content
stringlengths
1
63.8k
বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস সে দেশের মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার বলিভিয়ায় লাতিন আমেরিকার পাঁচটি দেশের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে তিনি এই হুমকি দেন।মোরালেস গত মঙ্গলবার রাশিয়া থেকে ফেরার পথে স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স ও পর্তুগাল তাঁকে বহনকারী বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারে বাধা দেয়। বলিভিয়ার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশেই তা করা হয়েছে। বাধাদানকারী দেশগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির তথ্য ফাঁসকারী মার্কিন নাগরিক এডওয়ার্ড স্নোডেন ওই বিমানে আছেন সন্দেহে বাধা দেওয়া হয়। তবে মোরালেসের বিমানে স্নোডেন ছিলেন না।আকাশসীমা ব্যবহারে বাধা দেওয়ার ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে এবং মোরালেসের প্রতি সমর্থন জানাতে গত বৃহস্পতিবার বলিভিয়ার কোচাবাম্বা শহরে বৈঠকে অংশ নেন আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর ও সুরিনামের প্রেসিডেন্টরা। বৈঠকে মোরালেস অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটনের নির্দেশে ইউরোপীয় দেশগুলো তাঁর বিমানকে বাধা দেয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘প্রয়োজন হলে বলিভিয়ায় মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের মর্যাদা আছে, সার্বভৌমত্ব আছে। যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই আমরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক ভালো আছি। তাই মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করতে আমার হাত কাঁপবে না।’ বৈঠক শুরুর আগে এক সমাবেশে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো বলেন, ‘ইউরোপের একটি দেশের মন্ত্রী আমাদের জানিয়েছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের নিদের্শেই তাঁরা প্রেসিডেন্ট মোরালেসের বিমানকে তাঁদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেননি।’ ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া বলেন, ‘ভেবে দেখুন ইউরোপের কোনো দেশের প্রেসিডেন্ট কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে কী হতো। একে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখা হতো।’ এদিকে স্পেন বলেছে, তারা বলিভিয়ার কাছে দুঃখ প্রকাশের কোনো কারণ দেখছে না। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল গার্সিয়া-মার্গালো এক টিভি সাক্ষাত্কারে বলেন, বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের বিমান যখন আসে, তখন আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতির মেয়াদ ছিলনা। এএফপি।
টন্টি আর মন্টি যমজ দুই ভাইয়ের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে টেলিভিশনগুলোতে। সবখানে তাদের মিল থাকলেও স্বাদের বেলায় যাদের পছন্দ ছিল আলাদা। ট্যাং পাউডার ড্রিংকসের এই বিজ্ঞাপনের চরিত্র এবারে চলে এসেছে মুঠোফোন গেমে। ‘ফ্রুট ব্যান্ডিট’ (fruit bandit) নামের অ্যাডভেঞ্চারে ভরা এই গেমটি ট্যাংয়ের সহায়তায় ভাবনা ও গল্প তৈরি করে ওগিলভি অ্যান্ড ম্যাথুর বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেসিস মিলনায়তনে গেমটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়। গেমটিতে দেখা যায় টন্টি আর মন্টি নামের এই দুই ভাই গভীর বনের ভেতরে বেড়াতে যায়। যেখানে মন্টি শিম্পাঞ্জির হাতে অপহূত হয়। আর টন্টি তাকে বাঁচাতে লড়াই করতে থাকে বনের পশুদের সঙ্গে। আম, আনারস, লেবু, কমলা ইত্যাদি ফলমূল দিয়ে পশুরা টন্টিকে আক্রমণ করতে থাকে। টন্টি তার হাতের একমাত্র শক্তি গুলতি দিয়ে প্রতিহত করে। প্রতিহত এসব ফল থেকে জুস তৈরি করে গ্লাস ভরতে থাকে। এভাবেই একেকটি ধাপ অতিক্রম করে টন্টি সামনে এগিয়ে যায় মন্টিকে বাঁচাতে। মোট পাঁচটি ধাপে গেমটি সম্পূর্ণ করা যাবে। প্রতিটি ধাপেই রয়েছে দারুণ সব চ্যালেঞ্জ।মজার এই গেমটি খেলা যাবে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট কম্পিউটারে। গুগল প্লে স্টোর (http://goo.gl/Z4pCd) থেকে বিনা মূল্যে নামানো যাবে গেমটি। অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে চলবে গেমটি।গেমটি তৈরি করেছে স্পিনঅফ স্টুডিও বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এ এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ‘গেমটি অবশ্যই গেমারদের চাহিদা মেটাবে বলে আমার বিশ্বাস। তা ছাড়া দেশে তৈরি এমন একটি মজার গেম সবাইকে খেলতে দেখতে নিজেদেরও ভালো লাগবে।’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বেসিসের সভাপতি এ কে এম ফাহিম মাশরুর, রেডওয়ার্ক ঢাকার ব্যবসায় ব্যবস্থাপক তানভীর আহমেদসহ অনেকে।গেমটির বিস্তারিত জানা যাবে www.fruitsofbangladesh.com ঠিকানার ওয়েবসাইটে।— হাসান ইমাম
দেশের উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় বৃহত্তম পাদপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছর হয়ে গেল। ১৯৫৩ সালের আজকের এই দিনে অর্থাত্ ৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল। রাজশাহীতে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের একটি ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে।অবিভক্ত বাংলায় রাজশাহী হয়ে উঠেছিল দেশের উত্তরাঞ্চলের রাজা-জমিদারদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। নাটোর, দিঘাপতিয়া, পুঠিয়া, বলিহার, দুবলহাটি, তাহেরপুরের রাজা-জমিদারেরা নিজেদের প্রয়োজনেই স্থানীয় ভূস্বামী, আইনজীবী, শিক্ষক প্রমুখের উদ্যোগে শহরে শিক্ষা ও সংস্কৃতিমূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বলা বাহুল্য, এই রাজশাহী শহরেই ‘বুয়ালিয়া ইংলিশ স্কুল’ নামে দেশের প্রথম ইংরেজি উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পর্যায়ক্রমে শহরে শিক্ষার এত প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল যে একসময় শহরটির পরিচয়ই হয় শিক্ষানগর হিসেবে।কিন্তু দুঃখজনক যে ’৪৭-এ দেশভাগের পর শহর রাজশাহী শিক্ষা-দীক্ষা, ব্যবসায়-বাণিজ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্রমেই পিছিয়ে পড়া শহরে পরিণত হয়। নব সৃষ্ট পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকা হয়ে ওঠে দেশের প্রধান আকর্ষণ। ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী তথা এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থা এ সময় ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। ইত্যবসরে, সরকার এক নির্দেশে পূর্ব পাকিস্তানের সব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অধিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে। এত সব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে রাজশাহীবাসী একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন দারুণভাবে উপলব্ধি করে।১৯১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিলেতের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এম ই স্যাডলার নেতৃত্বে কমিশন গঠন করে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও গবেষণাকর্ম সম্প্রসারিত করার যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তাতে রাজশাহীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সুপারিশ ছিল। ১৯৫৩ সালে রাজশাহীর মানুষ কমিশনের ওই সুপারিশকে বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগ একসময় আন্দোলনে এসে পৌঁছায়। রাজশাহীর কৃিবদ্য আইনজীবী মৌলভি মাদার বখ্শ এবং রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ ড. ইতরাত্ হুসেন জুবেরির যৌথ প্রচেষ্টায় অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাস হয়। ১৯৫৩ সালের আজকের এই দিনে ড. ইতরাত্ হুসেন জুবেরিকে উপাচার্য নিযুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়।দেশের উত্তরাঞ্চলের মাত্র ১২টি ডিগ্রি কলেজ এবং আটটি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ অধিভুক্ত করে সাতটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। গোড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল মাত্র ১৬১ জন। পদ্মাতীরে ওলন্দাজদের নির্মিত বড়কুঠি নামে ইতিহাসপ্রসিদ্ধ রেশম কুঠিকে করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ভবন। ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস অনুষ্ঠিত হতে থাকে রাজশাহী কলেজে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া করা বাড়িতে অস্থায়ীভাবে চলে দাপ্তরিক কাজ। এ অবস্থার নিরসন ঘটে কয়েক বছর পরই, ১৯৬১ সালে যখন শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে মতিহারের সবুজ চত্বরে ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টর জমির ওপর লে. কর্নেল জি সোয়ানি টমাস প্রণীত কলম্বো প্ল্যান অনুযায়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থানান্তর করা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ৪৯টি একাডেমিক বিভাগ, নয়টি অনুষদ, পাঁচটি ইনস্টিটিউট রয়েছে। রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। দেড় হাজার শিক্ষক তাঁদের পাঠদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছেন। ছয় দশকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এই শিক্ষার্থীদের অনেকেই দেশ পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বে তাঁদের সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে। ১৯৬২ সালের বিতর্কিত হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিল আন্দোলনে, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে এবং একাত্তরের মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের অনেকেই সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময় পাকিস্তানি আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারান ছাত্র-প্রিয় শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধকালের স্মৃতিকে ভাস্বর করে রেখেছেন তিন শহীদ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সুখরঞ্জন সমাদ্দার ও মীর আবদুল কাইউম। স্বাধীনতাসংগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিহত শিক্ষার্থী কর্মচারীর সংখ্যাও অনেক।১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনভাবে এগিয়ে যাওয়ার পথের সন্ধান পায় ১৯৭৩ সালে যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুমোদিত হলে। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের লক্ষ্যই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে নিরঙ্কুশ স্বশাসন প্রতিষ্ঠা করা, চিন্তার স্বাধীনতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। শিক্ষা গবেষণার ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই যে ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে, তা নয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ক্ষেত্রে যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে, প্রতিকূলতারও অন্ত নেই। অর্জন আর সীমাবদ্ধতা নিয়েই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূরণ করেছে। জন স্টুয়ার্ট মিলের ভাষায় বলতে চাই, ‘দ্য হাইয়েস্ট অ্যান্ড মোস্ট হারমোনিয়াস ডেভেলপমেন্ট অব অ্যান ইনডিভিজুয়াল’ হিসেবে গড়ে তুলতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ও ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে। তবে প্রয়োজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবারই হার্দিক মেলবন্ধন।ড. সাইফুদ্দীন চৌধুরী: গবেষক। অধ্যাপক, ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।[email protected]
বাংলাদেশ একদিন জিতবে বিশ্বকাপ, এই দুঃসাহসিক কল্পনাকে স্লোগান বানিয়ে বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব, ফ্রান্স গত ২৯ জুন সফলভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৩। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের লা করনভ মাঠে অনুষ্ঠিত এই ফুটবল  টুর্নামেন্টে প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণেরা ছয়টি ভিন্ন দলে ভাগ হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। দলগুলো হলো প্যারিস একাদশ, লা-প্লেইন একাদশ, শাহ্জালাল স্পোর্টিং ক্লাব, জেনারেল ওসমানী ফুটবল একাদশ, বিয়ানীবাজার ফুটবল দল ও সেভ্রন ভধু একাদশ।প্রতিপক্ষ দলকে পরাজিত করে লা-প্লেইন একাদশ ও সেভ্রন ভধু একাদশ ফাইনালে ওঠে। লা-প্লেইন একাদশ ৩-১ গোলের ব্যবধানে সেভ্রন ভধু একাদশকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রবাসের কর্মচঞ্চল ব্যস্ত দিনগুলোর মধ্যে এ ধরনের খেলার আয়োজন করায় ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে অত্যন্ত প্রশংসা কুড়ায় বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব, ফ্রান্স। তাদের এই প্রচেষ্টা পরবর্তী সময়েও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্যারিস, ফ্রান্স[email protected]
সব সুখী পরিবার একই রকম; কিন্তু অসুখী পরিবারগুলো যার যার মতো করে অসুখী। টলস্টয়ের আনা কারেনিনা উপন্যাসের প্রথম বাক্যটি মিসরের মুরসি সরকারের জন্যও সত্য। জনগণকে খুশি করাই সফল সরকারের গুণ। কিন্তু জনগণের অসুখী হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। মিসরের বেলায় সরকার জনগণকে রুটি, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই তারা সেনাবাহিনীকে দিয়ে তাদেরই পতন ঘটিয়েছে, যারা নাকি কিছুদিন আগে তাদের সেনাশাসনের হাত থেকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু ঘটনাটি এত সরল মনে হয় না।জন্ম থেকেই মুসলিম ব্রাদারহুড আমেরিকা ও ব্রিটেনের কাছে গ্রহণযোগ্য ‘ইসলামি’ দল। তাহলে কী কারণে ইসরায়েলের পর সর্বাধিক সাহায্যপ্রাপ্ত (এ বছর ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার) মিসরীয় সেনাবাহিনী সেই পছন্দের দলটিকে উত্খাত করল? ব্রিটেনের কাছে ঘটনাটা ‘গ্রহণযোগ্য’, যুক্তরাষ্ট্রও একে ক্যু বলতে রাজি নয়। অভ্যুত্থান ঘটানোর আগের দুই দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল ও জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্টিন ডেম্পসি মিসরীয় সেনাপ্রধানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে ছিলেন।মনে করার কারণ নেই যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষিত মিসরীয় সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি পেন্টাগনের হিসাবের বাইরে মুরসিকে বন্দী করেছেন। ক্যুয়ের মাত্র কদিন আগে যে আদলি মানসুর বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন, তাঁকে প্রেসিডেন্ট নিয়োগের আগে সাংবিধানিক আদালতের প্রধান বিচারক করিয়ে নেওয়া হয়। অভ্যুত্থানের প্রধান দুই সিভিল সমর্থক হলেন আন্তর্জাতিক আণবিক কমিশনের সাবেক প্রধান নোবেলজয়ী এল বারাদি এবং হোসনি মোবারক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আহমদ শফিক। আহমদ শফিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুরসির কাছে পরাজিত হন। গত মার্চে তাঁরা দুজন সংযুক্ত আরব আমিরাতে মিলিত হয়ে মুরসি সরকারের পতনের পরিকল্পনা করেন। অভ্যুত্থান ঘটার আগেই এক সাক্ষাত্কারে শফিক ফাঁস করেছেন যে মুরসিকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার ফন্দি ছিল তাঁদের। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে ঠিকই, তবে তাঁকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট না বানানোয় তিনি হতাশ হয়ে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন।মুরসির পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছিল প্রধানত দুটি কারণে। সেনাবাহিনী তাঁর হাতে ছিল না, বিচার বিভাগ নির্বাচিত সরকারকে পদে পদে বাধা দিচ্ছিল, আমলাতন্ত্র নিজের ইচ্ছায় চলছিল, পররাষ্ট্র দপ্তর ও ব্যাংকব্যবস্থাও সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল না। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব কটি প্রতিষ্ঠানেই যখন মোবারক যুগের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গাঁট মেরে বসে ছিলেন, তখন মুরসির একমাত্র শক্তি ছিল নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের পদ। এমনকি সংসদও আদালতের নির্দেশে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। মোবারকের আমলের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জারি করা আদেশ কেন গণতান্ত্রিক আমলে পালিত হলো না, তার জন্য আদালত নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ পর্যন্ত দিয়েছিলেন। ফিরিয়ে আনা হয়েছিল একসময়কার ঘৃণিত পাবলিক প্রসিকিউটরকে। অথচ মিডিয়ায় প্রচারিত হয়, ব্রাদারহুড সরকারই সবকিছুর নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি শরিয়া আইনের কিছু কিছু বিধান জারি করা, রাষ্ট্রকে ইসলামি করতে চাওয়াও জনগণের বিরাট অংশ মানতে পারেনি। ব্রাদারহুড শেষ পর্যন্ত জনগণের দল না হয়ে দলের জন্য জনগণ ভাবা শুরু করেছিল।অন্যদিকে হোসনি মোবারকের আমলে আইএমএফের ‘পরামর্শে’ মিসরের অর্থনীতিকে বাজারীকরণ করা হয়। রাষ্ট্রীয় সেবাসুবিধা উঠিয়ে নেওয়া হয়। জনগণ মূলত এ কারণে ক্ষিপ্ত হয় মোবারকের বিরুদ্ধে। কিন্তু মুরসিকেও ক্ষমতারোহণের সময় আইএমএফের নির্দেশ মেনে নিতে হয়েছিল। এতে অর্থনীতি আরও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। আইএমএফের নির্দেশ মানতে গিয়ে অর্থনৈতিক ব্যর্থতা মুরসির জন্য রাজনৈতিক ব্যর্থতা হয়ে দেখা দেয়।তার পরও প্রশ্ন থেকে যায়, যুক্তরাষ্ট্র কেন ব্রাদারহুডকে পরিত্যাগ করল? প্রধান কারণ, গণবিক্ষোভ উত্তরোত্তর মার্কিনবিরোধী হয়ে উঠছিল। মুরসিবিরোধী বিক্ষোভে সে দেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যান পিটারসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান ওঠে। বিক্ষোভ চলাকালেই তিনি মিসরীয়দের বোঝাতে চেয়েছিলেন, ‘কেউ কেউ বলে, নির্বাচনের বদলে রাজপথের বিক্ষোভেই ভালো ফল আসবে। কিন্তু সত্যি কথা বললে আমি ও আমার সরকার এ বিষয়ে সন্দিহান।’ মুরসিকে রক্ষার জন্য ওবামাও শেষ চেষ্টা করেন, মুরসি ও সেনাপ্রধানকে ফোন করে মীমাংসার আহ্বান জানান। বিপরীতে মুরসিকে ওবামার পুতুল বলে অভিহিত করে ব্যানার ওঠে তাহরিরে। সুতরাং, সময় থাকতেই একে নিয়ন্ত্রণে আনায় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপই যথার্থ মনে করেছে মার্কিন প্রশাসন। মার্কিন মিত্র সৌদি আরব, কাতার হইহই করে একে সমর্থনও করেছে। যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘আরব জাগরণ’ এভাবে তার অন্তিমে গিয়ে পৌঁছাল।আরব জাগরণ আর যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ তথা মডারেট ইসলামপন্থী দলের ক্ষমতারোহণ প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। এর পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা সরকারগুলোর মুসলিমবিষয়ক নীতি। স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে যাতে আমেরিকা-ইসরায়েলবিরোধী জনগণের সত্যিকার বিকল্প দাঁড়াতে না পারে, সে জন্য মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে মার্কিনপন্থী ইসলামি দলকে সমর্থন দেওয়া হতে থাকে। এর শুরু হয়েছিল পঞ্চাশের দশকে সোভিয়েতঘেঁষা আরব জাতীয়তাবাদী আন্দোলন মোকাবিলার উদ্দেশ্য থেকে। সে সময়ই মিসরের জাতীয়তাবাদী নেতা গামাল আবদেল নাসেরের বিরুদ্ধে মুসলিম ব্রাদারহুডকে মদদ দিতে থাকে ব্রিটেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য অস্তমিত হলে উত্তরাধিকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র একই কায়দায় মুসলিম দেশগুলোর জাতীয়তাবাদী সেক্যুলার সরকারগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করতে থাকে। এই সরকারগুলো অচিরেই স্বৈরতন্ত্র হয়ে উঠলে পশ্চিমাদের আরও সুবিধা হয়।সেক্যুলার স্বৈরশাহির বিরুদ্ধে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে উসকে দেওয়ার সাম্রাজ্যবাদী উদ্দেশ্য ছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারা। তারা চেয়েছিল প্রথমত, রক্ষণশীল শাসনে মুসলিম দেশগুলো পিছিয়ে থাক; অন্যদিকে সেক্যুলার বনাম ইসলামপন্থার বিবাদে অশান্তিও চলতে থাকুক। এভাবে দেশগুলো বিভক্ত থাকলে পশ্চিমাদের পক্ষে আরবের অগাধ তেলসম্পদ ব্যবহার ও ভূরাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। এ কারণেই মুসলিম ব্রাদারহুড ছিল তাদের প্রথম পছন্দ। আবার ইসলামপন্থীদের সঙ্গে সেক্যুলারদের গৃহযুদ্ধ হলেও সেই উদ্দেশ্যের কোনো ক্ষতি হয় না। আখেরে আরবকে অশান্ত ও বিভক্ত রাখাই তো লক্ষ্য।এ লক্ষ্যেই আরব জাগরণকে নিজেদের খাতে বইয়ে দিতে নতুন করে নেমে পড়ে তারা। আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যম, এনজিও নেটওয়ার্ক, ফেসবুক-টুইটার তো রয়েছেই; আরব তরুণদের গণ-আন্দোলনের প্রশিক্ষণও দেওয়া হতে থাকে সেই জর্জ বুশের আমল থেকেই। লক্ষণীয়, যেসব মার্কিন প্রতিষ্ঠান (যেমন ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি) বছর দুই আগে তাহরিরের তরুণদের তহবিল জুগিয়েছিল, মুরসিবিরোধী আন্দোলনেও তারা পাশে থেকেছিল। গণ-আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল যে কিফায়া সিভিল সোসাইটি মুভমেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নন-ভায়োলেন্ট কনফ্লিক্ট।এখন প্রশ্ন উঠেছে, আরব জাগরণ ও মডারেট ইসলামপন্থা নিয়ে আমেরিকার পরীক্ষা-নিরীক্ষার কি ইতি ঘটল? মিসরে যা ঘটল, তার প্রভাব সমগ্র মুসলিম দুনিয়ায় পড়বে। সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ রুদ্ধ হয়ে গেলে মধ্যপন্থী ইসলামি দলগুলো চরমপন্থার দিকে যেতে পারে। তাদের মনে থাকবে, ১৯৬০ সালে তুরস্কের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আদনান মেন্দারেসকে ইসলামপন্থী অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত করে ফাঁসি দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালে আলজেরিয়ার নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করতে যাওয়া ইসলামিক সালভেশন ফ্রন্টকে সিংহাসনের বদলে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়, যার পরিণতিতে গৃহযুদ্ধে এক লাখ মানুষ নিহত হয়। ফিলিস্তিনে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার খেসারত হামাসকে দিতে হয় ভেতরে-বাইরে অবরোধ ও হামলার শিকার হয়ে।আজকে মুসলিম দেশগুলোতে সেক্যুলার বনাম ইসলামপন্থার যে দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে, তার ফলাফল কারও জন্যই ভালো নয়। কেননা, সেক্যুলারিজম ও ইসলাম উভয়ই এসব দেশে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা ঢাকার ঢাল হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। এসব দেশে দরকার সহনশীল ও সমতাভিত্তিক গণতন্ত্র। ভালো-মন্দ যেকোনো আদর্শিক কঠোরতাই রাজনীতিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়। আর যে গণতন্ত্র সমতা আনে না, যে সেক্যুলারিজম গণবিরোধী, যে ধর্মীয় রাজনীতি অধিকার দেয় না, জনগণতাদের রাখবে না। তখন জনগণের মধ্যে এতসববিভক্তির সুযোগ নেবে তৃতীয় পক্ষ।মিসরে যা-ই ঘটুক, শেষ লড়াই সম্ভবত হবে রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র হয়ে ওঠা সেনা স্টাবলিশমেন্ট বনাম জনগণের মধ্যে। ব্রাদারহুড সরে যাওয়ায় এখন জনগণ সামনে সেনা নেতৃত্বকেই পাবে জবাবদিহি চাওয়ার জন্য। তাদের মার্কিন-ইসরায়েল ঘনিষ্ঠতাও আর আড়ালে থাকবে না। ১৯৯২ সালে আলজেরীয় নেতা আবদেল কাদের হাচানি জয়ের প্রাক্কালে যা বলেছিলেন, তা যেমন মুরসির জন্য সত্য হয়েছে, তেমনি সেনাপ্রধান সিসির জন্যও সত্য হওয়ার অপেক্ষায়। তিনি বলেছিলেন, কখনো কখনো বিজয় পরাজয়ের চেয়ে বিপজ্জনক। মুরসি জিতে হেরেছেন, সেনাপ্রধান ও বারাদি গং বিজয়ের বিপদ এড়াতে পারবেন না।ফারুক ওয়াসিফ: সাংবাদিক ও লেখক।[email protected]
ঢাকার গুলশানের নিকেতন এলাকা। বেলা তিনটা। টয়োটা অ্যালিয়েন গাড়ির চালকের আসনে নাসির হোসেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে যাঁর নামের আগে যুক্ত হচ্ছে ‘জনাব নির্ভরযোগ্য’ বিশেষণ। নিকেতন টু গুলশান ১-এর সংক্ষিপ্ত এক যাত্রায় চালক হিসেবেও নাসিরকে আমাদের নির্ভরযোগ্য মনে হলো। গাড়ির ড্যাশবোর্ডে অনেকগুলো গানের সিডি। অধিকাংশই ‘নাসিরস কালেকশন’, মানে তাঁর বাছাই করা প্রিয় সব গানের সংকলন। নিজেই সব রাইট করেছেন। গাড়ি চলতে শুরু করার পর পরই চালিয়ে দিলেন একটা গান। গানটা কেবল জমে উঠেছে, ফট করে নতুন আরেকটা গানে চলে গেলেন নাসির। দ্বিতীয়টার বেলায়ও একই ব্যাপার, কিছুদূর চলতেই ‘নেক্সট’! সংক্ষিপ্ত যাত্রায় বেশ বোঝা গেল, মাঠে যতই ধীর-স্থির-ঠান্ডা মাথার হোন না কেন, আদতে নাসির বড় চঞ্চল!নাসিরকে এই প্রশ্ন এর আগে অনেকেই করেছেন, ‘মানুষ হিসেবে আপনি কেমন?’ আমরাও করলাম। নাসির মাথা চুলকে বললেন, ‘আমি আসলে যে কেমন, ঠিক বুঝতে পারি না!’ তবে আমরা কিছুটা হলেও বুঝলাম। নাসিরভক্তদের নিশ্চয়ই অজানা নেই, প্রচণ্ড চাপেও ব্যাট করতে নেমে ২২ গজের পিচে দাঁড়িয়ে অবলীলায় শিস বাজান এই ক্রিকেটার! রোম পুড়ে যাওয়ার সময় বাঁশি বাজাচ্ছিলেন নিরো। আর বাংলাদেশ যখন মাঠে ধুঁকতে থাকে, তখন শিস বাজান নাসির! তবে নিরো ও নাসিরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফারাক হলো, নিরো রোমকে রক্ষা করার চেষ্টা করেননি, নাসির অধিকাংশ সময়ই বাংলাদেশের ত্রাতা। ধ্বংসস্তূপ থেকে ডানা মেলা এক ফিনিক্স পাখি।‘কীভাবে পারেন মাঠে এমন নির্ভার থাকতে? আন্তর্জাতিক ম্যাচও তো আপনি পাড়ার মাঠের ঢঙে খেলেন!’ নাসিরের মুখভঙ্গি দেখে মনে হলো, ‘ভাই, আমি তো এমনই!’ মুখের উত্তরে বললেন, ‘নতুন এক পরিবেশে আপনি এমনিতে যেভাবে কথা বলেন, সেভাবে না বললে কিন্তু সমস্যায় পড়বেন। ক্রিকেটও তেমনই, আগে পাড়ার মাঠে যেভাবে খেলতাম, আন্তর্জাতিক ম্যাচেও সেটা রিপিট করার চেষ্টা করি। আমার কাছে একটাই পার্থক্য—পাড়ার মাঠে ক্যামেরা থাকে না, আন্তর্জাতিক ম্যাচে থাকে। আর আমি চাপ উপভোগ করি। চাপ না থাকলে মনেই হয় না খেলাটা জমছে। দিন শেষে মনে হয়—আরে, এটা তো খেলাই, উপভোগের বিষয়।’ দেওয়ানবাড়ির ছোট ছেলেউপভোগের বিষয় যখন এল, তখন একটু পেছনে ফিরে যাই। রংপুরের দেওয়ানবাড়ির এক বাড়িতে। যেখানে মোটমাট সদস্য ২৫-৩০ জনের মতো। বাড়ির ছোটদের মধ্যে একজনের নাম নাসির হোসেন। বড় চাচা-মেজো চাচা-সেজো চাচা-ছোট চাচা আর বাবা—একেকজন যেন ‘রাগের ফ্যাক্টরি’! পান থেকে চুন খসলেই হয়েছে! তো বাবা-চাচারা মিলে ক্রিকেটটাকে মোটেও উপভোগের বিষয় হিসেবে রাখতেন না ছোট্ট নাসিরের জন্য। নাসির তখন সম্ভবত সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। বড় ভাইয়ের সঙ্গে গেছেন ক্রিকেট খেলতে, স্কুল পালিয়ে। বড় চাচা ও ছোট চাচা মাঠে গিয়ে দেখেন, বাড়ির দুই সদস্য দিব্যি ক্রিকেট খেলছে। কিসের খেলা কিসের কী! চ্যালা কাঠ নিয়ে ধাওয়া। নাসিরও ব্যাট ফেলে দে দৌড়। মধ্যদুপুরে লোকজন ক্রিকেট বাদ দিয়ে চাচা-ভাতিজার দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দেখতে হাততালিও দিল! ‘তবে সেদিন আর দৌড়ে পারিনি। শেষমেশ ধরা পড়লাম। সবার সামনে শক্ত মার খেয়ে আমি আর বড় ভাই সিদ্ধান্ত নিলাম—গৃহত্যাগী হব। বাসার পেছনেই ছিল বিশাল বাগান; ছোটবেলায় বনের মতোই মনে হতো। রাগে-ক্ষোভে-দুঃখে সেই বাগানের মধ্যে ঢুকে পড়লাম।’ স্মৃতি হাতড়াচ্ছিলেন নাসির। ‘তারপর কী হলো?’‘তারপর আর কী, সন্ধ্যার দিকে বাবা আর চাচারা অনেক খুঁজে বাসায় নিয়ে গেলেন!’ এটা যেন নাসিরের উল্টো শাস্তি। তবে বড়রাও একসময় বুঝলেন, এ ছেলে ক্রিকেটার না হয়ে ছাড়বে না। তাই পাড়ার মাঠে যখন নাসির ধুমধাম ছক্কা হাঁকাতেন, তখন পিঠ চাপড়ে দিতেও দ্বিধা করতেন না।বড়দের শাস্তি-ভালোবাসার কথা যখন এসেছে, তখন নাসিরের ‘বড় আম্মা’, মানে বড় চাচির কথা আসবেই। বড় চাচির কথা বলার আগে চলুন ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বরে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন নাসির। ফোন করেছেন মা। ফোনের অপর প্রান্তে মায়ের কম্পিত কণ্ঠ শুনেই ফোন কেটে দিলেন নাসির। কেন? সে সময় প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আম্মার অনেক দিনের ইচ্ছা আমাকে টিভিতে দেখবে, আমি ভালো খেলব। কিন্তু ফোনে তার কথা শুনে বুঝলাম কান্না-কান্না ভাব। “ব্যস্ত আছি” বলে তাড়াতাড়ি ফোন রেখে দিয়েছি। নইলে কেঁদেই দিত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমার আবার হাসি চলে আসে...।’ বুঝুন অবস্থা! কেবল ক্রিকেট বাদে আর কিছুতেই ‘সিরিয়াস’ নন এই মানুষটি—এটা তাঁর নিজেরই অভিমত। অথচ ‘বড় আম্মা’ রেহানা খাতুনের কথা বলতে গিয়ে গলা কি কেঁপে উঠল না একটু! হ্যাঁ, তা-ই তো! নাসির নিজের আবেগ ঢেকে রাখতে পারলেন না আর, ‘ছোটবেলায় তো সবাই অনেক শাসন করত, আবার আদরও করত। তবে সবচেয়ে বেশি আদর পেয়েছি বড় আম্মার কাছ থেকে।’ ঠিক এই সময় নাসির একটু বিরতি নিলেন, ‘বছর ১২-১৩ আগে মারা গেছেন তিনি। ছোটবেলায় যখন সবাই মারত, তখন বড় আম্মাই আমাকে বাঁচাতে আসতেন!’বড় আম্মাও একদিন আর বাঁচাতে পারলেন না! সেটাও স্কুলের পড়ার সময়ের কথা। বাড়ির পেছনেই একটা বড় পুকুর। মাছ ধরার ভীষণ নেশা নাসিরের। অধিকাংশ সময়ই ছিপ ফেলে মাছ ধরতেন এর-ওর পুকুরে (নাসিরের ভাষায় ‘লুকায়-ছুপায়’)। সেদিন সকালেও ছিপ ফেলে বসে আছেন। মাছের চেয়ে মশাই বেশি মারছেন। ঠিক তখন বেরসিক পুকুরমালিকের আগমন: ‘কট রেড হ্যান্ডেড!’ মানে হাতেনাতে ধরা। নাসিরকে ধরে একটা লাকড়ির ঘরে আটকে রাখলেন সঙ্গে সঙ্গে। বেলা ১১টার কথা। এক ঘণ্টা যায়, দুই ঘণ্টা যায়—ছাড়াছাড়ির কোনো নাম নেই! ‘কিছুক্ষণ কান্নাকাটিও করলাম! কোনো খাবারদাবারও দিল না, পেট চোঁ-চোঁ করছে। ছাড়া পেলাম সেই বিকেল পাঁচটার দিকে।’ নাসির বলতে বলতে হাসছিলেন। ‘এখন কি দেখা হয় সেই পুকুরমালিকের সঙ্গে? কী বলেন তিনি?’ নাসির বলেন, ‘আরে দূর! সেটা তো ভুলেই গেছেন মনে হয়। অত দিন আগের কথা কে মনে রাখে!’নাসির হোসেন ‘নটআউট’!রংপুরের ক্রিকেট কোচ শাকিল রায়হান নিশ্চয়ই নাসিরের ছোটবেলার কথা মনে রেখেছেন। এই মানুষটিই মূলত নাসিরের জীবনের বাঁক বদলের কারিগর। শাকিল যখন প্র্যাকটিসে ডাকতেন, তখনই ফাঁকিবাজির এক শ একটি উপায় মাথায় ঘুরত নাসিরের। এমন না যে, ক্রিকেট পছন্দ করতেন না নাসির। করতেন, তবে নিয়মনীতি যেন তাঁর দুই চোখের বিষ ছিল!স্কুলের বেলায়ও একই ঘটনা। স্কুলের শিক্ষকেরা আপনাকে মনে রেখেছেন কেন? রংপুরের সমাজকল্যাণ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন এই শিক্ষার্থী দুই আঙুল দেখিয়ে বললেন, ‘এক. খুব বাজে ছাত্র আর দুষ্টু ছিলাম। দুই. আমি এখন জাতীয় দলে খেলছি।’শিক্ষকেরা নিশ্চয়ই এখন টিভির পর্দায় নাসিরের খেলা দেখেন। ক্লাসের দুষ্টু ছাত্রটা যে এখন তাঁদের গর্ব—এটা অনুমান করতেও জ্যোতিষী হতে হয় না। নাসিরের কেমন লাগে ব্যাপারটি? আবার ফিরে গেলেন ২০১১ সালে জিম্বাবুয়েতে। ডেব্যু ম্যাচে মাঠে নেমেছেন, সবকিছুই ঠিক ছিল। ভড়কে গেলেন বিশাল পর্দায় নিজেকে দেখে, ‘তখন মনে হলো, হায় খোদা, সারা দেশ আমাকে দেখছে! হাঁটতে গেলেও তখন কেমন কেমন যেন লাগছিল! ২০-২৫ মিনিট পরে অবশ্য সব ঠিকঠাক।’ এবং প্রথম ম্যাচেই একটা ঝকঝকে অর্ধশতক হাঁকালেন নাসির। সেই শুরু, টেস্ট ও ওয়ানডেতে নাসিরের ব্যাটিং গড় এখন ৪৬ দশমিক ৭০ ও ৪৫ দশমিক ৩৫।শেষ প্রশ্ন—সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন। আপনি শুরু করছেন কবে? পাত্রী কি ঠিক করা আছে?নাসিরের লাজুক উত্তর, ‘না না, তেমন কেউ নেই। আর বিয়ে এখনই না রে ভাই! আরও আড়াই-তিন বছর পরে।’ নাসিরের ভাবভঙ্গি দেখে মনে হলো, আপাতত ‘নটআউট’ জীবনটাই বেশ উপভোগ করছেন।
ক্রিয়াপদ প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের জন্য আজ দেওয়া হলো বাংলা ২য় পত্র থেকে ক্রিয়াপদ নিয়ে আলোচনা। সকর্মক ও অকর্মক ক্রিয়াসকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়াপদের কর্ম থাকে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।বাক্যের ক্রিয়াকে কী বা কাকে —প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তাই কর্মপদ। কর্মযুক্ত ক্রিয়াই সকর্মক ক্রিয়া। যেমন:মা রান্না করছেন।এ বাক্যে ক্রিয়াপদ হচ্ছে ‘করছেন’।প্রশ্ন: কী করছেন?উত্তর: রান্না করছেন।অতএব, ‘করছেন’ ক্রিয়াপদটির কর্ম হচ্ছে ‘রান্না’। ‘করছেন’ সকর্মক ক্রিয়া।অকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কর্ম নেই, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন: সৌরভ পড়ে।সৌরভ কী পড়ে?—এ প্রশ্নের উত্তর নেই। অর্থাৎ এ বাক্যে ‘পড়ে’ ক্রিয়াপদের কোনো কর্ম নেই। তাই ‘পড়ে’ অকর্মক ক্রিয়া।প্রয়োগ বৈশিষ্ট্যে সকর্মক ক্রিয়া হতে পারে। যেমন:সকর্মক ক্রিয়া: ১. আমি টিফিন খেয়েছি।২. মাখন রায় গান গাচ্ছেঅকর্মক ক্রিয়া: ১. আমি টিফিনে খেয়েছি।২. মাখন রায় গানে মজেছে। ক্রিয়াপদযে পদ দ্বারা কোনো কিছু করা বা কোনো কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন:বাবা এসেছেন। ঘড়িতে ১০টা বাজে। ক্রিয়াপদ নানা রকম হয়:১. সমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন:সেতু স্কুলে যায়। বিথু গান গায়।২. অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ হয় না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন:আমি বাড়ি গিয়ে... সে বই নিয়ে...এখানে ‘গিয়ে’, ‘নিয়ে’ ক্রিয়ার দ্বারা কথা শেষ হয়নি। বাক্যের অর্থ অসম্পূর্ণ রয়েছে। বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ করার জন্য আরও ক্রিয়া চাই। যেমন:আমি বাড়ি গিয়ে খাবো।সে বই নিয়ে পড়তে বসেছে।সুতরাং, ‘গিয়ে’, ‘নিয়ে’ হচ্ছে অসমাপিকা ক্রিয়া। আর ‘খাবো’, ‘বসেছে’ এগুলো সমাপিকা ক্রিয়া।৩. সকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম থাকে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন:স্বপন চিঠি লিখছে। কাঞ্চন বই পড়ছে।৪. অকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম থাকে না, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন:সেলিমা বেগম বাড়ি যায়। মনি মারমা ভাত খায়।৫. দ্বিকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকে, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন:শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন।মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন।৬. প্রযোজক ক্রিয়া: যে ক্রিয়া অন্যের দ্বারা চালিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। যেমন:মা খোকাকে চাঁদ দেখাচ্ছেন। সাপুড়ে সাপ খেলায়।৭. যৌগিক ক্রিয়া: একটি সমাপিকা ক্রিয়া ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া মিলিত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়, তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন:সে পাস করে গেল। সাইরেন বেজে উঠল। সিনিয়র শিক্ষক, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ
আমাদের দেশের মানুষ যা যা খায়, তার মধ্যে এমন একটিরও নাম এখন বলা যাবে না যেটি ভেজাল বা বিষমুক্ত হিসেবে নিশ্চিন্তে খাওয়া যায়। ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূল থেকে শুরু করে কোনো ধরনের খাদ্যকেই এখন আর নিরাপদ খাদ্য হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ নেই। এক দিনে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সরকার ও প্রশাসনের অব্যাহত গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে পরিস্থিতি আজ এ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সেটাও বিক্ষিপ্ত এবং এ ক্ষেত্রে দূরদর্শিতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারটি জনস্বাস্থ্যসংক্রান্ত এমনই এক বিষয় যে, এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ছাড় দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। অথচ খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন ও নানা ধরনের রাসায়নিকের ব্যবহার, কৃষিকাজে বিচার-বিবেচনাহীনভাবে কীটনাশকের ব্যবহার, ফল পাকাতে রাসায়নিকের ব্যবহার, মাছের চাষ, হাঁস-মুরগি বা গবাদিপশু পালতে গিয়ে মানুষের জন্য ক্ষতিকর নানা রাসায়নিকের ব্যবহার আমাদের দেশের সব ধরনের খাদ্যদ্রব্যকে বিষাক্ত করে তুলেছে। আমাদের দেশে পুরো খাদ্যচক্রের মধ্যেই যেভাবে বিষ ঢুকে গেছে, তাতে মনে হচ্ছে জাতি হিসেবে আমরা ধ্বংসের দিকেই এগোচ্ছি।ফরমালিন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে, নানা ব্যবস্থার কথা শোনা গেছে; এর পরও খাদ্যে এই বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, দেশে শিল্প খাতে ফরমালিনের প্রয়োজন ৪০ থেকে ৫০ টন, কিন্তু গত অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ২০৫ টন। অর্থাত্ এই বাড়তি ১৫০ টনের বেশি ফরমালিন খাদ্যের সঙ্গে দেশবাসীর পেটে গেছে। বিভিন্ন বাজার ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করা হলো, অথচ সেখানে নিয়মিত কোনো পরীক্ষাই করা হয় না।এটা এখন পরিষ্কার যে, বর্তমান উদ্যোগ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। আমরা মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো আমাদের দেশেও একটি শক্তিশালী ফুড অ্যান্ড ড্রাগ প্রশাসন ধরনের কিছু গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে। নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য এখন আলাদাভাবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আবার খাদ্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে সবগুলো একই মান ও পদ্ধতিও অবলম্বন করে না, পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিশৃঙ্খলা রয়ে গেছে। ফলে প্রয়োজন একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী একক প্রতিষ্ঠান। আমলানির্ভর না হয়ে যে প্রতিষ্ঠানটি হবে বিশেষজ্ঞনির্ভর এবং সেখানে থাকবে না কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের খবরদারি। সামগ্রিকভাবে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করাই হবে তাদের কাজ। আশা করি, সরকার দ্রুতই এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নেবে।
‘জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি—এই বিষয়টি বুঝতে পেরেও আমি আশাবাদী রয়েছি। আমার মনোবল অতি উচ্চমাত্রার। কারণ, আমি এরই মধ্যে জীবনকে উপভোগ করেছি।’কথাগুলো বলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নায়ক জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নেলসন ম্যান্ডেলা। তবে এখন নয়, প্রায় ১৫ বছর আগের বলা কথা এটি। ১৯৯৮ সালে দেশের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ক্যানসারে আক্রান্ত মৃত্যুপথযাত্রী এক কিশোরকে দেখতে গিয়ে ওই কথাগুলো বলেছিলেন ম্যান্ডেলা। সেই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল, যা এত দিন অপ্রকাশিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস গত বৃহস্পতিবার ভিডিওটি সম্প্রচার করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা ম্যান্ডেলার নিজের অবস্থাই এখন সংকটাপন্ন। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত ১৫ বছর বয়সী কিশোরটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। তার পরনে ম্যান্ডেলার ‘ট্রেডমার্ক’ মাদিবা শার্ট। শান্তিতে নোবেলজয়ী ম্যান্ডেলাকে কাছে পেয়ে তার চেহারায় কিছুটা প্রশান্তির ছাপ। মুখে লাজুকতা মাখা মৃদু হাসি। ম্যান্ডেলা একটি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কিশোরটির পাশে বসে আছেন। ম্যান্ডেলা কিশোরটির উদ্দেশে আরও বলেন, ‘যদি তোমার মন আশাবাদী না হয়, মনোবল অতি উচ্চ না হয়, তাহলে ওষুধ খুব বেশি কাজ করবে না।’ ম্যান্ডেলা দেখে আসার প্রায় তিন মাস পর ওই কিশোর মারা যায়। এএফপি।
নব্বইয়ের দশকে আলজেরিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয় ইসলামপন্থীরা। কিন্তু সেনাবাহিনীর বাধায় ক্ষমতা পায়নি তারা। এর জেরে দেশটিতে প্রায় এক দশক ধরে চলে গৃহযুদ্ধ। প্রাণ হারায় অন্তত দুই লাখ মানুষ।সবচেয়ে জনবহুল আরব রাষ্ট্র মিসরের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে অনেকেই আলজেরিয়ার সেই সময়ের মিল খুঁজে পাচ্ছেন। পার্থক্য একটাই, মিসরে মোহাম্মদ মুরসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক বছর দায়িত্ব পালন করেছেন।বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, মুরসির এই পরিণতির জন্য তাঁর নিজের এবং দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টিরও (এফজেপি) দায় আছে। এই এক বছরে কোনো ক্ষেত্রেই তিনি চোখে পড়ার মতো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেননি। রাজনৈতিক দল এফজেপির মূল সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড। দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ থাকার পরও মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে তাদের সমর্থিত প্রার্থী মুরসিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। বলা হয়, দেশটিতে সবচেয়ে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সংগঠিত সংগঠন ব্র্রাদারহুডই। জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে মাত্র এক বছরের মাথায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার বিষয়টিকে অবশ্যই তারা সহজভাবে নেবে না। চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণেই সেই আলজেরিয়ার কথা উঠেছে। তার কিছু ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে ব্রাদারহুডের নেতা-সমর্থকদের কথাবার্তায়।ব্রাদারহুডের সুপরিচিত নেতা মোহাম্মদ এল বেলতাগি বলেন, মিসরকে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এই বার্তা প্রতিষ্ঠিত হবে যে ‘গায়ের জোরে’ সরকার পরিবর্তন সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইউটিউবে দেওয়া এক ভিডিওচিত্রে মুরসির একজন সমর্থক সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা অনেক নতুন মুজাহিদ তৈরি করেছেন, যাঁরা শহীদ হতে প্রস্তুত। এই মুজাহিদদের ১০ জনের মধ্যে একজনও যদি আত্মঘাতী হামলায় নিজেকে উড়িয়ে দেন, তার কারণ হবেন আপনিই।’মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার কয়েক ঘণ্টা আগে কায়রোয় তাঁর সমর্থনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অংশ নেন সরকারি কর্মচারী মোহাম্মদ নুফিল। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, মুরসিকে সরিয়ে দেওয়া হলে তাঁর সমর্থকেরা সহিংস হয়ে উঠবে। মিসরের পরিস্থিতি বর্তমানের সিরিয়া কিংবা নব্বইয়ের দশকের আলজেরিয়ার মতো হবে।’যুক্তরাজ্যের ডারহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষক খলিল আল-আনানি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মিসরে সহিংসতা হবে। বিশেষ করে সিনাই উপত্যকা অঞ্চল তো হোসনি মোবারকের পতনের পর থেকেই অস্থিতিশীল রয়েছে। তবে ইসলামপন্থীদের বুঝতে হবে সহিংসতা কোনো সমাধান নয়।
প্রথম ব্যাটরংপুরে অগ্রণী ক্লাবের হয়ে খেলার সময় ইউটি নামের একটা ব্যাট দিয়ে খেলেছিলাম। ওটাই আমার জীবনের প্রথম ব্যাট।মাঠের যে স্মৃতি ভুলিনিঅনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার সময় মাঠে ক্যাচ ধরতে গিয়ে একবার আহত হয়েছিলাম। তারপর মাঠেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ওই স্মৃতি আজও ভুলিনি।আমি ক্রিকেটার, কারণ...দেশের জন্য অনেক কিছু করার সুযোগ আছে, তাই আমি ক্রিকেটার।ক্রিকেটের গুরুরংপুর ক্রিকেট একাডেমির কোচ শাকিল রায়হান।ক্রিকেট ছাড়া আর যে খেলায় পারদর্শীফুটবল।খেলোয়াড় নাসির নাকি মডেল নাসির, যাঁকে টিভিতে দেখতে ভালো লাগেঅবশ্যই খেলোয়াড় নাসির।খেলোয়াড় না হলে যা হতামচাকরিজীবী।পাঠকের ভোটে বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার পর অনুভূতিদেশের মানুষ আমাকে এতটা ভালোবাসে, এটা ভেবে ভালো লাগছে।ভালো ক্রিকেটার হওয়ার জন্য যে তিনটি গুণ জরুরিকঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা, সততা ও শারীরিক যোগ্যতা।যাকে গ্যালারিতে বসিয়ে নিজের খেলা দেখাতে ইচ্ছা করেআমার পরিবারের সবাইকে।জীবনের সেরা ইনিংস২০১১ সালে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০০ রান করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য ওই ম্যাচ আমরা হেরে যাই।নিজের সম্পর্কে একটি অজানা তথ্যমানুষকে হাসাতে এবং নিজে প্রচুর হাসতে পারি।যার জন্য জীবন বাজি রাখতে পারিআমার পরিবারের জন্য।প্রথম যার প্রেমে পড়েছিলামএখনো কারও প্রেমে পড়িনি।মুঠোফোনে কোনো মেয়েভক্ত প্রেমের অফার করলে যা বলি...আপু, আমার প্রেমিকা (গার্লফ্রেন্ড) আছে। আপনি কি চান, আমার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে ঝগড়া হোক?ছেলেবেলায় যা হতে চেয়েছিলামআমি ক্রিকেটারই হতে চেয়েছিলাম।নিজের যে দিকটি বদলাতে চাইআমি নিজেকে মোটেই বদলাতে চাই না। যেমন আছি তেমনই থাকতে চাই।দেশের বাইরে গেলে মনে হয়প্রথম কয়েক দিন ভালো লাগে। পরে দেশকে খুব মিস করি।যখন রেগে যাইচুপচাপ হয়ে যাই এবং আস্তে কথা বলি।মন খারাপ হলেএকা একা কাঁদি।যে তিনটি জিনিস সব সময় সঙ্গে রাখিমা-বাবার দোয়া, মুঠোফোন ও সততা।সামনে যে কাজটি করব ভাবছিরংপুর শহরে আমার একটা স্বপ্নের বাড়ি করব। তারপর বিয়ে করব।সাক্ষাৎকার: মো. রুবেলপ্রচ্ছদের ছবি: কবির হোসেন
বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রাবার বাগান থেকে উত্পাদিত রাবার আমাদের জাতীয় সম্পদ; যা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই বনজ সম্পদটি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে রাবার বাগান সৃষ্টি ও কাঁচা রাবার উত্পাদন দ্রুত প্রসার লাভ করে। ফলে সরকারি পর্যায়ে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের অধীন প্রায় ৪০ হাজার একর ছোট-বড় ১৬টি রাবার বাগান থেকে রাবার উত্পাদিত হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীন প্রায় আট হাজার একর পতিত জমি রাবার চাষের আওতায় আনা হয়। এ ছাড়া রাবার খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে বেসরকারি মালিকানায় প্রায় ২০ হাজার একর পতিত জমি রাবার চাষের জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। তদুপরি চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে চা-বাগানের পাশাপাশি রাবার বাগান সৃষ্টির কার্যক্রম চালু রয়েছে।এক জরিপে দেখা গেছে, বেসরকারি বাগানগুলোতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে সফল বাগান সৃষ্টি ও উন্নত মানের কাঁচা রাবার উত্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সফল রাবার বাগান সৃষ্টি ও রাবারগাছ থেকে লেটেক্স (রাবারের কষ) আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের নিমিত্তে ও সব বাগানে সব কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের রাবারের ওপর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন তথা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকা একান্ত আবশ্যক। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের অধীন স্থগিত কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি রাবারের ওপর অভিজ্ঞ, দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করে সারা দেশে রাবার বাগানগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে এ শিল্পের প্রভূত উন্নতি সাধন করা যেতে পারে।সর্বোপরি আমাদের দেশের উত্পাদিত কাঁচা রাবারে যথাযথ ব্যবহারের জন্য টায়ার ও টিউব, স্যান্ডেল ও জুতা, হুজ পাইপ, ওয়াসার ইত্যাদি কারখানা স্থাপন করে উন্নত মানের রাবারসামগ্রী তৈরি করে বিদেশ থেকে আমদানি করা রাবারসামগ্রীর বিকল্প হিসেবে দেশীয় রাবারসামগ্রীর ব্যবহার দ্বারা আমাদের অনেক বিদেশি মুদ্রার সাশ্রয় সম্ভব। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।আ ফ ম মোহেববুল্লাহসাবেক সহব্যবস্থাপক ও প্রশিক্ষক, বশিউক, কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র, হেয়াকো, ভুজপুর, চট্টগ্রাম।
বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ অর্থনীতি বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।৩৬২. ক্রমান্বয়ে কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন কোন ধরনের দেশের বৈশিষ্ট্য?i. উন্নত ii. উন্নয়নশীল iii. অনুন্নতনিচের কোনটি সঠিক?ক. i.খ. ii. গ. i. ও ii.ঘ. i. ও iii.সঠিক উত্তর: খ।৩৬৩. চেক, ব্যাংক ড্রাফট, প্রাইজবন্ড কোন ধরনের মুদ্রার উদাহরণ?ক. প্রকৃত মুদ্রার খ. প্রতীকি মুদ্রারগ. ঐচ্ছিক মুদ্রার ঘ. প্রামাণিক মুদ্রারসঠিক উত্তর: গ।৩৬৪. ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম কোন ধরনের ব্যাংক?ক. বিশেষায়িত ব্যাংকখ. বাণিজ্যিক ব্যাংকগ. আন্তর্জাতিক ব্যাংকঘ. কেন্দ্রীয় ব্যাংকসঠিক উত্তর: ঘ।৩৬৫. কোনটি সামাজিক সম্পদ?ক. বন্দর খ. হাসপাতালগ. রাস্তাঘাট ঘ. কৃষি যান্ত্রীকরণসঠিক উত্তর: খ।৩৬৬. বেকারি সামগ্রী উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হওয়া কোন ধরনের শিল্পের উদাহরণ?ক. কুটির শিল্প খ. ক্ষুদ্র শিল্পগ. মাঝারি শিল্প ঘ. বৃহদায়তন শিল্পসঠিক উত্তর: ক।৩৬৭. কৃষিতে আধুনিকায়ন বলতে বোঝায়—i. কৃষিতে যন্ত্রপাতির ব্যবহারii. বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির ব্যবহারiii. উফশী ও রাসায়নিক সারের ব্যবহারনিচের কোনটি সঠিক?ক. i.খ. ii.গ. iii. ঘ. i. ও iii.সঠিক উত্তর: ঘ।৩৬৮. গ্রাম্য মহাজন কোন ব্যাংকের উদাহরণ?ক. বাণিজ্যিক ব্যাংকখ. সমবায় ব্যাংকগ. সঞ্চয়ী ব্যাংকঘ. স্থানীয় ব্যাংকসঠিক উত্তর: ঘ।৩৬৯. বিস্তৃত বাজারের শর্ত—i. প্রচারণা ii. নিরাপত্তাiii. স্থানান্তরযোগ্যতানিচের কোনটি সঠিক?ক. i.খ. ii.গ. iii.ঘ. i, ii ও iii.সঠিক উত্তর: ঘ।৩৭০. যে সম্পদের মালিকানা কোনো একক দেশের নয়, কিন্তু সকল মানুষ সমভাবে ভোগ করার সুযোগ লাভ করে। এটি কোন ধরনের সম্পদ?ক. ব্যক্তিগত সম্পদখ. সমষ্টিগত সম্পদগ. জাতীয় সম্পদঘ. আন্তর্জাতিক সম্পদসঠিক উত্তর: ঘ।৩৭১. কোন অর্থ ব্যবস্থায় ধনতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য একসঙ্গে পরিলক্ষিত হয়?ক. ধনতান্ত্রিক খ. সমাজতান্ত্রিক গ. মিশ্র ঘ. ইসলামিসঠিক উত্তর: গ।# কাজল একজন কর্মক্ষম যুবক। তার কোনো জমিজমা নাই। সে গ্রামের একজন শিক্ষকের পরামর্শে স্থানীয় একটি ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ করে বাড়ির আঙিনায় নার্সারি তৈরি করে। এতে সে প্রচুর লাভবান হয়।৩৭২. কাজলের নার্সারি তৈরি কোন ধরনের কাজ?i. উন্নয়নমূলক ii. আত্মকর্মসংস্থানiii. গ্রামীণ উন্নয়ননিচের কোনটি সঠিক?ক. i. খ. ii. গ. iii. ঘ. i. ও iii.সঠিক উত্তর: খ।৩৭৩. কোন স্থানীয় ব্যাংক থেকে কাজল ঋণ গ্রহণ করে?ক. সমবায় ব্যাংক খ. কৃষি ব্যাংকগ. সোনালী ব্যাংক ঘ. গ্রামীণব্যাংকসঠিক উত্তর: ঘ।৩৭৪. কোন বছর বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়?ক. ১৯৭১ সালে খ. ১৯৭২ সালেগ. ১৯৭৩ সালে ঘ. ১৯৭৪ সালেসঠিক উত্তর: খ।# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল
চীন দেশটার প্রতি আমার মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। তাই চীনে লেখাপড়া করার সুযোগ পাওয়ামাত্র তা আর হাতছাড়া করিনি। চীনে এসেছি বেশ কয়েক মাস হলো। পড়ি হুবেই প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ দেশের ভাষাটা ইতিমধ্যে রপ্ত করতে শুরু করেছি। দিন যত গড়াচ্ছে, এই দেশটার প্রতি আকর্ষণ ক্রমেই বাড়ছে। ছোটখাটো মানুষগুলো এত কাজ করতে পারে, এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। পুরুষ-মহিলা কোনো ভেদাভেদ নেই, সবাই কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা পুরুষের চেয়েও এগিয়ে। যেমন এখানে পুরুষ দোকানদার নেই বললে চলে। আর অধিকাংশ গাড়ির চালক মহিলা। এখানে গাড়ির ভাড়াটা অদ্ভুত ধরনের। ১০০ মিটার গেলে যে ভাড়া, পুরো শহর ঘুরলেও একই ভাড়া।এ দেশের মানুষের পোশাক-আশাক, সংস্কৃতিসহ অন্যান্য প্রায় সবকিছুই পৃথিবীর অন্য দেশ থেকে আলাদা। যা সবাইকে আকৃষ্ট করে। দ্য গ্রেট ওয়াল এই একটা নিদর্শনেই বোঝা যায় এ জাতির অতীত গৌরব। চীনাদের ইংরেজি ভাষার প্রতি তেমন একটা আগ্রহ নেই। যারা ইংরেজি জানে তারা অনেক ইংরেজি শব্দ সঠিক উচ্চারণ করতে পারে না। তারা এমন অনেক ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে, যার সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত নই। যেমন আমরা বলি তুমি কোন ডিপার্টমেন্টে পড়ো। কিন্তু চীনারা বলে তোমার major কী? ওরা ইউনির্ভাসিটি বা ভার্সিটি না বলে স্কুল শব্দই বেশি ব্যবহার করে। আর ডাস্টবিন না বলে শুধু বিন বলে।বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ছাত্রছাত্রীরা বন্ধের আগে রাস্তার দুপাশে ফুটপাতে বসে তাদের ব্যবহার করা অপ্রয়োজনীয় সব জিনিস বিক্রি করে দেয়। জামা-কাপড় থেকে শুরু করে চুলের ব্যান্ড-ক্লিপস, টেবিলল্যাম্প, বই-খাতা, ছাতা, ব্যাগ, এমনকি ব্যবহার করা জুতা পর্যন্ত বিক্রি করে।ঠিকানা লিখতে গেলে আমরা প্রথমে শহরের নাম তারপর জেলা এবং শেষে দেশের নাম লিখি। কিন্তু চীনারা লেখে উল্টো। তারিখের ক্ষেত্রেও উল্টো। প্রথমে বছর তারপর মাস আর সবার শেষে তারিখ।চীনে এসে আমার প্রথম যে ব্যাপারটা খটকা লাগে, তা হলো মেয়েদের ভ্যানিটিব্যাগ বহন করছে ছেলেরা। পরে জানতে পারি, এখানে এটাই নাকি নিয়ম। এটাই তাদের ভালোবাসার প্রকাশ। আর সন্ধ্যার দিকে প্রায়ই দেখা যায় প্রেমিকা তার প্রেমিকের কাঁধে চড়ে দিব্যি ঘুরছে। আমরা বাঙালিরা অবাক হয়ে তাকালে ছেলেগুলো মিটমিটি হাসে। এটা কষ্টের হাসি না ভালো লাগার হাসি বুঝতে পারি না।ভাত ছাড়া যে মানুষ দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে তা এখানে এসে চাক্ষুষ প্রমাণ পেলাম। এরা একবারে বেশি খায় না। অল্প অল্প করে সারা দিন খায়। সময় বাঁচানোর জন্য হাঁটতে হাঁটতেও খায়। নুডলস এদের প্রিয় খাবার। কি সকাল কি বিকেল, সব সময়ই নুডলস খায়।চীনারা নুডলস শুধু গরম পানিতে সেদ্ধ করে খায়। আমাদের মতো তেল দেয় না। এক ফুট লম্বা নুডলসগুলো প্রস্থেও প্রায় আধা ইঞ্চি। এরা খুব একটা প্রয়োজন না হলে ঠান্ডা খাবার খায় না। ধোঁয়া ওঠে এমন গরম খাবার এদের পছন্দ। এমনকি পানিও খায় গরম গরম। সারা দিন রাস্তার দুপাশ খালি থাকলেও সন্ধ্যা হলে হাজার রকমের খাবারের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানিরা।চীনা খাবার যে কত রকমের, কত স্বাদের হতে পারে তা এখানে না এলে বোঝা যায় না। আমাদের দেশের চায়নিজ রেস্টুরেন্টগুলো দেশি মসলা আর উপাদান ব্যবহার করে। আমাদের দেশের চায়নিজ খাবার আর এদের খাবারের মধ্যে অনেক পার্থক্য।দেশে থাকাকালে জানতাম চীনে এক সন্তান নীতি আছে। যত ধনীই হোক কেউ একজনের বেশি সন্তান নিতে পারবে না। এই নীতির ফলে চীনে তরুণের তুলনায় বৃদ্ধদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনগণের অভাব দেখা দিতে পারে। সে জন্য বর্তমানে এই নিয়মটা শিথিল করা হয়েছে। এখন যে কেউ চাইলে দুটি সন্তান নিতে পারে। অবশ্য কৃষক পরিবার এবং জনবিরল এলাকার লোকজন দুইয়ের অধিক সন্তান নিতে পারে।চীনারা সবকিছু নিজ ভাষায় লেখে। এমনকি আমাদেরও তারা একটা করে চীনা নাম দিয়েছে। তবে সংখ্যা লেখে ইংরেজিতে। চীনা ভাষায় সংখ্যা লেখা অনেক ঝামেলা। বিশেষ করে লিং বা শূন্য (零।)। এ সংখ্যা ইংরেজিতে লিখলেও তারা উচ্চারণ চীনা ভাষাতেই করে।চীনাদের যে বিষয়টা আমার সবচেয়ে ভালো লাগে তা হলো তাদের সময়নুবর্তিতা। এরা যে সময় আসবে বলবে, ঠিক সেই সময়ই আসবে। এরা এতটাই নিয়ম মেনে চলে যে এক বছরের ক্লাস রুটিন বছরের শুরুতে করে রাখে। সব ক্লাস বা পরীক্ষা ঠিক সময়েই হয়। তাই বছরের শুরুতেই বলে দেওয়া সম্ভব কোন দিন কয়টায় ক্লাস বা পরীক্ষা।এবার আসি চীনাদের পোশাক-আশাকে। ছায়াছবিতে চীনাদের যে ধরনের পোশাক পরতে দেখা যায়, তেমন পোশাক পরা কাউকে এখনো পর্যন্ত চীনে দেখিনি। এখানে ছেলেরা টি শার্ট-জিনস আর মেয়েরা টি শার্ট আর হাফপ্যান্ট পরে। কি গরম কি শীত, ছেলেরা কেডস পরবেই। কাঁধে বা বুকে থাকে ব্যাগ। অবশ্যই সঙ্গে থাকবে পানি। বিদেশিদের মুখ থেকে চীনা শব্দ শুনলেই তারা খুশিতে গদগদ হয়। তখন বলতে থাকে ‘হেন হাও’ অর্থাৎ খুব ভালো। আমি মাঝেমধ্যে আমার জানা চীনা শব্দগুলো ব্যবহার করে বাহবা নিই।এখানে আরেকটি ঘটনা আমার অবাক লাগে। রাস্তার পাশে দেখি কোনো গাছ নেই। হঠাৎ দেখি সেই জায়গায় বেশ লম্বা লম্বা গাছ। এই গাছগুলো অন্য কোথা থেকে তুলে নিয়ে এসে লাগানো হয়েছে। আমাদের দেশে যেভাবে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়, চীনে সেটা কখনো দেখিনি। সমস্যা হলে গাছগুলো তুলে তারা অন্য জায়গায় রোপণ করে।আমাদের দেশের মতো চীনেও অবশ্য কিছু খারাপ মানুষ আছে। যারা বিদেশিদের কাছে নকল জিনিস বিক্রি করে। তবে তাদের সংখ্যা নগণ্য। সবশেষে বলতে পারি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রযুক্তি, রীতিনীতি, কর্মঠ মানুষ—সব মিলিয়ে চীন একটি স্বপ্নের দেশ। চায়না থ্রিজরজেস ইউনিভার্সিটি, হুবেই, চীন[email protected]
Unit-7 : Lesson-6 সুপ্রিয় শিক্ষার্থী, শুভেচ্ছা নিয়ো। নতুন বই এবং নতুন মানবণ্টনের আলোকে ইংরেজি ১ম পত্রের Unit-7-এর Lesson-6 (Love for humanity) নিয়ে আলোচনা করা হলো।4. Make five sentences from the substitution table.Mother TeresaSheThe whole worldwasestablishedhas'Nirmal Hridoy' to look after the helpless.awarded the Nobel Prize for peace in 1979,touched by the sick and dying people.acknowledged her work.taught us how to help the destitute.or,Mother TeresaHer service to the mankindSheWehas got cannotis has taughtwholly praise worthy.us humanity.our pride.but remember her for her benevolent workinternational recognition for thisAnswer: 4.4. Substitution tablea) Mother Teresa was touched by the sick and dying people.b) She established ‘Nirmal Hridoy’ to look after the helpless.c) The whole world has acknowledged her work.d) She was awarded the Nobel Prize for peace in 1979.e) She has taught us how to help the destitute.ora) Mother Teresa is our pride.b) Her service to the mankind is wholly praise worthy.c) She has got international recognition for thisd) She has taught us humanity.e) We cannot but remember her for her benevolent work.# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল
উটপাখি ঘোড়ার চেয়ে দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে।হাতি তিন মাইল দূর থেকেও পানির গন্ধ পায়কুমিরের কামড় থেকে নিস্তার পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো তার চোখের ভেতর আঙুল ঢুকিয়ে দেওয়া।সি-হর্স সবচেয়ে ধীরগতিসম্পন্ন মাছ। এর গতি ঘণ্টায় ০.০১ মাইল।ক্যাঙারু লেজের সাহায্যে তার ভারসাম্য ঠিক রাখে।প্রজাপতি শুধু লাল, সবুজ আর হলুদ রং দেখতে পায়।
চট্টগ্রামে আজ শেষ হচ্ছে তিন দিনের ঈদ ই-বাণিজ্য মেলা। ‘ঘরে বসে কেনাকাটার উত্সব’ স্লোগানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করে। গত বৃহস্পতিবার নগরীর জিমনেসিয়ামে মেলার উদ্বোধন করেন আইসিটিসচিব নজরুল ইসলাম খান। এ সময়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পরে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুরে ই-বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হবে। এরপর বিভিন্ন জেলায় এ মেলা বসবে।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ইফতেখার মুনীর এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িত্ ও কম্পিউটার বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানসহ অনেকে। আয়োজক সূত্রে জানা যায়, মেলায় বিভিন্ন ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ৫২টি স্টল রয়েছে।—নিজাম সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম অফিস
প্রায় প্রতিদিন ক্লাসে যাওয়ার পথে বায়োলজি ল্যাবে চোখ বুলিয়ে যাই। মাঝারি সাইজের ল্যাব, তার ভেতরে ছোট্ট একটি রুম, যেখানে তিনি বসেন, সেই ১০৯ নম্বর রুমের দরজায় কিছুক্ষণের জন্য চোখ দুটি আটকে থাকে। মাঝেমধ্যে ল্যাবের ইয়াসিন ভাইকে জিজ্ঞেস করি, তিনি কি আজকেও আসবেন না? ইয়াসিন ভাই যথারীতি মাথা দুদিকে দুলিয়ে ‘না’ উত্তর দেন। আমি প্র্যাকটিক্যাল খাতাটির দিকে একপলক ফেলে ক্লাসরুমের দিকে হাঁটতে থাকি।খাতাটি কি আদৌ সাইন করানো যাবে না! ম্যাডামের সাইন না হলে খাতাটি দিয়েই বা কী করব। প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় পাস করতে ম্যাডামের সাইন খুব দরকার, এমন নয়। খাতাটির সঙ্গে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার কোনো সম্পর্কই নেই। খাতাটি শুধু আমার নয়, খাতাটি আমাদের কয়েকজনের। খাতাটিতে অনেকগুলো গাছের অনেক রকম পাতার ছবি। পাতাগুলো জীবন্ত না হলেও সজীব হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এই সজীব আর প্রাণবন্ত করে তুলতেই ম্যাডামের সাইন নেওয়া খুব দরকার। খুবই দরকার। হ্যাঁ, ম্যাডামের কাছে গিয়ে সাইন নিতে পারি, তবে না, ম্যাডামের কাছে গিয়ে সাইন নেব না। ম্যাডামকে এখানেই আসতে হবে। সুস্থ হয়ে ১০৯ নম্বর রুমে সোমা ম্যাডামকে এখানে বসতেই হবে। তারপর আমরা সাইন নেব। ক্যানসারের কাছে কেন তিনি হেরে যাবেন? আমাদের ছবি আঁকার কোনো মূল্য নেই! পরীক্ষার জন্যও তো এত সুন্দর করে ছবি আঁকতে পারিনি কখনো। এরটা দেখেছি, ওরটা দেখেছি, ছাপ মেরেছি। কত শত ছবি আঁকতে হয়েছে! কত রকম গাছের যে ফুলের, ফলের, বীজের, পাতার ছবি আঁকতে দিয়েছেন তিনি। মনে মনে বলতাম, এত কষ্ট দেওয়া ঠিক নয়, ম্যাডাম। তখন তো বুঝতাম না, এভাবে ছবি আঁকতে আঁকতেই আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গাছগুলোকে চেনা হবে। তখন বরং ম্যাডামের ওপর রাগই হতো। কিন্তু এবার, নিজে নিজে খুব যত্ন করে ছবিগুলো এঁকেছি। এগুলো শুধু ছবি নয়; এ যে আমাদের আবেগ, আমাদের ভালোবাসা।এই আবেগ আর ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে ম্যাডাম না এসে পারেন না। কেন দূরে থাকবেন, খুব অসুস্থ বলে! না, না, এমনটি হবে না। সুস্থ হয়ে আমাদের কাছে ম্যাডামকে আসতেই হবে, হ্যাঁ, সুস্থ হয়েই। আমরা বড় আশা করে বসে আছি, ম্যাডামের হাতের স্পর্শে আমাদের আঁকা গাছের পাতার ছবিগুলো একদিন না একদিন সজীব হয়ে উঠবেই। তিনি আবার আসবেন, প্রতিদিন আসবেন, সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েই আসবেন—সেই অপেক্ষাই করছি।তুষার রায়ফরেস্ট্রি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়[email protected]
২৩ জুন অটোয়ার জনাকয়েক সংগীতশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী স্থানীয় ব্রনসন সেন্টারে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিনের আলো নিবে এলো সুয্যি ডুবে ডুবে/ আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে/ মেঘের উপর মেঘ করেছে, রঙের উপর রঙ।’ কবিগুরুর লেখা এই কবিতার মতো এদিন অটোয়ার প্রকৃতিও মনে হয় নিজেকে অপরূপ সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুলেছিল। আকাশে সারা দিনই মেঘ আর সূর্যের লুকোচুরির সঙ্গে যোগ হয়েছিল থেমে থেমে বৃষ্টি। এমন মেঘলা দিনে অটোয়ার সংগীতপিয়াসু মানুষদের রবীন্দ্র আর নজরুল সংগীত শোনানোর দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে সুলতানা শিরীন ‘সবার হূদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনাতে নজরুল’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানটির শুরু করেন। দুই কবির জীবন ও সাহিত্যকর্মের ধারাবাহিক বর্ণনার পাশাপাশি নাচ, গান আর কবিতার চমৎকার যোগসাধন ছিল লক্ষণীয় ও প্রশংসনীয়। কৃষ্ণা সরকার, মমতা দত্ত, ফারজানা মওলা, ফারহানা বিশ্বাস, ডালিয়া ইয়াসমিন, রিফাত নুর, শারমীন সিদ্দিক, সিতারা আহসান, আফরোজা খান, নীনা আহমেদ, মিতা সাহা, তাসনীম কাওসার, নার্গিস আখতার, সাদিকা পারভীন, মিতা দাস, সুলতানা শিরীন, আলী আজগর, অরুণ সরকার, মাইনুল হোসেন, জসীম উদ্দিন আহমেদ, জয়ন্ত ভৌমিক, এনাম রাহমান, নটরাজ চৌধুরী, কাজী আফজাল হোসেন, মান্নান মোহাম্মদ, মো. মকসুদ খান, মাসুদুর রহমান, অং সুই থোয়াই প্রমুখ গান পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করেন।আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর, আমার দেশের মাটি এবং ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি, কারার ওই লৌহ কপাট, এই শিকল পরা ছল, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, পাগলা হওয়ার বাদল দিনে প্রভৃতি একক ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি সাম্যবাদী, দুঃসময়, হঠাৎ দেখা, বিদ্রোহী কবিতাগুলো আবৃতি, চিঠি পাঠ এবং কোরাস গানের সঙ্গে এ প্রজন্মের নৃত্যশিল্পী ঈশিতা, পুষ্পা, বীণা ও নিধার নৃত্যশৈলী অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। তাদের পরিবেশনা উপস্থিত সবার প্রশংসা পায়।সামাজিক, অর্থনৈতিক নিরাপত্তাসহ নানা কারণে বাঙালিরা এখন দেশান্তরী-অভিবাসী। কানাডায় সবাই কঠিন জীবন-সংগ্রামে ব্যস্ত। তার পরও কানাডাপ্রবাসী বাঙালি সবাই শিকড়কে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শত ব্যস্ততা আর ব্যর্থতার মধ্যেও অটোয়াপ্রবাসী বাঙালি সাংস্কৃতিককর্মী এবং শিল্পীদের এই প্রয়াস আমাদের সাম্যের গান: মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান/নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি/ সব দেশে সব কালে ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।’ গান গাইতে উৎসাহিত করে, আশান্বিত করে। অটোয়া, কানাডা।[email protected]
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম। তিনি আপনার মানসিক বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান দেবেন। অল্প কথায় আপনার সমস্যা তুলে ধরুন। আপনার সঠিক পরিচয় না দিতে চাইলে অন্য কোনো নাম ব্যবহার করুন।—বি. স.সমস্যা: আমি সম্মান দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি। আমার উচ্চতা কম। এই উচ্চতাই আমার সুন্দর জীবনটাকে দিন দিন বিপন্ন করে তুলছে। আমার অন্য সব ভালো গুণ থাকলেও উচ্চতার কারণে নিজেকে গুটিয়ে রাখি। বন্ধুদের মধ্যে আমার উচ্চতাই সবচেয়ে কম। কম উচ্চতার কারণে আমাকে অনেক বাজে মন্তব্যও শুনতে হয়। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, তা-ও অনেকে বিশ্বাস করতে চায় না। আমি জানি, মানুষের সবকিছু পরিপূর্ণ থাকে না। তবু পারি না মনকে বোঝাতে। বাইরে চলাফেরার সময় মনের অজান্তে নিজের উচ্চতা তুলনা করে ফেলি, যার ফলে আমার মনটা আরও বেশি খারাপ হয়ে যায়।হিমেল, চট্টগ্রাম।পরামর্শ: নিজেকে যখনই আমরা অন্যের সঙ্গে তুলনা করি, তখন একধরনের হীনম্মন্যতায় ভুগি। ভেবে দেখো, যারা তোমার মতো সম্মান পর্যায়ে পড়তে পারছে না, তারাও তো তোমার সঙ্গে তুলনা করে হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারে। সবারই অসংখ্য গুণাবলি আছে। যেগুলোর সমন্বয়ে সমগ্র ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে। এই গুণাবলির কোনোটি কারও মধ্যে বেশি এবং কারও মধ্যে কম থাকতেই পারে। আমাদের নিজেদের ইতিবাচক ও নেতিবাচক সব দিক মেনে নিয়েই নিজেদের ভালোবাসতে হবে। তবে আমরা আমাদের ভেতরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি। একটি মানুষ তার শিষ্টাচার ও জ্ঞান দিয়ে চারদিক আলোকিত করে তুলতে পারে খুব সহজেই। মনে হচ্ছে, তুমি সারাক্ষণ একটি চিন্তার মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গেছ এবং রয়েছ। সেই কারণে বিভিন্ন চর্চার মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করে তোলার প্রয়াস হারিয়ে যাচ্ছে। নিজেকে গড়ে তোলার জন্য ভালো লেখকের সুলিখিত বই পড়ার চেষ্টা করো। সেই সঙ্গে কীভাবে তোমার দ্বারা অন্য মানুষ উপকৃত হতে পারে, সেই চিন্তা করার চেষ্টা করো।সমস্যা: আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। হলে থাকি। এইচএসসি পাস করার পর আমার বাবা মারা যান। ভাইয়েরা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিতে চাননি আর্থিক কারণে। কিন্তু আমার পড়াশোনা করার ভীষণ ইচ্ছা ছিল। সবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এখানে ভর্তি হয়েছি। তাই পরিবারের সবার সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এ জন্য নিজেকে অপরাধী মনে হয়। আমি যখন ভর্তি হতে পারছিলাম না; তখন একটি ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হতো। ছেলেটিকে আমি চিনতাম। আমাদের একরকম আত্মীয়ও হয়। কথা বলতে বলতে তাকে ভালোবেসে ফেলি। কিছুদিন পর ছেলেটি পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে সম্পর্কটা ভেঙে দেয়। কিন্তু আমি ছেলেটিকে মনে মনে ভালোবাসতাম। সে আমাকে অনেক কষ্ট দেয়, তবু তাকে অনেক ভালোবাসি। আমি একটুও শক্ত হতে বা খারাপ ব্যবহার করতে পারি না। প্রতিবার ভাবি ওকে ভুলে যাব, কিন্তু ভুলতে পারি না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকপরামর্শ: তুমি যে নিজের অদম্য ইচ্ছাটাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছ, সে জন্য তোমাকে অভিনন্দন। পরিবারের লোকজন কোনো একদিন তোমাকে নিয়ে ঠিকই গর্ববোধ করবে, যদি তুমি ভালো ফল করে পরে পেশাগত জীবনেও ভালো করতে পারো। আশা রাখছি, তুমি সেটি পারবে। তোমার মন বলছে যে তার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে গেলে তোমার শুধু কষ্টই বাড়বে, কিন্তু তার পরও আবেগের কাছে তুমি বারবার পরাজিত হচ্ছ। তোমার পরিবারের মানুষগুলোর সঙ্গে দূরত্বটি কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করো। এতে তোমার একটি ‘সাপোর্ট সিস্টেম’ তৈরি হবে। এর মাধ্যমে আবেগের চাহিদাও পূরণ হবে। এ ছাড়া আরও কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভালো বন্ধু তৈরি করতে পারলেও অনেক মানসিক সহায়তা পাওয়া সম্ভব হবে। চিন্তা করে দেখো, তুমি যে বারবার ছেলেটির সঙ্গে যোগাযোগ করছ, এতে তোমার আত্মসম্মানের কতটা হানি হচ্ছে। নিজেকে এভাবে নিশ্চয়ই তুমি সব সময় অসম্মানিত হতে দেবে না, তাই না? সাহস আর শক্তি সঞ্চয় করে ছেলেটিকে বলো যে তুমি আর তার দ্বারা নিজেকে অবহেলিত হতে দেবে না। কারণ, তুমি নিজেকে অনেক বেশি ভালোবাসো। শুভ কামনা রইল।
২০১৩ সালের জেএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য এনসিটিবি’র নমুনা প্রশ্নপত্র ছাপা হবে আগামীকালরোববার ও সোমবার
আরব আমিরাত প্রবাসী এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১৫ জন বাংলাদেশি কৃতী ছাত্রছাত্রীকে সংবর্ধনা দিয়েছে পুষ্পাঙ্গন সমাজকল্যাণ সংস্থা। গত ২১ জুন দেরা দুবাই ল্যান্ড মার্ক রিজ্ঞা হোটেলের সেমিনার হলে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।সংগঠনের সভাপতি এম এ হকের সভাপতিত্বে ও নাজমুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুবাই ও উত্তর আমিরাতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল ড. মাহমুদুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস কনসাল জেনারেল আবু আসিফ, দুবাই চিড়িয়াখানার প্রধান অধ্যাপক ড. জিন্নাত রেজা খান, মো. আবদুল করিম, প্রকৌশলী আবদুস সালাম খান, প্রকৌশলী মুয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল আলম, হারুনুর রশিদ, মামুনুর রশিদ প্রমুখ। প্রধান অতিথি ড. মাহমুদুল হক ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ করে বলেন, পৃথিবীতে এখন জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিযোগিতা চলছে। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে তোমাদের আরও অধ্যয়ন করতে হবে। তা ছাড়া ছিটকে পড়বে প্রতিযোগিতা থেকে।অনুষ্ঠানে আয়শা রুবাইদা, মরিয়াম মামুদ, ইমরান উদ্দিন, সামিহা হোসেন সরকার, সাইফুল আলম, হাবিবে কিবরিয়া, রেজভিয়া, আতিক, শামিমা, খলিদ মো. ইসমাইল, তাসনিম চৌধুরী, অভিজিত দাস, তন্ময় চৌধুরীসহ শীর্ষ ১৫ জনকে ভালো ফলাফল করায় বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট ও বিমানের টিকিট দেওয়া হয়।  দুবাই, ইউএই[email protected]
গিনিপিগের বর্মপোষা গিনিপিগটার জন্য অধিক নিরাপত্তা চান? গিনিপিগটা কি আর দশটা গিনিপিগের সঙ্গে মল্লযুদ্ধে পেরে উঠতে পারছে না? সমাধান দিচ্ছে অনলাইন নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ইবে। প্রতিষ্ঠানটি নিলামে তুলেছে গিনিপিগের জন্য তৈরি করা এক বর্ম। মার্কিন এক প্রতিষ্ঠান তাদের পোষা গিনিপিগ লাকির জন্য তৈরি করেছিল এটি। লাকি ইহধাম ত্যাগ করার পর বর্মটি নিলামে তোলার চিন্তা করে তারা। এ পর্যন্ত দাম উঠেছে ৩০০ পাউন্ড। নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ খরচও হবে গিনিপিগদের কল্যাণেই। ভার্জিনিয়ার মেট্রোপলিটন গিনিপিগ রেসকেউ দলের কাছে হস্তান্তর করা হবে পুরো অর্থ। অরেঞ্জ অনলাইন আরেক প্রেমের তাজমহল!তাজমহল বানাতে কী কী চাই? চাই ভালোবাসা, একজন মমতাজ, অনেক অর্থ-প্রাচুর্য আর একজন শাহজাহানের মতো হূদয়বান মানুষের। ভারতের ৭৭ বছর বয়সী ফয়জুল হাসান কাদারির একজন মমতাজ ছিলেন, নাম তাঁর তাজাম্মুলি বেগম। স্ত্রীর জন্য ভালোবাসার কমতি নেই ফয়জুলের। কমতি ছিল অর্থ-প্রাচুর্যের। তবে সেই সীমাবদ্ধতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন এই বৃদ্ধ। ২০১১ সালে স্ত্রী গত হওয়ার সময় বলে গেছেন, ‘আমাদের তো কোনো সন্তান নেই। তাই মৃত্যুর পর আমাদের নাম কেউই মনে রাখবে না।’ ফয়জুল তা হতে দিতে চাননি। স্ত্রীর জন্য যে তাঁর ভালোবাসা, সেই ভালোবাসার জোরে ভিত গড়েছেন আরেক তাজমহলের। উত্তর প্রদেশের নিজের বাগানে গড়েছেন শাহজাহানের তাজমহলের মতোই দেখতে আরেক স্থাপত্য। ফয়জুল ৫০ ফুট বাই ৫০ ফুট আকারের এই স্থাপনার ভিত গড়েন ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রেমিক মানুষটি বলেন, ‘স্ত্রীর মৃত্যুর সময় কথা দিয়েছিলাম, তোমার নামে এমন এক সমাধি গড়ব, যা দেখে গোটা পৃথিবী আমাদের মনে রাখবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনার পর দিনে আট ঘণ্টা করে পরিশ্রম করেছি। এ পর্যন্ত লেগেছে ১০ হাজার ৫০০ পাউন্ড।’ তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ফয়জুরের তাজমহলের কাজ আর এগোচ্ছে না। অর্থের অভাবই প্রধান কারণ। পৈতৃক সম্পত্তির পুরোটাই বিকিয়ে দিয়েছেন। পেনশনের টাকাও শেষ। তার পরও ফয়জুল স্বপ্ন দেখেন স্ত্রীর জন্য গড়া তাজমহল মাথা তুলে দাঁড়াবে একদিন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই চেষ্টাই চালাবেন একালের শাহজাহান। অরেঞ্জ অনলাইনগ্রন্থনা: মাহফুজ রহমান
ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুই ভোটার—সলিম আর জব্বার।সলিম: জব্বার, দোস্ত দেখ, তুই কলা মার্কায় ভোট দিবি। আর আমি মুরগি মার্কায়। দুজনের ভোট কাটাকাটি হইয়া গেল। কেউ আগাইল না, পিছাইলও না। তাইলে আমাগো ভোট দিয়া কী লাভ?জব্বার: ঠিকই তো কইলি। তাইলে আর লাইনে দাঁড়ায়া কী হইব? চল, যাইগা।দুজন লাইন থেকে বেরিয়ে এল।পেছন থেকে এক বৃদ্ধ সলিমকে বললেন, ‘দুজন মিলে ভালোই তো চুক্তি করলা।’‘হ চাচা, সকাল থেকে পাঁচজনের সঙ্গে এই চুক্তি করছি।’ সলিমের জবাব।শামীম সাহেব ভোটে দাঁড়িয়েছেন। গণনা শেষে দেখা গেল, তিনি তিনটি ভোট পেয়েছেন।বাড়ি ফিরে দেখেন, বউ ঝাঁটা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন! শামীম সাহেবকে দেখেই চিৎকার জুড়ে দিলেন, ‘মিনসের ঘরে মিনসে! তুমি একটা ভোট দিছ, আমি একটা দিছি। আরেকটা দিল কে?’নির্বাচনে শরিফ দাঁড়িয়েছেন আনারস মার্কায়, আর জলিলের মার্কা ছাতা। একদিন রাস্তায় কথা হচ্ছিল তাঁদের।শরিফ: বুঝলা জলিল, ভোটে কিন্তু আমিই পাস করব। কেন জানো? আমার দলের কর্মীরা যখন রিকশায়ও ওঠে, রিকশাওয়ালার খোঁজখবর নেয়। রিকশা থেকে নামার সময় তাঁকে ১০ টাকা বকশিশ দেয়। আর বলে, ‘ভাই, ভোটটা কিন্তু আনারস মার্কায়ই দিয়েন।’জলিল: না রে শরিফ, ভোটে আমিই জিতব। কারণ, আমার লোকেরা রিকশায় উঠেই রিকশাওয়ালাকে গালিগালাজ করে। রিকশা থেকে নামার সময় ১০ টাকা কম দেয়। আর বলে, ‘ওই ব্যাটা, ভোটটা কিন্তু আনারস মার্কায় দিবি।’মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছিলেন এক নেতা, ‘আমি যদি নির্বাচিত হই, এই গ্রামে ব্রিজ বানিয়ে দেব।’পেছন থেকে একজন বলে উঠল, ‘স্যার, এই গ্রামে তো কোনো খাল নেই। ব্রিজ করবেন কীভাবে?’নেতা আমতা আমতা করে বললেন, ‘ইয়ে মানে...প্রথমে খাল খনন করব। এরপর খালের ওপর ব্রিজ বানাব।’আফ্রিকান ব্যবসায়ী ফার্নান্দেজ। নিজ গ্রামে নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে ঠিক করেছেন। কিন্তু বেচারা ছোট থেকে বড় হয়েছেন শহরে। গ্রামে কখনো যাননি, এমনকি নিজ গ্রামের ভাষাও ঠিকঠাক জানেন না। তাতে কী? ঢাকঢোল পিটিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে গেলেন তিনি।একদিন গ্রামের মঞ্চে তাঁকে বক্তৃতা করতে দেখা গেল, ‘আমি নির্বাচিত হলে আপনাদের সব দুঃখ-দুর্দশা দূর করব।’গ্রামের লোকজন সমস্বরে বলে উঠল, ‘হোয়া হোয়া’!ফার্নান্দেজ আরও বললেন, ‘গ্রামের মাটির সব ঘর ভেঙে পাকা ঘর তৈরি করে দেব।’আবারও সবাই বলে উঠল, ‘হোয়া হোয়া’।ইনিয়ে-বিনিয়ে আরও বহু প্রতিশ্রুতিই দিলেন তিনি। প্রতিটি বক্তব্য শেষেই গ্রামের লোকের একই কথা, ‘হোয়া হোয়া’। ফার্নান্দেজ তো গ্রামের ভাষা বোঝেন না। তিনি ধরেই নিলেন, সবাই নিশ্চয়ই তাঁকে সমর্থন জানাচ্ছে। খুশিমনে তিনি বক্তৃতা শেষ করলেন।ফেরার পথে কাদামাটি পেরিয়ে যাচ্ছিলেন ফার্নান্দেজ, সঙ্গে এক গাইড। পথিমধ্যে চোখে পড়ল একগাদা গরুর গোবর। নাক কুঁচকে ইশারায় বললেন ফার্নান্দেজ, ‘ওয়াক থু! এগুলো কী?’গাইডের উত্তর, ‘হোয়া হোয়া’!ভোট চাইতে ভোটারের কাছে গেছেন এক নেতা।নেতা: চাচা, কথা দেন, ভোটটা আমারেই দিবেন।ভোটার: কিন্তু ভাতিজা, আমি যে আরেকজনকে ভোট দেব বলে কথা দিয়ে ফেলছি।নেতা: তাতে কী? কথা দিলেই যে কথা রাখতে হবে, তা তো নয়।ভোটার: তাইলে ভাতিজা তোমারেও কথা দিলাম।সংগ্রহ: মো. সাইফুল্লাহ
শিক্ষার্থীদের অ্যানিমেশন তৈরির দক্ষতা বাড়াতে ঢাকায় ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডিআইইউ) কম্পিউটার অ্যানিমেশন নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি ও ক্রিয়েটিভ আর্টস বিভাগের উদ্যোগে গত বৃহস্পতিবার ‘অ্যানিমেশন শিল্পের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার ও ত্রিমাত্রিক ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল শিক্ষার্থীদের তৈরি অ্যানিমেশনের কিছু ছবি দেখানো হয়। এর উদ্বোধন করেন ডিআইইউয়ের উপাচার্য এম লুত্ফর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড্রিমার ডনকির প্রধান নির্বাহী মশিউর রহমান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের ডিন এস এম মাহাবুবুল হক মজুমদার ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রধান সৈয়দ আখতার হোসেন, মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ আর্টস বিভাগের প্রধান মো. কবিরুল ইসলামসহ অনেকে। —বিজ্ঞপ্তি
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে বিনা পয়সায় কিছু দেওয়ার ঘোষণা যুক্ত করা উচিত নয়। ইশতেহারের বিষয়বস্তু কী হওয়া উচিত, সে-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা তৈরি করতেও নির্বাচন কমিশনকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত বলেন, যদিও ইশতেহার-সংক্রান্ত আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার আগেই ওই সব নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে, তার পরও কমিশন এখন এই ইশতেহারকে আচরণবিধির আওতায় আনতে পারে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশনা কার্যকর হলে রাজনৈতিক দলের নেতারা জনগণকে আর ল্যাপটপ, টিভি, ফ্যান ইত্যাদি জিনিস বিনা পয়সায় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না।সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, এভাবে বিনা পয়সায় উপহার দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হলে নির্বাচনী দৌড়ে সব প্রার্থী সমানতালে ছুটতে পারবেন না। পিটিআই।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিশেষ দূত শাহরিয়ার খান তিন দিনের সফরে ভারতে এসে গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাতে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর চিঠিও তুলে দেন। বিশেষ দূত শাহরিয়ার খান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন, পররাষ্ট্র সচিব রঞ্জন মাথাই ছাড়াও দেখা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সতীন্দর লাম্বার সঙ্গেও। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে নওয়াজ শরিফ পাকিস্তান সফরের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছেন কি না সে বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আকবরউদ্দিন কোনো মন্তব্য করেননি।মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, শাহরিয়ার খান ভারতীয় নেতাদের জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোই পাকিস্তানের মূল লক্ষ্য। পাকিস্তানের বিদ্যুত্ ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে বিদ্যুত্ কিনতে তাদের আগ্রহের কথাও নতুন করে জানানো হয়েছে। নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যে ‘ট্র্যাক টু ডিপ্লোম্যাসি’ শুরু হয়েছে, শাহরিয়ার খান তার সঙ্গে যুক্ত। যেমন ভারতের দিক থেকে যুক্ত সতীন্দর লাম্বা।
আপনি নিজেই আপনার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন শতকরা ৯০ থেকে ৯৬ ভাগ। বাকিটা আমরা ফেট বা নিয়তি বলতে পারি। ভাগ্য অনেক সময় অনির্দিষ্ট কারণে আপনা থেকেও গতিপথ বদলাতে পারে। এখানে রাশিচক্রে আমি ‘নিউমারলজি’ বা ‘সংখ্যা-জ্যোতিষ’ পদ্ধতি প্রয়োগ করেছি।—কাওসার আহমেদ চৌধুরীমেষ Aries ২১ মার্চ—২০ এপ্রিল। ভর # ৬ > সপ্তাহের শুরুটা একটু বিশৃঙ্খল মনে হলেও পরে তা ঠিক হয়ে যাবে। এই সাত দিন আপনার শুভই রয়েছে।বৃষ Taurus ২১ এপ্রিল—২১ মে। ভর # ১ > এত চেনার কী? আমি তো আপনার ভালো দেখি।মিথুন Gemini ২২ মে—২১ জুন। ভর # ৬ >মুখে হাসি নিয়ে চলুন, চলতি সপ্তাহটা আপনার খুব ভালো কাটবে।কর্কট Cancer ২২ জুন—২২ জুলাই। ভর # ২ > এ সপ্তাহে আপনাকে খুব ঠান্ডা মাথায় চলতে হবে, তাহলেই সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে।সিংহ Leo ২৩ জুলাই—২৩ আগস্ট। ভর # ১ >সপ্তাহের মাঝখানে এসে একটু আটকে যেতে পারেন। এর পর থেকে আর চিন্তা নেই।কন্যা Virgo ২৪ আগস্ট—২৩ সেপ্টেম্বর। ভর # ২ > এ সপ্তাহে মেজাজ গরম করলেই সব শেষ। এটুকু শুধু বলে রাখি।তুলা Libra ২৪ সেপ্টেম্বর—২৩ অক্টোবর। ভর # ২ > আত্মবিশ্বাস বজায় রেখে চলুন। সামনে সংকট থাকলেও ভয়ের কিছু নেই।বৃশ্চিক Scorpio ২৪ অক্টোবর—২২ নভেম্বর। ভর # ৭ > চারদিকে আলো জ্বলে উঠবে, সুন্দর হবে সাপ্তাহিক জীবন।ধনু Sagittarius ২৩ নভেম্বর—২১ ডিসেম্বর। ভর # ৯ > যা ভাবছেন তা নয়, সপ্তাহ আসলে আপনার খুব ভালো কাটবে।মকর Capricorn ২২ ডিসেম্বর—২০ জানুয়ারি। ভর # ৩ > মন শান্ত রাখুন, আপনার সবকিছু ভালো থাকবে।কুম্ভ Aquarius ২১ জানুয়ারি—১৮ ফেব্রুয়ারি। ভর # ৯ > সাধারণত কাউকে কথা দিলে আপনি কথা রাখেন। এ সপ্তাহেও তা-ই করুন।মীন Pisces ১৯ ফেব্রুয়ারি—২০ মার্চ। ভর # ৩ > কাউকে অতিরিক্ত সন্দেহের চোখে দেখবেন না, তাহলেই সপ্তাহ ভালো যাবে।
পাকিস্তানে একটি সমন্বিত জাতীয় নিরাপত্তা নীতি তৈরির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য পার্লামেন্টের সব রাজনৈতিক দলের নেতা ও সেনাপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ১২ জুলাই ওই আলোচনা হতে পারে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আলোচনার দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ডন।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হবে। এ জন্য উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ চালু করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এর উদ্বোধন করেন। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেলাল হোসেন, হোমনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল হকসহ অনেকে। —কুমিল্লা অফিস
পূর্ব ভারতে বিজেপিকে রুখতে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) সঙ্গে জোট হয়েই গেল কংগ্রেসের। গতকাল শুক্রবার রাঁচিতে দুই দলের বৈঠকের পর এ কথা ঘোষণা করা হয়। এর ফলে শিগগির রাজ্যটিতে রাষ্ট্রপতির শাসনের অবসান ঘটবে এবং সরকার গঠনের দাবি জানাবে এই জোট। মুখ্যমন্ত্রী হবেন শিবু সরেনের ছেলে হেমন্ত সরেন। বোঝাপড়া অনুযায়ী, আগামী লোকসভা নির্বাচনেও এই দুই দল জোটবদ্ধ হয়ে লড়বে। রাজ্যের ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেস লড়বে ১০টিতে, জেএমএম চারটিতে। ২০০৪ সালে এই ফর্মুলায় জোট করে দল দুটি ১৪টির মধ্যে ১৩টি আসনই জিতেছিল। নয়াদিল্লি প্রতিনিধি।
কম্পিউটার মাউসের উদ্ভাবক ডগলাস অ্যাঙ্গেলবার্ট মারা গেছেন। ৪ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে ৮৮ বছর বয়সে মারা যান প্রযুক্তি-দুনিয়ার জনপ্রিয় যন্ত্রাংশের এই উদ্ভাবক। ডগলাসের পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৯২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগন রাজ্যের পোর্টল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন ডগলাস। ওরিগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িত্ প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি।স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে কম্পিউটারের জন্য বিশ্বের প্রথম মাউস তৈরি করেন তিনি। তখন মাউসটি তৈরি করা হয়েছিল একটি বক্সের মধ্যে। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল বিশেষ চাকা, যার মাধ্যমে মাউসটি ব্যবহূত হতো। আকারেও সেই মাউসটি ছিল বর্তমান মাউসগুলোর তুলনায় বড়। মাউস ছাড়াও ক্যালিফোর্নিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ডগলাস ওয়ার্ড প্রসেসিং, ভিডিও টেলিসম্মেলন নিয়েও কাজ করেছিলেন। এমআইটির ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজিসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন ডগলাস। ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পিউটার হিস্ট্রি জাদুঘরের ফেলো ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি একজন রাডার কারিগর হিসেবেও কাজ করেন।—বিবিসি অবলম্বনে কাজীআলম
পৃথিবী থেকে এক হাজার ১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূর থেকে আসা রহস্যময় বেতার সংকেত (রেডিও সিগন্যাল) শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। গতকাল শুক্রবার সায়েন্স সাময়িকীতে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার পার্কসে শক্তিশালী রেডিও টেলিস্কোপে ধরা পড়ে চারটি বেতার সংকেত। ওই সংকেতের শক্তি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন, এটি সত্যিকারের রেডিও সংকেত এবং এটি এসেছে আমাদের ছায়াপথের বাইরে থেকে। গবেষণা নিবন্ধের সহ-লেখক মেলবোর্নের সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির অধ্যাপক ম্যাথিউ বেইলিস মনে করেন, ম্যাগনেস্টার হিসেবে পরিচিত ম্যাগনেটিক নিউট্রন স্টারে কোনো বিস্ফোরণ থেকে ওই বেতার সংকেতের সৃষ্টি হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণদের সমাজের মূলধারায় নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে ব্রিটেনের স্থানীয় বাংলা সংবাদপত্রের অবদানের প্রশংসা করেছেন লেবার পার্টির এমপি রুশনারা আলি। ৩০ জুন রোববার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি মিলনায়তনে  লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা এবং বিংশতি বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রুশনারা আলি একথা বলেন। লন্ডনের সবচেয়ে জনবহুল ও বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পৌর এলাকা-টাওয়ার হ্যামলেটস বরার নির্বাহী মেয়র লুৎফর রহমান বলেন যে ব্রিটেনে বাংলা গণমাধ্যমের বিকাশ মূলধারার রাজনীতিতে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী হিসাবে বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র এবং স্থানীয় বাংলা টেলিভিশন ও রেডিওর সংবাদকর্মীদের ফোরাম হিসেবে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে। ক্লাবের সভাপতি সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক  নবাবউদ্দিনের সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ব্রিটেনে সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাঁচজন সাংবাদিককে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। এঁরা হলেন: কলামিষ্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরি, বিবিসি বাংলার সাবেক উপ-প্রধান সিরাজুর রহমান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক প্রধান গাজীউল হাসান খান, সাপ্তাহিক সুরমার প্রকাশক আয়েশা আহমেদ এবং সাপ্তাহিক জনমতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আনিস আহমেদ। বিশেষ প্রতিনিধি, লন্ডন
কানাডাপ্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক মো. আইয়ুব খান আকস্মিকভাবে আমাদের ছেড়ে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাসিক আশ্রম-এর এ সংখ্যায় তাঁর পরিচিত কয়েকজন আপনজনের স্মৃতিকথা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে নিয়মিত কলাম, গল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা, কবিতা এবং অটোয়া, মন্ট্রিয়েল, টরন্টো ও লন্ডনের সংবাদ। এ সংখ্যায় লিখেছেন মীজান রহমান, মহসীন বখ্ত, রাশেদ নবী, কবির চৌধুরী, তাজুল মোহাম্মদ, ইসহাক কাজল, অমল কৃষ্ণ রায়, জুয়েল মাজহার, শাহনাজ পারভীন, আনন্দ মোহন দাস, দিলীপ কর্মকার, ইরানী বিশ্বাস, সাঈম চৌধুরী, খুরশীদ শাম্মী, অরুণ শংকর রায়, আতাউর রহমান, ম্যাক আজাদ ও দীপিকা ঘোষ।বরাবরের মতো এবারও আশ্রম-এর প্রকাশনায় দেরি হয়ে গেল। আশ্রম কিনুন ও পড়ুন। নিজে লিখুন এবং অন্যকে লিখতে উৎসাহিত করুন। প্রকাশক, সম্পাদক: মাসিক আশ্রমঅটোয়া, কানাডা।mashik^[email protected]
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এম এ মান্নান বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। এসময় মান্নান খালেদার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।আজ রোববার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান এম এ মান্নান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহ, গাজীপুরের সাবেক সাংসদ হাসান উদ্দিন সরকার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন।
১৯৩৬ থেকে ২০১৩। মাঝে ৭৭ বছরের প্রতীক্ষা। টেনিসে পুরুষদের এককে উইম্বলডন শিরোপার জন্য ব্রিটিশদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটালেন অ্যান্ডি মারে। বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা নোভাক জোকোভিচকে আজ ৬-৪, ৭-৫, ৬-৪ গেমে হারিয়েছেন দুই নম্বরে থাকা মারে। অপেক্ষা ঘুচিয়েছেন ব্রিটিশদের। সুযোগটা অবশ্য গত বছরই এসেছিল। তবে সেবার রজার ফেদেরারের কাছে পেরে ওঠেননি তিনি। সেই গ্লানিটা মুছল বছর ঘুরতে না ঘুরতেই। আজ সেন্টার কোর্টে জোকোভিচকে পরাস্ত করে উইম্বলডনের নিজের প্রথম, আর ক্যারিয়ার দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপার দেখা পেলেন ২৬ বছর বয়সী মারে। ফাইনাল যেমন প্রত্যাশিত হয়, ঠিক তেমনই হলো জোকোভিচ-মারের আজকের ম্যাচটা। জোকোভিচ সরাসরি সেটে হারলেও লড়াইটা ছিল  তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। চার ঘণ্টার দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শিরোপা নিশ্চিত করতে সমর্থ হন মারে। ১৯৩৬ সালে উইম্বলডনের পুরুষ এককের শিরোপা জিতেছিলেন ফ্রেড পেরি। এরপর প্রতিবছর উইম্বলডন আসে, ব্রিটিশরা আশায় বসতি গড়ে। আর প্রতিবছরই ব্রিটিশদের প্রাপ্তি কেবল দীর্ঘশ্বাস। সেই দীর্ঘশ্বাসের অবসান ঘটল আজ, প্রায় আট দশক পর। শুধু উইম্বলডন কেন, ১৯৩৬ সালের পর গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপারই দেখা পাচ্ছিল না ব্রিটিশরা। সেটার দেখা মেলে গত বছর, দীর্ঘ ৭৬ বছর অপেক্ষার পর। জোকোভিচকে হারিয়ে সেই মাহেন্দ্রক্ষণটা এনে দিয়েছিলেন অ্যান্ডি মারেরই। সূত্র: রয়টার্স।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন পছন্দ করে বলেই সিটি নির্বাচনগুলোতে সরকারদলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। মানুষ যত সুখ পায়, তত বেশি চায়।’ আজ বিকেলে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) আয়োজিত সিলেটের পশ্চিমগ্রামের দরিদ্র ও অতিদরিদ্রদের মধ্যে স্বাবলম্বী ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে হারের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে কিছুটা পড়বে। এজন্য সরকারের যেসব জায়গায় অসুবিধাজনক অবস্থা আছে, সেগুলোকে ভালো করতে হবে।’অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম ও এসডিএফের পরিচালক এ জেড এম শাখাওয়াত হোসেন।আরিফুলকে মিষ্টিমুখ করালেন অর্থমন্ত্রীসিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে মিষ্টিমুখ করিয়ে অভিনন্দিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সিটি নির্বাচনের পর আজ অর্থমন্ত্রী প্রথম সিলেট এলে রাতে মেয়র আরিফুল হক অর্থমন্ত্রীর বাসায় যান। এ সময় অর্থমন্ত্রী তাঁকে মিষ্টিমুখ করান। মেয়র তখন সিলেট নগরের উন্নয়নে ১০টি প্রস্তাব লিখিত আকারে অর্থমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।গত ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে দুই মেয়াদের মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরুদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন ১৮-দলীয় জোট-সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। ওই দিনই সাবেক মেয়র কামরান আরিফুল হককে অভিনন্দন জানান। পরদিন আরিফুল নগরের ছড়ারপার এলাকার বাসায় গেলে কামরান তাঁকে মিষ্টিমুখ করান।নগরের ধোপাদীঘিরপার এলাকায় অর্থমন্ত্রীর বাসায় যান আরিফুল হক। তিনি দায়িত্ব পালনকালে অর্থমন্ত্রীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন। আরিফুল নগরের যানজট নিরসন, ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নয়ন, গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইল্যান্ড ও ডিভাইডার স্থাপন, নিজস্ব বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন, কারাগার স্থানান্তর করে উদ্যান নির্মাণ, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের বৈদ্যুতিক সমস্যার সমাধান, নগর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং ছড়া-খাল উদ্ধারে সিটি করপোরেশনে একজন নিজস্ব হাকিম নিয়োগসহ ১০টি প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।সাক্ষাত্ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নবনির্বাচিত মেয়র আরিফ আমার কাছে নগর উন্নয়নে সহযোগিতা চেয়েছেন। উন্নয়নের ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। মেয়র কোন দলের সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়, উন্নয়নে কোনো ঘাটতি থাকবে না।’এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘১০টি লিখিত উন্নয়ন প্রস্তাব ছাড়াও অর্থমন্ত্রীর কাছে আমার নির্বাচনী ইশতেহারের বিষয়টি তুলে ধরেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, উন্নয়নের স্বার্থে তাঁর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক কারণে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য হবে না।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৩৯২ কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৪টিতেই হেরেছেন  আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান। এর মধ্যে টঙ্গির ১৩৩ কেন্দ্রের মধ্যে ১০০টিতেই হেরেছেন তিনি।আজ রোববার ভোরে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হয়। এই নির্বাচনে এক লাখ ছয় হাজার ৫৭৭ ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন আজমত উল্লা খান। নির্বাচনে টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে এম এ মান্নান পেয়েছেন তিন লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৪ ভোট। আর দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে আজমত উল্লা পেয়েছেন দুই লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৭ ভোট। নির্বাচনে মোট ৬৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।৩৯২টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৩৩৪টি কেন্দ্রেই পরাজিত হয়েছেন আজমত উল্লা। আর যে ৫৮টি কেন্দ্রে তিনি বিজয়ী হয়েছেন, সেখানেও ভোটের ব্যবধান খুব সামান্য।সাবেক টঙ্গী ও গাজীপুর পৌরসভা এবং কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, গাছা, পূবাইল, কাউলতিয়া ও বাসন—এই ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন।টঙ্গী আজমত উল্লার নিজের এলাকা, যেখানে তিনি ১৮ বছর পৌর মেয়র ছিলেন। টঙ্গীর মোট ভোটার তিন লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮। এখানকার ১৩৩টি কেন্দ্রের ১০০টিতেই পরাজিত হয়েছেন আজমত। এ ছাড়া টঙ্গীতে ভোট পড়েছে অনেক কম। বিএনপি প্রার্থীর এলাকাগুলোতে যেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে, সেখানে টঙ্গীর অধিকাংশ কেন্দ্রে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।টঙ্গীর অন্যান্য কেন্দ্রে হারলেও যেখানে তিনি ভোট দিয়েছেন সেই উইলস লিটল ফ্লাওয়ার কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তিনি। এই কেন্দ্রে ১১৩২ ভোট পেয়েছেন আজমত। আর মান্নান পেয়েছেন ৬২১ ভোট।সাবেক গাজীপুর পৌরসভার ভোটার এক লাখ ২৯ হাজার ৮৬২ জন। ১৯৮৬ সালে পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর গাজীপুর শহরে কখনো আওয়ামী লীগ হারেননি। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কোনো জাতীয় নির্বাচনেও সদর আসনটি হারায়নি আওয়ামী লীগ। কিন্তু এবার সাবেক গাজীপুর পৌরসভার ৪৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১টিতেই পরাজিত হয়েছেন আজমত উল্লা।গাজীপুরের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন গাছা। এখানে মোট ভোটার এক লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ জন। ১৯৮৮ সালের পর গাছার স্থানীয় নির্বাচনে সব সময়ই জিতেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এবার এখানকার ৪৬টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে জিতেছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা।আহসান উল্লা মাস্টারের এলাকা পূবাইল। সেখানকার ভোটার ৩৫ হাজার ৩১৭ জন। আজমত উল্লা সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছেন সেখানে। সেখানকার ২১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০টিতে জয় পেয়েছেন তিনি।গাজীপুরের কাশিমপুরের মোট ভোটার এক লাখ ছয় হাজার ৮৬৫। সেখানকার ৪০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৮টিতেই হেরেছেন আজমত। কোনাবাড়ির মোট ভোটার এক লাখ ৩৩ জন। সেখানকার ৩৫টি ভোটকেন্দ্রের সবগুলোই হেরেছেন তিনি।একই অবস্থা কাউলতিয়ায়। সেখানকার ২৯টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই হেরেছেন আজমত। বাসনের ৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে কেবল বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন আজমত, তা-ও মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে।গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, এই নির্বাচনে মানুষ আওয়ামী লীগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।আজমত উল্লার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও সাংসদ জাহিদ আহসান বলেন, ‘দুই প্রার্থীর মধ্যে তুলনা করলে আজমত উল্লা অনেক বেশি যোগ্য। কিন্তু হেফাজত, ধর্মীয় ইস্যুসহ জাতীয় সব বিষয় নির্বাচনে গুরুত্ব পেয়েছে। ভোটারদের ভুল বুঝিয়ে প্রচার চালিয়েছে বিএনপি। এসব কারণেই হয়তো পরাজয়।’
পাকিস্তানে নবগঠিত সরকার সন্ত্রাস দমনে প্রাণদণ্ডের বিধান পুনর্বহাল করেছে। রয়টার্স বলছে, সরকারের পদক্ষেপকে অমানবিক ও পশ্চাত্পদ বলে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারে আটক প্রায় আট হাজার বন্দী এমনসব মামলায় অভিযুক্ত, যেগুলোর রায়ে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হতে পারে।কোনো একটি রাষ্ট্রে প্রাণদণ্ডের বিধানকে নিষিদ্ধ করে আবার সেটি চালুর ঘটনা খুবই বিরল। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে মৃত্যুদণ্ড ও এ ধরনের রায় দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।২০০৮ সালে পাকিস্তানের সরকার মৃত্যুদণ্ডের বিধান সাময়িকভাবে রহিত করে। গত ৩০ জুনে এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ ফুরায়। এ আদেশের পর বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন পাকিস্তান সরকারকে স্বাগত জানিয়েছিল।পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওমর হামিদ খান আজ রোববার বলেন, ‘বর্তমান সরকার এটিকে (মৃত্যুদণ্ডের স্থগিতাদেশ) বাড়াতে চায় না।’এর ফলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে মৃত্যুদণ্ডাদেশের সবগুলো রায় পাস করতে হবে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ ব্যক্তির প্রাণদণ্ড থেমে আছে। দেশটিতে সাধারণত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।জুরিদের আন্তর্জাতিক কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বের হাতেগোনা যে দু-একটি দেশ প্রাণদণ্ড ও এ ধরনের আদেশ প্রদান পুনর্বহাল করেছে, পাকিস্তান সেগুলোর অন্যতম।...সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, মৃত্যুদণ্ডের বিধানের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিলে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে মৃত্যুর শিকার হতে হবে।’ওমর হামিদ খান জানান, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সরকারের নতুন নীতি অনুযায়ী, মানবিক কারণে ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিরা ছাড়া মৃতুদণ্ড পাওয়া সবার শাস্তি কার্যকর করা হবে।জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, প্রাণদণ্ডের বিধান কোনো ধরনের অপরাধ কমাতে বা নির্মূল করতে সাহায্য করে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ‘যত দিন প্রাণদণ্ডের বিধান থাকবে, তত দিন নিরীহ মানুষেরা এর শিকার হতে থাকবে।’পাকিস্তান সরকারের দাবি, প্রাণদণ্ড করাচির মতো শহরগুলোতে অপরাধের মাত্রা কমাতে সাহায্য করেছে।বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র রাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনি ক্রমবর্ধমান গণধর্ষণ ও ‘ডাইনির’ হাতে মৃত্যুর ঘটনার পর গত মে মাসে মৃত্যুদণ্ড ও মায়াবিদ্যাবিষয়ক বিধান পুনর্বহাল করেছে।অ্যামনেস্টির অভিযোগ প্রসঙ্গে ওমর হামিদ খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে এখনো মৃত্যুদণ্ডের চল আছে।পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ছিলেন মৃত্যুদণ্ড বিধানের ঘোরবিরোধী। মূলত তাঁর প্রচারণার উত্সাহেই সরকার ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছিল।
দেশের রাজনীতি এখন মুনাফা অর্জনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এর ফলে দেশের জনগণের কল্যাণের চেয়ে অধিক অর্থ উপার্জনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ক্ষমতাবানরা।’আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সুশাসন ও সুনীতি: আগামীর বাংলাদেশ ও তরুণ সমাজ’ শীর্ষক সেমিনারে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে ইফতেখারুজ্জামান এ মন্তব্য করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদপত্র পাঠক ফোরামের দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজন করা হয় এ সেমিনারের।ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে দলের মনোনয়ন কিনে নেন। নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসে তাঁরা সেই টাকা তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে তাঁরা বিনিয়োগ করা টাকার কয়েক গুণ বেশি তুলে নেন।’ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘দেশে সুশাসন ও সুনীতি প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও তার প্রয়োগ। এজন্য গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করতে হবে এবং সুশাসনের পূর্বশর্ত হিসেবে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।’প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটি প্রতিরোধে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হলো দেশ গঠনের সূতিকাগার। দুর্নীতি প্রতিরোধে তাই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে।’বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদপত্র পাঠক ফোরামের সভাপতি নাজমুল হুদার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শামসুল আলম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম রফিকুল ইসলাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ছাদেকুল আরেফিন।
ব্রায়ানস এক্সপ্রেস ছুটছেই। বব ও মাইক ব্রায়ার্ন গত বছর জিতেছিলেন ইউএস ওপেন। অস্ট্রেলিয়ার এই যমজ ভাইদের জুটি এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেনের পর গত রাতে জিতল উইম্বলডন। টানা চারটি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে দুই ভাই পূর্ণ করলেন ‘গোল্ডেন স্লাম’। ১৯৫২ সালের পর টেনিস দ্বৈতে এমন কৃতিত্ব এই প্রথম। বিরল কীর্তি বলেই এর নাম বলা হচ্ছে ‘গোল্ডেন ব্রায়ান স্লাম’!উচ্চতায় মাইকের চেয়ে তিন সেন্টিমিটার লম্বা বব। পার্থক্য বলতে এই এতটুকুই। বাকি সবকিছুতেই মিল। সবচেয়ে বড় মিল তো অবশ্যই দুজনের চেহারায়। বব ব্রায়ান ও মাইক ব্রায়ান যে যমজ। যাকে বলে ‘আইডেন্টিকাল টুইন’। বয়সে মাত্র দুই মিনিটের ছোট-বড়। মাইক বড়, আর বব ছোট। টেনিস বিশ্ব একনামে তাঁদের চেনে ‘ব্রায়ান ব্রাদার্স’ নামে। রাইট-ভ্রাতৃদ্বয়কে ইতিহাস মনে রেখেছে উড়োজাহাজ আবিষ্কারের জন্য। ব্রায়ান ভাইদেরও মনে রাখবে ইতিহাস—টেনিসের পুরুষ দ্বৈতে তাঁদের অবিস্মরণীয় কীর্তির জন্য।মার্কিন যমজ ভাইদের এই টেনিস জুটির নাম ইতিহাসের পাতায় উঠে গেছে আগেই। গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে পুরুষ দ্বৈতে (ওপেন যুগে) সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ড গড়েন বব ও মাইক। সেটি ছিল তাঁদের ১৩তম শিরোপা। গত মাসে জেতেন ফ্রেঞ্চ ওপেন দ্বৈতের শিরোপা। গত রাতে দেখা পেলেন ১৫তম গ্র্যান্ড স্লামের।ব্রায়ান ভাইদের কাছে শিরোপা যেন মায়ের হাতের মোয়া। গত বছর দুজনে জিতেছেন অলিম্পিক সোনা। সাফল্যের ভেলায় ভাসার আনন্দ তাঁদের কাছে নতুন নয়। তবে গত রাতে টানা চতুর্থ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের পর উচ্ছ্বাসটা একটা বেশিই মনে হচ্ছে তাঁদের। বড় ভাই মাইক বলছিলেন, ‘টানা চারটি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের স্বপ্ন দেখাও কঠিন। এটা এমন কিছু, যা কখনোই ভাবিনি আমরা। এ বছরটা বিস্ময়কর কাটছে। কখনোই এতটা ধারাবাহিক ছিলাম না। ৩৫ বছর বয়সে মনে হচ্ছে, ফর্মের চূড়ায় আছি আমরা।’ সাফল্যের নেপথ্যের কথাটা বললেন ছোট ভাই বব, ‘এখানে এতটা ভালো খেলার কারণ, সবকিছুই পেয়ে গেছি আমরা। এখন সব আমাদের কাছে বোনাস। যদি আজ অবসরও নিই, মনে হবে সব পেয়েছি আমরা।’বব ও মাইকের চেহারা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। চেহারার মতো অদ্ভুত মিল রয়েছে তাঁদের সবকিছুতেই। একজন নাকি আরেকজনের শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যন্ত অনুভব করতে পারেন! আবার খ্যাতির উচ্চ শিখরে উঠেও তাঁরা একে-অন্যের ছায়াসঙ্গী। নিজেদের এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, এখন তাঁরা টেনিস কোর্টে নামা মানেই ইতিহাস। টেনিস দ্বৈতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ, সবচেয়ে বেশি টুর্নামেন্ট, সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্লাম—সবই তাঁদের দখলে।যমজ বলেই দুজন মানিকজোড় হয়ে ছিলেন ছোট্টটি থেকেই। শৈশবে বব ও মাইক কখনোই টেনিসের কোনো একক ম্যাচে অংশ নেননি। মা-বাবাই তাঁদের আলাদা হয়ে খেলতে দেননি। সেই থেকে শুরু। দুজনের বোঝাপড়াটাও তাই দুর্দান্ত।বব ও মাইক ব্রায়ানের জন্ম ১৯৭৮ সালের ২৯ এপ্রিল। মা ক্যাথি ব্রায়ান ছিলেন টেনিস খেলোয়াড়। বাবা ওয়েন আইন ব্যবসার পাশাপাশি ছিলেন টেনিস প্রশিক্ষক। দুই ভাইয়ের হাতে টেনিস র্যাকেট তুলে দেওয়া হয়েছিল দোলনায় থাকতেই! ছয় বছর বয়সে একটা অনূর্ধ্ব-১০ টুর্নামেন্ট জিতে যাত্রা শুরু। বাকিটা তো ইতিহাস। সূত্র: রয়টার্স।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি আল মারুফ খান সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব এক্সচেঞ্জের (সেফ) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গত শুক্রবার মুম্বাইয়ে সেফের নির্বাহী পর্ষদের সভায় দুই বছরের জন্য তিনি এই পদে নির্বাচিত হন।সিএসইর জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা সানজিদা পারভীন আজ রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।সিএসই সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালের ১৬ জানুয়ারি দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে সিএসইর উদ্যোগে সেফ গঠন করা হয়। সেফের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও আছে ভুটান, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এ ছাড়া মরিশাস, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাজাখস্তানের কয়েকটি স্টক এক্সচেঞ্জও এখানে প্রতিনিধিত্ব করে। এসব দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ, কমোডেটি এক্সচেঞ্জ, ক্লিয়ারিং করপোরেশন এই সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে সেফের সদস্য সংখ্যা ৩৪।
৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল কাল সোমবার বিকেলে প্রকাশিত হবে।সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ ই ম নেছারউদ্দিন আজ রোববার বিকেলে প্রথম আলো ডটকমকে এ কথা জানান। তিনি বলেন, কতজন প্রার্থী নেওয়া হবে সেসব বিষয়ে কাল সোমবার বিকেলে কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকের পরই ফল প্রকাশ করা হবে। পিএসসির ওয়েবসাইটে ফল পাওয়া যবে। এ ছাড়া টেলিটক নম্বর থেকেও ফল জানা যাবে।গত ২৪ মে ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দুই লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ জন প্রার্থী এই পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেন।বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দিতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ৩৪তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে পিএসসি। এবার রংপুরসহ দেশের সাতটি বিভাগীয় শহরের ১৭৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান আজ রোববার সন্ধ্যায় আজমত উল্লা খানের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর টঙ্গীর বাসভবনে যান।দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এম এ মান্নান টঙ্গী বাজার এলাকায় আজমতের বাসভবনে যান। সেখানে নবনির্বাচিত মেয়রকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় কিন্তু এ সময় বাসায় ছিলেন না আজমত উল্লা খান।আজমত উল্লার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন এম এ মান্নান। আজমত উল্লা মান্নানকে জানান, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি এলাকার বাইরে রয়েছেন। তাই কাল (সোমবার) বেলা ১১ টার দিকে তিনি মান্নানকে তাঁর বাসায় আসার জন্য অনুরোধ করেন।
রাজধানীর তেজগাঁও কলেজে আজ রোববার ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। তারা কলেজের সামনের সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে।শেরেবাংলা নগর থানা এলাকার টহল পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজ বেলা দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি দোতলা বাস তেজগাঁও কলেজের সামনে থামে। এরপর পুরোনো কোনো কিছুর সূত্র ধরে ওই বাসের শিক্ষার্থীরা তেজগাঁও কলেজের সামনে থাকা হানিফ পরিবহনের একটি ভ্রাম্যমাণ কাউন্টার ভাঙচুর করেন। এ সময় তেজগাঁও কলেজের কিছু শিক্ষার্থী তাঁদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে দোতলা বাসটি শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনের সড়ক দিয়ে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি দোতলা বাসে ভাঙচুর চালায়। এতে বাসে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে তেজগাঁও কলেজে হামলা ও ভাঙচুর করেন।আবুল কালাম আজাদ জানান, দুপুর থেকেই তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে। তারা কলেজের সামনের সড়কে গিয়ে অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে কলেজের আশপাশে এখনো শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে।এ ব্যাপারে তেজগাঁও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তাত্ক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া এবং বাস কাউন্টার ভাঙচুরের কারণ জানা যায়নি।
দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়েছেন। মাঠে উপস্থিত ২৫ হাজার দর্শককে উত্সবে মাতিয়ে একাই চার গোল করেছেন লিওনেল মেসি। শিকাগো চ্যারিটি ম্যাচে গত রাতে দলও জিতেছে। মেসি ও তাঁর বন্ধুদের দল ৯-৬ গোলে হারিয়েছে অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশকে। এর পরও ‘বিতর্ক’ এড়াতে পারেননি বার্সা জাদুকর। বিতর্কের কারণ অবশ্য পারফরম্যান্স নয়। পুরো ৯০ মিনিট মাঠে থাকেননি মেসি। খেলেন ম্যাচের ৬৯ মিনিট পর্যন্ত। পুরো সময় পর্যন্ত প্রিয় তারকাকে দেখতে না পেয়ে দর্শকেরা হতাশ। মেসির সঙ্গে সাক্ষাত্ ও অটোগ্রাফ পেতে বেশি অর্থ খরচ করে ‘বিশেষ টিকিট’ কিনেছিলেন অনেক ভক্ত। তবে মেসি তাঁদের সাক্ষাত্ দেননি। এমনকি ইএসপিএনকে সাক্ষাত্কার দেওয়ার কথা থাকলেও তা এড়িয়ে যান টানা চারটি ফিফা-ব্যালন ডি’অর-জয়ী। মেসি কেন এসব করেছেন, তা এখনো জানা যায়নি। তবে মেসির একান্ত সাক্ষাত্ না পেয়ে সমর্থকেরা এবং সাক্ষাত্কার না পেয়ে সাংবাদিকেরা তাঁর ওপর মনোক্ষুণ্ন হয়েছেন।চার ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচ ছিল গত রাতে। প্রথম দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আমেরিকায়। গত বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসে একটি ম্যাচ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। এর জন্য আয়োজকদের দায়ী করেছিলেন মেসি। সূত্র: ফক্স স্পোর্টস।
ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যাকাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানের ১৪তম আসর থেকে সেরা ছবির পুরস্কার ঝুলিতে ভরেছে ‘বরফি’। সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন রণবীর কাপুর ও বিদ্যা বালান। ম্যাকাওয়ে অনুষ্ঠিত তিন দিনের এ আয়োজনের শেষ দিন গতকাল শনিবার রাতে সেরা ছবি, অভিনেতা, অভিনেত্রী, নির্মাতাসহ বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর আইফা থেকে সেরা ছবি, অভিনেতা ও নির্মাতা বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ‘বরফি’। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ। বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউডের চিত্রনির্মাতা অনুরাগ বসু পরিচালিত ‘বরফি’ ছবির নামভূমিকায় অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন রণবীর কাপুর। তিনি পুরস্কার নিতে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারায় তাঁর পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন অনুরাগ বসু। অনুরাগ বলেন, ‘আজ সত্যিই রণবীরকে অনেক মিস করছি। তাকে ছাড়া ‘‘বরফি’’ ছবিটি তৈরি করা সম্ভব ছিল না আমার পক্ষে।’‘কাহানি’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বিদ্যা বালানকে। সেরা জুটি নির্বাচিত হয়েছেন রণবীর-দীপিকা। সেরা পার্শ্ব-অভিনেতা ও অভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন আনু কাপুর (ভিকি ডোনার) ও আনুশকা শর্মা (যব তক হ্যায় জান)। ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্পে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন প্রখ্যাত গীতিকার, কবি ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার। এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে দারুণ সাফল্য পাওয়ায় বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা অনুপম খের। সেরা নবাগত অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন আয়ুষ্মান খুরানা ও ইয়ামি গৌতম।
তরুণ সংগীতশিল্পী জেরীন তাবাসসুম হকের প্রথম গানের অ্যালবাম ‘মেঘলা দিনে’ বাজারে আসছে। অ্যালবামে জেরীনের সঙ্গে আরও গেয়েছেন আজিজুর রহমান আজিজ ও ফারহানা শিরিন নিপা। আজিজুর রহমান আজিজের কথা ও সুরে অ্যালবামের গানগুলোর সংগীত পরিচালনা করেছেন মো. শাহনেওয়াজ। অ্যালবামটি বাজারে আনছে ইমপ্রেস অডিওভিশন লিমিটেড। এ প্রসঙ্গে জেরীন তাবাসসুম হক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে অ্যালবামটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। তবে এটি বাজারে আসবে ঈদের পর।’ গান প্রসঙ্গে জেরীন বলেন, ‘শৈশব থেকেই গান করছি আমি। ভবিষ্যতে ভালো একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’জেরীনের বাবা মো. জহুরুল হক ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক এবং মা সালমা নাজনীন গৃহিণী। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ইংরেজি বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন জেরীন। তাঁর সংগীতে হাতেখড়ি বাবার কাছেই। নজরুল একাডেমী থেকে পাঁচ বছরের সার্টিফিকেট কোর্সে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন জেরীন। এ ছাড়া ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজিত উচ্চাঙ্গসংগীতে তিন বছরের সার্টিফিকেট কোর্সও সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি সংগীতশিক্ষা কেন্দ্র ও ছায়াবীথি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে সংগীতশিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তিন বছর ধরে বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে নজরুলসংগীত, উচ্চাঙ্গসংগীত ও আধুনিক গানের তালিকাভুক্ত শিল্পী জেরীন তাবাসসুম শৈশব থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বহু পুরস্কার অর্জন করেছেন। ২০০২ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে নজরুলসংগীতে স্বর্ণপদকসহ জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সেরা প্রতিযোগীও নির্বাচিত হয়েছিলেন জেরীন।      জেরীন তাবাসসুম হক
ঢাকার দুই সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ঈদুল ফিতরের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ।সিইসি বলেন, কমিশন শতভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কমিশনের কাজে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ কেউ করেনি। আর কেউ যদি হস্তক্ষেপ করে, সেটা প্রতিহত করা হবে।আজ রোববার নির্বাচন কমিশনে সিইসি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।সিইসি বলেন, গাজীপুরসহ পাঁচ সিটির নির্বাচন হলেও ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন এখনো বাকি। এ বিষয়ে ঈদের পর সিদ্ধান্ত হবে। একই সঙ্গে কমিশনকে এখন থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শেষ হয়েছে। যেসব কাজ বাকি আছে, সেগুলোও দ্রুত শেষ করা হবে। আশা করা যায়, সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পর পর পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ে মুষড়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। অব্যাহত এই ফল বিপর্যয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের মনোবলে চরম ধাক্কা দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন বেশ কয়েকজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মধ্যস্তরের নেতা। দলটি এখন একমাত্র সান্ত্বনা খুঁজছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক নয়, ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব’।আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজত আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। এটা মোকাবিলা করতে আসন্ন রমজান মাসে দলের সব কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্ন জেলা সফর করবেন। সাংসদেরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে সরকারের সাফল্য প্রচার করবেন।’সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘গাজীপুরসহ অন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচন শুধু জাতীয় কেন, সমগ্র রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। আগে যে রাজনৈতিক কৌশলে কাজ করেছি, সেটার পরিবর্তন আনতে হবে। তা না হলে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঠেকানো যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি আমার আসনে ছয়বার নির্বাচিত সাংসদ; এর পরও আমি এই আসন নিয়ে ভীত। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই।’জাতীয় নির্বাচনে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলের প্রভাব ফেলার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি ছিল স্থানীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয়। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না, তবে পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুল সংশোধনের কাজে লাগাতে চাই।’দলটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির কৌশল, সমন্বয়হীন প্রচার, স্থানীয় সাংসদদের জনবিচ্ছিন্নতা, এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনপ্রতিনিধিদের নজর না দেওয়া, সর্বোপরি সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৪ দল-সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে দলীয় সভানেত্রী বৈঠক করবেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক ব্যর্থতার কারণেই চার সিটি করপোরেশন ও গাজীপুরের মতো আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে এই পরাজয়। তবে পরাজয় থেকে মানুষ শিক্ষা পায়। আমাদের সভানেত্রী এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে আসার পর দলের সার্বিক অবস্থা ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা করা হবে।’আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মাহবুব উল আলম হানিফ। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ডজন খানেক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সবার কণ্ঠেই হতাশা। সবাই যেন মুষড়ে পড়েছেন। মর্যাদার প্রশ্ন হওয়ায় গাজীপুরে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছিল দলটি। কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ায় প্রচণ্ড হোঁচট খেয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বে দেওয়া দলটি।
সপ্তাহের প্রথম দিন আজ রোববার সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারের লেনদেন। বেলা আড়াইটায় দিনের লেনদেন শেষে দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে সূচক সামান্য বেড়েছে। তবে লেনদেন কমেছে দুই বাজারেই।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচক ৭ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২৭৮ পয়েন্টে। পাশাপাশি ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫৫৮ পয়েন্টে।সকাল সাড়ে ১০টায় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়। একপর্যায়ে ডিএসইএক্স সূচক গত বৃহস্পতিবারের চেয়ে ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু পরে সূচক বাড়ার হার কমতে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত বাড়তি প্রবণতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।ডিএসইতে আজ লেনদেন হওয়া ২৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৫টির দাম বেড়েছে, কমেছে ১১২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। আজ এই স্টক এক্সচেঞ্জে ৮৫৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গত বৃহস্পতিবারের চেয়ে ৫৫ কোটি টাকা কম। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৯১৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে ছিল টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি বিএসসিসিএল। আজ এই কোম্পানির ৪১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এ ছাড়া মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইউনিক হোটেল, ইউনাইটেড এয়ার, পদ্মা অয়েল, ওরিয়ন ফার্মা, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি, যমুনা অয়েল, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, তিতাস গ্যাস লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে।ডিএসইর পাশাপাশি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৪১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩২৭৮ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১০টির দাম বেড়েছে; কমেছে ৯০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।সিএসইতে আজ ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে তিন কোটি টাকা কম। বৃহস্পতিবার সিএসইতে ৬৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাধার কারণে আজ রোববার মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ‘কৃশ’ তারকা হৃতিক রোশনের অস্ত্রোপচার হচ্ছে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ। এ প্রসঙ্গে হৃতিকের বাবা রাকেশ রোশন জানিয়েছেন, ‘ডাক্তারি ভাষায় ক্রনিক সাবডুরাল হেমাটোমায় ভুগছে হৃতিক। তাঁর মগজ ও খুলির মাঝখানে রক্তের পিণ্ড জমা হয়েছে। সেটা অপসারণের জন্যই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিত্সকেরা। আমরা পরিবারের সবাই হূতিকের পাশেই আছি।’ এদিকে অস্ত্রোপচারের আগে এক ফেসবুক বার্তায় হৃতিক লিখেছেন, ‘আজ আমার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার। আমি নিশ্চিত, মনোবলকে হাতিয়ার করে খুব দ্রুত সেরে উঠতে পারব। আমার জীবন সুরক্ষিত রাখার জন্য আপনারা যাঁরা মনের শক্তি কাজে লাগাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সবার প্রতি রইল অনেক অনেক ভালোবাসা।’ ৩৯ বছর বয়সী এ তারকা আরও লিখেছেন, ‘মনের শক্তি কাজে লাগিয়েই আনন্দে পরিপূর্ণ একটি জীবন কাটানোর চেষ্টা করি আমরা। সৃষ্টিকর্তা মস্তিষ্ক নামের চমত্কার এক উপহার দিয়েছেন আমাদের। অমূল্য এ উপহার পেয়ে আমি অভিভূত। মস্তিষ্কের জন্যই আমরা দেখার, শোনার, স্পর্শ করার, গন্ধ নেওয়ার ও স্বাদ গ্রহণের অনুভূতি পাই। এর জন্যই ভয় জয় করে আমরা এমন সবকিছু করার সাহস পাই, যা হয়তো অতীতে কল্পনাও করা হয়নি।’
কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর ট্রাফিক কার্যালয়ের সামনে হেলাল উদ্দীন নামের একজন সহকারী পুলিশ সার্জেন্টকে (ট্রাফিক) বাসশ্রমিকেরা পিটিয়েছেন। পুলিশ জানায়, আইন না মেনে রাস্তায় চলাচল করতে বাধা দেওয়ায় তাঁকে পেটানো হয়।আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সামাদ মালিথা (৩৭) ও নাসির আলী (৪০) নামের দুজনকে আটক করে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে একটি ট্রলি দুর্ঘটনাকবলিত একটি বাসকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। ট্রলিটি মজমপুর ট্রাফিক মোড়ে পৌঁছালে মোড় না ঘুরে রাস্তা পার হচ্ছিল। এ সময় ট্রাফিক কার্যালয়ের সহকারী ট্রাফিক সার্জেন্ট হেলাল উদ্দীন ট্রলির চালককে বাধা দিয়ে সঠিকভাবে রাস্তা পার হতে বলেন। এতে বাসের শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।হেলাল উদ্দীন অভিযোগ করে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে তাঁকে মারধর শুরু করলে তিনি দৌড়ে ট্রাফিক কার্যালয়ের ভেতরে চলে যান। সেখানেও শ্রমিকেরা তাঁকে পেটাতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আইয়ুব আলী বাধা দেন। পরে খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও গোয়েন্দা শাখার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে দুজনকে আটক করে।এ ব্যাপারে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন দুলাল বলেন, একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মশিউর রহমান বলেন, পুলিশ সার্জন্টকে মারধরের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইউরোপের বাঘা বাঘা সব ক্লাবের লোভনীয় হাতছানির মধ্যে নেইমার শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন বার্সেলোনাকে। তাঁর ব্যাপারে কৌতূহল ছিল রিয়াল মাদ্রিদেরও। বার্সার বদলে নেইমার যদি রিয়ালের যোগ দিতেন! বিশ্বজুড়ে কোটি রিয়াল-সমর্থকের মতো এই আক্ষেপ রোনালদোরও। না, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নন, ইনি ব্রাজিল কিংবদন্তি রোনালদো।‘ফেনোমেনন’ রোনালদো নিজে একসময় বার্সায় খেলেছেন। তবে ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি সময় তিনি কাটিয়েছেন রিয়ালেই। ফলে রিয়ালের প্রতি যে তাঁর টান বেশি থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত রিয়ালের হয়ে খেলা এই ৩৬ বছর বয়সী বলেছেন, ‘আমি চাইতাম ও মাদ্রিদেই সই করুক, যদিও ও কোথায় সই করবে সেটা বলার আমি কেউ নই।’তার পরও নেইমারের বার্সা-যাত্রার শুভকামনা জানিয়েছেন রোনালদো, ‘ওর পেছনে এতগুলো ক্লাব ছুটছিল, এই হাতছানি উপেক্ষা করার উপায় ছিল না। বার্সেলোনাও দুর্দান্ত একটি দল। আমরাও জানি, নেইমার ইউরোপে ভালো করবে।’ কনফেডারেশনস কাপ ব্রাজিলকে জিতিয়ে দেওয়া ২১ বছর বয়সী নেইমারকে ‘কিংবদন্তি’ও বললেন রোনালদো, ‘আমাদের ব্রাজিলিয়ানদের কাছে ও তো এরই মধ্যে একজন কিংবদন্তি।’
প্রশ্ন: প্রথম আলোর নতুন ওয়েবসাইটটি দেখতে ভালো হয়নি। আগের সাইটটিই ভালো ছিল। অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন সাইটটির সৌন্দর্যহানি করেছে। দয়া করে, সম্ভব হলে, সাইটটি আপনারা পুনর্মূল্যায়ন করবেন আশা করি।রুমানা সুলতানা, [email protected]সম্পাদক: আমরা নতুনভাবে আমাদের ওয়েবসাইটটি সাজিয়েছি। পাঠকের এতে অভ্যস্ত হতে কিছুটা হয়তো সময় লাগতে পারে। এই নতুন সাইট সম্পর্কে আপনাদের পরামর্শকে আমরা স্বাগত জানাই।প্রশ্ন: মাননীয় সম্পাদক, আপনাদের পত্রিকায় কি চারগ্রাম, তালা, সাতক্ষীরার বন্যাদুর্গত মানুষকে নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে?মশিউর রহমান, [email protected]সম্পাদক: আপনার উল্লিখিত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন করতে সাংবাদিকদের বলব।প্রশ্ন: আপনি হয়তো জানেন, লিবীয় সরকার ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় দুই লাখ শ্রমিক নিয়োগ করতে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, লিবিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো ব্যাংকিং যোগাযোগ নেই। আপনাদের লেখার মাধ্যমে এ বিষয়ে কিছু তুলে ধরুন।ইমতিয়াজ উদ্দীন, [email protected]সম্পাদক: বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাব। এ বিষয়ে যাতে নজর দেওয়া হয়, সেটা নিয়ে কথা বলব।প্রশ্ন: কিছুসংখ্যক সাংবাদিক ও পত্রিকা আছে, যাদের কাছে নিরপেক্ষতা মানে হলো সরকারি ও বিরোধী পক্ষ—দুই পক্ষেরই সমানভাবে সমালোচনা করা অথবা প্রশংসা করা। এ ধরনের নিরপেক্ষতার চেয়ে জরুরি হলো, জনগণের পক্ষে থাকা। জনগণের পক্ষে বলতে গেলে তা কোন পক্ষকে খুশি করল, সেটা নিশ্চয়ই দেখার বিষয় নয়। আসলে এটা নিরপেক্ষতা নয়, এক ধরনের ব্যবসায়িক কৌশল (সরকারি বিজ্ঞাপন হারানোর ভয়)। প্রথম আলো প্রায়ই প্রথম ধরনের নিরপেক্ষতা পালন করে। সরকারি কিংবা বিরোধী পক্ষের কিছু কট্টর সমর্থকের লেখা ছাপালেই কি নিরপেক্ষতা হয়ে গেল? আপনার কী মত?সুজন, [email protected]সম্পাদক: আমরা শুরু থেকে দলনিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে চলেছি। সেটাই হয়তো আমাদের জনপ্রিয়তার কারণ। আর আমাদের অবস্থান জনগণের পক্ষে। শুধু পক্ষে বা বিপক্ষে লেখা ছাপলেই নিরপেক্ষ হওয়া যায় না—আপনার কথা আমরা মানি।প্রশ্ন: আপনার মতো মানুষ আছে বলে দেশটা এখনো রসাতলে যায়নি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।সৈয়দ রাজু আহমেদ, [email protected]সম্পাদক: আমরা চেষ্টা করি যাতে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো হয়, দেশটা ভালো থাকে। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আপনাকে ধন্যবাদ।প্রশ্ন: আমার মনে হয়, বর্তমান সরকারের নয় মাসের শাসনকাল আগের সরকারের চেয়ে খুব একটা ভালো নয়। আপনি কি বলতে পারেন, কেন?আশফাক মহী, [email protected]সম্পাদক: নির্বাচনের পর নতুন সরকারের প্রচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি। এখানে অবশ্য সরকারের ব্যর্থতা রয়েছে। এই ব্যর্থতাগুলো পত্রিকায় তুলে ধরছি। আমরা আশা করব, সরকার এ বিষয়ে আরও উদ্যোগী হবে।প্রশ্ন: আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। নিজেকে ভাগ্যহতই বলব। শিক্ষকরাজনীতি ও ছাত্ররাজনীতির কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বারবার সংঘর্ষ, ইত্যকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যায় বলে আমাদের শিক্ষাজীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। আপনি কি মনে করেন না, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র ও শিক্ষকরাজনীতি চিরতরে বন্ধ হওয়া উচিত? রাজনীতি নিয়ে যেখানে আমাদের প্রজন্মের কোনো আগ্রহ নেই, সেখানে কেন এই রাজনীতির কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে?মাহমুদ হাসান, [email protected]সম্পাদক: আপনার কথাগুলোর সঙ্গে আমরা একমত। ছাত্র ও শিক্ষকরাজনীতি সম্পর্কে অনেক সময়ই আমরা লিখি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির বিষয়টি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, এ থেকে মুক্তি না পেলে দেশের ভবিষ্যত্ আরও খারাপ হবে। আমরা আপনার পরামর্শ মনে রাখব।প্রশ্ন: বাংলাদেশের রাজনীতির এই খারাপ সময়ে প্রথম আলো কি আর একটু বেশি ভূমিকা রাখতে পারে না?সাহিদ মোল্লা, [email protected]সম্পাদক: বাংলাদেশের রাজনীতিকে সুস্থ করতে সচেষ্ট থাকব। জনমত তৈরি করতে চেষ্টা করব।প্রশ্ন: প্রথম আলো ও আপনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা মনে করি, প্রথম আলো সব সময় বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। আমরা জানি, প্রতিটি সংবাদপত্রের নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তাধারা আছে। তবে তা প্রতিফলিত হওয়া উচিত কেবল সম্পাদকীয় পাতায়; কোনো খবরে নয়। আশা করি, এ ব্যাপারে প্রথম আলো সচেতন থাকবে। শুভ কামনা রইল।মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, [email protected]সম্পাদক: আমরা সব সময় চেষ্টা করি সঠিক তথ্যভিত্তিক সংবাদ দিতে। নিশ্চিত না হয়ে কোনো সংবাদ দিতে চাই না। আর ছোট সংবাদকে বড় করতে চাই না। আপনার পরামর্শ মনে রাখব।প্রশ্ন: বাংলাদেশের এই বিরক্তিকর নোংরা রাজনীতির শেষ কোথায়? আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশের শতকরা ৯৯ ভাগ রাজনীতিবিদ অসত্ ও অযোগ্য। তাঁরা দেশের মানুষের জন্য কখনোই ভালো কিছু করেননি। সব সময় তাঁরা নিজেদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করেন। দেশের স্বার্থ তাঁদের কাছে গৌণ। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?সুরাত, [email protected]।সম্পাদক: আপনার বক্তব্যের সঙ্গে অনেকাংশেই একমত আমরা। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি অবস্থার উন্নতির জন্য। সে জন্য আমরা রাজনীতিতে পরিবর্তনের কথা বলি। তবে এ সমস্যা থেকে দ্রুত বের হয়ে আসা হয়তো সম্ভব নয়।প্রশ্ন: আমাদের দেশে এখন যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের বড় অভাব। এর প্রমাণ হচ্ছে, আমাদের বিদ্যুৎ সমস্যা। যে সমস্যা তিন মাসের মধ্যে সমাধান করা যেত, তা না করে বিভিন্ন ছলাকলার মাধ্যমে জনগণকে বুঝিয়ে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি।রাজীব হাসান, [email protected]সম্পাদক: দেশের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান জরুরি। এত দ্রুত হয়তো এটা করা সম্ভব নয়। তবে সরকারের উদ্যোগ বাড়ানো দরকার।প্রশ্ন: ড. ইউনূস বর্তমান সরকারের কাছে এত উপেক্ষিত কেন? তিনি একমাত্র বাংলাদেশি, যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। একমাত্র এশিয়ান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পেয়েছেন।লিয়াকত হোসেন, [email protected]সম্পাদক: বর্তমান সরকারই বিষয়টি ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা দেখছি, সরকারের মন্ত্রীরা প্রায়ই ড. ইউনূসের সমালোচনা করেন। এ বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে।প্রশ্ন: প্রকাশকাল ৫ মার্চ, ২০০৯। চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের ঘটনা সম্পর্কে প্রথম আলোর বিশেষ অনুসন্ধান; আইএসআইকে মামলা থেকে দায়মুক্ত করার জন্যই এ প্রতিবেদন প্রকাশ নয় তো? আমার মনে এ ধরনের আশঙ্কা জাগার কারণ হলো, এ প্রতিবেদনে কোথাও পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে কোনো ইঙ্গিত করা হয়নি। অথচ এ সম্পর্কে প্রতিটি আলোচনাতেই আইএসআইয়ের সাহায্য ও সহযোগিতার কথা শুনে আসছিলাম। এমনকি পাকিস্তানি একজন ধনকুবের সিঙ্গাপুর থেকে এ চালানের কলকাঠি নাড়ছিলেন এবং আর্থিক সহযোগিতা জুুগিয়েছেন—তাও বিভিন্নজনের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল। আশা করি, মতিউর রহমান সাহেব, আমার আশঙ্কা দূর করবেন।এস এম রহমান, [email protected]সম্পাদক: আমরা এ সম্পর্কেও একাধিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান সম্পর্কে আমরা বহু প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। এ বিষয়ে আমরা সচেতন রয়েছি।প্রশ্ন: প্রথম আলো বরাবরই অসত্য ও অসুন্দরের বিপক্ষে। আমাদের সংস্কৃতি ও সভ্যতার সঙ্গে খাপ খায় না এমন পণ্য ও সেবার প্রতি প্রথম আলোর একটা ঘৃণ্য মনোভাব থাকবে—এটাই আমরা আশা করি। কিন্তু ডিজুস কর্তৃক উদ্ভাবিত যে সংস্কৃতি আমাদের সমাজে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে, আমার মনে হয়, প্রথম আলো তার জন্য কিছুটা হলেও দায়ী। এ ব্যাপারটা কি প্রথম আলো একটু ভেবে দেখবে?ম্যাক, [email protected]সম্পাদক: আপনার সমালোচনার বিষয়টি সম্পর্কে আমরা সচেতন থাকব।প্রশ্ন: ক্রসফায়ারে ৭০-৮০ জন মারা যাওয়ায় সবাই ‘মানবাধিকার গেল গেল’ বলে শোরগোল তুলছে। কিন্তু গত আট মাসে ২৭৯ জন (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে) সাধারণ নাগরিক যখন খুন হলো, তখন কেউ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে না কেন?সোহেল আহমেদ, [email protected]সম্পাদক: বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। সন্ত্রাসীদের হাতে মানুষ যখন নিহত হয়, তা নিয়ে আমরা সব সময়ই প্রতিবেদন করি। অথবা আমাদের বিভিন্ন লেখালেখির মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারকে তাগিদ দিই। তাই বলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনোই স্থায়ী সমাধান নয়। এভাবে অপরাধের মূলোত্পাটন সম্ভব হয় না।
পাঁচ বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নান গাজীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রহমত আলীর কাছে এক লাখ ২৯ হাজার ২৯ ভোটে হেরেছিলেন। সেই তিনিই মেয়র নির্বাচনে এক লাখেরও বেশি ভোটে হারিয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে। গাজীপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মতো বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন, জাতীয় ইস্যুগুলো এ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছে। প্রার্থী বা এলাকার উন্নয়নের কথা আমলে নেননি ভোটাররা।গাজীপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, কয়েক সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠিত খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ফলাফলের প্রভাব পড়েছে এই নির্বাচনে। এর বাইরে নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের সরে যাওয়া, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক ইস্যু, শেয়ারবাজার ও ব্যাংকগুলোর আর্থিক অনিয়ম নিয়ে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে সরকারের উদাসীনতা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের অন্যতম কারণ। নির্বাচনের আগে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ এনে এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংবাদ সম্মেলনও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে গেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুরের একজন প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই পক্ষই সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল। সিটি করপোরেশন এলাকায় গাজীপুরের স্থায়ী বাসিন্দা মাত্র ৩৮ শতাংশ। বাকি সবাই বহিরাগত। তাঁরা বাইরে থেকে এসে বসবাস করছেন অথবা বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করছেন। এ নির্বাচনে সব অঞ্চলের মানুষের মতের প্রতিফলন ঘটেছে। আওয়ামী লীগ পিছিয়ে পড়ার পেছনে জাহাঙ্গীর আলম ইস্যুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। জাহাঙ্গীরের সমর্থকদের ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগের কর্মী। বাকি ৭০ শতাংশ ভোট আজমত উল্লা খানের পক্ষে না-ও পড়তে পারে। কারও কারও মতে, আজমত উল্লা ২০০৭ সালে সংস্কারপন্থী নেতাদের প্রতিনিধিত্ব করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ এই নির্বাচনে তাঁর পক্ষে ছিল না।দলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার আশঙ্কায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, নির্বাচনে হেফাজতে ইসলাম ইস্যুটিকে পুঁজি করে বিএনপি বহু মানুষের সমর্থন আদায় করেছে।জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) প্রধান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বিরোধী দল ধর্মকে ইস্যু করে যেমন ভোটারদের কাছে গেছে, তেমনি আজমত উল্লা খানকে ধর্মকে ইস্যু করতে দেখা গেছে। ধর্মীয় লেবাসধারী লোকজনের আনাগোনা দেখা গেছে তাঁর পাশেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে হেরে গেছেন তিনি। ধর্মকে ইস্যু করার পাশাপাশি আর্থিক খাতে অনিয়ম নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে প্রভাব ফেলেছে।সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, স্থানীয় হলেও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের রূপ পেয়েছিল। তাঁর মতে, ক্ষমতায় থাকার সময় শাসক দল কিছুটা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে থাকে। তার মধ্যে অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো নির্বাচনী ফলাফলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ব্যাংক, শেয়ারবাজারে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা এবং এর প্রতিকার না হওয়ায় সাধারণ মানুষ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। পাশাপাশি নির্বাচনের দু-তিন দিন আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর কর ফাঁকি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় বিষয়টি আজমত উল্লার জন্য হিতে বিপরীত হয়েছে। নির্বাচনের আগে আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংবাদ সম্মেলন করা উচিত হয়নি।ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী ইফতেখারুজ্জামানও মনে করেন, নেতিবাচক প্রচার আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর জন্য ভালো ফল বয়ে আনেনি। তাঁর মতে, গাজীপুরের নির্বাচনে প্রার্থী বা এলাকার উন্নয়ন নিয়ে মাথা ঘামাননি ভোটাররা।ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশের রাজনীতিকেরা নিজেদের যা কিছু ভালো তা নিয়ে ভোটারদের কাছে যান না। তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নেতিবাচক দিকগুলোকে নিয়ে প্রচার করেন। এতে মূলত বিরোধীদলীয় প্রার্থী জনপ্রিয়তা পান।’১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের সবগুলো আসনে জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৮৬ সালে গাজীপুর পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর সেখানে কখনো জয় পায়নি বিএনপি। ১৯৯৫ সালের পর টঙ্গী পৌরসভার নির্বাচনে কখনো হারেনি আওয়ামী লীগ।গত ২২ বছরে গাজীপুর শহরের সংসদীয় আসন কিংবা সেখানকার কোনো স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হননি।সম্প্রতি চারটি সিটি করপোরেশনে হেরে যাওয়ার পর গাজীপুর সিটি করপোরেশনে জিততে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন সাংসদ প্রচারে অংশ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের শিল্পী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরাও নিয়মিত নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন। তবু শেষ রক্ষা হয়নি।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘গত চার মাসের তুলনায় আগামী চার মাস ভিন্ন চিত্র থাকবে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাতাল হাওয়া বইতে থাকবে। এ হাওয়া কোন দিকে যায়, সেটা বলা যাবে না।’ আজ রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর হেরে যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত গাজীপুরে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর হেরে যাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের কাছে দুর্ভেদ্য দুর্গ বলে কিছু নেই। জনগণ যেকোনো দুর্গই ভেঙে দিতে পারে, যদি তারা আস্থা হারিয়ে ফেলে।’সিটি করপোরেশন নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এটি ছিল স্থানীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয়। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না, তবে পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুল সংশোধনের কাজে লাগাতে চাই।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তবে নির্বাচনে জামায়াত-শিবিরের মিথ্যা প্রচারণা, কালো টাকা ও ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও জনগণ যে রায় দিয়েছে, তা মাথা পেতে নিয়েছি।’আজ রোববার দুপুরে টঙ্গী বাজার এলাকায় অবস্থিত নিজ বাসভবনে প্রথম আলো ডটকমকে দেওয়া নির্বাচন-পরবর্তী একান্ত সাক্ষাত্কারে আজমত উল্লা এসব কথা বলেন।গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল মূল্যায়ন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা দাবি করেন, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলের একটা প্রভাব গাজীপুরেও পড়েছে।দলের ভেতরে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আজমত উল্লা বলেন, ‘যদি কেউ আমার বিরুদ্ধে কাজ করে থাকেন, তবে তিনি বা তাঁরা বিবেকের দংশনে দংশিত হবেন। আমার যে কষ্ট, সেটা আমি এক ঘণ্টায় ঝেড়ে ফেলেছি। কিন্তু কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে কাজ করে থাকেন, তবে তাঁদের কষ্টটা সারাজীবন থেকে যাবে।’গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো আলোচিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আজমত উল্লা।গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এম এ মান্নানকে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করার বিষয়ে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন আজমত উল্লা। তবে তিনি দাবি করেন, ‘আমি ১৮ বছরে কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, টঙ্গীবাসী তা জানে। আগামী পাঁচ বছর কী উন্নয়ন হয়, তাও আমি দেখতে চাই।’আজমত উল্লা জানান, আজ থেকে তিনি দলীয় কাজ শুরু করে দিয়েছেন।গতকাল শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৩৯২টি কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, মান্নান পেয়েছেন তিন লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৪ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৭ ভোট।
স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস ফোর ২৬ এপ্রিল বাজারে আসার পর এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মোট দুই কোটি ইউনিট ।বাজারবিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, গ্যালাক্সি এস ফোর স্মার্টফোনের বিক্রির গতি কমে গেছে। বাজারে আনার পর প্রথম মাসে এ স্মার্টফোন এক কোটি ইউনিট বিক্রি হয়েছিল। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে সিনেট।স্যামসাং কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, গ্যালাক্সি এস ফোরের আগের সংস্করণ গ্যালাক্সি এস থ্রির চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ গতিতে বিক্রি হচ্ছে এস ফোর।বাজারবিশ্লেষকেরা জানান, এস ফোরের তুলনায় আইফোন বিক্রি হয়েছে বেশি। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে আইফোন-৫ বাজারে আসার পর এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কোটি ইউনিট আইফোন বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে আইফোন-৫ বিক্রি হয়েছে বেশি।এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গ্যালাক্সি এস সিরিজে মোট ১০ কোটি ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রির তথ্য জানিয়েছিল স্যামসাং।সে সময় স্যামসাং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তিন বছর আগে গ্যালাক্সি এস সিরিজ প্রথম বাজারে আনে তারা। তিন বছরের মধ্যে ১০ কোটি এস সিরিজের স্মার্টফোন বিক্রির মাইলফলক স্পর্শ করেছে তারা। ১০ কোটি স্মার্টফোনের মধ্যে আড়াই কোটি গ্যালাক্সি এস, চার কোটি গ্যালাক্সি এস টু ও চার কোটি ১০ লাখ গ্যালাক্সি এস থ্রি বিক্রি হয়েছে।১০ কোটি স্মার্টফোন বিক্রির মাইলফলক স্পর্শ করতে অ্যাপলের আইফোনের চেয়েও কম সময় লেগেছে গ্যালাক্সি এস সিরিজের। ১০ কোটি আইফোন বিক্রি করতে সময় লেগেছিল চার বছর।প্রযুক্তিবিশ্লেষকেরা বলছেন, গ্যালাক্সি সিরিজের স্মার্টফোন এস ফোর বিক্রির হিসাব যুক্ত হওয়ায় মোট গ্যালাক্সি ফোন বিক্রি ১২ কোটি ইউনিটে পৌঁছেছে।
গ্রিক পুরাণের দেবতা ‘এরস’ ও ‘মার্স’-এর নাম দিয়ে দুটি মডেলের স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারে ফিনল্যান্ডের মুঠোফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নকিয়া।প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শক্তিশালী প্রসেসর, উন্নত ডিসপ্লে ও ক্যামেরা সুবিধার দুটি স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারে নকিয়া। স্মার্টফোন দুটির কোড নাম হবে ‘এরস’ ও ‘মার্স’। প্রযুক্তিবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নকিয়ার এ দুটি স্মার্টফোনের তথ্য ফাঁস হয়েছে।গ্রিক পুরানে মার্সকে যুদ্ধ বা শক্তির দেবতা বলা হয়। আর পুরাণে এরসকে বলা হয় প্রেমের দেবতা। প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির ছেলে এরস।গবেষকেরা এ নাম দুটি দেখে ধারণা করছেন, মার্স নামে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি স্মার্টফোন তৈরি করছে নকিয়া। আর হালকা-পাতলা গড়নের নমনীয় নকশার স্মার্টফোন হবে এরস। বাজার গবেষকেরা অবশ্য এগুলো বড় আকারের উইন্ডোজনির্ভর স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট হতে পারে বলেও মনে করছেন।নতুন দুটি স্মার্টফোনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি নকিয়া কর্তৃপক্ষ।এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে জানানো হয়েছে, ১১ জুলাই নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ফিনল্যান্ডের মুঠোফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নকিয়া। অনুষ্ঠানে নতুন ক্যামেরাপ্রযুক্তির স্মার্টফোনের ঘোষণা দিতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।‘ইওএস’ কোড নামের উইন্ডোজনির্ভর নতুন এ স্মার্টফোনটি নকিয়া তাদের জনপ্রিয় লুমিয়া সিরিজে যুক্ত করতে পারে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টঙ্গী অঞ্চলের ১৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে বিজয়ের দিক থেকে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা। ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে আটটিতে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। পাঁচটিতে বিএনপি-সমর্থিত, একটিতে জাতীয় পার্টি-সমর্থিত প্রার্থীর জয় হয়েছে। আর অন্যটিতে জয়ী হয়েছেন একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।সংরক্ষিত নারী আসনে পাঁচজনের মধ্যে বিএনপি-সমর্থিত তিনজন ও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত দুজন জয়ী হয়েছেন।নির্বাচন অফিস সূত্রের খবর অনুযায়ী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন: ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরন, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে ছাত্রলীগের সাবেক জিএস শাহ আলম রিপন, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর মো. নুরুল ইসলাম নুরু, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে থানা কৃষক লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর মো. আবু বকর, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী মো. মজিবুর রহমান, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর মো. আবুল হোসেন এবং ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে মো. গিয়াস উদ্দিন সরকার। গিয়াস উদ্দিন ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁদের মধ্যে আসাদুর রহমান কিরন চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন।বিএনপি-সমর্থিত বিজয়ী কাউন্সিলররা হলেন: ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. সফিউদ্দিন সফি, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ভিপি মো. আতাউর রহমান, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে  থানা কৃষক দলের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কর্মী শেখ মো. আলেক ও ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কর্মী মো. সেলিম হোসেন।এ ছাড়া ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম দীপু ও ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টি-সমর্থিত প্রার্থী মো. বাদল কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।সংরক্ষিত আসনে ৪৩, ৪৪, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সাহারা আক্তার মৌসুমি; ৪৬, ৪৭, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাসিনা মমতাজ; ৪৯, ৫০, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে শিরিন শারমিন এবং ৫২, ৫৩, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কেয়া শারমিন ও ৫৫, ৫৬, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে রাখি সরকার নির্বাচিত হয়েছেন।
চারটি সিটি নির্বাচনে সরকারি দলের লজ্জাজনক পরাজয়ের পটভূমিতে গাজীপুরের সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে দুটি বার্তা খুবই স্পষ্ট। প্রথমত, বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও তার ফল সুরক্ষাকারী ব্যবস্থা জোরালো হয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্যবৃদ্ধির ইঙ্গিতবহ। দ্বিতীয়ত, আমাদের ব্যক্তিনির্ভর রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নিরিখে গাজীপুরসহ পাঁচটি সিটি নির্বাচন গণভোটের সঙ্গে তুলনীয়। এটাকে ক্ষমতাসীনদের বিদায়ঘণ্টা হিসেবেও অভিহিত করা যায়। এই ভূমিধস বিজয়ের অন্যতম কারণ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয় ক্ষমতায় আসা। কোনো দলের বিপুল বিজয় গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ নয়। গণতন্ত্র রক্ষিত হতে পারে, বিএনপি যাতে আগামী নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় না পায়, তা নিশ্চিত করতে পারলে।দুটি জ্বলন্ত প্রশ্ন সামনে। প্রথমত, আওয়ামী লীগের দাবি বিবেচনায় নিয়ে অথবা না নিয়ে আমরা ভরসা করতে পারি কি না যে, আগামী সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে একইভাবে সম্পন্ন হতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকারের জনপ্রিয়তা যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে, তা প্রমাণিত হওয়ার পরও জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার নীতি আওয়ামী লীগের জন্য সুদূরপ্রসারী ক্ষতি বয়ে আনতে পারে কি না।দুটিরই উত্তর মাত্রাভেদে নেতিবাচক। তবে দলীয় সরকারের অধীনে এভাবে নির্বাচন করে বিএনপি জয় পেলে আওয়ামী লীগের জন্য তা দ্বিগুণ লোকসানের কারণ হবে। বিরোধী দলে বসা, আর পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির করুণাপ্রার্থী হওয়া। তখন লজ্জার মাথা খেয়ে ভোল পাল্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য জিগির তুলতে হবে। ক্ষমতাসীনরা কোন পথে যাবে, সেটা এখন তাকে ঠিক করতে হবে।তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে কারচুপি কিংবা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের বিজয় ছিনিয়ে নেবে না—এটা এখন হলফ করে বলা যায় না। তবে সেটা ২০১৩ সালের বিএনপির জন্য যেমন সত্য, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের জন্যও তেমন সত্য হতে পারে।পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধস পরাজয় দল হিসেবে তাকে ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচন-পূর্ববর্তী বিরোধী দলের অবস্থানে নিয়ে গেছে। গত সাধারণ নির্বাচনে দারুণভাবে পরাজিত ও বিধ্বস্ত বিএনপির পুনর্জন্ম ঘটেছে। এই বাস্তবতা ক্ষমতাসীন দল মেনে নিয়ে আগাম নির্বাচনই দেওয়া উচিত। এখন আওয়ামী লীগের কৌশল হওয়া উচিত আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিরোধী দলের আসনে বসার মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা। আর সে জন্য তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। সেটা বিএনপির চাপের মুখে নয়,  নিজের স্বার্থেই বিবেচনায় নিতে হবে। তার উদ্দেশ্য থাকবে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ২০০৮ সালের বিএনপির যে বিপর্যয় ঘটেছিল, সেটা একই মাত্রায় তার নিজের ক্ষেত্রে হতে না দেওয়া। সুশাসনের আশায় ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগকে দুই হাত ভরে যে ভোট মানুষ দিয়েছিল, মনে হচ্ছে এখন তারা তা কেড়ে নিচ্ছে। বদলা নিচ্ছে। তাই কত বেশি আসন নিয়ে তারা বিরোধী দলের আসনে বসতে পারে, সেটাই হওয়া উচিত তার রাজনৈতিক কৌশল। আওয়ামী লীগকে মনে রাখতে হবে, তাদের সরকারের আমলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো যতটা অবাধ ও সাফল্যজনকভাবে অনুষ্ঠিত হতে পেরেছে, সেটা কার্যত নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হওয়ার প্রমাণ নয়, বরং দলীয় সরকারের যে সদিচ্ছা ছিল তারই বহিঃপ্রকাশ।আর সেটা বিএনপি ও তার দক্ষিণপন্থী মিত্রদের নিয়ে যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, তারাও একইভাবে নিশ্চিত করবে, সেটা হলফ করে বলা যায় না। আওয়ামী লীগের উচিত সংবিধানের সংশোধনী আনা। নির্দলীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সংসদের কাছে দায়বদ্ধ রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নামে হলেও সংশোধনী আনা উচিত। গাজীপুরসহ পাঁচটি সিটি করপোরেশনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের জয় কেবল নয়, বিরাট ব্যবধানে আওয়ামী লীগের হারটাও লক্ষণীয়। এটা নিশ্চিত করছে যে, এগুলো আমাদের ব্যক্তিনির্ভর সরকারি দলব্যবস্থার জনপ্রিয়তার প্রশ্নে গণভোট হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে না বলেছেন বিনিয়োগকারীরা। সেখানে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়ের অন্যতম কারণ শেয়ারবাজারে ধস। গাজীপুরে বসবাস করেন এমন বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী এমনটিই মনে করছেন। এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আজ রোববার বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলেও মনে করছেন তাঁরা।মো. জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর শহরের একজন ভোটার। আট-নয় বছর ধরে শেয়ার ব্যবসা করছেন তিনি। তিনি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বিনিয়োগকারীরা এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এর আগের চার সিটি করপোরেশনের মতো গতকাল গাজীপুরের নির্বাচনেও বিনিয়োগকারীরা তা প্রমাণ করেছেন। ‘এই সরকারের আমলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধসে নিঃস্ব হয়ে বিনিয়োগকারীরা গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে না বলেছে।’ এমন মন্তব্য তাঁর।আলমগীর হোসেন নামের আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, শেয়ারবাজারে এসে নিঃস্ব বিনিয়োগকারীরা এই সরকারকে চান না। গাজীপুরের নির্বাচনে বিনিয়োগকারীরা বর্তমান সরকারকে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।এদিকে গাজীপুরের সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তার প্রভাব বাজারে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ নাইম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি শেয়ারবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদিক থেকে গাজীপুরের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেননা রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আস্থার জায়গা তৈরি হয়।বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজারে ধসের ঘটনা ঘটে। ২০১০-১১ সালেও এই সরকারের আমলে আবারও একই ঘটনা ঘটে। এতে নিঃস্ব হয়ে বিনিয়োগকারীরা এই সরকারের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। তারই প্রমাণ চার সিটি করপোরেশন এবং গাজীপুরের নির্বাচনে পড়েছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি আহসানুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দুই পক্ষই জনগণের রায় মেনে নিয়েছে। ফলে পুনরায় এটা নিয়ে রাজনৈতিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা শেয়ারবাজারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো থাকলে শেয়ারবাজারও ভালো থাকে। বিনিয়োগকারীরা আস্থা পান। তাই অন্য চার সিটির মতো গাজীপুর সিটির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।ডিএসই সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল থেকেই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ডিএসইতে লেনদেন চলছে। বেলা দেড়টায় ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪২৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৮টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।আলোচ্য সময়ে এই স্টক এক্সচেঞ্জে ৫৮৬ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চার সিটি করপোরেশনের পর গাজীপুরের জনগণও সরকারকে “না” জানিয়ে দিয়েছে। পাঁচটি সিটি করপোরেশনে পরাজয়ের পর ন্যূনতম আত্মসম্মানবোধ থাকলে সরকারের উচিত হবে পদত্যাগ করা।’আজ রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।বিএনপির মহাসচিব দাবি করেন, সরকার গাজীপুরে বিভিন্নভাবে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।বিএনপির পক্ষ থেকে গতকালের নির্বাচনের বিষয়ে যেসব অভিযোগ করা হয়েছিল, সেই সব অভিযোগ সত্য ছিল দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো সেই সব অভিযোগ করছি।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি দল কেন্দ্র দখল, কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নেওয়াসহ নির্বাচনকে নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের মুখে তারা সফল হয়নি।’ কারচুপির চেষ্টা না হলে জয়ের ব্যবধান আরও বেশি হতো বলে তিনি দাবি করেন।গাজীপুরের নির্বাচনের এ রায়কে সারা দেশের মানুষের রায়ের প্রতিফলন উল্লেখ করে তিনি অবিলম্বে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি জানান।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচন এক নয়। জাতীয় নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হয়। জনগণ রায় দিয়েছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, আ স ম হান্নান শাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উইম্বলডনের ফাইনালে মুখোমুখি ইয়েলিনা রিস্টিচ ও কিম সিয়ার্স—না না, থমকে যাবেন না। সংবাদটিকে ভুলও ভেবে বসবেন না। সত্যি সত্যিই আজ অল ইংল্যান্ড ক্লাবের চৌহদ্দিতে উত্তাপ ছড়াবে রিস্টিচ ও সিয়ার্সের লড়াই। এই লড়াই কিন্তু জোকোভিচ ও মারের লড়াইয়ের চেয়েও কোনো অংশে কম নয়। সেন্টার কোর্টের চৌহদ্দিতে রোববার বিকেলে উইম্বলডন শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে যখন জোকোভিচ ও মারে নিজেদের উজাড় করে দেবেন, তখন ভিআইপি বক্সে বসে ভালোবাসার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবেন ওই রিস্টিচ ও সিয়ার্স। এই ভালোবাসার লড়াইয়ের মর্যাদা কি মাঠের লড়াইয়ের চেয়ে কোনো অংশে কম হতে পারে?জোকোভিচকে ভালোবাসার বন্ধনে অবদ্ধ করে রেখেছেন রিস্টিচ। পেশায় মডেল, ২৭ বছর বয়সী এই রিস্টিচ আজ জোকোভিচের জন্য অনুপ্রেরণার উত্স হয়ে অল ইংল্যান্ড ক্লাবকে আলোকিত করবেন। সিয়ার্সই-বা কম যাবেন কেন? ৭৭ বছর পর প্রথম ব্রিটিশ হিসেবে উইম্বলডনের শিরোপা হাতে তুলতে অ্যান্ডি মারের শক্তির জায়গা তো সিয়ার্সই। ২৫ বছর বয়সী চিত্রশিল্পী সিয়ার্স যে আষ্টেপৃষ্ঠেই আবদ্ধ স্কটিশ টেনিস তারকার জীবনে।জোকোভিচ-মারের লড়াইটা তাই গ্যালারিতে বসে তাঁদের দুই প্রেমিকারও মর্যাদার লড়াই। সেন্টার কোর্টের লড়াইয়ের আবেগটা জোকোভিচ ও মারেকে ছাপিয়ে যেভাবে রিস্টিচ ও সিয়ার্সকে ছুঁয়ে যাবে, আবেগের আতিশয্যে তাঁরা যেভাবে থরো থরো হবেন—সেটা টেনিস লড়াইয়ের চেয়ে কি কোনো অংশে কম আকর্ষণীয় হবে? টেনিস বিশ্বের দুই সেরা পুরুষ তারকার লড়াই যেভাবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর টিআরপিকে প্রভাবিত করবে, তাঁদের দুই লাস্যময়ী প্রেমিকার প্রভাবও তাতে কম থাকবে না।ব্যাপারটি কি কেবল দুই রমণীর ‘মর্যাদার লড়াই’, নাকি এর মধ্যে অন্য কিছুও আছে? পুরো বিষয়টিকে ‘ভালোবাসাবাসির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত’ বই অন্য কিছু ভাবতে নারাজ দুই তারকার দুই প্রেমিকা, ‘এটা সম্পূর্ণ ভালোবাসার ব্যাপার। আমি অবশ্যই চাইব কোর্টে জোকোভিচ খুশি মনেই নামুক। গ্যালারির দিকে তাকালে আমাকে দেখে ওর মনটা যদি ভালো হয়ে যায়, তাহলে সেটাই হবে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।’ রিস্টিচের এই উক্তির সঙ্গে মিলে যায় সিয়ার্সের কথাও, ‘মারেকে উত্সাহ দিতেই আজ মাঠে থাকব আমি। বিষয়টিতে ভালোবাসা আর টেনিস-প্রেম ছাড়া অন্য কোনো ব্যাপার জড়িয়ে নেই।’ভদ্রলোকের খেলা টেনিসে জোকোভিচ ও মারে আজ কোর্টে একে অন্যের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও দুজনের সুসম্পর্ক সর্বজনবিদিত। কিন্তু তাঁদের প্রেমিকারা কী কখনো একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছেন? এমন প্রশ্নে অবাক জোকোভিচের প্রেমিকা রিস্টিচ। তিনিও টেনিসের ‘এলিট ভাবমূর্তি’র সঙ্গে নিজেদের মিলিয়েছেন বেশ ভালোভাবেই। সামাজিক যোগাযোগটা যে তাঁদের মধ্যে অটুট, সেটা রিস্টিচ জানিয়েছেন স্পষ্ট করেই, ‘আমি কিম সিয়ার্সের সঙ্গে অনেকবারই আড্ডা মেরেছি। অ্যান্ডি মারে ও সিয়ার্সের সম্পর্কটা দারুণ লাগে। কী চমত্কার একটি জুটি।’সিয়ার্স অবশ্য রিস্টিচের মতো সরাসরি অমন কিছু বলেননি। কিন্তু তাঁর সবটুকু শ্রদ্ধা জোকোভিচ ও মারের ব্যক্তিগত সম্পর্কের ব্যাপারে, ‘মাঠের লড়াইয়ে হয়তো মারে-জোকোভিচ শত্রু, কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে ওরা খুব ভালো বন্ধু। টেনিস ভদ্রলোকের খেলা আর ওরা দুজনেই দারুণ ভদ্রলোক।’ সূত্র: ডেইলি মেইল।
দেশ ছেড়েছিলেন কেন ফাওয়াদ আহমেদ? তিনি দেশ ছেড়েছিলেন তালেবানদের অত্যাচারে। তাঁর অপরাধ ছিল, তিনি নারী শিক্ষার পক্ষে কথা বলতেন, পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার গুরুত্বের কথা প্রচার করতেন আর ক্রিকেট খেলতেন। এই কয়েকটি ‘অপরাধের’ কারণেই পাকিস্তানের ধর্মান্ধ তালেবানি গোষ্ঠীর চক্ষুশূলে পরিণত হলেন তিনি। চলতে লাগল প্রাণনাশের হুমকি। জন্মভূমি একসময় অসহ্য ঠেকতে লাগল অ্যাবোটাবাদের হয়ে পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণীর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এই লেগ স্পিনারের। দেশ ছেড়ে চলে এলেন অস্ট্রেলিয়ায়। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা সেই ফাওয়াদই অপেক্ষায় আছেন স্বপ্নপূরণের। অ্যাশেজ খেলার স্বপ্নপূরণে।ক্রিকেটীয় প্রতিভা ছিলই। সেই প্রতিভা কাজে লাগিয়েই তিনি দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন অসি ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের। তাঁর লেগ স্পিনের ক্যারিশমাকে ব্যবহার করেই অস্ট্রেলিয়া এখন অপেক্ষায় অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারে। অথচ জীবনটা কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না ৩১ বছর বয়স্ক এই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ক্রিকেটারের।খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। বয়স তাঁর তখন মাত্র দেড় বছর। বাবা সেনাবাহিনীর সামান্য চাকুরে ছিলেন। পেনশনের টাকায় মা কোনোমতে ফাওয়াদ ও তাঁর বাকি তিন ভাইবোনকে বড় করে তুলেছেন। সম্ভব সব ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। আধুনিক মনস্ক করে গড়ে তুলেছেন।এলাকার কল্যাণেই ক্রিকেটকে ভালোবেসে ফেলেন সেই ছোটবেলা থেকেই। সরকারি ডিগ্রি কলেজে পড়ার সময়ই স্থানীয় নির্বাচকদের মনোযোগ কেড়ে ঢুকে পড়েন অ্যাবোটাবাদ দলে। শুরু করেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলা।কেবল ক্রিকেট খেলেই ক্ষান্ত হননি ফাওয়াদ। স্থানীয় পর্যায়ে উপজাতি শিশু ও মেয়েদের মধ্যে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসাটা ছড়িয়ে দিতে থাকেন। এর ফল নিশ্চিতভাবেই তালেবানের চক্ষুশূল হওয়া। ফাওয়াদও একসময় হয়ে যান ওই ধর্মান্ধ-যুদ্ধবাজদের লক্ষ্যবস্তু।অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে আসার আগে নিজের এক বন্ধু-সতীর্থের ভয়াবহ পরিণতির সাক্ষী হয়ে এসেছেন। ফাওয়াদের মতোই মেয়েদের ক্রিকেট প্রশিক্ষণে যুক্ত ছিলেন বন্ধু হাবিব। একসময় তালেবানের হাতে জীবন হারান ওই হাবিব। ফাওয়াদও হুমকি পাচ্ছিলেন। সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেন, ‘আর নয়। বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার যেখানে রহিত, সেখানে বাস করার কোনো মানেই হয় না।’অস্ট্রেলিয়ায় চলে না এলে হয়তো জীবনটা প্রলম্বিত করতে পারতেন না ফাওয়াদ, ‘আমার জীবনের ওপর মারাত্মক হুমকি ছিল। বন্ধু হাবিবও আমার মতো মেয়েদের ক্রিকেট শেখাত। একদিন ওকে অপহরণ করে নিয়ে গেল সন্ত্রাসীরা। কয়েক দিন পরে তার বস্তাবন্দী মৃতদেহ উদ্ধার হলো। আমি পাকিস্তানে থেকে গেলে হয়তো আমারও হাবিবের মতো পরিণতি হতো।’একটা সময় স্বপ্ন দেখতেন পাকিস্তানের হয়ে খেলবেন। ভাগ্য তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। স্বপ্ন দেখতেন আবদুল কাদির ও মুশতাক আহমেদের উত্তরসূরি হওয়ার। কিন্তু ওই ভাগ্যই তাঁকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে শেন ওয়ার্নের উপমহাদেশীয় উত্তরসূরি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্রিকেট দিয়ে এটা ফাওয়াদের এক ধরনের প্রতিবাদই। সূত্র: ওয়েবসাইট।
রাজধানীর খিলাগাঁওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে এক স্কুলছাত্র মারা গেছে। তার নাম মাহবুব হোসেন চৌধুরী (১৫)। সে খিলগাঁও মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে খিলাগাঁওয়ে খিদমাহ হাসপাতালের উল্টো দিকে গুলবাগ এলাকার রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।মাহবুবের বাবার নাম মোতাহার চৌধুরী। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মাহবুব সবার ছোট। খিলগাঁও তিলপাপাড়ার ৬ নম্বর রোডের ২৫১/১ নম্বর বাসায় তারা থাকে।মাহবুবের সহপাঠী আল আমিন প্রথম আলো ডটকমকে জানায়, সকাল নয়টার দিকে মাহবুব স্কুলে আসে। তবে তার পরনে স্কুলের পোশাক ছিল না। কিছুক্ষণ পর সে স্কুল থেকে বেরিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই স্কুলের পাশে রেললাইনে এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আল আমিন ও তার আরেক সহপাঠী সেখানে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে তারা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মাহবুবকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিত্সকেরা মাহবুবকে মৃত ঘোষণা করেন।মাহবুবের প্যান্টের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে জানিয়ে আল আমিন বলে, মাহবুবের বাবার নাম তার জানা নেই। তবে মাহবুবের পকেটে একটি চিরকুট পওয়া গেছে দাবি করে আল আমিন জানায়, তাতে লেখা, ‘আমার নাম মাহবুব হোসেন চৌধুরী। আমার চারপাশের কেউ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী না। আমি সুস্থ মস্তিষ্কে আত্মহত্যা করেছি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না, কেউ দায়ী না।’বেলা একটায় মাহবুবের মা মাহমুদা বেগমকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আসেন খিলগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবদুল খালেক। ছেলের অসুস্থতার কথা বলে মাহবুবের মাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে জানিয়ে আবদুল খালেক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘বিস্তারিত ঘটনা এখনো জানতে পারিনি। আমি স্কুলে এসে মাহবুবের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তার বাবাকে ঢাকা মেডিকেলে আসার জন্য খবর দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।’ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মজিদ জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ হয়নি বলে জানিয়েছে ভেনেজুয়েলা।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, গতকাল শনিবার ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইলিয়াস জওয়া এ তথ্য জানান।এর এক দিন আগে গত শুক্রবার ভেনেজুয়েলার স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো স্নোডেনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।লাখ লাখ ফোনকল ও অনলাইন তত্পরতায় মার্কিন প্রশাসনের গোপন নজরদারির তথ্য ফাঁস করে গত ২০ মে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে যান স্নোডেন। গত ২৩ জুন তিনি হংকং ছেড়ে রাশিয়া যান। তখন থেকে স্নোডেন মস্কোর শেরেমেয়িতেভো বিমানবন্দরের ট্রানজিট এলাকায় অবস্থান করছেন।ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে স্নোডেনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস বলেন, ‘না, স্নোডেনের সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের যোগাযোগ হয়নি। তবে তিনি ভেনেজুয়েলায় আশ্রয় নিতে আগ্রহী কি না, তা জানতে আমরা সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকস জানায়, গতকাল শনিবার স্নোডেন রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আরও ছয়টি দেশে আবেদন করেন। যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে এখনই ওই এসব দেশের নাম প্রকাশ করা হবে না। এ ছাড়া স্নোডেন ইতিমধ্যে ২১টি দেশে একই ধরনের আবেদন করেছেন, যার বেশির ভাগ দেশই ওই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো আলোচিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচনের এক দিন পর প্রথম আলো ডটকমকে বলেছেন, পরাজিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান জনগণকে ভুলে প্রধানমন্ত্রীর আশপাশের লোকজনকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছেন।জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এবং দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রীকে সঠিক তথ্য দেননি। মাঠের সঠিক চিত্র না দিয়ে তাঁরা নেত্রীকে বিভ্রান্ত করেছেন। নির্বাচনী ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সঙ্গে নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের দূরত্ব দলের এই অবস্থার মূল কারণ। কোনো জাতীয় ইস্যু নয়, সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ে কাজ করেছে সব স্থানীয় ইস্যু। সাক্ষাত্কারে তিনি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘নেতারা তাঁদের কর্মীদের বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মনে করেন। আমাদের এমপিরা ভুলে গেছেন, মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হয়। তাঁরা মনে করেন, দল যাঁদের মনোনয়ন দেবে, তাঁরাই নির্বাচন করবেন। বিষয়টা আসলে তা নয়। যারা জনগণের কাছে থাকে, মনোনয়ন পাওয়ার অধিকার তারাই রাখে, তারাই নির্বাচিত হয়।’জাহাঙ্গীর বলেন, মাঠপর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে দলের কোনো কার্যক্রম নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৩ সালে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজ্জামেল হক এবং সাধারণ সম্পাদক আজমত উল্লা খান স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়েছেন। তাঁদের মতের বিরোধিতা করলেই নেতা-কর্মীদের দল থেকে বহিষ্কারের ভয় দেখানো হতো। তিনি বলেন, গত দেড় বছরে তিনি (জাহাঙ্গীর) মসজিদ-মন্দির-স্কুল-কলেজসহ নানা প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৯৪৩টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সাংসদেরা ১৯টি কর্মসূচি করেছেন কিনা, সন্দেহ।তিনি বলেন, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করলে গাজীপুরে আবার আওয়ামী লীগ আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। তিনি বলেন, এলাকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মুখিয়ে আছেন দলের জন্য কাজ করতে। তাঁদের মূল্যায়ন হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে আবার ভালো ফল করা সম্ভব।আনারস প্রতীক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এবং আজমত উল্লার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নামেন।উল্লেখ্য, সিটি করপোরেশন এলাকাটি চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে গাজীপুর-২ আসনের পুরোটাই সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত।
বলিউডের অভিনেতা শাহরুখ খান ছেলে সন্তানের বাবা হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বৃহানমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (বিএমসি)।বাবা হওয়ার পর দুঃখ ও আনন্দের মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন ‘বলিউড বাদশাহ’ শাহরুখ খান। ব্যক্তিগত বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ার বাড়াবাড়িতে যারপরনাই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ ৪৭ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেতা। অভিমানে পরিবারের নতুন অতিথি সম্পর্কে কোনো তথ্যই তিনি দেননি। এমনকি তৃতীয় সন্তানটি ছেলে না কি মেয়ে তাও তিনি বলেননি। জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। শাহরুখ মুখ না খুললেও, তিনি ছেলে সন্তানের বাবা হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিএমসি। এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অরুণ বামনি জানান, একটি ছেলে সন্তান জন্মের বিস্তারিত বিবরণ পাঠানো হয়েছে বিএমসি কর্তৃপক্ষকে। ছেলেটির অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শাহরুখ খান ও গৌরী খান দম্পতির নাম।অরুণ বামনি আরও জানিয়েছেন, গর্ভধারণের ৩৪ সপ্তাহ পর গত ২৭ মে আন্ধেরির মাছরানি হসপিটাল ফর ওমেনে দেড় কেজি ওজনের বাচ্চাটির জন্ম দিয়েছেন এক সারোগেট মা। তবে তাঁর পরিচয় জানানো হয়নি। জন্মের পর প্রথমে শিশুটিকে জুহুর নানাবতি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এখন শিশুটি খান পরিবারের সঙ্গেই আছে। এদিকে, বিএমসি’র অতিরিক্ত কমিশনার মনীশ মহেশকর জানিয়েছেন, ‘মুম্বাই শহরের যে কোন হাসপাতালে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশুর জন্মের বিবরণ আমাদের পাঠানো হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ীই শাহরুখ-গৌরীর সন্তানের জন্ম সনদ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমরা এটি পেয়েছি ১ জুলাই।’প্রসঙ্গত, সারোগেসি পদ্ধতিতে তৃতীয় সন্তানের বাবা হয়েছেন শাহরুখ। এ পদ্ধতিতে বাবা-মায়ের অনাগত সন্তানের ভ্রূণ পরিবারের বাইরের কোনো নারীর গর্ভে বেড়ে ওঠে। গৌরীর সিদ্ধান্তেই আবার বাবা হতে রাজি হন শাহরুখ। তাঁদের ছেলেমেয়ে আরিয়ান ও সুহানার বয়স যথাক্রমে ১৫ ও ১৩। এবার সুহানাকে আরেকটি ভাই উপহার দিলেন শাহরুখ-গৌরী।সন্তান জন্মের আগেই লিঙ্গ নির্ধারণের অভিযোগ ওঠায় শাহরুখকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। কারণ ভারতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ও বেআইনি। এমনকি শাহরুখের বিরুদ্ধে পিসিপিএনডিটি (প্রি-কনসেপশন অ্যান্ড প্রি-ন্যাটাল ডায়াগনস্টিক টেকনিকস) অ্যাক্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন সমাজকর্মী বর্ষা দেশপান্ডে। অভিযোগ পাওয়ার পর শাহরুখের বাড়িতে অনুসন্ধানও চালায় বিএমসি’র স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
ঈদ উপলক্ষে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে এই প্রজন্মের সংগীতশিল্পী জয় শাহরিয়ারের নতুন একক গান ‘ছুতো’। বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল ফরম্যাটে গানটি প্রকাশ পাবে। সংগীতপ্রেমীরা আই টিউনস, অ্যামাজন, স্পাটিফাই, র্যাপসডি, ব্যান্ড ক্যাম্প, গুগল প্লে-সহ বিশ্বখ্যাত সব মিউজিক পোর্টালে গানটি শুনতে ও কিনতে পারবেন শ্রোতারা। কিনতে খরচ পড়বে ৯৯ সেন্টস। এ ছাড়া  যে কেউ qineticmusic.com থেকে ৯৯ সেন্টস ও বাংলাদেশ থেকে যেকোনো মাস্টার, ডেবিট কার্ড, ব্র্যাক ব্যাংক ও ডাচ-বাংলার কার্ড দিয়ে মাত্র ১৫ টাকায় একক গানটি কিনতে পারবেন।ডিজিটাল পদ্ধতি ও সিঙ্গেল প্রকাশের কারণ জানতে চাইলে জয় শাহরিয়ার বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অডিও ইন্ডাস্ট্রি এখন “সিঙ্গেল”মুখী। পশ্চিমা বিশ্বে পুরো স্টুডিও অ্যালবাম প্রকাশের আগে এক বা একাধিক সিঙ্গেল প্রকাশ করার নিয়ম অনেক আগে থেকেই চালু রয়েছে। আর অডিও পাইরেসির এই যুগে ডিজিটাল ফরম্যাটে গান রিলিজটা সময়ের দাবি। এ সময়ের একজন শিল্পী হিসেবে পুরো বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের মিউজিক এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা আমার ও আমাদের দায়িত্ব।’ ‘ছুতো’ সিঙ্গেলটি ১২ জুলাই থেকে রেডিও ফুর্তিতে শুনতে পারবেন শ্রোতারা। আজব রেকর্ডস থেকে প্রকাশিত এই সিঙ্গেলটির পার্টনার হিসেবে আছে কাইনেটিক মিউজিক, রেডিও ফুর্তি, এম.ই লেবেল ও স্বপ্নবাজ।
ভারতের বিহার রাজ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান মহাবোধি মন্দিরে আজ রোববার ভোরে নয়টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পর্যটকসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে অভিহিত করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিব্বতের দুজন পুণ্যার্থী রয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় মন্দিরটির ভেতরে খুব বেশি লোক ছিল না।পুলিশের বরাত দিয়ে খবরে জানানো হয়, বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বোধগয়া তীর্থের মহাবোধি মন্দির ভবন ও ভবনের বাইরে এসব বিস্ফোরণ ঘটে। ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে কয়েক মিনিট পর পর বিস্ফোরণগুলো ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা কম থাকায় মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে দুটি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।ঘটনার পরপরই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, ফরেনসিক দল, জাতীয় তদন্ত সংস্থার সদস্যরা (এনআইএ) ঘটনাস্থলে যান। বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।খবরে জানানো হয়েছে, মহাবোধি মন্দিরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার কথা রাজ্য সরকারকে আগেই জানিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্দির এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল।গোয়েন্দারা তাদের সতর্কবার্তায় বলেছিল, মিয়ানমারে চলমান জাতিগত দাঙ্গার জের ধরে ভারতে বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।মহাবোধি মন্দিরটি শ্রীলঙ্কা, চীন, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৌদ্ধ পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখরিত থাকে। ২০০২ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে।
আন্দামান সাগরে আংশিক কাত হয়ে হয়ে ডুবে যাওয়া ‘এমভি হোপ’ জাহাজের উদ্ধার হওয়া ছয় নাবিকের পাঁচজন আজ রোববার দেশে ফিরছেন। অপর নাবিক আবু বকর সিদ্দিক থাইল্যান্ডের হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। এই ছয়জনকে দুর্ঘটনার দিন বৃহস্পতিবারই উদ্ধার করা হয়। পরের দিন শুক্রবার আরও তিন নাবিককে জীবিত এবং দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।এদিকে জাহাজডুবির ঘটনায় এখনো নিখোঁজ ছয় নাবিকের সন্ধানে আজ রোববার চতুর্থ দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।জাহাজটির মালিকপক্ষের স্বার্থরক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান (পিঅ্যান্ডআই ক্লাবের প্রতিনিধি) ইন্টারপোর্ট মেরিটাইম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন আবদুল কাদের প্রথম আলো ডটকমকে জানান, প্রথম দিন উদ্ধার হওয়া ছয় নাবিকের মধ্যে পাঁচজনের আজ রাত আটটার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছার কথা। তাঁরা এমভি বাক্সমুন নামের কনটেইনারবাহী একটি জাহাজে করে আসছেন।এই পাঁচজন হলেন জাহাজের চতুর্থ প্রকৌশলী মো. আবদুল হাকিম, ডেক ক্যাডেট মোখলেসুর রহমান এবং নাবিক মো. রুবেল, আলী হোসেন ও সাইফুল ইসলাম।জাহাজমালিকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পথে গত বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় থাইল্যান্ডের ফুকেত দ্বীপের কাছাকাছি সাগরে জাহাজটি কাত হয়ে যায়। এ সময় ক্যাপ্টেন জাহাজটি বিপজ্জনক মনে করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে পাঁচ নাবিক লাইফবোটে উঠে সাগরে নেমে পড়েন। আর অন্যরা ঝাঁপ দেন। পরে কাছাকাছি থাকা এমভি বাক্সমুন নামের কনটেইনারবাহী জাহাজে উঠে প্রাণে রক্ষা পান লাইফবোটে থাকা পাঁচজন। আর নাবিক আবু বকরকে সাগর থেকে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।পরের দিন শুক্রবার জাহাজের আরও তিন নাবিককে জীবিত এবং দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। জীবিত তিনজন হলেন মুশফিকুর রহমান, মো. মোবারক হোসেন ও রায়েক ফাইরুজ। আর মৃত দুজন হলেন জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মাহবুব মোরশেদ ও প্রধান প্রকৌশলী কাজী সাইফুদ্দিন।এখনো নিখাঁজ ছয়জন হলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন রাজীব চন্দ্র কর্মকার, দ্বিতীয় প্রকৌশলী মো. নেজাম উদ্দিন, ইলেকট্রিশিয়ান সাদিম আলী, প্রধান কুক নাসির উদ্দিন, নাবিক নাসির উদ্দিন ও মো. আলী হোসেন ।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ কারণে এক জনসভায় দিল্লি দখলের ডাক দিয়েছেন তিনি।পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়।মমতা দাবি করেছেন, আগামীতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার মূল কারিগর হবে তাঁর তৃণমূল কংগ্রেস। তারাই নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের কাছে ভিক্ষা চাইতে যাব না।বাংলার কাছে ওদের ভিক্ষা চাইতে হবে।যেভাবে চলছি, চালাচ্ছি, তাতে আমি দিল্লি চালিয়ে দেব।এরপর দিল্লিকে কিনে নেব আমরা।’ভারতের লোকসভা নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে নির্বাচন নিয়ে দলীয় প্রচার জোরদার করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা বা ইউপিএ এবং বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা বা এনডিএ।পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছেন, মেয়াদ ফুরোনোর আগেই আগামী চার মাসের মধ্যে লোকসভার ভোট হতে চলেছে। কারণ, ইউপিএ সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে।অন্যদিকে ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা চালিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ বা এনডিএ কোনো জোটই সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় গরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। দুই জোটকেই অন্য রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিয়ে জোট সরকার গড়তে হবে। সর্বশেষ ‘দ্য উইক’ সাময়িকীও তাদের সমীক্ষায় বলেছে, এনডিএ পেতে পারে ১৮৪টি আসন। আর ইউপিএ পেতে পারে ১৬২টি আসন।এসব সমীক্ষা প্রতিবেদন দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বস্ত হয়েছেন যে, আগামী নির্বাচনে তৃতীয় কোনো শক্তি বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের জোট গঠন করে ক্ষমতায় আসতে পারে। এই লক্ষ্যে তিনি ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপিবিরোধী ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের ডাক দিয়েছেন। যদিও এ ব্যাপারে তেমন সাড়া মেলেনি।অন্যদিকে বামদলগুলোও মুলায়ম, মায়াবতী, নবীন পট্টনায়ক, চন্দ্রবাবু নাইডু, জয়ললিতা এই নেতাদের নিয়ে একটি বিকল্প জোট গঠনের চিন্তাভাবনা শুরু করছে।মমতা জানেন, বিজেপি বা এনডিএর দিকে ঝুঁকলে তাঁর সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক হারাতে হবে। তাই আঞ্চলিক দল নিয়ে তৃতীয় একটি ফ্রন্ট গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি।রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের ফলাফলে যদি আঞ্চলিক দলের জোটের শক্তি সরকার গড়ার মতো অবস্থানে চলে আসে, সে ক্ষেত্রে মমতা নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় তৃতীয় জোটকে সমর্থন দিয়ে বসতে পারেন। এতে তাঁর দিল্লি দখলের স্বপ্নপূরণ হতে পারে। এমনকি মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগও আসতে পারে।
ধুম ৩’ ছবিতে জুটি বেঁধেছেন ক্যাটরিনা কাইফ ও আমির খান। প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত ক্যাটরিনাকে বিছানা-বিশ্রামেই থাকতে বলেছিলেন চিকিত্সকেরা। কিন্তু ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ আমির খানের সঙ্গে শুটিং শিডিউল মেলাতে সম্প্রতি জ্বর নিয়েই ‘ধুম ৩’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়ে আবারও পেশাদার মনোভাবের পরিচয় দিলেন ক্যাটরিনা।এ প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জিনিউজ জানিয়েছে, ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় বেশ কাহিল হয়ে পড়েছেন ক্যাটরিনা। শারীরিকভাবে প্রচণ্ড দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমিরের সঙ্গে ‘ধুম ৩’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। কারণ ক্যাটের সঙ্গে অভিনয়ের জন্য আগে থেকেই শিডিউল দিয়ে রেখেছিলেন আমির।সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ছবির শুটিংয়ের ক্ষেত্রে শারীরিক অসুস্থতা যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না—ক্যাটরিনা এর আগেও তা প্রমাণ করেছেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে সালমান খানের সঙ্গে ‘এক থা টাইগার’ ছবির শুটিং করেছিলেন তিনি।অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার ‘ধুম’ সিরিজের তৃতীয় ছবিতে প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন আমির-ক্যাটরিনা। বিজয় কৃষ্ণ আচার্য পরিচালিত ছবিটিতে আরও অভিনয় করছেন জন অ্যাব্রাহাম, অভিষেক বচ্চন, উদয় চোপড়া, জ্যাকি শ্রফ প্রমুখ। ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ২৫ ডিসেম্বর।
নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তিপণ্য বাজারে এনে চমকে দেওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাপলের খ্যাতি রয়েছে। অ্যাপলের পরবর্তী বড় ধরনের চমকের আগে কিছুটা সময় নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর কিছুটা অন্যদিকে মোড় নিতে পারে অ্যাপল। অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রযুক্তি-গুরু স্টিভ ওজনিয়াক সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছেন।মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত এক ফোরামে স্টিভ ওজনিয়াক বলেন, তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস মারা যাওয়ার দুই বছর পর অ্যাপলে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।অ্যাপল প্রসঙ্গে ওজনিয়াক বলেন, অ্যাপল এখন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং নিজের সংস্কৃতি চালু রাখতে পেরেছে। অ্যাপলের নেতা স্টিভ চলে গেলেও এখনো প্রতিষ্ঠানটির সংগ্রহে অসাধারণ পেটেন্ট রয়েছে। বর্তমানে নতুন মোড় নেওয়ার আগে কিছুটা সময় নিচ্ছে অ্যাপল।নতুন পণ্য উদ্ভাবন সম্পর্কে ওজনিয়াক বলেন, ইলেকট্রনিক ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে প্রতিবছর বৈপ্লবিক পরিবর্তন আশা করা যায় না। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে আইপ্যাড মিনি ও আইফোন ৫ বাজারে এনেছিল অ্যাপল। চলতি বছর আইফোনের নতুন সংস্করণের সঙ্গে স্মার্ট হাতঘড়িও বাজারে আনতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আজ রোববার সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকার শেয়ারবাজারে। বেলা ১১টায় লেনদেনের আধা ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে সূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে লেনদেনে গতি লক্ষ করা যাচ্ছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টায় ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩১৮ পয়েন্টে। সকাল সাড়ে ১০টায় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।এই সময়ে ডিএসইতে ২৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৫টির দাম বেড়েছে, কমেছে ২৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।আলোচ্য সময়ে এই স্টক এক্সচেঞ্জে ১৫৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।এই সময়ে ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএসসিসিএল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইউনাইটেড এয়ার, ওরিয়ন ফার্মা, পদ্মা অয়েল, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি, ইউনিক হোটেল, তিতাস গ্যাস, কেয়া কসমেটিকস প্রভৃতি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ শনিবার অবতরণের সময় যাত্রীবাহী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে দুজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ১৮০ জনেরও বেশি যাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এশিয়ানা এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটিতে ২৯১ জন যাত্রী এবং ১৬ জন ক্রু ছিলেন। বিমানটি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে সান ফ্রান্সিসকো আসে।উদ্ধারকর্মীরা প্রাথমিকভাবে ৪৯ জনকে আহত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই শিশুসহ ১০ জনের অবস্থা গুরুতর।দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও কোনো ব্যাখ্যা দেননি।বিমানটিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ১৪১ জন চীনা, ৭৭ জন দক্ষিণ কোরিয়ান ও ৬১ জন মার্কিন নাগরিক।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এম এ মান্নান বলেছেন, নির্বাচনে তাঁর বিজয়ের পেছনে স্থানীয় নয়, জাতীয় ইস্যু কাজ করেছে। সরকারের দুর্নীতি, খুন, লুটপাট, ব্যর্থতা—এসবে মানুষ বিরক্ত। তাই তাঁরা সরকারকে সমর্থন না দিয়ে তাঁকে দিয়েছেন।আজ রোববার গাজীপুরের সালনায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এম এ মান্নান।এম এ মান্নান ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের ওপর সরকার হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে বলেন, হেফাজতের ওপর হামলা মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। এটিও তাঁর বিজয়ের একটি কারণ।গাজীপুরের নবনির্বাচিত মেয়র আরও বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়েই কাজ করব। কারণ, সবার লক্ষ্য একটাই, তাহলো গাজীপুরের উন্নয়ন। গাজীপুরের উন্নয়নের জন্য তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানান এম এ মান্নান। প্রথমত, তিনি গাজীপুর এলাকায় যানজট কমাবেন; দ্বিতীয়ত, এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করবেন এবং তৃতীয়ত, গাজীপুরের জলাবদ্ধতা দূর করবেন।সকাল থেকেই গাজীপুরে এম এ মান্নানের বাসভবনে  শত শত নেতা-কর্মী ভিড় করেন। তাঁরা ফুল দিয়ে নবনির্বাচিত মেয়রকে শুভেচ্ছা জানান। তিনিও তাঁদের অভিনন্দন জানান।এর আগে ভোরে বঙ্গতাজ মিলনায়তনে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এম এ মান্নান প্রথম আলো ডটকমকে  বলেন, পরাজিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবেন তিনি। নির্বাচন চলাকালে অনিয়মের বিষয়ে যেসব অভিযোগ তুলেছিলেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, ‘আমাকে হারানোর জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছে। তবে জনগণই আমার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশন কীভাবে গড়বেন, জানতে চাইলে এম এ মান্নান বলেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করে, অভিজ্ঞ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে পরামর্শ কমিটি গঠন করব। সেই পরামর্শ কমিটির মাধ্যমে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে গাজীপুরকে একটি আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলব।’গতকাল শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৩৯২টি কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী মান্নান পেয়েছেন তিন লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৪ ভোট; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৭ ভোট। আজ রোববার ভোর চারটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান ফল ঘোষণা করেন।এম এ মান্নানের জন্ম ১৯৫০ সালে, গাজীপুর উপজেলার সালনায়। ১৯৭৮ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলে (জাগদল) যোগ দেন, যেটি পরে বিএনপিতে পরিণত হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।এম এ মান্নান বিএনপি সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। (প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন, তানভীর সোহেল ও শরিফুল হাসান, গাজীপুর থেকে)
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এম এ মান্নান বলেছেন, নির্বাচনে তাঁর বিজয়ের পেছনে স্থানীয় নয়, জাতীয় ইস্যু কাজ করেছে। সরকারের দুর্নীতি, খুন, লুটপাট, ব্যর্থতা—এসবে মানুষ বিরক্ত। তাই তাঁরা সরকারকে সমর্থন না দিয়ে তাঁকে দিয়েছেন। আজ রোববার গাজীপুরের সালনায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এম এ মান্নান। এম এ মান্নান ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের ওপর সরকার হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে বলেন, হেফাজতের ওপর হামলা মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। এটিও তাঁর বিজয়ের একটি কারণ। গাজীপুরের নবনির্বাচিত মেয়র আরও বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়েই কাজ করব। কারণ, সবার লক্ষ্য একটাই, তাহলো গাজীপুরের উন্নয়ন। গাজীপুরের উন্নয়নের জন্য তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানান এম এ মান্নান। প্রথমত, তিনি গাজীপুর এলাকায় যানজট কমাবেন; দ্বিতীয়ত, এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করবেন এবং তৃতীয়ত, গাজীপুরের জলাবদ্ধতা দূর করবেন। সকাল থেকেই গাজীপুরে এম এ মান্নানের বাসভবনে  শত শত নেতা-কর্মী ভিড় করেন। তাঁরা ফুল দিয়ে নবনির্বাচিত মেয়রকে শুভেচ্ছা জানান। তিনিও তাঁদের অভিনন্দন জানান।এর আগে ভোরে বঙ্গতাজ মিলনায়তনে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এম এ মান্নান প্রথম আলো ডটকমকে  বলেন, পরাজিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবেন তিনি। নির্বাচন চলাকালে অনিয়মের বিষয়ে যেসব অভিযোগ তুলেছিলেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, ‘আমাকে হারানোর জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছে। তবে জনগণই আমার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশন কীভাবে গড়বেন, জানতে চাইলে এম এ মান্নান বলেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করে, অভিজ্ঞ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে পরামর্শ কমিটি গঠন করব। সেই পরামর্শ কমিটির মাধ্যমে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে গাজীপুরকে একটি আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলব।’গতকাল শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৩৯২টি কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী মান্নান পেয়েছেন তিন লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৪ ভোট; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৭ ভোট। আজ রোববার ভোর চারটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান ফল ঘোষণা করেন।এম এ মান্নানের জন্ম ১৯৫০ সালে, গাজীপুর উপজেলার সালনায়। ১৯৭৮ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলে (জাগদল) যোগ দেন, যেটি পরে বিএনপিতে পরিণত হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।এম এ মান্নান বিএনপি সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। (প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন, তানভীর সোহেল ও শরিফুল হাসান, গাজীপুর থেকে)
নিশ্চিত জয়ের পথে এম এ মান্নানমোট কেন্দ্র ৩৯২প্রাপ্ত ফল: ২৮৩ এম এ মান্নান পেয়েছেনভোট: ২,৬৯,৯৫৭ আজমত উল্লা খান পেয়েছেনভোট : ১,৮৬,৫৯১রাত ২টা পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র থেকে পাওয়া ফল ১৫ জুন ছিল শনিবার। সেদিন চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সবগুলোতে হেরেছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মাত্র তিন সপ্তাহ পর গতকাল আরেক শনিবারে আওয়ামী লীগের দূর্গ বলে খ্যাত গাজীপুরেও একই পরিণতি হয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির।গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সর্বশেষ পাওয়া বেসরকারি ফলাফলে মেয়র পদে নিশ্চিত জয়ের পথে রয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান। রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্রে রাত দুইটা পর্যন্ত মোট ৩৯২ কেন্দ্রের মধ্যে ২৮৩টির ফলাফল পাওয়া গেছে। এম এ মান্নান (টেলিভিশন) পেয়েছেন দুই লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান (দোয়াত কলম) পেয়েছেন এক লাখ ৮৬ হাজার ৫৯১ ভোট।তবে রাত দুইটা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৩৪ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তাতে এম এ মান্নান পেয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৫৫১ ভোট। আর আজমত উল্লা পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৯৪০ ভোট।গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে বিকেল চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এখানে মোট ভোটার ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯ জন। সন্ধ্যার পর থেকে গাজীপুর সদরে বঙ্গতাজ পৌর মিলনায়তনে স্থাপিত অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা শুরু করেন।দীর্ঘ দুই দশক পর গাজীপুরে আওয়ামী লীগের এমন ফলাফলের কারণ কী? জেলার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দুই দলের নেতারাই স্বীকার করেছেন, এর আগে অনুষ্ঠিত চার সিটি নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব পড়েছে গাজীপুরে। তাঁরা মনে করেন, গাজীপুরের নির্বাচনের এই ফল প্রভাব ফেলবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কম ব্যবধানে পরাজয় হলে তা-ও হতো। কিন্তু বড় ব্যবধানের এ পরাজয় সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করবে।এর আগে ২০০৮ সালের আগস্টে চার সিটিতে নির্বাচনে সবগুলোতে হেরেছিল বিএনপি। এর মাত্র তিন মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছিল বিএনপির। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে তাঁদের দলেরও একই দশা হতে পারে। নেতাদের কেউ কেউ আবার বলছেন, এখন সতর্ক হওয়ার সময় নেই।চার সিটিতে পরাজয়ের পর গাজীপুরে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল সরকারি দল। স্থানীয়-কেন্দ্রীয় সব নেতা সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচন মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ফল দেখে গতকাল রাতে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মীকে আর দেখা যায়নি।চার সিটির নির্বাচন কতটা প্রভাব ফেলেছে জানতে চাইলে আজমত উল্লার নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ জাহিদ আহসান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার সিটির আগে যদি গাজীপুরের নির্বাচন হতো, তাহলে হয়তো আমরা জিতে যেতাম। কিন্তু চার সিটিতে পরাজয়ের প্রভাব গাজীপুরে এসে পড়েছে। তবে এর বাইরে জাতীয় ইস্যুগুলোও এই নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে কাজ করেছে।’ এই নির্বাচনের ফল সংসদ নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই এ কথা বলার সময় আসেনি। তবে এ নির্বাচনের প্রভাব তো অবশ্যই সংসদ নির্বাচনে পড়বে। তার আগে আওয়ামী লীগকে আরও সংগঠিত হতে হবে।গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের যে আস্থা নেই, সেটি চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। ওই জয় এই নির্বাচনে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে। সাধারণ মানুষ বুঝে গেছে, দেশের কোথাও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নেই। গাজীপুরে পরাজয়ের মাধ্যমে এই বার্তা আরও অনেক বেশি শক্ত হলো।বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান বলেন, শুধু গাজীপুরের নির্বাচন নয়, সামনের সব নির্বাচনেই এখন থেকে বিএনপি জয়ী হবে।গোপালগঞ্জের পর গাজীপুরকে বলা হতো আওয়ামী লীগের বড় ঘাঁটি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে গাজীপুরের সবগুলো আসনে জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনটি আসন পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৮৬ সালে গাজীপুর পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর কখনোই সেখানে জয় পায়নি বিএনপি। ১৯৯৫ সালের পর টঙ্গী পৌরসভার নির্বাচনেও কখনো হারেনি আওয়ামী লীগ। আর গত ২২ বছরে গাজীপুর শহরের সংসদীয় আসন কিংবা সেখানে স্থানীয় কোনো নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়নি। কিন্তু এবার গাজীপুরের দুর্গে বড় আঘাত হানল বিএনপি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে ভোট দিতে সহযোগিতা করেছে।গাজীপুরে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সিইসি এসব কথা বলেন। তিনি জনরায় মেনে নেওয়ার জন্য সব প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ফল ঘোষণার পর কোনো ধরনের বিজয় মিছিল না করার জন্যও অনুরোধ জানান।সিইসি বলেন, প্রার্থী, সমর্থক ও রাজনৈতিক দল কিছু অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ করেছে। যেসব অভিযোগের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় আজ রোববারও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করবে। তিনি বলেন, আজকাল যে পদ্ধতি চালু হয়েছে, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স হয়েছে, তার ওপর সবার যে সতর্ক দৃষ্টি; তাতে কেন্দ্র দখল, কারচুপি বা ভোট ডাকাতি সম্ভব নয়।বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে সিইসি বলেন, এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের অনিয়ম-সমস্যা তৈরি হয়নি। যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছে, সেখানে র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্র ছাড়াও আশপাশের এলাকাগুলোতে গণমাধ্যম যেভাবে দৃষ্টি রেখেছে, তাতে ভোটের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে দেশ-বিদেশে অবহিত করা সম্ভব হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, জাবেদ আলী ও মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাদিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।বিএনপির অভিযোগ: এর আগে বেলা তিনটার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের নেতৃত্বে দলের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসির সঙ্গে দেখা করে গাজীপুরের ভোট গ্রহণ নিয়ে কিছু অভিযোগ করেন। পরে এম কে আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুরের বেশ কিছু জায়গায় আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘিত হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে অবস্থান করে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে (টঙ্গী) একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিজে উপস্থিত থেকে ব্যালটে সিল মেরেছেন। ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে একজন নারী একাই ৩৬টি জাল ভোট দিয়েছেন।
ভোট গণনা শেষ হওয়ার অনেক আগেই বাসায় ফিরে যান আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খান। চেষ্টা করেও রাতে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে পারেননি গণমাধ্যমকর্মীরা। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন আজমত উল্লা খান। এরপর গত রাত আটটার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন। টঙ্গীতে তাঁর বাসায় তখন অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জটলা। কিন্তু কারও সঙ্গে কোনো কথা না বলে সোজা বাসার ভেতরে চলে যান আজমত উল্লা। এ সময় তাঁর চোখে-মুখে ছিল ক্লান্তি আর বিষণ্নতার ছাপ। প্রতিক্রিয়া জানার জন্য রাত ১০টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদক মুঠোফোনে অনেক চেষ্টা করেও আজমত উল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। রাত আটটার পর গাজীপুর সদরে বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণকক্ষে ভোটের ফলাফল ঘোষণার সময়ও আজমত উল্লার পক্ষের বা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কাউকে দেখা যায়নি। সেখানে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী ও তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিত ছিল। ১৭ বছর ধরে টঙ্গী পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আজমত। ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু, ব্যক্তি হিসেবেও ছিলেন সমান জনপ্রিয়। কিন্তু ভোটের ফলাফলে বিরাট ধাক্কা খেয়েছেন আজমতের অনুসারীরাও। তবে ভোট গ্রহণ শুরুর পর গতকাল সকালে হাসিমুখেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আজমত উল্লা। ভোট দেওয়ার পর জয়-পরাজয় সম্পর্কে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘জয়-পরাজয় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নির্ধারণ করেন। তবে একটি কথা আছে, ভয়েস অব দ্য পিপল ইজ ভয়েস অব দ্য গড। জনগণের রায় আমি অবনত মস্তকে মেনে নেব।’ তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে—বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নানের এমন অভিযোগের জবাবে তখন আজমত উল্লা জানিয়েছিলেন, ‘এটা ওনার (মান্নান) অভ্যাস। তিনি সব সময় নেতিবাচক কথা বলেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দিনভর নানা অভিযোগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। কিন্তু রাতে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এগিয়ে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দলটির নেতারা।গতকাল শনিবার রাত ১০টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এখনো প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় আসেনি। তবে ফলাফল বলছে, এটা জনগণের বিজয়। মানুষ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, গাজীপুরের ফলাফল আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবির প্রতি জনগণের ইচ্ছার প্রকাশ।অবশ্য গতকাল রাত ১০টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ করে, বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষ হওয়ার পরও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ফলাফল আটকে রেখেছেন।এর আগে দিনভর গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় চার দফা সংবাদ ব্রিফিং করেছে বিএনপি। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপুর ১২টায়, বেলা দুইটা, তিনটা ও সন্ধ্যা ছয়টায় এসব সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়ম, ধীরগতিতে ভোট গ্রহণ, বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নানের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ করা হয়।দুপুর ১২টার ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানোর ‘নীলনকশা’ চলছে। তা করা হলে সরকারের ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজবে বলে ওই ব্রিফিংয়ে হুঁশিয়ার করে দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম।এ ছাড়া এম কে আনোয়ারের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল গতকাল দুপুরে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোট গ্রহণের নানা অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করেন। তবে, সন্ধ্যার ব্রিফিংয়ে অভিযোগের মাত্রা কমে যায়। তখন দিনভর জানানো অভিযোগের চেয়ে ফলাফলের দিকেই বেশি জোর দেন নেতারা।সন্ধ্যার সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের কাছে আন-অফিশিয়ালি খবর আসছে, টেলিভিশন প্রতীকের (এম এ মান্নান) প্রার্থী অধিকাংশ কেন্দ্রে এগিয়ে আছেন। এমনকি আজমত উল্লা খানের নিজ কেন্দ্রেও এম এ মান্নানের বিজয়ের খবর আসছে। এ খবর শুনে সরকারের পেটুয়া বাহিনী হিসেবে পুলিশ নির্বাচনের প্রকৃত ফলাফল পাল্টে দেওয়ার মতো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয় কি না, সে আশঙ্কা করছি।’এত অভিযোগের পরও বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী জিতে গেলে কি করবেন—সন্ধ্যার সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এখনো সম্পূর্ণ ফলাফল আসেনি। আমরা তা পর্যবেক্ষণ করছি। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে কি না, তা দেখে জবাব দেব।
নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজমত উল্লা খানের পরাজয় হয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নেতারা। তবে তাঁরা এও বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে।গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহাজোট-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পরাজয়ের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের ভোটের দুর্গে এমন হানা দেওয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না মহাজোট নেতাদের কেউ কেউ।নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর প্রথম দিকে আজমত উল্লা খানের অবস্থান ভালো ছিল না। কিন্তু মহাজোটগত সমর্থন পাওয়ার পর আজমত উল্লার জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই।জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিএনপি এ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা পারেনি। প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে ক্ষমতাসীন দলের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। এ নির্বাচনে সরকারি দল ন্যূনতম কোনো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেনি বলেও জানান তোফায়েল আহমেদ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুরে দলের দুজন নেতা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি। তা ছাড়া মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এক সুযোগসন্ধানী স্থানীয় জনগণকে জিম্মি করে রাতারাতি অর্থবিত্ত বানিয়ে এই সিটির মেয়র হতে চেয়েছিলেন। নির্বাচন নিয়ে এ সুযোগসন্ধানীর নাটক, জনগণের সঙ্গে তাঁর প্রহসন প্রভৃতি কারণে এলাকার মানুষ সরকারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে।১৪ দলের অন্যতম নেতা ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, চার সিটি করপোরেশনের ফলাফলের ধারাবাহিকতা, জাতীয় রাজনীতির প্রভাব, নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার ও বিএনপি-জামায়াত জোটের অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবে মহাজোটের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে ঐতিহ্য আমরা অর্জন করেছি, তা টিকিয়ে রাখা আমাদেরই দায়িত্ব। দলীয় সরকার থাকলেও নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব, এই নির্বাচন তার বড় প্রমাণ।’১৪ দলের নেতা, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, তা সবার মেনে নেওয়া উচিত। ভোটের ফল পক্ষে থাকলে মানব আর বিপক্ষে থাকলে মানব না, এটা হতে পারে না।’জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই নির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। বিজয়ী হয়েছে মানুষের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের। এই নির্বাচন থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত।
মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সেনাবাহিনী সরিয়ে দেওয়ার পর সেখানে মুরসি সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। মেশিনগানসহ ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন মুরসির সমর্থকেরা। শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানী কায়রোসহ বিভিন্ন এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন।রাতের ব্যাপক সংঘর্ষের পর গতকাল শনিবার রাজধানীতে বড় ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ করে মুরসির পুনর্বহাল দাবি করেছে তাঁর সমর্থকেরা। তবে মুরসিবিরোধীরাও রাজপথে আছে। এই অবস্থায় সংঘাত আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। রাজপথে সংঘাতের নিন্দা এবং সহিংসতা বন্ধে সেনাবাহিনীসহ সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।এদিকে, দেশটির অন্যতম বিরোধী নেতা মোহাম্মদ এল বারাদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনা গতকাল জানায়, অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এল বারাদি। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাবেক এই প্রধান মিসরের উদার ও বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর একটি জোটের নেতৃত্ব দেন।কয়েক দিনের বিক্ষোভের পর সেনাবাহিনী গত বুধবার প্রেসিডেন্ট মুরসিকে উৎখাত করে। সেনাবাহিনীর এই হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে গত শুক্রবার ‘প্রত্যাখ্যান দিবস’ পালন করে মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুড। ওই দিন জুমার নামাজেরপর থেকে রাস্তায় নামতে শুরু করে ব্রাদারহুডের কর্মী-সমর্থকেরা। তাদের শীর্ষনেতা মোহাম্মদ বাদি ঘোষণা করেন, মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মুরসির সমর্থকেরা কায়রোতে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের দিকে অগ্রসর হলে সেনাবাহিনী গুলি চালায়। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এরপর সংঘাত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে শহরের বিভিন্ন এলাকায়।রাতে মুরসির সমর্থক ব্রাদারহুডের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কায়রোর তাহরির স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে শহরের মানিয়াল এলাকায় তাদের বাধা দেয় স্থানীয় লোকজন। এ সময় দুই পক্ষে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত সাতজন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ বাদির উসকানিমূলক বক্তব্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর দলের লোকজন মানিয়াল এলাকায় হামলা চালায়। স্থানীয় বাসিন্দা আহমেদ ফাতাহ বলেন, ‘তারা আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করে যেন আমরা সবাই কাফের। আল্লাহু আকবর স্লোগান দিয়ে তারা আমাদের ওপর গুলি ছুড়তে শুরু করে।’ মানিয়াল এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, ব্রাদারহুডের লোকজন সব ধরনের অস্ত্র নিয়ে আমাদের এলাকায় হামলা চালায়।রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়, তাহরির স্কয়ারে মুরসির সমর্থকেরা তাদের বিরোধীদের ওপর গুলি চালায়। এতে সেখানে নিহত হয়েছেন অন্তত দুজন। সেনাবাহিনী সাঁজোয়া যান নিয়ে সেখানে পৌঁছার পর দুই পক্ষ পিছু হটে।কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি জায়গায় ক্যাম্প বানিয়ে মুরসি সমর্থকেরা সেখানে অবস্থান করছে ১০ দিন ধরে। শুক্রবার রাতে সেখানেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এ ছাড়া ভূমধ্যসাগরীয় শহর আলেকজান্দ্রিয়ায়ও মুরসি সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনা জানায়, সেখানে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন।দেশের উত্তরাঞ্চলে সিনাই উপত্যকার আল-আরিশ শহরে প্রাদেশিক সদর দপ্তরে হামলা চালায় ব্রাদারহুডের সশস্ত্র কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানে বন্দুকযুদ্ধের পর প্রাদেশিক সদর দপ্তর ভবনে ব্রাদারহুডের ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় তাদের কর্মীরা।গত বুধবার মুরসিকে সরিয়ে দেশের সংবিধান স্থগিত করে সেনাবাহিনী। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত বৃহস্পতিবার শপথ নেন দেশটির সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতের প্রধান আদলি মানসুর। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আহমেদ আলী গতকাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা কোনো পক্ষ নিচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য, দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া।’এদিকে, শান্তিপূর্ণভাবে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। তিনি বলেছেন, কোনো এক পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।রাজপথে সংঘাতের নিন্দা এবং সহিংসতা বন্ধে সেনাবাহিনীসহ সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, ‘মিসরে আজ যে সংঘাত শুরু হয়েছে, আমরা তার নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে সংঘাত বন্ধে সব পক্ষের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’আদালতে মোবারক: মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের বিচার গতকাল থেকে আবার শুরু হয়েছে। গতকাল মোবারককে আদালতে হাজির করা হয় শুনানির জন্য।২০১১ সালের শুরুতে মোবারকের বিরুদ্ধে দেশবাসীর তুমুল আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগে মোবারক এবং তাঁর সময়কার নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ সাত কর্মকর্তার বিচার হচ্ছে। এএফপি, রয়টার্স।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নায়ক নেলসন ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার জানিয়েছিল তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনো ‘সংকটাপন্ন তবে স্থিতিশীল’।এদিকে ম্যান্ডেলার লাইফ সাপোর্ট যন্ত্র খুলে ফেলার মতামত প্রত্যাখ্যান করেছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা বলেছেন, ম্যান্ডেলার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্রিয়া বড় পরিসরে বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতেই সেটা করা ঠিক হবে না।ম্যান্ডেলার পরিবারের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু এ কথা জানিয়েছেন। তিনি হলেন ডেনিস গোল্ডবার্গ। তিনি ম্যান্ডেলার বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ের সহকর্মী ছিলেন। অর্ধশতাব্দীর বেশি সময়জুড়ে বন্ধু হিসেবে তিনি ম্যান্ডেলার পাশে রয়েছেন। গোল্ডবার্গ গত শুক্রবার জানিয়েছেন, ম্যান্ডেলার লাইফ সাপোর্ট যন্ত্র খুলে ফেলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং অবশেষে তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।গোল্ডবার্গ বলেন, ‘বিষয়টি যে উত্থাপন করা হয়েছিল তা আমাকে জানানো হয়। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাঁরা বিষয়টি কেবল তখনই বিবেচনাকরতে পারেন, যদি প্রকৃতপক্ষেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। যেহেতু সে রকম কিছু ঘটেনি, তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত ম্যান্ডেলা সুস্থ হচ্ছেন, ততোক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা (চিকিৎসকেরা) তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’৮০ বছর বয়সী গোল্ডবার্গ দক্ষিণ আফ্রিকায় সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গদের শাসনের বিরুদ্ধে ম্যান্ডেলার সঙ্গে লড়েছিলেন। এ কারণে ম্যান্ডেলার সঙ্গে তাঁকেও ১৯৬৪ সালে কারাবরণ করতে হয়। গত সোমবার তিনি অসুস্থ ম্যান্ডেলাকে দেখতে প্রিটোরিয়ার মেডিক্লিনিক হার্ট হাসপাতালে যান। ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত ম্যান্ডেলাকে গত ৮ জুন ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এর আগে গোল্ডবার্গ বলেছেন, ‘ম্যান্ডেলা পরিষ্কারভাবেই খুবই অসুস্থ মানুষ। তবে তিনি সচেতন রয়েছেন। আমি যখন তাঁর সঙ্গে কথা বলি তখন তিনি তাঁর মুখ ও চোখ নাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।’ ম্যান্ডেলার তিন সন্তানকে সমাহিত করা নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ২৬ জুন আদালতে বেশ কিছু নথি দাখিল করেন পরিবারের আইনজীবীরা; যার মধ্যে কয়েকটি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে একটি নথিতে দাবি করা হয়েছে, ম্যান্ডেলা ‘স্থায়ী বোধশক্তিহীন অবস্থায়’ রয়েছেন। যন্ত্রের সাহায্যে তাঁকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সাহায্য করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা ম্যান্ডেলার পরিবারকে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের দপ্তর বলেছে, এটা সত্যি নয়। তবে ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতেও অস্বীকার করেছে দপ্তর। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থাকে সংকটাপন্ন তবে স্থিতিশীল বলে উল্লেখ করে। দক্ষিণ আফ্রিকার পার্লামেন্ট শুক্রবার কেপটাউন গির্জায় ম্যান্ডেলার জন্য এক প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এএফপি।
মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন টাইমস-এর বিরুদ্ধে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পত্রিকাটি খালেদা জিয়ার সই জাল করে তাঁর নামে নিবন্ধ ছাপিয়েছে—বিএনপির নেতাদের তরফে এমন দাবি করায় প্রধানমন্ত্রী মামলা করার এ আহ্বান জানান। খবর বাসস ও ইউএনবির।যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিলটন হোটেলে গত শুক্রবার সকালে (স্থানীয় সময়) ব্রিটেন ও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসীদের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, যদি প্রকৃতই (খালেদা জিয়ার) সই নকল করে পত্রিকাটি নিবন্ধ ছেপে থাকে, তবে ‘আপনারা কেন ওয়াশিংটন টাইমস-এর বিরুদ্ধে মামলা করছেন না?’প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতারা এখন দাবি করছেন, খালেদা জিয়ার স্বাক্ষর জাল করে তাঁর নামে নিবন্ধটি প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমার প্রশ্ন হলো, ওয়াশিংটন টাইমস কীভাবে তাঁর (খালেদা জিয়া) নামে নিবন্ধ প্রকাশ করার ঔদ্ধত্য দেখাল?’শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা নিবন্ধটি প্রকাশের পর এর পক্ষে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও তাঁরা এখন পাল্টা যুক্তি দেখাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যদি তাঁর স্বাক্ষর সত্যিই জাল করা হয়, তাহলে কেন বিএনপি ওয়াশিংটন টাইমস  কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করছে না?’প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজারব্যবস্থা (জিএসপি) বাতিল ও বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়ে ওয়াশিংটন টাইমস-এ নিবন্ধ লিখে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। তিনি আরও বলেন, সর্বস্তরের জনগণের ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিএনপির নেতা এখন ওয়াশিংটন টাইমস-এ নিবন্ধ লেখার কথা অস্বীকার করছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে যদি দেশপ্রেম থাকত, তাহলে তারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে পারত না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিবন্ধটি যে খালেদা জিয়া নিজেই লিখেছেন ওয়াশিংটন টাইমস কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এটাই প্রমাণ করে, বিএনপি কত বড় মিথ্যাবাদীর দল।’নিবন্ধ প্রকাশে ওয়াশিংটন টাইমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী লন্ডনভিত্তিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা খুঁজে বের করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তারা যে জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানটি আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন খাতে বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের চিত্র দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানান। সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতে ইসলামের সহিংস কর্মকাণ্ডের কথা উল্ল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার উৎখাতে ৪ থেকে ৬ মে দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলেছে। তবে সরকার সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছে।
বাংলাদেশি দুই বোনকে মুম্বাইয়ে পাচারের সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের বাড়ি চট্টগ্রামে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই বোনকে কলকাতায় কাজের লোভ দেখিয়ে একটি দালাল চক্র বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে নিয়ে আসে। হাওড়া রেলস্টেশনে আসার পর তাঁরা পাচারের বিষয়টি বুঝতে পারেন। তখন তাঁরা চিৎকার করলে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সেখান থেকে গৌতম ও রিংকু নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।উদ্ধার হওয়া দুই বোনকে লিলুয়ার সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার নবগঠিত আড়াইহাজার ও গোপালদী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের দুটিতেই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তাঁরা কেউই দলের সমর্থন না পেয়ে নির্বাচন করেন।এর মধ্যে আড়াইহাজারে জয়ী হয়েছেন সম্প্রতি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক আড়াইহাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান (তালা)। আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হাবিবুর পেয়েছেন পাঁচ হাজার ১৯৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী ও আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুন্দর আলী (চশমা) পেয়েছেন চার হাজার ৩৭৪ ভোট। এই পৌরসভায় বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী পারভীন আক্তার (দোয়াত-কলম) পেয়েছেন তিন হাজার ৫৬৯ ভোট।অন্যদিকে গোপালদী পৌরসভায় জয়ী হয়েছেন আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ হালিম শিকদার (আনারস)। সাবেক সাংসদ এমদাদ ভূঁইয়ার অনুসারী হিসেবে পরিচিত হালিম পেয়েছেন নয় হাজার ৯০৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী ও গোপালদী পৌর বিএনপির সভাপতি আবুল বাশার (কাপ-পিরিচ) পেয়েছেন ছয় হাজার ২৮৭ ভোট। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম (তালা) পেয়েছেন চার হাজার ৫২১ ভোট।রাত সোয়া ১০টার দিকে দুটি পৌরসভায় ফলাফল ঘোষণা করেন দুটি পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তারা।প্রতিক্রিয়া: ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন না হাবিবুর রহমান। পরাজিত প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের নেতা সুন্দর আলী ফল ঘোষণার পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি মেকানিজমের নির্বাচন হয়েছে।’গোপালদী পৌরসভায় জয়ী এম এম হালিম শিকদার বলেন, ‘এই জয় গোপালদীর মানুষের।’ পরাজিত প্রার্থী আবুল বাশারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দিয়েও ওষুধনীতি ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট আইন চূড়ান্ত করেনি। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আইনসহ আরও কিছু কাজ অসমাপ্ত রেখেছে। সরকারের শেষ সময়ে এসে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল’ গঠন করাহয়েছে। স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এই কাউন্সিলের কোনো সভা মন্ত্রণালয় এখনো ডাকতে পারেনি। জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, প্রতিটি কাজই করা সম্ভব ছিল। তাতে জবাবদিহি বাড়ত। মন্ত্রণালয়ের কিছু ব্যক্তি জবাবদিহি বাড়ুক, তা চান না। দুই মাস আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেছিলেন, এসব কাজ না হলেও স্বাস্থ্যসেবা পেতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে না।স্বাস্থ্য কাউন্সিল: জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারপ্রধানের নেতৃত্বে জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠন করা হবে।’ এই কাউন্সিলের কাজ মন্ত্রণালয়কে দিকনির্দেশনা দেওয়া ও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করা, নজরদারি করা, দেশের পুষ্টি পরিস্থিতি দেখা। গত ২ মে প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে ৪৪ সদস্যের এই কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।একাধিক সদস্য বলেছেন, মতামত না নিয়েই তাঁদের নাম কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নিয়ম রক্ষার জন্য সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে এই কাউন্সিল করেছে মন্ত্রণালয়।ওষুধনীতি: আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিল, ‘মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওষুধনীতি যুগোপযোগী করা হবে।’খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছর দুই আগে ওষুধনীতি যুগোপযোগী করার জন্য কমিটি হয়েছিল। ওই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত একজন ওষুধ বিশেষজ্ঞ বলেন, নয় মাস আগেই ওষুধনীতি চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। অজ্ঞাত কারণে মন্ত্রণালয় খসড়াটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠাচ্ছে না।ট্রাস্ট: অসচ্ছল রোগীদের জন্য দেশি-বিদেশি ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় তহবিল গঠন এবং তা পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্ট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কয়েক মাস আগে খসড়া ‘স্বাস্থ্যসেবা ট্রাস্ট আইন, ২০১২’ তৈরি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ট্রাস্ট হবে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। ট্রাস্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। আইনের খসড়া প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, যে গতিতে কাজ হচ্ছে, তাতে এই সরকারের আমলে এই আইন চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আইন: বেশ কিছু বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের নিজস্ব জায়গা ও হাসপাতাল নেই। পর্যাপ্তসংখ্যক নিয়মিত শিক্ষকও নেই। হাতে-কলমে শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির সময় ইচ্ছামতো ফি ও নানা অজুহাতে টাকা নেয় কর্তৃপক্ষ।অভিযোগ আছে, এদের ওপর সরকারের কার্যত নিয়ন্ত্রণ নেই। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, আইন না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ‘বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা আইন, ২০১৩’-এর প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে। কিন্তু এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি নেই।
সারা দেশে অনুমোদিত ২৮ হাজার পোশাক কারখানা পরিদর্শনের জন্য সরকারি একমাত্র প্রতিষ্ঠান— কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের পরিদর্শক আছেন মাত্র ৩৯ জন। অঙ্কের হিসাবে একজন পরিদর্শকের ৭১৭টির বেশি কারখানা পরিদর্শনের কথা। রাজধানীতে অনুমোদিত পোশাক কারখানা আছে ১৭ হাজার।পরিদর্শনের জন্য এই পরিদপ্তরের নিজস্ব কোনো পরিবহন নেই। এসব তথ্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের।২০০১ সালের করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা দেশে অনুমোদন নেই এমন পোশাক কারখানা আছে দুই লাখ ৪১ হাজার। তবে গত ১২ বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে না কমেছে, তার কোনো হিসাব নেই পরিদপ্তরের কাছে। পরিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, লোকবল ও আনুষঙ্গিক সংকটে অননুমোদিত কারখানা পরিদর্শন করতে পারছেন না তাঁরা।কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তর সূত্র জানায়, সারা দেশে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদপ্তরের ৩১৪টি পদের মধ্যে ১৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। দীর্ঘদিন ১৩৩টি পদ শূন্য আছে। সারা দেশে ১০৩টি পদের বিপরীতে পরিদর্শক আছেন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে পরিদর্শনে অবহেলা ও গাফিলতির জন্য ১২ জন পরিদর্শক সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।ঢাকা বিভাগে ও রাজধানীতে পরিদর্শনের জন্য ৩৬টি পদের বিপরীতে পরিদর্শক আছেন ২০ জন। পরিদপ্তরের অধীন ঢাকা, রংপুর ও চট্টগ্রামে মাত্র তিনটি বিভাগীয় কার্যালয় আছে। ঢাকা বিভাগের অধীন নারায়ণগঞ্জ, রংপুর বিভাগের রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লায় আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। এসব কার্যালয়ে একজন করে পরিদর্শক আছেন।কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের উপপ্রধান পরিদর্শক মঞ্জুরুল কাদের বলেন, প্রায় প্রতিদিন শ্রম আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজিরা দিতে হয় বেশির ভাগ পরিদর্শককে। নিজস্ব পরিবহন ও পরিদর্শকের সংকটে সময়মতো কারখানা পরিদর্শন করা যায় না। পরিদর্শকদের যে ভ্রমণভাতা দেওয়া হয়, তা দিয়ে বাসভাড়াও হয় না।গত মাসে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন ওবায়দুল ইসলাম। ওই সময় তিনি প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের জন্য দুই হাজার ২৯১ জনের জনবল কাঠামো উপস্থাপন করে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। এই জনবল পাওয়া গেলে কলকারখানা পরিদর্শন জোরালো করা যাবে।ত্রুটিপূর্ণ কারখানার বিরুদ্ধে মামলা: গত পাঁচ মাসে কারখানায় ত্রুটির জন্য শ্রম আদালতে পরিদপ্তর ১৮৩টি মামলা করেছে। এর মধ্যে ১৭৭টি মামলা করা হয় পোশাক কারখানায় বিকল্প সিঁড়ি না থাকা বা সিঁড়ি অপ্রশস্ত হওয়ায়। এগুলোতে অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই।গত বছর ত্রুটিপূর্ণ কারখানার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল এক হাজার ৫৬৬টি। আর ২০১১ সালে মামলার সংখ্যা ছিল এক হাজার ৯৬।পরিদপ্তর সূত্র জানায়, শ্রম আইনের ৩২৬ ধারা অনুযায়ী, কোনো কারখানা বা কোনো শ্রেণীর কারখানা নির্মাণ, প্রতিষ্ঠা বা সম্প্রসারণের জন্য এই পরিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শকের অনুমোদন নিতে হয়। কারখানার অনুমোদনের (লাইসেন্স) জন্য কারখানার ধরন অনুযায়ী ৫০০ থেকে ১৮ হাজার টাকা ফি দিতে হয়।পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এই পরিদপ্তরের দায়িত্ব হলো কারখানার ভেতরে পর্যাপ্ত স্থান, নিরাপত্তা, আলো-বাতাস, যন্ত্রপাতি ও কেমিক্যাল রাখার স্থান ও কারখানায় ওঠা-নামার সিঁড়ি প্রশস্ত আছে কি না, তা পরিদর্শন করা। এগুলোর ঘাটতি থাকলে পরিদপ্তর সংশ্লিষ্ট কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। আর অবকাঠামো ঠিক আছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব হলো রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও পৌরসভার।শর্ত পূরণে ব্যর্থ কারখানাগুলোকে ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তা ঠিক করার জন্য চিঠি দেয় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তর। কারখানার মালিক পদক্ষেপ না নিলে শ্রম আদালতে মামলা করার নিয়ম। তবে শ্রম আইনে দায়ের হওয়া মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। ফলে অনেক সময় মালিক জরিমানার এই টাকা দিয়ে কারখানা আর ঠিক করেন না। তাই আইন সংস্কার না হলে কারখানাগুলো ত্রুটিপূর্ণই থেকে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত ১১: কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের বিরুদ্ধে সময়মতো ও যথাযথভাবে কারখানা পরিদর্শন না করারও অভিযোগ আছে।সাভারের নয়তলা রানা প্লাজায় ধসের আগে ফাটল দেখা দিলেও পরিদর্শনে যায়নি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তর। পরদিন ২৪ এপ্রিল ভবনটি ধসে পড়লে এক হাজার ১৩১ জন পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েক শ শ্রমিক। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শককে প্রত্যাহার এবং তিনজন পরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।গত বছরের ২৪ নভেম্বর আগুনে পুড়ে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডের ১২৩ পোশাকশ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা কারখানাটি পরিদর্শন করেননি। ওই ঘটনায় পরিদপ্তরের ছয়জন পরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।গত ২৬ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের পাশে স্মার্ট এক্সপোর্ট লিমিটেডে আগুন লেগে সাতজন পোশাকশ্রমিক মারা যান। এ ঘটনায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের দুজন পরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।কারখানা পরিদর্শন প্রসঙ্গে মো. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, পরিদপ্তরে পরিদর্শক ও অনুষঙ্গিক সংকট বর্তমানে চরম পর্যায়ে, তাই সব কারখানা সময়মতো পরিদর্শন করা যাচ্ছে না। তার পরও কারখানা পরিদর্শনে সাধ্যমতো চেষ্টা চালানো হচ্ছে।তবে মিরপুরের শেওড়াপাড়ার শামীম গ্রুপের এম অ্যান্ড শার্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন, মিরপুর ১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে অবস্থিত ভার্টেক্স ফ্যাশন নামের পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপক (কারখানা) নজরুল ইসলাম, খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডের কাছে মোহাম্মদী গ্রুপ লিমিটেডের একটি পোশাক কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ এহতেশাম কবির প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের কারখানায় পরিদর্শক এসেছিলেন। সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে গেছেন।
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অনেকে বলেন, ড. ইউনূসকে সালাম দিতেও ভয় লাগে। কোন সময় কোন বিপদে পড়ি। কিন্তু আমাদের সমাজ এমন ছিল না। পরিবারের মধ্যেও ভিন্ন মত থাকে। কিন্তু এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে একজনকে কেউ এক পাশে দেখলে অন্যজন অপর পাশে গিয়ে বসে।’ গতকাল শনিবার এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন। এর জবাবে বিশিষ্ট নাগরিকেরা ইউনূসের বিভিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করে তাঁর প্রশংসা করেন। তাঁরা আরও বলেন, ইউনূসের অবদানের জন্য তাঁরা গর্বিত। মুহাম্মদ ইউনূসের পারিবারিক বন্ধু সাবেক সচিব এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী পরিবারের পক্ষ থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারসহ যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল মেডেল ও রাষ্ট্রপতির মেডেল প্রাপ্তি উপলক্ষে তাঁকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এবং ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদকে স্মারক ক্রেস্ট দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস ক্ষুদ্রঋণকে দারিদ্র্য বিমোচনের অস্ত্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন। পৃথিবীর অনেক দেশই দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্রঋণকে ব্যবহার করছে। ইউনূসের কারণে আজ বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত।’অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, বাজার অর্থনীতি যাদের দিকে মনোযোগ দিত না, যাদের কল্যাণে কিছু করত না, সেই মানুষদের ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে ড. ইউনূস শক্তিশালী করে তুলেছেন।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, ‘অনেকে দলিল-দস্তাবেজ ঘেঁটে বের করেছেন, আমি নাকি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় অধ্যাপক ইউনূসকে সব ক্ষমতা দিয়ে রেখেছিলাম। হ্যাঁ, আমরা বোর্ডের সদস্যরা আলোচনা করেই ঋণ অনুমোদন, পদোন্নতিসহ অনেক কিছুর ক্ষমতা দিয়েছিলাম। এ কারণেই গ্রামীণ ব্যাংক ও ইউনূস নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।’অনুষ্ঠানে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী লতিফুর রহমান বলেন, অধ্যাপক ইউনূস হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পরও থেমে নেই। দেশের জন্য, বিশ্বের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকীর ছেলে ও ইউনাইটেড ব্যাংক অব সুইজারল্যান্ডের অন্যতম ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন তাঁর মা রেহানা সিদ্দিকী।অনুষ্ঠানে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, অর্থনীতিবিদ, সাবেক আমলা ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
থাইল্যান্ডের উপকূলে আন্দামান সাগরে আংশিক ডুবে যাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি হোপ থেকে গত শুক্রবার উদ্ধার হওয়া দুই মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মাহবুব মোরশেদ (৪৫) ও প্রধান প্রকৌশলী কাজী সাইফুদ্দিন (৫২)।গতকাল মোরশেদের মৃত্যুর খবর জানার পরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী রিজভীনা মাহবুব। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। এমভি হোপের দুর্ঘটনার পর থেকেই নানা ভয় আর শঙ্কা জেঁকে বসেছিল তাঁর মধ্যে। এখন পরিবারে চলছে মাতম।মাহবুব মোরশেদের বড় মেয়ে চার বছরের যাহরার একটাই কথা, ‘আমার বাবাকে চাই। সাগর থেকে বাবাকে এনে দাও।’ যাহরার কান্নায় চট্টগ্রামের হালিশহরের কে ব্লকের ২/১ নম্বরের বাড়ির বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মোরশেদের ছোট মেয়ে যাইমার বয়স এক বছর। রিজভীনা ছোট দুই মেয়েকে ভরসা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।এদিকে গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত নিখোঁজ অপর ছয় নাবিকের সন্ধান মেলেনি। তাঁরা হলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন রাজীব চন্দ্র কর্মকার, দ্বিতীয় প্রকৌশলী মো. নেজাম উদ্দিন, ইলেকট্রিশিয়ান মো. সাদিম আলী, চিফ কুক নাসির উদ্দিন, নাবিক মো. নাসির উদ্দিন ও মো. আলী হোসেন।থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমভি হোপের নাবিক আবু বকর সিদ্দিক মোরশেদ ও সাইফুদ্দিনের মরদেহ শনাক্ত করেন। সাইফুদ্দিনের বাড়ি ঢাকায়। এ নিয়ে এমভি হোপের নয়জন নাবিককে জীবিত এবং দুজনকে মৃত উদ্ধার করা হলো। জীবিত উদ্ধার হওয়া নাবিকেরা হলেন দ্বিতীয় প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন, ডেক ক্যাডেট মুশফিকুর রহমান, রায়েক ফাইরুজ ও মোখলেছুর রহমান, চতুর্থ প্রকৌশলী আবদুল হাকিম, নাবিক আবু বকর সিদ্দিক, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ ওসমান, সাইফুল ইসলাম।জাহাজের মালিকের স্বার্থরক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টারপোর্ট মেরিটাইম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন আবদুল কাদের গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণত পানিতে লাইফ জ্যাকেটের সাহায্যে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত মানুষ জীবিত থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সময় যত গড়াচ্ছে, জীবিত উদ্ধারের আশা ততই কমছে। তবে আমরা এখনো আশায় আছি।’দুর্ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার এবং গত শুক্রবার এমভি হোপের নয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরমুখী এমভি হোপ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে থাইল্যান্ড উপকূলের কাছে আন্দামান সাগরে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যায়। এ সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন বিপজ্জনক মনে করে জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে নাবিকেরা লাইফবোটের সাহায্যে সাগরে ঝাঁপ দেন। এদিকে কাত হয়ে থাকা এমভি হোপকে উদ্ধার করতে থাইল্যান্ড উপকূল থেকে টাগ পাঠানো হচ্ছে। টাগের সাহায্যে জাহাজটি ভারসাম্য অবস্থায় রাখার চেষ্টা করা হবে বলে জাহাজের মালিকের প্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে।
রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্সের পরিচালনাধীন কুমিল্লার শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রের একটি নতুন কূপ (শ্রীকাইল-৩) থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে কূপটি থেকে গ্যাসের প্রবাহ শুরু হয়। পেট্রোবাংলার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী কূপটি খনন করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গাজপ্রম। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে গাজপ্রমের করা তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২০ নম্বর কূপটি থেকে উত্তোলন শুরু হবে। ওই কূপটি থেকে প্রতিদিন অন্তত তিন কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর জানান। বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ বাকি প্রথম আলোকে বলেন, শ্রীকাইল-৩ কূপটি থেকে দৈনিক কমপক্ষে দুই কোটি এবং সর্বোচ্চ আড়াই কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হবে বলে তাঁরা আশা করেন। শ্রীকাইলে পাইপলাইন ও প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট বিদ্যমান থাকায় আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই এই কূপের গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।তিনটি রাষ্ট্রীয় কোম্পানির (বাপেক্স, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস এবং সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড) পরিচালিত ক্ষেত্রগুলোতে ১০টি কূপ খনন করে দেওয়ার জন্য পেট্রোবাংলা গাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী গাজপ্রম শ্রীকাইল-৩ ও তিতাস-২০ কূপ দুটি খনন শুরু করে। কিন্তু কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিঘ্ন ঘটায় গ্যাস উত্তোলন বিলম্বিত হয়। এই দুটি কূপ থেকে গত মাসেই উত্তোলন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রীকাইলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস বিলম্বে গতকাল উত্তোলন শুরু হয়েছে। তিতাস-২০ থেকে উত্তোলন শুরু হতে আরও কয়েক দিন লাগবে।পেট্রোবাংলার সূত্র জানায়, এরপর এই মাসের মধ্যেই বাপেক্সের খনন করা তিতাস-১৮ নম্বর কূপ থেকেও উত্তোলন শুরু হবে। আগামী মাসের শুরুতে উত্তোলন শুরু হবে বাখরাবাদ-৯ নম্বর কূপ থেকেও। এই বছরের মধ্যে গ্যাস উত্তোলন বাড়বে প্রায় ২৫ কোটি ঘনফুট। দেশে এখন প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা প্রায় ২৮০ কোটি ঘনফুট। উত্তোলন হচ্ছে প্রায় ২৩০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের গত সাড়ে চার বছরে গ্যাসের উত্তোলন বেড়েছে প্রায় ৬০ কোটি ঘনফুট।
সাভারে চলন্ত বাসে অজ্ঞাত এক যুবকের ছুরিকাঘাতে গতকাল শনিবার সোহেল রানা (১৮) নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ সময় অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করেছেন।নিহত সোহেল ঢাকার আশুলিয়ার জিরানীর টেঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা আনসার আলীর ছেলে। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।আশুলিয়া ও ধামরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, কলেজে যাওয়ার উদ্দেশে গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সোহেল জিরানী বাসস্ট্যান্ড থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কের গাজীপুর সদর উপজেলার চক্রবর্ত্তী এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে এক যুবক সোহেলের বুকে ছুরিকাঘাত করে বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সোহেলকে প্রথমে আশুলিয়ার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।ঘটনার সময় ওই বাসে থাকা কয়েকজন যাত্রী জানান, সোহেল রানার সমবয়সী এক যুবক চলন্ত বাসের ভেতর একটি ছুরি হাতে নিয়ে প্রথমে সোহেল রানার দিকে তেড়ে যায় এবং তাঁর বুকে ছুরিকাঘাত করে। এরপর বাসের চালক গাড়ির গতি কমিয়ে দিলে ওই যুবক বাস থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যায়।সোহেলের বন্ধু সবুজ জানান, গত বৃহস্পতিবার কলেজ থেকে ফেরার পথে হানিফ মেট্রো সার্ভিসের একটি গাড়ির এক চালক ও তাঁর সহকারীর সঙ্গে সোহেলের বাগিবতণ্ডা হয়। তার ঘণ্টা খানেক পর সোহেল কয়েকজন বন্ধুকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই চালক ও তাঁর সহকারীকে মারধর করেন। ওই ঘটনার জের ধরে গতকাল তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন।সোহেলের বাবা আনসার আলী দাবি করেন, হানিফ পরিবহনের লোকজনই তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। এ ব্যাপারে তিনি গাজীপুর সদর থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।জানতে চাইলে হানিফ মেট্রো সার্ভিসের ব্যবস্থাপক মো. সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, সোহেলকে ছুরিকাঘাতের সঙ্গে জড়িত ইসমাইল নামের এক যুবক, যে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মী। অসদাচরণের কারণে মাস দুয়েক আগে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তাকে ধরিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।এদিকে সোহেল নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কের ডেন্ডাবর এলাকা থেকে ঢাকা-আরিচা মহসড়কের বাইশমাইল পর্যন্ত এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা এ সময় হানিফ পরিবহনের অন্তত অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করেন। বেলা একটার দিকে পুলিশ গিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম বলেন, ঘটনার সূত্রপাত গাজীপুর সদর থানার ভেতর হওয়ায় আশুলিয়া থানায় মামলা না নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মোতাহের হোসেন টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সোনাইমুড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি। গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোতাহের হোসেন পেয়েছেন চার হাজার ৫২১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী মো. নুরুল হক পেয়েছেন তিন হাজার ৭৮৮ ভোট। সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা বেগম মোতাহের হোসেনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসিনা বেগম মেয়র পদে মোতাহের হোসেনকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণার কথা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এদিকে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে পাঁচজনকে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরে ২ নং ওয়ার্ডের শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার সময় তাছলিমা আক্তার ও ইয়াকুব আলী নামের দুজনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও মো. নুরুজ্জামান।তা ছাড়া ৮ নং ওয়ার্ডের কাঁঠালি মোহামঞ্চদিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসাকেন্দ্রে দুলাল ও জসিম উদ্দিন নামের দুজনকে এক হাজার টাকা এবং রেহানা আক্তারকে ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।অস্বাভাবিক ভোট গ্রহণের অভিযোগ এনে বেলা তিনটার দিকে ২ নং ওয়ার্ডের শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রের ভোট বাতিলের আবেদন করেন তিন মেয়র পদপ্রার্থী মোতাহের হোসেন, আবু তাহের ও মাহফুজুর রহমান। আবেদনে মোতাহের হোসেন জানান, বেলা একটার মধ্যে ৭৪ শতাংশ ভোট গ্রহণ করা হয়, যা অস্বাভাবিক। এ প্রসঙ্গে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন জানান, বৃষ্টিতে যাতে ভোটারদের দুর্ভোগ না হয়, সে জন্য প্রতিটি বুথে দুটি গোপন কক্ষ করা হয়, যাতে দ্রুত ভোটাররা ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন। এ জন্যই দুপুরের মধ্যে এত ভোট পড়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন পবিত্র রমজানের খতম তারাবি পড়ার সময় দেশের সব মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে পবিত্র রমজানে দেশের বিভিন্ন মসজিদে খতম তারাবিতে পবিত্র কোরআনের নির্দিষ্ট পরিমাণ পারা তিলাওয়াত না করে বিভিন্ন পরিমাণে তিলাওয়াত করা হয়। এতে কর্ম উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী মুসলিমদের মধ্যে কোরআন খতমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে একটি অতৃপ্তি ও মানসিক চাপ অনুভূত হয়। খতম তারাবির সওয়াব থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হন। এ পরিস্থিতি নিরসনকল্পে রমজানের প্রথম ছয় দিনে দেড় পারা করে নয় পারা ও বাকি ২১ দিনে এক পারা করে ২১ পারা তিলাওয়াত করলে ২৭ রমজান রাতে অর্থাৎ পবিত্র লাইলাতুল কদরে কোরআন খতম করা সম্ভব। এর আগে বিষয়টি নিয়ে দেশবরেণ্য আলেম, পীর মাশায়েখ ও ইমামদের সঙ্গে আলোচনা হলে তাঁরাও এ পদ্ধতিতে খতম তারাবি পড়ার পক্ষে অভিমত দিয়েছিলেন এবং সে মোতাবেক অধিকাংশ মসজিদে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় দেশের সব মসজিদে খতম তারাবিতে প্রথম ছয় দিনে দেড় পারা করে ও পরবর্তী ২১ দিনে এক পারা করে তিলাওয়াতের মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদরে কোরআন খতমের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মসজিদের ইমাম, মসজিদ কমিটি, মুসলিম এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারাবির নামাজ ২০ রাকাত, যা রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণ আমল করেছেন। ইসলামের প্রথম যুগ থেকে উলেমা ও ফকিহগণ তা অনুসরণ করে আসছেন। তথ্য বিবরণী।
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চর জহিরুদ্দিনে চার জলদস্যুকে জেলেরা পিটিয়ে মেরেছেন বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মেঘনার মাঝে তেলিয়ার চরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ দস্যুদের কাছ থেকে কিছু ধারালো অস্ত্রসহ একটি বিদেশি বন্দুক উদ্ধার করে।ভোলার পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান ও স্থানীয় জেলেরা জানান, মেঘনার ত্রাস জয়নাল আবেদীন ‘স্পিকার বাহিনী’র সদস্যরা মেঘনায় ডাকাতি করতে গেলে অজিউল্যাহ বাহিনী ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে তারা ভোলার চর জহিরুদ্দিনের তেলিয়ার  চরে আশ্রয় নেয়। এ সময় জেলেরা দস্যুদের চিনতে পেরে ঘিরে ফেলেন। এ সময় জেলেদের গণপিটুনিতে জয়নাল বাহিনীর প্রধান জয়নাল স্পিকার, গিয়াস উদ্দিন বাহিনীর প্রধান গিয়াস উদ্দিন, ফোরকান বাহিনীর দ্বিতীয় প্রধান জহির উদ্দিন ও সামসুদ্দিন নামের চার জলদস্যু নিহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ রাত ১১টায় লাশগুলো নিয়ে তজুমদ্দিন থানায় ফিরছিল। জয়নাল আবেদীনের বাড়ি রামগতি থানার জনতা বাজার এলাকায়। তাঁর বিরুদ্ধে রামগতি ও ভোলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।