content
stringlengths
1
63.8k
লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রাখা গেল না মূল্যস্ফীতির হার। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (২০১২-১৩) বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। ১৯৯৫-৯৬ ভিত্তিবছর ধরে এই হিসাব করা হয়েছে। সরকার অবশ্য বার্ষিক ৭ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি বেঁধে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল রোববার এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ সময় বিবিএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ২০০৫-০৬ ভিত্তিবছর ধরে ভোক্তা মূল্যসূচক নির্ণয় করলে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।সংবাদ সম্মেলনে সর্বশেষ জুন মাসের মাসওয়ারি মূল্যস্ফীতিও প্রকাশ করা হয়েছে। ১৯৯৫-৯৬ ভিত্তিবছরে জুন মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর নতুন ২০০৫-০৬ ভিত্তিবছরে এই হার ৮ দশমিক ০৫ শতাংশ। উভয় ভিত্তিবছরে খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে।আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিবিএস মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল বলেন, বিভিন্ন কৌশলের ফলে গত এক বছরে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। খাদ্যপণ্য বিশেষ করে চালের দাম নির্দিষ্ট সীমায় বেঁধে রাখার কারণে অর্থবছরের গড় মূল্যস্ফীতিও কমেছে। একই সঙ্গে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে সরকার।তাঁর মতে, আসন্ন রোজার কারণে মূল্যস্ফীতি হার মে মাসের তুলনায় জুন মাসে বেড়েছে। তবে চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে মূল্যস্ফীতি সূচক নিম্নমুখী হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন ভিত্তিবছর অনুসারে জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ০৫ শতাংশ। মে মাসে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। একই সময়ে (জুনে) খাদ্য উপখাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। মে মাসে এ হার ছিল ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। জুন মাসে খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনে আধিপত্য ধরে রেখেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। কয়েক দিন ধরে এ খাতের কোম্পানিগুলো লেনদেনে ধারাবাহিক আধিপত্য বিস্তার করছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রোববার এ খাতের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি টাকা। ঢাকার বাজারের মোট লেনদেনের ২০ শতাংশই ছিল এ খাতের।ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোই লেনদেনে বেশ এগিয়ে রয়েছে। এর কারণ হিসেবে বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জুনে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাব বছর শেষ হয়েছে। সামনে এসব কোম্পানি বছর শেষের লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। এ কারণে এসব শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে বলে মত দেন বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।জানতে চাইলে কসমোপলিটন ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরিব জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, কিছুদিন ধরে যেসব শেয়ারের দাম বাড়ছে, তার বেশির ভাগেরই হিসাববছর জুনে শেষ হয়েছে। সামনে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের ঘোষণা আসবে।মাশরিব জাহিদ আরও বলেন, ভালো কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। এটি ইতিবাচক দিক।এদিকে সপ্তাহের প্রথম লেনদেন দিবসে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের বেশির ভাগ সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ২৭৮ পয়েন্টে। সাধারণ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে চার হাজার ৫৫৯ পয়েন্ট।অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে। সূচক বাড়লেও দুই বাজারে লেনদেন খানিকটা কমে গেছে।ডিএসইতে দিনশেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮৫৮ কোটি টাকা। আগের দিনের চেয়ে এর পরিমাণ ৫৫ কোটি টাকা কম। চট্টগ্রামের বাজারে এদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে তিন কোটি টাকা কম।ডিএসইর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পর লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। দিনশেষে এ খাতের লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৯ কোটি টাকা, যা বাজারের মোট লেনদেনের ১২ শতাংশ।
মিসরে সেনা অভ্যুত্থানে ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার চার দিন পরও যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপকে ‘ক্যু’ বা সেনা অভ্যুত্থান আখ্যায়িত করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, মিসরে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দেশটির সেনাবাহিনীকে বাধ্য করার ক্ষেত্রে সে দেশে সহায়তা বন্ধের হুঁশিয়ারি যথেষ্ট ফলদায়ক হবে। ১৯৮৫ সালের একটি মার্কিন আইনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে সেনাবাহিনীর হাতে কোনো দেশের বৈধ নির্বাচিত সরকার উৎখাত হলে দেশটিতে মার্কিন সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা অবশ্যই স্থগিত করা হবে। মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ওবামা তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, মিসরের ঘটনাপ্রবাহে মার্কিন প্রশাসন ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। মার্কিন আইনের আওতায় মিসর সরকারকে দেওয়া সহায়তার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও এ সময় জানান তিনি। এই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট অব নিয়ার ইস্ট পলিসির পরিচালক রবার্ট স্যাটলফ বলেন, ওবামা প্রশাসন যত শিগগির সম্ভব মিসরে বেসামরিক নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা ফিরে আসা দেখতে চায়। আর তারা এ ইঙ্গিতও দিচ্ছে যে মিসরকে মার্কিন সহায়তা বন্ধের হুমকির ক্ষমতা তার পকেটেই রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মিসরের সামরিক অভ্যুত্থানকে ‘ক্যু’ হিসেবে আখ্যায়িত না করে মার্কিন প্রশাসন যে কথার কারিগরি দেখাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ওবামা মিসরীয় জেনারেলদের খাটো করতে চাইছেন না। ওবামা প্রশাসনের প্রত্যাশা, ২০১১ সালে হোসনি মোবারকের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র যে পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেভাবেই ওয়াশিংটন দেশটিকে আবারও গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে সমর্থ হবে। মিসর নিয়ে মার্কিন আইনের এক বিশেষ ধারায় বলা হয়েছে, বেসামরিক সরকারব্যবস্থায় উত্তরণে সরকারকে অবশ্যই সহায়তা করতে হবে। তবে এই ধারায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাগত স্বার্থে’ শর্ত স্থগিত রেখে মিসরকে সহায়তা অনুমোদনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ঘনিষ্ঠ আরব মিত্র এবং প্রভাবশালী আঞ্চলিক শক্তি মিসরকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর প্রায় ১৫০ কোটি ডলার সহায়তা প্যাকেজ দেয়। এর প্রায় ১৩০ কোটি ডলারই সামরিক সহায়তা। মিসরীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক উপকরণ ও সরঞ্জাম ব্যয়ের ৮০ শতাংশই জোগান দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। রবার্ট স্যাটলফ বলেন, মার্কিন প্রশাসন এখন চাইলে মিসরকে উপকরণ সরবরাহ করা বন্ধ রাখতে পারে। তবে, এরই মধ্যে এসব উপকরণ বাবদ অর্থ বরাদ্দ এবং এর অনেকটাই খরচও হয়ে গেছে। মার্কিন কংগ্রেসের নিরপেক্ষ একটি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মিসরে ২০টি এফ-১৬ জঙ্গি বিমান সরবরাহে লকহিড মার্টিন কোম্পানির সঙ্গে ২০১০ সালে একটি চুক্তি সই করা হয়। এসব বিমানের মধ্যে চারটি মিসরকে গত জানুয়ারিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ১৯৮০ সাল থেকে মিসরীয় সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রায় ২২০টি এফ-১৬ জঙ্গি বিমান পেয়েছে। ব্রুকিংস সাবান সেন্টারের পরিচালক তামারা কফম্যান উইটস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, কায়রোতে যা ঘটেছে (সামরিক অভ্যুত্থান) তা কংগ্রেস স্বীকৃত ‘ক্যু’-এর সংজ্ঞার সঙ্গে মেলে কি না—বিষয়টির আইনি ব্যাখ্যা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে এখন কাজ করতে হবে। কফম্যান বলেন, সুতরাং এ বিষয়টি মিসরীয় সেনাবাহিনীর অভিপ্রায়, সংকট থেকে উত্তরণের রোডম্যাপ ও এ-সংক্রান্ত সময়সীমা প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর সরকারের মধ্যে সংলাপের কিছু সময় দেবে।
ভারতের বিহার রাজ্যের বুদ্ধ গয়া শহরে মহাবোধি মন্দির কমপ্লেক্সে গতকাল রোববার সকালে পর পর নয়টি বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে মিয়ানমারের এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীসহ দুই পর্যটক আহত হন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওই বিস্ফোরণটি সন্ত্রাসী হামলা বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী। বিহার রাজ্য পুলিশের ধারণা, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামের সন্ত্রাসী সংগঠন ওই হামলায় জড়িত থাকতে পারে। তবে এই অভিযোগের ব্যাপারে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের কোনো বক্তব্যপাওয়া যায়নি। মহাবোধি বৃক্ষের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত মহাবোধি মন্দিরে গতকাল সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে ওই বিস্ফোরণগুলো ঘটে। মন্দির এলাকার অভ্যন্তরে চারটি বিস্ফোরণ হয়। এতে সেখানে গৌতম বুদ্ধের পদচিহ্নের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য অরবিন্দ সিং বলেন, দুইটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। একটি ছিল বুদ্ধের ৮০ ফুট উঁচু মূর্তির পাশে এবং অন্যটি স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডের কাছে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় বিজেপির নেতা-কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। রাজ্যের রাজধানী পাটনা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মহাবোধি বৌদ্ধমন্দিরটি বিশ্বখ্যাত। পিটিআই।
২০১৫ সালের মধ্যে অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও সহস্রাব্দের লক্ষ্যসমূহের (এমডিজি) সব কটি অর্জন করতে পারবে না। এমন অবস্থায় জাতিসংঘের পরবর্তী উন্নয়ন-ভাবনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা, পরিবেশগত বিপর্যয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা, খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ।গতকাল রোববার এমডিজির বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পল্লী-কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি নেইল ওয়াকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম।প্রতিবেদন: প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এগুলো হলো দারিদ্র্য ব্যবধান কমানো, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারী-পুরুষ সমতা আনয়ন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমানো, এইচআইভি সংক্রমণ রোধ, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কীটনাশক থেকে রক্ষায় মশারির নিচে ঘুমানো, যক্ষ্মা রোধ চিহ্নিতকরণ ও নিরাময় ইত্যাদি।অপরদিকে দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিশুদের অপর্যাপ্ত ওজনের প্রকোপ, শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার, মাতৃমৃত্যুর হার, শিশুদের টীকা প্রদানের আওতা বৃদ্ধি এবং সংক্রামক রোগের বিস্তার কমিয়ে আনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালের খানা ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, ১৯৯১-৯২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বছরে গড়ে দারিদ্র্য কমেছে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় ২০১২ সালেই বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমে এসে এমডিজির লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।তবে যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অধিক মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেগুলো হলো ক্ষুধাজনিত দারিদ্র্য কমানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার ও বয়স্ক শিক্ষার হার বৃদ্ধি, মহিলাদের জন্য আরও অধিক পরিমাণে মানসম্মত কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রসূতিকালীন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি বৃদ্ধি, এইচআইভি বা এইডস-সংক্রান্ত সঠিক ও অধিক তথ্য জানানো, বনাঞ্চল বৃদ্ধি এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের সম্প্রসারণ।এর আগে ২০০৫, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১১ সালে এমডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ।আলোচনা: অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘ভঙ্গুর দেশ হিসেবে চিহ্নিত করতে সূচক হিসেবে বাজারসুবিধা, জনসংখ্যা, দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়গুলোর ওপর নজর দিতে হবে। তাই ২০১৫ সালের নতুন উন্নয়ন ভাবনায় এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতিই সমস্যা হিসেবে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভবিষ্যতে পুষ্টি, খাদ্যবৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাই বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি মনে করেন, এমডিজি অর্জনে দাতাদের যে পরিমাণ সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তারা তা দেয়নি। এই বিষয়ে দাতাদের আরও উদার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বিশ্বমন্দা, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য সারা বিশ্বে ‘স্টার পারফর্মার’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এমডিজি অর্জিত হওয়ার কথা ছিল বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতায়, কিন্তু সেটা হয়নি। তবে প্রধান সূচকগুলোকে বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জন করেছে।নেইল ওয়াকার বলেন, এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখযোগ্য। এমডিজি অর্জনে দাতাদের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বাংলাদেশ নিজস্ব সম্পদেই তা অর্জন করেছে। তাঁর মতে, পুষ্টি ও পর্যাপ্ত খাদ্য নিরাপত্তাই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ।
মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুড মনে করে, এতে পশ্চিমারাসহ সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পশ্চিমাদের প্রতি ঘৃণা বাড়বে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রাদারহুডের জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ আল-বেলতাগি বলেন, ‘আমরা খুবই মনস্তাপের সঙ্গে লক্ষ করছি, সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো না কোনোভাবে স্বীকৃতি বা সমর্থন দিচ্ছে। এতে করে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোর—যারা সব সময় স্বাধীনতাকামী মানুষের পরিবের্ত স্বৈরশাসকের পক্ষ নিয়ে থাকে, তাদের প্রতি মানুষের ঘৃণা বাড়বে।’বিরোধীদের কয়েক দিনের বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে গত বুুধবার ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। এরপর থেকে রাজপথে অবস্থান নিয়েছে তাঁর সমর্থক ও বিরোধী পক্ষ। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে। নির্বাচিত একজন প্রেসিডেন্টকে সেনাবাহিনী উৎখাত করলেও এ ঘটনাকে ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে অভিহিত করেনি যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কেননা এটা স্বীকার করে নিলে তখন মিসরের ওপর অবরোধ আরোপ করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমারা তা করতে চাইবে না। কেননা, এতে তাদের কৌশলগত স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মিসরের সেনাবাহিনীকে বছরে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।সেনাবাহিনী মুরসিকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ইইউ (মিসরের সবচেয়ে বড় বেসামরিক সাহায্যদাতা) আহ্বান জানিয়েছে দ্রুত গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বা ইইউ মিসরের সেনাবাহিনীর নিন্দা করেনি। ব্রাদারহুডের নেতা বেলতাগি বলেন, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণকে মেনে নিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকা নিজেদের স্বৈরশাসক ও নিপীড়কের সমর্থক হিসেবে তুলে ধরল।মুরসিকে উৎখাতের পর তাঁর দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি এবং তাদের মূল সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার এবং তিন শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এসব দমনপীড়ন উপেক্ষা করে তাঁরা মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্বহাল দাবি জানাচ্ছে। রয়টার্স।
শ্রমিকেরা যে তৈরি পোশাকশিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, সেটি মালিকপক্ষ অনেক ক্ষেত্রেই স্বীকার করতে চায় না। কিন্তু তারা যদি শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করত, তবে আজকে শিল্পটি এভাবে হুমকির মুখে পড়ত না।এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো খুবই দরকার। শ্রমিকদের ঠকানোর মানসিকতা থেকে মালিকদের বেরিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের শ্রম সংঘ (ট্রেড ইউনিয়ন) করার সুযোগ দিতে হবে। ক্রেতাদের শর্ত নয়, দেশের আইন মেনে কারখানার কর্মপরিবেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের সমস্যা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।ডেইলি স্টার সেন্টার মিলনায়তনে গতকাল রোববার এই আলোচনার আয়োজন করে শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ। ডেইলি স্টার-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন শিপার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগ তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। তবে খাতটির অবকাঠামোর যথাযথ উন্নয়ন করা হয়নি।’জিএসপি নিয়ে ফারুক খান বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে জিএসপি স্থগিত করে আমেরিকা আমাদের সহযোগিতা না করে অসহযোগিতাই করেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘শিগগিরই আমরা জিএসপি ফিরে পাব।’আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, বর্তমান সংকট কাটাতে আইনের চেয়ে বেশি মাত্রায় মান পরিপালন দরকার।সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভানেত্রী নাজমা আক্তার বলেন, শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে পোশাক কারখানার শ্রমিকসংকট ২৫ থেকে ১০০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। তখন মালিকদের বিলাসী জীবন বন্ধ হয়ে যাবে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, পোশাক উৎপাদন থেকে বিক্রির পর্যায়ে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। সে জন্য দেশের মালিকেরা একটি সংঘ করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কোনো ট্রেড ইউনিয়ন নেই।বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আইনি ও গঠনমূলকভাবে ট্রেড ইউনিয়ন হলে আমাদের আপত্তি নাই।’গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী তুহিন মালিক, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, বিআইডিএসের সিনিয়র গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, নারী নেত্রী শিরিন আখতার, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ প্রমুখ।
ভারতের পার্লামেন্ট (লোকসভা) নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। বিশেষ করে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) এবং বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চার (এনডিএ) নেতারা ভোটারদের কাছে টানতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বসে নেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আগামী নির্বাচনে তিনি নেতা-কর্মীদের প্রতি দিল্লি দখলের ডাক দিয়েছেন। আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে ভারতের পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা মনে করেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অর্থাৎ চার মাসের মধ্যে লোকসভার ভোট হতে পারে। কারণ, ইউপিএ সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। এদিকে ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা চালিয়েছে। এসব সমীক্ষায় উঠে এসেছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ বা এনডিএ—কোনো জোটই সরকার গঠন করার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। দুই জোটকেই অন্য রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে। সর্বশেষ দ্য উইক সাময়িকীর সমীক্ষায় উঠে এসেছে, আগামী নির্বাচনে এনডিএ ১৮৪টি আর ইউপিএ ১৬২টি আসন পেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, এসব সমীক্ষা প্রকাশের পর মমতার মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে, আগামী নির্বাচনে তৃতীয় কোনো শক্তি বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের জোট গঠন করে ক্ষমতায় আসতে পারে। তাই তিনি ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপিবিরোধী ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের ডাক দিয়েছিলেন। অবশ্য তাঁর ওই ডাকে তেমন সাড়া মেলেনি।বিশ্লেষকেরা বলছেন, নির্বাচনের ফলাফলে যদি দেখা যায়, আঞ্চলিক দলগুলোর জোট সরকার গঠনের মতো অবস্থানে চলে এসেছে, সে ক্ষেত্রে মমতা নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় তৃতীয় জোটকে সমর্থন দিতে পারেন। এতে তাঁর দিল্লি দখলের স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। এমনকি তাঁর সামনে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগও আসতে পারে।গত শনিবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরে পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় মমতা সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে জয়ের ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী। দিল্লি দখলের জন্য তৈরি হন। ভবিষ্যতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার মূল কারিগর হবে তৃণমূল কংগ্রেস।’জনসভায় তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাকে আর দিল্লির দিকে তাকাতে হবে না। দিল্লিকেই বাংলায় ভিক্ষা চাইতে আসতে হবে। যেভাবে চলছি, চালাচ্ছি, তাতে আমি দিল্লি চালিয়ে দেব। এরপর দিল্লিকে কিনে নেব আমরা। ’ মূলত মমতার সঙ্গে কংগ্রেসের জোট ভেঙে যাওয়ার পর মমতা এখন আর ভিড়তে পারছেন না এনডিএতে। এর আগে এনডিএ থেকে দুবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছিলেন। সংখ্যালঘু ভোট হারানোর শঙ্কায় তিনি এখন বিজেপির দিকে ঝুঁকতে পারছেন না। বিজেপি বা এনডিএর দিকে ঝুঁকলে তাঁর সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক হারাতে হবে। তাই মমতা এবার আঞ্চলিক দল নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ নেন।
চট্টগ্রাম বন্দর চত্বরে কনটেইনার খুলে আমদানি পণ্য খালাসে তিন-চার গুণ সময় লাগছে। বিশেষ করে এক কনটেইনারে আসা একাধিক আমদানিকারকের পণ্য খালাসে বেশি ভোগান্তির ঘটনা ঘটছে।বন্দরে নিয়োজিত বার্থ অপারেটরদের ব্যর্থতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এ এম মাহাবুব চৌধুরী। গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গত ১৩ জুন এমভি ওশান অ্যারো জাহাজ থেকে পোশাকশিল্পের পণ্যভর্তি একটি কনটেইনার নামানো হয়। এই কনটেইনারে ১০টি কারখানার কাঁচামাল আমদানি হয়। সেটি থেকে পণ্য খালাসে সময় লাগে ১৩ দিন। অথচ তিন দিনের মধ্যে এই পণ্য খালাস হওয়ার কথা।সংবাদ সম্মেলনে চেম্বারের পরিচালক আবদুল আউয়াল, অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম, আবদুল হাই মাছুম প্রমুখ বক্তব্য দেন।মাহাবুব চৌধুরী বলেন, পোশাকশিল্পের রপ্তানি আদেশ গ্রহণের প্রায় দুই মাসের মধ্যে কাঁচামাল আমদানি থেকে শুরু করে পোশাক তৈরি করে জাহাজীকরণ করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোনো জায়গায় বিলম্ব হলে রপ্তানিকারকদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।সংবাদ সম্মেলনে সাতটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তিন দিনের মধ্যে কনটেইনার থেকে পণ্য খালাস ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি কার্যকর করা এবং জাহাজ থেকে নামানোর পর সরাসরি বেসরকারি ডিপোতে কনটেইনার পাঠানো।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএতে জমা পড়া দুই হাজার ২৮টি কারখানা ভবনের স্থাপত্য নকশা পরীক্ষা করবে ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি)।আইইবির প্রকৌশলীরা নিজ উদ্যোগে বিজিএমইএকে এই সেবা দেবেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যেসব কারখানার নকশায় ত্রুটি পাওয়া যাবে, তা বিজিএমইএকে জানাবে আইইবি। বিজিএমইএ ভবনে গত বৃহস্পতিবার এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বিজিএমইএ এক মাসের মধ্যে পোশাক কারখানার অবকাঠামোগত নকশা ও মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
চিঠি দিয়ো প্রতিদিন, চিঠি দিয়ো—ই-মেইল, ফেসবুকের যুগে এই গান পরিবর্তিত হয়ে অনেক আগেই ‘মেসেজ দিয়ো প্রতিদিন, মেসেজ দিয়ো’-তে রূপান্তরিত হয়েছে। অথচ একসময় চিঠিই ছিল যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। কিন্তু ফোন, ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর চিঠি হয়ে গেছে দুর্লভ। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ নিয়ে এখন আর কেউ খুব বেশি অভিযোগ করে না। করবে কীভাবে? এখন তো কেউ চিঠিই লেখে না! তার পরও কয়েক দিন ধরেই চিঠি নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। কারণ, চিঠির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য নাকি কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছেন শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদেরা। শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিলের জন্য বিদেশি একটি রাষ্ট্রের কাছে চিঠি লিখেছেন জনৈক রাজনীতিবিদ। অভিযুক্ত রাজনীতিবিদ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে যা-ই হোক, রাজনীতিবিদেরা সাধারণত সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেন না। কিন্তু চিঠিকে আবার লাইমলাইটে আনার পদক্ষেপটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। যখন চিঠি অনেকটাই বিলুপ্ত, পাঠ্যপুস্তক কিংবা পরীক্ষার প্রশ্নে ‘পত্র লেখো’র সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে ‘ই-মেইল লেখো’, ঠিক তখনই রাজনীতিবিদদের এমন পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। অনেকে বলছেন, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে বিদেশি পত্রিকায় চিঠি লিখেছেন ওই শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ। আরে ভাই, রাজনীতিবিদেরা কখনো দেশের ভাবমূর্তির কথা ভাবেন নাকি? অন্তত চিঠি লেখার মাধ্যমে যে একটি হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তা নিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিত। আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে, মানুষকে সন্তুষ্ট করা খুবই কঠিন। ভেবে দেখুন, ওই রাজনীতিবিদ চিঠি লিখুন আর না লিখুন, চিঠি লেখা-সংক্রান্ত এই আলোচনায় সবার মনে পড়বে ‘আগে কী সুন্দর চিঠি লিখতাম’! অনেকেই নতুন উদ্যমে চিঠি লেখা শুরু করবে। পরীক্ষায় প্রশ্ন আসবে, ‘তোমার দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে বিদেশি পত্রিকার কাছে একটি পত্র লিখো।’ তা ছাড়া এই উদ্যোগের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। চিঠি লেখার সংস্কৃতি পুনরায় চালু হলে খুশি হবে দেশের ডাক বিভাগ এবং খাম ব্যবসায়ীরা। তাই কর্তৃপক্ষকে এখনই এসব ব্যাপার নিশ্চিত করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আশার কথা এই যে এত আলোচনার ফল হিসেবে চিঠি লেখার সংস্কৃতি বোধ হয় পুনরায় চালু হয়েই যাচ্ছে। কারণ, বিরোধী দল বলেছে, আগে কোনো চিঠি না লিখলেও জিএসপির ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য এবার তারা ঠিকই চিঠি লিখবে। পাঠক, আপনারাও আমাদের কাছে চিঠি লিখুন। শুরু হোক চিঠি লেখার উৎসব।
সিনাই উপদ্বীপে একটি গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটেছে। গ্যাস পাইপলাইনটি সিনাই হয়ে মিসর থেকে জর্ডানে নেওয়া হয়েছে।২০১১ সালে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারককে উৎখাত করার পর এই পাইপলাইনে ১০ বারের বেশি হামলা চালানো হয়েছে। মিসরে সম্প্রতি সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সরিয়ে দেওয়ায় সিনাইয়ে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর ওপর হামলা বেড়ে গেছে। ওই এলাকায় আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তবে এই অঞ্চলে তল্লাশি চৌকি এবং গ্যাসের পাইপলাইনে হামলার সঙ্গে কারা জড়িত, সে সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি। বুধবার মুরসিকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা হয়েছে কি না, তাও পরিষ্কার নয়। গত শুক্রবার সিনাইয়ের তল্লাশি চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় পাঁচজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। গত শনিবার ওই অঞ্চলে আরও চারটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালানো হয়েছিল। মুরসিকে অপসারণের পর থেকে মিসরে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই মুরসি-সমর্থক এবং বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। আল-জাজিরা।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী লড়াই এগিয়ে নিতে প্রধান বিরোধী জোট গত শনিবার আহমাদ আসি জারবাকে তাঁদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে। বিরোধীদের মুখপাত্র খালেদ সালেহ এসব তথ্য জানিয়েছেন। তুরস্কের ইস্তাম্বুলভিত্তিক সিরিয়ান ন্যাশনাল কোয়ালিশনে (এসএনসি) গত শনিবার ভোট হয়। এতে জারবা ৫৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুস্তফা আল সাব্বাঘ পেয়েছেন ৫২ ভোট। জারবা সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতি রয়েছে। সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে গত মে মাসে বিরোধী জোটের প্রধানের পদ ছাড়েন আহমদ আল-খতিব। এএফপি।
আপনি শুধু একবারই যুবক হতে পারেন, কিন্তু অপরিপক্ব হতে পারেন চিরকালই।ডেভ ব্যারি, মার্কিন লেখক হ্যাট আমার খুব ভালো লাগে। ময়লা চুল ঢাকতে এটি খুবই ভালো একটি অনুষঙ্গ।জুলিয়া রবার্টস, মার্কিন অভিনেত্রী সবচেয়ে বড় প্রতিশোধ হলো অঢেল সাফল্য।ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা, মার্কিন গায়ক একটা কৌতুক শুনে সবার শেষে যে হাসে, বুঝবেন সে আসলে কৌতুকটা বুঝতে পারেনি।হেলেন গিয়ানগ্রেগরিও আমি জানি আমি বুদ্ধিমান। কারণ, আমি জানি যে আমি কিছুই জানি না।সক্রেটিস, গ্রিক দার্শনিক
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের একটি জঙ্গলে বাঘের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গাছে উঠে ফেঁসে গেছেন পাঁচ লোক। গাছের নিচেই দুটি বাঘ অবস্থান নেওয়ায় চার দিন ধরে তাঁরা আটকা পড়ে আছেন। একজন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গত বৃহস্পতিবার ধূপকাঠি সংগ্রহ করতে গিয়ে ছয় ব্যক্তি জঙ্গলে যান। অসাবধানতাবশত জঙ্গলে একটি বাঘের বাচ্চাকে মেরে ফেললে তাৎক্ষণিকভাবে বাঘ ছয় ব্যক্তির একজনকে হত্যা করে। তাঁদের উদ্ধারের জন্য ৩০ জন পুলিশ ও সেনা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এএফপি।
অধ্যায়-৭প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের জন্য প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়-৭ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হলো। রচনামূলক প্রশ্ন/কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন: (প্রতিটির জন্য নম্বর থাকবে ৫)প্রশ্ন: সোয়াইন ফ্লু কী? সোয়াইন ফ্লুর লক্ষণ কী?সোয়াইন ফ্লু সম্পর্কে তুমি তোমার এলাকায় সচেতনতা সৃষ্টির দুটি উপায় লিখো।উত্তর: এইচ ওয়ান এন ওয়ান নামক একধরনের ভাইরাসের কারণে সোয়াইন ফ্লু হয়। আক্রান্ত পশু-পাখির সংস্পর্শে এলে বা অল্প সেদ্ধ মাংস খেলে মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়।যদি কারও জ্বর ১০৪০ ফারেনহাইটের ওপরে হয় এবং সঙ্গে নিচের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়, তবে বুঝতে হবে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে—i. অস্বাভাবিক অবসাদগ্রস্ততাii. মাথাব্যথাiii. নাক দিয়ে পানি পড়াiv. গলা খুসখুস করাv. ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস অথবা কাশি থাকাvi. ক্ষুধা কম হওয়াvii. মাংসপেশি ও গিঁটে ব্যথা হওয়াviii. ডায়রিয়া অথবা বমি হওয়াসোয়াইন ফ্লু সম্পর্কে আমি আমার এলাকায় নিম্নোক্ত দুটি উপায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করব—i. সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার কারণ, এর লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে এলাকার প্রতিটি মানুষকে অবগত করব।ii. বিভিন্ন রকমের পোস্টারে সোয়াইন ফ্লুর ভয়াবহ দিকগুলো তুলে ধরে সেগুলো এলাকার প্রতিটি ঘরবাড়িতে লাগবে।প্রশ্ন: ডেঙ্গু কীভাবে ছড়ায়? ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী কী করবে?উত্তর: ডেঙ্গু জীবাণুর বাহক স্ত্রী জাতীয় এডিস মশা। এটি সাধারণত কোনো ভাঙা পাত্র, ফুলের টব, টায়ার ইত্যাদিতে জমে থাকা পানির মধ্যে বংশ বৃদ্ধি করে এবং সকাল ও সন্ধ্যার আগে মানুষকে কামড়ায়। এর ফলে ডেঙ্গু জীবাণু মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিচের ব্যবস্থা গ্রহণ করব—i. এডিস মশার আবাসস্থল, যেমন: কোনো ভাঙা দ্রব্যাদি, ফুলের টব, নারকেলের খোল, টায়ার ইত্যাদিতে পানি যেন না জমে সেদিকে লক্ষ রাখব।ii. এডিস মশার জন্মস্থান কেরোসিন বা কীটনাশক দিয়ে সেগুলো ধ্বংস করে দিতে হবে।iii. বসতবাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যাতে এডিস মশা দিনের বেলায় লুকিয়ে থাকতে না পারে।iv. দিনের বেলায়ও মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে।প্রশ্ন: বাতজ্বর রোগের জীবাণুর নাম কী? বাতজ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার উল্লেখ করো।উত্তর: বাতজ্বর রোগের জীবাণুর নাম স্ট্রেপটোকক্কাস। এ রোগের লক্ষণগুলো নিচে দেওয়া হলো—i. ঘন ঘন জ্বর ও গলাব্যথা হয়।ii. দেহের ওজন কমতে থাকে।iii. হাত বা পায়ের গিঁটে ব্যথা হয়।iv. মাঝেমধ্যে বুকে ব্যথা হয়।বাতজ্বর প্রতিকারের উপায় নিচে দেওয়া হলো:i. বাতজ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।ii. রোগীর রক্ত ও লালা পরীক্ষা করে এ রোগের সংক্রমণ সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।iii. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।iv. এ রোগের চিকিৎসা অবহেলা করলে হূৎপিণ্ডের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। প্রধান শিক্ষক, ফকিরেরপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, সিলেবাস বা প্রশ্নের ধরন সম্বন্ধে ধারণা পরিষ্কার না থাকলে পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব নয়। তাই তোমাদের জন্য NCTB প্রণীত ইংরেজি ১ম পত্রের প্রশ্নের ধরন ও মানবণ্টন নিয়ে আলোচনা করা হলো।Part-A: Seen Comprehension (Marks-40)Ques. No. 1 (Multiple Choice): এই অংশটি প্রদত্ত সিন কম্প্রিহেনশনের ওপর ভিক্তি করে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের যেকোনো অংশে তিনটি প্রায় সমজাতীয় শব্দ থাকবে। এই তিনটি শব্দ থেকে বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে উপযুক্ত শব্দ বেছে নিয়ে বাক্য পূর্ণ করতে হবে। উওর লেখার সময় শুধু সঠিক উত্তরটুকু লিখতে হবে। পুরো বাক্য না লিখলেও চলবে।Ques. No. 2 (True/False): প্যাসেজ-ভিত্তিক পাঁচটি স্টেটমেন্ট থাকবে। এই প্রশ্নটি করা হবে ভুল-শুদ্ধ যাছাইয়ের জন্য। প্যাসেজ অনুযায়ী কোন প্রশ্নটি সঠিক এবং কোন প্রশ্নটি ভুল তা বুঝতে হবে। সঠিক হলে True এবং ভুল হলে False লিখে Correct answer লিখতে হবে।Ques. No. 3 (Filling in the gaps with clues): এখানে প্যাসেজ থেকে পাঁচটি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের ব্র্যাকেটে একটি করে শব্দ দেওয়া থাকবে এবং তার শূন্যস্থান থাকবে। বাক্যের অর্থানুসারে ব্র্যাকেটের শব্দটি পরিবর্তন করতে হবে। প্রয়োজনে Preposition ব্যবহার করে শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রামারের ওপর ভালো দখল থাকতে হবে।Ques. No. 4 (Information Transfer): প্রদত্ত সিন কম্প্রিহেনশনের আলোকে যেকোনো ব্যক্তি বা বস্তু বা বিষয় সম্পর্কে পাঁচটি তথ্যের তালিকা করতে বলা হবে এ অংশে। এ অংশে উত্তর করার সময় প্যাসেজটির প্রেক্ষাপট অনুধাবন করা খুব জরুরি।Ques. No. 5 (Open–ended Questions): সিন কম্প্রিহেনশনের ওপর পাঁচটি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১ নম্বর হিসাবে মোট নম্বর থাকবে ৫। উত্তর দিতে হবে একটি পূর্ণ বাক্যে, সংক্ষিপ্ত ভাষায়। উত্তর হতে হবে To the point-এ অর্থাৎ যথাযথ। এতে নিজস্বতা বা মৌলিকত্ব থাকতে হবে। প্যাসেজ থেকে অবিকল তুলে দেওয়া যাবে না। এ অংশে ভালো করতে হলে Tense-এর প্রতি জোর দিতে হবে। প্রশ্ন যে Tense-এ থাকবে উত্তরও সেই Tense-এর আলোকে হবে।Ques. No. 6 (Filling in the gaps without clues):কম্প্রিহেনশনের সামারাইজেশন আকারে একটি প্যাসেজ দেওয়া থাকবে। এখানে পাঁচটি শূন্যস্থান থাকবে। প্রতিটি শূন্যস্থানের জন্য ১ করে মোট নম্বর থাকবে ৫। প্যাসেজটি ভালোভাবে পড়ে কম্প্রিহেনশন থেকে তথ্য নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো Clue দেওয়া থাকবে না। উত্তর লেখার সময় প্যাসেজটি না লিখে শুধু উত্তর লিখতে হবে।Ques. No.7 (Summariesing): সামারাইজিংয়ের ক্ষেত্রে কম্প্রিহেনশনটির ওপর একটি Summary লিখতে হবে। এর আকার মূল কম্প্রিহেনশনটির এক-তৃতীয়াংশ হওয়া উচিত। উত্তরটি অনধিক পাঁচটি বাক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে হবে। কম্প্রিহেনশনে উল্লিখিত উদাহরণ, ব্যাখ্যা, উপমা ইত্যাদি বাদ যাবে।Ques. No. 8 (Flow Chart): প্রদত্ত সিন কম্প্রিহেনশনের ওপর ভিত্তি করে এ অংশে Flow Chart থাকবে। নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ভিক্তি করে পাঁচটি যথাযথ Word/Phrase দিয়ে Flow Chart-এর Box-গুলো পূরণ করতে হবে। এখানে প্যাসেজের বিশেষ কোনো দিক অথবা সমগ্র প্যাসেজের ওপর মন্তব্যমূলক বিষয়গুলো চিহ্নিত করে Phrase আকারে লিখতে হবে। Phrase-গুলো লেখার সময় বাক্যের Auxiliary Verb এবং Articles বাদ যাবে।Part-B: Vocabulary (Marks-20)Ques. No. 9 (Filling in the gaps with clues): এই প্রশ্নে মোট ১০টি শূন্যস্থান-সংবলিত একটি Passage (with clues) দেওয়া থাকবে এবং নম্বর থাকবে ১০। উত্তর লেখার সময় passage-টি তোলার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু উত্তর লিখলেই চলবে। শুধু a, b, c, d, e শিরোনামে উত্তর লিখতে হবে ।Ques. No. 10 (Filling in the gaps without clues): এই প্রশ্নে মোট ১০টি শূন্যস্থান-সংবলিত একটি Passage (without clues) দেওয়া থাকবে এবং নম্বর থাকবে ১০। উত্তর লেখার সময় passage-টি তোলার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু উত্তর লিখলেই চলবে। শুধু a, b, c, d, e শিরোনামে উত্তর লিখতে হবে। অর্থের সঙ্গে মিল রেখে যথাযথ Word/Phrase দিয়ে Gap-গুলো পূরণ করতে হবে।Part-C: Guided Writing (Marks-40)Question No. 11 (Substitution Table):এই প্রশ্নে চার Column-এর একটা Substitution Table দেওয়া থাকবে। ওই Table থেকে ছয়টি অর্থপূর্ণ এবং ধারাবাহিক বাক্য তৈরি করতে হবে। Text-টি পাঠ্যবই-সংশ্লিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।Question No. 12: (Re-arranging):এই প্রশ্নে কোনো ঘটনা বা বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের জীবনী বা গল্প সম্পর্কে ১৪টি Sentence এলোমেলোভাবে দেওয়া থাকবে। ছাত্রছাত্রীদের ১৪টি এলোমেলো Sentence-কে এমন ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখতে হবে, যাতে পরিশেষে এটি একটি গল্পের আকার লাভ করে। এবং অনুচ্ছেদের ওপরে বাক্যের ক্রমিক নম্বরগুলো লিখে বাক্যের ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে। অর্থাৎ বাক্যগুলোকে According to order বা Sequence অনুসারে সাজাতে কাটা যাবে। এ ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে সাজানো অন্যান্য বাক্যের জন্য নম্বর দেওয়া হবে।Question No. 13 (Paragraph Writing):এই অংশটি মূলত Writing skill যাছাই করার জন্য। এই প্রশ্নের কোনো বিষয় যেমন: কোনো ভ্রমণ, স্কুল বা কলেজের প্রথম বা শেষ দিন, কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা, পারিবারিক উৎসব, ধর্মীয় উৎসব প্রভৃতির ওপর কিছু প্রশ্ন সংকেত (clue) থাকবে। প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে ১৫০ শব্দের মধ্যে একটি Paragraph লিখতে হবে। Paragraph-টির একটি সুন্দর Title (শিরোনাম) দিতে হবে। Paragraph-টি হতে হবে এক প্যারায়। একাধিক প্যারায় লিখলে নম্বর কাটা যাবে। সাধারণত কোনো কিছু Free hand-এ লিখতে গেলে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার অনেক সুযোগ থাকে কিন্তু Questioning Paragraph-এর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে ওই প্রশ্নগুলোর ওপর নির্ভর করেই Paragraph লিখতে হয়। সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা স্টেট কলেজ, ঢাকা
তাইওয়ানে গত শনিবার রাতে একটি পান্ডা বাচ্চা দিয়েছে। তবে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা এখনই পান্ডার শাবকটিকে দেখতে পারবেন না। তিন থেকে পাঁচ মাস তাদের অপেক্ষা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গতকাল রোববার এ তথ্য জানান। ২০০৮ সালে তাইপে চিড়িয়াখানাকে একজোড়া পান্ডা উপহার দেয় চীন। তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কের অগ্রগতির জন্য চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীন এ উপহার দেয়। সাধারণত ধার হিসেবে অন্য দেশকে পান্ডা দিয়ে থাকে চীন। তবে উপহার হওয়ায় এসব পান্ডা তাইওয়ানকে ফেরত দিতে হবে না। এএফপি।
প্রিয় জেএসসি পরীক্ষার্থী, শুভেচ্ছা রইল। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ইংরেজি ১ম পত্রের প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বিভাজন পরিবর্তন করেছে। পরিবর্তিত প্রশ্নের ধরন অনুযায়ী এনসিটিবির দেওয়া ইংরেজি ১ম পত্রের নমুনা প্রশ্নের শেষ অংশ আজ ছাপা হলো। উত্তর ছাপা হবে আগামীকাল।5. Fill in the gaps with appropriate word: 1×5=5Bangladesh is one of the most a) — populated countries in South Asia. Her b) — area is smaller in comparison to c) — countries but she has really a large d) —. She lost three million people in e) — war of liberation in 1971.6. Summarize the following text in around 50 words. 10Smoking is a very bad habit. It is harmful to our health. A study by World Health Organization (WHO) reveals that about five million people die annually because of bad effect of smoking. If smoking continues, the death toll will rise to eight million by 2030. Considering the bad effect of smoking, Bangladesh government has signed an agreement with WHO in 2004 to control tobacco. Now smoking is illegal in public places such as bus-stand, rail station, and in any kind of other public transports. Although smoking causes premature death by creating health hazards like stroke, lung cancer, and heart diseases, many people in Bangladesh smoke regularly. Low and middle-income people are more inclined to smoking worldwide and they cover 80% of the total smokers. For better health, it is wise to give up smoking. One's firm decision is enough to refrain themselves from smoking. (Total words: 145)7. Rearrange the following sentences in correct order. 10(a) On a fixed day, the mice met in a meeting to find a way out.(b) A young mouse submitted a proposal.(c) Finally the mice migrated to another barn finding no other way.(d) There lived some mice in a farmer's barn happily.(e) Different mice gave different opinions but all of them were unacceptable.(f) The farmer was in a trouble with the mice and brought a cat in order to get rid of them.(g) Hearing the question, all began to look at one another in frustration.(h) He proposed to tie a bell around the neck of the cat.(i) As a result, the mice were in danger to come out of their holes.(j) An old mouse accepted the proposal and asked, 'But who will bell the cat?'8. Fill in the gaps using clues from the boxes. There are more words than necessary. 0.5×10=05inexpensive—globe—a—foods—called—expensive —studying—found—healthy—they—on—anResearch around the world points to— recipe for well-being. Eat simple—, not elite treats. Nutritionists have been—International super foods-dishes from around the—that may hold the key to — eating. In many countries, they have—, the healthiest diet is the simple, — diet that people give up as—move into prosperity. This diet often—the 'peasant diet'. It's usually based—grains, fruits and vegetables, and small amounts of meat, fish or eggs.9. The phrases in column A are the beginnings of some sentences. The phrases in Column B are the endings. Match the phrases in Column A with the phrases in Column B to make complete sentences. 1×5=5Section- B (Writing)10. Suppose you are Abonti and your friend is Jenny. Make a dialogue in 100 words between you and your friend about your preparation for the JSC examination. 1011. Write a paragraph on 'Our national Flag' in about 150 words answering the following questions. 10a) What is a National Flag?b) How have we got the national Flag?c) What is its width and breadth?d) How many colours are there and what do they symbolize?e) When do we use a national flag?f) How can we protect and uphold the honour of our National Flag?12. Read the beginning of a story. Now, complete it in 150 words. 10It was Habib's first journey by train. He was going to his maternal uncles house to spend the summer vacation. After some time the train started to run. The ticket checker approached and told him that he was in a wrong train.13. Suppose you have recently visited a new place with some of your friends or family members. Now write a letter to one of your friends living in another city describing your experience. (Word limit: 150) শিক্ষক, ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নজরদারি ফাঁস করে ফেরারি হয়েছেন এডওয়ার্ড স্নোডেন। লাতিন আমেরিকার তিনটি দেশ তাঁকে আশ্রয় দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু মস্কোর শেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দর থেকে যাওয়ার একমাত্র পথ কিউবা। সেই কিউবা নীরব থাকায় তাঁর আশ্রয় নিয়ে রয়ে গেছে অনিশ্চয়তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনের রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের আশায় দুঃস্বপ্ন ভর করেছে। রাশিয়া থেকে লাতিন আমেরিকার কোনো দেশে যাওয়ার পথে তাঁর সামনে এখন নানা প্রতিবন্ধকতা। ইতিমধ্যে লাতিনের তিনটি দেশ তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।স্নোডেনকে গত শনিবার বলিভিয়া আশ্রয় দেওয়ার হাত বাড়িয়ে দেয়। এর আগে ভেনেজুয়েলা ও নিকারাগুয়া তাঁর প্রতি অনুরূপ সহায়তার হাত বাড়ায়। ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ তিন দেশের সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন রয়েছে। রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে স্নোডেন গত সপ্তাহে ২১টি দেশে আবেদন করেন। তবে অধিকাংশ দেশই তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। এ অবস্থায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া এ তিন দেশই এখন আশ্রয়লাভে স্নোডেনের জন্য সবচেয়ে ভালো বিকল্প। হংকং থেকে মার্কিন নজরদারি ফাঁকি দিয়ে রাশিয়ায় পাড়ি জমানোর পর থেকেই স্নোডেন মস্কোর একটি বিমানবন্দরের ট্রানজিট এলাকায় লোকচক্ষুর অন্তরালে অবস্থান করছেন। গতকাল রোববার সেখানে তিনি ১৫তম দিনটি কাটান। এ অবস্থায় গতকাল তিনি সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, যেসব পশ্চিমা দেশ এখন এনএসএর গোপন নজরদারির বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, এ কর্মসূচির সঙ্গে তারাও জড়িত রয়েছে।এদিকে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকলেও ওয়াশিংটন সৌহার্দ্যের নিদর্শন হিসেবে স্নোডেনকে ফেরত পাঠাতে মস্কোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ওয়াশিংটনের অনুরোধ সরাসরি নাকচ করে ইঙ্গিত দিয়েছেন, স্নোডেন কোথায় যেতে চান, সে ব্যাপারে তাঁকেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।কিন্তু মস্কোর শেরেমেতেয়েভো বিমানবন্দরে থাকা স্নোডেনের সামনে বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ সীমিত। কারণ, এ বিমানবন্দর থেকে আকাশপথে লাতিন আমেরিকা যাওয়ার একটাই পথ কিউবা হয়ে যাওয়া। স্নোডেন বিতর্ক শুরুর পর থেকে কিউবা তাঁকে নিয়ে অস্বাভাবিক নীরবতা বজায় রাখছে।ইউরোপের দেশে স্নোডেনকে বহনকারী উড়োজাহাজের বাধ্যতামূলক অবতরণের ঝুঁকিও রয়েছে। যেমনটা ঘটেছে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের ক্ষেত্রে। মস্কো থেকে স্নোডেনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে—এমন সন্দেহে গত সপ্তাহের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট মোরালেসকে বহনকারী উড়োজাহাজ দেশে ফেরার পথে ভিয়েনায় অবতরণে বাধ্য করা হয়।গত ২৪ জুন স্নোডেন অজ্ঞাত কারণে মস্কো থেকে কিউবা অভিমুখী উড়োজাহাজে ওঠেননি। বিশ্লেষকদের ধারণা, স্নোডেনের মার্কিন ভ্রমণ পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর বিমানবন্দর ত্যাগে তাঁর কাছে কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় হয়তো রুশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ওই উড়োজাহাজে ওঠার অনুমতি দেয়নি।তা ছাড়া স্নোডেনকে আশ্রয় দিতে রাজি বলিভিয়া ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশের শেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দরে কনস্যুলার শাখা নেই; যাতে স্নোডেনকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জোগান তারা দিতে পারে। এমনকি, মস্কোয় নিযুক্ত ভেনেজুয়েলা বা অন্য দেশের কূটনীতিকদের মাধ্যমেও যদি স্নোডেনের কাছে ভ্রমণ কাগজপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়, তবু তাঁর সব সমস্যার সমাধান হবে না।ফরাসি ঐতিহাসিক সেবাস্তিয়েন লরেন বলেন, ‘আলংকারিক অর্থে তিনি মৃত। তিনি যা করেছেন তার গুরুত্ব বিবেচনায় তিনি কখনোই নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাবেন না।’ এএফপি।
বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তরপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ অর্থনীতি বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।৩৮৭. কোনটি প্রয়োজনীয় অভাব?ক. উন্নত মানের খাদ্যদ্রব্যখ. দামি গাড়িগ. স্বাস্থ্যকর বাসস্থান ঘ. অলংকারসঠিক উত্তর: ক।৩৮৮. বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত কোনটি?ক. পাট খ. চাগ. তৈরি পোশাক ঘ. চামড়াসঠিক উত্তর: গ।৩৮৯. মূলধন গঠনের প্রধান উপাদান কোনটি?ক. বিনিয়োগ বৃদ্ধি খ. উৎপাদন বৃদ্ধিগ. আয় বৃদ্ধি ঘ. সঞ্চয় বৃদ্ধিসঠিক উত্তর: ঘ।৩৯০. দারিদ্র্য দুষ্টচক্র ধারণাটি কয়ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?ক. ২ ভাবে খ. ৩ ভাবেগ. ৪ ভাবে ঘ. ৫ ভাবেসঠিক উত্তর: ক।৩৯১. ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক?ক. ফ্রান্স খ. যুক্তরাষ্ট্রগ. ভারত ঘ. ব্রিটেনসঠিক উত্তর: খ।৩৯২. আয়-ব্যয় সমান হলে বাজেটকে কী বাজেট বলে?ক. ঘাটতি বাজেট খ. উদ্বৃত্ত বাজেটগ. সুষম বাজেট ঘ. রাজস্ব বাজেটসঠিক উত্তর: গ।৩৯৩. বাজেট সাধারণত—ক. ২ প্রকার খ. ৩ প্রকার গ. ৪ প্রকার ঘ. ৫ প্রকারসঠিক উত্তর: ক।# এ বছর আমাদের জাতীয় বাজেটে বিনোদনের কথা মাথায় রেখে পর্যটনশিল্প বিকাশে মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়।৩৯৪. পর্যটনশিল্প বিকাশে বরাদ্দকৃত খাতটির নাম কী?ক. ভর্তুকি খ. সমাজকল্যাণ কার্যক্রমগ. অপ্রত্যাশিত ব্যয়ঘ. বেসামরিক পূর্ত কাজ।সঠিক উত্তর: খ।৩৯৫. কোন উৎস থেকে মধু আহরণ করে সরকার আয় করে?ক. রেলওয়ে খ. আয়করগ. বন ঘ. স্ট্যাম্পসঠিক উত্তর: গ।৩৯৬. প্রত্যক্ষ কর কী?i. মূল্য সংযোজন করii. আয়কর iii. আবগারি শুল্কনিচের কোনটি সঠিক?ক. i খ. ii গ. iii ঘ. ii ও iii.সঠিক উত্তর : খ। প্রভাষক, ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ, ফেনী
যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির তথ্য ফাঁসকারী এডওয়ার্ড স্নোডেন অভিযোগ করেছেন, জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলো মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসএ) সঙ্গে যৌথভাবে গুপ্তচরবৃত্তি করে। এ ক্ষেত্রে তারা মধ্যপ্রাচ্যের মতো বিভিন্ন অঞ্চল বেছে নেয়। জার্মান সংবাদ সাময়িকী ডের স্পিগেল-এর অনলাইন সংস্করণে গতকাল রোববার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। এদিকে ভেনেজুয়েলা জানিয়েছে, স্নোডেনের সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগাযোগ হয়নি। এর আগে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো তাঁর দেশে আশ্রয় নিতে স্নোডেনকে প্রস্তাব দেবেন বলে ঘোষণা দেন। ভেনেজুয়েলা ছাড়াও বলিভিয়া ও নিকারাগুয়া স্নোডেনকে আশ্রয় দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। ডের স্পিগেল-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগামী সংস্করণে স্নোডেনের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নজরদারির খবর প্রকাশ করে বিশ্বজুড়ে আলোচিত হওয়ার আগে জ্যাকব অ্যাপেলবাম ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা লরা পয়ট্রাস স্নোডেনের এই সাক্ষাৎকার নেন। স্নোডেন বলেন, জার্মানির পররাষ্ট্রবিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি ও এনএসএ পরস্পরকে সহযোগিতা করে। এএফপি।
কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা আবু কাতাদাকে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার তিনি জন্মভূমি জর্ডানে পৌঁছেছেন। সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। এ ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সাংবাদিকদের বলেন, আবু কাতাদাকে জর্ডানে পাঠাতে পেরে তিনি ‘আনন্দিত’। আবু কাতাদাকে (৫৩) বহনকারী একটি বিমান গত শনিবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে আরএএফ নর্থহল্ট বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর জর্ডানের মার্কা সামরিক বিমানঘাঁটিতে পৌঁছায়। প্রায় ২০ বছর পর স্বদেশে ফিরলেন আবু কাতাদা। সেখান থেকে তাঁকে সোজা নিরাপত্তা আদালতে নেওয়া হয়।সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আবু কাতাদাকে প্রথম ২০০১ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে স্বদেশে পাঠানোর জন্য প্রায় আট বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিল যুক্তরাজ্য। আবু কাতাদাকে নির্যাতন করা হবে না, এ-সংক্রান্ত যুক্তরাজ্য-জর্ডান একটি চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে স্বদেশে পাঠানো সম্ভব হয়।যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা মে বলেন, ‘বিপজ্জনক মানুষটিকে শেষমেশ বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে তাঁর নিজের দেশে পাঠানো হয়েছে।’কাতাদাকে বহনকারী ওই বিমানে জর্ডানের আরও ছয়জন ছিলেন। তাঁদের তিনজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা, একজন মনস্তত্ত্ববিদ, একজন চিকিৎসক ও একজন আইনজীবী। জর্ডানের একজন সরকারি মুখপাত্র বলেন, কাতাদাকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। বিচারপ্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করা হবে। বিবিসি ও এএফপি।
Lesson 12  Birds of Bangladeshপ্রিয় শিক্ষার্থী, পূর্বপ্রকাশের পর আজ ইংরেজি ১ম পত্রের Lesson 12: Birds of Bangladesh নিয়েআলোচনা করা হলো. 4. Make five sentences from the substitution table.Answer-4 :a. Benebau is a beautiful bird.b. It is called Black headed Oriole in English.c. It resembles the mayna, another familiar bird of Bangladesh.d. It lives in round shaped nests.e. The nests are built with dry grass and barks of trees.5. Rearrange the following sentencesThe black headed Oriole is one of them. Due to geographical location, plenty of fauna are found here. Beside Bangladesh, it is also found in different Asian countries. Bangladesh is the land of different kind animals. It is known as Benebau to us.Answer-5 :Bangladesh is the land of different kind animals. Due to geographical location, plenty of fauna are found here. The black headed Oriole is one of them. It is known as Benebau to us. Beside Bangladesh, it is also found in different Asian countries.6. True of false. If false, give the correct answera. Bangladesh is enriched naturally.b. The Bangladeshi look down upon their country.c. The country is gifted with natural resources.d. Bangladesh is full of natural resources because of it biological location.e. Birds are mineral resource.Answer-6 :(a) True. (b) False. Corr. Inf. The Bangladeshi are proud of their country, (c) True. (d) False. Corr. Inf. Bangladesh is full of natural resource because of its geographical location, (e) False. Corr. Inf. Birds are natural resources.7. Fill in the blank with the words from the box:Bangladesh is (a) — of natural resources. Among them (b) — are one. One of the common birds (c) — Benebau. It is also called (d) — in English. It is found in the (e) — land of Bangladesh. Its head and body are of (f) — but its throat, tail and some parts of wings are of (g) — . Red is the colour of its (h) — . Its length is (i) — and looks like a (j) —.Answer-7 :(a) full; (b) birds; (c) is; (d) Black headed Oriole; (e) plain; (f) yellow; (g) black; (h) beak; (i) 25 cm.; (j) mayna.8. Put a words in the gaps from the box matching their meanings.a. — = a long thin creature with no bones or legs, that lives in soil.b. — = a thing given to someone.c. — = full of life and energy.d. — = having no empty space.e. — = the outer covering of a tree.f. — = feeling pleased and satisfied with something. g. — = existing in nature.h. — = level. i. — = enjoyable.j. — = a supply of a country has to increase their wealth.Answer-8 :(a) worm; (b) gift; (c) sprightly; (d) full; (e) bark; (f) proud; (g) natural; (h) plain; (i) pleasant; (j) resource.
বিদেশি জার্মান ভাষাশিক্ষায় সবে হাতেখড়ি। থেমে থেমে পড়া, কিছু কিছু লেখা আর আধো আধো বুলি পর্যন্তই দৌড়। এরই মধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে যাওয়া। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই কোমাই যেন তাকে রাতারাতি জার্মান ভাষা শিখিয়ে দিয়েছে। এখন সে জার্মান ভাষা এতটাই অনর্গল বলা শুরু করেছে যে নিজের ভাষাই ভুলে গেছে সে। ক্রোয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় কেনিন শহরের ১৩ বছর বয়সী এক মেয়ের জীবনে ঘটে গেছে এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা। শিশুটির অভিভাবকেরা জানান, শিশুটি সবে একটি বিদ্যালয়ে জার্মান ভাষা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছে। তবে অনর্গল কথা বলা দূরে থাক, ভাষাটি এখনো খুব একটা শেখা হয়ে ওঠেনি তার। শিশুটির পরিবার জানায়, সম্প্রতি আকস্মিক অসুস্থ হয়ে সে কোমায় চলে যায়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা সে কোমায় ছিল। তবে কোমা থেকে ফেরার পর সে মাতৃভাষা ভুলে যায়। আর শুদ্ধ জার্মানিতে কথা বলা শুরু করে। কেবি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দাবি করেন, ঘটনাটি একেবারেই ব্যতিক্রম। বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। হাসপাতালের পরিচালক দুজোমির মারাসোভিক বলেন, ‘এভাবে স্নায়ুরোগ (ট্রমা) থেকে সেরে উঠে মস্তিষ্ক কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, আপনি কখনোই তা জানবেন না। তবে ওই ঘটনায় অবশ্যই আমাদের কিছু তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা আছে।’ মনস্তত্ত্ববিশেষজ্ঞ মিজো মিলাস বলেন, ‘আগে এ ধরনের ঘটনাকে অলৌকিক আখ্যা দেওয়া হতো। তবে আমরা মনে করি, এর অবশ্যই যৌক্তিক ব্যাখ্যা আছে। যদিও আমরা এখনো তা খুঁজে পাইনি।’ দ্য টেলিগ্রাফ।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত শনিবার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে দুজন নিহত ও অন্তত ২০০ জন আহত হয়েছেন। উড়োজাহাজটি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে সান ফ্রান্সিসকো পৌঁছে বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আশিয়ানা এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটিতে ৩০০ জনের বেশি আরোহী ছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে গেলে যাত্রীরা দ্রুত উড়োজাহাজ থেকে নেমে যান। আশিয়ানা এয়ারলাইনসের এক বিবৃতিতে দুই যাত্রীর নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে আশিয়ানা এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী ইউন ইয়াং-দু বলেন, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে আমরা জানতে পেরেছি।’ সান ফ্রান্সিসকো জেনারেল হাসপাতালের মুখপাত্র র‌্যাচেল কাগান জানান, হাসপাতালে ১৮১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগেরই আঘাত খুব বেশি গুরুতর নয়। তবে দুই শিশুসহ ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিবিসি।
এখন তোমার নেই ক্ষমতা; কেমন আছো? পত্র দিয়ো।এক বিকেলে মেলায় কেনা সানগ্লাসটামাঝদুপুরে তোমার চোখে কেমন আছে, পত্র দিয়ো।এই আষাঢ়ে কোন ছাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিতবৃষ্টি এলে দেয় ভিজিয়ে আজ তোমাকে, পত্র দিয়ো।কোন কথাটা অষ্টপ্রহর চাও জানাতে কানে কানে,কোন কথাটা উসকানি দেয়, ভাসতে বলে ক্ষোভের বানেপত্র দিয়ো, পত্র দিয়ো।আর না হলে মনটা দিয়ো হরতালেতে, আপত্তি নেইগেলে যাবে জনতারই, কার কী তাতে?আমি না হয় জিএসপিটায় বাদ সেধেছি, বাদ সেধেছিতোমার দলের কথা ভেবেআম্লীগকে ভীষণরকম ‘সাইজ’ করেছি, কী আসে-যায়?এক জীবনে কতটা আর হতাশ হবে,এক মানবী কতটা আর কষ্ট দেবে। মূল কবিতাপ্রস্থানহেলাল হাফিজ এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পত্র দিয়ো।এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালী তাল পাখাটাখুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিয়ো।ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিতডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিয়ো।কোন কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানেকোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানেপত্র দিয়ো, পত্র দিয়ো।আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেয়ো, আপত্তি নেই।গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?আমি না হয় ভালোবেসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,নষ্ট ফুলের পরাগ মেখেপাঁচ দুপুরের নির্জনতা খুন করেছি, কী আসে যায়? এক জীবনে কতটা আর নষ্ট হবে,এক মানবী কতটা আর কষ্ট দেবে।
পরীক্ষাধীন সৌরশক্তিচালিত উড়োজাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ভ্রমণ শেষে গত শনিবার নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। ভ্রমণকালে বিমানটির একটি পাখা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এক আসনের বড় আকৃতির উড়োজাহাজটি শনিবার স্থানীয় সময় ভোর হওয়ার কিছু আগে ওয়াশিংটনের ডালাস বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বেলা ১১টা ১১ মিনিটে কেনেডি বিমানবন্দরে অবতরণ করে।অবতরণের পর সুইস পাইলট আন্দ্রে বোর্সবার্গ বিমানবন্দরে তাঁর সহকর্মী পাইলট বাট্রান্ড পিকার্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে তাঁরা বিজয়সূচক চিহ্ন দেখিয়ে ছবি তোলেন।পাইলট বোর্সবার্গ সাংবাদিকদের বলেন, বিমানের বাঁ দিকের পাখাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অবতরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। বোর্সবার্গের সহকর্মী পাইলট বাট্রান্ড পিকার্ড বলেন, উপকূল থেকে উপকূলে উড়ে বেড়ানো সেরা বৈমানিকদের জন্য সব সময়ই খুব চ্যালেঞ্জের। এর আগে ইউরোপ ও আফ্রিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সাফল্যের সঙ্গে উড্ডয়ন করেছে সৌরশক্তিচালিত উড়োজাহাজটি। এএফপি।
কানাডার ল্যাক-ম্যাগানটিক শহরে গত শনিবার অপরিশোধিত তেলবাহী একটি ট্রেনে বিস্ফোরণ ঘটে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে পুলিশ আশঙ্কা করছে। তেলবাহী ট্রেনে বিস্ফোরণে ওই শহরের বেশ কয়েকটি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি পানশালাও ছিল। পুলিশ নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রেল কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনের ক্রু পরিবর্তনের জন্য পাশের একটি গ্রামে থামানো হয়। হঠাৎ ট্রেনটি ল্যাক-ম্যাগানটিক শহরের দিকে নামতে শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, চালকবিহীন ট্রেনটি শহরে পৌঁছানো পর্যন্ত স্বাভাবিক গতিতে চলছিল। পরে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এখনো অন্তত ১০০ লোক নিখোঁজ রয়েছে। পুলিশ পাঁচজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২০ জন কর্মী কাজ করে যাচ্ছেন। সীমান্তের ওপার থেকে আসা যুক্তরাষ্ট্রের অগ্নিনির্বাপণ-কর্মীরাও উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছেন। বিবিসি।
চলছে বর্ষাকাল। নতুন পানির আনন্দের সঙ্গে নতুন রোগবালাই চলে আসছে। বন্যা, জলাবদ্ধতা আর পানিবাহিত জীবাণুর ঠেলায় ‘ঠ্যাক’ খেয়ে যাচ্ছে সাধারণ পাবলিক। রস+আলোর পাঠকদের সঙ্গে কিছু বর্ষাকালীন রোগের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আমির খসরু ম্যানহোলগায়েবানোরিসএটি একটি সামাজিক রোগ। বিভিন্ন এলাকায় ম্যানহোলের ঢাকনাচোরদের কল্যাণে রোগটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। বন্যার পানিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় ঢাকনাবিহীন ম্যানহোলের অবস্থান শনাক্ত করতে না পারার ফলে অনেকই এ রোগের শিকার হচ্ছেন। ম্যানহোলে হঠাৎ পড়ে গিয়ে গায়েব হয়ে যাওয়াই এ রোগের পরিণতি। ম্যানহোলগায়েবানোরিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যথাসময়ে ফিরতে পারছেন না বাড়িতে। ফিরলেও বিচিত্র রঙের আবর্জনায় মাখামাখি হওয়ার ফলে বাড়ির লোকজন আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিনতে পারছে না। পাপিছলানোহাড়গুড়িসবর্ষার সময় রাস্তাঘাট স্বাভাবিকভাবেই পিছলা হয়ে থাকে। এই পিছলা পথে চলতে গিয়ে অনেকেই পায়ের নিচে শক্ত ভিত্তির অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেন। ফলে পতন ঘটিয়ে বেমক্কা আছাড় খেয়ে হাত-পাসহ শরীরের অনেক অংশের হাড়-হাড্ডি গুঁড়ো করে ফেলেন। পিচ্ছিল শেওলা, কলার খোসা, যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলার প্রবণতা এই রোগের বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। পাপিছলানোহাড়গুড়িস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নাখোশ হলেও হাড়বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমপ্রদায়কে এ সময় বিশেষ আনন্দিত হতে দেখা যায়। রেইনিবিজনেসোরাসবর্ষাকাল এলেই বিশেষ শ্রেণীর কিছু মানুষের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ ব্যাপক মাত্রায় দেখা দেয়। তাঁদের কেউ কেউ বাড়ির জানালা দিয়েই বন্যার পানিতে বড়শি-ছিপ ফেলে মাছ ধরার আশায় বসে থাকেন। কাউকে দেখা যায় চার চাকার গাড়িটি বিক্রি করে দিয়ে কাঠের নৌকা তৈরির ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে। ছাতা, রেইনকোট, রাবারের জুতা ও স্যালাইন বিক্রির ব্যবসায়ও অনেককে সাফল্যের সঙ্গে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। রেইনিবিজনেসোরাস রোগ হলেও তেমন ক্ষতিকর নয় বলে একে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়। কাদাছিটকানোফোবিয়াএই রোগের ফলে শারীরিক ক্ষতির চেয়ে মানসিক ক্ষতির পরিমাণ বেশি। বিশেষ করে যাঁরা বর্ষাকালে বাড়ি থেকে সাজুগুজু করে বের হন, তাঁদেরই এই রোগ নিয়ে বেশি বিচলিত হতে দেখা যায়। পাপিছলানোহাড়গুড়িস রোগে একবার আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও কাদাছিটকানোফোবিয়ায় ভুগতে দেখা যায়। পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তায় দ্রুতগতিতে চলাচলকারী যানবাহনগুলোর ছিটিয়ে দেওয়া কাদায় মাখামাখি হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডুকরে উঠে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে ডেটিং মিস হয়ে যাওয়ায় ভুল বোঝাবুঝি থেকে হূদেরাগের সূচনাও হয়। ওয়াটারোপেটোডাউনএটি পানিবাহিত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্যালাইন খেয়ে বেঁচে থাকেন। মিনারেল ওয়াটারের নামে ট্যাপের পানি এবং ট্যাপের পানির নামে নদীর পানি পান করায় এ রোগের উদ্ভব ঘটে। সতর্ক হওয়ার আগেই আক্রান্ত ব্যক্তির পেট নেমে যায় এবং তাঁরা বাড়ির টয়লেটে স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করে দেন। তাঁদের জ্বালায় পরিবারের অন্য সদস্যরা টয়লেট যাওয়ার ক্ষেত্রে সেশনজটের মুখোমুখি হন। ওয়াটারোপেটোডাউন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রিয় উক্তি হলো ‘ত্যাগেই শান্তি’। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে তাঁরা পরিবেশদূষণও করে থাকেন। বর্ষাকালে এই রোগ মহামারির লেভেল ছুঁয়ে ফেলতে পারে।
বনলতা ছাত্রী হোস্টেলটা উত্তরমুখী। ফলে খুব একটা বাতাস আসা-যাওয়া করে না। কিন্তু বেশ কয়েক দিন হয় বনলতায় তুমুল হাওয়া বইছে, নির্বাচনের হাওয়া। খুব শিগগিরই হোস্টেলের প্রধান নির্বাচন করা হবে। নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে তিনজন—টিনা, টিয়া আর সামিয়া। তো সেই নির্বাচনের হাওয়ায় টিনার চুল উড়ছে ফুরফুর করে। অন্যদিকে তারই আপন বোন টিয়ার চুলের অবস্থা কাকের বাসার মতো! মাথায় যে ভালো করে শ্যাম্পু করবে সেই উপায়ও নেই! ভ্যানিটি ব্যাগ যে গড়ের মাঠ।বনলতার বাকিরা বলে, ‘টিনার তো এখন রমরমা অবস্থা! কদিন পরেই বারেক মামা ওকে চকচকে ডলার পাঠাচ্ছেন। সেই টাকা দিয়ে আমাদের খাইয়ে-দাইয়ে ঠিকই ভোটে জিতে যাবে ও।’ আড়ালে দাঁড়িয়ে এসব শুনে টিনা মুখ টিপে হাসে। আর টিয়া আফসোস করে, ‘কী পোড়া কপাল আমার! নির্বাচনের এই সময় হাতে টাকা থাকা কত দরকার! আর এখনই কিনা আমার ব্যাগ খালি। ধুত্তুরি ছাই!’ঘটনাটা একটু খুলে বলা দরকার। টিনা আর টিয়ার বারেক মামা থাকেন আমেরিকায়। ছয় মাস পর পর এক হাজার করে ডলার পাঠান দুই ভাগ্নিকে। একবার পাঠান টিনাকে, একবার টিয়াকে। টিয়ার কপাল এমনই খারাপ, নির্বাচনের ঠিক আগে আগে এবার ডলার পাচ্ছে টিনা। অথচ নির্বাচনের এই সময়টাতেই ডলারের কত দরকার! টিয়া পারলে নিজের চুল ছেঁড়ে। চুল ছিঁড়তে গিয়েও থেমে যায় ও; পড়তে পড়তে চুলগুলো ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়ে যাচ্ছে প্রায়। ২.এক সকালে হঠাৎ টিয়ার মাথার ওপরে এক শ ওয়াটের একটা বাল্ব জ্বলে উঠল। এক লাফে বিছানা ছেড়ে খাতা-কলম নিয়ে বসল ও। খুব কাছের কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে সলাপরামর্শ করে লিখে ফেলল একটা চিঠি। চিঠির প্রাপক বারেক মামা।প্রিয় বারেক মামা,আশা করি ভালো আছো। আমি খুব বেশি ভালো নেই। তোমার পাঠানো এক হাজার ডলার দিয়ে বইপত্র কিনেছিলাম। সেই সব বই পড়তে পড়তে আমার মাথার চুল পর্যন্ত পড়ে যাচ্ছে! আমার কী হবে, মামা!অথচ তোমার প্রিয় ভাগ্নি টিনা তো গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াচ্ছে! পড়াশোনার নাম নেই, খালি ফেসবুকিং আর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা। এত করে বলি, আয়, একসঙ্গে পড়াশোনা করি, বারেক মামার স্বপ্ন পূরণ করি। নাহ্, সে আমার কথা কানেই তোলে না! বলো মামা, তুমি কি এসব করতেই আমাদের ডলার পাঠাও? তাই তোমার কাছে অনুরোধ, এবার আর টিনাকে ডলার পাঠিয়ো না। আরও ডলার পেলে ওর পাখা গজাবে। পরীক্ষায় ফেল করে তোমার মুখে চুনকালি মাখাবে! প্লিজ মামা, একটু ভেবে দেখো। এভাবে চোখের সামনে নিজের বোনকে ভুল পথে যেতে দিতে পারি, বলো?ইতিতোমার অতি আদরের টিয়া ৩.চার দিন পরেই একটা চিঠি এল বনলতায়। প্রেরক বারেক মামা, প্রাপক টিনা ও টিয়া। খুশিতে বাকবাকুম হয়ে চিঠিটা খুলল টিনা। ভাবল, ডলার পাঠিয়েছে মামা। চিঠিটা পড়েই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল ও। অন্যদিকে টিয়ার খুশি কে দেখে! মুখে সারাক্ষণ একটা কোলন ডি মার্কা হাসি ঝুলিয়ে হোস্টেলময় ঘুরে বেড়াতে লাগল ও।টিনা আবার চিঠিটা পড়তে শুরু করল। মামা লিখেছেন—প্রিয় টিনা ও টিয়া,আশা করি কুশলেই আছো। পর সমাচার এই যে তোমাদের অধঃপতনের কথা শুনিয়া যারপরনাই মর্মাহত হইয়াছি। তোমরা নাকি পড়াশোনায় মন না দিয়া ফেসবুক নামক পুস্তক পাঠে ব্যস্ত! তোমাদের তো আগেই বলিয়াছি—আগে পাঠ্যবই, তারপর আউট বই। কিন্তু তোমরা যখন আমার কথায় কর্ণপাত করো নাই, তাই সিদ্ধান্ত লইয়াছি, তোমাদেরকে আর ডলার পাঠাইব না। তোমরা যদি আবার পড়াশোনায় মনোনিবেশ করো, তবে আবার ডলারের কথা ভাবিয়া দেখিব। আর তোমরা তো জানোই, কত কষ্ট করিয়া, তোমাদের মামির রক্তচক্ষু ফাঁকি দিয়া ডলার পাঠাইতাম! আশা করি, তোমরা সুপথে ফিরিবে।ইতিতোমাদের বারেক মামা ৪.ক্ষোভে ফেটে পড়ল টিনা। বনলতার বাকি সবার সামনে ইচ্ছামতো ঝাড়ল টিয়াকে, ‘তুই একটা কুচক্রী! আমার নামে মিথ্যা কথা লাগিয়েছিস মামার কাছে! আর তুই যে এটা একা একা করিসনি, সেটা ভালো করেই জানি। সবার ভালোর কথা ভেবে ঠিক করেছিলাম, মামার পাঠানো টাকা দিয়ে হোস্টেলের চুলাটা ঠিক করব, দেয়ালে রং করব, আরও কত ইচ্ছা ছিল! তুই সেটা হতে দিলি না! আজ তোর একদিন কি আমারচব্বিশ ঘণ্টা!’বলেই টিনা-টিয়া প্রকাশ্যে চুলোচুলি শুরু করে দিল! টিয়ার যে চুল ছিল তা আর অবশিষ্ট রইল না। টিনারও একই দশা। শেষ কথাশেষ পর্যন্ত নির্বাচন হলো বনলতায়। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলো সামিয়া। টিনা-টিয়া জিতবে কী করে! সারা দিন ঝগড়া করলে কি আর নির্বাচনে জেতা যায়? তার ওপর ছিল না বারেক মামার ডলার। নির্বাচনের যখন এই ফলাফল তখন ঠিকই দুই বোনের মধ্যে মিল-মহব্বত হয়ে গেল। দুই বোন এখন দিন-রাত হাপুস নয়নে কাঁদে!
জব্বার স্যারের কাছে মৌখিক পরীক্ষা দিচ্ছিল জমির। উত্তর দিতে গিয়ে কোথাও আটকে গেলেই সে কাশি দেওয়ার ভান করছিল।স্যার বললেন, ‘কী ব্যাপার, পারছ না কেন? পরীক্ষার আগে দুই দিন ছুটি পেয়ে করলাটা কী?’জমির দুর্বলতার ভান করে নিচু গলায় জবাব দিল, ‘ভালো পড়া হয়নি, দুই দিন ধরে কাশি ছিল স্যার।’‘না, তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। দুই দিন ধরে প্র্যাকটিস করে এসে সামান্য কাশিটাকেই আসলের মতো দিতে পারতেছ না।’ জমিরকে ফেল করানোর আগে এটাই ছিল স্যারের শেষ কথা। কিছুদিন আগে আমি নিজের রুমে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার পাশের ব্লকে থাকা এক তরুণ চিকিৎসক ভাইয়ার রুম থেকে পড়ার শব্দ শোনা গেল। বিসিএস প্রিলিমিনারির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। বেশ জোরে জোরেই পড়ছিলেন, ‘বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি মাইলে ২,৫০০ বর্গজন... উম উম উম। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি মাইলে ২,৫০০ বর্গজন। উম উম উম...’ গণিত থেকে দূরে সরতে সরতে কতিপয় মেডিকেল ছাত্রের একসময় সম্ভবত গণিত ডেফিসিয়েন্সি রোগ তৈরি হয়ে যায়। কঠিন চিকিৎসাবিদ্যায় ডুবে থাকলে সেটা হওয়া অস্বাভাবিকও নয়।আমার নিজের বেলায়ও এমন নজির আছে। এক দিন পরে আইটেম এক্সাম থাকায় পড়ার চেষ্টা করছিলাম, তখন তানভির যুদ্ধের একটা মুভি দেখতে দেখতে বলল, ‘বাহ্! জানতাম না তো ট্যাঙ্কের ভেতর পানির স্ফুটনাঙ্ক ৯০ ডিগ্রি। ব্যাপারটা বুঝছিস?’আমি বই থেকে মুখ তুলে বললাম, ‘না বোঝার কী আছে, ৯০ ডিগ্রি মানে তো এক সমকোণ!’ পত্রিকার প্রথম পাতায় সাড়াজাগানো একটি খবর বের হলো। চিকিৎসকের চেম্বারে এক লোক মরে পড়ে আছে, অথচ অমানবিক চিকিৎসক খবরই নিলেন না।পরদিন সেই পত্রিকার মাঝের পাতায় ছোট্ট করে ওই চিকিৎসকের পরিবারের পাঠানো একটি প্রতিবাদনামা ছাপা হলো, ‘খবর নেবেন কী করে? মরে পড়ে থাকা লোকটিই যে ওই চেম্বারের চিকিৎসক ছিলেন!’ একদিন এক স্যার পড়াচ্ছিলেন, ‘যদি তোমরা বোন মেরোতে (অস্থিমজ্জায়) সুচ ঢোকাতে চেষ্টা করো, অদক্ষতাসহ নানা কারণে সুচটা অস্থিমজ্জায় নাও ঢুকতে পারে।’অসীম বলল, ‘আর স্যার, আমরা যদি সুচটা আশপাশের কোনো অংশে ঢোকাতে চাই, তাহলে?’ওর দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে স্যার বললেন, ‘সে ক্ষেত্রে সুচটা অস্থিমজ্জাতেই ঢুকতে পারে।’ আমার এক বন্ধু একদিন জিজ্ঞেস করল, ‘আচ্ছা বন্ধু, দুনিয়াতে এত চিহ্ন থাকতে ডাক্তাররা “প্লাস” (+) চিহ্নটাই বেছে নিল ক্যান?’আমি বললাম, ‘দেখ দোস্ত, রোগী মরুক আর বাঁচুক, ডাক্তার তো সব সময় “প্লাস”-এই থাকে, নাকি?
বাজারসদাই করার কাজে আমার অদক্ষতা, অপদার্থতা ও অজ্ঞানতা সীমাহীন পর্যায়ে। আমার যখন অতি অল্প বয়স, তখনই বাসার লোকজনের কাছে এই বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে। ফলে আমাকে অনেক দিন পর্যন্ত বাজারে যেতে হয়নি। কিন্তু কয়েক দিন আগে বাড়িতে কয়েকজন অতিথি আসবে দেখে মহামান্য স্ত্রী কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে সুদীর্ঘ ফর্দ হাতে বাজারের পথে রওনা হলাম। বাড়ির কাছেই বিশাল দুটি বাজার হয়েছে। আধুনিক বাজার, মানে সুপার শপ।ভেতরে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঠান্ডা পরিবেশ। কাচঘেরা ঝকঝকে-তকতকে ফ্লোর। অতিকায় শেলফে থরে থরে জিনিসপত্র সাজানো। লুকানো স্পিকারে মৃদুলয়ে রবীন্দ্রসংগীত বাজছে। সবচেয়ে বড় কথা, বাজারের লোকজন অসম্ভব বিনয়ী, অমায়িক ও সহযোগিতাপ্রবণ। চোখাচোখি হওয়া মাত্র হাত তুলে বিনীত গলায় প্রথমে সালাম দেন। তারপর মধুর গলায় জানতেচান, কী খুঁজছি।আমি তাঁদের সহায়তায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে ফর্দ মিলিয়ে মিলিয়ে জিনিসপত্র খুঁজে বের করে জড়ো করে ফেললাম। উদাহরণ: চামড়া ছাড়ানো মুরগি, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, আলু, পটোল, ডিম, শসা, পাউরুটি, হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, শ্যাম্পু-কন্ডিশনার ইত্যাদি।ফর্দে উল্লেখ ছিল না, কিন্তু পরে কাজে লাগতে পারে চিন্তা করে আরও কিছু জিনিসও কেনা হলো। উদাহরণ: মিক্সড জুস (এটা কিনে কুপন পূরণ করে বাক্সে জমা দিতে হয়। পরে লটারি হবে। লটারি জিতলে নাকি মালয়েশিয়া বেড়াতে নিয়ে যাবে), বিশেষ ধরনের সাবান (এটাতেও লটারি হবে, জিতলে পাওয়া যাবে হীরার আংটি), সুগন্ধি নারকেল তেল (এর কাজ মাথা ঠান্ডা রাখা, অতি জরুরি জিনিস), নতুন ধরনের আঠা (চেয়ার-টেবিলের কোনো অংশ খুলে গেলে এটা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে ফেলা যায়), টিস্যুবক্স, ফয়েল পেপার, কিচেন টিস্যু, জিপারওয়ালা স্টোরেজ ব্যাগ (আমার স্ত্রীর কাছে এটি দারুণ সমাদৃত হওয়ার কথা), মাসালা-টি, মশা ও তেলাপোকা মারার বিশেষ ধরনের স্প্রে (৭০ শতাংশ ডিসকাউন্ট), দুটি কোন আইসক্রিম (একটা কিনলে খারাপ দেখায়, তাই দুটি) ইত্যাদি।তালিকাভুক্ত পণ্যের মধ্যে কাঁচা মরিচের অংশটুকু বিস্তারিত বলা দরকার।আমি সেলসম্যানকে বললাম, ‘ভাই, কাঁচা মরিচ দ্যান।’‘কতটুকু দেব, স্যার?’কাঁচা মরিচ কতটুকু নিলে ভালো দেখায়, সেটা আমার ধারণা ছিল না। আমি বললাম, ‘১০ কেজি দ্যান।’সেলসম্যান আমার দিকে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে বড় বড় চোখ করে একবার তাকালেন। তারপর কোথা থেকে অতিকায় সাইজের একটা প্যাকেট নিয়ে এসে কাঁচা মরিচ ভরতে শুরু করলেন।আমি এর আগে কাউকে প্যাকেটের মধ্যে কাঁচা মরিচ ভরতে দেখিনি। পুরো দৃশ্যটা আমার কাছে কোদাল দিয়ে মাটি কোপানোর কর্মযজ্ঞের দৃশ্যের মতো দেখাল।আর ১০ কেজি কাঁচা মরিচ যে এত বিপুল পরিমাণে হয়, সেটাও আমার জানা ছিল না।কাঁচা মরিচ খুবই হালকা জিনিস, কিন্তু ১০ কেজি কাঁচা মরিচ একসঙ্গে করার পর তা দেখতে যে এত বিশাল হয়, সেটা দেখার পর আমি একটু ভড়কে গেলাম। এত বিপুল পরিমাণ কাঁচা মরিচ ১০ সদস্যের একটা পরিবার পুরো বছর ধরে চেটেপুটে খেয়েও শেষ করতে পারবে না (তাদের প্রত্যেকের যদি নিয়মিত তিন বেলা মুঠি মুঠি কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে, তবুও), এমনকি নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে বিতরণ করেও শেষ করা কঠিন। আমি আমার সন্দেহ মনের মধ্যে পুষে রাখলাম না। দ্রুত ফোন দিলাম মহামান্য স্ত্রীকে।‘আচ্ছা, কাঁচা মরিচ কয় কেজি কিনব?’সে টেলিফোনের ওপাশে থেকে রাগী রাগী গলায় বলল, ‘কয় কেজি কিনবা মানে? কেজি না, ১০০ গ্রাম কিনবা।’আমি থতমত খেয়ে বললাম, ‘মাত্র ১০০ গ্রাম? আরেকটু বেশি কিনি?’‘তোমার যা ইচ্ছা কেনো। তোমারে আজকে কাঁচা মরিচের ভর্তা আর স্যুপ বানায়ে দেব। খায়ো তুমি। আমি এখন ব্যস্ত, তোমার রংঢং শোনার টাইম নেই।’আমি ফোন রেখে সেলসম্যানের দিকে তাকিয়ে বিগলিত গলায় বললাম, ‘ভাই, ১০ কেজি কিনতে মানা আছে। আপনি আড়াই শ গ্রাম দ্যান।’আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম, সেলসম্যান গম্ভীর হয়ে বলবে, ‘আড়াই শ গ্রাম বেচি না।’ কিংবা এতক্ষণ ১০ কেজি কাঁচা মরিচ প্যাকেট করতে বলে যে বেকুবি করেছি, সে জন্য অনেক রাগারাগি করবে।কিন্তু বাস্তবে সে রকম হলো না। সেলসম্যান ছোট্ট একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কাঁচা মরিচগুলো আবার শেলফের যথাস্থানে ঢেলে দিয়ে ছোট আরেকটা প্যাকেট এনে দ্রুততার সঙ্গে আড়াই শ গ্রাম মেপে দিলেন।বিল মিটিয়ে ফেরার সময় দেখি, সুপার শপের দারোয়ানটা পর্যন্ত অসম্ভব অমায়িক। আমাকে বাজারের ব্যাগ হাতে নিতেই দিলেন না। পারলে বাসার গেটে এনে পৌঁছে দেন। আমি ছোট্ট একটা সিদ্ধান্তে এলাম, এখন থেকে অবশ্যই নিয়মিত বাজার করব।কিন্তু বাসায় ফেরার পর ছোট্ট একটু গন্ডগোল হয়ে গেল। আমার স্ত্রী সদাইপাতির সম্ভার দেখে কী কারণে কেন জানি মেজাজ ও গলার স্বর সপ্তদশে তুলে ফেলল। সে সময় তার উক্তিগুলো ছিল এ রকম: ‘আর যদি কোনো দিন তোমারে বাজারে পাঠাইছি!...এগুলা ঘোড়ার ডিম! কী আনছ?...এইটা কী কিনছ?...এটা কে কিনতে বলসে? উফ্...!’ঢিসাং...ঢিসুম...ঠাং...ঠং...ঠুং...ঠাস ঠাস ঠাস... ধ্রিমাক...!আমার আবারও বাজারে যাওয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
প্রথম আলোর ৬ জুলাইয়ের শিরোনাম অনুযায়ী, গাজীপুরে একটি ‘জাতীয়’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। ব্যাপক আগ্রহ, উৎকণ্ঠা এবং দুই প্রধান জোটের পারস্পরিক দোষারোপের মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি সম্পন্ন হয়েছে। বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত কিছু অনিয়ম সত্ত্বেও বাংলাদেশি মানদণ্ডে নির্বাচনটিকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে হয়। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনেকেরই অবদান রয়েছে।সবচেয়ে বড় অবদান মনে হয় সরকারি দলের। সরকারি দল দৃশ্যমানভাবে নির্বাচনী ফলাফল তাদের পক্ষে নেওয়ার কোনোরূপ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে হয় না। এর একটি বড় কারণ প্রায় সমশক্তিশালী ও আক্রমণাত্মক প্রতিপক্ষ। নির্বাচনের আগে থেকেই বিরোধী দল নির্বাচন কমিশন ও সরকারি দলের বিরুদ্ধে একটি স্নায়ুযুদ্ধের অবতারণা করে। তারা বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করে কমিশন ও ক্ষমতাসীনদের চাপের মুখে রাখে। এর থেকে সরকারি দলের মধ্যে এ ধারণা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক যে ঢিল মারলে পাটকেল খেতে হবে।সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। দ্য ডেইলি স্টার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯৩৪ জন সংবাদকর্মী গাজীপুরে জনগণের চোখ ও কান হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ৯৪ জন আন্তর্জাতিক এবং ২৩১ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক নির্বাচনের দিন গাজীপুরে উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনে এ ধরনের নিবিড় পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়।গত কয়েক বছরে আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতিতে যে পরিবর্তন এসেছে, তা-ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অনেকেরই মনে আছে আশির দশকের ভোটারবিহীন নির্বাচনের কথা। তখন থেকেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রবর্তন এবং ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ স্লোগানের আবির্ভাব হয়। এরপর ২০০৮ সালে নির্বাচনী বিধিবিধানে অনেকগুলো পরিবর্তন আসে। একটি কঠোর আচরণবিধিও প্রণীত হয়, যার মাধ্যমে শোডাউন, যত্রতত্র মিটিং-মিছিল, যখন-তখন লাউড স্পিকার বাজানো ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়, যার ফলে নির্বাচনে উত্তাপ ও উসকানি বহুলাংশে হ্রাস পায়। বিগত নির্বাচন কমিশন এসব বিধিবিধান কঠোরভাবে প্রয়োগ করে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যক্তিরাও তা মেনে চলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে নির্বাচনে খুনখারাবির প্রায় অবসান ঘটে। নির্বাচনী সংস্কৃতির এমন ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতাই গাজীপুরের নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। প্রসঙ্গত, নির্বাচনী সংস্কৃতিতে আরও উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নতুন স্লোগান হলো, ‘আমার ভোট আমি দেব, জেনে-শুনে-বুঝে দেব’।গাজীপুরের নির্বাচনী ফলাফল—মহাজোটের নিজ ঘাঁটিতে মহাপরাজয়—অপ্রত্যাশিত কি না। অনেকেই তা মনে করেন না। অনেকের ধারণা যে অতীতের পরাজয়ের ধারাবাহিকতাই গাজীপুরে অব্যাহত রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল একের পর এক চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছে। এসব পরাজয় ক্ষমতাসীনদের জন্য জেগে ওঠার ঘণ্টাধ্বনি বাজিয়েছিল। কিন্তু সরকার শুধু জনমতকে উপেক্ষাই করেনি, বরং একগুঁয়েমি ও অহমিকা প্রদর্শন করতেই থাকে।গাজীপুরের নির্বাচনী ফলাফলের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, মহাজোট-সমর্থিত প্রার্থী সৎ ও যোগ্য বলে যাঁর সুনাম রয়েছে, নিজের কেন্দ্রেও তিনি পরাজিত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রার্থীর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি এবং স্থানীয় ইস্যু এ নির্বাচনে কম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জাতীয় ইস্যুসমূহ, বিশেষত মহাজোট সরকারের ‘দিনবদলের’ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থতা। স্মরণ করা যেতে পারে, দিনবদলের সনদের ২৩টি অগ্রাধিকারের মধ্যে পাঁচটি ছিল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার। আর এ পাঁচটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল দুর্নীতি নির্মূল ও সুশাসন কায়েম করা। এ দুটি অগ্রাধিকারের অংশ হিসেবে সরকার ক্ষমতাধরদের বার্ষিক সম্পদের বিবরণ দেওয়ার, দলীয়করণের অবসানের, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ‘শিষ্টাচার ও সহিষ্ণুতা’ গড়ে তোলার, ‘রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরের ঘুষ, দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনুপার্জিত আয়, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালোটাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা’ গ্রহণের অঙ্গীকার করা হয়। এসব বাস্তবায়নের জন্য অর্থকড়ির পরিবর্তে প্রয়োজন ছিল সদিচ্ছা ও আন্তরকিতা, যা গত সাড়ে চার বছরে ক্ষমতাসীনেরা প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছে।সর্বোপরি, বর্তমান সরকার যেন জনগণের পরিবর্তে ‘আওয়ামী লীগের’ সরকারে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রের সব সুযোগ-সুবিধাই যেন এখন দলীয় নেতা-কর্মীদের করায়ত্ত। তদবির আর টাকা ছাড়া এখন যেন কোনো কিছুই ঘটে না। এ প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষ পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছে। কোথাও গিয়ে তারা যেন এখন কোনো অন্যায়ের প্রতিকার পায় না। গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও সাধারণ মানুষ প্রচলিত ব্যবস্থার শিকার ছিল। কিন্তু দিনবদলের আশা করেই এ দেশের জনগণ মহাজোটকে মহাবিজয় উপহার দিয়েছিল, যা আজ অনেকের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গাজীপুরের ‘জাতীয়’ নির্বাচনে ভোটাররা ক্ষমতাসীনদের সেই অঙ্গীকার ভঙ্গেরই আরেকবার জবাব দিয়েছেন।গাজীপুরের নির্বাচনী ফলাফল থেকে আজ আমাদের দুই প্রধান দলকে সঠিক শিক্ষা নিতে হবে। ক্ষমতাসীনদের শিক্ষা নিতে হবে যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার তাদের অনমনীয়তা একটি কুতর্কে পরিণত হয়েছে। তারা যদি সত্যিকারার্থেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়, তাহলে নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয় সরকারের দাবিতে একমত হতে সমস্যা কোথায়? এ ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের জন্যই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।পক্ষান্তরে, বিরোধী দল যেন মনে না করে যে ক্ষমতাসীনদের প্রতি জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে তারা বিরোধী দলকে ফুল দিয়ে বরণ করার জন্য এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। জনগণ তাদের অতীতের সব অপকর্মের কথা ভুলে গিয়েছে। স্মরণ রাখতে হবে, ২০০৮ সালের নির্বাচনেরসময়ে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের অনেকটা পরিচ্ছন্ন ইমেজ ছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রধান দুটি দলের কারোরই সেই ইমেজ নেই। তাই পরবর্তী নির্বাচনের দিনে ভোটারদের কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং এই সিদ্ধান্ত যে বর্তমানে বিরোধী জোটের পক্ষে যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।আমরা মনে করি, গাজীপুরের নির্বাচনী ফলাফলে সংলাপ অনুষ্ঠানের আরেকটি সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বৃহত্তর পরিসরে সংলাপ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর এবং একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন ও স্বাক্ষরের। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা এবং নির্বাচনী অঙ্গন থেকে অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের দূরে রাখার বিষয়-সম্পর্কিত ঐকমত্য জাতীয় সনদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। আরও অন্তর্ভুক্ত হতে হবে নির্বাচন-পরবর্তী নতুন সরকারের কিছু সুস্পষ্ট করণীয়। যেমন সংসদকে কার্যকর করা, রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রায়ণ, বিচার বিভাগ ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে পরিচ্ছন্ন করা, ক্ষমতা ও সম্পদের বিকেন্দ্রীকরণ, রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা ইত্যাদি। আশা করি, রাজনীতিবিদেরা আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানোর পথের সমস্যাগুলোর স্থায়ী ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের রথী-মহারথীদের সক্রিয় অংশগ্রহণসর্বস্ব গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া বাংলাদেশের ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি বড় সাফল্য। আর এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ; সাধুবাদ পেতে পারেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারাও। ক্ষমতাসীন দল যে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ করছে না— নেতাদের এই দাবি আরও একবার প্রমাণিত হলো। এটা বলা অতিশয়োক্তি হবে না যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে।তবে এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাই জাতীয় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার নিশ্চয়তা দেয় কি না, সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। যদিও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি গত চারটি সিটি নির্বাচনের মতোই গাজীপুরের নির্বাচনেও কারচুপি কিংবা নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ তোলার জন্য অত্যন্ত উদ্গ্রীব ছিল। তাদের আচার-আচরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে নির্বাচনে হেরে গেলে তারা কারচুপির ঢালাও অভিযোগ তুলতে পারত। বিরোধী দলকে এই অভিযোগ করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। গাজীপুরের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলাজনিত তেমন সমস্যা হয়নি কিংবা নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের কারচুপির অভিযোগ না তোলা কিন্তু প্রমাণ করে না যে গাজীপুরের নির্বাচন কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার থেকে একেবারেই মুক্ত ছিল; বরং এই নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপকভিত্তিক অভিযোগ ছিল।আরেকটি কথা হলো, স্থানীয় সরকারের একটি নির্বাচনে উভয় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সদর্প পদচারণ কাম্য ছিল না। এটাও প্রীতিকর ছিল না যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনটি নির্দলীয় মেজাজে হতে না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া। লক্ষণীয় যে নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে অসহায়ত্ব দেখিয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এটা উচ্চারণ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি যে এই নির্বাচন এ রকম তীব্র দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনের বিধিবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্য বিশ্লেষণের দাবি রাখে। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে আর ভোট ডাকাতির নির্বাচন সম্ভব নয়। সেদিন বাসি হয়ে গেছে। আমরা তাঁর মতের সঙ্গে একমত হতে পারলে সন্তুষ্ট হতাম। কিন্তু আমরা মনে করি, গাজীপুরসহ পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিরোধী দলের সেনা মোতায়েনের দাবি নাকচ হওয়া সত্ত্বেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া এবং হেরে যাওয়ার পরও সরকারি দল দ্বারা কোনো সহিংসতা না ঘটানো প্রধানত নির্বাচন কমিশনের নয়, সরকারি দলের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। তবে সামগ্রিক বিচারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর আইন অনুযায়ী নাগরিকদের প্রতি যথোচিত আচরণের এটা মানদণ্ড কি না, সেটা যাচাই করার সময় এখনো আসেনি; বরং এটাই প্রতিভাত হয় যে সরকারি দল না চাইলে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা অনেকটা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে কাজ করে দেখাতে পারে।
নীতিনির্ধারণী স্তরে ভূমিকা পালন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশের নারী পুলিশ ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করেছে। এখন তারা যুক্ত হয়েছে নারী পুলিশের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে। গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে নারী পুলিশের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই পটভূমিতে দেশে নারী পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি সামনে এসেছে। গত শনিবার বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্কের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে নারী পুলিশের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো প্রশংসিত হয়েছে।নির্যাতিত নারীর জন্য জরুরি সহায়তা, নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা অভিযুক্ত কোনো নারীকে গ্রেপ্তারের জন্য নারী পুলিশ অপরিহার্য। কিন্তু এটাই তাদের একমাত্র কাজ নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমনসহ পুলিশের নিয়মিত সব কাজেও নারী পুলিশ যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। এমনকি গোলযোগপূর্ণ অবস্থায় শান্তি রক্ষায়ও নারী পুলিশ বাহিনী রাস্তায় কর্তব্য পালন করে। তাই নারীর কাজের ক্ষেত্র এখন অবারিত। নারীর জন্য পুলিশের চাকরি বেশ মর্যাদাপূর্ণ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।পুলিশের প্রায় সব শাখায় উচ্চতর পদে নারী পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। র‌্যাবের একজন ডিআইজি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে একজন অতিরিক্ত কমিশনারসহ বেশ কিছুসংখ্যক অতিরিক্ত পুলিশ পরিদর্শক ও এসপি পদে নারী পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের নারী পুলিশ পেশাদারি দক্ষতার প্রমাণ রেখেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পুলিশকে জেন্ডার সংবেদনশীল হিসেবে গড়ে তোলার কর্তব্যই সামনে এসেছে। এ জন্য জেন্ডার গাইডলাইন ও জেন্ডার মডিউল তৈরি করা হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে এসব নীতিমালার সঠিক বাস্তবায়ন নারী পুলিশের আরও এগিয়ে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার। কিন্তু নারী পুলিশের সংখ্যা মাত্র ছয় হাজার বা তারও কম। এক হিসাবে নারী পুলিশ ৪ শতাংশের বেশি নয়। এই অনুপাত অন্তত ১০ শতাংশ হলে সার্বিকভাবে পুলিশের ভূমিকা আরও উন্নত হবে। পাশের দেশ ভারতেও ১৫ শতাংশ নারী পুলিশ রয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশেও আরও নারী পুলিশ চাই।
যত দূর মনে পড়ে, টাইটানিক সিনেমায় জাহাজের সঙ্গে ক্যাপ্টেনের সলিলসমাধি ঘটেছিল ক্যাপ্টেনার ইচ্ছা এবং সিদ্ধান্তে। অর্থাৎ ক্যাপ্টেন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনিও জাহাজের সঙ্গে ডুবে গিয়ে জীবনাবসান ঘটাবেন।সিনেমার ব্যাপার তো, তাই নিঃসন্দেহে রোমান্টিক; কিন্তু হয়তো বাস্তবতাবিবর্জিত। অবশ্য হলেও হতে পারে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে জাপানি ক্যাপ্টেনদের তাঁদের যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে ইচ্ছাকৃত সলিলসমাধির অনেক ইতিহাস পড়েছি। ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে আত্মহত্যা করা জাপানিদের দীর্ঘদিনের ‘ঐতিহ্য’, যা অন্যের কাছে যতই নির্মম মনে হোক না কেন।এককালে সতীদাহ প্রথার অধীনে অনেক উচ্চ গোত্রীয় স্ত্রী স্বামীর শবের সঙ্গে নিজেকেও চিতায় জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। ব্রিটিশরা জোর করে আইন করে এটা বিলুপ্ত করেছিল শ দেড়েক বছর আগে।জাহাজের কথায় ফিরে আসি। গাজীপুরে নিঃসন্দেহে আওয়ামী জাহাজের ভরাডুবি হয়েছে নির্বাচনের সাগরে শনিবার। রোববারের প্রথম আলোর তৃতীয় পৃষ্ঠায় আরও খবর আছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনসংক্রান্ত। শনিবার (৬ জুলাই) নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী এবং নারায়ণগঞ্জের দুটি নতুন পৌরসভা—আড়াইহাজার আর গোপালদীতেও নির্বাচন হয়েছে। এই তিনটি পৌরসভা নির্বাচনের একটিতেও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হতে পারেননি। জাহাজডুবি না হলেও নৌকাডুবি হয়েছে, অর্থাৎ পৌরসভাগুলো ছোট ছোট।২.সপ্তাহ খানেক হলো অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড পদত্যাগ করেছেন। বছর তিনেক প্রধানমন্ত্রী থাকার পর অস্ট্রেলিয়ার এই প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেন।কারণ, ইদানীংকালে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছিল যে, সরকার এবং সরকারি দল ভীষণভাবে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিল। সব দেশে জনমত জরিপ করে প্রধানত সংবাদমাধ্যম, অস্ট্রেলিয়ায় তা-ই হচ্ছিল। পত্রপত্রিকা জরিপ করে ফলাফল ছাপাচ্ছিল।শেষতক সরকার ও সরকারি দলের প্রধান হিসেবে জনপ্রিয়তা হ্রাসের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে জুলিয়া গিলার্ড পদত্যাগ করলেন।মার্গারেট থ্যাচার যখন জন মেজরের কাছে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব এবং প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান, তখন লন্ডনে থাকতাম। লেডি থ্যাচার তখন মনে বড় দুঃখ পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে টনি ব্লেয়ারের অবস্থা হয়েছিল একই রকম। দলের (লেবার পার্টি) আর সরকারপ্রধানের পদ ছাড়তে হয়েছিল গর্ডন ব্রাউনের অনুকূলে। সর্বক্ষেত্রে কারণ একটাই, একই রকম। অর্থাৎ তাঁদের নেতৃত্বাধীন সরকার ও দল জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিল। অবশ্য বেল পাকলে কাকের কী। আমরা না অস্ট্রেলিয়া, না গ্রেট ব্রিটেন!৩.ডুবন্ত জাহাজের ক্যাপ্টেনের সামনে তিনটি বিকল্প খোলা থাকতে পারে। প্রথম বিকল্প হলো এমন মনে করা যে, জাহাজে অল্প কিছু পানি ঢুকেছে। অর্থাৎ তেমন কোনো বিপদের কারণ নেই। জাহাজ আগের মতোই চালানো যাবে। ধারণা করছি, জাহাজের ক্যাপ্টেন এই বিকল্পই বেছে নেবেন। নিজের ভুল না মানা, দায়দায়িত্ব অস্বীকার করাই আমাদের রাজনৈতিক ধর্ম।নির্বাচনে ভরাডুবির কারণ কী? কারণ হলো বিএনপি টাকা ছড়িয়েছে, ভোট কিনেছে। আর দ্বিতীয় কারণ হলো ধর্মকে তারা রাজনীতিতে অপব্যবহার করেছে। অর্থাৎ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার হাস্যকর চেষ্টা।ভোটারদের অপমান করা হবে যদি বলা হয় যে, তাঁরা টাকা খেয়ে অথবা ধর্মের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে বিএনপিকে ভোট দিয়েছেন।অবশ্য আমাদের বিবেচনায় গাজীপুরে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন তুলনামূলকভাবে একজন দুর্বল প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের বহু অভিযোগ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অন্য চার সিটির আওয়ামী প্রার্থীর মতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার জোরালো কোনো অভিযোগও ছিল না। অর্থাৎ প্রার্থীর দোষগুণ স্পষ্টতই মুখ্য ভূমিকা পালন করেনি। ভোটাররা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, প্রার্থীকে নয়।আমরা বলছি বিএনপি আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী; ১৮ দল বা ১৪ দল-সমর্থিত প্রার্থী বলছি না। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কী দরকার?ক্যাপ্টেনের দ্বিতীয় বিকল্পটি হলো শেষতক জাহাজ চালিয়ে যাওয়া। ডুবলে ডুবুক, হাল ছাড়ব না!ধারণা করছি, এই বিকল্পটিও বেছে নেওয়া হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিকল্প মিলিয়ে চলবে আওয়ামী জাহাজ।অর্থাৎ জাহাজে কোনো বড় ফাটল ধরেনি অথবা বড় কোনো অংশ ভেঙে পড়েনি। জাহাজ ডোবার মতো কোনো অবস্থা হয়নি বা কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটেনি। বিএনপি আর ধর্মীয় রাজনীতিকদের অপপ্রচারে ভোটাররা সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। ভুল বুঝতে পেরে আগামী সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট আর গাজীপুরের ভোটাররা ওই সব সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত সংসদীয় এলাকায় দলে দলে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে তাঁদের ভুল শোধরাবেন। এবং ভোটারদের ভুল শোধরাতে পারবেন একমাত্র খোদ ক্যাপ্টেন। অর্থাৎ ভোটারদের ভুল শোধরানোর জন্য জাহাজ তাঁকেই চালিয়ে যেতে হবে। গাইতে হবে সেই পুরোনো কীর্তন—বিএনপিকে ভোট দিলে যুদ্ধাপরাধের বিচার হবে না, জঙ্গিবাদের পুনরুত্থান ঘটবে। হয়তো দুটি কথাই ঠিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বর্তমান সরকারের এত ব্যর্থতার বিপরীতে এসব কথায় কি ভোটারদের আর মন ভরবে? সম্ভবত না।৪.সরকারি দলের ভরাডুবি হচ্ছে তার কারণ, দেশ পরিচালনায় ব্যাপক ব্যর্থতা। এককথায় এই ব্যর্থতা তুলে ধরতে হলে যে উদাহরণটি সবচেয়ে আগে আসে, তা হলো সৈয়দ আবুল হোসেন। এক দিকে চরম অদক্ষতায় খানাখন্দে ভরা সারা দেশের রাস্তাঘাট। বাস-ট্রাক-গাড়ির মালিকেরা ধর্মঘট করছেন এই বলে যে তাঁরা এত ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাবেন না। এমনকি ঈদের আগে রাস্তা মেরামতের দাবিতে সাধারণ নাগরিকেরা মানববন্ধন পর্যন্ত করলেন।সরকারের টনক নড়ল না। তারপর পদ্মা সেতু ভেস্তে গেল সেই সৈয়দ আবুল হোসেনের জন্য। তারপর কী হলো—তিনি খেতাব পেলেন ‘দেশপ্রেমিকের’।দেশপ্রেমিকের নতুন সংজ্ঞা পেলাম আমরা—দেশপ্রেমিক কাহাকে বলে? অদক্ষ-দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে দেশপ্রেমিক আখ্যা দেওয়া হয়। অথবা যে দেশে অদক্ষ-দুর্নীতিবাজেরা দেশপ্রেমিক উপাধিতে ভূষিত হন, সেই দেশের নাম বাংলাদেশ। রাজনীতিতে ঘটনা থেকে ধারণাটাই মুখ্য। দেশব্যাপী ধারণা জন্মেছে যে, দুর্নীতি হয়েছে। ভোটের রাজনীতিতে এই ধারণাটাই মুখ্য।দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা, অদক্ষতা আর দুর্নীতির ফিরিস্তি সারা দিন ধরে দীর্ঘায়িত করা যায়। উল্টো দিকের যুক্তি অর্থাৎ সরকারের সাফল্যগাথাও তুলে ধরা যায়। তবে স্পষ্টতর ভোটারদের কাছে সাফল্যগাথা এখন মোটেও আমলযোগ্য নয়। তাই তো একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি।তৃতীয় বিকল্পটি হলো অস্ট্রেলিয়া বা গ্রেট ব্রিটেনকে অনুসরণ করা। সেটা বলা বাহুল্য, হবে না। নিদেনপক্ষে ঈদের পরপরই আওয়ামী লীগ দলীয় কাউন্সিল বা দলীয় সমাবেশ ডাকতে পারে আত্মসমালোচনার জন্য। ভরাডুবি কেন হচ্ছে, তা বিবেচনা-বিশ্লেষণ করার জন্য, খোলামেলা আলোচনা করার জন্য। নেত্রীর স্তুতি আর বন্দনার জন্য সমাবেশ করলে বিপদ আরও বেশি হবে।বিএনপির মজা হলো, ভালো কিছু না করেই দলটি ব্যাপকভাবে সাফল্যমণ্ডিত হচ্ছে। এটাই রাজনীতি অর্থাৎ রাজনীতিতে সবকিছু সব সময় যৌক্তিকভাবে হয় না। কোনোটা যৌক্তিকভাবে এবং কোনোটা অনুভূতির তাড়নায় হবে, সেটা বুঝতে পারাই হলো রাজনীতি বোঝা।এ দেশের রাজনীতিতে শিগগির যুবরাজদের সুদিন আসবে না। ক্যাপ্টেনের দুর্দিনেরও অবসান ঘটবে বলে মনে হয় না। বিশেষত, প্রথম অথবা দ্বিতীয় বিকল্প পথে চলতে থাকলে।চতুর্থ কোনো বিকল্প আছে কি না, সেটা ঠিক করতে পারে একমাত্র দলটি, যদি দলটির সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া বা বিকল্প খুঁজে পাওয়ার মতো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থাকে। অন্যথায় পাঁচ বছর ক্ষমতাসীন থাকার পর ২০০১-এর নির্বাচনে কম হলেও ৬২টি আসন পেয়েছিল। এবার অর্থাৎ আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত আসনসংখ্যা হবে তার চেয়েও অনেক কম।জাহাজ ডোবার দায়ভার কিন্তু সব সময় ক্যাপ্টেনেরই। সন্দেহ হয়, এই ক্যাপ্টেন হয়তো জাহাজ আর তীরে ভেড়াতে পারবেন না।ড. শাহদীন মালিক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট।
প্রথম আলোয় কাবেরী গায়েনের ‘কালো মিতু ও ফরসা অন্ধকার’ পড়তে গিয়ে মনে হলো, শিশুমনে সাদা-কালোর ধারণা আমরাই প্রতিষ্ঠিত করে দিই। প্রতিটি পরিবারেই কোনো না কোনো সময় নতুন শিশুর আগমন ঘটে। শিশুদের আমরা যেমন খুশি তেমন করে গড়তে পারি। তবে ১২ বছর পর নাকি তাদের কোমর শক্ত হয়ে যায়। আর ভেঙে গড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই যা কিছু করার বারোর আগেই করতে হবে। মা-বাবার সম্পর্ক, ছেলেমেয়ের পার্থক্য, নারী-পুরুষের বৈষম্য, আপন-পর ভাবনা, ঊর্ধ্বতন-অধস্তনের ধারণা, সাদা-কালোর ভালোমন্দ, গরিব-ধনীর ব্যবধান, আরাম-আয়েশের ধারণা, খাবারদাবারের অভ্যস্ততা, শিল্প-সংস্কৃতির পাঠদান ইত্যাদি বিষয়ে শিশুর সামনে যে ধরনের আচরণ করা হবে বা শিশুকে যা শেখানো হবে, শিশু সেই মানসিকতাতেই বেড়ে উঠবে। পরিবেশের প্রভাব কেউ এড়াতে পারে না।মা-বাবার সম্পর্ক শিশুমনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পুরুষ পরিবারের প্রধান। পুরুষের সিদ্ধান্তের ওপর সংসার পরিচালিত হয়। শিশুর মা-বাবা দুজনেই রোজগেরে হওয়া সত্ত্বেও শিশু যখন দেখে, দিনান্তে ঘরে ফিরে মা রান্নাঘরে ঢুকছে, বাবা টিভির সামনে গা এলিয়ে বসে ‘চা দাও’ বলে হুকুম জারি করছে, রাতের রান্না ভালো হয়নি বলে রেগেমেগে টেবিল থেকে উঠে যাচ্ছে, সকালে নাশতা দিতে দেরি হচ্ছে বলে খিস্তিখেউড় করছে, শিশুর স্কুলের ফলাফল ভালো হয়নি বলে মাকেই দোষারোপ করছে, তখন শিশুমনে বদ্ধমূল হয়ে ওঠে সব দোষ মায়ের। কারণ, এসব কাজের জন্যই মা। ওদিকে শিশু মা-বাবা দুজনকেই ভালোবাসে। মা-বাবার সম্পর্কের টানাপোড়েন এক দিকে শিশুকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, অপর দিকে মা-বাবার একে অন্যের প্রতি আচরণ মেয়েশিশু ও ছেলেশিশুকে বিসমচরিত্রের মানুষে পরিণত করে। মেয়েশিশু ভাবে, আমাকে মায়ের মতো মুখ বুজে সহ্য করা শিখতে হবে আর ছেলেশিশু ভাবে, পুরুষই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। শিক্ষা, সচেতনতা, নারীর ক্ষমতার স্বীকৃতি ও সংস্কৃতিবোধ খুব অল্পসংখ্যক মানুষকে বৈষম্যপূর্ণ আচার-ব্যবহারে কুণ্ঠিত করলেও এগুলোর কোনোটাই অধিকাংশকে পরিবর্তিত করেনি। একটি শিশু ছেলে না মেয়ে, সেই ধারণার বীজ বপন না করে, সে যেন বুঝতে পারে সে মানুষ।শিশু কোনো কারণে মাতুলালয়ে বড় হলেও তাকে শেখানো হয়, ওটা তার আসল ঠিকানা নয়। নানা-নানি-মামা-খালাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় বেড়ে ওঠা শিশুটি যখন সবচেয়ে অনিরাপদ ও স্পর্শকাতর সময় অতিক্রম করে কথা বলা শুরু করে, তখন পিতৃগৃহে ফিরে যায়। পরেরবার বেড়াতে আসা সে রকম এক নাতি নাকি অপত্যস্নেহে মানুষ করা তার নানিকে বলেছিল, ‘তোমরা থাকো, আমি এখন বাড়ি যাব।’ আবার শিশু জন্মের পর সবাই শিশুটির চেহারায় বাবা-দাদা-চাচা-ফুফুদের চেহারা খুঁজে পায়। অনেক শিশুর চেহারা অবিকল মায়ের মতো হলেও স্বভাবে পিতৃকুলের ছাপ খুঁজে পেতে সচেষ্ট হয়।আর শিশুর গায়ের রং নিয়ে আদিখ্যেতা তো আছেই। ফরসা শিশুদের বলা হয়, ‘একেবারে যেন সাহেবের বাচ্চা!’ কারও বাচ্চা হলে প্রথমে জিজ্ঞাসা করা হয় ছেলে না মেয়ে? ছেলে হলে কথা নেই। কিন্তু প্রথম বাচ্চা মেয়ে হলেই সবার মুখ ভার। তার পরের প্রশ্ন কালো না ফরসা। চেহারা কার মতো? বাবার মতো শুনলে অনেকেই স্বস্তি পায়। যে শিশু ‘ফরসা’, ‘সাদা’ ‘দুধে-আলতা’, ‘ইউরোপিয়ানদের মতো’, ‘ধবধবে’ ‘ফুটফুটে’ প্রভৃতি বিশেষণ শুনতে শুনতে বড় হয়, সে ‘কালো’কে তার তুলনায় হীন ভাবতে শুরু করে। একজন মা বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চা আমাদের গৃহপরিচারিকার কোলে যেতে চায় না। ও যে কালো, তাই।’ এক শিশুকে তার এক কালো আত্মীয়া কোলে নিতে গেলে সে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।কালো মানেই খারাপ—এ ধারণা আমরাই শিশুদের মনে ঢুকিয়ে দিই। এ ধারণা নিয়ে কোনো ছেলেশিশু বড় হয়ে কালো মিতুকে গঞ্জনা দেয়, কালো মিতু নিজেকে অবাঞ্ছিত ভাবতে ভাবতে আত্মহত্যায় স্বস্তি খুঁজে পায়। বর্ণবৈষম্যের গুরু আমরাই। শিশুর জন্য কেমন ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, আমরা কেউ তা জানি না। আমরা যারা তার পাশে আছি, একদিন সবাই থাকব বা সে যে পরিবেশে, আরাম-আয়েশে বড় হচ্ছে, ভবিষ্যতেও সেই একই অবস্থা পাবে—এর নিশ্চয়তা কি আমরা দিতে পারি? আজকাল নাগরিক জীবনে একটা বা দুটো বাচ্চা নিয়ে সংসার। বেশি নজর দিতে গিয়ে আমরা শিশুদের পরনির্ভরশীল করে তুলছি। পারলে তাদের বাহ্যক্রিয়াদিও মা-বাবাই সেরে দেন। কিন্তু আত্মনির্ভরশীল ও কষ্টসহিষ্ণু না হলে আত্মবিশ্বাস জন্মায় না এবং আত্মবিশ্বাসই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বশর্ত। জনসংখ্যা কমাতে সরকারি উৎসাহে ‘দুটোর বেশি সন্তান নয়, একটি হলে ভালো হয়’ ধারা বজায় রাখতে গিয়ে শিক্ষিত সমাজের মধ্যে জন্মহার কমলেও দেশ এর সুফল লাভে বঞ্চিত হচ্ছে। কেননা, মানুষ করার গলদে মানবসম্পদে পরিণত না হয়ে সন্তানেরা মানবাপদে পর্যবসিত হচ্ছে। একটি আত্মপ্রত্যয়ী, কর্মঠ, শক্তসমর্থ প্রজন্ম ছাড়া এ দুর্ভাগা দেশের পরনির্ভরশীলতা কে কমাবে? আমরা মা-বাবারাই কি ওদের হাত-পা ভেঙে দিচ্ছি না? যারা এ দেশের ভবিষ্যৎ, বিকলাঙ্গ দেহমন নিয়ে ওরা নিজেরাই যদি না বাঁচতে পারল, তাহলে দেশটাকে বাঁচাবে কারা?শিল্প-সংস্কৃতিবোধও শিশুদের ভেতর শৈশবে জাগ্রত করানো প্রয়োজন। শিশুকে শুধু টিভির সামনে বসিয়ে না রেখে, বিশেষ করে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করে দেওয়া পরিবারের সবার দায়িত্ব। পড়ুয়াদের চিন্তার জগৎ অনেক বিস্তৃত, অনেক গভীর। চিন্তাশক্তিকে ধারালো করার প্রধান উপায় বই পড়া। মানবিক গুণাবলি অর্জনেও বই পড়ার ভূমিকা দৃশ্যমাধ্যম-শিল্পের ভূমিকার চেয়ে বেশি। প্রতিটি পরিবারেই শিশুদের ম্যাগাজিন ও শিশুতোষ পত্রপত্রিকা নিয়মিতভাবে রাখা উচিত। ঠাকুরমার ঝুলি বা ফেইরিটেল-এর সিডি চালিয়ে দিলে শিশু হয়তো কিছুক্ষণের জন্য বিনোদিত হবে, কিন্তু সে চোখ বন্ধ করে কোনো দিন তেপান্তরের মাঠ পেরোতে পারবে না, খোলা আকাশ তাকে জ্যোৎস্না দেখতে ডাকবে না বা বর্ষার দিন তাকে বিষণ্ন করে তুলবে না। মানবিক গুণাবলি অর্জনের জন্য বই যেমন শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে, তেমনি কাব্যতার প্রলেপ হূদয়ের নাব্যতা বাড়িয়ে শিশুকে করে তোলে নদীর মতো নিঃস্বার্থ।উম্মে মুসলিমা: সাহিত্যিক।
প্রিয় ম্যাডাম,আচ্ছা বলুন তো, মুখ থেকে বের হওয়া বুলি আর বন্দুক থেকে বের হওয়া গুলি কি ফেরত নেওয়া যায়? টিউবের প্যাকেট থেকে বের হওয়া পেস্ট আর হুট করে বাড়িতে চলে আসা অনাহূত গেস্টকে কি ফেরত পাঠানো যায়? যায় না, ম্যাডাম।কিংবা পাঁচ মাস আগে যে চিঠি আপনি লিখেছেন, এখন যদি আফসোস হয়, ইশ্, কেন পাঠালাম এই চিঠি, লাভ আছে কোনো?জানেন, এই রকম আফসোসে পড়েছিল আমাদের রাহাত। আমরা তখন ঢাকায় নতুন এসেছি। পড়তে। নতুন নতুন এলে যা হয়, সারাক্ষণ বাড়ির জন্য মন কাঁদে। তখনো মোবাইল ফোনটোনও এতটা সুলভ হয়নি। তখনো মানুষ চিঠি লিখত।নেপোলিয়ান একই সঙ্গে নাকি দুই হাতে দুটি চিঠি সমানতালে লিখতে পারতেন। হয়তো ডান হাত দিয়ে তিনি প্রেয়সীর কাছে প্রেমপত্র লিখছেন, ‘জানু, কেমন আছো ময়নাপাখি,’ আর বাঁ হাতে লিখছেন পাশের রাজ্যের রাজার উদ্দেশে, ‘ওরে শয়তান, তোর দিন শেষ, আমি আসছি আক্রমণ করতে!’ঠিক নেপোলিয়ানের মতো না হলেও আমাদের রাহাতও অনেকটা কাছাকাছি অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গিয়েছিল। একই বসায় সে লিখেছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের দুটো চিঠি। ব্যাকরণ বই থেকে দেখে দেখে লিখল: টাকা চাহিয়া পিতার নিকট পুত্রের পত্র। আর মাহফুজের লেখা পুরোনো প্রেমপত্র দেখে কপি করে লিখল লাভ লেটার। রাহাতের প্রেমিকা এবং বাবা দুজনই থাকত রংপুরে। চিঠি পোস্টটোস্ট করে এসে হুট করে রাহাতের মনে পড়ে গেল, মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে। প্রেমিকার খামে ঢুকিয়েছে বাবার চিঠি আর বাবার খামে প্রেমিকার! এরপর...। সেদিন রাহাতও খুব আফসোস করেছে, কেন পাঠালাম এই চিঠি, লাভ হয়েছে?আপনারটায় অবশ্য একটা লাভ হয়েছে। ওয়াশিংটন টাইমস নামের একটা পত্রিকা যে আছে, সেটা এই জাতি জানতে পেরেছে। তবে কিনা ম্যাডাম, নামের শেষে ‘ঠাকুর’ থাকলেই তো আর ‘রবীন্দ্রনাথ’ হয় না। তাই ‘টাইমস’ থাকলেই সেটি নামজাদা কোনো পত্রিকাও হয়ে যায় না। কারও নামের শেষে ‘হাসান’ থাকলেই কি আর সে ‘সাকিব আল হাসান’ হয়, বলেন!এমন একটা অখ্যাত পত্রিকায় আপনি যে চিঠিটি কিংবা যে নিবন্ধটি লিখেছেন কিংবা আপনার নামে ছাপা হয়েছে, সেটি এই পত্রিকার জন্য স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে আমার অনুমান। যুক্তরাষ্ট্রের সেরা ১০০টি পত্রিকার তালিকাতেও না থাকা ওয়াশিংটন টাইমস-এ আপনার নামে ছাপা হওয়া লেখাটিতে প্রায় পৌঁনে ৭০০ মন্তব্য পড়েছে দেখলাম! এবং সেখানেও আওয়ামী বনাম বিএনপির ‘কমেন্ট যুদ্ধ’ চলছে! একেকজনের সে কী তর্জন-গর্জন। শাবাশ, বাঘের বাচ্চা একেকটা। দেখিয়ে দে পুরো বিশ্বকে বাংলায় ফেসবুক বা ব্লগে আসলে আমরা কী করি। সাড়ে আট শ শব্দের সেই লেখা পড়তে গিয়ে শুরুতেই অবশ্য হোঁচট খেয়েছি ম্যাডাম। এক্কেবারে পয়লা লাইনেই আপনি (কিংবা আপনার হয়ে কেউ) লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নাকি বিশ্বের সেই দেশগুলোর অন্যতম, যারা আমাদের স্বাধিকারের স্বীকৃতি শুরুর দিকেই দিয়েছিল! এ কী লিখলেন, ম্যাডাম! ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’টার জন্ম ঠেকাতে সপ্তম নৌবহর কে পাঠিয়েছিল, বলুন তো? শুরুর লাইনটা পড়ে তাই সত্যিই মনে হয়েছিল, নাহ, এটা আপনার লেখা নয়। হতেই পারে না। বাংলাদেশের দুই-দুইবারের (মতান্তরে তিনবারের) প্রধানমন্ত্রী এই ইতিহাসটুকু জানেন না!শেষ প্যারার আগের প্যারার শুরুতে জিএসপি বাতিলের প্রচ্ছন্ন অনুরোধ আছে লেখাটায়। তবে সত্যি বলতে কি, আমি আপনার এই বাক্যের সঙ্গে মোটামুটি একমত, এটা নিয়ে এত শোরগোল কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আপনি তো ঠিক কথাই বলেছেন, শ্রমিকদের অধিকার যারা সমর্থন করে এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ; তাদের সেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না দেওয়া হলে বিশেষ বাণিজ্য-সুবিধা না রাখার চাপ তো দেওয়াই উচিত।তবে ওই প্যারার শেষেই আপনি যে লিখেছেন, ‘এভাবেই বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যুক্তরাষ্ট্রের যে মিশন, সেটা অব্যহত থাকবে,’ এই বাক্যটা ঠিক হাজমোলা খেয়েও হজম করতে পারিনি, ম্যাডাম। যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে তৈরি গণতন্ত্র নামের ইঁদুরটাকে তো আমরা দেখছিই। আফগানিস্তানে, ইরাকে এবং হালের মিসরে। সেই ইঁদুরটা আঙ্কেল স্যামের পোষা বিড়ালের ভয়েই জবুথবু।পুরো লেখাটায় একটা লাইন অবশ্য আমার খুব ভালো লেগেছে, ম্যাডাম। লেখাটা আপনি পড়েছেন কি না, জানি না (কথাটা যদিও প্যারাডক্সের মতো শোনাচ্ছে, যাঁর লেখা, তাকেই কিনা বলা হচ্ছে, লেখাটা পড়েছেন? কী করব, আমরা ম্যাঙ্গো পিপলও প্যারাডক্সের মধ্যে যে আছি)। তবে অষ্টম প্যারার এক জায়গায় আপনি লিখেছেন, বাংলাদেশ যদি পুরোটাই একটি পরিবারের শাসনের জালে বন্দী হয়ে যায়, সেটা হবে বড় ক্ষতি। ঠিকই বলেছেন, ম্যাডাম। শুধু একটা ব্যাপার এর সঙ্গে যুক্ত করতে চাই: বাংলাদেশ যদি পুরোটাই দুটি পরিবারের শাসনের জালে বন্দী হয়ে যায়, সেটাই হবে সবচেয়ে বড় ক্ষতি!ভালো থাকুন, ম্যাডাম।আপনার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।ইতিবাংলাদেশের এক আমজনতা
মতামতের জন্য সম্পাদক ছাড়া বাকি সবাই দায়ীভাইয়া, শুনেছি আপনি সবই জানেন! তবে আপনি সব জানলেও আমার প্রশ্নের উত্তর কখনোই দেননি। ছদ্মনামেও অনেক চিঠি পাঠিয়েছি কিন্তু একটিও ছাপা হয়নি। আপনি কেন আমার প্রশ্নের উত্তর দেননি, সেটাই জানতে চাইছি। আর এবার যদি আমার লেখা না ছাপেন, তাহলে আমার যদি কিছু হয়ে যায়, তার সম্পূর্ণ দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে। মনে থাকে যেন।ফাইজা ফেরদৌসযাত্রাবাড়ী, ঢাকাl দেখো, এত অল্প ইনফোতে কারও দায়ভার নেওয়া সম্ভব না। তুমি আরও বিস্তারিত তথ্য পাঠাও। এরপর দেখি দায়ভার নেওয়া যায় কি না। কারও দায়ভার নিয়ে আমার আপত্তি থাকার কথা না। আমি ওই রকমমানুষই না। বিস ভাইয়া, আমি রস+চিঠিতে ৩০০ টাকা বিজয়ী হই। ভেবেছিলাম, দ্রুত প্রাইজবন্ডটা পাব। কিন্তু না, সবাই বলল প্রাইজবন্ড আসার সম্ভাবনা জিরো পার্সেন্ট। আশা সে তো মরীচিকা, এই ভেবে আমি আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। হঠাৎ আমার ডিপার্টমেন্ট থেকে দুপুরবেলা ফোন এল। ফোনে বলল, প্রথম আলো থেকে চিঠি এসেছে। পেয়ে গেলাম সেই কাঙ্খিত প্রাইজবন্ড। কী দরকার ছিল পাঠানোর!মো. সাইফুল ইসলামসিএসই, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়l দরকার যে ছিল না সেটা আগে বললেই পারতেন। আর আপনার এই গল্পের মোরাল কী? জীবনে কখনো আশা ছাড়বেন না। যত দিন আশা আছে তত দিন আমরাও আছি। বিকল্প একটা উপায়ও আছে, আশা নামের কাউকে খুঁজে নেওয়া। তাহলে কখনোই আর আশা ছেড়ে দেওয়ার চান্স থাকবে না।
অনলাইনে প্রথম আলো (prothom-alo.com) নিয়মিত পড়া হয় ১৯০টি দেশ থেকে। পড়ার পাশাপাশি পাঠকেরা প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত দেন। তাঁদের এ মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।গণধর্ষণ, মেধাবী ছাত্রীর স্বপ্নভঙ্গকুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এক শিক্ষার্থীর ধর্ষণকাণ্ডের শিকার হওয়ার খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আশিক ইমরান লিখেছেন, যদি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হয়, তবে ধরে নিতে হবে আমাদের দেশ অন্যায়ে ভরে গেছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দেশে কি কোনো আইনকানুন নেই? এটাই কি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে পাওয়া আমাদের স্বাধীন দেশ? একেকটা বিচারের দীর্ঘসূত্রতা আরও অনেক ঘটনার সূত্রপাত ঘটায়। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।হাবিব সুমন: নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে একযোগে মেয়েটির পাশে দাঁড়ানোর এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ ও আহ্বান জানাই। যেমনটা দেখেছিলাম ইয়াসমিনের সময়, এবারও এমন একটা বিক্ষোভ চাই।ওয়াহিদ হোসেন সিদ্দিকী: ধর্ষকদের দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে না পারলে সামাজিক এই ব্যাধি বাড়তেই থাকবে। দুই বছর হয়ে গেল পরিমলের জেরা চলছে, শাস্তির কোনো ঠিকঠিকানা নেই। ধর্ষকদের দ্রুত আটক করে তাদের এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে তাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যায়।আওয়ামী লীগ এখন কী করবে?নির্বাচনসহ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিয়ে এ প্রশ্ন তুলেছেন সোহরাব হাসান। তাঁর নিবন্ধ পাঠ করে মতামত জানিয়ে আহমাদ সোলায়মান লিখেছেন: শুধু আওয়ামী লীগ কেন, ক্ষমতায় থাকতে কেউ ভালো কথা বুঝতে চায় না। ক্ষমতার বাইরে গেলেই বোল পাল্টায়। বড় বিচিত্র এ ক্ষমতা! ক্ষমতাসীনদের এ মানসিকতা থেকে কীভাবে বের করে আনা যায়, সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ। যা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হয়, ক্ষমতার পালাবদল হবে। কিন্তু এতে কোনো সমাধান হবে কি? বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে আবার একই ঘটনা ঘটাবে। সাধারণ জনগণের করণীয় নির্ধারণের এটাই সবচেয়ে ভালো সময়।মো. রায়হানুল আমিন: জিএসপি বাতিল হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের ভোট কমেছে—এটি খাতা-কলমের হিসাব। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। জোয়ার এখন বিএনপির পক্ষে, তাই বিএনপি জিতেছে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর জোয়ার আসে এবং আমরা আগের সবকিছু ভুলে যাই। এ ছাড়া আর কী করব, হাতে তো অন্য কোনো পছন্দ নেই। যা-ই হোক, আমাদের ভালো একটা বিকল্প দরকার, যারা ভোটের রাজনীতি করবে, জনতার রাজনীতিও করবে।শফিক: সামরিক শাসকেরা আগে বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করতেন, পরে সেই ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে নির্বাচনের নাটক সাজাতেন। ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে নির্বাচনের নাটক সাজালেও যা আগে অবৈধ, তা সারা জীবন অবৈধই থাকবে। পাকিস্তান ৬৫ বছর পর বুঝতে পারল, পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারীদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা উচিত। দেশটির শেষ নির্বাচনে তা-ই হয়েছে। পারভেজ মোশাররফকে আবর্জনা মনে করেছে দেশটির জনগণ। বিষয়টি আমরাও একসময় বুঝতে পারব। পাকিস্তানের বুঝতে লেগেছে ৬৫ বছর, আমাদের না হয় লাগবে ৭০ বছর। এ দেশে কোন দুটি দল অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, জনগণ একদিন ঠিকই বুঝবে।কামরুজ্জামান: আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থা নিয়ে যত গোঁয়ার্তুমি করবেন, ততই নৌকা আস্তে আস্তে ডুবতে থাকবে। আসলে গণতন্ত্রে গোঁয়ার্তুমির কোনো স্থান নেই। হাইকোর্টের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে, এমনটি না বলে সরকারের উচিত তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা। আমার বিশ্বাস, এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে এবং আওয়ামী লীগেরই লাভ হবে।আজমত উল্লাকে সমর্থন দিলেন এরশাদগাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ সংবাদে মত জানিয়ে ফারুক হোসেন লিখেছেন: এমন একজন ব্যক্তিকে নিয়ে বড় দুই দলের টানাটানি দেখে সত্যি লজ্জা লাগে। সকালে এক কথা, বিকেলে আরেক কথা বলা এসব ব্যক্তিকে দেশের রাজনীতির অঙ্গন থেকে যত দ্রুত বিদায় করা যায় ততই মঙ্গল।সাজ্জাদ হোসেন: এরশাদকে যে বিশ্বাস করেছে, সে মরেছে। মনে হয় এত বহুরূপী রাজনীতিক বিশ্বের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি মুহূর্তে বিক্রি হয়ে যান যে কারও কাছে। এমন চরিত্রের জন্য রংপুরে তিনি তাঁর ভিত্তি হারিয়েছেন। গাজীপুরে তাঁর যে গুটি কয়েক সমর্থক আছেন, তাঁরা কি এরশাদের এ অন্তিম ঘোষণায় সাড়া দেবেন? কখনোই না। এবার খুব ভালোভাবে প্রমাণিত হবে, ভোটের মাঠে এরশাদ কোনো নিয়ামক নন।মাহবুব: এরশাদের সমর্থন নিতে অনেক দেরি করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। গাজীপুরে জাতীয় পার্টির অনেক নেতা-কর্মী এখন মান্নান ও বিএনপির পক্ষে কাজ করতে শুরু করেছেন। এর পরও আজমত উল্লাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য এরশাদ সাহেবকে ধন্যবাদ।সেনাবাহিনীকে নিয়ে ফাউল খেলবেন না: সারওয়ার্দীরানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে পোশাকশ্রমিক রেশমাকে উদ্ধার নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টার জবাবে নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বক্তব্যে মতামত জানিয়ে কাজী আবদুল মান্নান লিখেছেন: রেশমাকে জীবিত উদ্ধার ও পত্রিকার খবরগুলোর যথাযথ বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে জাতিকে সঠিক প্রতিবেদন দেওয়া উচিত। আর যারা মিথ্যা প্রচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের সবার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।এ জে তালুকদার: সেনাবাহিনীকে কেউ সরাসরি দায়ী করেনি। যেহেতু রেশমা উদ্ধার নিয়ে দেশে ও বিদেশে কিছুটা হলেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে কারণে কেউ কেউ এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। অবশ্যই এ দাবি অন্যায় কিছু নয়। তাই এ দাবিকে ‘ফাউল খেলা’ আখ্যায়িত করাও দুঃখজনক।সরদার ইউনুস: সন্দেহ, আশঙ্কা ও হতাশা—এ নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকা। যাদের কাজকর্ম নেই, তারা সন্দেহবাতিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। সময়োপযোগী ও শক্তিশালী বক্তব্য দেওয়ার জন্য মি. সারওয়ার্দীকে ধন্যবাদ।লিমনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা, বিচারের জন্য পাঠানো হয়েছের‌্যাবের গুলিতে পা-হারানো লিমনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার বাইরে আরেকটি মামলা শুরুর খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সোলায়মান লিখেছেন: এ ঘটনাকে ‘রাষ্ট্র বনাম লিমন’ কিংবা বলা যেতে পারে ‘রাষ্ট্র বনাম ১৬ কোটি জনতা’। লিমন যত দিন এভাবে হয়রান হতে থাকবেন, তত দিন সরকারের প্রতিও জনগণের ঘৃণা বাড়তে থাকবে।তুষার: র‌্যাবের খেয়ালিপনার কারণে কোটি মানুষের সামনে একটি অসহায় ছেলের প্রতি কী অবিচার ও জুলুমই না করছে সরকার। শুধু তা-ই নয়, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে সত্যকে মেরে ফেলা হচ্ছে।বিপ্লব রায়: লিমনের মতো নিরীহ মানুষের চোখের জলে এ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা যে ভেসে যাচ্ছে, তা সরকার এখনো বুঝতে পারছে না। সত্যকে সব অপশক্তি ভয় পায়। তবে কি রাষ্ট্র এখন অপশক্তির ভূমিকায়?খালেদা জিয়া দেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে পড়েছেন: ইনুতথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যে মত জানিয়ে জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন: জনগণকে এত বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই। আমরা সবাই জানি যে ইনু সাহেবের মতো রাজনীতিবিদেরা অনেক কথা বলেন।সোহেল রহমান: কী আর করবেন? জনগণের সুচিন্তা ও মেধাবিকাশের চেষ্টা করুন। ভুলেও শক্তি প্রয়োগের চিন্তা করবেন না।নূর আলম: মাননীয় মন্ত্রী, আপনি ও প্রধানমন্ত্রী বলছেন, খালেদা জিয়া জিএসপি বাতিলের জন্য মার্কিন সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন। আবার কখনো বলছেন, খালেদা মার্কিন পত্রিকায় নিবন্ধ লিখেছেন। এক খালেদা জিয়ার লেখালেখিতে যদি জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়ে যায়, তবে আপনারা ক্ষমতায় থেকে কী করছেন?(পাঠকের মন্তব্য বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)
সাভার ট্র্যাজেডিতে সহস্রাধিক শ্রমিকের মৃত্যু বিশ্বের শ্রমবাজারে এ দেশের শ্রমিকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে ভাবমূর্তি খারাপ হতে পারে, তা ছিল সহজেই অনুমেয়। আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি এতটাই গুরুত্বসহকারে দেখা হয়েছিল যে এই অগণিত শ্রমিকের মৃত্যু অনেকটাই উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল বিশ্বনেতাদের মনে, যা হয়তো স্বাভাবিক। এরপর বাংলাদেশ সরকার শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় এবং শ্রমিকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মজুরি বোর্ড গঠনে কমিটি করা হয়েছে। গত ২৭ জুন বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত দুইটার দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওমাবার অনুপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অ্যাম্বাসেডর মাইকেল ফ্রোমেন জিএসপি স্থগিত করার ঘোষণা দেন। এ ধরনের সিদ্ধান্তে হতাশ হতে হয় হতবাক না হলেও। বাংলাদেশ যেখানে শ্রমিকদের মানোন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল বাংলাদেশকে আরও কিছু সময় দেওয়া। জিএসপি সুবিধা স্থগিত করায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শ্রমিকেরাই। এই স্থগিতাদেশের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এ দেশের শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ, জীবনযাত্রার মান ইত্যাদির ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে, যা দুঃখজনক। জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের লক্ষ্যে যে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে, তা হলো সংশোধিত শ্রম আইন প্রয়োগ, শ্রমিকদের কর্মপরিবেশের উন্নতি এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করাসহ আরও কিছু কল্যাণমূলক পদক্ষেপ। অযথা হায়-হুতাশ না করে এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে শতভাগ মনোযোগ দিতে হবে।দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণ করে ইউরোপ কিংবা কানাডাও যদি একই সিদ্ধান্ত নেয়, তবে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত দারুণ সংকটে পড়তে পারে। তাই জিএসপি সুবিধা পুনরুদ্ধার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এ দেশের পোশাকশিল্প তথা শ্রমিকদের মানোন্নয়নের ব্যাপারে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা প্রয়োজন। আর সে জন্য শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ উন্নতি এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে আরও কিছু জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।সঞ্জয় কুমার ভৌমিকবসুন্ধরা আ/এ, শ্রীমঙ্গল।
পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিক বিজ্ঞান বইয়ের ৩০-৩১ পৃষ্ঠায় তাপ সঞ্চারণের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘কোনো কঠিন বস্তুর ভেতর দিয়ে তাপ সঞ্চারিত হয় পরিচলন পদ্ধতিতে।’ আবার ‘তরল ও বায়বীয় পদার্থের ভেতর দিয়ে তাপ সঞ্চারিত হয় পরিবহন পদ্ধতিতে।’ বর্ণিত পদ্ধতি দুটির প্রথমটি পরিবহন এবং দ্বিতীয়টি পরিচলন হওয়ার কথা। ড. আলী আসগর সম্পাদিত নবম-দশম শ্রেণীর পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ১৫৮ পৃষ্ঠায় পরিবহন ও পরিচলন পদ্ধতির সুস্পষ্ট সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা রয়েছে। একই বিষয়ে দুটি বইয়ের বর্ণনায় পার্থক্য দৃষ্ট হয়।সুতরাং পঞ্চম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের ভুল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।মঞ্জুমান আরা বেগমসহকারী শিক্ষক, আক্কেলপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়পুরহাট।
আই ডোন্ট নো’ মানে কী?করুণাময় চক্রবর্তী, জজ কোর্ট, হবিগঞ্জমানে, আপনি চাইলেও সবজান্তা হতে পারবেন না। ইন্টারনেট কী?বাচ্চু প্রামাণিক, পুরান ভারেঙ্গা, বেড়া, পাবনাএকধরনের জাল, যা দিয়ে ভার্চুয়াল জিনিসপত্র ধরা হয়! দেশের জনগণ কী চায়?আবদুল মুকিত, বোয়ালবাড়ি, ফরিদপুরসেটাই বা কে জানতে চায়! প্রমোশন নাকি ইমোশন, কোনটা আপনার দরকার?মো. ওয়ালী উল্লাহ, দক্ষিণ মান্ডা, মুগদা, ঢাকাশন ছাড়াই অনেক ‘ইমো’ দরকার! এই মুহূর্তে দেশের জনগণের কী দরকার?সৈয়দ মিরাজ মাহামুদ, শেরশাহ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকাকী কী দরকার না, তার একটা লিস্ট! পা কখন মাটিতে পড়ে না?সায়ফান আবরার জাওয়াদ, রূপতলী হাউজিং, বরিশালযখন পা ও মাটির মাঝখানে অন্য কিছু থাকে! সেরা প্রশ্নবিপদ চারদিক থেকে আসে কেন?জাকির হোসেনমুড়িওয়ালার গলি, দক্ষিণ মান্ডা, ঢাকাআপনাকে ওপরে কিংবা নিচে যাওয়ার সুযোগ করেদেওয়ার জন্য!অভিনন্দন জাকিরআপনি পাচ্ছেন ১০০ টাকার মুঠোফোন রিচার্জ। সবজান্তাকে প্রশ্ন পাঠাতে পোস্টকার্ড বা খামের ওপর লিখুন: সবজান্তা সমীপেষু, রস+আলো, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। সঙ্গে অবশ্যই পাঠাতে হবে আপনার মুঠোফোন নম্বরটি।
স্মার্টফোনের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে এগিয়ে চলছে স্যামসাং। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ বাজারে আসা গ্যালাক্সি এস ফোর বিক্রির পরিমাণ দুই কোটি ছাড়িয়েছে! গত ২৬ এপ্রিল বাজারে আসার পর থেকেই বিক্রির এই পরিমাণ নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রথম মাসেই এ স্মার্টফোন এক কোটি বিক্রি হলেও পরে বিক্রির এ হার কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বাজার-বিশ্লেষকেরা। তবে স্যামসাং জানায়, গ্যালাক্সি এস ফোর গ্যালাক্সি এস থ্রির চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি গতিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত এস ফোরের তুলনায় আইফোন বিক্রি হয়েছে বেশি। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে আইফোন-৫ বাজারে আসে। এরপর এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কোটি আইফোন বিক্রি হয়েছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্যামসাংয়ের সব মিলিয়ে গ্যালাক্সি এস সিরিজের মোট ১০ কোটি স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে আড়াই কোটি গ্যালাক্সি এস, চার কোটি গ্যালাক্সি এস টু ও চার কোটি ১০ লাখ গ্যালাক্সি এস থ্রি বিক্রি হয়েছে। এদিক দিয়ে এগিয়ে আছে স্যামসাং। একই পরিমাণ আইফোন বিক্রি করতে অ্যাপলের সময় লেগেছিল চার বছর। বর্তমানে এস ফোর বিক্রির পরিমাণসহ গ্যালাক্সি সিরিজের স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াল ১২ কোটি! —সিনেট ও ফোনঅ্যারিনা অবলম্বনে কাজী আলম
বাজারে এসেছে ইন্টেলের চতুর্থ প্রজন্মের কোর প্রসেসর। ইন্টেল বাংলাদেশ পারসোনাল কম্পিউটিংয়ে নতুন অভিজ্ঞতা দিতে পারে, এমন চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টেল কোর প্রসেসর উন্মুক্ত করে। নতুন এ প্রসেসর ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট চাহিদাগুলোকে মাথায় রেখে দিচ্ছে নতুন সব অভিজ্ঞতা, দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ, উন্নত গ্রাফিকস সুবিধা, টু-ইন-ওয়ান বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি। এ ছাড়া ট্যাবলেটসহ অন্যান্য যন্ত্রে যুক্ত হয়েছে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ইন্টেল ভিপ্রো বিজনেস ডিভাইস। গত শনিবার ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ প্রসেসরের উদ্বোধন করেন ইন্টেল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়া মনজুর। এ সময় তিনি বলেন, ইন্টেলের নতুন এ প্রজন্মের কোর প্রসেসর উল্লেখযোগ্য ব্যাটারি লাইফ প্রদান করে, যা ইন্টেলের দারুণ এক অর্জন। এ প্রসেসর ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন টু-ইন-ওয়ান কম্পিউটিং যন্ত্রগুলো নোটবুক পিসিগুলোর মধ্যে হয়ে উঠবে অনেক বেশি শক্তিশালী।অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নতুন ইন্টেল কোর প্রসেসর সক্রিয়, নিরাপদ এবং এর রয়েছে শক্তিশালী কার্যক্ষমতা; যা ব্যবহারকারীদের মোবাইল জীবনধারায় নতুনত্ব তৈরি করবে। ব্যবহারকারী এবং বাণিজ্যিক কাজের ওপর লক্ষ রেখে তৈরি কোর প্রসেসরভিত্তিক কোয়াড কোরের বিভিন্ন সংস্করণ এখন সহজলভ্য। এ ছাড়া টু-ইন-ওয়ান আল্ট্রাবুক, বহনযোগ্য অল ইন ওয়ান, প্রচলিত ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ এবং চতুর্থ প্রজন্মের কোর ভি-প্রোভিত্তিক বাণিজ্যিক পণ্য চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাজারে পাওয়া যাবে। —নিজস্ব প্রতিবেদক
কুষ্টিয়ায় আজ শেষ হচ্ছে তিন দিনের ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা। কুষ্টিয়া পৌরসভা মিলনায়তনে মেলার উদ্বোধন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুল জলিল। অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোখলেসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। মেলায় জেলার ছয়টি উপজেলার প্রায় ৭৩টি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্টল রয়েছে। প্রতিদিন দুপুরে বিনা মূল্যে আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। —কুষ্টিয়া অফিস
কৃষিবিষয়ক বাংলা ওয়েবসাইট এগ্রোবাংলা ডটকম (www.agrobangla.com) এবং কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘রমজানে সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য’ বিষয়ক সেমিনার। গতকাল রোববার ঢাকার ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডিআইইউ) মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে সহযোগিতায় ছিল ডিআইইউর নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফার্মেসি বিভাগ।রমজান মাসে বিভিন্ন ধরনের রসনাবিলাস ও মুখরোচক খাদ্যের সমাহারের পাশাপাশি বিভিন্ন ভেজালের মহোৎসব চলে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে সেমিনারে মন্তব্য করা হয়।সেমিনারে প্রধান অতিথি খাদ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য শুধু রমজান মাসে নয়, বরং পুরো বছর ধরেই আমাদের তা অব্যাহত রাখতে হবে। খাদ্যে ভেজাল রুখতে সরকার ইতিমধ্যে যুগোপযোগী খাদ্য আইন প্রণয়ন করেছে এবং আইনের বাস্তবায়নে সরকার পুরোপুরি আন্তরিক।’ সেমিনারে বক্তব্য দেন ডিআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক এম লুৎফুর রহমান, ক্যাবের খাদ্য সুরক্ষা কমিটির সভাপতি বেলাল হোসেন, মহাসচিব এবং এগ্রোবাংলার প্রধান নির্বাহী মহিউদ্দিন আহামেদ, ডিআইইউর অ্যালাইড হেলথ সায়েন্স বিভাগের ডিন এস এম কেরামত আলী, নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কে এম ফরমুজুল হক, খাদ্য সুরক্ষা কমিটির সদস্য মো. রাশেদুল হাসান, মাসুদ ইবনে রহমান, তানিয়া সুলতানাসহ অনেকে। —বিজ্ঞপ্তি
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জিপিআইটি মোবাইল ফোনে লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের জন্য কল সেন্টারের অবকাঠামো পরিকল্পনা, নির্মাণ ও বাস্তবায়ন করবে। সম্প্রতি এ বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চুক্তিতে সই করেন বিকাশের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদের এবং জিপিআইটির প্রধান নির্বাহী রায়হান শামসী। এ সময় বিকাশের বিজনেস সলিউশন বিভাগের প্রধান মো. আজমুল হুদা, কাস্টমার সার্ভিস বিভাগের প্রধান নিশাত রহমান, জিপিআইটির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুমন ব্যানার্জি, প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তা নোমান ওয়াসিসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। —বিজ্ঞপ্তি
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৮-এ রয়েছে নানা ধরনের নতুন সুবিধা। কাজের প্রয়োজনে এসব সুবিধা বেশ উপকারী। নানা ধরনের সুবিধার মধ্যে রয়েছে:লক পর্দা অচল করা: লক পর্দা অচল রাখতে Win key + R চেপে রানে গিয়ে এখানে REGEDIT লিখে এন্টার করুন। এই ডিরেক্টরি খুঁজে নিন HKEY^LOCAL^MACHINE>SOFTWARE>Policies>Microsoft>Windows>Personalization (Personalization না থাকলে নতুন করে তৈরি করুন)। বাঁয়ের দিক থেকে Personalization-এ ক্লিক করে New > DWORD Value গিয়ে NoLockScreen নামে একটি ডি-ওয়ার্ড বানিয়ে নিন। এবার NoLockScreen দুই ক্লিক করে খুলে Value ঘরে 1 লিখে OK করলে পরবর্তীতে কম্পিউটার চালু হলে আর লক পর্দা আসবে না। আবার আনতে চাইলে Value ঘরে 0 লিখে দিতে হবে।গেম ফোল্ডার: Start screen-এ game আইকনে রাইট ক্লিক করে নিচে থেকে Open file location নির্বাচন করলে ইনস্টল থাকা গেম খুঁজে নেওয়া যাবে।সব ফোল্ডার দেখা: কম্পিউটারে ক্লিক করে View > Options-এ গিয়ে Show all folders-এ টিক চিহ্ন দিয়ে OK চাপলে সব ফোল্ডার দেখা যাবে। —মো. রাকিবুল হাসান
সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য অন্য পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ডাকতে যাওয়ার সময় আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন।নিহত শ্রমিকের নাম মো. সোহাগ (২৫)।তিনি পূর্ব রামপুরার রিভিয়েরা রিসোর্সের শ্রমিক ছিলেন।এ ঘটনায় একজন পথচারীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।একই সময় বাড্ডা এলাকায় গুলিতে একটি ডায়িং কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহত হন।গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।হাবিবুর রহমান নামের এক পোশাকশ্রমিক জানান, আজ বিকেলে আফতাবনগরে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ ডাকা হয়।সেই সমাবেশে যোগ দিতে দুপুরের পর ছুটি দেওয়া হয় রিভিয়েরা রিসোর্সেস ও এর পাশের একই মালিকের কারখানা ফ্যাশন আইল্যান্ডে।ছুটি পেয়ে তাঁরা দল বেঁধে পাশেই তুবা গ্রুপের (গত বছরের নভেম্বরে আগুনে পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনসের মালিকের প্রতিষ্ঠান) একটি কারখানায় শ্রমিকদের ডাকতে যান।তুবার কারখানার কাছে যাওয়ার পরে বেলা তিনটার দিকে ২০-৩০ জন লোক শ্রমিকদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।তাদের একজন পিস্তল বের করে বলে, ‘কারখানায় আসবি তো গুলি করে দেব।’ কথা শেষ হতে না-হতেই সেই অস্ত্রধারী গুলি করে।একটি গুলি লাগে সোহাগের মাথায়।সোহাগ মাটিতে পড়ে যান।তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।রাত সোয়া ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।একই সময় ছোড়া গুলিতে পথচারী ছাপা কারখানার শ্রমিক শরীফুল ইসলাম (২৫) ডান বাহুতে গুলিবিদ্ধ হন।তিনি দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যাচ্ছিলেন।পোশাকশ্রমিকদের ধারণা, কারখানার মালিকের ঘনিষ্ঠ ঝুট-সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাবুল আক্তারের অভিযোগ, কারখানার মালিকের পোষা মাস্তানেরা শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে।এদিকে একই সময়ে দক্ষিণ বাড্ডায় সুপার ডায়িং অ্যান্ড থ্রেড নামের একটি কারখানায় ঢুকে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতিকুল ইসলামের দুই পায়ে গুলি করে সন্ত্রাসীরা।আতিকুল ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন।এই কারখানার কর্মী মো. ইব্রাহিম জানান, তিনজন লোক কারখানায় এসে কথা বলতে বলতে আতিকুলকে গুলি করে।তবে কী নিয়ে কথা হচ্ছিল, তা তিনি জানেন না।এক শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক আবদুল জলিল জানান, তাঁরা ঘটনাগুলো জেনেছেন।তবে কেউ থানায় কোনো অভিযোগ জানায়নি।এ বিষয়ে জানতে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।থানায় ফোন করা হলে ওয়্যারলেস অপারেটর ইসাহাক ফোনটি ধরেন।প্রথম আলো ডটকম থেকে শোনার পরই তিনি ফোনটি কেটে দেন।
জাতীয় পার্টি (জাপা) পরিচালিত এক জনমত জরিপে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের সাড়ে চার বছরে (এপ্রিল পর্যন্ত) দেশ সামগ্রিকভাবে যে পথে চলেছে, তা নিয়ে হতাশা বেড়েছে। ৮৪ শতাংশ মানুষ মনে করে দেশ সঠিক পথে পরিচালিত হচ্ছে না। মাত্র ১৪ শতাংশ মনে করে দেশ সঠিক পথে রয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ২ শতাংশ মানুষ কোনো মতামত দেয়নি।আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে জাপার তথ্য উপস্থাপনবিষয়ক সম্মেলনে এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়া ঢাকার ৮৩ ও ঢাকার বাইরের ৬৮ শতাংশ মানুষ মনে করে, আগামী সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন হওয়া উচিত। আর বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ৫৮ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে নিরাপদ বোধ করবেন না।এইচ এম এরশাদের নির্দেশনায় পরিচালিত জাপার গবেষণা ও কৌশল নির্ধারণ শাখা গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত সারা দেশে কয়েক দফা বিষয়ভিত্তিক একাধিক জরিপ চালায়। বিশ্লেষণসহ জরিপের ফলাফল পুস্তিকা আকারে ছাপিয়ে আজ দলীয় নেতাদের দেওয়া হয়েছে। এরশাদের উপস্থিতিতে জাপার গবেষণা ও কৌশল নির্ধারণ শাখার প্রধান ববি হাজ্জাজ এই জনমত জরিপের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।ঢাকায় জরিপের অংশ নেওয়া ৫০ শতাংশ মানুষ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করে। বাকি ৫০ শতাংশ সঠিক হয়নি বলে মত দিয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালে সুবিচার নিশ্চিত হবে না বলে মনে করে ৬০ শতাংশ মানুষ।জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের বিষয় নিয়ে ৮০ শতাংশ মানুষ অবগত। তবে এতে সমর্থন আছে ৩২ শতাংশের। ৫০ শতাংশ মানুষ এ কর্মসূচির বিরুদ্ধে। ১৮ শতাংশ পক্ষে-বিপক্ষে কোনো মত দেয়নি।শাহবাগ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, সেটার বিপক্ষে মত দিয়েছে ঢাকার ৬৫ শতাংশ মানুষ। আবার ৭৫ শতাংশ মানুষ জামায়াতের কর্মসূচি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শাহবাগ গণজাগরণ আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কিছু ব্লগারের ইসলাম ধর্মবিরোধী প্রচারণার প্রতিবাদে’ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দোলন সম্পর্কে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ জানে। এর মধ্যে ৪২ শতাংশ এ আন্দোলনকে ইতিবাচক এবং ২২ শতাংশ নেতিবাচক মনে করে। ৩৭ শতাংশ কোনো মত দেয়নি। সবচেয়ে পছন্দের নেতা এরশাদজাপার জরিপে দাবি করা হয়, ৮২ শতাংশের পছন্দের নেতা এরশাদ। ৭৩ শতাংশ শেখ হাসিনাকে ও ৭২ শতাংশ খালেদা জিয়াকে পছন্দ করে।জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক রাজনীতিবিদ সম্পর্কে মানুষের ধারণা, তাঁরা হচ্ছেন সুবিধাবাদী। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশ শেখ হাসিনাকে সুবিধাবাদী মনে করে। ৪৮ শতাংশ খালেদা জিয়াকে এবং ৪৬ শতাংশ এরশাদকে সুবিধাবাদী মনে করে।অনুষ্ঠানে জাপার চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, ‘দেশ ঠিকভাবে চলছে না। এখন আওয়ামী লীগের একজন পাতি নেতার কথায়ও ওসি, এসপি, ডিসি বদলি হয়। হুকুম দিয়ে মানুষ মারা হয়। অথচ আমি মাত্র দুজন লোকের (ডা. মিলন ও নূর হোসেন) মৃত্যুর কারণে ক্ষমতা ছেড়েছি।’ তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের পরাজয়ের প্রধান কারণ শাহবাগ চত্বর। এই শাহবাগ চত্বর দেশকে বিভক্ত করেছে। এর কারণে হেফাজতে ইসলাম সৃষ্টি হয়েছে।এরশাদ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইন সংশোধনেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বিচারের পর আইন পরিবর্তনের জন্য সংসদে বিল পাস হয়।অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের পর এবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকেও ইফতারের দাওয়াত দিলেন বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ১৩ জুলাই জাতীয় সংসদের এলডি মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ, তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদ ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমেদকে ইফতারের দাওয়াত দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কে এরশাদের বাসভবনে ইফতারের কার্ড বিএনপির পক্ষ থেকে পাঠানো হয়। দলের সহদপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম এ কথা জানান।
যথাযথ প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতাই দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে। ভবনধস বা ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের সময় উদ্ধারকাজের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা জরুরি। এটা করা গেলে উদ্ধারকাজ অনেকটা সহজ হবে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি অনেকটা হ্রাস পাবে।আজ মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সভাকক্ষে ‘একটি দুর্যোগসহনশীল বাংলাদেশ নির্মাণ—সপ্তম ডিপিকো কর্মপরিকল্পনা প্রকল্প অবহিতকরণ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। পপুলেশন সার্ভিসেস ও ট্রেনিং সেন্টারের (পিএসটিসি) উদ্যোগে ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের আয়োজনে নারী কনসোর্টিয়ামের আওতায় অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ও ইকোর সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠান হয়।ঢাকা সিটি করপোরেশনের অধীনে ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে একটি দুর্যোগসহনশীল বাংলাদেশ নির্মাণ নামক প্রকল্পের কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে শুরু করার জন্য আজ এ অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনছার আলী খান।বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে, সে তুলনায় প্রস্তুতি অপ্রতুল। এখানে বড় ধরনের ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ দুর্যোগ দেখা দিলে মহানগর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন,  আইনের তোয়াক্কা না করে ভবন তৈরি করা হচ্ছে। এতে প্রয়োজনের তুলনায় কম বালু, সিমেন্ট ও নিম্নমানের ইট দেওয়া হচ্ছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা নেই। বারবার বলা হলেও কেউ শুনছে না। তিনি বলেন, জাপানে ভূমিকম্প বেশি হলেও সচেতনতা এবং বিধি মেনে ভবন নির্মাণ করায় সেখানে ভবনধস এবং প্রাণহানি কম।নাজমুল আরও বলেন, অ্যাকশন এইড ও পিএসটিসি দুর্যোগ প্রতিরোধে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের পদক্ষেপ নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে। তিনি ভূমিকম্পসহ দুর্যোগের সময় উদ্ধারকাজে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। ঢাকা দক্ষিণের ওই প্রশাসক বলেন, সাভারের রানা প্লাজার মতো রাজধানীর নিউমার্কেট-সংলগ্ন বনলতাসহ পুরান ঢাকার অনেক বিপণিবিতান ঝুঁকির তালিকায়। জেনারেটরের কম্পন ও লোকসমাগম বেশি হওয়ায় এসব ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের বলেন এসব বিপণিবিতান থেকে জেনারেটর নামিয়ে আনার জন্য।ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলী খান বলেন, নগরবাসী ঝুঁকিতে এখন আতঙ্কিত। সতর্ক না হলে মহানগর ধ্বংস হয়ে যাবে। এখন সবার সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। ঘটনার পর নয়, আগে সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেন, বনলতা মার্কেটের দোকান বন্ধ করার ঘোষণা দিলে ব্যবসায়ীরা তা মানতে নারাজ। তিনি ক্রেতাদের ওই মার্কেটে না যেতে অনুরোধ করেন।ফায়ার ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন) আবদুস সালাম বলেন, ভবন নির্মাণে মানসম্মত উপাদান ব্যবহার করা হয় না। ভবনে প্রয়োজনমতো বালু, সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করা হয় না। এতে ভবন নড়বড়ে হয়। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরসহ অনেক সরকারি কোয়ার্টার ঝুঁকিপূর্ণ। ৭ দশমিক ৫ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরসহ পুরোনো ভবগুলো ধসে পড়বে। ‘এ অবস্থা হলে ফায়ারের সদস্যরাও বাঁচবে কি না, তা-ও জানি না। উদ্ধার তো আরও পরের কথা।’   অ্যাকশন এইডের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আখলাকুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশনকে সম্পৃক্ত করে এলাকা ও ওয়ার্ডভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক তৈরি, তাদের প্রশিক্ষিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভূমিকম্প সম্পর্কে করণীয় সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে।কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন অ্যাকশন এইডের কর্মকর্তা রেজাউল করিম, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ঝুঁকি হ্রাস বিশেষজ্ঞ মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ।
তিন হাজার টাকা দামের ১৪৮ পিস ভারতীয় শাড়িসহ প্রদীপ কুমার (৪০) নামের এক বাংলাদেশিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমন গেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে আটক করা হয়।প্রদীপ কুমারের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইনের নেতৃত্বে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) একটি দল তাঁকে আটক করে।জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে কলকাতা থেকে ঢাকায় আসেন প্রদীপ কুমার। বহির্গমন টার্মিনাল-১ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রদীপের সঙ্গে থাকা মালামালের কাগজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, শাড়িগুলোর কোনো শুল্ক ও ভ্যাট পরিশোধ করা হয়নি।আটক প্রতিটি শাড়ির আনুমানিক দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন হাজার টাকা  জানিয়ে ইকবাল হোসাইন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রদীপ দাবি করেন শাড়িগুলো তাঁর নিজের নয়, অন্য এক ব্যক্তির জন্য এনেছিলেন। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার করলে প্রয়োজনে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। তিনি বলেন, ধর্ম ব্যবহার তো অপরাধ নয়। কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা অপরাধ। এ বিষয়ে নির্বাচনী আইনে নিষেধাজ্ঞা আছে।আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের শাহনেওয়াজ এ কথা বলেন।সদ্য শেষ হওয়া পাঁচটি সিটির নির্বাচনের প্রার্থীদের অনেকেই ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। এ নিয়ে মহাজোটের নেতাদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে নমনীয় আচরণ করেছে। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, কিছু সীমাবদ্ধতা থাকায় এবার তেমন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। নির্বাচনে ধর্মকে ব্যবহার করে সুবিধা আদায় বা ধর্মকে আঘাত করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। তবে জাতীয় নির্বাচনে এ ধরনের প্রচারণার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সংসদ নির্বাচনের বিদ্যমান আচরণবিধিতে এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে একই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও কমিশনের রয়েছে।
থাইল্যান্ডের ফুকেট উপকূলের কোহ রক দ্বীপের কাছে আন্দামান সাগরে লাইফ জ্যাকেট পরা অবস্থায় গতকাল সোমবার চারজনকে ভাসতে দেখা গেছে বলে স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন। স্থানীয় ‘ফুকেট গ্যাজেট’ পত্রিকা আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ খবর দিয়েছে। তবে এই চারজন দুর্ঘটনাকবলিত এমভি হোপ জাহাজের নাবিক কি না, তা নিশ্চিত করা যায়নি।থাইল্যান্ডের নেভাল সিভিল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক ক্যাপ্টেন থামাওয়াত মালাইসুকারিন ‘ফুকেট গ্যাজেট’কে জানান, ‘গতকাল সোমবার অনুসন্ধান কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মাছ ধরার একটি নৌকা থেকে বিকেলে চারজনের ভেসে থাকার খবর পাই।’তবে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বিষয়টি স্থানীয় নৌপুলিশকে অবহিত করলেও তারা ভাসমান চারজনকে উদ্ধারের জন্য কোনো জাহাজ বা এয়ারক্রাফট পাঠাবে না বলে ‘ফুকেট গ্যাজেট’ জানিয়েছে।প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে ফুকেট উপকূলের কাছে আন্দামান সাগরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি হোপ। জাহাজের নয়জনকে জীবিত এবং দুইজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও এখনো ছয়জন নাবিক নিখোঁজ রয়েছেন।নিখোঁজ ক্যাপ্টেন রাজীব চন্দ্র কর্মকারের নাতি তনয় কর্মকার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘এমন খবর জানার পর দাদার (ক্যাপ্টেন রাজীব) পরিবারে উত্কণ্ঠা বেড়ে গেছে। চারজনকে উদ্ধারে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে আমরা জানতে পেরেছি।’জানতে চাইলে এমভি হোপ জাহাজ মালিকের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন আবদুল কাদের প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি।’
আগামী বৃহস্পতিবার পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। তাই বৃহস্পতিবার থেকে রোজা শুরু হবে। মাহে রমজানের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনার জন্য আজ সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম মিলনায়তনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাহজাহান মিয়াসহ চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আজ ২৯ শাবান বাংলাদেশের আকাশে কোথাও চাঁদ দেখতে পাওয়া যায়নি। কাল বুধবার ১৪৩৪ হিজরি বর্ষের পবিত্র শাবান মাস পূর্ণ হবে ৩০ দিনে। তাই বৃহস্পতিবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। আজ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মহিউদ্দিন মজুমদার প্রথম আলো ডটকমকে এ কথা জানান।
রাজশাহীতে পদ্মার পানিতে ভেসে আসছে মৃত মানুষ ও গরু। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরের মতিহার থানার শ্যামপুরে অবস্থিত পানি শোধনাগারের পাইপে এক নারীসহ চারজনের মৃতদেহ ও কয়েকটি মৃত গরু আটকে যায়।পুলিশ মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।  ধারণা করা হচ্ছে, লাশগুলো উজান থেকে বন্যার পানিতে ভেসে এসেছে। যেভাবে লাশগুলো পচে ফুলে উঠেছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক সপ্তাহ আগে তাদের মৃত্যু হয়েছে।স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, আজ দুপুরের পর শ্যামপুর এলাকায় হঠাত্ দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা গন্ধের উত্স খুঁজতে গিয়ে লাশের সন্ধান পান। তারা দেখতে পান, শ্যামপুরে অবস্থিত শহীদ এ এইচ এম কামরুজ্জামান পানি শোধনাগারের পাইপে চারজনের লাশ ও কয়েকটি মরা গরু আটকে আছে। নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসিত কুমার ঘোষ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, লাশগুলো শনাক্ত করার কোনো উপায় নেই। তাঁরা ধারণা করছেন, ভারতের বন্যায় তাদের প্রাণহানি ঘটতে পারে। তিনি জানান, লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কোয়ালিটি ব্লাড ব্যাংক নাম হলেও মাদকাসক্ত পেশাদার রক্তদাতাদের রক্ত সংগ্রহ করত প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে মাত্র ২৩০ টাকায় এক ব্যাগ রক্ত কিনে এই ব্লাড ব্যাংক তা বিক্রি করত এক হাজার ৪০০ টাকায়। এমন অভিযোগ পেয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে ২৪৯ নম্বর মগবাজারে কোয়ালিটি ব্লাড ব্যাংকের কার‌্যালয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান চালায় র‌্যাব।র‌্যাব-৩-এর মেজর সাদিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল এ অভিযান চালায়।এ সময় মাদকাসক্তদের কাছ রক্ত সংগ্রহ করতে থাকা ব্লাড ব্যাংকটির তিন মালিকসহ চারজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তিন মালিক হলেন দুলাল মিয়া (৩৫), জহিরুল ইসলাম (২৫) ও আবদুুল মোতালেব আলী (৬০) এবং অন্যজন টেকনিশিয়ান মোতালেব হোসেন (২৫)।অভিযানে তল্লাশি চালিয়ে ৪৩ ব্যাগ রক্ত জব্দ করা হয়। এসব অভিযোগে আটক চারজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা।অভিযানের সময় পেশাদার রক্তদাতা সোহেল মিয়া র‌্যাবকে জানান, মাত্র ১০-১২ দিন আগেও তিনি কোয়ালিটি ব্লাড ব্যাংকে এসে রক্ত বিক্রি করেছেন।এ ব্যাপারে আনোয়ার পাশা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘জব্দ করা রক্ত সংগ্রহ করার কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি আটক হওয়া ব্যক্তিরা। তিনি দাবি করেন, ব্লাড ব্যাংকের মালিক দুলাল স্বীকার করেছেন তাঁরা দালালের মাধ্যমে এই রক্ত সংগ্রহ করতেন। মাদকাসক্ত পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতি ব্যাগ রক্ত কেনা হতো মাত্র ২৩০ টাকায়। আনোয়ার পাশা আরও জানান, টেকনিশিয়ান মোতালেব হোসেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিজেই চিকিত্সকের স্বাক্ষর দিয়ে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি করতেন।
পরীক্ষা শুরুর দাবিতে অনশনের তৃতীয় দিনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৭ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।গত রোববার দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশন শুরু করেন জীববিজ্ঞান স্কুলের সাতটি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা।অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলেন মির্জা ওমর ফারুক (মনি), রবিউল ইসলাম, কামাল, আসাবুর রাহমান, অভিজিত্ বিশ্বাস, লোকমান হোসেন, হামিদুল ইসলাম, ছালমা আক্তার (সুমী), আরিফুর রহমান, উত্তম, চৈতন্য, লিয়ন, মোশারফ, সুস্মিতা পাল, পারভেজ, সৈকত, বিশ্বজিত্, পারমিতা, আরিফুল ইসলাম, কিশোর সরকার, রাশেদ, রুদ্র, অন্তরা, মো. আবু সাইদ, মো. ফাহাদ, কামাল হোসেন ও বাবু। তাঁদের অনেককে এখন স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।এ ছাড়া গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দুজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা হলেন অনিরুদ্ধ দাস ও শামিম হোসেন।শিক্ষার্থীদের অসুস্থতা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ সেন্টারের প্রধান চিকিত্সক মোশারেফ হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘অসুস্থদের মধ্যে মনির অবস্থা খুব খারাপ। তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ১৭০/১১৫। আর বাবুর উচ্চ রক্তচাপ ১৬০/১০০। এখনই হাসপাতালে না নিলে তাঁরা স্ট্রোক করে মারা যেতে পারেন। বাকিদের রক্তে শর্করা দ্রুত কমে যাবে। একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁরা যেকোনো মুহূর্তে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেন। তখন বড় ধরনের ক্ষতি হবে তাঁদের। আমি প্রশাসনকে বারবার বিষয়টি জানাচ্ছি।’গুরুতর অসুস্থ মির্জা ওমর ফারুক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমরা মারা গেলে স্যারেরা খুশি হবেন। তা না হলে আমাদের জিম্মি করে তাঁরা রাজনীতি করতে পারতেন না। আমি মৃত্যুর জন্য এখানে পড়ে আছি। আমার মৃত্যু হয়তো তাঁদের রাজনীতির সমাধান করে দেবে।’অপর অসুস্থ শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘সোমবার রাতে ৩৮ জন মেয়েসহ আমরা অনশন করে রাত কাটালাম। কিন্তু একজন শিক্ষকও আমাদের দেখতে আসেননি। শিক্ষকেরা দিব্বি সকালে গাড়িতে করে আসেন আর বিকেলে চলে যান। তাঁদের বাড়িতে কি কোনো সন্তান নেই?’খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এখন নিরুপায়। আমি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি শিক্ষার্থীদের জিম্মি না করে তাদের পরীক্ষার নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে। প্রশাসন সব ধরনের সাহায্য করবে।’উল্লেখ্য, জীববিজ্ঞান স্কুলের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ২৩ জুন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওই স্কুলের ডিন নিয়োগ নিয়ে শিক্ষকেরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এরপর পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।পরীক্ষার দাবিতে ২৪ জুন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ও প্রধান গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা সামনের সড়কও অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষকেরা পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তের জন্য ২৬ জুন পর্যন্ত সময় নেন। তবে কবে পরীক্ষা হবে সে বিষয়ে কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। ২ জুলাই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেন। ৩ জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁরা ঘোষণা দেন, ৭ জুলাই বেলা একটার মধ্যে পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা না হলে আমরণ অনশনে যাবেন তাঁরা।
পুরোনো ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ফিরছেন রাউল। খবরটা শুনে রিয়াল সমর্থকদের শিহরিত হওয়ার কথা। ঘরের ছেলের ঘরে ফেরার মতো আনন্দ আর কিসের হতে পারে! তবে রিয়ালে রাউলের এই ফেরাটা কিন্তু কিছুক্ষণের জন্য। মাত্র ৪৫ মিনিটের জন্য রিয়ালের জার্সি গায়ে দেখা যাবে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডকে। রাউলের বয়স ৩৬ বছর। জীবনের অর্ধেক সময়ই রিয়াল মাদ্রিদে কাটিয়েছেন তিনি। ১৯৯২ সালে ১৭ বছর বয়সে রিয়ালের যুবদলের হয়ে শুরু। মূল দলে খেলেছেন দীর্ঘ ১৬ বছর। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সময়টা ভালোই কাটছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, এই ক্লাবে খেলেই অবসরে যাবেন রাউল। সমস্যা হয় ২০১০ সালে হোসে মরিনহো রিয়ালের দায়িত্ব নেওয়ার পর। ‘বুড়ো’ রাউলকে হিসাবের মধ্যে রাখেননি মরিনহো। ফলে ঘর ছাড়েন রাউল। দলবদলের ঢেউ তাঁকে স্পেন থেকে নিয়ে যায় জার্মানিতে। জার্মান ক্লাব শালকের সঙ্গে দুই বছরে জন্য চুক্তিবদ্ধ হন রিয়ালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩২৩ গোল করা রাউল। সেই চুক্তিটাও শেষ হয়ে গেছে। গত মৌসুমে স্প্যানিশ এই ফুটবলার নাম লেখান কাতারের ক্লাব আল সাদে।  গোল ডটকমের খবর, ২২ আগস্ট আল সাদের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ। রাউলের বার্নাব্যুতে ফেরার মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইছে রিয়াল কর্তৃপক্ষ। রিয়ালের ওয়েবসাইটেও সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে—২২ আগস্ট শান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ আল সাদ। যেখানে ১৬ বছর কাটিয়েছেন, সেই স্টেডিয়ামে ফিরবেন রাউল। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক অধিনায়কের ফেরার মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই ম্যাচে দুই দলের হয়ে ৪৫ মিনিট করে খেলবেন রাউল।
গত জুন মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছরের চেয়ে তা প্রায় ২৭০ কোটি ডলার বেশি। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর বরাতে রয়টার্স আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন কারখানায় লাগাতার প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পরও এখানকার সস্তা শ্রমের কারণে বিশ্বের বৃহত্ খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের পোশাক লোভনীয়। পশ্চিমের অনেক বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ও খুবই কম মজুরি দিয়ে শ্রমিকদের খাটানোর বদৌলতে বাংলাদেশ এখন চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এ দেশের মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশ যায় ইউরোপের বাজারে এবং ২৩ শতাংশ যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাক শুল্কমুক্ত-সুবিধা পায় না। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আজ জানায়, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশের মোট আয় হয়েছে দুই হাজার ১৫০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে তা ১৩ শতাংশ বেশি।  রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আরও জানায়, গত এক বছরে দেশের মোট রপ্তানি ১১ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছরের চেয়ে তা দুই হাজার ৭০০ কোটি ডলার বেশি। তবে তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০০ কোটি ডলার কম। গত বছর তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনে পুড়ে কমপক্ষে ১১২ জন শ্রমিক ও গত এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৪ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। এ ছাড়া, প্রায় প্রতিবছরই বিভিন্ন দুর্ঘটনায় পোশাকশ্রমিকেরা কর্মস্থলে মারা যান। দুর্ঘটনায় শ্রমিকের প্রাণহানির সংখ্যা কমাতে সরকার বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে এখনো কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।পোশাক কারখানায় একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে সরকার, ব্যবসায়ী ও বিশ্বের বড় বড় পোশাক বিক্রেতারা এখন ভীষণ চাপের মুখে পড়েছে। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর শ্রমিক আন্দোলন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপের মুখে সরকার এ খাতে নিযুক্ত ৪০ লাখের বেশি শ্রমিকের জীবনমানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।
অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে একবার, ২০১২ সালে দুবার এবং গত ৫ মে আইনে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে, তাতে মানুষের আশা দুরাশায় পরিণত হয়েছে।আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১-এর সংশোধনীর সংকট ও জনদুর্ভোগ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে আলোচকেরা এ কথা বলেন।অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেলের নয়টি মানবাধিকার সংগঠন ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।সংবাদ সম্মেলনে আলোচকেরা বলেন, সর্বশেষ সংশোধনীতে সম্পত্তির নতুন নতুন তালিকার গেজেট প্রকাশের যে সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে, তা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১-এর মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ সংশোধনী বাতিল করা না হলে সংখ্যালঘুদের কোনো সম্পত্তিই আর অর্পিত তালিকার বাইরে থাকবে না।আলোচকরা অর্পিত সম্পত্তির ‘খ’ তালিকা পুরাপুরি বাতিল, ‘ক তফসিলের’ ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চের পরে তালিকাভুক্ত সম্পত্তির গেজেট বাতিল এবং সংশোধিত তালিকার গেজেট বাতিলসহ নতুন করে ‘খ’ তালিকার অর্পিত সম্পত্তির ইজারা দেওয়াকে বেআইনি বলে অভিহিত করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার দাবি জানান।সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেইন। লিখিত বক্তব্যে নয়টি দাবি জানানো হয়েছে।লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় ট্রাইব্যুনাল ও জেলা কমিটিতে চার লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে বিচারকের স্বল্পতা, আইনি অস্পষ্টতা, একশ্রেণীর অসত্ কর্মচারী এবং কর্মকর্তার অসহযোগিতার কারণে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।সংবাদ সম্মেলনে আলোচকেরা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১-এ ধারা ১৪ পরিবর্তন করে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ না হওয়া পর্যন্ত ‘ক’ তালিকার অর্পিত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং জেলা প্রশাসক প্রচলিত আইন অনুযায়ী আগের ইজারা নবায়ন করতে পারবেন বলে বিধান যুক্ত করারও দাবি জানান।সংবাদ সম্মেলনে অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তি অসংখ্য ভুলে ভরা। এ ছাড়া এটি ১৯৭৪ সালের আইনের পরিপন্থী এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ও নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ। তাই ‘খ’ তফসিল পুরোটা বাতিল করতেই হবে। তা ছাড়া ‘ক’ ও ‘খ’ তফসিলের সংশোধিত তালিকা প্রকাশের নামে নতুন করে যেসব সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, সেসব সম্পত্তির তালিকা অবৈধ। তাই সংশোধিত ও তারিখবিহীন সব অর্পিত সম্পত্তির গেজেট বাতিল করতে হবে।এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা এসব সংশোধনী বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সরকার যদি ব্যবস্থা না নেয়, তখন কঠোর আন্দোলনেরও কথাও জানান তিনি।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবং আলোচনায় অংশ নেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অজয় রায়, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ প্রমুখ।অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেলের নয়টি মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, এএলআরডি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, নিজেরা করি, এইচডিআরসি, বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাইড অ্যান্ড সার্ভিসেস  ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন যা মূত্র বা পেচ্ছাবের গন্ধ পরীক্ষা করে মূত্রথলির ক্যানসার নির্ণয় করতে সক্ষম। এ যন্ত্রে বিশেষ এক ধরনের সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে যাতে বিশেষ গন্ধযুক্ত রাসায়নিকগুলো শনাক্ত করে ক্যানসার কোষের উপস্থিতি বের করতে পারে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্রিস পোবার্ট ও ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নরম্যান র্যাটক্লিফ মূত্রথলির ক্যানসার শনাক্তের এ যন্ত্রটির উদ্ভাবক। উদ্ভাবকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের তৈরি যন্ত্রটি গন্ধ পরীক্ষা করে ক্যানসারের উপস্থিতি নির্ণয় করতে পারে। মূত্রে থাকা বিশেষ গ্যাসীয় রাসায়নিক যখন উত্তপ্ত করা হয় তখন এ যন্ত্রটি মূত্রথলিতে ক্যানসারের অস্তিত্ব আছে কিনা তা বের করতে পারে।পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীকে এ যন্ত্রের উদ্ভাবকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নির্ভুলভাবে মূত্রথলির ক্যানসার নির্ণয়ে সক্ষম হয়েছে তাঁদের  তৈরি যন্ত্রটি। এ যন্ত্রটি সহজলভ্য করার আগে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা।গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর শুধু যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজারের বেশি মানুষ মূত্রস্থলী ক্যানসার পরীক্ষা করান। চিকিত্সকেরা সঠিকভাবে মূত্রস্থলীর ক্যানসার নির্ণয়ের উপায় খুঁজছিলেন। তাঁরা চাইছিলেন, প্রাথমিক অবস্থায় যাতে ক্যানসার ধরা পড়ে এ রকম একটি যন্ত্র। এ ধরনের ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা হলে চিকিত্সা করা সম্ভব বলে মনে করেন তাঁরা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘আমাদের ভুল আছে, ত্রুটি আছে, কেউ আমরা অস্বীকার করতে পারি না। এ ভুলের কারণে যদি কেউ আমাদের ভুল বুঝে থাকেন, তাহলে অনুরোধ করব যে এ ভুল সংশোধনের সুযোগ করে দেন।’ আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ঢাকা বিভাগীয় শাখা আয়োজিত ‘দেশ ও জাতির স্বার্থে গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির নেতৃত্বে প্রয়োজন’ শীর্ষক আলোচনায় নাসিম এসব কথা বলেন। নাসিম বলেন, ‘পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরাজয়ে আওয়ামী লীগ হতাশ ও শঙ্কিত নয়। পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের পরাজয়ের কারণ খতিয়ে দেখা হবে। আর দলের সাময়িক বিপর্যয় হলেও চূড়ান্ত লড়াইয়ে বিজয় হবে।’ নাসিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সেই আত্মবিশ্বাস আছে যে ভুল সংশোধন করে অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে ইনশাআল্লাহ আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনবই। যেকোনো বিপর্যয়ের সময় ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে জানে আওয়ামী লীগ।’ বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখবে, নাকি জঙ্গিবাদী শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাবে। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হুমকি না দিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নীতিনির্ধারক বলেন, সিটি নির্বাচনগুলোর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও শক্তিশালী। জাতীয় নির্বাচনও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হওয়া সম্ভব। নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে নাসিম বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই, তারা অনেক অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা ও মিথ্যাচারের মধ্যেও নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছে এবং সঠিক সময়ে ফল প্রকাশ করেছে।’ নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহায়তা করার জন্য সিভিল প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মোবারক আলী সিকদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন কৃষক লীগের সহসভাপতি এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার প্রমুখ।
নতুন কোনো কর আরোপ ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য ৪০৩ কোটি ৯২ লাখ ৩৭৬ টাকার রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবন কার্যালয়ে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বিভিন্ন স্তরের নাগরিকদের উপস্থিতিতে এই বাজেট ঘোষণা করেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরী ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে মোট আয় দেখানো হয়েছে ৪০৩ কোটি ৯২ লাখ ৮৬ হাজার ৩৭৬ টাকা এবং মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫০ টাকা। ঘোষিত বাজেটে উদ্বৃত্ত রাখা হয়েছে চার কোটি ৫৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮২৬ টাকা।বাজেট ঘোষণাকালে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, রাস্তাঘাট, ড্রেন, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ; দারিদ্র্য বিমোচন; শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য; জলাবদ্ধতা দূরীকরণ; স্ট্রিটলাইট স্থাপন; বর্জ্যব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।  এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর জন্য একটি মাতৃসদন ও তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।জাইকা, বিএমডিএফ, এমজিএসপি, এডিপির প্রকল্প সহায়তার মাধ্যমে অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ, বর্জ্যব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সিটি করপোরেশনের আয়বর্ধক প্রকল্প হিসেবে নিজস্ব ভূমিতে বিপণিবিতান নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের জন্য বাজেটে সুযোগ রাখা হয়েছে। মেয়র আইভী নগরের উন্নয়নে সময়মতো হোল্ডিং কর পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলারুশ সফর সংক্ষিপ্ত করে আগামীকাল বুধবার দেশে ফিরবেন। আগামী বৃহস্পতিবার তাঁর  দেশে ফেরার কথা ছিল। খবর বাসসের।  প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, নতুন সফরসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেলারুশ ত্যাগ করবেন এবং আগামীকাল বেলা একটা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন থেকে গতকাল বেলারুশে পৌঁছান। এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধান বেলারুশ সফরে গেলেন। গত বছরের নভেম্বরে বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াচনিকোভিচের ঢাকা সফরের পর তিনি এই সফরে গেলেন।
আওয়ামী লীগ বলছে, সব দলের অংশগ্রহণে বর্তমান সংবিধান অনুসারেই নির্বাচন হবে। বিএনপি বলছে, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য বড় দুই দলকেই প্রয়োজনীয় ছাড় দিতে হবে। আজকের রাজনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী প্রতিহিংসার রাজনীতি। শুধু নির্বাচনী সংলাপ নয়, প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে একটি জাতীয় সমঝোতা করতে হবে। আজ মঙ্গলবার ‘প্রথম আলো’ আয়োজিত ‘গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ ধরনের মত দিয়েছেন। ‘প্রথম আলো’র মিলনায়তনে ওই গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়। এতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন হামিদা হোসেন, ‘প্রথম আলো’র সম্পাদক মতিউর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুব উল্লাহ, হাসানুজ্জামান চৌধুরী, নারীনেত্রী শিরিন আকতার আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা সঞ্চালনা করেন ‘প্রথম আলো’র সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান আওয়ামী লীগের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যেতে আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে কি না। আর আওয়ামী লীগ সমঝোতার জন্য বিএনপিকে কী কী প্রস্তাব দেবে। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ তাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে কি না।বিএনপির উদ্দেশে রেহমান সোবহান প্রশ্ন রাখেন, এখন সবখানেই গণমাধ্যম উপস্থিত। এ যুগে আসলেই কেউ ভোট ছিনতাই করতে পারে কি না।আলোচনার শুরুতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়। কোন পদ্ধতির সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, রাজনৈতিক দলগুলোকেই এর সমাধান দিতে হবে।নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজানো, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় সংস্কার, নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব লোকবল বাড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন ভোট জালিয়াতি দুরূহ হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হওয়া কমিশনের একটি বড় সাফল্য।নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে সাবেক এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তিনি যখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী বা উচ্চপর্যায়ের কেউ তাঁকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেননি। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে দেখা গেছে, সাংসদেরা কমিশনের কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হয়েছেন। এখন সাংসদেরা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারেন বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।‘প্রথম আলো’র সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণমাধ্যম যেভাবে উপস্থিত ছিল, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ৩০০ আসনে গাজীপুরের মতো সমসংখ্যক গণমাধ্যম সব আসনে থাকা সম্ভব নয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, গাজীপুরে যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিলেন, একই সময় ৩০০ আসনে একই পরিমাণ সদস্য মোতায়েন সম্ভব কি না।তোফায়েল আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের নীতি হলো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তন। গাজীপুরসহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো যেভাবে অবাধ হয়েছে, তাতে প্রমাণিত হয়েছে ভোট ছিনতাইয়ের যুগ এখন আর নেই। দলের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অবস্থান হলো সংবিধানে যা আছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে। তবে তারা সব দলের অংশগ্রহণ চায়।আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুসারে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে। তখন আর কেউ সাংসদ থাকছেন না। তখন যাঁরা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁরা দৈনন্দিন কাজ করবেন।তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা একে-অন্যকে বিশ্বাস করি না। এখন আমরা যদি বলি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না, তাহলে দেশ কোথায় যাবে?’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে, এটি নিশ্চিত হবে না। এ জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।’এই লক্ষ্যে সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পৃথিবীর সব যুদ্ধ-মহাযুদ্ধ শেষ হয়েছে টেবিলে। তিনি ১১ সদস্যের একটি নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সংলাপের মাধ্যমে ওই সরকারের ১০ জনকে নির্বাচন করা হবে। এই ১০ জন ঠিক করবেন সরকারপ্রধান কে হবেন। আবার যাতে প্রতিহিংসার রাজনীতি মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে জন্য জাতীয় সমঝোতা করতে হবে।’আকবর আলি খান বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসের নায়িকা কাদম্বিনীর মতো আওয়ামী লীগ পৌর নির্বাচনে হারিয়া প্রমাণ করিল আওয়ামী লীগ হারে নাই।’ তিনি বলেন, ‘হারা-জিতার ওপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্ভর করে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা রাজনৈতিক না সাংবিধানিক, সেটাই প্রশ্ন। সাংবিধানিক সমস্যা হলে সমাধান মোটেও শক্ত নয়। তবে সমস্যাটি সাংবিধানিক নয়, রাজনৈতিক।’’৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের উদাহরণ টেনে আকবর আলি খান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক না হলে বিরোধী দল জিততে পারবে না, এটি ঠিক নয়। জনগণ একদিকে চলে গেলে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়াও নির্বাচনে জেতা ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। দুই দল কাছাকাছি থাকলে তত্ত্বাবধায়কের প্রশ্ন ওঠে। তিনি বলেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে না যায়, তাহলে সে নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ জন্য তিনি ‘খোলা মনে’ সমঝোতায় আসার চেষ্টা করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, এর বাইরে কোনো সমাধান নেই। সব দল মিলে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজেদের ভেতর কতটুকু গণতন্ত্রের চর্চা করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন হামিদা হোসেন।জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা করতে হলে নির্বাচন করতে হবে। বড় দুই জোটকে সমঝোতায় আসতে হবে। দুই জোট মিলে গ্রহণযোগ্য সাংসদকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান করতে পারলে সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। শুধু নির্বাচনী সংলাপ নয়, তিনি বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতার সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।আসিফ ইব্রাহিম বলেন, এক দিনের হরতালে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট সময়ে অর্জন করা যাবে না। তিনি ১৫ জন সাংসদকে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করেন। এর সাতজন হবেন বিএনপির, সাতজন আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে সংস্থাপন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থাকবে বিএনপির হাতে।
সদ্যসমাপ্ত ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যাকাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানের ১৪তম আসরে অংশ নেওয়ার জন্য ম্যাকাও-এর উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন বলিউডের অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ। অনুষ্ঠানে মঞ্চ পরিবেশনায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেখানে ক্যাটরিনার টিকির খোঁজটিও পাওয়া যায়নি। ম্যাকাওতে অনুষ্ঠিত তিন দিনের এ আয়োজনের পর্দা নেমেছিল ৬ জুলাই। সেদিনের মঞ্চ পরিবেশনায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল ক্যাটের। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে তাঁকে না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করতে বাধ্য হন আয়োজকেরা। সম্প্রতি এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে ‘ওয়ান ইন্ডিয়া’। দিন কয়েক আগে ম্যাকাও যাওয়ার সময় মুম্বাই বিমানবন্দরে ক্যামেরাবন্দীও হয়েছিলেন ক্যাটরিনা কাইফ। শাহরুখ খান, মাধুরী দীক্ষিত, দীপিকা পাড়ুকোন, শহিদ কাপুর, দিয়া মির্জা, অভিষেক বচ্চনসহ আরও অনেক তারকা আইফা অনুষ্ঠানে হাজির থাকলেও, হঠাত্ করে ক্যাটরিনার এ অনুপস্থিতি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন। এপ্রিল থেকে মে এই তিন মাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রির তালিকায় রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন।বাজার বিশ্লেষক কানটার ওয়ার্ল্ডপ্যানেলের প্রযুক্তি গবেষকেরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয়তায় অ্যান্ড্রয়েড শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও ধীরে ধীরে অ্যাপলের আইওএস দূরত্ব কমিয়ে আনছে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেট।বাজার গবেষকেরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এপ্রিল থেকে মে এই তিন মাসে সাড়ে তিন শতাংশ আইফোন বিক্রি বেড়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারের ৪১ দশমিক নয় শতাংশ আইফোনের দখলে। অ্যান্ড্রয়েডের দখলে রয়েছে বাজারের ৫২ শতাংশ।কানটার ওয়ার্ল্ডপ্যানেলের বিশ্লেষক ডমিনিক সানেবো এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মুঠোফোন সেবাদাতা টি-মোবাইলের সঙ্গে অ্যাপলের চুক্তির ফলে বিক্রি বেড়েছে আইফোনের। টি-মোবাইল থেকে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে আইফোন ৫।বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে উইন্ডোজ ফোন। বাজারের চার দশমিক ছয় শতাংশ বর্তমানে উইন্ডোজ ফোনের দখলে। ২০১২ সালের তুলনায় এক শতাংশ বাজার বেড়েছে উইন্ডোজ ফোনের। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের পর থেকে উইন্ডোজ ফোন বিক্রি কিছুটা কমে গেছে বলেই জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকেরা।
‘কেমিস্ট্রি অব লাভ’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটকে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করলেন মীরাক্কেলখ্যাত অভিনেতা জামিল। বিশেষ ধারাবাহিক নাটকটি নির্মিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে। ‘কেমিস্ট্রি অব লাভ’ রচনা ও পরিচালনা করেছেন নাসিম সাহনিক। ‘কেমিস্ট্রি অব লাভ’ নাটকের জামিল তার অফিসের এক সহকর্মীর প্রতি একধরনের মোহে পড়ে। মোহাচ্ছন্ন অবস্থায় নানারকম কমেডি আচরণ করে জামিল। সহকর্মী বিষয়গুলো কৌশলে এড়িয়ে গেলেও জামিলের ইচ্ছা তাকে বিয়ে করা। একসময় জামিলের মোহভঙ্গ হয়। এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় ‘কেমিস্ট্রি অব লাভ’ নাটকের গল্প। নাটকটি প্রসঙ্গে জামিল বলেন, ‘নাটকটির গল্প তরুণ প্রজন্মকে কেন্দ্র করে এবং রম্য রোমান্টিক ধাঁচের। গল্পটা চমত্কার বলেই নাটকটিতে অভিনয় করেছি। এ নাটকে আমার বস চরিত্রে অভিনয় করেছেন লাক্স তারকাখ্যাত যূথী।’ নাটকটিতে জামিল ও যূথী ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাহা, তাহসিন, তুলনা, রিফাত জাহান প্রমুখ।
সম্প্রতি বাজারে এসেছে হিউলেট প্যাকার্ড বা এইচপি ব্র্যান্ডের প্রোবুক ৪৪৪৫এস মডেলের গেমিং ল্যাপটপ। গেম খেলার বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য এ ল্যাপটপটিতে রয়েছে উন্নত গ্রাফিকস।প্রোবুক ৪৪৪৫এস মডেলের ল্যাপটপটিতে রয়েছে এএমডি এ৮ ৪৫০০ মডেলের কোয়াড কোর প্রসেসর। ১৪.১ ইঞ্চি মাপের এলইডি ডিসপ্লেযুক্ত ল্যাপটপটিতে রয়েছে আট গিগাবাইট ডিডিআর৩ র্যাম, ৭৫০ গিগাবাইট হার্ডড্রাইভ।৪ গিগাবাইট রেডিয়ন গ্রাফিকস কার্ডযুক্ত ল্যাপটপটিতে সুপার মাল্টি ডিভিডি রাইটার ও এইচপি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সুবিধা পাওয়া যাবে।এক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবায় ল্যাপটপটি বিপণন করছে স্মার্ট টেকনোলজিস। ল্যাপটপটির দাম ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা।
লালমনিরহাটের কলেজছাত্রী পারভীনাকে গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলার চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে লালমনিরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ওসমান হায়দার এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন হালিম বাদশা ওরফে বাদশাহ হালিম (২৭), মাহবুবুর রহমান ওরফে মাহবুব (২৭), রশিদুল ইসলাম ওরফে রাশিদুল (২৫) ও আতাউর রহমান (২৫)। পারভীনার বাড়ি লালমনিরহাটের সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের সাকুরপাড় গ্রামে। সে লালমনিরহাটের পাশের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ছিল। ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি পারভীনা শিক্ষকের বাসায় পড়া শেষে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। ১২ জানুয়ারি পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রতিধর গ্রামের একটি পুকুরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরে পারভীনার লাশ ময়নাতদন্ত করে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। ১২ জানুয়ারি পারভীনার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রথম তিনজনকে আসামি করা হয়। ওই দিনই হালিম বাদশাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর হালিম বাদশা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আতাউর রহমান, রাশেদুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমানকে মামলায় আসামি করা হয়।গত ১৯ জুন চাঞ্চল্যকর এ মামলার বাদী ও বিবাদীপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে ২৭ জুন রায় ঘোষণার প্রথম তারিখ ধার্য করা হয়। কিন্তু ওই দিন মামলার রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত পুনরায় রায় ঘোষণার দিন ৩ জুলাই ধার্য করেন। একই কারণে ওই দিন রায় ঘোষণা না করে আদালত দ্বিতীয়বারের মতো তারিখ পিছিয়ে ৯ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।মামলাটি ২০০৯ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাঞ্চল্যকর মামলার মনিটরিং সেলে ছিল। মামলাটি পরিচালনায় সহায়তা করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
‘আমার মা হেনোয়ারা বেগম র‌্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছেন, সেই অভিযোগ সত্য। সেই মামলার বিচার হলেই আমি প্রকৃত বিচার পাব বলে মনে করি।’ আজ সরকারের মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানার পরে লিমন হোসেন প্রথম আলো ডটকমের কাছে তার এ প্রতিক্রিয়া জানায়। টেলিফোনে দেওয়া লিমনের ভাষ্য, এই দুটি মামলার অভিযোগ মিথ্যা। মিথ্যা দুটি মামলা সরকার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ, তারা বুঝতে পেরেছে যে তারা ভুল করেছে। ১৩ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিমনের বাঁ কানে অস্ত্রোপচার হয়। বর্তমানে সে রাজধানীর ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। সরকার মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান লিমনকে ফোন করে সে খবর জানান। র‌্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা মামলা পুলিশ নেয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলাটি নেয়। পরে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে শেষ করে দিয়েছে পুলিশ। এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলে সেটাও খারিজ করে দেন ঝালকাঠির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। অবশ্য ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেছেন হেনোয়ারা বেগম, যা এখনো চলছে।
র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে করা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সব মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর টেলিফোনে প্রথম আলো ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিফোনে বলেন, ‘আমরা লিমনের মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লিমনের বয়স মাত্র ১৬ বছর। আমরা চাই সে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরে যাক।’ সেই বিবেচনা থেকেই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।সিদ্ধান্ত নিতে এত দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চাচ্ছিলাম মামলা প্রত্যাহার করা হোক। কিন্তু কোনো এক কারণে বিষয়টি এগোচ্ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, তাঁরা মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লিমনকে বিষয়টি জানানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। জানা গেছে, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা লিমনকে জানিয়েছেন।২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে র‌্যাবের গুলিতে আহত হন লিমন। এ কারণে ওই বছর তিনি আর এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি। লিমনের অভিযোগ, বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র‌্যাবের সদস্যরা তাঁকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। পরে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে তাঁর চিকিৎসার খরচ চালান। একপর্যায়ে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লিমনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা লিমনের জীবন বাঁচাতে তাঁর বাম পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলেন। এ ঘটনার পর বরিশালে র‌্যাব-৮-এর তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে লিমনসহ আটজনের নামে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করেন। একটি অস্ত্র আইনে, অপরটি সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে। মামলা দুটিতে লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে র‌্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা মামলা পুলিশ নেয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলাটি নেয়। কিন্তু পরে মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে শেষ করে দিয়েছে পুলিশ। এ চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলে সেটাও খারিজ করে দেন ঝালকাঠির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। অবশ্য ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেছেন হেনোয়ারা বেগম, যা এখনো চলছে। লিমনের এ ঘটনা নিয়ে সারা দেশে আলোচনা, সমালোচনার ঝড় ওঠে। গণমাধ্যমগুলোও বিষয়টি নিয়ে গুরত্বসহকারে বিভিন্ন সময় প্রতিবেদন প্রচার ও প্রকাশ করে। সর্বশেষ গত ৩০ মে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়্যারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি অনানুষ্ঠানিক চিঠি (ডিও লেটার) লেখেন। ১৩ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে এ চিঠি পৌঁছে। ওই চিঠিতে লিমনের বিরুদ্ধে র‌্যাবের করা দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হয়। তাতে তিনি মন্ত্রীকে এ-ও লিখেন যে ‘আপনার সাথে ব্যক্তিগত আলাপের প্রেক্ষিতে আপনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ চিঠিটি নথিভুক্ত করার জন্য ২০ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপরে গত ২৩ জুন লিমন এবং তাঁর মা হেনোয়ারা বেগম ও বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে কথা বলেন। এ সময় তিনি র‌্যাবের করা মামলা প্রত্যাহারের স্বার্থে র‌্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করেন। জানতে চাইলে মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লিমনের বিরুদ্ধে করা মামলা দুটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক বিধায় মানবাধিকার কমিশন প্রথম থেকেই তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে। একাধিকবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সুপারিশও করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গুলিবর্ষণকারী র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে কি না—এ প্রশ্নে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিষয়টি আসলে বিনিময় নয়, তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের কথা আসতে পারে।’ মানবাধিকার কমিশন এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করছে কি না, জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘মধ্যস্থতা করা মানবাধিকার কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত। এটা করতে পারলে তা অবশ্যই কমিশনের সফলতা বলে বিবেচিত হবে।’
বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন প্রযোজ্য হবে।এ আইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইনের বিরোধ থাকলেও প্রথাগত আইন প্রযোজ্য হবে না।তবে ১৯৭৩ সালের আইনে যদি কোনো অস্পষ্টতা ও শূন্যতা থাকে, তাহলে ব্যাখ্যার জন্য প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহমুদুল ইসলাম।আদালতের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে তিনি আজ মঙ্গলবার আদালতে এই মত তুলে ধরেন।প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ শুনানি গ্রহণ করেন।একই সঙ্গে অপর্যাপ্ত দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে আনা সংশোধনী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলেও মত দেন তিনি।এ নিয়ে তিন অ্যামিকাস কিউরি এ প্রশ্নে একই মত দিলেন।  এর আগে মত দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক ও আমীর-উল ইসলাম। শুনানিতে মাহমুদুল ইসলাম বলেন, সংবিধানের ১০৪ নম্বর অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টকে অন্তর্নিহিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।আইনে কিছু বলা না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় আদেশ বা নির্দেশ দিতে পারেন।আপিলের বিধান না থাকলেও আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে।তিনি বলেন, ন্যায়বিচারের মৌলিক ধারণা (ফান্ডামেন্টাল ফেয়ারনেস) বজায় রাখতে হবে।সাবেক এই অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে, সেখানে দেশীয় আইনে বিচার হয়নি।বিচার হয়েছে চার্টার বা কনভেনশনের মাধ্যমে।এর আগে সকালে অ্যামিকাস কিউরি আমীর-উল ইসলাম তাঁর অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন শেষ করেন।মাহমুদুর রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর অপর অ্যামিকাস কিউরি আজমালুল হোসেন কিউসি তাঁর বক্তব্য শুরু করেন।কাল আবার শুনানি হওয়ার কথা।শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও কাদের মোল্লার পক্ষে আবদুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে দুটিতে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ, তিনটিতে ১৫ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য একটি অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। এরপর ৩ মার্চ কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরদিন ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ডাদেশ বাতিল করে অব্যাহতি চেয়ে আরজি জানিয়ে আপিল করেন কাদের মোল্লা।এরপর কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানিকালে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি প্রশ্ন ওঠে। একটি হলো, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন-১৯৭৩-এর অধীনে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না। দ্বিতীয়টি হলো, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধন করে ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে এর ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে, যাতে খালাস বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অধিকার দেওয়া হয়। কাদের মোল্লার দণ্ড ঘোষণার পর আইনের ২১ ধারায় আনা ওই সংশোধনীতে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের যে সুযোগ দেওয়া হলো, তা কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না।এসব প্রশ্ন ওঠায় গত ২০ জুন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি  হিসেবে জ্যেষ্ঠ সাত আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন।সাত অ্যামিকাস কিউরি হলেন: জ্যেষ্ঠ আইনজীবী টি এইচ খান, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আজমালুল হোসেন কিউসি এবং এ এফ হাসান আরিফ।কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের পর মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। শাহবাগে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। সংশোধিত আইনে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অধিকারসংক্রান্ত ধারায় সংশোধনী আনা হয়।
পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৭ জুলাই থেকে ছুটি শুরু হবে।চলতি বছর রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ২৭ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকবে। আগের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, এই ছুটি ১১ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল।শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী আজ মঙ্গলবার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বিভিন্ন কারণে অনির্ধারিতভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ছুটি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে আজ প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে ২৪০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব দিয়েছে চীনের পলি টেকনোলজি করপোরেশন। এতে মূল অর্থায়ন করবে চীনা এক্সিম ব্যাংক।আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে চীনা এক্সিম ব্যাংক ও পলি টেকনোলজি করপোরেশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী।বৈঠক শেষে যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিনিয়োগে চীনা প্রস্তাবটি আগেই এসেছে। আজ এ বিষয়ে কথা হয়েছে। বিদেশিদের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তি করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। তাই চীনের এই প্রস্তাব ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে। ইআরডি যদি এটি গ্রহণযোগ্য মনে করে, তাহলে তারা তা সেতু বিভাগকে জানাবে। তখন সেতু বিভাগ করণীয় ঠিক করবে।সরকার ইতিমধ্যে নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে দরপত্র দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এখন আর বিদেশি বিনিয়োগ দরকার আছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা লাগবে। চীনের প্রস্তাব যদি গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন মেটানো যাবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের রিজার্ভে চাপ পড়বে না। সবকিছু বিবেচনা করা হবে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে।’
ব্র্যান্ড হিসেবে এশিয়া অঞ্চলের শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং। তবে ব্র্যান্ডিংয়ে কম অর্থ খরচ করেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে স্যামসাংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপল। ৮ জুলাই নিয়েলসেন প্রকাশিত জরিপের এ তথ্য জানিয়েছে ফোর্বস অনলাইন।নিয়েলসেনের ক্যাম্পেইন এশিয়া নামের জরিপে দেখা গেছে, এশিয়ার ১২ টি বাজারের মধ্যে ৮ টিতেই শীর্ষ ব্র্যান্ড নামটি স্যামসাংয়ের। ২০১২ সালে এ অঞ্চলের মোট পাঁচটি বাজারে শীর্ষ ব্র্যান্ড হিসেবে স্যামসাংয়ের অবস্থান ছিল। ব্র্যান্ড হিসেবে স্যামসাংয়ের পরের অবস্থানটি অ্যাপলের। অ্যাপল বর্তমানে শীর্ষ ব্র্যান্ড হিসেবে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বাজারে তার স্থান দখল করেছে। এক্ষেত্রে সনি ও প্যানাসনিকের মতো স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোকে পেছনে ফেলেছে অ্যাপল। জাপানের বাজারে ভোক্তার পছন্দের ব্র্যান্ডের শীর্ষস্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে অ্যাপল।নিয়েলসেনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে এশিয়াতে স্যামসাংয়ের পণ্য ব্র্যান্ডিংয়ে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে স্যামসাংয়ের চেয়ে অর্ধেকেরও কম অর্থ খরচ করে আইফোন ও আইপ্যাডের মতো পণ্যগুলোর জন্য পছন্দের ব্র্যান্ড হিসেবে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অ্যাপল।বাজার গবেষকেরা বলছেন, ব্র্যান্ডিংয়ের প্রচুর খরচ করার ফলে স্যামসাংয়ের লাভের পরিমাণ কমে গেছে। স্যামসাংয়ের বাজারে আনা গ্যালাক্সি এস ৪ স্মার্টফোনটি আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। এশিয়াতে সেরা ব্র্যান্ডের মর্যাদা পেলেও লাভের ঘরে ঘাটতি থাকায় স্যামসাংয়ের আশা বোধহয় পূরণ হয়নি।
মিসরে নতুন গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত সময়সূচি প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থক প্রভাবশালী রক্ষণশীল ইসলামি গোষ্ঠী মুসলিম ব্রাদারহুড।বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল সোমবার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুর নতুন গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়সূচি-সংক্রান্ত একটি ডিক্রি জারি করেছেন। ডিক্রির বিস্তারিত বার্তা আজ মঙ্গলবার সকালে অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।ডিক্রিতে বলা হয়, মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর স্থগিত করা সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে পর্যালোচনার জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি প্যানেল গঠন করা হবে। সংবিধানের সংশোধনী চূড়ান্ত করে আগামী চার মাসের মধ্যে তা গণভোটে দেওয়া হবে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের শুরুর দিকে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ঘোষিত ক্ষমতা হস্তান্তরের এই সময়সূচি প্রত্যাখ্যান করে মুসলিম ব্রাদারহুডের জ্যেষ্ঠ নেতা এসাম এল এরিয়ান বলেন, সংবিধান সংশোধন ও আগামী বছর নির্বাচনের পরিকল্পনা দেশকে আরেকটি তাহরীর স্কয়ারে পরিণত করবে। সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই তাঁর ইসলামপন্থী মুসলিম ব্রাদারহুডের কর্মী-সমর্থকেরা ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে।গতকাল সোমবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে মুরসির সমর্থকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি ছুড়েছে সেনাসদস্যরা। এতে অন্তত ৫১ জন নিহত ও ৪৩৫ জন আহত হয়।এই হতাহতের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় একটি কমিটি গঠনেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।গত ৩০ জুন ছিল মুরসির দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরপূর্তি। ৩ জুলাই রাতে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়।
আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর করা মানহানির মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবির এ আদেশ দেন। মামলার বিচারকাজে পর পর সাতটি ধার্য তারিখে বাদী হাজির না হওয়ায় মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি তৌফিক-ই-ইলাহী ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন। মামলায় মাহমুদুর  রহমানসহ পত্রিকাটির প্রকাশক হাসমত আলী ও প্রতিবেদক এম আবদুল্লাহকে আসামি করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুত্ খাতে দ্রুত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে, গ্যাসের উত্পাদন বাড়িয়ে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ষড়যন্ত্র করে বাদী তৌফিক-ই-ইলাহী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদকে নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করছেন। আসামিরা ১৭ ডিসেম্বর (২০০৯) ‘তৌফিক-ই-ইলাহী ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে পাঁচ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ’ শিরোনামে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করেন। বাদী এর প্রতিবাদ পাঠালে আসামিরা তাঁদের প্রকাশিত সংবাদ প্রত্যাহার না করে প্রকাশিত সংবাদটিকে সত্য বলে মন্তব্য করেন।মামলা করার পর তৌফিক-ই-ইলাহী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও অসত্য সংবাদ প্রকাশের কারণে তিনি দেশে-বিদেশে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন।মাহমুদুর রহমান এখন অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ভারতের সর্বকালের সেরা ওয়ানডে দলের অধিনায়ক বানিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ভারতের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক মনে করেন, তিনি নিজে সফল হতে পারেন, কিন্তু ভারতকে সম্ভব-অসম্ভব সব শিরোপা পাইয়ে দিয়ে ধোনিই ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে সেরা।নিজের ৪১তম জন্মদিনে কলকাতার বাড়িতে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাঁর কণ্ঠে ঝরেছে ধোনির স্তুতি। টেস্ট দলের কথা আলাদা, তবে কোনো দিন যদি ভারতের সর্বকালের সেরা ওয়ানডে দল নির্বাচিত হয়, তাহলে তার নেতৃত্বের ভার অবশ্যই ধোনির হাতে তুলে দিতে হবে বলে অভিমত জানিয়েছেন তিনি, ‘আমি আমার জীবনে ধোনির মতো উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান দেখিনি। অধিনায়ক হিসেবে সে কেমন, সেটা তার রেকর্ডই বলে দিচ্ছে।’২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো সৌরভ তাঁর অবসর জীবনে যেন আরও বেশি ব্যস্ত। মাঠের খেলা ছেড়ে ধারাভাষ্য ধরেছেন, বিশেষজ্ঞ হিসেবে কমেন্ট্রি বক্সে তাঁর সদর্প পদচারণ। এই মুহূর্তে তিনি তাঁর ব্যস্ততার অনেকটুকুই নিংড়ে দিয়েছেন নিজের আত্মজীবনী লেখার কাজে। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়েও নিবিড় পর্যবেক্ষণ তাঁর। সেই পর্যবেক্ষণ থেকেই তাঁর কাছে ভারতের সর্বকালের সেরা ওয়ানডে অধিনায়ক ওই ধোনিই, ‘ওয়ানডেতে যদি ভারতের সর্বকালের সেরা কোনো দল গঠন করা হয়, তাহলে তার অধিনায়ক করতে হবে ধোনিকেই। ওর রেকর্ডই এ ব্যাপারে ওর পক্ষে কথা বলছে।’নিজের সঙ্গে ধোনির কোনো তুলনায় যেতে চান না সৌরভ। তুলনা ব্যাপারটি নাকি একেবারেই পছন্দ করেন না সৌরভ, ‘আমি তুলনা পছন্দ করি না। এসব ব্যাপারে তুলনা করাটা বোকামি। আপনি কখনোই সময়ের সঙ্গে সময়ের তুলনায় যেতে পারবেন না।’বিরাট কোহলিকে এখনই ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে ভাবতে চান না সৌরভ, ‘আপাত কোহলি নিজের ব্যাটিং প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে যাক। সে ভবিষ্যতে ভারতের অধিনায়ক হবে কি না, সেটা নিয়ে ভেবে কাজ নেই। কোহলির খেলা আমার অসম্ভব ভালো লাগে, ও রান করলেই তো ভারত যেতে। আপাত এ ব্যাপারটিই উপভোগ করে যেতে চাই।’
দীর্ঘদিন সন্তান-সংসার নিয়ে মগ্ন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন আবারও ফিরছেন চলচ্চিত্রে। তবে তাঁর সম্পর্কে লেখা ‘চলচ্চিত্রে প্রত্যাবর্তন’ বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সাবেক এ বিশ্বসুন্দরী ও বলিউডের অভিনেত্রী।প্রায় তিন বছর আগে সঞ্জয় লীলা বানশালীর ‘গুজারেশ’ ছবির মাধ্যমে সর্বশেষ রুপালি পর্দায় হাজির হয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া। তাঁকে আবার রুপালি পর্দায় দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তাঁর অগণিত ভক্ত। কিন্তু ২০১১ সালের নভেম্বরে মা হওয়ার পর মেয়ে আরাধ্য বচ্চনকে সময় দিতে গিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন ৩৯ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী।গত বেশকিছুদিন ধরেই ঐশ্বরিয়ার চলচ্চিত্র প্রত্যাবর্তন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এতদিন এ বিষয়ে কিছু না জানালেও সম্প্রতি মুখ খুলেছেন বলিউডের প্রভাবশালী বচ্চন পরিবারের বউ ঐশ্বরিয়া। ভারতের পুনেতে কল্যাণ জুয়েলার্সের একটি দোকান উদ্বোধনের সময় এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তো চলচ্চিত্র জগৎ থেকে চলে যাইনি। তাহলে কীভাবে আমার প্রত্যাবর্তন ঘটবে!’ঐশ্বরিয়া আরও বলেন, ‘সত্যি বলতে কি, চলচ্চিত্রে প্রত্যাবর্তন শব্দটির অর্থ আমার কাছে ঠিক পরিষ্কার নয়। মা হওয়ার কারণে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা থেকে সাময়িক বিরতি নিয়েছি। নতুন কোনো ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে তা জানিয়ে দেব। আরাধ্যকে জন্ম দেওয়ার পর আমার জীবন পুরোপুরি পাল্টে গেছে। আমার মেয়েকে যে আমি কী পরিমাণ ভালোবাসি, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’এদিকে বড় পর্দায় ফেরার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিই নাকি নিয়ে ফেলেছেন ঐশ্বরিয়া। এ প্রসঙ্গে তাঁর কাছের একটি সূত্র জানিয়েছে, মা হওয়ার পর মুটিয়ে যাওয়ায় অনেক সমালোচনা সইতে হয়েছে ঐশ্বরিয়াকে। নিয়ম করে শরীরচর্চার মাধ্যমে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখন বড় পর্দায় ফেরার জন্য তিনি পুরোপুরি প্রস্তুত। অপেক্ষা কেবল ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ঐশ্বরিয়া এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ছবির চিত্রনাট্য পড়েছেন। করণ জোহর তাঁর ‘শুদ্ধি’ ছবিতে হূতিক রোশনের বিপরীতে অভিনয়ের জন্য ঐশ্বরিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছেন। সঞ্জয় লীলা বানশালীও তাঁর একটি ছবিতে ঐশ্বরিয়াকে নেওয়ার জন্য খুবই আগ্রহী। হাতে আসা চিত্রনাট্যগুলো পড়ার পর কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঐশ্বরিয়া। তবে ছবির প্রযোজকরা ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এখনই এ বিষয়ে কিছু বলার এখতিয়ার তাঁর নেই।
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অপেক্ষায় আছে নির্মলেন্দু গুণের কবিতা অবলম্বনে সরকারি অনুদানে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের কাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’।এর মধ্যেই ছবিটির শব্দ ও আবহসংগীতসহ সম্পাদনার কাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি ছবিটি তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে এবং আগামী সপ্তাহে সেন্সর বোর্ডে ছাড়পত্রের জন্যও জমা দেওয়া হবে। আর এর পরই সুবিধাজনক একটি সময়ে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক মাসুদ পথিক।মাসুদ পথিক জানান, কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা অবলম্বনে ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ একটি মুক্তিযুদ্ধের কাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্র। এখানে গ্রামীণ এক সরল ও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার বঞ্চনার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী গ্রামীণ কলুষিত রাজনীতি এবং শহুরে রাজনীতির দোলাচল, প্রেম ও প্রতিবাদের অনুপম কাহিনি স্মৃতির বাস্তবতাকে নাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া সর্বপ্রাণবাদী মন ও নিসর্গ প্রেমের চিত্রও বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে এই ছবিতে।‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ছবিটির আবহ সংগীত পরিচালনা ও শব্দ সম্পাদনার কাজ করেছেন সাইম রানা। তিনি বলেন, ‘এই ছবিতে বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাদ্য একেকটি চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ব্যবহূত হয়েছে। যেহেতু ছবিটি গ্রামবাংলার কাহিনি অবলম্বনে, তাই এখানে দেশি সুর ও রাগ-রাগিণী এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়কার জনপ্রিয় সুরের ছায়া প্রতিধ্বনিত হয়েছে। দেশের প্রথিতযশা বাদ্যযন্ত্রশিল্পীদের সুরের মূর্ছনা সিনেমাটি উপভোগে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করছি।’‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ছবিটির অন্যান্য গান পরিচালনা করেছেন প্রিন্স মাহমুদ, মুশফিক লিটু, বেলাল খান, অসীম সাহা প্রমুখ। কণ্ঠ দিয়েছেন মমতাজ, বারী সিদ্দিকী, প্রিয়াংকা গোপ ও বেলাল খান। গীত রচনায় নির্মলেন্দু গুণ, মাসুদ পথিক, অসীম সাহা, সাইম রানা প্রমুখ। চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, প্রবীর মিত্র, শিমলা, জুয়েল, বাদল শহিদ, নির্মলেন্দু গুণ, অসীম সাহা, রানী সরকার, রেহানা জলি, তারেক মাহমুদ, শেখ শাহেদ, সৈয়দ জুবায়ের, ফারহানা সুচি, সোহেল বয়াতি প্রমুখ।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও পুলিশ ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। একই সঙ্গে গত দুই বছরে বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে বলে ৬০ শতাংশ মানুষ ধারণা করে। আজ মঙ্গলবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি এক সংবাদ সম্মেলনে গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার-২০১২ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়া উত্তরদাতাদের ৯৩ শতাংশের ধারণা, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ দুর্নীতিপ্রবণ খাত বা প্রতিষ্ঠান হলো রাজনৈতিক দল ও পুলিশ। আর ৮৯ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, এর পরের খাতই হলো বিচারব্যবস্থা।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, সরকারি খাতে দুর্নীতি খুবই গুরুতর সমস্যা। তবে ৯২ শতাংশ মানুষই মনে করেন, সাধারণ মানুষ দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারেন ও তাঁরা কোনো না কোনোভাবে ভূমিকা রাখতে চান।সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক রফিকুল হাসান ও কর্মসূচি ব্যবস্থাপক শাহানুর রহমান।দুর্নীতির এই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তরদাতারা নিজেদের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ভূমি, বিচার, কর এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতি কিছুটা কমেছে।
‘দোস্ত ফোন কিনতে ইচ্ছা করছে না, পকেটে আছে ১৫ হাজার টাকা, একটু বড় দেখে ট্যাব-ফ্যাব কেনা যাবে?’ মোস্তাফিজুর রহমান জিজ্ঞাসা করছিলেন তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটার বাজার ঘুরে দেখে শেষতক মোস্তাফিজুর রহমানের পছন্দ হয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার টাকা দামের একটি ফ্যাবলেট।যাঁরা মোস্তাফিজুরের মতো একটু বড় আকারের ডিসপ্লেযুক্ত প্রযুক্তিপণ্য খুঁজছেন, তাঁরা কিনতে পারেন ফ্যাবলেট। পাঁচ ইঞ্চি মাপের স্মার্টফোনের চেয়ে আকারে একটু বড় আবার সাত ইঞ্চি মাপের ট্যাবলেটের চেয়ে আকারে ছোট পণ্যগুলোকে ‘ফ্যাবলেট’ বলেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।বর্তমানে বাজারে নানা ধরনের ফ্যাবলেট পাবেন। এ ফ্যাবলেটগুলোর ডিসপ্লে তুলনামূলকভাবে বড় হওয়ায় অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারে ও ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা দাবি করেছেন ফ্যাবলেট ব্যবহারকারীরা।|বর্তমানে বাজারে ফ্যাবলেটের মধ্যে পাবেন সিম্ফনির ডুয়াল কোর প্রসেসরসমৃদ্ধ ৫ ইঞ্চি পর্দার স্মার্টফোন ডব্লিউ৯০। এর দাম পড়বে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টাকা। ডুয়াল কোর সুবিধা থাকায় ফোনটিতে দ্রুততার সঙ্গে ওয়েব পেইজ ডাউনলোড হয় এবং দীর্ঘক্ষণ ব্যাটারি থাকে। এতে পাঁচ ইঞ্চির পর্দা থাকায় তা সিনেমা দেখা ও গেমস খেলার জন্য সহায়ক। ডুয়াল বা দুটি সিম রাখার সুবিধাসংবলিত এ ফ্যাবলেটটি ১০ মিলিমিটার পুরু, ৭৮.৫ মিলিমিটার প্রশস্ত ও ১৪২ মিলিমিটার লম্বা। এতে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।ফ্যাবলেটের বাজারে আরেকটি পছন্দের পণ্য হতে পারে ওয়ালটনের প্রিমো এন১। এর পাঁচ দশমিক তিন ইঞ্চি মাপের ক্যাপাসিটিভ টাচ ডিসপ্লেতে অসাধারণ রেজুলেশন পাওয়া যায়। এক দশমিক দুই গিগাহার্টজের কোয়াড কোরের প্রসেসর, উন্নত গ্রাফিকস সুবিধা রয়েছে এতে। এতে আরও রয়েছে এক গিগাবাইট র‍্যাম। ওয়ালটনের এ ফ্যাবলেটে ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য সংরক্ষণের সুবিধা রয়েছে। ওয়ালটনের এ ফ্যাবলেটটি দাম প্রায় ১৬  হাজার টাকা।ওয়ালটনের পাশাপাশি ফ্যাবলেট হিসেবে মন কাড়তে পারে মাইক্রোম্যাক্সের পাঁচ ইঞ্চি মাপের ক্যানভাস। অ্যান্ড্রয়েড জেলি বিন অপারেটিং সিস্টেমনির্ভর ‘ক্যানভাস’ ফ্যাবলেটে রয়েছে এক দশমিক দুই গিগাহার্টজের কোয়াড কোর প্রসেসর, এক গিগাবাইট র্যাম, আট মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, চার গিগাবাইট তথ্য সংরক্ষণ সুবিধা ও ৩২ গিগাবাইট মাইক্রোসএসডি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা। ২০ হাজার টাকা দামের ফ্যাবলেট হিসেবে উন্নত ক্যামেরা আর ব্যবহারবান্ধব বৈশিষ্ট্য একে ওয়ালটন ও সিম্ফনির প্রতিদ্বন্দ্বি করে তুলেছে।দেশের বাজারে স্যামসাং ব্র্যান্ডের সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি মাপের গ্যালাক্সি নোট টু পাওয়া যায়। ফ্যাবলেটটির দাম অবশ্য অনেক বেশি। ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা দামের এ ফ্যাবলেটে আছে অ্যান্ড্রয়েডের সর্বশেষ সংস্করণ। এতে আরও রয়েছে বিশেষ ধরনের স্টাইলাস পেন, ১.৬ গিগাহার্টজ কোয়াড কোর প্রসেসর, ১৬ গিগাবাইট বিল্ট ইন মেমোরি, ৪.০ ব্লুটুথ, ওয়াই ফাই, ভয়েস মেমো এবং দীর্ঘস্থায়ী ৩১০০ এমএএইচ ব্যাটারি। ফ্যাবলেট কেনার হিসাব-নিকাশ ১. নানা ব্র্যান্ডের ভিড়ে কোন ফ্যাবলেটটি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো? তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে ইন্টারনেট থেকে আপনার পছন্দের ফ্যাবলেটটি সম্পর্কে তথ্য জেনে নিয়ে তবেই বাজার থেকে তা কিনুন। কেনার সময় এ বিষয়গুলো মাথায় রাখা ভালো। ২. আপনার স্টাইলের সঙ্গে মিলিয়ে রঙ, নকশা দেখে ফ্যাবলেট কিনুন।৩. পণ্যটির ক্যামেরা ও ভিডিও সুবিধা দেখে দিন।৪. এতে অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করা যায় কিনা দেখে নিন।৫. সবচেয়ে জরুরী বিষয়, পকেটের ওজন বুঝে কিনুন।কোন স্মার্টফোন কিনব?
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দেওয়ায় জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে কী কারণে শেষ মুহূর্তে সমর্থন দেওয়া হয়েছে, তা তিনি ‘একদিন’ জানাবেন বলে উল্লেখ করেন।আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে জাতীয় পার্টির তথ্য উপস্থাপনবিষয়ক সম্মেলনে এরশাদ এসব কথা বলেন।সম্মেলনে নানা বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হারার প্রধান কারণ শাহবাগ চত্বর। এই শাহবাগ চত্বর দেশকে বিভক্ত করেছে। এর কারণে হেফাজতে ইসলাম সৃষ্টি হয়েছে।মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধনের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে রায়ের পর আইন পরিবর্তন হয়। এখানে যুদ্ধাপরাধের বিচার বলে এ বিষয়ে কেউ কথা বলেনি।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, দেশ ঠিকভাবে চলছে না। একজন পাতি নেতার কথায়ও ওসি, এসপি, ডিসি বদলি হয়। হুকুম দিয়ে মানুষ মারা হয়। ‘অথচ আমি মাত্র দুজন (ডা. মিলন ও নূর হোসেন) লোকের মৃত্যুর কারণে ক্ষমতা ছেড়েছি।’আজকের এই সম্মেলনে জাতীয় পার্টির শাসনামলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক চিত্র তুলে ধরা হয়। সেখানে জাতীয় পার্টির রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি উইং দেশের প্রধান তিন নেতা শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া ও এইচ এম এরশাদের ওপর একটি জনমত জরিপ প্রকাশ করে।দাবি করা হয়, মানুষ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে এরশাদকে। জরিপটি প্রকাশ করেন উইংয়ের প্রধান ও এরশাদের বিশেষ উপদেষ্টা ববী হাজ্জাজ। অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
হয়তোবা হরিণ ধরতে ফাঁদ পেতেছিল ওই ছয়জন। সে ফাঁদে পড়ে মারা গেল এক বাঘের ছানা। আর যায় কোথায়? অমনি একদল বাঘ এসে জড়ো হলো। একজন বাঘের খপ্পরে পড়ে তাদের খাদ্যে পরিণত হলো। বাকি পাঁচজন দ্রুত উঠে পড়ল গাছে। গাছেই কেটে গেল তিনটা দিন। ইন্দোনেশিয়ার গুনুং লিউজার ন্যাশনাল পার্কে গভীর বনের ঘটনা এটি। গত বৃহস্পতিবার সুগন্ধি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের খপ্পরে পড়ে ছয় সদস্যের ওই দলটি। তারা আচেহ প্রদেশের সিমপাংকিরির বাসিন্দা। গাছে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা মুঠোফোনে পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বিপদের কথা জানায়। স্থানীয় পুলিশপ্রধান ডিকে সোসদানি জানান, গত শনিবার ৩০ সদস্যের একটি দল ওই পাঁচজনকে উদ্ধারে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। বনের গভীরে ঘটনাস্থলে হেঁটে যেতে তাদের দুই বা তিন দিন লেগে যেতে পারে। ডিকে আরও জানান, ‘গিয়ে যদি বাঘগুলোকে ওই গাছের নিচে পাওয়া যায়, তাহলে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করতে হবে। এভাবেই ওই পাঁচ ব্যক্তিকে উদ্ধার করা সম্ভব।’ ওই দলটি বনের ভেতরে থাকা সুগন্ধি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়েছিল বলে জানা গেছে। ওই কাঠ থেকে সুগন্ধি, তেল ও আগরবাতি তৈরি করা হয়। এই কাঠের প্রতি কেজির দাম ৫০৫ মার্কিন ডলার। তবে বাঘ ও হাতির কারণে এই কাঠ আনতে যাওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ। আইএএনএস।
সম্প্রতি ‘নিউইয়র্ক পোস্ট’ পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, হাসপাতাল ত্যাগের অনুমতি পাওয়ার পর বাড়ির পাট চুকিয়ে বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হবে জ্যাকসন-কন্যা প্যারিস।ঘুমের বড়ি খেয়ে ও কবজির রগ কেটে গত ৫ জুন আত্মহত্যা করার চেষ্টার পর থেকে প্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের ইউসিএলএ মেডিকেল সেন্টারে আছে। শারীরিকভাবে সেরে উঠলেও মানসিকভাবে এখনো পুরোপুরি ধাতস্থ হতে না পারায় সেখানে তার মানসিক চিকিৎসা চলছে।|এ প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, যেকোনো উপায়ে প্যারিসকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তার মা ডেবি রো ও দাদি ক্যাথরিন জ্যাকসন। তাঁরা মনে করছেন, ঘরে ফেরার মতো মানসিক অবস্থায় নেই ১৫ বছর বয়সী প্যারিস। এ জন্য ডায়মন্ড র্যাঞ্চ একাডেমিতে প্যারিসকে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডেবি ও ক্যাথরিন।ব্যয়বহুল ওই আবাসিক প্রতিষ্ঠানে প্যারিসকে ভর্তি করাতে খরচ পড়বে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিভিন্ন কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিশু-কিশোরদের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি পড়ালেখা করানো হয় ডায়মন্ড র্যাঞ্চ একাডেমিতে।এদিকে, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে প্যারিসকে দূরে রাখতে চান ডেবি ও ক্যাথরিন। তাঁদের মতে, ইন্টারনেটে প্যারিস ও মাইকেল জ্যাকসনকে নিয়ে লেখা আজেবাজে নানা মন্তব্য চোখে পড়লে কখনোই পুরোপুরি সুস্থ হতে পারবে না প্যারিস।
বাংলাদেশি তারকাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার চ্যাম্পিয়ন মেহজাবিন।সম্প্রতি ফেসবুকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৫ হাজার আটশো ছাড়িয়ে গেছে। আর এর মধ্য দিয়ে ফেসবুক অনুসারীর দিক দিয়ে বাংলাদেশি কোনো তারকা লাখের মাইলফলক পেরোলেন।বাংলাদেশি তারকা ব্যক্তিদের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে অনুসারীর সংখ্যার দিক দিয়ে মেহজাবিনের পরের অবস্থানে আছেন টিভি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। তাঁর বর্তমান অনুসারীর সংখ্যা ৯২ হাজারের ওপরে।ফেসবুক অনুসারীর সংখ্যা বিবেচনায় এর পরের অবস্থানে আছেন সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ৮৩ হাজারেরও বেশি।ফেসবুকে অনুসারীর সংখ্যা হিসেব করলে এরপর যাঁদের অবস্থান তাঁরা হলেন ইরেশ যাকের, আবদুন নূর তুষার, আরেফিন শুভ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, রাখি মাহবুবা, শাবনূর, মোশাররফ করিম, স্বাগতা, ফারিয়া, রেদওয়ান রনি ও এম এ জলিল অনন্ত সহ আরো অনেকে। প্রসঙ্গত, লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার চ্যাম্পিয়ন মেহজাবিন সম্প্রতি পাকিস্তানি ক্রিকেট তারকা শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে র্যাম্পে হেঁটে বেশ সমালোচিত হন। তবে বিষয়টি নিয়ে মেহজাবিন মোটেও বিচলিত নন।
মুঠোফোনের ডিসপ্লেই ঠেকাবে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার মতো মারাত্মক সব জীবাণু। বিশেষজ্ঞরা এ ডিসপ্লেকে বলছেন জীবাণু প্রতিরোধী।রোগ সৃষ্টিকারী মারাত্মক সব জীবাণু প্রতিরোধক নতুন ধরনের মুঠোফোন ডিসপ্লে তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাচ নির্মাতা কর্নিং। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।‘গোরিলা গ্লাস’ নির্মাতা হিসেবে অধিক পরিচিত কর্নিং। ইতিমধ্যে পাঁচশোরও বেশি পণ্যে গোরিলা গ্লাস ব্যবহূত হচ্ছে। এবারে কর্নিং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা মুঠোফোনের জন্য অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গ্লাস তৈরি করবে যা ওষুধ প্রতিরোধী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকেও দূরে রাখতে সক্ষম হবে।কর্নিংয়ের গবেষকেরা জানিয়েছেন, পাবলিক টয়লেটের চেয়েও অধিক ব্যাকটেরিয়ার আশ্রয়স্থল হতে পারে টাচস্ক্রিন স্মার্টফোন। টাচস্ক্রিন ডিভাইস যাতে ব্যাকটেরিয়ার আশ্রয়স্থল হয়ে না ওঠে সে লক্ষে কর্নিং গবেষণা করছে। জুন মাসে এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ-এর মোবাইল সামিটে কর্নিংয়ের গবেষক জেফ ইভেনসন ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী কর্নিং গ্লাস প্রদর্শন করেন।জীবাণু-রোধী ডিসপ্লে ছাড়াও অ্যান্টি রিফ্লেকটিভ বা প্রতিফলন রোধক ডিসপ্লে তৈরির তথ্যও দিয়েছেন জেফ ইভেনসন। প্রতিফলন বিরোধী ডিসপ্লে হবে স্বচ্ছ যাতে প্রখর সূর্য থাকলেও প্রতিফলনের কারণে ডিসপ্লে দেখতে সমস্যা হবে না।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গেরাখোলা সেতুর কাছে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ৮০ জন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস হোসেন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ফাল্গুনী পরিবহন ও টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস বাস দুটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে আটজন নিহত হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর এক শিশু মারা যায়।প্রত্যক্ষদর্শী হায়দার হোসেন জানান, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে লাশগুলো পড়ে ছিল। পরে সেখান থেকে আটজনের লাশ মুকসুদপুর থানায় নেওয়া হয়। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফাল্গুনী পরিবহন নামের বাসটি খুলনা ও বাগেরহাট হয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিল।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমির হোসেন খানকে তাঁর দপ্তরে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষকেরা।একই সঙ্গে আটকা পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. সৈয়দুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ  কুন্ডগোপী দাস।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেছে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম এবং পছন্দের এক ব্যক্তিকে একাধিক দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপাচার্যের দপ্তর অবস্থিত। তালা দেওয়ার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা উপাচার্যের দপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আয়নাল হক অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, জাল সনদে শিক্ষক নিয়োগ, নিয়োগ বাণিজ্য ও পছন্দের একজন শিক্ষককে ৩০টির মতো দায়িত্ব দেওয়ায় সাধারণ শিক্ষকেরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন।বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত সোমবার উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে (আল্টিমেটাম) দেন শিক্ষকেরা। কিন্তু দাবি অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজ উপাচার্যকে তাঁর দপ্তরে অবরুদ্ধ করেছেন আন্দোলনকারীরা।এ ব্যাপারে জানতে উপাচার্যের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সাড়া দেননি তিনি।
সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে কাল বুধবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। গতকাল সোমবার সৌদি আরবের ইংরেজি সংবাদপত্র আরব নিউজের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।বাংলাদেশে আজ মঙ্গলবার চাঁদ দেখা গেলে কাল থেকে রমজান মাস শুরু হবে। এ কারণে সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দৃষ্টি থাকবে আকাশের দিকে। চাঁদ দেখার খবর পেলে শুরু হবে তারাবির নামাজের প্রস্তুতি।মাহে রমজানের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম মিলনায়তনে সভা ডাকা হয়েছে। এতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাহজাহান মিয়াসহ চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের আকাশে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে খবর দিতে অনুরোধ করেছে।সৌদি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, গতকাল সোমবার কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি। তাই আজ মঙ্গলবার শাবান মাসের শেষ দিন। কাল বুধবার ১০ জুলাই থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। মিসর, ফিলিস্তিন, জর্ডান, কুয়েত, কাতার, ওমান, ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এসব দেশেও কাল থেকে পবিত্র রমজান শুরু হবে।
বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনে গড়ানো ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৯ রানের জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে লঙ্কানদের ফাইনালে খেলার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিতই হয়ে গেছে।৪১ ওভারে নির্ধারিত ইনিংসে কুমার সাঙ্গাকারার ৯৫ বলে ৯০ রানের সুবাদে ২১৯ রান তুলতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কা। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ের সময় এই লক্ষ্য বেড়ে দাঁড়ায় ২৩০। প্রথম ৩২ ওভারে মাত্র ১২২ রান করা লঙ্কানরা শেষ ৯ ওভারে ৯৭ রান তুলে নিজেদের নিয়ে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে। বোলারদের বাজে বোলিংয়ের কারণে লক্ষ্য বেড়ে গেলেও ব্যাটসম্যানরা বোলারদের পথ অনুসরণ করায় জয়ের কাছাকাছি আর পৌঁছানো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২৩০ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসা ক্যারিবীয়দের লড়াইটা প্রলম্বিত করেছেন ড্যারেন ব্রাভো আর লিন্ডল সিমন্স। ব্রাভো ৮৪ বলে ৭০ এবং সিমন্স ৭৮ বলে ৬৭ রান করে আশা জাগালেও শেষ অবধি ৩৯ রান দূরেই থেমে যেতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।এর আগে শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন কেমার রোচ। আট ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সূচনাটা ক্যারিবীয়দের পক্ষেই টেনে নিয়েছিলেন। রোচের পাশাপাশি জেসন হোল্ডার ২টি এবং মারলন স্যামুয়েলস ও কাইরন পোলার্ড একটি করে উইকেট দখল করেন।ক্যারিবীয় ইনিংসে ফাটল ধরান শারমিন্দা এরাঙ্গা আর অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। এরাঙ্গা ৪৬ রানে ৩টি আর ম্যাথুজ ২৯ রানে ৪টি উইকেট তুলে নিয়ে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংকে। এঁদের পাশাপাশি লাসিথ মালিঙ্গা ৪২ রানে ২ উইকেট তুলে নিলে পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ক্যারিবীয়দের। সূত্র: রয়টার্স।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়ন থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত মুঠোফোন কোম্পানি টেলিটকের পাঁচ কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল সোমবার বেলা দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।অপহৃত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের নাম পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন মো. আক্তার হোসেন ও সুজন। তাঁরা ঢাকা থেকে বাঘাইছড়ি গিয়েছিলেন।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে যাওয়া টেলিটকের তিনজন ও খাগড়াছড়ি থেকে দুজন কর্মকর্তা মারিশ্যা ইউনিয়নের বারিবিন্দুঘাট এলাকার একটি টাওয়ারে কাজ করতে যান। বেলা দুইটার দিকে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি সেখানে গিয়ে কথা আছে বলে তাঁদের অন্যত্র নিয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা ফিরে না আসায় টেলিটকের স্থানীয় কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়।নাম প্রকাশ না করার শর্তে টেলিটকের একটি সূত্র জানায়, অপহূত ব্যক্তিদের সঙ্গে সোমবার রাত আড়াইটা পর্যন্ত কথা হয়েছে। তাঁরা জানান, অপহরণকারীরা ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে। তবে কারা তাঁদের অপহরণ করেছে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিক উল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন চৌধুরী বলেন, ঘটনা জানার পর থেকে অপহূত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ও তাঁদের মুক্ত করার ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন অ্যাম্বুলেন্সের চালক (৩৫) ও চালকের সহযোগী (৩০)। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম জানা যায়নি।সড়ক (হাইওয়ে) পুলিশ সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আজ ভোর পাঁচটার দিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী পণ্যবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। চালক ও তাঁর সহযোগী ঘটনাস্থলে মারা যান। অ্যাম্বুলেন্সে এ সময় কোনো রোগী ছিল না। দুর্ঘটনার পর ট্রাকের চালক ট্রাক রেখে পালিয়ে যান। পুলিশ গিয়ে ট্রাকটি আটক করে।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সরাইল বিশ্বরোড মোড় সড়ক পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সার্জেন্ট মো. হানিফ মিয়া জানান, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
দলীয় প্রধানকেই ঠিক করতে হবে, যেসব সন্ত্রাসী ও লুটেরা দলকে ডোবাবে, তাদের প্রশ্রয় দেবেন; নাকি নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের পক্ষে অবস্থান নেবেন। যারা দলের দুঃসময়ে ভারতে বা কানাডায় পালিয়ে যায়, তাদের পক্ষে, না আমার মতো অসংখ্য কর্মী যারা দলের জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত, তাদের পক্ষে থাকবেন।’প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে এ প্রশ্ন ছুড়েছেন নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার চার মাস পার হওয়া উপলক্ষে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ ‘ত্বকী হত্যার বিচারে রাষ্ট্রের নির্লিপ্ততা ও গণতন্ত্রের সংকট’ শিরোনামে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।মেয়র আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জের একটি পরিবার নিজেদের স্বার্থে দলকে (আওয়ামী লীগ) বিতর্কিত করছে। তিনি আরও বলেন, ‘যে শামীম ওসমান সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করছে, দল কেন তাকে প্রশ্রয় দেবে? পক্ষ নেবে? তাদের বোঝা কেন দলকে বয়ে বেড়াতে হবে?’আইভী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ৯৯ ভাগ মানুষ, প্রতিটি ধূলিকণা, যে শীতলক্ষ্যা নদীতে ত্বকীর লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেই নদীও জানে, কে ত্বকীর হত্যাকারী। অথচ রাষ্ট্রের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসন জানে না। আমি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাব, অবিলম্বে ত্বকী হত্যার আসামি শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাই নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরি ওসমানকে গ্রেপ্তার করতে তাঁরা যেন প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।’ আইভী আরও বলেন, ‘তাদের যদি গ্রেপ্তার না করা হয়, তাহলে নারায়ণগঞ্জের মানুষ চুপ করে বসে থাকবে না।’আইভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা আছেন, যাঁরা ঢাকায় বসে টাকা খেয়ে শামীম ওসমানের পক্ষে কথা বলেন। এই নেতাদের জন্য আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’ নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও টাকা খেয়ে শামীম ওসমানের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ আনেন তিনি। আইভীর বক্তব্যে উঠে আসে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন প্রসঙ্গ। বললেন, পাঁচটি সিটি করপোরেশনে পরাজিত দলীয় প্রার্থীরা ব্যাপক কাজ করেছিলেন। তাঁরা মানুষ হিসেবে অনেক ভালো। কিন্তু দলের ভাবমূর্তির জন্য তাঁদের হারতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে দলীয় আদর্শের রাজনীতি করি। কিন্তু আমাদের মূল্যায়ন করা হয় না।’বৈঠকের সব আলোচকের বক্তব্যে ছিল কিশোর ত্বকীর হত্যাকারীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা। ঘটনার চার মাসেও অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করতে না পারায় ক্ষোভ জানান তাঁরা।অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেখছি, রাষ্ট্র সন্ত্রাসীদের নির্মূল করছে না, প্রশ্রয় দিচ্ছে। রাষ্ট্র কাউকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না। এত কিছুর মধ্যেও আশার কথা হচ্ছে, এসব ঘটনার প্রতিবাদ হচ্ছে। রাষ্ট্রকে মানবিক করতে হলে আমাদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।’ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘দেশে যদি আইনের শাসন না থাকে, তাহলে গণতন্ত্র থাকে না।’ ত্বকী হত্যার ব্যাপারে উপযুক্ত তদন্ত করে অবিলম্বে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কোনো রকম শ্রদ্ধাবোধ যদি থাকে, তবে ত্বকী হত্যার বিচার করবেন।’ সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান প্রবীণ বাম নেতা অজয় রায়। গণ-ঐক্যের আহ্বায়ক পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। তিনি বলেন, কেবল কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হবে না। তিনি বলেন, ‘কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাস্তবতা প্রমাণিত হয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব গডফাদার আছে, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। নয়তো সিটি করপোরেশনের ফলাফলের মতো জাতীয় নির্বাচনেও একই পরিণতি হবে।’ আলোচনায় অংশ নিয়ে সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মালেকা বেগম বলেন, ত্বকী এখন প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ত্বকী নিহত হয়েছে। কিন্তু লিমন বেঁচে থেকে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র কীভাবে সন্ত্রাস করে, এটা হচ্ছে তার নমুনা। এখানে মানবাধিকারকে হত্যা করা হচ্ছে।’ তিনি নারী সমাজের পক্ষ থেকে ত্বকী হত্যার বিচার দাবি করেন।নির্বাচনের আগে ত্বকী হত্যার বিচার না হলে জনগণ সরকারকে উচিত শিক্ষা দেবে বলে বক্তব্য দেন অধ্যাপক এম এম আকাশ। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ত্বকী হত্যার মামলায় তদন্তহীনতা ও বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে শামীম ওসমানরা এর সঙ্গে জড়িত। গোলটেবিল বৈঠকে মূল বক্তব্যে ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ বলেন, ত্বকী হত্যার পর গত চার মাসে নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মেধাবী কিশোর রাসেলকে দিনের বেলায় শত শত মানুষের সামনে হত্যা করা হয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র ইমনকে নয় টুকরা করে হত্যা করা হয়েছে, কিশোর পোশাকশ্রমিক রানাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার পায়নি তাদের পরিবার। বৈঠকে আরও আলোচনা করেন অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকী প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান গতকাল সোমবার এক কর্মিসভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং নিহত আলোচিত মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বিকে হুমকি দিয়েছেন। শামীম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত, আইভী ও রফিউর রাব্বি মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে চুক্তির মাধ্যমে খুনের উদ্দেশ্যে পারভেজকে গুম করিয়েছেন।’নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ মিলনায়তনে গতকাল সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর একাংশের কর্মিসভায় শামীম ওসমান এই অভিযোগ করেন। তিনি পারভেজকে ফিরিয়ে দিতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁকে ফেরত দেওয়া না হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। প্রয়োজনে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে বিদায় জানাবেন বলেও হুমকি দেন।কর্মিসভায় সভাপতিত্ব করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা সভাপতি চন্দন শীল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল আলম প্রমুখ।কর্মিসভায় শামীম ওসমান বলেন, ‘অনেক ধৈর্য ধরেছি। কিন্তু আর নয়। নিজের দলের সন্তানতুল্য কর্মী-সমর্থকদের গুম করে পরে লাশ ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের জানাজা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত, আইভী ও রফিউর রাব্বি মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে চুক্তির মাধ্যমে খুনের উদ্দেশ্যে পারভেজকে গুম করিয়েছেন।’প্রসঙ্গত, পারভেজকে গত শনিবার ঢাকার গুলশান থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে সাদা পোশাকের কয়েকজন অস্ত্রধারী তুলে নিয়ে যায় বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।শহীদ মিনার থেকে ত্বকীর ছবি ছিঁড়ে ফেলল ক্যাডাররা: এদিকে গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে শামীম ওসমানের ক্যাডাররা চাষাঢ়া শহীদ মিনার বেদিতে রাখা নিহত ত্বকীর একটি বড় ডিজিটাল ছবি ছিঁড়ে ফেলে এবং নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের কর্মীদের খুঁজতে থাকে।