doc_id
large_stringlengths 32
64
| text
large_stringlengths 0
560k
| type
large_stringclasses 3
values |
---|---|---|
3b0779e238e7e159b2c0c9443d7e381c | 'নারীরা সুন্দর বলে বাড়ছে ধর্ষণ'
ম্যানিলা, ০২ সেপ্টেম্বর- নিজ শহরে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে ঠাট্টা করায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের কড়া সমালোচনা করেছে দেশটির নারী অধিকার সংগঠনগুলো। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দাভাওয়ে আশঙ্কাজনক হারে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি নিয়ে বৃহস্পতিবার জনসম্মুখে দুতের্তে মন্তব্য করেন, তার শহরের নারীরা সুন্দর বলে এখানে ধর্ষণ বাড়ছে।
প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন ফিলিপাইনের নারী অধিকার সংগঠনগুলো। দেশটির নারী অধিকার নেত্রী এলিজাবেথ আঙ্গসিকো বলেন, প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যে মনে হয় ধর্ষণ যেন কোনো স্বাভাবিক ঘটনা। এর ফলে নারীর মর্যাদা আরো হুমকির মুখে পড়লো। শুক্রবার তিনি বলেন, এমন মন্তব্য কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারও কাছ থেকে বিশেষ করে দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন মন্তব্য কোনভাবে আশা করা যায় না।
এলিজাবেথ আঙ্গসিকো আরও বলেন, তার মন্তব্যে এটাও প্রকাশ পেয়েছে যে, সুন্দরী নারীরাই শুধু ধর্ষণের শিকার হয়। তার মানে নারীরা সুন্দর বলেই তাদেরকে ধর্ষণ করা যাবে। তার কাছে যেন এটা স্বাভাবিক ঘটনা। গত কয়েক দশক ধরে ফিলিপিনো নারীবাদী কর্মীরা এখানকার নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছেন।
সেইসাথে এজন্য সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরবর্তন ও আইনি পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এর ফলে আমাদের কিছু সাফল্যও এসেছে। কিন্তু দুতের্তের এমন মন্তব্য আমাদের সকল অর্জনকে বিনষ্ট করে দিয়েছে। সেইসাথে আমাদেরকে আরও অন্ধকার যুগে ঠেলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, দুতের্তে এর আগেও নারীদের কঠাক্ষ ও ধর্ষণ নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করে গেছেন। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, মিস ইউনিভার্সকে ধর্ষণ করাকে তিনি গ্রহণযোগ্য মনে করেন। একই বছরের শুরুতে সেনাদের সামনে তিনি বলেছিলেন, কোনো শাস্তি ছাড়াই একজন পুরুষ চাইলেই তিনজন নারীকে ধর্ষণ করতে পারে।
| web |
b6a67911db4c336dbda426211b26cd07b95eaf16 | হিমাদ্রি মন্ডল : বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত গৃহবধূ, সম্পর্কের টানাপোড়েনে মর্মান্তিক পরিণতি। সংসার ছেড়ে চম্পট দিয়েছেন স্ত্রী। এক ছেলে ও এক মেয়েকে বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী হলেন বাবা।
সিউড়ি থানার অন্তর্গত ভালুকা গ্রামের সোম মারান্ডির স্ত্রী আরতি মারান্ডি দিনকয়েক আগে পালিয়ে যায় অন্য পুরুষের সাথে। এরপর থেকেই চরম মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় বীরভূমের সিউড়ি থানার অন্তর্গত ভালুকা গ্রামের পাশে একটি ক্যানেল থেকে উদ্ধার হয় দুই সন্তান সনিয়া মারান্ডি (১০ বছর), রাকেশ মারান্ডি (৭ বছর) সহ বাবার মৃতদেহ। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে খবর দেন পুলিশে। সিউড়ি থানার পুলিশ গিয়ে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে ও ময়নাতদন্তের জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মানসিক অবসাদের জন্য দুই সন্তানকে মারার পর নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন, নাকি অন্য কোন রহস্য রয়েছে! সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে সিউড়ি থানার পুলিশ।
| web |
25bbc48a6c63f2dbce62b4b78aebf673 | নির্জনবাস, জনবিচ্ছিন্ন থাকা, একাকী ধ্যানমগ্ন থাকা, নির্জনে একাকী প্রার্থনা করা, ইয়োগা, মেডিটেশন, মক্কার হেরা গুহায় হযরত মুহাম্মাদ স. এর নিরিবিলি অবস্থান, রমজানের ইতেকাফ ইত্যাদি পরিভাষা ও তথ্যমালার কার্যকর প্রতিনিধিত্ব করছে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত 'কোয়ারেন্টাইন'। বিশ্বের শত কোটি মানুষের জন্য কোয়ারেন্টাইন অবস্থা সুযোগ এনেছে নিজের অন্তরাত্মাকে উপলব্ধি করার।
আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মানুষ ভুলত্রুটি থেকে মুক্ত থাকতে পারে। মানুষের মধ্যে যে হীনমন্যতা থাকে তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার সর্বোত্কৃষ্ট পথ হলো আত্মশুদ্ধি। পবিত্র কুরআনে সূরা ফাতিরের ১৮ নম্বর আয়াতে বান্দাকে আত্মশুদ্ধির তাগিদ দিয়ে বলা হয়েছে, 'কেউ যখন আত্মশুদ্ধি করে; সে তো তা করে তার নিজের জন্যই।'
আত্মশুদ্ধিকে বলা হয় মানব চরিত্রকে সংশোধনের এবং শুদ্ধ পথে নিয়ে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায়। ইবাদত বা প্রার্থনার মূল লক্ষ্য হলো আত্মশুদ্ধ হওয়া। মানুষের মাঝে যেসব খারাপ অভ্যাস রয়েছে, যেসব হীনমন্যতা রয়েছে তা ত্যাগ করা। পবিত্র কুরআনে সূরা আশ-শামসের ৯ ও ১০ নম্বর আয়াতে আত্মশুদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করে বলা হয়েছে, 'সে সফলকাম হবে যে নিজেকে শুদ্ধ করবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে নিজেকে কলুষাচ্ছন্ন করবে'।
হেরা গুহায় ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ স. একাকী ইবাদত ও ধ্যানমগ্ন থেকে আত্মশুদ্ধির ব্যবহারিক দিক সুস্পষ্ট করেছেন। জনমানুষ থেকে পৃথক হয়ে তথা কোয়ারেন্টাইনে থেকে নির্জন ধ্যানমগ্নতা মানুষের চিন্তার জগৎ, শারিরকি ও মানসিক শান্তির পথ সৃষ্টি করে।
Quarantine অর্থ সঙ্গরোধ। সীমিত সময়ের জন্য সঙ্গরোধ হয়ে ইবাদতে মগ্ন হওয়া ইসলামে গ্রহনযোগ্য; যদিও স্থায়ী বৈরাগ্যবাদ নিন্দনীয়। কোয়ারেন্টাইনে থেকে ইবাদাতের আরেকটি উদাহরণ হলো রমজানের ইতেকাফ। ইতেকাফ অর্থ অবস্থান করা,স্থির থাকা, কোনো স্থানে আটকে পড়া বা আবদ্ধ হয়ে থাকা। শরিয়তের পরিভাষায় রমজান মাসের শেষ দশক জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইবাদতের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা ও স্থির থাকাকে ইতিকাফ বলে।
বর্তমান সময়ে ঐশ্বরিক গ্রন্থ অধ্যয়ন, প্রার্থনা ও ধ্যানমগ্নতা হতে পারে আত্মশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ উপায়। মানব জীবনে তার সুন্দর ব্যবহার উপযোগী সময় চলছে এখন বিশ্বব্যাপী।
১৪০০ বছর পূর্বে নবুয়াত লাভের আগে হেরা গুহায় ইবাদাতের জন্য কোয়ারেন্টাইনে যেতেন নবী হযরত মুহাম্মাদ স.। এবং হেরা গুহাতেই সর্বপ্রথম ওহী অবতীর্ণ শুরু হয়।
নবীর বয়স যখন চল্লিশের কাছাকাছি তখন তিনি প্রার্থনার জন্য নিঃসঙ্গতা বেছে নেন এবং ধ্যান শুরু করেন। মূলত মানুষের নোংরা জীবনযাপন এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অরাজকতা আর নৈতিক অধঃপতন তাকে মর্মাহত করে এবং তিনি সর্বদাই এর সমাধান খোঁজায় তৎপর থাকার ফলেই এই ধ্যানে অংশ নেন। তিনি ব্যবসা উপলক্ষে বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন এবং কোন সমাজেই মুক্তি ও আদর্শ নেতৃত্বের কোন নির্দেশনা লাভ করতে সক্ষম হননি। এসব নিয়ে চিন্তার পাশাপাশি বিশ্বস্র্রষ্টার স্বরুপ নিয়ে চিন্তাও তার নিঃসঙ্গ জীবনের ভাবনার খোরাক হয়ে দেখা দেয়। পরম চিন্তার পরিবেশ তৈরির সুবিধার্থে তিনি মক্কা থেকে ২ মাইল দূরে অবস্থিত হেরা গুহার অভ্যন্তরে ধ্যান করা শুরু করেন।
সেখানেই অীবতীর্ণ শুরু হয় মানব মুক্তির মহা সনদ আল কুরআন। যে কিতাবের বিষয়বস্তু মানুষ এবং মানুষকে পরিশুদ্ধ করার বিধান ও দায়িত্ব দিয়ে তাঁকে (নবী স.) প্রেরণ করা হয়।
কোয়ারেন্টাইনঃ যে ধারণার প্রবর্তন করেন রাসুল (স.)
কিন্তু এই কোয়ারেন্টাইনের কথা সর্বপ্রথম যিনি বলেছিলেন তিনি হলেন মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)। বর্তমান সময়ে বিজ্ঞ আলেমরা বিষয়টি হাদিসের প্রমাণসহ উল্লেখ করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বিষয়টির স্বীকৃতি দেওয়া এক মার্কিন গবেষক।
আজ থেকে প্রায় ১৪শ বছর আগে ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোয়ারেন্টাইনের ধারণা দেন। যদিও তার সময়ে সংক্রামণ রোগের মতো কোনো বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তারপরেও তিনি এসব রোগব্যাধিতে তার অনুসারীদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা ছিল কভিড-১৯ এর মতো প্রাণঘাতী রোগ মোকাবেলায় দুর্দান্ত পরামর্শ। তার সেই পরামর্শ মানলেই করোনার মতো যেকোনো মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
এর উদাহরণ হিসেবে মার্কিন গবেষক মোহাম্মাদ (সা.)-এর একটি হাদীস উল্লেখ করেন। তিনি লিখেন- 'মোহাম্মাদ বলেছেন, যখন তুমি কোনো ভূখণ্ডে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাও তখন সেখানে প্রবেশ করো না। পক্ষান্তরে প্লেগ যদি তোমার অবস্থানস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ওই জায়গা ত্যাগ কোরো না।'
রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের এক পর্যায়ে সিরিয়াতে প্লেগ দেখা দিল। যে শহরে প্লেগ দেখা দিয়েছিল সেখানে আবু উবায়দা তখন কমান্ডার ইন চিফ ছিলেন।
এবং তিনি প্রথম কোয়ারেন্টাইন পালনকারী সাহাবী এবং তার সাথে যে সৈন্যদল ছিল কেউই ওখান থেকে বেরিয়ে আসে নাই।
যে কাজের নির্দেশ রসুলুল্লাহ (স) দিয়েছেন সেটা পালন করা, অনুসরণ করা কতটা পুণ্যের, কতটা সওয়াবের, কতটা উপকারি!অতএব কেউ যখন কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন, তিনি আল্লাহর রসুলের একটা নির্দেশ পালন করার সুযোগ পাচ্ছেন, সৌভাগ্যবান হচ্ছেন- এই আনন্দিতচিত্তে কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।
এবং এই কোয়ারেন্টাইন ব্যক্তির জীবনে সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হতে পারে। সেটা হোম-কোয়ারেন্টাইন হোক অথবা ক্যাম্প-কোয়ারেন্টাইন হোক বা হসপিটাল-কোয়ারেন্টাইন হোক।
যে কেউ এই সময়টা নিজের মতো করে, নিজের আত্মিক পরিশুদ্ধির জন্যে, নিজের মনের পরিশুদ্ধির জন্যে, মননের পরিশুদ্ধির জন্যে, সৃজনশীলতার পরিশুদ্ধির জন্যে এবং ব্রেনটাকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগানোর জন্যে এই সময়টা ব্যয় করতে পারেন।
সুস্থ দেহ-মনের জন্যে কত কিছুই না করি আমরা। পেশিবহুল দেহের জন্যে ব্যায়াম করি। স্টেমিনা বৃদ্ধির জন্যে দৌড়-সাঁতার ইত্যাদি নিয়মিত করেন অনেকে। ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম, নাচের ক্লাস ইত্যাদি নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। অনেকের জীবনে প্রতিদিনের অন্যতম জরুরি কাজের একটি 'ইয়োগা'।
মেডিটেশন হচ্ছে মনের ব্যায়াম। নীরবে বসে সুনির্দিষ্ট অনুশীলন বাড়ায় মনোযোগ, সচেতনতা ও সৃজনশীলতা। মনের জট যায় খুলে। সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। হতাশা ও নেতিবাচকতা দূর হয়। মেডিটেশন হলো সচেতনভাবে দেহ মন এবং মস্তিষ্ককে শিথিল করার আধুনিক বৈজ্ঞানিক এবং সহজ প্রক্রিয়া।
মেডিটেশন বিশ্বাসীরা মনে করেন, মনোদৈহিক ৭৫ ভাগ রোগের কারণই টেনশন। তাই মেডিটেশন করলে অনায়াসেই শতকরা ৭৫ ভাগ মনোদৈহিক রোগ যেমন মাইগ্রেন, সাইনুসাইটিস, ঘাড়ে-পিঠে-কোমরে বা শরীরের যেকোনো স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা, হজমের সমস্যা, আইবিএস, এসিডিটি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অনিদ্রা প্রভৃতি রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
সফলতা, রোগ প্রতিরোধ, মানসিক ও শারীরিক উন্নতির জন্য যেমন মেডিটেশন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই বিশ্বাসীদের কাছে মেডিটেশন সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া ও তার থেকে কিছু আদায় করারও মাধ্যম। মুসলিম সাধক, সুফী, দরবেশ ওলী আওলিয়ারা পর্যন্ত মেডিটেশন করেছেন।
মুসলিমদের মেডিটেশন পদ্ধতি রাসুল (সা.) ১৪০০ বছর আগে হেরা গুহায় করে দেখিয়ে গেছেন। তিনি একাগ্রতার সঙ্গে আল্লাহ পাকের ধ্যানে মগ্ন থাকতেন।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে একেকজন একেক পন্থা অবলম্বন করেন। কেউ বেড়াতে যান, কেউ ইয়োগা করেন আর কেউবা শরণাপন্ন হন চিকিৎসকের। তবে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে অভিনব পরামর্শ দিয়েছিল নেদারল্যান্ডসের র্যাডবউড বিশ্ববিদ্যালয়। মানসিক চাপ কমাতে শিক্ষার্থীদেরকে "গ্রেভ থেরাপি" বা কবরে শুয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্বে এই সময়ে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে ধ্যানমগ্ন হওয়া ও সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য চাওয়া। আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময় চলছে।
যারা সনাতন ধর্মাবলম্বী রয়েছেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রয়েছেন, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী রয়েছেন- তারা তাদের একাগ্র নিমগ্ন প্রার্থনায় ডুবে গিয়ে একটা নতুন মাত্রা নিয়ে আসতে পারেন।
| web |
66b479da07efcc2048e3dffbe8b93c89e01eb2a4 | আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুকুল রায়কে তুরুপের তাস করতে পারেন মমতা? মঙ্গলবার তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে মুকুল রায়ের বৈঠকের পর সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছিল রাজনৈতিক মহলে। তবে আজ নদিয়ার কৃষ্ণনগরের জনসভায় মহুয়া মৈত্রকে মাথায় রেখেই সমন্বয় কমিটি গড়ে সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ সমন্বয় কমিটিতে মহুয়া মৈত্রকে শীর্ষে এনে সদস্য হিসেবে অন্যান্য বিধায়কদের মতোই মুকুল রায়কে সেই কমিটিতে রেখে স্পষ্ট ভাবে তৃনমূল সুপ্রিমো বুঝিয়ে দিলেন যে মুকুলের ওপর এখনই ভরসা রাখছে না তৃনমূল। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নদিয়া জেলায় তো তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল আজকের কথা নয়, বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়ের সঙ্গে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের যেমন লড়াই রয়েছে, তেমনই লড়াই রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী রত্না কর ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর সিংহ ও তাঁর পুত্র শুভঙ্কর সিংহের। আর এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মরিয়া চিত্রের বদল ঘটাতে। কারন, তিনি সোজা কথা জানিয়েছেন, প্রচারে অগ্রাধিকার দিতে হবে উন্নয়ন। কোনও ঝগড়াঝাটি তিনি বরদাস্ত করবেন না। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া মিটিয়ে কাজ করতে হবে। তবে সাংসদ মহুয়া মৈত্র এই সমন্বয়ে কতটা সফল হবেন তা সময়ই বলবে।
উল্লেখ্য, সমন্বয়ের দায়িত্ব মুকুল রায়কে আদর্শ ব্যক্তি মনে হলেও, আজকের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটিবারের জন্যও মুকুল রায়ের নাম করেননি। অথচ মুকুল রায় ছিলেন মঞ্চে। এদিকে, মুকুল রায় সার্কিট হাউসে গিয়ে দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সম্প্রতি কালীঘাটে গিয়েও দেখা করেন মুকুল রায়। তারপর উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতারা মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেন। তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল আসন্ন পঞ্চায়েতেই কোনও বড় দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে মুকুল রায়কে। তবে মহুয়া মৈত্রকে দিয়েই ইতি টানলেন মমতা।
প্রসঙ্গত, একসময় তৃণমূলের সেকন্ড ইন কমান্ড হিসেবে নিজের জায়গা পাকাপাকি করে রেখেছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অভিষেকের দিকে আঙ্গুল তুলে ২০১৭ এর শেষের দিকে বিজেপিতে যোগদান করেন মুকুল রায় । তবে ২০২১'শে বিজেপির টিকিটে জয়লাভের পর আবারও অভিষেকের হাত ধরে ছেলেকে নিয়ে তৃণমূলে চলে আসেন তিনি। যদিও বিধানসভার অন্দরে এখনও তিনি বিজেপি বিধায়ক। তবে বাইরে তাঁকে সক্রিয় রাজনীতিতে সেভাবে দেখা যায়নি। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মুকুল রায়কে ফের পুরনো ভূমিকায় দেখা যাবে বলে মনে করছিল রাজনৈতিক মহলের একাংশ? সেই জল্পনা জল ঢেলে মমতা বুঝিয়ে দিলেন বিশ্বাস অর্জন করাটাই আসল। সবকিছুইতে মামাবাড়ির আবদার মানায় না?
| web |
e60fa8d13cfd3f0cc18c2fe0938b6b7277552294 | নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নিখোঁজ হওয়ার ৩ দিন পর বালু শ্রমিক আবু ছিদ্দিকের লাশ উদ্ধার করেছে দূর্গাপুর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাাই) দূর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বালু শ্রমিক আবু বক্কর ছিদ্দিক উপজেলার চন্ডিঘর ইউনিয়নের চরকুড়িয়া গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার সকালে দূর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর তৈরী বাজার ঘাট এলাকায় আবু ছিদ্দিকের লাশ ভাসতে দেখে স্থাানীয়রা পুলিশকে খবর দেয় পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
উল্লেখ্য মঙ্গলবার (৭জুলাই) বালু শ্রমিক আবু বক্কর ছিদ্দিক দুপুরের খাবার খেয়ে নদীতে নেমে পুনুরায় বালু তুলতে গিয়ে নদীর গর্তে পড়ে নির্খোজ হয়। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ থেকে ডুবুরিদল, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন ৩/৪ ঘন্টা চেষ্টা করেও তার কোন সন্ধান করতে পারেনি।
| web |
9a7ad00e11df10f920918b2263dcfb89 | রবিবার জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা। ১৪৩৯ হিজরি সনের শবে মেরাজের তারিখ নির্ধারণে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভা কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ধর্মমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান সভায় সভাপতিত্ব করবেন। বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ৯৫৫৯৪৯৩, ৯৫৫৯৬৪৩, ৯৫৫৫৯৪৭, ৯৫৫৬৪০৭ ও ৯৫৫৮৩৩৭ টেলিফোন ও ৯৫৬৩৩৯৭ ও ৯৫৫৫৯৫১ ফ্যাক্স নম্বরে অথবা অন্য কোনো উপায়ে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাসস।
| web |
4fffc38232d74c3c85387cd024f1bc81 | মাওলানা আবদুল্লাহ রাশেদ (হাফিযাহুল্লাহ)
কাউকে তাকফির করার কী অর্থ?
তাকফির শব্দটি আরবি। এর অর্থ, কোনো মুসলিমের ব্যাপারে কাফের ও মুরতাদ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া। কোনো মুসলিমকে তাকফির করার অর্থ, তার ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত দেয়া যে, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। এখন দুনিয়াতে ও আখেরাতে তার ওপর কাফের ও মুরতাদের বিধান প্রয়োগ হবে। যেমন, তার বিয়ে ভেঙে যাবে, পূর্বের সকল নেক আমল নষ্ট হয়ে যাবে, তাওবা করে পুনরায় ইসলামে ফিরে না এলে হত্যা করে ফেলা হবে, সে শাসক হলে তাকে অবশ্যই অপসারণ করতে হবে, সংঘবদ্ধ দল হলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। এ অবস্থায় মারা গেলে তাদের জানাযা পড়া যাবে না, মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না, পরকালে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অতএব কাউকে তাকফির করা সাধারণ কোনো বিষয় নয় যে, কারো ইচ্ছে হল আর কাউকে কাফের বলে দিল। না, বরং এর সাথে অনেক হুকুম-আহকাম ও মাসআলা-মাসায়েল জড়িত। দুনিয়াতে তার জান-মালের নিরাপত্তা, জানাযা, কাফন-দাফন ইত্যাদি এবং আখেরাতে তার চিরস্থায়ী সফলতা কিংবা ব্যর্থতা, জান্নাতি বা জাহান্নামি হওয়াসহ অনেক কিছু এর সাথে জড়িত।
কাউকে তাকফির করার বিষয়টি যেহেতু খুবই স্পর্শকাতর তাই শরিয়ত এ ব্যাপারে আমাদেরকে খুব সাবধানতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে। সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলিল প্রমাণ ছাড়া কাউকেই তাকফির করা যাবে না।
তাকফিরের বিষয়টি এতই স্পর্শকাতর যে, যেন তেন কোন অজুহাতে কাউকে তাকফির করে বসলে, নিজের ঈমান হারানোর আশঙ্কা আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক করে গেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন,
অন্য হাদিসে ইরশাদ করেছেন,
যেহেতু তাকফির একটি শরয়ী বিষয় তাই শরীয়তের অন্যান্য বিধি বিধানের মতো এরও সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা রয়েছে। সেসব নীতিমালার আলোকে যে ব্যক্তি বাস্তবেই কাফের কেবল তাকেই কাফের বলে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। শরীয়তের অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া বা ফতোয়া দেয়া যেমন যে কারো কাজ নয়, তাকফিরের বিষয়টি এমনই। বরং এ বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইমাম গাযালি রহ. বলেন,
শরীয়তের অন্য যেকোনো বিধানের তুলনায় তাকফিরের বিষয়টি খুবই নাজুক ও স্পর্শকাতর। তাই উসূলে তাকফির সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন এমন বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম ছাড়া অন্য কেউ এ ব্যাপারে মুখই খুলবে না।
তাকফিরের ব্যাপারে এ বিষয়টি খুব ভালোভাবে বুঝা জরুরি। এ বিষয়টি না বুঝার কারণে অনেকেই বিভ্রান্তির শিকার হন।
শরয়ী দলিল প্রমাণের আলোকে আইম্মায়ে কেরাম অনেক কথা, কাজ ও আকিদা-বিশ্বাসকে কুফর সাব্যস্ত করেছেন। যেমন বলেছেন, 'যে ব্যক্তি অমুক কাজ করবে, অমুক কথা বলবে বা অমুক বিশ্বাস রাখবে সে কাফের'। এ থেকে অনেকে মনে করেন, এসব কথা, কাজ বা আকিদার কোনোটাতে কেউ লিপ্ত হলেই কাফের হয়ে যাবে। বাস্তবে কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। একটি কাজ কুফর হলেই যে তাতে লিপ্ত ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে এবং তার ওপর মুরতাদের বিধান প্রয়োগ করা হবে, ব্যাপারটি এমন নয়। বরং এক্ষেত্রে কিছু শর্ত ও মাওয়ানে বা প্রতিবন্ধক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাফের হওয়ার জন্য তার মাঝে শর্তগুলো পরিপূর্ণ ভাবে পাওয়া যেতে হবে এবং প্রতিবন্ধকগুলোর কোনোটা না থাকতে হবে। যদি শর্তগুলো পরিপূর্ণ ভাবে পাওয়া যায়, পাশাপাশি প্রতিবন্ধকগুলোর কোনোটা না থাকে তখনই সে কাফের বলে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে যদি শর্তগুলোর কোনো একটা না পাওয়া যায় কিংবা কোনো একটা প্রতিবন্ধকও থাকে তাহলে কুফরে লিপ্ত হওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাফের হবে না।
যেমন ধরুন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করা বা তার শানে কটুক্তি করা কুফর। যে ব্যক্তি এমন করবে সে কাফের। এটি সর্বসম্মত মাসআলা। কিন্তু হাদিসে এসেছে, মুশরিকরা হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আটক করে শাস্তি দিতে শুরু করে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করতে বাধ্য করে। তখন তিনি নিরুপায় হয়ে মুখে এক-দুটি কুফরি কথা বলে ফেলেন। এতে তারা তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি কাঁদতে কাঁদতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে সব ঘটনা শুনান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কথা শুনে বললেন, ওরা যদি আবারও কখনও আটক করে তাহলে এভাবেই জীবন বাঁচিয়ে নিয়ো। এ ব্যাপারে একটি আয়াতও নাযিল হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
"যারা ঈমান আনার পর আল্লাহর সাথে কুফরি করে এবং কুফরির জন্য মন উম্মুক্ত করে দেয়, তাদের ওপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে মহা শাস্তি। তবে ওই ব্যক্তি ছাড়া যাকে কুফরি করতে বাধ্য করা হয় অথচ তার অন্তর ঈমানের ওপর অবিচল থাকে।"-সূরা নাহল (১৬ঃ১০৬)
এখানে 'ইকরাহ' (বাধ্য করা, জবরদস্তি করা) প্রতিবন্ধকটি বিদ্যমান থাকায় কুফর করার পরও ওই সাহাবী কাফের হননি।
কা'ব বিন আশরাফের ঘটনা আমরা সকলেই জানি। তাকে হত্যার কৌশল হিসেবে মুহাম্মাদ বিন মাসলামা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে রাসূলের শানে অবমাননামূলক কিছু কথা বলার অনুমতি চান। তিনি তাকে অনুমতি দেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি কিছু কুফরি কথা বলে কা'ব বিন আশরাফকে আশ্বস্ত করেন এরপর সুযোগ বুঝে হত্যা করেন। জিহাদের প্রয়োজনে এটি বৈধ। জিহাদের ব্যাপারটি ইকরাহের (জবরদস্তি করার) মতোই। এজন্যই কুফরি কথা বলার পরও কুফরের হুকুম বর্তায়নি। সারকথা হল, সব ধরনের কুফরের বেলায়ই -তা কথা হোক কিংবা কাজ- শর্ত ও মাওয়ানে-প্রতিবন্ধক বিবেচনা করে কুফরের সিদ্ধান্ত দিতে হয়।
এ বিষয়টির একটি নজিরও রয়েছে। তা হল, কুরআন সুন্নাহয় অনেক পাপাচারীর ব্যাপারে ধমকি এসেছে যে, তারা জাহান্নামী। যেমন কোনো মুসলমানকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা, ইয়াতিমের মাল আত্মসাৎ করা, যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পলায়ন করা, যাকাত আদায় না করা ইত্যাদি। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, কেউ কোনো মুসলমানকে হত্যা করলেই সোজা জাহান্নামে চলে যাবে বা ইয়াতিমের মাল আত্মসাৎ করলেই নিশ্চিত জাহান্নামি হবে। কোনো ভাবেই সে আর জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে না। না, ব্যাপারটি এমন নয়। বরং এমনও হতে পারে, হত্যাকারী বা আত্মসাৎকারী পরবর্তীতে তাওবা করে ফেলবে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে মাফ করে দিবেন কিংবা দুনিয়াতে নানান বিপদাপদ দিয়ে, মৃত্যুর সময় কষ্ট দিয়ে কিংবা কবরের আযাব দিয়ে তার সেই অপরাধের শাস্তি ক্ষমা করে দিবেন। পুনরুত্থানের পর তাকে কোনো শাস্তিই ভোগ করতে হবে না। সোজা জান্নাতে চলে যাবে।
তাকফিরের বিষয়টিও এমনই। কেউ কুফর করলেই কাফের হয়ে যাবে, তার ওপর মুরতাদের বিধান প্রয়োগ করতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। বরং তার ব্যাপারে শুরুতুত তাকফির-তাকফিরের সকল শর্ত এবং মাওয়ানিউত তাকফির-তাকফিরের প্রতিবন্ধক বিষয়গুলো বিবেচনা করার পরই সিদ্ধান্ত দিতে হবে, সে কাফের হবে, কি হবে না? এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
কারো কথা বা কাজে কুফর পাওয়া গেলে তাকে তাকফির করার জন্য তার মাঝে কিছু বিষয় থাকা জরুরি, আর কিছু বিষয় না থাকা জরুরি। যে বিষয়গুলো থাকা জরুরি ওগুলোকে বলা হয় 'শুরুতুত তাকফির' বা তাকফিরের শর্ত। তার মাঝে এই বিষয়গুলো পাওয়া গেলে তাকফির করা যাবে, না পাওয়া গেলে তাকফির করা যাবে না। আর যে বিষয়গুলো না থাকা জরুরি ওগুলোকে বলা হয় 'মাওয়ানিউত তাকফির' বা তাকফিরের প্রতিবন্ধক। এগুলোর কোনোটা পাওয়া গেলে, তাকফিরের সকল শর্ত পাওয়া গেলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাকফির করা যাবে না। তাকফিরের উল্লেখযোগ্য শর্তগুলো নিম্নরূপ,
البلوغ - বালেগ-প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া : অতএব অপ্রাপ্তবয়স্ক কোন শিশুর কথা বা কাজে কুফর পাওয়া গেলে তার ওপর মুরতাদের শাস্তি আসবে না। হ্যাঁ, তাকে যথাযথ শাসন করা হবে, সেটি ভিন্ন কথা।
العقل - সুস্থমস্তিস্ক সম্পন্ন হওয়া : অতএব কোন পাগল কুফরি কথা বললে বা কুফরি কাজ করলে তার ওপর মুরতাদের শাস্তি আসবে না।
الصحة - হুঁশ থাকা : অতএব বেহুঁশ বা মাতাল অবস্থায় কেউ কুফর করলে কাফের হবে না।
الطوع- স্বেচ্ছায় করা : অতএব যদি ইকরাহ তথা জবরদস্তির মাধ্যমে কুফর করানো হয় তাহলে কুফর সাব্যস্ত হবে না।
الاختيار - ভুলক্রমে না হওয়া : অতএব যদি অন্য কোন কথা বলতে গিয়ে ভুলে মুখ থেকে কুফরি কথা বেরিয়ে যায় তাহলেও কাফের হবে না।
তাকফিরের উল্লেখযোগ্য মাওয়ানে' বা প্রতিবন্ধকগুলো নিম্নরূপ,
الإكراه - জবরদস্তি করা, বাধ্য করা : অতএব কাউকে পিস্তল ঠেকিয়ে কুফরি কথা বলানো হলে ওই ব্যক্তি কাফের হবে না।
التأويل - তাবিল বা কোন ব্যাখ্যার আশ্রয় নেওয়া : যেমন খারেজিরা ব্যাপকভাবে মুসলমানদেরকে মুরতাদ মনে করে এবং তাদের জান-মাল বৈধ মনে করে। কোন মুমিনকে কাফের মনে করা এবং তার জান-মাল বৈধ মনে করা যদিও কুফর, কিন্তু তারা যেহেতু শরীয়তেরই কিছু দলিলের তাবিল বা ব্যাখ্যার ভিত্তিতে এ আকিদা পোষণ করেছে -যদিও তাদের সেই ব্যাখ্যাটি ভুল- তাই তাদেরকে তাকফির করা হয় না।
الجهل - অজ্ঞতা : যেমন দারুল হরবে (কাফের রাষ্ট্রে) বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করল। দারুল হরবে যেহেতু ইসলামের সকল বিধি বিধান সম্পর্কে জানার সুযোগ সাধারণত হয় না। তাই সেই নওমুসলিম যদি অজ্ঞতার কারণে কোন কুফরি কথা বলে ফেলে বা কুফরি কাজ করে ফেলে তাহলে এ কারণে সে কাফের হবে না।
উপরোক্ত শর্ত ও প্রতিবন্ধকগুলো ছাড়া তাকফিরের আরও বিভিন্ন শর্ত ও প্রতিবন্ধক আছে। প্রত্যেকটাতে আবার বিশদ ব্যাখ্যাও আছে। তাকফির করার সময় সবগুলোকে সামনে রাখা জরুরি।
কাউকে তাকফির করা তাকে হত্যা করার চেয়েও মারাত্মক। আর হত্যা করা যে শরীয়তে কত ভয়াবহ ব্যাপার তা তো সকলের জানা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
لَزَوَالُ الدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ قَتْلِ رَجُلٍ مُسْلِمٍ - سنن الترمذي، رقم: 1395؛ ط. شركة مكتبة ومطبعة مصطفى البابي الحلبي - مصر، [حكم الألباني] : صحيح.
এ কারণেই ওলামায়ে কেরাম তাকফিরের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। তাকফিরের শর্ত ও প্রতিবন্ধকগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবেচনার পর যখন কারো কুফরের বিষয়টি অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হয়, কোনো ভাবেই যখন তাকে ইসলামের গণ্ডিতে রাখা যায় না, তখনই কেবল তাকফিরের হুকুম দেন।
এ প্রসঙ্গে ইবনে আব্দুল বার রহ. (৪৬৩হি.) বলেন,
"কুরআন-সুন্নাহ এমন পরিষ্কারভাবে কোনো মুসলিমকে ফাসেক বা কাফের আখ্যা দিতে নিষেধ করেছে, যে ব্যাপারে কোনোই অস্পষ্টতা নেই।
ইমাম গাযালি রহ. (৫০৫হি.) বলেন,
কুফরি কথাবার্তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার পর ইবনে নুজাইম রহ. (৯৭০হি.) বলেন,
হাফেয যাহাবি রহ. (৭৪৮হি.) বলেন,
رأيت للأشعري كلمة أعجبتني وهي ثابتة رواها البيهقي، سمعت أبا حازم العبدوي، سمعت زاهر بن أحمد السرخسي يقول: لما قرب حضور أجل أبي الحسن الأشعري في داري ببغداد، دعاني فأتيته، فقال: اشهد علي أني لا أكفر أحدا من أهل القبلة، لأن الكل يشيرون إلى معبود واحد، وإنما هذا كله اختلاف العبارات.
"আবুল হাসান আশআরি রহ. এর একটি বক্তব্য দেখতে পেলাম। আমার কাছে এটি খুবই পছন্দ হয়েছে। ... যাহির বিন আহমাদ সারাখসি বলেন, যখন আবুল হাসান আশআরি রহ. এর মৃত্যু-কাল ঘনিয়ে আসে তখন তিনি বাগদাদে আমার বাড়িতে ছিলেন। তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তার কাছে যাই। তখন তিনি (আমাকে লক্ষ্য করে) বললেন, আমার ব্যাপারে সাক্ষী থাক, আমি আহলে কিবলার কাউকে তাকফির করি না। কারণ, সকলে এক মাবুদেরই ইবাদত করে। আর এসব মতভেদ তো শুধু শব্দের ভিন্নতা।
খারেজি, মু'তাজিলা, মুরজিয়া, জাহমিয়াসহ আহলুস সুন্নাহর বহির্ভূত সকল ভ্রান্ত ফিরকার ব্যাপারেই একই কথা। তাদের সকলের উদ্দেশ্য (আল্লাহু আলাম) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। তবে তারা কুরআন-সুন্নাহর সঠিক মর্ম বুঝতে ভুল করেছে। এ কারণেই তারা এমন সব কথাবার্তা বলে যা বাহ্যত কুফর। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত নিয়মিত নামায পড়ে যাবে, আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশ করে যাবে, ততক্ষণ তাদেরকে শুধু এসব ভ্রান্ত কথাবার্তা আর ভ্রান্ত আকিদার কারণে তাকফির করা হবে না। এ কারণেই হযরত আলী রাযি. খারেজিদের তাকফির করেননি, অথচ তারা মুসলিম উম্মাহকে কাফের মনে করতো, তাদের জান মাল বৈধ মনে করতো। হ্যাঁ! তাদের কারো মাঝে সুস্পষ্ট কুফর পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা।
বাতিনি, যিন্দিক, মুলহিদ, ইসমাঈলি ও নুসাইরিরা এর ব্যতিক্রম। তারা সবাই নিঃসন্দেহে কাফের। তাদের আকিদার ভিত্তিই হল কুফর ও শিরক। কাদিয়ানিরাও একই শ্রেণীভুক্ত। খতমে নবুওয়াত অস্বীকার করাই তাদের মূল আকীদা। তাদের কালিমা পড়া, নামায পড়া, রোযা রাখা কোনোই কাজে আসবে না। তাদের ব্যাপারে ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেছেন,
ইসমাঈলি, নুসাইরি ও কাদিয়ানিদের মতো মুসলিম দেশগুলোতে চেপে বসা বর্তমান তাগুত শাসকগোষ্ঠী, যারা আল্লাহর শরীয়ত প্রত্যাখ্যান করে কুফরি শাসনব্যবস্থা জারি করেছে এবং তা দিয়েই শাসনকার্য পরিচালনা করছে তারাও নিঃসন্দেহে কাফের। আবুল হাসান আশআরি, ইবনে তাইমিয়া ও হাফেজ যাহাবি রহ. এসব লোকের ব্যাপারে বলেনিনি যে, আমি কাউকে তাকফির করবো না'। বরং তাদের বক্তব্য সেসব ভ্রান্ত ফিরকার ব্যাপারে, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জনের চেষ্টা করেছিল, তবে দলিল দিতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছিল। এ যুগের হকপন্থী সকল ওলামায়ে কেরামের দৃষ্টিতে ইসমাঈলি, নুসাইরি, কাদিয়ানিদের মতো আল্লাহর শরীয়ত প্রত্যাখ্যানকারী বর্তমান তাগুত শাসকগোষ্ঠী নিঃসন্দেহে কাফের।
একবার দেনা-পাওনা নিয়ে এক পাওনাদার ও দেনাদারের মাঝে বিবাদ লেগে যায়। এক পর্যায়ে দেনাদার পাওনাদারকে বলল, صلّ عَلَى مُحَمَّد صَلَّى اللَّه عَلَيْه وَسَلَّم - মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ পড়ো। রাগান্বিত অবস্থায় পাওনাদার বলে বসলো, لَا صَلَّى اللَّه عَلَى من صَلَّى عَلَيْه - যে তাঁর ওপর দুরুদ পড়বে আল্লাহ তার ওপর রহমত না করুক।
বাহ্যত এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়ার শামিল কিংবা ওইসব ফেরেশতাকে গালি দেয়ার শামিল, যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ পড়ে। আর এতো স্পষ্ট যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়া, ফেরেশতাদেরকে গালি দেয়া কুফর।
ইমাম সুহনুন রহ.কে জিজ্ঞেস করা হলো, এ ব্যক্তি কি মুরতাদ হয়ে গেছে? তিনি উত্তর দেন, না। কারণ, কথাটি সে রাগের মাথায় বলেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিংবা ফেরেশতাদের গালি দেয়া তার উদ্দেশ্য নয়। যে তাকে দুরুদ পড়তে বলেছে তাকে গালি দেয়াই তার উদ্দেশ্য।
অর্থাৎ বাহ্যিক শব্দ যদিও কুফর, কিন্তু তার অবস্থা থেকে বুঝা যায়, তার উদ্দেশ্য এমনটি নয়। (দেখুন : আশশিফা-কাযি ইয়ায : ২/২৩৫)
এক লোক আহলে বাইতের এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিকে গালি দিয়ে বলল, এই কুত্তা! এই কুত্তার বাচ্চা! তখন লোকজন তাকে এ বলে শাসালো যে, তুমি কি জানো, কাকে কুত্তার বাচ্চা কুত্তা বলছো? ইনি শরীফ-সম্ভ্রান্ত (নবী-বংশের লোক)। সে রেগেমেগে বলে বসলো, لَعَنَهُ اللَّهُ وَلَعَنَ مَنْ شَرَّفَهُ -আল্লাহ একেও লানত করুন, একে যে শরীফ বানিয়েছে তাকেও লানত করুন।
লোকজন আবারও শাসালো, মিঁয়া তোমার মাথা ঠিক আছে? ইনি শরীফ (নবী-বংশের লোক)। সে উত্তর দিল, কিসের শরীফ? 'এ তো কুত্তার বাচ্চা কুত্তা'।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এর কাছে ফতোয়া চাওয়া হল, এ ব্যক্তি কি মুরতাদ হয়ে গেছে? তিনি উত্তর দেন, যদি সে আগ থেকে যিন্দিক ছিল বলে জানা না যায়, তাহলে শুধু এ গালির কারণে তাকে মুরতাদ বলা যাবে না। দেখতে হবে, তার উদ্দেশ্য কী? কারণ, যিন্দিক না হলে একজন মুসলমান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দিতে পারে না। مَنْ شَرَّفَهُ - 'একে যে শরীফ বানিয়েছে' দ্বারা যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদ্দেশ্য হয় যে, এমন লোককেও রাসূল শরীফ বানিয়েছেন, তাকে সম্মান দিতে বলে গেছেন, তাই রাসূলের ওপর আল্লাহর লানত পড়ুক, এমন উদ্দেশ্য হয়ে থাকলে সে মুরতাদ।
পক্ষান্তরে যদি এটি তার উদ্দেশ্য না হয়, বরং উদ্দেশ্য হয়, বর্তমানে যারা এই লোককে সম্মান করছে তাদের ওপর লানত পড়ুক, তাহলে সে মুরতাদ হবে না। তার আগের ও বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে দেখতে হবে, তার উদ্দেশ্য কী? সে হিসেবে ফায়সালা হবে। ওসব বিবেচনা না করেই তাকে মুরতাদ সাব্যস্ত করা যাবে না এবং তার ওপর মুরতাদের বিধান প্রয়োগ করা যাবে না। তবে সে কোন সাধারণ মুসলিমকে নয়, বরং নবী বংশের লোককে গালি দিয়েছে, তাই -মুরতাদ হোক না হোক- তাকে তা'যির করতে হবে। উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। যেন আর কখনও এমন কাজ করার সাহস না পায়। (দেখুনঃ মাজমুউল ফাতাওয়া ৩৫/১৯৭-১৯৯)
তাকফিরের ক্ষেত্রে উগ্রপন্থা অবলম্বন করা খারেজি সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট। ছোটখাট কারণে মুসলিমদেরকে তাকফির করে তাদের জান মাল বৈধ করে নেয়া এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা খারেজি শ্রেণীর কাজ। মুসলিম উম্মাহ দীর্ঘদিন এ শ্রেণীর ফিতনা থেকে নিরাপদ ছিল। এ যুগে আবার এদের উদ্ভব ঘটেছে। এদের উগ্রতা আর বাড়বাড়ির কারণে কাফের, মুরতাদ এবং তাদের পোষ্য দরবারি আলেমরা সুযোগ পেয়ে গেছে। তারা ইসলামকে সন্ত্রাসের ধর্ম এবং জিহাদ মানেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ও রক্তপাত প্রমাণের অপচেষ্টার নতুন পথ পেয়েছে। এদের চরমপন্থার কারণে একদিকে যেমন দীর্ঘদিন ধরে চলমান জিহাদের সুফল বহুলাংশে বিনষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে সাধারণ মুসলমানদের কাছে জিহাদের চেহারা বিকৃত হয়ে এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে। জিহাদপ্রিয় অতি জযবাতি কিছু যুবক যাদের ইলমের পরিধি সীমিত, ধৈর্যও কম এবং দীনের বুঝও হালকা, এরাই এ শ্রেণীর ফাঁদে সবচেয়ে বেশি পড়েছে। বর্তমানে হক-বাতিল অস্পষ্ট হয়ে পরিবেশ বেশ ঘোলাটে হয়ে গেছে। অনেকের মনেই এখন জিহাদ ও মুজাহিদদের ব্যাপারে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে। এ সবের জন্য নব্য খারেজিরাই অনেকাংশে দায়ী।
খারেজিদের উৎপত্তি যদিও বেশ পরে হয়েছে কিন্তু তাদের পূর্ব পুরুষ ও আদর্শিক পিতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেই জন্ম নিয়েছিল। ইমাম বুখারি রহ. আবু সাঈদ খুদরি রাযি. থেকে বর্ণনা করেন,
بينما نحن عند رسول الله صلى الله عليه و سلم وهو يقسم قسما أتاه ذو الخويصرة وهو رجل من بني تميم فقال يا رسول الله اعدل فقال ( ويلك ومن يعدل إذا لم أعدل قد خبت وخسرت إن لم أكن أعدل ) . فقال عمر يا رسول الله ائذن لي فيه فأضرب عنقه ؟ فقال ( دعه فإن له أصحابا يحقر أحدكم صلاته مع صلاتهم وصيامه مع صيامهم يقرؤون القرآن لا يجاوز تراقيهم يمرقون من الدين كما يمرق السهم من الرمية ينظر إلى نصله فلا يوجد فيه شيء ثم ينظر إلى رصافه فما يوجد فيه شيء ثم ينظر إلى نضيه - وهو قدحه - فلا يوجد فيه شيء ثم ينظر إلى قذذه فلا يوجد فيه شيء قد سبق الفرث والدم آيتهم رجل أسود إحدى عضديه مثل ثدي المرأة أو مثل البضعة تدردر ويخرجون على حين فرقة من الناس )
"আমরা একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি কিছু গনিমতের মাল বণ্টন করছিলেন। এ সময় বনু তামিম গোত্রের যুলখুয়াইসিরা নামক এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এল। এসে বললে, 'ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইনসাফের সাথে বণ্টন করুন'। (তার কথা শুনে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (রাগত স্বরে) বললেন, 'তোমার ধ্বংস হোক! আমি ইনসাফ না করলে কে ইনসাফ করবে? আমি ক্ষতিগ্রস্ত হবো, যদি ইনসাফ না করি'। তখন উমর রাযি. আরজ করলেন, 'ইয়া রাসূলাল্লাহ! অনুমতি দিন, আমি ওর গর্দান উড়িয়ে দিই'। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন 'ওকে ছেড়ে দাও। কারণ, তার এমন কিছু সাথী হবে, যাদের নামাযের সামনে তোমরা নিজেদের নামাযকে এবং তাদের রোযার সামনে নিজের রোযাকে নগণ্য মনে করবে। তারা কুরআন পড়বে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করে নিচে নামবেনা। তীর যেমন শিকারের দেহ ভেদ করে সজোরে বেরিয়ে যায়, এরাও তেমন দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। তীরের অগ্রভাগের লোহার ফলা দেখা হবে, কিন্তু কিছুই পাওয়া যাবে না। তীরের গোড়া দেখা হবে সেখানেও কিছুই পাওয়া যাবে না। মাঝের অংশ দেখা হবে কিন্তু কিছুই পাওয়া যাবে না। এরপর গোড়ার পালকে দেখা হবে সেখানেও কিছু পাওয়া যাবে না। শিকারের নাড়িভুঁড়ি এবং রক্তমাংশ ভেদ করে তীর সজোরে বের হয়ে গেছে। (এরা যখন বের হবে) এদের নিদর্শন হবে, (তাদের দলে) একজন কালো লোক থাকবে, যার একটি বাহু হবে নারীদের স্তনের মতো; কিংবা বলেছেন, গোশতের টুকরার মতো যা (ওপর-নীচে, ডানে-বামে) নড়াচড়া করবে। মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ চলাকালে তাদের আবির্ভাব হবে।
যুলখুয়াইসিরা এবং তার সমশ্রেণির জাহেল আবেদরাই খারেজিদের পূর্বপুরুষ। যেমনটা অন্য হাদিসে এসেছে,
ইবনে কাসির রহ. (৭৭৪হি.) বলেন,
যুলখুয়াইসিরা কী ধরনের শব্দ বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর আপত্তি তুলেছিল, হাফেয ইবনে হাজার রহ. (৮৫২হি.) সেগুলোর কয়েকটি একত্রিত করছেন,
"اتق الله يا محمد- হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় করুন।
اعدل يا محمد- হে মুহাম্মাদ! ইনসাফের সাথে বণ্টন করুন।
يا محمد والله لئن كان الله أمرك أن تعدل ما أراك تعدل- হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর কসম, আল্লাহ যদি আপনাকে ইনসাফ করার আদেশ দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে তো ইনসাফ করতে দেখছি না।
যুলখুয়াইসিরা এক দিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নাম ধরে সম্বোধন করে বেয়াদবি করেছে, অন্য দিকে তাঁর ইনসাফের ওপর প্রশ্ন তোলার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। এরপরও তাকে হত্যা করা হয়নি। এর কারণ সম্পর্কে একটি বর্ণনায় এসেছে,
অর্থাৎ তাকে হত্যা করলে অন্যান্য লোকজন ভাববে, যারা আমার দ্বীন গ্রহণ করেছে আমি তাদেরকেও হত্যা করি। এতে তাদের মনে ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারণা জন্ম নেবে। ফলে তখন তারা আর ইসলাম গ্রহণ করতে চাইবে না।
সারকথা হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর আপত্তি তোলার কারণে যদিও সে হত্যার উপযুক্ত ছিল। কিন্তু যেহেতু তখনও ইসলাম ততোটা শক্তিশালী হয়ে উঠেনি, তাই মাসলাহাতের (জাগতিক কল্যাণের) বিবেচনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হত্যা করেননি।
হত্যার উপযুক্ত হওয়ার সত্ত্বেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসলাহাতের খাতিরে যুলখুয়াইসিরাকে হত্যা করেননি। এ থেকে বুঝা যায়, মাসলাহাতের খাতিরে এ ধরনের লোককে হত্যা করা থেকে বিরত থাকা যাবে। খারেজিরা সংঘবদ্ধ কোন দল হলে ইমামুল মুসলিমিন যদি মনে করেন, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে না জড়ালেই ভালো হবে, তাহলে তিনি যুদ্ধ এড়িয়ে যেতে পারেন বা বিলম্বিত করতে পারেন। একান্ত যদি তারা আক্রমণ করে বসে তাহলে প্রতিহত করবেন। অন্যথায় বিলম্বিত করতে পারেন। আবার তিনি ভালো মনে করলে আগে বাগেই যুদ্ধ করতে পারেন। তবে দলিল প্রমাণের মাধ্যমে গোমরাহি থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলে তাই করবেন। এরপরও যারা গোমরাহি এবং বিরোধিতায় অটল থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধই করবেন। আলী রাযি. খারেজিদের সাথে এমনই করেছেন। খারেজিদের ব্যাপারে তিনিই আমাদের অনুসরণীয়। হাফেয ইবনে হাজার রহ. (৮৫২হি.) বলেন,
বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, যুলখুয়াইসিরা ছিল একজন জাহেল আবেদ। পাশাপাশি সে ছিল বেদুইন। হাফেয ইবনে হাজার রহ. এ সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। যেমন তিনি বলেন,
"হযরত আবু বকর রাযি. থেকে বর্ণিত আহমাদ ও তাবারির একটি হাদিসে এসেছে, 'কালো বর্ণের লম্বা এক লোক যার লুঙ্গি ওপরে উঠানো ছিল এবং মাথা ছিল মুণ্ডানো। তার দু'চোখের মাঝখানে (অর্থাৎ কপালে) সেজদার দাগ পড়া ছিল।
হযরত আবু বারযাহ রাযি. থেকে বর্ণিত আহমাদ, তাবারি ও হাকেমের একটি বর্ণনায় এসেছে, মাথা ভরা চুল বিশিষ্ট কালো এক লোক, যার দু'চোখের মাঝখানে সেজদার দাগ পড়া ছিল।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এমন ইবাদাতগুজার লোকটি, সেজদা করতে করতে যার কপালে দাগ পড়ে গেছে, সে কিভাবে আল্লাহর রাসূলকে বে-ইনসাফ মনে করলো? মনে করাতেও ক্ষান্ত থাকেনি, সকলের সামনে আপত্তিও করে বসলো? উপরোক্ত বর্ণনাগুলোতে তার উত্তরও পাওয়া গেছে যে, এর কারণ ছিল দুটি,
এক. সে ছিল বেদুইন। আর বেদুইনদের মেজাজ হয় রুক্ষ। ভদ্র সমাজের সাথে তাদের উঠাবসা হয় না। ফলে তাদের মাঝে আদব কায়দা থাকে না বললেই চলে। এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
দুই. সে ছিল নতুন মানুষ। অর্থাৎ দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ-জাহেল। বেদুইনরা এমনিতেই জাহেল হয়ে থাকে। তদুপরি সে ছিল নও মুসলিম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
এক দিকে আদব কায়দা বিবর্জিত বদমেজাজি, অপরদিকে জাহেল। এ কারণেই সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর আপত্তি করতে দ্বিধা করেনি।
বিভিন্ন হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খারেজিদের দ্বীনি হালত কেমন হবে, তা একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন। প্রচণ্ড শক্তিধর কোনো তীরন্দাজ কোনো শিকারের ওপর তীর মারল। তীরের গতি এতই তীব্র ছিল যে, শিকারের দেহ ভেদ করে চলে গেল। তীরের গায়ে শিকারের সামান্য রক্ত লেগে নেই। তীরন্দাজ বিশ্বাসই করতে পারছে না যে, তীরটা শিকারের গায়ে লেগেছিল। তার সন্দেহ হচ্ছে, তীর হয়তো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। শিকারের গায়ে পড়লে তো কিছু না কিছু আলামত থাকতো।
খারেজিদের হালতও এমন। দ্বীনের ব্যাপারে এত বেশি উগ্রতা দেখাবে যে, শেষে তারা দ্বীন থেকে বেরিয়েই যাবে। প্রকৃত দ্বীনদারি বলতে তাদের মাঝে কিছুই থাকবে না। মুখে মুখে দ্বীনের বুলি আওড়ানো ছাড়া বাস্তবে দ্বীনদারি কিছুই থাকবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনসাফের ওপর আপত্তি তোলার পর যুলখুয়াইসিরার দ্বীনদারির যে হালত, খারেজিদেরও একই হালত। আলী রাযি. এর ভাষায় এদের দৃষ্টান্ত হলো যেমনটা আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
"বলুন, আমি কি তোমাদেরকে সেসব লোকের সংবাদ দেবো, যারা কর্মের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত? তারাই সেসব লোক, পার্থিব জীবনে যাদের সকল দৌড়-ঝাপ সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে, অথচ তারা মনে করে যে, তারা খুব ভাল কাজ করছে।" -সূরা কাহফ (১৮ঃ১০৩-১০৪) (দেখুনঃ আলফারকু বাইনাল ফিরাক, আব্দুল কাহির আলজুরজানি : ৩০)
এক. যারা তাদের আকিদায় বিশ্বাসী হবে না তারা কাফের।
দুই. খারেজিরা এমন কাজের প্রেক্ষিতে মুসলিমদের কাফের ঘোষণা করে যার ভিত্তিতে আহলুস সুন্নাহর মতে মুসলিমদের কাফের ঘোষণা করা যায় না। অধিকাংশ খারেজিদের বিশ্বাস, কোন মুসলিম কবিরা গুনাহয় লিপ্ত হলে কাফের হয়ে যায়। বর্তমান যুগের খারেজিরা আরও এগিয়ে আছে, তারা কবিরা গুনাহ ছাড়াও সামান্য সামান্য বিষয়েই মুসলিমদের তাকফির করে বসে।
তিন. বর্তমানের অনেক খারেজি মনে করে দারুল হরবে বসবাসকারী সকল মুসলিম কাফের। আর দারুল হরব বলতে তারা বুঝায়, তাদের আয়ত্বাধীন রাষ্ট্র ছাড়া সব রাষ্ট্র। এ যুগের খারেজিদের কেউ কেউ তো মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে আইডি কার্ড করলেও কাফের হয়ে যাবে বলে মনে করে।
চার. খারেজিরা নিজেদের জামাআতকে ইমান ও কুফরের মাপকাঠি বানায়। যারা তাদের জামাআতের অংশ নয় এমন সবাইকে তারা কাফের গণ্য করে। আবার অনেকে এমন সবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং হত্যা করা জায়েজ মনে করে। অথবা মনে করে তাদের জামাআতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কুফরে আকবর। বর্তমানের যে খারেজিরা আবু বকর বাগদাদীকে খলীফা ঘোষণা করেছিল তাদের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
উম্মতে মুসলিমার মাঝে সর্বপ্রথম যে ফিতনা দেখা দিয়েছে তা হলো এই খারেজি ফেতনা বা তাকফিরি ফিতনা। এ ফিতনার দ্বারাই উম্মতের মাঝে ফিতনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। খলিফায়ে রাশেদ হযরত উসমান রাযি.কে তাকফির ও হত্যার মাধ্যমে এ ফিতনার সূত্রপাত। সেই যে ফিতনা শুরু হল আর শেষ হয়নি। ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,
দ্বীন-সচেতন, আল্লাহ ভীরু এবং আখেরাতে বিশ্বাসী একজন মুমিন অন্য মুসলিমদের কাফের আখ্যা দিয়ে তার জান মাল হালাল মনে করা তো বহু দূরের কথা, কথায় বা কাজে সামান্য কষ্টও সে কোনো মুমিনকে দিতে হিম্মত করতে পারে না। কিন্তু যখন কারো আকিদা নষ্ট হয়ে যায়, বিদআতের শিকার হয়, দ্বীনের নামে শয়তান তাকে ধোঁকায় ফেলে দেয় তখন সবকিছুই সম্ভব।
এটি শয়তানের অনেক বড় সফলতা। সে যখন কাউকে কোন অন্যায় কাজে লিপ্ত করাতে সক্ষম না হয়, তখন অন্যায়কে দ্বীনের লেবেল পরিয়ে তার সামনে পেশ করে। আর তখন অনেক সরলমনা মুসলমান তার ফাঁদে পড়ে যায়। বর্তমানে কোন কোন জিহাদি দলের মধ্যে খারেজি আকিদা ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে মুসলিম বিশ্বে জিহাদের বড় একটি ভিত্তি হল 'তাকফিরুত তাওয়াগিত' তথা তাগুত শাসকদের কাফের আখ্যায়িত করা। সামান্য অসাবধানতায় এ তাকফির শরীয়তের সীমানা অতিক্রম করে যেতে পারে এবং ইতিমধ্যে করেছেও। এজন্য একজন মুজাহিদকে এ বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। খারেজিদের আকিদা ও মানহাজ যেন কোন ভাবে নিজের মধ্যে এসে না যায়, এ ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য খারেজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট হাদিসগুলো এবং এ ফিতনা নিয়ে গ্রহণযোগ্য উলামা মাশায়িখদের লেখা প্রবন্ধ ও কিতাবাদি অধ্যয়ন করা চাই। খারেজিদের বৈশিষ্টগুলো খুব ভালোভাবে বুঝা চাই, যেন সেগুলো থেকে বেঁচে থাকা যায়। এখন আমরা এ সংক্রান্ত কিছু হাদিস উল্লেখ করব। এরপর সেগুলোর আলোকে খারেজিদের মৌলিক কিছু বৈশিষ্ট তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ।
'গলদেশ পেরিয়ে নিচে নামবে না' প্রসঙ্গে ইমাম নববি রহ. (৬৭৬হি.) বলেন,
"মুখে মুখে পড়া ছাড়া কুরআনের আর কোনো কিছুই তাদের মাঝে নেই। অন্তরে পৌঁছার জন্য কুরআন তাদের গলদেশ অতিক্রম করে না। অথচ শুধু এতটুকুই তো উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য তো হচ্ছে অন্তরে গিয়ে পৌঁছা। যার ফলে কুরআন বুঝবে এবং কুরআন নিয়ে গভীর ফিকির করবে।"-ইমাম নববি রহ. কৃত শরহে মুসলিম : ৬/১০৫ অর্থাৎ কুরআনের গভীর ফিকির তাদের নেই, সঠিক বুঝও নেই। মুখে মুখে পড়ে আর ভাসা ভাসা কিছু বুঝে।
'সৃষ্টি জগতের শ্রেষ্ঠ বাণী তারা বলবে'এ কথাটি সম্পর্কে হাফেয ইবনে হাজার রহ. (৮৫২হি.) বলেন,
"অচিরেই আমার উম্মতের মাঝে মতভেদ ও বিরোধ দেখা দেবে। একটি সম্প্রদায় বের হবে যারা কথা বলবে চমকপ্রদ, কাজ করবে মন্দ। কুরআন পড়বে কিন্তু তা তাদের গলদেশ বেয়ে নিচে নামবে না। শিকারের দেহ ভেদ করে নিক্ষিপ্ত তীর যেমন বেরিয়ে যায়, তেমনি তারা দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। নিক্ষিপ্ত তীর পুনর্বার ধনুকের রশিতে ফিরে আসা পর্যন্ত তারা দ্বীনে ফিরে আসবে না। তারা সৃষ্টি জগতের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টি। সুসংবাদ তাদের জন্য যারা এদেরকে হত্যা করবে এবং তাদের জন্যও, যাদেরকে এরা হত্যা করবে। আল্লাহর কিতাবের দিকে তারা আহ্বান করবে অথচ নিজেরা কিতাবের কোনো কিছুর ওপরই প্রতিষ্ঠিত থাকবে না। যারা তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করবে, এদের তুলনায় তাঁরাই আল্লাহর অধিক নৈকট্যবান হবে।" -সুনানে আবু দাউদ : ৪৭৬৫ (সনদ সহীহ)
ইমাম বুখারি রহ. তরজমাতুল বাবে বলেন,
"ইবনে উমর রাযি. খারেজিদেরকে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট মনে করতেন। তিনি বলেছেন, তারা কাফেরদের ব্যাপারে নাযিলকৃত আয়াতগুলোকে মুমিনদের ওপর প্রয়োগ করেছে"।-সহীহ বুখারি, বাবঃ কতলুল খাওয়ারিজ ওয়াল মুলহিদিন।
"শোনে রাখো! অচিরেই আমার উম্মতে এমন কতক লোক বের হবে যাদের প্রকৃতি হবে কঠোর। যবান হবে ধারালো। যবানে কুরআনের অনল বর্ষাবে, কিন্তু কুরআন তাদের গলদেশ পেরিয়ে নিচে নামবে না। শোনো! যখন তাদের দেখবে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। আবার দেখলে আবারও নিশ্চিহ্ন করে দেবে। তাদের হত্যাকারীদের জন্য রয়েছে (মহা) প্রতিদান।"-মুসনাদে আহমাদ : ২০৪৪৬ (সনদ শক্তিশালী)
"সুলায়মান আততাইমি সূত্রে আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের বলা হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'তোমাদের মাঝে এমন কিছু লোক আসবে যারা (খুব) ইবাদত করবে। অবস্থা এ পর্যায়ে পৌঁছবে যে, তারা অন্যদের মুগ্ধ করবে এবং নিজেরাও আত্মগৌরবের শিকার হবে। শিকারের দেহ ভেদ করে নিক্ষিপ্ত তীর যেমন বেরিয়ে যায়, তারাও তেমন দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে।"-মুসনাদে আবু ইয়ালাঃ ৪০৬৬ (সনদ সহীহ)
উপরোক্ত হাদীস এবং খারেজিদের প্রথম দলের ইতিহাস থেকে তাদের মৌলিক যেসব বৈশিষ্ট বুঝা যায় তা নিম্নরূপ,
এক. তারা এমন এমন বিষয়ের কারণে মুসলিমদের তাকফির করে যে সব কারণে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহর মতে কোন মুসলিমকে তাকফির করা বৈধ নয়।
দুই. তারা নির্বোধ ও মোটাবুদ্ধির অধিকারী হয়। তারা কুরআন পড়ে কিন্তু তার সঠিক মর্ম বুঝে না। ফলে কাফেরদের ব্যাপারে নাযিলকৃত আয়াতগুলোকে মুমিনদের ওপর প্রয়োগ করে তাদের তাকফির করে এবং মুমিনদের জান মাল হালাল এবং তাদের নারীদের দাসী বানানো বৈধ মনে করে।
তিন. তারা মুসলিমদের হত্যা করে কিন্তু কাফের ও মূর্তি পূজারিদের ছেড়ে দেয়।
চার. তারা কঠোর প্রকৃতির হয়।
পাঁচ. তাদের কথাবার্তা বাহ্যত বেশ সুন্দর ও চমকপ্রদ হয়। যা শুনে যে কোন মুমিন খুব সহজেই আকৃষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু তাদের আমল হয় মন্দ।
ছয়. তাদের বাহ্যিক ইবাদত, নামায, রোযা, কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি খুব সুন্দর হয়, যা দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে তারা নিজেরাও আত্মগরীমার শিকার হয়।
সাত. তারা সাধারণত অল্পবয়সী হয়। জ্ঞান-বুদ্ধি দিক দিয়েও হয় অপরিপক্ক।
আট. তাকফিরের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়াপ্রবণ। যারাই তাদের আকীদা-বিশ্বাস গ্রহণ করে না তাদেরকেই তাকফির করে।
নয়. তারা একগুঁয়ে ও অনিয়ন্ত্রিত জযবার অধিকারী হয়। পরিণতির কথা চিন্তা না করে হুটহাট কিছু একটা করে ফেলার প্রবণতা তাদের মাঝে দেখা যায়।
এগুলো হল খারেজিদের মৌলিক কিছু বৈশিষ্ট। আল্লাহর পথের মুজাহিদদের উচিত, সব সময় সতর্ক থাকা, যেন তাদের মাঝে এ সবের কোনোটা না এসে যায়। তাদের একটি বৈশিষ্ট হল তারা সাধারণত অল্পবয়সী হয়ে থাকে। তাই যুবক ভাইদেরকে খুব বেশি সতর্ক থাকতে হবে। তাদের কর্তব্য, সব সময় প্রবীণ ও অভিজ্ঞ মুজাহিদীন এবং হক্কানী আলেম-ওলামাদের পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা মোতাবেক চলা। যেন তারা অপরিপক্কতা এবং জযবার তাড়নায় বিচ্যুতির শিকার না হয়ে পড়েন।
তাকফিরের ব্যাপারে সীমালংঘনের প্রতিকার হিসেবে প্রথমত উম্মাহর হক্কানি ওলামায়ে কেরামকে দ্বিতীয়ত জিহাদি তানজিমগুলোকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রত্যেককে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। তাহলেই এ ভয়াবহ ফিতনা থেকে মুসলিম উম্মাহ বিশেষ করে উম্মাহর মুজাহিদরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবে।
আল্লাহ তাআলা ওলামায়ে কেরামকে দ্বীনের প্রতিটি বিষয় উম্মাহর সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার দায়িত্ব দিয়েছেন। যেহেতু দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতাই এ ফিতনা জন্ম নেয়ার অন্যতম কারণ। তাই ওলামায়ে কেরামের উচিত, দ্বীনের সকল বিষয়ে ইসলামের সঠিক অবস্থান উম্মাহর সামনে কোনো ধরনের লুকোচুরি না করে সুস্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা। বিশেষত হাকিমিয়া, ওয়ালা বারা, কুফর বিততাগুত, জিহাদ ও কিতাল, সিয়াসত, ইমারাত ও খেলাফত এবং ঈমান কুফর ও তাকফিরের বিষয়াদি পাশাপাশি তাকফিরের শর্ত ও প্রতিবন্ধকগুলো সবিস্তারে উম্মাহর সামনে তুলে ধরা।
বর্তমানে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম এ সব বিষয়ে কোনো কথাই বলেন না। হাতেগোনা অল্প কয়েক জন আলেম বলে যাচ্ছেন তবে তা পুরো উম্মাহর জন্য যথেষ্ট হচ্ছে না। এর ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ব্যাপকভাবে উম্মাহর মধ্যে চরম অজ্ঞতা বিরাজ করছে। তাকফিরের শর্ত ও প্রতিবন্ধক সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণে মুতলাক নুসুস এবং সালাফ ও আইম্মায়ে কেরামের মুতলাক বক্তব্য থেকে অনেকে লাগামহীন ভাবে তাকফির করতে শুরু করছে। এর জন্য ওলামায়ে কেরামের কিতমান, সুকুত ও তাহরিফই (সত্য গোপন করার প্রবণতা, নীরবতা ও হকের বিকৃতি সাধনই) সবচেয়ে বেশি দায়ী। চারদিকে মুসলিম উম্মাহর দুরবস্থা দেখে উম্মাহর যুবকরা ধীরে ধীরে জেগে উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু ওলামায়ে কেরামের কাছ থেকে সঠিক দিক নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে তারা কোন কোন ক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উস্তাদ আহমাদ ফারুক রহ. যথার্থই বলেছেন, "ওলামায়ে কেরাম যদি এসব বিষয়ে সময় থাকতে হক কথা না বলেন তাহলে এমন একটি তাকফিরি ফেরকা গড়ে উঠবে যারা ওলামাদেরকে ব্যাপকভাবে হত্যা করবে। তখন আফসোস করে এবং অন্যকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ হবে না। সব নিজেদেরই হাতের কামাই"।
সাধারণত দেখা যায়, জিহাদি তানজিমগুলোতে অনাকাঙ্ক্ষিত উগ্রতা ও বাড়াবাড়ি খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। তাই তানজিমের নেতৃবৃন্দের উচিত, শুরু থেকেই এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যেন এ জাতীয় ফিতনাগুলো জন্ম নেয়ার রাস্তাই বন্ধ হয়ে যায়। এ উদ্দেশ্যে যা যা করণীয়, তার কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হল,
এক. তানজিমের সকল পর্যায়ে কুরআন-হাদীসের বিশুদ্ধ ইলমের ব্যাপক প্রচার-প্রসার। একদম উপর থেকে নিচ পর্যন্ত। মাসউল, সাথী, সমর্থক কারো মাঝেই যেন দ্বীনের মৌলিক বিষয়াদির ব্যাপারে কোনও ধরনের অজ্ঞতা না থাকে। অজ্ঞতাই ফিতনার মূল কারণ। অজ্ঞতা থেকেই খারেজিদের জন্ম হয়েছিল।
দুই. ইসলাহে নফস ও ঈমানি তরবিয়াত। ই'জাব বিন নফস বা আত্মগৌরবই খারেজিদেরকে ভুল পথে নিয়ে গিয়েছিল। তানজিম তার প্রতিটি সদস্যকে এমন তাকওয়ার ছাঁচে গড়ে তুলবে, যেন মুসলমানদের এক এক ফোঁটা রক্ত তার কাছে সমগ্র দুনিয়ার চেয়েও বেশি মূল্যবান মনে হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এবং আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন ও শরীয়াহ কায়েম ও সকল মুসলমানের জান-মালের সুরক্ষা দেয়াই যেন তার জিহাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়। দুনিয়াবি কোন লালসা কিংবা অন্যের ওপর প্রাধান্য লাভ করা যেন তার অন্তরে একদমই না থাকে।
তিন. আমীরের ইতাআত। তানজিম তার প্রতিটি সদস্যকে আমীরের যথাযথ ইতাআতের গুণ অর্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করবে। আমীর যতক্ষণ কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক তানজিম পরিচালিত করবেন ততক্ষণ কোন ভাবেই তাঁর আনুগত্যের বাইরে যাওয়া যাবে না। খারেজিদের প্রথম গ্রুপের জন্ম আমীরের ইতাআত না করার কারণেই হয়েছিল। এ যুগের খারেজিদের জন্মও ঠিক একই ভাবে হয়েছে। এ জন্য তানজিমের নেতৃবৃন্দের উচিত, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে আমীরের ইতাআতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং তাঁর নাফরমানীর ভয়াবহতা প্রতিটি সদস্যের সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা। কোনো সদস্যের মাঝে ইতাআতের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অবহেলা বা কমতি দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়া। তানজিম যদি এ ব্যাপারে যথাযথ গুরুত্বারোপ না করে তাহলে অসম্ভব নয় যে, তানজিম থেকে খুব শীঘ্রই নতুন কোন খারেজি ফিরকার আবির্ভাব ঘটবে।
সারকথা হল, মুসলমানদের মাঝে কুরআন-হাদীসের বিশুদ্ধ ইলমের ব্যাপক প্রচার-প্রসার বিশেষভাবে জিহাদি তানজিমগুলোর সদস্যদের মাঝে বিশুদ্ধ ইলমের ব্যাপক প্রচার-প্রসার এবং তাদের ইলমী-আমলী, ঈমানী ও আখলাকি তরবিয়াত ও তারাক্কির মাধ্যমেই এ ফিতনাসহ সব ধরনের ফিতনার পথ বন্ধ করা সম্ভব। ওয়াল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তাআলা আ'লাম। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সব ধরনের ফিতনা থেকে হেফাজত করুন আমীন।
| web |
6beeb9f3a71b705709cd9411505bb59ebe992224 | অনিয়মের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের ফাইলিং ও এফিডেভিট শাখার অন্তত ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্য শাখায় বদলি করা হয়েছে। এফিডেভিট শাখার অনিয়ম নিয়ে প্রধান বিচারপতির ক্ষোভ প্রকাশের একদিন পরই বদলির এ আদেশ দেওয়া হলো। গতকাল বদলির বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। এর আগে সোমবার আপিল বিভাগে একটি মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট শাখায় সিসি ক্যামেরা বসানোর পরও অনিয়ম ঠেকানো যাচ্ছে না। একটি মামলা আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ৩ নম্বর ক্রমিকে থাকার কথা থাকলেও সেটি ৯০ নম্বর ক্রমিকে দেখা যায়। বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তখন প্রধান বিচারপতি এমন মন্তব্য করেন। বদলির আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই বদলি অনিয়ম প্রতিরোধেরই অংশ। তিনি বলেন, যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ঢুকে পড়ে তখন সেই দুর্নীতি রোধের জন্য কতগুলো পদক্ষেপ নিতে হয়। প্রধান বিচারপতি সোমবারও বলেছেন, উনি কঠোর হাতে এগুলো দমন করার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি এ বদলিগুলো তারই একটি অংশ।
| web |
c682a45fd14d93031aaa5eab947d368a052b2e7d | হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককের বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় করা ধর্ষণ মামলায় নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সহ ৩জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ সময় মামুনুল হক কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য শুনেছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে ধর্ষণ মামলায় তৃতীয় দফায় এই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
এরআগে সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।
এদিকে মামুনুল হকের সঙ্গে তার ছোট ভাই, ছোট বোন, ভাগনে সহ পরিবারের অনেকেই সাক্ষাত করেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিবুদ্দিন আহমেদ রকিব বলেন, রয়েল রিসোর্টের কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান, আনসার সদস্য ইসমাইল হোসেন ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু সাক্ষী দিয়েছেন। তারা তিনজনই ঘটনার দিনের নানা বিষয় তুলে ধরে সাক্ষী দিয়েছেন।
মামুনুল হকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক। সহযোগীতায় ছিলেন অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা। ওমর ফারুক বলেন, প্রথম দফায় সাক্ষ্য দিয়েছেন বাদী। দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩ জন। তৃতীয় দফায় ৩ জন। এ নিয়ে মামলায় ৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের আমরা জেরা করেছি।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-ক সার্কেল নাজমুল আলম জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যসহ তিন স্তরের নিরাপত্তায় মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ফের কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী।
তবে, ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।
| web |
8ee90273139c09bd8d993d244e396a7d1c9613d8 | মাথায় জড়ানো গাঁদা ফুলের মালা। পরনে তৃণমূলের প্রতীক দেওয়া শাড়ি। আর হাতে তৃণমূলের পতাকা। তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নুরের কোলে এমনই সাজে বসে রয়েছে বছর ছয়ের এক রত্তি মেয়ে। মৌসমের ডান পাশেও তৃণমূলের পতাকা হাতে বসে রয়েছে বছর সাতের একটি ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাতে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে মালদহের হবিবপুর ব্লকের পার্বতীডাঙা গ্রামে। আর তাতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তৃণমূল শিশুদের ভোটের কাজে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। যদিও এখানে বিতর্কের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন মৌসম।
ভোট প্রচারে গিয়ে দলীয় কর্মী, সমর্থকেরা কখনও ফুল, মালা দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন উত্তর মালদহের তৃণমূল প্রার্থী মৌসমকে। অনেক জায়গায় আবার তাঁকে মিষ্টি মুখও করানো হচ্ছে। দলীয় প্রার্থীকে সংবর্ধনায় নতুনত্ব আনতে মরিয়া তৃণমূল কর্মী, সমর্থকেরা। এ দিন হবিবপুর ব্লকের মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট প্রচার করেন মৌসম। রোড-শো থেকে শুরু করে পায়ে হেঁটে ভোট প্রচার করেন তিনি। তবে বিতর্ক তৈরি হয় হবিবপুরের পার্বতীডাঙা গ্রামের দলীয় কর্মসূচিতে। এ দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই গ্রামে পৌঁছন মৌসম। ওই গ্রামে ছ'বছর বয়সের এক মেয়েকে তৃণমূলের প্রতীক আঁকা শাড়ি পরানো হয়। প্রচারে গিয়ে মেয়েটিকে দেখে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কোলে তুলে নেন মৌসম। সেই সময় ওই মেয়েটির হাতে তুলে দেওয়া হয় তৃণমূলের পতাকাও। মৌসমের পাশে তখন বছর সাতেকের একটি ছেলেও।
| web |
f02fe603d8d1f0149aeb3087fd47f55e391309a0 | সব্যসাচী ঘোষ : আগামী ৯ এপ্রিল অর্থাৎ শুক্রবার মেগা ফাইটে মুখোমুখি হবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে এই বছর আরসিবি অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে মাঠে নামবে। এমন পরিস্থিতিতে কি স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করবেন আইপিএলের সবথেকে সফলতম অধিনায়ক রোহিত শর্মা?
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে কয়েক দিন আগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের চেন্নাই শিবিরে যোগ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক। তবে কোয়ারেন্টিনে থাকার কারণে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে নামতে পারবেন না ডি কক। এই অবস্থায় ডি ককের পরিবর্ত হিসেবে নামতে পারেন ক্রিস লিন।
অস্ট্রেলিয়ার এই বিধ্বংসী ওপেনার গত বছর একেবারে সুযোগ পাননি। তবে এইবার চেন্নাইয়ের মাটিতে তিনি সুযোগ পেতে চলেছেন। যদিও বাঁ হাতি-ডান হাতি কম্বিনেশন এবং সাম্প্রতিক ফর্মের কথা বিচার করলে রোহিত শর্মার সাথে ইশান কিশানকে নামানো যেতে পারে, কিন্তু লিনের আগ্রাসী ব্যাটিংকে পাওয়ারপ্লেতে পেতে ওপেনিংয়ে রোহিত পাবেন এই অসি ব্যাটসম্যানকে।
এদিকে মূল স্পিনার হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে রাহুল চাহার শুরু করলেও এই বছর দলে রয়েছেন অভিজ্ঞ লেগস্পিনার পীযুষ চাওলা, যার চেন্নাইয়ের স্পিনিং পিচে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে রোহিত ও টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে এটি বেশ চিন্তার বিষয়। যদিও রাহুল চাহার এই মুহুর্তে যথেষ্ট অভিজ্ঞ এবং জাতীয় দলে খেলে এসেছেন। ফলে চাহারই হবেন প্রথম পছন্দ।
আর শেষে জসপ্রীত বুমরাহ এবং ট্রেন্ট বোল্টের সাথে তৃতীয় বোলার হিসেবে কে যুক্ত হবেন, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যেহেতু চেন্নাইয়ের পিচে খেলা হচ্ছে, তাই খুব অবাক হবেন না যদি জিমি নিশামকে খেলানো হয়। তার সঠিক লাইন ও লেংথ ব্যাটসম্যানদের বিব্রত করতে পারে। এছাড়া তার ব্যাটিংয়ের হাত বেশ ভালো এবং মুম্বইয়ের তারকা সমৃদ্ধ ব্যাটিংয়ে গভীরতা আনতে পারেন। তবে তৃতীয় পেসার হিসেবে আসতে পারেন নাথান কুল্টার নাইলও। অত্যন্ত উপযোগী ভূমিকা রাখবেন তিনি এই স্লো পিচে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সম্ভাব্য একাদশ - রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ক্রিস লিন, সূর্যকুমার যাদব, ইশান কিশান (উইকেটকিপার), হার্দিক পান্ডিয়া, কাইরন পোলার্ড, ক্রুণাল পান্ডিয়া, জিমি নিশাম / নাথান কুল্টার নাইল, রাহুল চাহার, ট্রেন্ট বোল্ট, জসপ্রীত বুমরাহ।
| web |
4dde0941c128be72f9bdcb57932e662c142e92104998b774a8ec567bdb12dabd | - রিটায়ার করেছেন? কই, আমার সঙ্গে গত সপ্তাহে দেখা হলো, কিছু বললেন না
কি মুস্কিল, তিনি যদি জনে জনে ডেকে রিটায়ার করার কথা না শোনান, সেটা কি আমার দোষ। এদিকে, প্রায় বিবেকানন্দ রোড পর্যন্ত পৌঁছে গেছি, বাসটা তখনো আলেয়ার মতন খানিকটা দূরে। খুবই বোকামি হয়ে গেছে আমার, এ রকম ভাবে আসা। আমি বললাম, থাক্, আর বেশী দূরে গিয়ে লাভ নেই। সামান্য কয়েকটা টাকা তো। অফিসেরও দেরী হয়ে যাচ্ছে, আমি বরং এখানেই নেমে পড়ি।
ভদ্রলোক অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বললেন, না, না, এখানে নামবেন কেন? এতদূর এসেছেন যখন, চলুন! চলুন !
সর্বনাশ, ভদ্রলোক কি ভাবছেন, বিবেকানন্দ রোড পর্যন্ত বিনা পয়সায় ট্যাক্সিতে আসাই আমার উদ্দেশ্য ছিল, তাই ঐ গল্পটা বানিয়ে বলেছি। কি ঝামেলায় যে পড়লাম। এত ট্রাফিক জ্যাম হয়! এখন একটা ট্রাফিক জ্যামে বাসটা আটকে যেতে পারে না। ট্যাক্সিওয়ালা, তার সঙ্গী এবং এই প্রৌঢ় সহৃদয় লোকটির কাছে কি করে প্রমাণ করবো, আমি একটা জোচ্চোর বদমাস নই, আমার অন্য কোনো মতলব নেই।
কিছুক্ষণ চুপচাপ। দারুণ অস্বস্তিকর নীরবতা। কি জানি, ওঁরা হয়তো ভাবছেন, আমি যে কোনো মুহূর্তে ছুরিটুরি বার করতে পারি। আমি আগে ভেবেছিলাম এটা খুবই সামান্য ব্যাপার। ভদ্রলোক হয়তো মুহূর্তের দুর্বলতায় আমাকে ট্যাক্সিতে তুলে অনুতাপ
হঠাৎ তিনি বললেন, কিন্তু আমি তো গ্রে স্ট্রীট দিয়ে ডানদিকে বেঁকবো, ওর মধ্যে যদি আপনার বাস না ধরা যায়টাকার চিন্তা তখন আমার চুলোয় গেছে। আমি তখন অবিশ্বাসী দৃষ্টি থেকে ছাড়া পেতে পারলে বাঁচি। বিগলিত ভাবে বললাম, অত্যন্ত ধন্যবাদ আপনাকে, আমি গ্রে স্ট্রীটের মোড়ে নেমে পড়বো, আর যাবো না - চেষ্টা করেও যখন পাওয়া গেল না।
- না, না বাসের ডিপোতে চলে যান। সত্যিই যদি আপনার টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে ছাড়বেন কেন?
সত্যিই যদি? কি সর্বনাশ! এ যে পুরোপুরি অবিশ্বাস। অবিশ্বাস হবেই বা না কেন, সবারই তো ধারণা কলকাতার পথঘাট এখন ঠগ-বদমাসে ভরা।
ঠিক গ্রে স্ট্রীটের মোড়ে বাসটাকে ধরে ফেললো ট্যাক্সিটা। আমি ভদ্রলোককে দ্রুত ধন্যবাদ জানিয়ে পড়ি-মরি করে ছুটে চলন্ত বাসে উঠে পড়লাম। কণ্ডাক্টর আমাকে দেখে অবাক, হয়তো বিশেষ দোষ নেই তার, তবু খুব চোটপাট করলাম ওর ওপরে।
কণ্ডাক্টর বিনা বাক্যব্যয়ে আমাকে টাকা গুণে দিলেন।
ততক্ষণে বাস আরও দু'স্টপ এগিয়ে গেছে। টাকাগুলো নিয়ে নামতেই দেখি পিছনে
সেই ট্যাক্সি, প্রৌঢ় ভদ্রলোকটি ব্যগ্রভাবে তাকিয়ে। ওঁর না ডান দিকে বেঁকে যাবার কথা ছিল। আমাকে যাচাই করতে এসেছেন।
আমার ওপর বিরাট দায়িত্ব। অনেক কিছু নির্ভর করেছিলো আমার ওপর। ঐ ভদ্রলোকের কাছে প্রমাণ করতে হবে যে, কলকাতার রাস্তায় সবাই প্রতারক জোচ্চোর বদমাইস নয়। এখনও লোকে সত্যিকারের বিপদে পড়ে সাহায্য চায়। বাড়িতে ফিরে ওঁকে "খুব জোর বেঁচে গেছি" ধরনের একটা রোমহর্ষক গল্প বলতে হবে না!
আমি সগর্বে টাকাগুলো প্রৌঢ় ভদ্রলোককে দেখিয়ে বললাম, এই যে, পেয়েছি! পেয়েছি! - তারপর ঐ ট্যাক্সিওয়ালাকেও শিক্ষা দেবার জন্য উল্টো দিকের আর একটা ট্যাক্সি ডেকে উঠে বসলাম।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
রামরতন লোকটা অভদ্র বটে, কিন্তু ত্যাঁদড় নয়, বুঝলি সতু ?
সতুর কথা বলার মতো অবস্থা নয়। চকবেড়ের হাটে নফরের তামাকপাতার দোকানের পিছন দিকটার নিরিবিলিতে রোদের দিকে হাঁ করে চোখ বুজে আধশোয়া হয়ে বড়বড় শ্বাস টানছে। একবার শুধু মাথাটা নেড়ে জানাল, কথাটা ন্যায্য।
মরা কুল গাছটায় থিক থিক করছে শুঁয়োপোকা। কাঁচা নর্দমায় পাঁক পচে ফেঁপে উঠেছে। দুপুরের রোদে ঘাঁটা-পড়া নর্দমার কটু একটা গন্ধ ছড়াচ্ছে কখন থেকে। আর কিছু দেখার নেই লক্ষ্মীছাড়া জায়গাটার। দুদিকে দু সারি দোকানের পিছন। লোকজনের যাতায়াত নেই, শুধু দোকানীরা মাঝে মাঝে পেচ্ছাপ করতে আসে। মতি সিং-এর শিকলে বাঁধা সাইকেলটার একটা চাকা দেখা যাচ্ছে বেড়ার আড়াল থেকে। যুধিষ্ঠির পালের দোকানের পিছন দিকটায় মস্ত একটা মানকচু গাছ। লালু মিঞার টেলারিং-এর চালে একটা নধর বেড়াল বসে আছে কখন থেকে, নড়ছেও না, চড়ছেও না। গদার চায়ের দোকানের পিছন দিকটায় কানা লক্ষ্মীকান্ত এক নাগাড়ে কয়লা ভেঙে যাচ্ছে। এসব আলগা চোখে লক্ষ্য করতে করতে বাঁ গালে একবার হাত বোলায় নসিরাম। গালে রুক্ষু দাড়ি খড়খড় করছে। আর দাড়ির নিচে এখনো চিনচিনে ব্যথা। রামতারনের থাবড়াটা তার চোয়াল যে খসিয়ে দেয়নি এই যথেষ্ট।
বুঝলি সতু! নসিরাম গালে হাতখানা চেপে রেখেই বলে, রামতারন থানাপুলিশও
করতে পারত। একেবারে জলের মতো কেস।
রামতারনের থাবড়াগুলো খুব অল্পের ওপর দিয়ে যায়নি। সতু এমনিতেও কিছু রোগাভোগা লোক। ক' দিন আগেও ন্যাবা হয়ে চোখ মুখ সব হলুদচোবা হয়ে গিয়েছিল। শেষে বৈরাগী মণ্ডল কাঠির মালা করে দেয়। সে ভারী মজার ব্যাপার। একশ আটখানা কড় প্রমাণ কাঠি সুতোয় বেঁধে চুড়ির মাপের ছোট্ট একখানা মালা ব্রহ্মতালুতে রেখে বলল, হাত দিয়ে চেপে থাকো। সতু তাই থেকেছিল। দেখ না দেখ সেই আপনা থেকেই বড় হতে হতে মাথা গলিয়ে গলায় চলে এল। ঘন্টা কয়েকের মধ্যে সেই মালা বেঢপ বেড়ে নাই-কুণ্ডুলি ছুঁই ছুঁই। সকালে বাসিমুখে চুনের জলে সতুর হাত ধুয়ে দিয়েছিল মণ্ডল। একেবারে হলুদগোলা হয়ে গেল ফটফটে সাদা জলটা। দুপুরের দিকে মালা বেড়ে যখন শরীর গলিয়ে যাওয়ার মতো হল তখন মালা ছাড়ল সতু, দাঁত মাজল, খেল। ন্যাবা সেই বিদেয় হল বটে, কিন্তু শরীরটা এখনো জুতের নেই। রামতারন ভাল খায় দায়। হোঁৎকাটার এক একটা হাতের ওজনই গোটা সতুর সমান। তার ওপর থাবড়া মারার সময় রামতারন আবার বাঁহাতে সতুর চুলটাও ধরেছিল মুঠো করে। লেগেছে
খুব। সতু এখনো দম ফিরে পায়নি, মাথা ঝিমঝিম করছে। তবু নসিরামের কথাটার একটা জবাব দিল সে। বলল, পুলিশ আর এর বেশী কীই বা করত! যা ঝেড়েছে! ওফ!
একথায় নসিরাম একটু লজ্জা পায়। রামতারন দুজনকেই ঝেড়েছে বটে, কিন্তু তার তেমন লাগেনি। চোয়ালের ব্যথাটা দিন দুই থাকবে হয়তো। তবে তেমন কিছু নয়। চোয়ালের হাড় সরে যায়নি, দাঁত ভাঙেনি। গালের মাংসে দাঁত বসে যাওয়ায় কঁ' ফোটা রক্ত পড়েছিল শুধু। সে কথা বলল না, রোঁয়াহীন একটা শালিকের বাচ্চা কোথা থেকে পড়েছে নর্দমার ধারে। কয়েকটা কাক সেটাকে ঠুকরে ঠুকরে শেষ করল এইমাত্র। মাশালিকটা ধারে কাছে নাই, থাকলে কাককে মজা দেখাত! নসিরাম বুঝতে পারছে রামতারনের পক্ষ নিয়ে কথা বলা তার উচিত নয়। বললে হয়তো সতু ভাববে, মার খেয়ে নসিরামের মাথাটাই গুলিয়ে গেছে।
কিন্তু ঘটনাটা ঠিক ঠিক বিচার করলে রামতারনকে কি দোষ দেওয়া যায়? গাজিপুর থেকে তারা রামতারনের পিছু নিয়েছিল। নেওয়ারই কথা। রামতারন আদায় উশুল করে ফিরছে। গাজিপুরের গোটা বাজারটাই ওর কিনা। মেলা টাকা। একজন পাইকও সঙ্গে ছিল। লহরার ইসমাইল। তার কোমরে চাকু, হাতে লাঠি।
সতু আর নসিরাম সব খবরই নিয়েছিল। বনবিবিতলায় ইসমাইলকে ছেড়ে দেবে রামতারন। কারণ ওখানেই ইসমাইলের দু নম্বর বিবি ওলন থাকে, ওলন ভারী আহ্লাদী মেয়ে মানুষ। বুকে দয়ামায়া আছে, ধর্মভয় আছে। বড় একটা এদিক সেদিক করে না। তবে ইসমাইল বা রামতারনের সঙ্গে ভিড়িয়ে দেওয়ার দক্কে আছে। ওলনবিবি দেখতে খারাপ নয়। বালবাচ্চা নেই, শরীরটাও তাই ভাঙেনি।
ইসমাইলকে ছেড়ে রামতারন বনবিবিতলার বড় মাঠে পড়ল। পথও তার বেশী ছিল না। মাইলটাক গেলেই পীরগঞ্জের পাকা সড়ক। ফটফট করছে দুপুরের রোদ। ছাতা মাথায় রামতারন দুলকি চালে হাঁটছিল। আচমকাই সতু আর নসিরাম চড়াও হল তার ওপর। সতুর হাতে ভোজালি, নসিরামের হাতে দেড় ফুট লম্বা গুপ্তি ছোরা।
রামতারন ভয় খেয়েছিল কিনা বলা শক্ত। তবে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছিল ঠিকই। সতু ভোজালিটা আপসাতে আপসাতে বিকট গলায় বলল, জয়কালী, করালবদনী! একদম চেঁচামেচি করবে না বলে দিচ্ছি। লাশ ফেলে দিবো। এইখানেই লাশ পড়ে থাকবে, কুকুরে শেয়ালে ছিঁড়ে খাবে। মালটা দিয়ে দাও ভালোয় ভালোয়। পাশ থেকে গুপ্তির চোখা ডগাটা রামতারনের ভুঁড়িতে ঠেকিয়ে রেখেছিল নসিরাম। তেমন বেগতিক দেখলে ঢুকিয়ে দেওয়ার কথা। তবে সেটা কথাই। সতুও কোনদিন কারো লাশ ফেলেনি, নসিরাম গুপ্তি উঁচিয়ে দেয়নি। তেমন জোরালো কলজে তাদের নেই। কিন্তু রামতারনের তো ভয় খাওয়ার কথা, দু দুটো ঝকঝকে অস্ত্র চোখের সামনে দেখেও শালা ঘাবড়ালো না। অ্যা। নসিরাম ঘটনাটা আবার ছবির মতন দেখছিল চোখের সামনে।
সতু চোখ পিটপিট করে দেখছিল নসিরামকে। হঠাৎ অন্তর্যামীর মতো বলে উঠল,
শালা ভয় খেল না কেন বলো তো!
নসিরাম বিরক্ত হয়ে বলল, কাজের সময় বেশী কথা কইতে নেই। যারা বেশী কথা কয় তাদের কেউ ভয় খায় না।
সতু ফিসফিস করে বলল, মালটা ছাড়ছিল না যে!
ওর বাপ ছাড়ত। দুটো খোঁচা খেলেই বাপ বাপ বলে ছাড়ত। ভোজালিটা তোমার হাতে ছিল কী জন্যে!
সতু মিইয়ে গেল। ফের হাঁ করে শ্বাস টানতে লাগল চোখ বুজে। দোষটা সতুর ঘাড়ে চাপাল বটে নসিরাম, কিন্তু পুরো দোষটা ওরও নয়। বোধহয় ওর চেহারাটারই দোষ। ল্যাঙপ্যাঙে একটা লোক যদি ভোজালি নিয়ে কেরদানি দেখায় তবে কার না ইচ্ছে করে তাকে একটা থাবড়া বসাতে? তার ওপর সতু হঠাৎ রামতারনের কুচ্ছো গাইতে শুরু করল, তেঘরেতে তোমার বাপের একজন রাখা মেয়েমানুষ আছে। সব ফাঁস করে দেবো। ইসমাইল মিঞার দু নম্বর বিবি ওলনের সঙ্গে তোমার আশনাইয়ের কথাও জানি। হপ্তায় দুদিন ওলনের ঘরে তুমি যাও। ট্যা ফোঁ করেছ কি এসব কথা ঢোল-সহবৎ হয়ে যাবে। বুঝেছো?
রামতারন আচমকাই থাবড়াটা কষাল। আর সে কী থাবড়া বাপ। সতুর মুণ্ডুটা তখনই ধড় ছেড়ে উড়ে গিয়ে আলের ধারে পড়ার কথা। শব্দটাও হল বোমার মতো। সেই শব্দে কেমন অবশ হয়ে গিয়েছিল নসিরাম। হাতের গুপ্তিটার কথা তখন বৈবাক ভুল। সেই অবশ অবস্থাতে রামতারন হঠাৎ ঘুরে তাকেও একটা ওরকম থাবড়া কষাল। মাঠের মধ্যে দিনের আলোয় অন্ধকার দেখতে দেখতে মাটিতে বসে পড়ল নসিরাম। আর রামতারন তখন একহাতে সতুর চুল ধরে তুলে পটাপট কয়েকটা থাবড়া দিয়ে গেল নাগাড়ে। সতু চেঁচাচ্ছিল, আর মেরো না। ন্যাবা থেকে উঠেছি, শরীর যুতের নয়
হে, মরে যাবো।
হোঁৎকা এক কথায় থামল। তারপর ফ্যাসফ্যাসে গলায় জিজ্ঞেস করল, তোরা কারা?
সতু মাটিতে পড়ে চষা ক্ষেতের এক চাঙর মাটি আঁকড়ে ধরে দম নেওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিল। কথা বলার অবস্থা নয়। লুঙ্গি খসে গিয়ে দিগম্বর অবস্থা তার। নসিরাম টলতে টলতে দাঁড়িয়ে বলল, আজ্ঞে আমরা হচ্ছি - -বলে একটু ভাবতে হল। নাম দুটো স্মরণ হচ্ছিল না ঠিক। রামতারন ধমক দিল, কারা তোরা? আমি নসিরাম।
আর ও?
ও তো সতু!
কোন গাঁ?
আমি লোহারগঞ্জ, আর ও কালীতলা। ঠিকঠাক বলছিস?
বানানোর মতো কথা মাথাতেই আসছে না। ঠিকঠাক না বলে উপায় কি? নসিরাম জবাব না দিয়ে মাথা নাড়লে শুধু।
রামতারনের বোধহয় তাড়া ছিল, দুজনের জন্য যথেষ্ট সময় নষ্ট হয়েছে ভেবে চোখ পাকিয়ে বলল, এই দণ্ডে এই তল্লাট ছেড়ে চলে যাবি। ফের দেখতে পেলে পুঁতে ফেলব।
যাঃ যাঃ...
গরু তাড়ানোর মতো তাড়া খেয়ে তারা দুজনে সেই দণ্ডেই মাইলটাক পথ হেঁটে চকবেড়ের খাল পেরিয়ে হাটে এসে সেঁদিয়েছে। ভয়ের চোটে এতক্ষণ গা গতরের ব্যথা তেমন টের পায়নি। এখন পাচ্ছে। তবে গায়ের ব্যথাটা বড় কথা নয়। রামতারন ইচ্ছে করলে পীরগঞ্জের থানায় তাদের জমা করতে পারত। আরো বিপদের কথা, ইসমাইলকে লাগাতে পারত পিছনে, ইসমাইলের জমার ঘরে অন্তত পঁচিশটা খুন লেখা আছে। আরো দুটো বাড়লে ক্ষতি ছিল না।
নফর চেনা লোক। কিন্তু তাদের দেখে খুশী হয়নি মোটেই। দুজনের চেহারা দেখেই বিরস মুখে বলল, কোত্থেকে চোরের ঠেঙানী খেয়ে এসেছো! ভালোয় ভালোয় সরে পড়ো। আমি ঝামেলা পছন্দ করি না।
তা চোরের ঠেঙানীও তারা খেয়েছে বৈকি। নফরের দোষ নেই। এই তো মোটে সেদিন শীতলাদলের বাজারে রামহরির দোকানে মাঝরাতে ঢুকেছিল দুজন। সতু আগে পিছনে নসিরাম। ঢুকেই সতুটা হেঁচে ফেলল। রামহরির ছেলে দোকানে শোয়। তার হাতের কাছেই টর্চ আর লাঠি। "কে রে?" বলে লাফিয়ে উঠতেই ভাঙা জানালা গলে পালালো দুজন। কিন্তু বাজার বলে কথা। চোখের পলকে চৌকিদার দোকানী আর ব্যাপারী মিলে বিশ-পঁচিশ জন জুটে তাড়া করে খাল ধারে প্রায় ধরে ফেলল দুজনকে, তবে ভাগ্য ভাল সবাই অত জোরে ছুটতে পারে না। আর তারাও প্রাণের ভয়ে দৌড়াচ্ছিল। ধরল এসে জনা চারেক। কিল চড় চাপড় গোটা কয়েক পড়ল বটে, কিন্তু দুজনেই বুদ্ধি করে শীতের রাতে খালের বরফগোলা জলে লাফিয়ে পড়ায় অল্পের ওপর দিয়ে বেঁচে যায়। কাজেই নফরের দোষ নেই। তারা যে লোক ভাল নয় একথা সবাই জানে। তবে সুবিধেটা এই যে আজকাল লোক কেউ ভাল নয়। এই যে নফর দিব্যি তামাকপাতার পাইকারী কারবার খুলে বসে আছে আলপটকা দেখলে মনে হয় ভারী সিধে কারবার। কিন্তু তামাকপাতার আড়াল দিয়ে গুলি, গাঁজা, চরস, ভাঙ, আফিং-এর যে ফলাও কারবার চলছে তার খোঁজ রাখে কজন? নসিরাম আর সতু সবই জানে। তাই চলে যেতে বললেও তারা যায় না। নফরও আর বেশী গাঁইগুই করেনি।
বেলাটা পড়ে এল, দোকানের পিছনকার ঘাঁটাপড়া জায়গায় আলোটা বিলিতি বেগুনের রং ধরল। নসিরামের মনে হল, যথেষ্ট জিরেন হয়েছে।
ও সতু! উঠবি?
সতু আধশোয়া হয়ে ছিল এতক্ষণ। এখন দেখা গেল, ন্যাড়া মাটির ওপর হাতে মাথা
পেতে চোখ বুজে ঘুমোচ্ছে। তা ঘুমোবেই। শরীরটা যুতের নেই। ন্যাবার আলিস্যি আছে। রামতারনের ওই অসুরের মারেও তো কম ধকল যায়নি।
নসিরামের কাছে বিড়ি নেই। থাকলে একটা ধরাত। শরীরটা উশখুশ করছে। সতুর কাছেও নেই, সে জানে। বিড়ি নেই, ম্যাচিস নেই পয়সা নেই। নসিরাম উঠল। কারণ, বসে থাকার কোন মানে হয় না। যুধিষ্ঠির পালের দোকানের পিছনে মস্ত মানকচু গাছটা অনেকক্ষণ ধরে তার চোখ টানছে। মাটির ওপরেই কচুর যে মোথাটা উঠে আছে সেটা দেখে মনে হয়, দশ সেরের কম ওজন হবে না। যুধিষ্ঠির কচুগাছের গোড়ায় রোজ এঁটো ভাত, ছাই, গোবর আর কীকী সব ফেলে ফেলে দিব্যি পুরুষ্টু করে তুলেছে জিনিসটিকে।
শীতের শেষ টান। নসিরাম জানে এই হাটে এখনো মানকচু খুব একটা ওঠেনি। অনায়াসে দু তিন টাকায় বিকিয়ে যাবে। টেনে তুলতেও কষ্ট নেই। জল পড়ে পড়ে জায়গাটা এমনিতেই ভুসভুসে হয়ে আছে।
নসিরাম সাবধানে নর্দমাটা পার হয়ে এগিয়ে গেল। চাল থেকে সেই নট নড়ন চড়ন বেড়ালটা হঠাৎ একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল তাকে।
যুধিষ্ঠিরের দোকানের পিছন দিককার দরজাটা আবজানো। কে খোলা রাখবে বাপ! যা দুর্গন্ধ। কচুটা টেনে তোলার সময় নসিরামের কবার মনে হল, ছিঃ ছিঃ কাজটা ঠিক হচ্ছে না, একটু আগেই বনবিবিতলার মাঠে যার হাতে গুপ্তি ছোরা ছিল এখন সেই কিনা কচু - তুচ্ছ কচু চুরি করছে! লোকে দেখলে বলবে কী?
অবশ্য দেখছে না কেউ। কানা লক্ষ্মীকান্ত কয়লা ভেঙে উঠে গেছে। দেখছে শুধু বেড়ালটা। লালুমিঞার টেলারিং-এর চাল থেকে ঘাড় ঘুরিয়ে খুব লক্ষ্য করছে তাকে আর মিহিন মিয়াঁও আওয়াজ ছাড়ছে। তবে বেড়াল বলে রক্ষে। কুকুর হলে এতক্ষণে খাউ খাউ করে দুনিয়াকে জানান দিত।
যত সহজে কচুটাকে তোলা যাবে ভেবেছিল নসিরাম, কার্যকালে ততটা সহজ মনে হচ্ছে না। মাটিটা ভুসভুসে পচা মাটি ঠিকই, কচুটাও নড়বড় করছে বটে। কিন্তু গোলমাল অন্য জায়গায়। সেই সকালে দু গাল পাত্তা মেরে বেরিয়েছিল নসিরাম। সেই পাত্তা কবে তল হয়ে গেছে। অনেকক্ষণ ধরেই পেটটা একেবারে বোমভোলা ফাঁকা। মেহনত ও বড় কম যায়নি। এখন মাথাটা ঝিম ঝিম করছে, শরীরটা কাহিল লাগছে! ভারী কচুটা খানিক নাড়িয়ে মাটিটা আরো আলগা করে টান দিতে গিয়েই পাঁজরে খিঁচ ধরে দম বন্ধ হয়ে এল। দু হাতে বুকটা চেপে ধরে উবু হয়ে বসে পড়ল সে। হাতখানেক বেরিয়ে আসা কচুটা আবার নিজের গর্তে বসে গেল। লালুমিঞার চাল থেকে বেড়ালটা পায়ে হেঁটে চলে আসছে যুধিষ্ঠিরের দোকানের চালে। খুব চেল্লাচেল্লি করতে লেগেছে হঠাৎ। নসিরাম একটা ঢেলা কুড়িয়ে ছুঁড়ে মারল। তারপরই বুঝল ভুল হয়েছে। ঢেলাটা বেড়ালের গায়ে লাগল কিনা কে জানে, তবে যুধিষ্ঠিরের টিনের চালে খটাং করে একটা শব্দ হল।
নরিসাম ফেরৎ যাবার জন্য উঠতে যাচ্ছিল। কপাল খারাপ। বাঁ পায়ে জোর ঝিঁ ঝিঁ ধরেছে। একেবারে অবশ। উঠতে গিয়েও ফের বসে পড়তে হল। দোকানঘরের পিছনের দরজাটা খুলে বেরিয়ে এল যুধিষ্ঠির।
এমনিতে দেখলে যুধিষ্ঠিরকে ভয়ের কিছু নেই। রোগাভোগা চেহারা। গলায় কণ্ঠি, কপালে তিলক, গায়ে হাফহাতা গেঞ্জি। কিন্তু চেহারা দেখে বিচার করলে খুবই ভুল হবে। যুধিষ্ঠির দেখা দিয়েই মোলায়েম গলায় জিজ্ঞেস করল, কোন শুয়োরের বাচ্চা রে।
আশ্চর্য, নসিরামের রাগ হল না। আজকাল রাগটাগ কমে যাচ্ছে। সে একটু তেজী গলায় বলার চেষ্টা করল, গালমন্দ করছো কেন?
গলায় তেজ তো ফুটলই না, বরং খোনা স্বর বেরোল। উপোসী পেট থেকে আর কত বড় আওয়াজ বেরোবে?
যুধিষ্ঠির তার সাধের কচুটার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে ছিল। মাটি আলগা, কাদায় চোরের পায়ের ছাপ, চোরও বেকায়দায় পড়ে বসে রয়েছে। সামনে।
যুধিষ্ঠির কোমরে হাত দিয়ে তেজের ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে বলল, গালমন্দ করবো না তো কি জামাই আদর করতে হবে নাকি রে ছ্যাঁচড়া হারামজাদা? ওরে ও পর্তু, ইদিকে আয়পতুর আসা মানে সাড়ে সর্বনাশ। যুধিষ্ঠির রোগাভোগা হলেও তার মেজো ছেলে পতিতপাবন রোগা নয়। গাঁট্টাগোট্টা চেহারা। নসিরামের যা অবস্থা এখন ইঁদুরের লাথি খেলেও সইতে পারবে না। সে তাড়াতাড়ি বলল, তা আমি কী করে জানবো যে কচুটা তোমার!
আমার নয় তো কি তোর বাবার?
নসিরাম উকিল মোক্তারের মতোই বুদ্ধি খাটিয়ে বলল, জমিটা তো আর তোমার নয়। সরকারবাবুদের হাট, তাদের জমি।
তাই নাকি রে শুয়োরের পো? তোর এত আইনের জ্ঞান? ওরে পতু
ঝিঁঝিঁ ছাড়াতে পায়ে থাবড়া মারতে মারতে উঠে দাঁড়াল নসিরাম। বলল, চেঁচাচ্ছ কেন খামোখা? যেতে বলেছো যাচ্ছি।
কখন তোকে যেতে বললাম রে খানকির ছেলে? ওরে পর্তু। শুনছিস! শীগগীর
আয়পতু প্রথমটায় শুনতে পায়নি। এবার পেল। বেরিয়ে এসে বলল, কী হয়েছেটা কী? এই দ্যাখ। চোর ন'সে আমার কচু লিয়ে পালাচ্ছিল। ধর হারামজাদাকে। নসিরামের ঝিঁঝিঁ ছেড়েছে। সে আচমকাই লাফ দিয়ে নর্দমাটা পেরিয়ে গেল। নফরের দোকানের দিকে জোর কদমে হাঁটতে হাঁটতে ঘাড় ঘুরিয়ে বলল, এন্থ, ভারী তো কচু। পর্তু যে রেলের মাল নামায়, তার বেলা। চোর আমি একা, না?
একেবারে বেঁচে যাবে এতটা আশা করেনি নসিরাম। পর্তুও সমান তেজে
নর্দমাটা পেরিয়ে তেড়ে এল। দৌড়তে দৌড়তেই নসিরাম গুণে গুণে তিনটে গাঁট্টা খেল মাথায়। যেন তিনটে ঝুনো নারকোল ডগা থেকে খসে মাথায় এসে পড়ল। আর কিছু অকথ্য গালাগাল। তবে দোকানে খদ্দেরের ভীড় আছে বলেই বোধ হয় পতৃ ঝামেলা আর বাড়াল না। তিনটে রামগাঁট্টায় মাথায় তিনটে আলু ফুটিয়ে দিয়ে ফিরে
ফের চোখ অন্ধকার দেখল নসিরাম। মরা কুলগাছটায় হাতের ভর রেখে অন্ধকারটা ছাড়িয়ে নিল চোখ থেকে। এক রাজ্যের শুঁয়ো লেগে হাতটা চুলকোতে থাকে। তবু অল্পের ওপর দিয়েই গেছে বলতে হবে।
কিন্তু কথাটা সে অন্যায্য বলেনি। যুধিষ্ঠিরের চায়ের দোকান যত ভালই চলুক, তাদের আসল আয় দোকান থেকে নয়। পতু জংশন স্টেশনে রেল থেকে মাল খালাস করার দু নম্বরী ব্যবসায় বহুদিন হল ভিড়ে গেছে। রেলের পুলিশ নিজেরাই ব্যবসাটা ফেঁদেছে। পতুরা কম দামে মাল নামিয়ে আনে। বেশী দামে বেচে দেয়। ধরা পড়ার ভয়টা নেই।
সতু এতক্ষণে উঠে বসেছে। কাণ্ডটা বোধ হয় দেখেছেও। হাই তুলে বলল, বেশী
কথা বলা তোরও দোষ। অত কথা বলতে যাস কেন?
নসিরাম রাগ করে বলে, খামোখা গালমন্দ করছিল দেখলে না?
খামোখা করে রে পাগল। তোরও দোষ ছিল। চল রওনা দিই। আজ আর কিছু হওয়ার নয়। দিনটাই খারাপ।
বয়সে সতু নসিরামের চেয়ে বছর কয়েকের বড়। তার বউ আছে, গোটা চারেক বাচ্চা আছে। নসিরামের ওসব নেই। দুজনেই ভুঁইঞাদের জমিতে চাষ করত। বর্গা রেজিস্ট্রির সময় মাতব্বররা তাদের বাদ দিয়ে অন্য দুজনের নাম বসাল! কিছুতেই টলল না। নতুন বর্গাদার ভূঁইঞাদের নিজস্ব লোক। মাতব্বরদের টাকা খাইয়ে ওরাই ওই কাজ করে। সেই থেকে সতু কষ্টে আছে। দুজনেই বুদ্ধি পরামর্শ করে চুরি ছ্যাঁচড়ামির লাইন ধরল বটে, কিন্তু আজ অবধি তেমন সুবিধে হল না।
নসিরাম গোঁ ধরে বসে বলল, তুমি যাও। আমি যাব না। তবে কি এখেনে বসে বসে মশা তাড়াবি?
তাই তাড়াবো।
তোর বড় তেজ। অত তেজ ভাল নয়। আজ আর লোহারগঞ্জ গিয়ে কাজ নেই, কালীতলাতেই চল। একটা চট পেতে দাওয়ায় পড়ে থাকবি।
অভিমান ভরে নসিরাম বলে, তোমার বউ তোমার জন্য রেঁধে রেখেছে, আমার জন্য তো আর রাখেনি। একথায় সতু হাসল, বলল, রেঁধে রেখেছে তো মেলা। উনুনে নিজের হাত পা গুঁজে দিয়ে নিজের মুণ্ডুটা সেদ্ধ করে রেখেছে। চল, নুন দিয়ে মেখে তাই খাবি। তাও নুন যদি মুদির পো ধারে দেয়।
নসিরামের অভিমান যায়নি। বলল, তোমার বউয়ের মুণ্ডু তুমি খাওগে।
তোর বড্ড মেজাজ। ঠাণ্ডা হতো বাপু। ঠাণ্ডা মাথায় বসে ভাব। ভাবতে ভাবতে একটা কিছু বেরিয়ে পড়বে।
বিড়ির কী ব্যবস্থা করা যায় বলো তো?
নফরাকে বল না।
নফরা দিতে বসেছে আর কি।
তবে যা, একটু তামাক পাতা নিয়ে আয়। দুজনে বসে চিবুই।
কিন্তু নসিরাম নড়ল না। গোঁ ধরে বসে রইল। চারদিক ঝেঁপে অন্ধকার নামছে। চকবেড়ের হাটে জ্বলে উঠছে একে একে। কুপি, হ্যাজাক, হ্যারিকেন, কারবাইড। আনমনে দৃশ্যটা দেখছিল নসিরাম। ভারী সুন্দর এই অন্ধকারের সঙ্গে আলোর লড়াই। আলো ভাল লাগত যদি পেটের খোঁদলটা এমন হাঁ হাঁ না করত।
সতু একটা কোঁক দিয়ে ধীরে ধীরে উঠল। কোমরের গামছাটা খুলে মাথায় জড়াতে জড়াতে বলল, এখন সাঁঝের পর খুব হিম পড়ে। কালীতলায় যদি না যাস তো লোহারগঞ্জেই যা, ঘরে গিয়ে আজকের রাতটা জিরো।
নসিরাম তবু নড়ল না, তার কেমন একটা ভাব এসেছে। রামতারণ তাকে একটা মোটে থাবড়া দিয়েছিল। সতুর ভাগটা ছিল অনেকটাই বেশী। এখন আবার পতুর গাঁট্টা তিনটে খাওয়ার পর নসিরাম আর সতু প্রায় সমান সমান। তার চেয়ে বড় কথা, তিনটে গাঁট্টা তার মাথার ভিতরটা কেমন গুলিয়ে দিয়েছে। চারদিককার এই হাট বাজার, পচা নর্দমার গন্ধ, রৈ-রৈ শব্দ কিছুই যেন তাকে তেমন ছুঁচ্ছে না।
সতু আবার জিজ্ঞেস করল, কী রে যাবি?
না, তুমি যাও।
সতু একটা বড় শ্বাস ছেড়ে আবার বসে পড়ল। বলল, তোর হয়েছেটা কী বল তো। নসিরাম হঠাৎ মুখ তুলে বলল, হবে আবার কী? এতক্ষণে রামতারনের লাল মাঠের ধারে পড়ে থাকার কথা, তার ওপর মাছি ভন ভন করার কথা। আমাদের দুজনের হাতে দু দুটো অস্ত্র ছিল, তবু তা হল না। লোকটা ভয় পেল না। কেন বলো তো সতু গোঁসাই ? এক গোছা টাকা ট্যাকে নিয়ে সে দিব্যি ফিরে গিয়ে এতক্ষণে বউয়ের হাতপাখার নিচে বসে বাতাস খাচ্ছে।
হাতপাখার বাতাস খাওয়ার মতো গরম এখনো পড়েনি, কিন্তু সে কথাটা আর সাহস করে বলতে পারলে না সতু। গলাটা উদাস রেখে বলল, প্রথম প্রথম ওরকম হয়। ওকে যে মারতে হয়নি সেটা ভালই হয়েছে। মানুষ মারার অনেক হেপারে। আমরা তো মারতে চাইনি। টাকাটা চেয়েছিলুম।
আর উল্টে যে ও আমাদের মারল।
তা কী করবি বল। রামতারন শালা খায়দায় ভাল। বোধ হয় ডন বৈঠকও করে। তোর আমার মতো উপোসী পেট তো আর নয়। আমরাও দু দিন ভরপেট খেয়ে নিলে অত সহজে পারত নাকি! তার ওপর আমার ন্যাবাটা হয়ে...
রাখো তোমার ন্যাবা। নসিরাম খেঁকিয়ে উঠে বলে, আসলে আমরা মরদই নই। কথাটা অন্যায্য মনে হয় না সতুর। সে চুপ করে থাকে। অনেকক্ষণ বাদে ভয়ে ভয়ে বলে, চল, হাটে একটু ঘুরে দর দস্তুর দেখি।
দেখে কী হবে?
চল না। জিনিসপত্তর দেখলে মনটা অন্যদিকে থাকবে। দরটাও জেনে রাখা ভাল। আমার মুখে থুথু আসছে। একটু তামাক পাতা মুখে না দিলেই নয়। নসিরাম চোখ পাকিয়ে বলল, কচুটা কি যুধিষ্ঠির শালার বাপের?
সতু উদাস গলায় বলল, তারই বা কী করবি? জোর যার মুলুক তার।
এঃ জোর! আমরা যে আসলে মরদই নই সে কথাটা স্বীকার যাচ্ছো না কেন? যাচ্ছি বাপ, স্বীকার যাচ্ছি।
নসিরাম হঠাৎ একটা ঝাঁকি মেরে উঠে সতুকে দু হাতে নাড়া দিয়ে বলল, তাহলে
চলো মরদের মতো একটা কিছু করি।
ভয় খেয়ে সতু বলে, কী করবি?
একটা কিছু করি, নইলে কোন লজ্জায় বাড়ি ফিরবো।
নসিরামের মাথায় যে পতুর তিনটে গাঁট্টা তাড়ীর মতো কাজ করছে তা জানে না সতু।
তবে তার চোখেমুখে হন্যে ভাবটা দেখে সে বুঝল, নসিরাম নিজের বশে নেই। পাগলার বায়ু চড়েছে। সে নসিরামের গায়ে হাত বুলিয়ে বলল, চল তো আগে বেরোই।
তারপর দেখা যাবে।
দুজনে বেরোবার মুখে একটা আস্ত তামাক পাতা নফরের চোখের সামনেই তুলে নিল নসিরাম। আস্তটা না নিলেও হত। কুঁড়ো কাঁড়া মেলা পড়ে থাকে। তাই দিয়েই চলে যেত। তবু আস্ত পাতাটাই একটা থাক থেকে তুলে নিল নসিরাম। নফর কিছু বলতে যাচ্ছিল। হয়তো মা-বাপ তুলে একটা খিস্তিই দিত। কিন্তু নসিরাম তার চোখের দিকে চেয়ে ছিল। কী জানি কেন, কিছু বলল না নফর।
বাইরে এসে একটা পানের দোকানে দাঁড়িয়ে বলা নেই কওয়া নেই চুণের বাটি থেকে এক খাবলা চুণ তুলে নিল নসিরাম। পানের দোকানী হাঁ-হাঁ করে উঠেও শেষ অবধি আর কিছু বলল না।
চুণ দিয়ে ডলা খানিকটা তামাক পাতা ঠোঁটের নিচে গুঁজবার পর একটু ধাতস্থ হল দুজন।
নসিরাম খানিক থুথু ফেলে বলল, আমাদের কী নেই বলো তো? কেন আমাদের দিয়ে কাজ হচ্ছে না?
সতু মিইয়ে গিয়ে বলে, আমরা লোক ভাল। ভাল লোকদের দেখলেই চেনা যায় কিনা।
তোমার মাথা। ভাল লোককে ধরে তাহলে ঠেঙায়?
ভাল লোক বলতে ঠিক ভাল লোক নয় বটে। আসলে আহম্মক ঠাওরায়। তাই বলো। আহাম্মক আর ভাল কি এক হল?
অত কথা জানলে তো এতদিন কালীতলা প্রাইমারিতে মাস্টারি করতুম রে। অত কথা কি জানি?
ভূঁইঞারা যখন জমিতে নতুন বর্গা লাগালে তখন আমরা যেমন আহাম্মক ছিলুম আজও তেমনি আহাম্মক আছি বলছো?
সতু মাথা নেড়ে বলে, আছিই তো। তাহলে মরদও নই?
তাও খানিকটা ঠিক। কারো সঙ্গেই আমরা তেমন এঁটে উঠছি না। তবে রোজ একটু একটু অভ্যেস করলে দেখিস হয়ে উঠব একদিন।
তোমার বয়স কতো?
সতু অবাক হয়ে বলে, কত আর। তোর চেয়ে পাঁচ সাত বছরের বড় হবো। তোর
তা জানি না। তবে বেশী নয় খুব একটা, কমও নয়। ভাবছি হয়ে উঠতে আর কদিন লাগবে। ততদিন বুড়ো ধুড়ো হয়ে যাবো না তো দুজনে?
সতু খুব হাসে। গামছার ল্যাজে মুখ মুছে বলে, বুড়ো হওয়া তো ভাল কথা রে। বুড়ো বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতে হয় তাহলে। গতিক যা দেখছি, ততদিন বেঁচে থাকাটাই
তো দায়।
নসিরাম আর একবার থুথু ফেলে বলে, তাই তো বলছিলাম, এসব রয়ে সয়ে হয় না। এসো মরদের মতো একটা কিছু করে ফেলি।
মেটে আলুর দর জিজ্ঞেস করতে একটু দাঁড়িয়েছিল সতু। দোকানী তেরছা একটু চেয়ে দেখল। জবাব দিল না। মাল চেনে। সতুও আর চাপাচাপি করল না। হাঁটতে হাঁটতে বলল, কী বলছিলে?
বলছিলাম অত ভয় খাও কেন? একটা ধুন্ধুমার কিছু লাগিয়ে দিই এসো। যা হোক, একটা রক্তারক্তি কাণ্ড।
অত উতলা হোস না। রোস ক দিন।
সেটা আর ক' দিন ; ভাল পথ তো আর নেই। খারাপ পথেও ভীড় বাড়ছে। শেষে সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে। তখন?
কেন, এই তো সেদিন রতন সিং-এর গোরুটা চুরি করলুম দুজনে।
সে আর ক'টা টাকাই বা দিয়েছে। গো-হাটার লোকটা চোরাই গোরু বলে ধরে ফেলল। দিল মাত্র একশটা টাকা। ভাগাভাগি হয়ে তোমার পঞ্চাশ, আমার পঞ্চাশ। ও তো পিচেশপানা। বড় কিছু না করলে বড় দাঁও মারা যায় না, বুঝলে!
বুঝছি রে বাপ, হাড়ে হাড়ে বুঝছি। তুই বড় ছটফট করছিস আর্জ। এমন তো ছিলি
| pdf |
1d900689127e88f41a0daf42728a89a7 | যে ভাবে সম্প্রতি টুইট মারফত নতুন ছবি 'সঞ্জু'-র গল্পের সবটা বলে দিতে শুরু করেছেন পরিচালক রাজকুমার হিরানি, তাতে করে এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে বলিউডের আকাশে, বাতাসে। এ আনাচে, সে কানাচে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে কেবল একটাই কথা- পরিচালকের বুদ্ধির তারিফ করতেই হয়!
সত্যি বলতে কী, ছবির পোস্টারকে এখন কমিক বইয়ের পাতার মতো করে তুলেছেন রাজকুমার হিরানি। তবে কমিক বইতে যে রকমটা হালফিলে আমরা দেখে অভ্যস্ত সে রকম নয়। বরং তার ক্লাসিক ফরম্যাটে। মানে, কোনো সংলাপ বিনিময় নেই, রয়েছে কেবল ছবি আর তাতে কী ঘটতে দেখা যাচ্ছে, তার দুই কী এক লাইনে খেই ধরিয়ে দেওয়া!
এই দুটি পোস্টারেই নায়ক সঞ্জয় দত্তের জীবনের বিপর্যয়ের গল্প বলছেন হিরানি। প্রথম পোস্টারটিতে সঞ্জুকে দেখা যাচ্ছে বিদেশের পথে বসে ভিক্ষা করতে। জানিয়ে দিয়েছেন পরিচালক- রিহ্যাব থেকে পালিয়ে এসেছে সঞ্জু। এসে ভিক্ষা করছে যাতে বাসের টিকিট কেটে বেস্টফ্রেন্ডের কাছে পৌঁছতে পারে।
আর দ্বিতীয় পোস্টারে এক ধাপ ঘনীভূত হয়েছে বিপর্যয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে একটা গাড়ির মধ্যে থমথমে, কিছুটা বা ভাবলেশহীন মুখে সঞ্জুকে বসে থাকতে। গাড়ির বাইরে সাংবাদিকদের ভিড়। অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন গাড়ির কাচে সঞ্জুর ছবি তোলার জন্য। জানিয়ে দিয়েছেন পরিচালক- 'রকি' ছবির প্রিমিয়ার যার তিন দিন আগে মৃত্যু হয়েছে নায়কের মা নার্গিসের!
একটা বিতর্কিত সিদ্ধান্তে তোলপাড় হচ্ছে নরওয়ে। দুই-তৃতীয়াংশ নেকড়ে হত্যার প্রস্তাবে শিলমোহর দিয়েছে নরওয়ে সরকার। তাদের বক্তব্য, গবাদি পশু রক্ষা করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। তাদের যুক্তি, এই কঠোর সিদ্ধান্ত না নিলে হয়তো ভবিষ্যতে আরও অনেক অহিংস গবাদি পশুকে মরতে হবে। আর সঙ্গে সঙ্গে সমস্যায় পড়তে হবে চাষিদেরও।
২০০৪ ও ২০১১ সালে নরওয়ে পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মাংসাশী প্রাণী আর গবাদি পশু একসঙ্গে বসবাস করবে। সেই হিসাবেই নেকড়ে আর তৃণভোজী প্রাণীরা এক সঙ্গে বসবাস করছিল। কিন্তু নেকড়েদের দৌরাত্ম্যে ক্ষতি হতে শুরু করে বাকি প্রাণীদের। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষিরা। চাষিদের বাঁচাতেই সরকার নেকড়ে-হত্যার পথ ধরেছে। স্বভাবতই বিতর্কের ঝড় উঠেছে পশুপ্রেমীদের মধ্যে।
নরওয়ের একটি জনপ্রিয় স্পোর্টস শিকার। আর এই শিকারের জন্যই ১৬টি নেকড়ে হত্যার অনুমতি চেয়ে ২০১৫ সালে ১১ হাজার মানুষ আবেদন করেছিল। এ হেন নেকড়ে কিন্তু ওই দেশে বিপন্ন পশুর তালিকায়। বর্তমানে নরওয়েতে মোট নেকড়ের সংখ্যা মাত্র ৬৮। তার দুই তৃতীয়াংশ মানে ৪৭টি নেকড়ে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে তারা প্রায় লুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নরওয়ের ডব্লিউডব্লিউএফ এর প্রধান নিনা জেনসন জানান, "এ তো গণহত্যা। ১৯১১-এর পর এই প্রথম এত বেশি সংখ্যায় নেকড়ে হত্যার ফরমান জারি হল। যে দেশ পরিবেশ রক্ষা নিয়ে এত বড়ো বড়ো কথা বলে, সেই দেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভাবাই যায় না।" পাশাপাশি, নরওয়ের ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর পক্ষে এস এ লুন্দবার্গ এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন। কেননা এই হত্যালীলায় নেকড়েদের ৬টার মধ্যে ৩টি পরিবারই মারা যাবে। তিনি বলেন, নরওয়ের লজ্জিত হওয়া উচিত। দেশের পরিবেশমন্ত্রীর কাছে এই হত্যালীলা বন্ধ করার দাবি জানাবেন তাঁরা।
ওয়েবডেস্কঃ দানব ধুলোঝড় হত্যালীলা চালাল সমগ্র উত্তর ভারতে। তার প্রভাবে উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু হল ৪২ জনের। রাজস্থানে ৩১টি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই ধুলোঝড়। উত্তরাখণ্ডে কুমায়ুঁতে প্রাণ গিয়েছে দু' জনের।
বুধবার সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডে তাণ্ডব চালিয়েছে ধুলোঝড়। জায়গায় জায়গায় পড়ে গিয়েছে গাছ, উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি।
উত্তরপ্রদেশের সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায়। এর মধ্যে আগরা জেলার অবস্থা সব থেকে ভয়াবহ। সেখানে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৩৬ জনের। বিজনোর জেলায় মারা গিয়েছেন তিন জন, সাহারানপুরে দু' জন এবং বরেলিতে এক জন মারা গিয়েছেন।
দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ঝড়বৃষ্টি তাণ্ডব চালিয়েছে উত্তরাখণ্ডেও। কুমায়ুঁ অঞ্চলে অন্তত দু' জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
অন্য দিকে রাজস্থানের বিভিন্ন প্রান্তে প্রবল ধুলোঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩১ জন। আহত একশোরও বেশি। বুধবার বিকেল থেকে রাজ্যের ভরতপুর, আলোয়ার, ঢোলপুর, বিকানের এবং ঝুনঝুনু জেলায় তাণ্ডব চালায় ধুলোঝড়।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র ভরতপুর জেলাতে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। আলোয়ারে চার, ঢোলপুরে ন' জনের মৃত্যু হয়েছে। এক জন করে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ঝুনঝুনু এবং বিকানেরে। ঝড়ের তাণ্ডবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলোয়ার জেলা। জেলায় অন্তত একশোটি গাছ পড়ে গিয়েছে। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির ওপরে গাছ পড়ে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও।
আলোয়ার জেলার বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার ডিপি সিংহ বলেন, "প্রায় এক হাজারটা বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় শহরের অধিকাংশ এলাকা এখন বিদ্যুৎহীন। বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে অন্তত দু'টো দিন তো লাগবেই।" ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
উত্তরাখণ্ডে প্রবল বৃষ্টির জন্য সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে চারধাম যাত্রা। ঝড়বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লির জনজীবনও।
ওয়েবডেস্কঃ ভারতীয় সেনার মেজর নিখিল হান্দাকে মেরঠে আটক করল পুলিশ। অন্য আর এক মেজরের স্ত্রী শৈলজা দ্বিবেদীকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়। সেই ঘটনার সঙ্গে নিখিলের জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হল রবিবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দম্পতির সঙ্গে নিখিলের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। হাসপাতালেও সম্ভবত নিখিলকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল। তিনি দিমাপুরে কর্মরত ছিলেন। এই খুনের ঘটনায় তাঁর কী ভূমিকা রয়েছে, সে ব্যাপারে তাঁকে জি়জ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, খুন হওয়ার আগে যে রুপোলি রঙের হোন্ডা সিটি গাড়িটি শৈলজা ব্যবহার করেছিলেন, সেটির বিষয়েও তদন্ত করবে পুলিশ।
গত শনিবার ৩০ বছর বয়সি শৈলজার মৃতদেহ মেলে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন এলাকায়। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁর স্বামী অমিত দ্বিবেদী মৃতদেহটি শনাক্ত করেন। পুলিশের কাছে জমা তথ্য অনুযায়ী, শৈলজা ফিজিওথেরাপি করানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হন সকাল ১০টা নাগাদ। এর পর ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই তাঁর খুনের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
কলকাতাঃ ডার্বির আগে মোহনবাগানে শুধু বেদনার সুর। গোটা শিবিরের মনোবল যার জন্য ভেঙে গেছে, মনোবল ফেরানোর দায়িত্বও নিলেই তিনিই। এই মরশুমে তাঁর শেষ টিম মিটিং-এ সনি সহ খেলোয়াড়দের কাছে জয় উপহার চাইলেন। এদিন মোহনবাগান মাঠে একের পর এক শুধু সনিকে ঘিরে আবেগের ছবি। সমর্থকরা সনির বিদায় স্মরণীয় করে রাখতে রবিবার যুবভারতীতে সনির মুখোশ পরে হাজির থাকবেন বড়ো সংখ্যক বাগান সমর্থক।
কোচ শঙ্করলাল অবশ্য তাঁর খেলোয়াড়দের বলছেন মাঠের বাইরের বিষয় নিয়ে না ভেবে খেলায় মনোসংযোগ করতে। কিন্তু ব্যাপারটা যে কঠি, তা তিনি নিজেও জানেন। এ সবের মধ্যেই পেটের সমস্যায় ভুগছেন গোলরক্ষক শিলটন পাল। তাঁর জায়গায় ডার্বিতে খেলবেন শিবিন রাজ। এছাড়া বাকি দল চেনা। রক্ষণে কিংসলে, কিংশুক, রিকি, অরিজিত। মাঝমাঠে নিখিল কদম, ওয়াটসন, রেনিয়ার, ফৈয়াজ(ফৈয়াজের জায়গায় খেলতে পারেন আজহার)। সামনে ডিকা ও আক্রম। রবিবার মোহনবাগান কেমন খেলবে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে ওয়াটসন ও রেনিয়ারের ওপর।
| web |
6b1ba47df5e6aaff912bd3d6238e342cfddfd925 | শৈলেশ কুমার মণ্ডলের জন্ম বিহারের ভাগলপুরে। ২০০০ সাল থেকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু। বর্তমানে তিনি ভাগলপুরের (লোকসভা কেন্দ্র) সাংসদ। ২০১৪-র সাধারণ নির্বাচনে জনতা দলের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। অল্প বয়স থেকেই সমাজসেবায় বিশেষ আগ্রহী শৈলেশ। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পরেও তিনি গ্রামোন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছেন।
মহাপুরুষদের জীবনী পড়তে ভালোবাসেন শৈলেশ। গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য তিনি ব্যস্ত। দরিদ্র জনসাধারণের জীবনধারার মানোন্নয়ন এবং সামাজিক স্তরে তাঁদের উন্নতি ও বিকাশের জন্য এই বিশেষ শ্রেণির মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি, কৃষকদের চাষের উন্নতির জন্য উন্নতমানের সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে তাঁর।
ওই বছর লোকসভায় আরজেডি-র মুখ্য সচেতকের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় তাঁকে।
ওই বছরেই শৈলেশ রাজশাহীর সৈয়দ শাহনাওয়াজ হোসেনকে পরাজিত করে ১৬ তম লোকসভায় নির্বাচিত হন।
তিনি তৃতীয়বারের জন্য বিহার বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন।
বিদ্যুৎ মন্ত্রক ও নতুন তথা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন শৈলেশ।
সাল ২০১৪-র ১৫ সেপ্টেম্বর। ওই বছর শৈলেশ একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের সদস্য হন। সংসদীয় স্থানীয় এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের (এমপিএলডিএস) সদস্য পদ গ্রহণ করেন তিনি। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ মন্ত্রক ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন শৈলেশ।
ওই বছর অনগ্রসর ও অনুন্নত শ্রেণি কল্যাণ কমিটিতে সদস্য হিসাবে যোগ দেন।
কয়লা ও স্টিল মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির সদস্য পদে নিযুক্ত হন শৈলেশ।
লোকসভায় ৫০টি বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছেন শৈলেশ। তিনটি বিল তিনি সংসদে পেশ করেছেন। যেমনঃ ২০১৬-য় পাটনা হাইকোর্টে ভাগলপুরে স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার জন্য বিল পেশ করেন। এছাড়াও, সংবিধানের ২০১৪-র আর্টিকেল ২৪৩-এ ও 171 সংশোধনী বিল পেশ করেন তিনি।
Disclaimer: The information relating to the candidate is an archive based on the self-declared affidavit filed at the time of elections. The current status may be different. For the latest on the candidate kindly refer to the affidavit filed by the candidate with the Election Commission of India in the recent election.
| web |
d61b3c59493938f90cadb011f4b61d769550432e | আর কয়েকদিন পরেই বাঙালির প্রাণের উৎসব- পহেলা বৈশাখ। এ দিন বাংলা নববর্ষ। প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল বাঙালিরা মহাধুমধামে বাংলা নববর্ষ পালন করে থাকেন। বিশ্বের যেখানেই বাঙালি আছেন, সেখান থেকেই তারা নতুন বছরটিকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেন।
চীনের বুদ্ধিজীবী ফাং লিঝি, যিনি ৮০-এর দশকে চীনের সমগ্র ছাত্র একটিভিস্টদের অনুপ্রাণিত করেছিল, তিনি ৭৬ বছর বয়সে ৬ এপ্রিল ২০১২-এ মৃত্যু বরণ করেন। চীনা সরকার দ্রুত এই সংবাদ ইন্টারনেটে নিষিদ্ধ করে ফেলে এবং ওয়েবের সেন্সরের কারণে চীনের নেটনাগরিকরা ফাং-কে স্মরণ করতে অসমর্থ হয়।
ষষ্ঠ বার্ষিক অলাভজনক ডুগুডার নামক ভিডিও পুরস্কার-এর বিজয়ীদের নাম ৫ এপ্রিল ২০১২-এ ঘোষণা করা হয়েছে। নীচে চারটি বিভাগের পুরস্কার বিজয়ী চারটি ভিডিও তুলে ধরা হল; এগুলো হচ্ছে, ক্ষুদ্র, মাধ্যম এবং বৃহৎ প্রতিষ্ঠান, সেরা কাহিনীর ভিডিও এবং শঙ্কাহীন ভিডিও নির্মাণ বিভাগের চারটি পুরস্কার।
ক্যাম্বোডিয়ার মানবাধিকার সংগঠন সমূহ, সারা দেশ জুড়ে সংঘঠিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত, পর্যবেক্ষণ এবং তা তুলে ধরার জন্য অনলাইন মানচিত্র ব্যবহার করছে। এই সমস্ত মানচিত্রের কয়েকটি ভুমি নিয়ে সংঘর্ষ, প্রচার মাধ্যম কর্মী খুন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন, এবং অতিরিক্ত বন্দীর সংখ্যা সম্বলিত কারাগারের অবস্থান তুলে ধরছে।
গ্লোবাল ভয়েসেস, ভিডিও এ্যাডভোকেসি, আদিবাসী অধিকার সহ কিছু সাম্প্রতিক এবং কৌতূহলজনক কাহিনী নির্বাচন করেছে এবং এই সমস্ত সংবাদ তুলে আনা হয়েছে মধ্য এশিয়া ও ককেশাস, পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং সাবসাহারা অঞ্চল থেকে, আর এগুলো নির্বাচিত করেছে জুলিয়ানা রিঙ্কন পাররা।
সিন্ধু প্রদেশের অন্যতম বড় এক রাজনৈতিক দল, জেয়া সিন্ধ কোউমি মোহাজ ( জেএসকিউএম), একটি স্বাধীনতা মিছিলের আয়োজন করেছিল, যা কিনা করাচিতে এক উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক নাগরিকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। এই মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান প্রদান করে এবং সিন্ধুর স্বাধীনতা দাবী করে। পাকিস্তানের বেশীর ভাগ উর্দুভাষী হয় এই সংবাদ প্রচার করেনি অথবা গুরুত্বহীন ভাবে প্রচার করেছে। এই ঘটনার উপর আমীর রাজ সামরো সংবাদ প্রদান করছে।
চেৎনিক আন্দোলন এর জন্যে পরিচিতদ্রাজিয়া মিহাইলোভিচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিজ দেশে যুগোশ্লাভ সেনাবাহিনী'র একজন অধিনায়ক ছিলেন । ১৯৪৬ সালে কমিউনিস্ট যুগোস্লাভ কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়ে গভীর ষড়যন্ত্র ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে তার ফাঁসী হয়েছিল। কিছু কিছু রাজনীতিবিদ, এনজিও এবং নাগরিক তার পুনর্বাসনের জন্যে চলমান ট্রাইব্যুনালটি কে সমর্থন করলেও জনগণ বিভক্ত।
সংবাদপত্রের আদিরূপটি হলো হাতেলেখা এবং সম্ভবতঃ 'মুসলমান'ই বিশ্বের সর্বশেষ অবশিষ্ট হাতেলেখা সংবাদপত্র। ভারতের চেন্নাই শহরে ৮৫ বছরের পুরনো উর্দু ভাষার এই সংবাদপত্রটি প্রতিদিন তৈরী করেন দক্ষ লিপিকর্মীরা।
'রুনা কুটি, আরবান নেটিভ' নামক তথ্যচিত্রটি বুয়েন্স আয়ার্স চার প্রজন্ম ধরে বাস করা আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাহিনী, এবং কি ভাবে তারা তাদের পরিচয় বজায় রাখার জন্য সংগ্রাম করেছে, তাদের সংস্কৃতিকে নতুন করে আবিষ্কার করছে ও শহরে কি ভাবে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে, এই ভিডিও সে বিষয়গুলো আমাদের সামনে তুলে ধরছে।
যাজক এবং লেখক মারিও পাই দে অলিভিয়েরা বিশ্ব সম্পর্কে তার প্রতিষ্ঠানবিরোধী চিন্তা প্রচার করার জন্যে সামাজিক নেটওয়ার্কে "ধর্মান্তরিত" হয়েছেন। পর্তুগালে আজকের সাধারণ ধর্মঘটটি আমাদেরকে ২০১১-এর শেষে সংঘটিত সাধারণ ধর্মঘটের পরে ফাদার মারিও প্রকাশিত ভিডিওটির কথা মনে করিয়ে দেয়।
| web |
639fbe6b951efcff33cd8749c560eb9b5c4da1d9 | যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আট আসামিকে গ্রেফতার করেছে পোর্ট থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো বেনাপোলের গয়ড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, পুটখালী গ্রামের জামাত আলীর ছেলে মাসুদ, তোয়েব আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেনের ছেলে সুজন ও বারোপোতা গ্রামের আতাল হক ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম। বাকি ৩ জনের নাম ডিউটি অফিসার দিতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, গোপন খবরে জানা যায়, বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিরা এলাকায় ফিরে গোপনে অবস্থান করছেন। এমন সংবাদে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
বেনাপোল পোর্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহিন জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
| web |
396fe9754f6929ecaacab27fb5064e2855c388c1a4b62d5ae0a9b5f59886a4ae | তোমাতে হেরিব আমার দেবতা হেরিব আমার হবি
তোমার আলোকে জাগিয়া রহিব
অনস্ত বিভাবরী।
( 'সুরদাসের প্রার্থনা' ) লক্ষ করা দুরূহ নয়, শেষোক্ত উদাহরণে নারী পুরুষের নিয়ন্ত্রী হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন ঘনিষ্ঠতা থেকে কমনীয় অথচ পরিশীলন ব্যবধানে সরে গিয়ে।
মানসী'র অব্যবহিত পূর্বলেখ। এই কাব্যের sensuousness যতই উচ্চারিত হোক তা তাঁর পূর্ববর্তী কবিতাপ্রবাহের ঐন্দ্রিয়িক অসন্তোষের তুলনায় অনেক শান্ত, সুমিত, এমন-কি রোমান্টিক লালিত্যে স্নিগ্ধ। 'কড়ি ও কোমল' নিজেকে কবি কিছুমাত্র নির্যাতন না ক'রে প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তা কখনো গীতিবন্ধে, কখনো সনেটবন্ধে। এ দুটিই ব্যক্তিগত, অথচ ব্যক্তিগত নয়। আগের তুলনায় এ যেন দেহসংক্রান্ত নৈর্ব্যক্তিক অভিজ্ঞতার অন্তরঙ্গ ভাষ্য। এখন থেকে তাঁকে আর নিজেকে প্রকাশ ক'রেও 'ব্যক্তিগত' ব'লে অভিযুক্ত হতে হবে না :
চলো গিয়ে থাকি দোঁহে মানবের সাথে, সুখ দুঃখ লযে সবে গাঁথিছে আলয় - হাসি-কান্না ভাগ করি ধরি হাতে হাতে সংসার-সংশয়রাত্রি বহিব নির্ভয় ।
( 'মরীচিকা' ) 'কড়ি ও কোমল'কেই রবীন্দ্রনাথ তাই তাঁর নিজস্ব প্রথম ব'লে স্বীকার ক'রে নিয়েছেন। অনিকেত বিষয়ী এখানে কোথাও নিজেকে আরোপ করেনি, বিষয়ের আশ্রয়লাভ করেছে। 'এই আমার প্রথম কবিতার বই যার মধ্যে বিষয়ের বৈচিত্র্য ও বহির্দৃষ্টিপ্রবণতা দেখা দিয়েছে,' কবির এই উক্তি শ্লথকথন নয়, নিজের কবিতা বিষয়ে একটি সূত্র পেয়ে যাওয়ার উপলব্ধিতে আলোকিত। বিষয়ী এবং বিষয় রবীন্দ্রনাথের রোমান্টিকতায় একাসনে বসেছে 'কড়ি ও কোমল' থেকেই, এবং সেই কারণেই এই কাব্যকে তিনি কবিতা হিসেবে প্রথম অনুমোদন জ্ঞাপন করেছেন।
এ কথার অর্থ এই নয় যে 'মানসী'তে বা 'মানসী'র পরে তিনি যা যা লিখেছেন সবই বিষয়ের সঙ্গে হৃদয়ের অন্যোন্য সামঞ্জস্যে, মগ্ন আত্মস্থতায় প্রতিষ্ঠিত। শুধু
বলব, অস্মিতার সেই স্বরাঘাত কোথাও নেই যা বিষয়ের থেকে বিশ্লিষ্ট বা বিবিক্ত হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। 'গীতাঞ্জলি' পর্যন্ত, এমন কি 'বলাকা' 'পলাতকা' পর্যন্ত এই বিষয়নিষ্ঠ হৃদয়ধর্ম প্রসারিত। এখানে আরেকটি সূত্রও লক্ষ্য করতে হবে। যে মুহূর্ত থেকে তিনি তাঁর খসড়া আমাদের দেখতে দিলেন, তিনি যেন আমাদের ব'লেই দিলেন যে আমাদের চোখের উপর তিনি নিজেকে অতিক্রম ক'রে যাবেন বারবার ; একবার তিনি সিন্ধুতরঙ্গে নামবেন পরক্ষণে তীরে ফিরে আসার জন্য, একবার সারারাত্রি হাহাকার করবেন অকস্মাৎ প্রাতঃখননের জন্য। রোমান্টিক যন্ত্রণাতি এতটুকু এড়িয়ে না গিয়েও তাকে মনঃপূত পরিণামের দিকে নিয়ে যাওয়া। এজন্য তাঁর কাব্যগ্রন্থের পরিপূরক, পরিণাম অব্যবহিত পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ। সন্ধ্যা সংগীত-প্রভাত সংগীত, কড়ি ও কোমল-মানসী, সোনার তরী-চিত্রা, খেয়া-গীতাঞ্জলি, শেষ সপ্তক-বীথিকা, প্রাস্তিক-সেঁজুতি, রোগশয্যায়-আরোগ্য - কত উদাহরণ যোগ করব ? এ-ভাবে মিলিয়ে পড়লে রবীন্দ্রনাথের কবিল্বভাবের সামগ্রিক সূত্রটি আমাদের কাছে মূর্ত হয়ে ওঠে।
'সোনার তরী'র শেষ কবিতা নিরুদ্দেশ যাত্রার সঙ্গে 'চিত্রা'র অন্তিম কবিতা সিন্ধুপারে যুক্ত ক'রে দেখলেই একটি আত্মসচেতন কবি-ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি চোখে পড়ে। দুটি কবিতার পটভূমি খুব কাছাকাছি। দুটিরই বিন্যাস ষান্মাত্রিক মাত্রাবৃত্তে, তফাৎ শুধু চলনে । যে-নারীটি তাঁকে সমুদ্রযাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনিই সিন্ধুপারে নিয়ে এলেন তাঁকে। একই নারী দু-জনে, ইঙ্গিতভাষায় কথা বলেন, মন্ত্রচালিত কবিকে নিষ্ঠুরভাবে নিয়ে চলে যান এক রহস্যময় বিবাহ সভায়, দুরূহতর পরিণতির দিকে নিয়ে যাবার উদ্দেশ্যে হেসে ওঠেন। ঐ বিবাহ্ তাঁকে তো কোথায় বিশ্রাম করতে দিল না, নিরন্তর আত্ম-উত্তরণের যজ্ঞকর্মে জাগিয়ে রাখল। একটি অপরিণাম মুছে পরিণামে, সেই পরিণাম মুছে ফেলে অপর পরিণামে ধাবিত হবার নামই রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য নিজে কখনও সেই কৃতিত্ব দাবি করেননি, ঊর্ধ্বতন এক সত্তার কাছে হস্তান্তরিত ক'রে এগিয়েছেন। কিন্তু আমরা তো জানি সেই উর্ধ্বতন সত্তা - নারীই হোক আর জীবনদেবতাই হোক - নিজের সঙ্গে তাঁর নিজের সংগ্রামে উদ্ভুত। যেরাত্রি তিনি নিজের হাতে সৃষ্টি করেছিলেন তাকে প্রভাতে পরিণত করেছেন নিজেই। কিন্তু সেই সকালের প্রাক্-মুহূর্তের অস্থির প্রত্যুষক্ষণটিকে ভুলে গেলে ঐতিহাসিক সত্যের অপলাপ করা হবে।
| pdf |
8b823319f49916e66e001bd6672c3df8c82ed92b | কেক কাটা, আলোচনা সভা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বরিশালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ১৪তম বর্ষে পদার্পণ উদযাপিত হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর সদর রোডের দক্ষিণাঞ্চল গলির বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন।
পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, মেইন স্ট্রিম পত্রিকা হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন প্রতিষ্ঠিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শীর্ষ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন তরুণদের মাঝে জাগরণ সৃষ্টি করতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করাতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে পারে বাংলাদেশ প্রতিদিন। তিনি বলেন, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের ট্রেনে উঠে গেছে। এই ট্রেন সামনের দিকে এগিয়ে দিতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মতো গ্রহণযোগ্য পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তরুণ প্রজন্মেকে দেশ প্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধ এবং এতে নেতৃত্বের বিষয়টি তাদের (তরুণ) মন মননে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এই লক্ষ্যে সপ্তাহে অন্তত একদিন বা অর্ধেক পাতায় 'তরুণ প্রজন্ম ও মুক্তিযুদ্ধ, 'তরুণ প্রজন্ম ও ইতিহাস ঐতিহ্য' বিষয়ে লিখনী ছাপানোর জন্য বাংলাদেশ প্রতিদিন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
সভায় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুরাদ আহমেদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন, বরিশাল ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরদাউস সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন সুমন, রাহাত খান, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঠকরা উপস্থিত ছিলেন।
| web |
4eadb5bd3502109b458857545004354c | টেলিযোগাযোগ তৈরির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাঁশের কাঠামোয় টাওয়ার স্থাপন করেছে ইডটকো গ্রুপ (ইডটকো)। রাজধানীর উত্তরার ৫ নাম্বার সেক্টরের একটি বাড়ির ছাদে সম্প্রতি উদ্ভাবনীমূলক এই টাওয়ার স্থাপন করা হয়। প্রথাগত টাওয়ারের বাইরে নিত্য নতুন উদ্ভাবনীমূলক পরিবেশ-বান্ধব টাওয়ার তৈরিতে ইডটকোর ধারাবাহিক গবেষণার আরেকটি নতুন সংযোজন বনজসম্পদ বাঁশ দিয়ে তৈরি নবায়ণযোগ্য এই অবকাঠামো। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সাথে ইডটকো'এর যৌথ উদ্যোগ মূলত টেকসই এবং সবুজ প্রকৌশল (গ্রিন ইঞ্জিনিয়ারিং) ইডটকো'র নেতৃত্বকে আরো শক্তিশালি করেছে।
বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ'এর নেতৃত্বে একটি গবেষক দল টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর নকশা এবং নির্মাণে গতানুগতিক স্টিলের অবকাঠামোর বিকল্প উপাদান হিসাবে বাঁশের সক্ষমতার উপর গবেষণা কাজটি পরিচালনা করেন। বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, "টেলিযোগাযোগ সেবাগুলো আলাদা করার লক্ষ্যে ভিন্ন টাওয়ার শেয়ারিং নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।"
মোবাইল ফোন অপারেটররা বিভিন্ন সেবা প্রদান করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "শিগগিরই তারা (অপারেটররা) টাওয়ারের মতো সেবাগুলো আর প্রদান করতে পারবে না।" চেয়ারম্যান আরো বলেন, বাঁশের তৈরি টাওয়ার যদি সফলতা লাভ করে তবে দেশীয় প্রযুক্তি হিসেবে এ খাতে প্রণোদনা দেয়া হবে।
টাওয়ারটি নির্মানে নেতৃত্ব প্রদানকারী বুয়েটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, "দেশে প্রথম বাঁশের তৈরি টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো স্থাপন হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে বাঁশ একটি সহজলভ্য উপাদান। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে অবদান রাখতে এ ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এ দেশের পরিবেশের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাঁশের ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা গেছে, বাঁশের বৈচিত্রময় গঠন বৈশিষ্ট্যের কারণে টেলিকম টাওয়ার তৈরির জন্য এটি একটি ভালো উপাদান হতে পারে। পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে ও পরিবেশসচেতন জাতি গঠনে এটি অবদান রাখতে সক্ষম। এ ধরনের একটি উদ্যোগে আস্থা রাখার জন্য আমরা ইডটকো কে ধন্যবাদ জানাই।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, কাঁচা বাঁশকে নমনীয় এবং প্রসারনীয় শক্তি দিয়ে কংক্রিটের ওজন বহন করার উপযোগী করলে এটি টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো তৈরিতে সক্ষম উপাদানে পরিনত হয়। এটি প্রতি ঘন্টায় ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের গতিতে টিকে থাকতে পারে এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করলে এর আয়ূষ্কাল প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাঁশের তৈরি একটি টাওয়ার নির্মাণ করতে সময় লাগে ১২ দিন। গতানুগতিক স্টিলের টাওয়ারের চেয়ে এটি তৈরিতে কম জ্বালানী ব্যয় হয়। এ টাওয়ারে একই সাথে সর্বোচ্চ আটটি এন্টেনা স্থাপন করা সম্ভব, যার প্রতিটিই একই সাথে কার্যকর থাকবে।
এ টাওয়ারটির আরেকটি সুবিধা হল, বাঁশের ওজন প্রাকৃতিকভাবে হালকা হওয়ার কারণে এটি সহজেই বহন করা যায় এবং ভবনের উপর অতিরিক্ত কোন চাপ সৃষ্টি না করেই স্থাপন করা যায়। উই বা ঘুনপোকা এবং ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁশকে রক্ষা করতে এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকিয়ে রাখতে এটিকে রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
ইডটকো গ্রুপের সিইও সুরেশ সিধু বলেন, "ইডটকো বরাবরই টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো খাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান এবং উদ্ভাবনীমূলক সল্যুশন্স নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা বা গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। বাঁশের তৈরি এ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার আমাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন। টেকসই প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁশকে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করে পরিবেশের উপর এর প্রভাব কমানোর উদ্দেশ্যেই মূলত আমরা এ উদ্যোগটি নেই। বিশেষ এই টাওয়ারটি নির্মানে অংশীদার হিসাবে বাংলাদেশের শীর্ষ প্রকৌশল বিদ্যাপীঠ বুয়েটকে পাশে পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি ভবিষ্যতেও তাদের এ ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের রাজধানীর অধিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের অগ্রগণ্য ভূমিকার আরেকটি নিদর্শন হবে এই টাওয়ার।"
চলতি বছরে ইডটকো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন (প্রুফ অব কন্সেপ্ট- পিওসি) হিসাবে আরো কিছু বাঁশের টাওয়ার স্থাপন করবে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি যেসব দেশে তাদের কার্যক্রম রয়েছে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁশের সহজলভ্যতা রয়েছে সেসব দেশে এই সল্যুশন নিয়ে যাবে।
| web |
f78fc8047f6f74485b00d9f5f9fe6b27 | এফএনএস (এ.টি.এম মোরশেদুল ইসলাম; হোমনা, কুমিল্লা) । আপডেটঃ ১৬ নভেম্বর, ২০১৯, ৮ঃ৩১ পিএম\nকুমিল্লার হোমনা কাশিপুর হাসেমিয়া উচ্চ বিদ্যলয়ের উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বীরের কণ্ঠে বীরের কাহিনি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মঈনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওসি সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী।\nঅনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মো. এরশাদ হোসেন মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা মো. হুমায়ুন কবীর, মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল বাশার, মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ মাস্টার। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. কামাল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাসার সরকার, হোমনা উপজেলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোর্শেদুল ইসলাম শাজু, হোমনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল হক সরকার, বিদ্যালয়ের কো-অপ্ট সদস্য মো. আনোয়ারুল ইসলাম।\nস্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরূল ইসলামের পরিচালনায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। তিন ঘণ্ট্যাাপী অনুষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক, সাংবাদিক, শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষ এ অন্ষ্ঠুানে উপিস্থিত ছিলেন।
| web |
d99d26f262305c32d6386aeb879cfeefc0e594cd | কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার 'অত্যাচার' নিয়ে পাকিস্তান যত সুর চড়িয়েছে, ততই বালুচিস্তান, সিন্ধ প্রদেশের পাক সংখ্যালঘুদের উপর প্রশাসনের নির্যাতন নিয়ে বিশ্বে মুখ পুড়েছে পাকিস্তানের। এবার পুজোর থিমেও উঠে এল সেই বালুচিস্তানের কথা। তবে কলকাতায় নয়, প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডের গড়ওয়ায়।
গড়ওয়ার এই পুজো প্যান্ডেলটি গড়া হয়েছে বালুচিস্তানের হিংলাজ মাতার মন্দিরের আদলে। এই হিংলাজ মাতা, দেবী দুর্গারই এক রূপ। হিন্দুদের ৫১টি শক্তিপিঠের অন্যতম মরুতীর্থ নামে পরিচিত এই মন্দির। বালুচিস্তানের লাসবেলা জেলার মাকরান উপকূলে মরুভূমির মধ্যে পাথুরে এলাকায় অবস্থিত এই মন্দির।
পুরান অনুযায়ী সতির দেহ বিষ্ণু ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করার পর দেবীর মাথা এসে পড়েছিল এই হিংলাজে। প্রতি বছর এপ্রিল মাসে হিন্দু পূণ্যার্থীরা এই হিংলাজ মন্দিরে চার দিনের জন্য তীর্থযাত্রায় আসেন। পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুরা এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হন। আর সেই মন্দিরের আদলে প্যান্ডেল বানিয়েই তাক লাগিয়ে দিয়েছে গড়ওয়া। একই সঙ্গে পাক হিন্দুদের প্রতি প্রশাসনের নির্য়াতনের কথাও এইভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
| web |
e501abaa41d989a1e7e33bedff5f706c19919a63 | দ্য রিপোর্ট ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেদেশটির তিনজন মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা ঘটলো।
ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে সমর্থন করার বদলে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন তারা।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ার দুই দিনের মাথায় এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটলো।
সোমবার বিকেলে ওয়েস্টমিনস্টারে নিজের এমপিদের সামনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে থেরেসা মে'র। সাংসদদের মধ্যেও ব্রেক্সিট নিয়ে ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে।
শুক্রবার 'সফট' ব্রেক্সিট নীতি নিয়ে দ্বিধা-বিভক্ত মন্ত্রিসভার সাথে দিনব্যাপি বৈঠকের পরও সমঝোতা আনতে ব্যর্থ হন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেন, আজ দুপুরে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শিগগিরই নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে। জনসনের কাজের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবারের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে অপ্রিয় বিষয়কে উন্নতির বৃথা চেষ্টা বলে অভিহিত করেন বরিস জনসন।
পাঠকের মতামতঃ
- "দুই একদিনের মধ্যেই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে"
- "খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে নিতে হবে"
- মুখোমুখি পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা, এগিয়ে কারা?
| web |
7e476223b501773f341d5a37bf51461ff1876a62 | আজ কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সুপার ফোর পর্বে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শেষ করতে চায় টাইগাররা। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।
সুপার ফোর পর্বে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেট এবং শ্রীলংকার কাছে ২১ রানে হেরে এরই মধ্যে টুর্নামেন্টের ফাইনালের দৌঁড় থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ।
প্রথম দুই ম্যাচ হারের পরও ফাইনালে খেলার ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের সামনে। এক্ষেত্রে অন্য দলের ফলাফল এবং নেট রান রেট অনুকূলে থাকতে হতো।
কিন্তু শ্রীলংকার বিপক্ষে ভারতের ৪১ রানের জয়ে এশিয়া কাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায় ঘন্টা বাজে। অন্যদিকে পাকিস্তান-শ্রীলংকার ম্যাচটি রুপ নেয় অঘোষিত সেমিফাইনালে। যেখানে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে বাবরদের ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেছে দাসুন শানাকার দল।
ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় আগামীকালের ম্যাচটি ভারতের কাছে নিয়মরক্ষার লড়াই। স্বাভাবিকভাবেই এমন ম্যাচে দলের মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রেখে বেঞ্চের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চাইবেন রাহুল দ্রাবিড়।
অন্যদিকে ফাইনালে উঠতে না পারলেও খালি হাতে দেশে ফিরতে চাইবে না বাংলাদেশ। বেঞ্চের খেলোয়াড়দের নিয়ে ভারত পরীক্ষা-নিরীক্ষার করায় জয়ের একটা সুযোগ থাকতে পারে বাংলাদেশের সামনে।
দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক লড়াইয়ে ঘরের মাঠে ভারতকে তিন ম্যাচের ওয়ানডেতে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে এটা ছিল ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের টানা দ্বিতীয় সিরিজ জয়।
| web |
314bf4b8d83a500cf0b976b72cca77ba | বন্ধুর সঙ্গে মজা করে বলেছিল, 'হট ওয়াটার চ্যালেঞ্জ' খেললে কেমন হয়। যেমন ভাবা তেমন কাজ। কাইল্যান্ড যখন ঘুমাচ্ছিল তখন তার বন্ধু এসে ফুটন্ত জল মুখের উপর ফেলে দিয়েছিল। আর একেই বলে 'হট ওয়াটার' গেম চ্যালেঞ্জের ভয়ঙ্কর পরিণতি।
এর আগে এমন ভয়ংকর অঘটন ঘটেছে মোমোর সঙ্গে টক্কর দিয়ে , আবার মাথা তুলল ব্লু হোয়েল। একর পর এক ভয়ংকর গেমগুলো মাথা তুলে দাড়াচ্ছে।
আইস বাকেট চ্যালেঞ্জের মতো এখন ভাইরাল নতুন খেলা গরম পানি ঢালার। মূলত এই খেলা হট ওয়াটার চ্যালেঞ্জ আর এতে অংশগ্রহণ করে আহত হয়েছে ১৫ বছরের কিশোর।
কাইল্যান্ড জানান, আমার ত্বক তো খুলে পড়ে যাচ্ছিল। আয়নায় নিজের মুখ দেখে ভয়ে কেঁপে উঠেছিলাম। তার পুড়ে যাওয়ার ক্ষত ছিল দ্বিতীয় ডিগ্রির। যাতে জ্বালা করে ও ত্বকের উপর ফোসকা পড়ে যায়।
| web |
20e9a423d4b240a6ddc0ed6a5e0f53c8ad81ef5997870f50b10a0c22f2547d25 | নম নম ভগবতি বিশ্বস্বরূপিণি !
আদ্য। শক্তি মহাদেবি ! বিশ্বের নিদান, জয় জয় ব্রহ্মময়ি আত্মবিনোদিনি !
বল বল কৃপা করি বিভুর সন্ধান, দেখাও দেখাও দেবি ! দেখাও তাঁহায়, লভিয়াছ দেহে প্রাণ যাঁহার কৃপায় ॥ ৪৭ ॥
তোমায় - তোমায় শত সহস্র প্রণাম
শব্দগুণশালী অয়ি অনন্ত গগন !অনন্ত বিভুর গুণ গাও অবিরাম,
কৃপা করি কর্ণামৃত করহ সিঞ্চন,
গাও দেব ! গাও শুনি, আকৃতি কেমন, কেমন প্রকৃতি তাঁর, কে বা প্রিয়জন ॥ ৪৮
নমস্তে পবনদেব জগতের প্রাণ !
যাও বিভুর সদন, করি এ মিনতি, ত্রিলোকে অগম্য তব নাহি কোন স্থান, স্পর্শগুণশালী তুমি ওহে সদাগতি ; পরেশের পুণ্যময় পরশ লভিয়া হর মম রজোরাশি গাঢ় আলিঙ্গিয়। ।। ৪৯॥
| pdf |
84e064a6354520ce9ad349a5ab8eb85f53c19df8 | নয়াদিল্লিঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কারে হাত দিয়েছেন। এর সুফল দেখা যাবে মধ্য ও দীর্ঘকালীন বৃদ্ধির অঙ্কে। বললেন বিশ্বব্যাঙ্ক প্রধান জিম ইয়ং কিম। বিশ্বব্যাঙ্ক অবশ্য পূর্বাভাস দিয়েছে, এ দেশের জিডিপির হার এ বছর কমে ৭ শতাংশ হতে পারে।
ইন্টারন্যাশনাল মনেটারি ফান্ডের বৈঠকে কিমকে প্রশ্ন করা হয় ভারতের অর্থনীতির বর্তমান শ্লথগতি নিয়ে। জবাবে তিনি বলেন, যেভাবে ভারতে আর্থিক সংস্কার শুরু হয়েছে তা অত্যন্ত অর্থপূর্ণ। যদিও বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফ উভয়েই দেশের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দেখিয়েছে।
গত সপ্তাহেই বিশ্বব্যাঙ্ক প্রধান বলেন, ভারতে আর্থিক বৃদ্ধিতে যে ধীর গতি দেখা যাচ্ছে তা সাময়িক, মূলত জিএসটির জন্য প্রস্তুতির কারণে। কিন্তু জিএসটির কথা ভারতে আজ থেকে হচ্ছে না, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বহু আগে থেকে হচ্ছে। জিএসটি ভারতের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি যদিও সাময়িকভাবে মনে হচ্ছে, উন্নয়ন থমকে গিয়েছে কারণ কোম্পানিগুলি এ সংক্রান্ত যাবতীয় ঝুটঝামেলা মেটার জন্য অপেক্ষা করছে, তারপর বিনিয়োগ করবে তারা।
বর্তমান সরকারের আমলে চালু হওয়া যাবতীয় সংস্কারমূলক পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কিম। তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যবসা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গিই আলাদা। তিনি দ্রুত কাজ করতে চান, ব্যবসা সংক্রান্ত পরিবেশ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে গড়িমসি করেন না। তাঁর নেওয়া পদক্ষেপে বিশ্বব্যাঙ্ক অত্যন্ত সন্তুষ্ট, তাদের আশা, তিনি আরও সংস্কার করবেন।
| web |
446fcbe3e7b71551e6ec0e66bd6032fa | Bald men at higher risk of severe case of Covid-19, researcher finds in america\nPublished by: Sucheta Chakrabarty । Posted: June 6, 2020 12:40 pm। Updated: June 6, 2020 2:00 pm\nসংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ মাথায় চুল কম? ভাবছেন কি এটাকেই স্টাইল স্টেটমেন্ট বানিয়ে ফেলবেন? তাহলে আপনি ভুল করছেন। সচেতন হোন। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে পুরুষদের মাথায় চুল কম থাকলে বাড়তে পারে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি! নতুন এই আশঙ্কার নাম দেওয়া হয়েছে 'গ্যাব্রিন সাইন' (Gabrin sign)।\nদূষণের জেরে এখন অনেক বাড়ির পুরুষদেরই মাথায় নেই ঢেউ খেলানো চুলের বাহার। উত্তম, সৌমিত্র অতীত হয়ে এখন সবটাই নেই-এর যুগ। ফলে চুল ঝরে পড়াটাকেই পুরুষেরা স্টাইলে বদলে ফেলেছেন। তবে না জানা স্টাইল স্টেটমেন্টের জেরেই বাড়তে পারে করোনার সংক্রমণ। আমেরিকার এক দল গবেষক সম্প্রতি জানান, "যে পুরুষদের মাথায় চুল কম বা যাদের নেই তাদেরই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি"। এই নতুন রিস্ক ফ্যাক্টরের নাম দেওয়া হয়েছে 'গ্যাব্রিন সাইন'। করোনা আক্রান্ত হয়ে আমেরিকার এক চিকিৎসক ডক্টর ফ্র্যাঙ্ক গ্যাব্রিনের (Dr Frank Gabrin) মৃত্যুর পরে এই নাম দেওয়া হয়েছে। গ্যাব্রিনের মাথাতেও চুল ছিল না বলে জানা যায়। এই গবেষণার প্রধান ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কার্লোস ওয়াম্বিয়ার জানান, "মাথায় চুল কম থাকলে সংক্রমণের সম্ভাবনা ও তার প্রভাব অনেক বেশি বেড়ে যায়"।\n[আরও পড়ুনঃইডির দপ্তরে করোনার হানা! ৬ আধিকারিকের শরীরে মিলল মারণ ভাইরাসের সন্ধান]\nকরোনার আঁতুরঘর চিনের ইউহানে সংক্রমণ ছড়ানোর পর থেকেই নড়চড়ে বসেন বিশ্বের গবেষকরা। কীসের থেকে এই সংক্রমণ হচ্ছে? বা কীসের থেকে বাড়তে পারে সংক্রমণের মাত্রা? তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শেষে পুরুষদের মাথায় চুল কম থাকাকেই একটি কারণ হিসেবে মেনে নিয়েছেন তাঁরা। গবেষকরা দেখেছেন যে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদেরই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। আর তার অন্যতম কারণই হল মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের জীবন যাত্রার পার্থক্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরুষদের শরীরে নিঃসৃত হওয়া হরমোন এন্ড্রোজেন (androgens) শুধুমাত্র চুল পড়াতে প্রধান ভূমিকা পালন করে না, করোনাভাইরাসের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়।\n[আরও পড়ুনঃফের একদিনে রেকর্ড বৃদ্ধি, করোনা সংক্রমণের নিরিখে ইটালিকে টপকে গেল ভারত]\nতাই পুরুষদের চুল পড়া কমানোর জন্য চিকিৎসকরা এই হরমোনের প্রভাব কম করার চেষ্টা করছেন। প্রফেসর ওয়াম্বিয়ার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই আমেরিকায় চুল পড়া কমানোর জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, সেই ওষুধ নিয়ে করোনা সংক্রমণ কমানো যায় কিনা তার গবেষণা শুরু হয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্পেনের মাদ্রিদের তিনটি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যাঁরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ পুরুষের মাথায় চুল নেই বা কম আছে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডারামাটোলজিতে প্রকাশিত একটি জার্নালে বলা হয়েছে, ১২২ জন রোগীর মধ্যে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে যে, তাঁদের মধ্যে ৭১ শতাংশ রোগীর মাথায় চুল নেই। যাঁদের চুল কম, তাঁদের শরীরে এই ভাইরাসের প্রভাব অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও দাবি করেছে এই গবেষণা। ফলে এবার থেকে গোঁফ নয় করোনা আক্রান্ত পুরুষদের চেনা যাবে চুলেই।\nপুরুষের মাথায় চুল কম হলে বাড়াতে পারে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা।\nবলছেন আমেরিকার বিশেষজ্ঞরা।\nএই নতুন রিস্ক ফ্যাক্টরের নাম দেওয়া হয়েছে 'গ্যাব্রিন সাইন'।
| web |
97138bcbdd0db9f7e7cdeb4e64fe8c6f4f4fab24 | বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বাঁ-হাতি ওপেনার সৌম্য সরকার খুলনার মেয়ে প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। গত পরশু সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন তারা। একে অপরের গলায় মালাবদল করেছেন। খুলনা ক্লাবে সৌম্য সরকারের শুভ পরিণয়ের অনুষ্ঠানটি ছিল পারিবারিক মিলনমেলায়। কিন্তু এক অপ্রীতিকর ঘটনা এ আনন্দ অনুষ্ঠানকে কিছুটা হলেও ম্লান করেছে। বিয়েতে ৭টি মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আন্তর্জাতিক স্তরে নাম কুড়ানো ক্রিকেটারের বিয়েতে এমন ঘটনা কেন ঘটবে, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। পুলিশের বিরুদ্ধে নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগও তুলছেন তারা।
খুলনা ক্লাবে বেশ ঘটা করে সৌম্য সরকারের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই সেখানে অতিথিদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে। গেট দিয়ে বরযাত্রী ঢোকার সময় সৌম্যর বাবা কিশোরী মোহন সরকার, বরযাত্রী দীনবন্ধু মিত্রসহ মোট ৭ জনের মোবাইল খোয়া যায়। এ সময় হারিয়ে যাওয়া মোবাইলে ফোন দিয়ে এক চোরকে হাতেনাতে ধরেও ফেলা হয়। তল্লাশি করে পাওয়া যায় আরো ৫টি ফোন। বিষয়টি খুলনা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানান সৌম্যর ভাই প্রণব সরকার। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, খুলনা ক্লাবের লোকজন বিষয়টি নিজেদের ঘাড়ে নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।
এ বিষয় খুলনা ক্লাবের ডেপুটি সেক্রেটারি সেফগাতুল ইসলাম অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, চোর ধরা পড়ার পর আমরা চেয়েছিলাম তাদের আমাদের হাতে তুলে দেয়া হোক। আমরাই তাদের পুলিশে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সৌম্যর মামা স্বদেশ কুমার সরকার বলেন, খুলনা ক্লাব কর্তৃপক্ষ প্রথমে বিষয়টি আমলে নিতে চায়নি। এমনকি চোরদের হাতেনাতে ধরে ফেললে খুলনা ক্লাবের কর্মচারীরা বরযাত্রীদের ওপর হামলা করে। দুপক্ষের হাতাহাতিতে সৌম্যর বড় ভাই প্রণব গুরুতর আহত হয়।
এ বিষয় পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটার পর চুরি হওয়া একটি মোবাইলে কল করলে বিয়েবাড়িতে সেটি বেজে ওঠে। যার কাছে সেটি পাওয়া যায়, তাকে আটক করে তল্লাশি চালিয়ে বাকি মোবাইলের হদিশ মেলে। ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ ব্যক্তিকে স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। খুলনা সদর থানার ওসি বলেন, সৌম্যর বিয়েতে মোবাইল চুরি, মারামারি, হাতাহাতির ঘটনায় সেলিম ও রাসেল নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, তারা পেশাদার চিহ্নিত চোর। তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
| web |
d393c3e1ba0b02e847688c774a40087ca29160f6 | আসামের প্রকৃত নাগরিকদের নামের তালিকা (এনআরসি) প্রকাশ করা হয়েছে। ওই তালিকায় চূড়ান্ত ঠাঁই হয়েছে তিন কোটি ১১ লাখ লোকের। এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখের বেশি মানুষ।
আসামের এনআরসি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল।
এদিকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নীলফামারী থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫১ কিলোমিটার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৫৬ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মিজানুর রহমান খান।
এর আগে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, প্রতিটি দেশ তার বর্ডারে নিরাপত্তা জোরদার রাখে। আমরাও নিরাপত্তা জোরদার করছি।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)
| web |
f8a84f20960341cc317646792487eb5320594258 | ১. ৬৩ একর ওয়াকফের জায়গাকে ব্যক্তিগত মালিকানায় রেকর্ড করানোকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বর্ধমান ১নং ব্লকের কালনা রোড কপিবাগান এলাকায়। এই ঘটনাকে ঘিরে ১নং ব্লক বিএলআরও অফিসে বিক্ষোভ দেখায় এলাকার মানুষজন। ফের আগামী সোমবার এই ঘটনার শুনানির দিন ধার্য করেছেন ১নং ব্লকের বিএলআরও।
এলাকার বাসিন্দা সেখ রাকিব জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁরা জানতে পারেন কালনা রোডের বনমসজিদের অধীন তথা ওয়াকফের বেশ কিছু জমি অবৈধভাবে কপিবাগান এলাকার বাসিন্দা সেখ লালন নিজের নামে করে নিয়েছেন। প্রায় ১ বছর আগে তিনি মারা যাবার পর ১. ৬৩ একর ওই জায়গার মালিকানা রেকর্ড হয় সেখ লালনের ছেলে সেখ জনি এবং দুই মহিলা অসীমা মালিক এবং ফিরোজা সেখের নামে।
সেখ রাকিব জানিয়েছেন, সেখ লালন বর্ধমান আদালতে মুহুরীর কাজ করতেন। সেই সুবাদেই তিনি গোপনে ওয়াকফের ওই সম্পত্তিকে নিজের নামে করিয়ে নেন। পরবর্তীকালে বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা জেলা প্রশাসন, ভূমি দপ্তর সহ রাজ্য ওয়াকফ দপ্তরে জানান। এরপরই ওয়াকফ দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় ওই সম্পত্তি ওয়াকফ এস্টেটের তথা পীড়ত্ব সম্পত্তি। এরপরই তাঁরা বিএলআরও দপ্তরে ওই রেকর্ড খারিজ করার আবেদন জানান।
সেখ রাকিব জানিয়েছেন, এদিন এই আবেদনের শুনানি ছিল। ওই শুনানিতে সবপক্ষই হাজির ছিলেন। দুপক্ষের বক্তব্য শুনে আগামী সোমবার ফের শুনানির জন্য ডেকেছেন বিএলআরও বিশ্বজিৎ ঘোষ।
এদিকে, কিভাবে ওয়াকফ সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত মালিকানায় রেকর্ড করানো হয়েছে তা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, এব্যাপারে ভূমি দপ্তরের কর্মীরা জড়িত।
যদিও এব্যাপারে বিএলআরও বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, কিভাবে জমির মালিকানার রেকর্ড হয়েছে বা কি দলিল দেখে হয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে তাঁর কাছে যে সমস্ত কাগজ এসে পৌঁছেছে তাতে তিনি দেখেছেন ওই সম্পত্তিকে ওয়াকফ এস্টেট তাঁদের সম্পত্তি বলে জানিয়েছে।
বিশ্বজিৎ জানিয়েছেন, কয়েক দফায় ওই জমির মালিকানার রেকর্ড হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জমির মালিকানার হাত বদল হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সব পক্ষের বক্তব্য তিনি শুনেছেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও তিনি পেয়েছেন। আগামী সোমবার এব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কপিবাগান এলাকায় রীতিমত চাপা উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে প্রয়াত সেখ লালনের ছেলে সেখ জনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা ওই জমিতে ধান চাষ করে এসেছেন। বর্গাদারী স্বত্ত্বও পান তাঁরা। এরপর তাঁর বাবা ওই জমি কিনে নেন ৪জনের কাছ থেকে। পরবর্তীকালে পারিবারিক সূত্রে ওই জমির মালিকানা হয়েছেন ৩জন।
সেখ জনি জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের সমর্থনে সমস্ত তথ্য জানিয়েছেন। এব্যাপারে বিএলআরও-র সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।
| web |
2f84c5c5cc5a444c38f4db086366375f876a3f31 | IPL 2022: আজ মুখোমুখি রাসেল-ওয়ার্নার, দিল্লি-কলকাতা ম্যাচে কারা এগিয়ে?
IPL 2022: ঋষভ পন্থ, শার্দুল ঠাকুর, প্রবীণ আমরেকে কী শাস্তি দিল আইপিএল?
TMC Marriage : তৃণমূল সাংসদের কন্যার সঙ্গে তৃণমূলেরই রাজ্যসভার সাংসদের বিয়ে ! কী বলছেন পাত্র-পাত্রী ?
| web |
412b9026c2e11f56620ea85bfc91f61b728fd7d1 | নভেম্বরে এফটিএক্স-এ নিজেদের সর্বমোট সাড়ে ২৭ কোটি ডলারের বিনিয়োগ আটকে দেয় সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ তহবিল 'টেমাসেক হোল্ডিংস'।
ধসের মুখে পড়া এফটিএক্স'র বিভিন্ন অনিয়মিত তহবিল স্থানান্তর ও দুর্বল অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থার বিষদ বিবরণ দিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নতুন সিইও জন রে।
কোনো আইনজীবির উপস্থিতি ছাড়া তিনি নিজের এফটিএক্স ও আলামেডা রিসার্চের সাবেক বা বর্তমান কোনো কর্মীর সঙ্গেও কথা বলতে পারবেন না।
জব্দকৃত সম্পদের বেশিরভাগই রয়েছে আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি রবিনহুডের শেয়ার হিসেবে।
নভেম্বরের এফটিএক্স ধসের প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ক্রিপ্টো ঋণদাতা ব্লকফাই ও কোর সায়েন্টিফিক'সহ বেশ কিছু সংখ্যক কোম্পানির ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের এক দেউলিয়া আদালতে বুধবার দেওয়া তথ্য বলছে, ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জটির গ্রাহকদের ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
২৫ কোটি ডলারের মুচলেকায় জামিন পাওয়া ফ্রিড দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ একশ ১৫ বছর পর্যন্ত কারাভোগের সাজা পেতে পারেন।
ব্যাঙ্কম্যান-ফ্রিডের আইনজীবি মার্ক কোহেন বলেন, ২৫ কোটি ডলারের এক মুচলেকায় যৌথ স্বাক্ষর দিয়েছেন ফ্রিডের বাবা-মা।
| web |
b9a925fc9a4a830963c9f495471d2a96 | 'বড়দের মস্তিষ্কেও ক্ষতি করে জিকা'
কেবল গর্ভস্থ শিশু নয়, প্রাপ্তবয়স্কদের মস্তিষ্কেও জিকা ভাইরাস ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এক বৃদ্ধের মেরুদণ্ডের জলীয় অংশে (স্পাইনাল ফ্লুইড) জিকা ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ার পর তাঁরা গত বৃহস্পতিবার এ আশঙ্কার কথা জানান।
মাসব্যাপী নিউ ক্যালেডোনিয়া, ভানুয়াতু, সলোমন আইল্যান্ডস এবং নিউজিল্যান্ড ভ্রমণ শেষে ফেরার পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়া ৮১ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তি গত জানুয়ারিতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কাছাকাছি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। উচ্চমাত্রায় জ্বর, আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ওই ব্যক্তি কোমার কাছাকাছি রয়েছেন। তাঁর মস্তিষ্কে ও এর বহিরাবরণে প্রদাহ তথা মেনিনজেনসেফালিটিস শনাক্ত করেছেন ফরাসি বিশেষজ্ঞরা এবং মস্তিষ্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত স্পাইনাল ফ্লুইডে জিকা ভাইরাসও পেয়েছেন তাঁরা। জিকা ভাইরাসের সঙ্গে এর সম্পর্ক প্রমাণিত না হলেও এই ভাইরাসকেই দায়ী মনে করা হচ্ছে। এ কারণে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তাঁরা মেনিনজেনসেফালিটিসের সঙ্গে জিকা ভাইরাসের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে চিকিৎসকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
এর আগে গত বুধবার ফরাসি বিশেষজ্ঞদের আরেকটি দল স্পাইনাল ফ্লুইডে প্রদাহজনিত পক্ষাঘাত তথা মায়ালাইটিসের সঙ্গে জিকা ভাইরাসের সম্পর্কের কথা বলেন। তাঁরা জানান, গত জানুয়ারিতে ফরাসি ক্যারিবীয় দ্বীপ গুয়াদেলুপে ১৫ বছরের এক মেয়ের তীব্র মায়ালাইটিস শনাক্ত করা হয় এবং তার সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড, রক্ত ও মূত্রে উচ্চমাত্রায় জিকা ভাইরাস পাওয়া যায়।
লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া মশাবাহিত জিকা ভাইরাসের কারণে গত মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর সংক্রমণে সাধারণত জ্বর আর মাথাব্যাথা হলেও গর্ভস্থ শিশুর মাইক্রোসেফালিসহ সম্প্রতি নানা রোগের সম্পর্ক আবিষ্কার করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : এএফপি।
| web |
167344e98529ab388a68009ffb874f584b0249d6 | বিয়ে করার কি কম ঝক্যি? সারাদিন উপোস করে বর কখন আসবে তার জন্য অপেক্ষা করা এমনিতেও এই দিন মনের ভেতরে অদ্ভুত একটা চিন্তা কাজ করে। কিন্তু এমন স্পেশাল দিনে কেউ মনের মানুষের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে, এমন তো বোধ হয় সচরাচর দেখা যায় না। তাইতো সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, সাজুগুজু করে কনে একেবারে রেডি, কিন্তু একি কাণ্ড কনে তো বিয়ে করার আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার হওয়ার পর থেকেই পৌঁছে গেছে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে। আর কমেন্ট বক্সে প্রত্যেকেই হাসির ফোয়ারা ছুটিয়েছেন। এমন কনেকে সচরাচর কেউ দেখেনি, এমনটাই প্রত্যেকের মন্তব্য বিয়ের এমন সুন্দর মুহূর্তে কেউ ঘুমিয়ে পড়তে পারে, তা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারে না। সুন্দর করে সাজুগুজু করে আপাতত চোখ ঢুলু ঢুলু কনের।
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বিবাহের নানান ভিডিওতে একেবারে ভর্তি। কোনটা মজার আর কোনটা আবার শিক্ষামূলক। তবে যখন মন খারাপ থাকবে তখনই মজার ভিডিওগুলো দেখলে মন্দ লাগে না। সোশ্যাল মিডিয়ার নানান রকম প্ল্যাটফর্ম যেমন ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক এবং ইউটিউবে এই ধরনের মজার ভাইরাল ভিডিও প্রায় দেখা যায়। তবে শুধুমাত্র বিবাহের ভিডিও নয়, কখনো কখনো নতুন প্রতিভা নানান রকম নাচ-গান, আঁকা এই সমস্ত কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আর একবার যদি মানুষের পছন্দ হয়ে যায়, তাহলে তা পৌঁছে যায় দূর দূরান্তে।
| web |
841b985beae9cad33bf7433563b1fa37 | AKRON-Bridgestone আমেরিকা এবং গুডিয়র তাদের নিজ নিজ পাইকারি টায়ার বন্টন সম্পদের সমন্বয়ে একটি 50/50 যৌথ উদ্যোগে টায়ারহব এলএলসি নামে পরিচিত, যা দেশব্যাপী 80-এর বেশি বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কাজ করবে।
টায়ারহব আটলান্টা ভিত্তিক হবে এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার গিবস, একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায় এবং সরবরাহকারী চেইন এক্সিকিউটিভের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি স্বাধীন পরিচালিত দল দ্বারা পরিচালিত হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় টয়লেট প্রস্তুতকারকদের উভয়ের দ্বারা বিতরণ করা একটি সংবাদ প্রকাশের ব্যবসার সমাপ্তির পর সোমবার সন্ধ্যা হয়।
টায়ারহব ব্রডজাস্টারের টায়ার হোস্টেল সাবসিডিয়ার সাথে গডায়ারের কোম্পানির মালিকানাধীন পাইকারি ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ককে একত্রিত করবে, ভেনাসের অংশীদার বলেছে।
আর্থিক শর্তাবলী প্রকাশ করা হয় নি। লেনদেন প্রথাগত অনুমোদন সাপেক্ষে এবং মধ্য বছরের বন্ধ করার আশা করা হচ্ছে।
Michelin মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেকনোলজি টাওয়ার হাব তৈরির চার মাস পর আসে এবং আমেরিকার সুমিতোমো কর্পোরেশনটি টিবিসি কর্পোরেশনের পাইকারি সম্পদের সাথে 50-50 টি যৌথ উদ্যোগে মিলেবলের পাইকারি বিতরণ কার্যক্রমকে একত্রিত করতে সম্মত হয়, যার নাম ন্যাশনাল টায়র হোয়াইট।
নতুন বিতরণ কোম্পানি বিদ্যমান তৃতীয় পক্ষের পরিবেশকদের উভয় কোম্পানীর নেটওয়ার্ক পরিপূরক এবং লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার পরে সম্পূর্ণরূপে সমন্বিত বন্টন, গুদামজাতকরণ, বিক্রয় এবং বিতরণ সমাধান সরবরাহ করবে, দলগুলি বলেছে।
অংশীদারদের উপর জোর দেওয়া হয়েছে যে টায়ার হউন তাদের গ্রাহকদের টাকায় ব্যবসার ক্রমবর্ধমান জটিলতা পরিচালনা করতে সাহায্য করার জন্য সম্পদগুলি সরবরাহ করতে সহায়তা করবে, এসকিউএর বিস্তার এবং বৃহত্তর রিম ব্যাস প্রিমিয়াম টায়ারের দ্রুত বর্ধন চাহিদা।
"যুক্তরাষ্ট্রের টাওয়ার বিক্রেতা এবং খুচরা বিক্রেতা তাদের গ্রাহকদের চাহিদা এবং প্রত্যাশা পূরণের জন্য সঠিক টায়ার পেতে সক্ষম হওয়ার জন্য এটির সমালোচনা করে," টিজে হিগিনস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাজ্যের ইন্টিগ্রেটেড ভোক্তা টায়র গ্রুপ ব্রিডস্টোন আমেরিকা।
তিনি বলেন, "ব্রিজস্টোন থেকে যাত্রী ও হালকা ট্রাক টায়ারের গভীর ও বিস্তৃত পরিসরে তাদের প্রয়োজনীয় প্রবেশাধিকার প্রদান করে আজকের গতিশীল ও ক্রমবর্ধমান জটিল পরিবেশে টয়রহব অবস্থানকারীদের সহায়তা করবে"।
প্রবর্তনের সময়, টায়ারহবের দৈনিক মার্কিন দৈনিক বৃহৎ সংখ্যক খুচরা স্থানগুলিতে পৌঁছানোর জন্য স্কেল থাকবে, অংশীদার বলেন।
"গুডিয়ার পণ্যগুলির সম্পূর্ণ পোর্টফোলিও এবং সরবরাহ ও গ্রাহক সেবা উৎকর্ষের উপর ডেডিকেটেড ফোকাস সরবরাহের ক্ষমতা দিয়ে, টায়ারহব আমাদের, আমাদের গ্রাহকদের, গুডায়ারের কোম্পানির মালিকানাধীন খুচরো কারেন্ট এবং ভোক্তাদের জন্য বিজয়ী প্রস্তাব তৈরি করে, যার প্রত্যাশা এবং শপিং প্যাটার্নগুলি অবিরত গডিয়ের আমেরিকার রাষ্ট্রপতি স্টিভ ম্যাকক্ল্লান বলেন।
ব্রিজস্টোন এবং গুডায়ার উভয়ই বলেন, তারা আশা করেন যে টায়ারহব দ্রুত বর্ধন হার এবং টার্নআরাল টাইম প্রদান করবে যাতে তারা নিশ্চিত করতে পারে যে তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যগুলিকে দ্রুত ব্যবহার করতে পারে।
অংশীদাররা বলেছিলেন তারা আশা করেন যে টেরেব একটি সেলস ফোর্স এবং নতুন অনলাইন অর্ডার পোর্টালের মাধ্যমে "সেরা-বর্গের" গ্রাহক অভিজ্ঞতা সরবরাহ করবে যা বিক্রেতাগুলির পয়েন্ট-অফ-বিক্রয় সিস্টেমগুলির সাথে সহজেই সমন্বিত হবে।
টায়ারহুও গুড়ইয়ার এবং ব্রিজস্টোন গ্রাহকদের টাকায় ব্যবসার ক্রমবর্ধমান জটিলতা পরিচালনা করতে সহায়তা করবে, এসকিউএর বিস্তারকে চালিত করে। নতুন ডিস্ট্রিবিউটর উভয় কোম্পানীর পণ্যগুলির সম্পূর্ণ অ্যারে-এ অ্যাক্সেস প্রদান করবে, যা তাদের গ্রাহকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাদের সাধারণত তাদের অবস্থানে সীমিত পরিসংখ্যা স্থান থাকে।
গিবনস বি.সি. হেল্টার কারপের একটি বিভাগ সিপি কেলকো থেকে নতুন উদ্যোগে যোগদান করেন, বিওপলিমারারের একজন নির্মাতা, যেখানে তিনি গত ছয়-প্লাস বছরগুলির পরিচালক ছিলেন। তিনি মেটেল ইনকর্পোরেটেড এবং স্টারবাক্সের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
| web |
cc716c3789ae14228b9a131ff37348596fd4645b | খবরঅনলাইন ডেস্কঃ সেপ্টেম্বরে রাজ্যে যখন মাঝেমধ্যে লকডাউন চলছে, তখন তিনি বলেছিলেন করোনা চলে গিয়েছে। গত সপ্তাহে বিজেপির নবান্ন অভিযানেও সব রকম বিধিনিষেধ উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মাস্ক রেখেছিলেন থুতনিতে। সেই দিলীপ ঘোষই (Dilip Ghosh) এ বার আক্রান্ত হলেন কোভিডে (Covid 19)।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে সল্টলেকের আমরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে দিলীপবাবুর শারীরিক অবস্থা এখন উদ্বেগজনক নয়।
গত কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন দিলীপ। তাই নিজের বাড়িতেই তিনি আইসোলেশনে চলে গিয়েছিলেন। কোনো কর্মসূচিতে যোগ দেননি। বাড়ি থেকে কয়েক দিন বেরোননি। তবে দু' দিন আগেও এক বার কোভিড পরীক্ষা হলেও সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
শুক্রবার সকালে কিছুটা সুস্থও ছিলেন দিলীপবাবু। জ্বর চলে গিয়েছিল। কিন্তু দুপুরের পর থেকে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে কলকাতার নামী বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
সেখানে কোভিড পরীক্ষা হলে সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে এখন তিনি ভালো আছেন। তাঁর কোনো কো-মর্বিডিটি না থাকায় সুস্থ হতে বেশি সময়েও লাগবে না বলে জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
| web |
0548d6d09e66e32080a38cd8374c67b4d606f950b9bc54cbd63bd02cb5263c77 | মাধ্যম। ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ফোরাম সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে এক হওয়া নিয়ো-লিবারেল পলিসিগুলোর বিরুদ্ধে দুনিয়াজোড়া মানুষের সম্মেলনে রূপ নিয়েছে। অনেক মূল বিষয় সামনে এনেছে ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ফোরাম। দেখিয়ে দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আর আইএমএফের কর্তৃত্বে দক্ষিণের দেশগুলোর অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, তাদের ছত্রছায়ায় এইসব দেশের স্বৈরাচারী ডিক্টেটরেরা দেশগুলোতে যথেচ্ছ স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষমতায় টিকে আছে। তাদের সামনে গণমানুষের নিরন্ন, পুষ্টিহীন চেহারা ভেসে ওঠে না। দেশি-বিদেশি শোষণের যাঁতাকল নারীদের ঠেলে দিয়েছে প্রান্তিকতার শেষ প্রান্তে। যুব সমাজকে গড়ে ওঠার সহায়তা দেওয়ার বিপরীতে অবদমিত করে রাখার চেষ্টায় রত ওরা। পরিবেশকে বিপর্যস্ত করছে নিজেদের হঠকারী কর্মকাণ্ড দিয়ে। সামরিক সংঘাতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তৃতীয় বিশ্বের মানুষ নিজেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে অবলোকন করছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা বাধ্য হচ্ছে অমানবিক সামরিক আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়তে। কত কূটচাল, কত নৃশংস আচরণে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে পরস্পরের প্রতি পরস্পরের মানবিক আচরণ । পৃথিবীজুড়ে দরিদ্র, হতদরিদ্র মানুষকে শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট করা হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে একটি বিশ্ব গড়া সম্ভব। আমরা একত্রিত হলেই তা পারব। অ্যানাদার ওয়ার্ল্ড ইজ পসিবল।
ভদ্রলোক থামলে তার ভরাট কণ্ঠস্বর গমগম করে তাঁবুর ভেতরে। ছুঁয়ে যায় উপস্থিত মানুষের হৃদয়। তাদের চিন্তার ক্ষেত্র - যেন প্রবল বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে চিন্তার ঝরাপাতা। সেগুলো জমা হচ্ছে মানবতার
জয়গানে জ্বলে ওঠার জন্য। প্রবল করতালিতে মুখরিত হচ্ছে চারদিক।
সামান্থা আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে, ভদ্রলোক এইডস
আমি চমকে তার দিকে তাকাই। তিনি অন্যদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করছেন। মাথাভরা কাঁচাপাকা চুল এলোমেলো হয়ে আছে, যেন ইচ্ছে করে চুলের গোছা এভাবে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। বলতে চায় এসব ঝরাপাতায় এসো আগুন দেই। এসো গানে গানে বলি, আর একটি বিশ্ব চাই। আমাদের জন্য। তোমরা যারা মারণাস্ত্রময় পৃথিবী গড়েছ একদিন আমাদের কাছে হাত পেতে বলবে, একটু ভালোবাসা দাও। টুনটুনি পাখির ঠোঁটে করে নিয়ে আসা বৃষ্টির ফোঁটার মতো ভালোবাসা। মারণাস্ত্র দিয়ে যে আগুন জ্বলে উঠবে সেটা ভালোবাসা ছাড়া নেভানোর আর কোনো উপায় নেই।
আমি সামান্থাকে বলি, চল তার সঙ্গে কথা বলে আসি।
সামান্থা ভুরু কোঁচকায়। বলে, ওকে ঘিরে ধরেছে অন্যরা। আমি ঠেলাঠেলি করতে পারব না। তুমি যাও।
সামান্থা বিরক্তি প্রকাশ করে। আমি ওকে বুঝতে পারি না । ওর হাত ধরে বলি, ঠিক আছে থাক। আমি না হয় পরে একসময় কথা বলব। চল, বাইরে যাই।
আমরা দুজনে বেরিয়ে আসি। সামান্থা সুদান থেকে এসেছে। ওকে বলি, এই ফোরামের আয়োজনে এসে তোমাদের সঙ্গে পরিচয় হয়ে খুব ভালো লাগছে। আমার অনেক কিছু জানা হচ্ছে।
সুদানের নারীদের অবস্থার কথা তোমাকে বলব। তুমি তো জেন্ডার ইস্যুতে অভিধান করছো, দেখবে আমাদের মেয়েদের অবস্থা কত
ও কথা বলতে বলতে চারদিক তাকায়। কাউকে খুঁজছো
হ্যাঁ, আমার বন্ধু ও একটি এনজিওতে কাজ করে। আমরা একলে এসেছি। সকালে ও অন্য জায়গায় গিয়েছিল। বলেছে ওর জন্য এখানে অপেক্ষা করতে। তোমার কাজ থাকলে যেতে পারো। আমি কিছুক্ষণ দাঁড়াব।
আমিও তোমার সন্ডে দাঁড়াই। তোমার বন্ধুর সঙ্গে আমার পরিচয় করাবে না ?
নিশ্চয়ই করাব। ও তোমাকে দেখলে খুশি হবে। সাউথ এশিয়া সম্পর্কে ওর কোনো ধারণা নেই। ভেবেছিলাম বিয়ের পর ওইদিকে বেড়াতে যাব। কিন্তু সে আর হবে না।
কেন ? বাংলাদেশে এলে তোমরা আমার
অতিথি হবে। আমি তোমাদেরকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে নিয়ে যাব। তোমাদের খুব ভালো লাগবে। তুমি কি বঙ্গোপসাগরের কথা শুনেছ?
না, শুনি নি। আমার ভূগোলের জ্ঞান খুব কম।
আমার মনে হয় সামান্থাকে খানিকটা অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে। ও বোধহয় আমার দাঁড়িয়ে থাকা পছন্দ করছে না। আমি দ্রুতকণ্ঠে বলি, আমি যাই সামান্থা।
কোথায় যাবে ?
ওই যে দেখো আফ্রিকান ছেলেমেয়েরা রাস্তার উপর নাচ-গান করছে। ওখানে গিয়ে ওদের অনুষ্ঠান দেখি ?
দাঁড়াও, দাঁড়াও, ওই যে ও আসছে।
দূরে তাকিয়ে দেখি ছিপছিপে লম্বা একটি ছেলে দ্রুতপায়ে এগিয়ে আসছে। সামান্থাকে দেখে হাত নাড়াচ্ছে।
সামান্থা আমার দু'হাত ধরে বলে, ওর নাম জুলিয়াস। ওর সঙ্গে আমার বিয়ে হবে না অনামিকা।
হবে না কেন? আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। জুলিয়াস কাছে আসার আগেই ও বলে, জুলিয়াসের এইডস ধরা পড়েছে।
আমি দু'হাতে সামান্থার মুঠি চেপে ধরে বলি, এমন ঘটনার মুখোমুখি আমাকে হতে হবে তা আমি ভাবি নি। তারপরও তোমার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করব না।
জুলিয়াস এগিয়ে এসে সামান্থাকে জড়িয়ে ধরে। অনেকক্ষণ ধরে রাখে। আর আমার শুধু মনে হয় এই জীবন কত ক্ষণিকের।
সামান্থা দু'হাতে চোখের জল মুছে বলে, জুলিয়াস ও অনামিকা, বাংলাদেশ থেকে
হাই অনামিকা! হাই জুলিয়াস!
জুলিয়াস হাত বাড়িয়ে দিলে আমি হ্যান্ডশেক করি। ও আবার জিজ্ঞেস করে, হাউ ডু ইউ লাইক নাইরোবি ?
আই হ্যাড আ ড্রিম টু ভিজিট এ্যানি কান্ট্রি অব আফ্রিকা কন্টিনেন্ট।
সো ইউ আর এনজয়িং নাইরোবি। হঠাৎ করে আমি উত্তর দিতে পারি না। একজন এইডস আক্রান্ত তরুণের সামনে আমি কী করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করব! আমি যেটুকু কথা ওর সঙ্গে বলেছি সেটুকুই আমার জন্য অনেক বেশি। আমি একটি বোকা প্রাণী এবং বোবাও। আমার মুখে কোনো ধ্বনি উচ্চারিত হয় না। আমার ফেলে আসা জীবন আমার কাছে ধূসর হয়ে যায়। জেগে থাকে পাহাড়ের চুড়ো। সেই পাথুরে চূড়ো বৃক্ষহীন, সেখানে সবুজ বনরাজি নেই। সেখানে শুধু ধ্বনিত হয় ক্রন্দনের ধ্বনি। সেখানে কফিন বহনকারীদের কণ্ঠে প্রার্থনার সঙ্গীত উচ্চারিত হয়। দূর পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আমি মৃত্যুর কথা চিন্তা করে স্তব্ধ হয়ে যাই।
সে রাতে হোটেলে ফিরে আমি নির্জীবের মতো শুয়ে থাকি।
শরমিন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে,
কী হয়েছে আপা ?
ভীষণ মাথা ধরেছে।
| pdf |
a9426d261badd58045b47fdc96971eb7 | জন্মস্থানঃ মালদহ জেলার মানিকচক ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম নুরপুর।
কবিতা লেখার উদ্দেশ্য-বিধেয়ঃ
প্রথম যখন লিখতে শুরু করি তখন প্রতারক ছিলাম; ফল, ফুল, পাখি, সমাজ, রাজনীতি সবই লিখতাম, নিজের কথা লিখতাম না।
এখন অবচেতনের উপহাসে অনায়াসেই লিখি।
প্রথম প্রকাশঃ ২০১২ সালে স্কুল ম্যাগাজিনে।
একটা উদাসীন শহর ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে ভোকাট্টা হয়ে গেল। ফিরে তাকানো নেই,
নেই 'জানাজে-ফেরদৌসী'। সংগীতের সংসর্গে কল্পনার নিভৃতবাস স্বপ্ন স্বপ্ন লাগে। পাংশুলী তাণ্ডবে বিধ্বস্ত সংসার মকরূহি চাই; খোদা-খেলাপি হয়ে বদলে নিই হালালের পরিভাষা - জ্যান্ত নগরের অজগরী জীবন টিকে থাকে তাবিজের ভরসায়;
এহেন হারিয়ে যাওয়ায় সংকোচ নেই। বাস্তুহারা যে জন আজও ফিরে এলো না তার স্মরণসভা হোক। সংগোপনের নীলে গুলমোহর লেপে দাও; দিগন্তের আলোয় তাকাও, অতীত দেখো।
"ওই চোখের মণিতে তাক করে নিশানা লাগাও হে সেনাপতি - প্রেমিকার চোখও তো এত নির্মম ছিলনা।"
কোজাগরী বিপ্লব বোঝেনি উন্মাদ রুক্ষতার বিলম্ববোধ। সভ্যতার রজ্জু বেয়ে নেমে গেছে সান্ত্বনার জ্যামিতিক মুখপত্র; শব্দরা সেখানে অসহায় - লিবিডো পৌরোহিত্যের সোশ্যালে কুমারী প্রদর্শনের মতই ক্ষিপ্র!
অভিশপ্ত-অবচেতনের দোরগোড়ায় উন্মাদ - ছুটে চলেছে একবিংশের ঘোড়া।
নিউক্লিয়ার আশ্লেষে একদিন ছিটকে যাবে কেলভিন-পারদের হাতঘড়ি - মিনিটের কাঁটা, ঘন্টা, দশক অতঃপর শতাব্দী বেশভূষা - আক্রোশের এই নব্য সংস্করণ। হিজাব কেড়ে নেওয়া শরীরে রক্তের ডোপিং, ফোঁস করে ওঠে সমস্ত জীর্ণ কেউটেপ্রথার জঞ্জির অলংকরণ, মরা হাড়ের আওয়ামে আমরা সবাই এই তো চেয়েছিলাম - মরচের শুদ্ধস্বর!
আস্তাবলের একবিংশ ধ্বংস, আমার প্রতিকৃতির কসম - এই বেঁচে থাকা নিমিত্ত মাত্র।
আস্তিনের তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিলে নগ্ন শহর থাকে;
দিন বদলের গান শোনাতে চাই।
ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের বিধবা।
অস্তরাগের ভ্রুকুটিতে নৈর্ঋতের আবাহন,
ঈষদুষ্ণ সমস্ত জল্পনা;
আমি তাদের ইবাদত করি।
পুড়িয়ে ফেলি সব প্রাঞ্জল পুঁথি।
এ অ্যাখানের মুখবন্ধ থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না।
সেক্স করবে বলে দাঁড়িয়ে আছে। মাটির ভাঁড় থেকে চুঁইয়ে পরা চায়ে ক্ষতবিক্ষত তোমার শরীর;
কেউ বার্ণল দেবে না।
পড়ে থাকা টুকরো টুকরো মাংসের চিলি চিকেন বানাও। রাজপথে চিৎকার করে লাভ নেই,
কেউ শুনতে পায় না।
ওদের কানে কানে বলো - তোমার ইস্তাহার থেকে আমার কবিতা ভালো।
তামসিকের বেনোজলে সমুদ্রের গভীরতা থাকে,
আমরা অনায়াসে খুঁজে পেতে পারি ওলাওঠার রোগী।
রাষ্ট্র অমোঘ হয়ে ওঠে,
ডালপালা ছড়িয়ে ফেলে যায় অসময়ের আবদার;
তোমার যৌনরোগের মতো।
চোখ বুঁজে দুদণ্ড জিরিয়ে নেয় আমার ফুসফুস।
আর সবই তো পাপ - কেয়ামতের অপেক্ষা।
প্রতি রন্ধ্রে প্রায়শ্চিত্ত; তবু নিখুঁত।
হাহাকারের সাম্রাজ্য এনে দেয় একেকটা শূণ্যমগজ;
ভেন্টিলেটরের দোরগোড়ায়।
আলখাল্লায় আমার দেবতা।
তারপর কাঁধে তুলে নিই শাক্তের জানাজা, অগস্ত্য মোনাজাতের তর্পণ। এক ফকিরি জনম পেয়েছি; তেল-নুন মাখিয়ে ভাতঘুম দেওয়া যায়, অথবা গাইতে পারি গন্ধর্ব-গীত।
আলোয় আলোয় ছুঁয়ে দাও বাউলপশম।
কাকের ঠোঁট চিরে যে নদী বয়ে যায় তা আজও অন্তর্গূঢ়। অসময়ে একটা ডুব দিয়ে আসি। পবিত্রতা রক্ষার দায় তোমার নয়। যেসব বোধনের ফুল আজও নুইয়ে যায়নি, তোমার আমার প্রেম তাদেরই সমাবয়ব। তুমি সামনে এসে দাঁড়ালে আদিমতম মৌনতা আমাকে গ্রাস করে আর তুমি শিকারী হয়ে যাও পরক্ষণেই।
বিশ্বাসের কষ্টিপাথর হাতে আমি অদক্ষ জহুরি পিঁপড়েদের শীতের সঞ্চয় ধার করে বেরিয়ে পড়ি অন্তঃসলিলার সন্ধানে।
বারবেলায় ঢোক গিলে অসাবধানে ছুঁয়ে ফেলি সাগ্নিকের চিতা। সেই অনন্তের আগুনে আহুতি দিই পাপবোধ। মায়াগাছে বেড়ে ওঠা হাসনুহানারা সব জারজ সন্তান; একেকটা ফরজ গোসলের প্রায়শ্চিত্ত।
জ ন মে র গর্ভে অন্ধকার; অন্ধকারের গালিচায় হেঁটে আসে শীতের শ ব ন ম।
এই গোলক আমার না, এই খলক আমার না। রেশমচোর আমি বাস্তুসাপের নোলক। শিরোনামহীন রক্তবর্ণে অবৈধ মিছিল।
অন্বেষণের কারবালায় মহাব্বতের শোভাযাত্রা বের হলে হাংরি কবির পাপ-পুণ্যের তাবিজ ঝুলে যায় মৈথুনের পোস্ট মডার্নে।
| web |
12919cf4d5b778483776cb013e0d0f904c79a6b02a7fe1952fe866be913bcd84 | 'রাণী, এদের কেউই নয় ! এদের কেউ এমন দঃসাহসের- এমন জীবন-মরণের ব্যাপারে মাথা গলিয়ে দেবে না। রাণীকে তাবা অতটা ভালোবাসে না !...... কাল পানসিতে বসে আপনি বলেছিলেন, লোকে আপনার মুখের দিকে চোখ মেলে তাকাতে ভরসা পায় না। তারা জানে শব্দ, আপনার সামনে ভয়ে বিবর্ণ হতে. - জানে আপনার পায়ে পড়ে করুণা ভিক্ষা করতে... ..তা, আজ পেলেন একটি একনিষ্ঠ তরুণ প্রাণসত্যিই যে আপনাকে ভালোবাসে। এবার কি করবেন তা নিয়ে ? - চার্মিয়ন বলে যায় ।
সেদিন রাতে ক্লিওপাত্রা বৃথাই দুচোখ বহুজতে চেষ্টা করল বারবার পালঙ্কে শত্রু, এপাশ ওপাশ করে কাটাল, বৃথাই বারবার আহ্বান করতে লাগল তার মৃত্যু-দেবতাকে । বারবার আপনমনে বলতে লাগল সারা দুনিয়ার সবচেয়ে অসুখী রাণী সে-ই ! চার্মিয়ন এসব কথায় কণামাত্রও অভিভূত হ'ল না, তব, শুনতে শুনতে ধারণ করল সহানুভূতির ভাব ।
.....ওদিকে মিয়ামন ঝাপিয়ে পড়েছে নীলের বুকে, স্রোত উজিয়ে মাঝিদের আগেই উঠে এসেছে এক তালকুঞ্জে। এমন কি তার খোঁজে তখনো ওরা নৌকোই ছাড়েনি !
মিয়ামন লম্বা একটা দম টেনে নিয়ে কালো চুলগুলি হাত দিয়ে বিন্যস্ত করে দিল পিছনে। এবারে সে নিশ্চিন্ত খানিকটা, তার অন্তরে এসেছে শান্তি। তারই কিছ.-একটা চলে গেছে ক্লিওপাত্রার হাতে, তাদের দুজনের মধ্যে স্থাপিত হয়েছে একটা যোগাযোগ। ক্লিওপাতা ভাবছে তাকেই, - মিয়ামনকেই ! হয়ত সে ভাবনা হ'ল ক্রোধের, তবেও সে তার ! বহুকেই একটা অনুভূতির আলোড়ন জাগাতে পেরেছে তো ! তা, ভয়ই হ'ক, ক্লোধই হ'ক, বা করণাই হ'ক। তার নিজের অস্তিত্ব সম্বন্ধে তাকে সচেতন করে তুলেছে তো ! পত্রে তার নিজের নামটা অঙ্কিত করে দিতে ভুলে গেছে সত্যি, কিন্তু নামাঙ্কন থেকে তার সম্বন্ধে কী আর বেশী জানত সে? তার চোখে তো রাজা-ভৃত্য সবই সমান। তা, কোনো দেবী রাজামহারাজার বদলে এক রাখালকে ভালোবাসলে তো আর ছোট হয়ে যায় না !
জগদ্দল পাথরের মতো যে ভাবনাটি তাকে পিষে মারছিল তা থেকে যেন মুক্তি পেল মিয়ামন···মিয়ামন দেবতার নামে শখপ করল : একটি রাতের জন্যে - শব্দ একটি প্রহরের জন্যে হ'লেও ক্লিওপাবার প্রেম লাভ করবে, এতে যদি জীবন 'সর্জনও দিতে হয় সেও ভালো।
ক্লিওপাতার জীবনের একটি রজনী
যাকে শুধ, দূর থেকে দেখেছে, যার সামনে চোখ তুলে একটিবার তাকাতেও সাহস পায়নি - তাকেই সে কেমন করে এমন পাগলের মতো ভালোবাসল ? এক খেয়ালের মাথায় ছড়িয়ে দেওয়া প্রেমের বীজ কী করে এত চকিতে শিকড় মেলল গভীরে গিয়ে ? এই প্রশ্নের উত্তরে শঙ্খ, বলা যায় - সে এক রহস্য, দুর্ভেদ্য রহস্য !
বৈঠাদারদের নিয়ে সর্দার-মাঝি ফিরে গেছে নিশ্চিত বঝেই আবার সে ঝাঁপিয়ে পড়ল নীলের স্রোতে, আবার সাঁতারে এল প্রাসাদের দিকে। প্রাসাদের জানালার পর্দার আড়ালে তখন আলে' জলছিল - একটি চিত্রিত তারা।
প্রাসাদ-প্রাচীরের গা ঘেঁষে চলল সে সাঁতার কেটে। মম'র প্রাচীরের নিচু দিকটা তলিয়ে রয়েছে নদীর গভীরে। মিয়ামন এক পলক থমকে দাঁড়াল একটা জলমগ্ন অর্ধচন্দ্রাকার খিলানের কাছে। সেই খিলানের মধ্য দিয়ে জলস্রোত ছুটে চলেছে ঘূর্ণিপাকে । দ-তিনবার সে ডুব দিয়ে দেখল - তারপর হঠাৎ খাঁজে পেল প্রবেশ পথ, এবং অদৃশ্য হয়ে গেল নিমেষের মধ্যে।
এই খিলান-পথে এগোলেই পড়বে একটা নালা, নীলের জল সেই নালাপথে নামছে এসে ক্লিওপাতার স্নানাগারে।
স্বপ্নেরা যখন ডানা মেলে ফিরে যায় তাদের গজদন্ত-মিনারে - সেই ভোর অবধি ক্লিওপাতা একটুও বিশ্রাম নিতে পারেনি। অর্ধ-জাগরণে স্বপ্ন-মরীচিকার মাঝে সে দেখতে লাগল : কত প্রণয়ী সাঁতারে আসছে নদী, বেয়ে উঠছে দেয়াল - তারই কাছে আসবার জন্যে, আর তার স্বপ্নের সঙ্গে রহস্যের মতো জড়িয়ে গেল প্রণয়-লিপি-বেঁধা তাঁরটি। অনিদ্রার ও অস্বস্তির মাঝে ছটফট করছিল সে। চার্মিয়ন তার পা-বালিশের স্থান নিয়ে ঘমিয়ে ছিল বিছানার একপ্রান্তে ; হঠাৎ ক্লিওপাত্রার ছোট্ট পা-দটির লাথি এসে লাগল চার্নিয়নের বকের উপর ।
রাণী যখন চোখ খুলল, জানালার পর্দার ফাঁকে ফাঁকে লটোপাটি 'খাচ্ছে' ঋশিভরা সোনার রোদ ! রুগ্ন শিশুর মতো ক্ষীণস্বরে ক্লিওপাত্রা
তাকে তুলে নিতে বলল । দটি পরিচারিকা তাকে বাহতে তুলে নিয়ে আলগোছে শ·ইরে দিল মেঝেতে বিছানো বাঘের চামড়ার উপর, দুদধের চেয়েও সাদা সক্ষো-বসন পরিয়ে দিন তার অঙ্গে অঙ্গে, ৰূপালি তারে জড়িয়ে দিল চুলের গোছা...
পরিরিকদের সঙ্গে স্নানে
ক্লিওপাত্রার স্নাননীয়ার সময় হ'ল। গেল ক্লিওপাত্ৰা।
সুবিস্তীর্ণ স্প্যানের মধ্যে রাণীর স্নান-নিকেতন। 'ারদিকে দেশী বিদেশী তরু-লতার সারি আর কুঞ্জবন। লাল পাথরের সোপান-শ্রেণীর উপর দিয়ে ৬চিয়ে উঠেছে নানা লতা, তাদের ফুলগাল যেন আকাশ-ছোঁয়া A "কত অপরূপ নারী-মূর্তি চারদিকে। কী নিখুঁত তাদের নাসারন্ধন, কী নিটোল দুটি স্তন! কারো দেহের নিম্নভাগ মাছের লেজের মতো, কারো দেহভঙ্গি ডানা মেলে দেওয়া পাখীর মতো।
এইসব অদ্ভুত মূর্তি সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে ক্লিওপাত্রার প্রাসাদ থেকে স্নানাগারের হলবর পর্যন্ত। এই পথের শেষে ঝরে পড়ছে বিরাট এক ফোয়ারা, চারদিক থেকে চারটি সোপানশ্রেণী নেমে গেছে নিচে। হীরক-ঞ্চছ গভীর জলের তলদেশটা দেখা যাচ্ছে, স্পষ্ট - সিড়ির ধাপগুলি নেমে গেছে বিরাট এক জলাধারের তক্তদেশে। জলাধারের তলদেশে বাল, নয়, 'হুড়ানো রয়েছে স্বর্ণরেণ, ! অনিন্দ্য সুন্দর নারীমূর্তি কত বেদীস্তম্ভে দাঁড়িয়ে রয়েছে জলের উপর, তাদের স্তনাগ্ন থেকে উৎসারিত হচ্ছে সংক্ষম সুরভিত জলধারা, পড়ছে এসে জলাধারের মধ্যে। আরশিস্বচ্ছ জলে জেগে উঠছে কম্পন-রেখা।
এ ছাড়াও সাত-আটটি হলঘর রয়েছে, তাপ-বৈচিত্র্যে রমণীয়। কোথাও গরম বাষ্প, কোথাও বা হিম, রয়েছে সুগন্ধি-কুঠরী, রয়েছে তেল, রঞ্জনী ও গাত্রমার্জনার পাথর, - কামনা-বিলাসের চূড়ান্ত উপকরণ-সম্ভার।
চার্মিয়নের কাঁধে ভর করে এখানেই নেমে আসছিল ক্লিওপাত্রা। কম করেও ত্রিশটি সি'ড়ি সে কি নিজে নিজেই নেমে আসেনি ! বড় কঠোর শ্রম, বড় গভীর ক্লান্তি ! তার গালের স্বচ্ছ চামড়ার তলে তলে ফুটে বেরচ্ছে রক্তাভা, - মছে দিয়েছে মুখের উপরকার কামনার পাজ্জ্বর ছায়াটি। মর্ম'র-শোভন অনিন্দ্য-গঠন কপাল, তার মাঝখান থেকে শোভা পাচ্ছে কচুঁদে-গড়া একটি নাক ; গোলাপী রঙ - ফুটে-বেরচ্ছে যেন। নাসারন্ধ, ঈষৎ কামনার আবেগেও ফুলে ফুলে উঠতে থাকে, কাঁপতে থাকে কামোত্তা
| pdf |
a0a11f8d9006075397175ef3f6e9f44698f5af0d | বাড়ি তৈরি করতে কিংবা ঘর গোছাতে আজকাল অনেকেই ভরসা করছেন বাস্তু শাস্ত্রের ওপর। টোটকা রইল বাড়ির চাবি নিয়ে। শাস্ত্র মতে, বাড়ির চাবি রাখা উচিত সঠিক স্থানে। না-হলে দেখা দিতে পারে বাস্তুদোষ।
সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম উদ্বোধ করলেন এই নতুন ডিজিটাল কিউ আর কোডের। পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে 'মানুষের লড়াইয়ে,মানুষের রসদ'।
জমির বদলে চাকরির দাবিতে ফ্যাক্টরির গেটে বিক্ষোভ । বিক্ষোভ চলাকালীন বিক্ষোভকারী ও কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা, রণক্ষেত্রের আকার ধারন করে জামুড়িয়া ।
রইল পাঁচ রাশির কথা। সম্পর্কের ক্ষেত্রে দ্রুত বিরক্ত হয়ে যান। প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে এদের মনের ভাব একেবারে আলাদা। দেখে নিন এই তালিকায় কে কে আছেন।
অবশেষে টাকা নিয়ে প্রতারণার মামলায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সানি লিওন। অভিযোগের নিশানায় সানি ছাড়াও তার স্বামী ড্যানিয়েল ও এক কর্মচারী।
শিশুদের ফ্লু থেকে দূরে রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডায়েটে অনেক ধরনের খাবার রাখতে পারেন। এই খাবারগুলো পুষ্টিগুণে ভরপুর। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
বিচ্ছেদের পর সঙ্গীকে ভোলা বৃশ্চিক রাশির জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আজ টিপস রইল বৃশ্চিক রাশির জন্য। এই রাশির ছেলে মেয়েরা বিচ্ছেদের পর নিজেকে সামলাত মেনে চলতে পারেন এই কয়টি জিনিস। দেখে নিন কী রয়েছে শাস্ত্রে।
বিআরও চেষ্টা করছে ২০২৪ সালের মধ্যে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য। যাতে তীর্থযাত্রীদের ভারতের শেষ বিন্দু পর্যন্ত যানবাহন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়।
১৬ নভেম্বর, বুধবার ফের একবার রণক্ষেত্র হয় উঠল তিলত্তমার রাস্তা। এবার আন্দোলন মুখ্যমন্ত্রীর পাড়া হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে।
| web |
58ce393f09932bdbc1219206edd020be2ed02d5ac782bbd83374ba87167ab218 | 3. কাৰ্যৰলী (Functions) : ভিটামিন C দেহের বিভিন্ন রাসায়নিক ও শারীরবৃত্তীয় কার্যের সংগে জড়িত। নিম্নে সংক্ষেপে তাদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হল ঃ (1) ভিটামিন C কার্বোহাইড্রেটের বিপাকক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। এর অভাবে অগ্ন্যাশয়ে ইনসালিনের (insulin ) উৎপাদন হ্রাস পেতে দেখা যায়। (2) ভিটামিন C সম্ভবত হাইড্রোজেন বাহক হিসাবে কলাকোষে জারণ-বিজারণ বিভবের (oxidation-reduction potential) নিয়ন্ত্রণ করে। (3) এ ছাড়া ফলিক অ্যাসিডকে (folic acid) ফলিনিক অ্যাসিডে (folinic acid) রূপান্তরিত হতে সহায়তা করে। (4) লোহিতকণিকার উৎপাদনে অংশগ্রহণ করে। (5 অস্থি, তরুণাস্থি, দাঁত, ত্বক এবং সংযোগরক্ষাকারী কলার (connective tissue) কোষমধ্যস্থ পদার্থের (intercellular substance) স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখতে ভিটামিন C সহাযতা কবে। ইহা রক্তজালিকাব অন্তহ আবরণী-কলার বনিয়াদ পদার্থের রক্ষাকার্যেও সহায়তা করে। (6) অস্থিস্থিত প্রোটিন ম্যাট্রিক্সের বিকাশ বং ব্যালসিয়াম ও ফসফেটের উপস্থাপনে ভিটামিন C সাহায্য করে। (7) ক্ষত নিরাময়ে এবং (৪) ফাইব্রোব্লাস্ট (fibroblast), ওসটিওব্লাস্ট (ostcoblast) প্রভৃতি সংগঠক কোষের কার্য ইহা সহায়তা করে ।
4. অভাবজনিত লক্ষণ (Deficiency signs ) : ভিটামিন C এর অভাবে 'কাভি' (scurvy) রোগ দেখা দেয়। স্কার্ভি রোগের লক্ষণ
নিম্নরূপঃ (1) অস্থি ও দাঁত কদাকার রূপ ধারণ করে। অহিকোষ (osteoblast) নিষ্ক্রিয় হযে পড়ে। তাদের কিছু সংখ্যক আবার ফাইব্রোব্লাস্টে (fibroblast ) রূপান্তরিত হয়। অহিলবণের
যথাযথ উপস্থাপন (deposition) ব্যাহত হয় এবং দীর্ঘাস্থির ঘনত্ব হ্রাস পায় । দাঁতেও একই রকম পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় এবং মাড়ী স্পঞ্জী ও ছিদ্রযুক্ত হয় (8-17 নং চিত্র), (2) রক্তজালিবা ক্ষণভঙ্গার হয়, অন্ধ্র, বৃক্কে ও ত্বকের নিচে রক্তপাত ঘটে। মাড়ীর
পাষ্টি ও খাদ্যব্যবস্হা
মাড়ীর প্রান্তসীমার শ্লেষ্মাঝিল্লি ক্ষয় পাত্র এবং তখন রক্তপাত হয়, (3) অস্থির ভঙ্গ রতা বৃদ্ধি পায়। (4) লোহিতকণিকার সংখ্যা হ্রাস পায় এবং রক্তাল্পতা দেখা দেয়। (5) রক্তের ভষন-প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। (6) সংক্রমণের প্রতি সংবেদন-শীলতা বৃদ্ধি পায়। (7) ক্ষতের নিরামর মন্দীভূত হয়। (৪) নরনারীর মধ্যে প্রজনন ক্ষমতার বিপর্যয় দেখা দেয়। (9) ত্বকে ফসকূড়ি (eruption) দেখা দেয় এবং (10) কার্বোহাইড্রেটের বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয়।
5. দৈনিক চাহিদা (Daily requirements) : সাধারণভাবে 30 মিলিগ্রাম ভিটামিন C প্রতিদিন প্রয়োজন, তবে গর্ভাবস্থা, স্তন্যদান্যাল এবং বয়ঃসন্ধিকালে প্রায় 70 মিলিগ্রাম ভিটামিন প্রয়োজন হয়। অ্যান্টি ভিটামিন
যেসব পদার্থ ভিটামিনের কার্যে বাধা দেয়, ৩াঃ র বিনষ্ট করে বা নিষ্ক্রিয় করে, সেসব পদার্থকে অ্যান্টি ভিটামিন বলা হয়। দেখা গেছে এদের রাসায়নিক গঠন অনেকটা ভিটামিনের মতই, কিন্তু তারা জৈবিকভাবে নিষ্ক্রিয়। যেমন, পাইরিথায়ামিন (pyrithiamine) অনেকটা থায়ামিনের পিরাইডিনের সদৃশ। কিন্তু তার কোন শারীরতীয় সক্রিয়তা নেই। থায়ামিনের কাজে ইহা বাধাদান করে। তেমনি কাঁচা ডিমের শ্বেত অংশে অবস্থানকারী অ্যাভিডিন (avidin) ভিটামিন বায়োটিনের সংগে সংযুক্ত হয়ে তাকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে। থায়ামিনেজ (thiaminase) এমজাইম থায়ামিনকে বিনষ্ট করে। এমনি অসংখ্য অ্যান্টিভিটামিনের উপহরণ দেওয়া যায়।
খনিজ পদার্থ
খনিজ পদার্থ দেহের শক্তি সরবরাহ করে না, তব, এরা জীবনের অপরিহার্য উপাদান। অজৈব লবণ গ্রহণ না করা খাদ্যগ্রহণ না করার চেয়েও মারাত্মক। দ্বিতীয়টির চেয়ে প্রথমটির অভাবে প্রাণী তাড়াতাড়ি মৃত্যুবরণ করে। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, সালফার, ফসফরাস, পটাসিয়াম, তামা, আয়োডিন, ক্লোরিন প্রভৃতি খনিজ পদার্থ দেহের পক্ষে অপরিহার্য। নিম্নে প্রধান কয়েকটি খনিজ পদার্থের বিপাক সংক্ষেপে আলোচিত হল।
| pdf |
bb582b74a01a67e67448232448f5b1bc | দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন। তাকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রধান ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন বলেন বলেন, 'আশা করছি আগামীকাল তাকে আমরা ছাড়পত্র দেবো। তবে তাকে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে সিআরপিতে (পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র বা সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্য প্যারালাইজড) যাওয়ার জন্য লিখে দেবো।'
| web |
7de8c87754794938695cc0da3745537ff62ac529 | অ্যাঞ্জেলিনা জোলি থেকে অনুষ্কা শর্মা, পাউটি লিপসে এঁরা নজর কেড়েছেন ফ্যাশন বিশেষজ্ঞদের। যদিও কারও কারও মতে পাউট ঠোঁট দেখতে বড়ই অদ্ভুত। তবু এ কথা স্বীকার করতেই হয়, বিশ্বের তাবড় তাবড় ফ্যাশনিস্তাদের কাছেও এখন পাউট লিপ যথেষ্ট ফ্যাশন ইন। কিন্তু, পাউট ঠোঁট তো আমজনতার জন্য নয়। ফোলা ফোলা দু'টি ঠোঁটের জাদুতে যতই মুগ্ধ হন না কেন, রেস্তর কথা ভেবে হয়তো পিছিয়ে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু, এ বার আর ইচ্ছের উপর ছড়ি ঘোরানোর দরকার নেই। গ্যালারি থেকে জেনে নিন কী ভাবে সার্জারি ছাড়াই পাবেন সুন্দর দু'টি পাউট ঠোঁট।
| web |
400d21d620d61d8cf98a81c760a9b72670ae9e18 | মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আগামীকাল তাইওয়ান যাবেন। তার এ সফরের 'মারাত্মক পরিণতি' হবে বলে আবারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। পেলোসির সফরের সম্ভাবনা বিবেচনায় রেখে তাইওয়ানের আশেপাশে পারমাণবিক অস্ত্রবোঝাই রণতরীসহ বেশকিছু যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তাইওয়ানের রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিভিশন টিভিবিএসের রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিবেদক তিংতিং লু বলেছেন, ন্যান্সি পেলোসি আগামীকাল ২ আগস্ট রাতে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে পৌঁছবেন। একাধিক সূত্র থেকে এ খবর পাওয়া গেছে বলে তিংতিং টুইটারে এক পোস্টে জানিয়েছেন।
তাইওয়ান থেকে প্রকাশিত চায়না টাইমস জানিয়েছে, ন্যান্সি পেলোসির নেতৃত্বে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল আগামীকাল সন্ধ্যায় অথবা রাতে তাইপে পৌঁছবেন এবং পরদিন বুধবার তারা তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বিকেল পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফরের বিরুদ্ধে আবারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, তার এমন সফর মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে। চীনের সশস্ত্র বাহিনী এমন সফরের বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার এখতিয়ার রাখে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান।
নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ জানিয়েছে, পেলোসির সফরের সম্ভাব্যতা মাথায় রেখে তাইওয়ানের কাছে বিমানবাহী রণতরী, রিফুয়েলিং উড়োজাহাজসহ নানা ধরণের শক্তি সমাবেশ করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। গোড়াতে এ সফরের বিরোধিতা করলেও এখন চীনের হুমকির কথা বিবেচনায় নিয়ে পেলোসিকে বহনকারী বিমানের জন্য বাফার জোন বা ঘাত-নিবারক এলাকা তৈরি করছে মার্কিন বাহিনী।
সম্ভাব্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে মার্কিন বিমান বাহিনীর পারসোনেল রিকভাবি প্ল্যাটফর্ম (সংকটগ্রস্ত এলাকা থেকে সৈন্য ও কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিতে ব্যবহৃত উড়োজাহাজ) কমব্যাট কিং-টু'র দুটি এইচসি-১৩০ উড়োজাহাজ আলাস্কার অ্যাংকোরেজ থেকে জাপানের ওকিনাওয়ায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ দুটি উড়োজাহাজের পাশাপাশি অনেকগুলো কেসি-১৩৫ স্ট্র্যাটোট্যাঙ্কারস (আকাশে উড্ডয়নরত বিমানে জ্বালানি সরবরাহের উড়োজাহাজ) তাইওয়ানের কাছে আনা হয়েছে।
দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থানরত পারমাণবিক অস্ত্রবোঝাই রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান, জাপানের ওকিনাওয়ার কাছে থাকা রণতরী ইউএসএস ত্রিপোলি, সাসেবোতে মোতায়েন অ্যামফিবিয়াস অ্যাসল্ট শিপ (সমুদ্রপথে সৈন্য ও ভারি অস্ত্রশস্ত্র বহন ও স্থলভাগে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত নৌযান) ইউএসএস অ্যামেরিকাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থানরত বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আব্রাহাম লিঙ্কন ও ল্যান্ডিং হেলিকপ্টার ডক ইউএসএস এসেক্সকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
ন্যান্সি পেলোসি আজ সোমবার ভোরে সিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লু সিয়েন লুংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এশিয়া সফরকালে তিনি সিঙ্গাপুর ছাড়াও মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবেন বলে তার কার্যালয় জানিয়েছে। এর আগে এপ্রিলে পেলোসি তাইওয়ান সফরের পরিকল্পনা করেন। সে সময় চীনের দিক থেকে বারবার হুঁশিয়ারি ও নিজে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় তাইওয়ান সফর স্থগিত করেন তিনি।
চলতি দফায় ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু না বললেও অনেকে মনে করেন, তিনি দেশটিতে আকষ্মিক সফরে যেতে পারেন। তার এ সফরের আগমূহূর্তে তাইওয়ান প্রণালী ও পূর্ব চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে বড় ধরণের লাইভ ফায়ার মহড়া শুরু করেছে চীনা সামরিক বাহিনী পিএলএ।
এদিকে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস আজ এক মন্তব্য প্রতিবেদনে লিখেছে, যান্ত্রিক গোলযোগ অথবা জ্বালানি নেওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ন্যান্সি পেলোসিকে বহনকারী বিমান তাইওয়ানে অবতরণের ঝুঁকি ও বিপদ মাথায় নিতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে চীনের সামরিক বাহিনীর নজরদারি বিমান ও জাহাজ, র্যাডার পরিচালনা বিভাগ এবং ফুজিয়ানে মহড়ায় অংশগ্রণরত সৈন্যদের আগামী দিনগুলো সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকতে হবে।
গ্লোবাল টাইমস বলেছে, চীনের কাছাকাছি থাকাবস্থায় ন্যান্সি পেলোসির বিমানে সমস্যা হলে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তার বিমানকে সুরক্ষা দিবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরের তীরবর্তী হাইনান প্রদেশের সানসা বিমানবন্দর অথবা চীনের মূল ভূখণ্ডের অন্য যে কোনো বিমানবন্দরে সেটিতে অবতরণের সুযোগ দিবে। যতক্ষণ পর্যন্ত মার্কিন স্পিকারের বিমান তাইওয়ান থেকে দূরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পেশাদারি সেবা ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।
Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.
360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.
Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.
| web |
401520c6fc42425b07fdb09e6f7271174c68a52b | সকাল থেকেই কেটে গিয়েছে মেঘ। সঙ্গে বইছে কনকনে উত্তুরে হাওয়া। তার জেরে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে রাজ্যজুড়ে। মঙ্গলবার পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা থাকবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
গতকাল কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫. ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ একলাফে তা তিন ডিগ্রি নেমে দাঁড়িয়েছে ১২. ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে দু'ডিগ্রি কম। সকাল থেকেই রোদ ওঠায় রাতের পারদ আরও নামবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
ঠান্ডায় দাপটে কাঁপছে পশ্চিমের জেলাগুলিও। আজ শ্রীনিকেতনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯. ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী সেখানের কয়েকদিন পারদ ১০ ডিগ্রির নিচে থাকবে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও কনকনে শীত পড়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ২. ৬ ও ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
| web |
cf18fed6859676b05c62ec9ba76b4df3 | মুক্তকথা সংবাদ।। হায়রে শিক্ষক! তাও আবার মাদ্রাসার শিক্ষক। যেখানে নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা দেয়া হয় বলে দাবী করা হয়। দুঃসংবাদটি গণমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যম উভয় স্থানেই ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। ঘটনাটি নোয়াখালীর সোনাগাজীর একটি মাদ্রাসার। একজন মহিলা আলীম পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে ভূঁয়া সংবাদ দিয়ে দালানের ছাদের উপর নিয়ে, গায়ে তেল ঢেলে দিয়ে আগুন দেয়া হয়। কোন কোন সংবাদে বলা হয়েছে কেরোসিন তেল আবার দু'একটায় প্রকাশ হয়েছে পেট্রোল বলে। সে পেট্রোল হোক আর কেরোসিন হোক, একজন মানুষের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এটাই ঠিক। অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। তিনি মানুষ সংগ্রহ করে এমন অমানবিক পৈশাচিক কর্ম ঘটিয়েছেন। খুবই দুঃখ ও লজ্জাজনক যে নিজের কন্যাসম ছাত্রীর সাথে একজন শিক্ষকের ধর্ষণাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করতে না পারায় এমন নারকীয় পৈশাচিক ঘটনার জন্ম হয়েছে। এমন মর্মান্তিক, নারকীয় পৈশাচিক ঘটনার পর যেকোন সভ্য মানুষই ভাষা হারাতে বাধ্য। কি বলার থাকে!
পুলিশ বলেছে তারা বিশেষভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে। আসল দোষীকে তারা বের করবেই। পুলিশকে ধন্যবাদ তাদের উক্তির জন্য। এমন কথা না বলেও তারা পারতেন। কিন্তু বলেছেন এটা যদিও যথেষ্ট নয় তার পরও বলা যায় এটি একটি ভাল দিক। যদি পুলিশ ঠিক ঠিকই আন্তরিকভাবে কোন ধরনের প্রভাবিত না হয়ে ওই পশুকে ধরার কাজে মাঠে নামেন। সত্যসুন্দর মন নিয়ে তদন্তে নামলে পুলিশ অবশ্যই দোষী নরপশুকে হাতে নাতে ধরতে পারবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।
এই নরপশুর হিতাহিতজ্ঞান শূণ্য পৈশাচিক ঘটনার বিষয়ে সাহিত্য রচনার ইচ্ছে আমাদের নেই। এ ঘটনাকে কোন ভাষায় প্রকাশ করলে সঠিক হবে ঠিক ভেবে পাচ্ছি না। এমন নারকীয় অপরাধের সাথে জড়িত একজন শিক্ষক তাও আবার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। কি বলবো? কি রূপের বিচার চাইবো? একেবারে কোন কিছু না বলে শুধু একটি কথাই বলবো যে এই নরপশুদের না ধরা ও কঠিন সাজা না দেয়া পর্যন্ত আমরা নিজেদের সভ্য মানুষ বলে দাবী করতে পারবো না। নির্যাতিত ওই মেয়েটির চিকিৎসায় রাষ্ট্র ন্যায়সংগতভাবেই এগিয়ে আসবেন বলে আমরা আশা করতে পারি।
ওই ছাত্রী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে।
| web |
a3398c0293fa5dbba81081dd1864f5e36de652ac | বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে চীনের স্বর্ণের খনিতে আটকেপড়া ২২ শ্রমিকের মধ্যে ৯ জনকে নিরাপদে বের করতে সফল হয়েছেন উদ্ধারকারীরা। টানা ১৫ দিনের দীর্ঘচেষ্টার পর তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, স্থানীয় সময় আজ রবিবার (২৪ জানুয়ারী) সকাল ১১টা ১৩টার দিকে খনির গভীরের ৪নং সেকশন থেকে তাদের বের করে আনা হয়।
টানা ১৪ দিন খনির গভীরে আটকে থাকায় শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ৯ শ্রমিক। তাদের নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে।
বাকিদের উদ্ধারে এখনো সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে চীনা সরকার। তবে আটকে থাকা ১১ শ্রমিকের সঙ্গে এখনো কোনো যোগাযোগ করতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।
ওই খনিতে আটকেপড়াদের বের করে আনতে ৬ শতাধিক উদ্ধারকর্মী দিনরাত চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু খনির কয়েকটি মুখ ব্লক হয়ে যাওয়ায় বেধেছে বিপত্তি। এতেও থেমে যায়নি উদ্ধারকারীদের চেষ্টা। তাদের নিরাপদে বের করতে খনিতে নতুন করে ১২টি মুখ তৈরি করা হয়েছে।
গত ১০ জানুয়ারী চীনের শ্যানডং প্রদেশের হুশান স্বর্ণের খনিতে বিস্ফোরণের ফলে ২২ জন শ্রমিক আটকা পড়েন। এই দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর কর্তৃপক্ষ ১১ জন শ্রমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষমত হয় উদ্ধারকারীরা। তবে এদের মধ্যে একজন পরবর্তীতে মারা যায়।
| web |
6a386a9fa2c4b1b2fe0b7867e46c55abaeda746f | আজ রথযাত্রা (Rathyatra)। তবে প্রতিবছরের মতো লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত নেই পুরীতে (Puri)। গত বছরের মতো এবারেও ভক্তশূন্য রথযাত্রা পালন। ইতিমধ্যেই বলভদ্রদেবকে রথের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁকে রথে তোলা হচ্ছে। বেরিয়ে পড়েছেন সুভদ্রাও। জগন্নাথদেবের আসার অপেক্ষায় রয়েছেন সকলেই। এই তিন দেবদেবী রথে উঠলেই একে একে শুরু হবে রথযাত্রা সংক্রান্ত একাধিক নিয়ম। বিশেষ ধরনের কাঠ দিয়ে তৈরি হয় এই তিন দেবদেবীর তিনটি রথ। জগন্নাথদেবের রথের নাম 'নন্দীঘোষ'। বলভদ্রের রথের নাম 'তালধ্বজ' এবং সুভদ্রার রথের নাম 'দর্পদলন'। আজকের এই রথযাত্রায় অংশ নেবেন ৩ হাজার সেবায়েত, থাকছেন ১ হাজার কর্মী। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে, পুরী শহরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। যে রাস্তা ধরে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার রথ যাবে, সেই রাস্তা সংলগ্ন ছোট ছোট রাস্তাগুলিও আটকে দেওয়া হয়েছে। আজ যারা রথ টানবেন, তাঁদের উপরেও আরোপ হয়েছে একাধিক বিধি। ইতিমধ্যেই মন্দিরের ভিতরের আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে। রথ হল সচল, গতিময় জীবনের প্রতীক। সেই সুউচ্চ রথে প্রভু স্বয়ং খর্বাকৃতি। তিনি বামনরূপ ধারণ করে বিরাজিত হন যাতে সহজেই মানুষ তাঁকে টেনে নিয়ে যেতে পারেন। মন্দির থেকে দেবতা নিজে নেমে আসেন ভক্তদের দর্শন দিতে। আজও সেই দিন, তবে করোনা আবহে পালন হচ্ছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনে।
| web |
d004fe2756a516e1875d3e553e64d280c3070889 | অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য বলে অভিমত দিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের অবস্থা পর্যালোচনা করে সংগঠনটি জানিয়েছে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ইতিবাচক। তবে গুরুতর কিছু ঝুঁকিও রয়েছে আগামী দিনের জন্য। এগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট, দক্ষ মানব সম্পদের অভাব, প্রবাসী আয়ে ধীর প্রবৃদ্ধি, রফতানি আয়ে ধীরগতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, নাজুক বিনিয়োগ পরিবেশ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সংগঠনটির মতে, ২০২১ সাল নাগাদ অর্থনৈতিক লক্ষ্যপূরণে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে, রফতানিতে গতি আনতে হবে, আরো বেশি করে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, অবকাঠামো সংকট দূর করতে হবে, গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং বাড়াতে হবে দক্ষ জনশক্তির যোগান। সংকটগুলোর সমাধান হলে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব হবে না। বলা বাহুল্য, এমন এক সময় এই পর্যালোচনাটি প্রকাশিত হয়েছে যখন দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিয়েছে সরকারি দল। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশিত হলেও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল ইতোমধ্যে শঙ্কা প্রকাশ করেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, এমনকি সংঘাতমূলক পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রধান পূর্বশর্ত। অন্যান্য পূর্বশর্ত অনুকূল থাকলেও প্রবৃদ্ধি ও অগ্রগতির লক্ষ্য অপূর্ণ থেকে যেতে পারে যদি রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানমূলক পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা না থাকে। উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ গতিময় করতে হলে একটি নির্ভয় ও শান্ত পরিবেশ থাকতে হবে। গ্যাস-বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি কিংবা অবকাঠামো উন্নয়নেও অনুকূল পরিবেশ দরকার। রাজনৈতিক পরিবেশ যদি অস্থির, অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় হয়ে উঠে তবে কোনো কিছুই যথাযথভাবে হবে না।
প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন লক্ষ্যপূরণে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। সেটা করতে হলে সর্বাগ্রে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, সরকারি দল ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। অথচ তার প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার অবস্থায় নেই। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, এই মামলা ও সাজার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যবাদ নিশ্চিত ভূমিকা রেখেছে। দেশের বিভিন্ন মহলসহ বিদেশি মহলগুলোও প্রায় এ রকমই ধারণা পোষণ করে। কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার ডিভিশন দেয়া নিয়ে কিংবা মামলার রায়ের নথিপত্রের নকল সরবরাহ করা নিয়ে যে রকম আচরণ ও টালবাহানা প্রদর্শিত হয়েছে তাতে এই ধারণা আরো মজবুত হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির চেয়ারপার্সনকে কারাগারে রেখে, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দিয়ে কিংবা নিপীড়ন করে কি নির্বাচনের কাক্সিক্ষত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? সম্ভব কি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা? বিএনপি দেশের বৃহৎ দুটি দলের একটি। তাকে বাইরে রেখে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক বলে গণ্য হতে পারে না, যেমন ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন হয়নি। স্মরণ করা যেতে পারে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপির ওপর নজিরবিহীন দমন-পীড়ন হয়েছে এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। এ সরকারের আমলে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৮ হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আছে ৩৬টি মামলা। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। এহেন বাস্তবতায় দলটির পক্ষে কীভাবে নির্বাচনে আসা সম্ভব, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে বা নির্বাচন করতে না পারে, তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলেও তা অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে না। আর সে রকম হলে দেশের রাজনৈতিক সংকটের সুরাহা তো হবেই না, বরং তা আরো জটিল ও সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে।
এমসিসিআই'র পর্যালোচনায় যথার্থভাবেই চিহ্নিত করা হয়েছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। এ কথা আমরা উপযুক্ত উপলক্ষে বহুবার বলেছি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা কিংবা তার আশঙ্কা উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রধান অন্তরাায়। এ পর্যন্ত দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি যতটুকু হয়েছে, যদি রাজনৈতিক সংকট না হতো, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সহাবস্থানমূলক পরিবেশ বিদ্যমান থাকতো, গণতন্ত্রের চর্চা সঠিকভাবে হতো, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার রদবদল নিশ্চিত হতো তাহলে আরো অনেক বেশি উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হতো। প্রতিহিংসামূলক ও সংঘাতের রাজনীতি দেশ ও জাতিকে পিছিয়ে দিয়েছে। এই অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা রাজনৈতিক সংকটের দ্রæত অবসান, রাজনৈতিক পরিবেশের উন্নতি এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কামনা করি। সব কিছুর জন্যই একটা অনুকূল সময় থাকে। দেশের জন্য এখন অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠার সময়। এই সময়টাকে আমরা কাজে লাগাতে না পারলে দেশেরই সমূহ ক্ষতি হবে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে, জনগণের প্রত্যাশিত কল্যাণের প্রয়োজনে রাজনৈতিক সংকটের সুরাহা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একান্তভাবেই অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকাই মুখ্য। সরকার চাইলে সহজেই এটা হতে পারে। আমরা সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছা কামনা করি।
| web |
b9b4c9e75b0d42bdc52e170a2e685b22d01b5eaa | নজরবন্দি ব্যুরোঃ ওয়ান প্লাস তাদের নতুন ফোন OnePlus 9 RT লঞ্চ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কোম্পানি এই বছর অক্টোবর মাসে 'T' ট্রিটমেন্টের সাথে ওয়ানপ্লাস 9R লঞ্চ করবে। এই ফোন Oxygen OS এর নতুন ভার্সনের সাথে এন্ট্রি করতে পারে।
কিন্তু কেমন হবে এই ফোনের স্পেসিফিকেশন? OnePlus 9RT অনেকটা Oneplus 9R মতো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
এই নতুন সেটে 120Hz এর রিফ্রেশ রেট সহ 6. 5 ইঞ্চির AMOLED ডিসপ্লে, 4500mAh ব্যাটারি এবং 65W ফাস্ট চার্জিং থাকতে পারে। এই প্রসেসরটি স্ন্যাপড্রাগন 870+ বা 875 হতে পারে।
| web |
95b78d10fb7a58a46ba1d970a9f4d97d1a379019 | ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত ব্রিজ অব পিস ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রশংসিত ইরানি চলচ্চিত্র "দিস সাইড, আদার সাইড" তিনটি সেরা অ্যানিমেশনের একটি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ইভেন্টটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়।
সংক্ষিপ্ত অ্যানিমেশন মুভিতে পরিচালক লিদা ফজলি দেখান যে, আমরা সবসময় অন্য দিকে ভয় পাই, যদিও আমরা সবাই একই। যখন একটি যুদ্ধ তাদের পৃথিবীকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, তখন একটি ছোট মেয়ে এবং একটি ছোট ছেলে দুই পক্ষ থেকে তাদের যাদুকরী রঙিন চকপেন্সিল দিয়ে যুদ্ধ থামাতে একত্রিত হয়। কিন্তু আমরা সবাই জানি এটা শুধুই কল্পনা। বাস্তব যুদ্ধ বন্ধ করা এত সহজ নয়; ক্ষতি সারানো এত সহজ নয়।
ফিল্মটি এর আগে কয়েক ডজন আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে এবং স্লোভাকিয়ায় ২০২০ সালের দ্বিবার্ষিক অ্যানিমেশন ব্রাতিস্লাভায় ইউনিসেফ পুরস্কার সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার জিতেছে।
সূত্রঃ তেহরান টাইমস।
| web |
ef4ecfc87667f877a05f39c83b70139f6ac44533 | চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় বালতির পানিতে ডুবে এক শিশু (১৪ মাস) নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৪ মে) মনকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জেম আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেলে শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের রানীনগর হঠাৎপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের রানীনগর হঠাৎপাড়া গ্রামের পল্লি চিকিৎসক নাসিম উদ্দিনে ছেলে আফিম উদ্দিন।
নিহতের বাবা নাসিম উদ্দিন জানান, আমি মঙ্গলবার বিকেলে কাজের জন্য বাড়ির বাইরে ছিলাম। আমার ছেলে বাড়ির আঙিনায় থাকা বালতিভর্তি পানি নিয়ে খেলছিল। এ সময় হঠাৎ বালতির মধ্যে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে উদ্ধার করে দেখতে পান, আমার ছেলে আর নেই।
ইউপি সদস্য জেম আলী জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বালতির পানিতে ডুবে আফিম নিহত হয়েছেন।
| web |
15d574dbd449055b0ca4a1c17baa98e9 | শ্রমিকদের আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে সরকারের কাছে টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।
গত ২০ আগস্ট নতুন করে সহজ শর্তে ঋণ চেয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে এই চিঠি দেন সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক। চিঠিতে, তৈরি পোশাকর রপ্তানি বাণিজ্যের সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদর অন্তত আগস্ট মাসের বেতনভাতাদি পরিশোধে জুলাইয়ের ন্যায় সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এখনও সংকটের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা তাদের বর্তমান ক্রয়াদেশ স্থগিত/বাতিল করছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী এ পর্যন্ত ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রপ্তানি আদেশ বাতিল/স্থগিত হয়েছে, যা প্রতিদিনই বাড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয়। আগের চলতি শিপমেন্টগুলোর বিপরীতে পেমেন্ট পেতেও ৮-৯ মাস সময় লেগে যেতে পারে। ক্রয়াদেশ বাতিল/স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার ফলে পোশাক খাত নিদারুন আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।
এর আগে করোনা মহামারি শুরু হলে মার্চের শেষ দিকে (২৫ মার্চ) শুধু শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ পায় গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী শিল্প। সে সময় বলা হয়, পরবর্তী তিন মাসের বেতন পরিশোধ করতে এই অর্থ সহায়তা পাবেন শিল্প মালিকরা। এর টাকা নিলে ২ শতাংশ সুদ ও সময় মতো কিস্তির অর্থ পরিশোধ না করলে বকেয়া কিস্তির উপর দণ্ড সুধ আরোপেরও শর্ত দেয়া হয়।
এদিকে, চলতি মাসের মাঝামাঝি করোনাকালীন তৈরি পোশাক খাতের স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশের ৮০ শতাংশই আবার রপ্তানি করা হচ্ছে বলে জানায় বিজিএমইএ। যার বাজার মূল্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। সেই সঙ্গে ক্রেতাদের নতুন অর্ডারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে কম দামি পণ্যের অর্ডার তুলনামূলক বেশি আসছে বলেও সেসময় জানায় সংগঠনটি। এর আগে ২৪ জুলাই বিজিএমইএ জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সচল কারখানাগুলোর সক্ষমতার মাত্র ৩৫ শতাংশ কার্যাদেশ রয়েছে।
| web |
5754bcd3610f4cf31fd3e8f78b29e9ed | পোকেমন তরোয়াল এবং শিল্ড কেবল মূললাইন কনসোলগুলিতে সিরিজের জন্য উপযুক্ত শুরু নয়, সম্ভবত এই সিরিজের সেরা প্রবেশিকাও।
পোকেমন তরোয়াল এবং শিল্ড কেবল মূললাইন কনসোলগুলিতে সিরিজের জন্য উপযুক্ত শুরু নয়, সম্ভবত এই সিরিজের সেরা প্রবেশিকাও। নতুন পোকেমন, ডায়নাম্যাক্স অভিযান, জিম, এবং বিস্তৃত ওয়াইল্ড এরিয়া সহ পোকেমন তরোয়াল এবং শিল্ড আমাকে এমন এক আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছে যে আমি খুব কমই গেম খেলতে অনুভব করি।
গতিশীল আবহাওয়া যুদ্ধ এবং সন্ধানের জন্য পাওয়া পোকেমনকেও প্রভাবিত করে। বন্য অঞ্চলের অন্যতম বায়োমসের জায়ান্টের ক্যাপে যদি তুষার ঝড় দেখা দেয় তবে এটি রিওলুর পালনের সুযোগ উন্মুক্ত করে। বালু ঝড়ের সময় যুদ্ধ করা কেবল নির্ভুলতার উপর প্রভাব ফেলবে না, তবে ঝড়ের ধ্বংসাবশেষের ক্ষতির কারণ রয়েছে। এটি গ্যালারকে দুরন্ত ও জটিল অনুভব করে। যদিও প্রচুর পরিমাণে পোকেমন রয়েছে যেগুলি সর্বদা নির্দিষ্ট অঞ্চলে পাওয়া যাবে, আপনি কখনই জানেন না যে কখন একটি নতুন পপ আপ হবে কারণ বৃষ্টি হচ্ছে বা সূর্য জ্বলছে, আগুন পোকেমনকে অতিরিক্ত শক্তিশালী করে তোলে। এবং তারপরে পৃথিবী সম্পর্কে বিস্তৃত অনেকগুলি আইটেম রয়েছে (যার মধ্যে আপনার আর কাটতে বা শক্তির মতো চলার দরকার নেই, সেগুলি তোলাবার জন্য সেখানেই রয়েছে), অদ্ভুত এবং আনন্দময় এনপিসি, খনন করার জন্য জীবাশ্মগুলি , প্রজননের জন্য নার্সারি এবং ডায়নাম্যাক্স অভিযানের জন্য ডেনস করে যেখানে আপনি সুপার শক্তিশালী এবং বড় পোকেমনকে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। যদিও আগের গেমগুলি বিরতিযুক্ত এবং এলোমেলো বোধ করতে পারে, পোকেমন তরোয়াল এবং ঝাল জীবিত. এবং এটি কেবল বন্য অঞ্চল নয় - রুটগুলি এবং আন্তঃদেশীয় অঞ্চলে কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট-ক্যামেরা দর্শন সহ আমি উপরে তালিকাভুক্ত সমস্ত বৈশিষ্ট্য রেখেছি। গালারের মধ্য দিয়ে আমার পথ তৈরি করা আমাকে খেলতে গিয়ে যে উত্তেজনা এবং দুঃ সাহসিক কাজ করেছিল তা অনুভব করেছিল gave পোকেমন রেড প্রথমবার. সবকিছুই নতুন এবং চকচকে ছিল, কেবলমাত্র এই সময়টি আমার কল্পনাশক্তি দিয়ে বেশিরভাগ শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার ছিল না, আমার সামনে ঠিক এটি ছিল।
বিশ্ব পরিবর্তনের পাশাপাশি, গেম ফ্র্যাক হ'ল মুষ্টিমেয়ভাবে প্রয়োজনীয় জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে যা আমাকে আরও অবাক করে দেয় যে কেন তারা তাড়াতাড়ি ঘটেনি। তেমনি অতীত গেমগুলির মতো, আপনার পক্ষে ছয়টি পোকেমন একটি দল থাকতে পারে। আপনার যে কোনও নতুন বন্ধু ধরা পড়লে আপনার বাক্সে রিলিজড করা হয়, একটি যাদুকরী, অসীম ডিজিটাল ভাণ্ডার যা আপনার ক্যাপচার করা সমস্ত অতিরিক্ত পোকেমনকে সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না holds পূর্ববর্তী শিরোনামগুলিতে, আপনি যদি বিশ্বের বাইরে থাকেন এবং একটি নতুন পোকেমন ব্যবহার করতে চান, আপনাকে শহরে ভ্রমণ করতে হবে, একটি পোকেমন সেন্টার খুঁজে পেতে হবে, বাক্সটি অ্যাক্সেস করতে হবে এবং অদলবদল করতে হবে। ভিতরে তরোয়াল এবং ঝাল , আমি যে প্রতিটি পোকেমনকে ধরেছিলাম তা মূল মেনুতে একটি বোতামের প্রেসে আমার কাছে উপলব্ধ ছিল। আরও ভাল, যদি আপনি লিল 'cutie (আমি পোকমন এর প্রতিশব্দ থেকে শেষ হয়ে চলেছি) ধরে ফেলেন এবং আপনার যে চালনা চান তা তাদের কাছে নেই, প্রতিটি পোকেমন সেন্টারে কোনও প্রকারভেদে মুভিসেট পরিবর্তন করতে উত্সর্গীকৃত একটি এনপিসি থাকে। এটি অতীতের গেমগুলির মতো সক্ষমতা পরিবর্তন করতে কোনও নির্দিষ্ট আইটেম সন্ধান করার চেয়ে অনেক বেশি সুবিধাজনক। এমনকি বাইক চালানোর মতো সাধারণ জিনিসগুলি এখন একটি সাধারণ বোতাম টিপে টগলড। আবার, এটা আমার কাছে আকর্ষণীয় যে এই জিনিসগুলি আগে প্রয়োগ করা হয়নি, তবে তারা এখন এখানে থাকায় আমি খুশি।
এই ফ্রিকিং গেমটি সম্পর্কে ভালবাসার অনেক কিছুই রয়েছে। সেখানে ডেক্সিটারদের কাছ থেকে প্রচুর কান্নাকাটি করা সত্ত্বেও, এবং বিলাপকারীরা টুইটারে অস্পষ্ট প্রান্তগুলি নিয়ে পড়েছে (পড়ুনঃ অ্যান্টি-এলিয়াসিং), এটি দেখতে দুর্দান্ত এবং অভিনয় করে। যদি আপনি না জানতেন, ডেক্সিটার একটি শব্দ ডেরহার্ড পোকেমন ভক্তরা পুরানো পোকমনকে তরোয়াল এবং শিল্ডে ব্র্যাক্সিতে আমদানি না করা নিয়ে তাদের ক্ষোভের মর্যাদায় মেতে উঠেছে, এটি একটি আসল সমস্যা যা লক্ষ লক্ষ লোককে প্রভাবিত করে। আমি খেয়াল করিনি, অনেক কম শোকে, পোকেমনের অভাব। জোরে চিৎকার করার জন্য, লাফ থেকে তাদের 400 জন রয়েছে এবং নতুনগুলি দুর্দান্ত। আমার স্ত্রীকে নতুন পোকেমন এর আরও কিছু আকর্ষণীয় ডিজাইন দেখানোর জন্য আমি আক্ষরিক অর্থে আমার আসন থেকে লাফিয়ে উঠছিলাম।
তবে এটি কেবল বন্য অঞ্চল নয়, নতুন পোকেমন বা স্থানের ধারণা তরোয়াল এবং ঝাল এত দক্ষতার সাথে কারুকৃত - এটি খুব ছোট জিনিসও। জিম লিডার ডিজাইন, পথের সাথে আপনি যে অযৌক্তিক প্রশিক্ষকগুলির সাথে মিলিত হন, নতুন চাল এবং গ্যালারিয়ান পুনরায় নকশাগুলি এবং খেলোয়াড়ের কাস্টমাইজেশনের জন্য কিনতে কতগুলি পোশাক এবং আনুষাঙ্গিক। আমার মেয়েটি বেটিসির কাছে স্বর্গের সদস্যের মতো দেখাচ্ছে এবং আমি আর খুশি হতে পারি না। হেক, বসের আগে কেবল কিছু সংখ্যক প্রশিক্ষককে লড়াইয়ের পরিবর্তে প্রতিটি জিম নেতার আগে হালকা ধাঁধা এবং মিনি-গেমস রয়েছে।
শেষ সময়টি আমি এতটা অনুভব করেছি মনে করতে পারছি না আনন্দ যখন একটি ভিডিও গেম খেলছেন। এটি অন্ধকার লাগতে পারে তবে আমি এটি আন্তরিকতার সাথে বলতে চাইছি। এই বছর দুর্দান্ত গেমস হয়েছে, এবং আমি অবশ্যই মজা পেয়েছি, তবে পোকেমন তরোয়াল এবং ঝাল আমাকে অপ্রচলিত সুখে ভরপুর করেছে। আমি যখনই খেলি, সেদিন আমার সাথে যে চাপ পড়েছিল তা ঘন্টার সাথে সাথে গলে যায়। এই ভেবে যে আমি - কিছু সময় - থেকে এগিয়ে যান তরোয়াল এবং ঝাল আসলে আমাকে দুঃ খিত করে তোলে ততক্ষণে, আমি এই বাচ্চাদের মতো আনন্দ উপভোগ করতে যাচ্ছি এবং বাচ্চারা যেমন বলেছে, তাদের সবাইকে ধরার চেষ্টা করব।
এই পর্যালোচনাটি গেমটির নিন্টেন্ডো স্যুইচ সংস্করণের উপর ভিত্তি করে। একটি অনুলিপি আমাদের নিকটেন্ডো সরবরাহ করেছিলেন।
| web |
74a3807e2f66d653ceb3264ecea827508585ab14 | "সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য-অপ্রত্যাশিত দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণদের সহায়তায় করণীয়" প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে মাদারীপুরে বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা "কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি" (ক্যাম্পস) মাদারীপুর শাখা একটি পথ র্যালির আয়োজন করে।
র্যালিটি শহরের পানিছত্র এলাকা থেকে শুরু হয়ে সদর হাসপাতাল চত্ত¦র ঘুরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পস মাদারীপুর শাখার মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শিবলী সাহারিয়ার, শাখা সহকারী ব্যবস্থাপক মো. সজিব শিকদার, টেকনিশিয়ান মাসুদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, স্কাউট সদস্য প্রমুখ।
ক্যাম্পস মাদারীপুরের শাখা সহকারী ব্যবস্থাপক মো. সজিব শিকদার বলেন, কিডনি রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে, প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের কারণ ও কিডনি রোগ শনাক্ত করে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করতে এবং চিকিৎসা বঞ্চিত কিডনি বিকল রোগীদের স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যেই কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) কাজ করে যাচ্ছে।
ক্যাম্পস বিগত ১৮ বছর ধরে কিডনি রোগ প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে মাদারীপুর শাখা হতে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে।
| web |
55cc9d469c3479e4750ddc2125b371cf | ৬ জুন ২০২০, আজকের মেঘনা ডটকম,
আব্দুল হক :
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মোঃ মোসলেম উদ্দিন (দৈনিক ইত্তেফাক) সভাপতি ও এ এইচ ইমরানকে (দৈনিক গনমুক্তি /এশিয়াখবর২৪.কম) সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়।
কার্যকরী কমিটির অন্যান্যরা হলেন- সহসভাপতি এস এম আমীর হোসেন (দৈনিক জনতা) ও মোহাম্মদ মোমেন হোসেন (সময় টিভি), যুগ্ম সম্পাদক মোঃ শামীম রহমান (দৈনিক তরুণ কণ্ঠ), অর্থ সম্পাদক সোহেল রহমান (দৈনিক দেশরূপান্তর), সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম বাবু (দৈনিক গণমুক্তি), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাশেদুল কবির খান অনু (সময়ের আলো), অফিস সম্পাদক মোঃ আব্দুল হক (দৈনিক ঘোষণা) এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ কবির হোসেন (দৈনিক সংবাদ), মোঃ কামাল উদ্দিন (বাসস) আব্দুল আলীম ভূইয়া শাহীন (রাইজিংবিডি.কম) ও কাজী গাউছুল হায়দার (দৈনিক সোনালী বার্তা)।
| web |
b5a51415889ec5131bf5d27475ed36d0b2c91c96 | লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে ইসলামী দলগুলোর হরতাল ডাকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৫০তম জন্মদিনে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তার অপরাধের জন্য সরকার তাকে মন্ত্রিসভা ও প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে সর্বোচ্ছ শাস্তি দিয়েছে। দল থেকে বহিষ্কারের জন্য শোকজও করা হয়েছে। তিনি এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাই তাকে গ্রেফতারের জন্য হরতাল দেয়ার কোন মানে হয় না।
| web |
d1d3b7421b0a47fec6ac645968e5d9d8eca3c254 | টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ হরিয়ানার কারনালে নতুন কৃষি আইনের পক্ষে সওয়াল করতে এক কৃষক মহা পঞ্চায়েত সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। এই সভার আহবান করেছিলেন খোদ হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। মুখ্যমন্ত্রীর এই সভায় আসার আগেই সভাস্থলে ভাঙচুর চালিয়ে সভা পন্ড করে দিলো আন্দোলনকারী কৃষকরা। হেলিকপ্টারে থেকে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। পুলিশের সমস্ত বাধা অতিক্রম করে আন্দোলনকারী কৃষকরা ভেঙে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রীর অবতরণের জন্য প্রস্তুত হেলিপ্যাডটিও।
রবিবার কৃষি আইন এর সমর্থনে আয়োজিত বিজেপির এই কৃষক মহা পঞ্চায়েত সভার দিকে সকাল থেকেই মিছিল করে আসতে শুরু প্রতিবাদী কৃষকরা। তাদের বাধা দেওয়ার জন্য রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় একের পর এক ট্রাক দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় রাস্তার ওপর। কিন্তু কোনোভাবেই আন্দোলনকারী কৃষকদের নিরস্ত করা যায় না। সব বাধা টপকে তারা এগোতে থাকেন সভাস্থলের দিকে। কৃষকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। যদিও পুলিশের এই বাধাতে হার মানেননি কৃষকরা। সভাস্থলের সাথেই হেলিপ্যাডও ভাঙচুর করেন তারা। কালো পতাকা হাতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন কয়েক হাজার কৃষক। এই পরিস্থিতিতে মহা পঞ্চায়েত সভা বাতিল করেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর।
| web |
561c6d0b72d7e268730a2d58ef15e3e294f1ea2e4ef1b725c0d343a6ca91c85c | অনুবাদ । প্রমাণাদি পদার্থ কর্তৃক বিভজ্যমান (পৃথক্ ক্রিয়মাণ ) অর্থাৎ প্রমাণাদি পূর্বোক্ত ষোড়শ পদার্থ যে বিদ্যাকে অন্য বিদ্যা হইতে পৃথক, করিয়াছে, সেই এই আন্বীক্ষিকী (ন্যায়বিদ্য।) বিদ্যার উদ্দেশে অর্থাৎ বিদ্বার পরিগণনাস্থলে সর্বববিদ্যার প্রদীপরূপে, সর্ববকর্ম্মের উপায়রূপে, সর্ববধর্ম্মের আশ্রয়রূপে প্রকীর্তিত হইয়াছে।
সেই এই তত্ত্বজ্ঞান এবং নিঃশ্রেয়সলাভ বিদ্যানুসারে বুঝিতে হইবে। এই অধ্যাত্মবিদ্যাতে কিন্তু আত্মাদিজ্ঞান অর্থাৎ আত্ম। প্রভৃতি প্রমেয় তত্ত্বজ্ঞান - তত্ত্বজ্ঞান, নিঃশ্রেয়সলাভ অপবর্গপ্রাপ্তি, অর্থাৎ অন্য বিদ্য। হইতে এই ন্যায়বিদ্যায় তত্ত্বজ্ঞান ও নিঃশ্রেয়সে বিশেষ আছে। ইতি ।
টিপ্পনী । উপসংহারে ভাষ্যকার ন্যায়বিদ্যার শ্রেষ্ঠতা বুঝাইবার জন্য বলিয়াছেন যে, এমন কোন পুরুষার্থ নাই, যাহাতে এই ন্যায়বিদ্য। আবশ্যক নহে। এই ন্যায়বিদ্য।-ব্যুৎপাদিত প্রমাণাদিকে অবলম্বন করিয়াই অন্যান্য বিদ্যা স্ব স্ব প্রতিপাদ্য তত্ত্বের প্রতিপাদন করিয়াছেন এবং ইহার সাহায্যেই সৰ্ব্ববিদ্যাগৰ্ভস্থ গূঢ় তত্ত্ব দর্শন করা যায় । তাই সর্ব্ববিদ্যার প্রকাশক বলিয়া ইহা সৰ্ব্ববিহার প্রদীপস্বরূপ। ইহা সর্ব্বকর্ম্মের উপায় ; কারণ, এই ন্যায়বিয়াপরিশোধিত প্রমাণাদির দ্বারাই সর্ব্ববিদ্যার প্রতিপাদ্য কৰ্ম্ম গুলি প্রকাশিত হইয়াছে। সাম-দানাদি, কৃষিবাণিজ্যাদি কৰ্ম্মে এই ন্যায়বিদ্যাই মূল । ইহা সর্ব্বধর্ম্মের আশ্রয় । তাৎপর্য্যটীকাকার বলিয়াছেন যে, পুরুষ- প্রবর্তনা অর্থাৎ লোককে কর্ম্মে প্রবৃত্ত করা সর্ব্ববিদ্যার ধর্ম্ম। সেগুলিও এই ন্যায়বিদ্যার অধীন। এই বিদ্যার সাহায্য লইয়াই অন্য বিদ্যা পুরুষ-প্রবর্তনা করেন। বিমৃশ্যকারী চিন্তাশীল পুরুষগণ এই ন্যায়বিদ্যার দ্বারা প্রকৃষ্টরূপে বুঝিয়াই ক্লেশসাধ্য কৰ্ম্মে 'প্রবৃত্ত হইয়া থাকেন। বস্তুতঃ ভাষ্যকার যেরূপ বলিয়াছেন, বিদ্যার পরিগণনাস্থলে ন্যায়বিদ্যা এইরূপেই কীৰ্ত্তিত হইয়াছে। ন্যায়বিদ্যা বেদের উপাঙ্গ বলিয়া পুরাণে কীৰ্ত্তিত। "মোক্ষধৰ্ম্মে" ভগবান্ বেদব্যাস বলিয়া গিয়াছেন যে, "গরীয়সী আন্বীক্ষিকীকে আশ্রয় করিয়া আমি উপনিষদের সারোদ্ধার করিতেছি"। ভাষ্যকারোক্ত শ্লোকটীর চতুর্থ পাদে "বিদ্যোদ্দেশে গরীয়সী" এবং "বিদ্যোদ্দেশে পরীক্ষিতা" এইরূপ পাঠভেদও দৃষ্ট হয়। মহামতি চাণক্য-প্রণীত "অর্থশাস্ত্র" গ্রন্থেও এই শ্লোকটী দেখা যায়; কিন্তু তাহাতে চতুর্থ পাদে "শল্বদান্বীক্ষিকী মতা" এইরূপ পাঠ আছে। চাণক্যই এই ন্যায়ভাষ্যের কর্ত্তা, বাৎস্যায়ন তাঁহারই নামান্তর - এই মত সমর্থনে চাণক্যপ্রণীত অর্থশাস্ত্র গ্রন্থের ঐ শ্লোকটীও উল্লিখিত হইয়া থাকে।
যদি সর্ব্ববিদ্যার উপযোগী "প্রমাণ" প্রভৃতি পদার্থগুলিই এই শাস্ত্রের ব্যুৎপাদ্য হইল, তাহা হইলে সূত্রোক্ত নিঃশ্রেয়স শব্দের দ্বারা মোক্ষকে এই শাস্ত্রের ফল বলিয়া বুঝা যায় না; কারণ, ব্যুৎপায় প্রমাণাদি পদার্থের স্বভাব পৰ্য্যালোচনা করিয়া বুঝা যায়, ইহাদিগের তত্ত্বজ্ঞানে ভিন্ন
ভিন্ন বিদ্যাসাধ্য সৰ্ব্ববিধ নিঃশ্রেয়সই লাভ করা যায়। হায়বিছাসাধ্য নিঃশ্রেয়সের অন্য বিদ্যাসাধ্য নিঃশ্রেয়স হইতে কোন বৈশিষ্ট্য থাকিতে পারে না, এই আশঙ্কা মনে করিয়া ভাষ্যকার বলিয়াছেন -"তদিদং তত্ত্বজ্ঞানং" ইত্যাদি! ভাষ্যকারের তাৎপর্য্য এই যে, সকল বিদ্যাতেই "তত্ত্বজ্ঞান" এবং "নিঃশ্রেয়স" আছে। অন্য বিদ্যা সাধ্য সেই সমস্ত নিঃশ্রেয়স হইতে ন্যায়বিহ্যার মুখ্য ফল নিঃশ্রেয়স যে বিভিন্ন হইবে, ইহা সেই সমস্ত বিদ্যা ও তাহার ফল তত্ত্বজ্ঞানের স্বভাব পর্যালোচনা করিলেই বুঝা যায়। মনূক্ত ভয়ী, বার্তা, দণ্ডনীতি এবং আন্বীক্ষিকী, 'এই চতুব্বিধ বিদ্যার মধ্যে বেদবিদ্যার নাম "ত্রয়ী," যাগাদিবিষয়ক যথার্থ জ্ঞানই তাহাতে তত্ত্বজ্ঞান, স্বর্ণপ্রাপ্তিই সেখানে নিঃশ্রেয়স। ক্বব্যাদি জীবিকা-শাস্ত্রের নাম বার্তা, ভূম্যাদিবিষয়ক যথার্থ জ্ঞানই তাহাতে তত্ত্বজ্ঞান, কৃষি-বাণিজ্যাদি লাভই সেখানে নিঃশ্রেয়স। দণ্ডনীতি শাস্ত্রে দেশ, কাল ও পাত্রানুসারে সাম, দান, ভেদ দণ্ডাদি প্রয়োগ জ্ঞানই তত্ত্বজ্ঞান, রাজ্যাদিলাভই সেখানে নিঃশ্রেয়স। এই সমস্ত বিদ্যার প্রতিপাদ্য বিষয়ের স্বভাব পর্যালোচনা করিলেই এই সমস্ত ভিন্ন ভিন্ন তত্ত্বজ্ঞান ও নিঃশ্রেয়স বুঝিতে পারা যায়। তাই বলিয়াছেন - "যথাবিদ্যং বেদিতব্যম্ ।" এবং যদিও প্রমাণাদি পদার্থগুলি সর্ব্ববিদ্যার উপযোগী বলিয়। সৰ্ব্ববিদ্যা সাধারণ, কিন্তু আত্মা প্রভৃতি"প্রমেয়"রূপ অসাধারণ পদার্থের উল্লেখ থাকায়, ন্যায়বিদ্যা উপনিষদের নৃায় কেবল অধ্যাত্মবিদ্যা না হইলেও অধ্যাত্মবিশ্বা। তাই বলিয়াছেন - "ইহ ত্বধ্যাত্মব্যিায়াং" ইত্যাদি। অর্থাৎ সৰ্ব্ববিদ্যাসাধারণ প্রমাণাদি পদার্থের ব্যুৎপাদক বলিয়', সৰ্ব্ববিদ্যাসাধ্য নিঃশ্রেয়স লাভের সহায় হইলেও এবং সংশয়াদি প্রস্থান ভেদবশতঃ উপনিষদের ন্যায় কেবল অধ্যাত্মবিদ্যা না হইলেও, আত্মতত্ত্বজ্ঞানের সাধন বলিয়া এবং আত্মনিরূপণরূপ মুখ্য উদ্দেশ্যে প্রবৃত্ত বলিয়া, এই ন্যায়বিদ্যা যখন অধ্যাত্মবিদ্যা, তখন ইহাতে আত্মাদি বিষয়ক তত্ত্বজ্ঞানই তত্ত্বজ্ঞান বুঝিতে হইবে এবং মোক্ষলাভই নিঃশ্রেয়স লাভ বুঝিতে হইবে।
এখানে স্মরণ করিতে হইবে, ভাষ্যকার হায়বিদ্যা কেবল অধ্যাত্মবিহা নহে, এ কথা পূর্ব্বে বলিয়া আসিয়াছেন এবং এখানেও প্রথমে ন্যায়ব্যিাকে সর্ব্ববিদ্যার প্রদীপ এবং সৰ্ব্বকর্ম্মের উপায় এবং সর্ব্বধর্ম্মের আশ্রয় বলিয়াছেন। সর্ব্বধর্ম্মের আশ্রর বলিতে আমরা সব্বধর্ম্মের রক্ষক বুঝি ; উদ্যোতকর ও বাচস্পতি অন্যরূপ বুঝিয়াছেন। সে যাহা হউক, ভাষ্যকারের ঐ কথার দ্বারা তিনি যে সৰ্ব্ববিধ নিঃশ্রেয়সই ন্যায়বিদ্যার প্রয়োজন বলিয়াছেন, ইহা বুঝা যায় । তাৎপর্য-টীকাকারও ভাষ্যকারের ঐ কথার অবতারণায় বলিয়াছেন যে, সূত্রকার মোক্ষকে ন্যায়বিদ্যার প্রয়োজন বলিয়াছেন, কিন্তু ভাষ্যকার বলিয়াছেন যে, এমন কোন প্রয়োজন নাই, বাহাতে ন্যায়বিদ্যা নিমিত্ত নহে - আবশ্যক নহে। সেখানে তাৎপর্য্যপরিশুদ্ধিতে উদয়ন বলিয়াছেন যে, ভাষ্যকারোক্ত অন্য প্রয়োজনগুলি সূত্রকারোক্ত প্রয়োজনের বিরোধী নহে, ● পরন্তু অনুকূল। ইহা দেখাইতেই বাচস্পতি সূত্রকারোক্ত প্রয়োজনের অনুবাদ করিয়াছেন । তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে যে, ভাষ্যকার অন্যান্য বিদ্যার ফল দৃষ্ট নিঃশ্রেয় । গুলিকে ও ন্যায়বিদ্যার ফল বলিয়াছেন এবং তাহা সত্য, এ কথা তাৎপর্যটীকাকারও স্বীকার করিয়াছেন। উদয়নও
এই বিষয়ের উপসংহারে বাচষ্পতির তাৎপৰ্যব্যাখ্যাষ মোক্ষকে প্রধান বলিয়া অন্য বিচার দৃষ্ট ফলগুলিকে ন্যায়বিদ্যার গৌণ ফল বলিয়াছেন। বস্তুতঃ ইহা কেহ না বলিয়া পারেন না। তবে অন্ত্য বিস্তাসাধ্য দুই নিঃশ্রেরণগুলিই কেবল ন্যায়বিচার ফল নহে, ন্যায়ব্যি। যখন অধ্যাত্মবিদ্য', তখন তাহার অপবর্গরূপ নিঃশ্রেয়স ফল রহিয়াছে এবং তাহাই প্রধান ফল ; সুতরাং ফলাংশেও অন্য বিদ্যা হইতে ন্যারবিহার ভেদ আছে। পরন্তু যে বিদ্যার যাহা মুখ্য প্রয়োজন, তাহাকেই সেই বিদ্যায় "নিঃশ্রেয়স" বলা হয় এবং তাহার সাক্ষাৎ সাধনকেই সেই বিদ্যায় "তত্ত্বজ্ঞান" বলা হয়। ন্যায়বিদ্য। অধ্যাত্মবিদ্যা বলিয়া তাহার মুখ্য প্রয়োজন অপবর্গ এবং তাহার সাক্ষাৎ সাধন আত্মাদি তত্ত্বজ্ঞান, সুতরাং ভাষ্যকার অপবর্গকে ন্যায়ণ্যিার "নিঃশ্রেয়স" বলিয়াছেন এবং আত্মাদি তত্ত্বজ্ঞানকে তত্ত্বজ্ঞান বলিয়াছেন, তাহাতে অন্যান্য নিঃশ্রেরস ন্যায়বিহার ফলই নহে, এ কথা বলা হয় নাই। অধ্যাত্ম অংশ লইয়া ন্যায়বিদ্বার যাহা মুখ্য ফল, সেই ফলাংশে অন্যান্য দৃষ্টফলক বিদ্য। হইতে ন্যায়বিদ্যার ভেদ দেখাইতেই ভাষ্যকার ঐ কথা বলিয়াছেন। উপনিষদের ন্যায় "ন্যায়বিদ্য।" যদি কেবল অধ্যাত্মবিদ্যা হইত এবং মোক্ষ ভিন্ন আর কোন ফণ তাহার না থাকিত, তাহা হইলে ভাষ্যকারের ঐ কথার কোন প্রয়োজনও ছিল না। অন্য বিহার ফল দৃষ্ট নিঃশ্রেয়স গুলি ন্যায়বিঘার ফল বলিয়াই সেই সকল বিদ্যার ফলের সহিত ন্যায়বিদ্যার ফলের সম্পূর্ণ অভেদের আপত্তি হয়। এজন্যই ভাষ্যকার বলিয়াছেন যে, ন্যায়বিদ্যা যখন অধ্যাত্মবিদ্য।, তখন অপবর্গরূপ মুখ্য ফল থাকার সে আপত্তি হইবে না; কারণ, সে ফলটীত আর দৃষ্টফলক অন্য বিদ্বায় নাই? তাহা হইলে দাড়াইল যে, "ন্যায়বিদ্য।" বেদের কর্ম্মকাণ্ড, বার্তা এবং দণ্ডনীতি-বিদ্যার ন্যায় কেবল দৃষ্টফলক বিদ্যাও নহে, আবার উপনিষদের ন্যায় কেবল অধ্যাত্মবিদ্যাও নহে; কিন্তু অধ্যাত্মবিদ্যা, অপবর্গই ইহার মুখ্য প্রয়োজন, অন্যান্য সমস্ত নিঃশ্রেয়স ইহার গৌণ প্রয়োজন ; কারণ, তাহা লাভ করিতেও এই ন্যায়বিদ্যা আবশ্যক। তাহা হইলে ন্যায়বিদ্যা অন্য সমস্ত বিদ্যা হইতে বিশিষ্ট, এই বিশিষ্ট বিশেষটী আর কোন বিদ্যাতেই নাই। মহর্ষি প্রথম সূত্রে "নিঃশ্রেয়স" শব্দের প্রয়োগ করিয়া ইহাই সূচনা করিয়াছেন বলিয়া আমাদিগের মনে হয়। গায়বিদ্যা মুখ্য ও গৌণ সৰ্ব্ববিধ নিঃশ্রেয়সই সম্পাদন করে - ইহা যখন সত্যকথা, সৰ্ব্বস্বীকৃত কথা, তখন মহর্ষি নিঃশ্রেয়স শব্দের দ্বারা তাহা না বলিবেন কেন? তাহা বলিলে এবং তাহা বুঝিলে অন্য কোন অনুপপত্তিও দেখা যায় না এবং ভাষ্যকারও যে সূত্রোক্ত নিঃশ্রেয়স শব্দের দ্বারা সর্ব্ববিধ নিঃশ্রেয়সই গ্রহণ করেন নাই, ইহাও বুঝা যায় না। পরন্তু তিনি যখন সৰ্ব্ববিধ নিঃশ্রেরসেই ন্যায়বিদ্যা আবশ্যক বলিয়াছেন, তখন সূত্রকারের কথার দ্বারাও তিনি ইহা সমর্থন করি.তন, ইহা বুঝা যায় - ইহা বলা যায় । তবে তিনি অনেক স্থলে যে 'অপবর্গ' অর্থে ই নিঃশ্রেয়স শব্দের প্রয়োগ করিয়াছেন, তাহা সূত্রোক্ত নিঃশ্রেয়স শব্দের প্রতিপাদ মুখ্য নিঃশ্রেয়স অপবর্গের কথা বলিবার জ্য, তাহাতে সূত্রোক্ত নিঃশ্রেয়স শব্দের দ্বারা তিনি কেবল অপবর্গই বুঝিয়াছেন, ইহা প্রতিপন্ন হয় না। তাৎপর্য্যটীকাকার
· মৃত ]
সূত্রোক্ত নিঃশ্রেয়স শব্দের দ্বারা কেবল অপবর্গের ব্যাখ্যা করিলেও এবং উদয়ন প্রভৃতি তাহার সমর্থন করিলেও ভাষ্যকার যে সর্ব্ববিধ নিঃশ্রেয়সেই ন্যায়বিদ্যা আবশ্যক বলিয়াছেন এবং অন্যায় বিহার নিঃশ্রেরস গুলি ও ন্যায়বিদ্যার ফল বলিয়াছেন এবং তাহা সত্যই বলিয়াছেন - এ কথা ত তাৎপর্যাটীকাকার প্রভৃতিও বর্নিয়াছেন; তবে আর তাঁহাদিগের সূত্রোক্ত নিঃশ্রেয়সের ব্যাখ্যায় অন্যান্য সকল নিঃশ্রেয়সকে পরিত্যাগ করিয়া কেবল অদৃষ্ট-নিঃশ্রেয়স অপবর্গের প্রতি এত পক্ষপাত কেন? সুধীগণ উপেক্ষা না করিয়া ইহার মীমাংসা করিবেন এবং মহর্ষি অনূত্র অপবর্গ শব্দের প্রয়োগ করিয়াও কেবল প্রথম সূত্রে নিঃশ্রেয়স শব্দেরই প্রয়োগ করিয়াছেন কেন, ইহাও চিন্ত। করিবেন । মোক্ষ শব্দের বা অপবর্গ শব্দের প্রয়োগ করিলেও জীবন্মুক্তি ও পরা মুক্তি তাহার দ্বারা বুঝা যাইত। কেবল জীবন্মুক্তিও যদি 'প্রথম সূত্রে মহর্ষির বক্তব্য হয়, তাহা হইলেও নিঃশ্রেয়স শব্দ প্রয়োগ সার্থক হয় না; কারণ, উহার দ্বারা পরা মুক্তিও বুঝা যায়। তাৎপর্য্য-কল্পনার দ্বারা জীবন্মুক্তিমাত্রই যদি বুঝিতে হয়, তবে তাহা মোক্ষ প্রভৃতি শব্দের দ্বারাও বুঝা যাইতে পারে। কণাদসূত্রেও প্রথমে নিঃশ্রেয়স শব্দই দেখা যায় । • টীকাকারগণ তাহার মোক্ষমাত্র অর্থের ব্যাখ্যা করিলেও সূত্রকার স্বল্পাক্ষর মোক্ষ প্রভৃতি কোন শব্দের প্রয়োগ করেন নাই ; কেন, তাহা ভাবা উচিত। স্বল্পাক্ষর শব্দ প্রয়োগই সূত্রে করিতে হয়, ইহা সূত্রের লক্ষণে পাওয়ায়' সুধীগণ এ সকল কথাও চিন্তা করিয়া মহর্নির তাৎপর্য্য নির্ণয় করিবেন। এখন একবার স্মরণ করিতে হইবে, ভাষ্যকার ভাষ্যারম্ভ হইতে এ পর্যন্ত কোন কোন বিষয়ের বর্ণন করিয়াছেন।
ভাষ্যকার প্রথমেই সামান্যতঃ প্রমাণের প্রামাণ্য-নিশ্চয়ের অনুমান দেখাইয়াছেন। তাহার পরে প্রমাতা, প্রমাণ, প্রমেয় এবং প্রমিতি- এই চারিটীর স্বরূপ বলিয়া ঐ চারিটী থাকাতেই তত্ত্বপরিসমাপ্তি হইতেছে, এই কথা বলিয়াছেন। শেষে ঐ তত্ত্ব কি, এইরূপ প্রশ্ন করিয়া ভাব ও অভাবরূপ দুইটী তত্ত্বের পরিচয় দিয়াছেন এবং অভাবরূপ তত্ত্বও যে প্রমাণের দ্বারা প্রকাশিত হয়, ইহা বলিয়াছেন। শেষে মহর্ষি ভাব পদার্থের ষোলটী প্রকার সংক্ষেপে বলিয়াছেন, এই কথা বলিয়া মহর্ষির কথিত সেই ষোড়শ পদার্থ প্রদর্শনের জন্য মহর্ষির প্রথম সূত্রের অবতারণা করিয়া তাহার সমাস ও বিগ্রহবাক্য এবং ষষ্ঠী বিভক্তি সম্বন্ধে বক্তব্য প্রকাশপূৰ্ব্বক সংক্ষেপে সূত্রের বক্তব্য ও প্রয়োজন বলিয়াছেন।
শেষে আত্মা প্রভৃতি প্রমেয় পদার্থের তত্ত্বজ্ঞানই মোক্ষের সাক্ষাৎ সাধন, ইহা বলিয়া, তাহা কিরূপে বুঝা যায়, ইহা বলিবার জন্য দ্বিতীয় সূত্রের কথা বলিয়াছেন এবং তাহা বলিবার জন্যই হেয়, হান, উপায় ও অধিগন্তবা - এই চারিটীকে 'অৰ্থপদ' বলিয়া তাহাদিগের সম্যক্ জ্ঞানে নিঃশ্রেয়সলাভ হয়, এ কথা বলিয়াছেন ।
তাহার পরে সূত্রে সংশয় প্রভৃতি চতুর্দ্দশ পদার্থের বিশেষ করিয়া উল্লেখ কেন হইয়াছে,
১। স্বল্পাক্ষরমসন্দিগ্ধং সারবদ্বিশ্বতোমুখম্ ।
অস্ত্বেভিমনবদ্যঞ্চ সূত্রং সূত্রবিদ। বিদুঃ॥ - পরাশবোপপুরাণ, ১৮ অঃ ।
এই বিষয়ে পূর্ব্বপক্ষ প্রদর্শনপূর্ব্বক সংশয় প্রভৃতি পদার্থ ন্যায়বিহার পৃথক্ 'প্রস্থান' অর্থাৎ অসাধারণ প্রতিপাদ্য উদ্ভাদিগের ব্যুৎপাদন বা বিশেষরূপে বোধ সম্পাদন করাই নায়বিঘার অসাধারণ ব্যাপার, তাহা না করিলে হ্যায়বিহ্য। উপনিষদের ন্যায় কেবল অধ্যাত্মবিদ্যা হইয়া পড়ে ; সুতরাং সংশয়াদি পদার্থগুলির বিশেষ উল্লেখ হইয়াছে ইত্যাদি কথার দ্বারা সামান্যতঃ পূর্ব্বপক্ষের উত্তর প্রকাশ করিয়াছেন। তাহাব পরে বিশেষ করিয়া সংশয় হ্যায়বিদ্যার অসাধারণ প্রতিপাদ্য কেন, এ বিনরে কারণ প্রদর্শনপূর্ব্বক সংশয়ের পৃথক্ উল্লেখের কারণ সমর্থন করিয়াছেন। তাহার পরে প্রয়োজন পদার্থের স্বরূপ বর্ণন করিয়া তাহারও পৃথক্ উল্লেখের কাবণ সমর্থন করিয়াছেন। তাহাতে 'ন্যায়' কি, এই প্রশ্ন উঠিয়াছে, তাহাতে হায়ের স্বরূপ বলিয়াছেন, ন্যায়কেই অন্বীক্ষা বলে, এই কথা বলিয়া ন্যায়বিহাকেই আন্বীক্ষিকী বলে, ইহ! বুঝাইয়াছেন। ন্যায়ের কথায় হ্যারাভসি কাহাকে বলে, তাহা বলিয়াছেন । তাহার পরে বিতণ্ডার প্রয়োজন পরীক্ষা করিয়া বিতণ্ডা নিষ্প্রয়োজন নহে এবং স্বপক্ষসিদ্ধিই বিতণ্ডাব প্রয়োজন, এই কথ' বুঝাইয়াছেন, নিষ্প্রয়োজন-বিতণ্ডাবাদী ও শূন্যবাদীর মত খণ্ডন করিয়া বিতণ্ডার সপ্রয়োজনত্ব-পক্ষ সমর্থন করিয়াছেন। তাগর পরে যথাক্রমে দৃষ্টান্ত, সিদ্ধান্ত, অবয়ব, তর্ক, নির্ণয়, বাদ, জল্প এবং বিতণ্ডার সংক্ষেপে স্বরূপ বর্ণন করিয়া তাহাদিগের পৃথক্ উল্লেখের কারণ সমর্থন করিয়াছেন। তাহার পরে নিগ্রহস্থানের মধ্যে হেত্বাভাসের উল্লেখ থাকিলেও আবার পৃথক্ করিয়া হেত্বাভাসের উল্লেখের দ্বারা মহর্ষি কি সূচনা করিয়াছেন, তাহা বলিয়াছেন। তাহার পরে ছল, জাতি ও নিগ্রহস্থানের পৃথক্ উল্লেখের কারণ বলিয়া শেষে আন্বীক্ষিকী বিহার প্রয়োজন বর্ণন করিয়াছেন এবং যদিও সৰ্ব্ববিধ নিঃশ্রেয়সই আরীক্ষিকী বিদ্যার প্রয়োজন, - আত্মীক্ষিকীব সাগন্য ব্যতীত অন্যান্য বিদ্যাসাধ্য নিঃশ্রেয়স লাভ করা যায় না, তথাপি আত্মীক্ষিকী - অধ্যাত্মবিহা বলিয়া ইহার মুখ্য প্রয়োজন অপবর্গ এবং আত্মাদি তত্ত্বজ্ঞানই ইহাতে তত্ত্বজ্ঞান। ঐ তত্ত্বজ্ঞান এবং ঐ অপবর্গরূপ নিঃশ্রেরস ইহাব মুখ্য ফল বলিয়া ফলাংশেও অন্য বিদ্যা হইতে এই হ্যামবিদ্যা বিশিষ্ট এবং অন্যান্য বিদ্যা-সাধ্য দৃষ্ট নিঃশ্রেয়সও এই হ্যায়বিচাব গৌণ ফল বলিয়া ইহা কেবল অধ্যাত্মবিদ্যা হইতেও বিশিষ্ট। ভাষ্যকার এই পর্যন্ত বলিয়া প্রথম সূত্র-ভাষ্যের সমাপ্তি করিয়াছেন। ভাষ্যের শেষে সমাপ্তিসূচক 'ইতি' শব্দ কোন পুস্তকে দেখা না গেলেও ভাষ্যকার নিশ্চয়ই ইতি শব্দের প্রয়োগ করিয়াছেন, ইহা মনে হয়। তিনি বাক্যসমাপ্তি হৃচনার জন্যও প্রায় সর্ব্বত্র 'ইতি' শব্দের প্রয়োগ করিয়া গিয়াছেন। উদ্যোতকর প্রথম সূত্রভান্য-বার্ত্তিকের শেষে ইতি শব্দের প্রয়োগ করিয়াছেন; সেখানে তাৎপর্য্যটীকাকার লিখিয়াছেন - "ইতি স্বত্রসমাপ্তৌ।" এখানে উদ্যোতকরের পাঠানুসারে ভাষ্যকারের পাঠ স্থির করিয়া প্রচলিত কোন কোন পাঠ পরিত্যক্ত হইয়াছে । উদ্যোতকর অনেক স্থলে ভাষ্যকারের পাঠও উদ্ধৃত করিয়াছেন ; সুতরাং স্থলবিশেষে উদ্যোতকরের পাঠকেও প্রকৃত ভাষ্যপাঠ বলিয়া ধরিয়া লওয়া যায়, - ঐরূপ প্রচীন সংবাদ বাতীত ভাষোব প্রকৃত পাঠ নির্ণয়ের উপায়ই ব! কি আছে ?
1 No ]
মহর্ষি গোতমের প্রথম সূত্ৰাৰ্থ না বুঝিয়। প্রাচীন কালে কোন বিরোধী সম্প্রদায় প্রতিবাদ করিয়াছিলেন যে, গৌতমোক্ত "বাদ" হইতে "নিগ্রহস্থান" পর্য্যন্ত পদার্থগুলির জ্ঞান মোক্ষের কারণ হইতেই পারে না। যাহা পর-পরাভবের উপায়, যাহাতে অপরকে পরাভূত করিবার ক্ষমতা জন্মে, তাহা অহঙ্কারাদির কারণ হইয়া মোক্ষের প্রতিবন্ধকই হয়। যাহা মোক্ষের প্রতিবন্ধক, তাহাকে কি মোক্ষের কারণ বলা যায় ? সুতরাং গোতমের প্রথম সূত্রে যখন "বাদ," "জল্প," "বিতণ্ডা" প্রভৃতির তত্ত্বজ্ঞানকে মোক্ষের কারণরূপে বলা হইয়াছে, তখন ঐ সূত্রাৰ্থ নিতান্ত যুক্তিবিরুদ্ধ, সুতরাং অগ্রাহ্য । এইরূপ মত প্রকাশ এখনও অনেকে করিয়া থাকেন, কিন্তু ইহা পুরাতন কথা। উদ্যোতকর মহর্ষি গৌতমের প্রথম সূত্র ব্যাখ্যার উপসংহারে পূর্ব্বোক্ত প্রতিবাদী সম্প্রদায়ের এই পূর্ব্বপক্ষের অবতারণা করিয়া বলিয়াছেন যে, সূত্রাৰ্থ না বুঝিয়াই ঐরূপ প্রতিবাদ করা হইয়াছে। মহর্নির দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা এবং যুক্তির দ্বারা আত্মাদি "প্রমেয়" তত্ত্ব সাক্ষাৎকারই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, ইহাই সূত্রাৰ্থ বুঝিতে হইবে এবং প্রমাণাদি পঞ্চদশ পদার্থের তত্ত্বজ্ঞান পরম্পরায় তাহাতে আবশ্যক, ইহাই সূত্ৰার্থ বুঝিতে হইবে। তাৎপৰ্য্যটীকাকার বলিয়াছেন যে, "জল্প," "বিতণ্ডা" প্রভৃতির জ্ঞানে মুমুক্ষুর অহঙ্কার জন্মে না। কিন্তু উহার দ্বারা মোক্ষ-সাধনের প্রতিবন্ধক অন্য ব্যক্তির অহঙ্কার নিবৃত্তি করা যায়, তজ্জন্য অনেক অবস্থায় মুমুক্ষুর উহা আবশ্যক হয়, সুতরাং উহা মোক্ষের পরিপন্থী নহে, পরন্তু উহা মোক্ষের অনুকূল।
উদ্যোতকর শেষে বলিয়াছেন যে, প্রতিবাদী "বাদ," "জল্প," "বিতণ্ডা" প্রভৃতির জ্ঞানকে যে অহঙ্কারাদির কারণ বলিয়াছেন, তাহাও ঠিক বলা হয় নাই। কারণ, যাহাদিগের ঐ সকল পদার্থের কোনই জ্ঞান নাই, তাহাদিগেরও অহঙ্কারাদির উদ্ভব দেখা যায়, আবার তত্ত্বজ্ঞানী প্রকৃত পণ্ডিতের ঐ সকল জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও অহঙ্কারাদির উদ্ভব দেখা যায় না, তবে আর ঐ সকল জ্ঞানকে অহঙ্কারাদির কারণ বলা যায় কিরূপে ?
বস্তুতঃ চিত্তশুদ্ধির উপায়ের অনুষ্ঠান থাকিলে বিদ্যা বা তর্ক-কুশলতা প্রভৃতির ফলে কাহারও অহঙ্কারাদি বাড়ে না, উহার ফলে যাহার অহঙ্কারাদি বাড়ে, বিবাদপ্রিয়তা জন্মে, জিগীষার যন্ত্রণা উপস্থিত হয়, সে ত মুমুক্ষুই নহে, প্রকৃত মুমুক্ষু ব্যক্তির উহা দ্বারা কোন অনিষ্ট হয় না, পরন্তু ইষ্টই হয় । আমরা কি কোন তর্ক-কুশল ব্যক্তিকেই ধীর, স্থির, শান্ত দেখিতে পাই না ? তর্ককুশল হইলেই কি তাহার আর কোন উপায়েই চিত্তশুদ্ধি হইতে পারে না? অস্বীকার করিলে সত্যের অপলাপ করা হইবে। বস্তুতঃ বিদ্যা সকল ক্ষেত্রেই অহঙ্কারের বীজ বপন করেন না, সকলকে লক্ষ্য করিয়াই "বিদ্যা বিবাদায়" বলা হয় নাই, তাহা হইলে মহাজনগণ, মুমুক্ষুগণ, ভক্তগণ কোন দিনই বিদ্যার আলোচনা করিতেন না। ভক্তের গ্রন্থ চৈতন্য চরিতামৃতেও আমরা উত্তমাধিকারীর মধ্যে "শাস্ত্রযুক্তিশুনিপুণ"১ ব্যক্তিকে দেখিতে পাই । ফল কথা, শাস্ত্রযুক্তিনিপুণতা প্রকৃত অধিকারীর কোন অনিষ্ট ত করেই না, পরন্তু তাহার অধিকারের পূর্ণতা সম্পাদন করিয়া ১। শাস্ত্রযুক্তিসুনিপুণ দৃঢ় শ্রদ্ধা ষীর ।
উত্তম অধিকারী তিহেঁ। তারয়ে সংসার! - চৈ চঃ, মধ্যলীলা, ২২পঃ । মহাপ্রভুর নিজের উক্তি।
তাহাকে সৰ্ব্বদ। সৰ্ব্বতোভাবে রক্ষা করে, তাহার লক্ষ্যের দিকে সর্ব্বদ। লক্ষ্য রাখে, তাহার শ্রদ্ধাকে সর্ব্বদা দৃঢ় করিয়া রাখে, সুতরাং প্রমাণাদি পদার্থের তত্ত্বজ্ঞান নানা ভাবেই মোক্ষের সহায় হয় । তন্মধ্যে আত্মাদি পদার্থের তত্ত্বসাক্ষাৎকাররূপ তত্ত্বজ্ঞান মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ এবং আত্মাদি পদার্থের শ্রবণমননাদিরূপ পরোক্ষ তত্ত্বজ্ঞান তাহাতে পূর্ব্বে আবশ্যক, তাহাতে আবার প্রমাণাদি পদার্থের তত্ত্বজ্ঞান আবশ্যক, এই ভাবে প্রমাণাদি ষোড়শ পদার্থের তত্ত্বজ্ঞানকে মহর্ষি এক সঙ্গে নিঃশ্রেয়সের উপায় বলিয়াছেন। উহার দ্বারা প্রমাণাদি সমস্ত পদার্থের যে কোনরূপ তত্ত্বজ্ঞানই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, ইহা সূত্ৰার্থ বুঝিতে হইবে না। যাহা পরম্পরায় নিঃশ্রেয়সের সাধন, তাহাও ঋষিগণ নিঃশ্রেয়সকর বলিয়া উল্লেখ করিতেন। গীতায় আছে,
"সন্ন্যাসঃ কৰ্ম্মযোগশ্চ নিঃশ্রেয়সকরাবুভৌ" ॥ ৫া২।
এখানে "সন্ন্যাস" ও "কৰ্ম্মযোগ" কি সাক্ষাৎ সম্বন্ধেই মোক্ষসাধন বলা হইয়াছে ? তাহা কি হইতে পারে ? সন্ন্যাস ও কর্ম্মযোগ মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ তত্ত্বজ্ঞানের সম্পাদন করে বলিয়াই তাহাকে নিঃশ্রেয়সকর বলা হইয়াছে। ঐরূপ অতি পরম্পরায়ও যাহা মোক্ষে সহায়তা করে, এমন অনেক কর্ম্মের উল্লেখ করিয়া "ইহা করিলে আর ভবদর্শন হয় না, ইহা করিলে আর জননী-জঠরে আসিতে হয় না," এইরূপ কথা বলিতে ব্রহ্মবাদী বাদরায়ণও বিরত হন নাই। ফলকথা, প্রথম সূত্রে "বাদ," "জল্প" প্রভৃতির তত্ত্বজ্ঞানকে সাক্ষাৎ মোক্ষসাধন বলা হয় নাই। ষোড়শ পদার্থের তত্ত্বজ্ঞান কি ভাবে কেন মোক্ষসাধন, তাহা ক্রমে ব্যক্ত হইবে। ধৈর্য্য ধরিয়া দ্বিতীয় সূত্রে কিছু দেখুন। ১ ॥
ভাষ্য । তচ্চ খলু বৈ নিঃশ্রেয়সং কিং তত্ত্বজ্ঞানানন্তরমেব ভবতি? নেত্যুচ্যতে, কিং তহি ? তত্ত্বজ্ঞানাৎ ।
অনুবাদ । (পূৰ্ব্বপক্ষ ) সেই নিঃশ্রেয়স অর্থাৎ পূর্বোক্ত ন্যায়বিদ্যার মুখ্য ফল অপবর্গ কি তত্ত্বজ্ঞানের পরেই হয় ? (উত্তর) ইহা বলা হয় নাই, অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞানের পরেই মুখ্য ফল নিৰ্ব্বাণ লাভ হয়, ইহা মহর্ষি গোতম বলেন নাই। ( প্রশ্ন ) তবে কি ? (উত্তর) তত্ত্বজ্ঞান হইতে অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞানপ্রযুক্ত (দ্বিতীয় সূত্রোক্তক্রমে নিৰ্ব্বাণ লাভ হয় )।
টিপ্পনী । মহর্ষি প্রথম সূত্রের দ্বারা তাঁহার ন্যায়শাস্ত্রের প্রতিপাদ্য, প্রয়োজন এবং তাহাদিগের পরস্পর সম্বন্ধের সূচনা করতঃ প্রমাণাদি পদার্থের নাম কীর্ত্তন করিয়াছেন, ইহারই নাম "উদ্দেশ"। ঐ পদার্থগুলির "লক্ষণ" বলিয়া শেষে "পরীক্ষা" করিবেন। কারণ, পদার্থের পরীক্ষা ব্যতীত তত্ত্বনির্ণয় সম্ভব নহে । কিন্তু পদার্থের "প্রয়োজন" ও সম্বন্ধের নির্ণয় না হইলেও তাহার লক্ষণ ও পরীক্ষার অবসর উপস্থিত হয় না। "পরীক্ষা" ব্যতীত আবার ঐ প্রয়োজন ও সম্বন্ধের নির্ণয় হইতে পারে না, এ জন্য মহর্ষি দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা ঐ প্রয়োজন ও সম্বন্ধের পরীক্ষা করিয়াছেন। দ্বিতীয় স্থূত্রটি সিদ্ধান্ত-স্থূত্র। পূৰ্ব্বপক্ষ ব্যতীত সিদ্ধান্ত কখন সম্ভব হয় না, এ জন্য ভাষ্যকার একটি পূর্ব্বপক্ষের অবতারণা করিয়াই দ্বিতীয় সূত্রের অবতারণা করিয়াছেন ।
১ ঘৃত ]
পূর্ব্বপক্ষের গূঢ় তাৎপর্য্য এই যে, প্রথম সূত্রে তত্ত্বজ্ঞানবিশেষকে নিঃশ্রেয়সলাভের উপায় বলা হইয়াছে । তন্মধ্যে নির্ব্বাণরূপ অপবর্গই মুখ্য নিঃশ্রেয়স। তাহা তাহার কারণ তত্ত্বজ্ঞানবিশেষের পরেই জন্মিবে। ইহা অস্বীকার করিলে মহর্ষির প্রথম সূত্রের ঐ কথা মিথ্যা হইয়া যায়। মহর্ষি প্রথম সূত্রে যে তত্ত্বজ্ঞানবিশেষকে মুখ্য নিঃশ্রেয়স অপবর্গের সাক্ষাৎ কারণরূপে সূচনা করিয়াছেন, সেই তত্ত্বজ্ঞানবিশেষের পরেই যদি তাহার কার্য্য অপবর্গ না হয়, তাহা হইলে মহর্ষি তাহাকে সাক্ষাৎ কারণ বলিতে পারেন না, সাক্ষাৎ করিণের পরেই তাহার কার্য হইয়া থাকে । মহর্ষি প্রথম সূত্রে অবশ্য কোন তত্ত্বজ্ঞানবিশেষকে অপবর্গের সাক্ষাৎ কারণ অর্থাৎ চরম কারণ বলিয়া সূচনা করিয়াছেন, ঐ চরম কারণ তত্ত্বজ্ঞানবিশেষ জন্মিলে অপবর্গ লাভে আর বিলম্ব হইবে কেন ? যদি তাহাই হইল, যদি তত্ত্বদর্শনের পরক্ষণেই নির্ব্বাণ লাভ হইয়া গেল, তাহা হইলে তত্ত্বদর্শীর নিকটে তাঁহার দৃষ্ট তত্ত্ববিষয়ে কোন উপদেশ পাওয়া সম্ভব হইল না, তিনি তত্ত্ব দর্শনের পরক্ষণেই নির্ব্বাণ লাভ করায়, আর কাহাকেও কিছুই বলিয়া যাইতে পারিলেন না। সুতরাং শাস্ত্র-বাক্যগুলি তত্ত্বদর্শীর বাক্য হওয়া অসম্ভব। তত্ত্বদর্শী ব্যতীত আর সকলেই ভ্রান্ত, আর কাহারও উপদেশ শাস্ত্র বলিয়া মান। যায় না, সুতরাং শাস্ত্র নামে প্রচলিত বাক্যগুলি ভ্রান্তের বাক্য বলিয়া বস্তুতঃ শাস্ত্ৰ নহে, তাহা হইতে তত্ত্বজ্ঞানের আশা করা অসম্ভব। যিনি তত্ত্বদর্শী, অথচ জীবিত থাকিয়া তত্ত্বের উপদেশ করিবেন, এমন ব্যক্তি কোথায় মিলিবে ? তত্ত্বদর্শনের পরক্ষণেই যে নিৰ্ব্বাণলাভ হইয়া যায় ।
দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা এই পূর্ব্বপক্ষের উত্তর ঘূচিত হইয়াছে। তাই ভাষ্যকার "তত্ত্বজ্ঞানাং" এই কথার যোগ করিয়া, দ্বিতীয় সূত্রের অবতারণার দ্বারা তাঁহার উত্থাপিত পূর্ব্বপক্ষের উত্তর জান।ইয়াছেন। ভাষ্যকারের শেষোক্ত ঐ কথার সহিত দ্বিতীয় সূত্রের যোজনা বুঝিতে হইবে।
উত্তরপক্ষের গূঢ় তাৎপর্য্য এই যে, মুক্তি দ্বিবিধ, --পরা ও অপরা; নির্ব্বাণ মুক্তিকেই পরা মুক্তি বলে । তাহা তত্ত্বসাক্ষাৎকারের পরেই হয় না, তাহা যে ক্রমে হয়, মহর্ষি দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা সেই ক্রম বলিয়াছেন । অপরা মুক্তি তত্ত্বসাক্ষাৎকারের পরেই জন্মে, তাহাকেই বলে "জীবন্মুক্তি"। তত্বসাক্ষাৎকারের মহিমায় মুমুক্ষুর পূর্ব্বসঞ্চিত ধর্ম্ম ও অধর্ম্ম সমস্তই নষ্ট হইয়া যায়, কিন্তু "প্রারব্ধ" ধর্ম্ম ও অধর্ম্ম থাকে, ভোগ ব্যতীত তাহার ক্ষয় নাই। সুতরাং জীবন্মুক্ত ব্যক্তি প্রারব্ধ ভোগের জন্য যত দিন দেহ ভোগ করেন, তত দিন তাঁহার নির্ব্বাণ হয় না । শ্রুতি বলিয়াছেন, - "তাবদেবাস্থ্য চিরং যাবন্ন বিমোক্ষ্যে অথ সম্প্যে"। মুমুক্ষু আত্মাদি বিষয়ে মিথ্যা জ্ঞান বিনষ্ট করিবার জন্য প্রথমতঃ বেদাদি শাস্ত্র হইতে আত্মাদির প্রকৃত স্বরূপের শাব্দ বোধ করেন, ইহারই নাম শ্রবণ । তাহার পরে যুক্তির দ্বারা সেই শ্রুত তত্ত্বের পরীক্ষা করেন, ইহারই নাম মনন ; ইহা এই ন্যায়বিদ্যার অধীন, এই ন্যায়বিদ্যা "প্রমাণের" তত্ত্বজ্ঞান সম্পাদনের জন্য "সংশয়" প্রভৃতি পদার্থের তত্ত্ব জ্ঞাপন করিয়াছে। গ্রাহ্য ও ত্যাজ্য-ভেদে ব্যবস্থিত "প্রমের" পদার্থগুলির তত্ত্বজ্ঞাপনের জন্যই আবার প্রমাণের তত্ত্ব জ্ঞাপন করিয়াছে। প্রমাণের দ্বারা বিচার করিলে বুঝা যাইবে - আত্মা প্রভৃতি অপবর্গ পর্যন্ত দ্বাদশবিধ প্রমেয়ের মধ্যে "আত্মা" ও
[ ১ অ, আ ১ আ
"অপবর্গই" গ্রাহ্য, আর দশটি ত্যাজ্য, ঐ দশটি দুঃখের হেতু এবং দুঃখ, এ জন্য "হেয়"। ন্যায়বিদ্যার সাহায্যে মননের দ্বারা আত্মাদি "প্রমেয়ের" তত্ত্বাবধারণ হইলেও মিথ্যা জ্ঞানজন্য সংস্কার থাকায়, আবারও পূর্বের ন্যায় ভ্রম সাক্ষাৎকার করে। দিমূঢ় ব্যক্তির সহস্র অনুমানের দ্বারাও পূর্ব্বসংস্কার যায় না। তত্ত্বসাক্ষাৎকার হইলেই মিথ্যা সাক্ষাৎকার বা বিপরীত সাক্ষাৎকার নিবৃত্ত হইতে পারে এবং তত্ত্বসাক্ষাৎকারজন্য সংস্কারই বিপরীত সংস্কারকে দূর করিতে পারে, ইহা লোকসিদ্ধ, অর্থাৎ লৌকিক ভ্রম স্থলেও এইরূপ দেখা যায়। যে রজ্জুকে সর্প বলিয়া ভ্ৰম প্ৰত্যক্ষ করিয়াছে, তাহার রজ্জুর স্বরূপ প্রত্যক্ষ না হওয়া পর্য্যন্ত ঐ ভ্রম একেবারে যায় না, অন্য কোন আপ্ত ব্যক্তি "ইহা সৰ্প নহে" বলিয়া দিলেও এবং উপযুক্ত হেতুর সাহায্যে "ইহা সৰ্প নহে" এরূপ অনুমান হইলেও, আবার অনেক পরে নিকটে গেলে সেই সৰ্পবুদ্ধি তখনই উপস্থিত হয় ; কিন্তু রজ্জর স্বরূপ প্রত্যক্ষ হইয়া গেলে আর সে ভ্রম হয় না। সেইরূপ আত্মাদি বিষয়ে জীবের ভ্রমজ্ঞান প্রত্যক্ষাত্মক, বৈদান্তিক সম্প্রদায়বিশেষের সম্মত কোন মহাবাক্যজন্য পরোক্ষ তত্ত্বজ্ঞানে উহা যাইতে পারে না, উহা নাশ করিতে হইলে ঐ আত্মাদি পদার্থের তত্ত্বসাক্ষাৎকার করিতে হইবে, সুতরাং তাহার জন্য মননের পরে ঐ আত্মা প্রভৃতির শ্রুতিযুক্তিসিদ্ধ স্বরূপের ধ্যানধারণাদি করিতে হইবে, তাহাতে যোগশাস্ত্রোক্ত উপায় আশ্রয় করিতে হইবে, তাহাতে ঈশ্বরপ্রণিধানও আবশ্যক হইবে। ঐ ধ্যান-ধারণাদি জন্য যে যথার্থ দৃঢ় জ্ঞান জন্মিবে, তাহাই পরে কালবিশেষে আত্মাদির তত্সাক্ষাৎকার জন্মাইবে, উহাই আত্মাদি বিষয়ে চতুর্থ বিশেষ জ্ঞান। উহা হইলে আর তখন মিথ্যা জ্ঞানজন্য সংস্কারের লেশ মাত্র থাকিবে না। ঐ তত্ত্বসাক্ষাৎকার জন্মিয়া গেলে আর তাঁহাকে বদ্ধ বলা যায় না, তিনি তখন মুক্ত, তবে সহসা তিনি তখন দেহাদিবিযুক্ত হন না, প্রারব্ধ কর্ম্মফল ভোগের জন্য তিনি জীবিত থাকেন । সেই তত্ত্বদর্শী জীবন্মুক্ত ব্যক্তিরাই শাস্ত্রবক্তা, তাঁহাদিগের উপদেশই শাস্ত্র। তাঁহাদিগের উপদেশেই শাস্ত্র-সম্প্রদায় রক্ষা ও লোকশিক্ষা অব্যাহত আছে। ফলতঃ নিৰ্ব্বাণ মুক্তি তত্ত্বজ্ঞানের পরেই হয় না, জীবন্মুক্তি তত্বজ্ঞানের পরেই হইয়া থাকে, সুতরাং কোন দিকেই বিরোধ নাই এবং তত্ত্বদর্শী মুক্ত ব্যক্তির নিকটে তত্ত্বের উপদেশ পাওয়াও অসম্ভব হইল না। শাস্ত্র এবং এই সকল যুক্তির দ্বারাই মুক্তির পূৰ্ব্বোক্ত দ্বৈবিধ্য বুঝ। গিয়াছে। মহর্ষি দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা পরা মুক্তির ক্রম বলিয়াছেন, তাহাতে এবং প্রথম সূত্রের কথাতে অপরা মুক্তির কথাও পাওয়া গিয়াছে এবং আত্মা প্রভৃতি প্রমেয় পদার্থের তত্ত্বসাক্ষাৎকারই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, ইহাও দ্বিতীয় সূত্রে ব্যক্ত করা হইয়াছে।
সূত্র। দুঃখ-জন্ম -প্রবৃত্তিদোষ - মিথ্যাজ্ঞানানামুত্তরোত্তরাপায়ে তদনন্তরাপায়াদপবর্গঃ ॥ ২॥
অনুবাদ । দুঃখ, জন্ম, প্রবৃত্তি ( ধর্ম্ম ও অধর্ম্ম ), দোষ ( রাগ ও দ্বেষ ) এবং মিথ্যাজ্ঞান অর্থাৎ আত্মা প্রভৃতি পদার্থ বিষয়ে নানাপ্রকার ভ্রমজ্ঞান, ইহাদিগের পরপরটির বিনাশে ( কারণনাশে কার্য্যনাশক্রমে ) "তদনন্তর"গুলির অর্থাৎ ঐ
মিথ্যাজ্ঞান প্রভৃতি পরপরটির অব্যবহিত পূবগুলির অভাব প্রযুক্ত অপবর্গ হয় ( নির্বৰ্ব্বাণ লাভ হয় ) অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞানের দ্বারা মিথ্যাজ্ঞানের বিনাশ হয়, মিথ্যাজ্ঞানের বিনাশে রাগ ও দ্বেষরূপ দোষের নিবৃত্তি হয়, তাহার নিবৃত্তিতে ধর্ম্ম ও অধর্ম্মরূপ প্রবৃত্তির নিবৃত্তি হয়, তাহার নিবৃত্তিতে জন্মের নিবৃত্তি হয়, জন্মের নিবৃত্তিতে দুঃখের আত্যন্তিক নিবৃত্তি হয়, ইহাই নির্বৰ্ব্বাণ মুক্তি ।
২ মৃo ]
বিবৃতি । বদ্ধ জীবমাত্রেরই দুঃখনিবৃত্তির জন্য ইচ্ছা স্বাভাবিক, একেবারে সংসার ছাড়িয়া দুঃখমুক্ত হইতে সকলের ইচ্ছা না হইলেও দুঃখ কেহ চায় না, আমার দুঃখ না হউক, আমি কষ্ট না পাই, এরূপ ইচ্ছ। সকলেরই স্বাভাবিক এবং সে জন্য সকলেই নিজ নিজ শক্তি ও রুচি অনুসারে দুঃখ নিবৃত্তির জন্য চেষ্টা করিতেছে । দুঃখ কাহারই ভাল লাগে না। যাহা প্রতিকূল ভাবে অর্থাৎ স্বভাবতঃই অপ্রিয় ভাবে জ্ঞানের বিষয় হয়, তাহা দুঃখ । দুঃখের সহিত সকলেরই সুচিরকাল হইতে পরিচয় আছে, সুতরাং তাহার পরিচয় দেওয়া অনাবশ্তক, ভাষায় তাহার পরিচয় দেওয়াও সহজ নহে। দুঃখের পরিচয় দেওয়া অপেক্ষা দুঃখ এবং তাহার ভোগ অতি সহজ। অনাদি কাল হইতে সকলেই দুঃখ ভোগ করিতেছে এবং তাহার শান্তির জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করিতেছে । মূলের খবর লইলে কাহারই প্রাণে শান্তি নাই। দুঃখনিবৃত্তির জন্য সকলেরই ইচ্ছা, সকলেরই চেষ্টা, ইহা অস্বীকার করিলে জোর করিয়া সত্যের অপলাপ করা দুঃখ বলিয়া একটা কিছু না থাকিলে তাহার সহিত অনাদি কাল হইতে নিরন্তর জীবকুলের কখনই এত সংগ্রাম চলিত না। কিন্তু নিরন্তর নানাবিধ উপায় অবলম্বন করিয়াও, দুঃখের সহিত বহু বহু সংগ্রাম করিয়াও যত দিন জন্ম আছে, তত দিন কেহই দুঃখের হস্ত হইতে একেবারে বিমুক্ত হইতে পারিতেছে না। জন্মিলেই দুঃখ, জন্ম গ্রহণ করিয়া যিনি যত বড়ই হউন না কেন, দুঃখকে কেহই একেবারে তাড়াইয়া দিতে পারেন না। দুঃখভোগ সকলকেই করিতে হয়, এ সত্য চিন্তাশীলের অজ্ঞাত নহে। জন্ম হইলে দুঃখভোগ কেন অনিবার্য্য, সংসারী সর্ব্বদাই দুঃখের গৃহে কেন বাস করেন, ইহাও চিন্তাশীলদিগকে বুঝাইয়া দিতে হইবে না। ফল কথা, বদ্ধ জীব দুঃখের কারাগারে নিয়ত বাস করিতেছে, জন্মই তাহাকে দুঃখের সহিত দুশ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধিয়াছে, ইহা ভাবিয়া বুঝিলে অবশ্যই বুঝা বাইবে। মুলকথা, জন্ম দুঃখের কারণ । এই জন্মের কারণ ধর্ম্ম ও অধর্ম্ম। কারণ, ধর্ম্ম ও অধর্ম্মের ফল সুখভোগ ও দুঃখভোগ করিবার জন্যই জীবকে বাধ্য হইয়া জন্মগ্রহণ করিতে হয়। কর্ম্মফলানুসারে বিশিষ্ট শরীরাদি-সম্বন্ধই জন্ম। শরীরাদি ব্যতীত ধর্ম্মাধর্ম্মের ফলভোগ হওয়া একেবারে অসম্ভব, সুতরাং ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্ম ( যাহা শুভ ও অশুভ প্রবৃত্তি-( কৰ্ম্ম )সাধ্য বলিয়া 'প্রবৃত্তি' শব্দের দ্বারাও কথিত হইয়াছে ) জীবের শরীরাদি সম্বন্ধরূপ জন্ম সম্পাদন করিয়াই সুখভোগ ও দুঃখভোগ জন্মায়। এই "প্রবৃত্তি"র অর্থাৎ ধর্ম্ম ও অধর্ম্মের কারণ "দোষ"। দোষ বলিতে এখানে "রাগ" অর্থাৎ বিষয়ে অভিলাষ বা আনক্তি এবং "দ্বেষ"। এই রাগ ও দ্বেষবশতঃই জীব শুভ ও অশুভ
কর্ম্মে প্রবৃত্ত হয়। যিনি রাগ-দ্বেষ-বর্জিত, যাঁহার ইষ্ট ও অনিষ্ট উভয়ই তুল্য, যিনি গীতার ভাষায় "নাভিনন্দতি ন দ্বেষ্টি," তিনি ইষ্ট লাভ ও অনিষ্ট পরিহারের জন্য কোন কর্ম্ম করেন না, তিনি আসক্তির প্রেরণায় কোন সৎ বা অসৎ কর্ম্মে লিপ্ত হন না, তিনি বিদ্বেষ-বিষের জ্বালায় কাহারও কোন অনিষ্ট সাধন করিতে যান না। এক কথায় তিনি কায়িক, বাচিক, মানসিক কোন শুভ বা অশুভ কৰ্ম্মে আসক্ত নহেন, রাগ ও দ্বেষ না থাকায় তাঁহার সম্বন্ধে ঐরূপ ঘটিতেই পারে না এবং তিনি কোন কর্ম্ম করিলেও তজ্জন্য তাঁহার ধর্ম্ম ও অধৰ্ম্ম হয় না। মিথ্যা জ্ঞান বা অবিদ্যার অধিকারে থাকা পর্যন্তই কর্ম্ম দ্বারা ধর্ম্ম ও অধর্ম্মের সঞ্চয় হয় । এই রাগ ও দ্বেষের কারণ "মিথ্যাজ্ঞান"। অনাদিকাল হইতে আত্মা ও শরীরাদি বিষয়ে জীবকুলের যে নানাপ্রকার ভ্রম জ্ঞান আছে, তাহার ফলেই তাহাদিগের রাগ ও দ্বেষ জন্মে। যাহার ঐ মিথ্যাজ্ঞানের উচ্ছেদ হইয়াছে, যিনি প্রকৃত সত্যের দেখা পাইয়াছেন, তাঁহার আর রাগ ও দ্বেষ জন্মিতে পারে না, কারণ ব্যতীত কার্য হইতে পারে না, মিথ্যাজ্ঞান যাহার কারণ, তাহা মিথ্যাজ্ঞানের অভাবে কিরূপে হইবে ? অনাদিকাল হইতে জীবের নিজ শরীরাদি বিষয়ে অহঙ্কাররূপ মিথ্যাজ্ঞানজন্য সংস্কার বদ্ধমূল হইয়া আছে । ঐ শরীরাদি বিষয়ে আমিত্ব-বুদ্ধিরূপ অহঙ্কারের ফলেই তাহার ইষ্ট বিষয়ে আসক্তি এবং অনিষ্ট বিষয়ে বিদ্বেষ জন্মিতেছে এবং আরও বহু বহু প্রকার মিথ্যাজ্ঞান জীবকে পুনঃ পুনঃ সংসারে বদ্ধ করিতেছে। এই সকল সংসারনিদান মিথ্যাজ্ঞানের মহিমায় জীবের রাগ ও দ্বেষ জন্মে । রাগ ও দ্বেষবশতঃই শুভ ও অশুভ কর্ম্ম করিয়া জীব ধর্ম্ম ও অধর্ম্ম সঞ্চয় করে, তাহার ফলভোগের জন্য আবার জন্মগ্রহণ করে, জন্মগ্রহণ করিলেই দুঃখ অনিবার্য্য। সুতরাং বুঝা যায়, যে দুঃখের ভাবী আক্রমণ নিবারণ জন্য জীবগণের এত ইচ্ছা, এত চেষ্টা, এত সংগ্রাম, তাহার মূলই "মিথ্যাজ্ঞান" । সত্যজ্ঞান ব্যতীত এ মিথ্যাজ্ঞান কখনই যাইতে পারে না, তত্ত্বজ্ঞানের সুদৃঢ় সুসংস্কার ব্যতীত মিথ্যাজ্ঞানের কুসংস্কার আর কিছুতেই যাইতে পারে না। রজ্জর প্রকৃত স্বরূপ প্রত্যক্ষ ব্যতীত আর কোন উপায়েই তাহাতে সর্পভ্রম বিনষ্ট হয় না - হইতে পারে না। সুতরাং দুঃখনিবৃত্তি করিতে হইলে, চিরকালের জন্য দুঃখভয় হইতে মুক্ত হইতে হইলে তাহার মূল "মিথ্যাজ্ঞান"কে একেবারে বিনষ্ট করিতে হইবে। রোগের নিদান একেবারে উচ্ছিন্ন না হইলে রোগের আক্রমণ একেবারে রুদ্ধ হয় না, সাময়িক নিবৃত্তি হইলেও পুনরাক্রমণ হইয়া থাকে। সুতরাং সত্যজ্ঞানের দ্বারা মিথ্যা জ্ঞান বিনষ্ট করিতে হইবে। তত্ত্বজ্ঞানই সত্যজ্ঞান । যে বিষয়ে যেরূপ মিথ্যাজ্ঞান আছে, সেই বিষয়ে তাহার বিপরীত জ্ঞানই "তত্ত্বজ্ঞান" । শাস্ত্রোক্ত উপায়ে উহা লাভ করিলে পরক্ষণেই মিথ্যাজ্ঞান নষ্ট হইবে। তত্ত্বজ্ঞানজন্য সংস্কারে মিথ্যাজ্ঞানজন্য সংস্কার বিনষ্ট হইয়া যাইবে। মিথ্যাজ্ঞানের নাশ হইলেই অর্থাৎ তজ্জন্য সংস্কারের উচ্ছেদ হইলেই কারণের অভাবে রাগ ও দ্বেষ আর জন্মিল না। রাগ ও দ্বেষ না থাকায় আর ধর্ম্মাধর্ম্ম জন্মিল না, তত্ত্বজ্ঞানের মহিমায় পূৰ্ব্বসঞ্চিত ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম বিনষ্ট হইয়া গেল, ধর্ম্মাধর্ম্মের অভাবে আর জন্ম হইতে পারিল না, জন্ম না হইলে আর দুঃখের সম্ভাবনাই থাকিল না, প্রারব্ধ কৰ্ম্মভোগাস্তে বর্তমান জন্মটা নষ্ট হইয়া গেলেই সব গেল, তখনই নিৰ্ব্বাণ, তখনই সৰ্ব্ব দুঃখের চিরশাক্তি ।
ভাষ্য। তত্র আত্মাদ্যপবর্গপৰ্য্যন্তপ্রমেয়ে মিথ্যাজ্ঞানমনেকপ্রকারকং বৰ্ত্ততে । আত্মনি তাবন্নাস্তীতি । অনাত্মন্যাত্মেতি, দুঃখে সুখমিতি, অনিত্যে নিত্যমিতি, অত্রাণে ত্রাণমিতি, সভয়ে নির্ভয়মিতি, জুগুপ্লিতেইভিমতমিতি, হাতব্যেঽপ্রতিহাতব্যমিতি । প্রবৃত্তৌ - নাস্তি কৰ্ম্ম, নাস্তি কৰ্ম্মফলমিতি । দোষেষু - নায়ং দোষনিমিত্তঃ সংসার ইতি। প্রেত্যভাবে - নাস্তি জন্তুৰ্জ্জীবে। বা সত্ত্ব আত্মা বা যঃ প্ৰেয়াৎ প্ৰেত্য চ ভবেদিতি। অনিমিত্তং জন্ম, অনিমিত্তে। জন্মোপরম ইত্যাদিমান্ প্রেত্যভাবোঽনন্তশ্চেতি। নৈমিত্তিকঃ সন্নকর্ম্মনিমিত্তঃ প্রেত্যভাব ইতি। দেহেন্দ্রিয়বুদ্ধিনা-সন্তানোচ্ছেদ-প্রতিসন্ধানাভ্যাং নিরাত্মকঃ প্রেত্যভাব ইতি । অপবর্গে - ভীষ্মঃ খল্বয়ং সর্ব্বকার্য্যোপরমঃ সৰ্ব্ববিপ্রয়োগেহপবর্গে বহু ভদ্রকং লুপ্যত ইতি কথং বুদ্ধিমান সৰ্ব্বস্থখোচ্ছেদম চৈতন্যম মুমপবর্গং রোচয়েদিতি ।
অনুবাদ । * সেই আত্মাদি অপবর্গ পর্যন্ত "প্রমেয়" বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান অনেক প্রকার আছে। (তন্মধ্যে কতকগুলি দেখাইতেছেন। ) আত্মবিষয়ে "নাই" অর্থাৎ আত্মা নাই, এইরূপ জ্ঞান। অনাত্মাতে (দেহাদিতে) "আত্মা" এইরূপ জ্ঞান। ( এখন শরীর হইতে মনঃ পর্য্যন্ত "প্রমেয়" বিষয়ে সামান্যতঃ কতকগুলি মিথ্যাজ্ঞান দেখাইতেছেন)। - দুঃখে - সুখ, এইরূপ জ্ঞান । অনিত্যে - নিত্য, এইরূপ জ্ঞান। অত্রাণে - ত্রাণ, এইরূপ জ্ঞান। সভয়ে - নির্ভয়, এইরূপ জ্ঞান। নিন্দিতে - অভিমত, এইরূপ জ্ঞান। ত্যাজ্যে - অত্যাজ্য, এইরূপ জ্ঞান। ( এখন "প্রবৃত্তি" প্রভৃতি "অপবর্গ" পর্যন্ত প্রমেয়ে বিশেষ করিয়া কতকগুলি মিথ্যাজ্ঞান দেখাইতেছেন )। - প্রবৃত্তি অর্থাৎ ধর্ম্মাধর্ম্ম বিষয়ে - কৰ্ম্ম নাই, কৰ্ম্মফল নাই, এইরূপ জ্ঞান । দোষ অর্থাৎ রাগদ্বেষাদি বিষয়ে - এই সংসার-দোষ নিমিত্তক অর্থাৎ রাগদ্বেষাদি-জন্য নহে, এইরূপ জ্ঞান। "প্রেত্যভাব" বিষয়ে ( পুনর্জন্ম বিষয়ে ) - যিনি মরিবেন এবং মরিয়া জন্মিবেন, সেই জন্তু বা জীব নাই, সত্ত্ব বা আত্মা নাই, এইরূপ জ্ঞান।
* আত্মা, শরীর, ঘ্রাণাদি বহিরিন্দ্রিয়, রূপ, রস প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ার্থ, বুদ্ধি, মনঃ, প্রবৃত্তি, দোষ, প্ৰেত্যভাব, ফল, দুঃখ, অপবর্গ, এই দ্বাদশবিধ পদার্থকে মহর্ষি প্রমেয় নামে পরিভার্ষত করিয়াছেন। ঐ প্রমেয় বিষয়ে বহুবিধ মিথ্যাজ্ঞানই জীবের সংসারের নিদান এবং ঐ মিথ্যাজ্ঞানের বিপরীত জ্ঞানই তাহাদিগের তত্ত্বজ্ঞান। ভাষ্যকার সেই মিথ্যাজ্ঞান ও তত্ত্বজ্ঞানের বর্ণনা করিয়াছেন।
[ ১অ আ
জন্ম কারণশূন্য, - জন্মের নিবৃত্তি কারণশূন্য ; অতএব প্ৰেত্যভাব সাদি এবং অনন্ত, এইরূপ জ্ঞান । প্রেত্যভাব নিমিত্ত-জন্য হইলেও কৰ্ম্মনিমিত্তক নহে, এইরূপ জ্ঞান। * 'দেহ', 'ইন্দ্ৰিয়', 'বুদ্ধি', 'বেদনা' অর্থাৎ সুখ-দুঃখ, ইহাদিগের যে সন্তান অর্থাৎ সঙ্ঘাত বা সমষ্টি, তাহার উচ্ছেদ ও প্রতিসন্ধান বশতঃ অর্থাৎ ঐ দেহাদির এক সমষ্টির নাশের পরে তজ্জাতীয় অন্য এক সমষ্টির উৎপত্তি হয় বলিয়া, "প্রেত্যভাব" নিরাত্মক অর্থাৎ তাহাতে আত্মা নাই, এইরূপ জ্ঞান। অপবর্গবিষয়ে - সর্ববকার্য্যোপরতি অর্থাৎ যাহাতে সর্ববকার্য্যের নিবৃত্তি হয়, এমন, এই অপবর্গ ভয়ানক। সর্বববিপ্রয়োগ অর্থাৎ যাহাতে সকল পদার্থের সহিত বিচ্ছেদ হয়, এমন অপবর্গে বহু শুভ নষ্ট হয়, সুতরাং কেমন করিয়া বুদ্ধিমান্ ব্যক্তি যাহাতে সকল সুখের উচ্ছেদ হয় এবং যাহাতে কিছুমাত্র জ্ঞান থাকে না, এমন, এই অপবর্গকে ভালবাসিবে? এইরূপ জ্ঞান ( মিথ্যাজ্ঞান ) ।
ভাষ্য। এতস্মাস্মিথ্যাজ্ঞানদিনুকূলেষু রাগঃ প্রতিকূলেষু দ্বেষঃ। রাগদ্বেষাধিকারাচ্চাসত্যেৰ্য্যামায়ালোভদিয়ে। দোষা ভবন্তি । দোষৈঃ প্রযুক্তঃ শরীরেণ প্রবর্ত্তমানে হিংসাস্তেয়প্রতিষিদ্ধমৈথুনান্যাচরতি । বাচাঽনৃতপরুষসূচনাসম্বদ্ধানি । মনসা পরদ্রোহং পরদ্রব্যাভীপ্সাং নাস্তিক্য ঞ্চেতি । সেয়ং পাপাত্মিকা প্রবৃত্তিরধর্ম্মায় । অথ শুভা - শরীরেণ দানং পরিত্রাণং পরিচরণঞ্চ। বাচা সত্যং হিতং প্রিয়ং স্বাধ্যায়ঞ্চেতি। মনসা দয়ামস্পৃহাং শ্রদ্ধাঞ্চেতি । সেয়ং ধৰ্ম্মায় । অত্র প্রবৃত্তিসাধনৌ ধর্ম্মাধর্ম্মৌ "প্রবৃত্তি"শব্দেনোক্তৌ। যথা অন্নসাধনাঃ প্রাণাঃ - "অন্নং বৈ প্ৰাণিনঃ প্ৰাণাঃ" ইতি। সেয়ং প্রবৃত্তিঃ কুৎসিতস্যাভিপূজিতস্য চ জন্মনঃ কারণং । জন্ম পুনঃ শরীরেন্দ্রিয়বুদ্ধীনাং নিকায়বিশিষ্টঃ প্রাদুর্ভাবঃ । তস্মিন্ সতি দুঃখং । তৎ পুনঃ প্রতিকূলব্দেনীয়ং বাধন। পীড়। তাপ ইতি । ত ইমে মিথ্যাজ্ঞানাদয়ে। দুঃখান্তা ধৰ্ম্ম। অবিচ্ছেদেনৈব প্ৰবৰ্ত্তমানাঃ সংসার ইতি। যদ। তু তত্ত্বজ্ঞানান্মিথ্যাজ্ঞানমপৈতি তদ! মিথ্যাজ্ঞানাপায়ে
দেহ, ইন্দ্ৰিয়, বুদ্ধি এবং সুখ-দুঃখ, ইহাদিগের সমষ্টি-বিশেষই জীব। উহা ছাড়া অতিরিক্ত কোন অাত্মা নাই, ইহা ষাঁহারা বলেন, তাঁহাদিগকে নৈরাত্ম্য-বাদী বলে । তাঁহাদিগের জ্ঞান এই যে, দেহ, ইন্দ্ৰিয়, বুদ্ধি ও সুখদুঃখের এক সমষ্টির উচ্ছেদ হইলে, আর একটি পূর্ব্বোক্ত দেহাদি-সমষ্টির উৎপত্তি হয়, এই ভাবেই সংসার হইতেছে - ইহার মধ্যে নিত্য আত্মা কেহ নাই। কোন নিত্য আত্মাই যে ঐরূপ দেহাদি সমষ্টি লাভ করিতেছেন, তাহা নহে, সুতরাং প্রেত্যভাব নিরাত্মক। ভাষ্যকার এই জ্ঞানকে প্রেত্যভাব বিষয়ে এক প্রকার মিথ্যা জান বলিয়াছেন।
দোষা অপযন্তি । দোষাপায়ে প্রবৃত্তিরপৈতি। প্ৰবৃত্ত্যপায়ে জন্মাপৈতি । জন্মাপায়ে দুঃখমপৈতি, দুঃখাপায়ে দুঃখাপায়ে চাত্যন্তিকোহপবর্গো নিঃশ্রেয়সমিতি ।
অনুবাদ । ( ভাষ্যকার সূত্রোক্ত মিথ্যাজ্ঞানের স্বরূপ প্রদর্শন করিয়া এখন সূত্রোক্ত "মিথ্যাজ্ঞান," "দোষ," "প্রবৃত্তি," "জন্ম," "দুঃখ," এই কয়েকটি পদার্থের কার্য-কারণ-ভাব এবং ঐ 'দোষ," "প্রবৃত্তি," "জন্ম" এবং "দুঃখের" স্বরূপ প্রকাশ করিয়া সূত্রার্থ বর্ণন করিতেছেন।) এই মিথ্যাজ্ঞান (পূর্ববর্ণিত মিথ্যাজ্ঞান ) বশতঃ অনুকূল বিষয়ে অনুরাগ এবং প্রতিকূল বিষয়ে দ্বেষ জন্মে। রাগ ও দ্বেষের অধিকারবশতঃ অসত্য, ঈর্ষা, কপটতা, লোভ প্রভৃতি দোষ জন্মে। দোষকর্তৃক প্রেরিত জীব প্রবর্ত্তমান হইয়া শরীরের দ্বারা হিংসা, চৌর্য্য এবং নিষিদ্ধ মৈথুন আচরণ করে। বাক্যের দ্বারা মিথ্যা, পরুষ ( কটূক্তি), সূচনা (পর-দোষ-প্রকাশ ), অসম্বদ্ধ ( প্রলাপাদি) আচরণ করে। মনের দ্বারা পরদ্রোহ, পর-দ্রব্যের প্রাপ্তি কামনা এবং নাস্তিকতা আচরণ করে। সেই এই পাপাত্মিকা প্রবৃত্তি অধর্ম্মের নিমিত্ত হয়। অনন্তর শুভা প্রবৃত্তি (বলিতেছি)। শরীরের দ্বারা দান, পরিত্রাণ এবং পরিচর্য্যা আচরণ করে। বাক্যের দ্বারা সত্য, হিত, প্রিয় এবং স্বাধ্যায় ( বেদ-পাঠাদি ) আচরণ করে। মনের দ্বারা দয়া নিস্পৃহতা এবং শ্রদ্ধা আচরণ করে। সেই এই শুভা প্রবৃত্তি ধর্ম্মের নিমিত্ত হয় । এই সূত্রে প্রবৃত্তি-সাধন অর্থাৎ প্রবৃত্তি যাহাদিগের সাধন, এমন ধর্ম্ম ও অধর্ম্ম "প্রবৃত্তি" শব্দের দ্বারা উক্ত হইয়াছে। যেমন প্রাণ অন্ন-সাধন অর্থাৎ অন্ন-সাধ্য। ( বেদ বলিয়াছেন ) "অন্ন প্রাণীর প্রাণ" ( অর্থাৎ যেমন প্রাণের সাধন অন্নকে শ্রুতি প্রাণ বলিয়াছেন, তদ্রূপ মহর্ষি এই সূত্রে ধর্ম্মাধর্ম্মের সাধন প্রবৃত্তিকে ধর্ম্মাধর্ম্ম বলিয়াছেন, অর্থাৎ ধৰ্ম্মাধর্ম্ম অর্থে প্রবৃত্তি শব্দের গৌণ প্রয়োগ করিয়াছেন। ) সেই এই ধর্ম্ম ও অধর্ম্মরূপ প্রবৃত্তি নিকৃষ্ট ও উৎকৃষ্ট জন্মের কারণ। "জন্ম" বলিতে, শরীর, ইন্দ্রিয় ও বুদ্ধির নিকায়বিশিষ্ট প্রাদুর্ভাব অর্থাৎ উহাদিগের সংঘাতভাবে (মিলিত ভাবে ) উৎপত্তি। সেই জন্ম থাকিলে দুঃখ থাকে। সেই "দুঃখ" বলিতে প্রতিকূল-বেদনীয় * বাধনা, পীড়া, তাপ । অবিচ্ছেদেই প্রবর্ত্তমান অর্থাৎ অনাদি কাল হইতে যাহা কার্য-কারণ-ভাবেই উৎপন্ন হইতেছে, এমন সেই এই
* "প্রতিকূল-বেদনীয়" - অর্থাৎ যাহা প্রতিকূল ভাবে, অর্থাৎ ভাল লাগে না - এই ভাবে জ্ঞানের বিষয় হয়। "ৰাধনা", "পীড়া", "তাপ", এই তিনটি দুঃখবোধক পর্যায় শব্দ। ভাষ্যকার "দুঃখ"কে বিশদরূপে বুঝাইবার জন্য ঐ তিনটি পর্যায় শব্দের উল্লেখ করিয়াছেন। অর্থাৎ যাহাকে "ৰাধনা", "পীড়া" ও "তাপ" বলে, তাহাই দুঃখ ।
[ ञ আ
মিথ্যাজ্ঞান প্রভৃতি ( পূর্বোক্ত ) দুঃখ-পর্য্যন্ত ধর্ম্মই সংসার। যে সময়ে কিন্তু তত্ত্বজ্ঞান-হেতুক মিথ্যাজ্ঞান অপগত হয়, তখন মিথ্যাজ্ঞানের বিনাশে ( তাহার কাৰ্য্য) দোষগুলি অপগত হয়। দোষের নিবৃত্তি হইলে "প্রবৃত্তি" ( ধৰ্ম্মীধৰ্ম্ম ) অপগত হয়। প্রবৃত্তির অপায় হইলে "জন্ম" অপগত হয়। জন্মের নিবৃত্তি হইলে দুঃখ নিবৃত্ত হয়। দুঃখের নিবৃত্তি ( আত্যন্তিক অভাব ) হইলে, আত্যন্তিক অপৰৰ্গরূপ অর্থাৎ পরা মুক্তিরূপ নিঃশ্রেয়স হয়।
ভাষ্য । তত্ত্বজ্ঞানস্তু খলু মিথ্যাজ্ঞানবিপৰ্যয়েণ ব্যাখ্যাতং। আত্মনি তাব্দস্তীতি অনাত্মন্যনাত্মেতি। এবং দুঃখে নিত্যে ত্রাণে সভয়ে জুগুপিতে হাতব্যে চ যথাবিষয়ং বেদিতব্যম্ । প্রবৃত্তৌ - অস্তি কৰ্ম্ম, অস্তি কর্ম্মফলমিতি। দোষেষু - দোষনিমিত্তেঽিয়ং সংসার ইতি। প্রেত্যভাবে খল্বস্তি জন্তুৰ্জীবঃ সত্ব আত্ম। বা যঃ প্ৰেত্য ভবেদিতি। নিমিত্তবজ্জন্ম, নিমিত্তবান্ জন্মোপরম ইত্যনাদিঃ প্রেত্যভাবোঽপবর্গান্ত ইতি। নৈমিত্তিকঃ সন্ প্রেত্যভাবঃ প্রবৃত্তিনিমিত্ত ইতি। সাত্মকঃ সন্ দেহেন্দ্ৰিয়বুদ্ধিবেদনা-সন্তানোচ্ছেদপ্রতিসন্ধানাভ্যাং প্রবর্ত্তত ইতি। অপবর্গে - শান্তঃ খল্বয়ং সৰ্ব্ববিপ্রয়োগঃ সর্ব্বোপরমোহপবর্গঃ, বহু চ কৃচ্চুং ঘেরিং পাপকং লুপ্যত ইতি কথং বুদ্ধিমান্ সৰ্ব্বদুঃখোচ্ছেদং সৰ্ব্বদুঃখাসংবিদমপবর্গং ন রোচয়েদিতি। তদযথা - মধুবিষ-সম্পৃ ভান্নমনাদেয়মিতি, এবং সুখং দুঃখানুষক্তমনাদেয়মিতি। ২।
অনুবাদ। তত্ত্বজ্ঞান কিন্তু মিথ্যাজ্ঞানের বিপরীত ভাবে ব্যাখ্যাত হইয়াছে। ( সে কিরূপ, তাহা নিজেই স্পষ্ট করিয়া বর্ণনা করিতেছেন। ) আত্মবিষয়ে "আছে" অর্থাৎ আত্মা আছে, এইরূপ জ্ঞান। অনাত্মাতে (দেহাদিতে) অনাত্মা ( আত্মা নহে ), এইরূপ জ্ঞান । এইরূপ (পূর্ব্বোক্ত ) দুঃখে, নিত্যে, ত্রাণে, সভয়ে, নিন্দিতে এবং ত্যাজ্য বিষয়ে বিষয়ানুসারে ( তত্ত্বজ্ঞান ) জানিবে । ( দুঃখে দুঃখবুদ্ধি, নিত্যে নিত্যবুদ্ধি ইত্যাদি ) । প্রবৃত্তি বিষয়ে - কৰ্ম্ম আছে, কর্ম্মফল আছে, এইরূপ জ্ঞান । দোষ বিষয়ে - এই সংসার দোষজন্য, এইরূপ জ্ঞান। প্রেত্যভাব বিষয়ে - যিনি মরিয়া জন্মিবেন, সেই জন্তু বা জীব আছেন, সত্ত্ব বা * আত্মা আছেন, এইরূপ
"জ" ৰলিয়া শেষে আবার জীৰ ৰলিয়া তাহারই বিবরণ করিয়াছেন। "সত্ত্ব" বলিয়া শেষে আবার "আত্মা" বলিয়া তাহারই বিবরণ করিয়াছেন। ঐ সকল শব্দ প্রাচীন কালে এক অর্থে প্রযুক্ত হইত। ৰিশব্
জ্ঞান। জন্ম কারণজন্য, জন্মের নিবৃত্তি কারণজন্য; সুতরাং প্রেত্যভাব অনাদি মোক্ষ-পর্য্যন্ত, এইরূপ জ্ঞান। প্রেত্যভাব কারণ-জন্য হইয়া প্রবৃত্তি-জন্য অর্থাৎ ধর্ম্মাধর্ম্ম-জন্য, এইরূপ জ্ঞান । "সাত্মক" হইয়াই অর্থাৎ প্রেত্যভাব দেহাদি হইতে অতিরিক্ত নিত্য আত্মযুক্ত হইয়াই দেহ-ইন্দ্ৰিয়-বুদ্ধি-সুখ-দুঃখ-সমষ্টির উচ্ছেদ ও প্রতিসন্ধানবশতঃ প্রবৃত্ত হইতেছে - এইরূপ জ্ঞান । অপবর্গ বিষয়ে - যাহাতে সকল পদার্থের সহিত বিয়োগ হয়, যাহাতে সর্ববকার্য্যের নিবৃত্তি হয়, এমন এই অপবর্গ শান্ত ( ভয়ানক নহে ) এবং (ইহাতে ) বহু কষ্টকর ঘোর পাপ নষ্ট হয় ; সুতরাং বুদ্ধিমান্ ব্যক্তি সর্ববদুঃখের উচ্ছেদকর, সর্ববদুঃখের জ্ঞানরহিত অপবর্গকে কেন ভালবাসিবেন না, এইরূপ জ্ঞান। অতএব যেমন মধু ও বিষ-মিশ্রিত অন্ন অগ্রাহ্য, তদ্রূপ দুঃখানুষক্ত সুখ অগ্রাহ্য, * এইরূপ জ্ঞান (তত্ত্বজ্ঞান ) ।
টিপ্পনী । মহর্ষি প্রথম সূত্রের দ্বারা প্রমাণাদি পদার্থের তত্ত্বজ্ঞানপ্রযুক্ত নিঃশ্রেয়স লাভ হয়, এই কথা বলায় নিঃশ্রেয়সই তাঁহার ন্যায়শাস্ত্রের প্রয়োজন, ইহা বলা হইয়াছে। শাস্ত্রের প্রয়োজনজ্ঞান ব্যতীত তাহার চর্চ্চায় কাহারও প্রবৃত্তি হয় না, এ জন্য শাস্ত্রকারগণ প্রথমেই শাস্ত্রের প্রয়োজন সূচনা করিয়া থাকেন। কিন্তু সে প্রয়োজন কিরূপে সেই শাস্ত্র-সাহায্যে সিদ্ধ হইতে পারে, অর্থাৎ কোন্ যুক্তিতে সেই প্রয়োজনটি সেই শাস্ত্রের প্রয়োজন বলিয়া স্বীকার করা যায়, ইহা না বলিলে সেই প্রয়োজন শূচনার কোন ফল হয় না। সুতরাং শাস্ত্রকারের যুক্তির দ্বারা প্রয়োজন পরীক্ষা করা কর্তব্য। যে যুক্তিতে শাস্ত্রকারোক্ত প্রয়োজনটি তাঁহার শাস্ত্রের প্রয়োজন বলিয়া বুঝা যায়, সেই যুক্তির স্থূচনাই প্রয়োজনের পরীক্ষা।
অপবর্গ ভিন্ন অন্যান্য দৃষ্ট নিঃশ্রেয়স ন্যায়বিদ্যার প্রয়োজন হইলেও, সেগুলি মুখ্য প্রয়োজন নহে। সেগুলি ন্যায়বিদ্যার প্রয়োজন কিরূপে হয়, তাহাতে ন্যায়বিদ্যার আবশ্যকতা কি, ইহা সহজেই বুঝা যায়। ভাষ্যকারও ন্যায়বিদ্যা সর্ব্ববিদ্যার প্রদীপ, সর্বকর্ম্মের উপায় এবং সর্ব্বধর্ম্মের আশ্রয়রূপে বিদ্যার পরিগণনাস্থলে কীৰ্ত্তিত আছে, এই কথা বলিয়া তাহা বুঝাইয়াছেন। কিন্তু অধ্যাত্মবিদ্যারূপ ন্যায়বিদ্যার যাহা মুখ্য প্রয়োজন, প্রথম সূত্রে "নিঃশ্রেয়স" শব্দের দ্বারা মহর্ষি
বোধনের জন্যই প্রাচীনগণ ঐরূপ একার্থ শব্দের দ্বারা বিবরণ করিয়াছেন। এই ভাষ্যে বহু স্থলেই ঐরূপ বিবরণ আছে। স্বপদবর্ণনও ভাষ্যের একটি লক্ষণ।
* সুখ দুঃখানুষক্ত অর্থাৎ দুঃখের অনুষঙ্গযুক্ত। এই অনুযঙ্গব্যাখ্যা বার্তিককার চারি প্রকার বলিয়াছেন। ১। অনুষঙ্গ অর্থাৎ অবিনাভাব সম্বন্ধ । যেখানে সুখ, সেখানে দুঃখ এবং যেখানে দুঃশ, সেখানে মুখ। ইহাই সুখদুঃখের অধিনাভাব। ২। অপবা সমান-নিসিত্ততাই অনুষঙ্গ। যাহা বাহা সুখের সাধন, তাহাই দুঃখের সাধন। ৩। অথবা সমানাধারতাই অনুষঙ্গ ; যে আধারে মুখ আছে, সেই আধারেই দুঃখ আছে। ৪। অথবা সমানে প লভ্যতাই অনুষঙ্গ। যিনি হুখের উপলব্ধি করেন, তিনি দুঃখের উপলব্ধি করেন। ভাষ্যের সর্ব্বশেষবৰ্ত্তী ইতি শব্দটি সূত্রের সমাপ্তিবোধক।
[ ১ অ° ১ আঁ
যাহাকে মুখ্য প্রয়োজনরূপে সূচনা করিয়াছেন, তাহা কিরূপে এই ন্যায়বিদ্যার প্রয়োজন হয়, ষোড়শ পদার্থের তত্ত্বজ্ঞান কেমন করিয়া অপবর্গরূপ অদৃষ্ট নিঃশ্রেয়সের সাধন হয়, ইহা সহজে বুঝা যায় না; ইহা বুঝাইয়া না দিলে ঐ অপবর্গরূপ মুখ্য প্রয়োজন কেহ বুঝিয়া লইতে পারে না, তাহা না বুঝিলেও উহা ন্যায়বিদ্যার মুখ্য প্রয়োজন, এ কথা বলিয়াও কোন ফল হয় না । এই জন্য মহর্ষি দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা তাহা বুঝাইয়া গিয়াছেন, অর্থাৎ প্রথম সূত্রোক্ত ন্যায়বিদ্যার মুখ্য প্রয়োজনের পরীক্ষা করিয়াছেন। অপবর্গরূপ প্রধান প্রয়োজনই মহর্ষির প্রধান লক্ষ্য, সুতরাং দ্বিতীয় সূত্রেই সেই কথা বলিয়াছেন, তাহাতে পরা মুক্তির ক্রম প্রতিপাদন হইয়াছে এবং আত্মাদি প্রমের পদার্থের তত্ত্বজ্ঞানই যে অপবর্গের সাক্ষাৎ কারণ, ইহা বলা হইয়াছে ।
দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা এইরূপ অনেক তত্ত্বই সূচিত হইয়াছে। সূচনার জন্যই সূত্র। এক সূত্রের দ্বারা অনেক স্থলে বহু তত্ত্বই স্বচিত হইয়াছে। স্বত্রগ্রন্থের উহা একটি বিশেষত্ব। মহর্ষির দ্বিতীয় সূত্রে স্বচিত হইয়াছে যে, তত্ত্বজ্ঞান স্বতঃই মোক্ষসাধন নহে, মিথ্যা জ্ঞানের নিবৃত্তি করিয়াই উহা মোক্ষসাধন হয়। যে বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান জন্মিয়াছে, সেই বিষয়ে তাহার বিপরীত জ্ঞানরূপ তত্ত্বজ্ঞান জন্মিলে, ঐ মিথ্যাজ্ঞান আর কিছুতেই থাকিতে পারে না, ইহা সৰ্ব্বসিদ্ধ । সুতরাং এই সর্ব্বসিদ্ধ যুক্তিতে বুঝা যায়, তত্ত্বজ্ঞান মিথ্যাজ্ঞানের নাশক। তাহা হইলে যে সকল মিথ্যাজ্ঞান সংসারের নিদান, তত্ত্বজ্ঞানের দ্বারা সেগুলি বিনষ্ট হইলে অবশ্য মোক্ষ হইবে । সংসারের নিদান উচ্ছিন্ন হইলে আর সংসার হইতে পারে না, সুতরাং সংসারের নিদান মিথ্যাজ্ঞানের নিবৃত্তির জন্য তত্ত্বজ্ঞান লাভ করিতে হইবে। সেই তত্ত্বজ্ঞানে যখন ন্যায়বিদ্যা আবশ্যক, তখন অপবর্গকে ন্যায়বিদ্যার মুখ্য প্রয়োজন বলা যাইতে পারে। ফলতঃ এই ভাবে দ্বিতীয় সূত্রে প্রথম সূত্রোক্ত মুখ্য প্রয়োজনের পরীক্ষা হইয়াছে।
এই সূত্রে "তত্ত্বজ্ঞান" শব্দ না থাকিলেও মিথ্যাজ্ঞানের নিবৃত্তির কথা থাকায় তত্ত্বজ্ঞানের কথা পাওয়া গিয়াছে। কারণ, তত্ত্বজ্ঞান ব্যতীত মিথ্যাজ্ঞানের নিবৃত্তি আর কোনরূপেই হইতে পারে না, ইহা সৰ্ব্বসিদ্ধ । * মিথ্যাজ্ঞান বলিতে অসত্য জ্ঞান, যাহা "তাহা" নয়, তাহাকে "তাহা" বলিয়। জ্ঞান ; তাহা হইলে বুঝা গেল, বিপরীত ভ্রম জ্ঞানই মিথ্যাজ্ঞান । কিন্তু এই মিথ্যা জ্ঞান কোন্ বিষয়ে কি প্রকার, তাহা বুঝিতে হইবে। দোষের কারণ মিথ্যাজ্ঞানই এই সূত্রে উল্লিখিত হইয়াছে । কারণ, মিথ্যাজ্ঞানের নিবৃত্তি হইলে দোষের নিবৃত্তি হয়, এ কথা এই সূত্রে বলা হইয়াছে । কারণের নিবৃত্তিতেই কার্য্যের নিবৃত্তি বলা যায়, মহর্ষিও 'এই সূত্রে তাহাই বলিয়াছেন। মহর্ষি তাঁহার "প্রমেয়" পদার্থের মধ্যে দোষের উল্লেখ করিয়াছেন এবং চতুর্থাধ্যায়ে রাগ, দ্বেষ ও মোহকে "দোষ" বলিয়াছেন এবং তাহার মধ্যে মোহই সকলের মূল, মোহই সকল অনর্থের নিদান বলিয়া দোষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট ; কারণ, মোহ ব্যতীত রাগ ও দ্বেষ জন্মে না, এ কথাও বলিয়াছেন । সুতরাং সেই মোহই এই সূত্রে "মিথ্যাজ্ঞান," ইহা বুঝা যায় এবং মিথ্যাজ্ঞানের পৃথক্ উল্লেখ থাকায় তাহার কার্য্য রাগ ও ন্বেষই এই সূত্রে "দোষ" শব্দের দ্বারা · পরে মহর্ষিপুত্রেও এ কথা পাওয়া যায় - "মিথ্যোপলক্ষিবিনাশও ত্বজ্ঞান!ৎ" - ইত্যাদি সূত্র ।৪।২৩।
উক্ত হইয়াছে, ইহাও বুঝা যায় ; ভাষ্যকার প্রভৃতিও তাহাই বুঝিয়াছেন । অবশ্য মিথ্যাজ্ঞান ভিন্ন "সংশয়" প্রভৃতি আরও মোহ আছে, মোহের ব্যাখ্যায় ভাষ্যকারও তাহা বলিয়াছেন, সেগুলিও রাগ ও দ্বেষ জন্মায় এবং তত্ত্বজ্ঞানের দ্বারা সেগুলিরও নিবৃত্তি হয়। কিন্তু এখানে বিপরীত নিশ্চয়রূপ মিথ্যা জ্ঞানই মহর্ষির বক্তব্য ; কারণ, তাহাই সংসারের নিদান। এখানে মিথ্যা জ্ঞানের বিপরীত জ্ঞানরূপ যে তত্ত্বজ্ঞান মহর্ষির বুদ্ধিস্থ, তাহা তত্ত্বনিশ্চয় । নিশ্চয়াত্মক মোহের বিপরীত জ্ঞানই তত্ত্বনিশ্চয় হইতে পারে। সুতরাং "মিথ্যাজ্ঞান" শব্দের দ্বারাই মিথ্যাজ্ঞানের বিপরীত নিশ্চয়রূপ তত্ত্বজ্ঞানকে মিথ্যাজ্ঞানের নাশকরূপে সূচিত করিবার জন্য মহর্ষি অন্যত্র স্বল্পাক্ষর "মোহ" শব্দের প্রয়োগ করিলেও এই সূত্রে "মিথ্যাজ্ঞান" শব্দেরই প্রয়োগ করিয়াছেন। মহর্ষি পতঞ্জলিও "বিপর্য্যয়" বৃত্তির ব্যাখ্যায় "মিথ্যাজ্ঞান" শব্দের প্রয়োগ করিয়াছেন । ("বিপৰ্যয়ে। মিথ্যাজ্ঞানমতদ্রূপপ্রতিষ্ঠং" - যোগসূত্র। ৮) ভাষ্যকার অন্যত্র মিথ্যাজ্ঞান অর্থে "মোহ" শব্দেরও প্রয়োগ করিয়াছেন, তাহাও করা যাইতে পারে। কারণ, মিথ্যাজ্ঞানও মোহ এবং মোহের মধ্যে মিথ্যা জ্ঞানরূপ নিশ্চয়াত্মক মোহই প্রধান।
স্বত্রে যখন "মিথ্যাজ্ঞানে"র নিবৃত্তিতে রাগ ও দ্বেষ প্রভৃতি দোষের নিবৃত্তিক্রমে মোক্ষলাভের কথা বলা হইয়াছে, তখন যে সকল বিষয়ে যেরূপ মিথ্যাজ্ঞান অনাদিকাল হইতে জীবের রাগ-দ্বেষাদির নিদান হইয়। জীবকে বদ্ধ করিয়া রাখিয়াছে, তাহাই এখানে মহর্ষির অভিপ্রেত মিথ্যাজ্ঞান, ইহা বুঝা যায়। মহর্ষি চতুর্থাধ্যায়ে বলিয়াছেন - "দোষনিমিত্তানাং তত্ত্বজ্ঞানাদহঙ্কারনিবৃত্তিঃ" (৪৪২১)। অর্থাৎ যে সকল পদার্থ পূর্ব্বোক্ত দোষের নিমিত, তাহাদিগের তত্ত্বজ্ঞান হইলে অহঙ্কার নিবৃত্ত হয়। শরীরাদি পদার্থে জীবের যে আত্মবোধ বা আমিত্ব-বুদ্ধি আছে, তাহাই অহঙ্কার । জীব মাত্রেরই উহা আজন্মসিদ্ধ । মহর্ষি গোতমের মতে উহাই উপনিষদুক্ত "হৃদয়গ্রন্থি"। উহার নিবৃত্তি করিতে হইলে আত্মা শরীরাদি পদার্থ হইতে ভিন্ন, এইরূপ তত্ত্বসাক্ষাৎকার আবশ্যক। আর কিছুতেই ঐ অহঙ্কারের নিবৃত্তি হইতে পারে না। যে বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান হইয়াছে, সেই বিষয়ের তত্ত্বসাক্ষাৎকার ব্যতীত ঐ মিথ্যাজ্ঞান আর কিছুতেই বিনষ্ট হইতে পারে না, ইহা লোকসিদ্ধ - সৰ্ব্বসিদ্ধ । মহর্ষি গোতমোক্ত দ্বাদশ প্রকার প্রমেয়ের মধ্যে শরীরাদি দশ প্রকার পদার্থ পূর্বোক্ত দোষের নিমিত্ত ; এ জন্য উহাদিগকে "হেয়" বলা হয় । দুঃখই হেয় এবং দুঃখের নিমিত্তগুলিও হেয়। শরীরাদি দশ প্রকার প্রমেয়ের মধ্যে একটি দুঃখ এবং আর নয়টি দুঃখের হেতু ; সুতরাং ঐ দশটি হেয় এবং মোক্ষটি আত্মার "অধিগন্তব্য" অর্থাৎ লভ্য, জীবাত্মা উহা লাভ করিবেন। এই দ্বাদশ প্রকার পদার্থকেই মহর্ষি গোতম "প্রমেয়" নামে পরিভাষিত করিয়াছেন । ইহাদিগের তত্ত্বসাক্ষাৎকারই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ। কারণ, এই সকল পদার্থ-বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান থাকা পর্যন্ত জীবের রাগদ্বেষ থাকিবেই । তন্মধ্যে শরীরাদি পদার্থে আত্মবুদ্ধিরূপ মিথ্যাজ্ঞান যাহা সকল জীবের আজন্মসিদ্ধ এবং যাহা সকল মিথ্যাজ্ঞানের মূল, সেই অহঙ্কাররূপ মিথ্যা জ্ঞানবশতঃ জীব নিজের শরীরাদির উচ্ছেদকেই নিজের আত্মার উচ্ছেদ মনে করে। মুখে যিনি যাহাই বলুন, আত্মার উচ্ছেদ কাহারই
[ ১অ ১ আঁ
কাম্য নহে। পরন্তু জীব মাত্রই আত্মার উচ্ছেদভয়ে ভীত হইয়া আত্মরক্ষার অনুকূল বিষয়ে অনুরাগ ও প্রতিকূল বিষয়ে বিদ্বেষ করে । এইরূপ নানাবিধ রাগ-দ্বেষের ফলে জীব নানাবিধ কর্ম্ম করিয়া আবারও শরীর গ্রহণ করে। এইরূপ ভাবে অনাদি কাল হইতে জীবের জন্ম-মরণ-প্রবাহ চলিতেছে । ঐ প্রবাহ একেবারে রুদ্ধ করা ব্যতীত জীবের আত্যন্তিক দুঃখ নিবৃত্তির সম্ভাবনা নাই । উহা রুদ্ধ করিতে হইলেও উহার মূল অহঙ্কারকে একেবারে রুদ্ধ করিতে, বিনষ্ট করিতে হইবে এবং জীবের আরও কতকগুলি মিথ্যা জ্ঞান আছে, যাহা আজন্মসিদ্ধ না হইলেও সময়ে উপস্থিত হইয়া জীবের মোক্ষ-সাধনানুষ্ঠানের প্রতিবন্ধক হয়। পুনর্জন্ম নাই, মোক্ষ নাই, ইত্যাদি প্রকার অনেক মিথ্যা জ্ঞান জীবকে মোক্ষসাধনে অনেক পশ্চাৎপদ করিয়া এবং আরও বিবিধ রাগদ্বেষের উৎপাদন করিয়া সংসারের নিদান হয়। সুতরাং সংসারের নিদান মিথ্যাজ্ঞানের নিবৃত্তি ব্যতীত মোক্ষের আশা নাই। এ জন্য মহর্ষি গোতম যে সকল পদার্থের মিথ্যাজ্ঞান সংসারের নিদান, সেই সকল পদার্থকেই দ্বাদশ প্রকারে বিভক্ত করিয়া "প্রমেয়" নামে পরিভাষিত করিয়াছেন। এই সূত্রে মিথ্যাজ্ঞানের নিবৃত্তিক্রমে মোক্ষের কথা বলায়, সেই আত্মাদি "প্রমেয়" বিষয়ক মিথ্যাজ্ঞানই তাঁহার বুদ্ধিস্থ, ইহা বুঝা যায় । সুতরাং ঐ প্রমেয় তত্ত্বসাক্ষাৎকারই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, ইহাও এই সূত্রের দ্বারা বুঝা যায় । আত্মাদি প্রমেয় পদার্থ বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞানই যখন সংসারের নিদান, তখন প্রমাণ প্রভৃতি পদার্থ সাক্ষাৎকার তাহা নিবৃত্ত করিতে পারে না। এক বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান অন্য বিষয়ের তত্ত্বসাক্ষাৎকারে কখনই নষ্ট হয় না। সুতরাং মহর্ষি-কথিত ষোড়শ পদার্থের মধ্যে প্রমেয় তত্ত্বসাক্ষাৎকারই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, ইহা দ্বিতীয় সূত্রের দ্বারা মহর্ষি অনুবাদ করিয়াছেন, ইহা বুঝা গেল। "হেয়," "হান," "উপায়," "অধিগস্তব্য"-এই চারিটিকে "অর্থপদ" বলে। ইহাদিগের তত্বসাক্ষাৎকার মোক্ষে আবশ্বক এবং দ্বিতীয় সূত্রে তাহা ব্যক্ত আছে, এ কথা ভাষ্যকারও পূর্ব্বে বলিয়া আসিয়াছেন। হেয় কি, তাহা সম্যক্ না বুঝিলে, তাহার একেবারে ত্যাগ হইতে পারে না এবং যাহা "অধিগন্তব্য", তদ্বিষয়ে মিথ্যা জ্ঞান থাকিলেও তাহা পাওয়া যায় না। সকল মিথ্যাজ্ঞানের মূল অহঙ্কার নিবৃত্তি করিতে না পারিলেও শরীরাদি হেয় পদার্থকে ত্যাগ করিতে পারে না। সুতরাং ভাষ্যোক্ত চারিটি "অর্থপদকে" সম্যক্ বুঝিতে গেলে আত্মাদি দ্বাদশ "প্রমেয়" সাক্ষাৎকারই করিতে হইবে, ইহা বুঝা যায়। ফলকথা, মহর্ষির সকল কথা ( চতুর্থাধ্যায় দ্রষ্টব্য ) পর্যালোচনা করিলে বুঝা যায়, তিনি আত্মাদি "প্রমেয়" বিষয়ক মিথ্যাজ্ঞানকেই সংসারের নিদান বলিয়া ঐ "প্রমেয়" তত্ত্বসাক্ষাৎকারকেই মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ বলিয়াছেন। ভাষ্যকার প্রভৃতি প্রাচীন আচাৰ্য্যগণও তাহাই বুঝিয়া গিয়াছেন । এ জন্য ভাষ্যকার এখানে মহর্ষি-কথিত আত্মাদি দ্বাদশ "প্রমেয়" বিষয়েই মিথ্যাজ্ঞানের প্রকার বর্ণনা করিয়া সূত্রোক্ত মিথ্যাজ্ঞানের ব্যাখ্যা করিয়াছেন এবং সেই মিথ্যাজ্ঞানের বিপরীত জ্ঞানগুলির প্রকার দেখাইয়া প্রমেয় তত্ত্বজ্ঞানের আকার দেখাইয়াছেন । অর্থাৎ ঐ মিথ্যাজ্ঞানের বিপরীত জ্ঞানগুলিকেই তত্ত্বজ্ঞান বলিয়া ব্যাখ্যা করিয়াছেন।
এখানে একটি বিশেষ প্রশ্ন এই যে, মহর্ষি গোতম যে প্রমেয় তত্ত্বসাক্ষাৎকারকে মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণরূপে সূচনা করিয়াছেন, তাহার মধ্যে ঈশ্বরের উল্লেখ করেন নাই কেন? ঈশ্বরতত্ত্বজ্ঞান কি মোক্ষের কারণ নহে? ঈশ্বর কি মুমুক্ষুর প্রমেয় নহেন ? কেবল গোতমোক্ত প্রমেয় পদার্থের মধ্যেই নহে, প্রমাণাদি ষোড়শ পদার্থের মধ্যেই ঈশ্বর নাই, ইহার গূঢ় কারণ কি ? মহর্ষি গোতম কি নিরীশ্বরবাদী ? অথবা ঈশ্বর মানিয়াও মোক্ষে ঈশ্বরজ্ঞানের কোন আবশ্যকতা স্বীকার করেন না ? ভাষ্যকার প্রভৃতি ন্যায়াচার্য্যগণ এ প্রশ্নের কোন অবতারণাই করেন নাই তাঁহারা ঈশ্বর প্রসঙ্গে (৪।১।১৯।২০১২১সূত্রে ) ঈশ্বরের স্বরূপ ব্যাখ্যা করিয়াছেন, ঈশ্বর সমর্থন করিয়াছেন, কিন্তু গোতমোক্ত ষোড়শ পদার্থের মধ্যে ঈশ্বরের উল্লেখ নাই কেন, ইত্যাদি কথার কোন অবতারণাই করেন নাই ।
ন্যায়বিদ্যার যথামতি পর্যালোচনার দ্বারা আমার যাহা বোধ হইয়াছে, এখানে সংক্ষেপে তাহার কিছু আভাস দিতেছি । পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে, মহর্ষি "হেয়", "অধিগন্তব্য" এবং "অধিগস্তা" এইগুলি ধরিয়াই দ্বাদশপ্রকার প্রমেয় বলিয়াছেন। তন্মধ্যে মোক্ষ "অধিগন্তব্য", জীবাত্মা তাহার "অধিগন্ত।", অর্থাৎ জীবাত্মাই মোক্ষলাভ করেন। শরীরাদি আর দশটি "হেয়"। যাহা দুঃখ, তাহাই ত মুমুক্ষুর হেয় (ত্যাজ্য)। দুঃখের হেতুগুলিও সেই জন্য হেয়। ঈশ্বর হেয় নছেন, ইহ। সৰ্ব্বসম্মত । গৌতম মতে ঈশ্বর মুমুক্ষুর "অধিগন্তব্য" ও নহেন, মোক্ষের "অধিগন্তা" অর্থাৎ জীবাত্মাও নহেন। যাহারা জীবাত্মা ও পরমাত্মার অদ্বৈত সিদ্ধান্তের বর্ণনার জন্য এবং সেই সিদ্ধান্তানুসারে মোক্ষের উপায় বর্ণনার জন্য শাস্ত্র বলিয়াছেন, তাঁহারা ঈশ্বরকেই মুমুক্ষুর "অধিগন্তব্য" বলিয়াছেন এবং বলিতে পারেন। শুদ্ধাদ্বৈত মতে মোক্ষ ব্রহ্মস্বরূপ, জীবাত্মা ও ব্রহ্মে বাস্তব কোন ভেদ নাই, সুতরাং সে মতে ব্রহ্মসাক্ষাৎকারই জীবাত্মসাক্ষাৎকার । সে মতে ব্রহ্মের কথা আর জীবাত্মার কথা ফলে একই কথা। ব্রহ্মসাক্ষাৎকার হইলেই সে মতে জীবাত্মসাক্ষাৎকার হইল, সর্ব্বসাক্ষাৎকারই হইল। সুতরাং সেই সকল শাস্ত্রে ব্রহ্মের কথাই প্রধানরূপে-বিশেষরূপে বলা হইয়াছে। ব্রহ্মই সেই সকল শাস্ত্রের মুখ্য প্রতিপাদ্য। কারণ, সে মতে ব্রহ্মের প্রতিপাদনেই জীবাত্মা ও মোক্ষের স্বরূপ প্রতিপাদন হয়। সে মতেও জীবাত্ম সাক্ষাৎকার মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, তবে ব্রহ্মরূপে সাক্ষাৎকারই চরম কর্তব্য, এ জন্য ব্রহ্মসাক্ষাৎকারই মোক্ষের চরম কারণরূপে বর্ণিত হইয়াছে। কিন্তু যাহারা পরমাত্মা হইতে জীবাত্মার বাস্তব অত্যন্ত ভেদ পক্ষ অবলম্বন করিয়াই মোক্ষের উপায় বর্ণন করিয়াছেন, তাঁহারা ঐরূপ বলিতে পারেন না। তাঁহাদিগের মতে মোক্ষ ব্রহ্ম হইতে ভিন্ন পদার্থ, সুতরাং ব্রহ্ম মুমুক্ষুর অধিগন্তব্য নহেন। ব্রহ্ম হইতে ভিন্ন মোক্ষই মুমুক্ষুর অধিগন্তব্য অর্থাৎ লভ্য এবং তাঁহাদিগের মতে ব্রহ্ম সিদ্ধ পদার্থ বলিয়। অধিগন্তব্য হইতেও পারেন না। কারণ, সিদ্ধ পদার্থে ইচ্ছা হয় না। যাহা অসিদ্ধ, উপায়লভ্য, তাহাই ইচ্ছার বিষয় হইয়। অধিগন্তব্য হইতে পারে। আত্যন্তিক দুঃখনিবৃত্তিরূপ মোক্ষ অসিদ্ধ বলিয়া, উপায়লভ্য বলিয়া অধিগন্তব্য হইতে পারে। ঐ মোক্ষপ্রাপ্তিকেই ব্রহ্মপ্রাপ্তি বলা হয় । বস্তুতঃ উহা ছাড়া ব্রহ্মপ্রাপ্তি আর কিছু নাই - যাহ। নিত্য-সিদ্ধ, বিশ্বব্যাপী পদার্থ,
তাহার অপ্রাপ্তি অসম্ভব, এ জন্য ব্রহ্মকে *অধিগন্তব্য" বা প্রাপ্য বলা যায় না। মোক্ষবাদী সকল সম্প্রদায়ই মোক্ষকেই জীবের "অধিগন্তব্য" বলিয়াছেন । তন্মধ্যে দ্বৈতবাদী সম্প্রদায় মোক্ষকে ব্রহ্ম হইতে স্বরূপতঃ ভিন্ন পদার্থ বলিয়াই "অধিগন্তব্য" বলিয়াছেন। সেই মোক্ষ লাভের জন্য ব্রহ্ম উপাস্ত, ব্রহ্ম ধ্যেয়, ব্রহ্ম জ্ঞেয়, কিন্তু ব্রহ্ম "অধিগন্তব্য" নহেন। ব্রহ্ম অসিদ্ধ নহেন বলিয়াও মোক্ষের উপায়ের দ্বারা লভ্য নহেন। মহর্ষি গোতম দ্বৈত পক্ষ অবলম্বন করিয়াই মোক্ষের উপায় বলিয়াছেন এবং ন্যায়বিদ্যার "প্রস্থানা"নুসারে মোক্ষেপায়ের কোন অংশবিশেষই বিশেষরূপে বলিয়াছেন, এ জন্য তিনি "প্রমেয়" মধ্যে ঈশ্বরের উল্লেখ করেন নাই । জীবাত্মাদি দ্বাদশ প্রকার পদার্থকেই তিনি "প্রমেয়" বলিয়াছেন অর্থাৎ "হেয়", "অধিগন্তব্য" এবং "অধিগন্তা" অর্থাৎ যিনি মোক্ষলাভ করিবেন, এই গুলিকেই তিনি "প্রমেয়" বলিয়াছেন । উহাদিগের মিথ্যাজ্ঞানই তাঁহার মতে সংসারের নিদান । তাঁহার মতে জীবাত্মবিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান আর ব্রহ্মবিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান একই পদার্থ নহে। কারণ, জীবাত্মা ব্রহ্ম হইতে ভিন্ন পদার্থ। সুতরাং ব্রহ্মবিষয়ে মিথ্যাজ্ঞানকে তিনি অদ্বৈতবাদীর ন্যায় সংসারের নিদান বলিতে পারেন না। ব্রহ্মবিষয়ে আমিত্ব-বুদ্ধিরূপ অহঙ্কারও জীবের আজন্ম-সিদ্ধ নহে। পরন্তু ব্রহ্মবিষয়ে ভেদবুদ্ধিই অসংখ্য জীবের বদ্ধমূল হইয়া আছে । কিন্তু শরীরাদি পদার্থে আমিত্ব-বুদ্ধি সকল জীবেরই আজন্মসিদ্ধ । যে সকল জীবের ঈশ্বর বিষয়ে কোন জ্ঞানই নাই, তাহাদিগেরও জন্মাবধি শরীরাদি পদার্থে আমিত্ব-বুদ্ধি বা ঐরূপ সংস্কার বদ্ধমূল বলিয়া সৰ্ব্বসম্মত। সুতরাং ঐরূপ অহঙ্কারই প্রধানতঃ সংসারের নিদান এবং ভাষ্যোক্ত আরও কতকগুলি মিথ্যাজ্ঞানও জীবের মোক্ষ-সাধনানুষ্ঠানের প্রতিবন্ধক হইয়া সংসারের নিদান হইয়া পড়ে। ঈশ্বরবিষয়ে ঐরূপ কোন মিথ্যাজ্ঞান কাহারও হইলেও যদি তাহার গোতমোক্ত দ্বাদশ প্রকার "প্রমেয়" পদার্থে মিথ্যাজ্ঞান প্রবল না থাকে, তবে উহা মোক্ষসাধনানুষ্ঠানের প্রতিবন্ধক হয় না। ঈশ্বর না মানিয়াও আস্তিক হওয়া যায়, নিরীশ্বরবাদী সাংখ্য প্রভৃতি আস্তিক সম্প্রদায়ও মোক্ষসাধনের অনুষ্ঠান করিয়া গিয়াছেন । অনুষ্ঠানের ফলে শেষে তাঁহাদিগেরও কোন কালে ঐ মিথ্যাজ্ঞান দুরীভূত হইয়া ব্রহ্ম-জিজ্ঞাসা উপস্থিত হওয়ায় তাঁহারাও ব্রহ্মের শ্রবণ, মনন, নিদিধ্যাসনের দ্বারা ব্রহ্মসাক্ষাৎকার করিয়া ঐ মিথ্যাজ্ঞান দূর করিয়াছেন, ইহা কিন্তু আমার বিশ্বাস। যাহারা শুভ অনুষ্ঠান করেন, ভগবান্ ক্বপা করিয়া তাঁহাদিগের ভ্রম দূর করিয়া থাকেন। ফলকথা, ঈশ্বর বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞানকে সংসারের নিদান বলা অনাবশ্যক এবং পূর্বোক্ত প্রকারে উহা সংসারের নিদান হইতেও পারে না। এ জন্য মহর্ষি গোতম ঈশ্বরকে "প্রমেয়" পদার্থের মধ্যে উল্লেখ করেন নাই। জীবাত্মাকেই প্রমেয় পদার্থের প্রথমে উল্লেখ করিয়াছেন । জীবাত্মারই মোক্ষ হইবে এবং শরীরাদি পদার্থে জীবাত্মার অহঙ্কার বা আমিত্ব-বুদ্ধিই মুমুক্ষুর চরমে বিনষ্ট করিতে হইবে। আমি আমার ঐ অহঙ্কার বিনষ্ট করিতে না পারিলে কিছুতেই সংসারমুক্ত হইতে পারিব না। জীবাত্মা ব্রহ্ম বা ঈশ্বর হইতে ভিন্ন, সুতরাং ব্রহ্মসাক্ষাৎকারই জীবাত্মসাক্ষাৎকার নহে। ব্রহ্মসাক্ষাৎকার জীবাত্মসাক্ষাৎকারের জন্য পূর্ব্বে আবশ্যক হয়, সুতরাং উহা মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ নহে। জীবাত্মসাক্ষাৎকার মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, এ জন্য মহর্ষি গোতম তাঁহার "প্রমেয়"-পদার্থের মধ্যে জীবাত্মারই উল্লেখ
করিয়াছেন, ঈশ্বর বা পরমাত্মার উল্লেখ করেন নাই। ফল কথা, দ্বৈত পক্ষে যে আত্মার তত্ত্বসাক্ষাৎকার মোক্ষের সাক্ষাৎ কারণ, মহর্ষি গোতম সেই জীবাত্মাকেই "প্রমেয়" মধ্যে উল্লেখ করিয়াছেন। গোতমের পরিভাষিত "প্রমেয়" ভিন্ন আরও অনেক প্রমেয় আছে, সে সকল প্রমেয়ও মহর্ষি গোতমের সম্মত । ঈশ্বরও তাঁহার সম্মত। তবে তিনি যে ভাবে মোক্ষোপযোগী পদার্থের গ্রহণ করিয়াছেন, ঈশ্বর প্রভৃতি পদার্থ মোক্ষোপযোগী হইলেও সে ভাবে সে দিক্ দিয়া মোক্ষোপযোগী নহে । মহর্ষি গোতমোক্ত "প্রমেয়"-পদার্থগুলির তত্ত্বসাক্ষাৎকার করিতে হইবে। তত্ত্বসাক্ষাৎকার ব্যতীত মানস প্রত্যক্ষাত্মক মিথ্যাজ্ঞান নিবৃত্তি হইতে পারে না। জীব মনের দ্বারাই শরীরাদি পদার্থকে আত্ম। বলিয়া বুঝিতেছে, সুতরাং মনের দ্বারাই আত্মাদি পদার্থের তত্ত্বসাক্ষাৎকার করিতে হইবে ("মনসৈবানুদ্রষ্টব্যং" )। সুতরাং মনকে সাধনের দ্বারা ঐ তত্ত্ব সাক্ষাৎকারের যোগ্য করিতে হইবে, ঈশ্বর-প্রণিধানাদি নানাবিধ উপায় অবলম্বন করিতে হইবে; সে সবগুলি ন্যায়বিদ্যার "প্রস্থান" নহে; কারণ, ন্যায়বিদ্যা উপনিষদের ন্যায় কেবল অধ্যাত্মবিদ্যা নহে, ইহা গীতার ন্যায় "ব্রহ্মবিদ্যা" বা "যোগশাস্ত্র" নহে। "প্রস্থান" -ভেদেই শাস্ত্রের ভেদ। এক শাস্ত্রের "প্রস্থান" অন্য শাস্ত্রে বিশেষরূপে প্রতিপাদিত হইলে শাস্ত্ৰভেদ হইতে পারে না। গীতা প্রভৃতি শাস্ত্রেও ন্যায়বিদ্যা এবং অন্যান্য অনেক বিদ্যার "প্রস্থান" গুলি বিশেষরূপে বর্ণিত হয় নাই, তাহাতে সেই সকল শাস্ত্রের কোন অসম্পূর্ণতাও হয় নাই । যে শাস্ত্রের যেগুলি "প্রস্থান", সেইগুলিই তাহার বিশেষ প্রতিপাদ্য, অসাধারণ প্রতিপাদ্য। তাহাতে শাস্ত্রান্তরের "প্রস্থান"গুলি বিশেষরূপে বলা হয় নাই, তাহা বলাই উচিত নহে। অন্য শাস্ত্র হইতেই সেগুলি জানিতে হইবে । ঋষিগণ এই প্রণালীতেই ভিন্ন ভিন্ন শাস্ত্র বলিয়াছেন । প্রস্থানভেদে এবং অধিকার-ভেদেই শাস্ত্রের ভেদ হইয়াছে, উপদেশের ভেদ হইয়াছে । মহর্ষি গোতমোক্ত "প্রমেয়"-তত্ত্বসাক্ষাৎকারের জন্য পূর্ব্বে ঐ প্রমেয়গুলির শ্রবণ ও মনন করিতে হইবে। সেই প্রমেয় মননের জন্য মহর্ষি গোতম প্রমাণাদি পঞ্চদশ পদার্থের তত্ত্ব জ্ঞাপন করিয়াছেন। ঐ পঞ্চদশ পদার্থের তত্ত্বজ্ঞানের সাহায্যে মুমুক্ষু প্রমেয় পদার্থগুলির মনন করিবেন। মহর্ষি প্রমেয়-পরীক্ষার দ্বারা (তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ে ) সেই মননের প্রণালী দেখাইয়াছেন । মুমুক্ষু ঐ প্রণালীতে আত্মাদি পদার্থের মনন করিবেন এবং যত দিন পর্যন্ত লোকসঙ্গ অপরিহার্য্য থাকিবে, তত দিন পর্যন্ত বিরুদ্ধবাদী নাস্তিক প্রভৃতির সহিত বাধ্য হইয়া বিচার করিয়া নিজের শ্রবণ-মনন-লব্ধ তত্ত্বনিশ্চয় রক্ষা করিবেন। অন্য কোন উদ্দেশ্যে কখনও ঐরূপ জল্প বিতণ্ডা করিবেন না । গুরু প্রভৃতির সহিত "বাদ" পর্যান্ত করিতে পারেন। অর্থাৎ প্রমাণাদি পদার্থগুলি প্রমেয়-বিচারের অঙ্গ, উহাদিগের তত্ত্বজ্ঞানের সাহায্যে প্রমেয়গুলির মনন এবং নিজের যথার্থ বিশ্বাস রক্ষা করাই মুমুক্ষুর কার্য্য । বিরুদ্ধবাদীদিগের দৌরাত্ম্যে বৈদিক সিদ্ধান্তে সুচির কাল হইতেই আঘাত পড়িতেছে, অনেক বিচারশক্তিশূন্য ব্যক্তির বিশ্বাস নষ্ট হইতেছে, নাস্তিকতা উপস্থিত হইতেছে এবং ঐ দৌরাত্ম্যের আশঙ্কা চিরকালই আছে ও থাকিবে। এ জন্য ন্যায়বিদ্যার আচার্য্য মহর্ষি বিচারাঙ্গ "প্রমাণা"দি পদার্থের তত্ত্ব জানিতে উপদেশ করিয়াছেন এবং আত্মরক্ষার
জন্য, ধর্ম্ম রক্ষার জন্য, আস্তিকতা রক্ষার জন্য "জল্প", "বিতণ্ডা", "ছল", "জাতি" প্রভৃতিরও উপদেশ করিয়া গিয়াছেন । শেষে তিনি * স্পষ্ট করিয়াই বলিয়া গিয়াছেন যে, যেমন কোন ক্ষুদ্র বৃক্ষাদি রক্ষার জন্য লোকে কণ্টকযুক্ত শাখার দ্বারা আবরণ করিয়া রাখে, তদ্রূপ নিজের আয়াসলব্ধ তত্ত্বনিশ্চয় রক্ষার জন্য প্রয়োজন হইলে "জল্প" ও "বিতণ্ডা"ও করিতে হইবে। ঈশ্বর প্রমাণাদি পদার্থের ন্যায় "প্রমেয়"-মননোপযোগী বিচারাঙ্গ পদার্থ নহেন, এ জন্য প্রমাণাদি পঞ্চদশ পদার্থের মধ্যেও বিশেষরূপে ঈশ্বরের উল্লেখ করেন নাই। তবে বিচারে সিদ্ধান্তরূপে ঈশ্বরের যে জ্ঞান আবশ্যক, তাহা মহর্ষি-কথিত "সিদ্ধান্ত" পদার্থের তত্ত্বজ্ঞানেই হইবে। ঈশ্বর যখন সিদ্ধান্ত, মহর্ষি গোতমেরও সিদ্ধান্ত, তখন সিদ্ধান্তের তত্ত্ব বুঝিতে বলাতেই ঈশ্বরকে সিদ্ধান্তরূপে বুঝিতে বলা হইয়াছে । অবশ্য তাহাতে ঈশ্বরের বিশেষ জ্ঞান হয় না। কিন্তু প্রমেয়-মননের জন্য অথবা বাদিনিরাস করিয়া নিজের আয়াসলব্ধ তত্ত্বনিশ্চয় রক্ষা করিবার জন্য প্রমাণাদি পদার্থের ন্যায় এবং জল্প-বিতণ্ডা প্রভৃতির ন্যায় ঈশ্বরের বিশেষ জ্ঞান আবশ্যক হয় না, তত্ত্বজ্ঞান আবশ্যক হয় না । তজ্জন্যই মহর্ষি ঐ সকল পদার্থের মধ্যেও ঈশ্বরের বিশেষ উল্লেখ বা সংশয়াদি পদার্থের ন্যায় পৃথক্ উল্লেখ করেন নাই। ফল কথা, পূর্ব্বোক্ত প্রকারে যে সকল পদার্থ মোক্ষোপযোগী, মহর্ষি তাহাদিগেরই ষোড়শ প্রকারে বিশেষ উল্লেখ করিয়াছেন। ঐ ভাবে যাহারা মোক্ষের উপযোগী নহে, তাহারা অন্য ভাবে মোক্ষে বিশেষ উপযোগী হইলেও মহর্ষি সেগুলির বিশেষ উল্লেখ করেন নাই । কারণ, সেগুলি তাঁহার ন্যায়বিদ্যায় বক্তব্য নহে। মোক্ষে কত পদার্থ, কত কৰ্ম্ম উপযোগী অর্থাৎ আবশ্যক আছে, মোক্ষরাদী সকলেই কি তাহার সবগুলির বিশেষ উল্লেখ করিয়াছেন ? নিজ শাস্ত্রের প্রস্থানানুসারেই সফলে প্রতিপাদ্য বর্ণন করিয়াছেন। মহর্ষি গোতমের ন্যায়শাস্ত্র অধ্যাত্ম অংশে মনন-শাস্ত্র। শ্রুতির "মন্তব্যঃ" এই অংশে ভিত্তি স্থাপন করিয়াই এই ন্যায়শাস্ত্রের গঠন । ইহার সাহায্যে মুমুক্ষু "প্রমেয়" মনন করিবেন এবং সেই অপরিপক্ট তত্ত্বনিশ্চয়কে বিরুদ্ধবাদীদিগের আক্রমণ হইতে রক্ষা করিবেন, এই পৰ্য্যন্তই অধ্যাত্ম অংশে এই স্যায়শাস্ত্রের মুখ্য ব্যাপার । শেষে মুমুক্ষুর আর যাহা যাহা কর্তব্য, তাহার বিশেষ বিবরণ অন্য শাস্ত্রে আছে। মহর্ষি গোতমও আবশ্যক বোধে সেগুলির সংক্ষেপে উল্লেখ করিয়াছেন । তিনি চতুর্থাধ্যায়ের শেষে বলিয়াছেন যে, মোক্ষলাভের জন্য এই পর্যন্তই চরম অনুষ্ঠান নহে, ইহার জন্য যোগাভ্যাস করিতে হইবে; যম, নিয়ম প্রভৃতি যোগশাস্ত্রোক্ত সমস্ত উপায় অবলম্বন করিতে হইবে। সুতরাং মহর্ষি গোতম ঈশ্বরকে ছাড়িয়া দিয়াই মোক্ষের উপায় বর্ণন করিয়াছেন, ঈশ্বরের সহিত ন্যায়দর্শনের মুক্তির কিছুমাত্র সংস্রব নাই, এ কথাও জোর করিয়া সিদ্ধান্তরূপে বলা যায় না ।
মূলকথা, এই ন্যায়বিদ্যা মুমুঙ্কুকে আত্মাদি প্রমেয় পদার্থের মনন পর্যন্ত পৌছাইয়া দিয়া বলিয়া গিয়াছেন যে - "যাও, তুমি এখন নিদিধ্যাসনের তৃতীয় সোপানে গিয়া বসিয়া পড়, এখন তোমার
গুৱাৰ্য্যৰসাৱসংরক্ষণার্থং অল্পৰিততে বীজ প্রয়োঽসংরক্ষণার্থং কণ্টকলাখাবরণবৎ।"~্যারসূত্র, BRO ।
[ ১ অ, আ
সে অধিকার জন্মিয়াছে । প্রমেয় তত্ত্বসাক্ষাৎকারের জন্য তোমাকে এখন ঐ "প্রমেয়" পদার্থের ধ্যান, ধারণা ও সমাধি করিতে হইবে। গুরু ও শাস্ত্রের উপদেশানুসারে ঈশ্বরের উপাসনা প্রথম হইতেই করিতেছ, এখন প্রমেয়তত্ত্ব সাক্ষাৎকারের জন্য ঈশ্বরে তোমার প্রেমলক্ষণ। ভক্তির আবশ্যক হইবে। তাহার পরে ঈশ্বরের শ্রবণ, মনন, নিদিধ্যাসনের দ্বারা তাহারও তত্ত্বসাক্ষাৎকার করিতে হইবে। ভক্তির পরিপাকে ঈশ্বরসাক্ষাৎকার হইবে। তাহার পরে তোমার নিজের আত্মসাক্ষাৎকার হইবে, - প্রমেয়তত্ত্বসাক্ষাৎকার হইবে। সেই প্রমেয়তত্ত্বসাক্ষাৎকারই তোমার মোক্ষের চরম কারণ, তাহার জন্যই ঈশ্বরসাক্ষাৎকার পর্য্যন্ত আর সমস্ত সাধন আবশ্যক । আমি তোমাকে "প্রমেয়" পদার্থের "মনন" পর্য্যন্ত পৌছাইয়া দিলাম, এখন তোমার আর যাহা যাহা আবশ্যক, তাহার জন্য অধ্যাত্মশাস্ত্র, যোগশাস্ত্র আছেন, ব্রহ্মনিষ্ঠ গুরু আছেন, তুমি সেখানে যাও। আমি এত দিনে তোমার যে বিশ্বাস জন্মাইয়াছি, তাহা রক্ষা করিব, তুমি যাহাতে যে কোন ব্যক্তির নিকটে প্রতারিত না হও, প্রতারিত হইয়া যাহাতে অভীষ্ট লাভে আবার অনেক পশ্চাৎপদ হইয়া না পড়, তোমার স্থিরীক্বত সাধনপ্রণালী হইতে, সিদ্ধান্ত হইতে ভ্রষ্ট না হও, তোমার গুরূপদিষ্ট তত্ত্বে পদে পদে সন্দিহান হইয়া, পুনঃ পুনঃ গুরুর অনুসন্ধানেই সমগ্র জীবন অতিবাহিত না কর, আমি সে বিষয়ে সর্ব্বদা দৃষ্টি রাখিব । তুমি আমাকে ভুলিও না, আমাকে তোমার অনেক সময়েই আবশ্যক হইবে, আমি তোমার নিকটে থাকিয়া তোমার অনেক অন্তরায় দূর করিব, যোগশাস্ত্রোক্ত অনেক "অন্তরায়" দুর করিতে তুমি আমাকে আশ্রয় করিও। যাও, এখন তুমি নিদিধ্যাসনের তৃতীয় সোপানে গিয়া বসিয়া পড় । চতুর্থাধ্যায়ে যথাস্থানে এ সকল কথার বিশেষ আলোচনা দ্রষ্টব্য। এখানে আর বেশী বলা যায় না। - সকল কথা বিশদ করাও এখানে সম্ভব নহে ।
কেহ বলেন, আত্মবিষয়ক মিথ্যাজ্ঞানই সূত্রে 'মিথ্যাজ্ঞান' শব্দের দ্বারা কথিত হইয়াছে । উহা ছাড়া আর যে সকল মিথ্যাজ্ঞান আছে, পূৰ্ব্বোক্ত আত্মবিষয়ক মিথ্যাজ্ঞানের নাশেই সে সমস্ত নষ্ট হইয়া যায়, সুতরাং সূত্রস্থ "দোষ" শব্দের দ্বারা আত্মবিষয়ক মিথ্যাজ্ঞান ভিন্ন সমস্ত "মোহ" এবং "রাগ" ও "দ্বেষ" বুঝিতে হইবে। বস্তুতঃ মহৰ্ষিও পরে চতুর্থাধ্যায়ে অহঙ্কারনিবৃত্তির কথাই বলিয়াছেন । শরীরাদি পদার্থে আত্মবুদ্ধিই অহঙ্কার। আত্মবিষয়ক ঐরূপ মিথ্যা জ্ঞান-বিশেষকেই মহর্ষি "মিথ্যাজ্ঞান" শব্দের দ্বারা এখানে লক্ষ্য করিতে পারেন এবং এ জন্য তিনি স্বল্পাক্ষর "মোহ" শব্দ ত্যাগ করিয়াও "মিথ্যাজ্ঞান" শব্দের প্রয়োগ করিতে পারেন। কিন্তু আত্মবিষয়ক মিথ্যা জ্ঞানের নাশে অর্থাৎ আত্মার তত্ত্বজ্ঞানে অন্যবিষয়ক মিথ্যাজ্ঞানের নাশ হইতে পারে না। যে বিষয়ে মিথ্যাজ্ঞান নষ্ট করিতে হইবে, সেই বিষয়েই তত্ত্বজ্ঞান হওয়া আবশ্যক। তবে আত্মতত্ত্বজ্ঞান, ঈশ্বরতত্ত্বজ্ঞান প্রভৃতি ঐ সমস্ত তত্ত্বজ্ঞানের নিষ্পাদক হয় বটে, কিন্তু যে মিথ্যাজ্ঞানটি নষ্ট হইবে, ঠিক্ তাহার বিপরীত জ্ঞানরূপ তত্ত্বজ্ঞানটি জন্মিলেই তাহা নষ্ট হইবে, এ জন্যই ভাষ্যকার আত্মা প্রভৃতি সকল "প্রমেয়ে"ই মিথ্যাজ্ঞানের বর্ণনা করিয়া তাহাদিগের সকলেরই তত্ত্বজ্ঞানের বর্ণনা করিয়াছেন।
এখন আর একটি কথা এই যে, মিথ্যাজ্ঞান পূর্ব্বজাত এবং তত্ত্বজ্ঞানের বিরোধী। তত্ত্বজ্ঞান মিথ্যাজ্ঞানকে কি করিয়। বাধা দিবে ? যেমন তত্ত্বজ্ঞান উপস্থিত হইলে আর মিথ্যাজ্ঞান জন্মিতেই পারিবে না বলা হইতেছে, তদ্রূপ মিথ্যাজ্ঞান যাহ। পূৰ্ব্বেই জন্মিয়াছে এবং যাহা তত্ত্বজ্ঞানের বিপরীত, সুতরাং তত্ত্বজ্ঞানের বাধক, তাহা থাকিতে শুত্বজ্ঞান উপস্থিত হইতে পারে না বলিতে পারি ? যে দুইটি জ্ঞান পরস্পর বিরোধী, তাহাদিগের মধ্যে যেটি প্রথমে জন্মিয়াছে, সেইটিই প্রবল হয় ; যেমন প্রত্যক্ষ ও অনুমান পরস্পর বিরোধী হইলে, সেখানে পূৰ্ব্বজাত প্রত্যক্ষই প্রবল, এ জন্য সেখানে প্রত্যক্ষের বিরোধিতাবশতঃ অনুমান হইতেই পারে না। উদ্যোতকর এই প্রশ্নের অবতারণা করিয়া বলিয়াছেন যে, মিথ্যাজ্ঞান তত্ত্বজ্ঞানের বিপরীত হইলেও তত্ত্বজ্ঞানের বাধক হইতে পারে না । কারণ, মিথ্যাজ্ঞান সহায়শূন্য বলিয়া দুৰ্ব্বল, তত্ত্বজ্ঞান সহায়যুক্ত বলিয়া প্রবল, সুতরাং তত্ত্বজ্ঞানই মিথ্যাজ্ঞানকে বাধা দিবে। তত্ত্বজ্ঞান প্রকৃত তত্ত্বকে বিষয় করিয়া জন্মে, তাহা যথার্থ জ্ঞান, সুতরাং প্রকৃত তত্ত্ব বা প্রকৃত অর্থই তত্ত্বজ্ঞানের সহায়। প্রকৃত পদার্থটি তত্ত্বজ্ঞানের বিষয় হইয়া তাহাকে প্রবল করে। মিথ্যাজ্ঞান সেরূপ না হওয়ায় তদপেক্ষা দুৰ্ব্বল; সুতরাং তাহা পূর্ব্বজাত হইলেও পরজাত প্রবলের দ্বারা বাধিত হইতে পারে এবং তত্ত্বজ্ঞানে বিশেষ বিশেষ প্রমাণের সাহায্য রহিয়াছে। প্রমেয় তত্ত্বজ্ঞান করিতে হইলে শাস্ত্র-প্রমাণের দ্বারা প্রথমে প্রমের বিষয়ক "শ্রবণ" করিতে হইবে। তাহার পরে অনুমান-প্রমাণের দ্বারা ঐ বিষয়ে "মনন" করিতে হইবে। শেষে ঐ বিষয়ে ধ্যান, ধারণা, সমাধি করিতে হইবে । তাহার পরে প্রমেয়-তত্ত্ব সাক্ষাৎকার হইবে। সুতরাং এই প্রমেয়-তত্ত্বসাক্ষাৎকাররূপ তজ্ঞান আগমাদি প্রমাণের দ্বারা সমর্থিত হইয়া দৃঢ়মূল হওয়ায়, ইহা পরজাত হইলেও পূৰ্ব্বজাত দুৰ্ব্বল মিথ্যাজ্ঞানকে বাধা দিয়া থাকে এবং দিতে পারে এবং মিথ্যাজ্ঞান পূর্ব্বে জন্মিলেও এবং বদ্ধমূল হইয়া থাকিলেও প্রবল তত্ত্বজ্ঞান পরে জন্মিতে পারে। প্রবল হইলে সে পূৰ্ব্বে বদ্ধমূল দুৰ্ব্বলকে উন্মলন করিয়া তাহার স্থল অধিকার করিতে পারে ও করিয়া থাকে। এ কথারও যথাস্থানে পুনরালোচনা দ্রষ্টব্য। পরস্পর নিরপেক্ষ জ্ঞানের মধ্যে পরজাত জ্ঞানের প্রাবল্য বিষয়ে ভট্ট কুমারিলও "তন্ত্রবার্তিকে" অনেক কথা বলিয়াছেন ।
সূত্রে 'দুঃখ' প্রভৃতি শব্দ যে ক্রমে পঠিত, তদনুসারে "দুঃখ"ই সৰ্ব্ব প্রথম । 'জন্ম', 'প্রবৃত্তি', 'দোষ', 'মিথ্যাজ্ঞান', এই চারিটি উত্তর। ফলে ঐ চারিটি কারণ উহাদিগের প্রত্যেকের পূর্ব্বটি প্রত্যেকের কার্য্য। 'উত্তরোত্তরাপায়ে' ইহার অর্থ কারণগুলির অপায়ে । 'তদনন্তরাপায়াৎ' ইহার অর্থ তাহাদিগের কার্য্যগুলির অপায়বশতঃ। কারণের অনন্তরই কাৰ্য্য হয়, এ জন্য প্রাচীনগণ কাৰ্য্য অর্থে 'শেষ' শব্দ এবং 'অনন্তর' শব্দের প্রয়োগ করিতেন। আবার যাহার অন্তর নাই অর্থাৎ ব্যবধান নাই, অর্থাৎ বাহা অব্যবহিত, তাহাও অনন্তর শব্দের দ্বারা বুঝা যাহা অব্যবহিত পূৰ্ব্ব, তাহাকেও ঐ অর্থে 'অনন্তর' বলা যায় । মহর্ষি সেই অর্থেই এখানে অনন্তর শব্দের প্রয়োগ করিয়াছেন; ইহা যাঁহারা বলিয়াছেন, তাঁহাদিগের মতে "তদনত্তরাপায়াং" ইহার অর্থ 'তাঁহাদিগের পূর্ব্ব পূর্ব্ব পদার্থের অপায়বশতঃ' । এ পক্ষেও
| pdf |
e8aafd5d256e11fd5900047c60de51aaf5acb3ce | বিশ্বের বুকে কোনো মানুষ যাতে কোনোভাবেই নির্যাতনের শিকার না হয়, সে জন্য প্রতিবছর ২৬ জুন, আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবস পালন করা হয়। সাধারণ অর্থে কাউকে অন্যায়ভাবে শারীরিক, মানসিক অত্যাচার, আর্থিকভাবে ঠকানো এবং বৈধ অধিকার থেকে যেকোনো পন্থায় বঞ্চিত করাকে নির্যাতন বলে। তবে নির্যাতনের সবচেয়ে উত্তম সংজ্ঞা হলো, কোনো কিছু নিজ স্থান বাদ দিয়ে অন্য কোনো স্থানে প্রয়োগ করাকে। এই সংজ্ঞাটি ব্যাপক অর্থবহ। সব ধরনের নির্যাতন তথা জুলুমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
নির্যাতন একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্র ব্যাপক আকার ধারণ করেছে এটি। অন্যের ওপর অন্যায় করে নিজের পতন ও ধ্বংস ডেকে আনে অত্যাচারীরা। আপদ-বিপদ ও দুর্যোগ-বিশৃঙ্খলায় আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো জুলুম। তাই আল্লাহতায়ালা সবাইকে তা থেকে নিষেধ করেছেন।
| web |
9d1b909ff475c15a9859ce60549b1a4e70c3fe33 | চাঁদপুরে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে 'প্রাণের স্পন্দনে, প্রকৃতির বন্ধনে' বিশ্ব পরিবেশ দিবসে প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপি রাজনৈতিক কর্মোদ্যোগ ও জনসচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে -র্যালি এবং চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ' নদী রক্ষা,বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ,বায়ু ও শব্দ দূষণ রোধ' ইত্যাদির ওপর তথ্যচিত্র বা ডকুমেন্টরি ফিল্ম প্রদর্শন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সবুর মন্ডল ও বিশেষ অতিথি থাকবেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম,জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী (দুলাল) ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.মাসুদ হোসেন ।
| web |
cd08c6948ad9c9fd13baa6636661b48abfa698ba | নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালঃ: ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক নারী ফুটবলারকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সাল ফকির (৩৬) নামের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ফয়সাল ফকির উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি পৌর শহরের পাছপাড়া গ্রামের লাল মিয়া ফকিরের ছেলে।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে পৌর শহরের নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পেছনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার (২৩ এপ্রিল) ওই নারী ফুটবলার বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তবে, নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ধর্ষণচেষ্টার মামলা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বাদী।
বুধবার ভুক্তভোগী ওই নারী ফুটবলার সাংবাদিকদের বলেন, ফয়সাল পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা হওয়া আগে থেকেই পরিচিত। ঘটনার দিন সকালে ফয়সাল ফোন করে বলেন, 'উপবৃত্তির ফরমে সই দিতে হবে, তাড়াতাড়ি নান্দাইলের শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে আসো'। সরল বিশ্বাসে আমি কলেজের গেটে গিয়ে তাকে ফোন করি। ফোন করলে তিনি আমাকে কলেজের পেছনে যেতে বলেন। কলেজের পেছনে যেতেই মুখ চেপে ধরেন। এসময় চিৎকার করলে আশপাশ থেকে দু-তিনজন মানুষ আসতে চাইলে ফয়সাল তাদের চাকু দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিলে তারা পালিয়ে যান। কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম আমার চিৎকার শুনে কাছে আসতে চাইলে তাকেও চাকু দেখিয়ে ভয় দেখালে তিনিও সেখান থেকে পালিয়ে যান।
আপনি এ ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছিলেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাইনি'। পুলিশ তদন্ত করতে কলেজে এসেছিল কি না এমন প্রশ্নে অধ্যক্ষ বলেন, 'পুলিশ কোনো প্রকার তদন্ত করতে কলেজে আসেনি'।
| web |
a4b33a3d5e40a2e4163084d9bd49684fdb0b4927 | লালমনিরহাট সদর উপজেলায় অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির এক কিশোরীর বাল্যবিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সদর থানার এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর থানার ওই উপপরিদর্শক (এসআই) নির্দেশে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। তবে বাল্যবিয়ে হওয়ায় দালিলিক কোনো প্রমাণ রাখেনি স্থানীয় কাজী অফিস।
বিয়ের কয়েক দিন পর বর ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ওই কিশোরীর পরিবারকে জানানো হয়, বর ও কনের ইতিমধ্যেই তালাক হয়ে গেছে। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর কিশোরীর পরিবার বিষয়টি লিখিতভাবে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানায়। একই দিন ডাকযোগে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজিকে জানানো হয়েছে ঘটনাটি।
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, সদর উপজেলার শাহীন আলম (২৪) ওই কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কিশোরী রাজি না হওয়ায় শাহিন ওই কিশোরীর ছবি সম্পাদনা করে আপত্তিকর ভিডিও বানান। অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখান তিনি। একপর্যায়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শাহীন। এতে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে শাহীন আলম কিশোরীকে গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতে থাকেন। গত ২৫ জুলাই লালমনিরহাট শহরের একটি ক্লিনিকে কিশোরীর গর্ভপাত করা হয়। এরপর তিনি কিশোরীকে ক্লিনিকে রেখে পালিয়ে যান। পরে এক ভ্যানচালকের সহায়তায় বাড়িতে ফিরে ওই কিশোরী পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওই কিশোরীর বাবা গত ১১ আগস্ট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানার এসআই মাইনুল ইসলাম কিশোরীকে শাহীনের সঙ্গে বিয়ের পরামর্শ দেন। এরপর এসআই মাইনুলের নির্দেশে গত ২৩ আগস্ট মহেন্দ্রনগরের কাজি অফিসে শাহীনের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের প্রমাণ হিসেবে কোনো কাবিননামা করা হয়নি।
পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করলে কাজী শহীদুল ইসলাম মেয়ের বাবাকে জানান, মেয়ের বয়স কম, তাই কাবিননামা এখন দেয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে পরে তুলে নেয়া হবে, আশ্বাস দিয়ে কাজী অফিস থেকেই ওই কিশোরীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কয়েক দিন পর শাহীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিয়েতে কোনো কাবিননামা সই হয়নি। তাই শাহীনের সঙ্গে ওই কিশোরীর তালাক হয়ে গেছে।
বিয়ে ও তালাকের বিষয়ে অভিযুক্ত শাহীন আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে কাজী অফিসের শহীদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন।
এসআই মাইনুল ইসলাম প্রথমে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন না। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পর তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছেন। কিশোরী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল বলে গ্রামবাসীর পরামর্শে বিয়ের কথা শুনেছেন।
কিশোরীর বাবার অভিযোগের বিষয়ে লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ঘটনায় এসআই মাইনুল বা অন্য কারও বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাবনা সদর থানায় ধর্ষকের সঙ্গে 'জোরপূর্বক' বিয়ের ঘটনায় ওই থানার ওসি ওবায়দুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.
| web |
526da6079f7ee8b97de6966174389d38363539a1 | বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কয়েক মাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতি ( Recruitment Scam) ইস্যুতে জেরবার রাজ্য সরকার। চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন-অনশন, মামলা, বিরোধ সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে প্রায় ৬ বছর পর প্রাথমিকের টেট (Primary TET) পরীক্ষা নিচ্ছে পর্ষদ। এমন পরিস্থিতিতে হাজার ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও নির্বিঘ্নেই কাটলো প্রাথমিক টেট পরীক্ষা, গর্ব সহকারে এমনটাই জানালেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) ।
এবারের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭ লক্ষ পার। পর্ষদের কড়া নজরদারির ও নিরাপত্তার ব্যবস্থার মধ্যে পরীক্ষা হতে চলেছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। তা সত্ত্বেও টেট পরীক্ষা বানচাল করার চেষ্টা হতে পারে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন সভাপতি। আশঙ্কাকে সত্যি করে পরীক্ষার দিন সোশ্যাল মিডিয়া রমরম করেছিল কয়েকটি প্রশ্নপত্র। যার সাথেই রয়েছে উত্তরও। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পরে যায় নেট মহলে। দাবি করা হচ্ছিল, টেট প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।
ঘটনা চাওর হতেই বিষয়ের কড়া তদন্তে নামে পর্ষদ। পরে পুলিশ ও সাইবার সেলকে খবর দেওয়া হলে তারা প্রশ্নপত্র যাচাই করে দেখেন পুরোটাই ভুয়ো। এই বিষয়েই মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যাতে সুষ্ঠুভাবে টেট নিতে না পারে, পরীক্ষা বানচাল করা যায়, তার অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। বিরোধীরা বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কড়াহাতে পর্ষদ সেই বিপত্তি এড়িয়ে পরীক্ষা নিল। এখনও পর্ষন্ত নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা। " তীক্ষ্ম কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নজরদারির সাথে সাথে স্পর্শকাতর জেলায়, পরীক্ষাকেন্দ্রে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রিত হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
পরীক্ষার দিন সকাল থেকে নিজ দপ্তরে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এদিন হাজির রয়েছেন তিনি। সাথেই তিনি এও বলেন পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় নজর রাখছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ছিল, টাকার বিনিময়ে নাকি আগাম বিক্রি হচ্ছে টেটের প্রশ্নপত্র। তবে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ কার্যত তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানালেন "নির্বিঘ্নেই কেটেছে টেট "।
| web |
776ed273f91b618c6f937d48433327b11f1db5ae | খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং দুই শিক্ষককে অপসারণের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার তিন শিক্ষকের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদনটি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি খুবির ওই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়। কার্যকর পদেক্ষপ না নেওয়ায় হাইকোর্টে এ আবেদনটি করা হয়।
| web |
14273e208ba7800e30785cbbe4d94d3a901cf219 | প্রায়শই গ্রামের লোকেরা শহরে এসে তাদের নিজস্ব ব্যবসা শুরু করে, কারণ তারা মনে করে যে গ্রামে তাদের নিজস্ব ব্যবসা শুরু করে কোনও লাভ হবে না। আপনি যদি গ্রামে থাকেন এবং আপনিও এইরকম চিন্তা করেন, তবে আপনি সম্পূর্ণ ভুল ভাবছেন, কারণ এটি মোটেই এমন নয়।
হ্যাঁ, বর্তমানে গ্রামে নিজের ব্যবসা শুরু করা একটি লাভজনক চুক্তি। আমরা এটা বলছি কারণ গ্রামের মানুষের জন্য আমাদের কাছে 2টি ব্যবসায়িক ধারণা রয়েছে , যা গ্রামের লোকেরা খুব সহজেই শুরু করতে পারে। এই ব্যবসা শুরু করতে আপনার খুব বেশি খরচ লাগবে না। অর্থাৎ অল্প খরচে গ্রামে থেকে আপনি লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে কৃষির পরিধি কতটা বেড়েছে তা সবারই জানা। আজ মানুষ কৃষি থেকে এত বেশি মুনাফা অর্জন করছে যে তাদের অন্য কোন কাজ করার প্রয়োজন নেই।
আমরা যদি কৃষির কথা বলি, তাহলে এতে ২টি জিনিসের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রথমটি বীজ ভান্ডার এবং দ্বিতীয়টি কোল্ড স্টোরেজ। আপনাকে যা করতে হবে তা হল তাদের ব্যবসা শুরু করা । আপনি যদি গ্রামে থেকেই একটি গ্রাম ব্যবসার আইডিয়া শুরু করতে চান তবে আপনি এই 2টি ব্যবসা গ্রহণ করতে পারেন। এটি আপনাকে অনেক মুনাফা দেবে, তাই আসুন এই ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই কৃষিকাজ করেন, এমন পরিস্থিতিতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের সার ও বীজের প্রয়োজন হয়। আপনি যদি গ্রামে বা শহরে থাকেন তবে আপনি একটি সার এবং বীজের দোকান খুলতে পারেন। বিশেষ বিষয় হল আপনি সরকার থেকে সার ও বীজের ভর্তুকির সুবিধাও নিতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এতে আপনি লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
প্রায়শই কোল্ড স্টোরেজের সুবিধা গ্রামের কাছাকাছি বা দূর-দূরান্তে পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় কৃষকের ফল ও সবজি নষ্ট হয়ে যায়। আপনি যদি গ্রামে অবস্থান করে ব্যবসা করতে চান তবে আপনি নিজের কোল্ড স্টোরেজ শুরু করতে পারেন। যদিও এতে খরচ একটু বেশি হবে, কিন্তু আপনি এই ব্যবসা থেকে খুব ভালো রিটার্নও পাবেন।
| web |
7b504a8ae2376c656eac1b9b87ebe5adb8dcb3df | নয়াদিল্লিঃ নিয়ন্ত্রক এবং আইন প্রণেতাদের চাপে পড়ে নাম বদলাতে পারে ফেসবুক ! ফেসবুকের ব্যবসায়িক কাজকর্ম নিয়ে অনেকদিনই বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হয়েছে। নানাভাবে চাপের মুখেও পড়েছে এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট সংস্থা। এবার ফেসবুক ব্র্যান্ড নতুন নাম নিয়ে অবতীর্ণ হওয়ার কথা ভাবছে। দ্য ভার্জে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, নাম পরিবর্তন করে আগামী সপ্তাহে নতুন ভাবে আসতে পারে জুকেরবার্গের সংস্থা।
ভার্জের রিপোর্টে দাবি, নাম বদলে ফেলার পরিকল্পনা করছে ফেসবুক (facebook)। খবরে প্রকাশ, মার্ক জুকেরবার্গ তাঁর কোম্পানির নাম বদলে ফেলতে পারেন শীঘ্রই। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ফেসবুক সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হলেও এখন একাধিক প্ল্যাটফর্ম তারা চালায়। যার মধ্যে বেশকিছু ব্যবসায়িক কাজকর্মও চলে।
জানা যাচ্ছে, চলতি মাসের ২৮ তারিখ এই নাম বদল হতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করবেন জুকেরবার্গ। শোনা যাচ্ছে, নতুন নাম হবে ব্র্যান্ডের। এই ছাতার তলায় থাকবে একাধিক সংস্থা। একের সংস্থার একেক রকম কাজ। তার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি হয়ত থেকে যাবে ফেসবুক নামেই। শুধু ব্র্যান্ডের নাম বদলে যাবে।
জুকেরবার্গের প্রতিষ্ঠান এই নিয়ে কোনও বিবৃতি জারি করেনি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন নাম ঘোষণা হতে পারে। এই নতুন নামটি কী হবে তা নিয়ে কেউ কোনও ধারণা দিতে পারছে না এখনই।
ফেসবুক সংস্থার ছাতার তলায় ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডও রয়েছে। এর মধ্যে গুগল অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড মাদার সংস্থার অধীনস্থ একটি ব্র্যান্ড। ভার্জের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই রিব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে সম্ভবত ফেসবুকের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি একটি মূল ব্র্যান্ডের অধীনে অনেক প্রোডাক্টের মধ্যে একটি হিসেবে থাকতে পারে। অর্থাৎ ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ওকুলাস ইত্যাদি পরিষেবার মধ্যে একটি হিসাবে ফেসবুক থাকবে একটি মাদার ব্র্যান্ডের অধীনে।
| web |
10bd78d955872f8c38d74f1e46c53cdbc663167e838b69619f51fe62a8994b4b | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পসংগ্রহ বিশ্বাস করবার মতো নয়। মেজকর্তার হাতের পিঠে একটা শাদা উজ্জ্বল দাগ - তার ভেতরে রক্তের আভা। নিঃসন্দেহে কুণ্ঠ। অথচ বড়কর্তার হাত - সে হাড় ছিল অম্লান, চাঁদের মতো নিষ্কলঙ্ক।
মুখে মাথায় দিতে গিয়ে চরণামৃত নীলমণির পায়ে পড়ে গেল । ঝাড়লণ্ঠনের আলোয় কুষ্ঠের অনিবার্য নিঃসন্দেহ দাগটা পাঁচটা সোনার আংটির চাইতে বেশী জ্বলজ্বল করছে। নীলমণি শুনেছিল, বেশী সোনারূপো ঘাঁটলে নাকি হাতে কুণ্ঠ হয় মানুষের।
রাত্রের বিলের মধ্য দিয়ে নীলমণির নৌকো চলছিল।
পুঁ'টি একপাশে ছোট আর ঘন হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে - চারপাশে ছড়ানো রয়েছে তার খেলনাগুলো। অন্ধকার ধানবনের ভেতর দিয়ে নৌকো চলেছে নীলমণির।
নির্জন - নিস্তব্ধ পৃথিবী। চাঁদ ডুবে যাওয়া কালো আকাশ, শুধু তারার একটা তরল আলো জলের ভেতর থেকে প্রতিফলিত হয়ে পড়ছে। কোনোখানে জনমানবের সাড়া-শব্দ নেই, শুধু নীলমণির নৌকোর লগি পড়ছে : ছপ্~~ছপ্ - ছপ্ -
কাসেম ফকিরের ধানবন। শিরশিরে বাতাস - ধানের শীষে শীর্ষে যেন অশরীরী কান্না। লগির ঘষায় নীলমণির হড়ো আঙুলের নীচে খচ খচ করে জ্বালা করছে।
হঠাৎ নীলমণির যেন চমক লাগল। যে জায়গাটার ছাল ছড়ে গিয়েছে - সেখানে শাদা মতোন ওটা কিসের দাগ দেখা যাচ্ছে চকচক করে উঠছে তারার আলোয়। ঝাড়-লণ্ঠনের তীব্র শিখায় মেজকর্তার হাতে সে যা দেখেছিল - এ কি তাই? কুণ্ঠ ?
| pdf |
d5f3823982f54e697a83679d26873c2353094ecf8166acb3d61d03221439b692 | সন্দেহ কি? সেই জন্য তিনি রামচন্দ্রের সহিত স্বীয় কন্যা বিন্দুমতীর বিবাহ প্রদানে ইচ্ছুক হন। এই বিবাহের কথা অনেক দিন পূর্ব্বে স্থির হইয়াছিল। সম্ভবতঃ রামচন্দ্রের পিতা কন্দর্পনারায়ণ জীবিত থাকিতেই তাহার সূচনা হইয়া থাকিবে। কিন্তু বর ও কন্যা উভয়ে অল্পবয়স্ক হওয়ায় বিবাহ কাৰ্য্য সম্পন্ন হইতে বিলম্ব ঘটিয়াছিল । ১৫৯৯ খৃঃ অব্দে পাদরী ফনসেক। রামচন্দ্রকে অষ্টবর্ষীয় বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন।
অব্দে তাঁহাদের বিবাহ হয় বলিয়া জানা যায়। তাহা হইলে সে সময়ে তাঁহার বয়স একাদশ বা দ্বাদশ হওয়াই সম্ভব। পাদরী ফার্ণাণ্ডেজ উক্ত ১৫৯৯ খৃঃ অব্দে কুমার উদয়াদিত্যকে দ্বাদশবৎসরবয়স্ক বলিয়াছেন । তাহা হইলে এ সময়ে তাঁহার বয়স পঞ্চদশ বা ষোড়শ হইতে পারে। ১৬০২-৩ খৃঃ অব্দে যে রামচন্দ্রের বিবাহ হয়, তাহার বিশেষ প্রমাণও আছে। ১৬০২ খৃঃ অব্দে পটু গীজ সেনাপতি কার্ভালো সনদ্বীপ পরিত্যাগ করিয়া শ্রীপুরে কেদার রায়ের নিকট উপস্থিত হইলে আরাকানরাজ সনদ্বীপ অধিকার করেন। ডুজারিক বলেন যে, তিনি সেই সময়ে বাকলা পর্যন্ত অধিকার করিয়াছিলেন। বাকলায় যে মগগণ অত্যাচার করিয়াছিল, আমরা পূর্ব্বে তাহার উল্লেখ করিয়াছি। এই সময়ে রামচন্দ্র রায় রাজ্যে উপস্থিত না থাকায় এবং তাঁহাকে অল্পব জানিয়া আরাকানরাজ বাকলা অধিকারে সমর্থ হইয়াছিলেন। আমরা জানিতে গারি যে, রামচন্দ্র রায় ঐ সময়ে যশোরে অবস্থিতি করিতেছিলেন, এবং সেই সময়েই তাঁহার বিবাহ সম্পন্ন হয়। কারণ, এই বিবাহসময়েই প্রতাপাদিত্য তাহার হত্যার চেষ্টা করিয়াছিলেন। এ কথা পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে। রামচন্দ্র যে খাল দিয়া আপনার চৌষট্টিক্ষেপণীযুক্ত নৌকায় প্রস্থান করিয়াছিলেন, তাহাকে খোন্তাকাটার খাল কছে। • ফলতঃ প্রাচীন যশোর ও উপকণ্ঠ মানচিত্র দেখ
১৬০২-৩ খৃঃ অব্দে যে রামচন্দ্রের বিবাহ হয়, এবং প্রতাপ তাঁহার রাজ্য ও সমাজ অধিকারের জন্য যে সে সময়ে তাঁহার হত্যার চেষ্টা করিয়াছিলেন, ইহাই স্থির হইয়া থাকে। রামচন্দ্রের হত্যার চেষ্টা যে প্রতাপের আর এক নিষ্ঠুরতার নিদর্শন, তাহাতে সন্দেহ নাই। সে সময়ে তাহার হৃদয় এত কঠোর হইয়া উঠিয়াছিল যে, তিনি আপনার স্নেহময়ী কন্যাকে পর্যন্ত বিধবা করিতে উত্থত হইয়াছিলেন। উত্তরকালে প্রতাপের নিষ্ঠরতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইতেই ছিল। এই জন্য তিনি উচ্চ লক্ষ্য ভ্রষ্ট হইয়া কেবল প্রভুত্ব ও রাজ্য বিস্তৃতির আকাঙ্ক্ষায় আপনার হৃদয় পরিপূর্ণ করিয়া তুলিয়াছিলেন ।
রামচন্দ্র যশোর হইতে প্রস্থান করিয়া অল্পকালের মধ্যেই বাকলা পুনরধিকার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। তিনি স্বীয় পত্নী বিন্দুমতীকে আনয়ন করিতে কোনরূপ চেষ্টা করেন নাই। কয়েক বৎসর পরে, সম্ভবতঃ প্রতাপের পতনের পর
বিন্দুমতী নিজেই নৌকারোহণে বাকলায় গমন করেন। তিনি রাজধানীর অনতিদূরে অনেক দিন পর্যন্ত নৌকাতে অবস্থিতি করিয়াছিলেন । সম্ভবতঃ তিনি এইরূপ মনে করিয়াছিলেন যে, রাজা রামচন্দ্র তাঁহার আগমন সংবাদ পাইয়া, তাঁহাকে সমাদরে রাজধানীতে লইয়া যাইবেন। যে স্থানে তিনি অবস্থিতি করিতেন, তাঁহার ও তাঁহার সঙ্গী লোক জনের ব্যবহারোপযোগী দ্রব্যের বিক্রয়ের জন্য সপ্তাহে দুইবার করিয়া তথায় হাট বসিত । সেই স্থান কালে "বৌঠাকুরাণীর হাট" নামে প্রসিদ্ধ হয়, অ্যাপি তাহা সেই নামেই অভিহিত হইয়া থাকে। * তাহার পর তিনি তথা হইতে অন্য একটি স্থানে উপস্থিত হইয়। একটি বৃহৎ দীঘি খনন করাইতে আরম্ভ করেন। তাঁহার এই সমস্ত কীর্তির কথা রাজার কর্ণগোচর হইলে রাজা
চন্দ্রদ্বীপের রাজবংশ দেখ।
তাঁহার বিষয় অনুসন্ধান করিতে প্রবৃত্ত হন, কিন্তু তাঁহার কোনই পরিচয় পান নাই । রাজমাতা তাঁহার বিষয় অবগত হইয়া স্বয়ং নৌকাতে আসিয়া বিন্দুমতীর সহিত সাক্ষাৎ করেন । পরে তিনি বধূকে রাজবাটীতে লইয়া যান। কিন্তু রামচন্দ্র তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করেন নাই। তজ্জন্য বিন্দুমতী ক্ষুণ্ন মনে চন্দ্রদ্বাপ পরিত্যাগ করিয়া কাশী যাত্রা করেন। রামচন্দ্র তাঁহার সহিত যে দুর্ব্যবহার করিয়াছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই কারণ, তিনি বিন্দুমতীর জন্যই আত্মরক্ষা করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, যে সাধ্বী পতিপ্ৰাণ। বিন্দুমতী তাঁহার প্রাণ রক্ষা করিয়া আবার নিজেই তাঁহার দর্শনলাভে উপস্থিত হইয়াছিলেন, রামচন্দ্রের তাঁহাকে প্রত্যাখ্যান করা যে সাধুজনোচিত হয় নাই, ইহা স্বীকার করিতেই হইবে। বিন্দুমতী কাশী হইতে পুনরাগত হইয়াছিলেন কি না জানা যায় না। *
পটু গীজ সেনাপতি কার্ভালো সনদ্বীপ অধিকার করিলে আরাকানরাজ সেলিমস। তাহ। 'অধিকারের জন্য সচেষ্ট হন। সেই সময়ে পর্তুগীজ গণের সহিত তাঁহার বিবাদ উপস্থিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে তাহাদের বাণিজ্য-শুল্ক লইয়া বিবাদ বাধিয়া উঠে। এই সময়ে মগেরা কতকগুলি খৃষ্টানকে ক্রীতদাস করিবার জন্য উদ্যোগী হইলে পাদরী ফার্ণাণ্ডেজ তাহাতে বাধা প্রদান করেন তজ্জন্য তাহারা তাঁহাকে প্রহার করিয়া তাঁহার একটি চক্ষু নষ্ট করিয়া দেয়, ও তাঁহাকে কারাগারে নিক্ষেপ করে। বাউয়েসও কারাগারে বন্দী হইয়াছিলেন। ১৬০২ খৃঃ অব্দের ১৪ই নবেম্বর উক্ত কারাগারেই ফার্ণাভেজের মৃত্যু হয়। বাউয়েস শৃঙ্খলাবদ্ধ অবস্থায় তাঁহাকে তথায় সমাহিত করেন। পরে তাঁহারা মুক্তিলাভ করিয়া চট্টগ্রাম পরিত্যাগ করিয়া সনদ্বীপে উপশ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র রায় চৌধুরী প্রভৃতি রামচন্দ্রের পুত্র কীর্তি নারয়ণকে হিন্দুতর গর্ভজাত বলিয়াছেন। ইহার কোন প্রমাণ আছে কি না আমরা অবগত নহি।
স্থিত হন। সনদ্বীপ আরাকানরাজ কর্তৃক আক্রান্ত হইলে পটু গীজেরা শ্রীপুর, বাকলা ও চ্যাণ্ডিকানে গমন করে। কার্ভালো প্রথমে শ্রীপুর, তাহার পর চ্যাণ্ডিকানে উপস্থিত হয়। পাদরীরাও চ্যাণ্ডিকানে উপস্থিত হইয়াছিলেন। সাগরদ্বীপে অবস্থিতি করার পূর্ব্বে কার্ভালো গুলো বা হুগলীতে গমন করেন। * তথায় মোগলদিগের একটি দুর্গে ৪০০ সৈন্য অবস্থিতি করিত। কার্ভালো অল্পসংখ্যক পটু গীজের সহিত তাহাদিগকে আক্রমণ করিলে, একজন ব্যতীত তাহাদের সকলে নিহত হয়। ইহাতে কার্ভালোকে সমস্ত বঙ্গদেশে অত্যন্ত সাহসিক বলিয়া প্রচার করে। গুলোবন্দর অধিকার করিয়া কার্ভালো সনদ্বীপ অধিকারের জন্য আপনার জাহাজাদির সংস্কার করিতেছিলেন। এই সময়ে আরাকানরাজ সন্দ্বীপ অধিকার করিয়া বাকলা অধিকার করিলে, যশোর রাজ্যের প্রতিও তাঁহার দৃষ্টি নিপতিত হয় । প্রতাপাদিত্য তাঁহাকে সন্তুষ্ট করার জন্য কার্ভালোকে ধৃত করার ইচ্ছা করেন, এবং তাঁহাকে আহ্বান করিয়া পাঠান। কার্ভালো তিনখানি সুসজ্জিত রণতরি ৫• খানি জেলিয়া ও একদল সৈন্যের সহিত উপস্থিত হইলে, রাজা তাঁহার প্রতি সমাদর প্রদর্শন করিয়! তাঁহাকে খেলাত প্রদান করেন এবং সত্বরই আরাকানরাজের বিরুদ্ধে যাত্রা করিবেন বলিয়া আশ্বাস দেন। কিন্তু ১৫ দিন অতিবাহিত হইলেও তাহার কোনই আয়োজন হয় নাই । প্রতাপাদিত্য ইতিমধ্যে আরাকানরাজের সহিত গোপনে মিলন করিয়া কার্ভালোকে ধৃত করিতে সচেষ্ট হন। প্রতাপাদিত্য সেই সময়ের মধ্যে যশোরেও গমন করেন। তাঁহার মনোভাব বুঝিতে না পারায় পাদরীরা কার্ভালোকে স্থানান্তরে যাইবার পরামর্শ দেন। কিন্তু
* ডুজারিক গুলোকে গঙ্গার মোহানা হইতে ৫• লীগ বা ১৪০ ক্রোশ খলেন ; ফার্ণাভেজের ১৫৯৯ খৃঃ অব্দের ১৬ই ফেব্রুয়ারি তারিখের পত্রে ২১ মাইল আছে। মূল ৪৭৩ পৃঃ দেখ।
কার্ভালো রাজার নিকট হইতে সুস্পষ্টরূপে সমস্ত অবগত হইবার জন্য যশোরে উপস্থিত হন। তথায় ৩ দিন পর্যন্ত রাজার সহিত তাঁহার সাক্ষাৎ হয় নাই। তৃতীয় দিবসে তিনি রাজদবারে আহূত হইলে, কয়েকজন পটু গীসহ তিনি তথায় উপস্থিত হন। সেই সময়ে তাঁহাদিগকে ধৃত করিয়া শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। তাহার পর তাঁহাকে হস্তিপৃষ্ঠে আরোহণ করাইয়া রাজসেনাপতি সসৈন্যে তাঁহাকে লইয়া যান। কারাগার তাঁহার অবস্থিতির স্থান নিদ্দিষ্ট হইয়াছিল। অবশেষে সেই কারাগারে তাঁহার হত্যা সম্পাদিত হয়। * ১৬০৩ খৃঃ অব্দের প্রথমেই এই ভীষণ ব্যাপার সংঘটিত হইয়াছিল। কার্ভালোর মৃত্যুসংবাদ মধ্যরজনীতে সাগরদ্বীপে পঁহছে। তথায় যে সমস্ত পটুগীজ অবস্থিতি করিতেছিল, তাহাদিগকেও বন্দী ও কার্ভালোর জাহাজাদিও অধিকার করা হয়। পাদরীদিগের প্রতি নানা প্রকার সন্দেহ হওয়ায় তাঁহাদিগকে যশোর রাজ্য পরিত্যাগ করার জন্য আদেশ প্রদত্ত হইয়াছিল। তাঁহাদের গির্জা ভূমিসাৎ করা হয়, এবং বন্দিগণ তিন সহস্র মুদ্রা দিয়া নিষ্কৃতি লাভ করে। কার্ভালোর হত্যা যে-প্রতাপাদিত্যের নিষ্ঠুরতার আর একটি দৃষ্টান্ত, ইহা অস্বীকার করা যায় না। কার্ভালো যেরূপ বিশ্বাসী ও সাহসী সেনাপতি ছিলেন, তাঁহাকে ঐরূপ শোচনীয়ভাবে হত্যা করা প্রতাপের ন্যায় বীরপুরুষের যে কলষ্ট, তাহা আমাদিগকে স্বীকার করিতেই হইবে। কেদাররায়ের অধী কার্ভালো যেরূপ বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহাতে তাঁহাকে সাধুবাদ না দিয়া ক্ষান্ত হওয়। যায় না। তিনি সেইরূপ বিশ্বস্ততাসহকারে প্রতাপের রণতরী ও সৈন্য পরিচালন করিবেন বলিয়াই তাঁহার নিকট উপস্থিত হইয়াছিলেন । কিন্তু আরাকানরাজের ভয়ে প্রতাপ তাঁহাকে এ জগৎ হইতে অপসারিত করিয়া দেন। অবশ্য প্রতাপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্যই কার্ডামূল ৪৫৭-৫৮ পৃঃ দেখ ।
লাকে হত্যা করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। কিন্তু তিনি যদি আরাকান রাজের ভয় না করিয়া তাঁহাকে আপনার রণতরী ও সৈন্য পরিচালনে নিযুক্ত করিতেন, তাহা হইলে হয়ত বাঙ্গলার রাজনৈতিক জগতে আর এক দৃশ্যের উদয় হইত। ফলতঃ প্রতাপ কর্তৃক কার্ভালোর এরূপ শোচনীয় হত্যার সমর্থন করা যায় না
যে সময়ে প্রতাপ আপনার বলসঞ্চয় করিয়া অসীম পরাক্রমশালী হইয়া উঠিতেছিলেন, সে সময়ে বাঙ্গলায় অনেক রাজনৈতিক বিপ্লব
সংঘটিত হইয়াছিল। আজিম খাঁর পরে সাহাবাজ খাঁ কুম্বু বাঙ্গলার সুবেদার নিযুক্ত হন। তৎকালে পাঠানগণ পূর্ব্ববঙ্গ ও উড়িষ্যায় স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া, মোগল সৈন্যের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়। পূৰ্ব্ববঙ্গে ইশা খাঁ ও উড়িষ্যায় কতলু খাঁ মোগলদিণের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থিত হন। মাশুম খাঁ কাবুলী বিদ্রোহী হইয়া ইশা ও কতলুর সাহায্য গ্রহণ করিয়াছিল। সাহাবাজ খাঁ পূর্ব্ববঙ্গের যুদ্ধে লিপ্ত থাকায় ওয়াজির খাঁকে কতলুর দমনে প্রেরণ করেন। ওয়াজিরের সহিত যুদ্ধে কতলু পরাজিত হইয়া উড়িষ্যার জঙ্গলে পলাইয়। যান। পরে তাঁহাকে উড়িষ্যা প্রদান করিয়া শান্ত করা হয় । ইশা খাঁও সাহাবাজের সহিত কয়েকটি যুদ্ধের পর শান্তভাব অবলম্বন করেন। সাহাবাজের পর ওয়াজির অল্পদিনের জন্য সুবেদার নিযুক্ত হইয়াছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর পর রাজা মানসিংহ বাঙ্গলা, বিহারের সুবেদার হইয়া আসেন। এই সময়ে কতলু খাঁ পশ্চিম বঙ্গের কতক অংশ অধিকার করিয়া বসিলে, মানসিংহ তাঁহার দমনের জন্য অগ্রসর হন। প্রথমতঃ মানসিংহের পুত্র জগৎসিংহ মাফগানগণের সম্মুখীন হইয়া ছিলেন। জাহানাবাদের নিকট তিনি উপস্থিত হইলে, কতলুর সেনাপতি বাহাদুর খাঁ প্রথমে সব্জির ভান করিয়া পরে তাঁহাকে রাত্রিতে আক্রমণ
করেন। বিষ্ণুপুরের রাজা বীর হাম্বীরের চেষ্টায় জগৎসিংহ প্রাণরক্ষা করিয়া হাম্বীরের সহিত বিষ্ণুপুরে যান। হাম্বীর কতলুর পক্ষেই ছিলেন। পরে মোগলদিগের বশ্যতা স্বীকার করেন। ইহার অব্যবহিত পরে কতলুর মৃত্যু হইলে, আফগানেরা মোগলদিগের সহিত সন্ধির প্রস্তাব করে। ইশা খাঁ কতলুর পুত্রত্রয় নসীব, লোদী ও জামলের অভিভাবকস্বরূপে আফগানগণের নেতা হইয়া তাহাদিগকে কিছুকাল শান্তভাবে রাখিয়া ছিলেন। এই সময়ে জগন্নাথ প্রদেশ আফগানগণের হস্তচ্যুত হইয়া বাদসাহের অধিকারে আসে। ইশার মৃত্যুর পর তাঁহার পুত্র সুলেমান ও ওসমান আফগানগণের নেতা হইয়া জগন্নাথ অধিকার করিলে, মানসিংহ তাঁহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন। আফগানেরা কতলুর ও ইশার পুত্রগণের অধীনে সমবেত হইয়া মানসিংহের সম্মুখীন হন। মানসিংহ তাঁহা দিগকে পরাজিত করিয়া সমস্ত উড়িষ্যা বাদসাহের সাম্রাজ্যভুক্ত করিয়া লন। আকবরের পৌত্র স্থূলতান খসরু উড়িষ্যার শাসনকর্তা নিযুক্ত হইয়া তাহার আয় জায়গীরস্বরূপে গ্রহণ করেন। ইহার পর মানসিংহ কিছুকালের জন্য বাঙ্গলা পরিত্যাগ করিয়া গমন করিলে, পুনর্ব্বার আফগানের! ওসমানের অধীনে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। মানসিংহ তাহাদিগকে সেরপুর-আতাইএর যুদ্ধে পরাজিত করেন । সেই সময়ে ইশা খাঁর সহিতও করহার যুদ্ধ উপস্থিত হয় । আফগানগণ উড়িষ্যা হইতে বিতাড়িত হই। পূর্ব্ববঙ্গে জায়গীর লাভ করে। ওসমান তথায়ও বিদ্রোহিতাচরণ করিয়া বাদসাহী থানাদার বাজবাহাদুরকে পরাজিত করিলে, মানসিংহ পুনর্ব্বার ওসমানকে পরাজিত করেন। ইহার পর কেদার রায় ও আরাকানাধিপতির সহিত তাঁহার যুদ্ধ উপস্থিত হয়। তাহাদিগকে পরাজিত করিয়া মানসিংহ বঙ্গে শান্তি স্থাপিত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। পরে তিনি বাঙ্গলার সুবেদারী পরিত্যাগ করিয়া ১৬০৪ খৃঃ অব্দে আগরায় গমন করেন, এবং আসফ
খাঁ জাফরবেগ বিহারের শাসনকর্তা নিযুক্ত হইয়া বাঙ্গলার কর্তৃত্বেরও ভার প্রাপ্ত হন। *
পাঠানগণ ও কেদার রায় প্রভৃতি ভূঁইয়ারা স্বাধীনত! অবলম্বন করিয়া' ও মোগলের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থিত হইয়া আপনাদের যেরূপ পরাক্রম প্রদর্শন করিয়াছিলেন, প্রতাপ সে সমস্ত অবগত হইয়া আর শান্তভাবে অবস্থিতি করিতে পারিলেন না। এই সময়ে তিনি অনেক পরিমাণে বলসঞ্চয় করিয়াঃ ছিলেন। অন্যান্য ভূঁইয়া বা পাঠানদিগের অপেক্ষা তাঁহার সৈন্যসংখ্যা বা পরাক্রম অল্প ছিল না। কাজেই তিনি পুনর্ব্বার স্বাধীনতা প্রকাশের ইচ্ছা করিলেন। আমরা পূর্ব্বে উল্লেখ করিয়াছি যে, প্রতাপ আজিম খার সহিত সংঘর্ষের পর হইতে বাদসাহের বিদ্রোহিতাচরণ করেন নাই, এবং তাহার কিছু পরেই মানসিংহ সুবেদার হইয়া আসায়, প্রতাপ আপনাকে তাঁহার সমকক্ষ মনে না করায়, তখনও পর্যন্ত স্বাধীনতা প্রকাশ করেন নাই । মানসিংহের সময়ে তিনি যে বাদসাহের অধীনতা স্বীকার করিতেন, তাহার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। তাহাদের মধ্যে একটি প্রমাণ এই যে, মানসিংহ, আফগানদিগকে পরাজিত ও উড়িষ্যা হইতে বিতাড়িত করিয়া তাহাদিগকে সরকার থালিফাবাদে জায়গীর প্রদান
Stewart সাহেব জাফরবেগ আসফ খাঁর পরিবর্তে আবদুল মজিদ আসফ খাঁকে মানসিংহের পর বিহার ও বাঙ্গলার সুবেদার বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু প্ৰকৃত নহে । ব্লকম্যান সাহেব তাঁহার ভ্রম প্রদর্শন করিয়া লিখিয়াছেন - "Stewart (History of Bengal P. 120) says Abdul Mujid Acaf Khan officiated in 1013 for Man Singh in Bengal. This is as impossible &c." তিনি আসফ খাঁ জাফরধেগকেই উক্ত অব্দে বিহারের সুবেদার নিযুক্ত হওয়ার কথা লিখিয়াছেন। "Bihar was given to Acaf (Jafar Beg) who moreover, was appointed to a Command of three thousand." (Ain-i-Akbari P. 412) বিহারের শাসনকর্তা নিযুক্ত হওয়ায় তাঁহার প্রতি বাঙ্গলার ভারও অর্পিত হয়।
করেন। এই খালিফাবাদ যশোরের একাংশ, এবং তাহা প্রতাপাদিত্যের রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। সুতরাং যশোর রাজ্যের মধ্যে আফগানদিগকে জায়গীর দান করায় যশোরের অধিপতি যে বাদসাহের অধীনতা স্বীকার করিতেন, তাহাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই । সুতরাং ইহা হইতে সুস্পষ্টরূপে বুঝা যাইতেছে যে, মানসিংহ যত দিন বাঙ্গলায় অবস্থিতি করিয়াছিলেন, প্রতাপ তত দিন বাদসাহের বিরুদ্ধাচরণ করেন নাই। ১৬০৪ খৃঃ অব্দে মানসিংহ বাঙ্গলার সুবেদারী পরিত্যাগ করিয়! আগরা গমন করেন এবং জাফরবেগ আসফ খাঁ তাঁহার স্থলে বিহারের সুবেদার নিযুক্ত হইয়া বাঙ্গলাশাসনেরও ভার প্রাপ্ত হন। আসফ খাঁ বিহারেই অবস্থিতি করিতেন, তজ্জন্য তিনি বাঙ্গলার শাসনে তাদৃশ মনোযোগ প্রদান করিতে পারেন নাই। মানসিংহের গমনের পর প্রতাপ মহাসুযোগ প্রাপ্ত হইয়া পুনর্ব্বার আপনার স্বাধীনতা প্রকাশে প্রয়াসী হন। এই সময়ে তিনি যেরূপ ক্ষমতাশালী হইয়া উঠিয়াছিলেন, তাহাতে তিনি মোগল সৈন্যের সম্মুখীন হইতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হন নাই। তাঁহার অধীনে সে সময়ে অনেক সুশিক্ষিত সৈন্য অশ্বারোহী, পদাতিক
* "Jagiers were assigned to the Afghan Chiefs in the district of Khaleefabad." (Stewart). গ্রান্ট সাহেব খালিফাবাদ সম্বলেখিতেছেন, "Khaleefabad or Jessore, further south on the skirts of the Sunderbunds on sult Marshy island, covered with wood on the sea-coast" &c (5th Report.) এই খালিফাবাদের মধ্যেই ভবেশ্বর রায়ের জমিদারী ছিল। আজিম খার প্রদত্ত তাঁহার চারি পরগণার মধ্যে আমদপুর, মুড়াগাছ ও মল্লিকপুরের উল্লেখ আইন আকবরীতে দেখা যায়। কিন্তু তাহাতে সৈয়দপুরের উল্লেখ নাই। সম্ভবতঃ সে সময়ে সৈয়দপুরের অন্য নাম ছিল। সৈয়দপুরের নাম পরে প্রসিদ্ধ হইয়া উঠে। আজিম খার প্রদত্ত কোন সনদ চাঁচড়ার রাজবংশের নিকট আছে কি না আমরা অবগত নহি। তবে তাঁহাদের কোন কোন প্রাচীন কাগজ পত্রে উক্ত পরগণা চতুষ্টয় প্রাপ্তির কথা আছে -বলিয়া শুনা যায় ।
১৫৫ গোলন্দাজ ছিল। তদ্ভিন্ন অনেক রণহস্তীও তাঁহার সহিত থাকিত। প্রতাপ এই অসংখ্য বলের সাহায্যে আপনাকে যারপরনাই বলীয়ান্ মনে করিয়া বাদসাহের অধীনতা ছেদন ও আপনাকে স্বাধীন নরপতি বলিয়া ঘোষণা করিলেন। তিনি স্বীয় নামে মুদ্রাঙ্কিত করিয়াছিলেন বলিয়াও শুনা যায় । * প্রতাপের স্বাধীনতা ঘোষণার পূর্ব্বে কেদাররায় ইশা খাঁ প্রভৃতি এ জগৎ হইতে চির বিদায় লইয়াছিলেন। কিন্তু আফগানগণ তখনও পর্যন্ত আপনাদের পরাক্রম প্রদর্শন করিতেছিল। তাহাদের উপদ্রবের সহিত প্রতাপের স্বাধীনতা মিলিত হইয়া বঙ্গভূমিতে এক অশান্তির সৃষ্টি করিয়া তুলিল। আসফ খাঁ এ সমস্ত নিবারণ করিতে সমর্থ হইলেন না। ক্রমে বাঙ্গলার এই সংবাদ বাদসাহ-দরবারে উপস্থিত হইল।
এই সময়ে রাজধানী আগরাতেও বিপ্লব উপস্থিত হয়। ১৬০৪ খৃঃ অব্দে আকবর বাদসাহের জ্যেষ্ঠ পুত্র সেলিম পিতার বিদ্রোহাচরণ করেন, এবং তাঁহাকে ভবিষ্যতে সিংহাসন প্রদান না করার জন্য মানসিংহ ও আজিম খাঁ প্রভৃতি সচেষ্ট হন । মানসিংহ তৎকালে বাঙ্গলার সুবেদারী পরিত্যাগ করিয়া আগরায় উপস্থিত হইয়াছিলেন। মানসিংহের পিতৃধসার +
প্রতাপ যে নিজ নামে মুদ্রাঙ্কণ করিয়াছিলেন, ইহ। বঙ্গের অনেক স্থলে শুনিতে পাওয়া যায় । তাহার মুদ্রা ত্রিকোণাকৃতি ধলিয়া কথিত হইয়া থাকে। আমরা অনেক চেষ্টাতেও একটি সংগ্রহ করিতে বা দেখিতে পাই নাই। রাজ। বসন্তরায়ের বংশধরগণের মধ্যে যাঁহারা সে মুদ্র। দেখিয়াছেন বলিয়া থাকেন, তাহারা তাহাতে এইরূপ লিখিত আছে বলেন। সম্মুখ ভাগ - "শ্রীশ্ৰীকালী প্রসাদেন ভবতি শ্রীমন্মহারাজপ্রতাপাদিত্যরায়" পশ্চাদ্ভাগ - "বদৎছিক্কাবছিমো জরবে বাঙ্গাল। মহারাজ প্রতাপাদিত্য জদ্দাল।"
+ সাধারণতঃ জানা যায় যে, খসরু মানসিংহের ভাগিনেয়, কিন্তু জাহাঙ্গীরের আত্মজীৱনীতে তাঁহাকে মানসিংহের পিতৃবশ্বপুত্র বলিয়াই জানা যায়।
সহিত সেলিমের বিবাহ হয়, এবং সেই বিবাহের ফলে খসরুর জন্ম হইয়াছিল। খসরু আবার আজিম খাঁর কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন। মানসিংহ ও আজিম খাঁ সেলিমের পরিবর্ত্তে খসরুকে আকবরের পর সিংহাসন প্রদানের জন্য নানারূপ আয়োজনে প্রবৃত্ত হন। যে সময়ে আকবর পীড়িত হইয়া ক্রমে মৃত্যুমুখে পতিত হইবার উপক্রম করিতেছিলেন, সেই সময়েই আগরাতে এইরূপ গোলযোগ উপস্থিত হয়। আকবর কিন্তু সেলিমকেই আপনার উত্তরাধিকারী মনোনীত করিয়া যান। ১৬০৫ খৃঃ অব্দে আকবরের মৃত্যু হইলে, সেলিম জাহাঙ্গীর উপাধি ধারণ করিয়া সিংহাসনে উপবিষ্ট হন। তাহার পর তিনি মানসিংহ ও আজিম খাঁকে ক্ষমা করিয়া, মানসিংহকে বাঙ্গলায় পুনর্ব্বার পাঠাইয়া ঘটককারিকা, ক্ষিতীশ বংশাবলী ও রামরাম বসু মহাশয়ের গ্রন্থাদিতে লিখিত আছে যে, সেই সময়ে কচুরায় বাদসাহের নিকট প্রতাপাদিত্যের অত্যাচারের কথা জানাইলে, বাদসাহ তাঁহার দমনের জন্য মানসিংহ প্রভৃতিকে প্রেরণ করেন। ইহার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে কি না আমরা অবগত নহি। তবে কচুরায়ের বাদসাহ দরবারে প্রতাপাদিত্যের অত্যাচারের কথা জ্ঞাপন করা অসম্ভব বলিয়া বোধ হয় না। কিন্তু সেই কারণেই যে মানসিংহ বাঙ্গলায় প্রেরিত হইয়াছিলেন, তাহা বলিতে পারা যায় না । তবে সে সময়ে আফগানগণের ও অন্যান্য বিদ্রোহীর জন্য যে বাঙ্গলার শান্তি নষ্ট হইয়াছিল, ইহা বাদসাহ জাহাঙ্গীর বুঝিতে পারিয়াছিলেন, এবং প্রতাপাদিত্যের
* মানসিংহের বাঙ্গলায় পুনরাগমন সম্বন্ধে অনেক গ্রন্থে উল্লেখ আছে,
"Certain considerations, nevertheless, prevailed with me some time afterwards to reinstate the Rajah Man Sing in the government of Bengal. " ( Memoir of Jahanguier, Price P. 19. )
| pdf |
ebc904307fd63dfd8322536cb3550850 | আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ জাপানে মডার্না টিকার 'দূষণ' নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। দেশটিতে নতুন করে কয়েকটি ভায়ালের মধ্যে 'দূষিত বস্তু' শনাক্ত হওয়ায় আরও ১০ লাখ ডোজের ব্যবহার স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। 'দূষিত' টিকা নিয়ে দুইজনের মৃত্যুর পর জাপান সরকার নতুন করে মডার্নার আরও দুটি লটে উৎপাদিত টিকার ব্যবহার স্থগিতের এ সিদ্ধান্ত টিকাদান কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
গত শনিবার (২৮ আগস্ট) জাপান সরকার জানিয়েছিল, সেখানে স্থগিত করা লটের মডার্না টিকা গ্রহণের পর দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, বছর ৩০-এর ওই দুই ব্যক্তি মডার্না টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের কয়েকদিনের মাথায় মারা যান। তাদের মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
| web |
728cd72802662b54d7e44e7242d2a80bc68a6de6 | যতটা শোরগোল ফেলে এসেছিল ঠিক ততটাই নিঃশব্দে প্রয়াণের দিকে এগিয়ে চলেছে টাটা ন্যানো। একাধিক জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে সম্ভবত ন্যানোর উত্পাদন বন্ধ করে দিতে চলেছে টাটা মোটরস। ফলে বন্ধ হয়ে যাবে গুজরাটের সানন্দে টাটার কারখানাও।
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ যতটা শোরগোল ফেলে এসেছিল ঠিক ততটাই নিঃশব্দে প্রয়াণের দিকে এগিয়ে চলেছে টাটা ন্যানো। একাধিক জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে সম্ভবত ন্যানোর উত্পাদন বন্ধ করে দিতে চলেছে টাটা মোটরস। ফলে বন্ধ হয়ে যাবে গুজরাটের সানন্দে টাটার কারখানাও।
ন্যানোর চাহিদা যে তলানিতে তার প্রমাণ মিলেছে গত কয়েক মাসে তার বিক্রির পরিসংখ্যানেই। চলতি আর্থবর্ষের শুরু থেকেই লাফিয়ে কমেছে ন্যানোর বিক্রি। সঙ্গে উত্পাদনও কমিয়েছে টাটা। গত অগাস্টে দেশে ছড়িয়ে থাকা ৬৩০টি শো-রুম থেকে মাত্র ১৮০টি ন্যানো বিক্রি করতে পেরেছে টাটা মোটরস। গত বছর অগাস্টে যে সংখ্যাটা ছিল ৭১১। সেপ্টেম্বরে সংখ্যাটি কমে দাঁড়ায় ১২৪। অক্টোবরে তার থেকেও অর্ধেকের বেশি কমে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৫৭-য়। এরই মধ্যে দেশজুড়ে টাটা ন্যানোর বুকিং বন্ধ করে দিয়েছেন টাটা মোটরসের ডিলাররা। বর্তমানে সানন্দের কারখানায় মেরে কেটে দিনে মাত্র ২টি ন্যানো গাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
গাড়ি বাজারে গুঞ্জন, প্রথম থেকেই বাধার সম্মুখীন ন্যানো প্রকল্পকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চায় টাটা মোটরস। তাই নতুন অবতারে ন্যানোকে বাজারে আনতে চলেছে তারা। সেজন্য কোয়েমবাত্তুরের জেয়িম অটোমোবাইলসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ব্যাটারিচালিত গাড়ি লঞ্চ করতে চলেছে টাটা মোটরস। নতুন এই গাড়ির নাম হতে পারে 'নিও'।
দেশের মানুষকে মাত্র ১ লক্ষ টাকায় চার চাকা গাড়ি চড়ার সুযোগ করে দিতে ২০০৯ সালে ন্যানো গাড়ি লঞ্চ করেছিল টাটা মোটরস। সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান রতন টাটার স্বপ্নের এই প্রকল্প নানা বাধা পেরিয়ে বাস্তবের মুখ দেখলেও 'সস্তা গাড়ি'র ছাপ গায়ে লেগে যাওয়ায় তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি ন্যানো। শেষ পর্যন্ত তাই অমোঘ পরিণতির মুখোমুখি সাধের লাখ টাকার গাড়ি।
| web |
76b27d40cab2458db2769c5f269e5763944550f5 | স্বপন দেব, মৌলভীবাজারঃ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পুলিশ সদস্যসহ করোনা আক্রান্ত ৬জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। সোমবার (২৭ এপ্রিল) মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. তৌউহীদ আহমদ করোনা আক্রান্তের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে কুলাউড়ায় ৪জন ও বড়লেখায় ১ জন শ্রীমঙ্গলে ১ জন রয়েছেন।
কাদিপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের ৬০ বছরের এক মহিলার দেহে করোনা সনাক্ত হয়। পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ায় থানার ১৭ জন পুলিশ সদস্যকে এবং ওই মহিলার পরিবারের ৬ সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে থাকা সকলের নমুনা সংগ্রহ করে সিলেট ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
পরিবারের ১৫ বছরের এক মেয়ের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট রোববার রাতে পাওয়া গেছে।
| web |
ad101ce38b7c8fac28071266ac6589f7364a554f | নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিসিকি শিল্প এলাকায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) নোয়াখালী শাখার তথ্যের ভিত্তিতে অবৈধ তিনটি পলিথিন তৈরীর কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় বিপুল অবৈধ পলিথিন জব্দ করা হয়।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) এ অভিযান পরিচালনা করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন্নাহার বেগম । এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ।
এসময় সরকার নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরীর করার অভিযোগে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এসপি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং কারখানাকে এক লাখ টাকা, ভাই ভাই প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংকে এক লাখ ও আল মদিনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং কারখানাকে ৫০ হাজার টাকাসহ মোট দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন এনএসআইয়ের যুগ্ম পরিচালক আবু তাহের মো. পারভেজ।
বেগমগঞ্জ উপজেলা র্ন্বিাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন্ন্হাার বেগম জানান, পলিথিন কারখানার মালিকদের সর্তক করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
| web |
96aceb72ba05a759d9b5b1480db74f4e | এবারে হবে নিরানন্দ ঈদ।
আগামীকাল শুক্রবার (১৪ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতর। ৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর দেশের মুসলমানরা এদিন ঈদ উদযাপন করবেন।
ঈদের নামাজ একটি বড় উৎসব। এদিন ছেলে, বুড়ো, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই দল বেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে যান। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়, করমর্দন, কোলাকুলি করেন। সকল ভেদাভেদ ভুলে হাতে হাতে রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নেন। কিন্তু করোনার স্বাস্থ্যবিধিতে এবারও তা হচ্ছে না। এবারের ঈদে নামাজ শেষে করা যাবে না চিরাচরিত কোলাকুলি, করমর্দন। উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম করা যাবে না। তাই ঈদের নামাজ পড়তে হবে মসজিদে।
শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম প্রখ্যাত আলেম শায়খুল হাদিস আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, এবারও করোনাকে সঙ্গী করে এসেছে দুর্যোগ-দুর্ভোগের ঈদ। এর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করতে হবে। আল্লাহ সহায় হলে এ মহামারি একদিন পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে, দুর্যোগের মেঘ কেটে গেলে সাড়ম্বরে ঈদ উৎসব উদযাপনের সুযোগ সামনে আসবে, ইনশাল্লাহ।
| web |
9fa1d61d8c4e8578071d7b135599b7f91ca9e85d | জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে গুলি করা মার্কিন নৌবাহিনীর সেই সদস্যকে হুমকি দিয়েছে আরেক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট(আইএস)। অনলাইননে দেয়া সেই হুমকিতে রব ও'নেইলের নাম ঠিকানার সাথে তার বাড়ির ঠিকানাও পর্যন্ত উল্লেখ করেছে জঙ্গিরা।
গত শনিবার টুইটারে হুমকির মেসেজ পোস্ট করেন নিহত এক আইএস সদস্যের স্ত্রী। ওই জঙ্গি একজন কম্পিউটার হ্যাকার ছিলেন বলে জানায় টেক্স শেয়ারিং সাইট 'পেস্টবিন'। ম্যাসেজে ও'নেইলের নামের পাশে লেখা 'নাম্বার ওয়ান টার্গেট'।
জঙ্গি জঙ্গি গ্রুপ নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট এসআইটিইও ওই হুমকি সম্পর্কে খবর দেয়। কিন্তু দুটি সাইটের কোনোটাতেই এখন ওই পোস্ট দেখা যাচ্ছে না।
ও'নেইলের বিরুদ্ধে হুমকির খবর সম্পর্কে মার্কিন নৌবাহিনী সতর্ক আছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে এই ব্যাপারে এখনো কোনো মন্তব্য করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
২০১১ সালের মে'তে পাকিস্তান এক অভিযান চালিয়ে হত্যা করা হয় লাদেনকে। সেই ঘটনার দুই বছর পর গত বছর ওয়াশিংট পোস্টকে দেয়া সাক্ষাতকারে ও'নেইল বলেন, তিনিই প্রথম লাদেনকে গুলি করেছিলেন।
ও'নেইল নৌবাহিনীতে চাকরির পাশাপাশি বর্তমানে ফক্স নিউজের কন্টিবিউটর হিসেবে কাজ করছেন। চলতি বছরের গোড়ার দিকে তাকে কন্টিবিউটর হিসাবে নিয়োগ দেয় চ্যানেলটি। ও'নেইলকে নিয়ে 'দ্য ম্যান হু কিল্ড ওসামা বিন লাদেন' নামে একটি ডকুমেন্টরিও প্রচার করে ফক্স নিউজ।
| web |
bea96996b9670dbdce12b6ce78960ab3ba4d5893 | ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর - এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিবারের মতো এবারও পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের সুযোগ পাবে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এ আবেদন করা যাবে। প্রতিটি আবেদনের জন্য ১২৫ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষার জন্য আবেদন এসএমএসের মাধ্যমে করা যাবে।
প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে। যেসব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে, সেসব বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে মোট ২৫০ টাকা ফি কাটা হবে।
শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড থেকে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে। আবেদন করতে মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে RSC লিখে Space দিয়ে বোর্ডের নাম লিখে Space নিয়ে রোল নম্বরের পর আবারও Space বিষয় কোড লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
পুনঃনিরীক্ষণের ক্ষেত্রে একই এসএমএসের মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের (যেসব বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে) জন্য আবেদন করা যাবে। সেক্ষেত্রে কমা দিয়ে বিষয় কোডগুলো আলাদা করে লিখতে হবে।
| web |
8a668e591cc87f06455618b846d2e3f5a441e949 | মেষ/ Aries রাশিফল Rashifal : মানসিক শান্তি বজায় থাকবে। কোনও বিশেষ বন্ধুর সাহায্য করে স্বস্তি অনুভব করতে পারেন। আজ ব্যবসায়িক লগ্নি এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। সরকারি চাকরিতে আধিকারিকদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার বজায় রেখে চলুন। ঘর ও পরিবারে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে। বিবাহযোগ্য জাতকদের জন্য সঠিক সম্বন্ধ আসায় পরিবারের সকলের মনে আনন্দ থাকবে। স্বাস্থ্যের অযত্ন করবেন না।
বৃষ/ Taurus রাশিফল Rashifal : নিজের পরিবারকে অধিক গুরুত্ব দেবেন। কোনও অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হবে। তাঁর সহযোগিতায় নিজের কোনও সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পাবেন। সংযমী হন। ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। চাকরিতে সহজেই কোনও লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন। বাড়ির পরিবেশ আনন্দমুখর থাকবে। উৎসাহে পরিপূর্ণ থাকবেন।
মিথুন/ Gemini রাশিফল Rashifal : পরিকল্পনাবদ্ধ ভাবে নিজের কাজ করে যেতে হবে। জমি ও বাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত পরিকল্পনা বানাবেন। ব্যবসায়িক কাজের ক্ষেত্রে কোনও আধিকারিকের সঙ্গে দেখা হওয়ায় লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। পারিবারিক পরিবেশ আনন্দমুখর থাকবে। প্রেম সম্পর্কে প্রতারণা বা বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হতে পারেন। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গাফিলতি করলে এর মূল্য শোধ করতে হব।
কর্কট/ Cancer রাশিফল Rashifal : বিদ্যার্থীদের বিদ্যাযোগে অন্যমনস্ক ভাব থাকলেও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে। চাকরিজীবীদের চাকরির ক্ষেত্রে উচ্চপদ মর্যাদার লক্ষণ দেখা যায়। ব্যবসায়ীদের পক্ষে সপ্তাহটি শুভ। মন সংযোগের দ্বারা ধর্মে কর্মে প্রবৃত্ত হলে মানসিক শান্তি লাভ করা সম্ভব। বিবাহযোগ্যদের বিবাহ যোগের সম্ভাবনা দৃষ্ট হয়।
সিংহ/ Leo রাশিফল Rashifal : কোথাও বেড়াতে যাওয়া নিয়ে বাড়িতে আলোচনা। আজ কারও উপকার করে সুনাম পাবেন। ব্যবসায় বাধা আসতে পারে। দুপুরের পরে স্ত্রীর কোনও ব্যবসা থেকে লাভ পেতে পারেন। বাবার জন্য চিন্তা বাড়বে। বন্ধুর দ্বারা প্রতারিত হতে পারেন। আত্মীয়ের সঙ্গে মনোমালিন্যের জন্য মানসিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাবে।
কন্যা/ Virgo রাশিফল Rashifa : শরীরে কোনও কষ্ট বাড়তে পারে। আজ বন্ধুর থেকে সাহায্য পেতে পারেন। পায়ের কোনও সমস্যা বাড়তে পারে। সন্তানদের সঙ্গে বিশেষ আলোচনা। পড়াশোনার জন্য মনে ভয় ভাব আসবে। স্ত্রীর সঙ্গে ছোট বিষয় নিয়ে অশান্তি। ব্যবসার জন্য ঋণ নিতে হতে পারে। সম্পত্তি কেনাবেচার ভাল দিন নয়।
তুলা/ Libra রাশিফল Rashifal : ব্যবসায় সময় ভাল নয়। পড়াশোনার জন্য কোনও সুযোগ মিলতে পারে। পাওনা অর্থ আদায়ে দেরি হওয়ার সম্ভাবনা। কোনও উপহার পেতে পারেন আজ। শরীরে সমস্যা বাড়বে। পুরনো মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তির যোগ লক্ষ্য করা যায়। সপ্তাহের মধ্যভাগে বাক্যদোষে স্বজন বান্ধবের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা।
বৃশ্চিক/ Scorpio রাশিফল Rashifal : কর্মস্থানে আজ আপনাকে কারও অনুগত হয়ে চলতে হতে পারে। আজ কোনও আত্মীয়ের কাছ থেকে আপনি ভাল সাহায্য পাবেন। বেশি অর্থ অপচয়ের জন্য সংসারে বিবাদ। অন্যায় বহুদিন ধরে সহ্য করে চলেছেন, এবার প্রতিবাদ করার সময় এসেছে। অভিযোগ জানানোর মতো পরিস্থিতি এলে তা জানান।
ধনু/ Sagitarious রাশিফল Rashifal : আজ সম্পত্তি সংক্রান্ত কাজে সাফল্য লাভ করবেন। লগ্নির কাজ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যবসা বিস্তার সংক্রান্ত পরিকল্পনা তৈরি করবেন। সমস্ত কাজ সময়ের মধ্যে পূরণ করতে সক্ষম থাকবেন মীন রাশির জাতকরা। চাকরিতে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা লাভ করবেন। দাম্পত্য জীবন সুখে কাটবে। পড়ে গিয়ে আঘাত পেতে পারেন।
মকর/ Capricorn রাশিফল Rashifal : কর্মস্থানে কোনও বিশেষ কাজের চাপ আপনার উপর পড়তে পারে। বেকারদের জন্য নতুন কোনও যোগাযোগ আসবে। আজ সারা দিন ব্যবসায়িক উদ্বেগ খুব বেশি থাকবে এবং তাতে সফল হবেন। নিজের অভিজ্ঞতার প্রয়োগ আজ বেশি না করাই ভাল। পড়াশোনার দিক থেকে দিনটি উপযুক্ত। নিজের বুদ্ধিতে ব্যবসায় অগ্রগতির আভাস।
কুম্ভ/ Aquarious রাশিফল Rashifal : অতীতের ভুল সংশোধন করে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবেন। সঠিক লগ্নি করতে সক্ষম হবেন ধনু রাশির জাতকরা। ব্যবসায়িক যাত্রার পরিকল্পনা হতে পারে, যার ফলে লাভ হবে। চাকরিতে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। ভালো প্লেসমেন্টের সম্ভাবনা প্রবল। জীবনসঙ্গী ও পরিবারের সদস্যদের পূর্ণ সহযোগিতা লাভ করবেন। অত্যধিক পরিশ্রম ও কাজের দায়িত্ব আপনার স্বাস্থ্যের ওপর প্রতিকূল প্রভাব বিস্তার করবে।
মীন/ Pisces রাশিফল Rashifal : আজ কোনও কাজই মনের মতো করা অসম্ভব। পুরনো পাওনা পেতে বেগ পেতে হবে। কাজের জায়গায় হিসাব নিয়ে গণ্ডগোল হবে। সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। মামলায় অর্থ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। ব্যবসায় লাভের আশা রাখলে গুরু জনের কথা মেনে চলতে হবে। আজ সারা দিন অন্য দিনের তুলনায় পরিশ্রম বেশি হতে পারে।
| web |
6727dd593d204c9298b1c1a28d53ea979f3e16a3 | সোহিনী সেনঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মাস্টারপিস 'দেবী চৌধুরাণী' বলতেই মনে পড়ে যায় সুচিত্রা সেনের মুখ। সোনার গয়নায় সজ্জিতা সুন্দরীর হারমোনিয়াম বাজিয়ে 'ওগো এসো হে আমার...'-ই হোক বা প্রফুল্লর চাউনির ইস্পাতসম দার্ঢ্য- ১৯৭৪-এ দীনেন গুপ্তর ছবিতে সুচিত্রা যে মাইলফলক তৈরি করে যান, তা ছুঁতে পারেননি অন্য কোনও বাঙালি পরিচালক বা নায়িকা। ৪৪ বছর পর আবারও পর্দায় বঙ্কিম-কলমের সেই বৈপ্লবিক আস্ফালন। তবে এবার ছোটপর্দায়। 'স্টার জলসায়' শুরু হতে চলেছে 'দেবী চৌধুরাণী'। প্রফুল্লর দেবী চৌধুরাণী হয়ে ওঠার অবস্মরণীয় সফরকে কুর্নিশ জানিয়েই চ্যানেলের এই উদ্যোগ।
অমিত সেনগুপ্ত পরিচালিত এই ধারাবাহিকে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন নবাগতা সোনা সাহা। মালদার সোনা এখন থাকেন গল্ফ গ্রিনে। জানালেন, প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল নিজেকে পর্দায় দেখার। নাচ আর মডেলিংয়ের সঙ্গে চলত অডিশনও। অডিশন দিতে দিতেই পেয়ে গেলেন 'বিগ ব্রেক'। ঐতিহাসিক সাহিত্যভিত্তিক চরিত্র। স্বভাবতই আর পাঁচটা চরিত্রের থেকে আলাদা। তাই প্রথম প্রথম ভয় পেতেন সোনা। অকপটেই স্বীকার করে ফেললেন তা। তারপর বিবিধ ওয়ার্কশপ আর গ্রুমিং চরিত্রটার সঙ্গে ধাতস্থ হতে সাহায্য করেছে। তার সঙ্গে চলেছে বারবার উপন্যাসের মূল টেক্সট পাঠ। এছাড়াও ছিল সিনিয়র অভিনেতাদের আশ্বাসবাণী। প্রফুল্ল থেকে দেবী চৌধুরাণীর রূপান্তরের যাত্রাটাই উপন্যাস এবং ধারাবাহিকের অন্যতম উপজীব্য। সেই দুর্দমনীয় মানসিক ও শারীরিক ট্রানজিশনটাকে দর্শকের কাছে ফুটিয়ে তোলা সহজ নয়। তাকে বাস্তবসম্মত করে তোলা কঠিনতর।
সোনা জানালেন, পুরোদস্তুর দেবী চৌধুরাণী হয়ে উঠতে তাঁকে লাঠি-তলোয়ার চালানো ও ঘোড়ায় চড়া শিখতে হয়েছে। এখনও শিখছেন। এডুকেশন-এ বিএ সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী সোনা। পড়াশোনা সামলে মেগার লিডিং রোল সামলাতে অসুবিধা হয় বইকি! তবে দেবী চৌধুরাণী বলে কথা, এইটুকু তিনি উতরে দেন পারদর্শিতার সঙ্গেই- জানাতে গিয়ে আত্মবিশ্বাস ধরা পড়ে নবাগতার কণ্ঠে। প্রশ্নপর্বে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এসেছে সুচিত্রা সেন অনুষঙ্গ।
'চরিত্র নিয়ে তুলনা তো টানা হবেই। সুচিত্রা সেন অত বড়, অত অসাধারণ অভিনেত্রী! আমার অভিনয় কেউ ভাল বলবেন, কেউ খারাপ। আমি তো আর মানুষের স্মৃতি মুছে ফেলতে পারি না। যেটা পারি সেটা হল, এই তুলনাজনিত আমার নিজের নার্ভাসনেসটাকে কাটিয়ে উঠে দর্শককে নতুন প্রফুল্ল আর দেবী চৌধুরাণী উপহার দিতে। আর ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে মানুষ যেহেতু ডিটেলিং আশা করেন, তাই তাঁদের কাছে পৌঁছনোর স্কোপটাও আমার বেশি। আমার লক্ষ্য, সেটুকুকে পজিটিভলি কাজে লাগানো। ' সোনা আশাবাদী, উপন্যাসের পাতার মতোই ধারাবাহিকের প্রফুল্লও দর্শকের মন জয় করবে। প্রতিবাদ ও সাহসিকতার নিশান ওড়াবে। ধারাবাহিকে প্রফুল্লর স্বামীর চরিত্রে নতুন মুখ রাহুল মজুমদার। শ্বশুরের চরিত্রে দেখা যাবে সুজন মুখোপাধ্যায়কে। ১৬ জুলাই থেকে সোম থেকে রবি সপ্তাহে সাতদিন রাত আটটা থেকে সম্প্রচারিত হবে 'দেবী চৌধুরাণী'।
| web |
b5f9529fe65949b75d8aec19c4cafa14c42566336aba024ea91afce71a32c1b7 | রচনা অনুবাদ ও আবৃত্তির স্থান
আবৃত্তি করিয়। গুনাইতে হইত। বর্তমানেও সংস্কৃত শিক্ষায় এই আবৃত্তির প্রয়োজনীয়তা যে কিছু আছে, তাহা অনেকেই স্বীকার করেন।
সার্থক আবৃত্তি শিক্ষা দিবার জন্য শিক্ষকের প্রধানতম কর্তব্য হইবে শিক্ষার্থীকে সুষ্ঠু উচ্চারণ-রীতি শিক্ষা দেওয়া ; এবং যথার্থ উচ্চারণ শিক্ষ। দিবার নিমিত্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীকে সংস্কৃত ধ্বনিতত্ত্ব-সম্বলিত পুশুকাদি পড়াইবেন। টেপ রেকর্ডারে বড় বড় ভাষাতত্ত্ববিদ্গণের কঠিন কঠিন সংস্কৃত শব্দের উচ্চারণগুলি যদি ধরা থাকে, তাহা হইলে টেপ বেকর্ডার চালাইয়। ঐ সুষ্ঠ উচ্চারণ তাহাদের শুনাইতে হইবে। শিক্ষার্থীর কণ্ঠস্বর যাহাতে স্পষ্ট ও মধুর হয়, তাহার ব্যবস্থ। শিক্ষক করিবেন। আবৃত্তি করিবার সময় কোথায় কণ্ঠস্বর উচ্চ হইবে, কোথায় নিম্ন হইবে, কোথায় বলার গতি দ্রুত করিতে হইবে, কোথায় গতি হ্রাস করিতে হইবে, কোথায় শ্বাসাঘাত পড়িবে, কোথায় অর্থযতি পড়িবে, কোথায় ছন্দোষতি পড়িবে, পর্ব ও পর্বাঙ্গক কাহাকে বলে, উচ্চারণ কোথায় হ্রস্ব বা দীর্ঘ বা প্লুত হইবে - এই সকল বিষয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীকে ভালভাবে শিক্ষা দিবেন। যাহারা ভাল আবৃত্তি করিতে পারে, তাহাদেব আবৃত্তি যাহাতে শিক্ষার্থী শুনিতে পায় শিক্ষক তাহার বন্দোবস্ত করিবেন। আবৃত্তি শিখিবার জন্য শিক্ষার্থীর যে সকল বিষয়ে সুষ্ঠু ধারণা থাকা প্রযোজন, সেই সকল বিষয়ে শিক্ষকের আরও অধিক গভীর জ্ঞান থাকা দরকার।
আবৃত্তি শিখাইবার পদ্ধতি হিসাবে শিক্ষক প্রথমতঃ আবৃত্তির বিষয়টি নির্বাচন করিবেন। শিক্ষার্থীর বয়স, আগ্রহ, রুচি, মানসিক সংগঠনের নূর প্রভৃতির দিকে লক্ষ্য রাখিয়া শিক্ষক নিজে বিষয়টি নির্বাচন করিবেন। আবৃত্তির বিষয়টির মধ্যে দুরূহ শব্দাদি থাকিলে শিক্ষক শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় তাহা ব্যাখ্যা করিয়া দিবেন। তারপর শিক্ষক নিজে বিষয়টিকে আদর্শমূলক সরব পাঠের মাধ্যমে আবৃত্তি করিবেন। শিক্ষার্থীর প্রয়োজনবোধে শিক্ষক আরও একবার যথার্থ উচ্চারণ সহযোগে ধীরগতিতে বিষয়টি আবৃত্তি করিতে পারেন। অতঃপর শিক্ষক প্রয়োজনীয় উচ্চারণ-রীতির নির্দেশ সহ বিষয়টিকে বোর্ডে লিখিয়া দিবেন। শিক্ষার্থীরা মনোযোগ সহকারে নীরবে শিক্ষকের নির্দেশগুলি দেখিবে এবং বিষয়টিকে মনে মনে কয়েকবার পড়িয়া লইবে। তারপর শিক্ষক প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে বিষয়টি আবৃত্তি করিতে বলিবেন এবং এই আবৃত্তির মধ্যে কোন ত্রুটি থাকিলে শিক্ষার্থীদের সাহায্যে শিক্ষক সেই ত্রুটির সংশোধন করিয়া আর একবার নিজে আদর্শ আবৃত্তি করিবেন। পরে শিক্ষার্থীদিগকে যৌথভাবে ও পরে এককভাবে তাহা পুনরায় আবৃত্তি করিতে বলিবেন। সংস্কৃত আবৃত্তিতে শিক্ষার্থীকে আক্কষ্ট করিবার জন্য শিক্ষক আবৃত্তি-প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করিবেন এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।
আবৃত্তির মাধ্যমে একদিকে যেরূপ শিক্ষার্থীর স্মৃতিশক্তির চর্চা হয়, অপরদিকে আবৃত্তির তাৎপর্য সেইরূপ উচ্চারণজনিত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি আয়ত্ত করিয় শিক্ষার্থী সংস্কৃত ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন হইয়া উঠে।
| pdf |
c96cbc4b3dff39099000fb7c0fa5cd1d70d228908812df5f11676888e5e51aa7 | জয়কুমার চট্টোপাধ্যায়
কোনো বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভের পথে অতি-দুরত্ব যেমন একটি প্রধান বাধা, অতিনৈকট্যকেও পণ্ডিতগণ তেমনই সে পথের অন্যতম অন্তরায় রূপে গণ্য করেন । ব্যক্তি সম্পর্কে সম্ভবতঃ শেষোক্ত কারণটি তেমন বিপত্তি ঘটায় না। তা না হলে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে উৎলুক পাঠক-পাঠিকা তাঁর নিকট-জনের বক্তব্য শুনতে চান কেন? সেই ঔৎস্নুকোর ওপর আস্থা রেখেই রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে কিছু অন্তরঙ্গ প্রসঙ্গের অবতারণা করছি। আশা করি সহৃদয় পাঠক সর্বজনবিদিত কোনো তথ্যের অল্পোক্তিকে আমার অতিপরিচয়-জনিত ঔদাসীন্য বা অন্যের অজ্ঞাত তথ্যের বিস্তারিত আলোচনাকে 'চোরের লক্ষণ বলে চিহ্নিত করবেন না।
১৯৫৭ সালের ২৭শে জুলাই আমি সর্বপ্রথম রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে আসি নিতান্তই আকস্মিকভাবে। সব দিক দিয়েই আমার ছুর্দিন চলছিল। আর্থিক কারণে আই. এ পাশ করার পর আমার পড়া বন্ধ । শারীরিক অসুস্থতাও দুশ্চিন্তার সীমা অতিক্রম করেছিল । সেই দুঃসময়ে আমি আশ্রয় পেয়েছিলাম রবীন্দ্রজীবনীকারের গৃহে । আমার থাকা, খাওয়া রোগের চিকিৎসা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ইত্যাদির ভার তখন থেকে তাঁর। আর আমার মানসিক গ্লানি কাটাবার জন্য তিনি আমাকে দিয়েছিলেন তাঁর চার খণ্ড রবীন্দ্রজীবনী, 'বাংলা গ্রন্থ বর্গী১২৩
করণ', 'পৃথিবীর ইতিহাস', 'ভারতে জাতীয় আন্দোলন' প্রভৃতি গ্রন্থের প্রেস কপি তৈরী করার কাজ। জসহ তাঁরই নির্দেশ অনুযায়ী কিছু কিছু তথ্যাদির অনুসন্ধান ও পরিমার্জনা । রবীন্দ্রজীবন এবং সাধারণ পাঠক-পাঠিকার মধ্যে জীবনীকার রচিভ বিরাট লেভুবন্ধের কাজে আমার কাঠবিড়ালীসদৃশ ওই ভূমিকাটুকুর গৌৱব 'লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির' - ফরির এই পরিহাস বাক্যের মতই হাস্যকর। তবু আলোচ্য রচনার প্রথম অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে সংক্ষেপে এই 'শিবের গীত' - টুকু পাইতেই হলো।
১৯৫৭ থেকে এখন পর্যন্ত সুদীর্ঘ তেইশ বছর ধরে আমি জীবনীকারকে দেখছি। দেখছি অত্যন্ত কাছ থেকে। প্রথমে বলি তাঁর নিয়ম-নিষ্ঠার কথা । আমাদের দেশে মোটা মুটি ষাট বছর বয়সকেই বার্ধক্যের সীমারেখা ধরা হয় সঙ্গত কারণেই। কিন্তু ছেষটি বছরের ( ১৯৫৭ ) প্রভাতকুমারকে বোলপুর ডাব্বাংলোর মাঠে প্রভাতে ভ্রমণ কালে যাঁরা দেখেছেন তাঁরা একটি শক্ত-সমর্থ যুবককেই হাঁটতে দেখতেন । মাঠে পাঁচ-ছ' পাক ঘোরার পর তিনি যখন ফিরতেন তখন পূর্যোদয় হতো। প্রাতঃরাশের পর পড়ার টেবিল। এগারটা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা । তখন ন'টার সময় বিস্কুট আর কফি খেতেন; আর মুখে থাকতো একটি চুরুট। লিখতে লিখতে মাঝে মাঝে আবার দু'তিন মিনিট ব্যায়াম করতেন। এই ব্যায়াম-চর্চাটা স্নানের পূর্বেই বেশী হতো। দুপুরে খাওয়ায় খাওয়ার পরে আধষণ্টার সংবাদপত্র পাঠ - ওইটুকু বিশ্রাম। তারপর আবার পড়ার টেবিল। সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত দেখা। এর মধ্যেই আবার জমির ধান, আখের গুড়, মাছের পোনা, দলিল বস্তাবেজ, রাজমিস্ত্রির কাজ ইত্যাদির
কাছের মানুষ অন্ত কুমার
হয়ে বুকস রামেলাও থাকতো। কিন্তু কোনো কারণেই লখাপড়ার বিরতি ছিল না। তিনি বলতেন 'আসনসিি আমনসিদ্ধি ছাড়া কোনো ব্রত উদ্যাপন করা যায় না। তখন সুযোগ পেলেই আসন ছেড়ে উঠে পড়তান - এখনও আসন ছেড়ে পালাতে পারলেই বাঁচি - তবে পর্বতপ্রমাণ অকৃতকর্মের দিকে তাকিয়ে রবীন্দ্ৰজীবনীকার কথিত 'আসনসিদ্ধি' সার্থকতার কথা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করি।
রবীন্দ্রজীবনীকার মূলতঃ ঐতিহাসিক। 'রবীন্দ্রজীবনী'ও একটি মহান জীবনের ইতিহাস। ইতিহাসের সত্য প্রধানতঃ তথ্যনির্ভর । এই তথ্য সংগ্রহ আপাতদৃষ্টিতে অভ্যস্ত নীরস
এবং অনেকের কাছেই বিরক্তিকর। তাঁর সহায়করূপে কাজ করতে বসে যাতে আমি বাধ্যতামূলক কাজের বিরক্তিজনিত অবসাদে না ভুগি, সেদিকেও ছিল তাঁর সতর্ক দৃষ্টি। তিনি মাঝে মাঝেই জিজ্ঞাসা করতেন, 'বিরক্তি লাগছে না তো ?? নিজের রচনা অন্যের একঘেঁয়ে লাগতে পারে, এ চেতনা তাঁর বরাবরই ছিল। সেই জন্যেই কখনো তাঁর রচনা অন্যকে পড়ে শোনাতে দেখি নি। তবে খুব কাছের ছ্'একজনকে না-দেখিয়ে কখনো কোনো লেখা প্রেসে দিতেন না, এখনও দেন 21 এ বিষয়ে তাঁর অব্যবহিত পরামর্শদাত্রী ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী শ্রীযুক্ত। সুধাময়ী মুখোপাধ্যায়।
অনেক প্রাজ্ঞ প্রাচীর গবেষক আধুনিক সাহিত্য সম্পর্কে হয় উদাসীন, নয় খড়গহস্ত । বিশেষতঃ আধুনিক কবিতা প্রসঙ্গে একটি তাচ্ছিল্যের ভাব অনেকেই পোষণ করেন। প্রভাতকুমারের চিরনবীন মানসিকতা এই বিষুদ্ধতার ব্যতিক্রম। তিনি এখনও মনে করেন মানব-মনোরাজ্যে একটি সুবৃহৎ গবেষণা-গ্ৰন্থ অপেক্ষা একটি ক্ষুদ্র মৌলিক কবিতা বা ছোটকাছের মানুষ প্রভাতকুমার
গল্পের মূল্য অনেক বেশী। তাঁর কাছ থেকে বহু তরুণ কবি-সাহিত্যক অকৃত্রিম উৎসাহ পেয়েছেন এবং এখনও পান। 'কল্লোল' যুগের তরুণ কবি লুকুমার সরকার থেকে অত্যাধুনিক অখ্যাত পল্লী কবিরাও তাঁর স্নেহধন্য।
নান। বিদ্যার চর্চার জন্য বোলপুর-শান্তিনিকেতনে যাঁরা আসেন - তাঁদের একটি অবশ্য গন্তব্যস্থল রবীন্দ্রজীবনীকারের গৃহ। রবীন্দ্র-জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে বহু বিশেষজ্ঞ বোলপুর-শান্তিনিকেতনে আছেন। সেই অজস্র তথ্যের ভাণ্ডারীগণও প্রভাতকুমারকে শ্রদ্ধা করেন একজন নির্ভরযোগ্য কাণ্ডারীরূপে। শ্রীযুক্ত অমল হোম, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ, লিওনার্ড এল্ম্হাস্ট প্রমুখ দিপালদের দেখেছি তাঁরই গৃহে ।
'দুর্দান্ত পাণ্ডিত্যপূর্ণ' ব্যক্তিরাও মাঝে মাঝে আসতেন এবং আসেন । দশ মিনিট কথা বলার পরই বোঝা যেত তাঁরা কথা বলছেন ঔপন্যাসিক প্রভাতকুমারের সঙ্গে। মুরসিক জীবনীকার কখনও কখনও কোনো অভ্যাগতের সঙ্গে বারিস্টার প্রভাতকুমারের অভিনয় করে দিব্যি সেই উপন্যাসগুলি সম্পর্কে আলোচনা করতেন যেগুলি আদৌ তাঁর রচনা নয়। আমরা প্রহসনের শেষ দৃশ্যের অপেক্ষায় থাকতাম । আসল সভা ফাঁস হয়ে গেলে অপর পক্ষের পাণ্ডিত্যের বেলুন-চুপ সে-যাওয়া কাঁচুমাচু ভাবটি উপভোগ্য হয়ে উঠতো।
তিনি নাকি ঐতিহাসিক, তাঁর নাকি সাহিত্যরসে বিশেষ অধিকার নেই - - এ রকম কথা তিনি মাঝে মাঝে বলেন। আমার মন কোনো দিন তাঁর এ কথায় সায় দেয় নি। যদি রসবোধই না থাকবে তাহলে তিনি দৈনন্দিন জীবন-জটিলতাকে উপলক্ষ করে বাংলা এবং রবীন্দ্র-সাহিত্য থেকে জুৎসই উদ্ধৃতি দেন কি করে ? একবার সুদীর্ঘ এক মাস ধরে শন্তিনিকেতনের
একজন প্রয়াত অধ্যাপকের সঙ্গে তিনি গ্রীক নাটক সম্পর্কে আলোচনা করেন । প্রতিদিন বিকেলে দু'তিন ঘণ্টা আলোচনা। অধ্যাপক মহাশয় ছিলেন নীরব শ্রোতা। আর অবাক্ আমি, ওই এক মাস ভেবেছি, এই কি সাহিত্য-রসবোধের ন্যূনতার পরিচয় ? এ ছাড়া তাঁর 'রবীন্দ্রজীবনী' যাঁরা পড়েছেন আশা করি তাঁরাও এ বিষয়ে আমার সঙ্গে একমত হবেন। সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর 'ফিরে ফিরে চাই' গ্রন্থটিও তাঁর সাহিত্য-রসবে।ধহীনতার বিপক্ষেই ভোট দিচ্ছে।
প্রভাতকুমারের স্মৃতিশক্তি অসাধারণ । ১৯৫৪ সালে অবসর প্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক প্রভাতকুমার আট-দশ বছর পরেও বাড়িতে বসেই বলে দিতেন কোন্ বই কোন্ শেল্ফ-এর কোন্ জায়গায় পাওয়া যাবে। গ্রন্থাগারটি স্থানান্তরিত হওয়ার পর এখন আর তা বলা সম্ভব নয়, তবে তাঁর সময়ের কিছু গ্রন্থের সংস্করণ সংখ্যা এমন কি মলাটের রং পর্যন্ত এখনও তাঁর মনে আছে। বার্ধক্যজনিত অনিবার্য স্মৃতিদৌর্বল্যে কোনো বিষয়, বস্তু বা ব্যক্তির নাম স্মরণ করতে না পারলে তিনি যে একটি অব্যক্ত অস্বস্তিতে কষ্ট পান তা অনুভব করা যায়। বছর তিনেক আগের একটি ঘটনা। ১৯৭৭-এর মাঝামাঝি কোনো সময় । আমি পাশের ঘরে ঘুমন্ত । হঠাৎ রাত দুটোর সময় আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। জীবনীকার প্রভাতকুমার তাঁর সহধর্মিনীর কাছে জানতে চাইছেন - "ফরাসী-বিপ্লবের সময়ে সেখানকার বিখ্যাত দার্শনিকের নাম কি?" ক্ষীণ-শ্রবণশক্তির জন্য তাঁর সহধর্মিনী প্রথমে মনে করেছিলেন বোধহয় চোর-টোর কেউ এসে থাকবে । পরে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তিনি দার্শনিকের নামটা বলে দিলেন। তারপর সব চুপচাপ । পরের দিন ভোরবেলা চায়ের আসরে এ নিয়ে আমাদের এক চোট্ হাসা১২৭
হাসি হলো। রাত দুটোর সময় ফরাসী দার্শনিক ভাবা যায় ?
রবীন্দ্রজীবনীকার বিশ্বভারতীর গ্রন্থাগারিকের দায়িত্বই শুধু পালন করেন নি-তিনি সেখানকার ইতিহাসের অধ্যাপকও ছিলেন। আমি তাঁর কাছে আমি তাঁর অবসর গ্রহণের পর। লুতরাং প্রচলিত অর্থে আমি তাঁর ছাত্র ছিলাম না - একথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু গত তেইশ বছরে নানাভাবে তিনি কত বিষয়ই না শেখাবার চেষ্টা করেছেন। তাঁর শিক্ষণ-পদ্ধতির প্রথম এবং প্রধান উপকরণ ধৈর্য। এই সুদীর্ঘ কালে আমি তাঁকে কোনো দিন ক্রুদ্ধ হতে দেখি নি। প্রিয় মিথ্যা অপেক্ষা অপ্রিয় সত্য বলাই তাঁর স্বভাব - কিন্তু সে কথা কখনই বিদ্বেষপ্রসূত নয় । তাঁর পরিহাস-বিদ্রূপে থাকে 'আধমরাদের ঘা মেরে বাঁচাবার মন্ত্র । কখনও কোনো লেখকের রচনার নিন্দা করা তাঁর প্রকৃতি-বিরুদ্ধ। আর যাঁরা যে-কোনো জীবিকা বা পেশার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণও লেখাপড়া করার অভ্যাস রেখেছেন রেখেছেন বয়সনির্বিশেষে তাঁদের প্রতি যে শ্রদ্ধা তিনি প্রকাশ করেন, তা বর্তমানকালের বিদ্বৎসভায় দুর্লভ । স্পষ্টবাদী প্রভাতকুমারের কাছে মেকি সাহিত্যিকদের যেমন রেহাই ছিল না, সত্যকার সাহিত্য অনুরাগীদের প্রতিও তেমনি তাঁর সহানুভূতির অন্ত নেই। এই প্রসঙ্গে আর একটি কথাও বলা প্রয়োজন - ছাত্র ছাত্রীদের আহ্বানে তিনি সব সময় সাড়া দিয়েছেন। ছোট-বড় যে কোনো অনুষ্ঠানে তিনি সানন্দে হাজির হতেন। এখন এই অষ্টাশী বছর বয়সেও সভা অনুষ্ঠান ইত্যাদি সম্বন্ধে তাঁর আগ্রহ ৰিন্দুমাত্র কমে নি। কিন্তু পরিবারের কনিষ্ঠদের শাসনে যেতে পারেন না - এটা তাঁর উপর একটা অগত্যা আরোপিত দুঃখ।
জীবনীকারের প্রদত্ত শিক্ষার প্রথম পাঠ ছিল সোজা হয়ে দাঁড়ানো, সোজা হয়ে বসা। সকাল-সন্ধে বেড়াতে হবে ; কিন্তু অহেতুক অহেতুক আড্ডা নয়। আর একটি জিনিষকে তিনি খুব করুণার চোখে দেখতেন; হলো বাঙালীর দুরারোগ্য ব্যাধি দিবানিদ্রা। আমি তাঁর বাড়ির দোতলার একটি ঘরে থাকতাম। একদিন বিকেল বেলায় তিনি একতলা থেকে হাঁক দিলেন, 'ভারত, ভারত'। নয়। তবু নীচে নামতেই হল। নীচে নেমে এসে বুঝলাম তাঁর আহ্বানের উদ্দিষ্ট ব্যক্তিটি আমিই। জিজ্ঞাসা করলাম, 'ভারত কেন?' তিনি সংক্ষেপে বললেন, ভারত কেবল ঘুমায়ে রয়'। আমার স্বভাবদোষে সে নামটি এখনও মাঝে মাঝে উচ্চারিত হয়।
যে কাজ তিনি নিজে করতেন না, সে রকম কাজ করবার অসঙ্গত আদেশও দিতেন না। বাড়িতে কোনো কারণে কাজের লোক না এলে নিজের নিজের কাপড় জামা বা খাবার থালা-বাসন ধুয়ে নেওয়ার কাজটা মাঝে মাঝে বেশ আনন্দদায়ক অনুষ্ঠানের মতই মনে হত । এ কাজে তাঁরও সোৎসাহ অংশগ্রহণে দশের লাঠি একের বোঝা হয়ে উঠতো না, সাময়িক সমস্যারও সমাধান হয়ে যেত। এ বাবদ আমার একটি চিত্রের কথা মনে আছে । কথা মনে আছে। একদিন বাড়ির প্রাঙ্গণে তিনি যখন কলকাতা থেকে আগত কয়েকজন ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলছেন তখন তাঁর বাঁ-হাতে ছিল বালতি আর ডান হাতে একটি ঝাঁটা। দুর্ভাগ্যবশতঃ আমার হাতে ক্যামেরা ছিল না। থাকলে একটি প্রদর্শন-যোগ্য ছবির অধিকারী
হওয়া যেত। ১৯৬৯ সালে গুরুতর রকমের অসুস্থতার আগে পর্যন্ত তাঁর কর্মপটুতা ছিল যে কোনো যুবকের ঈর্ষাযোগ্য।
রবীন্দ্রজীবনীকারের অসাধারণ সংকল্পশক্তির ফসল তাঁর অব্যর্থ সফল জীবন । তাঁর জীবন-পঞ্জীটি পড়লেই এ কথা সকলেই বুঝতে পারবেন। জীবনপঞ্জীতে যা লেখা নেই এমন দু'একটি কথা বলি। এক সময় তাঁর চুরুটের চুরুটের ধোঁয়ায় লাইব্রেরী ঘরে মশা বসতো না, রবীন্দ্রসদনের শতবার্ষিকী গবেষণা কক্ষটি যার প্রধান পরিচালক ছিলেন রবীন্দ্রজীবনীকার স্বয়ং - অনুসন্ধিৎস্নু দর্শকদের কাছে মনে হত তা যেন টিয়ারগ্যাসে পূর্ণ - তিনি হঠাৎ একদিন সে নেশা চিরকালের জন্য ছেড়ে দিলেন। দীর্ঘকালের এই অভ্যাস ত্যাগ করা স্থিরসংকল্পের দ্বারাই সম্ভব । এই সংকল্পের জোরেই তাঁকে আর একটি সঙ্কট অতিক্রম করতে দেখেছি। পূর্বকথিত ১৯৬৯-এর সেই গুরুতর ব্যাধি তাঁর এক অঙ্গকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে তুলেছিল। সে সময় চিকিৎসককে সহায়তা করেছিল তাঁর অসাধারণ মনের জোর । শুধু মনের জোরে কয়েক বছরের ভোগান্তিকে তিনি কমিয়ে এনেছিলেন মাত্র কয়েক মাসে।
শান্তিনিকেতনে সকলেই সোনার কলম নিয়ে শিক্ষকতা করতে আসেন নি। সাধনার ফলে কারো কারো খাগের কলম পরে সোনার কলম হয়েছে। এখানে বিদ্যালয় পত্তনের যুগকে কৃচ্ছসাধনার যুগ বললে বাড়িয়ে বলা হয় না। স্বভাবতঃ সকলকেই হতে হয়েছিল মিতব্যয়ী। 'দীয়তাং ভুজ্যতা দূরের কথা, আত্মম্ভরী টাকা ওড়ানোর লোক এখানে আগেও ছিল না, এখনও নেই। সকলেই নিজের আয় অনুযায়ী সমঝে চলেন । কিন্তু দোষী কেবল মৎস্যরাঙ্গা। চা খেতে খেতে অনেকের পরচর্চার প্রিয় প্রসঙ্গগুলির অন্যতম হলো - 'প্রভাতদা'র কার্পণ্য' । নুন খাই যার, গুণ গাই তার - এই সহজ ফর্মুলায় যাতে না-পড়ি সেজন্য শুধু তথ্য নির্ভর প্রামাণিক কিছু কথা
এই রটনার বিপক্ষে বলতে চাই । ভুবনডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য এক বিধ। জমি দান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঁচ হাজার টাকা দান, - এ সব দাতার লক্ষণ না-হতে পারে, কিন্তু এ যে কার্পণ্য নয় নিঃসন্দেহে সে কথা বলা যায় । কোনো নামের জন্য নয় - বোলপুর সংস্কৃতি পরিষদ আয়োজিত একটি অখ্যাত 'দোল-মেলা'র (১৯৭৯) জন্য পাঁচশ টাকা
দান - প্রভাতকুমার ছাড়া এ অঞ্চলে আর কেউ করেছেন কি না আমার জানা নেই । এ রকম অনেক দৃষ্টান্ত আমি দিতে পারি । কিন্তু তিনি যা অপরকে বলতে চান না, আমার লেখাতে তা প্রকাশিত হলে হয়তো তিনি রুষ্ট হতে পারেন। কাজেই তালিকা বর্ধনে বিরত হতে হল । এ প্রসঙ্গ আমার নিজের ভ্রান্তিনিরসনের একটি উপাখ্যান দিয়ে শেষ করি। তখন আমি বি. এ. পড়ি। জীবনীকার প্রভাতকুমারের পাশে বসে কাজ করছি। বাড়ীর বালক-পরিচারক বলু খবর দিল বাগানে ছাগল ঢুকেছে, গাছ খেয়েছে। ছাগলটিকে সে বেঁধেও রেখেছে । ঘণ্টা খানেক পর ছাগলের মালিক এলো। জীর্ণ বস্তু, হাড্ডিসার একটি লোক। লোক। জীবনীকার বললেন - "চার আনা পয়সা দিয়ে ছাগল নিয়ে যাও।" লোকটির কাকুতিমিনতিতেও তিনি অনড়। আমি মনে মনে সেদিন তাঁর উপর রাগ করেছিলাম ; আমার সমস্ত সহানুভূতি ছিল ওই লোকটির উপর। শেষ পর্যন্ত সে চার আনা পয়সা দিয়েই ছাগল নিয়ে গেল। ছোট্ট বলু সিকিটি পেয়ে আনন্দিত । আমার আন্তরিক আক্ষেপ তখন চরমে। কিন্তু সে অন্তর-গ্লানির ভার সম্পূর্ণ তিরোহিত হতে ঘণ্টাখানেকও লাগে নি। অনুরূপ শীর্ণ আর এক ব্যক্তি জানালার ওপারে দাঁড়ালো। তার বক্তব্য বোলপুর হাসপাতাল থেকে সে সিউড়ি গিয়েছিল। বুকের ছবি তোলা
হয়েছে। এখন ওষুধের জন্য আশি টাকা চাই। জীবনীকার প্রভাতকুমার কোনো কথা না বলে টেবিলের ড্রয়ার থেকে আটটি দশ টাকার নোট বার করে তার হাতে দিলেন। আমি সেদিন স্তম্ভিত হয়েছিলাম। অত্যন্ত দ্রুত ঘটে যাওয়া ছুটি ঘটনাকে আমি মেলাতে পারি নি । পরে আমার কাছে এই গল্পটি শুনে আমার জনৈক শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক বলেছিলেন- প্রথম ঘটনাটি তাঁর আদর্শ, আর দ্বিতীয়টি তাঁর প্রকৃতি।
এবার তাঁর সখের কথা বলি। রেডিও, টেলিভিশন, বন্দুক বা নিত্যনূতন ত্যনূতন বই কেনা - এ সখ তো অনেকেরই আছে। আমার বক্তব্য সেগুলি নয়। তাঁর বাগান করার সখের কথা ধরা যাক্ । তাঁর একটি ইতস্ততঃ অবিন্যস্ত
ফুলের বাগান আছে, আর আছে সব্জি-বাগান । এ বাবদ দৈনিক চার টাকা মজুরিতে এক স্বাধিকারপ্রমত্ত তথাকথিত মালী আছে, আর আছে সে মালীর নানারকম বায়নাক্কা । এ ছাড়া বীজ, চারা, সার ইত্যাদির ব্যয় তো আছেই । বোলপুর-শান্তিনিকেতনের মরুভূমিতে ফলন কম। তার ওপর এখানে 'ভাইয়ের সঙ্গে ভাইকে সে যে করেছে এক-মন' ; হুতরাং 'পরের দ্রব্য' কথাটি এখানকার অভিধানে নেই। সেই অদৃশ্য 'ভাই'-দের হাতে কিছু সব্জি অদৃশ্য হবার পর যা অবশিষ্ট থাকে তার হিসেব দিয়ে দেখা গেছে একটি কুমড়োর দাম পড়ে শতাধিক টাকা, এক কেজি বেগুনের মূল্য কয়েক শত টাকা । ফুলকপি-বাঁধাকপির মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার শতকরা একশ ভাগ । আমগাছে পেয়ারাগাছে নিখিলভুবন শিশুবর্ষের অনাহূত অখণ্ড অনুষ্ঠান লেগেই আছে। কিন্তু জীবনীকারের বাগান করা ঠেকায় কে? বছরের পর বছর বাগান করার প্রচেষ্টা চলে পূর্ণোদ্যমে, আর ফল১৩২
-অপহরণকারী শিশুপালের জন্য রক্ষিত লজেলের বয়াম খালি হলেই আবার পূর্ণ করা হয়। এ প্রকারের সখ তাঁর হরেক
জীবনীকার সম্পর্কে আমার বলার শেষ নেই। একান্ত ব্যক্তিগত আবেগের কথা সচেতনভাবেই বাদ দিয়েছি। আমার পরিচিত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনার কথা সাবধানতার জন্য অনুল্লিখিত থাকলো। সেগুলিও ব্যক্তিমানুষ প্রভাতকুমারকে চিনিয়ে দিতে সাহায্য করতো। তবে আমার মনে হয় যথার্থ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের পরিচয় হীরের দ্যুতির মত নিজেই বিচ্ছুরিত হয়। শুধু দেখার রকম-ফের। আজ থেকে একুশ বছর আগে রবীন্দ্রজীবনীকার একই দিনে ছুটি পোষ্টকার্ডে চিঠি পেয়েছিলেন। লিখেছিলেন, 'রবীন্দ্রজীবনী'তে তিনি নাকি রবীন্দ্রনাথকে যথেষ্ট পরিমাণে ব্রাহ্ম রূপে উপস্থাপিত করেন নি। অপর চিঠিতে অভিযোগ, জীবনীকার তাঁর গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের হিন্দুত্বকে ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দিয়েছেন। তিনি সেদিন শুধু একের চিঠি অন্যের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন । আজ প্রভাতকুমার সম্পর্কে তাঁর পরিচিত জনের মনোভঙ্গি ও দৃষ্টিভঙ্গি আদানপ্রদানের অনুরূপ একটি উপলক্ষ হওয়াতে আমি আনন্দিত । এজন্য তরুণ সম্পাদকদের সামুরাগ শুভেচ্ছাসহ ধন্যবাদ জানাই। আর ভক্তিনম্র প্রণাম জানাই দেশিকোত্তম রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় ও শ্রীযুক্তা হুধময়ী মুখোপাধ্যায়কে ॥
প্রণয়কুমার কুণ্ডু
"আমার কারখানাটা দেখে যাও।" "আমার কারখানাটা দেখে এসো।"
ইদানীং এই ধরণের কথা আমরা অনেকেই শুনেছি তাঁর মুখে, তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপে, ঘরোয়া বক্তৃতায়, নানা ভাষণে বা সম্বর্ধনার প্রতিবেদনে। জীবনের অনেকটা পথ চলে এসে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় নিজের কর্মকেন্দ্রকে বলেছেন 'কারখানা'। বুঝতে পারা যায়, নিজের জীবন ও কর্মধারা" সম্পর্কে এই তাঁর পরিণত ও সর্বশেষ অনুভব; যেন তিনি তাঁর সুদীর্ঘ জীবনচর্যার ভিতর দিয়ে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার একটি কারখানা গড়তে চেয়েছেন এবং সেই কারখানার কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে নিরলস অধ্যবসায়ে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন সেই কাজে, যা আজ তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে সিদ্ধিলাভের চরম শীর্ষে। একদা তরুণ বয়সে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে এসেছিলেন, অতঃপর, মুলত তাঁকেই সামনে রেখে নীরব সাধনায় সকলের অগোচরে গেঁথে রেখেছেন তাঁর জীবনের অবলুপ্ত প্রায় পৃষ্ঠাগুলি, ইতস্তত ছড়িয়ে-থাকা ঘটনাগুলি জোড়া দিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন রবীন্দ্র-জীবনের বিশাল চিত্রশালা। আর, এই চিত্রশালার সামনে দাঁড়িয়ে আজ আমরা তাঁকে দেখতে পাই ঋষির ভূমিকায়। এই চিত্রশালার সামনে দাঁড়িয়েই এখনো তিনি আমাদের ডাক দিয়ে বলেন - "আমার কারখানাটা দেখে যাও।"
এই কারখানাটি কেমন? অনেকেই তার সঙ্গে পরিচিত। একটু খুঁটিয়ে দেখলেই দেখতে পাওয়া যায়, সারা ঘর বইয়ে ঠাসা, আর এরই মধ্যে সারাদিন কাজ করে চলেছেন প্রভাতকুমার তাঁর তরুণ সহকর্মীদের নিয়ে । প্রতিদিন সঞ্চিত হয় নতুন তথ্য, খবর ; বেড়ে চলে ঘটনাপঞ্জী সম্বলিত কার্ডের পর কার্ড এবং প্রায় সকলের আড়ালেই এই কারখানার কেন্দ্রস্থলে বিরাজিত থেকে তিনি তাঁর সহকারী শিষ্য-শিষ্যাদের নিয়ে এখনো রচনা করে চলেছেন রবীন্দ্রজীবনের নব নব ইতিবৃত্ত ; দর্শন ও সাহিত্যের পারম্পর্যসূত্রে ভারতীয় সংস্কৃতির নব পরিচয় দিয়ে চলেছেন। অশীতিপর এই মানুষটি এখনো তেমনি মেরুদণ্ড সোজ। রেখে অনলস পরিশ্রমে এই কারখানাটিকে প্রাণবন্ত করে রেখেছেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতবর্ষে দেশ জুড়ে গড়ে উঠেছে নানা গবেষণা কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ক্রমশ বেড়ে চলেছে গবেষকের সংখ্যা, সরকারী বে-সরকারী সাহায্যপুষ্ট গবেষকের দল কাজ করে চলেছেন। সেখানে কতো আয়োজন, কতো বিপুল অর্থের দাক্ষিণ্য, কতো আড়ম্বর। কিন্তু প্রভাতকুমারের কারখানা ? তাঁর এই গবেষণা কেন্দ্রের কোনো আড়ম্বর নেই, এমনকি কোনো চটকদার আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যারও আমদানী নেই। অথচ, ঐকান্তিক নিষ্ঠায় এই কারখানায় যে উৎপাদন সম্ভব হয়েছে, জানি না কোন পেশাদার গবেষণকেন্দ্র তার সমতুল্য হতে পারে কিনা। প্রবচনে আছে, 'সাজ করতে দোল ফুরোয়।' আমাদের দেশের গবেষণা কেন্দ্রগুলির বেশীর ভাগই পশ্চিমী কায়দায় বাইরের আড়ম্বরের দিকেই আগ্রহী, আয়োজনেই শক্তি নিঃশেষিত হয়। আসল কাজ নেপথ্যে থেকে যায়। কিন্তু, প্রভাতকুমার তাঁর এই কারখানায় ধ্যান-সমাহিত সাধকের মতো, বিদ্যাচর্চার যে দৃষ্টান্ত
| pdf |
5481bbcff9c86a139086a7a119b91645f4c627e1 | পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টিভি পর্দার শীর্ষ জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। বাংলা না জানা এক তরুণী থেকে বাংলা নাটকেরই প্রভাবশালী অভিনেত্রী হয়ে উঠেছেন তিনি। লম্বা পথচলায় নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা, শ্রম ঢেলে দিয়েছেন। যার সুবাদে দেশজুড়ে তার পরিচিতি।
দর্শক-সমালোচক সকলেই অকপটে স্বীকার করেন, অভিনয়ে অনেকখানি পরিণত হয়েছেন মেহজাবীন। তার সমসাময়িক কাজগুলো দেখলে মুগ্ধতায় অবাক হতে হয় সবাইকেই। তেমনই মুগ্ধ হয়েছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া।
মেহুর অভিনয় ফারিয়াকে এতোটাই ছুঁয়ে গেছে যে, তিনি প্রকাশ্যেই সেটা বলে ফেললেন। এমনকি মেহজাবীনের বিপরীতে নিজের জন্য ভোট চাওয়াকেও বেমানান বলে জানালেন তিনি।
সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকা। সেখানে ৫টি নাটকের জন্য সেরা টিভি অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন মেহজাবীন চৌধুরী। এগুলো হলো ভিকি জাহেদ পরিচালিত 'চিরকাল আজ', 'পুনর্জন্ম', 'ভুলজন্ম', কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত 'ভাইরাল গার্ল' ও মাহমুদুর রহমান হিমি পরিচালিত 'আলো'। অন্যদিকে শবনম ফারিয়া মনোনয়ন পেয়েছেন আবু বকর রোকন পরিচালিত 'ব্রাদার অ্যান্ড সিস্টার' নাটকের জন্য।
পুরস্কারের মঞ্চে একে-অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী। এরপরও এক শিল্পীর প্রতি আরেক শিল্পীর এমন উদারতা, ভালোবাসা মুগ্ধ করছে নেটিজেনদের। অনেকেই ফারিয়াকে ধন্যবাদ দিয়েছেন পোস্টটির জন্য।
| web |
37c92ec42695aa10c1d75bdb980f95d9 | 'শাসন নয়, জনকল্যাণে কাজ করছি'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, 'আমি জনগণের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছি।'
তিনি বিরোধী দলকে দমন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও নাকচ করেন।
ব্রিটেনের সংবাদপত্র গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। ঢাকায় দেওয়া এই সাক্ষাৎকার সোমবার প্রকাশ করে গার্ডিয়ান।
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার কাজ সাধারণ মানুষের উন্নয়ন। আমার রাজনীতি সাধারণ মানুষের জন্য, নিজের জন্য নয়...। জনগণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আছে। জনগণ চায়, তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হোক। আমি তাদের সেই চাহিদা পূরণেই কাজ করছি। খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও চাকরির ব্যবস্থা করছি।'
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশ হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান কার্যকর, মানুষও এতে সন্তুষ্ট। তাহলে আপনি কী করে আমাকে বলেন, যে আমি শাসন করছি। আমি শাসন করছি না, জনগণের সেবা করছি।'
২০০৮ সালের নির্বাচনে সরকার গঠনের পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল প্রশ্ন তুলেছিল।
শেখ হাসিনা গার্ডিয়ানকে বলেন, ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে আনতে তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে টেলিফোন করেছিলেন। পাশাপাশি ভোট ঠেকাতে বিরোধী জোটের নাশকতার ঘটনাগুলোও তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্র চর্চার ধরন বাংলাদেশেও অনুসরণের কথা তুলে ধরে বলেন, 'জনগণ যতক্ষণ চায়, আমি (ক্ষমতায়) আছি। তারা যদি না চায়, তাহলে নেই। তবে ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি, জনগণের জন্যই কাজ করব এবং তাই করছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ না নিয়ে রাজনৈতিক ভুল করেছেন খালেদা। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে তার সরকারের সময় বেসরকারি টেলিভিশন চালুর কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, 'এই পরিবর্তন কে এনেছে? এই আমি, আমিই সেই বন্ধ দুয়ার খুলে দিয়েছিলাম। এখন ৪১টি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল, প্রায় ৭০০ সংবাদপত্র। তারা লিখছে, স্বাধীনভাবেই লিখছে। এনজিওগুলো তাদের নিয়ম-নীতির মধ্যেই কাজ করছে।'
| web |
3c18e9b37270b7f21c32e36dca17ba94 | 'কার খালু'দের আর্তনাদ জলে যাক!
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। মূল্যবৃদ্ধিতে অর্থনীতির ওপর কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে ইতোমধ্যেই অর্থনীতিবিদরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বক্তৃতা-বিবৃতি দিতে শুরু করেছেন। মহারথীদের এসব যুক্তিতর্ক ও বিচার-বিশ্লেষণ আমার মতো ডেঙ্গুর কামড়ে পঙ্গু মানুষের মাথায় ঢোকে না। আমার মতো পঙ্গু যারা ঘরের জ্বালাতেই দিনরাত দগ্ধ হয়ে চলেছেন, তাদের মাথায় এসব আকাশকুসুম ভাবনা ঢোকার ফাঁক-ফোকর কোথায়? আমাদের ঘরের জ্বালাই তো মহল্লার পথ ধরে সারা দেশের মানুষের কাউকে কাউকে অগ্নিদগ্ধ করে চলেছে!
তাই মহারথীদের এসব আকাশকুসুম ভাবনার ফাঁক গলিয়ে আমাদের মাথায় কেবলই ঘরের চিন্তা! আমাদের ঘরে গ্যাসই নেই তো মূল্যবৃদ্ধির চিন্তা আক্রমণ করবে কী করে? আমার মতো যাদের ঘরে গ্যাস নেই তাদের একটা বিরাট অংশ গ্যাসের দাম বাড়ালেও গ্যাস চান! কারণ অনেক আছে। শুধু এটুকুই বলা কর্তব্যের বাধ্যবাধকতার জাঁতাকলে পিষ্ট মাথা অস্থির হয়ে মাছির মতো ভনভন করে ঘুরছে বিধায় নিম্নের কটুবাক্যগুলো বলতে বাধ্য হলাম!
যারা গ্যাসের নতুন সংযোগ পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে আছেন, তাদের কাছে মূল্যবৃদ্ধির শূল কোনো যন্ত্রণাই না। তারা সংযোগ না পাওয়ার যন্ত্রণায় কাতর হয়ে কুনো ব্যাঙের মতো ঘরের কোণে বসে স্ত্রীর সঙ্গে ভ্যাক ভ্যাক করছেন! কারণ নতুন সংযোগ না পাওয়ায় তাদের গায়ে আগুন জ্বলছে! এটা তাদের জন্য মরণফাঁদ হয়েও দাঁড়িয়েছে বটে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে কিন্তু বিল্ডিং তৈরি তো বন্ধ হয়ে নাই। এই দীর্ঘ সময়ে যেসব নতুন বিল্ডিং তৈরি হয়েছে তারা গ্যাস সংযোগ নেই বলে বাড়িভাড়া অন্যদের চেয়ে কম করে হলেও ২০% কম নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাছাড়া ভাড়াটিয়ারা সিলিন্ডার গ্যাসের বাসায় থাকতে চান না। কারণ অবশ্যই সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ প্রায় ডাবল হয়।
১২ কেজির ১ সিলিন্ডারে ১৮/১৯ দিন রান্না করা যায়। যার দাম ১১০০/১২০০ টাকা। সেই হিসাবে ৩০ দিনে প্রায় ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকার গ্যাস লাগে। অন্যদিকে পাইপের গ্যাস ব্যবহারের মতো নিরাপদ নয় সিলিন্ডার ব্যবহার। তাই স্বাভাবিক কারণেই ভাড়াটিয়ারা যে বাড়িতে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হয়, সে বাড়িতে ভাড়া থাকতে চান না। অনেক বুঝিয়ে যদিও কাউকে রাজি করানো যায়, সে আবার ভাড়া অনেক কম দিতে চান।
আর ভাড়া কম দিতে চাইবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। কারণ একদিকে লাইনের গ্যাসে খরচ কম অন্যদিকে নিরাপদ। পক্ষান্তরে সিলিন্ডারে খরচ ডাবল এবং ব্যবহার করাও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যারা নতুন বিল্ডিং করেছেন তারা পাইপের গ্যাসের সংযোগ পেতে উদ্গ্রীব। নতুন গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ না পাওয়ার বিড়ম্বনাও কম নয়। তারা বাড়িভাড়া ২০% কম নিতে বাধ্য হলেও সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স কিন্তু অন্যদের সমানই দিতে হচ্ছে!
এই কারণে যাদের বাড়িতে পূর্ব থেকে গ্যাসের সংযোগ আছে এবং মাত্র ১টি চুলার অনুমোদন আছে তাদের অনেকেই তাদের চাহিদার বাড়তি চুলাগুলো অবৈধভাবে জ্বালাচ্ছেন। যার প্রমাণ সংবাদপত্রের খবরে প্রকাশ 'অনুমোদন ১ চুলা, জ্বলছে ১৮টা!'
এমন চুরি করতে গিয়ে কেউ কেউ লাইনের গ্যাস সরবরাহকারী সরকারি কোম্পানির অসাধু লোকদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চলছেন! আর লিয়াজোঁ মানেই ঘুষ দিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস জ্বালানো। দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার গত ১০ জানুয়ারি ২০১৯ এর প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী এভাবে অবৈধ সংযোগ রয়েছে ৩ লাখেরও বেশি! যেহেতু প্রতিদিনই নতুন নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে সেহেতু এভাবে অবৈধ গ্যাস ব্যবহারও বাড়ছে বৈ কমছে বলে মনে হয় না।
যদি অবৈধ সংযোগ ৩ লাখও হয়, তবুও পূর্বনির্ধারিত মূল্যে মাসে ২৪ কোটি টাকার গ্যাস চুরি হচ্ছে! সেই হিসাবে বছরে ২৮৮ কোটি টাকার গ্যাস চুরি হচ্ছে! আর বর্তমানের বর্ধিত মূল্যে চুরি হবে ৩৫১ কোটি টাকার গ্যাস! অথচ এই চুলাগুলোকে বৈধতা দিলেই বছরে কমপক্ষে ৩৫১ কোটি টাকা সরকারের ঘরে জমা হয়। সেইসঙ্গে অবৈধভাবে গ্যাস জ্বালানোর পাপের অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগতে থাকা মানুষগুলোও কিছুটা তৃপ্তি পায়। গ্যাসে ভর্তুকির পরিমাণও কমে আসে। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কার স্বার্থে সরকার যেসব বাড়িতে গ্যাসের লাইন আছে তাদের বাড়তি চাহিদার সংযোগ দিচ্ছেন না?
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাকি সরকার বাহাদুরের দূরদর্শী লোকজনের এসব পরিসংখ্যান মাথায় ঢুকেও ছিল! তাই তারা বক্তৃতার মাঠে যেসব বাড়িতে পূর্ব থেকেই গ্যাসের লাইন আছে এবং এক বা একাধিক চুলা জ্বালানোর অনুমোদন আছে তাদের বাড়তি চাহিদাগুলোতে সংযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। নির্বাচনের ডামাডোলে কর্তাব্যক্তিরা বুঝি সেসব ভুলে গেছেন! তাই ২৩ মে ২০১৯ ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে জানতে পারলাম সরকার নাকি বিতরণকারী কোম্পানিগুলোকে বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ একেবারে লিখিত চিঠি দিয়ে ফরমান জারি করে বন্ধ করে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন! হায় কপাল! নির্বাচনের আগে যেটুকু আশার প্রদীপ জ্বলেছিল তার সবচুকুই তেলসহ পুড়ে ছাই হয়ে বাতিও নিঃশেষ হয়ে গেল!
কপাল পোড়ালেন ভালো কথা, এবার একটা এই বলে এমন শক্তিশালী চিঠি সিটি করপোরেশনকে দিন তো দেখি-'যেসব বাড়িতে গ্যাস সংযোগ নেই, সেসব বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স ২০% কম নিতে হবে!' তাহলে অন্তত এটুকু বুঝব যে আপনারাও কেউ কেউ ডেঙ্গুর কামড়ে আমার মতো পঙ্গু হতে পেরেছেন!
নচেৎ ধরেই নেব যে আপনারাও ওইসব চুলচেরা বিশ্লেষক অর্থনীতিবিদদের দলেরই বড় বড় অঙ্ক কষা লোক! আর আমরা বঙ্কিম চন্দ্রের 'বঙ্গদেশের কৃষক'! যেখানে 'কর্ণওয়ালিস প্রজাদের হাত পা বান্ধিয়া জমিদারের গ্রাসে ফেলিয়া দিলেন-জমিদার কর্ত্তৃক তাহাদিগের প্রতি কোনো অত্যাচার না হয়, সেই জন্য কোনো বিধি ও নিয়ম করিলেন না।' সেকালের হাত পা বাঁধা কৃষকের মতো একালের গ্যাস সংযোগ বঞ্চিতরা আপনাদের প্যাঁচানো দড়ির প্যাঁচে আটকা পড়ে শুধুই ছটফট করতে থাকবে! কর্ণওয়ালিসের মতো প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা আপনারাও রাখলেন না।
না জানি এসব অবান্তর কথা আবার কারো অন্তরে শূল হয়ে বিঁধে আমাকেই শূলে চড়ানোর পরিকল্পনা করছে কি-না! কারণ বঙ্কিমের প্রবন্ধ বলে, 'কৃষক গোমস্তার নামে নালিশ করিতে গেল, সেই অবসরে গোমস্তার বাধ্য লোকে তাহার ধান চুরি করিয়া লইয়া গেল, না হয় আর একজন কৃষক গোমস্তার নিকট হইতে পাট্টা লইয়া তাহার জমিখানি দখল করিয়া লইল।' কি জানি, সহৃদয়বান গ্যাস কোম্পানির কর্তাদের চোখের আড়ালে তাদের পান্ডারা আবার আমাদের অনুমোদিত ১টি চুলা না জানি কখন বন্ধ করে দেন!
সেকালের কথা একালে নিষ্প্রয়োজন। কারণ সেকালের বিদেশি শাসন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের দুই দুই বার যুদ্ধ করতে হয়েছে। শেষ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যিনি তার সম্মান বিশ্বজনীন। তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান! তিনি জীবিত থাকলে এমন অসঙ্গতির কথা তিনিই বলতেন। আমাদের পোড়ামুখের প্রলাপের প্রয়োজন হতো না। ব্যথা এইখানে লাগে, ঘাতকরা আমার আপনারে সপরিবারে নির্মমভাবে খুন করেছে! তাই তো আজ উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপবে না এমন শঙ্কা দূর হয় না!
সব সময় সফরীর মতো ভয়ে থাকতে হয়! যেখানে বড় বড় মাছের ভয়ে ভয়ে থেকেও তাদের আহারে পরিণত হওয়া সফরীদিগের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! কারণ বঙ্কিম বাবু জানিয়েছেন সেকালে 'শূদ্রের দাসত্বে ক্ষত্রিয়ের ধন এবং ধর্র্মের লোপ হয়।' আমাদের সমাজেও ক্ষত্রিয়ের তো অভাব নেই! তাই তো শূদ্র হয়ে যখন চারদিকে কিলবিল করা গ্যাসখোর ক্ষত্রিয়দের বিরুদ্ধে কথা বলি বা সফরী হয়ে যখন বোয়ালের ভুল ধরি, তখন বুকটা খাঁচায় বন্দি ছোট্ট ইঁদুরের মতো দুরু দুরু করে!
যাহোক ক্ষম অপরাধ! গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করলে রাষ্ট্রের রাজস্ব বাড়বে, কমালে জনগণের দোয়া বাড়বে! আর যেসব বাড়িতে পূর্ব থেকেই সংযোগ আছে তাদের বাড়তি চাহিদা পূরণ করলে চুরি বন্ধ হবে, মানুষের নৈতিক অবক্ষয় কমবে, রাষ্ট্রে রাজস্ব বাড়বে। কোনটা বেশি লাভজনক ভেবে দেখা মহারথীদের কাজ! আমার ডেঙ্গু খাওয়া পঙ্গু মাথার ভুলগুলো যদি আপনারা কুল হয়ে শুনেন ও সুচিন্তিত রায় দিয়ে রাষ্ট্রের ও মানুষের উপকার করেন তাহলেই ধন্য হবো!
'জীবের শত্রু জীব; বাঙালি কৃষকের শত্রু বাঙালি ভূস্বামী। ব্যাঘ্রাদি বৃহজ্জন্তু, ছাগাদি ক্ষুদ্র জন্তুগণকে ভক্ষণ করে; রোহিতাদি বৃহৎ মৎস্য, সফরীদিগকে ভক্ষণ করে; জমিদার নামক বড় মানুষ, কৃষক নামক ছোট মানুষকে ভক্ষণ করে। বঙ্কিমের এই কথা ইংরেজ শাসনামলের। আমরা ইংরেজ পেরিয়ে পাকিস্তানি তাড়িয়ে স্বাধীন হয়েছি।
তাই স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে বলছি, নিশ্চয়ই সরকার বাহাদুর দেশের লাভের কথা বিবেচনা করেই গ্যাসের দাম বাড়ানো ও বাসাবাড়িতে নতুন সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত অদল বদল, পুনর্বিবেচনা করেন কি-না তা আপনারাই ভাবুন। আমার মতো ডেঙ্গুর কামড়ে পঙ্গু কার খালুদের আর্তনাদ জলে যাক!
| web |
ec2f0828eee05a57c6d2cbf6a3bdbffee55f4e88 | দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের উদ্যোগে শুক্রবার ঝড়খালিতে পালিত হল আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস।
ফের হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি মাটির বাড়ি, ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক।
ফের সানস্ট্রোকে মৃত্যু, চাঞ্চল্য।
মুজনাই নদীর গঙ্গা মন্ডল ঘাটে সেতুর দাবি বহু দিনের।
| web |
e1390724db2562c51b959b3a35539086d26b9b98 | টয়লেটঃ এক প্রেমকথা দিয়ে মাত হয়ে গেছে বলিউড। বাংলাদেশেও সে রকম একটা ছবি হলে কেমন হয়? যার নাম হবে, 'টয়লেটঃ ক্রিকেটের এক বসত'।
বলিউডের ছবিতে টয়লেটের সঙ্গে ভারতে বহুদিন ধরে চলে আসা একটা সংস্কারের বিরোধ লেগে গিয়েছিল। কিন্তু বগুড়ার ১৫ কিশোরী সেই টয়লেটকেই করে নিয়েছে আপন, ছোট্ট একটি টয়লেটকে ঘিরে বড় হচ্ছে তাদের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার স্বপ্ন।
একটা টয়লেটকে ক্রিকেটের আবাস হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তাটা আসে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহকারী কোচ মোহাম্মদ মুসলিম উদ্দিনের মাথায়। ২০০৭ সালে মহিলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে বগুড়ার মেয়েদের ক্রিকেটের দেখভালের দায়িত্ব পান। দু-তিন মাস পর মহিলা ক্রীড়া সংস্থা সে কাজ থেকে সরে গেলেও মুসলিম উদ্দিন ছেড়ে যাননি বগুড়ার কিশোরী ক্রিকেটারদের। মাঝে কয়েক বছর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গেও ছিলেন না। মেয়েদের খেলা শেখানোর কাজটা তবু চালিয়ে গেছেন। মেয়েদের জাতীয় দলে খেলা খাদিজাতুল কুবরা, রিতু মণি, শারমিনরা তাঁর হাতেই তৈরি।
ক্রিকেটের বসতে ঢুকে মুসলিম উদ্দিনের আরও কিছু সৃষ্টিশীল চিন্তার ছাপ পাওয়া গেল। অনুশীলনের জন্য অপরিহার্য বেশ কিছু উপকরণ তিনি অনেক কম খরচে স্থানীয়ভাবে তৈরি করে নিয়েছেন। এসব জিনিস জাতীয় দল বা ঘরোয়া ক্রিকেটের দলগুলো উচ্চমূল্যে বাজার থেকে কেনে। অনেক সময় বিদেশ থেকেও আনাতে হয়। উইকেটকিপিং অনুশীলনের বিশেষ একধরনের ব্যাট দেখাতে দেখাতে মুসলিম উদ্দিন বলছিলেন, 'বিদেশ থেকে যেসব জিনিস আনা হয়, আমি নিশ্চিত, আমার জিনিসগুলো দিয়ে তার অন্তত ৭০ ভাগ কাজ হয়।' তবে একটা জিনিস চাইলেও বানানো সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। সেটা হলো বোলিং মেশিন। কোচ খুব করে বললেন, কেউ যদি মেয়েদের অনুশীলনের জন্য একটা বোলিং মেশিনের ব্যবস্থা করে দিতেন, খুব ভালো হতো।
ক্রিকেটের ছোট্ট দুনিয়া থেকে বের হওয়ার সময় আবারও চোখে পড়ল লেখাটা, 'দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, জীবন বদলে যাবে।' বলিউডের 'টয়লেট'ই বলুন বা শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের - বার্তা তো আসলে এটাই।
| web |
17fab90fb7d1a9e5710334efcc9cb29fed5007bf | বিশেষ প্রতিনিধিঃ আপনার পুলিশ আপনার পাশে, তথ্য দিন সেবা নিন 'বিট পুলিশিং বাড়ী বাড়ী, নিরাপদ সমাজ গড়ি' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহীর চারঘাট থানার ভয়াল লক্ষীপুর ইউনিয়নে বিট পুলিশিং কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। চারঘাট মডেল থানা পুুলিশের আয়োজনে রবিবার চারঘাট থানার ভয়াল লক্ষীপুর ইউনিয়নে এই বিট পুলিশিং কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়।
বিট পুলিশিং কার্যালয়ের উদ্বোধনটি চারঘাট মডেল থানা পুুলিশের আয়োজনে ও ভয়াল লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী বুলবুলের সভাপতিত্বে গতকাল রবিবার (৩০শে আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩ ঘটিকার দিকে উদ্বোধন উপলক্ষে শুরুতে ফিতা কেটে চারঘাট মডেল থানার ভয়াল লক্ষীপুর ইউনিয়নে ০৬-নং বিট পুলিশিং কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়।
উক্ত বিট পুলিশিং কার্যালয়টির উদ্বোধন করেন, চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমিত কুমার কুন্ডু। এ সময় বিট অফিসার এস আই (নিরস্ত্র) মোঃ নাজমুল হক মৃধা, সহকারী বিট অফিসার এএসআই (নিঃ) মোঃ এনামুল হক কর্তৃক বিট পুলিশিং কার্যালয়, বিট নং- ০৬ (ভয়াল লক্ষীপুর ইউনিয়) এর অফিস উদ্বোধন করা হয়। বিট পুলিশিং উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উক্ত ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বিট অফিসার এস আই (নিরস্ত্র) মোঃ নাজমুল হক মৃধার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশের সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। সেই সাথে পুলিশের সেবার কার্যক্রমকে গতিশীল ও কার্যকর করাসহ পুলিশের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে থানা এলাকায় পৌরসভা ও ইউনিয়ন ভিত্তিক এক বা একাধিক ইউনিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং পরিচালিত হবে। পাশাপাশি এলাকা থেকে মাদক, বাল্য বিবাহ বন্ধ করণ, চোরা কারবারী বন্ধসহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার করা।
বিট অফিসার বলেন, বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সেবাকে সরাসরি থানা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃতিকরণ এর ফলে থানায় মোতায়েনকৃত জনবলের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। প্রান্তিক পর্যায়ে জনসম্পৃক্তির মাধ্যমে এলাকার উত্থিত বা বিরাজমান সমস্যার প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। এতে করে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধ সংক্রান্ত অগ্রিম গোপন সংবাদ এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সমাজ থেকে অপরাধভীতি দূরীকরণ পূর্বক জনমনে স্বস্তি ও আস্থা স্থাপন করা। ফলে জনসাধারণের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরি করা সম্ভব হবে।
সেই সাথে বিট অফিসার আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী জনগণের আস্থা অর্জনে সর্বাত্মাক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের যে কোন দুর্ভোগে পুলিশ বাহিনী সর্বদায় কাজ করে চলেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর সুযোগ্য ও মানবিক পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ বিপিএম, পিপিএম স্যারের সঠিক দিক নির্দেশনা ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমিত কুমার কুন্ডু স্যারের পরামর্শ ক্রমে আমরাও এলাকার মানুষদের উন্নত সেবা দানের লক্ষ্যে বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তারই একটি বহিঃপ্রকাশ বিট পুলিশিং কার্যালয়।
| web |
0f176f7ec5b530cf8808682c893c312a8ecd26ce | ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) জনপ্রশাসন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে 'ঢালাও' দাবি করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, প্রতিবেদনে যেসব দাবি করা হয়েছে তা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ কথা বলেন।
রোববার 'জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচারঃ নীতি ও চর্চা' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। সেখানে তারা বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদায়ন ও পদোন্নতিতে রাজনৈতিক বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছে, মেধা উপেক্ষিত হচ্ছে। এমনকি বিধিমালায় না থাকলেও পদোন্নতিতে গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, তৃতীয় তলা, ৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, (নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ), ঢাকা-১২১৭ ।
| web |
359a0589755a89e912fd8ad5900795eaac249267 | দারুস সালাম থানা (ঢাকা মেট্রোপলিটন) আয়তনঃ ৪. ৯৮ বর্গ কিমি। অবস্থানঃ ২৩°৪৬' থেকে ২৩°৪৮' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২০' থেকে ৯০°২১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানাঃ উত্তরে শাহ আলী থানা, দক্ষিণে আদাবর থানা, পূর্বে মিরপুর মডেল ও শেরেবাংলা নগর থানা, পশ্চিমে সাভার উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৯৮৭২৩; পুরুষ ১১০৪১০, মহিলা ৮৮৩১৩। মুসলিম ১৯২০৬৬, হিন্দু ৬০৭৮, বৌদ্ধ ৪৯০, খ্রিস্টান ৭২ এবং অন্যান্য ১৭।
জলাশয় প্রধান নদীঃ তুরাগ।
প্রশাসন ২০০৮ সালের ২৩ আগস্ট মিরপুর থানার অংশ নিয়ে দারুস সালাম থানা গঠিত হয়।
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও স্মৃতিসৌধ।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুস সালাম মসজিদ, কল্যাণপুর জামিয়া মসজিদ, কল্যাণপুর হাউজিং জামে মসজিদ, লালকুঠি বড় মসজিদ উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার হার গড় হার ৬৭. ৫৮%; পুরুষ ৭৩. ৬১%, মহিলা ৬৮. ০৬%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ বাংলাদেশ টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, মিরপুর বাংলা কলেজ, কল্যাণপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, এফএম ইন্টারন্যাশনাল কলেজ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি সেন্টার ১, খেলার মাঠ ৫, সিনেমা হল ২।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গাবতলী বাস টার্মিনাল, কল্যাণপুর বিআরটিসি বাস ডিপো, একমি হেডকোয়ার্টর।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ১. ২৪%, অকৃষি শ্রমিক ৩. ৩৯%, শিল্প ৩. ৮৮%, ব্যবসা ৩১. ৪২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১১. ২৫%, নির্মাণ ৩. ৬৭%, ধর্মীয় সেবা ০. ১৫%, চাকরি ৩৭. ৮৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২. ৭৫% এবং অন্যান্য ৪. ৩৭%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫. ০৫%, ভূমিহীন ৪৪. ৯৫%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, শাকসবজি।
যোগাযোগ বিশেষত্ব মোট সড়ক ৩৪. ০৮ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা গার্মেন্টস ও ঔষধ শিল্প।
বাজার ও শপিং সেন্টার খাজা মার্কেট, কল্যাণপুর নতুন বাজার, গাবতলী গরু মার্কেট, গাবতলী বাজার, লালকুঠি বাজার উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য তৈরি পোশাক, ঔষধ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ থানার সবক'টি ওয়ার্ড বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯৭. ২২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ২১. ৭৬%, পুকুর ০. ১০%, ট্যাপ ৭৬. ০২% এবং অন্যান্য ২. ১২%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৮৭. ৪৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১০. ৮৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১. ৬৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
| web |
04a836a703a3b7895b86afa8e3acfaeb6c2e0d15 | খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ড্যান্ডি ডায়িংয়ের ৪৫ কোটি টাকা ঋণ খেলাপের মামলার বিচার শুরু হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার এক নম্বর অর্থঋণ আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস এ মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে ইস্যু গঠন করে সাক্ষ্য শুরুর দিন ঠিক করে দিয়েছেন।
মামলার বাদীপক্ষ সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম জানান, আগামী ১ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রেখেছেন আদালত।
৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা ঋণ খেলাপের অভিযোগে ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম অর্থ ঋণ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার মূল আসামি আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ হিসাবে মা খালেদা জিয়া, স্ত্রী শামিলা রহমান সিঁথি, মেয়ে জাহিয়া ও জাফিয়া রহমানকে এ মামালায় বিবাদী করা হয়। তাদের পক্ষে ইস্যু গঠনের শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম।
মুদ্রাপাচার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কোকো সপরিবারে মালয়েশিয়ায় থাকা অবস্থায় গতবছর জানুয়ারিতে কুয়ালালামপুরে মারা যান। সে সময় কোকোকে দাফনের জন্য দেশে এলেও পরে মেয়েদের নিয়ে মালয়েশিয়ায় ফিরে যান শামিলা। বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে রয়েছেন বলে বিএনপি নেতাদের তথ্য।
ড্যান্ডি ডায়িং মামলার ১০ নম্বর বিবাদী মোজাফফর আহমেদের মৃত্যুর পরও তার স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে মাসুদ হাসানকেও বিবাদী করেছিল সোনালী ব্যাংক।
মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন- ড্যান্ডি ডায়িং লিমিটেড, খালেদার ভাই প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের ছেলে শামস এস্কান্দার, সাফিন এস্কান্দার, মেয়ে সুমাইয়া এস্কান্দার, স্ত্রী নাসরিন আহমেদ, তারেকের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ১৯৯২ সালে তিন কোটি টাকা মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করে ড্যান্ডি ডায়িং লিমিটেড। ১৯৯৩ সালের ৫ মে সোনালী ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণ নেন বিবাদীরা। এরপর ১৯৯৬ সালে সাঈদ এস্কান্দারের আবেদনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবার ঋণ মঞ্জুর করে।
২০১০ সালের ৪ এপ্রিল ড্যান্ডি ডায়িংকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ কোটি ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, বারবার তাগাদার পরও যা পরিশোধ করেননি বিবাদীরা।
| web |
cbfe8b7406794053a6dd93d083b83aa6b6bba492 | রংপুর সিটি করপোরেশনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি সরকারদলীয় প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার চেয়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৯ ভোট বেশি পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ শেষে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাত ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন প্রমুখ।
চট্টগ্রাম : আগ্রাবাদ বড়পোল নিউমুরিং আ/এ বন্দর চট্টগ্রাম। মোবাইল নাম্বার 01814200066, 01871427770,
| web |
6b4f5501bcc111fbddd0adf9964981d366e39499 | রাগ আর অভিমান ভিন্ন দুটি মানসিক অনুভুতি। রাগের সাথে হিংসাত্মক মনোভাব জড়িত থাকে। রাগ হলে একজন মানুষ অনেক কিছু করতে পারে। রাগ দুই ধরনের হয়; প্রকাশিত রাগ এবং অপ্রকাশিত রাগ। যারা রাগ সহজেই প্রকাশ করে তারা সাধারণত ভাল মানুষ হয়ে থাকে, আবার কিছু মানুষ আছে যারা রাগ প্রকাশ করে না কিন্তু গোপনে অনেক বড় ক্ষতি হয়।
১. পরিবারে অশান্তি : রাগের কুফলের সবচেয়ে নির্মম বলি হয় আমাদের পরিবারের সদস্যরা। আমরা অনেকেই পরিবারের সদস্যদের ওপর রাগ করি, সন্তানের ওপর রাগ করি, সেন্টিমেন্টে আঘাত দিয়ে কথা বলি। মনে রাখতে হবে, একটি সম্পর্ক গড়তে সময় লাগে, কিন্তু ভাঙতে সময় লাগে না। রাগের মাথায় এমন কথা বলে ফেলি যে, ২০ বছরের সম্পর্ক এককথায় নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষোভ পারিবারিক সম্পর্কে ফাটল ধরে। মনে রাখতে হবে, যে সম্পর্ক ছিন্ন করা যায় না, তাতে কখনো দেয়াল তুলবেন না।
২. মানসিক প্রশান্তি নষ্ট : জন্মগতভাবে প্রতিটি মানুষ স্ফটিক স্বচ্ছ হৃদয় নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ধীরে ধীরে পারিপার্শ্বিক নেতিবাচকতায় প্রভাবিত হয়ে আপনি যখন রেগে যাচ্ছেন তখন এই অন্তরে আঁচড় পড়ে। অন্তরে যত আঁচড়ের পরিমাণ বাড়তে থাকে আপনার প্রশান্তি তত কমতে থাকে। নিজেই ভেবে দেখুন, আপনার যখন রাগ, ক্ষোভ বা অভিমান থাকে তখন ভেতরে প্রশান্তি অনুভব করেন কিনা? আসলে কাউকে কষ্ট দিয়ে, দুর্ব্যবহার করে কখনো প্রশান্তি পাওয়া যায় না।
৩. রাগ যত বেশি রোগ তত বেশি : আমাদের এই শরীর এক মহাবিস্ময়কর জৈব কারখানা। এই কারখানায় যত রাসায়নিক বিক্রিয়া বা রি-একশন হয় পৃথিবীর তাবৎ কারখানা সবমিলিয়ে একত্রে এত রি-একশন হয় না।
আবার যখন আমরা রেগে যাই, তখন আমাদের শরীরের এড্রিনাল গ্লান্ডস (adrenal glands) কর্টিসোল (cortisol) এবং এড্রেনালিন (adrenaline) নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে থাকে। এগুলো আসলে আমাদের শরীরে উৎপন্ন এক প্রকার বিষ বা টক্সিন।
আমরা যখন রেগে যাই, আমাদের দেহে কিছু জৈব রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। যেমন, হার্টরেট, ব্লাডপ্রেসার এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দীর্ঘসময় ধরে যদি এই রেসপন্স চলতে থাকে তাহলে অনেক ধরনের ক্রনিক রোগ হতে পারে। যেমন, ইনসমনিয়া, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, আলসার, মৃগীরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাইগ্রেন, ব্যাকপেইন, ফুসফুসের অসুখ এমনকি ক্যান্সার। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং আয়ুষ্কালের ওপরও রাগের প্রভাব আছে।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, রাগ যাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি, তাদের হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ। রাগ এবং স্ট্রেস আমাদের স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। কেউ যদি সার্বক্ষণিক চিন্তিত ও রাগান্বিত থাকেন, তাহলে তিনি তার আয়ু কমিয়ে ফেলছেন। বদরাগী বা রগচটা মানুষ বলে পরিচিতদের মৃত্যুর হার পাঁচ গুণ বেশি। কোয়ান্টামে আমরা বলি, ক্ষোভ হচ্ছে এমন একটি বিষ যা আমি নিজে পান করছি কিন্তু প্রত্যাশা করছি প্রতিপক্ষ মারা যাবে।
৪. নেতিবাচকতা দুষ্টচক্রে জড়িয়ে যায় : রাগ-ক্ষোভ-অভিমানের কারণে একজন মানুষ অবচেতনে নেতিবাচকতার ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে। রাগের কারণে কোনো ক্ষতি বা দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলে সে অনুতাপ ও পাপবোধে ভোগে, যা তার ভেতরে অস্থিরতার সৃষ্টি করে। এ অস্থিরতার কারণে সে কাজে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিতে পারে না। ফলে ব্যর্থতা তার পিছু ছাড়ে না। তাই হতাশা বা হীনম্মন্যতা থেকেই হোক সে আবার রাগের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে।
| web |
e996d5a9a88c349c7cd4cf82933b8bf8d99f100a | মালালা কি সত্যিই পশ্চিমাদের দালাল?
পাকিস্তানে এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমাবিরোধী মনোভাব প্রবল। সেই পশ্চিমারা যখন মালালার প্রতি আগ্রহ দেখায় বা তার নারী শিক্ষার প্রতি আগ্রহ দেখে মুক্তকণ্ঠে প্রশংসায় মেতে ওঠে তখন অনেক পাকিস্তানিই তা মেনে নিতে পারে না। কেননা অনেকে মনে করে মালালা ইসলামবিরোধী বলেই পশ্চিমারা তাকে নিয়ে এতো আহলাদ করে।
আবার অনেকে মনে করে মালালার ওপর আসলে কোনো হামলাই হয়নি, পুরোটাই সাজানো নাটক। মালালা পাকিস্তানে এমন এক চরিত্র যার পিঠের এক দিকে বাহবা, অন্যদিকে মেলে 'দালাল' উপাধি। পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম এ নিয়ে স্পষ্টতই দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ মনে করে মালালা আসলেই তরুণদের আদর্শ, আবার কেউ মনে করে মালালা পশ্চিমাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কাজ করে। যার ফলশ্রুতিতে সে নোবেলও বাগিয়ে নিয়েছে।
মালালা ইউসুফজাই, যিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন, তিনি নিজ দেশেই সবার কাছে সমাদৃত নন। এর পেছনে অবশ্য কারণও আছে। পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষ রক্ষণশীল। তাদের সামাজিক বিশ্বাস কিংবা প্রথার বিরুদ্ধে কোনো কথা বা মন্তব্য তারা সহজে মেনে নিতে পারে না। সম্প্রতি বিখ্যাত মার্কিন ফ্যাশন মাগাজিন 'ভোগ'-এর ব্রিটিশ সংস্করণের প্রচ্ছদ তারকা হয়ে ২৩ বছর বয়সি মালালা তার ব্যক্তিজীবন, বিশ্বাস, পড়াশোনা, টুইটার কর্মকাণ্ড এবং অ্যাপলটিভি প্লাসের সঙ্গে তার যুক্ত হওয়া নিয়ে কথা বলেন। এ সময় বিয়ে নিয়ে তিনি খোলামেলা মনোভাব ব্যক্ত করেন, যা অনেকের কাছেই ভালো লাগেনি। বিশেষ করে অধিকাংশ পাকিস্তানিদের কাছে এ ধরনের মন্তব্য হজম করা কঠিন! তার এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয় নেতারা পর্যন্ত কথা বলছেন। আসলে কী বলেছিলেন মালালা?
পাকিস্তানিদের বা মুসলিমদের জন্য বিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর মালালা ঠিক এই জায়গাটাতেই আঘাত হেনেছেন। যদিও অনেক মুসলিম তাকে সমর্থন করছেন। কিন্তু মালালার এই মন্তব্য পাকিস্তানে এক হিসেবে 'শব্দবোমা' হিসেবেই পতিত হয়েছে। যারা ধর্মীয় ভাবধারায় বিশ্বাসী তাদের কাছে মালালা কোনো কালেই ভালো ছিলেন না। আর পাকিস্তানে পশ্চিমাবিরোধী সেন্টিমেন্ট তো আছেই। সবাই ধরেই নেয়, মালালা পশ্চিমাদের খুশি করতেই ইসলামের এমন এক গুরুত্বপূর্ণ প্রথায় আঘাত হেনেছেন। কেননা মালালার মন্তব্য পশ্চিমাদের বিশ্বাসকেই সমর্থন করে। ইউরোপ-আমেরিকায় বিয়ে নিয়ে এতো মাতামাতি নেই। তারা লিভ টুগেদার বা লিভ ইন রিলেশনে বিশ্বাসী। বিয়ের মতো প্রথা ধর্মীয় ভাবাবেগে বিশ্বাসী এশিয়দের মধ্যেই গুরুত্ব বহন করে। পশ্চিমা সংস্কৃতি যারা মানতে পারেন না, তারা মালালার এই মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর যারা উদারপন্থী, তাদের কথা- মালালা ঠিকই বলেছে। আর কতকাল বিয়ের মতো শৃঙ্খল মানুষকে আবদ্ধ রাখবে? মানুষ কেন জোর করে তার জীবনসঙ্গীর সাথে থাকবে? কেন শত অসুবিধা মেনে শুধু সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে একজন ঘৃণিত ব্যক্তির সঙ্গে জীবন কাটাতে হবে; তাও একই ছাদের নিচে?
যারা মনে করেন, বিয়ে মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করে, তারা মালালার এই মতবাদকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অন্যদিকে যারা মনে করেন, বিয়ে সামাজিক সভ্যতা বজায় রাখে, মানুষের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের কাছে মালালার এই মন্তব্য অনেক বেশি কষ্টদায়ক। কেননা মালালা একজন নারী এবং মুসলিম। মুসলিমরা মনে করেন, বিয়ে নারীকে সম্মানিত করে, দেয় সুরক্ষা এবং পরিচয়।
বিয়ে নিয়ে নানা মানুষের নানা মত থাকতেই পারে। কিন্তু পাকিস্তানের তুলনামূলক সুবিধাবঞ্চিত এলাকার মানুষ হিসেবে মালালার এ মন্তব্য পাকিস্তানিরা ঠিক গ্রহণ করতে পারেনি। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হিসেবে বিয়েকেই সমর্থন করা উচিত এটা অধিকাংশ মানুষই মনে করেন।
তবে মালালার মন্তব্য শুধু পাকিস্তানেই আটকে থাকেনি। ভারত এবং বাংলাদেশেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। এর কারণ হলো এই অঞ্চলগুলোতে মুসলিমদের বসবাস অনেক। আর মালালা যেহেতু মুসলিম ঘরানার সেহেতু তার যে কোনো মন্তব্য অনেক বেশি সংবেদনশীল। আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে এর একটি সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যাও আছে। বলিউড নায়িকা সানা খান যেখানে রুপালি জগতের চাকচিক্য বিদায় জানিয়ে একজন মুফতিকে বিয়ে করে সংসার করছেন, সেখানে পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মেয়ে মালালার এমন মন্তব্য অনেকের কাছেই বিস্ময় হিসেবে আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এটা ভুললে চলবে না, তালেবান হামলার পর মালালা আর পাকিস্তানের গণ্ডিতে আটকে নেই। পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত মালালা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে যেতেই পারেন। কিন্তু রক্ষণশীলরা কেন তা মেনে নেবেন? ঘোমটা আবৃত একটি মেয়ে মাথা নিচু করে 'কবুল' বলে বিয়ে করে চলে যাবে অচেনা-অজানা কোনো পুরুষের ঘরনি হয়ে এই দৃশ্যই যে মুসলিম সমাজের চিরচেনা রূপ। সেখানে মালালাদের স্থান কোথায়?
| web |
08331387d116c4ea74192f0942582cb46cfccdef | করোনা মহামারি প্রতিরোধে টিকা নিলেই হাতে আসতে পারে উপহার। এমন উদ্যোগ বিশ্বের অনেক দেশেই নেওয়া হচ্ছে। কোথাও টিকা নিলে দেওয়া হয় নগদ টাকা। কোথাও বা দেওয়া হয় মদ্যপনীয় বিয়ার। থাইল্যান্ডে তো আবার করোনা টিকা নিলেই পুরস্কার হিসাবে গরু দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু মানুষকে টিকা দিতে উৎসাহী করে তুলতে এবার অভিনব এবং সাহসী পন্থা বেছে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত, এবার সেখানকার মানুষ টিকা নিলেই পুরস্কার হিসেবে পেতে পারেন বন্দুক!
এ আবার কেমন উপহার! টিকা নেওয়া সকল ব্যক্তিই কি পাবেন বন্দুক? নাকি আছে অন্য কোনো নিয়মকানুন? সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, মার্কিন অঙ্গরাজ্য ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার সরকার টিকার সঙ্গে সঙ্গে এক লটারির ব্যবস্থা করেছে। এই লটারিতে জিতলে মিলতে পারে পিকআপ ট্রাক, শিকারের জন্য বন্দুক এবং শটগান।
কারা এই লটারিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন? জানানো হয়েছে, অঙ্গরাজ্যের নাগরিকরা এক ডোজ করোনা টিকা নিলেই এই লটারিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ২০ জুন থেকে ৪ আগস্ট সময়ের মধ্যে যারা টিকা নেবেন; তারাই মূলত অংশগ্রহণ করতে পারবেন এই লটারিতে। তাদের মধ্যেই কেউ হয়তো জিতে নেবেন পিকআপ ট্রাক, বন্দুক কিংবা মোটা অংকের টাকা।
লটারিতে ট্রাক, রাইফেল, শটগানের পাশাপাশি ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের আর্থিক পুরস্কারেরও ঘোষণা করেছে সরকার। দ্বিতীয় পুরস্কার হিসাবে রয়েছে ৫ লাখ মার্কিন ডলার।
এছাড়া ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী টিকা গ্রহীতাদের জন্যও রয়েছে বিশেষ উপহার। তারা প্রত্যেকেই ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া সরকারের পক্ষ থেকে পাবেন ১০০ ডলারের সেভিংস বন্ড অথবা গিফট কার্ড। তবে তার আগে তাদের টিকার দু'টি ডোজই নিতে হবে।
অবশ্য এ ধরনের উদ্যোগ এটাই প্রথম নয়। টিকা নেওয়ার জন্য এর আগেও মানুষকে উৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার উদাহরণ রয়েছে। সেক্ষেত্রে কেউ পুরস্কার হিসাবে দিয়েছে মিলিয়ন ডলারের লটারি, কেউ বা দিয়েছে শিক্ষাবৃত্তি।
কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যের সরকার তো আবার বিয়ারও বিতরণ করেছে। আগামী ৪ জুলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের আগেই মোট জনগোষ্ঠীর ৭০ শতাংশকে করোনা টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্য নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন, তাতে সফল হওয়ার তাগিদ থেকেই তার প্রশাসন এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানাচ্ছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো।
সেই লক্ষ্যে লোকজনকে টিকা নিতে উৎসাহী করতে বিয়ার কোম্পানি অ্যানহাইজার বুশ ও হোয়াইট হাউজ মিলে 'টিকার বিনিময়ে বিয়ার' এর প্রস্তাব দিচ্ছে। টিকা নিলে ২১ বছর ও এর বেশি বয়সী প্রত্যেকেই এই বিয়ার পাবেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন।
প্রথম দফায় দুই লাখ লোককে বিনামূল্যে বিয়ার দেবে অ্যানহাইজার বুশ। টিকা নেওয়ার জন্য বেশ কিছু কোম্পানি সবেতন ছুটি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে। আর এভাবেই বিভিন্ন 'উপহার' এর প্রলোভনে টিকা নেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করছে মার্কিন সরকার।
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
| web |
e30247318bb1e7c07f652ec286476eb7bf47fe94d8262a5d939c38e9acbf4ff4 | প্রথম খণ্ড, ষষ্ঠ সংখ্য। ] স্নহা খুঁতী বাহবাহ ৈ
ঔর, ব্রৃভী ৱাৱা হৈ!
য়া দিল মে অব খুশ হোকর্
কর্ তমকে। প্যার্ প্যারে
য়া তেগ থৈচ জামি
টুকড়ে উড়। হুমারে।
জীতা রণে হে
য়া তনসে সির উত'রে
ছাত্র রামতীর্থ
অব রাম :তরা আশিক
কহতা হৈ হুঁ পুকারে।
রাজী হৈ হম্ উসীমে,
জিসমেঁ তেরী রজা হৈ,
যুহা য়ুভী বাঙৱাহ চৈ,
ঔর বাঁ ভী ৱাহৱাহ হৈ ! - আমি তো সোণার ডেলা মাত্র, তোমার যখন খুসী তুমি আমাকে গলাইয়া নাও না কেন! যদি একথা বিশ্বাস না হয় প্রভু, তবে নাও - আমাকে পরখ করিয়া দেখ। আমার সব তন্ন তন্ন করিয়া বুঝিয়া লও, সব রকমে দেখিয়া তোমার মনের সন্দেহ মিটাইয়া লও। - যেমন করিয়া তোমার খুমী - ব নাচে নাচাইয়। লও। যা' তোমার মরজী, তাতেই আমি খুসী। আমি এখানেও' বলি, বাহবা ]-ওখানেও বলি বাবা !
মন তোমার যদি খুসী হইয়া থাকে, তবে হে প্রিয়, প্রাণ ভরিয়া আমার আদর কর ;,' নইলে যদি ইচ্ছা হয়, এত নিষ্ঠুর, তলোয়ারের মুখে আমায় টুকরা টুকরা করিয়া ফেল। তুমি আমাকে বাঁচাইয়াই রাখ আর দেহ হইতে মস্তক বিচ্ছিন্নই কর - রাম যে এখন তোমার প্রেমের কাঙ্গাল, এই কথাই খান খুগিয়া বংলতেছি। যা তোমার মরজী, তাতেই আমি
খুসী। আমি এখানেও বলি বাহবা। -ওথানেও বলি বাহবা !"
আত্মসমর্পণের কি উজ্জ্বল, কি মধুর চিত্র 1 জ্ঞানার্জনের আকুল প্রয়াস, আবারনার 'একদিকে হৃদয়বিথারী ব্যাকুল বেদনা - দুয়ের মণি-কাঞ্চন সংযোগে ছাত্রজীবনের কি অপরূপ আদর্শই না ফুটিয়া উঠিয়াছে !
তীর্থরামের ছাত্রজীবন - শুধু ছাত্রজীবনই বা বলি কেন, তাঁহার সমগ্র সাধন জীবনের একটী রহস্য সঙ্কেতের কথা বলিয়াই আমরা তাঁগর জীবনীর এই পর্ব্ব শেষ করিব।
আমরা এই কথা বার বার বলিয়াছি, তীর্থরামের জীবনের অভিব্যক্তির একটা সহজ ধারা আছে - ভারতবর্ষের সনাতন জীবনধারার সহিত পর্ব্বে পর্ব্বে তাহার মিল রহিয়াছে। ছাত্র তীর্থরাম র্ষে অবশেষে বেদান্তকেশরী স্বামী রামতীর্থে পরিণত হইলেন, ইহার মূলে যে নিব্যপ্রেরণা রহিয়াছে, তাহার উৎস কোঁথায় এই প্রশ্ন স্বতঃই মনে জাগে। যখন এই কাহিনী, লিখিতে আরম্ভ করি, তখন শ্রীযুক্ত পূরণসিংহের লিখিত জীবনচরিতখানাই আমা দের উপজীব্য ছিল। পূরণসিংজী তীর্থরামের জীবনের এই অধ্যায়টী কেন জানি না, আড়ালে আবডালে রাখিবারই চেষ্টা করিয়াছেন - এ কথা র্ব্বেও আমরা বলিয়াছি। গ্রীমৎ ব্রহ্মচারী ধন্ন লুকেই জীর্ণতানের উপদেষ্টা রূপে লোকসমক্ষে চিত্রিত করিয়াছে এবং ধনামটোর প্রতি তীর্থরামের তীব্র মনোবেগকে বাললুলভ ভাবের বিকার বাগদা কটাক্ষ করিয়াছেন - স্বয়ং ধন্নামলকেও that uncanny sort of person বণিয়া [ভ্রূপ
| pdf |
0005b378dacc2820866efd90d2f23897a16f2aed7abf2cdb89dfc1a4c109ac63 | শেষ সপ্তক
যার মধ্যে শত শত শতাব্দীর রক্তলোলুপ হিংস্র নির্ঘোষ গেছে নিঃশব্দ হয়ে।
সেই মাটির ছাদের নীচে বসব আমি রোজ সকালে শৈশবে যা ভরেছিল আমার গাঁটবাঁধা চাদরের কোণা
এক-এক মুঠে। চাঁপা আর বেল ফুলে,
মাঘের শেষে যার আমের বোল দক্ষিণের হাওয়ায়
অলক্ষ্য দূরের দিকে ছড়িয়েছিল ব্যথিত যৌবনের আমন্ত্রণ ।
আমি ভালো বেসেছি
বাংলাদেশের মেয়েকে
যে দেখায় সে আমার চোখ ভুলিয়েছে তাতে আছে যেন এই মাটির শ্যামল অঞ্জন, ওর কচি ধানের চিকন আভা।
তাদের কালো চোখের করুণ মাধুরীর উপমা দেখেছি ওই মাটির দিগন্তে
নীল বনসীমায় গোধূলির শেষ আলোটির নিমীলনে।
| pdf |
159e2446c574c0b6b3a824425ddfeed9573e7bf1 | ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের খেলায় আগামী ১৬ জুন মুখোমুখি হওয়ার কথা রয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তানের। কে জিতবে সেটা জানার জন্য নিঃসন্দেহে ম্যাচের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে অন্য এক 'খেলায়' পাকিস্তানের কাছে কিন্তু একভাবে হেরে গেল ভারত!
কাশ্মিরের পুলওয়ামায় হামলার জের ধরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের উত্তেজনা এখন চরমে। এই ঘটনার জের ধরে ভারতজুড়ে চলছে পাকিস্তান বয়কটের হুড়োহুড়ি। পাকিস্তানকে বয়কট করার আবদার আইসিসিতেও জানিয়েছিল ভারত।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আইসিসির কাছে আবেদন করা হয়, সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের ক্রিকেট সম্পর্ক ছিন্ন করা হোক। দেরিতে হলেও ভারতের এই আবেদন সরাসরি নাকচ করে দিল আইসিসি।
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি জানিয়ে দিয়েছে, বয়কট করা না করার বিষয়টি অবশ্যই তাদের এখতিয়ারে নেই। কোন দেশ কোন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে বা রাখবে না সেটা পুরোপুরি সরকারি সিদ্ধান্ত।
কাশ্মিরের পুলওয়ামায় হামলার জের ধরে ভারতের অনেক সাবেক ক্রিকেটার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলার কথা বলেছেন। এদিকে, এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে আইসিসি তাদের ইতিবাচক ইচ্ছার কথা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছে।
Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues - along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.
Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.
| web |
177910d047c7f303d08169dedba13bc52102f960 | কোভিড মুক্তির ৯০ দিন পর মিলবে টিকা, কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে দেশবাসীকে।
বাংলা থেকে বহিরাগতদের বিদায় এখন সময়ের অপেক্ষা! এভাবেই নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে বার্তা দিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উত্তর বঙ্গের জেলা গুলিতেও। আজ দার্জিলিং জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯৬ জন। এছাড়াও জলপাইগুড়ি জেলাতে আক্রান্ত হয়েছেন ২১৬ জন। উত্তর দিনাজপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ২২১ জন।
সংক্রমন ও টেস্টে তৃতীয় এবং মৃত্যু সংখ্যায় বিশ্বের ষষ্ঠ স্থানে ভারত। ২৪ ঘন্টায় ভারতে আক্রান্ত প্রায় ৫০ হাজার। দেশ জুড়ে হুহু করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। সাথে পাল্লা দিয়ে চোখ রাঙাচ্ছে মৃত্যু সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৬৩২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭৭০ জনের।
ডিসেম্বরেই বড়সড় রদবদল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়,একাধিক মন্ত্রী পেতে পারে বাংলা । খুব শিঘ্রই বড় রদবদল আসতে ছলেছহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। আর তা আসতে চলেছে আগামী মাসের প্রথমদিকেই। এবারের মন্ত্রিসভায় বাংলার জন্য সুখবর। একাধিক মন্ত্রিত্ব বাংলা পেতে চলেছে বলেই সুত্রের খবর।
সুপ্রিম কোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেন সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী ।
যদিও তৃণমূলের দাবি গোটা বিষয়টা নিয়ে 'নোংরা রাজনীতি' করছে বিরোধী দল। অবশেষে সব কিছু পিছনে ফেলে ১৮ই ফেব্রুয়ারিই হচ্ছে সেই অনুষ্ঠান।
| web |
6b24f41cacfd64b194afa6bd417f214f35845e51 | বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুই হচ্ছেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।
রোববার সকালে দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নিজের সই করা মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের 'নির্বাচনী কর্তা' কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের নাম প্রস্তাব করেন, আর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ তা সমর্থন করেন।
রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করা মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২০০৬ সালে তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসরে যান।
ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। পরে সামলেছেন পাবনা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন চুপ্পু, মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সে সময় ক্ষমতাদখলকারীরা। সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকেও তখন কারাবরণ করতে হয়।
পেশায় আইনজীবী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়, যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে 'কমিশন' গঠন করে, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এই মহাসচিব বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত করা সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে তাকে মনোনীত করা হয়। দলের সর্বশেষ কাউন্সিলে তিনি নির্বাচন কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু এক ছেলের বাবা। তার স্ত্রী অধ্যাপক রেবেকা সুলতানা এক সময় যুগ্ম সচিব ছিলেন।
সাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাজনীতি, বঙ্গবন্ধু এবং নীতি নির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত কলামও লিখতেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই নানা জল্পনা কল্পনা চলছিল।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি খায়রুল হক, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, জাতীয় সংসদের বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এমনকি আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামও সংবাদমাধ্যমে আসে।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হবেন, তা ঠিক করার ভার দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে দিয়েছে তাদের সংসদীয় দল।
রোববার মনোনয়নপত্র জমার তারিখ থাকায় সকালেই গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের কয়েক জ্যেষ্ঠ নেতা। পরে তারা যান নির্বাচন কমিশনে। কিছুক্ষণ পর ইসিতে পৌঁছান আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। সে সময় তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিল।
নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুটি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে একই ব্যক্তির নামে।
ইসি সচিব জানান, মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারীর নাম দেওয়া আছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদের। এবং সমর্থনকারী হলেন চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাছান মাহমুদ।
সচিব জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচনী কর্তার দপ্তরে দুটি আবেদন সকাল ১১টা এবং সকাল ১১টা ৫ মিনিটে জমা দেওয়া হয়।
নিয়ম ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, একই ব্যক্তি তিনটি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন, যেখানে প্রস্তাবক ও সমর্থক ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। একই পদে একাধিক প্রার্থী থাকলে তখন এক ব্যক্তি দুজনের প্রস্তাবক হতে পারে না।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রোববার বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ আছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
রোববার আর কেউ প্রার্থী না হলে যাচাই বাছাই শেষে মো. সাহাবুদ্দিনকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী থাকলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে ভোট হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে।
বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদে পরোক্ষ ভোটে। সংসদ সদস্যরাই এই নির্বাচনে ভোট দেন। ৩৫০ আসনের সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য এখন ৩০৫।
অর্থাৎ, প্রার্থী একাধিক হলেও ভোটাভুটি হবে কেবল আনুষ্ঠানিকতা। টানা দুই বারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের উত্তরসূরি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনই বঙ্গভবনে যাবেন।
স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন। সেই হিসোবে নতুন রাষ্ট্রপতি হবেন এই পদে অষ্টদশ ব্যক্তি।
২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন আবদুল হামিদ। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়।
সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবারই সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
| web |
fd340fbd8c71696a06cd645de4ffc090 | সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবদুল আহাদ বলেছেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে অনিয়ম সহ্য করা হবেনা। কোন ধনরেন অনিয়ম হলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকার চলতি বোরো মৌসুমে হাওরের ফসল অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কৃষকের ফসল ঘরে তুলা পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ নিয়ে লুকোচুরি করা যাবেনা।
রবিবার সুনামগঞ্জের দিরাই সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর এর তত্ত¡াবধানে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন 'স্বাধীনতা উত্তর বিজ্ঞানখ্যাত ড. কুদরাত-এ -খুদা নিয়ে বাংলাদেশে জাতীর পিতা বঙ্গুবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞানের গবেষনা কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর দুটি স্বপ্ন ছিল। একটি হচ্ছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা এবং উনার জীবদ্দশায় দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে সেটি আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। আরেকটি হচ্ছে ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত, শোষন মুক্ত, বঞ্চনামুক্ত উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা এবং এটি করতে গেলে যে ধরনের সেটাপ প্রয়োজন উনি স্বাধীনতা উত্তর সেটি করেছিলেন। কিন্তু তা শেষ করতে পারেননি। পরবর্তিতে ১৯৯৬ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের স্বাধীনতার যে চেতনা ছিল, জাতীর পিতার যে স্বপ্ন ছিল তার শুভ সুচনা করেন। আনেক বাধাগ্রস্থ হল্ওে ২০০৯ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য কর্মপরিকল্পনা এবং অভিযাত্রা নিয়ে সামনে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসক বলেন, দিরাই-শাল্লার হাওরাঞ্চল আজ আর পিছিয়ে নেই, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে এবং প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও মানুষ মোবাইলের মাধ্যমে সারাদুনিয়ার সাথে যোগাযোগ এমনকি সুন্দরভাবে জেলা প্রশাসক এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশের সকল কার্যালয়ে আবেদন নিবেদন করতে পারছে। তা সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের সুদুর প্রসারী বিজ্ঞান মনস্ক চিন্তা চেতনার কারনে, যারফলে বাংলাদেশে আজ সুখী সমৃদ্ধ প্র্রযুক্তি নির্ভর তথ্য ভিত্তিক অনেক ক্ষেত্র তৈরী হচ্ছে। ৪১ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং ৪১তম জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ও স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সম্প্রসারন শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সফি উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনর পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর)সায়েন্টিফিক অফিসার ড. আহসান হাবিব। উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী, মেয়র মোশাররফ মিয়া, প্রধান শিক্ষক জাফর ইকবাল, সব্যসাচী দাস চয়ন। এরপর জেলা প্রশাসক বিজ্ঞান মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
| web |
fc234a21a7f9a738cba4c35c0ac44b20f9445874 | আজকের সময়ে ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি আপনি ডায়াবেটিস রোগী হন তবে আপনার ডায়েটে এমন কিছু খাবার রাখা উচিত যা আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণকে খুব বেশি প্রভাবিত করবে না। ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ে একটি খুব সাধারণ সমস্যা। এই রাগে বিশ্বজুড়ে কয়েক মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত। তবে জানলে অবাক হবেন, আমের পাতা রক্তে শর্করা বা সুগারের মাত্রা কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। আম পাতায় রয়েছে অনেক গুণ, যার সাহায্যে আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আমের পাতাগুলির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, যা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
আমারা অনেকেই ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে তা জানতে আগ্রহী। তবে সমুদ্র শাস্ত্র মতে, প্রতিটি ব্যক্তি তাদের অঙ্গের ভিত্তিতে ভবিষ্যতের তথ্য পেতে পারেন। ঠিক যেমন ভাবে হাতের রেখাগুলি দেখে ভবিষ্যতের বিষয়ে জানা যায়, ঠিক তেমনিভাবে দেহের অঙ্গগুলির ভিত্তিতেও সেই ব্যক্তির ভবিষ্যত সম্পর্কে অনুমান করা সম্ভব। কারণ প্রতিটি ব্যক্তির দেহের সমস্ত অঙ্গ আলাদা প্রকৃতির হয়। সমুদ্রবিদ্যা অনুসারে, নাক ব্যক্তির আর্থিক জীবন থেকে ব্যক্তির স্বভাব সম্পর্কেও অনেক কিছু অনুমান করা সম্ভব। প্রত্যেক ব্যক্তির নাকের আকার ভিন্ন হয়।
পুরাতন জ্যোতিষ শাস্ত্রে যেমন দৈনিক রাশিফল প্রতিদিনের ঘটনার ভবিষ্যকথন করে, তেমন সাপ্তাহিক, মাসিক তথা বার্ষিক রাশিফল যথাক্রমে সপ্তাহ, মাস এবং বছরের ভবিষ্যৎবাণী করে। জ্যোতিষে ১২টি রাশি-মেষ, বৃষভ, মিথুন, কর্কট, সিংহ, কন্যা, তুলা, বৃশ্চিক, ধনু, মকর, কুম্ভ ও মীন রাশি রয়েছে। একইরকম ভাবে ২৩টি নক্ষত্রও রয়েছে, যার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়ে থাকে।
পুরাতন জ্যোতিষ শাস্ত্রে যেমন দৈনিক রাশিফল প্রতিদিনের ঘটনার ভবিষ্যকথন করে, তেমন সাপ্তাহিক, মাসিক তথা বার্ষিক রাশিফল যথাক্রমে সপ্তাহ, মাস এবং বছরের ভবিষ্যৎবাণী করে। জ্যোতিষে ১২টি রাশি-মেষ, বৃষভ, মিথুন, কর্কট, সিংহ, কন্যা, তুলা, বৃশ্চিক, ধনু, মকর, কুম্ভ ও মীন রাশি রয়েছে। একইরকম ভাবে ২৩টি নক্ষত্রও রয়েছে, যার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়ে থাকে।
গরমের সময় লেবুর সরবত পছন্দ সকলেরই, তবে জানেন কি শীতকালেও এই সরবত শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই শুষ্ক আবহাওয়ায় শরীর ডিটক্স ও হাইড্রেটেড রাখতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে পাতিলেবু। একটি মাঝারি মাপের পাতি লেবু থেকে ৪০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি বা এসকরবিক অ্যাসিড পাওয়া। যা একজন মানুষের দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। ভিটামিন 'সি'দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। শরীরের কোনও অংশ কেটে গেলে বা ক্ষত হলে দ্রুতগতিতে কোলাজেন কোষ উপাদান তৈরি করে ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে এই ভিটামিন 'সি'।
প্রতিটি সম্পর্কেই থাকে দায়বদ্ধতা। আর সেই দায়বদ্ধতা এড়িয়ে চলতে শুরু করলেই সম্পর্কে সমস্যার শুরু। আর বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে সম্পর্ক নিয়ে সমস্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দিনের পর দিন ছোটখাটো বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে বেড়েই চলেছে সমস্যা। একটা সমস্যা কাটিয়ে ওঠার পর দুদিনের মধ্যে শুরু হয়ে যাচ্ছে অরেকটি নতুন সমস্যা। যে কোনও একটি সম্পর্ক শুরুতে ভালো থাকলেও, কয়েকদিন পর থেকেই শুরু হয়ে যায় সমস্যা। আগে যে বিষয়গুলি হাসির ছলেই মিটে যেত এখন সেই একই বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করেই তৈরি হচ্ছে ঝামেলা, অশান্তি। তবে সম্পর্ক সুরক্ষিত রাখতে এই পাঁচটি নিয়ম অবশ্যই পালন করা উচিত। সম্পর্ক অটুট রাখতে জেনে রাখুন এই পাঁচ টোটকা।
| web |