doc_id
large_stringlengths 32
64
| text
large_stringlengths 0
560k
| type
large_stringclasses 3
values |
---|---|---|
c1b221fe4df3b42b9b0f60b612bdcb7c56dd28a7 | অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ে লাগাম টেনে ধরাসহ বেসরকারি স্কুলে ভর্তি নীতিমালায় বড় ধরনের তিনটি পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য নতুন এই নীতিমালা চলতি সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
নতুন নীতিমালায় যে তিনটি বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে- তার মধ্যে একটি হচ্ছে- নির্ধারিত আসনের থেকেও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি না করাতে বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই মোট আসন সংখ্যা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠাতে হবে। ভর্তি কার্যক্রম শেষে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, প্রতিবছর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ভর্তি কার্যক্রমের সময় নির্ধারিত ফি থেকেও অতিরিক্ত ফি নিয়ে থাকে। এই অতিরিক্ত ফি যেন আর আদায় করতে না পারে, সেজন্য উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে তিন ধরনের কমিটি গঠন করা হবে। এদের আবার উপ-কমিটি থাকবে। যারা এই বিষয়গুলো মনিটরিং করবে।
আর অন্যটি হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলির ক্ষেত্রে আন্তঃউপজেলার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। যা পূর্বে জেলা পর্যায়ে ছিল।
খসড়া ভর্তি নীতিমালায় বলা হয়, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের লটারির মাধ্যমে ভর্তি করতে হবে। ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণিতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফল অনুযায়ী ভর্তি করতে হবে। অন্য ক্লাসের ক্ষেত্রে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে তিন বিষয়ে (বাংলা, ইংরেজি, গণিত) ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও ভর্তির পুরাতন নীতিমালার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, এলাকা, শিক্ষা ইত্যাদি বিভাগের কোটা চালু থাকবে। সরকারি স্কুলের ১০ শতাংশ আসন সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্যও বরাদ্দ থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান নতুন এই নীতিমালা ভঙ্গ করে, তাহলে মন্ত্রণালয় সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। চলতি সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ নীতিমালা জারি করা হতে পারে।
| web |
9c8e6fb0058d68d20f15f01cafee5238 | মতলব পৌরসভার দক্ষিণ দিঘলদী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাহেব আলী (৮৯) এর রাস্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে।গতকাল ২৮ জুন রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় দক্ষিণ দিঘলদী জামে মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানেদাফন করা হয়।
জানা যায়, ওই গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাহেব আলী ২৮ জুন দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় বার্ধক্যজনিত কারণেতাঁর নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন।তিনি স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের একটি চৌকস দল রাস্ট্রীয় মর্যাদায় অভিবাদন জানায়। রাস্ট্রের পক্ষে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা ও গার্ডঅব অনার প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক।
এ সময় অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ, সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপটিকমান্ডার বশিরউল্লাহ সরকার, বীর মুক্তিযোাদ্ধা মোস্তফা কামাল,মুক্তিযোদ্ধা ছলিম উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা বিভূতিভুষণ মজুমদারসহএলাকার মুসুল্লীগণ উপস্থিত ছিলেন।
| web |
d8b93eaeb9e96632feb07a21734807e08b478a03 | দেশে এবার নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন নৌ বাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর।
আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এক শোক সংবাদে আইএসপিআর জানায়, সম্প্রতি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন সাবেক নৌ-প্রধান মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম। গত ১ জুলাই তাকে রাজধানীর সিএমএইচ এ ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দিবাগত রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
এতে আরো বলা হয়, মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। আজ বনানীতে অবস্থিত নৌ বাহিনীর সদর দপ্তরের মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বনানী সামরিক কবরস্থানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে সাবেক এই নৌ-প্রধানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তার আত্মীয়-স্বজনসহ নৌ বাহিনীর সর্বস্তরের সদস্যরা। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
১৯৯১ সালের ৪ জুন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম। দীর্ঘ চার বছর নিষ্ঠা ও সফলতার সঙ্গে এ পদে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯৫ সালের ৩ জুন তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৪১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম। ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তান নেভাল একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। পরে ১৯৬৩ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি কমিশন লাভ করেন।
দীর্ঘ পেশাগত জীবনে তিনি বিভিন্ন জাহাজ এবং ঘাঁটির অধিনায়কসহ বিএন ফ্লিট, কমান্ডার সুপারিন্টেনডেন্ট ডকইয়ার্ড, চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল এবং নৌ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া নৌ বাহিনীর সদর দপ্তরের বিভিন্ন পরিদপ্তরের পরিচালক ও সহকারী নৌ-প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম সাবমেরিনের ওপর তুরস্ক ও ফ্রান্সে বিশেষায়িত কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল কমান্ড কলেজ থেকে। তিনি থাইল্যান্ডের রাজা কর্তৃক 'নাইট গ্র্যান্ড ক্রস' উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.
| web |
214eef39ba8de7ad5768440b06cccc24fa23141c | সাঁথিয়া (পাবনা) সংবাদদাতা : সাঁথিয়া উপজেলাধীন নাগডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদের চাচাতো ভাই আঃ মতিন (৫৫) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এসময় চেয়ারম্যানের আপন ভাই জুয়েল রানা (৩৫)আহত হয়। এ ঘটনায় রবিবার সকালে সাবেক চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ বাদী হয়ে ১৮জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। নাগডেমরা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজকে প্রধান আসামী করা হয়। ওই দিনই চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজকে আটক করে থানা পুলিশ। বর্তমান চেয়ারম্যানকে আটকের পর থেকেই চলছে এলাকায় নানা গুঞ্জন। পক্ষে বিপক্ষে চলছে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল। তবে অধিকাংশ মানুষ ও হাফিজের পরিবারের সদস্যরা চায় তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক তথ্য উদঘাটন করে আসল দোষীকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
| web |
e8e47231e4c059546f2809016a7dfcf421696c80553087c34e7ff38f4a17b411 | পরিবর্তন হয়। এটি খুব বেশি হতে থাকে। ফ্লাক্স স্থাপন করতে তোমার কার্যত কোন ম্যাগনেটাইজিং কারেন্টের প্রয়োজন হয় না।
আমার আগের ক্লাসে আমি এই কাজটি করেছিলাম। এটি আদর্শ ট্রান্সফরমার এবং আমি নো লোড কন্ডিশনের (no load condition) অধীনে যে ফেজর ডায়াগ্রামটি (phasor diagram) এঁকেছিলাম সেটি ছিল এইরকম। এটি হল অ্যাপ্লায়েড ভোল্টেজ (applied voltage) V, এবং এটি প্রাইমারিতে ইন্ডিউসড ভোল্টেজ (induced voltage), যেটি V' এর সমান দৈর্ঘ্যের এবং এটি হল E'। সেকেন্ডারি ইনডিউসড ভোল্টেজ E, যার N, টার্ন আছে এবং এটি হল N, টার্ন। সেকেন্ডারি ইনডিউসড ভোল্টেজও (secondary induced voltage) এর সাথে ফেজে (phase) থাকবে। অবশ্যই, এর দৈর্ঘ্য ভিন্ন হবে, হতে পারে V, এর চেয়ে বেশি, V, এর থেকে কমও হতে পারে। এটি N, N, এর চেয়ে বড় না ছোট তার উপর নির্ভর করে। এটি হল অ্যাপ্লায়েড ভোল্টেজ।
ম্যাগনেটাইজিং কারেন্ট 90° ল্যাগে (lag) থাকবে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে এটি 0, কোন ম্যাগনেটাইজিং কারেন্ট নেই। এটি ওপেন সার্কিট ফেজর ডায়াগ্রাম (open circuit phasor diagram), OC ফেজর ডায়াগ্রাম। অবশ্যই, ম্যাগনেটাইজিং কারেন্ট 0, কিন্তু এখানে ফ্লাক্স আছে। তাই নয় কি? কেন? কারণ বিশুদ্ধভাবে ইন্ডাকটিভ সার্কিটে (purely inductive circuit) যত সামান্যই ম্যাগনেটাইজিং কারেন্ট টানা হোক না কেন, সেটা অ্যাপ্লায়েড ভোল্টেজের সাথে 90° ল্যাগে থাকবে। ∞ এখানে থাকবে, ∞ হচ্ছে ফাইনাইট (finite)। এর থেকে ভাল হতে পারে না, কারণ তুমি খুব ভাল উপাদান ব্যবহার করছ যারu, এর ইনফিনিটির (infinity) প্রতি প্রবণতা থাকে। সুতরাং, এটি হল ওপেন সার্কিট ফেজর ডায়াগ্রাম।
তারপর আমি তোমাকে বলেছিলাম, এই ফ্লাক্স ∞ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় mmf হল N, I যা অদৃশ্যভাবে ছোট। ∞ সেখানে আছে, কিন্তু এই ফ্লাক্স স্থাপনের জন্য সেই mmf প্রয়োজনীয় ছিল। যখন তুমি সুইচটি বন্ধ কর, এখানে একটি EMF উপলব্ধ হয় এবং এখানে একটি ইমপিডেন্স (impedance) 22 রয়েছে। তাই, সার্কিটে কারেন্ট থাকবে, তাৎক্ষণিক কারেন্ট (instantaneous current) হল i, বা ফেজর উপস্থাপনা (phasor representation) হল ক্যাপিটাল I,। এই কারেন্ট লোডে বিতরণ করা হবে।
কিন্তু যে মুহূর্তে সেকন্ডারি থেকে কিছু কারেন্ট টানা হয়, প্রাইমারি সেই মুহূর্তে নীরব থাকতে পারে না, এটি নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না। যে মুহুর্তে এটি হবে, প্রাইমারি একটি অতিরিক্ত কারেন্টও টানবে যার মান হবে I এই কারেন্টটি প্রাইমারি টানবে এবং কারেন্টের দিকটি এরকম। এই চৌম্বকীয় সার্কিটে দুটি অতিরিক্ত mmf তৈরি
| speech |
7414ebe5717d585cb3ed65a17dac4a1f | স্বামীর সংসারে গিয়েই সিন্ধুতাই মুখোমুখি হন এক অচেনা জীবনের। ক্লান্তিহীন শারীরিক পরিশ্রম আর সেবা করেও মন জয় করতে ব্যর্থ হন স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির। মাত্র ১৯ বছর বয়সের মধ্যেই জন্ম দেন তিন সন্তানকে। চতুর্থ সন্তান জন্মের আগে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন আরো বেড়ে যায়। এর মধ্যেই একদিন তাকে মারধোর করে গোয়ালঘরে রেখে আসেন তার স্বামী।
সিন্ধুতাই সপকাল, এতিম শিশুদের নিয়ে নিজের রাজ্য গড়ে তুলেছেন ভারতের মহারাষ্ট্রের এই মহীয়সী নারী। বর্তমানে সংখ্যা প্রায় ১৫শ। ১৯৭৩ সাল থেকে এসব এতিম শিশুদের দেখাশোনা করছেন তিনি। স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হবার পর থেকেই পথশিশু আর এতিমদের মা হয়ে উঠেন ৭১ বছর বয়সী এই মহীয়সী নারী।
সিন্ধুতাই জন্ম নেন ভারতের মহারাষ্ট্রের ওয়ারদা শহরে। কন্যাসন্তানের প্রতি নেতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির থাকলেও গরীব বাবা ভালোবাসতেন তার মেয়েকে। তাইতো পাঁচ বছর বয়সে স্কুলেও ভর্তি করিয়ে দেন। কিন্তু বেশি দূরে এগোয়নি সিন্ধুতাইয়ের পড়াশোনা। সমাজের চাপে মাত্র ১০ বছর বয়সে তাকে বিয়ে দেওয়া হয় ২০ বছরের এক যুবকের সঙ্গে।
তিনি বলেন, তাকে মারপিটের পর ওই গোশালায় রেখে দেওয়া হয়, যেনো গরুর পায়ের আঘাতে মৃত্যু হয় তার। এতে তার স্বামীর পরিবারের ওপর অভিযোগ উঠবে না, তারা তাঁকে মেরেছে। অনেক গরুর ছোটাছুটি দেখে ভয় পেয়ে যান তিনি। নিজের জীবনের ইতি এখানেই, মনে মনে ভাবেন তিনি। কিন্তু তার জীবনতো তার হাতে নেই। এতো ঈশ্বরের দেয়া। 'রাখেন আল্লাহ, মারে কে'- প্রবাদেরই প্রমাণ তিনি। অন্য গরু যখন তার দিকে ছুটে আসছিলো, একটি গরু তার সামনে এসে দাঁড়ায়। সে যাত্রায় বেঁচে যান তিনি।
সেখানেই নিজের চতুর্থ সন্তানকে পৃথিবীতে নিয়ে আসেন তিনি। হাতের কাছে কোনো কিছু না পেয়ে পাথর দিয়ে নাড়ী কাটেন। একে একে ১৬ বার আঘাত করে মেয়ের সঙ্গে নিজের নাড়ীর বিচ্ছেদ করেন সিন্ধুতাই। তবে এখানেই শেষ নয়। এরপর সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানকে নিয়ে নিকটবর্তী রেল স্টেশনে যান তিনি। আত্মহত্যার জন্য শুয়ে পড়েন রেল লাইনে। তবে রেল ধর্মঘট হওয়ায় সেবারও বেঁচে ফেরেন সিন্ধুতাই। কিন্তু রেল স্টেশনে ভিক্ষুক আর এতিমদের দেখে নিজের কষ্টকে ছোট মনে হয় তার। তিনিও শুরু করেন ভিক্ষাবৃত্তি। সিন্ধুতাই বলেন, 'আমার দুধের শিশুকে নিয়েই আমি ভিক্ষা শুরু করি। তখনই আমি আমার মনে এক বড় ধরনের আকুতি শুনতে পাই, এতিমদের দেখাশোনা করার। আমি উপলব্ধি করি, ভিক্ষা করা আমার মধ্যে নিহত ছিলো।'
এরই মধ্যে বাস্তুছাড়া ভিক্ষুক ও এতিমরা তার নতুন পরিবারের সদস্য হন। এদের দেখভালের জন্য দিনভর তিনি ভিক্ষা করতেন। সন্ধ্যায় এসে খাওয়াতেন তাদের। রাস্তার এ পরিবার পেয়ে আত্মহত্যার কথা ভুলে গেলেও প্রতিদিনই জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে তাঁকে। আত্মহত্যার চিন্তা বারবার উঁকি দিতো তাঁর মন-জগতে। একদিন আবারও আত্মহত্যার কথা ভাবেন তিনি। সেদিনই রাতে খাবার খাচ্ছিলেন এ অভাগিনী মা। প্রতিদিন অন্য ভিক্ষুকদের খাবার দিলেও সেদিন দেননি, নেননি খোঁজ-খবরও। সিন্ধুতাই বলেন, 'ওই দিন তিনি কাউকে খাবার দেননি, কেননা পেটপুরে খেয়ে তিনি বিদায় নিতে চেয়েছিলেন পৃথিবী থেকে।'
ওই খাবারকে মনে করেছিলেন, তার শেষ খাবার। এমন সময় এক পুরুষ ভিক্ষুক আসে। ওই ভিক্ষুক জ্বরে কাঁপছিলেন, ক্ষুধায় কাতরাচ্ছিলেন। কান্না করছিলেন কিছু খেতে। আশপাশের মানুষের কাছে চাচ্ছিলেন পানি। সহ-ভিক্ষুককে দেখে মন গলে গেলো সিন্ধুতাইয়ের। শুধু পানি নয়, সাথে কয়েকটি গমের রুটিও দিলেন তাকে। এতে ওই ভিক্ষুক সুস্থ হয়ে উঠলেন। এবারের এ ঘটনা তাকে বাঁচালো আত্মহত্যা করা থেকে।
ওই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে ওই ভিক্ষুক বেঁচে গেলেন। আবারও একবার আমি উপলব্ধি করলাম, জীবন কতটা শক্তিশালী। আর এর পরেই আমি জীবন ছেড়ে দিলাম ঈশ্বরের কাছে, ত্যাগ করলাম আত্মহত্যার পরিকল্পনার।'
এরপর নিজের নতুন পরিবারকে মনোযোগ দিয়ে গড়া শুরু করলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তার হাতে পালিত সন্তানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫শ। এদের মধ্যে রয়েছে ২৭০ জন জামাতা, ৪০ জনেরও বেশি ছেলের স্ত্রী এবং এক হাজারেও বেশি নাতি-নাতনি। তার নিজের মেয়ে মমতাসহ এদের অনেকে হয়েছেন আইনজীবী, চিকিৎসক ও বিভিন্ন মর্যাদাশীল পেশার অধিকারী। মমতাও শুরু করেছেন তার নিজের এতিম আশ্রয় কেন্দ্র। তার এক পালিত সন্তান তারই জীবনকথা নিয়ে করেছেন পিএইচডি।
তার এই জীবনযুদ্ধের ও মানবতাবাদী কর্মজীবনের জন্য সম্মানিত হয়েছেন দেশে বিদেশে। পেয়েছেন ২৭০টিরও বেশি পুরষ্কার। তাকে নিয়ে হয়েছে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও, তার মায়ের ভাষা-মারাঠিতে। পুরষ্কারের সাথে সম্মাননা বাবদ যে অর্থ পান তিনি তা পালিত শিশুদের দেখভালে ব্যয় করেন। পুনে ও চিকালধারায় গড়ে তুলেছেন এতিমদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র।
এসব চালাতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তহবিল সংগ্রহ করতে সফর করেন তিনি। তার শেষ ইচ্ছা পুষ্টিহীন শিশুদের জন্য একটি আশ্রয়কেন্দ্র ও হাসপাতাল নির্মাণ করা। তিনি বলেন, 'মানুষ এতিমদের বিষয়টি বুঝতে পারে, এ জন্য অনেকে অনুদানও দেয়। কিন্তু পুষ্টিহীন শিশুদের জন্য এ ধরনের মানবিক সাহায্য তেমন নেই। পুষ্টিহীনতার কারণেই মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত এলাকায়, বিশেষ করে আদিবাসীদের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার বেশি।'
তিনি জানান, মহারাষ্ট্রে আদিবাসী এলাকায় অনেক স্বামী তাদের স্ত্রীকে ছেড়ে যান। না খেয়ে বেচে থাকেন গর্ভবতী নারীরা। মায়ের পেটে থাকার সময় থেকেই অপুষ্টিতে ভোগে অনেক শিশু। আমি এ ধরনের গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে রাখতে চাই। সন্তান প্রসবের তিন মাস পর আমার বাড়িতে (আশ্রয়কেন্দ্র) রাখবো তাদের। এতে করে মা ও সন্তান সুস্থ ও বেচে থাকবে। এটা আমার স্বপ্নের প্রকল্প। এর মাধ্যমে আমি আমাকে এই পৃথিবীতে পদচিহ্ন রেখে যেতে চাই।'
| web |
36a8f1a2a562d3be11d3a213d9250abfb092f3f7d17a779e0f78d5b36f9aa99d | পঞ্চম দৃশ্য
মহম্মদ। আমায় রাজ্যের লোভ দেখাচ্ছেন পিতা ? বলি নাই যে, কর্তব্যের জঙ্ক ভারত সাম্রাজ্যটা আমি লোষ্ট্রখণ্ডের মত দূরে নিক্ষেপ করেছি ? পিতামহ সে দিন এই রাজ্যের লোভ দেখাচ্ছিলেন, আপনি আজ আবার সেই রাজ্যের লোভ দেখাচ্ছেন ? হায়। পৃথিবীতে সাম্রাজ্য কি এতই মহার্ঘ ? আর বিবেক কি এতই সুলভ ? সাম্রাজ্যের জন বিনেক খোয়াবো? পিতা! আপনি বিবেক বর্জ্জন করে। সাম্রাজ্য লাভ করেছেন, সে সাম্রাজ্য কি পরকালে নিয়ে যেতে পাৰ্ব্বেন ? কিন্তু এই বিবেকটুকু বৰ্জ্জন না কর্লে সঙ্গে যেত ।
ঔরংজীব। মহম্মদ ! মহম্মদ। পিতা !
ঔরংজীব। এর অর্থ কি ?
এর অর্থ এই যে, আমি যে আপনার জন্য সব হারিয়ে বসে আছি, সেই আপনাকেও আজ আর হৃদয়ের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছি নাবুঝি তাও হারালাম । আর আমার মত দরিদ্র কে! আর আপনিআপনি এই ভারতসাম্রাজ্য পেয়েছেন বটে ! কিন্তু তার চেয়ে বড় সাম্রাজ্য আজ হারালেন ।
ঔরংজীব। সে সাম্রাজ্য কি ?
মহম্মদ। আমার পিতৃভক্তি!, সে যে কি রঞ্জ, সে যে কি সম্পদ - কি যে হারালেন - আজ আর বুঝতে পাচ্ছেন না। একদিন পার্ব্বেন
বোধ হয়।
चैজী- मর-बগর সিকে এगिन
| pdf |
8f38e75754be5af248252895964b914e3ce863e9 | কর আহরণ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অবস্থান কমনওয়েলথভুক্ত অন্যান্য দেশের, যারা উত্তরাধিকার সূত্রে একই কর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি পেয়েছে, তুলনায় অনেক পিছিয়ে। এটার অন্যতম কারণ অন্যসব দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার উদ্যোগের দ্রুত বাস্তবায়ন। যেমন- ভারত ১৯৬১ সালে, মালয়েশিয়া ১৯৬৭ সালে ঔপনিবেশিক আমলের আয়কর আইনকে যুগোপযোগী করে নেয়। ইন্দোনেশিয়া কয়েক বছর পরপর তাদের রাজস্ব আহরণ আইনকে রীতিমতো ঢেলে সাজায়। একই সমতলে অবস্থানরত কমনওয়েলথ সদস্য দেশ বাংলাদেশে আয়কর আইনের আধুনিকতম সংস্করণ ১৯৮৪ সালে, তাও অর্ডিন্যান্স আকারে। তা যুগোপযোগী করতে আইন আকারে পাস ও প্রবর্তনের কসরত চলছে গত দেড় যুগ ধরে। বাংলাদেশ ও ভারতের কর ব্যবস্থা, সুবিধা, ফরম্যাট মূলত একই। তবে একটা বড় প্রশাসনিক পার্থক্য হলো যে, বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ড পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ কর, এক মন্ত্রণালয় এবং একজন প্রশাসনিক চেয়ারম্যানের অধীনে। ভারতে তা নয়, সেখানে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ করের প্রশাসন আলাদা। আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকেও ভারতের কর বিভাগ বাস্তবায়নকারী হিসেবে স্বশাসিত। কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পলিসি প্রেসক্রিপশন ও থ্রেসহোল্ড দেয়ার ব্যাপারে তাদের নিয়ন্ত্রণ ও একটা শক্তিশালী অবস্থান যেমন আছে তেমনি রাজ্য পর্যায়ে আছে স্থানীয় কর আইন ও ব্যবস্থাপনার সমান্তরাল প্রণয়ন ও প্রয়োগের সুযোগ।
আরেকটি হলো হিসাব সংরক্ষণ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের একটা দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। বাংলাদেশেরও আছে, কিন্তু হিসাব পদ্ধতি, কোম্পানির আইন- সব মিলিয়ে দেশগুলোতে একটা টেকসই সংস্কৃতি গড়ে উঠলেও সে সড়কে বাংলাদেশের ওঠার প্রয়াস প্রলম্বিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এক হাতে হয়। তাই এখানে ডিসক্রিয়েশনারি পাওয়ার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিগত বিষয়গুলো অনেক জটিল, স্বেচ্ছা ব্যাখ্যা আচারি ও নিবর্তনমূলক হয়ে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে আইনের ব্যাখ্যা ধোঁয়াশে হয়ে যায়। অন্যান্য দেশে ওই সমস্যা তেমন একটা নেই। তারা অনেকটা স্বচ্ছ সংহত একটা আধুনিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়েছে।
ভ্যাট আইন প্রণয়ন ও প্রবর্তনে বাংলাদেশ যথেষ্ট ধীর এবং এখনো দোটানায়। ভ্যাট মধ্যস্বত্বভোগকারীদের দখল থেকে সরকারি তহবিলে আনার আইনকানুন-কলাকৌশল যেন সহজেই কুলিয়ে উঠতে পারছে না। বাংলাদেশে আরেকটি সীমাবদ্ধতা হলো যে মূল্য নির্ধারণ কিংবা ট্যারিফ ঠিক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্যারিফ কমিশন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন এনবিআর শুল্ক কর হার নির্ধারণ ও আরোপের সময় সেটিকে তেমন একটা আমলে নেয় না। একইভাবে আমদানি রপ্তানি শুল্ক পরিশোধ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা বা প্রজ্ঞাপন জারি করতে গেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি আনতে হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের মধ্যে মতামতের রশি টানাটানিতে শুল্ক আহরণ মাঠে মারা যায়। ভারত, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়ায় শুল্কায়ন সিদ্ধান্তদানকারী টায়ার বা লেয়ার অনেক কম। অধিকাংশ দেশে ট্যারিফ কমিশন শুল্ক আরোপ থেকে শুরু করে সবকিছু দেখে। বাংলাদেশের গণশুনানি করে ট্যারিফ কমিশন। কিন্তু শুল্ক আরোপ করে এনবিআর। এই জটিলতা নিরসনে সংস্কারের কথা বলা হলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশে রাজস্ব আইনগুলোর প্রয়োগ, পদ্ধতি প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, এমনকি অনলাইনিকরণের প্রয়াস চলছে তো চলছেই, পদ্ধতি সাপোর্ট করছে না। ঘুরে-ফিরে দেখা যায় একটা আন্তঃঅবিশ্বাস বিরাজ করছে। পরস্পরকে এড়িয়ে যাওয়ার এবং ফাঁকি দেয়ার চেষ্টাও চলছে। এ ধরনের ঘটনা ভিয়েতনামে খুব কম। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্যও সহজ ও পদ্ধতি মাফিক করায়ন ও আহরণের এবং বিভিন্ন কর রেয়াতের ব্যবস্থাও আছে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য হলো এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক কর সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা থাকলেও রাজস্ব বিভাগের কাছে গিয়ে বাস্তবে তা আরেক রকম মনে হয়। একটার সঙ্গে আরেকটার সঙ্গতি নেই। ভিয়েতনামে এ ধরনের জটিলতা ও অসঙ্গতি খুব একটা নেই। রাজস্ব বিভাগ যা বলছে, সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানও তাই বলছে। বাংলাদেশে এ রকম সমরূপতা নেই। ভিয়েতনামে বিদেশি বিনিয়োগ বেশি আসার পেছনে এই নীতিগত সংহতি একটা বড় ভূমিকা রাখছে।
মালয়েশিয়ায় যেমন মাইডা (মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) সার্বিকভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সমন্বয় করে। সেখানে কর, কাস্টম পলিসি সব এক জায়গাতে করা হয়েছে। অর্থাৎ মাইডা যা বলবে ওটাই শেষ কথা। ভিয়েতনামের সঙ্গে মালয়েশিয়ার পার্থক্য হচ্ছে তারা সব বিষয় সমন্বয় করে একটিমাত্র প্রতিষ্ঠানের কাছে সব ধরনের ক্ষমতা দিয়েছে।
১৮৬০ সালে জেমস উইলসন (১৮০৫-১৮৬০) ব্রিটিশ ভারতে প্রথম আয়কর আইন প্রবর্তন করেন। ব্রিটিশরা ভারতের শাসনভার নেয়ার পর প্রথম অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিল তাকে। ১৮৫৯ সালে তিনি ভারতে আসেন, ১৮৬০ সালের ৭ এপ্রিল তিনি প্রথম বাজেট বক্তৃতায় 'জনসেবার' জন্য রাজস্ব আহরণের যে ফর্মাট-ফর্মুলা দিয়েছিলেন, এখনো বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ কমনওয়েলথ দেশগুলোতে তা অনুসরণ করা হচ্ছে। শুধু সংস্কার হয়েছে দৃষ্টিভঙ্গির। যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি কর সংস্কৃতিতে ও অবকাঠামোয় ততটা উন্নত নয়, সেহেতু উন্নত বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি, রীতিপদ্ধতি ও নিয়মকানুন সরাসরি কাট-পেস্ট করে অনুসরণে সাফল্য আসতে ও টেকসই হতে বিলম্ব হচ্ছে। যে স্টেজে যে এটিচুড বা মনোভঙ্গি (মাইন্ডসেট) বা উপলব্ধি থাকার কথা সেটায় না থেকে যদি এটা ভাবা হয় যে, উন্নত অর্থনীতির মতো আমাদের সব করদাতা শিক্ষিত, কর দানে দায়িত্ব সচেতন এবং তারা আইন-কানুন সব বোঝেন জানেন, তাহলে কর-দৃষ্টিভঙ্গি (মাইন্ডসেট) ভিন্ন আঙ্গিকে চলে যাবে। এমন অবস্থায় রাজস্ব আহরণ পরিবেশ-পরিস্থিতি প্রগ্রেসিভ না হয়ে রিগ্রেসিভ হতে পারে। নতুন করদাতা আসতে যেহেতু চাচ্ছে না, বা তাদেরকে আনা যাচ্ছে না, সেহেতু তাদের স্থলে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর চাপ বেড়ে গেলে তারাও পথ খুঁজতে পারেন কীভাবে কর দেয়া থেকে ফাঁকি দিয়ে পরিত্রাণ মিলতে পারে।
বাংলাদেশ রাজস্ব আহরণের অবস্থান ভারত, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় পিছিয়ে থাকার আর যেসব কারণ তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য অবারিত কর অব্যাহতি আর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি। বাংলাদেশে অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের জন্য দেয় কর ও জরিমানা আরোপের সঙ্গে অনৈতিক পন্থায় অর্জিত আয়ের ওপর কর হার হ্রাস বা জরিমানা ছাড় দেয়ার কিংবা 'উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন না করার সুযোগ দেয়া'কে এক করে দেখা হয়। দেখা যায়, একজন লোকের অপ্রদর্শিত অর্থ ঘোষণার সুযোগে দুর্নীতিজাত কালো টাকার মালিককে দেয়া হচ্ছে বিশেষ কর ছাড়। এটি একটি বড় ধরনের কর প্রণোদনা। আবার বলা হচ্ছে, কালো টাকার উৎস নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করবে না অর্থাৎ দুর্নীতিবাজকে রাষ্ট্র সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বরং ইমিউনিটি দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেশী ভারতে ১৯৯৭ ও ২০১৫ সালে কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ দেয়া হয়েছিল সেখানে করের ও জরিমানার হার হ্রাস, জিজ্ঞাসাবাদেও অব্যাহতি ছিল না আর এ সুযোগ ছিল নির্দিষ্ট সীমিত সময়ের জন্য। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায়ও তাই। এসবের ব্যতিক্রম একমাত্র বাংলাদেশেই।
আমেরিকাতে আয়কর আইন কঠোর হওয়ার কারণে সবাই আয়কর দিতে বাধ্য। বাংলাদেশে পেশাজীবীরাসহ শহরের বাড়ির মালিকরা পর্যন্ত বা গ্রামের ধনী কৃষক তারা আয়কর এড়িয়ে যেতে পারছেন। বাংলাদেশে মনিটরিং সক্ষমতায় প্রচুর ঘাটতি রয়েছে।
বিদেশে যেমন কেউ গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে কোথাও থামতে হবে না। সে টোল দিয়েছে, কিন্তু রিসিটের জন্য তাকে ঘুরতে হচ্ছে না, আবার টোলের টাকা সরকারের কোষাগারে পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তায় তাকে ভুগতে হচ্ছে না। কিংবা টোল স্টেশনের ইজারা নেয়া নিয়ে গণ্ডগোলও নেই। গাড়ির মালিকদের চিপস সরবরাহ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় অর্থটা তার ব্যাংক হিসাব থেকে কেটে নেয়া হয়। সম্প্রতিক একটি সংস্কারের কথা- যেমন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই অডিট রিপোর্টের একটি কপি জয়েন্ট স্টক রেজিস্ট্রারের অফিসে (আরজেএসসি) জমা দেয়ার কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিতে সব প্রতিবেদন পরীক্ষা করার সময় ও লোকবল তেমন নেই। ফলে ভুয়া প্রতিবেদন দাখিলের চল চালু হয়েছে। ফলে অনেকে এনবিআরে এক ধরনের প্রতিবেদন, ব্যাংকে অন্য ধরনের প্রতিবেদন দেয়। এটা নিয়েই বহু ফাঁকির ঘটনা ঘটে। এ জন্য গত বছর থেকে আইসিএবি, আরজেএসসি, এফআরসি, এনবিআর, ব্যাংলাদেশ ব্যাংক একই অডিট রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে, তা সব সমন্বয় করে একীভূত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রতিবেদনে গরমিল থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ধরনের সৃজনশীল সংস্কারের কাজ করতে হবে।
সাধারণ করদাতার অভিযোগ জানানোর জন্য, এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবে কর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় অনেক কিছু করার জন্য যে প্রতিষ্ঠান গড়া হয়েছিল, থাকা উচিত ছিল সেটি হলো ট্যাক্স ওমবুডজম্যান অফিস। ১৬৬টি দেশে আছেও। ২০০৫ সালে এ অফিস যে উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে গঠিত হয়েছিল, তা অর্জনের সুযোগ না দিয়ে ২০১১ সালে এসে পুরো অফিসটাই বিলোপ করা হয়। ২০০৫ সালে কর ন্যায়পাল অফিস গঠনের সময় বলা হয়েছিল, এখানে মানুষ করসংক্রান্ত হয়রানি ও বিরোধের বিচার পাবে। মাত্র ৬ বছরের মাথায় ২০১১ সালে বলা হলো, 'করদাতার সঙ্গে ভালো আচরণ করলে, সেবা দিলে, ন্যায় বিচার করলে, কর দেয়ার পদ্ধতি সহজ করলে এ অফিস লাগবে কেন। ' আরো বলা হলো 'কর আইন, শুল্ক ও ভ্যাট আইনের মধ্যে কর ন্যায়পালের প্রভিশন নেই, তাই সেটিকে বিলোপ করতে হবে। ' ন্যায়পাল অফিস কর আইনের সঙ্গে সংযুক্ত না হলে আইন সংশোধন করে সংযুক্ত করে নিতে হবে। করদাতাদের আস্থায় আনতেই তো আইন করে কর ন্যায়পাল অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
মোদ্দাকথা হলো কর ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না করলে করজাল বৃদ্ধি তথা কর আহরণে উন্নতি আসবে না। কর-জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশ যে তলানিতে, তার কারণটাই হলো নানাভাবে এ সমাজে কর এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। মানে কাউকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করা হচ্ছে না বলে এমনটিই হচ্ছে। রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে ও পদ্ধতি প্রক্রিয়ায় আইনসঙ্গত স্বচ্ছতার আলোকে গতিশীলকরণের স্বার্থে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আইন ও প্রক্রিয়ার যৌক্তিকতা যথা বিশ্লেষণ হওয়া উচিত। বিশেষ করে কর আহরণ প্রক্রিয়ার যেসব আইনি জটিলতা সেটা ঠিক মতো সংস্কারের মাধ্যমে স্পষ্ট করা না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে। অন্তত এই অবস্থায় রেখে ব্যাপক কর আদায়ের যে কথা চিন্তা করা হয়ে থাকে তা অর্জন স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে আইনের আর্থ-প্রশাসনিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে যদি আরো কিছু অসম্পূর্ণতা ও ফাঁকফোকর থেকে থাকে তা সংশোধন করা না গেলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর কর্তৃপক্ষের নেতৃত্ব দেয়া কঠিন হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : কলাম লেখক, সাবেক সচিব ও সাবেক চেয়ারম্যান- এনবিআর।
| web |
58f5d1351aa0ce3448d50750ab01e901d4c670e7 | কল্যাণ ডেস্কঃ নিজেকে মুঘল রাজবংশের উত্তরাধিকারী দাবি করে সম্রাটদের এক সময়ের মনোরম প্রাসাদ হিসেবে ব্যবহৃত লাল কেল্লার মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভারতের কলকাতায় বসবাসরত এক নিঃস্ব বয়োজ্যেষ্ঠ নারী। সুলতানা বেগম নামের ওই নারী কলকাতার শহরতলীর একটি বস্তিতে দুই কক্ষের ঝুপড়িতে বসবাস করেন। নামমাত্র পেনশনে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন বেঁচে থাকার লড়াই।
ভারতের শেষ মুঘল শাসক সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের প্রপৌত্র মির্জা মোহাম্মদ বেদার বখতের সাথে বিয়ের নথিপত্র আছে সুলতানা বেগমের কাছে। ১৯৮০ সালে বেদার বখতের মৃত্যু তাকে কঠিন সংগ্রামের মধ্যে ফেলে দেয়। তিনি রাজকীয় মর্যাদার স্বীকৃতি এবং সেই অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন প্রায় ১০ বছর হয়ে গেছে। এখনো এর কোনো সুরাহা হয়নি।
নিজের স্বীকৃতির দাবিতে ভারতের একটি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সুলতানা বেগম। সপ্তদশ শতকে নির্মিত লাল কেল্লার বৈধ মালিক তিনিই বলে দাবি করেছেন বেগম। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই দুর্গ একসময় মুঘল সাম্রাজ্যের ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল।
এই নারীর মামলায় দেশটির সমাজকর্মীদের সমর্থন রয়েছে। সুলতানা বেগমের দাবি অনুযায়ী ভারতের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের বংশধরদের সঙ্গে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যেতে পারে বলে সমাজকর্মীরা জানিয়েছেন।
সুলতানা বেগম আদালতে দায়েরকৃত মামলায় বলেছেন, লাল কেল্লায় ভারতের সরকার অবৈধ দখলদারিত্ব ধরে রেখেছে। যার মালিকানা তার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত সপ্তাহে (ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ) দিল্লির হাই কোর্ট সুলতানা বেগমের আবেদনকে 'একেবারে সময়ের অপচয়' অভিহিত করে খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের বংশধর বলে যে দাবি করেছেন; সেটি বৈধ কি না সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি আদালত।
এর পরিবর্তে আদালত বলেছে, সুলতানা বেগমের আইনি দল জাফরের নির্বাসনের দেড়শ বছরেও কেন তার বংশধরদের দ্বারা এমন কোনো মামলা দায়ের করেনি, সে বিষয়ে যুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে সুলতানা বেগমের আইনজীবী বলেছেন, এই মামলার কার্যক্রম চলবে। এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের উচ্চতর বেঞ্চে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুলতানা বেগম এক অনিশ্চিত জীবন-যাপন করছেন। এমনকি বিধবা হওয়ার আগেই বস্তিতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। সেই বস্তিতেই এখনো তার বসবাস।
বেগম তার এক নাতির সাথে একটি ছোট খুপরিতে থাকেন। প্রতিবেশীর সাথে রান্নাঘর ভাগাভাগি করেন। রাস্তার পাশের নলকূপের পানি ব্যবহার করেন।
গত কয়েক বছর ধরে বস্তিতে তার ঘরের পাশে একটি ছোট চায়ের দোকান চালাচ্ছিলেন। কিন্তু রাস্তা সম্প্রসারণের সময় সেটিও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি মাসিক ৬ হাজার টাকার পেনশনে কোনো রকমে জীবন-যাপন করছেন।
ব্রিটিশ বেনিয়াদের বাণিজ্যিক উদ্যোগ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে ভারত জয়ের পর মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানীর সীমানা সংকুচিত হয়। ১৮৩৭ সালে মুঘল সামাজ্যে অভিষেক হয় সম্রাট জাফরের।
এর ২০ বছর পর ১৮৫৭ সালে ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে বিশাল বিদ্রোহ ঘটে (সিপাহী বিদ্রোহ); যা এখন ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসেবে স্বীকৃত। বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ায় সৈন্যরা রোগে-শোকে দুর্বল হয়ে যাওয়া ৮২ বছর বয়সী জাফরকে তাদের নেতা হিসেবে ঘোষণা করে। মুঘল এই শাসক প্রখ্যাত উর্দু কবি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
এর এক মাসের মধ্যে ব্রিটিশ সৈন্যরা দিল্লি ঘিরে ফেলে এবং নির্মমভাবে বিদ্রোহ দমন করে। রাজপরিবারের সদস্যরা আত্মসমর্পণ করা সত্ত্বেও সম্রাট জাফরের জীবিত ১০ ছেলের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।
গরুর গাড়িতে চড়ে প্রতিবেশী মিয়ানমারে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে যান জাফর এবং পাঁচ বছর পরে বন্দি অবস্থায় মারা যান তিনি।
বিদ্রোহের কয়েক বছর পর লাল কেল্লার অনেক ভবন ভেঙে ফেলা হয় এবং বিশ শতকের শুরুতে ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ এই কেল্লার সংস্কারের নির্দেশ দেওয়ার আগে সেটি বেহাল অবস্থায় পড়ে ছিল।
পরবর্তীতে ভারতীয়দের কাছে বৃটিশ শাসন থেকে মুক্তির এক 'শক্তিশালী প্রতীক' হয়ে ওঠে লাল কেল্লা।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৯৪৭ সালে দেশটির স্বাধীনতার পর প্রথম দিনে এই কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এখন প্রতিবছর ভারতের স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লায় প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সূত্রঃ এএফপি।
| web |
25d6adce6eae74959404664a66ee5dccce7fede0 | মোহাম্মদ সেলিম, মুন্সীগঞ্জ থেকে : মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামে রাস্তার বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। এখানকার সরু রাস্তা কেটে পাকা ড্রেন নির্মাণ করায় এখন এ পথে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন এ গ্রামের মানুষ। রাস্তার এ বেহাল দশার কারণে এ পথে লোকজনকে বর্তমানে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে।
গত ৬ মাস আগে রাস্তার এক অংশের জায়গায় রাস্তা কেটে সরু ড্রেন নির্মাণ করা হয়। আর সেই ড্রেনে এখন জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সেখানে এখন মশা উৎপাদন হচ্ছে নিত্যদিন। আশপাশের লোকজন নির্মিত ড্রেনে বিভিন্ন রকমের আর্বজনা ফেলছে। ড্রেনের ওপরে কোনো ঢাকনা নেই। এ সুযোগ নিচ্ছে ড্রেনের পাশের বাসিন্দারা।
জানা যায়, বিগত ৬ মাস আগে এখানে এমপির কোঠায় ৯ লাখ টাকার বরাদ্দের রাস্তার পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হয়। এ ড্রেনটি প্রায় ৯০০ ফুট বলে জানা গেছে। ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মণ্ডলবাড়ি থেকে পূর্বপাড়ার আজিজের বাড়ি পর্যন্ত ঢাকনাবিহীন ড্রেন নির্মাণ করা হয়। এ ড্রেনটি পাইপ লাইনের প্রকল্প ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পাকা আরসিসি ঢালাইয়ে ড্রেন নির্মাণ করা হয়। ড্রেন নির্মাণের পর থেকে এখানে মানুষের নানা রকমের ভোগান্তি বেড়েছে।
এ গ্রামের পূর্বদিকের ডিঙ্গাভাঙ্গা নতুন বাজার থেকে জাহাঙ্গীরের বাড়ি পর্যন্ত আরো একটি ড্রেন ১ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। সেই ড্রেনের সঙ্গে এ নতুন ড্রেনের সংযুক্তি ঘটানো হয়েছে ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের জন্য। জাহাঙ্গীর বাড়ির শেষ প্রান্তে একটি ডোবা রয়েছে। এ ড্রেনটি সচল হলে বৃহৎ এলাকার ময়লা পানি তখন এই ডোবায় গিয়ে পড়বে। তবে আগের ড্রেনটি অনেকটাই প্রশস্ত। আর এর আরসিসি ঢালাইও অনেকটাই মজবুত। এখানে একটি জালের মিলের আয়রন মেশিন রয়েছে। সেই মেশিনের জলধারা ঠিক রাখার কৌশল হিসেবে এ ড্রেনটি মজবুত করে তৈরির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পরের ড্রেনটি নির্মাণের সময় সেই বিষয়টিতে তেমনটা নজর রাখা হয়নি। তাতে এখানে দুটি ড্রেন নির্মাণে আলাদা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পঞ্চসার ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আব্দুল সালাম শেখ বলেন, ডিঙ্গাভাঙ্গার ড্রেনটি প্রথমে পাইপ লাইনের ড্রেন ছিল। পরে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হয়।
| web |
8b788389c5d9317f287ef975972424f77fc16901 | মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ বছরের এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিবেশী পারভেজ হোসেন নামে এক লম্পট যুবক এ কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার রাতে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিশুটি এখন থানা হেফাজতে রয়েছে। মঙ্গলবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে। এ ঘটনায় বইছে নিন্দার ঝড়। অভিযুক্ত পারভেজ ওই গ্রামের আলামিনের ছেলে। তিনি নছিমন চালক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী চা দোকানির কন্যা শিশুকে ভুলিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় পারভেজ। বাড়িতে কোনো লোকজন না থাকার সুবাদে তিনি শিশুটিকে যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি অবুঝ শিশু পরিবারের কাউকে না জানালেও সোমবার বিকেলের দিকে তার বাবা-মা জানতে পারেন। তার শারীরিক অবস্থা দেখে তারা দ্রুত তাকে নিয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে থানায় জানায়। গেল রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে পারভেজকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
| web |
aa4daa9b4790097655974221c6bf7fd563389b3f06e2408231506bcc70294693 | অতি দুৰ্দ্ধৰ্ষ সাত্যকিই তোমার সেনাগণকে সংহার করিবে। ত্রিভুবনে যাঁহার তুলনা নাই, কোন্ বুদ্ধিমান্ সেই বাহুদেবের সহিত সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইবে? হইবে? তিনি এক দিকে স্ত্রী, জ্ঞতি, বন্ধু, আত্মা ও পৃথিবী, আর অন্য দিকে একমাত্র ধনঞ্জয় অবস্থান করিলে সমান বিবেচনা করেন। পাণ্ডবগণ যে স্থানে অবস্থান করেন, দুৰ্দ্ধর্ষ যতায়। বাহুদেবও সেই স্থানে বৰ্ত্তমান থাকেন; অতএব কৃষ্ণ যাঁহাদিগের সহায় পৃথিবীও তাঁহাদিগের খল সহু করিতে সমর্থ হন না।
বৎস ! সাধু অর্থবাদী সুহৃদগণের ৰাক্যানুসারে অবস্থান কর ; বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্মের বাক্য গ্রহণ কর ; আমি কুরুগণের অর্থদশী ; আমার ঝক্য শ্রবণ কর ; এবং আমার ন্যায় দ্রোণ, কৃপ, বিকর্ণ ও মহঃরাজ বাহিনকেরও সম্মান রক্ষা কর; ইঁহারা সকলেই ধর্ম্মজ্ঞ ও সকলেই স্নেহৰান্ । বিরাট নগরে তোমার সম্মুখে তোমার ভ্রাতা ও সেনাগণ ভীত হইয়। গোসমূহ পরিত্যাগপূর্বক যে পলায়ন করিয়াছিল, আর অন্য যে সকল অদ্ভুত ব্যাপার শ্রবণ করিয়াছি, এক ব্যক্তি যে বহু ব্যক্তির সহিত সংগ্রাম করিতে সমর্থ হয়, উহাই তাঁহার দৃষ্টান্ত। ধনঞ্জয় একাকী সেই কার্য্য করিয়াছিল; সকল ভ্ৰাতা একত্র হুইলে কি না করিতে পারে : অতএব পাণ্ডবগণকে রাজ্যার্দ্ধ প্রদান করিয়া তাহাদিগের সহিত সৌভ্রাত সংস্থাপন কর।
পঞ্চষষ্টিতম অধ্যায়। বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! অনস্তয় মহাপ্রজ্ঞ ধৃতরাষ্ট্র পুনরায় সঞ্জয়কে রুহিলেন, হে সঞ্জয়! বাহুদেব বলিলে পর অর্জুন যাহ্! কহিয়াছিলেন; তাহার অবশিষ্ট বাক্য শ্রবণ করিতে আমার কৌতূহল জন্মিয়াছে ।
সঞ্জয় কহিলেন, মহারাজ ! দুৰ্দ্ধর্ষ ধনজয় বাহ্লদেবের বাক্য শ্রবণ করিয়া তাঁহার সমক্ষেই আমাকে কহিলেন, হে সঞ্জয় ! পিতামহ ভীষ্ম, রাঙ্গা পুরাষ্ট্র, দ্রোণ, ক্বপ, কর্ণ, বাহিলক, অশ্বত্থামা, সোমদত্ত, শকুনি, দুঃশাসন, শল, পুরুমিত্র, বিবিংশতি, • বিকর্ণ, চিত্রসেন, জয়সেন, অবন্তিদেশীয় বিন্দ ও অনুবিন্দ, দুমুখ, সিন্ধুরাজ, ভুরিশ্রবাঃ, ভগদত্ত, জলসন্ধ, ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ এবং অন্য যে সকল মুমুর্ষু রাজাকে' প্রদীপ্ত পাণ্ডবাগ্নিতে হোম করিবার নিমিত্ত আন য়ন করিয়াছেন, আমার বাক্যানুসারে তঁহাদিগের সকলকে ম্যায়ামুগত কুশল জিজ্ঞাসা ও অভিবাদন করিয়া ভূপতিগণের সমক্ষে পাপকৰ্ম্মা। কোপনম্বভাব দুৰ্ম্মতি, লুব্ধ প্রকৃতি দুর্য্যোধনকে এবং তাঁহার অমাত্যদিগকে এই সমস্ত কথা কহিবে।
তিনি এই কথা কহিয়া নেদ্বয় গৌহিতবর্ণ করিয়া বাহুদেবের প্রতি দৃষ্টিঃ পাতপূর্ববক পুনরায় কহিলেন, হে সঞ্জয় ! তুমি মহাব্জা মধুসূদনের নিকট যে এষ্কার শ্রবণ করিলে এবং আমি তোমাকে যে
প্রকার কহিলাম, তুমি সমস্ত ভূপালগণ
একত্র সমাগত হইলে অবিকল ঐ সকল কহিবে ; আর এই মহাযুদ্ধে রথ রূপ সমীরণে সন্ধুক্ষিত শর হুতাশনে শরাসন রূপ ভ্রুব দ্বারা যো হোন ক্রিয়া সম্পন্ন না হয় ; তোমর। তন্নিমিত্ত যত্নশীল হও অথবা শত্রুনিপাতন যুধিষ্ঠিরের অভিলষিত অংশ প্রদান কর। যদি ইহাতে সম্মত না হও, তাহা হইলে নিশ্চিত শরপ্রহারে তোম।দিগকে অশ্ব, পদাতি ও কুঞ্জর-সমভিব্যাহারে অতিভীষণ প্রেতরাজভবনে প্রেরণ করিব।
অনন্তর অমি আপনাদিগকে সেই সকল বাক্য অবগত করিবার নিমিত্ত ধনঞ্জয়কে আমন্ত্রণ ও বাস্তদেবকে নমস্কারপূর্ব্বক ত্বরান্বিত হইয়া আপনাদিগের নিকটে আগগন করিয়াছি।
যটষষ্টিতম অধ্যায়।
.. বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ ! রাজা দুর্যোধন সঞ্জয়ের বাক্য অভিনন্দন না করিলে, এবং অন্যান্য লোকেও মৌনী হইয়া রহিলে, তত্রস্থ সমস্ত ভূপতিগণ সভা হইতে গাত্রোত্থান করিলেন। শুভ্র পরবশ রাজা ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডবগণের জয় শঙ্কা করিয়া সেই নির্জন স্থানে শত্রুগণ, অন্যান্য লোক ও আপনাদের চেন্ট।সকল সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। হে সঞ্জয় ! আমাদিগের সেনামধ্যে কে শ্রেষ্ঠ ও কে অপকূন্ট, বল ? এবং তুমি পাণ্ডবগণের বিষয়ও বিশিষ্টরূপ অবগত আছ ; অতএব তাহাদিগের মধ্যেই বা কোন্ ব্যক্তি জায়ান্ ও কোন্ ব্যক্তি কনীয়ান
তাহাও কীর্ত্তন কর। তুমি উভয় পক্ষেরই সারজ্ঞ, সর্ব্বদর্শী, ধর্মার্থকুশল ও নিশ্চযজ্ঞ; এই নিমিত্ত তোমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছি ; তুমি বল, পাণ্ডব ও কৌরবগ পরস্পর যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলে কোন্ পক্ষ বিনাশ প্রাপ্ত হইবে।
সঞ্জয় কহিলেন, মহারাজ ! আমি কদাপি নির্জন স্থানে আপনাকে কিছুমাত্র কহিব না; কেন না, তাহাতে আপনার মনে অসূয়ার উদয় হইতে পারে ; অতএব মহাব্রত ব্যাসদেব ও দেবী গান্ধারীকে আনয়ন করুন। তাঁহারা উভয়েই ধাজ্ঞ, নিপুণ ও নিশ্চয়জ্ঞ ; তঁহারা আপনার অসূয়া খণ্ডন করিতে পারিবেন। আমি তাঁহাদের সন্নিধানে আপনাকে ধনঞ্জয় ও বাহুদেবের সমস্ত মত নিবেদন করিব।
বিদুর এই কথা শ্রবণ করিয়া অনতি বিলম্বে গান্ধারী ও ব্যাসদেবকে আনয়ন করিলেন। ব্যাসদেব গান্ধারীর সহিত সভা প্রবেশপূর্ধক ধৃতরাষ্ট্রের সন্নিহিত এবং তাঁহার ও সঞ্জয়ের মত অবগত হইয়া কহিলেন, হে সঞ্জয় ! তুমি ধনঞ্জয় ও বালুদেবের সমস্ত বিষয় অবগত আছ ; অতএব ধৃতরাষ্ট্র তদ্বিষয়ে যাহা কিছু জিজ্ঞাস করেন, তাহা কীর্তন কর।
সপ্তষষ্টিতম অধ্যায়।
সঞ্জয় কহিলেন, হে মহারাজ ! পরমপূজিত ধনুর্দ্ধর অর্জুন ও বাহুদেব স্বয়ং আবির্ভূত হইয়াছেন; ইঁহাদিগের প্রসাযানসন্ধিপৰ্ব্বাৰ্য্যায়।
দেই ব্রহ্মত্ব লাভ হইয়া থাকে।• মহানুভাব 'বাহুদেবের চক্রের অভ্যন্তর ভাগ এক ব্যাগ বিস্তৃত ; কিন্তু মায়াপ্রভাবে উহা যথাভিলাষ পরিবৰ্দ্ধিত হইয়া থাকে। ঐ চক্র কৌরবগণের সংহারক ; কিন্তু পাণ্ডবগণের প্রিয়তম ;- উহ। সকলের সারাগার জ্ঞাত হইবার নির্মিত তেজঃপুঞ্জে উদ্ভাসিত হইয়া আছে। মহাবল বাহুদেব অবলীলাক্রমে ঘোররূপ নরক, শম্বর, কংশ ও চৈদ্যান্তরকে পরাজিত করিয়াছিলেন । শ্রেষ্ঠরূপ সামর্থ্যবান্ পুরুষোত্তম কেশব সংকল্পমাত্রেই পৃথিবী, অন্তরীক্ষ ও স্বর্গ অন্তরীক্ষ ও স্বর্গ আহ্বারশে অনিয়ন করিতে পারেন।
মহারাজ ! আপনি পাণ্ডবগণের সারাসার অবগত হইবার নিমিত্ত যাহ। পুনঃপুনঃ জিজ্ঞাসা করিতেছেন, তাহা সংক্ষেপে শ্রবণ করুন। জগতে যে সকল· সারবান্ পুরুষ আছে, জনাৰ্দ্দন তাহাদিগের সকল অপেক্ষা উৎকৃষ্ট ; 'এমন কি, এক দিকে সমস্ত জগৎ আর অন্য দিকে একাকী জনাৰ্দ্দন অবস্থান করিলে মগান বোধ হয়। বাহুদেব ইচ্ছাগাত্রে এই সমস্ত জগৎ ভষ্মী ভূত করিতে পারেন; কিন্তু সমস্ত জগত একত্র মিলিত হইলেও তাঁহাকে ভস্মীকৃত করিতে সমর্থ হয় না । যে স্থানে সত্য, ধৰ্ম্ম, হ্রী ও সরলতা থাকে, ভগৰান্ গোবিন্দ সেই স্থানেই অবস্থান করেন; এবং যেখানে কৃষ্ণ, সেই স্থানেই জয় ; তাহার সন্দেহ নাই। ভূতাত্ম। জনাৰ্দ্দন অবলীলাক্রমে পৃথিবী, অন্তরীক্ষ ও স্বর্গ সঞ্চালিত করিতে পারেন । তিনি পাণ্ডব১৪৫
গণকে উপলক্ষ করিয়া সমস্ত লোক সম্মে!হন-পূর্বক আপনার অধাৰ্ম্মিক মূর্খ পুত্রগণকে দগ্ধ করিতে অভিলাষ করিতেছেন। ভগবান্ কেশব আত্মষোগপ্রভাবে নিরন্তর কালচক্র, জগৎচক্র ও যুগচক্র . পরিবর্তিত করিতেছেন। আমি সত্য কহিতেছি, ভগবান্ জনাৰ্দ্দন একাকী কাল, মৃত্যু, জঙ্গম ও স্থ।বরসমূহের অধীশ্বর। যেমন কৃগীবল ধান্যাদি পরিবর্দ্ধিত করিয়া স্বয়ং ছেদন করে, সেই রূপ মহাযোগী হরি সমস্ত জগতের ঈশ্বর হইয়াও মনুষ্যগণকে সংহার করেন। তিনি মহামায়াপ্রভাবে লোকসকলকে বঞ্চিত করিয়া থাকেন; কিন্তু যাঁহারা তাঁহাকে লাভ করেন, তাঁহাদিগকে কদাচ মুগ্ধ হইতে হয় না।
অষ্টষষ্টিতম অধ্যায়।
ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, হে সঞ্জয় ! তুমি সৰ্ব্বলোকাধিপতি মাধবকে কিরূপে অব গত হইলে; আমিই বা কি নিমিত্ত তাঁহাকে বিদিত হইতে সমর্থ হইতেছি না? তুমি এক্ষণে ইহা কীৰ্ত্তন কর। সঞ্জয় কহিলেন, মহারাজ ! আপনি বিদ্যাশূন্য ; বিষয়।ন্ধকারে অন্ধ প্রায় হইয়া আছেন;এই নির্মিত কেশবকে অবগত হইতে সমর্থ হইতেছেন না। আমি বিদ্যাসম্পন্ন; সেই বিদ্যাপ্রভাবে যুগত্রয়ের অধিষ্ঠান, বিশ্বের কর্তা, স্বতঃসিদ্ধ, প্রাণিগণের উৎপত্তি ও লয়স্থান ভগবান্ জনাৰ্দ্দনকে বিদিত হইতেছি। ধৃতরাষ্ট্রকেহিলেন, হৈ সঞ্জয় ! তুমি যে ভক্তিপ্রভাবে ভগবান্ কেশবকে অবগত হইতেছ,
তাহা কিরূপ ? সঞ্জয় কহিলেন, মহারাজ ! আপনার মঙ্গল হউক। আমি মায়ার সেবা ও বৃর্ণা ধর্ম্মের অনুষ্ঠান করি নাই ; কেবল ভক্তিবলে বিশুদ্ধ ভাবসম্পন্ন হইয়। শাস্ত্রে তাঁহাকে বিদিত হইতেছি ।
তখন ধৃতরাষ্ট্র দুর্য্যোধনকে কহিলেন, বৎস! সঞ্জয় আমাদের হিতকারী; অতএৱ তুমি কেশবের নিকট উপস্থিত হইয়া তাঁহার শরণাপন্ন হও। দুৰ্য্যোধন কহিলেন, তাত ! যদি কেশব অৰ্জ্জুনের সহিত সৌহৃদ্য সংস্থাপন করিয়া সমস্ত লোক সংহারার্ধ সমুম্বত হন, তথাপি আমি এখন তাঁহার শরণাপন্ন হইব না। রাজা ধৃতরাষ্ট্র তখন গান্ধারীকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন প্রিয়ে ! তোমার পুত্র দুর্য্যোধন ঈর্ষাপরায়ণ, অভিমানী ও উপদেশগ্রহণপরাঙ্মুখ ; অতএব উহাকে নরকে গান করিতে হইবে। গান্ধারী কহিলেন, রে দূরাশয় ! তুমি ঐশ্বৰ্য, জীবন ও পিতামাতাকে পরিত্যাগ করিয়া শত্রুগণের প্রীতি বৰ্দ্ধন এবং আমাকে শোকসাগৱে বিসৰ্জ্জন করিয়া ভীমের হস্তে কলেবর পরিত্যাগপূর্ব্বক পিতার বাক্য স্মরণ করিবে।
অনন্তর ব্যাসদেব কহিলেন, মহারাজ! তুমি আমার প্রিয় পাত্র ; এক্ষণে আমি কৃষ্ণের বিষয় কীৰ্ত্তন করি, শ্রবণ কর ; তাহা হইলে তোমার মহৎ ভয় নিবারণ হইবে। সঞ্জয় তোমাকে শ্রেয়স্কর কার্যে নিয়োগ করিতেছে; এ ব্যক্তি চিরন্তন হৃষীকেশকে সবিশেষ অবগত হইয়াছেন । ষে সকল ব্যক্তি ক্রোধ ও হর্ষপরায়ণ,
আপনার, ধনে অসন্তুষ্ট ও কামপ্রভৃতি বিবিধ পাশে সংযত ; তাহারা অন্ধ কর্তৃক নীয়মান অন্ধের ন্যায় স্বীয় কৰ্ম্মবলে নীত হইয়। বারংবার যমের বশবর্তী হইয়া থাকে। এই জ্ঞানমার্গ ব্রহ্মলাভের হেতুভূত ; মনীষিগণ -ই পথ অবলম্বন করিয়া সংসারপাশ হইতে বিমুক্ত হইয়া থাকেন;
মহৎ লোক কদাচ তাহাতে সংসক্ত হন
না। ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, হে সঞ্জয়! আমি যে পথ অবলম্বনপূর্বক হৃষীকেশকে প্রাপ্ত হইয়া মোক্ষ লাভ করিতে সমর্থ হই, সেই নির্ভয় পথ কি প্রকার ? তুমি তাহ আমার নিকট কীর্ত্তন কর।
সঞ্জয় কহিলেন, নরনাথ ! অজিতাত্মা ব্যক্তি সেই নিত্যসিদ্ধ জনাৰ্দ্দনকে কদাচ অবগত হইতে সমর্থ হয় না; ইন্দ্ৰিয়নিগ্রহ 71 করিয়া কেবল ক্রিয়াকলাপ দ্বারা তাঁহাকে লাভ করা নিতান্ত দুষ্কর। অতি প্রবল ইন্দ্রিয়গণের নিগ্রহ, অপ্রমাদ ও অহিংস। এই কত্ৰকটী জ্ঞানের কারণ ; অতএব আপনি আলস্যশূন্য হইয়া ইন্দ্রিয়নিগ্রহে যত্নবানু হউন ; আপনার বুদ্ধি যেন কদাচ প্ৰচ্যুত ন! হয়। আপনি বুদ্ধিবৃত্তি বশীভূত করুন। ব্রাহ্মণগণ ইন্দ্রিয়নিগ্রহই জ্ঞানশব্দে জ্ঞানশব্দে নির্দ্দেশ করিয়া থাকেন। মনীষিগণ এই জ্ঞানরূপ পথই অবলম্বন হে মহারাজ! ইন্দ্ৰিয়নিগ্রহ ব্যতিরেকে কদাচ কেশবকে প্রাপ্ত হওয়া যায় না। তিনি শাস্ত্র ও যোগবলে প্রসন্ন হইয়া তত্ত্বজ্ঞান প্রদান করিয়া থাকেন।
| pdf |
cdb1541a7a6727de5d7675264fddc36f58d9f5d36628d17804af8cd5f48a2448 | জ্ঞানকাণ্ড ও কর্ম্মকাণ্ড ।
ভগবান্ মনু লিখিয়াছেন ---
ক্ষত্ৰসাতি প্রবৃদ্ধস্য ব্রাহ্মণান্ প্রতিসৰ্ব্বশঃ । ত্ৰহ্মৈব সন্নিয়ন্তু স্যাৎ ক্ষত্ৰং হি ব্রহ্মসম্ভবং ।।
ব্রাহ্মণ পীড়াদায়ক ক্ষত্রিয়কে শাপ অভিচারাদি দ্বারা এমন করেন ; যেহেতু ক্ষন্দ্রিয় জাতি ব্রাহ্মণ হইতে উৎপন্ন ।
অদ্ভোঽগ্লিত্রহ্মতঃ ক্ষমশ্মনো লোহযুত্থিতং । তেযাৎ সৰ্ব্বত্রগং ডেঙ্গঃ স্বসু যোনিষু শাম্যতি ॥
জল হইতে অগ্নির উৎপত্তি এবং ব্রাহ্মণ হইতে ক্ষন্দ্রিয়ের * উৎপত্তি ; প্রস্তর হইতে অস্ত্রশস্ত্র সকল উৎপন্ন হয়। একারণ (যদিও অগ্নি সম্বন্ধীয় তেজ সকল বস্তুকে লেংকরে, ক্ষত্রিয়ের তেজ সকলকে পরাভব করে এবং শস্ত্রসহন্ধীয় ন্দ্রে সকল বস্তুকে ছেদকরে তথাচ) শেষে ঐসকল তেজ আপন আপন উৎপত্তিস্থানে শমতা প্রাপ্ত হয় ।
পূর্ব্বকালে নিরুষ্টজাতিস্থ ব্যক্তিরা উপযুক্ত হইলে তাঁহাদিগকেও ব্রাহ্মণ রূপে গণ্য করা হইত। যথা,
শূদ্রেচৈৰ ভবেল্লস্ক্যং দ্বিজে তচ্চ ন বিদ্যতে। ন বৈ শূদ্রে। ভবেছুত্রে। ব্রাহ্মণো ন চ ব্রাহ্মণঃ ।।
* এই গ্লে'কের টীকায় টীকাকার কুল্ল কভট্ট এইরূপ লিখিয়াছেন; যথা, -
অন্ত্যইতি ।--জলব্রাদণপাষাণেভ্যোহমিক্ষত্রিয়শপ্রাণি জাতানি তেষাং সম্বন্ধি তেজঃ সৰ্ব্বত্র দহনাভিভবচ্ছেদনাত্মকং কার্যং করোতি। অকারণেষু জব্রাহ্মণপাষাণাধ্যের দহনাভিভবচ্ছেদনরূপুং কাৰ্য্যং ন করোতি ।
যদিকোন ব্যক্তি ব্রাহ্মণকুলে জন্ম গ্রহণ করিয়া শূদ্রেরন্যার লক্ষণসম্পন্ন হয় তাহা হইলে তাহাকে শূদ্র ও যদি কোন ব্যক্তি শূদ্রবংশসম্ভূত হুইয়াও ব্রাহ্মণের লক্ষণ সমস্ত প্রাপ্ত হন তাহাহইলে তাঁহাকে ব্রাহ্মণ বলিয়। নির্দেশ করা যাইতে পারে ।
এই শ্লোকের টাকায় টীকাকার লিখিয়াছেন ধৰ্ম্ম এস বর্ণবিভাগে কারণং ন জাতিরিত্যর্থঃ । ভগবান্ বশিষ্ঠদেব রামচন্দ্রকে বলিয়াছিলেন,--
তামসীং রাজনীঞ্চৈব জাতিল্পামপি শ্রিতাঃ। লুপ্রযত্নবশাদ্ যান্তি সম্ভঃ সাত্বিকজাতিতাং ।
যো. বা. স্থিতি প্রকরণ।
তামসী অর্থাৎ শূদ্র জাতি আশ্রিত হউক, কিম্বা রাজদী অর্থাৎ কন্দ্রিয় জাতি আশ্রিত হউক, অথবা তদপেক্ষাও নীচ যে কোন জাত্যাশ্রিত লোক ইউক উত্তমরূপ যত্নের দ্বারা জ্ঞানাভ্যাস করিলে সাত্ত্বিক জাতি অর্থাৎ ব্রাহ্মণ জাতিত্ব প্রাপ্ত হয়।
পূর্ব্বকালে কেবলমাত্র এক বিশ্বামিন মুনিই যে ক্ষত্রিয় বংশোদ্ভব হইয়াও ব্রাহ্মণ হইয়াছিলেন, তাহা নহে। বিষ্ণুপুরাণ, হরিবংশ, শ্রীমদ্ভাগত প্রভৃতি গ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায় যে শত শত, সহস্র সহস্র ব্যক্তি ক্ষত্রিয় বৈশগদি বংশে জন্ম গ্রহণ করিয়া ব্রাহ্মণত্ব লাভ করিয়াছিলেন। হস্তিনাপুর প্রতিষ্ঠাপক সুবিখ্যাত পুরুবংশীয় "হস্তী" নামক রাজার প্রপৌত্র মেধাতিথির বংশীয়েরা ব্রাহ্মণরূপে গণ্য হইয়া ছিলেন।--যথা
বৃহৎক্ষত্রস্য স্নহোত্রঃ, সুহোত্রাৎ হস্তী । যইদং হস্তিনাপুরমারোপয়ামাস। অজমীঢ় দ্বিষীঢ় পুরুমীঢ়াত্ময়ে!হস্তিন স্তনয়াঃ। অজমীঢ়াত্ কণূঃ, কণাৎ মেধাতিথিঃ, যক্তঃ কাণায়না দ্বিজাঃ ।
জ্ঞানকাণ্ড ও কর্ম্মকাণ্ড।
বৃহংক্ষভ্রের পুন্ড্র সুতোর সহোত্র হইতে স্বস্তী উৎপন্ন হইয়াছিলেন। এই হস্তীই হস্তিনাপুর নামে নগব স্থাপন করেন। অঙ্গমীঢ় দ্বিমীঢ় ও পুরুমীঢ় এই-তিন জন হতীর তরে । গঙ্গমীঢ়ের পুত্র কণ, কণূ হইতে মেধাতিথি উৎপন্ন হইয়াছিলেন। এই মেধাতিথির বংশীয়ের। কারণয়ন ঐ নামে বিখ্যাত ব্রাহ্মণ ইয়াছেন।
জমীড়ের আর একটা ক্ষপ্রিয় পুত্র হইয়াছিল। তাহার নাম ঋক্ষ । খাক্ষ হইতে সংবরণ, সংবরণ হইতে কুরুটৎপন্ন হইয়াছিলেন। এই কুরু স্বীর নাম অনুসারে কুরুক্ষেত্র স্থাপন করেন। পরে ইহণ ধৰ্ম্মক্ষেত্র ও কুরুক্ষের নামে বিখ্যাতি হয়। যথা,
অজমীঢ়স্যান্যখশ্য নামা পুজোহভৃৎ। ঋক্ষাৎ সংব রণঃ সংবরণ ঃ । য ইদং ধর্ম্মক্ষেত্রং কুরুক্ষেত্রং ঢকার ॥
গর্গাচ্ছিনিঃ তভোগার্গ্যাঃ শৈন্যাঃ ক্ষন্ত্রোপেতা
বিজাতয়ে! বহুবু? ।
শ্রীযুক্ত বরা প্রসাদ বংশাকের প্রকাশিত বিষ্ণুপুরাণের ৪র্থ অংশের ১৯ অধ্যায়ের ১ শ্লোকের নিম্নে অনুবাদক ( বোধহয় বিবিধ পুরাণ প্রক!শক দ্ৰীযুক্ত পণ্ডিত জগন্মোহন তর্কালঙ্কার মহাশয়) লিথিয়াছেন যে "পুরুবংশীয় মেধাতিধি বাম্বেদভাষ্য, 'মনুভাষ্য ও অন্যান্য অনেকগুলি ধর্মশক্তিসম্বন্ধীয় গ্রন্থ প্রণয়ন করিয়াছিলেন। ইনি যদিও ক্ষত্রিয় বংশে উৎপন্ন, তথাপি কৰ্ম্মানুসারে ইহার বংশীর সকলেই উত্তম ব্রাহ্মণ হইয়াছিলেন। বর্তমান সময়ে ( সৎ ১৯৩০২ঃ ২৯) শ্রীযুক্ত জয়নারায়ণ তর্কপঞ্চানন প্রভৃতি কয়েকজন অদ্বিতীয় পণ্ডিতও এই বংশে জন্ম পরিগ্রহ করিয়াছেন ।"
M VAR
হিন্দুশাস্ত্র ।
গার্গের পুত্র শিনি। এই তিনি হইতে গার্গ ও শৈন্য নামে বিখ্যাত ক্ষদ্রোপেত ব্রাহ্মণগণ উৎপন্ন হইয়াছেন ।
ক্ষত্রোপেত ব্রাহ্মণ অর্থাৎ যাঁহারা ক্ষত্রিয় হইয়াও কোন কারণবশতঃ ব্রাহ্মণ হইয়াছেন। যথা, শ্রীধরস্বামী লিখিয়াছেন,
"ক্ষত্রিয়! এব কেনটিং কারণেন ব্রাহ্মণাশ্চ বহুবুঃ ।
মুদ্গলাচ্চ মৌদ্গল্যাঃ ক্ষত্রোপেড়া দ্বিজাতয়ো বভুবঃ ।
মুদ্গল হইতে মৌদগল্য গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণ উৎপন্ন হন। ইঁহারা আদিতে ক্ষত্রিয় ছিলেন।
কুরুবংশ বর্ণনের শেষ অবস্থায় লেখা আছে,
ব্রহ্ম ক্ষক্রস্য যো যোনির্বংশে। রাজর্ষিসৎকতঃ । ক্ষেমকং প্রাপ্য রাজানং স সংস্থাং প্রাপ্যতে কলোঁ।
যে বংশ ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় গর্ণের উৎপাদক, রাজবিগণ কর্তৃক যে বংশ অসম্ভূত হইয়াছে * সেই বিস্তীর্ণ কৃষ্ণবংশ কলিকালে "ক্ষেমক" নামক রাজাতেই পরিসমাপ্ত হইবেক।
শ্রীমদ্ভাগবতের ৫ম ঋদ্ধের ৪র্থ অধ্যায়ে এবং ১১শ স্কন্ধের ২য় অধ্যা য়ের ১৭শও ১৮% শ্লোকে বর্ণিত আছে যে ক্ষত্রিয় বংশোদ্ভব (বিষ্ণুর অবতার) ঋষভদেবের ১০০ পুত্রের মধ্যে ৮১ জন ব্রাহ্মণ হইয়াছিলেন।
* ভগবাদ স্বামী লিখিয়াছেন, অখণঃ amin ক্ষত্রিয়স্য চ যোনিঃ কারণং কব্জিয়েরেৰ কৈম্পিডপোৰিপেষাৎ ব্ৰাহ্মণত্বৎ লব্ধমিতি পূৰ্ব্বৎ গুণোৎ। সংস্থার সমাপ্তিম্ ।
| pdf |
de27f2bcb26f7b0b15ce384330d29c285745b305 | আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৮মার্চঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবি আইয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় সিআইডির কার্যালয়ে এফবি আই প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (সিআইডি) সাইফুল আলম।
সূত্রে জানা যায়, রিজার্ভ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে সাইফুলের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটির কাজ করছে। বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তারা ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে যান। এ সময় সাইফুল আলম সাংবাদিকদের এফবি আইয়ের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি জানান।
এ সময় সাইফুল আলম জানান, তাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনা নিয়ে এফবি আইয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তদন্তকারীরা। এর নিরাপত্তার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যাংকের কিছু সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে 'সুইফট মেসেজ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০০ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০০ কোটি টাকা অর্থ লোপাটের ঘটে। এর মধ্যে থাইল্যান্ডে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং বাকি অর্থ শ্রীলঙ্কায় পাচার হয়। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় পাচারকৃত অর্থ তারা ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছেন। অর্থ লোপাটের ওই ঘটনাটি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমদিকে গোপন রাখে।
তবে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ফিলিপাইনের স্থানীয় গণমাধ্যম ইনকোয়েরারে এ ঘটনাটি প্রথম প্রকাশ পায়। পরবর্তী তা বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এরই জেরে গত ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন তিনি। আর এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক অর্থসচিব ও সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ফজলে কবীর।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
| web |
20c63dd59444db6e5fd3489e987588c55c80b685 | পিএসজির সঙ্গে এ বছরের জুনে মেয়াদ শেষ হলে লিওনেল মেসির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের সম্ভাবনা কম। বিশ্বকাপের পর থেকেই উভয়পক্ষের আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনও কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আদৌ হবে কি না তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। ফলে মেসি জুনের পর পিএসজিতে থাকবেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
এর মধ্যেই গুঞ্জন, মেসি নাকি বার্সেলোনায় ফিরতে আলোচনা করতে রাজি। মেসি তার পুরোনো ক্লাবে ফিরবেন কি না, এ নিয়ে কানাঘুষার মধ্যেই বার্সেলোনার ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহো মেসিকে নিয়ে দিলেন আরেক ভবিষ্যদ্বাণী। মেসি বার্সেলোনায় ফিরলে তিনি খুশিই হবেন।
মেসির সেই 'ফেরা'র সময়টা কি এখনই! বার্সেলোনাও অবশ্য তাকে ফেরাতে আগ্রহী, তবে আর্জেন্টাইন তারকাকে ফেরাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ব্যাপারটা মোটেও সহজ কিছু নয়।
| web |
00b04462c422ed92429257192c1b7e9e68a9ef2c | পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর নটরডেম কলেজে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিপ্রার্থী ছাত্রদের জন্য পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছে কলেজ প্রশাসন।
আগামী ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিতব্য এ ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ কলেজে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
১। একজন প্রার্থী একই বিভাগে একটির বেশি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কোনো প্রার্থী একাধিকবার আবেদন করে আলাদা আলাদা প্রবেশপত্র (আলাদা রোল নম্বর) পেয়ে থাকলে যেকোনো একটি প্রবেশপত্র ব্যবহার করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। একজন প্রার্থী একই বিভাগে একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে পরীক্ষা বাতিল বলে গণ্য হবে।
২। পরীক্ষার সময় শুধু ভর্তিপ্রার্থীরা ভর্তির প্রবেশপত্র হাতে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে। কোনো অভিভাবক কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না।
৩। ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, কালো বলপেন ও এসএসসি পরীক্ষায় অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর সঙ্গে আনতে হবে। পরীক্ষার সময় অন্য ছাত্রদের কোনো জিনিস ব্যবহার করা যাবে না।
৪। সবাইকে ১নং গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে এবং পরীক্ষা শেষে মাঠের দক্ষিণ দিকের ২নং গেট দিয়ে বের হতে হবে।
৫। ভর্তি কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভর্তির আবেদনের প্রবেশপত্র নিজের কাছে সংরক্ষণ করতে হবে।
| web |
2ee4f913187f7a73d44a96514feb1bea | গুম খুন ও নির্যাতনের শিকার বরিশাল বিএনপি নেতাকর্মীর পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ । বরিশালটাইমস\n১ ঘণ্টা আগের আপডেট বিকাল ৫ঃ৫১ ; বুধবার ; মে ১২, ২০২১\nগুম খুন ও নির্যাতনের শিকার বরিশাল বিএনপি নেতাকর্মীর পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ\n৪ঃ৫৮ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০২১\nনিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> বরিশালে সরকার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে সরকারী বাহিনী কর্তৃক গুম খুন ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে থেকে দিনভর এসব ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) ও সাবেক এমপি অ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিন, বিশেষ অতিথি বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধরণ সম্পাদক অ্যাড. আবুল কালাম শাহীন, বরিশাল মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধরণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন শিকদার।
| web |
fda8c2c3c3c414bb3057c1c3793dcfe2 | নিখিল বিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বর্তমান ইমাম হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল্ খামেস (আই.) গত ১২ই মে, ২০১৭ইং রোজ শুক্রবার লন্ডনের বায়তুল ফুতুহ্ মসজিদ থেকে "ধৈর্য ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করা"- সম্পর্কে জুমুআর খুতবা প্রদান করেন।
তাশাহুদ, তাঊয, তাসমিয়া এবং সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর আনোয়ার (আই.) পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারার ১৫৪নং আয়াত তেলাওয়াত করেন, যার বঙ্গানুবাদ হল- "হে যারা ঈমান এনেছ, তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।"
হুযুর (আই.) বলেন, মানুষের জীবনে বিভিন্ন বিপদ বা সমস্যাবলী এসে থাকে যাতে ধৈর্য ধরা ছাড়া কোন উপায় থাকে না; ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ইত্যাদির ক্ষতি হয়। দুনিয়াদার লোকেরা এমন পরিস্থিতিতে শোকভোগ-কান্নাকাটি ইত্যাদি করে পরে তা সহ্য করে নেয়, তবে তাদের এরূপ করার পূর্বে তারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ-অনুযোগ ও অন্যায় কথা বলে বসে। কেউ কেউ পার্থিব ক্ষতি সহ্য করতে না পেরে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে বসে। কিন্তু আল্লাহ্র এমন কিছু বান্দাও হন যারা আল্লাহ্র প্রেরিত কোন ব্যক্তিকে মানার কারণে প্রাণ বা ধন-সম্পদের ক্ষতি, মানসিক বা শারীরিক কষ্টের শিকার হন, কিন্তু তারা কোন অভিযোগ-অনুযোগ ছাড়াই তা সহ্য করে। হ্যাঁ, তারা আল্লাহ্র কাছে দোয়া অবশ্যই করেন যে যেহেতু আল্লাহ্র প্রেরিত ব্যক্তিকে মানার ফলে তারা এই কষ্টের শিকার হচ্ছেন তাই আল্লাহ্ যেন তাদের ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দেন এবং অত্যাচারীদের অত্যাচার থেকে তাদের রক্ষা করেন। মুসলমানরা তো বিভিন্ন নবী-রসূলদের জামাতের এবং প্রাথমিক যুগের মুসলমানদের এরকম অত্যাচার সহ্য করার কাহিনী শুনে থাকে, কিন্তু আহমদীরা এ যুগের মসীহ্ ও মাহদীকে মানার কারণে নিজেরাই সেই দৃশ্য প্রদর্শন করে বা করে আসছে যা অন্য মুসলমানদের জন্য গল্প-কাহিনী। অন্য মুসলমানদের সাথে আহমদীদের এটি এক বিশাল পার্থক্য যে আহমদীরা কখনোই অন্যদের উপর অত্যাচার করে না, এর বিপরীতে অন্য মুসলমানরা সুযোগ পেলেই পরস্পরের উপর বা আহমদীদের উপর চড়াও হয়। আর আহমদীরা এটিও খুব ভালভাবে জানে যে আমাদের বিপদ ও দুঃখের অবসান একমাত্র আল্লাহ্ই করতে পারেন; তাই জগতের কারো কাছে বা কোন শক্তির কাছে নয়, বরং আল্লাহ্র কাছেই আমাদের সমর্পিত হতে হবে। আর যেভাবে রসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন, মুমিনের প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুঃখ-কষ্টও যা সে আল্লাহ্র উপর ভরসা করে সহ্য করে তার প্রতিদানে সে কল্যাণ ও পুণ্যে সিক্ত হয়; সে অনুসারে আমাদের সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও আল্লাহ্র প্রতি বিনত হতে হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ্র ভালবাসা পেতে হলে ধৈর্য ও বিনয় অবলম্বন করতে হয়। আর যারা এভাবে আল্লাহ্র ভালবাসা ও নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দায় পরিণত হয় তাদের জন্য আল্লাহ্ এক ধরনের আত্মাভিমান রাখেন, যারা তাদের উপর অত্যাচার করে তাদেরকেও আল্লাহ্ পাকড়াও করেন। তিনি (সা.) বলেন, অত্যাচারিত হয়ে ধৈর্য ধরলে আল্লাহ্ সেই ব্যক্তিকে সম্মানিত করেন; আর আল্লাহ্ কর্তৃক সম্মানিত হওয়ার চেয়ে বড় কিছু তো আর হতে পারে না। হুযুর (আই.) বলেন, অতএব পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে আহমদীদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে তার জবাবে আমাদের ধৈর্য ধারন করা ও আল্লাহ্র দরবারে বিনত হয়ে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করাই আসল কর্তব্য।
হুযুর (আই.) রসূলুল্লাহ্ (সা.) ও তাঁর সাহাবাগণের কথা উল্লেখ করে বলেন যে তাঁরা কষ্টের মধ্যে থেকেও ধৈর্য ধরতেন এবং তবলীগের কাজ অব্যাহত রাখতেন। তাই আমাদেরকেও এই আদর্শই অনুসরণ করতে হবে। এর ফলে অমুসলিম ও অ-আহমদী উভয়েই আমাদের শত্রুতায় লিপ্ত হবে। অমুসলিমরা বাহ্যত ভদ্র আচরণ করলেও যখন দেখবে যে তাদের মধ্য থেকে লোকজন দলে-দলে আহমদীয়াত গ্রহণ করছে তখন তারাও চরম অন্যায় ও অত্যাচার আমাদের উপর করবে। আর অ-আহমদী মোল্লারা সাধারণ মুসলমানদের উপর তাদের একচেটিয়া কর্তৃত্ব হারানোর ভয়ে বা রাজনীতিবিদরা সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য আমাদের উপর চড়াও হবে এবং হচ্ছেও। কিন্তু এতে ভীত হয়ে আমাদের তবলীগের কাজে ছাড় দেয়া যাবে না। হুযুর (আই.) পাকিস্তানের আযাদ কাশ্মীরের সাম্প্রতিক বিরোধিতা বা পাকিস্তান, আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি স্থানে চলমান বিরোধিতার উল্লেখ করেন। এরপর হুযুর (আই.) সম্প্রতি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার সোহাগী জামাতে উগ্রপন্থী ও সন্ত্রাসী মোল্লাদের আক্রমণের কথা উল্লেখ করেন যারা মুরব্বী মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে যখম করে। হুযুর (আই.) বলেন, তাকে এত মারাত্মকভাবে যখম করেছে যে তার সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছে, পেটের ক্ষত দিয়ে কিডনী বেরিয়ে এসেছে, ঘাড়ের কোপে সামান্যর জন্য জীবনশিরা রক্ষা পেয়েছে, সারা শরীর থেকে প্রবল বেগে রক্ত বেরিয়েছে। পরবর্তীতে জামাতের সদস্যরা সেখানে পৌঁছে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তাকে রক্তও দিয়েছে। পরবর্তীতে দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যে চিকিৎসা হয়েছে তার ফলে বর্তমানে অবস্থা মোটামুটি ঠিক হলেও এখনও সে আশঙ্কামুক্ত নয়। চেতনা আসার পর যদিও তার জন্য কথা বলা সম্ভবপর ছিল না, কিন্তু কাগজে লিখে লিখে তিনি তার মনের ভাব প্রকাশ করেছেন। মুমিনের যে উন্নত মর্যাদা সে অনুসারে তিনি নিজেকে নিয়ে চিন্তিত না হয়ে তার স্থানে অবস্থানরত মুরব্বীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে কিনা সেই খোঁজ নিয়েছেন, বাবা-মার খোঁজ নিয়েছেন। হুযুর (আই.) বলেন, আল্লাহ্ তাকে দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থ-সবল-দীর্ঘ জীবন দান করুন। হুযুর (আই.) বলেন, আহমদীয়াত গ্রহণ করলে যে এরকম বিপদ ও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে তা হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) আমাদের আগেই জানিয়েছেন, আর এ-ও বলেছেন যে এসব পরীক্ষার মাধ্যমে আসলে মানুষের ঈমান দৃঢ় হয়। অতএব আমাদের দায়িত্ব ধৈর্য ধরা ও দোয়া করা এবং আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করা, এবং এভাবে নিজেদের কর্মকান্ড দিয়ে এটি প্রমাণ করে দেয়া যে আহমদীয়াত গ্রহণ করেই আমরা সঠিক কাজ করেছি।
হুযুর (আই.) এরপর আরেকটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন যে, সম্প্রতি কেউ একজন হুযুরের কাছে অভিযোগ করেছেন যে কোন এক আহমদী সোশ্যাল মিডিয়াতে কোন অ-আহমদীর সাথে তর্কের এক পর্যায়ে অশোভন ভাষা প্রয়োগ করেছে। হুযুর (আই.) বলেন, একথার সত্যতা কতটুকু তা যদিও জানা যায় নি, কিন্তু যদি তা সত্য হয়ে থাকে তবে তা অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। এমন লোকদের বরং তবলীগ করাই উচিত নয়। হুযুর (আই.) বলেন, কটু বাক্য তো তারা ব্যবহার করে যাদের কাছে যুক্তি-প্রমাণ নেই। আমরা তো সর্বদিক থেকে যুক্তি-প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত, তাই যদি কেউ আমাদের গালিও দেয় তবুও তার প্রত্যুত্তরে আমাদের নম্র ও শালীন ভাষা ব্যবহার করতে হবে এবং যুক্তির মাধ্যমে তাদেরকে পরাস্ত করতে হবে। হুযুর (আই.) এ প্রসঙ্গে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর বিভিন্ন নসীহত তুলে ধরেন। হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন, আমাদের বিজয় লাভের উপকরণ হল ইস্তেগফার, তওবা, ধর্মীয় জ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জন, খোদা তা'লার মাহাত্ম্যকে দৃষ্টিতে রাখা, পাঁচ বেলার নামায নিয়মিত আদায় করা ও এতে দোয়া করা, একাজে কোন আলস্য না দেখানো, পাপ ও নোংরামি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা, খোদার নির্দেশাবলী মানার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকা এবং খোদার পথে কষ্ট ও ত্যাগ-স্বীকারকে ধৈর্যের সাথে সহ্য করা। হুযুর দোয়া করেন যে আল্লাহ্ তা'লা আমাদেরকে ধৈর্যের সাথে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলার ও সন্তুষ্টি অর্জনের এবং তাঁর কৃপারাজি অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমীন।
খুতবার শেষের দিকে হুযুর (আই.) একটি গায়েবানা জানাযার উল্লেখ করেন। এটি কেরালানিবাসী মোকাররম নাজিম উদ্দীন সাহেবের যিনি গত ৩ মে একটি কুরআন প্রদর্শনী থেকে ফেরার পথে ট্রেন-দুর্ঘটনায় নিহত হন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। হুযুর (আই.) মরহুমের সংক্ষিপ্ত যিকরে খায়ের করেন এবং তাঁর পদমর্যাদার উন্নতির জন্য দোয়া করেন।
| web |
902d51ad5f58d47fb4051370d9f17043 | আবাসিক হোটেলের নিবন্ধন খাতায় নাম লেখার সময় ইচ্ছে করেই ভুল মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন খোকন ভুঁইয়া। ১১ সংখ্যার ফোন নম্বরের বদলে লিখেছিলেন প্রথম নয়টি নম্বর, তাও একটি সংখ্যা ভুল। পরে হোটেলকক্ষে এক নারীকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এরপর নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ করে, অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রেখে আত্মগোপন করে। তার ধারণা ছিল, কোনোভাবেই তাকে শনাক্ত করতে পারবে না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে শেষপর্যন্ত ভুল নম্বরের সূত্র ধরেই প্রযুক্তিগত তদন্তে তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। রাজধানীর ক্যান্টনমেন্টের মাটিকাটা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা সমকালকে বলেন, রাজধানীর শ্যামলী এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে গত ৮ সেপ্টেম্বর এক নারীর হাত-পা বাঁধা লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। এর ছায়াতদন্ত করছিল ডিবি। একপর্যায়ে হত্যায় জড়িত খোকনকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়। সোমবার সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
তদন্ত সংশ্নিষ্টরা জানান, খোকন এক সময় মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশে ফিরে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় কাজ নেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকায় তার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যায়। সেখানে দু'জনে বিয়ার পান করে। এরপর চলে আসে ফার্মগেট এলাকায়। রাত ২টার দিকে ফার্মগেট ফুটওভারব্রিজের ওপর আসমা ওরফে লিমা বেগম ওরফে কবিতা (২৫) নামের এক নারীর সঙ্গে তার কথা হয়। কবিতা তার সঙ্গে রাত কাটাতে সম্মত হলে দু'জনে চলে যায় শ্যামলীর দুই নম্বর সড়কের ৪/১ নম্বর ভবনে রাজ ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে। তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলটির ষষ্ঠ তলার ৬০২ নম্বর কক্ষে ওঠে। পরদিন ওই কক্ষেই খাটের সঙ্গে ওড়না দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় কবিতার লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় দায়ের মামলার বাদী নিহতের স্বামী সজিব আলী শেখ জানান, পেশায় তিনি পান বিক্রেতা। পরিবার নিয়ে শেওড়াপাড়ার বর্ডার বাজার এলাকায় থাকেন। ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে তার স্ত্রী ফার্মগেটে আসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। সেদিন রাত ১০টাতেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। এরপর তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দু'দিন ধরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে তার লাশ পাওয়া যায়।
তিনি জানতে পারেন, হোটেলে তার স্ত্রীর লাশ পাওয়া গেছে। অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হোটেলে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে বলে তিনি মামলায় উল্লেখ করেন।
ডিবি সূত্র জানায়, হোটেলের নিবন্ধন খাতায় খোকনের দেওয়া অসম্পূর্ণ মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরেই শুরু হয় অনুসন্ধান। প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে মোবাইল ফোনের কললিস্ট বিশ্নেষণ ও বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করা হয়। এরপর রোববার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিন হাজার টাকার চুক্তিতে তার সঙ্গে হোটেলে রাত কাটাতে সম্মত হন কবিতা। সেখানে তারা অন্তরঙ্গ সময় কাটান। তবে পরে তিনি ২০ হাজার টাকা দাবি করে বসেন। টাকা না পেলে চিৎকার করে সবাইকে বিষয়টি বলে দেবেন বলেও হুমকি দেন। এ নিয়ে দু'জনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ৮ সেপ্টেম্বর ভোরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন খোকন। রোববার গ্রেপ্তারের পর সোমবার তাকে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই সুকান্ত বিশ্বাস। তিনি আসামির জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন জানান। পরে ১৬৪ ধারায় আসামির স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
| web |
c3e519a4869e254a8dcc007f6b0e3229 | 'বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের (বিসিআই) এক দুর্দান্ত, দুঃসাহসী স্পাই; গোপন মিশন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ-দেশান্তরে। বিচিত্র তার জীবন। অদ্ভুত রহস্যময় তার গতিবিধি। কোমলে-কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর সুন্দর এক অন্তর। পদে পদে তার বিপদ-শিহরণ-ভয় আর মৃত্যুর হাতছানি।'
'মাসুদ রানা' পড়েননি বা 'মাসুদ রানা'র নাম শোনেননি এমন মানুষ এদেশে নেই। মাসুদ রানার অ্যাডভেঞ্চার পড়ে রোমাঞ্চ অনুভব করা সেইসব পাঠকের জন্য নতুন 'চমক' প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার। কল্পনার মাসুদ রানাকে আরও একবার সিনেমার পর্দায় দেখানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাজের কর্ণধার আবদুল আজিজ। 'মাসুদ রানা'র জনক কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির এ বিষয়ক চুক্তিও হয়েছে। সিনেমা তৈরির জন্য সেবাভক্তদের প্রিয় 'কাজীদা'-এর কাছে থেকে তিনটি গল্পের লিখিত অনুমতিও নিয়েছে জাজ।
নিজেদের ফেসবুক পাতায় জাজ জানিয়েছে যে, তারা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে 'মাসুদ রানা' সিরিজ থেকে তিনটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবে। সিনেমাগুলোর চিত্রনাট্য তৈরি হবে সিরিজের 'ধ্বংস পাহাড়', 'ভারতনাট্যম' ও 'স্বর্ণমৃগ' থেকে। প্রথম সিনেমার টাইটেল হবে 'মাসুদ রানা' (ধ্বংস পাহাড়)। যার প্রাথমিক বাজেটও নির্ধারিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ, ৫ কোটি টাকা মাত্র। যদিও 'মাসুদ রানা' চরিত্রে কে অভিনয় করবেন তা এখনো জানায়নি প্রযোজনা সংস্থাটি। অবশ্য প্রথম তিনটি সিনেমাতেই নামভূমিকায় কাজ করবেন একই অভিনেতা- এটুকু নিশ্চিত করেছে জাজ। এরইমধ্যে মাসুদ রানা ফ্রাঞ্চাইজির সাথে ব্র্যান্ড হিসেবে যুক্ত হয়েছে ইউনিলিভার। শীঘ্রই আরও বেশকিছু ব্র্যান্ড এই ফ্যাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত হবে বলে আশাবাদী প্রযোজনা সংস্থাটি।
গত পঞ্চাশ বছর ধরে গোটা বিশ্বে ভয়ঙ্কর সব মিশন নিয়ে ঘুরে চলছে আমাদের রানা। কখনও সিরিয়ার গোলান মরুভূমিতে, কখনও মস্কো, মিশর বা মেক্সিকোর গুপ্তধন উদ্ধারে, আবার আফ্রিকার কোনো অত্যাচারী শাসকের অবসান ঘটাতে, কিংবা আর্কটিকের প্রাচীন রহস্য উদঘাটনে - দুনিয়ার কোথায় যায়নি রানা?! গেল ২০১৬ সালে পঞ্চাশে পড়েছে মাসুদ রানা সিরিজ। সেই হিসাবে রানার বয়স এখন ৮০; কিন্তু 'আসি' বলার কোন লক্ষণ এখনও নেই। কাজী আনোয়ার হোসেনের সৃষ্ট অসামান্য এই সিরিজ বাংলা সাহিত্যে এক নতুন বাঁক সৃষ্টি করে।
এই সিরিজের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়েই দারুণ সাফল্য পায় সোহেল রানা-কবরী অভিনীত মাসুদ রানা চলচ্চিত্রটি। মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা 'মাসুদ রানা' সিরিজের ১১তম বই 'বিস্মরণ' অবলম্বনে ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করেছিলেন 'মাসুদ রানা' চলচ্চিত্রটি। সেলুলয়েডে যা মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। যার চিত্রনাট্য লিখেছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন নিজেই।
পরবর্তীতে একাধিকবার 'মাসুদ রানা'কে বড় ও ছোট উভয় পর্দায় দেখা গেলেও সেগুলো দর্শক মনে ন্যূনতম দাগ কাটেনি। আরেকটি বই 'স্বর্ণমৃগ' বাংলাদেশ বেতারে নাট্যরূপ দেওয়া হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। খায়রুল আলম সবুজ ছিলেন রানা চরিত্রে। আর ১৯৯৪ সালে সম্প্রচারিত পিশাচ দ্বীপ অবলম্বনে বিটিভির প্রথম প্যাকেজ নাটক 'প্রাচীর পেরিয়ে' নির্মাণ করেছিলেন আতিকুল হক চৌধুরী। রানা-সোহানার ভূমিকায় ছিলেন নোবেল ও বিপাশা হায়াত।
| web |