content
stringlengths 0
129k
|
---|
কাস্পিয়ান সাগর
|
কৃষ্ণ সাগর
|
কোকো দ্বীপ
|
দক্ষিণ চীন সাগর
|
পূর্ব চীন সাগর
|
প্রান্তিক সাগর
|
বাল্টিক সাগর
|
লোহিত সাগর
|
শ্বেত সাগর
|
প্রুশিয়া
|
সিকিম
|
সিকিম রাজ্য
|
ওয়াঘা
|
নাথু গিরিবর্ত্ম
|
53
|
© .-. 2020 | . .
|
হযরত শায়খুল হিন্দ (রহ.) তো ছিলেন শায়খুল হিন্দ
|
আমি ছোট মানুষ, আমার কথাই বলি
|
যখন আমি পাকিস্তান চলে এসেছি
|
আপনাদের হয়তো ধারণা, আমি এখানে এসেই একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছি এবং আমি মাদরাসা পরিচালনাকারী একজন হুযুর
|
কিন্তু না
|
আমি এখানে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আসিনি
|
আমি এসেছিলাম পাকিস্তানে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে
|
সংবিধান প্রণয়নের জন্য আমি এসেছি
|
সংবিধান প্রণেতাগণ আমার নিকট একটি ইসলামী সংবিধান প্রস্তুত করার আবেদন করেন
|
তাদের আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা ইসলামী সংবিধানের একটি রূপরেখা প্রস্তুত করি
|
অথচ সংবিধান সম্পর্কে আমার তেমন কিছুই জানা ছিল না
|
আপনারা যা পড়েছেন, আমিও তাই পড়েছি
|
সংবিধান নিয়ে তো কোনো পড়াশোনা ইতিপূর্বে হয়নি
|
কিন্তু যখন কাজের জন্য বসে গেলাম আল্লাহর শোকর, বুযুর্গদের জুতো সোজা করার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছিল
|
পঠন-পাঠনের কাজে জীবন অতিবাহিত হচ্ছিল
|
যখন সংবিধান মুতালাআ শুরু করলাম, আলহামদুলিল্লাহ, সংবিধান সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা চলে এল
|
আমরা যে সংবিধান প্রণয়ন করেছিলাম তা ছিল বেসরকারি
|
তারপর সরকারিভাবে একটি প্রস্তুত করা হয় এবং এর জন্য পৃথক বোর্ড গঠন করা হয়
|
বোর্ডের প্রত্যেক সদস্যকে মাসে এক হাজার রুপি করে ভাতা প্রদান করা হত
|
এতে কতিপয় আলিম সদস্যও ছিলেন
|
তো বলছিলাম, আমি তো জীবনে কখনো সংবিধান নিয়ে পড়াশুনা করিনি
|
ইসলামী সংবিধান নিয়েও নয় এবং জাগতিক সংবিধান নিয়েও নয়
|
এ বিষয়ে কোনো লেখালেখিও করিনি
|
কিন্তু যখন মাথার ওপর দায়িত্ব এসে পড়েছে এবং আমিও মুতালাআ শুরু করে দিয়েছি
|
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংবিধান দেখেছি এবং ইংরেজি সংবিধান উর্দুতে অনুবাদ করিয়ে পড়েছি
|
তখন এ বিষয়ে আমার এত জানা-শোনা হল যে, দাবি করে বলতে পারি, সারা পৃথিবীর সংবিধান আমাদের জানা হয়ে গেছে
|
একবার খাজা নাযিমুদ্দীন সাহেব (আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন) ভালো মানুষ ছিলেন, তিনি তখন প্রধানমন্ত্রী
|
তার সাথে আরো চার-পাঁচ জন বড় বড় মন্ত্রী ছিলেন
|
মজলিসে কথাবার্তা চলছিল
|
একজন (তিনি এখনও জীবিত, আমি তার নাম নিচ্ছি না) আমার দিকে ইশারা করে বললেন, আপনি সংবিধান সম্পর্কে কী জানেন? সে মনে করেছিল, আমি একজন হুযুর মানুষ
|
মাদরাসায় পড়াশোনা করেছি
|
ওযু-ইস্তিঞ্জার মাসআলা জানা থাকলেও সংবিধান সম্পর্কে আমার জানা-শোনা আর কীইবা থাকবে! তিনি অনেকটা তাচ্ছিল্য ভরে বললেন, মাওলানা! আপনার তো এ বিষয়ে কোনো ধারণাই নেই
|
আমার খুব রাগ হল
|
আমি বললাম, সংবিধান সম্পর্কে আমি জানি না! আমি খুব ভালো করেই জানি, আপনি সংবিধান নিয়ে পকেটে করে যে নোট নিয়ে এসেছেন, যা আপনার সেক্রেটারি প্রস্তুত করে দিয়েছে, আপনার জ্ঞানের দৌড় ওই পর্যন্তই
|
আপনার নিজের জানা নেই, সংবিধান কাকে বলে! অথচ আমাকে জিজ্ঞাসা করুন, আমি সারা দুনিয়ার সকল সংবিধান মুতালাআ করেছি
|
আপনি আমাকে যে কোনো সংবিধান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন, আমি আপনাকে বলে দেব, ইংল্যান্ডের সংবিধানে কি আছে, হিন্দুস্তানের সংবিধানে কি আছে, এবং ইউরোপ-আমেরিকারসহ অন্যান্য দেশগুলোতে কোন ধরনের সংবিধান অনুসরণ করে তারা দেশ চালাচ্ছে, আমি আপনাকে সবকিছু বলতে পারবো
|
অথচ আপনি আমাকে বলছেন, আমার কোনো ধারণা নেই সংবিধান সম্পর্কে! আমার কথা শুনে তিনি একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে গেলেন
|
এরপর আর কোনো কথা বলার সাহস করেননি
|
সেই মজলিসেও না এবং পরবর্তী আর কোনো মজলিসেও না
|
তো আমি বলছিলাম, আমি তো রাজনীতি শিখিনি
|
তেপ্পান্ন বছর বয়সে পাকিস্তানে হিযরত করি
|
দু'বছর লেগে যায় দেশ গঠন করতে করতে
|
কেবল তখনই রাজনীতির অঙ্গনে অল্পবিস্তর আসা হয়
|
এর পূর্বে কি আমার জানা ছিল, রাজনীতি কী জিনিস? কিন্তু যখন প্রয়োজন পড়ল, তখন আল্লাহ রাস্তা খুলে দিলেন
|
ইসলামী সংবিধান এখনো সচল
|
একবার পাকিস্তানের চার প্রদেশের চার প্রধানমন্ত্রী এবং আরো বড় বড় মন্ত্রী এবং আমাদের আলিমদের মধ্যে মতবিনিময় হচ্ছিল
|
তারা বলছিলেন, আপনারা যে সংবিধানের কথা বলছেন তা এ যুগে অচল
|
আমরা বললাম, যদি ইসলাম এ যুগে অচল হত, তা হলে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে কখনো এ নির্দেশ দিতেন না
|
আমাদের বিশ্বাস, এ যুগেও ইসলাম সে যুগের মত অবশ্যই চলবে
|
এসব বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল
|
কথা তো অনেক দীর্ঘ হল
|
যেটা বলতে চাচ্ছিলাম তা হল, নূরুল আমিন সাহেব, যিনি পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, ঘরে গিয়ে বললেন, সত্য কথা তো তাই যা মুফতি সাহেব বলেছেন
|
আমাদের মানা না মানা সেটা ভিন্ন জিনিস
|
ইনসাফের কথা হল, মুফতি সাহেবের কথাই সঠিক
|
যোগ্যতা অর্জন করুন, সকল অঙ্গনে আল্লাহ কাজ নেবেন
|
তো যাইহোক, আমরা ইলম যেভাবে অন্বেষণ করতে হয় সেভাবে অন্বেষণ করেছি
|
যখন ছাত্র ছিলাম তখন আমাদের পড়া-লেখা ছাড়া অন্য কোন ব্যস্ততা ছিল না
|
পড়া-লেখা থেকে ফারেগ হওয়ার পর যখন প্রয়োজন হয়েছে, আল্লাহর শোকর এমনভাবে কাজ করেছি যে, বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গও আমাদের শিক্ষা-দীক্ষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য থাকত
|
যে কোনো আলিমের কথাই বলুন, দুনিয়াতে যারাই দীনের বড় বড় খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন, যদি তাদের ছাত্রজীবন দেখা হয় তাহলে কোথাও একথা খুঁজে পাবেন না যে, ছাত্রজীবনে তারা সভা-সমাবেশ করতেন এবং জোরে-শোরে শ্লোগান দিতেন
|
যদি তারা ছাত্রজীবনে শ্লোগান দিতেন, তা হলে দীনের বড় বড় খেদমত আঞ্জাম দেয়া তাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হত না
|
বড় বড় আলিমদের মধ্য থেকে যারাই রাজনীতির ময়দানে এসেছিলেন, তারা সকলে এমনই ছিলেন
|
তাদের ছাত্রজীবন রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিল
|
তারা শুধুই পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন
|
তারপর আল্লাহ যখন তাদেরকে কাজে লাগিয়েছেন তখন রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাদের দ্বারা অনেক কাজ হয়েছে
|
এ সব কিছু শোনানোর উদ্দেশ্য হল, ছাত্রজীবনকে গনীমত মনে করে কাজে লাগান
|
এখনো সময় আছে
|
রাজনীতির কারণে স্কুল-কলেজের ধ্বংসাত্মক পরিণতি
|
বিশেষভাবে রাজনীতি আজ স্কুল-কলেজকে ধ্বংস করে দিয়েছে
|
তাদের কাছে না আছে ইলম, না আছে দীন এব না আছে দীনদারী, না হালাল-হারামের পার্থক্য
|
আছে শুধু শ্লোগান এবং শ্লোগানের পেছনে ডিগ্রি
|
আর ডিগ্রির ওপর নির্ভর করে তাদের চাকুরি
|
এভাবে চলেও তারা পার পেয়ে যায়
|
কারণ তারা শ্লোগান দিতে শিখেছে এবং শ্লোগান দিয়ে চড়াও হয় নিজেদের প্রধান শিক্ষকের ওপর- দাও, আমাদেরকে ডিগ্রি দিয়ে দাও
|
এভাবে তাদের চাকুরিও হয়ে যায় এবং দুনিয়াতে তারা বাহ্যিকভাবে কামিয়াবও হয়ে যায়
|
যদিও সেটা কোনো কামিয়াবি নয়, কেবল ছাই
|
সার্টিফিকেট বনাম যোগ্যতা
|
প্রিয় ছাত্র ভাইয়েরা! আমি বলতে চাই, আপনারা এসবের লোভ করবেন না
|
আপনাদের সনদের দু'পয়সারও মূল্য নেই
|
ধরুন, আমি বড় বড় উপাধি আপনার নামের শুরুতে লিখে দিলাম
|
বাজারে যান, দেখবেন সেগুলোর মূল্য দু'পয়সাও হবে না
|
অফিসে যান, কোনো চাকুরিও এই সার্টিফিকেট দিয়ে পাবেন না
|
হ্যাঁ, যদি আপনার যোগ্যতা থাকে তাহলে সবকিছু আছে
|
এটা অনেক বড় মূল্যবান জিনিস
|
আর যদি যোগ্যতা না থাকে, তাহলে কিছুই নেই
|
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.