doc_id
large_stringlengths 32
64
| text
large_stringlengths 0
560k
| type
large_stringclasses 3
values |
---|---|---|
d5706ab5391aee284b3f2d2500e7542d70269363 | স্টাফ রিপোর্টারঃ:
সদ্য প্রয়াত জাতীয় নেতা ও সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনের সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আসনে মনোনয়ন পেলেন তার সহধর্মীনি সুরঞ্জিত জয়া সেন গুপ্ত। রবিবার রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড তাকে মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়টি অবগত করেছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়া সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারি কামরুল হক। এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং গত ২২ ফেব্রুয়ারি শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সভা ডেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রকে জয়া সেনগুপ্তকে মনোনয়ন দানের জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছিল।
এদিকে জয়া সেনগুপ্তের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির খবরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে দিরাই-শাল্লা উপজেলায়। এই খবরে বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মীরা। তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন জয়া সেনগুপ্তকে মনোনয়ন দানের জন্য।
জানা গেছে রবিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্টিত হয়। সুনামগঞ্জ-২ ও কুমিল্লার একটি আসনে দলীয় মনোনয়ন দানের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহকারী সকল প্রার্থীকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়। শেষে সুনামগঞ্জ-২ আসনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তকে দলীয় মনোনয়ন দানের কথা জানান সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পরে প্রেসবিফিং করে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
গণভবনে উপস্থিত শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন চৌধুরী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের ভাষা বুঝতে পারেন। তাই তিনি তৃণমূল মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সুযোগ্য স্ত্রীকে মনোনয়ন প্রদান করেছেন।
| web |
e7b58db027abb2b85d81360bdb528c56ab69429c | চট্টগ্রাম নগরীতে অভিযান চালিয়ে চোলাই মদ তৈরির নানা উপকরণসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে পাঁচলাইশ থানাধীন খতিবেরহাট এলাকার একটি ভবনে এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তাররা হলো উচিং থোয়াই মারমা (৪৪), মাসাং মারমা (৪০), উথোয়াইচিং মারমা (৩৩), মেতু মারমা (৪০), আছেমা মারমা (৩০) ও ইসাইমং মারমা (২০)। তারা সবাই রাঙ্গামাটির কাউখালীর বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, খতিবেরহাট এলাকার একটি ভবনের পঞ্চম তলার দুটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চোলাই মদের কারখানা করেছিল অভিযুক্তরা।
| web |
89a1c6f527181fe222e039fdc636f25246901cf0 | বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আড়াই ঘণ্টা পথ অবরোধ করল স্কুল পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বিল্বেশ্বর গ্রামের চরখি বাঁধের উপরে রাস্তায় বসে পড়ে দু'টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। ছিলেন অভিভাবক, স্থানীয় বাসিন্দারাও।
প্ল্যাকার্ড হাতে পড়ুয়াদের প্রশ্ন, কোন পথে স্কুলে যাবে তারা। অবরোধের জেরে কাটোয়া-কেতুগ্রাম রাস্তায় দীর্ঘ যানজট হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কেতুগ্রাম ২-এর বিডিও অমিতকুমার সাউ চরখি থেকে বিল্বেশ্বর স্কুল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পরিদর্শন করেন। তাঁর কাছ থেকে রাস্তা সংস্কারের লিখিত প্রতিশ্রুতিও আদায় করে পড়ুয়ারা। দুপুরের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিল্বেশ্বর বয়েজ ও গার্লস স্কুলের কয়েকশো পড়ুয়া বোলপুর-কাটোয়া রোডে সকাল থেকেই অবরোধ শুরু করে। তাদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করতে হবে। বাসিন্দারা জানান, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বিল্বেশ্বর পঞ্চায়েতের চরখি গ্রাম থেকে বিল্বেশ্বর পর্যন্ত যাওয়ার মূল রাস্তা অজয়ের বাঁধের উপর দিয়ে। গত বছর বন্যায় কেতুগ্রাম এলাকার ওই বাঁধ ভেঙে যায়। পরে সেটি সংস্কার করে সেচ দফতর। কিন্তু বাঁধের উপরের রাস্তা সংস্কার করা হয়নি বলে অভিযোগ। বর্ষায় মাটির রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। পড়ুয়াদের দাবি, প্রতিদিনই ছোটখাট দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে তারা। কারও হাত ভাঙছে। কেউ সাইকেল নিয়ে যেতে গিয়ে পড়েপা ভাঙছে।
| web |
0277d7d34368eef8d60cdadf29d5468efde0b0d4 | করোনা টেস্ট কিট কেনার লাইনে বহু পিছনে ভারত! পরিস্থিতি সামলাতে কী ভাবছে সরকার?
দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে প্রায় ২০০টি টেস্ট ল্যাব তৈরি করা হয়েছে দেশে। তবে টেস্ট ল্যাব তৈরি করলেই তো হবে না। সেই ল্যাবে প্রয়োজন পর্যাপ্ত টেস্ট কিট। তবেই করোনা যুদ্ধের প্রথম ধাপে এগোতে পারবে ভারত। তবে সেই প্রথম ধাপ পেরোতেই প্রচুর বেগ পেতে হচ্ছে ভারতকে। কারণ দেশে করোনা টেস্ট কিটের অভাব।
জানা গিয়েছে, করোনা টেস্ট করার জন্য যেই ১২৩টি সরকারি কেন্দ্র রয়েছে সেগুলি মাত্র নিজেদের কর্মক্ষমতার ৩৬ শতাংশ পূর্ণ করছে। এছাড়া দেশে যেই ৪৯টি বেসরকারি কেন্দ্রকে করোনা পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছেও করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার প্রয়োজনীয় টেস্ট কিট নেই।
এই বিষয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির পক্ষে বলা হচ্ছে, 'আমেরিকা, ইতালি, স্পেনেই সব কিট চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতির গুরুতর বলে ব্রিটেনও ভারতের আগে টেস্ট কিট পাচ্ছে। উৎপাদনকারী সংস্থাকে এই নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলছে যে ভারতকে এখনই টেস্ট কিট দেওয়া যাবে না। সময় লাগবে। '
পর্যাপ্ত টেস্ট কিট না থাকায় দেশে করোনা পরীক্ষাও করা যাচ্ছে না ঠিক মতো। যার জেরে দেশে আসল আক্রান্তের সংখ্যার কোনও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। উপসর্গ থাকলে আপাতত আইসোলেশনে পাঠানো হচ্ছে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি গুরুতর হলে তবেই পরীক্ষা করা হচ্ছে সেই রোগীকে।
এখনও পর্যন্ত কটি করোনা পরীক্ষআ হয়েছে?
৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে মাত্র ৪২,৭৮৮ জনের উপর করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। আমেরিকার তুলনায় সংখ্যাটা ১৩ ভাগের ১ ভাগ। যা প্রয়োজনের থেকে খুবই কম। এদিকে যেই হারে দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে তাতে করোনা টেস্ট যদি আরও বেশি করে করা না হয় তবে আসল আক্রান্তদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। এর জেরে দেশে করোনা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়বে।
এদিকে ভারতে করোনা সংক্রমণের হার হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। সৌজন্য দিল্লির মসজিদে হওয়া ধর্মীয় সমাবেশ। সেখান থেকে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণ। এর জেরে কোভিড১৯-এর প্রকোপের প্রবল ধাক্কা খেয়েছে দিল্লি সহ গোটা দেশ।
ইতিমধ্যেই, ভারতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তারমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে এই ভাইরাসের কবলে ৩২৬ জন। সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা ৫৬। তারমধ্যে বেশীরভাগ হয়েছে গতমাসে দিল্লিতে জমায়েতে অংশগ্রহণকারীদের থেকে। এই পরিস্থিতিতে দেশে করোনা মোকাবিলায় সব রকম সাহায্য পেতে মরিয়া মোদী প্রশাসন।
আরও খারাপ হবে পরিস্থিতি!
এদিকে দেশে করোনার এই প্রবণতা অব্যহত থাকলে আগামী দু-সপ্তাহের মধ্যে এই মারণ ভাইরাসে দেশের ১০,০০০ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেক্ষেত্রে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগী উপচে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে জানা গিয়েছে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এমন এক বিশেষ টেস্টিং কিট তৈরি করে ফেলেছেন যা দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি করোনা পরীক্ষা করা যাবে। পাশাপাশি এই টেস্টিং কিটের দামও আগের তুলনায় অনেকটাই কম হবে। ফলে আর্থিক ভাবেও লাভবান হবে দেশ। কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও আইসিএমআর-এর কাছে এই কিট পাঠানো হয়েছে অনুমোদনের জন্য।
| web |
47f2f5a80fda93cb8b3a4eeaf88caa078ce400ff | আইপিএলের ইতিহাসে নাইট ব্রিগেডের এটি ছিল ১০০ তম জয়। এছাড়াও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে চার বছর পর শাহরুখ খানের দলের এটাই প্রথম জয়।
প্রথমে ব্যাট করে ২৩২ রান করে নাইট রাইডার্স। এরপর মুম্বইকে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৯৮ রানে থামিয়ে দেয় তারা।
ম্যাচের পর কেকেআরের তারকা ক্রিকেটার রাসেলের স্ত্রী জ্যাসিম বলেছেন, স্বামীর কাছ থেকে এমন খেলাই আশা করেছিলেন তিনি। কারণ, এবারের আইপিএলে ইডেনে এটাই ছিল নাইট রাইডার্সের শেষ ম্যাচ।
সেইসঙ্গে জ্যাসিম আরও বলেছেন, যখন রাসেলকে ছক্কা মারতে বা এ রকম বিধ্বংসী ইনিংস খেলতে দেখি তখন খুবই উত্কন্ঠিত থাকি।
অন্যদিকে, রাসেল বলেছেন, ইডেনে চলতি মরশুমের শেষ ম্যাচ খেলাটা তাঁর কাছে খুবই আবেগবিহ্বল মুহূর্ত ছিল।
জ্যাসিম তাঁর স্বামীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান ও আলিঙ্গনও করেন।
হলিউডের অ্যাভেঞ্জার্স সিনেমার সিরিজের ভক্ত রাসেল বলেছেন, কেউ তাঁকে 'সুপারহিরো' বললে তিনি খুশিই হন।
সারা বিশ্বজুড়ে অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের ফলোয়ারের সংখ্যাটা কার্যত অবিশ্বাস্য। তেমনই ক্যারিবিয়ান রাসেল এমন কিছু স্ট্রোক খেলেন, তাও এক কথায় অবিশ্বাস্য।
গতকাল রাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে এমনই বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন তিনি।
ম্যাচের পর রাসেল বলেছেন, আমি অ্যাভেঞ্জার্স-এর অনুরাগী এবং এটা বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছি। অনুরাগীরা আমাকে সুপারহিরো বললে খুশি হই।
রাসেল বলেছেন, হাত ও চোখের সমন্বয়, ব্যাটের স্পিড ও ভারসাম্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাঁধ ও ভেতর থেকে আমি প্রচুর শক্তি সঞ্চয় করি। সবকিছুই তখন একসঙ্গে কাজ করে।
আটটি ছয়, ছয়টি চারের সাহায্য ৪০ বলে ৮০ রান করেন রাসেল। তিনি বলেছেন, ওই মুহূর্তে এ ধরনের শট খেলতে শরীর যাতে ফিট ও শক্তিশালী থাকে, তা নিশ্চিত করতে হয়।
কভারের ওপর দিয়ে মারা একটি শট সম্পর্কে রাসেল বলেছেন, কোনও ওয়াইড বা স্লোয়ার ডেলিভারি দিয়ে বোলার যখন বোকা বানাতে চায়, তখন এ ধরনের শট আমাকেও বিস্মিত করে।
গত ছয়টি ম্যাচ হারের পর জয় পেয়েছে নাইট রাইডার্স। রাসেল বলেছেন, আশা করছি, আগামী দুটি ম্যাচেও জয় পাব আমরা। এটা আমার অন্যতম সেরা টি ২০ ম্যাচ। আমাদের ২০০-র বেশি রানের দরকার ছিল। ২৩০ রান যথেষ্ট বলতে হবে। ২০০-র সামান্য বেশি রান হলে আমরা হেরেও যেতে পারতাম।
রাসেল আরও বলেছেন, চাপের মুখে আমরা মাথা ঠাণ্ডা রেখেছিলাম। পরিকল্পনার রূপায়ণও ভালো করেছি।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পক্ষে একটা অসম্ভব চেষ্টা করেছিলেন হার্দিক। রাসেলের মতোই অবিশ্বাস্য সব শট খেলেছেন তিনিষ মাত্র ৩৪ বলে ৯২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ম্যাচের পর হার্দিক বলেছেন, সার্বিকভাবে আক্রমণের প্রয়োজন ছিল। আউট হওয়ার বলটা ছাড়া তাঁর পক্ষে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল।
হার্দিকের নয় ছক্কা ও ছয়টি চারের ইনিংসও জয় এনে দিতে পারেনি মুম্বইকে।
| web |
8d38c99abafb82d3a5244d2617f9f45cc401f1fd | আগামী ১৫ বছরে ইরানের পরমাণু জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি ডলারের পুঁজি বিনিয়োগ হবে। দেশটির ১৬তম জাতীয় পরমাণু প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেছেন ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মাদ ইসলামি।
বৃহস্পতিবার ইরান প্রেসের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে এ তথ্য। আগামী ৯ এপ্রিল পালিত হবে ইরানের জাতীয় পরমাণু প্রযুক্তি দিবস।
মোহাম্মাদ ইসলামি জানান, ইরানি জনগণ যাতে নিজেদের জীবনে পরমাণু প্রযুক্তির সুফল ভোগ করতে পারে সে লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। শিগগিরই দেশটিতে ১০ হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘোষণা দেয়া হবে বলেও তথ্য দেন ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান।
২০০৬ সালের এই দিনে ইরানের বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় প্রথমবারের মতো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হন। ওই খবর প্রচারিত হওয়ার পর ইরানের সাংস্কৃতিক বিপ্লব বিষয়ক সর্বোচ্চ পরিষদ ৯ এপ্রিলকে জাতীয় পরমাণু প্রযুক্তি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
| web |
2d6d620fe4e701556d27259446c68eb332f339e1 | অলিম্পিক্সে পদক জয়ীদের ক্লাবে লাভলিনা বরগোহাঁইকে স্বাগত জানাতে খুব ভাল লাগছে। ২০১৬ অলিম্পিক্সে মেরি কম এবং আমি কাউকে এই ক্লাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। অতিমারির জন্য এক বছর পিছিয়ে গিয়ে শুরু হওয়া টোকিয়ো অলিম্পিক্সে অভিষেকেই এমন এক জন বক্সারের পদক নিশ্চিত করতে দেখে দারুণ লাগছে। আমি নিশ্চিত, ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিক্সে এর চেয়েও ভাল ফল করবে লাভলিনা।
ওর লড়াই ছিল বিশ্বের দু'নম্বর তুরস্কের বুসেনাজ় সুরমেনেলির বিরুদ্ধে। খুব কঠিন প্রতিপক্ষ। ৬৯ কেজি বিভাগের সেমিফাইনালে খুব কার্যকরী পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলন বুসেনাজ়। ওর চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে চার ধাপ পিছিয়ে থাকা লাভলিনা জেতার কম চেষ্টা করেনি। তবে দু'জনের লড়াই দেখে মনে হয়েছে বুধবার সেরা বক্সার ছিল বুসেনাজ়ই। লাভলিনা বুঝতে পারবে, লড়াইয়ে নেমে কখনও তুমি জিতবে, বাকি সময়ে শিখবে।
লাভলিনা তাঁর খেলোয়াড় জীবনের সব চেয়ে বড় বাউট জিততে কী করতে পারত? সত্যি কথা বলতে, দু'জনের মধ্যে যে খুব বেশি পার্থক্য ছিল, তা নয়। তবে তুরস্কের বক্সার ওর কৌশলগুলো ঠিকমতো কাজে লাগাতে পেরেছে তিনটে রাউন্ডেই। যদিও লাভলিনা আগ্রাসী মেজাজে লড়াই শুরু করার পরে কয়েকটা মোক্ষম ঘুসি চালিয়েছিল।
উচিত ছিল।
ঠিক আছে।
লাভলিনার জন্য আমাদের বক্সিং দল খালি হাতে ফিরছে না। তবে আমি অমিত পঙ্ঘাল এবং বিকাশ কৃষাণের প্রথম দিকেই ছিটকে যাওয়া দেখে অবাক হয়েছি। সতীশ কুমার অবশ্য ৯১ কেজিরও বেশি ওজন বিভাগে নেমে দারুণ লড়াই করেছে। মেরি কমের ক্ষেত্রেও একই কথা বলব।
তবে রবি কুমার কুস্তিতে ৫৯ কেজি বিভাগে নাটকীয় ভাবে পদক নিশ্চিত করেছে ফাইনালে উঠে। দীপক পুনিয়া এবং অংশু মালিকের ব্রোঞ্জ জয়ের সুযোগ রয়েছে। আত্মবিশ্বাসী নীরজ চোপড়া জ্যাভলিন থ্রো-র ফাইনালে উঠেছে এবং আমাদের হকি দলেরও ব্রোঞ্জ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি কুস্তিতে বিনেশ ফোগত এবং বজরং পুনিয়ার এখনও নামা বাকি। সব মিলিয়ে ভারতীয় দলের সামনে ভাল ফল করার সুযোগ রয়েছে। (টিসিএম)
| web |
00b39f02a62e94dd9139e33e33d6919b | করোনা মহামারির মধ্যেই সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ৩৬৬ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে ১৩২ জন উমরাযাত্রী এবং বাকি ২৩৪ জন সৌদি আরবের ডিপোর্টেশন সেন্টারে (অবৈধ সন্দেহে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায়) থাকা বাংলাদেশি কর্মী।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৯টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের নিয়ে সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
এসব বাংলাদেশির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরই বিমানে তোলা হয়েছে। কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়েনি। তার পরও অধিকতর সতর্কতার জন্য ফেরত আসা ব্যক্তিদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত বিষয়ে নেওয়া হবে।
৩৬৬ জন যাত্রী নিয়ে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট গত ৯ এপ্রিলই ঢাকায় আসার কথা ছিলো। কিন্তু করোনার বিস্তাররোধে দেশটিতে লকডাউন ও কারফিউ জারি থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দেশটির স্থানীয় প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব আটকে পড়া যাত্রীদের দেশে পাঠানো হয়েছে।
| web |
7edaaf26fb3962b3943f097bc40cba524484081a | আর্জেন্টাইন মহতারকা লিওনেল মেসির জন্য এটা শেষ বিশ্বকাপ। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার এটাই শেষ সুযোগ। ফুটবল জাদুকরকে বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দিতে একজোট হয়েছে আর্জেন্টিনা দল। মেসির জন্য তারা সব করতে প্রস্তুত।
১৯৮৬ সালে দিয়াগো ম্যারাডোনার জাদুতে সর্বশেষ বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টিনার সামনে আরও একটি দারুণ সুযোগ। আজ রাতে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারাতে পারলেই তারা চলে যাবে ফাইনালে।
| web |
562cf5b37d22ae3f1b25c892807c46162dcd0ca1 | সুব্রত বিশ্বাসঃ রেলের ফাঁকা আবাসনে মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টা। মহিলার চিৎকারে আবাসিকরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় চার যুবক। পরে ওই মহিলাকে পুলিশ নিয়ে গিয়ে দু'জনের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করে। লিলুয়া রেল আবাসনে এই ঘটনার পর রেলকর্মীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বেলুড় থানা তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত সুনীল ও সঞ্জুকে এখনও আটক করা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনার পর রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদাসীনতাকে দায়ী করে বিক্ষোভে শামিল হন কর্মীদের একাংশ। অভিযোগ, শুক্রবার ১২৮ নিউ জেনিনস রোডের তিনতলা আবাসনে এক মহিলাকে নিয়ে আসে বহিরাগত চার যুবক। এরপর তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করার সময় নির্যাতিতার চিৎকারে আবাসিকরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। জানা গিয়েছে, ছ'টি আবাসনের মধ্যে পাঁচটি আবাসন ফাঁকা। একটি আবাসনে এক মহিলা রেলকর্মী থাকেন। আবাসনগুলি ফাঁকা থাকার সুযোগে দুষ্কৃতীরা বহিরাগত মহিলাকে নিয়ে আসে বলে অভিযোগ।
আবাসিকদের অভিযোগ, আবাসনগুলি ফাঁকা থাকায় দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। বহিরাগত মহিলাদের নিয়ে এসে শ্লীলতাহানি, মদ, সাটটা, জুয়ার মতো বেআইনি কাজ চলে রোজই। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে আবাসনের মধ্যেই বেলুড় থানা, আরপিএফ ক্যাম্পাস তার মধ্যে এধরনের অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য কীভাবে কার মদতে চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আবাসিকরা। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ছুড়ে দিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, আবাসনগুলির গেট ভেঙে পড়ে গিয়েছে, গেট থাকলে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা ঢুকতে পারবে না। বারবার আবেদনও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হুশ ফেরেনি। সহকারী ইঞ্জিনিয়ার আর কে বিশ্বাস বলেন, যেখানে আবাসনের ভিতরে থানা, আরপিএফ আধিকারিক থাকেন সেখানে অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে ওঠে কি করে। ঘটনার পর তদন্ত শুরু করেছে বেলুড় থানা। তাদের কথায়, দু'জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মহিলা ও অভিযুক্ত যুবকরা রঙ্গলি পাশে কুলিপট্টির বাসিন্দা। তাদের খোঁজে পুলিশি তল্লাশি চলছে।
| web |
18752fa3c945f6bac6c9d230ab2dfebd84fb7dd7 | ভাষা আন্দোলন থেকে প্রতিটি জাতীয় সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষকে অনুপ্রাণিত করা এবং তাদের হৃদয়কে স্পর্শ করার অন্যতম হাতিয়ার হলো শক্তিশালী কবিতা।
তিনি বলেন, অনেক না বলা কথা কবিতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়। এটা অনেক সংগ্রামে পথ দেখায়।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব ২০২০-২২ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক ২০২০-২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন রাজনীতিবিদের কথার চেয়ে একটি কবিতা মানুষকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করতে পারে। কবিতা, গান, নাটক এবং সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছানো যায়।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের অভ্যুদয়ের পরপরই বাঙালি সংস্কৃতি ও ভাষার ওপর প্রথম আঘাত নেমে আসে এবং তাই ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রাম শুরু হয়।
ভাষা আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অগ্রণী ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মহান নেতা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র ছিলেন, বাংলার ওপর হামলার প্রতিবাদ করেছিলেন, ছাত্রনেতাদের নিয়ে ছাত্রলীগ ও ভাষাসংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছিলেন। আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ আরও অনেকের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের 'এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'- এই লাইনটি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ভাষণটি একটি কালজয়ী কবিতা (অমর কবিতা)।
শেখ হাসিনা বলেন, 'বারবার হামলা হয়েছে, কিন্তু বাঙালি নির্বিকার বসে থাকেনি প্রতিবারই প্রতিবাদ করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর যখন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যায়নি, তখন কবিতার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ হয়েছে। মানুষ অনুপ্রাণিত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজরিত কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের আয়োজনে শতকণ্ঠে পাঠ করা হয়েছে কবির 'বিদ্রোহী' কবিতাটি। বিজলী পত্রিকায় কবিতাটি প্রকাশের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার দামুড়হুদা উপজেলায় এই আয়োজন করা হয়।
এই কবিতা পাঠে অংশ নেন কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাসহ সাংবাদিক-রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনের ১০০ জন মানুষ। একই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র লতিফুর রহমানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এইসময় সবার কণ্ঠে উচ্চারিত হয় বিদ্রোহী কবিতার পঙক্তিগুলো।
এর আগে বেলা ১১টায় নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি এমএ গফুরের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় সিনিয়র সাংবাদিক ও গীতিকার শাহ আলম সনি, সিনিয়র সাংবাদিক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, আয়োজনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলাম, দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির সাবেক ডিজিএম খালেকুজ্জামান, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আপেল উদ্দীন, আতিয়ার রহমান, ক্রিস্টোফার মিথুন ও রঘুনাথ পাল কবির জীবন-কর্ম ও বিদ্রোহী কবিতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
শতকণ্ঠে কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক সাইফুল ইসলাম।
শহীদ গোলাম কিবরিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কবিতা উৎসব শুরু হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে কুমারখালী শহরের পৌর শিশুপার্কে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ।
ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালা, একলা রাতের অন্ধকারে আমি চাই পথের আলো এই শ্লোগানে কবি সৈয়দ আব্দুস সাদিকের সভাপতিত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়।
দিনব্যাপী এই কবিতা উৎসবকে ঘিরে যেন কবিদের মিলনমেলায় পরিণত হয় কুমারখালী শহর। সকাল থেকে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে কবিরা এসে ভিড় করেন কুমারখালী পৌর শিশু পার্কে। সকালের চা নাস্তা পর্বের ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে কবিদের রেজিস্ট্রেশন এবং কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠ।
আয়োজকরা জানান, ব্যর্থ প্রাণের জঞ্জাল সরিয়ে আঁধার দূর করতেই তাদের এই আয়োজন। দিনব্যাপী কবিদের এই আড্ডা চলবে গভীর রাত পর্যন্ত।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ বার্তা পত্রিকার সম্পাদক কবি আবদুর রশীদ চৌধুরী, সাবেক সচিব কবি আল কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সাবেক সচিব কবি কাজী আক্তার হোসেন, কুমারখালী পৌর মেয়র সামছুজ্জামান অরুন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার, কবি লিটন আব্বাস প্রমুখ ।
| web |
61e77f28fb496ace7980cd50f4e46962d910b5c0315547172fa8d67c3c4aabfe | time but there was a regular revolt in the congress camp."
গান্ধীজী সরকারের বিরুদ্ধে সমস্ত সভা ও শোভাযাত্রা বন্ধ করতে নির্দেশ দিলেন। • হঠাৎ আন্দোলন স্থগিত রাখার ফল হলো ভয়াবহ। হিন্দু মুসলমানের যে মিলন এত অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব হয়েছিল তা ধুলিসাৎ হয়ে গেল। পরস্পরের ভ্রাতৃত্ব ও বিশ্বাস চিরতবে মষ্ট হলো। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য গান্ধী পাঁচ দিনের অনশন ও করলেন। বলা বাহুল্য জালিয়ানওয়ালাবাগ্নের হত্যাকাণ্ডে মহাত্মাজীকে এত বিহবল হতে দেখা যায় নি। গান্ধীর এই ভূমিকায় দেশবন্ধু কতটা ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন তা নেতাজীর The Indianstruggle এর Anti-climax অধ্যায়ে ভালভাবেই প্রকাশিত হয়েছে :
"I was with the Deshabandhu and I could see that he was beside himself with anger and sorrow at the way Mahatma Gandhi was repeatedly bungling." [Part II, P. 108 ]
দুঃখে ও ক্রোধে লালা লাজপত বায় গান্ধীকে সত্তর পৃষ্ঠার এক দীর্ঘ পত্র পাঠালেন জেল থেকে। সকলে বিচলিত হলেও আন্দোলনেব পতাকাবাহক মহামানব রইলেন অবিচল। এমন কি স্বেচ্ছাচার প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য স্বাভাবিক সৌজন্যবোধটুকুও হারালেন। প্রত্যেকের আবেদন-নিবেদনকে প্রত্যাহাব কবলেন। পোলকব্রেইলসফোর্ড ও লরেন্স-এর বই থেকে নিম্নোক্ত উদ্ধৃতিটি না দিয়ে পারছি না।
From behind the bars of their prisons, Motilal Nehru and Lajpat Rai sent long letters of remonstrance to the Mahatma, which he dismissed with the tactless comment that as prisoners they were "Civilly dead" and were not entitled to express an opinion.Even Jawharlal Nehru admits that
"Gandhi's action brought about a certain demoralization" [ Mahatma Gandhi, P. 153]
যিনি সত্য ও ন্যায়নীতি ছাড়া জীবনে কিছুই জানতেন না, তাঁর এই ভূমিকার কথা যুক্তির সংগে বিবেচ্য বিষয়। ঐতিহাসিক উক্টর মজুমদার বলছেন, " Gandhi, the politiclan, hopelessly blundered. He sounded the order of retreat just when the public enthusiasm had reached the heating point." [India's struggle for Freedom. P. 58]
১৯২৪ সালে গান্ধীজীর সভাপতিত্বে বেলগাঁও কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের মহান বিপ্লবী নেতা লেনিনের মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব করার চেষ্টা করা হলে তিনি তা উত্থাপন করতে দেন নি। লেনিন উপদ্রবে বিশ্বাসী ছিলেন - এই ছিল তাঁর যুক্তি। ১৯২৭ সালে মাদ্রাজ কংগ্রেসে পূর্ণ স্বাধীনতার প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। গান্ধী মাদ্রাজে উপস্থিত থেকেও উক্ত অধিবেশনে যোগ দেন নি। Young India-তে একটি প্রবন্ধ লিখে স্বাধীনতাকামী কংগ্রেসীদের কড়া ধমক দিলেন :
""The Congress stultifies it self by repeating year after year resolutions of this character, when it knows that it is not capable of carrying them into effect." [ Polak, Brailsford, Lawrence - P.167]
বিদেশী শাসকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য গান্ধীর ভাবনার অন্ত ছিল না। নেতাজীর এই 'লাইনটিতে তা পরিষ্কার ভাবেই প্রকাশিত হয়েছে : "There was considerable excitement over a clause in the resolution moved by the Mahatma, which congratulated the Viceroy on his providencial escape when his train was bombed." [ The Indian Struggle Vol II, P. 243']
১৯২৮-২৯ সালে এমন শ্রমিক অসন্তোষ ছিল, আন্দোলন শুরু করলে তার প্রকৃতি ভিন্নতর ও ব্যাপকতর হতে পারতো।
অথচ উপরোক্ত প্রস্তাব ও বাপুজীর সম্মানার্থে পাশ হয়ে গেছে। নেতাজী তাঁর বইটিতে আর একটি বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন । সবচেয়ে হা্যস্পদ ব্যাপার যে, জনসাধারণের সেবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নেতারা শুধু মাঝে মাঝে বাস্তববুদ্ধি হারাবার ভান করেন তা নয়, সাধারণ জ্ঞানের, পরিচয়টুকুও দিতে পারেন না। ওয়ার্কিং কমিটির আগামী বছরের নির্বাচনের সময়ে গান্ধীজী নিজেই পনের জনের নাম পেশ করলেন। এবং শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার, সুভাষচন্দ্র প্রমুখ বামপন্থীদের বাদ দিলেন । তিনি প্রকাশ্যেই বললেন, - কংগ্রেস হবে এক মন ও একই মতাদর্শের সংগঠন । ক্যাবিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা। থাকার জন্য গান্ধী জয়ী হলেন। বাইরে জনমত ঠাণ্ডা করবার মত অস্ত্র তাঁর ছিলো। কারণে অকারণে কংগ্রেস ছেড়ে দেবার ভয় দেখাতেন বা আমরণ অনশন করতেন।
".... Whenever any opposition raised outside his cabinet, he could always coerce the public by threatening to retire from the Congress or to fast unto death." [ The Indian Struggle, Subhas Chandra Bose. P.245]
এর পরে কলকাতা কংগ্রেসে গান্ধীজীর চেষ্টায় পূর্ণ স্বরাজের প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।
১৯৩০ সাল থেকে আবার চলল আইন অমান্য আন্দোলন - ডাণ্ডি অভিযান - লবণ আন্দোলন। এসব আন্দোলন জনগণের মধ্যে অপূর্ব সাড়া জাগিয়েছিল সত্য। কিন্তু সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রশ্নে হঠাৎ আন্দোলন বন্ধ করে দিলেন। ১৯৩০ সালের ২রা মার্চ গান্ধী বড়লাটকে লিখলেন : "আমার উদ্দেশ্য···ক্রমবর্ধমান সহিংস সংগ্রামকারীদের সংগঠিত সহিংস শক্তির বিরুদ্ধে আমার আন্তরিক শক্তিকে ( অহিংসাকে ) পরিচালিত করা।" সেদিনু জওহরলাল নেহরু জাতির কণ্ঠস্বরকে যথার্থই প্রতিধ্বনিত করেছিলেন :
"I felt annoyed with him for choosing a side issue for the final sacrifice... After so much sacrifice and brave endeavour was our movement to tail off into something insignificant? I felt angry with him at his religious and sentimental approach to a political question, and his frequent references to God in connection with it." [Nehru on Gandhi, P. 72; Towards Freedom, 236-9]
এই বছরেই পেশোয়ারের জনগণের বিদ্রোহদমন করবার জন্য ঠাকুর চন্দ্রমা সিং গাড়োয়ালকে পাঠানো হয়। সৈন্যগণ জনসাধারণের ওপর গুলি করতে অস্বীকার করে জনতার হাতে রাইফেল তুলে দিলো। স্বয়ং গান্ধীজী বৃটিশ সরকারের বিরোধিতা করায় এদের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। অপরাধীদের দীর্ঘ কারাদণ্ডে এতটুকু প্রতিবাদও করলেন না। গান্ধী ক্রমশ গণ-আইন অমান্য থেকে "প্রতিনিধিত্বমূলক" আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হলেন ।
১৯৩৭ সালে জিন্না হিন্দু-মুসলমানের কোয়ালিশন সরকার গড়তে চেয়েছিলেন ! কংগ্রেস এই প্রস্তাব সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেন। মুসলিম লীগ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কোয়ালিশন সরকার গঠন করবেন না বলে জানিয়ে দেন। গান্ধীজী কি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন? নির্বাচনের পর কৃষক প্রজা পার্টির নেতা ফজলুল হক বাংলাদেশে কংগ্রেসের সংগে কোয়ালিশ মন্ত্রিসভা গঠনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। প্রথমে মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রশ্নে মতপার্থক্য থাকলেও পরে কংগ্রেস মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করলো, অথচ কংগ্রেস হাইকমাণ্ড বাংলা কংগ্রেসকে হক সাহেবের সংগে কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা করতে অনুমতি দেন নি। এ বিষয়ে শরৎচন্দ্র চদু ও সুভাষচন্দ্রের সংগে মহাত্মাজী ও অন্যান্যদের গুরুতর মতপার্থক্য ঘটেছিল। যে নলিনী রঞ্জন সরকারকে দলবিরোধী কার্যের জন্য বিশ বছরের জন্য কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত করা হয়, তিনিই প্রখ্যাত পুঁজিপতি জি. ডি. বিড়লাকে
সংগে নিয়ে কোয়ালিশন সম্পর্কে গান্ধীজীর সংগে আলোচনা করেছিলেন। [ Hindusthan Standard-এর বিশেষ সংবাদদাতা, নেপাল মজুমদার, "ভারতে জাতীয়তা ও আন্তর্জাতিকতা এবং রবীন্দ্রনাথ" পঞ্চম খণ্ড, পৃঃ ১৪৫ ]। কারো কারো ধারণা, মহাত্মাজীর কোয়ালিশন' বিরোধী সিদ্ধান্তের উপর উপরোক্তদের অদৃশ্য প্রভাব ছিল ।
জিহ্বার পুনঃ পুনঃ অনুরোধ সত্ত্বেও মহাত্মাজী আলোচনার দ্বার রুদ্ধ করে দেন। পৃথক সম্প্রদায় হিসেবে মুসলমানদের আর কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ রইলো না। তাই গান্ধীর চরমপন্থা (অনমনীয়তা) এমন সঙ্কেত বহন করে নিয়ে এলো, যাতে পাকিস্তানের জন্ম অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠলো।
গান্ধী তাঁর সমর্থক গোষ্ঠীদের নিয়ে ১৯৩১ সালে লর্ড আরউইনের সংগে চুক্তি করতে সমর্থ হন, যার ফলে তিনি গোল টেবিল বৈঠকের একমাত্র প্রতিনিধি হতে পেরেছিলেন। ১৯৩৯ সালে ত্রিপুরী সংকট ( Tripuri crisis ) উপস্থিত হলো। গান্ধীবাদী সনাতন পন্থী ও শুভাষবাদী মধ্যপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলো। নেতাজী সভাপতি নির্বাচিত হলেন । সুভাষচন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বী ডঃ পট্টভি সীতারামাইয়া প্রায় সংগে সংগেই বিজয়ীকে অভিনন্দন জানান। অথচ ১৯৩৯ সালের ৩১শে জানুয়ারী গান্ধীজী বরদৌলি থেকে তাঁর ঐতিহাসিক বিবৃতিটি প্রচার করেন .
"আমাকে স্বীকার করিতেই হইবে যে, গোড়া হইতে আমি তাঁহার ( সুভাষ চন্দ্রের) পুনর্নির্বাচনের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলাম। মৌলানা সাহেব তাঁহার নাম প্রত্যাহার করিবার পর আমার চেষ্টাতেই ডঃ পট্টভি নির্বাচন হইতে সরিয়া দাঁড়ান নাই। অতএব এই পরাজয় তাঁহার অপেক্ষা আমারই অধিক ।....কংগ্রেসের খাতার মধ্যে বহু সংখ্যক ভুয়া সদস্যের নাম রহিয়াছে।...এ বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ যে, এই সকল ভুয়া ভোটারের ভোটে নির্বাচিত বহু সদস্যই পরীক্ষার ফলে অযোগ্য বলিয়া প্রতিপন্ন হইবেন।... হাজার হোক, সুভাষ বাবুতো আর
অগ্নিযুগ - ২-২৪
দেশের শত্রু নন।...তাঁহার কার্যক্রম এবং নীতিকেই তিনি সর্বাপেক্ষা প্রগতিমূলক মনে করেন।...
[আনন্দবাজার পত্রিকা ১।২।৩৯, নেপাল মজুমদার কর্তৃক উদ্ধৃত, ঐ. ৫ম খণ্ড, ২৩৫ পৃ। ]
এই দুঃখ, ক্রোধ ও খেদোক্তি মহাত্মাজীর মনোভাবের নতুন একটি প্রশস্তিকা মাত্র। "Of all the participants only Gandhi had a clear and consistent objective to oust Bose. This he did in the end." [ Brepcher, Quoted by Tole kemp-university of Hull, England, Science and Society, 1964 ]
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ এসে গেল । ১৯৪০ সালে ২৯শে জুন বড়লাট লর্ড লিনলিথগোর সংগে গান্ধীর সাক্ষাৎ হল। গান্ধী হরিজন কাগজে লিখলেন - অবিলম্বে স্বাধীনতা চাই, যারা সশস্ত্র সংগ্রাম চায় তারা বহিষ্কৃত হবে, তাছাড়া ভাইস্ রয়ের কাউন্সিল বর্ধিত করবার প্রস্তাবকে গ্রহণ করতে হবে। পুনরায় প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় সদস্য হবার সুবর্ণ সুযোগ হারানো যায় না। তাই ১৯৪০ সালের ৭ই জুলাই প্রস্তাব পাশ হলো দিল্লীতে-"The working committee declare that if these measures are adopted, it will enable the congress to throw in its full weight in the efforts for the effectve organization of the country." [ Polak, Brailsford, Lawrence, P. 233].
ভাইসরয় প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় আবার আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই এই আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলো। আসলে গান্ধী বৃটিশ সরকারের অসুবিধাকে নিজের সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চান নি। অর্থাৎ, সরকারের বিরক্তি উৎপাদন করলে তা অহিংসার পরিপন্থী হবে। "He was not qut to cause embarassment to the Government"
( উৎস, ঐ পৃঃ 237)। নিজের দেশবাসীকে হিংসা থেকে নিবৃত্ত করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদীদের হিংসায় পরোক্ষভাবে সমর্থন জানাতে কুণ্ঠা বোধ করেন নি। তিনি প্রকাশ্যেই বলেছেন - "Of course it would be different if we had resorted to armed rebellion. Then the saying that "Their difficulty becomes our opportunity would apply" [ উৎস : ঐ, পৃঃ 238 ]
প্রকৃতপক্ষে আলোচনা, আপোষ ও অন্যায়কারীদের সংগে সন্ধি করে কোন প্রকারে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই ছিল গান্ধী পরিচালিত কংগ্রেসের একমাত্র উদ্দেশ্য। এই চুক্তি ও সন্ধির ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবার জন্যই জনতার আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। গান্ধীজীর আন্দোলন পরিচালনায় পূর্ণ ঐকান্তিকতা থাকা সত্বেও কেন তিনি বারবার ব্যর্থতার বরমাল্য লাভ করেছেন তা দেশবন্ধুর উক্তিতে সুন্দর ভাবেই প্রকাশিত হয়েছে :
"The Mahatma opens campaign in brilliant fashion, he works it up with unerring skill, he moves from success to success till reaches the zenith of his campaign,-but after that he loses his nerve and begin to falter." [Quoted by Dr. R. C. Majumder, India's struggle for Freedom, P. 59]
পর্যায়ক্রমে গান্ধীর প্রত্যেকটি আন্দোলন ব্যর্থতার ফলে কি গান্ধীবাদের ভ্রান্ততা ও অসারতাই প্রমাণিত হয় না?
একটু গভীরভাবে চিন্তা ও বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, এই ব্যর্থতার মূলে ছিল পুঁজিপতি ও জমিদার শ্রেণীর স্বার্থ । তাছাড়া ধর্মান্ধতা তাঁকে অবৈজ্ঞানিক কুসংস্কারের দিকে নিয়ে যায়। নিজেকে তিনি ভগবানের দূত বলে প্রচার করতে পেরেছিলেন। রাজনীতি, ইতিহাস ও অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়গুলো অলৌকিকতা নিরপেক্ষ। অলৌকিকতা, ভেল্কিবাজি শ ধর্মান্ধতার স্থান রাজনীতিতে থাকা উচিত নয়। গান্ধীর
অসামা্য অলৌকিক ক্ষমতার কথা ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার যথার্থ ই
ব্যক্ত করেছেনঃ
"Gandhi was always capable of working himself up to a Messianic zeal, as an instrument of God; and in such cases 'Messianic zeal is known to be harnessed to a desire to work as miracies." [ India's Struggle for Feedom, P. 49]
কোনোরকম যুক্তি এবং প্রতিভা না থাকলেও গান্ধীর ঐশ্বরিক ক্ষমতার জন্য ডক্টর সীতারামাইয়া গর্ববোধ করেছেন : "He saw things as if by a flash and framed his conduct by impulse. To the righteous man, these two are the supreme guides of life, not reason nor intellect." [ History of Congress I, P.378 ]
তবে কি গান্ধীজীর কোনো ক্ষমতাই ছিল না? গান্ধীজী তাঁর সাদাসিধা বেশভূষা ও ব্যক্তিজীবনে ধর্মাচরণের মাধ্যমে হাজার হাজার ভারতবাসীর মন জয় করে করেছিলেন। তা ছাড়া তাঁর অপরিসীম ব্যক্তিত্বে বড় বড় নেতারাও আকৃষ্ট হয়েছিলেন - একথা স্বীকার করতেই হবে। "It is the credit of Gandhi perhaps unique in the World's history that he could exploit the spirit of devotion and complete self-surrender, usually reserved for a spiritual guru, for political purposes." [ India's struggle for Freedom, P. 56 ]
গান্ধীজী যে নিজের মতবাদ সম্বন্ধে নিজেই পরিষ্কার ছিলেন না এবং তাঁর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বলেও যে কিছু ছিল না - এ কথা পণ্ডিত নেহরুও স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্বের কাছে জহরলাল আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
[ "In spite of the closest association with him ( Gandhi) for many years, I am not clear in my
own mind about his objective. I doubt if he is clear himself. One step is enongh for me, he says; and he does not try to peep into future or to have a clearly conceived end before him."...Personality is an indefinable thing, a strange force that has power over the souls of men, and he possesses this in an ample measure... [ Nehrn on Gandhi, P. 64, 90-91, Toward Feedom, 186-7]
এই ব্যক্তিত্ব - যার কোনো সার্থক ও বাস্তব সংজ্ঞা নেহরু দিতে পারেন নি - তাই দেশের পক্ষে হয়েছিল কাল। কারণ "হিংস্র আঘাত থেকে আত্মরক্ষা করবার অসার্থক প্রয়াস হ'ল ব্যক্তিত্ব"।
গান্ধীজী কি প্রকৃতই দরিদ্রপরায়ণ ছিলেন? ব্যক্তিজীবনে ও রাজনৈতিক আন্দোলনে তাঁর সমস্ত শক্তির উৎস ছিল ধনী শিল্পপতি ও জমিদার গোষ্ঠী। গান্ধীর মহাত্মায়ানাও রক্ষা করতে হতো এদেরই।
"It was his money milking of the rich evoked Mrs. Naidu's famous Quip, "It costs a lot of money to keep Gandhi poor." One Textile millionaire, G. D. Birla supported the ashram, with its hospital and dairy, after 1935 at a cost approximately $17,000 a year" [ L. Fisheer, Gandhi : His life and Message for the world : Mentored, Newyork, 1960]
অথচ এই বিড়লা ট্রাষ্টিতে শ্রমিকদের অবস্থা ছিল অসহনীয়। আড়াইশ' মানুষ ব্যবহার করতে। একটি মাত্র পায়খানা। মাত্র একটি নলকূপ থেকে সকলের তৃষ্ণা মিটতো। সাধারণ শ্রমিক বস্তিতে অন্ততঃ ইটের মেঝে বা কাচা নর্দমাটুকু ছিল । অথচ বিড়লার মিলে যে সব 'হরিজন'রা কাজ করতো, তাদের বস্তিতে এমন ঘরও ছিল, যার মধ্যে পঁচিশজন লোককে থাকতে হতো। ৯ × ১২ ' ঘরগুলোতে
( কোয়ার্টার ) এত লোক এক সংগে বসতেই পারতো না, ঘুমোবার প্রশ্ন তো ওঠেই না।
বাইরের জগতে আপন মহত্ত্ব প্রকাশের জন্য অবশ্য বিড়লাজী অনেক মন্দির ও ধর্মশালা বানিয়েছিলেন বা দান ধ্যাঁন করেছিলেন। তাই Margaret Bourke White বলেছিলেন - "During my stay in India I never ceased to wonder why Gandhi ; who symbolised the simple life for millions, should live at the home of India's richest textile magnet" [ Half way to freedom P. 31 ]
গান্ধীজী সাদাসিধা জীবন যাপনে বিশ্বাসী ছিলেন। তৃতীয় শ্রেণী ছাড়া ভ্রমণ করতেন না। মহাত্মাজী, তাঁর আশ্রম এবং তাঁর ছাগলটির জন্যও বেশ কয়েকটি তৃতীয় শ্রেণীর গাড়ী দরকার হতো। একবার সিমল ভ্রমণের জন্য সমস্ত তৃতীয় শ্রেণীর ট্রেনটিই গান্ধীর জন্য নেওয়া হয়েছিল। ( ঐ P-88) গান্ধীজীর দীর্ঘজীবনের অভিজ্ঞতা ছিল, বিড়লাজী কা'কেও ঠকান না । একে (blind-eye ) 'অন্ধ দৃষ্টি' বলবেন, না সমস্ত টাট। বিড়লাদের সম্পদ রক্ষা করা, বা সামন্তযুগীয় ব্যবস্থাকে অটুট রাখার প্রচেষ্টা আখ্যা দেবেন ?
"The anti-machine references made at prayers always intrigued me, especially since these were delivered through a modern microphone and when the talk was finished Gandhi would step off the prayer podium into Mr. Birla's milk white Packard car to be whirled back to the untouchable colony." [Half way to freedom, P. 88]
তাই যুক্তপ্রদেশের জমিদার শ্রেণীর প্রতিনিধি দলের সংগে সাক্ষাৎকারের সময় গান্ধী যথার্থ ই বলেছিলেনঃ "যুক্তি সংগত কারণ ব্যতীত ভূস্বামীদের সম্পত্তি কাড়িয়া লওয়ার দলে আমি নই। আমার উদ্দেশ্য হুইল 'তোমাদের হৃদয় স্পর্শ করিয়া তোমাদিগকে স্বমতে আনয়ন করা,
যাহাতে তোমরা তোমাদের প্রজাবৃন্দের অছি স্বরূপ সম্পত্তির রক্ষা কর এবং প্রধানতঃ তাহাদের কল্যাণের জন্যই উহা ব্যয় কর।...যদি কেহ অ্যায় রূপে তোমাদিগকে সম্পত্তির অধিকার হইতে বঞ্চিত করিতে চাহে, তাহা হইলে তোমরা দেখিবে, আমি তোমাদের হইয়া সংগ্রাম করিব। পাশ্চাত্যের সমাজতন্ত্রবাদ অথবা কমিউনিজম এমন কতকগুলি ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত, যাহা আমাদের মূল বিশ্বাস হইতে সম্পূর্ণ পৃথক ।...আমাদের সমাজতন্ত্রবাদ বা কমিউনিজম অহিংসার উপর এবং ধনী ও শ্রমিক, জমিদার ও প্রজার সামঞ্জস্যে পূর্ণ সহযোগিতার উপর প্রতিষ্ঠিত।" [ নেহরু আত্মচরিত, ১৩৫৫, পৃঃ ৫৭৪ ]
সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সজীব রাখার জন্য গান্ধী যে কত উদগ্রীব ছিলেন তা ১৯২২ সালের কংগ্রেস অধিবেশনের সিদ্ধান্ত থেকে সহজেই অনুমেয় : "তাহাদের (জমিদারদের ) বৈধ অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করিবার কোনো ইচ্ছাই কংগ্রেস আন্দোলনের নাই । নাই।" কৃষকগণ কর্তৃক জমিদারদের খাজনা বন্ধ করা কংগ্রেস প্রস্তাবের বিরোধী এবং দেশের মৌলিক স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকর। ১৯৩৪ সালের জুলাই মাসে গান্ধী কানপুরে প্রকাশ্যেই বলেছিলেন - "...তিনি কখনও তালুকদারী ও জমিদারীপ্রথা বিলোপের পক্ষপাতী নহেন এবং যাহারা মনে ভাবে উহা বিলুপ্ত করাই উচিত, তাহারা নিজেদের মনোভাবই বুঝিতে পারে না।" [ নেহরু আত্মচরিত--পৃঃ ৫৭৩]
মহাত্মাজীর ধর্ম যে প্রায়ই কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার ওপরে উঠতে পারেনি তাও সর্বজনবিদিত। ১৯৩৪ সালে বিহারে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়ে গেল। কংগ্রেসী নেতারা ভূমিকম্পের ফলে দুর্গতদের সেবায় আত্মনিয়োগ করলেন। গান্ধীজীর নেতৃত্ব খুবই প্রশংসনীয়। কিন্তু তিনি তাঁর 'হরিজন' পত্রিকায় লিখলেন : "বিহারের বর্ণহিন্দুদের অস্পৃশ্যতার পাপই হ'ল বিহারের ধ্বংসলীলার মূলকারণ, সে পাপের শাস্তিরূপেই বিধাতার নিকট থেকে এই ধ্বংসের কঠোর দণ্ড নেমে এসেছে।"
ভূমিকম্পের এ ধরণের অবৈজ্ঞানিক ও উদ্ভট ব্যাখ্যা অনেকেই গ্রহণ
করতে পারেন নি। বিশ্ববন্দিত কবি রবীন্দ্রনাথ এর উত্তরে জানালেন : "প্রাকৃত জড় ঘটনা সমূহের একটি বিশেষ সমবায়ই হইল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অনিবার্য এবং একমাত্র কারণ। বিশ্ববিধান সমূহ' অলখ্য; এই বিধানগুলির কাজে ঈশ্বর নিজেও কোনদিন হস্তক্ষেণ করেন নি "...এই অযুক্তিই হইল সকল অঙ্কশক্তির মূল আর্কর - যাহা আমাদিগকে জোরপূর্বক স্বাধীনতা ও আত্মসম্মানের পথ হইতে দূরে সরাইয়া লইতে পারে।" ভগবানের এত নিকটে যিনি যেতে পেরেছেন সেই মহাত্মাজী আবার লিখলেন - "আমরা ভগবানের সব বিধানের কথা জানিনা।···আমার জীবনের ক্ষুদ্রতম ঘটনাটিতেও তিনি আমাকে পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত করিতেছেন।.... তাঁহার করুণাময়ী ইচ্ছার উপরই আমার প্রত্যেকটি শ্বাস নির্ভর করিতেছে।" মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন !
প্রবন্ধের প্রারম্ভে গান্ধীজীবনীকার রলার মহাত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার কথা উল্লেখ করেছি। চরকা, বয়কট আন্দোলন ইত্যাদি নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সংগে গান্ধীর মতপার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে রলা লিখলেন : "Gandhi is a mediaval universalist, with ali veneration to the Mahatma, I am with Tagore."
[ Mahatma Gandhi: P, 98. ]
গান্ধীজীর প্রতি এই শ্রদ্ধাটুকু ও রলাঁ। কি বেশি দিন রাখতে পেরেছিলেন ? এর জন্য মহাত্মাজীর দায়িত্বকে অস্বীকার করবার কোনো উপায় নেই। ফ্রান্সের বার্থাল ভ্রাতৃদ্বয়ের মতো দু'জন গ্রাম্য কৃষকও অহিংস। মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। এই দু'জন কৃষক ভাই প্রথম 'মহাযুদ্ধে (যে যুদ্ধে গান্ধী সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন) যোগ দিয়েও মানুষ মারতে চাননি। ১৯২৮ সালে অত্যন্ত আনন্দের সংগে রঁলা গান্ধীকে এই ঘটনার কথা জানালেন। কিন্তু গান্ধীর নির্দেশে মীরাবেন লিখলেন : "বাপুজী মনে করেন না যে, এই ভ্রাতৃদ্বয়ের মন সত্যিকারের অহিংসা হবার মত পবিত্র, কেন না যুদ্ধে যোগ দিতে তাদের আপত্তির প্রধান কারণ ছিল তাদের পৈত্রিক জমির প্রতি আকর্ষণ।"
১৯২৯ সালের ২১শে জানুয়ারী রঁলা মর্মাহত হয়ে উত্তর দিলেন : "বার্থাল ভ্রাতৃদ্বয় সম্বন্ধে আপনারা যা লিখেছেন, তা পড়ে আমি খুব • দুঃখিত হলাম। এই সরল, অশিক্ষিত কৃষক দুইটি, যাদের কোনো গুরু • নেই, যারা ধর্মের খবর রাখেনা, যারা পুরাতন বাইবেলে বিশ্বাস করেও একমাত্র স্বভাবজাত বিবেকের আলোকের দ্বারা চালিত হয়েছে
- এই রকম দুইটি সাধারণ মহৎ ব্যক্তি যদি অহিংসা মন্ত্রের গুরুর ধর্মীয় চাহিদা পুরণ না করতে পারে, তা হলে গান্ধীর মহৎ আদর্শ কোন দিন যে মানুষের সমাজে প্রবেশ করবে ও ফলপ্রসূ হবে, তার কোনো আশা করা যায় না। গান্ধীর এই পবিত্র জেদ তাঁকে তাঁর আশ্রমের দেয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখবে।...১৯১৪ সালের যুদ্ধে গান্ধীর মনোভাব ও বৃটিশ সম্রাজ্যবাদের যুদ্ধে সহযোগিতার সংগে তাঁর অহিংসা নীতির সামঞ্জস্য বিধান তাঁর পাশ্চাত্য অনুগামীদের মনে যথেষ্ট সংশয়ের সৃষ্টি করেছে।" [ Inde, P 190 ]
গান্ধীজী প্রথম মহাযুদ্ধে যোগদানের কারণগুলো জানিয়ে রমা রলাকে চিঠি দিলেন। সাম্রাজ্যের রক্ষণাবেক্ষণে উপকৃত হয়ে প্রজা হিসাবে তাদের সহযোগিতা করা ও সহানুভূতি পাওয়া, ভারতের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা পাওয়া - এই ছিল গান্ধীর প্রধান যুক্তি।
• ১৯২৯ সালের ৭ই মার্চ বল। আবার গান্ধীকে লিখলেন : আপনার মত একজন ব্যক্তি, যার প্রচণ্ড সাহম ও বিশ্বাসের জোর, যিনি সর্বক্ষেত্রে মানুষ হত্যা ও জ্যাততে জাতিতে যুদ্ধ আপোষহীন ভাবে নিন্দা করেন, তিনিই তাতে অংশ গ্রহণ করলেন এবং তাতে বাধা না দিয়ে সে পথ স্বেচ্ছায় বেছে নিলেন,···যদি কেবলমাত্র ফলাফল দ্বারাই বিচার করা হয়, তা হ'লে আপনার এই অত্যন্ত রাজভক্তিমূলক সুবিধাবাদ কোনো কাজেই লাগেনি। পক্ষান্তরে যদি বা তা সত্যই সফল হত ও আপনারা স্বাধীনতা পেতেন - হে বন্ধু, আপনাকে একটা কঠিন বাক্য ব্যবহার করতে আমাকে অনুমতি দিন, সাম্রাজ্যবাদের জন্য কোটি কোটি মানুষের রক্তাক্ত আত্মাহুতির ফলে, এই মূল্যে যদি আপনাদের স্বাধীনতা লাভ হ'ত ; তাহ'লে তা হ'ত ভগবানের নিকট
বিষম অপরাধ ( it would have been a crime before God) এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ভারতের ললাট সেই রক্তের দ্বারা চিহ্নিত হয়ে থাকত; আর সেই রক্ত ভগবানের সমক্ষে ভারতকে অভিশাপ। "দিত।"...[ Inde, P. 193-94]। পাঠকের সুবিবেচনার জন্য মহাত্মাজীর সংগে রলার পত্রালাপের পরিপ্রেক্ষিতে উভয়ের সম্পর্ককে তুলে ধরলাম।
১৯৩১ সালে গান্ধীজী মুসোলিনির আমন্ত্রণে ইতালিতে গেলেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ও বিশ্ববিখ্যাত মনীষীদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী উক্তিগুলো গান্ধী ভালভাবেই জানতেন। রলাঁ । বললেন - 'আপনার সেখানে যাওয়াটাই হবে মুসোলিনির পক্ষে একটা নৈতিক বিজয়' ।
গান্ধীর ইতালি ভ্রমণ নিছক ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, এর রাজনৈতিক গুরুত্ব ও আন্তর্জাতিক তাৎপর্যকে অবহেলা করা যায় না। রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লব যার কাছে হিংসা ও সন্ত্রাসের রাজত্ব, তিনিই ইতালি ঘুরে এসে ( ১৯৩১, ২০শে ডিসেম্বর) রলাকে লিখলেন :
তাঁর (মুসোলিনির) অনেক সংস্কারের কাজে আমি সমর্থন করি। আমার মনে হ'ল, তিনি কৃষকদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। যেহেতু পাশ্চাত্যে পশুবলই (হিংসাই ) হ'ল সমাজের ভিত্তিমূল, মুসোলিনির সংস্কারগুলি নিরপেক্ষভাবে বিচার করার যোগ্য। আমি মনে করি গরীদের প্রতি তাঁর দরদ, বৃহৎ শহরীকরণের (super urbanization) প্রতি তাঁর বিরোধিতা, শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য তাঁর প্রচেষ্টা - এগুলি আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ যোগ্য···আমার যেখানে মৌলিক সন্দেহ থেকে যাচ্ছে তা হচ্ছে যে, এই সংস্কারগুলি বাধ্যতামূলকভাবে করা হয়েছে । কিন্তু গণতান্ত্রিক সমাজেও তে। এই একই পন্থায় এই কাজগুলি হচ্ছে। আমাকে যা আকর্ষণ করেছে তা হচ্ছে মুসোলিনির কঠোরতার পশ্চাতে রয়েছে একটা সততা ও তাঁর দেশবাসীদের প্রতি উদ্দীপ্ত প্রেম। আমার আরও মনে হয় যে ইতালিয় জনসাধারণ মুসোলিনির লৌহ শাসনকে পছন্দ করে।" [ Inde, P. 306
| pdf |
e2535c23c8286674d61ce45fffada67b | যুদ্ধরত দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ে আমদানির চুক্তির পুরো লট গম চলে এসেছে দেশে। গম আমদানি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে শঙ্কা নেই। বেসরকারি পর্যায়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২১ লাখ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছে।
পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে উৎপাদনের প্রায় ১২ লাখ টন চলতি মাসের শেষে কৃষকের ভান্ডারে যুক্ত হবে। এছাড়া গত মৌসুমে সরকারিভাবে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জন হয়েছে। কিন্তু এরপরও যুদ্ধের ডামাডোলের অজুহাতে বাজারে কতিপয় ব্যবসায়ী বাড়াচ্ছে গমের দাম। এতে গম ও মোটা চালের মূল্য প্রায় কাছাকাছি হয়ে গেছে। বাজারে এক কেজি মোটা চাল ৫০ টাকা এবং আটার কেজি ৪৫ টাকায় উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গম আমদানিকারক এবং গম থেকে আটা ও ময়দা উৎপাদনকারীদের ওপর নজরদারি করছে সরকারের এজেন্সিগুলো। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, গম পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে। এর মজুত নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে যে গমের মূল্য বেড়েছে, এর প্রভাব আগামী দুই মাস পর পড়বে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এর প্রভাব দ্রুত পড়ছে বাজারে। এ ধরনের তথ্য আমাদের কাছে আসছে। এজন্য আমি গোয়েন্দা সংস্থা ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দিয়েছি।
বাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিআইডিএস-এর সাবেক ডিজি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরি যুগান্তরকে বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য খাতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল ও ভোগ্যপণ্যের বাজারে আঘাত আসছে। আমরা যুদ্ধরত দেশগুলো থেকে গম, ভোজ্যতেল, ভুট্টা আমদানি করছি। এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে এটিও ঠিক, বিশ্ববাজারের কারণে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে যতটুকু বৃদ্ধির কথা, কতিপয় ব্যবসায়ী এর চেয়ে বেশি বৃদ্ধি করে থাকে। এজন্য সরকারকে পণ্যের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা উদ্যোগ নিতে হবে।
সম্প্রতি খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে গম নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বলা হয়, সরকার যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, এর ৯৫ শতাংশ গম আবাদ করেছেন কৃষক। এছাড়া ২০২১ সালের মৌসুমে ১ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ২১২ টন বেশি সংগ্রহ হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) সরকার টু সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতে রাশিয়া থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন, ইউক্রেন থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন এবং ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এর মধ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্থবছরের সাড়ে ৭ মাসে রাশিয়া, ইউক্রেন থেকে ৩ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে। এর বাইরে ৫২ হাজার ৫শ মেট্রিক টনের গমবাহী জাহাজ বাংলাদেশ বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে। অর্থাৎ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে সরকারিভাবে আমদানির পুরোটাই চলে আসছে। ফলে এ বছর যুদ্ধরত দেশ দুটি থেকে গম আমদানি নিয়ে কোনো ধরনের সরকারি পর্যায়ে শঙ্কা নেই।
এছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেসরকারিভাবে আমদানি করা হয়েছে ২১ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। অবশ্য বেসরকারিভাবে বছরে প্রায় ৫৪ লাখ মেট্রিক টনের মতো আমদানি হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে বার্ষিক গমের চাহিদা ৫৮ লাখ টন। প্রথম ছয় মাসে চাহিদা (জুলাই-ডিসেম্বর) ২৯ লাখ মেট্রিক টন। এই চাহিদা পূরণে সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট আমদানি হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন।
চলতি মাসে শেষ এবং এপ্রিলের শুরুতে কৃষকের আবাদের প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন যোগ হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের মৌসুমে (নভেম্বর-ডিসেম্বর) কৃষক ৩ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে গম আবাদ সম্পন্ন করেছে। এ বছর সরকারিভাবে গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন। ওই হিসাবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশই কৃষক আবাদ করেছে।
আমদানি, উৎপাদনের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই মুহূর্তে গমের সংকট নেই। কিন্তু যুদ্ধের দোহাই দিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ী দাম বাড়াচ্ছে গমের। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পরপরই সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গত দশ দিনে প্রতি মনে (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গমের দাম। এর জেরে বেড়ে গেছে আটা-ময়দা ও সুজির দাম।
এখন এক কেজি খোলা আটা ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা এবং আটার প্যাকেটের খুচরা মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। একইভাবে খোলা ময়দার কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি পাউরুটির প্যাকেটসহ কিছু ব্র্যান্ডেড বেকারির আউটলেট ও খুচরা দোকানে অন্তত ১০ টাকা বেড়েছে। রাস্তার পাশের চা-স্টলে বিক্রি হওয়া পাউরুটি ও বিস্কুটের দামও বেড়েছে। এতে কর্মজীবী মানুষের খাবারের পেছনে খরচও বেড়ে গেছে। এছাড়া আটা ও ময়দা দিয়ে তৈরি চানাচুর, বিস্কুট, বেকারি পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে।
সূত্র জানায়, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলে গম আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তাদের মত হচ্ছে, এ মুহূর্তে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে জাহাজ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিবছর এই দুটি দেশ থেকে আমাদের মোট চাহিদার ৩৫ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়।
তবে চলমান যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের প্রধান বন্দরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সরবরাহ ও শিপিং লিঙ্ক। যার ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে শিপমেন্ট। এছাড়া রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে জাহাজ ভাড়াও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি খাদ্যশস্য আমদানিকারকরাও বিকল্প সোর্সিং দেশের সন্ধান করছে। বিশেষ করে বিকল্প হিসাবে কানাডা এবং আর্জেন্টিনা থেকে গম বুকিং করছেন অনেক আমদানিকারক।
| web |
3520a642fe0868592122e64a660a04e0ec378c53 | স্থূল বা মোটা ব্যক্তিদের স্মৃতিশক্তি হালকা-পাতলা গড়নের ব্যক্তিদের চেয়ে কম হয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ দাবি করা হয়েছে। তবে সব স্মৃতির ক্ষেত্রেই নয়। বলা হচ্ছে, মোটা ব্যক্তিরা সাধারণ জ্ঞানের মতো বিষয়গুলো মনে করতে পারে, কিন্তু 'কাহিনীমূলক স্মৃতি' (এপিসোডিক মেমোরি) তারা খুব একটা স্মরণেরাখতে পারে না।
গবেষণার সারবস্তু সম্প্রতি 'কোয়ার্টারলি জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজি' সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা আছে, ৫০ জন ব্যক্তির ওপর গবেষণাটি চালানো হয়েছে। এদের মধ্যে স্থূল ও শীর্ণকায় ব্যক্তিরা ছিল। গবেষণার অংশ হিসেবে এদের সবাইকে কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে নানা ধরনের দৃশ্য দেখানো হয়। এরপর তাদের বলা হয়, একে একে সেগুলো স্মরণ করতে। তাতে দেখা গেছে, মোটা ব্যক্তিরা চিকন ব্যক্তিদের চেয়ে ১৫ শতাংশ নম্বর কম পেয়েছে।
গবেষকরা বলেন, কারো করমর্দনের অনুভূতি কেমন ছিল কিংবা কয়েক দিন আগে খাওয়া কোনো কফির ঘ্রাণ কেমন ছিল - তা স্থূল ব্যক্তিরা সহজে স্মরণ করতে পারে না। কিন্তু সাধারণ জ্ঞানের মতো বিষয়গুলোতে তাদের স্মৃতিশক্তি শীর্ণকায় ব্যক্তিদের চেয়ে কম নয়। সূত্র : বিবিসি।
Thanks, we should always cautious about our health.
| web |
426aa6af41691db1246646f912d48e25 | বর্তমানে মানুষ মনের শান্তির জন্যে কত কিছু করে। ধ্যান করে। মেডিটেশন করে। যোগসাধনা করে। নিজের নিরাপত্তার জন্যে নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। নবীজি সা.-ও নিরাপত্তা সুরক্ষার জন্যে বিভিন্ন আমল করতেন। দু'আ পড়তেন। দু'আগুলোর কথা হত অত্যন্ত অর্থপূর্ণ। দু'আবাক্যগুলোর শব্দে শব্দে ছত্রে ছত্রে বিনয় নম্রতা ঝরে পড়ত। প্রকাশ পেত আল্লাহ তা'আলার একত্ব। মহত্ব।
সন্ধ্যা নামলে নবীজি পড়তেনঃ
আমরা সন্ধ্যায় উপণীত হয়েছি। সমস্ত ক্ষমতাও আল্লাহর কুক্ষিগত হয়েছে। প্রমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনও ইলাহ নেই। তার কোনও শরীক নেই। রাজত্ব তার। প্রশংসাও তার। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
হে আমার প্রতিপালক, আমি আপনার কাছে এ-রাতের সমস্ত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। রাতের পরে যত কল্যাণ আছে, তাও কামনা করছি। এই রাতের সমস্ত অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। রাতের পরে আসা সমস্ত অকল্যাণ থেকেও মুক্তি কামনা করছি। আমি অলসতা থেকে, কষ্টকর বার্ধক্য থেকে পানাহ চাচ্ছি। জাহান্নামের আযাব ও কবরের আযাব থেকেও পানাহ চাচ্ছি।
ভোর হলেও নবীজি দু'আটা পড়তেন। শুরুতে বলতেনঃ
আমরা সকালে উপনীত হয়েছি। সমস্ত ক্ষমতা আল্লাহ কুক্ষিগত হয়েছে।
(আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.। মুসলিম)
এগুলো নিছক কিছু কথা নয়। আল্লাহর তাওহীদের স্বীকারোক্তি। আসমান যমীনের স্রষ্টা একমাত্র তিনিই, এর স্বীকারোক্তি। নিজেকে কী অসহায় বানিয়ে আল্লাহর কাছে দু'আ চাইতেন পেয়ারা নবীজি!
নবীজি এই দু'আয় অনেক কিছু চেয়েছেন,
ক. দিনরাতের সম্ভাব্য সমস্ত কল্যাণ কামনা করেছেন। সমস্ত অকল্যাণ থেকে মুক্তি চেয়েছেন। দিনরাতের কল্যাণ ও অকল্যাণই নয় শুধু, ভবিষ্যতের কথাও বলতে ভোলেননি।
খ. শুধু তাই নয়, দুনিয়া ছাড়িয়ে আখেরাতে মুক্তির প্রার্থনাও পাশাপাশিও করেছেন।
গ. কবরের বিপদ থেকে পানাহ চেয়েছেন। .
মাত্র কয়েক লাইনে এতকিছু চাওয়া পাওয়ার সম্মিলন করা নবীজির পক্ষেই সম্ভব। নবীজি এমন দু'আ কেন করতেন? তাকে আল্লাহ তা'আলা এমনিতেই রক্ষা করবেন। দুনিয়াতে কবরে ও আখেরাতে? তিনি মূলত পড়তেন আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্যে। পাশাপাশি উম্মতকে আমলটা শিক্ষা দেয়ার জন্যে। আমরা চাইলেই সকাল সন্ধ্যা দু'আটা পড়ে নিতে পারি। ইয়াকীন (দৃঢ় বিশ্বাস)-এর সাথে দু'আটা পড়লে, ইনশাআল্লাহ, সব ধরনের বিপদাপদ বালা-মুসীবত থেকে আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে রক্ষা করবেন। কবর আযাব থেকে, জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে?
| web |
85b3eb6330f3cfd2f9bc9a966d55e3e3 | চতুর্থতঃ সিয়ামঃ অর্থাৎ রমযান মাসের সিয়াম, যা ফজর উদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রাখা হয়। এ সময়ের মধ্যে রোযাদার পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও এতদুভয়ের হুকুমে যা পড়ে তা আল্লাহ তা'আলার ইবাদাত পালনার্থে বর্জন করে এবং স্বীয় আত্মাকে তার কু-প্রবৃত্তির আমল থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহ তা'আলা সিয়ামকে অসুস্থ, মুসাফির, গর্ভবতী, স্তন্যদানকারিনী, ঋতুবতী ও প্রসূতি নারীর ওপর হালকা করে দিয়েছেন। ফলে তাদের প্রত্যেকের জন্য ঐ হুকুমই প্রযোজ্য হবে যা তাদের জন্য সঙ্গত হবে। এই মাসে মুসলিম তার আত্মাকে তার কু-প্রবৃত্তি থেকে দূরে রাখে, যার ফলে এই মহান ইবাদাত পালনের মাধ্যমে তার আত্মাকে পশুর সাদৃশ্য থেকে বের করে আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ফিরিশতাদের সাদৃশ্যের দিকে নিয়ে যায়। অবশেষে সাওম পালনকারী এমন এক চিত্রের কথা চিন্তা-ভাবনা করতে থাকে যে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা ব্যতীত পৃথিবীতে তার আর কোনো প্রয়োজন নেই।
পঞ্চমতঃ হজ[9]: পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থিত বায়তুল্লাহিল হারাম (আল্লাহর সম্মানিত ঘর) কা'বার হজব্রত পালন। যারা কা'বা ঘর পর্যন্ত পরিবহনের ব্যবস্থা অথবা তার পারিশ্রমিক প্রদান এবং সেখানে যাওয়া আসার সময় তার সার্বিক প্রয়োজন মেটাতে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা দরকার তার সামর্থ্য রাখে, ঐ সমস্ত প্রত্যেক ক্ষমতাবান, জ্ঞানবান, বয়ঃপ্রাপ্ত মুসলিম ব্যক্তির ওপর তা ফরয। তবে শর্ত হলো যে, ব্যয়ের এই অর্থ, তার ভরণ পোষণের দায়িত্বে যারা রয়েছে তাদের খাদ্য-খোরাক হতে অতিরিক্ত হতে হবে এবং সে যেন পথে তার জীবনের ব্যাপারে ও তার অনুপস্থিতিতে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে আশংকা-মুক্ত হয়। যাদের সে পর্যন্ত (কা'বা ঘর) যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাদের ওপর জীবনে মাত্র একবারই হজ ফরয।
| web |
a873af43988f77529fb20e1ec57524466436d3d7 | উত্তরাখণ্ডে টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। পদত্যাগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। রাজভবনে গিয়ে রাজ্যেপালের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি। আগে থেকেই এই নিেয় জল্পনা শুরু হয়েছিল। গতকাল দিল্লিতে জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। তারপর থেকেই তাঁর পদত্যাগের জল্পনা শুরু হয়। সূত্রের খবর দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হচ্ছিল। এই নিয়ে দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগও করেছিলেন ত্রিবেন্দ্র বিরোধী বিজেপি নেতারা।
খবর আগে থেকেই হয়েছিল। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তাতে সিলমোহর দিলেন। সোমবার বিকেলে রাজভবনে গিয়ে নিজের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে তাতে সিলমোহর দিলেন ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। সূত্রের খবর ত্রিবেন্দ্রর বিরুদ্ধে তাঁই মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা গিয়ে নালিশ ঠুকেছিলেন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। ত্রিবেন্দ্রর কাজের ধরন পছন্দ হচ্ছিল না তাঁদের।
আগামিকালই মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তাই নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী তা ঠিক করবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে নাম শোনা যাচ্ছে ত্রিবেন্দ্রর মন্ত্রীগোষ্ঠীর মন্ত্রী ধান সিং রাওয়াতের। তাঁকে ত্রিবেন্দ্রর জায়গায় বসানো হতে পারে বলে খবর। ১১ মার্চ সকাল ১১টায় উত্তরাখণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেবেন বলে জানা গিয়েছে। ত্রিবেন্দ্রর বিরুদ্ধে একাধিক বিধায়কের অভিযোগের জেরেই এই পদত্যাগ বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তরাখম্ডের পরিস্থিতি নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনা সেরেছেন জেপি নাড্ডা।
| web |
9d2a092f8325dc169de1bcea5f54c4d960d21806 | ইংল্যান্ডের ওল্ড ট্রাফোর্ডে তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ভারতের উদীয়মান ক্রিকেট লোকেশ রাহুল। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ৮ উইকেটের হারিয়েছে সফরকারী ভারত।
এই বছরের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে দারুণ পারফরমেন্স করে যাচ্ছেন এই তরুণ ক্রিকেটার। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে মাত্র ১৩ ম্যাচে করেছেন ৬৫৯ রান সাথে রয়েছে আইপিএলের ইতিহাসের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরী। এই রেকর্ডটি করতে তিনি বল খেলেছেন মাত্র ১৪ টি। অন্যদিকে, আয়ারল্যান্ড সিরিজে তিনি জায়গা পেলেও প্রথম টি-টুয়েন্টিতে একাদশে ছিলেননা তবে দ্বিতীয় ইনিংসে সুযোগ পেয়েই সেই সুযোগ টি দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। এই ম্যাচে তিনি ৩৬ বল খেলে করেছিলেন ৭০ রান।
এই ধারাবাহিতা বজায় রাখতেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ তে দলে রাখা হয়েছিল তাকে, এখানেও এসে তার বাজিমাত ৫৪ বল খেলে ১০১ রান করেছেন তিনি, তার এই দর্শনীয় ইনিংসে ছিল দশটি চার ও পাঁচটি ছয়ের মার। তার এই ইনিংসে ভর করেই ১০ বল হাতে রেখে খুব সহজেই ১৬০ রানের টার্গেটে পৌছে যায় ভারত।
রাহুল ইনিংসের শুরু থেকেই চড়া হয়ে ব্যাট করেন, তৃতীয় বল মোকাবিলার সময় তিনি প্রথম ছক্কা হাঁকান ক্রিস জর্ডান কে, তার সঙ্গী শিখর ধবন খুব দ্রুত ফিরে গেলেও রোহিত শর্মাকে নিয়ে তিনি এক অবিচ্ছিন্ন ১২৩ রানের জুটি গড়েন। আদিল রশিদের বলে রহিত শর্মা ৩২ রান করে আউট হয়ে গেলেও ৫৩ বল খেলে সেঞ্চুরির দেখা পান রাহুল। তার সেঞ্চুরি উদযাপন ছিলোও দেখার মত, ব্যাট উঁচিয়ে আকশের দিকে লাফ দিয়েছিলেন এই ওপেনার। তার এই ইনিংস দেখে মুগ্ধ হয়েছেন তার সতীর্থ ধোনী, ড্রেসিংরুমের দিকে ক্যামেরা ধরতেই বুঝা গিয়েছিল ধোনি কতটা খুশি হয়েছিলেন। তার এই প্রতিক্রিয়া ছিল অমূল্য।
এইদিকে কুলদীপ যাদবও বোলিংয়ে অসাধারণ পারফরমেন্স করেছেন, তার জন্যই ইংল্যান্ডের ইনিংস বেশি বড় হয়নি, তিনি ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
কুলদীপ যাদব ও লোকেশ রাহুল কাছেই হেরে গেছে পুরো ইংল্যান্ড টিম। যার ফলে ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে ১-০ তে সিরিজে এগিয়ে গেলো ভারত। আর এই ম্যাচে লোকেশ রাহুল সেঞ্চুরি করলেও ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরষ্কার জিতে নিয়েছেন তরুণ স্পিনার কুলদীপ যাদব।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু হবে আগামী ৬ই জুলাই।
| web |
aee31f281350f74d2f510e59a737d5a2e9a88ab8 | ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জ্বালানী তেলবাহী লরির ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে সোহেল মিয়া (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পৌর শহরের মেড্ডা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকার মৃত এলাহী খন্দকারের ছেলে। তিনি ওই লরির চালকের সহযোগী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতেন।
টিব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ১নং ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আতিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে এস.রহমান ফিলিং স্টেশনের একটি জ্বালানী তেলবাহী লরির ট্যাঙ্কের ভেতরে ঢুকে পরিষ্কার করার সময় বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে সোহেলের মৃত্যু হয়ত।
জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মির্জা সাঈদ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ট্যাঙ্কের ভেতরে থাকা জ্বালানী তেলের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে মরদেহের ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর সঠিক করাণ জানা যাবে।
| web |
75fb2dc7cf138bc74d829a30cd3c97539cc92839 | জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘটনা কমেছে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে। সরকার বলছে, ২০২১ সালে ২২৯ টি সন্ত্রাসী ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৪২ জওয়ান নিহত এবং ১১৭ জন আহত হয়েছেন।
লোকসভায় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের দেওয়া তথ্যে প্রকাশ, ২০২০ সালে, জম্মু-কাশ্মীরে ২৪৪টি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে যাতে ৬২ জন নিরাপত্তা কর্মী নিহত এবং ১০৬ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭ জন বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে এবং ১১২ জন আহত হয়েছে। ২০২১ সালে জম্মু-কাশ্মীরে ২২৯টি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে যাতে ৪২ জন নিরাপত্তা কর্মী নিহত এবং ১১৭ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে ৪১ জন বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে এবং ৭৫ জন আহত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ৪১৭ টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল এবং এই সংখ্যা ২০২১ সালে ২২৯-এ নেমে এসেছে। ২০১৯ সালে ২৫৫ টি এবং ২০২০ সালে ২৪৪ টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল।
| web |
97289eb552d42d20180c0e0f3bf8d8da7b4bae34 | সেলিনা জেটলি।
প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া সেলিনা জেটলি এক সময় পর পর হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। বলিউডে নিজস্ব জায়গা তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি। তার পর বিয়ে করেন। মা হওয়ার পর বেশ কিছু দিন বড় পর্দা থেকে দূরে ছিলেন নায়িকা। এ বার রামকমল মুখোপাধ্যায়ের হিন্দি ছবি 'আ ট্রিবিউড টু ঋতুপর্ণ ঘোষঃ সিজন'স গ্রিটিংস'-এ অভিনয়ের মাধ্যমে কামব্যাক করছেন তিনি।
মা-মেয়ের সম্পর্কের ওপর চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন রামকমল। ছবিতে মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন সেলিনা। তাঁর মায়ের চরিত্রে দেখা যাবে লিলেট দুবেকে।
আরও পড়ুন, ব্যাঙ্ককে বহুতল থেকে ঝাঁপ দিলেন জিত্!
| web |
6ef2766b38278a6e797055d9dfe710ced529f3b8 | আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন : ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ঢাকার রমনার কালী মন্দির ধ্বংস করেছিল পাকিস্তান সেনা বাহিনী। সেই মন্দির সংস্কার করা হয়েছে। শুক্রবার সেই সংস্কার হওয়া রমনা কালী মন্দিরের উদ্বোধন করলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে তিনদিনের ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এইদিন তাঁর সফরের শেষ দিনে সেই কালী মন্দিরের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। এদিন সস্ত্রীক ওই মন্দিরে যান রাষ্ট্রপতি। মন্দিরে পুজাও দেন তিনি।
ওই কালী মন্দিরটিকে ভারত ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন হিসেবেই মনে করা হত।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এম আব্দুল হামিদের আমন্ত্রণে প্রথমবারের জন্য বাংলাদেশে গিয়েছিছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। মুক্তিযুদ্ধে জয় ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশ সফরে গিয়ে সেই দেশের রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। সফরের প্রথম দিন, বুধবার, তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। সেদিনই দুপুরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে যান। গতকাল ঢাকার শেরে নগর গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে যোগ দেন রামনাথ কোবিন্দ। এদিনই তিনি ফিরে আসেন দিল্লিতে।
| web |
76d5ccf40cd216cb85d561eb3c944d536bdb48ba | হিন্দু ধর্মে, উপবাস এবং পূজোর ক্ষেত্রে চতুর্থীর তারিখের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রতি মাসে দুবার আসে। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথিকে সংকষ্টী চতুর্থী বা গণেশ চতুর্থী বলা হয়। অন্যদিকে, শুক্লপক্ষে যে চতুর্থী তিথি পড়ে তাকে বলা হয় বিনায়ক চতুর্থী। জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথি পড়বে ২৯ মে, বৃহস্পতিবার।
অন্যদিকে, সংকষ্টী চতুর্থীর দিন, চাঁদ ধনু রাশির উপর দিয়ে অতিক্রম করবে এবং সূর্য বৃষ রাশিতে বসবে। এই দিনে গণেশের পূজো করলে ভক্তদের সমস্ত পাপ কেটে যায় এবং তাদের সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়।
সংকষ্টী চতুর্থী কী :
সংকষ্টী চতুর্থী মানে সংকটকে পরাজিত করে এমন চতুর্থী। সংকষ্টী সংস্কৃত ভাষা থেকে উদ্ভূত একটি শব্দ, যার অর্থ 'কঠিন সময় থেকে পরিত্রাণ পাওয়া। এটি একটি ধর্মীয় বিশ্বাস যে ভগবান গণেশের পূজা করলে সমস্ত ঝামেলা দূর হয়।
সংকষ্টী চতুর্থী তিথি ও নক্ষত্রঃ
| web |
0fa0e3914c29d1e2c55360185ac2ec346c6a8408 | হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ সারাদেশের ৫৪ নেতার ব্যাংক হিসাব জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
মোদিবিরোধী আন্দোলনের পর তাদের ব্যাংকে কী পরিমাণ অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে তা দেখতে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সরকারের একটি সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের হিসাব তলব করা হয়।
হেফাজতের আমির ছাড়াও অন্য নেতারা হলেন- হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মুহাম্মদ মাহফুজুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাইল করীম, মহাসচিব সৈয়দ ফয়জুল করীম, আল-হাইয়্যাতুল উলয়াও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ প্রমুখ।
এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের ৫৪ নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
| web |
9dbfa9471e6a55a0c125bc543a9d0135 | রোল এবং মোবাইল নম্বর www.exametc.com এই ওয়েবসাইটে আগে থেকে পাঠালে ফলপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই রেজাল্ট জানা যাবে।
মাধ্যমিকের মেধা তালিকা প্রকাশ পাবে ??
How can i check MP result online?
How to check MP result through SMS ?
Will this year MP Merit list published ?
When i will get Madhyamik mark sheet and certificate ?
Madhyamik result 2020 out website ?
Today Madhyamik result 2020 out .Candidate can check out this year WBBSE MP Result by visiting @wbresult.nic.in .In this article we discuss details updates about how to mark sheet and certificate and how to check online MP result 2020.
করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে অনেকদিন পর আজকে প্রকাশিত হচ্ছে ২০২০ সালের মাধ্যমিকের ফলাফল । আজ যে সমস্ত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনারা ফলাফল জানতে পারবেন তা নিচের দেওয়া হয়েছে । পরীক্ষার্থীরা এখনই রেজাল্ট চেক করতে পারবেন না আজকে সাড়ে দশটার পর থেকে অনলাইনের মাধ্যমে তারা রেজাল্ট চেক করতে পারবে ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) আজ বেলা দশটার থেকে মাধ্যমিকের রেজাল্ট ২০২০ প্রকাশ করবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ওয়েবসাইটে সাড়ে দশটা থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের রেজাল্ট চেক করতে পারবে । কিন্তু কবে মিলবে সার্টিফিকেট এবং রেজাল্টের সীট ? সেই নিয়ে আমরা আজকে আপডেট তথ্য এই আর্টিকেলে প্রকাশ করছি ।
প্রথমে বলে রাখি এই বছরের মাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষ হয় ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত এর ফল প্রকাশ না হওয়ার পেছনে করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করা হচ্ছে এবার এই পরিস্থিতি কাটিয়ে আজকে অর্থাৎ 15 জুলাই প্রকাশিত হতে চলেছে এই বছর মাধ্যমিকের ফলাফল । জানা গিয়েছে যে এবছর মাধ্যমিকের ফলাফল আজকে প্রকাশিত হলেও সঙ্গে সঙ্গে মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট পরীক্ষার্থীরা হাতে পাবেন না ।
তারা এগুলি হাতে পাবেন তাদের অভিভাবকদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্কুল থেকে । স্কুলের মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট বিতরণ এর কাজ শুরু হয়ে যাবে আজকের রেজাল্ট প্রকাশিত হবার পরে । জানা গিয়েছে যে,এক সপ্তাহ পরে স্কুলে এই মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট বিতরণ এর কাজ শুরু হবে।
ঐ নির্দিষ্ট দিনে অভিভাবকরা নিজের ছেলেমেয়েদের রেজিস্ট্রেশন এবং এডমিট কার্ড নিয়ে এসে সার্টিফিকেট ও মার্কশিট স্কুল থেকে নিয়ে যেতে পারবেন । কোনমতেই ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুলে আসা যাবেনা । নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট আপনাদের সামনে এনেছি আমরা সেগুলো নিচে ভিজিট করে আপনারা আজকের যে মাধ্যমিকের ফলাফল চেক করে নিতে পারবেন ।
এসএমএসের মাধ্যমে মাধ্যমিকের ফলাফল চেক করা যাবে তার জন্য নির্দিষ্ট এসএমএস টাইপ করতে হবে যা নিচে দেওয়া আছে ।
বেশ কিছু ওয়েবসাইট দেওয়া আছে নীচে সেখানে যদি আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করে রাখেন তাহলে,যখনই রেজাল্ট পাবলিশ হবে তখনই সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্ট আপনার মোবাইলে চলে যাবে ফ্রী অফ কস্ট এ ।তার জন্য নিচের লিংক দেওয়া আছে ।
একটা প্রশ্ন চিহ্ন মনে তারা ভাবছে যে এবার একই মাধ্যমিকের মেধা তালিকা প্রকাশ পাবে ?? উত্তর মিলেছে হ্যাঁ ,এবার মেধাতালিকা মাধ্যমিক এর প্রকাশ পাবে কারণ এবছর মাধ্যমিকের সমস্ত পরীক্ষা হয়েছে ,তাই মেধাতালিকা না প্রকাশ পাওয়া নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই । আমরা জানতে পেরেছি এবং বেশ কিছু খবর বেরিয়েছে সেখানে দাবি করা হচ্ছে যে এবছর মাধ্যমিকের মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে সেই মেধাতালিকা আমরা আপনাদের সামনে আনবো তাই অবশ্যই আমাদের হোম পেজ ভিজিট করবেন যখন হিসেবে আমরা পাব সেটা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব ।
| web |
22a3c2867958fc80230db16d48b7d5661bb30b4a | ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত রাজা হোসেন (২৫) নামের এক ইন্টার্ন নার্সকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সাদ্দাম হোসেন নামের এক দালালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ইন্টার্ন নার্সরা ছয় দফা দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের মহিলা ওয়ার্ডে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যারাত থেকে কর্মবিরতি করেন ইন্টার্ন নার্সরা। ওই দিন সন্ধ্যায় ঘটনার বিচার চেয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তারা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পাবনার ইছামতি নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা ইন সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজা হোসেন দুপুরের দিকে মেডিসিন ওয়ার্ডের মহিলা ইউনিটে ডিউটিরত ছিলেন। এ সময় হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের সিনিয়ির স্টাফ নার্স আশরাফুন্নেছাও ছিলেন। ভুক্তভোগী ওই নার্স একজন ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর ওষুধ দিচ্ছিলেন। সেই রোগীর সঙ্গে থাকা একজন আত্মীয় বলছে দেখেন ৮০ টাকার ইসিজি ৬০০ টাকা দিয়ে করিয়েছে। এই নিয়ে রোগীর আত্মীয় ও সাদ্দাম হোসেন নামের একজন দালালের তর্কাতর্কি শুরু হয়। এ সময় নার্স রাজা হোসেন ওই দালালকে উত্তেজিত না হয়ে রোগীর সঙ্গে হাসপাতালের বাহিরে গিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেন। দালাল সাদ্দাম হোসেন নার্সের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নার্সদের অফিস রুমে নিয়ে গিয়ে গলা থেকে আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে তাকে বেধরক মারধর শুরু করেন। তার সঙ্গে থাকা আর একজন নার্সকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় অন্য নার্সরা বাধা দিতে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। মারধর করার সময় বলে হাসপাতাল আমাদের কথায় চলে।
| web |
d71359114daf3c1f33e8d5b19662d97bb60c3c989d9c98add9f05714cfb0dedf | ভারতের শাসন-ব্যবস্থা
3. state and explain the important characteristics of the Federation in India. ( H. S. (H) Comp. 1963; H. S. (H) 1961 )
ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ ও ব্যাখ্যা কর। 4. Write an essay on Federalism in India. ভারতে যুক্তরাষ্ট্র গঠন লইয়া একটি ছোট প্রবন্ধ রচনা কর।
5. Discuss the scheme of distribution of powers between the Union and the States under the Constitution of India. ( I S. (II) Comp. 1961 62 )
ভারতীয় সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন পদ্ধতি লইয়। আলোচনা কর।
সপ্তম অধ্যায়
ইউনিয়ন সরকার
(Union Government )
শাসন বিভাগ (The Executive ) : বলা হইয়াছে, স্বাধীন ভারতের সংবিধান কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিতে পূর্ণ দায়িত্বশীল শাসন-ব্যবস্থার প্রবর্তন করিয়াছে। * এই দায়িত্বশীল শাসন-ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় শাসন বিভাগ রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রিপরিষদ লইয়া গঠিত; এবং কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা বিভাগ রাষ্ট্রপতি এবং লোকসভা ও রাজ্যসভা - এই দুইটি পরিষদ লইয়া গঠিত। শাসন বিভাগের আলোচনা রাষ্ট্রপতি হইতে সুরু করিতে হয় ।
রাষ্ট্রপতি ( The President ): রাষ্ট্রপতিকে ভারতের নিয়মতান্ত্রিক শাসনকর্তা বলিয়া অভিহিত করা চলে। ডাঃ আম্বেদকারের ভাষায়, "আমাদের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের পতি, কিন্তু শাসন বিভাগের কর্তা নহেন। রাষ্ট্রপতি-পদের প্রকৃতি তিনি জাতির প্রতীক, কিন্তু জাতিকে শাসন করেন না।" শাসন বিভাগের কর্ত। হইলেন প্রধান মন্ত্রী। ইংলণ্ডের রাজা বা রাণীর পদের সহিত আমাদের রাষ্ট্রপতির পদের কতকটা তুলনা করা চলে। আইনত উভয়েই প্রধান শাসক হইলেও, কার্যত দায়িত্বশীল শাসন-ব্যবস্থার বিধান অনুসারে উভয়েই মন্ত্রি-পরিষদের গরামর্শ অনুসারে শাসনকার্য পরিচালনা করিয়া থাকেন। উভয়েরই পদের মর্যাদা আছে, কিন্তু কাহারও কর্তৃত্ব নাই; সুতরাং দায়িত্বও নাই ।
নির্বাচন ( Election ) : রাষ্ট্রপতি প্রত্যক্ষভাবে জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিত হন না। তিনি এক বিশেষ নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বা রাষ্ট্রপতি পরোক্ষভাবে চিত হন। এই নির্বাচকমণ্ডলী (ক) কেন্দ্রীয় আইনসভা বা পার্লামেন্টের উভয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্যবৃন্দ, এবং
(1) রাজ্যের বিধানসভাসমূহের নির্বাচিত সদস্তবৃন্দ লইয়া গঠিত হয়।
º পৃষ্ঠা দেখ।
| pdf |
5f67c8792a8a3cd233c74227d939551959416baf | ফেনীর ফতেহপুরে উড়াল সেতুর নির্মাণকাজের জন্য চার লেনের মধ্যে দুই লেন বন্ধ, বিকল্প সড়ক দেবে যাওয়া, প্রবল বৃষ্টিপাতে ছোট-বড় খানাখন্দে স্থানে স্থানে জলাবদ্ধতা, মহাসড়কে বাস থামানো, মহাসড়কের ওপর বাজার - এমন সব কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেমে এসেছে স্মরণকালের স্থবিরতা। টানা তিন দিন ধরে ভয়াবহ যানজটে অচল এই মহাসড়কে ট্রাক ও লরি ভাড়া বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম কিংবা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌঁছতে লেগে যাচ্ছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই মহাসড়ক ব্যবহার করে সরবরাহ করা হয় পণ্যসামগ্রী। চলাচলকারী যানবাহনের ৬০ শতাংশই পণ্যবাহী। আর কয়েক দিন বাদেই পবিত্র রমজান। দুঃসহ এই যানজটের কারণে রমজান সামনে রেখে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহে চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে মহাসড়কের দুঃসহ যানজটের কারণে ট্রেন ও বিমানের টিকিটের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, এই মহাসড়কে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই লেগে থাকছে দুঃসহ যানজট। গতকাল মহাসড়কের ১৩৯ কিলোমিটারে যানজট ছিল। এর মধ্যে ফেনী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকা পড়ে থাকে। এগোতে পারেনি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্সও। মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার, শৌচাগার না থাকায় যাত্রীসাধারণ ও চালকদের গাড়িতে বসে অসহনীয় দুর্ভোগে কাটাতে হচ্ছে রাত-দিন।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে চার লেন প্রকল্পের কাজ শেষে মহাসড়ক প্রশস্ত হওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াতে গড়ে সময় লাগত পাঁচ ঘণ্টা। তবে গত দুই বছরেই মহাসড়কটি আগের চেয়েও খারাপ অবস্থায় পৌঁছে যায়। তিন হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সওজ অধিদপ্তরের অধীনে চার লেন প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ শেষ হলেও চট্টগ্রামে, কুমিল্লার পদুয়ার বাজার ও ফেনীর ফতেহপুরে লেভেলক্রসিংয়ের ওপর উড়াল সেতু নির্মাণকাজ বাকি থেকে যায়। এরই মধ্যে পদুয়ার বাজার উড়াল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এই সেতুর নির্মাণকাজের সময়ও যানজট লেগে থাকত। তবে ফতেহপুরে উড়াল সেতুর চূড়ান্ত পর্বের কাজ শুরু হলে দুই সপ্তাহ ধরে চার লেনের মধ্যে দুই লেন বন্ধ করে যান চলাচলের ব্যবস্থা রাখায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, রোজা সামনে রেখে পণ্য পরিবহন বেড়ে যাওয়ায় এ মহাসড়কে ট্রাক, লরিসহ বিভিন্ন ভারী যানবাহন আগের চেয়ে বেশি চলাচল করছে। সওজ অধিদপ্তরের হিসাবে, এ মহাসড়কে দিনে গড়ে ২৫ হাজার যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল করে। বর্তমানে বেড়ে গেছে আরো ২০ শতাংশ বেশি যান চলাচল।
মহাসড়কে সেতুগুলোর টোল প্লাজার হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে ৩০ হাজারেরও বেশি। ফেনীর ফতেহপুর লেভেলক্রসিংয়ে উড়াল সেতুর উন্নয়নকাজ ও খানাখন্দে যানবাহনের চট্টগ্রামমুখী বিকল্প সড়কে এবং ঢাকামুখী যানবাহনগুলোকে উড়াল সেতুর সার্ভিস সড়কে চলাচলে বাধ্য করছে মহাসড়ক পুলিশ। সেতু লাগোয়া ৩০ ফুটেরও বেশি চওড়া সার্ভিস সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। তবে সেখানে দ্বিমুখী যান চলাচলের সুযোগ রয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত ছিল একমুখী চলাচল। অন্যদিকে যানবাহনগুলোকে দুই লেনের সার্ভিস সড়কে ১০০ মিটার খানাখন্দের কারণে পাড়ি দিতে হচ্ছে ছয় কিলোমিটারের বিকল্প সড়ক। কিন্তু বিকল্প সড়কও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও দেবে গেছে। এতে করে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলতে না পারায় যানজটের মাত্রা আরো বাড়ছে। আর দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রীসাধারণ ও চালকদের।
ফেনীর ফতেহপুরে আটকে পড়া হানিফ পরিবহনের যাত্রী নজির হোসেন গতকাল শনিবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে শিমরাইল, সোনারগাঁ, মদনপুর, চৌদ্দগ্রাম, পদুয়ার বাজারে দীর্ঘ সময় যানজটে থেমে থাকতে থাকতে গতকাল বিকেলে ফতেহপুর পৌঁছে সেখানে আবার আটকা পড়েছেন। এই দীর্ঘ সময় আটকা পড়ার কারণে যাত্রীদের অনেকে বমি করছে। খাবারের অভাবে নারী ও শিশুদের অবস্থা আরো কাহিল। তিনি বলেন, বাসই এই মহাসড়কে ঘরবাড়ি হয়ে গেছে।
ঢাকার তেজগাঁও, দয়াগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ট্রাকচালকরা যানজট না কমা পর্যন্ত ট্রিপ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। আগাম বুকিং নিতে চাইছেন না বলেও জানা গেছে। রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে এ মহাসড়ক হয়ে বিভিন্ন জেলায় চলাচলকারী বাস-মিনিবাস চলাচল প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে বলে পরিবহনসংশ্লিষ্টরা জানান।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা, শ্যামলী পরিবহনের মালিক রমেশ চন্দ্র ঘোষ কালের কণ্ঠকে বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তা এমনিতেই পিচ্ছিল, খানাখন্দে ভরা, তার ওপর এই যানজটের কারণে যাত্রীরা আতঙ্কে আছে। বাধ্য হয়েই তারা বাসে চাপছে। না হয় কেউ যেত না।
বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ওজন নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পর থেকে গত নভেম্বর থেকে ট্রাকভাড়া বেড়েছে। রোজা সামনে রেখে বর্তমানে পণ্য পরিবহন বাড়লেও রাস্তায় যেখানে আসা-যাওয়ায় আগে দুই দিন লাগত, সেখানে এখন লাগছে পাঁচ দিন। ফতেহপুরে উড়াল সেতুর কাজের ফলে নতুন করে যানজটের ভয়াবহতা দেখতে হচ্ছে। তৈরি পোশাক পরিবহনের জন্য কাভার্ড ভ্যান আছে ২২ হাজার। সেগুলো এ মহাসড়ক দিয়েই চলে। সারা দেশে ট্রাক আছে তিন লাখ ১০ হাজার। তার সিংহভাগই এ মহাসড়ক দিয়ে পণ্য পরিবহন করে। এ মহাসড়ক ব্যবহার করছে ২১টি জেলা। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে দেরির সঙ্গে বর্তমানে মহাসড়কে এই যানজটের কারণে বাধ্য হয়ে ট্রাকভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আগের দিন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় মালপত্র পরিবহনের জন্য ট্রাক ভাড়া ছিল যেখানে ১৫ হাজার টাকা, তা গতকাল ছিল ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহাসড়কের যানজটের বিরূপ প্রভাব পড়েছে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন ব্যয়ে। যানজট যত তীব্র হচ্ছে ট্রাকভাড়াও বাড়ছে।
সূত্র জানায়, দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯০ শতাংশ সমুদ্রপথ দিয়ে হয়। কিন্তু যানজটের কারণে যথাযথ সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পৌঁছানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণও সম্ভব হচ্ছে না সময়মতো।
ফেনীর ফতেহপুর লেভেলক্রসিংয়ের ওপর উড়াল সেতুর নির্মাণকাজ আগামী দুই সপ্তাহের আগে শেষ হবে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ১৫ মে থেকে বন্ধ দুই লেন খুলে দেওয়া হবে। তখন যানজট কমবে। কিন্তু গত শুক্রবার বিকেল থেকে যানজট থেকে রেহাই পাওয়ার উদ্যোগ হিসেবে মহাসড়কে পুলিশ চট্টগ্রামমুখো গাড়িগুলো কুমিল্লার লাকসাম ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী হয়ে ফেনীর মহিপাল দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করেছে। ঘুরতি পথেও সুফল মিলছে বলে চালক ও যাত্রীরা জানিয়েছে। পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান বিকল্প পথে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ বলে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। শুধু বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে দেওয়া হচ্ছে। বিকল্প সড়কটি দুই লেনের। এতে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার বেড়ে গেছে।
এদিকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত ফেনীর ট্রাংক রোড যানবাহনের ভার নিতে অক্ষম হওয়ায় সড়কটি দেবে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নিলেও সড়কের ১৩ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা যাচ্ছে না বৃষ্টির কারণে।
এদিকে যাত্রীসাধারণের এই সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী চারটি আন্ত নগর ট্রেনে বাড়তি বগি সংযোজন করা হয়েছে। কিন্তু এর পরও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্তী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা মহাসড়কের এ পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে চলাচলকারী সোনার বাংলা, তূর্ণা নিশীথাসহ চারটি আন্ত নগর ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করেছি। স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রিও সহজ করা হয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রী নামানো ও তোলা হচ্ছে। তার পরও যাত্রীদের এই বিশাল চাপ সামাল দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
জরুরি খাদ্য ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে যাত্রীদের রাজধানীর একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত নাসরিন আক্তার গতকাল ফেনীর ফতেহপুরে যানজটে আটকা পড়ে ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খাবার খেতে বসছিলেন তিনি পাশের একটি রেস্তোরাঁয়। স্বামী ও দুই ছেলে-মেয়েসহ ঢাকা থেকে তিনি সৌদিয়া পরিবহনের বাসে রওনা দিয়েছিলেন গতকাল সকাল ৭টায়। বাসটির চালক যানজট এড়াতে কুমিল্লা বিশ্বরোড, লাকসাম, নোয়াখালীর চৌমুহনী হয়ে মহিপাল পৌঁছে সন্ধ্যা ৬টায়। নাসরিন বলেন, আম্মা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাই বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি। গাড়িতে টানা বসে থেকে পা ফুলে গেছে, হাত-পা একটানা ব্যথা করছে। বাচ্চারাও অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কখন চট্টগ্রাম পৌঁঁছাতে পারব আল্লাহই জানেন।
আমাদের ফেনী প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান দারা জানান, গতকাল ফেনী থেকে মিরসরাইয়ের দিকে মহাসড়কে ৮০ কিলোমিটার যানজট ছিল। শুক্রবার গভীর রাত থেকে আটকে পড়া যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে নামেন পুলিশ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার প্রায় ভোররাত পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাত্রী ও চালকদের জন্য শুকনো খাবার ও পানি বিতরণ করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার কালের কণ্ঠকে বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে পুলিশ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। তিনি জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেনী পুলিশের একাধিক দল রাতভর কাজ করছে। তবু হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ফেনীর পূবালী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়কারী সমরজিৎ দাশ টুটুল জরুরি প্রয়োজনে ঢাকার উদ্দেশে ফেনী থেকে স্টার লাইনের বাসে চড়েন শনিবার সকাল ৯টায়। ফেনী সদরের ফতেহপুর ওভারপাস পার হতে তাঁকে বহনকারী বাসের সময় লাগে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
প্রয়োজনে ঢাকায় গিয়েছিলেন দুই দিন আগে। প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর শনিবার সন্ধ্যায় ফেনীতে পৌঁছান। তিনি বলেন, কুমিল্লার শুয়াগাজী থেকে জ্যামের শুরু। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে গরমে যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
আমাদের সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, গতকাল সকাল ৮টায় সীতাকুণ্ড পৌর সদরের উত্তর বাইপাস এলাকার মহাসড়কের পাশ থেকে হেঁটে চলছিল অসংখ্য নর-নারী। তাদের মধ্যে একটি শিশুকন্যা মায়ের হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে ডুকরে কাঁদছিল। তাঁরা হলেন কুমিল্লার চান্দিনার সরকারি চাকরিজীবী আলাউদ্দিনের স্ত্রী শারমিন ও কন্যা জুলি। আলাউদ্দিন চট্টগ্রামে চাকরি করেন। তাঁদের বাসাও চট্টগ্রামে। বুধবার গ্রামের বাড়ি চান্দিনায় গিয়েছিলেন তাঁরা। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের উদ্দেশে বাসে ওঠেন। কিন্তু পথিমধ্যে ফেনীতে যানজটে পড়ে ছয় ঘণ্টা আটকে ছিলেন ফেনীর কাছাকাছি। এর পরও পাঁচ মিনিট চললে এক-দেড় ঘণ্টা জ্যামে থাকতে হয়েছে তাঁদের। মাঝখানে তাঁদের বাসটিও নষ্ট হয়ে যায়। শনিবার সকালে সীতাকুণ্ডের নুনাছড়ায় তাঁরা পৌঁছান। রাতে টয়লেটেও যেতে পারেননি। রাতের খাবারও খেতে পারেননি। পথে এক ব্যক্তি কিছু বিস্কুট দিতে চেয়েছিল। অপরিচিত হওয়ায় সেই বিস্কুটও নেননি। সকালে মেয়েটি ছিল ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর।
যানজটে পড়ে অনেকের বিয়েশাদির মতো অনুষ্ঠানও ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সীতাকুণ্ড পৌর সদরের প্রেমতলার জুয়েলারি ব্যবসায়ী রবি বণিক বলেন, তাঁর প্রতিবেশী একটি মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার রাতে। দুই পক্ষের অন্তত সাড়ে চার শ অতিথি আমন্ত্রিত ছিল সেখানে। যানজটের কারণে আমন্ত্রিত অতিথিদের বেশির ভাগই আসতে পারেননি। খোদ বর ও কনেকে আনতে হয়েছে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে। বরের মা-বাবা সীতাকুণ্ডের বারআউলিয়া থেকে পৌর সদর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে অনুষ্ঠানে পৌঁছান। আর সাড়ে ৪০০ অতিথির মধ্যে মাত্র ৫০ জন উপস্থিত ছিলেন। এতে সব খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। একইভাবে বর আসতে না পারায় দক্ষিণ মহাদেবপুর এলাকার একটি বিয়ে ভেস্তে গেছে এদিন।
| web |
224140ad6d5ddfdce5041888110b8bab255ceedb | অর্ণব আইচঃ বৃহস্পতিবার রাতে নারকেলডাঙার (Narkeldanga) এক ফ্ল্যাট থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল বছর ১৮-এর এক কিশোরী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু কীভাবে আহত হল ওই কিশোরী তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিল পুলিশ। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, প্রচণ্ড মারধর করা হয় কিশোরীকে। জ্ঞান ফিরতেই প্রকাশ্যে এল এক ব্যক্তির কথা। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিই ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ওই কিশোরীর।
কিন্তু কেন আক্রমণ? কে ওই ব্যক্তি? কীভাবে পরিচয়? কিশোরীর বয়ান অনুযায়ী, কিছুদিন আগেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় তার। দু'জনই নেশায় আসক্ত ছিল। ওই ফ্ল্যাটে নিয়মিত নেশা করত তারা। সম্প্রতি টাকা পয়সা নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ বাঁধে। সেই অশান্তির জেরেই ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে অভিযুক্ত। আক্রান্তের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। তরুণীর ভাই জানিয়েছে, বহু ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় ছিল ওই কিশোরীর। ঘটনার দিন বিকেলেও অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাকে। অনুমান, কোনও কারণে বচসা হওয়ায় ওই ব্যক্তিই খুনের চেষ্টা করে কিশোরীকে। তবে ওই ব্যক্তিই অভিযুক্ত কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নারকেলডাঙার বাসিন্দা ওই কিশোরী। আবাসনের দোতালায় একটি বাথরুম থেকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এরপরই তাঁকে ভরতি করা হয় হাসপাতালে। জ্ঞান ফিরতেই অভিযুক্তের বেশ কিছু তথ্য পুলিশকে জানায় সে। নিরাপত্তার খাতিরে যা গোপন রেখেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কিশোরীর সঙ্গে ব্যক্তির কী সম্পর্ক? আদৌ টাকা-পয়সাজনিত অশান্তির কারণেই এই খুনের চেষ্টা কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে খোঁজ চালানো হচ্ছে অভিযুক্ত ব্যক্তির।
| web |
867d8052482a388090ab1852004f9fe61cd2d6ca | পুরনো লাল ইটের বাড়ি । খুব সস্তায় পেয়ে গেছেন আহাদ সাহেব । পাহাড়তলীতে ভাড়া বাসায় এতদিন ছিলেন। জাকজমক সেখানে ভালই ছিল। তবুও তাে ভাড়া বাড়ি।
এই বাড়িটড়াই সবচেয়ে ভাল । মালিক কাদের চৌধুরী কেন যে হুট করে বিক্রি করে দিলেন বুঝতে পারলেন না আহাদ সাহেব । তেমন কিছু জিজ্ঞেসও করেননি এ ব্যাপারে।
'একটু না, বেশ নির্জন। আমার তো রাত বিরেতে গা ছমছম করবে একা বেরুতে।' মাজেদা বেগম ক্ষোভ চেপে রাখার চেষ্টা করলেন না।
বিকেল নাগাদ সব জিনিসপত্র ঘরে তোলা হয়ে গেল। মিতার উত্সাহের অন্ত নেই। এটা সেটা ধরে টানাটানি করছে । আহাদ সাহেব খুশি হলেন । একে নিয়েই চিন্তা ছিল। ভীষণ জেদী মেয়ে। যদি অপছন্দ করে বসত তা হলে মুশকিল হত খুব।
ঠোট ওল্টাল মিতা।
"ঠিক আছে। তোমার মাকে বলে দেখো ।' কোমরে আঁচল, পেঁচিয়ে বিছানাপত্র ঠিকঠাক করছিলেন মাজেদা বেগম। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। এখন তার পরিশ্রম করার সময় নয়। হাবুর মাকে চিৎকার করে কিছু একটা বলে এ ঘরে এসে ঢুকলেন।
স্বামীর কথা আমলেই আনলেন না মাজেদা বেগম । ওপরতলাটা পছন্দ হয়নি তার। অনেক উঁচুতে সিলিং আর অদ্ভুত তিনকােনা জানালা । দেয়ালের গায়ে বড় বড় কাঠের আলমারি । ওখানে থাকতে রাতে ভয় লাগবে তার।
'জানাে, আবার, দোতলায় বাদুড় আছে।,
এই এক দূর্বলতা তার। মেয়েটার মুখের দিকে চাইলে কিছুতেই তাকে না বলতে পারেন না। বারো বৎসরের বিবাহিত জীবনে কোনও সন্তান হয়নি তাদের। চার বৎসরের মাথায় এতিমখানা থেকে চেয়ে নিয়েছিলেন মিতাকে।
চার বৎসর বয়স তখন মিতার । আহাদ সাহেব বা মাজেদা বেগম কোনওদিনই বুঝতে দেননি কাউকে মিতা তাদের পালিতা মেয়ে। যদিও মিতা জানে।
মা বাবার অভাব কখনও বোধ করেনি সে। সুযোগ হয়নি। আদরে স্নেহে তাকে ঘিরে রেখেছেন আহাদ দম্পতি।
সন্ধ্যা নামছে পাহাড়ে । দূরের সমুদ্রে অবিশ্রাম গর্জনে ভেঙে পড়ছে ঢেউ। সেদিকে তাকিয়ে রইলেন আহাদ সাহেব । সাগর পারের নতুন জীবন কেমন হবে কে জানে।
'দোতলায়। দেয়াল আলমারির ভেতরে ছিল। ইস, কী সুন্দর না পুতুলটা?' খুশিতে চকচক করছে মিতার চোখ।
মনে হয় কাদের সাহেবের জিনিস। ভুলে ফেলে গেছে। কাল একসময় দিয়ে আসতে হবে ওটা।
"না, দেব না এটা আমি। আমি পেয়েছি এটা । আমার পুতুল।' বুকের সাথে চেপে ধরল মিতা পুতুলটা। যেন কেউ কেড়ে নেবে বলে ভয় পাচ্ছে।
আহাদ সাহেব হাসলেন। স্ত্রীর এই গােছগাছ করার অভ্যাস অনেক পুরানো। একদিনেই সব করে ফেলতে চায়।
'আঃ, মা। কী বলো তুমি!' ঘেন্নায় তিড়িন বিড়িন করতে লাগল মিতা। মাথা ঝাঁকাল কয়েকবার।
'চা খাইবেন, আসেন।' নতুন পাকের ঘর থেকে বেরিয়ে এল হাবুর মা। আদর্শ ফোকলা বুড়ি। কানে প্রায় শোনেই না। তবে শরীর শক্ত সমর্থ। কাজ করতে পারে খুব।
'খাওয়া যাক এক কাপ, কী বলাে।" স্ত্রীর দিকে চাইলেন আহাদ সাহেব।
'হরলিকস বানাও। টায়ার্ড লাগছে। ' চেয়ারে বসলেন মাজেদা বেগম।
'আম্মু, এটার নাম কি জানাে?' আদর করে পুতুলটার মাথায় হাত বুলাচ্ছে মিতা। অদ্ভুত একটা পুতুল। চোখ দুটো একদম সাদা। মাথাটা সামান্য ওপর দিকে তোলা, মনে হয় যেন অন্ধ।
নাম ?' ভ্রু কুচকে গেল মাজেদা বেগমের।
'আমার বন্ধু। আমার যা খুশি রাখব।' ঠোট ফুলাল মিতা। মায়ের খোঁচাটি ভাল লাগেনি ওর।
হেসে ফেলল মিতা। তার নিজের রুমের দিকে চলে গেল সে।
নীচতলায় মোট পাচটা রুম। সামনের দিকে ড্রইং রুম। মাঝখানের ঘরটাকে লিভিংরুম বানানো হয়েছে। উত্তর দিকের ছোট রুমটায় মিতা আর বুয়া থাকবে। পুবের ঘরটা আহাদ সাহেবের স্টাডি রুম। পাঁচ নম্বর কক্ষে রান্নাঘর।
জানালা দিয়ে বাইরে তকােলেন আহাদ সাহেব। কী গর্জন! অথচ কী সুন্দর । অনেকক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। চিটাগাঙের হৈ হুল্লোড়ের সাথে কোনও তুলনাই হয় না।
চাঁদের আলোয় দুই ফিটের মত উঁচু লাল ইটের দেয়ালটা চোখে পড়ল এতক্ষণে। হঠাৎ একটা অশ্বস্তিতে ভরে উঠল মন । এই রুমে মিতাকে থাকতে দেয়া কি ঠিক হলো? জানালা দিয়ে তাকালেই ওর চোখে পড়বে ওটা।
চৌধুরীদের পুরনো পারিবারিক গোরস্তান। এই ঘরে বসে গোরস্তানটাই চোখে পড়বে ওর সবার আগে । ছোট মেয়ে। ভয় পাবে না?
অথচ যে রকম জেদী । একবার যখন নিজে পছন্দ করেছে শত চেষ্টাতেও আর রুম বদলাতে রাজি হবে বলে মনে হয় না । খুঁতখুঁত করছে আহাদ সাহেবের মন।
বেশ কয়েকটা বড় বড় শিশু আর ইউক্যালিপ্টাস গাছ উঠোনে। একটা দুর্লভ গাছ আছে । নাগলিঙ্গম।
মিতাকে শুইয়ে দিতে এসে আহাদ দম্পতি উঠোনটা আরেকবার দেখলেন ভাল করে। মাজেদা বেগমের মনে হলো এই বাড়িতে আরও কিছু লোক থাকলে ভাল হত।
স্ত্রীকে আশ্বস্ত করবার জন্য বললেন বটে কথাটা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই ব্যাপার আরও ভাল করে ভেবে দেখা উচিত ছিল তাঁর। বাড়িটা সত্যি বড্ড নির্জন।
মিতার রুম থেকে নিজেদের ঘরে চলে আসবার সময় পুতুলটাকে দেখতে পেলেন আহাদ সাহেব। টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে জানালার বাইরে অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ একটা অদ্ভুত চিন্তা মাথায় এল আহাদ সাহেবের। মনে হলো সত্যি সত্যি দশ বারো বছরের একটা মেয়ে তাকিয়ে আছে বাইরে । চোখ দুটো দুধ সাদা, অদ্ভুত।
মেয়ের গােঙানির শব্দে ঘুম ভাঙল মাজেদা বেগমের। ঘুম প্রায় আজকাল হয়ই না তার। এখন সাত মাস চলছে। শুয়ে বসে কোনভাবেই স্বস্তি পান না।
শুয়ে শুয়ে মিতা স্বপ্নটার কথা ভাবছে। বড় অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখেছে সে।
চুপচাপ হাঁটছে মেয়েটা। দশ এগারো বছর বয়স। দৃষ্টিহীনের আড়ষ্ট, সাবধানী হাঁটা। দুই হাত শূন্যে ভাসছে। বোঝার চেষ্টা করছে কোনও বাধা আছে কি না।
হাসছে দুষ্টু ছেলেগুলো। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল চুপচাপ মেয়েটা। সন্দেহ দেখা দিল মনে। এই পথ তার মুখস্থ । বহুবার গেছে এখান দিয়ে। তবু কোনও ভুল হচ্ছে না তো?
কী করবে যে এখন। মনকে শান্ত করল অনেক চেষ্টা করে। ছেলেদেরকে পাত্তা না দেওয়াই ভাল। পাজী ছেলেমেয়ে সব।
সামান্য ভুল হলেই বিপদ হতে পারে। কয়েকবার এদিক ওদিক পা বাড়িয়ে পরখ করল সে। কয়েকটা নুড়ি ঠেকল পায়ে। এই পথে তো নুড়ি নেই। তা হলে ? সমুদ্রের আওয়াজ শুনে দিক খোঁজার চেষ্টা করল মেয়েটা। জোরে বাতাস বইছে আজ। চারদিক থেকেই ভেসে আসছে জলরাশির গর্জন। ভয় পেল সে এবার।
হাততালি দিয়ে হাসছে ছেলেমেয়েগুলাে । মনে হচ্ছে চারদিক ঘিরে রেখেছে ওরা। বায়ে একটু ঘুরল মেয়েটা। সম্ভবত এটাই।
পাঁচ সাত হাত এগিয়ে গেল সামনে। হঠাৎ একটা বড় পাথরে ঠেকল হাত। ক্ষুদ্র বুকটা কেঁপে উঠল অজানা আশঙ্কায়।
ঠিকই আছে । যাও না, বিকৃত স্বরে বলল একজন।
কয়েক পা পিছিয়ে এল সে এবার। সমুদ্রের গর্জনের শব্দ হঠাৎ বেড়ে গেল। একটা গাংচিলের কর্কশ ডাক শোনা গেল কাছেই।
সোজা সামনে হাটবার চেষ্টা করল মেয়েটা। অসহায় বোধ করল ভীষণ ভাবে। আর কত দূরে ?
শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেল। বাতাসে কয়েকবার দ্রুত পাক খেল ছোট দুটো হাত। টের পেল শূন্যে ভাসছে তার শরীর।
চারপাশ থেকে ঠাণ্ডা পানি এসে যখন তাকে ঘিরে ধরল তখন কোনও কষ্ট অনুভব করল না মেয়েটা।
তার সমস্ত মন জুড়ে তখন ভর করেছে ভীষণ ক্রোধ। কেন, কেন সে দেখতে পায় না? কেন তাকে এভাবে অসহায় অবস্থায় পড়তে হলো?
ঘৃণা আর রাগে তখন চারপাশের পরিস্থিতি বেমালুম ভুলে গেছে মেয়েটা। ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে আর তখনই মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙল মিতার । বুঝতে পারল ঘেমে গেছে সারা শরীর। স্বপ্নের মেয়েটার কথা মনে পড়ল। খুব মায়া হলো তার জন্যে । কেমন যেন চেনা চেনা লাগল ওকে। কোথায় দেখেছে আগে?
নতুন স্কুলে আজই প্রথম গেল মিতা। চট্টগ্রাম শহরের স্কুলের সাথে কোনও তুলনাই চলে না এর। সব কিছু ছোট ছোট। শেলী আর চম্পাকে খুব ভাল লাগল ওর। প্রথম দিনই ওকে বেঞ্চে বসার জায়গা করে দিয়েছে ওরা।
কিন্তু শিউলিকে পছন্দ হয়নি। কেমন যেন হিংসুটে চেহারা মেয়েটার। মিতা স্কুলে ফার্স্ট হত শুনে চেহারা শুকনো হয়ে গেছে ওর। এ পর্যন্ত শিউলিই ছিল ফার্স্ট গার্ল। শেলীই সাবধান করে দিল ওকে।
'হ্যা। তোমার?
খেঁকিয়ে বলব শিউলি। মুখ কালো করে চলে এল মিতা। মেয়েটা আসলেই হিংসুটে। ওরা জমিদারবাড়ি কিনেছে বলে হিংসা কাছে । মনে মনে রাগ হলো তার।
মুখ চাওয়াচাওয়ি করল ওরা।
চোরা চােরা মুখে হাসল শেলী । কোনও উত্তর দিল না।
হাত মুখ ধুতে বাথরুমে গিয়ে ঢুকল মিতা। মাজেদা বেগম্ খুশি হয়েছেন যে মিতার স্কুল ভাল লেগেছে। চট্টগ্রাম শহরের স্কুলের কথা মনে পড়ল তার। মেয়ে, 'পালিতা মেয়ে' বলে খুঁচিয়ে প্রায় পাগল বানিয়ে দিয়েছিল মিতাকে।
সেই ভয় এখনও কাটেনি তাঁর। এখানে কেউ যদি আবার জেনে ফেলে তা হলে? মেয়ের মায়াভরা মুখটা মনে হতেই বুকটা খাঁ খাঁ করে উঠল। বারো বছর পর তার নিজের সন্তান আসছে।
সহ্য করতে পারবে তো মিতা? নাকি নিজেকে অবহেলিত মনে করবে? মনস্তাত্তিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না তো? অজানা আশঙ্কায় মুখটা মলিন হয়ে গেল।
হাজার হোক মিতাই তাদের প্রথম সন্তান।
বিকেলবেলা হাটতে বেরুল মিতা। উত্তর দিকে চট্টগ্রামের রাস্তা । সেদিকে গেল না সে । পুব দিকে সাগর। ওদের বাসা থেকে প্রায় চারশো গজ দূরে হবে।
সরু পায়ে চলা পথ। কিছুদূর হাঁটতেই গোরস্তানটা চোখে পড়ল মিতার। অনেক পুরনো লাল ইটের নিচু দেয়াল। পলেস্তরাে খসে পড়েছে । ঝোপঝাড় লজ্জাবতী লতায় ভর্তি। সিমেণ্ট আর মার্বেল পাথরে ঘেরা কবরগুলাে প্রায় দেখাই যাচ্ছে না। কয়েকটা হেডস্টোন খুব উঁচু। ত্রিশ চল্লিশটার মত কবর। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল মিতা।
দোলনায় দুলছে একটা ছোট ছেলে। আরেকটা মেয়ে ধাক্কা দিচ্ছে পাশে দাঁড়িয়ে। মিতার চেয়ে ছোটই হবে মেয়েটা । ছেলেটা আরও ছোট।
ওদের দিকে এগিয়ে গেল মিতা। দাঁড়িয়ে রইল দোলনার পাশে।
'তুমি দোলনায় ঝুলবে?' ছোট্ট ছেলেটা বলল। খুব মিষ্টি চেহারা ছেলেটার।
ইস্ । এ রকম একটা ভাই থাকত আমার। ভাবল মিতা । মনটা খারাপ হয়ে গেল হঠাৎ। নিজের বাবা মারই খবর নেই। আবার ভাই।
"টুনু। ওর নাম বিলু।" মেয়েটাকে দেখাল টুনু।
চম্পাকে দেখতে পেল সে। আম বাগানে এসে দাড়িয়েছে। 'কী, তোমার পুতুল। খুব সুন্দর তাে।
'পেয়েছি। আমাদের নতুন বাসার দােতলায়,' খুশীভরা কণ্ঠ মিতার।
'এত্তবড় পুতুল ফেলে দেব, না?
টুনুদের রেখে হাঁটতে লাগল ওরা । শেলীকে দেখা গেল ওদের বাসার বারান্দায় । মিতাদের সাথে যোগ দিল সেও।
'এখানে এসে অনেক বন্ধু হলো আমার। সবচেয়ে আগে বন্ধু হয়েছে জুলেখা।' বুকে চেপে ধরল মিতা জুলেখাকে।
পুতুলটাকে দেখাল মিতা।
বিস্মিত চোখে চম্পার দিকে চাইল শেলী।
'কেউ বলেনি তােমাকে?' চোখ আরও বড় হলো।
মিতাকে এড়িয়ে আবার মুখ চাওয়া চাওয়ি করল ওরা। কিছু একটা কথা বিনিময় করল চোখে চোখে।
মিতাকে টানতে টানতে কবরস্তানের দিকে নিয়ে গেল শেলী। ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ, বুঝতে পারছে মিতা। সেও কোনও কথা না বলে ওদের সাথে ঢুকল গোরস্থানে।
আর কিছুই লেখা নেই। কবে জন্ম... কবে মৃত্যু, বাবা মার নাম, নেই।
মিতা কিছু বুঝতে পারল না। শেলী আর চম্পা বিচিত্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। কিন্তু ঘাবড়াল না মিতা।
'চলো আম বাগানে গিয়ে খেলি ।' কিন্তু শেলী আর চম্পার মধ্যে খেলার কোনও আগ্রহ দেখা গেল না।
বেশ কয়েকবার মিতাকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখল ওরা।
আছে এই দিকে।
'ৰাড়িতে থাকলেই মেয়ে হয় না। ' বিদ্রুপ ঝিলিক দিয়ে উঠল শিউলির চোখে।
অসহায় বোধ করছে মিতা । শেলীরাও কিছু বলছে না। মিতা জানে শিউলি সত্যি কথা বলেছে । কিন্তু আব্বু আম্মু এত আদর করে ওকে। ওরাই তাে তার বাবা মা। হঠাত্ কান্না পেল মিতার।
বাসায় ফেরার সময় কেমন জ্বর জ্বর বোধ করল মিতা। শরীর খারাপ লাগছে বলে আপার কাছ থেকে এক ঘন্টা আগেই ছুটি চেয়ে নিয়েছে।
সমুদ্রের ধার দিয়ে হেঁটে আসছে মিতা। একা। মন খুব খারাপ। শিউলি, শেলী, চম্পা, সবার ওপর রাগ হচ্ছে তার। কচুর স্কুল। আর যাবে না সে ওখানে।
মাথাটা ঝিমঝিম করছে । সমুদ্রের দিকে চাইল কয়েকবার । ফিকে হয়ে আসছে রোদ । কয়েক মিনিটের মধ্যে কুয়াশায় ঢেকে গেল চারদিক।
কেমন একটা অদ্ভুত গন্ধ পাচ্ছে। কুয়াশার পথ ঘাট কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
গন্ধটা হঠাৎ করেই চিনতে পারল সে। কর্পুরের গন্ধ।
বাতাসে তখন সমুদ্রের বুনো গর্জন ছাড়া আর কোনও শব্দ শোনা যাচ্ছে না।
আহাদ সাহেব থরথর করে কাপছেন । বিলুর দুর্বোধ্য চিত্কারে কয়েকজন লোক জুটে গিয়েছিল । তারাই ধরাধরি করে মিতাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।
যতটা ভয় করেছিলেন ততটা ক্ষতি হয়নি। বাম পায়ের হাড়ে ফ্রাকচার হয়েছে । গ্রীনস্টিক ফ্রাকচার।
মাজেদা বেগম নির্বাক হয়ে রইলেন। এক্স যে রিপোৰ্টটা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তারা । মিতা শুয়ে রইল ৰিছানায় ব্যাণ্ডেজ বাঁধা পা নিয়ে।
রশীদ চেয়ারম্যানের বউ খবরটা শুনে সন্ধ্যার দিকে আহাদ সাহেবের বাড়িতে এলেন।
জ্বরের ঘোরে মাথা এপাশ ওপাশ করছে মিতা। চোখ মেলে তাকিয়ে আছে মায়ের মুখের দিকে। অপরিচিত আরেকজনকে দেখতে পেল পাশে। রশীদ চেয়ারম্যানের বউ।
আমি চম্পার মা। কেমন আছ তুমি?
কথাটা এখানেও ছড়িয়ে গেছে ... 'মিতা আপনার পালিতা মেয়ে নাকি?' আস্ত পানটা গালে পুরে জিজ্ঞেস করলেন রশীদ গিন্নী।
"নিজের মেয়ের চেয়ে বেশী ভালবাসি আমরা ওকে,' বলেই হেসে ফেললেন মাজেদা বেগম। এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে চান না।
'এই পুতুলটা কোথোয় পেলেন?' প্রায় চমকে উঠলেন রশীদ গিন্নি। প্রাচীন চেহারার পুতুলটা এতক্ষণে চোখে পড়েছে তাঁর। টেবিলের ওপর নির্মিমেষ দাঁড়িয়ে আছে।
নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না রশীদ গিন্নী । কাদের খানের একমাত্র মেয়ে ফিরোজা দােতলায় ব্যালকনি থেকে পড়ে মারা যাবার পর তার বউ নিজে চুলোর আগুনে পুড়িয়ে ছাই করেছিলেন এটাকে। ফিরে এসেছে পুতুলটা। ' শিরশির করে ঠান্ডা একটা স্রোত বয়ে গেল মেরুদণ্ড দিয়ে। এরই নাম জুলেখা । নামটাও কেমন যেন। কোথায় যেন শুনেছেন আগে । আর দেরি করলেন না। 'আজ উঠি, ভাবী। কোনও চিন্তা করবেন না। মিতা ভাল হয়ে উঠলে আমার বাসায় বেড়াতে যাবেন কিন্তু।
' কার নিয়ে এসেছিলেন রশীদ গিন্নী। স্টার্ট দিচ্ছে ড্রাইভার গাড়িতে । সদর দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন তাকে মাজেদা বেগম । রশীদ আহমেদ বাড়িতেই ছিলেন। হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকলেন তার স্ত্রী।
'ওগো শুনছ?
"কী ব্যাপার, চম্পার মা?' উদ্বিগ্ন কণ্ঠ রশীদ সাহেবের।
'ব্যস, চুকে গেল।' মুচকি হাসি রশীদ সাহেবের ঠোটে।
'কি নাম রেখেছে জানাে? জুলেখা।' তুরুপের তাসটি টেবিলের রাখলেন রশীদ গিন্নি।
সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটছে মিতা । পায়ের ব্যাথাটি এখন আর নেই। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে আর কখনও হাঁটতে পারবে কিনা জানে না সে। স্কুলে যেতে চায়নি ও। কিন্তু মাজেদা বেগম বুঝিয়ে সুঝিয়ে পাঠিয়েছেন। বিষন্ন হয়ে আছে মিতার চেহারা। ডাইনে দূরে তাকিয়ে দেখতে পেল গোরস্তানের পাশের আম বাগানে এককা দোককা খেলছে তিনটে মেয়ে। বিলুকে চিনতে পারল। 'ও কি আর কোনওদিন ওদের মত দৌড়ঝাঁপ করতে পারবে? স্কুলে অন্য মেয়েরা কীভাবে তাকাবে ওর দিকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে মিতা। পায়ে সামান্য ব্যাথা লাগছে এখন। বাসায় ফিরে যাবে কি? ' শিউলির চেহাড়ারাটা দেখতে পেল মনের পর্দায়। মন শক্ত করল মিতা। কারুর সাথে কথা বলবে না সে। দরকার হলে একাই থাকবে। জুলেখার কথা মনে পড়ল । নিয়ে এলে ভাল হত না ?
'তাে খুঁড়িয়ে হাটছিলি যে?' অনেক কষ্টে স্বাভাবিকভাবে হাটবার চেষ্টা করেছে মিতা।
মিতার খুব রাগ হলো। কোনও সন্দেহ নেই শিউলিই পাঠিয়েছে চম্পাকে ইচ্ছা করেই । ওকে অপমান করতে চায়।
'পারলে তাে খেলবে । তোমার তো পা খোঁড়া।' শিউলি বলল রুমের কােনা থেকে।
চোখ ঝাপসা হয়ে এল আবার। অস্বচ্ছ হয়ে গেল চারদিক । রােদের আলো তিরতির করে কাঁপতে কাঁপতে হারিয়ে গেল হঠাৎ। ঘন কুয়াশায় আটকা পড়ল মিতা। এবার আর ভুল করল না। ঠায় দাঁড়িয়ে রইল চুপচাপ। একটা ছায়া নড়ে উঠল ওর সামনে। ছোট একটা মেয়ে। কালো ফ্রক পরা। মাথায় কালো কাপড়ের কুঁচি দেয়া বনেট।
দূর্বল একটা কণ্ঠ শোনা গেল । মিতার কান ঝাঁ ঝাঁ করছে। মনে হলো ওকে কেউ জোর করে ধরে রেখেছে। এখন ইচ্ছা করলেও আর হাঁটতে পারবে না ও।
'কেউ আমার বন্ধু না। সবাই শিউলির মত।' বিড়বিড় করল মিতা।
'শিউলিকে আমি দেখে নেব। তোমাকে আর খোড়া বলার সাহস পাবে না।' হিসহিস করে উঠল কণ্ঠস্বর।
গোরস্তানের কাছাকাছি আসতেই আবার খুঁড়িয়ে হাঁটতে শুরু করল মিতা। ভেতরে ঢোকার একটা অদম্য আগ্রহ বোধ করল। নিজের অজান্তেই হাঁটতে শুরু করল সেদিকে।
দোলনায় দোলা বন্ধ করে টুনু একদৃষ্টে চেয়ে দেখছে মিতাকে। গােরস্তানের দিকে কেন হাঁটছে মেয়েটা?
সরু কাঁচা রাস্তার দু পাশে সারি সারি কবর। কেমন যেন নেশার মতো হাঁটছে। সেই কববটার সামনে এসে দাঁড়াল। দুহাত দিয়ে সরিয়ে দিল ঝোপঝাড়। ছোট্ট একটা নাম। জুলেখা। মিতা তাকিয়ে বইল সেদিকে। ওর পুতুলের নাম।
রান্নাঘরে অনেকক্ষণ বসে থেকে হাপিয়ে উঠলেন মাজেদা বেগম। খোলা বিশাল জানালা দিয়ে সমুদ্র দেখা যায়। ডানদিকে দিগন্ত ভেদ করে উঠেছে সারি সারি পাহাড়।
বাতাস শির শির করে ঢুকছে রান্নাঘরে। মাজেদা বেগম উদাসভাবে তাকিয়ে রইলেন সমুদ্রের দিকে।
আরে কে ওটা? চমকে উঠলেন মাজেদা বেগম। গোরস্থানের ভাঙা দেয়ালের ওপাশে ঝুঁকে পড়ে কিছু একটা খুঁজছে মিতা। কী করছে এখানে?
স্কুলে যায়নি ? অজানা অশেঙ্কায় কেঁপে উঠল বুকটা। অন্য রকম হয়ে যাচ্ছে মেয়েটা। এরকম একা ভর দুপুরবেলা গোরস্তানে কী করছে?
মিতা দাড়িয়েই আছে। নড়ছে না। মেয়েকে নিয়ে আসার জন্য নিজেই বাড়ি থেকে বের হয়ে এলেন তিনি । জোরে হাঁটতে লাগলেন। ভারী শরীর... হাসফাস করছেন ক্লান্তিতে। জোরে হাটার উত্তেজনায় বুক ধড়ফড় করছে। ঘাম ঝরছে শরীর বেয়ে।
প্রায় সাত মিনিট হেঁটে গোরস্তানের সামনে এসে পড়লেন মাজেদা বেগম।
'এই মিতা এখানে কী করছিস?
'জুলেখার।' হাত তুলে দেখলে মিতা।
'বাসায় চল। ' মেয়ের হাত ধরে টানলেন মাজেদা বেগম।
মেয়ের মুখের দিকে তকােলেন মা। শান্ত সমাহিত মুখ। কী মনে করে ঝুঁকে পড়লেন হেডস্টোনটার দিকে লেখাটা চোখে পড়ল।
'জুলেখা ।' অবাক হয়ে উঠে দাড়ালেন।
পাশের কবরটার দিকে নজর গেল। সাদা সিমেন্টের ওপর কালো অক্ষরে লেখা।
'গুলবাহার বেগম।
এটা কী ধরনের লেখা? এর মানে কি? কুসুমপুর এলাকাটাই যেন কেমন রহস্যে ঘেরা। চিন্তাগ্রস্ত মনে সোজা হয়ে দাড়াতে গেলেন মাজেদা বেগম। হঠাৎ তীব্র ব্যথায় অন্ধকার হয়ে গেল চারপাশ। কােমরের কাছটায় লক্ষ লক্ষ সূচ ফোটাচ্ছে কেউ।
মায়ের চেহারা দেখে ঘাবড়ে গেল মিতা। দাঁতে দাঁত চেপে বললেন মাজেদ বেগম 'জলদি দৌড়ে যা ফার্মেসীতে। তৌর আব্বাকে খবর দে,বলেই বসে পড়লেন মাটিতে।
সময় হয়ে গেছে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে দৌড়াচ্ছে মিতা। পিছন থেকে আধাশোয়া অবস্থায় অসহায়ভাবে চেয়ে রইলেন মাজেদা বেগম।
শেষ পর্যন্ত তার প্রথম সন্তান ভুমিষ্ঠ হতে যাচ্ছে এইখানে। এই গোরস্থানে। হায় খোদা!
তুলতুলে পেঁজা তুলোর মত একটা শিশু। আহাদ সাহেব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন। ঠিক মায়ের আদল পেয়েছে। চুমো দিলেন মেয়ের লালচে গালে। দাড়ির খোঁচায় কেঁদে উঠল অবােধ শিশু।
"আবার তুমি কাদাচ্ছ ওকে?' মাজেদা বেগম কৃত্রিম রেগে বললেন।
মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন আহাদ সাহেব বাচ্চাটাকে। কান্না থামবার কোনও লক্ষণ নেই পিচ্চিটার।
মিতাকে পাওয়া গেল তার ঘরে। জুলেখাকে বুকে ধরে ঘুমিয়ে আছে।
আমতা আমতা করলেন আহাদ সাহেব । সত্যিই খেয়াল করেননি ব্যাপারটা।
উঠোনের কোনায় একটা ছোট ঘর। লাল ইটের তৈরি। টালির ছাদ। দেখলেই বোঝা যায় বহুকাল ব্যবহার করা হয়নি ওটা।
ভেতরটা খারাপ নয়। অদ্ভুত কিছু জিনিস পাওয়া গেল সেখানে। কয়েকটা পেইন্টেড আর কয়েকটা খালি ক্যানভাস। ছবি আঁকত চৌধুরীদের কেউ। মেঝেটা দেখে অবাক হলেন মাজেদা বেগম। পুরোটাই মােজাইক্ করা।
জবরজং ছোট্ট ঘরটার এত সুন্দর মেঝে ভাবাই যায় না।
ঝেড়েমোছে ঝকঝকে করে ফেলল রুমটা হাবুর মা।
চিমসে বুড়িটার গায়ে শক্তি আছে বটে। কালো একটা লম্বা দাগ কিছুতেই উঠছে না। প্রায় দেড় ফুট লম্বা বিচিত্র ধরনের একটা দাগ।
কিছু একটা পড়েছিল মেঝেয়। এখনও উঁচু হয়ে আছে। কীসের দাগ?
হঠাৎ ভয় পেয়ে গেলেন মাজেদা বেগম।
আমার মনে হয় রক্তের দাগ, ' ফিসফিস করে বললেন মাজেদা বেগম।
'খুঁচিয়ে তুলে ফেলো দাগটা, হাবুর মা । দা, ছুরি কিছু একটা, দিয়ে খোঁচাও।' বললেন আহাদ সাহেব।
স্কুলে আবার শিউলির' সাথে ঝগড়া হয়ে গেল মিতার। সবার আগে এসে সামনে বসেছিল মিতা। লাল সুটকেসটা রেখে বাইরে গিয়েছিল।
দশ মিনিট পরে এসে দেখল আগের জায়গায় নেই সুটকেসটা । কেউ ওটাকে দ্বিতীয় বেঞ্চে নিয়ে রেখে দিয়েছে। মেজাজ খারাপ হয়ে গেল মিতার।
আমার সুটকেস সরিয়েছ কেন?
আমার বয়েই গেছে তোমার সুটকেস ধরতে,' ঠোঁট বেঁকিয়ে বলল শিউলি। 'আমি সরিয়েছি ওটা মিতা। আমরা একসঙ্গে বসব।' পিছন থেকে বলল শেলী।
'আন্দাজী কথা বলো কেন তুমি? আমি আপাকে বলে দেব।' খেপে উঠল শিউলি।
বলবই তো । বেশি ডাট হয়েছে না? ল্যাংড়া মেয়ের এত ডাট ভাল না।' খোঁচা দেবার জন্যেই বলল শিউলি।
কেন, ওর কী দোষ? না জেনে শিউলিকে বলতে গেল কেন মিতা?' পেছন থেকে বলল আরেকটা মেয়ে।
রাগে দুঃখে স্কুল থেকে বেরিয়ে এল মিতা। পায়ের ব্যাথাটা বাড়ছে দ্রুত। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে লাগল। সুটকেসটাও ভারী মনে হচ্ছে খুব।
জুলেখার দিকে চোখ পড়া মিতার। দুধ সাদা চোখ দুটো ভাবলেশহীন চেয়ে আছে। মনে হচ্ছে খুব দুঃখ পেয়েছে সেও।
সমুদ্রের ধারে আসতেই বাতাসের ঠাণ্ডা ছোঁয়া লাগল শরীরে । হঠাৎ কেঁপে উঠল সূর্যের আলো। দেখতে দেখতে ঘন কুয়শায় ঢেকে গেল চারপাশ।
দুই দিকে বেণী ঝোলানাে একটা মেয়েকে আবছা মত দেখতে পেল মিতা। কাঁধে ঝুলছে দামী স্কুল ব্যাগ। একা। কেমন সতর্ক পায়ে এগুচ্ছে মেয়েটা। এখনও ওর মুখোমুখি যায়নি মিতা। দু ধার দিয়ে উঁচু ঢাল । প্রায় পঁচিশ তিরিশ ফুট নীচে চিকচিক করছে বালু আর পাথর । ঢালের ওপর দিয়ে হাটছে মেয়েটা । মিতাকে দেখেই চমকে উঠল । দু'হাতে বিদ্যুৎ খেলে গেল মিতার।
নিজেও চমকে উঠল সে। এত শক্তি সে পেল কোথায়? ওর আর মেয়েটার মাঝখানে কালো ফ্রক পরা ছায়াটাকে মুহূর্তের জন্যে দেখতে পেল মিতা। সাদা চোখ দুটো পাথরের মত নিষ্প্রান। মূহূর্তের মধ্যে কেটে গেল কুয়শার মেঘ। ঝলমল করে উঠল রােদেলা দুপুর।
বিশাল চালের ওপর একা দাড়িয়ে আছে মিতা। পায়ে ভীষণ ব্যাথা। কপালে হাত দিয়ে চমকে উঠল। জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে গা । সুটকেস হাতে নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো সে। যে কোনও সময় ও জ্ঞান হারাতে পারে। খুব দুর্বল লাগছে। এদিকে বোবা বিলু তখন আতঙ্কিত চোখে চেয়ে আছে মিতার দিকে।
কয়েকশ গজ দূরে আমবাগানে খেলতে খেলতে খুব খারাপ কিছু একটা দেখেছে সে। খুব খারাপ।
স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছিলেন হাশেম সাহেব। সমুদ্রের পাশে পাশে অনেকদূরে যেতে হয় তাঁকে। সাইকেল চেপেই যাতায়াত করেন প্রতিদিন। শাহবাজপুর প্রায় আড়াই মাইল দূরে এখান থেকে।
রোদ এখনও চড়া। ঘামে ভিজে উঠছে সার্ট। কুসুমপুর জামে মসজিদের গম্বুজে ঠিকরে পড়ছে রোদ। খুব ধীরে প্যাডেল করছেন হাশেম সাহেব।
সামনে বড় একটা বাঁক। বাঁকের মাথায় বুড়ো বটগাছটা ঝিরঝির বাতাস ছাড়ছে।
নীচে ঢেউয়ে ঢেউয়ে নাচছে সমুদ্র।
আরে ! কী ওটা?
ত্রিশ হাত নীচে বড় পাথরগুলাের মাঝখানে চার হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে কাজেম সওদাগরের ছোট মেয়ে শিউলি।
জোয়ারের পানি প্রায় ছুয়ে ফেলেছে ওর পা। দেখলেই বোঝা যায় প্রাণহীন দেহটা অনুভব করতে পারছে না কিছুই। তাড়াতাড়ি সাইকেল থেকে নেমে চালের নীচের দিকে রওনা হলেন হাশেম সাহেব।
বিলুর কাছ থেকে জানতে পেয়েছেন মাজেদা বেগম দৃপুরের রােদে সমুদ্রের ধারে গাছের কাছে বসেছিল মিতা। আরও কী কী যেন বলতে চাইছিল মেয়েটা। তিনি বুঝতে পারেননি।
মাথায় জলপট্টি দিচ্ছেন মাজেদা বেগম । বিড়বিড় করে জুলেখার নাম বলছে মিতা। 'ওহ পুতুলটাই মত নষ্টের মূল।' মনে মনে বললেন তিনি।
রশীদ চেয়ারম্যানের বউ অনেকভাবে চেষ্টা করলেন। কিন্তু বিলুর কথা বুঝতে পারছেন না কিছুতেই । বোবা মেয়েটা হাত নেড়ে মুখের বিচিত্র ভঙ্গি করে কিছু একটা বলতে চাইছে।
শুধু বুঝতে পারলেন শিউলির মৃত্যুর সাথে মিতার একটা সম্পক আছে।
কি সেটা?
দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকলেন মাজেদা বেগম। ঝকঝক করছে ঘর।
দৌড়ে বেরিয়ে এলেন মুহূর্তে । সমস্ত শরীর কাঁপছে।
স্পষ্ট মনে আছে গতকাল খুন্তি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পুরো দাগটা ভুলে ফেলেছিল হাবুর মা।
এই বাড়িটায় যে অস্বাভাবিক কিছু একটা আছে এতদিন পর সেটা স্বীকার করলেন আহাদ সাহেব।
আরও খোঁজ খবর নিয়ে ফেলা উচিত ছিল বাড়িটা।
স্কুলে মিতাকে এড়িয়ে চলতে লাগল ওরা । একমাত্র শেলি ছাড়া ওর আর কোনও বন্ধু সেই। চম্পা ওকে দেখলেই কেমন যেন আড়ষ্ট হয়ে যায়।
কথাটা ছড়িয়ে পড়েছে ভেতরে ভেতরে। মিতার পুতুলটার কথাও জানে ওরা। হেডমাস্টারকে সব কথা খুলে বলেছেন আহাদ সাহেব।
পিছনের বেঞ্চে চুপচাপ বসে থাকে মিতা। কখনও খেলতে যায় না। শেলির সাথে কথা বলে মাঝে মাঝে।
ঘুমুতে যাবার পরপরই একটু শীত শীত লাগছিল ওর। বাতাসে একটা গন্ধ ভেসে এল হঠাৎ । টেবিলের ওপর রাখা জুলেখার দিকে চাইল মিতা।
ভুল দেখল কী?
আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে ওটা। এক সময় হাওয়ায় ভাসতে লাগল যেন।
প্রতিবাদ করতে চাইল মিতা । কিন্তু গলায় জোর পেল না।
একঘেয়ে সুরে বলে যাচ্ছে কেউ।
চিন্তা করবার শক্তি হারিয়ে ফেলল মিতা। স্বপ্ন দেখছে বলে মনে হলো।
আহাদ সাহেব, মাজেদা বেগম কেউ নেই। এখনও শুতে আসেননি ওরা। ড্রয়িং রুমে রয়েছেন।
ছোট মশারীটা গুটিয়ে তুলতুলে ফর্সা শিশুটিকে কোলে তুলে নিল মিতা। আরও জোরে কাঁদতে শুরু করল রীতা। বুকের সাথে জোরে ঠেসে ধরল ওকে।
কর্পূরের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে এ ঘরেও। ভয় পেল মিতা। নীল হয়ে উঠেছে বাচ্চাটার ফর্সা মুখ । শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। হাত থেকে ছেড়ে দিতে চেষ্টা করল ওকে । কিন্তু পারছে না।
প্রাণপণে চেঁচাতে গিয়ে খুক খুক করে কাশছে রীতা।
"কাদছে মা। রীতা কাঁদছে। ' ঘোর কেটে গেছে মিতার।
কড়া গলায় ধমক দিলেন মাজেদা বেগম।
কালো ফ্রক পরা একটা অন্ধ মেয়েকে সবাই মিলে খেপিয়ে, খুঁচিয়ে উত্ত্যক্ত করে তুলছে। শেষ পর্যন্ত উচু ঢাল থেকে নীচে পড়ে পেল অসহায় মেয়েটা।
ছোট্ট মেয়েটার চোখে মুখে কী অসহ্য বেদনা। ক্রোধ আর প্ৰতিহিংসার আগুন। ঢাল বেয়ে উঠে আসছে সে অদ্ভুত ভঙ্গিতে। সাদা দৃষ্টিহীন চােখ জুড়ে প্রচণ্ড আক্রোশ।
'কি যা তা বলছ?' উষ্মা প্রকাশ করলেন আহাদ সাহেব।
দােলনায় দুলছিল বিলু। পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছে টুনু। সুন্দর ছেলেটাকে দেখে ওর এর দিকে এগিয়ে গেল মিতা। এই ছেলেটা খুব ভাল। সুন্দর করে হাসে।
তুমি খেলবে?' আগ্রহের সঙ্গে বলল টুনু।
"হ্যা।' ঘাড় কাত করল মিতা।
মিতাকে দোলনার দিকে আসতে দেখে নেমে পড়ল ৰিলু। মিতা ধাক্কা দিক এটা চায় না সে। শিউলি মারা যাবার সময় চালের ওপরে ওর সাথে মিতাকেও দেখেছে সে। ঠিক বুঝতে পারেনি কী ব্যাপার। কিন্তু হঠাত্ করে দেখল আচমকা ঢালের ওপর থেকে নেই হয়ে গেছে শিউলি।
কিন্তু টুনু নাছেড়াড়বান্দা। মিতাকে খেলতে নেবেই সে। বেশ কয়েকবার ওকে দোলনায় তুলে ধাক্কা দিল টুনু। ভাল লাগছে।
এবার উঠল বিলু। দুজনে খুব জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে। প্রায় সাত আট ফিট্ উঠে যাচ্ছে দোলনা। খিল খিল করে হাসছে বোবা মেয়েটা।
এখন থামা দরকার। দম হারিয়ে ফেলেছে সে। কিন্তু থামছে না মিতা। ব্যা ব্যা করে কিছু একটা বলল বিলু। বুঝতে পারছে না মিতা। আরও জোরে ধাক্কা দিল এবার।
ভয় পাচ্ছে বিলু । প্রায় দশ এগারো ফিট উঠে আসছে দোলনা। আর্তনাদ করছে সে। কিন্তু কিছুতেই থামছে না মিতা।
হাওয়ার উড়ে এল যেন মেয়েটা। মাথাটা আগে পড়ল শক্ত মাটিতে। ধড়ম করে পুরো শরীরটা বাড়ি খেল প্রচণ্ড ভাবে।
প্রাণঘাতী আর্তনাদ করে উঠল বিলু। ভ্যা করে কেঁদে ফেলল টুনু । হাত পা মাটিতে ছড়িয়ে নিথর হয়ে গেল বোবা মেয়েটা।
তখনও অনবরত দুলছে দােলনাটা। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাড়িয়ে রইল মিতা । বিলুর নাক দিয়ে দু ফোটা রক্ত গড়িয়ে পড়ল। পায়ের ব্যাথাটা আবার বাড়ছে । খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে দৌড়াতে লাগল মিতা। চোখ দিয়ে অনবরত জল গড়াচ্ছে।
গলা শুকিয়ে গেল মিতার। কােনওমতে ওকে বাসায় নিয়ে এলেন আহাদ সাহেব । বিলুর মায়ের গালাগালি আর আহজারিতে পাগল হবার দশা তার।
মাজেদা বেগম এই প্রথম মারলেন মেয়েকে। চড় খেয়ে কোনও কথা বলল না মিতা। কাঁদল না পর্যন্ত। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। চুপচাপ নিজের ঘরে এল সে। সেই কপুঁরের গন্ধটা নাকে এল । হিসহিস করে উঠল পরিচিত কণ্ঠ।
'উঠানে চলো... ওঠাে।' দরোজার খিল খুলে বাইরে বেরিয়ে এল মিতা। খালি পায়ে নিঃশব্দে হাটছে। বুকে শক্ত করে ধরে রেখেছে জুলেখাকে। উঠানে নেমে স্টোররুমের কাছে এল ও।
"কী করে ঢুকব্? তালা দেযা যে ।' অসহায় শোনাল ওর গলা।
হিংস্র দেখাচ্ছে কালো ফ্রক্ পরা মেয়েটাকে। ঘৃণায়, কষ্টে বিকৃত হয়ে গেছে ওর মুখ। হঠাৎ চমকে উঠল গোঁফঅলা লোকটা।
দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়েছে আরেকজন লোক। জমিদারী কেতায় শেরওয়ানী পরে আছে। দু চোখ ঠিকরে আগুন রেরােচ্ছে ওর। দাঁতে দাঁত চাপছে রাগে।
আচমকা বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠে এক প্রচণ্ড ধাক্কায় শেরওয়ানী পরা লোকটাকে ঘরের কোনায় পাঠিয়ে দিল গোঁফঅলা । তারপর এক দৌড়ে বাইরে চলে গেল। সেদিকে ফিরেও তাকাল না নতুন লোকটা। তার হাতে ততক্ষণে চলে এসেছে লম্বা একটা ছুরি। দুপা সামনে এগিয়ে এল সে।
একটা আর্তচিত্কার শুনে ঘুম ভেঙে গেল মাজেদা বেগমের। কী ব্যাপার? চোর ডাকাত? নাকি অন্য কিছু? স্বামীকে ডেকে তুললেন তিনি। দরজা খুলে ৰারান্দায় এসে দাড়ালেন কী ব্যাপার জানতে। উঠানের দিক থেকেই এসেছে চিতকারটা।
'চাের নাকি?' ফিসফিস করে বললেন আহাদ সাহেব।
হঠাৎ একটা হার্টবিট মিস হয়ে গেল তাঁর । মাজেদা বেগমেরও রক্ত হিম হয়ে গেল ভয়ে।
খোলা ঘরের ভেতর থেকে জুলেখাকে কোলে নিয়ে সন্তর্পণে হেঁটে বেরিয়ে আসছে মিতা।
চমকে বারান্দার দিকে চাইল মিতা। ভিড়মি খাবার যােগাড় হলো আহাদ সাহেবের। সারামুখে রক্তের দাগ মিতার।
'ও মাগাে।' বলেই জ্ঞান হারালেন মাজেদা বেগম। খপ করে পড়ন্ত শরীরটাকে ধরে ফেললেন আহাদ সাহেব । আস্তে করে শুইয়ে দিলেন বারান্দার ওপর।
মিতা উঠে আসছে ওপরে । সিঁড়িতে হালকা পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
বাড়িটা ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন আহাদ সাহেব। এখানে থাকলে মাজেদা বেগম হয়তো পাগল হয়ে যাবেন। মিতাকেও হারাতে হতে পারে।
এরিমধ্যে সবার আতঙ্কের বস্তুতে পরিণত হয়েছে মেয়েটা। স্কুলে যাওয়া বন্ধ । কেউ খেলতে চায় না ওর সাথে। মাথা খারাপ হতে দেরি নেই ওরও।
ওদিকে রশীদ গিন্নী বাড়ি বাড়ি বলে বেড়াচ্ছেন মিতা ইচ্ছা করেই বিলুকে মেরে ফেলেছে । শিউলিকেও ওই ফেলে দিয়েছে ঢাল থেকে।
মিতাকে আলাদা ঘরে শুতে দিলেন না মাজেদা বেগম। জুলেখাকেও আনতে দিলেন না এ ঘরে। বড় খাটের ওপর ঠাসাঠাসি করে শুয়ে রইলেন সবাই মিলে।
বেহুঁশ হয়ে ঘুমাচ্ছে মিতা। সুন্দর মুখটা ক্লান্ত লাগছে । এই ক'মাসে অনেক শুকিয়ে গেছে মিতা। সত্যিই খুব কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা।
আহাদ সাহেবের বুকে মমতা উথলে উঠল । মিতার মুখটা একটু একটু নড়ছে। হঠাৎ চোখ খুলে চাইল সে। কিন্ত আহাদ সাহেবকে দেখতে পেল বলে মনে হলো না।
বিছানা থেকে আলতো ভাবে নেমে পড়ল মিতা । কাঠ হয়ে শুয়ে রইলেন আহাদ সাহেব।
চমকে উঠলেন আহাদ সাহেব । কী বলছে মেয়েটা? হঠাৎ দ্বিতীয় আরেকটা কণ্ঠ শুনে ঘাবড়ে গেলেন তিনি।
"কিচ্ছুতেই না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তােমাকেও ছাড়ব না।' হিংস্রভাবে হিসহিস করে উঠল মিহিকণ্ঠটা।
মেঝেতে জুলেখাকে রেখে তার সামনে স্থির বসে আছে মিতা পাতলা ঠোট দুটো রাগে হতাশায় মৃদু কাপছে।
ঘরে আর কেউ নেই।
সকালবেলা মিতার চেহারায় এ প্রসন্নতা লক্ষ করলেন আহাদ সাহেব।
"পুড়িয়ে ফেলো ওটাকে।' পুতুলটাকে শেষ করে দেবার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলেন না মাজেদা বেগম।
তাই করব।" বলেই হন হন করে রান্নাঘরের দিকে হাটতে লাগল মিতা।
হাবুর মা নাস্তা বানাচ্ছিল রান্নাঘরে । মিতাকে ঢুকতে দেখে অবাক হয়ে গেল।
গনগনে আগুন বেরুচ্ছে বড় চুলার মুখ থেকে। একটু ইতস্তত করল মিতা। "তারপর জুলেখার মাথাটা ঢুকিয়ে দিল চুলার ভিতরে।
প্রচণ্ড উত্তাপে কুঁকড়ে ছোট হয়ে গেল মাথাটা। মিতার মনে হলো ব্যথায় আর্তনাদ করছে জুলেখা। একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল সে গলে যাওয়া পুতুলটার দিকে । খেয়াল করল না কখন একফাকে আগুনের একটা হালকা শিখা আলতাে ভাবে ছুয়ে পেল তার জর্জেটের জামাটাকে।
লাফিয়ে এল বুড়ি মিতার দিকে । কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে। চমৎকার ডিজাইন করা জর্জেটের জামাটাকে মুহূর্তেয মধ্যে গ্রাস করল লেলিহান শিখা। ভয়ে আতঙ্কে মরণ চিৎকার জুড়ে দিল হাবুর মা।
| web |
4be6cfc373cb68fc7b21e8d503245883 | বগুড়া সংবাদ ডট কম (শাজাহানপুর প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান) : ২০২০ সাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে পৃথিবীর উন্নততম রাষ্ট্রে পরিনত করা। ২০২১ সাল নয় ২০১৯ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যআয়ের দেশে পরিনত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রির এই ভিশন সফল করতে দেশের যুবসমাজকে দায়বদ্ধতার আলোকে তৈরী করতে হবে। দেশের চালিকা শক্তিই হলো যুবসমাজ। যুবসমাজকে সচেতন, শিক্ষিত, দক্ষ, সৎ, কর্মঠ ও দায়বদ্ধতার আলোকে গড়ে তুলতে পারলেই একটি দেশ জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদসহ অপরাধমূলক সকল কর্মকান্ড থেকে মুক্তি পেয়ে উন্নততম রাষ্ট্রে পরিনত হবে। তাই আমরা যে যে অবস্থানে আছি সেখান থেকেই যুবসমাজকে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি দায়বদ্ধতার আলোকে তৈরী করতে হবে। মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী উপরোক্ত কথাগুলি বলেন।
মতবিনিময় শেষে এডিপি'র অর্থায়নে শাজাহানপুরের সকল গ্রাম পুলিশদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরন, উপজেলা পরিষদ চত্তরে কদম বৃক্ষ ও ভূমি অফিস চত্বরে বকুল ফুলের চারা রোপন এবং খরনা ভূমি অফিস ও মাঝিড়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান দুলু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর আক্তার, জহুরুল ইসলাম জাহেরুল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি দিলীপ কুমার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তালেবুল ইসলাম, থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মান্নান ফকির, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুল হান্নান, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক হেফাজত আরা মিরা। এসময় জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
| web |
88146c7e7f05d00891b05ee0ad9287d586e7380ad25abd78985acd68a7a85f9e | বিধাতা ; কেমনে বল খণ্ডিবে তাঁহার সে নিবন্ধ, এ কিঙ্করী ? এই রঙ্গভূমে ক্রমে ক্রমে ছয় ঋতু করে অভিনয়। রক্ষয়িত্রী মাত্র দাসী ; যখন যে বেশে সাজাও দাসীরে আসি, সাজে দাসী ফলে, জলে, মেঘে, চন্দ্রলোকে। দাসীর কি দোষ? বৃথা গঞ্জ তারে প্রভু !"
বসন্ত তখন
ফিরায়ে বদন,চাহি বসুন্ধরা পানে বলিলা -"ধরিত্রি! নহে মার্জনীয় দোষ তব, কিন্তু আছে এই প্রায়শ্চিত্ত তার ; - জ্বলিয়। নিদাঘে ; ভাসি বরিষার জলে ; কাঁদিয়। সমস্ত নিশি শরতে, শিশিরে ; অনাবৃত অঙ্গে দীর্ঘ হেমন্ত নিশীথে ; কর ধ্যান দশ মাস, কর অন্বেষণ মম, ঘুরিতে ঘুরিতে; একাদশ মাসে মম পাবে দরশন।" ― চলিল। বসন্ত পুষ্পরথে, পুষ্পাকীর্ণ পথে ; উড়াইয়া মলয় অনিলে, চারু মকর-কেতন !
নবীন নিদাঘ দিবা, হেলায়ে পশ্চিমে
ভাস্কর মুকুট, যেন বঙ্কিম গ্রীবায়,
(নিরখিয়। প্রতিযোগী বসন্ত নিগ্রহ ) ঈষদে হাসিতেছিল, বিতরিয়া মুক্ত করে স্বর্ণ রাশি রাশি - তরল উজ্জ্বল ! সেই স্বর্ণ কারু কার্য্যে - হীরক মার্জ্জিত, রঞ্জিয়। ধবল বাস ; রঞ্জি প্রান্তদ্বয় তীরস্থিত অবিচ্ছিন্ন কানন শ্যামলে ; ওই স্রোতস্বতী ওই, নাচিয়া নাচিয়া চলেছে সাগরোদ্দেশে। হিল্লোলে হিল্লোলে নাচিছে তরণী ওই, চলেছে ভাসিয়া,
যেন ক্ষুদ্র জলচর, মন্থর গমনে । তরণী হৃদয়ে বসি, বিষণ্ন বদনে বীরেন্দ্র বিনোদ যুবা, - সরল, সুন্দর ! শুক্তির হৃদয়ে মুক্তা শোভিতেছে যেন! যুবার বিশাল বক্ষে, সুন্দর ললাটে, সুদৃঢ় যুগল ভুজে, বিস্তৃত নয়নে, অতুল সৌন্দৰ্য, বীৰ্য, দ্বন্দ্বে পরস্পরে। মরি কি বিচিত্র রণ! সারথি যৌবন উভয়ের, যোগাইছে শর তীক্ষ্ণতর । কেবল বিনয় দয়া, অজস্র ধারায় শান্তির সলিল রাশি করিছে বর্ষণ ! প্রফুল্ল বদনচন্দ্ৰ ! মরি দরশনে
রঙ্গমতী ।
সুকোমল ভাবসিন্ধু দর্শকের মনে হয় উচ্ছসিত ; চারুবর্ণ চন্দ্রিকায় বিষাদ-নীরদ ছায়া, পড়ে যেন হায়! করেছে প্রফুল্লতায়, গাম্ভীর্য্য সঞ্চার। যুবার যুগল নেত্র, স্থির সমুজ্জ্বল, জ্ঞান-জ্যোতিঃ পরিপূর্ণ, - বিদ্যার দর্পণ ! বীরত্বের রঙ্গভূমি! তরল অনলে চিত্রিয়া নয়ন যেন, বিধাতার তুলি, প্রেম-পদ্ম-রাগে, দুই নয়ন কোণায় করেছে বিশ্রাম ; আহা! মরি কি সুন্দর ! কি নয়ন, কি বদন, কুঞ্চিত অধর, কিম্ব। অনির্বচনীয় অঙ্গের মহিমা, কহিছে দৰ্শকে যেন ইতিহাস মত, উচ্চবংশ্য রক্তস্রোত, উন্নত মানস । আজি সে মানস ওই স্রোতস্বতী মত, একদিকে সমুজ্জ্বল প্রেম রবিকরে অনুক্ষণ, অন্যদিকে নিবিড় কানন ছায়া পড়িয়াছে তাহে !
তরণীর পার্শ্বে
অবলম্বি পৃষ্ঠ, বসি চিন্তাকুল মনে, যুবক পড়িতেছিল; করে মেঘদূত।
উজ্জয়িনী কোকিলের কণ্ঠ সুললিত, কিছুক্ষণ যুবকের মানস চঞ্চল মোহিল ; দ্রবিল চিত্ত যক্ষের উচ্ছাসে নিৰ্ব্বাসিত, প্রণয়িনী বিরহে বিধুর ! কবির কল্পনা-স্রোতে, প্রণয়-হিল্লোলে, না পারিল বহুদূর নিতে ভাসাইয়া মুগ্ধচিত্ত ; সেই স্রোত হতে ধীরে উপজিয়া চিন্ত। স্রোত অজ্ঞাতে কেমনে নিল ভাসাইয়া হায়! যুবকের মন, তৃণপ্ৰায় । সেই স্রোতবেগে ভেসেগেল মেঘদূত, - কালিদাস, - যক্ষের বিরহ ! কবির কল্পনা-সৃষ্টি নন্দনের শোভা হইল অন্তর ! কবি, কাব্য, সকলই হইল অদৃশ্য ক্রমে ! তখন যুবার শ্লথ কর হতে গ্রন্থ পড়িল খসিয়া, তরী বক্ষে ক্রমে ক্রমে ! উঠিল আকাশে নয়ন যুগল । কিন্তু দেখিল কি হায়! রবিকরে শ্বেতোজ্জ্বল আকাশের শোভা ? দেখিল কি গগনের বিস্তৃতি ভীষণ, - দূর মরুভূমি সম ? পশ্চিমাংশে ওই, - দুর্ণিরীক্ষ্য, প্রজ্বলিত মার্ত্তণ্ড-কিরণে, -
| pdf |
fe5d05363e08beb8f3571673109804878466b657 | রাজধানীতে ধুলা-দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে গতকাল শনিবার আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামসহ (নাসফ) সমমনা বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
বক্তারা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা মহানগরীতে ধুলা-দূষণের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ মৌসুমেই হাজার হাজার ইটভাটায় ইট প্রস্তুত ও পোড়ানোর পাশাপাশি মহানগরীতে অপরিকল্পিতভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ড্রেনেজ এবং রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় রাস্তা-ঘাট খোঁড়াখুঁড়ি বেড়ে যায়।
মেট্রোরেলসহ অন্যান্য মেগাপ্রকল্পের জন্য রাস্তা ও আশপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি, গ্যাস-পানি, বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, মাটি, বালি, ইটসহ নির্মাণসামগ্রী ট্রাকে করে শহরে পরিবহন করা, ড্রেন পরিষ্কার করে রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা, দোকানপাট ও গৃহস্থালীর আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হয়। এতে নানা ধরনের ব্যাধি মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
| web |
49a40ab91651f2d554c3060f9a771a49 | মুলান (পেপারব্যাক)
ছােটদের নিয়ে সবসময়ে ভেবেছেন ওয়াল্ট ডিজনি। তাদের আনন্দের জন্য জীবনভর কাজ করেছেন। কার্টুন ছবি তৈরিতে ওয়াল্ট ডিজনির কোনাে তুলনা ছিল না। আরাে কতভাবেই-না ছােটদের আনন্দ যুগিয়েছেন তিনি। পৃথিবীর ইতিহাসে গত একশত বছরের প্রধান গুণী মানুষদের একজন তিনি । ছােটদের মন-মানসিকতা গড়তে তার অবদানের তুলনা নেই। আমেরিকার এই মানুষটি গােটা দুনিয়ার শিশুদের কথা ভেবে কাজ করেছেন। আর সব দেশের শিশুরা তাে একই চরিত্রের। ওয়াল্ট ডিজনির স্টুডিওতে আঁকা ছবি নিয়েই এই বই। ছবি আর কথায় মেলে ধরা হয়েছে ছােটদের প্রিয় কাহিনী। দুনিয়াজোড়া শিশুদের আনন্দ দিয়ে চলেছে যেসব বই, এবার তা প্রকাশিত হলাে বাংলা ভাষায়।
| web |
c2746c2b4ab3e0637ceafe966492933a2d0f848f | এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : চলতি বিশ্বকাপে দুর্ধর্ষ ছন্দে রয়েছেন ফ্রান্সের সুপারস্টার ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবং ফ্রান্সের সেমি ফাইনালে ওঠার ক্ষেত্রে বড় অবদান রয়েছে এমবাপ্পের। ডানদিক থেকে অমানুষিক গতি এবং গোল করার অসাধারণ চোখের জেরে এমবাপ্পে নিজের একটি জায়গা তৈরি করেছেন।
ইতিমধ্যেই পাঁচটি গোল করে ফেলেছেন চলতি বিশ্বকাপে। শুধু গোল নয়, যে গতিতে বিপক্ষের ডিফেন্সে ত্রাহিত্রাহি রব সৃষ্টি করেন এমবাপ্পে, তা সত্যিই দেখার মত। এবং অনেকেই মনে করছেন, চলতি বিশ্বকাপে কিলিয়ান এমবাপ্পেই সব থেকে গতিশীল ফুটবলার।
তবে চলতি মরশুমের তথ্য তুলে ধরলে দেখা যাবে, চলতি বিশ্বকাপে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ গতিশীল ফুটবলারদের প্রথম দশে নীচের দিকেই থাকবেন এমবাপ্পে।
চলতি বিশ্বকাপে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ গতি দেখিয়েছেন ঘানার কামালদিন সুলেমানা, যিনি ২২. ১৮ মাইল প্রতি ঘন্টা সর্বোচ্চ গতিতে দৌঁড়েছেন। এরপর রয়েছেন স্পেনের নিকো উইলিয়ামস, যিনি ২২. ১২ মাইল প্রতি ঘন্টা দৌঁড়েছেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন জার্মানির সাইডব্যাক ডেভিড রাউম, ২২ মাইল প্রতি ঘন্টা তার সর্বোচ্চ গতি। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আঁতোয়া রবিনসন ও ওয়েলসের ড্যানিয়েল জেমস (২১. ৯৯ মাইল প্রতি ঘন্টা)।
এই তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, যিনি ২১. ৮৭ মাইল প্রতি ঘন্টার সর্বোচ্চ গতিতে দৌঁড়েছেন।
| web |
cffb6c4f1b4cdf4b0770f0f6c289623bcb98630f | অনেক চেষ্টা করেও গায়ক আকবরের পা বাঁচানো গেল না। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।
ডায়াবেটিস ও কিডনির জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আকবর। কয়েক বছর ধরে নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। তাঁর দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে শরীরে পানি জমার কারণে তাঁর ডান পায়ে ক্ষত সৃষ্টি হতে থাকে। তিনি বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর আগে আকবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এক দশক ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন আকবর। এর মধ্যে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক দফায় দেশে ও দেশের বাইরে চিকিৎসা করিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
কিশোর কুমারের 'একদিন পাখি উড়ে' নতুন করে গেয়েছিলেন আকবর আলী গাজী। সবার কাছে তিনি আকবর নামে পরিচিত।
হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'ইত্যাদি'তে এই গান তাঁকে আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপর 'তোমার হাতপাখার বাতাসে' গানটি দেশ-বিদেশের দর্শক-শ্রোতার কাছে তাঁকে পরিচিত করে তোলে। গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। গান শেখা হয়নি। তবে আকবরের ভরাট কণ্ঠের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন তিনি।
২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'ইত্যাদি'তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর 'ইত্যাদি' কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর 'ইত্যাদি' অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের 'একদিন পাখি উড়ে' গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।
| web |
ea73c82745b0bd39f10a61d96bfd37bacdcd9ef8 | শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এই কথা বলেন। 'তারুণ্যের বাংলাদেশ' শীর্ষক ওই কর্মশালার আয়োজন করে দর্শক শ্রোতা পাঠক (ডিএসপি) ও উৎসর্গ বাংলাদেশ।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, "পরিবার, শিক্ষাব্যবস্থা, সুশীল সমাজ, সংস্কৃতিকর্মী, মসজিদের ইমাম, আলেমদের সবকিছুর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। তাহলেই সম্প্রীতির সংস্কৃতি, পরমতসহিষ্ণু মানসিকতার একটা সহনশীল প্রজন্ম গড়ে উঠবে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলমান যাদের মুখ্য পরিচয় হবে না। তারা মানুষ, বাঙালি।
| web |
1b5efd38b59b2c0b016af3dba63d67a3f0635bd8 | অর্ণব আইচঃ বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই অত্যাচার বদলে গেল ধর্ষণের (Rape) মতো গুরুতর অপরাধে। নিজের ভাসুর দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন, এমনই অভিযোগ করলেন নাদিয়ালের গৃহবধূ। এ নিয়ে নাদিয়াল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। সেই গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার (Arrest) করা হয়েছে তাঁর স্বামী ও ভাসুরকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৮ সালে ওই মহিলার বিয়ে হয় নাদিয়ালের এক যুবকের সঙ্গে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে তাঁর উপর চলতে থাকে অত্যাচার। কিছুদিন পর থেকে অত্যাচার অন্য মাত্রা নেয়। গৃহবধূর ভাসুরই একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তিনি ভাসুরকে বাধা দেন। তা সত্ত্বেও ভাসুরের নারকীয় অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে পারেননি নিজেকে। এমনকী গৃহবধূকে হুমকি দেওয়া হত যে ধর্ষণের কথা কাউকে বললে তিনি খুন হয়ে যাবেন। দুই মেয়েকে নিয়ে কার্যত অসহায় বোধ করতে থাকেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত সাহস করে তিনি নিজের স্বামীকে বিষয়টি জানান। কিন্তু স্বামীও তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ। মহিলা লজ্জা ও ভয়ে পরিবারের অন্য কাউকে কিছু বলতে পারেননি। কিন্তু অত্যাচারের মাত্রা সীমা ছাড়ানোর পর তিনি বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানান। শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে যেতেও বাধ্য হন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই স্বামী ও ভাসুরকে নাদিয়াল থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মহিলাকে সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
| web |
ba1a9333841a9c466afc33e61d1472414b8a96e5 | নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লিঃ এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী রইল সংসদ।
রাজ্যসভার ভাইস চেয়ারপার্সন প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হলেন জনপ্রিয় অ্যাথলিট পিটি উষা। সভার চেয়ারম্যান তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এই খবর দিয়েছেন। রাজ্যসভার ভাইস চেয়ারম্যান প্যানেলে পিটি উষা ছাডা়ও সদস্য করা হয়েছে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ভি বিজয়াসাই রেড্ডিকে।
রাজ্যসভায় জগদীপ ধনখড় বলেন - আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সভার সব সদস্যকে জানাতে চাই যেস ভারতের প্রাক্তন অ্যাথলিট পিটি ঊষা এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ভি বিজয়াসাই রেড্ডিকে সভার ভাইস চেয়ারপার্সন প্যানেলের সদস্য করা হয়েছে। ভারতের সংবিধানের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মনোনীত মহিলা সদস্যকে এই প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত করা হল। আমার আশা, পিটি উষা ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে যেমন নজির রেখেছেন, প্যানেলের সদস্য হওয়ার দৌলতে তিনি সংসদেও তাঁর দায়িত্ব পালন করতে সমর্থ হবেন।
এই দুইকে প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করায় প্যানেলের মোট সদস্যসংখ্যা বেড়ে হল নয়জন। বাকি সাতজন হলেন ভুবনেশ্বর কালিতা, সরোজ পাণ্ডে, সুরেন্দ্র সিং নাগার, সুখেন্দু শেখর রায়, এল হমুমানথাইয়া, সাস্মিত পাত্র, তিরুচি শিবা। প্রশ্ন হল, পিটি ঊষার কাজ কী হবে? চেয়ারম্যান বা ডেপুটি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে তিনি সভা পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন পিটি ঊষা। এই ঘটনাও ব্যতিক্রমী। সংগঠনের আত্মপ্রকাশের পর এই প্রথম সভাপতি পদে কোনও মহিলা নির্বাচিত হলেন।
| web |
673e58b070deca11c0b095593ae032fd51863f80 | দীর্ঘ অপেক্ষার পড়ে এবার আসুস তাদের নতুন ROG Phone II লঞ্চ করে দিয়েছে। এই ফোনটি কোয়াল্কম স্ন্যাপড্র্যাগনের লেটেস্ট 855+ প্রসেসারের সঙ্গে এসেছে যা একটি ফ্ল্যাগশিপ স্ন্যাপড্র্যা ন 855 য়ের আপগ্রেটেড ভার্সান। আর এই ফোনটির ডিসপ্লে আপগ্রেড করা হতে পারে, আসলে এই ফোনে 120Hz 10-bit HDRস্ক্রিন পাওয়া যেতে পারে আর ইউজার্সরা নিয়ার স্টক UI আর গেম ফোকাসড ROG UI য়ের মধ্যে তেহেক একটি অপশান বাছতে হবে। আসুসের এই ফোনের দাম জানা জায়নি তবে আশা করা হচ্ছে যে ফোনটির দাম খুব তাড়াতাড়ি জানা যাবে।
Asus ROG Phone II তে আপনারা মেটাল গ্লাস ডিজাইন পাবেন আর এর সঙ্গে এই ফোনের ব্যাকে RGB lit ROG র লোগো দেওয়া হয়েছে। ফোনে গেম ডেভলাপার্সদের সঙ্গে পার্টনার্শিপ করে গেমিং অ্যাক্সেসারিজের সঙ্গে লঞ্চ করেছে। ফোনে 6. 59 ইঞ্চির AMOLED ডিসপ্লে দেওয়া ইয়েছে আর এর রেজিলিউশান 1080x2340 পিক্সাল। ফোনে আপনারা 10bit আর HDR সদাপোর্ট পাবেন।
এর আগেই আমরা আপনাদের জানিয়েছি যে এই ডিভাইসে কোয়াল্কম স্ন্যাপড্র্যাগন 855+ প্রসেসার আছে আর এই ফোনে গ্রাফিক্স রেন্ডারে 15% বুস্ট ডেলিভারি করে আর এটি CPU 2. 96GHz পর্যন্ত যায়। ডিভাইসে 12GB র্যামের সঙ্গে 512GB ইন্টারনাল স্টোরেজ আছে। Asus ROG Phone II ফোনে আপনারা কুলিং সিস্টেম পাবেন যা ফোনের টেম্পারেচার নর্মাল করতে পারে। ফোনে একটি 3. 5mm হেডফোন জ্যাক দেওয়া হয়েছে আর এই ফোনে চারটি মাইক্রোফোন আছে।
ক্যামেরার ক্ষেত্রে এই ফোনের ফ্রন্টে 24MP সেলফি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে আর ডিভাইসের ব্যাকে Asus 6Z র মতন ক্যামেরা সেটআপ দেওয়া হয়েছে। ফোনে একটি 48MP র ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। আর এইফ অনের ওয়ার সেন্সার আর 13MP র 125 ডিগ্রি আল্ট্রা অ্যাঙ্গেল সেন্সার আছে। ফোনে একটি 6000mAh য়ের ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে আর এই ফোনটি 30W ROG HyperCharge প্রযুক্তির সঙ্গে আসতে পারে যা কুইক চার্জ 4. 0 সাপোর্ট করে।
কোম্পানি এতে ROG Kunai Gamepad দিয়েছে যা Nintendo Switch য়ের মতন গেমিং অভিজ্ঞতা দেয়। আর ইউজার্সরা এটি দুটি অংশে ফোনের সাইডে যুক্ত করতে পারবেন আর এক সঙ্গে যুক্ত করে একটি ওয়ারলেস গেমপ্যাডের মতন ব্যাবহার করতে পারবেন।
| web |
97974038cd22d5bcc88484ee5f30b6efe2f0a2ab | পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অশান্তির অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। বোমাবাজি, গুলির লড়াই, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালট পেপার পুড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক অভিযোগ ওঠে।
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ ৫০০ বুথে পুনর্নির্বাচনের সুপারিশ গেল নির্বাচন কমিশনের কাছে। মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন জেলা থেকে অবজার্ভারদের সুপারিশ যায় কমিশনে। বেশি সুপারিশ যায় উত্তর ২৪ পরগনা, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া থেকে। তবে সব খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অশান্তির অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। বোমাবাজি, গুলির লড়াই, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালট পেপার পুড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক অভিযোগ ওঠে। কয়েক জায়গায় বুথ থেকে বার করে দেওয়া হয় ভোটকর্মীদেরই। প্রথমে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যুর খবর আসে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা, দক্ষিম ২৪ পরগনার কুলতলি, নদিয়ার শান্তিপুর থেকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে ভোটে বলির সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় যে, বার কাউন্সিলের সদস্যদের কাছ থেকে খবর পেয়ে হাইকোর্টের এজলাসে বসেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে 'অশান্তি'র ছবি দেখেন প্রধান বিচারপতি জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে অশান্তির 'মেনশন' করে সিপিএম, পিডিএস। আদালতের নির্দেশ অমান্যের অভিযোগে মামলা করার অনুমতি দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু আদালত সেই মামলা শুনবে গরমের ছুটির পর।
| web |
9dffbc1cd0444d73315763ea9eecf4c3907bf010 | স্টাফ রিপোর্টারঃ বাজারে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে চাল, ডাল, তেল, আটা, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে-বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)।
গত বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চাল-ডাল-তেল-আটা-পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন সংগঠনটির মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি ঐক্যপ্রক্রিয়ার সমন্বয়ক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হায়দুল্লাহ আল মেহেদী, মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, দলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সম্পাদকীর সদস্য মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, মো. আমজাদ হোসেন, মহানগর নেতা মো. শামিম ভুইয়া, হাবিবুর রহমান, নারী নেত্রী মিতা রহমান, আনোয়ারা বেগম প্রমুখ। তিনি বলেন, সরকার শুধুমাত্র ধনী আর লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। ফলে বাজার সিন্ডিকেট জনগণের পকেট কেটে নিয়ে যাচ্ছে। গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, গরিব মানুষের সস্তায় ক্রয়ের শেষ পণ্য মোটা চালের কেজি পৌঁছেছে ৫০ টাকায়। চালের দামের ওপর নির্ভর করছে অন্যান্য জিনিসপত্রের দামের সমীকরণ। পরিণামে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষক, শ্রমিক এবং পেশাজীবীসহ সীমিত আয়ের মানুষ। অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। চোখে পড়ছে না সারাদেশে কালোবাজারি ঠেকানোর কার্যক্রম। ন্যাপ মহাসচিব আরও বলেন, বার বার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ার উপযুক্ত কোনো কারণ হাজির করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। বরাবরের মতো কৃত্রিম সংকট, সরবরাহে ঘাটতি ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কথা বলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। খাদ্যের অভাবে এই পৃথিবীতে কখনও পণ্যের দাম বাড়াতে হয়নি, সংকট লাগেনি। সংকট লেগেছে মজুতদারদের মজুতদারিতে, আড়তদারিতে।
অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি ঐক্যপ্রক্রিয়ার সমন্বয়ক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করতে না পারলে অশুভ দিনের মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার ভারসাম্য সাধারণ মানুষের অধিকার। টিসিবি পণ্যের সহজলভ্যতা এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ করে বাংলাদেশে দুর্নীতি, কালোবাজারি ও মজুতদারি শক্ত হাতে দমন এখন সময়ের প্রয়োজন। নতুবা আমাদের ভাগ্যে অপেক্ষা করছে চরম মহামারি। অন্যান্য বক্তারা বলেন, একদিকে করোনা মহামারি, একদিকে ডেঙ্গুর ছোবল, অন্যদিকে পণ্যের ঊর্ধ্বমুখীতা নিম্নআয়ের মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। এর একমাত্র কারণ আয় কমে সবকিছুর দাম বাড়ায় অর্থ কুক্ষিগত হয়েছে পুঁজিপতির ঘরে। অসাধু ব্যবসায়ীরাও অতিরিক্ত মুনাফার লোভ সামলাতে পারছেন না।
| web |
ae96cf2e3ed8831824a9ad308e271b09e53080ec | স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৭ জুলাই। । আমতলী থানাধীন রানিখামার রাবার বাগানে গৃহবধূ বর্ণালী বিশ্বাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতার স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামী।
এদিন সকালে প্রতিবেশীরা প্রথম মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন অভিযোগ করেন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে মৃতদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয় যাতে ঘটনাকে আত্মহত্যার রূপ দেয়া যায়।
পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে তবে খবর লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই স্পষ্ট জানা যাবে মৃত্যুর কারণ।
| web |
459cd3f639fe5d8e0f1524fc81cd0c8e2df2932f | আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ.........আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি আয়িশা রা. -কে জিজ্ঞাসা করেন, রমযান মাসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত কেমন ছিল ? তিনি বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে এবং অন্যান্য সময় (রাতের বেলা) এগার রাকাআতের অধিক সালাত আদায় করতেন না। তিনি চার রাকআত সালাত আদায় করতেন। তুমি সেই সালাতের সৌন্দর্য ও দীর্ঘত্ব সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর চার রাকাআত সালাত আদায় করতেন, এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘত্ব সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর তিনি তিন রাকাআত (বিতর) সালাত আদায় করতেন। আয়িশা রা. বলেন, (একদিন) আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি কি বিতরের আগে ঘুমিয়ে থাকেন ? তিনি ইরশাদ করলেন : আমার চোখ দুটি ঘুমায়, কিন্তু আমার হৃদয় ঘুমায় না।
| web |
e865b4fe50e86306a83235151537c6ac808d6c53 | চট্টগ্রামের হাটহাজারীর হালদা নদী থেকে ৪ হাজার মিটার ঘেরা জাল জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
রবিবার (৩ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত হালদা নদীর ছায়ারচর ও কচুখাইন এলাকা থেকে এসব জাল জব্দ করা হয়।
সদরঘাট নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, হালদা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পাতানো অবস্থায় অবৈধ দুটি ঘের জাল জব্দ করা হয়েছে। এসব জালের দৈঘ্য ৪ হাজার মিটার।
| web |
90de4753b5ec067de7508663821ddf1a361e925d | চতুর্থ দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষায় লর্ডস টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ১৩২ রান তোলা নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে করেছে ২৮৫ রান। এতে করে ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৭ রানের। তৃতীয় দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ২১৬ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। আর তাই ম্যাচ জিততে ইংলিশদের প্রয়োজন আরও ৬১ রান, অপরদিকে কিউইদের প্রয়োজন পাঁচ উইকেট। উইকেটে আছেন জো রুট। ম্যাচের যে অবস্থা, তাতে চতুর্থ দিনই এই টেস্টের ফল দেখতে পাবে ক্রিকেট ভক্তরা।
এর আগে, ২২৭ রানে এগিয়ে থেকে চার উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে নিউজিল্যান্ড। সেঞ্চুরির প্রত্যাশায় দিন শুরু হয়েছিল দুই ব্যাটার ড্যারিল মিচেল ও টম ব্লান্ডেলের। এ দিনের শুরুর ভাগেই কাঙ্খিত সেঞ্চুরি তুলে নেন মিচেল।
সেঞ্চুরি করে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মিচেল। স্টুয়ার্ট ব্রডের অসাধারণ এক ডেলিভারি ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক বেন ফোকসের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তার ১০৮ রানের ইনিংসে ছিল ১২টি চারের মার।
মিচেল ও ব্লান্ডেলের ১৯৫ রানের জুটি ভাঙার পরই মূলত খেই হারিয়ে ফেলে কিউইরা। সেই ওভারের পরের বলেই অপ্রত্যাশিত রানআউটের শিকার হন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। এরপরের বলে কাইল জেমিসনকে বোল্ড করে ফেরান ব্রড।
৯৭ রানে ব্যাটিং শুরু করা মিচেল সেঞ্চুরি পেলেও চাপে পড়ে সেঞ্চুরি পাননি ৯০ রানে ব্যাটিং শুরু করা ব্লান্ডেল। জেমস অ্যান্ডারসনের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। ৩৪ রানে শেষ ছয় উইকেট হারায় কিউইরা। ব্রড এবং ম্যাথু পটস দুজনই নেন তিনটি করে উইকেট।
২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩১ থেকে ৬৯ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ইংলিশরা। একে একে ফিরে যান অ্যালেক্স লিস (২০), জ্যাক ক্রলি (৯), অলি পোপ (১০) ও জনি বেয়ারস্টো (১৬)।
এরপর জো রুটের সঙ্গে ৯০ রানের জুটি গড়েন নতুন অধিনায়ক বেন স্টোকস। কাইল জেমিসনের চতুর্থ শিকার হয়ে ১১০ বলে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৪ রান করে ফিরে যান তিনি। অবশ্য ব্যক্তিগত এক রানে থাকা অবস্থাতেই জীবন পান স্টোকস।
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে বোল্ড হয়েছিলেন স্টোকস। প্যাভিলিয়নের পথও ধরেছিলেন তিনি। যদিও আম্পায়াররা ওভারস্টেপের কারণে নো বলের সিদ্ধান্ত দেয়ায় বেঁচে যান তিনি। ১৩১ বল খেলে ৭৭ রানে উইকেটে আছেন রুট। ৯ রানে তাকে সঙ্গ দেবেন ফোকস।
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
| web |
ee22434adb6eda5013d2a2c15b3d22aac5a281e5 | কব্জির জাদুতে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানানো তার নিত্যকর্ম। এর সঙ্গে রয়েছে শেষ দিকে নেমে মারকুটে ব্যাটিং। ফিল্ডিংয়েও সদা তৎপর শ্রীলঙ্কার তারকা অলরাউন্ডার ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য দুর্দান্ত এক প্যাকেজ তিনি।
বোলিংয়ে সাফল্য পাচ্ছেন বেশি। স্বাভাবিকভাবেই সবাই তাকে দেখেন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবেই। এর বাইরে নন সতীর্থরাও।
"কেউ যদি ওর বোলিং ধরতে না পারে, তাহলে ও নিশ্চিত (ব্যাটসম্যানকে) চেপে ধরবে," হাসারাঙ্গার ব্যাপারে এভাবেই নিজের মূল্যায়ন জানালেন শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ভানুকা রাজাপাকসে। মূলত লেগ স্পিন দিয়েই নিজেকে সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হাসারাঙ্গার নজর এখন আরও ওপরে।
জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ২০১৭ সালে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে যাত্রা শুরুর জন্য ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে হাসারাঙ্গাকে। এরপর এই সংস্করণে শুধু শ্রীলঙ্কাই নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন হাসারাঙ্গা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকের পর থেকে হাসারাঙ্গার (৭৫) চেয়ে বেশি উইকেট শিকার করতে পারেনি বিশ্বের আর কোনো বোলার। সবশেষ দুটি বড় আসর- ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চলতি বছরের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার সেরা পারফরমার ছিলেন তিনি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া এশিয়া কাপে দলের সর্বোচ্চ ৯ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। পাশাপাশি ৬৬ রান করে আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে ২১ বলে ৩৬ রানের সঙ্গে বল হাতেও ৩ উইকেট নেন ২৫ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার।
লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকাও হাসারাঙ্গার হাতে বল তুলে দিয়ে সবসময় নির্ভার থাকেন। আইসিসি ডিজিটালের ফিচার ভিডিওতে হাসারাঙ্গাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন শানাকা।
তবে অধিনায়কের চোখে বল হাতে নির্ভরতার প্রতীক হলেও, হাসারাঙ্গার দাবি ভিন্ন। তিনি এখন নিজেকে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবেই ভাবছেন। সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে ব্যাটিংয়ে বাড়তি মনোযোগ দিচ্ছেন তিনি।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আসরের সর্বোচ্চ ১৬ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। এর মধ্যে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করা হ্যাটট্রিকও। পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারসেরা ৭১ রানের ইনিংসসহ পাঁচ ইনিংসে ১৪৮ স্ট্রাইকরেটে করেছিলেন ১১৯ রান।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে ১৭৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে পাঁচ নম্বরে রয়েছেন হাসারাঙ্গা। তার লক্ষ্য চূড়া, এখন যেখানে আছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
নিজের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি মাঠে দায়িত্ব নেওয়া ও তরুণ উজ্জীবিত করার বিষয়টি নজর কেড়েছে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ও বর্তমানে জাতীয় দলের পরামর্শক মাহেলা জয়াবর্ধনের জন্য। তার মতে, শ্রীলঙ্কার উঠতি প্রজন্মের জন্য বড় অনুপ্রেরণা হবেন হাসারাঙ্গা।
| web |
65684cbca5d2a335c3ca577a96aeb2b0ed842421 | অনেক তর্ক এবং বিতর্কের মধ্য দিয়ে গেলেও ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বলছে ঘাটাল থেকে জয়ী হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী দেব। সাত লক্ষ সতেরো হাজার নশো ঊনষাট টি ভোট পেয়েছেন তিনি। মানুষের ভালোবাসা এবং বিশ্বাস অর্জন করতে যে তিনি সক্ষম এই সংখ্যাই তার সব থেকে বড় প্রমাণ।
নিঃসন্দেহে দেবের এই ডাকে সাড়া দেবে অসংখ্য সাধারণ মানুষ এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই দ্রুত এগিয়ে চলবে দেবের বিজয়রথ।
| web |
f44da1215f5a2f2106664857202546395ebbbd37 | #হলদিয়া : আবারও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাক্ষী থাকল হলদিয়ার পৌরবাসী। এবার আগুন লাগলো শহরের কেন্দ্রবিন্দু দুর্গাচকের একটি পার্কের সামনে ফুডস্টলে। সম্প্রতি অতীতে বারবার অগ্নিক সংযোগের ঘটনার সাক্ষী রেখেছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল শহর। তবে অগ্নিসংযোগ এর ঘটনাগুলি ঘটেছিল শিল্পাঞ্চল শহরের বিভিন্ন কারখানায়। এবার হলদিয়ার শহরের মূল কেন্দ্রবিন্দু দুর্গাচক এলাকার সরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ইকো পার্কের সামনে একটি ফুড স্টলে আগুন লাগে বুধবার সন্ধে পৌনে সাতটা নাগাদ। আচমকা আগুন লাগে হলদিয়ার দুর্গাচকে একটি ফাস্টফুড তৈরীর দোকানে।
দোকানে থাকা দুটি গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লাগে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের চেহারা ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। দুর্গাচকে সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া ইকো পার্কের সামনে এমনই ঘটনা ঘটেছে। চারিদিকে দুর্গাচক আবাসন, পথ চলতি মানুষের ভিড়, রাস্তার গলির ধারেই একটি ভ্রাম্যমান গাড়িতে ফাস্টফুড তৈরি করে বিক্রি করছিল। তার পাশেই এক পথচারী মোটরসাইকেল রেখে মোমো কিনছিলেন। হঠাৎই ভ্রাম্যমান গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয় আর দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ বিকল পাম্প, শীতে পানীয় জল সংকট পাঁশকুড়ায়!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
| web |
b4c965f3eff0e35904c0bb6b418937f5 | ঘুম উড়বে চীনের! সীমান্ত রক্ষার জন্য রাশিয়া থেকে ৩৩ টি লড়াকু বিমান কেনার প্রস্তাব পাশ ভারতের । India Rag\nঘুম উড়বে চীনের! সীমান্ত রক্ষার জন্য রাশিয়া থেকে ৩৩ টি লড়াকু বিমান কেনার প্রস্তাব পাশ ভারতের\nনয়া দিল্লীঃ চীনের (China) সাথে বেড়ে চলা সীমান্ত বিবাদের মধ্যে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাশিয়ার (Russia) থেকে ৩৩ টি নতুন ফাইটার জেট কেনার অনুমতি দিয়ে দিলেন। ভারত ১২ টি Su-30MKI আর ২১ টি MiG-29 বিমান কিনবে। এর সাথে সাথে বায়ুসেনা কাছে আগে থেকেই মজুত ৫৯ টি MiG-29 কে আরও উন্নত করা হবে। কেনা আর উন্নত করার এই পুরো প্রক্রিয়ার জন্য ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা খরচ হবে। ভারতের প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদ (Defense Aquisition Council) তিন সেনার প্রয়োজনের জন্য মোট ৩৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকার প্রস্তাবকে মঞ্জুরি দিয়েছে। আরেকদিকে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) রাশিয়ার (Russia) রাষ্ট্রপতি পুতিনকে (Vladimir Putin) ফোন করেন। রাশিয়ার সংবিধান সংশোধনের জন্য নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) পুতিনকে শুভেচ্ছা জানান।\nপ্রতিরক্ষা মন্ত্রালয়ের তরফ থেকে জারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, বর্তমান পরিস্থিতি আর সেনার প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে হওয়া বৈঠকে এই প্রস্তাবকে মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে।\nবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রোজেক্টে ভারতে প্রতিরক্ষা উপকরণের ম্যানুফ্যাকচারিংকে আরও বড় স্তরে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারত অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী ভারতে প্রতিরক্ষা উপকরণের ম্যানুফ্যাকচারিং এর কাজ করা হবে। ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রির জন্য ৩১ হাজার ১৩০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাশ হয়েছে। প্রতিরক্ষা উপকরণ ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি আর কয়েকটি MSME এর সাথে মিলে বিকশিত করা হবে।\nDRDO স্বদেশী কোম্পানি গুলোর সাথে টেকনোলোজি শেয়ার করার জন্য এই প্রোজেক্ট সম্পূর্ণ করার আরও সহজ হয়ে আবে। এরমধ্যে পিনাকা হাতিয়ার, বিএমপি হাতিয়ার, উপকরণের আপগ্রেডেশন, সেনার জন্য সফটওয়ার আধারিত রেডিও যুক্ত আছে। এছাড়াও দীর্ঘ দূরত্বে ফায়ার করা ক্রুজ মিসাইল আর নেভি-এয়ারফোর্সের জন্য Astra মিসাইলের নামও আছে।\nউল্লেখ্য, ভারত আর চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিবাদ বেড়েই চলেছে। তিনটি রাউন্ডে হওয়ার সৈন্য আধিকারিক বৈঠকের পরেও চীন পিছু হটার নাম নিচ্ছে না। ভারতের তরফ থেকে দেশের অখণ্ডতা আর সার্বভৌম ক্ষমতা রক্ষার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সুরক্ষার প্রসঙ্গ টেনে ভারত ৫৯ টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। আর এরফলে চীন কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে।
| web |
6f3100974644f8dec0b7e2304b9d0e7b78b915b5 | কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম বছর পূর্তি ও গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আনন্দ মিছিল হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টায় কানাইঘাট বাজারে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালনের লক্ষ্যে দলের নেতকর্মীরা মিছিল বের করেন। আনন্দ মিছিল পরবর্তী বাজার ত্রিমোহনী পয়েন্টে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম হারুনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন, ফারুক আহমদ চৌধুরী, কাউন্সিলর মাসুক আহমদ, ফারুক আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিংকু চক্রবর্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সুবেদার আফতাব উদ্দিন, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মুফিজ উদ্দিন বাবলু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাউন্সিলর বিলাল আহমদ, সম বিষয়ক সম্পাদক হোসন আহমদ, উপ-প্রচার সম্পাদক মীর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য রফিক আহমদ, কাউন্সিলর তাজ উদ্দিন, আব্দুল লতিফ, মুহিবুর রহমান, ইকবাল হোসাইন, শামীম উদ্দিন, পৌর আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক খাজা শাহিন আহমদ, আ'লীগনেতা মখদ্দুছ আলী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বয়াক এনামুল হক সহ উপজেলা যুবলীগ, শ্রমিলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
| web |
4578925563221b269e805b793ebdb246c907e76f | নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পুরসভা নির্বাচনে ভরাডুবি বিজেপির। একদিকে রাজ্যজুড়ে যখন সবুজ ঝড়। তখন রাজ্যের একটা পুরসভাতেও বোর্ড গঠন করতে সক্ষম হলনা বিজেপি। ওপর দিকে বামেদের হাতে এসেছে ১ টি পুরসভা। নদীয়ার তাহেরপুর পুরসভা এসেছে বামেদের দখলে। অন্যান্যরা পেয়েছে ১ টি পুরসভা। ৪ টি পুরসভায় এখনও বোর্ড গঠন করতে পারেনি কোনও দল।
| web |
ca90ca7f2c8ca4cc8e8bbfa19f75799610671ddf | মেষঃ আপনি প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়তে পারেন। আজকে আপনি ঘরের ছোট সদস্য কে নিয়ে পার্কে বা শপিং মলে যেতে পারেন। আপনি এবং আপনার স্ত্রী আজ একটি বিস্ময়কর খবর পেতে পারেন। আপনি যদি তাদের সমর্থন করেন তবে আপনার শিশুরা তাদের শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ে ভাল ফল করতে পারে। আপনি একটি উত্তেজনাপূর্ণ নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন- যা আপনাকে আর্থিকভাবে লাভবান করতে পারে। আপনার কাজ হবে আরাম করা- কারণ আপনি আপনার প্রিয়জনের মাধ্যমে সুখ- সাচ্ছন্দ্য এবং পরমানন্দ খুঁজে পাবেন। আপনি আপনার সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা মনে করতে পারেন যা অনেক ঝগড়ার ফলে সৃষ্টি হবে। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গৃহীত ভ্রমণ লম্বা দৌড়ে লাভদায়ক প্রমাণিত হবে। বাড়িতে মানুষের সঙ্গে আপনি উত্তেজনাপূর্ণ এবং ভিন্ন কিছু করতে পারেন।
বৃষঃ কোন বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া কোন বিশেষ প্রশংসা আপনাকে খুশি করবে। কারণ আপনি আপনার জীবন গাছের মত করে তৈরী করেছেন, যে নিজে রোদে দাঁডিয়ে থেকে ঝলসানো রোদ সহ্য করে এবং অপরকে ছায়া দেয়। আর্থিক লাভ-যা আজকের দিনে প্রত্যাশিত ছিল-তা বিলম্বিত হবে। বাচ্চাদের সাথে বিতর্কের ফলে হতাশাগ্রস্ত হবেন। প্রেমঘটিত বিষয় আজ পরাজিত হতে পারে। উত্তেজনার মেয়াদ বজায় থাকলেও পরিবারের সমর্থন আপনাকে সাহায্য করবে। আপনার প্রণয়ীর সঙ্গ ছাড়া আপনি এক শূন্যতার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চলেছেন মনের কথা বলতে ভয় পাবেন না। আপনার স্ত্রীর অশিষ্টতা সারাদিন আপনাকে বিচলিত রাখতে পারে। ঝোপের চারপাশে প্রহার করার চেয়ে সত্য কথা বলা ভাল এবং ভবিষ্যতের কোনও ক্ষতি এড়াতে সততার সাথে কাজ করার চেয়ে ভাল।
মিথুনঃ আজ, আপনি বুঝতে পারবেন যে প্রেমই সবকিছু বিকল্প। আজকে আপনি টিভি বা মোবাইলে কোনো সিনেমা দেখতে এতো ব্যাস্ত হয়ে পড়বেন যে দরকারি কাজের কথা ভুলে যাবেন। বিবাহিত দম্পতিরা একসাথে বসবাস করে, কিন্তু এটা সবসময় রোমান্টিক হয় না। তবে আজ সত্যিই সত্যিই রোমান্টিক হবে। শীতল জল পান করা আপনার স্বাস্থ্যকে আজ নষ্ট করতে পারে। এমন একটি দিন যেখানে বিশ্রাম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে-যেহেতু আপনি সাম্প্রতিককালে প্রচুর মানসিক চাপের মুখোমুখি হয়েছেন- বিনোদন এবং আমোদপ্রমোদ আপনাকে আয়েস করতে সাহায্য করবে। দলে জড়িত থাকা বিনোদনমূলক হলেও খরচাসাপেক্ষ হবে- বিশেষত যদি আপনি অন্যের পিছনে খরচ করা বন্ধ না করেন। আপনি কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্যের মাধ্যমে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।
কর্কটঃ নতুন টাকাপয়সা বানানোর সুযোগ লাভজনক হতে পারে। পরিবারের কোনও সদস্যের আচরণের কারণে আপনি বিরক্ত থাকতে পারেন। আপনার তাদের সাথে কথা বলা দরকার। আপনার প্রিয়তমার দিনটা ভালোই কাটে, আজকে নিজের জন্য সময় বার করুন আর নিজের ঘাটতি এবং ভালোর সন্ধান করুন। এটি আপনার ব্যাক্তিত্বৰ মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। দীর্ঘদিন ধরে কাজের চাপ আপনার বিবাহিত জীবনকে ব্যহত করছিল। আজ নিজেকে কঠোর চাপ দেবেন না- আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমের দিকেই মনে হচ্ছে এবং স্পষ্টতই আপনার বিশ্রামের প্রয়োজন। আর্থিক দিকে উন্নতি নিশ্চিত। গৃহস্থালীর দায়িত্ব এড়িয়ে চলা এবং টাকাপয়সা নিয়ে কলহ আপনার বৈবাহিক সুখ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আপনি আপনার স্ত্রীর সঙ্গে একটি অসাধারণ সময় ব্যয় করবেন।
সিংহঃ যেহেতু আপনি ভয়রূপী এক ভয়ঙ্কর দৈত্যের সাথে লড়ছেন, কাজেই কিছু ইতিবাচক চিন্তার ছাঁচে নিজের ভাবনাকে গড়ে নিন অন্যথায় আপনি এই ঘোর দৈত্যের নিষ্ক্রিয় এবং নির্মম শিকারে পরিণত হবেন। আপনি অন্যদের উপর ব্যয় করতে পছন্দ করেন। ব্যক্তিগত জীবন ছাড়াও কিছু দাতব্য কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখবেন। এটা আপনাকে মানসিক শান্তি দেবে কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে কোন সাহায্য করবে না। স্ত্রীর ব্যাপারে অযথা নাক গলাবেন না- তাতে স্ত্রী রুষ্ট হবে। এর থেকে বরং নিজের দিকে নজর দিন। কিছু জিনিসে হস্তক্ষেপ করা যেতে পারে নাহলে নির্ভরশীলতা এসে যাবে। অর্থের অভাব পরিবারে আজ মতবিরোধের কারণ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলার আগে ভাল করে চিন্তা করুন এবং তাদের পরামর্শ নিন।
কন্যাঃ আপনার স্ত্রীর স্বাস্হ্য চাপ এবং উদ্বেগের কারণ হতে পারে। আজ আপনি একটি হৃদয়কে ভঙ্গ হওয়া থেকে বাঁচাবেন। আপনার স্ত্রীর স্বাস্হ্য আপনাকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে রাখবে। আজ সেরকমই একটি দিন যখন বিষয়গুলি আপনার ইচ্ছামাফিক চলে না। ব্যবসা আর ব্যাবসার চেয়ে বেশি আজকে আপনি নিজের পরিবারের লোকজনের সাথে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করবেন। এই কারণে আপনার পরিবারের মধ্যে সাদৃশ্য আসবে। আপনার খারাপ মেজাজ আপনার জীবন সঙ্গীনীর কিছু বিশেষ চমকপ্রদ জিনিসের দ্বারা ঠিক হয়ে যাবে। আজকে আপনি বাচ্ছাদের সাথে বাচ্ছাদের মতনি ব্যবহার করবেন যে কারণে আপনার বাছা সারাদিন আপনাকে জড়িয়ে ধরে থাকবে। নিজেকে শারীরিক কসরতে ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করুন কারণ খালি মস্তিষ্কই হল শয়তানের কর্মশালা।
তুলাঃ সামাজিক জীবনেও অবহেলা করবেন না। আপনার ব্যস্ত সময়ের মধ্যে থেকে সময় বের করে সপরিবারে পার্টিতে যান। এতে শুধু যে মন ভালো থাকবে তাই নয়, এতে আপনার সঙ্কোচও সরে যাবে। আপনার সঙ্গী আপনাকে নিচু দেখাবে এবং এরফলে আপনি বিবাহ ভেঙে দিতে বাধ্য হবেন। বাচ্চাদের সাথে খেলা আপনাকে এর চমৎকার নিরাময়কারী অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। আপনার অর্থ তখনই আপনার কাজে আসে যখন আপনি নিজেকে অতিরঞ্জিত ব্যয় করা থেকে বিরত রাখেন, আজ আপনি এই জিনিসটি ভালভাবে বুঝতে পারবেন। স্ত্রীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার হস্তক্ষেপ তাকে ক্ষিপ্র করতে পারে। মেজাজ নষ্ট করা এড়াতে তার অনুমতি নিন। আপনি সহজেই সমস্যা এড়াতে পারবেন। ছোট ব্যবসা সংস্থাগুলি তাদের কর্মচারীদের মেজাজ বাড়িয়ে তুলতে একটি ছোট্ট পার্টি দিয়ে তাদের আচরণ করতে পারে।
বৃশ্চিকঃ আপনি আপনার পরিবারের অভিপ্রায়ের জন্য আপনার সুখ ত্যাগ করবেন। এবং এটি আগ্রহ এবং প্রত্যাশাবিহীন হবে। বিনোদন এবং রূপচর্চায় বেশী খরচ নয়। আপনার বন্ধুদের যে মুহূর্তে আপনার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তখন তারা আপনাকে হতাশ করবে। আপনি বড় কিছুর অংশ হয়ে আপনার প্রশংসা এবং পুরষ্কার জয় করবেন। খুব ছোট কোন সমস্যা নিয়ে আপনার প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক আন্তরিকতাহীন হয়ে উঠতে পারে। এই রাশির লোকেরা খুব কৌতূহলোদ্দীপক হয়. এরা কখনো লোকেদের মাঝখানে থেকে খুশি হয় তো কখনো একা থেকে যদিও একা থাকা এতটা সহজ নয় তবুও আজকে আপনি নিজের জন্য কিছু সময় বার করতে পারবেন। আপনার স্ত্রী আজ আপনার মর্যাদা বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারেন। বন্ধুরা সহায়ক হবে এবং আপনাকে খুশি রাখবে।
ধনুঃ এক পরিতৃপ্ত জীবনের জন্য আপনার মানসিক কাঠিন্য বৃদ্ধি করুন। আপনার বাসস্থান সংক্রান্ত বিনিয়োগ লাভজনক হবে না। যদি আপনি একটি পার্টির পরিকল্পনা করেন তাহলে আপনার সবথেকে ভাল বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানান- সেখানে অনেক মানুষই থাকবে যারা আপনাকে উৎসাহিত করবে। আজ প্রেমঘটিত আকস্মিক সাক্ষাৎ দেখা যাচ্ছে। আপনি আজ অজানা উত্স থেকে অর্থ অর্জন করতে পারেন যা আপনার অনেক আর্থিক সমস্যার সমাধান করবে। আপনার বড় অনুষ্ঠানে সবাইকেই আমন্ত্রণ জানান- আজকে আপনার সেই অতিরিক্ত শক্তিটি আছে যা আপনাকে আপনার দলের জন্য অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে। প্রেমের মানুষটির সাথে ক্যান্ডিফ্লস এবং টফি ভাগ করে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তেলমশলাযুক্ত এবং উচ্চ কোলেস্টেরল খাবার এড়ানোর চেষ্টা করুন।
মকরঃ হতাশ এবং অবসাদগ্রস্ত হবেন না। আজ, অবিচ্ছিন্ন অর্থের প্রবাহ থাকবে এবং আজ ধন-সম্পদ জড়ো করতে আপনার অসুবিধা হতে পারে। কোন বন্ধু তার ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার উপদেশ চাইতে পারে। ভালোবাসার মানুষের চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করবেন না। নিজের মন কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিখুন কেননা অনেক বার আপনি আপনার মনের কথা শুনে মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলেন। আজ আর্থিক ক্ষতি হবে বলে মনে হচ্ছে যদি আপনি অন্যদের কথা মেনে বিনিয়োগ করেন। গৃহস্থালীর দায়িত্ব এড়িয়ে চলা এবং টাকাপয়সা নিয়ে কলহ আপনার বৈবাহিক সুখ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আজ পরম সুখের দিন। আপনার যোগাযোগ কৌশল এবং কর্মদক্ষতা হৃদয়গ্রাহী হবে। আপনি ভালোবাসার প্রকৃত উচ্ছ্বাসের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।
কুম্ভঃ একটি পারিবারিক জমায়েতে আপনি মধ্যমণি হয়ে উঠবেন। আপনার প্রণয়ীর রূঢ় শব্দের কারণে আপনার মেজাজ বিচলিত হতে পারে। আজকে আপনি আপনার জীবন সঙ্গীর সাথে সময় কাটানোর জন্য অফিস থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসতে পারেন কিন্তূ রাস্তায় খুব ভিড় থাকার কারণে আপনি এটা করতে অক্ষম হবেন। যেমন দাম্পত্য জীবন সে চেয়েছিল তা না হওয়ার জন্য আপনার স্ত্রী আপনার ওপর রাগে ফেটে পড়তে পারেন। আজ কিছুটা বেশি ঘুমোলে আপনি শক্তির মুকুট অনুভব করতে পারেন। নতুন চুক্তিগুলি লাভজনক মনে হতে পারে কিন্তু আকাঙ্খিত অনুযায়ী লাভ আনবে না- আর্থিক বিনিয়োগের সময় কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনি মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে সামান্য নীচু থাকবেন- একটু বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাদ্য আপনার শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
মীনঃ কোন গাড়ি চালানোর সময়ে সতর্ক থাকুন বিশেষত বাঁকগুলিতে। কারোর অবহেলা হয়তো আপনার জন্য কিছু সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। আকস্মিক টাকাকড়ির আগমন আপনার রসিদগুলির এবং তাত্ক্ষণিক খরচার খেয়াল রাখবে। সাময়িক সঙ্গীর সঙ্গে ব্যাক্তিগত ব্যাপার আলোচনা করবেন না। আশাবাদী হোন এবং উজ্জ্বল দিকটি দেখুন। আপনার প্রত্যয়ী প্রত্যাশাই আপনার আশা এবং আকাঙ্খা বাস্তবায়নের দ্বার উন্মুক্ত করবে। আজ ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সহায়তায় কিছু ব্যবসায়ী আর্থিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অর্থ আপনার অনেক ঝামেলা কাটিয়ে উঠতে পারে। পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে আনন্দমুখর সময়। সমস্যায় আপনার দ্রুত আচরণ করার ক্ষমতার জন্য আপনি স্বীকৃতি পাবেন। আজ, আপনি আপনার সঙ্গীর প্রেম জীবনের সমস্ত যন্ত্রণা ভোলার অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।
| web |
cffabcba05e2b1ee1ca38b5561165fe452497c4a | বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া চেতনার পরিপন্থি যেকোন ইস্যুতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি সদা তৎপর রয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। তাই সবধরণের কর্মকান্ড গতিশীল ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সুসংগঠিত করার লক্ষে সংগঠনটির প্রথম পঞ্চবার্ষিকী সম্মেলন আগামী ৩০ মে অনুষ্ঠিত হবে।
| web |
3374b7c9ebde9b43cec23d6f9af1d58689506b75 | শুধু তাইই নয়,এই বিতর্কের মাঝে শাইরিন খান নামে এক ইউজার্স কাবিশের প্রতি পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন, 'আপনি কেন এসএম-এ অবলা প্রাণী প্রদর্শনের প্রয়োজন বোধ করলেন ? তাদের দূরে রাখুন, দয়া করে । ' উত্তরে কাবিশ আজিজ লেখেন,'কখনও কখনও এই বিদ্বেষীদের উত্তর হৃদয়ে শান্তি দেয় । ' নিজেকে একজন সাংবাদিক দাবি করা কাবিশ আজিজের এই প্রকার বিদ্বেষমূলক মানসিকতায় সোশ্যাল মিডিয়ার নিন্দার ঝড় উঠেছে । মুসলিমদের পক্ষ থেকে তাকে সমর্থন করলেও হিন্দুরা এর নিন্দা করেছেন।
বিবেক পন্ডিত লিখেছেন,'মাংস খাওয়ার পর যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো ধর্মের হতে পারে, হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টান। তারা কখনই পশুদের প্রতি ভালবাসা রাখতে পারে না। আপনি শুধু ভান করতে পারেন । '।
| web |
ef83a29975adcb6d9c3b7265e8328ee41034f77a479eac8f0be3689979905578 | ইতিহাস ও রাজা গুপিচন্দ্ৰ
গোরক্ষনাথঃ গোরক্ষনাথের জন্ম সম্বন্ধে নাথ-সাহিত্যে আছে যে শিবের মন্তকদেশ থেকে গোরক্ষনাথের জন্ম। মীননাথ প্রভৃতি নাথ-সিদ্ধাগণ ভবানীর রূপে মুগ্ধ হলেও গোরক্ষনাথ দেবীকে জননীরূপে কামনা করেন। কিন্তু দেবী তবু গোলক্ষকে মাঠে 'গরু চরাইতে' অভিশাপ দেন। একদিন দেবী সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় মাঠে গিয়ে গোরক্ষকে কামনা করেন। গোরক্ষ বিল্বপত্রদ্বারা দেবীর পূজা এবং আচছাদনের কাজ সেরে ফেললেও দেবী তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে গোরক্ষের উদরে মাছিরূপে প্ররেশ করেন। গোবক্ষ তাঁকে উৎপীড়ন করে গুহ্যপথে বের করে দেন। পরে দেবীর নির্দেশে মহাদেব কর্তৃক এক কুমারীকে পাণি গ্রহণ করতে আদিষ্ট হলে প্রথম দর্শনেই গোরক্ষনাথ কন্যাকে মা, মা, বলে ডাকতে থাকেন। 'মীন চেতনে' আছে, -
স্তন খাইতে চাহে শিশু কান্দে হোয়। হোয়া। তা দেখিয়া রাজকন্য।এ বলে আচাভূয়া ।। ভাল স্বামী পাইল আমি দুগ্ধ খাইতে চায়। শুনিয়া কি বলিব মোর বাপ আর মায় ।।
গ্রীয়ারসন সাহেবের উল্লিখিত এক নেপালী প্রবাদমতে পঞ্চ পাণ্ডবের মহাপ্রস্থান কালে এক ভীম সেন ব্যতীত আর সকলেই মৃত্যুমুখে পতিত হলে গোরক্ষনাথ ভীম সেনকে নেপালের রাজা করে দেন। "পশ্চিম ভারতের প্রবাদ অনুসারে গোরক্ষনাথ সত্যযুগে পাঞ্জাবে, ত্রেতায় গোরখপুরে, দ্বাপরে হরমুজে এবং কলিতে কাটিয়াগড়ে অবস্থিত।" নেপালের ইতিহাস প্রণেতা রাইট সাহেবের মতে পঞ্চম খৃষ্টাব্দে বাজা ববদেবের সময়ে নেপালে গোরক্ষনাথের প্রাদুর্ভাব । সিলভ্যা লেভি (Sylvian Levi) তাঁর 'লিনেপাল' (Le Nepal) গ্রন্থে সপ্তম খৃষ্টাব্দে রাজা নরেন্দ্র দেবের সময়ে গোরক্ষনাথের নেপালে বিদ্যমান থাকার কথা বলেছেন।
কছ প্রদেশের প্রবাদ অনুসারে দ্বাদশ শতকের সাধু পুরুষ ধরসনাথের সতীর্থ ছিলেন গোরক্ষনাথ। মতান্তরে ধরমনাথ চতুর্দশ পঞ্চদশ শতকের লোক বলে বিবেচিত হন। সেই হিসাবে গোরক্ষনাথও ঐ সময়কার লোক হয়ে পড়েন। খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে কবীরের সঙ্গে গোরক্ষনাথের তর্ক-যুদ্ধের কথা উত্তর ভাবতে প্রচলিত আছে।
সাধু যোগী, পুরুষ হিসাবে গোরক্ষনাথের খ্যাতি উপমহাদেশের সর্বত্র বিদ্যমান। উত্তর ভারতের গোরখপুর সহর তাঁর নামের সঙ্গে সংযুক্ত। পাঞ্জাব এবং রাজপুতনার প্রভাবশালী কানফাঁট। যোগীর। তাঁরই প্রবর্তিত ধর্মের মতাবলম্বী। তিব্বতের ডেঙ্গুর গ্রন্থমালায় 'বায়ুতত্ত্ব ভাবনোপদেশ' নামক এক গ্রন্থ গোরক্ষনাথ কর্তৃক রচিত হবার খবর পাওয়া যায়। সংস্কৃত 'গোরক্ষ সংহিতা' 'গোরক্ষসিদ্ধান্ত' প্রভৃতি গ্রন্থে নাকি তাঁর উপদেশাবলী লিপিবদ্ধ আছে । অবশ্য নেপালে এবং তিব্বতে গোরক্ষনাথকে ধর্মত্যাগী এবং শৈব ধর্মালম্বী বলে অভিহিত করা হয়।
বালাদেশেও গোরক্ষনাথের প্রভাব এবং খ্যাতি যথেষ্ট আছে। মীননাথ আদি গুরু হলেও গোরক্ষনাথ এদেশের যোগী সম্প্রদায়ের প্রধান গুরু এবং নাথ ধর্ম যে প্রকৃত পক্ষে গোরক্ষ ১। দলপতরাম প্রাণ জীবন থক্করের প্রকাশিত উৎকৃণ লিপি।
গ্রুপিচন্দ্রের সন্ন্যাস
নাথেরই ধর্ম, তা এদেশের নাধ-সম্প্রদায়ের শিক্ষিত মহলও স্বীকার করেন। বাঙ্লাদেশে প্রচলিত সমুদয় নাথ-সাহিত্যের কেন্দ্র পুরুষ গোরক্ষনাথ - - -মীননাথ নয়। গোরক্ষ বিজয়, মীনচেতন প্রভৃতি গ্রন্থের একচ্ছত্র নায়ক গোরক্ষনাথ। গুপিচন্দ্রের বিভিন্ন কাহিনীতে গোরক্ষনাথেরই জয় জয়কার।
আলোচ্য পুঁথিতে যদিও হাড়িপার গুণকীর্তনই কাহিনীর অন্যতম প্রধান বক্তব্য বিষয়, তথাপি গোরক্ষনাথের প্রধান্য এখানেও ক্ষুণ্ন হয়নি। এখানে গোরক্ষনাথের অপর নাম হরিহর এবং গোরক্ষনাথ ও শিব অভিন্ন। তাঁর জন্ম বৃত্তান্ত সম্পর্কে আলোচ্য পুঁথিতে বলা হয়েছে যে অনাদ্যের ঘাম থেকে চণ্ডিকার জন্ম এবং অনাদ্য ও চণ্ডিকার মিলনে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের উৎপত্তি। অনাদ্য সংসার সৃষ্টি করার মানসে এঁদের একজনেব কাছে চণ্ডিকাকে সমর্পন করবেন মনস্থ করে তাঁদের মন পরীক্ষার জন্য তিনজনকে তিন ঘাটে বসিয়ে রেখে নিজে গলিত শবরূপে ভেসে আসেন। প্রথম ঘাটে ব্রহ্ম। এবং দ্বিতীয় ঘাটে বিষ্ণু গলিত শব দেখে মুখ ফিরিয়ে নেন। শেষ ঘাটে মহাদেব নিরঞ্জনকে চিনতে পেরে তাঁর গলিত দেহ বুকে ধরে রাখেন। তখন নিরঞ্জন নিজরূপ ধারণ করে দেবীকে শিবের হস্তে সমর্পন করেন। এতে ব্রহ্মা ও বিষ্ণু কুপিত হয়ে শিবকে হত্যা করাব উদ্দেশ্যে এক গভীর জঙ্গলে ডেকে নিয়ে তাঁকে মস্তকে প্রহার করতে থাকেন। শিব অচেতন হয়ে পড়েন কিন্তু তাঁর অচেতন দেহের নাভীমূল থেকে মীননাথ, কান থেকে কাহ্ন পাদ, হাড় থেকে হাড়িপা এবং মস্তক দেশ থেকে গোরক্ষনাথের জন্ম হয়ে 'পঞ্চজনে' মিলে শিবকে রক্ষা করেন। শিবের মস্তক থেকে জন্ম হওয়ার কাহিনীতে এখানেও গোরক্ষনাথের প্রাধান্যই বুঝা যাচেছ। এদেশের নাথ-সম্প্রদায়ের মধ্যেও এইমত প্রচলিত আছে।
উত্তর বঙ্গের নানাস্থানে গোরক্ষনাথের কাহিনী বিজড়িত অনেক মন্দিরাদি বর্তমান কালেও বিদ্যমান আছে। দিনাজপুর জিলাব রাণী শঙ্কইল থানার 'গোরকুই' নামক স্থানে প্রস্তর নির্মিত একটি অতি প্রাচীন কূপ আছে। কুপের ব্যাস প্রায় আড়াই ফুট। গভীরত। দশ ফুটের বেশী নয়। সংলগ্ন উঁচু ভূমি থেকে প্রায় চারফুট-সাড়ে চারফুট নীচে কূপটি অবস্থিত এবং চার পাশের দেয়াল ইট পাথর দ্বারা বাঁধানো। দক্ষিণের দেয়ালে মসৃন কাল পাথরের এক সারি পদ্ম ফুলের মত খোদিত আছে। কূপের চার পাশের মেঝে (আয়তনে অনুমানিক ১৮ × ১০ ফুট) পাথর দ্বার। বাঁধানো। দক্ষিণ দেয়াল ঘেসে উপরে একটি ছোট মন্দির। মন্দির গাত্রে প্লাষ্টারের উপরে নান। পৌরাণিক ছবি খোদিত। মন্দিরে নাকি গোরক্ষনাথ সমাহিত আছেন। ধারে কাছে আরও চার খান। ছোট মন্দির। একটিতে শিব-লিঙ্গ এবং অপরটিতে অতি ছোট একটি কালি মূর্তি।
মন্দিরগুলি দেড়শ-দুশ বছরের বেশী পুরানো বলে মনে হয়না। অবশ্য শিব-লিঙ্গ এবং কালি মূর্তি যে বহু পুরাতন তাতে কোন সন্দেহ নেই। এই সব মন্দিরের কাছেই নাকি একটি অতি প্রাচীন মন্দির ছিল। আজ তার চিহ্নও নেই। কূপটি কিন্তু বেশ প্রাচীন বলে মনে হয়। পুরাপুরি পাথবে নির্মিত কুপ বাংলাদেশে আর কোথাও আছে বলে জানা নেই।
এখানে একটি শিলালিপি পাওয়া গেছে। বেলে পাথরের উপর বাঙলা ভাষায় অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং খুব সম্ভব আনাড়ি হাতে উৎকীর্ণ এই শিলালিপির সঠিক পাঠোদ্বার আজ পর্যন্ত সম্ভবপর হয়নি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বালার অধ্যাপক আবু তালিব দুটি পরস্পর বিরোধী পাঠ আবিষ্কার করেছেন এবং দাবী করেছেন যে ৯২০ শকের এই শিলালিপি বাঞ্ছা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন। কিন্তু তাঁর পাঠ আদৌ গ্রহণ যোগ্য হয়েছে বলে মনে হয়না। আমি বিগত চার বৎসর ধরে শিলালিপির পাঠ উদ্ধার কার্যে ব্যাপৃত থেকেও কোন সুফল পাইনি। অধুনা আমার অনুরোধে এবং আংশিক সাহায্যে বালাদেশ পুরাকীর্তি বিভাগের শ্রী রনজিৎ শর্মা বহু চেষ্টার পরে একটি পাঠ খাড়া করেছেন সেই পাঠও সঠিক হয়েছে বলে মনে হয়না। শিলালিপির ছবি নিয়ে দেওয়া হলো :
৯ ১৯৬৭ বাপে আমি শিলালিপিটি উদ্ধার করি। এটি বর্তমানে দিনাজপুর নিউজিয়ামে রক্ষিত আছে।
-২ শ্রী পর্যায় পাঠ ও অধ্যাপক আবু তালিবের পাঠ উপরের ছবিসহ পুস্তকের পরিশিষ্টের অগে দেওয়া গেল পরব
গুপিচন্দ্রের সন্ন্যাস
কোন পাঠই সঠিক হয়েছে বলে মনে হয় না। শ্রী শর্মার পাঠের একটি সম্ভাব্য অর্থ তিনি দিয়েছেন। যথা : "দানপত্র' ১০। ৯২০ সালের ১৭ই মাঘ তারিখে উদ্যমশীল (?) পৌণ্ড্র রাজা উখর গ্রামে বিচিত্র বর্ণের-রমার বাসস্থান স্বরূপ বৃহৎ (?) মঠ প্রদান করিয়া ছিলেন। টীকাঃ প্রাচীন বাংলা লিপিতে লেখা এই শিলালিপির ভাষা সংস্কৃতজ বাংলা। এতে একটি মাত্র আরবী শব্দের ব্যবহার ও হয়েছে। তবে সংস্কৃতজাত প্রাচীন বাংলা শব্দের বহুল ব্যবহার রয়েছে। ৯২০ সালকে প্রচলিত বাংলা সন ধরে নিলে খৃষ্টীয় ১৫১৩ সালে অথাৎ ১৬শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এটা লিখিত হয়।" জনাব আবু তালেব কোন অর্থ দেননি।
শিলালিপির দ্বিতীয়, অষ্টম, নবম এবং দশম পঙ্ক্তির পাঠ আমি প্রথম দর্শনে যা বের করেছিলাম তা ছিল যথাক্রমে (২) খরগাম, (৮) রমাব সক, (৯) ৯২০ তারখ, (১০) ১৭ মাষ। এই পাঠ মোটামুটি গৃহীত হয়েছে। বাকী পতিগুলির পাঠ নিয়ে যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে তা সহজে মিটবে বলে মনে হয় না। দুর্বোধ্য অক্ষবে অত্যন্ত অপরিপক্ক হাতে লিখা এই পাঠ আদৌ উদ্ধার হবে কিনা বলা কঠিন। এই সম্পর্কে অন্যত্র বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার আকাঙ্খা আছে।'
শকিল হয়েছে ৯২০ (সক ? ) এবং তারখ বা তরিখ শব্দটি নিয়ে। তারখ বা তবিখ শব্দটি আরবী তারিখ শব্দের স্থলে ভুল প্রয়োগ বলে ধরা যেতে পাবে। ৯২০ যদি শকান্দ হয় তবে তা হয় ৯৯৮ খৃষ্টাব্দ। তখন বালাদেশে প্রথম মহীপাল দেবের রাজত্ব কাল। সে সময়ে আরবী 'তাবখ' শব্দ বালা ভাষায় স্থান পাবে কি করে? সে সময় থেকে আবও ২০২ বছর পবে বাঙল। দেশে মুসলমানদের আগমন ঘটেছে। আল বেরুণীর দোহাই দিযে অধ্যাপক আবু তালিব বলতে চান যে জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নাকি ভারতীয় এবং আরব পণ্ডিতদেব মধ্যে গভীর সংযোগ ছিল এবং সেই সংযোগেব ফলে আরবী তাবিখ শব্দটি বাল। তথা ভারতীয় ভাষায় অঙ্গীভূত হয়েছিল। জনাব আবু তালিবের চুক্তি মৌলিকতার দাবী রাখলেও গ্রহণ যোগ্যতাব মল্য এতে নেই।
৯২০ যদি বঙ্গাব্দ হয় তবে লিািপকাল দাঁড়ায় ১৫১৩-১৪ খৃষ্টাব্দে অর্থাৎ গৌড়ের সুলতান আলাউদ্দীন হুসেন শাহৰ্ সময়ে। বঙ্গাব্দ প্রচলনের সময় নিয়ে সুধী সমাজে, মতভেদ আছে। কোন কোন পণ্ডিতের মতে এই অব্দের প্রচলন হয় সম্রাট আকববের (১৫৫৬-১৬০৫) সময়ে । তাই যদি হয় তবে ৯২০ কে বঙ্গাব্দ ধবার ব্যাপারে বিরাট বাধা আছে। বাবু যতীন্দ্র মোহন ভট্টাচার্যের মতে বঙ্গাব্দ প্রচলিত হয় সুলতান হুসেন শাহ্ আমলে (১৪৯৩-১৫১৯) সময়ে। তা যদি হয় তবে ৯২০ সালকে বঙ্গাব্দ ধরতে তেমন কোন বাধা থাকে না। হুসেন শাহ্ যদি এই অব্দ প্রচলন করেই থাকেন তবে তা তাঁর রাজত্বের শেষের দিকে না করে প্রথম দিকেই করে থাকবেন এমন একটা আশা করা অসঙ্গত নাও হতে পারে।
কিন্তু হুসেন শাহ্র আমলে মালদহ পুর্ণিয়া-দিনাজপুর অঞ্চলে তেমন প্রসিদ্ধ কোন হিন্দু রাজার (স্বাধীন বা সামন্ত ) সন্ধান পাওয়া যায় না । সুবুদ্ধি রায় বলে একজন সামন্ত রাজার সন্ধান পাওয়া যায় হুসেন শাহ্ কিছু কাল আগে। তাঁর রাজ্য এই অঞ্চলে ছিল বলে মনে হয় না।
এই শিলালিপির সত্যকার ঐতিহাসিক মূল্য কি তা বলা কঠিন। কূপের সঙ্গে এই লিপির কোন সংযোগ আছে বলেও মনে হয় না। কূপ এবং তদসংলগ্ন স্থানে যে সমস্ত পাথর ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলির তুলনায় শিলালিপির পাথরকে অনেক নিকৃষ্ট বলা যায়। কূপ এবং
ইতিহাস পরিষদের 'ইতিহাস' পত্রিকার বৈশাখ ১৩৮০ সংখ্য'য় 'গোরকই শিলালিপি' শীর্ষক পুৰন্ধে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করিয়াছি।
পাশ্ববর্তী এলাকার নির্মাণ কার্যে যে নিপুন শিল্প কৌশল দেখা যায় লিপির বেলায় তা সম্পূর্ণ বিপরীত। মনে হয় একটি অতি নিকৃষ্ট পাথরের যেন তেন প্রকাবে দাষ সাৰা গোছেব কাজের মত লিপির কাজ করা হয়েছে। কূপ নির্মাতাব যদি ফলক দেবাব ইচ্ছ। থাকত তবে কাজট। ভাল পাথরে ভাল ভাবেই করা হতো। তদুপবি কূপ বা পার্শ্বস্থ এলাকায় পাথবটি সংলগ্ন ছিল না। কোন শিলালিপি সংলগ্ন থাকাৰ চিহ্ন ও সেখানে নেই। এটি অনাদৃতভাবে পড়ে ছিল কাছেই একটি অফিস ঘরের সিঁড়ী হিসাবে। সেখান থেকেই আমি এটিকে উদ্ধার করি।
কূপটি যে অতি প্রাচীন (হিন্দু-বৌদ্ধ আমলের পরের নয) তাতে কোন সন্দেহ নেই। পরবর্তী কালে হযত কূপেব কাছে কেউ মন্দিব তৈরী করেছিলেন। সেই মন্দিবে জন্য খুব সম্ভব এই শিলালিপি।
কূপের পানি উত্তর বঙ্গের হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র এবং এই পানি নাকি অফুরন্ত। বৎসবে এখানে একবাব মেলা বসে এবং অসংখ্য নবনাৰী ছোট এক পাত্র পানি দ্বাব। স্নান কবে। তাতে নাকি দুবাৰোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ করা যায় । বহুকাল থেকে প্রচুর ভূসম্পত্তি (বযেক শ একব নাল জমি, কযেকটা বড় বড় পুকুব, ইত্যাদি) এ-কূপ এবং মন্দিবাদি বক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেবোত্তর সম্পত্তি হিসাবে নির্দিষ্ট ছিল। মাত্র বছর কয়েক আগে পশ্চিম দেশীয এক ভণ্ড মহন্ত সেই সব সম্পত্তি বিনিম্য কবে ভাবতে চলে গেছে।
গোবক্ষনাথের নামজডিত (গোৰকুই / গোবকূপ Z গোবখকপ Z গোবক্ষকূপ) এস্থান যোগী সম্প্রদায, এই জিলাব পলিয। ১ এবং হিন্দু সম্প্রদাযেৰ কাছে পবিত্র তীর্থভূমি। স্থানীয় প্রবাদ অনুসাবে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে আসাব কালে গোবক্ষনাথ যখন নোনা নদী পাব হতে যাচ্ছিলেন তখন মাইল পাঁচেক দূরে অবস্থিত 'কাইছা' নদীর তীরে অবস্থিত 'নেকমদ' নামক স্থানে শেখ নাসিব উদ্দিন নেকমৰূদ নামক এক মুসলমান ফকীব ধ্যানে সে খবব পান। বুজুবকি দেখাবার জন্য গোবক্ষনাথ পানিব উপব দিয়ে হেঁটে আসছিলেন। কিন্তু নেকমব্দেব কাবসাজিতে নাথের গামছা পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেলে লজ্জিত গোরক্ষনাথ আব অগ্রসব না হয়ে সেখানেই নদীগর্ভে এক দ্বীপ সৃষ্টি কবে আস্তানা গাডেন। এই প্রবাদেব কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। শেখ নাসিব উদ্দিন নেকাবূদ নামে এক অতি পুত চবিত্রেব মুসলমান দরবেশ বাণীশঙ্কইল থানাব নেকমর্বুদ নামক স্থানে খুব সম্ভব পঞ্চদশ-ষোড়শ শতক কি তার কিছু আগে বা পরে আস্তানা গাড়েন। সেখানে তাঁর মাযাব আছে। বৃটিশ আমল এবং তাবও অনেক আগে উপমহাদেশেব বুহত্তম মেলাগুলিব অন্যতম মেলা হিসাবে নেকমৰূদেব মেলাকে গণ্য করা হতে।। নেকমরদ্ এবং গোবক্ষনাথ যদি সমসামযিক লোক হন তবে গোরক্ষনাথ পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকের লোক হযে পড়েন।
বগুড়া জিলাব 'যুগীব ভবন' নামক স্থান গোবক্ষনাথের নামের সঙ্গে জড়িত। সেখানে মন্দিবাদি আছে এবং উত্তর বঙ্গেব যোগীদের কাছে তা পবিত্র স্থান। বাজশাহী জিলাৰ পত্নী তল। থানায 'যুগীব ধোপা' বলে একটি স্থান গোরক্ষনাথের নামের সঙ্গে জড়িত এবং তাও উত্তব বঙ্গেব যোগীদেব পবিত্র তীর্থভূমি। সেখানে গোবক্ষ মহাবাজেব মূর্তি এবং মাটির তৈরী ব্যামলা - ব্যামলীর মূর্তি আছে।
১ পলিয়া রাজবংশী বা পলিয়াগণ ভঙ্গ ক্ষত্রিয় বলে দাবী করেন। প্রকৃত পক্ষে এর। নরগুঠীর একটি শাখা। এখন হিন্দু বলে দাবী করলেও পুকৃত পক্ষে এরা হিন্দু ছিলনা।
| pdf |
7a1064449fedd3802c7d55e7c1fe1f92 | সেই নিয়াজুলকে নিয়ে শামীম-আইভী বিতর্কে নতুন মোড় (ভিডিও)
নারায়ণগঞ্জে হকার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মিডিয়ায় উঠে আসা অস্ত্র তাক করা নিয়াজুল ইসলাম ইস্যুতে নতুন ঘটনা বের হয়ে এসেছে। অস্ত্র তাক করার আগে নিয়াজুলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিওচিত্র প্রকাশ পাওয়ায় নয়া মোড় নিয়েছে নিয়াজুল ইস্যু।
যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ও গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে আসা ওই ভিডিওচিত্রে দেখা যাচ্ছে নিয়াজুল ইসলামের উপর কয়েকদফা হামলার এক পর্যায়ে তিনি আত্মরেক্ষার্থে নিজের কোমড়ের পিস্তল বের করেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, আইভী সমর্থিত বিএনপি ক্যাডারদের হাত থেকে নিয়াজুল ইসলামকে রক্ষা করতে ছুটে এসেছিলেন মেয়র সমর্থক আবু সুফিয়ান। নিজের জীবন রক্ষায় নিয়াজুল সেদিন তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন এবং কোনো গুলিবর্ষণ করেননি বলেও স্পষ্ট দেখা গেছে সেই ভিডিওতে।
ভিডিওতে এও দেখা গেছে, প্রথমে রাস্তার পাশের ফুটপাথে, দ্বিতীয় দফায় রাস্তার মধ্যে ও তৃতীয় দফায় নিয়াজুল চলে যাওয়ার সময় পেছন থেকে ওই হামলাটি করা হয়। এদিকে ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যেভাবে দুই দফায় রাস্তায় ফেলে নিয়াজুলকে পেটানো হয়েছে সেটা ছিল নিছক হত্যার উদ্দেশে। শেষতক অস্ত্র তাক করে নিজের জীবন রক্ষা করেন নিয়াজুল।
নিয়াজুলের পরিবারের দাবি, তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার পরই তার ওপর হামলা করা হয়। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, বিকাল ৪টা ৩৯ মিনিটে মেয়রের নেতৃত্বে লোকজন শহরের চাষাঢ়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কের জীবন বীমা ভবনের মুক্তি জেনারেল হাসপাতালের সামনে এলে একজন হকারের সঙ্গে তুমুল বাকবিতণ্ডা ঘটে। ওই হকারকে মারধরের পর পাশে থাকা মাসুদা প্লাজার নিচে থাকা নিয়াজুল ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে মারধর না করার অনুরোধ করেন।
তখন আইভীর বহরের সামনে থাকা লোকজন নিয়াজুলকে ধাক্কা দিতে থাকেন এবং বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান এসে নিয়াজুলকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন এবং চলে যেতে বলেন। কয়েক সেকেন্ড পর জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল কাদিরও সেখানে এসে নিয়াজুলকে সরিয়ে দেন।
কিন্তু তখন ওই বহরে থাকা বিএনপি-জামায়াতের অতি-উৎসাহী লোকজন নিয়াজুলকে ধাক্কা মারতে মারতে সামনের দিকে ঠেলে দিতে থাকেন। সায়ামা প্লাজার সামনে ধাক্কাতে ধাক্কাতে আনার পর সেখানে ফুটপাথে পড়ে যান নিয়াজুল। তখন ৩০ থেকে ৪০ জন নিয়াজুলকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। বুকের ওপর ও গলায় চাপ দিয়ে ধরে একের পর এক মারধর করেন নিয়াজুলকে।
এক পর্যায়ে তিনি কোনোমতে সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে চাষাঢ়ার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে আবারও লোকজন গিয়ে দ্বিতীয় দফায় ফুটপাথে ফেলে মারধর করতে থাকেন। তখন নিয়াজুল ফুটপাথ থেকে রাস্তায় পড়ে গেলে মারধরের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। আশপাশের লোকজন কোনোমতে নিয়াজুলকে উদ্ধার করলে তিনি দ্রুত চাষাঢ়ার দিকে যেতে থাকলে তৃতীয় দফায় পেছন থেকে লাথি মারতে দেখা যায় কয়েকজনকে। ওই অবস্থায় পেছন থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে লোকজন এগোলে নিয়াজুল কোমর থেকে লাইসেন্স করা পিস্তল বের করেন। এ অবস্থায় ৪ থেকে ৫ জন যুবক গিয়ে আবারও মারধর করে নিয়াজুলের পিস্তল ছিনিয়ে নেন।
এদিকে গণমাধ্যমে শুধু নিয়াজুলের পিস্তল হাতে ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হয়। নিয়াজুল একসময় শামীম ওসমানের কর্মী ছিলেন এর রেশ ধরেই বিষয়টি শামীম ওসমানের ওপর বর্তানোর চেষ্টা করা হয়। মেয়র আইভীও সে সুযোগটি নিয়েছেন এবং শামীম ওসমানের নির্দেশে নিয়াজুল তাকে হত্যা করতে পিস্তল বের করেছিলেন বলে অভিযোগ করতে শুরু করেন। শুরুতে নিয়াজুলকে পেটানোর চিত্রটি উহ্য থাকে সর্বত্র।
এদিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নারায়ণগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সেদিন কারা কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে ঘটনার সূত্রপাত করেছিলেন তারও তদন্ত হচ্ছে। এই ঘটনার পর সার্বিক সবকিছুর খবর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিয়াজুল নামের যে ব্যক্তি অস্ত্র বের করেছিলেন তার সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক কিছু তথ্য পেয়েছি। তিনি একজন ব্যবসায়ী। তবে তিনি কী কারণে সেখানে গিয়েছিলেন সে ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও গণমাধ্যমে যাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের চিত্র বের হয়েছে তাদের ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে 'হকার মুক্ত ফুটপাথ চাই' স্লোগান ধরে লোকজন নিয়ে চাষাড়ার দিকে হেঁটে আসছিলেন সেলিনা হায়াত আইভী। এ সময় শামীম প্লাজা থেকে আইভীর লোকজনের ওপর বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পিস্তল উচিয়ে ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে সড়কে পড়ে যান সেলিনা হায়াত আইভী। তার পায়ে ইটের আঘাত লাগে। সেখান থেকে তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, সাংসদ শামীম ওসমানের নির্দেশে ওই হামলা চালানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আইভি বলেন, আমি মৃত্যুকে ভয় করি না। আমি শান্তিপূর্ণভাবে হেঁটে আসছিলাম। চাষাড়ার রাইফেলস ক্লাবে বসে শামীম ওসমান আমার ওপর হামলা চালানো নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ পেয়ে তার লোকজন ইট পাটকেল ছোড়ে। এটা নিরস্ত্র লোকের সশস্ত্র হামলা। ওই হামলায় সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হন।
পরবর্তীতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতিতে মেয়র আইভীর লোকজন হকারদের ওপর গুলি বর্ষণ করেছে। তিনি বলে, কোনো একটি পক্ষ আমাদের দুর্নাম করতে এ সংঘর্ষের সৃষ্টি করছে।
| web |
3b347f3a2e0eafc092c0c5d850c4dcc5a52400d5 | টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : শত কোটি ডলারের গেইম ও অ্যাপের বিশ্ববাজার ধরতে প্রস্তুতি শুরু করেছে সরকার। এ জন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার কথা জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তারই পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে রোববার 'মোবাইল গেইমের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের প্রস্তুতি' নিয়ে একটি ব্রিফিংও করেছেন প্রতিমন্ত্রী।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে ওই ব্রিফিংয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, চলতি বছরে বিশ্ববাজারে মোবাইল গেইমের ৯৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। যেখানে মোবাইল গেইমের বাজার রয়েছে ৩৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। সেই বাজার ২০১৮ সালের মধ্যে ১১৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। যেখানে ৪৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার আসবে শুধু মোবাইল গেইম থেকে।
সেই বড় বাজারে বাংলাদেশকে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে নিয়ে যেতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ২৮২ কোটি টাকার 'মোবাইল গেইম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন' প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ১০ হাজার ডেভেলপার তৈরিসহ নানা ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান জুনাইদ আহমেদ পলক।
সেই প্রস্তুতি হিসেবে প্রকল্পটির আওতায় দেশের সাতটি বিভাগীয় পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপস এবং গেইম ডেভেলপমেন্ট একাডেমি, ৩০টি জেলার স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল গেইম ও অ্যাপ ল্যাব, অ্যাপ টেস্টিং ল্যাব ও ট্রেনিং পয়েন্ট স্থাপন করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী পলক।
এজন্য পূর্ণাঙ্গ অ্যাপস ডেভেলপার হিসেবে আট হাজার ৭৫০ জনকে এবং গেইমিং অ্যানিমেটর হিসেবে দুই হাজার ৮০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে। এসব কাজে সরকারকে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশষ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সহ বেসরকারি খাতের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও প্রকল্পে অধীনে অনলাইন কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স টেস্টিং ও বাছাইকরণ, ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা, ভেঞ্চার সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ ও কার্যক্রমে সহায়তা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে পলক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যারা আছেন তাদের নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ইন্ডাস্ট্রিকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে হবে।
দেশে মেধাবী লোকের ঘাটতি নেই এবং সরকার সবসময় এসব বিষয়ে আন্তরিক জানিয়ে বলেন, মোবাইল ও অ্যাপ ডেভেলপার যারা আছেন তারা এটিকে আপনাদের প্রকল্প ভেবে এই সুযোগটা গ্রহণ করবেন। আর আমাদের জনগণের কষ্টার্জিত প্রত্যেকটি পয়সা আপনারা সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন।
জনগণের ২৮২ কোটি টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করে যেন দুই হাজার ৮২ কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব হয় এবং মোবাইল গেইমে বিশ্বদরবারে দেশের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে এগোনোর জন্য সেমিনারের আয়োজন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এ আগে গত ১৪ জুন মোবাইল গেইম ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপ উন্নয়নে ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে ২৮২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি(একনেক)।
সেসময় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের ১১ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারীর কথা মাথায় রেখে 'মোবাইল গেইম ও অ্যাপস ল্যাব' স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা ২০১৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান।
ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা, বেসিস জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের পার্টনার শামীম আহসান, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মুনির হাসানসহ আরও অনেকে।
ব্রিফিংয়ের পরে 'মোবাইল অ্যাপস ও গেইমিং ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে অগ্রযাত্রা' শিরোনামে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
| web |
213580d07200c2efdf06ac8780cabe30d5c099b3 | #দোহাঃ গ্রুপের শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে পর্তুগাল। শেষ ১৬ ইতিমধ্যেই নিশ্চিত। তাই পরীক্ষার পথে কোচ পর্তুগাল কোচ স্যান্টোস। রোনাল্ডোকে বিশ্রাম নাকি শুরু থেকেই সেই নিয়ে জল্পনা। তবে গ্রুপের শেষ ম্যাচে নামার আগেও চলছে গোল নিয়ে যত গন্ডোগোল। ফিফা থেকে বল প্রস্তুতকারী সংস্থা, সবাই ঘোষণা করে দিয়েছে, বলে রোনাল্ডোর নো টাচ। তবুও রোনাল্ডো দাবি থেকে সরেননি। তাই গোল তুমি কার বিতর্ক চলছেই।
এর মাঝেই গ্রুপের শেষ ম্যাচে নামতে চলেছে পর্তুগাল। নিয়মরক্ষার ম্যাচে ব্রুনোদের সামনে দক্ষিণ কোরিয়া। গ্রুপ এইচের যাবতীয় অঙ্ক দ্বিতীয় দল কে হবে তা নিয়ে। যদিও গ্রুপের সমীকরণে সঙ্গে জোর চর্চায় অনুশীলনে রোনাল্ডোর গরহাজিরা নিয়ে। বুধবারের প্র্যাক্টিসে ছিলেন না সিআর সেভেন। জল্পনা তিনি নাকি গোল নিয়ে গোঁষা করেছেন। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের দাবি, স্পেশাল রিহ্যাব করছিলেন রোনাল্ডো তাই অনুপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মীবারে অনুশীলনে ফিরেছেন সিআর সেভেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে পর্তুগাল কোচ রো-কে বিশ্রামও দিতে পারেন বলে খবর। রিজার্ভ বেঞ্চকে দেখা নেওয়াই লক্ষ্য কোচ স্যান্টোস। গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হওয়ার দাবিদার বাকি ৩ দলই। পর্তুগালকে হারতে পারলে সনদের সামনে সুযোগ থাকবে অঙ্কের বিচারে। তবে অন্য ম্যাচে ঘানা-উরুগুয়ে ম্যাচ ড্র হতে হবে। আর গোলপার্থক্যে এগিয়ে থাকতে হবে এশিয়ার দলটিকে। তবে এই গ্রুপের সব থেকে হাইভোল্টেজ ম্যাচ ঘানা বনাম উরুগুয়ে। ২০১০ সালের বদলা নিতে তৈরি আফ্রিকার দেশটি। সেই ম্যাচে কাভানিদের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে হেরে সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি ঘানা। নিশ্চিত গোল হাত দিয়ে বাঁচিয়ে লালকার্ড দেখেছিলেন সুয়ারেজ। ১২ বছর পরেও সেই হারের ক্ষত ঘানার মনে। জিতলেই শেষ ১৬ নিশ্চিত।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের মরশুমে রেস্তোরাঁয় চমক 'আইবুড়ো ভাত' থালি, মাটন-চিকেন-ইলিশ-আলু পোস্ত কিছু বাদ নেই!
তাই বদলার ম্যাচে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে তৈরি ঘানা। এদিকে এবারের উরুগুয়ে ২ ম্যাচে একটিতে জিততে পারেনি। তাদের পারফরম্যান্স অতীতের ছায়া মাত্র। তবে খাতায়-কলমে উরুগুয়েরও সুযোগ রয়েছে। ঘানাকে হারতে পারলে ৪ পয়েন্ট হবে সুয়ারেজদের। আর পর্তুগাল দক্ষিণ কোরিয়াকে হারালেই বাজিমাত। প্রি-কোয়ার্টারে উঠবে উরুগুয়ে। তবে সেক্ষেত্রে ঘানার বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের সেরা ম্যাচ খেলতে হবে প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
| web |
b168e89a8fc3a060db04d96fca686243b774a0b16b0de22900b04b2233442659 | করতে হলে তোমাকে এর পরিচিত লোকের মাধ্যমে দেখা করতে হবে। কিংবা
লি পিয়াং চপ করলেন।
আমার মনে হলো, তিনি যেন আমাকে আর কিছু বলবার জন্যে সঙ্কোচ বোধ করছেন । বললামঃ বলুন, আপনি থামলেন কেন ?
: ডিকি জন "ট অর্থাৎ মারিউনা বিক্রী কবে। যদি তুমি ওর পট ক্লাবে যাও তাহলে ওর দেখা পেতে পারো। আর পট ক্লাব কোথায় তার সঠিক ঠিকানা তোমাকে আমি দিতে পারবো না। কারণ, প্রতিদিন পট ক্লাবের ঠিকানা পাল্টায়। তবে পট ক্লাবে যাবার সব চাইতে সহজ উপায় হলো, পানওয়ালার সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করা। আমার কথা শুনে চমকে উঠো না। আজ কলকাতার বাজারে চোরা মদ পট কিনবার সব চাইতে উৎকৃষ্টতম স্থান হলো পানওয়ালার দোকান ।
না, কোন চনোপাটী ছোট পানওয়ালার দোকান নয়। তুমি গ্র্যান্ড হোটেলের আশেপাশে যে দু-চারটে বড় পানওয়ালার দোকান আছে ওদের কাছে আকারে ইঙ্গিতে 'পট' খাবার অভিপ্রায় প্রকাশ করো । ওরা তোমাকে ঠিক পট কিনবার জায়গা কিংবা খবার আসল জায়গার ঠিকানা বাতলে দেবে। ট্রাই দেম - লি পিয়াং এই কথা বলে আবার তার রামের গ্লাসে চুমকে দিলেন ।
আমি লি পিয়াং-কে ধন্যবাদ জানালাম। বললামঃ আপনার খবরের জন্যে অশেষ ধন্যবাদ । আবার পরে আপনার কাছে আসবো। দেখি আমি ডিকি জনকে খাঁজে বার করতে পারি কি না ?
: বেস্ট লাক - লি পিয়াং আমাকে বললেন ।
ঃ থ্যাঙ্কস - আমি ছোট জবাব দিয়ে লি পিয়াং-এব বাড়ী থেকে রাস্তার বেরলম।
বেশ রাত হয়েছিল। প্রায় বারোটা ।
ত্যাশ্চর্য - শহর কলকাতা। শহরের রাস্তা, সময় বুঝবার যো নেই যে শহরের লোক ঘমিয়ে আছে। ট্যাক্সী রিক্সা চলছে। কিন্তু আমি জানতুম, এই সময়ে যারা চীনে পাড়ায় ঘোরাফেরা করছে তারা সবাই নিশাচরী। ওরা দিনে ঘুমিয়ে থাকেন, রাতে শিকার খহুঁজতে বেরন । বিভিন্ন ধরনের শিকার। কেউ মেয়েদের সন্ধানে বেস্তোরাঁ বারে বসে আছে, কেউবা নোংরা ব্যবসা কাজকর্ম নিয়ে খদ্দেরদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। আর চীনে পাড়ায় কেউ কেউ মদের গ্লাস হাতে নিয়ে কড়ি খেলছে।
আমি ভাবতে লাগলাম কী করবো ? আমি কী হোটেলে ফিরে যাবো ? সোনিয়া হোটেলে নেই । শহরে 'হট স্পট' দেখতে বেরিয়েছে ?
| pdf |
c9e54b48906edbe8468c64a83c584206901680c27a6aeceaa36823f38451f300 | শব্দকে। ওয়েলী যখন একটিও কথা কইলেন না তখন বাদলের শঙ্কা দূর হল। সে ধীরে ধীরে পিছু হট্টতে হতে ঘর থেকে বেধিয়ে গেল।
পরদিন সকালবেলা ওয়েলীর মুখ দেখে বাদল ঠিক করে ফেলল এ হোটেলে থাক। পোষাবে না। এক মাসের ভাড়া আগাম দিয়ে রেখেছে, তবু পালাতেই হবে। তার বয়স অল্প, প্রাণে অনন্ত অভিলাষ, সে যে হতে হতে কী হয়ে উঠবে কল্পনা করতে গিয়ে রোমাঞ্চিত হয়, জগতের যত মহাপুরুষ তাঁদের সকলের সঙ্গে এক সারিতে বসবার যোগ্যত। অর্জ্জন করবে সে। তার কল্পলোকে পদে পদে যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার ও করমর্দন তাঁরা কলিন্স মিলফোড দে সরকার নন্, আত্ম অবিশ্বাসী ওয়েলী নন, তাঁরা দাস্তে গ্যেটে শেক্সপীয়ার প্লেটে। য়্যাবিষ্টট্ল্ গৌতম বুদ্ধ । তাঁরা অতি পুরাতন হয়েও অতীব নবীন । আপনার উপর তাদের অটল বিশ্বাস। আপনাকে তাঁর। যে পরিমাণ শ্রদ্ধা করেছেন সেই পরিমাণে শ্রদ্ধেয় হয়েছেন। বাদল দুবেল। জপমন্ত্রের মত উচ্চারণ কবে - আমি নিজেকে শ্রদ্ধা করি, আমি নিজেকে আরো শ্রদ্ধা করতে চাই । আমি শ্রদ্ধেয় বলেই আমি আছি, আমি শ্রদ্ধার যোগ্য না হয়ে থাকলে আমার অস্তিত্ব থাকত না।
পলায়ন করাতে শক্তির পরিচয় দেয় না, কাজট। শ্রদ্ধাযোগ্য ত নযই । তবু বাদল পালাবে স্থির করল। ভেবে চিন্তে স্থির কব্ল এমন নয়। হঠাৎ পাগলা কুকুর কিম্বা ষাঁড় দেখলে যেমন দৌড দেওয়া সাব্যস্ত করতে হয় এক্ষেত্রেও তেমনি। বাদলের মন দ্বিধা করলেও প্রবৃত্তি অস্থির হল। অতএব বাদল আর দেবি করল না। জিনিষগুলো একটা ট্যাক্সিতে
চাপিয়ে ম্যানেজারকে বলল, "টাক। ফেরৎ চাইনে। হোটেলের ব্যবস্থায় অসন্তুষ্ট হইনি । অন্য কারণে অন্যত্র যাচ্ছি।" ম্যানেজার হাসির ভাণ করে বলল, "আশা করি আবার কোনো দিন শুভাগমন করবেন। j"
বাদলের মনটা এক নিমেষে হাল্কা হয়ে গেল । অকস্মাৎ তার মনে হল তার কেউ নেই কিছু নেই কোনো ভাবনা নেই কোনো দায়িত্ব নেই । দিনটি পরিষ্কার ছিল। কোনে। পার্কের কাছ দিয়ে যখন মোটর চলে যায় রাশি রাশি almond মুকুল বাদলের চোখে অরুণ রঙের নেশা লাগিয়ে দেয় । অকবি বাদল উপমা খোঁজে। অতি মূল্যবান যার সময় সে খানিকটা সময়ের অপব্যয় করে। ভারতবর্ষে এই ত হোলি খেলার দিন। এদেশেও গাছে গাছে ডালে ডালে হোলি খেলা চলেছে। বাদলের বিশেষ কোনো ঠিকানায় যাবার কথা ছিল না। খুব সম্ভব ওয়াই এম সি এ'তে গিষে উত্ত। কিন্তু সেখানেও তিন চারদিনের বেশী রাখে না, যদি না অনেক আগে থেকে আবেদন করে স্থায়ী বোর্ডার হওয়া যায় ।
সোফারকে বলল, "ভিক্টোরিয়া।"
যাক্, কিছুদিনের মত লণ্ডনের বাইরে গিয়ে অজ্ঞাংবাস করা যাক্। মন স্বীকার না করলেও আত্মারাম জানেন কী শীত! কি বৃষ্টি! কী কুয়াশ।। কাঁ বোঁষা ! কুয়াশ। আন নৌষা মিলে কী ফগ্ ।
অন্ধকার !
ভিক্টোরিয়া ষ্টেশন। একপ্রান্তে ইউরোপ অভিমুখী ও ইউরোপআগত ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম। অপর প্রান্তের প্ল্যাটফমে দক্ষিণ ইংলণ্ডেব ট্রেন সমাবেশ ।
যে গতি-হিল্লোল মোটরে আবার সময় বাদলকে মাতিয়ে রেখেছিল মোটর থেকে নেমেও বাদল তার প্রভাব সৰ্ব্বাঙ্গে অনুভব করছিল ।
বিলম্ব করল না। আইল অব ওয়াইটের গাড়ী দাড়িয়ে ছিল। বাদলকে কোলে নিয়ে এমন দৌড় দিল যে পোর্টস্মাথ-এ পৌঁছতে ঘণ্টা দুয়েকও লাগল না।
সমস্ত পথ বাদল নিজের দেশকে প্রবল আগ্রহের সহিত চক্ষুসাৎ করছিল। লগুনের আশে পাশে ফ্যাক্টরী। লগুনের আওতা অতিক্রম করূলে ছোট ছোট গ্রাম। মাঠে ঘোড়ায় টানা লাঙল দিয়ে চাষ করা হচ্ছে। বন্ধুর অনুব্বর ভূমির উপর সবুজ রঙের প্রলেপ। গাছে গাছে নতুন পাতা ও নতুন পাথী। গাছ কিম্বা পাখী কারুর নাম বাদল জানে না, ওদের সম্বন্ধে বাদলের কোনোদিন কৌতূহল বোধ হয় নি।
বাদল কখনো ভাব ছিল, আচ্ছা, গাছের সঙ্গে পার্থীর এমন মিতালি কেন ও কবে থেকে? গাছ মাটী ছেড়ে নড়তে পারে না, পাথী আকাশে আকাশে উড়ে বেড়ায়। স্থিতির সঙ্গে গতির পরিণয় অদ্ভুত নয় কি?
কখনো ভাব ছিল, এখনো ঘোড়ায় টানা লাঙল ? এরা tractor কেনে না কেন? বাণিজ্যে আমাদের দেশ যেমন অগ্রসর কৃষিতে তেমন নয়, এ বড় আফশোষের কথা।
এক একবার ওয়েলীকে মনে পড়ে যাচ্ছিল।
বাদলের সাজানো বাগান শুকিয়ে যেত যদি ওয়েলীর 'লু' বাতাস প্রতিদিন তার উপর দিয়ে ছুটে যাবার পথ পেত। ইচ্ছার স্বাধীনতা, উদ্যোগের স্বাধীনতা, স্বাধীন মানুষের উদারমতি গবর্ণমেণ্ট, অবাধ বাণিজ্য, উন্নত শিল্প, জ্ঞানের বিকাশ ও প্রসার, যানের উৎকর্ষ, ও দ্রুতগতি, জাতিতে জাতিতে অক্ষতিকর প্রতিযোগিতা, ক্বচিৎ এক আবট। যুদ্ধ - যা কিছু বাদল সমস্ত জোরের সঙ্গে বিশ্বাস করে ওয়েলী এক ফুৎকারে নিবিয়ে দেন।
ওয়েলীর কাছ থেকে পালাতে হল, এ লজ্জ। বাদল ভুলতে পারছিল
না। নিজের পরাভবের জন্য বাদল ওয়েলীকে দোষ দিল। দিয়ে ভারি আত্মপ্রসাদ বোধ করল।
তারপর তার মনে পড়ে গেল সুধীদাকে। কী মজা ! সুধীদা টের পাবে না বাদল কোথায়। কেউ জানতে পাবে না সে কোথায়
উধাও হয়ে গেছে। শুধু জাবে তার ব্যাঙ্ক। কিন্তু ব্যাঙ্কের লোক একজনকে অপর জনের ঠিকানা জানায় না। ওটা ওদের নীতি-বিরুদ্ধ। কাজেই সুধীদা জব্দ ।
ব্যাঙ্কে বাদলের শ'দুই পাউণ্ড জম। রয়েছে। ছমাসের মত সে নিশ্চিন্ত। এই ছমাস কাল সে নিভৃত চিন্তা করবে। মননের মত আনন্দ কিছুতে নেই। দুনিয়ায় এমন কোনো বিষয় থাকবে না যা নিয়ে বাদল মন খাটাবে না। মনের মত দেশ, মনের মত ঋতু, একটু নিরিবিলি একটি কুটীয়, দুবেলা লঘুপাক আহায্য, সারাবেলা পায়ে হেঁটে বেড়ানো কিম্বা মাঠের উপর গড়িয়ে পড়ে আকাশের দিকে চেয়ে থাক। - অবশ্য ওয়েদাব যদি আজকের মত প্রসন্ন হয়। কী আনন্দ!
কী মুক্তি
মিস মেলবোর্ণ-হোয়াইট্ এর সঙ্গে সুধীব পরিচয় ব্রিটিশ মিউজিয়ামের পাঠাগারে। উক্ত গৃহে দিনের পর দিন পাশাপাশি বসতে বসতে কত পাঠক পাঠিকাব মধ্যে প্রণয সঞ্চার হয়ে পরিণয়ে পরিসমাপ্ত হয়েছে, পরিচয় ত সামান্য বিষয়। প্রথমে হয় গুড মর্ণিং বলাবলি। তারপরে দৈবক্রমে একদিন দুজনের লাঞ্চ খাওয়া হয় একই রেস্তোরাঁর 'কই টেবিলে। তখন একটু অ'বহচর্চ্চা হয় । "এ বছর বৃষ্টিট। কিছু বেশী বলে মনে হয় ।" "আমি ত আগষ্ট মাস থেকে বৃষ্টিব বিবাম দেখছিনে।" "ও আপনি গ্রীষ্মকালে এদেশে ছিলেন না। সারা গ্রীষ্মকালট। ৺িজে বয়েছিল।" সেদিন ঐ পয্যন্ত। পরেও একদিন দৈবাৎ ঐ টেবিলেই দুজনের সাক্ষং সুধীকে দেখে মিস্ মেল্বোর্ণ-হোয়াইট্ বললেন, "এই যে আপনি মাজও এখানে। এখানকার খাওয়া আপনার পছন্দ হয দেখছি।" সুধী বলল, অনেক ঘুবে শেষে এইখানে ভিডে গেছি। এরা নিরামিষটা বাস্তবিকই ভালো বাঁধে।" মিস্ মেল্বোর্ণ-হোয়াইট্ পরিহাস করে বললেন, "নিরামিষ যে বাঁধে এইটাই হচ্ছে half the battle. তারপর ভালে। রাঁধে সেটা ত রীতিমত দিগ্বিজয়।" সুধী বলল,
ভালো রান্নার জন্যে আমি একমাইল হাঁটুতে রাজি আছি।" মিস্ মেলবোর্ণ-হোয়াইট্ এর উত্তরে বললেন, 'ভালো রান্নার অঙ্গীকার দিতে পারব না, কিন্তু নিরামিষ যদি ভালোবাসেন তবে আমাদের ওখানে
একদিন আপনার নিমন্ত্রণ রইল, মিষ্টার - ।" সুধী তাঁর অসম্পূর্ণ বাক্য সম্পূর্ণ করে দিল।
রিমূলেস্ চশমার পিছনে তাঁর ঈষৎ নির্মীলিত চক্ষু পরিহাসকালে প্রায় নিমীলিত দেখায়। বয়স ষাটের এদিকে কিম্বা ওদিকে । চুল এখনো সেকেলে ধরণে বাঁধা, সব পেকে গেছে। গাল বেশ ফুলকে।, স্বাস্থ্যের বর্ণচ্ছায় রঙিন ! ভরাট গড়ন, দীর্ঘ ঋজু আকার। সুধী এলেন টেরীর সঙ্গে তুলনা করল । পোষাক মসৃণ কালো সাটিনের। বাম হাতের একটি আঙুলে একটি আংটি, দেখে মনে হয় বাগ্দানের ।
রবিবারে মধ্যাহ্নভোজনের সময় ডক্টর মেলবোর্ণ-হোয়াইট্ সুধীকে দেখে বললেন, "One more unfortunate ! এলেনর, তুমি এঁকে কবে ভজালে ?"
মিস্ মেল্বোর্ণ-হোয়াইট নিরামিষ turtle soup পরিবেশন করে নিরামিষ lamb cutlets-এর ঢাক। খুল্তে যাচ্ছিলেন। ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, "মিষ্টার চক্রবর্তীকে কনভার্ট করা যেন নিউকাস্লে কয়লা বয়ে নিয়ে যাওয়া। আচ্ছা মিষ্টার চক্রবর্ত্তী, মিসেস্ বেসাণ্টের সঙ্গে আপনার জানাশুনা আছে ?"
সুধী বলল, "আমি থিয়সফিষ্ট নই।"
এলেনর বললেন, "নন্? তবে কেমন করে নিরামিষাশী হলেন?" সুধীকে ভারতবর্ষের সাত্ত্বিক আদর্শের প্রসঙ্গ পাড়তে হল। হধী বলল, "জৈনদের নাম শুনেছেন?"
এলেনর বললেন, "শুনেছি বৈকি। সেই যাদের শব শকুনে খায় । উঃ !" ( শিউরে উঠলেন । ।
সুনী হেসে বলল, "আপনি যাদের কথা ভাবছেন তাদের বলে পাশী।"
"ও পার্শী! How dreadful ! শুনলে আর্থার ? তোমার গ্রীকদের পরম শত্রু সেই যে পার্শিয়ানরা, তারাই - মানে তাদের বংশধররাই - ওঃ How dreadful!"
সুধী জান্ত না যে মিস্ মেল্বোর্ণ-হোয়াইটের দুই নম্বর বাতিক ইংলণ্ডে শবদাহ প্রচলিত করা। এজন্যে তিনি ও তাঁহার বন্ধুরা একটি সমিতি করেছেন। যাঁরা চাঁদা দিয়ে সভ্য হবেন তাঁদের মৃত্যুর পরে তাঁদের শব সমিতি কর্তৃক দাহ করা হবে। শবদাহ কাৰ্য্য ইংলণ্ড প্রভৃতি দেশে অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। সমগ্র দেশের মধ্যে হয়ত একটি কি ছুটি Grematorium আছে ।
মিস্ মেলবোর্ণ-হোয়াইট সুধীকে সভ্য হবার জন্যে অনুরোধ করলেন। সুধী প্রথমটা আশ্চর্য্য ও পরে কৌতুক বোধ করে বলল, "আমি ড পশী নই। আমি হিন্দু। আমাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে অন্য সকলে তাকে ঘাড়ে করে শ্মশানে নিয়ে যায়, ঝড় বৃষ্টির রাত্রেও। একটি পেনী মজুরি নেয় না।"
ডক্টর মেলবোর্ণ-হোয়াইট গভীরভাবে বললেন, প্রাচীন গ্রীকা শব দাহ করত, না শবকে গোর দিত সে সম্বন্ধে মতভেদ আছে।" অন্যমনস্ক অধ্যাপককে দাবড়ি দিয়ে তাঁর ভগিনী বললেন, "কিন্তু আধুনিক পার্শীদেরকে আমাদের সমিতির সভ্য করতে হবে, আর্থার।"
মেল্বোর্ণ-হোয়াইট পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হলে সুধী জানতে পারুল এঁদের পূর্বপুরুষ কেউ রাণী ভিক্টোরিয়ার প্রধান মন্ত্রী লর্ড মেল্বোর্ণের আত্মীয় ছিলেন। লর্ড মেলবোর্ণের একখানি প্রতিকৃতি এঁদের বসবার ঘর অলঙ্কত করছে। একদিন কথা প্রসঙ্গে মিস্ মেল্বোর্ণহোয়াইট বলছিলেন, "the Melbourne grit" তাঁদের পরিবারের বিশেষত্ব। তার বিষয়ে সুধীর সন্দেহ ছিল না, কিন্তু তাঁর ভাইটি বড়
বেচারা মানুষ। বয়সেও তাঁর বড়। লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মস্ত ক্লাসিকাল স্কলার, গিলবার্ট মারের মত প্রখ্যাত না হলেও তেমনি বিদ্বান। ভাইবোন দুজনেই অনূঢ়, তবে ভাইয়ের জীবনে কখনো কোনো রোমান্স ঘটেছিল কিনা তার সাক্ষ্যস্বরূপ তাঁর আঙুলে অঙ্গুরীয় নেই। আকারে আয়তনে ভাইটি খর্ব্ব ও ক্ষীণ ; কিন্তু তাঁর দাড়ির বহর তাঁকে বাড়িয়ে দেখায়। বোনের অতি-সজাগ চক্ষু তাঁর পরিচ্ছদকে মলিন কিম্বা কুঞ্চিত হতে দেয় না। অন্যান্য বিষয়েও তাঁর উপর বোনের অবিরত লেগে রয়েছে। বোনটি এতটা পটু না হলে ভাইটিও বোধ করি এতট। অপটু হতেন না। আক্ষেপ করে বল্ছিলেন, "হতে চেয়েছিলুম ক্লাসিকাল নাযক, হয়ে দাঁড়ালুম ক্লাসিক্সের অধ্যাপক। কাজের মধ্যে পড়া আর পড়ানে।।"
সুধীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "ছাত্র ?"
সুধী উত্তর দিয়েছিল, "হুঁ!, সার।" প্রবীণ ব্যক্তিকে সান বলে সম্মান দেখিয়ে সুধী সম্মান বোধ করে। বাদলের মতে সকলেই সমান। সমানে সমানে সহজ ভদ্ৰত। চলুক, উচ্চত। নীচতার ভাণ কেন ? ডক্টর মেলবোর্ন হোয়াইট বলেছিলেন, "কিসেব ছাত্র ?"
সুধী বলেছিল, "জীবনশিল্পের।"
"তা হলে প্রাচীন গ্রীকদের দ্বারস্থ হতে হয়।'
"কিন্তু তারা কি বেঁচে আছে ?"
"আছে বৈকি। যে একবার বেঁচেছে সে চিরকাল বেঁচেছে। মরে তারাই যারা জন্ম থেকে মরা। প্রকৃতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃতবৎস!, মিষ্টার চক্রবর্ত্তী।"
সুধী সবিনয়ে বলেছিল, "মুতের জন্য কি আপনি শোক করেন না, সার? এই যে গত মহাযুদ্ধে লক্ষ লক্ষ বীর"
"এলেনর তাই নিয়ে হৈ হৈ করে বেড়াচ্ছে বটে। কী ওটার নাম লীগ অব নেশন্স, - হা হা হা। পৃথিবী থেকে যুদ্ধ উঠিয়ে দেবে এলেনর আর তার লীগ । কেন ? যুদ্ধে কি মানুষ এই প্রথম মরূল ? ট্রয়েব যুদ্ধে বছরের পর বছর কি তখনকার অনুপাতে কম মানুষ মরেছে ? যদি বল ট্রয়ের যুদ্ধ অঐতিহাসিক, তবে Peloponnesian War ?
সুধী গ্রীক ইতিহাস পড়েনি। চুপ কবে থাকুল । ডক্টর মেলবোর্ণহোয়াইট সমঝদার শ্রোতা পেয়েছেন ঠাওবে বলতে লাগলেন, "না, মিষ্টার চক্রবর্ত্তী, ও সব ছেলেমানুষী আমাদের মানায় না। এলেনর ওসব করে বেড়ায়, - মেয়েমানুষ, হাতে কাজ নেই অথচ পযসা আছে, একটা লীগ অব নেশন্স ইউনিয়ন, একটা ভেজিটারিয়ান ক্লাব, একটা ক্রিমেশন সোসাইটী, Abolition of Vivisection ইত্যাদি যাবতীয় ব্যাপার, এই করে তার জীবনের সার্থকতা। কিন্তু আমরা।
কোন্ কথা থেকে কোন্ কথা এসে পড়ল। সুধী ভাব ছিল, সেদিনকার মত উঠবে কিনা। ডক্টর মেলবোর্ণ হোয়াইট বললেন "কী
নাম ? - বাবগড গীট। না, কী যেন বইখানার নাম ? আমি পড়েছি।" সুধী বলল, "শ্রীমদ্ ভগবদ্ গীত।।"
'ওতে লিখেছে যাব। মধে রয়েছে তারাই মরে, কাজেই মারা সম্বন্ধে
দ্বিধা বোধ করা কাপুরুষতা। সংস্কৃত আমি জানিনে, কিন্তু গ্রীকের সঙ্গে তার ভাষার ও ভাবেব বহু সদৃশ্য তারা আবিষ্কার করেছে যারা দুটোই জানে । তুমিই দুটোই জান ?"
"আমি সংস্কৃত সামান্য জানি। গ্রীক একেবারেই না।"
"একেবারেই না? এ-কে-বা-বেই না।"
হুধী লজ্জিত হয়ে নিঃশব্দ বইল।
ডক্টর মেলবোর্ন হোয়াইট তাকে খানকষেক বইয়ের তালিকা দিয়ে
তারপরে বলেছিলেন, "রবিবার গুলোতে আমার কাছে এসো, সংস্কৃত ও গ্রীক চর্চ্চা করা যাবে।"
ক্রমশ যখন ঘনিষ্ঠতা হল -তখন ডক্টর মেল্বোর্ণ-হোয়াইট সুধীকে তার জীবনের ব্যর্থতার কথা বল্লেন। তাঁর বোন তাঁকে নজরবন্দী করে বেখেছেন। কোথাও যেতে দেন না। ১৯০৯ সালে Roosevelt যখন আফ্রিকায় শীকার করতে যান তখন তাঁর দলের মধ্যে আমাদের ডক্টরেরও নাম ছিল, কিন্তু এলেনব তাঁকে যেতে দিলেন না। সালে তিনি স্কটের সঙ্গে দক্ষিণ মেরু যাত্রা করবেন ঠিক হয়ে গেছল, কিন্তু সে বারেও এলেনর দিলেন বাধা। ১৯১৪ সালে তিনি বয়স ভাঁড়িয়ে সৈন্যদলে নাম লিখিয়েছিলেন, কিন্তু এলেনর জানতে পেরে পণ্ড করে দিলেন । গ্রীক হবার একটাও সুযোগ তিনি পেলেন না। বিদ্যা জীবনে রূপান্তরিত হতে পারে না সে যেন অচল স্বর্ণমুদ্রা, তাকে বাজারে ভাঙানে। যায় না, লকেট করে সবাইকে দেখিয়ে বেড়ানো ছাড়া তার অন্য সদ্ব্যবহার নেই! হিউম্যানিটারিয়ান বোনের উৎপাতে তিনি মাংসাহার ত ত্যাগ করেছেন। তাঁর দাড়ি কামানোরও হুকুম নেই, পাছে অসাবধান হয়ে মাংস কেটে ফেলেন ।
পাঁচ শত ডিম চাই!
কোন এক অনাথাশ্রমের জন্যে ঈষ্টার মহোৎসবের দরুণ পাঁচ শত ডিম চাদা করার ভার মিস্ মেল্বোর্ণ-হোয়াইটের উপর পড়েছে । তিনি তাঁর আত্মীয় বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করে বেড়াচ্ছেন কে ক'টা ডিমের মূল্য ভিক্ষা দিতে পারবে। সুধীকে পাকড়াও করে বললেন, "এই যে
• মিষ্টার চক্রবর্তী। আপনার নামে কত লিখব বলুন। একশোটা ?" সুধী কিছুক্ষণ অবাক হয়ে রইল, বুঝতে পারল না ব্যাপার কী।
মিস্ তাঁর চশমার ওপার থেকে মিটি মিটি চাউনি ক্ষেপণ করে মিষ্টি হেসে বললেন "ওদের ত কেউ আপনার লোক নেই। আমরা না দিলে কে দেবে বলুন। মোটে পাঁচশোটা ডিম। আর্থার একশোটা দিতে দয়া করে রাজি হয়েছেন। না আর্থার ?"
ডক্টর বললেন, "কই ? না!"
মিস্ বেশ জোরে জোরে অথচ ধীরে ধীরে বললেন; বলবার সময় তর্জনীর দ্বারা তাল দিতে দিতে। - "আর্থার, গেল বছর তুমি একশোটা দিয়েছিলে। তার আগের বছরও একশোটা। অনাথাশ্রমের ছেলেমেয়েরা তাদের আর্থার কাকার নাম মনে রেখেছে। তুমি কি এ বছর তাদের নিরাশ করতে চাও ?
ডক্টর সুবীর সঙ্গে এমন ভাবে চোখাচোখি করলেন যেন তার অর্থ, "দেখলে ত! আমি বলেছিলুম কি না।" কিছুক্ষণ নিঃশব্দে দাড়িতে হাত বুলালেন । তার পর সান্ত্বনার সুরে বললেন, "গ্রীকদের মধ্যে যোগ্যের পুরস্কার ছিল, কিন্তু অযোগ্যের প্রতি সকরুণ ভিক্ষা ছিল না। এট। আমাদের হৃদয়বৃত্তির সৌখীনতা।"
মিস্ তখন নিবিষ্টমনে একশোটা ডিমের বাজারদর কষ্ ছিলেন। কান দিলেন না। সুধী বলল, "দানশীলতা আমার দেশে চিরদিন অযোগ্য পাত্রের অপেক্ষা রেখেছে; কারণ যোগ্যপাত্র ত দান চায় না।"
ভক্টর বললেন, "কিন্তু দানশীলতাই যে একটা দুর্ব্বলতা। ভারতবর্ষ ওটাকে প্রশ্রয় দিলেন কেন ও কবে থেকে ?"
সুধী বলল, "পুরাণে রাজা হরিশ্চন্দ্রের কাহিনী আছে। তিনি স্ত্রীকে বিক্রয় করে সাম্রাজ্যদানের দক্ষিণা জুটিয়েছিলেন। ইতিহাসে হর্ষবন্ধনের
সম্বন্ধে পড়েছি তিনি পাঁচ বছর অন্তর যথাসর্বস্ব দান করে নিঃসম্বল হতেন। অসংখ্য উদাহরণ আছে। আমার মনে হয় আমাদের সমাজব্যবস্থার মধ্যে এর অর্থ নিহিত আছে। কতকগুলো লোক বলবান বিদ্বান ধনবান ও অন্য কতকগুলো লোক নিরাশ্রয় মূর্খ ও দরিদ্র হয়েই থাকে। সমাজ এদের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করতে সর্ব্বদা সচেষ্ট না থাকলে দক্ষিণ অঙ্গের অতি বৃদ্ধি ও বাম অঙ্গের অতি ক্ষয় ঘটবে এবং পরিশেষে সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে সমাজ ডিগবাজি খাবে। এই চেয়ারখানার একটা পায়া ভাঙলে যে দশা হয় সেই দশা। সেই জন্যে দান করাটা দাতার গরজ। অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে দান করতে হয় এবং দানের সঙ্গে দিতে হয় দক্ষিণা।"
মিস্ যে সব কথা শুনেছিলেন তা কাউকে জানতে দেননি। হঠাৎ মুখ তুলে বললেন, "শুন্লে ত আর্থার ? সমাজকে বাঁচিয়ে রাখার সংকেত? তোমার গ্রীকরা অপঘাতে মলে ক্রীতদাস পুষে । রোমানরা মলো ক্রীতদাসকে সিংহের খাঁচায় পুত্রে মজা দেখতে দেখতে। তুমি কি তোমার স্বজাতির তেমনি মৃত্যু চাও? আমি জানি তুমি বল্বে মৃত্যু যার ঘটে রয়েছে তারই ঘটবে। কিন্তু আমি গ্রীক নই, আমি Destiny মানিনে। যাকে প্রতিরোধ করতে পারি তাকে যতক্ষণ পারি ততক্ষণ যতদুর সাধ্য ততদুর প্রতিরোধ করব। যা ঘট। উচিত নয় তাকে ঘট্তে দেব না।"
সুধীর দিকে ফিরে বললেন, "দেখুন দেখি, মিষ্টার চক্রবর্ত্তী, যুদ্ধ একটা জিনিষ যা সভ্য মানুষের কলঙ্ক। নিব্বোধেরা লড়াই করে তিল তিল করে মরে--ওঃ সে অকথ্য যন্ত্রণা ! বুদ্ধিমানেরা মিথ্যাকথায় খবরের কাগজ ভরিয়ে মনের মধ্যে নরক নিয়ে বাঁচে এবং বেশ দুপয়সা করে খায় । আমরা নারীরা চিরকাল ঠাকুর দেবতার কাছে প্রার্থনা করে চোখের জলে ভেসে অনাহারে অল্পাহারে দিন কাটিয়ে প্রিয়জনকে হারিয়ে শেষ
পর্যন্ত দেখলুম ফল হয় না। আগুন একবার যদি লাগে তবে সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে থাক্ না করা অবধি নেবে না। আগুন যাতে না লাগে তারই ব্যবস্থা করতে হবে। তাই আমাদের এই No 'More War Movement কিন্তু আর্থার কিছুতেই এতে যোগ দেবে না।"
সুধী বলল, "অমন করে কি যুদ্ধ নিবারণ করা যায়, মিস্ মেল্বোহোয়াইট ? অবশ্য আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করবার অনুমতি দেন।
মিস্ একটু ক্ষুব্ধ হলেন। ধরে রেখেছিলেন সুধীও তাঁদের দলে। বললেন, "বিশ্বের লোকমত যদি আমাদের দিকে হয় তবে যুদ্ধ করবে কারা ও কার সাহায্যে এ
সুধী সবিনয়ে বলল, "ডক্টর মে'বার্ণ হোয়াইটের মত যুদ্ধকে আমি কাম্য মনে করিনে, ববঞ্চ আপনারই মত দুষণীয় জ্ঞান করি। কিন্তু মুদ্ধেব জড় আমাদের প্রত্যেকেরই চরিত্রে উহ্য থেকে আমাদের চিন্তায় বাক্যে ও কাজে সঞ্চারিত হচ্ছে। পৃথিবীর অতি নগণ্য কোণে অতি সামান্য একজন মানুষ যদি একটিমাত্র মিথ্যা কথা বলে তবে সেই ছিদ্র দিয়ে মহাযুদ্ধের মহামারী পৃথিবীময় ব্যাপ্ত হয়। যদি একটি মুহূৰ্ত্ত মন্দ চিন্তা করে তবে ও সেই কথা। যদি অন্যায় কাজ কবে কিম্বা কৰ্ম্মবিমুখ হয় কিম্বা পরিমাণ লঙ্ঘন কবে তবে ও সেই কথা।"
মিস্ মনোযোগপূর্ব্বক সমস্ত শুনছিলেন। কাগজপত্র ব্যাগে পূরে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, "আপনি বোধ করি পৃথিবীকে স্বর্গে পরিণত না দেখে কায্যক্ষেত্রে নাম্বেন না, মিষ্টার চক্রবর্ত্তী। কিন্তু কথায় কথায় আমাকে ভোলাতে পাবেন না যে আপনার কাছে আমার অনাথ বালকবালিকারা একশোটি ডিমের আশা রাখে।"
সুধী তাঁর দিকে একখানি পাউণ্ড নোট বাড়িয়ে দিল ।
Bayswater অঞ্চলে মেলবোর্ণ-হোয়াইটদের বাগান-বেষ্টিত বাড়ী । দুজন মানুষের পক্ষে বেশ বড় বলতে হবে। বেস্মেণ্ট নেই। নীচের তলায় বস্তার ঘব, খাবার ঘর, বান্নাঘর, ভাঁড়ার ঘর। উপর তলায় আর্থার এলেনর ও প্রৌঢ। পাচিক। মিস্ ডসনের তিনটি সুইট্ (sunte )। তেতালায় আর্থারের মস্ত লাইব্রেরী। তিনি থাকেন বেশীর ভাগ সময় সেইখানে কিথা কলেজে আব তাঁর ভগিনী থাকেন নীচের তলাব বদ্বার ঘরে - যার একদিকে একটি গ্র্যান্ড পিআনো এবং অপব দিকে একটি ডেম্ব - কিম্বা সভা-সমিতিতে।
ভাহ-বোন উভয়ের আমন্ত্রণে সুধীকে এ বাড়ীতে ঘন ঘন আসতে হয । একদিন আর্থার বলেন, "চক্রবর্ত্তী, ট্র্যাজেডীব প্রকৃতি ও স°জ্ঞা নম্বন্ধে এই যে প্রশ্ন আব্দ তুললে এর উত্তব চিন্তা করতে আমার দু'একদিন লাগবে অথচ শ্রোতাব জন্ঠে সাতনি অপেক্ষা করলে সমস্ত ভুলে যাব। কাজেই তুমি পরশু আমার সঙ্গে কলেজে দেখা কোরো, একসঙ্গে গল্প করতে করতে বাড়া আসা ও চা খাওয়। যাবে।" অন্যদিন এলেনর বলেন, "সুধী, অন্ধ কারুশিল্পাদেব দেখতে য়েছিলে, কাল সুইস্ কটেজ ষ্টেশনে আমার সঙ্গে সাক্ষাং কোরো। কেমন ? সেখান থেকে বাড়ী ফেব। যাবে, তোমার সঙ্গে পরিচিত হবার জন্যে জন কয়েক বন্ধুকে চা খেতে ডেকেছি।"
ভাইবোনের মধ্যে ভাবসংক্রান্ত বিবাদে সুধী মধ্যস্থ হয় ও শেষ পৰ্য্যন্ত একটা সমন্বয় ঘটিযে উভয়কেই খুশি করে। ওঁরা ভাবেন, তাই ত, আমাদের মতবাদে মিল যত আছে অমিল উত নেই ত। তারা একদিন প্রস্তাব করেছিলেন সুধী তাঁদের বাড়ীতে স্থায়ী অতিথি হলে
দিয়েছিল। তিনি দরজা খুলে দু'পা পিছিয়ে যেতেন। সুধী ইংরেজী বলতে পারে জেনে তিনি আশ্চর্য হলেও আশ্বস্ত হন। ক্রমশঃ সুবীর ভক্ত হয়ে পড়লেন। একদিন হাত পেতে বলেছিলেন ভাগ্যগণনা করতে । সুধী পরিহাস করে বলেছিল, নিকটেই আপনার বিবাহের সম্ভাবনা দেখছি, মিস্ ডব্সন । মিস্ ডবসন লজ্জায় সেই থেকে আর হাত *পাতেননি, তবে সপ্তাহে একদিনের বদলে দু'দিন হাফ ছুটী নিতে আরম্ভ করলেন দেখে মিস্ মেলবোর্ণ-হোয়াইটের আশঙ্কা হতে লাগল পাছে মিস ডবসন সত্যিই বিয়ে করে কাজ ছেড়ে দেন।
মিস্ নেলবোণ-হায়াইট বাড়া ছিলেন না। ভক্ট লাইব্রেবীতে বসিযে মিস্ ডব সনকে ডেকে বললেন দু'জনে দিতে।
সুনীকে বললেন, বল্ছিলুম ট্র্যাড্ডেী কথাটাব অপপ্রয়ে কাগজে প্রতিদিন দেখতে পাই, তাই তোমাকে গোড়াতে করে দিচ্ছি যে অমন ট্র্যাজেডার ব্যাখ্যা আমার আছে প্রত্যা না, চক্রবর্ত্তী "
সুধী বলল, 'না, সাব, আনি যাব কথ। পেডেছিলুম সেটা ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপকদের মুখে শুতে পাওয়। ট্র্যাজেডী।"
তিনি বললেন, "সেটাতে পরিণামের কথাই বলে, যে পরিণামে শোকাবহ তার কথা। আবন্ত হল হয়ত সুখ সম্পদের মধ্যে, শেষ হল দুঃখ দরিদ্র্যে অকাল মৃত্যুতে, এই আমাদের ইংলণ্ডীয় ট্র্যাজেডী। কিন্তু বৌক ট্র্যাজেডী অমন নয়, চক্রবর্ত্তী। তুমি যে বল্ছিলে সংস্কৃত সাহিত্যে জডী নেই সেটা বোধকরি তুমি ইংরেজী অর্থে বল্ছিলে ।"
শুখী বলল, "সফক্লিসের রচনার গুণে গল্পটি এমন ঘোরালে। আর কথোপকথন এমন জোরালো হয়েছে যে আড়াই হাজার বছরে কোনো নাট্যকার ঐ দুই দিকে উন্নতি দেখাতে পারেন নি। তবে চরিত্রচিত্র বড় মোটা তুলিতে মূল রং-এর সাহায্যে হয়েছে ।
ডক্টর সুধীর সঙ্গে একমত হলেন। সফক্লিস তাঁর প্রিয় নাট্যকার। তিনি বললেন, "সমস্যাসংক্রান্ত নাটক আধুনিক যুগে বাশি রাশি লেখা হচ্ছে, কিন্তু হতভাগ্য ঈডিপাসের সমস্যাকে কোন সমস্যাই অতিক্রম করতে পারছে না। পিতা মাতার জন্নো, পুত্রকন্যার জন্যে, আপনার জন্যে কী খেদ কী লন্জ। কী গ্লানি ঐ একটা মানুষের। কিন্তু ট্র্যাজেডী আমি সেইটুকুকে বন্ধ না। ট্র্যাজেডী হচ্ছে তাই বার কবল থেকে নিষ্কৃতি নেই, যা অবশ্যম্ভাবী, যাকে চুপ কবে ঘটতে দেওয়া ও অসহায় ভাবে সয়ে যাওয়াই আমাদের কৰ্ত্তব্য। এই যেমন গত মহাযুদ্ধ। ঐ নরকের ভিতর দিয়ে যেতেই হল আমাদের সবাইকে, কেউ প্রাণে মরে সকলের থেকে এগিয়ে গেল, কেউ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হাবিয়ে মানসিক যন্ত্রণ। লাঘব করল, কেউ আমার মত অকর্ম্মণ্য হয়ে সকলেব থেকে বেশী ভুগল।"
সুধী মন দিযে শুন্ছিল । বল ঈডিপাস যা করেছিলেন তা না জেনে করেছিলেন, তার দরুণ অনুশোচনার আবেগে আত্মপীড়ন করা তাঁর উচিত হযনি। নিজের দুভাগাকে সাধ্যমত খণ্ডন করাতেই মনুষ্যত্বের জ্য।"
ডক্টব বাধা পেয়ে বিরক্তি দমন করে বললেন, "কিন্তু দুর্ভাগ্য যে এরূপ ক্ষেত্রে অথণ্ডনীয়, মাই ডিয়ার ইযং ফ্রেণ্ড । হয় বিধাতার নয় প্রকৃতিব নয় অপরাপর মানবের stern necessity আমাদের দুর্ভাগ্যের মূলে। যেমন এক একটা ঝড় বা ভূমিকম্প তেমনি মানব সংসারের এক একটা ট্যাজেডী। ঝড়ের পরে যেমন আকাশ নিৰ্ম্মল হয়, বাতাস ঝির ঝির
করে বয়, নব জীবনের উল্লাস অনুভূত হয় তেমনি ট্র্যাজেডীর পরে। A stern necessity works itself out. দুই আর দুই মিলে চার হয়। তারপর আমরা বুঝি যা হয়ে গেছে তা মঙ্গলের জন্যে। ঈডিপাসকে দিয়ে দেবতারা প্রমাণ করলেন যে মানুষ যতই সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ও সাফল্যের অধিকারী হোক অহংকারে আত্মহারা হোক তার পতনের বীজ তার ঊত্থানের মধ্যে গুপ্ত আছেই, সে বীজ অঙ্কুরিত হতে বিলম্ব করলেও দ্রুমায়িত হয়ে দশদিক আচ্ছন্ন করবেই।"
সুধী তাঁকে স্তব্ধ হতে দেখে ভরসা করে বলল, "বুঝেছি, আপনি যাকে ট্র্যাজেডী বলেন তাকে আমরা বলি কর্ম্মফল।"
সুধী তাঁকে বোঝাল। তিনি বললেন, "আমি আমার অজ্ঞাতসারে যা করছি তাব ফল কি আমাকে ভোগ করতে হবে ? তা কি কর্ম্মের ও কর্ম্মফলের সামিল ?"
সুধী বলল, "নিশ্চয। আইন জানিনে আইন জানিনে বলে বিধাতার আদালত আমাকে মাফ করবে না সেই জন্যেই ত জ্ঞানার্জন করা আমাদের নিত্যকালীন কৰ্ত্তব্য।"
ডক্টর মেনে নিতে পারলেন না। বললেন, "তোমার দেখা ও আমার দেখ। দুই স্বতন্ত্র ভূমি থেকে। আমি দেবতাদের স্বর্গ থেকে ঈডিপাস নামক একটি মানব ম্যারিয়নেকে দেখছি। তাকে দিয়ে একবকম খেলা দেখানো হল । থেলাব থেকে শিক্ষ। - Wait to see life's ending ere thou count one mortal blest. সব ট্র্যাজেডীই খেলা এবং প্রত্যেক খেলার পিছনে শিক্ষা উহ্য আছে। তা বলে আমি বল্ছিনে যে সকলের জীবনে ট্র্যাজেডী ঘটে। না, ওজিনিষ অত সস্তা নয়, চক্রবর্ত্তী। যাদের জীবন মহৎ উপাদানে তৈরি কেবলমাত্র তারাই ট্র্যাজেডীর নায়ক হয়ে থাকে। ঈডিপাস এই হিসাবে ভাগ্যবান।"
শুধী কী বল্তে যাচ্ছিল হঠাৎ সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শোনা গেল। ডক্টর চা ঢেলে টেবিলটাকে নোংরা করে রেখেছিলেন। তাঁর মুখ বিবর্ণ হয়ে গেল। তিনি পকেট থেকে রুমাল বাব করতে গিয়ে হাতের ঘা লাগিয়ে একটা পেষালাকে দিলেন মেজের উপর কাৎ কবে। মিস্ মেলবোর্ণ-হোয়াইট ঘরে ঢুকতেই দেখেন এই ট্র্যাজেডী। তাব বিরাট বপু শ্রমক্লান্তিতে ঘন ঘন আকুঞ্চিত প্রসারিত হচ্ছিল। তিনি কথাটি না বলে একগাদা বইবের উপর বপ্ করে বসে পড়লেন। তখন অন্ধকার ঘনিয়ে আসছিল। সুধী আলোর সুইচটা টিপে দিল। আলোব আকস্মিকত। সইতে না পেরে মিস্ হাত দিয়ে চোখ ঢাকলেন।
"এই যে সুখী, এবেল। এইখানেই খেযে।। তোমার সঙ্গে কথা আছে।" "সে কী কবে হবে মিস্ মেলবোর্ণ-হোয়াইট ? আমার মাদাম যে খাবার নিয়ে অপেক্ষা কবৃতে থাকবে। আব মার্সেল গল্প না শুনে কিছুতেই ঘুমুতে যাবে না।"
"আঃ মার্সেল।
ওকে আজকাল ভগবানের গল্প বলি, মিস্ মেলবোর্ণ-হোয়াইট । ভগবান কে, কোথায় থাকেন, কী করেন, আমাদের সঙ্গে তাঁর কী সম্বন্ধ, তাঁর জন্যে আমরা কী করতে পারি। এই সব।"
চমৎক।ব। তোমার মাসে লকে দেখতে হবে একবার। তাকে নিয়ে আস্তে পাব না ?"
"উহু । গাড়ীতে চড়লে তার অসুখ করে।"
মিস মেল্বোর্ণ-হোয়াইট সামান্য একজন শ্রমিকশ্রেণীর লোকের বাড়ী বেন মার্সেলকে দেখতে, এটা আশা করা অনায। কাজেই সুধী তাঁকে
আমন্ত্রণ করতে পারল না। তিনিও প্রসঙ্গটা চাপা দিলেন। সুধীকে ছেডে আর্থারকে নিয়ে পড়লেন।
"তারপর আর্থাব, কতক্ষণ বাড়ী এসেছ? চা খাওয়া হয়েছে ? ভুলে যাওনি ? কই, তোমার পেয়ালা কোথায় ? সর্বনাশ! এতক্ষণ টুকুরগুলো উঠিয়ে রাখনি ? অধ্যাপক হলে কি এমনি ভোলানাথ হতে হয
সেই পুরানো হলাগুদেশীয় টী-সেট্-এর একটি মিস্ ডসনকে আমি হাজারবার বারণ করেছি। বিয়ে-পাগলী হয়ে তাঁর বুদ্ধি শুদ্ধি লোপ পেয়েছে।"
পেয়ালার ভাঙা অংশগুলি একত্র কবে ধবে তিনি আস্ত পেয়ালাব অনুকরণ করলেন। লোহার শিক দিয়ে ওগুলিকে ফুঁড়ে লোহার তাব দিয়ে এগুলিকে বেঁধে জোড়া যায় । সেজন্যে কালকেই তিনি বণ্ড ষ্টীটেব এক দোকানে যাবেন স°কল্প করলেন।
আর্থাব প্রথমটা অপদস্থের মত অধোবদনে ছিলেন। কিন্তু সুধীব সামনে এতথানি উচ্ছ্বাস দেখানো এলেনবের পক্ষে অশোভন হয়েছে মনে করে তিনি বিরক্ত হয়ে উঠলেন। কিন্তু বোনকে রীতিমত ভয় কবে চল্তেন । সুধীর সামনে একটা কাণ্ড বাধাতেও তাঁর অপ্রবৃত্তি। সহস! ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে ছাদে পায়চারি করতে লাগলেন ।
সুধী ভাব্ল এই • সুযোগে বিদায় নেওয়া যাক । মেলবোর্ণ-হোয়াইট্ -
বলল, বলল, "মিস
এতবড় একটা গালভরা নামে নাই বা ডাকলে সুধী। বোলে। আণ্ট এলেনর। আমি ত কবে থেকে তোমাকে সুধী বলে ডেকে আছি। কিন্তু দেখ দেখি আর্থারের পাগলামি! বিয়ে করে থাকলে বৌটাকে ক্ষেপিয়ে তুলে ছাত্ । আমি বলে সহ্য করি। অন্য কোনো বোন তাও পাবৃত না । তুমিই বল না কেন, সুধী।"
"কিন্তু আণ্ট এলেনর, বয়ঃকনিষ্ঠের উপস্থিতিতে ওঁকে অমন কথা শোনানো ঠিক হয়নি আপনার। আমাকে বিদায় দিয়ে আপনি যান ওঁকে প্রসন্ন করুন।"
"সে কী! তুমি খেয়ে যাবে না? তোমার সঙ্গে যে অনেক কথা ছিল। আমি একটা দোকান আবিষ্কার করেছি যেখানে তাঁতের কাপড় পাওয়া যায়, তোমরা যাকে 'কাডার' বল । কিছু কিনেও এনেছি। কাল পোষাক তৈরি করব বসে।"
অগত্যা সুধীকে প্রস্তাব করতে হল, "আচ্ছা, তবে কাল এসে দেখে যাব।"
পরদিন অণ্ট এলেনর বাগানের দিকের বারান্দায় বসে রঙিন পশমের খদ্দরের উপর কাঁচি চালাচ্ছিলেন, সুধীকে অভ্যর্থনা করে বললেন, "ভিতর থেকে একখানা চেয়ার টেনে নিয়ে এসে বস। পেয়ালাটা নিয়ে বণ্ড স্ট্রীটে যাব ভাবছিলুম। তোমার যদি বিশেষ কাজ না থাকে এক সঙ্গে যাওয়া যাবে।...তোমার সেই ঈষ্টার ডিমের কথা মনে আছে? লেডী হেনরিয়েটা ব্লুমফিল্ড তোমাকে তার কৃতজ্ঞতা জানাতে বলেছেন। যদি তোমার কোনো দিন সময় হয় তবে আমার সঙ্গে তাঁর ওখানে গিয়ে দেখা করে আসা মন্দ নয়। ··ও কী ? আমার জন্যে ফুল এনেছ ? কী ফুল ? স্নোড্রপ। বহু ধন্যবাদ !
সুধী বলল, "একটি বুড়ো ভিখারী পথে পাকড়াও করে এইটি হাতে গুঁজে দিল। ভাবলুম নতুন আণ্টকে উপহার দিয়ে সম্বন্ধটার সম্বর্দ্ধনা করি।"
আণ্ট এলেনর শুধু বল্তে থাক্লেন, "Too nice of you, too nice of you" উঠে গিয়ে একটি ফুলদানীতে যত্ন করে স্নোড্রপগুচ্ছটি রাখলেন । বাগান থেকে ভায়োলেট ফুল এনে একটি ছোট্ট তোড়া বেঁধে সুধীর বাটনহোলে পরিয়ে দিতে গিয়ে দেখেন তার বাটনহোল নেই ।
অতটা লক্ষ করিনি।
এখন কী করি! !
"তাই ত সুধী।
কষ্ট দিয়ে তুললুম।
মাসে লঞ্চে দিও।"
"ধন্যবাদ, আণ্ট এলেনর। মার্সেল খুব খুশি হবে।"
আণ্ট এলেনরের কী যে ববার ছিল বল্তে ত্বরা দেখা গেল না। সুধীর একটু কাজ ছিল। কিংস্ ক্ৰস্ ষ্টেশনে গিয়ে দেশ থেকে আসতে থাকা একটি ছেলেকে অভ্যর্থনা করতে হবে। ছেলেটিকে সুধী চেনে না, যোগানন্দের পরিচয়লিপি থেকে তার নাম জেনেছে এবং তার নিজের টেলিগ্রাম থেকে তার পৌঁছানোর তারিখ, সময় ও স্থান।
বহুকাল উজ্জয়িনীর সংবাদ না পেয়ে তার উৎকণ্ঠা সঞ্চার হয়েছিল। এদিকে বাদলও নিরুদ্দেশ। কাকামশাই যথেষ্ট বড় চিঠি লেখেন না কেবলমাত্র বাদলের কুশল জিজ্ঞাসা করে ও সুধীর কুশল আশা করে ইতি করেন । নবাগত যুবকটি হয়ত দেশের ও দশের খবর দিতে পারবে। যুবকটির সঙ্গে দেখা করবার জন্যে সুদী ব্যগ্র হয়ে রয়েছিল। আণ্ট এলেনরের সঙ্গে আলাপ জম্ছিল না।
আধ ঘণ্টাকাল বাগানের দিকে চেয়ে থেকে সুধী বলল, "দেশ থেকে একটি ছেলের পৌঁছানোর কথা আছে আজ, আণ্ট এলেনর।" "বটে ? তোমার বন্ধু বুঝি?"
"না, আণ্ট এলেনর। বন্ধু আমার একটিমাত্র । সে আজ মাস খানেক নিরুদ্দেশ ।"
মিছি মিছি ফুলগুলিকে আচ্ছা, নিয়ে তোমার
"নিরুদ্দেশ। অসম্ভব। স্থির জান নিরুদ্দেশ ?"
সুধী চিন্তামৌন থাক্ল । চিন্তার কিছুট। দুশ্চিন্তাও বটে । মনট। কেমন করে উঠছিল। আণ্ট এলেনর হাতের কাজ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে উত্তেজিত হয়ে বল্ছিলেন, "স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ডে খবর দিয়েছ ? দাও নি ?
| pdf |
67afdd4b1731ef205a81971f94e254c3f01e726b17b4c3c37e94878da3fbf82c | হায়দার আলি, টিপু সুলতান ও ভেলু অম্পিকে। লিখলেন মহারাষ্ট্রের আপ্পাসাহেব ভোঁসলে আর বাজিরাওয়ের কথা। অযোধ্যার বেগমদের, পাঞ্জাবের সর্দার শ্যামসিং আতারিওয়ালা, ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ, তাঁতিয়া তোপি, ডোমরাওয়েনের মহারাজা কুনাওয়ার সিং, নানাসাহেব প্রভৃতি বীরদেব কথা তাঁর লেখনীতে এসে গেল। স্বাধীনতা লাভের জন্য, ভারতের মঙ্গলের জন্য এবং জগৎ সভায় ভারতের গৌরবময় স্থানলাভের জন্য শপথ নেওয়ার কথা ঘোষণাপত্রে স্থান পেল। বলা হল, অস্থায়ী সরকারের কাজ হবে ভারতবর্ষ থেকে ইংরেজ ও তার মিত্রদের বিতাড়ন। তারপর স্থায়ী জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। সে কাজ হবে ভারতবাসীর ইচ্ছানুসারে ভারতের মাটিতে। যতদিন তা না হয় ততদিন অস্থায়ী সরকার ভারতীয়দের অছি হিসেবে দেশের শাসনব্যবস্থা চালিয়ে যাবে। আর এই অস্থায়ী সরকার জন্মলগ্ন থেকেই সকল নাগরিককে ধর্মীয় স্বাধীনতা, সকল বিষয়ে সমান অধিকার ও সমান সুযোগ দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ হল।
একুশে অক্টোবর ১৯৪৩ সাল। সকাল সাড়ে দশটায় অধিবেশন বসল সিঙ্গাপুরের ক্যাথে বিল্ডিংসে (Cathay Buildings)। গোটা দক্ষিণ এশিয়া ভেঙে সেদিন মানুষ এসেছিল আজাদ হিন্দ সরকাবের প্রতিষ্ঠার সাক্ষী হতে। তাদের নিজস্ব সরকার এই আজাদ হিন্দ সরকার। আর তার সর্বাধিনায়ক - স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। আনন্দে, গর্বে, সবার বুক ফুলে ওঠে - মনে জাগে ইংরেজ বিতাড়নের দুর্জয় সংকল্প।
ওই দিনই সিঙ্গাপুর বেতারে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী রাষ্ট্র উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি এক প্রাণস্পর্শী বক্তৃতায় বলেন, আজাদ হিন্দ সরকার তার সশস্ত্র জাতীয় বাহিনী নিয়ে ভারতের পূর্ব সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ভারতের মাটিতে যেদিন জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দেবে সেইদিনই দেশজুড়ে সত্যকার বিপ্লব শুরু হবে। আর সেই আঘাতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের শেষ চিহ্নটুকুও বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
ওই দিনই নেতাজি আরও একটা পৃথক বিবৃতিতে আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা বলেন। ব্যাপারটা তাঁর কথাতেই বলি - "গত বাইশ বছর আমার রাজনৈতিক জীবনে, ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে, বিশেষ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিদ্রোহের সূত্র অনুসরণ করতে গিয়ে আমি বুঝেছি স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের দুটি বড়ো উপাদানের অভাব রয়েছে। প্রথমটি হল জাতীয় বাহিনী আর দ্বিতীয়টি হল সেনাদল পরিচালনার উপযুক্ত শক্তিশালী একটি জাতীয় সরকারের।" তিনি আরও বলেন - "এই অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা করে আমরা একদিকে ভারতের বিশেষ পরিস্থিতির কথা মনে রেখেছি। আর অপর দিকে ইতিহাসের প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করেছি। সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে বলা যায় যে ১৯১৬ সালে আইরিশরা একটি অস্থায়ী রাষ্ট্র গঠন করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে (১৯১৪-১৮) চেক্জাতিও একাজ করেছিলেন। আর যুদ্ধের অবসানে মোস্তাফা কামালের নেতৃত্বে আনাতোলিয়াতে তুর্কি জাতির অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।"
এখন প্রশ্ন হতে পারে - নেতাজি বিদেশে ওই অস্থায়ী সরকার গঠন করেছিলেন কেন? কী তাঁর প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল?
মনে রাখা দরকার, অস্থায়ী সরকার গঠনের বাস্তবে বহু সুবিধা আছে। প্রথমত, যে কোন নেতা এখন আর পৃথকভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারবে না। সমস্ত সংগ্রাম সমন্বিত হবে ঐ অস্থায়ী সরকারের পরিচালনায়। শত্রুপক্ষকেও যথেষ্ট সতর্ক হতে হবে ওই সরকারের সঙ্গে সংগ্রামে। এছাড়াও, ওই সরকার শত্রুর চোখে বেশ কিছুটা মর্যাদা লাভ করবে। অপরাপর বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে নানা ব্যাপারে যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে। যেমন - অর্থ সাহায্য, ও তাদের ভূখণ্ড থেকে যুদ্ধ পরিচালনা। অস্থায়ী সরকারের স্বাধীনতা সংগ্রামকে তখন আর নিছক অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে অবজ্ঞা করা যাবে না। সে সংগ্রাম তখন আন্তর্জাতিক মর্যাদা পাবে। সাময়িকভাবে নিজেদের দেশের সামরিক ঘাঁটিগুলি শত্রু কবলিত হলে বন্ধু রাষ্ট্রগুলিতে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকে সংগ্রাম চালানো যাবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল শত্রু বিতাড়নের পর অর্থাৎ স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের জনগণের অভিপ্রায় অনুসারে অস্থায়ী সরকারের সমস্ত ক্ষমতা স্থায়ী সরকারের হাতে সমর্পণ করতে পারা যাবে।
অস্থায়ী সরকার গঠন উপলক্ষ্যে মালয়, জাভা, সুমাত্রা, শ্যাম, ইন্দোচীন ও হংকং-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সরকারিভাবে নয়টি স্বাধীন রাষ্ট্র অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি জানিয়েছিল। ওই রাষ্ট্রগুলি হল - -(১) জার্মানি, (২) ক্রোয়েশিয়া, (৩) নানকিং চীন, (৪) মাঞ্চুকুয়ো, (৫) ফিলিপাইন, (৬) ব্রহ্মদেশ, (৭) ইটালি, (৮) জাপান এবং (৯) শ্যাম। এছাড়াও আয়ারল্যান্ডের ডি-ভ্যালেরা নেতাজিকে ব্যাক্তিগতভাবে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
ইতিহাসের দিক থেকে তাই 'একুশে অক্টোবর' তারিখটাই আমাদের প্রথম স্বাধীনতা দিবস এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্রই ভারতবর্ষের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। আরও একটা কথা। ১৫ অগাস্ট ১৯৪৭ তারিখেই হয়েছিল ভারত ভাগ। ওই ১৫ অগাস্ট তারিখেরই অব্যবহিত আগে ও পরে ইতিহাসের নজিরবিহীন সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামায় লক্ষ লক্ষ মানুষ নৃশংস হত্যার শিকার হয়েছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহারা ও আত্মীয়হারা হয়েছিল। নারীনির্যাতন ও ধর্মান্তকরণ যে কত হয়েছিল তার কোনো হিসেব নেই। আসল কথা ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ইমারত গড়ে উঠেছিল বাঙালি ও পাঞ্জাবিদের বলি দিয়ে - অর্থাৎ কিনা বাংলা ও পাঞ্জাবকে দ্বিখণ্ডিত করে। তাই তো স্বাধীনতার ষাট বছর পরেও আমাদের প্রজন্মের বাঙালি ও পাঞ্জাবিদের স্বাধীনতা দিবসের অনুভূতি আজও কেমন যেন করুণ ও চোখের জলে ভেজা।
অন্য দিকে ২১-শে অক্টোবর ১৯৪৩-এর স্মৃতি নিয়ে আসে এক বিশুদ্ধ ও অপার আনন্দ। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারতীয়রা জাতি, ধর্ম, দল ও মত নির্বিশেষে জাতীয় পতাকার তলে দাঁড়িয়ে অখণ্ড স্বাধীন ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়েছিল।
ইংরেজ শাসনের অবসান এবং জাতীয় সরকারের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছিল। অনুগামীদের এভাবে অনুপ্রাণিত করতে বিশ্বের ইতিহাসে আর কোন নেতা পেরেছেন কিনা তাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তাই তো সুভাষচন্দ্র শুধু নেতাই নন - তিনি আমাদের নেতাজি - যে নেতার কোন বিকল্প নেই।
কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। আমাদের স্বাধীনতা এল বাংলা ও পাঞ্জাবকে বলি দিয়ে - দেশ ভাগের মাধ্যমেই। কিন্তু কেন? সে কথাই তো জানাব পরবর্তী প্রজন্মের ভারতীয়দের।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলির দূরদৃষ্টি ঃ ব্রিটেনের ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট অ্যাটলি বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরের বিচার-বিশ্লেষণ করে বুঝতে পেরেছিলেন যে, কামানবন্দুকের মাধ্যমে আর বেশিদিন ভারত শাসন করা সম্ভব নয়। তিনি ভালোভাবেই বুঝেছিলেন যে রক্তারক্তির পথে ভারত ত্যাগ করে যেতে বাধ্য হলে ব্রিটেনের কোটি কোটি টাকার লগ্নি বাঁচানো যাবে না। তাই বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি সাহেব তাঁর ক্যাবিনেট ও পার্লামেন্টকে বুঝিয়েছিলেন যে ওই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে (প্রায় গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে) শান্তিপূর্ণ উপায়ে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর করে দিতে পারলেই সবদিক থেকে সবকিছু বজায় থাকবে। অর্থাৎ রাজনৈতিক ক্ষমতা হারালেও ব্রিটেনের অর্থনৈতিক প্রাধান্য ভারতবর্ষে ঠিকই অব্যাহত থাকবে। এজন্যই ১৯৪৫-৪৬-এর শীতকালে রবার্ট রিচার্ডের One-Man Parliamentary Delegation-এর রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই অ্যাটলি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে যান যে, যেমন করেই হোক দেশভাগ করেই দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজটা চুকিয়ে ফেলতে হবে।
জাতীয় নেতাদের ক্ষমতার মোহ ও ব্যর্থতা : এদিকে কীভাবে যেন রবার্ট রিচার্ড ডেলিগেশনের রিপোর্ট পেশ হবার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের জাতীয় নেতারা বুঝে ফেলেছিলেন যে ক্ষমতা হস্তান্তর এবার হচ্ছেই এবং তা হচ্ছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ও বিনা রক্তপাতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে। সুতরাং আর আন্দোলন নয়, সংগ্রাম বা বিপ্লব তো কোন মতেই নয়। জওহরলালের বন্ধু ঐতিহাসিক মাইকেল এডোয়ার্ডস্-এর মতে ঠিক ওই সময় জওহরলাল নেহরুর মনোভাবটা ছিল এই রকম - "Freedom was at hand and it needed only to be negotiated, not bought with blood" (Michel Edwards, Last Years of British Rule in India. p. 126 )।
সাংবাদিক পবিত্রকুমার ঘোষের সংযোজন - বিশিষ্ট সাংবাদিক ও নেতাজি-গবেষক পবিত্রকুমার ঘোষ গত একুশে জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে বর্তমান পত্রিকায় একটি অত্যন্ত মূল্যবান রচনা প্রকাশ করেন। লেখাটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় তার কিছুটা অংশ এখানে তুলে ধরছি তাঁরই ভাষায় - "নেতাজি সুভাষচন্দ্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ঘটে গিয়েছে বেশ কয়েকবার। তাঁর মত ও পথ নিয়ে তথাকথিত কয়েকজন শীর্ষনেতা বার বার তাঁকে আঘাত করেছেন। তাঁর 'দিল্লী চলো' অভিযান সম্পূর্ণ হলে ভারতের চেহারাই পালটে যেত। লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উড়ত ১৯৪৫ সালেই। সুভাষচন্দ্র ভারতকে স্বাধীন
করার জন্য সমরবাহিনী নিয়ে ভারতের পূর্বপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এ সত্য সম্পূর্ণ আড়াল করে রাখা হয়েছিল এ দেশের জনসাধারণের কাছ থেকে। নেতাজি যদি ১৯৪৫ সালে বা তারপর ভারতে ফিরে আসতেন তাহলে ভারতভাগের এই মর্মন্তুদ পরিণাম ঘটত না। তাঁর নেতৃত্বে ভারত নিজ শক্তিতেই স্বাধীনতা অর্জন করত। ভিক্ষুকের মতো হাত পেতে আমাদের স্বাধীনতা পেতে হত না।"
"গান্ধীজি কোনো মতেই সুভাষচন্দ্রকে স্বমতে আনতে পারেননি। তাই সুভাষচন্দ্রকে কংগ্রেস থেকে সরিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন। সে কাজে তিনি সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু নেতাজি ও তাঁর আই. এন. এ.-র কীর্তিকাহিনী জানার পর গান্ধীজি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে তাঁর পুরোনো বিরোধের কথা ভুলে গিয়ে তাঁর পরম অনুরাগী হয়ে উঠেছিলেন। ক্ষমতা হাতে পেয়ে জওহরলাল নেহরু আর সর্দার প্যাটেল গান্ধীজির কোন কথা শুনতে আর প্রস্তুত ছিলেন না। গান্ধীজিকে ব্যবহার করেই নেহরু-প্যাটেল ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতার কাছাকাছি আসতেই তাঁরা সর্বাগ্রে গান্ধীজিকে ত্যাগ করেছিলেন। শুধু কান্নাই ছিল তখন গান্ধীজির একমাত্র সম্বল আর সুভাষ বিরোধিতার জন্য অনুশোচনার তীব্র জ্বালা।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট তারিখের আগের ও পরের দিনগুলিতে গান্ধীজির বেদনার্ত আত্মা শুধু নেতাজির পথ চেয়েছিল। তিনি বার বার স্বগতোক্তিতে বলতেন - ""আঃ! সে যদি একবার ফিরে আসত।' নেতাজি ফিরে আসবেন বলেই তাঁর অন্তরের বিশ্বাস ছিল। তাই নেতাজির মৃত্যু সংবাদ তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।"
| pdf |
097da76aba1ab55ae82b6851dfec1a703b3ed62d | 'আউটফিল্ড' একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
ব্রাসিল এমন একটা ফুটবল দল যারা কিনা ইতিহাসের সর্বকালের সেরা দল এবং তাদের আছেও সর্বকালের সেরা স্কোয়াড। সর্বকালের সেরা দল ত ব্রাসিল, বুঝলাম। কিন্তু ব্রাসিলের আবার সর্বকালের সেরা স্কোয়াড কোনটা..? ১৯৫৮ বিশ্বকাপের দলটি নাকি ২০০২ এর রোনালদো রিভালদোর দলটি..?
যদিও আমরা সবাই জানি ব্রাসিলের আর ইতিহাসের সর্বকালের সেরা স্কোয়াড কোনটি। হ্যাঁ, সেই দলটি হলো ১৯৭০ বিশ্বকাপের ব্রাসিলের দল। এই দলটি শুধু ব্রাসিলের সেরা স্কোয়াড না, ফুটবল ইতিহাসের সেরা স্কোয়াড যারা করেছিলেন বিশ্বজয়, যারা বিশ্বকাপকে একেবারে নিজেদের করে নিয়েছিলেন, যেই দলটা সবুজ মাঠে ছবি এঁকেছিলো হাতের বদলে পা দিয়ে, যেই দলটা ফুটবল খেলাকে অ্যাখ্যা দিয়েছিলো "জোগো বনিতা" বা "বিউটিফুল গেইম" নামে। যেই দলটার প্রত্যেক পজিশনের প্লেয়ার ছিলো সর্বকালের সেরা প্লেয়ারদের কাতারে..!
আজ বলবো তাদের বিশ্বজয়ের কাহিনী..!
১৯৬২ বিশ্বকাপে নিজেদের ২য় বিশ্বকাপ জিতার পর ১৯৬৬ বিশ্বকাপের হট ফেবারিট ছিলো ব্রাসিল। কিন্তু সেই দলে পেলে-গারিঞ্চা-আমিরাল্ডো-জায়েরজিনহো থাকা স্বত্বেও লজ্জাজনক ভাবে হাঙ্গেরীর সাথে ৩-১ এর হার, পর্তুগালের সাথে ৩-১ এর হার আর মাত্র বুলগেরিয়ার সাথে ২-০ এ জয় নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে পড়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ব্রাসিল। সবাই ভেবেছিলো ইতালীর মতই ব্রাসিলের দুর্দশা এসে পড়েছে, যাদেরও কিনা পর পর দুবার বিশ্বকাপ জয়ের পর আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। কিন্তু দলটা যে ব্রাসিল, যারা মাঝে মাঝে বিপদে পড়ে, কিন্তু সাফল্য তাদের সব সময়.................!
১৯৬৬ বিশ্বকাপ ইউরোপ ঘুরে ১৯৭০ বিশ্বকাপের আসর বসে মেক্সিকোতে। বিশ্বকাপের নবম আসর। যেই আসরে পুরো বিশ্ব বুঝেছিলো ফুটবল একটি খেলার চেয়েও বেশী, বুঝেছিলো ফুটবল হলো ছন্দের খেলা কোন লাত্থালাত্থির খেলা না.....!
১৯৭০ বিশ্বকাপের আসর প্রথমবারের মত মেক্সিতো বসে। ১৬টি দল, ৫ টি ভেন্যু নিয়ে মেক্সিকো প্রথম আয়োজন করতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের নবম আসর। যেই বিশ্বকাপের হট ফেবারিট ছিলো হাঙ্গেরী, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, জার্মানের মত দল। ৩১এ মে থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর মেক্সিকোর মধ্যকার খেলা দিয়ে শুরু হয় ৭০ এর বিশ্বকাপের যাত্রা আর শেষ হয় ২১এ জুন ব্রাসিল বনাম ইতালীর মধ্যকার ম্যাচের মাধ্যমে। ৩২ টি খেলার মধ্যে ৯৫টি গোল যার মধ্যে ছিলো ১ টি আত্মঘাতী গোল। পুরো বিশ্বকাপে দর্শক হয়েছিলো তৎকালীন রেকর্ড সংখ্যক ১৬ লক্ষ ৪ হাজার ৬৫ জন। প্রতি ম্যাচে গড়ে দর্শক হয়েছিলো ৫০ হাজার ১২৭ জন..!
১৯৭০ এর আসর ছিলো ব্রাসিলের জন্য সমালোচকদের জবাব দেওয়ার আসর যারা বলেছিলো ব্রাসিলের দিন শেষ। ৬২ এর কোচ মরেইরা চলে যাবার পর ৬৬ তে কোচ হয়ে এসেছিলো ভিসেন্তে ফেওলা। দল সেই বিশ্বকাপে লজ্জাজনক ভাবে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ হয়ে যাবার পর দলের কোচ হয়ে আসে সালদানহা। সালদানহার অধীনেই ব্রাজিল 1970 বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সব ম্যাচ খেলেছিলো এবং প্রতিটি ম্যাচ জিতেছিলো কিন্তু মিডিয়ার সামনে লাগামহীন কথাবার্তা আর প্রেসিডেন্টের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগে স্যাকড হন সালদানহা। তখন তড়িঘড়ি করে জাগালোকে দায়িত্ব দেওয়া হয় যিনি ৫৮ ও ৬২ বিশ্বকাপজয়ী ব্রাসিল দলের গুরুত্বপুর্ন সদস্য ছিলেন। সেই কিংবদন্তী ফুটবলার হলেন ব্রাসিলের কোচ। যিনি পেলের সাথে পাশাপাশি খেলতেন এখন তিনি সেই পেলেকেই শিক্ষা দিবেন। জাগালোর কোচ হয়ে আসা কিন্তু বেশী দিন না। ৬২ বিশ্বকাপের পর পর ই অবসরে যান জাগালো। তারপরই ৭০ বিশ্বকাপের কোচ। প্লেয়ার হিসেবে জিতেছেন টানা ২টি বিশ্বকাপ। কোচ হিসেবে কি তার প্রথম কোচিং ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপটি জিততে পারবেন..?
দলে এসেই দলকে নতুন ভাবে সাজান তিনি। ৫৮ থেকে ৬৬ বিশ্বকাপ খেলা প্লেয়ারগুলো বুড়িয়ে যেতে থাকে। গোলকিপার গিলমার, ডিফেন্ডার দেলমা, নিলটন সান্তোস, মিডফিল্ডার দিদি, স্ট্রাইকার ভাভা। একে একে সবাই বুড়িয়ে যেতে থাকেন।
তাই দলকে তিনি ঢেলে সাজাতে চেয়েছেন। স্কোয়াড থেকে বাদ দেন ইতিহাস আর ফুটবল মাঠ কাঁপানো গারিঞ্চাকে তার অফফর্ম আর বেখেয়ালী জীবন যাপনের জন্য। ফ্লুমেন্সিসের গোলকিপার ফেলিক্স, তৎকালীন অধিনায়ক সান্তসের কার্লোস আলবার্তো, সান্তোসের ক্লোডোলাল্ডো, বোটাফেগোর জায়েরজিনহো, সাও পাওলোর জারসন, ক্রুয়েজিরোর টোস্টাও, সান্তোসের পেলে, করিন্থিয়াসের এলাস্টিকো বয় রিভেলিনোদের নিয়ে তিনি সাজান তাঁর স্বপ্নের একাদশ। দলে নেই কোন বিগত বিশ্বকাপগুলোর সেরা প্লেয়ার শুধুমাত্র পেলে আর জায়েরজিনহো ছাড়া। দলের ফর্মেশন দিয়ে দিলেন ৪-২-৪ এর এক নান্দনিক ফর্মেশন.....!
এই সেই বিশ্বকাপ, যেই বিশ্বকাপ জয়ের পর বিশ্বকাপটি ব্রাসিল একেবারে তাদের করে নেন আর পেলের নাম তিনটি বিশ্বকাপ জিতা প্লেয়ারের নামে নামাঙ্কিত হয়..!
১৯৭০ এর বিশ্বকাপের ব্রাসিলের স্থান হয় গ্রপ সি তে। যেখানে রয়েছে গর্ডন ব্যাঙ্কস, জিওফ হার্স্ট, ববি চার্ল্টনের ইংল্যান্ড, ডিফেন্ডিং রানার্স আপ চেকোস্লোভাকিয়া আর রাডুর রোমানিয়া..!
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে ব্রাসিল ঠিক ৬২ বিশ্বকাপের ফাইনালের প্রতিপক্ষ চেকদের সাথে। ৬২ বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট। সেদিন ত ব্রাসিল সফল হয়েছিলো। আজকে কি চেকরা তার প্রতিশোধ নিতে পারবে নাকি ব্রাসিল ই সফল হবে..? সবার মনেই একটা প্রশ্ন..
খেলার ১১ মিনিটেই পেত্রাসের গোলে এগিয়ে যায় চেকরা। সে কি উল্লাস চেকদের..! কিন্তু এটা ব্রাসিল..! ২৪ মিনিটে এলাস্টিকো বয় রিভেলিনোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাসিল। ৫৯ মিনিটে পেলের গোলে সেলেসাওরা ২-১ এ এগিয়ে যায়..! এরপর সাম্বার অসাধারন নৈপুন্যে ৬১ মিনিট আর ৮৩ মিনিটে জায়েরজিনহোর জোড়া গোলের চেকদের ৪-১ এ উড়িয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে সেলেসাওরা, যাদের পায়ে দেখা গিয়েছে ছন্দময় নান্দনিক খেলা, রিভেলিনোর চোখ ধাঁধানো এলাস্টিকো আর পেলের অসাধারন স্কিল আর জায়েরজিনহোর গোল করার ক্ষুধা..!
নিজেদের ২য় ম্যাচ খেলতে ইউরোপের পরাশক্তি ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় সেলেসাওরা। ইংল্যান্ডের সেই দলটা ছিলো খুবই ভয়ানক। গর্ডন ব্যাংকস, ববি চার্লটন, জিওফ হার্স্ট, মার্টিন পিটার্স আর ফ্রান্সিস লিদের নিয়ে গড়া টিমটি ছিলো খুবই শক্তিশালী। হাড্ডাহাডি খেলার মধ্য দিয়ে প্রথমার্ধ গোলশুন্য ড্রতে শেষ হয়। এরপরের অর্ধেও ব্রাসিলকে মারাত্মক ভুগিয়েছে ইংলিশরা। সেই ম্যাচে গর্ডন ব্যাংকসের প্রত্যেকটা সেইভ বিশ্বকাপের সেরা সেইভের উপাধী পেয়েছিলো। রিভালিনো বাঁকানো শট সেইভ, টোস্টার শট সেইভ, আর সবচেয়ে বেশী যে সেইভটির জন্য আলোচিত হলো সেই সেইভটি হলো পেলের হেড সেইভ। রাইট উইং থেকে জায়েরজিনহো ক্রসকে অসাধারন হেডে গোলবারে ঢুকিয়ে দিলো পেলে, এখন শুধু মাত্র বল জালে স্পর্শ করা আর গোল উদযাপন করা বাকী ছিলো। কোথার থেকে যেনো গর্ডন উড়ে এসে বলটিকে ডান হাত দিয়ে বাড়ী দিয়ে বারের বাহিরে পাঠিয়ে দিলো তা আল্লাহ ই জানে। একদম সম্পুর্ন হয়ে যাওয়া গোলটিকে গর্ডন সেদিন যেভাবে সেইভ করেছিলো তা ছিলো আসলেই দর্শনীয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠে নি, ৬৯ মিনিটে রাইট উইং থেকে জায়েরজিনহোর জোড়ালো শটে পরাস্থ হয় ইংলিশ ইতিহাসের সেরা গোলকিপার গর্ডন ব্যাংকস। অবশেষে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সেলেসাওরা। সেদিন পেলে ছিলো নিজের ছায়া হয়েই..!
রোমানিয়াদের সাথে গ্রুপ পর্বের নিজেদের শেষ ম্যাচ। বেশ হাড্ডাহাড্ডিই লড়াই হয়েছিলো। ১৯ মিনিটেই পেলের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাসিল। এরপর ৩৪মিনিটে গোল করে দলকে সমতায় আনেন ডুমিতারসে। এরপর ২২ মিনিটে জায়েরজিনহোর গোলে ২-১ এ এগিয়ে যায় সেলেসাওরা। ব্রাসিলের ইতিহাসে জায়েরজিনহোই একমাত্র প্লেয়ার যিনি কিনা ৭০ এর বিশ্বকাপে সব ম্যাচেই গোল করার গৌরব অর্জন করেন। রোনালদো ২০০২ এ শুধু ইংল্যান্ডের সাথে গোল করতে পারে নি..
এরপর ৬৭ মিনিটে আবার পেলে ম্যাজিক। নিজের জোড়া গোল করে দলকে ৩-১ এ এগিয়ে নিয়ে যান..!
এরপর ৮৪ মিনিটে ডেম্ব্রোবসি গোল করে ব্যবধান কমায়। দল জিতে ৩-২ এ..!
এই প্রথম ব্রাসিল গ্রুপ পর্বের প্রত্যেকটি ম্যাচ জিতে দাপটের সাথে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়াটারে পা রাখে..!
১৪ জুন ১৯৭০। কোয়াটারে প্রতিপক্ষ ল্যাটিনের পেরু। তাই পেরুর নাড়ীভুড়ি জানা ব্রাসিলের ফরযে আইন। ১১ মিনিটেই এলাস্টিকো বয় রিভেলিনোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাসিল। এরপর ১৫ মিনিটে নাম্বার নাইন পরিধানরত টোস্টাও নিজের প্রথম গোল করেন এই বিশ্বকাপে..
২৮মিনিটে গেলারদোর গোলে ২-১ এ ব্যাবধান কমায় পেরু। ৫২ মিনিটে আবার টোস্টার গোলে ৩-১ এ এগিয়ে যায় ব্রাসিল। এরপর ৭০ মিনিটে কুবিয়াসের গোলে পেরু ব্যবধান কমালেও ওয়ান্ডার বয় জায়েরজিনহো ৭৫ মিনিটে করা গোলে ব্রাসিল ৪-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে..! উড়ে উড়ে ব্রাসিল চলে যায় সেমিতে..!
সেমিতে প্রতিপক্ষ আরেক ল্যাটিন, ৫০ এর মারকোনাজোর সেই ভিলেইন দল উরুগুয়ে। ১৯৫০ বিশ্বকাপের পর ২০ বছর পর বিশ্বকাপে আবার একে অপরের মুখোমুখি হয়। তাই ব্রাসিল ছিলো পুরানো প্রতিশোধ তুলার। উরুগুয়েদের হারালে ফাইনাল না জিতলেও ফাইনালে ত যেতে পারবে..! আর উরুগুয়ের ছিলো ২০ বছর পর ফাইনালে যাওয়ার দৃঢ় আত্মবিশ্বাস..!
খেলার ১৯ মিনিটেই কুবিয়ার গোলে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। এরপর একে একে ৪৪ মিনিটে ক্লোডোয়াল্ডো, ৭৬ মিনিটে জায়েরজিনহো আর ৮৯ মিনিটে রিভেলিনো শেষ পেরেক ঢুকিয়ে দেয় উরুগুয়ের কফিনে। ৩-১ এ জয় নিয়ে আর এক পৈশাচিক আনন্দ নিয়ে ৮ বছর পর ৪র্থ বারের মত ফাইনালে যায় ব্রাসিল..! রেকর্ড সংখ্যক শিরোপা হাতছানি দিয়ে ঢাকছে ব্রাসিলকে..!
ওইদিক দিয়ে আরেক কান্ড। গ্রুপ পর্বে উরুগুয়ে, সুইডেন, ইজরাইয়েল কে টপকে কোয়াটারে মেক্সিকোকে উড়িয়ে দিয়ে, সেমিতে জার্মানকে টাইব্রেকারে হারিয়ে দীর্ঘ ৩২ বছর পর প্রথম ফাইনালে রিভা, রিভেরা, মারটিনোর ইতালী..!
সমীকরন এমন যে, ব্রাসিল যদি বিশ্বকাপটা জিতে তাহলে রেকর্ড সংখ্যক ৩ বার জিতবে, আর ইতালী যদি জিতে তাহলেও ইতালী রেকর্ড সংখ্যক ৩ বার কাপ জিতবে। কারন ইতালী ইতমধ্যে ১৯৩৪, ১৯৩৮ বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছে..!
নবম বিশ্বকাপের ফাইনাল। যেই দল জিতবে সেই দল জুলে রিমে বিশ্বকাপটি একেবারে নিজেদের করে নিয়ে নিবে। কারন তখন নিয়ম ছিলো যে দল ৩ বার বিশ্বকাপ জিতবে সে দল একেবারে বিশ্বকাপ নিয়ে নিবে। আর ব্রাসিল ইতালী দু দলই দুবার করে নিয়েছে ইতমধ্যে...!
কার হাতে উঠবে সোনালী বিশ্বকাপ? সর্বকালের সেরা স্কোয়াড পেলে-রিভেলিনো-জায়েরজিনহোদের হাতে? নাকি চমক দেখানো ইতালীর হাতে..?
৪-২-৪ এর এক অসাধারন ফর্মেশনে ব্রাসিল ফাইনালে। রিভেলিনো-পেলে-টোস্টাও-জায়েরজিনহোদের নিয়ে ব্রাসিল ছিলো সেরা এটাকিং মুডে..
রেফারী বাঁশী ফু..! ইতালীর কিক অফ..
খেলার বয়স ১৮ মিনিটের কাছাকাছি।
লেফট উইং থেকে ব্রিত্তো থ্রো দেয় রিভেলিনোকে, রিভেলিনোর ক্লিয়ার ক্রস ইতালীর একেবারে বারের একটু সামনে পড়লে উড়ন্ত বলকে এক অসাধারন হেডে জালে জড়ান স্যার কিং পেলে..!
ব্যস, শুরু হলো উচ্ছ্বাস। পেলের উদযাপন ছিলো জায়েরজিনহোর কোলে উঠে ডান হাত মুঠ করে জয়ের উল্লাস যা এখনো ফুটবল ব্যাপারের কোন শো-তে টিভিতে হাইলাইটস হিসেবে দেখা যায়..! ব্রাসিল ১-০ এ এগিয়ে..
খেলার বয়স ৩৬ মিনিট।
ব্রাসিলিয়ান প্লেয়ারের কাছ হতে মিডফিল্ড থেকে বলটাকে চিলের মত ছোঁ মেরে দৌড়াতে দৌড়াতে ব্রাসিল শিবিরে ঢুকে যায় বনিনসেগনা। গোলকি ফেলিক্স এগিয়ে আসলে তাকে আর ব্রাসিলের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ফাঁকা বারে গোল দিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে বনিনসেগনা আর ইতালী। না দেখলে বুঝবেন না কি সেই উল্লাস..!
ইতালী ১-১ ব্রাসিল। কি হবে শেষ পর্যন্ত..? কার ভাগ্য সহায় হবে আজ..?
খেলার বয়স ৪৫ মিনিট।
ব্রাসিল ফ্রি কিক পেলে তাতে কিক নিতে আসে রিভেলিনো। জোড়ালো শটকে বুকে রিসিভ করে টোস্টাও বলটাকে মাটিতে নিয়ে বল জালে জড়ান। কিন্তু একি..? রেফারী ইশারা লাইন্সম্যানের দিকে..!
অফসাইড.. বঞ্চিত হলো চমৎকার একটি গোল..
খেলার বয়স ৬৫ মিনিট+।
ল্যাফট উইং থেকে মার্কো অ্যান্টিনিও পাস দেয় রিভেলিনোকে। রিভেলিনো একজন প্লেয়ার ড্রিবল করে দ্রুত বল দিয়ে দেয় ৮ নাম্বার জার্সি পরিধানত জারসন কে। জারসন বলটা রিসিভ করে একটু এগিয়ে গিয়ে ডি-বক্সের বাহির থেকে বা পায়ের জোড়ালো শটে দুই দুইজন ইতালীর প্লেয়ারদের মাঝখান দিয়ে অসাধারন একটা কার্ভ গোল করে..!
ব্রাসিল ২-১ এ এগিয়ে। জারসনের দুই হাতে তুলে কি সেই দৌড়..!
মাঝমাঠে একটা ফ্রিকিক পায় ব্রাসিল। মাঝমাঠ থেকে জোড়ালো ফ্রিকিক নিলে বল গিয়ে পড়ে ডি-বক্সের মধ্যে থাকা পেলের কাছাকাছি। পেলে সেই উড়ন্ত বলকে হেডের মাধ্যমে এসিস্ট করে জায়েরজিনহোকে..!
বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচে গোল করা জায়েরজিনহো এই ম্যাচে গোল না করলে কিভাবে হয়? সেই এসিস্ট থেকে গোল করে জায়েরজিনহো আর করে ফেললেন এক ইতিহাস..!
ব্রাসিলের হয়ে একমাত্র প্লেয়ার যে কিনা বিশ্বকাপের প্রত্যেকটা ম্যাচে গোল করার গৌরব অর্জন করে..! ব্রাসিল ৩-১ এ এগিয়ে..! ইতিহাসের রেকর্ড ব্রাসিলকে হাতছানি দিয়ে জোড়ে জোড়ে ঢাকছে..!
খেলার ৮৫ মিনিট।
এই একটা গোল, যেই গোলটা হতে ব্রাসিলের ৮ জন প্লেয়ারের পায়ের স্পর্শ পায় যেখানে কোন ইতালীয়ানের পায়ের স্পর্শ লাগে নাই, বল নেওয়া ত দুরের কথা..!
ইতালীর ল্যাফট উইং দিয়ে ইতালীয়ানরা বল নিয়ে এগিয়ে গেলে পিয়াজ্জা সেটাকে ছোঁ মেরে বল নিয়ে ডিফেন্ডার ব্রিত্তোকে দেয় (১), ব্রিত্তো পাস দেয় রিভেলিনোকে (২), রিভেলিনো সাথে সাথে বল দেয় জার্সোনকে (৩), জার্সোন ও সাথে সাথে পাস দেয় ক্লোডোলাল্ডোকে (৪)। ক্লোডোলাল্ডো দেয় আবার রিভেলিনোকে। রিভেলিনো চার চারটে প্লেয়ারকে একই ভঙ্গিমায় ড্রিবল করে (যার মধ্যে দুটি ছিলো এলাস্টিকো) বল দেয় ল্যাফট ব্যাকে থাকা এভারাল্ডোকে (৫) এভারাল্ডোর লং পাস ল্যাফট উইং এ থাকা জায়েরজিনহোর কাছে (৬) ডি-বক্সের বাহিরেই জায়েরজিনহো একজন প্লেয়ারকে ড্রিবল করে পাস দেয় ডি-বক্স বরাবর স্যার পেলেকে(৭) পেলে একদম আলতো থ্রু পাস দেয় রাইট উইং থেকে দৌড়ে আসা অধিনায়ক কার্লোস আলবার্তোকে (৮)। আলবার্তোর ওয়ান টাচ জোড়ালো শটে ইতালীর জালে বল জড়িয়ে গেলো।
ওহ, কি উচ্ছ্বাস, কি উদযাপন। ব্রাসিল ৪-১ এ এগিয়ে। এই গোল হওয়ার সময় বলটি ব্রাসিলিয়ান ৮ জনের স্পর্শ পেয়েছে কিন্তু বিশ্বাস করুন সেই ডিফেন্স থেকে এগিয়ে আসা বলটিতে একজন ইতালীয়ানের ছোঁয়াও লাগে নাই..!
পেলের ১৮মিনিট, ৬৬ মিনিটে জারসন, ৭১ এ জায়েরজিনহো আর ৮৬ মিনিটে কার্লোস আলবের্তোর গোলে ইতালীর জালে ৪ চারটি গোল ঢুকিয়ে দিয়ে তৎকালীন রেকর্ড সংখ্যক বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় সেলেসাওরা..!
সেদিন মাঠে উপস্থিত থাকা ১ লক্ষ ৭ হাজার ৪২ জন দর্শক দেখেছিলো নানা ইতিহাস আর সর্বকালের সেরা দল, সর্বকালের সেরা স্কোয়াডের নান্দনিক বিশ্বজয় যারা গ্রুপ পর্ব হতে ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচ জিতার এক গৌরব অর্জন করে..!
ফুটবলকে "বিউটিফুল গেইম" বা "জোগো বনিতা" উপাধী দিয়েছে ত এই দলই..!
রিভেলিনোর পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে চোখ ধাঁধাঁনো এলাস্টিকো মুভ, গ্রুপ পর্ব হতে ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচে জায়েরজিনহোর গোল করার মাধ্যমে ইতিহাস, প্লেয়ার হিসেবে স্যার মারিও জাগালোর দুইটি বিশ্বকাপ আর কোচ হিসেবেও বিশ্বকাপ জিতার এক অনবদ্য ইতিহাস করা, পেলের নামের পাশে তিনটি বিশ্বকাপ আর সর্বকালের সেরা প্লেয়ার হওয়ার তকমা, পেলের গোল্ডেন বল, জার্ড মুলারের গোল্ডেন বুট, ইতালীর দীর্ঘ ৩২ বছর পর ফাইনালে যাওয়া, কার্লোস আলবার্তোর বিশ্বকাপ মাথায় তুলে নেওয়া, পেলেকে সবাই কাঁধে তুলে নিয়ে দৌড়ানো আর ব্রাসিলের রেকর্ড সংখ্যক (৩ বার) বিশ্বকাপ জিতে তা একেবারে নিজেদের করে নেওয়ার মাধ্যমে শেষ হয় বিশ্বকাপের চাঞ্চল্যকর নবম আসর..!
নানা ইতিহাস গড়ার মাধ্যমে শেষ হয় ১৯৭০ এর বিশ্বকাপ। অসাধারন খেলা প্রদর্শনের জন্য এই ৭০ এর দল সর্বকালের সেরা দলে পরিনত হয়..!
আর আমরাও গর্বিত এমন দলের সাপোর্টার হয়ে যেই দল থেকেই শুরু হয়েছে ছন্দময় নান্দনিক খেলা। যে দলের কারনে ফুটবল পেয়েছে তার অবিরাম সৌন্দর্যের রূপ। যেই দল করেছে বিশ্ব ইতিহাস..! যেই দলে রয়েছে ছন্দ দিয়ে ফুটবল শাসন করা কিংবদন্তি প্লেয়ারগন..
আপনাদের স্যালুট স্যার..!
| web |
af8178b4e662a128261c0d4ff92fd31e20177d22 | রাজনীতির জন্য মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে এটা বোঝা যায় মানুষ মাত্রই রাজনৈতিক প্রাণী মনীষীদের এই উক্তি স্মরণ করেই। একসময়ের বলিউড স্টার ঊর্মিলা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এমনই এক নোংরা রাজনীতির চর্চা দেখে।
রবিবার সন্ধ্যায় শিবাজী পার্কে এই ঘটনার শুরু হয়। লতা মঙ্গেশকরকে শেষ বিদায় জানাতে এদিন বলিউডের অনেকেই এসেছিলেন। 'কিং খান' খ্যাত বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খানও এখানে এসেছিলেন। দুই হাত তুলে দোয়া পড়েন তিনি এসময় মুসলিম রীতি মেনে। এরপর ফুঁ দেন ডান হাত দিয়ে মাক্স নামিয়ে।
সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল লতা মঙ্গেশকরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানটি। শাহরুখ খান লতা মঙ্গেশকরকে অসম্মান করলেন না তো এমনই প্রশ্ন ওঠে শাহরুখের বিষয়টি দেখে বিজেপির নেতা অরুণ যাদব এক টুইট বার্তায়? একদম পরিষ্কার তার ইঙ্গিত। অর্থাৎ শাহরুখ খান হয়তো থুতু ছিটিয়েছেন এমনই বোঝাতে চাইছেন তিনি। ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে নেট দুনিয়া অরুণ যাদবের এই টুইটের পর। অরুণ যাদবের সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যেমন এক পক্ষ, ঠিক তেমনি অরুণ যাদবের স্বপক্ষে কথা বলার লোকও কম নেই।
আর তাতেই চটেছেন ঊর্মিলা। এক টুইট বার্তায় তিনি সমাজের অবক্ষয় নিয়ে বিস্মিত কণ্ঠে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, আমাদের সমাজে এতোখানি অবক্ষয় হয়েছে যে আজকাল প্রার্থনাকেও আমরা থুতু ভেবে ভুল করছি। আর এমন অভিযোগ যাকে নিয়ে উঠছে সেই মানুষটি এতগুলো আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। রাজনীতি এতটা নিচে নেমে গেছে দেখে দুঃখ হয়।
সিংহভাগ মানুষই অরুণ যাদবের টুইট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করেন। দোয়া প্রার্থনার পর ফুঁ দেওয়া মুসলিম ধর্মীয় রীতি। এতে অশুভ কোনো কিছু দূরে থাকবে বলে মনে করা হয়। রেওয়াজ মেনে শাহরুখ খান এই কাজটি করেছেন। বিষয়টি জেনেও যারা শুধুমাত্র রাজনীতির স্বার্থে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাহরুখ খানকে তুলোধোনা করছেন ঊর্মিলা তাদেরকেও একহাত নিয়েছেন।
| web |
56a5c2addf5ff4554ca2f1dbfc48163bbda01876 | জেলে বসেই হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা বদরুল আলম। আর তার হুমকির কারণে খাদিজা বেগম নার্গিস কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
এক বছর আগের এই দিনে বদরুলের নৃশংস হামলার শিকার হয়েছিলেন খাদিজা। প্রকাশ্যে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়।
এরপর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে সিআরপিতে যান। সেখানে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ করে বাড়ি ফেরেন খাদিজা।
এরপর তিনি কলেজে যাওয়া শুরু করেন। কিছু দিন পর বদরুলের লোকজন হুমকি দেওয়া শুরু করলে নিরাপত্তার কথা ভেবে কলেজে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন।
আলাপের এক পর্যায়ে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান তিনি। তাদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় বদরুল তার লোক দিয়ে হামলা চালাতে পারেন। এজন্য কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন খাদিজা।
তবে আদালতের মাধ্যমে বদরুলের সাজা হওয়ায় খাদিজা সন্তুষ্ট বলে জানান। এখন তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে পড়ালেখা শেষ করে ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন।
খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস জানান, বদরুলের আপন ভাই নুরুল খাদিজা ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রায় হুমকিধামকি দেয়। নুরুল সবাইকে বলে বেড়াই, 'তার ভাই বদরুলের সঙ্গে অন্যায় করেছে খাদিজার পরিবার। এজন্য খাদিজার পরিবারকে দেখে নেওয়া হবে'।
নুরুলের এই হুমকির বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কথা ভাবছেন খাদিজার পরিবার।
খাদিজার চিকিৎসার বিষয়ে বড় ভাই শাহিন জানান, চলতি সপ্তাহেই ঢাকা আসবে খাদিজা। তার হাতে আরও একটা অস্ত্রোপচার করা হবে।
২০১৬ সালের ৩ অক্টোবরে এমসি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিস।
পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর পথে প্রকাশ্যে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম।
খাদিজাকে মাঠের মধ্যে ফেলে চাপাতি দিয়ে নৃশংসভাবে বদরুলের কোপানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এরপর সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ এ ঘটনার বিচার চেয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
ঘটনার সময় স্থানীয়রা বদরুলকে ধরে গণধোলাই দেন। পরে শাহপরান থানায় তাকে সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে ওই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় বদরুলকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেয়। এরপর ২০১৭ সালের ৮ মার্চ সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালত বদরুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
বদরুল এখন কারাগারে আছেন। তবে এখনো তিনি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেননি।
| web |
c0de2ce65a698e6c8e6c88611a9ea5ef8c2f3775 | পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশের(UP) লখিমপুর খেরির ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। কেন্দ্র তথা উত্তরপ্রদেশের বিজেপি(BJP) সরকারের সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তীব্র আক্রমণ করল একসময়ের জোটসঙ্গী শিব সেনা। সেখানে স্পষ্ট প্রশ্ন তোলা হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে লখিমপুরের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন?
সময় যত যাচ্ছে ততই জটিল হয়ে উঠছে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে প্রতিবাদী কৃষকদের মৃত্যুর ঘটনা। শুধু যোগী সমর নয় এবার মোদি সরকার এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকেও আঙ্গুল উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ক্ষোভ ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে। শিবসেনা লখিমপুর খেরির সহিংসতার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরবতার নিয়েই এবার কটাক্ষ করেছে। একই সঙ্গে আশ্চর্যও প্রকাশ করেছে।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলায় সহিংসতায় চার কৃষক সহ আট জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক ঝড় উঠেছে। বিরোধী নেতারা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে প্রতি নিয়ত আক্রমণ করে চলেছে।
মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে ওঠে সেখানে। মঙ্গলবারই ওই ঘটনায় মৃত কৃষকদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টের দাবি, মৃত চার কৃষকের কারও শরীরেই গুলির আঘাতের চিহ্নের সন্ধান মেলেনি। ধাক্কাধাক্কির ফলে হওয়া অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। উল্লেখ্য, সব মিলিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ওই সংঘর্ষে।
| web |
560f42948efea7af6e4e70ef1539c016b4c0610f | নিজস্ব প্রতিবেদক :আজ সকাল ১০ টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষকরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি'র নির্দেশে কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের উদ্যোগে করিমগঞ্জ উপজেলার গেরাজুরের হাওরের কৃষক রমজান মিয়ার এক একর জমির পাঁকা বোরো ধান কেটে ঝাড়াই-মাড়াই করে গোলায় তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আহমেদ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু'র তত্ত্বাবধানে স্বেচ্ছায় ধান কাটা কর্মসূচি পালিত হয়।
কৃষক রমজান মিয়ার এক একর জমির পাঁকা ধান কাটা কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা কৃষকরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলেও কৃষক লীগকে সাথে নিয়ে কৃষকের পাশে থাকেন এবং ক্ষমতায় না থাকলেও কৃষক লীগকে সাথে নিয়ে কৃষকের সেবায় নিয়োজিত থাকেন। আর বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকলে কৃষক হত্যা করে আর ক্ষমতায় না থাকলে কৃষকের ধানের গোলায় আগুন দেয়।
উক্ত ধান কাটা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষিবিদ ডা. নজরুল ইসলাম, মোঃ আবুল হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. গাজী জসীম উদ্দিন, আসাদুজ্জামান বিপ্লব, কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা, সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সহ-দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব সৈয়দ শওকত হোসেন সানু প্রমূখ।
| web |
d17217ec7f06b1324b210486c37beb42bc1c41e8 | বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের কোনো শিল্পীর দশ লাখ ফেসবুক ফলোয়ার হয়নি। এর কাছাকাছি অনেকে পৌঁছালেও প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী শাহানা কাজীর ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়েছে। শাহানা কাজী বলেন, আমি সবসময়ই শ্রোতাদের সঙ্গে নিজের আনন্দ শেয়ার করতে চাই। আজ আমি তাদের জন্যই এতদূর আসতে পেরেছি। সামনে শ্রোতাদের জন্য নতুন কাজ করছি। সেই খবর জানাতে চাই। সম্প্রতি ফেসবুকে নিজের ফ্যান সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ায় একটি ছবি আপলোড করে তিনি তার ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০টি দেশে শাহানা কাজীর ভক্ত রয়েছে। কিছুদিন আগেই কানাডার টরন্টো শহরে অনুষ্ঠিত বিশাল এক লাইভ কনসার্টে একই মঞ্চে গান করেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক আতিফ আসলামের সাথে। কনসার্টে শাহানা কাজী বলিউডের বেশ কিছু জনপ্রিয় হিন্দি গান পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এর আগে তিনি বলিউডের সংগীতশিল্পী সুনিধি চৌহান ও আয়ুষ্মান খোরানার সঙ্গে একই মঞ্চে লাইভ পারফর্ম করেন। সম্প্রতি বলিউডের সঙ্গীত আইকন মিকা সিং শাহানা কাজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার সঙ্গে একটি দ্বৈত গান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। গত বছর কানাডার টরেন্টো থেকে প্রকাশিত হয় শাহানা কাজীর প্রথম একক অ্যালবাম 'ভালোবাসার কথা'। তিনি বর্তমানে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম নিয়ে কাজ করছেন। শাহানা কাজীর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে শীঘ্রই তার নতুন গানের ভিডিও শ্রোতারা দেখতে পাবেন।
| web |
987bde8273d899ad0cbc5e2b9318b420c7c74868 | মলয় দে, নদীয়াঃ- ছেলে মারা গেছে চার মাস আগে, নিজেও নানা রোগে জর্জরিত, সহ্য করতে না পেরে মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করতে মাঝ গঙ্গায় ঝাঁপ। প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে এক মৎস্যজীবী জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে ওই বৃদ্ধাকে। পুলিশের তত্ত্বাবধানে ওই বৃদ্ধা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনাটি নদীয়ার শান্তিপুর থানা এলাকার। সূত্রের খবর বর্ধমান মেমারি থানার গদাই তলা এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মী প্রামাণিক। বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। জানা যায় ৪ মাস আগে তার একমাত্র সন্তানের মৃত্যু হয়। এর পরেই দীর্ঘদিন মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তার উপর শরীরের নানান রকমের রোগে জর্জরিত ছিলেন। মানসিক যন্ত্রণা আর সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দেন তিনি। দীর্ঘক্ষন গঙ্গায় ভেসে থাকার পর হাত তুলে চিৎকার করতে থাকে। শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া পঞ্চ দেবতার ঘাটের মাঝ গঙ্গায় ভাসতে এক মৎস্যজীবী নজরে আসে। তৎক্ষনাত তারা নৌকা নিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে ডাঙ্গায় তোলেন। এরপর খবর দেওয়া হয় শান্তিপুর থানায়। খবর পেয়ে শান্তিপুর থানার পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। প্রশাসন সূত্রে খবর ঐ বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে যাতে ওই বৃদ্ধাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া যায়।
| web |
0f352c3383d1caf8dbcf7dec4f8c1928 | এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা ঃ তাবলীগ জামাতের ভিন্ন মতাবলম্বী মাওলানা সাদ পন্থী অনুসারীদের অপতৎপড়তা বন্ধের দাবিতে নেত্রকোনায় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ করেছে তৌহিদী-জনতা। গতকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর স্থানীয় বারহাট্টা রোডস্থ জামিয়া মিফতাহুল উলুম মাদরাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা য়ায়, বুধবার থেকে নেত্রকোনা জেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে উপ-মহাদেশের প্রখ্যাত ওলি হযরত শাহ্ সুলতার কমর উদ্দিন রুমী (রাঃ) মাজার শরীফ প্রাঙ্গণে মাওলানা সাদ পন্থি অনুসারী কর্তৃক তিন দিন ব্যাপী ইজতেমার আয়োজন চলতে থাকে। এ নিয়ে কওমী পন্থি ছাত্র, শিক্ষক ও তৌহিদী-জনতার মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। সাদ পন্থীদের অপ-তৎপরতা ও ইজতেমা বন্ধের দাবিতে তৌহিদী-জনতা এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়।
মাওলানা মাজহারুল ইসলামের পরিচালনায় মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মুফতি মুহাম্মদ তাহের কাসেমী, মাওলানা নাজমুল আলম, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, মুফতি জাকারিয়া, মাওলানা আসাদুর রহমান আকন্দ প্রমুখ। বক্তাগন বলেন, কোন অবস্থাতেই নেত্রকোনায় কুরআন সুন্নাহ্ বিরোধী কার্যকলাপ চলতে দেয়া হবে না। প্রতিটি মুসলমান নর নারী যাতে ঈমান আকিদা আখলাক লালন পালন করতে পারে তার জন্য সম্মিলিত ভাবে সকলকে মেহনত করে যেতে হবে।
এ সময় নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত হয়ে মাইকে সকলকে আশ^স্থ করে বলেন, আপনাদের দাবী অনুযায়ী ও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মদনপুরস্থ সাদ পন্থীদের ইজতেমা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ওসি কর্তৃক ইজতেমা বন্ধের ঘোষণা দেয়ায় পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা স্থগিত করা হয়। পরিশেষে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহ'র সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা আবুল কাসেম।
| web |
e6d9fafdf274c1e5d800f29f4c7d4034747048e9 | নিউজ ডেস্কঃ:নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে পারবে ইডি-সিবিআই। যা নিয়ে শোরগোল। সুপ্রিম কোর্ট হয়ে মামলা সেই হাইকোর্টে আসে। বুধবার কুন্তল ঘোষকে জেরার পরে সিবিআই এর ইঙ্গিত এরপর দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারে সিবিআই-ইডি।
বিভিন্ন সময়ে দলীয় অনুষ্ঠানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষকে পাশাপাশি দেখা গেলেও, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তিনি কুন্তল ঘোষকে চেনেন না। মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে তা নিয়েই প্রশ্ন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশে বুধবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, কুন্তলের বুধবারের বয়ান খতিয়ে দেখে তাঁকে ফের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে সিবিআই।
কুন্তলকে হেফাজতে নেওয়ার পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করে দুজনকে মুখোমুখি বসানো হতে পারে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোনও তদন্তকারী সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না, এমন কোনও রক্ষাকবচ সুপ্রিম কোর্ট কিংবা হাইকোর্ট থেকে পাননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২৯ মার্চ কলকাতায় এক কর্মসূচিতে অভিযোগ করেছিলেন, সারদা কাণ্ডে মদন মিত্র ও কুণাল ঘোষকে দিয়ে তাঁর নাম বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরের দিন অর্থাৎ ৩০ মে আদালত চত্বরে কুন্তল ঘোষ দাবি করেন, ইডি তাঁকে চাপ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
কুন্তল ঘোষ ৩১ মার্চ আদালতের বিচারক এবং হেস্টিংস থানায় চিঠি দিয়ে একই অভিযোগ করেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে, হেফাজতের থাকার সময় কুন্তল ঘোষ এমন অভিযোগ না করলেও, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পরেই কুন্তল ঘোষ ওই অভিযোগ করেন।
এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ইডি-সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট হয়ে হাইকোর্টে এজলাসও বদল হয়। তারপরেও বিচারপতি অমৃতা সিনহা সেই একই রায় বজায় রাখেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি-সিবিআই।
গত শনিবার এব্যাপারে সাড়ে নয় ঘন্টার বেশি সময় ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁকে আবার তলব করা হতে পারে বলে, সেই সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেরার পরে বেরিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, শুধু শুধু সময় নষ্ট করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সিবিআই সূত্রে দাবি, শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্ক জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি কুন্তল ঘোষকে চেনেন না। বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ থেকে প্রাপ্য তথ্য মিলিয়ে দেখতে কুন্তল ঘোষকে ফের হেফাজতে নিয়ে অভিষেককে তলব করে মুখোমুখি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সিবিআই-এর।
| web |
76ebb392b167bf942c4d8c49b06edaab174db31a | মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো জো বাইডেন ঘোষণা করলেন কমলা দেবী হ্যারিসের নাম। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর পছন্দের নাম হলেন কমলা।
নিউ ইয়র্ক : মা শ্যামলা গোপালন ছিলেন ভারতীয়। তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। ক্যানসার চিকিৎসার গবেষণার কাজে পাড়ি দিয়েছিলেন মার্কিন মুলুকে। সেখানেই আলাপ হয় আমেরিকায় ইকোনমিক্স পড়াতে আসা জামাইকার বাসিন্দা ডোনাল্ড হ্যারিসের সঙ্গে। তারপর বিয়ে। তাঁদের মেয়ে কমলা দেবী হ্যারিস। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে তিনি একজন মার্কিন সেনেটর। কমলা একজন আইনজীবীও। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তাঁর পরিচিতি মার্কিন মুলুকে রয়েছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য কমলা দেবী হ্যারিস এবার ভারতের গর্ব হিসাবে উঠে এলেন মার্কিন রাজনীতিতে।
মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন জো বাইডেন। তিনিই এবার ঘোষণা করলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর পছন্দ কমলা দেবী হ্যারিস। যা অবশ্যই ভারতীয়দের উচ্ছ্বসিত করেছে। কমলা দেবীর বয়স যখন ৭ বছর তখন তাঁর বাবা মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে তিনি তাঁর মায়ের কাছেই মানুষ। কমলা মনে করেন আজ তিনি যাই হয়েছেন তা তাঁর মায়ের জন্য।
ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার পর কমলা দেবী হ্যারিস জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের স্বপ্ন পূরণই হবে তাঁর প্রধান কাজ। এই প্রথম ভারতীয় বংশ সূত্রে বাঁধা কেউ মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে পছন্দ হিসাবে সামনে এলেন। এদিকে কমলা দেবী হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার পরই তামিলনাড়ুতে তাঁর মায়ের পরিবারে খুশি বন্যা বয়ে যায়। সকলেই ভীষণই উচ্ছ্বসিত। কারণও রয়েছে। কমলা দেবী হ্যারিস কিন্তু তাঁর মায়ের পরিবারকে ভুলে যাননি।
| web |
dea829831f3ff2d999c1ebe32bb320f853ffa0dd | নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মতো নদীয়াতেও আজ বেশ কিছু ব্লগ এবং শহর তৃণমূল কংগ্রেস সহ মহিলা যুবক এবং শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মনোনীত হন অনেকেই।
তবে নদীয়ার শান্তিপুর শহরের ব্লক A তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে দলীয় এআইটিসির পেজে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে সুব্রত সরকার লেখা আছে। শান্তিপুর ব্লক A তে এক সুব্রত সরকার দলের সহ-সভাপতি পদে ছিলেন, স্বাগতই দলীয় কর্মী সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে থাকেন তার সভাপতি হিসেবে গুরু দায়িত্ব পাওয়ার শুভেচ্ছা বার্তা, এমনকি তুমি আমাদের কাছেও শুভেচ্ছা জানান দলীয় কর্ম সমর্থকদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন দলীয় নেতৃত্বের প্রতি। অন্যদিকে অপর এক সুব্রত সরকার যিনি শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ এবং ব্লক তৃণমূলএসটি এসসি ওবিসি সেলের দায়িত্বে রয়েছেন। তার শুভেচ্ছা বার্তা ও দলীয় কর্মী সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে থাকে। অবশেষে বিধায়ক বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ এবং এসটি এসসি ওবিসি সেলের সভাপতি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মনোনীত হয়েছেন।
অন্যদিকে শান্তিপুর শহরের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন 18 নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নরেশ লাল সরকার। তিনি বলেন দল চালানো অভিজ্ঞতা তার দীর্ঘদিনের, তবে সকলের সঙ্গবদ্ধভাবে বিজেপি মুক্ত শান্তিপুর গড়ে তোলায় তার লক্ষ। শান্তিপুর শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপঙ্কর সাহা। , দীর্ঘদিন এই পদটির গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করা যায়নি , সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের নির্দেশেই সমস্ত যুবকদের নিয়ে তিনি অতীতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বিধানসভা নির্বাচনে, এবং তার সুফলও লক্ষ্য করা গেছে। শান্তিপুর শহর তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের পুনঃদায়িত্ব পান মিঠু চক্রবর্তীধর। সকল মহিলা নেত্রীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শান্তিপুরে বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী র কাছে তিনি কৃতজ্ঞ।
শান্তিপুর ব্লক এ আইএনটিটিইউসি সৌমেন্দ্র নারায়ন দাস এবং শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমীরণ সাহা।
ব্লক এ যুবর দায়িত্বে পুনর্বহাল থাকেন রুপম মান্না, মহিলার দায়িত্বে এলেন নমিতা সরকার।
শান্তিপুর ব্লক বি তে দলের সভাপতি কানাই দেবনাথ সহ যুব এবং অন্যান্য গণসংগঠনে পুনর্বহাল রয়েছেন সকলেই।
সকলেই দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, বিধায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
| web |
fd0b86c210519152a7a5faef3455d89b084719d9 | মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে জয় দিয়ে অভিযান শুরু করল দিল্লি ক্যাপিটালস। ডাবল হেডারের প্রথম ম্যাচে মুম্বইয়ের ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়ামে ৬০ রানে হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে। আরসিবি অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা শুরু থেকেই বলেছিলেন, বিরাট কোহলিদের হাত ধরে আরসিবির যে ঐতিহ্য তা বজায় রাখবেন। মজার ব্যাপার হলো, প্রথম পরাজয়ে তার অন্যথা হলো না।
অস্ট্রেলিয়ার টি ২০ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মেগ ল্যানিংয়ের দিল্লিকে টস জিতে ব্যাট করতে পাঠান স্মৃতি মান্ধানা। গতকাল প্রথম ম্যাচে ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বাধীন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দুই শতাধিক রান তুলেছিল। এদিন সেই রানকেও ছাপিয়ে গেল দিল্লি ক্যাপিটালস। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথমবার এদিনই শতরানের ওপেনিং পার্টনারশিপ হলো। ১৪. ৩ ওভারে দলগত ১৬২ রানে প্রথম উইকেট পড়ে দিল্লির। ১৪টি চারের সাহায্যে ৪৩ বলে ৭২ রান করে আউট হন ল্যানিং। ১৪. ৫ ওভারে দলের ১৬৩ রানে শেফালি ভার্মা সাজঘরে ফেরেন। ১০টি চার ও চারটি ছয়ের সাহায্যে তিনি করেন ৪৫ বলে ৮৪। মারিজানে কাপ ১৭ বলে ৩৯ ও জেমাইমা রডরিগেজ ১৫ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন। দিল্লি ক্যাপিটালস তোলে ২ উইকেটে ২২৩। ৩ ওভারে ৪০ রান দিয়ে দুটি উইকেট পান হিদার নাইট।
জবাবে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। মাত্র সাত রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৩. ১ ওভারে ৯৬ রানে সপ্তম উইকেট পড়ে গিয়েছিল আরসিবির মহিলা দলের। অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা ২৩ বলে ৩৫, হিদার নাইট ২১ বলে ৩৪ রান করেন। এলিস পেরি করেন ৩১। মেগান শুট ১৯ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন। রিচা ঘোষ ২ রানের বেশি করতে পারেননি।
মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগে প্রথম বোলার হিসেবে ইনিংসে পাঁচ উইকেট দখল করলেন তারা নরিস। আমেরিকার এই ক্রিকেটারকে দলে নিয়ে চমক দিয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। অ্যাসোসিয়েট দেশের ক্রিকেটারের উপর ভরসা রেখে দিল্লি কর্তারা যে কোনও ভুল করেননি প্রথম ম্যাচেই সেই আস্থার মর্যাদা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন তারা। তিনিই ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন। ৪ ওভারে ২৯ রান খরচ করে তিনি ৫ উইকেট দখল করেন। অ্যালিস ক্যাপসি ২টি ও শিখা পাণ্ডে একটি উইকেট নেন।
আরসিবি এই পরাজয়ের মাধ্যমেও নজির গড়ল। আইপিএলের প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে ১৪০ রানে হেরে গিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগে সেই আরসিবির মহিলা দল পরাস্ত হলো ৬০ রানে। স্মৃতি মান্ধানা ম্যাচের পর বলেন, আমরা এমন শুরু নিশ্চিতভাবেই আশা করিনি। বোলিংয়ের সময় ২০-৩০ রান বেশি দিয়ে ফেলেছি। সেই সঙ্গে ভালো শুরুর পরও ব্যাটাররা সেই ধারা বজায় রাখতে পারেননি। দলের পেস বোলিং নিয়েও সন্তুষ্ট নন স্মৃতি। আগামীকাল হরমনপ্রীতের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে অবশ্য আত্মবিশ্বাসী তিনি।
| web |
415d8ef94489105e113502dc7e43f6ddc55939a3 | মাঝে মাঝে, সকৌতুকে, নাবিকেরা তাকে ধরে ফেলে ।
বিশাল আলবাট্রস, সমুদ্রের বিহঙ্গপুঙ্গব,
তিক্ত ফেনা পেরিয়ে যে চলে আসে মৃদুমন্দ তালে,
জাহাজের সহযাত্রী, সঙ্গদাতা, পথের বান্ধব ।
যে-মুহূর্তে ওরা তাকে ধরে এনে রাখে পাটাতনে,
নাড়ে, যেন দাঁড়-ভাঙ্গা, অসহায়, সন্ত্রস্ত তরণী ।
এই সে-আকাশযাত্রী, কত রূপ ছিল সম্প্রতি ও!
অপ্রতিভ কুশ্রীতায় প্রহসন-পুত্তলি এখন !
কারো বা খুড়িয়ে-চলা বিদ্রূপে সে অনুকরণীয়,
অথবা হুকোর নল চঞ্চুপুটে দেয় কন্ডুয়ন !
তুফানে ঝাপট দেয়, ব্যর্থ করে কিরাতের ফলা ;
মহান ডানার ভারে অবরুদ্ধ হয় তার চলা ।
মাঝে মাঝে, সকৌতুকে, নাবিকেরা তাকে ধরে ফেলে ।
| web |
d119c1c237da27e8444f849dbe547047 | থারাঙ্গা চলে গেলেও থেমে থাকেনি শ্রীলঙ্কার রানের চাকা। চান্দিমালকে নিয়ে আবারও জুটি মেরামতের কাজ করে যান গল টেস্টের নায়ক মেন্ডিস। ৪১ রানের জুটি গড়ার পথে মেন্ডিস পূর্ণ করেন নিজের শতরান।
প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৫৯ রান করা দিনেশ চান্দিমালকে খুব একটা বাড়তে দেননি মোস্তাফিজুর রহমান। ব্যক্তিগত ২৪ রানের মাথায় চান্দিমালকে এলবির ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজ।
মোস্তাফিজ উইকেট পাওয়ার পরের ওভারেই লঙ্কান শিবিরে চতুর্থ ছোবল বসান তাসকিন আহমেদ। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ লুফে সেঞ্চুরিয়ান কুশাল মেন্ডিসকে বিদায় করেন এই টাইগার পেসার।
আগের নয় ওভারে উইকেটের দেখা না পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যক্তিগত দশম ওভারে দলের জন্য পঞ্চম সাফল্য এনে দেন। ৩০ রান করা মিলিন্দা সিরিবর্দনেকে সরাসরি বোল্ড করেন মিরাজ।
প্রথম ওয়ানডেতে ৩৫ বলে ৫৫ করা থিসারা পেরেরা আজ ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি। ৯ রান করেই মুশফিকুর রহিমের করা থ্রো'তে রান আউটের শিকার হন পেরেরা। সপ্তম উইকেটও আসে মুশফিকের ঝুলি থেকে।
| web |
543fc9057006e314e0bc49d76bf3f22342b0ef41 | সরাসরি কেনা যাচ্ছে না। তাই নেইমারকে ধারে আনার চেষ্টায় ছিল বার্সেলোনা। ইএসপিএন এফসি জানাচ্ছে, সেই প্রস্তাবও এখন বিফলে যাওয়ার পথে। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে নগদ অর্থ ছাড়া কোনোভাবেই কাতালোনিয়ায় যেতে দিতে রাজী নয় তার বর্তমান ক্লাব পিএসজি! গত কয়েকদিন ধরেই নেইমারকে অন্তত ধারে আনার পরিকল্পনা করেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। প্রস্তাব নিয়ে প্যারিসে উড়ে গিয়েছিলেন বার্সার দুই পরিচালকও। এই দুই কর্মকর্তা হলেন ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড় এরিক আবিদাল ও হাভিয়ের ভোর্দাস। কিন্তু ইএসপিএন এফসি তাদের সূত্রের বরাতে জানাচ্ছে, বার্সার প্রস্তাবে মন ভরেনি পিএসজির। তাই ধারেও তারা ছাড়তে চায় না ২৭ বছর বয়সী তারকাকে। পিএসজির কাতারি মালিকরা নেইমারের আচরণে বেশ মর্মাহত। তাই তারা আর এই ফরোয়ার্ডকে দলে চাচ্ছেন না। তাই বলে আবার মোটামুটি মানের প্রস্তাবেও রাজী নন। তাদের দাবী ২০১৭ সালে নেইমারকে আনতে যে ২২২ মিলিয়ন ইউরো খরচ করা হয়েছিল, সেই পরিমাণ কিংবা তার কাছাকাছি অর্থ দিয়েই যেন নেইমারকে নিয়ে যাওয়া হয়। বার্সা আবার সেই প্রস্তাবে সাড়া দিতে রাজী নয়। ইন্টারনেট।
| web |
8db1bf14ad265e91ce60e55fd0c6c0e1a6179b7da4f4196b15bd880456892a73 | ফিরে এলো, তখন আমি আমার ভাই মুহাম্মদ আল গাজালী এবং তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে ইমাম বান্নার কাছে নিম্নলিখিত সংক্ষিপ্ত চিঠি পাঠাই :
মুহতারাম ইমাম হাসানুল বান্না
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং ইসলামের খেদমতের জন্যে আমি জীবনের অন্যান্য সব তৎপরতা বর্জন করে আপনার সম্মুখে উপস্থিত হবার জন্যে উদগ্রীব । আপনিই একমাত্র ব্যক্তিত্ব, যার পথ নির্দেশ এবং পৃষ্ঠপোষকতা আমার একান্ত কাম্য । আল্লাহ্র দ্বীনের সেবার জন্যে আপনি আমাকে যে নির্দেশ দেবেন, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করাই হবে আমার জীবনের মহত্তম ব্রত! মুহতারাম ইমাম! আপনার নির্দেশের অধীর অপেক্ষায়- আল্লাহ্র দাসী । জয়নব আল-গাজালী ।
এরপর ইমাম বান্নার সাথে অবিলম্বে সাক্ষাৎ করার জন্যে উপযুক্ত স্থান হিসেবে মুসলিম যুব সংস্থার কেন্দ্রীয় দফতর নির্দিষ্ট করা হয় । কিন্তু বৈঠকে মিলিত হওয়ার জন্যে কোন সময় বা তারিখ নির্ধারিত করা হয়নি। সুযোগ মত আকস্মিক সাক্ষাতেরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ।
একদিন আমি মুসলিম যুব সংস্থার কেন্দ্রীয় দফতরে আয়োজিত সম্মেলনে বক্তৃতা করার জন্য যাচ্ছিলাম, হঠাৎ সিঁড়ির গোড়াতেই মহামান্য ইমামকে আমি দেখতে পাই । তার এ সাধারণ ও অনাড়ম্বর উপস্থিতিতে আমি অত্যন্ত বিস্মিত হই এবং ভাবাবেগ ও আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়ি । আমি আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসার আগেই সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠতে উঠতেই মুহতারাম ইমাম বান্নার সাথে আলাপ শুরু করি ।
সর্বপ্রথম আমি তাঁকে বললাম, শ্রদ্ধেয় ইমাম! আমার মুর্শেদ । আমি আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলছি যে, ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা এবং ইসলামী সরকার কায়েমের উদ্দেশ্যে আপনি যে মহতী প্রয়াস চালাচ্ছেন, আমি তার সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং এ পথে যে কোন ত্যাগ তিতিক্ষা এমনকি প্রাণ দিতেও দ্বিধা করবো না। আমি সর্বান্তকরণে আপনার আদেশ নিষেধ মেনে চলার প্রতিজ্ঞা করছি ।
ইমাম আমার কথায় এবং প্রতিজ্ঞায় অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইসলামী মহিলা সংস্থা আপাতত যেভাবে কাজ করছে, সেভাবেই করতে থাকুক ।
আমার এবং ইমাম বান্নার সাথে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয় আমার ভাইকে । ইমাম বান্না নুহাস এবং ইখওয়ানের মধ্যে মধ্যস্থতা রক্ষার দায়িত্ব
কারাগারে রাতদিন - ৩৬
ন্যস্ত করেন আমার ওপর । তখন রাফয়াত, মুস্তফা পাশা আন নুহাস দেশের বাইরে ছিলেন । এঁরা মরহুম আমীন খলিলীকে বিভ্রান্তি দূরীকরণ অভিযানের দায়িত্ব অর্পণ করেন । এ ব্যাপারে ইমাম বান্নাও একমত ছিলেন । আমাকেও যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয় ।
১৯৪৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক রাতে জনাব আমীন খলিলী আমার কাছে আসেন । তাঁর চোখে মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ ছিল স্পষ্ট। তিনি বললেন, কর্তৃপক্ষ ইমাম বান্নাকে হত্যার পরিকল্পনা নিচ্ছে। তাঁকে শিগগিরই কায়রো থেকে বের করার ব্যবস্থা করতে হবে ।
কিন্তু আমার ভাইকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইমামের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম কেউ ছিল না। ফলে আমি নিজেই ইমামের সাথে দেখা করার জন্যে রওয়ানা হই । কিন্তু দূর্ভাগ্য! আমার, আমার জাতির এবং গোটা বিশ্বমানবতার দুর্ভাগ্য যে, আমি অর্ধপথেই মুহতারাম ইমামের মর্মান্তিক শাহাদাতের সংবাদ পাই। শতাব্দির মহান বিপ্লবী নায়ককে মানবতার শত্রুরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডে গোটা জাতি ক্ষোভে দুঃখে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। হন্তাদের প্রতি সর্বত্র তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করা হয় । আমি প্রকাশ্যভাবে সরকারের এ বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও আন্তরিক ক্ষোভ প্রকাশ করি। এরপর দেশে কোয়ালিশন সরকার গঠিত হয় এবং নতুন সরকার অবিলম্বে ইসলামী মহিলা সংস্থাকে বেআইনী ঘোষণা করে ।
আমি সরকারের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা দায়ের করি। ১৯৫০ সালে জনাব হুসাইন সিরয়ী পাশার আমলে আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেন এবং ইসলামী মহিলা সংস্থার তৎপরতা আবার পুরোদমে শুরু হয়ে যায় । এ ঐতিহাসিক মামলায় আমাদের পক্ষের কৌশুলী ছিলেন প্রখ্যাত আইনবিদ জনাব আব্দুল ফাত্তাহ হাসান পাশা ।
এরপর ওয়াফদ পার্টির সরকার গঠিত হয় এবং জনাব ইমাম হাসান হুজায়বীর নেতৃত্বে ইখওয়ানুল মুসলিমুন আবার কর্মতৎপরতা শুরু করে । ইখওয়ানুল মুসলিমুনের কেন্দ্রীয় দফতর উদ্বোধনের প্রথম দিনেই আমি প্রকাশ্যভাবে ইখওয়ানের সাথে আমার সার্বিক সম্পর্কের কথা ঘোষণা করি, এবং মুর্শিদে 'আম' জনাব হুজায়বীর ব্যক্তিগত দফতর হিসেবে ব্যবহারের জন্যে আমার বাড়ির সবচেয়ে বড় এবং সুসজ্জিত হল ঘরটি উৎসর্গ করি ।
কারাগারে রাতদিন - ৩৭
ইখওয়ানের ভাই আব্দুল কাদের আওদাহ এ জন্যে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে আমাকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ইখওয়ানুল মুসলিমুনের সাথে সরাসরি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত আপনার প্রকাশ্য ঘোষণা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আমাদের জন্যে অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার । বস্তুত এটাকে আমাদের বড় সৌভাগ্যই বলতে হবে।
আমি বিনয়ের সাথে বললাম, যা হয়েছে তার জন্যে আল্লাহ্র অশেষ শুকরিয়া । বলা বাহুল্য, ইখওয়ানের সাথে অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম । এর মধ্যেই জেনারেল নজীবের নেতৃত্বে সামরিক বিপ্লব সংঘটিত হয়। বিপ্লবের কয়েকদিন আগে আমীর আবদুল্লাহ ফয়সলসহ জেনারেল নজীব আমার সাথে দেখা করেন । এ বিপ্লবের প্রতি ইখওয়ান এবং মহিলা সংস্থার কিছুটা সহানুভূতি ছিল ।
কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বিপ্লবী সরকারের প্রতিশ্রুতি ঘোষণা এবং কাজকর্মের মধ্যে অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়। এ ব্যাপারে ইখওয়ান নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় আমি আমার মতামত প্রকাশ করি । পরে যখন নজীব সরকার ইখওয়ানের কয়েকজন সদস্যকে মন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় অংশগ্রহণের প্রস্তাব করেন, তখন আমি আমার পত্রিকার মাধ্যমে এই বলে প্রস্তাবের বিরোধিতা করি, যেহেতু বিপ্লবী সরকার আন্তরিকতার সাথে ইসলামী জীবনাদর্শে অনুসারি নন বলে প্রকাশ পাচ্ছে সুতরাং উখওয়ানের কোন ব্যক্তিই এ ধরনের সরকারের সাথে মৈত্রী স্থাপন বা তার অধীনে দায়িত্ব পালনের কথা ভাবতেও পারে না। যদি কোন ব্যক্তি তা করে তাহলে তাকে ইখওয়ান থেকে বহিস্কার করা উচিত। বস্তুত বিপ্লবী সরকারের আসল উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ইখওয়ানকে তার ভূমিকা ও নীতির উপর অটল থাকতে হবে । পত্রিকায় আমার বক্তব্য প্রকাশের পর জনাব আব্দুল কাদের আওদাহ্ আমার সাথে সাক্ষাৎ করে আপাতত এ ধরনের বক্তব্য প্রকাশ মুলতবী রাখার অনুরোধ করেন । এর পরবর্তী দু'সংখ্যায় আমি এ ব্যাপারে কিছুই লিখিনি । কিন্তু পরে আবার লিখতে শুরু করি। এবার জনাব আব্দুল কাদের আওদাহ্ জনাব হুজায়বীর নির্দেশপত্র নিয়ে আসেন। তাতে তিনি এ ব্যাপারে কিছু লিখতে নিষেধ করেন । বলাবাহুল্য, আমি এ নির্দেশ মেনে নেই । নেতার নির্দেশ অমান্য করা সম্ভব ছিল না। এ সময় সব ব্যাপারেই আমি ইমাম হুজায়বীর আদেশ নিষেধ মোতাবেকই কাজ করি । এমনকি তাঁর অনুমতিতেই আমি শান্তি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি।
কারাগারে রাতদিন - ৩৮
মুখোস উম্মোচিত
সময় তার নির্ধারিত গতিতে কালের প্রেক্ষাপট অতিক্রম করছিল । অবশেষে ১৯৪৫ সালের ভয়াবহ ঘটনাবলী দেশের ভাগ্যাকাশকে মেঘাচ্ছন্ন করে তোলে । জামাল আব্দুন নাসের তার মুখোস খুলে ফেলে তার আসল পৈশাচিক রূপে ধরা দেয়। সে প্রকাশ্যভাবে ইসলামের বিরোধীতা শুরু করে এবং ইসলামী আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেয়ার অঙ্গীকার করে। এক্ষেত্রে বিদেশী শক্তিবর্গ এবং তাদের দেশীয় চরেরা তাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেয় । নাসের কাল বিলম্ব না করে ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়ার জঘন্য হুকুম জারি করে ।
স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান বীর জনাব আব্দুল কাদের আওদাহ এবং শেখ মোহাম্মদ ফরগালীর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নেতাদের শুধু এ জন্যেই ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। কারণ, তারা দেশের সার্বিক উন্নতি এবং জনগণকে মুক্তি ও সমৃদ্ধির জন্যে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের দাবি তুলেছিলেন । নাসের ইমাম হুজায়বীর মতো সর্বজন শ্রদ্ধেয় বৃদ্ধ নেতাকেও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়ার হুকুম দেয়। কিন্তু আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ডাক্তাররা তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলানোর অযোগ্য ঘোষণা করে। তারা এও বলে যে, এ বুড়ো এমনিতেই কয়েক ঘন্টার বেশি বাঁচবে না। সুতরাং ফাঁসিতে ঝুলানো দরকার হবে না। একই কথা ভেবে জামাল নাসের জনাব হুজায়বীর ফাঁসির দন্ড মওকুফ করে ।
কিন্তু রাখে আল্লাহ্ মারে কে? ইমাম হুজায়বী অচিরেই সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং নাসেরের জুলুম নির্যাতন এবং রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দ্বিগুণ উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে থাকেন। তাঁর নির্ভীক পদক্ষেপ এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠলে সরকার ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে গ্রেফতার করে এবং সামরিক কারাগারে নিক্ষেপ করে। সেখানে তাঁর উপর যে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়, তাতে অতি পাষণ্ডের চোখও অশ্রু ছলছল হতে বাধ্য। কিন্তু ইমাম হুজায়বী অতি ধৈর্য ও সহনশীলতার মূর্ত প্রতীক হয়ে সব অত্যাচার সহ্য করেন ।
শেষ পর্যন্ত এ বৃদ্ধ নেতার চোখের সামনেই নাসের এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের মৃত্যু ও পতন ঘটে। প্রেসিডেন্ট নাসেরের স্বৈরাচারী আমলে অবর্ণনীয়
কারাগারে রাতদিন - ৩৯
অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই যখন আপাতত চুপচাপ নিষ্ক্রিয়তা অবলম্বনের অনুমতি চেয়ে ইমাম হুজায়বীর কাছে আসেন, তখন বৃদ্ধ ইমাম হুজায়বী একজন নবীন বিপ্লবীর মতো উদ্দীপনা প্রকাশ করে বলেন, তোমরা কারা সক্রিয় থাকতে চাও বা কারা নিষ্ক্রিয়তা অবলম্বন করতে চাও, তা নিয়ে ভাবার অবকাশ আমার নেই। তবে একটা কথা তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ইতিহাস খুলে দেখ, বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে যারা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বেড়িয়েছে, তারা কোন দিনই ইসলামী আন্দোলনের সেবা করতে পারেনি । ইসলামী আন্দোলনে ভীরু কাপুরুষ এবং সুযোগ সন্ধানীদের কোন স্থান নেই । এসব কথা বলেছেন, তিনি কারা নির্যাতন ভোগ করার সময়; তখন তাঁর বয়স আশি বছর । কুখ্যাত নাসেরের মৃত্যুর পর তিনি সবার পরে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন ।
দায়িত্ব পালনের ডাক
১৯৫৫ সালে স্বৈরাচারী সরকারের অকথ্য নির্যাতনে এবং নির্বাচার মৃত্যুদণ্ডের শিকার হয়ে ইসলামী আন্দোলনের হাজার হাজার কর্মী শাহাদাত বরণ করে। আমি শাহাদাতপ্রাপ্ত ভাইদের মাসুম সন্তান এবং বিধবাদের করুণ অবস্থা দেখে দারুনভাবে বিচলিত হয়ে পড়ি। এসব ইয়াতিম ও বিধবাদের বুকফাটা কান্না, অবর্ণনীয় দুঃখ দুর্দশা এবং রিক্ত অসহায় অবস্থা আমাকে গভীরভাবে দুঃখ ভারাক্রান্ত করে তোলে এদের যথার্থ পুনর্বাসন এবং শহীদদের রক্তে ভেজা পথে দ্বিগুণ উৎসাহে এগিয়ে চলার জন্যে আমি নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই । আমি সরকারের সাথে সরাসরি সংঘাতে অবতীর্ণ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই । নতুন ভাবে কাজে নেমে দেখি সারাদেশে অভাব অনটন এবং ক্ষুধার তাড়নায় মানুষ অস্থির । কোনো রকমে বেঁচে থাকার জন্যে দু'মুঠো অন্ন এবং লজ্জা ঢাকার মতো এক প্রস্থ কাপড়ের অভাবে লাখ লাখ বনি আদম অবৈধ আয়ের পথে হন্যে হয়ে ঘুরছে । ক্ষুধা মানুষের চরিত্র ও নৈতিকতাকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে ।
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র অসন্তোষ এবং কল কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ জ্যামিতিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সুযোগ বুঝে কায়েমী স্বার্থবাদী চক্র এবং মালিক ও বণিকরা জনসাধারণকে শোষণ করে নিত্য নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছিল ।
কারাগারে রাতদিন- ৪০
| pdf |
f879ea8425cd593f3d78bcbbe933a5f79634dd36 | বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার কোথাও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম আসেনি বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যের জন্য মানুষের কাছে এখন হাসির পাত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
বুধবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত শেষে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
'তিনি যদি অপশনাল হন তবে মূল কে? আর তখন জনাব ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান কোথায় ছিল, সেটাও হয়তো তার পরিষ্কার করা দরকার' যোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা।
এ সময় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
| web |
05412fa10e1220c644797c3242160b575166a7df | চপ শিল্পের কথা বলে বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মমতা। একইভাবে অবশ্য সংসদে পাকোড়া তৈরি করাকেও বে-রোজগারির সমাধানের রাস্তা বলে দাবি করেছিলেন অমিত শাহ।
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ সদ্য রাজ্যপালের পদ ছেড়ে রাজ্য ফিরেছেন তথাগত রায়। রাজ্য রাজনীতিতে জোর জল্পনা, বিজেপির কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি চলে যেতে পারেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যসরকারকে আক্রমণ করেছেন। এবার ফের মমতাকে নিশানা করলের রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি।
শনিবার এক টুইট করে তথাগত বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ খুলতে নিষেধ করেছেন তাঁর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। পিকে একেবারে কড়া ভাবে বলে দিয়েছেন, যে যাই বলুক একদম মুখ খুলবেন না। এক একবার আপনি বার মুখ খোলেন, ডহরবাবু, চপ-শিল্প, যৌনধর্ম, বিষ্ণুমাতা বলেন আর পঞ্চাশ হাজার ভোট ভেগে যায়! একদম চুপ। কিন্তু এত করেও আর ফাটা ডিমে তা দিয়ে কি ফল পাবে!
প্রশান্ত কিশোর মমতাকে কড়াভাবে বলেছে "যে যাই বলুক একদম মুখ খুলবেন না । এক একবার আপনি মুখ খোলেন, ডহরবাবু, চপ-শিল্প, যৌনধর্ম, বিষ্ণুমাতা ইত্যাদি বলেন, আর হাজার পঞ্চাশ ভোট ভোগে যায় ! একদম চুপ"।
কিন্তু এতো করেও "ফাটা ডিমে আর তা দিয়ে কি ফল পাবে"? লিখেছিলেন কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত।
উল্লেখ্য, চপ শিল্পের কথা বলে বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মমতা। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্য শিল্প আনতে পারছেন না মমতা। তাই এখন চপভাজাকেও শিল্প বলছেন। একইভাবে অবশ্য সংসদে পাকোড়া তৈরি করাকেও বে-রোজগারির সমাধানের রাস্তা বলে দাবি করেছিলেন অমিত শাহ।
আরও পড়ুন- দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ লক্ষের গণ্ডি, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৯৩৩৩৭!
প্রসঙ্গত, রাজ্যে ফিরে দলের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছেন তথাগত রায়। সূত্রের খবর রাজ্য বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা তাঁর পাশে রয়েছে। রাজ্যপাল থাকার সময়েও বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করতেন তথাগত। এবার রাজ্যে ফিরেও রাজ্য রাজনীতিতে ভেসে থাকার চেষ্টা করছেন প্রাক্তন এই বিজেপি নেতা।
| web |
471ef1202447c416b80acd4e49580775ef300f5a | মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে নিজস্ব প্রযুক্তিতে আরও অত্যাধুনিক করার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। ন্যাটো সদস্য দেশটির সমরাস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের 'ওজগুল' প্রকল্পের আওতায় মার্কিন এই বিমানকে তুরস্কের বিমানের রূপান্তর করা হবে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের সমরাস্ত্র প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ইসমাইল দেমির এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসমাইল দেমির বলেন, সমরাস্ত্র খাতে আমরা বিদেশ নির্ভরতা কমাতে যেসব উদ্যোগ নিয়েছি, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই 'ওজগুল' প্রকল্প।
টার্কিস এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিএআই) বর্তমানে তুরস্কের বিমানবাহিনীর হাতে যেসব এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে সেগুলোর কম্পিউটার ও সফটওয়্যার নিজস্ব প্রযুক্তিতে আরও আধুনিক করবে।
তুর্কি এসব অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের নামকরণ করা হবে- এফ-১৬ ওজগুল। এ প্রকল্পের আওতায় ৩৫টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে এফ-১৬ ওজগুলে রূপান্তর করা ছাড়াও নতুন করে আরও ৩০টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান নির্মাণ করা হবে।
এ ছাড়া অত্যাধুনিক বিমানটির রাডার সিস্টেম, ককপিট আপার ফ্রন্ট কন্ট্রোল প্যানেল, ফুয়েল হাউড্রোলিক ইন্ডিকেটর, ইঞ্জিন ডেসপ্লে স্ক্রিন ও ইমাজেন্সি ইন্ডিকেটর আরও আধুনিক করা হচ্ছে।
| web |
581ebf2678ddd1ce938a674635502cc1bf677557 | সংগ্রাম অনলাইন ডেস্কঃ টানা দুই দিন বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে খুলছে নিউ মার্কেট। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা বৈঠক শেষে সমঝোতায় পৌঁছেছেন ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত হলেও ঢাকা কলেজের হল খোলা কিংবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে কলেজ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি হামলার ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস এসেছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
এ ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বৈঠকে নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতারা, ঢাকা কলেজের শিক্ষক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা কলেজের পাশে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (সায়েন্স ল্যাবরেটরি) সভা কক্ষে এ বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিউমার্কেটসহ আশপাশের সব দোকানপাট খুলে দেয়া হবে। আর ছাত্রদের ছুটি ও হলে থাকার বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদের দাবিগুলোর প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। তাদের প্রায় সব দাবিই যৌক্তিক। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলো মানা হয়েছে। ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিগগিরই একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, টানা দুই দিনের সংঘর্ষে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, দুজন মারাও গেছেন। আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল দেখা করবে। একই সঙ্গে তাদের আর্থিক সহযোগিতাও দেয়া হবে।
বৈঠকে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহাবুব আলম উপস্থিত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ছাত্রদের করা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা কলেজে ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা আসলেই দুঃখজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ছাত্রদের অনেক যৌক্তিক দাবির কথা আজকের বৈঠকে উঠে এসেছে। সেগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করেছি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানকর্মীদের সংঘর্ষের পেছনে তৃতীয়পক্ষের উসকানি ছিল বলে দাবি করেন নেহাল আহমেদ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশ জানিয়েছে, এটি তদন্ত করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
১. অ্যাম্বুলেন্সে হামলার ঘটনায় পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
২. রমনা জোনের ডিসি, এডিসি, নিউমার্কেট থানার ওসির বিরুদ্ধে ফর্মাল তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৩. প্রতিটি মার্কেটের কর্মচারীদের আচরণ পরিবর্তনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে মালিক সমিতি।
৪. নারী হয়রানী বন্ধে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করবে মালিক সমিতি।
৫. দোকান মালিক কর্মচারীদের ডিজিটাল আইডি কার্ড নিশ্চিত করা হবে।
৬. অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে কলেজ প্রশাসন, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী মালিক সমিতি মিলে সমন্বিত প্রতিনিধি টিম গঠন করা হবে।
| web |
36ebcf25cec72106baa59b5dd86990b1ef232469 | খুলনায় ওষুধ ও সার্জিক্যাল সরঞ্জামের পাইকারি বাজার হেরাজ মার্কেটকে ঘিরে অক্সিজেনের কালো ব্যবসা গড়ে উঠেছে। অক্সিজেনের সংকটের কথা বলে এখানে দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ আদায় করা হচ্ছে। মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে অক্সিজেন কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্বজনরা। জানা যায়, খুলনায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে বয়স্কদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাই বেশি। চিকিৎসকদের মতে, কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন দিয়ে তাদের শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা জরুরি। তবে খুলনায় সরকারি হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চাপে ভর্তির সুযোগ না থাকায় বাড়িতে রেখেই অনেককে অক্সিজেন দিতে বলা হচ্ছে। আর এ সুযোগে অক্সিজেন সেটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'রোটারি খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক প্রকল্প'র চেয়ারপারসন ইঞ্জিনিয়ার মশিউজ্জামান খান জানান, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাজারে অক্সিজেন সেটের দাম ছিল ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে সেই সেট এখন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল বা পুনরায় ভর্তি করতে মাত্র ১২০ টাকা প্রয়োজন হয়। কিন্তু মুমূর্ষু রোগীদের জিম্মি করে সেখানে হাজার হাজার টাকার ব্যবসার ফাঁদ পেতেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিভাগের কোনো মনিটরিং না থাকায় খুলনার হেরাজ মার্কেটে ১ দশমিক ৩৬ কিউবিক মিটারের অক্সিজেনসহ সেট বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিলিন্ডার, ফ্লোমিটার ও মাস্কের বাজারমূল্য ২৩ হাজার ৭১০ টাকা নির্ধারণ করলেও হেরাজ মার্কেটে ফাহিম সার্জিক্যালে ৩০ হাজার টাকা, ফেমাস সার্জিক্যালে ৩৫ হাজার ও সাকির সার্জিক্যালে ৩৩ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সিলিন্ডার বাদে ফ্লোমিটার ও অন্যান্য সামগ্রীর দাম ৫ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। তবে এখানকার ব্যবসায়ীদের দাবি, অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। তারাই অক্সিজেনের দাম কয়েক দফা বাড়িয়ে দিয়েছে। জানা যায়, খুলনায় স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড, লিন্ডা ও খুলনা অক্সিজেন লিমিটেড বাজারে অক্সিজেন সরবরাহ করে। স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেডের প্রতিনিধি সজীব রায়হান বলেন, গত কয়েক মাসে অক্সিজেনের দ্বিগুণ চাহিদা বেড়েছে। তবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অক্সিজেনের দাম বৃদ্ধি করেনি। ১ দশমিক ৩৬ কিউবিক মিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার ১২০ টাকা ও ৬ দশমিক ৮ কিউবিক মিটারের বড় সিলিন্ডার ৪১০ টাকায় রিফিল করা হচ্ছে।
| web |
7304c8877f87b51f3f5835c503f9f07e95a08049 | পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঘোষের টিকিকাটা গ্রামে ঈদের দিন বুধবার বিকেলে সর্প দংশনে সেফালী বেগম (৫৫) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সেফালী বেগম উপজেলার ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের দুধ বিক্রেতা মানিক মিয়ার স্ত্রী।
শেফালী বেগমের ছেলে নুর-নবী জানান, বুধবার দুপুরের দিকে তার মা রান্না ঘর থেকে কাঠ আনতে গেলে কাঠের মধ্যে থাকা বিষধর সাপ বের হয়ে তার পায়ের আঙ্গুলে দংশন করে। তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে রান্না-বান্নার কাজ শুরু করেন। পরে তিনি বমি করা শুরু করে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা সেফালী বেগমকে বিকেল সারে তিনটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সৌমিত্র সিনহা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৬ নং টিকিকাটা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
| web |
77444e9674af555a189f2335779c7b865f69905eda9771fff5e1ce6e00382626 | কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ করাই পুরুষের সবচেয়ে বড় পুরুষার্থ। বুদ্ধির দিক দিয়ে এ আমি বিশ্বাস করি এবং এ সাধনায় সিদ্ধিলাভের চেয়ে মহত্তর কিছু নেই এ বিষয়েও আমি নিঃসংশয়। কাঞ্চন আমার যথেষ্ট আছে, তাতে লোভ নেই, কিন্তু সমস্ত জীবনে ভালবাসার কেউ নেই, কেউ কখনো থাকবে না, মনে হলে বুক যেন শুকিয়ে ওঠে। ভয় হয়, অন্তরের এ দুর্বলতা হয়ত আমি মরণকাল পর্যন্ত জয় করতে পারবো না। অদৃষ্টে তাই যদি কখনো ঘটে, আশ্রম ত্যাগ করে আমি চলে যাবো। কিন্তু, তোমার আহ্বান তার চেয়েও মিথ্যে । ও ডাকে সাড়া দিতে আমি পারব না।
একে মিথ্যে বলচেন কেন?
মিথ্যেই ত। মনোরমা সত্যই কখনো আমাকে ভালবাসে নি, তার আচরণ বোঝা যায়, কিন্তু শিবনাথের প্রতি শিবানীর ভালবাসা ত আমি নিজের চোখেই দেখেচি। সেদিন তার যেন আর সীমা ছিল না, কিন্তু আজ তার চিহ্ন পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
কমল কহিল, আজ যদি তা গিয়েই থাকে, সেদিন কি শুধু আমার ছলনাই আপনার চোখে পড়েছিল ?
অজিত বলিল, সে তুমিই জানো, কিন্তু আজ মনে হয় নারী-জীবনে এর চেয়ে মিথ্যে বুঝি আর নেই ।
কমলের চোখের দৃষ্টি প্রখর হইয়া উঠিল, কহিল, নারী-জীবনের সত্যাসত্য নির্দেশের ভার নারীর'পরেই থাক। সে বিচারের দায়িত্ব পুরুষের নিয়ে কাজ নেই - মনোরমারও না, কমলেরও না। এমনি করেই সংসারে চিরদিন ন্যায় বিড়ম্বিত, নারী অসম্মানিত এবং পুরুষের চিত্ত সঙ্কীর্ণ, কলুষিত হয়ে গেছে। তাই এই মিথ্যে-মামলার আর নিষ্পত্তি হতে পেলে না। অবিচারে কেবল একপক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না অজিতবাবু, দু'পক্ষেরই সর্বনাশ করে। সেদিন শিবনাথ যা পেয়েছিলেন, দুনিয়ার কম পুরুষের ভাগ্যেই তা জোটে, কিন্তু আজ তা নেই। কেন নেই এই তর্ক তুলে পুরুষের মোটা হাতে মোটা দণ্ড ঘুরিয়ে শাসন করা চলে, কিন্তু ফিরে পাওয়া যায় না। সেদিনের থাকাটা যেমন সত্যি, আজকের না-থাকাটাও ঠিক তত বড়ই সত্যি। শঠতার ছেঁড়া-কাঁথা মুড়ে একে ঢাকা দিতে লজ্জাবোধ করেছি বলে পুরুষের বিচারে এই হলো নারী-জীবনের সবচেয়ে বড় মিথ্যে ? এই সুবিচারের আশাতেই আমরা আপনাদের মুখ চেয়ে থাকি ? অজিত উত্তর দিল, কিন্তু উপায় কি ? যা এমন ক্ষণস্থায়ী, এমন ভঙ্গুর, তাকে এর বেশী সম্মান মানুষে দেবে কেন?
কমল বলিল, দেবে না জানি। আমার উঠানের ধারে যে ফুল ফোটে তার জীবন একবেলার বেশী নয়। তার চেয়ে ওই মসলা-পেশা নোড়াটা ঢের টিকসই, ঢের দীর্ঘস্থায়ী । সত্য যাচাই করার এর চেয়ে মজবুত মানদণ্ড আপনারা পাবেন কোথায়?
কমল, এ যুক্তি নয়, এ শুধু তোমার রাগের কথা।
রাগ কিসের অজিতবাবু? কেবল স্থায়ীত্ব নিয়েই যাদের কারবার, তারা এমনি করেই মূল্য ধার্য করে। আমার আহ্বানে যে আপনি সাড়া দিতে পারেন নি তার মূলেও এই সংশয় । চিরদিনের দাসখত লিখে যে বন্ধন নেবে না, তাকে বিশ্বাস করবেন আপনি কি দিয়ে ? ফুল যে বোঝে না তার কাছে ঐ পাথরের নোড়াটাই ঢের বেশি সত্য। শুকিয়ে ঝরে যাবার শঙ্কা নেই, ওর আয়ু একটা বেলার নয়, ও নিত্যকালের। রান্নাঘরের প্রয়োজনে ও চিরদিন রগড়ে রগড়ে মসলা পিষে দেবে - ভাত গেলবার তরকারির উপকরণ - ওর প্রতি নির্ভর করা চলে। ও না থাকলে সংসার বিস্বাদ হয়ে ওঠে ।
অজিত তাহার মুখের দিকে চাহিয়া কহিল, এ বিদ্রুত কিসের কমল ?
কমলের কানে বোধ করি এ প্রশ্ন গেল না, সে যেন নিজের মনেই বলিতে লাগিল, মানুষে বোঝে না যে হৃদয়-বস্তুটা লোহার তৈরী নয় । অমন নিশ্চিন্ত নির্ভয়ে তাতে ভর দেওয়া চলে না। দুঃখ যে নেই তা নয়, কিন্তু এই তার ধর্ম, এই তার সত্য। অথচ এ কথা বলাও চলে না, স্বীকার করাও যায় না। এর চেয়ে বড়
দুর্নীতি সংসারে আর আছে কি ? তাই ত কেউ ভেবেই পেলে না শিবনাথকে কি করে আমি নিঃশেষে ক্ষমা করতে পারি। কেঁদে কেঁদে যৌবনে যোগিনী হওয়াটা তাঁরা বুঝতেন, কিন্তু এ তাঁদের সইল না। অরুচি ও অবহেলায় সমস্ত মন তাঁদের তিতো হয়ে গেল। গাছের পাতা শুকিয়ে ঝরে যায়, তার ক্ষত নূতন পাতায় পূর্ণ করে তোলে। এই হলো মিথ্যে, আর বাইরের শুকনো লতা মরে গিয়েও গাছের সর্বাঙ্গ জড়িয়ে কামড়ে এঁটে থাকে, সেই হলো সত্য ?
অজিত একমনে শুনিতেছিল, শেষ হইলে সহসা একটা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিল, একটা কথা আমরা প্রায় ভুলে যাই যে, আসলে তুমি আমাদের আপনার নয়। তোমার রক্ত, তোমার সংস্কার, তোমার সমস্ত শিক্ষা বিদেশের। তার প্রচণ্ড সংঘাত তুমি কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারো না। বরং এইখানেই আমাদের সঙ্গে তোমার অহরহ ধাক্কা লাগে। রাত অনেক হলো কমল, এ নিষ্ফল কলহ বন্ধ করো, - এ আদর্শ তোমার জন্যে নয়।
কোন্ আদর্শ ? আপনার ব্রহ্মচর্য-আশ্রমের ?
অজিত খোঁচা খাইয়া মনে মনে রাগ করিল, কহিল, বেশ তাই । কিন্তু এ গূঢ়তত্ত্ব বিদেশীদের জন্যে নয় । এ তুমি বুঝবে না।
আপনার শাগরেদি করলেও পারবো না?
এবার কমল হাসিয়া উঠিল। যেন সে-মানুষ আর নয়। কহিল, আচ্ছা বলুন ত, কি হলে ঐ সাধুদের আড্ডা থেকে আপনার নাম কাটিয়ে দিতে পারি ? বাস্তবিক, ঐ আশ্রমটা হয়েছে যেন আমার চক্ষুশূল।
অজিত বিছানায় শুইয়া পড়িয়া বলিল, রাজেন্দ্রকে ডেকে এনে তুমি অনায়াসে আশ্রয় দিলে, - তোমার কিছুই বোধ হয় মনে হলো না, - না?
কি আবার মনে হবে ?
এ-সব বোধ করি তুমি গ্রাহ্যই করো না?
কি গ্রাহ্য করিনে, আপনাদের মতামত? না।
নিজের সম্বন্ধেও বোধ করি কখনো ভয় করো না?
কমল বলিল, কখনো করিনে তা বলতে পারিনে, কিন্তু ব্রহ্মচারীদের ভয় কিসের ?
হুঁ, বলিয়া অজিত চুপ করিয়া রহিল।
হঠাৎ একসময়ে বলিয়া উঠিল, কেঁচো মাটির নীচে অন্ধকারে থাকে, সে জানে বাইরের আলোতে বার হলে তার রক্ষে নেই - তাকে গিলে খাবার অনেক মুখ হাঁ করে আছে । লুকানো ছাড়া আত্মরক্ষার কোন উপায় সে জানে না। কিন্তু তুমি জানো মানুষ কেঁচো নয় । এমন কি মেয়েমানুষ হলেও না। শাস্ত্রে আছে, নিজের স্বরূপটিকে জানতে পারাই পরম শক্তি, - এই জানাটাই তোমার আসল শক্তি, না কমল ?
কমল কিছুই না বলিয়া শুধু চাহিয়া রহিল।
অজিত কহিল, মেয়েরা যে বস্তুটিকে তাদের ইহজীবনের যথাসর্বস্ব বলে জানে, সেইখানে তোমার এমন একটি সহজ ঔদাসীন্য যে, যত নিন্দেই করি, সে-ই যেন আগুনের বেড়ার মতো তোমাকে অনুক্ষণ আগলে রাখে। গায়ে লাগবার আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এইমাত্র আমাকে বলছিলে পুরুষের ভোগের বস্তু যারা তাদের জাত তুমি নও। আজ রাত্রে তোমার-সঙ্গে মুখোমুখি বসে এই কথাটার মানে স্পষ্ট হয়ে আসছে। আমাদের নিন্দে-সুখ্যাতিতে অবজ্ঞা করার সাহস যে
| pdf |
573fe22fd85e3d123290b9592f2053bf80f52dcd | ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যাওয়ার পর একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের মাঝে। কে হবেন রিয়ালের ভবিষ্যৎ তারকা? উত্তরটা দিলেন রিয়াল ডিফেন্ডার মার্সেলো। তার মতে, এই মৌসুমে রিয়ালে আসা ব্রাজিলিয়ান তরুণ ভিনিসিয়াস জুনিয়রই রিয়ালের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কান্ডারি।
১৮ বছর বয়সী ভিনিসিয়াস জুনিয়ারকে নিয়ে গত দুই বছরে আলোচনার কোনো শেষ নেই। ব্রাজিলিয়ান বিস্ময় বালককে গত বছরেই দলে ভেড়ানোর ব্যাপারে নিশ্চিত করে রিয়াল কর্তৃপক্ষ। এই মৌসুমের শুরুতেই রিয়ালে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন ভিনিসিয়াস।
ভিনিসিয়াস রিয়ালের হয়ে কতটুক আলো ছড়াতে পারেন, সেটা জানা যাবে এই মৌসুমেই।
| web |
b684eca52f459438bad450e81e0ad9a46571ff06 | বগুড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ৯ দিন পর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নাজমুল হাসান অরেঞ্জ (২৫) মারা গেছেন। সোমবার রাত ১১টার দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ আব্দুল ওয়াদুদ।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে মালগ্রাম ডাবতলার মোড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন মালগ্রাম দক্ষিণপাড়ার রেজাউল ইসলামের ছেলে অরেঞ্জ এবং একই এলাকার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আপেল।
অরেঞ্জের চোখের নিচে আর আপেলের পেটে গুলি লাগে। এদের মধ্যে সংগঠনের জেলা কমিটির সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক অরেঞ্জকে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার রাত ১১টার দিকে অরেঞ্জ মারা যান। এছাড়া এ ঘটনায় আহত আপেল নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় ৩ জানুয়ারি দুপুর একটার দিকে বগুড়া সদর থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন অরেঞ্জের স্ত্রী স্বর্নালী আক্তার।
মামলায় উল্লেখ করা আসামীরা হলেন- বগুড়া মালগ্রামের একরাম হোসেনের ছেলে রাসেল আহমেদ (৩২), রাসেলের ছোট ভাই রাছানী (২৭), শহরের ডাবতলা মোড় এলাকার মৃত রহমান ফকিরের ছেলে খাইরুল ইসলাম (৪৮), একই এলাকার খাইরুল ইসলামের ছেলে সুমন (২০), বেলতলা এলাকার মতিন শেখের ছেলে শাকিব (২২), মালগ্রাম এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে হাবিব (২৪) এবং একই এলাকার আইনুল কসাইয়ের ছেলে টিপু (২৬)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জনকে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলার ৭ নম্বর আসামী টিপুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বগুড়া সদর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে অরেঞ্জ মারা গেছেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
| web |
402bb50692a225b2705e66b4df778df4ffe79d60 | চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহ্ মাহমুদপুর ইউনিয়নের আলুমুড়া গ্রামে সমবায় থেকে নিবন্ধন নিয়ে সেবক ডিজিটাল বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ গ্রাহকের সাথে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানাযায়, গতকাল ৭ এপ্রিল সোমবার মাছুম বিল্লাহ অভিযোগকৃত সমিতির কার্যকরি পরিষদের বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতি স্ট্যাম্প ও চেক আদায়ের লক্ষে চাঁদপুর আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামীরা হচ্ছেঃ সমিতির ম্যানেজার মোঃ মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী, সভাপতি নুরুজ্জামান পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মোরশেদা আক্তার, কোষাধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসাইন, সহ-সভাপতি মশিউর রহমান খান, যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন গাজী। একই বিষয়ে চাঁদপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ এনে গত রোববার মাছুম বিল্লাহ একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মোঃ মাছুম বিল্লাহ উল্লেখিত সমিতি থেকে গত ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর তারিখে ৮ মাসে বার্ষিক ২০% মুনাফা হারে মাসিক কিস্তি হিসেবে ৩লাখ টাকা ঋণগ্রহণ করে। যার বিপরীতে তিনি চলতি বছরের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত ১লাখ ৩৫হাজার টাকা সমিতি বরাবর পরিশোধ করেন। কিন্তু সমিতির ম্যানেজার ১লাখ ৩৫হাজার টাকার কোন প্রাপ্তি রশিদ প্রদান করেননি। সমিতি এলাকার আরেক সদস্য রিপন পাটওয়ারীর ৩০হাজার টাকা সমিতি থেকে ঋণ গ্রহণ করলে, তার বিপরীতে ম্যানেজার ও সমিতির অন্যান্য লোকজন দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। পরে ৯০হাজার টাকা আদায় করে। এছাড়াও একাধিক পরিবারকে এ সমবায় সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ম্যানেজার মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী মাছুম বিল্লাহকে ঋণ প্রদান করার সময় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ হাজীগঞ্জ শাখার ব্যাক্তিগত অলিখিত ৩টি চেকের পাতা, পাসপোর্ট সাইজের ছবি ৩টি, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ সমিতির যাবতীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেন এবং ঋণ ফরমে মোতাহের হোসেন ও নজরুল ইসলাম নামে দু'জন স্বাক্ষী প্রদান করেন।
কিন্তু অভিনব কায়দায় জাল জালিয়াতির উদ্দেশ্যে প্রকল্প পরিচালক মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী সমবায়ের বরাত দিয়ে ৩শ' টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মাছুম বিল্লাহর ভাড়ায় চালিত গাড়ি (যার নং- ঢাকা মেট্টো চ-১৪-২১৭৮) গাড়িটি ঋণের বিপরীতে বন্দক লিখিয়ে নিজের নামে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করেন। মাছুম বিল্লাহর গ্রহীত ঋণের পরিমাণ ৩লাখ টাকা থাকলেও এফিডেভিটে জালিয়াতির উদ্দেশ্যে সে ৪লাখ ৩৫হাজার টাকা লিপিবদ্ধ করেন। একই ঋণে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মেয়াদ দেয়া হয় ৩মাস। এতে সে উল্লেখ করে এই ৩মাসের মধ্যে উল্লেখিত টাকা পরিশোধ করতে না পারলে গাড়িটি তার নিজ নামে লিখে নিবেন। গাড়িটির বর্তমান বাজার মূল্য ২১ লাখ টাকা। তার এ কার্যকলাপ সমবায় আইনের কোন নিয়ম নীতির মধ্যে নেই।
এ ব্যাপারে মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করে তার কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। তার এ ধরণের কর্মকান্ডে এলাকাবাসী এখন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী সদস্যরা তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
| web |
9f1008bf29daf9feeb7fd6b5d5aaef872aaf8b97 | যে ভুলটি করি ৫টি ফল খাওয়ার সময়!
গাড়ির টায়ার কালো ছাড়া অন্য রঙের হয় না কেন, জানেন?
নখের বর্ণ যা হলে এখনই সাবধান!
একটা দাঁত মাজার ব্রাশ কতদিন ব্যবহার করা উচিৎ?
প্রেমিকার সঙ্গে যে ৫টি কাজ করা ঠিক না প্রেমিকের!
চায়ের সঙ্গে যা মিশিয়ে খাবেন না!
সহজে ধনী হওয়ার ১২ উপায়!
| web |
cc7f6afb7d5d71701c6685b8520e22665df85b49 | শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী সিম্ফোনী'র স্মার্টফোন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ওই ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রী সারিয়া সামিয়া সাজেদ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিার্থী।
সামিরা জানান, তার হাতে থাকা অব্স্থায় সিম্ফোনি এক্সপ্লোরার ডব্লিউ-৬০ মডেলের সেটটি হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। ওই সময় মোবাইল ফোনটি ফেটে গিয়ে ব্যাটারি দিয়ে আগুনের ফুলকি বের হতে থাকে। বিস্ফোরণের ফলে হাতে জখম হলেও বর্তমানে ওই ছাত্রী সুস্থ আছেন।
সামিরা জানান, বিস্ফোরিত হওয়ার আগে সকালে পরীা থাকায় টানা ৩ তিন ঘণ্টা ফোনটি বন্ধ ছিল। পরীা শেষে ফোনটি অন করে হাতে নেয়ার কিছুণের মধ্যে তা বিস্ফোরিত হয়। মাত্র কিছুদিন আগে হ্যান্ডসেটটি কিনেছিলেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, স্মার্টফোন বিস্ফোরণের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও জুলাই মাসে হংকংয়ে স্যামসাং কোম্পানির 'গ্যালাক্সি এসফোর' মোবাইল হ্যান্ডসেট বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। এতে এক দম্পতি অল্পের জন্য রা পেলেও বিস্ফোরণে তাদের পুরো ঘর পুড়ে যায়।
| web |
8b9ff46611636e3556a94e3b3d893b629c57b93b | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ফোন করে সুপার সাইক্লোন আম্পানে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকাল ১১টা ১০ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে টেলিফোন করেন এবং পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানা সাইক্লোনে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তার কাছে জানতে চান।
প্রধানমন্ত্রী সাইক্লোনে জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের প্রতি সমবেদনা জানান এবং অচিরেই রাজ্য সরকার এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সমর্থ হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আরও বলেন, সমবেদনা জ্ঞাপন করায় মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
সুপার সাইক্লোন 'আম্পান' গত বুধবার বিকেলের পর বাংলাদেশে আঘাত হানে। এর আগে এটি পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এই ঘূর্ণিঝড়ে পশ্চিমবঙ্গে ৮০ জন আর বাংলাদেশের ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
| web |
37d80a37d38c07fb4895e3b1398e389f533c2fd9 | চলতি মরশুমে লিগে প্রথমবার টানা দুই ম্যাচ অপরাজিত অবস্থায় মাঠে নামবে ইস্টবেঙ্গল।
আইএসএলের লিগ টেবিলে ইস্টবেঙ্গলের স্থান নবমে।
বল পজেশনে এগিয়ে থেকেও গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ লাল-হলুদ স্ট্রাইকাররা।
এবারও একরাশ হতাশা নিয়েই যুবভারতী থেকে ফিরতে হল সমর্থকদের।
গোলকিপার ছাড়া লাল-হলুদ দলের প্রত্যেকেই গোল করেছেন।
ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে পাকাপাকি বিচ্ছেদ শ্রী সিমেন্টের, কে হচ্ছে নয়া ইনভেস্টর?
ফিরিয়ে দেওয়া হল স্পোর্টিং রাইটস।
এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে গোটা ময়দান।
সুরসম্রাজ্ঞীর প্রয়াণে আজ স্মৃতিচারণায় ময়দানের ক্লাব।
কার্যত বাধ্য হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন লাল-হলুদ গোলকিপার?
শক্তিশালী মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রেনেডির কোচিং দেখে তাঁর একদা টিমমেটরা উচ্ছ্বসিত হয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
মাঠে নামার আগেই চাপে এসসি ইস্টবেঙ্গলের অন্তর্বর্তী কোচ।
হীরার উঠে আসার রাস্তাটা মোটেও পাপড়ি বিছানো ছিল না।
তিন ম্যাচে ১০ গোল হজম করে বিধ্বস্ত এসসি ইস্টবেঙ্গল।
'ছোট ছোট ভুলগুলোর জন্য বড় খেসারত দিতে হল,' ডার্বি হেরে আক্ষেপ লাল-হলুদ কোচের।
মাণ্ডবীর তীরে চড়ছে ডার্বির পারদ।
নেটদুনিয়ায় ভাইরাল বরের ছবি।
লাল-হলুদের শক্তি কী কী? ব্যাখ্যা করলেন প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য।
তাঁদের সঙ্গে গোয়া পৌঁছেছেন টিম ম্যানেজার মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
মঙ্গলবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা লাল-হলুদের।
শুক্রবারই নয়া সহকারীর নাম ঘোষণা করেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল।
স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং নাইজিরিয়ার তারকাকে ইতিমধ্যেই সই করিয়েছে লাল-হলুদ।
লাল-হলুদে ফের 'চিমা যুগ'! সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে জোর আলোচনা।
আগামী নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলেও জানান তিনি।
ঘোষিত ISL 8 মরশুমের সূচি, উদ্বোধনী ম্যাচেই নামছে এটিকে মোহনবাগান, ডার্বি কবে?
জানেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ কবে?
বুধবার সন্ধ্যায় এসসি ইস্টবেঙ্গলের তরফেই এই ঘোষণা করা হল।
গতবার আইএসএলে গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছিলেন অরিন্দম ভট্টাচার্য।
এখনও অব্যাহত ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি জট।
কলকাতা ফুটবল লিগের আংশিক সূচি ঘোষণা IFA-র, কবে মাঠে নামছে দুই প্রধান?
৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
পতাকা উত্তোলন করলেন বিকাশ পাঁজি এবং তুষার রক্ষিত।
| web |
4e4c005f6f1ee0c704c9729c727209dbcb7e8ad2 | স্পোর্টস রিপোর্টার : ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়ে ক্লাব কাপ হকির ফাইনালে উঠেছে আবাহনী লিমিটেড। মালয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড ইজওয়ান ফেরদৌস ও মোহাম্মদ মহসিনের হ্যাটট্রিকে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবকে বড় ব্যাবধানে হারায় আবাহনী। । মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে গতকাল শনিবার প্রথম সেমি-ফাইনালে ভিক্টোরিয়াকে ১১-১ গোলে হারায় প্রতিযোগিতার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দলের জয়ে চার গোল অবদান রাখেন ইজওয়ান। ভারী বর্ষণের কারণে বিকাল ৫টার পরিবর্তে ৫টা ৪০ মিনিটে খেলা শুরু হয়। দ্বিতীয় মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে লক্ষ্যভেদ করে আবাহনীকে এগিয়ে নেন আশরাফুল ইসলাম। দুই মিনিট পর ইজওয়ানের ফিল্ড গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় শিরোপাধারীরা। দশম মিনিটে ইজওয়ান, ২০তম মিনিটে রিভার্স হিটে মোহাম্মদ মহসিন লক্ষ্যভেদ করলে ব্যবধান আরও বাড়ে। এরপর এক মিনিটের মধ্যে মহসিন ও মালয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড আজোয়ার বিন রহমানের গোলে স্কোরলাইন ৬-০ করে বিরতিতে যায় আবাহনী। ৪৭তম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে আবাহনীকে সপ্তম গোলটি এনে দেন সোহানুর রহমান সবুজ। ৪৯তম মিনিটের গোলে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ইজওয়ান। চার মিনিট পর নিজের চতুর্থ গোলটি করেন মালয়েশিয়ার এই ফরোয়ার্ড। রাকিবের হিট ঠিকানা খুঁজে পেলে ৬২তম মিনিটে একমাত্র গোল পায় ভিক্টোরিয়া। কিন্তু পরে আশরাফুল লক্ষ্যভেদের পর মহসিন হ্যাটট্রিক পূরণ করলে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।
| web |
e5458e0e12112793b775b93f66232ffd3aa22089 | মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদঃ মাত্র ১৩ কার্যদিবসের ব্যবধানে প্রতি শেয়ারে ১০ টাকা দর বেড়েছে সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ারে, শতাংশের হিসাবে যা ৪৪ শতাংশ। সার্বিকভাবে বস্ত্র খাতের শেয়ার চাহিদা থাকলেও আর্থিকভাবে লোকসানি এ কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই। বিষয়টি নজর এড়ায়নি ডিএসই কর্তৃপক্ষেরও। ফলে কোম্পানিটিকে নোটিস দেয় তারা। খোদ কোম্পানি কর্তৃপক্ষও অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি নিয়ে অবাক। তারাও বলতে পারছেন না ঠিক কী কারণে দর বাড়ছে এ শেয়ারের।
সাম্প্রতিক বাজারচিত্রে দেখা গেছে, ১৩ কার্যদিবস আগে এ কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ২২ টাকা ৮০ পয়সা। এর পর থেকে অজানা কারণে দর বাড়তে শুরু করে। টানা দর বেড়ে গতকাল কিছুটা নি¤œমুখী অবস্থায় ৩২ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর কেন বাড়ছে, তা জানতে চেয়ে কোম্পানিকে নোটিস দেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ। জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাদের কাছে দর বৃদ্ধি পেতে পারে, এমন সংবেদনশীল তথ্য নেই।
এদিকে বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করলে কোম্পানি সচিব ইফতেখার আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, শেয়ারদর কেন বাড়ছে, তা আমাদের জানা নেই। আর এটা আমাদের জানার কথাও নয়। বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল। আমরা তাদের জানিয়েছি, সংবেদনশীল কোনো তথ্য নেই।
এদিকে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দিন দিন আরও নাজুক হচ্ছে। ২০১৮ সালে কোম্পানিটির মুনাফা হয় এক কোটি ২২ লাখ টাকা। পরের বছর লোকসানে পড়ে কোম্পানিটি। ২০১৯ সালে কোম্পানিটির লোকসান হয় এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা। পরের বছর তা আরও বেড়ে হয় ১৭ কোটি টাকা।
এর আগে কোম্পানিটির নামে অভিযোগ করেন কয়েকজন বিনিয়োগকারী। অভিযোগে বলা হয়েছে, কোম্পানিটি ভুল তথ্য দেয়ার পাশাপাশি লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকাচ্ছেন। ফলে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা জানতে বিএসইসির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।
সম্প্রতি বিএসইসিতে মো. মামুন অর রশিদ, মজিবুর রহমান ও মমিনুল ইসলাম নামে তিন বিনিয়োগকারী লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত এ অভিযোগে বলা হয়েছে, বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বোনাস শেয়ার দিয়েছে। মাঝখানে ২০১৫ সালে তারা বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। পরবর্তীকালে ২০১৯ ও ২০২০ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত করে। কারণ হিসেবে ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা মনে করে, তথ্যটি সঠিক নয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানির দুটি ইউনিটই এখন পুরোদমে চলছে। সেখানে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ শ্রমিক কর্মচারী কাজ করছেন। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির লোকসানে থাকার প্রশ্নই আসে না। তারা জানান, কোম্পানি যে আর্থিক প্রতিবেদন দিয়েছে, তা আমাদের কাছে স্বচ্ছ নয়। এটা নিজেদের ইচ্ছামতো ও পরিচালকরা লাভবান হওয়ার জন্য করেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পণ্য উৎপাদনের খরচ (কস্ট অব প্যাকিং ম্যাটেরিয়ালস) বেশি দেখানো হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে এ খরচ দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা থেকে বেড়ে চার কোটি ৪২ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে, যা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। একইভাবে অভিযোগপত্রে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্য খরচের যে হিসাব দেখানো হয়েছে, তাও অস্বাভাবিক। এ কারণে দক্ষ নিরীক্ষক দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির হিসাব খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
| web |
476055ba62d7d642cf3a2d27db68216dd9830c63 | করোনা ঠেকাতে দরকার ইমিউনিটি ! কিভাবে বাড়াবেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ?
বাড়ছে শিশুদের মধ্যে ডায়াবিটিস আক্রান্তের সংখ্যা ! দেখুন কোন পথে সমাধান ?
ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতন হোন ! জানুন প্রাথমিক লক্ষণ কি কি ?
| web |
e1a7c406f1d745433d628903c2e4cc66725ef209 | বাঁকুড়া, 25 জুলাই : ধোঁয়া ওঠা ভাত । অনুষঙ্গ হিসাবে ডাল, আলুভাজা বা সরষে বাটা দিয়ে মাছের ঝাল । মর্টিন তৈরির কারখানার সামনের খাবারের দোকানগুলিতে এমন খাবার চেটেপুটে খেতেন সেখানকার শ্রমিকরা । পান্নাদার হোটেল, পাঁচকড়ির চায়ের দোকান বা বড়দার হোটেল চলত রমরমিয়ে । এইসব দোকানে বসে গরম চায়ে চুমুক দিয়ে কাজে ঢুকতেন শ্রমিকরা । কারখানা বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে এই পান্নাদা, বড়দা বা পাঁচকড়িদের হোটেল-দোকানগুলিরও ঝাঁপ বন্ধ । শুধু ওই কারখানাই নয়, বড়জোড়ায় আরও তিনটি বন্ধ কারখানার আশপাশেও হুবহু একই ছবি । এসব কারখানায় শিল্পের পুনরুত্থান হয়নি । তার প্রভাব পড়েছে নাগরিক জীবনেও ।
প্রান্তিক এই জনপদে কারখানার সাইরেন বাজলেই দলে দলে মানুষের ভিড় দেখা যেত রাস্তায় । হন্তদন্ত হয়ে কাজে ঢুকতেন শ্রমিকরা । চেনা সেই ব্যস্ত ছবিটা এখন ঝাপসা । তারপর এক এক করে কারখানায় তালা ঝুলে যায় । কোনও কারখানার যন্ত্রপাতিতে মরচে পড়ে গিয়েছে, কোথাও আবার বন্ধ কারখানার চৌহদ্দি । ঝোপ-জঙ্গলে ভর্তি । সেখানে সাপখোপ, শেয়ালের বাসা ।
| web |
aab756521ebe54bddf3a8b07db5fa67bdadc6eeaa5facb27a1cd109eab6a5a91 | । ১০ম বর্ষ, ৫ম সংখ্যা
যে গাড়ীর চাকাটা অনেকখানি বসে গেছে - সুতরাং ওটা মালে ভর্তি ছিল। চল আরও খানিকটা এগিয়ে যাই। ঐ দেখ! চাকার আঁকাবাঁকা দাগগুলিও বলছে যে মালের ভারে ক্লান্ত বলদেই গাড়ী টেনে নিয়ে গেছে! এখন দেখ গাড়ীতে কি মাল ছিল। আমি বলবো খড়, কারণ - ঐ দেখ ঐ নিচু বটগাছটার নিচের ডালে এখনও কয়েকটা খড় লেগে আছে। ওগুলি নিশ্চয়ই শকটের উপরের গাঁটের খড়। ঐ গাড়ীর সঙ্গে একজন গাড়োয়ান বাঁ দিকের গরুটার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। জামার এ কথার নির্ভুলতা বোধ হয় গাড়োয়ানের পায়ের দাগ থেকেই বুঝতে পাচ্ছ। তারপর ঐ দেখ তার বাঁ পাশে তিনটে দেশলাইএর কাঠি - দু'টা তো ধরেই নিবে গেছে আর বাকিটার প্রায় অর্দ্ধেক ধরেছে। সুতরাং যখন সে দেশলাই জ্বালায় তখন জোরে বাতাস হচ্ছিল। আচ্ছ। লোকটা কি ধরিয়েছিল ঐ কাঠি দিয়ে। খানিকটা এগিয়ে চল যদি কিছু বুঝতে পারি। আরে এই দেখ আধখাওয়া একটুকরা বিড়ি পড়ে রয়েছে । আবার দেখ বিড়ির যে দিক্টা মুখে থাকে সেটা আবার লাল। সুতরাং লোকটা পান ও বিড়ি দুইই খায়। তারপর ঐ দেখ কি খানিকটা বিশ্রী গয়ার লোকটার পথে পরে রয়েছে ঐ দেখ আবার গয়ার। লোকটা নিশ্চয়ই বুড়ো এবং ছেলেবেলা থেকেই বিড়ির নেশা আরম্ভ করেছে; তা' না হ'লে বিড়ি খাবার পরই ঐ রকম কাশি হয় না। এখন ও সব যাক্ । বলতো কতক্ষণ আগে এই রাস্তা দিয়ে শকটটি গেছে ! বলতে পারলে না ? আচ্ছা প্রথমেই দেখ গরুর পায়ের দাগ আর গাড়ীর চাকার দাগ খুব নুতন বলেই মনে হচ্ছে। সুতরাং শকটটি খুব বেশী সময় হ'ল এই রাস্থা দিয়ে যায় নি। তা ছাড়া তোমাদের বোধ হয় মনে আছে যে আধঘণ্টা হাগে একটু। বৃষ্টি হয়েছিল। সুতরাং দেখতে পাচ্ছ রাস্থার সবই ভিজে। কিন্তু ঐ দেখ শত্রুট থেকে রাস্থায় পড়। কয়েকটা ধড়। দেখ দেখি ও গুলো শুক্নো না ভিজে ! 21 এতে ভিজের নাম গন্ধও নেই। সুতরাং শটটি বৃষ্টি হবার পর এই রাস্তা দিয়ে গেছে । আর তার গতি নিশ্চয়ই ঘণ্টায় তিন মাইলের বেশী হতে পারে না সাধারণ জ্ঞানেই বুঝেছ । তাহলে ব্যাপারটি দাঁড়ায় এই রকমপ্রায় আধঘণ্ট। আগে একটি খড়ে বোঝাই গরুরগাড়ী এই রাস্তা দিয়ে প্রায় তিন মাইল বেগে তার বুড়ো বিড়িখোর বাঁ দিকে নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং শকটটি এখন এখান থেকে প্রায় দেড় মাইল দূরে হতে পারে।
আমরা এখন চার মাইল বেগে হাঁটছি। সুতরাং আমরা শকটটিকে ঘণ্টায় একমাইল এগিয়ে যাচ্ছি। সুতরাং কমবেশী দেড়ঘণ্টার মধ্যে আমরা শকটটিকে ধর্ত্তে পাব আশা করা যায় । চল, এগিয়ে গিয়ে আমরা গাড়ীটাকে ধরে আমাদের ধারণা প্রমাণ করি।
হাঁ।, ঐ দেখ আমার পূর্ব্ববর্ণিত শব্টটি যাচ্ছে। কেমন হে, মিলেছে তো ? আমি এই ক্ষুদ্র ঘটনাটি থেকেই 'Trackingএর কয়েকটি সাধারণ জিনিষের কথা ৰলেছি মাত্ৰ। চেষ্ট। কলে' বালকের পায়ের দাগ দেখেই তার বয়স বলে দিতে পারা যায়
অথবা গুরুর পায়ের দাগ দেখেই ওটা কোন জাতের তাও হয়তো বলতে কষ্ট হয় না। A জিনিষটা অভ্যাসের উপরেই নির্ভর করে।
এরই সাহায্যে শীকারীরা শীকারের অবস্থান সহজেই খুঁজে নিয়ে তার পশ্চাদ্ধাবন করেন। কোনও পুরাতন শীকারীকে কোনও অপরিচিত ভূখণ্ডে ছেড়ে দিয়ে এলেও সে পায়ের দেখেই সেখানকার জীব জন্তুর বিষয় অনায়াসে সবই বলে দিতে পারেন। ঐ সব পদচিহ্ন তাঁদের তাছে বইএর খোলা পাতার মতই মনে হয়। শীকারীরা পায়ের ছাপ দেখে তাদের কাছে গিয়ে আবার নিজের পায়ের ছাপ দেখে নিজের জায়গায় ফিরে আসেন।
Tracking আমাদের প্রত্যেক বিষয়ে - বিষয়টি যত ক্ষুদ্রই হউক না কেন - লক্ষ্য কর্ডে বাধ্য করে। সুতরাং tracking আমাদের তীক্ষ্ণবুদ্ধি, ভবিষ্যৎ বিবেচনা শক্তি, এবং সতর্ক দৃষ্টি বাড়িয়ে তোলে। দ্বিতীয়তঃ trackingএ প্রত্যেক বিষয়টিকেও ঘৃণা না করে, তা কেন হচ্ছে এবং কোথা থেকে তা হচ্ছে, তাঁ'র খোঁজ নিতে আমরা উৎসাহিত হয়ে উঠি। সুতরাং trackingএর সঙ্গে সঙ্গে কারণ দর্শাবার গুণটি আপনা থেকেই বাড়িয়ে তুলি। সৰ্ব্বশেষে এই tracking অসংখ্য good-turn কর্ত্রে সাহায্য করে। তোমরা বোধ হয় Scouting for Boysএর রাখাল ছেলে Robert Hindmarsh এবং খুলি ডাকাতটার গল্প পড়েছ। Scotlandএর পাহাড় থেকে ভেড়। নিয়ে ফেরবার সময় পথে গুহার মধ্যে ডাকাতটাকে দেখে তার পায়ের জুতোর হারানো পেরেকগুলির অবস্থান যদি সে এক দৃষ্টিতেই ভালভাবে দেখে নিয়ে পুলিশকে সাহায্য না কৰ্ত্তো তবে কি আর ঐ দাগীটাকে তারা অত শীঘ্র হাতে পেত? একবার ভেবে দেখ দেখি তুমি যদি Hindmarshএর পরিবর্ত্তে থাকতে তবে কি ঐ রকম করে ডাকাত ধর্ভে পাৰ্ত্তে ? কি বলছ - পার্ত্তে না! বোধ হয় অভ্যাস কৰ্ত্তে থাকলে তুমিও IHindimarsh এর মতই হতে পার। সুতরাং নূতন trackerদের প্রতি একমাত্র উপদেশ - চেষ্টা কর ! অভ্যাস কর ! যা পেয়েছ চিন্তা কর !*
• ইংরাজী থেকে ।
| pdf |
d71aac6f2e07eec16fe6eee7f2bd386298c3dd6a | রক্তদাতাদের সংগঠন 'বাঁধন' জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জোনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টায় পরিবহন চত্বরে বাঁধন কার্যালয়ের সম্মুখে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম। এ সময় সোনালু, কাঠগোলাপ, জাম সহ বিভিন্ন ফুল, ফল ও ঔষধি চারাগাছ রোপণ করা হয়।
এসময় 'বাঁধন' জাবি জোনের সভাপতি শাকিল আহমেদ বলেন, 'আগামী ২৪ অক্টোবর রক্তদাতা সংগঠন 'বাঁধনের' রজতজয়ন্তী পূর্তি উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।এরই ধারাবাহিকতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কর্তৃক এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন।পরবর্তীতে হল ভিত্তিক ভাবেও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনা রয়েছে।'
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম বলেন, 'বৃক্ষরোপণ পরিবেশে জন্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা কারোরই অজানা নয়।নিঃসন্দেহে এটা একটা ভালো উদ্যোগ। তোমরা ভালো কাজের পাশাপাশি আরও একটি ভালো কাজ করলে।আমি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন সবসময় ভালো কাজের পাশে আছি।'
এ সময়ে কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষক ও টিএসসি'র পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীর এবং সংগঠনের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
| web |
65c52b9bc8243cff820aef61bb923ecc4ecda065 | আপনার কি কোন প্রশ্ন আছে, বিদেশে লেখাপড়ার বিষয়ে?
ব্লগে না আসলেও মেইল প্রতিদিন দেখি কারণ এগুলো আমার পার্সোনাল মেইলে ফরোয়ার্ড করা আছে। আমি নিয়মিত আপনাদের ইমেইলের উত্তর দিচ্ছি সেখানেও।
আপডেট (২০ অক্টোবর ২০১৪): উত্তর দেবার চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি, আপনাদের থেকে পাওয়া মেইলগুলোর উত্তরও যথাসাধ্য দেবার চেষ্টা করছি।
| web |
061dc863536029fca8c5a1dab06cb085 | ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কেমন, আজ বলতে পারত নুহুজেট গুইলেন। যে এখন পরম নিশ্চিন্তের ঘুমে, বেঁচে থাকলে আজ যে কুড়ি বছরের যুবক হত। নুহুজেট বলতে পারত, কীভাবে তার জন্য চার-চারটে বছর লড়ে গিয়েছিলেন কোনও এক সিআর। রক্তের সম্পর্ক না থেকে। শুধু আত্মিক সম্পর্কের রক্তবীজ থেকে। দুরারোগ্য কর্কটরোগ ছিল খুদে রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তের। বাঁচত না নুহুজেট। বাঁচেওনি। কিন্তু বেঁচে থাকলে আজ সে সব বলতে পারত।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কেমন, আজও অনায়াসে বলে দেবেন নেরেদিয়া গালার্দো। বহু বছর আগের কথা, তবু মনে থাকা উচিত। সিআর রিয়াল মাদ্রিদ যাওয়ার আগে স্প্যানিশ মডেলের সঙ্গে একটু 'আলাপ-পরিচয়' হয়েছিল আর কী, তারপর খানিক 'সুখদুঃখের' গল্প! তা, একটু উষ্ণতার জন্য দু'জন যখন আসতেন কাছাকাছি, রোনাল্ডো নাকি সব সময় টকটকে লাল অন্তর্বাস পরে উদয় হতেন। তাতে আবার হাতির শুঁড় আঁকা!
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কেমন, বলে দেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার নিপীড়িত মানুষগুলোও। যাদের জন্য নিজের ব্যালন ডি'ওর পুরস্কার নিলামে তুলে দিয়েছিলেন সিআর সেভেন! ঠিক পড়লেন, এটা সেই ব্যালন ডি'ওর ট্রফি যা ফুটবলারের শ্রেষ্ঠত্বের রাজমুকুট। এটা সেই ব্যালন ডি'ওর, যা লিওনেল মেসি পাবেন শুনে ফ্রান্সে এবার যাননি রোনাল্ডো। অথচ সেই একই পুরস্কার, ২০১৩-এ পাওয়া সেই বিশ্বশাসনের স্বীকৃতি কিনা হেলায় বিক্রি করে দিয়েছেন পর্তুগিজ ফুটবলদস্যু! বিশ্বাস না হলে, গাজায় যান। যুদ্ধবিধ্বস্তদের জিজ্ঞাসা করুন। ওরা আজও বলে দেবে। নিলাম থেকে ওঠা টাকাটা তো ওরাই পেয়েছিল!
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কেমন, আজও জানেন ব্যালন ডি'ওর অনুষ্ঠানের জনৈক সঞ্চালক। সেবার ফ্রান্সে ছিল ব্যালন ডি'ওর, পেয়েছিলেন রোনাল্ডো। আর সঞ্চালক মহাশয় ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে, বিস্ময়ের বৃষ্টিতে ভিজে পুরস্কার প্রাপককে চিবিয়ে-চিবিয়ে বলতে শুনেছিলেন, "পুরস্কারটা দিলে, ভাল করেছ। কারণ আমিই এটা পাওয়ার যোগ্য। এই ফুটবল পৃথিবীতে আমিই এক, দুই, তিন! তারপর বাকিরা।" স্ফীত নাসা, গর্বিত গ্রীবা, আকাশছোঁয়া লাফ শেষে দু'পা ফাঁক করে দাঁড়ানো আপাত অহঙ্কারী মানুষটার আজ পঁয়ত্রিশ হল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আজ পঁয়ত্রিশে পা দিলেন। কিন্তু তাঁকে নিয়ে লিখতে বসে যেন সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। কী লিখব? লিওনেল মেসি? আর্জেন্তিনীয় ফুটবল মহাপুরুষের সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ানোর চিরন্তন রোমহর্ষক যুদ্ধ? মাঠে, মাঠের বাইরে? ধুর, ধুর। মাঠে ১-১। মাঠের বাইরে ৭-১! লিওনেল মেসির অবস্থা সেখানে জার্মানি বিশ্বকাপে ধুলিসাৎ ব্রাজিলের মতো।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পঁয়ত্রিশ বছরের জীবনকোষ্ঠীতে চোখ বুলোলে সময় সময় মনে হবে, এ মানুষটার কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী থাকতে পারে না। প্রতিদ্বন্দ্বীকে তো আগে জন্ম নিতে হবে! পুরোটাই তো ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। দুই বিপরীতধর্মী সত্বার অবিরাম ঠোকাঠুকি। লিওনেল মেসি নামের সাত্বিক ফুটবল পুরোহিতের সেখানে কোনও জায়গাই নেই! বর্ণময় প্রেমময় জীবন একটা দিক। লিওনেল মেসি আজ পর্যন্ত হাতির শুঁড় আঁকা অন্তর্বাস পরে প্রেমিকার সামনে হাজির হয়েছেন বলে খবর নেই! প্যারিস হিলটন থেকে ইরিনা শায়েক, জর্জিনা রডরিগেজ থেকে কিম কারদাশিয়ান- নামীদামি সুপার মডেলদের সঙ্গে নিভৃতে নিশিযাপন করেছেন বলেও কেউ জানে না। মেসির প্রেম মেরেকেটে দেড়খানা। পুরনো এক বান্ধবী, তারপর সোজা আন্তোনেল্লা। আর আন্তোনেল্লাও প্রেমে গদগদ হয়ে 'উফ, কী শরীর, কী দেখতে, প্রথম দেখাতেই শেষ হয়ে গেছিলাম' মার্কা কথাবার্তা ইহজীবনে বলেননি। যেটা জর্জিনা, ক্রিশ্চিয়ানোর বর্তমান প্রেমিকা দিনকয়েক আগে বলেছেন পর্তুগিজ বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে।
লিওনেল মেসিকে 'সেক্স টয়' হিসেবে ব্যবহার করে 'সেক্সি টাইম' কাটাতে কারও ইচ্ছে হয়েছে বলে শোনা যায়নি। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ক্ষেত্রে যা গিয়েছে। গুগল সার্চ দিলে জেসমিন লেনার্ডের সরস কাহিনি পাবেন। আর ফুটবল সমাজের রীতিনীতি, তাদের পূজনীয় বিগ্রহের গালে থাপ্পড় মেরে কথাবার্তা, চরিত্রের এই দিকটারই বংশধর। মাঠে একবার সমর্থকদের ধিক্কার ধ্বনির প্রত্যুত্তরে দলা পাকানো তাচ্ছিল্য ছুড়ে সিআর বলেছিলেন, "আমাকে দেখতে সুন্দর। আমি কিংবদন্তি। আমার টাকা আছে। তাই ওরা আমাকে হিংসে করে!" তাঁর মায়াবী, নির্ভুল ফ্রিকিক রহস্য নিয়ে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। রোনাল্ডো চোখ টিপে উত্তর দিয়েছিলেন, "ফ্রিকিক রহস্য? আমি শুধু নেটের দিকে তাকিয়ে নিজেকে বলি, ফ্রিকিকটা নাও, ক্রিশ্চিয়ানো!"
আবার, আশ্চর্যের হল, এর একটা উলটো পৃথিবীও আছে। যেখানে বসবাস আর এক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। সেখানে থাকে তাঁরই অল্টার ইগো। নারীবেষ্টিত লাস্যময় জীবন যেখানে নেই, নেই অহেতুক বাগাড়ম্বর। বরং সেখানে নীরবে থাকে এক শিশুমন যে অক্লেশে বিলিয়ে দিতে পারে প্রিয় সব কিছু। চ্যারিটি অনেক তারকাই করেন। লিওনেল মেসিরও প্রচুর আছে। কিন্তু গোল্ডেন বুট বা ব্যালন ডি'অর নিলামে তুলে দেওয়া? শুধু অচেনা, অজানা কিছু প্রাণের আর্তনাদ শুনে? কিংবা প্রাণাধিক প্রিয় ক্লাবের প্র্যাকটিস দেখতে বহু দূর থেকে ছুটে আসা জনৈক সমর্থককে গাড়িতে লিফট দিতে চাওয়া, বৃষ্টির মধ্যে সে কীভাবে ফিরবে ভেবে? কোথায়, লিও মেসি এসব কখনও করেছেন বলে তো শোনা যায়নি।
নুহুজেটের কথা লিখেছিলাম শুরুতে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তখন সবেমাত্র রিয়াল মাদ্রিদে এসেছেন। তিনি খবর পান, রিয়ালের সাদা জার্সির বাইরে বর্ণান্ধ ন'বছরের এক খুদে সমর্থক আক্রান্ত ক্যানসারে। ড্রাইভার পাঠিয়ে টিম হোটেলে নিয়ে এসেছিলেন খুদে 'প্রেমিক'-কে। লিফটে করে সটান নেমে তাকে চমকে দিয়ে বলেছিলেন, "কী রে, কিছু বলবি না আমাকে?" পরে নুহুজেটের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, আশা কম। একমাত্র আমেরিকায় চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু খরচ প্রচুর। রোনাল্ডো বলে দেন, টাকা তিনি দেবেন। তাঁর মায়েরও ক্যানসার ছিল যে! শেষ একটা বছর দূর্মূল্য প্রাইভেট নার্সিং হোমে রেখে খুদে সমর্থককে বাঁচাতে চেয়েছিলেন সিআর, পুরো খরচ একা টেনে। চেয়েছিলেন ম্যাচের নব্বই মিনিটে, এগারো জনের 'ওয়াল' এক গোলায় উড়িয়ে, জীবনের ফ্রিকিকটা মারতে। পারবেন মেসি এসব?
পারেননি রোনাল্ডোও। 'টেক দ্য কিক, ক্রিশ্চিয়ানো' বললেও নেট সেদিন কথা শোনেনি। কিন্তু কোথাও গিয়ে রোনাল্ডো পেরেছেনও। ভীষণ অসম্ভবের সামনে তিনি আজ বিশ্বজুড়ে চেষ্টার সংজ্ঞা। আর তাই, এহেন রোনাল্ডোর পঁয়ত্রিশতম জন্মদিনে থাক না চর্বিতচর্বণে প্রায় ছিবড়ে হয়ে যাওয়া তাঁর ফুটবল অ্যান্টি-হিরো সত্বা নিয়ে টানাহেঁচড়া। থাক না তাঁর বন্য নৈশজীবন, অগণিত গার্লফ্রেন্ড, দাম্ভিক কথাবার্তা নিয়ে অবিরাম চর্চা।
বিদ্রোহের গালে বিপ্লবী চুম্বন আঁকতে সব সময় ভালবেসেছে পৃথিবী। আঁকুক। থাকুক সে সব। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো মানে তো শুধু বিদ্রোহের বুনো ঝোপ নয়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো মানে সেই ঝোপে ফুটে থাকা ভোরের ফুলও। যার সামনে থাকতে ইচ্ছে করে নতজানু হয়ে। অস্ফুটে যাকে বলতে ইচ্ছে করে 'খোদার কসম জান, আমি ভালবেসেছি তোমায়।' লিওনেল মেসি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। তাঁর ভয় নেই। গনগনে পৌরুষের সঙ্গে নিষ্পাপ শৈশবের এমন অনির্বচনীয় প্যাকেজ আর আসবে না। ফুটবলার আসে, ফুটবলার যায়। ফুটবল কিংবদন্তি আসে, ফুটবল কিংবদন্তি যায়। কিন্তু আজও, ফুটবলের স্বর্গীয় পৃথিবীতে পারিজাত একটাই জন্মায়!
The post গনগনে যৌনজীবন থেকে মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ৩৫-এর রোনাল্ডো এক বর্ণময় চরিত্র appeared first on Sangbad Pratidin.
| web |