doc_id
large_stringlengths 32
64
| text
large_stringlengths 0
560k
| type
large_stringclasses 3
values |
---|---|---|
cf7418de5bdbd0d4bcc58d66546e35070a70aa2c | বৃষ্টি কমলেও জল যন্ত্রণার ছবিতে বদল নেই হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুরে। কৃষিজমি, রাস্তা থেকে বসতবাড়ি সর্বত্র জল থইথই। ব্যপক ক্ষতি কৃষিকাজেও।
যেদিকে দু'চোখ যায় শুধু জল আর জল। প্লাবন-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আমতার আকাশে উড়ল ড্রোন। নতুন করে আর সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। তা সত্ত্বেও বদলাচ্ছে না হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুরের জল যন্ত্রণার ছবিটা। জলের তলায় উদয়নারায়ণপুরের শতাধিক ও আমতার ৩০টি গ্রাম। রাস্তা যেন সমুদ্র। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দুর্গতদের উদ্ধার করছে NDRF ও SDRF। বাড়ি-ঘর থেকে পানীয় জলের নলকূপ। সবকিছুই জলের তলায়। DVC-র ছাড়া জলে বিপর্যস্ত আমতার মানুষ। বাঁধ রক্ষার অসম লড়াই চলছে জল ও মানুষের মধ্যে। বালির বস্তা ফেলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
About Channel: ABP Ananda is a regional news hub that provides you with comprehensive up-to-date news coverage from West Bengal and all over India and World. Get the latest top stories, current affairs, sports, business, entertainment, politics, spirituality, and many more here only on ABP Ananda.
ABP Ananda maintains the repute of being a people's channel. Its cutting-edge formats, state-of-the-art newsrooms command the attention of million of Bengalis weekly.
Social Media Handles:
| web |
f20dec0f03c241181e77a8e4674228bb6cdaf0f0 | যেখানে আসনসংখ্যা ছিল ২৪৮২, সেখানে ভিড় হয়েছিল প্রায় ৮০০০। ৭টা দরজার ৫টাই খোলা ছিল। মঞ্চের দুদিকেও লোক দাঁড়িয়ে যায়।
দেবারতি ঘোষ : কী হয়েছিল মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে (Nazrul Mancha)? নজরুল মঞ্চের এক কর্মীর কথায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাঁর কথায়, তিনি ১২ বছর নজরুল মঞ্চে কর্মরত। কিন্তু মঙ্গলবারের মত এদৃশ্য তিনি নজরুল মঞ্চে আগে দেখেননি।
নজরুল মঞ্চের (Nazrul Mancha) ওই কর্মীর অভিযোগ, আসনসংখ্যার থেকে অনেক বেশি ভিতরে ঢুকে যায়। প্রবল ভিড়ের জন্য বিশৃঙ্খলাও দেখা দেয়। যার প্রমাণ প্রেক্ষাগৃহের পিছন দিক থেকে ছোঁড়া বোতল। যা কিনা এদিক ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে অনুষ্ঠান শেষের বহু ঘণ্টা পরেও। নজরুল মঞ্চের ওই কর্মী বলেন, কেকে (KK) মঞ্চে ওঠেন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ। তারপর একটার পর একটা গান গেয়ে যাচ্ছিলেন। মাঝে মাঝে ব্যাকস্টেজে গিয়ে ঘাম মুছে এসে আবার গান ধরছিলেন। ৮টা ৪০ নাগাদ অনুষ্ঠান শেষ হয়। প্রথম থেকেই খুব ভিড় হচ্ছিল। যেখানে আসনসংখ্যা ছিল ২৪৮২, সেখানে ভিড় হয়েছিল প্রায় ৮০০০। ৭টা দরজার ৫টাই খোলা ছিল। মঞ্চের দুদিকেও লোক দাঁড়িয়ে যায়। এসি বন্ধ ছিল না। কিন্তু অত ভিড়ে কাজ করছিল না এসি। দরজা খোলা থাকায়, হাওয়া বেরিয়ে যাচ্ছিল।
যে কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে আসা নিয়ে প্রবল উৎসাহী ছিলেন, সেই কলকাতাতেই অনুষ্ঠান শেষে প্রয়াত শিল্পী। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎ শরীর খারাপ। তারপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে (KK)-কে। প্রিয় শিল্পীর অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সব মহল। এই পরিস্থিতিতে নজরুল মঞ্চে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে। মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ের কারণে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, এবার এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে, তদন্তে নামছে কেএমডিএ (KMDA)।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)
| web |
54bd25f005d8a225780f5131a5067078087b6bb1 | - #MaharashtraSharad Vs Ajit: আগে থেকেই পরিকল্পনা অজিত পাওয়ারের! দল রক্ষায় শারদের হাতিয়ার মোদীর 'বিবৃতি'
মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকারকে 'অসহিষ্ণু' বলেও উল্লেখ করেছেন ফড়নবিস, এবং তিনি আরও বলেছেন, 'রানা দম্পতি শুধু বলেছিলেন যে তারা হনুমান চালিসা পাঠ করতে চান! তারা বলেনি তারা (মুখ্যমন্ত্রীর) বাসার সামনে বিক্ষোভ করবে বা কিছু! তাও তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে!
তাহলে হনুমান চালিসা কোথায় পড়তে হবে? পাকিস্থানে? ' এরপরই হনুমান চালিসা পাঠ করা দেশবিরোধী কিনা! সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে ফড়নবিস বলেন, যদি আগামীতি এরকম কোনও ঘোষণা আসে তাহলে আমরাও হনুমান চালিসা পাঠ করব। সরকারের উচিত আমাদের বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা। মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা দাবি করেছেন যে সাংসদ নবনীত রানা তার স্বামী বিধায়ক রবি রানার সাঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে মুম্বাই পুলিশ।
রানা দম্পতি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হনুমান চালিসা পড়তে চেয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পরে জেলে থাকাকালীন তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কারাগারে মহিলা এমপির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাঁর জাত নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। সাংসদের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ তাঁকে জল দেওয়া হয়নি এবং ওয়াশরুম ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়নি!
সম্প্রতি লাউডস্পিকারের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মহা বিকাশ আঘাদি সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠক এড়িয়ে যান দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এর পরই সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণ দেন ফড়নবিস, যা একটি রাজনৈতিক ফ্ল্যাশপয়েন্টে পরিণত হয়েছে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, বিজেপিকেও এই বৈঠকে অংশ নিতে বলা হয়েছিল।
| web |
e54d21619dace1b7e00c332f9cbfe9554a31fa72 | #সিরিয়াঃ সমুদ্রের পাড়ে পড়ে ছিল ছোট্ট একটা পুতুল । গায়ে লাল সোয়েটার, জিনস আর পায়ে বেবি শ্যু । কাছে গিয়ে বোঝা গেল পুতুল কই! এতো এক শিশুর দেহ। যাকে সমুদ্র ফিরিয়ে দিয়েছিল। হাওয়ার দোলায় সরে সরে যাচ্ছিল সমুদ্রের সীমানা। সেখানেই মেলে আয়লানের নিথর দেহ। তখন থেকেই সে সিরিয়ার উদ্বাস্তু সমস্যার ব্যান্ড আম্বাসাডর। সেই নিথর দেহই নজর কাড়ল বিশ্বের। মানবিক মুখ দেখাতে বাধ্য হল ইউরোপ।
ছোট ছোট ডিঙি। নেই লাইফ জ্যাকেট। ক্ষমতার তুলনায় দুগুণ এমনকী তিনগুণ পর্যন্ত যাত্রী তুলেই সমুদ্রে ভেসে পড়েছিল শয়ে শয়ে ডিঙি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, রাইট পুলিশের লাঠি - সবকিছু সহ্য করেও দাঁতে দাঁত কামড়ে ছিলেন শরণার্থীরা। কোনও মতে একবার নিজেদের পছন্দসই দেশে পৌঁছতে পারলেই হল। তারপর না হয় শুরু করা যাবে নতুন জীবন। সিরিয়া, লেবানন, থেকে আছড়ে পড়া শরণার্থীদের স্রোতের সেই শুরু।
জন্মভূমিতে নেই জীবনের নিরাপত্তা। ভিটেমাটি ছেড়ে, শেষ সম্বলটুকুকে আঁকড়েই ইউরোপে ঠাঁই পেতে জীবন বাজি রাখতেও রাজি ছিলেন শরণার্থীরা। দায় কার? ভার নেবে কে? ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশিরভাগ সদস্য দেশ হুঙ্কার ছাড়ছিল, নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মেটার শরণার্থীরা। আয়লান ট্রাজেডি পর্বের পর মানবিক মুখ দেখাতে হচ্ছে তাদের। তাই বাধ্য হয়েই ঘোষণা, শরণার্থীদের ভার নিতেই চাই। কিন্তু ক্ষমতা কোথায়? উত্তর নেই। থেমে নেই শরণার্থী স্রোতও।
শরণার্থী বোঝা ঝেড়ে ফেলতে চায় ক্লান্ত ইউরোপ। কিন্তু শরণার্থীদের সে সুযোগ কোথায়? ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেও বুদাপেস্ট সহ তিনটি শহর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রওনা হয়েছেন শরণার্থীরা। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমান্তই তো বন্ধ। প্যারিস হামলার পর আর কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ ইউরোপ। বুদাপেস্ট ও লিবিয়া সীমান্তে লাইন ক্রমশ লম্বা হচ্ছে।
হ্যাঁ, ছুতোই বটে। গৃহযুদ্ধ, ইসলামিক স্টেটের শাসন আর উন্নত দেশের বিমানহানার মুখে পড়ে থাকাটাই তো বুদ্ধিমানের কাজ। বোকা বলেই তো সর্বস্ত খুইয়ে পাড়ি িদচ্ছেন তাঁরা। মাঝেমধ্যেই আয়লানরা ভেসে উঠছে সমুদ্রেত তীরে। জীবন বাঁচানোর তাগিদ। পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ। এই তাগিদই আপাতত তাড়িয়ে নিচ্ছে বেড়াচ্ছে সব পিছনে রেখে আসা মানুষগুলোকে। ভবিষ্যৎ এখনও দূর অস্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এতবড় সংকট আর আসেনি। তবুও ইউরোপ বলছে, ওটা স্রেফ ছুতো। ওরা আসলে ইউরোপে আসার জন্য পাগল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
| web |
7ea92001779df93286ad8318a07b5cf5408cd99e | সিটি নিউজ ডেস্কঃঃনোবেল বিজয়ী মরিয়েড মুগুয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যা দেখেছেন, তাতে তারা গভীরভাবে শোকাহত। রাখাইনের ঘটনাকে গণহত্যা হিসাবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এরপরও বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো কীভাবে নীরব রয়েছে তাতে তারা বিষ্মিত।
আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি ) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন নোবেলজয়ী ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান এবং যুক্তরাজ্যের মরিয়েড মুগুয়া।
রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে আসা শান্তিতে নোবেল জয়ী তিন নারী বলেছেন,জাতিগত নিধন চালাতেই মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। মিয়ানমারকেই এই গণহত্যার দায় নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ইহসানুল করিম বলেন, মরিয়েড মুগুয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যা দেখেছেন, তাতে তারা গভীরভাবে শোকাহত। রাখাইনের ঘটনাকে গণহত্যা হিসাবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এরপরও বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো কীভাবে নীরব রয়েছে তাতে তিনি বিস্মিত।
মানবিক কারণে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তাকে 'কাইন্ড মাদার' হিসেবে বর্ণনা করেন মরিয়েড মুগুয়া। তিনি ১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল পান।
সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী তাওয়াক্কুল কারমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বলেন, রাখাইনে যা ঘটছে তার দায় মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের যে খবর প্রচার মাধ্যমে আসছে তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহতা সেখানে ঘটেছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে একশ নারীর সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তাওয়াক্কুল কারমান শেখ হাসিনাকে বলেন, ওই নারীরা মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। ক্যাম্পের অধিকাংশ এতিম রোহিঙ্গা শিশুর অভিভাবককে হত্যা করা হয়েছে।তিনি বলেন, এটা জাতিগত নিধনের পরিকল্পিত সরকারি নীতি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।
ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেছেন সব মিলিয়ে দশ লাখ ৭৮ হাজার রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার যাতে ওই চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নেয়, সেজন্য আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
| web |
50bf24792d4825d17ace6cd99c5ef51818d0dcce | ভূরাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নিয়ে দ্বিধায় বেইজিং বলে জানিয়েছেন ঢাকার চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনুরোধে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হলো। এরপর যদি হঠাৎ করে কারো চাপে যদি বাংলাদেশ বলে, দুঃখিত চীন এ প্রকল্পটি আমরা করতে পারবো না। তখন পরিস্থিতিটি আমার জন্য বিব্রতকর হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে চীনের ভাবমূর্তি নিয়ে এক গবেষণা প্রকাশ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে 'ন্যাশনাল ইমেজ অব চায়না ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক গবেষণা প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস)। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকার চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব ও গবেষণা উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিএস'র পরিচালক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ চৌধুরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত, শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সম্প্রতি দূতাবাস চীনের প্রায় সকল প্রকল্প ঘুরে দেখেছে। আর সেই অংশ হিসেবে তিস্তা দিয়ে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ সরকার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের কাছে তিস্তা নিয়ে কিছু করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। ঢাকার দূতাবাস এটি পর্যালোচনা করে বেইজিংকে জানিয়েছে। এখন তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বেইজিং পর্যালোচনা করে দেখছে।
তিনি বলেন, তবে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া নিয়ে চীন দ্বিধায় রয়েছে। কারণ এ প্রকল্পে কিছুটা সংবেদনশীলতা রয়েছে, যা আমরা অনুভব করতে পারি। সেই সঙ্গে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে উদ্বিগ্ন, যদি এ প্রকল্প নেওয়ার পর বর্হিবিশ্বের চাপে বাংলাদেশ সরকারের তার অবস্থান পরির্বতন করে। হঠাৎ করে কেউ এসে এ প্রকল্প নিয়ে বলবে যে এটি চীনের আরেক ঋণের ফাঁদ। আর এখানে কিছুটা সুনির্দিষ্ট ভূরাজনৈতিক সংবেদনশীলতা রয়েছে। ফলে বিষয়গুলো আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে। স্থানীয় সরকার ও মানুষ এ প্রকল্প নিয়ে বেশ আশাবাদী। সেখানকার ২ কোটি মানুষদের এটি দরকার বলে জানান লি জিমিং।
রোহিঙ্গা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী না হলেও চীন রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক কিছু করছে। যে বৈঠকটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীনের মধ্যে রোহিঙ্গা নিয়ে হচ্ছে, সেটি চীনের উদ্যোগে। এ সংকটের একমাত্র সমাধান কূটনীতিতে। তবে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ কূটনীতিক দিক থেকে সকল প্রচেষ্টা করে দেখেছে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন অন্যতম শক্তি হিসেবে জানিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রোহিঙ্গা নিয়ে সক্রিয় ভাবে কাজ করছে জানিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অনেক ঝগড়া ও অমিমাংসিত ছিল। এর মধ্যে একমতে আসা অনেক কঠিন ছিল। চীন দুই পক্ষকে এক টেবিলে বসিয়েছে। আমরা আমাদের কাজ নিরবে করে থাকি, যতক্ষণ না ফলাফল আসে। তার আগে এ বিষয়ে আমরা কিছুই বলি না, আমরা কাজ করি শুধু কথা বলি না।
সম্প্রতি মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগে সকল মাধ্যম ব্যবহার করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আস্থা তৈরির কাজটি হচ্ছে এখনকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এ বিষয়ে আমরা নেপিদোকে বলেছি, কিভাবে আস্থা তৈরি করা যায় এটা তোমাদের খুঁজে বের করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চীন ইতোমধ্যে একটি ধরনাপত্র তৈরি করেছে। যখনই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে, তখনই প্রত্যাবাসন শুরু হবে। তবে এখন সেখানে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশ সীমান্তে যুদ্ধ নিয়ে নেপিদোতে চীন দূতাবাস কাজ করেছে। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে উত্তর পেয়েছে চীন। যা এ মুহূর্তে প্রকাশ করা যাবে না। মিয়ানমারের আনুষ্ঠানিক উত্তর বাংলাদেশকে জানানো হবে।
চীনে মানবাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে সাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, 'ট্র্যাক-০২ ডিপ্লোমেসি' এর মাধ্যমে চীনের শিনজিয়ান প্রদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বাংলাদেশ তার উদ্বেগ চীনের কাছে জানিয়েছে। অনেক ফোরামেই আমাদের উদ্বেগ জানানো হয়েছে। তবে আমার জানা মতে দ্বিপক্ষীয় কোন বৈঠকে এ বিষয়টি তাদের কাছে তুলে ধরা হয়নি। আমরা চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। একই সঙ্গে আমরা আমাদের অবস্থান পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাই, যা আমরা করে আসছি। যেমন ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন ওআইসিতে চীনের উইঘুরের মুসলিমদের মানবাধিকারের বিষয়টি প্রায়ই আলোচনায় আসে। সেখানে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরে।
উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার নিয়ে সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর বক্তব্যের বিরোধীতা করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, উইঘুর মুসলিমদের ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা হয় পশ্চিমা বিশ্বে এ নিয়ে নানা ধরনের খবর রয়েছে। আর এ সব খবর জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ছড়ানো হয়। চীন সেখানে কোন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ওপর অত্যাচার চালায় না। কারণ চীনের ৫৬টি সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সমান ভাবে অধিকার দেওয়া হয়। এদের মধ্যে উইঘুর একটি গোষ্ঠী। আর যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তা ধর্ম,বর্ণ, মানবাধিকার বা স্বাধীনতার ওপর ভিত্তি করে নয়। সেখানে শুধুমাত্র সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করা হয়েছে। যেটি বাংলাদেশেও করেছে। বাংলাদেশ যেমন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি অবলম্বন করে, চীনও একই ভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে জানান তিনি।
| web |
c9a988888dfddbe6d9d9477ed264ff623326414fab731a6c05d44bf54cfd21cb | ভাল করে দেখল দীপক । দেহটা শক্ত, রাইগর মর্টিস্ সেট্ ইন্ করেছে। দেহের কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্নমাত্র নেই। হঠাৎ দেখা গেল পিঠে একবিন্দু রক্ত জমে আছে। আর চেয়ারের ঠিক পিঠের কাছে একট। পিন ফোটানো আছে - তার দু'মুখেই ধার ।
দীপক বললে - ঐ পিনে কেউ হাত দেবেন না । ওতে নিশ্চয়ই তীব্র বিষ মেশানো আছে, বিষের ক্রিয়ায় মৃত্যু ঘটেছে ।
মিঃ গুপ্ত বললেন - হত্যাকারী ভারি চতুর। আগেই পিন ফুটিয়ে রেখে গেছে। পরে তিনি এসে চেয়ারে বসার সঙ্গে সঙ্গে পিন ফুটে দেহটা বিষাক্ত হওয়াতে মারা যান, তাই না?
- ঠিক তাই । যা হোক, মৃতদেহটা পোস্টমর্টেম করতে পাঠিয়ে দিন। আর একটা কথা, মৃতের কয়েকটা ভঙ্গিমার ফটো নিতে ভুলবেন না ।
এমন সময় রতন হঠাৎ চেয়ারের তলায় কি একটা জিনিস দেখতে পেয়ে সেটা টেনে বের করল। একটা ভাঁজ করা কাগজ।
রতন সেট। দিল দীপকের হাতে। দীপক পড়ে দেখল, তাতে লেখা :'অদৃশ্য বন্ধুর দ্বিতীয় কীর্তি।
এমন সময় সুধীর এসে বললে - চলুন পাশের ঘরে বসবেন।
পাশের ঘরে বাড়ির সকলেই উপস্থিত হলো। সুধীর, অধীর, বিজয়া, তন্ময়, ৰীণাদেবী, মায়াদেবী আর নায়েব সনাতন সরকার ।
দীপক সকলকে উদ্দেশ্য করে বলল - মাননীয় ভদ্রমহোদয় ও মহিলাবৃন্দ ! আমি বর্তমানে এই কেন তদন্তে হাত দিয়েছি । আর একাজের সুবিধার জন্য আমি কয়েক দিন 'নিরালা লজ'এ থাকব বলে মনস্থ করেছি।
তা শুনে রায়সাহেবের স্ত্রী বীণাদেবী বললেন - আপনি স্বচ্ছন্দে এখানে থাকতে পারেন। হত্যাকারী ধরা পড়ুক সেটাই আমি চাই ।
দীপক বললে - আচ্ছা, সুশীলবাবুর মৃতদেহ প্রথমে কে দেখতে পান বলুন ত ?
| pdf |
ba14ac867515aa3576865b64ae9c6ff2a59ab649d4beb3e91a7fa36ba6efe626 | উত্তর দিলাম না।
এই জায়গা থেকেই আমি সাত আট বছর বয়সে এই দেশ ছাড়ি সেই তিীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। কী ভয়ঙ্কর সেই দিনগুলো, আজও মনে করলে আমার গায়ে কাঁটা দেয় ।
সেই স্তব্ধ জ্যোৎস্নামুখর রাত্রি অতন্দ্র চাঁদের চোখের সামনে গভীর হতে লাগল। কৃষ্ণ-সাগরের উত্তাল তরঙ্গমালা আমাদের পায়ের তলায় আছড়িয়ে পড়তে লাগল । লবণাক্ত বাতাস নারকোল বনের মাথায় মাথায় দোলা জাগিয়ে তুলল। ধূ-ধূ করা সাদা বালির ওপরে শুধু আমরা দুজনে। তারই মাঝে সিণ্টা বলে চলল তার অতীতের কাহিনী।
১৯৪১ সনে আমরা ফিরে যাই।
জার্মানির মতো জাপানও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। প্রথম ধাক্কাতেই তারা আমেরিকার পার্ল হারবারের নৌ-ঘাঁটি বিধ্বংস করে মিত্রশক্তির হৃদয়ে আতঙ্ক এবং অবিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছে। এশিয়া এবং বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে জাপানী অভিযান অত্যন্ত প্রত্যক্ষ হয়ে উঠেছিল, কিন্তু ব্রিটিশ ও ওলন্দাজ সামরিক কর্তৃপক্ষ ছিলেন সে সম্বন্ধে সম্পুর্ণ উদাসীন ।
ব্রিটিশদের ধারণা ছিল যে জাপানীরা যুদ্ধে নিপুণ নয় এবং তাদের 'জিরো' প্লেন ব্রিটিশ প্লেনের চেয়ে নিকৃষ্টতর। সেইজন্য জাপানী আক্রমণ সহজে প্রতিহত হবে মনে করে তারা নিশ্চিন্ত ছিল। জাপান মিত্রশক্তির এই দুর্বলতা সম্বন্ধে পূর্ণমাত্রায় হালওয়াকিব ছিল । ১৯৩৭ সন থেকে চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে তারা চীনের অধিকাংশ উপকুল এবং তীরবর্তী দ্বীপগুলি অধিকার করে বসেছিল। জার্মানি ফ্রান্স এবং নেদারল্যাণ্ড অধিকার করার সঙ্গে সঙ্গেই ফ্রান্সের ভিসি সরকার
দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে। জাপানী অগ্রগতিতে ভীত সৈন্যবাহিনীর দলত্যাগের সংখ্যা প্রতি মুহূর্তে বাড়তে লাগল। মিলিটারি পুলিসের সঙ্গে তারা লড়াই করতে লাগল, বন্দুক নিয়ে ভয় দেখিয়ে দলে দলে তারা অসামরিক যাত্রীদের জাহাজে উঠে সিঙ্গাপুর ছেড়ে পালাতে লাগল । চারদিকে অরাজকতা, চরম বিশৃঙ্খলা ।
কিন্তু সিঙ্গাপুরের সংবাদপত্রগুলো পড়লে এই সংবাদ পাওয়া যাবে না। বড় বড় হেড লাইন ; SINGAPORE MUST STAND: It SHALL Stand. কিংবা পণ্ডিত নেহরু এবং চিয়াং কাইসেকের সাক্ষাৎকারের বিবরণ। জাভা সী-তে জাপান ও হল্যাণ্ডের মধ্যে দারুণ সংঘর্ষ হয়েছে। আরও বড় খবর - সিঙ্গাপুরে জাপানীদের প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি ।
অথচ সিঙ্গাপুরে জ্বলছে আগুন। জ্বলন্ত পেট্রোল রিজার্ভয়েরের কালো ধোয়। সমস্ত আকাশ অন্ধকার করে রেখেছে। প্রতি মুহূর্তে অগ্রগামী জাপানীদের কামানের শব্দে সিঙ্গাপুর থরথর করে কাঁপছে। সিঙ্গাপুরের সমুদ্রে শুধু পলায়নরত ছোট-বড়, ভাল-মন্দ জাহাজ, মোটর লঞ্চ, নৌকো, সাম্পান, ডিঙ্গি, টোঙ্কান ।
জাপানী রেডিও ঘোষণা করল : There will be no Dunkirk at Singapore. The British are not going to be allowed to get away with this time. All ships leaving will be destroyed.
তা-ই হল । জাপানী বোমারু বিমান হানা দিল সমুদ্রে। কোন জাহাজ বা নৌকো সিঙ্গাপুরের সমুদ্র ছেড়ে যেতে পারল না।
জাপানীরা আয়ার রাজা রোড দিয়ে একেবারে বিনা বাধায় সিঙ্গাপুরের উপকণ্ঠে সামরিক হাসপাতালে প্রবেশ করল। হাসপাতাল বা রেডক্রস তাদের নিষ্ঠুর অত্যাচারের হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে পারল না। অর্ধেক ডাক্তার এবং রোগী বেয়নেটের আঘাতে প্রাণ দিল ।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনী একবার শেষবারের মতো বাধা দেবার চেষ্টা করল। উত্তরে জাপানীরা চতুর্দিক থেকে বোমাবর্ষণ করতে লাগল । সিঙ্গাপুরের গভর্ণর স্যার শেণ্টন থমাস সিঙ্গাপুরের দায়-দায়িত্ব হস্তান্তর করলেন সামরিক অধিকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল পার্সিভালের হাতে। জাপানী বোমা এবং গোলাবর্ষণ যখন তীব্রতর হয়ে উঠল, যখন আত্মরক্ষা আর কিছুতেই সম্ভব নয় তখন জেনারেল পার্সিভাল জাপানী সেনাপতি য়ামাসিতার কাছে ১৫ই এপ্রিল রাত্রি পৌনে আটটায় আত্ম-সমর্পণ করলেন।
তবু যুদ্ধ শেষ হল না।
তখনও হাজার হাজার ব্রিটিশ সৈন্য গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। আত্মরক্ষার জন্য মাঝে মাঝেই তারা গুলি চালাচ্ছে। হঠাৎ দল বেঁধে বাইরে বেরিয়ে জনসাধারণের বাড়ি ঢুকে খাবারদাবার লুটপাট করে সরে পড়ছে ।
জাপানী সৈন্যর। হুঁসিয়ার করে দিল সকলকে - ব্রিটিশ সৈন্যদের সাহায্য করলে মৃত্যু। সিণ্টার বাবা ধর্মাদির দোকান লুট করেছিল ব্রিটিশ সৈন্য - ধর্মাদি কেন বাধা দিতে পারেন নি, তাই জনসাধারণকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য তাঁকে রাস্তার চৌমাথায় দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হল।
পনেরই এপ্রিল ।
রাত তখন ন'টা।
মরণপ্রায় এই নগরীর ওপরে শ্বাসরুদ্ধ করা, গভীর, অপ্রবেশ্য কালে। এক আচ্ছাদন যেন পড়ে রয়েছে। প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি অফিসবোমা-বিধ্বস্ত হোক বা না-ই হোক - এই মসীকৃষ্ণ ধোয়ার গহ্বরে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি পথ, প্রতিটি গলি, হাসপাতাল,
সমুদ্রতীর - সব জায়গা জুড়েই এই ধোঁয়া। বারুদের গন্ধে ভারি ধোঁয়া হাল্কা শীতের রাতে জমাট বেঁধে নগরীর বুকে বসতে শুরু
করেছে ।
সন্ধ্যাবেলাতেও রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই কালো ধোঁয়ার ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে নীল আকাশে কয়েকটা তারাকে জ্বলতে নিভতে দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু সামান্য একটু বাতাসে আকাশের সমস্ত ফাঁক কালো ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে গিয়েছে। নগরীর বাইরে থেকে বিধ্বস্ত পেট্রোল ট্যাঙ্কের ধোয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে এসে নগরীর ওপরে জমছে।
এ ধোঁয়া কোথা থেকে আসছে তা কেউ জানে না। হয়তো কালাঙ বিমানবন্দর থেকে, হয়তো ইলেকট্রিক কোম্পানির কারখানা থেকে, হয়তো আশেপাশের তৈলদ্বীপগুলো থেকে। কেউ জানে না, কেউ বলতে পারে না। এইটুকু শুধু সকলে জানে যে প্রতিনিয়ত প্রাণান্তকারী কালো বিষধোয়। এই নগরীর শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করছে, আর রাত ন'টার মধ্যেই নিশ্চন্দ্র নিষ্প্রদীপ মধ্যরাত্রির কালিম। সারা নগরীতে। জ্বলন্ত বাড়িগুলো থেকেও এখন আর এতটুকু আলো দেখা যাচ্ছে না - অনেক আগেই তারা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। সিঙ্গাপুরের জীবনও ঠিক তাই ।
মৃত্যুর নীরবতা ধীরে ধীরে সিঙ্গাপুরকে ঘিরে ধরছে । মাঝে মাঝে এক একটা গোল। ভীতিকর শিষ দিয়ে মাথার ওপর দিয়ে ছুটে গিয়ে হয়তো জলের মধ্যে পড়ছে, নয়তো কোন বাড়ির ওপরে পড়ে ক্ষণেকের জন্য একটু আগুন জ্বালিয়ে বিস্ফোরণের তীব্র শব্দ করছে। সেই আগুন কালো ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। তবু এই আগুন, এই শব্দ যেন রাত্রির একান্ত অবাস্তবতা ও অপার্থিবতাকে বাস্তব করে তুলছিল এবং তার পরেই রাত্রির নীরবতাকে আরো গভীর, আরো মর্মন্তুদ করে তুলছিল। মাঝে মাঝেই নগরীর উত্তর-পশ্চিম সীমানা ছাড়িয়ে, ফোর্ট ক্যানিং বা পার্লস্ হিল ছাড়িয়ে মেশিনগানের খটাখট
শব্দ ভেসে আসছিল ; কিন্তু তা-ও সুদূর, তা-ও অবাস্তব, - যেন স্বপ্নে শোনা বহুদূরাগত প্রতিধ্বনি। সেই রাত্রে সমস্ত কিছুই যেন স্বপ্নের মতো, ছায়া-ছায়া, অশরীরী।
সেই অন্ধকারের মধ্যে পথ হাতড়িয়ে চলেছে ছোট্ট একটা দল - নরনারী-শিশু। দূর থেকে দেখলে মনে হয় তারা অতি বৃদ্ধ - বয়সের চাপে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। সকলের মনের ওপর দিয়েই এক প্রবল ঝড় বয়ে গিয়েছে - কী যে সে ঝড় কেউ আর তা স্মরণ করতেই চাইছে না।
এরই মাঝে একটি ছোট্ট মেয়েকে মাঝে মাঝে ফুঁপিয়ে উঠতে শোনা যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে একটি হাত তার মুখটিকে সজোরে চেপে ধরছে। শব্দ নয়, কোন শব্দ নয় - এই বর্বর অত্যাচারের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য এই ছোট্ট দল রাত্রির গভীর অন্ধকারে গা-ঢাকা দিতে চেষ্টা করছে। জাপানীরা দেখতে পেলে তাদের আর নিস্তার নেই। জাপানীরা এখনও ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীদের আত্মসমর্পণ নিয়ে ব্যস্ত। শুধু আজকের রাতটাই আত্মরক্ষার একমাত্র সুযোগ - যদি না অবশ্য ধরা পড়ে যায়। কাল সকাল থেকে সিঙ্গাপুরের বাইরে যাওয়া অসম্ভব। চারদিকে জাপানী সৈন্য পাহারা দিতে শুরু করবে।
এই ছোট্ট মেয়েটিই আমাদের সিণ্টা। চোখের ওপরে সে দেখেছে তার বাবাকে জাপানীরা গুলি করে মেরে ফেলেছে। সেই কথা সে ভুলতে পারছে না, বাবার কথা মনে হতেই সে কেঁদে উঠছে। অস্ফুটস্বরে সে
একবার বলল -বাপক !
মা কথা বললেন না। সিণ্টার বাপক আর নেই। তাঁকে এখানে রেখেই তাঁরা বেরিয়ে পড়েছেন। সিণ্টার ছোট্ট হাত দুটো শক্ত করে ধরে জোরে জোরে হাঁটতে লাগলেন।
একটা ছোট্ট গলির ধারে একটি ছোট ছেলে একঘেয়ে কেঁদেই চলেছে। তার পাশে ভাঙা-চোর। ইট-পাথর-বালির মাঝে পড়ে রয়েছে একটা নারী-মূর্তি, আকাশের দিকে তার চোখ দুটো বিস্ফারিত -নিষ্প্রাণ। কিন্তু সেই শিশুটির কান্না শুনেও কেউ একবার একটুক্ষণের জন্যও দাঁড়াল না।
কয়েক ঘণ্টা পরে তারা নারকোল বন পার হয়ে এল সিগলাপের সমুদ্রতীরে।
বড় বড় ঢেউ ডাঙার ওপর আছড়ে পড়ছে । দূরের সমুদ্র কালো। কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে চারদিক ভাল করে তাকিয়ে দেখতে লাগল । তারপর হতাশার সুরে ফিরে এসে বলল- না, কেউ নেই ।
সেই ছোট্ট দলটি নারকোল বনের মধ্যেই গা ঘেঁষে বসে পড়ল। পুরুষেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিল যে কাপ্তেন চী লিঙ এখানেই তাদের অপেক্ষা করতে বলেছে, টাকাও নিয়ে গেছে - অথচ তার পাত্তা নেই। জাপানীদের হাতে ধরা পড়ল, না টাকা মেরে পালিয়ে গেল ! প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে তারা বসে রইল। যত রাত গভীর হচ্ছে, ততই তাদের উৎকণ্ঠা বেড়ে উঠতে লাগল । সকাল হলেই পলায়নের আর কোন পথ থাকবে না। এদের পথও অনেক দূর । সকলেই ইন্দোনেশিয়ার অধিবাসী। ইন্দোনেশিয়ার যে-কোন দ্বীপে উপস্থিত হতে পারলে তবু তারা একটু নিশ্চিন্ত হতে পারে। অবশ্য যদি সমুদ্রমধ্যে জাপানী আক্রমণে তারা নিমজ্জিত না হয় ।
হঠাৎ খুব দূরে যেন তারা ঘর্ঘর্ শব্দ শুনতে পেল । নারকোল গাছের আড়ালে দাড়িয়ে তারা দেখতে লাগল সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে। অতি দূরে কালো মতো একটা কি যেন দেখা যাচ্ছে। সেটি আস্তে আস্তে বড় হল। ছোট্ট একটা মোটর লঞ্চ। সেই মোটর লঞ্চ থেকে দুটো নৌকো নামানো হল। তারপর নৌকো দুটো এতটুকু শব্দ না করে এগিয়ে এল তাদের দিকে।
আধঘণ্টা পরে পঁচিশ জনের সেই দল দুটো নৌকো বোঝাই করে সমুদ্র ভেঙে চলল মোটর লঞ্চের দিকে। আরো আধঘণ্টা লাগল মোটর লঞ্চে ফিরে যেতে। তারপর সেই অন্ধকার রাত ভেদ করে মোটর লঞ্চটি ছুটে চলল সুমাত্রার দিকে।
সিণ্টা সিঙ্গাপুর ত্যাগ করেছিল সেই রাত্রেই।
বলীদ্বীপে ফিরে এসেছিল সিণ্টা।
কিন্তু সে কোনদিন ভুলতে পারে নি তার শৈশবের স্মৃতি-রঞ্জিত সিঙ্গাপুরকে, আর ভুলতে পারে নি জাপানীদের হাতে তার বাবা ধর্মাদির মৃত্যু। মামারবাড়িতে একা বসে বসে সে শুধু মনে করত সেইসব দিনগুলিকে। মামারবাড়িতে আসত যেত অনেকে। এখানেই বসে সে শুনতে পেত জাপানীদের অগ্রগমনের কথা। বলীদ্বীপে যেদিন জাপানীর। অবতরণ করল সেদিন সে ভয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল । বলীদ্বীপের অধিবাসীরাও প্রথমে শঙ্কাভিভূত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু তাদের নতুন সাহস দিলেন শাহরির। জাপানীদের ভয় করো না, জাপানীদের সঙ্গে হাত মিলিও না, সুযোগ পেলেই জাপানীদের ক্ষতি করো। জাপানীরা স্বরাজ দিতে আসে নি। দেবে না জাপানী উড়োজাহাজ এদেশে ছুঁড়ে স্বরাজ।
ইন্দোনেশিয়ার যৌবন চঞ্চল হয়ে উঠল। যুবকেরা দলে দলে গুপ্তসমিতি গড়ে জাপানীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করল। মামারবাড়ি থেকে সিণ্টার মামাতো ভাই সুমাত্রো এসে যোগ দিয়েছিল এই দলে। সুমাত্রোর কাছে আসত একটি অত্যন্ত ডানপিটে ছেলে। মাথায় ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া কোঁকড়ানো চুল। অত্যন্ত সুন্দর বলিষ্ঠ চেহারা।
তার নাম হরাতোনো। হরাতোনো এসে প্রায় গল্প করত কবে কোথায় তারা কিভাবে জাপানীদের সঙ্গে লড়াই করেছে।
ছোট্ট মেয়ে সিণ্টার চোখে হরাতোনো প্রথম দিনই এক পরম বিস্ময় হয়ে দেখা দিল। ভক্তি শ্রদ্ধায় তার মন ভরে উঠল। হরাতোনো হয়ে উঠল তার হিরো। হরাতোনোও সিণ্টার মনোভাব স্পষ্ট বুঝতে
পেরেছিল, সেইজন্যে সিণ্টার কাছে তার বাহাদুরির গল্প করতে তার ভালই লাগত ।
সিণ্টাও যোগ দিয়েছিল হরাতোনোর দলে। তার কাজ ছিল চিঠি বিলোনো এবং জাপানীরা কি করছে না করছে তার খবর দেওয়া। এই ছোট্ট মেয়েটিকে জাপানীর। কোনদিন সন্দেহের চোখে দেখে নি। ক্রমে হারাতোনোর দলের সঙ্গে সে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠল। তার মা ভয় পেয়ে গেলেন, মামা সুমাত্রো আর হরাতোনোকে ধমকালেন এবং সিণ্টাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন; কিন্তু সিণ্টা সব কিছু ভুলতে পারে, বাবার মৃত্যুর কথা ভুলতে পারে না।
আর ভুলতে পারে না যেদিন গভীর রাতে একটি ছোট্ট মোটর লঞ্চ সমেত পাঁচজন ইংরেজ ধরা পড়েছিল। জাপানী সমুদ্রতীর-রক্ষীদল ছোট ছোট ট্রলার, মোটর লঞ্চে করে ঘুরে বেড়াত সারা দিনরাত। তাদের ভয় - কখন ইংরেজ-আমেরিকান-অষ্ট্রেলিয়ানরা গোপনে এসে ইন্দোনেশিয়ার যে-কোন দ্বীপে এসে হানা দেয়। সুমাত্রো-হরাতোনোর দলও কোলেক কিংবা প্রাহুতে করে গভীর অন্ধকারে নদীতে, সমুদ্রে জাপানী লঞ্চের ওপর হানা দেওয়ার চেষ্টা করত। এমনিতে তাদের ওপর জাপানীদের সন্দেহ হত না--ইন্দোনেশীয় কিংবা মালয়ী জেলের দল মাছ ধরার জন্য সবসময়েই নদীতে কিংবা সমুদ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটা মোটর লঞ্চ তারা ডুবিয়ে দিতে পেরেছিল, গুটি কয়েক জাপানীদলকে তারা গুম করতে পেরেছিল ।
সেদিন রাতেও সুমাত্রো, হরাতোনো, দিকজয়। আর আবুগণি একটা কোলেকে চড়ে মাছ ধরার অছিলায় সাগরের উপকূলে ঘুরে বেড়াচ্ছে, হঠাৎ আবুগণি শুনতে পেল একটা এঞ্জিনের ঝক্ঝক্ শব্দ । একটু পরেই থেমে গেল সেটা। অন্যান্য তিন বন্ধুকে জানাল সে কথা। চারদিকে তাকিয়ে দেখল তারা - কুয়াশা আর ধোঁয়ায় কিছু দেখা গেল না। তবু নিঃসন্দেহ হওয়ার জন্য প্রায় তীর ঘেঁষে এগিয়ে গেল ।
প্রায় আধ মাইল এগিয়ে গিয়ে তারা দূরে একটা কালো মতো কি মাঝসমুদ্রে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল।
এবার নিঃসন্দেহ হয়ে তারা আস্তে আস্তে অগ্রসর হল। কাছাকাছি এসে দেখল যে, ছোট্ট একটা মোটর লঞ্চে একটা জাপানী পতাকা উড়ছে । সঙ্গে সঙ্গে তারা স্থির করল যে সেই মোটর লঞ্চটিকে তারা আক্রমণ করবে।
কিন্তু সুমাত্রোর কেমন যেন সন্দেহ হল। বলল - জাপানী মোটর লঞ্চে .সার্চ লাইট নেই কেন, আর মাত্র দু'জন কেন ডেকে দাঁড়িয়ে আছে ? একদিক দিয়ে তারা নিঃসন্দেহ হয়েছিল যে মোটর লঞ্চে বেশি লোক নেই। থাকলে আরো অনেক লোক জেগে চারদিকে লক্ষ্য রাখত। তারা অত্যন্ত সন্তর্পণের সঙ্গে কোলেকটি লঞ্চের পিছন দিকে বেঁধে চুপি চুপি লঞ্চে উঠে পড়ল । সেই দুটি লোক রিভলভারে হাত দেওয়ার আগেই তাদের হাতে বন্দী হয়েছিল। আর দুজন শুয়ে ছিল, তাদের বন্দী করতেও বেশি সময় লাগে নি।
কিন্তু সুমাত্রোর সন্দেহই ঠিক। তদের চেহারা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল যে তারা জাপানী নয়। হাতে মুখে কালো-বাদামী রঙ মাখা। তারা ভাঙা ভাঙা মালয়ী ভাষায় জানাতে চাইছিল যে তারা মালয়ী জেলে ; কিন্তু তাদের কথাবার্তা শুনে বোঝা গেল যে তারা বিদেশী। এবারে সুমাত্রে। তাদের পরিচয় দিল। তাদের পরিচয় শুনে একজন বিদেশী তার বাঁধা হাত দুটো বাড়িয়ে দিয়ে বলল - আমার নাম ক্যাপ্টেন ব্রুস্ কানিংহাম। এরা আমার বন্ধু এবং সহকর্মী - লেফটেনান্ট প্যাডি কার্স, সার্জেন্ট জন লুডউইক আর মেট টাইগার হামাস্। তারপর তাদের কাছ থেকে জানা গেল যে উত্তর-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে তারা এই মোটর লঞ্চে করে বেরিয়েছে সিঙ্গাপুর সম্বন্ধে খবর আনতে এবং পারলে জাপানীদের সেখানে কিছু ক্ষতি করতে। তাদের এই দুঃসাহসে সকলে আশ্চর্য হয়ে গেল। যেখানে তারা ধরা পড়েছে
তারপর থেকে সমস্তটাই জাপানী রাজত্ব । যে-কোন মুহূর্তে তারা ধরা পড়ে যেতে পারে। এত অল্প লোকে তারা সামান্য লড়াইও করতে পারবে না। তাদের চেহারা, তাদের গায়ের রঙ, তাদের কথাবার্তা - সব কিছুই জাপানীরা সহজে ধরে ফেলবে।
হরাতোনোই প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিল যে তারা যদি সঙ্গে থাকে তবে দলও ভারী হবে এবং তাদের দেখলে জাপানীরা বিশেষ সন্দেহ করবে না। প্রয়োজনের সময় কানিংহাম তার দলবল নিয়ে এঞ্জিন-ঘরে আত্মগোপন করবেন ।
উৎসাহিত হয়ে উঠেছিল সুমাত্রো, দিকজয়া আর আবুগণি-ও ; কিন্তু কানিংহাম প্রথমে চুপ করে ছিলেন। তিনি এদের ঠিক বিশ্বা পারেন নি। কিন্তু সুমাত্রো এতদূর উৎসাহিত হয়ে উঠেছিল যে কানিংহাম তাদের সঙ্গে নিতে রাজি না হলে তাঁদের বন্দী করে সে তার দলবল নিয়েই সেই মোটর লঞ্চে করে সিঙ্গাপুর যাবে ঘোষণা করল। শেষ পর্যন্ত কানিংহামকে সম্মত হতে হল ।
আর সময় নেই। দলের সকলকে খবর দিয়ে আসার জন্য সুমাত্রে। একা কোলেক নিয়ে ফিরে গেল। কিন্তু সেখানে আর এক প্রবল সমস্যা। দেখা দিল। এই অভিযানে সকলেরই উৎসাহ দেখা গেল, কিন্তু সিণ্টা একেবারে ধরে বসল যে সে সিঙ্গাপুরে যাবেই। সে সিঙ্গাপুর ভাল করে চেনে, সে সকলকে চিনিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তাছাড়া তার বাবাকে জাপানীর। ওখানেই হত্যা করেছে তখন সে জাপানীদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে নি, কিন্তু এবারকার সুযোগ সে ছাড়বে না। বাধ্য হয়ে সুমাত্রে। সিণ্টাকে নিয়ে মোটর লঞ্চে উপস্থিত হল। সিণ্টাকে দেখে কানিংহাম আর তাঁর দলবল ঘোরতর আপত্তি জানালেন। বললেন - আমরা চড়ুইভাতি করতে যাচ্ছি না।
সিণ্টা বলল আমি চড়ুইভাতি করতে যাচ্ছি। সমুদ্রের ধারে চড়ুইভাতি করার সবচেয়ে ভাল জায়গা কোনটা আমি জানি। আমিই
আপনাদের তা দেখিয়ে দিতে পারব। আর আমি যদি না যাই, তবে কেউ যেতে পারবে না।
অনেক কথা কাটাকাটির পর সিণ্টাকে সঙ্গে নিতে কানিংহাম রাজি
গভীর রাত্রে মোটর লঞ্চ চলতে শুরু করল ।
স্থির হয়েছিল যে সুমাত্রোর দলের দুজন এবং কানিংহামের দলের দুজন একসঙ্গে পাহারা দেবে। জাপানীদের সঙ্গে দেখা হলে সুমাত্রোর দলই কথাবার্তা চালাবে ।
সেই অন্ধকার ভেদ করে উত্তর দিকে লঞ্চটি চলতে লাগল। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা লোম্বক আর বলীদ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রে এসে উপস্থিত হল। কাছেই বলীদ্বীপের দেন পাসরে জাপানীদের বিমানঘাঁটি। মাঝে মাঝেই জাপানী বিমান আকাশে উঠে চারদিক ঘুরে ফিরে দেখছে। এ সময়ে এই প্রণালী দিয়ে যেতে গেলে জাপানীরা সন্দিগ্ধ হবে। সুতরাং সেখানেই ঘুরে ঘুরে তারা সকলে মাছ ধরতে
লাগল ।
সন্ধ্যা হতেই আবার তারা যাত্রা শুরু করল। রাতের অন্ধকার বাড়তে না বাড়তেই সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ডাইনে বাঁয়ে দেখা দিল দুটি আগ্নেয় গিরি । একদিকে লোম্বকদ্বীপের বারো হাজার ফুট উঁচু গুনোঙ রোঞ্জানি, আর একদিকে বলীদ্বীপের দশ হাজার ফুট উঁচু গুনোঙ আগুঙ্গ। আর এই দুই দ্বীপের মাঝে সমুদ্র প্রণালীর ঠিক মধ্যখানে দেখা যেতে লাগল ছোট্ট একটা স্টীমারের মতে। নুস। বেসর দ্বীপটিকে ।
লীদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় কয়েকটি সার্চ লাইট ঘুরে ঘুরে সমুদ্রপ্রণালী আলোকিত করে তুলতে লাগল। কানিংহাম আত্মরক্ষার জন্য লোম্বক দ্বীপ ঘেঁষে মোটর লঞ্চটিকে চালিয়ে নিয়ে যেতে লাগলেন।
ডিজেল এঞ্জিনের শক্তি খুব বেশি ছিল না, ঘণ্টায় সাত আট মাইল সহজেই যেতে পারে; কিন্তু সে রাতে তারা দারুণ বিপর্যয় এবং উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েছিল । প্রতি চব্বিশ ঘণ্টায় একবার যব-সাগর তার সমস্ত জল উজাড় করে দেয় ভারত মহাসাগরে। সেই সময়ে স্রোতের বিপরীত দিকে তারা তিন ঘণ্টায় তিন মাইলও যেতে পারে নি। গভীর রাতে আবার স্রোত বদল হল। এবার ভারত মহাসাগর থেকে জল ছুটে এল। সেই স্রোতে দ্রুত ছুটে চলল লঞ্চটি। নুসা বেসর দ্বীপ পার হয়ে গেল রাত্রির অন্ধকারের মধ্যেই। মাঝে মাঝে দু-একবার তারা হুসা বেসর থেকে সমুদ্রে আলো পড়তে দেখেছে, কিন্তু লোম্বক দ্বীপের কোল ঘেঁষে থাকাতে তারা ধরা পড়ে নি।
তারা আশা করেছিল যে রাত্রির অন্ধকার আর ভোরের কুয়াশার মধ্যেই তারা বলী আর লোম্বক দ্বীপ দুটিকে অতিক্রম করে যেতে পারবে । কিন্তু ভোর হয়ে রোদ পুনোঙ আগুঙ্গের চূড়া ছুঁতেই দুই ধার থেকে কুয়াশা কাটতে শুরু করল। একটু পরেই দুই দ্বীপেরই তীরভূমি পরিষ্কার হয়ে গেল । শুধু লোম্বক দ্বীপের কাছাকাছি একটা কুয়াশার পর্দ। তখনও ছিল, কানিংহাম মোটর লঞ্চের মুখ ঘুরিয়ে সেই কুয়াশার মধ্যে নিয়ে গিয়ে ফেললেন।
কিন্তু উৎকণ্ঠার আর শেষ হল না। বলীদ্বীপ শেষ হল তো শুরু হল যবদ্বীপ। যব সাগরে হাজার হাজার প্রান্থ আর কোলেকের ছড়াছড়ি আর জাপানীদের সতর্ক পাহারা। লোম্বক দ্বীপ অতিক্রম করে সুমাত্রোর কথামত তারা ধরল কাঙ্গা দ্বীপপুঞ্জের পূর্বদিককার সমুদ্র উপকূলের পথ। এখানে জাপানীরা প্রহরা বসায় নি এইজন্য যে এখান থেকে সবটুকুই তাদের নৌবাহিনীর কর্তৃত্বাধীনে। তাছাড়া এখানকার সমুদ্র অগভীর বলে জাপানী পাহারাদার জাহাজ আসতে চাইবে না। দশদিন ধরে চলল এই দুর্যোগময় সমুদ্র যাত্রা। চোদ্দ দিনের মাথায় এসে পৌঁছুলো তারা বোর্নিওর কুলে।
এবারে তারা একটি ছোট্ট জাহাজকে যেন তাদের পিছু নিতে দেখল । প্রথমটা সকলেই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কানিংহামের আদেশে চারজন ইংরেজ সমস্ত দেহে রঙ মাখতে বসলেন। প্রত্যেকেই পরেছেন ইন্দোনেশীয় পোশাক । সুমাত্রো, হরাতোনো, দিকজয়া, আবুগণি আর সিণ্টা ডেকের ওপর উঠে এল। কানিংহাম চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে তাদের মধ্যে রইলেন; আর প্যাডি, জন ও টাইগার এঞ্জিন রুমে বসে রইল । ঠিক সেই সময়ে আকাশে মেঘ দেখা গেল। ক্রমে সেই কালো মেঘ সারা আকাশ ছেয়ে ফেলল এবং পর মুহূর্তে শুরু হল প্রবল ঝড় আর বৃষ্টি । সেই ঝড়বৃষ্টিতে সমুদ্রের জল প্রায় ত্রিশ চল্লিশ ফুট ফেঁপে উঠল । প্রচণ্ড ঢেউ-এ লঞ্চটিকে যেন সমুদ্রের মধ্যে আছাড় মারতে লাগল । সিণ্টাকে কেবিনের মধ্যে বন্ধ করে রেখে তারা সেই বৃষ্টিতে প্রথমে প্রাণভরে ভিজে নিল। খাবার জলের অভাব হওয়ার আশঙ্কায় তারা এতদিন স্নান করতে পারে নি। তারপর জল ধরার পালা। ঘণ্টাখানেক বাদে ঝড় থেমে গেল । আকাশ একটু পরিষ্কার হতেই পিছনের জাহাজটাকে আর তারা দেখতে পেল না। তাদের একটা ফাঁড়া কেটে গেল ।
পরদিন ভোরবেলায় তারা পোমপোঙ দ্বীপ ছাড়িয়ে রিও এবং লিঙ্গ। দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এসে পড়ল। এই ছোট ছোট দ্বীপগুলি সমুদ্রের বুকে ইতস্তত ছড়িয়ে যেন সিঙ্গাপুরে যাওয়ার একটা সুন্দর পথ তৈরি করেছে। এক একটা দ্বীপে এক একটা পা রেখে সমুদ্র ডিঙিয়ে চলে গেলেই যেন হয়। দ্বীপগুলি সিঙ্গাপুরের দিকে এগিয়ে একেবারে উত্তরে সিঙ্গাপুরের প্রায় শ খানেক মাইল দূরে হঠাৎ বাঁদিকে মোড় ফিরে সুমাত্রার দিকে চলে গিয়েছে। সিঙ্গাপুর আর তাদের মাঝখানে সিঙ্গাপুর প্রণালী, তার মাঝে মাত্র গোটা কয়েক দ্বীপ। এই সব দ্বীপ শুধু জঙ্গলময়। কখনো কখনো কোথাও মাটির চালাঘর, কোথাও বা কিছু কিছু খেত দেখা যায়; কিন্তু অধিকাংশ
লোকই মাছ ধরে সংসার চালায়। চারদিকে সবুজ সবুজ আর সবুজ - গাছপালা, বনজঙ্গল, পাহাড় মাটি - সব কিছুই সবুজ। দ্বীপের সরল অধিবাসীরা মাছ ধরতে ধরতে তাদের কোলেক বা প্রান্ত থেকে উঁকি মেরে তাদের একবার দেখে নিয়ে নিজেদের কাজেই মন দিচ্ছিল ।
বেঙ্গকু দ্বীপের কাছাকাছি আসামাত্র আকাশে হঠাৎ একটা এরোপ্লেন দেখা দিল। এরোপ্লেনটি ঘুরে ঘুরে তাদের লঞ্চটিকে লক্ষ্য করতে লাগল । কানিংহামের আদেশমতে। টাইগার, জন আর প্যাডি আবার নীচে গিয়ে আশ্রয় নিল। ডেকের ওপরে রইল হুমাত্রো, হরাতোনো, দিকজয়া, আবুগণি আর সিণ্টা। জাপানী প্লেনটি একেবারে নীচে নেমে এসে লঞ্চটির মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে তারা ঝুঁকে পড়ে হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাল। জাপানী পাইলট দু তিব্বার তাদের ভাল করে লক্ষ্য করে শেষ পর্যন্ত নিঃসন্দেহ হয়ে উড়ে গেল ।
কানিংহাম মোটর লঞ্চটিকে নিয়ে গিয়ে পুলো ডুরিয়ানের এক কোণায় অন্ধকারে নিয়ে গিয়ে রাখলেন।
সিঙ্গাপুর আর মাত্র ত্রিশ মাইল । কানিংহাম এবার সকলকে নিয়ে মিটিং-এ বসলেন। তাঁর মতে তাঁদের যাত্রার শেষ হয়েছে। এবার একটা ছোট দ্বীপ বেছে নিয়ে সেখানে মোটর লঞ্চটি লুকিয়ে রেখে দিয়ে কোলেকে চড়ে সিঙ্গাপুরে যাত্রা করতে হবে। কানিংহাম জানালেন যে তিনি স্থির করেছেন - পঞ্জাঙ্গ দ্বীপে গিয়ে আস্তানা গাড়বেন এবং সেই রাত্রেই তা করতে হবে।
কানিংহাম একদ। এই সমুদ্রপথে জাহাজ নিয়ে ব্রিটেন থেকে জাপান যেতেন আর আসতেন। সুতরাং সিঙ্গাপুর সম্বন্ধে তাঁর অভিজ্ঞতা সব চেয়ে বেশি। এইজন্য সকলেই মেনে নিল সে কথা। কিন্তু এতদিন পরে মুখ খুলল সিণ্টা। আপত্তি জানাল সে।
বলল - পঞ্জাঙ্গ সিঙ্গাপুরের একেবারে মুখোমুখি হবে। ওখানে বেশি লোকজন থাকে না সত্য, মোটর লঞ্চ লুকিয়ে রাখাও কঠিন না, - কিন্তু কোলেকে করে সিঙ্গাপুরে নামতে গেলে জাপানীদের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
কানিংহাম বললেন - তুমি তো অনেক কিছুই জান দেখছি সিণ্টা। তুমি যা বললে হয়তো সত্যি, কিন্তু পঞ্জাঙ্গ যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। কারণ পঞ্জাঙ্গ দ্বীপটা তো আমি জানি, আর তার পরের কাজ আমাদেরই করতে হবে।
প্যাডি একবার বলেছিল - ক্যাপ্টেন, সিণ্টার কথাটা আর একবার ভেবে দেখলে হয় না !
কানিংহাম উত্তর দিয়েছিলেন - সময় হলে দেখব।
সেই রাত্রে তারা পঞ্জাঙ্গে এসে উপস্থিত হল। ভাগ্য ভালই বলতে হবে। লঞ্চটিকে লুকিয়ে রাখার জন্য জায়গার অভাব হল না। পাহাড়ের মাঝখানে সমুদ্র সরু খালের মতো হয়ে একজায়গায় ঢুকে গেছে। তার চারদিকে বন-জঙ্গল । সেইখানে তারা মোটর লঞ্চটি রাখল । কিন্তু সিণ্টার কথাই সত্যি হল। লুকিয়ে থাকার জন্য পঞ্জাঙ্গ অতি চমৎকার জায়গা, কিন্তু সেখান থেকে বেরোবার উপায় নেই। গলাঙ্গবারু থেকে প্রতিমুহূর্তে একটা সার্চলাইট ঘুরে ঘুরে সিঙ্গাপুরের সামনের সমুদ্রটিকে আলোকিত করে তুলছে। এই আলোকিত সমুদ্র ভেদ করে তাদের পক্ষে সিঙ্গাপুরে যাওয়া সম্ভব নয় ।
সুতরাং কানিংহাম এবার সিণ্টাকে ডেকে পাঠালেন। জিজ্ঞাসা করলেন - তুমি ঠিক বলেছিলে মা। এখান থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়া সম্ভব না। আমাদের এখন কোন দ্বীপে গেলে সুবিধা হবে বল তো? সিণ্টা বলল - আমার মনে হয় পুলো ডোঙ্গাসে যাওয়া উচিত। বাতামের উত্তরে আর পুলো সাম্বুর ঠিক পিছনে। এই দ্বীপটা সিঙ্গাপুরের পিছনে এবং খুব কাছে, অথচ কোনকালে লোকজন কেউ
এখানে থাকে না। আর এখান থেকে সিঙ্গাপুরের সিগলাপ সমুদ্রতীর দেখা যায় । সিগলাপেও সন্ধ্যার পর কেউ আসে যায় না। কানিংহাম সিণ্টার পিঠ চাপড়িয়ে দিলেন।
পরদিন গভীর রাত্রে তারা মোটর লঞ্চ চালিয়ে পুলো ডোঙ্গাসে এসে উপস্থিত হল। চারদিকে আমবন, তারই নীচে চিকচিক করছে সমুদ্রতীর । মোটর লঞ্চটি আস্তে আস্তে যেতে যেতে একটা খাড়ি দেখে তার মধ্যে গিয়ে ঢুকল। আমবনের মধ্যে হারিয়ে গেল লঞ্চটি । বাইরে থেকে কিংবা দ্বীপের ভিতর থেকে আর তাকে দেখার উপায়
সকলে নেমে পড়ল ডোঙ্গাসে।
আমবন পার হয়ে ছোট্ট একটা পাহাড়। তারই গায়ে কয়েকটা ওয়ারিঙিন গাছ বাতাসে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে ফিফিস্ করে কথা বলছে। কাছেই একটা ছোট্ট পুকুর। যেন তারা এক স্বপ্নরাজ্যে এসে উপস্থিত হয়েছে। মোটর লঞ্চের ডিজেল আর মাছের গন্ধ থেকে রেহাই পেয়ে ভিজে মাটি আর বুনো ফুলের গন্ধ তারা প্রাণভরে
আঘ্রাণ করতে লাগল ।
রাত্রে আর কিছু করার নেই। ঠাণ্ডা পাথরের ওপর তারা শুয়ে রইল। পরদিন সকাল থেকে শুরু হল মোটর লঞ্চে করে আনা তিনটি কোলেককে জলে নামিয়ে সাজসরঞ্জামে ভর্তি করা। বন্দুক, গুলি, ছোরা, ম্যাপ, বাইনোকুলার, খাবার, জল, আর লিম্পেট মাইন কোলেকে তুলে রাখা হল। একটা নৌকোয় রাখা হল শুধু খাবার আর জল। অন্য দুটোতে অস্ত্রশস্ত্র। তার কারণ জানালেন ক্যাপ্টেন কানিংহাম। একটা নৌকোয় করে প্রথমে সিণ্টা, হরাতোনো আর আবুগণি সিঙ্গাপুরে যাবে। জাপানীরা তাদের দেখতে পেলে খোঁজ করেও কিছু পাবে না। কানিংহাম তাইতে বুঝতে পারবেন যে জাপানীর। এদিকে লক্ষ্য রাখছে কি না। হরাতোনোর কাছ থেকে
| pdf |
68d29b92e9b5031427286751d36f12f2a2444b2d9ab486c1bc5f5b979b7d30d1 | দেশের দিকে যাবার পথে বনবিষ্ণুপুরে প্রবেশ করেছে। তাই তিনি স্থির করলেন গাড়ী লুঠ করতে হবে। এদিকে গাড়ী বিষ্ণুপুরে প্রবেশ করতে সূর্য্যদেব অস্তমিত হলেন। তিনজন মন্ত্রণা করে ঐ নগরীর মধ্যে সরোবর তটে উপবন প্রান্তে বিশ্রামের ব্যবস্থা করলেন। সন্ধ্যায় তথায় সঙ্কীর্ত্তন নৃত্য আরম্ভ হল। গ্রামের বহু লোক তা দেখবার জন্য ছুটে এল। বৈষ্ণবগণের অঙ্গ তেজ দেখে, ভজনকীৰ্ত্তনাদি শুনে সকলে আশ্চর্য্য হল।
রাজা বীর হাম্বীর বার বার চর প্রেরণ করে খবর নিচ্ছেন। ভাবছেন বিধাতা বহুদিন পরে মনের সাধ মিটালেন। ক্রমে রাত্রি গভীর হলে বৈষ্ণবগণ প্রসাদ গ্রহণের পর গ্রন্থ পূর্ণ গাড়ীর চারি পার্শ্বে শয়ন করলেন। সকলে নিদ্রিত হলেন। এ সময় দস্যুগণ সাবধানে গাড়ী থেকে গ্রন্থ পূর্ণ সিন্দুকটি নিয়ে বরাবর রাজ অন্তঃপুরে এলে। রাজা গ্রন্থের সিন্দুক দেখে বিবেচনা করলেন - তাতে বহু ধন-রত্ন আছে। তিনি আনন্দে আত্মহারা হলেন। দস্যুগণকে ডেকে বস্ত্ৰভূষণাদি দিয়ে তাদের প্রশংসা করতে লাগলেন।
শ্রীবীর হাম্বীর রাজা মনে বিচারয়। এই গাড়ী পশ্চিম দেশের সুনিশ্চয়।। বহু দিন বহু অর্থ লাভ হৈল মোরে। এরূপ আনন্দ কভু না হয় অন্তরে।। বুঝিলু - অমূল্য রত্ন আছয় ইহায় । এত কহি গ্রন্থের সম্পুট পানে চায়।।
রাজা বীর হাম্বীরের একজন গণক ছিলেন। এঁকে জিজ্ঞাসা করতে তিনিও বললেন সিন্দুকে বহু অমূল্য নিধি আছে।
এদিকে বৈষ্ণবগণ প্রাতঃকালে জেগে দেখলেন গাড়ীতে গ্রন্থ সম্পুটটী
নাই। অমনি সকলের শিরে যেন বজ্রপাত হল। সকলে চতুর্দিকে অন্বেষণ করতে বের হলেন। কিন্তু কোন সন্ধান পেলেন না। বিষাদে সকলে মৃতপ্রায় হলেন। কিছুক্ষণ পরে বৈষ্ণবগণ একটু ধৈর্য্য ধারণ করে বলতে লাগলেন - শ্রীগোবিন্দেদেবের কি ইচ্ছা, কি জানি? তাঁর শুভ আশীর্ব্বাদ নিয়ে যাত্রা করেছি। তিনি গ্রন্থপূর্ণ সম্পুট বের করে দিবেন। বৈষ্ণবগণ এভাবে বলাবলি করতে লাগলেন। এমন সময় গ্রামবাসীদিগের কাছে শুনতে পেলেন, এ দেশের রাজা দস্যু দলপতি। তিনিই এ সমস্ত জিনিস হরণ করেছেন।
এদিকে রাজা সেই রাত্রে গ্রন্থ সম্পুট খুললেন - দেখলেন মূল্যবান বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদিত গ্রন্থ-রত্নরাজি। পরে গ্রন্থগুলি খুলে যখন 'শ্রীরূপ গোস্বামী' এ নাম ও তাঁর মুক্তা পাঁতির ন্যায় শ্রীহস্ত অক্ষর দর্শন করলেন তখন তাঁর জীবনের পুঞ্জীভূত পাপ দূর হয়ে গেল। হৃদয় পবিত্র হল। শুদ্ধ হৃদয়ে প্রেমের সঞ্চার হল। রাজা গ্রন্থ সম্পুট রেখে নিদ্রিত হলেন। তখন স্বপ্নে দেখতে
স্বপ্নচ্ছলে দেখে - এক পুরুষ সুন্দর। জিনি হেম পৰ্ব্বত অপূর্ব্ব কলেবর।। শ্রীচন্দ্রবদনে কহে হাসিয়া হাসিয়া । চিন্তা না করিহ তেঁহ মিলিব আসিয়া ।। হইব তোমার প্রতি প্রসন্ন অন্তর। জন্মে জন্মে হও তুমি তাহার কিঙ্কর।।
অপূর্ব্ব গ্রহরত্ন দেখে রাজা মনে মনে বললেন - এ গ্রহরত্ন যাঁদের তাঁদের বড় দুঃখ দিয়েছি নিশ্চয়ই। আমার কি গতি হবে জানি না। স্বপ্নে এক দিব্য পুরুষ এসে বলতে লাগলেন - "রাজা। তুমি চিন্তা কর না। যাঁর এ
অপূর্ব্ব গ্রহরত্ন তিনি সত্বর তোমার সঙ্গে মিলিত হবেন। জন্মে জন্মে তুমি তাঁর কিঙ্কর হও।"
শ্রীনরোত্তম ঠাকুরকে খেতরি গ্রামে এবং শ্রীদুঃখী কৃষ্ণদাসকে অম্বিকায় প্রেরণ করে, রাজগৃহ থেকে গ্রন্থ উদ্ধার করবার জন্য শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য স্বয়ং বিষ্ণুপুরে রইলেন।
বিষ্ণুপুরবাসী শ্রীকৃষ্ণবল্লভ নামক একজন পণ্ডিত ব্রাহ্মণ শ্রীনিবাস আচার্য্যকে দর্শন করে মুগ্ধ হলেন এবং আচার্য্যকে যত্ন করে গৃহে নিয়ে তাঁর পূজাদি করলেন। অনন্তর তাঁর থেকে মন্ত্র-দীক্ষা গ্রহণ করলেন। তথায় আর কয়েকজন ব্যক্তিও তাঁর প্রতি মুগ্ধ হয়ে মন্ত্র দীক্ষা নিলেন।
রাজা নিত্য ভাগবত শুনেন - শুনে শ্রীনিবাস আচার্য্য ইচ্ছা করলেন একদিন রাজগৃহে ভাগবত পাঠ করবেন। এ প্রস্তাব শ্রীকৃষ্ণবল্লভের কাছে করলেন। শ্রীকৃষ্ণবল্লভ বললেন রাজার ভাগবত ও সাধুর প্রতি শ্রদ্ধা আছে।
চলুন অদ্যই আমরা রাজগৃহে গমন করি।
ভাগবত শুনে রাজা - এ কথা শুনিয়া। রাজসভা চলে কৃষ্ণবল্লভে লইয়া ।। আচার্য্যের তেজ দেখি রাজা সাবধানে। ভূমে পড়ি প্রণমি আপনা ধন্য মানে।।
শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য শ্রীকৃষ্ণবল্লভকে নিয়ে শীঘ্র রাজভবনে এলেন। রাজা বীর হাম্বীর শ্রীআচার্য্যের দিব্য তেজোময় শ্রীঅঙ্গ দর্শন করে ভূমিতলে দণ্ডবৎ হয়ে পড়লেন এবং বহু যত্ন করে তাঁকে উত্তম আসনে বসিয়ে গন্ধ পুষ্পমাল্যাদি প্রদান করলেন। অতঃপর শ্রীনিবাস আচার্য্য সুমধুর কণ্ঠে গুরু বন্দনাদি
করে শ্রীমদ্ ভাগবত পাঠ করতে লাগলেন। আচার্য্যের কি অদ্ভুত শ্লোক উচ্চারণ এবং ব্যাখ্যা ! তা শুনে সভাসদ সহ রাজা বীর হাম্বীর প্রেমার্দ্র হয়ে পড়লেন।
"দর্শনে পবিত্র কর এই তোমার গুণ।" মহাদস্যু দলপতি রাজা শ্রীনিবাস আচাৰ্য্যকে দর্শন মাত্রই পবিত্র হলেন। বৈষ্ণব দর্শনে পবিত্রতা লাভ হয়। শ্রীনিবাস আচার্য্য ভাগবত পাঠ সমাপ্ত করে শ্রীনাম সংকীর্ত্তন করলেন ও কিছুক্ষণ নৃত্যাদি সহ কীর্ত্তন করলেন। অনন্ত রাজা গলে বস্ত্র দিয়ে দৈন্যভরে শ্রীনিবাস আচার্য্যের শ্রীচরণ মূলে সাষ্টাঙ্গে বন্দনা করলেন এবং বারংবার তাঁর কৃপা প্রার্থনা করতে লাগলেন। শ্রীআচার্য্য তাঁকে ধরে আলিঙ্গন করলেন। বললেন অচিরাৎ শ্রীগৌরসুন্দর তোমাকে কৃপা করবেন। তারপর রাজা গ্রন্থ সম্পুটসহ নিজেকে আচার্য্য পাদপদ্মে অর্পণ করলেন।
শ্রীনিবাস আচার্য্য শ্রীশ্রীগৌরকৃষ্ণের অসীম কৃপা-মাধুর্য্যের কথা বুঝতে পারলেন। তাঁর ইচ্ছায় সব কিছুই হচ্ছে প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পেলেন।
শ্রীনিবাস আচার্য্য রাজাকে অনুগ্রহ করলেন। সব খবর শীঘ্র তিনি শ্রীবৃন্দাবনে শ্রীজীব গোস্বামীর নিকট পাঠালেন। শ্রীমদ্ জীব গোস্বামী অন্যান্য গোস্বামিগণ সব শুনে পরম আশ্চর্য্য ও আনন্দিত হলেন।
শ্রীনিবাস আচার্য্য রাজার থেকে বিদায় নিয়ে গ্রন্থ সম্পুটসহ যাজিগ্রামে এলেন এবং তত্রস্থ ভক্তগণের কাছে সমস্ত কথা বললেন। বৈষ্ণবগণ শুনে সকলেই পরম সুখী হলেন। এই সময় তিনি শ্রীনবদ্বীপে শ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া ঠাকুরাণীর অন্তৰ্দ্ধান বাৰ্ত্তা শুনলেন। বিষাদে শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য ভূতলে মূৰ্চ্ছিত হয়ে পড়লেন। ভক্তগণ বহু প্রবোধ বাক্যে শ্রীআচার্য্যকে একটু স্থির করালেন। এমন সময় শ্রীখণ্ড হতে শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুরের আহ্বান পত্র এল। শ্রীআচাৰ্য্য বিলম্ব না করে শ্রীখণ্ডে যাত্রা করলেন। শ্রীআচার্য্যকে দর্শন করে শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুর, শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর প্রভৃতি প্রভুর পার্ষদগণ বড় সুখী হলেন। শ্রীআচার্য্য্য
পার্ষদগণের শ্রীচরণে সাষ্টাঙ্গ বন্দনা-পূর্ব্বক তাঁদের নিকট শ্রীবৃন্দাবন ধামবাসী গোস্বামী সমূহের সংবাদ বললেন।
এ সময় শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুর তাঁকে বলতে লাগলেন-৫৮৪
"তোমার জননী তেঁহো পরম বৈষ্ণবী। কথোদিন রহু যাজিগ্রামে তাঁরে সেবি।। তাঁর মনোবৃত্তি যাহা করিতেই হয়। ইথে কিছু তোমার নহিব অপচয়।। বিবাহ করহ বাপ এই মোর মনে।"
শ্রীল নরহরি সরকার ঠাকুর মহাশয়, আচার্য্যকে তাঁর জননীর ইচ্ছা অনুসারে বিবাহ করতে বললেন। শ্রীআচার্য্য দ্বিরুক্তি না করে সে আদেশ শিরে ধারণ করলেন। তিনি কয়েকদিন শ্রীখণ্ডে থাকার পর কন্টক নগরে শ্রীগদাধর দাস ঠাকুরের দর্শনের জন্য এলেন। আচার্য্য শ্রীগদাধর দাস ঠাকুরকে বন্দনা করতেই তিনি তাঁকে কোলে নিয়ে কত স্নেহ করতে লাগলেন। আচার্য্যের কাছে শ্রীগদাধর ঠাকুর বৃন্দাবনস্থ গোস্বামিগণের কুশল সংবাদ শুনলেন। সব শুনে সুখী হলেন। আচার্য্য কয়েকদিন শ্রীগদাধর দাস ঠাকুরের কাছে থাকার পর বিদায় নিলেন। যাবার সময় শ্রীগদাধর দাস ঠাকুর বলতে লাগলেন -
"পরম দুর্লভ শ্রীপ্রভুর সংকীর্ত্তন। নিরন্তর আস্বাদিবে লৈয়া নিজগণ।। করিবে বিবাহ শীঘ্র - সবার সম্মত। হইবেন অনেক তোমার অনুগত।।
শ্রীগদাধর দাস ঠাকুরের উপদেশ-আশীর্ব্বাদ নিয়ে শ্রীআচাৰ্য্য যাজিগ্রামে ফিরে এলেন। এ সময় যাজিগ্রামে শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর শুভ বিজয় করলেন। তিনি শ্রীআচার্য্যের বিবাহ-উৎসব করতে লাগলেন। যাজিগ্রামে শ্রীগোপাল চক্রবর্ত্তী নামে এক ভক্ত-ব্রাহ্মণ বাস করতেন। তাঁর অতি সুন্দরী ভক্তিমতী দ্রৌপদী নামে কন্যা ছিল। শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর সেই কন্যার সঙ্গে আচার্য্যের বিবাহ উদ্যোগ করলেন। বৈশাখ মাসের অক্ষয় তৃতীয়ায় আচার্য্যের বিবাহ কৰ্ম্ম সম্পন্ন হল। আচার্য্যের পত্নীর পূর্ব্ব নাম ছিল দ্রৌপদী, বিবাহের পর নাম হল 'ঈশ্বরী'। পরবর্তীকালে শ্রীগোপাল চক্রবর্ত্তী আচার্য্য থেকে মন্ত্ৰ-দীক্ষা গ্রহণ করলেন। শ্রীগোপাল চক্রবর্ত্তীর শ্যামদাস ও রামচন্দ্র নামে দুটি পুত্র ছিলেন। তাঁরাও আচার্য্যের থেকে দীক্ষা নিলেন। শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুর আচার্য্যের বিবাহ বার্তা শুনে অতিশয় সুখী হলেন।
অনন্তর শ্রীনিবাস আচার্য্য যাজিগ্রামে শিষ্যগণকে গোস্বামী গ্রন্থ অধ্যয়ন করাতে লাগলেন। দ্বিজ হরিদাসের পুত্র শ্রীদাস ও শ্রীগোকুলানন্দ আচার্য্যের থেকে দীক্ষা নিয়ে গোস্বামী গ্রন্থ অধ্যয়ন করতে লাগলেন। দিন দিন শ্রীআচার্য্যের প্রভাব বিস্তার লাভ করতে লাগল। অল্পকালের মধ্যে তাঁর চরণ আশ্রয় করবার জন্য বহু সজ্জন ব্যক্তি আসতে লাগলেন ।
শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজ মিলন
একদিন শ্রীনিবাস আচার্য্য যাজিগ্রামে স্বীয় গৃহে ভক্তগণ সঙ্গে বসে ভগবদ্ কথা বলছেন। এমন সময় তাঁর গৃহের পাশ দিয়ে গৌরপার্ষদ শ্রীচিরঞ্জীব সেনের পুত্র শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজ বিবাহ করে নব বধূ নিয়ে প্রত্যাবর্ত্তন করছেন। শ্রীনিবাস আচার্য্য দূর থেকে তাঁকে দেখলেন, শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজও দূর থেকে শ্রীআচার্য্যকে দর্শন করলেন। পরস্পরের দর্শনে নিত্যসিদ্ধ সৌহার্দ্যভাব যেন তখন থেকেই জেগে উঠল। দর্শনের পর মিলনের আকাঙ্খা উভয়ের হতে
লাগল। শ্রীনিবাস আচার্য্য লোকমুখে শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজের পরিচয় নিলেন। শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজও শ্রীনিবাস আচার্য্যের পরিচয় নিলেন।
শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজ নব বধূ সঙ্গে গৃহে এলেন। কোন রকমে দিনটা কাটালেন। রাত্রিকালে গৃহ থেকে বের হয়ে যাজিগ্রামে এসে কোন এক ব্রাহ্মণ গৃহে রাত্রি যাপন করলেন। প্রাতঃকালে শ্রীনিবাস আচার্য্যের গৃহে এলেন এবং তাঁর চরণে সাষ্টাঙ্গে দণ্ডবৎ হয়ে পড়লেন। আচার্য্য শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজকে ভূমি থেকে উঠিয়ে দৃঢ় আলিঙ্গন করলেন এবং বললেন - "জন্মে জন্মে তুমি আমার বান্ধব।" বিধাতা সদয় হয়ে আজ পুনঃ মিলায়ে দিয়েছেন। মিলনে উভয়ের খুব আনন্দ হল। শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজের অগাধ পাণ্ডিত্য প্রতিভা জেনে আচার্য্য অতিশয় সুখী হলেন। তিনি তখন তাঁকে গোস্বামী গ্রন্থ শ্রবণ করাতে লাগলেন। কয়েকদিন পরে আচার্য্য তাঁকে শ্রীরাধা-কৃষ্ণ যুগল মন্ত্রে দীক্ষিত করলেন।
শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য পুনঃ শ্রীবৃন্দাবন ধামাভিমুখে যাত্রা করলেন। সঙ্গে কতিপয় ভক্তও বৃন্দাবন যাত্রা করলেন। আচার্য্য পূর্ব্ব পরিচিত পথে চলতে চলতে গয়াধামে এলেন এবং শ্রীবিষ্ণু পাদপদ্ম দর্শন করলেন। তথা হতে কাশী এলেন। শ্রীচন্দ্রশেখর আদি ভক্তগণের দর্শন করলেন। দণ্ডবৎ আদি করতেই সকলে শ্রীনিবাসকে স্নেহে আলিঙ্গন করতে লাগলেন।
শ্রীনিবাস কাশীতে দু-এক দিবস অবস্থান করে শ্রীমথুরা ধামে প্রবেশ করলেন। শ্রীবিশ্রাম ঘাটে স্নান করে আদিকেশব ও জন্মস্থানাদি দর্শন করে শ্রীবৃন্দাবন ধামে এলেন। শ্রীজীব গোস্বামী শ্রীনিবাসের দর্শন প্রতীক্ষা করছিলেন। শ্রীনিবাস আচার্য্য এসে তাঁর শ্রীচরণ সাষ্টাঙ্গে বন্দনা করতেই শ্রীজীব গোস্বামী তাঁকে ভূমি হতে তুলে দৃঢ় আলিঙ্গন করলেন এবং গৌড় দেশের বৈষ্ণবগণের কুশল বার্ত্তাদি জিজ্ঞাসা করলেন। পুরীধাম থেকে এই
সময় শ্রীশ্যামানন্দ প্রভুও বৃন্দাবন ধামে এলেন। তিনি শ্রীজীব গোস্বামীর শ্রীচরণ বন্দনাদি করলেন, শ্রীজীব গোস্বামী তাঁকে স্নেহে আলিঙ্গন পূর্ব্বক বসিয়ে পুরীধামবাসী বৈষ্ণবগণের কুশল বার্ত্তাদি জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। অতঃপর শ্রীনিবাস ও শ্যামানন্দের মিলন হল। পরস্পরকে দণ্ডবৎ আলিঙ্গন প্রভৃতি করলেন। তাঁদের খুব আনন্দ হল। তথায় তাঁরা দ্বিজ হরিদাসের অপ্রকট বার্ত্তা শুনে অতিশয় দুঃখিত হলেন। উভয়ে শ্রীজীব গোস্বামিপাদের নিকট অবস্থান করতে লাগলেন এবং ষট্সন্দর্ভের বিবিধ সিদ্ধান্ত তাঁর কাছ থেকে শুনতে লাগলেন। এই সময় শ্রীমদ্ জীব গোস্বামী শ্রীগোপাল চম্পু গ্রন্থ রচনা আরম্ভ করেছেন। তিনি শ্রীনিবাস ও শ্যামানন্দকে মঙ্গলাচরণ শ্লোক পড়ে শুনালেন।
শ্রীনিবাস আচার্য্য বৃন্দাবনে শ্রীজীব গোস্বামী তথা অন্যান্য গোস্বামিদিগের সঙ্গে কয়েকমাস সুখে অবস্থান করলেন। এমন সময় গৌড়দেশ থেকে শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজ তাঁকে গৌড় দেশে নেবার জন্য শ্রীবৃন্দাবন ধামে উপস্থিত হলেন। গৌড় দেশবাসী ভক্তগণ তাঁকে পাঠিয়েছিলেন।
শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য শ্রীমদ্ জীব গোস্বামীর সাথে শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজের পরিচয় করিয়ে দিলেন। শ্রীরামচন্দ্র শ্রীজীব গোস্বামীর শ্রীপাদপদ্মে সাষ্টাঙ্গে ভূমিতলে পড়ে বন্দনা করলেন। শ্রীজীব গোস্বামী তাঁকে তুলে স্নেহে আলিঙ্গন করলেন। শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজকে শ্রীরাধারমণ, শ্রীগোবিন্দ, শ্রীগোপীনাথ আদি বিগ্রহগণকে দর্শন করতে আদেশ করলেন এবং গোস্বামিবৃন্দের শ্রীচরণ দর্শনে আজ্ঞা দিলেন। শ্রীনিবাস ও শ্যামানন্দ প্রভু তাঁকে সঙ্গে নিয়ে সব দর্শন করাতে লাগলেন। শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজের দৈন্য ভক্তি প্রভৃতি দেখে গোস্বামিগণ সকলেই পরম সুখী হলেন। শ্রীমদ্ জীব গোস্বামী শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজকে বন দর্শনে আদেশ করলেন, তিনি সৰ্ব্বত্র দর্শন করে রাধাকুণ্ডেশ্রীমদ্ রঘুনাথ দাস গোস্বামীর ও শ্রীমদ্ কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর শ্রীচরণ দর্শনে এলেন। এদিকে শ্রীমদ্ জীব গোস্বামীর আদেশ নিয়ে
শ্রীনিবাস আচার্য্য ও শ্রীশ্যামানন্দ প্রভু গৌড়দেশের দিকে যাত্রা করলেন। বন বিষ্ণুপুরে আগমন করলেন। রাজা বীর হাম্বীর শ্রীনিবাস আচার্য্যের শ্রীচরণ দর্শন করে আনন্দে নৃত্য করতে লাগলেন। রাজপুরে মহাযত্নে নিয়ে শ্রীপাদকে পূজাপূৰ্ব্বক বিবিধ উপাচারে ভোজন করালেন, রাজগৃহে মহোৎসব আরম্ভ হল। শ্রীশ্যামানন্দ প্রভু রাজার ভক্তি দেখে চমৎকৃত হলেন। এইবার আচার্য্য প্রভু রাজাকে রাধাকৃষ্ণ মন্ত্র দীক্ষা প্রদান করলেন। রাজার নাম হল 'শ্রীচৈতন্য দাস'। রাজপুত্র ধাড়ি হাম্বীরও মন্ত্র গ্রহণ করলেন। তাঁর নাম হল শ্রীগোপাল দাস। শ্রীবীর হাম্বীর আচার্য্যের দ্বারা শ্রীকালাচাঁদের সেবা প্রকট করালেন। শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য স্বহস্তে শ্রীবিগ্রহের অভিষেক পূজাদি করলেন। শ্রীশ্যামানন্দ প্রভু কয়েকদিন তথায় থাকার পর পুরীর দিকে যাত্রা করলেন। শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য যাজিগ্রামে আসবার উদ্যোগ করলেন। এই সময় শিখরেশ্বর রাজ শ্রীহরিনারায়ণ দেব নিজ গৃহে শ্রীনিবাস আচার্য্যকে বিশেষ আমন্ত্রণ করলেন। সপার্ষদ শ্রীনিবাস আচার্য্য তাঁর গৃহে শুভ বিজয় করলেন। কয়েক দিন তাঁর গৃহে আচার্য্য অবস্থান পূৰ্ব্বক শ্রীভাগবত কথা-গঙ্গা প্রবাহিত করলেন। বহুলোক শ্রীআচার্য্যপাদের অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলেন।
শ্রীনিবাস আচার্য্য কয়েক দিন শিখরেশ্বর দেশে অবস্থান করে শ্রীখণ্ডে আগমন করলেন এবং অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণ একাদশীতে শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের অপ্রকট বার্ত্তা শুনে ভূতলে মূর্ছিত হয়ে পড়লেন। আচার্য্য বহু খেদ পূর্ব্বক ক্রন্দন করতে লাগলেন। তারপর অতি কষ্টে ধৈর্য্য ধারণ করলেন। শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর শ্রীসরকার ঠাকুরের বিরহে বড়ই কাতর হয়েছিলেন। শ্রীনিবাসকে দেখে একটু শান্ত হলেন। কয়েক দিন শ্রীআচাৰ্য্য শ্রীখণ্ডে অবস্থান করার পর কন্টক নগরে এলেন। সেখানে এসে শুনলেন শ্রীগদাধর দাস ঠাকুর কার্ত্তিক মাসে অপ্রকট হয়েছেন। নিদারুণ শোকে আচার্য্যের প্রাণ বিদীর্ণ হতে লাগল। অতি কষ্টে ধৈর্য্য ধারণপূর্ব্বক যাজিগ্রামে এলেন এবং স্বগৃহে
ভাগবতগণকে আহ্বান করে এক মহোৎসবের আয়োজন করলেন। অতঃপর মাঘকৃষ্ণ একাদশীতে দ্বিজ হরিদাসের অপ্রকট মহোৎসব করবার জন্য আচাৰ্য্য কাঞ্চনগড়ি নগর অভিমুখে যাত্রা করলেন। কাঞ্চনগড়িতে দ্বিজ হরিদাসের অপ্রকট মহামহোৎসব মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হল। উৎসবের দিন দ্বিজ হরিদাসের পুত্র শ্রীদাসও শ্রীগোকুলানন্দ আচার্য্য থেকে দীক্ষা গ্রহণ করলেন। কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করবার পর শ্রীআচার্য্য ফাল্গুন পূর্ণিমায় খেতরির মহোৎসবে যোগ দেবার জন্য যাত্রা করলেন। খেতরিতে এ উৎসবের আয়োজন রাজা সন্তোষ দত্ত করেন । তিনি শ্রীনরোত্তম ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র এবং শিষ্য। এ উৎসবে স্বয়ং শ্রীজাহ্নবাদেবী আগমন করেন। তাঁর সঙ্গে শ্রীনিধি, শ্রীপতি, শ্রীকৃষ্ণ মিশ্র, শ্রীগোকুল, শ্রীরঘুনন্দন প্রভৃতি গৌর-পার্ষদগণ আগমন করেন।
Gaudiya Missionn
শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য বিগ্রহগণের অভিষেক পূজাদি করেন। ভোগ রন্ধন শ্রীজাহ্নবা মাতা করেন। ফাল্গুন পূর্ণিমা তিথিতে অহোরাত্র শ্রীহরিসঙ্কীৰ্ত্তন মহোৎসব হয়। ঐ কীৰ্ত্তনে সপার্ষদ শ্রীগৌরসুন্দর আবির্ভূত হয়ে ভক্তগণকে দর্শন দিয়েছিলেন। ফাল্গুন পূর্ণিমা তিথিতে সকলে উপবাস করেন। দ্বিতীয় দিবসে পারণ মহোৎসব করা হয়।
শ্রীগৌরাঙ্গ, শ্রীবল্লবীকান্ত, শ্রীব্রজমোহন । শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরাধাকান্ত, শ্রীরাধারমণ ।।
এই ছয় বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা উৎসব হয়। বৈষ্ণব জগতে এইরূপ মহোৎসব ইতঃপূর্ব্বে বিশেষ হয় নাই। রাজা সন্তোষ দত্ত সমাগত বৈষ্ণবগণকে বস্ত্রমুদ্রাদি দান করেন । বৈষ্ণবগণ রাজা সন্তোষ দত্তকে প্রচুর আশীর্ব্বাদ করেন।
উৎসবের পর শ্রীনিবাস আচার্য্য ও শ্রীশ্যামানন্দ প্রভু যাজি গ্রামে আগমন করেন। বৈষ্ণবগণের আগমনে শ্রীআচার্য্যের গৃহে মহোৎসব আরম্ভ হল। কয়েক দিন পরে তথায় শ্রীনরোত্তম ঠাকুর মহাশয়ও শুভাগমন করলেন।
কয়েক দিন তিনজন যাজিগ্রামে অবস্থানের পর শ্রীশ্যামানন্দ প্রভু উৎকল দেশাভিমুখে যাত্রা করলেন। শ্রীনিবাস আচার্য্য, শ্রীনরোত্তম ও শ্রীরামচন্দ্র কবিরাজ নবদ্বীপ অভিমুখে যাত্রা করলেন। নবদ্বীপ মায়াপুরে শ্রীগৌর গৃহে তাঁরা আগমন করে অতি বৃদ্ধ শ্রীঈশান ঠাকুরের শ্রীপাদপদ্মে সাষ্টাঙ্গে বন্দনা করলেন। স্ব-স্ব নাম ধরে তাঁরা পরিচয় জানালেন, ঈশান ঠাকুর উঠে অতি প্রেমভরে সকলকে আলিঙ্গন করলেন। এ সময় শ্রীগৌর-গৃহে একমাত্র ঈশান ঠাকুর অবস্থান করেছিলেন। পরদিবস ভক্তগণ শ্রীঈশান ঠাকুরকে নিয়ে নবদ্বীপ ধাম পরিক্রমায় বের হলেন। ভক্তগণ অতি আনন্দ ভরে ঈশান ঠাকুরের শ্রীমুখে শ্রীগৌরসুন্দরের চরিত সকল শুনতে শুনতে পরিক্রমা করতে লাগলেন। পরিক্রমা সমাপ্ত করে ভক্তগণ শ্রীঈশান ঠাকুরকে বন্দনা পূৰ্ব্বক বিদায় নিলেন এবং শ্রীখণ্ডে আগমন করলেন। ইতিমধ্যে শ্রীঈশান ঠাকুরের অপ্রকট বাৰ্ত্তা মায়াপুর হতে এল। এ কথা শ্রবণ করা মাত্র ভক্তগণ বিরহে হাহাকার করে উঠলেন। এইরূপে নবদ্বীপ ও মায়াপুরে ক্রমে ক্রমে গৌর পার্ষদগণ প্রায় সকলে অপ্রকট লীলা করলেন।
একদিন শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর শ্রীআচার্য্যকে আনবার জন্য কোন ভক্তকে যাজিগ্রামে প্রেরণ করলেন। শ্রীনিবাস অতি সত্বর শ্রীখণ্ডে এলেন এবং শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর আচার্য্যকে আশীর্ব্বাদ করে বললেন - "তুমি চিরজীবী হও। প্রভু শ্রীগৌরসুন্দরের বাণী প্রচার কর।" এই সব বলে শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর শ্রীবিগ্রহগণের সামনে এলেন এবং স্বীয় পুত্র কানাইকে ডেকে শ্রীমদন গোপাল ও শ্রীগৌরাঙ্গ দেবের শ্রীচরণে সমর্পণ করলেন। অনন্তর তিন দিন মহাসংকীৰ্ত্তনে মগ্ন হলেন। শেষ দিবস শ্রীনরহরি সরকার ঠাকুরের শ্রীগৌরাঙ্গের ও শ্রীমদনগোপাল দেবের শ্রীরূপে নয়নযুগল সমর্পণ করে অন্তর্ধান করলেন।
শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুরের অন্তর্ধান দর্শন করে শ্রীনিবাস আচাৰ্য্য, পুত্র কানাই ঠাকুর ও অন্যান্য ভক্তগণ বিরহে মূর্ছা প্রাপ্ত হলেন ও নয়ন জলে ভাসতে
Moissim exiones
ভাসতে বিবিধ বিলাপ করতে লাগলেন।
অতঃপর শ্রীকানাই ঠাকুর এক মহোৎসবের বিপুল আয়োজন করলেন। চতুৰ্দ্দিকে বৈষ্ণবগণকে প্রেরণ করলেন। মহোৎসবের আমন্ত্রণ বৈষ্ণবগণ সর্বত্রই জানালেন। উৎসব দিবসে বৈষ্ণবগণ উপস্থিত হলেন। মহাসংকীৰ্ত্তননৃত্য বৈষ্ণবগণ সমাধি প্রাঙ্গনে আরম্ভ করলেন। সে সংকীর্ত্তনে শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুর যেন সাক্ষাৎ প্রকট হয়ে নৃত্য করতে লাগলেন। শ্রীরঘুনন্দন ঠাকুরের অপ্রকট - শ্রাবণ শুক্লা চতুর্থী তিথিতে। শ্রীনিবাস আচার্য্য উৎসবের দেখা শুনার যাবতীয় কার্য্য করলেন। উৎসব অন্তে বৈষ্ণবগণ সহ তিনিও বিদায় নিয়ে বনবিষ্ণুপুরে রাজা বীর হাম্বীরের গৃহে শুভ বিজয় করলেন। আচার্য্য রাজগৃহে শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ ও কীর্ত্তন আরম্ভ করলেন। চতুর্দিক থেকে বহু ভক্তের সমাগম হতে লাগল। মহারাজ বহু প্রীতি ভরে ভক্ত সেবা করতে লাগলেন। বন বিষ্ণুপুর তৎকালে প্রকৃত বিষ্ণুপুরে পরিণত হল। বহু শ্রদ্ধালু ব্যক্তি শ্রীআচার্য্যের শ্রীপাদপদ্ম আশ্রয় গ্রহণ করলেন।
রাঢ় দেশের মধ্যে গোকুলপুর গ্রামে শ্রীরাঘব চক্রবর্ত্তী নামে একজন পরমভক্ত ব্রাহ্মণ বাস করতেন। শ্রীগৌরাঙ্গ প্রিয়া নাম্নী তাঁর এক কন্যা ছিল। ব্রাহ্মণ কন্যার বিবাহ সম্বন্ধে উপযুক্ত পাত্রের খোঁজ না পেয়ে বড়ই চিন্তিত হয়ে পড়লেন। অবশেষে শ্রীমন্মহাপ্রভুর শ্রীচরণে সমস্ত কথা ও দায় অর্পণ করলেন।ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী এক রাত্রি স্বপ্ন দেখছেন যে তাঁরা শ্রীনিবাস আচার্য্যকে কন্যা দান করছেন। এই আশ্চর্যজনক স্বপ্ন দেখে ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী সুখী হলেন। পুনঃএকাৰ্য্য অসম্ভব বলে চিন্তা করলেন। বহুবিধ চিন্তা করতে করতে ব্রাহ্মণ শীঘ্র শ্রীনিবাস আচার্য্যের কাছে এলেন এবং বন্দনা পূর্ব্বক করজোড়ে সামনে দাঁড়ালেন। শ্রীআচার্য্য তাঁর অভিপ্রায় বুঝতে পেরে ঈষৎ হাস্য করতে করতে তাঁকে বসতে বললেন এবং আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। ব্রাহ্মণ কিছুক্ষণ
মৌন থাকার পর বললেন আপনার শ্রীচরণে একটী নিবেদন করতে এসেছি। কিন্তু যদি আপনার অভয় পাই, বলতে পারি। আচার্য্য বললেন আপনি নির্ভয়ে বলুন। এবার ব্রাহ্মণ স্বীয় কন্যার কথা নিবেদন করলেন । আচার্য্য কথা শুনে হাস্য করতে লাগলেন। ভক্তগণ এ সব কথা শুনে বড় সুখী হলেন। পরিশেষে শ্রীআচার্য্য বিবাহ করতে রাজি হলেন।
মহা সমারোহের সহিত মহারাজ বীর হাম্বীর শ্রীআচার্য্যের বিবাহের আয়োজন করলেন। শুভলগ্নে শ্রীরাঘব চক্রবর্ত্তী বিবিধ বস্ত্রালঙ্কার সহ কন্যা এনে শ্রীআচার্য্যের করে সমর্পণ করলেন। শ্রীমতী গৌরাঙ্গ-প্রিয়াকে বিবাহ করবার পর আচার্য্য পত্নীসহ যাজিগ্রামে ফিরে এলেন। ঠিক এই সময় নিত্যানন্দশক্তি শ্রীজাহ্নবা দেবীও বৃন্দাবন ধাম পরিক্রমা করে যাজিগ্রামে আচার্য্য গৃহে শুভাগমন করলেন। তাঁকে দর্শন করে আচার্য্যের আনন্দের সীমা রইল না। মহা সমাদরে তাঁর পাদপদ্ম ধৌত করে তাঁকে আসনে বসিয়ে পূজাদি করবার পর নববিবাহিতা গৌরাঙ্গ প্রিয়াকে তাঁর শ্রীচরণ বন্দনা করালেন। সুশীলা সুন্দরী সাক্ষাৎ ভক্তি স্বরূপিণী পত্নী দেখে পরম স্নেহ ভরে কোলে তুলে নিলেন। শ্রীজাহ্নবা দেবী আচার্য্যের পত্নীদ্বয়ের প্রতি বহু প্রীতি প্রকাশের পর শ্রীবৃন্দাবন ধামস্থ গোস্বামিবৃন্দের সংবাদ বলতে লাগলেন। পরম সুখে শ্রীজাহ্নবা মাতা শ্রীআচাৰ্য্য-গৃহে কয়েকদিন থাকবার পর খড়দহ গ্রামে ফিরে এলেন।
যাজিগ্রামে আচাৰ্য্য লইয়া শিষ্যগণে। গোঙায়েন সদা শাস্ত্রালাপ সংকীৰ্ত্তনে।।
শ্রীনিবাস আচার্য্য যাজিগ্রামে ভক্ত শিষ্যগণ সঙ্গে পরম আনন্দে গোস্বামী গ্রন্থ অধ্যয়ন-অধ্যাপনায় সুখে দিন যাপন করতে লাগলেন। আচার্য্যের ঐশ্বর্য্য ও বৈভব দর্শনে সকলে আশ্চর্য্য হতে লাগলেন। তাঁর প্রভাবে মহাপাষণ্ডিগণও
| pdf |
33d5e6123f6f03a0dcc2d5322319bf67 | 'নেত্রী মোদের মা, জেলে যেতে দেব না'
'নেত্রী মোদের মা, জেলে যেতে দেব না'- এমনই স্লোগানে কেঁপে উঠছে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। যা এখন খুব ধীরগতিতে এগোচ্ছে। ধীরে ধীরে যাচ্ছে মৎস্য ভবনের দিকে। সেখানে রয়েছে পুলিশের ব্যারিকেড।
ডিএমপি সূত্র জানচ্ছে, মৎস্য ভবনের পর গাড়িবহরের গাড়ি ব্যতীত আর কোনো গাড়িকে যেতে দেওয়া হবে না। তাই, গাড়িবহরের সাথে জুটে যাওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীরা পায়ে হেঁটেই চলছেন। সেই সাথে স্লোগান, 'নেত্রী মোদের মা, জেলে যেতে দেব না'।
গুলশান থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত বেশ নির্বিঘ্নেই চলেছে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। এরপর থেকেই কয়েকটি মোটরসাইকেল এসে ভিড়ে যায় গাড়িবহরের সাথে। এরপর বাড়তে থাকে গাড়িবহরে নেতা-কর্মীদের প্রবেশ। এখন তা পৌঁছেছে প্রায় কয়েক হাজারে।
আর বিএনপি নেতা-কর্মীদের এই প্রবেশকে পুলিশের নিরাপত্তা দুর্বলতা বলে মনে করছেন সবাই। আর বিএনপির এই নেতা-কর্মীদের বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ আগে হলি ফ্যামিলি মোড়ে গাড়িবহর ঘিরে থাকা নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তবে বিএনপি কর্মীদের আক্রমণের মুখে পিছূ হটতে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
বর্তমানে পরিস্থিতি বেশ জটিল বলে জানা গেছে। মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে।
| web |
a9c49819ae5ac468f16fbff45b37c05a07189103 | কেন বন্ধ হলো রাবি ছাত্রলীগের হল সম্মেলন!
রাবি প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ চার বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের হল সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি। সম্মেলনের তারিখ, অতিথি, স্থান ও পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে সিভি নেয়াও হয়েছিল। এরপর সম্মেলনের তিন দিন আগে হঠাৎ কেন হল সম্মেলন স্থগিত করা হলো এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে তৈরী হয়েছে নানা প্রশ্ন।
কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, রাবি ছাত্রলীগের মূল কমিটি মেয়াদোউত্তীর্ণ হওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ হল সম্মেলনে আসতে রাজি হয়নি। কেউ মন্তব্য করেছেন কমিটি ঘোষণা নিয়ে হয়তো নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে। আবার অনেকেই বলছেন, হুট করে সম্মেলন স্থগিত করার অবশ্যই নির্দিষ্ট কোন কারণ থাকতে পারে। আবার নেতাকর্মীদের অনেকেই মনে করছেন, মূল কমিটি দেওয়ার পর হয়তো হল কমিটি কমিটি ঘোষণা করা হবে।
ছাত্রলীগের দফতর সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশ মোতাবেক ৫ ফেব্রুয়ারি হল সম্মেলনের জন্য প্রত্যেক হলের সকল পদপ্রত্যাশীদের গত ১৮ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সিভি জমা দেয়ার জন্য বলা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৪১৬ জন পদপ্রত্যাশী সিভি প্রদান করে।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, হল সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত কর্মীসভা থাকায় হল সম্মেলনের তারিখ স্থগিত করা হয়। হল কমিটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আরিফ বিন জহির বলেন, হল সম্মেলন হুট করে স্থগিত করার কারণ হলো রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সময়ের জন্য। তিনি হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে হল সম্মেলন তারিখ পেছানো নিয়ে হল কমিটির পদপ্রত্যাশী কমপক্ষে ১০ জন নেতাকর্মীর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তারা প্রত্যেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করে বলছেন, আমাদের প্রত্যেকের অন্তত ১৫-২০ হাজার টাকা করে খরচ হয়ে গেছে। এখন যদি হল সম্মেলন না হলে সে বিষয়টি আসলেই আমাদের জন্য পীড়াদায়ক।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের এই শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কর্মীদের জন্য আমরা সবসময় আছি। তারা কখনও রাবি ছাত্রলীগের কাছ থেকে নিরাশ হবে না। সাময়িক কিছু বিড়ম্বনা হচ্ছে তবে খুব দ্রুতই হল কমিটি দেয়া হবে। আমাদের সাংগঠনিক কর্মীরা সবসময় রাজনীতির জন্য নিবেদিত প্রাণ।
এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ও ২২ নভেম্বর দুই ভাগে ভাগ করে ছাত্রদের ১১টি হলের সম্মেলন করে তৎকালীন রানা-বিপ্লব কমিটি। পরে শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল ব্যতীত ৯টি হলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে আর হল কমিটি হয়নি।
| web |
ae9100f13cad903d68c82c3436a306b9e06a26ae3e4de9895325a06949ac6ba9 | অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যতীত আরও কয়েকটি উদ্দেশ্য সম্পত্তিরূপ সংস্থা দ্বারা সাধিত হয়। ইহা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনের সহায়ক। প্রথমতঃ, ইহা ব্যক্তির মনে নিরাপত্তা বোধের সৃষ্টি করে - ব্যক্তি-বিশেষ যদি কিছু সম্পত্তি সংরক্ষণ করিয়া রাখিতে পারে, তাহা হইলে সে নিশ্চিন্ত থাকে যে, শারীরিক অক্ষমত। ঘটিলে.বা অন্য কোন কারণে তাহার অর্থের প্রয়োজন ঘটিলে, সে উহার উপর নির্ভর করিতে পারিবে। মানুষ যদি এই নিরাপত্তাবোধ হারাইয়া ফেলে, যদি সে আত্মনির্ভরশীল না হইতে পারে, তাহা হইলে তাহাদের ব্যক্তিত্ব ব্যাহত হয় - অন্যের সহিত আচরণে সে ভীরুতা ও দুর্বলচিত্ততার পরিচয় দিবে, অথবা ক্ষেত্রবিশেষে তীব্র ব্যর্থতাবোধ জাগরিত হওয়ার জন্য সে অপরের প্রতি আক্রমণাত্মক ভাব গ্রহণ করিবে।
তাহা ছাড়া, সম্পত্তির অধিকারিত্ব ব্যক্তি-বিশেষের মনে দায়িত্ববোধের সৃষ্টি করে এবং তাহার বুদ্ধিকে প্রথর করিযা তোলে। যে সম্পত্তির অধিকারী হয়, সম্পত্তিকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করিবার জন্য এবং উহার উন্নতিবিধানের জন্য তাহাকে বুদ্ধির চর্চা করিতে হয় এবং অন্যের সহিত আচরণে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হয়। ইহাতে তাহাব ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। আবার, যে সম্পত্তির অধিকারী হয়, তাহার মনে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংহতি ও শৃঙ্খলা রক্ষার প্রচেষ্টা কারণ সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা যদি বিশৃঙ্খল হইয়া পড়ে, তাহা হইলে পরিণামে তাহার সম্পত্তি ভোগও ব্যাহত হইয়া পড়িবে। সুতরাং সম্পত্তির যে অধিকারী, সমাজে তথা রাষ্ট্রে তাহার একট। 'স্বার্থ' থাকে - উহার প্রতি একট 'আকষণ' সে বোধ করে এবং এইজন্য সে সমাজবিরোধী বা রাষ্ট্রবিরোধী কায
করে না।
অতএব বলিতে পারা যায় যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি অর্থ নৈতিক উন্নতির সহায়ক, ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক এবং রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সংহতির সংরক্ষক। ১৩
Urban এই অভিমত ব্যাখ্যা করিয়া বলেন : "The ethical value of security, in freeing the self from the hand to mouth existence so inimical to its higher development, and the moralizing character of ownership in developing responsibility, through giving the individual a stake in the community, need no special emphasis." (Fundamentais of Ethica. p. 272).
| pdf |
7f261889d7978829d975fab1f56d1e88d1d50c2c | মসজিদ নেই বলে মুসলিম অভিবাসী নিষিদ্ধ!
মসজিদ না থাকার অজুহাতে মুসলিম অভিবাসীদের নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপের দেশ স্লোভাকিয়া। গতকাল বুধবার স্লোভাকিয়ার অভিবাসী কর্তৃপক্ষের সূত্রে একথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন টাইমস। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অভিবাসীবিষয়ক পরিকল্পনা অনুযায়ী সিরিয়ার খ্রিস্টানদের নিতে রাজি আছে দেশটি।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সীমান্তে বহু অভিবাসী এসে জড়ো হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সিরিয়ার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এখন শরণার্থী হয়ে তুরস্ক, অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের নানা দেশে একটু আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন। দেশটির সরকার এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তারা এই লাখ লাখ আশ্রয়হীন মানুষের মধ্যে ২০০ জনকে আশ্রয় দেবে। তবে এই আশ্রয়প্রার্থীদের সবাইকে হতে হবে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
স্লোভাকিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইভান মেটিক জানান, মুসলিমরা স্লোভাকিয়াকে নিজেদের বাড়ি বলে মেনে নিতে পারবে না। কারণ এ দেশে মুসলিম উপাসনার জন্য কোনো মসজিদ নেই। এ কারণে স্লোভাকিয়া মুসলিমদের অভিবাসী হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নয়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতারা মুসলিম অভিবাসীদের তাদের দেশে নিতে সমানভাবে অনাগ্রহী। এ জন্য তাঁরা 'সম্পূর্ণ ভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমির যুক্তি' দেখাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে স্লোভাকিয়ার প্রায় ৫২ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মুসলিম। শুধু স্লোভাকিয়া নয়, ইউরোপের অন্যান্য দেশ যেমন চেক রিপাবলিক, হাঙ্গেরি ও এস্তোনিয়ার মতো পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলো মুসলিমবিদ্বেষী নীতি গ্রহণ করেছে।
| web |
dc974da58643e2deb6cedcc2931c8e7576b5d10d | নালা-নর্দমা পরিস্কারসহ মশার প্রজনন ধ্বংসের জন্য আরো তৎপর হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মঙ্গলবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চসিক ৫ম নির্বাচিত পরিষদের ৫৫ তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র আরো বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আর্থিক ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। বলতে গেলে আয়-ব্যয় প্রায়ই সমানে সমান। এ পরিস্থিতিতে মশার প্রজনন এবং উড়ন্ত মশা ধ্বংস করার জন্য ওষুধ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ব্যতিত চসিকের সামনে কোনো পথ খোলা নেই। তাই জরুরিভিত্তিতে এডালটিসাইড ও লার্ভিসাইডসহ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ২০ (বিশ) কোটি টাকার আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণের জন্য চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেন সিটি মেয়র।
মেয়র বলেন, শুস্ক মৌসুমে মশার বিস্তারের উপযুক্ত সময়। ফলে নগরীতে মশার উপদ্রব ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাসা-বাড়িতে মশার উপদ্রবে নগরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। নগরবাসীকে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে চসিককে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর্থিক অনটনের কথা বলে বসে থাকলে নগরবাসীর অভিযোগ থেকে পার পাওয়ার সুযোগ নেই চসিকের।
মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করাকে ইবাদত মনে করে উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নির্বাচন। এ নির্বাচনে যে কেউ জয়ী হয়ে আসতে পারে, আবার অনেকেই নাও আসতে পারে। বিজয়ী হয়ে আসতে না পারলে নিভৃতে বসে থাকাটা একজন জনপ্রতিনিধির কাম্য নয়। কারো ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। জনপ্রতিনিধির কাজ মানুষের সেবাদান করা। ক্ষমতায় না থাকলেও আপদে-বিপদে মানুষকে সেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে হবে। এই সময়ই জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার মোক্ষম সময় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত ৫ম পরিষদের মেয়াদ থাকবে। এ মেয়াদকালীন সময়ের মধ্যে কাউন্সিলর ও চসিক কর্মকর্তাদের সমন্বয় সাধন পূর্বক করপোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন মেয়র।
তিনি বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে এ মেয়াদেই চসিকের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। যা জনসম্মুখে প্রচার ও প্রসার করতে হবে। মেয়র চসিকের চলমান উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রেখে সুন্দর নগরী হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠিত এ সভায় চসিক প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চসিক প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেমসহ চসিক বিভাগীয় ও শাখা প্রধাননা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সঞ্চালনায় ছিলেন চসিক সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী।
| web |
feddb7d80953da677b84bffbfb52abb04866b130 | #রঘুনাথগঞ্জঃ মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত মির্জাপুরে, পিকনিক করা নিয়ে বিবাদের জেরে বোমাবাজির ঘটনা। ঘটনায় আহত হলেন একই পরিবারের মোট চারজন। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে লবাই মন্ডল ও মহাদেব মন্ডল পিকনিক করছিল। কিন্তু পিকনিক করার সময়ে বচসা তৈরি হয় দুজনের। পরে পিকনিক ছেড়ে চলে আসে লবাই মন্ডল। তবে পিকনিক ছেড়ে চলে এলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বচসার কারণেই মির্জাপুরে লবাই মন্ডলের বাড়িতে, রবিবার রাতে চড়াও হয়ে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ মহাদেব মন্ডলের বিরুদ্ধে। বোমাবাজির জেরে লবাই মন্ডলের পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন- নিজের কাকাকে গুলি করল ভাইপো! কারণ জানলে ভাববেন, এমনটাও সম্ভব!
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আহত অবস্থায় চারজনে জঙ্গিপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের নাম লবাই মন্ডল, তার ভাই তুষার মন্ডল, বাবা সরিফ মন্ডল ও মা বন্দনা মন্ডল।
আরও পড়ুন- মুর্শিদাবাদের এই গ্রামে আত্মীয়তা করতে চাননা কেউ! কারণ জানলে আপনার চোখ কপালে উঠবে!
এলাকার বাসিন্দারা জানান, "রবিবার রাতে হঠাৎই আমরা বোমাবাজির শব্দ শুনতে পাই। পরে দেখি একই পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন। " তবে কী কারণে এই বোমাবাজির ঘটনা তা স্পষ্ট করতে পারেননি এলাকার বাসিন্দারা। আহত লবাই মন্ডল জানান, "পিকনিকে বচসার কারণেই আমার বাড়িতে চড়াও হয়ে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। আমাদের একই পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন। "
অন্যদিকে, মহাদেব মন্ডলের বিরুদ্ধে রঘুনাথগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাওকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
| web |
ed4a23739031c1f47480f6be4a43af89ac3bd486 | দার্জিলিং (পঞ্চায়েত সমিতি)
কালিম্পং (পঞ্চায়েত সমিতি)
দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করেছে CoWIN! বিস্ফোরক তৃণমূল, কী সাফাই কেন্দ্রের?
করোনা টিকাকরণের প্রক্রিয়ার সময়ই নাকি ইউজারদের তথ্য ফাঁস হয়েছে।
যদিও এর পরেও কোভিডের অস্তিত্ব থাকবে বলেই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এবার টিকা কিনতে হবে পয়সা দিয়ে।
এখনই প্রস্তুত হতে হবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলিকে, বলছে WHO।
সদ্যই ৮ রাজ্যকে সতর্ক করেছে কেন্দ্র।
চিন্তায় শীর্ষ আদালতের আইনজীবী থেকে কর্মীরা।
চাইলেই মিলবে বুস্টার ডোজ, আশ্বাস সেরাম কর্তার।
করোনার উপসর্গের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডায়েরিয়াও, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনায় মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে।
ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই কি এই পদক্ষেপ?
প্রতিষেধক তৈরির দৌড়ে তারাই এগিয়ে, দাবি রাশিয়ার।
বিশ্বের বৃহত্তম করোনা ট্রায়াল শুরু করল মার্কিন সংস্থাটি।
শীঘ্রই প্রতিষেধকটির চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল শুরু করতে চায় সেরাম ইনস্টিটিউট।
৩০ বছরের এক যূবকের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।
আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যেই ৩০-৪০ কোটি টিকা বাজারে চলে আসবে, দাবি প্রস্তুতকারী সংস্থার।
ইতিমধ্যেই পরিচালক-অভিনেত্রী AIIMS-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
দ্রুত করোনামুক্তির আশা জাগিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
লাইসেন্স পেলে ভারতেই বিপুল হারে এই 'প্রতিষেধক' তৈরি করতে চায় বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা।
প্রথম দফার হিউম্যান ট্রায়ালে ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এক দল স্বেচ্ছাসেবকের উপরে এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।
ICMR-এর এবং ভারত বায়োটেক একসঙ্গে কোভ্যাক্সিন নিয়ে কাজ করছে।
এই কাজে ভারতীয় সংস্থাকে সাহায্য করছে মার্কিন বায়োটেকনোলজি কোম্পানি রেফানা।
WB Panchayat Poll: রাজ্যে নির্বাচনী অশান্তির বলি আরও ১, কেতুগ্রামে প্রৌঢ় ভোটারকে মাথা থেঁতলে খুন!
ভোটের সমীকরণ ওলটপালট করতে জঙ্গলমহলে এক্স-ফ্যাক্টর কুড়মিরাই, হাওয়া কোন দিকে?
| web |
3986a0a9797f90670c45ec4c7cc7c006c6254760 | গুজরাটিরা খুব মিষ্টি খেতে ভালোবাসে। এখানে সব থেকে প্ৰিয় মিষ্টি হল দাবেলি। এটি অনেকটা বার্গারের মত। তাই একে দেশি বার্গারও বলা হয়।
ইতিহাসঃ
এই খাবারটি গুজরাটের কচ্ছে প্রথম কেশব জি গাভা চুদাসামা ওরফে কেশা মালাম তৈরি করেছিলেন। ১৯৬০ সালে তৈরি করা দাবেলি সর্বত্র পছন্দ হতে থাকে।
তখন দাবেলি পাওয়া যেত 'এক আনা করে আজ দাবেলির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা। দাবেলি মানে 'নিচে চাপা'।
পাওয়া যায় :
গুজরাট ছাড়াও দাবেলি মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং রাজস্থান, ভোপাল এবং ইন্দোরেও পাওয়া যায়।
| web |
85e2528f52f8b57a130f9e646a498f157d96f99e | পটিয়ায় পাউবো'র জলাবদ্ধতারোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের আওতায় ১১ শ ৫৮ কোটি টাকার কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৩ টায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব. ) জাহিদ ফারুক উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ব্যাংক মাঠ এলাকায় এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পটিয়া একটি দ্বীপের মত। পটিয়াকে রক্ষায় চারদিকে বাঁধ নির্মান করা হচ্ছে। যা বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের ১৩ হাজার হেক্টর অনাবাদী জমিতে চাষাবাদ হবে। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরক্তের কারণে একপ্রকার বাধ্য হয়েই আমি এটি পাশে সহযোগিতা করেছি। করোনাকালীন সময়ে সারাবিশ্বে তখন থেকেই অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল। সব দেশে উন্নয়নমূলক কাজ স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাকালীন সময়েও যেসব প্রকল্প আমরা একনেকে পাঠিয়েছি তা একটিও তিনি ফেরত পাঠাননি। পটিয়ার এ প্রকল্পও তেমন একটি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পটিয়াকে দেখলে এখন কোন গ্রাম বা উপজেলা মনে হয়না, মনে হয় চট্টগ্রামের পাশে আরেকটি পটিয়া শহর। আপনাদের এ প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে আপনারা উপকৃত হবেন। এটি যাতে সঠিকভাবে হয় তা আপনারা তদারকি করবেন। প্রকল্প চলাকালীন সময়ে আমি আরোও আসবো।
উদ্বোধকের বক্তব্যে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি বলেন, এ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলের মানুষের বিশাল একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। পটিয়াবাসী আজীবন কৃতজ্ঞতা জানালেও শেখ হাসিনার এ ঋণ শোধ হবে না। এটি পটিয়াবাসীর আশা ও আবেগের প্রকল্প। এ প্রকল্পে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না। আগামী এক বছরের মধ্যে ৭৫ ভাগ কাজ দৃশ্যমান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পাউবো'র দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী প্রামানিকের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. ফজলুর রশীদ, পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মেয়র মো. আইয়ুব বাবুল, ইউএনও আতিকুল মামুন, সহকারী পুলিশ সুপার তারিক রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য দেবব্রত দাশ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অপু দেব, আকম সামশুজ্জান চৌধুরী, অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, তিমির বরণ চৌধুরী, বিজন চক্রবর্তী, আবু ছালেহ, এম এজাজ চৌধুরী, আশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এম এ হাসেম, হাবিলাসদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান ফৌজুল কবির কুমার, কোলাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চৌধুরী, ধলঘাট ইউপি চেয়ারম্যান রনবীর ঘোষ টুটুন প্রমুখ।
| web |
b7d2bacdc4a694e2937babdc25b273b1273d0e52 | সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের থ্রিলারের জাল বুনছেন পরিচালক অভিরূপ ঘোষ। এবার তিন কাহিনিকে এক সিনেমায় দর্শকদের সামনে পরিবেশন করতে চলেছেন তিনি। ছবিতে রয়েছেন একঝাঁক তারকা। রুদ্রনীল ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা সরকার, কাঞ্চন মল্লিক, বিশ্বনাথ বসু, সায়নী ঘোষ, পৌলমী দাস ও জিনা তরফদার। খবর আগেই মিলেছিল। এতদিনে ছবির চরিত্রদের লুক প্রকাশ্যে এল।
থ্রিলার নিয়ে এর আগেও এসেছিলেন অভিরূপ। 'কেঃ সিক্রেট আই' তাঁর প্রথম সিনেমা। এবার তিনটি আলাদা কাহিনিকে এক সুতোয় গেঁথেছেন পরিচালক। প্রথম গল্পে দেখা যাবে বিশ্বনাথ ও প্রিয়াঙ্কাকে। সে কাহিনি এক ঝড়ের রাতের। ভয়ঙ্কর সেই রাতে জেল থেকে পালিয়ে যায় সিরিয়াল কিলার সাইকো সান্যাল। এদিকে আবার রেস্তরাঁয় আটকে পড়ে সায়নী নামের একটি মেয়ে। যেখানে আশ্রয় নেয় এক আগন্তুক। কে সেই আগন্তুক? সিরিয়াল কিলারই বা কোথায় গেল?
এই প্রশ্নের আবহেই শুরু দ্বিতীয় গল্প। যেখানে রয়েছেন রুদ্রনীল ও সৌমান। ভাল জীবনের তাগিদে ঝন্টুর গাড়ি চুরির গ্যাংয়ের সঙ্গে মিশে যায় অর্জুন। কিন্তু শর্টকাটে টাকা রোজগারের অনেক শত্রু রয়েছে। এই শত্রুদের মোকাবিলা কি করতে পারবে অর্জুন?
সবশেষে আসে সৈকতের গল্প। যেখানে রয়েছেন কাঞ্চন ও সায়নী। জুয়া-আসক্ত সৈকত কি পারবে জীবনের খেলায় বাজিমাত করতে? এই সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে 'রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ'-এ।
অভিরূপ ছাড়াও চিত্রনাট্য লিখেছেন ইন্দ্রনীল সান্যাল, আব্দুল বশিত। প্রযোজনায় এসবি মনতাজ আর্ট হাউস ও ট্রু কলিং মিডিয়া। সিনেম্যাটোগ্রাফির দায়িত্বে অঙ্কিত সেনগুপ্ত। জুন মাসেই শেষ হয়েছে ছবির শুটিং। এবার অপেক্ষা বড়পর্দায় আসার।
| web |
89ac522929701ef1831f553020aff9ee961a2ab3 | পোড়োবাড়ি জঙ্গলে বা নির্জন বারান্দাতে,
শ্মশানঘা ও কবরখানায় কাটায় ঘুরে-ফিরে।
জ্বিন-ভূতেদের যায় না দেখা কেন দিনের বেলা?
জ্বিন-ভূতেদের পোশাক কেন শুধুই সাদা কাপড়?
রক্তচোখে ভেংচি মেরে কাটে ভয়ের আচড়,
ভূতেরা কি খায়- ঘুমায় আর যায় কি ওরা মারা?
| web |
24dca9ea8df839b24e7a1223531bfef2 | স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া ও সদস্যসচিব নুরুল হক নুর।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে এই দুই নেতা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুনিয়াকে একশ বছর পেছনে ঠেলে দিয়ে, ক্ষুদ্র ও সামরিক শক্তিতে দুর্বল রাষ্ট্রসমূহের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে অসভ্যতার রাজত্ব কায়েম করতে নেমেছেন।
যা কোনো সভ্য সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাশিয়ার এমন আগ্রাসন স্বাধীন দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মতো আন্তর্জাতিক রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বিশ্বশান্তির প্রতি দেশটির যে প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশিত ছিল, তার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর নামান্তর।
গণ অধিকার পরিষদ মনে করে, সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে রাশিয়া ইউক্রেন দখল করে নিয়েছে। সেখানে মানবজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে, প্রাণহানি ঘটছে, দেশটির অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে।
বিশ্ববাসীর চোখের সামনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্লজ্জ ভাবে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশকে অপমানিত, পরাস্ত ও পদানত করছেন। মানব ইতিহাসের এই যুগে এমন বর্বরতা ঘটতে পারে বলে কেউ ইতিপূর্বে ভাবতেও পারেনি।
এ ছাড়া, রাশিয়ার জনগণকে শান্তিপ্রিয় বিশ্ববাসীর সঙ্গে থেকে আগ্রাসী ও কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোও আহ্বান জানায় গণ অধিকার পরিষদ।
তারা আরও বলেন, আমরা মানবতা বিরোধী এই অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং রাশিয়ার কাছে এই দখলদারির অবসান ঘটানোর আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ইউক্রেনে অবস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মুক্তবিশ্ব কর্তৃক রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সামাজিক অবরোধের সঙ্গে পরিপূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
শেয়ার করুনঃ
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
Previous post এখন পর্যন্ত ৪৫০ রুশসেনা নিহত!
| web |
a952c0d544703db85c0419fbea85f80f8afa403e | নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ :
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ালো রায়গঞ্জ থানার রামপুরে। ঘটনাস্থলে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। কত টাকা চুরি গিয়েছে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সোমবার গভীর রাতে রায়গঞ্জ থানার রামপুর গ্রামে কানাড়া ব্যাঙ্কের শাখায় একদল দুষ্কৃতি দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটায়। দুষ্কৃতিরা প্রথমেই সিসিটিভি ক্যামেরা ঘুরিয়ে দেয়। এরপর সিকিউরিটি অ্যালার্মের তার ছিঁড়ে ফেলে গ্যাস কাটার দিয়ে শাটার ও কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ব্যাঙ্কের ভেতরে প্রবেশ করে। ব্যাঙ্কের ভেতরে ঢুকে কত টাকা লুট করেছে তার পরিমান জানা যায়নি। তবে চুরির ধরন দেখে বড়ধরনের ক্ষতিই হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
| web |
2903036fffb870ef656bfbb4f758140d675c7036091cb8cb14448d23ac401ebc | বেওয়ারিশ লাগ।
এই সংবাদ যে বলিয়া দিতে পারিবে, সে পঞ্চাশ টাকা পারিতোষিক পাইবে, এই কথা তুমি শুন নাই কি?
১ম ব্যক্তি। শুনিয়াছি; কিন্তু আমি যখন চিনিতে পারি নাই, তখন কাহার নাম করিব?
আমি। তোমার মিথ্যা কথা আর আমি শুনিতে চাহি না। তুমি যেরূপ প্রকৃতির লোক, তোমার সহিত সেইরূপ ভাবে ব্যবহার না করিলে, তোমার নিকট হইতে কোন কথা পাইবার প্রত্যাশা নাই। যাহাতে তুমি প্রকৃত কথা সহজে বলিতে সক্ষম হও, আমি এখনই তাহার উপায় করিতেছি। তুমি একটু অপেক্ষা কর, তোমার সমভিব্যাহারী ব্যক্তিকে আর দুই চারিটী কথা আমি অগ্রে জিজ্ঞাসা করিয়া লই ; তাহার পর আমার বিবেচনা. মত ব্যবহার আমি তোমার প্রতি করিতেছি।
এই বলিয়া আমি সেই দ্বিতীয় ব্যক্তিকে পুনরায় জিজ্ঞান! করিলাম, "মেহের আলির জামাতা কোথায় থাকে, তাহ! তুমি বলিতে পার কি?"
২য় ব্যক্তি। না মহাশয় ! আমি তাহার বাড়ী জানি
না ।
আমি। মেহের আলির বাড়ী জান? ২য় ব্যক্তি। তাহা জানি।
আমি। তুমি আমাকে সেই বাড়ী দেখাইয়া দিতে পার ? হয়। সবিশেষ আবশ্যক হয়, ত কাজেই দেখাইয়া দিতে হইবে ; কিন্তু এখন একটু প্রয়োজন বশতঃ আমাকে স্থানান্তরে গমন করিতে হইতেছে। পরে যখন বলিবেন, সেই সময় আমি
দারোগার দপ্তর, ৭৩ম সংখ্যা।
আসিয়া আপনাকে সঙ্গে করিয়া লইয়া গিয়া মেহের আলির বাড়ী দেখাইয়া দিব।
আমি। তুমি এখন অপর কার্য্যে গমন করিতেছ, কিন্তু ইহাও সবিশেষ কাৰ্য। কারণ, তোমার সংবাদ যদি ঠিক হয়, অর্থাং এই মৃতদেহ যদি মেহের আলির জামাতার হয়, তাহা হইলে সরকার হইতে তুমি একবারে পঞ্চাশ টাকা পাইবে, তদ্ব্যতীত সরকারী কার্যে আমাদিগের সাহায্য করাও হইবে। তুমি এখনই আমার সঙ্গে আইস, এবং মেছের আলির ঘর আমাকে দেখাইয়া দেও। তাহা হইলে সেই স্থান হইতে আমি অনায়াসেই সন্ধান লইতে পারিব যে, তাহার জামাতা কোথায় থাকে ।
আমার কথায় দুই একবার আপত্তি উত্থাপন করিয়া, পরিশেষে সেই ব্যক্তি আমার প্রস্তাবে সম্মত হইল। আমি তাহাকে সঙ্গে লইয়া তৎক্ষণাৎ সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিলাম। অপর ব্যক্তি জনৈক গ্রহরীর সহিত সেই স্থানে বসিয়া রহিল।
নেই ব্যক্তি আমাকে সঙ্গে করিয়া তালতলায় মেহের আলির বাড়ীতে লইয়া গেল। অনুসন্ধানে জানিতে পারিলাম, মেহের আলি বাড়ীতে নাই। অতি প্রত্যূষে সে আপন কাৰ্য্যে গমন করিয়াছে। মেহের আলির একমাত্র কন্যা, সে সেই সময় মেহের আলির বাড়ীতেই ছিল।
আমরা মেহের আলির বাড়ীর সম্মুখে গমন করিলেই, পাড়ার অনেক লোক আসিয়া সেই স্থানে ভিড় করিয়া ফেলিল। উহাদিগের একজনকে মেহের নালির আত্মীয় বলিয়। অনুমান ● হইল। তাহাকে মেহের আলির জামাতার
বেওয়ারিশ লাস।
নাম জিজ্ঞাসা করায়, সে নিজে তাহা বলিতে পারিল না ; কন্তু মেহের আলির বাড়ীর ভিতর গমন করিয়া তাহার নাম জানিয়া আসিয়া আমাকে কহিল, "মেহের আলির জামাতার নাম রব্বানি।"
যে বাড়ীতে মেহের আলি বাস করে, তাহা মেহের আলির নিজের বাড়ী। উহা একখানি সামান্য খোলার ঘর। রাস্তার উপর সদর দরজা, উহা খোলা রহিয়াছে; কিন্তু সেই দরজার উপর একখানি চটের পরদা ঝুলিতেছে। সেই পরদাটী নিতান্ত পুরাতন, এবং স্থানে স্থানে ছিঁড়িয়া গিয়াছে।
যে ব্যক্তি বাড়ীর ভিতর গমন করিয়া মেহের আলির জামাতার নাম জানিয়া আসিল, সে ভিতর হইতে আমাদিগের নিকট আসিবার পরেই কয়েকটী স্ত্রীলোক সেই পরদার পার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইল। আমাদিগের প্রেরিত ব্যক্তি রব্বানির নাম আমাকে বলিবার পরই পরদার অন্তরাল হইতে একটী স্ত্রীলোক কহিল, "কেন গা কি হইয়াছে ?"
আমি । রব্বানি কোথায়, তাহাই জানিবার নিমিত্ত এখানে আসিয়াছি ।
পরদার অন্তরালবর্ত্তী স্ত্রীলোক। কেন মহাশয় ! তাহার অনুসন্ধান করিতেছেন ? অদ্য তিন দিবস হইতে তিনি যে কোথায় গিয়াছেন, তাহার কিছুই আমরা স্থির করিয়া উঠিতে পারিতেছি না।
আমি। একটী মৃতদেহ পাওয়া গিয়াছে, কেহ কেহ বলিতেছে, উহা মেহের আলির জামাতার দেহ। তাই আমরা জানিতে আসিয়াছি যে, তাহার জামাতা এখন কোথায়।
দারোগার দপ্তর, ৭তম সংখ্যা।
আমার এই কথা শুনিবামাত্র সেই পরদার অন্তরালবর্ত্তী স্ত্রীলোকদিগের মধ্য হইতে একটী স্ত্রীলোক হঠাৎ পরদা ঠেলিয়া বহির্গত হইয়া পড়িল, এবং সেই রাস্তার উপর আমাদিগের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া কহিল, "আমি বুঝিতে পারিতেছি, আমারই সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে ! চলুন, মহাশয় ! আমাকে সঙ্গে করিয়া লইয়া চলুন, আমি এখনই গিয়া সেই মৃতদেহ দেখিয়। আসি।"
আমি নিজে যে প্রস্তাব করিব মনে করিয়াছিলাম, সেই স্ত্রীলোকটী আপনা হইতেই সেই প্রস্তাব করিল। সুতরাং বিনা-বাক্যব্যুয়ে আমি তাহাতে সম্মত হইলাম, এবং আমার সমভিব্যাহারে যে গাড়ি ছিল, সেই গাড়িতে উঠিতে কহিলাম। রোদন করিতে করিতে সেই স্ত্রীলোকঢ়ী তিন চারিটী ছোট ছোট বালক-বালিকার সহিত সেই গাড়িতে গিয়া উপবেশন করিল। আমি তাহাদিগকে সঙ্গে লইয়া সেই মৃতদেহ যে স্থানে রক্ষিত ছিল, সেই স্থান অভিমুখে প্রস্থান করিলাম। গাড়িতে আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, "তুমি কি মেহের আলির কন্যা ?"
। হাঁ মহাশয় !
তোমরা কয় সহোদরা ?
স্ত্রীলোক। আমি ভিন্ন আমার পিতার পুত্র কথা আর
কেহই নাই।
আমি। রব্বানি কি তোমার স্বামী ?
স্ত্রীলোক। হাঁ।
আমি। রকানি কি তোমার পিতার বাড়ীতেই থাকে ?
| pdf |
06c4404cc42fa34b0d760b248f48e4e9934de5ca | সেরা মহিলা বিজ্ঞানীর খেতাব পাওয়া গীতা রামজি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অথচ জীবাণু নিয়েই ওঠাবাস, কাজকর্ম ছিলো তার। আর সেই জীবাণুর ছোবলেই প্রাণ গেলো ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাইরোলজিস্টকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন ৬৪ বছরের বিজ্ঞানী গীতা রামজি। এই নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নোভেল করোনা ভাইরাস প্রাণ কাড়ল ৫ জনের।
প্রবীণ রামজি নামে ভারতীয় বংশোদ্ভুত দক্ষিণ আফ্রিকার এক ফার্মাসিস্টকে বিয়ে করেছিলেন গীতা পরিবার বলতে এইই। কীভাবে গীতা রামজির দাফন সম্পন্ন হবে, তা এখনও জানা যায়নি। যেহেতু করোনায় মৃত্যু হলে, দাফন একেবারে হু'র গাইডলাইন মেনে করতে হয়, তাই এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন গ্লেনডা গ্রে। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেখানেও ২১ দিনের লকডাউন চলছে। তবে অনেকেই এখনও লকডাউন সেভাবে মেনে চলছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাউথ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল।
| web |
2b5121aa8f2a282b72448b1cb5519bf342ab1be00aa45591d31f5bf1fdbb456a | ২৮এ মে, বৃহস্পতিবার। - ইতিপূর্ব্বে যে ভয়ানক রাস্তার কথা বলেছি, আজ সেই রাস্তায় চোল্তে হবে। এত দিন ত অনেক ভয়ানক পথই দেখে আসা গেল। আরো ভয়ানক! আমার ত তার একটা ধারণাই হোলো না । এখন যদি কোন পথে গাড়ীর চাকার মত গড়িয়ে যাওয়া যায়, তা হোল্ইে তা একটু নূতন রকমের ভয়ানক হবে বোলে বোধ হয়। যাহোক এই রাস্তার ভয়ানকত্ব জানবার জন্যে মনের মধ্যে কিঞ্চিৎ আগ্রহও জন্মালে।। বিষ্ণু-প্রয়াগ পেতে বদরিনারায়ণ বারো ক্রোশ অর্থাৎ আঠারো মাইল । এ দেশের এক ক্রোশে দেড় মাইল ; কিন্তু এইবারের ক্রোশের এক এক ক্রোশকে - "ডালভাঙ্গ।" ক্রোশ বলা যেতে পারে। আমাদের সহরাঞ্চলের পাঠকমহাশয়দের বোধ হয় ডালভাঙ্গা ক্রোশের সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা নেই। বাঙ্গালার কোন কোন জেলায় পথিকেরা গন্তব্য স্থানে রওনা হবার সময় গাছের ডাল তা হাতে
নিয়ে চোল্তে থাকে। পথ চোল্তে চোল্তে রৌদ্রের উত্তাপে যখন এই ডালের পাতাগুলি শুকিয়ে যায়, তখনই এক ক্রোশ পথ চলা হয় । তা আট ক্রোশ যাওয়ার পরই ডাল শুকোক্, কি দশ ক্রোশ চলার পরই শুকোক্। বদরিনারায়ণের এই বার ক্রোশ, আমাদের দেশের "আট বারং ছিয়ানব্বই" ক্রোশের ধাক্কা।
রাস্তায় বের হোয়ে ধীরে চলা আমার শাস্ত্রে লেখে না। যখন দুই সন্ন্যাসিনী জয়ন্তী ও শ্রী পুরুষোত্তম দর্শনাকাঙ্ক্ষায় যাচ্ছিলেন, সেই সময় শ্রীকে কিছু দ্রুতগামিনী দেখে জয়ন্তী বোলেছিলেন, "ধীরে চ বহিন, তাড়াতাড়ি চোল্লে কি অদৃষ্টকে ছাড়াতে পারবি?" - তাড়াতাড়ি চলে যদি অদষ্টকে ছাড়ান যেতো, তা হোলে এতদিন এ দগ্ধ অদৃষ্ট অনেক
পেছনে পোড়ে আর কোন পথিকের স্কন্ধাবলম্বনের অবসর খুঁজতো। কিন্তু তা তো হবার নয়; অদৃষ্ট সঙ্গে সঙ্গেই ফেরে, এবং তা জেনেও আমি তাড়াতাড়ি চলি ; অভিপ্রায়, অদৃষ্টে য। কিছু আছে শীঘ্র শীঘ্র ঘটে যাকু ; তার পরে দিন কত একটু বির ম ভোগ করা যাবে। বৈদান্তিক ভায়াও আমার তাড়াতাড়ি চলার একটা ভাল রকম কৈফিয়ৎ চেয়েছিলেন, সেবার তাঁকে আমি এই কৈফিয়ঁই দিয়েছিলুম; কিন্তু তাতে তিনি আমাকে যে সম্ভাবনা জানিয়েছিলেন, তার মধ্য কতখানি বেদান্ত ও কতটুকু মায়াবাদ ছিল, তা ঠিক কোর্ত্তে পারি নি। যাই হোক, কিন্তু তাঁর গল্পে একটু নূতনত্ব ছিল এবং পথ চোলতে চোলতে সেই নুতনত্বটুকু বেশ আমোদজনক বোধ হোয়েছিল। আমার সহৃদয় পাঠকগণকে আমি সে রস হোতে বঞ্চিত কোর্ভে চাইনে, কারণ সেটা সাধুর
বৈদান্তিক ভায়। বোল্লেন, "আমি যে অদৃষ্টের ভোগটা তাড়াতাড়ি কাটিয়ে দিনকতক আরাম ভোগের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় স্ফীত হোচ্ছি, তা আমার মত নূতন বিরক্ত মৃঢ় সন্ন্যাসীর কাছে বড় সহজ বোলে বোধ হোলেও, কাজে তা বিলক্ষণ কঠিন । যা ললাটে আরাম ভোগের কক্ষে শূন্য অঙ্ক লেখা আছে, সে কি ঋণ কোরে আরাম ভোগ কোরূবে ? আরাম বিরামের রাজ্যে দেনা পাওনার কারবার থাবৃলে অনেক রাজা রাজড়া অতি উচ্চ দান দিয়ে এই জিনিসকে কিনতেন; কিন্তু ভগবানের মর্জ্জি অন্য রকম।" বাস্তবিক অদৃষ্ট জিনিষটা বড়ই খারাপ, শুধু ইহলোক নয় - পরলোকের পার পর্যন্ত সঙ্গে সঙ্গে ছোটে এবং তার জন্যে কোন মুটে বা কুলীর আয়োজন কোর্ত্তে হয় না। দৃষ্টান্ত-স্বরূপ ভায়' বোল্লেন, - ' উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের একজন লোকের কাকচরিত্র বিছায় খানিকটা অভিজ্ঞতা ছিল। লোকটা একদিন শ্মশানের কাছ দিয়ে যেতে যেতে দেখলে, একটা অনেকদিনের পুরাণে। মড়ার মাথা পোড়ে রয়েছে।
সেই নর-কপালের সাদা সাদা অক্ষর গুলোর উপর লোকটার নজর পোড়লে। ; - কাকচরিত্র বিদ্যাবলে সে পোড়লে"ভোজনং যত্র তত্রাপি শয়নং হট্টমন্দিরে,
মরণং গোমতীতীরে অপরং বা কিং ভবিষ্যতি ।" লোকটা শুধু কাকচরিত্রই যে জান্তো তা নয়, একটু বুদ্ধিবৃত্তিরও ধার ধারতো। "অপরম্বা কিং ভবিষ্যতি" পোড়ে তার মনে কৌতূহল হোলো, এর পরে আর কি হয় জানতে হবে। মরে গিয়েছে, শ্মশানে মাথার খুলিটে শুধু পোড়ে রয়েছে, এখনো অপরম্বা কিং ভবিষ।তি ?" পণ্ডিত মড়ার মাথাটা কুড়িয়ে বাড়ী এনে তা একটা হাঁড়িতে পূরে একটা নির্জ্জন স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখ্লে । আরও নূতন কিছু হলো কি না পরীক্ষার জন্যে প্রায়ই ইঁ।ড়ির মুখ খুলে দেখে। একদিন পণ্ডিত কাৰ্যো লক্ষে দু চারদিনের জন্যে বিদেশ যাত্রা কোরলে পর কৌতূহলাবিষ্ট। পণ্ডিতপত্নী সেই হাঁড়ির মুখ খুলে দেখলেন একটা নরকপাল তার মধ্যে পরম সমাদরে রক্ষিত হোয়েছে। পণ্ডিতের যিনি সহবশ্বিণী তাঁর পক্ষে এই নরকপাল দেখে তার প্রকৃত তথ্য অনুমান কোরে নেওয়া অবশ্য নিতান্ত সময় ব্যাপার হবার সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত কোল্লেন, অকিছু নয়, পণ্ডিতজীর বোধ হয় কোন প্রিয়তমা ছিল; তার মৃত্যু হওয়াতে বিরহক্লিষ্ট পণ্ডিতবর তার মস্তকটি কুড়িয়ে এনে এইরূপে সঙ্গোপনে হাঁড়ির মধ্যে রেখে দিয়েছেন,এবং মধ্যে মধ্যে এই কঙ্কালাবশেষখানি দেখেই দুঃসহ বিরহজালা প্রশমন করেন। পণ্ডিত-পত্নীর দুর্জ্জয় ক্রোধ এবং অভিমানের উদয় হোলো । পণ্ডিত সশরীরে সেখানে বর্তমান থাকলে বোধ হয় তিনি সম্মুখ যুদ্ধে আহূত হোতেন। সে বিষয়ে আপাততঃ কিঞ্চিৎ বিলম্ব দেখে পণ্ডিত-পত্নী সেই নরকপালখানি হাঁড়ি থেকে বের কোরে ঢেঁকিতে চূর্ণ কোরে, একটা পচা নৰ্দ্দামার মধ্যে নিক্ষেপ কোল্লেন। পণ্ডিত গৃহে ফিরে সর্ব্ব প্রথমেই হাঁড়ি দেখতে গিয়ে দেখেন হাঁড়িও নেই কঙ্কালও নেই ।
ব্যস্ত সমস্ত হোয়ে গৃহণীকে জিজ্ঞাস। কোল্লেন, হাঁড়ি কোথায় ? পত্নী পণ্ডিত মহাশয়কে বিরহ-ব্যথায় অত্যধিক ব্যাকুল করবার অভিপ্রায়ে সমস্ত কথ। সবিস্তারে বোলে তার প্রিয়তমার কপালের দুরবস্থা দেখাইবার জন্যে নর্দামার কাছে হাত ধোরে নিয়ে গেলেন। পণ্ডিতের কিন্তু চক্ষু স্থির ! "অপরং বা কিং ভবিষ্যতি" এই রকম ভাবে ফলবে তা কে জানতো ?
বৈদান্তিক বোল্লেন, মরণের পরও যখন অদৃষ্ট সঙ্গে সঙ্গে ফেরে, তখন আমার সুখভোগের আশাট! অলীক মাত্র। বৈদান্তিকের আর কোন ক্ষমতা না থাক, তিনি মনটকে বেশ দমিয়ে দিতে পারেন; কিন্তু আমার তাতে বিশেষ বড় আসে যায় না।
গল্প কোৰ্ত্তে কোর্ভে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া গেল। উপক্রমণিকাতেই স্বামীজি আমাকে খুব ধীরে চলবার জন্যে অনুমতি কোলেন এবং আজ যদি তাড়াতাড়ি চলি, তা হোলে আমার অসুখ হোতে পারে বোলে ভবিষ্যংবাণী কোর্ভেও ছাড়লেন না; কিন্তু তাঁর এ রকমের সাবধানতা এ নূতন নয়, কাজেই আমার কাছে তার তেমন দর হলো না।
আমরা খানিক দূর অগ্রসর হোয়ে একটা কাঠের সাঁকো দিয়ে অলকানন্দা পার হোলুম। সাঁকোটীর উপর দিয়ে যেতে বড়ই ভয় কোৰ্ত্তে লাগলো। ইংরেজের তৈয়েরী লোহার সাঁকোর উপর দিয়ে বেশ সগর্ব্বে চলে যাওয়া যায়; কিন্তু পাহাড়ী কারিগরদের তৈয়েরী এই কাঠের সাকোর কাছে এসে আমার সে কালের লছমনঝোলার কথা মনে পড়লো। বাস্তবিক এমন খারাপ সাকে। আমি এ পর্যন্ত একটাও দেখি নি। যাহোক অতি সাবধানে ত সাকোটা পার হওয়া গেল। খানিক দূর এগিয়ে যখন পেছন ফিরে চাইলুম তখন সঙ্গীদের কাকেও দেখতে পলুম না। এই বাঁকা রাস্তায় ৫০ হাত এগিয়ে এলে আর কাকেও বড় দেখবার যো নেই ।
সাঁকো পার হোয়ে রাস্তার ভীষণতা বুঝতে পাল্লুম! এ পর্য্যন্ত
অনেক "চড়াই উৎরাই" দেখেছি, কিন্তু এমন "চড়াই উৎরাই" আর কোন দিন নজরে পড়ে নি। বরাবর শুধু চড়াই আর উৎরাই। বহু কষ্টে আধ মাইল চড়াই উঠলুম ; ওঠ। যেই শেষ হলো, অমনি আবার উৎরাই আরম্ভ ; আবার যেই উৎরাই শেষ হলো অমনি চড়াই আরম্ভ। নাগরদোলার মত কেবল চড়াই আর উৎরাই। সমান জমি কি সামান্য উচু নীচু রাস্তা মোটেই নেই এই রকম তিন চারটে চড়াই উৎরাই পার হোলেই মানুষের জীবাত্ম। ত্রাহি মধুসূদন ডাক ছাড়ে। আমি কতবার ক্রমাগত সাত আট মাইল চড়াই উঠেছি, কিন্তু কখন 'এত কষ্ট হয় নি। একবার উঠা তার পরেই নামা, এতে যে কি কষ্ট তা বুঝান সহজ নয়। বুকের হাড় ও পাঁজরাগুলো যেন চড় চড় কোরে ভেঙ্গে যায়; তার সঙ্গে সঙ্গে আবার সৰ্ব্বনেশে তৃষ্ণা ; এই মাত্র ঝরণার জল খাওয়া গেল, পরক্ষণেই মুখ নীরস, গলা শুকনো, যেন কতকাল জল খাওয়া হয় বুকের মধ্যে কে যেন মরুভূমি সৃষ্টি কোরে রেখেছে। তবে সুখের মধ্যে এই পথে যত ঝরণা, এত ঝরণা আর এ পাহাড় রাজ্যের কুত্রাপি দেখি নি ; আর এত ঝরণ। আছে বলেই এ পথে মানুষ চলাচল ােবৃতে
পারে ।
রাস্তায় চোল্তে আরম্ভ কোরে গন্তব্য স্থানে না পৌঁছিয়ে আর আমি কখন বিশ্রাম করিনে; কিন্তু এই ভয়ানক পথে এ রকম জিদ বজায় খাকূলে। না । চলি আর বসি এবং ঝরণা দেথ্ লেই সেখানে গিয়ে অঞ্জলি পূরে জল খাই। রাস্তায় চার পাঁচবার বিশ্রাম কোরে এবং দশ বারে। বার জল থেয়ে শরীরের সঙ্গে শক্তির সঙ্গে, আর এই বিষম পথের সঙ্গে প্রবল যুদ্ধ কোরতে কোরতে আট মাইল দূর পাণ্ডুকেশ্বরে উপস্থিত হোলুম । বেলা তখন প্রায় ৯টা। এতখানি রাস্তা আমি তিন ঘণ্টায় এসেছি। শুনলুম, যে সকল সন্ন্যাসী পাহাড় ভ্রমণে অত্যন্ত অভ্যস্ত তাঁহারাও পাঁচ ছয় ঘণ্টার কম বিষ্ণুপ্রয়াগ হোতে পাণ্ডুকেশ্বরে আতে
পারেন না। খুব অল্প সংখ্যক পাহাড়ী জোয়ানেরাই তিন ঘণ্টায় এ রাস্তা হাতে পারে। আজ এই ভয়ানক দুর্গম রাস্তা অতিক্রম কোর্ভে একজন দুর্ব্বল বঙ্গ-সন্তান, প্রবল বিক্রম, বলিষ্ঠ দেহ, পাহাড়ীর সমকক্ষ হয়ে উঠেছে মনে কোরে অহঙ্কারে আমার বুকখান। দশ হাত হোয়ে উঠলো এবং নিজেকে অদ্বিতীয় বঙ্গবীর স্থির কোরে যথেষ্ট আত্ম প্ৰসাদ ভোগ করা গেল। কিন্তু হায়, সকলে আমার মত বঙ্গবীর নয় : বঙ্গভূমির মুখ উজ্জ্বলও সকলের দ্বারা সম্ভব নয়; আমি অমিত পরাক্রমে তিন ঘণ্টায় বিষ্ণুপ্ৰয়াগ হোতে পাণ্ডুকেশ্বরে এগুম বটে, কিন্তু স্বামীজি ও বৈদান্তিক কারো দেখা নেই; এ বেলা যে তাঁরা আসতে পারেন সে বিষয়েও আমার সন্দেহ হোল। তাঁরা দেখছি বাঙ্গালীর নাম রাখতে
পাল্লেন না।
কি করা যায় ; পাণ্ডুকেশ্বরে এসে একটু ঘুরে বেড়ান গেল । প্রথমেই পাণ্ডুকেশ্বরের নাম-রহস্য জানবার জন্য কৌতূহল হোলো। শুনলুম, এখানে মহারাজ পাণ্ডু দীর্ঘকাল যাবৎ তপস্যা কোরেছিলেন, তাই এস্থানের নাম "পাণ্ডুকেশ্বর"। এখানে একটা খুব প্রাচীন মন্দির দেখতে পেলুম। বদরিকাশ্রমের রাস্তায় এ পর্যন্ত যতগুলি মন্দির দেখেছি, তার মধ্যে দুটির মত প্রাচীন মন্দির আর আমার নজরে পড়ে নি, একটি হৃষীকেশে, আর একটি এই পাণ্ডুকেশ্বরে। অনেক কালের পুরাণে। বোলে মন্দিরটার খানিক অংশ মাটীর মধ্যে বোসে গিয়েছে। মন্দিরের পাশে ছোট ছোট চার পাঁচট। পাথরের কোটা বাড়ী আছে, সেগুলিরও জীর্ণ অবস্থা; নানা রকমের গাছ পালা তাদের মাথার উপর সগর্ব্বে দাঁড়িয়ে রোয়েছে। গাছগুলোই কি অল্প দিনের ? তাদের মোটা মোট। শিকড়গুলি পাথরের মধ্যে প্রবেশ কোৰ্ত্তে কত কাল লেগেছে ! এই সকল মন্দিরের সংস্কারের কোন সম্ভাবনা নেই, আর বিশ পঁচিশ বছর পরে সমস্ত ভেঙ্গে পোড়ে যাবে, এবং এগুলি কি ছিল তা জান.৫
বার পর্যন্ত উপায় থাকবে না । এ রকম ভাঙ্গা স্তূপ আমরা এ পর্য্যন্ত কত দেখেছি ; সেগুলি উদাসীন চোখের সামনে দুদণ্ডের বেশী স্থায়িত্ব লাভ করে নি ; কিন্তু এককালে সে সকল স্তুপ যে কত গৌরব, কত পবিত্রতা এবং মহিমার অখণ্ড বাসস্থান ছিল, তা ভাব্লে মনের মধ্যে একটা সঙ্কোচপূর্ণ ভক্তির আবির্ভাব হয়। মনে হয় জীবন ও মৃত্যু শুধু জীব জগৎকেই যে আচ্ছন্ন কোরে আছে তা নয়, এই জড় জগতের বহু দ্রব্যও জীবিতের ন্যায় উচ্চ সম্মান এবং প্রবল খ্যাতি লাভ করে; কিন্তু কালক্রমে তাদের মৃত্যু হোলে, তখন তাদের মান সম্ভ্রম, খ্যাতি প্রতিপত্তি সমস্তই শৈবালাচ্ছাদিত ইষ্টক বা প্রস্তর স্তূপের নিম্নে সমাহিত হোয়ে যায় এবং দর্শকগণ কদাচিৎ তাদের দিকে একবার চক্ষু ফিরিয়ে অতীত গৌরবের কথা চিন্তা করে।
পাণ্ডুকেশ্বরের বাজারটী নিতান্ত ছোট নয়; কিন্তু যদি বার মাস এখানে লোক বাস কোরতে পারতো, তা হোলে বাজারটি আরও ভাল হোতো। গ্রীষ্মের চার পাঁচ মাস কেবল এখানে বসবাস কোর্ভে পারে, দোকানেও কেবল সেই কয় মাস খরিদ বিক্রী হয়। শীত পড়তে আরম্ভ হোলে দোকানী পসারী এবং বাসিন্দ। লোকজন বিষ্ণুপ্রয়াগ । ধাশীমঠ প্রভৃতি স্থানে উঠে যায়; গ্রীষ্মের প্রারম্ভে আবার সকলে ফেরে এসে নিজ নিজ আড্ডা দখল কোরে বসে । এতদিন এ স্থানটা জনসমাগনশূন্য ছিল, আজ কয়েক দিন হোতে আবার লোক জুটতে আরম্ভ হোয়েছে। কারণ এখানে গ্রীষ্মের সূত্রপাত মাত্র। গ্রীষ্মের সূত্রপাত শুনে পাঠক মনে কোরবেন না, আমাদের দেশে ফাল্গুন মাসের শেষে যে অবস্থা হয় এখানেও সেই রকম। মাঘমাসের শীতের তিন গুণ শীত কল্পনা কোরে নিলে এ শীতের খানিকটা আভাস পাওয়া যায়, কিন্তু শীতকালের অবস্থা আমরা কিছুতেই কল্পনা কোরে উঠতে পারিনে - তা আমাদের কল্পনাশক্তি যতই প্রবল হোক। এখন বরফ গলছে, আর
সহরগুলি বরফের মধ্যে থেকে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হোচ্ছে। বড়ই সুন্দর। শীতকালে সমস্ত বরফোকা থাকে। একট। স্থান দেখলুম, সমস্ত বরফে ঢাকা, একদিন পরেই দেখা গেল বরফ গোলে গোলে তার মধ্য হোতে একটা দীর্ঘচূড় প্রকাণ্ড মন্দির বের হোয়ে পড়েছে; হঠাৎ এই রকম পরিবর্তন দেখলে মনে ভারি আনন্দ হয়। আমি চোলতে চোলতে দেখচি সহরের অনেক স্থান এবং অনেক পথ পথ এখনো বরফে ঢাকা রয়েছে ; স্থানে স্থানে বা বরফ গোলছে আর তার ভিতর থেকে ঘাস বেরিয়ে পড়ছে ; চারিদিক্ সাদা, মধ্যে মধ্যে নবীন তৃণ মাথা তুলে দিয়ে চারিদিকের তৃষার-ধবল স্তুপের মধ্যে অনেকখানি নৃতনত্ব বিস্তার কোরছে।
ঘুরে ঘুরে একটা দোকান ঘরে এসে বোসলুম। দশটা বেজে গিয়েছে ; এখনও সঙ্গীদের দেখা নেই : এই অপরিচিত জন-বিরল স্থানে একা বড়ই কষ্ট বোধ হোতে লাগলো; সঙ্গীদের জন্যও ভাবনা হোতে
লাগ লো ।
ক্রমে যত বেলা বাড়তে লাগলো, ততই শরীরের মধ্যে গরম বোধ কোর্ভে লাগলুম। বোধ হোতে লাগলো যেন শরীরের মধ্য দিয়ে আগুন ছুটে বেরোচ্ছে ; আমি আর বোসে থাক্তে পান্থুম না, কম্বল মুড়ি দিয়ে সেই দোকানেই শুয়ে পড়লুম! ক্রমে এমন মাথা ধোরলো যে তা আর ববার নয়; মনে হোলো মাথার মধ্যে কে ক্রমাগত হাতুড়ীর বাড়ি মার্ছে । চোক দুটি ছুটে বের হবার উপক্রম হোলে। এবং বুকের মধ্যে এমন যন্ত্রণা যে শ্বাসরোধের আশঙ্কা হোতে লাগলো। স্থির হোয়ে থাকতে পাল্লুম না, যন্ত্রণায় ছট্ ফট্ কোর্ভে লাগলুম। শুয়ে থাকি তাতেও কষ্ট, উঠে বসি তারও উপায় নেই ; তার উপর এমন জায়গায় এসে পোড়েছি যে, আমাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করে এ রকম লোকও একটী নেই ! যে দোকানে পোড়ে রয়েছি, সে দোকানদার
এখনও নীচে হোতে এসে পৌঁছেনি। পিপাসায় প্রাণ ওষ্ঠাগত, অদূরে ঝরণা, কিন্তু সাধ্য নেই উঠে গিয়ে একটু জল খেয়ে আসি। অল্পক্ষণ পরে বমি আরম্ভ হোলো, সঙ্গে সঙ্গে পিপাসারও বৃদ্ধি হলো। এই দারুণ পথে বেড়াতে বেড়াতে অনেকবারই আসন্ন মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার পেয়েছি, কিন্তু মনে হলো যেন আজ আর অব্যাহতি নেই। .এই মহাপ্রস্থানের পথে একটা ব্যর্থজীবন তার অলস মধ্যাহ্নেই কি আয়ুর শেষ প্রান্তে এসে উপস্থিত হলো। হায়, আজ সকালেও জানতুম না এই নির্জন স্থানে, সঙ্গীহীন অবস্থায় এ রকম ভাবে প্রাণবিয়োগ হবে! শারীরিক যাতনার সঙ্গে এইরূপ মানসিক চিন্তার উদয় হওয়ায় প্রাণ আরো ছট্ ফট্ কোৰ্ত্তে লাগলো। মৃত্যুভয়ে যে বেশী কাতর হোয়েছিলুম এমনও বলতে পারিনে। দুঃখ, কষ্ট, অশান্তি, যন্ত্রণ। কিসের অভাব আছে, যার জন্মে মৃত্যুর শান্তি এবং নিরুদ্বেগ তৃচ্ছজ্ঞান কোরবো? তবে এত যন্ত্রণাতেও যে বেঁচে থাকতে ইচ্ছ। হোচ্ছিল, এটাও অস্বীকার কোরূতে পারছিনে। আসল কথা, আমাদের জীবনের প্রতিদিনের এই অভ্যস্ত স্রোত এবং সুখ দুঃখ হাসি কান্নার চক্রের মধ্যে হঠাৎ যে, অজ্ঞাত, পরীক্ষাতীত, রহস্যসঙ্কুল ঘটনার নূতনত্ব এসে সমস্ত গোল কোরে দেবে এবং বর্তমানের সমাপ্তি হোয়ে যাবে, এ দেখতে আমরা রজী নই; তাই হাজার দুঃখেও আমরা মৃত্যু চাইনে। কে জানে মৃত্যুর পর আমাদের প্রাণ বর্তমানের আকাঙ্ক্ষা, অভাব ও কষ্টের প্রাবল্যকেই কত সুমধুর বোলে পুনর্ব্বার তা পাবার জন্যে আগ্রহ করে কি না?
বেল। যখন দ্বিপ্রহর হোয়ে গেছে, তখন আমার সঙ্গীদ্বয় এসে পৌঁছলেন। তাঁরা পথশ্রমে দুই জনে মরার মত, হোয়ে এসেছিলেন, কিন্তু আমার অবস্থা দেখে তাঁরা নিজের কষ্ট ভুলে অবাক্ হোয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তার পরেই স্বামীজী ব্যস্ত সমস্ত হোয়ে আমাকে কোলে
তুলে বাতাস কোর্ভে লাগলেন এবং ব্যাকুল ভাবে আমাকে কত স্নেহের ভং সন! কোল্লেন ! অচ্যুত ভায়া আমার সব্বশরীরে হাত বুলাতে লাগলেন। আমার মাথাট। যাতে একটু ভাল থাকে, এজন্যে সহস্র চেষ্টা হোতে লাগলো । আমার আরোগ্যের জন্যে এঁদের দুজনের প্রাণের সমগ্র আগ্রহ এবং হৃদয়ের সমস্ত শক্তি নিয়োজিত হোলো; কিন্তু তাঁদের চেষ্টার ফল হওয়ার কোন লক্ষণই দেখা গেল না। আমি অবশেষে অবসন্ন হোয়ে পড়লুম; নিরুপায় দেখে স্বামীজি ও অচ্যূত তায়া একজন লোককে জল গরম কোরতে অনুমতি দিলেন। সে ক্রমাগত জল গরম কোরে আমার পায়ে ঢালুতে লাগলো। জলই কি শীঘ্র গরম হয় ? অনেক চেষ্টাতে জল খানিকটে গরম হোলো, টবগ্ কোরে ফুচে, হুহু কোরে তাপ উঠছে ; উনোন হতে নামিয়ে যেমনি পায়ে ঢালা অমনি ঠাণ্ডা ; আমাদের দেশে শীতকালে কলসীর জল যে রকম ঠাণ্ডা হয় সেই রকম। অনেকক্ষণ এই রকম জল ঢাল্তে ঢালতে মাথাটা একটু ঠাণ্ডা হোলো। তখন তাঁরা আমাকে ধরাধরি কোরে চারিদিকে বন্ধ একটা অন্ধকার ঘরে নিয়ে গিয়ে শোয়ালেন । ক্রমে আমি ঘুমিয়ে পড়লুম । অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলুম।
শেষ বেলা জেগে উঠে দেখি, অচ্যুতানন্দ ও স্বামীজি আমার পাশে বসে আছেন, আর আমার সম্মুখে একখানি আসনে একজন গায়ে জামাজোড়া, মাথায় প্রকাণ্ড পাগড়ি ভদ্রলোক ঘরখানা জমকে নিয়ে বোসে রয়েছেন। লোকটির চেহারা দেখেই একজন বড় লোক বলে বোধ হোলে। ! হঠাৎ এখানে তাঁর কি রকমে আবির্ভাব হোলো ভেবে আমি একটু আশ্চর্য্য হোয়ে গেলুম! এদিকে ওদিকে চেয়ে দেখলুম, তাঁর সঙ্গে অন্য দুই চারজন লোকও আছে। এঁদের পরিচয় জানবার জন্য আমার ভারী কৌতূহল হোলো। আমার কিন্তু ক্ষুধার প্রবৃত্তিটা আরে। প্রবল হোয়ে ওঠায়, আগে ভাগে আহারের চেষ্টাতেই প্রবৃত্ত হোতে হোলো।
আমি নিদ্রিত হোলে স্বামীজি ও অচ্যূতভায়। রুটি তৈয়েরী কোরে নিজেরা থেয়ে আমার জন্যে কতক ভাগ রেখে দিয়েছিলেন, আমি উঠে বসে পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে সেগুলি উদরস্থ কোল্লম। আহারান্তে এক লোট। জল খেয়েই সমস্ত ক্লান্তি ও পরিশ্রম যেন দূর হোয়ে গেল ।
একটু সুস্থ হোয়ে এই অভ্যাগত ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ কোল্লম। এঁর নাম পণ্ডিত কাশীনাথ জ্যোতিষী, জন্মস্থান গুজরাট্ ; সম্প্রতি কলি কাতা হোতে আসছেন। কলিকাতার ইনি মহারাজ। সার যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর বাহাদুরের বাড়ীতে বাস করেন। শুনলুম মহারাজ বাহাদুর এঁকে খুব শ্রদ্ধা ভক্তি করেন। বাঙ্গালা দেশের কোন সংবাদই অনেকদিন পাইনি, জ্যোতিষী মহাশয়ের সঙ্গে বাঙ্গালা দেশ সম্বন্ধে অনেক কথা হোলো। তিনি কলিকাতার অনেক বড় বড় ঘরের কথা বলতে লাগলেন ; দেখলুম লোকটি শুধু জ্যোতিষের রহস্য পর্যালোচনাতেই যে সময় ক্ষেপ করেন তা নয়, রাজনীতি ও সমাজনীতি সম্বন্ধে তাঁর স্বাধীন মতামতের পরিচয় পাওয়া গেল ; আর বাস্তবিক এতে আশ্চর্য হবার বিশেষ কিছু নেই। লোকতত্ত্বে যাঁদের অসাধারণ কৃতিত্ব আছে - রাজনীতি, সমাজনীতি তাঁদের সহজে বোঝাই সম্ভব ।
এতক্ষণ পরে জ্যোতিষী মহাশয় নিজের কথা পাড়লেন। কলিকাতার ধনকুবের এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিগণের মধ্যে কার কি রকম অদৃষ্ট গণনা কোরেছেন, কার কি কি ফলেছে এবং কে তাঁকে কি রকম শ্রদ্ধা ভক্তি করেন, সেই সকল কথা পুনঃ পুনঃ বোল্তে লাগলেন। নিজমুখে যদি কাকেও আত্মপ্রশংসা কোরতে শোনা যায় - তবে সে হাজার ভাল লোকের মুখে হোলেও ভাল লাগে না। জ্যোতিষী মহাশয় খুব বিজ্ঞ,বিচক্ষণ,ধাৰ্ম্মিকলোক হোতে পারেন, কিন্তু তাঁর এইরূপ আত্মপ্রশংসায় আমি অতি কষ্টে দৈয়া রক্ষা কোরতে পেরেছিলুম, বিশেষ এই অসুস্থ শরীরে। যা হউক আমার এই ধৈৰ্যাতিশয্যে জ্যোতিষী মহাশয়ের উৎসাহ বা সাহস বোধ হয় বেড়ে
গেল, হয় ত এমন নির্ব্বিবাদ শ্রোতা বহুদিন তাঁর ভাগ্যে জোটে নি! তিনি একজন ভৃত্যকে ডেকে তাঁর বাক্স আনতে বললেন। বাক্স আনা হোলে তিনি তার মধ্য হ'তে কতকগুলি খাতা পত্র বের করলেন। আমার বড়ই আশঙ্ক। উপস্থিত হোলে।; বিবেচনা কোল্লম এখনি বা আমার অদৃষ্টই গণন। কোরে আমার ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমান সব নখদর্পণে দেখিয়ে দেন। আমার ভবিষ্যৎ জানবার জন্যে কিছুমাত্র আগ্রহ ছিল না; জানি সেখানে আমার জন্যে অনেক দুঃখ জমান আছে, আলাদা আলাদা কোরে ফর্দ মাফিক সে সমস্ত দুঃখ জেনে আর কি ফল হবে ? - মনে মনে এই রকম তর্ক করচি, এমন সময় জ্যোতিষী মহাশয় আমার হাতে কতকগুলি কাগজ পত্র দান কোলেন। ও হরি, এ গুলো জ্যোতিষের কোন পুঁথি নয়, - ইংরেজী পারসীতে লেখা কতকগুলি প্রশংসাপত্র। সে সমস্ত আমার দেখবার কিছুমাত্র আবশ্যক ছিল না এবং সে জন্যে আমার মনে একটুও কৌতূহলের উদ্রেক হয় নি; কিন্তু জ্যোতিষী মহাশয় ছাড়বার পাত্র নন, ইংরেজীগুলে। পোড়ে তাঁকে তার অর্থ বোঝাবার জন্যে আমাকে অনুরোধ কোয়েন, এবং আমি পারসী জানিদে বোলে দুঃখ কোরে, তিনিই পরসী প্রশংসাপত্রগুলি পোড়ে আমাকে তার অর্থ বোঝাতে লাগলেন। পড়ার ভঙ্গিমাই বা কি ! আমি বলি আমার অর্থ বোঝবার দরকার নেই, কিন্তু তিনি যদি কিছুতে ছাড়েন! দেখলুম ভারতবর্ষের বহু প্রদেশ হোতে তিনি প্রশংসাপত্র পেয়েছেন, এবং সকল প্রশংসাপত্রেই তাঁর প্রধান জ্যোতিষী বোলে খ্যাতি আছে। দেশে মহারাট্টাদের প্রদত্ত অনেক জায়গীর আছে ; তা হোতে জ্যোতিষীজির প্রচুর অর্থাগম হয়। ইনি নিজের অর্থে তীর্থ পর্য্যটনে এসেছেন। যেখানে যান সেখানে অনেক আঁতথি সেবা করান ; সঙ্গে অনেক সাধু সন্ন্যাসী ও চাকর বাকর আছে। এই দূরারোহ পাহাড় কি হেঁটে পার হওয়া যায় ?-- তাই পাহাড়ীদের কাঁধে চোড়ে তীর্থ ভ্রমণ কোর্ঃ চেন, ইত্যাদি নানা কথা বোলতে লাগলেন। লোকটার লেখা পড়াও জানা
আছে ; কিন্তু নিজের গরিমা, বিদ্যার গরিমা, দাে গরিমা প্রকাশ করবার জন্যে লোকটা মহাব্যস্ত। যে, এই রকম গরিমা প্রকাশ করাটা নিতান্তই অনুচিত বঃজ্, এবং এতে মানুষের কাছে বরঞ্চ আরো লঘু হোয়ে পড়তে হয়, এতটুকু সাধারণ জ্ঞানও কেন এদের নেই ? যাহ। হউক সুবিধার বিষয় এই, যাঁরা ঐরূপ প্রশংস-। প্রিয় তাঁদের খোসামোদের দ্বারা সময়ে ঢের কাজ বাগান যায়। এই প্রসঙ্গে আমার একটী বন্ধুর কথা মনে পোড়েছে। বন্ধুটী কলিকাতার এক সম্ভ্রান্ত লোক, তাঁর অর্থ অনেক। কিন্তু আমাদের ন্যায় বন্ধুগণের ভোজে সে অর্থের সংব্যয় কদাচিৎ মাত্র হোয়ে থাকে। আমরা একদিন তার আতিথ্য গ্রহণ করায় তাঁর ভ্রাত। একটা খুব বড় রকমের মাছ এনে একটু ভাল রকম খাওয়ার আয়োজন করেন । বন্ধুটী ভ্রাতার এই কার্যে একেবারে খড়্গহস্ত ; রাগে কত কথাই বোল্লেন, "একালের ছোঁড়াগুলা কর্ত্তাব্যক্তিদের গ্রাহই কোর্তে চায় না, (তাঁর অনুমতি না নিয়ে মাছ আনা হোরেছিল তাই বোধ করি এ কথা),আবার এ কালের ছেলেগুলে। ভারি অমিতব্যয়ী,বাজেয়সা খরচ না কোল্লে এদের হাত যেন শুড় শুড় করে" ( ২।০ সিট পেয়ে ম ছ কেনা হোয়েছে সে কি সহ্য হয়?)। আহারান্তে বোললেন "ছেলেগুলো ইংরেজী শিখে দেশটা উচ্ছন্ন দিলে" (নিজে ইংরেজী জানেন না ) । এই ঘটনার পরদিন আমি আর উল্লিখিত মিতব্যয়ী বন্ধু এই দুজনে বেলা আটার সময় ট্রামে চেপে চৌরঙ্গীর দিক হতে ফিরে আচি। জোড়াসাঁকোর কাছে এসে আমাদের খাওয়া দাওয়ার গল্প আরম্ভ হোলো। আমি বল্লম "আগে আগে কলকাতায় এসে ভাল খাওয়া পাওয়া যেতো, এখন সে রামও নেই সে অযোধ্যাও নেই। যারা খাওয়াবে তারা সকলেই এখন কলিকাতা ছাড়া, তবু যে মধ্যে মধ্যে এখানে এলে ভাল খাওয়া যায়, সে কেবল এক তোমার জন্যে, তুমি ত আর কিছু বন্ধুবান্ধবকে খারাপ খাওয়াতে পার না ; এজন্যে পয়সা ব্যয় করতেও তোমার আপত্তি নেই।
নিজেই ভাল জিনিস সন্ধান কোরে খাওয়া দাওয়ার উদ্যোগ করা এ গুণটী তোমার যেমন, আর কারে। সে রকম দেখতে পাইনে।" বন্ধু যেন স্বর্গ হাতে পেলেন ; অমনি তাঁর মুখ খুলে গেল, আমার হাত দুটি ধোরে সবিনয়ে বোল্লেন,"দেখ ভাই, তোমাদের খাওয়ানের জন্যে আমার বড়ই আগ্রহ হয়। এক সঙ্গে যে পাঁচ দিন আমোদে কাটান যায়, সেও পরম সুখের কথা। টাকা কড়ি আর ত সঙ্গে যাবে না, কিন্তু এ কথা বোঝে কান?" - দেখ তে দেখতে ট্রাম গাড়ি ঘড় ঘড় শব্দে নূতন বাজারে এসে পড়লো। বন্ধুবর চাঁংকার কোরে বল্লেন, "বাঁধে।"? গাড়ি না বাঁধলে ভায়া নামতে পারতেন না, সুতরাং তাঁর নামবার আবশ্যক হোলে তার জন্যে অনেকথানি আয়োজন কোৰ্ত্তে হোতো। অনেক সোর গোল কোরে তিনি নেমে পড়লেন; তারপর আমার হাত ধোরে টানাটানি। আমি বল্লু "ন।মৃতে হবে শোভাবাজারের মাড়ে,এখানে হঠাৎ তোমার কি কাজ পোড় গেল? ভায়া কোন দিকে কাণ না দিয়ে আমার হাত ধোরে বাজারের ভিতর প্রবেশ কল্লেন, এবং খেজুরগাছের মাথার মত মাথাওয়ালা এক ডজন গল্লাচিংড়ি, দুৰ্ম্ম, ল্য ফুলকপি এবং কড়াইশুঁ টী প্রভৃতিতে তিন টাকার বাজার নিয়ে বাসার দিকে চল্লেন। শুধু আমি অবাক্ নই, বাসায় উপস্থিত হোলে সকলেই অবাক্ হোয়ে গেলেন ! রাত্রে মহাধূমে পোলাও কালিয়ার বন্দোবস্ত হলো। সেদিন দাদার মিতব্যয়িতার পরিচয় পেয়ে অমিত্যবায়ী ছোট ভাইটা যে সকল স্বগত উক্তি কোরেছিল, তা প্রকাশ্যে বল্লে বোধ হয় আমোদ আর একটু বেশী হোতো। যাহোক ইংরাজী না শিখলে দেশ কি রকম কোরে উদ্ধার হয়, রাত্রে দাদার কাছে সে তার অতি সুন্দর পরিচয় পেয়েছিল। সেই অনেক দিনের পুরাণো কথা আজ খুলে লিখলুম, এখন বন্ধুবিচ্ছেদ না হোলে বাঁচি। যা হোক শতশত প্রশংসা পত্র দেখিয়েও জ্যোতিষী মহাশয়ের আশ মিটলো না। শেষে বাক্সের ভিতর হোতে দু তিন খানা,"অমৃতবাজার" বের কোরে আমাকে দুই তিনটে জায়গা পোড়তে দিলেন। পাশে লাল
দাগ দেওয়া-- দেখলুম, হরিদ্বারে কুম্ভ মেলার সময় ইনি নিজে খরচ পত্র কোরে অনেক গরীব সাধু সন্ন্যাসীকে আহার দিয়েছিলেন ও এতদ্ভিন্ন প্রচুর বস্ত্র অর্থাদিও দান করেছিলেন, এই কথা কে অমৃতবাজারে টেলিগ্রাম কোরেছে ; ইনি সেই সমস্ত টেলিগ্রাম সংগ্রহ কোরে রেখেছেন।
জ্যোতিষীর কাছে মহারাজ ঠাকুর বাহাদুর ও কুমার বাহাদুরের ফটো দেখতে পেলুম ; উজ্জ্বল, প্রসন্ন, শান্তিপূর্ণ বদন এবং তাতে পুরুষ সুলভ কাঠিন্যের অভাব দেখে মনে আপনি একটা প্রীতি এবং শ্রদ্ধা ভক্তির ভাব
এসে উপস্থিত হোলো। কত দিন স্বদেশ দেখি নি - স্বদেশীর মুখ পৰ্য্যন্ত যেন ভুলে গিয়েছি। আজ এই ছবি দুখানি দেখে ভারি আনন্দ লাভ কোল্লুম। এই প্রবাসের মধ্যে বোধ হোলে। এঁর। আমার পরম আত্মীয়। কোথায় মহৈশ্বৰ্য্য-সম্পন্ন সম্ভ্রান্ত রাজপরিবার, আর কোথায় সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী ; আমি কিন্তু আমাদের মধ্যে এই গভীর ব্যবধান ভুলে গেলুম। শুনেছি স্বর্গে মানুষে মানুষে ব্যবধান নেই; এই দ্বারদেশে কি তারই পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে ?
সন্ধ্যার সময় একটু বাইরে বেড়াতে গেলুম। সন্ধ্যার বাতাসে এবং স্নিগ্ধতার মধ্যে শরীর অনেকটা ভাল বোধ হোলো; আস্তে আ.ত পাণ্ডুকেশ্বর মন্দির এবং আরও গোটাকতক ভাল মন্দির দেখে এলুম। দেখতে দেখতে আকাশে মেঘ কোরে এল; আমরা কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘরের মধ্যে -াশ্রয় নিলুম । অল্পক্ষণের মধ্যেই ভয়ানক শিলাবৃষ্টি আরম্ভ হলো, শীতে আমরা আড়ষ্ট হোয়ে পড়লুম - ভাগ্যি আমরা আগেকার সেই দোকান ঘরটা ছেড়ে এসেছি তাই রক্ষা, নতুবা আজ মারা পড়ার আটক ছিল না। যতক্ষণ জেগেছিলুম বৃষ্টি একবারও থামেনি। রাত্রে আর কিছু আহারাদি হোলো না, বেশ আরামের সঙ্গে রাত কাটান গেল । স্বামীজি বোলে ছিলেন, আগামী কল্যই আমরা বদরিকাশ্রমে পৌঁছুতে পারবো। সেই কথা শুনে পর্য্যন্ত আমার বড় আনন্দ হোয়েছিল! এত কষ্ট, এত পরিশ্রম,
বদরিকাশ্রমে ।
এত কঠোর ড্যম কাল সমস্ত সার্থক হবে ! যাঁরা নিষ্ঠাবান্ ধাম্মিক, ভগবানের চির প্রসন্নতাই যাঁদের লক্ষ্য, এবং ভক্তিকেই যার। জীবনপথের অমূল্য পাথেয় বোলে ধ্রুব জেনেছেন, তাঁদের শান্তিলাভ অসম্ভব কথা নয়। কিন্তু আমার লক্ষ্য, আমার উদ্দেশ্য যে কিছুই নেই ! বদরিনারায়ণের মধুর সত্ত। কি আমার হৃদয়ের দারুণ পিপাসা নিবারণ কোর্ভে পারবে ? দেখি যদি সাধুর এই অভীষ্ট মন্দিরে, এই সনাতন ধর্ম্মের পীঠতলে একটু শান্তি, একটু তৃপ্তি যুগান্তব্যাপী মহাগ্ল্যের মধ্যে লুকারিত থাকে ! আশা, উৎসাহেএবং স্বপ্ন-জাগরণে সমস্ত রাত্রি কেটে গেল ।
২৯ মে শুক্রবার, - মনের মধ্যে একটা ইচ্ছা ছিল, খুব ভোরে বের হোয়ে পোড়তে হবে, তাই রাত থাকতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। তখনই আমরা বাত্রার আয়োজন কোরে নিলুম। আজ আমাদের যাত্রার অবসান। আনন্দে, উৎসাহে এবং সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা নিরাশায় হৃদয় পূর্ণ হোয়ে যাচ্ছিল। কোন কবি লিখেছেন, "আশ। যার নাই তার কিসের বিষাদ" - আমারও কোন বিষাদ ছিল না, কিন্তু যোন্টি ঋষিগণ যে সুখের আস্বাদনে বিমুগ্ধ, আমার সে মুখ কোথ..? -আজ হিমালয়ের পাষাণমণ্ডিত স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে আমাদের শ্যামল, নদনদী-শোভিত, সমতল মাতৃভূমির দিকে চক্ষু ফিরিয়ে মনে মনে ভাবলুম, "কোথা মুখ, কোথ। তুমি ? মাতা বঙ্গভূমি, তোমাকে ত্যাগ কোরে আজ ভূতলে অতুলতীর্থ বদরিকাশ্রমের দ্বারদেশে দাঁড়িয়ে আছি। সুখের সন্ধানেই এতদূর এসেছি ; সুখ নাই মিল্ক, শান্তি কৈ ?" হায়, মনে সে পবিত্রতা নেই, চিত্তের সে দৃঢ়তা নেই, প্রাণের সে একাগ্ৰত। নেই, কিসে হৃদয়ে শান্তি পাব ? এত পরিশ্রম, জীবনের এই কঠোর ব্রত সমস্ত নিষ্ফল হোলো।
আমাদের আগে আগে কয়েকজন সাধু অগ্রসর হোচ্ছিলেন, তাঁদের আনন্দ, তাঁদের প্রাণের উচ্ছাস দেখে আমার হিংস। হোতে লাগলো। বদরিনারায়ণের উপর পূর্ণ বিশ্বাসে সোৎসাহে তাঁরা অগ্রসর হোচ্চেন, বিশ্বাসরত্ন-অপহৃত হতভাগ্য আমি তাঁদের সেই সুখস্বর্গ-চ্যুত! সত্য বটে জীবনে একদিন এমন সুখ ছিল, যার তুলনায় অন্য সুখ কামনা কোর্তুম না, কিন্তু তা হারিয়েছি বোলেই কক্ষচ্যুত গ্রহের মত দেশে দেশে ঘুরে আজ গিরিরাজ্যে অনন্ত হিমানীর মধ্যে প্রাণের যাতনা বিসর্জন দিতে এসেছি ; দেবতায় ভক্তি নেই, চির প্রেমময়ের মঙ্গলময়ত্বেও বিশ্বাস নেই, তবু আশা, যদি প্রাণ শীতল হয়! জানি ধৰ্ম্ম রাজ্যে, প্রেমের রাজ্যে, স্বর্গরাজ্যে 'যদি'র প্রবেশ নিষেধ; তাই আশার মধ্যে নিরাশা, আনন্দের মধ্যেও নিরানন্দ ভাব প্রবেশ কোরতে লাগলো; তবুও স্বামীজীর আনন্দ, বৈদান্তিকের উৎসাহ এবং অন্যান্য যাত্রীদের প্রফুল্ল মুখ দেখে হৃদয় প্রসন্ন হোয়ে উঠলো, প্রাণের দীনত। ও আশার ক্ষীণতায় এই রকম ধার করা উৎসাহ ও আমোদ ঢেকে খুব স্ফভি কোরে অগ্রসর হোতে লাগলুম ।
আমাদের আগে পিছে আরও যাত্রী যাচ্ছিল; কিন্তু "সরা তিন টিতে একদল । গথে যেতে অনেকগুলি কুঁড়ে ঘর রাস্তার ধারে নজরে পড়লো; এ সকল ঘর পাহাড়ী লোকের বাঁধা, তাব; এ সকল জায়গা হোতে কাঠ দুধ প্রভৃতি নিয়ে বদরিনারায়ণ বিক্রী কোরে আসে; এতে তাদের বেশ উপার্জন হয়। পাণ্ডুকেশ্বর ছেড়ে আর এক মাইল উপরে এখনও বাস কবার যো হয় নি, সমস্ত বরফে ঢাকা। এতদিন দূর হোতেই পর্ব্বতের গায়ে চূড়ায় বরফের স্তূপ দেখে এসেছি, সময়ে সময়ে বরফের ভিতর দিয়ে যেতে হোয়েছে বটে, কিন্তু সে অল্প সময়ের জন্য, এবং তাতে বরফের ভিতর দিয়ে চলার অসুবিধা ভোগ কোরতে হয় নি ! আজ দিগন্তবিস্তৃত শ্বেত তুষারের রাজ্য দিয়ে যেতে লাগলুম ;
ইতিপূর্ব্বে যে পথ দিয়ে চোলেছিলুম, কিছুদিন আগে যে সকল জায়গা বরফে ঢাকা ছিল, গ্রীষ্মকাল আসায় তা গোলে পথঘাট সব বেরিয়ে পোড়েছে; কিন্তু এ স্থানটি অনেক উচ্চ, তাই এখানকার বরফ আজও গলে নি। পায়ের নীচে কতক জায়গায় বরফ কদমময় হোয়েছে মাত্র। শতের প্রারম্ভে নারিকেল তৈল যে রকম জমে, অনেকটা সে রকম; কিন্তু খানিক উপর হোতে উর্দ্ধতম প্রদেশে যে বরফ আছে, তা জমাট গাযাণ স্তূপের মত। সৃষ্টির শেষ দিন পর্য্যন্ত তা সেই এক ভাবেই থাক্বে বোলে বোধ হয়। শীতের সময় বিষ্ণুপ্রয়াগ, কোন কোন বার যোশীমঠ পর্য্যন্ত, বরফের মধ্যে ডুবে থাকে, গ্রীষ্মকালে নীচের বরফ জল হোয়ে নদীস্রোতের বৃদ্ধি করে ; সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির একটা নবজীবন, একট। নূতন মাধুরী পরিস্ফ'ট হোয়ে উঠে।
পাণ্ডুকেশ্বরের একটু উপরের বরফ এখনও গলেনি, আরও পরে জায়গায় জায়গায় গোলে পথ দেখিয়ে দেবে ; তাতে সমস্ত পথ যে বেশ সুগন হবে তা নয়, তবে এই শ্বেতরাজ্যের মধ্যে পথের একটা মোটামুটি হিসাব পাওয়া যাবে। মরুভূমির মধ্যে দিয়ে ঢোল্তে শুনেছি পথভ্রান্ত হোতে হয় ; আমি তেমন নামজাদা মরুভূমির মধ্যে কখন পড়ি নি, কিন্তু এই রকম রাজ্যের মধ্যেও পথহারা হবার সম্ভাবন। কম নয়। যে দিকে তাকান যায় শুধু শাদা, এক রকম বরফ-মণ্ডিত, কোন্ দিক বিয়ে কোথায় পথ গেল একে ত তা ঠিক কোরে নেওয়াই মহাবিপদের কথা, তার উপর এমন অসংলগ্ন পথ যে পদে পদে পথ ভ্রান্তির সম্ভাবনা। অন্য কারও পথের ঠিক থাকে কিনা তা বলতে পারিনে, কিন্তু আমরা তিনটি প্রাণী ত প্রতি মুহূর্ত্তে ভাবতে লাগলুম, এইবার বুঝি পথ হারিয়েছি। এমন কি অন্যান্য চিন্তা দূর হোয়ে এই দুর্ভাবনাটাই বেশী হোয়ে উঠলো ।
স্বামীজি ও অচ্যুত ভায়। কথাবার্ত্ত। চালাতে লাগলেন।
কিন্তু সেদিকে মন ছিল না। আমি তখন ঘোর চিন্তায় অভিভূত হোয়ে চোল ছিলুম, বরফের এই অভিনব রাজ্যে এসে আমি একেবারে অবাক্ হোয়ে গিয়েছি ; সঙ্গে সঙ্গে আমার অতীত জীবনের দুই একটি কথা মনে পড়েছিল। শৈশবের সেই কোমল হৃদয়, সরল মন, অকপট বন্ধুত্ব এবং সকলের প্রতি গভীর বিশ্বাস ও ভালবাসা, সে কেমন সুন্দর কেমন মোহময় ছিল । তখন আমাদের ক্ষুদ্র গ্রামখানি আমার পৃথিবী ছিল; তার প্রত্যেক বৃক্ষপত্র, উন্মুক্ত ক্ষেত্রে ভারাবনত শশীর্ষ এবং দূর প্রবাহিত বায়ু-তরঙ্গের অবিরাম গতি যেন কতই স্নেহ ঢেলে দিত। ক্রমে বড় হোয়ে বিদেশে কলিকাতায় পোড়তে গেলুম, পবিত্ৰচেতা মধুর-হৃদয় কত সঙ্গী লাভ হলে। এবং একখানি প্রেমপূর্ণ নিতান্ত নির্ভরতাপূর্ণ হৃদয় আমার জীবনের সুখ দুঃখের সঙ্গে তার জীবনের সুখ দুঃখ নিশিয়ে নিলে । নয়ন সমক্ষে পৃথিবীর নূতন শোভা দেখতে পেলুম, এবং তার অভিনব মাধুর্য্য হৃদয় পূর্ণ কোরে দিলে ! তখন হৃদয়ে কত বল, মনে কত সাহস, প্রাণে কত বিশ্বাস। মনে হোতো পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যা মানুষের এই দুখানি হাত দুখানি হাত সুসম্পন্ন কোরতে না পারে। জীবনের সেই পূর্ণবসন্ত কে পূর্ণবসন্ত কে ^? - বসন্তের জ্যোৎস্নাধৌত রাত্রে আম্রঙ্কুলের সৌরভে পরিপূর্ণ একটি ক্ষুদ্র উপবন প্রান্তে প্রণয়ী ও প্রণয়িণীর কোমল মিলন, সেই অভিমান ও আদর, হাসি ও অশ্রু, সে সকল কোথায় ? কাৰ্যক্ষেত্রে বিপুল পরিশ্রম, লোকহিতে গভীর একাগ্রত। - সে এখন স্বপ্ন বোলে মনে হয় ! ইহজীবনের মধ্যেই যেন একটা বৃহৎ ব্যবধান। তারই এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আজ হা হতাশ কোচ্ছি! তখন এক দিনও কি কল্পন। কোরেছি আজ যেখানে এসেছি, জীবনে একদিন এমন স্থানে আমার পদধূলি পোড়বে। কিন্তু আজ এই অভিনব প্রদেশে, স্বর্গের শূন্য সোপানতলে পদার্পণ কোরে আমার সুখময় শৈশব ও যৌবনের মধুর স্মৃতি হৃদণ্ডের জন্যে মনে
পোড়ে গেল। আমার চিরনির্ব্বাসিত অশান্ত হৃদয় সেই কুশুমকুঞ্জবেষ্টিত শান্তিময় আলয়ের কথা ভেবে চঞ্চল হোরে উঠলো; অন্যের অলক্ষিতে দু বিন্দু অশ্রু মুছে গাছপালাবৰ্জ্জিত দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে তারাবৃত অলকনন্দার ধারে ধারে চোলতে লাগ্লুম ।
পাণ্ডুকেশ্বর ছেড়ে যে সব কুটীর দেখতে দেখতে এলুম, সেগুলি বুঝি আমার সুকোমল প্রভাত-জীবনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল। বাস্তবিক কুটীরগুলি আনন্দপূর্ণ, প্রকৃত সুখের বাসস্থান : পাহাড়ীরা এখানে সপরিবারে বাস কোচ্ছে। সকালে কেহ কাঠ কাটছে, কেহ আটি বাধছে, কেহ রুটি তৈয়েরী কোরতে ব্যস্ত, কেহ বা উদরের তৃপ্তিসাধনে নিবিষ্টচিত্ত। পাহাড়ী যুবতীর। কেহ গান গাচ্ছে, কেহ ছোট ছোট ছেলে মেয়ের কাছে দাঁড়িয়ে যাত্রীর দল দেখছে ; সরল, উন্নতদেহ, প্রফুল্লমুখে কোমল হাসি। যাত্রীর দল দেখে বালিকা, যুবতী, এমন কি নিতান্ত শিশুর দলও "জয় বদরি বিশাল কি জয়!" বোলে আনন্দধ্বনি কোর্ছে, এবং যাত্রীদের কাছে এসে কেহ বা একটা পয়সা, কেহ বা
২. সূচ সূতা চাচ্ছে। দেখলুম এর অনেকেই সূচ সূতার প্রার্থী ; বোধ হয় এই দুটি জিনিষের এরা বেশী ভক্ত। সকল বালক বালিকাই হৃষ্টপুষ্ট ও বলিষ্ঠ ; যুবতিগণের দেহ সবল ও দীর্ঘ। প্রকৃতি যেন নিজ হস্তে অতি সহজ ভাবে সস্ত অঙ্গের পূর্ণতা সম্পাদন কোরেছেন । বিশেষ তাদের মধ্যে এমন একটা জীবন্ত ভাব দেখলুম, যা আমাদের ম্যালেরিয়াগ্রস্ত বঙ্গদেশের প্লীহা ও যক্বং প্রপীড়িত অন্তঃপুরে কখনই দৃষ্টিগোচর হয় না। বোধ হোলে। এদেশে কোন রকম পীড়ার প্রবেশাধিকার নেই । এমন যে মলিন বস্ত্র ও ছিন্ন কম্বল পরিহিত ছেলে মেয়ের দল, তবু তাদের গোলাপী আভাযুক্ত সুন্দর মুখ দেখলে কোলে তুলে নিতে ইচ্ছে হয়। কতবার সতৃষ্ণ নয়নে তাদের মুখের দিকে চেয়ে দেখলুম। এখানে আর একটু তফাৎ দেখ ; দেশে থাকতে যখন আমরা
রেলের গাড়ীতে কি নৌকাযোগে কোথাও যেতুম, প্রায়ই দেখা যেত, পথের দু পাশে রাখাল বালকেরা "পাচনবাড়ী" তুলে আমাদের শাসাচ্ছে কখন বা ছোট হাতের মুষ্টি তুলে, কখন কখন বিকট মুখভঙ্গী কোরে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে; কিন্তু এ দেশে চাষার ছেলের সে রকম কোন উপসর্গ দেখা গেল না; ছেলেমেয়েগুলি সকলেই কেমন পীর, শান্ত। কেহই কালীঘাটের কাঙালীর মত কাহাকেও জড়িয়ে ধরে না, কিম্বা গাড়ীর সঙ্গে সঙ্গে চৌরঙ্গার মোড় পর্য্যন্ত ছুটে আসে না। কেহ একটি পয়স। চাহিতেও সঙ্কোচ বোধ করে; হয়ত মুখের দিকে একটী বার চেয়ে ঘাড় নীচু কোরলে। যদি তার মনের ভাব বুঝে তার হাতে একটি পয়স। দেণ্ড ত উত্তম, না দেও দাঁড়িয়ে থেকে চলে যাবে। আমা দের বঙ্গভূমি ভিক্ষুকের আর্তনাদে ও কাতর প্রার্থনায় পরিপূর্ণ; তাতে দাতাদিগের কর্ণও বধির কারে ফেলে, সুতরাং আমাদের বঙ্গীয় দাতাগণ যদি এদেশে আসেন ত এইসব বুভুক্ষিত বালক বালিকাদের নীরব প্রার্থনা প্রতিপদেই অনাদৃত হয়! কিন্তু যে সকল বাবু সন্ন্যাসী এ পথে পদার্পণ করেন, তাঁদের মধ্যে বাঙ্গালীর সংখ্যা নিতান্ত কম, 'বং তাঁরা গরীবের কাতর প্রার্থন। শুবার আগেই যথাসাধ্য দান নন। অতএব দাতার দানে যেমন বিরক্তি নেই, গ্রহীতার ভিক্ষা গ্রহণেও সেইরূন অপ্রসন্নতার সম্পূর্ণ অভাব দেখা গেল। যে নিতান্ত ভিখারী, যার পয়সার অত্যন্ত প্রয়োজন, সেও একবারের বেশী দু বাব চায় না। তবু আগাদের দশে দুষ্ট মি-জ্ঞাপক বিশেষণ যোগ কোর্তে হোলেই লোকে বলে "পাহাড়ে মেয়ে" "পাহাড়ে সয়তান" ইত্যাদি। এই পাহাড়ের বুকের মধ্যে এসে, পাহাড়ে ছেলে মেয়েদের সঙ্গে আলাপ কোরে পাহাড়ীর প্রতি এরকম কোপ।টাক্ষ অকারণ বোলে মনে হোলো।
আরও কিছু অগ্রসর হোতেই দেখি যে পাহাড়ের দেবকুটীরের চি একেবারে অদৃশ্য হোয়ে গেছে । চারিদিকে সাদা চিহ্ন ছাড়া আর কিছু
দেবার নেই; কে যেন সমস্ত প্রকৃতিকে দুগ্ধফেননিভ বস্ত্রখণ্ডে মুড়ে রেখেছে ; পায়ের নীচে পুরু বরফ তেমন কঠিন নর; তার মধ্যে কদাচিৎ দুটো একটা জায়গায় বরফ গলাতে পাথরের কৃষ্ণবর্ণ বেরিয়ে পড়েছে; সেই গুলি লক্ষ্য কোরে পথ চল্তে লাগলুম। ইচ্ছা তাড়াতাড়ি চলি, - কিন্তু ভয়ানক কাদার মধ্যে দিয়ে যেতে যেমন জোর পাওয়া যায় না, এক পা তুলতে আর এক পা বোসে যায়, আমাদের অবস্থা তদ্রূপ ; তবে এই নে, কাদার মধ্যে থেকে পা তুলতে ভারি ও আটালো বোধ হয় -- বরকে সে রকম কোন উপসর্গ নেই। প্রথমে মনে হোলে। আমরা দইয়ের উপর দিয়ে চোল ছি ; ইচ্ছে হোলে। খানিকটে তুলে গালে ফেলে দিই। কিন্তু স্বামিজীর কাছে এই অভিপ্রায় ব্যক্ত কোতেই তিনি এ রকম অশিষ্টাচরণ করার বিরুদ্ধে অনেক যুক্তি প্রদর্শন কোরে "প্রাপ্তে তু ষোড়শে বর্ষে পুলঃ মিত্রবদাচরেং" এই চাণক্য-নীতির মর্যাদা রক্ষা কোলেন, এবং পাছে বরফ খাওয়া অন্যায় বোল্লে এ যুক্তি তর্কের দিনে তাঁর "মিত্রবদাচরেং" এর প্রতি যষ্টে সম্মান প্রদর্শন না করি, এই ভয়ে তিনি বোল্লেন "বরফ খেলে পেটের ব্যারাম হয় !" এই অদ্ভুত মত শুনে আমার হাসি এল ; মনে হোলে। আজকাল আমাদের দেশে যুক্তির আধিক্যের মধ্যে বড় একটা নূতনতর জিনিষ প্রবেশ করেছে- সেট। হোচ্ছে শরীরতত্ত্ব! ছেলে বেলায় শুনতুম, একাদশীতে নিরম্ব, উপবাস কোল্লে পুণ্যসঞ্চয় হয়, এখন শুনি একাদশী ত উপবাস কোলে শরীরের রস অনেকট। শুষ্ক হয় সুতরাং জ্বরের আর ভয় থাকে না ; আগে শুনতুম, কুশাসন পবিত্র জিনিষ সুতরাং কোন ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম উপলক্ষ্যে কুশাসন বসাই যুক্তিসঙ্গত, এখন শুনতে পাই, কুশাসন অপরিচালক - তাই শরীরজ বিদ্যুতের সঙ্গে ভূমিজ বিদ্যুৎ একীভূত হয়ে শরী রর অনিষ্টসাধন কোরতে পারে না। এইরূপে টিকি রাখা'হাতে আচমন করা পর্য্যন্ত সমস্ত অনুষ্ঠানেরই এমন এক অভিনব ব্যাখ্যা বের হোয়েছে, যাতে প্রমাণ করে দেহরক্ষার চেয়ে আর ধর্ম্ম নেই এবং যা কিছু আমাদের ক্রিয়া>
কর্ম্ম সকলই এই দেহরক্ষার জন্যে। এতে ফল হয়েছে এতে ফল হয়েছে এই যে, যুক্তিগুলি নিতান্ত উপহাসাম্পদ হোয়ে পোড়ছে। অবশ্যই স্বামীজির প্রদর্শিত উদরাময়ের আশঙ্কা সম্বন্ধে এত কথা খাটে না; তিনি বৃদ্ধ, পরিপাক শক্তির প্রতি হয় ত তাঁর আর তেমন বিশ্বাস নেই এবং "শরীরং ব্যাদিমন্দির!" এই কথাটার উপর হয় ত অবিচল বিশ্বাস। স্বামীজি আমাকে অনেক অনায় কাজ কোরতে বহুবার নিম্নে কোরেছেন, এবং তাঁর নিষেধ সত্ত্বেও সেই সকল অন্যায় কাজ কোরে দু বার বেশ ফলভোগও করেছি; কিন্তু বৃদ্ধের অতি সতর্কতা অনুসারে চলাট। সর্ব্বদা আমাদের পুষিয়ে ওঠে না। অতএব স্বামীজির নিষেধ বাক্যে মনযোগ না দিয়ে দুই এক দল। বরফ তুলে গালে ফেলে দিলুম ; দুর্ভাগ্যবশতঃ তৃপ্তিলাভ কোর্স্কে পাল্লম না। সেই বাল্যকালে যখন কলিকাতায় পড়তুম, তখন বৈশাখের দারুণ গ্রীষ্মে গলঘৰ্ম্ম হোয়ে কখন কখন দুই এক পয়সার বরফ কিনে প্রবল পিপাসার নিবৃত্তি করা যেত। পিপাস। এখনও তেমনই প্রবল আছে, কিন্তু বরফে ত আর তেমন তৃপ্তি বোধ হয় না ।
এই রকম ভাবে চার পাঁচ মাইল চলার পর আমরা "হনুমান টি"তে উপস্থিত হোলুম। এর নাম কেন যে 'হনুমান চটি' হোলে . বোলতে পারিনে। দোকানদার আজ মোটে চার পাঁচ দিন হোলো এসে এখানে দোকান খুলেছে ; তার আগে এ চটি বরফে ঢাকা ছিল। দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করায়, সে এই নামের রহস্য ভেদ কোরূতে পাল্লে না, কিন্তু চটিওয়ালা যে জবাব দিলে তাতে হাসি এল। সে বোল্লে, সে ছেলেমানুষ ( বয়স চল্লিশের কাছাকাছি !) তার এ সকল শাস্ত্রকথা জাবার বা বুধবার সময় হয় নি; বয়োবৃদ্ধ সাধুদের জিজ্ঞাসা কোল্লে ঠিক উত্তর মিলিতে পারে । এই চটি পর্ণকুটীর নয়। এই দারুণ বরফের রাজ্যে পাতার কুটীরে বাস রক্ত মাংসধারীদের পক্ষে অসম্ভব, এবং সে রকম সম্ভাবনা উপস্থিত হোলে প্রাণ নামক পদার্থটি দেহকে আগেই জবাব দিয়ে বোসে থাকে। চটিতে
ছোট পাথরের ঘর, তার একটা বারান্দা বের করা ; আর তার পাশেই সম্মুখ দিক খোলা আর একটা ছোট ঘর । শুনলুম, এ ঘর চটিওয়ালার নয়; সে এক দেবতার ঘর। দু চার দিনের মধ্যেই দেবতাটি নীচে হোতে এখানে এসে তাঁর সিংহাসন দখল কোরে বোসবেন এবং পুণ্যপ্রয়াসী যাত্রীদের আর এক দফা খরচ বাড়বে। এই চটিতে বেশী ঘর না থাকার কারণ জিজ্ঞাস। কোরে জালুম যে, এখানে কোন যাত্রীই থাক্তে চায় না। বদরিকাশ্রম' এখান হোতে মোটে চার মাইল; বদরিনারায়ণ ছেড়ে এই সামান্য দূরে এসে কে আরাম বিরাম বা আহারাদি কোরূবে ? আর নারারণ দর্শনার্থীর মধ্যেই বা কে সাত সমুদ্র তের নদী পার হোয়ে এসে এই চার মাইলের জন্যে এখানে বোসে থাকবে ? তীর্থযাত্রীদের মধ্যে এমন প্রায়ই দেখা যায় না, যার। মন্দিরের দ্বারে এসে দেবতার শ্রীমুখপঙ্কজ না দেখে সিঁড়ির উপর বোসে অপেক্ষা করে সুতরাং এখানে বেশী দোকান থাকার বিশেষ কোন দরকার নেই ; একখান। দোকান, তাই ভাল রকম চলে না। আর এই জন্যেই দোকানী তার দোকানে চাল ডাল বড় একটা রাখে না, কিছু পেড়া ( সন্দেশ ) বা পুরী সর্ব্বদা প্রস্তুত রাখে এবং দরকার হোলে প্রস্তুত কোরেও দিতে পারে; যাত্রীরা প্রায়ই এখানে ছোলাভাক্ত। পুরী ইত্যাদি জলখাবার কিনে নেয়। আমরাই বা এ সুযোগ ছাড়ি কেন ? এই দোকানে টাকা ভাজা পুরীর সুগোল পরিধি দর্শনে বৈজ্ঞানিক ভায়া বিশেষ লোলুপ হোয়ে উঠলেন। স্বামীজি বোল্লেন, "অচ্যুত, আজ আমাদের মহা আনন্দের দিন ; এমন দিন মানুষের ভাগ্যে বড় কম ঘটে, আর অল্পক্ষণ পরেই আমাদের জীবন সার্থক হবে। আজ মনের আনন্দে এখানে আহারাদির আয়োজন কর।" অচ্যুত ভায়াকে এ কথা বলাই বাহুল্য ; একে নিজের ষোল আনা ইচ্ছা, তার উপর স্বামীজির অনুমতি, ভায়। উৎসাহে হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন। তাঁর সে দিনের সেই উৎসাহ দেখে মনে হোয়েছিল ভায়া যদি ধৰ্ম্মকর্ম্মে সর্ব্বদা এমন উৎসাহ প্রকাশ কোরতেন
তা হোলে যতদিন তিনি দণ্ড ছেড়েছেন তাতে এতদিন ক্লষ্ণ বিষ্ণুর মধ্যে একজন হোতে পার্ত্তেন, কিন্তু তাঁর সে দিকে নজর নেই।
দীর্ঘকাল অনাহারে থাকায় এবং পথ পর্যাটনে ক্ষুধ। অসম্ভব রকম বৃদ্ধি হোয়েছিল। যথাবিহিত ক্ষুধা শান্তি কোরে এবং এক ঘণ্টার জায় গায় তিন ঘণ্টাকাল বিশ্রাম করার পর বদরিনারায়ণের পথের শেষ আড্ডা ত্যাগ কল্লম।
একটু অগ্রসর হোয়েই সম্মুখে একটা প্রশস্ত-দুরারোহ পাহাড় দেখলুম। আগাগোড়া কঠিন বরফরাশিতে আবৃত ; যেন বিভূতিভূষিত যোগীশ্রেষ্ঠ, সরল, উন্নত, শুভ্র দেহ, ধৈর্য্য ও গাম্ভীর্য্যের যেন অখণ্ড আদর্শ । মস্তক আকাশ স্পর্শ কোরছে, মধ্যাহ্নসূর্য্যের কিরণ তাতে প্রতিফলিত হোয়ে কিরীটের ন্যায় শোভা পাচ্ছে, নিম্নে স্তূপে স্তূপে বরফ সঞ্চিত হোয়ে পাদদেশ আবৃত কোরেছে। আমরা যেন বিস্ময় ও ভক্তির পুষ্পাঞ্জলি দেবার জন্যই তার পদতলে এসে দাঁড়ালুম।
কিন্তু আমাদের এই বিস্ময় ও ভক্তি শীঘ্রই ভয়ে পরিণত হোলো : শুনলুম, এই উন্নতপাহাড়ের পর প্রান্তে বদরিকাশ্রম। বা পাহাড় উল্লঙ্ঘন ন! কোলে আমাদের সেই পুন্যাশ্রম দেখবার অধিনেই ; কিন্তু এ পাহাড় অতিক্রম করা বড় সহজ কথা নয় । যাত্রার আরম্ভে সন্ন্যাসগ্রহণের প্রথম উদ্যমেই যদি এখন একটা বিশাল পৰ্ব্বত আমার অভীষ্ট সাবনের পথ আট্কে এই রকম ভাবে দাঁড়াতো, তবে এই সন্ন্যাসব্রত -- কঠোরতাই যার সাবনার অঙ্গ - তা গ্রহণ কোরতে সাহস কোত্তুম কিন!
একে ত ক্রমাগত সোজা উপরের দিকে উঠা, প্রতিপদে পা ভেঙ্গে এবং নিশ্বাস আটকে আসে, তার উপর পায়ের নীচে বরফের স্তূপ! যেখানে বরফ একটু গোলছে সেখানে যেন বালি রাশির উপর দিয়ে যাচ্ছি; প্রতি পদক্ষেপেই পা ডুবে যাচ্ছে । আবার যেখানে জমাট কঠিন বরক,
| pdf |
c40daf221b58edcb44fe4544ac2d5ddc67ebb43e | স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল মূলত দ্বিতীয় দিনেই। তৃতীয় দিনে স্থানীয় সময় অনুযায়ী ঘড়ির কাটা তখন ৩টা স্পর্শ করেনি। রবিচন্দ্রন আশ্বিনের ক্যারম বলে লাইন মিস করে বোল্ড হলেন লাহিরু কুমারা। সাথে সাথে একটা ইতিহাস লেখা হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেটে। মাত্র দ্বিতীয়বারের মত দেশের বাইরে তিন বা তার চেয়ে বেশি ম্যাচের সিরিজে জিতল ভারত। আগের জয়টি সেই ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে। নিউজিল্যান্ডকে সেবার তারা হারিয়েছিল ৩-১ ব্যবধানে।
এবারেরটি অবশ্য আরো বেশি মহত্মপূর্ণ হয়েই থাকল। শ্রীলঙ্কাকে তারা হোয়াইটওয়াশ করেছে ৩-০ ব্যবধানে। দেশের বাইরে এই প্রথম তিন বা তার বেশি ম্যাচের সিরিজে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাইয়ের কৃতিত্ব দেখালো দলটি। প্রত্যেকটি জয়-ই আরেকটিকে ছাড়িয়ে। প্রথমে গলে প্রতিপক্ষের মাঠে ভারতের রেকর্ড ৩০৪ রানের ব্যবধানে জয়, এরপর কলম্বোয় প্রতিপক্ষের মাঝে প্রথমবারের মত ইনিংস ব্যবধানে জয় (ইনিংস ও ৫৩ রানে), এবার পেল্লেকেলেতে সেটাকেও ছাপিয়ে মাত্র তিন দিনে ইনিংস ও ১৭১ রানের আরো বড় জয়ের হাসি।
এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার যোগ্যতাটাও প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। সেটা কিঞ্চিত সত্যও। পুরো সিরিজে তারা হতচ্ছড়া ব্যাটিং করেছে। সাথে চোট ছিল তাদের নিত্ত সঙ্গী। প্রতিপক্ষের এই দুর্বলতার সুযোগে ভারত আধিপত্য দেখিয়েছে বোলিং ও ব্যাটিং উভয় বিভাগেই। কাল বল হাতে আলো ছড়ান আশ্বিন ও মোহাম্মাদ সামি। দুজনে মিলে ১০০ রানে নেন ৭ উইকেট। আশ্বিন ৪টি, সামি ৩টি।
তৃতীয় দিনে নিজের প্রথম ওভারেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ¯িøপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন লঙ্কান দ্বিতীয় ইনিংস স্পেশাল্টি দিমুথ করুনারতœকে, আগের ম্যাচেই যিনি শতক হাঁকিয়েছিলেন। লঙ্কানদের ব্যাট হাতে আসা যাওয়া সেই শুরু। ১ উইকেটে ১৯ রানের যে স্কোরকার্ড দিনের শুরুতে ছিল কিছুক্ষণ পর তা হয়ে গেল ৪ উইকেটে ৩৯! এরপর ৬৩ রানের জুটিতে ভারতের জয়টাই কেবল বিলম্বিত করেন অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল ও নিরোশান ডিকভেলা। ইনিংসের সর্বোচ্চ রানও তাদের, যথাক্রমে ৪১ ও ৩৬। দুজনকেই আবার ফেরান দুই যাদবÑ ডিকভেলাকে উমেশ আর চান্দিমালকে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া কুলদিপ। বাকি সময়টা ভারতের কেটেছে জয়ের অপেক্ষায়, আর লঙ্কানদের লজ্জার পরিধি কমানোর প্রাণপোন চেষ্টায়। এর অবসান ঘটে আশ্বিনের সেই ক্যারম বলে লাহিরুর বোল্ড হওয়ার মধ্য দিয়ে। প্রথম ইনিংসে ভারতের ৪৮৭ রানের জবাবে প্রথমে ১৩৫ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর এবার চান্দিমালের দল গুটিয়ে গেল ১৮১ রানে।
ভারত : প্রথম ইনিংস ৪৮৭।
শ্রীলঙ্কা : ১৩৫ ও (ফলো অনের পর) ৭৪. ৩ ওভারে ১৮১ (আগের দিন ১৯/১); (করুনারতেœ ১৬, থারাঙ্গা ৭, পুস্পকুমারা ১, মেন্ডিস ১২, চান্দিমাল ৩৬, ম্যাথিউস ৩৫, ডিকভেলা ৪১, পেরেরা ৮, সান্দাকান ৮, ফার্নান্দো ৪*, কুমারা ১০; সামি ৩/৩২, অশ্বিন ৪/৬৮, উমেশ ২/২১, কুলদিপ ১/৫৬, পান্ডিয়া ০/২)।
ফল : ভারত ইনিংস ও ১৭১ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৩ ম্যাচের সিরিজে ভারত ৩-০তে জয়ী।
| web |
d3927a06d4f0ec3eb6113249db17e7cc6b4d11ad | আমরা এমন এক সমাজে বাস করছি, যে সমাজ ধনীকে আরও ধনী গরিবকে আরও গরিব করছে। এর প্রভাব রাষ্ট্রসহ সমাজ পরিবারেও পড়ছে। আর তাই নারী-পুরুষ বিতর্ক ক্রমেই ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রাত্যহিক জীবনে। এর ফলে নারীর প্রতি বাড়ছে বৈষম্য। অনেকে নারীকে ভোগের সামগ্রী ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারে না। ধর্ম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ আসন। কিন্তু ধর্ম নিয়ে যাদের কাজকর্ম তারাও ধর্মের অপব্যাখ্যায় নারীকে ভোগের সামগ্রী করে ফেলেছে। প্রতিনিয়ত নারীকে পুরুষের লালসার শিকার হচ্ছে। তিন বছরের শিশু থেকে কোনো বয়সের নারী এ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। কোন বয়স বা কোন পরিবেশে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে তা এখনও অমীমাংসিত।
প্রধানমন্ত্রী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি কার্যকর করেছেন। তাতেও কি ধর্ষণ বা নারীর প্রতি বিরূপ মানসিকতার পরিবর্তন হবে? সেটা অবশ্যই ভবিতব্য বলে দেবে। অনেকে নারীর পোশাককে দায়ী করছে। তাই যদি হবে, তাহলে তিন বছরের শিশুর কী পোশাক পরা উচিত সেটাও প্রশ্নের বিষয়। আবার মাদ্রাসাগুলোতে কী নির্মমভাবে ছোট ছোট ছেলেরা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়, তা অনেকেই দেখে থাকবেন। আসলে আইন দিয়ে কিছুই রোধ করা সম্ভব নয়। নারী-পুরুষ দুজনের প্রতি থাকতে হবে শ্রদ্ধাবোধ। যতদিন এ শ্রদ্ধাবোধ ও নৈতিকতা পরস্পরের প্রতি সৃষ্টি না হবে ততদিন এমন ঘটনা ঘটবে। ফাঁসি বা কারাদ-ে খুব একটা লাভ হবে বলে মনে হয় না। মৃত্যুর পর যে শাস্তি আর জীবিত অবস্থায় জেলখানার কয়েদিদের যে শাস্তি আমরা শুনতে পাই, মানুষ তাতে নিজেকে কতটা শুদ্ধ করতে পেরেছে! যে যে অবস্থায় আছে সে সেখান থেকেই শুরু করছে দুর্নীতি। কোনোভাবেই দুর্নীতি কমছে না। এটাও নারী নির্যাতনের একটি ধাপ। টাকা ছাড়া বা ক্ষমতা ছাড়া থানায় কোনো মামলা নেওয়া হয় না। তাতে করে দেয়ালে পিঠ না ঠেকা পর্যন্ত কেউ আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পায় না।
পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা নারীকে পরোক্ষভাবে তৈরি করে ফেলেছে পণ্যে। হিজাব থেকে শুরু করে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, সাবান, স্নো, ক্রিম এমনকি কনডমের বিজ্ঞাপনেও নারীর প্রতিভার চেয়ে গ্ল্যামারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। মেয়ের গায়ের রঙ কালো বলে বাবার আক্ষেপ আমার যদি একটা ছেলে থাকত! কথাটা মেয়ের কানে যেতেই ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ব্যবহার করে মেয়ে সাদা হয়ে যায়! তারপর বাবার মনের আশা পূর্ণ করে! এ হলো আমাদের মানসিকতা। প্রতিভার চেয়ে গ্ল্যামারকে কতটা প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে নির্বোধ নারী সেটা বুঝতে পারছে না। বুঝলেও নিজের বিবেককে প্রতিষ্ঠা ও টাকার কাছে বিক্রি করছে। এসব আচরণ থেকে আমাদের অনেক আগেই বের হয়ে আসা উচিত ছিল। কিন্তু এটা না করে আমরা বুর্জোয়া শ্রেণির কাছে নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছি। নারী স্বাধীনতার নামে বেলেল্লাপনা ও অশ্লীলতায় মেতে উঠি। এ মানসিকতা থেকে আমরা বের কেন হতে পারি না এটাও একটা বড় প্রশ্ন। নারী প্রকৃতিগতভাবে পুরুষের তুলনায় শক্তি ও সাহসে কম হলেও মেধা মননে কোনো অংশেই কম নয়। সেটা আমরা সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালত এমনকি মাটি কাটা বা ইট মাথায় করে নেওয়ায় নারীর সে কর্ম দেখি।
অনেকে পোশাককে দায়ী করে। সেটাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অনেক মার্কেট বা ইউনিভার্সিটি ছুটির পর কিছু কিছু মেয়ের পরিহিত পোশাক দেখে রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক দাঁড়িয়ে ঢোক গেলে। এটা আমার নিজের চোখে দেখা। রিকশাচালককে তখন কোথাও যেতে বললে সে যেতে চায় না। সটান দাঁড়িয়ে থাকে, মেয়েদের দেখতে! আসলে লিখলে অনেক কিছু লেখা যায়। তাতে অনেকে হয়তো রেগে যাবেন আমি নারী বলে এসব লিখছি বলে। বাংলাদেশের সিনেমার নায়ক-নায়িকা তাদের সন্তানকে এ পেশায় জড়িত করেন কজন! সেটাও আমরা অনেকেই জানি এবং বুঝি। কেউ চায় না তার প্রিয়জন অন্য পথে চলে যাক।
ঘটা করে নারী দিবস পালন করি, কেন করি তা আমরা জানি না। আমরা শুধু অনুকরণ করি। নারীকে মানুষ থেকে নারীতে রূপান্তর করা আর পুরুষ মানুষ হয়েই থাকে। প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত তার সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। একটা বয়সের পর সন্তান শাসন না মানলে সেখানে বাবা-মায়ের কিছুই করার থাকে না। সেটা ভিন্ন বিষয়। এ লেখাটা সবার জন্য নয়। যারা মেয়েদের ছোট চোখে দেখে বা লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায় তাদের জন্য। আপনারা ভাবেন, আপনাদের ঘরেও মা বোন সন্তান আছে। মহাকাল কাউকে ক্ষমা করে না। আজ আপনি যা করছেন অন্য মেয়ের সঙ্গে, সেটা আবার আপনার ঘরেই ফেরত আসবে। পৃথিবী কাউকে ঋণী করে রাখে না। এখানেই সব ঋণ পরিশোধ করে যেতে হবে। সবার সুবুদ্ধি হোক।
| web |
8d7a3d27688f82dda666bdd8fefe04c7397866e2 | কিশোরগঞ্জের ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি, প্রতিষ্ঠাতা সহ সভাপতি ও ভৈরবের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব কাজী মতিউর রহমান আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃতুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বার্ধক্যজনিত কারণে ভৈরবের ঘোড়াকান্দা এলাকার নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মরহুম আলহাজ্ব কাজী মতিউর রহমান, স্ত্রী, ৪ ছেলে, ৬ মেয়ে, নাতি-নাতনি, আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ২টায় ভৈরব কে. বি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে আলহাজ্ব কাজী মতিউর রহমানের মরদেহ ভৈরবপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বলিউড পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজের প্রস্তাবে মিমের না!
মরহুমের আত্নার আত্নার মাগফেরাত কামনায় জানাজায় উপস্থিত ছিলেন ভৈরব পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেণু, ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হুমায়ূন কবীর, ভৈরব শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি এস. এম বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ প্রমুখ।
এর আগে ভৈরব রোটারি ক্লাব ও চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে আলহাজ্ব কাজী মতিউর রহমানের কফিনে পুষ্পার্ঘ অর্পন করা হয়।
তিনি ভৈরব রোটারি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক কাজী মাসউদ-উর রহমান রনি'র পিতা।
| web |
a8f0d1484f29b5626f78fb6f1fd8b943d831cb10 | বিশেষ (নাটোর) প্রতিনিধিঃ ঈদের দিন মুক্তি পাচ্ছে লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নুরজাহান শিল্পীর নতুন মিউজিক ভিডিও "প্রেমের পাখি"। গানটি লিখছেন ফারহান আহমেদ রাজু।
সুর ও সঙ্গীত পরিচালন করেছেন খ্যাতনামা মিউজিক ডিরেক্টর শান শায়েক। গানটির ভিডিও পরিচালনায় ছিলেন নির্মাতা আসাদ আফজাল।
প্রযোজনা ও পরিবেশনায়ঃ আগামী শুক্রবার ঈদের দিন প্রকাশ পাবে এর অফিশিয়াল ইউটিউব আর্ট চ্যানেল থেকে প্রকাশিত হবে। এছাড়াও টিকটক, আইটিউনস, এ্যাপেল মিউজিক, ড্রেজার, ম্পটিফাইসহ আরও ১৫ টি ইন্টারন্যাশনাল প্লাটফর্ম এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।
নতুন এই গান প্রসঙ্গে সংগীত শিল্পী নুরজাহান শিল্পী বলেন,'অসম্ভব সুন্দর কথামালায় গানটি লিখেছেন ফারহান আহমেদ রাজু এবং শান শায়েক গানের কথা ও ভাবগভীরতায় একান্ত হয়ে চমৎকার সুর করেছেন। পাশাপাশি সঙ্গীত পরিচালনায় গানটি ভিন্ন এক মুগ্ধতা তৈরি করেছে। আমিও চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চটা দিয়ে গাইতে। আশা করছি, গানটি সবার মধ্যে ভিন্ন এ অনুভূতি জাগাবে।
তিনি আরও বলেন, 'অনেক সময় ব্যয় করে যত্ন নিয়ে গানটি করেছি। গানের মর্ম-ভাবকে রূপকল্পে নিয়ে নান্দনিক মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন আসাদ আফজাল। এতে শিল্পীর প্রাণবন্ত অভিনয় সবার মনে ভিন্ন কিছু তৈরি করবে বলে আমার বিশ্বাস।
ভিডিও নির্মাতা আসাদ আফজাল জানান, লন্ডনের বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে গানটির চিত্রায়ন করা হয়েছে'।
| web |
3f8df1e14c4c7953e8715d8021cf81a4034d2e14 | নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিকআপের ধাক্কায় পঞ্চগড়ে ফিরোজ আলম (৩০) নামে এক মোটরবাইক আরোহী নিহত হয়েছেন। একই দুর্ঘটনায় মোটরবাইকে থাকা আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা সদরের পিটিআই মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ফিরোজ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সোনাপুর তাতিপাড়া এলাকার ফেরদৌসের ছেলে। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে আহত যুবকের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকালে মোটরবাইকযোগে জয়পুরহাট থেকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ঘুরতে আসে ফিরোজসহ অজ্ঞাত ওই যুবক। পথে পঞ্চগড় সদরের পিটিআই মোড় এলাকায় পৌঁছালে তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড়গামী সামনের চাকা ব্রাস্ট হয়ে একটি পিকআপ মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে দুইজনেই গুরুতর আহত হলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রুত তাদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ফিরোজকে মৃত ঘোষণা করেন।
তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খান অধিকারকে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর পিকআপটি জব্দ করা সম্ভব হলেও এর চালক পলাতক রয়েছে।
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
| web |
8fa6e2ac3983fa187c6e3f5d2d546bed3079c3d1ade9ee5a521dce2fe58e221c | মপাসা, রচনাবলী
রইল ; ঘোড়াগুলি গাড়ী ভর্তি সারের বোঝা নিয়ে ধীর গতিতে এগিয়ে যেতে লাগল। এখন সে করবে কী? জানাজানি হলে তো তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। তার ক্ষেতথামার পুড়িয়ে দেবে তারা; গাঁকে গাঁ দেবে ধ্বংস করে। এখন কী করা উচিৎ তার ? মৃতদেহটিকে সে লুকোবে কোথায়, এই হত্যার ব্যাপারটা সে কেমন ক'রে গোপন করবে, প্রাশিয়ানদের নির্বোধ বানানোর উপায়টা কী?
সেই বরফে সমাচ্ছন্ন জনপদের ওপরে একটা গভীর নিস্তব্ধতা নেমে এসেছিল। সেইখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সে দূর থেকে ভেসে আসা অনেকগুলি কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। হঠাৎ ভয় পেয়ে সে শিরস্ত্রাণটা কুড়িয়ে নিল; সেটিকে মৃত সৈনিকের মাথায় দিল বসিয়ে। কোমর ধরে তাকে বসালো; তাকে তুলে নিয়ে গাড়ীর পেছনে পেছনে ছুটলো ; তারপরে গোবর-গাদার ওপরে তাকে শুইয়ে দিল। একবার বাড়ি পৌঁছানোর পরে তার ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতি সে ঠিক করে নেবে। কী করবে, কী তার করা উচিত এই সব ভাবতে ভাবতে সে ধীরেধীরে এগিয়ে চলল; কিন্তু কিছুই ঠিক করতে পারল না। সে যে কত বড় বিপদে পড়েছে তা সে ভালভাবেই বুঝতে পারল । নিজেকে বাঁচানোর সমস্ত আশা ভরস। সে জলাঞ্জলি দিল।
বাড়ির সামনে পৌঁছে সে দেখল চিলে-ঘরে আলো জগছে। পরিচারিকা তখন জেগে রয়েছে। বেশ শক্ত হাতে গাড়ীটাকে পেছনের দিকে ঠেলে সার জমানোর গর্তের মুখে সেটাকে দাঁড় করালো। এখন যে মৃতদেহট। সারের মাথার ওপরে রয়েছে সেট। গর্ভের নীচে চাপা পড়বে এই ভেবে সে গাড়ীর দরজাট। খুলে দিল। সে যে রকম ভেবেছিল তাই দাঁড়ালো শেষ পর্যন্ত। দেহটি সারের গাদার নীচে চাপা পড়ে গেল।
খড়-বিচালি তোলার জন্যে লম্বা হাতলযুক্ত যন্ত্রটা দিয়ে অ্যানটনী সারের গাদাটা চেপেচুপে পরিষ্কার করে দিল; তার পরে সেটাকে গাদার পাশে মাটির ওপরে পুঁতে রাখলো। একটি চাকরকে ডেকে ঘোড়। দুটোকে আস্তাবলে ঢুকিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল। তারপরে সে সটান নিজের ঘরে ঢুকে শুয়ে পড়ল। এরপরে তার করণীয় কী রয়েছে তখনও সে সেই কথাই ভাবছিল। কিন্তু বাঁচবার একটা পথও তার চোখে পড়ল না। বিছানায় চুপচাপ শুয়ে থেকে সে ভয়ে কাঁপতে লাগল। নিশ্চয় তাকে গুলি করে মেরে ফ্লেবে ওরা। ভয়ে সে ঘেমে উঠল, তার দাঁতে দাঁত বসে গেল। শেষ পর্যন্ত আর সে সহ্য করতে পারল না। কাঁপতে কাঁপতে সে বিছানা থেকে উঠে এসে রান্নাঘরে গেল। কাবার্ড থেকে ব্র্যানডির বোতলটা নিয়ে সে ঘরে ফিরে এল, পর-পর দুটো গ্লাস ব্র্যানডি সে ঢক ঢক করে খেয়ে ফেলল। নতুন নেশার উন্মাদনায় সে আচ্ছন্ন হল বটে কিন্তু মনের কষ্ট তার দূর হল না। নিজেকে সে এই রকম একটা বিপদের মধ্যে জড়িয়ে ফেলেছে। কী হতভাগা সে।
| pdf |
24e8b50a7d6ced47bb7f5a287fc083e7 | স্পোর্টস লাইফ, ডেস্ক : পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেন দেশটির সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আকতার।পিসিবি চেয়ারম্যানের ক্রিকেট বিষয়ক উপদেষ্টা ও একই প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত হলেন বিশ্বের সবচেয় দ্রুত গতির এ বোলার।
পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এই ঘোষণা দেন।
নাজাম শেঠি শোয়েবকে এমন সম্মান দিলেও, পূর্বে অবশ্য চেয়ারম্যান থাকাকালে শোয়েব তাকে খুব একটা সম্মান করেননি। ২০১৩ সালে পিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত এ বোলার বলেছিলেন, শেঠির অধীনে পাকিস্তান ক্রিকেটে ধস নেমেছে। তার বোঝা উচিৎ সে এখানকার চেয়ারম্যান কোনো টিভির উপস্থাপক নয়।
এদিকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার পর অবশ্য পিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শোয়েব আকতার।
ডানহাতি এ ফাস্ট বোলার ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ৪৬টি টেস্ট, ১৬৩টি ওয়ানডে ও ১৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। এই ফরম্যাটগুলোতে যথাক্রমে ১৭৮, ২৪৭ ও ১৯টি উইকেট পেয়েছেন তিনি।
| web |
37ca056cf1c42e0907bf0a9bad02d01c50352106 | মিশরের চিকিৎসক থেকে আল-কায়দা প্রধান, কে এই আল জাওয়াহিরি?
তাঁর মাথার দাম ছিল আড়াই কোটি মার্কিন ডলার। ওসামা বিন লাদেনের পরে তাঁর উত্তরসূরী হিসেবেই আল-কায়দার মুখ হয়ে ওঠেন আয়মান আল জাওয়াহিরি (Al-Zawahiri)। মিশরের খ্যাতনামা সার্জন, নেতা, বক্তা আল জাওয়াহিরি তাঁর যৌবনকাল থেকেই জেহাদের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। একটা সময় ওসামার পরেই আল-কায়দার দু'নম্বর নেতা ছিলেন জাওয়াহিরি। ওসামা নিহত হওয়ার পরে সেই জায়গা তিনিই নেন। একের পর এক নাশকতামূলক কাজকর্মে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন জাওয়াহিরি (Al-Zawahiri )।
ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পরে ক্রমেই প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছিল আল-কায়দা। জীবনের শেষ কয়েক বছর মূল সংগঠনের কাজ থেকে দূরে থাকলেও আল-কায়দা ও তাদের ছাতার তলায় থাকা অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছে ওসামার প্রতীকি ভূমিকা ও অনুপ্রেরণা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই জায়গায় বহাল হয়েছিলেন মিশরের চিকিৎসক নেতা আল জাওয়াহিরি (Al-Zawahiri )।
ইরাকে মার্কিন সেনার অবস্থানের সময়ে সেখানে আল-কায়দার শাখা তৈরি হয়। এর এক নেতা ছিলেন আবু বকর আল-বাগদাদি। তিনি মার্কিন সেনার হাতে ধরা পড়ে কয়েক বছর গুয়ানতানামো বে-তে বন্দি ছিলেন। ২০০৯-এ মুক্তি পাওয়ার পরে ইরাকে নতুন করে আল-কায়দার সংগঠন গড়ে তুলতে শুরু করেন আল-বাগদাদি। এখানেই তাঁর সঙ্গে আল-কায়দার শীর্ষ নেতৃত্বের বিরোধ শুরু হয়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এই বিরোধ প্রবল হয়। আইএস-এর নৃশংস কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে জাওয়াহিরি-সহ আল-কায়দার শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের সমালোচনা করতে শুরু করেন। ফলে আইএস-এর সঙ্গে আল-কায়দার সম্পর্কই শুধু ছিন্ন হয় না, সিরিয়ার কয়েকটি জায়গায় দু'দলের জঙ্গিরা সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন।
আল-কায়দার 'নরম মনোভাব' আইএসের পছন্দ হয়নি। তবে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পরেই আল জাওয়াহিরি ভিডিও বার্তায় মায়ানমার, বাংলাদেশ, অসম, গুজরাত, আমদাবাদ ও কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর অবিচার ও শোষণের থেকে মুক্ত করার জন্য 'আল-কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট' স্থাপনের কথা জানিয়েছিলেন। ভারতে একাধিকবার নাশকতামূলক হামলা চালানোর হুমকিও দিয়েছিলেন জাওয়াহিরি।
| web |
5e654eb897499de771a6c475e5fa67c7600f0d13 | ২০১২-এ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ৪-২ গোলের জয়ে একাই ৪ গোল করেছিলেন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। শেষ গোলটি করেছিলেন বাইসাইকেল কিকে। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা গোলরক্ষক জো হার্ট বল ক্লিয়ারে হেড করেছিলেন। কিন্তু সুইডিশ তারকা ইব্রা তা মাটিতে পড়তে না দিয়ে বাইসাইকেল কিকে বল জালে জড়িয়েছিলেন। গোলটি জিতেছিল পুসকাস অ্যাওয়ার্ড।
কথায় আছে 'ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে'। ছুটিতে থাকা ইব্রা পানির ওপর বল নিয়ে সেই একই ভঙ্গিমায় বল মেরে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
ক্যাপশনে লিখে দিয়েছেন- 'রানিকে রক্ষা করুন প্রভু। ' এতে যে ইংল্যান্ডের সমর্থকদের ব্যঙ্গ করা হয়েছে তা অনুমেয়ই।
| web |
8f6bb6f74af3c35c946e6cac1448b62ba8dfe1ea | শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরীর জানাজায় সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার বাদ আছর রাজধানীর বনানীর ক্লাব মাঠে জায়ান চৌধুরীর জানাজায় শোকসন্তপ্ত মানুষের বিপুল উপস্থিতি দেখা গেছে।
জানাজায় তার আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেয়।
এর আগে হজরত শাহজালাল (র. ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার পর দেড়টার দিকে জায়ানের মরদেহ শেখ সেলিমের বাসায় আনা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ এবং ক্ষমতাসীন দলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
পরে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে সেখানে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জায়ানের মরদেহ দেখতে মন্ত্রী, এমপি, রাজনীতিক এবং আত্মীয়-স্বজনরাও ভিড় করেন। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
শেখ সেলিমের বাসায় জায়ানকে শেষবারের জন্য দেখতে আসেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজ্জামেল হক, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।
রবিবার শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে সেখানে সপরিবারে বেড়াতে যাওয়া শেখ সেলিমের মেয়ে জামাই মশিউল হক চৌধুরী গুরুতর আহত এবং তার নাতি জায়ান চৌধুরী নিহত হয়। আট বছর বয়সী জায়ান রাজধানীর সানবিম স্কুলের ছাত্র ছিল।
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বনানী কবরস্থানে তার দাফনের কথা রয়েছে।
| web |
e7bc39d0b609f23271163377fb6d22a5cb699d47 | Write your thoughts about this book.
খুব সুন্দর চরিত্রের মানব শক্তি গড়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।ভালো উপদেশ দেয়া হয়েছে।আধুনিক সমস্যা গুলির ভালো সমাধান করা হয়েছে। জয় গুরু।
To write a review, please login to your Pothi.com account.
| web |
c5ff98e463dbc4fb08e82bb81745a814727cdb25 | দেশে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ১০ লাখ ৬০ হাজার টন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে, aযার মধ্যে এক লাখ ৯২ হাজার ১০৪ টনই বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর মিনিপ্যাক বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
সোমবার গবেষণা সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) লালমাটিয়ায় নিজেদের কার্যালয়ে 'প্লাস্টিক স্যাশেঃ স্মল প্যাকেট উইথ হিউজ এনভায়রনমেন্ট ডেস্ট্রাকশন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরে।
এসডোর গবেষণা অনুযায়ী, কেবল খাবারের (চিপস, টমেটো সস, জুস, গুঁড়ো দুধ, কফি ইত্যাদি) মিনিপ্যাকেই ৪০ শতাংশ ক্ষুদ্র প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। প্রসাধনীর (শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, টুথপেস্ট ও মাউথ ফ্রেশনার) ক্ষেত্রে এই হার ২৪ শতাংশ, ওষুধের (স্যালাইনের প্যাক, মেডিসিন স্ট্রিপ) দায় ৮ শতাংশ এবং মশলা, বেভারেজ ও গৃহস্থালি পরিচ্ছন্ন সামগ্রীর দায় ৭ শতাংশ করে। বাকি ৭ শতাংশ বর্জ্য উৎপাদন হয় অন্যান্য মিনিপ্যাকে।
সাবেক এই সচিব সরকারের কাছে মিনিপ্যাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করার অনুরোধ জানান।
বৈঠকে বলা হয়, কেবল কক্সবাজারেই এক বছরে ৬৯ হাজার ৮৪১ টন (১৩,৯৬৮ টন মিনিপ্যাক) একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য মিলেছে, আর কুতুপালং এলাকায় এর পরিমাণ ৯ হাজার ৭৩ টন (১৬৩৩ টন মিনিপ্যাক) টন।
মিনিপ্যাক নিয়ন্ত্রণে আইনি কাঠামো বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, জাতিসংঘ এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেম্বলি (ইউনিয়া ৫. ২) এরইমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটি আন্তঃসরকারি কমিটি গঠন করার এবং ২০২৪ সালের মধ্যে লিগ্যালি বাইন্ডিং প্লাস্টিক কনভেনশন নিয়ে আলোচনা ও চূড়ান্ত করার।
বাংলাদেশসহ ১৭৫টি দেশ এই বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। তাই আমাদের উচিত নিজেদেরকে এর জন্য প্রস্তুত করা এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
| web |
7186da66e8b4e3d039a32afa50804eec | দুর্বল প্রতিপক্ষ আলাভেসের বিপক্ষেও নিজেদের খেলায় তেমন উন্নতির ছাপ দেখাতে পারলো না বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষে মাঠে অনুষ্ঠিত লা লিগার ম্যাচতে প্রায় পয়েন্ট হারাতে বসেছিল লিওনেল মেসির সাবেক ক্লাবটি। তবে শেষ মুহূর্তে জয় সূচক গোলটি করেন ফ্রেংকি ডি ইয়ং।রোববার (২৩ জানুয়ারি) রাতে লা লিগায় ১-০ ব্যাধানে জয় পেয়েছে বার্সেলোনা।
প্রতিপক্ষের মাঠে মোট ৭৬ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রাখলেও আলাভেসের বিপক্ষে গোল আদায় করতে পারছিল না বার্সেলোনা। ম্যাচের প্রথমার্ধে মাত্র দুইবারর প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে ব্যস্ত করে তুলেছিল তারা। উল্টোদিকে বিরতির ঠিক আগে গোল করার সুযোগ পেয়েছিল আলাভেস। তবে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনা। তবে পেদ্রির ফ্রি কিকে গোলমুখে বল পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি লুক ডি ইয়ং। গোলরক্ষক রুখে দেওয়া বলে মিস করেন পিকেও।
গোল আদায় করতে না পারা বার্সেলোনার বিপক্ষে আরও একটি ভালো সুযোগ পেয়েছিল আলাভেস। প্রতি-আক্রমণে ৭৮তম মিনিটে ভালো সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা। বিপরীতে ৮৭তম মিনিটে গোল পেয়ে যায় বার্সেলোনা।
মাঠের বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার ডি-বক্সে বাড়ানো দারুণ ক্রসে ফ্রেংকি ডি ইয়ংকে পাস দেন তরেস। ফাঁকায় বল ফেয়ে বাকি কাজটি সারেন ডাচ মিডফিল্ডার। ম্যাচের শেষ মুহূর্তের এ গোলেই জয় নিশ্চিত হয় বার্সেলোনা। বাকি সময় আর তেমন কোন আক্রমণে যেতে পারেনি কোন দল।
লিগে নিজেদের ২১ ম্যাচে ৯ জয় ও ৮ ড্রয়ে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে রয়েছে বার্সেলোনা। আর ২২ ম্যাচে মাত্র ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় ১৯তম স্থানে রয়েছে আলাভেস। এছাড়া বার্সার সমান ২১ ম্যাচে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চতুর্থ স্থানে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ২২ ম্যাচ খেলে শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৫০।
| web |
bf8b1746147107091288a77d058bc48f0d0beb90cceafbc9e579416572ec68dc | (৭) য়ূসুফ ও তার ভ্রাতাদের ঘটনায় জিজ্ঞাসুদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (৮) যখন তারা (ভ্রাতারা) বলেছিল- আমাদের পিতার নিকট ঘৃসুফ এবং তার ভাই (বিন ইয়ামীন)-ই অধিক প্রিয়, অথচ আমরা একটি সংহত দল, আমাদের পিতা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন(৯) য়ূসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে কোন স্থানে ফেলে এস। ফলে তোমাদের পিতার দৃষ্টি শুধু তোমাদের প্রতি নিবিষ্ট হবে এবং তারপর তোমরা ভাল লোক হয়ে যাবে। (১০) তাদের মধ্যে একজন বললো : য়ুসুফকে হত্যা কর না, বরং যদি তোমরা কিছু করতেই চাও তাহলে তাকে কোন গভীর কূপে নিক্ষেপ করো, যাত্রী দলের কেউ তাকে তুলে নিয়ে যাবে। (১১) তারা বললো : হে আমাদের পিতা! য়ুসুফের ব্যাপারে আপনি আমাদেরকে অবিশ্বাস করছেন কেন, যদিও আমরা তার হিতাকাঙ্ক্ষী? (১২) আপনি আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন, সে ফলমূল খাবে ও খেলাধূলা করবে, আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করবো। (১৩) সে বললো ঃ এটা আমাকে কষ্ট দিবে যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি ভয় করি, তোমরা তার প্রতি অমনোযোগী হলে তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলবে। (১৪) তারা বললো : আমরা একটি সংহত দল হওয়া সত্ত্বেও যদি তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলে, তাহলে তো আমরা ক্ষতিগ্রস্তই হব। (১৫) অতঃপর যখন তারা তাকে নিয়ে গেল এবং তাকে গভীর কূপে নিক্ষেপ করতে একমত হল, এমতাবস্থায় আমি তাকে জানিয়ে
সূরা ১২, সুফ
দিলাম ঃ তুমি তাদেরকে তাদের এই কর্মের কথা অবশ্যই বলে দিবে যখন তারা তোমাকে চিনবে না। (১৬) তারা রাত্রিতে কাঁদতে কাঁদতে তাদের পিতার নিকট আসলো। (১৭) তারা বললো ঃ হে আমাদের পিতা! আমরা দৌড়ের প্রতিযোগিতা করেছিলাম এবং য়ুসুফকে আমাদের মালপত্রের নিকট রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলেছে; কিন্তু আপনি তো আমাদের বিশ্বাস করবেন না যদিও আমরা সত্যবাদী। (১৮) আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লেপন করে এনেছিল। সে বললো ঃ না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং, পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ্ই আমার সাহায্যস্থল। (১৯) এক যাত্রী দল আসল, তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করলো; সে তার পানির বালতি নামিয়ে দিল, সে বলে উঠলো ঃ কি সুখবর! এ যে এক কিশোর। অতঃপর তারা তাকে পণ্যরূপে লুকিয়ে রাখল, তারা যা করছিল সেই বিষয়ে আল্লাহ্ সবিশেষ অবগত ছিলেন। (২০) আর তারা তাকে বিক্রি করলো স্বল্প মূল্যে, মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে, তারা এতে ছিল নির্লোভ।
(২১) মিসরের যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করেছিল, সে তার স্ত্রীকে বললো : সম্মানজনকভাবে এর থাকার ব্যবস্থা কর, সম্ভবতঃ সে আমাদের উপকারে আসবে অথবা আমরা একে পুত্ররূপেও গ্রহণ করতে পারি এ
সূরা ১২, য়ুসুফ।
এবং এভাবে আমি য়ূসুফকে সেই দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম তাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেয়ার জন্য। আল্লাহ্ তাঁর কার্য সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। (২২) সে যখন পূর্ণ যৌবনে উপনীত হল, তখন আমি তাকে হিকমত ও জ্ঞান দান করলাম এবং এভাবেই আমি সৎকর্ম পরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। (২৩) সে যে স্ত্রী লোকের গৃহে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎকর্ম কামনা করল এবং দরজাগুলো বন্ধ করে দিল ও বললো ঃ চলে এসো (আমরা কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করি), সে বললো ঃ আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি (আযীয) আমার প্রভু! তিনি আমাকে সম্মানজনকভাবে থাকতে দিয়েছেন, সীমা লঙ্ঘনকারীরা সফলকাম হয় না। (২৪) সেই রমণী তো তার প্রতি আসক্ত হয়েছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়তো, যদি না সে তার রবের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করতো, তাকে মন্দ কর্ম ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত। (২৫) তারা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল এবং স্ত্রী লোকটি পিছন হতে তার জামা ছিড়ে ফেললো, তারা স্ত্রী লোকটির স্বামীকে দরজার কাছে দেখতে পেলো, স্ত্রীলোকটি বললো ঃ যে তোমার পরিবারের সাথে কু-কর্ম কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ অথবা অন্য কোন বেদনাদায়ক শাস্তি ব্যতীত আর কি দণ্ড হতে পারে? (২৬) সে (মৃসুফ) বললো : সেই আমার হতে
পোরা ১২
অসৎকর্ম কামনা করেছিল। স্ত্রী লোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল- যদি তার জামার সম্মুখ দিকে ছিন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী লোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী- (২৭) আর যদি তার জামা পিছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী লোকটি মিথ্যা কথা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। (২৮) সুতরাং, গৃহস্বামী যখন দেখলো যে, তার জামা পেছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়েছে, তখন সে বললোঃ ভীষণ তোমাদের ছলনা। (২৯) হে য়ুসুফ! তুমি এটা উপেক্ষা কর এবং হে নারী! তুমি তোমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই তুমিই অপরাধী।
(৩০) নগরে কতিপয় নারী বললো : আযীযের স্ত্রী তার যুবক দাস হতে অসৎ কর্ম কামনা করেছে; প্রেম তাকে উন্মুক্ত করেছে, আমরা তো তাকে দেখছি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে। (৩১) স্ত্রী লোকটি যখন তাদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনল, তখন সে তাদেরকে ডেকে পাঠাল, তাদের প্রত্যেককে একটি করে চাকু দিল এবং যুবককে বললো : তাদের সামনে বের হও। অতঃপর তারা যখন তাকে দেখলো তখন তারা তার সৌন্দর্যে অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেললো। তারা বললো : অদ্ভুত আল্লাহ্র মাহাত্ম্য! এতো মানুষ নয়, এতো এক ১ মহিমান্বিত ফেরেশতা। (৩২) সে বললো ঃ এই সে যার সম্বন্ধে তোমরা,
সূরা ১২, মৃসুফঃ
আমার নিন্দা করেছো, আমি তো তার হতে অসংকর্ম কামনা করেছি; কিন্তু সে নিজকে পবিত্র রেখেছে; আমি তাকে যা আদেশ করেছি সে যদি তা না করে তাহলে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (৩৩) য়ূসুফ বললোঃ হে আমার রব! এই নারীরা আমাকে যার প্রতি আহবান করছে তা অপেক্ষা কারাগার আমার কাছে অধিক প্রিয়! আপনি যদি আমাকে ওদের ছলনা হতে রক্ষা না করেন তাহলে ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হবো। (৩৪) অতঃপর তার রব তার আহবানে সাড়া দিলেন এবং তাদের ছলনা হতে রক্ষা করলেন, তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (৩৫) নিদর্শনাবলী দেখার পর তাদের মনে হল যে, তাকে কিছু কালের জন্য কারারুদ্ধ করতেই হবে।
(৩৬) তার সাথে দু'জন যুবক কারাগারে প্রবেশ করল, তাদের একজন বললো : আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আংগুর নিংড়িয়ে রস বের করছি এবং অপরজন বললো ঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আমার মাথায় রুটি বহন করেছি এবং পাখী তা হতে খাচ্ছে, আমাদেরকে আপনি এর তাৎপর্য জানিয়ে দিন, আমরা আপনাকে সৎকর্ম পরায়ণ দেখছি । (৩৭) য়ুসুফ বললো ঃ তোমাদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয় তা আসার পূর্বে আমি তোমাদেরকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানিয়ে দিব, আমি যা তোমাদেরকে বলবো তা আমার রব আমাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা
হতে বলব, যে সম্প্রদায় আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে না ও পরলোকে অবিশ্বাসী হয়, আমি তাদের মতবাদ বর্জন করেছি। (৩৮) আমি আমার পিতৃ পুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক্ব এবং ইয়াকুবের মতবাদ অনুসরণ করি, আল্লাহ্র সাথে কোন বস্তুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়, এটা আমাদের ও সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। (৩৯) হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়। ভিন্ন ভিন্ন বহু রব শ্রেয়, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ্? (৪০) তাঁকে ছেড়ে তোমরা শুধু কতকগুলো নামের ইবাদত করছ, যে নাম তোমাদের পিতৃপুরুষ ও তোমরা রেখেছ, এগুলোর কোন প্রমাণ আল্লাহ্ পাঠাননি, বিধান দেয়ার অধিকার শুধু আল্লাহ্রই, তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে, আর কারও ইবাদত করবে না, এটাই সরল সঠিক দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। (৪১) হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়। তোমাদের একজনের ব্যাপার এই যে, সে তার প্রভুকে মদ্য পান করাবে এবং অপর সম্বন্ধে কথা এই যে, সে শূলবিদ্ধ হবে; অতঃপর তার মস্তক হতে পাখী আহার করবে, যে বিষয়ে তোমরা জানতে চেয়েছো তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। (৪২) ঘৃসুফ তাদের মধ্যে যে মুক্তি পাবে মনে করল, তাকে বললো ঃ তোমার প্রভুর কাছে আমার কথা বল; কিন্তু শয়তান তাকে তার প্রভুর কাছে তার বিষয়ে বলার কথা ভুলিয়ে দিল; সুতরাং য়ূসুফ *কয়েক বছর কারাগারে রইল।
(৪৩) রাজা বললো ঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি স্থূলকায় গাভী, এগুলোকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অপর সাতটি শুষ্ক, হে প্রধানগণ! যদি তোমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পার তাহলে আমার স্বপ্ন সম্বন্ধে অভিমত দাও। (৪৪) তারা বললো ঃ এটা অর্থহীন স্বপ্ন এবং আমরা এরূপ স্বপ্ন ব্যাখ্যায় অভিজ্ঞ নই। (৪৫) দু'জন কারারুদ্ধের মধ্যে যে মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পরে যার স্মরণ হল সে বললোঃ আমি এর তাৎপর্য তোমাদেরকে জানিয়ে দিব, সুতরাং তোমরা আমাকে পাঠিয়ে দাও। (৪৬) সে বলল ঃ হে য়ূসুফ! হে সত্যবাদী। সাতটি স্থূলকায় গাভী, এগুলোকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অপর সাতটি শুষ্ক শীর্ষ সম্বন্ধে আপনি আমাদেরকে ব্যাখ্যা দিন, যাতে আমি লোকদের কাছে ফিরে যেতে পারি এবং যাতে তারা অবগত হতে পারে। (৪৭) য়ূসুফ বলল ঃ তোমরা সাত বছর একাদিক্রমে চাষ করবে, অতঃপর তোমরা শস্য সংগ্রহ করবে, তার মধ্যে যে সামান্য পরিমাণ তোমরা ভক্ষণ করবে, তা ব্যতীত সমস্ত শীর্ষ সমেত রেখে দিবে। (৪৮) এরপর আসবে সাতটি কঠিন বছর, যা পূর্বে সঞ্চয় করে রাখবে তা এই সাত বছর লোকে খাবে, শুধু সামান্য কিছু যা তোমরা সংরক্ষণ করবে তা ব্যতীত - (৪৯) এবং এরপর আসবে এক বছর, সেই বছর মানুষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে এবং সেই বছর মানুষ প্রচুর ফলের রস নিংড়াবে ।
| pdf |
e4defa722f860de863d906703ff65b391799a062 | মঙ্গলবার, ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং, ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বং।
স্পোর্টস ডেস্কঃ এই ম্যাচে ৩৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট পেতে পারেন সাকিব আল হাসান। সঙ্গে ব্যাট হাতে করতে পারেন ২৯ রানও। কিংবা এই ম্যাচে ৪৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিতে পারেন এবাদত হোসেন। যে দুটি বোলিং পারফরম্যান্সের কারণে ৪১.২ ওভারেই অলআউট ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের দল। তাও মাত্র ১৮৬ রানে।
এই ম্যাচে লোকেশ রাহুল ৭৩ রান করতে পারেন। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ভারতকে লড়াকু স্কোরের পুঁজি তৈরি করে দিতে পারেন। কিংবা এই ম্যাচে ৪১ রান করে বাংলাদেশের সূচনাটাও সুন্দর করে দিতে পারেন। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ যা করেছেন তা তো অবিশ্বাস্য! ভারতীয়রা বাংলাদেশকে যেভাবে চেপে ধরেছিল, তাতে রোহিত শর্মারা কত রানে জিততে পারে সেটাই গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অনেক দর্শক হয়তো মাঠ ছেড়ে বাড়ি চলে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কেউ কেউ বেরও হয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটার পারফরম্যান্সে বিরক্ত হয়ে।
কিন্তু ভোজবাজির মতো এভাবে পাশার দান উল্টে দেবেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তা ক'জন ভাবতে পেরেছিলেন! মিরাজও নিশ্চয় নয়! নন-স্ট্রাইকপ্রান্তে মোস্তাফিজুর রহমানকে দাঁড় করিয়ে রেখে, সিঙ্গেলস কিংবা ডাবলস না নিয়ে, একটি-দুটি বাউন্ডারি মেরে বাংলাদেশকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
পরিসংখ্যানে তার পারফরম্যান্স লেখা থাকবে ৩৯ বলে ৩৮ রান! কিন্তু কী পরিস্থিতিতে, খেলার কী অবস্থায় মিরাজ এই রান করেছিলেন, তা পরিসংখ্যানের পাতায় না হলেও লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়। সঙ্গে ম্যাচের বিচারকরা মেহেদী হাসান মিরাজকে সেরার পুরস্কারে ভূষিত করে যেন নিজেরাই সম্মানিত হওয়ার গৌরব লাভ করলেন!
এমন একটি পারফরম্যান্সের পর সাকিবের ৫ উইকেট প্লাস ২৯ রান, এবাদতের ৪ উইকেট কিংবা লোকেশ রাহুলের ৭৩ রানের ইনিংস- সবই ম্লান হয়ে গেলো। যথাযোগ্যভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কারটি উঠে গেলো মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে। প্রসঙ্গত বল হাতে একটি উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। শিখর ধাওয়ানকে বোল্ড করে বাংলাদেশের জন্য প্রথম ব্রেক থ্রুটা এনে দিয়েছিলেন তিনিই।
| web |
ef0de8ccc9f3aa8fa89feea28e8cd9cc7385cc68 | ২০ মে আমফানের পর ৩ রা জুন নিসর্গ। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়। ২০২০ সালে এই ৬ মাসের মধ্যে ২ টি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের সাক্ষী থাকল দেশবাসী। একটা ঘূর্ণিঝড় প্রায় ২৫০ বছর পর কলকাতাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেল। আর নিসর্গের তান্ডব চাক্ষুস করল মহারাষ্ট্রবাসী ১৩৮ বছর পর। দুটি ঝড় কিন্তু কাকতালীয়ভাবে বুধবার হয়েছে। এই ঝড়গুলির তান্ডবলীলা দেখার পর মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গতকালের ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাতে ঘূর্ণিঝড় প্রায় দেখা যায়। কখনও তা বিরাট আকার নেয়, প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়। কখনো আবার অল্পের মধ্যে দিয়ে যায়। এবারের ঘূর্ণিঝড়ে কলকাতার অবস্থা খুব খারাপ হয়েছিল। তবে মহারাষ্ট্রের ঘূর্ণিঝড় বিরল ঘটনা। ১৮৮২ সালের পর এই আবার ঘূর্ণিঝড় হল। পূর্ব উপকূলে প্রায় ঘূর্ণিঝড়ের আগমন ঘটে। কিন্তু এবার তা তান্ডব দেখালো পশ্চিম উপকূলে।
প্রকৃতির রোষে ঝড় কখন আসবে তা কিন্তু জানা থাকে না। তবে ঝড়ের নাম ঠিক করে রাখা হয় অনেক আগে থেকেই। অনেক পরিক্ষা নিরীক্ষার পর নাম তৈরী হয়। বিভিন্ন দেশের থেকে নাম ঠিক করা হয়। এবারের ঘূর্ণিঝড় নিসর্গের নাম রেখেছিল বাংলাদেশ। আর আমফানের নাম রেখেছিল থাইল্যান্ড। এর পরের ঝড়ের নাম কি? ২০০০ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে ঝড়ের নাম ঠিক করে রাখা হয়েছিল। এর পরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম 'গতি', এই নাম রেখেছে ভারত। তারপরে পর্যায়ক্রমে রয়েছে- 'নিভার' ইরানের দেওয়া নাম, 'বুরেভি' মলদ্বীপের দেওয়া নাম, 'তৌকতাই' মায়ানমার নাম দিয়েছে এবং 'ইয়াস' ওমান নাম রেখেছে।
| web |
8425bb5b9e80e4842d813e2a0654081d8fc734c767954afa6f6e496b84f72ab0 | পারিবারিক জীবনে বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তি
আমার এক বন্ধুর দুই সাবালক ভাই বেকার হয়ে বাড়ীতে বসে। বন্ধুটির সংসারে বেশ কিছুটা টানাটানি। তিনি প্রায়ই বলেন, 'আমাদের ভাগ্যটা বড় খারাপ যাচ্ছে। আমার এক পরিচিত ব্যক্তি গ্রামে থাকেন, চাষবাস করে সংসার চালান। যে বছর ফসল ভাল হয় না, তাঁদের খাওয়া আধপেটা থেকে কমতে কমতে সিকিপেটা হয়ে যায়; তাঁর সঙ্গে দেখা হলে বলেন, 'এ বছর কপাল বড় মন্দ।' আমার এক প্রতিবেশীর ন'টি ছেলেমেয়ে, তিনি এবার দশম সন্তানের জনক হতে চলেছেন। ছেলেমেয়েদের মানুষ করা সম্বন্ধে তাঁর বক্তব্য : 'ওদের ভাগ্যে থাকলে ওরা ভালভাবেই মাহুষ হবে।'
আসলে আমাদের দেশে অনেকেই আমরা ভাগ্যে বা কপালে বড় বেশী বিশ্বাস করি। যে কোন সমস্যাকে বিশ্লেষণ করা, তার মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধ খুঁজে বের করা এবং তাই থেকে সাধারণের পথের সন্ধান পাওয়া ও সেই পথে এগনো - বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তির এই যে ধারা আমাদের মধ্যে এর বড়ই অভাব। অথচ আমরা যদি সমাজে সত্যিকারের কোন পরিবর্তন আনতে চাই, তাহলে আমাদের ঘরে-বাইরে সর্বত্রই এই মনোবৃত্তির একান্তই দরকার। আমাদের বর্তমান সমাজ পরিবারভিত্তিক; পারিবারিক জীবনে বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তি গড়ে না উঠলে সমাজ-মানসে বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাধারার বিকাশ হবে না।
এ কথা সকলেই স্বীকার করবেন যে, গত 2-3 শতাব্দী ধরে সামাজিক পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলো বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও তার প্রয়োগের ফলে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ
ভাবে মনুষ্যসমাজে এত ব্যাপক এবং এরকম দ্রুত হারে পরিবর্তন হচ্ছে যে, আগেকার দিনে তা কল্পনাও করা যেত না। বার্ট্রেও রাসেলের কথায় বিজ্ঞান নিজেকে অবিশ্বাস্য রকম ক্ষমতাশালী বিপ্লবী শক্তি হিসাবে প্রমাণিত করেছে।'
বিজ্ঞান সমাজে পরিবর্তন আনে মূলতঃ দু'তাবে :- এক নতুন নতুন উপকরণ ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করে এবং সেগুলির মধ্য দিয়ে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদিকে যথেষ্ট প্রভাবান্বিত করে। দুই, মানুষের মনে বৈজ্ঞানিক ভাবধার উম্মেষ ও প্রসার ঘটিয়ে। সমাজের সুষম উন্নয়নের জন্যে বিজ্ঞানের এ দুধরণের কার্যধারারই গুরুত্ব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আমাদের সকলের পক্ষে যা অবশ্য করণীয়, তা হলো- নিজের এবং আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী গড়ে তোলবার জন্যে সবত্ব প্রয়াস। আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে। আমাদের নিজের নিজের পরিবারে যাতে বৈজ্ঞানিক মেজাজ গড়ে ওঠে, সেদিকে প্রথমেই দৃষ্টি দেওয়া দরকার। বিশেষতঃ যারা শিশু ও কিশোর, যারা সবে জীবনের পাঠ নিতে শুরু করেছে, তাদের মনে গোড়া থেকেই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী সঞ্চারিত হওয়া উচিত। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'শিক্ষা যারা আরও করেছে, গোড়া থেকে বিজ্ঞানের ভাণ্ডারে না হোক, বিজ্ঞানের আঙিনায় তাদের প্রবেশ করা অত্যাবশক।'
বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তির প্রধান লক্ষণ হচ্ছে স সাহা ইনষ্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, কণিকাতা-9
| pdf |
ad2973b0a2e666e44274a6b0c68d8a1effe23ddd | টানা পঞ্চমবারের মতো ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে ফিনল্যান্ড। ১৮ মার্চ প্রকাশিত রিপোর্টের দশম সংস্করণ অনুসারে, ফিনল্যান্ডের পরে তালিকায় রয়েছে আরও দুটি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ড। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান। তালিকায় সাত ধাপ এগিয়ে এখন বাংলাদেশের অবস্থান ৯৪তম। গত বছর এ তালিকায় ১০১তম ছিল দেশটি। প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান তালিকায় ১৩৬তম। পাকিস্তান রয়েছে ১২১ নম্বরে। বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে আফগানিস্তান। এ তালিকায় আরও রয়েছে লেবানন ও জিম্বাবুয়ে। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক দ্বারা প্রকাশিত এই রিপোর্টে মাথা পিছু জিডিপি, সামাজিক সমর্থন, স্বাস্থ্যকর জীবন প্রত্যাশা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, উদারতা, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে র্যাংকিং করা হয়েছে। এ বছর প্রতিবেদনে ১৪৬টি দেশকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সুখী দেশ : ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ, সুইডেন, নরওয়ে, ইসরায়েল ও নিউজিল্যান্ড। গত বছরের মতো এবারও শীর্ষ ১০ এর তালিকায় বেশির ভাগই নর্ডিক দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
| web |
6043e49241d87582f322136c0db502e6890d2854 | ডায়াবেটিক ডিসলিপিডেমিয়া কি?
ডিসলিপিডেমিয়া হলো লিপোপ্রোটিন বিপাকক্রিয়া সম্পর্কিত একটি রোগ। এই রোগটি লিপোপ্রোটিন বেশি উৎপাদনের ফলে বা তার কম উৎপাদনে রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় বা কমায়। ডায়াবেটিস রোগীদের ডিসলিপিডেমিয়া হওয়ার ভীষণ প্রবণতা থাকে যেমন, পরিবর্তনশীল লিপিডের মাত্রা।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ডায়াবেটিক ডিসলিপিডেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে, ডিসলিপিডেমিয়া থেকে অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা থেকেই যায়, যেমন হৃদরোগ এবং স্ট্রোক।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
টাইপ 2 ডায়াবেটিস আছে এমন ব্যক্তির ডিসলিপিডেমিয়া হওয়ার একটি প্রবল ঝুঁকি থেকে যায়।
ডায়াবেটিস একটি চিকিৎসাগত অবস্থা এবং ডিসলিপিডেমিয়া হওয়ার একটি গৌণ কারণ, যেহেতু ডায়াবেটিস স্বাভাবিক লিপিড মাত্রায় পরিবর্তন আনে এবং তার বৃদ্ধি ঘটায়। হরমোন ইনসুলিন নেওয়াতে কোন ত্রুটি হলে এবং রক্তে গ্লুকোজের উচ্চ মাত্রা হল ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডিসলিপিডেমিয়া হওয়ার প্রধান কারণ।
- উচ্চ-ক্যালোরি সম্পন্ন খাদ্য তালিকা (অস্বাস্থ্যকর খাদ্য)
কিভাবে এই রোগ নির্ণয় এবং এর চিকিৎসা করা হয়?
ডিসলিপিডেমিয়া রোগ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার রক্ত পরীক্ষা এবং মূত্র পরীক্ষা করেন।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরী যাতে গম্ভীর কোন জটিলতা না সৃষ্টি হয়, যেমন কার্ডিওভাসকুলার রোগ। অতএব, ডাক্তার শুধুমাত্র খাদ্য তালিকা এবং জীবনশৈলীতে পরিবর্তনের পরামর্শ দেবেন না তার সাথে ঘন ঘন এবং নিয়মিত চেক-আপের উপরও জোর দেবেন।
ডিসলিপিডেমিয়ার ঝুঁকি কমাতে, স্ট্যাটিন এবং ফাইব্রিনোজেনস নামক ওষুধগুলিও দেওয়া হয়।
| web |
aa63080225dae8f2e05fc98bdd6d8bf000926530 | বিল্লাল হুসাইন, ঝিকরগাছা, যশোর। ।
যশোরের শার্শার বাগআঁচড়া বাজারে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মারাত্মকভাবে আহত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা নুর মোহাম্মদ (৫৫) শনিবার সকাল ৯ টায় চিকিৎসারত অবস্থায় যশোর সদর হাসপাতালে মারা গেছেন। অপর জন যুলফার ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি রাসেদুজ্জামান (৪৫) অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তার অবস্থাও আশংকা জনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার সময় যশোর-সাতক্ষীরা মহাসসড়কের বাগআঁচড়া বাজারে মুড়ির মিলের সামনে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা নূর মোহাম্মদ (৫৫) ও যুলফার ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান (৪৫) মোটর সাইকেলে সাতক্ষীরা যাওয়ার পথে যশোর মুখী একটি ট্রাক তাদের চাপা দিলে দুজনই মারাত্মকভাবে আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং শনিবার সকালে ডাক্তার মোস্তফা নুর মোহাম্মদ মারা যান । ডাক্তার নুর মোহাম্মদের মৃত্যুর খবরে চিকিৎসক মহলে ও ওষুধ কোম্পানির লোকজোনের মধ্য শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রত্যক্ষদশীরা জানান,সাতক্ষীরা হাসপাতালে দায়ীত্ব শেষে প্রতি শুক্রুবার বাগআঁচড়া আখি টাওয়ারে এসে শিশুরোগ বিশেষঞ্জ ডাক্তার নুর মোহাম্মদ শিশু রোগী দেখে থাকেন। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার তিনি রোগী দেখা শেষে সাতক্ষীরায় ফিরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাগআঁচড়া মুড়িরমিলের সামনে পৌঁছালে যশোর গামী ট্রাক (সাতক্ষীরা ট১১-০২৩৪) তাদের মোটর সাইকেল কে মুখোমুখি ধাক্কা দিলে ডাক্তার মোস্তফা নুর মোহাম্মদ ও চালক রাসেদুজ্জান গুরুতর আহত হন।
চিকিৎসারত অবস্থায় (শনিবার) সকালে সকলকে কাঁদিয়ে ডাক্তার নুর মোহাম্মদ মারাযান। এদিকে রাসেদুজ্জামানের অবস্থাও খুব একটা ভালো না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
| web |
3bf47cd29280f58d49cc6c55f730b1aafb851305 | ঢাকা মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় তথ্য কমিশনের সাবেক সচিবসহ ১৬ জন মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট-২-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তথ্য কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব কৃষিবিদ তৌফিকুল আলম (৫৯)।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তথ্য কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আলম করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ার পর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেকে) করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকেই তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর কিছু দিন পর তিনি কিছুটা সুস্থ হলে তাকে ভিআইপি কেবিনে নেয়া হয়। এরপর তাকে আবার আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখান থেকে সর্বশেষ তাকে হাসপাতালের নতুন ভবনের আইসিইউতে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় সেখানে তিনি মারা যান। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের মহাসচিব কৃষিবিদ মোঃ খায়রুল আলম প্রিন্স জানান, মৃত তৌফিকুল আলম সর্বশেষ তথ্য কমিশনের সচিব ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পিআরএলে যান। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন তৌফিকুল আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। বিসিএস অষ্টম ব্যাচের (১৯৮৬) এই কর্মকর্তাকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৬ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস পজিটিভ ৫ জন পুরুষ এবং ১ জন নারীসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে অন্যরা মারা গেছেন। ২ মে থেকে শুরু করা করোনা ইউনিটে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই হাসপাতালে নারী ও পুরুষ মিলে ২২১ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৪৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজউদ্দিন গতকাল শুক্রবার বিকেলে এই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল আরো ১৬ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে ৫ জন পুরুষের ও ১ নারীর। যারা করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন তাদের লাশগুলো তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর করোনা পজিটিভে যারা মারা গেছেন সেই সব লাশগুলো করোনা বিধি মোতাবেক তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
| web |
d3ca0cc0dee3cba235553f8c90c9d1dd390ff86f | ৫ টেস্টের সিরিজ খেলতে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ইংল্যান্ড সফরে আছে ভারতের ক্রিকেট দল। একই সময়ে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলতে বর্তমানে শ্রীলঙ্কা সফর করছে ভারতের আরও একটি দল।
শিখর ধাওয়ানের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা সফর করা দলটিকে কাগজে-কলমে ভারতের দ্বিতীয় দলই বলা যায়। কিন্তু এমন দলের বিপক্ষে নিজ দেশের মূল দল খেলবে, এটা মানতে পারেননি শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। ভারতের শ্রীলঙ্কা সফরের দলটিকে সরাসরিই 'দ্বিতীয় সারির দল' জানিয়ে এই সিরিজকে শ্রীলঙ্কার জন্য 'অপমানজনক' বলেছেন শ্রীলঙ্কাকে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক।
কিন্তু তাঁর এই মন্তব্য আবার ভালোভাবে নেয়নি ক্রিকেট-সমাজ। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড তো জবাব দিয়েছেই, ভারতের সাবেক ওপেনার আকাশ চোপড়াও সরাসরি রানাতুঙ্গার নাম মুখে না আনলেও আকার-ইঙ্গিতে তাঁর কথার জবাব দিয়েছেন।
জবাব নয়, চোপড়া আসলে শ্রীলঙ্কাকে খোঁচাই মেরেছেন বলা যায়! শ্রীলঙ্কার মূল দলের অবস্থা বোঝাতে বললেন, আফগানিস্তানের মতো ক্রিকেটে নতুন দলও যেখানে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে সরাসরি খেলবে, সেখানে শ্রীলঙ্কাকে সে যোগ্যতা অর্জনের জন্য আগে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসতে হবে!
'শ্রীলঙ্কানদের আগে নিজেদের দিকে তাকানো উচিত। সত্যিটা হচ্ছে, আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাছাইপর্ব খেলতে হবে না, কিন্তু আপনাকে (শ্রীলঙ্কা) খেলতে হবে। এটাই বাস্তবতা। সত্য কথাটি হলো শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট এখন ধুঁকছে! এমনও হতে পারে যে তারা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিতে পারল না! সুপার টুয়েলভে (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব) আপনারা না-ও থাকতে পারেন। অথচ আফগানিস্তানের সেখানে খেলা চূড়ান্ত, এটাও বাস্তবতা' - ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন আকাশ চোপড়া।
কোহলিদের নিয়ে ভারতের প্রথম পছন্দের দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের সিরিজ শুরু করবে আগামী ৪ আগস্ট থেকে। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ওয়ানডের সিরিজ শুরু হচ্ছে ১৩ জুলাই।
| web |
294e219bc4d8a98100213e1660720e9381dbcc7f | সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, শিগগিরই টুইটারে কল ও মেসেজিংসহ নানা সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হবে। মঙ্গলবার (৯ মে) এ বিষয়ে তিনি বিশদ বিবরণ দিয়েছেন।
গত বছর মাস্ক 'টুইটার ২.০ দ্য এভরিথিং অ্যাপ'-এর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। যেখানে থাকবে এনক্রিপ্টেড ডাইরেক্ট মেসেজ (ডিএম), লংফর্ম টুইট এবং পেমেন্টের মতো ফিচার।
মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় ইলন মাস্ক জানান, খুব শিগগিরই টুইটার থেকে প্ল্যাটফর্মটির যে কারো কাছে ভয়েস এবং ভিডিও চ্যাট করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। আপনি আপনার ফোন নম্বর না দিয়েই বিশ্বের যেকোনো স্থানের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে অনুরূপ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মাস্ক বলেন, এনক্রিপ্টেড ডাইরেক্ট মেসেজের একটি সংস্করণ বুধবার থেকে টুইটারে পাওয়া যাবে।
চলতি সপ্তাহে টুইটার জানিয়েছে, তারা কয়েক বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা অ্যাকাউন্টগুলো সরিয়ে এবং সংরক্ষণের মাধ্যমে 'শুদ্ধি প্রক্রিয়া' শুরু করবে।
| web |
6feb5ba0683ee7c53998e7e79b6a5555 | দেশে ইংরেজি উচ্চারণে বাংলা বলার সাম্প্রতিক প্রবণতার কড়া সমালোচনার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা ইংরেজি উচ্চারণে বাংলা বলে, তাদের প্রতি করুণা হয় বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ করতে হলে, ব্যবসা বাণিজ্য, সাহিত্য সম্পর্কে জানতে সেখানে অন্য ভাষা শেখারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু মাতৃভাষা বাদ দিয়ে নয়। বাংলাদেশের মাটিতে থেকে যারা বাংলা ভাষা ভুলে গিয়ে বা বাংলা ভাষাকে বাংলা ভাষার মতো বলতে পারে না। তাদের প্রতি করুণা ছাড়া আর কিছু নেই।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাষাবিদ অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার।
| web |
ea8b26b693c3aa623287e98d4c17a7beef1bfb3a | প্রতি বছর ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন একদিন থাকলেও করোনাভাইরাস বিবেচনায় এবার সিলেট জেলায় ৪ দিনব্যাপী এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় জানান সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত।
তিনি জানান, আগামী ১২-১৫ জুন দেশব্যাপী ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপিত হতে যাচ্ছে। এবার কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে ভিন্ন ভাবে এ ক্যাম্পেইন আয়োজিত হতে যাচ্ছে। অন্যান্য বার ১ দিনেই এ ক্যাম্পেইন শেষ হলে ও এ বার ৪ দিনব্যাপী ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সিলেটেও সেভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বছর কোভিত-১৯ পরিস্থিতিতে আসন্ন ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সুষ্ঠু ভাবে বাস্তবায়ন, প্রস্তুতি ও ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে সম্পন্ন করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতের ও ব্যবহৃত সরঞ্জামের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত মাস্ক সরবরাহ করা সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বল হয়- শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন 'এ' অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি। ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা থেকে শুরু করে জেরোপথ্যালমিয়ার মত রোগ হতে পারে যাতে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে। এছাড়া ভিটামিন এ এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পায়, রক্তাল্পতা দেখা দেয় ও ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়।
যেহেতু ভিটামিন 'এ'র অভাব একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা তাই সম্পূরক খাদ্য হিসেবে বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। কোভিড ১৯ প্রেক্ষাপটে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর পুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে কারন ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খেলে কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এ লক্ষ্যে ৬-১১ মাস বয়সী শিশু দের জন্য নীল ক্যাপসুল (১ লক্ষ ইউনিট) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু দের জন্য লাল ক্যাপসুল। (২ লক্ষ ইউনিট) খাওয়ানো হবে।
এছাড়া জন্মের পর পর ই নবজাতক কে শাল দুধ খাওয়ানো, জন্মের পর প্রথম ৬ মাস। শিশু কে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি অন্যান্য সুষম খাবার খাওয়ানো, গর্ভবর্তী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সবুজ শাক সবজি ও হলুদ ফল মূল খাওয়ানো এবং রান্নায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করা- এ সকল পুষ্টি বার্তা ও প্রদান করা হবে।
এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিলেট সিভিল সার্ভিন অফিসের ইপিআই ভবনে সিভিল সার্জনের সভাপতিত্বে জেলার অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে সিলেট জেলার সকল উপজেলার তদারককারি মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসবীগণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
| web |
e207ebead5f00ffc5e397a06232ae6f599eac9cf | ক্রাইমবার্তা রিপোটঃবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সাময়িকভাবে হলেও রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেত। কিন্তু ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ। পার্শ¦বর্তী দেশ মায়ানমারে মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর যে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হচ্ছে তাতে করে বাংলাদেশ সরকার নিশ্চুপ। কারণ এরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই সরকারকে একটি বিষয় পরিষ্কার করতে হবে, হয় নৌকায় ভেসে আসা রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিন অথবা সাময়িকভাবে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নিয়ে পরবর্তীতে কুটনৈতিক ভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুণ।
বিএনপি প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ সরকার পার্শ্ববর্তী দেশ হিসাবে মায়ানমারে নির্যাতিত মুসলমাদের পাশে দাঁড়াবে, অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ভাসানী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫২ তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এ আলোচনাসভার আয়োজন করে।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, নীল নকশার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনা বিএনপির নাই। বিএনপি চায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন। অথচ ভোটবিহীন জোর করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে থাকা আওয়ামী লীগ সেই সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে যাচ্ছে না। তারা জানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জামানত থাকবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, বিএনপি না কি গণতন্ত্র হত্যা করেছে। অথচ বিএনপির ইতিহাস গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। একটি কথা স্পষ্ট করে বলছি বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বারবার হত্যা করেছে। তাই আবারো গণতন্ত্র হত্যার পায়তারা চালচ্ছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে পারবে না। কারণ বিএনপি, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ষড়যন্ত্রের শিকার। তাই হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে হবে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনা ১/১১ সরকার ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের সরকারের ফসল। তাই ক্ষমতায় এসে ১/১১ সরকারের ন্যায় হাসিনা সরকার খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা অব্যাহত রেখেছেন।
| web |
98a7eebce99d3705e6e45a6f39e2ecf21ccef722 | শুরুতে লিড পেয়েছিলো বার্সেলোনা। কিন্তু ম্যাচ যতই সামনে অগ্রসর হতে থাকে, ততই ঝিমিয়ে পড়তে থাকে কাতালান এই ক্লাব। আর এরই সুযোগ নেয় সেল্ট ভিগো। আক্রমণ তো করেছেই, গোলেরও প্রতিশোধ নিয়েছে এই ক্লাব। যদিও অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়ে যায়।
সব মিলিয়ে কোনোমতে জিতে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ফিরল জাভির দল। খবর বিবিসির।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে কাতালানরা। ১৭তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বার্সেলোনা। গাভির ক্রস ঠেকাতে পারেনি প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার, বল পেয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন পেদ্রি।
বিরতির পরও একইভাবে খেলতে থাকে বার্সা। তবে সুযোগ পেলেই উল্টো আক্রমণ করে বসে সেল্টা। ৬৯তম মিনিটে গোলও পেয়ে যায় দলটি। তবে অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। শেষপর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা।
৮ ম্যাচে ৭ জয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ দুইয়ে। ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে সেল্টা ভিগো।
| web |
0780bf03a9387f054e0f289e360651793d1b313b | কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করে যুবলীগ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদলে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংগঠন। গত চার দশকের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ভোর ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে অর্পণ করা হবে পুষ্পার্ঘ্য। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণিসহ ৭৫'এর ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ এবং মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল দেশবাসীসহ যুব সমাজকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
| web |
774135b3eae55a501ec6210f701d0713756f4d8c | ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতাঃ শুভেন্দুতেই ভরসা! কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে কলকাতায় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হল শুভেন্দু অধিকারীকে। বিজেপি সূত্রের খবর,' শুভেন্দুর পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতা। তবে শুধু দক্ষিণ কলকাতাই নয়, বিভিন্ন জেলায় সংগঠনকে মজবুত করার পাশাপাশি দলের তরফে শুভেন্দু অধিকারীকে কলকাতায় বিজেপির প্রভাব বিস্তারে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কলকাতায় বুথ সশক্তিকরণ অভিযান সহ কলকাতার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতৃত্বের সঙ্গে এক প্রস্থ বৈঠক ও আলাপচারিতাও সেরে ফেলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
দু দশকেরও বেশি সময় ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পরবর্তীকালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার পর থেকেই নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগে সরব হন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি শিবির মনে করছে, উত্তর কলকাতায় তাদের সংগঠন দক্ষিণ কলকাতার তুলনায় কিছুটা শক্তিশালী। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতা এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের 'দুর্গ'। মূলত দক্ষিণ কলকাতার যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে সেখানে কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য শাসকদলের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই দক্ষিণ কলকাতারই। মূলত ২০২৪ কে পাখির চোখ করে রাজ্যজুড়ে ঘর গুছোতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। সম্প্রতি বঙ্গ সফরে এসে অমিত শাহ লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ৩৫ টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে গেছেন।
আর তারপর থেকেই লোকসভা প্রবাস কর্মসূচি ও বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। গত মঙ্গলবার কলকাতায় হাজির হয়ে প্রথম পর্যায়ে দক্ষিণ কলকাতার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের সাংগঠনিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আগামী দিনে উত্তর কলকাতা জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। তৃণমূলের দুর্গ কলকাতা থেকেও তৃণমূল কংগ্রেসকে 'সাফ' করা যে অসম্ভব নয় সে কথাও এদিন দক্ষিণ কলকাতা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে নামার ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী বলে জানা গেছে।
সব মিলিয়ে কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনে থাবা বসাতে পদ্ম শিবির আস্থা রাখল বিরোধী দলনেতা, নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা একদা শাসক ঘনিষ্ঠ শুভেন্দু অধিকারীতেই বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। তবে কলকাতার বিশেষ দায়িত্বে কেন শুভেন্দু অধিকারী? কারণ হিসেবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ' তৃণমূলের সংগঠন মজবুতের ক্ষেত্রে যেহেতু শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে নিবিড় ভাবে যুক্ত ছিলেন ফলে তাদের রণকৌশল অনেকটাই জানা শুভেন্দুর। আর সেই কারণেই শুভেন্দু অধিকারীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হল ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
| web |
805f267c9680b16642be57259dc7b8855602606e | মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) সংবাদদাতাঃ সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় জনপদ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ১৫০ হেক্টর আমন বীজতলা নষ্ট এতে চাষিদের প্রায় ২ কোটি টাকার রোপা আমন মৌসুমের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। টানা বর্ষণে বহরবুনিয়া, হোগলাবুনিয়া, পঞ্চকরণ, তেলিগাতি, বারইখালী, বলইবুনিয়া, মোরেলগঞ্জ সদর, নিশানবাড়িয়া ও জিউধরায় ভারী বর্ষণে অতিরিক্ত পানিতে ৮ হাজার মৎস্য ঘের পানির নিচে তলিয়ে গেছে মৎস্য ঘেরের বেড়ি ধসে গিয়ে বেরিয়ে গেছে বাগদা, গলদা, বিভিন্ন প্রজাতির সাদামাছ। এতে ঘের ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এতে চাষিদের প্রায় ৬ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। বিস্তীর্ণ এলাকার বিল ও মাঠ ঘাট বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে। এতে করে কৃষকের স্বপ্ন চলতি আমন মৌসুমের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। বীজ ধানও মিলছেনা। ধান রোপণ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান রয়েছে কৃষকরা। তবে স্থানীয় কৃষি অফিসের মাধ্যমে তাদেরকে হতাশ না হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
| web |
76970954e43647a77a32f933bdea1ca9 | Copyright © HT Media Limited All rights reserved.
মিঠাই-এর শাক্যর আসল পরিচয় কী?
মিঠাই-তে ১৪ নভেম্বর থেকে দেখা যাবে বালক শাক্যকে। সেই চরিত্রে অভিনয় করবেন ধৃতিষ্মান চক্রবর্তী। জানুন এই ওয়ান্ডার বয়-এর ব্যাপারে।
জি বাংলার ধারাবাহিক মিঠাই-এর টিআরপি কম হলে কী হবে, চর্চা কম হওয়ার নাম নেয় না। আপাতত গোটা মোদক পরিবার ব্যস্ত শাক্যকে নিয়ে। মানে মিঠাই আর সিডের ছেলে। ১৪ নভেম্বর থেকে বদলাচ্ছে টাইম স্লট। আর তাতে দেখা মিলবে শাক্যর বালকবেলা। ইতিমধ্যেই প্রোমো এসেছে সামনে। আর মিষ্টি অভিনয় দিয়ে দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছে এই পুচকে। চলুন জেনে নেই মিঠাই-এর শাক্যর আসল পরিচয়।
বেবি শাক্যর আসল নাম ধৃতিষ্মান চক্রবর্তী। বয়স মাত্র ৫ বছর। ভাববেন না এই প্রথম সে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ পরিচিতি তাঁর রয়েছে। এইটুকু বয়সেই ৫টি ভাষায় গান গেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে। যে খবর আবার টুইট করে শেয়ার করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই খুদেকে 'রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার' দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি।
ধৃতিষ্মানের বয়স যখন মাত্র ১১ মাস তখন থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক। কেউ গান গাইতে শুরু করলেই চুপ করে শুনত সে। অহমিয়া, সংস্কৃত, বাংলা, হিন্দি এবং ইংরাজি ভাষায় গান গেয়ে গিনিস বুক অফ রেকর্ডে নাম তুলেছেন। ইয়ংগেস্ট মাল্টিলিঙ্গুয়াল সিঙ্গারের খ্যাতিও দেওয়া হয়েছে।
এখানেই কিন্তু শেষ নয়, এই বয়সেই সে ৭০টির বেশি গান রেকর্ড করে ফেলেছেন। ইউটিউবে তাঁর চ্যানেলে ফলোয়ার্সের সংখ্যাও নেহাত কম নয়, প্রায় সাড়ে চার হাজারের কাছাকাছি। বড় হয়ে রকস্টার হতে চান। তবে খুব শীঘ্রই জীবনের নতুন পর্যায়ে পা রাখছেন। গানের দুনিয়ার পাশাপাশি শাক্য হয়ে দর্শকমনে জায়গা করতে প্রস্তুত। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন 'বাপ কা বেটা'। আসলে উচ্ছেবাবু মানে আদৃত রায়ও খুব ভালো সিঙ্গার। তাঁর নিজের ব্যান্ডও আছে। তাই বলা ভালো, ভালোই জমবে সেটে, অনস্ক্রিন বাবা আর ছেলেতে।
নেট-দুনিয়ায় শাক্যর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া।
এদিকে প্রোমোতে দেখানো হয়েছে মারা গিয়েছে মিঠাই। এদিকে দুষ্টু শাক্যকে পড়াতে আসছে মিঠি। যাকে দেখতে মিঠাই-এর মতো। এখন দেখার, কী টুইস্ট অপেক্ষা করে আছে সকলের জন্য।
| web |
70a14bd68790bb44526c760fb8b0866c9cd0b6d0 | সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ ভারতে থেকে পাকিস্তানের জয়গান গাইবে। আবার তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। অন্তত এমনটাই আবদার কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি লিখে তিনি আবেদন করলেন, যারা পাকিস্তানের জয়গান গাওয়ার জন্য শাস্তি পেয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট না হয়।
গত রবিবার ভারত ও পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ম্যাচ চলাকালীন পাকিস্তানের হয়ে জয়ধ্বনি দেওয়া ও পাকিস্তানের (Pakistan) জয় উদযাপন করার একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। পাক দলকে সমর্থনের অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়েছে কাশ্মীরি মেডিক্যাল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। একই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশেও (Uttar Pradesh)। আগ্রার মেডিক্যাল কলেজের তিন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা আবার কাশ্মীরি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে পাকিস্তানের জয়ে উল্লাসের জন্য, লখনউ, আগ্রা, বরেলি, সীতাপুরের মোট সাতজনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা রুজু করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন কাশ্মীরি এমবিবিএস পড়ুয়া।
মেহেবুবার চিঠিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে আগ্রার ৩ এমবিবিএস পড়ুয়ার কথা। কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, "এতদিন এই ধরনের অভিজ্ঞতা কাশ্মীরের মধ্যের যুবসমাজের হত। এবার কাশ্মীরের বাইরে এমবিবিএসের মতো পেশাদার ডিগ্রি নিতে গিয়েও এভাবে আক্রান্ত হতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এরাই আমাদের সেরা প্রতিভা। এদের ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট না হয়। " শুধু চিঠি লেখাই নয়, মেহেবুবার দল পিডিপি কাশ্মীরে পাকপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভও দেখিয়েছে। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি পিডিপি নেত্রী ঘুরিয়ে ভারত বিরোধিতায় ইন্ধন যোগাচ্ছেন?
| web |
adc501d0a7a7953aebe274cc6a1625c3a98de8a2 | বাংলা হান্ট ডেস্ক : আরও এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পেতে চলেছে ভারত। এই মুহুর্তে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ত্রিপুরায় এবার মুখ্যমন্ত্রীর (Tripura Chief Minister) পদে বসতে পারেন এক মহিলা। বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। অবশেষে ম্যাজিক ফিগার টপকে সরকার গঠন করতে চলেছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট। এখন লক্ষ টাকার প্রশ্ন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন?
গতবার বিপ্লব দেবের উপর ভরসা রেখে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তিনিই যদি মুখ্যমন্ত্রী থাকতেন তাহলে এই নির্বাচনে আদৌও বিজেপি জিতত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল গেরুয়া শিবিরের। তড়িঘড়ি মানিক সাহাকে এনে 'ড্যামেজ কন্ট্রোল' করেছে পদ্ম শিবির। কিন্তু আশানুরূপ সাফল্য পায়নি দল। তাই এবার বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের অনুমান, এবার আর মানিক সাহা নয়, কোনও মহিলাকেই মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসাতে চলেছে গেরুয়া শিবির।
সূত্রের খবর, জোটের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রতিমা ভৌমিককে (Pratima Bhowmik) মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসাতে চলেছে। বর্তমানে তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মহিলা ক্ষমতায়নের প্রতিমন্ত্রী। লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁকেই ত্রিপুরার সিংহাসনে বসাতে চাইছে বিজেপি-আইপিএফটি।
অবশ্য, বিজেপির একাংশের ধারণা, আপাতত মানিক সাহাই রাজ্যের নেতৃত্বে থাকবেন। তিনিই হবেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। কিছু সময় পর তাঁকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদে নিয়ে আসা হতে পারে প্রতিমা ভৌমিককে। প্রতিমা ভৌমিক ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হলে তিনিই হবেন উত্তর পূর্ব ভারতের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী (First Female Chief Minister Of North East India)। এবং দেশের বর্তমান দ্বিতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী।
কে এই প্রতিমা ভৌমিক? ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ত্রিপুরার ছোট্ট গ্রাম ধানপুর। সেখানেই একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম প্রতিমার। আদিবাসী জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলি থেকে এ বার নির্বাচনে শোচনীয় হাল হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বহুবার উত্তর পূর্ব ভারতে মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে যে বার্তা দিয়েছেন, তা ভোটারদের বেশ অনুপ্রাণিত করেছে। মহিলাদের ভোট বিজেপি-কে আরও একবার ক্ষমতা বসিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। তাই প্রতিমা ভৌমিককে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে সেই ভোট ব্যাঙ্ককেই শিলমোহর দিতে চাইছে বিজেপি।
| web |
2ed16d44cb46e92425da3be370d90f26bd3fd79b | স্বপ্নের ফাইনাল খেলতে কলম্বিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল ব্রাজিলিয়ান ক্লাব শাপেকোয়েন্স। কিন্তু আকাশপথে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ক্লাবটির ১৯ ফুটবলার নিহত হয়েছেন। তাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নিজেদের অনুশীলনের আগে নিরবতা পালন করেছে ইউরোপের দুই সেরা ক্লাব বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের ক্লাব পর্যায়ের অন্যতম সেরা ফুটবল টুর্নামেন্ট কোপা সুদামেরিকানা। ওই টুনামেন্টের ফাইনালে অংশ নিতে দেশ ছেড়েছিল শাপেকোয়েন্সের ফুটবলাররা। কিন্তু তাদের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পুরো ফুটবল বিশ্বে চলছে শোকের মাতম। ফিফা সভাপতি জিয়ানো ইনফান্তিনো থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবল ফেডারেশন ও ক্লাবগুলো শাপেকোয়েন্সের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছে। ইউরোপের অন্যতম সেরা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের ওয়েবসাইটে শোক প্রকাশ করে লেখা হয়েছে, 'ব্রাজিলিয়ান ক্লাব শাপেকোয়েন্স মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে রিয়াল মাদ্রিদ। নিহতদের বন্ধু ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি আমরা। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন সে প্রত্যাশাও থাকবে আমাদের। 'শাপেকোয়েন্সের প্রতি সমবেদনার কথা জানিয়েছে স্পেন তথা ইউরোপের আরেক শীর্ষ ক্লাব বার্সেলোনা। কাতালান ক্লাবটি এক টুইট বার্তায় জানায়, 'শাপেকোয়েন্স ট্র্যাজেডির শিকার প্রত্যেকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও সংহতি জানাচ্ছি। ' ইন্টারনেট।
| web |
aa9e24b842c3261b0bd7f74cebd5cac2826f99b7868ccc27d39aa81c631cdb10 | স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে সামনের পাহাড়ের একটা ফটো তুলে নিলেন। তারপর রেলপথের দুধারেই অপূর্ব দৃশ্য - জানালা থেকে চোখ ফেরাতে পারিনে। গৈলকেরা স্টেশনে বড় বড় পেঁপে গোটাকতক কেনা হয়েছিলকিরণ সেগুলো ছাড়িয়ে ভালো করে কেটে দিলে।
বসন্তকাল, বনে বনে রক্তপলাশের সমারোহ, সারেঙ্গ টানেন্সের মুখে ধাতুপ ফুলের বন, শালবনে কচি সবুজ পত্রের সম্ভার, প্রচুর সূর্যালোক, বনের মাথাব ওপরে নীল আকাশ, মাঝে মাঝে বনের মধ্যে দিয়ে পার্বত্য নদী শীর্ণধারায় সর্পিল গতিতে বয়ে চলেচে, কোথাও একটা বড় নির্জন পথ রেললাইনের দিক থেকে গভীর বনের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল, কোথাও প্রকাণ্ড কোয়ার্টজ পাথরের পাহাডটা বনের মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে, কোথাও একটা অদ্ভুতদর্শন বিশাল শিলাখণ্ড বনের মধ্যে পড়ে আছে - প্রমোদবাবু আর কিরণের খুশি দেখে কে। পরিমল বেচারী তো ফটো নেবাব জন্যে ছট্গট্ করছে, আর কেবল মুখে বলচে, ওঃ এইখানে যদি ট্রেনটা একটু দাঁড়াতো। ওখনে যদি ট্রেন একটু দাঁড়াতো !
এখানে আমরা
বেল। দুট্টোর সময় ঝাসাগুডা স্টেশনে গাড়ি দাঁড়ালো। চা খেয়ে নিলাম।
প্রমোদবাবু টাইমটেবল দেখে বললেন- বিচানা বেঁধে ফেলুন সবাই, আর দুটো স্টেশন পরেই বেলপাহাড়। ওখানেই নামতে হবে।
ইব বলে একটা ছোট স্টেশন ঘন বনের মধ্যে।
স্থানটায় বড় চমৎকার শোভা। স্টেশনের কাছেই একটা নদী, তার দুপারে ঘন বন, বনের মধ্যে রাঙা ধাতুপ ফুলের মেলা ।
একটা লোককে জিগ্যেস করে জানা গেল নদীর নাম ব্রাহ্মণী বা বামুনী ।
বেলপাহাড় স্টেশনে নামবার আগে দেখি ছোট্ট স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে
অনেকগুলি লোক সারবন্দী হয়ে কাদের অভ্যর্থনা করে নেবার জন্যে দাড়িয়ে আছে । আমরা যেতেই তারা আমাদের কাছে ছুটে এল - উড়িয়া ভাষায় বললে - বাবুর। কলকাতা থেকে আসচেন ?
-হ্যা। তোমরা কাকে খুঁজচো ?
-~-সম্বলপুরের ডেপুটি কমিশনার সাহেব আমাদের পাঠিয়ে দিয়েচেন। আপনাদের আসবার কথা ছিল, আপনাদের সব বন্দোবস্তের ভার নেবার পরোয়ানা দিয়েচেন আমাদের ওপর ।
প্রমোদবাবুর দাদা বন্ধুবর নীরদবাবুর সঙ্গে সম্বলপুরের ডেপুটি কমিশনার মিঃ সেনাপতির আলাপ ছিল, সেই সূত্রে নীরদবাবুকে দিয়ে একখানা চিঠি লিখিয়ে এসেছিলুম আমি ও প্রমোদবাবু কয়েকদিন পূর্বে। চিঠির মধ্যে অনুরোধ ছিল যেন গ্রাম্য পুলিশ আমাদের গন্তব্য স্থানে যাবার একটু ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু সে ব্যবস্থা যে এভাবে অভ্যর্থনায় পরিণত হবে তা আমরা ভাবিনি ।
বেলপাহাড় স্টেশন থেকে কিছুদূরে ডাকবাংলোয় তারা নিয়ে গিয়ে তুললে । একটু দূরে একটা বড় পুকুর, আমরা সকলে পুকুরের জলে নেমে স্নান করে সারাদিন রেলভ্রমণের পবে যেন নতুন জীবন পেলাম। পুকুরের পাডে পুরীর জগন্নাথের মন্দিরের অনুকরণে একটি ক্ষুদ্র মন্দির।
স্থানটি চতুর্দিকে পাহাড়ে ঘেব। - অবিশ্যি পাহাড়শ্রেণী দূরে দূরে। একটি বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ ডাকবাংলোয় আমাদের জন্যে রান্না করে বেখেচে।
স্নান করে এসে আমরা আহারে বসে গেলুম, শালপাতায় আলোচালের ভাত আর কাঁচ। শালপাতার বাটিতে ডাল । পাচক ব্রাহ্মণটি যেন সাত্ত্বিকতার প্রতিমূর্তি, শান্ত নম্ৰস্বভাব - আমাদের ভয়েই যেন সে জড়সড়। সঙ্কোচের সঙ্গে ভয়ে ভয়ে আমাদের পরিবেষণ করছিল - যেন তার এতটুকু ত্রুটি দেখলে আমরা তাকে জেলে পাঠাবো। ডেপুটি কমিশনারের বন্ধু আমরা
-বলা তো যায় না! তারপর জিগ্যেস করে জানা গেল ব্রাহ্মণ পুকুরপাড়ের সেই মন্দিরের পূজারী।
বেলা পড়ে এসেচে। রাঙা রোদ দূরের পাহাড়ের মাথায়, শালবনে, রাঙা মাটির টিলার গায়ে ।
কি ঘন শালবন, দূরে দূরে নির্জন পর্বতমালা।
ডাকবাংলো থেকে অল্প দূরে একটি গ্রাম্য হাট বসেচে। আমরা হাটে বেড়াতে গেলাম। উড়িযা মেয়েরা হাট থেকে ঝুড়ি মাথায় বাড়ি ফিরচে। আমরা হাট বেড়িয়ে বেড়িয়ে দেখলাম । পরিমল কয়েকটি ফটে। নিলে। বেগুন, রেডির বীজ, কুচো শুট্কি চিংড়ি, কুমডে। প্রভৃতি বিক্রি হচ্চে। এক দোকানে একটি উড়িয়া যুবতী ধান দিয়ে মুডকি কিনচে।
সন্ধ্যার ছায়া নেমে এল। আমরা ডাকবাংলোর বারান্দায় চেয়ার পেতে বসলাম । পাচক ব্রাহ্মণটি এসে বিনীত ভাবে উড়িয়া ভাষায় জিগ্যেস করলে রাত্রে আমরা কি থাবো। আমাদের এত আনন্দ হয়েচে যে, কত রাত পযন্ত জ্যোৎস্নালোকে বসে আমরা গল্প করলুম । রাত দশটার সময় আহারাদি শেষ হয়ে গেল - কিন্তু ঘুম আর আসে না কারো চোখে ।
পরদিন সকালে আমরা বিক্রমথোল রওনা হই। আমাদের সঙ্গে রইল গ্রাম্য পাটোয়ারী ও দুজন ফরেস্ট গার্ড - একখানা গোরুর গাড়িতে আমাদের জিনিসপত্র চললো, কিন্তু আমবা পাবে হেঁটে যাওয়াই পছন্দ করলুম। জিগ্যেস করে জেনেছিলুম বিক্রমবোল এখান থেকে প্রায় ভেবে। মাইল।
বেলপাহাড় থেকে বিক্রমখোল পর্যন্ত এই পথের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমার মনে চিরকালের ছবি এঁকে রেখে দিয়েচে। কতবার অবকাশমুহূর্তে স্বপ্নের মতো মনে হয় সেই নদী-পর্বত-অরণ্য-সমাকুল নির্জন বন্যপথটির স্মৃতি। প্রথম বসন্তে ফুটন্ত পলাশবনের শোভা ও রাঙা ধাতুপ ফুলের
সমারোহ সারা পথে, মাঝে মাঝে পাহাড়ী নদীর খাত বেয়ে ঝিরঝির করে জল চলেচে পাথরের হুড়ির রাশির ওপর দিয়ে।
এক জায়গায় বড় বড় গাছের ছায়া। সামনে একটি পাহাড়ী নদীর কাঠের পুলের ওপর ঘাসের চাপড়া বিছিয়ে দিচ্চে। ঝরনার দুধারে পাহাড়ী করবীর গাছ ফুলের ভারে জলের ওপর হয়ে আছে। প্রমোদবাবু প্রস্তাব করলেন, এখানে একটু চা সেরে নেওয়া যাক বসে ।
কিরণ বললে - চা খাওয়ার উপযুক্ত জায়গা বটে । বসুন সবাই ।
আমাদের সঙ্গে ফ্ল্যাঙ্কে চা ছিল, আর ছিল মার্মালেড আর পাঁউরুটি। মার্মালেডের টিনটা এই প্রথম খোলা হ'ল । প্রমোদ ও পরিমল রুটি কেটে বেশ করে মার্মালেড মাখিয়ে সকলকে দিলে - কিরণ চা দিল সবাইকে টিনের কাপে ।
কিছুক্ষণ পরে কিরণ রুটি মুখে দিয়ে বললে - এত তেতো কেন ? এঃ-আমিও রুটি মুখে দিয়ে সেই কথাই বললুম । ব্যাপার কি? শেষে দেখা গেল মার্মালেডটাই তেতো। মার্মালেড নাকি তেতো হয়, পরিমল বললে । কি জানি বাপু, চিরকাল পড়ে এসেচি মার্মালেড মানে মোরব্বা, সে যে আবার তেতো জিনিস - তা কি করে জানা যাবে ?
এ নাকি সেভিলের তেতো কমলালেবুর খোসায় তৈরী মার্মালেড, টিনের গায়ে লেখা আছে ।
পরিমল এটা কিনে এনেছিল - তার ওপর সবাই খাপ্পা । কেন বাপু কিনতে গেলে সেভিলের তেতো কমলালেবুর মার্মালেড ? বাজারে জ্যাম জেলি ছিল না ?
হাঁটতে হাঁটতে রৌদ্র চড়ে গেল দিব্যি। বেলা প্রায় এগারোটা। পথের নব নব রূপের মোহে পথ হাঁটার কষ্টটা আর মনে হচ্ছিল না। এ যেন জনহীন অরণ্যভূমির মধ্যে দিয়ে চলেচি - এতটা পথ চলে এলুম,
কোথাও একটা চষা ক্ষেত চোখে পড়লো না। শুধু পাহাড় আর বন, বন আর পাহাড়।
এক জায়গায় পাহাড় একেবারে পথের গা ঘেঁষে অনেক দূর চলেচে। পাহাড়ের ছায়া আগাগোডা পথটাতে । আমাদের বাঁদিকে জমি ক্রমশ ঢালু হয়ে একটা নদীর খাতে গিয়ে মিশলো। সমস্ত ঢালুটা বন্য-করবী ফুলেৰ বন। পাহাড়ের ওপর বাঁশবন এদেশে এই প্রথম দেখলুম। বন্যবাঁশ আমি চন্দ্রনাথ ও আরাকান-ইয়োমার পাহাড়শ্রেণী চাড়া ইতিপূর্বে কোথাও দেখিনি। উড়িষ্য। ও মধ্যপ্রদেশের আর্দ্রতা-শূন্য আবহাওয়ায় এই বন্যবাশ সাধারণত জন্মায় না। বাঁশ যেখানে আছে, তা মানুষের সযত্নরোপিত ।
বেল। প্রায় বাবোটার সময় আমরা গ্রিন্ডোলা বলে একটি গ্রামে পৌছলাম। এই গ্রাম আমাদের গন্তব্যস্থান থেকে মাত্র দু'মাইল এদিকে, এখানেই আমর। দুপুরে খাবে। দাবো।
গ্রামে ঢুকবাব আগে এক অপূর্ব দৃশ্য। ঢুকবার পথের দুধারে সারবন্দী লোক দাঁড়িয়ে কাদের অপেক্ষা করচে যেন - অনেক দূর থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম ।
প্রমোদবাবু বললেন - ওখানে অত লোক কিস্সে হে? পরিমল বললে - আমি একটা ফটো নেবো।
আমরা কাছে যেতেই তারা আমাদের একযোগে পুলিশ প্যারেডের মতে? সেলাম করলে। ওদের মধ্যে একজন লোক এগিয়ে এসে বললে - আমার নাম বিম্বাধর, আমি এই গ্রামের গ্রামীণ। ডেপুটি কমিশনার সাহেব পরোয়ানা পাঠিয়েচেন কাল আমার ওপর, আপনাদের বিক্রমখোল দেখবার বন্দোবস্ত করতে। সব করে রেখেচি আঙ্গুন বাবুসাহেবরা। কিরণ বললে - ব্যাপার কি হে?
পরিমল বললে - রাজশক্তি পেছনে থাকলেই অমনি হয়, এমনি আমরা ট্যাং ট্যাং করে এলে কেউ কি পুছত ? এ ডেপুটি কমিশনারের পারোয়ানা
আমি বললুম - টু করবার জোটি নেই ।
গ্রামের মাঝখানে মণ্ডপঘর । সেখানে আমাদের নিয়ে গিয়ে সবাই তুললে। রথ-যাত্রাব ভিড লেগেচে সেখানে, গ্রামসুদ্ধ লোক সেখানে জড হয়েচে কলকাতা থেকে মহাপ্রতাপশালী বাবুর। আসচেন শুনে। ডেপুটি কমিশনার স্বয়ং যাদের নামে পরোয়ানা পাঠান - তাদের একবার চোখে দেখে আসাই যাক !
বেলপাহাড়ের পাটোয়ারী ইতিমধ্যে জাহির করে দিয়েচে - বাবুরা সাধারণ লোক নয়। গবনমেন্টের খাসদপ্তরের অধিসর সব। ভাইসব, হুশিয়ার ।
বিশ্বাধর আমাদের জন্যে এক ধামা ওকুড়া অর্থাৎ মুডকি আর এক কড়া ভর্তি গরম দুধ নিয়ে এল। পরামর্শ করে স্থির হ'ল আমব। একটু বিশ্রাম করে নিয়ে এখনি বিক্রমখোল যাবো। সঙ্গে চারজন ফরেস্ট গার্ড এবং বিম্বাধর থাকবে। জঙ্গল বড় ঘন, বাঘ-ভালুকের ভয় - বেলাবেলি সেখানে থেকে ফিরতে হবে দেখে শুনে । এসে স্নানাহার করা যাবেনতুবা এখন স্নানাহাব করতে গেলে বেলা একেবারে পড়ে যাবে, সে সময় অত বড় জঙ্গলে ঢোক। যুক্তিযুক্ত হবে না।
কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে আমরা বিক্রমবোল বওনা হলুম।
গ্রিণ্ডোলা ছাড়িয়ে মাইল দুই গিয়েই গভীর অবণ্যভূমি - লোকজনের বসতি নেই, শুধু বন্যবাঁশ আব শাল-পলাশের বন। প্রকাণ্ড বড় বড় লতা গাছের ডালে জড়াজড়ি করে আছে - গাছের ছায়ায় সবুজ বনটিয়ার ঝাঁক। হরিতকী গাছের তলায় ইতস্তত শুকনে। হরিতকী ছড়িয়ে পড়ে আছে কোথাও আমলকি গাছে যথেষ্ট আমলকি ফলে আছে।
পূর্বে যে শুভ্ৰকান্ত বৃক্ষকে শিববৃক্ষ বলে উল্লেখ করেচি, এ বনে তার সংখ্যা খুব বেশি। এত শিব-বৃক্ষের ভিড় আমি আর কোথাও দেখিনি।
এই বনে আর একটি পুষ্পবৃক্ষ দেখলুম - পরে অবিশ্রি সিংভূম অঞ্চলের পার্বত্য অরণ্যে এই জাতীয় গাছ আরও দেখেচি। গাছটার ফুল অবিকল কাঞ্চন ফুলের মতো, গাছটাও দেখতে সেই ধরনের। বনের মধ্যে যেখানেসেখানে এই বৃক্ষ অজস্র পুষ্প-সত্তারে সজ্জিত হয়ে দাঁড়িয়ে।
বনের মধ্যে মাইল দুই-তিন হাঁটবার পরে পথ ক্রমে উঁচু দিকে উঠতে লাগলো - এক জায়গায় গিয়ে পথটা হঠাৎ শেষ হয়ে গেল। আমরা যেন একটা পাহাড়ের ওপর থেকে অনেক নিচু উপত্যকার দিকে চেয়ে দেখচি। আমাদেরঃওই উপত্যকার মধ্যে নামতে হবে সরু পথ বেয়ে, কোনো কোনো জায়গায় পাহাড়ের ফাটল থেকে বেরুনো শেকড় ধরে।
বিস্বাধর আমাদের সঙ্গে ছিল। সে বললে -পুলিশে জঙ্গল কেটে রাস্তা পরিষ্কার করে দিয়েছে। নামতে তত অসুবিধে হবে না বাবু ।
সবাই মিলে পাহাড়ের গা ধরে সন্তর্পণে অনেকটা নিচে নামলুম, আঁকা-বাঁকা পথ বেয়ে।
তারপর ওপর দিকে চেয়ে দেখা গেল অনাবৃত পর্বতগাত্রে লম্বালম্বিভাবে খোদাই করা কতকগুলি অজ্ঞাত অক্ষর বা ছবি। পরিমল বিভিন্ন দিক থেকে শিলালিপির ফটো নিলে, অক্ষরগুলির অবিকল প্রতিলিপিও এঁকে নিলে। জায়গাটার প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই অপূর্ব। আমাদের আরও নিচে উপত্যকার মেজে। যে পাথরের গায়ে শিলালিপি উৎকীর্ণ, তাকে পাহাড় না বলে একটা মালভূমির অনাবৃত শিলাগাত্র বলাই সঙ্গত। নিম্নের উপত্যকা নানাজাতীয় বন্যবৃক্ষে সমাচ্ছন্ন, তার মধ্যে কাঞ্চন ফুলগাছের মতো সেই গাছও যথেষ্ট - ফুলে ভর্তি হয়ে সেই নির্জন পর্বতারণ্যের শোভা ও গাম্ভীর্য বৃদ্ধি করচে।
উপত্যকার ওদিকে আবার মালভূমির দেওয়াল খাড়া প্রাচীরের মতো উঠে গিয়েচে, সেদিকটাতেও ঘন জঙ্গল। এমন একটি জনহীন ঘন অরণ্যভূমির দৃশ্য কল্পনায় বড় একটা আন। যায় না, একবার দেখলে তারপর তার বন্য বাঁশ-ঝোপের ছায়ায় বিচরণকারী মৃগযুথের ছবি মানসচক্ষে দর্শন করা কঠিন হয় না অবিশ্যি
বেলা পড়ে আসচে। সমগ্র উপত্যকাভূমির অরণ্য ছায়াবৃত হয়ে এসেচে। রৌদ্রতপ্ত বাতাসে শালমঞ্জরীর সুগন্ধ।
বিধাধর বললে - এবার চলুন বাবুরা, আর এখানে থাকা ঠিক হবে না। অনেকটা যে ফিরতে হবে।
জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে আমরা সে স্থান ত্যাগ করবার পূর্বে পরিমল আমাদের দলের একটা ফটো নিলে।
তারপর আবার পাহাড়ের গা বেয়ে ওপরে উঠলুম সবাই । বনের মধ্যে দিয়ে জোর পায়ে হেঁটে সন্ধ্যার কিছু পূর্বে আমরা গ্রিপ্তোনা পৌছলাম।
বিম্বাধরের লোকজন আমাদের জন্যে রান্না করে রেখেছিল। ভাত ও পুরী দুই রকমই ছিল, যে যা খায় । আমরা নিকটবর্তী একটা পুকুরে স্নান করে এসে খেতে বসলুম।
গ্রামের লোকের ভিড় পূর্ববৎ। সবাই উঁকি-ঝুকি মেরে ভোজন-রত বাঙালী বাবুদের দেখচে । গ্রামের বালক-বৃদ্ধ-যুবা কেউ বোধ হয় বাকি নেই। চারিধারে উড়িয়া বুলি ।
খাওয়া শেষ হ'ল। একটি গ্রাম্য নাচের দল নাকি অনেকক্ষণ থেকে আমাদের নাচ দেখাবে বলে অপেক্ষা করচে। এখন যদি আমাদের অনুমতি হয় তো তারা আসে। আমরা খুব আনন্দের সঙ্গে সম্মতি দিলাম। গ্রামের মণ্ডপঘরের সামনে রাস্তার ওপরে নাচ আরম্ভ হ'ল। ছোট
| pdf |
f386d6fd10d67325e221f8ebbc77c55ac23b308a9465807ff4ef8127bd21b9d6 | বামাবোধিনী পত্রিকা ।
[৫ম ক-২য় ভাগ ।
প্রেমিক বুদ্ধ - প্রেমিক চৈতন্য কিসের জন্য সংসার ছাড়িয়াছিলেন? প্রেমসদ্ভাবে অভ্যস্ত করাইতে ভাতৃদ্বিতীয়া ময়ী মীরা বাঈ - করমেতো বাই কিসের
প্রবর্তন করিয়াছেন। তাই এক একবার ভরসা হয়, ভ্রাতৃদ্বিতীয়। উপযুক্তরূপে অনুষ্ঠিত হইলে বুঝি বা ভারতের লুপ্ত প্রায় সদ্ভাব আবার ফিরিয়া আসিবে! তাই ভরসা হয় ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উপযুক্ত রূপে অনুষ্ঠিত হইলে বুঝি বা সকলেই ডাই, সকলেই ভগিনী হইবে ! বুঝি প্রেমসাধক আর্য্যগণের মহামন্ত্র ব্যর্থ হইবে না। বুঝি পাতদিতীয়ার জন্ম নিষ্ফল হইবে না!
আমরা পূর্ব্বে বলিয়াছি, সদ্ভাবের পরিণতির অবস্থাকে প্রেম বলে। বলিয়াছি যেমন কলিকা ও ফল, সেইরূপ সদ্ভাব ও প্রেম। সদ্ভাব হইতে পর আপনার জন হয়, প্রেম হইতে পর প্রেমিক নিজেই! সদ্ভাব বলেন "এই জগতে যত নর নারী সকলেই এক মায়ের সন্তান;" প্রেম মানবকে বলেন "জ যত মানব দেখিছে, এ সব তুমিই" ! বসুধৈব কুটুম্বকম," এই হইল সদ্ভাবের কথা, আর আত্মবং সৰ্ব্বভূতেষু" এই হইল প্রেমের কথা ! হৃদয় হৃদয়ে যে একটুকু ব্যবধান, প্রেম তাহ। সহিতে পারে না, প্রাণে
প্রাণে যে একটুকু প্রভেদ, প্রেম তাহা সতিতে পারে না। সদ্ভাব সকলের মুখে হাসি দেখিতে চায়, সকলের বুকে সুখ দেখিতে চায়! প্রেমিক নিজে সন্ন্যাসী ডিখারী হুইয়া পরের সুখ বাড়াইতে চায় !
জন্য পথের ভিধারিণী হইয়াছিলেন ? কেবল প্রেমের জন্য। প্রেমিক বিশ্বেশ্বরকে - এই অনন্ত বিশ্বের সমাটকে আপনার বুকের ভিতর পূরিয়া রাখিয়াছেন। প্রেমিক পঞ্চভূতের সমষ্টি ও নহে, ইন্দ্রিয়ের - একাদশ ইন্দ্রিয় অধিকারীও নহে; প্রেম, কায়মনোবাক্যে প্রেমিককে ঈশ্বরের চরণে উৎসর্গ করিয়াছে, প্রেমিক সেই ঈশ্বরের। সেই ঈশ্বরের। প্রেমের সহিত ধর্মের মিলন অপরিহার্য্য । ধার্মিক বলিতে প্রেমিক বুঝায়, প্রেমিক বলিতে ধাৰ্ম্মিক বুঝায় একথা তুমিই বুঝিয়াছিলে, হিন্দু আর তুমিই বলিয়া গিয়াছ - "সৰ্ব্বভূতস্থমা গ্লানং সৰ্ব্বভূতানি চায়নি। ঈক্ষতে যোগব তাত্মা সঙ্গত সমদনিঃ॥"
অর্থাং " ঈশ্বরে যোগ মুক্তাত্মা ব্যক্তি সৰ্ব্বত্র সমদর্শী হইয়া আপনাকে সৰ্ব্বভূতের মধ্যে সর্ব্বভূতকে আপনার মধ্যে দেখেন " ইহাই প্রেমের চরমোংকর্য ! এমন স্বর্গীয় কথা যে জাতি বলিয়াছেন, স জাতি মানব কি দেবতা, পাঠক পাঠিকা স্বয়ং তাহার বিচার করুন।
প্রকৃত পতিপাণা রমণী সপত্নী-সম্ভান কে "পর" ভাবিতে পারেন না, স্বামীর সন্তান বলিষা, স্বামীর ধন বলিয়া তাহাকে
অপত্য নির্ব্বিশেষে স্নেহ করেন ; সেইরূপ প্রকৃত ধার্ম্মিক কোনও ব্যক্তিকে পাপী বলিয়া, কোনও সম্প দায় কে ভ্রান্ত বলিয়া,
| pdf |
e0f9b65e9f99b26ea4d3501a09e3144f7cb6ef3d | উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে দু'ফসলী ও পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। এই চাষের ফলে একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলার কর্মহীন অসহায় লোকরা ঘরে বসে না থেকে খাদ্য খাট মোকাবিলায় তাদের পতিত জমিতে করেছে সূর্যমূখীর আবাদ। এই চাষের ফলে একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে পতিত অনাবাদি জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এই ধারণা থেকে চর ও আবাদি জমিতে কৃষিবিভাগ প্রণোদনার মাধ্যমে ব্যাপক জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে পাল্টে যেতে পারে এই এলাকার চেহারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলার মির্জাগঞ্জ চরে, পূর্ব সুবিদখালী দত্তের চরে, পশ্চিম সুবিদখালী, কাকড়াবুনিয়া, মজিদবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ১০ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা এস-২৭৫, হাইসান-৩৩ ও বাড়ি সূর্যমুখী হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।
পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের কৃষক জলিল হাওলাদার বলেন, এবছই প্রথম ৩৩ শতক জমিতে সূর্যমূখী চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সূর্যমুখীর এস-২৭৫ (হাইব্রিড) জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার বিনামূল্যে সংগ্রহ করেছি। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সহযোগিতায় সূর্যমুখী চাষ করেছি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারি করে বীজ রোপন করেছি। তিন মাসের মধ্যে ফুল আসা শুরু হয়েছে। খুব ভালো ফলন হইছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ ন্যায্যমূল্য কৃষকদের কাছ বীজ সংগ্রহ করবে। ৭-৮ দিনের মধ্যেই বীজ সংগ্রহ করা যাবে।
পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক রুস্তুম আলী বলেন, সূর্যমুখী চাষে খরচ অল্প এবং পরিশ্রমও কম। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় এক একর জমিতে সূর্যমূখীর আবাদ করছি। অধিক ফলন হওয়ায় প্রতিবছরই সূর্যমুখীর চাষ করবো।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য সূর্যমুখীর তেলের বিকল্প নেই। ভারতে এই তেল খুবই জনপ্রিয় ও প্রচলন আছে চোখে লাগার মতো। অন্য তেলের চেয়ে যদিও একটু দাম বেশি। বাংলাদেশের আবহাওয়া, জল, মাটি সূর্যমুখী চাষের অনুকূলে। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে, প্রসার লাভ করছে না সে রকমভাবে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে তার দাম। অথচ বাংলাদেশে সূর্যমুখীর সম্ভাবনা উজ্জ্বল। আমরা বিদেশ থেকে রিফাইন্ড সয়াবিন তেল আমদানি করি, তাতে আছে ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান।
সূর্যমুখী উৎপাদনে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ হতে পারে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার অনুকূলে শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি মাথায় রেখে। সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল সংগ্রহ ও যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রিফাইন্ড করে সূর্যমুখী তেল বোতলজাত করে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে বাজারজাত করা যেতে পারলে, তেল সহজলভ্য হতো এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষাও থাকতো।
তিনি আরও বলেন, এবারে সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহ করা হবে। যাতে কৃষকরা লাভবান হয় এবং ভবিষ্যতে সূর্যমূখী চাষে কৃষকরা উৎসাহী হন। সূর্যমুখীর স্বাভাবিক ফলন বিঘা প্রতি ৬ থেকে ১০ মণ, তবে মির্জাগঞ্জ চরাঞ্চলে সূর্যমুখীর ফলন দশ মণের বেশি আশা করছি। মির্জাগঞ্জে সূর্যমুখীর চাষ করা হলে এ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়রেন ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
| web |
b4c6bd3b88ff5161cb9a0b8e5e7752147c9434f6 | বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার করচার হাওর সহ বিভিন্ন হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধে ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধে বাঁশ ও বস্তা না দেয়ায় করচার হাওরের ১নং, ২নং ও ৪নং পিআইসির বাঁধগুলো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এতে দুশ্চিতা বেড়েছে কৃষকদের।
হাওর পার্শ্ববতীর্ নদীতে অতিরিক্ত পানি বাড়ায় উপজেলার করচার হাওরের ১নং পিআইসির হরিমনের ভাঙ্গা ও বেকা বাঁধ সহ বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ইঞ্জিন চালিত নৌকার ঢেউয়ে বাঁধের পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে।
উপজেলার আঙ্গারুলী হাওরের ৯নং পিআইসির খাদ্য গোদামের পাশে ২টি বাঁধে এবং করচার হাওরের রাজার বাঁধে গর্ত হয়ে পানি প্রবেশ করছিল। স্থানীয় কৃষক ও পাউবো সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় গর্তগুলো বন্ধ করা হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, বাঁধে প্রয়োজনীয় বাঁশ ও বস্তা লাগানো হয়নি। নদীতে পানি বাড়ায় এবং ইঞ্জিন চালিত নৌকার ঢেউয়ে ভাঙ্গছে বাঁধ। জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ এখন বাঁশ ও বস্তা দিয়ে শক্ত করা এবং বাঁধে সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা করা দরকার।
ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমেদ বলেন, হালির হাওরের একাংশে ১৭নং পিআইসির কালা গাংঙ্গের ক্লোজার ও ২২নং পিআইসির সিমের খাড়া ও শামছুল খাড়ায় ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাঁধগুলোতে জরুরী ভিত্তিতে বস্তা ও মাটি ফেলা প্রয়োজন।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর পূর্ব অঞ্চল সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. সাদি উর রহিম জাদিদ প্রমুখ।
| web |
0f939c2acf994143feda5c857bb332f2 | নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ'র জয়রামপুর গ্রামে ব্যতিক্রমী এক মেলা বসে, যার নাম বউমেলা। এখানে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে দেড়শ বছরের পুরোনো একটি বটগাছকে ঘিরে বউমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটি স্থানীয়ভাবে "বটতলার মেলা" নামেও পরিচিত। শত বছরের পুরোনো এ মেলার আয়োজন করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
জয়রামপুর গ্রামের মানুষের ধারণা, প্রায় ১০০ বছর ধরে চলছে এই মেলা । বটগাছটিকে দেবী মনে করে আমিনপুর, ভট্টপুর, সাহাপুর, বাণীনাথপুর, কৃষ্ণপুরা, গোবিন্দপুর, পানাম-গাবতলীসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে শত শত নারীরা পূজা-অর্চনা করতে এখানে আসেন।
লোকমুখে প্রচলিত আছে, ১৯১১ সালে এ এলাকার জমিদার শ্যামচরণ ভৌমিক স্ত্রীলোকদের কথা চিন্তা করে বটগাছতলায় মেলাটির আয়োজন করেন। এরপর থেকে জায়গাটি বউ গাছতলা নামে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বটবৃক্ষের নিচে এই মেলা বসে, যদিও হিন্দুধর্মাবলম্বীরা সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পুজার জন্য এখানে সমবেত হয়।
বর্ষবরণের এই দিনে কুমারী, নববধূ, জননীসহ সব বয়সের নারীরা তাঁদের মনস্কামনা পূরণের আশায় এই মেলায় এসে পূজা-অর্চনার উদ্দেশ্যে বটতলায় একত্র হয়ে থাকেন। দেবী বটগাছের কাছে তাঁরা প্রার্থনা করেন- তাঁরা সবাই যেন ঘরের লক্ষ্মী হতে পারেন, সব ঝগড়া-বিবাদ মুছে ফেলে নতুন বছরে দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়।
পূজার অপেক্ষায় পহেলা বৈশাখ সকাল থেকেই গ্রামের নারীরা উপোস থাকেন। সবাই কালীরূপী বটগাছকে পূজা দিতে অর্ঘ্য, নানারকম ফুল ও ফলমূল বেতের সাজিতে সাজিয়ে নিয়ে আসেন। সন্দেশ, মিষ্টি, ধান, দূর্বার সঙ্গে মৌসুমি ফলমূল নিবেদন করে ভক্তরা।
মেলায় ঘর গৃহস্থালির উপকরণসহ মেয়েদের বাহারি প্রসাধনীর অনেক দোকান বসে। এলাকার বিভিন্ন বয়সের নারীরা মেলায় এসে কেনাকাটা করেন। কাঠের জিনিসপত্র, খেলনা, মণ্ডা-মিঠাই, ফিরনি-বাতাসা, খই-মুড়ি পাওয়া যায়। সেইসঙ্গে মেলাজুড়েই থাকে মৃৎশিল্পের আধিপত্য। নানা রঙের মাটির হাঁড়ি, কলস, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, কবুতর ইত্যাদি কারুকাজময় মৃৎশিল্প উল্লেখযোগ্য হারে পাওয়া যায়।
মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান উপভোগ করতে অসংখ্য মানুষের ভিড় জমে। এ ছাড়া রয়েছে সার্কাস, পুতুলনাচ, নাগরদোলাসহ বিনোদনের নানা আয়োজন।
বউমেলায় পাঁঠাবলির রেওয়াজও বেশ পুরনো। বদলে যাচ্ছে পুরনো অর্চনার পালা। এখন কপোত-কপোতি উড়িয়ে ভক্তরা দেবীর কাছ থেকে শান্তির বার্তা পেতে চায়।
| web |
ee5c8202821d8355790a5d755f12f64081b76f95 | ঘুমের ঘোরে টেবিল ঘড়িটা চেক করে দেখলো ভোর হয়েছে কিনা।
কেবল রাত ১২. ৩৫, ইস! ! কখন যে ভোর হবে! ! !
ভোর ৫টায় গাড়ী ছাড়বে।
শিক্ষা সফরে উত্তরবঙ্গের মহাস্থান গড়ে যাচ্ছে মৃনরা।
সারারাত এপাশ ওপাশ করে ভোর তিনটায় উঠেছে।
ফোলা ফোলা লাল চোখ নিয়ে ভোর সাড়ে চারটায় কার্জন হলের সামনে হাজির মৃন।
গাড়ীটা এখান থেকেই ছাড়বে।
শুধু গাড়ী আছে কিন্তু কেউ আসেনি। নিজেই নিজেকে বকা দিচ্ছে।
ভোরের আঁধারে নভো দেখবে ভেবে ঠিকমত সাজতেও পারলো না।
কি আর করা, নিজের গাড়ীতেই অপেক্ষা করতে লাগলো।
দুরন্ত স্বভাবের কারণে ক্লাশমেটরা নভোকে এই ট্রিপের টীম লিডার বানিয়ে সমস্ত দায়িত্ব ওর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে।
নভো এসবে অভ্যস্ত। প্রতিটা কাজ সে ছক বেঁধে করতে শিখেছে সেই তখন থেকে যখন বিভিন্ন জেলায় তাকে আন্ডার-১৯ ক্রিকেট টিম নিয়ে খেলতে হয়েছে।
গাড়ীর উইন্ডোতে টক টক শব্দে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল মৃনের। চোখদুটো খচখচ করছে, দেখে নভো ঈশারা করছে গাড়ী থেকে বের হতে।
শিক্ষা সফরের গাড়ীতে উঠে মৃনের চোখ ছানাবড়া, ওমা সবাই এসে গেছে।
ভেবেছিল নভোর পাশে বসবে কিন্তু নভোরি সিট নেই সে বসেছে ইঞ্জিন কভারের উপর। যেহেতু সে টীম লিডার তাই তাকেই সেক্রিফাই করতে হলো।
গাড়ী ছাড়ার আগ পর্যন্ত সবাই হৈচৈ করলেও গাড়ী ছাড়ার পর সবাই চুপ, বেশীর ভাগই ঘুমাচ্ছে।
হোটেল এ্যারিট্রোক্রাটে আধা ঘন্টার যাত্রা বিরতি। গাড়ী যখন চান্দাইকোনা ক্রস করছে তখন বমির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল অনেকের। মৃন তার সামনের সিট ভাসিয়ে দিয়েছে। পাবলিক বাসে চলাচলে অভ্যস্ত না সে। সবাই তো হো হো করে হাসতে লাগলো। লজ্জ্বা পেয়ে মৃন মাথা নিচু করে আছে, তার বমি এখনো শেষ হয়নি। চোখের কোনায় দেখতে পাচ্ছে একটি পলিথিন। মুখ তুলতেই দেখে নভো দাঁড়িয়ে আছে পলিথিন, পানির বোতল আর মেডিসিন নিয়ে।
নভো জানতো এমন কিছু ঘটতে পারে তাই টীম লিডারের দায়িত্ববোধ থেকে কিছু এ্যাভোমিন ও পলিথিন ব্যাগ নিয়ে রেখেছিল।
এতক্ষণ রূপসচেতন সিন্থিয়া বসেছিল মৃনের পাশে কিন্তু আর বসতে চাচ্ছে না। শুধু সিন্থিয়া কেন ওর পাশে কেউই বসতে চাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে নভো ইঞ্জিন কভার ছেড়ে মৃনের পাশে বসলো।
মৃন ঔষধ খেয়ে চিন্তা করছে, ইস. . . . বমিটা আরো আগে এলো না কেন! ! !
নভোর তড়িৎ রিফ্লেকশন মৃনকে আবারো মুগ্ধ করলো।
সে ভাবছে এমন ছেলেই টীম লিডার হবার যোগ্য এবং এমন ছেলের হাতেই নিজেকে সঁপে দেয়া স্বার্থক। আর ভাবতে পারছে না, শরীরটা খুব দুর্বল লাগছে তাই চোখ বন্ধ করে ফেললে।
এসে গেছি, এসে গেছি চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে গেল মৃনের।
নভো ইচ্ছা করেই ওকে জাগায়নি। ঘুমন্ত মৃনকে সে অপলক চোখে চেয়ে দেখেছে, চোখে চোখ পড়ার ভয় নেই। মৃনের চুল যখন বাতাসে উড়ে নভোর মুখে পড়ছিল তখন চুল কিছুটা ছুঁয়েও দেখেছে।
গাড়ী থেকে নামার পর মহাস্থানগড়ের বাউন্ডারী ওয়ালের উপর দিয়ে হাঁটছে সবাই। মৃন চাচ্ছে নভোর পাশাপাশি থাকতে কিন্তু নভোর গতির সাথে পাল্লা দিয়ে কুল পাচ্ছে না।
অনেক্ষণ হাঁটার পর এলো যাদুঘরে। ঘুরেফিরে সবাই দেখছে, তাও মাঝে মধ্যে নভো কিছু বর্ণনা করে শোনাচ্ছে বন্ধুদের। টীমের দায়িত্ব পাওয়ার পর মহাস্থান সম্পর্কে গুগল থেকে অনেক কিছু জেনে এসেছে এখন সেগুলো মিলিয়ে দেখছে আর বলছে।
যাদুঘর থেকে বেরিয়ে আরো কিছু দর্শনীয় স্থান দেখছে আর বর্ণনা করে শোনাচ্ছে নভো।
হাঁটাহাটির পর সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। বিশ্রামের জন্য তারা এলো জিয়ৎ কুন্ড বা জিয়ৎ কূপের কাছে।
মৃত মানুষকে কূপের মধ্যে ফেললে আবার জীবিত হয় এই গল্পটা নভো সবাইকে শোনাচ্ছিল। মৃন খেয়াল করে দেখছে নভোর বর্ণনা খুব সাবলিল এবং গোছানো সে ভেবে পায় না একটা মানুষের এতটা ভালদিক কীভাবে থাকতে পারে।
সবাই যখন বিশ্রামের সময় মহাস্থানগড়ের কটকটি খেতে ব্যস্ত মৃন তখন নভোকে ঈশারা করে কূপের কাছে আসতে। নভো এলে দুজন মিলে কূপের ভেতরটা দেখে। অনেক গভীর আর পানিগুলো কালো দেখাচ্ছে। মৃন ভয় পেয়ে যায়।
নভো বলে একটা মজার জিনিষ শুনবে ?
মৃন বলে কী?
অনেক বেলা হয়ে গেছে। খাওয়া দাওয়া সেরে ফেরার পথে গোকুলের বেহুলা বাসর ঘর দেখার জন্য দল বেধে সবাই গাড়ী থেকে নামলো। যে যেদিকে পারছে ঘুরে ঘুরে দেখছে ছবি তুলছে।
মৃন নভোকে বললো আমার কয়েকটা ছবি তুলে দাও। ক্যামেরা নেয়ার সময় নভোর আঙ্গুলের স্পর্শে মৃনের শরীর শিহরিত হয়ে উঠে। মহুর্তের জন্য চোখ বন্ধ করে অনুভূতিটাকে মনের গভীরে পোঁছে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে।
ছবিঃ নেট থেকে।
(পাসওয়ার্ড পাওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪টি লেখা পোস্ট করেছি, প্রথম পোস্টে ১ম মন্তব্যকারী থেকে নাম শুরু করা হয়েছে। সবাই আমার কাছে সম্মানীয়, আশাকরি নামের ক্রম নিয়ে ভুল বুঝবেন না। )
ভুল স্বীকারঃ প্রকৃতপক্ষে জিয়ৎ কূপ মাটি দিয়ে ভরাট। গল্পের প্রয়োজনে গভীর উল্লেখ করা হয়েছে।
| web |
2fc9dceb05e79243ff258f105130fd3e | নিউজ ডেস্ক বঙ্গ রিপোর্টঃ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি দেশজুড়ে সফর করার কর্মসূচি নিয়েছেন। মঙ্গলবার এর সূচনা হয় রাজস্থান সফরের মধ্য দিয়ে। জয়পুরে তিনি একটি জনসভায় বক্তব্য দেন। সভা থেকে মোদিকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, দেশের শান্তি ও সম্প্রীতির ছবিতে কলঙ্ক লেপন করছেন মোদি। বিশ্বের কাছে ভারতের মর্যাদাকে হীন করেছে মোদির সিএএ-এনআরসি পদক্ষেপ বলে রাহুল দাবি করেন। 'মোদি ২ কোটি নতুন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ১ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে। দেশজুড়ে বুলেটের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি সরকার। এটা সফল হতে দেওয়া যাবে না,' সোচ্চার হন রাহুল।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, এনআরসির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। মোদি-শাহরা নানা ভাবে রাষ্ট্রীয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একে দমাতে চাইছে। উত্তরপ্রদেশে যোগী-সরকার আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে গুলি ছুড়েছে- অবৈধ অভিযোগ তুলে জেলে ঢুকিয়েছে। ছাত্ররা না বুঝেই আন্দোলন করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মোদি। এমনকি পোশাক দেখেই আন্দোলনকারীদের চেনা যায় বলেও ধর্ম-বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন মোদি। মঙ্গলবার জয়পুরে যুব আক্রোশর্ যালিতে এসব প্রসঙ্গ তুলেই প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি প্রধানমন্ত্রী মোদি ও বিজেপিকে একহাত নেন। দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য তিনি মোদিকে দায়ী করে বলেন- দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে বিদেশি পর্যটকরা এ দেশকে এড়িয়ে চলছেন। ঠিক একই কারণে বিনিয়োগকারীরাও এ দেশে বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না। এটা ভারতের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনছে। আর তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেশের বেকার যুবকদের ২ কোটি নতুন চাকরি হবে। তা তো হলই না। উলটে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ১ কোটি মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছে। বিশ্বে ভারতের মর্যাদা হ্রাস হয়েছে। ভারত এখন আন্তর্জাতিক 'রেপ ক্যাপিটাল' বলে এ দিন তিনি ফের মন্তব্য করেন।
রাহুল এ দিন জনসভা থেকে আরও বলেন, এখন যদি আট বছর বয়সী একটি বাচ্চাকেও জিজ্ঞাসা করা হয়, নোটবন্দিতে ক্ষতি না উপকার হয়েছে? সে বলবে, ক্ষতি হয়েছে। আগে আমরা চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতাম। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে- চিন আমাদের অনেক পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে। পুরো বিশ্ব জানে- চিনের সঙ্গে কেউ যদি প্রতিযোগিতা করতে পারে- তবে তা হল ভারতের তরুণ জনতা।
এদিনেরর্ যালিতে মূলত তরুণদের উপস্থিতিই বেশি ছিল। দেশে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব নিয়ে তাই বারবার সরব হন রাহুল গান্ধি। তিনি অভিযোগ করেন, তরুণরা যখন বেরোজগারি নিয়ে মোদিকে প্রশ্ন করে, তখন বুলেট দিয়ে তার জবাব দেওয়া হয়। যুবকদের কণ্ঠরোধ করা হয়। ভারতের সবচেয়ে সেরা সম্পদ ও শক্তি হল তরুণরা। বিজেপি সরকার সেই সম্পদ নষ্ট ও অপচয় করছে।
| web |
b07e9e9502275449f382834ca89417608e825508 | আকাশে ঝকঝকে রোদ। রাতভর বৃষ্টি হওয়াতে আবহাওয়া বেশ ঠান্ডা । পেপার দিয়ে মোড়ানো হলের জানালাটায় একটা ফুটো। সেই ফুটো দিয়ে আলোটা একেবারে মুখে এসে পড়েছে সুমনের। হলের এই রুমটাতে সুমনরা থাকে আটজন। তৈরীর সময় ঠিক কয়জনের জন্য রুমটা বরাদ্দ ছিল, সেটা সে বা তার বন্ধুবান্ধব কেউই জানে না । তারা প্রথমবর্ষে নিয়মিত গনরুমে থেকে ম্যানার শিখেছে, জেনেছে ক্যাম্পাসে তাদের প্রতি তাদের ক্যাম্পাসের অভিবাবকদের ভালবাসার কথা । সেই ভালবাসার একটা নিদর্শন এই রুম। এখানে অবশ্য থাকার কথা দশ বার জনের, ওরা থাকে আটজন । বাকিদের কারো কারো বাড়ি ঢাকায় আর কেউ ক্যাম্পাসের আশেপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে । ওরা রোহিঙ্গা, ওরা অভিভাবকদের ভালবাসা বুঝে না। ওদের হিসাব আলাদা ।
তখন তার সেই পুরোনো ইচ্ছা মনে জেগে উঠলেও আজ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুমনের মেয়েদের সাথে সিগারেট খাওয়া আর হয় নি । প্রথমবর্ষের পুরোটাই হলে প্রচুর সময় দিতে হয়েছে, ইন্টিমেসি বাড়াতে হয়েছে । একতালা থেকে চারতালা সবার সাথে পরিচয় হতে হয়েছে! দ্বিতীয়বর্ষে সে আবিষ্কার করল, তার অচেনা আরো অনেক বড়ভাইরা আছে যাদের সে চিনেই না । আবার তারা এই হলেই থাকে। এ নিয়ে সুমনের কোনো দুঃখ নেই । সে মনে করে সে খুব ভাল আছে। তার নিকটবর্তী এক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুর কাছে শুনেছে, তাদের নাকি প্রথমবর্ষের বেশিরভাগ সময় রাজপথেই কেটে গেছে। সেদিকদিয়ে চিন্তা করলে সুমন অবশ্যই ভাল আছে । তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটাই রাজপথ। সেখানে দাঁড়ালে দেশের অর্ধেক জেলার সাথে ঢাকার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সুমনের বাড়ি আবার ওই রাস্তা দিয়েই যেতে হয় । ওর পাড়ার এক বড় ভাই বলত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা । কিছু হলেই নাকি এরা রাস্তা আটকায় দেয়।
সুমন নিজেই দুইবার এর সাক্ষী। প্রথমবার তো রোজার বন্ধ, সে উপস্থিত ছিল না। পরেরবার সে উপস্থিত ছিল। সে আন্দলনে অংশ নেয়নি। দেখতে গিয়েছিল। মেয়েরা স্লোগান দিচ্ছে, গালাগাল দিচ্ছে, সিস্টেমের বিরুদ্ধে কথা বলছে, কত সাহস! এরা নিশ্চয়ই বাম। মায়ের অনুগত সন্তান সে, মায়ের কথা রাখতে সে অনেকদূরে দাঁড়িয়ে আছে! হটাৎ কি হলো, চারিদিকে ধোঁয়া সবাই দৌড়াচ্ছে, চোখমুখ জ্বলছে । এর আগে সে শুধু পত্রিকায় পড়েছে টিয়ার শেলের গল্প। পরেরদিন সে আর যাওয়ার সাহস পায়নি। বন্ধুদের কাছে শুনেছে অবশ্য!
ফেসবুকে ঢুকতেই সুমন অবাক হয়ে গেল! স্কুলের ছেলেপুলে লাইসেন্স চেক করছে! সাহস আছে মাইরি! আবার নাকি কারা ওদের ধরে মারছেও! যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সুমন অবশ্য নিজেও সেই দলের সাপোর্টার । তার অভিভাবকদের মত। কিন্তু তার বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু হচ্ছে না। হচ্ছে রাজধানীর ভেতরে, তার বন্ধুরা যারা আশেপাশের বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এবং হলে থাকে, তারা পোস্ট দিইয়ে জানাচ্ছে এগুলো গুজব বৈ আর কিছু নয়!
সুমন তাদের কথা বিশ্বাস করে কেননা তারা রাজপথে সময় দেয়। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মাত্র একটাই রাজপথ! সুমন আগে মনে করত, দুনিয়ার সব খবর পাওয়া যায় চায়ের দোকানে অথবা নাপিত দোকানে। কিন্তু তার বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা বলেছে তারা রাজপথে থাকে, তারা আসল খবর জানে! ফেসবুকে অবশ্য সুমনের বিশ্বাস একটু কম। একবার কাকে যেন চাদে দেখা গেল, সেই নিউজতো এই ফেসবুকেই পাওয়া গেছে । আজ আবার ফেসবুকেই এসব খবর ছড়াচ্ছে! হেলমেট পড়া ছেলেপুলে রড নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে । এমন ছবি, ভিডিও। মেসেজে আসছে, নিউজফিডে আসছে। ক্যাপশনে লেখা, ভাইরাল করে দাও। সুমন অবশ্য শেয়ারতো দূর, লাইকও দিচ্ছে না। অভিভাবক মহলের নিষেধ আছে। সুমন আসলে হলে থাকতে চায়। সে চায় প্রত্যেকদিন ওই ফুটো দিয়ে রোদ এসে তার ঘুম ভাঙিয়ে দিক।
সি আর গতরাতেই পোস্ট দিয়েছে ক্লাস হবে না । ডিপার্টমেন্ট থেকেও ছেলেপুলে আন্দোলনে সঙ্ঘতি জানালো। সুমনের ইচ্ছা করে কমেন্টে বলতে যে, "এগুলো সবই গুজব। আমার বন্ধুরা রাজপথে আছে, তারা বলেছে! " কিন্তু সুমন কমেন্ট লিখেও মুছে ফেলে । ব্যাচে কিছু বাম আছে, কিছু বললেই যুক্তি খাড়া করে ফেলবে । তাদের সাথে ননপলিটিকাল কিছু ছেলেপুলেও যোগ দিয়েছে । যদিও সুমন ওদের গুনে না। ওরা বেশিরভাগই হলে থাকে না। ম্যানার নাই, লুরমা।
কিছুক্ষনের মধ্যেই সুমনের কাছে কিছু প্রমান চলে আসে। সত্যের লাঠি, অন্ধের আলো, গরীবের বার্তা, পচাখবর ২৪ ঘন্টা নানা নামের বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল । এই একটা নতুন সমস্যা দেশে, এত শত নিউজ পোর্টাল আর এত শত সাংবাদিক সুমন মাঝেমাঝে অবাক হয়! নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকায়! এখানে অর্ধেক সরকার সমর্থিত ছাত্র রাজনীতি করে, বাকি অর্ধেক সাংবাদিক আর অল্পকিছু বাম। বাকি যারা, বেশিরভাগই হলে থাকে না । ম্যানার নাই, মুরগী, লুরমা। সুমন অবশ্য মুরগী ভয় পায়। একবার মুরগীর বাচ্চা ধরতে গিয়েছিল, মুরগী হঠাৎ ঠোকড়ে বসেছিল!
এই যে নিউজ পোর্টাল! এদের মধ্যে কে যে সত্য বলে সেইটা আসলে বেশ বিতর্কিত ব্যাপার। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গ্রুপ আছে। সেখানে প্রায় সব ব্যাচের আবালবৃদ্ধবণিতা আছে। সেখানে মাঝেমাঝে বিভিন্ন নিউজ ভাইরাল হয়। সুমন সেগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ে। কারন সে দেশ নিয়ে চিন্তিত। তার স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট না হয় এসপি হওয়া, দেশের সেবা করা । সুমন জানত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে মানুষ শুধু বিসিএস ক্যাডারই হয়, কিন্তু এখানে এসে দেখে স্যাররা কিসব গবেষনার কথা বলছে! কিছু ছেলেপুলে আবার সেসবের পিছে দৌড়ায়ও! সুমন তাদের দেখে মনে মনে হাসে! চোখ বন্ধ করলেই ভেসে উঠে ল্যান্ডক্রুজার, টয়োটা ।
সুমন পোর্টালগুলো পড়ে আর মাঝে মাঝে অবাক হয়, ফেইক নিউজের মাঝে আসল খবর খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর! মাঝে মাঝে তার নিউজ পড়ে স্কুল কলেজের সৃজনশীল প্রশ্নের কথা মনে পড়ে, উদ্দিপক একদিকে প্রশ্ন আরেকদিকে, উত্তর আবার অন্য দিকে। নিউজগুলোর শিরোনাম, মূল বক্তব্য আর ছবিগুলোর মধ্যেও সেইরকম সম্পর্ক । তার অনেক বন্ধুই সাংবাদিক। প্লাস্টিকের তৈরী আইডি কার্ড আছে। কলেজের শুরুতে তার অনেক বন্ধু গল্পটল্প লিখে ফেসবুকে বেশ ফ্যান ফলোয়ার বানিয়ে ফেলেছিল। যারা পারে নাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সে দেখে তারাই সাংবাদিক হয়ে গেছে। অবশ্য বানান ভুলের পরিমান দুই পক্ষেরই সমান। সুমন প্রমানস্বরূপ পাওয়া নিউজগুলো শেয়ার দেয়। তার সংগঠন বেশ বিপদে পড়ে গেছে। সুমন জানে ওই হেলমেট পড়া লোকগুলো তাদের কেউ নয়। স্কুল ড্রেসে ছদ্মবেশী ছেলেগুলো আসলে সরকারবিরোধী। তারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করলেই বাঁচে। সে এইসব জানে, বুঝে। তার বন্ধু তাকে বলেছে। সেই বন্ধু নিকটবর্তী আরেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সে হলে থাকে এবং রাজপথের রাজনীতি করে। সুমনের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটাই রাজপথ। সেই রাজপথ আবার আজ ছেলেপুলে দখল নিয়ে নিছে। সুমন খাওয়ার জন্য বাইরে গিয়েছিল। বিশাল মিছিল । ক্লাসের সবচেয়ে শান্ত মেয়েটাও দেখি মিছিলে আছে। সুমন মনে মনে মেয়েটাকে পছন্দ করে। সে ছুটে গিয়ে বলতে চায়, বিশ্বাস করো এগুলো সব গুজব। এত ভিড় ঠেলে সুমন তার কাছে পৌছাতে পারে না। বিশাল মিছিল এগুতে থাকে।
চায়ের দোকানে বসে সে একটা সিগারেট জ্বালায়। দেশের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করে! কিন্তু চারিদিক থমথমে শুনশান। কেউ নেই। দোকানী পান খেতে খেতে জিজ্ঞেস করে,
- মামা আন্দোলনে যান নাই?
- না মামা।
- ভাল করছেন। এইসব কইরা কোন লাভ আছে কন? গরীবের পেটে লাথি মারা ছাড়া? মরলেও গরীবেই মরে। হেরা খালি আছে ক্ষমতা নিয়া। আমাগো দিকে তাকায় নি?
সুমন দোকানীর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। দেশ সম্পর্কে এই দোকানদারের মন্তব্য নিয়ে সে চিন্তা করে। তার এক বন্ধু তাকে একবার কিছু বড় ভাইয়ের কাছে নিয়ে যায়। তাদের কাছে দেশের বিভিন্ন কথা শুনে! সুমন অবাক হয়ে যায়। দোকানদার মামার মাথাটাও কি ওরা খেয়ে ফেলেছে? নাকি ওরা মাঝে মাঝে দুই একটা সত্য কথাও বলে? সুমনের তার মায়ের সতর্কবাণী মনে পড়ে যায়। সে সিগারেট ফেলে, দাম দিয়ে বের হয়ে আসে। রাতের আগে সুমনের কোনো কাজ নেই। একবার ভাবে সাইকেল ভাড়া নিয়ে একটু এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াবে। হলে গিয়ে আড্ডাবাজিও করা যায়। কিন্তু সুমন আবার সিগারেট ছাড়া অন্যকিছু খায় না। সে জানে এখন রুমগুলো ধোঁয়ায় ঢেকে আছে। এরপরই ভাবল একটু আন্দোলন দেখে আসি। তার পছন্দের মেয়েটা এখনো কি আছে সেখানে? পরক্ষনেই তার গত আন্দোলনের অভিজ্ঞতা মনে পরে। পেটে মোচড় দিয়ে উঠে। সে সব বাদদিয়ে টিভিরুমে গিয়ে ফেসবুক চালায়। সবাই তার প্রিয় সংগঠনকে নিয়ে আজেবাজে কথা লিখছে! কিন্তু এরা কারা! এদের এত সাহস কে দিল এইসব কথা লেখার? শুধুমাত্র গুজবে কান দিয়েই ছেলেপুলেগুলো এসব লিখছে! সুমন মনে মনে কষ্ট পায়। হঠাৎ তার পছন্দের মেয়ের স্ট্যাটাস চোখে পড়ে, "অমুকদলের সমর্থকরা আমাকে আনফ্রেন্ড করে দিন" সুমন ঘাবড়ে যায়। নিজের প্রোফাইলে ঢুকে দেখে কোথাও কোনো দলীয় পোস্ট আছে কি না। সে আবিষ্কার করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো ছাড়া তার আর কোনো রাজনৈতিক এক্টিভিটিজ নেই ফেসবুকে! মাঝে মাঝে বেশ কিছু নিউজ, পোস্ট শেয়ার দিয়েছে বটে, কিন্তু সেগুলো সবাই শেয়ার দেয়। তবে নিজের রাজনৈতিক কন্ট্রিবিউশন নিয়ে সে কনফিউশনে পড়ে যায়। তার কি দলের প্রতি ভালবাসা কম? তার কি এখন দলের পক্ষে কথা বলা উচিত নয়? সে কাকে বিশ্বাস করবে খুজে পায়না। সে কি তার পছন্দের মানুষের কথা মত দল ছেড়ে দিবে? পরক্ষনেই তার রুমটার কথা মনে পরে! ফুটো দিয়ে আসা সূর্যের আলোর কথা মনে পরে! গনরূমের কষ্টের কথা মনে পড়ে। তার মনে পড়ে অভিভাবকদের কথা, তাদের ভালবাসার কথা। মেয়েটার মাথা নির্ঘাৎ ওই বামগুলা খেয়েছে। গোপনসূত্রে খবর পেয়েছে, ওই মেয়ের রূমমেট নাকি বিশাল প্রগতিশীল। সুমন চায় মেয়েটাকে তার মায়ের সতর্ক বাণী শুনিয়ে আসে। কিন্তু তার সামনে গেলেই পেটের ভেতরে কেমন যেন মোচড় দেয়।
সুমন স্ক্রল করে করে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলো দেখতে থাকে। রক্তের ছবিগুলো দেখে। রক্তাক্ত মুখের ছবিগুলো দেখে। ভিডিওতে হেলমেটপরা লোকগুলোকে দেখে, পকেট থেকে পিস্তল বের করে ঢুস ঢুস করে গুলি করতে দেখে। তার গা শিউরে উঠে। তার বিচার চাইতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পারে না। তার বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু তাকে বলেছে এইসব গুজব। ঢাকায় কিছু হচ্ছে না। সে তার কথা বিশ্বাস করে। কারন তার বন্ধু রাজপথের রাজনীতি করে, সে জানে রাজপথে কি হচ্ছে। সুমনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটাই রাজপথ। সেখানে কিছু হচ্ছে না!
| web |
dce3b2dde2751d00080099067734677ace2ce136 | ভারতীয় রেল (indian railway) ১০ অক্টোবর থেকে রিজার্ভেশনের বেশ কিছু নিয়ম পরিবর্তিত হয়েছে। রেল জানিয়েছে এবার থেকে ট্রেন ছাড়ার ৩০ মিনিট আগে দ্বিতীয় চার্ট করা হয়। যেহেতু এই চার্টটি ৫ মিনিট আগেই তৈরি করা সম্ভব তাই এবার থেকে ট্রেন ছাড়ার ৫ মিনিট আগে দ্বিতীয় চার্ট প্রকাশের পূর্বেই করা যাবে বুকিং। অর্থাৎ ট্রেন ছাড়ার মাত্র ৫ মিনিট আগেই এবার তৎকাল বুকিং করা সম্ভব হবে।
পাঁচ মিনিট আগে যেমন ট্রেনের টিকিট সংরক্ষণ করা যাবে , তেমনি এই সময়ে কোনও টিকিটও বাতিল করা যেতে পারে। লকডাউনের পরে, সমস্ত কার্যক্রম ধীরে ধীরে সারাদেশে শুরু হচ্ছে, যাতে করোনার সময়কালের আগে পরিস্থিতি পৌঁছানো যায় সেই কারনেই এই পরিবর্তন গুলি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল।
উৎসবের কথা মাথায় রেখে আরো কিছু নতুন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। রেল সূত্রে খবর, আপাতত অতিরিক্ত ট্রেনের সংখ্যা ২০০ হলেও পরিস্থিতি বিচার করে আরো ট্রেন চালানো হতে পারে।
প্রতি বছরই পুজোর মরশুমে হু হু করে বাড়ে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা। যারা প্রবাসে থাকেন তারা যেমন উৎসব উপলক্ষ্যে বাড়ি ফিরে আসেন তেমনই ছুটি থাকায় অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে যান। এবার করোনা পরিস্থিতিতে সেই চাহিদা কম থাকলেও ট্রেনের সংখ্যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। যে কোনো প্রয়োজনে এক শহর থেকে অন্য শহর বা রাজ্যে যেতে হলে ব্যাবহার করতে হচ্ছে সড়কপথ। যার ফলে ভাড়া অনেকটাই বেশি গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
উৎসবের মরশুমে তাই আরো ২০০ ট্রেনের ব্যাবস্থা রেলের। এই ট্রেনগুলি চলবে ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। পাশাপাশি, রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে প্রতিটি জোন এর পরিস্থিতি বিচার করে দেখা হবে। সফটওয়্যার এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হবে টিকিটের চাহিদা। সেই চাহিদা অনুযায়ী বেশ কিছু জোনে অতিরিক্ত ক্লোন ট্রেন চালানো হতে পারে।
| web |
d41eba3697371833160253a7b795197ff4a0338d | এবারের গুগল আই/ও সম্মেলনের চমক কী!
আগামী ১০ মে অনুষ্ঠিত হবে গুগল ডেভেলপার সম্মেলন। প্রতি বছর আয়োজিত এ সম্মেলনকে সংক্ষেপে 'আই/ও সম্মেলন' বলা হয়। প্রতিবারের মতো এবারো যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্ট ভিউয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনে গুগলের সফটওয়্যার, অ্যান্ড্রয়েডসহ গুগলের বিভিন্ন হালনাগাদ পণ্য নিয়ে ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
গুগলের এই বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলনে অ্যাপ ও গুগল ইকোসিস্টেমের সর্বশেষ প্রযুক্তি নিয়ে হালনাগাদ তথ্য জানতে পারেন ডেভেলপাররা। এ সম্মেলনটি গুগলের নতুন পণ্য ঘোষণার জন্যও পরিচিত। ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্ট ভিউয়ের শোরলাইন অ্যাম্ফিথিয়েটারে নির্বাচিত গণমাধ্যমকর্মী ও ডেভেলপারদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে গুগল। এ ছাড়া সম্মেলনটি অনলাইনের মাধ্যমে সবাই দেখতে পারবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের সম্মেলনে অ্যান্ড্রয়েড-১৪, পিক্সেল-৭-এ, গুগল পিক্সেল ফোল্ড, পিক্সেল-৮ ও ৮ প্রো, গুগল পিক্সেল ট্যাবলেট, গুগল পিক্সেল ওয়াচ-২ ইত্যাদি বিভিন্ন গুগল পণ্য ও সেবার ঘোষণা আসতে পারে। পণ্য ও সেবার সবই হবে নতুন বা হালনাগাদ করা।
অ্যান্ড্রয়েড-১৪ অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা এ সম্মেলনে আসতে পারে এটি অনেকটা নিশ্চিত বলে মনে করছেন অনেকে। এখন ডেভেলপাররা সর্বশেষ এই অপারেটিং সিস্টেমের বেটা সংস্করণ ব্যবহার করছেন। অ্যান্ড্রয়েড-১৪-এ নতুন সেবার ঘোষণা আসতে পারে।
এ সম্মেলনে গুগলের প্রথম ফোল্ডেবল ফোন গুগল পিক্সেল ফোল্ডের ঘোষণা আসতে পারে। গত বছরের বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলনে গুগল পিক্সেল-৭ সিরিজের ঘোষণা দেয় গুগল। ধারণা করা হচ্ছে, গত বছরের মতো এবারো গুগল পিক্সেল-৮ সিরিজের ঘোষণা দেবে প্রতিষ্ঠানটি।
| web |
05fe8746242402697618a6aadb07229abd33a4ce | মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথমে উত্তর দেন 'না', তবে এতেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে উত্তর পাল্টে বলেন, 'আপনি কি জানতে চেয়েছেন আমি কী বলবো...? হ্যাঁ, আমি মনে করি তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী'।
পরে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন পিসাকি বলেন, ইউক্রেনে সহিংসতার 'বর্বর' ছবি দেখার পর প্রেসিডেন্ট কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বদলে তার হৃদয় থেকে উচ্চারিত কথা বলেছেন। তিনি জানান, যুদ্ধাপরাধ নির্ধারণে আলাদা আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। যা পরিচালনা করে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা আলাদাভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাশিয়ার ১৪ হাজার সেনা নিহতঃ ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে। তবে রাশিয়া বলছে, তাদের মাত্র ৪৯৮ সেনা নিহত হয়েছে। এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, ইউক্রেনে তিন সপ্তাহ ধরে চলা সংঘাতে রাশিয়ার সাত হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে সংঘাত চলছেই। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর, ইউক্রেনীয় পরিসংখ্যান, রাশিয়ান পরিসংখ্যান, স্যাটেলাইটের ছবি ইত্যাদি বিষয় বিশ্লেষণ করে এই সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া এক ভার্চুয়াল ভাষণে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি পার্ল হারবার এবং নাইন ইলেভেনের মতো এবং তা মোকাবেলায় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আরো সহায়তা প্রয়োজন। জেলেনস্কি পরে ইউক্রেনের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেন, সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং চেচনিয়ায় রাশিয়ার যত সেনা মারা গেছে তার চেয়ে বেশি রুশ সেনা ইউক্রেনে মারা গেছে। এদিকে মারিউপোল শহরে রাশিয়া একটি থিয়েটারে বোমা ছুড়েছে যেখানে প্রায় ১২০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। অপরদিকে ইউক্রেনে হামলা চালানোয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী' বলে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার এমন মন্তব্যের পর দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে কেন্দ্র করেই এ কথা বলেছেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রথমবারের মতো পুতিনের সমালোচনায় এমন শব্দ ব্যবহার করলেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরবর্তীতে হোয়াইট হাউজ থেকে বলা হয়েছে, বাইডেন মন থেকেই এসব কথা বলেছেন।
রুশ আগ্রাসন সব ফ্রন্টেই থমকে পড়েছেঃ ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ মূলত সব ফ্রন্টেই থমকে পড়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্য। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ গোয়েন্দা মূল্যায়নে এই দাবি করা হয়েছে। ওই মূল্যায়নে দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক দিনে স্থল, সমুদ্র কিংবা আকাশে ন্যুনতম অগ্রগতি অর্জন করেছে রুশ বাহিনী। এছাড়াও দাবি করা হয়েছে রুশ বাহিনীর মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া অব্যাহত রয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, 'ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ অটুট এবং সুসমন্বিত রয়েছে। সব বড় শহরসহ ইউক্রেনীয় ভূখ-ের বেশিরভাগ অংশই ইউক্রেনীয়দের হাতে রয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলছে, রাশিয়া এখন বিমান হামলার দিকে নজর দিয়েছে। বেসামরিক জনগোষ্ঠীর ওপর বোমা এবং গোলা বর্ষণ করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে স্থল অভিযানে রুশ বাহিনীর ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।
ইউক্রেনে এখন পর্যন্ত পাঁচশ' নিহতের কথা স্বীকার করেছে রাশিয়া। তবে মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা এই সংখ্যা সাত হাজার হতে পারে।
| web |
d99b29ad7864be18fdfb11363a919ca79c00fd61f02a39f88789bf6512c07de3 | বলে, ড্রয়ার থেকে একটি বের করলেন বড় পাটনাই পেঁযাজ, বেশ খানিকটা আদা, একটি পাতিলেবু আর একটা ধারালো ছুরি।
গঙ্গারাম নাক ফুলিয়ে বললেন, 'বিলিতি মদ খেতে শেখোনি, সেটা না হয় বুঝলাম। কিন্তু এটার মানে কী?'
'মানে আবার কী। আমি বুঝি, যাব সঙ্গে যা
বলে, ঝোল টানার শব্দ করে, হবলাল ছবি দিয়ে কচকচ কবে তাদা পেঁয়াজ কুচোতে লাগলেন।
গঙ্গারাম বললেন, 'তুমি আব চিকেন দোপেঁয়াজিব কী বুঝবে। বাস্তাব ধাধে শুঁড়িখানায় বসে খাওযা শিখেছ, ওসবই তোমাৰ সইবে।'
হবলাল ছুবি সুদ্ধ হাতটা তুলে, খেঁকিয়ে উঠলেন, 'আব তুমি সগগে বসে অপ্সবাব নাচ দেখতে দেখতে খেতে শিখেছ। তবু যদি না সব জানতাম।'
গঙ্গানাম বললেন, 'আমার কথা ছাড়, আমি কোনোদিনই এসব চিকেন মটন খেযে মদ খেতে পারি না। গবম চানা চটপটিতে দু ফোঁটা লেবুর বস থাকবে, এক চিমটি কবে মুখে দেব, এক ঢোক মদ খাব। তোমার তো তা না। শুঁটকো শবীর, এদিকে গিলতে তো পাব খুব।'
হবলাল ভীষণ বেগে উঠলেন, 'সে যখন গিলি তখন গিলি, হ্রদের সঙ্গে বড়লোকি ঠাট আমার ভাল লাগে না।
গঙ্গাবাম বললেন, 'ডাঁটা চচ্চড়ির লোক যে
হবলাল আদা পেঁয়াজ কুচনো থামিয়ে, প্রায় চিৎকার করে উঠলেন, 'দ্যাখ, খাবাব খোঁটা দিও না। যা খাই, তা নিজের রোজগাবে খাই, কোনো ফ্যাকটবিওয়ালাব পয়সায় খাই না।'
গঙ্গাবাম বললেন, 'র্যাকগে বাবা, চেঁচিও না। আমি একটু গলা খুলে গান ধরলে তোমার আশেপাশে সবাই শুনতে পায়, নিজে চেঁচালে কিছু না।'
হবলাল তখন দাঁতে দাঁত পিষে, আদা কুচোতে কুচোতে আপন মনে লছেন, 'কী বকম ঝামেলা বল দিকিনি। আমার যদি ভাল না লাগে, তাতে তোমার কী। সবতাতে বড়লোকি। বড়লোক আছ, নিজের জায়গায় গিয়ে দেখাও, হলো গোসাইযেব কাছে কেন।'
গঙ্গারাম তখন দেশী বোতল থেকে গেলাসে মদ ঢেলেছেন। বললেন, 'যাক বাবা, থাম। সারাদিন খাটাখাটনিব পর, একটা মজুবও শান্তিতে থাকতে চায়।'
'থাক, তুমি আব মজুবের নাম কবো না। মজুবদেব বক্ত শুষেই তো তোমাব যত ওস্তাদি ।' গঙ্গারামেব মুখের কথাও টোল খেল না। ঢক কবে পাত্র উপুড় করে গলায ঢাললেন। বললেন, 'তোমার যেমন খদ্দেরেব পকেট কেটে। চানা চটপটি কোথায় ?'
হরলাল ড্রায়ার টেনে চানা চটপটিব ঠোঙা বেব কবে দিলেন। লেবু কেটে কুচনো আদা পেঁয়াজের বস দিয়ে, ছুরি দিয়ে ঘেঁটে দিলেন। গঙ্গারাম হরলালকে গেলাসে মদ ঢেলে দিয়ে, আদা পেঁয়াজেব কুচো মুখে দিলেন। জিভ দিয়ে টকাস করে শব্দ করলেন, 'মাইরি হরো, এ জিনিসে তোমার জুড়ি নেই। হাতটা সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে বাখবাব মতো।'
হরলাল সে কথায় কান না দিয়ে মদ্যপানে মন দিলেন। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পানীযের বোতল, সুস্বাদু গরম শুষ্ক কুকুটের মাংস একপাশে পড়ে বইল। চারদিকে ঠাসা মালপত্র, এই ঘুপচি ঘরেব মধ্যে ছোট পাখার হাওয়া ইতিমধ্যেই গরম হয়ে উঠেছে। ভেন্টিলেশন বলতে একমাত্র দরজার তক্তাব ফাটল। কিন্তু গঙ্গারাম আর হরলাল বেশ বহাল তবিয়তেই, দেশীয় মদ এবং আদা
পেঁয়াজ কুচের সঙ্গে চানা চটপটি চিবিয়ে চলেছেন। খানিকক্ষণ কোনো কথা না বলে, পর পর দুটি পাত্র দুজনে শেষ করলেন। গঙ্গারাম অবিশ্যি কুলকুল করে ঘামছেন। ব্যাগের মধ্যে হাতড়ে তিনি বর্মী চুরুট আর সিগারেটের প্যাকেট বের করলেন। জিজ্ঞেস করলেন, 'কোনটা খাবে?' হরলাল বিডি বের করে বললেন 'কোনোটাই না।'
কানের কাছে বিড়ি টিপে টিপে, তামাকেব করকর শব্দ শুনলেন। আবার বললেন, 'ওতে আমার জমে না।
গঙ্গারাম মুখের মধ্যে জিভটা নাড়াচড়া কবে বললেন, 'দাঁতগুলো কিছুতেই সেট হচ্ছে না। তোমারগুলো ঠিক আছে ?'
হরলাল মুখ বিকৃত করে বললেন, 'কোথায় ? এই দ্যাখো না।'
বলে নিচেব দাঁত জিভ দিয়ে ঠেলে, নাড়িয়ে দেখালেন। গঙ্গাবাম দেখে, ঘাড় নাড়লেন। আবার মদের পাত্র ভবলেন। তাবপরে বললেন, 'সংসারটা বুঝলে, বড় অশান্তির জায়গা। এক তো ছেলেদেব কাবোর সঙ্গে মতে মেলে না। তার ওপবে আজ এই নাতিটাব অসুখ, ওই মেযেটার ব্যামো কোথাও যে যাব, তারও উপায় নেই।'
হরলাল বললেন, 'ওসব কাকে বলছ। আমাকে এই বুড়ো বয়সেও দোকানে বসতে হচ্ছে। বাবুবা সব চাকরি করবেন, দোকানে বসবেন না। গুযোর ব্যাটাবা ব্যবসা বুঝল না কোনোদিন। আর অসুখ বিসুখ ? তা যদি বল-
গঙ্গাবাম হাত জোড় করে বললেন, 'বাবা, তুমি অমন ফলাও কবে শুরু করো না। মাল খাওয়াটি একেবারে বরবাদ করে ছাড়বে।'
হরলাল রাগে গবগর করে উঠলেন, 'তার মানে ?'
গঙ্গারাম মুখের কাছে গেলাস তুলে বললেন, 'অসুখেৰ ফিবিস্তি শুনতে ভাল লাগে না।' হরলাল খিঁচিয়ে উঠে বললেন, 'নিজের বেলা অঁটিশুটি, পরের বেলা দাঁত কপাটি ? নিজে যে সাত কাহন ফিরিস্তি দিচ্ছিলে ?'
'ফিরিস্তি তো দিই নি। তুমি যেরকম কোমর বেঁধে শুরু করতে যাচ্ছিল - '
'থাক, আর ন্যাকামো করতে হবে না! বুড়ো হয়ে মরতে চলল, এখনো ইয়ে গেল না।' গঙ্গারাম সে কথার জবাব না দিয়ে, গেলাসে চুমুক দিলেন। হবলাল যেন বাগবশতঃ হাঁ করে গেলাসের সবটুকু গলায় ঢেলে দিলেন। তারপবে গোঁজ হয়ে বসে রইলেন।
গঙ্গারাম গুগুন করে একটু টপ্পাব সুর ভাঁজলেন। হরলালের দিকে তাকিয়ে বললেন, 'কী হল, রাগ করলে?'
হরলাল কোনো জবাব দিলেন না। গঙ্গারায় ঝুঁকে পড়ে, হরলালের পেটে আঙুল দিয়ে খোঁচা • দিলেন। হরাল তড়াক কবে সোজা হয়ে বসে, গঙ্গারামের হাত চেপে ধরলেন, 'ভাল হবে না বলে দিচ্ছি।'
গঙ্গারাম সে কথা না শুনে, পেটে খোঁচাবার জন্য হাত টানাটানি করতে লাগলেন। হরলালও ছাড়বেন না। গঙ্গারাম বললেন, 'তোমার প্যাচার মতো মুখ করে বসে থাকা দেখাচ্ছি।'
'তবে রে গঙ্গা ঘোষ।' বলেই হরলাল তাঁর কালো রোগা রোগা আঙুল দিয়ে, গঙ্গারামের ভুঁড়িতে খোঁচা দিলেন। দশাসই গঙ্গারাম সারা শরীর কাঁপিয়ে খ্যালখ্যাল করে হেসে উঠলেন। বললেন, 'হরো, ভালো হবে না বলে দিচ্ছি, কাতুকুতু লাগছে।'
গঙ্গারামের হাসি দেখে, হরলালের মুখেও হাসি ফুটল। বললেন, 'আর আমার বুঝি লাগে
হাসতে হাসতে হাত টানাটানি করে দুজনেই হাঁপিয়ে পড়লেন। একটু চুপচাপ থেকে, হরলাল আবার দুই গেলাস মদ ঢাললেন।
গঙ্গারাম জিজ্ঞেস করলেন, 'হরো, সেই ফুলকিব কথা মনে আছে? রামনগিনের বউ হে, মাথাভাঙার সেই ঘাটমাঝির বউ, যে-মাঝির ঘরে প্রায়ই আমবা মালপত্তর রাখতাম?'
হরলালের ভাঙাচোরা রেখাবহুল মুখে পুরনো দিনের স্মৃতির অন্যমনস্কতা ফুটল। ইতিমধ্যেই তাঁর চোখ কিঞ্চিৎ বক্তবর্ণ হয়েছে। চোখে একটি স্বপ্নিল ছবি যেন ভেসে উঠল। আবেগ গম্ভীর স্বরে বললেন, 'মনে নেই আবার। দুজনে তখন কাঁধে মাল বয়ে বযে কত জায়গায় সাপ্লাই দিতে গেছি। নবদ্বীপ, কুষ্টিয়া, মাজদিয়া,ওদিকে বর্ধমান, হাওড়া। কিন্তু তুমি আজ কোথায়, আর আমি
গঙ্গারাম আদা, পেঁয়াজের কুচো চিবোচ্ছিলেন। বললেন, 'সেজন্য তোমাকে রামনগিনের বউয়ের কথা বলিনি।'
হরলাল গেলাসে চুমুক দিয়ে বললেন, 'সেটা বুঝেছি ফুলকির সঙ্গে আমাদের সেই যাকে বলে, ভাব ভালবাসার কথা বলছ তো? শুধু কি তা-ই। যেমন স্বাস্থ্যখানি, ঢলঢলে টলটলে, তেমনি ছিল হাসিটি। একবার তাকালেই মনে রঙ ধরে যেত। মেযেছেলেটি আমাদের যেন কী চোখে দেখেছিল, তাই না ?'
গঙ্গারাম গেলাসে চুমুক দিলেন, চানা চটপটি মুখে দিয়ে, একটু চিবিয়ে নিলেন। বললেন, 'তুমি তখন থেকে, "আমাদের আমাদের" কবে বলছ কেন বুঝতে পারছি না। তোমার সঙ্গে আবাব তাব ভাব ভালবাসা হল কবে ?
হবলাল গেলাসে চুমুক দিতে উদ্যত হয়ে থামলেন। কোঁচকানো মুখে নিচের দাঁত একবার জিভ দিযে ঠেলে, জিজ্ঞেস করলেন, 'তার মানে '
গঙ্গারাম বললেন, 'তোমাব অই খেঁকুবে চেহারার দিকে তাকিয়ে ফুলকি কোনোদিন ভাবের হাসি হেসেছে বলে তো মনে পড়ছে না।'
হবলাল রাগে বি রি করে উঠলেন, গেলাসে আব চুমুক দেওয়া হল না। তর্জনী দিয়ে গঙ্গারামেব আপাদমস্তক দেখিয়ে ভ্যাংচানো সুবে বললেন, 'অ ফুলকিব যত ভাবের হাসি ঝরত বুঝি এই - - ঢ্যাপসা ভোঁদকা গঙ্গা ঘোষকে দেখেই ?"
গঙ্গারাম একটু অসহাযভাবে নিজের খালি গা শরীবটার দিকে তাকালেন। বললেন, 'কিন্তু সেই অল্প বয়সে আমি এরকম মোটা ছিলাম না।'
আর অই বয়সে, আমি বুঝি ধুেঁকরে ছিলাম ? শক্ত ছিপছিপে শরীরকে বুঝি তাই বলে ?' 'ছিপছিপে শক্ত ! আজকাল যাকে স্লিম বলে ? বাব্বা, হরো তুমি নিজের প্রশংসা করতে পার বাপু। তা সে কথা যাক গে, তোমার পকেটে সে কোনোদিন ছুটে এসে লিট্ঠি গুঁজে দিয়েছে? চামচের বাঁট দিয়ে, চা খুঁটতে খুঁটতে, রসের গানের কলি শুনিয়েছে। হবির্ণীর মতো তাকিয়ে কোনোদিন জিজ্ঞেস করেছে, ফির কব আওযেগে বাবুজী ?'
হরলাল ইতিমধ্যে গ্লোসে চুমুক দিয়েছিলেন। বললেন, 'কী করেছে আর কী বলেছে তা তুমি জানবে কী করে। আমাকে যখন একলা পেয়েছে, তখন ওরকম অনেক কিছুই হয়েছে। তোমাকে কোনোদিন ভুট্টা পুড়িয়ে, নুন কাঁচালঙ্কা দিয়ে খাইয়েছে?'
'বহুবার। তোমাকে আমাকে দুজনকে একসঙ্গেই খাইয়েছে।'
'আমাকে একলাও খাইয়েছে। অনেক কিছুই খাইয়েছে।'
গঙ্গারাম একবার আরক্ত চক্ষু বড় বড় করলেন, তারপর এক চোখ বুজে বললেন, 'সে সব
অনেক-কিছু জিনিসের নাম কী,হবো ?"
হরলাল সন্দিগ্ধ বিস্ময়ে গঙ্গাবামের দিকে তাকালেন। পরমুহূর্তে প্রশ্নের গূঢ় অর্থ বুঝতে পেরে বলে উঠলেন, 'বজ্জাতি করো না গঙ্গা, ওসব খারাপ কথা আমি মোটেই বলি নি। অনেক কিছু মানে, আচার পুরি ছোলাভাজা, এইসব। তোমাকে আর কী খাইযেছে সে কথা তুমিই বলতে পার।
বলে, হরলাল ত্যাবছা চোখে তাকালেন। গঙ্গাবাম জিভ কেটে বললেন, 'না না ফুলকির নামে আমি মিছে কথা বলতে পারব না। সে রকম মেযে ছিল না। আমাকে যে তার খুব ভাল লাগত, সেটা বুঝতে পারতাম।
'সেটা আমার বেলা, আমিও পারতাম। কিন্তু নিজের মনের কথাটা বল গঙ্গা ঘোষ।'
গঙ্গারাম একটি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। বললেন, - সে কথা বলে আব কী লাভ। বে থা'ব পরেও ফুলকিকে স্বপ্ন দেখেছি।'
হরলালের গলাটা এবাব কোলা,ব্যাঙ-এর মতো শোনাল, 'আমি তো এই বুড়ো বয়সেও তাকে ভুলতে পারলাম না। মেয়েছেলেটির মনটা বড ভাল ছিল।'
গঙ্গাবাম বললেন, 'মাঝি বামনগিনকে সে কোনোদিন ঠকাযনি, কিন্তু তার মনে একটা খেদ ছিল।
দুজনেই খানিকক্ষণ কথা বললেন না। বোতলেব শেষাংশ দুই গেলাসে ঢেলে, আস্তে আস্তে চুমুক দিতে লাগলেন। চুরুট আব বিড়িব ধোঁযাব এবং গন্ধে, খুপবি ঘবটা আবর্তিত হচ্ছে। চানা চটপটি আব আদা পেঁয়াজের কুচো শেষ। এখন দুজনে কেবল আঙুল বুলিয়ে চুষছেন। তারপবে হঠাৎ যেন কিছু মনে পড়ে যাওযায আবাব ব্যাগ খুললেন গঙ্গাবাম। এখন হাতের অবস্থা কিঞ্চিৎ অসাব্যস্ত। ব্যাগের ভিতব থেকে একটি নতুন দেশী মদেব বোতল বের করে হরলালের দিকে বাড়িয়ে দিলেন, 'আজকে তুমি খাওয়ালে, ধর কালকেব বরাদ্দ।'
হরলাল বোতলটি নিয়ে এক জায়গায় ঢুকিয়ে দিলেন। গঙ্গাবাম বললেন, 'তাহলে এই হুইস্কি আর দোপেঁয়াজির কী হবে।
হবলাল বললেন, 'যেখানকাব জিনিস, সেখানে নিয়ে যাও। বোজ রোজ ধ্যালাং করতে নিযে আসাই বা কেন, বুঝি না।'
গঙ্গাবাম বোতল আর প্যাকেট ব্যাগের মধ্যে পুবলেন। জামাটা কাঁধে নিয়ে, গেলাসে শেষ চুমুক দিযে, ছড়িটা তুলে নিলেন। বললেন, 'উঃ, একেবাবে ইঁদুরের গর্ত। কোথায় একটু ছড়িয়ে বসে আরাম কবে খাব, তা না - ।'
হবলাল বলে উঠলেন, 'অই দশাসই চেহাবা নিযে, কুড়ি বছর ধরে তো এই ইঁদুরের গর্তেই কাটালে। অন্য কোথাও যাবাব নাম তো শুনি না। ইঁদুরের গর্ত! বলতে লজ্জা করে না?'
বলে তিনি গেলাস বোতল সব সরিয়ে ফেললেন। গঙ্গারাম গুনগুন কবে উঠলেন, 'কী কারণে কারণবাবি করি পান '
হরলাল ধমকে উঠলেন, 'চুপ কর, আশেপাশের লোক শুনতে পাবে।'
'আমাব থেকে তো তোমার গলার জোব বেশী, সেটা বুঝি কেউ শোনে না? আসলে আমি একটু গাইতে পাবি বলে তোমার হিংসা হয়।'
'আহা, একেবারে কে মল্লিক আব কানাকেষ্টর মতন গলা।'
হবলাল দরজা খুলে দিলেন। ঘরে একটু ঠান্ডা হাওয়া ঢুকল। গঙ্গারাম ছড়ি আর ব্যাগ নিয়ে রেরোলেন। কাঁধের ওপব পাঞ্জাবি। হরলাল তালা-চাবি নিয়ে পেছনে। দবজা ঠেলে, গোটা
| pdf |
9eeb4013b2c59168abdfd08298cf126886cfbce3 | জনমত ডেস্কঃ চলতি বছর যারা অভিনয় দিয়ে তুমুল সাড়া ফেলেছেন তাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতের বিনোদনভিত্তিক ওয়েব সাইট ফিল্মিসিল্মি ডটকম। সেখানে তাদের 'গেম চেঞ্জিং' তারকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে স্থান পেয়েছেন হলিউডের এমা স্টোন, লেডি গাগা; বলিউডের প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকোনের মতো তারকারা। সেই তালিকায় বাংলাদেশের অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধনও জায়গা করে নিয়েছেন।
'গেম চেঞ্জিং'-এ তারকাদের নাম ক্রমিক অনুসারে সাজানো হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'গেম চেঞ্জিং' মানে বোঝানো হয়েছে পারফরম্যান্সকে, যা কি না অভিনয়শিল্পীর ফিল্মগ্রাফিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এমন ৩৮ জনের নাম তারা প্রকাশ করা হয়েছে।
এ তালিকায় রয়েছেন হলিউডের রিজ আহমেদ, দেব প্যাটেল, ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট, এমা স্টোন, জেনিফার হাডসন, অ্যান্ড্রু গারফিল্ড, লেডি গাগাসহ আরও অনেকে। আর বলিউডের প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকোন, কৃতি শ্যানন, কার্তিক আরিয়ান, পরিণীতি চোপড়া, মহিন রাইনাদের মতো তারকারা।
এদের সঙ্গেই রয়েছেন বাঁধন। তার সস্পর্কে বলা হয়েছে, 'বাঁধন একজন ডেনটিস্ট হওয়ার পাশাপাশি অভিনয় করেন। তিনি বাংলাদেশের গ্ল্যামারাস তারকা এবং অনেকদিন ধরেই মিডিয়াতে কাজ করেছেন।
চলতি বছর ৭৪তম কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অফিসিয়াল সিলেকশনে অংশ নিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলো বাংলাদেশি সিনেমা 'রেহানা মরিয়ম নূর'। সিনেমাটি বিদেশি ভাষা বিভাগে অস্কারে জমা পড়েছিলো। তবে ৯৪তম অস্কারের আসরের সংক্ষিপ্ত তালিকা থেক বাদ পড়েছেন সিনেমাটি।
একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে এই সিনেমার গল্প। যেখানে রেহানা একইসঙ্গে একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক। এখানে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাঁধন।
'রেহানা মরিয়ম নূর' নির্মাণের পাশাপাশি এর চিত্রনাট্য ও সম্পাদনা করেন নির্মাতা সাদ নিজেই। চলতি বছরের ১২ নভেম্বর দেশের প্রেক্ষাগৃহে এটি মুক্তি পায়। সিনেমাটি ৩০ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে।
| web |
b7c7de10b0ae956e6fab2471e05655beb43e0d6c | নয় দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি (সকশিস)। সংগঠনের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এমরান হোসেনের কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতরা।
শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক সমন্বিত পদ সৃজন ও পদায়ন, প্যাটার্নভুক্ত পদে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে আত্মীকরণ, দ্রুত পদসোপান তৈরি ও পদোন্নতির শর্তাবলী প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা, ১০০% চাকরিকাল গণনা করা এবং কার্যকরী চাকরিকাল পদোন্নতিসহ সকল জায়গায় কার্যকর করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক এসএম সামাদুল ইসলাম, প্রভাষক মো. নেহারুল হক, আমিনুল ইসলাম, ফয়সল কবীর, কামরুল ইসলাম, মশিউর রহমান, লিটন চন্দ্র সরকার, মীর মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
| web |
9e53d5ad14acf0afcca097e9595b21895bd52fed | বেঙ্গালুরুঃ করোনাভাইরাস লকডাউনের মধ্যেই কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর ছেলের বিয়ে হয়ে গেল। কুমারস্বামী অবশ্য বলেছেন, লকডাউনের জন্য বেঙ্গালুরুতে নয়, বিয়ে হয়েছে রামানগরে, তাঁদের খামারবাড়িতে।
দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার ছেলে কুমারস্বামী জনতা দল সেকুলার নেতা। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কর্নাটকের ক্ষমতা দখল করে জেডিএস। কুমারস্বামী মুখ্যমন্ত্রী হন। পরে অবশ্য আস্থাভোটে পড়ে যায় জেডিএস-কংগ্রেস সরকার। কর্নাটকে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। অনেকদিন খবরে না থাকা কুমারস্বামী ফের সংবাদ শিরোনামে। তবে রাজনীতির কারণে নয়, ছেলের বিয়ে দিয়ে।
কুমারস্বামী ছেলে নিখিল গৌড়ার বিয়েও অবশ্য রাজনীতিক পরিবারেই দিয়েছেন, গৃহ দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী, কংগ্রেস নেতা এম কৃষ্ণাপ্পার নাতনি রেবতীর সঙ্গে। তাঁর বক্তব্য, লকডাউনের কারণেই বিয়ে বেঙ্গালুরুতে হয়নি, হয়েছে তাঁদের রামানগরের খামারবাড়িতে। ভিড়ও হয়নি, ছিলেন মাত্র জনাষাটেক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিজন। যদিও সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং কীভাবে মানা হয়েছিল, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
| web |
62d06443489f7012eda889d2a80413c69effdb12 | শুক্রবার গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে হিরো আইএসএল ৮-এর প্রথম ম্যাচে নামার আগে indiansuperleague. com কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এটিকে মোহনবাগানের নবনিযুক্ত গোলকিপার অমরিন্দর সিং যেমন নিজের দলবদলের নেপথ্যকাহিনী নিয়ে মুখ খুললেন, তেমনই বললেন সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবল সংস্কৃতি ও কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের জয়ের অদম্য মানসিকাতা নিয়ে। সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ এখানে তুলে ধরা হল।
আপনি শেষ গোল্ডেন গ্লাভ জিতেছিলেন ২০১৬-য়। এ বারে এমন এক রক্ষণ বিভাগ আপনার সামনে থাকবে, গত মরশুমে যাদের পিছনে থাকা গোলকিপার গোল্ডেন গ্লাভ জিতেছেন। আপনার এই খেতাব জয়ের সম্ভাবনা এ বার কতটা দেখছেন?
গত বছর চ্যাম্পিয়নের ট্রফি জিতেছি। প্রতি বছরই এই পুরষ্কারটা জেতার কথা মাথায় রেখেই মাঠে নামি। প্রতি বছরই আমাদের দল সেমিফাইনাল, ফাইনালে ওঠে। তাই এ বারেও ফোকাসটা একই থাকছে। আগে সেমিফাইনালে ওঠো, তার পরে লিগশিল্ডের জন্য লড়াই করো এবং শেষে আইএসএল ট্রফি। আমার কাছে ক্লাবের জন্য ট্রফি জেতার গুরুত্ব সবার আগে, তার পরে ব্যক্তিগত পুরষ্কার, মানে গোল্ডেন গ্লাভ। যে কোনও পুরষ্কার পেলেই ভাল লাগে।
একাধিক স্প্যানিশ কোচের সঙ্গে কাজ করেছেন আপনি। হাবাস তাদের চেয়ে কোনদিক থেকে আলাদা?
ওঁর জেতার অদম্য মানসিকতাই ওঁকে সবার চেয়ে আলাদা করে রেখেছে। প্রত্যেক দিন অনুশীলনেই উনি প্রত্যেকের মাথায় ঢুকিয়ে দেন, জিতে মাঠ ছাড়তে হবে। অনুশীলন থেকেই এই মানসিকতা দেখা যায় ওঁর মধ্যে। ফুটবলারদের মধ্যেও এই মানসিকতা তৈরি করে দেন। আসলে উনি হারতে একেবারে পছন্দ করেন না। প্রতি ম্যাচে ওঁর জয় চাইই-চাই। দলের ছেলেদের মধ্যেও এ রকমই মানসিকতা লক্ষ্য করেছি আমি। এমনকী ক্লাবের মানসিকতাও একই রকমের। ফাইনালে ওঠার জন্য যা করতে হয়, সবই করো এবং ট্রফি জিতে আনো।
রয় কৃষ্ণা বা ডেভিড উইলিয়ামসের মুখোমুখি অনুশীলনে এবং ম্যাচেও করেছেন। কোনটা বেশি কঠিন?
নিজের দলেই যদি লিগের সেরা স্ট্রাইকার থাকে, একজন গোলকিপারের কাছে এর চেয়ে ভাল খবর আর কিছু হতে পারে না। প্রতিপক্ষ দু-একবার তাদের মুখোমুখি হতে পারে। কিন্তু আমাকে রোজই অনুশীলনে তাদের মুখোমুখি হতে হয়। এর ফলে গোলকিপারেরই উন্নতি হয়। তাই সব সময়ই চাইব, ওরা সব সময় আমার দলেই থাকুক।
এই মরশুমের আগে একাধিকবার ট্রান্সফার ফি-র নজির ভেঙেছে, গড়েছে। এটিকে মোহনবাগান হুগো বুমৌস, লিস্টন কোলাসোকে নিয়ে এসেছে, আপুইয়াকে নিয়ে গিয়েছে মুম্বই সিটি এফসি। গত কয়েক বছর দলবদলের গতিপথ কী ভাবে পাল্টেছে বলে মনে হয় আপনার?
এই যে ভাল ফুটবলারদের চাহিদা এত বাড়ছে, এটা খুব ভাল সঙ্কেত। উঠতি খেলোয়াড়দের পক্ষেও এটা খুব ভাল ব্যাপার। ইউরোপের মতো আমাদের দেশেও দেখা যাচ্ছে বড় ক্লাবগুলো বিশাল অঙ্কের ট্রান্সফার দিয়ে খেলোয়াড় নিয়ে আসছে। এটা খুবই ভাল সঙ্কেত। আমরা উন্নতি করছি। আইএসএলে দলগুলো কী ভাবে উন্নতি করছে দেখছেন। জাতীয় দলে কত তরুণ খেলোয়াড় ডাক পাচ্ছে, তা একবার ভেবে দেখুন। তারা ভাল খেলছেও। আমার তো মনে হয় আগামী কয়েক বছরে ভারতীয় ফুটবল আরও উন্নতি করবে। আইএসএল ক্লাবগুলো তো বটেই, জাতীয় দলও উন্নতি করছে। এটা খুবই ভাল সঙ্কেত।
গত বার হিরো আইএসএল শেষ হওয়ার আগেই আপনি দলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন বলে শোনা গিয়েছে। মুম্বই সিটি এফসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে তাদের ছেড়ে এটিকে মোহনবাগানে চলে আসার সিদ্ধান্তটা কি ঠিক ছিল বলে মনে করেন?
অবশ্যই। অনেক ভাবনা-চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম। মরশুম শেষ হওয়ার আগেই সিদ্ধান্ত নিই, যখন লিগ চলছিল। ক্লাবের (মুম্বই) কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে তাদের জানাই। তাঁরা আপত্তি তো করেনইনি। বরং আমার পাশে ছিলেন। আমার সিনিয়রদের সঙ্গেও আলোচনা করি। তার পরে সিদ্ধান্ত নিই। আমার মনে হয়, একজন পেশাদার খেলোয়াড় যদি পরের মরশুমে সেই ক্লাবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, ফাইনালে যে ক্লাবের মুখোমুখি হতে চলেছে, তাতে সমস্যার কিছু নেই। আমি ফাইনালে ওঠার আগেই দলবদলের সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত নিজের কাছে সৎ ছিলাম। কারণ, ফুটবল আমার কাছে সব কিছু। সিদ্ধান্তটা তাই ঠিকই ছিল। আমরা জেতার জন্য খেলি। পরের মরশুমে কোথায় যাব, সেটা বড় কথা নয়। এখন আমি যেহেতু এটিকে মোহনবাগানের ফুটবলার। তাই এই ক্লাবই আমার কাছে সব কিছু।
| web |
b760e58cbe8c5e36db28bc82297bc07fc19742f5 | মলয় দে নদীয়াঃ- সত্যিই কি ভূত আছে ? নাকি মানুষের দীর্ঘদিনের মননে প্রোথিত অন্ধবিশ্বাসের ফল এই ভূত নামক আজব ধারনা ও গুজব। হ্যাঁ এমনই ঘটনা ঘটে গেলো নবদ্বীপ শহরের মহাপ্রভু কলোনীর বিষ্ণু দাস লেনে ( প্রতাপনগর বাজারের পিছনে )
ভূতের উৎপাতের খবর শুনে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে তিন সদস্যের একটি টিম গণেশ দেবনাথ, সোমনাথ রায় এবং প্রতাপ চন্দ্র দাস তদন্তের জন্য বা বলতে পারেন ভূত রহস্য উন্মোচনের জন্য ছুটে যান। পাড়ার প্রতিবেশিদের কাছে গিয়ে খোঁজ খবর নিতেই উঠে আসে বিভিন্ন রকমের তথ্য মানে ভূত রহস্যের গালগল্প। স্থানীয় একজন, নাম জয়দেব দেবনাথ জানান, ঐ পাড়ায় দু'জন কিছুদিন আগে মারা যায়, একজনকে খুন করা হয় এবং আরেকজন গৃহবধূ আত্মহত্যা করে। পাড়ার প্রায় সকলের বিশ্বাস ঐ দুই মৃতদেহের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে ভূত হয়ে। অনেকের বাড়িতে নাকি ঐ ভূত বা আত্মা রাতে বাড়ির দরজায় ঠকঠক করে আওয়াজ করছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে এলাকার লোকজনেরা আতঙ্কে আছে, ভয়ে সন্ধ্যার পরে ঘর থেকে বেরোতে চায়ছে না। বাচ্চারাও আতংকিত, ভীত। বেশ কয়েকজন ভূতের ভয় কাটাতে ওঝা গুনীনের কাছে গিয়ে জল পড়া খেয়েছে, তাবিজও নিয়েছে।
ভূতের দোষ কাটাতে, পাড়ায় অপছায়া তথা আত্মার শান্তির জন্য আজ ভগবৎ গীতা পাঠের আয়োজন ও ধর্মীয় নাম সংকীর্তনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উচ্চস্বরে মাইক (প্রায় ১৫ টা মাইক) বাজিয়ে সকাল থেকেই চলছে ভগবানের গান, সন্ধ্যা হলে গীতা পাঠ। এতে নাকি ভূত পালাবে। আগামীকাল ভূত তাড়ানোর জন্য আয়োজন করা হয়েছে মহা-যজ্ঞের। সেই ভূত বা আত্মাকে এভাবে তাড়ানোর জন্য এমন কুসংস্কারময় অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানের জন্য পাড়ার লোকেরা কেউ পাঁচশো, কেউ সাতশো, কেউবা হাজার টাকা দিয়েছে। এভাবেই চলছে ভূত তাড়ানোর অভিনব কৌশল।
উক্ত খবর পেয়ে যুক্তিবাদী সমিতির সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় মানুষদের নিযে সচেতনমূলক অনুষ্ঠান করা হয়, পারার দেওয়ালে পোস্টারিং করা হয় এবং সমিতির লিফলেটও বিলি করা হয়। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় ভূত বলে কিছু হয় না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সদস্যরা - অর্পন রায়, সোমনাথ রায়, সমীর রঞ্জন সাহা, গনেশ দেবনাথ, তপন ভট্টাচার্য, সোমনাথ ব্যানার্জি ও প্রতাপ চন্দ্র দাস। এলাকার মানুষজন খুব উৎসাহের সহিত যুক্তিবাদী সমিতির সদস্যদের বক্তব্য শোনেন। এলাকায় ভীতির পরিবেশ অনেকটাই এখন নিয়ন্ত্রণে।
| web |
5433beed5ae031889ceed8fecec5a1aaae8d51e49a85ca62c82388f701e44219 | 'হায় অভাগা হৃদয় আমার শোনো, বিষের ক্ষতে ভুগছ তুমি জেনো। কোথায় তুমি দাওয়াই পাবে বল ? বধাই তোমার ঝরবে আখিজল।' তব্দ যদি হৃদয় কিছু বলে
তারে আমি শুনতে নাহি পাই ;
কেমন করে শনৰ বল
হৃদয় সেথায় নাই। সে যে আজ হারিয়ে গেছে
পথের ধূলির মাঝেকামনার ফাঁস পরেছে
লাগবে কী আর কাজে।
হৃদয়ের নিভৃত কন্দরের রন্ধ দরজায় আঘাত করল মেয়েটি, জাগিয়ে তুলল সপ্ত বেদনার আর্তিকে। কেমন যেন উদাস হয়ে গেল আলী সাহেবের মনটিও। সরাবের পেয়ালায় ঠোঁট দিয়ে তিনি সেটি এগিয়ে দিলেন মেয়েটির দিকে কৃতজ্ঞচিত্তে মেয়েটি তা গ্রহণ করল। সংরাপাত্র আবার পূর্ণ করে এগিয়ে গেলেন তিনি কৃষ্ণাঙ্গীর কাছে, বললেন - চোখের নীল অঞ্জন তুমি। চেহারাটা কৃষ্ণ ভ্রমর হলে কি হবে? মনটা তোমার বরফের মত সাদা। তোমাকে দেখলে আল্লাহর পরম করুণার কথা মনে পড়ে যায়। এ দদনিয়ার ব্যথাবেদনার যেন প্রতীক তুমি! তোমার মুখের দিকে তাকালে জীবনের সব দঃখ, ব্যথা আর বেদনার কথা আমি ভুলে যাই। মনটা যে তোমার গোলাপের মত সংগন্ধী। তোমার মনের মত একটা গান শোনাও না আমাদের। মাথা নিচ করে প্রভুর নির্দেশে মেয়েটি বীণা তুলে নিল হাতে। বীণার তারে সদরের ফলঝরি ছড়িয়ে পড়ল। দঃখের সরে কতখানি মাদকতা রয়েছে আলী সাহেব তা যেন বুঝতে পারলেন। বিভিন্ন সদরের আমেজে মগ্ধ হয়ে উঠল সবাই। তারপরে মেয়েটি তার সেই প্রিয় গানখানি গাইল :
আমাদের প্রেমের যে স্বর্ণ শিখা জ্বলছে তার জন্য শোক কর; কারণ আমার প্রেমিক অন্য নারীদের প্রীতির চোখে দেখে। কিন্তু গোলাপকে ভালবাসতে তোমরা বাধা দিয়ে। না আমাকে।
যে হৃদয় গোলাপের স্বপ্নে মাতোয়ারা, হায়, তাকে নিয়ে কী কাজ হবে দনিয়ায়! আমার সামনে কুড়িটি পেয়ালা সাজানো সেগলি সব সরাব দিয়ে ভরানো
অর রয়েছে কেবল চম, খাওয়ার জন্য একটি পরানো গিটার, আমার প্রিয়তম সে-ই কিন্তু আমার কাছে কোন সংগান্ধী নির্যাস নেই।
| pdf |
094f02a62f9cfc825cd308b35277648a13d07651e5f9beb4d162f177c8750150 | 'দেখেই বুঝেছিলাম, তুমি রগচটা,' ফিসফিস করে বলল ও। কিন্তু ডার্লিং, আমার কথা তোমাকে শুনতে হবে।
আবার ওর কাঁধ আর মাথা এঞ্জিন কাউলিঙের ভিতর অদৃশ্য হয়ে গেল, ভিতর থেকে শক্ত ধাতুর সঙ্গে স্প্যানারের ঠোকাঠুকি আর শিসের আওয়াজ বেরিয়ে আসছে। দশ মিনিট পর আবার ক্র্যাঙ্ক হাতল ঘোরাল ও। সঙ্গে সঙ্গে গর্জে উঠল এঞ্জিন, ব্যাকফায়ারের আওয়াজ হলো কামান দাগার মত, হাত থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেল ক্র্যাঙ্ক হ্যান্ডেল-ওটা উল্টো করা মুঠোর ভিতর ধরা থাকলে বুড়ো আঙুলটা ছিঁড়ে নিয়ে যেত।
'শালীর দেমাক কী!' হতভম্ব রানা টারিটে উঠে কন্ট্রোলের দিকে ঝুঁকল, রিসেট করল ইগনিশন।
পরের বার ক্র্যাঙ্ক ঘোরাতে সচল হলো এঞ্জিন, নিস্তেজ হতে শুরু করে আবার সতেজ হলো, তারপর নিয়মিত শব্দছন্দ বজায় রাখল। আড়ষ্ট সাসপেনশনের উপর কাঠামোটা মৃদু কাঁপছে, তবে জ্যান্ত থাকল এঞ্জিন।
পিছিয়ে এল রানা, দরদর করে ঘামছে, চেহারায় একটা আভা, তবে আনন্দে চকচক করছে চোখ জোড়া।
'পরস্পরকে আমরা চিনেছি, তাই না?'
'ব্রাভো! ব্রাভো!' পিছন থেকে, দরাজ কণ্ঠস্বর। প্রায় চমকে
উঠে তাড়াতাড়ি ঘাড় ফেরাল রানা। ভুলেই গিয়েছিল দুনিয়ায় সেই একমাত্র প্রাণী নয়। অপ্রতিভ বোধ করল ও, যেন একান্ত ব্যক্তিগত এবং গোপন শারীরিক একটা বৈশিষ্ট্য আড়াল থেকে
দেখে ফেলেছে কেউ। লোকটার দিকে কটমট করে তাকাল ও, পোজ দেওয়ার মার্জিত ভঙ্গিতে আমগাছের গায়ে হেলান দিয়ে রয়েছে।
'দারুণ একটা কৃতিত্ব চাক্ষুষ করলাম, মাইরি বলছি!' মিটিমিটি
মাসুদ রানা-১৬৩
হাসছে আগন্তুক, তার কণ্ঠস্বর দ্বিতীয়বার কানে ঢুকতেই রানার ঘাড়ের পিছনে খাড়া হয়ে গেল চুল। উচ্চারণ এবং বাচনভঙ্গি ইংলিশ, সবজান্তা ট্যুরিস্টদের একজন বলে মনে হলো। রানার জানা আছে, পরের ব্যাপারে নাক গলাতে ওদের জুড়ি মেলা ভার। কে জানে লোকটা কে বা কেমন! পালিয়ে তাঞ্জানিয়ায় চলে এসেছে ও, আবার না তাঞ্জানিয়া ছেড়ে পালাতে হয়।
পরে আছে মাখন রঙা দামী ট্রপিক্যাল লিনেন-এর সুট, পায়ে সাদা আর খয়েরী জুতো। সাদা স্ট্র হ্যাটের চওড়া কার্নিস ছায়া ফেলেছে মুখে। তবে চেহারায় লেপ্টে থাকা হাসিখুশি ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বসূচক ভাব রানার চোখ এড়াল না। প্রচলিত অর্থে সুদর্শন বলা চলে, যদিও সহজ-সরল হাবভাবের মধ্যে সকৌতুক শয়তানীর একটা ভঙ্গি উঁকি-ঝুঁকি মারছে বলে সন্দেহ হলো রানার। চেহারায় অভিজাত একটা ভাবও আছে, তবে তার কতটুকু বানোয়াট বা অর্জিত আর কতটুকু উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া, বলা কঠিন। তবে সন্দেহ নেই সুন্দরীদের আবেগ উথলে উঠবার একটা কারণ সৃষ্টি করবে এই মুখ, তাতে গতি সঞ্চার করবে দরাজ কণ্ঠস্বর। বহুজাতিক কোন কোম্পানীর সেলস এজেন্ট? উঁহু, সম্ভাবনাটা বাতিল করে দিল রানা। কেমন যেন সন্দেহ হতে লাগল ওর। লোকটা হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, হাত ও পা স্থির, তবু গোটা ভঙ্গিটার মধ্যে কী যেন একটা আছে যা ধরা দেই দেই করেও দিচ্ছে না।
'ওটাকে জ্যান্ত করতে মোটেও বেশি সময় নাওনি তুমি।' গাছে হেলান দিয়েই থাকল, তবে দাঁড়ানোর ভঙ্গিটা বদলে গেল। জোড়া পা নীচের দিকে ক্রস চিহ্নের আকৃতি পেল, একটা হাত কোট পকেটের ভিতর। আবার হাসল সে, এবার তার হাসিতে ব্যঙ্গ আর
মুক্ত বিহঙ্গ-১
| pdf |
46ac89c271d9d28bdbcb656b4fff9cbd09e545c6 | অবৈধ সম্পদ ও মানি লন্ডারিং আইনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন শুনানির জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ দিন ধার্য করেণ।
সূত্র জানায়, এ দিন মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানি জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন দিন ঠিক করেন।
গত ৩০ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ এ চার্জশিট দাখিল করেন। মিজান ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন-ডিআইজি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না ওরফে রত্না রহমান, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান এবং ভাগনে মাহমুদুল হাসান। মাহমুদুল হাসান রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এর আগে গত ১ জুলাই তারা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয়। এরপর ওই দিনই শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন। পরের দিন (২ জুলাই) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর গত ৪ জুলাই ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। উভয় আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
গত ২৪ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদী হয়ে ডিআইজি মিজানসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৩ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ করা হয়।
অপরদিকে ১৮ মার্চ অবৈধভাবে তথ্যপাচার ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য রয়েছে মামলাটি ।
| web |
5cde552c2b465cdaf9228e5bf408095c9f62675a | ইংলিশ প্রিমিয়ারের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন কোচ হয়ে এসেছেন এরিক টেন হাগ। তিনি দায়িত্ব পেয়েই দল গোছানোর কাজে নেমে পড়েছেন। ইতোমধ্যেই ডাচ লিগের দল ফেইনুর্দ থেকে লেফটব্যাক টায়রেল মালাসিয়াকে দলে ভিড়িয়েছেন। বার্সেলোনা থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে নিয়ে আসা প্রায় নিশ্চিত।
মধ্যমাঠ নিয়ে চিন্তায় টেন হাগ। তাই নিজের সাবেক ক্লাব আয়াক্স থেকে আর্জেন্টাইন আরেক মিডফিল্ডারকে দলে আনছেন টেন হাগ। তিনি লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। ২৪ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারকে আনতে ৪৭২ কোটি টাকা (প্রায় পাঁচ কোটি ইউরো) খরচ করতে রাজি ম্যানইউ। তবে মার্টিনেজ মিডফিল্ডার না ডিফেন্ডার এ নিয়ে প্রশ্ন। সেন্টারব্যাক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু। তবে বাঁ পায়ের এই ডিফেন্ডার একাধিক পজিশনে খেলতে পারেন। খেলতে পারেন লেফটব্যাক পজিশনেও। আবার গত মৌসুমে রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন।
আয়াক্সের প্রধান নির্বাহী এডউইন ফন ডার সার আবার ইউনাইটেডেরই সাবেক গোলকিপার। ফলে দামের ব্যাপারে দুই পক্ষের ঐকমত্যে বেশি বেগ পেতে হয়নি। মার্টিনেজ কোচ টেন হাগের অধীন আবারো খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন। ২০২৭ সাল পর্যন্ত মার্টিনেজের সাথে চুক্তি হচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। গত মৌসুমে আয়াক্সের হয়ে ৩৬ ম্যাচ খেলেন তিনি। আর্জেন্টিনার হয়েও ৭ ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
| web |
144fae2131e12b28fb451d4ed003abdd | পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইন আপ কেমন হতে পারে, ভাতে গেলেই যেনো জট পাকাচ্ছে মাথায়। বিপিএলে ওপেনিংয়ে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব'র কথা বাদ দিলেও নিয়মিত ওপেন করেন এমন আরও ৫জন ব্যাটসম্যান আছেন স্কোয়াডে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো, এই পাঁচজনের প্রত্যেকেই আছেন ভালো ফর্মে। কাকে কোন পজিশনে খেলানো হবে এই বিষব বিষয় নিয়ে টাইগারদের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো কিছুটা মধুর বিড়ম্বনাতেই আছেন বলা চলে।
অবশ্য চিন্তার বিষয় হলেও, দুশ্চিন্তা নয়। তবে একটু দ্বিধা ত আছেই। মুশফিকুর রহিম না থাকায় টি-টোয়েন্টি দলের লাইনআপে অদলবদল আসবই। প্রথম দেখায় তামিম ইকবালকে প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো কিভাবে ব্যবহার করবেন- সেই প্রশ্ন উঠেছে।
সাধারণত মারকুটে ওপেনার হিসেবে পরিচিত হলেও বঙ্গবন্ধু বিপিএলে তামিম ছিলেন দলের ইনিংসকে ধরে রাখার ভূমিকায়। এই ভূমিকায় তিনি সফলও হয়েছেন। তাই জাতীয় দলে খেলার সময়ও কিছুটা ধীর হয়ে যান কি না- সেটি অনেকেরই ভাবনা।
তামিমের ভূমিকা ও দলের সম্ভাব্য ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো।
তিনি বলেন, 'তামিমের সাখে এটাই আমার প্রথম সফর। তাকে আরও ভালো করে বুঝতে পারব। বিপিএলে কোন ভূমিকায় খেলেছে, দেখেছি। আলোচনা করতে হবে জাতীয় দলের ভূমিকা নিয়ে। এখনো তার খেলার ধরন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এ নিয়ে ভাববো।'
ব্যাটসম্যানে ঠাসা ব্যাটিং লাইন আপ কেমন হবে, সে প্রসঙ্গে নিজের পরিকল্পনার আভাস দিলেন ডোমিঙ্গো। বললেন, 'মিডল অর্ডারে অন্যরা কেমন করে এটাও আমাদের দেখতে হবে। ভারত সিরিজে তিনে ব্যাট করা সৌম্য হয়তো ছয়ে নেমে যাবে। রিয়াদ পাঁচে ব্যাট করতে পারে। আফিফ তিনে বা চারে থাকতে পারে। আমাদের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে। শান্ত সম্প্রতি ভালো করছে। তাই সব মিলিয়ে আমাদের হাতে এখন অনেক অপশন। ওপেনার তো দুইজনকেই নিতে হবে আর বাকিদের দিয়ে অন্যান্য জায়গা ভরাট করতে হবে।'
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাইম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন ধ্রুব- দলে বেশ কয়েকজন ওপেনার থাকায় ওপেনিংয়ে অভ্যস্ত ব্যাটসম্যানদের অভ্যস্ততা থাকার ওপর জোর দিয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, 'বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররা যেকোনো পজিশনেই ব্যাট করতে পারে। মরগানকে তিনে দিলেও ভালো করবে, ছয়ে দিলেও ভালো করবে। কের উইলিয়ামসনকে যেকোন পজিশনে নামালেই সে ভালো করবে। এমনও হতে পারে লিটনকে চারে ব্যাট করতে হচ্ছে, মিঠুনকে ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকে নেমে যেতে হচ্ছে আর আফিফ ওপেন করতে নামছে।'
তবে সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আর চারদিন বাদেই। ২৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের মিশন শুরু করবে টাইগারবাহিনী।
| web |
00f6eb877b78da6fb6085d794401a2e4 | কলকাতার জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তা এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। নায়ক ফেরদৌস প্রযোজিত প্রথম ছবি 'এক কাপ চা' ছবির শুটিংয়ে তিনি অংশ নিচ্ছেন।
তরুণ নির্মাতা নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল পরিচালনায় চলছে ছবিটির শেষ অংশের শুটিং। এফডিসিতে শুটিংয়ের ফাঁকে বাংলানিউজের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
প্রথমেই ঋতুপর্ণা জানালেন, 'এক কাপ চা' ছবিতে করা নিজের চরিত্রটি সম্পর্কে। চরিত্রটির নাম দিলরুবা। হাই সোসাইটির ক্যাবার ড্যান্সার পরিচয়ের আড়ালে পতিতাবৃত্তিই তার আসল পেশা। ঋতুপর্ণা বলেন, এই ছবিতে আমি করছি নাচগান জানা এক পতিতার চরিত্রে অভিনয়। নাইট ক্লাবে নাচ-গান করার পাশাপাশি সমাজের উচ্চবিত্ত ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে হোটেলে রাত্রি যাপন করাই হলো আমার কাজ। কলেজের অধ্যাপক ফেরদৌসের সঙ্গে একপর্যায়ে আমার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে প্রায় রাতেই হোটেলে আমার কাছে আসে। আমি তাকে এড়াতে চাইলেও পারি না। এ ছবিতে আমার সঙ্গে অভিনয় করছেন শাকিব খান, মৌসুমীসহ অনেকেই।
'এক কাপ চা' ছবিতে অভিনয়ের জন্য একাধিকবার শিডিউল দিয়েও কথা রাখেননি ঋতুপর্ণা। তার কারণে ছবির কাজ বেশ খানিকটা পিছিয়ে গেছে। বিষয়টি সম্পর্কে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, পুরো ব্যাপারটাই ছিল একধরণের মিস কমিউনিকেশন। ফেরদৌসের সঙ্গে অনেক ছবিতে আমি অভিনয় করেছি। কাজেই তার প্রযোজনার প্রথম ছবিতে শিডিউল নিয়ে ঝামেলা করা আমার জন্য মোটেও শোভনীয় নয়। আসলে আমি ছিলাম তখন সন্তান-সম্ভবা। অনাগত সন্তানের চিন্তায় মানসিকভাবে অস্থির ছিলাম। শরীরের অবস্থাও ভালো ছিল না। ঐ অবস্থায় শুটিংয়ে অংশ নিলে ভালোর চেয়ে মন্দটাই বেশি হতো। কয়েকমাস পেছালেও এখন আমি মন দিয়ে কাজটা শেষ করে যেতে চাই।
এবার ঢাকায় এসে কেমন লাগছে? এ প্রশ্নের উত্তরে ঋতুপর্ণা বললেন, ভালো লাগছে খুব। কারণ ঢাকায় এর আগে অনেকবার এসেছি। এ শহরে আমার কিছু ভালো কাজের স্মৃতি আছে। ভালো লাগেনি, ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে লেগে থাকা ট্র্যাফিক জ্যাম। আগেও এসে দেখেছি, ঢাকায় লম্বা যানজট লেগে থাকে। কিন্তু এবার মনে হলো তা অসহনীয় পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। তাছাড়া এফডিসিতে পা রেখে আমি চমকে গেলাম। চারদিক কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগছে। এই এফডিসিকেই আমি দেখে গেছি জমজমাট অবস্থায়। এখন এফডিসির সবকিছু ফাঁকা ফাঁকা। এখানে সেখানে লোকজনের জটলা নেই। পুরনো মানুষদের খুব কম চোখে পড়েছে। যাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, তাদের সবাই বেশ খানিকটা বুড়িয়ে গেছেন।
ছবির পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল সম্পর্কে তিনি বলেন, বয়সে তরুণ হলেও কাজ তিনি ভালোই বোঝেন। ফেরদৌসের মুখ থেকে নেয়ামূল সম্পর্কে অনেক শুনেছি। তার তৈরি করা বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের কাজও দেখেছি। নেয়ামূল সম্পর্কে উঁচু ধারণ নিয়েই 'এক কাপ চা' ছবিতে অভিনয় করতে আসি। যতোটুকু কাজ করলাম তাতে তার প্রতি আমার উঁচু ধারণা আরো বেড়ে গেছে। ছবিটি তিনি ভালোই বানাবেন ।
কলকাতা, মুম্বাই ও ঢাকা; তিনটি ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ঋতুপর্ণার। তিন ইন্ড্রাস্ট্রির মধ্যে কোনটিতে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য পান? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে তিন ইন্ড্রাস্ট্রির কাজের ধরণ তিন রকম। একটা সময় ঢাকার ছবির চেয়ে কলকাতার ছবি বেশ পিছিয়ে ছিল। সে সময়ই আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করি। ঢাকার প্রযোজক-পরিচালকদের আগ্রহের কারণেই একের পর এক তখন এদেশের ছবিতে অভিনয় করেছি। তবে কলকাতা হলো আমার নিজস্ব জায়গা। এখন তো ঢাকার চেয়ে কলকাতার ছবি অনেক এগিয়ে গেছে। মুম্বাইয়ের কয়েকটি হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছি। আমার অবশ্য বাংলা ছবিতেই অভিনয় করতে বেশি ভালো লাগে। এখন আমি ছবি করছি অনেক কম। সন্তান আর সংসারের প্রতি আমার বেশি মনোযোগ।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তা জানালেন, একটানা শুটিংয়ের কাজ শেষ করে ৩০ জুলাই রোববার রাতে তিনি কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। এরপর ছবির ডাবিংয়ে অংশ নেওয়ার জন্য আবার ঢাকায় আসবেন আগস্টের শেষ নাগাদ।
| web |
7d6afbd6fdf4ad543a62f77a7146bf4135c2eb33 | ফেনীর সোনাগাজীতে স্কুলছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা তমিজ উদ্দিনের (৪৫) সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই দিন হাসপাতালে ওই ছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ধর্ষক তমিজ উদ্দিনকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসমাইল ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আলম মিয়াজী স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. আবদুর রহিম সরকার বলেন, দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ওই ছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত ২২ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। একই সঙ্গে ধর্ষক তমিজ উদ্দিনকেও আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে সদ্য বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগের নেতা তমিজ উদ্দিনকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন।
পরে রাতেই উপজেলার ভাদাদিয়া এলাকা থেকে তমিজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার জানায়, উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাবা তমিজ উদ্দিনের ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন। গত ১ অক্টোবর মেয়েটি প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় তমিজ উদ্দিন তাকে কৌশলে ডেকে দোকানের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
এরপর বিষয়টি কাউকে বললে তাকে ও তার বাবাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেন। ঘটনাটি তমিজের স্ত্রী দেখে ফেলে ওই ছাত্রীকে দ্রুত তাড়িয়ে দেন। ওই সময় বিষয়টি নিয়ে তমিজ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বাগবিতণ্ডা হলে আশপাশের মানুষও বিষয়টি জানতে পারেন।
এরই মাঝে মেয়েটিও তার মায়ের কাছে বিষয়টি খুলে বললে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় থানায় গিয়ে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা।
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
| web |
ed872fbe7a15da336a73a6cf517953dabbc56208 | মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয় এখন এক বিতর্কের মধ্যে জডিয়ে পড়েছে। জানা গেছে যে পর্যটন মন্ত্রণালয়, মালয়েশিয়ার পর্যটনের প্রচারণার জন্য ফেসবুকের ছয়টি পাতা তৈরিতে ১. ৮ মিলিয়ন মালয়েশীয় রিঙ্গিত ( ৫৯৪, ০০০ মার্কিন ডলার) খরচ করেছে।
মালয়েশিয়া ইনসাইডার সংবাদ প্রদান করছে যে উপ পর্যটন মন্ত্রী জেমস দাওয়াস মামিট বিরোধী দলের এক সংসদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য প্রদান করেন। এই ছয়টি পাতা হচ্ছে চুতি- চুতি ১ মালয়েশিয়া (এক মালয়েশিয়ায় অবকাশ যাপন)। চুতিরাওয়ারান ১ মালয়েশিয়া ( এক মালয়েশিয়ার রঙ), কার্নিভাল জুয়ালান মেগা ১ মালয়েশিয়া (১ মালয়েশিয়া মেগা বিক্রয় উৎসব) কেমপেন ১ মালয়েশিয়া বেরিশা (পরিষ্কার এক মালয়েশিয়া নামক প্রচারণা) এবং ফাবুলাস ফুড ১ মালয়েশিয়ায়( ১ মালয়েশিয়ার সুস্বাদু খাবার)। সব মিলিয়ে এই ছয়টি পাতার প্রতিটির পেছনে খরচ হয়েছে ২৯৭,০৭২ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত।
এই বিষয়টি অনলাইনে মালয়েশীয়দের মাঝে অনেক প্রতিবাদের জন্ম দেয়, যাদের অনেকে অনুভব করছে ফেসবুকের একটি পাতা তৈরি করতে লক্ষ টাকা খরচ করা এক অযৌক্তিক বিষয়।
এর ফলে, প্রতিবাদকারীরা ফেসবুকে তাদের নিজস্ব পাতা তৈরি করেছে। এর নাম চুরি চুরি ওয়াঙ্গ মালয়েশিয়া (মালয়েশিয়ার অর্থ চুরি করা) এবং এই পাতাটিকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পাতার থেকে ৩ গুণ বেশি মানুষ পছন্দ করেছে। [ ২১ জুন ২০১১-তে, মালয়েশীয় সময় রাত ১০. ৩০ মিনিট পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের পাতা পছন্দ করেছে ১২৩,৯৭৪ জন এবং প্রতিবাদকারীদের পাতা ৪২, ৫৪১ জন পছন্দ করেছে]।
ফারেদ ইসা ব্লগ করেছেঃ
ফেসবুকে পাতা তৈরি করতে কোন টাকা লাগে না। এ কারণে এখন দিন দিন আরো অনেক অনেক ব্যবসায়ী তাদের পণ্য বা কোম্পানীর কথা প্রচার করার জন্য ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে। এমনকি আপনি যদি উচ্চমাত্রা সম্পন্ন ফ্লাশ ব্যবহার করে থাকেন অথবা অন্য কোন কোড, তারপরে এর জন্য তেমন একটা অর্থ লাগে না। যখন আমি ভাবি যে পর্যটন মন্ত্রণালয় করদাতাদের ১. ৮ মিলিয়ন রিঙ্গিত এমন একটা জায়গায় ছুঁড়ে ফেলেছে যা কিনা বিনে পয়সায় করা যায়, তখন আমার মনে হয় যেন আমি তাদের ছুঁড়ে ফেলি।
ব্লগার গালাম-এর অনুভুতিও একই রকমঃ
আমি বিস্মিত এ কারনে যে, কেন একজনের ফেসবুকের ছয়টি পাতার প্রয়োজন, যেখানে এই প্রচারণার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে একটি বিষয়কে তুলে ধরা, তা হচ্ছে মালয়েশিয়া। ভিন্ন ভিন্ন পাতার ক্ষেত্রে ট্যাব বা চাবি নামক বাটন তৈরি করা তেমন কঠিন কিছু নয়। যদি আপনি ফেসবুক ব্যবহারকারী হন এবং যদি ছয়টি পাতার সবকটি পছন্দ করেন, তাহলে আপনার নিউজ ফিড সব তাজা আপডেটে ভরে যাবে। ? খুবই অস্বাভাবিক, নয় কি? এখন যে প্রশ্নটি সবার ঠোঁটে, সেটি হচ্ছে এই বিষয়টি কি ১. ৮ মিলিয়নের যোগ্য, নাকি নয়? আমি নিশ্চিতভাবে এই বিষয়টি বিশ্বাস করি না।
টুইটারে এক ঝলকে বোঝা যায় যে বেশিরভাগ ব্যবহারকারী এই ঘটনা বর্ণনার এই ক্ষেত্রে 'নির্বোধ', 'অদ্ভুত' এবং 'লজ্জাজনক' শব্দটি ব্যবহার করেছে।
তবে, এমন অনেকে আছেন যারা বিশ্বাস করেন না যে খরচের এই পরিমাণ অনেক বেশি। অনেকে এই তথ্য উদ্ধৃত করেছে যে, পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রচার মাধ্যমে এক বিবৃতিতে বিষয়টি পরিষ্কার করেছে। তারা বলছে, ফেসবুকের পাতা তৈরিতে একটি অর্থ ব্যয় করা হয়নি; এবং যে সব খরচের কথা বলে হচ্ছে, তা কন্টেন ডেভলপমেন্ট, গুগল এবং ফেসবুকে অনলাইন বিজ্ঞাপন এবং কন্টেন ম্যানেজমেন্ট, এই প্রচারণার জিনিসপত্র রক্ষণাবেক্ষণ ও তাজা সংবাদ যোগ করতে (আপডেট করতে), এবং একই সাথে ডাটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং একত্রিত করার জন্য ব্যয় করা হয়েছে।
আইজুদ্দিন দানিয়ান মনে করেন এটা কেবল এক গণ সংযোগ ব্যর্থতাঃ
একজন সাধারণ মানুষের কাছে মনে হতে পারে যে অনেক বড় অংকের টাকা, বিশেষ করে যখন ফেসবুকে বিনে পয়সায় পাতা তৈরি করা যায়। তাহলে এত টাকা গেল কোথায়? এটা কি তাহলে দূর্নীতির আরেক অন্যতম উদাহরণ, পশ্চাৎপদতা, এবং সরকারে অপব্যয়? সম্ভবত তা নয়, যদি আপনারা প্রচার মাধ্যম এবং ব্র্যান্ডিং শিল্পের সাথে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেন, তা হলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এই কাজগুলো বিনে পয়সায় হয় না এবং নিঃসন্দেহে এগুলো সস্তা নয়। পেপসি সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর জন্য ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে । আর হ্যাঁ, মাত্র একটা ফেসবুক পাতার জন্য তারা এই পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে। এবার ঘরের কাছে যারা রয়েছে তাদের দিকে নজর ফেরানো যাক, এয়ার এশিয়া নামক বিমান কোম্পানী তাদের প্রায় সকল বাজেট অনলাইন মার্কেটিং-এ খরচ করে। হ্যাঁ, যার মধ্যে তাদের ফেসবুকের পাতাও অর্ন্তভুক্ত, সহজে বলা যায় এর পেছনে তারা মিলিয়ন পরিমাণ রিঙ্গিত খরচ করেছে। তাহলে এখানে সমস্যা কোথায়? এক অজ্ঞ এবং সহজে বিভ্রান্তির শিকার ব্যক্তি মনে করতে পারে যে (ইন্টারনেট হচ্ছে ফ্রি? অনেকটা তাই শোনায়)। এবং মন্ত্রণালয় এতটা বুদ্ধিমান নয় যে বিষয়টিকে পরিষ্কার করবে। তার বদলে তার অস্পষ্ট দুর্বল সংজ্ঞা, যেমন " অসীম সৃষ্টিশীলতার মত শব্দ ব্যবহার করেছে"।
জনপ্রিয় ব্লগার আহিরুদ্দিন আটানও বিশ্বাস করে যে মার্কেটিং-এর জন্য খরচ করা এই অর্থ পরিমাণে অনেক বিশাল নয়, এবং অন্য অনেক দেশ তাদের পর্যটনের পেছনে যে অর্থ বরাদ্দ করেছে, সে তার উদাহরণ তুলে ধরেছেঃ
১. এখানে ক্লিক করলে জানতে পারবেন অস্ট্রেলীয় সরকার তার পর্যটনের জন্য সামাজিক প্রচার মাধ্যমে যে বিপুল অর্থ ব্যবহার করছে সেই বিষয়টি। অস্ট্রেলিয়া পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য সামাজিক প্রচার মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর জন্য আগামী তিন বছরে ১৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার বাজেট বরাদ্দ করেছে। বলা যায় তা বিশাল পরিমাণ রিঙ্গিতের সমান এবং তা আমাদের প্রচুর খরুচে মন্ত্রীকে উত্তেজিত করে তুলবে। ইয়েন ইয়েন। কিন্তু ওয়াইবি, দয়া করে বেশি উত্তেজিত হবেন না, হ্যাঁ।
2. ফিলিপাইন হচ্ছে আমাদের অন্যতম এক দরিদ্র প্রতিবেশি, যারা অনেক মালয়েশীয় পর্যটক, বিশেষ করে পুরুষদের আকৃষ্ট করে থাকে, তারাও তাদের পর্যটনকে তুলে ধরার জন্য ১০০মিলিয়ন পেসো বা ৭ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত খরচ করেছে। যাতে মালয়েশীয় পুরুষরা জাকার্তা, মেদান বা ব্যাংকক না গিয়ে ফিলিপাইনে যায়।
কুয়াহ সেং সান মনে করে যে কারি কারি ওয়াং মালয়েশিয়া নামক পাতাটিকে এত পছন্দ করার বিষয়টি, এই ঘটনায় যে দেশের সকলের অনুমতি নেই তা প্রতিফলিত করে নাঃ
ব্যক্তিগতভাবে, আমি জানি না কি ভাবে এই সংখ্যাকে ভাবে প্রকাশ করা যায়, সেখানে এই সংখ্যা নির্দেশ করছে যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকে বেশি লোক এই ঘটনায় অসন্তুষ্ট, সরকারি অর্থের বোকার মত খরচ করায় এবং তার অপব্যবহারে। কিন্তু আমার সন্দেহ যে, অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী পছন্দ (লাইক) নামক বাটন ক্লিক করেছে কেবল সরকারে জোরালো ভাবে আঘাত করার জন্য। আসলে কি তারা এই বিষয়ে সচেতন, অথবা তারা কেবল 'পছন্দ করি' নামক বাটনটি চাপছে, কারণ তার বন্ধুরা ফেসবুকে এই কাজটি করছে ?
| web |
54e2c60fd582d2cd09ab2a921b82ae636cb39780 | ত্রাণের ত্রিপল চুরির অভিযোগে এফআইআর দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা অভিযোগ তুললেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
২০ হাজার কোটি ক্ষতি হয়েছে, প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হিসেব মেলাতে রাজ্য়ে আসছে কেন্দ্রীয় দল!
কেশপুরের মহিষদা গ্রামে বিজেপি কর্মীদের বয়কটের ডাক দিয়ে এই লিফলেট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
রবিবার সাতসকালে নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় নৃশংস খুনের ঘটনা!
মাত্র চার দিন আগেই মুখ্যসচিব পদে আলাপনবাবুর মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়েছিল।
অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে ফেরানো হোক, দাবি শিবসেনার!
বিক্ষোভের খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
রাজ্যপালের 'নারদ খেল', পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রাথমিক পদক্ষেপ?
সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক ভাবে রাজ্য সরকারকে কি 'বিপাকে' ফেলার কৌশল নেওয়া হচ্ছে?
| web |
550d5c750fbf4fbc15b08f5c1610dd7050102d9c | রাজশাহী অফিস : রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মালদ্বীপের নাগরিক ও মডেল রাউধা আথিফের লাশ দ্বিতীয় দফায় পুনঃময়না তদন্তের জন্য আগামীকাল সোমবার কবর থেকে উত্তোলন করা হবে। এজন্য নতুন করে একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আসমাউল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার নগরীর হেতেম খাঁ কবরস্থান থেকে রাউধার লাশ উত্তোলন করা হবে। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রক্তিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে তোলা হবে লাশ। এছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে লাশের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হবে। নতুন মেডিকেল বোর্ড গঠন সম্পর্কে আসমাউল হক জানান, সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের ওই বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন, সিরাজগঞ্জর নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব হাফিজ ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান। এরই মধ্যে বোর্ডের সদস্যদের চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। এর আগে গত ৩১ মার্চ রামেক হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক ও বারিন্দ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মনসুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করে। রামেক হাসপাতাল মর্গে ওই ময়না তদন্ত করা হয়। রাউধা 'গলায় ফাঁস দিয়ে আতœহত্যা করেছেন' উল্লেখ করে পরদিন বোর্ড প্রতিদবেদন দেয়। রাউধার স্বজনসহ মালদ্বীপের প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে ১ এপ্রিল নগরীর হেঁতেম খা গোরস্থানে দাফন করা হয় তার লাশ। গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে নিজের কক্ষে রাউধা আথিফের (২১) লাশ পাওয়া যায়। এরপর ৩১ মার্চ তার পরিবারের সম্মতিতে ময়নাতদন্ত শেষে নগরীর হেতেম খাঁ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এমবিবিএস ১৩ তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাউধা আথিফ। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি ছাত্রী হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ২০৯ নং কক্ষে উঠেছিলেন তিনি।
| web |
044abd720e63a24824b05408d09992683d5147c8 | কাঁচা আম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী!
দিক্সা দাস,১৪জুনঃ কাঁচা আম শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি খেলে স্বাস্থ্যের অনেক উপকার পাওয়া যায়। কাঁচা আমে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি খেলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। কাঁচা আম ভিটামিন সি-এর একটি চমৎকার উৎস। এটি খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়।
পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কাঁচা আম খেতে পারেন। এটি খেলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা দূর হয়। কাঁচা আম একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার। এটি পাচক রসের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে এবং গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, অ্যাসিডিটি, সকালের অসুস্থতা এবং বমি বমি ভাবের চিকিৎসা করে পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
কাঁচা আম খেলে হার্ট সুস্থ থাকে।
কাঁচা আমে রয়েছে বি ভিটামিন, নিয়াসিন এবং ফাইবার, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য, তারা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাঁচা আম খেতে পারেন। কাঁচা আম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমাদের শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। এইভাবে, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন এ, যা চোখ ও চুলের জন্যও উপকারী।
| web |
e06d2fcd41fdbba1843710d9044eae1e9a5db7a7 | গরিবের চিকিৎসা মানেই বিমা?
৯/১১ হামলা সংক্রান্ত গোপন নথি চুরি!
বিয়ের বিমা করিয়েছেন দীপবীর, বিষয়টা ঠিক কী, জানেন?
বাগড়িঃ বিমা নেই সিংহভাগ দোকানেরই!
বিমা সংস্থাগুলির কাছে পড়ে রয়েছে দাবিহীন ১৫,১৬৭ কোটি টাকা!
সঞ্চয় তো করছেন, কিন্তু বিমা?
আপনি কি অযথাই গাড়ির ইনসিওরেন্সে অতিরিক্ত ব্যয় করছেন?
| web |
247be768654b2db9af6228c266c149a6dfee7033 | বাংলাদেশে গরু পাচার বন্ধ করতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে নির্দেশ দিয়েছেন। ভারতের সীমান্তে গরু চোরাচালানদের বিরুদ্ধে কঠোর নজারদারি বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া গরু পাচার সম্পূর্ণ বন্ধ করা হলে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম আরও ৭০ শতাংশ বেড়ে যাবে বলে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। এই চোরাচালান বন্ধ করে বাংলাদেশের মানুষের গরু খাওয়াও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে চেয়েছেন তিনি।
গত ৩রা এপ্রিল ইকোনমিক টাইমস এর খবরে বলা হয়েছে, ভারতে প্রতিবছর ১ কোটি ২৫ লাখ গরু উৎপাদিত হয়। তার মধ্যে ২৫ লাখ গরু পাচার হয় বাংলাদেশে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু আসা বন্ধ হলে দেশটিকে বছরে ৩১ হাজার কোটি রুপি বাড়তি খরচ মেটাতে হবে।
বাঙালি বড়ই ভোজন রসিক। এ ভোজন রসিকতা নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে। সেসব যে কেবল গল্প তা নয়। অনেক ক্ষেত্রে শতভাগ সত্যও বটে। রংপুর এলাকায় একটি গল্প প্রচলিত রয়েছে, 'ভাটিয়ারা (যারা চরাঞ্চলের মানুষ) কাঁঠালের সময়ে গরু বিক্রি করে হলেও কাঁঠাল খায়। ' কারণ হিসেবে বলা হয়, তারা নাকি বিশ্বাস করে, টাকা হলে যেকোনো সময়ে গরু পাওয়া যাবে তবে টাকা থাকলেও সব সময় কাঁঠাল পাওয়া যাবে না।
আমরা অতিথিপরায়ণ জাতি। অতিথিপরায়ণতায় আমাদের অনেক সুনাম রয়েছে। বাড়িতে অতিথি আসলে আমাদের আয়োজনের শেষ থাকে না। অতিথিদের নিজেদের সাধ্য মতো আপ্যায়ণের চেষ্টা করা হয়। ছোটবেলায় অতিথি আসলে বেশ খুশি হতাম। কেননা, বাড়িতে অতিথি আসলে ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। অতিথির সুবাদে ভালো খাবারের ব্যবস্থা হওয়ায় সর্বদা অতিথি আসার কামনাও করতাম।
আমাদের সমাজব্যবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, বাড়িতে অতিথি আসলে তাকে মাংস দিয়ে ভাত না খাওয়ালে অতিথি বদনাম করতে পারেন বলে মনে করা হয়। তাই বদনামের ভয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি তাকে মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াতে। মাংস খাওয়ানো আমাদের অতিথিপরায়ণতার প্রাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজেরা খেতে আর অতিথিদের খাওয়াতে দেশের মাংসের বাজারে আগুন লেগে গেছে।
দেহকে সুস্থ, সবল কিংবা কর্মক্ষম রাখতে খাদ্য গ্রহণ আবশ্যক। আমরা সচরাচর যে সকল খাদ্য উপাদান গ্রহণ করি তাদের মধ্যে মোট ছয় ধরনের উপাদান বিদ্যমান। আমিষ সেসব উপাদানের মধ্যে একটি গুরত্বপূর্ণ উপাদান। প্রাণি ও উদ্ভিদ উভয় জগৎ থেকেই প্রচুর পরিমাণে আমিষ জাতীয় খাদ্য পাওয়া যায়।
প্রাণিজ আমিষ হলো- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, পনির ইত্যাদি। আর উদ্ভিজ্জ আমিষ হলো-ডাল, বাদাম, মটর, ছোলা। প্রাণিজ আমিষের দাম বেশি হওয়ায় তা সবার পক্ষে সব সময় খাওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তাই বলে কি আমিষের চাহিদা পূরণ হবে না? আমরা অল্প দামে আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারি। আর সেটি করা সম্ভব উদ্ভিজ্জ আমিষ গ্রহণের মাধ্যমে।
ভারত আমাদের দেশে গরু আসতে না দিলেও আমাদের ক্ষতি নেই বরং লাভ। আমাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা লাগবে না আমিষের চাহিদা মেটাতে। এটি আমরা অন্য খাতে ব্যয় করতে সক্ষম হবো। আমাদের সামান্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে পারলে দেশের বিপুল পরিমাণ ব্যয় রোধ করা সম্ভব হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং হয়তো ভাবছেন, এদেশের মানুষ দামের ভয়ে মাংস খাওয়াই ছেড়ে দিবেন। আসলে সে রকম কি হতে পারে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে? যারা কাঁঠাল খেয়ে গরু বিক্রি করতে জানে তারা প্রয়োজনে বাস্তুভিটা বা ফসলি জমি বিক্রি করে যে মাংস খাবে না তা জোর গলায় বলা যায় না।
বাঙালি খুবই পরিশ্রমী জাতি। তাদের বোঝাতে হবে গরু উৎপাদন বেশ লাভজনক। তাহলে তারা এতে মনোযোগ দিবেন। আর তারা একবার মনোযোগ দিলে গরুর উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যেতে বাধ্য হবে। আমাদের দেশে তখন গরু বিপ্লব দেখা দিবে। আর গরু বিপ্লব দেখা দিলে বাঁচানো যাবে ৩১ হাজার কোটি টাকা আর বেড়ে যাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমাণ।
গরুর মাংসের দাম এখন আকাশ ছোঁয়ার মতো অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এটি খাওয়ার সাধ্য আজ নীচতলার মানুষের নেই। গরুর মাংস এখন উপরতলার মানুষের খাবারে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে এত দাম দিয়ে এটি কিনে খাওয়া কষ্টকর। এ মাংসের দামের প্রভাব পড়েছে অন্য মাংসের দাম কিংবা মাংসজাত দ্রব্যের উপরেও। তাই অনেকে মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
মাংস খাওয়া ছেড়ে দিলেই তো সমাধান হয়ে যাবে না। সমাধানের জন্য ভাবনা প্রয়োজন। আর ভাবনা দিয়েই বা কি হবে? ভাবনা অনুযায়ী কাজ ছাড়া প্রকৃত সমাধান আশা করা যায় না। সমাধান অতি সহজ। তবে সমাধানের জন্য আমাদের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে গরু উৎপাদনে নেমে পড়লে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
প্রতিবছর দেশের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার আমদানি করতে হয়। এতে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। দেশে গরুর উৎপাদন বেড়ে গেলে আমাদের আর সার আমাদানি করতে হবে না আব ব্যয় হবে না মুদ্রাও। তাছাড়া জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহারে তৎক্ষণাৎ ফসলের উৎপাদন বেড়ে গেলেও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে। জমি ধীরে ধীরে তার উর্বরতা শক্তি হারায়। এক সময় ফসল উৎপাদনের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে পরিবেশের বেশ বিপর্যয় দেখা দেয়।
আমাদের দেশে যখন থেকে রাসায়নিক সারের ব্যবহার বেড়েছে তখন থেকেই মাছের উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দেশীয় মাছ আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। মাছ বাদেও কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ যে ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ক্ষতির হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করে সেও হারিয়ে যেতে বসেছে। বাসায়নিক সার ব্যবহৃত ফসল খেয়ে মানুষ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মানুষসহ অন্যান্য পশুপাখির মধ্যে বন্ধ্যাত্বও বেড়ে গেছে। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে গোবরের মতো উপকারী জৈব সার ব্যবহার করলে এসব সমস্যা অনায়াসেই এড়ানো সম্ভব। পরিবেশ রক্ষা ও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে গোবরের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না।
গরুর চামড়া মূল্যবান সম্পদ। দেশে গরুর উৎপাদন বাড়লে চামড়ার রপ্তানিও বেড়ে যাবে। ফলে বাংদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন নিঃসন্দেহে কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। আর বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ বাড়লে সরকারের পক্ষে দেশের উন্নয়নমূলক কাজ করাও সহজ হবে।
আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে বিদ্যুতের সমস্যা প্রকট। আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি লেগেই থাকে। সরকারকে বিদ্যুৎ খাতে বৃহৎ একটা অংশ ব্যয় করতে হয়। সরকারের এত প্রচেষ্টার সত্ত্বেও এখনও দেশের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয় নি। দেশের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় এ সংযোগ দেওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তাছাড়া আমাদের দেশে গ্যাসের মজুতও সীমিত। ফলে এদেশে গ্যাস সংকটও প্রকট।
আমাদের গরুর উৎপাদন বাড়ানো গেলে এসব সমস্যার সমাধান অনেক সহজ হবে। গরুর গোবর ব্যবহার করে বায়োগ্যাস প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে। ফলে দেশের বিদ্যুতের জাতীয় গ্রেডে চাপ কম কমবে এবং গ্যাসের জন্য হাহাকার করতে হবে না। বায়োগ্যাস আমাদের দেশের প্রাণ গ্রামগুলোয় আধুনিকায় সৃষ্টিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। দেশের বিদ্যমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর যে বিপুল পরিমাণ গাছপালা ধ্বংস হয় তাও রক্ষা করা সম্ভব হবে।
বেকারত্বের বেড়াজালে বন্দী দেশের বৃহৎ একটা অংশ। ফলে হতাশায় নিমজ্জিত কর্মঠ এ অংশকে আলোর পথে আনতে সহায়ক হতে পারে গরুর উৎপাদন। গরুর খামারে কাজ করতে প্রয়োজন হয় অনেক লোকের। তাছাড়া গরুর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন পড়ে ডাক্তারের। আমাদের দেশে পশু চিকিৎসকের সংখ্যা নগন্য। দেশের বেকারদের মধ্যে যারা শিক্ষিত তাদের পশু চিকিৎসার প্রশিক্ষণ প্রদান করলে তারা দেশের পশু চিকিৎসায় অবদান রাখতে পারবে আর সেই সাথে দেশের বেকারত্বের হারও কমে যাবে।
আমরা গরীব দেশের নাগরিক। এদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভোগে। এ পুষ্টিহীনতা দূর করতে সহায়ক হতে পারে সুষম খাদ্য হিসেবে পরিচিত দুধ। দেশে গরুর উৎপাদন বেড়ে গেলে দুগ্ধজাত শিল্পেরও উন্নয়ন সাধিত হবে। দেশের দুগ্ধজাত শিল্পের বিকাশ হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে গুঁড়া দুধ বিদেশে রপ্তানি করাও সম্ভব হবে।
গরুর মাংসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে উপসাগরীয় দেশসমূহে। ভারত এসব দেশে মাংস রপ্তানি করে আয় করে থাকে। গরুর উৎপাদন বাড়িয়ে আমাদের চাহিদা পূরণ করার পর আমরাও সেসব দেশে মাংস রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি।
রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে আমাদের দেশের খাল-বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড় এ মাছ উৎপাদন কমে গেছে বহুল পরিমাণে। তবে খামার পর্যায়ে মাছ উৎপাদনে আমরা আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছি। এসব মৎস খামারে মাছের খাদ্য হিসেবে গরুর গোবর ব্যবহৃত হয়। গরুর উৎপাদন বাড়লে খামার পর্যায়ে মাছের খাদ্যের উপাদনও বেড়ে যাবে। ফলে মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে। তিনি সত্যিকার অর্থে আমাদের প্রকৃত বন্ধুর মতো কাজ করেছেন। আমাদের মধ্যে চেতনা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমাদের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। এতদিন ভারতের গরুর মাংস খেয়ে আমরা নিজেদের গরু উৎপাদনের কথা ভুলতে বসেছিলাম। সময় এসেছে গরু উৎপাদনের, সময় এসেছে দেশের অর্থনীতির গতি পরিবর্তনের। ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর পদক্ষেপ যেন আমাদের অর্থনীতির গতি পরিবর্তনে আশার আলো দেখাচ্ছে। তার কঠোর পদক্ষেপ যেন আমাদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনার হাতছানি দিচ্ছে। সময় এসেছে সেই হাতছানি বা আশাকে বাস্তবে রূপায়নের।
ভাষার জন্য যে জাতি প্রাণ দিয়েছে তাদের কাছে গরুর মাংস ত্যাগ কোনো বড় বিষয় হতে পারে না। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজনে আমাদের কয়েক বছর গরুর মাংস খাওয়া কমে দেয়া যায় কিংবা বিকল্প হিসেবে মুরগী বা অন্য কোন পশুপাখির উৎপাদন বৃদ্ধি করে গরুর মাংসের অভাবটা পূরণ করা সম্ভব। আমরা সেদিনের স্বপ্ন দেখি যেদিন আমরা নিজের দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত গরুর মাংস, চামড়া কিংবা গুঁড়া দুগ্ধ রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো। এ কাজের সফলতা দেখে সারা বিশ্বের মানুষ আমাদের বাহবা দিবে। আমরা পারবো কি সেই লক্ষ্যে পোঁছাতে?
| web |
b7ed31c0a7487f2839435a2c62a0ba4c | ইতালি পর্যটন তার ইতালীয় প্যাভিলিয়নে প্রতিনিধিত্ব করে কোস্টা ক্রুজগুলির উপরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক্সপো ২০২০ দুবাইয়ের দিকে যাত্রা করবে।
এক্সপো দুবাই 2021 এ ইতালির অংশগ্রহণের জন্য ইতালীয় সংস্থা এবং কমিশনারের মধ্যে চুক্তিটি "গ্রিন" ফ্ল্যাশিপ কোস্টা স্মারাল্ডার উপরে সিভিটাভেচিয়ায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
চুক্তিটি কোস্টা ক্রুজের মহাব্যবস্থাপক মারিও জানেটি এবং ইতালিতে ইউএই রাষ্ট্রদূত, এইচ ওমর ওবায়দ আলশামসির উপস্থিতিতে কমিশনার পাওলো গ্লিসেন্টের দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
"এক্সপো দুবাইতে ইতালি প্যাভিলিয়নে উপস্থিত হওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের কারণ, পাশাপাশি পর্যটন এবং দেশব্যবস্থার পুনঃসূচনা করার আরও একটি স্পষ্ট ও দৃ concrete় লক্ষণ রয়েছে," জানেত্তি বলেছিলেন। "আমাদের জাহাজগুলি ইতালির সৌন্দর্য বিশ্বের কাছে নিয়ে আসে এবং আমরা এতে সন্তুষ্ট দুবাইতে এই গল্পটি চালিয়ে যান, পুনর্জন্মের এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষে, আরও অনেক ব্র্যান্ডের ইতালির সেরা নায়কদের সাথে।
"এক্সপো ভবিষ্যতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন টেকসই ও অন্তর্ভুক্ত পর্যটন বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সভা এবং আলোচনার জায়গা হবে, যার মধ্যে আমাদের সংস্থাটি পুরো খাতের জন্য একটি নেতা এবং উদাহরণ হতে পারে, অর্থনীতির জন্য মূল্য তৈরি করতে সহায়তা করবে এবং উদ্ভাবনের নামে আমাদের গন্তব্যগুলির জন্য, সংস্কৃতি ও পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধা।
এর অতিথিদের অভিজ্ঞতা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া এক্সপো এবং ইতালীয় প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করুন, ডিসেম্বর 17, 2021 থেকে মার্চ 2022 এর মাঝামাঝি পর্যন্ত, সংস্থাটি মার্গেরার ফিনকান্টেরেই নির্মিত আরব উপসাগরে ফ্লোরেনটাইন রেনেসাঁকে উত্সর্গীকৃত নতুন জাহাজ কোস্টা ফায়ারনেজকে অবস্থান করবে।
| web |
5ed9be56af96932c5c568c0d76f8982f | বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্যে উন্নয়ন (হার্ডকভার)
মেধা ও মননে, চিন্তা ও চেতনায়, দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ প্রতিষ্টিত। রাজনীতির প্রচণ্ডতম । স্রোতধারায় অবস্থান নিয়ে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্টীয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে ভীষণভাবে জড়িয়ে থাকা সত্বেও তাঁর নিজস্ব চেতনায় যেন সর্বদা দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি ও জনগণ উদ্ভাসিত। জনকল্যাণেই তিনি পরীক্ষিত নিবেদিত এক আদর্শময় সংগ্রামী সৈনিক। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে তিনি দেশ ও জনগণ থেকে দূরে তাে নয়ই বরং তাদের মাঝেই অবস্থান নিয়ে আরও । গভীরভাবে তাদের দেখেছেন। বর্তমান গ্রন্থে তাঁর এই গভীরভাবে দেখার অনুভূতির কথাই স্পষ্টভাবে উচ্চারিত হয়েছে। তিনি প্রধানতঃ দারিদ্রের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন নিরক্ষরতা। নিরক্ষরতার অভিশাপে কলুষিত সমাজ ব্যবস্থা, যুব সমাজের অবক্ষয় ইত্যাদি বিষয় তিনি যেমন তীক্ষ্মভাবে তুলেছেন, তেমনি নিজস্ব চিন্তা ও চেতনার কথাও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর সাবলিল ভঙ্গির লেখা যে কোনাে পাঠককেই আকৃষ্ট করতে সমর্থ হবে।
| web |
8afa1d734eb1f7e3ae4093e702b8a1d80c13f80d | রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়। আর সেই ইঙ্গিতের পর এদিন পঞ্চায়েতে কারা শাসক দলের টিকিট পাচ্ছেন, তাও চূড়ান্ত করে ফেললেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, 'যারা ভালোবেসে দল করছেন, সেইসব পুরনো কর্মীরাই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী তালিকায় অগ্রাধিকার পাবেন। '
হাওড়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সম্মেলন থেকে সুব্রত বক্সি দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, 'দল সবার আগে গুরুত্ব দেবে তাঁদেরই, যাঁরা পদের জন্য দল করে না, ভালোবেসে দল করে। ' দলের প্রতি আন্তরিকতাই হবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার চাবিকাঠি। তাঁর কথায়, 'কিছু নেতা-কর্মী আছেন, যাঁরা শুধু পদের লোভে পার্টি করে। কিন্তু আমরা তাঁদেরকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই। '
তিনি হাওড়ার সম্মেলনে স্পষ্ট করে দেন, 'গোষ্ঠীকোন্দল বরদাস্ত করা হবে না। তৃণমূল চায় না ভোটের টিকিট নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দল হোক। তার কারণ, এবারের ভোট শুধু গ্রামের যুদ্ধ নয়, এবারের ভোট ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল। বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে। তার আগে পঞ্চায়েতে হবে লোকসভার মহড়া। '
তাঁর কথায়, 'সেই লক্ষ্য নিয়েই এবার নামতে হবে পঞ্চায়েত ভোটে। পঞ্চায়েত ভোটে জেতার পাশাপাশি এই ভোট থেকেই বিজেপিকে বিদায় বার্তা পাঠাতে হবে। তাই দলাদলি বন্ধ করে একযোগে ভোট-যুদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দেন তিনি। আগে থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয় টিকিট নিয়ে লড়াই করে বিরোধী দলে যোগ দিয়ে বা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে ভোট কাটাকাটি করে বিরোধীদের সুযোগ করে দেবেন না। '
সুব্রতবাবু বলেন, 'রাজ্যের মানুষের পূর্ণ আস্থা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি। সেই বিশ্বাসের মূল্য দিতে হবে নিচুতলার নেতা-কর্মীদের। বিরোধীদের হাত শক্ত করে রাজ্যের মানুষকে অপমান করবেন না। ' তিনি এদিন সবাইকে আহ্বান জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার।
| web |
f2e972498f33def99bcd987dd1bbc9f013f72965 | তাড়াশে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আদিবাসী এক নারীর তিন বিঘা জমির ধান বিষ প্রয়োগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তার প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) ভুক্তভোগী ওই আদিবাসী নারী তাড়াশ থানায় জিডিসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ক্ষতিপূরণ চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর আগে গত রবিবার উপজেলার তালম ইউনিয়নের গুল্টা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার গুল্টা গ্রামের আদিবাসী মহিলা ছবিরন রানী উরাও পৈত্রিক সূত্রে ৩বিঘা জমি ভোগ দখল করে আসছে। উক্ত জমি জবর দখল নেয়ার জন্য রানীদিঘী গ্রামের প্রশান্ত,পরিতোষ, তালম আদার পাড়া গ্রামের চাঁন মিয়া, লাউশোন গ্রামের আবুল কালাম অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে। ছবিরন রানী উরাও উক্ত জমিতে এবার আব্দুর গুটি (৩৬) ধান রোপণ করেছে। ধান প্রায় আধা পাকা। গত সোমবার ছবিরন ও তার স্বামী জমির ধান দেখতে গিয়ে তার জমির চারিদিকে বিবাদীগণ ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাদের মনে সন্দেহ হয়। পরদিন তারা দেখে যে তার জমির ধান পুড়ে মরে যাচ্ছে। এরপর তারা মরা ধানের শিষ নিয়ে তাড়াশ থানায় জিডি করে।
তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ছবিরন রানী উরাওর জমির ধান পুড়িয়ে দেয়ার একটি জিডি করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এস আই হারিছকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে উক্ত জমি পরিদর্শন করেছেন।
তাড়াশ থানার এস আই হারিছুর রহমান জানান, ছবিরন রানী উরাও একটি জিডি করেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য আদালতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, তৃতীয় তলা, ৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, (নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ), ঢাকা-১২১৭ ।
| web |
b97d6144de99421ee63eb895d7cc0a5542605a11 | মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাড়িতে জগন্নাথ (Jagannath) পুজোর আয়োজন করা হল শুক্রবার। পুজোর যজ্ঞে সংকল্প করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর (CM) বাড়িতে বছরে দুইবার করে এই পুজো করা হয়। উপস্থিত রয়েছেন পুরীর (Puri) জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিত। নির্বাচনের (Election) দিন ঘোষণার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এই পুজো আয়োজন করার মধ্যে রাজনৈতিক বিষয় যুক্ত থাকতে পারে বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। এবার নির্বাচনে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC)। এই নিয়ে বিরোধী দলগুলির দিকে বারবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন ঘাসফুলের (Trinamool) নেতারা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ভোটযুদ্ধে জয়লাভের আশায় ভগবানের স্মরণ নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
| web |
9d923012ec4e1c5715152578cd7bb2c4c6dc2289 | গাজীপুরে একটি চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় জামা-শাড়ি-কসমেটিক-অর্নামেন্টসহ বিভিন্ন পণ্য পাচারকালে ৮৫লাখ ৭৯হাজার ৭শ' টাকার পণ্য জব্দ এবং এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তার মোবারক আলী (২৯), ঠাকুরগাঁও সদর থানার কালীবাড়ী এলাকার ইমদাদুল হকের ছেলে। তিনি ঢাকার উত্তরার আজমপুরে বসবাস করেন।
রোববার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ (দক্ষিণ)-এর উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান ওই তথ্য জানিয়েছেন। এসময়সহকারি উপ-কমিশনার মো. খোরশেদ আলম, সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এক শ্রেণির পাচারকারী কর ফাঁকি দিয়ে বছরের বিভিন্ন সময় বিশেষ করে ঈদ-পুজাকে সামনে রেখে ভারত থেকে ট্রেনযোগে কসমেটিক, জামা, ওড়না ইমিস্টেশনের গহনা, ক্যাবল, লোশনসহ বিভিন্ন পণ্য রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় পাচার করে থাকে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টারদিকে খবর পান গাজীপুর সদর থানাধীন দেশী পাড়া এলাকায় ভাওয়াল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সংলগ্ন এলাকায় ঢাকাগামী একটি চলন্ত ট্রেন থেকে ব্যাগভর্তি বিভিন্ন পণ্য রেললাইনের পাশে ফেলে দিচ্ছে পাচারকারীরা। যা পরে তাদের সহযোগিরা অটোরিকশাযোগে নিয়ে যাচ্ছিল। এখবর পেয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গাজীপুর মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় পুলিশ এক যুবককে মালামালসহ গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হলেও অপর কয়েকজন পালিয়ে গেছে।
উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে ৭৫০ পিস শার্ট, ৩৮৮ পিস থ্রিপিছ, ৩৮ পিস শাড়ি,৪৪ পিস ওড়না, ৬০৫৬ জোড়া বিভিন্ন কালার ও সাইজের চুড়ি, ২৬৩৭ পিছ বিভিন্ন সাইজের নেকলেস, টিকলি ৪৭৩ পিস, পায়ের নুপুর ৩০ পিছ , ৮০ প্যাকেট নাকফুল, যাহার প্রতিটি প্যাকেটে ৫০ টি করিয়া মোট ৪০০০ পিস, বিভিন্ন কালারের আংটি-৭৬১ পিস, ৪টি সহ আরো বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য- ৮৫লাখ ৭৯ হাজার ৭০০টাকা।
রোববার বিকেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং গাজীপুর সদর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে।
| web |
8888750cf510600fb960a8db8c9c4710868224b434b7110a958626ddf9df2e48 | বলছি- আপনাদের মধ্যে কতজন এই দ্য স্যাটানিক ভার্সেসের এই কথাগুলো জানতেন? ধরুন দুইজন বা তিনজন। এখানে অনেক জ্ঞানী লোক আছে, সবাইতো এটা জানে না।
আমি জানি মার্গারেট থ্যাচারকে লোকজন বলে 'আয়রন লেডি'। তার আবেগ কম এবং তিনি খুবই শক্ত মনের মানুষ। ঠিক আছে মানলাম; তাকে ম্যাগি বলা হলে বা স্ত্রী কুকুর বলা হলে তিনি কিছু মনে করবেন না। কিন্তু চিন্তা করেন, যদি তার ছেলের কাছে যান অর্থাৎ মার্কের কাছে এবং তার গিয়ে বলেন যে মার্ক ছালমান রুশদী বলেছেন আপনি একজন ..... তা পাচ অক্ষরের শব্দ; আমি শিওর সে অপমানিত হবে। সে তখন বাকস্বাধীনতা মানবে না।
ব্রিটিশরা হলো খুবই সংবেদনশীল। তবে একেকজনের সংবেদনশীলতা একেকরকম হয়ে থাকে। কিছু মানুষ হয় তো বিশেষ কিছু শব্দর বেলায় সেনসেটিভ। আপনারা রাস্তায় গেলে দেখবেন রাস্তা ঘাটে মানুষ একেকজনকে গালাগালি করছে। সালমান রুশদী তার বইয়ে এই শব্দ গুলোই লিখেছে। এছাড়া তার বইতে হিন্দি শব্দ আছে। রাস্তাঘাটে যে সব শব্দ ব্যবহার করা হয় তা হয়তো কেউ কেউ তাকে তেমন কিছু মনে করে না। কারণ তাদের কাছে সেটা সংবেদনশীল কোনো বিষয় নয় বরং তা তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়। তবে তাকে যদি সাধারন ভাষায় কিছু বলেন যেটা হয়তো কম অপমানজনক; যেমন বললেন, তার মা একজন পতিতা। তাহলে রাস্তার পাশের সে লোকটার কাছেও এটা খারাপ লাগবে।
প্রত্যেক মানুষই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল। ব্রিটিশ সরকার বাকস্বাধীনতার কথা বললেও সে বিশ্বাস করে না। কারণ, আহমদ দিদাত বলেন, আমি তাদের বলেছিলাম আমাকে বিবিসিতে মাত্র পাঁচমিনিট সময় দেন, আমি শুধু সালমান রুশদীর কয়েকটা উদ্ধৃতি দেব আর এই জন্য আপনাদের ৫০ হাজার পাউন্ড দেব; তারা রাজি হয়নি। এবিসি কর্পোরেট কর্পোরেশনও রাজি হয়নি। দিদাত বলেছেন ৫০ হাজার ডলার দেব। আপনারাতো বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন; আমি সালমান রুশদীর কয়টা উদ্ধৃতি দেব আর তার বদলে ৫০ হাজার ডলার; তারা রাজি হয়নি। এই হলো সেখানের বাকস্বাধীনতার অবস্থা। আর বিচারের কথা যদি বলেন এখানেও তসলিমা নাসরিনের মতোই হবে ।
ফাদার প্যারেইরা : আমি এখানে কিছু কথা বলবো। এই কথাটা আগেও বলেছি যে, আয়াতুল্লাহ খামেনির ফতওয়াটা ক্ষমার অযোগ্য। পরে যে ফতওয়াটা দেওয়া হয়েছে সেটা আগের ফতওয়াকে বাতিল করে দিয়েছে; সেটা পাঁচ বছর পরে। এটা হয়তো পাঁচ সপ্তাহ পরে বলা উচিত ছিলো; কিন্তু সেটা বলা হয়নি। কারণ হলো পলিটিকস । এই কথা আমি বার বার বলছি; এই সব ধর্মীয় মৌলবাদের
পিছনে পলিটিসিয়ানদের হাত আছে। দ্বিতীয়ত আমার মনে হয় সালমান রুশদী এখানে অনেক খানি দায়ী। সে ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে উদ্ধত আচরণ করেছে। এখন দায়িত্ব পালন না করে যদি আপনি বাক স্বাধীনতা চান, তাহলে ফলাফল গুলোর মুখোমুখি আপনাকে দাড়াতে হবে। এই জন্য শুধুমাত্র অধিকার পেলেই চলবে না আপনাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আমি আপনাকে সবার সামনে অপমান করলাম তাহলে ফলাফলের জন্য আমাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন সালমান রুশদী যে সরকারকে ছোট করেছে সেই তাকে রক্ষা করছে। আমি বলবো এই কাজটা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। এখানে আপনারা দেখবেন যে, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশে তারা মনে করে যে কমিউনিজমের পতনের পর এখন তাদের এক নম্বর শত্রু হলো ইসলাম ধর্ম আর চরমপন্থি ইসলামিক মৌলবাদিরা।
কমিউনিজম এখন আর তাদের জন্য কোনো মিলিটারী হুমকী নয়; এখন হুমকী হলো চরমপন্থি ইসলাম। আপনারা তারপর এমনটা দেখবেন, ইরান। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। তাহলে আপনাদের বুঝতে হবে এই ধরণের মৌলবাদ আসলে সমাজের একটা বিশেষ গোষ্ঠীকে শক্তিশালী করে তোলে, যেটা বর্তমানের পশ্চিমা সেক্যুলার সমাজ পছন্দ করে না। এছাড়াও পশ্চিম এশিয়াসহ পৃথিবীতে এখন অনেক দেশ আছে যারা পশ্চিমাদের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে চাচ্ছে; তারাও উপনেবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হতে চাচ্ছে। এখন তারা স্বাধীনভাবে মাথা তুলে দাড়াতে চায়; কিন্তু তারা সেটা পারছেনা।
আরবের অনেক দেশের অবস্থা একইরকম। আপনারা জানেন, ইতিহাস ঘাটলেই দেখতে পাবেন এ রকম অনেক দেশের কাছে আমেরিকা একটা শত্রু আর জজ বুশও একটা শত্রু । ইজরাইলকেও অনেকে শত্রু হিসেবে গণ্য করে। অর্থাৎ পুরো পৃথিবীতে এ রকম বিশৃঙ্খলা চলছে। আর পশ্চিমা বিশ্বে এখন কমন শত্রু ইসলাম ধর্ম আর ইসলামিক মৌলবাদ। কিছুদিন আগেও এই শত্রুটা ছিলো রাশিয়া অথবা কমিউনিজম।
প্রশ্ন-১৪. আমার প্রশ্ন মিঃ শাহানীর কাছে। আমরাতো এখানে বাক স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছি । আমরা কথা বলছি মুক্ত আর স্বাধীন চিন্তা নিয়ে; আর তার উপর ধর্মীয় মৌলবাদের প্রভাব নিয়ে। এখন আমরা সবাই সমালোচনা করতে পারি; বাক স্বাধীনতা মানেতো তার মধ্যে সমালোচনা আসতে পারে। এখানে কাউকে সমালোচনার উর্ধ্বে রাখার প্রয়োজন নেই। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্যটা জানতে চাই। আমাদের অধিকার আছে। তবে তার পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করতে হবে। দায়িত্ব পালন না করে মুক্তচিন্তাতো অন্যকে আঘাতও করতে পারে। এরকম হলে আমরা সেই কাজে সমালোচনা করতে
পারি। স্বাধীনতা মানে অন্যকে আঘাত করা নয়; কিন্তু এরকমতো আমরা প্রায়ই দেখি। আমরা অনেকেই স্বাধীনতার কথা বলি কিন্তু দায়িত্ব জ্ঞান না থাকলে অনেক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের সচেতন হতে হবে। এ ব্যাপারে আপনি কি মন্তব্য করবেন?
উত্তর : অশোক শাহানী : আমি আপনার কথাগুলোর সাথে একমত। এখানে আমি একটাই কথা বলবো যে, কোনো মানুষই আসলে সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। আমার মনে হয় এখানকার আধুনিক সমাজে এটাই এখন নিয়ম। আমার মতে সবকিছুরই সমালোচনা করা যায়, সবারই সমালোচনা করা যাবে অবশ্যই। হতে পারে সেটা ধর্ম, হতে পারে কোনো ব্যক্তি, অথবা হতে পারে যারা ক্ষমতায় আছে তারা। আর এটাইতো বাক স্বাধীনতা ।
প্রশ্ন-১৫. আমি মিঃ সঞ্চালককে একটা প্রশ্ন করতে চাই। আমার ধারণা আপনি একজন সাংবাদিক; তাহলে প্রশ্নটা আপনার কাছেই। মি. অশোক শাহানী একটু আগেই বললেন যে, ইনডিয়ার সাংবাদিদের কারণে তসলিমা নাসরিনের জীবন এখন অনেক হুমকীর মুখে পড়েছে। এটার কারণ হলোদায়িত্ব জ্ঞানহীনতা। মাঝে মধ্যে আমরা সাংবাদিকদের এরকম দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজ করতে দেখি। এটার জন্য আপনাদের সাংবাদিকদের সমাজে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা আছে কি? সাংবাদিকদের কারণে অনেক সমস্যা তৈরি হয়। এই সব ক্ষেত্রে দায়ী লোকদের কোনো ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত। এমন সাংবাদিককে কি শাস্তি দিবেন?
উত্তর : সঞ্চালক (মি. গঙ্গাধর) : আমি পেশায় একজন সাংবাদিক; তবে এখানে আমি সঞ্চালক। আর সঞ্চালক সবসময় বলে নো কমেন্ট। এটাই আমার উত্তর। প্রশ্ন-১৬ : আমার প্রশ্নটা ডা. বিয়াসের নিকটে । আপনি বলবেন কি, দলিতের ব্যাপারে হিন্দু শাস্ত্ৰে কি বলেছে?
উত্তর : ডা. বাসুদেব বিয়াস : একটি কথা স্পষ্ট করে বলি, আর তা হলো- হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে দলিত বলে কোনো শব্দ নেই; ইংরেজরা নিচু বর্ণের হিন্দুদের এই নাম দিয়েছিলো। আমাদের সমাজে বড় ভাই আর ছোট ভাই মানে এই অগ্রজ আর অন্ত্যজ একটা ব্যাপার আছে। এখানে অনেক কিছু কর্মের ফল। আপনি যদি ব্রাহ্মন, ক্ষত্রিয়, বৈঞণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমি সংক্ষেপে এতোটুকুই বলব- আমাদের ধর্মে কিছু কর্ম আছে এগুলো সব মানুষের জন্য এক। ক্ষুধা, নিদ্রা, ইন্দ্রিয়, মৃত্যু এ রকম বেশ কিছু কাজ; এগুলোর ফলাফল সব মানুষে জন্য এক । তবে কিছু কিছু কর্ম আছে যেগুলোর ফলাফল পৃথিবীতে আলাদা রকম হয় । এখন ফলাফল পৃথিবীতে আলাদা আলাদা হয় মানে এই নয় যে, অমুক বড় আর
অমুক ছোট; এরা ভাল আর এরা খারাপ; এটা সম্মানজনক এটা অসম্মানজনক । সমাজের ভালোর জন্য এদের সবাইকে আমাদের প্রয়োজন। সমাজের জন্য যে কাজগুলো করা আবশ্যক, সেগুলোকে আমরা কখনো ছোট বা অপমানজনক ভাববো না ।
আমি আরো একটা কথা বলবো- আমি একজন ডাক্তার। যে কোনো হাসপাতালে, যে কোন দাওয়া খানায় নিয়মটা কিন্তু এরকম না যে, রোগী সেখানে, পছন্দ মতো তার ওষুধ বেছে নিচ্ছে। বরং সব জায়গায় নিয়ম হলো- রুগী সেখানে ডাক্তারের কাছে তার সমস্যার কথা বললে ডাক্তার তখন তাকে পরামর্শ দেয় যে, আপনার এই অসুবিধা হয়েছে, এই ওষুধ খেলে সমস্যাটা ঠিক হয়ে যাবে । হিন্দু ধর্মে নিয়মটা আসলে এই রকম । আপনি যেটা সঠিক মনে করবেন, সেটাই করবেন; আর সেটাই আপনার জন্য কর্ম হয়ে যাবে আর তার ফলাফল পাবেন। ব্যাপারটা এই রকম। আপনি কি করবেন সেটা আপনার ধর্মশাস্ত্রই আপনাকে বলে দেবে। ভাল কর্ম করলে ভাল ফল পাবেন। এটা যাদের কাছে ভাল লাগে না বরং অপমানজনক মনে হয়; এসব কথা ভেবে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করে, ওদের বলবো আপনারা ভুল করছেন, আপনারা বুঝতে পারছেন না। আমি আপনাদের আরেকটা উদাহরণ দিই। ধরুন আমার কাছে চারজন রোগী আসলো; এ জনকে গুলি দিলাম, একজনকে বড়ি দিলাম, আরেকজনকে পাউডার দিলাম, আরেকজনকে ওষুধটা যবরদস বানিয়ে দিলাম। আমার নিয়তটা যদি ঠিক থাকে, যে আমি চারজনের অসুখ ভাল করতে চাই তাহলে যার অসুখ গুলিতে ভাল হবে তাকে গুলি দিয়েছি, যার পাউডারে ভালো হবে তাকে পাওডার দিয়েছি, যারা যবরদসে ভাল হবে তাকে যবরদস দিয়েছি।
এখানে আপনি আমাকে পক্ষপাতিত্বের দোষ দিতে পারবেন না যে, ওকে যবরদস দিয়েছে আমাকে পাওডার দিয়েছেন কেন? কিন্তু নিয়ত খারাপ হলে দোষ দিতে পারেন। ধর্মশাস্ত্র আর ইশ্বর সম্পর্কে নিয়তকে আমি খারাপ মনে করি না। এখন কোন মানুষটার কোন জিনিষটাতে কল্যাণ হবে সেটা ইশ্বর বলেছে দিয়েছেন, মুনি, ঋষিরাও আমাদের বলে গিয়েছেন। এগুলো বিশ্বাস করলেই আমাদের কল্যাণ হবে । যদি মনে করেন কিসে কল্যাণ হবে সেটা আমিই বুঝবো, তাহলে ব্যাপারটা সেরকম দাওয়া খানার মতো হবে, যেখানে রোগী পছন্দ মতো ওষুধ নিয়ে চলে যাবে। এমতাবস্থায় রোগীর কি হবে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন । প্রশ্নকারী : এখন আপনি আপনার কর্মের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলুন।
ডা. বিয়াস : সেটাতো ব্যক্তিগতো প্রশ্ন হয়ে গেল। আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? আমি এই কাজটা করি কি না?
প্রশ্নকারী : আমি জানতে চাচ্ছি আপনি ভাল করলে কল্যাণ পাবেন না করলে পাবেন না; সেখানে ধর্ম বিবেচনা করার দরকার কি?
ডা. বিয়াস : ঠিক আছে, আপনার প্রশ্নের উত্তরটা দিচ্ছি; তার আগে একটা কথা জিজ্ঞেস করি । আপনি কি আমার সম্পর্কে জানেন? আমি কি করি, কি করি না? আরেকটা কথা, আপনাকে এখানে বিশ্বাস করতে হবে, আপনাকে মানতে হবে, আমি যদি ভাল কাজ করি তাহলে আমার কল্যাণ হবে, আর যদি ভাল কাজ না করি তাহলে আমার অকল্যাণ হবে। এর বেশি আপনার বা সবার জেনে কি লাভ আছে? আমি আপনাদের আরেকটা কথা বলি, আপনারা হচ্ছেন আস্তিক । আস্তিক হলে দাওয়াতটা পাবেন। আস্তিক তারা, যার ধর্মশাস্ত্র পালন করার চেষ্টা করে আর বেশি বেশি প্রার্থনা করে।
এখনকার দিনে এই আস্তিক হওয়ার দাওয়াতটা কেউ দিতে চায়না। তবে আমি আশা করি মানুষ যেন বেশিবেশি প্রার্থনা করে, এতে সবারই কল্যাণ হবে। ব্রাহ্মণের ধর্ম হলো শিক্ষা গ্রহন করা আর শিক্ষা দেওয়া; অধ্যয়ন করা আর অধ্যাপনা করা; এগুলো একজন ব্রাহ্মণের কাজ, এগুলো এককজন ভাল মানুষের কাজ। এগুলো আমার করা উচিত। কাজগুলো না করলে সেটা আমার দোষ, সেগুলো হিন্দুশাস্ত্রের দোষ নয়। এই ফল আমি পাবো, হিন্দুশাস্ত্র বা অন্য কেউ পাবে না। আশা করি, আপনাদের সন্তুষ্ট করতে পেরেছি।
প্রশ্ন-১৭. আমার প্রশ্ন ডা. নায়েকের কাছে। তসলিমা নাছরিন এই কথা বলেছে যে, কুরআন বলছে- "স্ত্রীরা তোমাদের চাষের জমির মতো তোমরা যেভাবে খুঁশি গমন করো।" এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্যটা জানতে চাই। উত্তর : ডা. জাকির নায়েক : আমিও একমত। তসলিমার নাছরিনের এই মন্তব্যটা আমি পড়েছি। সেখানে সে বলেছে যে, পবিত্র কুরআন বলা হয়েছে'স্ত্রীগণ তোমাদের শষ্যক্ষেত্র' সরি! শষ্যক্ষেত্র, না তসলিমা নাছরিন এটা বলেনি, এটা আছে পবিত্র কুরআনে। সে বলেছে স্বামীদের জন্য স্ত্রীরা হলো চাষের জমি।. কুরআন শষ্যক্ষেত্রের কথা বলেছে। তবে দুটোর অর্থ মোটামুটি একই রকম। তসলিমা বলেছে যে, এই কথাটা কুরআনে আছে। সে কোনো রেফারেন্স দেয়নি যে, স্বাীদের কাছে তাদের স্ত্রীরা চাষের জমির মতো; তোমরা যেভাবে ইচ্ছে গমন করতে পারো। এটা ছাড়াও সে বলেছে যে, মহিলাদের একধরনের সম্পত্তি হিসাবে ধরা হয়। এখানে কুরআন থেকে সূরা ইমরানের উদ্ধৃতি দিয়েছে যে, মহিলা, সোনা, এসব কিছুই সম্পদ। নারী, সন্তান, সোনা আর ঘোড়া সম্পদ। আবার সে ভুল উদ্ধৃতি দিয়েছে। সে এখানে পুরো আয়াতটার কথা বলেনি ।
সে এখানে সূরা আলে ইমরানের ১৪ নং আয়াতের কথা বলছে; যেখানে বলা হয়েছে যেزين للناس حب الشهوت من النّساء والبنين والقناطير المقنطرة من الذهب والفضة والخيل المسومة والأنعام والحرث ط ذلك متاع الـحـيـوة الـدنـياج والله عنده حسن الماب -
অর্থ : নারী, সন্তান, রাশিকৃত স্বর্ণরৌপ্য আর চিহ্নিত অশ্বরাজি, গবাদি পশু এবং ক্ষেত-খামারের প্রতি আসক্তি মানুষের নিকট সুশোভিত করা হয়েছে।
এখানে নারী তথা স্ত্রী বা কন্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এমন কোন পুরুষ আছে যে, ভাল স্ত্রী নিয়ে গর্ব করে না? আর আছে সন্তানের কথা। কোন বাবা তার সন্তানকে নিয়ে গর্ব করে না? কোন স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে গর্ব করে না, আর কোন স্ত্রী তার স্বামী নিয়ে গর্ব করে না? যদি ভাল হয়? তাহলে কুরআন কোথায় তাদের সম্পত্তি বললো?
এবার প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা দেই যে, কুরআন বলছে- স্ত্রীরা স্বামীদের জন্য চাষের জমি; সে কোন রেফারেন্স দেয়নি। এখন আমি কুরআনের কোথায় খুঁজবো? কোথায় একথাটা লিখা আছে যে, "স্ত্রীরা স্বামীদের জন্য চাষের জমি?" সে এখানে পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারার ২২৩ নং আয়াতের কথা বলেছে। তবে উত্তর দিতে গেলে এর আগের আয়াতটাও দেখতে হবে। সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াত দেখে তারপর ২২৩ নং আয়াত দেখতে হবে। ২২২ নং আয়াতে বলা হয়েছেويسئلونك عن المحيض قل هو اذی فاعتزلوا النساء في المحيض ولا تقربوهن حتى يطهرن ج فاذا تطهرن فأتوهن من حيث أمركم الله ط إن الله يحب التوابين ويحب المتطهرين
অর্থ : লোকে তোমাকে রক্তঃস্রাব সম্বন্ধে বিজ্ঞাসা করে। বল, 'উহা অশুচি।' সুতরাং তোমরা রক্তঃস্রাবকালে স্ত্রী-সংগম বর্জন করবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী-সংগম করবে না। অতঃপর তারা যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হবে তখন তাদের নিকট ঠিক সেইভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদেকে আদেশ দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তওবাকারীকে ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন।
| pdf |
feb1f719d08b535fc3b57d3f32d43dedb69497ac | "মা কাঁদছে-জ্বলছে দেশ, ঘুরে দাড়াও বাংলাদেশ" এ শ্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশে চলছে সহিংসতাকারিদের প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের আন্দোলন। হরতাল আর অবরোধকারি ছোঁড়া বোমা ও পেট্রলবোমায় দদ্ধ হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এসব বোমাবাজদের ধরিয়ে দিতে রোববার দুপুরে হেলিকপ্টরযোগে চাঁপাইনবাবগজ্ঞ ও শিবগঞ্জ উপজেলা সদর এলাকায় প্রচারনামূলক লিফলেট বিতরণ করেছে র্যাব। লিফলেটে বলা হয়েছে সারাদেশব্যাপী অবরোধ-হরতালে বিপন্ন দেশ, বোমায় পুড়ছে বাস, পুড়ছে আমার মা, পুড়ছে আমার ভাই-বোন, আগুনে পুড়ছে পরিবার সাথে জ্বলছে জাতির বিবেক।
আর পুড়তে দেব না, হতে দেব না কোন ক্ষতি। রুখে দাঁড়াবো, নিরাপদ একটি দেশ গড়ব । এছাড়া সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে যারা সহিংসতাকারিদের ধরিয়ে দিতে পারবে তাদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে র্যাব।
তথ্য প্রদানকারির পরিচয় গোপন রাখা হবে। আর তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামী ধরতে পারলে নগদ টাকা পুরস্কার প্রদান করবে র্যাব এমন প্রতিশ্রুতি দেয়া আছে এই লিফলেটে।
| web |
b3dc4061dde610212cc6eda404a2c8e1 | ** কোর্স শুরু হবে আগামী - ০৭ নভেম্বর - বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
ওয়েব ডিজাইন দিয়ে অনলাইন ক্যারিয়ার শুরু করার অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে, এর ক্রমবর্ধমান কর্মক্ষেত্র । এটি শিখতে অন্যান্য অনেক কাজের তুলনায় সহজ এবং যেহেতু এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে তাই শেখার পরে কাজ করার অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও ওয়েব ডিজাইন শেখার আরেকটি প্রধান কারন হচ্ছে, এটি এখন শিখলে এখনই কাজ করা সম্ভব , তাই অন্যান্য কাজের মত কাজ করতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয় না।
৩ মাসের এই কোর্সটি করে আপনি হতে পারবেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার এবং কাজ করতে পারবেন অনলাইন ও আমাদের টিমে।
| web |
a66b69e172f69158685f6e9862269cc83201ca7f33d1326ac5fd2844671a3938 | জগত তার কাছে আজ অসার। সে যে একটা নৈতিক আদর্শের বলি, একটা কঠোর নিষ্ঠার পরিণাম - তার জন্য তার মনে এখন আর অবকাশ নেই সুখ হর্ষ কিম্বা অহংকারের। না আছে কোন আনন্দ। স্বামীর মস্তক ছিন্ন হয়েছে, ননদের! আত্মাহুতি দিয়েছে - একথাও সে ভাবছে না। শূণ্য আকাশের মত ফাঁপা হয়ে গেছে তার মন । যেদিকে সে তাকাচ্ছে, দেখছে শুধু -- নেই, নেই, কিছু নেই ! বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড রিক্ত, আকাশ বাতাস বিষাক্ত ।
উর্মিলার মাথা ঘুরতে লাগল । সে কাত, হয়ে রইল ছেলে দুটোর একপাশে । দুরন্ত শীতের রাত্রির কুয়াশায় ভিজে যেতে লাগল কাঁথা কাপড় ।
সকাল বেলা একটু রোদ উঠতেই একজন যুবতী স্ত্রীলোক তাকে ডাকবে ভাবল। স্বল্পপরিসর স্থানে উর্মিলাকে এক অনাহুত আপদ বলে মনে হল তার। বিনোদ সামন্ত তার স্ত্রীর মনের ভাবটা বুঝে তাকে নিষেধ করল, 'আহা থাক, থাক ।'
স্ত্রীলোকটি গজগজ করে চুপ করে রইল। খরচ দেবে সকলেই সমান, একজনে সুবিধা ভোগ করবে কেন ন্যায্য প্রাপ্যের চেয়ে অনেক বেশী ?
বেলা একটু বেশী বাড়ার সংগে সংগে যেন উত্তরে হাওয়াটা বাড়ল। ঘুম ভেঙে গেল উর্মিলার। সে রোজা হয়ে উঠতেই সবাই দেখল যে তার কাপড় চোপড়ে চাপড়া চাপড়া রক্তের দাগ। নিকটের সেই স্ত্রীলোকটি ঘৃণায় সরে গেল। কে যেন দাঁত বের করে হেসে একটা ঠেলা দিল নিকটের সংগিনীকে।
পুরুষেরা অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে ছিল । উর্মিলা যেমন উঠেছিল তেমনি আবার কাঁথা কাপড় জড়িয়ে বসে পড়ল। সংগে তার তো আর একখানাও বাড়ন্ত শাড়ী কিম্বা ছেঁড়া নেক্ড়া নেই ।
বিনোদ সামন্তের সবই নজরে পড়েছিল, সে বলল, 'বাতাসীর মা চাবিটা দে।" 'কেন ?'
'কাজ আছে।'
কাজটা কি সে অনুমানে বুঝে জবাব দিল, 'পাচ্ছিনে। রাত্রে কোথায় রাখলাম বে চাবির থোকাটা !'
'ভাল করে একটু খুঁজে দেখ।'
'কেমন করে এর মধ্যে খোঁজে বলতো? জায়গা একটু মানুষ একুশটা।' ইংগিতটা বুঝে একেবারে জড়োসড় হয়ে বসে উর্মিলা।
'দেখ বাপু সক্কাল বেলা আমাকে আবার স্নান করিও না। বাতাসীর মার কথায় উর্মিলা মরমে মরে যায়।
বিনোদ সামন্ত একটা লোহার শলা নিয়ে ওঠে বাক্স ভাঙবে বলে। অমনি চাবি পাওয়া যায় । 'এই যে ছড়ানি।' এগিয়ে আসে সামন্তের বৌ। বিনোদ একখান। লাল পেড়ে ভাল শাড়ী কাপড় বের করে। উর্মিলা তা দেখে বলে, 'দিলেনই যখন তখন বদলে দিন ওখানা।"
'কেন মা?' 'আমি বিধবা।'
অথচ কপালে সিন্দুর রয়েছে - হিন্দু এয়োতির সুস্পষ্ট ছাপ। এর অর্থ কি ? কেমন সুন্দর মুখখান। কিন্তু বড় বিশুষ্ক যেন একট। করাল কাল বৈশাখী বয়ে গেছে ওর দেহ ও মনের ওপর দিয়ে। মুসলমানরা সবই বলেছিল, তবে কিছু খুলে বলেনি এই ভয়তে পাছে এরা অস্বীকার করে মামলা মকদমার আশংকায় ঊর্মিলাকে সংগে নিতে। এখন তো আর এদেশে আইন-কানুন নেই । আসামী তো দূরের কথা ফরিয়াদীকেও সাহায্য করলে অপরাধ হতে পারে সরকারের চোখে।
নৌকার সমস্ত যাত্রীরা বিস্ময়ে কৌতূহলে ঊর্মিলার দিকে চেয়ে রইল। উর্মিলা সংক্ষেপে তার সমস্ত কাহিনী এদের জানাল। বিনোদ সামন্ত থান কাপড় আর খুঁজে সময় নষ্ট করল না - পাড় ছিড়ে ঐ শাড়ীই পরতে দিল ।
বাতাসীর মা পায় ধরে ক্ষমা চাইল । উর্মিলা সামান্য কথায়ই সান্ত্বনা দিল তাকে। স্তব্ধ হয়ে রইল বাইয়ে ক'জন। অক্ষম আক্রোশে ফুলে ফুলে উঠতে লাগল বুকের পাঁজর। নৌকা এগিয়ে না গিয়ে প্রায় রশি দশেক পিছিয়ে এলো। তখন জ্ঞান হলো আবার বাইয়েদের। ওরা ভাবতে লাগল যে ওরা কেউ অক্ষম নয়। ওদের বাহুতে এখনও শক্তি আছে বন্য বরাহের। তবু ওরা কেন জানি পারল না ঠিক আঘাত করতে, ন্যায্য প্রতিশোধ নিতে অন্যায়ের। ওদের কেমন যেন কারা গাছে তুলে দিয়ে কেড়ে নিয়েছে মই - করে ফেলেছে দুর্বল অসহায়। অথচ ওরা সত্যি তা নয় ।
দেখতে দেখতে দুটো দিন গত হয়ে গেল। রান্না-বান্না হলো কোন পরিত্যক্ত হাটখোলার বাচারিতে নয়ত কারুর দরজার বড় গাছতলায় । সকলের এক সংগেই খাওয়া-দাওয়া হলো উন্মুক্ত আকাশের তলে। ছোঁয়া পানির আর অত
বাছ-বিচার রইল না। বিপদ এবং দুঃখে যেন বৈষম্যমুক্ত হতে চলেছে সমাজের ছত্রিশ জাতি।
জোয়ার এলে, নৌক। আবার এগিয়ে চলল।
শুধু অন্নস্পর্শ করল না উর্মিলা। জলও সে স্পর্শ করত না, যদি জীবন ধারণের ভিম্ন কোন পথ থাকত । নৌকার সকলেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল । বাতাসীর মা একেবারে পা দুখানা জড়িয়ে ধরে তাকে অনুরোধ করল, একটু দুধ আর কটি কলা খেতে হবেই। দুধ এবং কলা পূর্বাহ্নেই সংগ্রহ করেছিল বাতাসীর মা। সন্তানের মংগলের জন্যই তার অনুরোধ রাখা উচিত। সব গেছে ওরা তো রয়েছে । 'এগার দিনের আর চারদিন বাকি- শ্রাদ্ধান্তে তো সবই খাব।'
'না দিদি - প্রাণে না বাঁচলে শ্রাদ্ধ করবে কে? চার চারটা দিন কম নয়।' 'এখনও যখন বেঁচে আছি, সহজে এ জীবন যাওয়ার নয়।' অনেকক্ষণ কথা কাটাকাটি করার মত শক্তি ও উদ্যম ছিল না উর্মিলার। অগত্যা তাকে কিছু আহার্য গ্রহণ করতে হয়।
এই দুদিনের মধ্যে এমন একটা আবহাওয়া গড়ে উঠেছে যে লাঞ্ছিতা অপমানিত। উর্মিলাই হয়েছে সকলের শ্রদ্ধার পাত্রী। ওর কঠোর নিষ্ঠা অবাক
করেছে সকলকে ।
উর্মিলা কারুর সংগেই যেচে কথা বলে না। নিতান্ত ঠেকা না হলে ছেলে দুটোর কাছেও থাকে নির্বাক। কেবল বিনোদ সামস্তের কাছে মাঝে মাঝে খোঁজ নেয়, সময় মত কলকাতা পৌঁছান যাবে তো ?
আকাশ পরিষ্কার, মেঘ বৃষ্টির কোন চিহ্ন নেই, এ অবস্থায় এগার দিনের পূর্বেই আশা করা যায় যে গন্তব্য স্থলে পৌঁছান যাবে।
উর্মিলা চায় স্বামীর শেষ কাজটুকু গংগা জলে সারতে।
আর একটা দিনও বেশ নিরাপদে কাটল। নৌকার আরোহীরা ভাবল তারা জাহাজে না গিয়ে ভালই করেছে। বিদেশে . নতুন একটা সংসার পাতাতে হলে কত কি টুকি-টাকির দরকার। তা তো কিছুই নিতে পারেনি জাহাজের যাত্রীরা, ওরা বরঞ্চ নিয়ে যাচ্ছে সব।
সেদিন নৌকা আর কিছুদূর অগ্রসর হলে চারজন মুসলমান যাত্রীদের ডেকে নৌকা থামাল। অনেক কথা জিজ্ঞাসা করল বন্ধুর মত, কিছু ফল-মূল এনে দিল যাত্রীদের খেতে। অবশেষে তারা কাকুতি মিনতি করতে লাগল যে তারাও
যাবে ওদের সংগে কলকাতা। দেশে চালের দর অত্যধিক - বিদেশে না গেলে
ছেলে মেয়ে। একজন মনে হয় যেন ছ বছরের খুকি । এমনি গাঁয়ের অধিকাংশ ছেলে মেয়ে। রায়টের আগে ওরা নাকি কুলি এবং দপ্তরীর কাজ করত বড়বাজারে। এখন আবার সেখানেই যাবে। টালাই নায়ে মাঝি নেই, ওরা যাবে মাঝি হয়ে বেয়ে-ছেয়ে।
বিনোদ সামন্ত একটু আশ্চর্য হল।
জিজ্ঞাসা করল, 'তোমরা দেশ ছেড়ে যেতে চাও ? পাকিস্তান ছেড়ে ? 'পাকিস্তান দিয়ে মজুর মুটের কি হবে যদি ভাত কাপড় না মেলে ?? বিনোদ এ মন্তব্যেখুব খুসি হল না। সে খুসি হত অন্তত এদের সুখ-সমৃদ্ধির
কথা শুনলে ।
'যদি যেতে হয় চল ভাই, কিন্তু সেখানে গেলেও তোমার আমার শ্রীবৃদ্ধি নেই বুঝলে।'
কি করবে, তবু ওরা সংগে যাবে। ওরা ঘণ্টা খানেকের মধ্যে জোগাড় হয়ে নায়ে উঠল ।
বাতাসীর মা তৃতীয় পক্ষের স্ত্রী - দেখতে শুনতে ফিটফাট। ছেলে মেয়ে বিনোদ সামস্তের আগের দু' পক্ষের গর্ভেও জন্মায়নি, বাতাসীর মাও বন্ধ্যা। তবু বৃদ্ধ সামস্ত বেশ সুখে স্বচ্ছন্দে ছিল নিজের রোজগারে, তাই সখ করে তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীকে ডাকত বাতাসীর মা বলে। বুড়োর ছেলের চাইতেও কেন জানি বেশী সাধ ছিল মেয়ের।
বাতাসীর মার বড় ইচ্ছা কলকাতা যখন যাচ্ছে এবং স্থায়ীভাবেই সেখানে যখন বসবাস করবে তখন কিছু অভিজ্ঞতা পথে বসেই সঞ্চয় করে। অভিজ্ঞতাও সে সঠিক সঞ্চয় করতে চায় না, চায় বর্ণনা শুনতে। এই মটরগাড়ী, ট্রাম, চিড়িয়াখানা, যাদুঘর ইত্যাদির। হাতে তার কিছু পয়সা আছে, নাভিমূলে সোনাও সে কিছু গোপন করে নিয়েছে, বয়সও নেহাৎ মাত্রা ছাড়ান নয় - এমন মানুষের মন চঞ্চল হওয়। কি অস্বাভাবিক ? এতগুলে। যাত্রীর মধ্যে কেউ তেমন সৌখীন নয় - গেঁয়ো ভূত, কেউ কখনও নামেনি বাড়ী ছেড়ে। শুধু নাকি তার স্বামী ক'বার কলকাতা গিয়েছিল, আর সে শহর দেখেছে কেবল উর্মিলা। স্বামী কটূক্তি করে উঠবে অসময়ে এসব কথা শুধালে আর উর্মিলা তো পাথরের মত
নির্বাক । তাই বাতাসীর মার মনট। আঁকু-পাকু করতে থাকে। গেঁজিয়ে ওঠে কথার ভিয়ান।
আরও একটা দিন গত হলো - নৌকা এবার ঠেলে চলেছে উজান জল । গতি মন্থর। বাতাসীর মা একেবারে ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। কেউ কিছু না বলুক, কলকাতা ও যদি পৌঁছতে পারত !
নৌকার অন্যান্য আরোহীরা ম্রিয়মান। অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের আশংকায় সংকুচিত। মুখে হাসি নেই, বেশী কথা-বার্তা নেই কারুর মুখে। সকলেই এসেছে অল্প বিস্তর কিছু হাতে নিয়ে, কিন্তু সংগে এক একটা সংসার। শুধু স্বামী স্ত্রী পুত্র কন্যার সংসার নয়, গলগ্রহ এবং পোষ্যও আছে দু' একজনার। দেশে বসে যারা মুখের দিকে চেয়ে থাকত, বিদেশে আসার সময় তাদের উপেক্ষা করে আসে কি করে ?
সন্ধ্যার একটু পূর্বে পাকিস্তানী একদল দৈত্য সংগিন উঁচিয়ে টর্চের আলো ফেলে ক্ষুৎ-পিপাসায় কাতর যাত্রীদের নাও ঘিরে ধরল। তারা স্ত্রীলোক কেড়ে নেবে, না সোনার গয়না ছিনিয়ে নেবে, না এদের সবাইকে ডুবিয়ে মারবে বোঝা গেল না। বাতাসীর মার মুখ এতটুকু হয়ে গেল । বয়স তো তার বেশী নয়।
কয়েকটা দিন পরের কথা বলছি।
পরাণ এক বাড়ী থেকে আর এক বাড়ী তারপর আবার এক গ্রামে রোগী দেখতে দেখতে প্রায় সাতদিনের পথে চলে গিয়েছিল। ফিরে যখন এলো তখন তাকে একখানা ডোঙা নায় করে এক রোগীর আত্মীয়েরা দুপুর রাত্রে উর্বশীর বাসার কাছে নামিয়ে দিয়ে গেল।
'অপ্সরী, অপ্সরী - ও অপ্সরী, সজাগ আছনি ?' বড় আনন্দে ডাকতে ডাকতে এলো পরান। ঘর দোর উন্মুক্ত। কেবল পালিত কুকুর দুটো ঘেউ ঘেউ করে পরাণের কাছে ছুটে এসে কাঁদতে লাগল। পরাণের বুকটা ছ্যাক্ করে উঠল। म কিছু জানে না, তবু একট। অজ্ঞাত আশংকা তাকে অধীর করে ফেলল। হঠাৎ কি হতে পারে উর্বশীর ? সে একটা দিয়াশলাই জ্বালল। যদি ওর ওপর রাগ
করে গুম্ মেরে থাকে, যদি লুকিয়ে থাকে দোরের আবডালে ও তাকে খুঁজে বের করবে।
ঘরের একটা শ্রীহীন ভাব দেখে ওর আশংকা আরও দ্বিগুণ হলো। অপ্সরী, অপ্সরী!' কেউ সাড়া দিল না। বাড়ীটা সত্যই জনশূণ্য ।
পরাণ আবার ভাল করে খুঁজল উর্বশীকে। ডাকল সপ্তমে গল। চড়িয়ে। ক্রমে তার সুর খাদে নেমে এল। সে তন্ন তন্ন করল ঘর দোর। উর্বশী কোথায় কখন কি ভাবে বসে থাকত, চুল এলিয়ে দাঁড়াত, ঘাট থেকে ভরা ঘড়া কাঁথে ফিরে আসত সব তার মনে পড়তে লাগল। ঘাটে বাটে, উঠানে, ঘরে সর্বত্রই যে তার স্মৃতি জড়িত। এ কিসের স্মৃতি-- কামনার না প্রেমের ? কামনা কোথায় ? এ যে শুধু প্রেম। দয়িতার জন্য গভীর আকুতি। পরাণ যত খোঁজে, তত তার বুক জ্বলতে জ্বলতে প্রেম হেমে পরিণত হয়। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া তুচ্ছ করা সুবর্ণের সে তে! সন্ধান পায় না। মনে যে রয়েছে, রক্ত মাংসের • দেহে এবং রূপে তাকে দেখতে চায় পরাণ। 'অপ্সরী, অপ্সরী !' কোন জবাব আসে না ।
পরাণ দাওয়ায় বসে পড়ে। কুকুর ছানা দুটো ওর পায়ের কাছে এসে কাঁদতে থাকে । সেই কাঁদনে যেন কেঁদে ওঠে রাত্রির আকাশ, খাল, বিল মেঠো হাওয়া, ফলবতী নারকেল সুপারি গাছগুলো পর্যন্ত ।
কত শঠতা করেছে পরাণ, তাই আসে অনুতাপ। মর্মে বেঁধে শানিত আঘাত। নীচ কূলে জন্ম বলে করেছে কত তুচ্ছ ! এখন যদি সেই তুচ্ছ অচ্ছুং মেয়েটাকে সে পেত তবে সাপের মাথার মনির মত করে সে তুলে রাখত । ওর উর্বশী যে স্বর্গের অপ্সরী ! আজ যদি একবার সাক্ষাৎ পেত, তবে নিশ্চয়ই পরাণ পায় ধরে ক্ষমা চাইত।
পরাণ অন্ধকারেই চলল কুসুমপুরের দিকে।
ও কত বার্তা, কত ব্যাকুলতা যে বহন করে নিয়ে এসেছিল ! একটা নয় দুটো নয় - দাত সাতটা দিনের পুঞ্জীভূত কথার অর্ঘ্য !
বেশ খানিকটা মেঠো পথ ভেঙে, লম্বা লম্বা জংলা ঘাসের শিশিরে কাপড় -চোপড় ভিজিয়ে পাণ্ডুর জ্যোৎস্নালোকে পরাণ এসে উঠল সরকার বাড়ী।
'কান্তি, কান্তি ও সরকার !
সে দেখল বাইর থেকে বড় বড় দুখানা ঘরে তালা মারা। এরা কি কোথায়ও কোন আত্মীয়-বাড়ী বেড়াতে গেল ? কিন্তু এদের খড়ের গাদাগুলো কই ?
গোয়ালখানা যে খালি। গরু-বাছুর তো আর মানুষের মত নিমন্ত্রণ খেতে যেতে পারে না এক গাঁ থেকে অন্য গাঁয়ে।
জনশূণ্য লাগছে এমন বনেদী গৃহস্থবাড়ী।
পরাণ একটা প্রাচীন শিবমন্দির ও বোসদের নবরত্নতলা ছাড়াল। তাঁতি বাড়ী। 'যোগন ও যোগেন!'
পরাণ ডাকছে কাকে? বাড়ীর ওপরের ভিটিগুলিই তো শূণ্য। কোন দৈত্য এসে ভেঙে নিয়ে গেল নাকি ঘর দুয়ার ? সে তো ভুল করেনি ? কুসুমপুর তাঁতি বাড়ী না এসে সে অন্ধকারে অন্য কোথায়ও এসেছে নাকি? না - ঐ তো তাঁতিদের বড় চরকাটা পড়ে রয়েছে। একটা শৃগাল বের হলো মনসামণ্ডপ থেকে। ওরা ঘর দোর ভেঙে নিয়ে ছেড়ে গেছে দেশ, তবু ভাঙতে ওদের মন সরেনি চোদ্দ পুরুষের স্থাপিত দেবীমণ্ডপ ।
এগিয়ে চলল পরাণ । কোথায় যাবে? কার কাছে সংবাদ পাবে এই বাস্তু ত্যাগীদের ?
আরও কয়েকখানা ছোট ছোট জনহীন বাড়ীর ওপর দিয়ে হেঁটে গেল পরাণ। রামু রজকদাস নেই, নেই মণি শীল। থিলহীন এক জোড়া কবাট ইঁ করে রয়েছে।
একটা তক্ষক সজোরে ডেকে উঠল একটা মৃত পত্রহীন গাছের কোটর থেকে । পরাণ একটু যেন ভয় পেল। সমস্ত মানুষকে কি ঐ একটা ক্রুরবুদ্ধি সর্প ধ্বংস করে এখন পরম আনন্দে ডাকছে? পরাণ গাছটার পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলল জোর কদমে।
সে পণ্ডিত বাড়ীর কাছাকাছি হলো। টিনের ছোট বসতি আটচালাখান। কই? মৃত জ্যোৎস্নায় লক্ষ্য করল কাঠ কপাট টিনের একটা ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে। চেনা যাচ্ছে না গোঁসাইমণ্ডপ। আগুন দিল কে? ঐ তো পোড়া খুঁটি, গাদা গাদা ছাই। মরা শকুনের মত ডানা মেলে যেন পড়ে আছে টিনের চালের পাঁজর।
পরাণ হতবুদ্ধি হয়ে গেল।
এই কি শশিশেখরের বাড়ী ? এ তো বিশ্বাস করতে পারে না পরাণ ।
কে যেন কাঁদছে ঐ ভাঙা পাঁজরের তলে বসে। একটা প্রদীপও জ্বলছে যেন। পরাণ আর একটু এগিয়ে এলো। সে ভাল করে কান পেতে শুনে বুঝতে পারল, এ তো ঠিক ক্রন্দন নয়। জাহ্নবী দেবী মহাভারতের নারীপর্ব পড়ছেন।
১৪৫ যেন বিলাপ করছেন গান্ধারী-ক্রন্দন নয়, বিলাপ । হস্তিনার প্রাচীন সেই ঐশ্বর্যের কথা মনে পড়ল পরাণের। কাশীরাম দাসের পয়ার করুণ নিক্কণে বেজে উঠল এই গ্রাম্য চিকিৎসকের বুকে। অভ্রংলিহ প্রাসাদ, দরবার, হস্তিশালা মুহূর্তে ভেসে এল চোখের সুমুখে। সকলই শূন্য। রথী নেই, সারথি নেই, নেই কৰ্ণ দ্রোণাচার্য। কোথায় স্থির প্রতিজ্ঞ পিতামহ ? কোথাই বা অভিমন্যু, ঘটোৎকচ দুর্যোধনের অমিতবিক্রম শত ভাই ?
কুরুক্ষেত্র শবাকীর্ণ।
কিন্তু কুসুমপুরের বাসিন্দারা তো ভাই ভাই কলহ করেনি - নিশ্চয় ওরা সবাই আর মরেনি, কিন্তু, কিন্তু ওদের কি হয়েছে ?
পরাণ আকাশের দিকে চেয়ে যেন জিজ্ঞাসা করে, বলতে পার হে জ্যোতিষ্ক মণ্ডল এই কুসুমপুরের বাসিন্দাদের কি হয়েছে? তোমরা তো শুধু আজকার সাক্ষী নও, সাক্ষী যুগযুগান্তের - তোমরা কি বলতে চাও, এই একসপ্তাহ কাল ছিলে ভয়ে আতংকে চোখ বুজে ? জেনেছ, বুঝেছ সবই কিন্তু চোখ মেলনি সাহস করে। কেন, এমন কি ঘটেছিল, যা কুরুক্ষেত্রের চেয়েও হৃদয় বিদারী ? বল, বল জ্যোতিঃপুঞ্জ কি হয়েছে কুসুমপুরবাসীদের ?
যেন কেঁপে ওঠে তারা স্তোম ।
পরাণ ঘাসগুল্ম বৃক্ষলতার কাছে জিজ্ঞাসা করে, জিজ্ঞাসা করে কীটপতংগটির কাছে পর্যন্ত -ওদের সংবাদ কি কেউ জানো না? এই নানা বয়সের লোক, গৃহস্থের গরু ছাগ মেষ, কৃষকের ধান, ব্রাহ্মণের মান, কারবারীর কারবার, কুমোর কামারের গড়ন, সমস্ত কি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল ? না প্রলয়ংকর মহামারী এসে উজাড় করে নিয়ে গেল এই ক'দিনে ?
কেউ কিছু জবাব দেয় না, ঝিঝিরা শুধু করুণ সুরে বেহাগ বাজায়। কেন জানি জাহ্নবী দেবী থেমেছিলেন তিনি আবার স্পষ্ট করে নারীপর্ব পড়তে আরম্ভ করলেন। পরণের মনে হল এ যেন যুদ্ধান্তেরই কুরুক্ষেত্র - না, না তার চেয়েও বুঝি বা ভয়ংকর শ্মশান ।
পরাণ একটু দাঁড়াল। এ তো শত পুত্রহারা মাতার শোক নয় - সহস্র সহস্র পুত্রহারা এক জননীর বিলাপ।
সহজে কাতর বড় মায়ের পরাণ। সুপুত্র কুপুত্র দুই মায়ের সমান ।
এককালে এত শোক সহিতে না পারি। বুঝাইবা কিরূপে হে তোমারে মুরারি সংসারের মধ্যে শোক আছয়ে যতেক। পুত্ৰ শোক তুল্য শোক নাহি তার এক ॥ গর্ভধারী হয়ে যেই করেছে পালন । সেই সে বুঝিতে পারে পুত্রের মরণ ॥
পুত্র, প্রেমিক, প্রেমিকার চিরবিচ্ছেদ দেখেছে - সে শৈল্য চিকিৎসক, কিন্তু এমন রোদন শোনেনি। জাহ্নবী দেবী পড়ছেন না তো যেন কাঁদছেন । উঃ কি মর্মভেদী !
সে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল ঐভাবে বলা যায় না । এবার শোনা গেল ক্রুদ্ধা এক হিংস্র। মাতার অভিশাপ।
শুন কৃষ্ণ আজি শাপ দিব হে তোমারে। তবে পুত্রশোক মম ঘুচিবে অন্তরে ॥ অলঙ্ঘ্য আমার বাক্য না হবে খণ্ডন । জ্ঞাতিগণ হইতে কৃষ্ণ হইবে নিধন ।
কি ভেবে যেন পরাণ আর ওখানে দাঁড়াল না। সে হন্হন্ করে হেঁটে চলল পূবদিকে । গরীব মনহর দেশত্যাগ করতে পারেনি, আর পারেনি বৃদ্ধা অসহায় কুন্দ ঠাকুরাণী । পরাণ তাদের গিয়ে ডেকে তুলল। জিজ্ঞাসা করার আগেই
তারা বলল সব।
চলল আবার উর্বশীর
সে উন্মত্তের মত বেরিয়ে এলো ওদের বাড়ী ছেড়ে। বাসার দিকে।...
তার সমস্ত গা বেয়ে ঘাম ঝরতে লাগল ।
সে ঘরে ঢুকে কতখানি মদ খেল। সহজেই পরিশ্রান্ত মস্তকে ক্রিয়া হতে লাগল । যেন আকাশ পথে মেঘলোকে ঝড় উঠেছে। আলুলায়িত কুন্তলা এক নারী যেন এগিয়ে আসছে। হাতে তার ত্রিশূল। পিছনে অগণিত সর্বহারার দল। আজ তারা দুর্বল নয় । আধুনিক নানা অস্ত্রে সজ্জিত। সংগে ঐ আসছে কারা - টুপি ফেজ লুংগি পরা ? ওরা তেরশ' পঞ্চাশের বলি, বলি পর পর প্রতি বছরের রোগ শোক দারিদ্র মহামারী মড়কের। একত্র হয়ে আসছে, সবাই আসছে অমিত বিক্ৰমে ।
ও রমণী কে ?
| pdf |
dcb6995359579ef4cdd6b0c837adcceb | বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কালিবাড়ি গ্রামের ফকু তালুকদারের চার সন্তান তারা সবাই প্রতীবন্ধী হয়ে গেছে।জন্মের ৫-৭ বছর বয়সে শুরু হয় প্রতীবন্ধী হওয়া । ফকু তালুকদার বলেন তার বড় ছেলে স্বপন সুস্থ সবল শিশু হিসাবে জন্মগ্রহন করেন । অন্যান্য শিশুদের মত সে বেড়ে উঠে। যখন স্বপনের বয়স ৭ বছর হয়, তখন প্রথমে স্বপনের দুই পায়ের নিচের অংশ কিছুদিন পরে দুই হাত ফুলে শক্ত হয়ে মারাত্বক ব্যাথা হয় তার পর আস্তে আস্তে দু পা ও হাত চিকন হয়ে পঙ্গু হয়ে যায় তারা আর স্বঅবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারেনা । ডাক্তাররা এখন পর্যন্ত রোগই নির্নয় করতে পারেন নি।
আমতলী হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার মন্ডল বলেন এ টা কি রোগ বলা যাচ্ছেনা । ফকু তালুকদার আরো বলেন বড় ছেলে স্বপন ২২বছর বয়সে মারা গেছে। অপর দুই ছেলে রিপন(১৯) সিপন (১৭ )বছর তাদেরও একই অবস্থা । ছোট ছেলে ছলেমান বয়স-৭ বছর দ্বিতীয় শ্রেনীতে কালিবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। তার ও হাত পায়ে ব্যাথ শুরু হয়ে গেছে । অসহায় গরীব ফকু তালুকদার ছেলেদের নিয়ে আছেন মহা বিপদে।
টাকার অভাবে ঢাকা বরিশাল চিকিৎসা করাতে পারছেনা। যে টুকু সহায় সম্বল ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা করানোর পর এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ফকু তালুকদার । অর্ধহারে অনাহারে থাকতে হয় এই প্রতীবন্ধী সন্তানদের নিয়ে তিনি তাদের মুখে তিন বেলা খাবার দিতে পারেনা । ফকু তালুকদার তার সন্তাদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী ,স্বাস্থ্য মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এবং সমাজের সহৃদয়বান ব্যক্তিদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন । সঞ্চয়ী হিসান নং-১৮৭৭, জনতা ব্যাংক আমতলী শাখা,বরগুনা ।
| web |