Source
stringclasses
15 values
Headlines
stringlengths
10
177
Category
stringclasses
5 values
Article
stringlengths
337
11.8k
Aspect
stringclasses
4 values
Sentiment
stringclasses
3 values
যুগান্তর
ঈদ: সন্তুষ্টি ও ক্ষমাপ্রাপ্তির এক মহাআনন্দের দিন
ইসলাম ধর্ম
ঈদ খুশির দিন। শ্রমের পারিশ্রমিক প্রাপ্তির দিন। পুরস্কার লাভের দিন। সন্তুষ্টি ও ক্ষমাপ্রাপ্তির দিন। অফুরন্ত দানের দ্বার উন্মুক্ত করার দিন। বড়ত্ব-মহত্ব প্রকাশের দিন। তাই ঈদের কল্পনা করতেই প্রতিটি ঈমানদার নারী-পুরুষের শরীরে সৃষ্টি হয় শিহরণ। পুলকিত হয় তাদের তনুমন। কারণ এদিনের পুরস্কার লাভের জন্যই তারা দীর্ঘ এক মাস ক্ষুধা ও অনাহারে থেকেছেন, সিয়াম সাধনা করেছেন, তারাবির নামাজ পড়েছেন, কিয়ামুল লাইল করেছেন ও সাহরি খেয়েছেন। মহান মালিকের দরবারে রোনাজারি ও কাকুতি-মিনতি করেছেন। আর আজ তাদের জন্য মহান মালিক সন্তুষ্টি ও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করবেন। হজরত আনাস (র) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন ঈদের দিন হয় তখন আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করে বলেন, হে আমার ফেরেশতারা! সেই শ্রমিকের পারিশ্রমিক কি হবে যে তার কাজ যথাযথ সম্পাদন করেছে? তারা উত্তরে বললেন, হে আমাদের প্রতিপালক! তার বিনিময় ইহাই যে, তাকে পুরোপুরি পারিশ্রমিক দেওয়া হোক। তখন আল্লাহতায়ালা বলবেন, হে আমার ফেরেশতারা! আমার বান্দারা তাদের প্রতি আমার অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে অতঃপর (ঈদগাহের দিকে) আমার কাছে প্রার্থনা করার জন্য তাকবির ধ্বনি দিয়ে যাচ্ছে। আমার ইজ্জত ও বুজুর্গি, সম্মান ও সুউচ্চ মর্যাদার কসম, আমি অবশ্যই তাদের প্রার্থনা কবুল করব। অতঃপর আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করবেন, তোমরা ফিরে যাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম। তোমাদের পাপগুলোকে পুণ্যে রূপান্তরিত করে দিলাম। ফলে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে যাবে। (আল মুজামুল কাবির লিত তাবারানি, হাদিস নং – ৬১৭, আত তারগিব ওয়াত তারহিব -৫৪৯) তাই মুমিনের কর্তব্য হলো, পবিত্র ঈদের দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং ক্ষমাপ্রাপ্তির জন্য আল্লাহ ও তার রাসুলের বাতানো পথে ঈদ উদযাপন করা। ঈদ আনন্দ উৎসব উদযাপনের নামে বিজাতীয় কৃষ্টি-কালচার অনুসরণে পাপ এবং গর্হিত কাজে লিপ্ত না হওয়া।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
ভোরের কাগজ
ধর্মগুরুর জলাতঙ্ক রোগের বার্তায় স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা
অন্যান্য
উপজেলার গন্ডিমসারা গ্রামে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সন্তানদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না অভিভাবকরা। স্থানীয় এক ধর্মগুরু এবং কবিরাজের ছড়ানো গুজবে সন্তানদের ঘরের বাইরে যেতে দিচ্ছেন না তারা। পুলিশ প্রশাসনের লোকজন গ্রামবাসীর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও পরামর্শ দিচ্ছেন। স্থানীয়রা জানায়, গন্ডিমসারা গ্রামে প্রভাষ চন্দ্র নামে এক ব্যাক্তি ৪-৫ মাস আগে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান। তার মারা যাওয়ার পর একজন কবিরাজ ওই গ্রামের শিশু, নারী-পুরুষসহ প্রায় সবার শরীরে মৃত প্রভাষের কুকুরের বিষ প্রবেশ করেছে বলে মত দেন। তার কথায় বিশ্বাস করে গ্রামের শিবেন দেবনাথ, বাচ্চু মোল্লা, মিলন ইসলামসহ গ্রামবাসীরা কবিরাজের ঝাড়-ফুঁক, পানিপড়া, গুড়পড়াসহ হাতুড়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিভাবকরা সন্তানদেরকে নিয়ে চরম দুশ্চিতায় রয়েছেন। ধর্মগুরু আর কবিরাজের নাম-পরিচয় জানাতে তারা রাজি হননি। গন্ডিমসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণা কান্তি সরকার জানান, গুজবে অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না। এতে তার বিদ্যালয়সহ আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাধে শ্যাম আগরওয়ালা ও আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগের লোকজন গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করতে জনসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গুজব ছড়ানো সেই কবিরাজের খোঁজে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
ভোরের কাগজ
বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অন্যান্য
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। এদেশের আলেম-ওলামারা সহযোগিতা করলে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল করা সম্ভব হবে। রোববার বেলা সোয়া ২টার দিকে শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং ওলামা-মাশায়েখ ফোরামের উদ্যোগে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী ওলামা-মাশায়েখ সমাবেশ’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সমাবেশে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে না। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে রয়েছে বড় ঘরের সন্তানরা। জঙ্গিবাদে এরাই জড়িত। তাই সমাজের অন্যায়-অবিচার প্রতিরোধের জন্য আলেম-ওলামাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। উপস্থিত আলেম-ওলামাদের উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে আপনাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ইমামরা মসজিদগুলোতে শুক্রবার জুমার দিনের খুতবায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কুফল সম্পর্কে বক্তব্য দিলে জনগণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কুফল সম্পর্কে সচেতন হবে। যে যেখানে সুযোগ পান, সেখানেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী বক্তব্য দেবেন। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়ে অবস্থান নিই। ১৯৭৮, ১৯৯২, ২০১৬ সালে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এখন ২০১৭ সালেও তারা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা যদি খেতে পারি, তাহলে ১০ লাখ রোহিঙ্গাদেরও খেতে দিতে পারব। প্রধানমন্ত্রী ২ হাজার একর জমিতে রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন। শরীয়তপুরের জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুনের সভাতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন-২৭) অ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অ্যাডিশনাল আইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবা আক্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল, ভোজেশ্বর ঐতিহাসিক জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা শওকত আলী ও আংগারিয়া কওমি মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
কালের কন্ঠ
বিখ্যাত দানবীর হাতেম তাঈয়ের পরিবার যেভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন
ইসলাম ধর্ম
আরবের বিখ্যাত দাতা হাতেম তাঈ। যাঁর বদান্যতার গল্প আরব উপদ্বীপ ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র বিশ্বে। তাঁর পরিবার রাসুল (সা.)-এর যুগেই ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। দাতা হাতেমের ছেলে আদি ইবনে হাতেম (রা.) ছিলেন নবীজি (সা.)-এর সাহাবি। ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক তাঁর ইসলাম গ্রহণের বর্ণনা এভাবে তুলে ধরেন। আদি ইবনে হাতেম (রা.) বলতেন, আরবে আমার চেয়ে কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কথা বেশি অপছন্দ করত না। তবে আমি স্বভাবে সম্ভ্রান্ত এবং ধর্মে খ্রিস্টান ছিলাম। আমার কাজ ছিল চৌথ (লুণ্ঠিত সম্পদের এক-চতুর্থাংশ) উশুলের জন্য বিভিন্ন গোত্রে ঘুরে বেড়ানো। মহানবী (সা.)-এর আগমনের কথা শুনে আমার গা জ্বলত। আমি আমার গোলামকে নির্দেশ দিলাম সে যেন আমার উটের পাল থেকে কিছু মোটাতাজা উট বাছাই করে রাখে এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর বাহিনী আসছে এই কথা শুনলে আমাকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেয়। কিছুদিন পর সে আমাকে খবর দিল মুহাম্মদ (সা.)-এর বাহিনী আপনার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি তখনই সিরিয়ার পথ ধরলাম এবং আমার এক বোন সাফফানা বিনতে হাতেমকে সেখানেই রেখে গেলাম। আমি চলে যাওয়ার পরপর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘোড়সওয়ার বাহিনী গোত্রের ওপর চড়াও হলো। অন্যদের মতো হাতেমের কন্যাকে বন্দি করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে হাজির করা হলো এবং আমার পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ তাঁকে জানানো হলো। অন্যান্য বন্দির মতো হাতেমের কন্যাকেও মসজিদ-ই-নববীতে আটকে রাখা হয়। একদিন মহানবী (সা.) সে স্থান অতিক্রম করার সময় তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার বাবা মারা গেছেন, অনাথের ভরসা হারিয়ে গেছে। আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন। আল্লাহ আপনাকে অনুকম্পা করবেন। নবীজি (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার ভরসা কে? হাতেমকন্যা বলল, আদি ইবনে হাতেম। তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল থেকে পলায়নকারী? এরপর তিনি চলে গেলেন। এভাবে তিন দিন অনুগ্রহ ও মুক্তি চাওয়ার পর নবীজি (সা.) তাঁকে মুক্তি দিলেন। তবে বললেন, তুমি চলে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ো না। বরং তোমাকে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার মতো নির্ভরযোগ্য লোক পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করো। অতঃপর কুজায়া গোত্রের কিছু লোকের সঙ্গে হাতেমকন্যা সফরের প্রস্তুতি নিলে মহানবী (সা.) তাঁকে বাহন, পোশাক ও প্রয়োজনীয় পাথেয় দিলেন। বোন সিরিয়ায় পৌঁছানোর পর আদি ইবনে হাতেম (রা.)-কে বকাঝকা করে তাঁকে ফেলে রেখে আসায় এবং তিনি তাঁর ভুল স্বীকার করে নেন। বোনই তাঁকে পরামর্শ দিলেন তিনি যেন মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করেন। আদি ইবনে হাতেম (রা.) নিশ্চিত হতে চাইছিলেন, মুহাম্মদ (সা.) কোনো সাধারণ বাদশাহ, নাকি সত্যিকার নবী। কিছু বিষয় প্রত্যক্ষ করার পর তিনি নিশ্চিত হন, তিনি নবী। যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলা, বিছানায় আদি (রা.)-কে বসিয়ে নিজে নিচে বসা এবং আদি (রা.)-এর ক্ষমতার গোপন মোহ সম্পর্কে বলে দেওয়া ইত্যাদি। এরপর তিনি বিলম্ব না করেই ইসলাম গ্রহণ করেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া : ৫/১২২)
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
কালের কন্ঠ
হোয়াইট হাউসে ঈদ উৎসব, শোনা গেল কোরআন তিলাওয়াত
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হোয়াইট হাউসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার (২ মে) অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি দৃঢ় সমর্থনের কথা তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কোরআন থেকে রোজাবিষয়ক একটি আয়াত তিলাওয়াত করতে শোনা যায়। ঈদ উৎসবের স্বাগত বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রমজান মাসের রোজা ও মুসলিমদের ওপর এর প্রভাব প্রসঙ্গে কথা বলেন।এ সময় তিনি আমেরিকান সমাজে মুসলিম সম্প্রদায়ের অবদানের প্রশংসা করে জানান, মার্কিন কূটনীতি, সামরিক খাত থেকে শুরু করে সিনেমা, খাদ্য ও বস্ত্রশিল্পে মুসলিমদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আপনাদের মতো ৩৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। আপনারা ভিন্ন ভিন্ন জাতি থেকে এসেছেন। বিভিন্ন ভাষায় কথা বলেন।কিন্তু এখন আপনারা আমেরিকান হিসেবে এখানে একত্রিত হয়েছেন। আমেরিকার ইতিহাসে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান কংগ্রেসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলিম দায়িত্ব পালন করছেন। বক্তব্য শেষে ‘ঈদ মোবারক’ বলে উপস্থিত সবাইকে অভিবাদন জানান বাইডেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন ইমাম মাখদুম জিয়া।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, কংগ্রেস সদস্য আন্দ্রে কার্সন ও ইলহান ওমরসহ শতাধিক মুসলিম নেতা।এদিকে হোয়াইট হাউসে ঈদের আয়োজনে নিউ জার্সির প্রসপেক্ট পার্কের মুসলিম মেয়র মোহাম্মদ খায়রুল্লাহকে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দেয়নি গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট সার্ভিস। তবে তাকে কেন হোয়াইট হাউসে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি তা জানা যায়নি।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে যা জানাল আমিরাত
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি জানিয়েছে, আগামী ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতর পালিত হতে পারে। আজ রবিবার গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আমিরাত জ্যোতির্বিদ সোসাইটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান জানান, শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ১০ এপ্রিল পড়তে পারে। এ দিন হবে বুধবার। এ হিসেবে এ বছর মুসলিমদের ৩০টি রোজা পালন করা লাগতে পারে। উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। রমজানের মাসব্যাপী রোজা পালনের পর ঈদুল ফিতরের দিন উৎসব হিসেবে পালন করেন মুসলিমরা।
ধর্মীয় উৎসব
Neutral
যুগান্তর
ইয়াজিদ ছিল একজন মুনাফিক
ইসলাম ধর্ম
ইয়াজিদ ছিল একজন মুনাফিক ও অত্যাচারী শাসক। তার শাসনের বিরুদ্ধে লড়তে ইমাম হোসাইন (রা.) কুফায় রওনা দেন।এ সময় ইয়াজিদের বিপুলসংখ্যক সৈন্য কারবালা প্রান্তরে ইমাম হোসাইনের কাফেলাকে অবরুদ্ধ করে। এক অসম এবং অন্যায় যুদ্ধে ন্যায়ের জন্য হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার ৭২ জন সঙ্গী শহীদ হন। এত বিপুল রণসজ্জা দেখে ইমাম হোসাইন (রা.) ভীত হননি বরং অত্যাচারী ইয়াজিদের বিরুদ্ধে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেন। প্রাণ দেন শিশু, যুবক ও বৃদ্ধসহ অনেকেই। এরপরও তিনি অন্যায়-অবিচার মেনে নেননি। এ ঘটনাটি যেমন হৃদয়বিদারক তেমনি অত্যাচারী ও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেরণা জোগায় যুগে যুগে। অন্যায় আর অবিচারের সঙ্গে আপস না করার দৃঢ়তা শেখায়। ঐতিহাসিক এ আশুরার দিনে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হওয়া এবং সব ধরনের জাহেলি রসম-রেওয়াজ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য।অতএব, মর্যাদার এ মাসে আমরা যেমন রোজা ও নফল ইবাদতসহ বিভিন্ন নেক আমল করব তেমনি ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যায়, অত্যাচার আর অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নেব।ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা আমাদের জীবনে ধারণ করার সংকল্প করব। আসুন, সত্য ও ন্যায়ের পথে জীবন গড়ে তুলি।
ধর্মীয় শিক্ষা
Negative
কালের কন্ঠ
আয়ারল্যান্ডের জাতীয় স্টেডিয়ামে জুমার নামাজ
ইসলাম ধর্ম
আয়ারল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উইন্ডসর পার্কের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ নামাজে বেলফাস্ট শহরের মুসলিমরা অংশ নেন। নামাজের পর তারা পুরো স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন। স্থানীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক ও সংযোগ তৈরি করতেই অভিনব এই আয়োজন করে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ।আইরিশ ফুটবল স্টেডিয়ামের জনসংযোগ কর্মকর্তা অ্যান্ডি হারডি বলেন, ‘স্টেডিয়ামে প্রথমবার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নামাজে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির ৫০ জন অংশ নেন। মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে এই আয়োজন করা হয়। মূলত পরিকল্পনা করেই জমায়েতটি অনুষ্ঠিত হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন আরো করা হবে।’স্টেডিয়ামে জুমার নামাজ আয়োজনের বিষয়কে ইতিবাচকভাবে দেখছেন আইরিশ মুসলিম কমিউনিটি। এটিকে আন্ত সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে মনে করছেন তাঁরা। বেলফাস্টের মুসলিম কমিউনিটির প্রতিনিধি আবিওলা সানুসি বলেন, ‘দিনটি আমাদের জন্য বিশেষ দিন ছিল। আজীবন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।আয়ারল্যান্ডে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সব কমিউনিটির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’সানুসি আরো বলেন, ‘বেলফাস্ট শহরে ৪-৫টি মসজিদ রয়েছে। আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক বিদ্যমান। তা ছাড়া ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাও আমাদের এক করে রেখেছে।আমাদের অনেকে স্টেডিয়ামে যেতে দ্বিধাবোধ করতেন। কিন্তু সেখানে সবার প্রতি আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা হয়।’
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
নবীজির স্বপ্নযোগে পাওয়া দোয়া
ইসলাম ধর্ম
মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বলেন, একদিন সকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করতে আসতে দেরি করেন। এমনকি আমরা সূর্য উদিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলাম। তিনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলে নামাজের জন্য ইকামত দেওয়া হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) সংক্ষেপে নামাজ আদায় করলেন। তিনি সালাম ফেরানোর পর উচ্চৈঃস্বরে আমাদের ডেকে বলেন, তোমরা যেভাবে সারিবদ্ধ অবস্থায় আছ সেভাবেই থাকো। তারপর তিনি আমাদের দিকে ফিরে বসলেন, অতঃপর বললেন, সকালে তোমাদের কাছে আসতে আমাকে কিসে বাধাগ্রস্ত করেছে তা এখনই তোমাদের বলছি। আমি রাতে উঠে অজু করলাম এবং সামর্থ্যমতো নামাজ পড়লাম। নামাজের মধ্যে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। অতঃপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম, এমন সময় আমি আমার বরকতময় প্রভুকে খুব সুন্দর অবস্থায় (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললাম, প্রভু! আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, ঊর্ধ্বজগতের অধিবাসীরা (শীর্ষস্থানীয় ফেরেশতারা) কী ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললাম, প্রভু! আমি জানি না। আল্লাহ তাআলা এ কথা তিনবার বললেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তাঁকে দেখলাম যে তিনি তাঁর হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। আমি আমার বক্ষস্থলে তাঁর হাতের আঙুলের শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে প্রতিটি জিনিস আমার নিকট আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উঠল এবং আমি তা জানতে পারলাম। আল্লাহ তাআলা বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললাম, প্রভু! আমি আপনার কাছে উপস্থিত। তিনি বললেন, ঊর্ধ্বজগতের বাসিন্দারা কী ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললাম, কাফফারাত (যেসব কাজে পাপ মোচন হয়) বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে। তিনি বলেন, সেগুলো কী? আমি বললাম, হেঁটে নামাজের জামাতগুলোতে উপস্থিত হওয়া, নামাজের পর মসজিদে বসে থাকা এবং কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে অজু করা। তিনি বললেন, তারপর কী ব্যাপারে (তারা বিতর্ক করছে)? আমি বললাম, খাদ্যপ্রার্থীকে আহার্য দান, নম্রতার সঙ্গে কথা বলা এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে সেই সময় নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে। আল্লাহ বললেন, তুমি কিছু চাও। আমি বললাম, উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা ফি’লাল খাইরাতি, ওয়া তারকাল মুনকারাতি, ওয়া হুব্বাল মাসাকিনি, ওয়া আন-তাগফিরালি, ওয়া তারহামানি, ওয়া ইজা আরাদতা ফিতনাতা কাউমিন ফাতাওয়াফফানি গাইরা মাফতুনিন। আসয়ালুকা হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মান ইয়ুহিব্বুকা ওয়া হুব্বা আমালিন ইয়ুকাররিবু ইলা হুব্বিকা। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভালো ও কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ কাজগুলো বর্জনের, দরিদ্রজনদের ভালোবাসার তাওফিক চাই, তুমি আমায় ক্ষমা কোরো ও দয়া কোরো। তুমি যখন কোনো গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা কোরো, তখন তুমি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে তোমার কাছে তুলে নিও। আমি প্রার্থনা করি তোমার ভালোবাসা, যে তোমায় ভালোবাসে তার ভালোবাসা এবং এমন কাজের ভালোবাসা, যা তোমার ভালোবাসার নিকটবর্তী করে দেয়।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, স্বপ্নটি অবশ্যই সত্য। অতএব তা পড়, তারপর তা শিখে নাও। ইমাম তিরমিজি (রহ.) হাদিসটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত বলে মন্তব্য করেছেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩২৩৫)
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
কালের কন্ঠ
ভারতের মুসলিম সংস্থার নতুন সভাপতি
ইসলাম ধর্ম
ভারতের প্রাচীনতম ইসলামী সংস্থা ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’-এর নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানি। বোর্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই দিনব্যাপী (৩-৪ জুন) বৈঠকে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। মধ্যপ্রদেশের আম্বেদকর নগরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন।এর আগে গত ১৩ এপ্রিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সভাপতি মাওলানা রাবে হাসান নদভি ৯৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে বোর্ডের সভাপতির পদটি শূন্য হয়। এ ছাড়া বৈঠকে মাওলানা ফজলুর রহিম মুজাদ্দিদিকে সাধারণ সম্পাদক, সাইয়েদ শাহ খসরু হুসাইনি গুলবারগা ও সাইয়েদ সাদাতুল্লাহ হুসাইনিকে সহ-সভাপতি পদে এবং মাওলানা সাইয়েদ বিলাল হাসানি নদভি, মাওলানা আহমাদ ওয়ালি ফয়সাল রাহমানি ও মাওলানা ইয়াসিন আলী উসমানি সদস্য মনোনীত হন। নতুন দুই সহ-সভাপতিকে শূন্য পদের বিপরীতেই নির্বাচিত করা হয়েছে।বৈঠকের দ্বিতীয় নতুন সভাপতির সভাপতিত্বে ‘দ্য ইউনিফর্ম সিভিল কোড’-সহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়। মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ড. এম কিউ আর ইলিয়াসকে বোর্ডের মুখপাত্র হিসেবে এবং জেবি কামাল ফারুকিকে সহকারী মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেন।উল্লেখ্য, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানি ৫ নভেম্বর ১৯৫৬ বিহারের দারভাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জামিয়া রাহমানি মুঙ্গের এবং দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে পড়াশোনা করেছেন।পেশায় তিনি একজন লেখক ও ধর্মতাত্ত্বিক। ইসলামী আইন গবেষণার ওপর তাঁর একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
কালের কন্ঠ
মুসলিম ইতিহাসের প্রথম নারী শাসক
ইসলাম ধর্ম
উম্মে খলিল ইসমাতুদ্দিন সাজারাতুদ্দুর ছিলেন মুসলিম ইতিহাসের প্রথম নারী শাসক। যিনি একজন দাসী থেকে আইয়ুবীয় রাজবংশের সম্রাজ্ঞীতে পরিণত হন। তাঁর শাসনামল সংক্ষিপ্ত হলেও তাঁর বীরত্ব, সাহসিকতা, প্রশাসনিক দক্ষতা ও জনকল্যাণমূলক কাজ তাঁকে ইতিহাসের পাতায় অম্লান করে রেখেছে। সুলতানা সাজারাতুদ্দুর ছিলেন আইয়ুবীয় শাসক মালিক সালিহ আইয়ুবের স্ত্রী এবং শাহজাদা খলিলের মা।সপ্তম ক্রুসেড যুদ্ধে স্বামী মালিক সালিহ মারা গেলে তিনি দেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ২ মে ১২৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি মিসরের সম্রাজ্ঞী মনোনীত হন।সুলতানা সাজারাতুদ্দুর ছিলেন তুর্কি বা আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সুন্দরী, ধার্মিক ও বুদ্ধিমান নারী।মালিক সালিহ সুলতান হওয়ার আগেই তাঁকে একজন ক্রীতদাসী হিসেবে ক্রয় করেছিলেন। ১২৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি সুলতান হন এবং সাজারাতুদ্দুরের গর্ভে শাহজাদা মালিক মানসুর খলিলের জন্ম হয়। এর কিছুদিন পর সুলতান তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। এপ্রিল ১২৪৯ খ্রিস্টাব্দে মালিক সালিহ আইয়ুব সিরিয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।ফলে তিনি মিসরে ফিরে আসেন এবং তিনি দামিয়েত্তা শহরের নিকটবর্তী আশমুম তানাহতে অবস্থান নেন। কেননা তিনি জানতে পেরেছিলেন ফ্রান্সের রাজা নবম লুইস সাইপ্রাসে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছেন এবং তিনি মিসরে আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন। জুনে ক্রুসেডার বাহিনী দামিয়েত্তা শহরে অবতরণ করে। অন্যদিকে মালিক সালিহ সুরক্ষিত আল-মানসুরাহ শহরে অবস্থান করে ক্রুসেডার বাহিনীর মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেন। ২২ নভেম্বর ১২৪৯ খ্রিস্টাব্দে এখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।সাজারাতুদ্দুর সভাসদদের সুলতানের মৃত্যুর সংবাদ গোপন রাখার নির্দেশ দেন। কেননা তিনি ভেবেছিলেন, শত্রু আক্রান্ত দেশে সুলতানের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। সুলতানের লাশ অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে রুদাহ দ্বীপে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সুলতানের ছেলে আল মুয়াজ্জাম তুরানশাহকে ডেকে পাঠান এবং তাঁকে পরবর্তী সুলতান হিসেবে মনোনীত করেন। নিহত সুলতানের হাতের লেখা নকল করে রাষ্ট্রীয় ফরমান জারি রাখেন। কিন্তু সুলতানের মৃত্যু খবর ক্রুসেডার বাহিনীর কাছে পৌঁছে যায়। ফলে তারা আশমুম খাল পার হয়ে মিসরের মূল ভূখণ্ডে আক্রমণ করে। সাজারাতুদ্দুর মানসুরায়ই অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন এবং টোপ ফেলে আগ্রাসী বাহিনীকে শহরের ভেতরে নিয়ে আসেন। অতঃপর মিসরীয় বাহিনী ও শহরবাসী একযোগে আক্রমণ করে তাদের পরাজিত করে। যুদ্ধে নবম লুইস আটক হন। তুরানশাহ মিসরে এলে সুলতানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়।ক্ষমতায় বসে তুরানশাহ অনুভব করেন সাজারাতুদ্দুরের ব্যক্তিত্ব ও প্রভাব তাঁর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা লাভের পথে বাধা। এ ছাড়া প্রভাবশালী মামলুক ও প্রাসাদের রক্ষী বাহিনীর ওপর তাঁর কার্যকর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে তিনি প্রশাসনে নিজের পছন্দের লোক বসাতে শুরু করেন এবং জেরুজালেম সফররত সাজারাতুদ্দুরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিনি যেন তাঁর পিতার সম্পদ ও অলংকারগুলো তাঁকে ফেরত দেন। তুরানশাহের এমন অকৃতজ্ঞ আচরণে সাজারাতুদ্দুর কষ্ট পান। তিনি তাঁর অনুগত মামলুক ও রক্ষী বাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারাও ক্ষুব্ধ হয়। একদিন তুরানশাহ মদ্যপ অবস্থায় দাসীদের অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করছিলেন। তখন বাইবার্স ও মামলুক সেনাদের হাতে নিহত হন।তুরানশাহ নিহত হওয়ার পর সভাসদ, প্রশাসক ও মামলুকরা মিলে সাজারাতুদ্দুরকে সম্রাজ্ঞী এবং ইজ্জুদ্দিন আইবেককে সেনাপ্রধান মনোনীত করেন। তাঁর রাজকীয় নাম নির্ধারণ করা হয় ‘মালিকা ইসমাতুদ্দিন উম্মে খলিল সাজারাতুদ্দুর’। তিনি মুসলিম ইতিহাসের প্রথম নারী, যাঁর নামে জুমার দিন খুতবা পাঠ করা হতো এবং যাঁর মুদ্রা জারি করা হয়েছিল। সাজারাতুদ্দুর ক্ষমতায় আরোহণের পর রাজা নবম লুইয়ের সঙ্গে সমঝোতা করেন। ফলে লুই ও তাঁর ১২ হাজার যুদ্ধবন্দি মুক্তিপণ ও দামিয়েত্তাসহ দখলকৃত অঞ্চল অর্পণের বিনিময়ে মুক্তি লাভ করে।রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাজারাতুদ্দুর সেনাপতি ইজ্জুদ্দিন আইবেক বিয়ে করেন। তাঁরা যৌথভাবে সাত বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। কিন্তু ইজ্জুদ্দিন একসময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেন। এতে আবারও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং ইজ্জুদ্দিন নিহত হন। এর জেরে ২৮ এপ্রিল ১২৫৭ সাজারাতুদ্দুরও নিহত হন। তাঁকে তুলুন মসজিদের কাছে দাফন করা হয়। সাজারাতুদ্দুর তাঁর সংক্ষিপ্ত শাসনামলে জনকল্যাণমূলক বহু কাজ করেছেন। অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, পানির কূপ ও আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেন। মাদরাসা-মসজিদের সঙ্গে কবরস্থান নির্মাণ করা ছিল তাঁর উদ্ভাবন। এ ছাড়া তিনি ইসলামী স্থাপত্যে নতুন ধারার সূচনা করেন, যা ‘বাহরি মামলুক’ রীতি নামে পরিচিত।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
প্রথম আলো
কুয়াকাটায় সংস্কার শেষে সীমা বৌদ্ধ মন্দিরের উদ্বোধন
বৌদ্ধ ধর্ম
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছে মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির সংস্কার শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ড. ফার্দিনান্দ ফন ভেইয়ে গতকাল বুধবার এর উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডের দেশ পরিচালক টোবিয়াস বেকার, জিআইজেডের কোস্টাল লাইভলিহুডস অ্যাডাপটেশন প্রজেক্টের প্রধান উপদেষ্টা পূর্ণিমা ডোরিস চট্টোপাধ্যায়-দত্ত, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার, রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা মং তেনথান প্রমুখ। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার তাণ্ডবে মন্দিরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১২ সালে জার্মান দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল মন্দিরটি পরিদর্শনকালে এর সংস্কার এবং উন্নয়নের জন্য সহায়তা করার আশ্বাস দেয়।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
রোজা মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ ও আলোকিত করে
ইসলাম ধর্ম
রোজা মানুষের নফস বা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ ও আলোকিত মানুষ করে দেয়। সিয়ামের দ্বারা রোজাদার নিজের ব্যক্তিসত্তা বা নফসকে বিধৌত করে। ‘নফস’ শব্দের অর্থ এক কথায় প্রকাশ করা যায় না। প্রধানত মানুষের নিজস্বতা, ব্যক্তির সত্তা, আমিত্ব, প্রবৃত্তি অর্থেও নফস শব্দ ব্যবহৃত হয়। আত্মশুদ্ধির রমজান মাসে সিয়াম-সাধনার মাধ্যমে ‘তাজিকায়ায়ে নফস’ সাধিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে, যে পবিত্রতা অর্জন করে এবং তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত আদায় করে।’ (সূরা আল-আলা, আয়াত: ১৪-১৫)। ইলমে তাসাওউফে নফসকে অবস্থাভেদে ‘নফসে আম্মারা’, ‘নফসে লাওওয়ামা’, ‘নফসে মুতমাইন্না’, ‘নফসে মুলহিমা’ মোটামুটি এই চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ১. ‘নফসে আম্মারা’ হচ্ছে প্ররোচক ও প্রলুব্ধকারী প্রবৃত্তি, এক কথায় বলা যায়- কুপ্রবৃত্তি। এই নফস ব্যক্তিকে এমনভাবে বশীভূত করে যে, ব্যক্তির নিজের ওপর কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ থাকে না, তার প্রবৃত্তি যা আদেশ করে, সে তাই সম্পাদন করে, এর ওপর শয়তানের প্রবল প্রভাব বিরাজমান থাকে। ফলে এই নফস ব্যক্তিসত্তাকে সব ধরনের অন্যায়, অপকর্ম ও মন্দ পথের দিকে ধাবিত করে। সোজা কথায়- নফসে আম্মারায় আবেষ্টিত ব্যক্তিসত্তার মধ্যে এমন একটা মনোভাব থাকে যে, পাপ আবার কী? যা ইচ্ছে তাই করতে থাকে। ২. ‘নফসে লাওওয়ামা’ হচ্ছে সেই নফস, যার গুনাহের দিকে আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা থাকলেও ভুল-ত্রুটি বা পাপকাজ করার পর আতঙ্ক বা ভয় জাগ্রত হয় এবং মন্দকে ভর্ৎসনা করে। গুনাহ করে আত্মগ্লানির কারণে সে ব্যক্তি তওবা করে; কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না; ফলে আবার গুনাহ করে, আবার তওবা করে। এই নফস কিঞ্চিৎ পবিত্র। এর ভালো-মন্দ বোধশক্তি থাকে। ৩. ‘নফসে মুতমাইন্না’ হচ্ছে সেই নফস, যার মধ্যে পবিত্রতার সুরভি আছে এবং নুরানি তেজ আছে। এটাই হচ্ছে আলোকিত নফস। এই নফস সবসময় নেককাজ ও কল্যাণের দিকে মানুষকে ধাবিত করে। মন্দ ও অকল্যাণ এই নফসের কাছে ঘেঁষতে পারে না। এটাই হচ্ছে প্রশান্ত এবং জাগতিক চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে এক অনন্য শান্ত প্রবৃত্তি। ৪. নফসে মুতমাইন্নায় উন্নীত নফস যখন পুণ্যে প্রেরণাদায়ক ও উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হয় তখন আল্লাহ তায়ালার গোপন ভেদ ও আদেশ তার ওপর প্রতিফলিত হয়, সে ইলহাম বা প্রত্যাদেশ লাভে ধন্য হয়। এই নফসকেই বলা হয় ‘নফসে মুলহিমা’। হাদিস শরিফে নফসের সঙ্গে জিহাদকারীর পরিচয় প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে, প্রকৃত মুজাহিদ ওই ব্যক্তি, যে নিজের নফসের সঙ্গে জিহাদ করে। নফসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও সাধনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ বলার আরও একটি তাৎপর্য হলো- কাফের, মুশরিক, ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের পরিচালিত যুদ্ধ কোনো বিশেষ সময়েই সংঘটিত হয়। যখন ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর শত্রুদের আঘাত আসে। যুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হওয়ার পর সে জিহাদ বন্ধ থাকে। কিন্তু নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ ও সংগ্রাম হরদম চালিয়ে যেতে হয়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই জিহাদের বিরাম নেই, শেষ নেই। এই হিসেবেও নফসের সঙ্গে জিহাদকে জিহাদে আকবর বা সর্বোত্তম জিহাদ বলার সার্থকতা উপলব্ধি করা যায়।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
দৈনিক খবরপত্র
একজন মানবতাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর জন্য পরম শ্রদ্ধা
বৌদ্ধ ধর্ম
২০২৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি। একটি দিন। একটি সময়ের সন্ধিক্ষণ। এ দিন ৭২ পেরিয়ে ৭৩Ñএ পা রাখলেন আদিবাসীদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো। ০১ ফেব্রুয়ারি আমার কাছে কেবলই একটি তারিখ নয় বরং একটি দীপ্তিদায়ক দিন কারণ এই দিন এমন এক গুণী মানুষের জন্মদিন যাকে খুব কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। একাধারে তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় পরমকল্যাণমিত্র, মানবতাবাদী, প্রজ্ঞাবান, মহানকর্মবীর, পরোপকারী। আমার জানা মতে, এই মহান বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নিরহংকারী, ত্যাগী ও দয়ালু। পরম পূজনীয় শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো বহু প্রতিষ্ঠানের রূপকার। তিনি একজন সমাজ সেবক এবং চাকমা জাতির বা আদিবাসীদের দিকপাল। সৌভাগ্যবশতঃ দীর্ঘদিন যাবত এমন গুণী মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে নিজেকে খবই ধন্য মনে করি। শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো চট্টগ্রামের ইতিহাসে আদিবাসীদের জন্য একজন মহাপুরুষ যিনি যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শিক্ষার আলো বিলিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদে মাঝে। এক্ষেত্রে প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো আদিবাসী সমাজের জন্য শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত, আলোকবর্তিকা এবং একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র যাকে বলা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জন্য ইতিহাসের ভেতর আরও একটি ইতিহাস। তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে পারলে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে দক্ষ করতে পারলে এবং তরুণদের জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে পারলে একটি জাতি উন্নতির র্শীষে অবস্থান করে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের রক্ষা, কল্যাণ, উন্নতি এবং আদিবাসী জাতির ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্য আজ তরুণ প্রজন্মকে শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ ভান্তের দর্শন, চিন্তা-চেতনা, তাঁর নিঃস্বার্থ অবদান মনেপ্রাণে ধারণ করা অনস্বীকার্য। আমি মনে করি, এই মহান মানুষ আমাদের মাঝে না এলে আমরা আজও অনেক পিছিয়ে থাকতাম বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা। আমরা পেতাম না শ্রদ্ধেয় ভান্তের হাতে গড়া অনেক প্রতিষ্ঠান। সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা শোভিত পৃথিবীর এক অপূর্ব দেশ বাংলাদেশ। এ দেশে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত তিন পার্বত্য জেলা-রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। শ্রীমৎ প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর জন্ম ১৯৫২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, খাগড়াছড়ি জেলাধীন দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায়। আলোকিত মানুষ ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর পারিবারিক নাম বলেন্দ্র দেব চাকমা। তাঁর পিতা প্রয়াত নরেন্দ্র লাল চাকমা ও মাতা প্রয়াত ইন্দ্রপতি চাকমা। ভেন. ১৯৬৮ সালে দীঘিনালা উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক ও ১৯৭২ সালে হাটহাজারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৭৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পালি ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর সদ্ধর্মাদিত্য ভদন্ত জ্ঞানশ্রী মহাথের মহোদয়ের উপস্থিতিতে তারই উপাধ্যায়ত্বে ভিক্ষু হিসেবে দীক্ষিত হন। তার দু’বছর আগে ১৯৬৬ সালে মাইনী উপত্যকায় ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ পীঠস্থান বোয়ালখালী দশবল বৌদ্ধ রাজবিহারে এসে শ্রদ্ধেয় জ্ঞানশ্রী মহাথেরোর কাছে শ্রামণ্য ধর্মে দীক্ষিত হন। দীক্ষাগুরু জ্ঞানশ্রী মহাথেরোর পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে মানবতার সেবায় আত্মনিবেদিত করেন। সেই থেকে মহান ব্রত নিয়ে আজও কাজ করে যাচ্ছেন পাবর্ত্য অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি বিশেষত অনাথ, অসহায়, হত-দরিদ্র, ছিন্নমূল ও দুঃস্থ শিশুদের কল্যাণ ও শিক্ষা বিস্তারে। প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর পরমারাধ্য গুরু জ্ঞানশ্রী মহাথের ১৯৭৪ সালে বোয়ালখালী ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হন। এর পর থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেছিলেন যা কালের স্বাক্ষী হিসেবে এখনও তাকিয়ে আছে। ১৯৭৪ সালে মোনঘর প্রতিষ্ঠা করা হলে তিনি এর সাধারণ সম্পদক হন। মোনঘর পরিচালনা পর্ষদে প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে দীর্ঘদিন ধরে মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। শ্রদ্ধেয় ভান্তে ২০০৪ সালে রাজধানী মিরপুরে বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে ঢাকার বুকে দাঁড়িয়ে থেকে সমগ্র দেশের আদিবাসীদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ২০২৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি, এ মহান ব্যক্তির শুভ জন্মদিন। এদিন ভান্তে ৭২ পেরিয়ে ৭৩ বছর বয়সে পর্দাপণ করেছেন। যদিও পরম পূজনীয় শ্রদ্ধেয় ভান্তে এইসব বিষয়ে এতো আন্তরিক নন তারপরও সবার অনুরোধে খুবই সাদামাটাভাবে শ্রদ্ধেয় ভান্তের ৭৩তম শুভ জন্মদিন পালন করা হলো। ক্ষুদ্র পরিসরে ভক্ত বা শিষ্যরা মিলে অমরা ক’জন অনুষ্ঠানে সামিল হলাম। নিজের হাজারো ত্যাগ তিতিক্ষাকে স্বীকার করে ধর্মীয় ও অধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত হয়ে ’প্রকৃত পক্ষে মানব’ হওয়ার শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো। আজ এই মহান সময়ে আপনার আজীবনকার মেধা, কর্মশক্তি আমাদের সবার কল্যাণের জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন তাই আমরা আপনার কাছে চিরঋণী। পাশাপাশি আপনার সুদীর্ঘ মানবজীবন চর্চিত সকল কুশল ও পূণ্যময় কর্মপ্রবাহ জন্ম জন্মান্তর আমাদের চলার পথে পাথেয় হোক; আমরা যেন আপনার মানবতার শক্তিকে ফুলে ফসলে সুশোভিত করতে পারি এই আর্শীবচন একান্তভাবে কামনা করছি। পরিশেষে আপনি আমৃত্যু নিরোগ, সুস্থ জীবন লাভ করে ধন্য হোন তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের অনন্ত কর্মশক্তির কাছে কায়মন বাক্যে এই প্রার্থনা করছি।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
চির অভিশপ্ত এক জাতি
ইসলাম ধর্ম
আল্লাহ ইহুদিদের ওপর স্থায়ীভাবে লাঞ্ছনা, অপমান ও নির্যাতন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। যুগে যুগে ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে তাদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন। মিসরের ফেরআউন শাইশাক জেরুসালেম দখল করে এবং ইহুদিদের তাড়িয়ে দেয়। তারপর ব্যাবিলনের রাজা বখতে নসর জেরুসালেম দখল করে ইহুদিদের বন্দি করে নিয়ে আসে এবং তাদের দাস বানিয়ে রাখে। পরে পারস্য সম্রাট ইহুদি দাসদের সেখানে ফেরত পাঠান সত্য, কিন্তু তখন পারস্য সম্রাটেরই অধীন ছিল। ৬৬ খ্রি. রোমান সম্রাট তাইতুস জেরুসালেম দখল করে এবং ইহুদিদের ব্যাপকহারে হত্যা করে। উপরন্তু ৭০ খ্রি. রোমান বাহিনী হাজার হাজার ইহুদিকে বন্দি করে নিয়ে যায় এবং তাদের দাস বানায়। এডলফ হিটলার জার্মানির নাৎসি নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন। হিটলারের ইহুদিদের প্রতি ঘৃণার কারণ হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্য ইহুদিদের দায়ী করার কথা বলা হয়। যদিও এটা একটা ধারণা মাত্র। হিটলারের ইহুদি হত্যার আসল কারণ হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মুহূর্তে ইহুদি নেতারা বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইহুদিরা ওই সময় পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করে। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদের দেশত্যাগ প্রয়োজন। কিন্তু কোনো ইহুদি ইসরাইল রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিল না। তখন ইহুদি নেতারা হিটলারের সাথে এক গোপন ইহুদি হত্যা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। যাতে করে বিশ্বব্যাপী ইহুদিদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা যায় এবং তারা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৪ লাখ ৫০ হাজার ইহুদির মধ্যে মাত্র ৭ হাজারকে ইসরাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং অবশিষ্টদের হত্যার নীলনকশা করা হয়। হিটলার ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে জড়ো করে গ্যাস বোমা মেরে হত্যা করে। এরপরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইহুদিরা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি নেতারা বিশ্বের সর্বত্র ইহুদি হত্যার গোপন পরিকল্পনা হাতে নেয়। যাতে করে তাদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। ইহুদিরা ইসরাইলের হাইফা বন্দরে এসেও জাহাজ থেকে নামতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি বোঝাই জাহাজটিকে তাদের নেতা ডেভিড গুরিওন বোমা মেরে সাগরে ডুবিয়ে দেয়। এভাবে আল্লাহর ঘোষণা সত্যে পরিণত হয়। (ইসলাম ও অন্যান্য মতবাদ : পৃ. ৮৪)। এতদসম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আরো স্মরণ করো, যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, তিনি কেয়ামত পর্যন্ত সবসময় বনি ইসরাইলের ওপর এমন লোককে প্রভাবশালী করবেন যারা তাদের নিকৃষ্টতম শাস্তি দান ও নির্যাতন করতে থাকবে। (সূরা আরাফ : ১৬৭)। ইরশাদ হয়েছে, তাদের ওপর অপমান ও অভাব লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গজবের শিকার হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরি করেছে এবং নবীদের হত্যা করেছে, এটা ছিল তাদের নাফরমানি এবং তারা ছিল সীমালঙ্ঘকারী। (সূরা বাকারা : ৬১)। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে আরো ইরশাদ করেন, যারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরি করে, নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারীদেরও হত্যা করে, তাদের কষ্টদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। তারাই ওই সকল যাদের আমল দুনিয়া এবং আখেরাতে ব্যর্থ বেকার এবং যাদের কোনো সাহায্যকারী নেই। (সূরা আল ইমরান : ২১-২২)। আল্লাহ ইহুদিদের ব্যাপারে আরো বলেন, তারা মন্দ কাজ থেকে বিরত হয় না, যা তারা ইতঃপূর্বে করেছে এবং তারা যা করে তা কতই না খারাপ। (সূরা মায়েদা : ৭৯)। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজবপ্রাপ্ত জাতি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাদের ধ্বংস অনিবার্য। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক হাদিসের আলোকে বলা যায়, বর্বর নৃশংস অত্যাচারী ইহুদিরা অবশ্যই ধ্বংস হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না যতক্ষণ না মুসলিমদের সঙ্গে ইহুদিদের যুদ্ধ হবে। মুসলিমরা ইহুদিদের হত্যা করতে থাকবে। তখন তারা (ইহুদিরা) পাথর ও গাছের পেছনে লুকিয়ে আশ্রয় নেবে। তখন পাথর ও গাছ বলবে, হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা, এই তো ইহুদি আমার পেছনে লুকিয়ে আছে। এসো, তাকে হত্যা করো। (সহিহ মুসলিম)। তবে নির্দিষ্ট করে জানা নেই, সে চূড়ান্ত যুদ্ধটি কতদূরে। আর এর আগে ইহুদিদের হাতে ঝরবে কত মুসলমানের প্রাণ? আল্লাহ আপনি পরীক্ষার সময়টি দ্রুত সমাপ্ত করে সহসাই মুক্তি ও বিজয়ের চূড়ান্ত দিনটির সূর্য উদিত করুন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
দৈনিক ইনকিলাব
মুম্বাইয়ে বোরখা পরে কলেজে ঢুকতে বাধা
অন্যান্য
ভারতে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের কলেজে হিজাব বিতর্কের পর এবার ছাত্রীদের বোরখা পরা নিয়ে সহিংষতা মহারাষ্ট্রের একটি কলেজে। বিজেপি-শিন্ডেসেনা জোট শাসিত ওই রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ের একটি কলেজে বুধবার বোরখা পরা ছাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মুম্বাইয়ের চেম্বুরের ওই কলেজে নির্দিষ্ট পোশাকবিধি রয়েছে বলে কয়েকজন মুসলিম ছাত্রীকে বোরখা পরিহিত অবস্থায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ঘটনার জেরে ওই ছাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনের অভিভাবক এবং স্থানীয়দের একাংশ ওই কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ঘিরে বিতর্ক, ওই ‘এনজি আচার্য অ্যান্ড ডিকে মরাঠে কলেজ’ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, ‘কলেজের পোশাক পরার সময় কিছু শর্ত এবং নিয়ম মেনে চলতেই হবে।’ এর আগে, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্ণাটকের উদুপির একটি কলেজে কয়েকজন হিজাব পরিহিত মুসলিম ছাত্রীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেয়ার হয়। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট বলেছিলেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। ওই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য-জুড়ে। এরপর, একই বছরের ২৬ জানুয়ারি কর্ণাটক সরকারের শিক্ষা দফতর এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগে পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েকজন ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন। তারা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনোভাবেই তা বাতিল করা যাবে না। কিন্তু গত বছরের মার্চ মাসে কর্ণাটক হাইকোর্ট মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে জানায়, হিজাব পরা ইসলামে ‘বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন’-এর মধ্যে পড়ে না। এরপর আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু গত অক্টোবরে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ‘খ-িত রায়’ দেয়ায় মামলাটি এখন শীর্ষ আদালতেরই উচতর বেঞ্চে রয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ স্থগিতাদেশ না দেয়ায় কর্ণাটক সরকারের ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশ’ এখনো বহাল রয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
দৈনিক ইনকিলাব
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা আজ রোববার (২৫ জুন) শুরু হচ্ছে। এদিন ভোরে মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শয়তানকে উদ্দেশ্য করে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে ১২ জিলহজ শেষ হবে হজ। এদিকে শনিবার (২৪ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে ছেড়ে গেছে হজের শেষ ফ্লাইট। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, হজযাত্রী নিয়ে ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের শেষ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর গত ২১ মে বিমানের প্রথম ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের হজযাত্রা। হজযাত্রীদের বহন করে বিমান বাংলাদেশ, সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিমান বহন করে ৬১ হাজার ১৫১ জন হজযাত্রী। বাকিদের বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস। গত বৃহস্পতিবার বিমানের হজ ফ্লাইট শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ৩ জুলাই। উল্লেখ্য, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার বিষয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়। সে লক্ষ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় চূড়ান্ত নিবন্ধন। এবার হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ৯ দফা সময় বাড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত কোটা পূরণ করা যায়নি।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
প্রথম আলো
ন্যায্য মজুরি শ্রমিকের অধিকার
ইসলাম ধর্ম
শ্রমিককে কাজ সম্পাদন করামাত্রই তাঁর প্রাপ্য পারিশ্রমিক প্রদান করা মালিকের প্রধান দায়িত্ব। শ্রমিক-মজুরেরা নিজের ও পরিবারের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের জন্য কঠিন পরিশ্রম করে থাকেন। প্রাপ্য মজুরিই তাঁদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু যুগ যুগ ধরে শ্রমিকেরা ন্যায্য প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাঁদের কাজের সময় কমানো ও ন্যায্য মজুরি প্রাপ্তির অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করতে গিয়েই তাঁরা নিগৃহীত হন। শুরু হয় শক্তির দাপটে তাঁদের ওপর মালিকপক্ষের জুলুম-নির্যাতন। অথচ শ্রমিকেরাই হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে মালিকের জন্য খাদ্য-বস্ত্র উৎপাদন করেন, বাসস্থান নির্মাণ করেন। এমতাবস্থায় শ্রমিকেরা যদি ন্যায্য মজুরি না পান বা প্রয়োজন অপেক্ষা কম পান বা নির্দিষ্ট সময়মতো প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন, তবে তাঁদের দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। এতে হতাশায় ভারাক্রান্ত হয়ে কাজের প্রতি শ্রমিকদের বীতশ্রদ্ধা ও বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নবী করিম (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও ঋণ পরিশোধ নিয়ে ধনী ব্যক্তিদের টালবাহানা করা জুলুম।’ (বুখারি ও মুসলিম) শ্রমের বিনিময়ে মালিকের বিনিয়োগকৃত সম্পদ শ্রমিকের কাছে আমানত। শ্রমিকদের ওপর এ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে তিনি যেন তাঁর চুক্তিকৃত মজুরির বিনিময়ে উত্তম সেবা প্রদান করেন এবং মালিকের প্রদত্ত জিম্মাদারি অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সঙ্গে সম্পন্ন করেন ও তাঁর পরিপূর্ণ শক্তি-সামর্থ্য নির্দিষ্ট কাজে ব্যয় করেন। শ্রমিকের তত্ত্বাবধানে যেসব প্রতিষ্ঠান বা কারখানার মূল্যবান আসবাব দেওয়া হয়, তা আমানতস্বরূপ ব্যবহার করবে এবং সেগুলো তুচ্ছ মনে করে চুরি, অবৈধ ব্যবহার, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা অন্য কোনো ধ্বংসাত্মক পন্থায় জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করা যাবে না। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছেন, ‘নিজের কিংবা অন্যের কোনো ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে না।’ (দারাকুতনি) শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে মালিকের যেসব দামি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল তাঁদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, সেগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা ও জেনেশুনে তা নষ্ট বা ধ্বংস না করা তাঁদের অবশ্যকর্তব্য। যে কাজ যেভাবে করা উচিত, সে কাজ সেভাবে আঞ্জাম দেওয়া শ্রমিকের দায়িত্ব, অন্যথায় চরম বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা করা হবে। এ ব্যাপারে সদাসচেতন থাকার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো লোকের অধীন শ্রমিক স্বীয় মালিকের সম্পদের রক্ষক এবং সে তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম) সম্পদ ব্যবস্থাপনায় মালিকপক্ষ বা পুঁজিপতি তাঁর মূলধন খাটানোর কারণে এবং শ্রমিক তাঁর শ্রমের বিনিময়ে লাভের হকদার হয়ে থাকেন। মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক বিরাজমান থাকলে এবং শ্রমিক তাঁর ন্যায্য পাওনা পেলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশ ও জাতি যেমন উপকৃত হয় তেমনি শান্তি স্থাপিত হয় সর্বত্র। শ্রমিকেরা উৎপাদনে শরিক থাকলেও মুনাফায় তাদের অংশীদার করা হয় না। কিন্তু ইসলািম ব্যবস্থায় লাভের মধ্যেও তাঁদের অংশীদার করার বিধান রয়েছে। এ জন্য নবী করিম (সা.) শ্রমিককে মজুরি দান করার পরও তাঁকে লাভের অংশ দেওয়ার জন্য উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘শ্রমিকদের তাঁদের শ্রমার্জিত সম্পদের লভ্যাংশ দাও, কেননা আল্লাহর শ্রমিককে বঞ্চিত করা যায় না।’ (মুসনাদে আহমাদ) কর্মক্ষেত্রে নিহত, আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের কর্মদিবসের আয় অনুযায়ী আর্থিক বা দৈহিক ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। সামর্থ্যের বাইরে শ্রমিকদের ওপর কাজের বোঝা চাপানো যাবে না এবং তাঁদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সদাচরণ করতে হবে। অথচ বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও স্থায়ী পঙ্গুত্ব যেন শ্রমিকের নিয়তি! অগ্নিকাণ্ড বা মর্মান্তিক কোনো দুর্ঘটনার পর নিহত শ্রমিকের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা যেন আরেক ট্র্যাজেডি! মালিকপক্ষের প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার গতি এতটাই মন্থর যে তা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সহায় হয়ে উঠতে পারে না। যদিও ইসলামে শ্রমিকের পরিশ্রমের ফল বা কর্মীর কাজের প্রতিদান পাওয়ার অধিকার অনস্বীকার্য। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রত্যেকের মর্যাদা তার কর্মানুযায়ী—এটা এ জন্য যে আল্লাহ প্রত্যেকের কর্মের পূর্ণ ফল দেবেন এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না।’ (সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ১৯) অধীনস্থ শ্রমিকদের দেশে প্রচলিত রীতি অনুসারে উপযুক্ত খোরপোশ ও পোশাক-পরিচ্ছদ দিতে হবে এবং তাঁদের ওপর সামর্থ্য অনুযায়ী কাজের দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। মজুরি বৃদ্ধির সংগ্রাম শ্রমিকদের সাময়িক সুবিধা দিলেও প্রকৃত সুবিধা প্রাপ্তি স্থায়ী থাকাটা মোটেও নিশ্চিত হয় না। এ জন্য মজুরির পরিমাণ এমন হতে হবে যেন তা কোনো দেশ ও যুগের স্বাভাবিক অবস্থা ও চাহিদা অনুসারে যুক্তিসংগত হয় এবং উপার্জনকারী শ্রমিক তাঁর পারিশ্রমিক দ্বারা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মানবিক, মৌলিক অধিকার ও দৈনন্দিন জীবনধারণের অন্যান্য প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) যথার্থই বলেছেন, ‘অধীনস্থ শ্রমিকদের খোরপোশ দিতে হবে।’ (মুসলিম) তাই বর্তমান বাজার অনুযায়ী একটি শ্রমজীবী পরিবারের জীবন-যাপনের সাধারণ মানের কথা বিবেচনায় রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা উচিত। আজীবনের জন্য যে শ্রমিকের পুরো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো এবং সারা জীবনে তিনি কত আয় করতেন, এসব দিক বিশেষভাবে মানবিক বিবেচনায় রাখতে হবে। শ্রমিকের অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসারে জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। আর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকপক্ষগুলোকে শ্রমিকদের এ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে অথবা যথাসময় এমন মজুরি দেবে, যাতে তাঁদের প্রয়োজন মিটে যায়। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকের কর্মদক্ষতা, যোগ্যতা, পরিবেশ, চাহিদা, জীবনযাত্রা প্রভৃতি পর্যালোচনা করে মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। এগুলো যেহেতু পরিবর্তনশীল, তাই শ্রমিকের মজুরির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সাধিত হতে পারে।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
কালের কন্ঠ
বেশি কথা বলার পরিণতি
ইসলাম ধর্ম
মুখ আছে বলেই শুধু কথা বলতে থাকবে—এমনটি যেন না হয়। কেননা, কথা বলার জন্য মুখ একটি আর কথা শোনার জন্য কান দুটি। তাই উত্তম কথা বলতে হবে নতুবা চুপ থাকতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৬০১৮-১৯; মুসলিম, হাদিস : ৪৭-৪৮) প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বললে বেশি ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ভুল মানুষের জন্য মন্দ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। নবী করিম (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই বান্দা কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টির কোনো কথা বলে অথচ সে কথা সম্পর্কে তার জ্ঞান নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবার বান্দা কখনো আল্লাহর অসন্তুষ্টির কথা বলে ফেলে, যার পরিণতি সম্পর্কে তার ধারণা নেই, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৮) অন্য বর্ণনায় এসেছে, বান্দা এমন কথা বলে, যার ফলে সে জাহান্নামের এত দূরে নিক্ষিপ্ত হয়, যা পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তের মধ্যস্থিত ব্যবধানের চেয়ে বেশি। (মুসলিম, হাদিস : ২৯৮৮) সুতরাং হাদিস থেকে জানা গেল যে বেশি কথা বলা কখনো কখনো জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
ধর্মীয় শিক্ষা
Negative
Dhaka Tribune
প্রধানমন্ত্রী: দেশে সবাই সমান ধর্মীয় অধিকার ভোগ করে
অন্যান্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “তার সরকার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।” রবিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপূজার মণ্ডপে হিন্দু ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে।” সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৭১ সালে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল এবং তাই এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে।” “আমরা সবাই এই মাটির সন্তান। আমরা এই ভূমিতে আমাদের নিজ নিজ অধিকার উপভোগ করে বসবাস করব।” প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ও এর অগ্রগতির জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি বাড়ি বিদ্যুতের আওতায় এসেছে এবং প্রতিটি পরিবারে খাবার রয়েছে। সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এই উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রতিটি স্থান স্পর্শ করেছে।” আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের কাজ এবং একমাত্র দায়িত্ব। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা এবং আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব।” শেখ হাসিনা বলেন, “সারাদেশে আনন্দও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে এবং উৎসব চলাকালে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ ও তার দলের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা আন্তরিকভাবে কাজ করছে।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা চাই এই পূজা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক। সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে সারাদেশে ৩২ হাজারেরও বেশি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মণীন্দ্র কুমার নাথ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, বিপিইউপির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দেশের বিভিন্ন মন্দির ও অস্থায়ী মণ্ডপে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
প্রথম আলো
ঘুমানোর পূর্বে সুরা মুলক পাঠের গুরুত্ব
ইসলাম ধর্ম
সুরা মুলক পবিত্র কোরআনের ৬৭তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ২ রুকু, ৩০ আয়াত। আল্লাহ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং সর্বশক্তিমান। তিনি মানুষকে দিয়েছেন দেখার ও শোনার শক্তি ও বিবেক। অথচ তারা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এ সুরা পাঠের ফজিলত সীমাহীন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআনে এমন একটি সুরা আছে, যার আয়াত ৩০টি। এই সুরা যে পাঠ করবে, সেই ব্যক্তির জন্য সুরাটি সুপারিশ করবে এবং তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক)। (সুনানে আত-তিরমিজি, ২৮৯১) প্রতি রাতের যেকোনো সময় সুরা মুলক তিলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তিরমিজি শরিফের ২,৮৯২ নম্বর হাদিস অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.) সুরা আস-সাজদা ও সুরা মুলক তিলাওয়াত না করে কোনো দিন ঘুমাতেন না। তার মানে এই নয় যে সুরাটি দিনে পড়া যাবে না। যেকোনো সময়ই পড়া যাবে, তবে রাতে বিশেষ জিকির হিসেবে এ সুরা পড়া উত্তম। সুরাটি নামাজের সঙ্গে পড়াও ভালো। মুখস্থ না থাকলে দেখে দেখে অর্থ বুঝে পড়লে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। সুরা মুলকের ছয়টি ভাগ: প্রথম ভাগ ১ থেকে ৪ আয়াত—এ অংশে আছে আল্লাহর ক্ষমতার বর্ণনা। দ্বিতীয় ভাগ ৫ থেকে ১৫ আয়াত—এ অংশে জাহান্নাম ও জান্নাতের প্রসঙ্গ। তৃতীয় ভাগ ১৬ থেকে ২২ আয়াত—এখানে আছে অত্যাসন্ন বিপদের বার্তা। চতুর্থ ভাগ ২৩ থেকে ২৪ আয়াত—সে বিপদে প্রস্তুতির সময় নিয়ে প্রশ্ন। পঞ্চম ভাগ ২৫ থেকে ২৭ আয়াত—সে বিপদ কবে ঘটবে, তা নিয়ে মানুষের কৌতূহল? শেষ ভাগ ২৮ থেকে ৩০ আয়াত—আল্লাহর বিপরীতে মানুষের দুর্বলতা। সুরার বিষয়বস্তু সুরাটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজগতের কর্তৃত্ব ও রাজত্ব সবই আল্লাহর। আরও বলা হয়েছে বিশ্বজগৎ সৃষ্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সৃষ্টিজগতের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। সুরাটিতে আছে তারকারাজি সৃষ্টির রহস্যের কথা, কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের অবস্থা এবং তাদের চিন্তা ও গবেষণা করার দাওয়াত এবং বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান। সুরাটির নামের মধ্যেই এর বিষয়বস্তু ও মর্মার্থ সুস্পষ্ট হয়েছে। আরবি মুলক মানে সার্বভৌমত্ব। আসমান ও জমিনে সার্বভৌমত্বের একমাত্র অধিকারী যে আল্লাহ, তা এ সুরায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সুরাটির শুরুতেই আল্লাহ তাঁর পরম সার্বভৌম কর্তৃত্বের কথা ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’ এতে বোঝা যায়, জীবনের মতো মৃত্যুও স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি। এ আয়াত থেকে আরও স্পষ্ট বোঝা যায় যে যিনি মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, তিনি অবশ্যই মৃত্যু থেকে মুক্ত। অর্থাৎ মৃত্যু তাঁর ওপর কার্যকর হতে পারে না। ৩ ও ৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তিনি স্তরে স্তরে সাজিয়ে সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন। করুণাময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোনো খুঁত দেখতে পাবে না। আবার তাকিয়ে দেখো, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি না। তারপর তুমি বারবার তাকাও, তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে।’ এখানে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত বা অসংগতি আছে কি না, তা বারবার খুঁজে দেখতে বলেছেন। কারণ, প্রথমবার মানুষ যখন অবাক হয়ে কোনো কিছু দেখে, তখন কোনো ত্রুটি বা অসংগতি তার চোখে পড়ে না। বারবার অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে আল্লাহ সৃষ্টির অসংগতি খুঁজে দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। নিটোল সৃষ্টির কোনো অসংগতি না দেখতে পেয়ে মানুষের দৃষ্টি ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে। এরপর পঞ্চম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি নিম্নতম আকাশকে প্রদীপমালায় সুশোভিত করেছি এবং তাদের ক্ষেপণীয় বস্তু করেছি শয়তানের ওপর নিক্ষেপ করার জন্য। আর আমি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।’ এ আসমানকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়েছে, তেমনি এগুলোকে আক্রমণের মাধ্যমও করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর এই সৃষ্টির মধ্যে কোমলতা ও কঠোরতা পাশাপাশি রয়েছে। ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে প্রশস্ত করেছেন, অতএব তোমরা দিগ্‌দিগন্তে বিচরণ ও তাঁর দেওয়া জীবনের উপকরণ থেকে আহার করো। পুনরুত্থানের পর তাঁরই কাছে
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
প্রথম আলো
ইফতারে খেজুরের গুরুত্ব
ইসলাম ধর্ম
ইফতারে খেজুর না থাকলে ইফতারির টেবিলে যেন পূর্ণতা আসে না। খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি খুবই পুষ্টিকর। খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংকসমৃদ্ধ খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ করে। রোজার সময় ইফতারে খেজুর রাখা ভালো। পবিত্র রমজান এলে খেজুরের কদর বেড়ে যায়। রোজাদাররা খেজুর দিয়ে ইফতার করতে পছন্দ করেন। পৃথিবীতে দুই শতাধিক খেজুরের জাত রয়েছে। মরু অঞ্চলেই খেজুর বেশি উৎপাদিত হয়। সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্বকারী ফল খেজুর। আরবরা প্রধানত খেজুর ও আরবি কফি দিয়ে আপ্যায়ন করেন। রমজানে ইফতারের প্রধান উপকরণ খেজুর। খেজুরের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ, আকৃতি ও রং; এর মিষ্টতায়ও রয়েছে বৈচিত্র্য। খেজুরকে আরবরা এত গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হলো তাঁরা বিশ্বাস করেন, খেজুর দিয়েই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইফতার করতেন। এর ফলে রমজান মাসে খেজুর খাওয়া মুসলিম ঐতিহ্য। মহানবী (সা.)-এর সুন্নত হিসেবে বিশ্বব্যাপী রোজাদাররা এটি পালন করেন। অভিজাত শ্রেণির খেজুরের মধ্যে মেডজুল, আজওয়া, মরিয়ম—এগুলোর রং উজ্জ্বল বাদামি, প্রায় দেড় ইঞ্চির মতো লম্বা, স্বাদ খুবই মিষ্টি। মরিয়ম বা কালমি মরিয়ম খেজুর একটু গাঢ় বাদামি, প্রায় কালচে রঙের। দেখতে খানিকটা ডিম্বাকৃতির। একটু হালকা বাদামি রঙের সুফরি মরিয়ম। ১. আজওয়া খেজুর সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এটি মদিনায় বেশি উৎপাদিত হয়। আজওয়া এর স্থানীয় নাম ‘পবিত্র খেজুর’। কালো বা গাঢ় বাদামি রঙের এই খেজুরের রয়েছে স্বতন্ত্র স্বাদ ও আবেদন। এটি কিছুটা মিষ্টি এবং ভিটামিনে ভরপুর। জামের মতো কালো রঙের আবরণে মোড়ানো ছোট আকারের এই খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। অনেক জটিল রোগের প্রতিষেধক রয়েছে মর্মে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া (উৎকৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৪৪৫) ২. খালাস সৌদি আরবের অভিজাত জাতের খেজুর। এটি গাঢ় বাদামি, মিষ্টি গন্ধযুক্ত ডিম্বাকৃতির একটি খেজুর। খালাস খেজুর সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলের খেজুর। আরবের সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রায়ই খালাস খেজুর খেতে দেওয়া হয়। ৩. মিষ্টি মিছরির স্বাদ সুকারি খেজুরের। খুব বেশি মিষ্টি হওয়ায় একে সুকারি বলা হয়। এটি আঁশজাতীয় খাবারের বড় উৎস। খেজুরের এই জাত আরবে বেশ জনপ্রিয়। একে রাজকীয় খেজুর বলা হয়। ৪. সাগাই খেজুরের একটি অংশ নরম এবং অপর অংশ কুঁচকানো ও শুকনা হয়। এর স্বাদ লাল চিনির মতো।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
আলোকিত বাংলাদেশ
ওমরাহ পালনে শিশুদের জন্য নতুন নির্দেশনা সৌদির
ইসলাম ধর্ম
শিশুদের ওমরাহ নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিল সৌদি আরব। শিশুদের ওমরাহতে নিয়ে গেলে অভিভাবকদের মানতে হবে নতুন কয়েকটি নির্দেশনা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গালফ নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ওমরাহর সময় শিশুদের ডান অথবা বাঁ হাতের কব্জিতে পরিচিতিমূলক ব্রেসলেট থাকতে হবে। ভিড়ে কোনো শিশু হারিয়ে গেলে তার পরিচিতি সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাবে সেই ব্রেসলেটে। যেসব ওমরাহযাত্রী তাদের শিশুদের নিয়ে ওমরাহ পালনে যাবেন, তাদের যেসব স্থানে ভিড় কম হয় সেসব স্থানে ওমরাহ’র আনুষ্ঠানিকতা পালন করার জন্য বলা হয়েছে। শিশুদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে অভিভাবকদের যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। ওমরাহ’র সময় শিশুরা যেন স্বাস্থ্যকর ও তাদের শরীরের জন্য উপযোগী খাদ্য গ্রহণ করতে পারে, সেজন্য অভিভাবকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। নারীদের শরীরে কোনো ধরনের অলংকার থাকতে পারবে না এবং ঢিলেঢালা পোষাক পরিধান করতে হবে। পোষাক যেমনই হোক তা দ্বারা যেন সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা থাকে সেদিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
যায়যায়দিন
এক কাঠমিস্ত্রির ঘটনা রয়েছে সুরা ইয়াসিনে
ইসলাম ধর্ম
এই ঘটনা বিশ্বে হজরত ঈসা (আ.)-এর আগমনেরও আগের। সিরিয়ার আন্তাকিয়ার শহরতলিতে বাস করতেন একজন কাঠমিস্ত্রি। তার নাম হাবিব ইবনে ইসমাইল। ইসলামের ইতিহাসে তিনি হাবিব নাজ্জার, অর্থাৎ কাঠমিস্ত্রি হাবিব নামে পরিচিত। আন্তাকিয়া ছিল ওই সময়ের এক জনপদ। আন্তাকিয়ার লোকজন ছিল পৌত্তলিক। হাবিবও ছিলেন কুষ্ঠরোগী। রোগমুক্তির আশায় তিনি নানা প্রতিমার উপাসনা করতেন। আল্লাহ ওই সম্প্রদায়কে সতর্ক করার বাসনা করলেন। প্রথমে তিনি তাদের কাছে দুজন আল্লাহ্‌ প্রেরিত বার্তাবাহী ব্যক্তিত্ব (রাসুল) পাঠালেন। দ্বীনের দাওয়াত দিতে তাঁরা আন্তাকিয়া শহরে গেলেন। সেখানে তাঁদের দেখা হলো হাবিবের সঙ্গে। তাঁরা তাকে মূর্তিপূজা ত্যাগ করে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দাওয়াত দিলেন। হাবিব বললেন, আপনাদের দাবি যে সত্য, তার কি কোনো প্রমাণ আছে? তাঁরা বললেন, আছে। হাবিব তাঁর কুষ্ঠরোগের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘আপনারা কি আমার এ ব্যাধি দূর করে দিতে পারবেন?’ তাঁরা বললেন, ‘হ্যাঁ! আমরা আমাদের রবের কাছে দোয়া করব। তিনি তোমাকে রোগমুক্ত করবেন।’ হাবিব এ কথা শুনে অবাক হয়ে বললেন, ‘আমি সারা জীবন দেব-দেবীর প্রার্থনা করলাম। কিন্তু কোনো উপকার পেলাম না। অথচ আপনাদের রব কীভাবে আমার কঠিন অবস্থা পাল্টে দেবেন?’ রাসুলদের দোয়ায় আল্লাহ হাবিবকে সুস্থ করলেন। তাঁর ঈমান দৃঢ় হলো। আল্লাহর এই দুই প্রতিনিধি আন্তাকিয়াবাসীদের সঠিক পথের দাওয়াত দিতে থাকলেন। কিন্তু তারা তাঁদের দুজনকে মিথ্যাবাদী বলে আখ্যা দিল। তাঁদের শক্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আল্লাহ আরেকজন রাসুল পাঠালেন। কিন্তু তাঁদের উপদেশের জবাবে জনপদবাসীরা তাঁদের মিথ্যুক বলেই অপবাদ দিতে থাকল। কোরআনে আছে, ‘ওরা বলল, তোমরা তো আমাদেরই মতো মানুষ। করুণাময় আসলে কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তোমরা কেবলই মিথ্যা বলছ।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৫) তাদের রূঢ় কথাবার্তা শুনে কষ্ট পেলেও প্রতিনিধিরা দ্বীনের দাওয়াত চালিয়েই গেলেন। তাঁরা বললেন, ‘আমাদের প্রতিপালকের শপথ, আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে প্রেরিত হয়েছি, স্পষ্টভাবে প্রচার করাই আমাদের দায়িত্ব।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৬-১৭) তবু আন্তাকিয়াবাসীরা তাঁদের কথা অমান্য করে চলল। তাদের অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ আন্তাকিয়া শহরে দুর্ভিক্ষ দিলেন। আল্লাহর সতর্কতা সঙ্কেত তারা মোটেই বুঝতে পারল না, বরং রাসুলদের তারা বলল, ‘আমরা তোমাদেরকে অমঙ্গলের কারণ মনে করি। যদি তোমরা বিরত না হও, তোমাদেরকে অবশ্যই আমরা পাথর মেরে হত্যা করব ও নিদারুণ শাস্তি দেব।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৮) এক সময় তারা রাসুলদের হত্যা করার কথা ভাবল। এই চক্রান্তের খবর শুনতেই হাবিব নাজ্জার তাদের কাছে ছুটে এলেন। তার সম্প্রদায়ের লোকদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেন। অথচ তারা তাঁর কথায় মোটেই কান দিল না। কোরআনে আছে, ‘তারা বলল, এ কি এজন্য যে, আমরা তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি? তোমাদের অমঙ্গল তোমাদেরই, আসলে তোমরা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৯) কোরআনে আরও আছে ‘শহরের এক প্রান্ত থেকে একজন ছুটে এসে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! রাসুলের অনুসরণ করো, অনুসরণ করো তাদের যারা তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চায় না, আর যারা সৎপথ পেয়েছে।যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন ও যার কাছে তোমরা ফিরে যাবে, আমি তাঁর উপাসনা করব না কেন? আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য উপাস্য গ্রহণ করব? করুণাময় আল্লাহ্ আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইলে, ওদের সুপারিশ আমার কোনো কাজে আসবে না; আর ওরা আমাকে উদ্ধার করতেও পারবে না। এমন করলে আমি অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পড়ব। আমি তোমাদের প্রতিপালকের ওপর বিশ্বাস রাখি, তাই তোমরা আমার কথা শোনো।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২০–২৫) এলাকাবাসী হাবিবের কথা তো শুনলই না। উল্টো তাঁর ওপর চড়াও হয়ে পাথর ছুড়তে ছুড়তে তাঁকে হত্যা করে ফেলল। আল কোরআনে আছে, ‘শহীদ হওয়ার পরে তাঁকে বলা হলো, জান্নাতে প্রবেশ করো। সে বলে উঠল, হায়, আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত, কী কারণে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা করেছেন ও সম্মানিত করেছেন!’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২৬–২৭) কোরআনে আরও আছে, ‘আমি তাঁর (মৃত্যুর) পর তাঁর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আকাশ থেকে কোনো বাহিনী প্রেরণ করিনি, আর তার প্রয়োজনও ছিল না। কেবল এক মহাগর্জন হলো। ফলে ওরা নিষ্প্রাণ, নিস্তব্ধ হয়ে গেল। আমার দাসদের জন্য দুঃখ হয়, ওদের কাছে যখনই কোনো রসূল এসেছে তখনই ওরা তাকে ঠাট্টাবিদ্রূপ করেছে। ওরা কি লক্ষ করে না, ওদের আগে কত মানবগোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি যারা আর ওদের মধ্যে ফিরে আসবে না? আর ওদের সকলকে তো আমার কাছে একত্র করা হবে। ‘ওদের জন্য একটা নিদর্শন মৃত ধরিত্রী, যা আমি পুনর্জীবিত করি ও যার থেকে আমি শস্য উৎপন্ন করি—যা ওরা খায়। তার মধ্যে আমি সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙুরের বাগান এবং বইয়ে দিই ঝরনা, যাতে ওরা এর ফলমূল খেতে পারে—যা ওদের হাতের সৃষ্টি নয় । তবু ওরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না? পবিত্র-মহান তিনি যিনি উদ্ভিদ, মানুষ এবং ওরা যাদের জানে না তাদের প্রত্যেককে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২৮–৩৬)
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
কালের কন্ঠ
আর্মেনিয়ায় মুসলমানের হাজার বছরের ইতিহাস
ইসলাম ধর্ম
পশ্চিম এশিয়ার স্থলবেষ্টিত দেশ আর্মেনিয়ার দাপ্তরিক নাম ‘দ্য রিপাবলিক অব আর্মেনিয়া’। ককেশাস অঞ্চলে অবস্থিত দেশটির সঙ্গে ইউরোপের গভীর ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এর পশ্চিমে তুরস্ক, উত্তরে জর্জিয়া, পূর্বে আজারবাইজান এবং দক্ষিণে ইরান অবস্থিত। ইয়েরেভান আর্মেনিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।দেশটির মোট আয়তন ২৯ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশটির জনসংখ্যা ৩০ লাখ ৭৫৬ জন। আর্মেনিয়ার ৯৮ শতাংশ মানুষ আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত।আর্মেনিয়ার প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক খ্রিস্টান।মুসলমানের সংখ্যা এক শতাংশের চেয়েও কম। দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা তিন হাজারের সামান্য বেশি বলে ধারণা করা হয়। আর্মেনিয়ায় ইসলামের বিজয় অভিযান শুরু হয় ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে। আলজেরিয়া ও আজারবাইজানের পারস্য অঞ্চল বিজয়ের পর মুসলিম বাহিনী আর্মেনিয়ার প্রতি মনোযোগী হয়।আর্মেনিয়া তখন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীন ছিল।আর্মেনিয়ায় প্রথম সামরিক সাফল্য পান সাহাবি ইয়াজ বিন গানম (রা.)। তিনি ১৭ হিজরি মোতাবেক ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে তারতুস ও রোমান ভূমি অতিক্রম করে বাদলিসে পৌঁছান। খিলাত শহর হয়ে আর্মেনিয়ার ‘আল আইন আল হামেসা’য় পৌঁছে যান। ইয়াজ বিন গানম (রা.)-এর বিজয়াভিযান ছিল অসস্পূর্ণ ও ক্ষণস্থায়ী।তিনি ১৯ হিজরি উসমান বিন আবিল আস সাকাফিকে অভিযানে প্রেরণ করেন। এ যুদ্ধে সাফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল (রা.) শহীদ হন। অবশেষে আর্মেনিয়াবাসী ‘জিজিয়া’ বা নিরাপত্তা কর চুক্তিতে সম্মত। চুক্তিতে প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে এক দিনার কর নির্ধারণ করা হয়। তবে কিছুদিনের মধ্যে তারা চুক্তি ভঙ্গ করে।২১ হিজরিতে সুরাকা ইবনে আমর (রা.)-এর নেতৃত্বে পুনরায় অভিযান শুরু হয়। আর্মেনিয়ানরা আবারও সমঝোতা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। তবে চূড়ান্ত বিজয়ের আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। আবদুর রহমান বিন রাবিআ বাহেলি (রা.) তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। অবশেষে ২৫ হিজরিতে হাবিব বিন মাসলামা ফিহরির নেতৃত্বে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তবে উমাইয়া শাসনের শেষভাগ পর্যন্ত আর্মেনিয়ায় মুসলিম শাসন স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছায়নি।৬৫২ সালে আর্মেনীয়দের সঙ্গে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক চুক্তি হয়। প্রিন্স থিওডরস দামেশক ভ্রমণ করেন এবং সেখানে তিনি মুসলিম শাসক কর্তৃক আর্মেনিয়া, জর্জিয়া ও আলবেনিয়ার শাসক নিযুক্ত হন। সপ্তম শতাব্দীর শেষে আব্বাসীয় আমলে একাধিক প্রতিনিধির মাধ্যমে আর্মেনিয়া শাসন করা হতো। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে আর্মেনিয়া আরব ও তুর্কি মুসলিম বসবাস করতে শুরু করে। খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে এই ধারা আরো প্রবল হয়। আর্মেনীয়রাও মুসলিম আমিরদের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে যোগদান শুরু করে। পরে আর্মেনিয়া উসমানীয় ও ইরানের সাফাবিদ সাম্রাজ্যের অধীন হয়। সাফাবীয়দের অধীনে থাকা পূর্ব আর্মেনিয়ার রাশিয়ার দখলে চলে যায় এবং পশ্চিম আর্মেনিয়া যেটি আর্মেনিয়ার মূল ভূখণ্ড মনে করা হয় তা তুর্কিদের অধীনে ছিল। ১৯১৮ সালে আর্মেনিয়া তুরস্ক থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু ১৯২০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর্মেনিয়া দখল করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে আর্মেনিয়া স্বাধীন হয়।দীর্ঘদিন মুসলমানদের শাসনাধীন থাকার পরও আর্মেনিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায়। এর প্রধান কারণ জাতিগতভাবে খ্রিস্টধর্মের প্রতি আর্মেনীয়দের ঝোঁক, ধর্মের প্রতি মুসলিম শাসকদের উদাসীনতা ও ইসলাম প্রচারে ব্যর্থতা। এ ছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুর্কিদের সঙ্গে আর্মেনীয়দের সংঘাত ও ইসলামের প্রতি সোভিয়েত শাসকদের কঠোর মনোভাবের কারণে দেশটির বেশির ভাগ মুসলমান দেশত্যাগ করে বলে মনে করা হয়। সোভিয়েত আমলে আর্মেনিয়ার মসজিদসহ অন্য মুসলিম স্থাপনাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এগুলোর রূপান্তর ঘটানো হয়। রাজধানী ইয়েরেভানে অবস্থিত ব্লু মসজিদকে আর্মেনীয় মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় স্থাপনা মনে করা হয়। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৯৬ সালে তা পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। এটি একটি শিয়া মসজিদ।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
রাসূলের আদর্শেই গড়ে উঠে উন্নত সমাজ-২
ইসলাম ধর্ম
সভ্যতা ও ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে ইসলাম এসেছে একটি পশ্চাৎপদ সমাজে। নবীজি (সা.) সেই আরবদেরই পরিণত করেছেন পৃথিবীর উন্নত জাতিতে। মানবেতিহাসে তিনিই প্রথম এমন একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা পেশ করেছেন, যা আত্মিক ও বস্তুগত উভয় দিক থেকে মানুষের সংকটমুক্তির দায়িত্ব নিয়েছে। ইসলাম পৃথিবীর সেই একক ও বৃহত্তম ধর্ম, যা নিঃস্ব ও দরিদ্র জীবনের মাঝে মর্যাদা ও তাৎপর্য দান করেছে। ইসলাম বিভিন্ন গোত্রের মানুষকে পরস্পরে ভাইয়ের মতো থাকার এবং বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার শিক্ষা দিয়েছে। ইসলাম মানব পৃথিবীতে একটি উন্নত সভ্যতা দান করেছে, যার ফলশ্রুতিতে ইসলামী সমাজের রূপ সামনে এসেছে। সে সমাজে মুসলমানদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের অনুসারীরাও সৃজনশীলতা ও পরিতৃপ্তির সঙ্গে জীবন অতিবাহিত করেছেন। ইসলাম তার অবস্থার প্রাচুর্য দিয়ে বিত্তবান বানিয়েছে পুরো পৃথিবীকে। ইসলামী সমাজব্যবস্থার পরিধি অনেক বিস্তৃত। যে সমাজে ইসলামের সভ্যতা ও শরীয়তের প্রয়োগ হয় এবং কুরআন ও সুন্নতের অনুসরণ করা হয় সেটিই ইসলামী সমাজরূপে গণ্য। ওই সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে- ক) মানবজাতির ঐক্য খ) কল্যাণের বিকাশ ও মন্দের দ্বার রুদ্ধকরণ, গ) মানবচিন্তার ঐক্য, ঘ) মানবতার সম্মান, ঙ) সমতা, চ) রাসূলের আনুগত্য। আজ পৃথিবীতে যে ধর্ম ও কর্মসূচির প্রয়োজন সে’টি হচ্ছে আলোকজ্জ্বল দ্বীন-ইসলাম। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়ত ও তাঁর সীরাত গোটা মানবজাতির জন্য একটি সমন্বিত সম্পদ। এখানে সবারই ভাগ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালার সব বস্তুগত নেয়ামত যেমন সব মানুষের জন্য অবারিত, ঠিক তেমনই এই রূহানী নেয়ামতও সকল মাখলুকের জন্য উন্মুক্ত। নবীয়ে আখেরুজ্জামান সম্পর্কে কুরআনে কারীমে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনাকে গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি’। আরেক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আপনি বলে দিন পবিত্র সেই সত্ত্বা যিনি হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী কুরআন নিজ বান্দার ওপর অবতীর্ণ করেছেন, যেন তিনি সব মানুষকে শেষ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করতে পারেন’। আমরা সবাই রাসূলে আকরামের উম্মত। তিনি আমাদের কাছে বার্তা পৌঁছিয়েছেন বন্ধুত্ব, সহিষ্ণুতা, মানুষের সম্মাননা, নিরাপদ সহাবস্থান, পক্ষপাতমুক্ততা এবং শান্তি ও নিরাপত্তার। নিরাপত্তা, সৌজন্য ও শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের দায়িত্ব হলো, এই সীরাতে তাইয়্যিবার প্রসার ঘটানো। নিজেরাও উসওয়ায়ে হাসানা বা উত্তম আদর্শ গ্রহণ করি এবং অন্যদেরও এর প্রতি উৎসাহিত করি। নবীজির সীরাত ও তাঁর শিক্ষা আমাদেরকে এমন একটি সমাজ গড়তে অনুপ্রাণিত করে, যে সমাজের প্রতিটি সদস্য হয়ে উঠে সৎ মানুষ। এমন সৎ মানুষ, যার গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে সূরায়ে আসরে। ইসলামের তত্ত্বগত দর্শন সম্পর্কে সমাজের প্রতিটি সদস্যের অন্তরে থাকতে হবে দৃঢ় বিশ্বাস। মানুষকে পুরা করতে হবে আল্লাহ তায়ালার বন্দেগীর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। খেলাফতব্যবস্থা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রতিটি মুহূর্তে অনুভূতি জাগ্রত থাকতে হবে আল্লাহর আনুগত্য, সুন্নতের অনুসরণ, তাকওয়া অবলম্বন এবং আখেরাতের জবাবদিহি সম্পর্কে। হেদায়েতের উলূম তথা দ্বীনি ইলমের চর্চা থাকতে হবে। পাশাপাশি চলতে হবে বৈষয়িক, আর্থিক ও বিজ্ঞানবিষয়ক জ্ঞানের চর্চা। দিতে হবে মানুষের শৈল্পিক ও পেশাভিত্তিক মেধা বিকাশের সুযোগ। যেন সে হালাল জীবিকা অর্জন করতে পারে। মানুষের অন্তরে, চরিত্রে ও জীবনে শুদ্ধি আনতে হবে। মানুষ যেন সত্যের আহ্বানকারী ও কল্যাণ কাজের সঞ্চালক হয় সে উদ্যোগ নিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে তাদেরকে পরিশ্রম ও কষ্ট সহিষ্ণুতায় অভ্যস্ত করতে, ধৈর্যও বরদাশত-যোগ্যতা অর্জন করাতে এবং আত্মমর্যাদা ও আত্মপ্রত্যয়ে বলিয়ান করতে। সর্বোপরি মানুষের মাঝে সময় ও নিয়মানুবর্তিতার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সব ভিত্তির ওপরই একটি আদর্শ সমাজের কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন। এ সমাজই পৃথিবীর সব সমাজের ওপর সর্বাত্মক প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়েছিল। তাই বর্তমান যুগেও একটি আদর্শ সমাজের রূপায়ন সম্ভব হবে যখন আমরা মানবতার ত্রাণকর্তা হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর শিক্ষা ও সীরাতকে জীবনোপায় বা কর্মপন্থা হিসেবে গ্রহণ করে নেব। যখন তাঁকে অনুসরণ করব। এতেই রয়েছে মানবতার মুক্তি। এটিই কল্যাণ ও সাফল্যের অব্যর্থ মন্ত্র।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
ভোরের কাগজ
জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীরা ধর্মান্ধ : প্রধানমন্ত্রী
অন্যান্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ বরেণ্য শিক্ষাবিদ সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর যারা হামলা চালালো তারা কারা, এরা ধর্মান্ধ। এদের খুঁজে বের করতে হবে। ওরা মনে করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারলেই বেহেস্ত নিশ্চিত। আসলে তারা বেহেস্তে যাবে না, তাদের জায়গা দোজখে। এটা নিশ্চিত। রোববার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়/গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এবং মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ও বিশেষ গবেষণা অনুদান-২০১৮ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধর্মান্ধরা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ যারা করে তারা দেশের মঙ্গল করতে পারে না। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য এ সময় আহ্বানও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, একটি অনুষ্ঠানে তাকে পিছন দিক থেকে চুরিকাঘাত করা হয়েছে। ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি নির্দেশ দিয়েছি হেলিকপ্টারে দ্রুত ঢাকায় এনে চিকিৎসা করার জন্য। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যারা করে তারা শিক্ষা দেয় যে, মানুষকে খুন করতে পারলেই তারা বেহেস্তে যাবে। এ ধরনের কথা ইসলাম সমর্থন করে না। আমাদের ইসলাম ধর্মে হত্যা মহাপাপ। কাজেই তারা কখনই বেহেস্তে যেতে পারবে না। তাদের জায়গা হবে দোযখে। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন সভা সমাবেশে আপনাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক সম্পর্কে সচেতন করার জন্য। আশা করি, প্রতিটি বাবা-মা তাদের সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। এই ধর্মান্ধরা কারো ভালো করতে পারে না। এরা শুধু জানে ধ্বংস করতে। সুতরাং এদের থেকে সাবধান হতে হবে। রাজধানীর ওসমাসী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব অনোয়ার হোসেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. রুহুল হক এমপি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
কালের কন্ঠ
আত্মমুগ্ধতা যেভাবে অহংকারী করে তোলে
ইসলাম ধর্ম
বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে একটি ঈমানঘাতী মারাত্মক রোগ হলো আত্মমুগ্ধতা। এটি মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। দুনিয়ার জীবনে মহান আল্লাহ আমাদের অনেক নিয়ামত দিয়েছেন, আমাদের উচিত এগুলো নিয়ে আত্মমুগ্ধতায় না ভুগে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। যারা আল্লাহপ্রদত্ত নিয়ামত পেয়ে শুকরিয়া না করে অহংকারের ঢেঁকুর দেয়, মহান আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন না। মহান আল্লাহ ইতিহাসের অন্যতম ধনী কারুনকেও অনেক সম্পদ দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দিয়েছিলেন; কিন্তু তার দাম্ভিকতা তার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। তাকে ঈমানদাররা এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিল; কিন্তু সে তার দাম্ভিকতা থেকে ফিরে আসেনি। এবং ধ্বংস হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কারুন ছিল মুসার সমপ্রদায়ভুক্ত, বস্তুত সে তাদের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল। আমি তাকে দান করেছিলাম এমন ধনভাণ্ডার, যার চাবিগুলো বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ করো, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দম্ভ করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৭৬) আত্মমুগ্ধতার ব্যাপারে বান্দাকে সতর্ক করতে মহান আল্লাহ এমন অনেক আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। যেমন পবিত্র কোরআনের অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর তাদের যা কিছু উপদেশ ও নসিহত করা হয়েছিল তা যখন তারা ভুলে গেল তখন আমি সুখ-শান্তির জন্য প্রতিটি বস্তুর দরজা উন্মুক্ত করে দিলাম। যখন তারা তাদের দানকৃত বস্তু লাভ করে খুব আনন্দিত ও উল্লসিত হলো তখন হঠাৎ একদিন আমি তাদের পাকড়াও করলাম, আর তারা সেই অবস্থায় নিরাশ হয়ে পড়ল।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৪৪) এ আয়াতে বলা হয়েছে যে তাদের অবাধ্যতা যখন সীমাতিক্রম করতে থাকে, তখন তাদের একটি বিপজ্জনক পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। আত্মমুগ্ধতা অহংকারের নামান্তর। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক ব্যক্তি নবী (সা.) এর কাছে এলো। লোকটি ছিল খুবই সুন্দর। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি সৌন্দর্যকে ভালোবাসি। আপনি তো দেখতে পাচ্ছেন আমাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়েছে। এদিক দিয়ে কেউ আমার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করুক তা আমি চাই না, এমনকি কেউ যদি বলে, আমার জুতার ফিতার চেয়ে তার ফিতাটা ভালো, সেটাও পছন্দ করি না। এরূপ করা কি অহংকার? তিনি (সা.) বলেন, না; বরং অহংকার হলো সত্যকে অবজ্ঞা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ মনে করা।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৯২) মহান আল্লাহ আমাদের আত্মমুগ্ধতা ও অহংকারের মতো ধ্বংসাত্মক অভ্যাস ত্যাগ করার তাওফিক দান করুন।
ধর্মীয় শিক্ষা
Negative
ভোরের কাগজ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্মী পূজা আজ
হিন্দু ধর্ম
সনাতন ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস, ধন-সম্পদ-ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী। এছাড়া তিনি হলেন জ্ঞান, আলো, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের প্রতীক। তাই বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ধন সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর পূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আওয়াজ উঠবে- ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে, আমারই ঘরে থাকো আলো করে’। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে হিন্দু সম্প্রদায় লক্ষ্মী পূজা উদযাপন করে থাকে। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী পূজা। বাঙালি হিন্দুদের বিশ্বাস লক্ষ্মী দেবী দ্বিভূজা। তিনি ঈশ্বরের পালন রূপ শক্তি নারায়ণী। যাকে ভক্তরা ধন সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী, অন্নদাত্রী দেবীরূপে আখ্যায়িত করে পূজা করেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, লক্ষ্মী দেবী সন্তুষ্ট থাকলে সংসারে অর্থকষ্ট থাকবে না ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে। ঘরে ঘরে মা লক্ষ্মী ধন-সম্পদের দেবী হিসেবে পূজিত হন। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে এ দিন লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন। সঙ্গে থাকে বাহন পেঁচা এবং হাতে থাকে শস্যের ভাণ্ডার। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, রামসীতা মন্দির, পঞ্চানন্দ শিব মন্দির, গৌতম মন্দির, রাধামাধব বিগ্রহ মন্দির, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দিরসহ দেশের অনেক মন্দিরে ঘরোয়া পরিবেশে লক্ষ্মী পূজার নানা ধর্মীয় কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
আলোকিত বাংলাদেশ
ইমামকে সিজদায় পেলে যেভাবে নামাজ পড়বেন
ইসলাম ধর্ম
অনেক সময় ইমামের সঙ্গে শুরু থেকেই নামাজ পাওয়া যায় না। কোনো সময় রুকু, সিজদা অথবা বৈঠকে গিয়ে ইমামের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন মুসল্লিরা। কখনো জামাতের নামাজে সিজদারত অবস্থায় ইমামকে পেলে মুসল্লিদের অনেকে সন্দেহে থাকেন সিজদাতেই ইমামের সঙ্গে যু্ক্ত হবেন নাকি ইমাম সিজদা থেকে ওঠে দাঁড়ানো বা বসার অপেক্ষা করবেন। মুসল্লিদের এমন সন্দেহ দূর করতে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলে থাকেন, কোনো মুসল্লিা ইমামকে সিজদায় পেলে তখনই ইমামের সঙ্গে সিজদায় অংশ গ্রহণ করে ফেলবে; ইমামের সিজদা থেকে ওঠার অপেক্ষা করবে না। হাদিস শরীফে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, إِذَا أَتَى أَحَدُكُمُ الصَّلَاةَ وَالإِمَامُ عَلَى حَالٍ فَلْيَصْنَعْ كَمَا يَصْنَعُ الإِمَامُ তোমাদের কেউ যখন নামাজে আসে তখন ইমামকে যে অবস্থায় পায় সে যেন তাই করে (অর্থাৎ যে অবস্থায়ই ইমামকে পাবে, জামাতে অংশ গ্রহণ করে ফেলবে।) (জামে তিরমিজি, হাদিস, ৫৯১) আরেক হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, وَإِذَا وَجَدْتُّمُ الْإِمَامَ قَائِمًا فَقُومُوا، أَوْ قَاعِدًا فَاقْعُدُوا، أَوْ رَاكِعًا فَارْكَعُوا، أَوْ سَاجِدًا فَاسْجُدُوا، أَوْ جَالِسًا فَاجْلِسُوا যখন তোমরা ইমামকে দাঁড়ানো অবস্থায় পাবে তখন দাঁড়ানো অবস্থায় নামাজে অংশ গ্রহণ করবে। বসা অবস্থায় পেলে বসাতেঅংশ গ্রহণ করবে। রুকুতে পেলে রুকুতে অংশ গ্রহণ করবে। আর সিজদায় পেলে সিজদায় অংশ গ্রহণ করবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস, ৩৩৭৩) তবে সিজদায় ইমামের সঙ্গে অংশ গ্রহণ করলে ওই রাকাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না; বরং রাকাত পাওয়ার জন্য ইমামের সাথে রুকু পাওয়া শর্ত। (আলমাবসূত, সারাখসী ১/৩৫; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৩১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১; ফাতহুল বারী ২/১৪০)
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
কালের কন্ঠ
বাংলাদেশিদের জন্য উচ্চশিক্ষায় সহায়তা অব্যাহত থাকবে : সৌদি রাষ্ট্রদূত
ইসলাম ধর্ম
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সৌদি সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলান। গতকাল রবিবার (৮ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আরবি বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এ কথা বলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। রাষ্ট্রদূত ইসা বলেন, ‘শিক্ষা-গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আগামীতে সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আরো সম্প্রসারিত হবে।’ বাংলাদেশি কর্মীদের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সৌদি আরবের উন্নয়নে বাংলাদেশি কর্মীদের বিশেষ অবদান রয়েছে।দেশটির সব অঞ্চলে এ দেশের লোক পাওয়া যায়। কর্মদক্ষতার মাধ্যমে তারা আর্থ-সামাজিক অবদান রাখছেন।’ অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আরবি বিভাগের আয়োজনে এ ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের এগিয়ে চলার পথে অনুপ্রেরণা যোগাবে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা, তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আরো বিস্তৃত হবে।অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সৌদি রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আরবি বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ১৫জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
কালের কন্ঠ
আসবাব থেকে নাপাকি দূর করার ইসলামী বিধান
ইসলাম ধর্ম
সাধারণত শরীরে কিংবা কাপড়ে নাপাকি লাগলে তা পবিত্র করে থাকি, তাই তার নিয়ম-কানুনও আমরা বেশির ভাগ মানুষ জানি। কিন্তু আসবাবে নাপাকি লাগার ঘটনা বিরল, তাই এমন পরিস্থিতির শিকার হলে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি যে এই জিনিস কিভাবে পবিত্র করা যায়। নিম্নে আসবাব পবিত্র করার উপায় তুলে ধরা হলো : যদি এমন জিনিসে নাপাকি লাগে যা নিংড়ানো যায় না, যেমন—থালা-বাসন, কলস, খাট, মাদুর, জুতা ইত্যাদি, তাহলে তা পবিত্র করার নিয়ম হলো, একবার তা ধুয়ে এমনভাবে রেখে দেবে যেন সব পানি ঝরে যায় এবং পানির ফোঁটা পড়া বন্ধ হয়ে যায়, তারপর অনুরূপ আরেকবার করবে, এভাবে তিনবার ধুয়ে নিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। জুতা বা চামড়ার মোজায় গাঢ় বীর্য, রক্ত, পায়খানা, গোবর ইত্যাদি গাঢ় নাপাকি লাগলে তা যদি মাটিতে খুব ভালোমতো ঘষে বা শুকনা হলে নখ বা ছুরি/চাকু দিয়ে খুঁটে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ফেলা যায় এবং বিন্দুমাত্র নাপাকি না থাকে, তাহলেও তা পবিত্র হয়ে যাবে, না ধুলেও চলবে। কিন্তু পেশাবের মতো তরল নাপাকি লাগলে পূর্বোক্ত নিয়মে ধোয়া ছাড়া পবিত্র হবে না। আয়না, ছুরি, চাকু, সোনা-রুপার অলংকার, থালা-বাসন, বদনা, কলস ইত্যাদি নাপাক হলে ভালোমতো ঘষে বা মাটি দিয়ে মেজে ফেললেও পবিত্র হয়ে যায়, কিন্তু এজাতীয় জিনিস কারুকাজকৃত হলে উপরোক্ত নিয়মে পানি দিয়ে ধোয়া ছাড়া পবিত্র হবে না। নাপাক ছুরি, চাকু বা হাঁড়ি-পাতিল জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে পোড়ালেও পবিত্র হয়ে যায়। কুকুর কোনো পাত্রে মুখ দিলে তা অপবিত্র হয়ে যায়। তিনবার ধুলেও তা পবিত্র হয়ে যায়, তবে সাতবার ধোয়া উত্তম। আর একবার মাটি দিয়ে মেজে ফেললে আরো বেশি উত্তম। (সূত্র : আহকামুন নিসা, পৃষ্ঠা ৩৫৫)
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
আলোকিত বাংলাদেশ
ঢাবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সরস্বতী পূজা উদযাপন , উপাচার্যের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন
হিন্দু ধর্ম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি (২০২৪) বুধবার সন্ধ্যায় জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এসময় জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল দীর্ঘকাল ধরে সাড়ম্বরে এই উৎসব আয়োজন করে আসছে। দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ও অসাম্প্রদায়িক সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন মানুষ সকল উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে"। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিকতার প্রতীক এই উৎসব থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সভ্যতাসহ সকল ক্ষেত্রে বলীয়ান হওয়ার প্রয়াস নেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপাচার্য সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পূজা উৎসব আয়োজনের জন্য জগন্নাথ হল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
সমকাল
সংস্কৃতির ধর্ম কিংবা ধর্মের সংস্কৃতি
অন্যান্য
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিরোধ নিয়ে তর্ক কোনোভাবে কি গ্রহণযোগ্য? তবুও সমাজে কিছু মানুষ এই তর্ক চালিয়ে যাবেন হাত দিয়ে পাহাড় ঠেলার মতো। ধর্মে ধর্মে বিরোধ; তা তো চলে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সারাবিশ্বে। এই ধর্মের রেষারেষি পৃথিবীকে বিভক্ত করতে করতে আজ যেন ক্লান্ত এক পৃথিবীর বুকে আমরা অসহায়ের মতো বসবাস করছি। ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাসের বিষয়, যা মূলত পরকালকেন্দ্রিক। যেহেতু পরকাল আমরা দেখতে পাই না, তাই পুরোটাই দাঁড়িয়ে আছে আমাদের মনোজগতে যে বিশ্বাসের ভিত্তি আছে তার ওপর। অন্যদিকে সংস্কৃতি মানুষের প্রতিদিনের জীবনাচরণ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে আমাদের যাপিত জীবনের যা কিছু আছে সবকিছুকে ধারণ করে। এ নিয়ে বিতর্কটি বছর ঘুরলেই তুলে আনেন যাঁরা; তাঁরা আসলে ধর্ম ও সংস্কৃতির মাঝে সম্পর্কটিকে কতটা বিশ্লেষণ করতে পারেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাঁদের উদ্দেশ্যও খুব পরিষ্কার। তাঁরা মূলত দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিটুকু ধ্বংস করার মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী। সারাবছর যে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বসবাসের চেষ্টা; সেই চেষ্টায় বিরোধ, সংঘর্ষ, বিচ্ছিন্নতা ও বৈরিতার সম্পর্ক তৈরি করাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য; আর কিছু নয়। আমাদের মনোজাগতিক সংস্কৃতিও যেন যুক্ত হচ্ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বিরোধপূর্ণ তর্কে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব? আচ্ছা, দু’জন দুই ধর্মের মানুষের দেহাকৃতি থেকে শুরু করে জীবনাচরণে এই যে এত মিল, তা কি অস্বীকার করা সম্ভব? কেবল দুই ধর্মের দু’জনের মাঝে নানা কিছুতে মিল থাকলেই কি তারা একে অপরকে অনুকরণ করছে– আমরা এমন দাবি করতে পারি? ঠিক যেমনটি মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রাণীর প্রতীকী চিত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাণী ও প্রকৃতি পূজার সঙ্গে মিলে যায় বলে দাবি করছে কেউ কেউ? ধর্ম কিংবা সংস্কৃতি কোনোটিকে কি এতটা সরল-সাধারণীকরণ সম্ভব? কোনো বিভিন্নতা, বৈচিত্র্য কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না? কাছাকাছি কিংবা মিলে যাওয়া সাদৃশ্যপূর্ণ সংস্কৃতির মাঝেও কি ভিন্নতা নেই? সাধারণীকরণের বাইরে গিয়ে উত্তরাধুনিকতাবাদী চিন্তাভাবনা কিন্তু আমাদের জানান দেয়– বিভিন্নতা, বৈচিত্র্য সর্বত্র! ধরা যাক, রহিম সাহেব শার্ট-প্যান্ট পরিধান করে অফিসে যান, রাজেন্দ্র বাবুও তো তাই পরিধান করেই অফিস করছেন! তাই বলে তাদের দু’জনের চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, চালচলন, জীবনবোধের মাঝে কোনো তফাত নেই? কেবল বাহ্যিক মিলই তাঁদের আত্মিক মিলের কারণ হয়ে দাঁড়াবে? তাঁরা দু’জনেই যাঁর যাঁর অফিসে যে যে কাজ করার কথা, তা করে বাজার করে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে বসে রাতের খাবার খেয়ে নেন। সেখানেও কোনো পার্থক্য নেই। যেহেতু তাঁদের দৈন্দন্দিন জীবনযাপনের সংস্কৃতি মিলে যাচ্ছে; তাহলে কি বলা যায়– হয় রহিম রাজেন্দ্রকে অনুকরণ করছেন, কিংবা রাজেন্দ্র করছেন রহিমকে? রহিম ও রাজেন্দ্র– তাঁদের দু’জনকেই প্রকৃতি সমানভাবে বিচার করে। এমন নয়, একজন সূর্যের আলো কম পেয়ে থাকেন অন্যজনের চেয়ে কিংবা একটি গাছের নিচে দাঁড়ালে গাছটি দু’জনের মাঝে একজনকে বেশি ছায়া দিয়ে থাকে। তেমনটিও তো নয়! তাহলে ধর্মের দোহাই দিয়ে তাঁদের এই যে প্রতিদিনের জীবনযাপনের সংস্কৃতি, সেখানে প্রতিনিয়ত ধর্মের পরিচয় তুলে ধরা, ধর্ম নিয়ে প্রতিযোগিতা করা, তর্ক করা, ধর্মভিত্তিক পরিচিতি নির্মাণের রাজনীতি করার কী মানে দাঁড়ায়? ঠিক একইভাবে বলা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রায় যা যা আনুষ্ঠানিকতা হয়, সেসব হিন্দু ধর্মের পূজা অর্চনার বিষয়– এমন মিল ধরে আমরা তর্ক কেমন করে করি? এক ধর্মের সঙ্গে আরেক ধর্মের মিল থাকতেই পারে। যেমনটি থাকতে পারে এক সংস্কৃতির সঙ্গে আরেক সংস্কৃতির; থাকতে পারে অমিলও। তাই বলে একটি অন্যটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা কীভাবে বলা যায়? নৃবিজ্ঞানে ‘একালচারেশন’ বলে একটা ধারণা আছে, যেখানে বলা হয়, সংস্কৃতি প্রবহমান। কালের পরিক্রমায় এক সংস্কৃতি আরেক সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে কিছুটা গ্রহণ করে, কিছুটা বর্জন করে। একাধিক সংস্কৃতির এই মেলামেশা, গ্রহণ-বর্জনের মধ্য দিয়েই সংস্কৃতি তার রূপ বদলায় অল্প অল্প করে। হতে থাকে সংস্কৃতির বিবর্তন। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাশীল সংস্কৃতি একালচারেশনের মাধ্যমে নিজের সংস্কৃতির উপাদানকে অন্যদের মাঝে ঢোকানোর চেষ্টা করে, যেমন উপনিবেশকালে আমাদের মাঝে ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি ঢোকানো হয়েছে, যার লিগ্যাসি এখনও আমরা বহন করে চলছি। এখন ভারত-পাকিস্তান ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত দুটি রাষ্ট্র কি ঔপনিবেশিক সংস্কৃতিকে ধারণ করছে না? ধর্ম তো সংস্কৃতিরই অংশ! সংস্কৃতি কখনও চিরতরে হারিয়ে যায় না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন ধর্মে বা দেশে ফিরে ফিরে আসে। আবার যায়, আবার আসে। আমরা যদি লক্ষ্য করি, এখনকার যে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, এই ব্যবস্থায় যে আইনগুলো হয়েছে, এগুলো কিন্তু একেবারেই আদি যুগ থেকে ছিল; তেমনটি নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একালচারেশনের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতির বিবর্তন বা পরিবর্তন আসে। সেই সঙ্গে আসে আইনগুলোরও পরিবর্তন। কিছুটা ক্ষমতার জোরে চাপিয়ে দেওয়া, কিছুটা নিজেদের প্রয়োজনে। আবার কিছুটা তথাকথিত আধুনিকতার কথা বলে পশ্চিমা সভ্যতার মধ্যে আমাদের জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বা আমরা ঢুকেছি সময়ের পরিক্রমায়। প্রক্রিয়া যেটাই হোক; শেষ কথা তো সেটাই– ধর্ম ও সংস্কৃতি দুটোই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়; যেতে হয়। তাই দেশ, ধর্ম, সমাজ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবাই সবার পরিপূরক। কিন্তু তাদের মিলিয়ে এক ও অভিন্ন করে দেখার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি সংঘর্ষেরও অবকাশ নেই। এই যাওয়া-আসার মাঝে সংস্কৃতি নতুন নতুন করে আবিষ্কারও হয়। আবার যে কোনো ধর্মেরই কিছু সংস্কৃতি থাকে, যা যুগের সঙ্গে, সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে। এই পরিবর্তিত রূপে যেমন থাকে ধর্মের সংস্কৃতি, তেমনি থাকে সংস্কৃতির ধর্ম! অতএব, এই দুইয়ের মাঝে সংষর্ষ নেই। যা আছে তা হলো, পারস্পরিক একালচারেশন। একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে নতুনভাবে নিজেকে আবিষ্কার করার আকুলতা। এই আকুলতার মাঝে নতুনের আহ্বান থাকে। থাকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে পুরাতনকে বিদায় জানানোর আকুতি। এই আকুতির সঙ্গে আমাদের বর্ষবরণের আকুতির সুর যেন মিলে গেছে। তাহলে বর্ষবরণের সংস্কৃতির সঙ্গে ব্যক্তির মতাদর্শ, শ্রেণি, বর্ণ কিংবা ধর্মের সংঘর্ষ কোথায় থাকল– যেখানে পরিবর্তনের প্রবণতা বিদ্যমান, নতুনের হাতছানি অনবরত ও অবধারিত, যেখানে সত্য ও বাস্তবতার মুখোমুখি আমাদের সবার গন্তব্য?
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Neutral
Dhaka Tribune
পাকিস্তানে হিন্দু বিয়ে আইন পাস
হিন্দু ধর্ম
পাকিস্তানের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য নতুন বছরের উপহার হিসেবে 'হিন্দু ম্যারেজ বিল' পাস করেছে দেশটি। ফলে সেখানকার হিন্দু নাগরিকদের বিয়ের সময় আদালতে রেজিস্ট্রি করতে হবে এবং বিচ্ছেদের ক্ষেত্রেও তারা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। এই বিলের ফলে পাকিস্তানের তালাকপ্রাপ্ত হিন্দুরা পুনরায় বিয়েও করতে পারবেন। এই বিলের ফলে বিয়ের প্রমাণ হিসেবে দেশটির হিন্দুরা ‘শাদিপারাত’ অর্থাৎ ‘নিকাহনামা’র মতো দলিল হাতে পাবেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় দেশে দেশে নিন্দা-বিক্ষোভ
ইসলাম ধর্ম
সউদী আরব, ইরান ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র জরুরি বৈঠক ডেকেছে। তুরস্ক, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, লেবানন, মরক্কো, সিরিয়া ও ইরাকসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরকার সুইডিশ সরকারের মদদে পবিত্র কুরআন অবমাননার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এইসব দেশ সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে অথবা সুইডেন থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ডেকে এনেছে প্রতিবাদ হিসেবে। দাবি উঠেছে সুইডিশ পণ্য বর্জনের। এদিকে, সুইডেনে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত সুইডিশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু মুসলিম দেশ। গত বুধবার স্টকহোম শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এক ব্যক্তি। তার নাম সালওয়ান মোমিকা। তুরস্ক, ইরাক, ইরান, মিশর ও সউদী আরবসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ইরাকের একজন ক্ষমতাধর ধর্মীয় নেতা মোকতাদা আল-সদর এর প্রতিবাদ জানানোর ডাক দিলে বৃহস্পতিবার রাজধানী বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের সামনে একদল লোক জড়ো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে বেশ কিছু মানুষকে দূতাবাস ভবনটির প্রাঙ্গণে হাঁটতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে থাকা এএফপির একজন ফটোসাংবাদিক বলেছেন, কিছু লোক দূতাবাস ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে ও প্রায় ১৫ মিনিট সেখানে অবস্থান করে। পরে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী আসার পর তারা সেখান থেকে চলে যায়। এদিকে সুইডেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, মোমিকাকে দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনের আওতায় মসজিদের বাইরে প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটার পর পুলিশ বলছে, তারা এখন ঘৃণা উস্কে দেওয়ার দায়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে। তুরস্ক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের ইসলামবিরোধী কর্মকা- অগ্রহণযোগ্য। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, উদ্ধত পশ্চিমাদের আমরা একসময় শিক্ষা দেবো যে মুসলিমদের অপমান করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। মরক্কো ও জর্ডান এ ঘটনার প্রতিবাদে স্টকহোম থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরে আসতে বলেছে। মরক্কোর রাবাতে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলবও করা হয়। মিশর বলেছে, যখন মুসলিমরা ঈদুল আজহা পালন করছে তখন এই লজ্জাজনক ঘটনা বিশেষভাবে উস্কানিমূলক। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন বলেছেন এ ঘটনা ‘আইনগতভাবে বৈধ হলেও অনুচিত’ ছিল। সুইডেনে কুরআন পোড়ানোর পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে এর আগে দাঙ্গা হয়েছে। ন্যাটো সদস্য তুরস্ক এর আগে সুইডেনকে এ জোটের সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেনি ও এর একটি কারণ হিসেবে এ ধরনের ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে। রাশিয়ার সংসদ দ্যুমা সুইডিশ সরকারের মদদে পবিত্র কুরআন অবমাননার নিন্দা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, রাশিয়ায় পবিত্র কুরআন অবমাননা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান আহমাদ আততাইয়্যেব সুইডিশ পন্য বর্জনের পদক্ষেপ নিতে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
বাংলাদেশ প্রতিদিন
রমজানের চাঁদ দেখতে সন্ধ্যায় সভা
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র রমজান মাসের তারিখ নির্ধারণের লক্ষ্যে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার (১১ মার্চ)। হিজরি ১৪৪৫ সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় (বাদ মাগরিব) এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠেয় সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Neutral
দৈনিক ইনকিলাব
লজ্জা মুসলিম চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
ইসলাম ধর্ম
লজ্জা বা হায়া শব্দটি বেহায়াপনা ও অশ্ল­ীলতার বিপরীত অর্থে ব্যবহৃত হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক ধর্মেরই কিছু না কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। লজ্জাশীলতা হলো ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্য।’ লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। লজ্জাশীলতার মাধ্যমে একজন মুসলমানের ঈমানের পরিমাপ করা যায়। যিনি অবলীলাত্রমে ও নির্দ্বিধায় লজ্জাকর কাজ করে যায় এবং নিজের বেহায়াপনা বা অশ্ল­ীলতার জন্য এতটুকুন অনুতপ্ত হয় না, বুঝতে হবে তার ঈমানে বড় ধরনের কোন ত্রুটি রয়েছে। অপর দিকে এমন ব্যক্তি রয়েছেন যার দ্ধারা কোন লজ্জাকর কাজ সংঘটিত হলে, সাথে সাথে ভুলের জন্য আড়ষ্ট হয়ে মুখ লুকায় এবং বিবেকের কষাঘাতে জর্জড়িত হয়। তখন বুঝতে হবে তাঁর ঈমান জীবিত আছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। আর ঈমানের স্থান বেহেস্ত। অপরদিকে অকথ্য গালিগালাজ জুলুমের অন্তর্ভুক্ত। আর জুলুমের স্থান দোযখ।’ (আহমাদ)। লজ্জা মু’মিনের ভূষণ। এটি মু’মিনের চারিত্রিক সৌন্দর্যকে সুশোভিত করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) লাজুক প্রকৃতির নম্র-ভদ্র, সহনশীল ও কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। হযরত আবু সাইদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) কুমারী মেয়েদের চেয়েও অধিকতর লজ্জাশীল ছিলেন। তিনি যখনই কোন লজ্জাকর কাজের সম্মুখীন হতেন, তাঁর মুখ রক্তিমবর্ণ ধারণ করতো। রাসুল (সা.) বলেছেন লজ্জা ও ঈমান অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। যখন একটির অভাব ঘটে, তখন অন্যটিও বিলুপ্তির পথ ধরে। লজ্জাহীন ব্যক্তির চরিত্র হয় অশ্ল­ীল। সে সমাজের এমন হীন কাজ নেই যা সে করতে পারে না। এ ধরনের ব্যক্তি সাধারণত ফাসেক, পাপিষ্ঠ, কদাচারী, দৃুর্বৃত্ত ও দুর্নীতিপরায়ণ হয়। লজ্জাহীনতা তার আচরণকে করে উদ্যত, স্বভাব হয়ে উঠে রুক্ষ, মেজাজের ভারসাম্য হারিয়ে সামাজিক জীবন যাপনে বেপরোয়া, উন্মাদ, পরশ্রীকাতর, পরধনে লোভী, ঠাউট-ভাটপার ও দুর্নীতিবাজ এক কথায় উন্মাদ ব্যক্তিতে পরিণত হয়। এদের আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো যে, এরা সাধারণত মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে। মিথ্যাই এদের প্রধান পূঁজি হিসাবে কাজ করে। এই রকম একজনমাত্র নির্লজ্জ ব্যক্তি একটি সমাজ, একটি রােষ্ট্রর জন্য অশান্তি ও বিপর্যয়ের জন্য যতেষ্ট কারন হতে পারে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিন্মোক্ত হাদীস থেকে লজ্জাহীন ব্যক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাই। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোন মানুষের অধঃপতন ঘটে, প্রথমে তার হৃদয় হতে লজ্জার বিচ্যূতি ঘটে। পরে সে নিকৃষ্ট কাজের অনুগামী হয়। যখন কোন পাপীষ্ট আল্লাহর রোষানলে নিপতিত হয় তখন তার হৃদয় হতে লজ্জা উঠিয়ে নেন। আর যখন লজ্জা বিচ্যূত হলো, তখন হিংসুক হয়ে উঠে এবং হিংসার আগুণে জ্বলতে থাকে। শত্রুতা করতে দেখবে অথবা শত্রু দ্ধারা আক্রান্ত দেখবে। যখন উল্লেখিত দুই অবস্থায় কাউকেও দেখবে, বুঝবে তার থেকে আমানত উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এবং যখন সে আমানত বিচ্যূত হলো, তখন তাকে আমানত খেয়ানতকারী অথবা আমানত বঞ্চিত দেখতে পাবে। বস্তুতঃ যখন তাকে এরূপ অবস্থায় দেখবে, মনে করবে তার থেকে স্নেহ-মমতা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আর যখন সে দয়া বিচ্যুত হলো, তোমরা তাকে বিতাড়িত, অভিশপ্তরূপে দেখতে পাবে। যখন তাকে এমতাবস্থায় দেখবে, মনে করোও তার গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলা হয়েছে। (অর্থাৎ ইসলাম বিচ্যুত হলো)Ñইবনে মাজা। লজ্জাশীলতা কোন দূর্বলতার নাম নহে। বরং লজ্জাশীল ব্যক্তি একজন দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী। লজ্জা হলো, তার চরিত্রের মার্জিত রুচীশীল পোষাক সদৃশ। রাসুল (সা.) বলেছেন : নির্লজ্জতা যাকে আকৃষ্ট করে সে চিরকলুষ হয়। অপরপক্ষে লজ্জা যাকে পরশ লাগায় সে চিরসুন্দর হয়ে উঠে। লজ্জাশীল ব্যক্তি মানসম্মানকে এতটাই অগ্রাধিকার দেয় যে. প্রয়োজনে নিজের প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জন দিবে কিন্তু আত্মমর্যাদার অবমাননা হতে দেবে না। লজ্জা ও ভয় পাশাপাশি অবস্থান করে। প্রথমতঃ লজ্জাশীল ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে। সে এ বিশ্বাস পোষণ করে যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার প্রতিটি কথা ও কাজ প্রত্যক্ষ করছেন। এ ধরনের ব্যক্তি সর্বদা আল্লাহকে হাজির-নাজির জানে বলেই কোন লজ্জাকর কাজ তার দ্ধারা সংঘটিত হয় না। দ্বিতীয়ত, নিজের ব্যক্তিত্ব, মর্যাদা ক্ষুণœ হওয়ার ভয় করে। মানুষের দৃষ্টিতে সে নিকৃষ্ট হেয় প্রতিপন্ন হবে এ ভয়ে যে কোন অপকর্মে লিপ্ত হয় না। এটি কোন দূর্বল চিত্তের লক্ষণ নয়। বরং এ ধরনের ব্যক্তিরাই সমাজের দৃঢ়চিত্ত ও বিরোচিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়। যার লজ্জা নাই তার মধ্যে আল্ল­াহর ভয় নাই। যার মধ্যে আল্লাহর ভয় নাই তার মধ্যে ঈমান কি করে থাকে। কারণ লজ্জাহীন ব্যক্তি আল্লাহর কোন হুকুমের পরোয়া করে না। সমাজের সকল কু-কাজের একচ্ছত্র নায়ক বনে যায়। এ ধরনের লোকেরা অশ্ল­ীল ও নিন্দনীয় কাজ করে অনুতপ্ত হওয়ার পরিবর্তে তৃপ্তির নিঃস্বাস ছাড়ে। লক্ষ-কোটি জনতার ধিক্কারকে সে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়। সমাজ ও সভ্যতার সকল নিয়ম-কানুনকে সে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। সামাজিক বিপর্যয় ও অসংখ্য বণী আদমের দূর্ভোগে সে পশুত্বের অট্রহাসি ছড়ায়। দুনিয়ার সকল কিছুই তার জন্য অতি সামান্যই মামুলী ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবী নামক এ গ্রহটি সকল জীবের জন্য বসবাসের অনোপযোগী হযে পড়ে। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেন, জলে-স্থলে ফাসাদ ছড়িয়ে পড়েছে। এটি পৃথিবীর নির্লজ্জ মানুষদের হাতের কামাই। নির্লজ্জরা সাধারণত হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়। সত্য থেকে অনেক দুরে অবস্থান করায় সত্যের চিন্তা ও উপলব্ধি করতে পারে না। অসত্য, অন্যায় ও অকৃতজ্ঞতার ওপর এদের জীবনের ভীত রচিত হয়। পৃথিবীর ইতিহাস স্বাক্ষী এ ধরনের ব্যক্তিরা ইতিহাসে কালো পাতায় শুধু স্থান পেয়েছে। কিন্তু জীবিত নির্লজ্জরা এ সমস্ত ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
কালের কন্ঠ
দাসী থেকে রাজ উপদেষ্টা হন যে গণিতবিদ
ইসলাম ধর্ম
লুবনা কুরতুবিয়্যা ছিলেন একজন স্প্যানিশ মুসলিম নারী গণিতবিদ ও কবি। খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি তাঁর সাহিত্যপ্রতিভা ও বিজ্ঞানে বিশেষ দক্ষতার জন্য খ্যাতি লাভ করেন। লুবনার জন্ম হয়েছিল একজন দাসী হিসেবে এবং তিনি স্পেনের বিখ্যাত রাজপ্রাসাদ ‘মাদিনাত আল জাহরা’তে বেড়ে ওঠেন। তিনি স্পেনের উমাইয়া খলিফা দ্বিতীয় হাকামের পাঠাগারের একজন লিপিকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।পরবর্তী সময়ে নিজের মেধা, প্রতিভা, জ্ঞানগত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার দরুন রাজ-উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন।লুবনা খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমানের আমলে মাদিনাত আল জাহরা প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল একজন দাসী হিসেবে। কিন্তু জন্মের পরপরই আরো অনেকের মতো তিনি মুক্তি পান।তবে গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এইচ এম পুয়েত্রা ভিলচেজের দাবি লুবনা ছিলেন খলিফা আবদুর রহমানের কন্যা। একজন মুক্তিপ্রাপ্ত দাসীর গর্ভে তাঁর জন্ম হয়। রাজকীয় হেরেমেই তিনি বেড়ে ওঠেন। রাজকীয় ব্যবস্থাপনায় লুবনার শিক্ষাদীক্ষা সম্পন্ন হয়, যা তাঁকে পরবর্তী সময়ে একজন গণিতবিদ, ভাষাবিদ, কবি ও রাজ উপদেষ্টা হতে সাহায্য করেছিল।অবশ্য শুধু লুবনা নয়, বরং ইসলামী শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে যুগে যুগে মুসলিম শাসকরা বহুসংখ্যক দাস মুক্ত করেছেন, তাদের শিক্ষিত করে উপযুক্ত পদে নিযুক্ত করেছেন।লুবনার কর্মজীবন শুরু হয় দ্বিতীয় আল হাকামের পাঠাগারের একজন লিপিকার হিসেবে। খলিফা দ্বিতীয় আল হাকামের সময় ১৭০ জন এমন নারী সম্পর্কে জানা যায়, যাঁরা শহর ও শহরতলিতে মূল্যবান পাণ্ডুলিপির অনুলিপি তৈরি করতেন। পরবর্তী সময়ে খলিফা তাঁকে একজন আবাসিক সহকারী ও পণ্ডিত হিসেবে নিয়োগ দেন। কূটনৈতিক বার্তা প্রেরণ এবং রাজকীয় ফরমান লেখার ক্ষেত্রে খলিফা লুবনার প্রতি আস্থাশীল ছিলেন।আরবি, স্প্যানিশের পাশাপাশি তিনি গ্রিক, হিব্রু ও লাতিন ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।লুবনার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ছিল রাজকীয় পাঠাগারের তত্ত্বাবধান করা। আর লিপিকার হিসেবে কাজটি তাঁর জন্য সহজ ছিল। পাঠাগারের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ বই পাঠের সুযোগ পান এবং সেগুলোতে মন্তব্য ও টীকা লেখেন। যার মধ্যে আর্কিমিডিস ও ইউক্লিডও ছিল। হাদসাই বিন শাপরুতের সঙ্গে তিনি মাদিনাত আল জাহরার রাজকীয় পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং এর সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এই পাঠাগারে কমপক্ষে চার লাখ বই ছিল। পাঠাগারের জন্য প্রাচীন পাণ্ডুলিপির সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। এ সময় তিনি কায়রো, দামেস্ক, বাগদাদসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শহর ভ্রমণ করেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
Dhaka Tribune
বিজ্ঞানের শিক্ষক ধর্ম অবমাননা করেননি, আটকে রেখে আপনারা করছেন
অন্যান্য
বিজ্ঞানের শিক্ষককে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হেনস্তা করা হয়েছে পর্যন্ত জেনে বালিতে মুখ গুঁজে দিয়েছিলাম। যখন জানতে পারলাম ওই শিক্ষক গ্রেপ্তার আছেন তখন বুঝলাম ক্রমশ তপ্ত বালুতে ডুবে যাচ্ছে সারা দেশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে প্রতিবাদ করছেন, অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছেন। আমি ভাবছি বিলম্ব, তাই তো বিলম্ব মানে দেরি! আমি আরও ভাবছি মাত্র ১৫/১৬ বছরের শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করছেন কারণ তিনি মেনে নিতে রাজি হননি যে, ধর্মই সব বিজ্ঞানের উৎস! তাই তিনি ধর্মের অবমাননা করেছেন! বিলম্ব মানে দেরি, তাই না? ইদানিং দেখতে পাই, ইদানিং, না কি আগেও ছিল, আমি ভালো জানি না। আমি দেখতে পাই ইদানিং যে, ধর্মের খুব দায় পড়েছে বৈজ্ঞানিক হওয়ার। মানে, ধর্মের অনুশাসনগুলো কত আধুনিক আর কত বেশি বিজ্ঞানের লিটমাস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়, তা দেখানোর জন্য বিশ্বাসীরা খুব ব্যস্ত। বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার ধর্মগ্রন্থে আছে এ কথা প্রমাণ করতে ধার্মিকেরা মরিয়া। বৈজ্ঞানিক হওয়ার জন্য ধর্মের এই ব্যাকুলতা আমরা পেলাম কোথায়? নাকি আমার ধর্ম ছাড়া আর বাকি সব বিশ্বাস বা আচরণ যে অবৈজ্ঞানিক আর অযৌক্তিক, তা বোঝানো এখন আমাদের অবশ্য কর্তব্য। আরেকজনকে ছোট করলেই আমরা বড় হই শুধু! যতটুকু বুঝি বিজ্ঞান একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। তাই তা কখনো বদলায়, প্রায়ই নানা দিকে মোড় নেয়, হামেশাই নতুন সময় তার সংস্কার করে। সংস্করণ সম্ভব নয় বলে ধর্মগ্রন্থের পক্ষে বৈজ্ঞানিক হওয়ার ঝুঁকি সব সময় রয়ে যায়- বিজ্ঞানে আজকের সমাধান আগামীকাল এমনকি হাসির খোরাকও হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে আর পৃথিবী সমতল, এই ছিল এক সময়ের বিজ্ঞান! আবার মহাকাশ, মহাসাগর বা চিকিৎসাবিজ্ঞান/জীবাণুর মতো অসংখ্য বিষয় নিয়ে মানুষের জ্ঞান বাড়তে পারে, খুব কাছাকাছি সময়ই পাল্টে যেতে পারে বা সংশোধিত হতে পারে। তাই আজকের বিজ্ঞান মাথায় রেখে যারা পবিত্র গ্রন্থের মহত্ত্বের আলাপ দিচ্ছেন তারা কি একটু বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেলছেন না? একজন মহাজন বললেন, ধর্মের আচরণে বা বইয়ে বিজ্ঞানের অনুসন্ধান আগেও ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা এমনকি বিজ্ঞানীরাও দেশে বিদেশে যার যার ধর্মের বিশ্বাস-আচরণ-নীতিমালার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরেছেন। আমিও মানি তারা এরকম করেছেন। গুগল-ইউটিউবের এই যুগে একটু পেছনে গিয়ে তাদের দাবি আর শ্রেষ্ঠত্বের পক্ষে যুক্তি এখন দেখলে তাদের জন্য একটু মায়াই হতে পারে। যেসব বিশ্বাসের, বয়ানের বা ডিভাইন গাইডলাইনের অংশগুলো তারা বৈজ্ঞানিক বলে দৃঢ় প্রমাণ হাজির করেছিলেন এখন বিজ্ঞান সেগুলোর বেশিরভাগই সংশোধন করে নিয়েছে। তো এখন? সৃজনশীল হয়ে অনুবাদের দোহাই দেওয়া ছাড়া আর উপায় কী? বিশ্বাসের মুরুব্বি ধর্মের গুরুদের প্রতি আমার আহ্বান, বিশ্বাসই আসল, সেই শিক্ষাই দিন। কালের পাল্লায় সবকিছু না মাপাই বোধহয় ভালো। সবশেষে বলি, বিজ্ঞানের শিক্ষক ধর্মকে অবমাননা করেননি। বিজ্ঞানের সবকিছু ধর্ম থেকে আসেনি বললে ধর্মের অবমাননা হয় না। ধর্ম বিশ্বাসে ভর দিয়ে চলে তাই তা বিজ্ঞান-নির্ভর নয়। আপনারা যারা তাকে হেনস্তা করলেন, আটকে রাখছেন, তারাই ধর্মের অবমাননা করছেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
দৈনিক ইনকিলাব
রমজান : পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভালোবাসার মাস
ইসলাম ধর্ম
মাহে রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। সহমর্মিতার মাস। প্রতি বছরই সংযম ও নেক আমলের বার্তা নিয়ে এ মাসের আগমন ঘটে। এ মাসের প্রতিটি দিনই সাহরি, ইফতার, তারাবিহ, নফল নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির-আযকার ও দান-খয়রাতের মতো বহুবিধ ইবাদতের সমাহার। আর তাই এ মাসে মুসলমানদের দৈনন্দিন রুটিন, আমলের প্রস্তুতি, আমলের উপলক্ষ ও নেক কাজের আগ্রহ বরাবরই একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। পাশাপাশি এ মাসের অনিবার্য বিষয় যেহেতু, শারীরিক অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ, যা রোজার দীর্ঘ উপবাসের কারণে হয়ে থাকেÑ তাই এ সময় অন্যের একটু সহায়তা ও সহমর্মিতা খানিকটা হলে স্বস্তি এনে দিতে পারে রোজাদারের মনে। সুতরাং বরকতপূর্ণ এই মাহে রমজানে রোজা ও অন্যান্য ইবাদতে বরকত লাভের একটি অনিবার্য অনুষঙ্গ হচ্ছে, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা। তাছাড়া পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একটি স্বতন্ত্র নেক আমলও। বলা বাহুল্য, মাহে রমজানে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অন্যান্য ইবাদতের মতোই বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। নেককাজ ও তাকওয়া অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যের সহায়তা ও সহযোগিতা করা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করবে। গুনাহ ও জুুলুমের কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করবে না। আল্লাহকে ভয় করে চলো। নিশ্চয়ই আল্লাহর শাস্তি অতি কঠিন।’ (সূরা মায়েদা : ২)। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের পার্থিব কষ্টসমূহের একটি দূর করে দেয়, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীর অভাবের কষ্ট লাঘব করে, আল্লাহ তাআলা তার দুনিয়া ও আখেরাতের অভাবের কষ্ট লাঘব করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আল্লাহ তাআলা বান্দার সহায়তায় থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সহায়তায় থাকে।’ (সহীহ মুসলিম : হাদিস ৩৮)। আরেক হাদিসে এসেছেÑ ‘তোমাদের মধ্যে যে তার ভাইয়ের উপকার করার সামর্থ্য রাখে, সে যেন তা করে।’ (সহীহ মুসলিম : হাদিস ৬১)। ‘শুআবুল ঈমান’ ও ‘সহীহ ইবনে খুযাইমা’র এক রেওয়ায়েতে রমজান মাস সম্পর্কে এসেছেÑ (রমজান মাস) সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মাস। (শুআবুল ঈমান : হাদিস ৩৩৩৬; সহীহ ইবনে খুযাইমা : হাদিস ১৮৮৭)। কোরআন ও সুন্নাহর বাণীগুলো এ বিষয়ে সুস্পষ্ট যে, নেক কাজে মুসলিম ভাইয়ের সহযোগিতা করা অনেক বড় নেক আমল। আল্লাহ তাআলা নিজেই এর আদেশ করেছেন এবং আল্লাহ তাআলা সহায়তাকারীর সাহায্যে থাকার সুসংবাদ দিয়েছেন। আর তা যদি হয় মাহে রমজানে! রোজাদারের সহযোগিতা করার কারণে! তাহলে তো ‘নূরুন আলা নূর’। বিশেষত পৃথিবীর এক সঙ্কটকালে রমজান আমাদের মাঝে এসেছে। যেখানে সহযোগিতা ও সহমর্মিতাই পারে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে। নেক কাজে মুসলিম ভাইয়ের সহযোগিতা, বিশেষভাবে রোজাদারের সহযোগিতা একটি বিশাল ও বিস্তৃত অধ্যায়। এখানে শুধু রোজাদারের সহযোগিতার কয়েকটি আঙ্গিক ও দিক সংক্ষিপ্তাকারে পেশ করা হলো। আল্লাহ তাআলা আমাদের এগুলোর ওপর আমল করে রমজানের বরকতকে বহুগুণে বাড়িয়ে নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
ইত্তেফাক
কলাবাগানে পূজার অনুমতি না দেওয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ
হিন্দু ধর্ম
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডিতে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে দুর্গাপূজা উদ্যাপনের অনুমতি না দেওয়ায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও মাঠের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করেছে সম্মিলিত হিন্দু সংগঠন।শনিবার (৯ অক্টোবর) বিকালে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংগঠনের আহ্বায়ক কপিল কৃষ্ণ মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সুমন কুমার রায়ের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে। আরো বক্তব্য রাখেন অখিল মন্ডল, সাজেন মিশ্র, সুজন ঘোষ ও সৈকত কুন্ডসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার প্রায় ৬০ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাস করেন। এ জন্য কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠেই ২০০৭ সাল থেকে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন করা হচ্ছে। অন্যান্য বারের মতো গত ২৬ আগস্ট পূজা উদ্যাপনের জন্য আমরা সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর লিখিত আবেদন করি। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া পাইনি। যা স্বাধীন দেশে ধর্ম পালনে বাধা বলে মনে করি। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র থাকার পরও সিটি করপোরেশনের আচরণ আমাদের ব্যথিত করেছে।’ আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তারা আরো বলেন, সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করলেও সিটি করপোরেশনের আচরণ সাম্প্রদায়িক। আমরা মেয়রের এমন আচরণের প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই আচরণের কারণে ২ কোটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আজ অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা উদ্বিগ্ন এ বিষয় নিয়ে। আজকের মধ্যে আমরা অনুমতি প্রদান করে পূজা উদ্যাপন করার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বক্তব্য: দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) গত শুক্রবার রাতে এক লিখিত বক্তব্যে পূজা উদ্যাপনের অনুমতি প্রদান না করার বিষয়ে জানায়। গতকাল শনিবারও তারা অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি। সিটি করপোরেশন জানায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র থাকার পরেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অসহযোগিতার কারণে পূজা উদ্যাপন করতে পারছেন না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অভিযোগ করেছেন। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পূজা উদ্যাপন কমিটি কর্তৃক পূজা উদ্যাপনকালে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠ ও মাঠের স্থাপনাসমূহের কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি/বিনষ্ট না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, এমন শর্তসাপেক্ষে পূজা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করার বিষয়টি তারা উল্লেখ করেননি। এছাড়া মন্ত্রণালয় প্রদত্ত ‘শর্তসাপেক্ষ অনুমতি প্রদান’ করার জন্য ডিএসসিসি’র কাছে যে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে, এতে পূজা আয়োজনের ফলে কলাবাগান মাঠ কিংবা প্রকল্প এলাকায় কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে তার যথার্থ ক্ষতিপূরণ/জরিমানা দেওয়া হবে এমন নিশ্চয়তা প্রদানপূর্বক কমিটির পক্ষ হতে এখন পর্যন্ত ডিএসসিসির কাছে কোনো আবেদনও করা হয়নি। সিটি করপোরেশন জানায়, কলাবাগান মাঠ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় কলাবাগান মাঠের উন্নয়ন, মাঠ হতে ধানমন্ডি-৩২ এবং মাঠ হতে ধানমন্ডি হ্রদের পানসি রেস্তোরাঁ পর্যন্ত পথচারীদের হাঁটার পথ (ফুটপাত), মাঠের চারপাশে নর্দমা (ড্রেনেজ) ব্যবস্থা ও হ্রদের পাড়ে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) নির্মাণ, মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য সুবিধা সংবলিত অনুষঙ্গ সৃষ্টি এবং অনুশীলনের জন্য জাল (নেট) স্থাপন ইত্যাদি বহুবিধ কর্মযজ্ঞ চলমান। ২০১৯ সালে কলাবাগান মাঠে বিশেষ বিবেচনায় মাঠের ক্ষয়ক্ষতি না করা এবং ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করার শর্তে দুর্গাপূজার অনুমতি দেওয়া হয়। সামগ্রিকভাবে সে সময় প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে মর্মে মুচলেকা হলেও বস্তুত কমিটি কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রদান করেনি।
ধর্মীয় উৎসব
Negative
ভোরের কাগজ
ধর্মের ব্যবহার কি ক্ষমতার জন্য
অন্যান্য
রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারের কারণে দারিদ্র্য কমছে না বরং দরিদ্র মানুষকে শোষণ করা হচ্ছে ধর্মীয় বেড়াজালে আবদ্ধ করে। রাষ্ট্র শাসকরা ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের ভাগ্য পাল্টাচ্ছেন আর কৌশলে জনগণকে রাখছেন ধর্মীয় চেতনায় মাতোয়ারা। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্র শাসকদের বেঁধে দেয়া ধর্মীয় চেতনার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারছে না মনস্তাত্ত্বিক কারণে। ধর্মীয় মোড়কে শোষণটা বন্ধ হয়নি। সারা পৃথিবীর রাজনীতিতে ধর্ম এখন বড় ফ্যাক্টর। দুনিয়াজুড়ে রাজনীতির প্রচ্ছদ যে ধর্মীয় মোড়কে আচ্ছাদন করা হচ্ছে তাতে কি ধর্মের উৎকর্ষতা সাধিত হবে, নাকি ধর্মকে রাজনীতির রণকৌশলের বর্ম বানিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পরিষ্কার করাটাই মুখ্য হয়ে যাবে? আর এই কারণে ধর্মীয় মূল আর্দশটাই বিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার যে, ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়াটাই এখন মুখ্য বিষয়। ধর্মীয় বিষয়গুলো অনুশীলন এখানে অনেকটা গৌণ। ধর্মের ব্যবহার শুধু রাজনীতিবিদরাই করে ক্ষান্ত নন, পুঁজিবাদকে টিকিয়ে রাখতে ব্যবসায়ীরাও ধর্মকে পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবহার করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই রাজনীতির মতো ধর্মের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। ধর্মের ব্যবহারের মাধ্যমে অনুশীলন করা রাজনীতি সমাজে কোনো প্রকার শান্তি আনতে পারে না এটা সবারই জানা, কারণ প্রত্যেক ধর্মানুসারীরাই নিজের ধর্মটাকে বড় মনে করে। এই মনে করাতেই সৃষ্টি হয় সংঘাতের। আর এ ধরনের রাজনীতির কারণে সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ভারতের সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে বড় অনুঘটকের কাজ করেছে ধর্ম। জুশনে মোহাম্মাদ নামে ইসলাম ধর্মের একটি জঙ্গি সংগঠন এবারের ভারতের নির্বাচনে বিজয়ী মোদির পালে হাওয়া জুগিয়েছে। সংগঠনটির নেতা আজহার মাসুদ নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এই জঙ্গি ভারত ও পাকিস্তানের চির বৈরী সম্পর্কের আগুনে ঘি ঢালেন। জঙ্গি নেতার ঘি ঢালায় পাকিস্তান-ভারত ঘৃতাগ্নিতে পুড়তে থাকে, যদিও এই অনল তেমন একটা ছড়ায়নি, স্বল্প সময়ের মধ্যেই থেমে যায়। ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত থেমে যাওয়ার পর জঙ্গি নেতা আজহার মাসুদ আশ্রয় নেন চীনে। ভারত রাষ্ট্র সংঘের কাছে দাবি করে চীন যেন আজহার মাসুদকে ভারতে ফেরত দেয়। চীন মাসুদকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। গণচীন সমাজতান্ত্রিক দেশ, দেশটির ক্ষমতায় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংগঠন। পৃথিবীর কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে এত সংখ্যক সদস্য নেই যত সংখ্যক সদস্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টিতে রয়েছেন। এমনকি পৃথিবীর অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা বেশি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টিতে একটা নিয়ম আছে তা হলো কমিউনিস্ট পার্টির কোনো সদস্য প্রকাশ্যে কোনো ধর্মানুসারী হতে পারবেন না। অর্থাৎ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কোনো সদস্য কোনো ধর্মেরই অনুসারী নন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ধর্মনিরপেক্ষ একটি রাজনৈতিক দলের শাসনাধীন চীনে ধর্মীয় জঙ্গি নেতা আজহার মাসুদ কী করে নিরাপদে ঠাঁই পান? বাস্তব প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে দেখা যায় চীন এই অঞ্চলের ভৌগোলিক রাজনীতিতে স্বীয় আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখতে পাকিস্তানের মতো একটি উগ্র মৌলবাদী রাষ্ট্রকে সহায়তা করে। বর্তমানে এশিয়া অঞ্চলে শিল্প ক্ষেত্রে চীনের পাশাপশি ভারত অগ্রসরমান একটি দেশ। চীনের শাসকরা নিজের বাজারকে সুসংহত রাখতে নানা রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। তার কারণেই নিজেরা ধর্মনিরপেক্ষ হয়েও জঙ্গি নেতাকে ঠাঁই দিচ্ছেন। সুতরাং সার্বিক প্রেক্ষাপটে ধর্মটা একটি উপকরণ, যা ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের আধিপত্য বজায় রাখছে বিভিন্ন দেশের ক্ষমতাসীনরা বিভিন্ন দেশে দেশে বা নিজ দেশে। আর এ ধরনের নিয়মে রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারের কারণে দারিদ্র্য কমছে না বরং দরিদ্র মানুষকে শোষণ করা হচ্ছে ধর্মীয় বেড়াজালে আবদ্ধ করে। তাই দরিদ্র মেহনতি মানুষও পাচ্ছে না তার ন্যায্য পাওনা। রাষ্ট্র শাসকরা ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের ভাগ্য পাল্টাচ্ছেন আর কৌশলে জনগণকে রাখছেন ধর্মীয় চেতনায় মাতোয়ারা। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্র শাসকদের বেঁধে দেয়া ধর্মীয় চেতনার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারছে না মনস্তাত্ত্বিক কারণে। অন্যদিকে আবার তারা নিজের নায্যটাও বুঝে নিতে পারছেন না শাসকদের কাছ থেকে ধর্মীয় বেড়াজালে মাতোয়ারা হয়ে থাকার কারণে। সরকার ধর্মীয় খাতে অকাতরে অর্থ ব্যয় করছে। চলতি অর্থবছরে সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে দুই থেকে তিনটি করে মসজিদ উন্নয়নের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে টাইলসসহ সৌন্দর্যবর্ধন এবং নানা সংস্কারের কাজ করেছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মসজিদ এখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেইসঙ্গে দেশের হিন্দু ধর্ম পালনকারীদের উপাসনালয় মন্দিরের উন্নয়নের কাজ করছে সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্যাগোডা, গির্জার উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ হয় সরকারিভাবে। দেশের প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি আরেকটি শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিভাবেই চলছে। তা হলো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা। বাংলাদেশের ইসলাম ধর্ম পালনকারী মানুষের সংখ্যা বেশি। এর পরের স্থানে রয়েছে হিন্দু ধর্ম পালনকারীর সংখ্যা। তারপর অন্য ধর্ম পালনকারীরা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মসজিদ ও মন্দিরভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য রয়েছে প্রকল্প। বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক। আর প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টিও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখানে প্রশ্ন হলো, প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক থাকার পরও কেন মন্দির বা মসজিদভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজন? এই প্রকল্পে সরকারিভাবেই অর্থ ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, প্রতি বছরই কৃষক তার উৎপাদিত ধান সরকারিভাবে বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করতে পারছে না। এই বিক্রি করতে না পারার কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র নেই। সরকার দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্য গুদামও স্থাপন করতে পারছে না। এ বছর সরকার নিজে থেকেই ঘোষণা করেছে দেশের খাদ্য গুদামগুলোতে খাদ্য মজুত রাখার মতো স্থান নেই। তাই সব ধান সরকারের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। লালসালু উপন্যাসের কোনো এক জায়গায় মসজিদ নির্মাণের বিষয়টিও উঠে এসেছিল, লালসালু উপন্যাসটির প্রেক্ষাপটটা কল্পনার হলেও সেই সময়ের সমাজ ব্যবস্থার একটি প্রতিবিম্ব হিসেবে গণ্য করা যায়। সময়ের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন কতটা হয়েছে? সবই শক্তির নিত্যতার সূত্রের মতো। এক রূপ থেকে অন্যরূপে রূপান্তর হয়েছে মাত্র। কিন্তু ধর্মীয় মোড়কে শোষণটা বন্ধ হয়নি। বিশ্বের দেশে দেশে রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় থাকার জন্যও মাঝে মাঝে মুঘল স¤্রাট আকবরের মতো সব ধর্মকেও একীভূত করে ফেলার চেষ্টাও করেন। তাই সব ধর্মের নামে চলে নানা গুণগান। কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলে গেছেন, মানুষ এনেছে ধর্মগ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ। সুতরাং মানুষের উন্নয়ন বাদ দিয়ে যারা রাজনৈতিক কারণে ধর্মের উন্নয়নের নামে লোক দেখাচ্ছেন তারা প্রকৃতার্থে মানুষের কল্যাণ চান না। তারা ক্ষমতার মোহে বা ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে ধর্মকে নানাভাবে ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় উত্থান ঘটেছে ধর্মীয় রাজনীতির। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে বিচ্যুত হওয়ার ফলেই আজকে কৃষকসহ মেহনতি মানুষের দুরবস্থা। তারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের সুফল ভোগ করতে পারছে না। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরতে হলে, রাজনীতি থেকে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। আর এটা করতে না পারলে কৃষক ও মেহনতি মানুষের জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে না।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
প্রথম আলো
ইসলামে প্রতিবন্ধীদের অধিকার
ইসলাম ধর্ম
মহান আল্লাহ তাআলা সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা। তাঁর সৃষ্টিকুলের মধ্যে কিছু সৃষ্টিকে আমরা কখনো অস্বাভাবিক দেখতে পাই। এতে তাঁর বিশেষ উদ্দেশ্য ও মহান রহস্য বিদ্যমান। কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই সৃষ্টির রহস্য হলো প্রথমত, বান্দা যেন তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পারে, তিনি যেমন স্বাভাবিক সুন্দর সৃষ্টি করতে সক্ষম, তেমনি এর ব্যতিক্রমও করতে সক্ষম। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ যাকে বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ রেখেছেন; সে যেন নিজের ওপর আল্লাহর দয়া ও অনুকম্পাকে স্মরণ করে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। কারণ, আল্লাহ চাইলে তার ক্ষেত্রেও সে রকম করতে পারতেন। তৃতীয়ত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা এই সমস্যার বিনিময়ে তাঁর সন্তুষ্টি, দয়া, ক্ষমা ও জান্নাত দিতে চান। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি যার প্রিয় চোখ নিয়ে নিই, অতঃপর সে ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা করে; আমি তার জন্য এর বিনিময়ে জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুতে সন্তুষ্ট হই না।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৯৫৯)। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির করণীয় প্রথমত, ধৈর্য ধারণ করবে এবং সন্তুষ্ট থাকবে। কারণ, এটি তার ভাগ্যের লিখন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘পৃথিবীতে এবং তোমাদের ওপর কোনো বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগৎ সৃষ্টির আগেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। এটা এ জন্য, যাতে তোমরা যা হারাও, তাতে দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদের যা দিয়েছেন, তাতে উল্লসিত না হও। আল্লাহ উদ্ধত ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা হাদিদ, আয়াত: ২২-২৩)। দ্বিতীয়ত, বিশ্বাস রাখবে, আল্লাহ যখন কোনো মুমিনকে পরীক্ষায় ফেলেন, তখন তিনি তাকে ভালোবাসেন এবং অন্যদের থেকে তাকে অগ্রাধিকার দেন। তাই তিনি নবীদের সবচেয়ে বেশি বিপদ-আপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করেছিলেন। নবী করিম রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নবীরা সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত হন, অতঃপর তাঁদের থেকে যাঁরা নিকট স্তরের। মানুষকে তার বিশ্বাস অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হয়। যদি তার ইমান শক্তিশালী হয়, তাহলে তার পরীক্ষা কঠিন হয়। আর যদি তার ইমান দুর্বল হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও সে অনুযায়ী হয়। বিপদ বান্দার পিছু ছাড়ে না। পরিশেষে তার অবস্থা এমন হয় যে সে পাপমুক্ত হয়ে জমিনে চলাফেরা করে।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৪৩ ও ইবন মাজাহ)। তৃতীয়ত, মনে রাখবে যে দয়ালু আল্লাহ মুমিন ব্যক্তিকে তার প্রতিটি কষ্টের বিনিময় দেন, যদি সেই কষ্ট নগণ্যও হয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মুসলিম ব্যক্তিকে কষ্ট, ক্লান্তি, দুঃখ, চিন্তা, আঘাত, দুশ্চিন্তা গ্রাস করলে এমনকি কাঁটা বিঁধলেও আল্লাহ তাআলা সেটা তার পাপের কাফ্ফারা করে দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)। চতুর্থত, মুমিন ব্যক্তি যেন তার নির্দিষ্ট প্রতিবন্ধিতাকে ভুলে গিয়ে শরীরের বাকি অঙ্গগুলোকে কাজে লাগায়। কারণ, কোনো এক অঙ্গের অচলতা জীবনের শেষ নয়। দেখা গেছে, যার কোনো একটি ইন্দ্রিয় বা অঙ্গ অচল, তার বাকি ইন্দ্রিয় বা অঙ্গগুলো বেশি সক্রিয় ও সচল। প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের করণীয় নিজের সুস্থতা ও পূর্ণতার জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের জন্য দোয়া করা। যথাসম্ভব প্রতিবন্ধীদের সাহায্য-সহযোগিতা করা। প্রতিবন্ধীর দেখাশোনা করা তার অভিভাবকের কর্তব্য হলেও সমষ্টিগতভাবে তা সমাজের সবারই দায়িত্ব। ইসলামে প্রতিবন্ধীর গুরুত্ব ও মর্যাদা ইসলামের দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান। ইমান ও তাকওয়া হচ্ছে মানুষের মর্যাদার মানদণ্ড। যে যত বেশি মুত্তাকি, আল্লাহ তাকে তত বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে; পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন, যে বেশি মুত্তাকি।’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩)। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের শরীর ও আকৃতির দিকে দেখেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তরের দিকে দেখেন।’ (মুসলিম)। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা, যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী যেন অপর কোনো নারীকে উপহাস না করে; কেননা, যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১১)। প্রতিবন্ধীদের সামাজিক স্বীকৃতি প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) একাধিকবার তাঁর অনুপস্থিতির সময় মদিনার মসজিদে নববিতে ইমামতির দায়িত্ব এক প্রতিবন্ধী সাহাবির ওপর অর্পণ করে তাদের সমাজের সর্বোচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত করার নজির তৈরি করেন। তিনি সেই প্রতিবন্ধী সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে আজান দেওয়ার কাজেও নিযুক্ত করেছিলেন। (বুখারি, অধ্যায়: মাগাজি, অনুচ্ছেদ: বদর ও ওহুদের যুদ্ধ)। প্রতিবন্ধীদের জন্য ছাড় ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ বিধানে প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে সহজতা ও সহনশীলতা। তাই এমন প্রতিবন্ধী, যে ইসলামের বিধান পালনে একেবারে অক্ষম, যেমন পাগল ও জ্ঞানশূন্য ব্যক্তি, তার ওপর ইসলাম কোনো বিধান জরুরি করে না। আর আংশিক প্রতিবন্ধী যে কিছুটা করতে সক্ষম, তার প্রতি অতটুকুই পালনের আদেশ দেয়। ফরজ বিধান যা মহান আল্লাহ মানুষের জন্য নির্ধারণ করেছেন, যদি মানুষ তা পালনে সক্ষম হয়, তাহলে তার প্রতি তা আবশ্যিক হবে। আর যদি সে তাতে অক্ষম হয়, তাহলে তা থেকে সে মুক্তি পাবে। অর্থাৎ, যে পরিমাণ পালন করতে সক্ষম হবে, সে পরিমাণ তাকে পালন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬)। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন আমি তোমাদের কোনো আদেশ করি, তখন তা বাস্তবায়ন করো, যতখানি সাধ্য রাখো।’ (বুখারি ও মুসলিম)। ইসলামে প্রতিবন্ধীদের অধিকার নবী করিম রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নাও এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও।’ (বুখারি)। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে সদাচরণ করা, সাহায্য-সহযোগিতা করা এবং তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া আবশ্যক। প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ানো মানবতার দাবি ও ইমানি দায়িত্ব। প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে অসদাচরণ বা তাদের উপহাস, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বা ঠাট্টা-তামাশা করা স্রষ্টাকে তথা আল্লাহকে উপহাস করার শামিল। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করে, আল্লাহ ততক্ষণ বান্দাকে সাহায্য করেন।’ (মুসলিম)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘আর তাদের ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিত ব্যক্তিদের হক বা অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত: ১৯)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিজন। আল্লাহর কাছে প্রিয় সৃষ্টি সে, যে তাঁর সৃষ্টির প্রতি সদয় আচরণ করে।’ প্রিয় নবী (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্ষুধার্তকে অন্ন দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে ফল খাওয়াবেন। যে তৃষ্ণার্তকে পানি পান করায়, আল্লাহ জান্নাতে তাকে শরবত পান করাবেন। যে কোনো দরিদ্রকে বস্ত্র দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে উত্তম পোশাক দান করবেন।’ (তিরমিজি)। জন্মগত প্রতিবন্ধী হোক কিংবা দুর্ঘটনাজনিত প্রতিবন্ধীই হোক; ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভেদ ভুলে তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসা আমাদের কর্তব্য। প্রিয় নবী (সা.) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে তাঁর অপার ভালোবাসায় ধন্য করেছেন। তিনি যখনই তাঁকে দেখতেন, তখনই বলতেন, ‘স্বাগত জানাই তাকে, যার সম্পর্কে আমার প্রতিপালক আমাকে সতর্ক করেছেন।’ পরে মহানবী (সা.) এই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাহাবিকে দুবার মদিনার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। প্রতিবন্ধীদের প্রতি ভালোবাসা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় সুন্নত। (মুসলিম)।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
যুগান্তর
সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ
ইসলাম ধর্ম
২৫ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার। ঘড়ির কাঁটায় আনুমানিক রাত ৪টা। উত্তরের প্রাচীন জনপদ সৈয়দপুর শহর ছাড়িয়ে আমাদের গাড়ি এসে থামল ইসবাগে। গাড়ি থেকে নামতে চোখ পড়ল সুন্দর কারুকার্যে ঘেরা সুরম্য এক মসজিদে। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম। কী অপরূপ মসজিদ। এক দেখাতেই যে কারও নজর কাড়বে এটি। সামনে এগিয়ে গেলাম। মূল ফটকের পাশের এক অংশে ফার্সি এবং বাংলায় বড় করে লেখা ‘চিনি মসজিদ ১৮৬৩’। ওজু শেষে মসজিদে প্রবেশ করলাম। ফজরের সালাত শেষে যখন বেরিয়ে আসি প্রকৃতি তখন বেশ ফর্সা হয়ে গেছে। কোমল স্নিগ্ধ বাতাস। আমরা একদল অভিভূত দর্শক, মুগ্ধ হয়ে দেখছি প্রায় পৌনে দুইশ বছরের পুরোনো এ স্থাপনা। নীলফামারী জেলা সদর থেকে ২০ কিমি. দূরে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার খুব কাছে ইসবাগ এলাকায় অবস্থিত এ ঐতিহাসিক চিনি মসজিদ। বাংলাদেশে যে কয়টি মসজিদ ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে পড়ে, চিনি মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম। শৈল্পিক কারুকাজ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য হিসাবে চিনি মসজিদের রয়েছে বিশেষ খ্যাতি। এ মসজিদে পাঁচ শতাধিক মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। ১৮৬৩ সালে হাজি বাকের আলী ও হাজি মুকুল নামের স্থানীয় দুই বাসিন্দা সৈয়দপুর উপজেলা শহরের ইসবাগ এলাকায় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে প্রথম এ মসজিদের গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তী সময়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় মসজিদটিকে টিনের মসজিদে রূপান্তর করা হয়। এরপর এলাকার লোকজন মসজিদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন। ১৯২০ সালে হাফেজ আবদুল করিমের উদ্যোগে প্রথম মসজিদের প্রথম অংশ পাকা করা হয়। এ সময় মসজিদের দৈর্ঘ্য ছিল লম্বায় ৪০ ফুট ও প্রস্থে ৩৯ ফুট। ১৯৬৫ সালে মসজিদের দ্বিতীয় অংশ পাকা করা হয় এবং ১৯৮০-এর দশকে মসজিদের শেষ অংশ পাকা করা হয়। কারুকার্যের জন্য কলকাতা থেকে মর্মর পাথর ও চীনামাটির নকশা করা থালা আনা হয়। মসজিদের অধিকাংশ কারুকাজ চীনামাটির। মসজিদের নকশার কারিগরও কলকাতা থেকে আনা হয়েছিল। সৌন্দর্য বাড়াতে দেওয়ালে চীনামাটির থালা ও কাচের টুকরা বসানো হয়। এ পদ্ধতিকে ‘চিনি করা’ বা ‘চিনি দানার’ কাজ বলা হয়। ধারণা করা হয় এখান থেকেই এর নামকরণ হয় ‘চিনি মসজিদ’। আবার কেউ কেউ বলেন পুরো মসজিদে চীনামাটির কাজ রয়েছে। এ কারণেও এর নাম চিনি মসজিদ হতে পারে।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Neutral
দৈনিক ইনকিলাব
সরকারি কাজে ইংরেজি ক্যালেন্ডার ব্যবহার করবে সউদি আরব
ইসলাম ধর্ম
সউদি আরব এখন থেকে সরকারি কাজে ইংরেজি ক্যালেন্ডার (গ্রেগোরিয়ান) ব্যবহার করবে। সউদি মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সউদি প্রেস অ্যাজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে। উল্লেখ্য, সউদি আরব ২০১৬ সালে দেশের সরকারি ও আইনগত কিছু কার্যক্রমে হিজরি ক্যালেন্ডারের বদলে ইংরেজি ক্যালেন্ডার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সৌদি আব ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে চান্দ্রভিত্তিক হিজরি ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে আসছিল। তবে ইংরেজি ক্যালেন্ডার দ্বিতীয় ক্যালেন্ডার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। হিজরি ক্যালেন্ডার ১২ মাসের হলেও চাঁদ দেখার ভিত্তিতে এতে প্রতি মাসে থাকে ২৯ থেকে ৩০ দিন। সাধারণত হিজরি ক্যালেন্ডার দিন হয় ৩৫৪টি। আর গ্রেগরিয়ান তথা ইংরেজি ক্যালেন্ডারে দিন থাকে ৩৬৫টি। অর্থাৎ হিজরি ক্যালেন্ডারে সাধারণত ১১টি দিন কম হয়।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
দৈনিক ইনকিলাব
গাজা ও রাশিয়ায় পারমাণবিক বোমা ফেলার আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসম্যানের
ইসলাম ধর্ম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ও রাশিয়ায় পারমাণবিক বোমা ফেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরোশিমা ও নাগাসাকির মতো অবস্থা তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন টিম ওয়ালবার্গ নামে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির এক কংগ্রেসম্যান। সম্প্রতি নিজের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা সভায় এ ধরনের আহ্বান জানান তিনি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিশিগানের রিপ্রেজেন্টেটিভ টিম ওয়ালবার্গ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইল ও ইউক্রেনের মিত্র রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাজার অবস্থা নাগাসাকি ও হিরোশিমার মতো হওয়া উচিত। এই সমস্যা দ্রুত শেষ করুন। একই অবস্থা হওয়া উচিত রাশিয়ারও। এ সময় গাজায় ত্রাণসহায়তা পাঠানোর কঠোর বিরোধিতা করেন ওয়ালবার্গ। তিনি বলেন, ‘গাজায় ত্রাণসহায়তার জন্য আমাদের আর একটি পয়সাও ব্যয় করা উচিত নয়। এই পয়সা উল্টো ইসরাইলের জন্য ব্যয় করা উচিত। কেননা, পৃথিবীর যেকোনো স্থানে, যেকোনো ইস্যুতে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র।’ উল্লেখ্য, টিম ওয়ালবার্গ নামে রিপাবলিকান পার্টির এই কংগ্রেসম্যান একজন ধর্মযাজক ছিলেন রাজনীতিতে আসার আগে। গণসংযোগকালে তার মুখে উচ্চারিত এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ছড়িয়ে পড়েছে ইতোমধ্যে। ওয়ালবার্গের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহলও। একজন সাবেক খ্রিষ্টান যাজক হয়ে তিনি কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন এই নিয়ে জোর সমালোচনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র। বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেসম্যানের এ বক্তব্যকে ‘গণহত্যার স্পষ্ট আহ্বান’ আখ্যা দিয়েছে কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (কাইর)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক দাউদ ওয়ালিদ ওই বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সব আমেরিকানের উচিত ওয়ালবার্গের বক্তব্যের নিন্দা করা, যারা মানুষের জীবন এবং আন্তর্জাতিক আইনকে মূল্য দেয়।’ এদিকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসার চেষ্টা করছেন টিম ওয়ালবার্গ। রোববার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে মার্কিন এ কংগ্রেসম্যান জানান, তার মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে মিডিয়া। তার দাবি, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষে কথা বলেননি তিনি। গার্ডিয়ান।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
দৈনিক ইনকিলাব
আল- রাজী: চক্ষু- চিকিৎসাবিজ্ঞানের আবিস্কারক ইসলামী চিন্তাবিদ
ইসলাম ধর্ম
আল- রাজী'র সম্পূর্ণ নাম আবু বকর মোহাম্মাদ ইবন জাকারিয়া আল রাজী। তিনি আল- রাজী নামে বেশী পরিচিত। তিনি ল্যাটিন ভাষায় (Rhazes) রাযেস এবং ইংরেজীতে (Rhasis) রাসিস নামে পরিচিত। আল রাজী ছিলেন একজন দক্ষ পারসিক চিকিৎসক এবং দার্শনিক। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞান, আল-কেমি, পদার্থবিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর প্রায় ২০০ বই লিখেছিলেন। তিনিই অপথ্যালমোলজি বা চক্ষু- চিকিৎসাবিজ্ঞানের আবিস্কারক। তিনিই প্রথম "সালফিউরিক এসিড" আবিষ্কার করেছেন। যদিও সালফিউরিক অ্যাসিড পূর্বে ‘অয়েল অফ ভিট্রিয়ল’ নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞানী মহলের সুপরিচিত "সালফিউরিক অ্যাসিড" নামটি তাঁরই দেওয়া। সালফিউরিক অ্যাসিড একটি শক্তিশালী খনিজ অ্যাসিড বা অম্ল। এই রাসায়নিক যৌগটির কাঠামোগত “হাইড্রোজেন সালফেট” নাম এবং এর সংকেত H2SO4 - টিও তাঁর দেওয়া। তিনি ইথানলও আবিষ্কার করেন। ইথানল সাধারনত "ইথাইল অ্যালকোহল" নামে পরিচিত। এটা এক প্রকারের জৈব যৌগ। এটা দাহ্য, স্বাদবিহীন, বর্ণহীন, সামান্য বিষাক্ত ও বিশিষ্ট গন্ধযুক্ত, এবং অধিকাংশ মদ বা মাদকের প্রধান উপাদান। এতে ৯৯% বিশুদ্ধ অ্যালকোহল থাকে। এটা জৈব সংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। আল- রাজী ইথানল উৎপাদন, বিশুদ্ধকরণ এবং চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়াও আবিষ্কার করেন। ইথানল বা ইথাইল অ্যালকোহলের রাসায়নিক সংকেত "CH3-CH2-OH" বা "C2H6O" বা "EtOH" বা "C2H5OH" -ও আল রাজী'র দেওয়া। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণও করেছেন। বাগদাদ নগরীতে তাঁর একটি পরীক্ষাগারও ছিল। তাঁর নামে ইরানে "রাজী ইনষ্টিটিউট" এবং "রাজী বিশ্ববিদ্যালয়" রয়েছে। তাঁর স্মরণে ইরানে প্রতি বছর ২৭শে আগস্ট আল-রাজী দিবস পালন করা হয়। আল- রাজী ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ৬০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
যায়যায়দিন
ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ পড়ায় সময় বিদেশী ৫ শিক্ষার্থীকে নির্মম নির্যাতন
ইসলাম ধর্ম
জাতিসংঘে ভোট দানে বিরত থাকার দিন ভারতে গুজরাটে আবারও মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা ঘটলো। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র ক্ষোভে সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে এআরসি (মুসলিম বিরোধী আইন) পাশ অন্যদিকে বিদেশী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মুসলিমদের ভেতর। এর আগে গত শুক্রবার জুমার দিন দিল্লিতে নামাজ পড়ার সময় এক পুলিশ সদস্য নামাতরত মুসলিদের লাথি মেরে রাস্তার ওপর থেকে সরিয়ে দেয়। নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস। গভীর রাতের পাঁচজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পাসে নামাজ আদায়ে আপত্তি তুলে পাঁচ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। আহত ছাত্ররা উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিক। শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা নিজেদের রুমেই নামাজ পড়ছিলেন। ওই সময় একদল লোক নামাজ পড়ার প্রতিবাদ জানান এবং চেঁচাতে শুরু করেন। ওই লোকরা নিজেরাও ধর্মীয় স্লোগান দিতে শুরু করে। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে পরিণত হয়। জানা গেছে, আমবাদে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ব্লক ‘এ’-তে এ ঘটনা ঘটে। সেখানেই বিদেশী শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস আছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আমদাবাদের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ দমন) নীরজকুমার বদগুজর জানান, ইতোমধ্যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এফআইআর রুজু করা হয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে একজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা। আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঝামেলা শুরুর সাথে সাথে পুলিশকে খবর দেয়া হলেও হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ সেখানে এসে পৌঁছায়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। দেখা যায়, ঘটনায় অন্তত পাঁচটি বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এদিকে ছাত্রাবাসের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত রাত ১১টার দিকে বাইরে থেকে ১০ থেকে ১৫ জন আমাদের হোস্টেল ক্যাম্পাসে আসে। আমরা নামাজ আদায়ের সময় তাদের মধ্যে তিনজন আমাদের হোস্টেল ভবনে প্রবেশ করে। তারা আমাদের বলে যেন আমরা নামাজ আদায় না করি। এরপর জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে শুরু করে তারা। তারা নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এবং তারপর নামাজ আদায় করা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। অন্যান্য অমুসলিম বিদেশী ছাত্ররা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। তখন তারাও হামলার শিকার হয়। তাদের ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। তাদের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও আয়না ভাঙচুর করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার দু’জন এবং আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার এক শিক্ষার্থী এই হামলায় আহত হন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
ইত্তেফাক
সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসনসহ ১ জন পূর্ণমন্ত্রী চায় হিন্দু মহাজোট
হিন্দু ধর্ম
জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন ও একজন পূর্ণমন্ত্রীর দাবি জানায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। শনিবার (১৯ জুন) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি ছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণ, রথ যাত্রায় ১ দিনের সরকারি ছুটিসহ বেশকিছু দাবি তুলে ধরে জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, নির্বাহী সভাপতি দীনবন্ধু রায়, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রতীভা বাকচী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘বাঁচতে শেখা’ নামে দুটি এনজিওকে হিন্দু ধর্ম ও সমাজবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি তোলা হয়। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে হিন্দু সম্প্রদায় সারাদেশের প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও ঘোষণা দেন সংগঠনটির মহাসচিব।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
কালের কন্ঠ
মসজিদুল হারামের ৩৫ হাজার কার্পেট পরিষ্কার করা হয় যেভাবে
ইসলাম ধর্ম
মক্কায় অবস্থিত পবিত্র মসজিদুল হারামে প্রতিদিন লাখ লাখ মুসল্লির জমায়েত হয়। বিশেষত রমজান মাস ও হজের সময় সেখানে ২০ লাখের বেশি লোকের সমাবেশ ঘটে। এ সময় মসজিদের মেঝে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পবিত্র মসজিদুল হারামের মেঝেতে আছে ৩৫ হাজারের বেশি কার্পেট।সব সময় তা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিযুক্ত রাখার পেছনে আছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রতি সপ্তাহে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে দুই হাজার কার্পেট পরিষ্কার করে তাতে সুগন্ধি দেওয়া হয়। মক্কার কুদাইয়ে অবস্থিত বিশেষায়িত একটি প্রতিষ্ঠানে এসব কাজ সম্পন্ন হয়। এ প্রসঙ্গে সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের সঙ্গে কথা হয় মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সেবাবিষয়ক প্রধান জাবের আহমদ আল-ওয়াদানির।তিনি বলেন, ‘পবিত্র মসজিদুল হারামের ৩৫ হাজারের বেশি কার্পেট রয়েছে। মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ ও ইবাদত করতে পারে তাই সেখানে খুবই উন্নত মানের ও বিলাসবহুল কার্পেট বিছানো হয়েছে। এসব কার্পেটের রং সবুজ; মানুষের মন-মানসিকতায় যেন এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে তাই এই রং ব্যবহার করা হয়েছে।’আল-ওয়াদানি আরো জানান, মূলত পবিত্র মসজিদুল হারামের জন্য নরম সুতা ও মোটা স্তূপ থেকে এসব বিলাসবহুল কার্পেট তৈরি করা হয়।এগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন বারবার ধোয়া হলেও তাতে কোনো সমস্যা না হয়। কার্পেটের মান বজায় রেখে অত্যাধুনিক উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তা পরিষ্কার করা হয়। কার্পেট পরিচ্ছন্নতা বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল রয়েছে, যারা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ত্রুটিমুক্ত উপায়ে পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করে।তিন ধাপে পরিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম ধাপে উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্পেট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ময়লা ও ধুলা দূর করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে জীবাণুনাশক, পানি ও বিশেষ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধোয়া হয় এবং জীবাণুমুক্ত করা হয়।তৃতীয় ধাপে অতিরিক্ত পানি দূর করতে কার্পেটগুলো বিশেষ টিউবে বসানো হয়। সব শেষে সূর্য ও বাতাসে শুকাতে কার্পেটগুলো বিছানো হয়। দ্রুত শুকাতে ফ্যানও ব্যবহার করা হয়। এরপর অত্যাধুনিক ঝাড়ু দিয়ে তা মোছা হয় এবং তাতে তায়েফের বিখ্যাত গোলাপজলের সুগন্ধি দেওয়া হয়। অতঃপর প্যাকেট করে রাখা হয়।আল-ওয়াদানি বলেন, প্রতি ঘণ্টায় ২৪০ মিটার ধোয়া হয়। এরপর তা বিশেষ গুদামে সংরক্ষিত রাখা হয়। তাতে পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদে পরিবহনের জন্য প্রস্তুত ২৬ হাজার কার্পেট জমা করা হয়। কার্পেটগুলোকে ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখতে পরিচ্ছন্নতা বিভাগে অত্যাধুনিক মেশিনের একটি পরীক্ষাগার রয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
আলোকিত বাংলাদেশ
ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) লাখো মানুষের অংশগ্রহণে রাজধানীতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে বিএসপি চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীর নেতৃত্বে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজধানীতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা জশনে জুলুস র‌্যালী বের হয়েছে। এসময় বাংলাদেশ সূপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান এবং মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম, আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সভাপতি হযরত শাহ্সূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী আল্-হাসানীর (মা.জি.আ.) নেতৃত্বে লাখো নবী (সা:) প্রেমি সুফিবাদী জনতা উচ্ছ্বাসমুখরভাবে অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা শুরু হয়ে রাজধানীর শাহবাগ, মৎস ভবন, দোয়েল চত্বর হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়। ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা, উপজেলা থেকে লাখ লাখ জনতা শোভাযাত্রা ও শান্তি মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হন। শোভাযাত্রার অগ্রভাগেই দৃষ্টিনন্দন বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী ছালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসূল ছালামু আলাইকা’। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ও আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার ব্যবস্থাপনায় জশনে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, প্লেকার্ড, ফেস্টুন ছাড়াও, বহন করে বাংলাদেশের বিশাল জাতীয় পতাকা। জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা নারায়ে তকবির, নারায়ে রেসালতের স্লোগানে স্লোগানে রাজধানীর রাজপথ মুখরিত করে তোলেন। জুলুস শেষে মুসলিম জনতা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়। সভাপতিত্ব করেন লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী। তিনি বলেছেন, মহানবীর (দ.) দুনিয়ায় শুভাগমন জগৎবাসীর জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ। তিনি আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীবাসীকে শান্তি, সাম্য ও মুক্তির পথ দেখান। রাসূলে পাক (দ.) দুনিয়ায় শুভাগমনের মূল উদ্দেশ্যই হলো একটি শান্তি ও সহাবস্থানপূর্ণ মানবিক বিশ্ব সমাজ গড়ে তোলা। তিনি আরো বলেন, ধর্ম মানুষকে সুশৃংখলিত করে। উগ্রতা, হঠকারিতা, জঙ্গি কর্মকান্ড জ্বালাও পোড়ার মাধ্যমে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা ধর্মের বিধান নয়। শান্তি, সাম্য, ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করাই ইসলাম তথা প্রিয়নবীর (দ.) মূল আদর্শ। রাসূলের (দ.) আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারনেই আজ সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ তাবৎ দুনিয়ায় যুদ্ধ সংঘাত ও রক্তপাতে জর্জরিত। শক্তিধর দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ খাদ্য,জ্বালানি,মৌলিক অধিকার সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মহানবীর (দ.) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। প্রিয়নবী (দ.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র নায়ক।সাড়ে চৌদ্দশত বৎসর আগে রাসূলই আমাদেরকে দেখিয়েছেন কীভাবে সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক আধুনিক কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করা যায়। পীরজাদা মুফতী মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল-আযহারী ও শায়খ আজমাঈন আসরারের সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন ১৪ দলীয় সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু (এম.পি), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক (এম.পি), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ (এম.পি), লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান ও লিবারেল ইসলামিক জোটের কো-চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরাম সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরামের নির্বাহী সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, এফবিসিআই পরিচালক মো. রেজাউল করিম রেজনু, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক আকন্দ, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. আব্দুল আজিজ সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ, আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সহসভাপতি মো. কবীর চৌধুরী, অ্যাড. মো. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, মহাসচিব মো. আলমগীর খান, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব আলহাজ্ব কাজী মহসীন চৌধুরী প্রমুখ।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
ইত্তেফাক
নিউইয়র্কে হিন্দু সমাবেশ
হিন্দু ধর্ম
নানা আয়োজনে নিউইয়র্কে শেষ হলো প্রবাসী বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন ইউনাইটেড হিন্দুস অব ইউএসএ ইনক-এর সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে এদিন প্রবাসী নেতারা ছাড়াও অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার জনপ্রতিনিধিরা।স্থানীয় সময় রোববার (৮ জানুয়ারি) রাতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। রাম দাস ঘরামীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার, হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস অব বাংলাদেশ মাইনোরিটিস-এর পরিচালক প্রিয়া সাহা, শংকর পাড়িয়াল প্রমুখ । আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশ থেকে হিন্দু আনুপাতিক হারে কমাসহ বিগত দিনে হিন্দু মন্দিরে হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এ ব্যাপারে বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান । নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হলে সমাজে শান্তি বিনষ্ট হয় না। তিনি বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস অব বাংলাদেশ মাইনোরিটিস-এর পরিচালক প্রিয়া সাহা বলেন, নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমতে কমতে এখন সাড়ে ৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে। সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রবাস প্রজন্মকে বাংলা শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস ছাড়াও নিজ নিজ ধর্ম পালনে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নিত্যানন্দ কিশোর দাস, সাংবাদিক ও কলামিস্ট শীতাংশু গুহ, সুশীল সাহা, হিমেন রায় প্রমুখ।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
ভোরের পাতা
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু, মিনার পথ ধরেছেন হাজিরা
ইসলাম ধর্ম
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনি ও কাবা প্রদক্ষিণের মাধ্যমে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতিহাসে এবারই (২০২৩ সালে) সবচেয়ে বেশি হাজির পদচারণায় মুখরিত হবে কাবা প্রাঙ্গণ। রোববার (২৫ জুন) কাবা ঘর প্রদক্ষিণ করেন বিশ্বের ১৬০টি দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হাজি। ইতিহাসের সবচেড়ে বড় হজ হওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ বছর, আমরা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ প্রত্যক্ষ করব।’ ২০২০ সালের করোনা মহামারি হানা দেওয়ার পর— এবার প্রথমবারের মতো সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার একসঙ্গে হজ করবেন ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস জানিয়েছিল, ২০১২ সালে হজ করেছিলেন ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন হাজি। যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ ছিল। এবার এ সংখ্যাটি পার হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে হজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার মানুষ; ২০২১ সালে ৫৯ হাজার। আর গত বছর এ সংখ্যাটি ছিল ১০ লাখ। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় হাজিরা মিনার দিকে যাবেন। যা কাবা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এরপর আরাফাত ময়দানে যাবেন তারা। শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এই আরাফাতের ময়দানেই তার সর্বশেষ ভাষণটি দিয়েছিলেন। হাজিরা যেন নির্বিঘ্নে হজের সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে পারেন সেজন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। মিনায় হাজিদের সুবিধার্থে খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। এদিকে এবার হজের মৌসুমটা পড়েছে তীব্র গরমের মধ্যে। জানা গেছে হাজিদের প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে। এই গরমে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে যেন তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় সেজন্য ৩২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ বছর হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামীকাল ২৬ জুন। যা চলবে ১ জুলাই পর্যন্ত। আর এ বছর সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ২৮ জুন।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
ভোরের কাগজ
আসলেই ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে
অন্যান্য
একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন আগে দশ বছর সাজাপ্রাপ্ত বর্তমানে হত্যা চেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনীতি কোনো দিনই সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হবে না। আজ সময় এসেছে এদের প্রত্যাখ্যান করার। বাংলাদেশের জনগণ যত তাড়াতাড়ি বিএনপি ও তার জোটভুক্ত দলগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে ততই তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। কয়েকদিন আগে আমি একটি কলাম লিখেছিলাম ‘নিজেকে প্রশ্ন করুন কোন পক্ষে যাবেন’- শিরোনামে। যেখানে আমি নানা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি কীভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমার সে লেখায় এটাও বলার চেষ্টা করেছিলাম যে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলার মাটিতে বিএনপি নামক ঘাতক দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে এবং কারা প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এ এইচ এম কামরুজ্জামান এবং এম মনসুর আলীকে হত্যা করেছে, যে বিএনপি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নৃশংস গ্রেনেড হামলায় প্রত্যক্ষ মদদ জুগিয়েছে, সেই বিএনপির আসলেই কি কোনো অধিকার থাকতে পারে বাংলাদেশে রাজনীতি করার? জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপি বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নানামুখী চক্রান্ত করে যাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে। জিয়াউর রহমান দল গঠন করে দেশদ্রোহী-রাজাকারদের বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করেছিলেন, তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ও পুত্র তারেক রহমান জিয়া নির্দেশিত পথেই এগিয়ে গেছেন। জিয়া পরিবারের জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক কিছুই করেছেন। খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু আপন কন্যার মতোই স্নেহ করতেন। খালেদা জিয়ার ভাঙা সংসার বঙ্গবন্ধুই জোড়া লাগিয়ে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এত আদর-স্নেহের মূল্য জিয়া দিয়েছেন ‘বুলেট’ দিয়ে, আর তার স্ত্রী-পুত্র দিয়েছেন ‘গ্রেনেড’ দিয়ে। মানুষ কতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে, ক্ষমতা ও স্বার্থের জন্য কতটা নিচে নামতে পারে, জিয়া পরিবারকে না দেখলে বাংলাদেশের মানুষ কিছুতেই তা বুঝতে পারতেন না। কথায় বলে- ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’। আসলেই ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে। ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডির রায়ের কল নড়েছিল ২৩ বছর ২ মাস পরে আর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হয় ১৪ বছর ২ মাস ১৯ দিনের মাথায়। দীর্ঘ সময় পর হলেও আদালতের রায়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুখোশ খুলে গেছে ষড়যন্ত্রকারীদের। আজ শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, পৃথিবীর নানা দেশের মানুষই বুঝতে পারছে বিএনপি স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়, বিএনপির বিশ্বাস হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, তাই জামায়াত তাদের বন্ধু। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিকেল ৫.৪০ মিনিটে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেই হামলায় ঘটনাস্থলেই মারা যান আওয়ামী লীগের ২৪ জন নিরপরাধ নেতাকর্মী। এর মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানও আছেন। আহত হন পাঁচশ’র অধিক নেতাকর্মী। বাংলাদেশের ইতিহাসে দিবালোকে এমন নৃশংস ঘটনার আর কোনো নজির নেই। সবশেষে শেখ হাসিনাকে বহন করা গাড়িতেও কয়েকটি গুলি করেছিল তাকে হত্যার জন্য। সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। মূলত শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হলেও, এর পেছনে ছিল আরো গভীর চক্রান্ত। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বাংলাদেশকে মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য বানাতে চেয়েছিল, বিপথে নিয়ে যেতে চেয়েছিল ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তমূল্যে কেনা সব অর্জন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়নি বিএনপি ও তার দোসররা। এই হামলাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য সব আলামত নষ্ট করা হয়। আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানো হয়, সাজানো হয় জজ মিয়া নাটক। নোয়াখালীর সেনবাগের শ্রমজীবী যুবক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ওরফে জজ মিয়া নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ৪ বছর ২৬ দিন জেলখানায় কাটাতে হয়। রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয় জজ মিয়ার ওপর। ক্রসফায়ারের হুমকি ও জজ মিয়ার পরিবারকে টাকা দেয়ার শর্তে শেখানো জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় জজ মিয়ার। তবু শেষ রক্ষা হয় না। একে একে বের হতে থাকে আসল ঘটনা। তারপর অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১০ অক্টোবর, ২০১৮ সালে ঘোষিত হয় আদালতের রায়। ৪৯ জন আসামির মধ্যে ১৯ জন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়, যাবজ্জীবন সাজা হয় ১৯ জনের, বাকি এগারো জন পায় বিভিন্ন মেয়াদের দণ্ড। আদালতের রায় ঘোষিত হওয়ার পরে নানাজন নানাভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগী ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ। এখানে আমি রায়ের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না, আমি শুধু বলতে চাই- এই ঐতিহাসিক রায়ে একটি জিনিস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সেটা হলো- বিএনপি একটি সন্ত্রাসী ও ঘাতক দল। হত্যা, খুন, লুটপাট ও জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দান করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। এরা চায় না বাংলাদেশ সুখে-শান্তিতে থাকুক, নিরাপদে বসবাস করুক বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ। এরা ষড়যন্ত্র করে কিংবা মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সহায়তায় যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তখন দেশে দুর্নীতি বেড়ে যায়, বোমাবাজি বেড়ে যায়, রাষ্ট্র খেতাব পায় অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে। বিএনপি স্পষ্টত রাষ্ট্র চালনায় ব্যর্থ এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে এরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এরা মুখোশ পরে থাকে, কিন্তু মুখোশের আড়ালে এদের যে মুখটা আছে সেটা খুবই ভয়ঙ্কর। একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন আগে দশ বছর সাজাপ্রাপ্ত বর্তমানে হত্যা চেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনীতি কোনো দিনই সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হবে না। আজ সময় এসেছে এদের প্রত্যাখ্যান করার। বাংলাদেশের জনগণ যত তাড়াতাড়ি বিএনপি ও তার জোটভুক্ত দলগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে ততই তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। বিএনপি পদে পদে ব্যর্থতা, অযোগ্যতা ও নৃশংসতার পরিচয় দিয়েছে। যারা নৃশংস, সন্ত্রাসী, ব্যর্থ এবং অযোগ্য তাদের হাতে দেশ ও দেশের মানুষ কিছুতেই নিরাপদ থাকতে পারে না। আমি প্রথমেই বলেছিলাম আমার পূর্ববর্তী একটি নিবন্ধের কথা- ‘নিজেকে প্রশ্ন করুন কোন পক্ষে যাবেন।’ আজ আবার এই প্রশ্ন উত্থাপন করে বলতে চাই- বাংলাদেশের মানুষ কোন পক্ষে যেতে চায়? তারা কি হত্যায় বিশ্বাসী, মৌলবাদে উস্কানিদাতা, দুর্নীতিবাজ বিএনপির সঙ্গে যাবে? বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী, দল এবং যারা জোট করতে চান তাদেরও নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উন্নয়নে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে? বাংলাদেশের মানুষ খুবই আবেগপ্রবণ, তাদের মনও অত্যন্ত কোমল। বাঙালি আবেগপ্রবণ আর কোমল মনের বলে অনেক সহজেই এরা ক্ষমাশীল। ক্ষমা মহৎ গুণ বটে। তবে ঘাতককে, দেশদ্রোহীকে ক্ষমা করার কোনো মানে নেই। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে বয়কট করে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ জন্য যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাদের হাত শক্তিশালী করতে হবে। নির্দ্বিধায় গণরায় দিতে হবে দেশপ্রেমিক, উন্নয়নমুখী, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক দলকে। বিগত দশ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূরে এগিয়ে গেছে, বিদেশেও মর্যাদা বাড়ছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বিএনপি নয়- আওয়ামী লীগই এখন আমাদের একমাত্র ভরসা।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
দৈনিক ইনকিলাব
ইসলামে নামাজ কায়েমের ফজিলত
ইসলাম ধর্ম
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে সালাত হচ্ছে দ্বিতীয়। পবিত্র কুরআনের পরিভাষায় সালাতের স্থলে নামাজ কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আভিধানিক ভাবে দোয়া, দুরুদ, প্রতিদান, কারো দিকে মুখ করা, নিকটবর্তী হওয়া, অগ্রসর হওয়া ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘সালাত’ কুরআন, হাদীস, ইজমা দ্বারা প্রমাণিত ফরজ। রাসুল (সা:) এর আমল থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর সব মুসলিম কোনো মতবিরোধ ছাড়াই এর ফরজিয়াত, গুরুত্ব, তাৎপর্য, প্রয়োজনীয়তা, বৈজ্ঞানিক যুক্তিবাদ স্বীকার করে আসছেন। রাসুল (সা:) এর মক্কি জীবনে মিরাজের সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। ঈমানের পরই এর স্থান। একজন লোকের ঈমানের প্রমাণ ও বাস্তব রূপ প্রকাশ পায় তার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর আদেশ পালন করা হয় এবং সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টের মধ্যে একটা গভীর সর্ম্পক সৃষ্টি হয়, যা আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ এনে দেয়। রাসুল (সা:) বলেছেন- বান্দা সিজদারত অবস্থায় তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। (মুসলিম)। পৃথিবীতে প্রত্যেক নবী-রাসুলের ওপরই সালাত ফরজ ছিল। হযরত আদম (আঃ) ও তার বংশধর হযরত নুহ (আঃ) ও হজরত ইব্রাহীম (আঃ) কে নামাজের আদেশ দেয়া হয়েছিল এবং তারা নামাজ পড়ত; এর প্রমাণ মিলে সূরা মরিয়মের ৫৮ নাম্বার আয়াতে। বলা হয়েছে, নবীদের মধ্যে যাদের আল্লাহ পুরস্কৃত করেছেন এরাই তারা, আদমের ও যাদের তিনি নূহের সথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলেন তাদের বংশোদ্ভুত, ইব্রাহীম ও ইসরাইলের বংশোদ্ভুত এবং যাদের তিনি পথনির্দেশ করেছিলেন তাদের অন্তর্ভুক্ত। তাদের নিকট করুনাময় আল্লাহর আয়াত আবৃত্তি হলে তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ত ও রোদন করত। সূরা ইব্রাহীমের ৪০ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে আমার রব, আমাকে এবং আমার বংশধরকে যথাযত নামাজ প্রতিষ্টাকারী কর। ‘সূরা লোকমানের ১৭ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে, হে বৎস! নামাজ কায়েম করবে, সৎ কাজের নির্দেশ দেবে, অসৎ কাজ প্রতিরোধ করবে এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করবে। অনুরূপ ভাবে কুরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবী রাসুলের ব্যাপারেই স্পষ্ট আয়াত রয়েছে, যাদেরকে সালাতের তাকিদ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কালামে পাকে নামাজের আদেশ, গুরুত্ব,তাৎপর্য ও সফলতা সংক্রান্ত যে আয়াতগুলো রয়েছে, এগুলোর মধ্যে কিছু আয়াত সুরার নাম সহ উল্লেখ করা হলো: বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা:) কে উদ্দেশ্য করে সূরা ইব্রাহীম বলা হয়।- ‘আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদের নামাজ কায়েম করতে বলুন’। (১৪:৩১)। সূরা আল হজের ৭৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ওহে যারা ঈমান এনেছে তোমরা রুকু করো, সিজদা করো ও তোমাদের রবের ইবাদত করো এবং সৎ কাজ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। (২২:৭৭) সুরা ত্বহার ১৩২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, আর আপনার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন এবং আপনি নিজেও এতে অবিচলিত থাকুন। সুরা বাকারার ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত প্রদান এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করো। (২:৪৩)। একই সুরার ২৩৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা নামাজ সমূহকে হেফাজত করো। বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজকে আর আল্লাহর সামনে তোমরা বিনীতভাবে দাঁড়াও।’ (২:২৩৮)। এ আয়াতের মধ্যবর্তী সালাত বলতে আসরের নামাজের কথা বলা হয়েছে। কারণ এই সময়ে মানুষের মধ্যে ব্যস্ততা বেশি থাকার দরুন নামাজটি ফউত(কাজা) হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সে জন্য এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে । সহি বুখারি শরিফের ১/৫৫২ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আসরের নামাজ ছেড়ে দিল, সে যেন তার পরিবার ও ধনসম্পদ হারাল। একই গ্রন্থের ১/৫৫৩ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে আসরের নামাজ ছেড়ে দিয়ে পরে তা আদায় করলে আদায় হবে না। নামাজের সফলতার বাণী ও প্রচারিত হয়েছে আল কুরআনের অনেক জায়গায়। ‘ঈমানদারেরা অব্যশই সফলকাম হয়েছে, যারা নিজেদের নামাজে বিনয়ী ও নম্র।’ (২৩:১-২)। সফলকাম ব্যক্তি সেই যে পবিত্রতা অর্জন করেছে। আপন প্রতিপালকের নাম স্বরণ করেছে এবং নামাজ আদায় করেছে।’ সুরা: আল আলাক, আয়াত ১৪-১৫। নামাজ না পড়ার জন্য যে শাস্তির কথা আল কুরআনে বলা হয়েছে তা নিুরূপ: সূরা আল মুদাসসিরে দোজখের কটিন শাস্তিতে নিক্ষিপ্তদের সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘ কী অপরাধে তোমাদের দোজখে টেনে আনা হলো? তারা উত্তরে বলবে, আমরা মুসলিমদের অর্ন্তভূক্ত ছিলাম না তথা সালাত আদায় করিতাম না। (আয়াত ৪২:৪৩)। যারা নামাজ আদায় করে না, হাদিস শরিফে তাদের সর্ম্পেক অনেক সর্তকবাণী উচ্চারিত হয়েছে। যেমন- রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, বান্দা ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ আদায় না করা। (মুসলিম)। নামাজ সম্পর্কে সুরা আল আনকাবুতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ খারাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।‘ (আয়াত ৪৫)। নামাজ মানুষকে চিন্তামুক্ত রাখে তাই রাসুল (সাঃ) কোনো ব্যাপারে পেরেশান হলে নামাজ আদায় করতেন। সূরা বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ এ ছাড়াও কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে নামাজ আদায় করার আদেশ, এর সুফল ও আদায় না করার কুফল সম্পর্কে অসংখ্য উদ্ধৃতি রয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো নামাজের স্বরূপ নিয়ে। নামাজের স্বরূপ হলো দু’টি-ফরজিয়াত (গধহফধঃড়ৎু): ফরজিয়াত সালাতগুলো হচ্ছে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ এবং এর সাথে আনুষাঙ্গিক কিছু সুন্নত ও নফল নামাজও রয়েছে। এই ফরজ নামাজগুলো ১০ বছর বয়স থেকে শরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত (যতক্ষণ জ্ঞান থাকবে) ফকির, বাদশা, আমির ওমরাহ সুস্থ-অসুস্থ, শাসক-শাসিত, মনিব-গোলাম, মুকিম-মুছাফির সবার জন্য ফরজ। জাকাত, রোজা ও হজের ফরজিয়াতের বেলায় পূর্বশর্ত ও অবস্থার সাথে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নামাজ এমনই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবাদত, যা সব সময় সব অবস্থায় ফরজ। এই ফরজিয়াত নামাজ পরিত্যাগ করলে, কায়েম না করলে বান্দাকে শাস্তি পেতে হবে। ফরজ নামাজের বিনিময়ে কোনো সওয়াব বা প্রতিদানের প্রত্যাশা করা যাবে না। ফরজ নামাজ আদায়ের পর ব্যক্তির জন্য আরো ফরজ কাজ রয়েছে, যেমন- হালাল রিজিক অর্জন, সদাচরণ, নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন ইত্যাদি। (গধহফধঃড়ৎু) এই ফরজ নামাজগুলো আদায় করতে হবে কেন? এর উত্তরে বলা যেতে পারে মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন অত্যন্ত শখ করে অন্য প্রাণিকুলের মধ্যে অতি উত্তম ও সুন্দর আকৃতিতে। সূরা আতত্বিনে বলা হয়েছে, ‘আমি মানুষকে অতি উত্তম ও সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি। (আয়াত-৪)।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
প্রথম আলো
দেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তির সঙ্গে ধর্ম পালন করতে পারছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
অন্যান্য
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শেখ হাসিনা সব ধর্মাবলম্বীর নিরাপদ আশ্রয়। একসময় সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি শুরু করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা পুনরায় ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনেন। এখন সব ধর্মের মানুষ শান্তির সঙ্গে সমভাবে ধর্ম পালন করতে পারছে।আজ শুক্রবার সকালে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা সদরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।শ ম রেজাউল করিম বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সবাই মানুষ। সবাইকে নিরাপত্তা দেওয়া, সব ধর্মের মানুষকে ধর্ম পালনের সুযোগ করে দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শেখ হাসিনা হচ্ছেন সেই নেত্রী, যিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা দিয়ে তাঁদের শান্তিতে রাখার জন্য সবকিছু করেছেন। সনাতন সম্প্রদায়ের সম্পত্তি যাতে বেহাত না হয়, সে ব্যবস্থাও তিনি করে দিয়েছেন।ধর্ম কখনোই মানুষের মধ্যে বিভাজন করে না উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো ধর্মের মানুষই কারও জন্য ক্ষতিকর নয়। ১৯৭১ সালে কিছু রাজাকার, কিছু দুষ্কৃতকারী, সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি সনাতন সম্প্রদায়সহ যাঁরা আওয়ামী লীগ করতেন, তাঁদের ওপর আঘাত করেছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সেই রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে রায় কার্যকর করেছেন। এখন আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সুন্দর বাংলাদেশে বসবাস করছি। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির শেষ আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা।’
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
রমজানে জান্নাতের দরজায় ফেরেশতাদের আহ্বান
ইসলাম ধর্ম
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রমজান মাসের প্রথম রাতেই শয়তান ও দুষ্টু জিনদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে ফেলা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, এর একটি দরজাও তখন খোলা হয় না; জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকে, ‘হে কল্যাণকামী! অগ্রসর হও! হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আছে জাহান্নাম থেকে বহু লোককে মুক্তি দান। প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬৮২) রমজান মাস মুমিনের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। এই মাসে আল্লাহ মুমিনের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ রেখেছেন। রমজানের প্রথম প্রহর থেকেই একজন ঘোষণাকারী এই কল্যাণের ঘোষণা দিতে থাকে। সে বলতে থাকে, ‘হে কল্যাণকামী! অগ্রসর হও! হে পাপাসক্ত! বিরত হও’। এই আহ্বান বান্দার প্রতি আল্লাহর কল্যাণকামিতারই বহিঃপ্রকাশ। কেননা তা বিশ্বাসী ব্যক্তিকে আল্লাহর আনুগত্য করতে এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে, বিশেষত যখন ঘোষণা করা হয় জাহান্নাম থেকে মুক্তির। প্রত্যেক মুমিনের উচিত, পাপ পরিহার ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাওবা করে মুক্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) পাপ পরিহারের পুরস্কার এভাবে ঘোষণা করেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান, তার মধ্যবর্তী সময়ের জন্য পাপমোচনকারী হবে যদি কবিরা গুনাহ হতে বেঁচে থাকে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
পবিত্র কোরআনে এতিম প্রতিপালন সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
ইসলাম ধর্ম
এতিম মানে নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ। বাংলা ভাষায় মাতা-পিতাহীন বালক-বালিকাকে এতিম বলা হয়। ইসলামী পরিভাষায় যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন তাকে এতিম বলা হয়। পিতা উপস্থিত থাকাবস্থায় মাতাবিহীন শিশুকে ইসলামী পরিভাষায় ‘এতিম’ বলা হয় না। পবিত্র কোরআনের ১২টি সুরার ২২ আয়াতে এতিম সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। ঈমান আনা যেমন পুণ্যের কাজ, নামাজ পড়া যেমন পুণ্যের কাজ, তেমনি এতিম ও অসহায়ের সহায় হওয়া পুণ্যের কাজ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘...কিন্তু পুণ্য আছে কেউ আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, কিতাব ও নবীদের ওপর ঈমান আনলে। আর (পুণ্য আছে) আল্লাহকে ভালোবেসে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য দান করলে...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৭৭)। এতিমের তত্ত্বাবধায়ক হওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার ও অত্যন্ত মর্যাদাকর বিষয়। যিনি এই মহান দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন তিনি অবশ্যই মহান মানুষ। নিজের সন্তানের মতো এতিমের সার্বিক বিষয় দেখভাল করবেন। কখনো আদর করে, মাথায় হাত বুলিয়ে সহানুভূতি প্রদর্শন করবেন, আবার অবাধ্যতায় কখনো শাসন করবেন। দাউদ (আ.) বলতেন, ‘এতিমদের প্রতি দয়াবান পিতার মতো হয়ে যাও।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১৩৮) এখানে এতিম প্রতিপালনের পথ ও পন্থা সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো- লালন-পালন ও শিষ্টাচার শিক্ষাদান সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠা শিশুর জন্মগত অধিকার। কিন্তু শৈশবে পিতৃবিয়োগের কারণে এটি অনেক সময় বিঘ্নিত হয়। তাই শৈশব থেকেই তাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিতে হবে। আলী (রা.) বলেন, ‘যার পিতা মারা গেছে সে প্রকৃত এতিম বা অনাথ নয়। বরং জ্ঞান ও শিষ্টাচারে দৈন্য ব্যক্তিই প্রকৃত এতিম।’ (জামিউ দাওয়াবিনিশ শিরিল আরাবি ১০/১৭০) বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করা, দেখা হলে সালাম দেওয়া, গৃহে প্রবেশ ও বের হওয়ার আদব, খাওয়া-পরার আদব, ঘুমানো ও ঘুম থেকে ওঠার আদব, সালাতের নিয়ম ও প্রয়োজনীয় দোয়া-কালাম প্রভৃতি দৈনন্দিন জীবনে চলার নিয়ম-পদ্ধতি শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ এতিমের তত্ত্বাবধায়কের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করা যাবে না। কেননা প্রত্যেককেই কিয়ামতের দিন নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমরা প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৫৫৪) প্রয়োজনীয় শিক্ষাদীক্ষার ব্যবস্থা করা ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাপক। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম অবতীর্ণ পাঁচটি আয়াতের প্রথম শব্দটিই হচ্ছে ‘পড়ো’। আল্লাহ বলেন, ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। পড়ো! আর তোমার পালনকর্তা বড়ই দয়ালু। যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দান করেছেন।’ (সুরা : আলাক, আয়াত : ১-৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ।’ (ইবনে মাজাহ : ২২৪) তাই যথাসাধ্য এতিমের দ্বিনি ও জাগতিক-ব্যাবহারিক উপকারী জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা করা জরুরি। একজন এতিমকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বাত্মক চেষ্টা করা একজন ‘কাফিল’ বা তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব। ঈমান ও আমল শেখানো ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি শিশুই ফিতরাত তথা ইসলাম গ্রহণের যোগ্যতাসহ জন্মগ্রহণ করে। তারপর তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজক বানায়।’ (বুখারি, হাদিস : ১৩৮৫) ঈমান, আমল ও সুন্দর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়ার যোগ্যতা প্রতিটি শিশুর মধ্যেই বিদ্যমান আছে। যদি শিশুর পিতা-মাতা বা অভিভাবক এ ব্যাপারে যত্নবান হয় এবং পরিবেশ যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে শিশুর মধ্যে অনুপম চরিত্রের বিকাশ ঘটে। পাশাপাশি শিরক ও বিদআতের ভয়াবহতা তুলে ধরা এবং এসব থেকে বেঁচে থাকতে বলা। যেমনটি লোকমান তাঁর সন্তানকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘স্মরণ করো, যখন লোকমান উপদেশ দিতে গিয়ে তার পুত্রকে বলেছিল, হে বৎস! আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই শিরক মহা অন্যায়।’ (সুরা ; লুকমান, আয়াত : ১৩) হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে বসা ছিলাম। এমন সময় তিনি আমাকে বলেন, ‘হে বৎস! আমি তোমাকে কিছু কথা শিক্ষা দেব। তুমি আল্লাহর হুকুমের হেফাজত করো, আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করবেন, আল্লাহর বিধানের হেফাজত করো, আল্লাহকে তোমার সামনে পাবে। যখন কিছু চাইবে একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইবে, আর যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে কেবল আল্লাহর কাছেই করবে। জেনে রেখো, সমস্ত জাতি যদি তোমার উপকার করার জন্য একত্র হয়, তাহলে এতটুকু উপকারই করতে পারবে, যা আল্লাহ লিখে রেখেছেন। আর যদি তারা তোমার কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একত্র হয়, তাহলেও ততটুকু ক্ষতিই করতে পারবে, যা আল্লাহ লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং কালি শুকিয়ে গেছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬) সুতরাং ঈমান ও আমল শিক্ষাদানের উপযুক্ত বয়স হচ্ছে শিশু-কিশোর বয়স। তাই এতিমের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার অধীনস্থ এতিম সন্তানকে ঈমান ও আমল শিক্ষা দেবেন। শিরক ও বিদআতমুক্ত সুন্নাতপন্থী হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবেন। তবেই তিনি নিজেকে একজন সফল এতিম প্রতিপালনকারী হবেন। উপযুক্ত বয়সে বিবাহের ব্যবস্থা করা এতিমের দায়িত্বশীলের এটিও অন্যতম দায়িত্ব যে বিবাহের বয়স হলে তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করা। বিবাহ মুসলিম জীবনের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। বিবাহের মাধ্যমে যেমন নিঃসঙ্গতা দূরীভূত হয়, চিন্তা প্রশমিত হয়, ঠিক তেমনি তাকওয়া বা পরহেজগারিতা বৃদ্ধি পায়। অশান্ত মনে প্রশান্তি ফিরে আসে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর মহান আল্লাহর নিদর্শনাবলির মধ্যে আছে যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মধ্যে পরস্পরে ভালোবাসা ও দয়া।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ২১) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করতে সক্ষম তারা যেন বিবাহ করে। কারণ বিবাহ দৃষ্টি অবনত রাখতে ও গুপ্তাঙ্গের হেফাজতে বেশি কার্যকর। আর যে ব্যক্তি বিবাহ করতে অক্ষম সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা যৌন চাহিদা অবদমিত রাখে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০৬৫)
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
কালের কন্ঠ
মসজিদুল হারামের সম্প্রসারিত মাতাফ অংশের নাম ঘোষণা
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র মসজিদুল হারামের মাতাফ অংশের সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজকীয় নির্দেশনায় এর নাম ‘সৌদি রিওয়াক’ হিসেবে ঘোষণা দেন পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইস। মাতাফ সম্প্রসারণের ফলে আরো অধিকসংখ্যক মুসল্লি ও তাওয়াফকারী এখন স্বাচ্ছন্দ্যে হজ ও ওমরাহ পালন করতে পারবেন।শায়খ আল-সুদাইস বলেন, পবিত্র মসজিদুল হারামের মাতাফের আয়োতন সর্বোচ্চ পরিমাণ সম্প্রসারিত হয়েছে, যা পূর্বে কখনো হয়নি।মূলত সৌদি রিওয়াকের মাধ্যমে পূর্ণতা পেয়েছে আব্বাসি রিওয়াক। পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণের চারপাশের আব্বাসি রিওয়াকের ঠিক পেছনে তা নির্মিত হয়। মূলত সর্বাধিকসংখ্যক মুসল্লির অংশগ্রহণের লক্ষ্যে মসজিদুল হারাম সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন সৌদি রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজ।১৩৭৫ হিজরি মোতাবেক ১৯৫৫ সালে বাদশাহ সাউদের শাসনামলে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং তা বাদশাহ ফয়সাল ও বাদশাহ খালিদের সময়ে তা চলমান থাকে।সর্বশেষ বাদশাহ ফাহাদ, বাদশাহ আবদুল্লাহ ও বাদশাহ সালমানের সময় এর কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়। সৌদি রিওয়াক অংশের চার তলায় দুই লাখ ৮৭ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। আর প্রতি ঘণ্টায় রিওয়াক ও মাতাফ প্রাঙ্গণে এক লাখ সাত হাজারজন তাওয়াফ করতে পারবেন। মাতাফ অংশের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের একটি হলো তাপরোধী মার্বেল পাথর।মেঝেতে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার ক্ষেত্রে এই পাথরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভ্রাতৃত্ববন্ধন ও উদারতার শিক্ষা দেয় রমজান
ইসলাম ধর্ম
রমজান মাস শুরু হলেই আমাদের মাঝে এক ধরনের ইবাদতের আমেজ কাজ করে। ইবাদতের শিডিউল তৈরি হতে থাকে। ইবাদত নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ভ্রাতৃত্ববন্ধন এক উত্তম ইবাদত। এর দ্বারা সমাজের মধ্যে ইসলামী পরিবেশ তৈরি হয়, দীনি হাওয়া চালু হয়। একে অন্যের প্রতি মায়া-মমতা ও মহাব্বত তৈরি হয়। ধীরে ধীরে মানুষ আল্লাহর প্রতি ধাবিত হতে থাকে। কেননা ভাতৃত্ববন্ধনে মানুষ একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল-নম্রতাশীল হয়। একে অন্যের প্রতি যত্নবান হয়। প্রত্যেকে চায় তার দ্বারা যেন অন্য ভাইয়ের কোনো অসুবিধা-কষ্ট না হয়। আর এটি মুমিনের অন্যতম একটি গুণ। হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মুমিন পরিপূর্ণ ইমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তার হাত-মুখ থেকে অন্য মুসলমান ভাই নিরাপদ থাকে। (বুখারি, মুসলিম)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মাঝে মীমাংসা করে দাও।’ (সুরা হুজুরাত : ১০)। আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন নর ও মুমিন নারী সবাই একে অন্যের বন্ধু।’ (সুরা তাওবা : ৭১)। আয়াতদ্বয় দ্বারা কোরআনে বর্ণিত ভাতৃত্ববন্ধনের পরিচয় জানা যায়। রমজান মাসে এই ভাতৃত্ববোধ নিজেদের মধ্যে জেগে ওঠে। অনেকেই তার আশপাশের লোকদের খোঁজখবর নিয়ে থাকে। তার প্রতিবেশী কীভাবে ইফতার করছে, রমজান মাস তাদের কীভাবে কাটছে? তখন নিজেদের সাধ্যমতো তাদের সহোযোগিতা করে থাকে। পবিত্র রমজান মাসে কাউকে ইফতার করানোর ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘যাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানি (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- কোনো রোজা পালনকারীকে যে লোক ইফতার করায় সে লোকের জন্যও রোজা পালনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। কিন্তু এর ফলে রোযা পালনকারীর সাওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।’ (সহিহ ইবনু মাজাহ : ১৭৪৬) সুবহানাল্লাহ। মক্কায় অবস্থিত সাহাবায়ে কেরাম যখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে মদিনাতে হিজরত করেন, তখন মদিনার আনসার সাহাবিগণ মুহাজিরদের সঙ্গে ভাতৃত্ববন্ধনের যে নিদর্শন স্থাপন করেছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে আজ পর্যন্ত ভাতৃত্বের এই অনুপন দৃশ্য আর কোনো জাতি দেখাতে পারেনি। মদিনার মুসলমানগণ সহযোগিতা ও সহানুভূতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তারা নিজেদের প্রয়োজন ও দারিদ্র্য থাকা সত্ত্বেও সহায়-সম্বলহীন মুহাজির মুসলমান ভাইদের জন্য ধনসম্পদ ও আপন স্বার্থ পর্যন্ত ত্যাগ করেছিলেন। যাদের দুটি বাড়ি ছিল তারা নিজেদের জন্য একটি রেখে অন্য মুহাজির ভাইয়ের জন্য আরেকটি ছেড়ে দেন। তাদের ত্যাগ ও কোরবানির এ গুণটি পছন্দ করে আল্লাহতায়ালা কালামে পাকে ইরশাদ করেন- ‘তারা (আনসারেরা) নিজেদের ওপর (মুহাজিরদের) প্রাধান্য দেয়। যদিও নিজেদের প্রয়োজন ও অভাব থাকে।’ (সুরা হাশর : ০৯)। এই গুণের অধিকারীদের সম্পর্কে অন্য জায়গায় ইরশাদ হচ্ছে, ‘(তারাই এসব নেয়ামত লাভ করবে যারা...) এবং যারা মিসকিন, এতিম ও বন্দিদের খাবার দান করে তার প্রতি (নিজেদের) আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও। (আর বলে) আমরা তো তোমাদেরকে খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। তোমাদের থেকে আমরা কোনো প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।’ (সুরা দাহর : ৮-৯)। এক হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজ সাথীদের প্রতি উদারতার একটি ঘটনা বর্ণিত আছে। হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক নারী সাহাবি নবীজির জন্য সুন্দর কারুকার্যখচিত একটি নতুন কাপড় হাদিয়া এনে আরজ করলেন, আমি এটি স্বহস্তে তৈরি করেছি। আপনি তা পরিধান করলে খুশি হব। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপড়টি গ্রহণ করলেন। তাঁর কাপড়ের প্রয়োজনও ছিল। যখন তিনি তা লুঙ্গি হিসেবে পরিধান করে ঘরের বাইরে এলেন, এক ব্যক্তি তা দেখে বলল, খুব চমৎকার কাপড় তো! আমাকে তা দান করবেন কি? তখন নবীজি ঘরে ফিরে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে ওই কাপড়টি ভাঁজ করে লোকটির জন্য পাঠিয়ে দিলেন। এ দৃশ্য দেখে অন্যান্য সাহাবি ওই ব্যক্তিকে তিরস্কার করে বলতে লাগলেন, আরে মিয়া! তুমি কি জানো না, কাপড়টি নবীজির প্রয়োজন রয়েছে। আর তিনি কোনো কিছু চাইলে ‘না’ বলেন না। ওই লোকটি জবাবে বলল, আমি সবই জানি। এরপরও চেয়েছি, যাতে তাঁর মুবারক শরীর-স্পর্শে ধন্য কাপড় দিয়ে আমি নিজের কাফন বানাতে পারি। বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন, ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর সেই কাপড়েই তাকে দাফন করা হয়েছিল।’ (সহিহ বুখারি : ১২৭৭, ২০৯৩)। সিরাতের কিতাবগুলোতে এই জাতীয় বহু ঘটনা বণিত আছে। ভাতৃত্ববন্ধন ইসলামের অন্যতম একটি বড় গুণ। এর দ্বারা মানুষ মানুষকে মূল্যায়ন করতে শিখে। নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি, মনের অমিল ও দূরত্ব কমে গিয়ে এক উত্তম আদর্শ সৃষ্টি হয়। আল্লাহপাক এই রমজানে আমাদেরকে ভাতৃত্বের এই মহৎ গুণ পরিপূর্ণভাবে অর্জন করার তৌফিক দান করুন।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
যায়যায়দিন
বেনামাজির রোজা কবুল হবে না
ইসলাম ধর্ম
ইমানের গভীরতা ও দৃঢ়তা সৃষ্টি এবং শরিয়ত পালনে অবিচলতা অর্জনের কার্যকর উপায় সিয়াম সাধনার মাস রমজানুল মোবারকের আজ চতুর্দশ দিবস আজ। বিগত জীবনের ভুল-ভ্রান্তি সংশোধনের জন্য ও জীবনের সব গুনার কথা স্মরণ করে মুসলমানরা প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শেষে অশ্রুসিক্ত নয়নে তওবার মাধ্যমে রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। তবে নির্বোধ অনেকেই নামাজ না পড়ে সারাদিন উপবাস থেকে সেহরি ও ইফতারি খেয়ে সিয়াম পালনের দাবি করেন। ইসলাম তাদের সুনির্দিষ্টভাবে সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, বেনামাজির রোজা কবুল হবে না। এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ইসলামের প্রথম স্তম্ভ হলো নামাজ। তারপর পর্যায়ক্রমিকভাবে রোজ, হজ, জাকাত ইত্যাদির অবস্থান। নামাজ ছাড়া কোনো ইবাদতই কবুল হয় না। এ ছাড়া সালাত হচ্ছে একজন মানুষের ইসলাম গ্রহণের পর ইসলাম টিকিয়ে রাখার প্রথম শর্ত। অর্থাৎ ইমান আনার পর সেই ইমানে অবিচল থাকা প্রধান শর্ত হচ্ছে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। যদি কেউ তা না করে তবে তার আর ইমান থাকবে না। সে কাফের হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে চুক্তি হলো সালাত। সুতরাং যে ব্যক্তি তা ত্যাগ করবে সে কাফির হয়ে যাবে। (তিরমিজিঃ ২৬২১, ইবনে মাজাহঃ ১০৭৯) অর্থাৎ ৫ ওয়াক্তে সর্বমোট অন্তত ১৭ রাকআত ফরজ সালাত একজন মানুষকে মুসলিম থাকতে হলে অবশ্যই আদায় করতে হবে। যদি সে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সে ক্ষেত্রেও তাকে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাত অবশ্যই আদায় করতে হবে। সুতরাং হাদিস অনুযায়ী যে রোজা রাখল কিন্তু সালাত আদায় করল না তার রোজা কবুল হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এমনকি বেনামাজির জাকাত ও হজসহ কোনো আমলই কবুল হয় না। ইমাম বুখারি (৫২০) বুরাইদা (রা.) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।’ এ হাদিস প্রমাণ করে, বেনামাজির কোনো আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং বেনামাজি তার আমল দ্বারা কোনোভাবে উপকৃত হবে না। তার কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না। ‘ফাতাওয়াস সিয়াম’ (পৃ-৮৭) গ্রন্থে এসেছে শাইখ ইবনে উছাইমীনকে বেনামাজির রোজা রাখার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এর উত্তরে বলেন, বেনামাজির রোজা শুদ্ধ নয় এবং তা কবুলযোগ্য নয়। কারণ নামাজ ত্যাগকারী কাফের, মুরতাদ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন করিমে বলা হয়েছে, ‘আর যদি তারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও জাকাত দেয় তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই।’ [৯ সূরা আত্ তওবা: ১১] প্রসিদ্ধ তাবেয়ি আব্দুল্লাহ ইবনে শাক্বিক রাহিমাহুমুল্লাহ বলেছেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবিগণ নামাজ ছাড়া অন্য কোনো আমল ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না।’ উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যদি কোনো ব্যক্তি রোজা রাখে; কিন্তু নামাজ না পড়ে তবে তার রোজা প্রত্যাখ্যাত, গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাছে কোনো উপকারে আসবে না। এমনকি যদি কোনো ব্যক্তি শুধু রমজান মাসে রোজা পালনে ও নামাজ আদায়ে সচেষ্ট হয় আর রমজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নামাজ ত্যাগ করে, তবে তার সিয়াম কি কবুল হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আলেমদের ভাষ্য, নামাজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। সাক্ষ্যদ্বয়ের পর ইসলামের স্তম্ভগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ফরজে আইন। যে ব্যক্তি এর ফরজিয়তকে অস্বীকার করে কিংবা অবহেলা বা অলসতা করে তা ত্যাগ করল সে কাফের হয়ে গেল। আর যারা শুধু রমজানে নামাজ আদায় করে ও রোজা পালন করে তবে তা হলো আল্লাহ্র সঙ্গে ধোঁকাবাজি। রমজান ব্যতীত অন্য মাসগুলোতে নামাজ ত্যাগ করায় তাদের সিয়াম শুদ্ধ হবে না।
ধর্মীয় শিক্ষা
Negative
বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম : জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ইসলাম ধর্ম
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার নামই হলো জিহাদ। মানুষের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামই জিহাদ। অধিকার বঞ্চিত মানুষের ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই জিহাদ। জিহাদ বললে আমাদের লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। ভাবতে হবে আমি ন্যায়ের পক্ষে আছি।’ আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় ‘সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ নয় : সম্প্রীতি, ইনসাফ ও সহনশীলতাই ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ এ আলোচনা সভা আয়োজন করে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র, সাম্য এবং জনগণের অধিকার। মুক্তিযুদ্ধে সবই ইসলামের কথা বলেছি। মানুষের কথায় বলেছি, ন্যায়ের কথায় বলেছি। আজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ভূলণ্ঠিত, সেজন্য সংগ্রামে যেতে হবে।’ গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমি নামাজ পড়ি না বলে আমাকে মুরদাদ বলার অধিকার আপনাদের নেই। এটা আল্লাহ সিদ্ধান্ত নেবেন। নামাজ পড়ি না বলে আমাকে বেত মারার অধিকার আপনার নেই, খোদা বিচার করবেন। আজকে আলেমদের নামে কেন বলাৎকারের অভিযোগ আসবে? অন্যরা করলে দোষ হয় না, কিন্তু আপনারা করলে দোষ হবে। কারণ, মানুষ আপনাদের সম্মান করে। আপনারা ছোট দোষ করলে দোষটা বড় হয়ে যায়।’ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ড. মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, ড. আল্লামা সাইয়েদ কামাল উদ্দিন জাফরী, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
প্রথম আলো
ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে নওগাঁয় কিশোর আটক
অন্যান্য
নওগাঁর মহাদেবপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে এক কিশোরকে (১৬) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে ওই কিশোরকে আটক করা হয়। পরে সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ওই কিশোর স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।থানা-পুলিশের ভাষ্য, গত শনিবার বিকেলে ওই কিশোর তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট দেয়। পোস্টটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা ওই কিশোরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল দুপুরে উপজেলার সরস্বতীপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে বিকেল চারটার দিকে অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করে পুলিশ। সন্ধ্যায় আদালতের নির্দেশে ওই কিশোরকে যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি জানার পরই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত কিশোরকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে যশোরে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বিশৃঙ্খলা না করে সবাইকে আইনের প্রতি আস্থা রাখার জন্য অনুরোধ জানান।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
Dhaka Tribune
বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ইসলাম ধর্ম
গোপালগঞ্জে বাবা-মায়ের কবরের পাশে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। রবিবার (১৪ জুন) বাদ আসর গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার কেকানিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে অ্যাম্বুলেন্সে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মরদেহ বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে সরাসরি তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কেকানিয়া গ্রামে এসে পৌঁছায়। বিকেল ৫ টার দিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহ দাফন করা হয়। শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মৃত্যুতে গোটা গোপালগঞ্জ জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ শোক প্রকাশ করেছেন।ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহচর গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ রুহুল আমিন বলেন, “শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ছিলেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতা। স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে পথ চলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন তিনি।” টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলায় উন্নয়ন প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে নিরলস কাজ করেছেন তিনি। সুখে ও দুঃখে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার মানুষের সাথে সব সময় ছিলেন শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনি এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষের খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন।” কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ একজন আদর্শবান মানুষ। এই নেতাকে হারিয়ে, আমরা অভিভাবক হারিয়েছি। এ শূণ্যতা পূর্ণ হওয়ার নয়।”
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
আলোকিত বাংলাদেশ
দেশের সম্মানহানি যেন না ঘটে : ধর্মমন্ত্রী
অন্যান্য
হজ গাইডদের উদ্দেশ্যে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় একজন হজ গাইড নয়, আপনার পরিচয় আপনি বাংলাদেশি। আপনি হলেন আপনার দলের হজযাত্রীদের জিম্মাদার, পথ প্রদর্শক ও পরামর্শক। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফুটে উঠবে। আপনার কারণে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও সম্মানহানি যেন না ঘটে সেদিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।’ শনিবার (৯ মার্চ) সকালে ঢাকার আশকোনায় হজ অফিসে সরকারি হজ গাইড প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হজ গাইডদের ‍তিনি এসব কথা বলেন। ধর্মমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক সুস্থ ও সামর্থ্যবান মুসলমান নরনারীর উপর হজ আদায় করা ফরজ। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে হজের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। প্রত্যেক হজযাত্রী যাতে সহীহ্ ও শুদ্ধভাবে হজ পালন করতে পারে সে বিষয়ে হজ গাইডদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। ধর্মমন্ত্রী আরও বলেন, আপনাদের দক্ষ হজ গাইড হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই আজ এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের প্রতিটি অধিবেশনে শতভাগ মনোযোগী থাকবেন। হজের নিয়ম কানুন, হুকুম-আহকাম ও ধারাবাহিক কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞান অর্জন করতে হবে। বুঝতে সমস্যা হলে প্রশিক্ষকদের বারবার জিজ্ঞাসা করতে হবে। প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে গ্রহণ করলেই আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। প্রশিক্ষকদের উদ্দেশ্যে ফরিদুল হক খান বলেন, দক্ষ হজ গাইড গড়ে তুলতে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোন প্রশিক্ষণার্থীই যাতে পিছিয়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ধীরে শেখে এমন প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
ভোরের কাগজ
এরকম কাপুরুষদের কোনো ধর্ম ও জাতি নেই: আজহার আলী
অন্যান্য
নিউজিল্যান্ডের মসজিদে ভয়াবহ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী। টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এ হামলায় যাদের পরিবারের মানুষ নিহত হয়েছেন তাঁদের কথা ভেবে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এখানে খেলোয়াড় ও বুদ্ধিজীবীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও বাংলাদেশ দল নিরাপদে আছে তা শুনে স্বস্তিবোধ করছি। এরকম কাপুরুষদের কোনো ধর্ম ও জাতি নেই। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ভয়াবহ হামলায় প্রাণে বেঁচে গেছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ওই মসজিদে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা পবিত্র জুমা আদায় করার কথা ছিল। মসজিদের ভেতরে গুলির প্রচণ্ড আওয়াজ শুনে বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে রক্ষা পান। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনার পর বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা একটি পার্কের মধ্য থেকে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন৷ এসময় তাদের নিরাপত্তা দিতে কোনও পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি৷ মসজিদে সন্ত্রাসীর ওই এলোপাতারি গুলিতে ৪৯ জন নিহত হন। ভয়াবহ এ হামলায় সারা বিশ্বে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা নানাভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এ ঘটনার।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Negative
আলোকিত বাংলাদেশ
বন্যায় ডুবে যাওয়া মসজিদে নামাজ আদায়ের বিধান
ইসলাম ধর্ম
বৃষ্টিপাত ও বন্যায় চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারসহ দেশের অনেক জায়গায় কয়েকদিন ধরে জনজীবন বিপন্ন। বন্যার পানিতে অনেক মসজিদও ডুবে গেছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু বন্যার কারণে ডুবে যাওয়া মসজিদে পানির উপর নামাজ কি পড়তে হবে? পড়লে পদ্ধতি কী হবে?— জানতে চান অনেকে। এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মসজিদ পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলে সেখানে নামাজ পড়তে হবে না। আশপাশের কোথাও পানিহীন স্থানে রুকু সেজদাসহ নামাজ আদায় করে নেবে। আবার রুকু সেজদা দিয়ে নামাজ পড়ার মতো স্থান থাকা অবস্থায় বন্যাকালীন সময়ে মসজিদে এসে পানিতে ইশারা করে নামাজ আদায় করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। মসজিদে আসার ইচ্ছে থাকার কারণে ইনশাআল্লাহ মসজিদে আসার সওয়াব থেকে মাহরুম হতে হবে না। (তথ্যসূত্র: নুরুল ইজাহ, ‘সালাত’ অধ্যায়, ‘জামাত’ পরিচ্ছদ: ৭৮; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি: ২৯৯; রদ্দুল মুহতার: ২/২৯২; মাওসুয়াতুল ফিকহিয়া আল কুয়েতিয়াহ: ৪২/৬৩; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি: ২৯৭)
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
ভোরের কাগজ
শ্যামাপূজার দিন অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান
হিন্দু ধর্ম
বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামাপূজা ও দীপাবলি। আগামী রবিবার (১২ নভেম্বর) শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হিন্দুদের এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে দিনটিতে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্যে বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন যে, বিরোধী দলসমূহ ঐক্য পরিষদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোববারের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন। উল্লেখ্য, সরকার পতনের একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী রবিবার ও সোমবার সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
ভোরের কাগজ
৩য় চার্লসের রাজ্যাভিষেকে বিভিন্ন ধর্মের মিলনমেলা
অন্যান্য
ব্রিটেনের রাজা হিসেবে তৃতীয় চার্লসের অভিষেক হচ্ছে আজ শনিবার। তিনি হবেন ব্রিটেনের ৪০তম রাজা। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে সীমিত কিন্তু জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই রাজকীয় অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে। আধুনিক ব্রিটেন যে বিভিন্ন স¤প্রদায় ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের দেশ, তা তুলে ধরতেই অনুষ্ঠানটিকে বিশেষভাবে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন চার্লস। তার মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মারা যাওয়ার পর তিনি রাজার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অভিষেক অনুষ্ঠানে যা হবে : ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে অভিষেক অনুষ্ঠানে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে কুইন কনসর্ট ক্যামিলাকেও মুকুট পরানো হবে। এই অভিষেক অনুষ্ঠান মূলত অ্যাংলিকান খ্রিস্টানদের একটি ধর্মীয় সভা যা আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি পরিচালনা করে থাকেন। এ সময় রাজার মাথায় ও হাতে ‘পবিত্র তেল’ লেপন করা হয় এবং রাজকীয় প্রতীক হিসেবে তিনি রাজদণ্ড ও রাজগোলক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্বে রাজা তৃতীয় চার্লসের মাথায় সেন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট পরিয়ে দেবেন আর্চবিশপ। এটি একটি স্বর্ণের মুকুট যা ১৬৬১ সালে তৈরি করা হয়েছিল। অভিষেক অনুষ্ঠানে কারা থাকছেন, কারা থাকছেন না : রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে অনেক বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকছেন। আবার রাজপরিবারেরই অনেক সদস্য থাকছেন না। বিশ্বনেতাদের মধ্যে থাকছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং প্রমুখ। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। অন্য রাজপরিবারগুলোর মধ্যে স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেতিসিয়া, যুবরাজ ফ্রেদেরিক এবং ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্সেস মেরিসহ বিভিন্ন দেশের রাজপরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অভিষেকে থাকছেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার প্রতিনিধিত্ব করবেন স্ত্রী জিল বাইডেন। অভিষেকে উপস্থিত না থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্তানদের নিয়ে থাকবেন। অবশ্য কয়েক মাসের দর-কষাকষির পর অনুষ্ঠানে থাকতে রাজি হয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। রাজ্যাভিষেকে বিভিন্ন ধর্মের উপস্থিতি : ইংল্যান্ডের রাজা সরকারিভাবে ‘চার্চ অব ইংল্যান্ড’-এর প্রধান। তা ছাড়া, তাকে ‘ধর্মের রক্ষাকর্তা’ বলেও মান্য করা হয়। প্রথাগতভাবে এই ‘ধর্ম’ খ্রিস্টান ধর্ম। কিন্তু চার্লস বরাবরই বলে এসেছেন, তিনি ‘সব ধর্মের রক্ষাকর্তা’ হিসেবেই পরিচিত হতে চান। তাই অভিষেক অনুষ্ঠানে চার্লস বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাকিংহাম প্রাসাদ সূত্রের খবর, এই অনুষ্ঠানটি যার পৌরহিত্যে হবে, সেই আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবেরি রেভারেন্ড জাস্টিন ওয়েলবির সঙ্গে আলোচনা করেই অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে। রাজ্যাভিষেক মূলত খ্রিস্টীয় রীতি মেনে হলেও এবার বিভিন্ন ধর্মের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানকে বিশেষ মাত্রা দেবে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে আশা প্রকাশ করেছেন চার্লস। আজকের অনুষ্ঠানে বাইবেল থেকে পাঠ করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এর আগে সব সময়ে এই কাজটি করে এসেছেন কোনো এক বিশপ। প্রসঙ্গত, সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু। অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ অংশে রাজার হাতে ‘রাজকীয়’ কিছু দ্রব্য তুলে দেয়া হয়। প্রথাগতভাবে যাজক বা রাজপরিবারের সদস্যরাই এই কাজ করেন। কিন্তু এবারের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ৩ জন অ-খ্রিস্টান। ‘করোনেশন রিং’ বা অভিষেক অঙ্গুরীয় রাজার হাতে তুলে দেবেন লর্ড বাবুভাই প্যাটেল (হিন্দু)। তারপরে, রাজাকে করোনেশন গ্লাভস বা দস্তানা দেবেন লর্ড ইন্দ্রজিৎ সিংহ (শিখ)। তারা দুজনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এরপরে রাজাকে ব্রেসলেট দেবেন পাকিস্তানের বংশোদ্ভূত লর্ড সৈয়দ কামাল (মুসলিম)। অনুষ্ঠান শেষে, বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে সম্ভাষণ জানাবেন রাজা। তাদের মধ্যে থাকবেন ইহুদি, বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলিম, শিখসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
মিথ্যাবাদীর স্থান ইসলামে নেই
ইসলাম ধর্ম
মিথ্যা বলা ও মিথ্যাবাদীর স্থান ইসলামে নেই। ইসলাম হলো সত্য ধর্ম। এখানে কেবলই সত্যবাদীর স্থান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার ভালোভাবে জানা নেই তা নিয়ে পড়ে থেক না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও হৃদয়- এসবের ব্যাপারে কেয়ামতের দিন প্রশ্নের মুখোমুখি হবে’ (সুরা বনি ইসরাইল-৩৬)। জেনেশুনে তো বটেই এমনকি অনুমাননির্ভর মিথ্যা সম্পর্কেও কোরআন সুস্পষ্ট বলে দিয়েছে, ‘অনুমাননির্ভর মিথ্যাচারীরা ধ্বংস হোক’ (সুরা জারিয়াত-১০)। অন্য আয়াত থেকে জানা যায়, মিথ্যাবাদীকে স্বয়ং আল্লাহ অভিশাপ দিয়ে থাকেন। মুবাহালা সংক্রান্ত আয়াতে এসেছে, ‘তাহলে আমরা সবাই আল্লাহর কাছে এ দোয়া করি যে, মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ অঝোর ধারায় বর্ষিত হোক’ (সুরা আলে ইমরান-৬১)। আল্লাহতায়ালা মিথ্যাবাদীকে ঘৃণা করেন এবং কেয়ামতের দিন মিথ্যাবাদী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। আল্লাহ কোরআনে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘সুতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে নিফাক (দ্বিমুখিতা) রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তারা আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারণে’ (সুরা তওবা-৭৭)। অন্য আয়াত থেকে জানা যায়, মিথ্যা বলা মুনাফিকি বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মিথ্যা বলার শাস্তির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাদের হৃদয়ে আছে একটি অসুখ, আল্লাহ সে অসুখ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি; কারণ তারা ছিল মিথ্যাবাদী’ (সুরা বাকারা-১০)। মিথ্যা সব পাপের মা বলা হয়। একটি ছোট্ট মিথ্যা থেকে শত শত পাপের জন্ম হয়। তাই খুব সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা নিষেধ। কেননা মিথ্যাকে হালকা মনে করার ফলে মানুষ ধীরে ধীরে মিথ্যায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন মিথ্যা কথা বলতে তার আর দ্বিধা করে না। যে কোনো বিষয়ে মুখ দিয়ে অকপটে মিথ্যা বের হয়ে আসে। জলিলে কদর সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সত্যকে আঁকড়ে ধর। কারণ সত্য পুণ্যের পথ দেখায় আর পুণ্য জান্নাতের পথ দেখায়। কোনো ব্যক্তি সব সময় সত্য কথা বললে এবং সত্যের অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে লিখিত হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা পাপের রাস্তা দেখায় আর পাপ জাহান্নামের রাস্তায় নিয়ে যায়। কোনো ব্যক্তি সব সময় মিথ্যা কথা বললে এবং মিথ্যার অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদীরূপে পরিগণিত হয়’ (মুসলিম)। আমরা কথায় কথায় খুব সাধারণ বিষয়ে অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে ফেলি। অতি সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা এমনকি বিনোদনের জন্যও মিথ্যা বলাও ইসলামে নিষেধ। হিজাম (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির, যে মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে। অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির, অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির’ (তিরমিজি)। অন্য হাদিসে স্বপ্ন নিয়ে মিথ্যা বলা সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো স্বপ্ন দেখেছে বলে দাবি করল, অথচ সে তা দেখেনি, তাহলে তাকে দুটি জবের দানা একত্রে জোড়া দিতে বাধ্য করা হবে অথচ সে তা কখনোই করতে পারবে না’ (বুখারি ও তিরমিজি)।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইবাদতে ব্যস্ত থাকা ব্যক্তির জন্য আল্লাহর সুসংবাদ
ইসলাম ধর্ম
অবসর মানে ব্যস্ততা থেকে খালি হওয়া। ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার অর্থ হলো, আখিরাতের জীবনকে সামনে রেখে পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালিত করা। মহান আল্লাহ হাদিসে কুদসিতে তাঁর ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য অবসর হও। আমি তোমার বক্ষ অভাবমুক্ত করে দেব এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করে দেব। আর যদি সেটা না করো (অর্থাৎ আমার ইবাদতের জন্য অবসর না হও), তবে তোমার দুই হাত ব্যস্ততা দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার অভাব-অনটনের পথ কখনো বন্ধ করব না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬৬) অন্য বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য অবসর হও। তাহলে আমি তোমার অন্তর ধনী বানিয়ে দেব এবং তোমার দুই হাত রিজিক দিয়ে পূর্ণ করে দেব। হে আদম সন্তান! আমার (ইবাদত) থেকে দূরে সরে যেয়ো না! তবে আমি তোমার হৃদয় দারিদ্র্য দিয়ে পূর্ণ করে দেব এবং তোমার দুই হাত ব্যস্ততা দিয়ে ভরে দেব।’ (মুস্তাদরাক হাকেম, হাদিস : ৭৯২৬) সব কাজ থেকে যথা সময়ে নিজেকে অবসর করে নিয়ে আল্লাহর অভিমুখী হওয়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য। মহান আল্লাহ তাঁর রাসুল (সা.)-কে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও এবং তোমার রবের দিকে রুজু হও।’ (সুরা : ইনশিরাহ, আয়াত : ৭-৮) এ আয়াতের তাফসিরে ইবনু কাসির (রহ.) বলেন, ‘যখন তুমি দুনিয়ার কাজকর্ম ও ব্যস্ততা থেকে অবসর হবে এবং দুনিয়ার যাবতীয় সম্পৃক্ততা থেকে মুক্ত হবে, তখন ইবাদতে আত্মনিয়োগ করো এবং অন্তরকে খালি করে সক্রিয়ভাবে ইবাদত সম্পাদন করো। আর নিয়ত ও আগ্রহকে একমাত্র তোমার রবের জন্য বিশুদ্ধ করো।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির, ৮/৪৩৩) ইবাদতের জন্য অবসর তিন ভাগে বিভক্ত : (১) মনের অবসর, (২) শরীরের অবসর ও (৩) সময়ের অবসর। মনের অবসর : মনের অবসর হলো, গভীর মনোযোগী হয়ে ইবাদত করা, অন্তরকে লৌকিকতামুক্ত করা, নিয়ত পরিশুদ্ধ করা। শরীরের অবসর : শরীরের অবসর হলো, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর আনুগত্যে নিয়োজিত করা এবং পাপাচার থেকে বিরত রাখা, জিহ্বাকে জিকরে ব্যস্ত রাখা, সত্য কথা বলা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, পেট হারাম খাদ্য থেকে বিরত রাখা ইত্যাদি। সময়ের অবসর : সময়ের অবসর হলো, নির্দিষ্ট সময় ইবাদতের জন্য বরাদ্দ রাখা। যেমন : প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জন্য সময় বরাদ্দ রাখা, প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি। সব কিছুর ওপর আল্লাহর ইবাদতের অগ্রাধিকার ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হলো, দুনিয়ার সব কাজের ওপর আল্লাহর আনুগত্য প্রাধান্য দেওয়া। কেননা দুনিয়াতে মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে ইবাদতে মধ্যপন্থা অবলম্বন করবে। কারণ সামর্থ্যের অতিরিক্ত আমল করা শুরু করলে কয়েক দিন পরে সেটাতে বিরক্তি চলে আসবে। তাই ইবাদতে মধ্যপন্থা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করতে থাকো। কারণ আল্লাহ (সওয়াব দানে) ক্লান্তিবোধ করেন না, যতক্ষণ না তোমরা (আমল সম্পাদনে) ক্লান্ত হয়ে পড়ো। আর আল্লাহর কাছে ওই আমল সবচেয়ে প্রিয়, যা অল্প হলেও নিয়মিত করা হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৮৬১) আল্লাহর ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার সর্বশেষ স্বরূপ হলো, ইবাদতে ইস্তিকামাত তথা অবিচল থাকা। আর ইবাদতে অবিচল থাকার অর্থ হচ্ছে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়মিত আল্লাহর আনুগত্য করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। অতএব তোমরা তাঁর দিকেই দৃঢ়ভাবে গমন করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।’ (সুরা : হা-মিম সাজদাহ, আয়াত : ৬) মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
সমকাল
বাংলার মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ী নয়: সজীব ওয়াজেদ
অন্যান্য
বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বাংলার মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ী নয়। পহেলা বৈশাখে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা লিখেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারে নাই। আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকই ধর্মপ্রাণ মুসলমান, কিন্তু ধর্মান্ধ নন। বাংলার মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে সরলপ্রাণ ও ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম প্রদর্শনকারী বা ধর্মব্যবসায়ী নয়।’ ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরাই একসময় বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। বিপরীতে মাত্র ৯টি আসন পেয়ে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় ধর্মব্যবসায়ীরা।’ গত শারদীয় দুর্গোৎসবে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, মণ্ডপে হামলার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন প্রত্যক্ষ করে বাংলাদেশ। সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডল ও নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালের ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগ উত্থাপনের পর দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আসার পর সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার এক শিক্ষক আত্মগোপনে চলে গেছেন। এসব ঘটনায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িকতা আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হলে বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তুলে ধরেন। সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আপনারা জানেন- দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে যে চারটি স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। সবাই সবার নিজের ধর্ম পালন করবে, অন্যদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, ধর্ম নিয়ে কেউ সহিংসতা করবে না- এটাই হলো ধর্মনিরপেক্ষতার মূল কথা। এর সঙ্গে নৃতাত্ত্বিকভাবে চলে আসা বাঙালি সংস্কৃতির কোনো বিভেদ নেই। সাংস্কৃতিকভাবে আমরা অনেক সমৃদ্ধ জাতি।’ আবহমান বাংলার ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারে নাই। প্রত্যেক বাঙালি শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করুন এবং একইসঙ্গে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করুন। যারা এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারা বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এবং সংস্কৃতিকে ধারণ করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই জাতি- ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি। করোনামুক্ত দেশে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনুক এবারের বৈশাখ। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সম্প্রীতির পথে হাঁটতে শুরু করুক সবাই। বাংলা ভাষা এবং হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক আমাদের নতুন প্রজন্মের হাত ধরে।’ স্বাধীন দেশে নিজেদের সংস্কৃতি লালন করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পূর্বপুরুষদের অনিঃশেষ ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, এই দেশে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। আবহমান বাংলার প্রধানতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকা। শান্তি ও সমৃদ্ধির আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শুরু হোক নতুন বছর।’
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
কালের কন্ঠ
ভুল স্বীকার করা ব্যক্তিত্বের পরিপন্থী নয়
ইসলাম ধর্ম
চলার পথে আমাদের অনেকের ভুল হয়ে যায়। ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় আমরা প্রায়ই ভুল করে ফেলি। কেউ কেউ যখন ভুল বুঝতে পারে তা শুধরে নেয়। আবার কেউ নিজের ভুলের ওপর গোঁ ধরে বসে থাকে। এই মনে করে যে ভুল স্বীকার করা ব্যক্তিত্বের পরিপন্থী। হয়তো এর কারণে নিজের সম্মানহানি হবে। অথচ বিষয়টি একেবারেই এমন নয়। মানুষ ভুল করবে—এটাই স্বাভাবিক। আর মহৎ গুণগুলোর একটি হচ্ছে, কৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া। ভুল করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে এটাই মানুষের বৈশিষ্ট্য। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তাওবাকারীরা উত্তম। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫১) আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর ঘটনা। ভুল হয়ে গেলে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার চমৎকার উদাহরণ রেখে গেছেন রাসুলের প্রিয় সাহাবি আবু বকর ও ওমর (রা.)। আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আবু বকর (রা.) ও ওমর (রা.)-এর মধ্যে বিতর্ক হলো, আবু বকর (রা.)-এর কোনো কথায় ওমর (রা.) রাগান্বিত হন। এবং রাগান্বিত অবস্থায় ওমর (রা.) সেখান থেকে চলে গেলেন। আবু বকর (রা.) তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে তাঁর পিছু নিলেন, কিন্তু ওমর (রা.) ক্ষমা করলেন না, বরং তাঁর সম্মুখের দরজা বন্ধ করে দিলেন। এরপর আবু বকর (রা.) রাসুল (সা.)-এর দরবারে এলেন। আবু দারদা (রা.) বলেন, আমরা তখন রাসুল (সা.)-এর কাছে ছিলাম, ঘটনা শোনার পর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের এই সঙ্গী আবু বকর আগে কল্যাণ লাভ করেছে। ’ তিনি বলেন, এতে ওমর লজ্জিত হলেন এবং সালাম করে নবী (সা.)-এর পাশে বসে পড়েন। সব কথা রাসুল (সা.)-এর কাছে বর্ণনা করেন। আবু দারদা (রা.) বলেন, এতে রাসুল (সা.) অসন্তুষ্ট হলেন। আর আবু বকর (রা.) বারবার বলছিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি বেশি দোষী ছিলাম। ’ পুনরায় রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার খাতিরে আমার সাথির ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? তোমরা আমার খাতিরে আমার সঙ্গীর ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? এমন একদিন ছিল যখন আমি বলেছিলাম, হে লোকসকল! আমি তোমাদের সকলের জন্য রাসুল, তখন তোমরা বলেছিলে, তুমি মিথ্যা বলেছ আর আবু বকর (রা.) বলেছিল, আপনি সত্য বলেছেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৬৪০) ‘আমি ভুল করেছি, আমাকে মাফ করে দিন। ’ এটুকু কথায় লুকিয়ে থাকা সব ক্ষোভ রফা করে দিতে পারে মুহূর্তেই। কিন্তু সমাজে ভুল স্বীকার করার মানুষ খুব কম। অথচ এই অনুশোচনায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্বের প্রকাশ ঘটে। তাই ভুল হলে আন্তরিকতার সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নিজের ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা। এতে দুর্বলতা নয়, উদারতা প্রকাশ পায়। তাই ভুল হলে আমাদের করণীয়- এক. ভুল স্বীকার করা এবং অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাওয়া। আর এর দায়ভার মেনে নেওয়া। কোনো মাধ্যম ব্যতীত যার সঙ্গে ভুল হয়েছে সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলে দুঃখ প্রকাশ করা। আর প্রকাশ্যে ভুল করলে প্রকাশ্যে তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া। কারো প্রতি দায়ভার না চাপিয়ে নিজেই সব মেনে নেওয়া। নিজের ভুল স্বীকার করতে গিয়ে আকার-ইঙ্গিতে কাউকে দোষারোপ না করা। দুই. ভুল যদি নিজের অজান্তে হয়ে থাকে তাহলেও তা মানুষের সামনে স্পষ্ট করা। ইনশাআল্লাহ, এর দ্বারা আপনার সম্মান বৃদ্ধি হবে। তবে বারবার যেন একই ভুল করা থেকে পূর্ণ সতর্ক থাকা, নয়তো এর কারণে মানুষের মধ্যে আপনার তথা ওজন কমে যাবে। উল্টো আপনি হবেন হাসির পাত্র। তিন. কৃত ভুলের কারণে যদি কোনো সংকট তৈরি হয় তা মেনে নিয়ে সমাধানের পথ খোঁজা। এ ক্ষেত্রে কোনো তিরস্কারের সম্মুখীন হলে ধৈর্য ধারণ করা। তার সঙ্গে অহেতুক তর্কে না জড়ানো; বরং অনুশোচনা প্রকাশ করা। ভুল স্বীকার করা নবীদের বৈশিষ্ট্য ছিল। অথচ তাঁরা ছিলেন পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাঁরা আমাদের জন্য নমুনা হিসেবে রেখে গেছেন ভুল স্বীকার মানুষের মর্যাদাকে ছোট করে না। আদম (আ.)-এর ভুল স্বীকার আমাদের পিতা আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) যখন বুঝতে পেরেছেন শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে তাঁরা ভুল করেছেন এবং নিষিদ্ধ গাছ থেকে ফল ভক্ষণ করেছেন। তখন তাঁরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ বলেন, তারা বলল, ‘হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করছি। আর যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং দয়া না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবো। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৩) মুসা (আ.)-এর ভুল বুঝতে পারা নবুয়ত প্রাপ্তির আগের মুসা (আ.) যখন জনৈক কিবতিকে চড় দিতে গিয়ে হত্যা করেছিলেন। তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে এ কথা স্বীকার করলেন—এই কাজটি শয়তানের প্ররোচনায় হয়েছে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকলেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনি নগরীতে প্রবেশ করলেন, যখন এর অধিবাসীরা ছিল অসতর্ক। সেখানে তিনি দুটি লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত দেখলেন, একজন তার নিজ দলের এবং অন্যজন তার শত্রুদলের। অতঃপর মুসার দলের লোকটি ওর শত্রুর বিরুদ্ধে তার সাহায্য প্রার্থনা করল, তখন মুসা তাকে ঘুষি মারলেন এভাবে তিনি তাকে হত্যা করে বসলেন। ’ মুসা বললেন, ‘এটা শয়তানের কাণ্ড। সে তো প্রকাশ্য শত্রু ও বিভ্রান্তকারী। তিনি বলেন, ‘হে আমার রব! আমি তো আমার নিজের প্রতি জুলুম করেছি; কাজেই আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ১৫, ১৬) আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দান করুন।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
ভোরের পাতা
যেভাবে সাফা-মারওয়া পাহাড় পরিস্কার করা হয়
ইসলাম ধর্ম
পবিত্র নগরী মক্কায় মসজিদে হারামের নিকট অবস্থিত সাফা-মারওয়া‌ মহান আল্লাহ তা’য়ালার অন্যতম নিদর্শন। হারামাইন শরিফাইনের পরিচালনা কমিটি পবিত্র কাবা ও তার পবিত্র স্থানগুলোর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সাফা এবং মারওয়া প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩০০ মি. (৯৮০ ফুট)। এসব স্থানের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তাদের আলাদা পরিকল্পনাও রয়েছে। মহামারি করোনার এ সময়ে কাবা শরিফের চারপাশসহ সাফা-মারওয়া পাহাড়ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। কারণ সাফা মারাওয়া পাহাড় হজ ও ওমরার অন্যতম রোকন। এটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা গুরুত্বও অনেক বেশি। কেননা আল্লাহ তা’য়ালা এ পবিত্র দুই স্থান সম্পর্কে কুরআনে আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ اللّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ ‘নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’য়ালা নিদর্শনগুলোর অন্যতম। সুতরাং যারা কাবা ঘরে হজ অথবা ওমরাহ পালন করে, তাদের পক্ষে এ দুটিতে (সাফা-মারওয়ায়) প্রদক্ষিণ করাতে কোনো দোষ নেই। বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকির কাজ করে, তবে আল্লাহ তাআলার অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তার সে আমলের সঠিক মুল্য দেবেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৮) মসজিদে হারামের গালিচা পরিস্কারের ইনচার্জ জাবের আল-ওয়াদানী বলেন, সাফা ও মারওয়া পাহাড় পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া হয়৷ মসজিদে হারাম পরিস্কার করার জন্য ব্যবহৃত উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সাফা-মারওয়া পাহাড় পরিস্কার করার কাজে ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক এই পাহাড় সাফা ও মারওয়া পরিস্কার করার জন্য একটি দল গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিদিন পাহাড় এবং তার আশপাশ অত্যন্ত যত্নের সাথে পরিস্কার করে। হারামাইন শরিফাইনের জেনারেল প্রেসিডেন্সির মহামারি প্রতিরোধক ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক হাসান আল-সুওয়াহিরি বলেন, মসজিদে হারাম এবং অন্যান্য পবিত্র স্থানগুলিকে সবধরনের পোকামাকড় এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক বস্তু থেকে রক্ষা করার জন্য অন্তত ২০টি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মসজিদে হারাম এবং অন্যান্য জায়গাগুলি পরিস্কার করার সাথে সাথে পোকামাকড়ও বিনাশ করে থাকে।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
লাইলাতুল কদর : বান্দার ভাগ্যনির্ধারণী রাত
ইসলাম ধর্ম
কোরআনে ১১৪টি সূরা। সেই সূরাসমূহের মধ্যে একটি বিশেষ রাতকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ একটি সূরা নাজিল করা হয়েছে। সূরা কদর। এই থেকেই বোঝা যায় শবে কদরের গুরুত্ব কতোখানি। আলহামদুলিল্লাহ, বলতে গেলে আমরা কেউই শবে কদরের মর্যাদা ও ফজিলত সম্পর্কে কম ওয়াকিবহাল নই। অতএব, এ রাতের ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া হবে নিতান্তই এক দুর্ভাগ্য। ইরশাদ হয়েছে : আমি এ (কোরআন) নাজিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জানো, কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও বেশি ভালো। ফেরেশতারা ও রূহ এই রাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রতিটি হুকুম নিয়ে নাজিল হয়। এ রাতটি পুরোপুরি শান্তিময় ফজরের উদয় পর্যন্ত। (সূরা কদর : ১-৫। প্রশ্ন হচ্ছে, শবে কদর আসলে কবে? বুখারি ও মুসলিমের হাদিস থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, আমাকে শবে কদর দেখানো হয়েছিল; কিন্তু পরে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব, তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতে তা অনুসন্ধান করো। সে হিসাবে, আমরা বেশির ভাগই ধরে নিই যে, ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের যেকোনো এক রাতে শবে কদর। তবে আমরা যদি সালাফদের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব যে, অনেকেই ব্যাখ্যা করেছেন শুধু বিজোড় রাত নয়, যেকোনো জোড় রাতেও শবে কদর হয়ে যেতে পারে! শবে কদরের হাদিসগুলো নিয়ে ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ (রা.)-এর ব্যাখ্যাটি সত্যিই আকর্ষণীয়। আলহামদুলিল্লাহ, নিশ্চয়ই রমজানের শেষ দশকের কোনো এক রাত হচ্ছে শবে কদর। আর এ রাতটি হচ্ছে কোনো এক বিজোড় রাত, যেভাবে হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আর সাধারণত এই বিজোড় রাতটি ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের যেকোনো এক রাতে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত অন্য এক হাদিস থেকে জানা যায়, ‘রমজানের (শেষ দশকের) অবশিষ্ট নবম রাতে, অবশিষ্ট সপ্তম রাতে, অবশিষ্ট পঞ্চম রাতে এবং অবশিষ্ট তৃতীয় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)। এ হাদিস থেকে আমরা দেখতে পারি যে, যদি কোনো রমজান মাস ৩০ দিনের হয়, তাহলে অবশিষ্ট নবম রাতটি হবে ২২ রমজানের রাত, অবশিষ্ট সপ্তম রাতটি হবে ২৪ রমজানের রাত, অবশিষ্ট পঞ্চম রাতটি হবে ২৬ রমজানের রাত এবং অবশিষ্ট তৃতীয় রাতটি হবে ২৮ রমজানের রাত! আর এভাবেই আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা.) শবে কদরের রাত সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন। অন্য দিকে, যদি কোনো রমজান মাস ২৯ দিনের হয়, তাহলে উক্ত হাদিস অনুযায়ী শবে কদরের রাত পড়বে শেষ দশকের বিজোড় তারিখের রাতগুলোর যেকোনো এক রাতে। অতএব, মুমিনের উচিত, রমজানের শেষ দশ রাতের প্রতিটি রাতেই শবে কদর অনুসন্ধান করা। সুতরাং পুরো রমজান মাসেই শবে কদরের তালাশে থাকা উচিত। রমজানের প্রত্যেকটি রাত যদি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো যায়, তবে শবে কদর অবশ্যই ভাগ্যে মিলবে বলে আশা করা যায়। আর তা সম্ভব না হলে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে জাগ্রত থেকে জিকির-আজকার, নফল নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদির মাধ্যমে যদি কাটানো যায়, তবে শবে কদর মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এটা সম্ভব না হলে, অন্তত এই রাতগুলোতে যেন এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা হয়। এতে আশা করা যায়, শবে কদরের ফজিলত থেকে মাহরুম হতে হবে না। কারণ, হাদিস মতে এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় সম্পূর্ণ রাত ইবাদত করার সমতুল্য। আর যদি বেজোড় রাতগুলো পূর্ণভাবে ইবাদতের মধ্যে অতিবাহিত করার সুযোগ না হয়, তবে অন্তত ২৭ তারিখের রাতের গুরুত্ব দেয়া এবং পুরো রাত ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা দরকার। যে জন্য শেষ দশ দিন ইতিকাফ সুন্নত করা হয়েছে। নবী করিম (সা.) জীবনভর রমজানে ইতিকাফ করেছেন। যেন জোড়-বিজোড় প্রতিটি রাতেই মানুষ শবে কদর তালাশ করার সুযোগ পায়।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
মৃত্যু আসার আগেই প্রস্তুতি নেওয়া মুমিনের কর্তব্য
ইসলাম ধর্ম
মৃত্যুই প্রতিটি জীবনের অমোঘ পরিণতি। নিজের মৃত্যু আমরা চাই না। উপরন্তু মৃত্যুর কথা চিন্তাও করতে চাই না। আপনজনদের মৃত্যুতে ব্যথিত হই কিন্তু শত আপত্তি, বেদনা আর অনিচ্ছা সত্ত্বেও মৃত্যুই জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। আরও বড় সত্য হলো- কখন মরব তা আমরা কেউই জানি না। সবচেয়ে বড় কথা হলো- যে জীবনের জন্য আমরা এত লালায়িত সে জীবনটি মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের তুলনায় কিছুই নয়। এজন্য জীবনের বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। যে আগন্তুককে কোনোভাবেই ফেরানো যাবে না, তাকে অভ্যর্থনার জন্য সদা সর্বদা প্রস্তুত থাকাই তো বুদ্ধিমানের কাজ। আর মৃত্যুর অভ্যর্থনা হলো তাকে বারবার স্মরণ করে সতর্ক থাকা। দুনিয়াতে আল্লাহ পাঠিয়েছেন যে কদিন তিনি বাঁচিয়ে রাখবেন ভালোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। দুনিয়ার সফলতার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু কখনই তা আখেরাতকে নষ্ট করে নয়। যেহেতু চলেই যেতে হবে, কী হবে আর অকারণ বিবাদ করে, পরস্পরের সম্পর্ক নষ্ট করে মানুষের নিন্দা ও ধিক্কারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়ে মহান রবের কাছেও অপরাধী হয়ে যাওয়ার। যতটুকু পারা যায় নিরিবিলি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলা এবং নিজের পাথেয় সংগ্রহ করতে থাকা। যেন গুনাহটা কম হয়। অন্তত মানুষ মরার পর একবার হলেও যেন তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করে। অসুখে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। কারণ সব অসুস্থতা ও কষ্ট মুমিনের জন্য সওয়াব বয়ে আনে। মুখে স্বাভাবিক বেদনা বা কষ্ট প্রকাশে অসুবিধা নেই। তবে অসুস্থতার জন্য আল্লাহকে, ভাগ্যকে দোষ দেওয়া, আপত্তিকর কথা বলা অবশ্যই পরিহার করতে হবে। এতে কখনই বিপদ কাটে না। শুধু শুধু গুনাহ হয়। কোনো কষ্টেই মৃত্যু কামনা করা যাবে না। জীবনটা আল্লাহর দেওয়া সবচেয়ে বড় নেয়ামত, একে নষ্ট করা, ক্ষতিগ্রস্ত করা, আত্মহত্যা করা তো দূরের কথা, শত কষ্টেও মৃত্যু কামনা করা যাবে না। এ কামনা মৃত্যুকে এগিয়ে আনে না, কষ্ট কমায় না, কিন্তু মুমিনের সব নেকি নষ্ট করে দেয় এবং গুনাহ অর্জনে সহায়তা করে। নবীজির চাচা হজরত আব্বাস (রা.) অসুস্থ হয়ে যখন মৃত্যু কামনা করেন, তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, চাচা মৃত্যু কামনা করবেন না। আপনি যদি নেককার হন তবে জীবন বাড়লে নেকি বাড়বে। আর যদি বদকার হন তবে জীবন বাড়লে তওবা করার সুযোগ পাবেন। কাজেই কোনো অবস্থাতেই মৃত্যু কামনা করবেন না। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, একান্তই বাধ্য হলে কেউ বলতে পারবে, হে আল্লাহ যতক্ষণ আমার জন্য জীবন কল্যাণকর, ততক্ষণ আমাকে জীবিত রাখুন। আর যখন আমার জন্য মৃত্যু অধিকতর কল্যাণকর হয় তখন আমাকে মৃত্যু দিন। (বুখারি শরিফ)। সব মুমিনেরই উচিত মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা। বেশি বেশি নেক আমল করা। সব রকমের গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং এ প্রতিজ্ঞা করা, গুনাহ যত ছোটই হোক করব না। নেকি যত ছোটই হোক কখনই ছাড়ব না। মানুষের পাওনা থাকলে আদায় করে দেওয়া বা আদায়ের ব্যবস্থা রাখা ও অসিয়ত করা। একটি বিশেষ অসিয়ত সব মুমিনেরই করা উচিত, তা হলো তাকে যেন পরিপূর্ণ সুন্নত পদ্ধতিতে দাফন করা হয়। সাহাবি-তাবেইনগণ এরূপ অসিয়ত করে যেতেন। মানুষের আখেরাতের সফলতা নির্ভর করে তার কর্মের ওপর। কাজেই শুধু মৃত্যুকালীন অবস্থা দেখে তাকে ভালো বা মন্দ বলা যায় না। তবে কোনো কোনো মৃত্যুকে ভালো বলা যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার জীবনের সর্বশেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে ব্যক্তি একসময় না একসময় গুনাহগার হলেও শাস্তি ভোগের পর জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আবু দাউদ ইবনে হিব্বান)। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, মুমিনের মৃত্যু হয় কপালের ঘামের মধ্য দিয়ে। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, কোনো মুসলিম শুক্রবারের দিবসে বা রাতে মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাকে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিজি)। অর্থাৎ কর্মের হিসাব, পুরস্কার বা শাস্তি কেয়ামতের দিন হবে, তবে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত কবরের শাস্তি থেকে আল্লাহতায়ালা তাকে রক্ষা করবেন। শাহাদাত বা শহীদি মৃত্যুর মর্যাদার কথা আমরা সবাই জানি। বিভিন্ন সহিহ হাদিসে নিম্নরূপ মৃত্যুকে শাহাদাত বা শহীদি মৃত্যু বলা হয়েছে। ১. প্লেগ বা মহামারিতে মৃত্যু। ২. পেটের পীড়ায় মৃত্যু। ৩. পানিতে ডুবে, ধ্বংসস্তূপে বা বাড়িঘর ধসে মৃত্যু। ৪. সন্তান প্রসব অবস্থায় মৃত্যু। ৫. অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু। ৬. বক্ষব্যাধিতে মৃত্যু। ৭. যক্ষ্মা রোগে মৃত্যু ৮. নিজের জীবন, পরিবার-পরিজনের সম্ভ্রম বা সম্পদ রক্ষার্থে মৃত্যু। এসব হাদিসের আলোকে আমরা বুঝতে পারি যেসব দুরারোগ্য বৃদ্ধির কারণে মৃত্যু, অস্বাভাবিক বা কষ্টকর মৃত্যু, নিজের অধিকার রক্ষার জন্য মৃত্যু এবং মজলুম হয়ে নিহত হওয়া মৃত্যুকে শাহাদাতের মৃত্যু বলে গণ্য হবে। মৃত্যুপথযাত্রী অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তিকে দেখতে গেলে তার এবং তার পরিবারের জন্য ভালো দোয়া করতে হবে। এ সময়ে দোয়ায় ফেরেশতারা আমিন বলেন বলে সহিহ হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
আমিরাতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শারদীয় দুর্গাপূজা
হিন্দু ধর্ম
দেশের মতো প্রবাসেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজা। শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গোৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সন্ধ্যা নামতেই আমিরাতের আজমানে অস্থায়ী পূজামণ্ডপ মুখরিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পদচারণায়। ঢাকের তালে তালে নাচ আর নানা আনুষ্ঠানিকতায় আয়োজন করেন তারা। উলুধ্বনি আর প্রার্থনায় দেবী দুর্গার অসুর পথ মানুষের মুক্তির দিনটি উদযাপন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী আমিরাত প্রবাসীরা। বাংলাদেশিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পূজায় অংশ নেন অন্যান্য দেশের হিন্দু ধর্মালম্বীরাও। পূজা, পুষ্পঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ এবং আরতিসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় পূজা উদযাপন করে তারা। প্রবাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলেন, বিজয়ের দশমির প্রথমভাগে দেবী দূর্গার বিদায়কে সামনে রেখে ভক্তি আর শ্রদ্ধা আরতি অঞ্জলি প্রদান করেন। এতে উপভোগের পাশাপাশি অনাচার সংঘমুখ্যর এবং বিশ্ববাসীর প্রার্থনা করেন তারা। দেশ থেকে অনেক দূরে থাকলেও এই উৎসব দেশের অনেকটাই আমেজ মনে করিয়ে দেয় এমনটাই বলেছেন পূজায় অংশগ্রহণকারীরা।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
ইত্তেফাক
৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন আজ
ইসলাম ধর্ম
মানুষের কাছে ইসলামের সঠিক বাণী পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণে শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন। মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে অজুর জন্য পৃথক জায়গা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতব্যবস্থায় নামাজ আদায়ের সুবিধা রয়েছে। এছাড়া, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র এবং ইসলামী গ্রন্থাগার, অটিজম কর্নার, দাফন কার্যক্রমের ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজাখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সম্মেলন কক্ষ এবং ইসলামিক দাওয়াহ, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার পাশাপাশি সব পৌরসভায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ নির্মাণে সরকার ২০১৭ সালে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বিভিন্ন পর্যায়ে এ পর্যন্ত মোট ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার উদ্বোধন করেছেন। নতুন আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
আল কোরআনের আয়নায়, চাই নিজেকে
ইসলাম ধর্ম
মহা গ্রস্থ আল কোরআন। মুত্তাকিন বান্দার জন্য হিদায়াত। মানব জাতির জীবন বিধান। যা মহান আল্লাহ তাআলা বিশ^ নবী হজরত রাসুল (দ) এর উপর নাজিল করেন। এ কিতাব বিশ^ নবী (দ) এর জন্য একটি জীবন্ত মোজেজা। যে কিতাব অন্ধাকার-থেকে আলো,মিথ্যা থেকে-সত্য,অন্যায় থেকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাপ কাটি।এরশাদ হচ্ছে-‘আমি যুগে যুগে নবী রাসুল পাঠিয়েছি প্রামান্য দলিলসহ,আর নাজিল করেছি কিতাব ও ন্যায়ের দন্ড। যাতে করে গোটা মানুষ জাতি ন্যায় ও ইনসাফের উপর প্রতিস্টিত হতে পারে’।(আল হাদীদ-২৫)। সুতরাং বুঝা গেল যে,ন্যায়,ইনসাফ ও কল্যাণ প্রতিষ্টার একমাত্র মাপ কাটি আল কোরআন। এরশাদ করেন, ‘হে মুহাম্মদ! এটি একটি কিতাব। আমি এটি তোমার উপর নাজিল করেছি। যাতে করে তুমি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসো’।(আল ইব্রাহীম-১)। মহান আল্লাহ তাআলা পুথিবীতে এক লক্ষ বা দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী ও রাসুল (দ) প্রেরন করেন। নবী ও রাসুলদের প্রতি সহিফা ও আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। প্রত্যেক নবীর ও রাসুলের শরীয়ত একই রকম ছিল না। সর্বশেষে বিশ^ নবী (দ) এর উপর মহা গ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করে ইতিপুর্বে নাজিল কৃত সব আসমানি কিতাবের হুকুম আহকাম বাতিল করেন। শুধু মাত্র কোরআনের বিধি-বিধান কিয়ামত পর্যন্ত চালু থাকবে। সুতরাং আল কোরআন মোমিন বান্দার জন্য উপর প্রশান্তির ঝর্না ধারা।এ কিতাবে মানব জীবনের সব সমস্যার সমাধান। মানুষ সৃষ্টির ম্রেষ্ঠ জীব। মহান আল্লাহ তাকে জ্ঞান,বিবেক,ও বুদ্ধি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যার কারনে মানুষ,ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ,নিয়ম-কানুন,বিধি-নিষেধ, হালাল-হারাম বুঝার ক্ষমতা রাখেন। এরশাদ হচ্ছে-‘তিনি আল্লাহ,যিনি স্বীয় রাসুলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীন সহকারে পঠিয়েছেন। যাতে তিনি এ দ্বীনকে অন্য সমস্ত মত ও জীবন ব্যবস্থার উপর বিজয়ী করে দিতে পারেন। চাই তা মুশরিকদের কাছে যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন”।(আস সফ-৯)। মহা গ্রন্থ আল কোরআনে ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ,ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সব আদেশ নির্দেশ রয়েছে।সুতরাং এটি একটি পুনাঙ্গ জীবন বিধান। এটা এমন একটা জীবন-বিধান,এখানে বৈচিত্রময় কিছু বিধান রয়েছে। যা মানব রচিত বিধানে নেই। সে হিসাবে বুঝা যায় যে,আল কোরআনের আয়নায়, চাই নিজেকে। আয়নায় সব কিছু সুস্পষ্ঠ ভাবে ভেসে উঠে। কোন অন্তরায় দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। এরশাদ হচ্ছে-‘হে মানুষ তোমাদের জন্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নসিহত এসে গেছে। এটা ঐ জিনিস যা অন্তরের সব রোগ সারায় এবং মুমিনের জন্য হেদায়াত ও রহমত। হে নবী আপনি বলে দিন এটা আল্লাহর দয়া ও মেহরেবানী যে, তিনি তা পাঠিয়েছেন। এর জন্য তো লোকদের খুশি হওয়া উচিৎ’। (ইউনুস)। আল কোরআন,একটি জ্ঞানের সাগর। জ্ঞান ডুবুরীরা এ সাগরে ডুবে সোনা-রুপা,মনি-মুক্ত,হিরা-জহুরত নিয়ে আসে। তারা মহান আল্লাহর নিয়ামত ও কুদরত খুজে পান। কোন মানুষ যদি আসমানি কিতাবের জ্ঞানে জ্ঞানী না হয়,তাহলে তার মাঝে মানুষ,মানুষত্ব ও মানবতাবোধ উপস্থিত থাকে না। জ্ঞান শুন্য হয়ে,সে হয় অমানুষ।এ কিতাব অধ্যায়নে জিরো থেকে জিরো, জ্ঞানের সন্ধান পাওয়া যায। আল্লাহর সৃষ্টির রহস্য খোজা সম্ভব হয়। আল্লাহর নিয়ামত ও রহমত অফুরন্ত। এ সব মানুষের জন্য। কিন্তু আমরা মানুষ নাফরমান। আল্লাহর শুকুর আদায় করতে পারি না। আল্লাহ মানুষকে ন্যায়-অন্যায়,সত্য-মিথ্যা,আলো-অন্ধকার বুঝার ক্ষমতা দিয়েছেন। সত্য পথে চলার রাস্তা সহজ করে দিয়েছেন।এই কিতাবে আদেশ-নিষেধ,বিধি-বিধান,কিচ্ছা-কাহিনী,ইতিহাস-ঐতিহ্য,পাহাড়-পর্ব্বত,সাগর-নদী,মরুভুমি ইত্যাদি বিষয় সুস্পষ্ট ভাবে আলোচিত হয়েছে। একজন মানুষ দৈনিক কিভাবে আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত করবে তার ব্যাখা রয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে,‘হে নবী আপনি বলুন,আমার নামাজ, কোরবানী,জীবন মরন একমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত’। এই বিধানকে যারা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অস্বীকার করে,তারাই কাফের।কারণ,আল্লাহর নিকট অন্য কোন ধর্ম নয়, একমাত্র মনোনীত ধর্ম হলো ইসলাম। এরশাদ হচ্ছে-‘একমাত্র আল্লাহর নিকট মনোনীত ধর্ম ইসলাম’। এরশাদ হচ্ছে-‘এটা আল্লাহর হেদায়াত যে,এটাই আমার সরল মজবুত পথ। এ পথেই চল। অন্য সব পথে চলবে না। তাহলে তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে ছড়িয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।এ ঐ হেদায়াত যা তোমাদের রব তোমাদেরকে দিয়েছেন।হয় তো তোমরা বাকাঁ পথ থেকে বেচে থাকবে’।(আনয়াম)। ইসলামী আইনের মুল উৎস হলো-কোরআন,হাদীস,ইজমা ও কিয়াস। এরশাদ হচ্ছে-‘সুতরাং তাদের জন্যই ধ্বংস যারা নিজের হাতে শরিয়তের বিধান রচনা করে। তারপর লোকদের বলে যে,এ সব আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এর বদলে সামান্য কিছু মুল্য পেতে পার।তাদের হাতের এ লেখা তাদের জন্য ধ্বংসের কারন এবং তাদের এ রোজগারও ধ্বংস করবে’।(বাকারাহ)। আমরা মানুষ, ক্ষুদ্র জ্ঞানের অধিকারী। আমাদের জ্ঞান যেখানে শেষ, সেখান মহান আল্লাহ জ্ঞান শুরু। আল্লাহর জ্ঞানের কোন সীমা রেখা নেই। তিনি অসূম জ্ঞানের অধিকারী।আল কোরআন একটি মহা কাব্য। এ কাব্যে ছড়া,কবিতা,গল্প সমগ্র,প্রবন্ধ ভান্ডার রয়েছে। যা সাহিত্যে রসে ভরপুর। প্রতিটি শব্দ,লাইনে সাহিত্যের বৈশিষ্ট ও উপাদান যথাযথ ভাবে মিলে মিশে রয়েছে। সাহিত্যে সর্ম্পকে একটি সুরা নাজিল হয়েছে। কোরআনের সাথে জীবনের গভীর সর্ম্পক।শুধু জীবনই নয়,মানুষের ব্যক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,স্বরাষ্ট্রনীতি,পররাষ্ট্রনীতি,সমর নীতি,শিক্ষা নীতি,চিকিৎসা নীতি,আইন-কানুনসহ দেশ পরিচালনার জন্য সব ধরনের বিধি-বিধান চালু রয়েছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞান,সৃষ্টি রহস্য,পরকাল,জান্নাত,জাহান্নাম,বিশ^ প্রকৃতির প্রতি বিশ^াস স্থাপন করা মোমিন জীবনে একমাত্র দায়ীত্ব ও কর্তব্য। পরিশেষে বলতে চাই যে,আল-কোরআন মুসলমানের সংবিধান। যা একমাত্র ইহকাল ও পরকালে মুক্তির উপায়। সুতরাং আল কোরআনের আয়নায়,চাই নিজেকে। প্রত্যেক মোমিন-মুসলমানের ব্যক্তি,পরিবার,সমাজিক জীবনে আল কোরআনকে যথাযথ ভাবে মুল্যায়ন করি। তবেই চারি দিকে প্রশান্তির ঝর্না ধারা প্রস্ফুটিত হবে। ফিরে আসবে সুখ-শান্তি। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সেই বিধান পালনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী হোক। এই কামনা করি।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
প্রথম আলো
উমর (রা.) কন্যা হাফসা (রা.)–র জীবনী
ইসলাম ধর্ম
একবার খলিফা উমর (রা.) এক নারীর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কী হয়েছে?’ নারীটি বললেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমার স্বামী আমার কাছ থেকে দূরে আছে। তাঁকে আমার কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়ে উঠেছে।’ উমর (রা.) তখন তাঁর মেয়ে হাফসা (রা.)–র কাছে গিয়ে বললেন, ‘আমি তোমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাই। আমাকে সাহায্য করো। স্বামী কত দিন দূরে থাকলে স্বামীকে কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মেয়েদের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠে?’ হাফসা (রা.) লজ্জায় মাথা নত করে ফেলেন। উমর (রা.) তখন বললেন, ‘আল্লাহ সত্য প্রকাশের ব্যাপারে লজ্জা করেন না।’ হাফসা (রা.) তখন হাতে ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন তিন বা চার মাস। উমর (রা.) নির্দেশ দিলেন, কোনো সৈনিককে যেন চার মাসের বেশি সময় আটকে রাখা না হয়। হাফসা (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)–র কন্যা। তাঁর ভাই সাহাবি আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা.)। হাফসা (রা.) আবদুল্লাহর চেয়ে ছয় বছরের বড় ছিলেন।বিয়ের বয়স হলে উমর (রা.) বনু সাহম গোত্রের খুনাইস ইবনে হুজাফার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন। খুনাইস (রা.) মক্কায় প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্যতম। স্বামীর সঙ্গে হাফসা (রা.) মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় যাওয়ার কিছুদিন পরই খুনাইস (রা.) ইন্তেকাল করেন। হাফসা (রা.) বিধবা হয়ে যান। তাঁর বয়স তখন ২০ বছরেরও কম। উমর (রা.) তাঁর মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবতে লাগলেন। রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। হাফসাকে ৪০০ দিরহাম মোহরানা দেওয়া হয়। হাফসা (রা.) ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী। তাঁর মধ্যে শেখার প্রবল আগ্রহ লক্ষ করে রাসুল (সা.) তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। নারী সাহাবি শিফা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) লিখতে ও পড়তে জানতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নির্দেশে তিনি হজরত হাফসা (রা.)–কে লেখাপড়া ও রোগ নিরাময়ের উপায় শেখান। হাফসা (রা.) ৬০টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদিসগুলো তিনি রাসুল (সা.) এবং উমর (রা.)–এর কাছে শুনেছিলেন।আয়েশা (রা.) আর হাফসা (রা.)–এর সম্পর্ক ছিল বোনের মতো। তাঁরা একে অপরের সহযোগী ছিলেন। আয়েশা (রা.) তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, হাফসার বাবা যেমন প্রতিটি কথা ও কাজে দৃঢ়সংকল্প, হাফসাও তেমন। (আবু দাউদ) রাসুল (সা.)–এর ইন্তেকালের আগে কোরআন একত্রে সংকলনবদ্ধ হয়নি। কোরআন ছিল সাহাবিদের অন্তরে খোদিত। আবু বকর (রা.)–এর খিলাফতের সময় সাহাবি যায়িদ ইবনে সাবিত (রা.)–কে কোরআন সংকলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংকলিত সেই কোরআন হাফসা (রা.)–র কাছে সংরক্ষিত ছিল। উসমান (রা.) খিলাফতকালে হাফসা (রা.)–র কাছে রক্ষিত কোরআনের কপিকে প্রামাণ্য ধরে আরও কপি তৈরি করা হয়। হাফসা (রা.) ৪৫ হিজরিতে রোজা রাখা অবস্থায় মদিনায় ইন্তেকাল করেন। জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
কালের কন্ঠ
গৃহস্থালি জিনিস ধার দিলে যে সওয়াব
ইসলাম ধর্ম
এখন সোনালি ফসল ঘরে তোলার মৌসুম। বিরামহীন বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই ঠিকভাবে সোনালি ফসল ঘরে তুলতে গ্রামাঞ্চলে ব্যস্ত সময় পার করছে মানুষ। এ সময় রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফসল প্রক্রিয়াজাত করতে বহু গৃহস্থালিসামগ্রীর প্রয়োজন হয়, যা অনেক সময় অনেক পরিবারের কাছে পর্যাপ্ত থাকে না। তাই কখনো ছোটখাটো জিনিস প্রতিবেশী থেকে ধার করতে হয়। এর প্রচলন পৃথিবীতে আদি যুগ থেকেই চলে আসছে। এমনকি রাসুল (সা.)-ও বিশেষ প্রয়োজনে ধার করেছেন, যার উল্লেখ বিভিন্ন হাদিসে রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে সাফওয়ানের পরিবারের কিছু ব্যক্তির সূত্র থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে সাফওয়ান! তোমার কাছে যুদ্ধাস্ত্র আছে কি? সে বলল, ধার চাইছেন, না জোরপূর্বক নেবেন? তিনি বলেন, না, বরং ধার হিসেবে। সাফওয়ান তাঁকে ৩০ থেকে ৪০টি লৌহবর্ম ধার দিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) হুনাইনের যুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করলেন। মুশরিকরা পরাজিত হলে সাফওয়ানের লৌহবর্মগুলো একত্র করে দেখা গেল, কয়েকটি বর্ম হারিয়ে গেছে। নবী (সা.) সাফওয়ানকে বলেন, আমরা তোমার কয়েকটি বর্ম হারিয়ে ফেলেছি। আমরা তোমাকে এর ক্ষতিপূরণ দেব কি? সে বলল, না, হে আল্লাহর রাসুল! কারণ তখন আমার মনের অবস্থা যেমন ছিল আজ তেমন নেই। ইমাম আবু দাউদ (রহ.) বলেন, তিনি ইসলাম কবুলের আগে এগুলো ধার দিয়েছিলেন, পরে ইসলাম কবুল করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৬৩) এ থেকে বোঝা যায়, কখনো কোনো প্রয়োজনে প্রতিবেশীর সহযোগিতা নেওয়ার অবকাশ রয়েছে। এবং কোনো প্রতিবেশী কোনো কিছু ধার চাইলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়াও উচিত নয়। যেমন—গ্রামে এখন বিভিন্ন কাজে প্রতিবেশীর থেকে দা, কোদাল, শাবল, বালতি ইত্যাদি ধার করতে হয়। যেহেতু এগুলো মানুষের প্রতিদিন প্রয়োজন হয় না, তাই অনেকেই এগুলো তৈরি করেন না। কেউ এ ধরনের ছোটখাটো জিনিস চাইলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়াকে পবিত্র কোরআনে খুব নিকৃষ্ট কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এবং এ ধরনের ছোটখাটো বিষয়ে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(দুর্ভোগ তাদের জন্য)...এবং ছোটখাটো গৃহসামগ্রী দানে নিষেধ করে। ’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৭) আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর যুগে ‘মাউন’ গণ্য করতাম বালতি, হাঁড়িপাতিল ইত্যাদি ছোটখাটো বস্তু ধারে আদান-প্রদান করাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৫৭) যুগের পরিবর্তনের কারণে আরো অনেক ছোটখাটো জিনিস এগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যেগুলো আমাদের নিত্যদিন প্রয়োজন হয়। আমাদের উচিত প্রতিবেশীর কখনো এ রকম ছোটখাটো জিনিস প্রয়োজন হলে, যদি নিজের কাছে এগুলো থাকে, তাহলে তাদের সহযোগিতা করা।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
প্রথম আলো
কোরআন মুখস্থ সাহাবির বিয়ের মোহরানা
ইসলাম ধর্ম
হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.)-এর বরাতে একটি হাদিসের বর্ণনা আছে। এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার জীবন আপনার হাতে সমর্পণ করতে এসেছি।’ নবী (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে সতর্ক দৃষ্টিতে তাঁর আপাদমস্তক দেখলেন। তারপর মাথা নিচু করে রইলেন। ওই নারী যখন দেখলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো ফয়সালা দিচ্ছেন না, তখন তিনি বসে পড়লেন। সাহাবিদের মধ্য থেকে একজন দাঁড়িয়ে তখন বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, যদি আপনার বিয়ের প্রয়োজন না থাকে, তবে আমার সঙ্গে এই নারীকে বিয়ে দিয়ে দিন।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কাছে কী আছে?’ সাহাবিটি উত্তর দিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কিছুই নেই।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখ, কিছু পাও কি না।’ সাহাবি চলে গেলেন। ফিরে এসে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি কিছুই পাইনি।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘আবার গিয়ে লোহার একটি আংটিও পাও কিনা দ্যাখো।’ সাহাবি আবারও ফিরে গেলেন। এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! তা–ও পেলাম না। এই আমার বস্ত্র। শুধু এটাই আছে।’ তাঁর কাছে কোনো চাদরও ছিল না। লোকটি তার অর্ধেক নারীটিকে দিতে চাইলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার বস্ত্র দিয়ে সে কী করবে? তুমি যদি এটি পরো, তাহলে তার কোনো কাজে আসবে না; আর যদি সে পরে, তাহলে তোমার কোনো কাজে আসবে না।’ সাহাবিটি বেশ কিছুক্ষণ নীরবে বসে থাকলেন। এর পর উঠে দাঁড়িয়ে চলে যেতে উদ্যত হলেন। নবী (সা.) তখন তাঁকে ডেকে এনে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার কি কোরআন মুখস্থ আছে?’ তিনি বললেন, ‘অমুক অমুক সুরা আমার মুখস্থ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘এগুলো কি তোমার মুখস্থ।’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘যে পরিমাণ কোরআন তোমার মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে তোমার কাছে এই নারীকে আমি বিয়ে দিলাম।’ (বুলুগুল মারাম, হাদিস: ৯৭৯)
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
প্রথম আলো
আল্লাহর ভয়ে কাতর থাকা
ইসলাম ধর্ম
আল্লাহকে ভয় করা জরুরি। আল্লাহর ভয় করে আমরা নিজেদের সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজেদের সৎ পথে পরিচালনা করতে হবে। জীবনকে ইসলামের নীতিতে মূল্যবোধের সঙ্গে চালনা করতে আল্লাহ ভয় করে মুমিনের একটি বিশেষ কর্তব্য। নবী=রাসুলদের এই বৈশিষ্ট্য ছিল। আল্লাহর ভয় ইমানের অপরিহার্য উপাদান। আল্লাহ বলেছেন, ‘সুতরাং তোমরা মানুষকে ভয় কোরো না, আমাকে ভয় করো।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৪৪) আল্লাহ বলেন, ‘তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত। আর আমাকে আশা ও ভীতিসহকারে ডাকত। আর তারা ছিল আমার কাছে বিনয়ী।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯০) আল্লাহর আজাবের ভয়ে ফেরেশতাদের ইমান আনা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তারা তাদের ওপরে আল্লাহকে ভয় করে আর তারা তা-ই করে, যা তাদের আদেশ দেওয়া হয়।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৫০) আল্লাহ আরও বলেন, ‘আল্লাহর বান্দাহদের মধ্যে তারাই তাঁকে ভয় করে যারা জ্ঞানী।’ (সুরা ফাতির, আয়াত: ২৮)
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
ভোরের কাগজ
শুরু হয়েছে বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান
বৌদ্ধ ধর্ম
দেশের পার্বত্য এলাকায় বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে ত্রি-চীবর নামে বিশেষ পোশাক দান করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের পর গতকাল (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী এ উৎসব। উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলো বিরাজ করছে সাজসাজ রব। পাহাড়ের বিভিন্ন বিহারে ধারাবাহিকভাবে এ উৎসব পালিত হবে। ভারতীয় জনপদে 'কঠিন চীবর দান' শব্দটি গৌতম বুদ্ধের সময় থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা কেটে, সুতা বানিয়ে, রং করে, নানা রকম আচার ও নিয়ম মেনে একেকটি চীবর তৈরি করার কাজটি খুব বেশি কঠিন বলেই অনুষ্ঠানের এই নাম। ইতিহাস থেকে জানা যায়, গৌতম বুদ্ধের সময় বিশাখা নামে এক পূণ্যবতী, বুদ্ধের জন্য এক দিনের ভেতর এভাবেই চীবর তৈরি করেছিলেন। আর তারই ফলশ্রুতি বর্তমান 'কঠিন চীবর দান' অনুষ্ঠানটি। পূণ্যার্থীদের বিশ্বাস এ কাজের প্রভাবে মৃত্যুর পরে নির্মাণগামী হওয়া যায়। শুক্রবার দুপুর ২টায় রাঙামাটি সদরের মোরঘোনা সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের জন্মস্থান মোরঘোনা বন বিহারে পালিত হয় কঠিন চীবর দান। একই দিনে বাঘাইছড়ি উপজেলার আর্য্যপুর ধর্মোজ্জল বন বিহারেও পালিত হয় এ অনুষ্ঠান।
ধর্মীয় উৎসব
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
উপহার বিনিময়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলাম ধর্ম
উপহার বিনিময় সামাজিক জীবনের একটি সাধারণ অনুষঙ্গ। উপহারের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা-সম্প্রীতি বাড়ে। উপরন্তু এটি ইসলামের দৃষ্টিতে খুবই পুণ্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, তোমরা কিছুতেই বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ তোমরা ঈমান না আনবে, আর যতক্ষণ তোমরা একে অন্যকে ভালো না বাসবে ততক্ষণ তোমরা (পূর্ণ) ঈমানদারও হতে পারবে না। আমি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলে দিই, যা করলে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। তোমরা তোমাদের মধ্যে সালামের প্রচলন ঘটাও। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৬৮৮) অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে উপহার দাও, এতে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। ’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং : ৫৯৪) উল্লিখিত দুইটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি ১. বেহেশতে যেতে হলে ঈমান আবশ্যক। ঈমান ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না। ২. ঈমান যদিও আল্লাহ তায়ালার ওপর এবং নবী-রাসুল, ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, পরকাল ও তকদিরের ওপর বিশ্বাসের নাম; কিন্তু পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে হলে এবং ঈমানের পূর্ণ সুফল পেতে চাইলে এ বিশ্বাসের পাশাপাশি ঈমানদারদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভালোবাসাও জরুরি। ৩. পারস্পরিক এ ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য দুই হাদিসে দুটি পথ বলে দেয়া হয়েছে এক. অধিক হারে সালামের প্রচলন ঘটানো, দুই. পারস্পরিক উপহার আদান-প্রদান। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া উপহার দাও। এটি মনের শত্রুতা ও বিদ্বেষ দূর করে দেয়। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২১৩০) পারস্পরিক উপহার বিনিময় যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়, তখন দূরের মানুষের সঙ্গেও গড়ে ওঠে গভীর-নিটোল সম্পর্ক। অনেক সময় এ সম্পর্ক রক্ত ও আত্মীয়তার বাঁধনকেও ছাড়িয়ে যায়। উপহার বিনিময় উত্তম গুণ হলেও কাউকে উপহার দিতে চাপে ফেলা কোনোভাবেই উচিত নয়। কেউ যদি কারও অতিথি হয়, তাহলে সাধারণত গৃহকর্তাদের জন্য কিছু একটা নিয়েই যায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অতিথিরা সাধ্যানুযায়ী অথবা সুবিধা মতো উপহার নিয়ে যান। কিন্তু বিভিন্ন আনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ খুব আনন্দের হলেও কারও কারও জন্য বেশ নিরানন্দের। যাদের অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে, তারা অত্যন্ত মিতব্যয়িতার সঙ্গে ও নির্দিষ্ট আয়ের মাধ্যমে সব খরচ বহন করেন। তারা আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশীর এরকম আনন্দ অনুষ্ঠানের সংবাদে ও আমন্ত্রণে যেমন উল্লসিত হয়, তেমনি পরক্ষণেই আবার দুশ্চিন্তায় মগ্ন হয়। কারণ সেখানে মানসম্মত হাদিয়া উপহার না দিলে মানরক্ষা হয় না। আর মান রক্ষা করতে গেলে নিজের ক্ষমতায় কুলায় না। এ ধরনের উভয় উভয়সংকটে পড়ে অনেকে। আবার অনেক সময় কোনো অনুষ্ঠানের দাওয়াতের অর্থই হলো আপনাকে উপস্থিত হওয়ার পাশাপাশি মানসম্মত উপহারও নিয়ে যেতে হবে। উপরন্তু উপহার গ্রহণ করার জন্য সেখানে ভিন্ন রকমের আয়োজন রাখা হয়। ‘প্রমাণস্বরূপ’ তা লিখেও রাখা হয়। এরপর কে কত দিল এবং কত খরচ হলো আর কত টাকা উঠে এলো তার হিসাব চলে। এ রকম দৃশ্য আমাদের সমাজের অনেকটা অংশজুড়ে দেখা যায়। উপহার আদান-প্রদানের পরিপূর্ণ সুফল পেতে সামাজিক বাধ্যবাধকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আন্তরিকতাপূর্ণ উপহার দেওয়া হলে সম্প্রীতি ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর তা ঈমানের পূর্ণতার একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গও বটে।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
নবিজিকে ভালোবাসবো কী কারণে?
ইসলাম ধর্ম
এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে অকারণে ভালোবাসে না। যদি কোন লোকের মধ্যে ভালোবাসার মতো গুণ, বৈশিষ্ট্য, বিশেষত্ব ও অসাধারণত্ব বিদ্যমান থাকে, তাহলেই কেবল তাকে ভালোবাসে। যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে ভালোবাসার মতো গুণ ও বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান না থাকে, তাহলে তাকে কেউ ভালোবাসে না। সম্মান করে না ও মর্যাদা দেয় না। বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে ভালোবাসার মতো সমুদয় স্বভাব, প্রকৃতি, নৈপুণ্য, দক্ষতা, পূর্ণতা ও যোগ্যতা পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান ছিল। পৃথিবীতে যত সুন্দর গুণ রয়েছে সকল গুণের আকর ছিলেন মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমরা মনেপ্রাণে ভালোবাসবো। নবিজির কল্যাণকামনা: মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসতেন। তিনি সব সময় নিজের উম্মতের কল্যাণ কামনা করতেন। তার কাছে উম্মতের কষ্ট-ক্লেশ, আপদ-বিপদ ও বালা-মুসিবত অত্যন্ত অসহ্যকর ছিল। ঈমানদার লোকদের প্রতি কল্যাণকামনায় তার হৃদয় ভরপুর ছিল। আর যে মহান সত্তার মধ্যে কল্যাণকামনার এই গুণ বিদ্যমান থাকে লোকে তাকে ভালবাসে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে উম্মাহর প্রতি কল্যাণ কামনা বিদ্যমান থাকার কারণে তিনি উম্মতের প্রতিটি সদস্যের ভালোবাসা পাওয়ার হকদার। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে কল্যাণ কামনার গুণ বিদ্যমান থাকার সাক্ষ্য দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসুল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।’ (সুরা তওবা, আয়াত : ১২৮) চরিত্রবান হওয়া: চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমান। চরিত্রহীন মানুষ ও পশুর কর্মকা-ের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। মন্দ চরিত্রের অধিকারী মানুষ যা ইচ্ছা তাই করে বেড়ায়। তাই এমন লোককে কেউ ভালবাসে না। কেবল চরিত্রবান লোকই মানুষের ভালোবাসা পায়। কোন ব্যক্তি নিজের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে লোক নিয়োগ দেওয়ার পূর্বে চরিত্রবান লোকের সন্ধান চালায়। বিবাহ দেওয়া ও করানোর পূর্বে লোকেরা বর বা কন্যা চরিত্রবান কিনা তা অনুসন্ধান করে। যদি লোকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে চরিত্রবান হওয়ার সাক্ষ্য দেয়, তাহলে এমন লোক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়ার কিংবা বিবাহ শাদি নিষ্পন্ন করা ও করানোর পছন্দের তালিকায় থাকে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি চরিত্রের ষোলকলাপূর্ণ করার জন্যই পৃথিবীর বুকে আগমন করেছিলেন। তাই আমরা তাকে ভালোবাসবো। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়ার সাক্ষ্য দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কলম, আয়াত : ৪) দয়াশীল হওয়া: বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, মানুষ দয়ার দাস। যদি কোন ব্যক্তি কারো উপর দয়া করে, তাহলে সেই ব্যক্তি দয়াশীল ব্যক্তিকে ভালোবাসে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোমল হৃদয়ের অধিকারী ও দয়ার আধার ছিলেন। তিনি সাহাবায়ে কেরামের সুবিধা ও অসুবিধার প্রতি তীক্ষè দৃষ্টি রাখতেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেন। একবার কতিপয় যুবক সাহাবি মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বিশরাত অবস্থান করলে তিনি বুঝতে পারলেন তারা তাদের স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি অতিশয় আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তখন তিনি তাদেরকে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। হজরত মালিক ইবনু হুওয়াইরিস রা. বলেন, আমরা প্রায় একই বয়সের কিছু যুবক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বিশদিন অবস্থান করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র হৃদয়। তিনি বুঝতে পারলেন, আমরা আমাদের পরিবারের লোকজনের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছি। তাই নিজ পরিবারে আমরা কাকে কাকে রেখে গিয়েছি এ বিষয়ে তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করলে আমরা তাকে সে বিষয়ে অবহিত করলাম। তখন তিনি বললেন, ঠিক আছে, তোমরা নিজ পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে অবস্থান করে তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষাদান করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৪২১) নবিজি আল্লাহর বন্ধু: সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তিনি আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য ও গ্রহ নক্ষত্রের সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন। তার ক্ষমতার বাইরে কোন কিছুই নেই। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। অতএব, যদি তার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা যায় এবং তার অন্তরঙ্গ বন্ধুকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসা যায়, তাহলে নিজের মনস্কাম পূর্ণ করা সহজ হবে। আর আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার অন্তরঙ্গ বন্ধু। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ার ঘোষণা নিজেই প্রদান করেছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জেনে রাখো! কারো সাথে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নেই, যদি কাউকে বন্ধু বানাতাম তবে আবু বকরকেই বানাতাম। তোমাদের সঙ্গী আল্লাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬০৭০) মহানবির সঙ্গলাভের জন্য: মানব সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ এই পৃথিবীতে আগমন করেছে, করছে ও করবে তাদের সকলের মধ্যে মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। তাই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতে মর্যাদার সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত থাকবেন। বেহেশতে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে থাকার অন্যতম উপায় হলো তাকে ভালোবাসা। কেননা যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে তার সঙ্গেই তার হাশর হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলো। অতঃপর সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! সে লোকটি সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন, যে একটি সম্প্রদায়কে ভালোবাসে অথচ সে তাদের সাথে মিলিত হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে যাকে ভালোবাসে পরকালে সে তার সঙ্গেই থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৬১১) নবির স্নেহশীলতার কারণে: বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতের প্রতিটি সদস্যের প্রতি অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ ছিলেন। নবীজির স্নেহশীলতার কারণে উম্মতের প্রতিটি সদস্যের জন্য সমীচীন হলো তাকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসা। এক হাদিসে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে উম্মাহর জন্য স্নেহশীল পিতার মতো বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি তার উম্মতকে স্নেহশীল পিতার মতোই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে চলার নিয়ম কানুন পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে শিক্ষা দিয়েছেন। এমনকি তার শিক্ষা দানের আওতা হতে শৌচ কর্মের নিয়ম-কানুনও বাদ যায় নি। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য পিতৃতুল্য, তোমাদেরকে আমি দ্বীন শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমাদের কেউ পায়খানায় গেলে কেবলাহমুখী হয়ে বসবে না এবং কেবলার দিকে পিঠ দিয়েও বসবে না, আর ডান হাতে শৌচ করবে না। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড় দ্বারা শৌচ করতে নিষেধ করতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ০৮)
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
প্রথম আলো
ইসলামের আলোকে পথশিশুদের অধিকার
ইসলাম ধর্ম
আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। দায়িত্ব সফলভাবে প্রতিপালন করলে বন্ধুত্বের সম্মানে বিভূষিত করবেন। ইসলাম সর্বকালের সর্বযুগের সব মানুষের জন্য। ইসলামে রয়েছে পথশিশুদেরও ন্যায্য অধিকার। পথশিশু বলতে তাদের বোঝানো হয়, যাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসা ও শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। পথশিশুরা এসব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ইসলামের বিধানে পথশিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। যারা পথশিশু, তারা তাদের এ অবস্থার জন্য দায়ী নয়। এমনকি তাদের এ অবস্থার জন্য তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবকও সর্বাংশে দায়ী নন। সুতরাং যাঁরা ভালো অবস্থায় ও ভালো অবস্থানে আছেন, তাঁদেরও ভাবতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে এ অবস্থা আমার এবং আমার পরিবারের বা আপনজনদের কারও হতে পারত। আল্লাহ যখন কোনো মোমিনকে পরীক্ষায় ফেলেন, অর্থাৎ কষ্টে নিপতিত করেন; তখন তিনি তাকে ভালোবাসেন এবং অন্যদের থেকে তাকে অগ্রাধিকার দেন। তাই তিনি নবীগণকে সবচেয়ে বেশি বিপদাপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করেছিলেন। নবীজি (সা.) বলেন, ‘নবীগণ সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত হন, অতঃপর তাঁদের থেকে যারা নিকট স্তরের। মানুষকে তার বিশ্বাস অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হয়। যদি তার ইমান শক্তিশালী হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও কঠিন হয়। আর যদি তার ইমান দুর্বল হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে হয়। বিপদ বান্দার পিছু ছাড়ে না, পরিশেষে তার অবস্থা এমন হয় যে সে পাপমুক্ত হয়ে জমিনে চলাফেরা করে। (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৪৩ ও ইবনে মাজাহ)। ইসলামের দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান। ইমান ও তাকওয়া হচ্ছে মানুষ মর্যাদার মানদণ্ড। যে যত বেশি মুত্তাকি, আল্লাহ তাকে তত বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে অধিক মুত্তাকি।’ (সুরা-৪৯ হুজুরাত, আয়াত: ১৩)। পথশিশু এবং ছিন্নমূল ও গৃহহীন নারী বা পুরুষ সবার সমান অধিকার ও সম্মান রয়েছে। ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ বিধানে দুর্বলদের জন্য রয়েছে সহজতা ও সহনশীলতা। তাই এমন মানুষ যারা ইসলামের বিধিবিধান পালনে অক্ষম, তাদের ওপর ইসলাম তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পালনের সুযোগ দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তাঁর সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৮৬)। আমাদের উচিত নিজের সচ্ছলতা ও আর্থসামাজিক নিরাপত্তার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং ছিন্নমূল, গৃহহীন ও পথশিশু ভাইবোনদের জন্য দোয়া করা। যথাসম্ভব তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা। ছিন্নমূল, গৃহহীন ও পথশিশুদের দেখাশোনা করা সমষ্টিগতভাবে সমাজের সবারই দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নাও এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও।’ (বুখারি)। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী পথশিশুদের সঙ্গে সদাচার করা, তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা আবশ্যক। পথশিশুদের পাশে দাঁড়ানো মানবতার দাবি এবং ইমানি দায়িত্ব। পথশিশুদের সঙ্গে অসদাচরণ বা তাদের উপহাস, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বা ঠাট্টা-তামাশা করা আল্লাহকে উপহাস করার শামিল। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিজন। আল্লাহর কাছে প্রিয় সৃষ্টি সে, যে তাঁর সৃষ্টির প্রতি সদয় আচরণ করে।’ প্রিয় নবীজি (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্ষুধার্তকে অন্ন দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে ফল খাওয়াবেন। যে তৃষ্ণার্তকে পানি পান করায়, আল্লাহ জান্নাতে তাকে শরবত পান করাবেন। যে কোনো দরিদ্রকে বস্ত্র দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে উত্তম পোশাক দান করবেন।’ (তিরমিজি)। একদা নবীজি (সা.) ঈদের ময়দানে যাচ্ছিলেন। দেখলেন পথের ধারে একটি শিশু কাঁদছে। নবীজি (সা.) তাকে আদর করে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। শিশুটি বলল, ‘আমার বাবা-মা নেই, আমি এতিম; আজ এই ঈদের দিনে আমার নতুন জামাকাপড়ও নেই।’ নবীজি (সা.) শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন। হজরত আয়িশা (রা.) কে বললেন, ‘তোমার জন্য একটি ছেলে এনেছি। একে গোসল করিয়ে ভালো পোশাক পরাও।’ শিশুটিকে বললেন, ‘আজ থেকে আয়িশা তোমার মা, ফাতিমা তোমার বোন, আমি তোমার বাবা।’ এভাবেই শিশুটির মুখে হাসি ফুটল। (সীরাতুন নবী সা.)। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার পিতা নেই, যে এতিম, আমি তার পিতা। যার অভিভাবক নেই, যে অভিভাবকহীন; আমি তার অভিভাবক। যার আশ্রয়স্থল নেই, আমি তার আশ্রয়স্থল। যার ঘর নেই, আমার ঘরই তার ঘর।’ (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
প্রথম আলো
তারাবিহতে আজ: ১৭ শত্রুর ঘরে নবীর পালন ও কারুনের ধ্বংসের গল্প
ইসলাম ধর্ম
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা নামলের ৬০ থেকে সুরা কাসাস ও সুরা আনকাবুতের ১ থেকে ৪৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে। ২০তম পারা পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আসমান-জমিন সৃষ্টি, আল্লাহর ক্ষমতা, ইমানদারের পরীক্ষা, মৃত্যু-পরবর্তী জীবন, রিজিক, দুই নদীর মাঝখানে পার্থক্যরেখা, মুসা (আ.) ও ফেরাউনের কাহিনি, কারুনের ঘটনা, মুসলমানদের দুঃখ-কষ্ট, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য, সবুজ-শ্যামল বাগান সৃষ্টি, মিঠা পানি ও লবণাক্ত পানির দরিয়া, কোরআন আঁকড়ে ধরা ও হিদায়েত আল্লাহর হাতে ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। বান্দার ডাকে আল্লাহর সাড়া সুরা নামলের ৬০ থেকে ৬৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহর কুদরত ও একাত্ববাদ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। পরে মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের আলোচনা এসেছে। আল্লাহর দয়ামায়া মানুষকে বেষ্টন করে আছে। অসহায় অবস্থায়, দুঃখ-কষ্টের সময় এবং অসুস্থতার মুহূর্তে তিনিই সাড়া দেন নিরুপায় বান্দার ডাকে। গভীর অন্ধকারে জলে-স্থলে তিনিই দেন পথের দিশা। বৃষ্টি বর্ষণের আগমুহূর্তে তিনি শীতল ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত করেন। তিনিই মানুষকে রিজিক দেন। জীবন দেন। ভালো কাজের প্রতিদান ইসলাম বিশ্বাসী মানুষের কাছে চায় শ্রেষ্ঠ ও উত্তম আমল। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে, মানুষের কল্যাণে কাজ করে, মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তার জন্য আল্লাহর কাছে উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। আল্লাহ তাকে মহব্বত, নৈকট্য ও অনুগ্রহের দ্বারা সম্মানিত করবেন। তার আশার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেবেন। তার অস্থিরতা দূর করবেন। বর্তমানে মানুষ নানা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে, এক বাঁধনহীন উড়াল জীবন বয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় মানুষ; কোথাও যেন শান্তি নেই, মানুষের এই অস্থিরতা কাটাতে পারে তাদের ভালো কাজ। ভালো কাজ ভয়াবহ সেই কিয়ামতের দিনেও মানুষের জন্য আলো হয়ে দাঁড়াবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে উৎকৃষ্টতর প্রতিদান পাবে এবং সেদিন তারা গুরুতর অস্থিরতা থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৮৯) সুরা কাসাসে নানা ঘটনা ৮৮ আয়াতবিশিষ্ট সুরা কাসাস মক্কায় অবতীর্ণ। এটি কোরআনের ২৮ তম সুরা। কাসাস অর্থ কাহিনি বর্ণনা করা। এ সুরায় বিস্তারিতভাবে মুসা (আ.)-এর ঘটনা বর্ণিত হওয়ার পাশপাশি আরও বিভিন্ন নবীর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, তাই এটিকে সুরা কাসাস বলা হয়। যে নবী বেড়ে উঠেছেন শত্রুর ঘরে স্বপ্নের ব্যাখ্যায় ফেরাউন জানতে পারলেন, বনি ইসরায়েলের এক পুত্রসন্তান তাকে হত্যা করবে। ফেরাউন বনি ইসরায়েলের সব পুত্রসন্তানকে হত্যার নির্দেশ দেন। বনি ইসরায়েল ভেঙে পড়লেন। এদিকে মুসা (আ.)-এর মা তাঁকে প্রসব করলেন। চিন্তায় পড়ে গেলেন। আল্লাহ মায়ের অন্তরে শিশুপুত্রকে রক্ষার যাবতীয় কৌশল ঢেলে দিলেন। মা সিন্দুক বানালেন। একদিন শিশু মুসাকে সিন্দুকে বসিয়ে দরিয়ায় ভাসিয়ে দিলেন। মুসার বোন চললেন সিন্দুকের গতির পথ ধরে। সেই সিন্দুক ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গেল ফেরাউনের ঘাটে। শিশু মুসা গেল ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়ার কোলে। ফেরাউন দেখে তাকে হত্যা করতে উদ্যত হলো। আসিয়া দাঁড়ালেন বাধা হয়ে। এবার তবে ক্ষুধার্ত শিশু মুসাকে দুধ খাওয়াতে হয়। দুগ্ধবতী কয়েকজন নারী চেষ্টা করলেন। কাজ হলো না। মুসার বোন অপরিচিতি হয়ে সব ঘটনা কাছ থেকে দেখছিলেন। তিনি আসিয়াকে বনি ইসরায়েলের এক নারীর খবর দেন, যার দুধ এই বাচ্চা পান করতে পারে। ডাকা হয় সেই নারীকে। সেই নারী মুসার মা। শত্রুর ঘরে মায়ের আদরে মুসা বড় হতে থাকে। যৌবনে পদার্পণ করেন। ঘটনাচক্রে মুসার হাতে জনৈক কিবতির হত্যা হয়। ফেরাউন মুসাকে হত্যার নির্দেশ দিলে এক ব্যক্তির পরামর্শে শহর ছেড়ে মাদায়েনে চলে যান তিনি। কূপ থেকে জন্তুকে পানি খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে শুআইব (আ.)-এর মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। আট থেকে দশ বছর শুআইব (আ.)-এর ঘরে কাজ করার পর তাঁর কন্যার সঙ্গে বিয়ে হয়। পরে নবুওয়ত ও মোজেজা লাভ করেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে ভাই হারুন (আ.)-এর নবুওয়াত আনেন। ফেরাউনসহ অবিশ্বাসীদের একাত্ববাদের দাওয়াত দেন। মুসার বিরোধিতার জন্য ফেরাউনের নির্দেশে হামান কর্তৃক প্রাসাদ নির্মাণ করেন। একদিন মুসা (আ.) ও তাঁর সঙ্গীদের ধাওয়া করতে গিয়ে ফেরাউন ও তাঁর লোকজন নদীতে ডুবে মারা যান। সুরা কাসাসের ৩ থেকে ৫০ নম্বর আয়াতে মুসা (আ.)-এর জীবনের এসব ঘটনার বিবরণ রয়েছে। যে কারণে ধ্বংস হয়েছিল কারুন মুসা (আ.)-এর সময়ে আরেক অহংকারী ও দুষ্ট লোক ছিল কারুন। তার ছিল অঢেল সম্পত্তি। বাইবেল ও তালমুদে কারুনের নাম পাওয়া যায় কোরহ। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাসের (রা.) মতে, ‘কারুন ছিল মুসা (আ.)-এর চাচাতো ভাই। মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের এক অঞ্চলের নেতৃত্ব দিতেন এবং কারুন নেতৃত্ব দিত অন্য অঞ্চলের।’ (তাফসিরে তাবারি) কারুনের ধনভান্ডারের চাবিগুলো বহন করত একদল শক্তিশালী বাহিনী। তাদের পক্ষে ব্যাপারটি ছিল কষ্টসাধ্য। সম্পদের প্রাচুর্য তাকে ধোঁকায় ফেলে দিয়েছিল। সে অহংকার করত। কাউকে দান করত না। আল্লাহকে ভয় করত না। মুসা (আ.) তাকে বোঝালেন। আল্লাহর ভয় দেখালেন। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘(মুসা তাকে বলল) আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন, তা দিয়ে পরকালের ঘর অনুসন্ধান করো এবং ইহকাল থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৭৭) কারুন মুসা (আ.)-এর কথা শুনল না। সে অহংকার দেখিয়ে চলল। অবশেষে আল্লাহ তাআলা কারুনকে তার বাড়িঘরসহ জমিনে ধসিয়ে দেন। সুরা কাসাসের ৭৬ থেকে ৮২ নম্বর আয়াতে সম্পদশালী কারুনের দম্ভ, অবাধ্যতা ও ধ্বংসের কাহিনির বর্ণনা রয়েছে। সুরা আনকাবুতের বিষয়বস্তু কোরআনের ২৯তম সুরা আনকাবুত মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৬৯। এ সুরার আজকের অংশে তাওহিদ, রিসালাত, আখেরাত, মক্কার জীবনে মুসলমানদের কষ্ট, অত্যাচার ও বিপদের মধ্যে পড়া, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য, নুহ (আ.), ইবরাহিম (আ.), লুত (আ.), শুআইব (আ.)-এর কষ্ট ও ত্যাগ, আদ ও সামুদ জাতি, কারুন, ফেরাউন ও হামানদের ধ্বংসের কাহিনি এবং সত্যবাদীর জন্য আল্লাহর পরীক্ষার বর্ণনা রয়েছে। শেষাংশে অবিশ্বাসীদের দেব-প্রতিমা ও মূর্তিগুলোকে মাকড়সার জাতের সঙ্গে উপমা দেওয়া হয়েছে। মাকড়সার জাল যেমন দুর্বল, অবিশ্বাসীদের দেব-প্রতিমাও তেমন দুর্বল।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা ইসলামের ভাষা হতে পারে না : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ইসলাম ধর্ম
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ইসলামের ভাষা হতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম, সেই হিসেবে আমরা শান্তির অনুসারী। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলেই জাতি ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি একটি বিশাল জনগোষ্ঠী মূলধারা ফিরে পাবে। সৃষ্টি হবে কর্মমুখী মানব সম্পদ। রবিবার বিকালে শেরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল লছমনপুর এলাকার আল আরাবিয়া ফারাজিয়া কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্র-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এসব কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানা করেন, তারা সমাজের ভাল লোক। ভাল লোকদের দেশ প্রেমে আরও এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় দেশ পিছিয়ে পড়বে। এর আগে দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
ধর্মীয় আইনে ধর্ষণের শাস্তি
ইসলাম ধর্ম
ধর্ষণ সমাজ জীবনে এক জঘন্যতম পাপাচার। জিনা-ব্যভিচার এক সমাজ বিধ্বংসী কালচার। ধর্ষণ মানুষকে পশুতে পরিণত করে দেয়। ব্যভিচারের প্রসারের কারণে মানবতা বিপন্ন হয়। সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘিœত হয়। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দেশে একেরপর এক ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা দেশে নারীর সামাজিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। আরও কত ঘটনা যে আমাদের অজান্তেই ঘটেছে, কত ধর্ষিতা মা বোন লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছে তার হিসেব মেলা ভার! বছর শেষে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন দেয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানগুলো এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ বলছে, তারা একটি ধারণা দিয়ে থাকেন, তবে সঠিক সংখ্যা এর চেয়েও বেশি। এমনকি পত্রিকায় যখন অন্য কোনও ইস্যুকে গুরুত্ব দেয় তখন প্রতিনিধিরা ধর্ষণের খবর দেওয়ার চেয়ে ওইসব সুনির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগী থাকেন। ফলে ধর্ষণের অনেক ঘটনাই পরিসংখ্যানের বাইরে থেকে যায়। আর প্রকৃত হিসেব ইস্যুর ভিড়ে চাপা পড়ে যায়। ধর্ষণ- ব্যভিচারের শাস্তি : ইসলামে ধর্ষণ-ব্যভিচার এতোটাই জঘন্য যে, এর আশে পাশে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। ব্যভিচার ও ধর্ষণ রোধে ইসলামে পর্দার বিধান রাখা হয়েছে, নারীদের শালীন পোশাক পরিধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাথে দুনিয়া ও আখেরাতে এর কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। রাসূল সা. বলেন, ‘ব্যভিচারী অবিবাহিত নারী পুরুষকে ১০০ বেত্রাঘাত এবং ১ বছরের জন্য নির্বাসন করতে হবে। আর বিবাহিত নারী-পুরুষকে রজম করতে হবে অর্থাৎ পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করতে হবে’ ( মুসলিম : ১৬৯০)। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদকে ডাকে না, শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে ব্যক্তি এসকল কাজ করে সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। এবং এ শাস্তি লাঞ্ছিত অবস্থায় সে অনন্তকাল ভোগ করতে থাকবে। (সুরা ফুরকান : ৬)। রাসূল সা. বলেছেন, অর্ধ রজনীতে আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হয়। এ সময় মুসলিম যে দুআই করবে তার সে দুআ আল্লাহ কবুল করবেন। তবে ব্যভিচারকে পেশা হিসেবে গ্রহণকারিণী নারীর দুআ আল্লাহ কবুল করবেন না। (আল মুজামুল কাবীর লিততাবারানী : ৪৩৯১)। ধর্ষণের কারণ ও প্রতিকার : সমাজে ধর্ষণের ঘটনা ঘটার প্রধান কারণ এবং প্রথম ধাপ, পরনারী কিংবা পরপুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি দেওয়া। ইসলাম সেই উৎসটাই উপড়ে ফেলতে চেয়েছে। তাই পুরুষকে নির্দেশ দিয়েছে দৃষ্টি অবনত রাখতে আর নারীকে বলেছে দৃষ্টি অবনত রাখার পাশাপাশি দৈহিক সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখতে এবং কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে শরিয়ত সমর্থিত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যেতে। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে নবী আপনি মুমিনদেরকে বলে দিন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এটাই তাদের জন্যে সবচেয়ে বড় পবিত্রতা। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা আবহিত আছেন। (সুরা নূর : ৩০)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের বাসস্থানে অবস্থান করবে এবং জাহেলি যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মতো তোমরা তোমাদের প্রদর্শন করবে না, তোমরা যথাযথভাবে নামাজ আদায় করবে এবং জাকাত প্রদান করবে।’ (সূরা আহজাব : ৩৩)। সমাজের সবাই যদি ইসলামী আদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়, একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, রাষ্ট্রীয় আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়, তবে আশা করা যায় ধর্ষণের প্রকোপ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। বিশেষত রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো ধর্ষক যেন আইনের হাত থেকে রক্ষা না পায়, রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে গণসচেতনা গড়ে তুলতে হবে। তবে এই সামাজিক অভিশাপ থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে।
ধর্মীয় শিক্ষা
Positive
বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইসলাম ধর্মে শিষ্টাচার
ইসলাম ধর্ম
মানুষই একমাত্র প্রাণী যার বিবেক বুদ্ধি ও জ্ঞান আল্লাহ তাকে দান করেছেন। এ জ্ঞান বিবেক বুদ্ধি দিয়েই মানুষ নিজের জীবনকে পরিচালনা করে। সৃষ্টির সেরা জীব হলো মানুষ। তাই কোরআন মানুষকে তার চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে জীবন পরিচালনা করার তাগিদ দিয়েছে বারবার। আল্লাহ বলেন, এভাবেই আল্লাহতায়ালা তাঁর আয়াতগুলো তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করে বলে দিচ্ছেন, আশা করা যায় তোমরা তা অনুধাবন করবে। (সুরা বাকারা, আয়াত ২৪২)। আমরা সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে বসবাস করতে হলে আমাদের সবাইকে সামাজিক রীতিনীতি ও শিষ্টাচার মেনে জীবন পরিচালিত করতে হয়। আল্লাহ রব্বুল আলামিন রসুল (সা.) এর নীতি ও আদর্শ অনুকরণের জন্য পবিত্র কোরআনে তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, রসুল তোমাদের যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে তোমাদের নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক। (সুরা হাশর, আয়াত ০৭)। পিতা-মাতার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, কী আচরণ করতে হবে সে বিষয়েও আল্লাহ কোরআনে বলেন, তোমরা পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর। যদি তোমাদের কাছে তাঁদের কোনো একজন বা উভয়েই বৃদ্ধ অবস্থায় উপনীত হয় তাহলে তাদের সঙ্গে ‘উহ্’ শব্দটিও বল না এবং কখনো তাদের ধমক দিও না, তাদের সঙ্গে সম্মানজনক ও ভদ্রজনোচিত কথা বল। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩)। আমাদের জীবনে শিষ্টাচার প্রতিটি ক্ষেত্রে বিদ্যমান। একজনের বাসায় গেলে তার অনুমতি নিয়ে সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করতে হয়। আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা কখনো নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারও ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি না চেয়ে এবং তাদের সালাম প্রদান না করে গৃহে প্রবেশ কর না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। আশা করা যায় তোমরা এ থেকে শিক্ষা নিতে পারবে। (সুরা আন নুর, আয়াত ২৭)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ সমুন্নত রাখার জন্য বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। কখনো যদি মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাতের সূচনা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে কী করতে হবে তা কোরআনের সুরা হুজরাতের ৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, মুমিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই, অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক করে দাও। আল্লাহকে ভয় কর, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানি করা হবে। (সুরা হুজরাত, আয়াত ১০)। পবিত্র কোরআনের সুরা হুজরাতে আরও বর্ণিত হয়েছে- কোনো নারী যেন অন্য কোনো নারীকে বিদ্রুপ না করে, কেউ যেন কাউকে নিন্দা না করে, কাউকে মন্দ নামে না ডাকে, অন্যের সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষণ না করে, অন্যের গোপন বিষয়ে পেছনে না লাগে, আর কারও বিরুদ্ধে পরচর্চা বা গিবত না করে। আমাদের সমাজে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলো পরের নিন্দা করা আর তার পেছনে লাগা। অথচ আল্লাহ বলেন, দুর্ভোগ রয়েছে প্রত্যেক পেছনে ও সামনে নিন্দাকারী ব্যক্তির জন্য। (সুরা আল হুমাযাহ, আয়াত ০১)। আমাদের উচিত জীবনের মূল্যবান সময়গুলো অন্যের দোষ না খুঁজে মানুষের কল্যাণে কাজ করা। কাউকে মন্দ নামে ডাকা, মন্দ ধারণা পোষণ করা, কারও বিরুদ্ধে পরচর্চা করা কোরআনে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও আমরা এই কাজগুলো করে আনন্দ পাই। রসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহতায়ালা কেয়ামতের ময়দানে তার দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবেন। (মুসলিম শরিফ, ৬৭৪৬)। আমাদের সমাজের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলো গিবত বা পরনিন্দা করা। আল্লাহ বলেন, তোমাদের কেউ যেন কারোর কোনো গিবত বা পরনিন্দা না করে, তোমাদের কেউ কি চায় যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করবে? তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাক। (সুরা হুজরাত, আয়াত ১৩)। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষকে কিছু নীতি, নিয়ম, শিষ্টাচার ও রীতিনীতির মাধ্যমে জীবন পরিচালিত করতে হয়। যাতে সমাজে সবসময় একে অপরের সঙ্গে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গভীর হয় এবং নৈতিকতা, শালীনতা মেনে জীবন পরিচালিত হয়। তাহলে প্রতিটি মানুষের জীবন হবে নির্বিঘ্ন ও শঙ্কামুক্ত।
ধর্মীয় সংস্কৃতি
Positive
প্রথম আলো
সংখ্যালঘু শব্দটা মুছে ফেলতে হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
অন্যান্য
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, অনেকে নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবেন। এ শব্দটা মুছে ফেলতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন কিন্তু হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন করেছে।আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুল্লাহ আল শাহীন।প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশি ও আমরা বাঙালি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের ভেতরে ভেদাভেদের কোনো প্রশ্ন আসতে পারে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে চাই, বাঙালি হিসেবে থাকতে চাই।’অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম এ বারী, গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম ইসমাইল হোসেন মিয়া, অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম, কাপাসিয়ার ইউএনও এ কে এম গোলাম মোরশেদ খান, কালিয়াকৈরের ইউএনও তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ, গাজীপুর সদরের ইউএনও সৈয়দ মোরাদ আলী, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন, গাজীপুর জেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি কামরুল ইসলাম, গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের খতিব আকতার হোসেন প্রমুখ।ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘আজকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশ পা ফেলেছে। ২০৪১ সালে এটা উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে শামিল হবে। অনেকে মনে করেন কী করে এটা সম্ভব যে আমেরিকার মতো এ দেশ হবে, রাশিয়ার মতো এ দেশ হবে, সুইজারল্যান্ডের মতো এ দেশ হবে। আসলেই এটা সম্ভব। আমাদের ১০টি মেগা প্রকল্প আছে। আজকে এক পদ্মা সেতু থেকে আমাদের পারডে ইনকাম হলো ৩০০ কোটি টাকার ওপরে। এতে বছরে যে অঙ্ক দাঁড়ায়, একসময় আমাদের দেশের বাজেটও এত টাকা ছিল না।’দেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে ফরিদুল হক আরও বলেন, এবার চালু হয়েছে মেট্রোরেল। এখানকার আয় থেকে জিডিপি ২ ভাগ বেড়ে যাবে। ঠিক তেমনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলটি যখন চালু হবে, তখন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে দূরত্ব কমে যাবে প্রায় অর্ধেক। এতে তেলের খরচ অর্ধেক কমে যাবে। সময়ও লাগবে অর্ধেক। বাকি অর্ধেক সময় মানুষ অন্য কাজে লাগাতে পারবে। এ ছাড়া টানেল ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নেওয়া ট্যাক্সের সঙ্গে যোগ হবে। আরও সাতটি মেগা প্রকল্প যখন হয়ে যাবে, তখন জিডিপির হার বেড়ে যাবে বর্তমান সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশ যখনই এগিয়ে যায়, তখনই একশ্রেণির মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।’
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
কালের কন্ঠ
স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান নিয়ে ইসলাম কী বলে
ইসলাম ধর্ম
স্বামী-স্ত্রী সমবয়সী হওয়া কিংবা বয়সের তারতম্য থাকা—উভয় অবস্থায় বিবাহ বৈধ। দেশে দেশে স্বামী-স্ত্রীর বয়সের স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক ব্যবধানেরও বহু নজির আছে। শরিয়তে বয়সে তারতম্যময় বিবাহ নিষিদ্ধ নয়। আবার ইসলাম এ বিষয়ে কাউকে উৎসাহও দেয়নি। এ ক্ষেত্রে আছে প্রশস্ততা ও অবাধ স্বাধীনতা। কিন্তু বিষয়টি নির্ভর করে বাস্তবতা, সমাজ, সংস্কৃতি ও পরস্পর বোঝাপড়ার ওপর। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রথমা স্ত্রী খাদিজা (রা.) রাসুল (সা.)-এর চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, খাদিজা (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)-এর চেয়ে ১৫ বছরের বড়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বয়স ছিল তখন ২৫ বছর। নবী করিম (সা.) ও খাদিজা (রা.)-এর মধ্যে শুভ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় শাম দেশ থেকে প্রত্যাবর্তনের দুই মাস পর। তিনি সহধর্মিণী খাদিজা (রা.)-কে মোহরানাস্বরূপ ২০টি উট প্রদান করেন। ওই সময় খাদিজা (রা.)-এর বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। বংশমর্যাদা, সহায়-সম্পদ, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সমাজের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়া। তাঁর জীবদ্দশায় রাসুল (সা.) অন্য কোনো নারীকে বিবাহ করেননি। (ইবনে হিশাম ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৮৯-১৯০; ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা ৫৯) আর রাসুল (সা.) যখন তাঁর সবচেয়ে কম বয়সী স্ত্রী আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু করেন, তখন তাঁদের বয়স ছিল যথাক্রমে ৫৩ ও ৯। যদিও বিবাহ আরো আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) আয়েশা (রা.)-কে প্রধানত পাঁচ কারণে বিয়ে করেছিলেন— ১. আয়েশা (রা.)-এর পিতা আবু বকর (রা.)-এর অতি আগ্রহ ছিল যে তিনি [আবু বকর (রা.)] যেভাবে ঘরের বাইরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী হয়ে যাবতীয় খেদমত আঞ্জাম দেন, অনুরূপ ঘরের ভেতরও যেন তাঁর পরিবারের কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমত করতে পারেন। তাই আবু বকর (রা.) মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার সম্পর্কে রূপান্তর করেন। ২. সব ইতিহাসবিদ এ ব্যাপারে একমত যে আয়েশা (রা.) ছিলেন তৎকালীন আরবের অন্যতম মেধাবী নারী। তাই মহানবী (সা.) তাঁকে বিবাহ করার মাধ্যমে ইসলামের বিধি-বিধান, বিশেষ করে নারীদের একান্ত বিষয়াদি উম্মতকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। ৩. মহানবী (সা.) তাঁকে বিয়ে করেছেন ওহির নির্দেশ অনুসরণ করে। ওহির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৫) ৪. শুধু আরবের সংস্কৃতি নয়, গোটা বিশ্বে সেই সময়ে ধর্মীয় নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবার মধ্যে অল্প বয়সী নারীকে বিবাহ করার ব্যাপক প্রচলন ছিল। ৫. মহান আল্লাহ তাঁর হিকমত অনুযায়ী, মহানবী (সা.)-এর মাধ্যমে এমন কিছু কাজ করিয়েছেন, যেসব কাজের উদ্দেশ্য ছিল—তাঁর উম্মতের জন্য বৈধতা ও অবৈধতার সীমারেখা চিহ্নিত করা এবং সংস্কৃতির নামে মানুষের কল্পিত অলিখিত আইনগুলো ভিত্তিহীন প্রমাণ করা। যেমন—নামাজ কাজা হওয়া, পালক পুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা ইত্যাদি। মহানবী (সা.) নিজে এগুলোর নজির স্থাপন করেছেন। অনুরূপ নিজের চেয়ে বেশি বয়সের কিংবা কম বয়সের স্ত্রী গ্রহণ বৈধ প্রমাণ করার জন্য মহান আল্লাহ মহানবী (সা.)-এর মাধ্যমে নজির স্থাপন করেছেন। এর মাধ্যমে বিবাহের বিধানে প্রশস্ততা ও অবারিত সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যুগে যুগে দেশে দেশে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সুযোগ গ্রহণ করেছে। স্বামীদের যেমন নিজেদের চেয়ে কম বয়সী স্ত্রীকে বিবাহ করার নজির আছে, অনুরূপ স্ত্রীদের মধ্যে নিজেদের চেয়ে কম বয়সী স্বামী গ্রহণের নজিরও দেশে দেশে আছে। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য সবচেয়ে বেশি ছিল রাসুল (সা.)-এর পালক পুত্র জায়িদ ইবনে হারিসা (রা.) ও তাঁর স্ত্রীর। তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন রাসুল (সা.) লালন-পালনকারী বারাকাহ (রা.)। তাঁর প্রসিদ্ধ নাম উম্মে আইমান। জায়িদ ইবনে হারিসার চেয়ে তাঁর স্ত্রী উম্মে আইমান (রা.) কমপক্ষে ৩০ বছরের বড় ছিলেন। উম্মে আইমান (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)-এর পালক মা। রাসুল (সা.)-কে কোলে-কাঁধে করে যাঁরা বড় করেছেন, তিনি তাঁদের একজন। রাসুল (সা.) একদিন সাহাবায়ে কিরামকে বলেন, কেউ যদি জান্নাতি নারীকে বিয়ে করতে চায় সে যেন উম্মে আইমানকে বিয়ে করে। জায়েদ (রা.) দেরি না করে রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টির জন্য তাঁকে বিয়ে করেন। উম্মে আইমান (রা.) তখন বয়স্কা নারী। আর জায়েদ (রা.) অবিবাহিত যুবক। তাঁর উদরে (মক্কায়) জন্মলাভ করেন বিখ্যাত সেনানায়ক উসামা ইবনে জায়েদ (রা.)। (উসদুল গাবাহ ২/১৩০; আল-ইসাবাহ ২/৪৯৬) স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ভারসাম্য স্বামী-স্ত্রীর বয়সে ভারসাম্য রক্ষা করা উচিত। বয়স স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আচরণগত (স্বভাব ও দৈহিক) বিষয়ে প্রভাবক। এ ক্ষেত্রে কোরআনের সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও ইঙ্গিত আছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং (জান্নাতে) তাদের পাশে থাকবে সমবয়সী আয়তনয়না (জান্নাতি রমণী)।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৫২) অন্য আয়াতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি জান্নাতি রমণীদের উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদের করেছি চিরকুমারী, সোহাগিনী, সমবয়স্কা।’ (সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৩৫-৩৮) সুতরাং স্বামী-স্ত্রীর বয়স কাছাকাছি হওয়া বাঞ্ছনীয়। বয়সের বেশি ব্যবধানে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তাই প্রয়োজন ভারসাম্য। ফাতেমা (রা.)-কে বিয়ে করার প্রস্তাব সর্বপ্রথম আবু বকর (রা.) দেন। অতঃপর ওমর (রা.) প্রস্তাব দেন। উদ্দেশ্য ছিল—তাঁরা রাসুল (সা.)-এর জামাতা হওয়ার সম্মান অর্জন করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, সে [ফাতেমা (রা.)] অনেক ছোট। তাঁদের বয়স অনেক বেশি ছিল। রাসুল (সা.) বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁদের আবেদন নাকচ করে দেন। এতে বোঝা যায়, মেয়ের বয়স কম হলে স্বামীর বয়স অতিরিক্ত বেশি হওয়া উচিত নয়। বয়সের বেশি অসমতায় বিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়। (ইত্তিহাফুস সায়েল বিমা লিফাতিমাতা মিনাল মানাকিবি ওয়াল ফাদাইল, পৃষ্ঠা : ৩৪-৩৬) ফাতেমা (রা.)-এর বিয়ের সময় বয়স ছিল সাড়ে ১৫ বছর। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, পৃষ্ঠা : ৪২৩)। তবে ইবনে সাদের মতে, সে সময় তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর। আর আলী (রা.)-এর বয়স ছিল ২১, মতান্তরে ২৫ বছর। ইসলামে আলী (রা.) ও ফাতেমা (রা.)-এর বিয়ে একটি আদর্শ বিয়ে। এই দীর্ঘ আলোচনা থেকে জানা যায়, বর-কনের বয়সের ভারসাম্য রাখা উচিত। উত্তম হলো, বয়স কাছাকাছি হওয়া। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর বয়স কিছু কম হওয়া মন্দ নয়। কেননা নারীর গ্রোথ পুরুষের চেয়ে প্রবল। তাই পরস্পরের বয়সে ভারসাম্য আনতে স্বামীর তুলনায় স্ত্রীর বয়স কিছু কম হওয়া কাম্য। অভিজ্ঞরা বলেন, স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বয়সে একটু ছোট হয় তাহলে ভালো। আর নারীর শারীরিক কাঠামো থাকে দুর্বল। ফলে সে আগে বৃদ্ধা হয়ে যায়। যদি দুই-চার বছরের পার্থক্য থাকে তাহলে সমতা আসে। (হুকুকুল জাওজাইন, পৃষ্ঠা ৩৭০) পরিশেষে, আমৃত্যু এক ছাদের নিচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে মানুষ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। আর স্বামী-স্ত্রীর বয়সের অতিরিক্ত তারতম্যের পরিণতি অনেক ক্ষেত্রে সুখকর হয় না। বিবাহ শুধু কিছুদিন এবং কয়েক বছরের উপভোগের জন্য হওয়া উচিত নয়। আর এ ক্ষেত্রে পরস্পর বোঝাপড়া ও শারীরিক সক্ষমতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত থাকে। তাই কাছাকাছি বয়স বা সামান্য ব্যবধান দীর্ঘস্থায়ী দাম্পত্যজীবনের অনুকূল।
ধর্মীয় শিক্ষা
Neutral
প্রথম আলো
মুঠোফোনে দেখা যাবে মদিনার মসজিদে নববির ভেতরে-বাইরে
ইসলাম ধর্ম
ঘরে বসেই মুঠোফোনে মদিনার মসজিদে নববির ভেতর-বাইরে ঘুরে দেখা যাবে। শারীরিক, আর্থিক বা অন্য কারণে যাঁরা মদিনার মসজিদে নববিতে যেতে পারবেন না, তাঁরাও মসজিদে নববির ভেতর-বাইরে দেখার সুযোগ পাবেন। ঘরে বসে ভার্চ্যুয়াল মসজিদে নববি ঘুরে দেখার জন্য এই ঠিকানার (https://vr.qurancomplex.gov.sa/msq/) ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ভার্চ্যুয়াল মসজিদে নববি দেখার সময় আজানসহ পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শোনা যাবে। মসজিদে নববি প্রাঙ্গণে থাকা উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে ত্রিমাত্রিক ছবি দেখা যাবে এবং দরকারি তথ্য পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে আরবির পাশাপাশি ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষায়ও তথ্যগুলো পড়তে পারবেন। বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রবেশের পর মসজিদে নববিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের সামনের ও পাশের অংশ দেখতে পাবেন ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণকারীরা। মসজিদে নববির বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ রয়েছে। আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট ও কিং ফাহাদ গেট। গেট নির্বাচন করে দিলে সেই পথে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে। পর্দার ওপরে মাঝখানে থাকা নির্দেশনাসূচক বাটন থেকে গেটগুলো নির্বাচন করতে হবে। ভার্চ্যুয়াল প্রযুক্তিতে আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট দিয়ে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে। ঢোকার পর দেখা যাবে পাঠাগার, গ্যালারি ও প্রদর্শনী কক্ষ। নবীর তৈরি মসজিদের ওপরের অংশও দেখা যাবে। সবুজ মিনারের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি মসজিদে নববির মিনারও দেখা যাবে এই ভ্রমণে। ভার্চ্যুয়ালি মসজিদে নববি দেখার সময় কম্পিউটার বা মুঠোফোনের পর্দার আকার ছোট বা বড় করে দেখা যাবে। সৌদি আরবের সরকারি সংস্থা ‘কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স’ ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি টিমের ব্যবস্থা করেছে। স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে ব্রাউজ করেই উপভোগ করতে পারবেন মসজিদে নববি। ২০০১ সালে কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১০ সালে পবিত্র মসজিদের নববির ভেতর-বাইরের অর্ধশত উচ্চমানের ছবি যুক্ত করে সাইটটি তৈরি করা হয়। ৩৬০ ডিগ্রিতে ছবিগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় শোনা যাবে মসজিদে নববির আজান, পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত। ভার্চ্যুয়ালি ঘুরে আসতে পারেন মসজিদে নববি।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
দৈনিক ইনকিলাব
ঘড়ির কাঁটা উল্টো ঘোরে যে মসজিদে
ইসলাম ধর্ম
বছরের পর বছর ধরে, প্রচলিত নিয়মে বাঁ থেকে ডানে না গিয়ে ঘড়ির কাঁটা ছুটছে উল্টো দিকে। এমনই এক ব্যতিক্রমী ঘড়ির দেখা মিলবে তিউনিসিয়ার দ্য গ্রেট মস্ক অব তিস্তুরের মিনারে। অদ্ভুত নিয়মে চলা এ ঘড়ি বানানো হয়েছে অন্তত চারশ’ বছর আগে। খবর ইয়াহু নিউজ’র। ১৭ শতকের প্রথম দিকে, স্পেন থেকে আন্দালুসিয়া সম্প্রদায়ের অনেকেই পালিয়ে তিস্তুরে আশ্রয় নেয়। তাদেরই একজন নির্মাণ করেছিলেন মসজিদটি। সেই নির্মাণশৈলি এত বছর পরও ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা। সবকিছু ছাপিয়ে অবশ্য মসজিদের রহস্যময় ঘড়িটিই রয়েছে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে। এর কাটা কেন উল্টো দিকে ঘুরছে তা নিয়ে রয়েছে নানা মত। অনেকের বিশ্বাস, কাবা ঘর তাওয়াফের সময় ডান থেকে বাঁ দিকে ঘোরে মুসল্লিরা। আর তাই ঘড়িটিও সেভাবেই বানানো হয়েছে। স্থানীয় অনেকের মত, পালিয়ে আসলেও, অতীতে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আন্দুলিসানরা। তাদের সেই স্বপ্নকেই ঘড়ির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তিস্তুরের শহর সুরক্ষা সংস্থার সভাপতি রাচিদ সোসি বলেন, কেউ কেউ বলে, কাবার চারপাশে মুসল্লিরা ডান থেকে বাঁয়ে ঘোরে, আরবি লেখা হয় ডান থেকে বাঁ দিকে সে অনুযায়ী ঘড়িটি বানানো হয়েছে। এছাড়া অনেকের মত, তারা আন্দালুসিয়ার স্মরণে তারা ঘড়িটি এভাবে বানিয়েছিল। আন্দালুসিয়া অঞ্চলের অবস্থান মানচিত্রের বাঁ দিকে। মসজিদের মিনারের গায়ে থাকা আরেক রহস্য ‘দ্য স্টার অব ডেভিড’কে স্থানীয়রা বলছেন একতার প্রতীক। তাদের দাবি, যুগের পর যুগ ধরে তিউনিসিয়ার এই শহরটিতে বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থানকে তুলে ধরছে এই চিহ্ন। রাচিদ সোসি আরও বলেন, দ্য গ্রেট মস্ক অব তিস্তুরের মিনার তিনটি ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। ইসলাম তো অবশ্যই; এছাড়া মিনারটিতে রয়েছে দ্য স্টার অব ডেভিড যা ইহুদি ও খ্রিস্টান দুই ধর্মেই গুরুত্বপূর্ণ। নিঃসন্দেহে এই শহরের বিভিন্ন ধর্মের বাসিন্দাদের সহাবস্থানকে তুলে ধরেছে। বিশ্বে উল্টো ঘড়ি এটিই একমাত্র নয়। ইতালি, চেক রিপাবলিক ও জার্মানিতেও রয়েছে এমন অদ্ভুত ঘড়ি।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
বাংলাদেশ প্রতিদিন
হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় বাড়ল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত
ইসলাম ধর্ম
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও ২১ দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে রবিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটা এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। আগামী বছর (২০২৪ সাল) হজে যেতে সরকারি-বেসরকারি হজযাত্রীদের নিবন্ধন শুরু হয় গত ১৫ নভেম্বর। নিবন্ধনের সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল আর রবিবার।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Neutral
কালের কন্ঠ
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ইসলামী ব্যক্তিত্বদের সম্মাননা
ইসলাম ধর্ম
সৌদি আরবের মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পড়তে আসা দুই হাজার ৫৫২ শিক্ষার্থী তাতে অংশ নেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অনুষ্ঠিত জমকালো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মদিনা অঞ্চলের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন আনাস গাজি সাহলুল। তিনি বিশ্বব্যাপী জ্ঞান ও বিজ্ঞান প্রচার-প্রসারে এই শিক্ষাকেন্দ্রের অতুলনীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। মুসলিম সমাজে ইসলামের মধ্যপন্থা ছড়িয়ে দিতে এই বিশ্ববিদ্যালয় আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে বলে জানান তিনি। সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ড. মামদুহ বিন সাউদ সানয়ান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি তার তৃতীয় কৌশলগত পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জনের পথে চলছে। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মিলে এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ও গবেষণায় নিত্য-নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করছে এবং বিশ্বব্যাপী শিক্ষিত সমাজ গড়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর এখান থেকে শিক্ষা সম্পন্ন করে সুদক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।এদিকে দ্বিতীয় বছরের মতো এবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীদের বিশেষ সম্মাননা ও ৫০ হাজার রিয়াল পুরস্কার দেওয়া হয়। শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তার, আর্থ-সামাজিক অবদান, সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা, টেকসই উন্নয়ন ও পেশাগত দক্ষতাসহ চার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়।এসব ক্ষেত্রে যারা পুরস্কার লাভ করেন তারা হলেন, নাইজেরিয়ার অ্যালর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শরিয়াহ বিষয়ক শিক্ষক ড. আবদুর রাজ্জাক, কোরিয়ার মায়ংজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. হামিদ চৈ ইয়ং কিল, ইন্দোনেশিয়া সরকারে পিপলস কনসালটেটিভ কাউন্সিলের উপপ্রধান ড. হেদায়াত নুর ওয়াহিদ এবং নাইজেরিয়ার ইউবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানববিদ্যা ফ্যাকাল্টির প্রধান ড. দুকুরি মাসিরি।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive
প্রথম আলো
সম্পদের অহংকার ধ্বংস করে কারুনকে
ইসলাম ধর্ম
কারুন ছিল হজরত মুসা (আ.)-এর সম্প্রদায়ের লোক। আল্লাহ তাকে বিপুল ধনভান্ডার ও প্রাচুর্য দান করেছিলেন। সম্পদের মোহে কারুন ওই এলাকার মানুষের ওপর নিপীড়ন চালাত। কাউকে সে দান করত না। নবী মুসা (আ.) তাকে বোঝালেন। আল্লাহর ভয় দেখালেন। আখিরাতের কথা বললেন। মানুষের প্রতি দয়া দেখাতে বললেন। তাতে কাজ হয়নি। অবশেষে আল্লাহ তাআলা কারুনকে তার বাড়িঘরসহ সবকিছু ধ্বংস করে দেন। সুরা কাসাসে সম্পদশালী কারুনের দম্ভ, অবাধ্যতা ও ধ্বংসের কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। তাফসিরে তাবারিতে আছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাসের (রা.)–এর মতে, কারুন ছিল মুসা (আ.)-এর চাচাতো ভাই। মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের এক অঞ্চলের নেতৃত্ব দিতেন। কারুন নেতৃত্ব দিত অন্য অঞ্চলের। মিসরের ফায়ুম শহরে কারুন হ্রদ নামে একটি স্থান রয়েছে। রাজধানী কায়রো থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখন লোকে সেটিকে চেনে বিরকেত কারুন নামে। কোরআনে আছে, ‘কারুন ছিল মুসার সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের ওপর জুলুম করেছিল। আমি তাকে এত ধনভান্ডার দিয়েছিলাম, যার চাবিগুলো বহন করা একজন শক্তিশালী লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ করো, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দেমাক কোরো না, আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ যা তোমাকে দিয়েছেন, তা দিয়ে পরলোকের কল্যাণ অনুসন্ধান করো এবং ইহলোকে তোমার বৈধ সম্ভোগকে তুমি উপেক্ষা কোরো না। তুমি সদয় হও, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি সদয়। আর পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চেয়ো না। আল্লাহ ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না। ‘কারুন বলল, এ সম্পদ আমি আমার জ্ঞানের জোরে পেয়েছি। সেকি জানত না আল্লাহ তার আগে বহু মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছেন, যারা তার চেয়েও শক্তিতে প্রবল ছিল, সম্পদে ছিল সমৃদ্ধ? অপরাধীদেরকে ওদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না। ‘কারুন তার সম্প্রদায়ের সম্মুখে জাঁকজমকের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিল। যারা পার্থিব জীবন চাইত তারা বলল, আহা! কারুনকে যা দেওয়া হয়েছে, আমরা যদি তা পেতাম! সত্যিই তিনি বড় ভাগ্যবান! আর যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল তারা বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ আর ধৈর্যশীল ছাড়া কেউ এ পাবে না। ‘তারপর আমি কারুনকে ও তার প্রাসাদকে মাটির নিচে মিলিয়ে দিলাম। তার পক্ষে এমন কোনো দল ছিল না, যারা আল্লাহর শাস্তির বিরুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করতে পারত। আর সে নিজেও আত্মরক্ষা করতে পারেনি। আগের দিন যারা তার মতো হতে চেয়েছিল, তারা তখন বলতে লাগল, দেখো, আল্লাহ তাঁর দাসদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা জীবনের উপকরণ বাড়ান ও যার জন্য ইচ্ছা তা কমান। যদি আল্লাহ আমাদের ওপর সদয় না হতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি মাটির নিচে মিলিয়ে দিতেন। দেখো, অবিশ্বাসীরা সফল হয় না। ‘এ–পরকাল, যা আমি নির্ধারণ করি তাদেরই জন্য যারা এ-পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চায় না। সাবধানীদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম। যে সৎকাজ করে, সে তার কাজের চেয়ে বেশি ফল পাবে, আর যে মন্দ কাজ করে, সে তো কেবল তার কাজের অনুপাতে শাস্তি পাবে। যিনি তোমার জন্য কোরআনকে বিধান করেছেন, তিনি অবশ্যই তোমাকে স্বদেশে ফিরিয়ে আনবেন। বলো, আমার প্রতিপালক ভালোই জানেন কে সৎ পথের নির্দেশ এনেছে আর কে পরিষ্কার বিভ্রান্তিতে আছে।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৭৬-৮২)
ধর্মীয় শিক্ষা
Negative
ভোরের পাতা
মুসলিম বান্ধবীদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ফরাসি তরুণীর ইসলাম গ্রহণ
ইসলাম ধর্ম
তুরস্কে বেড়াতে এসে মুসলিম বান্ধবীদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন এলোডলে মরেনো নামে এক ফরাসি তরুণী। তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআর ডট এজেন্সি এ তথ্য জানায়। শুক্রবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেকিরদাগের দারুল ইফতায় আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন। তেকিরদাগের প্রাদেশিক মুফতি শায়খ ইসমাইল ইপেক তাকে কালেমা পড়িয়ে ইসলামে স্বাগত জানান। ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর নিজের নতুন নাম নির্ধারণ করেছেন সিবেল। ডেইলি সাবাহকে ওই তরুণী জানান, সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। এলোডলে মরেনোর ইসলাম গ্রহণের অনুষ্ঠানটি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। অনুষ্ঠানে মুফতি শায়খ ইসমাইল ইপেক বলেন, ‘আমরা মুসলিম। আমরা বিশ্বাস করি- সকল নবী-রাসূল আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এবং তারা সত্যের ওপর অটল ছিলেন। শেষ নবী হলেন- হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.)। ‍পবিত্র কুরআন আল্লাহর কিতাব এবং তা আল্লাহর তরফ থেকে সর্বশেষ ওহী ও প্রত্যাদেশ। পবিত্র কুরআনে যা আছে, আমরা তা নিঃসন্দেহে সত্য বলে বিশ্বাস করি। আমরা সমস্ত ফেরেশতা, তাকদির ও মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার প্রতি ঈমান রাখি।’ বক্তৃতার শেষে মুফতি ইসমাইল ইপেক নওমুসলিমা সিবেল ও ইসলাম গ্রহণে তাকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানান এবং সিবেলের সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করেন। সিবেল আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম গ্রহণের পর মুফতি ইসমাইল ইপেক তাকে কুরআনে কারিমসহ বেশ কিছু ইসলামী গ্রন্থ উপঢৌকন দেন।
ধর্মীয় প্রতিবেদন
Positive