text
stringlengths 8
24.4k
|
---|
তুরস্কের পর একই পরিবর্তন অন্যান্য দেশেও কি দেখা যাবার ইঙ্গিত এটা? তুরস্ক এমন সময় এই নতুন আইন প্রবর্তন করল যখন অনলাইনে বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস নিয়ে ভুয়া তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, বিশ্ব জুড়ে তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। কী আছে তুরস্কের এই নতুন আইনে? এই আইনের আওতায় যেসব সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের দশ লাখের বেশি অনুসারী আছে, তাদের তুরস্কে স্থানীয় কার্যালয় থাকতে হবে এবং সরকার কোন কন্টেন্ট সরাতে বললে তাদের সেটা মানতে হবে। কোন সংস্থা এই নির্দেশ অমান্য করলে তাদের জরিমানা করা হবে এবং তাদের ডেটা সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব পড়বে। অর্থাৎ তাদের ডেটা সরবরাহের গতি ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেয়া হবে। এই পরিবর্তন প্রযোজ্য হবে ফেসবুক, গুগল, টিকটক এবং টুইটারের মত বিশাল প্রযুক্তি সংস্থাগুলোসহ বহু কোম্পানি এবং বহু সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম-এর ক্ষেত্রে। নতুন আইনে নির্দেশ অমান্যকারী সংস্থাগুলোর ব্যান্ডউইথ ৯৫% পর্যন্ত হ্রাস করা হতে পারে, যার অর্থ হবে যে তারা কাজ করতে পারবে না। নতুন আইন অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত তথ্য তুরস্কে সংরক্ষিত রাখা হবে। তুরস্কের ৮ কোটি ৪০ লক্ষ জনগণের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলো খুবই জনপ্রিয়। দেশটির কয়েক কোটি সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর কাছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, স্ন্যাপচ্যাট এবং টিকটক সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এখন এই আইন আনা হলো কেন? সরকার বলছে এই আইনের লক্ষ্য সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই এবং "লাগামহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব" থেকে ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা দেয়া। কয়েক মাস ধরেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান সোশাল মিডিয়া সাইটগুলোকে "অনৈতিক" বলে বর্ণনা করে আসছেন এবং এইসব সাইটকে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে তিনি যে বদ্ধপরিকর সে কথা তিনি কখনই গোপন করেননি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান বলেছেন সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো "অনৈতিক" অন্যান্য দেশেও কি একইধরনের আইন আছে? তুরস্কের সংসদে এই নতুন আইন নিয়ে বিতর্কের সময় প্রায়শই জার্মানির উদাহরণ টানা হয়েছে এবং অনলাইন নিয়মবিধির ক্ষেত্রে জার্মানিকে আদর্শ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। জার্মানি ২০১৭ সালে নেটজেডডিজি নামে একটি নেটওয়ার্ক এনফোর্সমেন্ট অ্যাক্ট বা নেটওয়ার্ক আইন চালু করে। একইভাবে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য এবং আপত্তিকর কন্টেন্টকে ওই আইনের আওতায় আনা হয়েছিল। জার্মানিতেও সোশাল নেটওয়ার্ক আপত্তিকর কোন পোস্ট ২৪ ঘন্টার মধ্যে না সরালে আইন অনুযায়ী তাদের ৫০ মিলিয়ন ইউরো (৫ কোটি ৬৪ লক্ষ মার্কিন ডলার) জরিমানার বিধান আছে। জার্মানিতে এই আইনের বিধান সম্প্রতি আরও বাড়ানো হয়েছে, যাতে ফৌজদারি অপরাধের জন্য সন্দেহ করা হচ্ছে এমন কন্টেন্ট সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মকে জার্মান পুলিশের কাছে সরাসরি পাঠাতে বলা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: ইন্টারনেট যখন বন্ধ করে দেয়া হয় তখন কী ঘটে মহামারিকে কাজে লাগিয়ে কি ক্ষমতা সংহত করছেন ইউরোপের কিছু নেতা মিথ্যা খবর সরাবে না ফেসবুক এই আইন নিয়ে সমস্যা কোথায়? ইন্টারনেটের ওপর নজরদারি নিয়ে তুরস্ক আর জার্মানির ইতিহাস খুবই আলাদা। জার্মানির গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বাকস্বাধীনতার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সাথে রক্ষা করার রেওয়াজ চালু রয়েছে, কিন্তু তুরস্কের একনায়ক শাসন কাঠামোয় অনলাইনের স্বাধীনতা দিনে দিনে খর্ব করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তুরস্কে সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের ওপর কড়া নজর রাখা হয়। মি. এরদোয়ান বা তার মন্ত্রীদের অপমান করার দায়ে অথবা বিদেশে সামরিক হস্তক্ষেপ এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলার সমালোচনা করায়, অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। গত এক দশকে তুরস্কের মূলধারার সংবাদ মাধ্যমের অধিকাংশই সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ফলে সমালোচকদের মন্তব্য করার এবং নিরপেক্ষ সংবাদ তুলে ধরার জন্য জায়গা করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো। তুরস্কে ভিন্নমত প্রকাশের একমাত্র জায়গা ইন্টারনেট এবং এ সপ্তাহে টু্ইটারে ট্রেন্ড করছে #SansurYasasinaDurDe (হ্যাশট্যাগসেন্সরশিপআইনবন্ধহোক) কিন্তু ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিবেদন বলছে, এ পর্যন্ত উইকিপিডিয়া সহ চার লাখ ৮ হাজার সাইট দেশটিতে ব্লক করা হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে সেগুলোতে ঢোকা যাচ্ছে না। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল নতুন এই আইনকে ব্যাখ্যা করেছে "সর্বসাম্প্রতিক এবং তুরস্কে বাকস্বাধীনতার ওপর সবচেয়ে গুরুতর আঘাত" হিসাবে। "নতুন ইন্টারনেট আইনের ফলে পুলিশের সাথে সরকারের একযোগে কাজ করার ক্ষমতা বেড়ে যাবে এবং তারা অনলাইনে সেন্সরশিপ চালাতে পারবে। এর ফলে যারা ভিন্নমত প্রকাশ করার কারণে ইতোমধ্যেই সরকারের বিরাগভাজন হয়েছে এবং সরকার যাদের নির্দয়ভাবে লক্ষ্যবস্তু করেছে তাদের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে," বলছে অ্যামনেস্টির তুরস্ক বিষয়ক গবেষক অ্যান্ড্রু গাডর্নার। এই আইন সেন্সরশিপকে উৎসাহিত করবে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন। তিনি বলেছেন এই আইন তৈরি করা হয়েছে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে একটা যথাযথ বাণিজ্যিক ও আইনি সম্পর্ক গড়ে তোলার স্বার্থে। অন্যান্য দেশ কীভাবে সোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে? বিভিন্ন দেশের সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বক্তব্য এবং অনলাইনের কন্টেন্ট-এর মোকাবেলা কীভাবে করবে তা নিয়ে ক্রমশই আরও বেশি আলাপ আলোচনা চালাচ্ছে। চীনে এ ব্যাপারে আইন খুবই কড়া। দেশটিতে কয়েক লক্ষ সাইবার পুলিশ সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো নজরদারি করে এবং রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বার্তাগুলো তারা যাচাই-বাছাই করে। রাশিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও অনলাইনে কী পোস্ট করা যাবে বা কী ছড়ানো যাবে তা নিয়ে কঠোর আইন আছে। তবে তুরস্কের এই নতুন আইনের ওপর অনেক দেশই নি:সন্দেহে ঘনিষ্ঠ নজর রাখবে, যেমন আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য দেশ। কারণ এই দেশগুলোতে সোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই মুহূর্তে বড়ধরনের বিতণ্ডা চলছে। কিছু কিছু মানবাধিকার সংগঠন তুরস্কের নতুন আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন এই কারণে যে এটা অন্য অনেক দেশকে একইধরনের আইন তৈরিতে উৎসাহিত করবে। মানবাধিকার সংস্থা হিউমান রাইটস ওয়াচ বলছে তুরস্কের এই নতুন আইন "অনলাইন সেন্সরশিপের এক নতুন অন্ধকার জগতের" সূচনা করেছে। |
সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তুরস্কের সংসদ একটি আইন পাশ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে এই আইন বাকস্বাধীনতার প্রতি বড় হুমকি। |
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ভারতে গত পাঁচ বছর যাবত ক্ষমতাসীন বিজেপি বলে আসছে যে দেশটিতে বহু অবৈধ অভিবাসী রয়েছে - যারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গিয়েছে বলে দাবি করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই। এই কারণ দেখিয়ে আসাম রাজ্যের মতো নাগরিক যাচাইয়ের একটি উদ্যোগ বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গেও নিতে চায় বিজেপি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য বিব্রতকর হতে পারে। তবে এ বিষয়টিকে সরকার কিভাবে দেখছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের জন্য অনিষ্টকর কোন কিছু ভারত করবে বলে তিনি মনে করেন না। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সময় আসাম রাজ্যে যে বিতর্কিত নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে চল্লিশ লাখ মানুষ বাদ পড়েন এবং এদের বেশিরভাগই বাংলাভাষী মুসলমান। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে পদত্যাগ করছেন মোদীর জয় বাংলাদেশের জন্য চিন্তার বিষয়: রওনক আম পাড়ার ক্যালেন্ডার নিয়ে মানুষ কতটা সচেতন? আসামের মতো একটি নাগরিক তালিকা পশ্চিমবঙ্গেও করতে চায় বিজেপি। ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ দেশটির পার্লামেন্টে এমন কথাও বলেছেন যে নাগরিক তালিকার বিরোধিতা করার অর্থ হচ্ছে অবৈধ বাংলাদেশীদের মদদ দেয়া। বাংলাদেশকে ঘিরে থাকা ভারতের রাজ্যগুলিতে এবারের নির্বাচনে বেশ ভালো ফলাফল করেছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় থাকার সময় গত পাঁচ বছর বিজেপির মুসলিমবিরোধী মনোভাব ছিল প্রবল। সেক্ষেত্রে তথাকথিত নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়টিকে সবচেয়ে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশী বিশ্লেষকরা। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছে? পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "বন্ধুত্ব থাকলে কখনো বন্ধু অপর বন্ধুর অনিষ্ট করে না। ভারত সরকার আমাদের বন্ধু। আমাদের কোন অনিষ্ট করবে বলে মনে করিনা।" নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিলের বিরুদ্ধে আসামে বিক্ষোভ। নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাইয়ের কাজটিকে ভারতের 'অভ্যন্তরীণ বিষয়' বলে বর্ণনা করেন মি: মোমেন। তার কথায়, বিষয়টি নিয়ে এখনো বাংলাদেশের চিন্তার কোন কারণ নেই বলে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "দেখা যাক কী ইস্যু হয়, আমরা হাওয়ার মধ্যে কোন বক্তব্য দিতে চাইনা।... যদি কোন সিরিয়াস ইস্যু হয়, তখন আমরা এ নিয়ে আলাপ করবো।" এবারের নির্বাচনের পর বাংলাদেশের চার পাশের রাজ্যগুলোতে বিজেপির নেতৃত্বে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির পরিষ্কার উত্থান দেখছেন বাংলাদেশী বিশ্লেষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামানের মতে ভারতে তথাকথিত নাগরিকত্ব বাছাইয়ের বিষয়টিকে শুধুই রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবেনা তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম অঞ্চলে একটা বড় ধরণের ধাক্কা আসছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর হতে পারে।" দ্বিতীয় বারের মতো নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ হতে পারে বলে মনে করেন দেশটির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান মনে করেন, আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও যদি বিজেপি নাগরিকত্ব বাছাইয়ের পথে হাঁটে, তাহলে বাংলাদেশের চিন্তিত না হয়ে উপায় নেই। এ প্রসঙ্গে রওনক জাহান বলেন, "তাদের নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য মুসলমানদের উপরে কিংবা বাঙালিদের উপরে তারা যে ধরণের স্লোগান ব্যবহার করছেন, এগুলো হলে আমাদের সাধারণ মানুষ তো খুব বিক্ষুব্ধ থাকবে।" "কিন্তু আমাদের সরকার তো কখনোই চাইবে না ভারতের সাথে সম্পর্ক বিরূপ হোক। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের সেন্টিমেন্টকে তো তাদের দেখতে হবে" - বলেন রওনক জাহান। আরো পড়তে পারেন: পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি'র উত্থানের তাৎপর্য কী? ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদীর বিজয় কী বার্তা দিচ্ছে আবার মোদী সরকার: কী প্রত্যাশা হবে বাংলাদেশের? |
ভারতের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি বিপুল বিজয় পাবার পর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও নাগরিকত্ব যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয়া হয় কিনা - তা নিয়ে বাংলাদেশের 'চিন্তার কারণ' আছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। |
বরগুনায় প্রকাশ্যেই কুপিয়ে মারা হয় রিফাতকে জেলার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, "আমরা সবাই বুঝতে পারছি যে ব্যক্তিগত কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।" তবে ব্যক্তিগত কোন কারণে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি প্রকাশ করেননি তিনি। বুধবার ওই হত্যাকাণ্ডের পর নানা গণমাধ্যমে মাদকের বিষয়টি আসলেও পুলিশ সুপারের দাবি বরগুনা শহরে মাদকের তেমন ছড়াছড়ি নেই। এখানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সব দিক থেকেই ভালো ছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মিস্টার হোসেন পরে বিবিসি বাংলাকে বলেন, অভিযুক্তরা যেনো পালাতে না পারে সেজন্য সব সীমান্ত ও বন্দরে সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। "রিফাত হত্যার ঘটনায় মোট ১২ জন এজাহারভুক্ত আসামী। এর মধ্যে আমরা তিনজনকে আটক করেছি। বাকীদের ধরতে অভিযান চলছে," বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, মিন্নি (নিহত রিফাতের স্ত্রী যিনি হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন) এখানে ভিকটিম। তার স্বামী মারা গেছে ৪৮ঘন্টাও পার হয়নি। তাকে নিয়ে কথা বলা সমীচীন হবে না। "একটি নারকীয় হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। যারা এ কাজটি করেছে তাদের খুঁজে বের করে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবো।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: 'চিৎকার করেছি, সবাইকে বলেছি - ওরে বাঁচান' আদালতে আড়াই মাসের শিশু, আইন বদলানোর আদেশ যেসব চাকরিতে মিথ্যে বলাই যোগ্যতা ধরা হয় প্রকাশ্যে হামলা হামলার ভিডিওতে দেখা যায়, কলেজের মূল ফটকের কাছে কয়েকজন যুবক রিফাতের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে উপর্যুপরি হামলা চালাচ্ছে। এসময় তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার একাই দুর্বৃত্তদের হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিবিসি বাংলার কাছে আয়েশা আক্তার ব্যাখ্যা করেন তার সেই 'বিভীষিকাময়' অভিজ্ঞতার কথা। "আমার স্বামী [রিফাত] আমাকে কলেজ থেকে নিয়ে ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। আমি অস্ত্রের মুখে পড়েও অনেক বাঁচানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাঁচাতে পারি নাই।" তিনি বলেন, "আমার আশেপাশে অনেক মানুষ ছিল। আমি চিৎকার করছি, সবাইকে বলছি - ওরে একটু বাঁচান। কিন্তু কেউ এসে আমারে একটু সাহায্যও করে নাই।" পুলিশ বলছে নিহত নেয়াজ রিফাত শরীফ- এর স্ত্রী আয়েশা আক্তার এ ঘটনায় ভিকটিম। তাকে নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবেনা। রাজপথে বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড: কী নির্দেশ করে? এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অনেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন বলে ভিডিওতে দেখা গেছে এবং এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দুর্বৃত্তদের প্রাণপণে বাধা দিয়েও হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে পারেননি নিহতের স্ত্রী আয়েশা আক্তার। দোষীদের ফাঁসি চেয়ে সরকারের কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন। উচ্চ আদালত এর মধ্যেই এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের তদন্তের তদারকি করছে। কিন্তু রাজপথে এমন বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড সমাজের ঠিক কোন ব্যাধির প্রতি দিক নির্দেশ করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য মেঘনা গুহঠাকুরতা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এটা ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের মতোই ঘটনা যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন তাকে মারার চেষ্টা করছে আর ওয়াইফ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আগে পাড়ার বা পাশের বাড়ির লোকের কিছু হলে মানুষ নিজের মনে করতো। যেটা গ্রামে গঞ্জে এখনো আছে। কিন্তু এখন যতক্ষণ নিজের ওপর না আসছে ততক্ষণ সবাই আলাদা। "সব ঘটনার একটাই ধারাবাহিকতা- নিষ্ক্রিয়তা। খুব হিংস্র হয়ে যাচ্ছে। আগের মূল্যবোধ ধরে রাখা যাচ্ছে না আবার সেই মূল্যবোধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা অনেকেই মানছে না।" মেঘনা গুহঠাকুরতা বলেন, কেউ বিচারে বিশ্বাস করছে না। সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সিস্টেম ভেঙ্গে পড়েছে। |
বাংলাদেশে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নেয়াজ রিফাত শরীফ নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার জন্য ব্যক্তিগত কারণকেই দায়ী করেছে পুলিশ। |
সোমবার (২৯ মার্চ) এভার গিভেনকে আংশিক ভাসানো সম্ভব হয়েছে তবে ৪০০ মিটার লম্বা এবং দুই লাখ টন ওজনের দানবাকৃতির এই জাহাজটিকে পানিতে ভাসানো গেলেও সুয়েজ খাল দিয়ে স্বাভাবিক জাহজ চলাচল কখন পুরোপুরি শুরু হবে তা স্পষ্ট নয়। সুয়েজ খাল হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্যের সবচেয়ে ব্যস্ততম পথগুলোর একটি। সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করে বিশ্ববাণিজ্যে। মঙ্গলবার জাপানি মালিকানাধীন এই জাহাজটি প্রায় ২০,০০০ কন্টেইনার সহ বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই খালটি অতিক্রম করার সময় বালিতে আটকে যায়। জাহাজটির মাথা খালের তীরে আটকে সেটি আড়াআড়ি হয়ে পড়লে খালে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খালের দুই দিকে সাগরে আটকা পড়ে কয়েকশ জাহাজ। অনেক জাহাজ জটে আটকা না থেকে দীর্ঘ পথে অন্য রুটে রওয়ানা হয়েছে। কেন বিরল এই বিপত্তি ঘটলো তা এখনও পরিষ্কার নয়। সম্ভাব্য কারণ হিসাবে ঝড়ো বাতাসের কথা বলা হচ্ছে। এমন কথাও বলা হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে জাহাজে হঠাৎ করে ঘটা বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এভার গিভেন আড়াআড়ি আটকে পড়ে সুয়েজ খালে। জাহাজের সামনের এবং পেছনের অংশ পাড়ের বালিতে আটকে যায় মিশরের কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন আজকের (সোমবারের) মধ্যে এভার গিভেন চলতে সক্ষম হবে, এবং পরপরই সুয়েজ খাল আবার সচল হবে। জাহাজ পরিবহন সম্পর্কিত সাময়িকী লয়েডস লিস্টের ম্যানেজিং এডিটর রিচার্ড মিড বিবিসিকে বলেছেন, সোমবার দিনের শেষভাগে সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। সাগরে জাহাজের জট এবং লোকসানের খতিয়ান কিন্তু গত সাতদিনে মিশরের তো বটেই পুরো বিশ্ব বাণিজ্যের বিশাল ক্ষতি হয়ে গেছে। এখনও বিশ্ব বাণিজ্যের ১২ শতাংশ এই খালের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ টন জ্বালানি তেল এবং বিশ্বের মোট তরলীকৃত জ্বালানি গ্যাস এই খাল দিয়ে পার হয়। রোববার পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে, ৩৬৯টি মালবাহী জাহাজ ১২০ মাইল লম্বা খালের দুদিকে সাগরে আটকা পড়েছে। সোমবার পাওয়া হিসাবে ৪৫০টির মত জাহাজ জটের মধ্যে পড়েছে, এবং খাল চালু হলেও জট কাটাতে কয়েকদিন লেগে যাবে। সুয়েজ খালের ওপর মিশরের অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভর করে। করোনাভাইরাস প্যানডেমিকের আগে মিশরের জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ আসতো সুয়েজ খাল থেকে পাওয়া মাশুল থেকে। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা রাবি শনিবার বলেন, খাল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন তাদের গড়ে ১৫ মিলিয়ন (এক কোটি ৫০ লাখ) ডলার ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে, লয়েডস লিস্টে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে শত শত মাল ভর্তি জাহাজ আটকে থাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯৬০ কোটি ডলারের ব্যবসা বন্ধ হয়ে রয়েছে। তার অর্থ প্রতি ঘণ্টায় ৪০ কোটি ডলার এবং ৩৩ কোটি টন পণ্যের ব্যবসা আটকে রয়েছে। এভার গিভেন জাহাজটি যেভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লাইন সুয়েজ খাল জার্মান বীমা কোম্পানি অ্যাল্যায়াঞ্জ শুক্রবার হিসাব দিয়েছে সুয়েজ খাল বন্ধ হয়ে থাকায় এক সপ্তাহে বিশ্ব বাণিজ্যে ৬০০ কোটি ডলার থেকে ১০০০ কোটি ডলারের লোকসান হবে। যার ফলে, বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি ০.২ থেকে ০.৪ শতাংশ কম হতে পারে। জাহাজ পরিবহন খাতে শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান এসিএম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকাকে জানিয়েছে এই জটের কারণে ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে মাল পরিবহণের জন্য কিছু জাহাজের ভাড়া হঠাৎ ৪৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। সুয়েজ খালের জটের মধ্যে বসে না থেকে কিছু কিছু জাহাজ দীর্ঘ পথে রওয়ানা হচ্ছে, ফলে গন্তব্যে পৌঁছুতে তাদের অতিরিক্ত আট দিন লাগবে। ক্ষতির মুখে অসংখ্য ব্যবসা সুয়েজ খাল বন্ধ হয়ে পড়ায় শুধু যে মিশরের অর্থনীতি বা জাহাজ পরিবহন ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে তা নয়। বহু দেশে অভ্যন্তরীণ পরিবহন, সুপারমার্কেটের মত খুচরা ব্যবসা বা পণ্য উৎপাদনকারী অসংখ্য প্রতিষ্ঠান লোকসানে পড়েছে। ব্রিটেনের অনেক প্রতিষ্ঠানও তাদের অর্ডার করা পণ্যের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বিবিসিকে বলেছে আরো দেরি হলে তাদেরকে বাধ্য হয়ে বিমানে করে অতিরিক্ত পণ্য আনতে হবে, যার পরিবহণ খরচ পড়বে কমপক্ষে তিন গুন। বিশ্বের বহু ব্যবসায়ী তাই গভীর আগ্রহে অপেক্ষ করছেন কখন এভার গিভেন সুয়েজ খালের বালি থেকে ছাড়া পেয়ে আবারো চলতে শুরু করবে। |
মিশরের সুয়েজ খালের তীরের বালিতে আটকে পড়া এভার গিভেন নামে বিশালাকৃতির মালবাহী জাহাজটিকে সোমবার মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে খালের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। |
বিদ্রোহীদের হাতে জীবিত কর্নেল গাদ্দফি গাদ্দাফি সমর্থকদের শেষ ঘাঁটি ছিলো শহরের উত্তর-পশ্চিমে ডিস্ট্রিক্ট-২৻ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগিকে নিয়ে কর্নেল গাদ্দাফি একটি গাড়িবহরে ডিস্ট্রিক্ট-২ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন৻ কর্নেল গাদ্দাফির ছেলে মুতাসসিমসহ গাড়িবহরটি লড়াই করে বিরোধী ন্যাশনাল ট্রান্সিশনাল কাউন্সিলের যোদ্ধাদের প্রতিরোধ অতিক্রম করার চেষ্টা করে৻ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহর থেকে ৩-৪ কিলোমিটার পশ্চিমে কয়েকটি ফরাসী জঙ্গী বিমান গাড়িবহরের উপর আক্রমণ শুরু করে৻ বিদ্রোহী সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ফরাসী বিমান হামলায় গাড়িবহরের অন্তত ১৫টি সশস্ত্র পিকআপ ট্রাক বিধ্বস্ত হয়৻ কর্নেল গাদ্দাফিসহ কয়েকজন দুটি বড় কনক্রিটের পাইপের ভেতরে আশ্রয় নেন৻ কর্ণেল গাদ্দাফির শেষ যাত্রা কর্নেল গাদ্দাফির মরদেহ বিদ্রোহীরা তখন কাছাকাছি চলে আসে৻ বিদ্রোহী যোদ্ধাদের একজন রয়টার্সকে বলেন, প্রথমে তারা কামানের গোলা ছুঁড়তে থাকে কিন্তু সেটাতে কাজ হচ্ছিলো না৻ ‘‘এর পর আমরা হেঁটে হেঁটে অগ্রসর হতে থাকি৻ গাদ্দাফির একজন লোক তখন বেরিয়ে আসে এবং আমাকে দেখেই গুলি শুরু করে‘‘, তিনি বলেন৻ ‘‘আমার মনে হয় গাদ্দাফি সম্ভবত তাকে গুলি বন্ধ করতে বলেন৻ ‘‘ঐ লোক তখন বলতে থাকে, ‘আমার নেতা এখানে আছেন, আমার নেতা এখানে আছেন‘, সে বলতে থাকে, ‘মুয়াম্মার গাদ্দাফি এখানে আছেন এবং তিনি আহত‘‘‘৻ বেলা ১২টার দিকে কর্নেল গাদ্দাফিকে জীবিত কিন্তু গুরুতর আহত অবস্থায় আটক করা হয়৻ টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় যে ভিডিও প্রচার করা হয় সেখানে দেখা যায় দৃশ্যত: বিভ্রান্ত মিঃ গাদ্দাফিকে বিদ্রোহী যোদ্ধারা টানা-হেঁচড়া করছে৻ তবে এর পরের ঘটনাবলী পরিস্কার না৻ লিবিয়ার ট্রান্সিশনাল কাউন্সিল বা এনটিসি-র প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল সাংবাদিকদের বলেন ‘ফোরেন্সিক‘ রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে কর্নেল গাদ্দাফি গুলির আঘাতে মারা গেছেন৻ মিঃ জিবরিল বলেন এনটিসি বাহিনী মিঃ গাদ্দাফিকে আটক করে, তিনি কোন কোন বাধা দেননি এবং তারপর তাঁকে গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয়৻ ‘‘গাড়ি চলাকালে বিপ্লবী বাহিনী আর গাদ্দাফি বাহিনীর গোলাগুলির ক্রসফায়ারে পরে যে সময় তাঁর মাথায় গুলি লাগে,‘‘ ঐ রিপোর্ট উদ্ধৃত করে মিঃ জিবরিল বলেন৻ ‘‘তবে ফোরেন্সিক ডাক্তাররা বলতে পারেন নি গুলিটি বিপ্লবী না গাদ্দাফি বাহিনীর দিক থেকে এসেছিলো,‘‘ তিনি বলেন৻ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিয়ার্তের একটি সড়ক তবে একজন নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দাবি করে বিবিসিকে বলেন তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কর্নেল গাদ্দাফিকে একটি ৯মিমি বন্দুক দিয়ে তলপেটে গুলি করা হয়৻ এনটিসি কর্মকর্তা আব্দেল মাজিদ ম্লেগতা রয়টার্সকে বলেন গাদ্দাফি দু‘পায়েই গুলিবিদ্ধ হন৻ ‘‘তিনি মাথায়ও আঘাত পেয়েছিলেন,‘‘ তিনি বলেন৻ ‘‘তার দলকে লক্ষ্য করে প্রচুর গুলি ছোঁড়া হয়েছিলো, এবং তিনি মারা যান‘‘৻ ঘটনার অস্পষ্ট ভিডিও ছবি দ্রুত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মাঝে হাত বদল হতে থাকে৻ আল-জাজিরায় দেখানো আরেকটি ভিডিওতে কর্নেল গাদ্দাফির মৃতদেহ মাটিতে টেনে নিতে দেখা যায়৻ এনটিসি-র একজন মন্ত্রী রয়টার্সকে বলেন মিঃ গাদ্দাফির মরদেহ মিসরাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৻ |
অগাষ্ট মাসে রাজধানী ত্রিপোলির পতনের পর, সিয়ার্ত-এ গড়ে ওঠে ক্ষমতাচ্যুত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীর শেষ প্রতিরোধ৻ |
বৈঠকের দুদিন আগেই সিঙ্গাপুর গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং আন বৈঠকটি নির্ধারিত হওয়ার পরেও দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে তা প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছিল। কিন্তু বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে হচ্ছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে বৈঠকটি করে আদৌ কোনো লাভ হবে কিনা - তা নিয়ে বিশ্বজুড়েই সন্দেহ যেমন প্রবল, আশাবাদী হওয়ার কারণও দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা স্টাডিজের গবেষক এবং শিক্ষক ডঃ সৈয়দ মাহমুদ আলী বিবিসিকে বলেছেন - "সিঙ্গাপুরের বৈঠকে ট্রাম্প এবং কিম আমাদের চমকে দিতে পারেন।" মি আলী স্বীকার করছেন, বিপদ অনেক রয়েছে। ব্যক্তিত্ব, অতীত, ক্ষমতায় আসার পটভূমি - এগুলোর বিবেচনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং আনের মধ্যে বিস্তর ফারাক। দুজন দুই জগতের মানুষ। মি কিম ক্ষমতায় এসেছেন পরিবারের পরম্পরায়, পড়াশোনা করেছেন সুইজারল্যান্ডে, বয়সে যুবক এবং একনায়ক। নিজের ক্ষমতার বিরুদ্ধে যখনই কেউ বিন্দুমাত্র চ্যালেঞ্জ করেছে, তাকে তিনি অবলীলায় সরিয়ে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে, মি. ট্রাম্প ব্যবসায়ী থেকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এমন একজন কেউ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হননি। তিনি 'আনপ্রেডিক্টেবল' অর্থাৎ তিনি কী বলবেন বা করবেন আগে থেকে ধারনা করা কঠিন। তবে দুজনের বিষয়ে একটি মিল রয়েছে সেটি হলো নিজেদের প্রশাসনের ওপর তাদের কর্তৃত্ব প্রবল। আমেরিকা চাইছে উত্তর কোরিয়ার পারমানবিক অস্ত্রসম্ভার তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'আনপ্রেডিক্টেবল' আচরণ কতটা হুমকি তৈরি করতে পারে শীর্ষ বৈঠকে? সৈয়দ মাহমুদ আলী খুব বেশি শঙ্কিত নন। "তিনি যখন ব্যবসায়ী ছিলেন, মি ট্রাম্প একটি বই লিখেছিলেন কীভাবে বৈরি প্রতিপক্ষের সাথে চুক্তি করতে হয়... মনে হয় তার কৌশল হচ্ছে ইচ্ছাকৃত-ভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মতৈক্যে পৌঁছানো ।" তাছাড়া, ডঃ আলীর মতে, শুধুই এক ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের প্রশ্ন নয়, বরঞ্চ বর্তমানে আমেরিকার যে ভূ-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক এবং সামরিক বাস্তবতা, সেটাই মীমাংসার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। "যুক্তরাষ্ট্র এখন আর একমাত্র পরাশক্তি নয়, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ক্ষমতা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে, সুতরাং আমেরিকা এখন চাইছে বিশ্বের দু-একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে তাদের লক্ষ্য যেন তারা হাসিল করতে পারে।" সুতরাং উত্তর কোরিয়ার সাথে একটি চুক্তি নিয়ে আমেরিকানদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। উত্তর কোরিয়া সীমান্তে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়া (ফাইল ফটো। পিয়ং ইয়ং চাইছে ১৯৫৩ সালে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে পূর্ণাঙ্গ একটি শান্তি চূক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। আমেরিকার প্রধান দাবি উত্তর কোরিয়ার পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণ। উত্তর কোরিয়াকে পারমানবিক অস্ত্রসম্ভার, তৈরির সাজ-সরঞ্জাম, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। পক্ষান্তরে উত্তর কোরিয়ার দাবি - ১৯৫৩ সালের কোরিয়া যুদ্ধের যুদ্ধ-বিরতি চুক্তিকে একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তিতে রূপান্তর করতে হবে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আমেরিকার ঘাঁটি এবং অস্ত্রসম্ভার সরাতে হবে এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ওঠাতে হবে। এসব শর্তের সাথে উত্তর কোরিয়া দাবি করছে - হঠাৎ করে একটি বৈঠক থেকে এই নিরস্ত্রীকরণ সম্ভব নয়, এটা ধীরে ধীরে করতে হবে। ড আলী বলছেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক কিছু কথাবার্তায় আঁচ করা যায় যে তারাও উত্তর কোরিয়ার অবস্থান স্বীকার করে নিতে প্রস্তুত। পর্যায়ক্রমে কয়েকবার বসে কথাবার্তা বলার বাস্তবতা তারা হয়ত মেনে নিচ্ছেন। তাছাড়া উত্তর কোরিয়ার প্রধান মিত্র চীনও ওয়াশিংটন এবং পিয়ং-ইয়ংয়ের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। উত্তর কোরিয়ায় অর্থনীতি, ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন নিয়ে চীন উদগ্রীব। সুতরাং, ড. আলী মনে করেন, আগামি দুদিনে সিঙ্গাপুরে অবাক করার মত ঘটনা ঘটতেই পারে। "ট্রাম্প এবং কিম মুখোমুখি বসলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটা অনুমান করা কঠিন, কিন্তু আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। |
আমেরিকার কোনো প্রেসিডেন্ট এবং উত্তরে কোরিয়ার কোনো নেতা মুখোমুখি বসে কথা বলবেন কমাস আগেও তা অকল্পনীয় ছিল। |
ব্রাজিলে জাতীয় দলের সাথে আছেন নেইমার। সাও পাওলোর পুলিশ বলছে, যৌন হয়রানির ঘটনাটি ঘটেছিল একটি হোটেলে। প্যারিসের ওই হোটেলে নেইমারের দল পিএসজির খেলোয়াড়েরা অবস্থান করছিলেন। যদিও এখন পর্যন্ত নেইমার কিংবা তার কোনো প্রতিনিধির কাছ থেকে এ বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নেইমার এখন ব্রাজিলে কোপা আমেরিকার জন্য গঠিত দেশটির জাতীয় দলের সাথে প্রশিক্ষণে রয়েছেন। অভিযোগে কী বলা হয়েছে? অভিযোগকারী নারীর নাম এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে পুলিশের ডকুমেন্টস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই নারীর সাথে নেইমারের পরিচয় হয়েছিল ইন্সটগ্রামে। পরে নেইমার ওই নারীকে প্যারিসে তার সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেন। তিনি ওই নারীকে ব্রাজিল থেকে প্যারিসের আসার জন্য একটি বিমান টিকেট পাঠান এবং প্যারিসের ওই হোটেলে তার জন্য রুম রিজার্ভেশন নিশ্চিত করেন। ওই নারীর অভিযোগ, গত ১৫ই মে নেইমার যখন হোটেলে ফিরেন তখন তিনি 'আপাতদৃষ্টিতে মাতাল' ছিলেন। একা হাতে যারা সন্তান বড় করেন বাবা মা যখন সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করেন কুঁড়েঘর থেকে মন্ত্রিসভায়ঃ প্রতাপ সারাঙ্গি আসলে কে? পর্বত শিখরে ঊঠতে গিয়ে নিখোঁজ আট পর্বতারোহী নেইমার হোটেলে এসেই তিনি ওই নারীর সাথে কিছু কথা বলে তাকে জড়িয়ে ধরেন। "এক পর্যায়ে নেইমার আগ্রাসী হয়ে ওঠেন এবং জোর করেই ওই নারীর সম্মতি ছাড়াই তাকে যৌনতায় বাধ্য করেন।" দুদিন পর ওই নারী ব্রাজিলে ফিরে যান, যদিও যাওয়ার আগে ফরাসি পুলিশের কাছে তিনি কোন অভিযোগ করেননি। তার দাবি, "ওই ঘটনায় তিনি ছিলেন হতবিহবল, আর অন্য দেশে এ ধরণের অভিযোগ করার বিষয়ে তিনি ভয় পাচ্ছিলেন।" নেইমারের বাবা কী বলছেন? নেইমারের বাবা নেইমার দস সান্তোস ব্রাজিলের একটি টিভিকে শনিবার বলেছেন, "এটা পরিষ্কার যে ওটা ছিলো একটা ফাঁদ।" "জনমনে বিষয়টি পরিষ্কার না হলে নেইমারের হোয়াটসঅ্যাপ এবং সেখানে ওই মেয়ের সাথে নেইমারের কথোপকথন আমরা দেখাবো।" কোপা আমেরিকার জন্য প্রস্তুত নেইমার? ২৭ বছর বয়সী ফুটবল তারকা সাম্প্রতিক সময়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ জনিত কারণে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন। গত মাসে একজন ফ্যানকে আঘাত করার ঘটনায় ফরাসি ফুটবল কর্তৃপক্ষ তাকে তিনমাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এছাড়া ড্রেসিং রুমেও বিপত্তির জন্ম দিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ আমেরিকার ন্যাশনাল টিম চ্যাম্পিয়নশিপ -কোপা আমেরিকা- শুরু হবে ব্রাজিলে আগামী ১৪ই জুন। একই গ্রুপের অন্য দলগুলো হলো - বলিভিয়া, ভেনিজুয়েলা ও পেরু। তবে গত মঙ্গলবার হাঁটুর আঘাতে ট্রেনিং বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন নেইমার, যদিও মনে করা হচ্ছে ইনজুরিটা খুব মারাত্মক কিছু হয়নি। |
ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন প্যারিসের এক নারী। |
ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। ফাইল ছবি সরকার দাবি করছে, এই ডিএনএ টেকনোলজি রেগুলেশন বিল জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও অপরাধ দমনে বিরাট সাহায্য করবে। তবে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এই বিলটির তীব্র বিরোধিতা করছে, মানবাধিকার কর্মীরাও বলছেন, ডিএনএ-র মতো সংবেদনশীল ডেটা সুরক্ষিত রাখার জন্য কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে সরকার এই ধরনের আইন প্রণয়ন করতে পারে না। ভারতে একটি তথাকথিত ডিএনএ প্রোফাইলিং বিল আনার লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন তদানীন্তন বিজেপি সরকারের আমলেই। ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এরপর বিলটিকে পার্লামেন্টে পাস করানোর একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, তবে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলছেন এবার তারা বিলটিকে নিয়ে যথেষ্ঠ আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছেন। লোকসভায় তিনি আরও জানিয়েছেন, "অনেকে যেমনটা ভাবছেন দেশের সব মানুষের ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হবে, ব্যাপারটা কিন্তু আদৌ তা নয়।" "আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি, খুনী বা ধর্ষণকারীর মতো দাগী অপরাধী, বড় কোনও অপরাধে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা, কিংবা কোনও নিখোঁজ লোকের আত্মীয়স্বজন - এরাই কেবল এর আওতায় আসবেন।" "আর ডিএনএ ডেটা ব্যাঙ্কে যে তথ্য জমা থাকবে তা থেকে কারও ধর্ম-বর্ণ-জাতি বা এ ধরনের কোনও বৈশিষ্ট্যই জানা যাবে না।" ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সিও প্রবলভাবে এই বিলটি চাইছে মন্ত্রী আরও বলছেন, ব্রিটেন-আমেরিকাসহ দুনিয়ার অন্তত ষাটটি দেশে ইতিমধ্যেই এধরনের আইন আছে। তিনি এও বলেছেন, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সির মতো দেশের শীর্ষ তদন্তকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারাও না কি অনেকদিন ধরেই এই বিলটি পাস করানোর জন্য তাদের তাগাদা দিয়ে আসছেন। আর বিলটির খসড়া তৈরিতে যে বিশেষজ্ঞরা জড়িত ছিলেন তারাও জানাচ্ছেন, মানবদেহ থেকে ডিএনএ সংগ্রহটা আসলে তেমন কোনও জটিল প্রক্রিয়াও নয়। এই বিশেষজ্ঞদের অন্যতম দিল্লিতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে ফরেনসিক মেডিসিনের প্রধান সুনীল গুপ্তা। তার কথায়, "মুখের ভেতর থেকে খুব সহজে একটা সোয়াব নিয়ে, বা চুলের গোড়ার ফলিকল থেকে, কিংবা রক্ত, টিস্যু বা পেশীর ছোট্ট নমুনা থেকেই আমরা কোনও ব্যক্তির ডিএনএ নিতে পারি।" গবেষণাগারে ডিএনএ পরীক্ষার কাজ চরছে। ফাইল ছবি "সেই ডেটা পরে আনায়াসেই দেশের নিরাপত্তার কাজে, পুলিশের কাজে বা ফরেনসিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করা সম্ভব।" বিরোধী কংগ্রেস পার্লামেন্টে এই বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছে - লোকসভায় তাদের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, এই বিলটি মানুষের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। "কারণ এর মাধ্যমে কোর্টের নির্দেশ ছাড়াই সরকার বিচারাধীন ব্যক্তিদের ডিএনএ সংগ্রহ করতে পারবে", বলেছেন তিনি। কংগ্রেস এমপি ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুরও মনে করছেন, কোনও ডেটা প্রোটেকশন আইন ছাড়াই এই বিলটি আনার অর্থ হল "ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া"। আরো পড়তে পারেন: ক্লিনিকের ভুলে ভুল শিশুর জন্ম দিয়েছে দম্পতি জিনোম সিকোয়েন্সিং: শিশু রোগ নির্ণয়ে ‘বিপ্লব’ আসছে তিন জনের ডিএনএ থেকে শিশুর জন্ম পার্লামেন্টে বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া অধিকর্তা মীনাক্ষি গাঙ্গুলিও এ বিষয়ে মি থারুরের সঙ্গে একমত। মিস গাঙ্গুলি বিবিসিকে বলছিলেন, "যে কোনও দেশেই আমরা বলি ডেটাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য একটা নিরপেক্ষ তদারকি ব্যবস্থা বা ওভারসাইট মেকানিজম দরকার হয়। ওটা না-থাকলেই সেই ডেটা অ্যাবিউজ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।" "যেমন, উদাহরণস্বরূপ খোদ আমেরিকাতেও দেখা গেছে পুলিশবাহিনীতে পুরুষ সদস্যরা তাদের মহিলা সহকর্মীদের ফাইল ঘেঁটে ঘেঁটে ব্যক্তিগত তথ্য বের করেছে।" "সেই ডেটায় তাদের অ্যাক্সেস ছিল, আর তার সুযোগ নিয়েই তারা নারী কলিগদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছিল।" মীনাক্ষি গাঙ্গুলি "আর ভারতেও আমরা জানি সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনের মতো শর্টকাট নেওয়ার কারণে। আইনের শাসন বজায় রাখার সঠিক রাস্তায় কেউ যেতে চায় না।" "যেখানে আমরা জানি ভারতীয় সিস্টেমে এই ধরনের ত্রুটি আছে, সেখানে কঠোর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে ডেটা সুরক্ষিত করার পদক্ষেপ না নিয়ে এই আইন আনা মোটেও উচিত হবে না", বলছেন মীনাক্ষি গাঙ্গুলি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষবর্ধন কিন্তু পার্লামেন্টে প্রতিবেশী বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেছেন, তারা ভারতের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গিয়ে সে দেশে এর মধ্যেই ডিএনএ আইন চালু করে ফেলেছে। "কাজেই ভারত নিজেরা এ ব্যাপারে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না," লোকসভায় জানিয়েছেন তিনি। আরো পড়তে পারেন: ৫৮৬ কেন্দ্রে সব ভোট নৌকা মার্কায় 'ক্রিস্টাল মেথ বা আইস' শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর? নকল কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে 'অর্থ চুরি' ঢাকার তিন সড়কে রিকশা বন্ধ নিয়ে পাঠকের প্রতিক্রিয়া |
ভারতে নাগরিকদের দেহ থেকে সরকারকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষরণের অনুমতি দেবে, এমন একটি বিল গতকাল সোমবার পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছে। |
চিঙজিয়াং বাইওটার অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো এত বছর পরও সম্পূর্ণ অবিকৃত রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চীনের এক নদীর পারে তারা হাজার হাজার জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন। তারা বলছেন, এই জীবাশ্মগুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ এই প্রাণীগুলোর দেহের কোমল কোষ, যেমন ত্বক, চোখ বা দেহের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো এত বছর পরও সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। জীবাশ্মবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার "একেবারে মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো" কারণ এদের অর্ধেকেরও বেশি প্রজাতি অনাবিষ্কৃত ছিল। এই জীবাশ্মগুলির নাম দেয়া হয়েছে 'চিঙজিয়াং বাইওটা'। চীনের হুবেই প্রদেশের ডানশুয়ে নদীর তীরে এগুলোকে খুঁজে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা সেখান থেকে এপর্যন্ত ২০,০০০ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ৪৩৫১টি নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নমুনাগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা রকম পোকা, জেলিফিশ, সি অ্যানেমোনে এবং শ্যাওলা। নতুন আবিষ্কার হওয়া প্রাণীর প্রজাতি, শিল্পীর দৃষ্টিতে। আরো পড়তে পারেন: সিলেটে বাসের চাকায় ছাত্র পিষ্ট হবার আগের মুহুর্ত শিশু বয়সেই খ্যাতি পেয়েছিলেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ চীনের নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিংলিয়াং ঝ্যাং, যিনি এই বিষয়ে একটি গবেষক দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি বিবিসিকে বলেন, "প্রাণীর উদ্ভবের গোঁড়ার দিক সম্পর্কে গবেষণায় এই জীবাশ্মগুলো গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে কাজ করবে।" এই আবিষ্কারটি বিশেষভাবে বিস্ময়কর এই জন্য যে নরম দেহের যেসব প্রাণী সেগুলো সাধারণত জীবাশ্মতে পরিণত হয় না। সম্ভবত কোন ঝড়ের ধাক্কায় এই প্রাণীগুলো দ্রুত নদীতে পলির নীচে চাপা পড়ে যায় বলে অধ্যাপক ঝ্যাং জানান। জীবাশ্মবিজ্ঞানী অ্যালিসন ডেলি, যিনি এই নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন, তিনি বলছেন, জীবাশ্ম বিজ্ঞানে গত ১০০ বছরের মধ্যে এতবড় আবিষ্কার আর হয়নি। |
আপনি যে পোকাটিকে দেখছেন তার বয়স ৫১ কোটি ৮০ লাখ বছর। |
খালেদা জিয়া এবং তা তৈরি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের শনিবারের এক সিদ্ধান্তে। এর আগে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের একক একটি বেঞ্চ দুটি দুর্নীতির মামলায় সাবিরা সুলতানা নামে একজন বিএনপি নেত্রীকে নিম্ন আদালতের দেয়া মোট ছ'বছরের কারাদন্ডের সাজা স্থগিত করেছিলেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মতে, হাইকোর্টের রায়ে সাজা স্থগিত হবার পর দন্ডিত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিতও হয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন - এমন দৃষ্টান্ত আছে। তাই বৃহস্পতিবারের রায়ের ফলে 'খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য সাজাপ্রাপ্ত রাজনীতিকরা হয়তো নির্বাচন করতে পারবেন' এমন সম্ভাবনা তৈরি হয় । কিন্তু শনিবারই সরকারের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রীম কোর্টের চেম্বার আদালত বৃহস্পতিবারের আদেশটি স্থগিত করে পূর্ণ আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফলে কারো দু'বছরের বেশি কারাদন্ড হলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না - সেই পূর্বতন আদেশটিই বহাল থাকলো। আজকের আদেশের পর এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিবিসিকে বলেন, খালেদা জিয়ার মতো দন্ডপ্রাপ্তদের নির্বাচন করার আর কোনো সুযোগ নেই বলে তিনি মনে করেন তিনি বলেন, "দন্ডপ্রাপ্তরা নির্বাচন করতে পারবে না এ মর্মে এর আগে দুটি বেঞ্চ যে রায় দিয়েছিলেন - ফুল কোর্ট তা বহাল রেখেছেন। কিন্তু শনিবার একটি সিঙ্গল বেঞ্চ বিপরীতমুখী স্টে অর্ডার দেবার পর এর বিরুদ্ধে আমরা চেম্বারে গিয়েছিলাম। চেম্বার তা স্টে করে আবার ফুল কোর্টে দিয়েছেন। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে যা আছে - তাকে অগ্রাহ্য করে কোন কোর্ট সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্বাচন করার সুযোগ দিতে পারে না।" এর মানে কি এই যে খালেদা জিয়া আর নির্বাচন করতে পারবেন না? বিবিসি বাংলার এ প্রশ্নের উত্তরে এটর্নি জেনারেল বলেন,"আমার অভিমত তাই। বিএনপি অফিসের সামনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় "রোববার বেলা এগারোটার মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে হবে - কারণ কালই মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ হয়ে যাবে। এরপর তো আর কেউ নতুন ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। আর আগামীকাল তারা ভিন্নতর আদেশ দেবেন এটা তো মনে হয় না। কারণ এ্যাপীলেট ডিভিশনকে তো ইউনিফর্ম অর্ডার দিতে হবে" - বলেন তিনি। আগামী কাল রোববারই নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ করবে। সাবিরা সুলতানার আইনজীবী এবং বিএনপি আইনজীবী পরিষদের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম অবশ্য বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের রোববারে সিদ্ধান্তের পরই শুধু বলা যাবে খালেদা জিয়াসহ আরো অনেকের ভাগ্যে কি ঘটবে। মি. ইসলাম বলেন, "আজকে চেম্বার বিচারপতির কাছে দুই পক্ষের শুনানী হয়েছে। আগামীকাল সকাল নয়টায় এ বিষয়টা শুনানীর জন্য আসবে। আমরা আশা করছি যে ১০টার মধ্যে বিষয়টা শুনানী হয়ে যাবে। শুনারীর পর ফুল কোর্ট যদি হাইকোর্ট ডিভিশনের আদেশটা যদি বহাল রাখেন তাহলে সাবেরা সুলতানা সহ এরকম যারা আছেন সকলেই তার বেনেফিট পাবেন। আর যদি তা না হয় - তাহলে তো তাদের আর নির্বাচনে প্রার্থী হবার সুযোগ থাকবে না।" এর পর কি খালেদা জিয়া বা তার মতো দন্ডপ্রাপ্ত কারো পক্ষে নির্বাচন করার আর কোন সুযোগ থাকবে? আমিনুল ইসলাম একেবারে সম্পূর্ণ আশা ছেড়ে দিচ্ছেন না। তার কথা: "এটা নির্ভর করে কি ফর্মে আদেশটা হয়। তারা সিপি সহ আসার জন্য বলতে পারেন, রেগুলার এ্যাপ্লিকেশন নিয়ে আসার জন্য বলতে পারেন, নো অর্ডার করতে পারে ... নো অর্ডার করলে আপাতত আমাদের কিছু করার নেই । ইন দ্য মিনটাইম স্ক্রুটিনিতে তারা যদি বাদ পড়ে যায়, তাহলে তারা হয়তো আপীলেআসতে পারে, অথবা রীটআবেদন করতে পারে। এজাতীয় নানা প্রসিডিউর আছে।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: যে রায়ের পর নড়েচেড়ে বসেছে বাংলাদেশ সরকার কোন ভরসায় নির্বাচন করতে চাইছেন খালেদা জিয়া? বায়লাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩০শে ডিসেম্বর কয়েকদিন আগে বিএনপির পাঁচজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে তাদের সাজা ও দণ্ড স্থগিত করার জন্যে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। তখন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ তাদের আবেদন খারিজ করে রায় দিয়েছিল যে কারো দু'বছরের বেশি দণ্ড বা সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন, "সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে নৈতিক স্খলনের কারণে কেউ যদি দুই বছর কিম্বা তারও বেশি সাজাপ্রাপ্ত হন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।" খালেদা জিয়া এখন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বিএনপির নেতারা আশা করছিলেন যে তাদের নেত্রী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন এবং সেজন্যে তাকে পাঁচটি আসনে মনোনয়নও দেওয়া হয়। |
আগামী ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির কারাভোগরত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া 'অংশ নিতে পারবেন' - এমন একটা সম্ভাবনা তৈরি হবার ২৪ ঘন্টা পরই আবারো তা নিয়ে গুরুতর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। |
সান্দিনিস্তা বিদ্রোহের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে ড্যানিয়েল ওর্তেগা নিকারাগুয়ার মোনিম্বো শহরের সমাধিস্থানে পুরোনো একটি রণসঙ্গীতের সুর বাজাচ্ছিলো বাদকদল। হোসে পালাসিওস নামের এক তরুণের মরদেহ সৎকারের জন্য সেখানে জড়ো হয়েছেন তার আত্মীয় ও বন্ধুরা। নিকারাগুয়ায় গত তিনমাসের অস্থিরতায় নিহত হওয়া ব্যক্তিদের একজন ২৭ বছর বয়সী পালাসিওস। নিকারাগুয়ায় তিনমাসে নিহত হওয়া প্রায় সাড়ে তিনশো মানুষের সবাই প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষেোভ করেছিলেন। পালাসিওসের বিধবা স্ত্রী রোকসানা বলেন, নিকারাগুয়ায় চলতে থাকা অবিচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন তাঁর স্বামী। সমাধিক্ষেত্রের বাইরে শহরের মূল চত্বরের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। সেখানে রাস্তায় অস্ত্রশস্ত্র হাতে, মুখোশ পড়ে বসে আছে বেশ কয়কেজন, যাদের কোনো একজনের গুলিতেই হয়তো পালাসিওস মারা গেছেন। সান্দিনিস্তা বিদ্রোহের বার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। প্রায় চার দশক আগে ঐ বিদ্রোহের মধ্যে দিয়েই নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট হন ড্যানিয়েল ওর্তেগা। প্রেসিডেন্ট ওর্তেগার বিরুদ্ধে এখন নিকারাগুয়ায় যেরকম আন্দোলন চলছে, ১৯৭৯ সালে ঠিক এরকমই এক বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওর্তেগা নিজে। নিকারাগুয়ার সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপর প্রেসিডেন্ট ওর্তেগার তত্বাবধানেই সেটি সাধারণ মানুষ আর ওর্তেগা সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়। সান্দিনিস্তা বিদ্রোহের শুরু থেকে ঐ এলাকায় কাজ করা সাংবাদিক জন লি অ্যান্ডারসন বলেন, ওর্তেগা নিজে একসময় যেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এখন নিজে ঐ একই অন্যায় করছেন। আরো পড়ুন: বিপ্লবী না স্বৈরশাসক, ড্যানিয়েল ওর্তেগা আসলে কে? ক্ষমতায় সমতা: বিশ্বের নিয়ন্ত্রণ যেখানে নারীর হাতে নতুন পাঁচ 'স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায়' বাংলাদেশ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিকারাগুয়ার সাধারণ মানুষ মি. অ্যান্ডারসন বলেন, "চল্লিশ বছর আগে প্রেসিডেন্ট সামোযার উৎখাতের সময়কার পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থিতি অনেকটাই একরকম।" "সামোযার মত বিভিন্ন শহরে বিমানহামলা না করলেও, বড় শহরগুলোতে মুখোশধারী প্যারামিলিটারি পাঠাচ্ছেন ওর্তেগা। যারা সব ধরণের সরকারবিরোধী বিদ্রোহ নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে।" অতীতে প্রেসিডেন্ট সামোযা'র ওপরও ভরসা রেখে নিপীড়িত হতে হয়েছে নিকারাগুয়ার মানুষকে, এবার প্রেসিডেন্ট ওর্তেগার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটলো। তবে নিকারাগুয়ার সাধারণ মানুষ সরকারবিরোধী বিদ্রোহ চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। হোসে পালাসিওসের শবদেহ সৎকারের সময় তার পরিচিতদের কন্ঠে ছিল সেই প্রতিজ্ঞার আভাস। |
নিকারাগুয়ায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভে গত তিন মাসে নিহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিনশো মানুষ। সাধারণ মানুষের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সরকারের সমর্থকরা হামলা চালানোর ফলেই এসব হতাহতের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে। |
বর্তমানে ওই এলাকা লবণের মরুভূমি হয়ে আছে, কিন্তু এক সময় এখানে বিশাল একটি হ্রদ ছিল বর্তমানে ওই এলাকা লবণের মরুভূমি হয়ে আছে, কিন্তু এক সময় এখানে বিশাল একটি হ্রদ ছিল, যেখানে আমাদের পূর্বপুরুষরা দুই লাখ বছর আগে বসবাস করতেন। গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পাল্টে যাওয়ার আগে পর্যন্ত, প্রায় ৭০ হাজার বছর ধরে সেখানে বসবাস করেছেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। উর্বর সবুজ করিডোর উন্মুক্ত হওয়ার পর তারা সেখান থেকে সরে যেতে শুরু করে। এভাবে আফ্রিকার বাইরে পরবর্তী অভিবাসন প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। ''এটা বেশ কিছুদিন ধরেই পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, শারীরিকভাবে আধুনিক মানুষ প্রায় দুই লাখ বছর পূর্বে আফ্রিকায় দেখা যেতে শুরু করেছে।'' বলছেন অধ্যাপক ভেনেসা হেইস, অস্ট্রেলিয়ার গার্ভান ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল রিসার্চের একজন জিন বিজ্ঞানী। ''কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যা নিয়ে বিতর্ক চলছে, তা হলো ঠিক কোন স্থান থেকে এই মানুষদের দেখা যেতে শুরু করে এবং কেন আমাদের পূর্বপুরুষরা পরবর্তীতে আলাদা হয়ে ছড়িয়ে যায়।'' অধ্যাপক হেইসের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য এই খাতের অন্য গবেষকদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। হ্রদ ঘেরা স্বর্গ যে এলাকায় আমাদের পূর্বপুরুষের উৎপত্তির কথা বলা হচ্ছে, সেটি হলো জাম্বেজি অববাহিকার দক্ষিণের একটি এলাকা, যা উত্তর বতসোয়ানায় অবস্থিত। গবেষকরা ধারণা করছেন যে, আমাদের পূর্বপুরুষরা আফ্রিকার বিশাল হ্রদ ব্যবস্থার কাছাকাছি বাসস্থান তৈরি করেছিলেন, যাকে বলা হয় লেক মাকগাডিকাগাদি, যা বর্তমানে শুকিয়ে দিয়ে আঁকাবাঁকা লবণ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ''এটা সত্যিই বিশাল একটা এলাকা, তখন এটা হয়তো খুব আর্দ্র আর উষ্ণ ছিল,'' বলছেন অধ্যাপক হেইস। ''এবং এটা তখন আধুনিক মানুষ ও আশেপাশের বুনো জীবজন্তুর জন্য একটি উপযুক্ত বাসস্থান তৈরি করে দিয়েছিল।'' আরো পড়ুন: বেঁচে থাকার জন্যে কেন ৫৩৬ খৃস্টাব্দ ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ? মানুষ কী করে অন্য প্রাণীর দুধ খেতে শিখলো? মানুষের দ্রুত রাগের পেছনে রহস্য কী? নামিবিয়ার কালাকারি মরুভূমিতে স্থানীয়দের কাছ থেকে আগুন জ্বালানো শিখছেন অধ্যাপক হেইস সেখানে প্রায় ৭০ হাজার বছর বসবাসের পরে সেই মানুষরা অন্যত্র সরে যেতে শুরু করে। পুরো অঞ্চল জুড়ে বৃষ্টির ধারা পাল্টে যাওয়ায় ১ লাখ ৩০ হাজার বছর থেকে ১ লাখ ১০ হাজার বছর আগে তিন দফায় অভিবাসন হয়। তখন তাদের সামনে তৈরি হওয়া একটি সবুজ উর্বর করিডোর দিয়ে এই অভিবাসন সম্পন্ন হয়। প্রথম দফার অভিবাসীরা উত্তর-পূর্ব দিকে যায়, পরের দলটি যায় দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আর তৃতীয় দলটি তাদের পুরনো ঠিকানাতেই থেকে যায়, যারা এখনো সেখানে আছে। মায়ের দিক থেকে শিশুদের মধ্যে যে ডিএনএ আসে, সেরকম শত শত ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করে মানুষের পারিবারিক ইতিহাস বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য বের করা হয়েছে। কিন্তু সেই ডিএনএ-র জিনগত তথ্যের সঙ্গে ভূগোল, কম্পিউটারের মাধ্যমে জলবায়ুর তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা সেই সময়ে একটি চিত্র এঁকেছেন, ঠিক দুই লাখ বছর আগে আফ্রিকান মহাদেশ যেমন ছিল। মানব ইতিহাসের পুনর্গঠন তবে জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এই গবেষণাকে সাধুবাদ জানালেও, একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, শুধুমাত্র ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মানুষের উৎস মূল সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে না। জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে পূর্ব আফ্রিকার মানুষের উৎস সম্পর্কে অন্য গবেষকরা ভিন্ন ধরণের বক্তব্য দিয়েছেন। লন্ডনের নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অধ্যাপক ক্রিস স্ট্রিংগার বলছেন, মানুষের বিবর্তনের বিষয়টি জটিল একটা ব্যাপার ছিল। ''আপনি আধুনিক মাইটোকন্ড্রিয়াল বিতরণ ব্যবস্থা ব্যবহার করে আধুনিক মানুষের উৎস হিসাবে শুধুমাত্র একটি স্থানকে চিহ্নিত করতে পারবেন না।'' তিনি বিবিসিকে বলেছেন। ''আমি মনে করি, এখানে অতিরিক্ত তথ্য বলা হচ্ছে, কারণ আপনি শুধুমাত্র জিনের ক্ষুদ্র একটি অংশকে এখানে বিশ্লেষণ করছেন, যা আমাদের উৎপত্তি সম্পর্কে পুরো তথ্য দিতে পারবে না।'' সুতরাং, হয়তো মানুষের আরো অনেক আদি বাসস্থান ছিল, যা হয়তো এখনো ঠিকভাবে সনাক্ত করা যায়নি। মানব ইতিহাসের বিবর্তনের মাইলফলক |
বর্তমানে পৃথিবীতে যত মানুষ বেঁচে আছে, তাদের আদি বাসস্থান চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, বর্তমান পৃথিবীর সব মানুষের এক সময়ের বাসস্থান ছিল জাম্বেজি নদীর দক্ষিণের একটি এলাকায়। |
বাড়ির সামনের বাগানে হাঁটছেন শতবর্ষী ক্যাপ্টেন মূর তবে দানের একটি ঘটনা নিয়ে ব্রিটেনে বিস্ময় তৈরি হয়েছে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক অফিসার তার শততম জন্মদিনের আগে নিজের বাড়ির সামনের বাগানে ১০০ ল্যাপ হেঁটে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (এনএইচএস) জন্য কিছু চাঁদা তোলার পরিকল্পনা করেন। ক্যান্সারে ভোগার সময় এনএইচএসের ডাক্তার- নার্সরা তাকে যেভাবে সেবা করেছে, তার কিছু প্রতিদান দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তার টার্গেট ছিল হাজার খানেক পাউন্ড, কিন্তু গতকাল (শুক্রবার) পর্যন্ত চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ২কোটি ১০ লাখ পাউন্ডেও বেশি (দুই কোটি ৬৩লাখ ডলার)। যেখানে তিনি ভেবেছিলেন চাঁদা আসবে পরিচিত-পরিজন, স্বজন, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে, সেখানে অনলাইনে খোলা তার জাস্ট-গিভিং পেজে শুক্রবার পর্যন্ত পাঁচ লাখের মত মানুষ চাঁদা দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের এই বদান্যতায় অভিভূত হয়ে পড়েছেন শতবর্ষী সাবেক এই সৈনিক, যাকে এখন লাঠিতে ভর করে বা অন্যের সাহায্য নিয়ে হাঁটতে হয়। "আমি বাকরুদ্ধ", সাংবাদিকদের কাছে অনুভূতি প্রকাশ করতে বলেন আবেগ-আপ্লুত ক্যাপ্টেন টম মূর, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। ক্যাপ্টেন মূর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারত ও মিয়ানমার ফ্রন্টে যুদ্ধ করেছেন। এ-লিস্ট সেলেব্রিটি অল্প কিছুদিন আগেও যে বৃদ্ধ সাবেক এই সৈনিককে কেউ চিনতই না, রাতারাতি তিনি এখন ব্রিটেনে 'এ-লিস্ট' সেলেব্রিটি। দেশি-বিদেশী মিডিয়া সাক্ষাৎকারের জন্য তার পিছনে ছুটছে। গতকাল (শুক্রবার) এক টুইট বার্তায় ক্যাপ্টেন মূর বলেন, তিনি আজ কম হাঁটবেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেবেন। বৃহস্পতিবার তিনি ৩৫টি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। শুক্রবার দিয়েছেন ১৭টি। লাখ লাখ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় শতবর্ষী এই মানুষটির ভূয়সী প্রশংসা করছেন। তাকে 'নাইট' উপাধি দেওয়ার দাবি উঠেছে। যুবরাজ উইলিয়াম তার প্রশংসা করতে গিয়ে তাকে "ওয়ান-ম্যান ফান্ডরেইজিং মেশিন" বলে খেতাব দিয়েছেন। যুবরাজ এবং তার স্ত্রী কেট ক্যাপ্টেন মূরের তহবিলে চাঁদাও দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, সাবেক এই সৈনিককে কীভাবে সম্মানিত করা যায়, তার উপায় খুঁজছেন তিনি। ক্যাপ্টেন মূরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন এনএইচএসের একদল ডাক্তার ও নার্স ইংল্যান্ডের বেডফোর্ডশায়ার জেলার মার্সটন এলাকার এই বাসিন্দা ৩০শে এপ্রিল তার শততম জন্মদিন উদযাপন করবেন। সন্দেহ নেই, এবারের জন্মদিনই হবে তার শ্রেষ্ঠতম। |
জনসেবায় দানের সংস্কৃতি ব্রিটেনে বহুদিনের। অনেক স্বল্প আয়ের মানুষও নিয়মিত জনসেবার জন্য পকেট থেকে পয়সা বের করে দেন। |
সিটিং সার্ভিস বন্ধে ঢাকার রাস্তায় চলছে অভিযান। বাস মালিকদের একটি অংশের সংগঠন ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি বলছে, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া ঠেকানো সহ অনিয়ম রোধে তারা এই অভিযান পরিচালনা করছে। আর একাজে বিআরটিএ এবং পুলিশ সহযোগিতা করছে। মালিকদের পাল্টাপাল্টি অবস্থান ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিবিসিকে বলেন, "গ্যেটলক, সিটিং সার্ভিস, স্পেশাল সার্ভিস এমন নামে যেসব গাড়ি চালানো হত সেগুলোতে ভাড়ার তারতম্য ছিল, কোথাও কোথাও বেশি ভাড়া নেয়া হতো। আর সিটিং সার্ভিসের নামে বাস চালানো হলেও সেরকম কোনও নামে পারমিশন কর্তৃপক্ষ দেয়নি"। তিনি দাবি করেন সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এটি করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরব মধুচন্দ্রিমা কতদিন টিকবে? উত্তর কোরিয়ার ব্যর্থ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার অর্থ কী? কিন্তু পরিবহন মালিকদের আরেকটি অংশের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য অস্বীকার করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অব বাস কোম্পানিজ নামের সংগঠনের একজন নেতা রফিকুল হোসেন কাজল বিবিসিকে বলেন, " আমরা বিরোধিতা করছি- এটা ঠিক না। কিন্তু সাধারণ মালিকদের প্রতারিত করা হচ্ছে। কারণ এই গাড়িগুলোর মালিক ক্ষুদে বিনিয়োগকারী । তারা এটা করেছে আগের অনিয়মের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে"। মুছে ফেলা হচ্ছে 'স্পেশাল' সিটি সার্ভিস যারা এই অভিযানের উদ্যোগ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ তুলেছেন রফিকুল হোসেন কাজল। "এই যে যারা বলছে যে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করবে তারা যে প্রতিদিন বড় আকারের চাঁদা নেয় আজ থেকে সেটা বন্ধ হয়ে যাবে?" তিনি প্রশ্ন তোলেন, "মালিকের কাজ কী পুলিশের কাজ করা?" তবে এই অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অনিয়মের ঘটনায় বিভিন্ন বাসের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা করেছে। যাত্রীদের ভোগান্তি রোববার দুপুরের দিকটায় ফার্মগেট এলাকায় লোকজনকে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা জানান, অন্যদিন এ সময়টা সহজে বাস পাওয়া গেলেও আজ মিলছে না। বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা একজন যাত্রী বলছিলেন, "ফার্মগেট থেকে মোহাম্মদপুর যেতে সময় লাগে ত্রিশ মিনিট। দুপুরে সাধারণত ১০ মিনিটেই বাস পাওয়া যায়। কিন্তু আজ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অনেকক্ষণ"। আরেকজন যাত্রী বলেন, "এখন থেকে যেহেতু সিটিং সার্ভিস চলবে না তাই বাড়তি ভাড়া গুণতে হবে। আগে মোহাম্মদপুর থেকে গুলিস্তান যেতাম ২০ টাকায় সেটা এখন দিতে হবে ২৫ টাকা। আর মিরপুর থেকে মতিঝিল ২৯ টাকা"। অভিযানের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে বিবিসি বাংলার সাইয়েদা আক্তার রোববার রাস্তায় যে কয়েকজন চালক এবং শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন, তারা সবাই স্বীকার করছেন, বাসের সংখ্যা আজ অনেক কম। মোবাইল কোর্টের ভয়ের কারণে অনেক কোম্পানি তাদের বাস নামাতে পারেনি। একটি পরিবহনের কর্মীরা জানান, তাদের মালিকের ৩০টি বাস চলে। আজ নেমেছে মাত্র ৮টি। বিআরটিএ'র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মোবাইল কোর্ট বিভিন্ন অনিয়মে অনেকগুলো বাস সার্ভিসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কারওয়ানবাজারের মোড়ের কাছে একজন নারী বাসের জন্য অপেক্ষায়। সাথে একটি শিশু। অভিযানের কারণে বাসগুলো দ্রুতগতিতে চলে যাওয়ায় উঠতে পারেননি তিনি। "আব্দুল্লাহপুরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি। সাথে শিশু আছে। কিন্তু বাস গুলো থামছে না" একজন যাত্রী বলেন, "লোকাল বাসেও তো অনেক সময় 'সিটিং' লিখে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়"। আবার অন্য একজন যাত্রীর বক্তব্য "তা-ও সিটিং বাসে উঠলে লোকাল বাসের মত এখানে-ওখানে থামে না বলে সময়মত জায়গামতো যাওয়া যায়"। তবে তার মত অন্য যাত্রীদের একটাই প্রশ্ন, বাস সিটিং বা লোকাল যাই হোক না কেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় আর বাসে হয়রানি কমবে তো? |
বাংলাদেশের ঢাকায় বাস, মিনিবাসে নানা ধরনের অনিয়ম ঠেকাতে বাস মালিকদের পক্ষ থেকে অভিযান শুরু করা হয়েছে । আর এতে সহায়তা দিচ্ছে সরকার। |
তুর্কী পত্রিকা সাবাহ্ বলছে, জামাল খাসোগজি (ছবিতে) খুনিদের বলেছিল তার মুখ না বাঁধতে। ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে তাকে হত্যার জন্য সৌদি আরব থেকে একটি 'ঘাতক দল' এসে হাজির হয়েছিল। এসব তথ্যই প্রকাশিত হয়েছে তুরস্কের এক সংবাদপত্রে। সরকারপন্থী পত্রিকা সাবাহ্ বুধবার মি. খাসোগজির জীবনের শেষ মুহূর্তের এই কথিত অডিও রেকর্ডিং-এর বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটি বলছে, সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে এই অডিও রেকর্ডিং ধারণ করা হয়েছে এবং তুর্কী গোয়েন্দা সংস্থা এটি সংগ্রহ করেছে। গত বছর অক্টোবর মাসে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে মি. খাসোগজিকে হত্যার ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল তোলপাড় হয়। মি. খাসোগজি সৌদি রাজপরিবারের একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন এবং মৃত্যুর আগে বেশ ক'বছর ধরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। সৌদি সরকার এবং রাজপরিবার সব সময় মি. খাসোগজির হত্যাকাণ্ডে তাদের হাত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে। জাতিসংঘ অভিযোগ করেছে মি. খাসোগজিকে ইস্তাম্বুলের এই সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়। সম্পর্কিত খবর: খাসোগজি হত্যার দায় সৌদি আরবের: জাতিসংঘ সৌদি আরবে জামাল খাসোগজি হত্যার বিচার শুরু খাসোগজিকে খুন করা হয়েছে, নতুন সৌদি স্বীকারোক্তি এই ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েকজনকে আটক করে সৌদি আরবে তাদের বিচারও শুরু হয়েছে। এর আগে তুর্কী পত্রিকা সাবাহ্ জামাল খাসোগজির রহস্যময় খুনের ব্যাপারে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যা নিয়ে দুনিয়াজোড়া হেডলাইন হয়েছে। তবে তার দু'একটি রিপোর্ট নিয়ে বিতর্কও ছিল। চলতি সপ্তাহেও পত্রিকাটি, তার ভাষায়, সৌদি 'ঘাতক দল'-এর কথিত তৎপরতার ওপর দুটি খবর ছাপিয়েছে। পত্রিকার সর্বশেষ খবরটি ছিল সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর অডিও রেকর্ডিং-কে ভিত্তি করে। এতে বলা হয়েছে, জামাল খাসোগজি সৌদি কনস্যুলেটে পৌঁছানোর আগে সৌদি আরব থেকে আসা ঘাতক দলের সদস্য একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মি. খাসোগজিকে 'কোরবানির পশু' বলে বর্ণনা করেছিল। সাবাহ্ বলছে, কনস্যুলেটে ঢোকার পর কিছু একটা আঁচ করে মি. খাসোগজির সন্দেহ হয়। এসময় তাকে বলা হয় তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই তাকে সৌদি আরবে ফেরত যেতে হবে। কিন্তু তিনি সেই হুকুম মানতে চাননি। এই সময় তিনি তার ছেলেকে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠান। এর পরেই তাকে ওষুধ দিয়ে অচেতন করা হয় বলে সাবাহ্ তার খবরে দাবি করছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সুলতান (ডানে) বলছেন, তিনি জামাল খাসোগজিকে (বাঁয়ে) খুন করার আদেশ দেননি। জ্ঞান হারানোর আগে তিনি তার কথিত ঘাতকদের উদ্দেশ্য করে বলেন তার হাঁপানি রয়েছে সেকারণে তার মুখ যেন বেঁধে ফেলা না হয়। সাবাহ্ খবরে বর্ণনা করা হয়, এরপর কীভাবে মি. খাসোগজির মাথা একটি ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। প্রাণ রক্ষার্থে তার ছটফটানির শব্দও রেকর্ড হয়। তারপর যেভাবে মি. খাসোগজির মাথা কেটে ফেলা হয় সেই শব্দও রেকর্ড হয় বলে সাবাহ্ তার খবরে অভিযোগ করেছে। মি. খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের কথিত অডিও রেকর্ডিং-এর অস্তিত্ব নিয়ে গত এক বছর ধরেই গুঞ্জন চলছিল। সাবাহ্ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সত্যি হলে সেই গুঞ্জন বাস্তব বলে প্রমাণিত হবে। তবে তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এর আগেই এসব অডিওর অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিলেন। তারা এসব অডিও বিভিন্ন দেশের কাছে পাঠিয়েছেন বলেও জানান। জামাল খাসোগিজ হত্যা বিচারের দাবিতে সারা বিশ্ব জুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু এই অডিও রেকর্ডিং কীভাবে ঐ সংবাদপত্রের হাতে গিয়ে পৌঁছল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় এক বছর পার হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও তার মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। চলতি বছর গোড়ার দিকে জাতিসংঘের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ অ্যাগনেস ক্যালামার্ড মি. খাসোগজির মৃত্যুকে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সুপরিকল্পিত খুন' বলে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে সৌদি আরব রাষ্ট্র এর জন্য দায়ী। তিনি ঐ হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ক্রিকেটারদের বাড়িতে ডেকে যা বললেন বিসিবি প্রধান বিনা খরচে জাপানে যেভাবে চাকরি পাওয়া যাবে ছাত্র ভিসায় ব্রিটেন গেলে কাজের সুযোগ ফিরছে |
সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগজিকে হত্যার আগে এক সৌদি ফরেনসিক বিশেষ তাকে 'কোরবানির পশু' বলে বর্ণনা করেছিল। |
জাপানে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের অবকাশে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে নিয়ে সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের কিছুক্ষণের মধ্যেই দিল্লি তা জোরালোভাবে অস্বীকার করে। এদিন মঙ্গলবার পার্লামেন্টেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী কখনওই এমন কোনও অনুরোধ জানাননি এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতেই কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান হতে হবে ভারতের এই অবস্থানেও কোনও পরিবর্তন হয়নি। তবুও ভারতের বিরোধী দলগুলো নরেন্দ্র মোদীর নিজের মুখ থেকেই এর ব্যাখ্যা শোনার জন্য জেদ ধরে আছে। আরো পড়তে পারেন: মোদী এবার কিভাবে অর্থনীতি সামলাবেন ভারতে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির ধারার সমাপ্তি ঘটাচ্ছেন মোদী? আবার মোদী সরকার: কী প্রত্যাশা হবে বাংলাদেশের? সিমলা চুক্তি স্বাক্ষর করার প্রাক্কালে ইন্দিরা গান্ধী ও জুলফিকার আলি ভুট্টো আসলে কাশ্মীর প্রশ্নে কোনও তৃতীয় পক্ষ নাক গলাতে পারবে না - শুধুমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই এর সমাধানের পথ খুঁজতে হবে, এটাই দিল্লির বহু বছরের ঘোষিত অবস্থান। বাহাত্তরের সিমলা চুক্তি বা ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত এই অবস্থান থেকে ভারতের কোনও সরকার কখনোই সরে আসার ইঙ্গিত দেয়নি। সেই কারণেই যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার ওভাল অফিসে ইমরান খানকে পাশে নিয়ে মন্তব্য করেন যে দিনকয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাকে কাশ্মীর প্রশ্নে 'মিডিয়েশন বা আরবিট্রেশন করার জন্য' আর্জি জানিয়েছেন - ভারতে তার প্রতিক্রিয়া হয় বোমাবর্ষণের মতো। এদিন সকাল থেকেই ভারতের বিরোধী দলগুলো পার্লামেন্টে এই ইস্যুতে তুমুল হইচই বাঁধিয়ে দেন। ওভাল অফিসে ইমরান খানের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ২২শে জুলাই, ২০১৯ উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে রাজ্যসভায় বারবার বলতে শোনা যায়, "আপনারা কি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বেশি বিশ্বাস করেন?" "দয়া করে একটা জাতীয় ইস্যুকে রাজনৈতিক রঙ দেবেন না!" কিছুক্ষণ পরেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পার্লামেন্টে বিবৃতি দিয়ে বলেন, "আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই প্রধানমন্ত্রী মোদী কখনও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এরকম কোনও অনুরোধ জানাননি।" "আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার - পাকিস্তানের সঙ্গে সব অমীমাংসিত ইস্যু কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতেই মেটাতে হবে, আর সেটাও হবে তারা সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করলে তবেই।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে বন্যায় ১২ দিনে ৮৭ জনের মৃত্যু কাটা মাথা আতঙ্ক জেঁকে বসেছে প্রত্যন্ত গ্রামে বরগুনা হত্যাকাণ্ড: মাদক, রাজনীতি আর ক্ষমতার চক্র ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঘটনা হল, সপ্তাহদুয়েক আগে জাপানে জি-২০ সামিটে ট্রাম্প ও মোদীর সত্যিই একান্তে কথাবার্তা হয়েছিল। অতএব প্রধানমন্ত্রীর নিজের মুখ থেকে ব্যাখ্যা শোনার দাবিতে বিরোধী দলগুলো এরপরেও অটল থাকে। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ অন্য বিরোধী নেতাদের সাথে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, "ভারতের অবস্থান খুব ভাল করে জানা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেন এই ধরনের একটা কথা বললেন সেটাই আমরা জানতে চাই।" "নিশ্চয় কোনও বিশেষ কারণেই তিনি এটা বলেছেন।" "আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করতে রাজি আছি। এটা বলছি না যে তিনি মিথ্যা কথা বলছেন - কিন্তু তার পার্লামেন্টে এসে বিবৃতি দিতে অসুবিধা কোথায়?" কংগ্রেস নেতা ও ভারত শাসিত কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ কংগ্রেস নেতা শশী থারুর অবশ্য বলেছেন, তার ধারণা ভালমতো না বুঝেই এবং কাশ্মীর ইস্যুতে সঠিকভাবে 'ব্রিফড' বা অবহিত না হয়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই মন্তব্য করেছেন। দিল্লিতে বহু পর্যবেক্ষকেরও ধারণা অনেকটা সেরকমই। সিনিয়র কূটনৈতিক সংবাদদাতা দেবীরূপা মিত্র যেমন বিবিসিকে বলছিলেন, "কাশ্মীরে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় ভারতের কোনও লাভ নেই।" "ফলে মোদীর এই ধরনের ইউ টার্ন নেওয়ারও কোনও কারণই নেই।" কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধ চলছে সত্তর বছরেরও বেশি সময় ধরে "তাই গোটা ব্যাপারটাই খুব ধন্দে ফেলার মতো।" "তবুও আমার ধারণা, বিভিন্ন দেশের অতিথি নেতাদের পাশে নিয়ে তাদের খুশি করে কথা বলাটা মার্কিন প্রেসিডেন্টের পুরনো অভ্যাস, আর এটাও সেই 'ট্রাম্প টেমপ্লেটে'রই অংশ।" বিতর্ক সামাল দিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য এর মধ্যেই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, কাশ্মীর একটি 'দ্বিপাক্ষিক ইস্যু' বলেই তারা মনে করে। অন্য দিকে ইমরান খানও মি ট্রাম্পের মন্তব্যকে লুফে নিতে দেরি করেননি। তবে দিল্লি ও ওয়াশিংটন যত দ্রুত সম্ভব এই অস্বস্তিকর বিতর্ককে ভুলে যাওয়ারই চেষ্টা চালাচ্ছে। |
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে বিতর্কিত কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন - মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণা ভারতকে চরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। |
ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন, ২০১৬ সালে বিশ্বে প্রতি সাতটি নতুন ডায়াবেটিস কেসের একটির পেছনে আছে ঘরের বাইরের বায়ু দূষণ। সেবছর বিশ্বে শুধুমাত্র বায়ু দূষণের কারণে ৩২ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত একজন বিজ্ঞানী জিয়াদ আল আলি বলছেন, ডায়াবেটিসের সঙ্গে বায়ু দূষণের খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখতে পাচ্ছেন তারা। ডায়াবেটিস বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা রোগগুলির একটি। বিশ্বে ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। এতদিন পর্যন্ত শারীরিক স্থূলতার কারণেই ডায়াবেটিস হয় বলে মনে করা হতো। যারা অস্বাস্থ্যকর খাবার খান বা মোটেই শরীর নড়াতে চান না, তাদেরই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা বায়ু দূষণকেও ডায়াবেটিসের কারণ বলে বর্ণনা করছেন। বায়ু দূষণের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক দেখতে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা গবেষকরা দেখেছেন, এমনকি যখন বায়ু দূষণের হার নীচের দিকে, যেটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিরাপদ মাত্রা বলে মনে করে, তখনও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বায়ু দূষণের কারণে শরীরের ইনসুলিন কমে যায়। এর ফলে ব্লাড গ্লুকোজকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে না আমাদের শরীর। |
যুক্তরাষ্ট্রে এক নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, বায়ু দূষণের সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ার বেশ গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। |
লন্ডনে দূতাবাস ভবনের বাইরে পদচ্যুত রাষ্ট্রদূত জ জোয়া মিন। জ জোয়া মিন বলেছেন, দূতাবাসে কর্মরত লোকজনকে ভবন ছেড়ে চলে যাওয়ার আদেশ দেন মিয়ানমারের মিলিটারি অ্যাটাশে এবং দেশটির রাষ্ট্রদূতের পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব দূতাবাস থেকে "জোরপূর্বক বের করে" দেওয়ার এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রদূত পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তকে লন্ডন মেনে নিয়েছে। পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে জ জোয়া মিন সেনা অভ্যুত্থানের সমালোচনা করে অং সান সু চির মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেসময় তিনি বলেন, মিয়ানমার বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান-বিরোধী বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত পাঁচশোরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জ জোয়া মিন লন্ডনের এই ঘটনাকে অভ্যুত্থান হিসেবে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, "সামরিক অ্যাটাশে তার দূতাবাস দখল" করে রেখেছে। "লন্ডনের কেন্দ্রে এধরনের অভ্যুত্থান গ্রহণযোগ্য নয়," বলেন তিনি। একজন মুখপাত্রের মাধ্যমে জ জোয়া মিন ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সামরিক জান্তার নিয়োগ দেওয়া নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতেও তিনি আহবান জানান। "ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারে অভ্যুত্থান হয়েছে। এখন লন্ডনের কেন্দ্রেও একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে," বলেন তিনি। মুখপাত্র আরো বলেছেন, "সামরিক জেনারেলদের জন্য কাজ না করলে দূতাবাসের লোকজনকে কঠোর শাস্তি দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।" জ জোয়া মিনের পক্ষে তার একজন মুখপাত্র বিবৃতি পড়ে শোনান। দূতাবাসের লোকজনকে বের করে দেওয়ার পর তারা যাতে আবার ভবনের ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য পুলিশ ডেকে পাঠানো হয়। এর পর থেকে ভবনের গেটে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। রাষ্ট্রদূতকে বের করে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মিয়ানমারের লোকজন লন্ডনের কেন্দ্রে দূতাবাস ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ জানাতে শুরু করে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে রাষ্ট্রদূত যে দেশে কাজ করছিলেন সেদেশকে জানানোর পর ওই রাষ্ট্রদূতের চাকরি আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে যায়। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে তারা এসংক্রান্ত নোটিস পেয়েছে, এবং "মিয়ানমার সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে।" উপ-রাষ্ট্রদূত চিট উইনকে লন্ডনের শার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রাষ্ট্রদূতের অনুপস্থিতে শার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার দূতাবাসের প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। আরো পড়তে পারেন: মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাত্র ৮টি দেশ মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হলো সাত বছরের শিশু মিয়ানমারে আটক হওয়া বিবিসির সাংবাদিক মুক্তি পেয়েছেন ব্রিটেনে পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, "কাউকে এই দায়িত্ব দেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো নোটিশ তারা এখনও পাননি।" জ জোয়া মিন বলছেন, "তার দেওয়া বক্তব্য দেশের সঙ্গে কোনো ধরনের প্রতারণা নয়।" তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে তিনি বরং "মধ্যবর্তী স্থানে" অবস্থান নিয়েছেন। জবাবে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাকে দেশে ফেরত যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেই আদেশ উপেক্ষা করে তিনি লন্ডনেই থেকে গেছেন। |
লন্ডনে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়ার পর বুধবার তিনি ভবনের বাইরে রাস্তায় তার গাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। |
বাংলাদেশে প্রভাব বাড়াতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে চীন চীনের দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মৌখিকভাবে এই বার্তা দেয়া হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে। এখানে তাইওয়ানের সঙ্গে আলাদা আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের কোন বিষয় নেই। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ''চীনের দূতাবাস থেকে মৌখিকভাবে টেলিফোন করে তাদের মনোঃকষ্টের বিষয়টি জানিয়েছে। তারা পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি যে, বাংলাদেশ এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে, সেই দৃষ্টিভঙ্গির কোন পরিবর্তন হয়নি।'' তিনি জানান, ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তারা জানতে পেরেছেন, বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে তারা গিয়েছিলেন। চীনের দূতাবাসকেও এই তথ্য জানানো হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। আরো পড়ুন: বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব: নেপথ্যে কী? চীন ও ইরানের যে চুক্তি বদলে দিতে পারে এশিয়ার ভূ-রাজনীতি চীনের সহায়তায় তিস্তার পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে কী থাকছে? যা ঘটেছিল গত ৩১শে অগাস্ট ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেশ কিছু মেডিকেল সামগ্রী প্রদান করে তাইওয়ান। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, বাণিজ্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তিন মন্ত্রী এবং তিন সচিব। তাইওয়ান এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান এক লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, ১৬০০ এন-৯৫ মাস্ক, ২০ হাজার কাপড়ের মাস্ক, ১০ হাজার ফেস শিল্ড, পিপিই, গগলস, দুই সেট ভেন্টিলেটর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করে। তাইওয়ানের আধা-সরকারি অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশে তাইওয়ানের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে কাজ করে। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা তিন মন্ত্রীর একজন, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''তাইওয়ানের কাছ থেকে উপহার সামগ্রী নেয়া হচ্ছে সেটা আমরা জানতাম না। আমাদের বলা হয়েছিল, ওয়ালটন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কিছু উপহার সামগ্রী দেবে। হেলথ মিনিস্ট্রি এটার আয়োজন করেছিল।'' ''ওখানে গিয়ে আমরা শুনলাম, তাইওয়ান থেকে ওনাদের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। এর বেশি আমাদের জানাও ছিল না, আমরা জানতামও না যে এখানে তাইওয়ানের কোন ব্যাপার আছে।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করলেন সৌদি বাদশাহ লাদাখে চীনের সৈন্যরা আবারও সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে: ভারত ইউএই-ইসরায়েলের মধ্যে প্রথম ‘ঐতিহাসিক‘ ফ্লাইট সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্কে হঠাৎ অবনতি, কাশ্মীরই একমাত্র কারণ নয় সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন কাজে চীন অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্কে কী প্রভাব পড়তে পারে? চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন মুন্সি ফয়েজ আহমেদ। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার একটি বিশেষ শর্ত হলো, এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করতে হয়। সেটার ব্যতিক্রম করলে চীন সেটা খুশি মনে মেনে নেয় না। বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ যখন 'এক চীন' নীতির কথা বলে, সেটা তারা মেনে চলে। তিনি জানান, অনেক শক্তিধর দেশ হয়তো ব্যতিক্রম করে, কিন্তু সেখানেও চীন যে খুশি হয় না, সেটা জানাতে তারা দ্বিধা করে না। ''তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে কোন দেশকে চীন বাধা দেয় না, সেটা তাদের নীতি নয়। কিন্তু তারা চায়, তাইওয়ান যে একটি আলাদা রাষ্ট্র নয়, সেটা যেন খেয়াল রাখা হয়। সেরকম কোন সম্পর্ক যেন গড়ে তোলা না হয়।'' উপহার সামগ্রীর ওই অনুষ্ঠানের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তিনজন মন্ত্রী গিয়েছেন, সেটা হয়তো চীনের ভালো লাগবে না। সেটা তারা প্রকাশ করবে স্বাভাবিক। ''আসলে এটা কোন স্বীকৃতিও নয়। হয়তো একটা ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ আছে। তবে আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের দিক থেকে এ ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। কারণ তাইওয়ানকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেয়ার বিষয় কোন কোন চিন্তাভাবনা এই সরকারের নেই। তবে কোথায় সীমারেখা, সেটা সম্পর্কে হয়তো সম্যক ধারণা নাও থাকতে পারে।'' ''আমরা হয়তো এমন কিছু করে ফেলতে পারি, যেটা তাদের দৃষ্টিতে ঠিক নয়। সুতরাং এসব ব্যাপারে ভবিষ্যতে আমাদের আরো সতর্ক থাকা দরকার।'' তিনি বলছেন। |
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় তাইওয়ানের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ করার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে টেলিফোন করে নিজেদের দুঃখ পাওয়ার কথা জানিয়েছে চীন। |
কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভসহ দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আহবান জানিয়েছেন। সিদ্ধান্ত এতোদিনেও বাস্তবায়িত না হওয়ায় সেটি সরকারের কোন কৌশল কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। অধ্যাপক সুলতানা বলেন, "সরকারে যারা থাকেন তারাই তো কৌশলী হন। হয়ত বলে ফেলেছেন, এখন হয়তো উনি (প্রধানমন্ত্রী) ভাবছেন যদি এটা বাস্তবায়ন হয়, তাহলে দুইটা পক্ষ হয়েতো মুখোমুখি হয়ে যাবে। সেটা আমার বিশ্লেষণ।'' ''ভাবছে একদিকে হয়তো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বা আত্নীয়-স্বজন যারা আছে তারা দাঁড়িয়ে যাবে, অন্যদিকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী যারা আছে তারা মুখোমুখি হয়ে যাবে। হয়ত এটা তাদের মাথায় আছে।" তিনি বলেন সামনে নির্বাচন আছে, ''তাই হয়ত এই ব্যাপারটা তারা ঘাঁটাতে চাইছেন না।'' নির্বাচনের বছরে কোটার বিষয়টি নিয়ে সরকার একটা কৌশলী ভূমিকা নিতে চাইছে বলে তিনি মনে করেন। তবে তিনি বলেন যেহেতু সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন - ''যে সংসদ থেকে দেশের জন্য নানা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়, তাই আমার মনে হয় এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা উচিত। শিক্ষার্থীরা বলছেন প্রজ্ঞাপন জারির জন্য একমাস সময় নেয়া হয়েছিল যা ৭ই মে পার হয়ে গেছে। তাদের এই দাবি নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ''প্রধানমন্ত্রী যখন সংসদে এই সিদ্ধান্তের কথা বলেছিলেন তখন তিনি ৭ই মের কথা বলেছিলেন বলে আমার মনে পড়ে না, কারণ আমি সেদিন সংসদে ছিলাম, তাঁর বক্তব্য শুনেছি।'' বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: কোটা পদ্ধতি বাতিল: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'কোটা বাতিল নিয়ে কোন আফসোস থাকবে না' চাকরিতে কোটাঃ কী আছে বাংলাদেশের আইনে? গত ১৬ই এপ্রিল কোটা আন্দোলনের নেতাদের সংবাদ সম্মেলন । মি: ইমাম বলেন, আন্দোলনরতরা সবাই যদি শিক্ষার্থী হয়, তাহলে তাদের মধ্যে একটা শিষ্টাচার থাকা উচিত, ''আমি মনে করি সরকারকে ছাত্রদের পক্ষ থেকে আলটিমেটাম দেওয়া শিষ্টাচার বহির্ভূত।'' তিনি মনে করেন নির্বাচনের আগে এর পেছনে ''অনেক রাজনৈতিক অঙ্ক কষার বিষয় আছে এবং কষাও হচ্ছে।'' মি: ইমাম বলেন, ''সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই বলছি যারা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব যারা দিচ্ছে তাদের অধিকাংশই ছাত্র শিবিরের।'' গতমাসে কোটা সংস্কার নিয়ে যখন দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তুঙ্গে, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছিলেন কোন কোটাই থাকবে না। এরপর কিছুদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আবার বলেছেন, কোটা বাতিল হয়ে গেছে এবং এনিয়ে হা-হুতাশ করে লাভ নেই। কিন্তু কয়েকদিন আগে মন্ত্রীপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, কোটা নিয়ে কোন অগ্রগতি নেই এবং এ বিষয়ে কোন দিকনির্দেশনাও নেই। এইচ টি ইমাম বলেছেন বিষয়টি দেখার জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে এবং বিষয়টিতে সময় লাগবে। কিন্তু এর দুদিন পরেই জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সচিব সাংবাদিকদের বলেছেন কোটা বাতিল বা সংস্কার করতে একটি কমিটি গঠনের রূপরেখা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে। দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। আন্দোলনরত একজন শিক্ষার্থী মিস মৌসুমি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "আপনি জানেন সামনে রোজা, কিন্তু রোজার মধ্যেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রজ্ঞাপন না হওযা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল আন্দোলন চলবে।" তবে তিনি বলেন শিক্ষার্থীরা ''অহিংস আন্দোলন করবে এবং তা হবে মূলত অবস্থান কর্মসূচি''। পরবর্তীতে তারা সড়ক অবরোধ, ধর্মঘট বা ক্লাস বন্ধ করার মত কর্মসূচি দেবেন কিনা সে বিষয়েও শিগগিরিই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মিস মৌসুমি। |
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছে সিদ্ধান্ত ঘোষণার একমাস পরেও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি না হওয়ার বিষয়টি হতাশাজনক। |
মালি-তে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সমর্থকরা রাস্তায় উল্লাস করছেন। প্রতিবেশী দেশ নিজের-এ নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগে একটি ক্যু'র প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন: আফ্রিকায় সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা কি বাড়ছে? বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: ক্যু বা সামরিক অভ্যুত্থান আসলে কী? এর একটি সংজ্ঞা হচ্ছে, সামরিক বাহিনী (বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাহায্যে) অবৈধভাবে এবং প্রকাশ্যে কোন ক্ষমতাসীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা। যুক্তরাষ্ট্রের দু'জন গবেষক জনাথান পাওয়েল এবং ক্লেটন থাইন দেখতে পেয়েছেন ১৯৫০-এর পর থেকে আফ্রিকার দেশগুলিতে ২০০ বারেরও বেশি ক্যু'র প্রচেষ্টা ঘটেছে। এদের মধ্যে অর্ধেক সফল হয়েছে, অর্থাৎ এসব প্রচেষ্টা অন্তত সাতদিন স্থায়ী ছিল। এর মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বারকিনা ফাসোতে সবচেয়ে বেশি সফল অভ্যুত্থান ঘটেছে। সে দেশে সাতটি ক্যু'র মধ্যে মাত্র একটি ব্যর্থ হয়েছে। কোন কোন সময় অভ্যুত্থানকারীরা নিজেরা একে অভ্যুত্থান বলতে রাজি হয়না। যেমন, জিম্বাবুয়েতে ২০১৭ সালে যে সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছিল তার মাধ্যমে রবার্ট মুগাবের ৩৭-বছরের শাসনের অবসান ঘটে। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট মুগাবের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী পথে নামার পর মানুষের উল্লাস। এই ক্যু'র একজন নেতা মেজর জেনারেল সিবুসিসো ময়ো সে সময় টেলিভিশনে পর্দায় পুরোপুরিভাবে সামরিক অভ্যুত্থানের কথা অস্বীকার করেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চাদ-এর নেতা ইদ্রিস ডেবি'র মৃত্যু হলে সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে তার ছেলেকে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়ে দেয়। তার বিরোধীরা একে 'পরিবারতন্ত্রের ক্যু' বলে বর্ণনা করেছে। "বৈধতা পাওয়ার জন্য অভ্যুত্থানের নেতারা তাদের এসব কাজকে তারা অভ্যুত্থান বলতে নারাজ," বলছেন জনাথান পাওয়েল। আফ্রিকায় অভ্যুত্থানের সংখ্যা কী বেড়েছে, না কমেছে? উনিশশো ষাট থেকে ২০০০ পর্যন্ত চার দশকে আফ্রিকায় অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে একই ছিল - গড়ে প্রতি বছর চারটি করে। এরপর থেকে এই সংখ্যা কমতে শুরু করে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত দুই দশকে সেনাবাহিনীর ক্যু'র সংখ্যা ছিল প্রতিবছর গড়ে দুটি করে। চাদ-এর নতুন নেতা মাহামাত ইদ্রিস ডেবি, যিনি তার বাবার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। স্বাধীনতার পর থেকে আফ্রিকার দেশগুলোতে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ ছিল সে কারণে এধরনের অভ্যুত্থান অস্বাভাবিক না বলে জনাথান পাওয়েল বলছেন। "আফ্রিকার যেসব দেশে অভ্যুত্থান ঘটেছে সেগুলোর অবস্থার মধ্যে মিল রয়েছে - দারিদ্র, দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি। কোন দেশে যখন একবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে, সেই দেশে এটা বার বার ঘটতে থাকে।" আরো পড়তে পারেন: আফ্রিকার কোন্ দেশে সবচেয়ে বেশি সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে? বারকিনা ফাসোতে বহুবার ক্যু হয়েছে। এব্যাপারে সুদান রয়েছে সবার আগে। সে দেশে মোট ১৫টি সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে - যার মধ্যে পাঁচটি ক্যু ছিল সফল। সুদানে সর্বশেষ অভ্যুত্থানের ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৯ সালে। দীর্ঘ গণআন্দোলনের পর এই অভ্যুত্থানে ওমর আল-বশিরের সরকারের পতন ঘটে। মি. বশির অবশ্য নিজেও ১৯৮৯ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন। গ্যাবনে সেনাবাহিনী ক্যু করার ঘোষণা দিচ্ছে। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে সারা বিশ্বে যে ক'টি সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে, দুটি বাদে তার সবই ঘটেছে আফ্রিকার দেশগুলিতে। শুধু তুরস্ক (২০১৬ সালে) এবং মিয়ানমারের (২০২১) ক্যু ছিল আফ্রিকার বাইরে। সার্বিকভাবে যে কোন মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে আফ্রিকাতে। এর পরের সারিতে রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। ঐ অঞ্চলে মোট ৯৫টি ক্যু'র প্রচেষ্টা হয়েছে, তার মধ্যে ৪০টি ছিল সফল। |
স্বাধীনতার পর থেকেই আফ্রিকার দেশগুলোতে নিয়মিতভাবে ক্যু বা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে আসছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী তার ক্ষমতা ব্যবহার করছে, মালির সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান তারই সর্ব-সম্প্রতি উদাহরণ। সে দেশে এক বছরের মধ্যে দু'বার সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে। |
সানি লিওন: "আমি সময়ের সঙ্গে অনেক বদলে গেছি" উত্তরে সানি লিওন বলছেন, "একটাই মিল দুজনের - গাটস।" 'গাটস' বা এই হিম্মৎ দেখতে পাচ্ছিলাম তাঁর চাল, চলন, চেহারা আর কথাবার্তায়, যখন তিনি বিবিসিকে সাক্ষাতকার দেওয়ার জন্য মুম্বাইয়ের একটা হোটেলে আমার মুখোমুখি হয়েছিলেন। ট্রেলারের ওই দৃশ্যটা, যেখানে সাংবাদিক একজন পর্ণস্টারের সঙ্গে একজন যৌনকর্মীর ফারাক জানতে চেয়েছিলেন, সেই অংশটা শ্যুট করা বেশ কঠিন ছিল সানির পক্ষে। তিনি বলছিলেন, "প্রশ্নটা খুব খারাপ। কিন্তু ওই অংশটা বাদ দিতে চাই নি আমি। কারণ এই প্রশ্নটা তো সাধারণ মানুষের মধ্যে আছেই! আমিও জবাবটা দিতে চেয়েছিলাম।" पोर्न स्टार की इमेज पर क्या कहती हैं सनीलियोनी সানি লিওনের নাম গত পাঁচ বছর ধরে ভারতে সবথেকে বেশী গুগল করা হয়েছে। মানুষ তাঁকে দেখতে চান, তাঁর সম্বন্ধে জানতে চান। কিন্তু বেশীরভাগ মানুষই তাঁর সম্বন্ধে আগে থেকেই একটা মতামত তৈরী করে রেখেছেন নিজের মনে। বিবিসি হিন্দির দিব্যা আর্য্যার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন সানি লিওন সানিও মনে করেন যে তাঁর সম্বন্ধে মানুষ যেটা মনে করে, সেটার কারণ তিনি নিজেই। "আমার চিন্তা-ভাবনা আর জীবন নিয়ে আমি নিজের কাছে একদম পরিষ্কার। কিন্তু মানুষ আমাকে সবসময়েই আমার ছেড়ে আসা জীবন, ছেড়ে আসা পেশার সঙ্গে এক করে দেখতে চায়। এটা তাঁদের ভুল নয়। কিন্তু এটাও বুঝতে হবে যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজেও বদলে গেছি। আশা করব এই বদলে যাওয়া মানুষটাকে সবাই বুঝতে পারবেন," বলছিলেন সানি লিওন। বলিউডের 'আইটেম নাম্বার' নামে পরিচিত যে নাচ-গানের চরিত্রগুলো থাকে, সেসবে বেশ কিছুদিন অভিনয় করার পরে এখন সানি সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসাবেও কাজ করছেন। সানি লিওনের আসল নাম করণজিৎ কৌর। এই নামটা ব্যবহার করায় শিখ ধর্মের শীর্ষ সংগঠন শিরোমণি গুরুদোয়ারা প্রবন্ধক কমিটি আপত্তি তুলেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল 'কৌর' পদবীটা শিখ ধর্মে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে সানির মতো একজন ব্যক্তি, যিনি পর্ণ ফিল্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁর জীবনী নিয়ে তৈরী ওয়েব সিরিজে ওই পদবী ব্যবহার করা অনুচিত। সানির কাছে যখন এই প্রসঙ্গটা তুললাম, তখন তিনি বলছিলেন, "এই নামটাই তো তাঁর পাসপোর্টে রয়েছে! বাবা-মায়ের দেওয়া নাম এটা। ওটাই তো আমার আসল নাম। কাজের ক্ষেত্রে সানি লিওনি নামটা ব্যবহার করি।" সানি লিওনের আশা একদিন মানুষ তার পরিবর্তনটা বুঝতে পারবে পর্ণ ফিল্মে কাজের জন্য কখনই লজ্জিত মনে করেন নি সানি। এখন যেহেতু তিনি ভারতে থাকেন, তাই ভারতের পর্ণ ইন্ডাস্ট্রি নিয়েও কথা হল তাঁর সঙ্গে। ভারতে ব্যক্তি পরিসরে পর্ণ ফিল্ম দেখা বেআইনী নয়, তবে এধরণের ভিডিও বা ছবি তৈরী করা বা শেয়ার করা আইন বিরুদ্ধ। পৃথিবীর সবথেকে বড় পর্ণ ওয়েবসাইট 'পর্ণহাব' এর তথ্য অনুযায়ী আমেরিকা, ব্রিটেন আর কানাডার পরেই ভারতেই সবথেকে বেশী পর্ণ দেখা হয়ে থাকে। তাই জিজ্ঞাসা করেছিলাম, "ভারতেও কি আইনসম্মতভাবে পর্ণ ইন্ডাস্ট্রি গড়ে ওঠা উচিত?" একমুহুর্তও না ভেবে জবাব দিলেন, "এটা তো আমি ঠিক করব না। ভারত সরকার আর এখানকার মানুষ যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই হবে!" সানি লিওন সানি এখন তিন সন্তানের মা। একটি মেয়েকে তিনি দত্তক নিয়েছেন, আর সারোগেসির মাধ্যমে তাঁর দুই ছেলে হয়েছে। তিনি মনে করেন যে তাঁর সন্তানরা অনেক উঁচুতে উঠুক, এমনকি মঙ্গলগ্রহে যাক তারা, এটাও চান। তবে নিজের ইচ্ছা বা সিদ্ধান্ত কখনই ছেলেমেয়েদের ওপরে চাপিয়ে দিতে চান না তিনি। যেরকমটা তাঁর বাবা-মা-ও অখুশি ছিলেন পর্ণ ফিল্মে তাঁর কাজ করা নিয়ে। কিন্তু কখনই তাঁদের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ সানির ওপরে চাপিয়ে দেন নি তাঁরা। নিজের সন্তানদের সঙ্গে সানি লিওন বাচ্চাদের কথাই যখন উঠল, সেই প্রসঙ্গেই শেষ প্রশ্নটা করেছিলাম। যেটার বিষয় সানি লিওন, কিন্তু তার জবাবটা চেয়েছিলাম করণজিৎ কৌরের কাছ থে "আপনার ছেড়ে আসা প্রফেশনের ব্যাপারে নিজের সন্তানদের বোঝাতে পারবেন?" তাঁর মুখের ভাব দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে বেশ অস্বচ্ছন্দ বোধ করছেন প্রশ্নটাতে। যদিও তিনি নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিজেই নিয়েছেন, কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে যে ধারণাটা তৈরী হয়ে গেছে, সেটাকে নিয়ে জীবন কাটানো যে বেশ কঠিন! তবে, প্রথমেই যে 'গাটস্' বা হিম্মতের কথা লিখেছিলাম, শেষ প্রশ্নের উত্তরটাও সেই হিম্মতের সঙ্গেই দিলেন তিনি। বললেন, "ওই বিষয়টা নিয়ে এখনও ভাবি নি। মা হওয়ার একটা স্বপ্ন ছিল বহুদিন ধরে। এখন সেই মাতৃত্বের স্বাদ নিচ্ছি প্রাণভরে। যখন সময় আসবে তখন নিশ্চই নিজের ব্যাপারে সত্যটাই তুলে ধরব বাচ্চাদের কাছে।"কে। |
সানি লিওনের জীবনীর ওপরে নির্ভর করে তৈরী ওয়েব-সিরিজ 'করণজিৎ কৌর'-এর ট্রেলারে একটা দৃশ্য আছে, যেখানে এক সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করছেন, "একজন যৌনকর্মী এবং একজন পর্ণস্টারের মধ্যে ফারাকটা ঠিক কী?" |
এক ছাত্রীকে হাত-পা বেধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা কোচিং সেন্টার মালিক র্যাবের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়েছে। র্যাবের পক্ষ থেকে একটি ক্ষুদে বার্তায় জানানো হয়েছে, র্যাব-৭ এর একটি টহল দলের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে রবিবার রাতে ওই ব্যক্তি নিহত হন। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার উত্তর আমিরাবাদের একটি বাসায় ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আরো পড়ুন: ধর্ষণে অভিযুক্ত ২জনের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা এক বছরে বাংলাদেশে ১ হাজারেরও বেশি ধর্ষণ স্বামীর হাতে ধর্ষণ: বাংলাদেশে এক নারীর অভিজ্ঞতা লোহাগাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, আমিরাবাদের একটি কোচিং সেন্টারে একজন ছাত্রী পড়াশোনা করতেন। গত ১২ই এপ্রিল বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে সেই ছাত্রীর বাসায় গিয়ে তাকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করেন কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও শিক্ষক। পরে ছাত্রীর মা ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পরে কোচিং সেন্টারটি বন্ধ করে দিয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক পালিয়ে যান, বলছে পুলিশ। র্যাব দাবি করেছে, ঘটনাস্থল থেকে দুইটি অস্ত্র ও ২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবে, বাংলাদেশে প্রতিবছর এক হাজারের বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে এর আগেও আলোচিত কয়েকটি ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে নিহত' হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ বছরের জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে গণ ধর্ষণের অভিযোগ থাকা একজন ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে কথিত 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হন। মার্চ মাসে যশোরে শিশু ধর্ষণ মামলার একজন অভিযুক্ত একইভাবে নিহত হয়। জানুয়ারি মাসে সাভার ও ঝালকাঠিতে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা তিনজন ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাদের গলায় ঝোলানো চিরকুটে লেখা ছিল, ''আমার নাম......মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ করার কারণে আমার এই পরিণতি।'' এসব হত্যার জন্য 'হারকিউলিস' নাম দাবি করা হলেও, তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ২০১৮ সালের এপ্রিলে সাতক্ষীরার শিশু ধর্ষণ মামলার একজন অভিযুক্ত পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ফখরুল ছাড়া বাকীদের শপথ ঠেকাতে পারবে বিএনপি? সকালের নাশতা বাদ দিয়ে কি মৃত্যু ডেকে আনছেন? ইহুদিবিদ্বেষী খোলা চিঠির পর সিনাগগে বন্দুক হামলা যে ব্যক্তিকে ছয় বছর বয়স থেকে আটকে রেখেছে চীন |
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে এক ছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা কোচিং সেন্টার মালিক র্যাবের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়েছেন, বলছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। |
সাইফুল করিম, মাদক সাম্রাজ্যের একাংশের বেতাজ বাদশা। তিনি প্রায় নয় মাস সময় বিদেশে পালিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশে ফেরার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ তালিকায় থাকা আসামী মি. ইসলাম নিহত হন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমানা প্রাচীরের শেষ প্রান্তে এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার মৃত্যু হয় যে জায়গাটিতে সেটি নাফ নদীর পারে। একসময় এই নদী থেকেই শুরু হয়েছিল সাইফুল ইসলামের অপরাধ জীবন। গডফাদার জীবনের সূচনা যেভাবে তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। আরও পড়তে পারেন: মাদক নিয়ন্ত্রণ: সরকারি পদক্ষেপ কি কাজে লাগছেনা? বদির তিন ভাইসহ ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ীর আত্মসমর্পণ 'কান্না করে, আর বলে বাংলাদেশে কোন বিচার নাই' কক্সবাজারের সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ জানাচ্ছেন, ১৯৯৫ সালে টেকনাফ স্থলবন্দর চালু হওয়ার পর সাইফুল করিম ঐ বন্দরে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায়িক সাফল্যের হাত ধরে তিনি একাধিকবার সেরা করদাতা বা সিআইপি'র পুরষ্কারও পান। পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে তোফায়েল আহমেদ জানান, ১৯৯৭ সালে নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবার চালান ঢোকে। সেই চালানটি সাইফুল করিম আনেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন। এরপর থেকে তার তৈরি ইয়াবা নেটওয়ার্কটি নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকে। তিনি বনে যান ইয়াবা সাম্রাজ্যের দুই অধিপতিদের একজন। অন্য ইয়াবা গডফাদার হলেন টেকনাফের বিতর্কিত সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদী, তোফায়েল আহমেদ জানান। "এই ইয়াবা সাম্রাজ্য গড়ে তোলার কাজে সাইফুল করিমকে সহায়তা দেন তার মামা আব্দুর রহিম যিনি মিয়ানমারের বাসিন্দা," বলছেন তিনি, "সীমান্তের ওপারে যে ৩৭টি ইয়াবা কারখানা রয়েছে আব্দুর রহিম সেগুলোর প্রধান ডিলার।" এসব তথ্য মি: আহমেদ জেনেছেন পুলিশ সূত্রে। র্যাবের হাতে আটক ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। "মামা ইয়াবা উৎপাদনের দিকটি দেখতো আর ভাগ্নে সেগুলো তার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতো," পুলিশকে উদ্ধৃত করে জানান তোফায়েল আহমেদ। টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বিবিসিকে জানান, সাইফুল করিম বৃহস্পতিবার বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর পুলিশ তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে মিয়ানমার থেকে আনা ইয়াবার একটি বড় চালান নাফ নদীর পারে মজুত রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাইফুল করিমকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে, পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, অস্ত্রধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে সাইফুল করিম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এসময় পুলিশের ক'জন সদস্যও আহত হন বলে জানান মি. দাস। গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের উপস্থিতিতে যে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন, সাইফুল করিম তাতে যোগ দেননি। গত বছর মে মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তৈরি ৭৩ জন শীর্ষ ইয়াবা চোরাকারবারি ও ব্যবসায়ীর তালিকায় সাইফুল করিমের নাম ছিল দ্বিতীয়। তালিকার শীর্ষে রয়েছে আবদুর রহমান বদির নাম। বাংলাদেশে ইয়াবার বিস্তার। একটি মৃত্যু ও কিছু প্রশ্ন সাইফুল করিমের মৃত্যুর পটভূমি নিয়ে কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। টেকনাফ পুলিশ দাবি করছে, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৩০শে মে'র রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং সেই রাতেই তিনি নিহত হন। কিন্তু বিবিসি বাংলার তরফ থেকে সাইফুল করিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আসন্ন একটি আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে তাকে যোগ দিতে দেয়া হবে বলে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্বাসের পর তিনি দেশে ফিরতে রাজি হন। তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার ৩০শে মে নয়, ২৭শে মে'র রাতে এক ফ্লাইটে মি. করিম ঢাকায় আসেন। তার পরিবারের কিছু সদস্য এবং ক'জন পুলিশ কর্মকর্তা এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। তারা বলছেন, ঢাকায় পৌঁছানোর পর একটি সেফ-হাউজে সরিয়ে নেয়া হবে বলে তাকে অপেক্ষমাণ গাড়িতে তোলা হয়। তারপর থেকে তার সাথে পরিবারের কোন যোগাযোগ ছিল না। এরকম একজন তালিকাভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ আসামীকে নিয়ে পুলিশ কেন রাতের বেলায় অভিযানে বের হলো, বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে আসামীকে নিয়ে ইয়াবার চালান আটক করার জন্যই তারা ঐ অভিযানটি চালান। আইন মেনেই এই কাজ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। বিবিসিতে অন্যান্য খবর: কারাবন্দির মৃত্যুর জবাব চায় মানবাধিকার কমিশন নারীদের খাটো স্কার্ট পরতে টাকা দেয় যে কোম্পানি এবার ফিনিশিংয়ের অপেক্ষায় মুশফিকুর রহিম |
বাংলাদেশের পুলিশ বলছে, সে দেশে মাদক ইয়াবা সাম্রাজ্যের অন্যতম গডফাদার সাইফুল করিম কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। |
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চিত্র কিন্তু ততক্ষণে ঢাকার হাসপাতালগুলো সয়লাব হয়ে পড়েছিলো ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীতে, এমনকি জ্বরে আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া শুরু হয়েছিলো ঢাকার বাইরে কয়েকটি জেলা ও উপজেলাতেও। পাশাপাশি বাজারে উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে মশারি, কয়েল বা অডোমাসের মতো পরিচিত মশা প্রতিরোধী সামগ্রীর দাম। এমন পরিস্থিতিতে ভয় আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। জুলাইয়ের শুরু থেকেই পত্রপত্রিকার খবরে জায়গা করে নিয়েছিলো এডিস মশা আর ডেঙ্গু। কিন্তু সরকারি হিসেবেই সব রেকর্ড ভঙ্গ হয় ৭ই অগাস্ট যেদিন একদিনেই নতুন রোগীর সংখ্যা ছিলো প্রায় আড়াই হাজার। সব মিলিয়ে ২২ই অগাস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন জেবা মাহবুবা। তিনি বলছেন ঈদের আগের ওই সময়টাতে আতঙ্ক কীভাবে ঘিরে ধরেছিলো তাকে। "নিউজগুলোতে দেখতাম প্রচুর মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, মানুষ মারাও যাচ্ছে। বাচ্চারা স্কুলে যেতো ভয় লাগতো যে কখন মশা কামড়ায়। আমাদের এখানে কনস্ট্রাকশন কাজ হচ্ছে অনেক, পানি জমে থাকে,'' তিনি বলেন। ''বাচ্চারা স্কুল থেকে এসে যদি বলতে কোথায় জ্বলছে,শুনেই ভয় লাগতো মশা কামড়ালো কিনা। বাসার সব গাছ মাটিতে রেখে দিলাম। দুটার পর সব নেট লাগিয়ে দেই। কিছুক্ষণ পর পর স্প্রে করি। কারণ কখন কোথায় এডিস মশা তাতো আমাদের জানা নেই"। মূলত ঈদের আগে থেকেই ভয় আর আতঙ্কে হাসপাতালগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় শুরু হয়। আবার ঈদের ছুটির পর বেশি আক্রান্ত হবার খবর আসতে থাকে ঢাকার বাইরে থেকে। পেশায় শিক্ষক চট্টগ্রামের সেগুফতা পারভীন বলছেন ডেঙ্গু আতঙ্ক সবার মধ্যেই একটা বড় মানসিক চাপ তৈরি করেছে এবার। "বাচ্চা পর্যন্ত ভীত হয়ে পড়েছিলো। ছোট বাচ্চা পর্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে বলছিলো দরজা বন্ধ রাখো। ঘর এমন রাখো। তারাও খুব সতর্ক হয়ে পড়েছিলো। এটা আসলে মনের উপর একটা বড় চাপ তৈরি করেছে। ডেঙ্গু আগেও হতো, এটা নতুন ইস্যু ছিলোনা। কিন্তু এবার এতোটা ছড়ালো কিভাবে? বিষয় হলো এটা।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ১০টি তথ্য জেনে নিন ঢাকায় এডিস মশা নিধনে ব্যর্থতার ৬টি কারণ ডেঙ্গু: 'সরকারের পরিকল্পনায় ঘাটতি আছে' জেবা মাহবুবা ডেঙ্গুকে ঘিরে জনমনে এই ভয় আর আতঙ্ক এতো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিলো যে সরকারের উদ্যোগে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা জায়গা ঠিক করা হয় এবং হাসপাতাল ক্লিনিকে সংকট দেখা দেয় টেস্ট কীটের। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা চায় বাংলাদেশ। সারাদেশে সিভিল সার্জনদের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত নির্দেশনা ও সামগ্রী পাঠানো হয়। এর মধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে ঢাকায়। এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানার ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু উনিশ বছর ধরে বর্ষা মৌসুমের পর ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর সংখ্যা কমবেশি দেখা গেলেও এবার কার ব্যর্থতায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির এমন অবনতি হলো? মশা বিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কবিরুল বাশার বলছেন বড় ধরণের ব্যবস্থাপনা সংকট আর মানুষের অসচেতনতাই এবারের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। "চারটি উপাদান- পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, বায়োলজিক্যাল ও কেমিক্যাল কন্ট্রোল ও কমিউনিটি ইনভলবমেন্ট- এ চারটি একসাথে না করলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আসবেনা। এজন্য সারা বছর কার্যক্রম থাকতে হবে। শুধু সিজন আসলে কাজ করলে হবেনা। আমাদের যে পরিকল্পনা তাতে এ চারটি বিষয় একযোগে আসেনি। আবার জনগণেরও যে ব্যর্থতা নেই তাও কিন্তু না"। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাহমুদুর রহমান বলছেন গত বছরই ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত পাওয়া সত্ত্বেও যথাসময়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া আর সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতাই এবারের প্রাদুর্ভাবের কারণ। "নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেই এমন হয়েছে পরিস্থিতি। গত বছরই জ্বরের ধরণটা ও তীব্রতা ভিন্ন বলে ইঙ্গিত মিলছিলো। আবার যে ঔষধ আনা হয়েছিলো সেগুলোও কার্যকর ছিলোনা, সেটিও গত বছরেই জানা গিয়েছিলো। এগুলো নিয়ে আগেই পদক্ষেপ নিলে এমন হতোনা পরিস্থিতি"। আবার এতোদিন ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর প্রকোপ খুব একটা না থাকায় এবারেও শুরুতে ঢাকার বাইরের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো ততটা সক্রিয় ছিলোনা। আবার সরকারি ভাবে চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছিলো এবং জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জনদের মাধ্যমে হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের প্রস্তুত করা হয়েছিলো। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ খুব একটা দেখা যায়নি শুরুতে। তবে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার পরেও কি তৎপর হয়েছে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদগুলো? সেটি জানতে কথা বলেছিলাম কুষ্টিয়ার শিরিন আখতারের সাথে। "শুরুর দিকে আমাদের এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ে তৎপরতা দেখা যায়নি। গত ২০/২৫ দিন ধরে ইউনিয়ন কাউন্সিল ও স্থানীয়রা মিলে ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার করছেন। মশার ঔষধও দেয়া হচ্ছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও কাজ চলছে"। কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার ওদিকে বেশ কিছু জেলা শহরের মতো ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে চুয়াডাঙ্গাতেও। এ পর্যন্ত ৭২ জন আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে সেখানে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেনো তারা ডেঙ্গু মোকাবেলায় আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে পারেননি তারা। "ডেঙ্গু পরিস্থিতি এমন হবে আমরা বুঝতে পারিনি। আবার পৌরসভার কর্মকর্তাদের ভিন্ন কর্মসূচির কারণে আমরা কিছুটা সমস্যায় ছিলাম। তবে ডেঙ্গুর বিস্তার দেখে আমি নিজে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছি। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করছি। আমরা যেটা বুঝছি তা হলো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সারা বছর কাজ করতে হবে। তাই এখন যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেগুলো সারা বছর অব্যাহত থাকবে। দুটি কমিটি করছি যারা এলাকাগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার তদারকি করবেন"। তবে ডেঙ্গুকে ঘিরে যে প্রবল সমালোচনা হয়েছে ঢাকার দুটি সিটি কর্পোরেশনকে নিয়ে তারা কি ভাবছে। এবারের পরিস্থিতি থেকে তারা কি শিক্ষা নিচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন তারা বিশেষজ্ঞদের সাথে। চূয়াডাঙ্গার মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার যে অভিযোগ উঠছে সেটি মানছেন কি-না এবং মানলে সেখান থেকে কি শিক্ষা নিচ্ছেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলছেন অনেকদিন পর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হলো এবার, সে কারণেই নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে সময় লেগেছে তাদের। এখন সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্য তাদের এবং এরপর তারা দৃষ্টি দেবেন ভবিষ্যতের দিকে। "এটা তো অনেক দিন পর হলো। অনেক বছর এ ধরণের পরিস্থিতি হয়নি। এ অবস্থা যেনো আর ভবিষ্যতে হয় এবং যে সময়সীমা ঠিক করেছি নিয়ন্ত্রণের জন্য, যদিও গতিটা ধীর তবুও অল্প অল্প করে ডেঙ্গু কমতে শুরু করেছে। আমরা আশা করি যে সময়সীমা ঠিক করেছি তার মধ্যেই এটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। এরপরই আমরা পাঁচবছর মেয়াদী একটি মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা নিবো । এখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা,যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থা ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞ- সবাইকে নিয়েই আমরা এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে চাই"। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাহমুদুর রহমান ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার দুজনেই বলছেন এবারের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত সমন্বিত একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে না পারলে এডিস মশা সামনে আরও ভোগান্তির যে কারণ হয়ে উঠবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আবার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হলে নগরবাসীকেও পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সচেতন হতে হবে গৃহ ও আবাসভূমিকে মশা মুক্ত রাখার জন্য। |
ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক করতে ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাটাতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঈদ উল আযহার আগে থেকেই বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেছিলো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। |
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে আসামে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই আনা হয়েছে এই বিতর্কিত বিলটি। আর সেটি সোমবার লোকসভায় পেশ করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশ-সহ তিনটি প্রতিবেশী দেশের সংবিধানকে উদ্ধৃত করে আরও বলেছেন, এই দেশগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলেই সেখানে অন্য ধর্মের মানুষরা নিপীড়িত হচ্ছেন। কংগ্রেস-সহ প্রায় সব বিরোধী দলই অবশ্য এই বিলটির তীব্র বিরোধিতা করছে। অনেক বিরোধী এমপি-ই প্রশ্ন তুলছেন শ্রীলঙ্কা থেকে আসা তামিল শরণার্থী বা মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারাই বা কেন ভারতের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন? ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কূটনৈতিকভাবে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন 'শ্রেষ্ঠ সময়' বা 'সোনালি অধ্যায়ে'র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দুই দেশের নেতারা প্রায়ই দাবি করে থাকেন। অথচ ভারতের লোকসভায় আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, এই বিলটি আনতে সরকার বাধ্য হয়েছে তার অন্যতম কারণ সেই বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশেই হিন্দু-বৌদ্ধরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ থেকে আসা লোকরাও এই বিলের সুবিধা পাবেন।" "মাননীয় স্পিকার, সে দেশে কিন্তু নরসংহার থামেনি - একাত্তরের পরও বেছে বেছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।" এমন কী, ইসলামি প্রজাতন্ত্র আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতোই বাংলাদেশেও যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। হায়দ্রাবাদের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি অমিত শাহ পার্লামেন্টে বলেন, "বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২(ক)-তেও বলা আছে, ওই প্রজাতন্ত্রের ধর্ম হবে ইসলাম।" "এই তিনটি দেশে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম বলেই সেখানে মুসলিমদের নির্যাতিত হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না - কিন্তু অন্য ধর্মের মানুষরা অত্যাচারের শিকার হতে পারেন।" তিনি আরও দাবি করেন, সাতচল্লিশে কংগ্রেস যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হতে না-দিত, তাহলে আজ এই বিল আনার কোনও প্রয়োজনই হত না। বিরোধীরা অবশ্য সরকারের এসব যুক্তি একেবারেই মানতে রাজি নন, তারা মনে করছেন এই বিলটির প্রস্তাবনাই আসলে সংবিধানবিরোধী - এবং ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থী। হায়দ্রাবাদের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি যেমন বিবিসিকে বলেন, "এর মাধ্যমে সরকার তো দ্বিজাতি তত্ত্বকেই নতুন করে সামনে নিয়ে আসছে।" দিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বিক্ষোভ "জিন্নাহ্-র যে মতবাদ আমরা প্রত্যাখ্যান করেছিলাম, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দিতে চেয়ে তারা সেটাকেই তো আবার ফিরিয়ে আনতে চাইছে।" "মুসলিমদের কি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানানোর চেষ্টা হচ্ছে? আর ধর্মীয় নির্যাতনের কথাই যদি বলা হয়, তাহলে মিয়ানমার বা সিরিয়া থেকে নির্যাতিত হয়ে এলেই বা কেন নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে না?", বলছেন মি ওয়াইসি। অন্যান্য খবর: রোহিঙ্গা গণহত্যাঃ মিয়ানমারকে বয়কটের আহ্বান ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে মন্তব্য: শাজাহান খান যা বলছেন আন্তর্জাতিক খেলাধুলায় রাশিয়া ৪ বছরের জন্য নিষিদ্ধ পাকিস্তানের আহমদিয়া বা শিয়া হাজারাদের মতো সংখ্যালঘু কিংবা শ্রীলঙ্কায় জাতিগত সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা তামিল শরণার্থীরাই বা কেন ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন না, সেই প্রশ্ন তুলছেন বামপন্থীরাও - যারা সরকারের আনা বিলে এদিন দুটি সংশোধনী জমা দিয়েছে। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, "কেন শুধুমাত্র তিনটি দেশ - আমাদের মতে সব প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রেই এই আইন প্রযোজ্য হওয়া উচিত।" "শ্রীলঙ্কা থেকে আসা লক্ষধিক তামিল গত তিরিশ বছর ধরে তামিলনাডু বা ওড়িশার শরণার্থী শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন - মাদ্রাজ হাইকোর্টও তাদের নাগরিকত্ব দিতে বলেছে।" বাংলাদেশের নাসিরনগরে হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় মশাল মিছিল। ২০১৬ "ফলে কেন তারা এই সুবিধা পাবেন না?", প্রশ্ন মি ইয়েচুরির। "আর দ্বিতীয় যে সংশোধনীটি আমরা দিয়েছি তাতে এই বিলে ধর্মের উল্লেখটাই আমরা মুছে দিতে চেয়েছি।" শিবসেনার মতো হিন্দুত্ববাদী দলও এদিন মন্তব্য করেছে, এই বিল ভারতের হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে 'অদৃশ্য দেওয়াল' তুলে দেবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য দাবি করেছেন, এই বিল ভারতে মুসলিমদের কোনও অধিকারই কেড়ে নেবে না - কারণ গোটা বিলে তাদের কথা একবারও উল্লেখই করা হয়নি। |
প্রতিবেশী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না-থামাটাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার অন্যতম প্রধান কারণ বলে ভারতের সরকার আজ পার্লামেন্টে দাবি করেছে। |
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে পুলিশ র্যাবের বিশেষ অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচন কমিশনে ক্ষোভের কথা তুলে ধরে দলটির নেতারা বলেছেন, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী নেতা-কর্মীদের টার্গেট করে এমন অভিযান চালানো হচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দুই দলই একে অপরের বিরুদ্ধে ঢাকায় সন্ত্রাসীদের জড়ো করার অভিযোগ তোলায় তা নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আইন শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীতে আসা লোকজনকে ঢাকায় অবস্থান না করার পরামর্শ দিয়েছে। হঠাৎ করেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত বুধবার ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। ঢাকায় ভোটার নন, কিন্তু গত কিছুদিনের মাঝে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন, তাদের বহিরাগত হিসেবে উল্লেখ করে এই অভিযান অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ফিরে দেখা: যেভাবে হয়েছিল ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন নির্বাচন প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ যাচাই করেনা কমিশন গণতান্ত্রিক দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ: ইকোনমিস্ট নতুন পাঁচ 'স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায়' বাংলাদেশ বিএনপি অভিযোগ করেছে প্রথমদিনে আটককৃতদের অনেকেই বিএনপির নেতা কর্মী। বিএনপির অভিযোগ বিএনপি অভিযোগ করেছে, প্রথমদিনের অভিযানেই দেড়শ জনের মতো আটক করা হয়েছে, তাদের অনেকেই বিএনপির নেতা কর্মী। দলটির একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে দেখা করে এই অভিযান নিয়ে তাদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থেকে বিএনপি নেতা কর্মিদের টার্গেট করে এই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন। "এটা সম্পূর্ণ তাদের অপকৌশল। তাদের মতো করে পুলিশ অভিযান চালাবে। আমাদের নেতাকর্মিদের মনোবল ভেঙ্গে দেবে। ইতিমধ্যেই গত রাতে ঢাকায় আমাদের যাদের বাসা, তাদের অনেকের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ গেছে। অনেককে গ্রেফতার করেছে। অনেকে বাসায় থাকছেন না।" "নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের সহযোগিতা করছে। এই নির্বাচনকে ২০১৮ সালের মতো প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করছে। তারা একেবারে দলীয় নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে সবকিছু।" মি: আলমগীর অভিযোগ করেছেন, "আওয়ামী লীগ সারাদেশ থেকে অনেক লোক ঢাকায় এনেছে।" আওয়ামী লীগের পাল্টা অভিযাোগ সরকার বা আওয়ামী লীগের নেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, নির্বাচনের আগে এ ধরণের অভিযান হয়ে থাকে।সেই অভিযান নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন তোলার পিছনে রাজনৈতিক চিন্তা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। "অন্যান্য নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বহিরাগতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। এটা সব দলের জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু বিএনপি এনিয়ে কেন প্রশ্ন তুলেছে বা আতংকিত হচ্ছে? ধরে নেয়া যায় বিএনপি বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের ক্যাডার এবং নেতাকর্মিদের ঢাকায় এনেছে। যাদেরকে দিয়ে ভোট কেন্দ্রকে প্রভাবিত করতে চায় বা দখল করতে চায়। তাদের এমন ষড়যন্ত্র বানচাল হতে পারে, সেজন্যই তারা এসব প্রশ্ন তুলছে।" আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির সিনিয়র নেতারা কয়েকদিন ধরেই ঢাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের জড়ো করার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন। এমন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের কারণে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে প্রধান দুই দলেরই অনেক নেতাকর্মির সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, উভয়েরই নেতা কর্মিরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকায় এসে তাদের স্ব স্ব দলের প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। এমন প্রেক্ষাপটে বিশেষ অভিযান চালানো হলে তাতে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মির বাসায় হানা দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে কাউকে গ্রেফতারের অভিযোগ নাকচ করেছে পুলিশ রাজনৈতিকভাবে কাউকে গ্রেফতারের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম। তিনি অভিযান সম্পর্কে বলছিলেন, "হোটেলগুলোতে এবং কিছু মেসে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আমরা কিছু মানুষের কাছ থেকে ফোন পাচ্ছি যে, হঠাৎ করে অপরিচিত অনেক লোক এই বাসায় উঠছে, তখন সেখানে আমরা তাদের সাথে কথা বলছি। অনেকে ঢাকায় বসবাস করেন, কিন্তু এখানকার ভোটার না। তাদের কোনো সমস্যা নাই।" তিনি আরও বলেছেন, "যিনি ঢাকার ভোটার নন, আবার এখানে বসবাসও করেন না। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন দলের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য। যেহেতু প্রচারণা শেষ হয়ে গেছে, সুতরাং আমরা তাদের বলবো, তারা যেনো ভোটকেন্দ্র এলাকায় না যান। অথবা তারা যেনো কোনো সভা সমাবেশে না যান।এটা আমরা তাদের সতর্ক করে দেবো। আমরা তাদের গ্রেফতার করছি না।" কিন্তু এই অভিযানে নিরীহ মানুষ হয়রানির মুখে পড়ছে, এমন অভিযোগও উঠছে। একজন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের বক্তব্য হচ্ছে, তারা এই সিটি নির্বাচন নিয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন। তিনি বলছিলেন, "ঢাকা শহরতো বাংলাদেশের রাজধানী। এখানে অনেক মানুষ প্রতিদিন অফিশিয়ালসহ নানান কাজে এসে থাকেন। ফলে নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, বহিরাগত অন্য কোনো উদ্দেশে এসেছে কিনা-তা অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখতে পারে। কিন্তু নিরীহ বা সাথারণ মানুষ যেনো হয়রানির শিকার না হয়।" আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে মনে করছেন, বিএনপি জেলা উপজেলা থেকে নেতা কর্মিদের ঢাকায় এনেছে এবং তারা ভোটের দিনে ভোটকেন্দ্রে তাদের জমায়েত করে কোনো একটা রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। বিএনপির নেতাদেরও অনেকে ভাবছেন, আওয়ামী লীগ তাদের নেতাকর্মি বা জমায়েত দিয়ে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে পারে। দু'পক্ষই বক্তব্যেও এসব প্রকাশ করছেন। ফলে তাদের মাঝে এক ধরণের উত্তেজনা থাকছে। |
বাংলাদেশে ঢাকার দু'টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে পুলিশ র্যাবের বিশেষ অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধীদল বিএনপি। |
উত্তর কোরিয়ার একটি সমুদ্র সৈকতের ছবি। তাদের মধ্যে হওয়া করমর্দন থেকে শুরু করে তাদের যৌথ সমঝোতায় স্বাক্ষর - সবকিছু থেকেই বিশ্লেষকরা দেখার চেষ্টার করছেন এই আলোচনায় আসলে কতোটা কী অর্জিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের ভবিষ্যতের ক্ষেত্রেও বা এই সমঝোতার তাৎপর্য কী? কিন্তু সেদিনের কিছু বিষয় ও ঘটনা ছিল, যা নিয়ে লোকজন প্রচুর কথাবার্তা বলছেন। ঠিক কী ঘটেছিল তখন? ১. সমুদ্র সৈকত প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিচিত ছিলেন একজন প্রপার্টি ব্যবসায়ী হিসেবে। তারপরেও এটি বিস্ময়কর যে কেন তিনি উত্তর কোরিয়ার অপরিচিত সমুদ্র উপকূলের কথা উল্লেখ করেছেন। মি. কিমের সাথে বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, "তাদের (উত্তর কোরিয়া) দারুণ কিছু সমুদ্র সৈকত আছে। তারা যখন সমুদ্রে তাদের কামান থেকে বিস্ফোরণ ঘটায়, তখন আপনারা সেসব দেখতে পান। সেখানে কি দারুণ সব বাড়িঘর বা কন্ডো হতে পারে না?" যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তার নাগরিকদেরকে উত্তর কোরিয়ায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে। এবং বলেছে, যেসব নাগরিক উত্তর কোরিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তারা যেন যাওয়ার আগে উইলের খসড়া করে যান। ২. পোজ বা ভঙ্গি দুই নেতা যখন একসাথে দুপুরের খাবার খেতে যান, মি. ট্রাম্প তখন খাবারের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সকৌতুকে জিজ্ঞেস করেন:"ভালো ছবি পাচ্ছেন, সবাই? যাতে আমাদেরকে সুন্দর, হ্যান্ডসাম এবং চিকন দেখায়?" তবে তার এই কথার অর্থ মনে হয় অনুবাদের কারণে হারিয়ে গিয়েছিল। কারণ মি. কিমের চোখেমুখে তখন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফটোসাংবাদিকদের কাছে জানতে চাচ্ছেন তাদেরকে সুন্দর দেখাচ্ছে কিনা। আরো পড়তে পারেন: প্রিয়াঙ্কার পর এবার এক মুসলিম লেখককে আক্রমণ সৌদি নারীরা এখনও যে ৫টি কাজ করতে পারে না চাঁদ দেখার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় কীভাবে? প্রবাসী আয়ে করারোপ: সরকার মনে করছে চক্রান্ত ৩. ভিডিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিকদেরকে চার মিনিটের একটি ভিডিও দেখানো হয়। এটি খুবই অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। ভিডিওটি ছিল কোরীয় এবং ইংরেজি ভাষায়। সংবাদ সম্মেলনে মি. ট্রাম্প বলেছেন যে এই ভিডিওটি তিনি কিম জং-আনকে দেখিয়েছেন। ভিডিওটিতে এমন কিছু দৃশ্য আর মিউজিক যোগ করা হয়েছে যাতে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। এর ধারাভাষ্য দিচ্ছেন যিনি, নাটকীয় কণ্ঠে তিনি জিজ্ঞেস করছেন: "এই নেতা কি তার দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে কাজ করবেন ... তিনি কি শান্তির সাথে হাত মিলিয়ে সমৃদ্ধি উপভোগ করবেন, যে সমৃদ্ধি তিনি আগে কখনো দেখেননি?" সাংবাদিকদের যে ভিডিওটি দেখানো হয় তার একটি স্থির চিত্র। ৪. দ্য বিস্ট আলোচনার পর মি. ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতাকে তার কালো রঙের লিমুজিন গাড়িটি দেখাবেন। গাড়িটি পরিচিত 'দ্য বিস্ট' নামে। ক্যামেরা তখন দুই নেতাকে অনুসরণ করলো। তারা হেঁটে গেলেন গাড়ির দিকে। মি. কিম খুব অল্প সময়ের জন্যে গাড়ির ভেতরটা দেখলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মি. কিমকে তার গাড়িটি দেখালেন। ৫. কলম সমঝোতায় সই করার জন্যে টেবিলের উপর যে কলমটি রাখা ছিল সেটি ছিল কালো রঙের। তার গায়ে ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর, সোনালী রঙের। উত্তর কোরিয়ার একজন কর্মকর্তা কলমটি পরীক্ষা করে দেখছেন। কিন্তু এই কলমে সই করেননি মি. কিম। একেবারে শেষ মুহূর্তে মি. কিমের প্রভাবশালী বোন কিম ইউ-জং তার ভাই-এর দিকে একটি বলপয়েন্ট কলম এগিয়ে ধরেন, যা দিয়ে তিনি চুক্তিতে সই করেছেন। পুরো সফরেই উত্তর কোরিয়ার নেতার নিরাপত্তার বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কলমটি কি রাজনৈতিক না-কি নিরাপত্তার কারণে বদলানো হয়েছে, তা এখনও পরিস্কার নয়। সংবাদ মাধ্যমে এও খবর বেরিয়েছে যে মি. কিম তার সাথে করে একটি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট সিঙ্গাপুরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কেন? বলা হচ্ছে, যাতে মি. কিমের মলমূত্র থেকে কেউ তার সম্পর্কে জৈব-তথ্য বের করে ফেলতে না পরে। অবশ্য এই খবরটি বিবিসি যাচাই করে দেখতে পারেনি। |
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আনের বৈঠককে বলা হচ্ছে ঐতিহাসিক ঘটনা। সিঙ্গাপুরে এই প্রথম দুটো দেশের নেতারা বৈঠক করলেন। |
ওয়েটার মারা যান ঘটনাস্থলে - তাকে বাঁচানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয় পুলিশ বলছে, প্যারিসের পূর্ব শহরতলিতে নইসি-লেঘ্রঁ এলাকায় শুক্রবার রাতের এই ঘটনার পর খুনের তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ওই খদ্দের পালিয়ে গেছে এবং এখনও পলাতক। ২৮বছর বয়সী ওয়েটারকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা। ওয়েটারকে ঘাড়ে গুলি করা হয় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার সহকর্মীরা পুলিশকে জানায় যে পিৎসা ও স্যান্ডউইচ রেস্তোঁরায় আসা ওই খদ্দের তার অর্ডার করা খাবার পরিবেশন করতে সময় লাগার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: আমেরিকা থেকে মেক্সিকো 'মাদক পাচার সুড়ঙ্গ' বাঙালী মুরগির ঝোলের জাপান জয় এই হত্যার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা এবং এলাকার দোকানদাররা স্তম্ভিত। ''এটা খুবই দু:খজনক,'' ফরাসি সংবাদমাধ্যমে ২৯বছর বয়সী এক তরুণীর মন্তব্য। ''এই রেস্তোঁরা খুবই শান্ত পরিবেশের, কখনও এখানে কোন সমস্যা হয়নি। মাত্র কয়েক মাস আগে এই রেস্তোঁরাটি খুলেছে।'' তবে কোন কোন বাসিন্দা বলেছেন, সম্প্রতি এলাকার রাস্তায় মাতালদের সংখ্যা বেড়েছে, সেইসঙ্গে অবৈধ মাদকের কেনাবেচা বাড়ার কারণে এলাকায় অপরাধের ঘটনাও সম্প্রতি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: কাশ্মীর: অন্যান্য রাজ্যের জন্যও কি একটি সংকেত? ইসরায়েল ইস্যুতে বিতর্কে পড়া দুই নারী কংগ্রেস সদস্য কারা? |
প্যারিসের পূর্বাঞ্চলে এক রেস্তোঁরায় একজন খদ্দেরের গুলিতে নিহত হয়েছেন এক ওয়েটার। খবরে বলা হচ্ছে, ওই খদ্দেরের অর্ডার করা স্যান্ডউইচ ওয়েটার যথেষ্ট দ্রুত তৈরি করতে না পারায় খদ্দের কার্যত রেগে গিয়ে তাকে গুলি করেছেন। |
পরিণত বয়সে আসার পর অনেকে পুরুষই এখন শিশু অবস্থায় তার উপর যৌন নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলছেন। ঘটনার তিন মাস পর রাকিবের বাবার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখনো তার চিকিৎসা চলছিলো। রাকিবের বাবা বলছিলেন, তার আরেকটি কন্যা সন্তান আছে। যাকে নিয়ে তার পরিবার সবসময়ই সচেতন থাকতো। কিন্তু তার ছেলেরও যে বিপদ হতে পারে সে বিষয়ে কোন ধারণাই ছিলো না তার। "ঘটনার দিন আমার ছেলেটাকে এক প্রতিবেশি তার বাড়িতে ডাইকা নিয়া যায়। আমরা জানতাম না। লোকটা তারে খাবারের লোভ দেখাইছিলো। সারাদিন ছেলেটার কোন খোঁজ পাই নাই। সন্ধ্যায় যখন ছেলেটা বাড়িতে আইলো তখন কেমন জানি করতেছিলো। চুপচাপ ছিলো। কিন্তু ওর প্যান্টের পিছনে রক্ত দেখে সন্দেহ হয় ওর নানির।" বলছিলেন রাকিবের বাবা। "ওরে আমরা জিগাইছি কী হইছে? কোন কথা বলে না। পরে যখন মাইরের ভয় দেখাইছে, তখন সে নির্যাতনের কথা কইছে"। "লোকটা ওরে মাইরা ফেলার ডর দেখাইছে। সেইজন্যে সে কথা কইতে চায় নাই। কিন্তু আমরা ওর প্যান্টে রক্ত দেইখ্যাই ঘটনা বুঝতে পারছিলাম।" এই ঘটনায় রাকিবের পরিবার থানায় একটি মামলা করেছিলো। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে। সম্পর্কিত খবর: শিশু নির্যাতক আপন ঘরেরই লোক, কাছের লোক নিজ ঘরেই যৌন নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশের যে শিশু মেয়েরা রাকিবের (ছদ্মনাম) বাবা বলছেন, তার ছেলে সন্তান যে কোন পুরুষ দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে সে বিষয়টি কখনোই তার ধারণায় ছিলো না। কিন্তু এরকম অনেক যৌন নির্যাতন কিংবা ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়া দূরে থাক অনেক সময় ঘটনা প্রকাশই হয় না। এরকমই একজন সুমন আহমেদ (ছদ্মনাম)। ১৪ বছর বয়সে যৌন নির্যাতনের শিকার হলেও পরবর্তী ১৫ বছর ধরে সে ঘটনা তিনি গোপনেই রেখেছেন। "আমার বয়স তখন ১৪ বছর। বেড়াতে গিয়েছিলাম কাজিনের বাসায়। সেখানে রাতে আমাকে থাকতে দেয়া হয় আমার চেয়ে ১৫ বছরের বড় একজনের সঙ্গে। রাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়, দেখতে পাই ফিজিক্যালি আমি তার পুরো কন্ট্রোলে। সে প্রচণ্ড জোরে কিস করছিলো, শরীরের বিভিন্ন অংশে টাচ করছিলো। আমি চেষ্টা করেও তার কব্জা থেকে বের হতে পারছিলাম না। ভয়ে আমি কোন চিৎকারও করতে পারিনি।" "এই ঘটনার কথা আমি কখনোই কাউকে বলিনি। আমার বা তার পরিবারকেও না। কারণ, পরিবারে তার একটা ভালো অবস্থান ছিলো। আর এ ধরণের ঘটনা যে ঘটতে পারে বা ঘটলে কি করতে হবে সে বিষয়েও আমার কোন ধারণা ছিলো না।" বাংলাদেশে এরকম ছেলেশিশুর উপর যৌন র্নিযাতনের ঘটনা বিভিন্ন সময়ই শোনা যায়। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের হিসেবে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১১ জন ছেলেশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালে সংখ্যাটি ছিলো ৯ জন। আর ২০১৭ সালে ১৫ জন। কিন্তু বাস্তব চিত্র আরো ভয়াবহ বলেই মনে করে শিশু অধিকার সংগঠনগুলো। বেসরকারি শিশু সংগঠন 'ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সে'র নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা মনে করেন, বাংলাদেশে সামাজিকভাবেই ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের বিষয়ে একধরণের নিরবতা কিংবা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা আছে। "বাংলাদেশে ছেলেশিশুদের উপরও যে যৌন নির্যাতন হয়, সেটাই তো আমাদের সমাজ এখনো গ্রহণ করতে পারেনি। এখানে পথশিশুরা নির্যাতনের শিকার হয়, আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এধরণের ঘটনা আমরা পেয়েছি। তবে সবচেয়ে বেশি যৌন নির্যাতনের ঘটনা হয় পরিবারে। কারণ, সেখানে অপরাধীদের জন্য শিশুদের কাছে পাওয়াটা সহজ। ছেলেশিশুদের কাছে পাওয়াটা আরো সহজ। আমরা এখনো শুধু মেয়েশিশুদের নিয়েই সচেতন, ছেলেশিশুর যৌন নিরাপত্তা আমাদের মাথাতেই নেই। এমনকি এরকম ঘটনা ঘটলেও সেটা গোপন করার প্রবণতা বেশি।" ছেলেশিশু ধর্ষণের মামলা কোন আইনে? রাকিবের বাবা তার ছেলেশিশুর ধর্ষণের ঘটনায় থানায় যে মামলাটি করেছিলেন সে মামলাটি দায়ের হয়েছিলো দণ্ডবিধির-৩৭৭ ধারায়। অথচ মামলাটি হওয়ার কথা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। কারণ ৩৭৭ ধারায় শিশুর উপর যৌন নির্যাতনের বিষয়ে কোন বক্তব্য নেই। ধারাটি মূলত: প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে স্বেচ্ছায় যৌন সঙ্গম বা সমকামিতার অপরাধ বিষয়ে। আরো পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া যেসব সমস্যার কারণ এশিয়ার সমরখাতে কি মার্কিন একাধিপত্য শেষ? দণ্ডবিধি'র ৩৭৭ ধারা। গত কয়েকমাসে এরকম আরো দুটি ছেলেশিশু ধর্ষণের ঘটনায় কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের দুটি থানায় খোঁজ-খবর নেই আমি। দেখা যায়, দুটি থানাতেই মামলা দায়ের হয়েছে দণ্ডবিধি'র ৩৭৭ ধারায়। কিন্তু শিশু ধর্ষণের অপরাধের মামলা কিভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে না হয়ে দণ্ডবিধি'র ৩৭৭ ধারায় হচ্ছে এমন প্রশ্নে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র মো. সোহেল রানা বলছেন, অসাবধানতাবশতঃ এমনটা হচ্ছে। তবে এ ধরণের মামলার সংখ্যা খুবই কম। তিনি বলছিলেন, "২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন হওয়ার আগে ছেলে শিশু ধর্ষণ বা নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের হতো দণ্ডবিধিতে। দীর্ঘদিনের প্রচলিত রীতির কারণে কোন কোন পুলিশ কর্মকর্তা অসাবধানতাবশতঃ এখনো দণ্ডবিধিতেই মামলা নিচ্ছেন। তবে এ ধরণের ঘটনা খুবই কম। এবং অভিযোগপত্র তৈরির সময় এই ভুল সংশোধন করা হয়।" ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে আইনে অস্পষ্টতা ছেলেশিশু ধর্ষণের মামলা যে ভুল আইনে রজু হচ্ছে তার আরেকটা বড় কারণ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছেলেশিশুর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। দণ্ডবিধি'র ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞা দেয়া আছে। এই সংজ্ঞাটিই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সংজ্ঞায় স্পষ্টভাবেই পুরুষের মাধ্যমে নারী'র ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা বলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পরিবর্তন আনার কথা বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা ইয়াসমীন। তবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে 'শিশু'র কথা বলা হলেও সেটা যে ছেলেশিশুর নির্যাতনকেও অন্তর্ভূক্ত করছে সেটা বুঝতে পারেন না অনেকেই। ফলে আইনে কিছু পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন ঢাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা ইয়াসমীন। তিনি বলছিলেন, "ধর্ষনের সংজ্ঞায় নারীর পাশাপাশি শিশুকেও অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন। এবং একইসঙ্গে শিশুর সংজ্ঞাতেও ছেলেশিশুর বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে। তাহলে ধর্ষণ মানেই যে সেটা নারী কিংবা মেয়ে শিশু ধর্ষণ, সে ধারণার অবলুপ্তি ঘটবে।" এই প্রতিবেদনের ভিডিও দেখুন এখানে: |
প্রতিবেশির হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলো নয় বছর বয়সী রাকিব (ছদ্মনাম)। এরপর থেকেই তার আচরণ অস্বাভাবিক হয়ে যায়। সারাদিন চুপচাপ থাকে। অপরিচিত কাউকে দেখলেই ভয় পায়। |
বৃহস্পতিবার বিদ্রোহী অধ্যূষিত হাযা শহরে হামলা চালানো হয় রাজধানী দামাস্কের পার্শ্ববর্তী পূর্ব ঘুটায় গত এক সপ্তাহে সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর বোমা হামলায় ৫০০র বেশী মানুষ মারা গেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। রোববার যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে সিরিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে রাশিয়াকে অনুরোধ করেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ফোন-আলাপে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল এবং ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। তবে যুদ্ধবিরতির সমেঝাতা অনুযায়ী, ইসলামী জঙ্গী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে পারবে সিরিয় ও রুশ সেনাবাহিনী। আরও পড়ুন: সেন্সর প্যাচ: স্ট্রোক রোগীদের আশীর্বাদ ধর্ষিতা রোহিঙ্গা নারীদের জীবন ছ'মাস পর পিছিয়ে গেল খালেদা জিয়ার জামিনের সম্ভাবনা চিকৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে হাসপাতালগুলোতে শনিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের কয়েক ঘন্টা পরই বিদ্রোহী অধ্যূষিত এলাকায় আক্রমণ চালায় সিরিয় সরকারি বাহিনী। ত্রাণ সংস্থা সিরিয়ান অ্যামেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটি বিবিসিকে জানায়, তাদের একটি হাসপাতালে আসা রোগীদের উপসর্গ দেখে ধারণা করা হচ্ছে যে এখানে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। পূর্ব ঘুটার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার লক্ষ্যে সিরিয় সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলে রোববার জানানো হয় সরকারি ও বিদ্রোহী পক্ষ থেকে। এরমধ্যে ইরান জানিয়েছে, তারা 'যুদ্ধবিরতি'র সিদ্ধান্তকে সম্মান করবে, তবে যুদ্ধবিরতির আওতার বাইরে থাকা অঞ্চলে ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আগ্রাসন অব্যাহত রাখবে তারা। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রধান সমর্থক ইরান ও রাশিয়া । বোমা বিস্ফোরণের পর উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা যুদ্ধবিরতির বাইরে কারা? পূর্ব ঘুটার বিদ্রোহীরা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির খসড়ায় ইসলামিক স্টেট, আল কায়েদা ও নুসরা ফ্রন্ট অন্তর্ভূক্ত নেই। নুসরা ফ্রন্ট পূর্বে আল কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। বর্তমানে তারা হায়াত তাহরির-আল-শামস নামে কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট। সিরিয় সরকার বলেছে, হায়াত তাহরির-আল-শামসের উপস্থিতির কারণেই পূর্ব ঘুটর দখল নিতে আগ্রাসন চালাচ্ছে তারা। পূর্ব ঘুটার বর্তমান অবস্থা কী? জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস পূর্ব ঘুটাকে 'ভূ-পৃষ্ঠে নরক' হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন। সিরিয়ান অবজার্ভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে গত এক সপ্তাহে সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর ক্রমাগত বোমা হামলায় ৫০০র বেশী সাধারণ মানুষ মারা গেছে। যাদের মধ্যে অন্তত ১২১ জন শিশু। যদিও বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে সিরিয় সরকার। তাদের ভাষ্যমতে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে তারা। |
শনিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হওয়ার কয়েক ঘন্টা পরেও বিদ্রোহী অধ্যূষিত অঞ্চলে সেনা আক্রমণ চালিয়েছে সিরিয়া। |
সবচেয়ে বেশি আয় করা ইউটিউব স্টারদের একজন রায়ান। ছবি: রায়ান টয়'স রিভিউ থেকে ছয় বছরের রায়ান একজন ইউটিউব স্টার। তার কাজ ইউটিউবে নতুন নতুন খেলনার মোড়ক খোলা। কেবল এই কাজ করেই গেল বছর রায়ান আয় করেছে এক কোটি দশ লাখ ডলার। ইউটিউবে তার চ্যানেলটির নাম 'রায়ান টয়'স রিভিউ।' নিত্য নতুন খেলনার মোড়ক খোলার পর রায়ান সেসব নিয়ে খেলছে এরকম ভিডিওই সেখানে দেখানো হয়। বিজনেস ম্যাগাজিন 'ফোর্বস' এর হিসেবে রায়ান হচ্ছে সবচেয়ে বেশি আয় করা ইউটিউব স্টারদের একজন। তার অবস্থান এখন আট নম্বরে। ২০১৫ সালে প্রথম ইউটিউবে রায়ানের ভিডিও আপলোড করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ইউটিউবে তার ভিডিওগুলি দেখা হয়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটি বার। জুন ২০১৬ হতে জুন, ২০১৭ পর্যন্ত রায়ানের চ্যানেলটি ইউটিউবে দেখা হয়েছে আটশো কোটি বার। ছবি: রায়ান'স টয় রিভিউ থেকে কিন্তু রায়ানের ভিডিও আর তার খেলনা নিয়ে কেন মানুষের এত আগ্রহ? রহস্য বালক ইন্টারনেটে খুবই পরিচিত মুখগুলোর একটি হওয়া সত্ত্বেও রায়ানের পরিচয় নিয়ে রয়েছে ব্যাপক রহস্য। তার নামের শেষাংশ কি, রায়ান কোথায় থাকে, কেউ জানে না। রায়ানের বাবা-মা মাত্র অল্প কয়েকবার গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে রায়ানের মা দাবি করেছেন যে যখন তার ছেলের বয়স মাত্র তিন বছর, তখন এই ইউটিউব চ্যানেল করার আইডিয়া রায়ানই দিয়েছিল। তবে রায়ানের মা নিজেও তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করেননি। ইউটিউবে রায়ানের প্রথম ভিডিওটি ছিল প্লাস্টিকের ডিম ভেঙ্গে সেখান থেকে খেলনা বের করা। আশি কোটি বার এই ভিডিও দেখা হয়েছে। তার ভিডিও চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে এক কোটি মানুষ। রায়ানের ভিডিওর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার স্বতস্ফূর্ততা। নিত্য নতুন খেলনা নিয়ে সে যেভাবে খেলে, সেটা লোকে পছন্দ করে। একটি রিভিউতে বলা হচ্ছে, 'রায়ান যেভাবে তার খেলনার প্যাকেট খোলে, তখন সেটি একটি নাটকীয় পরিবেশ তৈরি করে।" মোড়ক খুলে খেলনা বের করছে রায়ান সমালোচকরা অবশ্য বলছে, রায়ানের বাবা-মা আসলে তাকে ব্যবহার করে একটি সফল ব্যবসা চালাচ্ছে। তারা এই শিশুকে 'এক্সপ্লয়েট' করছে। কিন্তু তার মা একথা মানতে নারাজ। "আমরা তো তার স্কুল রুটিনে কোন ব্যাঘাত ঘটাচ্ছি না। আমরা ছুটির দিনেই সব ভিডিও রেকর্ড করি। যখন সে স্কুলে থাকে তখন এগুলো এডিট করা হয়।" রায়ানের এসব ভিডিও খেলনার বিক্রি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। রায়ানকে বর্ণনা করা হচ্ছে ইউটিউবের তরুণতম সফল তারকা হিসেবে। |
ইউটিউবে খেলনা দেখিয়ে রায়ান যতটা মজা করতে পারে, তা দেখে হিংসা হবে যে কোন ছেলের। আর তার ব্যাংক ব্যালান্স দেখে ঈর্ষান্বিত হবে যে কোন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। |
শেখ তন্ময় কিন্তু এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি আলোচনায় এসেছেন শেখ সারহান নাসের তন্ময়, যদিও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এর আগে তার নাম খুব এটা শোনা যায়নি। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বাগেরহাটের একটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শেখ সারহান নাসের তন্ময়। যদিও মনোনয়ন পাবার আগে থেকেই ফেসবুকে রীতিমত ভাইরাল তিনি। দলের মনোনয়ন পাবার পর নিজের ফেসবুক পাতায় সুদর্শন এই তরুণ লিখেছেন, "আমাদের অনেক স্বপ্ন আছে, আমরা সুন্দর বাংলাদেশ চাই। শুধু বাগেরহাটের নয়, সারা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের আমি একজন প্রতিনিধি। বাগেরহাটের পাশাপাশি সারা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মতো আমারও অনেক স্বপ্ন আছে"। কিন্তু এই দলীয় মনোনয়ন পাবার আগে থেকেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে তার বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও। এসব ছবি ও ভিডিও'র নীচে রাজনৈতিক নানা মন্তব্য যেমন এসেছে তেমনি ব্যক্তিগতভাবে করা অনেক মন্তব্যও চোখে পড়ে। বিশেষ করে তরুণী বা নারীদের নামে আসা অসংখ্য মন্তব্য দেখা যায় যেখানে শেখ তন্ময়কে তাদের কেউ 'ক্রাশ' কিংবা কেউবা 'নায়ক' হিসেবে চিত্রিত করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন : নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কতটা আছে? সংসদ নির্বাচন: ক্ষোভ-অসন্তোষ জাতীয় পার্টিতে নির্বাচনের আগে এরশাদ কেন আবার সামরিক হাসপাতালে ফেসবুকে মেয়েদের এই আগ্রহকে তিনি কীভাবে দেখছেন? দেখতে তুলনামূলক লম্বা, সুন্দর ও নায়কোচিত চেহারার এই তরুণকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ করে মেয়েদের এই আগ্রহকে তিনি কীভাবে দেখেন ? জবাবে বিবিসি বাংলাকে শেখ তন্ময় বলেন, "আমরা তরুণ বলেই তরুণদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং সেটাই স্বাভাবিক। যারা আমার সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ"। কিন্তু রাজনীতির বদলে তিনি সুদর্শন বলেই তার প্রতি এতো আগ্রহ কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এ জন্য আল্লাহর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।" "কিন্তু আমি মনে করি এদেশের তরুণরা আমাদের মাধ্যমেই তাদের স্বপ্ন দেখছে দেশ নিয়ে। আগ্রহের মূল কারণ এটাই। কারণ তরুণরা এখন সবাই দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।" শেখ সারহান নাসের তন্ময় ফেসবুকে কিছু মন্তব্য ফেসবুকে শেখ তন্ময়ের একটি পোস্টে সামাইরা স্বর্ণা নামে একজন লিখেছেন "আপনি অনেক জলদি বিয়ে করে ফেলছেন"। তানিয়া বৃষ্টি লিখেছেন "বাংলাদেশে হ্যান্ডসাম নায়কের অনেক অভাব। আপনি জয়েন করছেন না কেন?আপনি তো পুরো বলিউড নায়কদের মতো দেখতে"। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে শেখ তন্ময়ের একটি ছবির নীচে পিয়ালি দত্ত নামে একজন লিখেছেন, "দিজ পিকচার ওয়াজ টু মাচ হার্মফুল ফর মাই হার্ট..তন্ময় ইউ আর মোর কিউট নাউ দেন ইউর চাইল্ডহুড" অর্থাৎ এই ছবি আমার হৃদয়ের জন্য ক্ষতিকর.. তন্ময় তুমি ছোটবেলার চেয়ে এখন বেশি কিউট।" শেখ তন্ময়ের ফেসবুক পোস্টে কিছু মন্তব্য। "শেখ সারহান নাসের তন্ময় ভাইয়া, আমরা আপনাকে কতোটা পছন্দ করি, আপনাকে কতোটা ভালোলাগে তা হয়তো আপনি বুঝে গেছেন ! আমরা সব মেয়েরা (ছেলেদের কথা জানিনা ) আপনার জন্য নির্বাচনী প্রচারণা করা শুরু করে দিয়েছি, আপনার কোনো চিন্তা নেই! আপনি শুধু দয়া করে একটা কাজ করবেন !তাহলো আপনি প্রতিদিন আপনার নতুন নতুন ছবি আমাদের জন্য প্রকাশ করবেন আর তাতেই আমরা খুশি!"- মন্তব্য করেছেন সীমা আরিফ। অন্যদিকে অনেক নারী তার প্রতি ভালোবাসাও প্রকাশ করছেন! "কত্ত সুন্দর একটা পোস্ট দিচ্ছি আমার টাইমলাইনে, আপনার জন্য শুধু 'আই লাভ ইউ" লিখেছেন সাথিলা আরাবি মেহেরজান। তবে মি: তন্ময়ের পোস্ট শেয়ার দেয়া নিয়ে অনেককে মজা করতেও দেখা গেছে। বিশেষ করে প্রেমিকদের। যেমন রাফিম হাছানাত হিযবু ফেসবুকে শেখ তন্ময়কে লিখেছেন- " ভাইই, আমার গার্লফ্রেন্ডরে একটু ব্লক করে দেন, ও আপনার কথা বলতে বলতে কান ঝালাপালা বানাই পেলতাছে, অসহ্য লাগছে ! আর পারছি না....."। একজন একটি পোস্ট কমেন্টে শেখ তন্ময় ও তাঁর স্ত্রীর ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, "ধোঁকা খাইলাম! দিতাম না ভোট.." । সাথে জুড়ে দিয়েছেন কান্নার ইমোজি। বাগেরহাটের একটি আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শেখ তন্ময় কীভাবে রাজনীতিতে এলেন তন্ময় বিবিসি বাংলাকে শেখ সারহান নাসের তন্ময় বলছেন, "একটা পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক আবহেই আমি বড় হয়েছি। ফুফু (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)কে একেবারে কাছে থেকে দেখছি সেই ছোটবেলা থেকে। বাবাও রাজনীতি করছেন। সব মিলিয়ে রাজনীতি আমার কাছে নতুন নয়"। তবে দলীয় রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক সম্পৃক্ততা হয়েছে তাঁর ২০১৭ সালে বাগেরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সদস্যপদ লাভের মধ্য দিয়ে। মূলত এরপরই নানা সভা সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেন ১৯৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করা শেখ তন্ময় যিনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের নাতি । তার বাবা শেখ হেলাল উদ্দিন বর্তমানে বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্যও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। শেখ সারহান নাসের তন্ময় সম্পর্কে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য শেখ তন্ময় বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন শৈশবে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ঢাকায় পড়ালেখার পর তিনি ভারতে একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হন। পরে আবার ঢাকায় এসে ও লেভেল এবংএ লেভেল পড়া শেষ করেন। এরপর ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারীর পর তিনি আবার ভারতে যান ও এরপর ২০১২ সালে আবার ঢাকায় ফেরেন। এরপর উচ্চশিক্ষার্থে লন্ডন যান। পরে ঢাকায় এসে বিয়ে করেন এবং মাঝে কিছুদিন সিঙ্গাপুরে চাকুরীও করেছেন। গত বছরের শেষ দিক থেকে পুরোদমে রাজনৈতিক কাজে মনোযোগী হন আর তখন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়। বিবিসি বাংলার আরো খবর: সংসদ নির্বাচন: ক্ষোভ-অসন্তোষ জাতীয় পার্টিতে স্বামীর হাতে ধর্ষণ: বাংলাদেশে এক নারীর অভিজ্ঞতা রাজনীতি নিয়ে মাশরাফির ব্যাখ্যায় আলোচনার ঝড় লোনা পানি কীভাবে গর্ভপাত ঘটাচ্ছে নারীদের |
বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারী বিরোধী দলের মনোনয়ন তালিকায় এবার বেশ কিছু তরুণ প্রার্থী রয়েছেন। |
আদালতের বাইরে রায় সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানাচ্ছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান। তবে মোট আটজন আসামীর মধ্যে বাদবাকি দু'জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ঐ আটজনের প্রত্যেককেই এর আগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। এই রায়ের পর বিশ্বজিৎ দাসের ভাই উত্তম দাস বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "পাঁচ বছর পরে আজকে আরেকটা দু:সংবাদ এটা। আজকের দিনটাতে যে এরকম কিছু শুনতে হবে আমরা আশাই করিনি। এটাই ঠিক যে সরকার যা চাইবে তা-ই হবে। সরকার যদি চাইতো যে অন্তত বিশ্বজিৎ এর ঘটনাটা সুষ্ঠু বিচার হোক-তাহলে হতো। কোথায় আটজনের মৃত্যুদন্ড সেখানে আসলো দুইজনে। কি বলবো বলার ভাষা নাই"। বিএনপির-নেতৃত্বাধীন ১৮-দলের অবরোধ কর্মসূচি চলার সময় গত ২০১২ সালের ৯ই ডিসেম্বর ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিনে দুপুরে খুন হন বিশ্বজিৎ দাস। অনেকগুলো ক্যামেরার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। বিব্রতকর এক পরিস্থিতির মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ওই হত্যার একবছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ জনের মধ্যে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জরে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছিল। রোববার সেই মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে, ছয়জনকে রেহাই দেয়। মামলা থেকে খালাস দেয়া হয় চারজনকে। যদিও আসামিদের মাত্র আটজনই আটক আছে। পলাতক ১৩জন। তবে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতি নজরে এসেছে এবং ময়নাতদন্তে আঘাতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আসেনি বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান বিবিসিকে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির বাইরেও নিহত বিশ্বজিৎ দাসের ময়না তদন্তেও গাফিলতি রয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। সে ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টের রায়ে যাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে তারা হলেন রফিকুল ইসলাম শাকিল এবং রাজন তালুকদার। সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন এবং মীর মো. নূরে আলম লিমনকে। আর সাইফুল ইসলাম এবং কাইয়ুম মিঞা টিপুকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। |
বাংলাদেশের হাইকোর্ট পুরনো ঢাকায় আততায়ীদের হাতে নিহত দর্জি দোকানের কর্মী বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের ছয় জন নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দিয়েছে। |
মশার কামড় থেকে বাঁচতে দিনের বেলাতে মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। চোখের সামনে নিজ সন্তানের এমন মুমূর্ষু অবস্থা দেখে অসহায় বোধ করছেন সামিয়া রহমান। "আমার এই ছোট বাচ্চাটা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় রক্ত দিতে হচ্ছে। স্যালাইন চলছে। সারাদিন কান্নাকাটি করে। কিছু খায়না। ওর জন্য আমাদেরও কষ্টের শেষ নাই"। তিনি অভিযোগ করছিলেন "এখন সিটি কর্পোরেশন যদি মশা ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করতো, আজকে আমাদেরকে এতো কষ্ট করতে হতো না। অন্যের গাফিলতির দায় আমরা কেন নেব?" মিসেস রহমানের মতো এমন প্রশ্ন বেশিরভাগ ঢাকাবাসীর। কেননা এবারের বর্ষা মৌসুমে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অন্য যে কোন বারের চাইতে অনেক বেশি। চলতি বছর বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রেকর্ড সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। হাসপাতালে ভর্তি রেকর্ড সংখ্যক রোগী: সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪২৪৭জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে শুধু জুন থেকে ১২ই জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩৬৪৭ জন। তবে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শোয়েব মোমেন মজুমদার। "প্রতিদিন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীরা আসছে। এবারের সংখ্যাটা অনেক বেশি। বলা যায় যে, গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুন বেশি। এমনও রোগী আছেন যারা দ্বিতীয়বারের মতো, তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়ে আসছেন। তাদের অবস্থা বেশ জটিল। আর এবারের ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে মূলত তিন নম্বর প্রজাতির মশাগুলো। যেগুলোর কারণে রোগের জটিলতা অনেক বেড়েছে।" তৃতীয় শ্রেণীর এডিস মশার কারণে এবারে ডেঙ্গু রোগীদের জটিলতা অনেক বেড়েছে। বেড়েছে ডেঙ্গু রোগের জটিলতা: সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে মৃত্যুর সংখ্যা তিন জন বলা হলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে রোগ তত্ত্ব নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট-আইইডিসিআর এর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে মৃতের সংখ্যা অন্তত ১১ জন। সব মিলিয়ে এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চাইতে উদ্বেগজনক এবং বিগত যেকোনো বছরের চাইতে এই জটিলতার দিকগুলো অনেক বেড়েছে বলে জানান মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মোমেন মজুমদার। "আগে ডেঙ্গু হলে জ্বর হতো, মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হতো। তবে এবারে ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো অন্যরকম। যেমন কেউ তীব্র পেটব্যথা নিয়ে আসছেন, কারও হার্টের সমস্যা বেড়েছে। কারও ব্রেনে অ্যাফেক্ট ফেলেছে। অন্যান্য বছরের চাইতে এবারে এই জটিলতাগুলো অনেক বেশি।" কী বলছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র: এদিকে মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশন এতদিন ধরে যে ওষুধ ব্যবহার করছে সেটা আর আগের মতো কাজ করছেনা বলে জানিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র-সিডিসি এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ-আইসিডিডিআরবি । মশা এখন আরও শক্তিশালী বলে তাদের পৃথক দুটি গবেষণায় উঠে আসে। এমন অবস্থায় মশার ওষুধ পরিবর্তনের বিষয়ে এই সপ্তাহে একটি সভার ডাক দেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন। তবে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা নিধনে নাগরিক সচেতনতাই সবচেয়ে জরুরি বলে তিনি মনে করেন। মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের ওষুধ আগের মতো কাজ করছেনা বলে জানিয়েছে সিডিসি এবং আইসিডিডিআরবি "ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যে শুধু ঢাকা বা বাংলাদেশেই বেশি তা নয়। আমাদের পাশের দেশ ভারতের দিল্লি, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর শহর, সিঙ্গাপুর সিটি, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্সের মতো জায়গায় এবার রেকর্ড সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এসবের পেছনে আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুটাই ঘুরে ফিরে আসছে।" তবে কারণ যাই হোক দ্রুততম সময়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তিন ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান মেয়র সাইদ খোকন। প্রথমত ঢাকা দক্ষিণের ৫৭টি ওয়ার্ডে ৬৭টি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তারা বর্ষা মৌসুমের সর্দি কাশির মতো সমস্যার প্রাথমিক ও বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীদের তাদের অসুস্থতার মাত্রা বুঝে পরামর্শ দিচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সমন্বয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। তারা সামনের সপ্তাহে ঢাকা দক্ষিণের আওতাভুক্ত ভবনগুলোয় অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানান মেয়র সাইদ খোকন। তিনি বলেন, "যদি কোন ভবনে স্বচ্ছ জমানো পানি থেকে যেগুলোয় ডেঙ্গু মশার লার্ভা থাকে। সেগুলোকে আমাদের টিম ধ্বংস করে দিয়ে আসবে। কেননা এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে থাকে। বাইরের নোংরা পানিতে থাকেনা। তাই জনসচেতনতা হল এডিস মশা নির্মূলের সবচেয়ে বড় শক্তি।" এডিস মশা। আরও পড়তে পারেন: এ বছর ডেঙ্গুর মাত্রা কি আগের চাইতে তীব্রতর? ডেঙ্গু প্রকোপ: মশা নিধনে অ্যাম্বাসেডরদের কাজ কী? ডেঙ্গু: ২৪ ঘন্টায় ৭৩ জন আক্রান্ত, যাচ্ছে ঢাকার বাইরেও তৃতীয়ত, মশা মারার উপযোগী নতুন ওষুধ কিনতে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দফতর অধিদফতরের সঙ্গে সামনের সপ্তাহে একটি বৈঠক করার কথা জানান তিনি। মূলত ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যে কি ধরণের ওষুধ আমদানি করা যাবে। কেননা এসব ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন নিতে হয়। সাইদ খোকন বলেন, "আমরা চাইলেই যখন তখন যেখানে সেখানে ওষুধ ছেটাতে পারিনা। এর সাথে আমাদের স্বাস্থ্য পরিবেশসহ আরও নানা বিষয় জড়িত আছে। আমরা এটা নিয়ে কথা বলবো। তারপর অনুমোদন নেয়ার ভিত্তিতে ওষুধ কিনে ছেটানোর ব্যবস্থা করা হবে।" বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে এবার ২০০০ সালের পর সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মশা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। |
শিশু ফারজানা ফাইজার বয়স ১৪ মাস হয়েছে মাত্র। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচ দিন ধরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি আছে এই শিশুটি। |
বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন বিশেষ করে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর আগুন নেভানোর কার্যক্রম শুরু করা, একপর্যায়ে পানি ফুরিয়ে যাওয়া এবং মানুষজনকে উদ্ধার কার্যক্রমে সময় লাগা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন। ঢাকার বনানীর মতো একটি অভিজাত এলাকায় একটি বহুতল ভবনে লাগা আগুন নেভাতে কেন এতো সময় লাগলো? বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার খবর দমকল বিভাগ পায় বেলা সাড়ে ১২টা ৫৫ মিনিটে। তাদের হিসাবে এর অন্তত ২০মিনিটি আগে আগুন লেগেছে। আগুন লাগার চার ঘণ্টারও বেশি সময় পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে এ কাজে দমকল বাহিনীর ১৭টি ইউনিট কাজ করে। সেই সঙ্গে যোগ দেয় অন্যান্য বাহিনীও। পরে তাদের সাথে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী যৌথভাবে কাজ শুরু করে। সাথে স্থানীয় মানুষেরাও যোগ দেন। বনানী আগুন: ছবিতে উদ্ধার তৎপরতা আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের জন্য উন্নত সব কৌশল বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন চার ঘণ্টা চেষ্টার পর আয়ত্তে আনে ফায়ার সার্ভিস কিন্তু কেন এই আগুনটি নেভাতে চারঘণ্টা সময় লাগলো? দমকল বাহিনীর ঢাকা বিভাগের কর্মকর্তা দেবাশীষ বর্ধন জানিয়েছেন, মূলত দুটি কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়েছে। • পানির অভাব আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রচুর পানি দরকার হয়। এক সময় পানির যোগান এবং তা যথাস্থানে দ্রুত সময়ে পৌঁছানো একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লাগার এটি একটি কারণ। কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের বহুতল ভবনের নিচে পানির রিজার্ভ থাকার কথা। কিন্তু ভবনটিতে পানি সরবরাহের যেমন কোন ব্যবস্থা ছিল না, আশেপাশেও তেমন পানির উৎস ছিল না। • সিনথেটিক ফাইবার মি. বর্ধন জানিয়েছেন, ঐ ভবনের বেশিরভাগ তলায় রয়েছে বিভিন্ন অফিস, যেগুলো ডেকোরেট বা সজ্জার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সিনথেটিক ফাইবার। এসব জিনিসে আগুন লেগে যাওয়ায় তা যেমন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি অনেক ধোয়ার সৃষ্টি হয়। • মানুষের অতিরিক্ত ভিড় দমকল বিভাগের পরিচালক এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলছেন, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী, এ ধরনের বহুতল একটি ভবনের অন্তত ৩০ মিনিট নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ক্যাপাসিটি থাকতে হবে। কিন্তু বনানীর ওই ভবনে সেটা ছিল না। ওই ক্যাপাসিটি থাকলে আগুনটা এতো বড় করে ছড়িয়ে পড়তে পারতো না, দমকল কর্মীরা গিয়েই সেটি নিভিয়ে ফেলতে পারতো। তিনি জানান, আগুন লাগার বেশ খানিকক্ষণ পরেই দমকল বিভাগে খবর দেয়া হয়েছে। তারপরে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে উদ্ধার কর্মীরা আরো বিপদে পড়েছেন। গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হয়েছে, পানি আনা যায়নি। আগুনে পুড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনানীর এফ আর টাওয়ার যেসব কারণে আগুন এতো দ্রুত ছড়িয়েছে আগুন কেন এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল তা নিয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ আনসারির সাথে আলাপকালে মূলত ছয়টি কারণ উঠে এসেছে। ১. প্রশিক্ষিত লোকজন ছিল না তিনি বলছেন, যেকোনো ভবনে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম থাকার পাশাপাশি সেগুলো ব্যবহারে দক্ষতা বা প্রশিক্ষিত লোকজনও থাকা দরকার। "দমকল বিভাগের আসতে সময় লাগে। তখন প্রতিটি ফ্লোরে কিছু প্রশিক্ষিত ব্যক্তি থাকা দরকার ছিল, যারা তাৎক্ষণিকভাবে আগুনটি নেভাবেন।" তিনি জানান, এই ব্যাপারটি এই ভবনে একেবারেই ছিল না।" ২. 'ফায়ার ডোর ছিল না' মি.আনসারি জানান, এফ আর টাওয়ারে "আগুন থেকে বাঁচার সিঁড়ি থাকলেও তা ছিল নগণ্য। "কোন ফায়ার ডোর ছিল না। ফায়ার ডোর থাকলে তার ভেতরে আগুন ঢুকতে পারতো না।" ৩. মূল সিঁড়ি ও ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি পাশাপাশি আরেকটি ব্যাপার হলো, মূল সিঁড়ি আর আগুন থেকে নামার সিঁড়ি বা ফায়ার এক্সিট দুইটা পাশাপাশি ছিল বলে জানা গেছে, "যা হওয়ার কথা নয়" বলে মনে করছনে মি.আনসারি। এর আগে দমকল বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে, ভবনটিতে সম্ভাব্য অগ্নিকাণ্ড থেকে পালানোর জন্য লোহার ফ্রেমে তৈরি সরু একটি সিঁড়ি ছিল ঠিকই - কিন্তু তা ছিল তালাবদ্ধ। "ফায়ার এস্কেপ হিসাবে একটি লোহার সিঁড়ি থাকলেও, বিভিন্ন ফ্লোরে সেটি তালাবন্ধ অবস্থায় দেখা গেছে" - বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন দমকল বিভাগের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাজাহান শিকদার। ৪. এক্সটিংগুইশার থাকলেও ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষিত লোক ছিল না বুয়েটের শিক্ষক মি. আনসারি বলছেন, ভবনে ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকলেও, সেগুলো ব্যবহারে প্রশিক্ষিত লোকজন ছিল না। ৫. হোসপাইপে পানির সংযোগ ছিল না এছাড়া হোসপাইপ থাকলেও, সেগুলোয় পানির সংযোগ ছিল না বলে জানতে পেরেছেন তিনি। ৬. ফায়ার অ্যালার্ম ছিল না বনানীর এই ভবনটিতে কোন ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম ছিল না। যার ফলে অনেকেই এটি বুঝে উঠতে পারেননি। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, মানুষের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে আগুন নেভাতে দেরি হয়েছে উঁচু থেকে পড়ে মারা যাওয়া কি ঠেকানো যেতো? বহুতল ভবনে আগুন লাগার পর লাফিয়ে নিচে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য বাতাসের বিশেষ ম্যাট্রেস রয়েছে দমকল বিভাগের। এর ওপর কেউ পড়লে তিনি আহত হলেও হয়তো নিরাপদে উদ্ধার পেতে পারেন। কিন্তু বনানীর আগুনের ঘটনায় সেসব ম্যাট্রেস ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। দমকল বিভাগের কর্মকর্তা শাজাহান শিকদার বলছেন, ''এ ধরনের ম্যাট্রেস আমাদের কাছেও আছে। কিন্তু এখানে আমরা সেটি ব্যবহার করিনি, তার বিশেষ কারণ রয়েছে।'' ''এসব ম্যাস্ট্রেস পাঁচতলা ভবন পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ ছয়তলার বেশি উঁচু নয়, এমন ভবনে আগুন লাগলে, সেখান থেকে কেউ এসব ম্যাট্রেসে লাফিয়ে পড়লে অক্ষত থাকবেন। কিন্তু এর বেশি উঁচু ভবন হলে, সেখান থেকে কেউ লাফ দিলে এসব ম্যাট্রেস সামলাতে পারবে না, ফলে ওই ব্যক্তির ক্ষতি হতে পারে। '' মি. শিকদার বলছেন, ফলে আমরা যদি সেগুলো এখানে দিতাম, অনেকেই সেগুলো দেখে লাফিয়ে নামার চেষ্টা করতেন। কিন্তু তাতে হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতো। এ কারণে বনানীর আগুনে তা ব্যবহার করা হয়নি। ঢাকায় অসংখ্য বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে যেগুলোর অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সংশয় রয়েছে ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে এড়ানো যেতো? দমকল বিভাগের পরিচালক শাকিল নেওয়াজ বলছেন, এই ভবনেই যদি চারটা ফায়ার এস্কেপ থাকতো, অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা থাকতো, ফায়ার ডোরগুলো থাকতো, তাহলে এখানে কেউ মারা যেতো না। তিনি বলছেন, আগুনের খবর পেয়ে দমকল বিভাগ তো গিয়ে আগুন নেভাবেই, কিন্তু এ ধরনের বহুতল ভবনগুলোয় নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা থাকলে তাতে প্রাণহানি যেমন হবে না, তেমনি ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাও কমে যাবে। এ কারণে বিল্ডিং কোড মেনে প্রতিটা বহুতল ভবনে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সেখানকার কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর তিনি জোর দেন। পাশাপাশি ঢাকায় আরো বেশি ফায়ার স্টেশন বাড়ানো দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমানে ঢাকা শহরে ১৭টি দমকল স্টেশন রয়েছে, আর সারা দেশে রয়েছে ৪০২টি স্টেশন। |
বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার পর প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টার পরে আগুন আয়ত্তে আনে দমকল বিভাগ। পুরোপুরি আগুন নেভাতে সময় লাগে আরো কয়েক ঘণ্টা। |
সুমো কুস্তি জাপানে শত শত বছর ধরে হচ্ছে, এই ছবিটি ২০১১ সালে তোলা এই খেলাকে ঘিরে সম্প্রতি কিছু কেলেঙ্কারির পর জাপান সুমো এসোসিয়েশন এক বৈঠকে বসেছিল এবিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে। কিন্তু কোন সিদ্ধন্তের কথা তারা ঘোষণা করতে পারেনি। অতি সম্প্রতি কয়েকজন নারী রিং-এ উঠেছিলেন একজন পুরুষকে সাহায্য করতে কিন্তু তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়। এই ঘটনার পর নারী পুরুষের বিষয়টি আবারও সামনে চলে আসে। সাধারণত নারীদেরকে 'অপরিষ্কার' হিসেবে বিবেচনা করার কারণে এই খেলায় তাদেরকে অংশ নিতে দেওয়া হয় না। এমনকি তাদের সেখানে প্রবেশেরও সুযোগ নেই। সমিতির পরিচালক তোশিও তাকানো বলেছেন, "এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন। সেজন্যে তাদের আরো সময়ের প্রয়োজন।" সুমো নিয়ে কেন এই সমালোচনা? এই এপ্রিল মাসে মাইজুরু শহরের মেয়র রিয়োজো তাতামি রিং-এর উপর ভাষণ দেওয়ার সময় সেখানে পড়ে যান। তখন কয়েকজন নারী সেখানে ছুটে যান মেয়রকে সাহায্য করার জন্যে। কিন্তু রেফারি তাদেরকে বলেন সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্যে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় মিডিয়াতে খবর বেরিয়েছে যে এরপর ওই রিং-এর উপর লবণ ছিটানো হয়। খেলা শুরু হওয়ার আগে সাধারণত এভাবেই রিংকে 'পবিত্র' করা হয়। আরো পড়তে পারেন: বন্ধ হয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কেন্দ্র রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ কি করতে পারে? বাসের চাপায় পা হারানো রোজিনা আর নেই লাইভে হঠাৎ নারী রেসলার, ক্ষমা চাইলো সৌদি কর্তৃপক্ষ রিং এর উপর লবণ ছিটিয়ে সেটিকে পবিত্র করা হচ্ছে রেফারির এই সিদ্ধান্তের ফলে তীব্র সমালোচনা হয়েছে জাপান সুমো এসোসিয়েশনের। পরে এই সমিতির প্রধান এজন্যে ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু তার কয়েকদিন পরেই এই সমিতি আবারও আক্রমণের মুখে পড়ে যখন একটি শহরের এক নারী মেয়রকে রিং-এ উঠতে বাধা দেওয়া হয়। তাকারাজুকা শহরের মেয়র তোমোকো নাকাগাওয়া সুমো সমিতির কাছে জানতে চেয়েছিলেন একটি প্রদর্শনী ম্যাচের আগে শহরের এক রিং-এ দাঁড়িয়ে তিনি বক্তব্য রাখতে পারেন কিনা। কিন্তু তাকে "ঐতিহ্যকে সম্মান' জানানোর কথা বলে না করে দেওয়া হয়। পরে রিং-এর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "নারী মেয়ররাও মানুষ। আমি শুধু নারী হওয়ার কারণে বক্তব্য রাখতে না পেরে খুব হতাশ।" মেয়র তোমোকো নাকাগাওয়া নারীদেরকে কেন রিং-এ উঠতে দেওয়া হয় না? জাপানে সুমো কুস্তি খেলা হচ্ছে হাজার হাজার বছর ধরে। এখনও অনুসরণ করা হয় বহু প্রাচীন রীতিনীতি। জাপান টাইমসের সাবেক একজন কলামিস্ট মার্ক বাকটন বিবিসিকে বলছেন, এই খেলাটির সাথে জাপানের শিন্তো ধর্মের সম্পর্ক রয়েছে। "জাপানে এটি কখনোই খেলা হিসেবে বিবেচিত হয়নি। বরং এটি জাপানিদের সাইকির সাথে গভীরভাবে জড়িত।" বহু বছর ধরে যেসব রীতিনীতি চলে আসছে তার মধ্যে রয়েছে যে খেলা শুরু হওয়ার আগে রিং-এর মাঝখানে একটি গর্ত তৈরি করা হয়। তারপর সেটি পূর্ণ করা হয় বাদাম, শামুক জাতীয় সামুদ্রিক প্রাণী এবং সমুদ্রের লতাগুল্ম দিয়ে। আর সেই কাজটা করেন শিন্তো ধর্মের যাজকেরা। তারপর গর্তটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর সুমো কুস্তিগিররা রিং-এর উপর উঠে পা দিয়ে মাড়াতে থাকেন ও হাতে তালি দেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো সেখান থেকে খারাপ প্রেতাত্মাদের তাড়ানো। "শিন্তো ধর্মে সুমো কুস্তির রিং-কে দেখা হয় পবিত্র একটি জায়গা হিসেবে," বলেন মি. বাকটন। মঞ্চ থেকে খারাপ প্রেতাত্মা তাড়াতে কুস্তিগিররা কিছু রীতিনীতি অনুসরণ করেন। এই ধর্মে নারীদেরকে তাদের মাসিকের রক্তের কারণে দেখা হয় 'অপবিত্র' হিসেবে। আর একারণে তাদেরকে রিং-এর ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। মনে করা হয়, যে কোন রক্ত জায়গাটিকে অপবিত্র করবে। এমনকি পুরুষ কুস্তিগিরদের শরীর থেকেও যদি কোন কারণে সেখানে রক্ত ঝরে - তখন লবণ ছিটিয়ে জায়গাটিকে পবিত্র করা হয়। এই রীতির কি পরিবর্তন হতে পারে? সুমো প্রধান ওগুরামা, যার এই একটিই নাম, তিনি বলেছেন, "এসব রীতিনীতি শত শত বছর ধরে অনুসরণ করা হচ্ছে। আর এটা আমরা মাত্র এক ঘণ্টায় বদলে দিতে পারি না।" এর আগেও এধরনের ঘটনা ঘটেছিল কিন্তু সুমো সমিতি কখনও তাদের সিদ্ধান্ত বদল করেনি। ২০০০ সালেও ওসাকার গভর্নর সুমো সমিতিকে অনুরোধ করেছিলেন রিং-এর ভেতরে যেতে অনুমতি দেওয়ার জন্যে। তিনি চ্যাম্পিয়ন এক কুস্তিগিরের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেসময় তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। সারা বিশ্বে নারীরা সুমোতে অংশ নিতে পারে, কিন্তু জাপানে নয়। মি. বাকটন মনে করেন যে সুমো সমিতি কখনোই এই নীতির পরিবর্তন ঘটাবে না, কারণ এটি বহু দিনের সংস্কৃতি। এ ছাড়াও জাপানে নারীবাদের বিষয়ে লোকজন খুব একটা সচেতন নয়। "সুমো সমিতি শুধু অপেক্ষা করছে কখন এসব কেলেঙ্কারির ঘটনা আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে যায় তার জন্যে।" "জাপানে এটা তেমন বড় কোন বিতর্ক নয়," বলেন তিনি। |
জাপানে সুমো কুস্তির কর্তৃপক্ষ 'শুধুমাত্র পুরুষদের' এই খেলা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। |
অযোধ্যায় জড় হচ্ছে কট্টর হিন্দু দুই সংগঠনের কর্মীরা রবিবার দুটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ডাকা পৃথক সমাবেশে কয়েক লক্ষ মানুষ সেখানে রামমন্দির তৈরির দাবি নিয়ে হাজির হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র থেকে বিশেষ ট্রেনে চেপে কট্টর হিন্দু সংগঠন শিবসেনার কয়েক হাজার সমর্থক হাজির হয়েছেন। শনিবার বিকেলে অযোধ্যায় পৌঁছিয়েছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেও। অন্য দিকে আর এস এসের সহযোগী ও কট্টর হিন্দু সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদও রবিবার রাম মন্দির কীভাবে তৈরি করা যায়, তা নিয়ে জনমত জানতে ডেকেছে বিশাল ধর্ম সভা। আর এই পরিস্থিতিতেই অযোধ্যার মানুষের মনে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে আবারও সেই ১৯৯২ সালের ৬ডিসেম্বরের মতো ঘটনা না ঘটে। আরও পড়ুন: অফিসার্স ক্লাবে ‘গোপন বৈঠক’: কে কী বলছে? দাঙ্গা-সহিংসতার তান্ডব কেন বারবার মুম্বাইতেই? অযোধ্যায় শিবসেনার বিশাল পোস্টার নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা ইশতিয়াক আহমেদ নামে অযোধ্যার এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেছিলেন, "যেভাবে ভিড় বাড়ছে, তাতে আমাদের অনেকের মনেই একটা সন্দেহ হচ্ছে আবার ৯২ এর মতো কিছু ঘটে যাবে না তো? অনেকেই বাচ্চা আর নারীদের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে। ঘরে খাবার মজুত করে রেখেছি আমরা সবাই।" কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য লাখ খানেক নিরাপত্তা কর্মী অযোধ্যায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ যেমন আছে, তেমনই রয়েছে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশও। "নিরাপত্তা ব্যবস্থা তো সরকার ভালই করেছে। প্রচুর পুলিশ। সরকার আশ্বস্তও করছে আমাদের। কিন্তু একবার কল্যাণ সিংয়ের সরকারের কাছে তো ৯২ সালে আমরা ধোঁকা খেয়েছি। তখনও তো আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল। তাই আবারও কোনও ঝামেলা হবে না তো? এই ভয় তো রয়েইছে," বলছিলেন শের আলি। অযোধ্যায় কয়েকদিন ধরেই অবস্থান করছেন বিবিসি হিন্দি বিভাগের সংবাদদাতা সমীরাত্মজ মিশ্র। তিনি টেলিফোনে বলছিলেন, "প্রচুর পুলিশ রয়েছে চারদিকে। অশান্তি এড়াতে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে যাতে দুটি সংগঠনের কেউই সভা না করতে পারে। তা স্বত্বেও সাধারণ মানুষের মনে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে - এটা আমি হিন্দু আর মুসলমান - উভয় ধর্মের মানুষের সঙ্গেই কথা বলতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি গত কদিনে।" দুটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনেরই দাবি একই - রাম মন্দির গড়তে হবে। লাখ খানেক নিরাপত্তা রক্ষী জড় করা হয়েছে অযোধ্যায় শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে সরকারে রয়েছে কেন্দ্রে। তবু তারা নিয়মিত সরকারের কাজের সমালোচনা করে থাকে। রাম মন্দির ইস্যুতেও তারা সরকারের দিকে প্রশ্ন তুলেছে যে এতদিন ধরে নরেন্দ্র মোদী মন্দির তৈরির জন্য কেন কিছু করতে পারলেন না। অযোধ্যায় যে সব হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে শিবসেনা নেতা উদ্বব ঠাকরের সভার, সেখানেও লেখা হয়েছে, 'মন্দির আগে, সরকার পরে'। রাম মন্দির নিয়ে বিব্রতকর প্রশ্ন তুলে ইস্যুটাকে যাতে হাইজ্যাক করে না নিতে পারে শিবসেনা, সেজন্য আর এস এসের সহযোগী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তড়িঘড়ি পাল্টা 'ধর্মসভা' ডেকেছে একই দিনে, অযোধ্যাতেই। সেখানে তারা ধর্মগুরু আর সাধারণ মানুষের মতামত জানতে চাইবে প্রকাশ্যে যে কিভাবে রামমন্দির তৈরির দিকে এগোনো যায়। তারা ঘোষণা করেছে, এটাই হবে মন্দির তৈরির আগে 'শেষ সমাবেশ'। এরপরে আর কোনও ধর্না, সভা, সমাবেশ নয় - শুধুই মন্দির নির্মাণের কাজে এগোনো হবে। তবে রবিবার কয়েক লক্ষ মানুষের মধ্যে থেকে কেউ যাতে বিতর্কিত রামমন্দির-বাবরি মসজিদ চত্বরের দিকে না যেতে পারে, তার জন্য ওই অঞ্চলকে 'হাই সিকিউরিটি জোন' বলে ঘোষণা করেছে পুলিশ। |
১৯৯২ সালের ৬ডিসেম্বর যা ঘটেছিল, তারই পুনরাবৃত্তি হবে না তো রবিবার? - এই আশঙ্কাতেই ভুগছেন উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার মানুষ। |
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট হত্যা করা হয় শেখ মুজিবুর রহমানকে। বিবিসি বাংলাকে এ কথা বলেছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন। তিনি বলেন, আজ (মঙ্গলবার) ভোরে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তোলার আগে কিছুটা সময় আব্দুল মাজেদের সাথে তার কথা হয়েছে। সে সময় তিনি (আ. মাজেদ) তাকে জানান যে, গত ২০ থেকে ২২ বছর ধরে তিনি ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। ভারতের কলকাতায় তিনি থাকতেন বলে জানান। তবে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি কোন জায়গার নাম উল্লেখ করতে পারেননি। গত মাসের ১৫-১৬ তারিখের দিকে মি. মাজেদ বাংলাদেশে প্রবেশ করেন বলেও জানান তিনি। "তিনি কিভাবে বাংলাদেশে আসলেন সেটা আসলে জানানো হয়নি," মি. খান বলেন। আজ (মঙ্গলবার) ভোররাত ০৩:৪৫ মিনিটের দিকে মিরপুরের গাবতলি এলাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তাকে গ্রেপ্তার করে। বাংলাদেশে ফেরার পর তিনি কোথায় থাকতেন বা কী করতেন সে বিষয়েও কিছু জানা যায়নি। পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত ১৫ই মার্চের দিকে মিস্টার মাজেদ বাংলাদেশে ঢোকার পর পরই ইন্টারপোলের মাধ্যমে তারা সেটি জানতে পারেন। সেই তথ্য অনুযায়ী, তাকে ট্র্যাক করে গ্রেপ্তারের তৎপরতায় ছিলো পুলিশ। সূত্রগুলো বলছে, মি. মাজেদ যে ভারতে ছিলেন প্রেপ্তারের পর তিনি তা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। আরো পড়তে পারেন: সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, মি. মাজেদ গাবতলি বাস স্ট্যান্ড থেকে রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। "এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন যে তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।" এদিকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার দুপুরে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে মহানগর পুলিশ। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, যেহেতু সাজা ঘোষণার অনেক দিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হলো তাই আপীল করার কোন সুযোগ পাবেন না তিনি। পরিবারসহ শেখ মুজিবুর রহমান "তবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারবেন," মি. আবু বলেন। প্রাণ ভিক্ষা না চাইলে, বিধি মোতাবেক তার সাজা কার্যকর করা হবে। মি. মাজেদ গ্রেপ্তার হলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরো পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। এরা হলেন - মোসলেম উদ্দিন, শরিফুল হক ডালিম, খন্দকার আবদুর রশীদ, এ এম রাশেদ চৌধুরী এবং এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী। স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যের হাতে নিহত হন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান। ঐ একই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী, তিন পুত্র এবং দুই পুত্রবধূ সহ তাঁর পরিবারের ২০ জনের মত সদস্য নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারকার্য দীর্ঘদিন বিলম্বিত হবার পর অবশেষে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে পাঁচজন আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়। পলাতক অবস্থায় একজন মারা যান। |
২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল মাজেদ। |
জো বাইডেন ও শি জিনপিং - কিছুদিনের মধ্যেই কি দুই নেতা ফোনে কথা বলবেন? শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র তার বক্তব্যে বলেন, "আমরা আমেরিকার মানুষের পছন্দকে সম্মান করি। আমরা মি. বাইডেন ও মিজ হ্যারিসের প্রতি আমাদের অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি।" চীন-মার্কিন সম্পর্ক এই দুই দেশের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ বাকি বিশ্বের জন্যও। সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্য, করোনাভাইরাস মহামারি ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে অস্থিরতা বেড়েছে। নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রাশিয়াও এখন পর্যন্ত অভিনন্দন জানায়নি। চার বছর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তখন তাকে অভিনন্দন জানানো প্রথম কয়েকজন রাষ্ট্র নেতার মধ্যে ছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এবার জো বাইডেনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনো টুইট, টেলিগ্রাম বা ফোন কলও করেননি রুশ প্রেসিডেন্ট। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমাদের বিশ্বাস, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করাটাই সঠিক কাজ।" শনিবার মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলো জো বাইডেনের নির্বাচনে জয়ের পূর্বাভাস সম্পর্কে খবর প্রকাশ করা শুরু করার পর থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতারা মি. বাইডেনকে ফোন করে অভিনন্দন জানানো শুরু করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য কোনো ধরণের প্রমাণ ছাড়াই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে আসছেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্য ভিত্তিক কয়েকজন নির্বাচন কর্মকর্তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঐ দাবি বাতিল করে দেন। তারা মন্তব্য করেন যে ভোটগ্রহণ 'আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে নিরাপদ' ছিল। আরো পড়তে পারেন: আমেরিকার নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করে যা পেয়েছে বিবিসি ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজয় স্বীকার না করলে কী হতে পারে? নির্বাচনে কে বিজয়ী হয়েছেন, তা কখন জানা যাবে? ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা র্যলি করেই যাচ্ছেন চীনের বার্তা দেয়া কী ইঙ্গিত করে? চীনের এই বার্তা থেকে বোঝা যায় যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনি চ্যালেঞ্জ স্বত্ত্বেও চীনের নেতৃত্ব - বিশেষ করে দেশটির ক্ষমতাশালী প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং - আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল মেনে নিয়েছেন এবং জানুয়ারি মাসে জো বাইডেনই পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন বলে মনে করে। এই বার্তা দেয়ার আগ পর্যন্ত চীনের সরকার বলে আসছিল যে জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করার বিষয়টি তাদের 'নজরে এসেছে।' বৃহস্পতিবার অভিনন্দন জানানোর পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়্যাং ওয়েনবিন বলেন: "আমরা বুঝতে পারি যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মার্কিন আইন এবং পদ্ধতি অনুসরণ করেই হবে।" বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করার পাশাপাশি করোনাভাইরাসকে 'চীনা ভাইরাস' বা 'কুং ফ্লু' হিসেবে বেশ কয়েকবার উদ্ধৃত করার কারণেও দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি হয়েছে। পশ্চিম চীনে মুসলিমদের গণহারে বন্দী করা এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সেনা ঘাঁটি স্থাপন নিয়েও দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। চীন কাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়, তা নিয়ে এবারের মার্কিন নির্বাচনের আগে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিশ্বাস ছিল, শি জিনপিং এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টি জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চেয়েছে। শনিবার হোয়াইট হাউজে যান ট্রাম্প তবে বেইজিংয়ের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ান জুয়েতং মনে করেন, আরো চার বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকুক, চীন তাই চেয়েছিল। চীনের ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে চাওয়ার কারণ সম্পর্কে বিবিসিকে নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন, "এমন নয় যে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্প চীনের স্বার্থে কম আঘাত করবেন, ট্রাম্প নিশ্চিতভাবে বাইডেনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশি ক্ষতি করবেন।" চীনের প্রতি জো বাইডেনের নীতি কতটা পরিবর্তিত হবে তা এথনও পরিষ্কার না হলেও বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন কৌশলগত কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বাইডেনের চীন বিষয়ক নীতিতে। আর কোন্ কোন্ দেশ এখনও অভিনন্দন জানায়নি রাশিয়া মস্কোর পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনে অভিনন্দন না যাওয়ার অর্থ দাঁড়ায় যে মস্কো নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ততটা উৎফুল্ল নয় - মন্তব্য করছেন মস্কোতে বিবিসি'র স্টিভ রোজেনবার্গ। মি. বাইডেন মস্কোর সমালোচক এবং সম্প্রতি তিনি এমন মন্তব্যও করেছেন যে রাশিয়া আমেরিকার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারোকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এতটাই কাছের মিত্র হিসেবে মনে করা হয় যে তাকে কখনো কখনো 'ক্রান্তীয় অঞ্চলের ট্রাম্প' হিসেবেও বর্ণনা করা হয়ে থাকে। তাই ব্রাজিলের এই নেতা যে এখনও জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানাননি, তাতে খুব একটা আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের গণমাধ্যম যখন জেয়ার বোলসোনারোকে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানানোর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করে, তখন তার উত্তর ছিল: "নির্বাচন কি এখনও শেষ হয়েছে?" রবিবার ভার্জিনিয়ার ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ কোর্সে খেললেও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেননি ট্রাম্প মেক্সিকো মেক্সিকোর অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মেক্সিকোর সীমান্তে দেয়াল তৈরি করতে চাইলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সবসময় ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর। গত রবিবার তিনি মন্তব্য করেন, "আমরা হালকাভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাই না। মেক্সিকোর দুই প্রার্থীর সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সব আইনি জটিলতা সমাধান হওয়ার জন্য আমরা অপেক্ষা করবো।" উত্তর কোরিয়া মার্কিন নির্বাচনের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আর অথবা দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম কোনো মন্তব্য করেনি। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে উত্তর কোরিয়া নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছিল। মি. ট্রাম্পের সাথে কিম জং-আনের বেশ আক্রমণাত্মক সম্পর্ক থাকলেও দুই নেতার মধ্যে তিনবার সাক্ষাৎ হয়েছে। অন্যদিকে মি. বাইডেন কিম জং-আনের সাথে কোনো ধরণের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী নন বলে এর আগে মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার নেতাও মি বাইডেনকে 'কম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মূর্খ' বলে সমালোচনা করেছেন। |
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয়ের পর কিছুদিন নীরব থাকলেও অবশেষে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছে চীন। |
টাইম ম্যাগাজিনের সম্মাননাকে কীভাবে দেখছেন শহিদুল আলম? সেই তালিকায় আছেন নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগজি। আছেন মিয়ানমারে আটক রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কিয়া সো। আছেন ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা। আরও আছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ক্যাপিটাল গেজেট পত্রিকার পাঁচ জন। টাইম ম্যাগাজিন তাদের এই বিশেষ সংখ্যায় আরও যেসব নির্যাতিত সাংবাদিকের কথা উল্লেখ করেছে, তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের শহিদুল আলম। আন্তর্জাতিক খ্যাতি পাওয়া যে আলোকচিত্রীকে বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকমাস বন্দী করে রেখেছিল। টাইম ম্যাগাজিনের এই সম্মাননাকে তিনি কীভাবে দেখছেন? টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে নিপীড়নের শিকার সাংবাদিকরা। বিবিসির এই প্রশ্নের উত্তরে শহিদুল আলম বলেন, "আমার মতো আরও একশো জন যদি আমার মতো কথা জোর গলায় বলতো, তাহলে নিশ্চয়ই আমাকে সেরকম আলাদাভাবে দেখা হতো না। আমাকে চিহ্ণিত করা হতো না বা আমার সঙ্গে বাংলাদেশে যে আচরণ করা হলো, সেটাও হয়তো ঘটতো না।" শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে তরুণ শিক্ষার্থীদের এক ব্যাপক আন্দোলনের সময়। তার বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ এনেছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু শহিদুল আলম মনে করেন তাঁকে ধরা হয়েছিল ভিন্নমতের কন্ঠরোধের জন্য। "আমি যে কথাগুলো বলেছিলাম, সেগুলো নতুন নয়। ঘরে ঘরে সবাই বলে। প্রকাশ্যে বলে না। আর আমি যা করছি, তা তো অনেককাল ধরেই করছি। কিন্তু এখন যেহেতু বাংলাদেশ একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, সেখানে আমার ভূমিকাটা হয়তো আরও পরিস্কার হয়ে গেছে। যেহেতু অনেক মানুষ চুপ করে আছে, তখন একটা কন্ঠস্বর অনেক বেশি লাইমলাইটে বা স্পটলাইটে আসে।" শহিদুল আলমের মুক্তি চেয়ে ঢাকায় বিক্ষোভ টাইম ম্যাগাজিন যে এবার পার্সন অব দ্য ইয়ার হিসেবে সাংবাদিকদের বেছে নিয়েছে, তা খুবই প্রাসঙ্গিক হয়েছে বলে মনে করেন শহিদুল আলম। " এই মুহূর্তে অন্যদের ওপর লোকে যখন আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, হাতড়ে বেড়াচ্ছে কার ওপর আমি আস্থা রাখতে পারি, সাংবাদিক মহলের মধ্যেও যখন পচন ধরেছে- তার মধ্যেও কেউ কেউ এর উর্ধ্বে উঠে জোর গলায় সত্য কথা বলার চেষ্টা করছে। এরকম সাহস যারা দেখায়, তাদেরকে আমাদের অবশ্যই সম্মান করতে হবে।" তার মতে, বিশ্ব জুড়েই সাংবাদিকতার জন্য একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আরও পড়ুন: যেসব ছবির মাধ্যমে আলোড়ন তোলেন শহিদুল আলম কেন বাংলাদেশের শহীদুল আলমের পাশে ভারতের রঘু রাই? শহীদুল আলমের মুক্তি চেয়ে বিবৃতি: যা বললেন ইনু " যেখানে যেখানে যত বেশি নিপীড়ন সেখানে তত বেশি ভয় তৈরি হচ্ছে। নিপীড়ন যেখানে নেই সেখানে সাংবাদিকতায় সেরকম সমস্যা হয় না।" বাংলাদেশে নতুন প্রযুক্তির বিকাশের পাশাপাশি যখন কীনা গণমাধ্যমের অধিকতর স্বাধীনতা ভোগ করার কথা, সেখানে যে এর উল্টো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। "আজকে বাংলাদেশে অনেক পত্রিকা, অনেক টেলিভিশন, অনেক রেডিও। তা সত্ত্বেও গণমাধ্যম যে ভূমিকা রাখতে পারে না, সেটাই আমার কাছে খুব চিন্তার বিষয়। কিছু কিছু গণমাধ্যম তো নিজেদের একেবারে সরকারের মুখপাত্র হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। অনেকে বিভিন্ন ভাবে সরকার থেকে আরেক ধাপ এগিয়ে সরকারের বুলিকেই সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করতে চেষ্টা করছে। এটা একটা ভয়ের বিষয়।" বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকায়ও হতাশ তিনি। " যেখানে বুদ্ধিজীবীদের এত জোরালো ভূমিকা রাখার কথা, সেখানে এতটাই তারা গুটিয়ে গিয়েছে, তাদেরও তো জনগণের আস্থা রাখার সুযোগ এত কম। বুদ্ধিজীবীদের তো কেনা যায়, তাদের পোষা যায়। যারা পোষা বুদ্ধিজীবী নয়, তাদেরই ভয় পায়। " |
"দ্যা গার্ডিয়ান্স এন্ড দ্য ওয়ার অন ট্রুথ।" যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টাইম সাময়িকী ২০১৮ সালে যাদের বছরের আলোচিত চরিত্র বলে বাছাই করেছে তাদের এভাবেই বর্ণনা করেছে। এরা সবাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হওয়া সাংবাদিক। |
বি-৫২ বোমারু বিমান ওয়াশিংটন যখন এমন দাবি করছে যে, ইরান সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা মার্কিন সৈন্যদের ওপর আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে - ঠিক সেই সময়ই এই বোমারু বিমান পাঠানো হলো। ইরান অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে । ইরাকে মার্কিন অভিযানের সময় তাদের ভাষায় যেরকম 'মিথ্যে গোয়েন্দা তথ্য' ছড়ানো হচ্ছিল, তার সঙ্গে এর তুলনা করছে ইরান। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ইরানের বিরুদ্ধে কেন রণতরী পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস আব্রাহাম অবশ্য কথিত এ আক্রমণের হুমকি সম্পর্কে হোয়াইট হাউস থেকে এখনো বিস্তারিত কিছু বলা হয় নি। একটি আমেরিকান বিমানবাহী জাহাজও ইতিমধ্যেই পারস্য উপসাগরে পাঠানো হয়েছে। বি-৫২ বোমারু বিমান পাঠানোর খবরটি দিচ্ছে মার্কিন সংস্থা সিবিএস। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ আরও জোরদার গাজীপুরের গ্রামে কংকাল চুরি, ঠেকাতে কবর পাহারা কঠোর ইসলামি আইনের দেশ ব্রুনেই আসলে কেমন? বি -৫২ বোমারু বিমান বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন কি করতে চায় এটা স্পষ্ট নয়। তারা ইতিমধ্যেই ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আখ্যায়িত করেছে। আমেরিকা যদিও বলছে যে তারা যুদ্ধ চায় না, কিন্তু ইরানের ক্ষমতাসীন শাসকদের উৎখাত করার ব্যাপারে তাদের উৎসাহও গোপন থাকছে না। এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়, এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের তেল বিক্রির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। |
যুক্তরাষ্ট্র আর ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকার মধ্যেই খবর পাওয়া যাচ্ছে যে চারটি আমেরিকান বি-৫২ বোমারু বিমান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে এসে নেমেছে। |
আয়া মাসারভি। তিনি মেলবোর্নে হেঁটে নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। একুশ বছর বয়সী ইসরায়েলি আরব এই তরুণীর নাম আয়া মাসারভি। তার মৃত্যুর ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভ ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়, বিশেষ করে নারী বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে। নিহত এই তরুণীর পরিবার বলছে মিস মাসারভি অস্ট্রেলিয়াকে সব সময় নিরাপদ মনে করতেন এবং সে কারণেই তিনি এখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পড়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। তবে তার আগেও আরও কয়েকটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়াতে সাম্প্রতিক সময়েই এবং সেগুলোর ক্ষেত্রেও একই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: 'নারীর জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান নিজের ঘর' নিপীড়ক সঙ্গী চিনবেন যেভাবে নিউইয়র্কে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র: আটক ৪ চীনের যে অস্ত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র পরিসংখ্যান কী বলছে? অস্ট্রেলিয়াতে প্রতি তিনজন নারীর একজন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন এবং যৌন সহিংসতার শিকার হন প্রতি পাঁচজনে অন্তত একজন। দেশটির আদিবাসীদের ক্ষেত্রে এ ধরণের সহিংসতার হার আরও অনেক বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি দশজন নারীর একজন সহিংসতার অভিজ্ঞতা পান অপরিচিত কারও দ্বারা। আর পারিবারিক সহিংসতা দেশটিতে প্রায় নিয়মিত ঘটনা এবং গড়ে প্রতি সপ্তাহে একজন নারী খুন হন তাদের বর্তমান বা সাবেক পুরুষ সঙ্গীর হাতে। "নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা যার সর্বোচ্চ রূপ হলো খুন। কিন্তু এটিই নিয়মিত হচ্ছে। নারীর ঘরেই আহত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিকভাবে," বলছিলেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ রুথ ফিলিপস। তার মতে, "এটি একটি মারাত্মক সমস্যা"। আয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অনেকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কী ঘটেছে? আলোচিত কিছু খুনের ঘটনা বিষয়টিকে জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় নিয়ে এসেছে। মেলবোর্নের একটি এলাকায় কমেডিয়ান ইউরাইডাইস ডিক্সনের হত্যার ঘটনায় বিতর্ক জোরদার হয়েছিলো। এর কয়েক মাসের মাথায় শুধু অক্টোবরেই অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ হারিয়েছে এগারো নারী। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ক গবেষক কেলসলি হেগার্টি বলছেন, "অনেক সময় নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি পর একটি ঘটতেই থাকে। এবং বাস্তবতা হলো গোপন মহামারীর মতো রয়েছে হয়রানি ও সহিংসতার বিষয়গুলো"। এর আগে ২০১২ সালে আইরিশ নারী জিল মিয়াগের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলো। এখন আবার সেই একই প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে আয়া মাসারভির মৃত্যুর ঘটনায়। জি-২০ জাতিসমূহের মধ্যে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান অষ্টম। জুনে খুন হয়েছিলেন কমেডিয়ান ডিক্সন। সমাধানে করণীয় কী? ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সরকার নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা কমিয়ে আনতে একটি নীতি প্রণয়ন করে। তারপরেও গবেষক ফিলিপ ও অন্যরা বলছেন যে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা তাই বিষয়টির ওপর আরও জোর দেয়ার দাবি করছেন। দেশটি যৌন বৈষম্য বিষয়ক কমিশনার কেট জেনকিনস বলেছেন, "আমরা সহিংসতা কমিয়ে আনতে পারবো তখন যখন নারীরা শুধু নিরাপদই বোধ করবেনা বরং তারা যখন একই সাথে সম্মানও পাবেন"। |
গত সপ্তাহেই এক তরুণীর হত্যাকাণ্ডের খবরে দারুণ ধাক্কা খেয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ার মানুষ। |
'মানব ইতিহাসের সর্বশেষ যুদ্ধ শুরু হতে পারে'- জেনারেল ইয়েভগেনি বুজনিস্কি লে জে ইয়েভগেনি বুজনিস্কি - যিনি বর্তমানে নিরাপত্তা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার প্রধান - বলছেন, রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয়ে পড়েছে যে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ার যথার্থ কারণ রয়েছে। "পরিণতি শীতল যুদ্ধের চেয়ে অনেক খারাপ হতে পারে, এবং ফলাফল খুব খুব খারাপ হতে পারে...মানব ইতিহাসের সর্বশেষ যুদ্ধ লেগে যেতে পারে"। জেনারেল বুজনিস্কি বলেন,"দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া রাশিয়া খুবই ভয়ঙ্কর"। ইংল্যান্ডের সলসবেরি শহরে গত মাসে সাবেক স্বপক্ষত্যাগী এক সাবেক রুশ গুপ্তচর এবং তার মেয়েকে বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগে হত্যার চেষ্টার জন্য ব্রিটেন সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সহ ২০টিরও বেশি ইউরোপীয় দেশ থেকে একশরও বেশি রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। পাল্টা জবাবে রাশিয়াও সমান সংখ্যক পশ্চিমা কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। শুধু ব্রিটেন বা আমেরিকা নয়, সারা বিশ্বের বহু দেশই তো সলসবেরির ঘটনায় রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে বিশ্বাস করে - বিবিসির এরকম প্রশ্নে জেনারেল বুজনিষ্কি বলেন, "আপনারা যখন বিশ্বের কথা বলেন, তখন আপনারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন,যুক্তরাষ্ট্র এবং আর দু'একটি দেশের কথা বোঝান।" পোর্টন ডাউন ল্যাব বলছে বিষাক্ত নভিচক যে রাশিয়ায় তৈরি তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি নার্ভ গ্যাস যে রাশিয়ার তা নিশ্চিত নয়- ব্রিটিশ ল্যাব ওদিকে ব্রিটেনের সরকারি যে গবেষণাগারে (পোর্টন ডাউন ল্যাব) সলসবেরিতে প্রয়োগ করা নার্ভ গ্যাস পরীক্ষা করা হচ্ছিল, তারা গতকাল (মঙ্গলবার) বলেছে- নভিচক নামে ঐ বিষাক্ত গ্যাস যে রাশিয়া থেকে এসেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দু'সপ্তাহ আগে ব্রিটেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন - পোর্টন ডাউন ল্যাবের বিজ্ঞানীরা একশ ভাগ নিশ্চিত যে বিষাক্ত গ্যাস রাশিয়ায় তৈরি। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) ল্যাবের প্রধান গ্যারি এইটকেনহেড বলেছেন, তারা বের করেছেন যে ঐ নার্ভ এজেন্ট ছিল মিলিটারি গ্রেডের নভিচক কিন্তু "আমরা এর সুনির্দিষ্ট সূত্র খুঁজে পাইনি।" রাসায়নিক অস্ত্র সম্পর্কিত এই ল্যাবরেটরির বক্তব্যে একদিকে যেমন অস্বস্তিতে পড়েছে ব্রিটেন সরকার, সেই সাথে রাশিয়া ব্রিটেনের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন মঙ্গলবার রাতে বলেছেন, বিশ্বের বিশটি দেশে নভিচক তৈরির ক্ষমতা রাখে। অন্যদিকে রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার গ্রুশকো বলেছেন - ব্রিটেন এখন শক্তিধর একটি শত্রু খুঁজে বেড়াচ্ছে। রাশিয়ার সরকারের পক্ষ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সলসবেরিতে রুশ সাবেক গুপ্তচরের ওপর গ্যাস প্রয়োগের ঘটনা হয়তো ব্রিটিশ গুপ্তচরদের কাজ। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ সরকার যে সমস্যায় পড়েছে, তা থেকে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘোরাতেই হয়তো এই কাজ করা হয়েছে। তবে এই সন্দেহ উড়িয়ে দিয়েছেন ব্রিটেনের সরকারি মন্ত্রীরা। |
রুশ সেনাবাহিনীর সাবেক একজন শীর্ষ জেনারেল বিবিসিকে বলেছেন, ব্রিটেনে একজন সাবেক রুশ গুপ্তচরের ওপর নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগের ঘটনা নিয়ে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমের যুদ্ধ লেগে যেতে পারে এবং তা হবে 'সর্বশেষ যুদ্ধ'। |
বিজ্ঞান, গণিত এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষকদের ভিসা দেয়া হবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা নামে নতুন এই ভিসা ব্যবস্থা চালু হবে ২০শে ফেব্রুয়ারি থেকে। এই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতার শর্ত হলো - বিজ্ঞান, গণিত ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা বর্তমানে গবেষণার কাজ করছেন এবং যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেটি যদি ব্রিটিশ কোন স্বীকৃত কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত হয়, তাহলে তিনি এ ভিসা পাবেন। বরিস জনসন বলেছেন, তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যে "বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবী মানুষদের জন্য যুক্তরাজ্যের দরজা খোলা।" অন্য দুটো প্রধান রাজনৈতিক দল লেবার পার্টি এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিকরা অবশ্য এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ বিষয়ক ঘোষণায় মি. জনসন বলেন, "বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে যুক্তরাজ্যের গৌরবজনক ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু তাতে নেতৃত্ব দেয়া এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আমাদের মেধাবী মানুষ খুঁজে বের করা এবং গবেষণায় বিনিয়োগ চালিয়ে যেতে হবে।" তিনি আরো বলেন, "এখন যেহেতু আমরা ইইউ ছাড়তে যাচ্ছি, তাই আমি সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই যে বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবী মানুষদের জন্য যুক্তরাজ্যের দরজা খোলা। তাদের আইডিয়াকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা আমাদের সমর্থন চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।" এর আগে গত মাসে মি. জনসনঘোষণা করেছিলেন যে সারা পৃথিবীর "বিজ্ঞানীদের চুম্বকের মত আকর্ষণ" করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার অধীনে বছরে কত মানুষকে ভিসা দেয়া হবে, তা জানানো হয়নি। শি অনউরা এর আগে এ সংক্রান্ত যে ব্যবস্থা ছিল তাতে বছরে অনুর্ধ্ব দুই হাজার ভিসা দেয়া হতো। লিব-ডেমরা বলছে, আগের ব্যবস্থায় কখনোই দুই হাজার লোককে ভিসা দেয়া হতো না এবং নতুন ব্যবস্থা বৈপ্লবিক কোন পরিবর্তন আনবে না। দলটির মুখপাত্র ক্রিস্টিন জার্ডাইন বলছেন, "কোন ভিসার নাম বদলে দিলেই এবং নির্দিষ্ট একটি সংখ্যার সীমারেখা তুলে দিলেই তাকে সিরিয়াস কোন পরিকল্পনা বলা যায় না।" ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়ার পর ভিসা আবেদন যাচাই ও প্রদানের কাজটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলে ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন এজেন্সি বা ইউকেআরআই করবে। এই প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা খাতে সরকারি অর্থায়ন দেখভাল করে। এর ফলে যোগ্য প্রার্থীদের আবেদন দ্রুত যাচাই এবং পুরো ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। আরো পড়তে পারেন: ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ ৩১শে জানুয়ারি ব্রিটেনের নির্বাচন কেন হয়ে উঠেছে 'ব্রেক্সিট ইলেকশন' ব্রেক্সিট: এরপর কী হতে পারে? যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় যুক্ত দুই লক্ষ ১১ হাজার মানুষের অর্ধেকই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বাসিন্দা। ব্রিটিশ ল্যাবে কাজের জন্য এখন তাদের ভিসা নেওয়ার দরকার হয় না। যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা এ মাসের শেষে অর্থাৎ ৩১শে জানুয়ারি শেষ হতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়ায় এখন যেমন পয়েন্ট-ভিত্তিক ভিসা সিস্টেম চালু রয়েছে, ব্রিটেন তেমনি একটি ব্যবস্থা ২০২১ সাল থেকে চালু করবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিবাচক বার্তা ব্রেক্সিটের ফলে আন্তর্জাতিক কর্মসূচিগুলোতে যুক্তরাজ্যের অংশগ্রহণ কমে যাবে কিনা, সে নিয়ে নানা রকম আলোচনা রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে নতুন এই কর্মসূচি যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রকল্পে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী এবং গণিতজ্ঞকে ব্রিটেন নিয়ে আসতে পারবে বলে সরকার দাবি করছে। ব্রেক্সিটের ফলে ব্রিটেনের মেধাবীদের একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্য ছেড়ে চলে যাবেন এমন আশংকায় দেশটির গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যারা ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজতর করার জন্য লবি করে আসছিলেন, এই সিদ্ধান্তকে তাদের একটি জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। আরো পড়ুন: বাংলাদেশিদের ফেরাতে চীনের সাথে আলোচনা শুরু কোন দেশে পড়তে যেতে চান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা? ক্রিকেট: পাঁচ বছরে মুস্তাফিজের অবনতি কতটা বিশেষ করে, যেহেতু এই প্রক্রিয়ায় ইউকেআরআই যুক্ত থাকবে এবং বিশেষ প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতিকে যোগ্যতা হিসেবে গণ্য করা হবে, সে কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আলাদা করে কারো বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজটি যাচাই করতে হবে না। ব্রিটেনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন রয়্যাল সোসাইটি এবং রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। গত বছর বিবিসি নিউজ রিপোর্ট করেছিল যে ব্রেক্সিটের পর সরকারের প্রধান চিন্তার বিষয়গুলোর একটি হবে বিজ্ঞান ও গবেষণা। চলতি বছরের মার্চে যখন নতুন জাতীয় বাজেট ঘোষণা হবে, তখন এ খাতে বেশ কয়েকশো' কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ছায়া শিল্পকৌশল সংক্রান্ত বিভাগের মুখপাত্র শি অনউরা সরকারের বাড়তি পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, "বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের বিষয়টি বিজ্ঞান নিয়ে শীর্ষ গবেষক বা বিজ্ঞানীর কাছ থেকে নাও আসতে পারে, সেটা এই পরিকল্পনায় ভাবা হয়নি। নতুন ভিসা নিয়মের এই বিষয়টিকে পুরোপুরি বোঝার ঘাটতি থাকতে পারে।" শি অনউরা বলেন, "এরাসমাস স্কিম বন্ধ করা এবং এশিয়া ও আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের ভিসা দেয়া বন্ধ করা---বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে এগুলোর নেতিবাচক প্রভাবের কথা মনে রাখতে হবে।" তবে লিব-ডেম পার্টি মনে করিয়ে দিয়েছে, গবেষণার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, যে কারণে ইইউ-এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজের বিষয়টি মাথায় রেখে এগুতে হবে। |
আগামী মাস থেকে ব্রিটেন বিজ্ঞানী, গণিতবিদ আর গবেষকদের দ্রুততম সময়ে ভিসা দেয়ার নতুন এক ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। |
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিজি১৪৭ তবে কিছুক্ষণ পরেই চট্টগ্রাম সেনা দপ্তরের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, কম্যান্ডোদের আত্মসমর্পণের অনুরোধে সাড়া না দেয়ায় এনকাউন্টারে প্রথমে আহত এবং ঐ ব্যক্তি মারা যান। বিমানটিতে ১৩৪জন যাত্রী আর ১৪জন ক্রু ছিলেন। অস্ত্রধারী ব্যক্তি ছাড়া সবাই অক্ষত রয়েছেন। যেভাবে ঘটনা শুরু বাংলাদেশ বিমানের ময়ুরপঙ্খী নামের এই বোয়িং বিমানটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। সেনা কর্মকর্তা ও যাত্রীদের তথ্য মতে, ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার পরেই একজন যাত্রী পিস্তল নিয়ে ককপিটে প্রবেশ করেন। মাঝ আকাশেই তিনি পাইলটকে পিস্তল ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়ার দাবি করেন। বিমানে থাকা একজন যাত্রী ওসমান গণি সাংবাদিকদের বলেছেন, "ঢাকা থেকে বিমানটি রওনা হওয়ার একটু পরেই একজন যাত্রী ককপিটের দিকে যায়। এরপর আমরা কিছু গুলির শব্দ শুনতে পাই। তখন আমরা শুধু আল্লাহ আল্লাহ করছিলাম।'' বিমানটি চট্টগ্রামে অবতরণের ফাঁকে বিমানের পাইলট ওই ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ অব্যাহত রাখেন যাতে সে কারো ক্ষতি না করে। কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানটি ছিনতাই করলেও তিনি সেটিকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেননি। তার দাবি ছিল, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চান। ওই বিমানটির একজন যাত্রী, বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ''বিমানে একজন যাত্রী অস্ত্র নিয়ে বিমানটি হাইজ্যাক করার চেষ্টা করেছিল। সে বাঙ্গালি। সে গুলী করেছে তবে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাইলট আমার কাছে এসেছিল, সে বলেছে হাইজ্যাকার একজন, সে গুলি করেছে। পাইলট তাকে পারসুয়েড করার চেষ্টা করেছে। হাইজ্যাকার বলেছে, সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।'' তবে গুলির শব্দ প্রসঙ্গে সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, এটা যাত্রীদের ভুল হতে পারে। এ ধরণের ঘটনায় অনেক সময় যাত্রীরা সবসময় একটা ট্রমায় থাকে, তারা অনেক কিছু শুনতে পান, সেটা একটা হ্যালুসিনেশন হতে পারে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান জানান, ''বিমানটি বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপরেই জরুরি গেট দিয়ে সকল যাত্রীকে বের করে আনা সম্ভব হয়।'' সন্দেহভাজন এই ছিনতাইকারী যাত্রী বা ক্রুদের ক্ষতি করার কোন চেষ্টা করেনি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আরো পড়ুন: ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাই নাটক শেষ হয় যেভাবে চট্টগ্রামে সেনা অভিযানে বিমান ছিনতাইকারী নিহত বাংলাদেশ বিমানে অস্ত্রধারী উঠলো কিভাবে কমান্ডো অভিযানে সন্দেহভাজন ছিনতাইকারী নিহত হয়েছে বিমানবন্দরের রুদ্ধশ্বাস দুই ঘণ্টা বিমানটি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণের পর থেকে ছিনতাইকারী মুক্ত করতে এরপর চলে যায় আরো দুই ঘণ্টা। অবতরণের পরেই সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, কমান্ডো, র্যাব, সোয়াট, দমকল বিভাগ বিমানটি ঘিরে ফেলে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থাকা একজন যাত্রী শিউলি রানী দে স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলছেন, ''আমার বিমান ছিল ৬টা ২০ মিনিটে। তার আগেই আমি বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট অবতরণ করতে দেখি। তখন আমি দেখতে পাই, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র্যাবের গাড়িগুলো গিয়ে বিমানটি ঘিরে ফেলেছে।'' এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান সাংবাদিকদের বলেন ''এর মধ্যেই পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান যে, কথিত হাইজ্যাকার তার স্ত্রীর কোন বিষয় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। এক ফাঁকে একজন ক্রু বাদে সকল ক্রুই বের হয়ে আসতে পারেন। পরে সেই ক্রুও বের হয়ে আসেন। তখন শুধুমাত্র কথিত হাইজ্যাকার বিমানে ছিল।'' ''আমরা খবর পাওয়ার পর আমরা বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে কথা বলি। চট্টগ্রাম বিমান বাহিনীর ঘাটি থেকে সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে।'' বলছেন মি. হাসান। বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেছেন, ''আমাদের লক্ষ্য ছিল কম্যান্ডোরা না আসা পর্যন্ত তাকে ব্যস্ত রাখা। এ পর্যন্ত আমরা নানা ভাবে তার সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছিলাম।'' এর মধ্যে বিভিন্ন বাহিনী, সেনাবাহিনী, এয়ারফোর্স, নেভি, র্যাব, সোয়াট টিম সেখানে অবস্থান নেয়। কম্যান্ডো অভিযান সন্ধ্যা ৭ টা ১৭ মিনিটে অভিযান শুরু করে সেনা কম্যান্ডোরা। জে. এস এম মতিউর রহমান জানান, হোলি আর্টিজান বেকারিতে কম্যান্ডোদের যে দলটি অভিযান পরিচালনা করেছিল, সেই একই দল এখানে অভিযানটি পরিচালনা করে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরুল নেতৃত্ব অভিযানে নেতৃত্ব দেন। "মাত্র আট মিনিটের মধ্যে তারা ছিনতাইয়ের অবসান ঘটান।" জে রহমান বলেন, ''আমাদের কম্যান্ডোরা বিমানের ভেতর অভিযান চালানোর পর তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু তিনি সাড়া না দিয়ে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। তার সঙ্গে আমাদের এনকাউন্টার হয়। তিনি প্রথমে আহত হন। পরে তিনি মারা গেছেন বলে আমি জানতে পেরেছি।'' তার কাছে শুধুমাত্র একটি পিস্তল পাওয়া গেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিনতাইকারী সম্পর্কে কি জানা যাচ্ছে? পাইলটের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি একবার নিজের নাম মাহাদি বলে উল্লেখ করেছেন। তার পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে পারেননি কর্মকর্তারা। তার চেহারা দেখে পাইলট প্রথমে বিদেশী বলে মনে করলেও, তিনি একজন বাংলাদেশী বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এয়ার মার্শাল নাইম হাসান বলছেন, ''কথিত ছিনতাইকারীকে খানিকটা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়েছে। সাধারণত ছিনতাই ঘটনা যেমনটা দেখা যায়, তেমনভাবে সে যাত্রী বা ক্রুদের জিম্মি করার সেরকম চেষ্টা করেনি।'' কড়া নিরাপত্তা ডিঙ্গিয়ে কিভাবে অস্ত্র নিয়ে ঢুকলেন যাত্রী মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলছেন, এতো কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ডিঙ্গিয়ে কিভাবে তিনি অস্ত্র নিয়ে ভেতরে চলে এলেন, এটা অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান নাইম হাসান বলছেন, তারা পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখবেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: আইএসের হাজার হাজার বিদেশী জিহাদির পরিণতি কি প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-২ বইয়ের বিক্রি বন্ধ আবাসিক ভবনে অগ্নি নিরাপত্তায় যা ভুলবেন না বাঙালিদের কেন আপেল-স্ট্রবেরি না খেলেও চলবে? |
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে সেনা অভিযানের পরপরই ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান বলেন, ''কথিত ছিনতাইকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে।'' |
প্রযুক্তির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। কিংবা কোন দুর্ঘটনা বা উন্নয়ন কাজের কারণে হঠাৎ যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটলো। এই ধরনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে প্রায়শই ঘটে। সেসব তথ্য যাত্রী, চালক, পুলিশ বা হাসপাতালে পৌঁছাতেও অনেক সময় লেগে যায়। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে সড়কে অপ্রত্যাশিত কোন ঘটনা সম্পর্কে আগেভাগে জানতে বা সড়কে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থা থাকে যার সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করে পুলিশ, উদ্ধারকর্মী, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবাই। বাংলাদেশেও এরকম একটি ব্যবস্থা চালু করার জন্য একটি পাইলট প্রকল্পের ব্যাপারে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। "ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম" যে ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে কথাবার্তা হচ্ছে সেটি হল "ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম"। এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল করিম। তিনি ব্যাখ্যা করছিলেন বিষয়টি আসলে কী। তিনি বলছেন, "এর মূল উদ্দেশ্য হল দেশের সকল সড়ক মহাসড়ক প্রযুক্তির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা যাতে কোন ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে সেটি জানা ও দেখা যায় এবং ব্যবস্থা নেয়া যায়।" এক দেশে প্রায় ৬০ কোটি সিসিটিভি ক্যামেরা? বাংলাদেশে প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে যা আছে আইন হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রাস্তায় কি বদলেছে কিছু? বাংলাদেশে মহাসড়কে অপ্রত্যাশিত কোন ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পৌছাতে অনেক সময় লেগে যায়। তিনি বলছেন, "যেমন এখন কী হচ্ছে? হাইওয়েতে একটা দুর্ঘটনা ঘটলো। এটার খবর নিকটবর্তী থানা, হাইওয়ে পুলিশ বা হাসপাতালে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। এর ফলে দুটো জিনিস ঘটে। একটি হল দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসায় দেরি হয় এবং ওই দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে বিশাল লম্বা যানজট তৈরি হয়ে যায়। একটা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যদি নজরদারি চলে তাহলে সাথে সাথে ঘটনা জানা যাবে ও ব্যবস্থা নেয়া যাবে" যেভাবে কাজ করবে এই ব্যবস্থা যেমন সারাদেশের মহাসড়কজুড়ে হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। গাড়ির গতি পরীক্ষার জন্য থাকবে গতি নির্ধারক সেন্সর-যুক্ত ক্যামেরা। সেগুলো থেকে যে ছবি ও তথ্য আসবে তা কেন্দ্রীয় ব্যবস্থায় পর্যবেক্ষণ হবে। নানা যায়গায় বার্তা সম্বলিত ডিজিটাল বোর্ড বসানো হবে। আরো খবর: কতটা বিপজ্জনক সড়কে চলাচল করছেন আপনি? বাংলাদেশে সড়কে শৃঙ্খলা: সমাধান সূত্র আছে যেখানে হাইওয়ে পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ সবার পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। যে যার মতো ঘটনাস্থলে চলে যাবে। যার যা করার কথা সে সেই দায়িত্ব পালন করবে। সড়ক নিরাপত্তা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ গতি নির্ধারক সেন্সর-যুক্ত ক্যামেরা যা জানতে পারবে যেমন কোন গাড়ি কত গতিতে অতিক্রম করছে ক্যামেরার বার্তা ছবিসহ চলে যাবে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। মি. করিম বলছেন, "যেমন কোন গাড়িটা কোনদিকে যাচ্ছে, কত গতিতে যাচ্ছে, আইন ভঙ্গ করছে কিনা, প্রতি ঘণ্টায় কতগুলো গাড়ি একটি এলাকা দিয়ে গেলো সেসব তথ্য রেকর্ড হতে থাকবে। ভেহিকেল ডিটেকশন সিস্টেম থাকবে। অর্থাৎ কোন ধরনের গাড়ি, তার আকার ও তা কত লোক বহন করছে সেটা ডিটেক্ট করা যাবে।" মহাসড়কে গাড়ির গতি জানার জন্য মাঝেমাঝে স্পিডগান ব্যবহার করা হয়। উন্নত বিশ্বে লাইসেন্স নম্বরের ছবিসহ জরিমানার চিঠি পাঠানো হয় চালকদের। সেরকম ব্যবস্থা এখানে করার কথা ভাবা হচ্ছে যাতে করে আইন ভঙ্গ করার বিষয়ে চালকরা সাবধান হন। পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের এসব তথ্য হাইওয়ে পুলিশও ব্যাবহার করবে মহাসড়কে নানা ধরনের অপরাধ দমনে। মি. করিম বলছেন, "একই ক্যামেরা সব ধরনের ঘটনাকে ডিটেক্ট করতে পারছে। যা অপরাধ দমনে ব্যবহার করা যাবে।" সাধারণ জনগণের উপরও নজরদারির সুযোগ থাকছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে নতুন এই পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে ঘিরে। তবে সেই সুযোগকে কীভাবে কাজে লাগানো হবে তা পরিষ্কার নয়। যানজটের অগ্রিম তথ্য সড়কে ডিজিটাল বোর্ডে নানা ধরনের অগ্রিম বার্তা দেয়া হবে। মি. করিম বলছেন, সামনে যানজট আছে কিনা, দুর্ঘটনা হয়েছে কিনা, গাড়ির গতি কমানোর, বিকল্প সড়ক ব্যবহারের নির্দেশনা আছে কিনা, গুগল ম্যাপের মতো সবচেয়ে ভালো সড়ক সম্পর্কে তথ্য, পৌঁছানোর সম্ভাব্য সময় এমনকি আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্যও থাকবে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে যে তথ্য আসবে সেটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে অগ্রিম বার্তা হিসেবে ডিজিটাল বোর্ডে চলে আসবে। এসব বিষয় জানাতে ডিজিটাল বোর্ড ছাড়াও মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়। আপাতত যা পরিকল্পনা করা হচ্ছে সরকার এই ব্যাপারে একটি দীর্ঘমেয়াদী "মাল্টি-প্ল্যান" নিয়ে ভাবলেও আপাতত একটি পাইলট প্রকল্প চালু করার চিন্তা করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে দাউদকান্দির দিকে যেতে চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার জুড়ে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই ব্যবস্থা চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটির জন্য বাংলাদেশ কোরিয়ান সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে। কোরিয়া থেকে একটি দল একবার এসে এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে ইতিবাচক উত্তর দিয়েছে। কোরিয়ান সরকারের অনুদানে হবে এই পাইলট প্রকল্প যার জন্য আপাতত ৯০ কোটি ডলার দিচ্ছে তারা। প্রযুক্তি ও প্রকৌশলগত দিক দিয়েও তারাই সহায়তা করবে। এব্যাপারে আরও কথা বলতে আজ (রবিবার) দক্ষিন কোরিয়া থেকে আর একটি দল আসছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে নানা দিক আলোচনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাদের বাংলাদেশে থাকার কথা। তবে এই সফরেই কিছু চূড়ান্ত হবে কিনা সেটি নিশ্চিত নয়। আগামী বছর থেকে পাইলট প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করার আশা করছে সরকার। কোন কিছুই এখনো চূড়ান্ত না হলেও সারা দেশে সুফল পেতে দশ বছরের মতো লেগে যেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে সড়কে বিরাজ করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এর কতটা সুফল পাওয়া যাবে? শুনতে বেশ গালভরা মনে হচ্ছে বিশেষ করে বাংলাদেশের যানবাহন ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে। বাংলাদেশের সড়কে রয়েছে নানা ধরনের ছোট ও কম গতির বাহন। মহাসড়কের পাশে রয়েছে ব্যস্ত বাজার, চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, পথচারীদের জন্য ব্যবস্থার অভাব এই সবকিছু মিলিয়ে দেশের যানবাহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের প্রধান অধ্যাপক মিজানুর রহমান এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বাংলাদেশের এই প্রেক্ষাপট মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, "সড়ক ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে শেষ ধাপ হচ্ছে প্রযুক্তি। এর আগে আরও বেশ কটি ধাপ রয়েছে। সেগুলো কী আমরা ব্যবহার করেছি?" এর একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলছেন, "যেমন ধরুন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেন করা হয়েছে। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে অনেক গাড়ি উল্টোদিকে চলে আসছে। এইরকম বিষয়গুলোতে আইন প্রয়োগেরও দরকার আছে।" তিনি বলছেন, "প্রযুক্তির সুফল যদি আমরা পেতে চাই তাহলে যারা সড়ক ব্যবহার করেন বিশেষ করে চালক ও গাড়ির মালিক তাদের মনোভাব পরিবর্তনের দরকার আছে। তাদের বিষয়টি আগে জানানোর দরকার। তা না হলে এর সুফল হয়ত পাওয়া যাবে না।" সড়কে নিয়ম ভঙ্গ করার প্রবণতা, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, খারাপ মানের গাড়িই যদি রাস্তায় চলে তাহলে প্রযুক্তি দিয়ে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হবে বলে তিনি মনে করেন। দুর্ঘটনা সনাক্তকরণ প্রকল্প নিয়ে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য খবর: নুসরাত হত্যা: ১৬ জন আসামীর সবার মৃত্যুদণ্ড কীসের এত ভাব হেনরি কিসিঞ্জার আর নরেন্দ্র মোদীর? বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে যা বললেন শোয়েব আখতার |
ধরুন আপনি বাংলাদেশের যেকোনো মহাসড়ক ধরে দেশের কোন জেলায় যাচ্ছেন। হঠাৎ লম্বা যানজটে পড়লেন যার কারণ আপনি জানেন না। |
জম্মু ও কাশ্মীরের একটি রোহিঙ্গা শিবির মি. নূর বিবিসি বাংলাকে বলছেন, দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একজন বয়স্কা মহিলা ভারতের জম্মু থেকে রওনা হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসেন। তারা আমাদের বলেছেন, ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে, এমন খবর শুনে তারা ভয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন। কারণ প্রাণের ভয়ে তারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে চান না। পরিবারটির খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ভারত থেকে আসা রোহিঙ্গারা সেখানেই রয়েছে। গত বছর ভারতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভারত সরকার ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করার পর থেকেই অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রোহিঙ্গাদের আসা অনেক বেড়ে গেছে। জাতিসংঘ এবং সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই সংখ্যাটি তেরশোর বেশি ছাড়িয়ে গেছে। শরণার্থী , ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ: আবুল কালাম জানিয়েছেন, ভারত থেকে এ পর্যন্ত তেরশো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে, যারা সেদেশের জম্মু, হায়দ্রাবাদ বা নিউ দিল্লির রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করতেন। তাদের অনেকের সেখানকার ইউএনএইচসিআরের পরিচয়পত্রও রয়েছে। তিনি বলছেন, ''এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে ভারত থেকে নতুন করে রোহিঙ্গাদের আসা শুরু হলো। আমরা সরকারকে জানিয়েছি। তাদের নির্দেশনার ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।" তিনি জানান, "পুশব্যাক নয়, এই রোহিঙ্গারা নিজেরাই জম্মু, হায়দ্রাবাদ বা নিউ দিল্লি থেকে বাংলাদেশে এসেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। ভারত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবে, এই আতংকে তারা চলে আসছে।" তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ট্রানজিট ক্যাম্পে পরিবারগুলো থাকছেন বলে জানিয়েছেন ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ফিরাস আল খাতিব। তিনি বলছেন, ''গতবছরের মে জুন মাস থেকেই কিছু কিছু করে তারা আসতে শুরু করেছে, তবে জানুয়ারি মাসে সংখ্যাটি অনেক বেড়েছে। নিয়মিত ক্যাম্পগুলোয় তাদের একটি ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আপাতত ইউএনএইচসিআরের ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছে এবং তাদের সবরকম সহায়তাই দেয়া হচ্ছে। নিজেদের ইচ্ছাতেই ভারত থেকে তারা বাংলাদেশে এসেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন, কিন্তু কেন এসেছে, সেটা জানতে আরেকটু সময় লাগবে।" জোর করে ফেরত পাঠানোর আতংক হঠাৎ এই সময়ে এসে কেন রোহিঙ্গারা দলে দলে ভারত ছাড়ছে? শ্রীনগরের বাইরের রোহিঙ্গা শিবিরে শরণার্থী মা ও শিশু এ প্রশ্নের উত্তরে দিল্লিতে রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের একজন সমন্বয়কারী আলী জোহর বলেন, ভারত জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটা ভয় তৈরি হয়েছে। আলী জোহর নিজেও একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী। থাকেন দিল্লিতে। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি জানান, দু'মাস আগে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটি ফর্ম বিতরণ করে, যেটি পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর থেকেই রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতংক তৈরি হয় যে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো হবে। এছাড়া আসাম থেকে দুই দফায় ১২ জনকে ফেরত পাঠানো হয় মিয়ানমারে। সেটাও রোহিঙ্গাদের মধ্যে ভীতি তৈরি করে। আরও পড়ুন: ভারত থেকে আবার রোহিঙ্গাদের 'পুশ-ব্যাক' রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত কেন মিয়ানমারের পাশে? রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের উভয়সঙ্কট যেখানে ভারতে প্রায় ১৬ হতে ১৭ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বিভিন্ন শহরে বাস করছে বলে তিনি জানান। এরা দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর ইত্যাদি জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আলী জোহরের ধারণা, গত কয়েক মাসে অন্তত ২/৩ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ভারত ছেড়েছে। "কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে এরা বাংলাদেশে যাচ্ছে। কেউ কুমিল্লা দিয়ে যাচ্ছে। কেউ সাতক্ষীরা দিয়ে যাচ্ছে। যেদিকেই পথ পাচ্ছে, সেদিক দিয়েই যাচ্ছে।" মিয়ানমারের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। তিনি আরও বলেন, এই শরণার্থীরা সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএএসএফ তাদের সাহায্য করছে। কিন্তু সীমান্তের অপর দিকে বিজিবি ধরছে। কিছু মানুষকে তারা ডিটেনশনে নিচ্ছে। পরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কী বলছে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী ভারত থেকে নতুন করে রোহিঙ্গাদের এই আসার বিষয়টিকে কিভাবে দেখছে বাংলাদেশের সরকার? পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলছেন, তারা বিষয়টি নজরে রেখেছেন। তিনি বলছেন, ''এটা আমরা শুনেছি, তবে আমাদের কাছে পুরো তথ্যটি আসেনি। আমরা বিষয়টি আরো পর্যবেক্ষণ করে বলতে পারবো।'' তবে নতুন এই প্রবণতাটি চিন্তার কারণ বলে মনে করছেন শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর। তিনি বলছেন, এটি বাংলাদেশের জন্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করতে যাচ্ছে। সরকারের উচিত এখনই ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা। "ভারত আসলে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে খুব একটা সংবেদনশীল না। বাংলাদেশ, এদেশের মানুষ , সরকার, সবাই অনেক বেশি সংবেদনশীল। আমাদের মনে হচ্ছে, ভারত সরাসরি তাদের বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে না, তারা কিছুটা কৌশলের অবলম্বন করছে, একটা চাপ সৃষ্টি করছে। এই মুহূর্তে তাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার মতো পরিবেশ নেই, সুতরাং বাংলাদেশ থেকেও তারা ফেরত যেতে পারছে না।" "খুবই দ্রুত কূটনৈতিক পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করা দরকার। কারণ বিষয়টি আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিকভাবেই সমাধান করতে হবে। প্রস্তুতি রাখতে হবে, ভারত থেকে আরো বেশি রোহিঙ্গা আসতে পারে", বলছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যে প্রত্যাবাসন আলোচনা চলছে, সেখানে ভারত থেকে আরো রোহিঙ্গা এলে তাদের ফেরতের বিষয়টি নিয়ে নতুন জটিলতাও তৈরি হতে পারে। |
ভারতের জম্মু থেকে বহু পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছিল একটি পরিবার। কক্সবাজারের ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার আগে ওই পরিবারটির সঙ্গে কথা হয়েছিল টেকনাফের রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ নূরের। |
সামরিক ঘাঁটির বাইরে সেনা বাহিনীর পোশাক পরিহিত কয়েকজনকে পাশে নিয়ে বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদো মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোরের দিকে প্রচারিত এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় মি গুয়াইদো একটি সামরিক ঘাঁটির বাইরে সেনা বাহিনীর পোশাক পরিহিত কয়েকজনকে পাশে নিয়ে ঘোষণা করছেন যে সরকারকে উৎখাতের চূড়ান্ত পর্যায় শুরু হয়েছে। তিনি বলছেন, এখন তিনি সেনাবাহিনীর একটি অংশের সমর্থন পাচ্ছেন। সেনাবাহিনীর বাকি সবাইকে তিনি তার পক্ষে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। তবে নিকোলাস মাদুরোর সরকার বলছে ছোটোখাটো একটি সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, মি: গুয়াইদো এখন ঐ সেনা ছাউনি থেকে সরে গেছেন। কিন্তু টিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে তার সমর্থকদের সাথে রাস্তায় সেনা সদস্যদের সংঘর্ষ হচ্ছে। সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িকে মানুষের মিছিলে ভেতর চালিয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। সে সময় রাস্তায় বেশ ক'জনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। টুইটারে প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেছেন তিনি সেনা কমান্ডারদের সাথে কথা বলেছেন এবং তারা তাকে সমর্থন দিয়েছেন। সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টার বিরুদ্ধে তিনি তার সমর্থকদের বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কারাকাসের রাস্তায় বিরোধী সমর্থকদের সাথে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ সর্বশেষ পরিস্থিতি কী? মি: গুয়াইদোকে দেখা গেছে তিন মিনিটের একটি ভিডিওতে আরেকজন বিরোধী নেতা লিওপোল্দো লোপেজের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। ২০১৪ সালে সরকার বিরোধী এক বিক্ষোভে ইন্ধন জোগানোর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর মি: লোপেজ গৃহবন্দী অবস্থায় ছিলেন। মি: লোপেজ বলেছেন সেনা বাহিনীর সেইসব সদস্যরা তাকে মুক্তি দিয়েছে যারা মি: গুয়াইদোর প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে এবং এই ভিডিওতে মি: গুয়াইদো ঘোষণা করেছেন কারাকাসের "সাহসী সেনারা" তাকে সমর্থন করছেন। "ভেনেজুয়েলাবাসী- রাস্তায় নেমে আসুন...দখলের অবসান ঘটানোকে সমর্থন করুন- দখলদারিত্বে আমরা ফিরতে চাই না। জাতীয় সশস্ত্র বাহিনী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভেনেজুয়েলার জনগণের সমর্থন তাদের পেছনে রয়েছে। আমাদের সংবিধান তাদের পক্ষে, ইতিহাস তাদের মনে রাখবে," বলেন মি: গুয়াইদো। বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা জনাতান মার্কাস বলছেন ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি এখন অস্পষ্ট এবং অনিশ্চিত। তবে ম: গুয়াইদো ক্ষমতা হাতে নেবার সর্বসাম্প্রতিক এই উদ্যোগ নিয়ে তিনি যে কার্যত বিরাট একটা জুয়া খেলছেন সেটা স্পষ্ট। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ক্ষমতায় টিকে থাকার পেছনে মূল শক্তি ছিল তার প্রতি দেশটির সেনাবাহিনীর আনুগত্য। মি: মার্কাস বলছেন তাদের এই আনুগত্যে মৌলিক একটা পরিবর্তন ঘটে থাকলে অথবা সেনাবাহিনীর মধ্যে অন্তত বড়ধরনের একটা বিভক্তি ছাড়া বাইরে থেকে কোন ধরনের কূটনৈতিক চাপ মি: মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে বলে মনে হয় না। |
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদো প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি ডাক দিয়েছেন। |
জামাল খাসোগজি হাতিস চেংগিস টুইট করে বলেছেন, এ ধরণের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের জন্য কখনই কেউ ক্ষমা পতে পারে না। সৌদি সরকারের সমালোচক মি. খাসোগজিকে ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের মধ্যে হত্যা করা হয়। সৌদি সরকার এবং রাজপরিবার দাবি করে আসছে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, বরঞ্চ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভেতরের কিছু লোক নিজের সিদ্ধান্তে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে জাতিসংঘ সহ অনেক দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই অজুহাত মেনে নেয়নি। তাদের সন্দেহ - সৌদি যুবরাজ মোহামেদ বিন সালমান নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ-দাতা। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: খাসোগজি হত্যার দায়ে সৌদি আরবে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড নতুন সৌদির ক্ষমতাধর নেতা এমবিএস লোকটি কেমন? খাসোগজিকে 'কোরবানির পশু' বলে বর্ণনা করেছিল এক ঘাতক খাসোগজি হত্যার দায় সৌদি আরবের: জাতিসংঘ মৃত্যুর আগে জামাল খাসোগজি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন এবং ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। এসব লেখার অনেকগুলোতেই সৌদি রাজপরিবারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা হয়েছে। ইস্তাম্বুলে তার হত্যাকাণ্ডের পর তার লাপাত্তা হয়ে যাওয়া নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ নানারকম তত্ত্ব প্রচারের পর একসময় শিকার করে তাকে কনসুলেটের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে। তাকে দেশে নিয়ে আসার জন্য পাঠানো একটি গোয়েন্দা দল তাকে হত্যা করেছে। গত বছর ডিসেম্বরে রিয়াদে এক গোপন বিচারকার্যের পর পাঁচজনকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সেসময় জাতিসংঘের একজন র্যাপের্টিয়ার অ্যাগনেস কালামার্ড মন্তব্য করেছিলেন, “বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে।“ হাতিস চেংগিস কী বলেছেন খাসোগজির বাগদত্তা? শুক্রবার হাতিস চেংগিজ টুইটারে লেখেন, জামাল খাসোগজি এখন একজন “আন্তর্জাতিক প্রতীক, তিনি আমাদের সবার ঊর্ধ্বে, ভালোবাসা এবং সম্মানের পাত্র তিনি।“ সুতরাং তার হত্যাকারীদের এভাবে ক্ষমা করে দেওয়া যায় না। মিস চেংগিজ লেখেন, “তার বিয়ের জন্য কাগজপত্র আনতে গিয়ে জামাল তার দেশের কনসুলেটের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাকে লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। তাকে হত্যার জন্য সৌদি আরব থেকে লোক যায়।“ তিনি বলেন, জঘন্য এই হত্যাকাণ্ডের হোতাদের ক্ষমা করে দেওয়ার অধিকার কারো নেই, এবং বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তিনি চুপ করবেন না। কী বলছেন খাসোগজির সন্তানরা? সালাহ খাসোগজি নামে নিহত জামাল খাসোগজির যে ছেলে জেদ্দায় থাকেন তার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বাবার হত্যাকাণ্ডের পর যুবরাজ সালমানের সাথে সাক্ষাৎ করছেন সালাহ খাসোগজি তাতে বলা হয়, “পবিত্র রমজানে মাসের পবিত্র রাতে আমরা সৃষ্টিকর্তার বাণী স্মরণ করছি :‘কেউ যদি ক্ষমা প্রদর্শন করে এবং মীমাংসা করে, আল্লাহ তাকে পুরস্কৃত করবেন।‘ “সুতরাং শহিদ জামাল খাসোগজির পুত্ররা ঘোষণা করছি যে যারা আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে তাদের আমরা ক্ষমা করে দিচ্ছি, এবং আল্লার সন্তুষ্টি কামনা করছি।“ ইসলামি শারিয়া আইনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন যিনি তার নিকট পরিবার ক্ষমা করলে অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড রহিত করা যেতে পারে। এর আগে সালাহ খাসোগজি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, সৌদি সরকারের তদন্তের ওপর তার আস্থা রয়েছে। অতীতে তিনি এমন বিবৃতিও দিয়েছেন যে তার বাবার মৃত্যুকে পুঁজি করে সৌদি আরবের বিরোধীরাণ্ডের সৌদি নেতৃত্বকে খাটো করতে চাইছে। গত বছর ওয়াশিংটন পোস্টে রিপোর্ট বের হয়েছিল যে বাবার মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসাবে জামাল খাসোগজির সন্তানরা সৌদি সরকারের কাছ থেকে বাড়ি এবং মাসোহারা পাচ্ছেন। |
হত্যাকাণ্ডের শিকার সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজির সন্তানরা তার বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই নিহতের তুর্কি বাগদত্তা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছেন এমন ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার কারো নেই। |
Subsets and Splits