text
stringlengths 8
24.4k
|
---|
মইন আলী তবে লম্বা শশ্রুধারী ধার্মিক ইংলিশ ক্রিকেটার মইন আলীকে কটাক্ষ করে পোস্ট করা তার একটি টুইট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছেন নির্বাসিত বাংলাদেশি এই লেখিকা। মইনের সতীর্থ বেশ কজন ইংলিশ ক্রিকেটার টুইটারে তাদের পোস্টে তসলিমার 'মানসিক সুস্থতা' নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তসলিমার টুইটটি নিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার জন্য মানুষজনকে অনুরোধ করেছেন ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের দুজন সদস্য - স্যাম বিলিংস এবং বেন ডাকেট। তসলিমা নাসরিন তবে দিল্লিতে বিবিসি বাংলার শুভজ্যোতি ঘোষকে তসলিমা নাসরিন বলেছেন, টুইটটি তিনি মুছে দিলেও ঐ টুইট পোস্ট করা নিয়ে কোনো অনুশোচনা তার নেই। তিনি বলেন, ব্যক্তি মইনকে নয়, ‘কট্টর ইসলামকে‘ কটাক্ষ করতে চেয়েছেন তিনি। ইংলিশ ক্রিকেটারদের সমালোচনার প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা তাদের সতীর্থকে সমর্থন করছে ভালো কথা। তারা বলেছে বলে আমি টুইটটি মুছে দিয়েছি, কিন্তু তারা আমার সম্পর্কে কতদূর জানে?“ বিতর্কের সূত্রপাত বিতর্কের সূত্রপাত হয় সোমবার যখন দিল্লিতে বসবাসরত তসলিমা নাসরিন এক টুইটে লেখেন - “ক্রিকেট না খেললে মইন আলী হয়ত সিরিয়ায় গিয়ে আইসিস-এ যোগ দিতেন।“ এ ধরণের উস্কানিমুলক টুইটের পেছনে রয়েছে আসন্ন আইপিএল যেখানে মইন চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) দলে খেলছেন। মদ তৈরির একটি কোম্পানি এবার সিএসকে দলের অন্যতম স্পন্সর। টুইটারে তসলিমার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্রিকেটার জফরা আর্চার বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: শনিবার ভারতের কয়েকটি পত্রিকায় রিপোর্ট বের হয় যে ঐ কোম্পানির লোগো তার জামায় ব্যবহার না করার জন্য মইন আলী সিএসকে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন। যদিও সিএসকে দলের প্রধান নির্বাহী কাশী বিশ্বনাথন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মইন এমন কোনো অনুরোধ করেননি, কিন্তু সোমবার মইনকে কটাক্ষ করে তার টুইটটি পোস্ট করেন তসলিমা নাসরিন। পরপরই সোশাল মিডিয়ায় তসলিমার ঐ টুইট নিয়ে শুরু হয়ে যায় তুমুল বিতর্ক। নেটিজেনদের সিংহভাগই তসলিমার ঐ টুইটের সমালোচনা করেছেন। অনেকে তাকে ‘মুসলিম বিদ্বেষী‘ বলে আক্রমণ করছেন। বেন ডাকেটের টুইট: তসলিমার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তসলিমা নাসরিনের সমালোচনায় এখন যোগ দিয়েছেন মইন আলী সতীর্থ ইংলিশ ক্রিকেটারদের বেশ ক'জন। প্রথম মুখ খোলেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অল-রাউন্ডার জফরা আর্চার। তসলিমা তার টুইটটি পোস্ট করার প্রায় পরপরই ক্ষুব্ধ জফরা তাকে উদ্দেশ্য করে পাল্টা টুইট করেন - “আপনি কি সুস্থ? আমার মনে হয় না আপনি সুস্থ।“ জফরার ঐ টুইট রি-টুইট হয়েছে শত শতবার। পাশাপাশি ভারত এবং ভারতের বাইরে হাজার হাজার মানুষ টুইটে মইনকে কটাক্ষ করে পোস্ট করা তসলিমা নাসরিনের ঐ টুইটের তীব্র সমালোচনা শুরু করেন যা এখনো সমানে চলছে। জফরা আর্চারের সাথে তসলিমার সমালোচনায় একে একে সামিল হন ইংল্যান্ড দলে মইনের সতীর্থ স্যাম বিলিংস এবং বেন ডাকেট। মুখ খুলেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক ফাস্ট বোলার রায়ান সাইডবটম এবং কাউন্টি ক্লাব ল্যাঙ্কাশায়ারের তারকা ফাস্ট বোলার সাকিব মাহমুদ। স্যাম বিলিংস তার ফলোয়ারদের অনুরোধ করেছেন, তারা যেন তসলিমার টুইটটি নিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। একই অনুরোধ করেছেন বেন ডাকেট। তিনি টুইট করেছেন, “টুইটারের সমস্যা এটাই। মানুষ এ ধরণের কথাও সেখানে বলতে পারে। টুইটটি (তসলিমার) রিপোর্ট করুন।“ রায়ান সাইডবটম তার টুইটে তসলিমাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন, “আমার মনে হয় আপনার দেখা উচিৎ আপনি সুস্থ কিনা? আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট ডিলিট করার কথাও ভাবতে পারেন।“ এমনকি ভারতের মানবাধিকার এবং নারী অধিকার কর্মীদের অনেকেও তসলিমার সমালোচনা করেছেন। প্রখ্যাত নারী অধিকার কর্মী কবিতা কৃষ্ণান, যিনি অল ইন্ডিয়া প্রগ্রেসিভ উইমেন অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি, তসলিমার তীব্র সমালোচনা করে টুইট করেছেন - “একজন লেখক হিসাবে নয়, একজন যুক্তিবাদী এবং নারীবাদী হিসাবে নয় - ভবিষ্যতে আপনি (তসলিমা) বিবেচিত হবেন একজন গোঁড়া বিদ্বেষী হিসাবে।“ তসলিমার ব্যাখ্যা অবস্থা বেগতিক দেখে গতকাল (মঙ্গলবার) তসলিমা নতুন এক টুইট করে বলার চেষ্টা করেন যে মইনকে ব্যঙ্গ করেতেই তিনি ঐ টুইটটি করেছিলেন। “বিদ্বেষীরা ভালো করেই জানেন মইন আলীকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছি। কিন্তু সেটিকে কেন্দ্র করে তারা আমাকে অপমান করার চেষ্টা করছেন কারণ আমি মুসলিম সমাজকে ধর্মনিরপেক্ষ করার চেষ্টা করছি এবং আমি কট্টর ইসলামের বিরোধিতা করি।“ দিল্লিতে টেলিফোনে বিবিসি বাংলার কাছে মইন আলীকে নিয়ে তার বিতর্কিত টুইটের পক্ষে একই ধরণের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেন, “মইন আলী হয়তো ভালো মানুষ, কিন্তু আইসিসে তো আর অপরাধীরা যায়নি। টিভিতে আমি দেখেছি সে নারী সাংবাদিকদের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলছে না। মাঠের পাশে নামাজ পড়ছে ...সুন্নতি লম্বা দাঁড়ি। খেলার মাঠে এই এগুলো কেন? সেগুলোর কারণেই উপহাস করতে টুইটটি করেছি। মত প্রকাশের স্বাধীনতার যুগে সেটা কি করা যাবেনা?“ কিন্তু খুব মানুষই তসলিমার এই ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন বলে মনে হচ্ছে। ক্রিকেটার জফরা আর্চার টুইটে জবাব দিয়েছেন - “মজা করছেন? কিন্তু কেউই হাসছে না। আপনি নিজেও বোধ হয় হাসছেন না। যেটা আপনি করতে পারেন টুইটটি মুছে ফেলতে পারেন।“ বোলার সাকিব মাহমুদ টুইট করেছেন - “মজা করেছেন? আপনার মন অসুস্থ।“ তসলিমা নাসরিন তার সোমবারের টুইটটি মুছে দিয়েছেন। তবে আজ তিনি নতুন এই টুইটে কিছুটা শ্লেষের সাথে বলেছেন যারা মুক্ত চিন্তা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতার সমর্থক তারাও তাকে আক্রমণ করছেন। “কারণ আলী মহান একজন মানুষ। আমি নই।“ ইংলিশ ক্রিকেটাররা মইন আলীর সমর্থনে সোচ্চার হলেও, চেন্নাই সুপার কিংস দল বা দলের ক্রিকেটাররা তসলিমার ঐ টুইট নিয়ে নিয়ে এখনও নিশ্চুপ। ভারতের ক্রিকেটাররাও চুপ। ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক বরখা দত্ত এ নিয়ে এক টুইটে লিখেছেন - “তসলিমা নাসরিনের টুইটের পর ব্রিটিশ ক্রিকেটাররা যেভাবে মইন আলীর সমর্থনে দাঁড়িয়েছে তা প্রশংসা করার মত। আশা করি আমাদের ক্রিকেটারও এর থেকে শিক্ষা নেবেন এবং তাদের মনের কথা প্রকাশ করবেন।“ মইন আলী নিজে এখনও তসলিমা নাসরিন বা তার টুইট নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তার নজর হয়তো এখন শনিবার মুম্বাইয়ে সিএসকের প্রথম আইপিএল ম্যাচের দিকে। |
ধর্ম নিয়ে বিশেষ করে ইসলাম নিয়ে তার কটাক্ষমুলক লেখালেখি নিয়ে বিতর্ক ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিনের জন্য নতুন কিছু নয়। |
এলি সুশিয়াতি ও তার মা সেখানকার অল্প বয়েসী মায়েদের প্রায় সবাই কাজের খোঁজে দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন। এলি সুশিয়াতির মা যখন তার দাদীর কাছে তাকে রেখে যান সে সময় তার বয়স ১১ বছর। তার বাবা-মায়ের মাত্রই বিচ্ছেদ হয়েছে তখন, পরিবারের সবার মুখে দুটো খাবার তুলে দেবার চিন্তায় গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে চলে যান এলির মা। এলি এখন দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। সে জানিয়েছে, মা চলে যাবার পর সেই সময়টা কী কষ্টে কেটেছে! মায়ের সঙ্গে দীর্ঘ সেই বিচ্ছেদের ব্যথা যেন এখনো তার চোখ মুখে। "আমার ক্লাসের বন্ধুদের বাবা-মায়েদের যখন আমি যখন দেখি, আমার মনটা তিতা লাগে। কত বছর ধরে আমি অপেক্ষা করছি মা আসবে! আরো পড়ুন: কেমন থাকেন বাংলাদেশি অভিবাসীদের সন্তানেরা? লিবিয়ায় বাংলাদেশীদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় 'দশ মিনিট দেরি হলে আমরা সবাই মারা যেতাম' এলি বলছে, "আমি চাইনা আমার মা আর বিদেশে কাজ করুক, আমি চাই উনি দেশে ফিরে আসুক। আমাকে আর আমার ভাইবোনকে দেখে-শুনে রাখুক।" মাতৃহীন এসব বাচ্চা কে দেখাশোনা করে? দেশটির পূর্ব লম্বকের গ্রাম ওয়ানাসাবাতে থাকে এলি। সেখানে এটাই স্বাভাবিক যে সন্তানদের উন্নত জীবন দিতে অল্প বয়েসী মায়েরা পরিবার ছেড়ে বিদেশে কাজ করতে যাবে। কারিমাতুল আবিদিয়া এখানকার পুরুষেরা কৃষিকাজ করে কিংবা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। পরিবারের নারীদের আয়ের তুলনায় এদের আয় একেবারেই নগণ্য। গ্রামটির প্রতিটি বাড়ি একটির গায়ে আরেকটি লাগোয়া, পুরো গ্রামে সারি সারি বাড়ি। মাঝের গলিও একেবারে সরু, কোনমতে দুটো মোটর সাইকেল পাশাপাশি চলতে পারে। বাড়ির পেছনে বিশাল ধানক্ষেত। যখন মায়েরা ছোট বাচ্চা রেখে বিদেশে যায়, তখন পরিবারের পুরুষ ও বয়স্ক সদস্যরা সন্তান পালনের দায়িত্ব নেয়। এই গ্রামের প্রতি পরিবারেই যেহেতু মা প্রবাসী, দেখা গেছে সব পরিবারই সবার বাচ্চা দেখে শুনে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন মায়েরা বাড়ি ছেড়ে যায়, সন্তানদের বিদায় জানানোই যেন তখন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। কারিমাতুল আবিদিয়ার মা যখন বিদেশে যায়, তখন তার বাচ্চার বয়স এক বছর। ফলে সেই কষ্টের স্মৃতি আবিদিয়ার দেন মনে নেই। তার প্রাইমারি স্কুল যে বছর শেষ হয়, সে বছর তার মা দেশে ফিরে এসেছিল। ততদিনে আবিদিয়া তার খালাকে মা ভাবত, যে তাকে কোলেপিঠে করে বড় করেছে। খালার সঙ্গে আবিদিয়া সুতরাং তার মা যখন ফিরে এলো, সে খুবই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তার মনে আছে, তার মা রোজ কাঁদত আর অভিযোগের সুরে তার খালাকে জিজ্ঞেস করতো "ও কেন জানে না যে ও আমার বাচ্চা?" খালা জবাব দিতো, আবিদিয়ার মায়ের কোন ছবি ছিলো না বাড়িতে। স্মৃতি বলতে মায়ের নাম আর তার কর্মক্ষেত্রের ঠিকানা, যা ছোট একটি বাচ্চার কাছে হয়ত কোন অর্থই বহন করে না। এখনো যখনই তার মা দেশে আসেন, আবিদিয়া তার খালার কাছেই থাকে। মা কাছে থাকতে বললেও, আবিদিয়া দূরে দূরে থাকে। তার খালা বাইক নুরজান্নাহ আরো নয়টি বাচ্চাকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন, এর মধ্যে কেবল একটি তার নিজের সন্তান। এ বাচ্চাগুলো তার বোনেদের বা ভাইয়ের বউদের। "কিন্তু আমি কাউকে আলাদা চোখে দেখি না। ওরা সবাই আপন ভাইবোনের মতই। গ্রামের মানুষের বাড়তি মনোযোগ উপভোগ করে ফাতিমা ওদের কেউ অসুস্থ হলে বা ওদের কিছু লাগলে আমি আলহামদুলিল্লাহ পাশে থাকতে পারি।" পঞ্চাশোর্ধ নুরজান্নাহ এই গ্রামের সবচেয়ে বয়স্ক মা। কবে থেকে মহিলারা বিদেশ যাচ্ছেন? ১৯৮০ দশক থেকে ইন্দোনেশিয়ার এ অঞ্চল থেকে নারীরা গৃহকর্মী ও আয়া হিসেবে কাজ করতে বিদেশে যাওয়া শুরু করেন। কোন ধরণের নিরাপত্তা ছাড়া বিদেশে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় তারা নিপীড়নের শিকার হন। উন্নত জীবনের খোঁজে গিয়ে কফিনে করে ফিরে আসার অনেক ঘটনা রয়েছে। কেউ কেউ শারীরিক নির্যাতনেরও শিকার হন, কেউ বা নিয়মিত বেতন পান না। অনেক সময় দেখা যায়, এসব মায়েরা আরো সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন, এসব বাচ্চা কর্মস্থলে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রবাসী ঐ নারীর গর্ভে জন্মানো বাচ্চা। ভিন্ন জাতি পরিচয়ের এসব বাচ্চাও অন্য বাচ্চাদের সাথে মিলেমিশে এ গ্রামে থাকে। স্কুল শেষে অনেক বাচ্চা যায় স্বেচ্ছাসেবী এক ক্লাবে চেহারা বা গায়ের রং ভিন্ন হবার কারণে হয়ত কিছুটা বেশি মনোযোগ পায় আর সবার কাছে। আঠারো বছর বয়েসী ফাতিমাহ জানায়, সেই বাড়তি মনোযোগ তার ভালোই লাগে। "মানুষজন আমাকে দেখে বিস্মিত হয়। কেউবা বলে তুমি খুব সুন্দর কারণ তোমার গায়ে আরব রক্ত রয়েছে। আমার এসব শুনতে খুব ভালো লাগে।" কিন্তু এ ধরণের বাচ্চাদের সেখানকার সমাজে খাটো করেও দেখা হয় এবং স্কুলেও এরা নিপীড়নের শিকার হয়। ফাতিমা কখনো তার সৌদি বাবাকে দেখেনি। কিন্তু তিনি ইন্দোনেশিয়ায় ফাতিমার মায়ের নামে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু কিছুদিন আগে তিনি মারা যান, এখন ফাতিমার মাকে আবার বিদেশে যেতে হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রবাসী আয় দেশটির প্রবাসী শ্রমিকের দুই তৃতীয়াংশের বেশি নারী শ্রমিক। তাদের পাঠানো অর্থে চলে সন্তানদের ভরণপোষণ। ক্লাবে কোরআন পড়া শিখছে একজন গত নয় বছরে এলি তার মাকে দেখতে পায়নি, কিন্তু তার মায়ের পাঠানো অর্থের কারণেই এলি আজ তার গ্রামের প্রথম মেয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাচ্ছে। এলির মা জানিয়েছেন, তার মেয়ে যে কঠিন মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছে, সেজন্য তিনি খুব খুশী। এলি বিবিসিকে জানিয়েছে, যে সে এখন তার মায়ের ত্যাগ বুঝতে পারে। "আমার কর্মজীবন অবশ্যই ভিন্ন হবে। কারণ আমি বুঝি আমাদের মায়েদের শিক্ষার অভাবের কারণেই তাদের আমাদের ছেড়ে দূরে চলে যেতে হয়েছিল। এটাই আমাদের মনে রাখতে হবে। আমি কিছুতেই আমার মায়ের মত সেখানে যাব না, আমি গেলে বরং ওদের সাথে ব্যবসায়িক চুক্তি করবো।" হাসিমুখে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলে এলি। অন্যান্য খবর: মিশরে দিনে স্বাধীন আর রাতে কারাবন্দি যারা গর্ভপাত আইনের প্রতিবাদে 'যৌন ধর্মঘটে'র ডাক কেন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাচ্ছে বাংলাদেশিরা? |
ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলে একটি গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামকে 'মা ছাড়া গ্রাম' বলে ডাকে দেশটির মানুষ। কারণ সেই গ্রামে মা ছাড়াই বড় হচ্ছে প্রায় সব শিশু। |
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাউল গানের একটি আসর। সাংস্কৃতিক কর্মীদের অনেকে এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছেন। তারা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কার্টুনিস্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমের অনেক শিল্পীকে আটক বা হয়রানির ঘটনায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বিবৃতি দিয়ে আটক কার্টুনিস্ট ও শিল্পীদের মুক্তি চেয়েছে। তবে সরকার এসব অভিযোগ মানতে রাজি নয়। আরও পড়ুন: কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং লেখক মুশতাক আহমেদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে রয়েছেন প্রায় আট মাস ধরে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, তারা ফেসবুকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি এবং জাতীয় পতাকার অবমাননা করার অভিযোগও আনা হয়েছে। কার্টুনিস্টদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, নানা ধরনের অভিযোগ দিয়ে আটক বা হয়রানির ঘটনা ঘটছে। তারা বলেছেন, পত্রপত্রিকায় একস ময় রাজনৈতিক কার্টুন ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু কয়েক বছর ধরে পত্র-পত্রিকাও ঝুঁকি নিতে চায় না। ফলে রাজনৈতিক কার্টুন আঁকা একেবার কমে গেছে। অন্যতম একজন কার্টুনিস্ট রাশেদ ইমাম তন্ময় নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, "একটি দৈনিক ইংরেজি পত্রিকায় এডিটরিয়াল কার্টুনিস্ট হিসাবে চাকরি করতাম। সেখানে দেখা গেছে, আস্তে আস্তে কার্টুন ছাপানোর পরিসর কমে এসেছে। আগে আমি চারটি কার্টুন করলে একটা কার্টুন ছাপা হতো। "গত চার পাঁচ বছরে দেখালাম যে সংখ্যাটা কমে আসলো এবং শেষের দিকে আমার কোন কার্টুনই ছাপা হতো না। তখন আমি চাকরিটা ছেড়ে দিলাম। এরকম আমি আরও কিছু কার্টুনিস্টের ঘটনা জানি।" এই কুর্টনিস্ট আরও বলেন, "যখন পত্রিকায় হচ্ছে না, তখন আমি মনে করলাম যে, ডিফারেন্ট মিডিয়া অর্থ্যাৎ সামাজিক মাধ্যমে আমি কার্টুন আঁকবো। সামাজিক মাধ্যমে যখন কার্টুন করি। ওভার দ্য ইয়ার্স দেখলাম, একটা কিছু করলেই যারা কার্টুন ভালবাসে, তারা এসে লিখতো যে ভাই সাবধান। ব্যাপারটা হচ্ছে এরকম যে কী দরকার ঝামেলায় গিয়ে?" বাউল শিল্পী শরিয়ত সরকার ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত বছর জেল খেটেছেন। তিনি বলছেন, এখন গান গাইতে তার ভয় কাজ করে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে টাঙ্গাইলে পালাগানে অংশ নিয়েছিলেন বাউল শিল্পী রিতা দেওয়ান। এরপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়। তিনি এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তার স্বামী মো: আশরাফুল ইসলামও একজন বাউল শিল্পী। তিনি জানান, মামলার পর এক বছর ধরে তাদের গানবাজনা বন্ধ হয়ে রয়েছে। একটি টেলিভিশন নাটকের দৃশ্য। সম্প্রতি একটি নতুন সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশ হওয়ার পর সেই সিনেমার পরিচালক এবং অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পর্নোগ্রাফি নিরোধ আইনে। সিনেমাটির ট্রেইলারে একজন পুলিশ কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের শিকার একজন নারীর হেনস্তা হওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়। মঞ্চ নাটকসহ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতাদের অনেকে মনে করেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সব মাধ্যমেই মত প্রকাশের অধিকার ব্যাহত করার ঘটনা বাড়ছে। নাট্যকার এবং অভিনেতা মামুনুর রশিদ বলেন, "খুবই উদ্বেগজনক বলে আমি মনে করি। কারণ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কার্টুনিস্ট, বাউল শিল্পী, এর আগে ফরিদপুরে একজন নাট্যকারকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বাঁচানো হয়।" "এই প্রবণতা যদি চলতে থাকে, তাহলে তো আমরা ভয় পেয়ে যাবো। ভয় পেলেতো কোন সৃজনশীল কাজ হবে না এবং সত্য প্রকাশ হবে না।" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা মঞ্চ নাটকের আন্দোলনের সাথে রয়েছেন। তিনি বলেন, একদিকে ভয়, অন্যদিকে সেল্ফ সেন্সরশিপ রয়েছে সাস্কৃতিক অঙ্গনে। "আমরা কী নিয়ে কথা বলবো, আমরা সরকারের বিরুদ্ধে কতটুকু যেতে পারবো - সেটার একটিা সেল্ফ সেন্সরশিপ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবশ্যই রয়েছে। আর বেশিরভাগ সংস্কৃতিকর্মীই সরকারকে সংস্কৃতি-বান্ধব মনে করে। সেই অবস্থায় সেভাবেই তারা কাজটাকে সাজায়। সে কারণেও সেল্ফ সেন্সরশিপ কাজ করে।" মিজ লুৎফা আরও বলেন, "আর রিতা দেওয়ান বা শরিয়ত বয়াতি-এদের ক্ষেত্রে যেটা ঘটে, সূফি দর্শনের সাথে যে এক ধরনের দ্বন্দ্বের জায়গা তৈরি হয়ে যায়, সেখান থেকে ঘটে। আর কিশোর এবং মুশতাকের ক্ষেত্রে এটা বলা যায়, যেহেতু তারা সরকার-বিরোধী কথা লিখেছেন, সেজন্য তাদের ধরা হয়েছে। এটা আসলে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করার অংশ।" তবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে মত প্রকাশের অধিকার ব্যাহত করার এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালেদ। তিনি বলেন, "আমরা সংস্কৃতিকে সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই দেখি। এখন কারও বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়ে থাকলে আইনী বিধান যা আছে, তা হবে। অযথা যদি কেউ হয়রানি শিকার হয়, সেটা নিশ্চয়ই আমরা দেখবো। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, "সরকারের সমালোচনা না করলে তো সরকারই সঠিকভাবে চলবে না। আমরাতো গঠনমূলক সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানাই।" এদিকে সাংস্কৃতিক কর্মীরা বলছেন, অভিযোগ নাকচ না করে সরকারের উচিত বিষয়টাতে নজর দেয়া। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: |
বাংলাদেশে কার্টুনিস্ট, বাউল শিল্পী, নাট্যকারসহ সাংস্কৃতিক কর্মী বা শিল্পীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যহত হওয়ার মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। |
প্রায় দুইশোটি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, ৪০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের পুরুষদের ওপর করা হয়েছিল এসব গবেষণা। মানব প্রজন্মের সাম্প্রতিক তথ্য নিয়ে অবশ্য কিছু গবেষক সন্দেহও প্রকাশ করেছেন। তবে তথ্য সংগ্রহের এই গবেষণা দলের প্রধান ড: হ্যাগাই লেভিন জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা নিয়ে তিনি 'খুবই উদ্বিগ্ন'। এই তুলনামূলক গবেষণাটি করা হয় ১৯৭৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। এই সময়কালে করা ১৮৫টি গবেষণার তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণা কাজটি করে ড: লেভিনের দল। ডঃ লেভিন একজন 'এপিডেমিওলজিস্ট'। রোগবিস্তার সংক্রান্ত বিদ্যা ও এর সাথে সম্পর্কিত ওষুধের শাখা, রোগের সম্ভাব্য নিয়ন্ত্রণ এসব বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ। বিবিসিকে ডঃ লেভিন জানান, "এভাবে স্পার্ম কাউন্ট কমতে থাকলে একসময় মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে"। শুক্রাণু কমে যাবার সংখ্যা 'দিনে দিনে বাড়ছে' "আমরা যদি নিজেদের জীবনযাপনের ধরন, পরিবেশ এবং রাসায়নিক ব্যবহারে পরিবর্তন না আনি, তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে তা ভেবে আমি উদ্বিগ্ন" । "একটা সময়ে এটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে, আর তাতে মানব প্রজাতির বিলুপ্তিও দেখা যেতে পারে" -বিবিসিকে বলেন ড: লেভিন। যেসব বিজ্ঞানীরা এই গবেষণার সঙ্গে ছিলেন না তারাও এই গবেষণার মানের প্রশংসা করে বলেন, তাদের কাজ খুবই ভালো, তাদের তথ্যও ঠিক আছে। কিন্তু এখনই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না যে 'মানব প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে'। জেরুজালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটির গবেষক ড: লেভিন তাঁর অনুসন্ধানে দেখেছেন, শুক্রাণুর ঘনত্ব কমে এসেছে ৫২.৪ শতাংশ এবং স্পার্ম কাউন্ট কমে এসেছে ৫৯.৩ শতাংশ। গবেষণায় আরো বলা হচ্ছে, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত পুরুষদের মধ্যে স্পার্ম কাউন্ট বা শুক্রাণুর হার কমে যাবার এই ধারা অব্যাহত রয়েছে এবং এটি দিনে দিনে আরো বাড়ছে। পূ্র্ববর্তী গবেষণা নিয়ে 'দ্বন্দ্ব' তবে দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার পুরুষদের মধ্যে স্পার্ম কাউন্ট বা শুক্রাণুর হার কমতে দেখা যায়নি। তবে গবেষকেরা বলছেন, এসব দেশে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি এবং একটা সময়ে এখানেও স্পার্ম কাউন্ট কমে আসতে পারে বলে ধারণা করেছেন ড: লেভিন। এসব গবেষণার তথ্য নিয়ে বিতর্ক আছে অনেক কারণে। এর আগে কয়েকটি গবেষণা কাজে বলা হয়েছিল উন্নত অর্থনীতির দেশে স্পার্ম কাউন্ট কমে আসছে। তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারণা এর মধ্যেও 'বিভ্রান্তিমূলক তথ্য' রয়েছে। এছাড়া আরো কিছু গবেষণা করা হয় কমসংখ্যক পুরুষ নিয়ে। আবার ফার্টিলিটি ক্লিনিক থেকে তথ্য নিয়ে যেসব গবেষণা করা হয় সেখানে স্পার্ম কাউন্ট কম আসা স্বাভাবিক, কারণ মানুষ সমস্যা নিয়েই সেখানে যায়। আরেকটি বড় চিন্তার বিষয় হলো, স্পার্ম কাউন্ট কমে আসছে এমন ফলাফল দেখতে পেলে তা জার্নালে প্রকাশিত হবার সম্ভাবনা থাকে বেশি। এই কারণে হয়তো স্পার্ম কাউন্ট বা শুক্রাণু হার কমে আসছে এমন একটা ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। কিন্তু এই গবেষকেরা দাবি করছেন এরকম সব ধরনের সমস্যার বিষয়েই তারা চিন্তা করেছেন এবং গবেষণা করে যে তারা যে ফলাফল পেয়েছেন তা সত্য বলে মানছেন অনেকে। যেমন শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যালান পেসি বলছেন "এর আগে স্পার্ম কাউন্টের বিষয়ে যেসব গবেষণা হয়েছে তাতে আমি খুব একটা আশ্বস্ত হয়নি। কিন্তু ড: লেভিন ও তার দল যে গবেষণা করেছেন এবং তারা যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা পূর্ববর্তী অনেক গবেষণা নিয়ে ভ্রান্তি দূর করে দেয়"। ধুমপান এবং স্থূলতা তবে অধ্যাপক পেসি বলছেন, নতুন এই গবেষণাটি অনেক ভ্রান্তি দূর করলেও ফলাফলের বিষয়টি নিয়ে সতর্কতার সাথে এগুতে হবে। "এ বিষয়টা নিয়ে তর্কের অবসান কিন্তু এখনই হচ্ছে না। এ বিষয়ে আরো অনেক কাজ করতে হবে" -বলেন অধ্যাপক পেসি। কেন স্পার্ম কাউন্ট বা শুক্রাণু হার কমে যাচ্ছে তার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে কীটনাশক এবং প্লাস্টিকে থাকা রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা, ওবেসিটি বা স্থূলতা, ধুমপান, মানসিক চাপ, খাদ্যভ্যাস, এমনকি অতিরিক্ত টিভি দেখা এক্ষেত্রে ক্ষতিকর বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।। ড: লেভিন বলছেন, কেন শুক্রাণুর হার কমে যাচ্ছে সে বিষয়টি জানা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। একইসাথে এমনটা যেন না ঘটে সেই উপায়ও খুঁজে বের করতে হবে বলে উল্লেখ করেন এই চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: |
সারাবিশ্বে পুরুষদের শরীরে যে হারে শুক্রাণুর সংখ্যা বা স্পার্ম রেট কমে যাচ্ছে, শুক্রাণু কমে যাবার সেই হার বজায় থাকলে মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন এক চিকিৎসক। |
১৯ বছরের লুইস শৈশব থেকে একজন ইউটিউবার ইউটিউবকে যারা নিজেদের কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে তেমনই একজন লুইস বল। ১৯ বছরের এই তরুণ ইউটিউবার এর মেকআপ সংক্রান্ত টিউটোরিয়াল এবং ছাত্র হিসেবে তার জীবনের প্রতিদিনকার ঘটনা নিয়ে ভিডিও ব্লগ বা ভ্লগ তাকে ৩ লাখের বেশি অনুসারী এনে দিয়েছে। "অনলাইনে বেড়ে ওঠা" পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে সে এসব ভিডিও পোস্ট করে আসছে। বিবিসিকে সে জানায় নিজের টিন-এজ সময়টাকে অনলাইনে তুলে ধরা নিয়ে তার কোন অনুশোচনা নেই। "আমি আমার টিন-এজ বয়সটা অর্থাৎ ১৩ থেকে ১৯ বছরের প্রতিটি মুহূর্ত অনলাইনে প্রকাশ করেছি। আমি জানি অনেক মানুষই এই বিষয়টাকে ঘৃণা করে কিন্তু আমি পেছনে ফিরে ১৪ বছর বয়সী আমাকে দেখতে ভালবাসি।" "খুব অল্প বয়স থেকে সামাজিক মাধ্যম নিয়ে আমার অবসেশন ছিল। আমার বয়স যখন ৮ কি ৯ বছর তখন একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে আমি আমার পোষা প্রাণীর ছবি তাৎক্ষণিকভাবে তুলে দিতাম।" এরপর প্রাথমিক স্কুলের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ভিডিও ব্লগে। লুইসের ভিডিও যা সম্মিলিতভাবে ১৬ মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে যেসব ভিডিওতে তার জামাকাপড় থেকে মেকআপ কিংবা ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া সবকিছুই স্থান পায়। "ফলাফল না ভেবেই যা খুশি মন্তব্য" এভাবে একটি কিশোরের 'অনলাইনে বেড়ে ওঠা' অনেকের কাছেই অস্বাভাবিক মনে হলেও এই তরুণ বলছে তার অভিজ্ঞতা ছিল ইতিবাচক। "অনলাইনে ভিডিও পোস্টিং একজন ব্যক্তি হিসেবে আমার পরিচয় খুঁজে বের করতে সাহায্য করেছে এবং আমার ব্যক্তিত্বের সেরাটা বের করে এনেছে।" আরো পড়তে পারেন: দর্শক-দর্শনী দুটোই এখন ইউটিউব বিনোদনে বিজ্ঞাপনী বাজার: ডিজিটাল মিডিয়ার সম্ভাবনা কতটা? ফেসবুক-গুগল-ইউটিউবে ব্যবসার ওপর করের প্রস্তাব ইউটিউব দেখে হোটেল কক্ষে সন্তান প্রসব করলেন তরুণী নিখোঁজের ৪০ বছর পর স্বজনের কাছে ফেরালো ইউটিউব অনলাইনে সব ইউটিউবারদের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের শিকার হতে হয়-বলেন এই ইউটিউবার আরও অনেক ইউটিউবারের মত লুইসও সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রলিং এবং লোকজনের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য থেকে বাদ পড়েনি। "অনলাইনে লোকই আমার কাজকে সমর্থন দিয়ে আসছে কিন্তু আরও বহু মানুষ আছে যারা শুধু আমাকেই নয় অন্য ইউটিউবারদেরকেও নিচে নামাতে তৎপর।" লুইস বলেন ইউটিউবারদের সবাইকেই এ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। "এমন কোন ইউটিউবারের কথা আমি শুনিনি যাকে এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের শিকার হতে হয়নি।" এই তরুণ আরও যোগ করেন, " ইউটিউবে লোকজন ফলাফল চিন্তা না করেই যা খুশি তাই বলে বসে।" "ইউটিউবের ভিন্ন চেহারা" নিজের পোস্ট করা ভিডিওগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সম্পাদনা করেন লুইস। কারণ ভিউয়ারের সাথে কথোপকথনের মতো মনে হলে সেই ভিডিও দিতেই সে পছন্দ করে। "আমি মনে করি ইউটিউবের যে আন-গ্ল্যামারাস দিকটি আছে সে দেখানো জরুরি কারণ তা আপনাকে দর্শকের কাছাকাছি আনবে ।" বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের জীবনের প্রকৃত চিত্রই তুলে ধরতে চায় সে। আর ইউটিউবকে সে নিয়েছে একটি "পূর্ণকালীন কাজ" হিসেবে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: কোটা বাতিল চায় কমিটি, দোটানা মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে খাবেন, কিন্তু মেদ জমবে না - কীভাবে সম্ভব? আমেরিকা তুরস্কের পিঠে ছুরি মেরেছে, বললেন এরদোয়ান |
ব্রিটেনে সবচেয়ে বড় অনলাইন ভিডিও ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে ইউটিউব তারকা এবং তাদের ভক্তরা জড়ো হচ্ছেন লন্ডনে। |
নবীর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বিতর্কে মিস্টার ম্যাক্রঁর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন অনেক মুসলিম আল জাজিরা টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ এই মন্তব্য করেছেন। গত শুক্রবার ফ্রান্সের নিস শহরে এক ব্যক্তি ছুরি হাতে হামলা চালিয়ে তিন জনকে হত্যার ঘটনার পটভূমিতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ একথা বললেন। নিস শহরের ঐ ঘটনা ছিল ফ্রান্সে এক মাসের সামান্য বেশি সময়ের মধ্যে তৃতীয় সন্দেহভাজন ইসলামী জঙ্গি হামলা। ইসলামের নবীর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর তীব্র বিতর্ক চলছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ 'মত প্রকাশের স্বাধীনতার' প্রেক্ষাপটে এই ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের অধিকার আছে বলে যুক্তি দেয়ার পর তা মুসলিমদের ক্ষিপ্ত করে। তখন অনেকে ফরাসী পণ্য বর্জনের ডাক দেয়। গত মাসের শুরুতে ফ্রান্সের এক স্কুল শিক্ষক ক্লাসে তার ছাত্রদের এই ব্যঙ্গচিত্রটি দেখিয়েছিলেন। এরপর ঐ শিক্ষককে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করা হয়। নিসের হামলার ঘটনার সূত্রে তিউনিসিয়ায় দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা। নিসের হামলাকারী ছিল তিউনিসিয়ার নাগরিক। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা আরও জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে আশংকা করছেন। নিসের ঘটনার পর লিঁও শহরে আরেকটি হামলা হয়। সেখানে অর্থোডক্স চার্চের এক পাদ্রি হামলায় আহত হন। তবে হামলাকারি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। সাক্ষাৎকারে যা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ নিস শহরে হামলায় নিহত হয় তিনজন আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ বলেছেন, মুসলিম বিশ্বে তার কথা নিয়ে যে এরকম তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তার কারণ হচ্ছে লোকে ভুল করে ভেবেছেন তিনি নবীর ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থন করেছেন। অথবা তারা মনে করেছেন ফরাসী সরকারই বুঝি এই ব্যঙ্গচিত্র তৈরি করেছে। "যে ধরণের অনুভূতি প্রকাশ করা হচ্ছে আমি সেটা বুঝতে পারি এবং আমি তাদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমার ভূমিকাটিও আপনাদের বুঝতে হবে। এখানে দুটি বিষয়: শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং কিন্তু সেই সঙ্গে অধিকার রক্ষা করা।" যারা নবীর ব্যঙ্গচিত্র একেঁছেন তাদের বাকস্বাধীনতার প্রতি ইঙ্গিত করে বলছিলেন তিনি। "আজকের বিশ্বে কিছু মানুষ আছেন যারা ইসলামকে বিকৃত করেন এবং এই ধর্মের নামেই, যেটিকে তারা রক্ষা করছেন বলে দাবি করেন, তারা মানুষকে হত্যা করেন, জবাই করেন --- ইসলামের নামে কিছু চরমপন্থী আন্দোলন এবং ব্যক্তি সহিংসতার চর্চা করেন।" মি. ম্যাক্রঁ বলেন, ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে ক্ষোভের কারণে এখন ফরাসী পণ্য বর্জনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে সেটা অর্থহীন এবং অগ্রহণযোগ্য। যে পটভূমিতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ একথা বললেন: নবীর কার্টুন বিতর্কে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মিস্টার ম্যাক্রঁর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বৃহস্পতিবার নিস শহরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছিল তিনজনকে। হামলাকারী ছিলেন তিউনিসিয়ার নাগরিক, যিনি আগের রাতে নিস শহরে আসেন। এ ঘটনার পর ফ্রান্সে সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়। সব ধর্মীয় উপাসনাস্থলে এবং স্কুলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আরও পড়ুন: এর আগে গত মাসের শুরুতে প্যারিসের উপকন্ঠে স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক স্কুল শিক্ষককে হত্যা করা হয়। তিনি ইসলামের নবীর বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্র ক্লাসে তার ছাত্রদের সামনে প্রদর্শন করেছিলেন। এই হামলার পর প্রেসিডেন্ট ম্যাক্র মন্তব্য করেছিলেন, ফ্রান্স কখনো সহিংসতার কাছে নতি স্বীকার করবে না। এই ঘটনার জের ধরে ফ্রান্সের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশসহ কিছু দেশে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মিস্টার ম্যাক্রঁর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। এরপর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। |
ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন, ইসলামের নবীকে নিয়ে আঁকা বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্রের কারণে মুসলিমরা কেন এতটা ক্ষুব্ধ হয়েছিল সেটা তিনি বুঝতে পারেন। তবে এর কারণে সহিংসতার যুক্তি তিনি কোনদিনই মানতে পারবেন না। |
বাম হাতের স্ক্যান, গর্ভস্থ ১০ সপ্তাহের শিশুর জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব পেশী ক্ষণস্থায়ী হলেও, বিবর্তনের এই বিষয়টি সম্ভবত সবচেয়ে প্রাচীন কোন অবশেষ, যা এখনও মানুষের শরীরে রয়ে গেছে। ডেভেলপমেন্ট নামের একটি জর্নালে গবেষণার এই ফলাফলটি প্রকাশিত হয়েছে। এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে মানব দেহে কেন এসব পেশী তৈরি হয় এবং শিশুর জন্মের আগেই সেগুলো ঝেড়ে ফেলা হয়। জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবদেহের বিকাশের এই ধাপটির কারণেই হয়তো বৃদ্ধাঙ্গুলির কাজের দক্ষতা অনেক বেশি। এই বৃদ্ধাঙ্গুলি হাত ও পায়ের অন্যান্য আঙ্গুলগুলোর মতো নয়। এতে অতিরিক্ত একটি পেশী থাকে। কোনো কোন শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক লোকের আঙ্গুলে ও হাতে কদাচিৎ হয়তো অতিরিক্ত পেশী পাওয়া গেছে কিন্তু বিজ্ঞানীরা যখন সাত থেকে ১৩ সপ্তাহের গর্ভকালের ভ্রূণের থ্রিডি স্ক্যান করে পরীক্ষা করেছেন, তখন তারা সবগুলো পেশীই দেখতে পাননি। এসব পেশী যখন থাকে, তখন, কখনো সেগুলো অঙ্গ বিকৃত হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভে বেড়ে ওঠা এরকম ১৫টি শিশুর ওপর গবেষণা চালিয়ে তারা যেসব তথ্য পেয়েছেন, সেগুলো এধরনের জন্মগত ত্রুটির বিষয়ে আলোকপাত করতে পারে। প্রধান গবেষক, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. রুই দিওগো বলেছেন: "আমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলির সাথে অনেক পেশী যুক্ত থাকে, এগুলো তার নড়াচড়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু অন্যান্য আঙ্গুলের সাথে যুক্ত ছিল এরকম অনেক পেশী আমরা হারিয়ে ফেলেছি।" "আমাদের বিবর্তনের সময় এগুলো হারিয়ে গেছে, এগুলো আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন নেই।" শিশুর পায়ের পেশীর স্ক্যান আরো পড়তে পারেন: আপনার শিশুর বৃদ্ধির জন্য যা খাওয়াতে পারেন চিনিযুক্ত পানীয় কি ক্যান্সারের কারণ? ঝি ঝি ধরলে কী করবেন? বিবর্তনের পরেও মানবদেহে আরো যেসব জিনিস রয়ে গেছে, যেমন অ্যাপেন্ডিক্স, আক্কেল দাঁত এবং ককসিক্স, এগুলোর তুলনায় এসব পেশীর গঠন বেশি জটিল। "এসব পেশী ২৫ কোটি বছর আগে হারিয়ে গেছে," বলেন ড. দিওগো। "প্রাপ্তবয়স্ক স্তন্যপায়ী প্রাণী, ইঁদুর ও কুকুরের এই পেশী নেই। অনেক অনেক বছর আগে ছিল।" "ধারণা করা হতো যে আমরা আমাদের নিজেদের চেয়ে মাছ, ব্যাঙ, মুরগি ও ইঁদুরের প্রাথমিক বিকাশ সম্পর্কে বেশি জানি। কিন্তু এই পদ্ধতিতে মানব-বিকাশ সম্পর্কে আমরা অনেক বিস্তারিত জানতে পারছি।" আরেকজন নৃবিজ্ঞানী ড. সের্জেওি আলমেসিয়া, যিনি আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচরাল হিস্ট্রিতে আদি-মানব ও মানব বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন, তিনি বলছেন, "এই গবেষণার ফলাফল থেকে মানব বিবর্তন সম্পর্কে আরো গভীরভাবে জানতে পারছি, আবার একই সাথে এই গবেষণা অনেক প্রশ্নেরও জন্ম দিয়েছে।" "এই গবেষণার অভিনবত্ব হচ্ছে আমরা নির্ভুলভাবে দেখতে পারছি মানব দেহের বিকাশের ঠিক কোন পর্যায়ে এসব জিনিস আবির্ভূত হয়েছে কিম্বা হারিয়ে গেছে," বলেন তিনি। "আমার কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে: আর কী কী জিনিস হারিয়ে গেছে? যখন পুরো মানবদেহ পরীক্ষা করে দেখা হবে তখন এরকম বিস্তারিত আর কী কী জিনিস আমরা দেখতে পাবো? "কী কারণে মানবদেহের কোন কোন জিনিস হারিয়ে যাচ্ছে তারপর সেগুলো আবার আবির্ভূত হচ্ছে? এখন হয়তো আমরা জানতে পারবো যে কিভাবে সেটা ঘটছে। কিন্তু কেন হচ্ছে সেটা কি জানতে পারবো?" জীববিজ্ঞানীরা এখন মানবদেহের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আরো বিশদভাবে পরীক্ষা করে দেখার পরিকল্পনা করছেন। ইতোমধ্যেই তারা মানুষের পা পরীক্ষা করেছেন এবং দেখেছেন যে গর্ভস্থ শিশুর এই অঙ্গেও অতিরিক্ত পেশী ছিল এবং সেগুলো হারিয়ে গেছে। বানর ও শিম্পাঞ্জির দেহে এখনও এসব পেশী রয়ে গেছে। কোন কিছু বেয়ে উপরে উঠতে এবং পা দিয়ে কোন জিনিস ধরতে তারা এসব পেশী ব্যবহার করে থাকে। ড. দিয়োগো বলছেন, "এসব হারিয়ে ফেলার অর্থ এই নয় যে আমরা আরো উন্নত মানবে পরিণত হচ্ছি। আসলেই আমরা কিছু জিনিস হারিয়ে ফেলছি যা আমাদেরকে সুপার-মানবে পরিণত করবে।" "সুপার-মানবের হয়তো এসব পেশী থাকবে কারণ তারা তাদের সব আঙ্গুল নাড়াতে পারবে।" "এগুলোর প্রয়োজন নেই বলেই আমরা সেসব হারিয়ে ফেলেছি।" আরো পড়তে পারেন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া যেভাবে বদলে দিচ্ছে জীবন কেন পাকিস্তান যাচ্ছে না বাংলাদেশ দলের ভারতীয় কোচ? |
গর্ভের শিশুদের হাতে টিকটিকি জাতীয় অতিরিক্ত কিছু পেশী থাকে এবং তাদের জন্মের আগেই এসব ঝরে যায়, এক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। |
তারেক রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তারা বলছেন, তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। সুতরাং ব্রিটিশ সরকার এমন কোন পদক্ষেপ নেবে না যাতে তিনি কোন ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েন। একুশে অগাস্ট হামলা সংক্রান্ত মামলায় রায়ের পর বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এই মামলার যেসব আসামী বিদেশে রয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে। ওদিকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার উদ্যোগী হলে বন্দী সমর্পন চুক্তি (এক্সট্রাডিশন ট্রিটি) না থাকলেও জাতিসংঘ সনদের শর্ত মেনে ব্রিটেন সাজাপ্রাপ্তদের ফেরত দিতে পারে। সজীব ওয়াজেদের ফেসবুক পোস্ট। "আমাদের সরকারের উচিত এখনই তারেক রহমানের নামে আবার নতুন করে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা, এবার খুন ও সন্ত্রাসবাদের জন্য। তাকে ফেরত দিতে যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ করাও উচিত আমাদের।" আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করছেন, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের মধ্যে বন্দী সমর্পন চুক্তি না থাকলেও জাতিসংঘের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যসিসট্যান্স (এমল্যাট) সনদের আওতায় তারেক রহমানকে বিচারের জন্য হস্তান্তর করা যেতে পারে বলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন। দুটি দেশের মধ্যে আইনগত এবং বিচারিক সহযোগিতার ভিত্তি এই সনদ বলে বাংলাদেশে আইনমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এছাড়া ২১শে অগাস্ট মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তারেক রহমানকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। তাই ফিরে আসা ছাড়া তার সামনে আর কোন পথ নেই। এতো রক্ত, এতো লাশ আমি আর কখনো দেখিনি। আরো পড়তে পারেন: যে কারণে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা 'হিন্দুদের বন্ধু', তবু লিঞ্চিস্তানে আক্রান্ত মিও মুসলিমরা কিন্তু এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তার যুক্তি: তারেক রহমানকে দু'মাসের সময়সীমার মধ্যেই আপিল করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তারেক রহমান যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেন, তাহলে 'কন্ডোনেশন অফ ডিলে'র আওতায় আদালত বিলম্ব মার্জনা করে দু'মাস পরও তাকে আপিল করার অনুমতি দিতে পারেন বলে মি. আহমেদ বলেন। এক্ষেত্রে সময়সীমার কোন বাধ্যবাধকতা থাকেন না বলে তিনি জানান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমান গত প্রায় এক দশক ধরে সপরিবারে ব্রিটেনে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, ব্রিটেনে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথাকে রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর বলে বর্ণনা করে মওদুদ আহমেদ বলেন, এই ইস্যুতে আওয়ামী লীগ মোটেই আন্তরিক নয়। তারা যতদিন সম্ভব একে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়। "তারা গত ১০ বছর ধরেই তো বলছে তাকে ফেরত আনবে। কিন্তু পেরেছে কি?" বলছেন তিনি, "আর না পারলে, তারা কি বলতে পারছে কেন তারা পারছে না?" যাবজ্জীবন রায়ে জীবনের ঝুঁকি না থাকায় তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়া সরকারর জন্য সহজ হবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে ব্রিটেন তার আইনগত বাধ্যবাধকতার বাইরে যেতে পারে না। "সাত বছর, ১০ বছর কিংবা যাবজ্জীবন সাজা - যাই হোক না কেন তারেক রহমান যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, এটা তো সবারই জানা।" আনিসুল হক, বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী। একুশে অগাস্ট হামলা মামলার রায় সরকারের জন্য বিশেষ কোন আইনগত সুবিধে তৈরি করতে পারবে না বলেই মনে করেন ইংল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, তারেক রহমান সফলভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন যে বাংলাদেশে ফেরত গেলে তার ওপর জুলুম হবে। ব্রিটিশ সরকারকে তিনি বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন বলেই তাকে আশ্রয় এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে। মি. আহমেদ জানান, এক্সট্রাডিশন ট্রিটি বা এমল্যাট -- যাই হোক না কেন ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন এবং ২০০২ সালের কমনওয়েলথ দেশগুলোর এক্সট্রাডিশন সংক্রান্ত আইনগুলোর আওতার মধ্যে থেকে ব্রিটিশ সরকারকে তারেক রহমানকে ফেরত নেয়ার আবেদন বিবেচনা করতে হবে। পুরো আইনগত প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, যদি বাংলাদেশ সরকার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত চেয়ে কোন আবেদন পাঠায় তাহলে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এসব আইনের আলোকে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি সেটা ঠেলে দিতে পারেন আদালতে। আদালত এক্ষেত্রে প্রথমে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করতে পারে। মওদুদ আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। সৈয়দ আহমেদ জানাচ্ছেন, আদালতের বিবেচনা হবে এ ক্ষেত্রে কোন আইনি বাধা আছে কিনা। "এই বাধাগুলোর একটি হলো যে সাজার কথা বলে তাকে ফেরত নেয়া হবে, তার বাইরে যেন তার বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলা দায়ের কিংবা তার কোন সাজা না হয়।" আদালতের রায় বিরুদ্ধে গেলে তারেক রহমান একে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন, মি. আহমেদ জানান, হাইকোর্টে এবং সুপ্রিম কোর্ট পেরিয়ে মানবাধিকার সংক্রান্ত ইয়োরোপীয় আদালতেও যেতে পারবেন। "এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আইনের বর্তমান কাঠামোর অধীনে বাংলাদেশ কোনভাবেই তাকে ফেরত পাবে না।" গ্রেনেড হামলার মামলায় রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আদালত তারেক রহমান এবং খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। এর বাইরে ১১ জন সরকারি কর্মকর্তাকেও বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে। |
বাংলাদেশে ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবজ্জীবন সাজা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের জন্য বিশেষ কোন সুযোগ তৈরি করছে না বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। |
এ বছর সাগরে ও নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে। এই বছর নিষেধাজ্ঞা চলবে চৌঠা নভেম্বর পর্যন্ত। এই সময় মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে। এর লঙ্ঘন করা হলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখার ফলে ইলিশের প্রজননে সেটা কি ভূমিকা রাখছে? ইলিশ গবেষকরা বলছেন, এই সময়ে ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মা ইলিশ রক্ষা করা, যাতে তারা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। এই ডিম রক্ষা করতে পারলে তা নিষিক্ত হয়ে জাটকার জন্ম হবে। সেই জাটকা রক্ষা করা গেলে দেশে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের ইলিশ বিষয়ক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলছেন, ঠিক এই সময়টাতে মা ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়তে শুরু করে। একটা মা ইলিশ চার থেকে পাঁচ লক্ষ ডিম ছাড়ে। আমাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা বলছে, শুধুমাত্র গতবছরে অন্তত ৭ লাখ ৪০ হাজার কেজি ডিম ছাড়া হয়েছে। সেগুলো বড় হওয়ার সুফল এই বছর আপনারা দেখতে পেয়েছেন। আরও পড়তে পারেন: ইলিশ গাইড: নদীর ইলিশ যেভাবে চিনবেন বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন এত বাড়লো কীভাবে? ইলিশ কি মিঠা পানির মাছ হয়ে যাচ্ছে? ইলিশের 'জীবন রহস্য' কীভাবে এর উৎপাদন বাড়াবে? ইলিশের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ১০ বছরে বিজ্ঞানীরা ধরে নেন, এর অর্ধেক যদি নিষিক্ত হয়, তার মধ্যেও ১০ শতাংশ যদি বাঁচে, তাহলে ৩৭ হাজার কোটি ইলিশ পোনা বা জাটকা পাওয়া যায়। ''সেটা যে হয়েছে, তার প্রমাণ আমরা পাচ্ছি। সেটা না হলে দিনের পর দিন এরকম বড় বড় ইলিশ, এতো ইলিশ ধরা পড়তো না,'' বলছেন ড. রহমান। এই বছর বাংলাদেশের বাজারে অনেক কম দামে বড় আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে। নদী ও সাগরে তুলনামূলকভাবে বেশি বড় ইলিশও ধরা পড়েছে। আগে যেখানে এক কেজির ওপরের ইলিশের কেজি কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এই বছর বাংলাদেশে সেটা হাজার টাকার নিচে বিক্রি হয়েছে। ঢাকার একজন গৃহিণী ইলোরা চৌধুরী বলছেন, ''কখনোই এত কম দামে এরকম বড় বড় ইলিশ কেনার সুযোগ পাইনি। আবার ইলিশগুলোও অন্য সময়ের তুলনায় বেশ পুষ্ট, সুস্বাদু।'' গত বছর এই ধরণের ইলিশ তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে বলে জানান ইলোরা চৌধুরী। ইলিশ মাছ আকারে যত বড় হবে, তত তার স্বাদ বেশি হবে। আকারে বড় ইলিশকে অনেকে পাকা ইলিশ বলে অভিহিত করে থাকেন। ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান, ''ইলিশের উৎপাদন যে বেড়েছে, সেটা তো এখন সবাই বুঝতে পারছে। সেই উৎপাদন বাড়ার পেছনে যেসব কারণ আমরা দেখতে পেয়েছি, তার মধ্যে এই ২২ দিনের ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞাটি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।'' বাংলাদেশে ২০০৩-২০০৪ সাল থেকেই জাটকা রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই আস্তে আস্তে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছিল। ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আশ্বিন মাসে পূর্ণিমার আগে পরে মিলিয়ে ১১দিনের ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। তখন থেকেই এর সুফল দেখতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। তখন তারা গবেষণায় দেখতে পান যে, শুধু পূর্ণিমায় নয়, এই সময়ের অমাবস্যাতেও ইলিশ ডিম ছাড়ে। পরবর্তীতে পূর্ণিমার সঙ্গে অমাবস্যা মিলিয়ে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া শুরু হয়। ''২০১৪-২০১৫ সালের পর থেকে কিন্তু ইলিশের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বেড়ে আসছে। রাতারাতি উৎপাদন অনেক বেড়ে গেছে। কারণ আইনটা আগে থাকলেও ওই সময় থেকে কড়াকড়িভাবে তা পালন করা শুরু হয়,'' বলছেন মি. রহমান। ২০১৯ সালে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিকটন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে বলে তিনি জানান। ''আগেও ইলিশ পাওয়া যেতো, কিন্তু এখন উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রচুর বড় বড় ইলিশ আসছে, পরিমাণে বেশি, আকারে বড়,'' তিনি বলছেন। ইলিশ মাছ বাংলাদেশে চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে শুরু করে ভোলার লালমোহন উপজেলা পর্যন্ত ইলিশের সবচেয়ে বড় প্রজনন ক্ষেত্র। বিশেষ করে মনপুরা, ঢালচর, বালিরচর, মৌলভীরচর-এগুলো হচ্ছে ইলিশের ডিম ছাড়ার সবচেয়ে বড় পয়েন্ট। চট্টগ্রাম, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশ মাছ সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে। এর বাইরের উপকূলের অন্যান্য নদীগুলোতেও ইলিশ ডিম ছাড়ে। মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ পর্যবেক্ষণ সেলের হিসেবে ১৫ বছর আগে দেশের ২৪ টি উপজেলার নদীতে ইলিশের বিচরণ ছিল। এখন দেশের অন্তত ১২৫ টি উপজেলার নদীতে ইলিশের বিচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার পর জাটকা বড় হয়ে আবার সাগরে ফিরে যায়। পরে সেগুলো বড় হলে ডিম ছাড়ার জন্য আবার নদীতে ফিরে আসে। বাংলাদেশের জিডিপিতে এর অবদান এক শতাংশের মত। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্যানুযায়ী এই মুহূর্তে দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ঢাকার অর্ধেক মানুষ আক্রান্ত: সামনে তাহলে কী হবে যেসব নতুন ফিচার নিয়ে এলো আইফোন ১২ চীনের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কের এতো অবনতি হওয়ার কারণ কী ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড: নতুন অধ্যাদেশে কী বলা হয়েছে? |
আজ বুধবার থেকে বাংলাদেশে ২২ দিনের জন্য ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। |
খালেদা জিয়ার অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি "গতকালের (বৃহস্পতিবারের) মতো আজও অবস্থা স্থিতিশীল আছে। গতকাল যেমন ছিলেন আজও তাই, অপরিবর্তিত," মিস্টার হোসেন রাত আটটার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ব্রিফেংয়ের সময় এ মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়া গত সাতাশে এপ্রিল থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী জটিলতার কারণে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিলো। এর আগে গত ১১ই এপ্রিল তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সে সময় সিটি স্ক্যান রিপোর্টে তাঁর ফুসফুসে পাঁচ শতাংশ সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর গত ২৫শে এপ্রিল খালেদা জিয়ার দ্বিতীয়বারের মতো কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হলে সেখানেও তার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। পরে আরও জটিলতা দেখা দেয়ায় গত ২৭শে এপ্রিল থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর দলের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছিলো যে খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো, তবে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। যদিও পরে ৩রা মে তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউতে নেয়া হয় এবং অক্সিজেন দিতে হচ্ছে বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, "এখনো তিনি সিসিইউতেই আছেন। মেডিকেল বোর্ড আজ জুমার নামাজের আগে এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে। তারা আগের চিকিৎসাই অব্যাহত রেখেছে। উনার অবস্থাও গতকালের মতো আজও স্থিতিশীল আছে। উনার রোগমুক্তির জন্য দোয়া কামনা করছি"। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এখন উনি (খালেদা জিয়া) স্বনামধন্য হাসপাতালে স্বনামধন্য চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডের অধীনে আছেন। "আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে হলে সরকারের অনুমতির পর মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত জানাবে। এখন পর্যন্ত সরকারের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে ও মহাসচিবও অনুরোধ করেছেন। এখন এটি সরকারের বিষয় যে কবে নাগাদ কিভাবে অনুমতি দেবে"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: যে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া সম্ভব বন্দী খালেদা জিয়ার মাথায় যত মামলা ও দণ্ড বিএনপি ও জিয়া পরিবারের রাজনীতি কোন পথে? |
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিসেস জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। |
কলকাতায় বিজেপি ছাত্র ইউনিটের বিক্ষোভ ভারত সরকার ঐ হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করছে।। পাকিস্তানকে কীভাবে জবাব দেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। সেই সাথে রয়েছে জনমতের চাপ আর রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। কিন্তু ভারতের সামনে জবাব দেওয়ার মতো বিকল্প কী কী রয়েছে? একসাথে কূটনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক প্রত্যাঘাতের কথা বলছেন অনেকে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যে সব বিকল্প আছে, তার কোনোটাই খুব সহজ হবে না ভারতের পক্ষে। নিহত এক সৈনিকের অন্তেষ্টক্রিয়া রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী বিবিসিকে বলেন, পাকিস্তানের মতো পারমনবিক শক্তিধর কোনো দেশের বিরুদ্ধে চরম কোনো পথ নেওয়া কঠিণ সিদ্ধাস্ত। "শাসক পক্ষের ওপরে যথেষ্ট চাপ আছে বিরোধী পক্ষর থেকে যেমন, তেমনই জনমতও তৈরী হয়েছে যে এই হামলার প্রত্যাঘাত করা দরকার। সেদিক থেকে মনে হয় সামরিক বিকল্পের দিকেই ভারত ঝুঁকবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সেরকম প্রত্যাঘাত আবারও পাল্টা আঘাত টেনে আনবে কিনা! কারণ দুটোই পারমানবিক শক্তিধর দেশ।" অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধান জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী মনে করেন, যেভাবে আত্মঘাতী হামলা হয়েছে, সেই একই পথে প্রত্যাঘাত করা যায় কিনা, তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত ভারত সরকারের। "কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক আর সামরিক - এই চারটে বিকল্পই আছে, যেগুলো নিয়ে চর্চা হচ্ছে। কিন্তু এর বাইরে আরও একটা পদ্ধতি আছে, যেটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে উচিৎ পথ বলে মনে করি - নন স্টেট অ্যাক্টর্সদের ব্যবহার করা হোক। যেভাবে পাকিস্তান থেকে আত্মঘাতী হামলা হচ্ছে, সেই একই ভাবে এদিক থেকেও প্রত্যাঘাত করা হোক।" জেনালের রায় চৌধুরী মনে করেন, সরাসরি সামরিক বাহিনী বা কোনও সরকারী এজেন্সিকে যুক্ত না করে রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে নেই এমন সব 'এলিমেন্ট' ব্যবহার করে শায়েস্তা করার কথা ভারতের ভাবা উচিৎ। "যদিও এরকম কাজে পশ্চিমা দেশগুলো হয়ত ভারতকে সমর্থন করবে না, তবুও এই একটা বিকল্প নিয়ে ভাবা যেতে পারে।" বদির তিন ভাইসহ ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ীর আত্মসমর্পণ জামায়াত বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়ে রাজ্জাকের পদত্যাগ কলকাতায় পাকিস্তানের পতাকা পোড়ানো হচ্ছে অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গীবাদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্ত থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক অজয় সাহনীর মতে চটজলদি প্রত্যাঘাত কোনও কাজেই আসবে না, দীর্ঘমেয়াদী কৌশল ছাড়া কোনো বিকল্প ভারতের নেই। মি. সাহনীর কথায় - যেসব বিকল্প নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেগুলো সবই চটজলদি ব্যবস্থা। একটা হামলার প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবা হচ্ছে। কৌশলগত পদ্ধতি নিয়ে কারও ভাবনা নেই - একটা হামলা হয়েছে, কীভাবে তার প্রত্যাঘাত করা হবে, সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে। "সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এভাবে করা যায় না। যখনই একটা বড়ধরণের হামলা হয়, তখনই এসব চিন্তাভাবনা শুরু হয়। কিন্তু প্রশ্নটা হল এর আগের হামলা আর এই হামলার মাঝের সময়টাতে কী করা হল? সামরিক ব্যবস্থাপনা বা গোয়েন্দা ব্যবস্থায় কি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?" মি. সাহনী আরও বলছিলেন যে গতবছর মার্চে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রিপোর্ট দিয়েছিল যে সামরিক বাহিনীর ৬৮ শতাংশ সরঞ্জাম বহু পুরনো, সেকেলে। এমনকি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে ১০ দিন পর্যন্ত লড়াই করার গুলি বারুদ মজুদ রয়েছে ভারতের। "যদি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না নেওয়া হয়, তাহলে এভাবেই একেকটা হামলা হবে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মারা যাবেন আর সবাই ভাবতে বসবে কীভাবে প্রত্যাঘাত করা যায়!" |
ভারত শাসিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলায় ৪০ জনেরও বেশী কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হওয়ার পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ার করেছেন, হামলার জন্য দায়ীদের চড়া মাসুল দিতে হবে। |
তেহরানে যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী একটি বিক্ষোভ প্রথম দফার সংঘাতে কে জিতলো এবং কে হারলো - সেই কাটা-ছেঁড়া হচ্ছে। তবে ইরান বা আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তার জেরে দ্রুত বদলে যেতে পারে প্রথম দফার হার-জিতের এসব সমীকরণ। কিন্তু এই পর্যায়ে জিত হলো কার? হারলো কে? ইরান যদিও ইরান তাদের অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন জেনারেলকে হারিয়েছে, তারপরও তার মৃত্যু থেকে স্বল্প মেয়াদে তারা লাভবান হতে পারে। নভেম্বরে ইরানে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ যেভাবে নৃশংসভাবে সরকার দমন করেছে মি. সোলেইমানির জানাজায় নজিরবিহীন জনসমাগমে তা চাপা পড়ে গেছে। ইরানি জনগণের এই স্বতঃ:স্ফূর্ত আবেগ দিয়ে ইরান আরেকবার বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে যে দেশের ভেতর রাজনৈতিক বিভেদ থাকলেও, জাতীয় সঙ্কটের সময় তার ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একর পর এক নিষেধাজ্ঞার চাপে ইরানের অর্থনীতির এখন বেহাল দশা। গত বছর দুই দেশের মধ্যে বৈরিতা চরমে ওঠে যখন ইরান একটি মার্কিন ড্রোন বিমান গুলি করে নামায়, এবং দুটো তেলে ট্যাংকার আটক করে। এরপর গত বছর সেপ্টেম্বরে সৌদি একটি তেলক্ষেত্রের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্যও ইরানকে দায়ী করেছে আমেরিকা, যদিও ইরান সবসময়ই তা অস্বীকার করেছে। কাসেম সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে ইরান বুধবার ইরাকে দুটো মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। কিন্তু এখন যদি তারা সংযত থাকে এবং মানুষের সহানুভূতি আদায় এবং নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পথে থাকে, তাহলে ইরান এই সঙ্কট থেকে লাভবান হতে পারে। সামরিক বদলার পথে গেলে উল্টো ফল হতে পারে। আমেরিকার বিরুদ্ধে যে কোনো সামরিক ব্যবস্থার পরিণতিতে অপেক্ষাকৃত অনেক দুর্বল ইরান দীর্ঘমেয়াদি একটি লড়াইয়ের চক্রে পড়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা করে ফেলেছে আমেরিকা। কোনো যুদ্ধ ইরানকে আরো একঘরে করে ফেলবে। আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনা: ইরানকে কেন দুষছে পশ্চিমারা? ইরান-আমেরিকা সংঘাতে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা কোথায় ইরানের হামলায় উত্তেজনা কমবে নাকি বাড়বে? বিক্ষুব্ধ ইরাক যুক্তরাষ্ট্র কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে ইরানের সামরিক দম্ভকে অনেকটাই আঘাত করেত সমর্থ হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনাও হয়তো অনেকটাই বাড়িয়েছেন তিনি। একইসাথে, মধ্যপ্রাচ্যে তার মিত্রদের, বিশেষ করে সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের প্রমাণও তিনি দিয়েছেন। তবে ইরানের সাথে হিংসা-প্রতিহিংসার দীর্ঘমেয়াদি কোনো চক্রে পড়ে গেলে তা মি. ট্রাম্পের জন্য সঙ্কট তৈরি করতে পারে। কারণ তাতে করে তেলের দাম বাড়বে, মার্কিন নাগরিকের প্রাণহানি হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে হয়তো ব্যাপক এবং দীর্ঘস্থায়ী এক যুদ্ধের সূচনা হবে। শুধু আমেরিকা নয়, মধ্যপ্রাচ্যের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দেশের ওপরই তার গুরুতর প্রভাব পড়বে। ইরাকে শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী এই সঙ্কট থেকে স্বল্প মেয়াদে হলেও ইরাকে ইরান-সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো লাভবান হতে পারে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুর্নীতি এবং অপ্রতুল নাগরিক সুযোগ সুবিধার প্রতিবাদে ইরাকে সরকার বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সেসময় ইরানের প্রভাব নিয়েও অনেক ইরাকি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিক্ষোভে হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু এখন এই সব মিলিশিয়া গোষ্ঠী এবং সেই সাথে ইরাকের সরকার সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সামনে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছে যে ইরাকের সার্বভৌমত্বের জন্য এইসব গোষ্ঠীর অস্তিত্ব জরুরী। শিয়া এই মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো বহুদিন ধরেই চাইছে মার্কিন সৈন্যরা যেন ইরাক ছেড়ে চলে যায়। সোলেইমানির মৃত্যুতে তাদের সেই দাবি জোরদার করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল-বানন সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ইসরায়েল ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে বৈরিতা বহুদিনের। ইসরায়েল মনে করে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সবচেয়ে বড় হুমকি ইরান। লেবাননে শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হেযবোল্লার প্রতি ইরানের সমর্থন এবং সিরিয়ায় ইরানের সামরিক উপস্থিতি নিয়ে ইসরায়েল সবসময়ই উদ্বিগ্ন। কিন্তু সোলেইমানিকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমেরিকা ইঙ্গিত দিয়েছে তারা ইরানকে বাগে আনতে বদ্ধপরিকর। ইসরায়েলের স্বার্থের জন্য জন্য এটা ইতিবাচক। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেছেন যে তার দেশে আমেরিকার সাথে থাকবে। অস্থির লেবানন সৌদি আরব - সংযুক্ত আরব আমিরাত সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব-আমিরাত বা ইউএই নাজুক একটি পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। গত বছর হরমুজ প্রণালীতে তেলের ট্যাংকারের ওপর হামলার শিকার হয়েছে এই দুই দেশ। তারপর সেপ্টেম্বরে তাদের তেল স্থাপনার ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্যও ইরানকে সন্দেহ করে সৌদি আরব। চাপে পড়ে, ইউএই চেষ্টা করছে যাতে ইরানের সাথে সম্পর্কে উত্তেজনা কমে। কিন্তু সৌদি আরব চায় আমেরিকা যেন ইরানের ওপর চাপ বাড়ায়। কাসেম সোলেইমানি হত্যাকাণ্ডের পর এই দুই দেশ উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানাচ্ছে। সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কথা বলতে ওয়াশিংটন গেছেন। ভৌগলিক নৈকট্য এবং সম্পর্কের ইতিহাসের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যে কোনো বড় যুদ্ধে ইরানের কাছ থেকে আঘাত আসার ঝুঁকি এই দুই দেশের ওপরেই রয়েছে। ওমান সাগরে তেলের ট্যাংকারে হামলা। ইরানের দিকে অঙ্গুলি (ফাইল ফটো) ইউরোপ ইরানের সাথে করা পারমানবিক চুক্তিটি রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউরোপ। ফলে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিপজ্জনক এই পরিস্থিতি ইউরোপকে নতুন বিড়ম্বনায় ফেলেছে। কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার আগে ব্রিটেনকে জানায়নি আমেরিকা। এই ঘটনা প্রমাণ করে আটলান্টিকের দুই পারের মধ্যে টানাপড়েন কোন পর্যায়ে গেছে। কিন্তু আইসিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণে ব্রিটেন সহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের সৈন্য রয়েছে ইরাকে। ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক লড়াই শুরু হলে, এই পশ্চিমা দেশগুলো ক্রসফায়ারের মাঝে পড়ে যাবে, এবং সন্দেহ নেই ইউরোপ সে কারণে চিন্তিত। |
কাসেম সোলেইমানি হত্যা এবং তার বদলায় ইরাকে মার্কিন দুটো ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক এক সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করেছে। |
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎস কর আরোপ করেছে সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আগে থেকেই সাংসারিক বাজেটে টানাটানি শুরু হয়েছিল। আর এই বাজেটে উৎসে কর বাড়িয়ে দেয়ায়, তারা পড়েছেন আরো সংকটে। শাহিদা পারভিন বলছেন, ''সঞ্চয়পত্রের টাকা আর কিছু জমিজমা থেকে যে আয় হয়, তা দিয়েই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, বাড়িভাড়া, সংসার খরচ চলে। এমনিতেই সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এখন আমাদের আয় যদি আরো কমে যায়, তাহলে তো সংসারে তার প্রভাব পড়বেই।'' সঞ্চয়পত্রের ওপর তার কেন এই নির্ভরশীলতা? দেশের নারী, বয়স্ক নাগরিক এবং অবসরে যাওয়া সাবেক চাকরিজীবীদের একটি বড় অংশ, তাদের পারিবারিক আয়ের ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্রের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। দেশের ব্যাংকগুলোর তুলনায় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি হওয়ায় অনেকেই এই খাতে বিনিয়োগে উৎসাহী হন। শাহিদা পারভিন বলছেন, ''ব্যাংকে সুদের হার কম। ব্যবসা বাণিজ্য তো আর এই বয়সে করতো পারবো না। তাই সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছি, যাতে সহজে মুনাফা পাওয়া যায়। আবার পোস্ট অফিস থেকে তুলতে পারি বলে ঝামেলা হয় না।'' এতদিন সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তোলার সময় পাঁচ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হতো, এখন থেকে তাদের দিতে হবে ১০ শতাংশ হারে। সঞ্চয়পত্রের ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর বহাল রেখে রোববার বাংলাদেশে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। উৎসে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছে সরকার? সঞ্চয়পত্রে উৎস্যে কর বাড়ানোর কারণে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ আরো বাড়বে বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। তিনি বলছেন, ''সঞ্চয়পত্রের ওপরে এখন চাপ খুব বেশি। দেশের মোট মানি সাপ্লাইয়ের এক চতুর্থাংশ সঞ্চয়পত্রে জমা আছে।" অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, "সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দেয়া হলে ব্যাংকগুলোতে টাকা আসবে।'' তবে সরকার এটাও চিন্তা করেছে, সুদের হার কমিয়ে দিলে সাধারণ মানুষ, যাদের অনেকেই সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল, তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেজন্য এবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হয়নি বলে জানান মিস্টার ভুঁইয়া। কিন্তু একটা কর আরোপ করা হয়েছে। যেন কিছু অর্থ ব্যাংকিং খাতে যায়। সেইসঙ্গে বন্ড বা এ ধরণের বিনিয়োগ কিছুটা বাড়ে।- বলছেন মি. ভুঁইয়া। আরো পড়ুন: ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদ কমালে কার কতটা লাভ আয়কর সম্পর্কে যেসব তথ্য না জানলেই নয় ব্যাংকের ঋণের সুদের হার কেন কমছে না? জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে, সঞ্চয়পত্রে উৎস কর আরোপ করায় অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ আরো বাড়বে। অভিযোগ আছে যে, স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এই উচ্চ সুদের সুবিধাটি চালু করা হলেও অনেক ধনী ব্যক্তি নামে বেনামে সঞ্চয়পত্র কিনে সুবিধা নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ গবেষক নাজনীন আহমেদ মনে করেন, যেভাবে বিপুল পরিমাণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে, তা ভবিষ্যতে অর্থনীতি ও সরকারের জন্য বড় ধরণের সমস্যা তৈরি করতে পারে। তিনি বলছেন, মানুষ সঞ্চয়পত্র কেনে, কারণ অন্য যেসব সঞ্চয়ের উপাদান আছে, তার চেয়ে এখানে সুদের হার বেশি। আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করছে সরকার, যেহেতু তারা অতিরিক্ত সুদ দিচ্ছে, তখন অতিরিক্ত বিক্রি হলে সরকারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুদের একটা বোঝা তৈরি করছে। সেটা কিন্তু সরকারকেই ভবিষ্যতে প্রদান করতে হবে। ফলে এটা সরকারের ব্যয় বা দায়ের ওপর একটা প্রভাব ফেলবে। '' ''সেই প্রভাব কিন্তু দেশের অর্থনীতিতেও পড়তে বাধ্য, যদি না রাজস্ব বা অন্য আদায় থেকে আয়টি অনেকগুণ বাড়ে। কিন্তু সেটা যদি না হয়, তাহলে সুদের হার হিসাবে যে বিপুল অর্থ দিতে হবে, সেটা সামষ্টিক অর্থনীতি ও সরকারের ব্যয়ের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা তৈরি করতে পারে।'' গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ বলছেন, একদিকে সরকার যেমন নারী ও বয়স্কদের আয়ের ব্যবস্থা করার জন্য সঞ্চয়পত্রে চড়া সুদ বহাল রাখছে, আবার এই উৎস কর আরোপ করে তাদের আয় কমিয়ে দিচ্ছে। তাই তার মতে, সরকারের বরং উচিত, সঞ্চয়পত্রের সুবিধাটি শুধুমাত্র নারী, বয়স্কা বা নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা, তাহলে তারা অর্থনৈতিকভাবে সুবিধা পাবে, আবার দেশের অর্থনীতির জন্যও সেটি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে না। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: এখনও নিবন্ধন করেনি পাঠাও উবারের মতো প্রতিষ্ঠান গ্যাসের দাম বাড়ায় আরো যেসব খাতে প্রভাব পড়বে মরক্কোর অর্ধেক মানুষই কেন দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায় ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের শেষভাগ 'অদ্ভুত': পিটারসেন |
ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা শাহিদা পারভিন স্বামীর পেনশন হিসেবে পাওয়া পুরো টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন, যা দিয়ে তাদের সংসারের খরচ চলে। |
পাকিস্তানকে তাদের নিজেদের স্বার্থেই ব্যবস্থা নিতে হবে - রেক্স টিলারসন তিনি খোলাখুলি হুমকি দিয়েছেন, তালেবানকে নিজেদের মাটিতে নিরাপদ আশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে পাকিস্তানকে। তিনি যদি মনে করেন পাকিস্তান তার কথা শুনছে না, তাহলে আমেরিকা কী করবে - সেটা খোলাসা করেননি মি ট্রাম্প। তবে মুখে তিনি যেটা বলেছেন তা হলো - আমেরিকা আফগানিস্তানে ভারতের অধিকতর ভূমিকা দেখতে চায়। মি ট্রাম্প হয়তো মনে করছেন, ভারতের ভূমিকা নিয়ে এই বক্তব্য পাকিস্তানের ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করবে। কিন্তু মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক উপ-প্রধান জেনারেল জ্যাক কিন, যার সাথে বর্তমান আমেরিকান প্রশাসনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, তিনি বিবিসিকে বলেছেন - প্রেসিডেন্ট যেটা মুখে বলেননি তা হলো যদি পাকিস্তান তালেবানের 'নিরাপদ আশ্রয় শিবিরগুলো' বন্ধ না করে, তাহলে আমেরিকাকেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে। জেনারেল কিন যেটা ইঙ্গিত করেছেন, তালেবানকে শায়েস্তা করতে পাকিস্তানের ভেতরে সামরিক অভিযান চালাতে পেছপা হবেনা আমেরিকা। তালেবানকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আফগান সেনাবাহিনী মি ট্রাম্পের এই হুমকির পরদিনই (বুধবার) পাকিস্তানের প্রতি চাপ অব্যাহত রেখেছেন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্টের নতুন কৌশলকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে পাকিস্তানকে। তা না হলে, মি টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাকিস্তান যে 'বিশেষ মর্যাদা' পেয়ে আসছে তা হারাতে হবে। "পাকিস্তানকে তাদের নিজেদের স্বার্থেই ব্যবস্থা নিতে হবে।" পাকিস্তান এখনো প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৩০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য পায় আমেরিকার কাছ থেকে, যদিও তালেবান ইস্যুতে সে সব সাহায্যের অনেকগুলো এখন স্থগিত। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার আমেরিকার নতুন এই হুমকির ব্যপারে খুব বেশি কথা বলেনি। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু বলেছে - পাকিস্তান তালেবানকে কখনই নিজেদের মাটিতে আশ্রয় দেয়না এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে পাকিস্তান নিন্দা করে। তবে আমেরিকা, আফগান সরকার এবং পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই যে পাকিস্তান তাদের কৌশলগত স্বার্থে তালেবানকে গোপনে সাহায্য সহযোগিতা করছে । কিন্তু আমেরিকার এই হুমকি ধামকিতে তা কি বন্ধ করবে পাকিস্তান? বিবিসির কূটনৈতিক বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথন মার্কাস বলছেন, পাকিস্তান এখন আমেরিকার "আধা মিত্র -আধা সমস্যা।" আর কাবুল থেকে বিবিসির সেকেন্দার কেরমানি সন্দেহ প্রকাশ করে বলছেন - একসময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্রের সাথে আমেরিকার দিন দিন দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, এবং কৌশলগত কারণেই আমেরিকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চিনের সাথে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। আফগান-পাকিস্তান সীমান্ত বিশ্লেষকদের মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই যে পাকিস্তান আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব দেখতে নারাজ। এছাড়া, বিবিসি উর্দু বিভাগের আসাদ আলী বলছেন, পাকিস্তান চায় ভবিষ্যতে আফগান সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান হলে, এমন কোনো সরকার যেন কাবুলে বসে যাদের ওপর তারা ভরসা করতে পারে। "ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে আফগানিস্তানে ভারতের অধিকতর ভূমিকার কথা বলেছেন, সেটা পাকিস্তানের সরকার বা সেনাবাহিনী একবারেই ভালোভাবে নেবেনা।" এছাড়া, কাবুলে বিবিসির দাউদ আজমি বলছেন, গত কয়েক বছরে আফগানিস্তানে রাশিয়া, চিন এবং ইরানের ভূমিকার কারণে আমেরিকার জন্য পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে পড়ছে। প্রধানত ইসলামিক স্টেটের উত্তরোত্তর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কারণে, রাশিয়া এবং ইরান তালেবানের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে। এমন খবরও রয়েছে যে তালেবান নেতৃত্ব সম্প্রতি রাশিয়ার ভেতরে গিয়ে রুশ কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে এসেছেন। দাউদ আজমি বলছেন, রাশিয়া এবং ইরানের সাথে তালেবানের এই যোগাযোগ পাকিস্তানকে সুবিধে দিচ্ছে। "তাদের ওপর আমেরিকার চাপ সামাল দেওয়া পাকিস্তানের জন্য এখন সুবিধে হচ্ছে।" মি ট্রাম্পের এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) ইসলামাবাদে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এক বৈঠকে বসছে। আমেরিকার হুমকিকে পাকিস্তান কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে বৈঠকের পর তা হয়তো কিছুটা বোঝা যাবে। |
কাগজে কলমে এখনো পাকিস্তান আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র, কিন্তু আফগান সঙ্কট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার যে ভাষায় পাকিস্তানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, তার নজির খুব একটা চোখে পড়েনা। |
জঙ্গিবাদ দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে অনেক ধরনের কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। শহরের দূতাবাস পাড়া ও কূটনীতিকদের আবাসনের এত কাছে একটি অভিজাত এলাকায় বিদেশিদের টার্গেট করে যেভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে এবং রাতভর রেস্তোরাটিকে ঘিরে যে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ছিল সে কারণে এই হামলা বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সক্ষমতা কতটা বেড়েছে? এরপর থেকে জঙ্গিবাদ দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে অনেক ধরনের কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। পুলিশ বাহিনীতে বিনিয়োগ, প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি এবং শুধু জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কাজ করার জন্য নতুন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান বলছেন, তাদের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। গুলশানে হোলি আর্টিজান হামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন জঙ্গি হামলা। তিনি বলছেন, "একটা হচ্ছে সরকারের জিরো টলারেন্স পলিসি ঘোষণা করা। স্পেশালাইজড ইউনিট তৈরি, যার ধারাবাহিকতায় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট তৈরি হয়েছে। গোয়েন্দা সক্ষমতা, ইন্টেলিজেন্স এনালাইসিস করার সক্ষমতা, সাইবার পেট্রোলিং অর্থাৎ অনলাইনে ও সোশাল মিডিয়াতে যেখানে তাদের বিচরণ বেশি সেখানে আমরা নিয়মিত নজরদারী করি। অপারেশন চালানোর ক্যাপাসিটি ও তদন্ত চালানোর সাপোর্ট এগুলো বহুগুণে বেড়েছে।" তিনি আরও বলছেন, "যেহেতু জঙ্গিবাদ একটা বৈশ্বিক বিষয়, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্টতা ও আদানপ্রদান অনেক বেড়েছে।" উগ্র-মতবাদের প্রসার ঠেকাতে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তরুণদের সাথে জনসংযোগ করছেন ও মসজিদ ভিত্তিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাধারণ জনগণকে তথ্য দেয়ার ব্যাপারে সচেতন করছেন। এছাড়া যেসব অঞ্চলে জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম বেশি ছিল সেখানে নিয়মিত নজরদারি কার্যক্রম চালাচ্ছেন তারা। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় পুলিশের আলাদা ইউনিট রয়েছে। সেই পটভূমিতে ইসলামপন্থী জঙ্গিবাদের উত্থানের সবচেয়ে বড় নমুনা ছিল হোলি আর্টিজান হামলা। জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থা বাংলাদেশ সেন্টার ফর টেরোরিজম রিসার্চ-এর প্রধান শাফকাত মুনীর। কাছাকাছি সময়ে তেমন হত্যাকাণ্ড বা বড় কোন হামলার অনুপস্থিতিকে জঙ্গিবাদ দমনে সক্ষমতার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বলে মনে করছেন তিনি। তবে উগ্র মতবাদে বিশ্বাসীরা এখনো ছোটি ছোট গোষ্ঠীতে সক্রিয় যা পুলিশও স্বীকার করছে। অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান বলছেন, মাঝে মাঝে তারা ছোট আকারে অস্তিত্ব প্রকাশ করার চেষ্টা করছে। শাফকাত মুনীর বলছেন, হামলা বা সক্রিয় থাকার জন্য এসব গোষ্ঠী নিয়মিত নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। সেটি মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলছিলেন, "ছোট নেটওয়ার্ক বা গুপ্ত যে সেলগুলো রয়েছে, সেগুলোকে খুঁজে বের করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। উগ্র মতবাদের আকর্ষণ করার জন্য বা র্যাডিকালাইজেশনের যে পদ্ধতিগুলো আছে সেগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। আমাদের সেই সাথে মনে রাখতে হবে সবসময় যে প্রথাগতভাবে জঙ্গি হামলা হবে সেটা কিন্তু না। কারণ জঙ্গি বা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কিন্তু প্রতিনিয়তই তাদের কর্মপন্থার ক্ষেত্রে নতুন নতুন বিবর্তন নিয়ে আসছে।" এই হামলা বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করিছিলো। উৎসবের ভিড়ের মধ্যে গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে বহু মানুষ হত্যা করা, পথচারীদের এলোপাথাড়ি ছুরি চালানো এমন কিছু নমুনা ইউরোপের দেশে দেখা গেছে। বিশেষ করে 'লোন উলফ' বা জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর আদর্শের প্রতি অনুগত কোন ব্যক্তি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে যে হামলাগুলো চালায় সেটিও নতুন কায়দা। প্রথাগত কৌশল হোলি আর্টিজান হামলাসহ বাংলাদেশে ভিন্ন মতাবলম্বীদের অনেকগুলো হত্যাকাণ্ডই কথিত ইসলামিক স্টেট ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে। যদিও কখনোই বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর অস্তিত্ব বা তাদের সাথে স্থানীয় কোন জঙ্গি গোষ্ঠীর সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেনি সরকার। জঙ্গি আস্তানায় বহু অভিযান চালিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সরকারের তরফ থেকে সবসময় বলা হয়েছে এসব হামলা জন্য দায়ী দেশি নিষিদ্ধ গোষ্ঠী যারা হয়তো ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইসলামিক স্টেটের প্রতি অনুগত। এর আগে হোলি আর্টিজান হামলার পর দুই বছরের বেশি সময় ধরে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম দমনে একের পর এক অভিযান চালিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে এক অর্থে কোণঠাসা করে ফেলেছে বলে দাবি করে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকার কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সিলেটের আতিয়া মহলের অভিযানে সহ এসব অভিযানে বেশ বড় সংখ্যায় তথাকথিত ইসলামপন্থী জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। জঙ্গিবাদ নিয়ে গবেষণা করছেন সুইডেনে অবস্থানকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনিম খলিল। তিনি বলছেন, "গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, আন্ত-রাষ্ট্রীয় তথ্য আদান প্রদান, নজরদারি ও প্রযুক্তিগত দিকে বাংলাদেশের সক্ষমতা আগের চাইতে অনেক বাড়লেও, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জঙ্গিদের দমনে এখনো কিছু প্রথাগত কৌশল অবলম্বন করছেন যা তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক নয়।" বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলছেন, "তারা অভিযান করে অনেককে মেরে ফেলেছে। কিন্তু এসব ব্যক্তির মধ্যে কানেকশন, এই আইসিসের মতো একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন কিভাবে এত দ্রুত বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করলো সেটা কিন্তু তারা উদঘাটন করতে চাননি অথবা করতে পারেননি। এর কারণ হল ঘটনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের তারা মেরে ফেলেছেন।" তিনি বলছেন, "সারা বিশ্বে আমরা যেটা দেখেছি রাষ্ট্রীয়ভাবে শক্তি প্রদর্শনের কায়দা জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ দমনে শেষ পর্যন্ত কাজে আসে না।" অন্যান্য খবর: চীনের কোয়ান্টাম স্পীড-রিডিং কি একটা ভাঁওতাবাজি ? প্রশংসায় ভাসছেন এক ব্রিটিশ মুসলিম নারী দুবাই ডান্স বার: বাংলাদেশ থেকে নারী পাচার যেভাবে |
রাজধানী ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান হামলাকে বলা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলা। |
সন্তানকে স্কুূলের বাসে তুলে দেবার জন্য রোববার সকালে বের হয়েছিলেন মাহমুদা আক্তার, বাসার কাছে জিইসি মোড়েই দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে ও গুলি করে পালিয়ে যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, "বাবুল আক্তার একজন সৎ, নির্ভীক ও পরিশ্রমী অফিসার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীকে টার্গেট করা হয়েছে। এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে"। অনেক পুলিশ কর্মকর্তাও একই কথা মনে করছেন। চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোক্তার হোসেন মনে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বাবুল আক্তারের যে ভূমিকা সেই প্রেক্ষিতেই তার স্ত্রী টার্গেটে পরিণত হতে পারেন। বিবিসিকে মোক্তার হোসেন বলছিলেন, “বাবুল আক্তার অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী ছেলে, পুলিশে উদীয়মান একজন কর্মকর্তা। চট্টগ্রামে জঙ্গি অভিযানসহ বহু অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছেন বাবুল আক্তার”। বাবুল আক্তার তাঁর কাজের জন্য প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক অর্থাৎ দুইবার রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ পদকও পেয়েছেন একবার। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রীর মরদেহ দেখে ফিরছেন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার, দুইবার রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছেন তিনি। বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার ঘটনায় কোনও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে কিনা সে প্রশ্নে মোক্তার হোসেন বলেন যে তদন্ত শেষ করে এ বিষয়ে বলতে পারবেন তারা। তবে মি: হোসেন বলছেন-সমাজের চোখে যারা খারাপ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে যেহেতু অভিযান চালিয়েছেন বাবুল আক্তার, সুতরাং এ বিষয়টা মাথায় রেখেই তদন্তের কাজ করছেন তারা। একই ধরনের কথা বলেছেন পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার। তিনি বলছিলেন “বাবুল আক্তার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যেহেতু অনেক অভিযান পরিচালনা করেছেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকার আশঙ্কাটাই আমাদের অনেক। আমরা কয়েকটি পয়েন্ট ধরে এগুচ্ছি। সিসিটিভি ফুটেজও পেয়েছি। চেষ্টা চলছে তাদের ধরার”। চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক বলেছেন গত বছরের শেষ দিকে খোয়াজনগরে জঙ্গি অভিযানের পর তিনি কিছুটা আতঙ্কের কথা প্রকাশ করেছিলেন। কখনও কি নিজের বা পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাবুল আক্তার? পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলেছেন তিনি কখনও এমন আশঙ্কার কথা শোনেননি। তবে চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ সেলিম বলছেন গত বছরের শেষ দিকে চট্টগ্রামের খোয়াজনগরে জঙ্গি অভিযানের পর তাঁর সাথে আলাপকালে বাবুল আক্তার বলেছিলেন তিনি আতঙ্কের মধ্যে আছেন, তাঁর মনে হচ্ছিল জঙ্গিরা তাকে টার্গেট করেছে। পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার জঙ্গিদের টার্গেট হলে তাঁর স্ত্রীকে কেন হত্যা করা হলো? গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোক্তার হোসেন মনে করছেন “পুলিশের মনোবল ভাঙার জন্য অপরাধীরা এমন কাজ করেছে”। পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হত্যার ঘটনার পর সারাদেশের পুলিশের মধ্যেই এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে তারা বলছেন কোনও ধরনের হামলায় পুলিশকে দমাতে পারবে না অপরাধীরা। বাবুল আক্তারের সাম্প্রতিক ফেসবুক স্ট্যাটাসেও উঠে এসেছে তাঁর কাজের কথা “পুলিশের চাকরিতে সকলকে সন্তষ্ট করা সম্ভব নয়। হয় অভিযোগপত্র না হয় চুড়ান্ত রির্পোট। এর মাঝামাঝি কোন অবস্থানে থাকার সুযোগ নেই। সে কারনে অনেকের বিরাগভাজন হয়ে থাকতে পারি। তবে এতটুকু বলতে পারি নিজ স্বার্থের জন্য কিছু করিনি”। |
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হবার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন “এ ঘটনায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে”। |
আগুন নিয়ন্ত্রণ দমকল বাহিনীকে অনেক বেগ পেতে হয়। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পরই এই ভবনের কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন রাজউক কর্তৃপক্ষ। সংস্থার চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, "আজকে আগুন লাগার পর আমরা যখন তথ্য ঘাঁটতে গেছি, তখন আমরা এটা পেয়েছি।" বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, "যে ভবনটিতে আগুন লাগে, সেটির ফাইল আমি যতটুকু দেখেছি, ১৯৯৬ সালের ১২ই ডিসেম্বর এটিকে একটি ১৮ তলা ভবন হিসেবে করার জন্য নকশা অনুমোদন করা হয়। কিন্তু এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে ২৩ তলা। শুধু তাই নয়, রাউজকের অনুমোদিত নকশা থেকে এই ভবনের নকশায় আরও অনেক বিচ্যূতি রয়েছে।" রাজউকের চেয়ারম্যান আরও জানাচ্ছেন, এফআর টাওয়ারের মালিকপক্ষ ২০০৫ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী রাজউকের কাছে আরেকটি নকশা পেশ করে, যার সঙ্গে রাজউকে সংরক্ষিত নকশার কোন মিল নেই। "ফলে আমরা বুঝতে পারি, ঐ যে নকশা, ২০০৫ সালে যেটা তারা সাবমিট করেছিল সেটা বৈধ নকশা ছিল না।" "শুধু তাই নয়, ১৯৯৬ সালের যে মূল নকশা রাজউকের অনুমোদন পেয়েছিল, সেটির সঙ্গেও নির্মিত ভবনটির অনেক বিচ্যূতি রয়েছে", বলছেন তিনি। এ ব্যাপারে ২০০৭ সালে রাজউক একটি রিপোর্টও তৈরি করে। রাজউক বলছে, নকশা নামে মেনে নির্মাণ করা হয় ভবনটি এই ভবন নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের সবারই শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ভবনটি এ কারণেই অনিরাপদ ছিল কীনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমাদের নকশা থেকে বিচ্যূতির কারণে ভবনটি অবশ্যই অনিরাপদ হতে পারে। কারণ আমাদের নকশায় অগ্নিনিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হয়।" আরও পড়ুন: বনানীর আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হওয়ার যে কারণ কুণ্ডুলি পাকানো ধোঁয়া আর দিনভর রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা 'মা আমি ভালো আছি, স্যারেরা আটকে গেছে কয়েকজন' ঢাকা শহরে বিগত দশকগুলোতে যে শত শত বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর কত শতাংশ এরকম ঝুঁকির মধ্যে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এরকম তো আরও থাকতে পারে। হয়তো থাকতে পারে। আমরা জানি না।" ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তা কতটা মানা হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, "এখন যেসব হাইরাইজ ভবন হচ্ছে সেগুলো যেন নিয়ম মেনে হয়, সে বিষয়ে আমরা সচেতন আছি। কিন্তু আগের কিছু ভবন হয়ে গেছে, যেগুলোর বেলায় একশোভাগ নিয়ম মানা হয়নি। এই ভবনগুলো নিয়ে আমরা বিপদে পড়েছি।" কেন এসব ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এতগুলো এতবড় ভবন, আমরা ভেঙ্গেও দিতে পারছি না, আবার সংশোধনেরও উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না। কারণ সংশোধন করতে গেলে পুরো ভবনটি ভেঙ্গে দিতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে মূল নকশার ব্যতিক্রম করা হয়েছে, সেগুলো আমরা সংশোধনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু এর বাইরেও অনেকগুলো আমাদের নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে।" তিনি জানান, এরকম কত ভবনে রাজউকের অনুমোদিত নকশা মানা হয়নি, সেটি জানার জন্য তারা একটি জরিপ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। |
ঢাকার বনানীর যে ভবনটিতে আগুন লেগে ১৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে, সেটি রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে তৈরি করা। একথা জানিয়েছেন রাজউকের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। |
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা একজনের কবরের সামনে মোনাজাত করছেন কয়েকজন স্বজন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে মোট ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট মারা গেলেন ১০ হাজার ৯৫২ জন। গত কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এর চেয়ে বেশি ছিল। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গত কয়েকদিনের মৃত্যুর পরিসংখ্যান: এর আগের চারদিন ধরে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রতিদিন ১০০ জনের ওপরে মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ২,৬৯৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট শনাক্ত হলেন ৭ লাখ ৪২ হাজার ৪০০ জন। মোট ২০,৫৭১ টি নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্তের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫,৪৭৭ জন আর এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৫১ জন। নমুনা পরীক্ষার বিচারে মার্চ মাস নাগাদ শনাক্তের হার শতকরা ২০ পার হলেও, এখন সেটি ১৩.১১ শতাংশে নেমে এসেছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে শনাক্তের হার ২৫.২৪ শতাংশ কমেছে। তবে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৭.৫৬ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষার হারও ২.৪০ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশে গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিলো স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশোর ঘরে নেমে এসেছিল। তবে এবছর মার্চের শুরু থেকেই শনাক্তে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ভারতের হাসপাতালে অক্সিজেন বিপর্যয়ে আবারো বহু রোগীর মৃত্যু বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ যে কারণে সিরামের কাছ থেকে টিকা আনার ব্যাপারে যা বললেন বেক্সিমকোর এমডি বাংলাদেশে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের তীব্রতার পেছনে কারণ যা বলা হচ্ছে |
বাংলাদেশে গত কয়েকদিনের তুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা শনিবার আরও কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে নমুনা পরীক্ষা তুলনায় শনাক্তের হারও। |
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে শীঘ্রই প্রকাশিতব্য বইটিতে মি. বোল্টন দাবি করেছেন, ট্রাম্প চেয়েছিলেন চীন মার্কিন কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য কিনুক। 'দ্য রুম হোয়্যার ইট হ্যাপেনড' নামে বইটি ২৩শে জুন প্রকাশ হবার কথা রয়েছে। জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজ বলেছিল বইটিতে 'টপ সিক্রেট' তথ্য এবং বর্ণনা রয়েছে, যা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। তবে মি. বোল্টন সেসময় তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। মি. ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারের ক্ষেত্রে যেসব প্রশ্ন উঠেছিল, তা মি. বোল্টনের বইটিতে স্থান পেয়েছে। শি জিনপিংকে নিয়ে কী রয়েছে বইটিতে? অভিযোগটি উঠেছে মূলতঃ জাপানের ওসাকায় গত বছরের জুনে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে মি. ট্রাম্প এবং মি. শির মধ্যে হওয়া এক বৈঠক নিয়ে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত নতুন বইটির সারসংক্ষেপে মি. বোল্টন দাবি করেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেছিলেন, কিছু মার্কিন সমালোচক চান চীনের সঙ্গে যাতে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন মি. ট্রাম্প ভেবেছিলেন মি. শি হয়তো তার ডেমোক্রেটিক প্রতিপক্ষের কথা বলছেন। মি. বোল্টন বলেছেন, "এরপর বিস্ময়করভাবেই মি. ট্রাম্প আলোচনা ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে ঘুরিয়ে দেন। চীনের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের কথা উল্লেখ করে মি. ট্রাম্প নির্বাচনে জেতার জন্য মি. শি'র সাহায্য চান।" "তিনি কৃষকদের গুরুত্বের ওপর এবং দেশটি থেকে চীনের সয়াবিন ও গম ক্রয়ের বর্ধিত হারের ওপর বারবার জোর দিচ্ছিলেন," মি. বোল্টন বলেন। এরপর মি. শি যখন বাণিজ্য আলোচনায় কৃষি উৎপাদনের ওপর জোর দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন, মি. ট্রাম্প তখন তাকে 'চীনের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ নেতা' বলে মন্তব্য করেন। বই বিতর্ক সংবাদদাতারা বলছেন, নতুন বইয়ের তথ্য মি. ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই বইটির প্রকাশনা আটকে দেবার চেষ্টা করছে। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের অভিযোগ বইটিতে 'ক্লাসিফায়েড' অর্থাৎ 'রাষ্ট্রীয়' গোপনীয় তথ্য রয়েছে। এদিকে, বইটি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা ধরণের বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট লাইথিজার মি. বোল্টনের বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, "চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঐ আলোচনায় দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে কোন আলোচনা হয়নি।" জানুয়ারিতে ডেমোক্রেটিক দলের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপে ফেলার জন্য সামরিক সহায়তা প্রত্যাহারের অভিযোগে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হন মি. ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সব অভিযোগ অস্বীকার করেন, এবং রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সেনেটে কোন সাক্ষীর বক্তব্য ছাড়াই দুই সপ্তাহব্যাপী ট্রায়ালের পর নিষ্কৃতি পান মি. ট্রাম্প। ২০১৮ সালের এপ্রিলে হোয়াইট হাউজে যোগ দেন মি. বোল্টন, একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি জানান যে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্টের সাথে মতানৈক্য হবার কারণে তাকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। |
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন নিজের নতুন বইতে দাবি করেছেন, দ্বিতীয় দফায় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাহায্য পেতে চেষ্টা করেছিলেন। |
হোয়াটসএ্যাপ কর্তৃপক্ষ ভারতের জন্য কিছু কড়াকড়ি আরোপ করেছে ভারত সরকার হোয়াটসঅ্যাপকে জানিয়েছিল যে তাদের মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহার করে যেভাবে ছেলেধরার গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা রোধ করতে যেন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর পর হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, কোনও মেসেজ বা ছবি একসঙ্গে ৫টির বেশি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে ফরোয়ার্ড করা যাবে না। চটজলদি ফরোয়ার্ড করে দেওয়া সীমিত করতে তারা কুইক ফরোয়ার্ড বাটনটিও সরিয়ে দিচ্ছে। এর আগে কোন মেসেজটি অন্য কারও কাছ থেকে ফরোয়ার্ড হয়ে এসেছে, সেটা স্পষ্ট করে চিহ্নিত করারও ব্যবস্থা করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহার করে যেভাবে ছেলেধরার গুজব ছড়ানো শুরু হবার পর গত দেড় মাসে কুড়ি জনেরও বেশী মানুষকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়। একটি ভুয়ো ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করেই ওই সন্দেহের গুজব ছড়ানো হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপে। ছেলেধরার গুজবের সঙ্গে ব্যবহার করা ভিডিও আর ছবিগুলি যে ভুয়ো, তা খুঁজে বার করেছিল ভুয়ো খবরের সন্ধানকারী ভারতীয় ওয়েবসাইট 'অল্ট নিউজ'। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: গুজবে কান দিয়ে কেন মানুষ পিটিয়ে মারা হচ্ছে? ভুয়া খবরের দায়ে ভারতে প্রশ্নের মুখে হোয়াটসঅ্যাপ এরকম বার্তা ছড়িয়ে পড়ছিল অত্যন্ত দ্রুতগতিতে তারা জানিয়েছিল পাকিস্তানের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছেলেধরাদের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরীর উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও বানিয়েছিল। সেখান থেকেই একটি অংশ কেটে নিয়ে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে যে দুটি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু করেছে হোয়াটসঅ্যাপ, সেগুলি কতটা কার্যকরী হবে ভুয়ো খবর বা গুজব ছড়াতে, তা জানতে চেয়েছিলাম অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহার কাছে। তিনি বলছিলেন, "হোয়াটসঅ্যাপ যা জানিয়েছে, তা নিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন উঠছেই - প্রথমত মেসেজ বা ছবি ৫জনকে ফরোয়ার্ড করা যাবে না ৫টি চ্যাটে একেকবারে ফরোয়ার্ড করতে পারবেন কেউ! যদি শুধু ৫টি মেসেজ ফরোয়ার্ড করা যায়, তাহলে মেসেজটি ভাইরাল হওয়া আটকানো কঠিন। তবে ৫জনকে একবারে ফরোয়ার্ড করার ব্যবস্থা যদি করে থাকে এরা, তাহলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ তো করাই যাবে বলে মনে হচ্ছে।" "ফরোয়ার্ড হয়ে আসা মেসেজটিকে চিহ্নিত করার ব্যবস্থাটা ভাল, কারণ মানুষ বুঝতে পারবেন যে সেটা তার কনট্যাক্ট লিস্টে থাকা কেউ নিজে পাঠায় নি। হয়তো বিশ্বাস করে ফেলার আগে কিছুটা ভাববেন।" হোয়াটসঅ্যাপ একটা প্রচেষ্টা শুরু করেছে, কিছু অন্তত উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো কতটা কার্যকরী হবে, সেটা বোঝার জন্য সময় লাগবে," বলছিলেন প্রতীক সিনহা। "ফরোয়ার্ড করা মেসেজের সঙ্গে অন্য মেসেজ আলাদা করে চিহ্নিত করা গেলে কে ওই ভুয়ো খবর তৈরী করেছে আর কারা সেটা ছড়িয়েছে, এটা বুঝতে পারবে পুলিশ", বলছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাইবার অপরাধ বিষয়ে স্পেশাল পাবলিক প্রসেকিউটার বিভাস চ্যাটার্জী। যদিও হোয়াটসঅ্যাপ বলছে যে তারা পরীক্ষামূলক ভাবে এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুটি চালু করেছে, তবে এখনও সাধারণ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছে নতুন আপডেট আসে নি। অবশ্য ভারত সরকার বৃহস্পতিবারই জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের চালু করা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় তারা সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট নয়। বিভাস চ্যাটার্জী অবশ্য বলছিলেন হোয়াটসঅ্যাপ নিজে থেকে যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছে, তার থেকেও বেশী প্রয়োজন এ জন্য আইন প্রণয়ন। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: দিল্লিতে গণ-ফাঁসির কারণ কি অতিপ্রাকৃত বিশ্বাস? বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট কি বাড়ছে? ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র ঘোষণার প্রতিক্রিয়া কী হবে? 'কীভাবে আবিষ্কার করলাম যে আমার স্বামীর আরেকটি স্ত্রী আছে' |
হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, শুক্রবার থেকে তারা ভারতে তাদের মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহারকারীদের জন্য এমন দুটি নতুন ফিচার যোগ করেছে - যার মাধ্যমে মেসেজ বা ছবি অথবা ভিডিও শেয়ার করা সীমিত করা যাবে। |
শিনজিয়াং প্রদেশের দাবাংচেং-এ সম্প্রসারিত বিশাল বন্দীশিবির: উপগ্রহ চিত্র উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে তৈরি করা এক রিপোর্টে বিবিসির জন সাডওয়ার্থ লিখছেন, আঞ্চলিক রাজধানী উরুমচির কাছেই দাবাংচেং-এ এরকম একটি শিবিরে সম্প্রতি ব্যাপক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই শিবিরটিতে কমপক্ষে এগারো হাজার বন্দীকে রাখা যাবে। অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক একটি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান এ কথা জানিয়েছে, তবে এর প্রকৃত ধারণক্ষমতা এক লক্ষেরও বেশি হতে পারে। চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ: তারা পশ্চিম শিনজিয়াং অঞ্চলে বিনাবিচারে লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে আটকে রেখেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব শিবিরে লোকজনকে জোর করে আটকে রাখা হচ্ছে, কিন্তু চীনের বক্তব্য - এখানে উইগুরদের শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেয়ার মধ্যে দিয়ে সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় উগ্রপন্থা দমন করা হয়। দাবাংচেং-এ যে শিবিরটি গড়ে তোলা হয়েছে - তা ২০১৫ সালেও ছিল একটা ফাঁকা জায়গা। কিন্তু তিন বছর পরে একই জায়গার উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে সেখানে এক বিশাল দেয়াল-ঘেরা স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এর চারদিকে দু কিলোমিটার দীর্ঘ দেয়াল, রক্ষীদের জন্য তৈরি হয়েছে ১৬টি চৌকি। ভেতরে গড়ে উঠছে অনেকগুলো বিশাল বিশাল চারতলা ভবন। এসব শিবিরের চার পাশে থাকে কড়া প্রহরা শিনজিয়াংএ এরকম অনেকগুলো কারাগারের মতো স্থাপনা তৈরি হয়েছে গত কয়েক বছরে। এখানে সাংবাদিকদের পক্ষে কারো সাথে কথা বলা প্রায় অসম্ভব। শিনজিয়াংএ ফোন করে সাধারণ লোকের সাথে কথা বললে ব্যাপারটা কি তার একটা আন্দাজ পাওয়া যায়। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: চীন ১০ লাখ উইগুর মুসলিমকে আটকে রেখেছে? চীনের মুসলিম বন্দী শিবিরগুলো এখন 'বৈধ' চীনে উইগর মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে যা জানা গেছে কাশগরে একটি বন্ধ মসজিদ, ওপরে উড়ছে চীনা পতাকা বিবিসির জন সাডওয়ার্থ একটি হোটেলের মালিককে প্রশ্ন করেছিলেন, ১৬টি প্রহরী-চৌকি ওয়ালা ওই স্থাপনাটা কি? তিনি জবাব দিলেন, "এটা একটা সংশোধনমুলক স্কুল। সেখানে হাজার হাজার লোক আছে। তাদের চিন্তা-ভাবনায় কিছু সমস্যা আছে।" চীন সবসময়ই বিনাবিচারে মুসলিমদের আটকে রাখার কথা অস্বীকার করে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় টিভিতে এসব স্কুলের 'ছাত্রদের' সাক্ষাতকার প্রচার হয়। কিন্তু এরা কি জরিপের জন্য নির্বাচিত হয়েছে, কতদিন ধরে এসব 'কোর্স' চলবে তার কোন উল্লেখ থাকে না। তবে এদের কথাবার্তা থেকে একটা কিছু আন্দাজ করা যায়। এদের সাক্ষাৎকারগুলো অনেকটা স্বীকারোক্তির মতো। আবলেত তুরসুন তোহতি একজন বলছে, "আমি আমার ভুলগুলো গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি। আমি বাড়ি ফিরে যাবার পর একজন ভালো নাগরিক হয়ে উঠবো।" আমরা জানতে পারছি এসব স্থাপনার উদ্দেশ্য উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করা - যাতে আইনি তত্ব, কর্মদক্ষতা, এবং চীনা ভাষা ইত্যাদি শিক্ষা দেয়া হয়। এগুলো শুধুই এ প্রদেশের মুসলিম সংখ্যালঘুদের জন্য - যাদের মাতৃভাষা চীনা নয় - তারা একধরণের তুর্কিক ভাষা বলে। শিনজিয়াংএ উইগুরদের সংখ্যা ১ কোটিরও বেশি। তাদের সাথে মধ্য এশিয়ার জনগোষ্ঠীরই মিল বেশি, চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ হ্যান জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের সংস্কৃতির অনেক তফাৎ। এসব সংশোধনী স্কুলের নিজস্ব পোশাক আছে। ছাত্রীদের কারো মাথায় হিজাব নেই। গত এক দশকে শিনজিয়াং-এ দাঙ্গা, আন্ত-সম্প্রদায় সহিংসতা, আক্রমণ এবং পুলিশী ব্যবস্থার কারণে এখানে শত শত লোক নিহত হয়েছে। বেজিংএর তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে একটি আক্রমণের ঘটনায় দু'জন এবং কুনমিংএর উইগুরদের ছুরিকাঘাতে ৩১ জন নিহত হবার দুটি ঘটনা চীনের শাসকশ্রেণীকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে গাড়ি নিয়ে চালানো এই আক্রমণে দু'জন নিহত হয় এর পর শিনজিয়াংএর নানা রকম বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। ইসলামী রীতিনীতি পালন - যেমন পুরুষদের দাড়ি রাখা, মহিলাদের হিজাব পরা, শিশুদের ধর্মশিক্ষা, বা ইসলামী শোনায় এমন নাম রাখা - এগুলো সীমিত করতে নানা আইনী পদক্ষেপ বলবৎ হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের রোজা রাখা বা মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ। এখান থেকে শত শত লোক সিরিয়ায় জঙ্গী গ্রুপগুলোর হয়ে যুদ্ধ করতে গেছে এমন বিশ্বাসযোগ্য খবরের পর উইগুররা কর্তৃপক্ষের সন্দেহের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তাদের ওপর জারি হয়েছে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। হোতানে একটি বন্দীশিবিরে ছিলেন ২৯ বছর বয়স্ক আবলেত তুরসুন তোহতি। তাদের সকালে উঠিয়ে দৌড় করানো হতো। জোরে না ছুটতে পারলে পেটানো হতো। শিনজিয়াংএর একটি পোস্টার : 'স্থিতিশীলতাই আশীর্বাদ' তিনি বলছেন, তাদের কমিউনিস্ট পার্টির প্রশংসাসূচক গান গাইতে হতো, আইন মুখস্থ করতে হতো। আবৃত্তি করতে ভুল হলে পেটানো হতো। এসব ক্যাম্পের সাবেক বাসিন্দাদের সবার মধ্যেই দেখা গেছে ব্যাপক ক্ষোভ। এসব সংশোধন শিবিরে কোন অভিযোগ ছাড়াই আটক থাকা লোকদের কোন আইনী প্রক্রিয়ার শরণাপন্ন হবার সুযোগ নেই। চীন দাবি করে যে তাদের এসব কর্মসূচি সফল হয়েছে। কিন্তু এসব প্রকল্প নিয়ে ইতিহাসে উদ্বেগজনক দৃষ্টান্তের কোন অভাব নেই। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবি: অ্যালামি/গেটি ইমেজেস/ রয়টার্স/ গাইমার বেইলি আর্কিটেক্টস/জিএমভি |
চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইগুর মুসলিমদের 'সংশোধনের' জন্য পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ বন্দীশিবির গড়ে তুলেছে কর্তৃপক্ষ । |
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে মহামারী আকারে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস এর মধ্যে তিব্বতে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে দেশটিতে ২৯শে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৭১১জন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া আরো অন্তত ১৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এমন প্রেক্ষাপটে এখন বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করা উচিত কি না, সে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও। সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডানম গ্যাব্রিয়েসুস বুধবার জার্মানি, ভিয়েতনাম এবং জাপানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, "গত কয়েক দিনে মানুষে-মানুষে সংস্পর্শের মাধ্যমে এই ভাইরাস যেভাবে কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তা উদ্বেগের ব্যাপার। যদিও চীনের বাইরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখনো খুবই কম, কিন্তু তা সত্ত্বেও এটি মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্গা রয়েছে।" করোনাভাইরাস উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে যা দেখলো বিবিসি যেহেতু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা কোন প্রতিষেধক নেই, ফলে অনেক মানুষ আছে যাদের এই ভাইরাস আক্রমণ করলেও তাদের মধ্যে লক্ষণগুলো হালকা দেখা দিয়ে আবার সেরেও গেছে। তবে শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে বাহিত হয়ে মারাত্মক সংক্রমণ তৈরি করতে পারে এই ভাইরাস এবং তার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুও হতে পারে। ধারণা করা হয়, সার্স এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মত নতুন এই করোনাভাইরাস বিশেষ করে বয়স্ক এবং আগে থেকে অসুস্থ মানুষকে বেশি আক্রমণ করে। চীনের হুবেই প্রদেশ এবং তার রাজধানী উহানে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এজন্য কর্তৃপক্ষ উহান শহরকে কার্যত অন্যান্য শহরের থেকে একেবারে আলাদা বা বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। বাস-ট্রেন এবং বিমান চলাচলসহ বহির্গামী সব ধরণের যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে অনেক শহরে। উহান শহর থেকে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর শত শত নাগরিককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। |
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১৭০ জনে পৌঁছেছে এবং চীনের প্রতিটি অঞ্চলে এখন ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। |
জামালপুরের প্রত্যন্ত চরে আটকে রয়েছে ভারতীয় একটি বুনো হাতি হাতি উদ্ধারে সহায়তা করতে বুধবার বাংলাদেশে এসেছে একটি ভারতীয় দল। হাতিটি এখন রয়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার সোনারকান্দা এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে থাকা একটি চরে। বৃহস্পতিবার এই দলটি এবং বাংলাদেশের বনবিভাগের কর্মকর্তারা জামালপুরের প্রত্যন্ত চরে হাতিটির পেছন পেছন ঘুরে সেটির অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছেন। এরপর তারা সেটিকে উদ্ধারের পরিকল্পনা করবেন। সেখান থেকে বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী বিভাগের উপ-বন সংরক্ষক মোঃ. সাহাবউদ্দিন বিবিসিকে জানান, ''আমরা এখন হাতিটির পেছন পেছন ঘুরছি। তবে পাটক্ষেত এবং ছনের জন্য সেটির অবস্থা পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না। আমরা এখন হাতিটির অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছি।'' চর এলাকায় কখনো নৌকায়, কখনো পায়ে হেটে হাতিটির পেছনে ঘুরছেন দুই দেশের বন কর্মকর্তারা। স্থানীয় একজন সাংবাদিক আজিজুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, হাতিটি সকালে সরিষাবাড়ী এলাকা থেকে পানি ও নদীনালা পাড় হয়ে সিদুরি উপজেলায় যায়। পরে আবার সেটি ভাটারা ইউনিয়নের কৃষ্টপুর নামের একটি গ্রামে রয়েছে। তিনি জানান, হাতিটির চারদিকে কয়েকহাজার মানুষ ঘিরে রয়েছে। আসার পথে কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। তবে পুরো সময়টা ধরে হাতিটি জলা এলাকার মধ্যেই রয়েছে। হাতিটিকে প্রথমে জলা এলাকা থেকে সরিয়ে একটু নিরাপদ এবং উঁচু এলাকায় নেয়ার কথা ভাবছেন কর্মকর্তারা। পানি থেকে শুকনো এলাকায় নিয়ে গিয়ে হাতিটিকে খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করার পর ট্রাক কিংবা ক্রেন দিয়ে হাতিটিকে তুলে নিয়ে যেতে চাইছেন তারা। তবে হাতিটির অবস্থা পর্যালোচনার পর উদ্ধারের পরিকল্পনা ঠিক করা হবে, বলছেন, মোঃ. সাহাবউদ্দিন। বুনো হাতিটি উদ্ধারে চেষ্টা করছে ভারত- বাংলাদেশের বন কর্মকর্তারা এরপর হাতিটি ভারতে নেয়া হবে নাকি বাংলাদেশে রাখা হবে তার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। মি. চৌধুরী জানান, ভারতীয় দলের সাথে কাজ করতে বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিটের ১৭ সদস্যের একটি দল ট্রাঙ্কুলাইজিং গান, ওষুধ, ট্রলারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে সেখানে রয়েছে। বাংলাদেশের বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী সাঁতরে হাতিটি এসে গাইবান্ধার একটি চরে ওঠে। এরপর যমুনার তীরবর্তী এক চর থেকে আরেক চরে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে হাতিটি। এরপর জামালপুরের চাঞ্চল্য ঘুরে সে পৌঁছে যায় বগুড়ায় চরে। পরে আবারও জামালপুরের গিয়ে সর্বশেষ হাতিটি সরিষাবাড়ি এলাকায় রয়েছে বলে জানা যায়। বিশাল দেহের প্রাণীটি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন চর এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিটের সাইদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “হাতিটি দীর্ঘ এক মাসে কখনো খাবার পেয়েছে, কখনো পায়নি। পরিমাণ মত খাবার না পাওয়ায় কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে হাতিটি”। শুরুতে হাতিটিকে চেতনা-নাশক প্রয়োগ করে সরিয়ে নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু পাঁচ টনেরও বেশি ওজনের হাতিটিকে অজ্ঞান করলে সেখান থেকে কিভাবে সরিয়ে নেয়া হবে সেটিও এখন চিন্তা করা হচ্ছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে হাতি আসার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও আরও দু’বার এরকম হাতি আসার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন ধরে একটি বুনো হাতি আটকে থাকার ঘটনা আগে দেখা যায়নি, বলছেন বন কর্মকর্তারা। |
বাংলাদেশের জামালপুরের একটি চরে আটকে থাকা ভারতীয় একটি বুনো হাতি উদ্ধারে চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ও ভারতের বন কর্মীরা। |
ভ্রমণের অধিকারের হিসেবে সৌদি আরবের নারীদেরকে পুরুষের সমকক্ষতা দেয়া হলো শুক্রবার ঘোষণা করা নতুন আইনে বলা হয়, ২১ বছরের বেশি বয়সী যে কোনো নারী এখন থেকে কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমোদন ছাড়াই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রাপ্তবয়স্ক সকল ব্যক্তিই এখন থেকে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে এবং ভ্রমণ করতে পারবে। এর ফলে এই ক্ষেত্রে নারীদের অনেকটা পুরুষের সমকক্ষ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। রাজকীয় ফরমানে নারীদের শিশুর জন্মের নিবন্ধন এবং বিয়ে করা বা বিয়ে বিচ্ছেদের অনুমোদনও দেয়। এছাড়া নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ানো হয়েছে ঐ ফরমানে। এই আইনমতে সব নাগরিকেরই কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছেে এবং লিঙ্গ, বয়স বা শারীরিক অক্ষমতার ভিত্তিতে সেক্ষেত্রে তাদের সাথে কোনো ধরণের বৈষম্য তৈরি করার সুযোগ নেই বলা হয়েছে। এই আইন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত, পাসপোর্ট বানানো বা দেশের বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সৌদি নারীদের জন্য স্বামী, পিতা বা যে কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক ছিল। আরো পড়তে পারেন: 'যেভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলাম' বোরকার বিরুদ্ধে সৌদি নারীদের যে অভিনব প্রতিবাদ ক্যানাডায় দেশান্তরী সৌদি নারী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুন (মাঝখানে)। সৌদি আরবের শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কিছুদিন আগে নারীদের গাড়ি চালানোর বিষয়ে বাধ্যবাধকতা শিথিল করেন। ২০১৬ সালে তিনি একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন, যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরবের অর্থনীতি পরিবর্তনের প্রত্যাশা তুলে ধরা হয়। এ সময়ের মধ্যে সৌদি আরবের শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণের হার ২২% থেকে ৩০% এ উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে কানাডাসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে সৌদি আরবের অনেক প্রভাবশালী বা বিত্তশালী নারীদের আশ্রয় চাওয়ার অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যেও। তারা লিঙ্গবৈষম্যের কারণে অত্যাচারের শিকার হয়ে দেশত্যাগ করতে চেয়েছেন বলে দাব করেছেন। জানুয়ারিতে ১৮ বছর বয়সী রাহাফমোহাম্মদ আল-কুনুন'কে আশ্রয় প্রদান করে কানাডা। তিনি সৌদি আরব থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ঘটনাচক্রে থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বিমানবন্দরের একটি হোটেল রুমে আটকা পড়ে যান তিনি এবং সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন করেন। সৌদি আরবে নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে অনেক সময় দাবি করে এসেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। |
এখন থেকে সৌদি আরবের নারীরা কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে পারবেন বলে এক রাজকীয় ফরমানে বলা হয়েছে। |
মেয়েদের নিয়ে যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য করায় গ্রেফতার করা হয়েছে ভারতের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে 'বইস লকার রুম' নামের গ্রুপটি ভারতের রাজধানী দিল্লির স্কুলপড়ুয়া কিশোরদের বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রুপটির সদস্যদের চ্যাটের বেশকিছু স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্ক্রিনশটগুলো ছড়িয়ে পড়ার পর দিল্লির বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে নারীদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ শহরগুলোর একটি মনে করা হয় দিল্লিকে। ২০১২ সালে দিল্লিতে এক মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হলে তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির মত অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয় বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে। তবে এখনও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়েছে বলে মনে করে না মানুষ। আরো পড়তে পারেন: ভারতে নারীদের প্রতি এতো যৌন সহিংসতা কেন? ইনস্টা-র আড়াল থেকে যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ বৈধ? যৌন হয়রানি: মানহানির মামলা করলেন এম জে আকবর লকডাউনের সময় শিশুরা অনলাইনে বেশি সময় কাটাচ্ছে বলে মনে করেন ক্যাম্পেইনাররা কীভাবে জানা গেলো ইনস্টাগ্রাম গ্রুপটি সম্পর্কে? ইনস্টাগ্রামের অনেক ব্যবহারকারীর নজরে আসার পর গ্রুপটি সম্পর্কে পোস্ট করতে শুরু করে মানুষ। ঐ গ্রুপের সদস্যদের মন্তব্য ও ব্যবহার নিয়েও উঠতে শুরু করে অভিযোগ। গ্রুপের সদস্যরা তাদের সহপাঠী ছাত্রীদের অনুমতি ছাড়াই তাদের ছবি একে অন্যকে পাঠাচ্ছিল এবং তাদের শারীরিক গঠন সম্পর্কে কটু মন্তব্য থেকে শুরু করে তাদের ধর্ষণ করার মত বিষয়েও রসিকতা করছিল। ব্যবহারকারীদের নজরে আসার পর হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারসহ আরো কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়িযে পড়ে ঐ গ্রুপের স্ক্রিনশটগুলো। তবে সেসব স্ক্রিনশটগুলো নিয়ে কাজ করা সাইবার বিশেষজ্ঞ শুভম সিং বলেন যে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটগুলোর অনেকগুলোই অতিরঞ্জিত এবং বানানো। প্রাথমিক তদন্ত শেষে শুভম সিং একজনকে দোষী শনাক্ত করেন এবং পুলিশের কাছে তথ্য হস্তান্তর করার পর এক কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিবিসি বাংলার দিল্লি সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষ জানাচ্ছেন, গ্রুপটির সদস্যরা ছিল দিল্লির অভিজাত কয়েকটি স্কুলের কিশোর ছাত্র। স্ক্রিনশটগুলো ছড়িয়ে পড়ে রবিবার। সম্ভবত কোনো একটি স্কুলের কোনো অভিভাবকের নজরে আসে পোস্টগুলো, পরে তিনি সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পোস্টগুলোতে ছাত্ররা তাদের সমবয়সী অথবা তাদের চেয়ে কমবয়সী মেয়েদের ছবি তাদের অনুমতি ছাড়া শেয়ার করছিল। তবে তার চেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, তারা কমেন্টে মেয়েদের ধর্ষণ করার পরিকল্পনাও করছিল। এমন পোস্টও দেখা গেছে, যেখানে একটি মেয়েকে গণধর্ষণ করার পরিকল্পনায় সায় দিয়েছে কয়েকজন ছাত্র। ১৫ বছর বয়সী যেই ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আরো ২০ জনের মত ছাত্রকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। কী ঘটেছিল? দিল্লি'র ওমেন্স কমিশন ইনস্টাগ্রাম গ্রুপটির বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে এবং এই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চেয়ে দিল্লির পুলিশের প্রতি একটি নির্দেশনা জারি করেছে তারা। পুলিশ জানিয়েছে তারা এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং জানিয়েছে যে, স্থানীয় একটি স্কুলও এই ঘটনায় ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে। গ্রুপের সদস্যদের বিস্তারিত পরিচয় এবং তাদের ব্যবহার করা আইপি অ্যাড্রেস জানতে চেয়ে ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষের কাছেও নোটিশ দিয়েছে দিল্লি ওমেন্স কমিশন। তবে এখন পর্যন্তে এই বিষয়ে কিছু জানায়নি ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ। ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব সাইবার সিকিউরিটি ল'য়ের চেয়ারম্যান পাওয়ান দুগ্গাল মন্তব্য করেছেন যে সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানটি এই ঘটনার দায়বদ্ধতা এড়াতে পারে না। "ইনস্টাগ্রাম বলতে পারে না যে তারা এ সম্পর্কে জানতো না। তাদের নিজের থেকে এই ধরণের কন্টেন্ট সরিয়ে নিতে হবে। তারা না পারলে তখন পুলিশের শরণাপন্ন হওয়া যায়।" তিনি মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কগুলোর মত মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ভারতের মনোভাব 'অতিরিক্ত নরম' হওয়ায় এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে লকডাউন জারি করার পর ভারতের বিপুল সংখ্যক শিশু 'পর্ন সাইট' ও 'ডার্ক ওয়েব' সাইটগুলোতে গিয়ে আপত্তিকর কন্টেন্টের সংস্পর্শে আসছে এই ধরণের ব্যবহারের কারণ কী? করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে লকডাউন জারি করার পর বিপুল সংখ্যক শিশু 'পর্ন সাইট' ও 'ডার্ক ওয়েব' সাইটগুলোতে গিয়ে আপত্তিকর কন্টেন্টের সংস্পর্শে আসছে বলে তার সংস্থার নজরে এসেছে বলে মন্তব্য করেন পাওয়ান দুগ্গাল। তিনি বলেন, "গত ৪০ দিনের লকডাউনে শিশুরা ঘরের ভেতরে থাকায় তাদের ব্যবহারে বেশ পরিবর্তন এসেছে। শিশুরা তাদের অনলাইনের কার্যক্রম অভিভাবকদের জানাচ্ছে না।" তবে সিনিয়র মনোবিজ্ঞানী রোমা কুমার বলেন এই ধরণের গ্রুপ লকডাউনের আগেও ছিল। কিন্তু এই সময়ে তাদের উপস্থিতি এবং কার্যক্রমের পরিধি বিস্তার করতে পারে। পাওয়ান দুগ্গাল মনে করেন এই ধরণের আচরণ নিরুৎসাহিত করতে কর্তৃপক্ষের উচিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 'শক্ত অবস্থান' নেয়া এবং আইনগতভাবে 'কঠোর শাস্তি' নিশ্চিত করা। ঐ ইনস্টাগ্রাম গ্রুপের সদস্যরা এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনরোষের শিকার হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোয় ঐ সদস্যদের নাম এবং ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল পাবলিক করে দেয়া হয়েছে। মনোবিজ্ঞানী রোমা কুমার অবশ্য মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযুক্তদের নাম ছড়িয়ে দেয়া গঠনমূলক নয় এবং এর ফলে আসলে সমস্যাটির সমাধান হবে না। কিশোর বয়সে শিশুদের জন্য এই ধরণের কথাবার্তা বলা অনেকক্ষেত্রে স্বাভাবিক বলে রোমা কুমার মন্তব্য করেন, "তাদের ক্ষতি করা আমাদের লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য হচ্ছে তাদেরকে এই ধরণের ব্যবহার থেকে বের করে আনা।" "ইন্টারনেটের সমস্যা হলো, এখানে শিশুরা এই ধরণের আচরণ করে থাকে এবং তারা মনে করে যে এরকম আচরণই স্বাভাবিক। এর একমাত্র সমাধান দীর্ঘমেয়াদি কাউন্সেলিং, যেন তারা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে যে তারা ভুল করছিল।" "তাদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ালে তারা আরো প্রতিবাদী ও ক্ষু্দ্ধ হয়ে উঠবে, আর সমস্যার সমাধানও হবে না। আমরা চাই এই ছেলেরা যেন শোধরায় এবং সুস্থ, সুন্দর নাগরিক হয়ে বেড়ে ওঠে," বলেন রোমা কুমার। |
ইনস্টাগ্রাম গ্রুপ চ্যাটে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের ছবি শেয়ার করা ও অশালীন মন্তব্য করায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ। |
মোবাইল অ্যাপ দিয়ে উইগরদের ওপর নজরদারি করছে চীন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলছে, তারা এই অ্যাপটির প্রযুক্তি পরীক্ষা করে বের করেছে - কিভাবে গণ-নজরদারির এই ব্যবস্থা কাজ করে। যারা 'সরকারের অনুমতি না নিয়ে হজ করতে গেছে', যারা 'খুব বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে', যাদের 'কোনো পরিচিতজন বিদেশে থাকে', যারা 'লোকজনের সাথে বেশি মেলামেশা করে না' এবং 'বাড়ির সামনের দরজা দিয়ে কম বের হয়' - এরকম লোকদের ওপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। মানবাধিকার গ্রুপগুলোর মতে, চীনে উইগর মুসলিমরা তীব্র নিপীড়নের শিকার। জাতিসংঘ বলেছে, তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট আছে যে প্রায় ১০ লাখ উইগরকে শিনজিয়াংএ বন্দীশিবিরে আটক রাখা হয়েছে। চীন এই কেন্দ্রগুলোকে 'পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্র' হিসেবে অভিহিত করে থাকে। উইগরদের নিত্যদিনের আচরণ এবং গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে প্রতিবেশীদের সাথে যোগাযোগ সহ উইগরদের নিত্যদিনের আচরণ এবং গতিবিধিও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনা কর্মকর্তারা '৩৬ ধরণের লোকের ওপর' নজর রাখা এবং তাদের তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য অ্যাপটিকে কাজে লাগাচ্ছে। রিপোর্টে কোন বিশেষ জাতিগোষ্ঠীর কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় নি - তবে, এই ৩৬ ধরণের লোকের মধ্যে 'বেসরকারি ইমাম' এবং যারা 'ওয়াহাবি ইসলাম অনুসরণ করে' তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরও খবর: শক্তিশালী হচ্ছে ফণী, ৫-৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা বিএনপি সংসদে কতটা বিরোধী ভূমিকা রাখতে পারবে? ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯: জার্সি নিয়ে অন্তরালে কী ঘটেছিল? চীনা কর্মকর্তারা '৩৬ ধরণের লোকের ওপর' নজর রাখছে' সংগ্রহ করা তথ্যগুলো শিনজিয়াং প্রদেশের গণ নজরদারির প্রধান ব্যবস্থা আই জে ও পি-তে পাঠানো হয়। তারা রাস্তার চেকপয়েন্ট, পেট্রোল পাম্প, স্কুল ইত্যাদি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং কোন রকম অস্বাভাবিক আচরণ দেখলে তার ওপর নজরদারি করে। শিনজিয়াং চীনের একটি অর্ধস্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল এবং এর অধিবাসীদের প্রায় ৪৫ শতাংশ উইগর মুসলিম। আরো পড়তে পারেন: চীনে উইগর মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে যা জানা গেছে |
চীনে শিনজিয়াং প্রদেশের উইগর মুসলিম জনগোষ্ঠীর লক্ষ লক্ষ লোকের উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করছে চীনা পুলিশ। |
Subsets and Splits