Source,Headlines,Category,Article,Aspect,Sentiment প্রথম আলো,ইসলামে শিশু নির্যাতন হারাম,ইসলাম ধর্ম,"শিশুরা পবিত্রতার প্রতীক। শিশুরা নিষ্পাপ। শিশুরা আনন্দের উপকরণ ও প্রেরণার উৎস। তাই শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করা জরুরি। কোরআন মজিদে বর্ণিত হয়েছে: ‘আল্লাহ তোমাদের থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের যুগল থেকে তোমাদের জন্য পুত্র ও পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের উত্তম জীবন উপকরণ দিয়েছেন। (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৭২)। শিশু মানবজাতির অতীব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শৈশবেই মানুষের জীবনের গতিপথ নির্ধারিত হয়। তাই শৈশবকাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়ে ওঠার জন্মগত অধিকার রয়েছে। শিশুদের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশুরা অহরহ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শিশুদের শারীরিক শাস্তি একটি সামাজিক ব্যাধি শিশুদের শারীরিক শাস্তি আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে অঘোষিতভাবে অনুমোদিত হয়ে রয়েছে। এটি পারিবারিক নেতিবাচক মূল্যবোধ থেকে সৃষ্ট ও সামাজিক নৈতিক অবক্ষয়ের কুফল। শিশুর পিতা, মাতা ও অভিভাবকেরা নিজেরা এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং তাঁরা শিক্ষকসহ অন্যদের এ বিষয়ে উৎসাহ প্রদান ও সহযোগিতা দান করে থাকেন। আমাদের সমাজে অনেক শিশু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সমাজের সব স্তরের মানুষের একটি বড় অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এর সঙ্গে জড়িত না থাকলে এত শিশু শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা নয়। শিশুদের শারীরিক শাস্তি ও মানসিক নির্যাতন বর্তমানে একটি সামাজিক ব্যাধিরূপে আবির্ভূত হয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়; এর আশু নিরসন প্রয়োজন। শিশুদের শারীরিক শাস্তির মতো বর্বর সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সামাজিক উদ্যোগ। শিশুদের সুশাসন বনাম শারীরিক নির্যাতন ইসলামের বিধানগুলো যৌক্তিক ও মানবিক। শিশুর সুনাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য পিতা, মাতা, শিক্ষক ও অভিভাবকের সুশাসন অবশ্যই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু শাসনের নামে নির্যাতন ইসলাম অনুমোদন করে না। এটি অমানবিক জুলুম। শিশুরা বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন রকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। সাধারণত শারীরিক শাস্তিটা পরিবারে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বেশি হয়। গড়ে শিশুর ৩ বছর থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে শারীরিক শাস্তি বেশি দৃশ্যমান হয়ে থাকে; এর মধ্যে বয়স ৭ বছর থেকে ১১ বছর সময়ে শারীরিক শাস্তিটা বেশি পরিলক্ষিত হয়। নাবালেগ মাসুম (নিষ্পাপ) শিশুদের শাসনের নামে এমন শাস্তি প্রদান যাতে শরীরের কোনো অংশ কেটে যায়, ফেটে যায়, ছিঁড়ে যায়, ভেঙে যায়, ফুলে যায়, ক্ষত হয়, বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয় অথবা মানসিক ক্ষতি হয়; ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক, কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে এবং ফিকহের বিধানমতে সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়েজ, অবৈধ, অনৈতিক, অমানবিক ও বেআইনি এবং কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ; যা তওবা ছাড়া মাফ হবে না। তা সত্ত্বেও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাবালেগ মাসুম শিশুদের শারীরিক শাস্তির হার সর্বাধিক। শিশুর পিতা, মাতা বা অভিভাবকের অনুমতি বা নির্দেশক্রমেও শিশুদের শারীরিক শাস্তি প্রদান শিক্ষক বা অন্য কারও জন্য জায়েজ নয়। কারণ পিতা, মাতা বা অভিভাবক নিজেই তাঁর নিজের নাবালেগ সন্তানকে (শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে এমন প্রচণ্ড ও কঠিন আঘাতের মাধ্যমে) শাস্তি দানের অধিকার রাখেন না। সুতরাং, তিনি অন্যকে এই অধিকার দিতে পারেন না। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি। নিজ ঘরে শিশুদের শারীরিক শাস্তি নিবারণ নিজের ঘর শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। মাতৃকোল শিশুর পরম শান্তির নিবাস। মায়ের যথাযথ শিক্ষা না থাকায় এখানেই শিশু প্রথম বঞ্চনা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। কুসংস্কার ও অজ্ঞতার কারণে শাল দুধ ফেলে দিয়ে শিশুর ক্ষতি করা হয়। অভাবের সংসারে এবং অনেক মা কর্মব্যস্ততার কারণে মেজাজ বিগড়ে গেলে শিশুদের মারধর করেন। কর্মজীবী বা শ্রমজীবী পিতারা শিশুদের খেলাধুলা ও চঞ্চলতার জন্যও মেরে থাকেন, যা আদৌ কাম্য হতে পারে না। সুশিক্ষা, সচেতনতা সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে এ পর্যায়ে শিশুর শারীরিক শাস্তি ও জুলুম বন্ধ করা সম্ভব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের শারীরিক শাস্তি নিবারণ শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। সুশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই, যা আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে, তা–ই শিক্ষা। শিক্ষা তথা সুশিক্ষার জন্য রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যাঁরা শিক্ষা প্রদানে ব্যাপৃত থাকেন, তাঁরা নিজেরাই অনেক ক্ষেত্রে তেমন শিক্ষিত নন বা প্রশিক্ষিত নন। কোথাও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের আদর্শ অনুপাত যেখানে ১: ১০ থেকে ১: ২০-এর মধ্যে (প্রতিজন শিক্ষকের জন্য ১০ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী) হওয়ার কথা, সেখানে দেখা যায় এই অনুপাত ১: ৫০ থেকে ১: ১০০ (শিক্ষকপ্রতি শিক্ষার্থী ৫০ জন থেকে ১০০ জন) পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর সঙ্গে উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ না থাকা ও যথাযথ শিক্ষা উপকরণের অভাব, শিক্ষার্থীদের বয়সের তারতম্য, মেধা ও রুচির পার্থক্য, পারিবারিক বিভিন্ন স্তরের শিশুর অসম অবস্থানসহ নানা প্রভাবক শিক্ষককে শিশুদের শারীরিক শাস্তি প্রদানে প্রভাবিত ও উদ্বুদ্ধ করে। এর সমাধানের জন্য প্রয়োজন গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষক, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গড় অনুপাত আদর্শ অনুপাতের কাছাকাছি আনা, শিক্ষকদের বিনোদনের সুযোগ প্রদান, শিক্ষকদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদা পূরণ ও মানসম্মত জীবনযাত্রা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষকদের আধুনিক আন্তর্জাতিক বিশ্বশিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। কর্মক্ষেত্রে শিশুদের শারীরিক শাস্তি নিবারণ কর্মক্ষেত্রে শিশুরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, অবহেলার শিকার হয়; এমনকি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। শিশুশ্রমিক বা শ্রমজীবী শিশুরা কম বয়সেই বেশি নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হয়। এ ক্ষেত্রে গৃহকর্মী শিশুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও বঞ্চিত হয়ে থাকে। এই গৃহকর্মীরা প্রায় কন্যাশিশু। এদের বয়স ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে গৃহকর্ত্রী ও গৃহমালিকের সন্তানদের দ্বারাই বেশি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি প্রয়োজন। জালিম ও মজলুমকে সাহায্য করো যাদের দ্বারা নির্যাতন (জুলুম) সংঘটিত হয়, তারা জালিম। যারা নির্যাতিত হয়, তারা মজলুম। হাদিস শরিফে রয়েছে, হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: ‘উনছুর আখাকা জালিমান আও মাজলুমান।’ অর্থাৎ তোমরা তোমার ভাইকে (সব মানুষকে) সাহায্য করো; হোক সে জালিম বা মজলুম। এক সাহাবি বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), যখন কেউ মজলুম হবে, আমরা তার সাহায্য করব; কিন্তু জালিমের (নির্যাতনকারীর) সাহায্য করব কীভাবে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জালিমকে জুলুম থেকে বিরত রাখবে, এটাই তাকে সাহায্য করা। (বুখারি, মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)। আদর্শ শিখনপদ্ধতি আমরা নিরন্তর শিখছি, শিশুরাও শিখছে অহরহ, অবিরত। শিশুদের শিক্ষা নিয়ে আমরা সদা উদ্গ্রীব থাকি। আমরা ভাবি, আমরা যা শেখাই (যা বলি), শিশুরা তা শেখে। আসলে শিশুরা আমাদের শেখানোটা (বলাটা) হয়তো শেখে; কিন্তু শিশুরা আমাদের দেখে দেখে (আমাদের আচরণ থেকে) তার চেয়ে বেশি শেখে। কারণ, শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে তা আত্মস্থ করে। আমাদের জীবনের প্রতিচ্ছবি তাদের কোমল মনে স্থায়ীভাবে রেখাপাত করে। এর প্রতিফলন ঘটে তাদের কর্মক্ষেত্রে বা কাজে-কর্মে, সারা জীবনের আচার-আচরণে। যেমন ধৈর্য বা সহিষ্ণুতার উপদেশ যদি আমরা অসহিষ্ণুভাবে উপস্থাপন করি; তবে শিশু এখান থেকে দুটো বিষয় শিখবে: এক. ধৈর্য বা সহিষ্ণুতার বাণী বা বুলি; দুই. অধৈর্য বা অসহিষ্ণু আচরণ। এখন আমাদের ঠিক করতে হবে, আমরা শিশুদের কী শেখাতে চাই। আমাদের সেভাবে আচরণ করতে হবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative ভোরের পাতা,"পুরুষদের জন্য সোনা ব্যবহার করা কি বৈধ? ",ইসলাম ধর্ম,"পুরুষের জন্য সোনার চেইন, ঘড়ি, আংটি, বোতাম, কলম ইত্যাদি ব্যবহার বৈধ নয়। তবে নারীদের জন্য স্বর্ণ-রোপা সবই বৈধ। পুরুষের স্বর্ণ ব্যবহার নিয়ে হাদীসে এসেছে, আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রা.) হতে বর্ণিত। নবী ( সা.) বলেছেন, স্বর্ণ ও রেশমের ব্যবহার আমার উম্মাতের নারীদের জন্য হালাল এবং পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে। (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত ৪৩৪১ নং) ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন লোকের হাতে একটি সোনার আংটি লক্ষ্য করে সেটি খুলে ফেলে দিলেন এবং বললেন, তোমাদের মাঝে কেউ কেউ আগুনের টুকরা জোগাড় করে তার হাতে রাখে। রাসূলুল্লাহ (সা.) সে স্থান ত্যাগ করলে ব্যক্তিটিকে বলা হলো, তোমার আংটিটি উঠিয়ে নাও। এটি দিয়ে উপকার হাসিল করো। সে বলল, না। আল্লাহর কসম! আমি কখনো ওটা নেব না। কারণ রাসূলুল্লাহ (সা.) তো ওটা ফেলে দিয়েছেন। (মুসলিম ২০৯০ নং) প্রকাশ থাকে যে, ব্যতিক্রমভাবে পুরুষের জন্য সোনার নাক বাঁধার অনুমতি রয়েছে ইসলামে।'আবদুর রহমান ইবনু ত্বরাফাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত, কুলাবের যুদ্ধে তার দাদা' আরফাজাহ্ ইবনু আস’আদ-এর নাক কাটা গিয়েছিল। তিনি রূপার দ্বারা একটি নাক তৈরি করেছিলেন। ফলে তাতে দুর্গন্ধ দেখা দিলো। অতঃপর নবী (সা.) তাকে স্বর্ণের নাক তৈরি করতে নির্দেশ করলেন। (আহমাদ ১৮৫২৭, আবূ দাঊদ ৪২৩২, তিরমিযী ১৭৭০, নাসাঈ ৫১৬১ নং) প্রয়োজনে সোনার তার দিয়ে দাঁত বাঁধতে অথবা সোনার দাঁত বাঁধিয়ে ব্যবহার করাতেও অনুমতি আছে শরীয়তে। পক্ষান্তরে চার আনা সোনার আংটি ব্যবহারের বৈধতা শরীয়তে নেই। বিপদ প্রয়োজনে যে কোনো স্বর্ণটুকরা হাতে না রেখে সঙ্গেও তো রাখা যায়। প্রকাশ থাকে যে, সোনা দিয়ে পালিশ করা জিনিসেও যেহেতু সোনা থাকে, সেহেতু টা পুরুষের জন্য ব্যবহার বৈধ নয়। (ইবনে জিবরীন)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral ভোরের কাগজ,"ধর্ম রাজনীতির হাতিয়ার হতে পারে না ",অন্যান্য,"পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বলেছেন- বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে। তাতে ধর্ম রাজনীতির হাতিয়ার হতে পারে না। গত ২৮ ডিসেম্বর ঢাকায় মেট্রোরেল এর শুভ উদ্বোধনসহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেছে। অব্যাহত থাকবে উন্নয়নের ধারায়, দেশ অন্ধকার থেকে এবার আলোয় পরিনত হবে। তিনি আরো বলেন- বিএনপি-জামায়াত ধর্মের নামে একত্র হয়ে যে রাজনীতির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে, তাতে কোন লাভ হবে না। তবে দলীয় কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সরকারের নামে শক্তির অপব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। উপজেলা প্রশাসন আয়োজনে শনিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে বাঘা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অন্তঃধর্মীয় সর্ম্পক ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত রাখা, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনকে এগিয়ে নিতেও উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ,সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। এ সময় অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, পৌর মেয়র একরামুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, চারঘাট মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুল আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন তুষার, সাধারণ সম্পাদক রায়হেনুল হক রানাসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পাচঁজন ছাত্রছাত্রীর মাঝে বাইসাইকেল ও বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদেও উপবৃত্তি টাকা প্রদান করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"মুসলিম উম্মাহর জন্য মসজিদে আকসা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ-৩ ",ইসলাম ধর্ম,"বাইতুল মাকদিসের মতো পবিত্র ভূখণ্ডের সান্নিধ্যে কিছু সময় যাপন করতে পারাই তো সৌভাগ্যের বিষয়। উপরন্তু বসবাসের জন্য যদি এক টুকরো মাটি পাওয়া যায়, তাহলে এটা তো আরো অনেক বড় প্রাপ্তি। এ কারণেই হাদিস শরীফে বাইতুল মাকদিসের কাছাকাছি বসবাসের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আবু যার (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : অচিরেই এমন সময় আসবে, যখন কোনো ব্যক্তি যদি ঘোড়ার রশি পরিমাণ জায়গাও পেয়ে যায়, যেখান থেকে বাইতুল মাকদিস দেখা যায়, তাহলে এটা তার জন্য সমগ্র দুনিয়া থেকে বেশি উত্তম হবে। (মুসতাদরাকে হাকেম ৪/৫০ : ৮৫৫৩)। পবিত্র ভূখণ্ডে জীবন অতিবাহিত করার পাশাপাশি মৃত্যুবরণ করাও একজন মুমিনের পরম কাক্সিক্ষত বিষয়। বাইতুল মাকদিস যেহেতু পবিত্রতম স্থান, তাই তো হযরত মূসা (আ.) এই মাটিতে মৃত্যুর আরজি পেশ করেছিলেন। রাসূলে কারীম (সা.) হযরত মূসা (আ.)-এর মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন : তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন, যেন তাঁকে পবিত্র ভূখণ্ডের এতো কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখান থেকে একটি পাথর নিক্ষেপ করলে পবিত্র ভূখণ্ডে পতিত হবে। যদি আমি সেখানে থাকতাম, তবে লাল টিলার কাছে রাস্তার পাশে আমি তোমাদেরকে তাঁর কবর দেখিয়ে দিতাম। (সহীহ বুখারী : ১৩৩৯)। এই হাদিসে পবিত্র ভূখণ্ড দ্বারা বাইতুল মাকদিস উদ্দেশ্য করা হয়েছে। আহলে হকের অবস্থানস্থল। বাইতুল মাকদিস এবং আশপাশের অঞ্চলে সর্বদা এমন একটা জামাতের উপস্থিতি থাকবে, যারা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আবু উমামা বাহিলী (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেন : আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা সত্যের ওপর অবিচল থাকবে। তাদের দুশমনদের ওপর বিজয়ী থাকবে। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করে কেউ তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ আসবে আর তারা এভাবেই থেকে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, এই দলটির অবস্থান কোথায় হবে? তিনি বললেন, বাইতুল মাকদিস ও তার আশপাশে। (আল মুজামুল কাবীর, তবারানী : ৭৬৪৩)। পৃথিবীতে মানব জাতির যাত্রালগ্ন থেকেই শুরু হয়েছে হক ও বাতিলের লড়াই, সত্য ও মিথ্যার সংঘাত। এটা অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে হক-বাতিলের চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারণী লড়াই হবে বাইতুল মাকদিস অঞ্চলে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) বলেন : কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষণ না মুসলিমগণ ইহুদিদের সাথে লড়াই করবে আর মুসলিমগণ তাদের হত্যা করবে। এমনকি ইহুদিরা যে পাথর বা গাছের পেছনেই আত্মগোপন করবে, সে পাথর বা গাছও বলে উঠবে, হে মুসলিম! হে আল্লাহর বান্দা! এই যে আমার পেছনে ইহুদি আছে। এসো তাকে হত্যা করো। তবে গারকাদ গাছ কিছু বলবে না; কারণ এটা ইহুদিদের গাছ। (সহীহ মুসলিম : ২৯২২)। ইমাম নববী (রাহ.) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘গারকাদ’ একধরনের কাঁটাদ্বার গাছ, যা বাইতুল মাকদিসে প্রচুর পরিমাণে হয়। আর সেখানেই দাজ্জাল ও ইহুদি বধের ঘটনা ঘটবে। (দ্র. শরহে মুসলিম, নববী ১৮/৪৫) উপরের আলোচনা দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল, আল আকসা বা বাইতুল মাকদিস ইসলামের দৃষ্টিতে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ আর মুসলিম উম্মাহর জন্য কতই না গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গোটা মুসলিম উম্মাহ আল আকসার বিষয়ে দায়িত্বহীনতার শিকার হয়ে পড়েছে। আল্লাহ আমাদের মাফ করুন এবং আল আকসার মুক্তির জন্য আবারো জেগে ওঠার তাওফীক দান করুন। (আমীন)। ইয়া রাব্বুল আলামীন। ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আত্মহত্যা রোধে ইসলামের সতর্কতা ",ইসলাম ধর্ম,"বর্তমানে বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর ২০টি কারণের মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হল আত্মহত্যা। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে বিশ্বের কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ আত্মহত্যা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বছরে প্রায় আট লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশেষতঃ ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী যুবক-যুবতীরা বেশি আত্মহত্যা করে বলে জানা গেছে। যা মানবতার জন্য এ এক অপূরণীয় ক্ষতি। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। দক্ষিণ এশিয়ায় দশম। প্রতি বছরই আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে এবং গড়ে প্রতিদিন ৩০ জন করে আত্মহত্যা করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যার পেছনে অন্যতম কারণগুলো হল মানসিক হতাশা ও বিষণনতা, দাম্পত্যজীবনে কলহ কিংবা যেকোনো সম্পর্কে অনৈক্য, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতা ও পারিপার্শ্বিক অসহযোগিতা আর ২০০৩ সাল থেকে দিবসটি পালন করা শুরু হলেও ২০১১ সালে প্রায় ৪০টি দেশ এই দিবসটি উদযাপন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘প্রিভেন্টিং সুইসাইড: অ্যা সোর্স ফর মিডিয়া প্রফেশনালস ২০১৭’ জরিপ বলছে, ‘প্রতিবছর বিশ্বে ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে একটি।’ আরও একটি জরিপ বলছে, ‘গত ৪৫ বছরে আত্মহত্যার ঘটনা ৬০ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বে বর্তমানে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুর প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে আত্মহত্যা।এতো গেল বিশ্বের কথা। বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা- ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ইউনিটে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়ে ৩৪ হাজার ৬০৫টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৯২। লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এই বিশাল সংখ্যার নারীর অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীদের এই উচ্চ হার জানিয়ে দিচ্ছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করছে ব্যাপক মাত্রায়। এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৯ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ জন, ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন এবং যৌতুকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন নারী। দেশের পত্রপত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী আত্মহত্যায় শীর্ষে ঢাকা। বিভাগটিতে আত্মহত্যা ২৩.৭৭ শতাংশ। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ যা ১৭.২৭ শতাংশ এবং রাজশাহী বিভাগ যা ১৬.৮১ শতাংশ। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে ১৪.১৩ শতাংশ, রংপুরে ৮.৭৪ শতাংশ, বরিশালে ৮.৫৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৬.২৭ শতাংশ এবং সিলেটে ৪.৪৮ শতাংশ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থী রয়েছেন।পরিসংখ্যান বলছে নারীদের আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি। স্কুল এবং কলেজ পড়ুয়া আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৬০ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং পুরুষ রয়েছেন ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। শুধু স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যাকারী নারী শিক্ষার্থীর পরিমাণ ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ। শুধু কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যাকারী নারী ৫৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং পুরুষ ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ রয়েছে ।আত্মহত্যার পেছনের কারণ হিসেবে মান-অভিমানকে দেখানো হয়েছে। জরিপে উঠে আসা এমনই বেশ কিছু কারণের মধ্যে দেখা যায়, অভিমান তাদের সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ করে তোলে। ২৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে অভিমান করে। এদের বড় অংশই অভিমান করেছিল পরিবারের সদস্যদের ওপর। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে প্রেমঘটিত কারণ, পারিবারিক কলহসহ নানা কারণ। পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ শুধু ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে।বর্তমানে নানা কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। এ হার প্রতি লাখে ৮ দশমিক ৫ জন। এটি আমরা ২০২৫ সালে ৩ দশমিক ৫ ও ২০৩০ সালে ২ দশমিক ৮ জনে নামিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। তবে এটা কারোর একার পক্ষে সম্ভব নয়, সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জোর দিতে হবে। আত্মহত্যা জীবনে সবচেয়ে বড় কাপুরুষতার পরিচয়”- উক্তিটি জগদ্বিখ্যাত নেপোলিয়ন বোনাপার্টের। ভারতবর্ষের মহান সাধক ফকির লালন সাঁই জীবনকে দেখেছেন আশ্চর্য এক সাধনার মঞ্চ হিসেবে। সেই জীবনের টানেই জীবনানন্দ দাশ কবিতার পঙক্তিতে ঢেলেছেন সুরিয়ালিস্টিক ভাবধারা। মনীষীরা মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে জীবনকেই করেছেন মহিমান্বিত। তবে কেন এ আত্মহনন? কেন এ জীবনবিমুখতা? চিকিৎসাবিজ্ঞান আত্মহত্যার চেষ্টাকে মানসিক অবসাদজনিত গুরুতর উপসর্গ হিসেবে দেখেন। বিশ্বের অনেক দেশ আত্মঘাতকদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ বলছে, প্রতিবছর বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটে এর মধ্যে আত্মহত্যা ১৩তম প্রধান কারণ। বিবিএস সূত্র জানায়, বর্তমানে (২০২০ সালের জরিপ) প্রতি লাখে ৮ দশমিক ৫ জন আত্মহত্যা করেন। সে সময়ে দেশের মোট জনসংখ্যা ধরা হয় ১৭ কোটি ১৬ লাখ। ২০২০ সালে সারাদেশে মোট ১৩ হাজার ৮১৪ জন মানুষ আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের গড় প্রায় সমান। ২০১৯ সালে প্রতি লাখে আত্মহত্যার হার ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। তখন দেশের মোট জনসংখ্যা ধরা হয়েছিল ১৬ কোটি ৫৯ লাখ। সে হিসাবে ওই সময়ে দেশে মোট জনসংখ্যার ১২ হাজার ৯৫৮ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছিলেন। এতেই স্পষ্ট হয়, দেশে আত্মহত্যার হার বাড়ছে। ২০১৫ সালে দেশে প্রতি লাখে ৭ দশমিক ৬৮, ২০১৬ সালে ৭ দশমিক ৮৪, ২০১৭ সালে ৩ দশমিক ৭৯ ও ২০১৮ সালে ৭ দশমিক ৬৮ জন আত্মহত্যা করেছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লাখে আত্মহত্যার হার ৭ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এটা এখন ৮ জনের ওপরে চলে এসেছে। বিবিএস সূত্র জানায়, ২০২১ সালের প্রথম ১০ মাসে দেশে মোট মৃত্যুর কিছু কারণ খুঁজে বের করে বিবিএস। ১০ মাসে যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ৫ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তখন ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। মহামারির এ সময়ে দেশে শুধু হার্ট-অ্যাটাক, হার্ট-ফেইলিওর ও হৃদরোগে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে ৮ লাখ লোক আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৬ জন। ২০১৪ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে গড়ে প্রতিদিন ২৮ জন মানুষ আত্মহত্যা করেন। আর পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, বছরে গড়ে ১০ হাজার মানুষ ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। এর বাইরে ঘুমের ওষুধ সেবন, ছাদ কিংবা উঁচু স্থান থেকে লাফিয়ে পড়া কিংবা রেললাইনে ঝাঁপ দেওয়ার মতো ঘটনাগুলোও বিরল নয়। বয়স্ক মানুষ হার্ট অ্যাটাকে বেশি মারা যাচ্ছে, বাড়ছে আত্মহত্যাও: ৬০ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুহার হিসাব করলে হার্ট অ্যাটাক প্রথমে। মোট মৃত্যুর ২৩ দশমিক ৮ শতাংশই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। এর পরে রয়েছে ব্রেন স্ট্রোক ১১ দশমিক ৫, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ১১, হার্ট ডিজিস ৬, অ্যাজমা ৫ দশমিক ২, হাই ব্লাড প্রেশার ৩ দশমিক ৭, ডায়াবেটিস ৩ দশমিক ৩, কিডনি রোগে ২ দশমিক ৯, লিভার ক্যানসার ২ দশমিক ৮, প্যারালাইসিসে ২ দশমিক ২, ব্লাড ক্যান্সারে ১ দশমিক ৯, নিউমোনিয়া ১ দশমিক ৫ ও স্টমাক ক্যান্সারে ১ শতাংশ মানুষ মারা যান। এসব রোগের বাইরে অন্য কারণে দেশের দশমিক ২ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। পরিশেষে বলতে চাই, কুরআন সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী হতাশা কিংবা যে কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে নিমিষেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া যাবে না। বরং এক আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার মাধ্যমে জীবনের প্রতিটি কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য ও নিজের মেধা খাঁটিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়; বরং আবেগতাড়িত হয়ে নিজের ভূলে নিজের জীবনকে চিরতরে নিঃশেষ করে দেওয়া মারাত্মক ভুল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।আল্লাহ তাআলা সবাইকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুক। তাই আত্মহত্যা প্রতিরোধে ধর্মীয় অনুশাসন মানার বিকল্প নেই। এ মহাপাপ থেকে বাঁচতে জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর ওপর ভরসা এবং সবরের আমল করতে হবে। সব ধরনের দুশ্চিন্তা, দুঃখ-কষ্ট এবং ডিপ্রেশন থেকে বাঁচতে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত, দুরূদ পাঠ, জিকির ও ইস্তিগফার করতে হবে।আত্মহত্যার মতো মারাত্মক অপরাধ ও হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,"ছিলেন পর্নো তারকা, বর্তমানে ধর্ম প্রচারক!",খ্রীষ্টান ধর্ম,"ছিলেন পর্নো তারকা। হয়ে গেলেন খ্রীষ্টান ধর্মযাজক। সাবেক পর্নো তারকা ক্রিসি আউটল এভাবেই নিজেকে পাল্টে ফেলেছেন। দীর্ঘদিনের পেশাকে ছেড়ে এবার চার্চের যাজক হিসেবেই নিজেকে দেখতে চান তিনি। পর্নো দুনিয়া থেকে চার্চের কর্মী হওয়ার ক্রিসির এমন সিদ্ধান্তে অবাক অনেকেই। তবে তিনি জানান, যে ঈশ্বরই তাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে পর্ন দুনিয়া ছেড়ে তাকে চার্চের কাজে যোগ দিতে। তাই নিজের এতদিনকার পেশা ছেড়ে দিলেন ৪১ বছরের এই পর্নো তারকা। ক্রিসি এখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন যে, তার মতো যেন অন্য মেয়েরা এই পর্নো দুনিয়াতে এসে ভুল না করেন। এমনকি এখন তিনি অ্যান্টি-পর্নো ওয়েবসাইটের হয়েও কাজ করছেন। অতীতে প্রায় ৫০টির বেশি পর্নো ছবিতে অভিনয় করেছেন ক্রিসি।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন," ইসলামী অভিবাদন সালামের ফজিলত",ইসলাম ধর্ম,"সালাম শব্দের অর্থ শান্তি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সুন্দর কথা, পরম শান্তিময়, সর্বোচ্চ সম্মানজনক অভ্যর্থনামূলক ইসলামী অভিবাদন। ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য, আন্তরিকতা, নিরাপত্তা ও অকৃত্রিম ভালোবাসার বিনম্র অভ্যর্থনার বহির্প্রকাশ। জান্নাতের সর্বোচ্চ নেয়ামত হলো আল্লাহপাকের দিদার। জান্নাতিরা নিজ চর্ম চোখে মহান রাব্বুল আলামিনকে প্রাণভরে দেখবে ও নিজ কানে তাঁর পবিত্র কথা শুনবে। সব নবী-পয়গম্বরগণসহ সর্বস্তরের জান্নাতিদের তাদের প্রেমাষ্পদের সঙ্গে সাক্ষাতের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেদিন নূরের পর্দা উঠিয়ে সর্বপ্রথম সব জান্নাতিকে আল্লাহতায়ালা স্বীয় রহমত ও বরকতময় ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে অভিবাদন করবেন। (সুরা আহজাব আয়াত ৪৪) সুবহানাল্লাহ! আল্লাহতায়ালা জান্নাতিদের সম্বোধন করে বলবেন : তোমাদের প্রতি দয়াময় রবের পক্ষ থেকে চিরস্থায়ী সালাম (সুরা ইয়াসিন আয়াত ৫৮)। কেয়ামতের ময়দানে হিসাব-নিকাশ শেষে জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার পথে কোটি কোটি ফেরেশতা সালাম দিয়ে তাদের জান্নাতের দরজায় অভিবাদন করবেন। মানব সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই সালামের প্রচলন শুরু হয়েছে। আল্লাহতায়ালা যখন হজরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করলেন তখনই তাঁকে সালামের শিক্ষা ও নির্দেশ দেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা হজরত আদমকে যখন সৃষ্টি করলেন তখন বললেন, যাও সামনে অবস্থানরত ফেরেশতাদের বিশাল একটি জামাতকে সালাম কর, আর তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেয় তা শ্রবণ কর এবং তা-ই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালামের পদ্ধতি। তখন হজরত আদম (আ.) সামনে অগ্রসর হয়ে বললেন, আসসালামু আলাইকুম। জবাবে ফেরেশতাগণ বললেন, আসসালামু আলাইকা ওয়ারাহমাতুল্লাহ। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তারা ওয়ারাহমাতুল্লাহ অংশটি বৃদ্ধি করে বলেছেন। (বুখারি মুসলিম)। পুত্র সন্তান লাভের সুসংবাদ ও আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত কওমে লুতকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহর প্রেরিত ফেরেশতাগণ যখন হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর কাছে আগমন করলেন তারা বললেন ‘সালাম’। তিনি বললেন, আপনাদের প্রতিও সালাম, আপনারা অপরিচিত। এমনিভাবে সব নবীগণের কাছে প্রেরিত ফেরেশতাগণ প্রথমেই নবীকে সালাম প্রদান করেন। হজরত আবুজর গিফারী (রা.) বলেন, আমি একদা নবীজির কাছে গেলাম, তিনি আমাকে বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। আমি বললাম, ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আবুজর (রা.) বলেন, সর্বপ্রথম আমি ওই ব্যক্তি যাকে মুহম্মাদুর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম প্রদান করেছেন। নবীজি বলেন, কথা বলার আগেই সালাম প্রদান কর। নবীজি আরও বলেন, যে অগ্রে সালাম প্রদান করে সে অহংকারমুক্ত। সালাম একটি দোয়া এবং ইবাদত। সালাম দেওয়া সুন্নত, উত্তর দেওয়া ওয়াজিব।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মে রোজা যেমন ছিল,ইসলাম ধর্ম,"ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি রোজা। মুসলিমদের মতো পূর্ববর্তী জাতি গোষ্ঠীর ওপর রোজা ফরজ ছিল। এমনকি আসমানি ধর্মের অনুসারী নয়—এমন সম্প্রদায়ের ভেতরও রোজাসদৃশ আচার-আয়োজন খুঁজে পাওয়া যায়। তবে প্রথমেই ইসলামী শরিয়তে রমজানের রোজা ফরজ হয়নি; বরং তা কয়েক ধাপে হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারায় রোজা ফরজ হওয়ার ধারাক্রমটি বর্ণিত হয়েছে। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসেও সেই বর্ণনা পাওয়া যায়। পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মে রোজা : আল্লাহ তাআলা মুসলিম জাতির মতো পূর্ববর্তী জাতিগুলোর ওপরও রোজা ফরজ করেছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যেমন তোমরা আল্লাহভীতি অর্জন করতে পারো। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩) কোরআনে মারিয়াম (আ.)-এর ভাষ্যে বলা হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে কাউকে যদি তুমি দেখ তখন বলবে, আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে রোজার (মৌনতা অবলম্বনের মাধ্যমে) মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সঙ্গে বাক্যালাপ করব না। ’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত : ২৬) ইসলামপূর্ব আরবে রোজা : ইসলাম আগমনের পূর্বে আরব সমাজেও রোজার প্রচলন ছিল। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘জাহেলি যুগে কুরাইশরা আশুরার রোজা পালন করত এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-ও এই রোজা পালন করতেন। যখন তিনি মদিনায় আগমন করেন তখনো এই রোজা পালন করেন এবং তা পালনের নির্দেশ দেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো তখন আশুরার রোজা ছেড়ে দেওয়া হলো। যার ইচ্ছা সে পালন করবে আর যার ইচ্ছা পালন করবে না। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০০২) আশুরার রোজা : মুসলমানরা মদিনায় হিজরত করার পর কিছুদিন আশুরার রোজা পালন করেন। এই সময় আশুরার রোজাই মুসলমানের জন্য ওয়াজিব ছিল। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) যখন মদিনায় আসেন তখন দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখে। তাদের রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, এই দিনেই আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.) ও বনি ইসরাঈলকে ফিরাউনের ওপর বিজয় দিয়েছিলেন। তাই আমরা ওই দিনের সম্মানে রোজা পালন করি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমাদের চেয়ে আমরা মুসা (আ.)- এর বেশি নিকটবর্তী। এরপর তিনি সাওম পালনের নির্দেশ দিলেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৯৪৩) এ ছাড়া মুসলিম প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা পালন করত বলে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ ফকিহ ও মুহাদ্দিসের মতে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ওয়াজিব ছিল, যা পরবর্তী সময়ে নফলে পরিণত হয়। আর আইয়ামে বিদ বা প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখার বিধান সব সময় মুস্তাহাব ছিল। হাদিসে আইয়ামে বিদের রোজার বিশেষ তাগিদ এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার বন্ধু (সা.) আমাকে তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন। মৃত্যু পর্যন্ত আমি তা ত্যাগ করব না। তা হলো—প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, চাশতের নামাজ আদায় করা এবং বিতর আদায় করে শোয়া। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৭৮) রমজানের রোজা : দ্বিতীয় হিজরিতে রমজানের রোজা ফরজ হয়। ইমাম নববী (রহ.) লেখেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মোট ৯ বছর রমজানের রোজা রেখেছেন। কেননা তা দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে ফরজ হয়। আর নবী (সা.) একাদশ হিজরির রবিউল আউয়ালে ইন্তেকাল করেন। ’ (আল-মাজমুআ : ৬/২৫০) রোজা ও ফিদিয়ার ইচ্ছাধিকার : রমজানের রোজা যখন প্রথম ফরজ হয়, তখন মুমিনদের রোজা রাখা ও ফিদিয়া দেওয়ার ইচ্ছাধিকার দেওয়া হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘(তোমাদের ফরজ করা হয়েছে) রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। এটা যাদের সাতিশয় কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদয়া—একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর রোজা পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪) অবকাশহীন ফরজ : এরপর রোজা ফরজ করা হয় কোনো প্রকার অবকাশ না রেখে। ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাস। এতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে। তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫) সময় সীমায় পরিবর্তন : তাফসিরে ইবনে কাসিরে উল্লেখ করা হয়েছে, রমজানের রোজা যখন ফরজ হয়, তখন রাতের বেলা এশার নামাজ বা ঘুমের আগ পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী-সম্ভোগ অনুমতি ছিল। এশার নামাজ বা ঘুমের পর পানাহার ও স্ত্রী-সম্ভোগ নিষিদ্ধ হয়ে যেত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আল্লাহ সময় সংক্ষিপ্ত করে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার সময় নির্ধারণ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রোজার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানেন যে তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ যা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কোরো। আর তোমরা পানাহার কোরো যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা থেকে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭) ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral প্রথম আলো,ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত নিরসনে ইসলামের শিক্ষা,ইসলাম ধর্ম,"সমগ্র সৃষ্টিজগতের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান ইসলামের লক্ষ্য। কোরআন মজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই; সুতরাং তোমরা ভ্রাতৃগণের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।’ (সূরা-৪৯ হুজুরাত, আয়াত: ১০)। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: মুসলমান মুসলমানের ভাই। তাই তোমরা পরস্পরকে হিংসা কোরো না, ঈর্ষান্বিত হয়ো না, কারও পেছনে লাগবে না; এবং তোমরা এক আল্লাহর দাস হয়ে যাও এবং হয়ে যাও একে অপরের ভাই।’ (বুখারি: ৫৬৩৮)। দ্বীন বা ধর্ম কী? দ্বীন বা ধর্মের উদ্দেশ্য কী? হাদিস শরিফে আছে: ‘কল্যাণ কামনাই দ্বীন।’ (বুখারি ও মুসলিম)। কারও কল্যাণ চাইলে তার সংশোধনের জন্য যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, তাতে থাকতে হবে মহব্বত (প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা), আযমত (সম্মান করা), হিকমত (কৌশল অবলম্বন করা), খিদমাত (সেবা প্রদান করা)। নবী করিম (সা.) মুসলিম উম্মাহকে একটি মানবদেহের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এটা সেই তুলনার সঙ্গেও সাদৃশ্যমান, যেখানে উম্মাহকে একটি প্রাসাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তিশালী করে তোলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন: ‘প্রত্যেক মুসলমান একে অন্যের ভাই, কেউ কারও ক্ষতি করে না বা অন্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।’ (বুখারি)। মানবভ্রাতৃত্বের পাশাপাশি ইসলাম বিশ্বাসের ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তির সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আল-কোরআনে এক মুসলমানকে অন্য মুসলমানের বন্ধুরূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে এই বলে যে ‘মুমিন নর ও মুমিনা নারী একে অপরের বন্ধু, তারা সৎকাজে আদেশ করে, মন্দকাজে নিষেধ করে এবং নামাজ কায়েম করে ও জাকাত আদায় করে। সর্বোপরি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করে; অচিরেই আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পরাক্রমশালী, মহা কৌশলী।’ (সূরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ৭১)। অহিংসা, মৈত্রী ও শান্তি হলো মহানবী (সা.)-এর মহতী দর্শন। ধৈর্য, সহনশীলতা, সমবেদনা, সহমর্মিতা, সহানুভূতি এবং ক্ষমা, দয়া, স্নেহ, মায়া, মমতা, প্রেম, প্রীতি ইত্যাদি ছিল তাঁর মহান আদর্শ। পরোপকার, কল্যাণকামিতা ও ত্যাগ-তিতিক্ষা ছিল তাঁর কর্মালংকার। আর এটাই হলো ইসলাম। হাদিস শরিফে আরও আছে: ‘রাসুল (সা.) বলেন, যে সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং আমাদের কিবলাকে অনুসরণ করে, আমাদের মতো নামাজ (স্বীকার) করে ও আমাদের (মুসলমানদের) জবাই করা প্রাণী আহার করে (হালাল মনে করে); তবে সে মুসলিম, তার জন্য তা-ই, যা মুসলমানের জন্য এবং তার বিরুদ্ধেও তা-ই, যা মুসলমানের বিরুদ্ধে।’ (বুখারি শরিফ)। মতবিরোধের ক্ষতি ও শান্তি–শৃঙ্খলার অবনতির পরিণাম কুফর-শিরকের চেয়েও ক্ষতিকর; এটা বোঝা যায় আল্লাহ তাআলার নবী ও রাসুল হজরত হারুন (আ.)-এর অবস্থান থেকে। হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর নির্দেশে ৩০ দিনের জন্য তুর পাহাড়ে যান তাওরাত কিতাব আনার জন্য। সেখানে তিনি আল্লাহর আদেশে ৪০ দিন অবস্থান করেন। এ সময় তাঁর ভাই হজরত হারুন (আ.)-কে কওমের কাছে রেখে যান। পূর্বনির্ধারিত ৩০ দিনের বেশি আরও ১০ দিন বিলম্ব হওয়ার সুবাদে ছামেরি নামের এক জাদুকর সোনা দিয়ে গো-বাছুর তৈরি করে। বনি ইসরাইল এই গো–বাছুরের পূজা শুরু করে দেয়। নবী হারুন (আ.) এই মারাত্মক বিকৃতি সম্বন্ধে বারণ করলেও কঠোরতা অবলম্বন করেননি। হজরত মুসা (আ.) ফিরে এসে তাঁর সম্প্রদায়ের ওই গোমরাহির কথা জেনে তাঁর ভাইকে বললেন: ‘হে হারুন! তুমি যখন দেখলে তারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, তখন তোমাকে কিসে নিবৃত্ত করল আমার পদাঙ্ক অনুসরণ করা থেকে? তবে কি আমার আদেশ অমান্য করলে?’ (সূরা-২০ তহা, আয়াত: ৯২-৯৩)। উত্তরে হারুন (আ.) বললেন: ‘হে আমার সহোদর! আমার দাড়ি ও চুল টেনো না। আমি আশঙ্কা করেছিলাম যে তুমি বলবে, তুমি বনি ইসরাইলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং তুমি আমার কথা পালনে যত্নবান হওনি।’ (সূরা-২০ তহা, আয়াত: ৯৪)। এখানে লক্ষ করা যায় যে হারুন (আ.) প্রধান নেতা ফিরে না আসা পর্যন্ত দলের ঐক্য ধরে রাখার নিমিত্তে কওমের গোমরাহির মতো কাজেও কঠোরভাবে বাধা না দিয়ে ঐক্য বজায় রেখেছেন, যাতে কেউ বলতে না পারে যে তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করেছেন। দ্বন্দ্ব-সংঘাত বন্ধের শান্তিপূর্ণ উপায় এবং প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের সুন্নতি পদ্ধতি উত্তম কর্ম দ্বারা প্রতিবিধান করা। আল্লাহপাক নবী-রাসুলদের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম প্রচার করিয়েছেন। তাঁরা যদি শৌর্য-বীর্যে বলীয়ান হতেন অথবা রাজশক্তিতে শক্তিমান হতেন, তাহলে বলা যেতে পারত ইসলাম শক্তির বলে প্রচার-প্রসার লাভ করেছে। কিন্তু আল্লাহ ধনসম্পদহীন নবীদের দ্বারা দুনিয়ার বুকে ইসলাম জিন্দা রেখেছেন। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ভালো ও মন্দ সমান হবে না (হতে পারেও না); তুমি প্রতিরোধ করো (মন্দকে) যেভাবে উত্তম; তবে তোমার সঙ্গে যার শত্রুতা রয়েছে; সে–ও যেন পরম বন্ধু হবে।’ (আল-কোরআন, পারা: ২৪, পৃষ্ঠা: ৪৮১ / ১৯ হা. , সূরা-৪১ হা মীম সাজদাহ/ফুচ্ছিলাত, আয়াত: ৩৪)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘তোমরা মন্দকে প্রতিরোধ করো যা উত্তম তার মাধ্যমে; আমি নিশ্চিত জানি যা তারা সংজ্ঞায়িত করে।’ (সূরা-২৩, মুমিনুন, আয়াত: ৯৬)। ইসলাম চায় পৃথিবীতে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হোক। এ জন্য যুদ্ধের বিকল্প অনুসন্ধান করে। যেখানে দ্বন্দ্ব-সংঘাত দেখা যায়, তা দূর করতে যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ উপায় খোঁজে; যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে মীমাংসা করতে চায়। এ আয়াত থেকে সুস্পষ্ট যে ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের পরিপন্থী কোনো কাজ পছন্দ করে না এবং সেগুলো দূর করতেও চরমপন্থা গ্রহণ করে না। এ থেকে আরও একটি কথা প্রমাণিত হয়, ইসলামি শরিয়ার সব বিধিবিধানই বিশ্ববাসীর জন্য শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর। প্রতিপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ না করে সন্ধিতে আবদ্ধ হওয়া মহানবী (সা.)-এর শান্তিকামিতার আরও একটি প্রকৃষ্ট প্রমাণ। তিনি শান্তি স্থাপনের জন্য হুদাইবিয়ার সন্ধি করেছেন; এ ছাড়া আরও বহু সন্ধিতে আবদ্ধ হয়েছেন। বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) সারা জীবন এই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। ইসলাম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। ইসলাম কখনোই অনর্থক দ্বন্দ্ব-সংঘাতকে সমর্থন করে না। তাই শান্তির দূত রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহের মুসলমান, ইহুদি, খ্রিষ্টান, পৌত্তলিকসহ নানা ধর্মের ও নানা বর্ণের লোকদের নিয়ে একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করলেন, যা জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার মানবিক ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। মদিনায় বসবাসরত সব গোত্রের মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি সনদ বা সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে মদিনা সনদ নামে পরিচিত; এটি একটি ঐতিহাসিক চুক্তি। এ চুক্তির নানামুখী উদ্দেশ্যের একটি ছিল যুদ্ধের পরিবর্তে পরস্পরের শান্তিপূর্ণ অবস্থান। এ চুক্তির আরও উদ্দেশ্য ছিল অত্যাচারিত-নিপীড়িতকে সাহায্য করা এবং চুক্তিভুক্ত সব পক্ষের মান, মর্যাদা ও ধর্মবিশ্বাসের অধিকার সংরক্ষণ করা। ইসলাম যে শান্তি চায়, তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো এই মদিনা সনদ। ‘মদিনা সনদ’ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জীবনে বিরাট পরিবর্তন সাধন করে। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নৈরাজ্য, সংঘাত, যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে যুদ্ধবাজ গোত্রগুলোর মধ্যে সংঘাতের পরিবর্তে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধন। সংঘাত এড়ানো ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ হলো কারও অনুভূতিতে আঘাত না করা। সে যে ধর্মের বা যে মতেরই অনুসারী হোক না কেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহকে ছেড়ে যাদিগকে তারা ডাকে, তাদিগকে তোমরা গালি দিয়ো না।’ (সূরা-৬ আনআম, আয়াত: ১০৮)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন; মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসিকি এবং হত্যা করা কুফরি। ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"এক মাদ্রাসা থেকে দশ লাখ হাফেজ ",ইসলাম ধর্ম,"পাকিস্তানের একটি মাদ্রাসা থেকেই পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছেন অন্তত দশ লাখ শিক্ষার্থী। ওয়াকাফ উল মাদারিস নামের মাদ্রাসাটি ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে এই মাদ্রাসা থেকে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী সফলভাবে পবিত্র কোরআন মুখস্ত করেছেন। স্টার্টাপ পাকিস্তানের খবরে বলা হয়েছে, শুধু ২০১৯ সালে মাদ্রাসাটি থেকে ১৪ হাজার ছাত্রীসহ ৭৮ হাজার জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ হন। খবরে বলা হয়েছে, মাদ্রাসাটি চার বছরের কম বয়সী শিশুদের ভর্তি করে। তারা মাত্র দুই বছরের মধ্যে পবিত্র কুরআন মুখস্ত করে। কুরআন মুখস্থ ছাড়াও এই পাকিস্তানি মাদ্রাসার ছাত্ররা ইংরেজি, উর্দু, গণিত ইত্যাদি বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান স্টাডিজ এবং বিজ্ঞান। ওয়াফাক উল মাদারিসের প্রতিনিধি ক্বারী হাফিজ জলন্ধরি পাকিস্তানে বার্ষিক হাফিজ-ই-কুরআনের সংখ্যা সৌদি আরবের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, আরবি পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা না হলেও সৌদি আরবের তুলনায় পাকিস্তানের বেশি শিশু কুরআন মুখস্থ করছে। তিনি তুলে ধরেন যে সৌদি আরবে প্রতি বছর মাত্র পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী হাফেজে কুরআন হয়। ক্বারী হাফিজ জলন্ধরী উল্লেখ করেছেন যে ওয়াফাক উল মাদারিসের প্রচেষ্টা সৌদি সরকারের কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশটি মাদ্রাসাটির প্রশংসা করেছে এবং এটিকে পুরষ্কার দিয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"সিরিয়া থেকে পরিবারসহ ইরাকে ফিরেছে ৫০ আইএস সদস্য ",ইসলাম ধর্ম,"ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপের ৫০ সদস্য এবং তাদের পরিবারের ১৬৮ সদস্যকে শনিবার সিরিয়া থেকে ইরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। একজন ইরাকি কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরাকি কর্তৃপক্ষ সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) কাছ থেকে ইসলামিক স্টেটের ৫০ জন সদস্যকে গ্রহণ করেছে। খবর এএফপি’র। এসডিএফ কার্যত এই এলাকায় কুর্দিদের সেনাবাহিনী এবং তারা ২০১৯ সালে তাদের সিরিয়ার ভূখ-ের শেষাংশ থেকে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ যোদ্ধাদের বিতাড়িত করার যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। কর্মকর্তারা আরো জানান, ‘তাদের ব্যাপারে তদন্ত করা হবে এবং তারা ইরাক বিচারের মুখোমুখি হবে।’ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার হাসাকেহে থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। ইরাকি কর্মকর্তা আরো বলেন, আইএস-গ্রুপ সদস্যদের ১৬৮ জন আত্মীয়কে সিরিয়ার আল-হল ক্যাম্প থেকে ইরাকের মসুলের দক্ষিণে আল-জাদা ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, সেখানে তাদের মানসিক চিকিৎসা দেয়া হবে। তারা বলেন, ‘আমরা তাদের উপজাতি নেতাদের কাছ থেকে প্রতিশোধের মুখোমুখি না হওয়ার আশ্বাস পেলে তাদের বাড়িতে পাঠানো হবে।’ কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার আল-হোল ক্যাম্পে সন্দেহভাজন আইএস ও পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ৫০ হাজার লোক বসবাস করে। তাদের মধ্যে বাস্তুচ্যুত সিরিয়ান, ইরাকি উদ্বাস্তু এবং সেইসাথে প্রায় ৬০টি দেশের ১০ হাজারের বেশি বিদেশী রয়েছে। মার্চ মাসে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আল-হোলে আটক বিদেশীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানান। ইরাক সফরের সময় একটি বিবৃতিতে গুতেরেস বলেন, ‘শিবিরের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ১২ বছরের কম বয়সী এবং বাসিন্দারা ‘তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, দুর্বল এবং প্রান্তিক।’ গুতেরেস বলেন, আমার বলতে দ্বিধা নেই যে আজকের বিশ্বে বিদ্যমান সবচেয়ে খারাপ শিবিরটি হলো আল-হোল, যেখানে মানুষের জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এবং সেখানে আটকে থাকা লোকরা বছরের পর বছর ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।’ ২০২১ সালের মে থেকে, শত শত পরিবারকে আল-হোল থেকে ইরাকের আল-জাদাতে স্থানান্তরিত করা হয়েছ, যাদের অনেকে পালিয়ে যাচ্ছিল। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাকের এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণকারী অতি-উগ্রবাদী গোষ্ঠীতে যোগদানকারী যোদ্ধাদের আত্মীয়দের ইরাকে প্রত্যাবাসন নিয়ে বিরোধিতাও রয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ইরাকি কর্তৃপক্ষ আল-জাদা বন্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এএফপি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,হজ শেষে রওজা শরিফ জিয়ারতে দেড় লাখ মুসল্লি,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র হজ পালনের পর মদিনায় পৌঁছেছেন লক্ষাধিক হাজি। তারা মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারত করবেন এবং পবিত্র মসজিদে নববীতে নামাজ পড়বেন। গত বুধবার পর্যন্ত এক লাখ ৪২ হাজার ৫৮৮ জন হজ করে মদিনায় যান বলে জানিয়েছে সৌদি বার্তা সংস্থা।হজ ও ভিজিট কমিটির পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, হজ শেষ করে গতকাল বুধবার মোট ১৭ হাজার ২৫৮ জন মদিনায় পৌঁছেন। ৩৯৫ ফ্লাইটে মদিনার হিজরাহ স্টেশনে এসেছেন ১৫ হাজার ১৫৯ জন। তাদের মধ্যে হারামাইন হাইস্পিড ট্রেনের ৩৯৫ ট্রিপে করে ১৭৯৭ জন পৌঁছেন। এদিকে ৩৬ হাজার ৯৬৩ জন নিজ দেশের উদ্দেশে চলে যান। জেনারেল প্রেসিডেন্সি জানায়, গত ২৫ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ৪২ লাখ ৫২ হাজারের বেশি লোক পবিত্র মসজিদে নববীতে জিয়ারত করেছেন।মসজিদে আগত মুসল্লিদের জন্য স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সেবা, স্বেচ্ছাসেবাসহ প্রয়োজনীয় সব সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। মুসল্লিদের মধ্যে দুই লাখ ৩২ হাজার ৯৪টি জমজম পানির বোতল এবং রোজাদারদের মধ্যে চার লাখ ২৬ হাজার ৪৫৭টি খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়। তা ছাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে ৪৬ হাজার ১৩৮টি উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। পবিত্র মসজিদে নববীর স্বেচ্ছাসেবা বিভাগ জানায়, জেনারেল প্রেসিডেন্সির পক্ষ থেকে পবিত্র মসজিদে ছয় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।জিলহজ মাসে মসজিদে আগত মুসল্লিদের নানা ধরনের সেবা দিয়েছেন। এদিকে সৌদি সরকারের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অনেকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করেন। তারা মুসল্লিদের পথনির্দেশনা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ, খাবার বিতরণ, রোগীদের জন্য যানবাহন ব্যবস্থাপনা, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতাসহ নানা ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেন। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,‘ফিলিস্তিনি শিশুদের জীবন কি মূল্যহীন’,ইসলাম ধর্ম,"গাজায় যুদ্ধ ও রক্তপাত বন্ধসহ সব ধরনের সংঘাতের বিস্তার প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। গতকাল মঙ্গলবার কাতারের শুরা কাউন্সিলের উদ্বোধনী বক্তব্যে জোরালোভাবে এ আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের জীবনের কোনো মূল্য নেই, শিশুদের জীবন যেন কারো কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ আল-থানি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি জনগণের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার একমাত্র উপায় হলো ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা, যা এখন পর্যন্ত এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।আন্তর্জাতিক রেজল্যুশন অনুসারে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সংরক্ষণ করে ন্যায়সংগত ও ব্যাপক শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই।’ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি প্রসঙ্গে কাতারের আমির বলেন, ‘আমরা বলব, যথেষ্ট হয়েছে। ইসরায়েলকে হত্যাযজ্ঞ চালানোর নিঃশর্ত সবুজ সংকেত দেওয়া উচিত নয়। চলমান অবরোধ, দখলদারি, বসতি স্থাপনের বাস্তবতা উপেক্ষা করা যায় না।ফিলিস্তিনি জনগণ থেকে পানি, ওষুধ ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করা পুরোপুরি অবৈধ। আমরা কারো দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের পেছনে থাকা সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, এরপর কী ঘটতে যাচ্ছে? যুদ্ধ কি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে? এরপর ফিলিস্তিনিরা কোথায় যাবে? যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়; বরং এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও হতাহতের সংখ্যা কেবল বাড়বে। এখন যা ঘটছে তা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে ধর্মীয় ও পার্থিব কোনো রীতি-নীতি ও মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হয়নি। ক্রমবর্ধমান এই সহিংসতা বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন অভিযান পরিচালনা করে। এর পর থেকে গাজায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। সংঘর্ষের শুরুতেই দুই শতাধিক ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দি করে হামাস।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,তুরস্কের যে মসজিদের ওপর পাখি বসে না,ইসলাম ধর্ম,"উসমানীয় যুগের ঐহিতাসিক মসজিদগুলোর অন্যতম শামসি পাশা মসজিদ। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের ইসকুদা অঞ্চলে তা অবস্থিত। ১৫৮১ সালে বসফরাস প্রণালীর তীর ঘেঁষে নির্মিত হয় এ মসজিদ। মসজিদটি নির্মাণে উসমানীয় আমলের গভর্নর শামসি পাশা বিশেষ সহযোগিতা করেন এবং এর নকশা অঙ্কন করেন বিখ্যাত স্থাপতি মিমার সিনান।তিনি ৯০ বছর বয়সে তা নির্মাণ করেন।ঐতিহাসিক এ মসজিদের অন্যতম বিশেষত্ব হলো, এর ওপর পাখি দাঁড়ায় না। কারণ তা বসফরাস প্রণালী ও মারমারা সাগরের সংযোগস্থলে নির্মিত হয়েছে। উসমানীয় সুলতান সুলাইমান কানুনির যুগে নির্মিত মসজিদটি ঘিরে তুর্কি জাতির মধ্যে বংশপরম্পরায় বিস্ময়কর নানা কথা প্রচলিত রয়েছে।তুর্কি জাতির ঐতিহাসিক গ্রন্থ থেকে জানা যায়, সেনাপতি শামসুদ্দিন পাশা তৎকালীন স্থপতি মিমার সিনানের কাছ থেকে একটি অদ্ভুত আবদার করেন। তিনি তাঁকে এমন একটি মসজিদ নির্মাণ করতে বলেন, যার ওপর পাখি দাঁড়াতে পারবে না। যেন মসজিদের ছাদ ময়লাযুক্ত হয়ে না পড়ে। এরপর বুদ্ধিসম্পন্ন মিমার সিনান ইস্তাম্বুলের তীরবর্তী ইস্কুদার অঞ্চলটি নির্বাচন করেন।এর কারণ হিসেবে মনে করা হয়, অঞ্চলটি প্রবহমান বাতাসের জন্য পরিচিত। স্বাভাবিকভাবে প্রচণ্ড বাতাসে পাখিদের চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে মসজিদের দেয়াল ও মিনারের ওপর দাঁড়ানো পাখিদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তাই মসজিদটির ছাদ কোনো ময়লাযুক্ত হয় না এবং এর গম্বুজ ও মিনার খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের তা পরিষ্কার করার প্রয়োজনও হয় না।মসজিদের আরেকটি বিশেষত্ব হলো, এর ভেতর বায়ু চলাচলের জন্য বিশেষ ধরনের আউটলেট রয়েছে। তুরস্কে এ ধরনের ব্যবস্থা একমাত্র এ মসজিদেই রয়েছে। এর মাধ্যমে মসজিদে সমুদ্র থেকে পানি প্রবেশ করে এবং বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ছাড়াই তাতে প্রাকৃতিক বায়ু চলাচল করে।মসজিদের বাম পাশে উসমানীয় সেনাপতি শামসি আহমেদ পাশার সমাধি রয়েছে। তা ছাড়া মসজিদের ভেতরে একটি মাদরাসা রয়েছে। বর্তমানে তা সরকারি গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উসমানীয় যুগে এখানে ইসলামী পাঠ প্রদান করা হতো। প্রতিদিন পর্যটকরা মসজিদটির স্থাপত্য সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"কুরআন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনে ",ইসলাম ধর্ম,"মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের সহজ ও সুন্দরতম মাধ্যম হল কুরআন মাজীদ। অধিক পরিমাণে কুরআন তিলাওয়াত করা, অন্যের তিলাওয়াত শোনা, আয়াতের অর্থ, ভাব ও মর্ম নিয়ে চিন্তা ফিকির করা- এসবই বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়তা করে। আল্লাহর পরিচয় লাভ ও তাঁর প্রতি আপনত্ব অনুভবে সাহায্য করে। কারণ, কুরআন আল্লাহর কালাম। তাঁর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি প্রেরিত বার্তা। যেখানে তিনি পরম মমতায় বান্দাকে সম্বোধন করেছেন। উপদেশ দিয়েছেন। কল্যাণের পথ নির্দেশ করেছেন। মন্দ ও ক্ষতিকর বিষয়ে সতর্ক করেছেন। নবী ও রাসূলদের গল্প বলেছেন। সাহাবায়ে কেরামের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। পূর্বের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর কর্ম-পরিণতি ও উত্থান-পতনের ইতিবৃত্ত জানিয়েছেন। সর্বোপরি ইহ-পরকালীন জীবনে সফলতা লাভের পথ ও পন্থা বলে দিয়েছেন। এসব এত সহজ ও সাবলীলভাবে পেশ করেছেন যে, সবাই বুঝতে পারে। এত চমৎকার শব্দ, বাক্য ও শৈলী ব্যবহার করেছেন যে, সবাই তার মাধুর্য অনুভব করতে পারে। কুরআন হল ‘রূহ’। কুরআনের বহু জায়গায় আল্লাহ তাআলা নিজের পরিচয় দিয়েছেন। এরপর বলেছেন, হে বান্দা, ইনি ‘তোমার’ রব। অর্থাৎ এই মহামহিম অত্যুচ্চ গুণাবলির অধিকারী সত্তার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক বড় গভীর ও মজবুত। তিনি তোমার স্রষ্টা। তোমার প্রতিপালক। তোমার অতি আপন। এভাবে বান্দাকে তার আসল পরিচয়ের সূত্র ধরিয়ে দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন তার মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের রহস্য। এরপর নানাভাবে তাকে উৎসাহিত করেছেন কুরআন পড়তে। উদ্বুদ্ধ করেছেন কুরআনের বিভিন্ন আয়াত নিয়ে ভাবতে। কুরআনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে। কুরআনকে বুকে ধারণ করে লাভবান হতে। যেমন সূরা শূরার এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন : এভাবেই আমি ওহীর মাধ্যমে আপনার প্রতি নাযিল করেছি এক ‘রূহ’ আমার নির্দেশে। এর আগে আপনি জানতেন না- কিতাব কী, ঈমান কী। কিন্তু আমি একে বানিয়েছি এক নূর, যার মাধ্যমে আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চাই হেদায়েত দান করি। (সূরা শূরা : ৫২)। এখানে আল্লাহ তাআলা কুরআনকে মানব জাতির ‘রূহ’ বা প্রাণ বলেছেন। বুঝিয়েছেন, কুরআনহীন মানব জীবন প্রাণহীন মানুষের মতো, মৃত। এ প্রসঙ্গে নবী (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তির বুকে কুরআনের কোনো অংশ নেই, সে যেন বিরান ঘর। (জামে তিরমিযী : ২৯১৬)। অর্থাৎ অপরিচ্ছন্ন, আবর্জনাময়, ভীতিকর মানব সে। আলো বাতাসহীন, বসতিহীন, কীট পতঙ্গের আবাস তার বুক। কিন্তু এই বুকে যখন কুরআন প্রবেশ করে, বুক আলোকিত হয়। জীবন উজ্জ্বল ও ঝলমলে হয়। সজীব সতেজ হয়। জীবন্ত ও প্রাণবন্ত হয়। আর বিরান মৃত জীবনের সঙ্গে তো প্রাণবন্ত জীবনের কোনো তুলনা হতে পারে না। একথাও আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন : যে ব্যক্তি ছিল মৃত এরপর আমি তাকে জীবন দিয়েছি, তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করেছি, যার সাহায্যে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে, সে কি ওই ব্যক্তির মতো হতে পারে, যে অন্ধকারে পরিবেষ্টিত, যা থেকে সে বের হতে পারে না? (সূরা আনআম : ১২২)। এছাড়াও সূরা ইবরাহীমের শুরুতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন : এটি এমন কিতাব, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে আনতে পারেন, তাদের রবের নির্দেশে। সেই সত্তার পথে, যিনি পরাক্রমশালী প্রশংসার্হ। (সূরা ইবরাহীম : ১)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদত ",ইসলাম ধর্ম,"রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসনাতাউ ওয়া ফিল আখিরাতে হাসনাতাউ ওয়া কিনা আজাবান্নার’, অর্থাৎ ‘হে আমাদের রব, তুমি আমাদেরকে পৃথিবীতে কল্যাণ এবং পরকালে কল্যাণ দান করো।’ এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, ইসলাম শুধু মানুষকে বেহেশতের পথই দেখায়নি, ইসলাম মানুষকে সর্ববিধ পার্থিব উন্নতির পথও দেখিয়েছে। আল্লাহ মুসলমানদের এ কালের শান্তি ও পরকালে মুক্তি অর্জনের পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন। বেশির ভাগ মুসলমানই আমরা মনে করে থাকি যে, আমরা যেসব ইবাদত-বন্দেগি করে থাকি, সেসব ইবাদতের প্রতিদান শুধু মৃত্যুর পরবর্তী জীবনেই ভোগ করা যায়, এ পার্থিব জীবন বা এই দুনিয়ার জীবনে তেমন কোনো সুবিধাদি পাওয়া যায় না। এ রকম ধারণা সত্য না অযৌক্তিক তা আলোচনাসাপেক্ষে পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের মুক্তি ব্যতীত ইবাদতের যাবতীয় প্রতিদান বা উপকারিতা মানুষ এ পৃথিবীতেই ভোগ করে থাকেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ পাক নিজেই ঘোষণা করেছেন- ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকে, তারাই কৃতকার্য’। (সূরা নূর : ৫২)। এ আয়াত দ্বারা আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে কৃতকার্যের কথাই বুঝিয়েছেন। অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ ওয়াদা করেন- ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎ কর্ম করে, আল্লাহ তাদের ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদের অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন’। (সূরা নূর : ৫৫)। অন্য এক আয়াতে বলা হচ্ছে- ‘যে সৎ কর্ম করে সে নিজের উপকারের জন্যই করে আর যে অসৎ কর্ম করে তা তার ওপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই জুলুম করেন না’। (সূরা হামিম সেজদা : ৪৬)। কাজেই ইবাদতের উপকারিতা শুধু মৃত্যুর পরেই পাওয়া যাবে, এমনটি নয়। ‘ইবাদত’ শব্দটি এসেছে আরবি ভাষার ‘আবদুন’ শব্দ থেকে। আবদুন শব্দের অর্থ গোলাম এবং ইবাদত শব্দের অর্থ গোলামি করা। অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে নিয়ে তাঁরই আনুগত্য করা। আল্লাহ বলেন- ‘আমি জিন ও মানুষকে এ জন্য সৃষ্টি করেছি যে, তারা শুধু আমারই আনুগত্য করবে’। (সূরা জারিয়া : ৫৬)। মানুষের পুরো জীবনের যাবতীয় কাজ আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী করা বা না করাই হচ্ছে ইবাদত। পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে- ‘তোমরা আনুগত্য করো এক আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের, আর যদি তোমরা তা থেকে বিমুখ হও তাহলে জেনে রেখো আল্লাহ কাফেরদের ভালোবাসেন না’। (সূরা আল ইমরান : ৩২)। ইবাদতের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, তবে মানুষের কল্যাণ সাধন হচ্ছে ইবাদতের পারিপার্শ্বিক কর্তব্য। এ দুই উদ্দেশ্যে যেকোনো ভালো কাজ করার নামই ইবাদত। ইবাদতের পরিষ্কার একটি ধারণা পাওয়া যায় সূরা আল বাকারায়। বলা হয়েছে- ‘সৎ কর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎ কাজ হলো এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামত দিবসের ওপর, ফেরেশতাদের ওপর এবং সমস্ত নবী-রাসূলগণের ওপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্মীয়স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্য। আর যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে-রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্যধারণকারী, তারাই হলো সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেজগার’। (সূরা বাকারা : ১৭৭)। ইবাদত দুই প্রকার। হক্কুল্লাহ আর হক্কুল ইবাদ। হক্কুল্লাহ হচ্ছে সেই ইবাদত, যা আল্লাহর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। যেমন- তাওহিদ, রোজা, নামাজ, হজ, কোরবানি এবং হক্কুল ইবাদ, যা বান্দার সাথে সংযুক্ত যেমন- জাকাত, পিতা-মাতার অধিকার, নিকটাত্মীয়ের অধিকার, প্রতিবেশীর অধিকার, এতিম, ফকির-মিসকিনের অধিকার এবং সমস্ত মুসলিম ও অমুসলিমদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত ইবাদতগুলো বান্দার সাথে সম্পৃক্ত ইবাদতগুলো কার্যকরী হওয়া বা নিশ্চয়তার পূর্বশর্ত। কেননা কেউ যদি প্রথম পর্যায়ের ইবাদত অর্থাৎ হক্কুল্লাহর ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক না হয়, তবে তার দ্বারা দি¦তীয় পর্যায়ের ইবাদত অর্থাৎ বান্দা সম্পর্কিত ইবাদত আশা করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অর্থাৎ কেউ যদি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে না পারে, তাহলে তার পক্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ের ইবাদতের নিশ্চয়তা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে। যদি কেউ এ দু’ধরনের ইবাদতই সম্পন্ন করে থাকে, তাহলে সেই ইবাদতগুলোই মানবকল্যাণের তাৎপর্য বহন করবে। তাওহিদ হচ্ছে প্রথম ইবাদত, যা আল্লাহর দিকে সম্পৃক্ত। আল্লাহ ঘোষণা করেন- ‘হে মানুষ সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো ইলাহ নেই’ (সূরা হুদ : ৬১)। পবিত্র কুরআনের সূরা ইখলাসে বলা হয়েছে- ‘বলুন, তিনি আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়, তিনি অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি, তিনিও কারো থেকে জন্ম নেননি এবং তাঁর সমকক্ষ কেউ একজনও নেই’। (সূরা ইখলাস : ১-৪)। এই তাওহিদ বা একত্ববাদের স্বীকৃতি প্রদানের ফলে বান্দার ওপর অত্যাবশ্যক হয়ে যায় নবী-রাসূল, বেহেশত-দোজখ, কেয়ামত, আখেরাতসহ সব কিছুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। যখন এসবের প্রতি মানুষ বিশ্বাস স্থাপন করবে তখন মানুষের ভেতরে এক ধরনের জবাবদিহিতার ভয় জন্মাবে, যাতে করে মানুষ নিজের থেকেই নিজে নিয়ন্ত্রিত হবে এবং যা ইচ্ছে তা করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা মানুষ তখন ভাববে যে, আল্লাহর নির্দেশিত পথের বাইরে গেলে তাকে হাশর, মিজান, কবর, ফেরেশতা, জাহান্নাম ইত্যাদির সম্মুখীন হতে হবে। এই চেতনা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হলেই মানুষ মানুষের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়ে উঠবে। আর মানুষ যদি আল্লাহর তৈরি এসব বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করা থেকে বিরত থাকে এবং যা ইচ্ছে হয় তাই করতে থাকে, তাহলে আল্লাহর কোনো লাভ বা ক্ষতি হবে না। যা হওয়ার তা সবই হবে বান্দার জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘যে সৎ কর্ম করে সে নিজের কল্যাণের জন্যই তা করে এবং যে মন্দ কাজ করে তার শাস্তি সেই ভোগ করবে’। (সূরা হামিম : ৪১)। আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসের দ্বারা মানুষ নিয়ন্ত্রিত হলে সমাজ নিয়ন্ত্রিত হবে। সমাজে ভারসাম্য ও স্থিতি থাকবে এবং এই ভারসাম্য ও স্থিতির মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিরাজ করবে। ইবাদত হিসেবে নামাজের স্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ ও তার বান্দার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একমাত্র ইবাদত হচ্ছে নামাজ। কুরআন মজিদে অসংখ্যবার নামাজের ব্যাপারে তাগিদ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন- ‘নামাজকে প্রতিষ্ঠিত করো, জাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহর রুজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, এর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’ নামাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পড়া হয়ে থাকলেও নামাজের অবদান সম্পূর্ণভাবে মানুষ ভোগ করে থাকে। পবিত্র কুরআন ঘোষণা করছে- ‘অবশ্যই নামাজ অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে।’ তাহলে দেখা যাচ্ছে, নামাজি ব্যক্তির দ্বারা কোনো প্রকার খারাপ কাজ সংঘটিত হচ্ছে না, যাতে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে বা নামাজির দ্বারা মানুষ কষ্ট পেতে পারে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এখানেও নামাজ পড়ার কারণে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে সততা অর্জন করছে এবং তার সততার সুফল সে নিজে ভোগ করছে, সেই সাথে তার সমাজও ভোগ করছে। আধ্যাত্মিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যম হচ্ছে সিয়াম বা রোজা। রোজার মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন বৈধ কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা, অহঙ্কার, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে নিজেকে বিরত রেখে আত্মার পরিশুদ্ধি অর্জন করে। এটিও আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত ইবাদত। রোজা রাখার কারণে মানুষ যখন বৈধ জিনিসের প্রতি লালসা, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি থেকেও নিজেকে সংযত রাখে; নিজে সংবরণ করে, তখন তার কাছে অবৈধ ভোগ-বিলাস হয়ে পড়ে গৌণ ও তুচ্ছ। বৈধ জিনিস চরিতার্থ করলে সমাজকে বা অন্য মানুষকে কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না, কিন্তু অবৈধ বস্তু চরিতার্থ করলে তার দ্বারা অন্য মানুষের দুঃখ ও কষ্ট বহুগুণে বেড়ে যায়, যা রোজার বিধানে বিশ্বাসী ব্যক্তির দ্বারা করা সম্ভব নয়। আল্লাহ ঘোষণা করেন- ‘অবশ্যই রোজা তোমাদের ওপর ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ওপর করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া বা পরহেজগারিতা অর্জন করতে পারো।’ এখানে তাকওয়া অর্জনের অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর ভয়ে অন্যায় কর্ম থেকে বিরত থাকা। তাহলে অন্যায় কর্ম থেকে বিরত থাকলে উপকৃত হবে কে? উপকৃত হবে রোজাদার নিজে এবং সমাজের অন্যসব মানুষ। কাজেই রোজার মাধ্যমে যদি প্রত্যেক মানুষ তার আত্মার পরিশুদ্ধতা অর্জন করতে পারে, তবে সেই মানুষগুলো সমাজে সোনার মানুষে পরিণত হবে এবং এসব সোনার মানুষের কাছ থেকে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে, সেসব সুযোগ-সুবিধা আল্লাহ পাক গ্রহণ করেন না, তার সমুদয় সুবিধা গ্রহণ করেন সমাজের সব স্তরের জনসাধারণ। জাকাত, হজসহ সব ধরনের ইবাদত যা বান্দার সাথে সম্পৃক্ত তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের কল্যাণ সাধন; সেই সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা। জাকাতের অর্থ বিলি-বণ্টন ব্যবস্থা মানুষের তথা সমাজের দারিদ্র্য কমিয়ে আনে। মানুষের মধ্যে সমতা ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা রক্ষা করে শ্রেণী বৈষম্য কমায়। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অহঙ্কারের ব্যবধান হ্রাস করে। আল্লাহ বলেন- ‘নিশ্চয় ধনীদের সম্পদে দরিদ্রদের অধিকার রয়েছে।’ জাকাতের কোনো অর্থ-সম্পদই আল্লাহ গ্রহণ করেন না, এর সমুদয় অর্থ-সম্পদ জাকাত প্রদানকারী ব্যক্তির (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) নিকটাত্মীয় এবং চার পাশের মানুষই গ্রহণ করে থাকেন। এখানেও জাকাতের অর্থ-সম্পদ সবই সাধারণ মানুষদের বিলিয়ে দেয়া হয়, আল্লাহ উদ্দেশ্য মাত্র। হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সাথে সাথে বিশ্বমুসলিম ভ্রাতৃত্বের সৌহার্দ্য সাম্য ও পারস্পরিক মতবিনিময়ের দ্বারা মুসলিম উম্মাহর অগ্রগতি ও উন্নতির পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়। হজের আত্মত্যাগে মানুষ একে অন্যের সাহায্যকারীর শিক্ষা অর্জন করে। আল্লাহর রাসূলদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো পরিদর্শনের মাধ্যমে রাসূলের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের সমাজে ফিরে আসেন। এই ফিরে আসা হাজীরা সমাজের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করার চেষ্টা করেন। এখানেও আল্লাহর কোনো উপকার হয় না, উপকার হয় মানুষের, মুসলিম উম্মাহর। পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধা, নিকটাত্মীয়দের প্রতি গুরুত্বারোপ, অনাথ, এতিম, ফকির-মিসকিনদের প্রতি দায়িত্ববোধ, প্রতিবেশীদের খোঁজখবর করা ও বিপদাপদে আন্তরিকতার সাথে পাশে থাকা এবং সমাজের সব মুসলিম ও অমুসলিমের মানবিক প্রত্যাশার প্রতি যতœশীল হওয়ার মতো বান্দা সম্পর্কিত ইবাদতের প্রতিফলও মানুষই ভোগ করে থাকেন। এখানেও ইবাদতকারী ব্যক্তি আল্লাহর হুকুম পালন করার মাধ্যমে, পিতা তার সন্তানের কাছ থেকে, সন্তান পিতার কাছ থেকে; স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে, স্বামী স্ত্রীর কাছ থেকে; প্রতিবেশী তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে, এতিম-অনাথ তার নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে পরস্পর উপকৃত হয়। এভাবে পারস্পরিক সম্পৃক্ত এসব ইবাদত প্রত্যেক মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি হয়ে যায়। মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে একে অন্যের সাথে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত। সবাই সবার কাছে কোনো না কোনোভাবে দায়বদ্ধ কিংবা সহযোগিতা প্রত্যাশী। বান্দাসংশ্লিষ্ট ইবাদতের মাধ্যমে এই দায়বদ্ধতার দায়িত্ব থেকে মুক্তি অর্জন এবং সুশৃঙ্খল মানবিক অধিকার সচেতন টেকসই সমাজব্যবস্থার প্রবর্তনই এসব ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য। যদিও প্রতিটি ইবাদত আল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পন্ন হয়ে থাকে, তবুও এর অন্তর্নিহিত সব সুবিধা মানুষই উপভোগ করে থাকেন। যেমন কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য আয়োজিত দোয়াখায়ের অনুষ্ঠানে প্রস্তুতকৃত খাদ্যসামগ্রী মৃত ব্যক্তি গ্রহণ করেন না, সব খাদ্য অনুষ্ঠানে আগত মেহমানেরাই ভোগ করে থাকেন, মৃত ব্যক্তি উপলক্ষ মাত্র। এভাবেই আল্লাহ শুধু দেখতে চান বান্দা তার আদেশ-নিষেধ ঠিকমতো পালন করছেন কি না। আল্লাহ বলেন- ‘তাদের গোশতও আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, তাদের রক্তও না কিন্তু তাঁর কাছে পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া’। (হজ-৩৭)। অন্য এক আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেন- ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন; যেন পরীক্ষা করে দেখতে পারেন কাজকর্মে তোমাদের মধ্যে কে সর্বোত্তম; তিনি মহাশক্তিমান ক্ষমা দানকারী’। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,চীনের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মসজিদ,ইসলাম ধর্ম,"চীনের সর্ববৃহৎ মসজিদ মসজিদে ঈদগাহ। স্থানীয় উচ্চারণ ‘ইদ কাহ’। ১৪৪২ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত মসজিদ কাশগর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। মসজিদের মোট আয়তন ১৬ হাজার আট শ বর্গমিটার।মসজিদের মূল প্রার্থনা কক্ষে একসঙ্গে দুই থেকে তিন হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। আর পুরো মসজিদ কমপ্লেক্সের ধারণক্ষমতা প্রায় ৩০ হাজার। মসজিদ নির্মাণে মৌলিক ধর্মীয় উপাদানের সঙ্গে স্থানীয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটেছে। ঈদগাহ মসজিদকে মনে করা হয় প্রাচীন উইঘুর স্থাপত্যের চমৎকার নিদর্শন ও আধ্যাত্মিকতার প্রতীক।এ মসজিদ দ্বারা উইঘুরে ইসলামী সংস্কৃতি ও স্থাপত্যরীতির প্রভাব অনুভব করা যায়। ‘দ্য চায়না ডিসকভারি ওয়েবসাইট’-এর ভাষ্য মতে, মসজিদটি প্রকৃতপক্ষে আরব সেনাপতি ও ইসলাম প্রচারক ইবনে কুতাইবার সমাধি ছিল (সম্ভবত উমাইয়া সেনাপতি কুতাইবা বিন মুসলিম উদ্দেশ্য। যিনি অত্র অঞ্চল বিজয়ে নেতৃত্ব দেন এবং খোরাসানের প্রশাসক নিযুক্ত হন)। কাশগর রাজ্যের শাসক সাকসিজ মির্জা ১৪৪২ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন।প্রাচীনকালে ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রচারে ঈদগাহ মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খ্রিস্টীয় ১৬ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ঈদগাহ মসজিদ সম্প্রসারণ করা হয়। তখন বিপুলসংখ্যক মুসল্লি জুমার জামাতে অংশগ্রহণ করত। ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে গুলেরেনা নামের একজন মুসলিম নারী পাকিস্তান যাওয়ার পথে মারা যান। স্থানীয় মুসল্লিরা মসজিদ সম্প্রসারণে তার পরিত্যক্ত সম্পদ ব্যবহার করে। এ ছাড়া একজন ধনাঢ্য উইঘুর মুসলিম নারী ছয় শ একর ভূমি মসজিদকে দান করেন। ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। তখন একটি গেট এবং ভেতরে খাল খনন করা হয়। মসজিদের সর্বশেষ সংস্কার হয় দাওগুয়াং সাম্রাজ্যের সময়ে। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে সংস্কার কার্যক্রম শেষ হয়।ঈদগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সটি সাতটি অংশে বিভক্ত। তা হলো গেট, মিনার, সাধনা কক্ষ, সভাকক্ষ, উঠান, অতিরিক্ত প্রার্থনা কক্ষ ও মূল প্রার্থনা কক্ষ। মসজিদ নির্মাণে জমকালো শৈলীর পরিবর্তে উজ্জ্বল রং ও সাধারণ শৈলী ব্যবহার করা হয়। মসজিদের প্রধান প্রবেশপথ পূর্ব দিকে অবস্থিত। তবে পশ্চিমেও একটি প্রবেশপথ আছে। মুসল্লিদের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণ সূর্যাস্ত দেখতে এবং অবসর কাটাতে ঈদগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে আসে। উজ্জ্বল হলুদ রঙের গেটের দুই পাশে রয়েছে দুটি মিনার। মসজিদের অভ্যন্তর ভাগের নকশায় মুসলিম রীতি অনুসারে ফুল-পাতা-লতার ব্যবহার দেখা যায়। ধনুকাকৃতির দরজাগুলোর ৪.৭ মিটার উঁচু এবং ৪.৩ মিটার চওড়া। মিনার দুটির উচ্চতা প্রায় ১৮ মিটার। উভয়টিতে ইসলামী কারুকাজ ও ফুলেল নকশা রয়েছে। মিনারের শীর্ষদেশে আছে অর্ধচন্দ্র। ১৬ মিটার উঁচু গম্বুজের নিচে রয়েছে অষ্টভুজ আকৃতির হল। উত্তর পাশের পাথর বাঁধানো পথ ধরে হাঁটলে পাওয়া যাবে ২০ একরের সুবিশাল উঠান। যেখানে রয়েছে সবুজ বাগান,দৃষ্টিনন্দন গাছ ও পরিষ্কার পানির পুকুর।উইঘুর মুসলমানের কাছে ঈদগাহ মসজিদ যেমন তাদের সোনালি অতীতের সাক্ষী ও প্রতীক, তেমনি তা বহু নির্মমতারও সাক্ষী। যেমন ৯ আগস্ট ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে উইঘুর নেতা তৈমুর বেগকে শহীদ করে তাঁর মাথা ঈদগাহ মসজিদে প্রদর্শন করা হয়েছিল। একইভাবে ১৯৩৪ সালে মার্চে উইঘুর আমির আবদুল্লাহ বুগরাকে শহীদ করে তাঁর মাথা ঈদগাহ মসজিদে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে ঈদগাহ মসজিদে একাধিকবার নামাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,শুভ বড়দিন আজ,খ্রীষ্টান ধর্ম,"ফুল, নানা রঙের বেলুন, নকশা করা কাগজ ও জরি ব্যবহার করে কয়েক দিন ধরেই সাজানো হচ্ছিল রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালার গির্জা। শুধু এই গির্জা নয়, দেশের সব গির্জার ভেতরেই গত কয়েক দিন উৎসবের প্রস্তুতি চলছিল। গির্জায়–গির্জায় বর্ণিল সাজে সেজেছে ক্রিসমাস ট্রি। এত সব আয়োজন ২৫ ডিসেম্বর ঘিরে। এই দিনটি (আজ) খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বাংলাদেশে এই উৎসব বড়দিন (ক্রিসমাস ডে) নামে পরিচিত। অন্য বছরের তুলনায় এবার বড়দিনের আয়োজনে চাকচিক্য কম। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর অনাড়ম্বরভাবে বড়দিন উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট আজকের দিনে বেথলেহেম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য যিশুখ্রিষ্ট জন্ম নিয়েছিলেন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা আজ সারা দিন আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করবেন। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। গত দুদিন ঢাকার কাকরাইলের সেন্ট মেরিস গির্জা, তেজগাঁওয়ের হলি রোজারি গির্জা ও আসাদগেটের সেন্ট ক্রিস্টিনা গির্জা ঘুরে দেখা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবার জাঁকজমক কম। যাজকেরা বলছেন, বড়দিনের যেসব ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে লোকসমাগম হয়, সে ধরনের উদ্‌যাপনে খ্রিষ্টভক্তদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কিছু কিছু আনুষ্ঠানিকতাও বাতিল করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কেউ গির্জায় প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রার্থনা চলাকালেও সার্বক্ষণিক মাস্ক পরে থাকতে হবে। বড়দিন উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। বিদ্যমান সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বর্তমানে বিশ্ব বিপর্যস্ত। তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবারের বড়দিন পালনের আহ্বান জানান। বড়দিনে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী জনসাধারণের শান্তি, কল্যাণ এবং সমৃদ্ধি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীসহ দেশের সব মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি।",ধর্মীয় উৎসব,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,"ইজতেমায় কোনো পক্ষ বা বিভাজন থাকা উচিত নয় : র‍্যাব মহাপরিচালক ",ইসলাম ধর্ম,"র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, নিজেদের মধ্যে বিভাজন থাকলে ইজতেমায় আগ্রহ হারাবে মানুষ। তাই ইজতেমায় কোনো পক্ষ বা বিভাজন থাকা উচিত নয়। গাজীপু‌রের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ। এ উপলক্ষে বুধবার বেলা ১১টার দিকে ইজতেমা ময়দানের পাশে র‍্যাবের কন্ট্রোল রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি। র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, এবারের ইজতেমা আয়োজনে জঙ্গি বা কোনো উগ্রবাদী সংগঠনের হুমকি নেই। সকল গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। র‌্যাব শুধু নিরাপত্তাই নয়, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাও দেবে। এ ছাড়া তুরাগ নদীতে টহলের জন্য র‌্যাবের স্পিডবোট থাকছে। ৯টি অবজারভেশন পোস্ট, ৯টি ওয়াচ টাওয়ার সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। পুরো ময়দান পর্যবেক্ষণের জন্য আকাশ পথেও টহলে র‌্যাবের হেলিকপ্টার চলছে। তাছাড়া র‌্যাবের বোম্ব স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড ও স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে একটি মূল নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও দুটি উপ-নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এবারের ইজতেমা নির্বিঘ্নে শেষ করতে র‍্যাবের পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র‍্যাব সব সময় প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral ভোরের কাগজ,"মাদ্রিদে শারদীয় দুর্গোৎসবে প্রবাসীদের মিলনমেলা ",হিন্দু ধর্ম,"নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে পালিত হলো বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গা পূজা। বাঙালিঅধ্যুষিত লাভাপিয়েসে নির্মিত অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পাঁচ দিনব্যাপী এই দুর্গোৎসব মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) শেষ হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসবে বাংলাদেশি ছাড়াও নেপাল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অনেক প্রবাসীও অংশ নিয়েছেন। এবার দুর্গা পূজা উপলক্ষে মাদ্রিদের বাঙালিঅধ্যুষিত এলাকা লাভা পিয়েসের পাশে খেসুস ই মারিয়া রোডস্থ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন হলরুমে পূজা মণ্ডপ তৈরি করা হয়। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এ পূজামণ্ডপ আরাধনার পাশাপাশি ছিল প্রবাসীদের মিলনমেলা। ঢাকঢোল ও শঙ্খ বাজিয়ে চলেছে উলুধ্বনি। দুর্গাপূজাকে ঘিরে মাদ্রিদে বাঙালিঅধ্যুষিত এলাকা যেন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে আয়োজিত এই পূজার সব তিথি নির্ঘণ্ট মেনে এই পূজা পালন করা হয়। অন্যবারের মতো এবারও ছিল নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সব বয়সের মানুষই সমানভাবে অংশগ্রহণ করেন এই অনুষ্ঠানে। আর এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন এখানকার বয়োজ্যেষ্ঠরা। পূজাকে ঘিরে বিরাট আয়োজন হলেও কোথাও যেন একটা ঘরোয়া ছোঁয়া ছিল। আয়োজন করা হয় ভোগেরও। হাসিমুখে গোটা আয়োজনের দায়িত্ব ভাগ করে নেন সবাই। এরইসঙ্গে প্রাণখোলা আড্ডায় মেতে ওঠেন সবাই। দেশ থেকে অনেক দূরে সারাটা বছর জুড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা থাকেন নানা কাজের ব্যস্ততা। শুধুমাত্র এই সময়টাতেই একসঙ্গে মেতে ওঠেন এখানকার বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সব কাজ ভুলে সবাই মেতে ওঠেন আনন্দে। তারপর ফিরে যাওয়া আবার সেই দৈনন্দিন জীবনে। স্পেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আসেন এই পূজাতে। মাদ্রিদ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চক্রবর্তী উৎসবমুখর পরিবেশে প্রবাসে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করতে পেরে খুবই উৎফুল্ল। এসময় তারা বলেন, দেশের মতো আনন্দঘন পরিবেশ না থাকলেও এখানে আমরা নিজেদের মধ্যেই এ উৎসবকে ভাগাভাগি করে নিয়েছি। সোমবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ।পরিদর্শনকালে তিনি সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উক্তি 'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার'- উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যা পৃথিবীর খুব কম দেশেই আছে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মোহতাসিমুল ইসলাম। সর্বজনীন দুর্গাপূজা পরিষদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি আল মামুন, সাবেক সভাপতি এস আর আই এস রবিনসহ রাজনৈতিক, সামাজিক, কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। স্পেনে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত শ্রী দিনেশ কে পাঠনায়েন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন হলরুমে বড় সর্বজনীন দুর্গাপূজা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, দশমীই মূলত দুর্গাপূজার প্রধান অনুষঙ্গ। তবে দেবী দুর্গার বিদায় অর্থাৎ স্বামী গৃহে গমনের পাঁচদিন পরেই লক্ষ্মীপূজার মধ্য দিয়ে আবার পিতৃগৃহে ফিরে আসবেন। মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি যেমন কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য।ভারতের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সুন্দর পূজা আয়োজনের প্রশংসা করেন। এ সময় সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চক্রবর্তী, উপদেষ্টা উত্তম মিত্র, মান্না চক্রবর্তী, শ্যামল তালুকদার, গৌরিক প্রভাত চক্রবর্তী, শ্যামল দেব নাথ, শংকর রায়, তাপস দেব নাথ, পলাশ শাহা, সুব্রত মল্লিক, শান্তনু দাস, আদ্রি সেন, মোহন লাল মজুমদার, সুমন রায়, শিমুল ঘোষ, চমন দাস, দিলিপ সূত্রধর, উত্তম ভূইয়া, লক্ষণ মণ্ডল, কমল মণ্ডল, প্রাণধন চক্রবর্তী, শংকর পোদ্দার, আরিন্দ্রজিত চক্রবর্তী, রাখাল দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ইত্তেফাক,চাঁদকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণার দাবি ভারতীয় ধর্মগুরুর,হিন্দু ধর্ম,"সম্প্রতি ভারতের চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছে। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে সফল চন্দ্র অভিযানের আনন্দে ভাসছে পুরো দেশ। এরই মধ্যে চাঁদকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবি উঠেছে। আর এই অদ্ভুত দাবিটি করে বসলো দেশটির এক ধর্মগুরু।ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার জাতীয় সভাপতি স্বামী চক্রপানি মহারাজ। এই ধর্মগুরু তার বিতর্কিত নানা মন্তব্যের জন্য বেশ পরিচিত। ধর্মগুরুর দাবি, চন্দ্রযান-৩ অবতরণ করার পর এবার চাঁদকে হিন্দু রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করা হোক এবং যে স্থানে চন্দ্রযানের সফট ল্যান্ডিং হয়েছে, সেই জায়গাটিকে রাজধানী ঘোষণা করা হোক। রোববার (২৭ আগস্ট) চক্রপানি মহারাজ এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানান। তার দাবি, অন্য কোনও ধর্ম চাঁদের মালিকানা দাবি করার আগে, ভারত সরকারের এই দাবি করা উচিত। এমনকি এক লোকসভায় তিনি এ বিষয়ে প্রস্তাব এনে তা পাসেরও দাবি জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে চক্রপানি মহারাজ বলেন, ‘ভারতীয় সংসদ চাঁদকে একটি হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করুক। শিব শক্তি পয়েন্ট, যেখানে চন্দ্রযান-৩ অবতরণ করেছিল তাকে রাজধানী ঘোষণা করা হোক। যাতে কোনও জিহাদি মানসিকতা সেখানে পৌঁছাতে না পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোনও সন্ত্রাসবাদী যাতে চাঁদে পৌঁছতে না পারে তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,কোটা খালি রেখেই শেষ হলো হজ নিবন্ধন,ইসলাম ধর্ম,"চার দফা সময় বাড়ানোর পর শেষ হয়েছে এ বছরের হজ নিবন্ধন। মঙ্গলবার রাত ১১টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ হজযাত্রী। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নিবন্ধন শেষে এখনো কোটা খালি রয়েছে ৪৪ হাজার ৪৩টি। এ বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করে দেয় সৌদি আরব। এর মধ্যে সরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন চার হাজার ২৬০ জন। বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। সবমিলিয়ে মোট নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ জন। বাকি ৪৪ হাজার ৪৩টি কোটা ফেরত যাবে। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, শেষদিনে অনেকে নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু তাদের পেমেন্ট পেন্ডিং (অপেক্ষমাণ) রয়েছে। এ সংখ্যা যোগ করলে আরও হাজার দুয়েক কমবে। তারপরও ৪০ হাজারের মতো কোটা সৌদি আরবকে ফেরত দেওয়া হবে। এবার হজের নিবন্ধন শুরু হয় ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর, যা ১০ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রত্যাশিত সাড়া না মেলায় প্রথম দফায় সময় বাড়ানো হয় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতেও হজ নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় শেষ দফায় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে সুরের লড়াই ",হিন্দু ধর্ম,"দেবী দুর্গার ধর্মীয় মাহাত্ম্যের প্রথম উল্লেখ দেখা যায় শ্রীশ্রীচণ্ডীতে। সেখানে যে ধর্মীয় কাহিনি আছে, তাতে বলা আছে: রাজা সুরথ রাজ্য হারিয়ে আর সমাধি বৈশ্য ব্যবসা-বাণিজ্য হারিয়ে তাঁদের পরিবার-পরিজন কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে মনের দুঃখে গৃহত্যাগী হলেন। রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য কেউই কারও পূর্বপরিচিত নন। মনের দুঃখে তাঁরা দিগ্বিদিক ঘুরছিলেন। ঘুরতে ঘুরতে একসময় দুজনের দেখা হলো মেথস মুনির আশ্রমে। সেখানেই তাঁদের কথা হয়। দুজনেই তাঁদের দুঃখ ও যন্ত্রণার কথা পরস্পরকে বলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁরা দুজনেই দুঃখ-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে মা দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করলেন। সময়টা ছিল বসন্তকাল। চণ্ডীতে বলা আছে, মা দেবী দুর্গা তাঁদের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে দেখা দিলেন এবং তাঁদের শোকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিলেন। এই হলো দেবীপূজার মাহাত্ম্য। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে যে মেথস মুনির আশ্রমটির কথা বলা আছে, আশ্রমটির অবস্থান যেখানে থাকার কথা উল্লেখ আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে, সেটি এখনো আছে নবগ্রামের বোয়ালখালী থানার করলডেঙ্গা গ্রামের করলডেঙ্গা পাহাড়ে। আশ্রমটি তেমনভাবেই আছে। বিশ্বাসীদের মতে, আগে এই অঞ্চলটি বেশ দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ছিল। এই স্থানের পর্যটনের গুরুত্ব অনেক। তাই কয়েক বছর ধরে এই স্থানের পর্যটন গুরুত্ব, ধর্মীয় গুরুত্ব উপলব্ধি করে, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের খানিকটা সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, দেবী দুর্গার ধর্মীয় মাহাত্ম্য অনুযায়ী দেবী দুর্গার আবাহনের এই স্থানটির যথাযথ সংস্কার জরুরি। একই সঙ্গে নানা ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটন করপোরেশন স্থানটিকে দর্শনার্থী, তীর্থযাত্রীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। তাহলে বাংলাদেশ-ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে বহু দর্শনার্থী, তীর্থযাত্রী স্থানটি পরিদর্শনে আসতে পারবে। এতে বাংলাদেশ পর্যটন খাতটি আরও সমৃদ্ধ হবে। বসন্তকালে দুর্গাপূজা হবে, এমনটাই যখন বলা আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে, তখন এ ঘটনার ব্যতিক্রম দেখি রামায়ণে। রামায়ণে উল্লেখ আছে, রামচন্দ্র সীতাকে উদ্ধারের জন্য দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেছিলেন। আর সময়টা ছিল শরৎকাল। তাই পরবর্তী সময়ে যখন শারদীয় দুর্গাপূজার ব্যাপক প্রচলন হয়, তখন এই পূজাকে আমরা বলি শারদীয় দুর্গোৎসব। সেই সঙ্গে অকালবোধন পূজা। আমরা যদি শ্রীশ্রীচণ্ডীর মাহাত্ম্য বা রামচন্দ্রের অকালবোধন পূজার উদ্দেশ্যের দিকে তাকাই, দেখতে পাই দেবী দুর্গার আরাধনা, শক্তিরই আরাধনা। রাজা সুরথ আর রামের সময় আর পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও তাঁরা একই দেবীর পূজা করেন শক্তি সঞ্চয়ের জন্য। আর সেই শক্তিটি হলো শুভশক্তি। যে শক্তি আসুরিকতার বিরুদ্ধে, সব অসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আদিম যুগের পরবর্তী সময়ে যখন প্রস্তর যুগের সূচনা হলো, দেখলাম মানুষ পাথর দিয়ে বিভিন্ন জিনিস সৃষ্টি করে মনের ভাব প্রকাশ করতে শুরু করল। তার পরবর্তী সভ্যতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইট ও মাটি দিয়ে তৈরি জিনিসের প্রচলন শুরু হলো। তখন যে ভক্তিবাদের উন্মেষ ঘটেছিল, সেখানে মাটি দিয়ে তৈরি দেবীরই আরাধনা করতে শুরু করল মানুষ। আমরা মিসরীয় সভ্যতা, মহেেঞ্জাদারো সভ্যতা, হরপ্পা বা ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, ভারত সভ্যতা, অথবা মধ্যপ্রাচ্যের সভ্যতার দিকে যখন তাকাই, সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দেখতে পাই, সব সভ্যতাতেই বাসনকোসনের সঙ্গে মাটির তৈরি মূর্তিগুলোও পাওয়া গেছে। এ দেশে মা দেবী দুর্গার মাটির তৈরি প্রতিমা গড়ে পূজার প্রচলন শুরু করেন রাজশাহীর তাহিরপুরে রাজা কংস নারায়ণ। সেটাও আজ থেকে প্রায় সাত-আট শ বছর আগের কথা। এর আগে দেবী দুর্গার মাটির মৃণ্ময়ী রূপের প্রচলন হতে দেখা যায়নি। রাজা কংস নারায়ণ প্রতিমা গড়ে যে পূজা করেছিলেন, সেখানে তৎকালীন সময়ে নয় লাখ টাকা খরচ করা হয়েছিল। বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে যেসব রাজা-মহারাজা ছিলেন, তাঁদের একাংশ ছিলেন প্রজাদের প্রতি নিষ্ঠুর। আরেকাংশ প্রজাবৎসল। প্রজাবৎসল রাজারা যে শুধু প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন তা-ই নয়, প্রজাদের সঙ্গে মিলে তাঁরা দুর্গোৎসবের আয়োজনও করতেন। রাজারা এই উৎসবকে কেন্দ্র করেই প্রজার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতেন। এই উৎসবে রাজা-প্রজা, ধনী-নির্ধন—সবাই মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতেন। ফলে রাজা আর প্রজার মধ্যে নৈকট্যের জন্ম হতো। এটি ছিল ভয়ের সংস্কৃতির বিপরীতে একটি সৌহার্দ্যের সংস্কৃতি গড়ে তোলার চেষ্টা। আর এই ধারাটা চলে এসেছে প্রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ কাল পর্যন্ত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন রাজা-মহারাজাব্যবস্থা থাকল না, তখন দেখা গেল, সাধারণ বাঙালি একজোট হয়ে দুর্গাপূজা করছে। সেই সময় থেকেই দুর্গাপূজা সর্বজনীনতার রূপ নিল। তখন দুর্গাপূজা রাজার আঙিনা থেকে বেরিয়ে সাধারণের আঙিনায় চলে এল। বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালির জীবন ইতিহাসে দেখা যায়, বাঙালি কখনো কারও ওপর আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেনি। চিরকাল তারা আগ্রাসিত হয়েছে। এর কারণে বাঙালির জীবনে দুঃখ এসেছে, বিপর্যয় এসেছে, হাসি-কান্না-বেদনার দিন এসেছে। পরবর্তী সময়ে এই কান্না, দুঃখ, বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য নতুন করে প্রাণোদ্যম ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছে উৎসবের মাধ্যমে। সেটা আজও অব্যাহত। বাংলার যেমন ষড়্ঋতু আছে। আছে সেই ঋতুগুলোর বৈচিত্র্য। এই বৈচিত্র্য আর কোথাও দেখা যায় না। আর প্রতি ঋতুতেই বাঙালির উৎসব আছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে বাঙালির বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি আছে। সংকীর্ণতা ভুলে বাঙালি পরিসরে একাকার হওয়ার চেষ্টা করে এ অঞ্চলের জনগণ। এ জন্যই আমরা বলি, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। প্রত্যেক বাঙালির যার যার ধর্ম আছে। ধর্মাচার আছে। কিন্তু সব ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচারের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসব আছে। এখান থেকে আমরা উচ্চারণ করতে পারি: ধর্ম যার যার উৎসব সবার। চট্টগ্রামে যে পাড়ায় আমি থাকি, তার নাম দেওয়ানজি পুকুরপাড়। এই এলাকায় মূলত হিন্দু সংখ্যালঘুদের বাস। এই পাড়ার নিকটতম প্রতিবেশী ছিল আজকের বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানদের পরিবার। একবার সরস্বতী পূজা উপলক্ষে পাড়ায় যে কমিটি হয়েছিল, সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। বিএনপির সাবেক মন্ত্রী। বর্তমানে তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যান। আবার কলাবাগানে যে সর্বজনীন দুর্গোৎসব হচ্ছে, এই উৎসবের সূচনা ও আয়োজনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সেই এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। তঁারাই এলাকার হিন্দুদের একত্র করে এই উৎসবের আয়োজনে উৎসাহিত করেছেন। সেই থেকেই কলাবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব হয়ে আসছে। এটা খুব বেশি দিনের কথা নয়। আমরা লক্ষ করি, শারদীয় দুর্গাপূজা হিন্দুধর্মাবলম্বীরা করে। গৌতম বুদ্ধের জন্মদিনে বুদ্ধপূর্ণিমা বা খ্রিষ্টের জন্মদিনে ক্রিসমাস ডে করে, সবই আবহমানকাল থেকে বাঙালির সংস্কৃতির একটি রূপ। আরেকটি ব্যাপার উল্লেখযোগ্য, মা দুর্গার যে কাঠামো, রাষ্ট্র ও সমাজকে প্রতিফলন করে এ কাঠামো। আসুরিক শক্তির প্রভাবে যখন স্বর্গ থেকে দেবতারা চ্যুত হয়ে গেলেন, তখন তাঁরা আসুরিক সংস্কৃতির হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য মা দুর্গার আরাধনা করলেন। দেবতাদের মিলিত আরাধনার মাধ্যমেই তো মা দুর্গার আবির্ভাব। দেবতাদের যাঁর হাতে যা ছিল, তা-ই কিন্তু মায়ের হাতে স্থান পেল। রাষ্ট্র ও সমাজেরও তেমনি আসুরিক শক্তি আছে। আসুরিক অত্যাচারে মানুষ যখন ভয়ে থাকে, যখন উৎপীড়নের সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়, তা থেকে উত্তরণের জন্য বাঙালি যুদ্ধ করে। ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে বাঙালি যখন যূথবদ্ধ হয়ে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখে, এই অবয়বটি মা দুর্গার কাঠামোতে আছে। অসুরের সঙ্গে মা দুর্গার যে লড়াইটি হয়েছিল, তাতে আসুরিক শক্তির পরাজয় ঘটেছিল। দেখা যায়, যখনই আসুরিক শক্তির পরাজয় ঘটল, সেখানে যে সমাজকে দেখি, লক্ষ করি জ্ঞানের প্রতীক সরস্বতী, ধনের প্রতীক লক্ষ্মী, জনগণের প্রতীক গণেশ আর বীরের প্রতীক কার্তিক। তার মানে জনতা, জনগণ, ধ্যানজ্ঞান ও বীরের মধ্য যে রাষ্ট্রকাঠামো, এটা হলো শান্তি-সৌহার্দ্য বিনির্মাণের রাষ্ট্র ও সমাজকাঠামো। এই কাঠামো বিনির্মাণের জন্যই তো ঐক্যবদ্ধ বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ করেছে। কিন্তু এই স্বপ্নের বাংলাদেশ স্বাধীনতার চার দশক পর আজও আসেনি। আসুরিক শক্তি আজও সমাজে বর্তমান। পাশাপাশি শুভশক্তিও অবস্থান করছে। তাই আসুরিক শক্তির সঙ্গে শুভশক্তির বারবার সংঘর্ষ হচ্ছে, লড়াই হচ্ছে। তাই সময়ের বিচারে শারদীয় পূজা এখনো প্রাসঙ্গিক। ভবিষ্যতেও থাকবে। এই পূজার মাহাত্ম্য কখনো শেষ হওয়ার নয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ইত্তেফাক,একশজন হলেই হজের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে এজেন্সি,ইসলাম ধর্ম,"বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সি প্রতি একশজন হলেই আসন্ন হজের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে বাংলাদেশের বেসরকারি এজেন্সিগুলো। ২০১৯ সালের হজে বেসরকারি এজেন্সিগুলোর জন্য নতুন এই কোটা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে এজেন্সি প্রতি ১৫০ জন নির্ধারিত ছিল।রবিবার সৌদি আরবের জেদ্দায় দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। জেদ্দায় সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স হলে সৌদি হজমন্ত্রী ড. সালেহ বিন বানতেনের সঙ্গে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন ধর্ম সচিব আনিসুর রহমান, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, কন্সাল জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দিন, কাউন্সিলর (হজ) মাকসুদুর রহমান ও হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম। এছাড়া হজ মৌসুমে হাজিদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা, খাবারের মান উন্নয়ন, মোয়াল্লেম সার্ভিসকে আরো যুগোপযোগী করাসহ সৌদি হজ অথরিটি কর্তৃক হাজিদের মিনায় তাবুতে দুতলা বিশিষ্ট খাট পরিহার করার দাবি জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"রামাল্লার কেন্দ্রে ইসরাইলের অভিযান ",ইসলাম ধর্ম,"অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরের কেন্দ্রে গতকাল অভিযান চালিয়েছে ইসরাইল। শহরটিতে হামলার ঘটনা নতুন নয়। তবে ৭ অক্টোবরের পর থেকে হামলার গতি ও তীব্রতা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রামাল্লার কেন্দ্রে অস্বাভাবিক এ অভিযান শুরু হয়েছে। এটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক সদর দফতর। রামাল্লাতে অভিযানের ঘটনা ঘটলেও শহরটির কেন্দ্রে প্রায়শই এমন ঘটনা ঘটে না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলছে এবং রামাল্লার কেন্দ্রে ইসরাইলি বাহিনী এবং সাধারণ জনতার মধ্যে কিছু সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। তাদের পিছু হটাতে ইসরাইলি সেনার সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের অন্যান্য স্থানেও ইসরাইলি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গাজায় খাদ্যসংকট নিয়ে ফের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা : আবার গাজায় খাদ্যসংকটের সতর্কতা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। বুধবার ডাব্লিউএইচও-র প্রধান একটি বিবৃতি জারি করে বলেছেন, এখনই পদক্ষেপ না নিলে এক ভয়ংকর খাদ্যসংকটের মুখে পড়বে গাজা উপত্যকা। কয়েকলাখ মানুষ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ডাব্লিউএইচও বিবৃতিতে বলেছে, গাজার সর্বত্র স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না মানবিক কর্মীরা। বহু জায়গায় তাদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। লড়াইয়ে তাদেরও প্রাণ গেছে। জিনিস নিয়ে তারা বার হলেই ক্ষুধার্ত মানুষ তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে খাদ্যসংকট থেকে গাজাকে বাঁচানো যাবে না। এর আগেও এবিষয়ে দীর্ঘ রিপোর্ট দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একাধিকবার সংঘর্ষ-বিরতির আবেদনও জানানো হয়েছে ডাব্লিউএইচও-র তরফে। হিটলারের চেয়ে খারাপ নেতানিয়াহু : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান গাজায় ইসরাইলের হামলাকে ইহুদিদের প্রতি নাৎসিদের আচরণের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের চেয়েও খারাপ মানুষ। বুধবার আঙ্কারায় একটি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতার সময় তিনি নেতানিয়াহু গণহত্যার জন্য দোষী অভিযোগ করে এ মন্তব্য করেন। আঙ্কারায় এক অনুষ্ঠানে এরদোগান ইসরাইলের প্রতি পশ্চিমা সমর্থনের সমালোচনা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, গাজার সংঘাত সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নিপীড়নের শিকার শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানীদের স্বাগত জানাতে তুরস্ক প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যা করছেন এবং কয়েক দশক আগে ইউরোপে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলার যা করেছেন; তার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এরদোগান বলেন, হলোকাস্টে ৬ মিলিয়ন ইহুদিকে হত্যা গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধের মতো খারাপ ছিল না এবং উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের আচরণকে ইহুদিদের সঙ্গে তুলনা করেন। ঘনত্ব ও মৃত্যু শিবিরে আটকে রাখা হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"আফগানে মসজিদে বিস্ফোরণ, ধর্মীয় নেতাসহ নিহত ১৫ ",ইসলাম ধর্ম,"আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাতে একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে তালেবানপন্থি এক ধর্মীয় নেতাসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের সময় গুজরগাহ মসজিদে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর আল জাজিরার। হেরাত পুলিশের মুখপাত্র মাহমুদ রাসুলি বলেছেন, মুজিব রহমান আনসারি কয়েকজন রক্ষী ও বেসামরিক লোকদের নিয়ে মসজিদের দিকে যাওয়ার পথে নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে ঠিক কতজন হতাহত হয়েছে তা জানাননি তিনি। তবে ঘটনাস্থলের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, এতে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আরও অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক চিকিৎসক।রাসুলি বলেন, ইমাম সাহেব বাড়ি থেকে মসজিদে যাওয়ার সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী তার হাতে চুম্বন করার সময় নিজেকে উড়িয়ে দেয়।তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বোমা হামলার নেপথ্যে থাকা অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে। এক টুইটে তিনি বলেছেন, দেশের বলিষ্ঠ ও সাহসী এক ধর্মীয় পণ্ডিত নৃশংস হামলায় শহীদ হয়েছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,নবীজির (সা.) রাষ্ট্রনীতি,ইসলাম ধর্ম,"আধুনিক ইসলামী গবেষকরা বলছেন, ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র গঠন হবে এ নিয়ে ইসলামের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। আমরা দেখেছি রসুল (সা.) ওফাতের সময় তাঁর স্থলাভিষিক্ত শাসক কে হবেন এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কিছু বলে যাননি। ফলে জনগণ হজরত আবু বকর (রা.)-কে রাষ্ট্রের কর্ণধার হিসেবে নির্বাচন করে নেয়। পরবর্তীতে হজরত আবু বকর (রা.) হজরত ওমরকে নিজের স্থলাভিষিক্ত মনোনীত করে যান। হাজার হাজার সাহাবি ও তাবেয়ি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাঁর আনুগত্য করেন। আবার হজরত ওমর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে কাকে নির্বাচন করা যায় এজন্য একটি ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। এভাবে তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান (রা.) খেলাফতের দায়িত্বে আসেন। খলিফা বা রাষ্ট্রপ্রধান যে প্রক্রিয়াতেই নির্বাচিত হোক না কেন সেটা বড় বিষয় নয়, কোরআনের দৃষ্টিতে বড় বিষয় হলো ন্যায়-ইনসাফের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। পক্ষ-বিপক্ষের সব জনগণ সমান অধিকার পাবে এটাই কোরআনের রাষ্ট্র পরিচালনার বড় নীতিমালা। আসলে রাষ্ট্রে যদি ন্যায়বিচার থাকে, ইনসাফ থাকে তাহলে সেখানে কম যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধান হলেও তাতে ইসলামের বড় কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু রাষ্ট্রে যদি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না থাকে আর সবচেয়ে পরহেজগার ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হন তাতে জনগণের খুব একটা উপকার হবে না। ইসলামের ইতিহাসে অনেক কম পরহেজগার ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন এটা ঠিক, তবে যখনই ইনসাফের ব্যত্যয় ঘটেছে, তখনই একদল প্রতিবাদী আলেম জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন। কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের অনেকগুলো মৌলিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ন্যায়বিচার একটি। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আপনি বলুন, আমাকে আদেশ করা হয়েছে যেন তোমাদের মাঝে ন্যায়বিচার করি।’ (সুরা শুরা, আয়াত ১৫) আরবি ‘আদল’ শব্দের অর্থ ন্যায়, ইনসাফ, ন্যায্যতা, নিরপেক্ষ, সমান। পরিভাষায়, যে যতটুকু যোগ্য তাকে ততটুকু প্রদান করাকে ন্যায়বিচার বলে। আল্লাহর এক নাম আদল বা আদিল। কেননা তিনি যোগ্যতা অনুযায়ী মানুষ ও সৃষ্টিকুলের মাঝে ভালোমন্দ বণ্টন করে থাকেন। যিনি ন্যায়বিচার করেন তাঁকে বলা হয় আদিল। আর যে স্থানে ন্যায়বিচার করা হয় তাকে বলা আদালত। কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের প্রধান অবশ্যই আদিল তথা ন্যায়বিচারক হবেন। তাঁর দেখাদেখি রাষ্ট্রের নির্বাহী ও বিচারিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ন্যায়বিচার করবেন। ন্যায়বিচারের সহজ অর্থ হলো- সব ধরনের দলাদলি থেকে দূরে থেকে নিরপেক্ষ বিচার করা। দলীয় স্বার্থ কিংবা বিরোধীপক্ষকে পরাস্ত করার মানসিকতা থেকে মুক্ত হয়ে বিচার করা। আপন-পর, দলীয়-বিরোধী সব মানুষের সঙ্গে সমান সম্পর্ক বজায় রাখা। আর সে সম্পর্কে ভিত্তি হবে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার। কোনো রায় যদি বিচারকের নিকটাত্মীয় বা দলীয় লোকের বিরুদ্ধেও যায় তবুও সে রায় কার্যকর করতে হবে নির্র্দ্বিধায়। আবার কোনো রায় যদি দূরের কোনো মানুষ কিংবা ব্যক্তির শত্রুতা আছে অথবা মতের অমিল রয়েছে এমন কারও পক্ষে যায় তবুও সে রায় কার্যকর করতে হবে বিনা বাক্যে। আমরা যদি রসুলের জীবনের দিকে তাকাই তাহলে দেখব তিনিও ন্যায়বিচারের সবগুলো প্যারামিটারে ছিলেন আপসহীন। একবার মক্কার এক সম্ভ্রান্ত নারী চুরির দায়ে পাকড়াও হয়। নবীজি (সা.) কোরআনের ক্রিমিনাল কোড অনুযায়ী তার হাত কাটার শাস্তি ঘোষণা করেন। কেউ কেউ বলল, উনি তো সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার জন্য শাস্তি কিছুটা সহজ করা যায় কি না বা মওকুফের কোনো সুযোগ আছে কি না? এমন প্রস্তাব শুনে রসুল (সা.) দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের আগে যেসব জাতি অতিবাহিত হয়েছে তারা ঠিক এ কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা দুর্বল অপরাধীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করত আর প্রভাবশালীদের ছেড়ে দিত। আল্লাহর কসম! আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য আমার মেয়ে ফাতেমাও যদি আজ চুরি কত, তবে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে ফেলতাম।’ (বুখারি, কিতাবুল হুদুদ)। কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের জন্য ন্যায়বিচার শর্ত। আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য শর্ত হলো নির্লোভ থাকা। তাফসিরে কুরতুবি থেকে জানা যায়, ওলিদ ইবনে মুগিরা ও শায়বা ইবনে রাবিয়া ছিলেন মক্কার প্রভাবশালী দুই নেতা। তারা একবার রসুলের (সা.) দরবারে এসে বলল, হে মুহাম্মদ! তুমি যে ধর্মের দাওয়াত দিচ্ছ সেটা বন্ধ করে দাও। বিনিময়ে ওলিদের সব সম্পদের অর্ধেক আর মুগিরার অতি রূপবতী কন্যা তোমাকে দিয়ে দেওয়া হবে। এমন লোভনীয় প্রস্তাবের জবাবে আল্লাহতায়ালা সুরা শুরার ১৫ নম্বর আয়াত নাজিল করে সাফ জানিয়ে দেন- ‘হে নবী! আপনি বলুন, আমাকে আদেশ করা হয়েছে যেন তোমাদের মাঝে ন্যায়বিচার করি।’ আজকের মুসলিম বিশ্ব অনেক দিকে এগিয়েছে। অনেক আধুনিক হয়েছে। প্রযুক্তিসমৃদ্ধ হয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো দেশে এখনো ইনসাফ ও ন্যায়বিচার অধরা রয়ে গেছে। এ দুর্বলতা সাধারণ কোনো দুর্বলতা নয়। বরং রসুলের (সা.) ঘোষণা অনুযায়ী একটি জাতি ধ্বংস হওয়ার জন্য বেইনসাফি সমাজই যথেষ্ট। আল্লাহতায়ালা মুসলিম বিশ্বে ইসনাফ ও ন্যায়বিচারের সুবাতাস বইয়ে দিন। আমিন।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral কালের কন্ঠ,বন্দিদের সঙ্গে বিশ্ব নবী (সা.)-এর আচরণ যেমন ছিল,ইসলাম ধর্ম,"একজন অপরাধীকে কারাগারে বন্দি রাখা হবে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়; বরং তাকে সঠিক পথ বলে দিয়ে গন্তব্য দেখানোর জন্য। তার জীবন যে অন্ধকারে ছেয়ে গেছে সে অন্ধকার দূরীভূত করি আলোর রশ্মি জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য। যারা বন্দিদের তত্ত্বাবধানে থাকবে তাদের আচরণ-উচ্চারণ, চলাফেরা সব কিছু দেখেই মুগ্ধ হয়ে সে আলোর পথে ছুটে আসবে। কিন্তু যদি বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়, তাহলে তো সে বন্দি অন্ধকারের দিকে আরো বেশি করে ছুটবে। বন্দিদের সঙ্গে প্রিয় নবীজি (সা.)-এর আচরণের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত; সুমামা ইবনে উসালের ঘটনা। তিনি ছিলেন বনু হানিফা গোত্রের এক নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি। সে রাসুলকে হত্যা করার জন্য মদিনায় এসেছিল। আর রাসুল (সা.) তার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন, তার কিছু নমুনা এই হাদিসে এসেছে। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কিছুসংখ্যক অশ্বারোহী সৈন্যকে ‘নাজদ’-এর দিকে পাঠান। অতঃপর বনু হানিফা গোত্রের এক ব্যক্তিকে তারা ধরে নিয়ে এলো। তার নাম ছিল সুমামাহ ইবনে উসাল। তিনি ইয়ামামাবাসীর সরদার ছিলেন। তারা মসজিদের একটি খুঁটির সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখল। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তার কাছে এলেন এবং বলেন, হে সুমামাহ, তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? সে জবাব দিল, আমার কাছে তো ভালোই মনে হচ্ছে। আপনি যদি আমাকে হত্যা করেন, তাহলে খুনি ব্যক্তিকেই হত্যা করলেন। আর যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনার অনুগ্রহ হবে কৃতজ্ঞ ব্যক্তির ওপর। আর যদি আপনি সম্পদ চান, তবে আপনাকে তাই দেওয়া হবে, আপনি যা চাইবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে যথাবস্থায় রেখে দিলেন। [এভাবে রাসুল (সা.) তিন দিন তার সঙ্গে কথা বলেন, এরপর]। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা সুমামাহকে ছেড়ে দাও। তারপর সুমামাহ মসজিদের নিকটবর্তী একটি খেজুরগাছের নিকট গেলেন। সেখানে তিনি গোসল করলেন। এরপর মসজিদে প্রবেশ করে বললেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল। হে মুহাম্মদ, আল্লাহর শপথ! পৃথিবীতে আমার কাছে আপনার চেহারার চেয়ে খারাপ চেহারা আর ছিল না। আর এখন সব মানুষের চেহারা থেকে আপনার চেহারাই আমার বেশি প্রিয়। আল্লাহর শপথ! আপনার ধর্ম থেকে বেশি খারাপ ধর্ম আমার কাছে আর ছিল না। আর এখন আপনার ধর্মই আমার কাছে সব ধর্ম থেকে অধিক প্রিয়। আল্লাহর কসম! আপনার জনপদ থেকে বেশি নিকৃষ্ট জনপদ আমার কাছে আর ছিল না। আর এখন আপনার জনপদই আমার কাছে সব জনপদের চেয়ে বেশি প্রিয়। আপনার অশ্বারোহী সৈনিকরা আমাকে ধরে নিয়ে এসেছে। অথচ আমি তখন ওমরা করার ইচ্ছা করেছিলাম। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে সুসংবাদ দিলেন এবং ওমরাহ করার নির্দেশ দিলেন। এরপর যখন তিনি মক্কায় ফিরে এলেন, তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, তুমি কি ধর্মান্তরিত হয়েছ? তখন তিনি বললেন, না; বরং আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ইসলাম গ্রহণ করেছি। আল্লাহর কসম! ইয়ামামা থেকে একটি গমের দানাও তোমাদের কাছে পৌঁছাবে না। যতক্ষণ না রাসুলুল্লাহ (সা.) তাতে সম্মতি দেন। (মুসলিম, হাদিস : ৪৪৮১) বন্দিদের সঙ্গে কোমল আচরণ বন্দিদের সঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) কোমল আচরণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন। নবীজি (সা.) যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে যেই সদয় আচরণের আদেশ দিয়েছেন তা শুধু মুখে বলে সীমাবদ্ধ করেননি, বরং বাস্তবে প্রয়োগ করে তিনি দেখিয়েছেন। তাদের সঙ্গে এমন সুন্দর আচরণ করতেন, যাতে তারা নিজেদের নবীজির কাছে নিরাপদ ও সুরক্ষিত মনে করতে বাধ্য হয়। বিশেষত, তাদের খাবারদাবার ইত্যাদি বিষয়ে সাহাবাদের সতর্ক করেছেন। হাদিসে এসেছে রাসুল (সা.) বলেছেন, যুদ্ধবন্দিদের প্রতি কল্যাণের ও সদাচরণের অঙ্গীকার গ্রহণ করো। (আল-মুজামুল কাবির : ৯৭৭) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) সাহাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা বন্দিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করো। ফলে সাহাবারা খানার সময় তাদের নিজেদের থেকে প্রাধান্য দিতেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৪/৫৮৪) নারী ও শিশুদের সঙ্গে যেমন আচরণ করতেন নারী ও শিশু বন্দিদের ব্যাপারে রাসুল (সা.)-এর বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তাদের মানসিক বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্ব দিতেন যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা বজায় রাখতেন। এ জন্য তিনি শিশুসন্তান ও মায়ের মাঝে আলাদা করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আবু আইয়ুব (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, (বন্দিনী) মা ও তার সন্তানকে একে অন্য থেকে যে ব্যক্তি আলাদা করল, আল্লাহ তাআলা কিয়ামত দিবসে তার এবং তার প্রিয়জনদের পরস্পর থেকে আলাদা করবেন। এ হাদিস অনুযায়ী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবি ও তৎপরবর্তীরা আমল করেছেন। বন্দিনী মা-সন্তান, পিতা-পুত্র এবং ভাইদের পরস্পর থেকে আলাদা করাকে তারা নিষিদ্ধ বলেছেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৫৬৬)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,বিশ্বের প্রথম থ্রিডি প্রিন্টেড মসজিদ তৈরি করছে দুবাই,ইসলাম ধর্ম,"সাম্প্রতিককালে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, গাড়ি, সেতু থেকে ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি। এবার নতুন চমক দেখিয়ে বিশ্বের প্রথম থ্রিডি প্রিন্টেড মসজিদ নির্মাণ করতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুবাই সরকারের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ ডিপার্টমেন্টের (আইএসিএডি) তত্ত্বাবধানে আমিরাতের পুরনো শহর বুর দুবাইয়ে মসজিদটি তৈরি হচ্ছে।আইএসিএডি জানায়, সাধারণ নিয়মে মসজিদ নির্মাণের চেয়ে এই মসজিদ নির্মাণে ৩০ গুণ বেশি খরচ হবে।তবে থ্রিডি প্রিন্টিং পদ্ধতিতে নির্মাণসামগ্রীর বর্জ্য কমবে। এ ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণের ডিজাইনের তথ্যের সঙ্গে প্রগ্রাম সংযুক্ত বড় প্রিন্টিং মেশিনের প্রয়োজন হয়। প্রিন্টারের প্রয়োজনীয় ম্যাটেরিয়াল ও কংক্রিটের মিশ্রণে তা তৈরি করা হবে।দুই হাজার বর্গমিটার আয়তনের এই মসজিদে একসঙ্গে ৬০০ জন নামাজ পড়তে পারবেন।চলতি বছরের অক্টোবরে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হবে। ভবনের নকশার থ্রিডি প্রিন্টিং সম্পন্ন করতে চার মাস এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার কাজ শেষ করতে ১২ মাস সময় লাগবে। ২০২৫ সালের মার্চে মসজিদটি উন্মুক্ত হওয়ার আশা করা হচ্ছে।আইএসিএডি মহাপরিচালক ড. হামাদ বিন শেখ আহমেদ আল-শাইবানি বলেন, ‘থ্রিডি প্রযুক্তি ভবন নির্মাণ প্রকৌশলকে টেকসই করে তুলবে।তা খুবই পরিবেশবান্ধব ও নির্মাণসামগ্রীর বর্জ্য কমাতে সহায়ক। মূলত তিনজন কর্মী রোবটিক প্রিন্টারটি পরিচালনা করবেন এবং তা প্রতি ঘণ্টায় দুই বর্গমিটার প্রিন্ট করবে। অবশ্য মসজিদটি নির্মাণে সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি খরচ হবে। আশা করছি, ৩০ বছরের বিল্ডিং গ্যারান্টিসহ এর খরচ একই রকম হবে।’ দুবাইকে বিশ্বের থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের রাজধানী হিসেবে গড়তে কাজ করছে দেশটির সরকার। ২০২১ সালের আগস্টে দুবাইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আমিরাতকে ‘থ্রিডি প্রিন্টিং স্ট্র্যাটেজি’ ঘোষণা করে। মূলত ২০৩০ সালের মধ্যে আমিরাতের এক-চতুর্থাংশ ভবন নির্মাণে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতেই বিশেষ আইনটি করা হয়। এরই মধ্যে বৃহত্তম থ্রিডি প্রিন্টেড অবকাঠামোর জন্য বিশ্বরেকর্ড করেছে দুবাই। ২০১৯ সালে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৬৪০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে সাড়ে ৯ মিটার দৈর্ঘ্যের মিউনিসিপ্যালিটি বিল্ডিং তৈরি করা হয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রিসালাত সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য ",ইসলাম ধর্ম,"নূর নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রিসালাত সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য, বিশ্বের প্রতিটি ভাষাভাষীর জন্য। বিশ্বের প্রতিটি জাতি, প্রতিটি ভাষাভাষীর কাছে এ বাণী পৌঁছে দেয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দায়িত্ব ও কর্তব্য। এতদপ্রসঙ্গে মহান আল্লাহতায়ালা আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন : {হে প্রিয় হাবীব (সা.)}! আপনি বলুন, হে মানুষ! নিশ্চয় আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল, যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের সার্বভৌমত্বের অধিকারী। (আল আ’রাফ :১৫৮)। এই আয়াতে কারীমায় ইসলামের মূলনীতি সংক্রান্ত বিষয়াবলির মধ্য থেকে রিসালাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোচিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রিসালাত সারা দুনিয়ার সমস্ত জ্বিন ও মানবজাতি তথা কেয়ামত পর্যন্ত তাদের বংশধরদের জন্য ব্যাপক ও বিস্তৃত। এ জন্য নূর নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে সাধারণভাবে ঘোষণা করে দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে যে, আপনি মানুষকে বলে দিন : ‘আমি তোমাদের সকলের প্রতি নবী ও রাসূল-রূপে প্রেরীত হয়েছি। আমার নবুওয়াত লাভ ও রিসালাত প্রাপ্তি বিগত নবী ও রাসূলগণের মতো কোন বিশেষ জাতি অথবা বিশেষ ভূখণ্ড কিংবা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়; বরং সমগ্র বিশ্ব মানবের জন্য। বিশ্বের প্রতিটি অংশ, প্রতিটি দেশ ও রাষ্ট্র এবং বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশ ধরদের জন্য কেয়ামতকাল পর্যন্ত প্রলম্বিত ও পরিব্যাপ্ত।’ (কুরআনুল কারীম : অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর, খ.-১ প. ৮৩০)। হাফেজ ইবনে কাসির (রাহ.) বলেছেন : এ আয়াতে কারীমায় রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শেষ নবী খাতামুন্নাবিয়্যিন হওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারণ, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আবির্ভাব ও রিসালাত যখন কেয়ামত পর্যন্ত আগত সমস্ত বংশধরদের জন্য এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য ব্যাপক ও বিস্তৃত, তখন আর অন্য কোন নতুন রাসূল আগমনের প্রয়োজনীয়তা অবশিষ্ট নেই। (তাফসীরে ইবনে কাসির)। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, নূর নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) তাবুক যুদ্ধের সময় গভীর রাতে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের ভয় হচ্ছিল যে, শত্রুরা নাজানি এ অবস্থায় আক্রমণ করে বসে। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চারদিকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) নামায শেষ করে বললেন : আজকের রাতে আমাকে এমন পাঁচটি জিনিস দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্ববর্তী নবী ও রাসূলকে দেয়া হয়নি। তার একটি হলো এই যে, আমার রিসালাত ও নবুওয়াতকে সমগ্র দুনিয়ার জাতিসমূহের জন্য ব্যাপক ও বিস্তৃত করা হয়েছে। আর আমার পূর্বে যতো নবী ও রাসূলই এসেছেন, তাদের আবির্ভাব ও দাওয়াত নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সাথেই সম্পৃক্ত ছিল। দ্বিতীয়ত : আমাকে আমার শত্রুর মোকাবেলায় এমন প্রভাব দান করা হয়েছে যে, তারা যদি আমার থেকে এক মাসের দূরত্বেও থাকে, তবুও তাদের উপর আমার প্রভাব বিস্তার লাভ করবেই। তৃতীয়ত : অবিশ্বাসী কাফেরদের সাথে যুদ্ধেপ্রাপ্ত মালে গণিমত আমার জন্য হালাল করা হয়েছে। অথচ পূর্ববর্তী উম্মতদের জন্য তা হালাল ছিল না। বরং এসব মালের ব্যবহার মহাপাপ বলে মনে করা হতো। তাদের মালে গণিমত ব্যয়ের পন্থা ছিল এই যে, আকাশ থেকে বিদ্যুৎ এসে সে সমস্তকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিয়ে যেত। চতুর্থত : আমার জন্য সমগ্র ভূমণ্ডলকে মসজিদ করে দেয়া হয়েছে এবং মাটিকে পবিত্র করার উপকরণ বানিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে-আমাদের নামায ভূখণ্ডের যে কোন অংশে, যে কোন জায়গায় শুদ্ধ হয়। কোন বিশেষ মসজিদে সীমাবদ্ধ না হয়। পক্ষান্তরে, পূর্ববর্তী উম্মতদের ইবাদত কেবলমাত্র উপাসনালয়েই হতো, অন্য কোথাও নয়। নিজেদের গৃহে অথবা মাঠে ময়দানে তাদের ইবাদত বা নামায হতো না। তাছাড়া যখন পানি ব্যবহারের সামর্থ্য না থাকে, তা পানি না পাওয়ার কারণে বা রোগ-শোকের কারণে হোক, তখন মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নেয়া পবিত্রতা অর্জন ও অযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হয়ে যায়। পূর্ববর্তী উম্মতদের জন্য এ সুবিধা ছিল না। আর পঞ্চমটি হচ্ছে এই যে, আল্লাহ জাল্লাশানুহু তাঁর প্রত্যেক রাসূলকে একটি দোয়া কবুল হওয়ার এমন নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন, যার কোন ব্যতিক্রম হতে পারে না। প্রত্যেক নবী রাসূলই তাদের নিজ নিজ দোয়াকে বিশেষ বিশেষ উদ্দেশে ব্যবহার করেছেন এবং সে উদ্দেশ্যও পূরণ হয়েছে। আমাকেও বলা হয়েছে যে, আপনিও কোন একটা দোয়া করুন? আমি আমার দোয়াকে আখেরাতের জন্য সংরক্ষিত করে রেখেছি। সে দোয়া তোমাদের জন্য এবং কেয়ামত পর্যন্ত ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কালেমার সাক্ষ্যদানকারী যেসব লোক জন্মগ্রহণ করবে, তাদের কাজে লাগবে। (মুসনাদে আহমাদ : ২/২২২)। হযরত আবু মূসা আশয়ারী (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : যে লোক আমার আবির্ভাব সম্পর্কে শুনবে, তা সে আমার উম্মতদের মধ্যে হোক কিংবা ইয়াহুদি নাসারা হোক। যদি সে আমার উপর ঈমান না আনে তাহলে জাহান্নামে যাবে। (মোসনাদে আহমাদ : ২/৩৫০)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,বদর যুদ্ধে ইসলামের বিজয় কেতন,ইসলাম ধর্ম,"মাহে রমজানে যে বছর মদিনায় প্রথম সিয়াম পালিত হয়, সেই দ্বিতীয় হিজরি সালের ১৭ রমজান, মাগফিরাতের সপ্তম দিন মোতাবেক ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ ইসলামের ইতিহাসের প্রথম আত্মরক্ষামূলক সশস্ত্র যুদ্ধ ‘গায্ওয়ায়ে বদরে’ ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন হয়েছিল বলে এ দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের ইতিহাসে ‘বদরের যুদ্ধ’ বিশেষভাবে স্মরণীয়। ওই যুদ্ধে মুসলমানদের ‘চূড়ান্ত মীমাংসা’ হয়েছিল। আজ থেকে ১৩৯১ বছর আগে ১৭ রোজার দিনে ৩১৩ জন পদাতিক মুসলমানের দল তৎকালীন রণকৌশলে পারদর্শী অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত কাফের বাহিনীর সঙ্গে অসম যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে ইসলামের বিজয় ছিনিয়ে আনে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘বদরের যুদ্ধে যখন তোমরা হীনবল ছিলে, আল্লাহ তো তোমাদের সাহায্য করেছিলেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১২৩) মক্কার কুরাইশরা যখন দেখল যে নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরত করে তথায় পৌত্তলিক, ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের সমন্বয়ে পৃথিবীর প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র ‘মদিনা সনদ’-এর ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করলেন এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-দলমতনির্বিশেষে তাঁর নেতৃত্বে মদিনাবাসী বিনা প্রতিবন্ধকতায় নিঃশঙ্ক জীবন যাপন করছিলেন এবং ইসলামের মর্মবাণী ধীরে ধীরে আরব উপদ্বীপ ছেড়ে বহির্বিশ্বে প্রচারিত হচ্ছিল, তখন মক্কার কাফের সম্প্রদায় ও মদিনার ষড়যন্ত্রকারী মুনাফিকেরা চক্রান্ত করে নবী করিম (সা.) ও ইসলামকে দুনিয়ার বুক থেকে চিরতরে উৎখাত করে দেওয়ার মানসে যুদ্ধের জন্য রণপ্রস্তুতি গ্রহণ করে। একদল কুরাইশ ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে যুদ্ধাস্ত্র কিনে মদিনা হয়ে সিরিয়া থেকে মক্কায় ফিরছিল। পথে সরঞ্জামাদি হারানোর আশঙ্কায় মক্কায় বিপৎসংকেত পাঠানো হয়। তখনই কুরাইশ নেতা আবু জেহেল এক হাজার অশ্বারোহী সশস্ত্র যোদ্ধাসহ মদিনা অভিমুখে ছুটে আসেন। এ সংবাদ জানতে পেয়ে মহানবী (সা.) রোজাদার সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শ সভায় বসলেন। সাহাবায়ে কিরামের সুদৃঢ় ইমানি চেতনা ও ইস্পাত কঠিন মনোবল দেখে নবী করিম (সা.) অত্যন্ত খুশি হলেন। আবু জেহেলের রণযাত্রার খবর শুনে দ্বিতীয় হিজরির রমজান মাসের ১২ তারিখে নিখিল বিশ্বের ত্রাণকর্তা স্বয়ং সেনাপতি রাসুলুল্লাহও (সা.) প্রাণোৎসর্গে প্রস্তুত ৬০ জন মুহাজির ও ২৫৩ জন আনসারসহ মোট ৩১৩ জন সাহাবি সঙ্গে নিয়ে শত্রু বাহিনীকে বাধা প্রদান ও দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য মদিনা থেকে যাত্রা শুরু করে ৮০ মাইল দূরে বদর প্রান্তরে উপস্থিত হলেন। মুসলমানদের অস্ত্র মাত্র তিনটি ঘোড়া, ৭০টি উট, ছয়টি বর্ম ও আটটি তলোয়ার হলেও বিজয়লাভের প্রধান উপকরণ ছিল ইমানের বল; অস্ত্রবল ও সংখ্যা নয়। নবী করিম (সা.) মুসলমানদের জিহাদ সম্বন্ধে উপদেশ ও উৎসাহ প্রদান করলেন। যুদ্ধে জয়লাভ করা সংখ্যা, অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জামাদির আধিক্যের ওপর নির্ভর করে না; বরং মহাপরীক্ষার সময় আল্লাহর প্রতি অটল বিশ্বাস রেখে ধৈর্য অবলম্বন করা এবং অটল থাকাই জয়লাভের উপায়—এ কথাগুলো তিনি উত্তমরূপে সাহাবিদের হৃদয়ঙ্গম করিয়ে দিলেন। তিনি বদর প্রান্তরে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেছিলেন, তাঁর দোয়া কবুল করে আল্লাহ তাআলা বদর যুদ্ধে ফেরেশতা দিয়ে মুজাহিদদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাহায্য করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যখন তুমি মুমিনদের বলছিলে, “এটা কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে তোমাদের প্রতিপালক প্রেরিত তিন সহস্র ফেরেশতা দ্বারা তোমাদের সহায়তা করবেন?” হ্যাঁ, নিশ্চয়ই যদি তোমরা ধৈর্যধারণ করো এবং সাবধান হয়ে চলো, তবে তারা দ্রুতগতিতে তোমাদের ওপর আক্রমণ করলে আল্লাহ পাঁচ সহস্র চিহ্নিত ফেরেশতা দ্বারা তোমাদের সাহায্য করবেন।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১২৪-১২৫) আরবের তৎকালীন প্রথাগত যুদ্ধরীতি অনুযায়ী প্রথমে সংঘটিত মল্লযুদ্ধে মুসলিম বীরযোদ্ধাদের হাতে কাফের বাহিনী পরাজিত হয়। এরপর হক ও বাতিলের, নূর ও জুলুমাতের, ইসলাম ও কুফুরের উভয় বাহিনী পরস্পর সম্মুখীন। দুই পক্ষের তুমুল যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী বীরবিক্রমে লড়াই করে ইসলামের বিজয় কেতন ছিনিয়ে আনেন। বদর যুদ্ধের প্রাক্কালে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, ‘আজ যে ব্যক্তি কাফিরদের বিরুদ্ধে ধৈর্যের সঙ্গে সওয়াবের প্রত্যাশায় যুদ্ধ করবে, শহীদ হবে, আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন।’ (বায়হাকি) এমন আশ্বাসবাণী পেয়ে হক ও বাতিলের লড়াইয়ে স্বল্পসংখ্যক মুসলমান জানবাজি রেখে কাফেরদের মোকাবিলায় জয়লাভ করেছিলেন। বদর যুদ্ধে ৭০ জন কাফের নিহত ও ৭০ জন বন্দী হয়। অন্যদিকে মাত্র ১৪ জন মুসলিম বীর সেনা শহীদ হন; কাফেরদের বহু অস্ত্র ও রসদপত্র মুসলমানদের হস্তগত হলো। দেশের সার্বভৌমত্ব অর্জন ও স্বদেশ রক্ষায় জীবনদানকে মহানবী (সা.) শাহাদতের সম্মানজনক মর্যাদা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে শহীদদের মর্যাদা ঘোষণা করে বলা হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদের কখনোই মৃত মনে কোরো না, বরং তারা জীবিত ও তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে জীবিকাপ্রাপ্ত।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৯) আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য ও মাতৃভূমি সুরক্ষার জন্য যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেন, তাঁদের সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর পথে যারা নিহত হয়, তাদের মৃত বোলো না, তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো না।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৪) বদরের যুদ্ধে নিহত শহীদদের সম্পর্কে লোকেরা যখন বলাবলি করছিল যে ‘অমুকের ইন্তেকাল হয়েছে, সে পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে’ তখন তাদের মন্তব্যের জবাবে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। ১৭ রমজান বদর যুদ্ধ থেকেই আরম্ভ হয় ইসলামের মহাজয় যাত্রা। তওহিদ ও ইমান যে এক অজেয় শক্তি, এর সামনে যে দুনিয়ার সব শক্তিই মাথা নত করতে বাধ্য, এ কথা মুসলমানরা পূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে পারলেন। সত্যাসত্যের পার্থক্য দিবা ভাস্করসম উজ্জ্বলরূপে মানব হৃদয়ে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। বস্তুত, বদর যুদ্ধ ছিল ইমানের মহাপরীক্ষা। এতে রোজাদার সাহাবিরা যেভাবে কৃতিত্বের সঙ্গে সফলকাম হতে সক্ষম হয়েছেন, জগতের ইতিহাসে তার তুলনা নেই। সাফল্যের অপূর্ব বিজয়গাথা ইসলামের ত্যাগের শিক্ষায় সত্য ও ন্যায়ের পথে মুসলমানদের যুগ যুগ ধরে প্রাণশক্তি জুগিয়ে আসছে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,কলাপাড়ায় ফানুস উৎসব,বৌদ্ধ ধর্ম,"প্রবারণা পূর্ণিমায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এ বছর সবচেয়ে বড় একটি ফানুস উড়িয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনরা। এটির উচ্চতা ১৫ ফুট ও প্রস্থ ৪ ফুট। এটিতে কাগজ লেগেছে ৮০ পিস। আর ফানুসটির গায় লোখা রয়েছে ওয়েলকাম ইউএনও। উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের বেতকাটা পাড়ার রাখাইন যুবক মংতেন, ওয়েনচো, মেচো প্রায় এক মাস ধরে এ ফানসুটি তৈরি করেছেন। প্রবারণা পূর্ণিমায় দ্বিতীয় দিন সোমবার রাতের আকাশে বাহারি ডিজাইনের তৈরি এ ফানুসটি আনুষ্ঠানিক ভাবে উড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ বৌদ্ধকৃষ্টি কালচার সংঘ উপকূলীয় পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার প্রেসিডেন্ট নিউ নিউ খেইনসহ উপজেলা কৃষক লীগের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে অতিথি অপ্যায়ন ও রাখানই তরুনীর নৃত্য পরিবেশন করেন। তবে সব চেয়ে বড় এ ফানুস উড়ানো দেখার জন্য রাখাইন পল্লীর আশপাশ থেকে আসা উৎসুক লোকজন ভিড় করেন। রাখানই যুবক মেচো বলেন, শুধু মাত্র এই ফানুসটি তৈরি করা হয়েছে তা নায়। প্রবারণা পূর্ণিমায় উপলক্ষ্যে তাদের পাড়া থেকে ৫০টি ফানুস উড়িয়েছেন। এর মধ্যে এটাই সব চেয়ে বড় ফানুস। বাংলাদেশ বৌদ্ধকৃষ্টি কালচার সংঘ পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নিউ নিউ খেইন বলেন, ফানুস উড়ানো এখন সার্বজনীন উৎসব। এতে সকল ধর্মের লোকজন আনন্দ পায়। প্রতি বছরই প্রবারণা পূর্ণিমায় রাতের আকাশে ফানুস উড়ানো হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাখাইনরা যাতে এ উৎসব ভালোভাবে পালন করতে পারে, সে জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ২৪টি রাখাইন মন্দিরে প্রবারণা উৎসব পালন করার জন্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।",ধর্মীয় উৎসব,Positive প্রথম আলো,ধর্ম নিয়ে কাউকে আক্রমণ করার চেয়ে জঘন্য কিছু নেই,অন্যান্য,"সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটের হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ভারতের। ২৪ অক্টোবরের সে হারের পর স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে গোটা ভারতীয় ক্রিকেট দলের ওপর দিয়ে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছেন ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ শামি। পাকিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে খুব একটা ভালো করতে পারেননি, ৩.৫ ওভারে কোনো উইকেট পাননি, রান দিয়েছেন ৪৩টি। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ভারতীয় সমর্থকদের আক্রোশের শিকার হন এই পেসার। ধর্মের কারণে তাঁকে ‘পাকিস্তানি’ বলে গালি দিয়েছে নেটিজেনরা।শামির ওপর এমন আক্রমণ মোটেও ভালোভাবে নেননি ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মের জন্য শামির নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তাদের একহাত নিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান, ‘আমার মতে একজন মানুষের পক্ষে ধর্মের জন্য কাউকে আক্রমণ করার চেয়ে জঘন্য আর কিছু সম্ভব নয়। এর মাধ্যমেই বোঝা যায়, মাঠে আমরাই ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করছি, যারা মেরুদণ্ডহীনের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব কুৎসা রটাচ্ছে, ওরা নয়। ওদের তো সামনাসামনি এসে কিছু বলার মতো সাহসই নেই।’যারা ভারতীয় ক্রিকেটে শামির অবদান ভুলে গিয়ে এভাবে নোংরা ভাষায় আক্রমণ করেছে, তাদের মতো হীন লোকের পেছনে সময় নষ্ট করতে মোটেও রাজি নন ভারতীয় অধিনায়ক, ‘মোহাম্মদ শামি ভারতকে বহু ম্যাচ জিতিয়েছে। সে ও বুমরা কয়েক বছর ধরেই আমাদের দলের নিয়মিত বোলার। মানুষ যদি এগুলো মনে না রাখে, সত্যি বলতে, এ ধরনের মানুষের পেছনে আমি, শামি বা ভারতীয় দলের অন্য সবাই—আমরা আমাদের জীবনের আর একটা মুহূর্তও ব্যয় করতে চাই না।’ ভারতীয় ক্রিকেট দলে সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক এতই ভালো যে এ ধরনের নোংরা কথাবার্তা তাঁদের ওপর কোনো প্রভাবই ফেলে না, শামির আক্রমণকারীদের জানিয়ে রাখেন কোহলি, ‘আমরা সম্পূর্ণভাবে তার (শামির) পাশে আছি। আমাদের ২০০ ভাগ সমর্থন পাচ্ছে সে। যারা আক্রমণ করতে চায়, তারা চাইলে আরও বেশি মানুষ নিয়ে আমাদের আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু তাতেও আমাদের ভ্রাতৃত্ববোধ ও বন্ধুত্বের ওপর কোনো প্রভাবই পড়বে না। দলের অধিনায়ক হিসেবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমরা দলের ভেতর এমন একটি সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছি, যেখানে এসব কথা দলের পরিবেশের মধ্যে ঢুকতেই পারে না, এমনকি ০.০০০১ ভাগও না।’কোহলির মতে ধর্ম নিয়ে কখনোই বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়, ‘ধর্ম খুবই পবিত্র ও ব্যক্তিগত একটা বিষয়; সেভাবেই থাকা উচিত।’বিরাট কোহলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাউকে নিগ্রহ করাকে জঘন্যতম কাজ হিসেবে মনে করেন, ‘তারা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যকে হয়রানি করে এবং তাদের নিয়ে হাসাহাসি করে। বর্তমানে এটি একটি বিনোদনের খোরাক হয়ে গিয়েছে, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমার কাছে এদের সবচেয়ে নিম্নশ্রেণির মানুষ বলে মনে হয়। সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য একজন মানুষকে যে কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, সে সম্পর্কে ওই লোকদের কোনো ধারণাই নেই।’মানুষের মধ্যে সহানুভূতির অভাব আজকাল নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কোহলি, ‘মানুষ ব্যক্তিগত হতাশা থেকে এবং নিজেদের মধ্যে সহানুভূতি বলে কিছু না থাকার কারণেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যের নামে এ ধরনের জঘন্য কাজ করে।’",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,কোরআন তিলাওয়াতের আদব,ইসলাম ধর্ম,"কোরআনুল কারিম মানব জাতির হেদায়েতের মাধ্যম। এর মাধ্যমে মুক্তি অনুসন্ধান করা হয়। এতে রয়েছে আরোগ্য। এর দ্বারা শারীরিক ও রুহানি রোগের মুক্তি মিলে। তার অসাধারণত্ব, মোজেজার শেষ নেই। শেষ নেই এর উপকারিতার। এটি এমন এক গ্রন্থ যা পূর্ববর্তী-পরবর্তী, জিন-মানুষ সবাইকে পথ দেখায়। কোরআন উপেক্ষা করলে হেদায়েত অসম্ভব। যারা তার ওপর ভরসা রাখবে তারাই হবে কামিয়াব। যারা সে অনুসারে আমল করবে তারাই হবে পার্থিব ও আখেরাতের সৌভাগ্যে সিক্ত। এতসব বৈশিষ্ট্যের কারণ এ কোরআন সংরক্ষিত। সংরক্ষিত হওয়ার রয়েছে অনেক কারণ। তন্মধ্যে অধিক পরিমাণ তিলাওয়াত হওয়া অন্যতম। অন্যসব গ্রন্থ থেকে এটি আলাদা ও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। এর বরকত অর্জনে আদবের সঙ্গে তিলাওয়াত কর্তব্য। নিচে কোরআন তিলাওয়াতের কয়েকটি আদব উল্লেখ করা হলো। ১. অজু সহকারে তিলাওয়াত করা। সম্মানের সঙ্গে তিলাওয়াত করা। বসে, শুয়ে, দাঁড়িয়ে যে অবস্থায়ই তিলাওয়াত করা হোক সওয়াব হবে। তবে কোরআনের সম্মানটা ধরে রাখা চাই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘বুদ্ধিমান তারা, যারা আল্লাহকে (সর্বাবস্থায়) স্মরণ করে, দাঁড়িয়ে, বসে এবং শায়িত অবস্থায়।’ সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১। অবশ্য উত্তম হলো অজু অবস্থায় বসে কিবলামুখী হয়ে তিলাওয়াত করা। আসন করে বসা কিংবা টেক লাগিয়ে বসা থেকে বিরত থাকা। ২. তিন দিনের কমে খতম না করা। এর চেয়ে কম সময়ে খতম করলে তিলাওয়াতের হক আদায় হয় না। নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে তিন দিনের কমে কোরআন খতম করল সে কোরআন বোঝেনি।’ আবু দাউদ : ১৩৯৪। তবে সাত দিনে কোরআন খতম একটি মধ্যম পন্থা। নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে বলেন, সাত দিনে কোরআন খতম কর, এর চেয়ে কম সময়ে করো না।’ মুসলিম : ১১৫৯। তিলাওয়াতকারী আলেম হলে এবং কোরআনের অর্থ ও মর্ম সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা উদ্দেশ্য ভালো হলে তার জন্য এক মাসে এক খতম করাও যথেষ্ট। ৩. কোরআন তারতিল তথা খুব ভালোভাবে ধীরে ধীরে পড়া মুস্তাহাব। কোরআনের উদ্দেশ্যই হলো আয়াত নিয়ে চিন্তা-ভাবনা। ধীরে ধীরে পড়লে চিন্তা-ভাবনা করতে সহজ হয়। উম্মে সালামা (রা.) নবী (সা.)-এর তিলাওয়াত সম্পর্কে বলেছেন, ‘নবী (সা.) একেকটি অক্ষর খুব স্পষ্ট করে পড়তেন।’ নাসায়ি : ১০২২। তা ছাড়া ধীরে ধীরে পড়লে অন্তরে এর প্রভাব পড়ে অনেক বেশি। ৪. তিলাওয়াতের মাঝে কোরআনের সতর্কবাণী, কিয়ামতের অবস্থা এবং পূর্ববর্তী জাতিসমূহের ধ্বংসের বিবরণ সম্পর্কিত আয়াতে চিন্তা-ভাবনা করা এবং ক্রন্দন করা মুস্তাহাব। নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন পড়, কাঁদ। কাঁদতে না পারলে কাঁদার ভান কর।’ ইবনে মাজাহ : ১৩৩৭। আশা-আকাক্সক্ষার আয়াত অতিক্রম করলে সেগুলো প্রার্থনা করা এবং ভয়ভীতির আয়াত পড়ে গেলে তা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা। ৫. আয়াতের হক আদায় করা। সিজদার আয়াত পড়লে কিংবা কারও থেকে শুনলে সিজদা করে নেওয়া, তবে শর্ত হলো অজু অবস্থায় থাকতে হবে। মুখস্থ তিলাওয়াত করলে সে অবস্থায় অজু না থাকলে অজু করে পরে সিজদা করে নেওয়া। ৬. শব্দ করে তিলাওয়াত করা। এতটুকু শব্দ অবশ্যই হওয়া চাই যেন নিজ কানে শোনা যায়। জোরে তিলাওয়াত অন্তর জাগ্রত করে। চিন্তা-ভাবনা শানিত করে। ঘুম দূর করে এবং পড়ায়ও আসে তৃপ্তি। তবে নিজের মধ্যে লোক দেখানোর আশঙ্কা হলে আস্তে পড়াই ভালো।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"তারাবিহতে আজ: ২৬ জীবন-মৃত্যু সৃষ্টির কারণ",ইসলাম ধর্ম,"আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা মুলক, সুরা কলম, সুরা হাক্কাহ, সুরা মাআরিজ, সুরা নুহ, সুরা জিন, সুরা মুজ্জাম্মিল, সুরা মুদ্দাসসির, সুরা কিয়ামাহ, সুরা দাহর ও সুরা মুরসালাত তিলাওয়াত করা হবে। ২৯তম পারা পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর ক্ষমতা, তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ, কিয়ামত, জান্নাত, জাহান্নাম, নবীজি (সা.)-এর গুণাগুণ, অবিশ্বাসীদের ভুল চিন্তা, অকৃতজ্ঞতার পরিণাম, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের পরিণতি, আগের জাতির কাহিনি, কিয়ামতের দিন আমলনামা প্রদান, মানুষের স্বভাব, নুহ (আ.)-এর গল্প, জিনদের আলোচনা, নবীজীবনী, তাহাজ্জুদের নামাজ, আল্লাহর অনুগ্রহ, নবীজি (সা.)-এর দাওয়াত, উত্তম উপদেশ গ্রহণ, মৃত্যু, জান্নাতের নেয়ামত ও পুনরুত্থান ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে। সুরা মুলকের ফজিলত মক্কায় অবতীর্ণ সুরা মুলকের আয়াত সংখ্যা ৩০। রাসুল (সা.) প্রতি রাতে এ সুরা তিলাওয়াত করতেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোরআনের মধ্যে ত্রিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে, যেটি কারও পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এ সুরাটি হলো—তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১,৪০০) রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে প্রতি রাতে সুরা মুলক পাঠ করবে, আল্লাহ এ সুরাকে তার কবরের আজাবের প্রতিরোধক বানাবেন।’ (সহিহুল জামে, হাদিস: ৩৬৪৩) আল্লাহ মানুষের জীবন ও দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষার জন্য। দুনিয়ার এ পরীক্ষার হলে যে সঠিক পথে জীবন যাপন করে আল্লাহর পরীক্ষায় পাস করবে, সে থাকবে জান্নাতে। ভুল পথে চললে কিংবা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে থাকতে হবে জাহান্নামে। আল্লাহ বলেন, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য যে—কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’ (সুরা মুলক, আয়াত: ২) যাদের অনুসরণ করা যাবে না ৫২ আয়াতবিশিষ্ট সুরা কলম মক্কায় অবতীর্ণ। সুরার শুরুতে আল্লাহ কলমের কসম করেছেন, তাই এর নাম সুরা কলম রাখা হয়েছে। এ সুরার ১০ থেকে ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসুল (সা.)-কে ৯ ধরনের মানুষের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। যেমন যে অযথা কসম করে, নিচু স্বভাবের লোক, পেছনে দুর্নাম করে, পরচর্চাকারী, ভালো কাজে বাধা দেয়, সীমা লঙ্ঘনকারী, পাপী, পিতৃপরিচয়হীন কঠোর স্বভাবের মানুষ ও কোরআন অস্বীকারকারী। এক বাগানওয়ালার গল্প ইয়েমেনের সানা থেকে ৬ মাইল দূরে একটি বিশাল বাগান ছিল। এ কাহিনি আরবদের মুখে মুখে ফিরত। বাগানের মালিক এর থেকে উৎপন্ন ফলমূল গরিব-অসহায়দের দিত। তার মৃত্যুর পর সন্তানেরা গরিবদের বঞ্চিত করল। সম্পূর্ণ ফসল নিজেদের ঘরে তুলত। খুব ভোরে তারা ফসল তুলত, যেন গরিবরা তাদের নাগাল না পায়। আল্লাহর এ কাজ পছন্দ হয়নি। আল্লাহ বাগানে বিপর্যয় দিলেন। বাগান ধ্বংস হয়ে গেল একদিন। তারা ভোরে ফসল তুলতে গিয়ে কৃষ্ণবর্ণ এক বাগান পেল। তারা ভুল বুঝতে পারল। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইল। আল্লাহ ক্ষমা করে দিলেন। সুরা কলমের ১৭ থেকে ৩৩ নম্বর আয়াতে এ গল্পের বর্ণনা রয়েছে। সুরা হাক্কার বিষয়বস্তু মক্কায় অবতীর্ণ সুরা হাক্কার আয়াতের সংখ্যা ৫২। হাক্কা কিয়ামতের একটি নাম। অর্থ বাস্তবায়নাধীন। কিয়ামত একদিন বাস্তবায়ন হবেই, তাই এর নাম হাক্কা। সুরায় কিয়ামতের ভয়াবহতা, পূর্ববর্তী জাতির পরিণতি, কিয়ামতপূর্ব অবস্থা, নেককারদের ডান হাতে ও হতভাগাদের বাঁ হাতে আমলনামা প্রদান, জাহান্নামে কাফেরদের টেনেহিঁচড়ে নেওয়া ইত্যাদির বয়ান আছে। আল্লাহর কাছে ভালো যারা ৪৪ আয়াতবিশিষ্ট সুরা মাআরিজ মক্কায় নাজিল হয়েছে। মাআরিজ অর্থ উঁচু, সিঁড়ি। আল্লাহ নবীকে উঁচু মর্যাদা দিয়েছেন; এই সুরায় এমন আলোচনা থাকায় এ নাম রাখা হয়েছে। এ সুরার ২২ থেকে ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহর পছন্দনীয় স্বতন্ত্র মানুষের বেশ কিছু গুণের কথা এসেছে। গুণগুলো হলো ১. যারা নামাজ আদায় করে, ২. নামাজের প্রতি যত্নবান, ৩. যারা আত্মীয় ও অসহায়দের হক বুঝিয়ে দেয়, ৪. যারা প্রতিফল দিবসকে বিশ্বাস করে, ৫. আল্লাহর ভয়ে কম্পিত যারা, ৬. যারা বিশেষ অঙ্গকে সংযত রাখে। যা আছে সুরা নুহে ২৮ আয়াতবিশিষ্ট সুরা নুহ মক্কায় নাজিল হয়েছে। নুহ (আ.)-এর দাওয়াত, তাঁর জাতির অবাধ্যতা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ফজিলত ও উপকারিতা, আল্লাহর নেয়ামত, মূর্তির প্রতি কাফেরদের প্রীতি, তাদের ধ্বংস এবং মুমিনদের জন্য ক্ষমার বর্ণনা রয়েছে এ সুরায়। বিশ্বাসী জিনদের কাহিনি সুরা জিনে ২৮ আয়াতবিশিষ্ট সুরা জিন মক্কায় অবতীর্ণ। সুরার ১ থেকে ১৫ নম্বর আয়াতে নবীজির কণ্ঠে জিনদের কোরআন শোনার বয়ান আছে, তাই এর নাম সুরা জিন রাখা হয়েছে। রাসুল (সা.) তখন কয়েকজন সাহাবিকে নিয়ে উকাজের বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে নাখলা নামক স্থানে ফজর নামাজের সময় হয়। তিনি নামাজে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। সে সময় একদল জিন ওই স্থান অতিক্রম করছিল। কোরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ শুনে তারা থেমে যায়। মধুর বাণী শুনতে থাকে। তারা ইসলাম গ্রহণ করে। জাতির কাছে ফিরে গিয়ে ঘটনা শোনাল। তাদের ইসলামের দাওয়াত দিল। তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব মক্কায় অবতীর্ণ সুরা মুজ্জাম্মিলের আয়াতসংখ্যা ২০। এ সুরার শুরুতে আল্লাহ-তাআলা রাসুল (সা.)-কে রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার আদেশ দেন। কারণ আল্লাহ তখন তাঁকে নবুয়তের জন্য প্রস্তুত করতে চাচ্ছেন। আত্মসংযমের জন্য বেশি কার্যকর ও কোরআন তিলাওয়াতের সেরা সময় তাহাজ্জুদ। মধ্যরাতের পর শয্যাত্যাগ করাকে তাহাজ্জুদ বলা হয়। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় হলো রাত ২টার পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। সুরা মুদ্দাসসির, কিয়ামাহ, দাহর ও মুরসালাতে দ্বীনের দাওয়াত, কাফেরদের পরিণাম, কিয়ামতের দিন জান্নাতি ও জাহান্নামিদের অবস্থা, নসিহত, মৃত্যু-পরবর্তী জীবন, শাস্তি, মৃত্যুর সময় মানুষের অবস্থা ও কিয়ামতের পর পুনরুত্থান, মানুষ সৃষ্টির কাহিনি, মুমিনদের গুণ, জান্নাত, আল্লাহর নেয়ামত, আল্লাহর পথে আহ্বানকারীর গুণাবলি, কিয়ামত, মৃত্যু-পরবর্তী জীবন, আল্লাহর বিভিন্ন সৃষ্টি ইত্যাদির আলোচনা রয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,যেসব কাজে রোজা মাকরুহ হয়,ইসলাম ধর্ম,"রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানের জন্য ফরজ। রোজাদার ব্যক্তি সুবহে সাদিকের সময় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থাকে। এ ছাড়া যাবতীয় পাপ কাজ পরিহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রোজাদারকে। ইসলামী আইনজ্ঞরা এমন কিছু বিষয়ের উল্লেখ করেছেন, যা রোজাদারের রোজা মাকরুহ করে ফেলে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো— ১. গড়গড়াসহ কুলি করা : রোজা থাকা অবস্থায় গড়গড়াসহ কুলি করা এবং নাকের গভীরে পানি পৌঁছান মাকরুহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তুমি ভালোভাবে অজু করো এবং নাকের গভীরে পানি পৌঁছাও, যদি না তুমি রোজা থাকো। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৮৭) ২. বিনা প্রয়োজনে খাবারের স্বাদ নেওয়া : খাবারের স্বাদ গ্রহণ করা খাবার খাওয়ার সদৃশ। তাই বিনা প্রয়োজনে কেউ রোজা রেখে খাবারের স্বাদ নেবে না। কিন্তু যদি বিশেষ প্রয়োজন হয়—যেমন অসুস্থ ব্যক্তি বা শিশুর জন্য খাবার তৈরি করা, তবে তা মাকরুহ হবে না। ৩. রোজা অবস্থায় মুখে থুথু জমিয়ে তা গিলে ফেলা মাকরুহ। ৪. রোজা অবস্থায় পেস্ট বা এমন ঝাঁজযুক্ত মাজন দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা মাকরুহ। তবে মিসওয়াক করা জায়েজ। ৫. দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকলে শিঙা লাগানো মাকরুহ। ৬. কামাসক্ত হওয়ার ভয় থাকলে স্ত্রীকে স্পর্শ করা, চুম্বন করা বা অনুরূপ কোনো স্বামী-স্ত্রীসুলভ আচরণ করা মাকরুহ। ৭. সন্দেহযুক্ত সময় পর্যন্ত বিলম্ব করে সাহরি খাওয়া মাকরুহ। ৮. সাহরি ও ইফতার ছাড়া ধারাবাহিকভাবে একাধিক দিনের রোজা রাখা মাকরুহ। ৯. বেশি কষ্ট হলে মুসাফিরের জন্য রোজা রাখা মাকরুহ। ১০. রোজা অবস্থায় মুখে পানি নিয়ে বারবার কুলি করা, মাথায় পানি ঢালা এবং ভেজা কাপড় শরীরে জড়িয়ে রাখা মাকরুহ।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative ভোরের পাতা,"দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামিক কনফারেন্সের উদ্বোধন করলেন বসুন্ধরা চেয়ারম্যান ",ইসলাম ধর্ম,"বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত দেশের সর্ববৃহৎ কুরআনের নূর প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও ইসলামিক কনফারেন্সের উদ্বোধন করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। শনিবার রাত পৌনে ৮টায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) হল-৪ (নবরাত্রি)-এ জমকালো এই আয়োজনের উদ্বোধন হয়। এর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর মঞ্চে উপবিষ্ট হন। তারা অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের সময় হলজুড়ে তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। এ সময় আগত অতিথিদের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। আগত অতিথি ও পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে দেখা যায় আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে একে একে মঞ্চে ওঠেন দেশি-বিদেশি বিশেষ অতিথিবৃন্দ। এর আগে মঞ্চ কলরব শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা ইসলামী গান পরিবেশন করে মাতিয়ে তোলেন অনুষ্ঠানস্থল। আল্লাহ ও রাসুলের গুণকীর্তনে তৈরি করা ইসলামী সংগীত সকলকে মুখরিত করে তোলে। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে দেশে-বিদেশি অতিথিরা বক্তব্য রাখছেন। ইসলামিক কনফারেন্সের পর প্রতিযোগিতায় প্রথম বিজয়ী পাবে নগদ ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা। এ ছাড়া দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে সাত লাখ টাকা ও সম্মাননা। তৃতীয় বিজয়ী পাবে পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা। চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার হিসেবে দুজন দুই লাখ টাকা ও সম্মাননা পাবে। এমনকি সেরা আটে থাকা প্রতিযোগীরাও পাবে এক লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কার ও সম্মাননা। এ ছাড়া বিজয়ীরা পাবে বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ওমরাহ পালনের সুযোগ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive Dhaka Tribune,"ধর্ম প্রতিমন্ত্রী: আগামী বছর হজে ৬৫ বছরের বয়সসীমা না-ও থাকতে পারে ",ইসলাম ধর্ম,"ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে হজে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা না-ও থাকতে পারে। সেই সঙ্গে আগামী বছর পূর্ণ পরিসরে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) নবনির্বাচিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মো. ফরিদুল হক খান বলেন, আমরা আশা করছি এবারের হজ পূর্ণাঙ্গভাবে হবে এবং কোটা অনুযায়ী আমরা পূর্ণ অনুপাতে হজযাত্রীদের পাবো। সৌদি সরকারের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে এবং ৬৫ বছরের বয়সসীমার বিষয়টি পরের বার না-ও থাকতে পারে। এর আগে, কোভিড টিকার সবগুলো ডোজ নিয়েছেন এমন ৬৫ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের হজ করার অনুমতি দিয়েছিল সৌদি সরকার। গতবার, প্রায় ৬০,২৫৬ জন বাংলাদেশি হজ পালন করেছিলেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,রোজার কাফফারা কী ও কিভাবে,ইসলাম ধর্ম,"রোজার কাজা হলো ভেঙে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা রোজার প্রতিবিধান হিসেবে শুধু রোজা আদায় করা। এক রোজার বিপরীতে এক রোজা রাখা। অতিরিক্ত কিছু আদায় না করা। অন্যদিকে রোজার কাফফারা হলো প্রতিবিধান হিসেবে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা। যেসব কারণে রোজার কাফফারা ওয়াজিব হয়, তা হলো— ১. ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সম্ভোগ/নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়া। ২. ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কোনো জিনিস খাওয়া বা পান করা, যা সাধারণত খাওয়া বা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। (আলমগিরি, খণ্ড ১ পৃষ্ঠা ২০৫) ৩. যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গিবত করার পর পানাহার করে। তাহলে তার ওপর কাজা-কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব। (ফাতহুল কাদির খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৮০) ৪. রোজাদার যদি সমকামিতায় লিপ্ত হয়, তাহলে তার ওপর কাজা-কাফফারা দুটিই ওয়াজিব। (আল-ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২২৩) ৫. পুরুষ যদি নারীর সঙ্গে জোরজবরদস্তি করে সম্ভোগ করে, তাহলে নারীর ওপর শুধু কাজা ওয়াজিব, কাফফারা নয়। আর পুরুষের ওপর কাজা-কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব। (আল-ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২২৪) রোজার কাফফারা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, এই হতভাগা স্ত্রী সহবাস করেছে রমজানে। তিনি বলেন, তুমি কি একটি গোলাম আজাদ করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বলেন, তুমি কি ক্রমাগত দুই মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বলেন, তুমি কি ৬০ জন মিসকিন খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। এমতাবস্থায় নবী (সা.)-এর কাছে এক আরাক অর্থাৎ এক ঝুড়ি খেজুর এলো। নবী (সা.) বলেন, এগুলো তোমার তরফ থেকে লোকদের আহার করাও। লোকটি বলল, আমার চেয়েও অধিক অভাবগ্রস্ত কে? অথচ মদিনার উভয় লাবার অর্থাৎ হাররার মধ্যবর্তী স্থলে আমার পরিবারের চেয়ে বেশি অভাবগ্রস্ত কেউ নেই। নবী (সা.) বলেন, তা হলে তুমি স্বীয় পরিবারকেই খাওয়াও। (বুখারি, হাদিস : ১৯৩৭) ইসলামী শরিয়তে রোজা ভঙ্গ করার প্রতিবিধান রাখলেও তার শত ভাগ ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি (শরিয়ত অনুমোদিত) কোনো কারণ ছাড়া বা রোগ ছাড়া রমজান মাসের একটি রোজা ভেঙে ফেলে, তার পুরো জীবনের রোজা দিয়েও এর ক্ষতিপূরণ হবে না। যদিও সে জীবনভর রোজা রাখে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৭২৩) রোজার কাফফারা হলো রোজা ভঙ্গকারী দাস মুক্ত করতে অক্ষম হলে দুই মাস লাগাতার রোজা রাখবে। আর দুই মাস রোজা রাখতে ব্যর্থ হলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে খানা খাওয়াবে অথবা ৬০ জন মিসকিনকে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ গম, আটা, চাল ইত্যাদি অথবা সমপরিমাণ নগদ টাকা দেবে। একজন মিসকিনকে ৬০ দিন দুই বেলা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। (আলমগিরি ১/৩০৫, রদ্দুল মুহতার ৩/৩৯০)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"আল ফাজারী: আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের পথিকৃৎ মুসলিম বিজ্ঞানী ",ইসলাম ধর্ম,"আল ফাজারী'র পুরা নাম মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম ইবনে হাবীব ইবনে সোলায়মান ইবনে সামরা ইবনে জুনদাব আল ফাজারী। তিনি ছিলেন একজন মুসলিম দার্শনিক, গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিদ। তার পিতা ইব্রাহীম আল ফাজারীও একজন জ্যোতির্বিদ এবং গণিতবিদ ছিলেন। তিনি কোন অঞ্চলের মানুষ ছিলেন সেটা পরিস্কারভাবে জানা যায় না। তবে কোন কোন ঐতিহাসিক তাকে আরব হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আবার কোন কোন ঐতিহাসিক তাকে পারসীয়ান হিসাবে উল্লেখ করেছেন। জানা যায়, আল ফাজারী ৭৪৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন এবং ৮০৬ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। আল-ফাজারী আরবী ও ফারসী ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তিনি বহু বৈজ্ঞানিক গ্রন্থের অনুবাদক ছিলেন। তিনি অষ্টম শতাব্দীর ইসলামী স্বর্ণযুগের মানুষ ছিলেন। ইসলামী বিশ্বের এবং আধুনিক বিশ্বের প্রথম অ্যাস্ট্রোল্যাব নির্মাণের কৃতিত্বও তাঁর। অ্যাস্ট্রোল্যাব হলো একটি বিস্তৃত নত-পরিমাপক এবং একটি অ্যানালগ ক্যালকুলেটর। যা কিনা জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন ধরনের কাজ এবং সমস্যা সমাধানে সক্ষম একটি যন্ত্র। ঐতিহাসিকভাবে, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং নাবিকরা পথে কিংবা সমুদ্রে চলার সময় তারকা দেখে দিক নির্ধারণর সুবিধায় এটি ব্যবহার করত বলে জানা যায়। যা ইসলামিক স্বর্ণযুগ, ইউরোপীয় মধ্যযুগ, শাস্ত্রীয় প্রাচীনত্ব এবং ইউরোপীয়দের আধুনিক জ্যোতির্বিদদের টেলিস্কোপ আবিষ্কারের যুগের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল। তাকে আধুনিক জ্যােতির্বিজ্ঞানের পথিকৃৎ বলা হয়। ইয়াকুব ইবনে তারিক ও তার পিতার সাথে তিনি ৮ম শতাব্দীতে ভারতীয় গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী ""ব্রহ্মগুপ্ত"" কর্তৃক সংস্কৃত ভাষায় লিখিত ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক পুস্তক ""ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত"" থেকে আজ-জাজিল আল সিনা-আল-আরব বা ""সিন্দহিন্দ"" নামে আরবীতে অনুবাদ করতে সহায়তা করেন। ব্রাহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত হলো ব্রহ্মার সংশোধিত নীতিমালা বা সিদ্ধান্ত। ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মগুপ্তের লেখা এবং বিশেষত সেই সময়ের তুলনায় একটি বিশাল আকৃতির বই। যা কোন গাণিতিক চিহ্নবিহীন পদ্যে রচিত গ্রন্থ। গাণিতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর লিখিত এই পুস্তকটি গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে শূন্য নিয়ে কার্যক্রমের তথা শূন্যের ভূমিকার একটি উত্তম ধারণা, ধনাত্মক বা ঋণাত্মক যেকোন সংখ্যা প্রয়োগের কিছু নিয়ম, বর্গমূল নির্ণয়ের একটি নিয়ম, ধারার সমষ্টি নির্ণয়ের পদ্ধতি উপরন্তু ব্রহ্মগুপ্তের অভেদ ও ব্রহ্মগুপ্তের উপপাদ্য এবং রৈখিক ও দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধান। দ্বিঘাত সমীকরণ হচ্ছে প্রাথমিক বীজগাণিতে, চতুর্ভুজ সমমানের সমাধান। আল ফাজারী'র এই অনুবাদটিই ছিল সেই মাধ্যম, যার দরুন হিন্দু সংখ্যা পদ্ধতি (অর্থাৎ আধুনিক সংখ্যা চিহ্নিতকরণ) ভারত থেকে মুসলিম বিশ্বে স্থানান্তরিত হয়েছিল। যার ফলে আরবের সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে নতুন সেতুবন্ধনের দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"সচ্চরিত্রবান ব্যক্তির হাতে জান্নাতের চাবি ",ইসলাম ধর্ম,"চরিত্র মানুষের আচারণগত একটি দিক। সচ্চরিত্র মানুষের অর্জিত অমূল্য সম্পদ। সচ্চরিত্র অর্জনের কোনো বিনিময় নেই। এটি মানুষের পরিপূর্ণ ব্যাবহারিকগুণ। সচ্চরিত্র অর্জনের দুটি ধারা। এক জ¦ীনা ব্যভিচার মুক্ত থাকা। ব্যভিচারের অপরাধ চর্মের সংস্পর্শেই ঘটে থাকে। সুতরাং শারীর থেকে যৌনাঙ্গ বিচ্ছিন করাও যেমন সম্ভবপরনয় তেমনি জীবন থেকে দুশ্চরিত্রের ছাপ মুছে ফেলাও সম্ভাব হয় না। আজীবন এর মর্মন্তুত গ্লানি বয়ে বেড়ানো ছাড়া উপায় থাকে না।পৃথিবীতে অনেক মূল্যবান বিষয় আছে যা অর্থ এবং কোনো কিছুর বিনিময়ে লাভ করা যায়। কিন্তু সচ্চরিত্র কখনো বিনিময় যোগ্য নয়। এটা ব্যক্তির শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ব্যাবহারিক ও আচরণগত সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ। দুই, সচ্চরিত্র অর্জনের প্রথম ধারার সাথে দ্বিতীয় ধারা সাপেক্ষ। সত্যবাদিতা, সততা সৎসাহস, কর্তব্য নিষ্ঠা, দায়বদ্ধতা,বুদ্ধিমত্তা প্রভৃতি গুণাবলীর অধিকারী হওয়া। এ সব গুণাগুণ প্রথম ধারার সাথে সংশ্লিষ্ঠ। প্রথম ধারার ব্যভিচার মুক্ত ব্যক্তিই এ সব মানবিক গুণগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয়। সকল পাপের মূল হচ্ছে ব্যক্তির মধ্যে মিথ্যার বাসনা। গাছ মাটির উপরে স্থির ভাবে বিরাজমান থাকার মূলে রয়েছে মাটির মধ্যে শিকরের সাথে তার গভীর বন্ধন। ব্যক্তির অপরাধের মূলেও থাকে মিথ্যার সাথে নীতির বন্ধন। মিথ্যাশ্রয়ী ব্যক্তির বিচারিক চেতনা মিথ্যার সূত্রে সত্যকে পরাস্থ করে মিথ্যাকে সত্য বলে তুলে ধরা। ব্যক্তি যখন সত্যে বিশ^াসী হয়, সততা তখন অতি সহজেই তার চিন্তা চেতনায় বর্হির্প্রকাশ পায়। বিবেক তাকে অসৎকাজে বাধা প্রদান করে থাকে। সত্যনিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যক্তি তখন সততার আশ্রয় নেন। জ¦ীনা-ব্যভিচারের মত কঠিন পাপ করতে সে ভয় পায়। ব্যভিচারের পরিনাম, আল্লাহ প্রদত্ত দুনিয়া ও পরকালিন কঠিন শাস্তি তার মনকে অপকর্ম হতে বিরত থাকতে উজ্জিবীত করে। সচ্চরিত্র মানুষের মহামূল্যবান সম্পদ। এ সম্পদ আজীবন কঠিন সাধানার মাধ্যেমে অর্জন করতে হয়। এ সাধনার মূলে ব্যক্তির পঞ্চইন্দ্রিয়ের ভোগমোহকে বর্জন করে বৃহত্তর স্বার্থ জান্নাত লাভের আশায় আল্লাহতায়ালর প্রতি ভয় ও ভরসা রেখে জীবন চলতে হয়। রাসুলে করিম সা. উত্তম চরিত্রের মর্যাদা তাহাজ্জুদ গোজার ও অবিরাম সিয়াম সাধনা কারীর চেয়েও অধিক বলেছেন। জীবনভর রোজা রাখা আর রাতের পর রাত তাহজ্জুদ পরা বড় কঠিন সাধনা। আল্লাহতায়লা সচ্চরিত্রের পুরষ্কার ঘোষনা করে বলেছেন “ বান্দা তোমর চরিত্রকে সুন্দর কর আর জান্নাতুল ফির দাউসের চাবি হাতে নাও। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের এ অঙ্গিকার, নামাজ রোজা, পর্দা, তেলাওয়াত, জিকির ও দানের বিনিময় নয়, সচ্চরিত্রের বিনিময়ে। সচ্চরিত্রবান বান্দার এবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণ যোগ্য। হাদিসে আছে“ উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীর অধিকারী মুমিনের সারাদিন রোজা ওে সারারাত নামাজের সওয়ার প্রদান করা হয়”। অর্থ হলো, যে বান্দা মুমিন, সে আল্লাহর দেয়া ফরজ বিধানগুলো যথাযথ পালন করে, খুব বেশী নফল রোজা আদায় করে না কিন্তু যে সচ্চরিত্রবান। তবে মহান আল্লাহ তায়লা তার এ সচ্চরিত্রের দরুন ঐ সবওলি আল্লাহদের সমপরিমাণ সওয়াব তাকে দান করবেন, যারা সারাদিন রোজা ও সারাদিন নফল নামাজ পালন করে। সচ্চরিত্র অর্জন যেমন কঠিন তেমনি সহজ, শুধুমাত্র আল্লহ তায়লার ফরমান পালনার্থে আল্লাহ প্রদত্ত কঠিন শাস্তি দোষককে ভয় করা এবং আল্লাহ তায়লা ঘোষিত অনন্ত শান্তি জান্নাতে বিশ^াসী থাকা। ইংরেজী প্রবাদে আছে, ঈযধৎধপঃবৎ রং ঃযব ঈৎড়হি ড়ভ সধহ. অর্থাৎ চরিত্র হলো মানুষের মূকুট স্বরূপ। মূকুট শরীরের শোভা, সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। শরীরে যত মূল্যবান পোষাক থাক না কেন, উর্ধ্ব অঙ্গে ব্যবহৃত মূকুটের সৌন্দর্য ব্যক্তির শরীরে শোভাও মর্যাদা বৃদ্ধি করে। মানুষের চারিত্রকগুণ বহুমূখী। তার মধ্যে নৈতিক চরিত্রই ব্যক্তির চরিত্রের পরিচয়ে অগ্রে স্থান পায়। নৈতিক চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তিই অন্যান্য চারিত্রিক গুণাবলীর ধারক বাহক হয়ে থাকে। সচ্চরিত্রবান ব্যক্তি সত্যনিষ্ঠ, ন্যায় পরায়ন, বিনয়ী ও আত্মসংযমী হয়। সে অন্যায় কে প্রশ্রয় দেয় না, ক্রোধে আত্মহারা হয় না এবং নিজগর্বে গর্বিত হয় না,কারও সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করে না। চরিত্র গঠনের প্রথমও প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে পরিবার। শিশুর মানসিক শিক্ষার প্রকৃষ্ট সময় এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত। শিশু এ সময়ে শুধু অনুকরণমূলক শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে বড়দের নিকট হতে। সৎ ও সততার প্রশিক্ষণ শিশুকে দিতে হয় কৈশর পর্যন্ত। ধর্মীয় বিশ^াস, সত্যবাদিতা,বিনয় ন¤্রতা, দয়া, ক্ষমা, নিয়মানুবর্তিতা অপচয়, পূণ্য প্রভৃতি শিশুর অন্তরে দৃঢ় বিশ^াস জন্মানো পিতামাতার দায়িত্ব। নৈতিকতা সমৃদ্ধ বই পত্র মহাপুরুষদের জীবনী পড়ার অভ্যস্ত করা একান্ত কর্তব্য। এসময়ে শিশুকে সত্য- মিথ্যা, পাপ- পূণ্য,ন্যায়- অন্যায়, হালাল- হারাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়া অত্যন্ত জরুরী বিষয়। শিশুর কমল মনে এসব বিষয়গুলো অতি সহজেই প্রভাব পরে। মিথ্যা বললে পাপ হয় পাপের ফলে শাস্তি পেতে হয় এসব নীতি নির্ধারক বিষয়গুলো শিশু সহজেই বিশ^াস করে,কারণ শিক্ষক তার পিতামাতা। পিতামাতাই শিশুর একমাত্র বিশ^স্ত ব্যক্তি কারণ জন্মগত সম্পর্ক ও সাহচর্য। সুতরাং আদর্শবান পিতা মাতার সন্তানই আদর্শবান হয়। আদর্শবান সন্তানের দ্বারাই আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠিত হয়। আদর্শ সমাজের মাধ্যমে আদর্শ জাতি গঠন করা যায়। পরিবেশ মানুষের জীবনে গভীর ভাবে রেখাপাত করে। পরিবেশ মানুষকে সৎ অসতে প্রভাবিত করে। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের জীবন চলার ক্ষেত্রে সঙ্গির প্রয়োজন দেখা দেয়। তাই সৎ সঙ্গ শিশুর জীবনে অত্যন্ত গরুত্বপূর্ণ। সব বয়সেই যেহেতু সৎ সঙ্গের প্রভাব থাকে সেহেতু সবাইকে সৎসঙ্গীর সাথে চলাফেরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতরাং সব বয়সেই অসৎ সঙ্গী থেকে দূরে থাকতে হয়। সঙ্গ দোষ ও সঙ্গগুণ দ’টোই ক্রিয়াশীল। সঙ্গ দোষে দোষী ব্যক্তি সুপথে ফিরে আসার সংখ্যা নগন্য। অসৎসঙ্গির কারণে বাস্তবে যা ঘটছে, আজ তা কারও অজানা নয়। রাছুলে করিয় সা. বলেছেন “ নেককার সাথি ও অসৎ সাথীর দৃষ্টান্ত একজন আতর রহনকারী ও একজন কামারের মত। আতর রহনকারী হয় সে তোমাকে আতর দেবে অথবা তুমি তার থেকে আতর খরিদ করবে, আর নাহলে কমপক্ষে তুমি তার থেকে সুঘ্রাণ পাবে। আর কামার সে হয় তোমাকে পুড়িয়ে দেবে অথবা তুমি তার থেকে দূর্গন্ধ অনুভব করবে”। এ হাদিসের বর্ণিত উদাহরন থেকে অতিসহজেই অনুমেয় যে, সৎ ও অসৎ সঙ্গির স্বভাবজাত প্রভাব সঙ্গির পর অনিবার্য। সচ্চরিত্র গঠনে এ হাদিসটি ছোটদের জন্য দৃষ্টান্ত স্বরূপ যার প্রযোজোক কর্তা পিতামাতা। বড়দের ব্যাপারেও হাদিসে আসছে “ বন্ধু নির্বাচন করলে তাকে বন্ধুর দ্বীনের উপর চিন্তা করতে হবে কাকে সে বন্ধু বানাবে”। অর্থাৎ দ্বীনদার ব্যক্তিই মুমিনের প্রকৃত বন্ধু। বন্ধু নির্বাচন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে সততার সাথে সত্যবাদীদের সাহচার্য অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন- “হে ঈমানদারগণ আল্লাহকে ভয় কর আর শুধু সত্যবাদীদের সাথে থাক”। বন্ধু নির্বাচন নিয়ে ইংরেজিতে প্রবাদ আছে- অ সধহ শহড়ংি ষড়ু ঃযব পড়সঢ়ধহবু যব শববঢ়ং. অর্থাৎ বন্ধু নির্বাচনে বন্ধুকে জেনে, শুনে, বুঝে তবেই বন্ধু নির্ধারণ করা প্রয়োজন। রাছুল করিম সা. নিজের অধিক মহব্বতের কথাব্যক্ত করে বলেছেন “কিয়ামতের দিন আমার কাছে ঐ ব্যক্তিই সর্বাধিক প্রিয় যার চরিত্র ভালো। সচ্চরিত্রবান বান্দাকে আল্লাহতায়ালা উত্তম পুরুষ্কার হিসেবে জান্নাতুল ফেরদাউসের ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহর নবীও তাঁর সচ্চরিত্রবান উম্মতকে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। আল্লাহর নবী বলেন “ “কেয়ামতের দিন আমলের পাল্লায় সবচেয়ে ভারী আমল হবে সচ্চরিত্র”। পাপ পূর্ণ্যরে ফল আখেরাতের জীবনে অবশ্যই প্রদান করা হয়। এ বিশ^াসে বিশ^াসীগণ আল্লহ প্রদত্ত শাস্তিকে ভয় করে বিধায় জ¦ীনা - ব্যভিচারের দিকে তাকায় না। টি.ভি অম্লীলতায় ভরা। ইন্টারনেট, স্মার্টফোন তো চরিত্র বিধ্বংশী যৌনযন্ত্র। ধ্বংসের যত উপকরণ আছে তা আজ ঘরে ঘরে শোভায় পরিণত হয়েছে। আমদের শিক্ষা সংস্কৃতি পাশ্চাতের অপসংস্কৃতির উষ্ণ জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। এ ¯্রােতে আত্মাহুতি দিচ্ছে আমাদের মুসলিম যুবক যুবতীরা। চারিত্রিক সৌন্দর্যের সাথে দৈহিক সৌন্দর্যের কোন সম্পর্ক নেই। আল্লাহ তায়ালা মানুষের দৈহিক সৌন্দর্য দেখেন না, তিনি দেখেন বান্দার চারিত্রিক সৌন্দর্য ও সরল অন্তকরণ। অন্তরের অনুভূতি আচরণে প্রকাশ পায়। পবিত্র অন্তরের অনুভূতির বহিপ্রকাশ হচ্ছে সচ্চরিত্র। পবিত্র অন্তর অর্জনের উপায় হচ্ছে আল্লাহ তায়লার ধ্যান খেয়ালকে অন্তরে পোষণ করা। সুতরাং মানুষ যখন আল্লাহ তায়লার প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল হয়, তখন চরিত্র বিনাশকারী কর্মকান্ড থেকে সে নিজেকে রক্ষা করতে পারে অর্থাৎ আল্লহ তায়লাই তাকে রক্ষা করেন। হাদিসে আছে ‘ যে কামনা সুন্দরী কোনো নারী আলিঙ্গন থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে সে জান্নাতী”। হযরত ইউসুব আ. জুলায়খার কামনা হতে রক্ষার জন্য আল্লাহর প্রতি নিজেকে সফর্দ করে ছিলেন বিধায় আল্লাহতায়লা তাকে তাৎক্ষণিক ভাবে রক্ষা করে ছিলেন। আল্লাহর কোনো বান্দা বান্দী এ ধরনের সমস্যায় নিúতীত হলে সে যদি আল্লহ তায়ালার উপর নিজেকে ছেড়ে দেয়, মহান রববুল আলামীন তাঁর বান্দার সন্ত্রম রক্ষার ব্যবস্থা করতে বিন্দু মাত্র দেরী করেন না। ইংরেজি প্রবাদে আছে ডযবহ রং সড়হবু ষড়ংঃ রং হড়ঃ হড়ঃযরহম ষড়ংঃ. অর্থাৎ আর্থিক ক্ষতি কোনো ক্ষতি নয় কেননা শ্রম ও চেষ্টার মাধ্যমে তা পূরণ করা সম্ভব। ডযবহ রং যবধষঃয ষড়ংঃ রং ংড়সবঃযরহম ষড়ংঃ. স্বাস্থ্য নষ্ট হলে, স্বাস্থ্য সেবা সত্ত্বেও তা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাওয়া যায় না। ডযবহ রং ঈযধৎধপঃবৎ ষড়ংঃ রং বাবৎুঃযরহম ষড়ংঃ. অর্থাৎ ব্যক্তি যখন তার চরিত্রকে নষ্ট করে ফেলে, তখন সে সম্পূর্ণই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কেননা সচ্চরিত্র মানুষের সর্বোত্তম আচরণমূলক গুণ। এ গুণ একবার বিনষ্ট হলে তা পূরণ যোগ্য নয়। আজীবন তার গ্লানিবয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। পরকালেও এ পাপের কঠিন শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর কোরান পাকে সূরা বনি ইসরাইলের বত্রিশ নং আয়াতে বলেছেন, “ব্যভিচারের ধারের কাছেও যেয়ো না। এটা অত্যন্ত নিলর্জ্জতা ও চূড়ান্ত পর্যায়ের খারাপ পথ অবলম্বন করা। ব্যভিচারের শাস্তিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ যোগ্য বর্ণণা হচ্ছে;-“ব্যভিচারি নারী পুরুষকে দোযকের ভেতর একটি গর্তে উলঙ্গ অবস্থায় পোড়ানো হবে”। সে গর্তের নীচের মুখ ছোট উপরের মুখ প্রশস্থ। ব্যভিচারী নারী পুরুষ সেখানে আগুনে জ¦ালবে । তারা গর্তের নীচের মুখে দৌড়ায়ে গেলে আগুন পিছে পিছে যাবে। আবার উপরে মুখে দৌড়ায়ে গেলে আগুন তাদের বেরিকেট দিয়ে পুড়াতে থাকবে। এ ভাবে ব্যভিচারী নারী পুরুষ অনন্তকাল ধরে আগুনে পুড়তে থাকবে। হায় অপকর্মে লিপ্ত নারী পুরুষ। ধীক তোমার মানব জীবন। তুমি তো পশুর চেয়েওে নিকৃষ্ট। আল্লাহতায়ালা তার কালেমে পাকে বলেছেন- “উলায়িকা কালআনয়ামি বাল হুম আদাল। অর্থাৎ তারা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট”। ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে- “অ সধহ রিঃযড়ঁঃ ঈযধৎধপঃবৎ রং রহ ঃড় ধহরসধষ” অর্থাৎ চরিত্রহীন ব্যাক্তি পশুর চেয়ে অধম। চরিত্রবান হতে হলে লোভ- লালসা ও অসৎ প্রবৃত্তির নানা কু প্রলোভেন পরিহার করার শক্তি অর্জন করতে হয়। এ শক্তি অর্জনের একমাত্র পথ ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা। মনুষ্য সমাজে চরিত্র বলেই লোকে অমরতা লাভ করে থাকে। প্রতিভাবান ব্যক্তিও যদি চরিত্রবান না হয়; তাহলে সে সমাজে শ্রোদ্ধা অর্জন করতে পারে না। এ জন্যই বলা হয়, দুজন বিদ্যান হলেও পরিত্যক্ত। চারিত্রিক মাধুর্যের অধিকারী মানুষই অমরতা লভ করে। সমাজ ও ইতিহাসের পাতায় তার নাম ভাস্বর হয়ে থাকে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,দারিদ্র্য বিমোচনে জাকাত,ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত দারিদ্র্যের থাবা বিস্তৃত হচ্ছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিশ্বমানবতার জন্য চরম এক অভিশাপ। তাই ধনী ও দরিদ্রের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ইসলাম কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আর্থিক সাহায্যের বিধান রেখেছে। সম্পদ যেন শুধু বিত্তবানদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না থাকে, সে জন্য এতে দরিদ্রের একটা নির্দিষ্ট প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করে দেওয়া হয়েছে। একটি সুখী, সুন্দর ও উন্নত সামাজিক পরিবেশ গঠনে ধনাঢ্য মুসলমানদের অবশ্যই তাদের নিসাব পরিমাণ সম্পদের একটি নির্ধারিত অংশ দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিদের দুর্দশা মোচনের জন্য ব্যয় করতে হবে। ফলে অসহায় ও দুস্থ মানবতার কল্যাণই হবে না; বরং সমাজে আয়বণ্টনের ক্ষেত্রেও বৈষম্য হ্রাস পাবে। পবিত্র কোরআনে ধনসম্পদ বণ্টনের মূলনীতি সম্পর্কে ঘোষণা হয়েছে, ‘যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান, কেবল তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে।’ (সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭) দারিদ্র্য বিমোচনে ইসলাম অর্থনৈতিক বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। অর্থবিত্তের মাধ্যমেই সমাজে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধি পায়। ইসলামি বিধানে সমাজের দরিদ্র জনসাধারণের আর্থিক প্রয়োজনের ব্যাপকতার প্রতি লক্ষ রেখে তৃতীয় হিজরিতে ধনীদের ওপর জাকাত ফরজ করা হয়েছে। সমাজে ধনসম্পদের আবর্তন ও বিস্তার সাধন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের মহান উদ্দেশ্যেই জাকাতব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকার সমস্যা সমাধান জাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। জাকাত বণ্টনের খাতগুলো এ লক্ষ্যেই নিবেদিত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সাদকা বা জাকাত তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত, জাকাত আদায়কারী কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্তাকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণ ভারাক্রান্ত ব্যক্তিদের, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও মুসাফিরদের জন্য; এটা আল্লাহর বিধান।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ৬০) দারিদ্র্য দূরীকরণে জাকাতের মতো আর কোনো অর্থব্যবস্থাই সমাজের সার্বিক হিত সাধন করতে পারে না। ইসলামি সমাজে তাই জাকাত একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ বণ্টনব্যবস্থা। জাকাত ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম ফরজ আর্থিক ইবাদত। জাকাত হতদরিদ্র, অভাবী ও অক্ষম জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করে। নবী করিম (সা.) তাঁর জীবনব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত আরবদের তিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী জাতি হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তাঁর প্রবর্তিত অর্থব্যবস্থার মূল লক্ষ্য ছিল সমাজে সুষম, ভারসাম্যপূর্ণ ও কার্যকরী জাকাতব্যবস্থা প্রচলনের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন। জাকাত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জাকাত ইসলামের সেতু।’ (মুসলিম) ধনী লোকেরা তাদের ধনসম্পদের ৪০ ভাগের এক অংশ অসহায় দরিদ্রদের মধ্যে জাকাত বিতরণ করলে গরিব লোকেরা দারিদ্র্যের নিষ্ঠুর কশাঘাত থেকে মুক্তি পায়। ইসলামি বিধান অনুসারে জাকাত প্রদানের ফলে সমাজের ঋণগ্রস্ত গরিব-দুঃখী, অনাথ, বিধবা, বৃদ্ধ, রুগ্ণ, পঙ্গু ও অক্ষম ব্যক্তিরা মৌলিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে অভাব মোচন করতে পারে। জাকাতের অর্থ অভাবী মানুষের হাতে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বণ্টিত হয়ে তাদের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হয়। ধনী লোকেরা যদি ঠিকমতো জাকাত আদায় করে, তাহলে সমাজে কোনো অন্নহীন, বস্ত্রহীন, আশ্রয়হীন, শিক্ষাহীন দরিদ্র লোক থাকতে পারে না। জাকাতের সুষ্ঠু উশুল ও সুষম বণ্টনের মাধ্যমেই মুসলিম সমাজের দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব। যেমনভাবে পবিত্র কোরআনে ঘোষিত হয়েছে, ‘তাদের ধনসম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক।’ (সূরা আল-জারিআত, আয়াত: ১৯) জাকাতের মাধ্যমে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়। ইসলামে সম্পদ বণ্টনব্যবস্থায় ধনীরা তাদের সম্পদের কিছু অংশ জাকাত দিলে গরিবদের সম্পদ কিছুটা বেড়ে যায় এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর হয়। জাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা মহানবী (সা.)-এর আদর্শ মদিনা রাষ্ট্র, খোলাফায়ে রাশেদিনের শাসনামলে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও দারিদ্র্য বিমোচন করে মুসলিম উম্মাহকে সমকালীন বিশ্বে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত জাতিতে পরিণত করেছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় আল্লাহর কাছে দারিদ্র্য থেকে মুক্তির প্রার্থনা করতেন এবং বরকতের জন্য দোয়া করতেন। তিনি মানুষকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের ওপর সাদকা (জাকাত) অপরিহার্য করেছেন, যা তাদের ধনীদের কাছ থেকে আদায় করে দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম) জাকাতের মাধ্যমে ইসলাম সমাজকে দারিদ্র্য থেকে উদ্ধার করতে চায়। কিন্তু দেশে যেভাবে জাকাত আদায় ও বণ্টন করা হয়, এতে জাকাতগ্রহীতা স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের পেশা বা কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারে না। দেশের আদায়যোগ্য জাকাতের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও অধিক হতে পারে; যা দ্বারা প্রতিবছর দুই লাখ লোকের পুনর্বাসন সম্ভব। পরিকল্পিতভাবে কাজ করলে এভাবে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব। তাই সমবেত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে ইসলামের বিধান অনুযায়ী জাকাত আদায় ও তার যথাযথ বণ্টনের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানুষের স্থায়ী কল্যাণের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যায়যায়দিন,"কাছের ব্যক্তি ছাড়া কাউকে স্বপ্নের কথা বলা ঠিক নয় ",ইসলাম ধর্ম,"স্বপ্নের উৎস তিনটি। ১. মহান আল্লাহ–তায়ালা, ২. কল্পনা, এবং ৩. শয়তান। নবীরা আল্লাহর কাছ থেকে আসা স্বপ্ন দেখেছেন। আল্লাহ তাঁদের স্বপ্ন শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছেন। নিজেদের কল্পনা থেকেও আল্লাহ তাঁদের স্বপ্নকে রক্ষা করেছেন। নবীদের স্বপ্ন তাই অহি হিসেবে গণ্য করা হয়। হজরত ইব্রাহীম (আ.) যেমন হজরত ইসমাইল (আ.)–কে কোরবানি করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কল্পনা থেকে উদ্ভূত স্বপ্নকে বলা হয় হাদিসুন নাফস। ধরা যাক, ঢাকা শহরের আপনি একটি ফ্ল্যাটের মালিক হতে চান। এ নিয়ে সব সময় আপনি ভাবছেন। স্বপ্ন দেখলেন, আপনি একটি ফ্ল্যাটে বাস করছেন। এটা আপনার কল্পনা থেকে উদ্ভূত স্বপ্ন। শয়তানের পক্ষ থেকে যে স্বপ্ন আসে তা আসলে দুঃস্বপ্ন। আরবিতে একে বলা হয় আল হুলম। আল হুলম মানে অশুভ স্বপ্ন। এ ধরনের স্বপ্ন দেখার পর মনে ভয় বা আতঙ্কের জন্ম হয়। এ ধরনের স্বপ্নের মাধ্যমে শয়তান অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। এ ধরনের স্বপ্ন নিয়ে পড়ে থাকা ঠিক নয়। হজরত আবু হুরাইরাহ্ (রা.)–এর বরাতে একটি হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের সময় যখন আসন্ন তখন খাঁটি মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের মধ্যে সত্যভাষীরা সবচেয়ে সত্য ও বাস্তব স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। মুসলমানের স্বপ্ন নবুয়তের পঁয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। স্বপ্ন তিন প্রকার। ভালো স্বপ্ন আল্লাহর কাছ থেকে সুসংবাদ। আরেক ধরনের স্বপ্ন আসে শয়তানের পক্ষ থেকে, তা দুর্ভাবনা তৈরি করে। মানুষ তার মনের সঙ্গে যে কথা বলে এবং সে যা চিন্তা–ভাবনা করে তা থেকে অন্য আরেক ধরনের স্বপ্ন উদ্ভূত। অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কোনো স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন ঘুম থেকে উঠে দাঁড়ায় এবং নামাজ আদায় করে। আর মানুষের কাছে সে স্বপ্নের কথা গোপন রাখে। দুঃস্বপ্নের প্রতিকার দুঃস্বপ্ন দেখার পর কী করতে হবে সে সম্পর্কে মুসলিম শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু কাতাদাহ্ (রা.) বলেছেন যে তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘সুস্বপ্ন আসে আল্লাহর কাছ থেকে, আর দুঃস্বপ্ন শয়তানের কাছ থেকে। অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কোনো বিষয় স্বপ্নে দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন সে যেন তার বাঁপাশে তিনবার থুতু ফেলে এবং আউজুবিল্লাহসহ সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চায়। এ রকম করলে সে তার খারাপ কিছু করতে পারবে না।’ কেউ দুঃস্বপ্ন স্বপ্ন দেখলে তিনি পাশ পরিবর্তন করে ঘুমাবেন। সম্ভব হলে নামাজ পড়বেন। যে স্বপ্নই কেউ দেখুক না কেন, একেবারে কাছের ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে স্বপ্নের কথা বলা ঠিক নয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,কুয়ালালামপুরে পর্যটকদের নজর কাড়ে যে মসজিদ,ইসলাম ধর্ম,"কুয়ালালামপুর শহরে দৃষ্টি নন্দন যে কয়েকটি ভবন ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের নজর কাড়ে তার একটি হলো মসজিদ জামেক। ভারতীয় মুসলিম মুঘল স্থাপত্য শৈলীতে তৈরি এ মসজিদটি দেখে যে কোনো ধর্মের লোকই বিমোহিত হন। জাভা স্ট্রিট এবং মালয় স্ট্রিট এলাকায় মালয় সম্প্রদায়ের জন্য কয়েকটি মসজিদ আগে বিদ্যমান ছিল, কিন্তু জামেক মসজিদটি কুয়ালালামপুরে নির্মিত প্রথম বড় মসজিদ। ব্রিটিশ স্থপতি এবি হাবব্যাক ডিজাইন করেন এই দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির। যিনি ইন্দো-সারাসেনিক শৈলীতে মসজিদটির নকশা করেছিলেন যা ভারতীয় মুসলিম মুঘল স্থাপত্য শৈলীকে শিথিলভাবে প্রতিফলিত করে। পিয়াজ এর মত দেখতে ঠিক এর গম্বুজগুলো। মসজিদ এর ইট-এবং-প্লাস্টার ব্যান্ডেড মিনার এবং তিনটি সুশোভিত গম্বুজ মোগল এবং মুরিশ শৈলী ধারন করে। গোমবাক এবং ক্লাং নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত মসজিদ জামেক মালয়েশিয়ার প্রথম ইটের মসজিদ। যা ১৯০৯ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। ১০৬৫ সালে জাতীয় মসজিদ খোলার আগ পর্যন্ত এটি শহরের ইসলামী উপাসনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ২৩ মার্চ ১৯০৮ সালে সেলাঙ্গরের সুলতান স্যার আলাউদ্দিন সুলাইমান শাহ মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সুলতান আনুষ্ঠানিকভাবে ২৩ ডিসেম্বর ১৯০৯ সালে মসজিদটি খুলে দেন। মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তৎকালিন ৩২,৬২৫ ডলার যার কিছু অংশ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের অবদানে মালয় সম্প্রদায় দ্বারা অর্থায়ন করা হয়। যে কোন জাতি, ধর্মের মানুষ মসজিদের অভ্যন্তরে পরিদর্শন করতে পারেন এবং নামাজের সময়ের বাইরে এর আশেপাশের মাঠ এবং বাগানে বিশ্রাম করতে পারেন শালীন পোশাক পরিধান করে। তাৎক্ষনিক কারো শালীন পোশাক পরিধান করা না থাকলে মসজিদ এর পক্ষ থেকেও শালীন পোষাক (ফেরত যোগ্য) প্রদান করা হয়। মসজিদটি ১৯৮৪ সালে সংস্কার করা হয়েছিল এবং নদীর নিকটবর্তী মিনারটি ইতিমধ্যেই ঢালু হওয়ায় এটির নিচের অংশটি পুনরায় তৈরি করা হয়েছিল। মসজিদের একটি গম্বুজ ১৯৯৩ সালে ভারী বৃষ্টির কারণে ভেঙে পড়ে, তারপর সেটিও মেরামত করা হয়। ২৩ জুন ২০১৭ সালে সেলাঙ্গরের সুলতান শরাফুদ্দিন ইদ্রিস শাহ তার পূর্বপুরুষ সেলাঙ্গরের চতুর্থ সুলতান আব্দুল সামাদ এর নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করেন সুলতান আব্দুল সামাদ জামেক মসজিদ। কারণ মসজিদটি মূলত সেলাঙ্গর রাজ্যের অংশ ছিল এমন জমিতে নির্মিত হয়েছিল।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","জুমার দিনের যে আমলে এক সপ্তাহের গুনাহ মাফ হয় ",ইসলাম ধর্ম,"জুমাবার মুসলমানদের কাছে একটি অত্যন্ত ফজিলতের দিন। সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুমা নামে পবিত্র কোরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। সুরা জুমায় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা: ০৯) জুমার দিন কিছু আমল করলে সপ্তাহব্যাপী হয়ে যাওয়া গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়। সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি: ৮৮৩) অন্য হাদিসে আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, তার ঈমানের নূর এক জুমা থেকে অন্য জুমা পর্যন্ত বিচ্ছুরিত হতে থাকবে।’ (বায়হাকি, সুনানে সুগরা: ৬৩৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"মিথ্যাবাদিতা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য ",ইসলাম ধর্ম,"ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, মানবের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য, সত্যবাদিতা। এছাড়া একজন মুমিন কামিল মুমিন হতে পারে না। একজন মানব পূর্ণাঙ্গ মানব হতে পারে না। কুরআন মাজীদে ও হাদিস শরীফে এ বিষয়ে খুব তাকীদ করা হয়েছে। আল্লাহপাক বলেন : ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর আর সত্যবাদীদের শামিল হও।’ (সূরা তাওবা : ১১৯)। আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন : ‘তোমরা সত্যকে অবলম্বন কর। কারণ সত্যবাদিতা ভালো কাজে উপনীত করে। আর ভালো কাজ উপনীত করে জান্নাতে। মানুষ সত্য বলে ও সত্যবাদিতার অন্বেষায় থাকে, একপর্যায়ে সে আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে লিখিত হয়ে যায়।’ এ হলো হাদিসের প্রথম অংশ, দ্বিতীয় অংশ : ‘আর মিথ্যা থেকে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা উপনীত করে পাপাচারে। আর পাপাচার উপনীত করে জাহান্নামে। ব্যক্তি মিথ্যা বলে ও মিথ্যার অন্বেষায় থাকে, এভাবে একসময় আল্লাহর কাছে সে চরম মিথ্যুক হিসেবে লিখিত হয়ে যায়।’ (সহীহ মুসলিম : ২৬০৭)। তো এ হাদিসে রাসূলে কারীম (সা.) সত্যকে অবলম্বন করার এবং মিথ্যা থেকে দূরে থাকার তাকীদ করেছেন। এজন্য সত্য বলা ফরয। মিথ্যা বলা হারাম। আর যে কোনো চিন্তাশীল মানুষ উপলব্ধি করেন যে, সত্য বলা মানুষের একটি উৎকৃষ্ট গুণ আর মিথ্যা বলা একটি নিকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য। ভালো মানুষ কখনো মিথ্যা বলতে পারে না। একজন ভালো মানুষ সবসময় সত্য বলেন। তো সত্য বলা ধর্মীয় দৃষ্টিতে যেমন ফরয তেমনি বুদ্ধির দিক থেকেও এক উত্তম ও অপরিহার্য মানবীয় বৈশিষ্ট্য। ভালো মানুষ হওয়ার জন্য সত্যবাদিতার কোনো বিকল্প নেই। ইসলাম যেহেতু ‘দ্বীনে ফিতরত’ তাই এখানে সত্যবাদিতার গুরুত্ব অপরিসীম। ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাদ ইমাম ইবনে আবী শায়বাহ (রাহ.) এবং পরবর্তী মুহাদ্দিস ইমাম বায়হাকী (রাহ.) হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)-এর একটি বাণী সহীহ সনদে উল্লেখ করেছেন। হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) বলেন : ‘তোমরা মিথ্যা থেকে দূরে থাক, কারণ মিথ্যা ঈমানের পরিপন্থী।’ (আল মুসান্নাফ, ইবনে আবী শায়বা : ২৬১১৫)। সুতরাং যে মিথ্যা বলে সে কামিল মুমিন নয়। হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন : মুমিনের মধ্যে স্বভাবগত বিভিন্ন দোষ-ত্রুটি থাকতে পারে। তবে সে মিথ্যুক ও প্রতারক হতে পারে না। (আল মুসান্নাফ, ইবনে আবী শায়বা : ৩০৯৭৫)। তো মিথ্যা ইসলামের দৃষ্টিতে অতি গর্হিত, অবশ্য-বর্জনীয়। কুরআন মাজীদে সূরাতুল বাকারায় আল্লাহপাক মুনাফিকদের যে সকল বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন এর মধ্যে নিকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন মিথ্যা বলাকে। আল্লাহপাক বলে : তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। এ কারণে যে, তারা মিথ্যা বলত। মিথ্যায় অভ্যস্ত ছিল।’ (সূরা বাকারা : ১০)। রাসূলে কারীম (সা.)-এর হাদিস শরীফেও যা ইমাম বুখারী (রাহ.) এ শিরোনামে এনেছেন এই বিষয়টি পাওয়া যায়। আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন : ‘মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি।’ ‘যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে।’ কথা বললেই মিথ্যা বলে। অর্থাৎ মিথ্যা বলা তার স্বভাব। মিথ্যায় সে অভ্যস্ত। মিথ্যাবাদিতা ও মিথ্যায় অভ্যস্ততা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"সউদি আরব-আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যে ঈদ কবে, জানা যাবে আজ ",ইসলাম ধর্ম,"সউদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশে আজ বৃহস্পতিবার ২৯ রমজান। আজ সন্ধ্যার পরই পবিত্র শাওয়াল মাসের সূচনা উপলক্ষে চাঁদ খুঁজবেন এসব দেশের মানুষ। –খালিজ টাইমস আর তাই শুক্রবার (২১ এপ্রিল) শাওয়াল মাসের প্রথম দিন বা পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে কিনা তা আজ জানা যাবে। মূলত চন্দ্র মাস হিসেবে রমজান মাস ২৯ দিনেও শেষ হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মুসলমানদেরকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পবিত্র শাওয়াল মাসের খোঁজার আহ্বান জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। অন্যদিকে সৌদিতে বসবাসরত সব মুসলিমকে আজ সন্ধ্যায় নতুন চাঁদ খোঁজার নির্দেশনা দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। খালিজ টাইমস বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের সূচনা উপলক্ষে নতুন চাঁদ দেখার জন্য দেশের সকল মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আজ শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে চলমান পবিত্র রমজান মাস শেষ হয়ে যাবে এবং ঈদুল ফিতরের সূচনা হবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেউ চাঁদ দেখতে পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতের চাঁদ দেখা কমিটি ০২৬৯২১১৬৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৃহস্পতিবার ২৯তম রমজান চলছে এবং আজ সন্ধ্যায় নতুন চাঁদ দেখা গেলে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) দেশটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর চাঁদ দেখা না গেলে শুক্রবার ৩০তম রোজা পালন শেষে পরদিন শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। চাঁদ দেখার তারিখের ওপর নির্ভর করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাসিন্দারা চার দিন বা পাঁচ দিনের ছুটি ভোগ করবেন। শুক্রবার ঈদ হলে আমিরাতের বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার থেকে রোববার মোট চারদিনের ছুটি পাবেন। আর ঈদ শনিবার হলে ছুটি থাকবে পাঁচ দিন— বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার। এদিকে আরব আমিরাতের মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের চাঁদ অনুসন্ধানের জন্য সকল মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশের সকল মুসলমানকে চাঁদ দেখার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট। সউদি প্রেস এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ‘যারাই খালি চোখে বা দূরবীনের মাধ্যমে চাঁদ দেখবেন তাদের নিকটতম আদালতে তা রিপোর্ট করার এবং সাক্ষ্য নিবন্ধন করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে।’ উল্লেখ্য, সউদি আরব ও সয়ুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গত ২৩ মার্চ পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়। বৃহস্পতিবার নতুন চাঁদ দেখা গেলে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) এসব দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর চাঁদ দেখা না গেলে পরদিন শনিবার (২২ এপ্রিল) উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"দীর্ঘ সাত বছর পর আজ সউদীতে দূতাবাস খুলছে ইরান ",ইসলাম ধর্ম,"আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) সউদী আরবের রাজধানীতে অবস্থিত দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশনগুলো পুনরায় খুলতে যাচ্ছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ছাড়া ওআইসিতে কাজ শুরু করবেন ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি। ইরান ও সউদী আরব উভয় দেশের সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ সাত বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশের মধ্যে পুনরায় কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে যাচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভি জানিয়েছে, নাসের কানয়ানি সোমবার রাজধানী তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মঙ্গলবার ও বুধবার (৬ ও ৭ জুন) রিয়াদে ইরান দূতাবাস এবং জেদ্দায় ইরানি কনস্যুলেট আবার চালু করা হবে। একই সঙ্গে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা তথা ওআইসিতে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি তার কাজ শুরু করবেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, রিয়াদে অবস্থিত ইরানি দূতাবাস এবং জেদ্দায় ইরানি কনস্যুলেট নিজেদের হজ যাত্রীদের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম দেখভালের কাজ এরই মধ্যে শুরু করেছে। গত ১০ মার্চ ইরান ও সউদী আরব পরস্পরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। চীনের মধ্যস্থতায় বেইজিংয়ে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই করেন ইরান ও সউদী আরবের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে গত ৮ এপ্রিল ইরান ও সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। গত মাসে শীর্ষ কূটনীতিক আলী রেজা এনায়েতিকে রিয়াদে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয় ইরান। এরই ধারাবাহিকতায় সউদী আরবে নিজের দূতাবাস চালু করছে তেহরান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি: নোবিপ্রবি’র ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার,ইসলাম ধর্ম,"সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করার অভিযোগে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে তাদের হলের সিট বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রতীক মজুমদার এবং একই শিক্ষাবর্ষের ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী পাল দীপ্ত। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা.আবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। আদেশে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং বাংলাদেশ সরকারের আইন মোতাবেক দণ্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আদেশ মোতাবেক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাদেরকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার এবং হলের সিট বাতিল করা হল। তাদের কেনো স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এবং আইসিটি আইনে মামলা হবে না তা লিখিতভাবে আগামী ৪ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রার দফতর বরাবর জানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৭ অক্টোবর থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইসলাম নিয়ে প্রহসনমূলক মন্তব্য ও কটূক্তিকারী দুই শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"যে কারণে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়া হয় ",ইসলাম ধর্ম,"যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ সামনে এলে বলা হয় ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। বিশ্বাসীরা কেবল মুখে বলা নয়; বরং মনে মনে এ কথা স্বীকার করে নেওয়া যে আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব—এর অর্থ হচ্ছে, চিরকাল এ দুনিয়ায় থাকা যাবে না। একদিন আল্লাহরই কাছে যেতে হবেই। ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অর্থ সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতটি কোরআন শরিফের প্রসিদ্ধ আয়াত। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। অর্থ (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে আমরা তো আল্লাহরই আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব। কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে পড়েন। অনেকে মনে করেন, মানুষের মৃত্যুসংবাদ পেলে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়তে হয়। বরং ইন্না লিল্লাহ পড়ার অনেক কারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে। এই পবিত্র বাক্য আল্লাহকে স্মরণ রাখার বড় উপায়। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে (কাউকে) ভয় ও ক্ষুধা দিয়ে, আর (কাউকে) ধনে–প্রাণে বা ফল–ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করব। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের তুমি সুখবর দাও। (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে, [ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন] ‘আমরা তো আল্লাহর আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব।’ এসব লোকের প্রতি তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আশীর্বাদ ও দয়া বর্ষিত হয়, আর এরাই সৎ পথপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭) এ তিনটি আয়াতে বিষয়টি সুস্পষ্ট। কারা ইন্না লিল্লাহ পড়বেন, কোনো পরিস্থিতিতে পড়বেন এবং পড়লে কী উপকার। বিশ্বাসীরা বিপদে পড়লে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করেন। কেউ বিপদে পড়লে যেন এ দোয়াটি পাঠ করে। একাধারে যেমন সওয়াব পাওয়া যায়, তেমনি অর্থের প্রতি লক্ষ রেখে পাঠ করা হয়, তবে বিপদের মধ্যেও শান্তি লাভ করবে বিপদ থেকে উত্তরণও সহজ হয়ে যায়। কোনো বিপদে বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় এই দুটি বাক্য—এর অর্থ আল্লাহর ফয়সালা সর্বান্তঃকরণে মেনে নিচ্ছি। আর আখিরাতে বিশ্বাস করি, তাই এ বিপদে সবরের বিনিময় তাঁর কাছে প্রত্যাশা করছি। দুটি বাক্যে ইমানের মৌলিক সাক্ষ্য দেওয়া হয়। তাই এর ফজিলতও অনেক। বিপদের সময় বলতে হবে উম্মে সালামা (রা.)–এর বরাতে হাদিস থেকে জানা যায়। তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)–কে বলতে শুনেছি, কোনো মুসলিমের ওপর বিপদ এলে যদি সে বলে, আল্লাহ যা হুকুম করেছেন—ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (অর্থাৎ আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তারই কাছে ফিরে যাব) বলে এবং এই দোয়া পড়ে, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফলি খাইরাম মিনহা ইল্লা আখলাফাল্ল হুলাহ খয়রাম মিনহা (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে আমার মুসিবতে সওয়াব দান করো এবং এর বিনিময়ে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করো, তবে মহান আল্লাহ তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করে থাকেন।) উম্মে সালামা (রা.) আরও বলেন, আবু সালামা যখন ইন্তেকাল করেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, আবু সালামা থেকে উত্তম মুসলিম আর পাব না। এরপর আমি দোয়া পড়লাম। এরপর মহান আল্লাহ আবু সালামার স্থলে রাসুল (সা.)–এর মতো স্বামী দান করেছেন। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, আমার কাছে রাসুল (সা.) বিয়ের পয়গাম দেওয়ার জন্য হাতিব ইবনে আবু বালতা (রা.)–কে পাঠালেন। আমি বললাম, আমার একটা মেয়ে আছে আর আমার জিদ বেশি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তার মেয়ে সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করব, যাতে তিনি তাকে তার মেয়ের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন। আর (তার সম্পর্কে) দোয়া করব যেন আল্লাহ তার জিদ দূর করে দেন। (মুসলিম: ৯১৮)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"যেসব দেশে এবার ১৮ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে! ",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের জন্য পবিত্রতম একটি মাস রমজান। পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে দুই মাসেরও কম সময় বাকি রয়েছে। সময় ঘনিয়ে আসায় খুব দ্রুতই রমজানের প্রস্তুতি শুরু করবেন বিশ্বের সব মুসলিম। রমজান মাসে সূর্যোদয়ের আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজা রাখেন মুসলিমরা। এর পর ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙেন তারা। এ বছর পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে ১১ মার্চ থেকে। অন্যবারের মতো এবারও রোজার সময়টি (ঘণ্টা) ভিন্ন ভিন্ন হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর ১২ ঘণ্টা থেকে শুরু করে ১৮ ঘণ্টা হবে একেকটি রোজা। খবর আল আরাবিয়ার। এবার যেসব দেশের মুসলিমরা ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা রোজা রাখবেন— ১। নুক, গ্রিনল্যান্ড ২। রেকজাভিক, আইসল্যান্ড ৩। হেলেনস্কি, ফিনল্যান্ড ৪। গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড ৫। ওটোয়া, কানাডা ৬। লন্ডন, যুক্তরাজ্য ৭। প্যারিস, ফ্রান্স ৮। রোম, ইতালি ১০। মাদ্রিদ, স্পেন। অপরদিকে আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোতে রোজা কম সময়ের হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব অঞ্চলের মানুষ ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা রোজা রাখবেন। সেসব দেশগুলো হলো— ১। ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড ২। পুয়ের্তো মন্তে, চিলি ৩। জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া ৪। নাইরোবি, কেনিয়া ৫। করাচি, পাকিস্তান ৬। নয়াদিল্লি, ভারত ৭। ঢাকা, বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য ও গালফ অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্য ও গালফ অঞ্চলের মুসল্লিরা এবার ১৩ থেকে ১৫ ঘণ্টা রোজা রাখবেন। স্থানভেদে এটি ভিন্ন ভিন্ন হবে। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"সউদীর এক মসজিদে মিললো ১২০০ বছর পুরনো স্থাপত্য নিদর্শন! ",ইসলাম ধর্ম,"সউদী আরব মসজিদে নতুন এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়ার কথা জানিয়েছে। দেশটির ঐতিহাসিক উসমান বিন আফফান মসজিদে মিলেছে ১ হাজার ২০০ বছর পুরনো ওই স্থাপত্য নিদর্শন। গালফ নিউজ আবিষ্কারটি ঐতিহাসিক জেদ্দায় প্রত্নতত্ত্ব প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ের অংশ, যার লক্ষ্য এই অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য উন্মোচন করা। জেদ্দা হিস্টোরিক ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম (জেএইচডিপি) পরিচালিত জরিপ থেকে আধুনিক নির্মাণ বৈশিষ্ট্য থেকে শুরু করে মসজিদটির বিস্তৃত ইতিহাস সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা পাওয়া গেছে। ঐতিহাসিক উসমান বিন আফফান মসজিদটি শতাব্দীর পর শতাব্দী সংস্কারের মধ্য দিয়ে গেছে। তবে আসল মিহরাব এবং স্থানিক নকশা বজায় রেখেই সবচেয়ে সাম্প্রতিক কাঠামোটি হিজরি ১৪ শতকের বলেই মনে করা হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, মসজিদটি বহু শতাব্দী ধরে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, সবচেয়ে সাম্প্রতিক কাঠামোটি ১৪ শতক হিজরির। এক সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে এর মূল মিহরাব এবং স্থানিক নকশা অবিকৃত রয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক খনন মারফত শত শত প্রত্নবস্তু উদ্ধার হয়েছে, যা মসজিদের স্থায়ী উত্তরাধিকার এবং বিভিন্ন নির্মাণ পর্যায়কে প্রকাশ করে। উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে মসজিদের মেঝেতে ব্যবহৃত মাটির টাইলস, প্লাস্টার। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারগুলির মধ্যে একটি হল মসজিদের নীচে পাওয়া প্রাচীন পানির ট্যাঙ্কগুলি, যা প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো। জেদ্দার বাসিন্দাদের পানির অভাব মোকাবেলায় এগুলি তৈরি করা হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এছাড়াও সাইটটি থেকে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী মিলেছে- যেমন চীনামাটির বাসন এবং সেলাডন জাহাজের টুকরো, যা কয়েক শতাব্দী আগে এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক বাণিজ্য রুট এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive Dhaka Tribune,"বিজয়া দশমী আজ ",হিন্দু ধর্ম,"শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী আজ । হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসব আজ শেষ হবে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। মহালয়া থেকে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আসার ঘণ্টা বাজে। ষষ্ঠীতে তিনি ভক্তদের মাঝে অধিষ্ঠিত হন। আর দশমীতে তিনি চলে যান কৈলাশ। তাই আজ ভক্তদের মনে বাজছে বেদনার সুর। হাতিতে চড়ে মা দুর্গা এসেছিলেন, ভক্তদের দুঃখ দূর করে দুর্গা এবার বিদায় নেবেন নৌকায়। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল ৯টায় বিহিত পূজা ও পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দশমীর পূজা শেষ হচ্ছে। হিন্দু পুরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় বসন্তকাল; কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগিয়ে পূজা করেন। সেই থেকে অকালবোধন হওয়া সত্ত্বেও শরৎকালেই দুর্গাপূজা প্রচলন হয়ে যায়। সনাতন ধর্ম মতে, যা কিছু দুঃখ-কষ্টের বিষয়, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ-শোক, জ্বালা-যন্ত্রণা এসব থেকে ভক্তকে রক্ষা করেন দেবী দুর্গা। শাস্ত্রকাররা দুর্গা নামের অর্থ করেছেন “খের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা”। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন। মহালয়াতেই দেবী আগমনের ঘণ্টা বাজে আর বিজয়া দশমী দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর দিন। এই দিনটি শেষ হয় মহা-আরতির মাধ্যমে। এর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ইত্তেফাক,ধর্ম অবমাননার দায়ে ইরানে ২ জনের ফাঁসি,ইসলাম ধর্ম,"অনলাইনে ইসলাম ধর্মের অবমাননার দায়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। গত বছর দেশটিতে বিক্ষোভের পর থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার দায়ে ইউসেফ মেহরদাদ ও সাদরোল্লাহ ফাজেলি নামে দুই ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ। দেশটির বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট মিজান জানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম ও নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটাক্ষের অভিযোগ ছিল। বিচার বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই ব্যক্তি একাধিক ধর্মবিরোধী অনলাইন প্লাটফর্ম পরিচালনা করছিলেন। এর মাধ্যমে তারা ইসলাম ধর্ম ও এর পবিত্র বিষয়গুলোকে অমর্যাদার পাশাপাশি নাস্তিকতার প্রচার চালাচ্ছিলেন বলে দাবি করা হয়। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তাদের একজন কনটেন্ট প্রচারের কথা স্বীকার করেছেন। তবে এই ধরনের স্বীকারোক্তি সাধারণত জোরপূর্বক নেয়া হয় বলে অভিযোগ অধিকার সংস্থাগুলোর। গত শনিবার হাবিব চাব নামে সুইডিশ-ইরানিয়ান নাগরিকের ফাঁসি কার্যকর করেছে তেহরান। এই ঘটনাকে অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করে উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে সুইডেন। চীনের পরই ইরান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশ। দুইটি অধিকার সংস্থার গত মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইরানীয় কর্তৃপক্ষ ৫৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে, যা ২০২১ সালের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি। নরওয়ে ভিত্তিক ‘ইরান হিউম্যান রাইটস' এবং প্যারিসভিত্তিক ‘টুগেদার অ্যাগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি' এপ্রিলে জানিয়েছে, চলতি বছর ১৫১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,"কথায় কথায় কসম খাওয়া অনুচিত ",ইসলাম ধর্ম,"সারা বিশ্বের মানুষ শান্তির খোঁজে ছুটছে। কিন্তু শান্তির দেখা মেলে না। কারণ শান্তি পাওয়ার যে শর্তগুলো আল্লাহপাক কোরআন পাকে উল্লেখ করেছেন সেগুলো মানুষের মধ্যে অনুপস্থিত। যিনি আমার মালিক, যিনি আমাকে জীবনধারণের সব উপকরণ সরবরাহ করেন তাঁর কথা মতো না চলে শান্তির প্রত্যাশা করি কীভাবে? শান্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর শর্তগুলো কী? পবিত্র কোরআনের সুরা আল-আসরেই রয়েছে সেগুলো। আল্লাহপাক বলেছেন, ‘কসম যুগের; নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে আছে। কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে এবং নেক আমল করে, সঙ্গে সঙ্গে তারা পরস্পরকে হকের ওপর অটল থাকার উপদেশ দেয় এবং একে অন্যকে ছবরের তাগিদ দেয়।’ এই আয়াতে আল্লাহপাক শান্তির জন্য চারটি শর্তের উল্লেখ করেছেন। তবে এগুলোর গুরুত্ব বুঝানোর জন্য শুরুতে তিনি যুগ বা কালের কসম করেছেন কিংবা কালকে সাক্ষী রেখেছেন। এখানে দেখার বিষয়, সাক্ষী রাখা হয় এজন্য যে, বক্তা অথবা শ্রোতা কেউ যেন পরে বিষয়টিকে অস্বীকার করতে না পারে। তদ্রুপ দুজনের কেউ হয়তো বিষয়টি বিস্মৃত হয়, তখন সাক্ষীর মাধ্যমে বিষয়টিকে প্রমাণ করা সহজ হয়। আসলে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোরআন ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য বড় নেয়ামত। এ দুটি ছাড়া আমাদের পক্ষে দুনিয়াতে শান্তিময় জীবনযাপন করা এবং আখেরাতের চির মুক্তি পথের সন্ধান পাওয়া কিছুতেই সম্ভব হতো না। আল্লাহপাক বলেন, ‘লাক্বাদ কানা লাকুম ফি রসুলিল্লাহি উস্ওয়াতুন হাসানাহ্’ অর্থাৎ তোমাদের জন্য রয়েছে রসুলের চরিত্রে উত্তম আদর্শ। এই আয়াতে সে কথাই বর্ণনা করা হয়েছে। ‘উস্ওয়া’-এর অর্থ হলো নিদর্শন, নমুনা, মডেল। রসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য উত্তম মডেল। তাঁর পথ-প্রদর্শন ব্যতিরেকে কিছুতেই আমরা গন্তব্যের সন্ধান পেতাম না। কোরআন ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জীবনপথের পাথেয়। মানবিক জীবনাচারের সবকিছুই আমরা কোরআন ও রসুল (সা.) থেকে আমরা শিখি। তাই কোরআনে আল্লাহতায়ালা মানবীয় জীবনের স্বভাব ও আচরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অনেক কিছু উল্লেখ করেন, যা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হওয়ার উপযুক্ত নয়, তথাপি শুধু মানুষের কাছে সহজবোধ্য করার জন্য তা উল্লেখ করেন। সাংসারিক বিবাদ-বিসংবাদ মীমাংসা করার সুবিদিত পন্থা যেমন দাবির সপক্ষে সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করা, আর সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকলে কসম করা, তেমনি আল্লাহ মানুষের এ পরিচিত পন্থা নিজেও অবলম্বন করেছেন। তিনি কোথাও ‘শাহাদাহ্’ শব্দের মাধ্যমে বিষয়বস্তুকে জোরদার করেছেন, যেমন- ‘শাহিদাল্লাহু আন্নাহু লা-ইলাহা ইল্লাহু’ আবার কোথাও কসমের দ্বারা; যেমন- ‘ওয়ালআসরে’ ইত্যাদি। অনেকে তো কথায় কথায় কসম করে। এটা নিন্দনীয়। দোকানদাররা বলে, খোদার কসম! চল্লিশ টাকায় আমার কেনা, লাভ ছাড়াই আপনাকে কেনা দামে দিলাম। কেউ বলে, কসম খোদার! মাল একখানা দিলাম, সারা জীবন মনে করতে হবে! বাড়িতে এসে দেখা যায় বাতিল মাল। আবার অনেকের কথা- যারা আছে, যারা আলাপ-আলোচনার সময় দুই-তিন বাক্য পরপর কসম খায়। সমাজে কিন্তু এদেরকে সর্বাপেক্ষা বড় মিথ্যুক ধারণা করা হয়। হাদিসেও এদের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে, ‘বেশি বেশি কসম খাওয়া মিথ্যাবাদীর আলামত।’ তবে শরিয়তে কসমের গুরুত্ব রয়েছে। ইসলামী বিধানের কোনো কোনো ক্ষেত্রে কসমকে অত্যধিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। সাধারণ কথাবার্তায়ও কসমের দ্বারা বক্তব্যের বিশুদ্ধতা ও যথার্থতা বৃদ্ধি পায়। এটা সর্বজনবিদিত ও স্বীকৃত। তবে সীমা অতিক্রম করলে সব কিছুতেই নিন্দার শিকার হতে হয়। কথায় কথায় কসম করা আত্মমর্যাদাবোধহীনতার পরিচয়। যার মধ্যে যতটা সৎ গুণাবলি ও প্রশংসিত বৈশিষ্ট্যের অনুপস্থিতি রয়েছে, সে ততটাই এই নিন্দনীয় স্বভাবের শিকার হয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative কালের কন্ঠ,ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের খাবার দিতে তুরস্কে মাহের জেইন,ইসলাম ধর্ম,"ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে এবার তাদের দেখতে তুরস্কে গেলেন ইসলামী সংগীতশিল্পী মাহের জেইন। দেশটির কাহরামানমারাস প্রদেশে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা সালামের সঙ্গে খাবার বিতরণে অংশ নেন তিনি। এক টুইট বার্তায় মাহের জেইন লেখেন, ‘আমরা কাহরামানমারাস শহরের কেন্দ্রে রয়েছি। সুবহানাল্লাহ, এখানকার ধ্বংসের দৃশ্য যুদ্ধাঞ্চলের কথা মনে করিয়ে দেয়। শহরটি এই বিশাল ভূমিকম্পের প্রধান কেন্দ্রস্থল। লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। আমাদের যেভাবে সম্ভব তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।’ ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলে ধ্বংসের মাত্রা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা কাহরামানমারাসে পৌঁছেছি। ভূমিকম্পের আঘাতে জর্জরিত শহরগুলোর মধ্যে এটি একটি। শহরটি খুবই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। আমি ক্যামেরার মাধ্যমে এর ভয়াবহ চিত্র আপনাদের দেখানোর চেষ্টা করেছি; কিন্তু ক্যামেরা কখনো শতভাগ তা দেখাতে পারে না।’ গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় দুটি প্রচণ্ড ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু তুরস্কে নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪১৮ জন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৮০০ জনের বেশি। মেহের জেইন বিশ্বখ্যাত একজন ইসলামী সংগীতশিল্পী। লেবানিজ-সুইডিশ বংশোদ্ভূত এই শিল্পী রক অ্যান্ড বোল্ড গায়ক, গীতিকার ও সংগীত নির্মাতা। ২০০৯ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘থ্যাংক ইউ আল্লাহ’ প্রকাশ করেন। ২০১২ সালে ‘ফরগিভ মি’ নামে তার আরেকটি অ্যালবাম প্রকাশ পায়। আরব ও মুসলিম দেশগুলোর পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোর তরুণদের মধ্যে তাঁর গানগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"রমজান মাসে রহমতের ফল্গুধারা ",ইসলাম ধর্ম,"রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। (বায়হাকি) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সব মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় দানশীল। যখন রমজান মাস আসত, তখন হজরত জিবরাইল (আ.) প্রতি রাতেই নবীজির কাছে আসতেন, কোরআনের দারস তালিম করতেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রবাহিত বায়ু অপেক্ষা অধিক হারে দান–খয়রাত ও ভালো কাজ করতেন।’ অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘রমজান এলে রাসুল (সা.) এত বেশি দান–দক্ষিণা করতেন, যেন তা প্রবাহিত বায়ু।’ (বুখারি: ৪৭১১; মুসলিম: ২৩০৮) আল্লাহর রহমত পেতে সৃষ্টির প্রতি দয়াশীল হতে হবে। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা দুনিয়াবাসীর প্রতি রহম করো, আসমানওয়ালা খোদা তাআলা তোমাদের প্রতি রহম করবেন।’ (তিরমিজি: ১৯২৪; আবু দাউদ: ৪৯৪১; আহমাদ: ৬৪৯৪) আল্লাহর গুণাবলিগুলো দুই প্রকার, জামালি ও জালালি। দয়া–মায়া, স্নেহ–করুণা, সৃজন–লালন ইত্যাদি হলো সিফাতে জামালি বা ইতিবাচক সৌন্দর্যমণ্ডিত গুণাবলি। মহিমা, প্রতাপ, প্রভাব, প্রতিপত্তি, প্রতিকার, প্রতিবিধান, ধ্বংসলীলা, শাস্তিদান ইত্যাদি হলো সিফাতে জালালি বা নেতিবাচক সৌন্দর্যমণ্ডিত গুণাবলি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সিফাতে জামালি বা সৃজনশীল গুণাবলির অন্যতম প্রধান গুণ রহমান। রহমত অর্থ দয়া, মায়া, কৃপা, করুণা, অনুকম্পা, অনুগ্রহ ইত্যাদি। কোরআন ও হাদিসে এ শব্দের দুটি রূপ ব্যবহৃত হয়েছে, তা হলো ‘রহমান’ ও ‘রহিম’। এই শব্দ কোরআন কুঞ্জিকা বিসমিল্লাহ শরিফের মধ্যেই রয়েছে দুই–দুবার। উম্মুল কোরআন বা কোরআনের জননী ফাতিহা শরিফের দ্বিতীয় আয়াতে একইভাবে আছে আরও দুবার। কোরআন নাজিলের মাস রমজান। কোরআনের সঙ্গেও রহমতের আর রহমানের সম্পর্ক সুনিবিড়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রহমান (আল্লাহ) কোরআন শেখাবেন বলে মানুষ সৃষ্টি করলেন।’ (সুরা-৫৫ রহমান, আয়াত: ১-৩) রহমান অর্থ পরম করুণাময়। এ শব্দ দুনিয়ার সব মুসলিম–অমুসলিম, বাধ্য–অবাধ্য, নারী-পুরুষ, জীব–নির্জীব সবার জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য; যিনি দয়া বা রহমত কারও প্রতি একমুহূর্তের জন্যও বন্ধ করে দেন না, তিনি রহমান। রহিম অর্থ অতীব মেহেরবান, অতিশয় দয়ালু। আল্লাহর এ দয়া শুধু মুমিন মুসলিমগণের জন্য খাস বা নির্দিষ্ট, যা প্রকাশিত হবে বিশেষত আখিরাতে। যাঁরা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ ও রাসুল (সা.)–কে মেনে ইসলামের অনুশাসন বা রীতিনীতি অনুসারে জীবনযাপন করেছেন, শুধু তাঁরাই মৃত্যুর পর কবর, মিজান, পুলসিরাত ও হাশরের ময়দানে আল্লাহর ‘রহিম’ নামের দয়া বা অনুগ্রহধন্য হয়ে নাজাত পেয়ে জান্নাতে যাবেন। আল্লাহর বান্দা যেন তাঁর গুণাবলি অর্জন করে, সে গুণে গুণান্বিত হয়ে আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সেই গুণের প্রকাশ ঘটায়, এটাই তাঁর ইচ্ছা। আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘আল্লাহর রং! আর আল্লাহর রং অপেক্ষা চমৎকার আর কোনো রং হতে পারে?’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৩৮) যেহেতু মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি, তাই তাঁকে খেলাফতের দায়িত্ব পালনের যোগ্য হতে হলে অবশ্যই সেসব গুণ অর্জন করতে হবে। আল্লাহর রং বা গুণ কী? তা হলো, আল্লাহ তাআলার অসংখ্য গুণবাচক নাম। হাদিস শরিফে এসেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, যাঁরা এগুলো আত্মস্থ করবেন; তাঁরা জান্নাতে প্রবেশ করবেন। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)। আল্লাহ তাআলার নামগুলো আত্মস্থ করা বা ধারণ করার অর্থ হলো সেগুলোর ভাব ও গুণ অর্জন করা এবং সেসব গুণ ও বৈশিষ্ট্য নিজের কাজে–কর্মে, আচার–আচরণে প্রকাশ করা তথা নিজেকে সেসব গুণের আধার বা অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা। আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করবেন, আমরাও তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়া করব। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘দয়ার বিনিময় দয়া ছাড়া আর কী হতে পারে?’ (সুরা-৫৫ রহমান, আয়াত: ৬০) আল্লাহ তাআলার দয়া বা রহমত সর্বকালে সর্বক্ষণ তাঁর বান্দার প্রতি বর্ষিত হতে থাকে; বিশেষ করে পবিত্র মাহে রমজানে এর ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। পবিত্র মাহে রমজানের বরকতে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়। ফলে আদম সন্তান রোজা পালন, নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, দান–সদকা, ফিতরা, জাকাত প্রদান ও জিকির–আসকার ইত্যাদিতে মশগুল হয়ে তাকওয়া অর্জনে অধিক সচেষ্ট হতে পারে। ●",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,সব মসজিদে একই নিয়মে খতম তারাবি পড়ার আহ্বান,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র রমজান মাসে খতমে তারাবি পড়ার ব্যাপারে দেশের সকল মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। শুক্রবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে দেশের প্রায় সকল মসজিদে খতমে তারাবি নামাজে পবিত্র কুরআনের নির্দিষ্ট পরিমাণ পারা তিলাওয়াত করার রেওয়াজ চালু আছে। তবে কোনো কোনো মসজিদে এর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এতে করে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী কর্মজীবী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে পবিত্র কুরআন খতমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। এর পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে একটি অতৃপ্তি ও মানসিক চাপ অনুভূত হয়। পবিত্র কুরআন খতমের পূর্ণ সওয়াব থেকেও তারা বঞ্চিত হন। এ পরিস্থিতি নিরসনকল্পে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ৯ পারা এবং বাকি ২১ দিনে ১ পারা করে ২১ পারা তিলাওয়াত করলে ২৭ রমজান রাতে অর্থাৎ পবিত্র শবে কদরে পবিত্র কুরআন খতম করা সম্ভব হবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে, দেশের সকল মসজিদে, খতমে তারাবি নামাজে প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ও পরবর্তী ২১ দিনে এক পারা করে তিলাওয়াতের মাধ্যমে পবিত্র শবে কদরে পবিত্র কুরআন খতমের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সারা দেশের সকল মসজিদের খতিব, ইমাম, মসজিদ কমিটি, মুসল্লি এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"একদিনে গাজা ছেড়েছে ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি ",ইসলাম ধর্ম," গাজা নিয়ে ‘বৈশ্বিক উদ্যোগ’ চালু করছেন এরদোগান মানবিক বিরতির জন্য ইসরাইলকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইল স্থল অভিযান জোরদারের পরে ওই অঞ্চল ছেড়েছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুধু বুধবারই শহরটি ছেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা। ইসরাইলি বাহিনী গাজার উত্তর-দক্ষিণের রাস্তা দিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য নিরাপদে বের হওয়ার সুযোগ করে দিলে বাসিন্দারা গাজার উত্তরাঞ্চল ছাড়ে। বুধবার ইসরাইল বলেছিল, তারা গাজা শহর ঘিরে ফেলেছে এবং গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। আর এখন তারা বলছে, হামাস গাজার উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। হামাস পরিচালিত গাজার কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে বেশ কিছু বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। সব মিলিয়ে গত সাত অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ১০ হাজার ৫৬৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়। তাদের মধ্যে অর্ধেকই শিশু। জাতিসংঘ এখনো শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। হামাস এবং ইসরাইল-দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, গাজায় যে হারে বেসামরিক নাগরিক মারা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পরিচালিত অভিযানে ‘স্পষ্টভাবেই কিছু ভুল’ রয়েছে। একই সাথে হামাস মানুষকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গাজায় আটক ২৩৯ সজন জিম্মির পরিবার তাদেরকে মুক্তি দেয়ার দাবি অব্যাহত রেখেছে। বিবিসি তাদের ঘনিষ্ঠ জনদের সাথে কথা বলেছে। মোট ১২জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে তিন দিনের জন্য মানবিক বিরতি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই জিম্মিদের মধ্যে অর্ধেকই আমেরিকান। তবে বিরতির সময়সীমা এবং গাজার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বিতর্ক চলছে। কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এতে ‘মিথ্যা গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। একই সাথে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত’ কোন অস্ত্রবিরতি হবে না। বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন ইসরাইলি বাহিনীর সাথে গাজায় প্রবেশ করেছেন। তিনি সেখানে কোন ভবন অক্ষত দেখতে পাননি। এদিকে, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ ফের বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গাজা উপত্যকা ও মিসরের মধ্যকার সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিং। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ‘রাফাহ ক্রসিং আজ থেকে বন্ধ রয়েছে। আমরা যদ্দুর বুঝতে পারছি, নিরাপত্তাজনিত কারণেই এমন হয়েছে।’ কবে নাগাদ এই সীমান্তপথ খুলতে পারে, তার কোনো আভাস বেদান্ত প্যাটেল দেননি। মিসর থেকেও এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি আসেনি। গাজা নিয়ে ‘বৈশ্বিক উদ্যোগ’ চালু করছেন এরদোগান : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান গাজা সঙ্কট সমাধানের জন্য একটি ‘বৈশ্বিক উদ্যোগ’ পরিকল্পনা করছেন, সরকারপন্থী সংবাদপত্র হুরিয়েত জানিয়েছে। এতে বলা হয়, এরদোগান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি ছিটমহলে ইসরাইলের অপরাধ বন্ধের প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘আমি প্রত্যেক বিশ্বনেতাকে ফোন করব, তাদের সাথে আলোচনা করব এবং প্রয়োজনে তাদের সাথে দেখা করব। আমি নেতা, প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে গাজা নিয়ে একটি যৌথ বৈশ্বিক উদ্যোগ শুরু করতে চাই,’ ৭ নভেম্বর তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এরদোগান বলেছেন। এ সপ্তাহান্তে সউদী আরবে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এর একটি জরুরী শীর্ষ সম্মেলনের পর তুর্কি নেতা তার ‘বৈশ্বিক উদ্যোগ’ চালু করার পরিকল্পনা করেছেন। ২৮ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে এক সমাবেশে ভাষণ দিয়ে এরদোগান ইসরাইলকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ ঘোষণা করার জন্য তার দেশের অভিপ্রায় ঘোষণা করেছিলেন। মানবিক বিরতির জন্য ইসরাইলকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : ফিলিস্তিনে গাজা উপত্যকায় মানবিক বিরতি ঘোষণা করতে ইসরাইলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সাম্প্রতিক বক্তব্যে তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে। জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে গতকাল জাপানের রাজধানী টোকিও গিয়েছিলেন ব্লিনকেন। বিশ্বের শিল্পোন্নত ৭ দেশের এই জোটের এবারের বৈঠকের মূল এজেন্ডাই ছিল গাজার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। বৈঠক শেষে জি-৭ জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় অবিলম্বে মানবিক বিরতি ঘোষণা এবং বেসামরিক লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়র জন্য করিডোরের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে হামাস ও ইসরাইলের চলমান সংঘাত নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ব্লিনকেন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের ওই অঞ্চলে যে সঙ্কট চলছে, তা স্থায়ীভাবে সমাধানের একমাত্র উপায় হলো সেখানে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত সৃষ্টি করা এবং অবশ্যই সেটি করতে হবে রাজনৈতিক কূটনৈতিক ভাবে। তাই শেষ পর্যন্ত কূটনীতি ও রাজনীতির ওপরই ভরসা রাখতে হবে আমাদের। গাজা উপত্যকাকে আমরা কখনও সন্ত্রাস ও সহিংসতার কেন্দ্রে পরিণত হতে দিতে পারি না।’ ব্লিনকেন আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিন ও গাজা প্রশ্নে ওয়াশিংটনের অবস্থান একদম স্পষ্ট; আর তা হলো-কোনো দখলদারিত্ব চালানো যাবে না, গাজা উপত্যকা থেকে অবরোধ তুলে নিতে হবে এবং গাজা উপত্যকার বেসামরিক লোকজনকে তাদের আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদ করা বন্ধ করতে হবে।’ কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মানবিক বিরতি না দেয়ার বিষয়ে অটল রয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত’ কোন অস্ত্রবিরতি হবে না। এদিকে, গাজায় আটক ২৩৯ সজন জিম্মির পরিবার তাদেরকে মুক্তি দেয়ার দাবি অব্যাহত রেখেছে। মোট ১২জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে তিন দিনের জন্য মানবিক বিরতি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই জিম্মিদের মধ্যে অর্ধেকই আমেরিকান। তবে বিরতির সময়সীমা এবং গাজার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বিতর্ক চলছে। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"ধামইরহাটে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গোৎসব ",হিন্দু ধর্ম,"নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় সারাদেশে ন্যায় ধামইরহাট ও যথাযোগ্য উৎসাহ উদ্দীপনায় পালিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। তাই পূজামণ্ডপে গত শনিবার থেকে লাগাতার ভক্তদের ঢল নেমেছে। বোধনের মধ্যে দিয়ে ষষ্ঠী শুরু হয়ে সপ্তমীতে চক্ষু দান হয়ে অষ্টমীর পার হতে চলেছে। সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, মন্দিরগুলো নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। এখনও কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে সোমবার ভোর সকাল থেকেই বৃষ্টি ঝরছে। কিন্তু থেমে নেই ভক্তদের ঢল। ৩২ মন্দিরে জেলা প্রশাসক মোঃ খালিদ মেহেদী হাসান সরকারি অনুদান প্রদান করেছেন। ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক। এ সময় ওসি মোজাম্মেল হক কাজী, প্রেস ক্লাব সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ মণ্ডল, পূজা উদযাপনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ নাথ কর্মকার, রামজনম রবিদাস খোকা মাহাতো প্রমুখ। আয়োজকরা বলেন, এবারের পূজা জাঁকজমক পূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতিধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে আমাদের সাথে থেকে উৎসবকে সোহার্দ্য-সম্প্রতির বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখতে চাই।",ধর্মীয় উৎসব,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","মুসাফির যেভাবে নামাজ আদায় করবেন ",ইসলাম ধর্ম,"ব্যক্তিগত প্রয়োজন, অফিসিয়াল কাজকর্ম কিংবা আনন্দ-ভ্রমণসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের দূর-দূরান্তে সফর করতে হয়। এটা মানুষের জীবনযাত্রার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মানুষ নিজের আবাস্থলে থাকলে পুরোপুরি নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু ভ্রমণে গেলে আল্লাহর পক্ষ থেকে আলাদা সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তখন নামাজ সংক্ষেপ করাই ইসলামের বিধান। মূলত কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। নিজ এলাকা, গ্রাম বা শহর অতিক্রম করার পর থেকেই সফরের বিধান আরোপিত হবে। এ সময় সফরকারীকে মুসাফির বলে গণ্য করা হবে। সফরকারীর জন্য শরিয়তের বিধি-বিধানে কিছু শিথিলতা রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহ তা’আলা তোমাদের নবির জবানে মুকিম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত নামাজ ফরজ করেছেন’ (সহিহ মুসলিম: ৬৮৭)। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায়— কোনো আপত্তি নেই’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১০১)। মাগরিব ও ফজরে কসর নেই। এ দুই ওয়াক্তের ফরজ নামাজ যথাক্রমে তিন রাকাত ও দুই রাকাতই আদায় করতে হবে। ফরজ ছাড়া অন্য নামাজগুলো কসর হয় না। তাই সেগুলো আদায় করলে পরিপূর্ণভাবেই আদায় করতে হবে। বেতর তিন রাকাতই আদায় করতে হবে। তবে সুন্নাতে মুআক্কাদা নামাজ অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজের সাথে প্রতিদিন যে বারো রাকাত সুন্নাত নামাজ আমরা আদায় করে থাকি, এগুলো সফর অবস্থায় আবশ্যক থাকে না। ক্লান্তি বা ব্যস্ততা থাকলে এই নামাজগুলো ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে সময় সুযোগ থাকলে পড়ে নেওয়াই উত্তম। আর মুসাফির ব্যক্তি স্থানীয় ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে সে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে। (আল মাবসুত, সারাখসি ১/২৪৩)। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মুসাফির যদি মুকিমদের সঙ্গে নামাজে শরিক হয় তবে সে তাদের মতো (চার রাকাত) নামাজ পড়ে (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩৮৪৯)। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,বাঙালি মুসলিম সমাজে নববর্ষ,অন্যান্য,"সময় বয়ে চলেছে তার আপন গতিতে। একটি বছরের বিদায়ের মধ্য দিয়ে আরেকটি বছরের আগমন ঘটছে। একটি সালের পরিবর্তন মানে বর্ষপঞ্জিতে এক বছরের যোগ। একটি বছরের বিদায়লগ্নে নতুন আরেকটি বছরের আগমন নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাই জীবনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজের মতো বর্ষ গণনাকেও জরুরি বলে মনে করা হয়। সকলে বিগত বছরটির প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অঙ্ক কষেন এবং আগত বছরটিকে নতুন স্বপ্নে বরণ করার প্রস্তুতি নেন। দিবা-রাত্রির পরিবর্তন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে এই দিনগুলোর আমি পর্যায়ক্রমে আবর্তন ঘটাই।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৪০) সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ইহজগতে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে মানুষের পথচলা। ইসলামে সময়ের সদ্ব্যবহারের কথা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। সূরা আল-আসরের প্রারম্ভিক আয়াতে যুগের শপথ গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে সত্য, ন্যায়পরায়ণতা ও ধৈর্য-সহনশীলতার মাধ্যমে মানবজাতি তার আয়ুষ্কাল বা সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারে এবং নিজেদের অনিষ্টের কবল থেকে রক্ষা করতে পারে। সময়ের আবর্তনে ঘটমান সবকিছু থেকে আল্লাহ তাআলা মানুষকে উপদেশ গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘এবং তাদের আল্লাহর দিবসগুলো দ্বারা উপদেশ দাও। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে পরম ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ লোকদের জন্য।’ (সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ৫) বাঙালি জাতির জীবনে বাংলা নববর্ষ উৎসব একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। মৌসুমি ফসল উৎপাদন ও ঘরে তোলাকে কেন্দ্র করে যুগে যুগে উপমহাদেশে বাংলা সনসহ একাধিক সন গড়ে উঠেছে। বাংলা নববর্ষ উৎসবে প্রথমদিকে মুসলমানরা পুরোপুরি সম্পৃক্ত ছিল। বৈশাখী অনুষ্ঠান ছাড়াও আবহমান বাংলার গ্রামীণ লোকজ অনুষ্ঠানে মুসলমান ও হিন্দু কৃষিজীবীরা একাত্মÄ হতেন। নববর্ষ পৃথিবীর সর্বত্রই দেশীয় সংস্কৃতি, জনগণের অনুভূতি, আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে উদ্যাপিত হয়। সবার প্রত্যাশা থাকে নতুন বছরে অতীতের সব গ্লানি ধুয়ে-মুছে নতুনভাবে শুরু হোক জীবন, সৌভাগ্যের রাজটীকা শোভিত হোক ললাটে, বিষাদ ও বিড়ম্বনার অবসান হোক! ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম বণিক বা শাসকেরা যখন ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন, তখন তাঁদের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে কৃষ্টি-সভ্যতার অংশবিশেষ আমাদের সংস্কৃতিতে মিলিত হয়েছে। আরবরা ইসলাম গ্রহণের পরও অনেক ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান অকৃত্রিম রেখেছিল। বাংলা সন-পরবর্তী একাধিক সন তৈরিতে ইসলামের প্রভাব সুস্পষ্ট ছিল। ১৭৮২ সালে পিতা হায়দার আলী খানের ইন্তেকালের পর টিপু সুলতান মহীশূর রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি পিতার নামে নয়, বরং মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের বছরকে গণনায় এনে মুহাম্মদী সন নামে একটি নতুন সাল প্রবর্তন করেন। এটিই নবী করিম (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের স্মারকে উপমহাদেশে প্রথম সন। সম্রাট আকবরের সময় ফসলের মাধ্যমে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে ফসলি সন নামে আরও একটি সন চালু ছিল। এ মাসগুলোর নাম হিজরি মাসের নামেই ছিল। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ও আরাকানে মগি সন নামে আরেকটি সন প্রচলিত ছিল। এটিও হিজরি সনের ওপর ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তনের মতোই। হিজরি সনের আদলে এ অঞ্চলে আরও গড়ে উঠেছিল বিলায়তি সন, আসলি সন, ইলাহী সন প্রভৃতি। এসব সনের উৎপত্তি ও তারিখ গণনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে মহানবী (সা.), নবুওয়াত, ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিষয়গুলো সম্পৃক্ত ছিল। মোগল সম্রাট আকবর প্রবর্তিত সেই বাংলা নববর্ষই আজ বাঙালিদের প্রাণের অনুষ্ঠান। যে বাংলায় আজ নববর্ষ উদ্যাপিত হচ্ছে একসময় তা ছিল প্রাচীন কৃষিসভ্যতার অংশ। বাংলার কৃষি অর্থনীতিতে পুঁজিবাদের ছোঁয়া তখনো লাগেনি। নগদ অর্থের প্রবাহ কম থাকায় দোকানদার-মহাজনের সঙ্গে শ্রমজীবী কৃষকেরা বাকি-বকেয়ায় জড়িত হয়ে পড়তেন। সেই বকেয়া শোধের কাঙ্ক্ষিত দিন ছিল পয়লা বৈশাখ। মহাজন-দোকানদারেরা এ উপলক্ষে আয়োজন করতেন বর্ণাঢ্য হালখাতা অনুষ্ঠান। দেনাদারকে চিঠির মাধ্যমে পরোক্ষভাবে জানিয়ে দিতেন দেনা পরিশোধ করার জন্য। দেনাদারেরাও নানাভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন সে অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য। দেনা শেষে দোকানদার-মহাজনেরা মিষ্টি, দই-সন্দেশ দিয়ে তাঁদের আপ্যায়ন করাতেন। খাজনা পরিশোধের পর প্রজাদের মিষ্টিমুখ করানোরও রেওয়াজ ছিল। বঙ্গীয় মুসলমানরা এ সময় ভালো খাবার-দাবারের বন্দোবস্ত করেন। পোশাকপরিচ্ছদেও থাকে পরিপাটির ছাপ। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মুসলমানরা ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি পুরোনো ঘরদোরের সংস্কারে নিয়োজিত হন। নীতিমান ব্যবসায়ীরা হালখাতার উৎসবে মেতে ওঠেন। এ ধারাটি এখনো অক্ষুণ্ন আছে মুসলিম সমাজে। মুসলমান ব্যবসায়ীরা বৈশাখের প্রথম দিনে দোকান পরিষ্কার, ঝাড়মোছ করার পর দোয়ার মাহফিল ও মিলাদ শরিফ পড়ানোর বন্দোবস্ত করেন। দেনা-পাওনা মেটানোর পর দেনা পরিশোধকারীদেরও মিষ্টিমুখে বিদায় করার সাংস্কৃতিক রেওয়াজ এখনো মুসলিম সমাজে লক্ষণীয়। লৌকিক বাংলার ধারাবাহিকতায় সিক্ত বাঙালি মুসলমান সমাজে নববর্ষের প্রথম দিনে হতদরিদ্র মানুষের জন্য কাঙালিভোজ ও শিরনি-পায়েস খাওয়ানোর রেওয়াজও ছিল। আবহমান কাল থেকে বাংলা নববর্ষের সূচনালগ্ন পয়লা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির একটি অনন্য দিন। দেশের প্রতিটি ঘরে বিরাজ করে নবান্নের উৎসবের আমেজ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইহলোকিক কল্যাণ ও পরকালীন সফলতার প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রতিটি দিন, মাস ও বছর মানুষের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। সময়ের যথার্থ মূল্য দিতে পারলেই কেবল জীবনে সফলকাম হওয়া যাবে। পূর্ব দিগন্তে প্রভাতের সূর্য হাসুক, খুশির বার্তা নিয়ে পাখিরা মুক্ত মনে গান গেয়ে উড়ুক খোলা আকাশে। মুছে যাক ব্যর্থতার সব স্মৃতিচিহ্ন। সূচনা হোক নতুন বছরের। হারিয়ে যাওয়া দিনের প্রাপ্তি প্রত্যাশার হিসাব। স্বপ্নিল আগামী গড়ার দৃঢ়প্রত্যয়ে সূচিত হোক নতুন দিনের, নতুন বছরের। বাংলা সন হোক আমাদের জীবনে সত্য ও ন্যায়ের পথে চলার অনুপ্রেরণা!",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral ভোরের কাগজ,"রমজানে বিএনপির কর্মসূচি ধর্মীয় মূল্যবোধের বিপরীত ",ইসলাম ধর্ম,"আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রমজান মাসে কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতির বিপরীতে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, রমজান মাস সংযমের মাস। এ মাসেও বিএনপির নেতারা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি চলমান রাখার কথা জানিয়েছে। রমজান মাসে কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিএনপি জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। কাদের বলেন, তাদের এই কর্মসূচি রমজানের মধ্যেও জনভোগান্তি সৃষ্টি করবে। অর্থাৎ তারা দেশের জনগণকে কোনওভাবেই স্বস্তিতে থাকতে দিতে চায় না। আমরা আগেই বলেছি, রমজানে ঘোষিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপি আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে তাদের তথাকথিত সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংসের পাঁয়তারা করে আসছে বিএনপি। কিন্তু তাদের ডাকে জনগণ কখনোই সাড়া দেয়নি। বরং তারা জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ফলে বিএনপি তথাকথিত আন্দোলনের মাধ্যমে গণসম্পৃক্ততার কোনও স্বরূপ তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি সর্বদাই গণবিরোধী অবস্থানে থেকে রাজনীতি করে আসছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পরোক্ষভাবে বন্দিত্বের কথা বলছে; তারা নাকি স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারে না। অথচ তারা নিয়মিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে, চড়া গলায় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভুলের চোরাবালিতে আটকা পড়েছে, ভুল রাজনীতির ফ্রেমে বন্দি হয়ে আছে। তারা খুনি-দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারী তারেক রহমানের নেতৃত্বের দাসত্বে বন্দি হয়ে আছে। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় বা বিবেক জাগ্রত না হলে তারা এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাবে না। বন্দি অবস্থায় থাকতে থাকতে ভ্রমের কারণে তারা তাদের বন্দিত্বের দায়ভার সরকারের উপরে চাপানোর অপচেষ্টা করছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"ঈদের আগে সুনামগঞ্জে পরিবহন ধর্মঘট ",অন্যান্য,"সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে বিআরটিসির বাস চালু করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সোমবার ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘট চলছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগ মুহূর্তে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। হঠাৎ এ ঘোষণায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সুনামগঞ্জ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা বলছেন, সোমবার থেকে হঠাৎ করে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে বিআরটিসির বাস চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অথচ সুনামগঞ্জে ২টি মালিক সমিতি ও একটি ট্রেড ইউনিয়ন আছে। কোনো জেলায় নতুন বাস চালু করতে হলে মালিক-শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হয়। কিন্তু প্রশাসন কিংবা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই অঘোষিত ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত বিআরটিসির বাস চালুর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হয়, এই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলবে। সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিসবাহ উদ্দিন জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জে মোট ৪টি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ থাকার পরও কেউ আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত বিআরটিসির বাস বন্ধ করা না হয় আমাদের এই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,যুক্তরাজ্যে সব ধর্মের লোকদের মসজিদে আসার আমন্ত্রণ,ইসলাম ধর্ম,"সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধ তৈরি করতে যুক্তরাজ্যে এবারও অনুষ্ঠিত হবে ‘ভিজিট মাই মস্ক’ দিবস। মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের (এমসিবি) তত্ত্বাবধানে দেশটির আড়াই শর বেশি মসজিদে পালিত হবে দিবসটি। আগামী ২৩-২৪ সেপ্টেম্বর দুই দিন মসজিদগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ওই দিন মসজিদ প্রাঙ্গণে থাকবে বিভিন্ন ইসলামী প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের অধিকাংশ মসজিদ প্রতিবছর এই আয়োজনে অংশ নেয়। এক বিবৃতিতে এমসিবি জানিয়েছে, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও ভিজিট মাই মস্ক দিবসটি পালিত হবে। মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের নেওয়া এই উদ্যোগে আড়াই শর বেশি মসজিদ অংশ নেবে। এই সময় মসজিদগুলো সব ধর্মের লোকদের জন্য সার্বক্ষণিক উন্মুক্ত থাকবে।এতে স্থানীয় সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে মসজিদগুলোর সেতুবন্ধ তৈরি হবে।’ এই আয়োজনে অংশ নিতে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে বলা হয়। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হ্যাশট্যাগ ভিজিট মাই মস্ক’ লিখে চলছে প্রচারণা। এমসিবি এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছে, ব্রিটেনের ৭০ শতাংশ মানুষ অন্য ধর্মের উপাসনাস্থলের ভেতরের অংশ কখনো দেখেনি।আর প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কখনো মসজিদের ভেতরের অংশ দেখেনি। তাই সব ধর্মের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক জানাশোনা ও সুসম্পর্ক গড়তে মসজিদ পরিদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যেন ইসলাম ও মুসলিমদের জীবনযাপন সম্পর্কে অন্য ধর্মের মানুষও ধারণা লাভের সুযোগ পান।২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার ভিজিট মাই মস্ক দিবসটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বছরই সবার মধ্যে মসজিদভিত্তিক ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলে।ওই বছর যুক্তরাজ্যের ২০টি মসজিদ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করলেও বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে তিন শর কাছাকাছি পৌঁছে। দিনটিতে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিরোধীদলীয় নেতা, জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা স্থানীয় মসজিদ পরিদর্শন করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral যায়যায়দিন,"ইফতারের সময় কুয়েতে কামানের গোলা ছুড়ে কেনো? ",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বজুড়ে চলছে এখন মাহে রমজান। এই রমজান মাসকে কেন্দ্র করে উৎসবের নগরীতে পরিণত বিশেষ অনেক শহর বন্দর। বিশেষ করে তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে এই সংস্কৃতি দেখা যায়। সম্প্রতিক সময়ে লন্ডনেও বর্ণিল সাজে সাজানো হয় রমজান উপলক্ষ্যে। রমজান মাসকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী রয়েছে নানা অনুষ্ঠান আর রীতি-রেওয়াজ। রমজানে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে প্রতিদিন কামান দাগিয়ে ইফতারের সময় জানিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ বেশ পুরোনো। কুয়েতও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে ইফতারের সময় হলেই দেখা যায় বিভিন্ন মসজিদে সাইরেন কিংবা ‘ইফতারের সময় হয়েছে, আপনারা ইফতার করে নিন’ বলে দেওয়া হয়। অন্যদিকে কুয়েতে ইফতারের সময় জানাতে কামানের গোলা ছোড়ার আওয়াজ শোনানো হয়। যা ‘মিডফা আল ইফতার’ নামে পরিচিত। রোজাদারদের জানাতে দেশটির শাসক শেখ মোবারক আল সাবাহ এ রীতি চালু করেন বলে জানা যায়। এটি কুয়েতের ঐতিহ্যও বটে। ইফতারের সময় হলেই দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে। যেটা দেখে রোজাদাররা ইফতার শুরু করেন। কুয়েত ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশে এ রীতি চালু আছে। কুয়েত সিটির লিবারেশন টাওয়ারের পাশেই নায়েফ প্রাসাদে এ কামান বসানো হয়েছে। নায়েফ প্রাসাদটি ১৯১৯ সালে শেখ সালেম আল-মুবারক আল-সাবাহ-এর শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল। কুয়েতে প্রথম কামানটি ১৯০৭ সালে শেখ মুবারক আল-সাবাহ-এর শাসনাধীনে আসে। কামানটি ছিল ইরানের গভর্নরের কাছ থেকে পাওয়া একটি উপহার ছিল। নায়েফ প্রাসাদের বর্তমান কামানটি ১৯৯২ সালে বাহরাইন রাজা থেকে প্রতিশ্রুতি হিসেবে এসেছে। এই কামান দাগাতে তিনজন ইউনিফর্মধারী গার্ড কাজ করেন। কামানের গোলা ছোড়ার এ দৃশ্য দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় নাগরিক ও প্রবাসীরা। তাদের কাছে এটি মনোমুগ্ধকরও বটে। বলা হয়ে থাকে, মিশরের তৎকালীন শাসক খোস কাদাম একদিন সূর্যাস্তের সময় নতুন একটি কামান পরীক্ষা করতে গিয়ে ঘটনাক্রমে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলেন। সেটা ছিল রমজানের মাগরিবের সময়। সমগ্র কায়রোয় শব্দটি শোনা গিয়েছিল। স্থানীয়রা মনে করেছিল, ইফতারের সময় হয়েছে, তা জানাতে এটি নতুন শাসকের নতুন পদ্ধতি। বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সমাজের অভিজাত ব্যক্তিরা সুলতানের কাছে গিয়েছিলেন এবং তার সদয় অঙ্গভঙ্গির জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান। তখন থেকে এ ঐতিহ্য আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"আলজেরিয়ায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ উদ্বোধন ",ইসলাম ধর্ম,"আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ও আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আলজিয়ার্সের গ্র্যান্ড মসজিদ উদ্বোধন করেন দেশটির রাষ্ট্রপতি আবদেল মাদজিদ তেবোউন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্য গ্রেট মস্ক অব আলজিয়ার্স স্থানীয়ভাবে জামাআ এল-জাজাইর নামে পরিচিত। মসজিদটিতে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। আলজিয়ার্সের গ্রেট মসজিদে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনার রয়েছে-যার উচ্চতা ২৬৫ মিটার (৮৬৯ ফুট)। রাষ্ট্রীয় খরচে ২০১০ এর প্রায় পুরো দশক ধরেই একটি চীনা নির্মাণ কোম্পানি মসজিদ তৈরির কাজটি করেছে। মসজিদটির নকশায় রয়েছে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের সমন্বিত ছোঁয়া। এতে আলজেরিয়ার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে আরব এবং উত্তর আফ্রিকার সমৃদ্ধিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মসজিদটিতে রয়েছে হেলিকপ্টার অবতরণের একটি প্যাড। মসজিদের সাথে সংযুক্ত লাইব্রেরিতে রাখা যাবে প্রায় ১০ লাখ বই। আল-জাজিরা জানায়, প্রায় ৭০ একর জায়গার উপর মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটি প্রায় পাঁচ বছর ধরেই পর্যটক এবং রাষ্ট্রীয় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কেবল বিলম্বিত হয়েছে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ইসরাইলের বাধার মুখেও আল-আকসায় ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় ",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র রমজান মাসের দ্বিতীয় জুমায় আল-আকসা মসজিদে শুক্রবার একসঙ্গে নামাজ পড়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লি। দখলদার ইসরাইলের নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক বাধা সত্ত্বেও এদিন পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের আল-আকসায় জড়ো হন হাজার হাজার মুসল্লি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মুসলমানদের পবিত্রস্থান আল-আকসার কালান্দিয়া, জেইতুন ও বেথলেহেম চেকপয়েন্টে সামরিক তৎপড়তা জোরদার করেছে ইসরাইল। আল-আকসায় প্রবেশের অনুমোদন তাদের কাছে নেই দাবি করে শত শত মুসলিমদের ফিরিয়ে দেয় ইসরাইলের সেনাবাহিনী। মসজিদের চারপাশে শত শত সেনা মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। রমজান মাসেও আল-আকসায় প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দখলদার বাহিনী। এর মধ্যেও ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জেরুজালেমের ইসলামিক প্রতিষ্ঠান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে বিভিন্ন জায়গায় চেকপয়েন্ট বসিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছে ইসরাইল। এছাড়া ওল্ড সিটির উন্মুক্ত গেইটে লোহার ব্যারিকেড বসিয়েছে তারা। ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান হলো আল-আকসা মসজিদ। তবে আল-আকসায় প্রবেশে মুসলিমদের যে একচ্ছত্র অধিকার রয়েছে সেটি কেড়ে নিতে চায় দখলদার ইসরাইল। এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও আল-আকসায় ইবাদতের জন্য একমাত্র মুসলিমদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু সেটির তোয়াক্কা করে না ইসরাইলি সরকার। পবিত্র রমজান মাসেও যেন মুসল্লিরা যে আল-আকসায় যেতে না পারেন সেজন্য সেখানে প্রবেশের আগে পূর্ব অনুমতির ব্যবস্থা করেছে ইসরাইল। এর আগে রমজানের প্রথম জুমায় আল-আকসায় ৮০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেছিলেন। কিন্তু ওইদিন মসজিদটিতে শুধুমাত্র ৫৫ বছরের উর্ধ্বের পুরুষ এবং ৫০ বছরের উর্ধ্বের নারীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এছাড়া আগে থেকেই অনুমতি নেয়ার বাধ্যবাধকতা দিয়েছিল ইসরাইল। ফলে বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি প্রথম জুমায় আল-আকসায় প্রবেশ করতে পারেননি। গত বছরের অক্টোবর গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধের দোহাই দিয়ে আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের প্রবেশ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু রমজান মাস আসার পর তারা নমনীয়তা দেখাতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও ইসরাইলের উগ্রপন্থিমন্ত্রী ইতামার বেন গিভির চেয়েছিলেন রমজানেও যেন আল-আকসায় মুসল্লিদের প্রবেশ করতে না দেয়া হয়। তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার এ প্রস্তাবে রাজি হননি। কারণ নেতানিয়াহু ভয় পেয়েছিলেন এই ভেবে যে, যদি রমজানেও মুসল্লিদের পবিত্র এ মসজিদে প্রবেশ করতে না দেয়া হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশী হতে পারে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ব্রুনাই-মালয়েশিয়ায় রোজা শুরু মঙ্গলবার,ইসলাম ধর্ম,"ব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ায় রোজা শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। চাঁদ দেখা না যাওয়ায় দেশ দুটিতে আগামী মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে শুরু হবে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। ব্রুনাই জানিয়েছে, রাষ্ট্রের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী মঙ্গলবার থেকে রমজান মাস শুরু হবে। অপরদিকে মালয়েশিয়া বলেছে, রমজানের অর্ধচন্দ্র দেখা সম্ভব হয়নি। ফলে আগামী মঙ্গলবার পবিত্র রমজান মাসের প্রথমদিন হবে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রও রোজা শুরুর তারিখ ঘোষণা করেছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার জানায়, আগামীকাল সোমবার শেষ হবে শাবান মাস। আর মঙ্গলবার (১২) হবে রমজান মাসের প্রথমদিন। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে আগামীকাল সোমবার থেকে রোজা শুরু হবে। উত্তর আমেরিকা ফিকাহ কাউন্সিল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, রমজানের প্রথমদিন হবে আগামীকাল সোমবার, মার্চ ১১, ২০২৪। তারাবির নামাজ শুরু হবে রবিবার রাতে।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ইত্তেফাক,হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে চলেছে ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্টের মেয়ে,হিন্দু ধর্ম,"মুসলমান থেকে হিন্দু হতে চলেছে ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট সুকার্নোর তৃতীয় কন্যা সুকমাবতী সুকার্নোপুত্রি। সিএনএন ইন্দোনেশিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার বালিতে একটি 'সুধি বদানি' অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সনাতনী হবেন সুকমাবতী। হিন্দু ধর্মে তার আগ্রহের পিছনে রয়েছেন দাদী ইদা আয়ু নিয়োমন রাই শ্রিম্বেন। সুকমাবতীর বাবা ইন্দোনেশিয়া ন্যাশনাল পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। কানজেঙ্গ গুস্তি পানগেরান আদিপতি আর্য মাঙ্গকুনেগারার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। ১৯৮৪ সালে বিচ্ছেদ। সুকমাবতীর আইনজীবী জানান, হিন্দুত্বের বিষয়ে বিশাল জ্ঞান রয়েছে সুকার্নোর মেয়ে। হিন্দু ধর্মের আচার-আচরণ সম্পর্কেও জানেন। ২০১৮ সালে সুকমাবতীর বিরুদ্ধে উঠেছিল ইসলাম অবমাননার অভিযোগ। ইন্দোনেশিয়ার ফ্যাশন উইকে একটি কবিতা পড়েছিলেন তিনি। সুকমাবতী বলেছিলেন, বোরখা পড়ার চেয়ে ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী খোঁপা অনেক ভালো। তার পরই সুকমাবতীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে উলেমাদের সংগঠন। তার গ্রেফতারির দাবি করেন। ওই ঘটনার পর সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষমা চান তিনি। ইন্দোনেশিয়া মুসলিম প্রধান দেশ। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা সেখানে। একটা সময় হিন্দুদের আধিক্যও ছিল সেখানে। এখনও সরকারিভাবে দেশের ৬টি ধর্মের মধ্যে অন্যতম হিন্দু।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,"কাজাখস্তানে রোজা ",ইসলাম ধর্ম,"কাজাখস্তানে ৭০ শতাংশ মুসলমান। কাজাখদের ইফতার, সাহ্‌রি, তারাবিহ আর ঐতিহ্যের মিশেলে রমজান মাস হয়ে উঠে উৎসব–আনন্দের মাস। দোকানিরা রমজানকে স্বাগত জানান। নামাজি মুসল্লিরাও মসজিদ ও নামাজের স্থানগুলো ধোয়ামোছায় রোজার প্রাথমিক প্রস্তুতি সমাপ্ত করেন। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা রাস্তায় নেমে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে নানান আরবি গান গাইতে থাকে। সর্বত্র একটি ধর্মীয় আবেগ ইমেজ তৈরি হয়। কাজাখদের ঐতিহ্যবাহী রীতি হলো, রমজানে সব আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত করা ও উপহার পাঠানো। যেসব আত্মীয়স্বজনের ভেতরে কোনো বিরোধ থাকে, রমজান আসার আগেই সে বিরোধ মিটিয়ে ফেলা হয়। কাজাখদের প্রধান ইফতারি হলো কুমিস আর শুবাত। কুমিস তৈরি হয় ঘোড়ার দুধ দিয়ে, শুবাত উটের দুধে। এর সঙ্গে ফলমূল আর শরবত। শীতপ্রধান দেশ হওয়ায় ইফতারে শরবতের পরিবর্তে চায়ের চাহিদাও থাকে। কাজাখদের রন্ধনশৈলী পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত। বাহারি রন্ধনের জন্য পর্যটকদের প্রথম পছন্দ কাজাখস্তান। উট, ভেড়া ও ঘোড়ার গোশতে প্রস্তুত হয় করা নানান ধরনের খাদ্য। উট আর ভেড়ার দুধ থেকে তৈরি করা হয় নানা ধরনের মুখরোচক ইফতারি। কাজাখস্তানে রোজা কাজাখস্তানে প্রায় দুই হাজার বড় মসজিদ আছে। সব মসজিদেই রোজাদারদের জন্য উন্মুক্ত মেহমানদারির ব্যবস্থা থাকে। এই মেহমানদারির নাম মাতাইমুর রহমাহ, অর্থাৎ আল্লাহর রেস্তোরাঁ। মাতাইমুর রহমাহ পরিচালনার জন্য উন্মুক্ত দানের ব্যবস্থা আছে। খতমে তারাবিহতে কাজাখদের আগ্রহ বেশি। সহজে কেউ খতমে তারাবিহ ছাড়তে চান না এবং মসজিদ ছাড়া কেউ একাকী তারাবিহ পড়েন না। কাজাখস্তানের শহরের মসজিদগুলোয় একটি অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। এটি কাজাখদের ঐতিহ্যের অংশ। তারাবিহর পর চালক বা গাড়ির মালিক গাড়ি নিয়ে মুসল্লিদের অপেক্ষা করেন। এরপর তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেন। কোনো ভাড়া নেন না। গাড়ির মালিক রমজানে অতিরিক্ত নেকি ও ফজিলত অর্জন করতে চান। রমজানের কোরআন তিলাওয়াতেও কাজাখদের আগ্রহ। এভাবে সুন্দর সব ইবাদত আর কাজের মধ্য দিয়ে কাজাখরা রমজানকে বিদায় জানান। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,দেশের বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না : জিএম কাদের,হিন্দু ধর্ম,"শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি। শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষ্যে আজ সোমবার দেয়া এক বাণীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবে দেশের সকল মানুষের প্রতি অফুরান ভালোবাসা জানিয়েছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সনাতন ধর্ম মতে, “দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন” এর প্রত্যাশায় শারদীয় দুর্গা উৎসব উদযাপিত হয়ে থাকে। এসময় সমাজের অন্যায়, অবিচার, অশুভ এবং অশুর শক্তি দমনের মাধ্যমে বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরম ভক্তিকে আরাধনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, সার্বজনীন দুর্গা উৎসবে এদেশের মুসলিম-বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও আনন্দ মুখর পরিবেশে অংশ নেয়। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে বিরাজমান হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময় ১৯৮৯ সালে জন্মাষ্টমীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জন্মাষ্ঠমীর শুভ দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। পল্লীবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট। যোগ্যতার ভিত্তিতে সকল ধর্মাবলম্বীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এছাড়া, প্রতিটি পূজা-পার্বণ, মন্দির নির্মাণ ও মন্দির সংস্কারে পল্লীবন্ধুর আন্তরিক সহায়তা ছিল সর্বজনবিদিত। তিনি, সবার শান্তিময় উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানে অধীনস্থ কর্মচারীর কাজ হালকা করুন,ইসলাম ধর্ম,"বেঁচে থাকতে হলে একে অপরের ওপর নির্ভর করতে হয়। আজ যারা অফিসপ্রধান তারাই তাদের অধীনস্থ কর্মচারীর কারণে খুব সহজেই অফিস পরিচালনা করতে সক্ষম। আপনি একটু ভাবুন, আপনার নিম্ন কর্মচারী যদি না থাকত, অফিসের কাজে আপনার কতইনা বেগ পেতে হতো। অফিস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সব কাজই প্রধানের পক্ষে করা কষ্টের হতো। আজ যারা মালিকপক্ষ, যারা শিল্পপতি, দামি বাড়িতে বসবাস ও দামি গাড়িতে চলাচল করে, আনন্দে উল্লাসে সময়কে অতিবাহিত করে একটু লক্ষ্য করুন, আপনার এ আনন্দের পেছনে রয়েছে আপনারই অধীনস্থ শত শত শ্রমিক বা কর্মচারীর হাজারো ফোঁটা ঘাম। একজন কর্মচারীর গোটা জীবন কেটে যায় আপনার কারখানায়। মালিকের মুখে হাসি ফোটাতে, মালিককে লাভবান করতে অসহনীয় পরিবেশে কাজ করেন তারা। এমনকি মালিককে লাভবান করতে অতিরিক্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করেন হাসিমুখে। সপ্তাহ, মাসজুড়ে কাজ করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও মন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট তারা ব্যতীত অন্যরা খুব কমই বোঝে, যে শ্রমিক দিয়ে আমরা আজ বিত্তশালী। পরিবারকে নিয়ে আনন্দে কাটাচ্ছি। তাদের অবহেলা করা উচিত নয়। মাহে রমজানে অধীনস্থ কর্মচারীদের থেকে কাজের বোঝা কমিয়ে দেওয়া ভালো কাজ। একজন কর্মচারীর রোজা রেখে পরিপূর্ণভাবে কাজ সম্পাদন করা যে কত কঠিন, উপরস্থ কর্মচারী কিংবা মালিকপক্ষের অনুভব করা দরকার। রমজান মাসে তাদের ওপর কষ্টকর সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপানো ঠিক নয়। এটা রোজাদারকে কষ্ট দেওয়া হয়। রোজা রেখে তারা অধিক কষ্টসাধ্য কাজ করলে বেশি ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। তারা নিজ পরিশ্রম দিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে ১২টি মাসের ১১টিতেই কাজ করল। রোজার এই একটি মাসে তাদের অধীনস্থ কর্মচারীদের কাজকে হালকা করে দেওয়া ভালো কাজ। এ ব্যাপারে বলেন, ‘এ মাসে (রমজানে) যারা দাস-দাসীদের প্রতি সদয় ব্যবহার করেন, অর্থাৎ তাদের কাজের বোঝা হালকা করেন, আল্লাহ তাদের দয়াপরবশ হয়ে ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করেন।’ শান্তির ধর্ম ইসলামে মানুষের পার্থক্য করেনি। মাটির কবরেই সবার শেষ ঠিকানা। ধনী-গরিব, মালিক-শ্রমিকের কোনো পার্থক্য করে না। একটি প্রতিষ্ঠানে সবাই সমান। মালিক নিজে যা খাবে ও পরবে, অধীনস্থ কর্মচারীকে তা-ই খাওয়াবে ও পরাবে। উঁচু-নীচুর মন মানসিকতা তৈরি করবে না। প্রিয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ভাইদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। অতএব, যার অধীনে কোনো ভাই থাকে তাকে তা-ই খাওয়াবে যা সে নিজে খায়, তাকে তা-ই পরাবে যা সে নিজে পরে এবং তাকে সাধ্যের অধিক কাজ চাপিয়ে দেবে না। অগত্যা তাকে দিয়ে যদি কোনো কষ্টের কাজ করাতে হয়, তাহলে তাকে সাহায্য করবে।’ বুখারি ও মুসলিম। রমজানে বাসার কাজের ছেলেমেয়েদের অতিরিক্ত কাজ করানো হয়। অল্প বেতন দিয়ে পুরো পরিবারটিকেই গুছিয়ে রাখে তারা। একটু ভুল হলেই বকাঝকা পর্যন্ত করে। কাজের ছেলেমেয়ের হাত দিয়ে সামান্য কিছু নষ্ট হলেই শুরু হয় বেদম প্রহার বা নির্যাতন। অথচ নিজের ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে কোনো কিছু নেই। রমজানে অতিরিক্ত রান্নার কারণে মালিকপক্ষের উচিত তাকে সাহায্য করা।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive Dhaka Tribune,"আরব আমিরাতে সন্ধান মিলল ইসলামপূর্ব যুগের খ্রিস্টান মঠের ",ইসলাম ধর্ম,"সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলের একটি দ্বীপে প্রাচীন খ্রিস্টান মঠের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) আমিরাতের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। আরব দেশগুলোতে ইসলাম ধর্ম প্রসারের আগে মঠটি নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমিরাতে পাওয়া দ্বিতীয় মঠ এটি। সিনিয়াহ দ্বীপে অনুসন্ধান পাওয়া মঠটি পারস্য উপসাগরের তীরে খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসে নতুন আলো দেখালো।সিনিয়াহ উম আল-কুওয়াইনের শেখডমের অংশ। পারস্য উপসাগরের উপকূল বরাবর দুবাই থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) উত্তর-পূর্বের আমিরাত দ্বীপ এটি। দ্বীপটি উম্ম আল-কুওয়াইনের খোর আল-বেইদা জলাভূমিকে রক্ষা করে। দ্বীপের উত্তর-পূর্ব দিকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা মঠটি খুঁজে পেয়েছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, প্রায় এক হাজার ৪০০ বছরের মঠটি যখন তৈরি হয়, তখন মরুভূমির বিস্তার ঘটেনি। এখনকার মতো সমৃদ্ধ তেল শিল্পের সূচনাও হয়নি, আবুধাবি এবং দুবাইয়ের আকাশছোঁয়া অট্টালিকা তখন কল্পনার বাইরে ছিল। এই মঠ আবিষ্কারের কাজে যুক্ত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্বের সহযোগী অধ্যাপক টিমোথি পাওয়ার। তিনি বলেন, “হাজার বছর আগে এখানে অসাধারণ কিছু ঘটেছিল। সেই কথা জানা প্রয়োজন। তিনি জানান, ৫৩৪ এবং ৬৫৬ সালের মধ্যে মঠের ভিত্তিতারিখে নমুনার কার্বন ডেটিং করা হয়েছে। ইসলামের নবী মোহাম্মদ (সা:) জন্মগ্রহণ করেন ৫৭০ সালে। বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা জয় করার পর ৬৩২ সালে মৃত্যু হয় তার। অধ্যাপক টিমোথি পাওয়ার আরও জানান, উপর থেকে দেখা গেলে বোঝা যাবে, সিনিয়াহ দ্বীপে খ্রিস্টান উপাসকরা চার তলার মঠের একটি একক ঘরের গির্জার মধ্যে প্রার্থনা করতেন। ভিতরের কক্ষগুলোতে ব্যাপটিজমাল হরফ রয়েছে। রুটি বেক করার জন্য একটি চুলা বা গোষ্ঠীবদ্ধ রীতিপালনের জন্য ওয়েফার রয়েছে। একটি বেদিও ছিল সেখানে। গির্জার মূল অংশে ওয়াইনের জন্য একটি ইনস্টলেশনও ছিল। মঠের পাশে চারটি ঘরের দ্বিতীয় ভবন রয়েছে। সম্ভবত চারপাশে মঠের উঠান ছিল। অনুমান করা হচ্ছে, গির্জা বা মঠের প্রথম বিশপের বাড়ি ছিল এটি। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"সুরা নমলে হজরত সোলায়মান (আ.) ও রানি বিলকিসের ঘটনা ",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ইয়েমেনের এক নারীর গল্প বলেছেন। বিলকিস হজরত সোলায়মান (আ.)-এর যুগে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সম্রাজ্ঞী ছিলেন। সোলায়মান (আ.) ওই নারীর (বিলকিসের) সাম্রাজ্যের কথা জানতেন না। তিনি তাঁর গোয়েন্দা পাখি হুদহুদের মাধ্যমে জানতে পারেন, কারো আনুগত্য স্বীকার না করেই বিলকিস বিস্তীর্ণ একটি অঞ্চল শাসন করছেন। তিনি তাঁকে আত্মসমর্পণের আহ্বান করলেন। কোরআনের সুরা নমলের ২৪টি আয়াতে আল্লাহ ঘটনাটি তুলে ধরেছেন। কোরআনের ভাষ্যে ঘটনাটি বর্ণনা করা যাক। কোরআনে আছে, সে (হুদহুদ) দেরি না করে এসে পড়ল এবং বলল, ‘আমি এমন সব তথ্য লাভ করেছি, যা আপনার জানা নেই আর সাবা থেকে সঠিক খবর নিয়ে এসেছি। আমি এক নারীকে দেখলাম সে জাতির ওপর রাজত্ব করছে। তাকে সবই দেওয়া হয়েছে ও তার আছে এক বিরাট সিংহাসন। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম, তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদা করছে। শয়তান ওদের কাছে ওদের কাজকর্ম শোভন করেছে ও ওদের সৎ পথ থেকে দূরে রেখেছে যেন ওরা সৎ পথ না পায় এবং যিনি আকাশ ও পৃথিবীর গোপন বিষয়কে প্রকাশ করেন, যিনি জানেন যা তোমরা গোপন কর ও যা তোমরা প্রকাশ কর, সেই আল্লাহকে যেন ওরা সিজদা না করে। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনিই মহা আরশের অধিপতি।’ (সোলায়মান) বলল, ‘আমি দেখব, তুমি সত্য বলছ না মিথ্যা বলছ? তুমি আমার এ চিঠি নিয়ে যাও। এ তাদের কাছে দিয়ে এসো। তারপর তাদের কাছ থেকে সরে পড়ো ও দেখো তারা কী উত্তর দেয়।’ (সাবা রানি বিলকিস) বলল, ‘পারিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেওয়া হয়েছে। এ সোলায়মানের কাছ থেকে। আর তা এই: করুণাময়, পরম দয়াময় আল্লাহর নামে। অহংকার করে আমাকে অমান্য করো না, আনুগত্য স্বীকার করে আমার কাছে উপস্থিত হও।’ (বিলকিস) বলল, ‘পারিষদবর্গ! আমার এ সমস্যায় তোমাদের পরামর্শ দাও, আমি যা করি তা তো তোমাদের উপস্থিতিতেই করি।’ ওরা বলল, ‘আমরা তো শক্তিশালী ও কঠোর যোদ্ধা; তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আপনার, কী নির্দেশ দেবেন, তা আপনিই দেখুন।’ (বিলকিস) বলল, ‘রাজা-বাদশাহরা যখন কোনো জনপদে প্রবেশ করে, তখন তাকে বিপর্যস্ত করে দেয় ও সেখানকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদের অপদস্থ করে; এরাও তা-ই করবে। আমি তাঁর কাছে উপঢৌকন পাঠাচ্ছি। দেখি, দূতেরা কী উত্তর আনে।’ দূত সোলায়মানের কাছে এলে সোলায়মান বলল, ‘তোমরা কি আমাকে ধনসম্পদ দিয়ে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন তার চেয়ে উত্তম জিনিস দিয়েছেন আমাকে, অথচ তোমরা তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে উৎফুল্ল বোধ করছ।... তোমরা ওদের কাছে ফিরে যাও, আমি অবশ্যই ওদের বিরুদ্ধে এমন এক সৈন্যবাহিনী নিয়ে উপস্থিত হব, যা রুখবার শক্তি ওদের নেই। আমি ওদেরকে সেখান থেকে অপমান করে বের করে দেব ও ওদেরকে দলিত করব।’ সোলায়মান আরও বলল, ‘হে আমার পারিষদবর্গ। তারা আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে আসার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমাকে এনে দেবে?’ এক শক্তিশালী জিন বলল, ‘আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার আগেই আমি তা এনে দেব। এ ব্যাপারে আমি এমন শক্তি রাখি। আর আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন।’ কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বলল, ‘আপনি চোখের পলক ফেলার আগেই আমি তা এনে দেব। সোলায়মান যখন তা সামনে রাখা দেখল, তখন বলল, এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন, আমি কৃতজ্ঞ না অকৃতজ্ঞ। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তা নিজের জন্য করে, আর যে অকৃতজ্ঞ সে জেনে রাখুক যে আমার প্রতিপালকের অভাব নেই, তিনি মহানুভব।’ সোলায়মান বলল, ‘তার সিংহাসনের আকৃতি বদলে দাও; দেখি সে ঠিক ধরতে পারে, নাকি ভুল করে।’ বিলকিস যখন পৌঁছাল, তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘তোমার সিংহাসন কি এ রকম?’ সে বলল, ‘এ তো এ রকমই। আমরা আগেই সবকিছু জেনেছি ও আত্মসমর্পণও করেছি।’ আল্লাহর পরিবর্তে সে যার পূজা করত, তা-ই তাকে সত্য থেকে সরিয়ে রেখেছিল, সে (বিলকিস) ছিল অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের একজন। তাকে বলা হলো, ‘এই প্রাসাদে প্রবেশ করো।’ যখন সে ওটার দিকে তাকাল, তখন তার মনে হলো এ এক স্বচ্ছ জলাশয় এবং সে তার কাপড় হাঁটু পর্যন্ত টেনে তুলল। সোলায়মান বলল, ‘এ তো স্বচ্ছ স্ফটিকের প্রাসাদ।’ (বিলকিস) বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক। আমি তো নিজের ওপর জুলুম করেছিলাম। আমি সোলায়মানের সঙ্গে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের কাছে আত্মসমর্পণ করছি।’ (সুরা নমল, আয়াত: ২২-৪৪) আরও পড়ুন রোজার নিয়ত রোজার নিয়ত নিজের সিংহাসন সোলায়মান (আ.)-এর দরবারে দেখে বিলকিস অবাক হবেন এবং ক্ষমতা দেখে তাঁকে নবী হিসেবে মেনে নিয়ে আনুগত্য করবেন। তাই তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য সোলায়মান (আ.) কিছু নির্দেশনা দিলেন। বললেন, তাঁর সিংহাসনের ধরন পাল্টে দাও। এরপর দেখি, সে সত্য পথের দিশা পায়, নাকি যারা পথের দিশা পায় না তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়। রানি বিলকিস আত্মসমর্পণের জন্যই এলেন। তাঁকে সিংহাসনটি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘এটা কি আপনার সিংহাসন?’ তিনি বললেন, ‘তাই তো মনে হয়। আমরা আত্মসমর্পণ করতেই এসেছি।’ রানি বিলকিসকে প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানিয়ে সোলায়মান (আ.) বললেন, ‘প্রাসাদে প্রবেশ করুন।’ প্রাসাদের মেঝে দেখে তিনি ভাবলেন সেটি স্বচ্ছ পানির হ্রদ। বিভ্রান্ত হয়ে পানি থেকে বাঁচানোর জন্য তিনি পায়ের গোছা থেকে কাপড় উঁচু করেন। সোলায়মান (আ.) বললেন, ‘এটা স্বচ্ছ কাচের প্রাসাদ।’ রানি বিলকিস এসব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়ে সোলায়মান (আ.)-এর অলৌকিক ক্ষমতা উপলব্ধি করলেন। তিনি আত্মসমর্পণ করলেন। বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমি অবশ্যই নিজের প্রতি জুলুম করেছি। আমি সোলায়মানের সঙ্গে বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করছি।’",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"হজরত আলী (রা.): ইসলামের ইতিহাসে জ্ঞানের প্রদীপ ",ইসলাম ধর্ম,"হুদাইবিয়ার সন্ধি ইসলামের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ সন্ধির লেখক ছিলেন হজরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)। রাসুল (সা.)–এর যুগের সব যুদ্ধেই আলী (রা.)–র সাহসিকতা ও বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। এ কারণে রাসুল (সা.) তাঁকে হায়দার বা সিংহ উপাধি দিয়েছেন। খন্দকের যুদ্ধের সময় রাসুল (সা.) আলী (রা.)–কে জুলফিকার নামের একটি তলোয়ার দেন। আলী (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)–এর আপন চাচাতো ভাই, রাসুল (সা.)–এর চাচা আবু তালিবের ছেলে। রাসুল (সা.)–এর নবুয়ত প্রাপ্তির সময় তাঁর বয়স ছিল ১০ বছর। সে সময় তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। কিশোরদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম মুসলিম। রাসুল (সা.)–এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে তিনি শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ছিলেন কোরআনের হাফেজ এবং একজন শ্রেষ্ঠ মুফাসসির। আলী (রা.) নিজেই বলেছেন, কোরআনের এমন কোনো আয়াত নেই, যা নিয়ে আমি রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করিনি। রাসুল (সা.)–এর হিজরতের সময় আলী (রা.) গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। অবিশ্বাসীদের যেন সন্দেহ না হয়, এ জন্য আলী (রা.)–কে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে রাসুল (সা.) আবু বকর (রা.)–কে সঙ্গে নিয়ে রাতের অন্ধকারে মদিনায় রওনা দেন। সুবহে সাদিকের সময় মক্কার লোকজন রাসুল (সা.)–এর ঘরে আসে এবং দেখতে পায় আলী (রা.) তাঁর বিছানায় শুয়ে আছেন। খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পরপরই তিনি ইসলামি রাষ্ট্রের রাজধানী মদিনা থেকে ইরাকের কুফায় স্থানান্তর করেন। তিনি ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে তাঁর শাসনকাজ পরিচালনা করেছেন। হিজরি ৩৭ সনে সংঘটিত সিফফিনের যুদ্ধে আলী (রা.)–র খুব প্রিয় একটি বর্ম হারিয়ে যায়। হঠাৎ একদিন তিনি তাঁর বর্মটি কুফার বাজারে এক অমুসলিমকে বিক্রি করতে দেখেন। তিনি লোকটিকে তাঁর বর্মটি ফিরিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু লোকটি বর্ম ফিরিয়ে দিতে রাজি হলো না। বর্মটি জোর করে নিয়ে নিতে পারলেও তিনি তা করলেন না। আইন অনুযায়ী লোকটির বিরুদ্ধে কাজির আদালতে মামলা করেন। কাজিও কঠোর ন্যায়বিচারক। তিনি আলী (রা.)–র দাবির সমর্থনে প্রমাণ চাইলেন। আলী (রা.) কোনো প্রমাণ দিতে পারলেন না। ফলে কাজি অমুসলিম লোকটির পক্ষে মামলার রায় দিলেন। মুসলিম জাহানের শাসকের এমন ন্যায়পরায়ণতা লোকটিকে খুব বিস্মিত করল। এ মামলার প্রভাব লোকটির ওপর এতটাই পড়েছিল যে সে মুসলমান হয়ে যায়। লোকটি বলে ওঠে, যে ধর্ম এমন সুন্দর শিক্ষা দেয়, সে দ্বীন অবশ্যই সত্য! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, বর্মটি আমিরুল মুমিনিনের। সিফফিন যুদ্ধে যাওয়ার সময় উটের পিঠ থেকে বর্মটি পড়ে গেলে আমি তা তুলে নিই। লোকটি ইসলাম গ্রহণ করায় আলী (রা.) খুব খুশি হয়ে বর্মটি তাকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেন। আলী (রা.) ছিলেন জ্ঞানের ভান্ডার। সে যুগের শ্রেষ্ঠ আরব কবিদের মধ্যে তিনিও ছিলেন একজন। দিওয়ানে আলী নামে তাঁর একটি কবিতার সংকলন পাওয়া যায়, তাতে ১ হাজার ৪০০ শ্লোক আছে। তিনি ছিলেন একজন সুবক্তা। ‘নাহজুল বালাগা’ নামে তাঁর বক্তৃতার একটি সংকলন আছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"স্মরণকালের বড় ধর্মঘটের ডাক ফ্রান্সে ",অন্যান্য,"প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর প্রস্তাবিত সার্বজনীন পয়েন্টভিত্তিক পেনশন ব্যবস্থাপনায় নাখোশ বিভিন্ন ইউনিয়ন কয়েক বছরের মধ্যে ফ্রান্সজুড়ে সবচেয়ে বড় সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। দেরিতে অবসর কিংবা কম পেনশন নিতে বাধ্য করার প্রতিবাদে পেশাজীবী ও শ্রমিকদের ডাকা এ ধর্মঘটে ফ্রান্সজুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধর্মঘটে পুলিশ, আইনজীবী, হাসপাতাল ও বিমানবন্দরের কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক এবং পরিবহন শ্রমিকরাও অংশ নিতে যাচ্ছে বলে জানায় বিবিসি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করলেও তা জনদুর্ভোগ হ্রাসে সেগুলো খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারবে না বলেই অনুমান করা হচ্ছে। শিল্প খাতের শ্রমিকদের ধর্মঘট বৃহস্পতিবারের পরও চলতে পারে বলে বেশকিছু ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা আভাস দিয়েছেন। পেনশন ব্যবস্থাপনার সংস্কার নিয়ে ম্যাক্রো তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করা না পর্যন্তও এ ধর্মঘট চলতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা। ধর্মঘটের পক্ষে ৬৯ শতাংশ নাগরিকের সমর্থন আছে বলে এক জনমত জরিপে দেখা গেছে। সমর্থকদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যাই বেশি। ১৯৯৫ সালেও পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের এক প্রস্তাবের বিপক্ষে ইউরোপের এ দেশটিতে টানা তিন সপ্তাহের ধর্মঘট হয়। দেশজুড়ে পরিবহন ব্যবস্থা অকেজো করে দেয়া ওই ধর্মঘটে জনগণের বিপুল সমর্থন থাকায় তৎকালীন সরকার তাদের সংস্কার প্রস্তাব থেকে পরে সরে আসে। বৃহস্পতিবারের ধর্মঘট শুরুর আগে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্তেনার বলেন, ধর্মঘট চলাকালে দেশের অন্তত আড়াইশ স্থানে বিক্ষোভ হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। এর মধ্যে কিছু প্রতিবাদ সহিংস হতে পারে বলে আশঙ্কা তার। অসংখ্য মানুষ এসব প্রতিবাদে অংশ নেবেন এবং আমরা জানি ঝুঁকিগুলো কী। আমি অনুরোধ করেছি, যেসব জায়গায় দাঙ্গা বা সহিংসতার ঘটনা ঘটবে, সেখানে যেন নিয়ম মেনে দাঙ্গাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্মঘটে অংশ নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান ইয়োলো ভেস্ট আন্দোলনে অংশ নেয়া অনেক বিক্ষোভকারীও। বাস চালক ও ট্রেন কর্মীদের মতো পরিবহন খাতে সক্রিয় সব শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নই বৃহস্পতিবার থেকে বিক্ষোভে অংশ নেবে বলে নিশ্চিত করেছে। আন্তঃনগর ও দ্রুতগতির টিজিভি ট্রেনের মধ্যে কেবল ১০ শতাংশ আজ শুক্রবার চালু ধাকবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের এসএনসিএফ। মেট্রো চলাচলেও সারাদিন ধরে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করতে পারে বলে যাত্রীদের সতর্ক করেছে প্যারিসের মেট্রো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান আরএটিপি। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররাও এ ধর্মঘটে অংশ নেবেন। এরই মধ্যে এয়ার ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ৩০ শতাংশ বাতিল করা হয়েছে। ইজিজেটও তাদের ২০০র বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। নার্স, হাসপাতালের কর্মী, আইনজীবী, পুলিশ কর্মকর্তা, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, জ্বালানি খাতের কর্মী ও ডাক বিভাগে কর্মরতরাও এদিনের ধর্মঘটে অংশ নেবেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"মসজিদুল হারামে বুধবারের তারাবিতে অংশ নেন ২৫ লাখ মুসুল্লি ",ইসলাম ধর্ম,"মক্কার মসজিদুল হারামে খতম আল-কোরআনের তারাবিহ নামাজে গতকাল বুধবার (রমজানের ২৮তম রাতে) ওমরাহ করতে আসা মানুষ ও দর্শনার্থীসহ ২৫ লাখ মুসুল্লি অংশ নিয়েছেন। খবর সৌদি গেজেটের। খতম আল-কোরআনের নামাজ হলো পবিত্র রমজান মাসজুড়ে তারাবি নামাজে পুরো কোরআন তিলাওয়াতের সমাপ্তি ঘটা। সৌদি সরকারের দুই পবিত্র মসজিদ (মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববি) বিষয়ক প্রেসিডেন্সির প্রধান শেখ আবদুর রহমান আল-সুদাইস এদিন তারাবিহ নামাজে ইমামতি করেন। তার সঙ্গে নামাজে অংশ নেন ২৫ লাখের বেশি মুসল্লি। দুটি পবিত্র মসজিদ মুসুল্লিতে পরিপূর্ণ ছিল। শুধু তা-ই নয়, মসজিদের প্রাঙ্গণ এবং আশপাশের সড়কেও নামাজ আদায় করেন প্রচুর মুসলমান। সৌদি প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপে প্রশান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে ইবাদত-বন্দেগি করেন তারা। নামাজ শেষে ইমাম শেখ আল-সুদাইস মহান আল্লাহর কাছে এই বরকতময় রাতে সব মুসলমানদের ক্ষমা এবং তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষার জন্য প্রার্থনা করেন। এছাড়া দেশটির নেতাদের পাশাপাশি সব মুসলিম দেশকে অনিষ্ট থেকে রক্ষা এবং তাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রদানের জন্য প্রার্থনা করেন তিনি। এদিন সকাল থেকেই নামাজ আদায়ের জন্য গ্র্যান্ড মসজিদে সমবেত হন মুসল্লিরা। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,মানুষের জীবনে তাওবার প্রয়োজন কেন,ইসলাম ধর্ম,"তাওবা মানে ফিরে আসা। পরিভাষায় তাওবা হলো, যেসব কথা ও কাজ মানুষকে আল্লাহর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তা থেকে ফিরে আসা এবং সে সব কথা ও কাজে লিপ্ত হওয়া, যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় ও তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচা যায়। সহজ কথায় তাওবা হলো, সব পাপ কর্ম থেকে ফিরে এসে সৎকাজে প্রবৃত্ত হওয়া।ইমাম নববী (রহ.) বলেন, উলামায়ে কেরাম বলেছেন, প্রতিটি গুনাহ থেকে তাওবা করা ওয়াজিব।তারপর তিনি তাওবা শুদ্ধ হওয়া ও কবুল হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, যদি গুনাহ আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার সংশ্লিষ্ট বিষয় হয় এবং তার সঙ্গে কোনো লোকের হক জড়িত না থাকে তবে তা থেকে তাওবা করার তিনটি শর্ত আছে—১. তাওবাকারীকে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে।২. সে তার কৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে।৩. তাকে আর কখনো গুনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে।আর গুনাহের কাজটি যদি কোনো ব্যক্তির হক বা অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে, তাহলে তার থেকে তাওবা করার উপরোক্ত তিনটি শর্ত ছাড়া আরো একটি শর্ত আছে। তা হলো, তাওবাকারীকে হকদার ব্যক্তির প্রাপ্য হক আদায় করতে হবে। যদি গুনাহটি কারো ধন-সম্পত্তির বিষয়ে হয়ে থাকে অথবা এরূপ অন্য কিছু থাকে, তাহলে তাকে তা ফেরত দিতে হবে। কোনো প্রকার দোষারোপ (যেমন: জিনার অপবাদ, মিথ্যা চুরির অপবাদ) বা এরূপ অন্য কোনো বিষয় হয়ে থাকলে, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে অথবা তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।অনুরূপভাবে গিবত, গালাগাল, কাউকে অপমান করা ইত্যাদি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।ইমাম নববী (রহ.) বলেন, সব গুনাহ থেকে তাওবা করা ওয়াজিব। কিছু গুনাহ তাওবা করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। তবে বাকি গুনাহগুলো বাকি থেকে যাবে। কোরআন, সুন্নাহ ও উম্মতের ইজমার মাধ্যমে তাওবা করা ওয়াজিব প্রমাণিত হয়েছে।(সূত্র রিয়াজুস সালেহিন, তাওবা অধ্যায়)আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে মুমিনদের তাওবা করার আদেশ দিয়েছেন। যেমন এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো। তাহলে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা নূর, আয়াত : ৩১) অন্য আয়াতে বলেছেন, (তরজমা) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। অতঃপর তাওবা করো।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৩)তাওবা করার মাধ্যমে মুমিন বান্দা শুধু নিষ্পাপ ও গুনাহমুক্ত হয় না; বরং ইহকালীন ও পরকালীন বহু কল্যাণ এবং সুখ-শান্তিময় জীবন লাভ করেন। এখানে তাওবার কিছু উপকারিতা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো। তাওবা আগের সব গুনাহ দূর করে দেয় এবং জান্নাত দান করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করো। আশা করা যায় তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের পাপ তোমাদের থেকে মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিচে নহর বহমান থাকবে। (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮) এই আয়াতে আল্লাহ তাওবা করার আদেশ করেছেন, পাশাপাশি তার ফলাফল উল্লেখ করেছেন যে এর দ্বারা পাপ মোচন করে দেবেন এবং তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাওবা পাপকাজগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন পাপ ও সেগুলোর শাস্তি সম্পর্কে আলোচনা করার পর বলেছেন, ‘তবে কেউ তাওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যে ব্যক্তি তাওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে মূলত আল্লাহর দিকে যথাযথভাবে ফিরে আসে।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭০-৭১)তাওবা দুনিয়ায় উত্তম জীবন দান করে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তার কাছে তাওবা করো। তিনি তোমাদের এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত উত্তম জীবন উপভোগ করতে দেবেন এবং যে কেউ বেশি আমল করলে তাকে নিজের পক্ষ থেকে বেশি প্রতিদান দেবেন।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৩) আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে খাঁটি তাওবাকারী হিসেবে কবুল করুন। আমিন",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,স্কটিশ যুদ্ধবন্দি যখন মদিনার গভর্নর ছিলেন,ইসলাম ধর্ম,পবিত্র নগরী মদিনার গোড়াপত্তনের পর বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি এর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ব্রিটিশ নাগরিক থমাস কেইথ তাঁদের ব্যতিক্রম। কেননা তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠার কোনোটিই মুসলিম পরিবারে হয়নি। এমনকি তিনি কোনো মুসলিম দেশেরও নাগরিক ছিলেন না।তিনি ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে থমাস কেইথ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৭৮তম হাইল্যান্ডারস রেজিমেন্টে যোগদান করেন। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে ব্রিটিশ উপনিবেশ সিসিলিতে পাঠানো হয়। কেইথ ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে মিসরের আলেক্সেন্দ্রিয়া নগরী দখলে ব্রিটিশ অভিযানে অংশ নেন।কিন্তু এই অভিযান ব্যর্থ হয় এবং ব্রিটিশ ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হয়। বহু সৈনিক নিহত হয় এবং অনেকেই গ্রেপ্তার হয়। ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দের ২১ এপ্রিল থমাস ও তাঁর রেজিমেন্টের বাদ্যবাজক উইলিয়াম থম্পসন রোসেটা দ্বীপের নিকটবর্তী আল হামিদ এলাকা থেকে আটক হন। তাদের আরো ৪৫০ জন ব্রিটিশ বন্দির সঙ্গে কায়রোতে পাঠানো হয়।একজন আলবেনীয় বর্শাচালক তাদের সামরিক ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করে দেন। উসমানীয় অফিসার আহমদ বোনাপার্ট তাঁদের দুজনকে কিনে নেন। থমাস কেইথ আহমদের সেবা করে তাঁর প্রিয়ভাজন হয়ে ওঠেন। আহমদের আচরণ ও মুসলমানদের রীতিনীতি দেখে দুই স্কটিশ সৈনিক ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। ইসলাম গ্রহণের পর কেইথ ইবরাহিম এবং থম্পসন উসমান নাম ধারণ করেন।আহমদের কাছ থেকে থমাস কেইথকে মিসরের তৎকালীন উসমানীয় গভর্নর মুহাম্মদ আলী পাশার স্ত্রী আমিনা হানিম কিনে নেন। তিনি তাঁকে তাঁর ছেলে তুসুনের সেবায় নিয়োজিত করেন। তুসুন স্কটিশ থমাসের সামরিক ও আরবি ভাষার দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হন। পরবর্তী সময়ে থমাস কেইথ তুসুনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তুসুন থমাসের মৃত্যুদণ্ড দেন। কিন্তু প্রহরীদের হত্যা করে তিনি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তিনি তুসুনের মায়ের কাছে ক্ষমা ও আশ্রয় প্রার্থনা করেন। আমিনা হানিম তাঁকে ক্ষমা করেন এবং তুসুনের সঙ্গে বিরোধ মেটাতে এগিয়ে আসেন। কেননা তিনি থমাসের উচ্চতর সামরিক দক্ষতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। প্রহরীদের হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে থমাসের বীরত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মানুষ তাঁকে ‘আগা’ উপাধি দেয়। পরবর্তী সময়ে তিনি আগা ইবরাহিম নামেই পরিচিতি লাভ করেন।১৮১১ খ্রিস্টাব্দে ১৮ বছর বয়সী আগা ইবরাহিম এবং ১৭ বছর বয়সী তুসুন ‘আলে সৌদ’ তথা সৌদি রাজপরিবারের নেতৃত্বাধীন ওয়াহাবি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে এক অভিযানে যোগদান করেন। এই অভিযানে দুই হাজার আলবেনীয় ও বেদুইন সেনা ছিল। ইবরাহিম আগা ছিলেন এই বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক ব্যক্তিত্ব (সেকেন্ড ইন কমান্ড)। ১৮১২ সালে আলে সৌদের বিরুদ্ধে আগা ইবরাহিমের বাহিনী বড় ধরনের সাফল্য লাভ করে। পবিত্র মদিনা নগরী উদ্ধারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৮১৫ সালে উসমানীয় শাসকদের পক্ষ থেকে তাঁকে মদিনার ভারপ্রাপ্ত গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে মক্কা নগরী উদ্ধারেও আগা ইবরাহিম সাহসিকতার পরিচয় দেন এবং মক্কার নিকটবর্তী বিদ্রোহী সেনা ছাউনিগুলো গুঁড়িয়ে দেন। এ বছরই একজন ওয়াহাবি উগ্রবাদীর হাতে তিনি গুপ্তহত্যার শিকার হন। ১৮১৮ সালে উসমানীয়দের হাতে বন্দি সৌদি রাজপুত্র আবদুল্লাহ বিন সৌদ তাঁর বীরত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।,ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,"শবেবরাতের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও করণীয়",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র শবেবরাত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশাল নিয়ামত। শবেবরাত মুক্তির রজনি। এ রাতে আল্লাহতায়ালা তাঁর অসংখ্য, অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করার মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। আরবি ভাষায় এ রাতকে ‘লাইলাতুন্নিসফি মিন শাবান’ বলা হয়। এর অর্থ হচ্ছে অর্ধশাবানের রজনি। হাদিসে লাইলাতুন্নিসফি মিন শাবান নামেই এ রাতের ফজিলতের কথা এসেছে। শবেবরাত একটি মহিমান্বিত রাত। এ রাত ফজিলতপূর্ণ হওয়ার বিষয়টি সহি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন, এ হাদিসের ফজিলত সম্পর্কে সহি হাদিসের বিখ্যাত সংকলন সহি ইবনে হিব্বানে বর্ণিত হয়েছে- হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ অর্ধশাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ দেখুন ‘ইবনে হিব্বান’। শবেবরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত প্রমাণিত হওয়ার জন্য এই একটি হাদিসই যথেষ্ট। তবু হাদিসের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে এ-বিষয়ক আরও হাদিস উল্লেখ করা সম্ভব। নিচে আরেকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো। হজরত আলা ইবনুল হারিস (রহ.) থেকে বর্ণিত। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘একবার রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে, আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা, অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রসুলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসুলই ভালো জানেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন ইরশাদ করলেন, এটা হলো অর্ধশাবানের রাত। (শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত।) আল্লাহ অর্ধশাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।’ দেখুন ‘শুয়াবুল ইমান, বায়হাকি’। উপরোক্ত হাদিস থেকে এ রাতের ফজিলত যেমন জানা যায় তেমন এ রাতের আমল কেমন হওয়া উচিত তাও বোঝা যায়। অর্থাৎ দীর্ঘ নামাজ পড়া, সিজদা দীর্ঘ হওয়া, আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং রহমত ও দয়া কামনা করা। এমনিভাবে অন্তরকে বিদ্বেষমুক্ত করা। কারও সঙ্গে যদি বিদ্বেষ ও শত্রুতামূলক কোনো সম্পর্ক থাকে, তাহলে তা মিটিয়ে ফেলা। কারণ তা না হলে এ মহান রাতের ফজিলত তথা আল্লাহর ক্ষমাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার মতো দুর্ভাগ্যের শিকার হতে হবে। যার চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কিছু হতে পারে না। শবেবরাতের আরেকটি বিশেষ আমল হলো শবেবরাতের পরদিন রোজা রাখা। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (তরজমা) ‘১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখো।’ দেখুন ‘সুনানে ইবনে মাজাহ’।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আল্লাহর ওলি-আউলিয়াদের পরিচিতি ",ইসলাম ধর্ম,"আরবি ভাষায় ‘ওলি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো নিকটবর্তী বন্ধু, দোস্ত, অভিভাবক। শরীয়তের পরিভাষায় ‘ওলি’ বলতে তাকেই বুঝায় যার মধ্যে দু’টি গুণ আছে। প্রথমত: ঈমান, এবং দ্বিতীয়ত: তাকওয়া। ঈমানদার এবং মুত্তাকিদের আল্লাহ রাব্বুল ইজত ওলি বা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেন। আরবি ওলি শব্দটির ব্যবহার আল কুরআনে বিভিন্ন আঙ্গিকে হয়েছে। যেমন: এক বচনে ওয়ালিয়্যুন্ রূপে সূরা বাকারাহ-এর ২৫৭ নং আয়াতে। সূরা আলে ইমরানের ৬৮ নং আয়াতে। সূরা আল আনয়ামের ৭০ নং আয়াতে। সূরা বনি ইসরাাইলের ১১১ নং আয়াতে। সূরা ফুসসিলাতের ৩৪ নং আয়াতে। সূরা শুরা-এর ৯ নং আয়াতে এবং ২৮ নং আয়াতে। সূরা জাসিয়া-এর ১৯ নং আয়াতে। এতে স্পষ্টতই বুঝা যায় যে, ওয়ালিয়্যুন রূপে ওলি শব্দটির ব্যবহার আল কুরআনে ৮ বার হয়েছে। আর আল কুরআনে ‘ওলি’ শব্দটি ওয়ালিয়্যিন্ রূপে এসেছে ১২ বার। যেমন : সূরা বাকারাহ-এর ১০৭, ১২০ নং আয়াতে। সূরা তাওবাহ-এর ৭৪ নং আয়াতে ও ১১৬ নং আয়াতে। সূরা রায়াদ-এর ৩৭ নং আয়াতে। সূরা কাহাদ-এর ২৬ নং আয়াতে। সূরা আনকাবুতের ২২ নং আয়াতে। সূরা আস সিজদাহ-এর ৪ নং আয়াতে। সূরা শুরা-এর ৯, ২৮, ৩৯ এবং ৪৪ নং আয়াতে। এতে করে আল কুরআনে ‘ওয়ালিয়্যুন’ ও ওয়ালিয়্যিন, শব্দ দ্বয়ের এক বাচনিক ব্যবহার ২০ বার লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া ওয়ালিয়্যুন্ শব্দটি এক বচনে ওয়ালিয়্যান রূপে আল কুরআনে ১৩ বার এসেছে। যেমন: সূরা নিসা-এর ৪৫, ৭৫, ৮৯, ১১৯, ১২৩ ও ১৭৩ নং আয়াতে। সূরা আল আনয়ামের ১৪ নং আয়াতে। সূরা আল কাহাফ-এর ১৭ নং আয়াতে। সূরা মারিয়ামের ৫ ও ৪৫ নং আয়াতে। সূরা আল আহযাবের ১৭ ও ৬৫ নং আয়াতে। সূরা আল ফাতহ-এর ২২ নং আয়াতে। আর ওয়ালিয়্যুন শব্দটি সম্বন্ধপদ হিসেবে আল কুরআনে ৬টি রূপে মোট ১১ বার ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন: ‘ওয়ালিয়্যুকুম’ রূপে সূরা আল মায়েদাহ-এর ৫৫ নং আয়াতে। ‘ওয়ালিয়্যুনা’ রূপে সূলা আল আরাফের ১৫৫ নং আয়াতে। সূরা সাবা-এর ৪১ নং আয়াতে। ‘ওয়ালিয়্যুহু’ এবং ‘ওয়ালিয়্যিহি’ রূপে সূরা বাকারাহ-এর ২৮২ নং আয়াতে। সূরা বনি ইসরাইলের ৩৩ নং আয়াতে। সূরা নামল-এর ৪৯ নং আয়াতে। ‘ওয়ালিয়্যহুম’ রূপে সূরা আল আনয়ামের ১২৭ নং আয়াতে। সূরা নাহল-এর ৬৩ নং আয়াতে। ‘ওয়ালিয়্যুহুমা’ রূপে সূরা আলে ইমরানের ১২২ নং আয়াতে। ‘ওয়ালিয়্যিয়া’ রূপে সূলা আল আরাকের ১৯৬ নং আয়াতে। সূরা ইউসুফ-এর ১০১ নং আয়াতে। একুনে ‘ওলি’ শব্দটি এক বচনের বিভিন্ন রূপসহ সম্বন্ধ পদ হিসেবে সর্ব মোট ৪৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে। এই ৪৪ সংখ্যাটির একক হচ্ছে (৪+৪)=৮। এই ৮ সংখ্যাটি আরবি ‘রাসূলুল্লাহ’ শব্দদ্বয়ের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে। এতে করে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়ে যে, আল্লাহপাক তাদেরকেই বন্ধুরূপে কবুল করেন, যারা আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশ মোতাবেক জীবন চলার সকল পথ অতিক্রম করে। আর আরবি ‘ওলি’ শব্দের বহু বচন হলো ‘আওলিয়া’। এই বহুবচনিক আউলিয়া শব্দটি আল কুরআনে ৩৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন : সূরা আলে ইমরানের ২৮ নং আয়াতে। সূরা নিসা-এর ৮৬, ৮৯, ১৩৯, ১৪৪ নং আয়াতে। সূরা আল মায়েদাহ-এর ৫১, ৫২, ৬৭, ৮১, নং আয়াতে। সূরা আরাফের ৩, ২৭, ৩০ নং আয়াতে। সূরা আন্ফাল-এর ৭২, ৭৩, নং আয়াতে। সূরা তাওবাহ-এর ২৩, ৭১ নং আয়াতে। সূরা ইউনুস-এর ৬২ নং আয়াতে। সূরা হুদ-এর ২০, ১১৩ নং আয়াতে। সূরা রায়াদ-এর ১৬ নং আয়াতে। সূরা বানি ইসরাইলের ৯৭ নং আয়াতে। সূরা আল কাহাফ-এর ৫০, ১০২ নং আয়াতে। সূরা ফুরকানের ১৮ নং আয়াতে। সূরা আনকাবুতের ৪১ নং আয়াতে। সূরা জুমার-এর ৩ নং আয়াতে। সূরা শুরা-এর ৬, ৯, ৪৬ নং আয়াতে। সূরা জাসিয়া-এর ১০, ১৯ নং আয়াতে। সূরা আহকাফ-এর ৩২ নং আয়াতে। সূরা মুমতাহানার ১ নং আয়াতে। সূরা আল জুময়া-এর ৬ নং আয়াতে। গভীর দৃষ্টিতে তাকালে দেখা যায় যে, বহু বচনিক আউলিয়া শব্দটি সম্বন্ধপদসহ আল কুরআনে ৪১ বার ব্যবহৃত হয়েছে। এই ৪১ সংখ্যাটির একক হলো (৪+১)=৫। এই ৫ সংখ্যাটি ইঙ্গিত করছে আরবি ইসলাম শব্দের প্রতি। ইসলাম শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৫। সুতরাং সহজেই অনুধাবন করা যায় যে, যারা আল্লাহপাকের দেয়া জীবনব্যবস্থা ইসলামে দীক্ষিত হয়েছে, ইসলামকে কবুল করে ধন্য হয়েছে, তারাই আল্লাহর বন্ধু বলে স্বীকৃতি লাভ করতে পারবেন, অন্যরা নয়।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive ভোরের কাগজ,"ভারতে ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ৪ ",হিন্দু ধর্ম,"ভারতের হরিয়ানায় একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছে। হরিয়ানার গুরুগ্রাম সংলগ্ন নূহ এলাকায় সোমবার এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। পুলিশ বলছে, নূহ এলাকার খেদলা মড এলাকায় ওই শোভাযাত্রায় একদল জনতা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এর জেরেই পাথর নিক্ষেপ ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেসময় গুলিতে ওই দুই নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এরপর রাতভর চলা সহিংসতার মধ্যে আরও দুজনের প্রাণ যায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ‘ব্রিজ মণ্ডল জলভিষেক যাত্রা’ নামে ওই শোভাযাত্রা আয়োজন করলে একদল যুবক গুরুগ্রাম-আলওয়ার জাতীয় মহাসড়কের কাছে তাদের বাধা দেয়। এর জেরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকারি ও ব্যক্তিগত যানবাহন লক্ষ করে আক্রমণ চালায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা। এনডিটিভি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বজরঙ দল কর্মীর এক ভিডিও প্রকাশের জেরে এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়। কয়েকদিন আগে বজরঙ দল সদস্য মনু মানেশর ও তার সহযোগীরা ওই ভিডিও পোস্ট করেছিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শোভাযাত্রায় বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় গুরুগ্রাম-সোহনা মহাসড়কে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বেশকিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়া হয়। এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে নূহ এলাকায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিল। কিন্তু সহিংসতার সূত্রপাত হলে তারা একটি মন্দিরে আশ্রয় নেয় এবং সন্ধ্যায় পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"আজ রমজানের বরকতময় প্রথম জুমা ",ইসলাম ধর্ম,"আজ রমজানের প্রথম জুমা। বরকতময় জুমা। সওয়াবের বসন্তপ্রবাহ। জুমার দিনে সুরা কাহাফের তেলাওয়াত করা, দান-সদকা করা ও দরুদ শরিফের আমল করার কথা আছে। এ ছাড়াও দিনটির বিশেষ গুরুত্ব কোরআন হাদিসে এসেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ। এরপর নামাজ শেষ হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো যাতে তোমরা সফলকাম হও। সূরা জুমা : ৯-১০ জুমার দিনের ফজিলত বিষয়ে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সকল দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনেই আদম (আলাইহিস সালাম)কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এই দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। আর এই জুমার দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। বুখারি-১৫০২ আজ রোজার চতুর্থদিন। চারদিকে রহমতের উৎসব। রমজানের অবারিত রহমতে ভরে যাক আমাদের জীবন। যে কোরআনের প্রেমময়তায় আজ রমজান রহমতে ভরপুর, কোরআনের মুগ্ধতায় লাইলাতুল কদর হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রাত! কোরআন এসেছিল বলে মক্কা-মদিনা পৃথিবীর মর্যাদাবান শহর! কোরআনের নবী হজরত মুহাম্মদ নবীদের সরদার! কোরআনের সেই প্রেম, মুগ্ধতা ও মর্যাদা আমাদের কতটা আলোকিত করেছে? মাস, রাত আর মক্কা-মদিনার মর্যাদা বাড়াতে কোরআন আসেনি পৃথিবীতে। কোরআনে এসেছে মানুষের জীবন রাঙাতে। শুধু রাত শ্রেষ্ঠ হবে না; কোরআনের মানুষেরাও হবে আশরাফুল মাখলুকাত। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ। কোরআন সে তো আল্লাহ প্রেমের চিঠি। পাঠে পাঠে সজীব হয় দেহমন। জোগায় আত্মিক শক্তিও। প্রেমের চিঠি প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালাও বলেন, যারা ঈমানদার, তারা যখন আল্লাহর নাম নেয়, নরম হয় তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে কোরআন পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান সজীব হয়ে ওঠে। রোজার জুমায় মানুষের ঢল। কিয়ামুল লাইল বা শেষ রাতের তাহাজ্জুতেও মসজিদ প্রাণবন্ত থাকে। মসজিদমুখী মানুষেরা কোরআনের আলোয় জীবন রাঙাতে চায়। হেদায়াতের নেশায় ব্যাকুল মানুষেরা শুনতে চায় কুরআনের মর্মকথা। কোরআনের ইতিহাস ও গল্পে ফিরে যেতে চায় আগের নবী-রাসুলদের জীবনে। আগে মসজিদে যাওয়ার সওয়াব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন জুমার দিন আসে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি, হাদিস, ৮৮২) এক বছর নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব আরেক হাদিসে হজরত আউস ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও এক বছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস,৩৪৫) দোয়া কবুল জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমার দিনে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাস করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস : ১৩৮৯)",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,"হজরত আবু মুসা: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শে প্রতিচ্ছবির জীবন ",ইসলাম ধর্ম,"হজরত আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.)-এর জীবন ছিল যেন রাসুলের (সা.) জীবনের প্রতিচ্ছবি। সব সময় তিনি চেষ্টা করতেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতিটি কাজ ও আচরণ হুবহু অনুসরণ করতে। রমজানের রোজা ছাড়াও তিনি নফল রোজা রাখতেন। এ ছাড়া তিনি আশুরার রোজা রাখতেন এবং মানুষকে তা রাখতে বলতেন। প্রচণ্ড গরমের সময়ও তাঁকে রোজা রাখতে দেখা যেত। তিনি বলতেন, ‘হয়তো দুপুরের গরমের তৃষ্ণা কিয়ামতের দিনে আমাদের জন্য প্রশমিত হবে।’ সুন্নত ছাড়া মুস্তাহাবের প্রতিও তিনি খুব যত্নবান ছিলেন। কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। এ কারণে তিনি তাঁর কন্যাদেরও হুকুম দিতেন নিজ হাতে পশু জবাই করার জন্য। আবু মুসা (রা.) জীবনের শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদেশ ও নিষেধ পালনে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। জীবনের শেষ দিকে তাঁর অবস্থা যখন সংকটজনক হয়ে পড়ে এবং তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন, তখন নারীরা কান্নাকাটি শুরু করেন। সেই কঠিন মুহূর্তেও ক্ষণিকের জন্য চেতনা ফিরে পেলে তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এভাবে বিলাপ করতে নিষেধ করেছেন।আবু মুসা (রা.)-এর মধ্যে এ গুণ পরিপূর্ণরূপে ছিল। রাতে ঘুমানোর সময়ও তিনি বিশেষ ধরনের পোশাক পরে নিতেন, যাতে সতর (শরীরের সেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক) উন্মুক্ত না হয়ে যায়। আবু মুসা (রা.) ছিলেন অত্যন্ত সরল ও সাদাসিধে প্রকৃতির। প্রথম জীবনে দরিদ্র ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। তবে পরবর্তী জীবন সচ্ছলতায় কেটেছে তাঁর। যে ছয়জন সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় ফতোয়া দানের অনুমতি পেয়েছিলেন, আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.) তাঁদেরই একজন। রাসুল (সা.) তাঁর সম্পর্কে বলতেন, ‘আবু মুসা (রা.) অশ্বারোহীদের নেতা।’ আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.) ছিলেন ইয়েমেনের অধিবাসী। সেখানকার আল আশয়ার গোত্রের সন্তান হওয়ায় তিনি আল আশয়ারি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।আবু মুসা (রা.) ইসলামের পরিচয় পেয়ে ইয়েমেন থেকে মক্কায় আসেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে বাইয়াত নেন। কিছুদিন মক্কায় অবস্থানের পর স্বদেশবাসীকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে আবার ইয়েমেনে ফিরে যান। আবু মুসা (রা.) ছিলেন তাঁর বংশের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। তাই খান্দানের লোকেরা দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে তাঁর দাওয়াতে সাড়া দেন। রাসুল (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের কয়েক বছর পর প্রায় ৫০ জন মুসলিমের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে আবু মুসা (রা.) মদিনায় যাওয়ার জন্য ইয়েমেন থেকে সমুদ্রপথে যাত্রা করেন। তাঁরা যখন মদিনায় পৌঁছান, সে সময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীও খাইবার বিজয় শেষ করে মদিনায় ফেরেন। রাসুল (সা.) আবু মুসা (রা.) ও তাঁর সঙ্গীদের সবাইকে খাইবারের গনিমতের অংশ দান করেছিলেন। আবু মুসা (রা.) তাড়াতাড়ি মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত সম্মানিত হয়ে ওঠেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"বৃষ্টি আসে আল্লাহর রহমত হিসেবে ",ইসলাম ধর্ম,"বৃষ্টিতে মন প্রফুল্ল হয়। আল্লাহর রহমতে প্রকৃতি পায় স্বস্তি ও উর্বরতা শক্তি। বৃষ্টি আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ বৃষ্টি সম্পর্কে বলেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টির সময় কিছু আমল করতেন। বৃষ্টির সময় দোয়া রাসুল (সা.) বৃষ্টির সময় আল্লাহর রহমতের জন্য দোয়া করতেন। বৃষ্টি যেমন আল্লাহর রহমত, তেমনই আবার কখনো গজবও হয়ে উঠতে পারে। রাসুল (সা.) দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা সায়্যিবান নাফিআহ।’ ‘হে আল্লাহ! তুমি এ বৃষ্টিকে প্রবহমান ও উপকারী করে দাও। (বুখারি, হাদিস: ১,০৩২) হজরত আনাস (রা.)–র বরাতে হাদিসে এসেছে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, একবার আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম; তখন বৃষ্টি এল। রাসুল (সা.) তখন তাঁর গায়ের পোশাকের কিছু অংশ সরিয়ে নিলেন, যাতে করে গায়ে বৃষ্টির ছাঁট লাগে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি কেন এমনটি করলেন? তিনি বললেন, ‘কারণ বৃষ্টি তার প্রতিপালকের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৮)ঝোড়ো বাতাস বইতে দেখলে দোয়া দমকা হওয়া বইতে দেখলে নবীজি (সা.) উদ্বিগ্ন হতেন। বৃষ্টি শুরু হলে তিনি খুশি হয়ে উঠতেন। হজরত আয়িশা (রা.) বলেছেন, আমি এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘আমার আশঙ্কা হয়, আমার উম্মতের ওপর কোনো গজব আসে কি না।’ বৃষ্টি দেখলেই তিনি বলতেন, ‘এটি আল্লাহর রহমত।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬৯) হজরত আয়িশা (রা.)–র বরাতে আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) আকাশে মেঘ দেখলে নফল ইবাদত ছেড়ে দিতেন। তিনি এই বলে দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরি ওয়া খাইরি মা উরসিলাত বিহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি’। ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে বৃষ্টির উপকারী দিক কামনা করছি। আর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাইছি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫,১৯৯)অতিরিক্ত বৃষ্টিতে দোয়া রাসুল (সা.) একবার অতিরিক্ত বৃষ্টিতে এই দোয়া করেছিলেন, ‘আল্লাহুম্মা হাওয়াইলাইনা ওয়া আলাইনা।’ ‘হে আল্লাহ! আমাদের এখানে নয়, আশেপাশে বৃষ্টি বর্ষণ করো।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস: ১,৫২৭) প্রবল বৃষ্টি হলে নবী (সা.) বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার।’ (বুখারি, হাদিস: ১,০১৪) এর অর্থ, ‘হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।’ বজ্রপাতের দোয়া আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) বজ্রপাতের সময় কথা বন্ধ রাখতেন। কেবল বলতেন, ‘ওয়া ইউসাব্বিহুর রাদু বিহামদিহি, ওয়াল মালাইকাতু মিন খিয়ফাতিহি।’ (সুরা রাদ, আয়াত: ১৩) এর অর্থ, ‘বজ্র ও সব ফেরেশতা সন্ত্রস্ত হয়ে তাঁর প্রশংসা পাঠ করে।’বৃষ্টির সময় দোয়ার ফজিলত বৃষ্টি আল্লাহর রহমত ও করুণা বর্ষণের সময়, তাই এটি দোয়া কবুলেরও উপযুক্ত সুযোগ। সাহল বিন সাদ (রা.) বর্ণনা করেছেন যে নবী (সা.) বলেছেন, ‘দুটি দোয়া প্রত্যাখ্যান করা হয় না। আজানের সময়ের দোয়া এবং বৃষ্টির সময়ের দোয়া।’ (মুস্তাদরাক, হাদিস: ২,৫৩৪; তাবারানি; হাদিস: ৫,৭৫৬; সহিহুল জামে, হাদিস: ৩,০৭৮) বৃষ্টি শেষে দোয়া করা বৃষ্টি শেষ হয়ে এলে রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কিরামকে এই দোয়া পড়ার তাগিদ দিয়েছেন, ‘মুতিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়া রাহমাতিহ।’ ‘আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস: ১,০৩৮) বৃষ্টি শেষে রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে একটি বিশেষ দোয়া পড়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন, দোয়াটি হলো, ‘মুতিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়া রহমাতিহ। এর অর্থ, ‘আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস: ১,০৩৮)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,ট্রানজিট ভিসায় ওমরাহ পালনের সুযোগ,ইসলাম ধর্ম,"সৌদি আরবের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করা যাত্রীদের জন্য ফ্রি ট্রানজিট ভিসা পরিষেবা চালু করেছে সৌদি আরব। গতকাল সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এই ভিসা চালুর ঘোষণা দেয় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চার দিনের এই ভিসা নিয়ে ট্রানজিটে থাকা যাত্রীরা ওমরাহ পালন, মসজিদে নববি জিয়ারতসহ সৌদি বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন। আরব নিউজের খবরে বলা হয়, ট্রানজিট ভিসাধারীরা ৯৬ ঘণ্টা বা চার দিন পর্যন্ত সৌদিতে অবস্থান করতে পারবেন। সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইনাসের ইলেকট্রনিক প্লাটফর্মের মাধ্যমে এই ভিসা আবেদন করতে পারবেন টিকিটধারী যাত্রীরা। এরপর আবেদনটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিন্ন জাতীয় ভিসা প্লার্টফমে চলে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে একটি ডিজিটাল ভিসা ইস্যু হবে এবং তা আবেদনকারীর ই-মেইলে চলে যাবে। এই প্রক্রিয়ার জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। তিন মাস মেয়াদের এই ভিসা নিয়ে চার দিন সৌদিতে অবস্থান করা যাবে। সৌদি ভিশন ২০৩০ এর লক্ষ্য অর্জনে ই-ট্রানজিট ভিসা বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং প্রতি বছর অন্তত ১০ কোটি লোক দেশটি ভ্রমণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তা ছাড়া এর মাধ্যমে সৌদির ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক স্থানে আগের চেয়েও বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে। সৌদির পর্যটন মন্ত্রী ও পর্যটন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আহমেদ আল-খতিব বলেছেন, ‘পর্যটন খাতে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সৌদির প্রতিশ্রুতির আরেকটি প্রমাণ নতুন ট্রানজিট ভিসা। সৌদি আরবের মধ্য দিয়ে যাওয়া ভ্রমণকারীদের জন্য সবকিছু উন্মুক্ত থাকবে। ভ্রমণ, ব্যবসা, ওমরাহসহ যেকোনো কাজের উদ্দেশ্যে এখানে আসতে পারবে। সৌদিকে একটি বৈশ্বিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে কাজ চলছে।’ সৌদি ট্যুরিজম অথরিটির সিইও ফাহদ হামিদাদ্দিন বলেছেন, ‘আজ ট্রানজিট ভিসা উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। এটি সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত সহযোগিতার একটি যুগান্তকারী উদাহরণ। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যকদের কাছে তা প্রধান গন্তব্যে পরিণত হবে।’ এই ভিসা সৌদি আরবকে পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে একটি প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে জানান বিমান সংস্থা সৌদিয়া ও ফ্লাইনাসের প্রধান নির্বাহীরা। সৌদিয়ার প্রধান ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম কোশি বলেছেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ভ্রমণের কৌশলগত লক্ষ্য পূরণে এটি সহায়তা করবে। তা ছাড়া পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সংযোগকারী কেন্দ্র হিসেবে সৌদির অবস্থানকে সুদৃঢ় করবে। পাশাপাশি তা ক্রমবর্ধমান ট্রানজিট যাত্রীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’ ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,জামাতে নামাজ আদায় উত্তম,ইসলাম ধর্ম,"দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কোরআন-হাদিসে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার অনেক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। জামাতে নামাজ আদায় করার তাগিদ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। কোরআনে করিমে তিনি ঘোষণা করেন, ‘আর তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত প্রদান কর এবং যারা রুকু করে তাদের সঙ্গে রুকু কর। (সুরা বাকারা-৪৩) মুসলিম উম্মাহর সর্বোত্তম আদর্শ রসুলুল্লাহ (সা.)। তিনি গোটা জীবন জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি তাঁর ইন্তেকালের আগমুহূর্তে অসুস্থতার সময়ও তিনি জামাত ছাড়েননি। তাঁর প্রিয় সাহাবিরা আমাদের জন্য আদর্শের প্রতিচ্ছবি। তাদের গোটা জীবন রসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুযায়ী অতিবাহিত করেছেন। তারাও জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। রসুলুল্লাহ (সা.) জামাতে নামাজ আদায়ের বহু ফজিলত ও উপকার বর্ণনা করেছেন। সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয় জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দিই। এরপর নামাজ কায়েমের আদেশ দিই। তারপর নামাজের আজান দেওয়া হোক, এরপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামতি করার নির্দেশ দিই। তারপর আমি লোকদের অন্বেষণে যাই এবং যারা (জামাতে আসেনি) তাদের ঘর জ্বালিয়ে দিই। (সহি বুখারি) জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত বর্ণনা করে রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জামাতে নামাজের ফজিলত একাকী ঘরে বা বাজারে আদায়ের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি। অন্য বর্ণনায় ২৭ গুণ ফজিলতের কথা উল্লেখ আছে। (সহি বুখারি) অন্য হাদিসে তিনি ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিন পর্যন্ত তাকবিরে উলার সঙ্গে (নামাজের প্রারম্ভ থেকে) জামাতে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে দুই প্রকার মুক্তি দান করবেন। এক. জাহান্নাম থেকে মুক্তি। দুই. মোনাফেকের তালিকা বা কার্যক্রম থেকে মুক্তি।’ (তিরমিজি-হাসান) প্রত্যেক মুসলমানের ওপর নামাজ ফরজ। মহান আল্লাহতায়ালা নামাজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেক ওলামায়ে-কিরামের দর্শন অনুযায়ী নামাজ সংরক্ষণের অন্যতম মর্ম হলো, তা জামাতের সঙ্গে আদায় করা। মারাত্মক অসুস্থতা অথবা অনিবার্য কোনো অপারগতা না হলে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক। তাই আমাদের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমা ও ঈদের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা। মসজিদে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সবাই অজু করে পাকপবিত্র হয় এবং নামাজে ওঠাবসা করে, যা দৈহিক সতেজতা এবং মানসিক প্রফুল্লতা লাভে অত্যন্ত সহায়ক হয়। সকালে জামাতের জন্য জাগ্রত হওয়া এবং মসজিদের দিকে হেঁটে যাওয়া শারীরিকভাবে শ্রেষ্ঠতম উপশম। আর পরকালের অফুরন্ত কল্যাণ তো আছেই। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করে জামাতে নামাজ পড়ার জন্য কোনো একটি মসজিদের দিকে পা বাড়াবে তাঁর একটি কদমে আল্লাহ তার একটি করে পাপ মুছে দেবেন। আর একটি কদমে তার একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন। (সহি মুসলিম)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"সদ্ব্যবহারে মনুষ্যত্বের বিকাশ ",ইসলাম ধর্ম,"ব্যবহার মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য উপাদান। ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ হিসেবে জগতের সব মানুষ পারস্পরিক সর্বোত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিকার রাখে। সুন্দর ব্যবহারকে ইসলামে অত্যাবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়। সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মানুষ নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারে। সব মানুষেরই নিজের ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করার জন্য তার ব্যবহারকে অমায়িক করে গড়ে তোলা দরকার। কেননা, আচার-ব্যবহারের মধ্য দিয়েই মনুষ্যত্বের প্রকৃত পরিচয় ফুটে ওঠে। মানুষ ভালো কথাবার্তা ও আচার-ব্যবহার গঠনের মাধ্যমে নিজেকে শোভন, সুন্দর আর পরিশীলিত করে অন্যের প্রীতিভাজন হয়ে উঠতে পারে। সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকটতম প্রতিবেশী, দূরবর্তী প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।’ (সূরা আল নিসা, আয়াত: ৩৬) মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার ও ইসলামি শরিয়াহ পরিপালন পরস্পর সহধর্মী। তাই পরস্পরের প্রতি ভালো ব্যবহার মানবজীবনের অন্যতম ব্রত হওয়া উচিত। মানুষের শোভন ও সুন্দর হয়ে ওঠার জন্য জীবন চলার পথে সুন্দর আচার-ব্যবহারের মানসিকতা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। মানবসমাজে বংশের আসল পরিচয় তার আচার-ব্যবহার। তাই মনুষ্যত্বের বিকাশের জন্য আচার-ব্যবহার সুন্দর হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। মানুষের সত্যিকার পরিচয় তার ব্যবহারেই ফুটে ওঠে। একজন মানুষ ভালো কি মন্দ, তা তার ব্যবহার দেখেই ধরে নেওয়া যায়। ভদ্রলোকের কথাবার্তা, আদব-কায়দা ও আচার-আচরণ থেকে সদ্ব্যবহার প্রকাশ পায়। একজনের ব্যবহার ভালো হলে সে সহজেই সবার প্রিয়ভাজন হয়ে উঠতে পারে। যেমনভাবে হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘ভালো কথা ও সাদকা করা উত্তম কাজ। সুতরাং তোমরা দোজখের আগুন থেকে বেঁচে থাকো, একটি খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও, তাহলে মধুর ভাষা ও ব্যবহারের বিনিময়ে।’ (বুখারি) মানবসমাজে সবাইকে ভদ্রোচিতভাবে অন্যের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে কথায় ও কাজে আত্মসংযমী হতে হয়। মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, কাউকে কথা দিয়ে প্রতিশ্রুতি না রাখা, অবান্তর প্রশ্ন করা এবং অহেতুক রাগ-অনুরাগ বা হিংসা-বিদ্বেষ করা উচিত নয়। পরিচিত লোকজনের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করা, ছোটদের স্নেহ-ভালোবাসা, গুরুজনদের মান্য করা এবং অতিথিকে যথাসাধ্য আপ্যায়ন করা সবার দায়িত্ব। সালামের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে খুশিমনে সালামের জবাব দেওয়া অবশ্যকর্তব্য। সৎ মানুষকে সর্বোত্তম বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। একে অন্যের সঙ্গে সব সময় হাসিমুখে কথা বলা উচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন এবং সর্বোত্তম পন্থায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতেন। তাই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান করো হিকমত (প্রজ্ঞা) ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করো সদ্ভাবে।’ (সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১২৫) সুতরাং মানুষকে হাসিমুখে ও আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করা নৈতিক দায়িত্ব। বন্ধুত্বপূর্ণ হাসি দ্বারা গ্রাহকদের অভ্যর্থনা দিতে হবে। একজন হাস্যোজ্জ্বল মানুষের সঙ্গে যে কেউ কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মানুষের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করলে তার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও প্রশংসা লাভ করা যায়। ব্যবহার ভালো হলে সবাই তাকে ভালো বলে ও পছন্দ করে। ভালো ব্যবহার করলে অন্যের কাছ থেকেও সদ্ব্যবহার পাওয়ার আশা করা যায়। সুন্দর ব্যবহারই মানুষকে শান্তিপূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারে। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে হলে, জীবনে মহৎ কিছু করতে চাইলে অবশ্যই সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর ব্যবহারই মানুষকে সব দিক থেকে সুন্দর করে তোলে। মুমিনের সম্প্রীতিবোধ সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নম্র-বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উচ্চাসনে আসীন করেন।’ (মিশকাত) সুন্দর ব্যবহার গড়ে তুলতে হলে মানুষের মন-প্রাণ উদার হতে হয়। আবার ব্যবহার সুন্দর হলে তার মন উদার ও মানবিক গুণাবলিতে ভরপুর হয়ে ওঠে। ভদ্র ও সংযমী আচরণের মাধ্যমে গড়ে ওঠে সুন্দর ব্যবহার। কারও মধ্যে এসব সদ্গুণের সমাহার থাকলে তা ধীরে ধীরে মানুষের ব্যবহারকে সুন্দর ও শোভন করে গড়ে তোলে। তাই ইসলামি জীবনাচার, আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার নিজের জীবনে পরিপালন করতে হবে। পরিপাটি হয়ে থাকা, মানানসই জামা-কাপড় পরিধান করা, পারস্পরিক সাক্ষাতে সালাম ও অভিবাদন দেওয়া, উত্তম আচরণ করা এবং অনুমতি নিয়ে কথা বলা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি। ইসলামে শিষ্টাচার বা আদবকে ইমানের অংশ বলা হয়েছে। সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয়ী চরিত্র, ব্যক্তিত্ব, আনুগত্য, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে মানবসেবা ও জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। সে-ই সবচেয়ে আদর্শ মানুষ, যার স্বভাব পরিবারের কাছে সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত। সে-ই পূর্ণ মুসলমান, যার আচরণ সর্বোত্তম। যে ব্যক্তি নিজের লেনদেন ও কাজ-কারবারে সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত, ওয়াদা পালন করে, দায়িত্ব-কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করে, মানুষকে ধোঁকা দেয় না, আমানতের খেয়ানত করে না, অন্যের হক বিনষ্ট করে না, ওজনে কম দেয় না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং সুদ-ঘুষসহ যাবতীয় অবৈধ রোজগার ও দুর্নীতি থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলে, সে-ই হলো প্রকৃত মুসলমান। খাঁটি মুসলিম সে-ই, যার রসনা ও হাত থেকে মানবজাতি নিরাপদ। কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা চাইবে, তা অন্য ভাইয়ের জন্যও চাইবে। সমাজকে এমন আলোকিতভাবে গড়ে তোলা দরকার, যাতে সহজেই সব মানুষ ব্যক্তিগতভাবে সদ্বব্যবহার করার সুযোগ পায়। সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করে মানবজীবনকে সুখী, সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ করার পাশাপাশি চিরন্তন জীবনের মহাশান্তি লাভের পথ সুগম করা সম্ভব।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যায়যায়দিন,"বই পরিচিতি ইসলাম ও বিশ্বদর্শন নিয়ে কবি ইকবাল",ইসলাম ধর্ম,"আধুনিক উর্দু ও ফারসি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে খ্যাতির পাশাপাশি আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের পরিচিতি উপমহাদেশের বিশিষ্ট রাজনীতিক হিসেবে। ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের স্বাত্যন্ত্র ধরে রাখা ও বিকশিত করার তাগিদে তাদের নিজস্ব স্বাধীন আবাসভূমি পাকিস্তান গঠনের তাত্ত্বিক পুরুষ হিসেবে তিনি সুপরিচিতি। তবে এর চেয়েও বেশি জোরালো হলো দার্শনিক হিসেবে তাঁর সুনাম। আর তাঁর দর্শনচিন্তায় ইসলাম প্রবলভাবে উপস্থিত। ইসলাম তাঁর কাছে ছিল গতিশীল এক জীবনদর্শন। সেই উপলব্ধির ফসল রিকনস্ট্রাকশন অব রিলিজিয়াস থটস ইন ইসলাম (ইসলামে ধর্মীয় চিন্তার পুনর্গঠন)। মূলত ১৯২৮ সালে অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ, হায়দারবাদ, আলিগড়সহ কয়েকটি স্থানে তিনি বিশ্বদর্শন ও ইসলাম বিষয়ে সাতটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেগুলো ছিল ইংরেজিতে। সে বক্তৃতাগুলো সংকলিত হয়ে ১৯৩০ সালে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এর চার বছর পর অক্সফোর্ড থেকে বইটির আরেকটি সংস্করণ প্রকাশিত হয় যেখানে ‘ধর্ম কি সম্ভব?’ নামে আরেকটি নিবন্ধ যুক্ত হয়। বইটি র্জামান ভাষায় অনূদিত হওয়ার পর সেখানকার দার্শনিক ও পণ্ডিত মহলে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। তাঁরা অনেকেই ইকবালকে তখন ’ইসলামের নবজাগরণের চিন্তাবিদ’ হিসেবে অভিহিত করেন। উল্লেখ্য, ইকবাল জার্মানির মিউনিখের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। বইটিতে জ্ঞান ও ধর্মীয় অভিজ্ঞতা, দর্শনের দৃষ্টিতে প্রত্যাদেশমূলক ধর্মীয় অভিজ্ঞতা, আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা ও প্রার্থনার মর্ম, মানুষের খুদি বা আত্মার স্বাধীনতা ও অমরত্ব, মুসলিম সংস্কৃতির মর্মকথা এবং ইসলামি জীবন ব্যবস্থার গতিময়তার ওপর গভীরভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। ইকবাল বলতে চেয়েছেন, ইসলামভিত্তিক সমাজজীবন কোনো একটি কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, নয় স্থবির। সে কারণেই ইসলামি দুনিয়ায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন দেখা দিয়েছে, মতবাদ এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় মুসলমানদের মানসদিগন্তে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে স্বকীয় জ্ঞানের আলোকে নানা রকম ধারণা তৈরির স্বাধীনতা এসেছে। ইকবাল এটাও ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন যে মানুষের জীবনে ইচ্ছার স্বাধীনতা রয়েছে এবং মানুষ তাঁর কাজের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতিনিধি হয়ে অমরত্ব লাভ করতে পারে। মানে, তাকে সাধনা করে অমরত্ব অর্জন করতে হয়। আল্লামা ইকবালে এই বইয়ের মাধ্যমে এও জানাতে চেয়েছেন যে ইসলামের বিধিবিধানগুলোর ভিত্তিতে এবং ইজতিহাদের (আলেমদের গবেষণা) আলোকে মানবজীবনে কালে কালে চিন্তায় ও চর্চায় নানা বিন্যাস ও পুনর্বিন্যাস দেখা দেয়, ভবিষ্যতেও দেবে। তবে এই পুনর্বিন্যাসে কোনো সংকীর্ণ মনোভাবকে স্থান দেওয়া যাবে না। প্রথম প্রকাশ হওয়ার পর থেকে ৯৩ বছর ধরে নানা ভাষায় বইটির অনেক অনুবাদ ও পুনর্মুদ্রণ হয়েছে। বাংলাভাষাতেও এটি সুন্দরভাবে অনূদিত হয়েছে। ১৯৮১ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এটি বের করেছিল। এখন প্রথমা প্রকাশনীর অনুবাদে এটি বাজারে আছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"এক শ বছর পর জীবিত ",ইসলাম ধর্ম,"হজরত ইবরাহিম (আ.) জাতিকে তওহিদের দাওয়াত দিয়েছেন। তার বাবাকে তওহিদের প্রতি আহ্বান করেছেন, মূর্তি ভেঙেছেন। শাসক নমরুদ ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে বিতর্ক হয়। ইবরাহিম (আ) বলেন, আমার আল্লাহ তিনি, যিনি জীবন-মৃত্যু দান করেন। তখন নমরুদ বলল, আমিও তো জীবন ও মৃত্যু দান করি। এ বলে সে দুজন জীবন্ত লোক আনতে বলল। একজনকে মেরে ফেলল অন্যজনকে ছেড়ে দিল। আর বলল এই যে আমি যাকে ইচ্ছা জীবন ও মৃত্যু দিই। তারপর ইবরাহিম (আ.) সূর্য উদয় ও অস্তের কথা বললেন, তখন নমরুদ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। আল্লাহ তাঁর ক্ষমতা দেখানোর ইচ্ছা করলেন। গাধাসহ এক লোককে মৃত্যু দিয়ে একশত বছর মৃত রাখেন। তার সঙ্গে রাখা খাবার নষ্ট করলেন না। এক শ বছর পর জীবিত করে বললেন, ‘তুমি এ অবস্থায় কত দিন ছিলে?’লোকটি বলল, ‘এক দিন অথবা এক দিনের কিছু সময়। পুনরায় যখন জীবিত হলো তখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল। লোকটি ভাবল হয়তো দিনের মধ্যবর্তী সময়টুকু মৃত অবস্থায় ছিলাম। আল্লাহ জানিয়ে দিলেন, তুমি এক শ বছর মৃত ছিলে এবং আল্লাহ নিদর্শনগুলোও দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহ সব বিষয়ে ক্ষমতাবান, তিনি ইচ্ছা করলে হাজার বছর পরেও মৃতকে জীবিত করতে পারেন, মানুষ মরে পচে গলে গেলেও পুনর্জীবিত করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব নয়। এ লোকটি কে ছিল, তা নিয়ে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়। তার নাম ছিল উজায়ের, তবে প্রকৃত নাম আল্লাহ ভালো জানেন। (সূত্র: তফসিরে ফাতহুল মজিদ) কোরআনে আছে, আবার সেই ব্যক্তির কথা স্মরণ করো, যে এমন এক শহরে পৌঁছেছিল যা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সে বলল, ‘মৃত্যুর পর কী রূপে আল্লাহ একে জীবিত করবেন?’ তখন তাকে আল্লাহ এক শ বছর মৃত রাখলেন, তারপর তাঁকে পুনর্জীবিত করলেন। আল্লাহ বললেন, ‘তুমি মৃত (অবস্থা) কতক্ষণ ছিলে?’ সে বলল, ‘এক দিন বা এক দিনেরও কিছু কম।’ তিনি বললেন, ‘না, এক শ বছর ছিলে। আর লক্ষ করো তোমার খাদ্যসামগ্রী ও পানীয় বস্তু আর তোমার গাধাটাকে—ওসব অবিকৃত রয়েছে আর আমি তোমাকে মানবজাতির জন্য নিদর্শনস্বরূপ করব। আর (গাধার) হাড়গুলোর দিকে লক্ষ করো, কীভাবে সেগুলোকে আমি জোড়া দিই ও মাংস দিয়ে ঢেকে দিই।’ যখন এ তার কাছে স্পষ্ট হলো তখন সে বলে উঠল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৯ )",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার মানুষের ঢল নামছে ইউরোপে ",ইসলাম ধর্ম,"গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। এরপর ২৮ অক্টোবর থেকে ওই উপত্যকায় স্থল হামলাও শুরু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এরই মধ্যে ভয়াবহ আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজারে। এর মধ্যেই ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ৫২ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যেও ১৫ হাজারের বেশি নারী ও শিশু। এছাড়াও আট হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছে। তা সত্ত্বেও পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে’— মর্মে সমানে সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে। তারা চলমান বোমা হামলার তীব্রতার কথা বলছে খুব সামান্যই। তবে ইসরাইলের বর্বর এই আগ্রাসন ইতোমধ্যে গণহত্যায় রূপ নিয়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ। গাজার সমর্থনে ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বিক্ষোভ হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। বিক্ষোভ মিছিলের সংখ্যা বাড়ছে। এদিকে, ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশকে ব্রিটেনে অনেক রাজনীতিক একটি ঘৃণাব্যাঞ্জক কাজ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গায়ে সন্ত্রাসের সহযোগী শক্তি হিসেবে তকমা এঁটে দিতে চাচ্ছেন। ফিলিস্তিনিদের পতাকা উড়িয়ে অথবা ‘নদী থেকে সাগরে ফিলিস্তিন’ শীর্ষক সেøাগান দিয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশকে রাজনীতিকেরা যতই নিন্দাসূচক কাজ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করুন না কেন, ব্রিটেনের অনেক সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছেন। গাজার বিরুদ্ধে আজকের চলমান যুদ্ধ যুক্তরাজ্যের জনগণ ও তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের মানসিক ব্যবধান বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভাজনের রাজনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা অনেকেও এই তথাকথিত ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে আমাদের এই সময়ের সবচেয়ে তীব্র বিভাজনকারী ইস্যু হিসেবে চিহ্নিত করছেন। এর মাধ্যমে এটি পরিষ্কার যে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি বৈশ্বিক সমর্থন অনেক বেড়েছে। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন নামের একটি আন্দোলন সংগঠনের হিসাব মতে, লন্ডনে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা দেড় লাখ থেকে তিন লাখ এবং সর্বশেষ আট লাখে উন্নীত হয়েছে। গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর তা-ব ও গণহত্যার ভয়াবহ মাত্রা সাধারণ মানুষের বিবেককে মারাত্মকভাবে নাড়া দিয়েছে এবং অনেকে রাতারাতি আন্দোলন কর্মীতে পরিণত হয়েছেন। দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনের ওপর জুলুম চালানোকে সমর্থন দেওয়ার কারণে পশ্চিমা সরকারগুলোর প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ পুঞ্জীভূত হয়েছে। ফিলিস্তিন সমর্থক আন্দোলনকর্মীদের ইসরাইলবিরোধী ভাষা প্রয়োগের এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরাইল বিদ্বেষী বক্তব্য দেওয়ার কারণে ব্রিটিশ পুলিশ ইতোমধ্যে অনেককে আটক করেছে। শিক্ষার্থীদের অনেকে বলেছেন, তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের অ্যান্টি টেররিজম প্রিভেন্ট প্রোগ্রামের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করলে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরাইলবিরোধী বক্তব্য পোস্ট করলে তাদের অ্যান্টি টেররিজম প্রিভেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় আনা হতে পারে বলে তারা সতর্ক করছেন। তবে এত কিছুর পরও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যুক্তরাজ্যে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া লোকের সংখ্যা বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের মাটিতে ফিলিস্তিনিরা এমন একটি ন্যায্যতাবাদী গোষ্ঠী খুঁজে পাচ্ছেন, যাদের আন্দোলন তৎপরতা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ-সিরিয়ান উদ্যোক্তা ওমার লাবাবেদি হোয়াটসঅ্যাপে ফিলিস্তিন আন্দোলনের সমর্থনে একটি গ্রুপ খুলেছিলেন। শুরুর দিকে তাতে দেড়শ’ জনের মতো সদস্য ছিলেন। সেই গ্রুপ থেকেই পরে আন্দোলনকারীদের বড় একটি সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এই নেটওয়ার্কটি মিছিল, সমাবেশের পাশাপাশি গণমাধ্যমে ফিলিস্তিন ইস্যুর সংবাদ পরিবেশনা পর্যবেক্ষণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে থাকে। ‘প্যালঅ্যাক্টিভিজম’ নামের এই গোষ্ঠী যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনকর্মীদের পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করে দেয়। লাবাবেদি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু লোকজনকে সংগঠিত করার এই কাজ তার প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলেছে। মিডল ইস্ট আই।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের পাতা,"ইফতার সামনে নিয়ে দোয়া পড়লে গুনাহ মাফ হয় ",ইসলাম ধর্ম,"রোজা মুসলমানের জন্য ফরজ ইবাদত। এটা আল্লাহর দেওয়া বিশেষ সওগাত। মুসলমান হিসেবে সবার উচিত এ মাসকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা, এ মাসে ইবাদত-বন্দেগি বেশি বেশি করা। সকল প্রকার, অন্যায়, অপরাধ, জুলুম-নির্যাতন, অশ্লীলতা ও বেহায়পনা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখাই হলো- রমজানের পবিত্রতা। রমজানের পবিত্রতা শুধু মিছিল ও স্লোগানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সব ধরণের অন্যায়-অশ্লীলতা থেকে নিজেকে পরিশোধিত ও সংশোধন করতে হয় রমজান মাসে। লক্ষ্য রাখতে হবে, তাহাজ্জুদ, জিকির-আজকারও যেন না ছুটে। আল্লাহর কাছে ক্ষমাও চাইতে হবে। ইফতারের কিছুক্ষণ পূর্বে এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে হবে। এটি পড়লে পড়লে আল্লাহতায়ালা তার বান্দার পেছনের সব গুনাহ মাফ করে দেন- يَا وَا سِعَ الْمَغْفِرَةِ اِغْفِرْلِىْ উচ্চারণ: ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি, ইগফিরলী। অর্থ: হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন। (শু‘আবুল ঈমান: ৩/৪০৭) بِسْمِ اللهِ وَعَلى بَرَكَةِ اللهِ বিসমিল্লাহি ওয়া ‘আলা বারাকাতিল্লাহ বলে ইফতার শুরু করবে এবং ইফতারের পর নিম্নের দুটি দোয়া পড়বে- اَللّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلي رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়ালা রিযকিকা আফতারতু। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোজা রেখেছি, এবং তোমারই দেয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করলাম। (আবূ দাঊদ: ১/৩২২) ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْـتَلَّتِ العُرُوْقُ وَثَبَتَ الاَ جْرُ اِنْ شَاءَ الله تَعَا لى উচ্চারণ: যাহাবাযযমা ওয়াবতাল্লাতিল উরুকু ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহু তায়ালা। অর্থ: পিপাসা দূরিভূত হয়েছে, ধমনীসমূহ সতেজ হয়েছে, এবং ইনশাআল্লাহ রোজার সওয়াব নিশ্চিত হয়েছে। (আবূ দাঊদ: ১/৩২১) কারো দাওয়াতে ইফতারি করলে মেজবানের উদ্দেশে এই দোয়া পড়বে- اَفْطَرَعندكم الصائمون واكل طعامكم الابرار وصلت عليكم الملئكة উচ্চারণ: আফতারা ইনদাকুমুস সায়িমুন ওয়া আকালা তাআমুকুমুল আবরার ওয়া সাল্লাত আলাইকুমুল মালাইকা। অর্থঃ আল্লাহ করুন যেন রোজাদাররা তোমাদের বাড়ীতে রোজার ইফতার করে এবং নেক লোকেরা যেন তোমাদের খানা খায় এবং ফেরেশতারা যেন তোমাদের উপর রহমতের দু‘আ করে। (আসসুনানুল কুবরা, নাসাঈ ৬:৮১)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ধেয়ে আসছে জাহেলিয়াত ",ইসলাম ধর্ম,"জাহেলিয়াত মানে অজ্ঞতা, বর্বরতা, হিং¯্রতা কিংবা দানবতা। অথবা অশ্লীল ও অনাচার ঘেরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজ ব্যবস্থা। যে সমাজে মিথ্যার জয়জয়কার। সত্যের ঠাঁই মেলা ভার। মানুষ আর পশুতে ব্যবধান কেবল আকৃতি। আচার-আচরণ ও কাজকামে দুয়ের মাঝেই অভিন্ন প্রকৃতি। সে সমাজে, যে যার মতো চলে। যা খুশি তাই করে। শক্তির জোরে ভক্তি পায় অর্থের জোরে মুক্তি পায়। কি ন্যায় কি অন্যায় তা বুঝার শক্তিও লোপ পায়। ঠিক যেন ইসলামপূর্ব সত্যের জ্ঞান ও আলোহীন সমাজ ব্যবস্থার মতো। ইসলাম যার নাম দিয়েছিল ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’ বা ‘অজ্ঞতার যুগ’ বলে। কাল পরিক্রমায় আবারও ‘ধেয়ে আসছে জাহেলিয়াত’। অন্ধকার হচ্ছে পৃথিবী। এর কিছু নমুনা তুলে ধরা হলোÑ সৃষ্টিকর্তা ও পরকালে অবিশ্বাস : জাহেলি যুগে অনেক মানুষের ধারণা ছিল সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছু নেই। পরকাল, হাশর-নাশর কেবল অলীক কল্পনা। দুনিয়ার জীবনই জীবন। হায়াত-মউত প্রাকৃতিক নিয়ম বা কাল বিবর্তনের ফল। কোরআনে মাজিদে তাদের কথা এভাবে এসেছে, ‘আর তারা বলে, জীবন তো শুধু দুনিয়ার জীবনই। আমাদের জীবন-মরণ এখানেই। কালের বিবর্তনই আমাদের ধ্বংস করে।’ (সুরা জাসিয়া : ২৪) অন্যত্র এসেছে, ‘তারা বলে, ‘যখন আমরা মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?’ (সুরা মুনিুন : ৮২) কোরআন তাদের এসব অসার ও অবান্তর অনেক কথার জওয়াব খুব জোরালোভাবে দিয়ে ঘোষণা করেছে, ‘এমনকি তোমরা যদি (মাটি ও হাড্ডির চেয়ে কঠিন পদার্থ) পাথর কিংবা লোহা হয়ে যাও অথবা তারচেয়েও কোনো কঠিন পদার্থ, তোমাদের ধারণা মতে যাতে জীবনীশক্তি দেয়া সম্ভব নয় (তবু তোমাদের পুনরায় উঠাব।)’ [সুরা বনি ইসরাইল : ৫০-৫১] আজকাল আমাদের সমাজে এ ধরণের বিশ্বাস ও চেতনাধারীদের নাস্তিক বলে ডাকা হয়। ইউকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, ‘বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার শতকরা ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয় এবং ১১.৯% মানুষ কোনো ধর্মেই বিশ্বাস করে না।’ তন্মধ্যে ‘গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল’র ৬৫টি দেশ নিয়ে করা এক জরিপে দেখা গেছে চীনের শতকরা ৯০ ভাগ ও সুইডেনের ৭৬ ভাগ মানুষ পত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করে। এছাড়া চেকপ্রজাতন্ত্র, ব্রিটেন, হংকং, জার্মানি ও জাপান নাস্তিক্যবাদ চর্চায় রয়েছে শীর্ষ সাত দেশের তালিকায়। (সূত্র দৈনিক কালেরকণ্ঠ, ৩০ জুন, ২০১৯) মুসলিম দেশগুলোতেও নাস্তিকদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। শিরকের প্রাদুর্ভাব : শিরক হলো আল্লাহতায়ালার সত্তা কিংবা গুণাবলির সঙ্গে কোনো মানুষ, জীবজন্তু, বা কোনো নির্জীব পদার্থের গুণাবলি অথবা সত্তাকে অংশীদার বানানো। পৃথিবীর মোট ৪৩০০টি ধর্মের মধ্যে ইসলাম ছাড়া কোনো ধর্মই আল্লাহর একত্ববাদের বিশুদ্ধ শিক্ষা দেয় না। সে হিসাবে শিরককারীদের সংখ্যাও পৃথিবীতে কম নয়। অথচ ‘শিরক সবচেয়ে বড় অন্যায়।’ (সুরা লুকমান : ১৩) ‘আল্লাহতায়ালা তাঁর সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য পাপ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিতে পারেন। কারণ যে শিরক করে সে অবশ্যই মহাপাপ রচনা করে।’ (সুরা নিসা : ৪৮) কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো আজ তাওহিদের ধারকবাহক মুসলিমরাও নানা রকমের শিরকে লিপ্ত। মাজারগুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখুন। পীর-মুরিদদের দিকে লক্ষ্য করুন। গণক, জ্যোতিষীদের কাছে যারা যায় তাদের দিকে তাকান। দেখবেন, কতজন কতভাবে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করছে। ঠিক যেন জাহেলি যুগের মুশরিকদের মতো তাদের আকিদা-বিশ্বাস। মাজারে পড়ে সিদজা করছে। মৃতলোকের কাছে দুনিয়ার সমস্যার সমাধান চাচ্ছে। সন্তান কামনা করছে। পীরকে ভালোমন্দ দেয়ার বা করার যোগ্য মনে করছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসবই শিরকের অন্তর্ভুক্ত। মূর্তিপ্রীতি : জাহেলি যুগে মূর্তি এতটাই প্রিয় হয়ে উঠেছিল, মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ক্ষেতখামার, বৈঠকখানা, ইবাদতখানা সর্বত্রই সযতেœ মূর্তি রাখত ও সংরক্ষণ করত। এমনকি মক্কার লোকেরা কাবাঘরেও ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। এদের সামনে মাথা নত করত। সেজদা দিত। খাবার রাখত। এদের নামে যেকোনো কাজ শুরু ও শেষ করত। মান্নত করত। পশু জবাই দিত। বিয়ে-শাদিসহ সামাজিক সকল আচার-অনুষ্ঠান এদের নামেই হতো। এসব মূর্তি বা প্রতিকৃতি ছিল মূলত পূর্বেকার নেককার লোকদের। তাদের বিশ্বাস ছিল নেককার লোকেরা আল্লাহর প্রিয় মানুষ। তারা আল্লাহর কাছে কারো ব্যাপারে সুপারিশ করলে আল্লাহ তা কবুল করবেন। সুতরাং তাদের কোনোভাবে খুশি করা গেলে সফল হওয়া যাবে। কোরআন মাজিদে এসেছে, (মুশরিকরা বলত) ‘আমরা তাদের (মূর্তিদের) ইবাদাত একমাত্র এ উদ্দেশ্যেই করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেবে।’ (সুরা যুমার : ৩) অন্যত্র এসেছে, ‘তারা বলে, ‘এগুলো আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।’ (সুরা ইউনুস : ১৮) আমাদের অবস্থাও আজ তাদের মতোই। আমরাও বাড়িঘর, দোকানপাট, অফিস-আদালতসহ সকল কর্মস্থলে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় প্রিয়জনদের ছবি, বুজুর্গদের ছবি কিংবা নেতানেত্রীর ছবি লাগিয়ে রাখি। যা মূলত মূর্তিপূজারীদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ ধরণের সাদৃশ্য ধারণও ইসলামে নিষিদ্ধ। নবী করিম সা. বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য ধারণ করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।’ (সুনান আবু দাউদ : ৪০৩১) বলতে বাধা নেই, অনেকে বরকত লাভ ও সম্মান জানানোর জন্যও কোনো মৃত নেতানেত্রী বা বুজুর্গ ব্যক্তির ছবি কিংবা ভাস্কর্য বানিয়ে ঘরে রাখেন কিংবা কোনো জায়গায় স্থাপন করেন। এ সবকিছু মূর্তির সাদৃশ্য অবলম্বন। মূর্তিপূজার সূচনা এভাবেই হয়েছিল। মাদকের ছড়াছড়ি : কোরআনের ভাষায় মদ একটি নিকৃষ্ট বস্তু ও এটা গ্রহণ করা শয়তানের কাজ। (সুরা মায়েদা: ৯১) হাদিসে একে ‘উম্মুল খাবায়েস’ বা পাপাচারের উৎস আখ্যা দেয়া হয়েছে। কারণ মদের উপকারের চেয়ে অপকার অনেক বেশি। জাহেলি যুগে মদের ব্যবহার ছিল অতি মাত্রায়। মদ খেত না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম ছিল। ইসলামের শুরু সময়টাতে তা গ্রহণে বাধা না দেয়া হলেও পরবর্তীতে তা সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কারণ একটি আদর্শ ও সুস্থ সমাজ নির্মাণে মাদক সেবন একটি বড় অন্তরায়। আজকাল মদ্যপান ও এর বেচাকেনা ইসলাম ভিন্ন অন্যান্য জাতির কাছে যেমন স্বাভাবিক বিষয়, তেমন অনেক মুসলিমের কাছেও তা স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে কে না জানে। এরপরও মানুষ সে পথেই হাঁটছে। সমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অবৈধ উপার্জন : সে যুগে অর্থ উপার্জনের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ছিল না। জীবিকার তাদিগে যে যেভাবে পারত অর্থ উপার্জন করত। অভিশপ্ত ইহুদিরা করত সুদের কারবার। যাযাবররা মরুভূমি পশুপালনের সঙ্গে জড়িত থেকে চুরি, ছিনতাই ও লুটতরাজ চালাত। অভিজাত শ্রেণি ব্যবসা-বাণিজ্য করলেও উপার্জন ছিল সীমিত। যে কারণে তারাও অসদুপায় অবলম্বন করত। দুর্বলদের ঠকাত। এতিম-মিসকিনেদর সম্পদ গ্রাস করত। মেয়েদের পিতা, স্বামী, ভাইসহ অনেক আত্মীয়ের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করত। জুয়াকে সম্পদ উপার্জনের বৈধ পথ মনে করত। ইসলাম এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। চুরি-ডাকাতির শাস্তি নির্ধারণ করেছে। প্রত্যেকের সম্পদেরর অধিকার নিশ্চিত করেছে। সুদ, ঘোষ, ও জুয়াকে হারাম ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু আজ সমাজের চিত্র পাল্টে গেছে। উল্লিখিত অপরাধগুলো মহামারীর আকার ধারণ করেছে। বোনদের হক না দেয়া রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দুর্বলদের নানাভাবে ঠকানো হচ্ছে। জুয়া ও সুদের কারবার রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ যেন কোরআনের বিধানের প্রতি বৃদ্ধাঙুল প্রদর্শন। ইসলামের সঙ্গে ক্ষমতার আস্ফালন। এসবই কেয়ামত পূর্বলক্ষণ। নারী নির্যাতন : জাহেলি যুগে নারী ছিল কেবলই ভোগের পণ্য। তাদের সামাজিক মান-মর্যাদা ছিল খুবই কম। যেভাবে খুশি পুরুষ তার প্রয়োজনে তাকে ব্যবহার করত। ছেলের কাছে মায়ের কদর ছিল না। বাবার কাছে কন্যার দাম ছিল না। অনেক সময় কন্যাকে বংশের কলঙ্ক ভেবে হত্যা করা হতো। জীবন্ত কবর দিয়ে বাবা তার আত্মমর্যাদা রক্ষা করত। স্ত্রীরা ছিল দাসীতুল্য। বোনরা ছিল অবহেলিত। ইসলাম এসে সবার মর্যাদা নিশ্চিত করে। কিন্তু আজ সে অধিকার নারীরা হারাতে বসেছে। সম-অধিকারের নামে তারা অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের অধিকার খর্ব করছে। ইসলাম বলে মেয়েকে পাত্রস্থ করার আগ পর্যন্ত তার যাবতীয় ব্যায়ভার বাবা ও ভাইদের ওপর। স্ত্রীর ভরণপোষণ স্বীমর ওপর। মা-বাবা কর্মক্ষম হলে সন্তানরা তাদের দেখভাল করবে। আর এখন সে চিত্র উল্টে যাচ্ছে। মা-বাবার স্থান হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। স্ত্রী সংসারের উপার্জনের উদ্দেশ্যে উড়াল দিচ্ছে বিদেশের মাটিতে। যুবতী মেয়েকে ঘরের বাহিরে কাজে দিয়ে বাপ-ভাইয়েরা ঘুমাচ্ছে বাড়িতে পড়ে। নারী যেন স্বাধীনতার নামে ফিরে যাচ্ছে পরাধীনতার জীবনে। এসবই নব্য জাহেলিয়াতের নিদর্শন। অবৈধ যৌনাচার : অবৈধ যৌনাচার, যাকে ইসলাম জিনা হিসেবে নামকরণ করেছে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান পৃথিবী জাহেলি যুগের পৃথিবীকে ছাড়িয়ে গেছে। বিয়ের মতো পবিত্র ও মধুর সম্পর্ক ছেড়ে ব্যভিচারকে মানুষ বেছে নিচ্ছে। বিয়ে ছাড়াই জন্ম দিচ্ছে সন্তান। অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইউরোপ, আমেরিকা এগিয়ে থাকলেও এশিয়া কিছুটা পিছিয়ে। তবে বিনোদন কেন্দ্রগুলো, নামি-দামি হোটেলগুলো, শহরের বিভিন্ন অলিগলি আজ জিনার বাজারে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে সে বাজার দিনকে দিন বড় হচ্ছে। গ্রাম, মফস্বলের পবিত্র পরিবেশও সে বায়ুতে আক্রান্ত হচ্ছে। অশ্লীল বিনোদন : সে যুগে গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস সবকিছুতেই ছিল অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। নারীর বিভিন্ন গোপনাঙ্গের বর্ণনা, বংশীয় আভিজাত্য, পরস্পর অহংকার প্রদর্শন ইত্যাদি কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা দিয়ে সাজানো ছিল সাহিত্যাঙ্গন। নগ্নতা ছিল আকর্ষণীয় বিনোদন। আজও সাহিত্য মানে একশ্রেণির মানুষের কাছে অশ্লীল, রুচিহীন, নোংরা, পুঁতিগন্ধময় কিছু কথাবার্তা। নগ্নতা সবার চোখেই দৃশ্যমান। এ ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের চেয়ে এগিয়ে। শয়তানের প্রধান টার্গেটই ছিল মানুষের শরীর থেকে পোশাক খুলে নেয়া। জান্নাতে সে আমাদের আদি পিতামাতার পোশাক খুলে নিয়েছিল ষড়যন্ত্র করে। আর দুনিয়ায় সে আদম সন্তানের পোশাক খুলে নিতে ব্যস্ত। এ ক্ষেত্রে মানুষরূপী শয়তানরা তাকে সাহায্য করছে। গান-বাজনার কী অবস্থা সে খবরও আমাদের জানা। এক কথায় অশ্লীলতার ও বেহাপনার জোয়ারে ভাসছে আজ পৃথিবী। চারিত্রিক অবক্ষয় : চরিত্র মানবের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। একটি সমাজ সুস্থ কি অসুস্থ তার পরিচয় সমাজে বসবাসরত মানুষের মধ্যে দিয়ে পাওয়া যায়। আমাদের সমাজের প্রতিবিম্বটা তখনই পরিস্কার হয়ে ওঠে, যখন দেখি ছাত্রের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত। শিক্ষকের হাতে ছাত্রী যৌন হেনস্থার শিকার। সহপাঠীর হাতে সহপাঠী নিহত। বাবা-মাকে হত্যা করছে আপন সন্তান! ক্ষমতার লোভে গুম-খুন করছে মানুষ মানুষকে। সত্যকথা বলার দায়ে বিষিয়ে তোলা হচ্ছে জীবনকে। কারো সম্পদ রাখার জায়গা হচ্ছে না, কেউ আবার দু’বেলার খাবার খুঁজে পাচ্ছে না। কারো আলিশান গাড়ি বাড়ি। কারো ফুটপাতে লতাপাতার ঝুপড়ি। কেউ সামান্য রোগের চিকিৎসা করাতে বিদেশে যায়, কেউ মহারোগ নিয়ে হাসপাতালের বারান্দাতেও থাকার জন্য টাকা পায় না। মানবীয় গুণাবলি ধারী ধীরে মানুষ থেকে উঠে যাচ্ছে। এর স্থান দখল করছে পশুস্বভাব। একে অপরের প্রতি দয়া, ভ্রাতৃত্ববোধ, ভক্তি, সম্মানবোধ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। হিং¯্রতা, বর্বরতা, হিংসা-বিদ্বেষ ব্যাপকহারে বেড়ে চলছে। এ অবস্থায় মুমিনের অতি সতর্ক ও সংযত হয়ে জীবনযাপন করা প্রয়োজন। ইসলামি অনুশাসনের প্রতি ভালোবাসা ও দরদ নিয়ে তা মান্য করা কর্তব্য। নতুবা ইসলাম যেভাবে অপরিচিত ও দুর্বল অবস্থায় আত্মপ্রকাশ করেছিল অচিরেই তা আগের অবস্থাতেই ফিরে যাওয়ার ভয় রয়েছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন!",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative Dhaka Tribune,"চাঁদকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ ঘোষণার দাবি মহাসভা প্রধানের ",হিন্দু ধর্ম,"গত সপ্তাহেই প্রথমবারের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রেখে ইতিহাস গড়েছে ভারত। বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সফলভাবে সফট ল্যান্ডিং করেছে দেশটির মহাকাশযান চন্দ্রযান ৩। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এরই মধ্যে সেই ল্যান্ডিং স্পটের নাম “শিবশক্তি” রেখেছেন। এই নামকরণ নিয়ে ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। আর এই আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই এবার চাঁদকে “হিন্দু রাষ্ট্র” হিসেবে ঘোষণার দাবি তুলেছেন সর্বভারতীয় হিন্দু মহাসভার জাতীয় সভাপতি স্বামী চক্রপাণি মহারাজ। রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমি চাই ভারতীয় পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে চাঁদকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করুক।” নরেন্দ্র মোদির নাম দেওয়া “শিব শক্তি পয়েন্ট”কে চাঁদের রাজধানী ঘোষণারও দাবি করেন সর্বভারতীয় হিন্দু মহাসভার জাতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, “চন্দ্রযান-৩ যেখানে অবতরণ করেছে সেই শিব শক্তি পয়েন্টকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো সন্ত্রাসী জিহাদি মানসিকতা নিয়ে যাতে সেখানে পৌঁছাতে না পারে, কট্টরপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিকাশ যাতে না হয় সেজন্য চাঁদকে সনাতন হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া উচিত।” স্বামী চক্রপাণি মহারাজ বলেন, “শিবশক্তি পয়েন্টকে আমি শিবশক্তি ধাম হিসেবেই দেখছি। হিন্দু মহাসভা এবং সন্ত মহাসভার তরফ থেকে এই মর্মে আমরা সরকারের কাছে একটি চিঠিও লিখছি। যত দ্রুত সম্ভব চাঁদকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করা হোক। আমার আরও একটি প্রস্তাব আছে। চাঁদে যাতায়াত শুরু হলেই ওই শিবশক্তি পয়েন্টে আমি ভগবান শিব, মা পার্বতী এবং ভগবান গণেশের একটি মন্দির তৈরি করব।”",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,"মাহে রমজানে তাওরাত অবতরণ ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহর নবী হজরত মুসা (আ.)-এর কাছে কয়েক হাজার বছর আগে রমজান মাসের ৬ তারিখে কয়েকখানা পাথরের ফলকে উৎকীর্ণ অবস্থায় আসমানি কিতাব ‘তাওরাত’ নাজিল করা হয়। আল্লাহর আহ্বানে হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে গমন করে প্রথমে ৩০ দিন একটানা রোজা ও ইতিকাফ পালন করেন, পরে আরও ১০ দিন একইভাবে সিয়াম ও ইতিকাফ পালন করেন। এভাবে ৪০ দিন পূর্ণ হলে তাঁর কাছে ‘তাওরাত’ অবতীর্ণ হয়। হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে গিয়েছিলেন ২৭ রজব এবং ৬ রমজান তাঁর অবস্থান ৪০ দিন পরিপূর্ণ হলে তিনি তাওরাতপ্রাপ্ত হন। হজরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি বাক্যালাপ হওয়ায় তিনি ‘কালিমুল্লাহ’ খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুসার সঙ্গে আল্লাহ সাক্ষাৎ বাক্যালাপ করেছিলেন।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৬৪) হজরত মুসা (আ.) আল্লাহকে দেখার জন্য জোর আবেদন-নিবেদন করলে তিনি ঘোষণা করেন, ‘মুসা যখন আমার নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হলো এবং তার প্রতিপালক তার সঙ্গে কথা বললেন, তখন সে বলল: “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দর্শন দাও! আমি তোমাকে দেখব।” তিনি বললেন: “তুমি আমাকে কখনোই দেখতে পাবে না। বরং তুমি পাহাড়ের প্রতি লক্ষ করো, তা স্বস্থানে স্থির থাকলে তুমি আমাকে দেখবে।” যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ে জ্যোতি প্রকাশ করলেন, তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল আর মুসা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ল। যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল, তখন বলল: মহিমাময় তুমি, আমি অনুতপ্ত হয়ে তোমারই দিকেই প্রত্যাবর্তন করলাম এবং মুমিনদের মধ্যে আমিই প্রথম।’ (সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৪৩) হজরত মুসা (আ.)-এর হাতে যে আশ্চর্যজনক লাঠি থাকত, সেটি অনেক মুজিজা গুণসমৃদ্ধ ছিল। ফিরআউনের জাদুকরদের জাদুর সাপ সেই লাঠি সাপে পরিণত হয়ে খেয়ে ফেলেছিল। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মুসার প্রতি আমি প্রত্যাদেশ করলাম, তুমিও তোমার লাঠি নিক্ষেপ করো, সহসা তা তাদের অলীক সৃষ্টিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।’ (সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ১১৭) ওই লাঠি লোহিতসাগরে বিশাল পথ করে দিয়েছিল, যা দিয়ে ফিরআউনের কবল থেকে উদ্ধারকৃত বনি ইসরাইলকে নিয়ে হজরত মুসা (আ.) নিরাপদে নীল নদের ওপারে চলে যান। এই লাঠি অন্ধকারে আলো দিত, অনাবৃষ্টির সময় পানি বর্ষণ করত, ফলবান বৃক্ষ হয়ে যেত; দুধ, মধু ও সুগন্ধি জোগান দিত, সমুদ্রে দিক নির্ণয় করত। হজরত মুসা (আ.) যখন রিসালাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন তিনি প্রধানত ১০টি বিধান বা ধর্মীয় অনুশাসন লাভ করেছিলেন আর তা হচ্ছে: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মূর্তি তৈরি কোরো না, মাতা-পিতার অবাধ্য হবে না, নরহত্যা কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে কোনোরূপ মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না, প্রতিবেশীর পরিবারের প্রতি অন্যায় লালসা কোরো না’ প্রভৃতি। হজরত মুসা (আ.) ও হজরত খিজির (আ.)-এর সাক্ষাৎ ও বিশেষ জ্ঞান শিক্ষালাভ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘অতঃপর তারা (মুসা ও তাঁর সঙ্গী) আমার বান্দাদের মধ্যে এমন একজনের (খিজিরের) সাক্ষাৎ পেল, যাকে আমি আমার কাছ থেকে অনুগ্রহ দান করেছিলাম এবং আমার কাছ থেকে শিক্ষা দিয়েছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান। মুসা তাকে (খিজিরকে) বলল, “সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে, তা থেকে আমাকে শিক্ষা দেবেন, এ শর্তে আমি আপনার অনুসরণ করব কি?”’ (সূরা আল-কাহফ, আয়াত: ৬৫-৬৬) পবিত্র মাহে রমজানে আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক জাতির স্বীয় মাতৃভাষাকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান করে নিজ নিজ জাতির নিজস্ব ভাষায় আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। হজরত মুসা (আ.)-এর সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা ছিল হিব্রু বা ইবরানি, এ ভাষায় ‘তাওরাত’ অবতীর্ণ হয়। হিব্রু ভাষায় ‘তাওরাত’কে বলা হয় ‘তোরা’। নবী-রাসুলগণের মাতৃভাষায় আসমানি কিতাব নাজিলের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি প্রত্যেক রাসুলকেই তাঁর স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন।’ (সূরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪) >নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘রমজান উপলক্ষে আমার উম্মতকে পাঁচটি বস্তু দেওয়া হয়েছে, যা পূর্ববর্তী উম্মতকে দেওয়া হয়নি।’ হজরত মুসা (আ.)-এর সমকালেও রোজা রাখার বিধান ছিল। ইহুদিদের ওপর সপ্তাহে প্রতি শনিবার আর বছরের মধ্যে মহররমের ১০ তারিখে আশুরার দিন এবং অন্যান্য সময় বিশেষ উপলক্ষে রোজা ফরজ ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় হিজরত করে ইহুদিদের আশুরার দিনে রোজা অবস্থায় পেলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজ তোমরা কিসের রোজা করছ?’ তারা বলল, ‘এটা সেই মহান দিবস, যেদিন আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা (আ.) ও তাঁর সম্প্রদায়কে (বনি ইসরাইল) মুক্ত করেছিলেন এবং ফিরআউন ও তার জাতিকে নীল নদে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। ফলে শুকরিয়াস্বরূপ হজরত মুসা (আ.) ওই দিন রোজা রেখেছিলেন, তাই আমরা আজ রোজা করছি।’ এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমি তোমাদের অপেক্ষা হজরত মুসা (আ.)-এর অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এদিন সাওম পালন করেন এবং সবাইকে রোজা রাখার নির্দেশ দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে আল্লাহর কাছ থেকে ‘তাওরাত’প্রাপ্তির আগে ৪০ দিন পানাহার পরিত্যাগ করেছিলেন। ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে বর্ণিত আছে, হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে ৪০ দিন পানাহার বর্জন করে রোজা অবস্থায় ধ্যানমগ্নতায় কাটিয়েছিলেন। তাই ইহুদিরা হজরত মুসা (আ.)-এর অনুসরণে ৪০টি রোজা রাখা ভালো মনে করত। তন্মধ্যে ৪০তম দিনটিতে তাদের ওপর রোজা রাখা আবশ্যক ছিল। মহররমের ১০ তারিখে আশুরার দিনে হজরত মুসা (আ.) তাওরাতের ১০টি বিধান পেয়েছিলেন, এ কারণেই তাওরাতে ওই দিনের রোজা পালনের জন্য তাগিদ এসেছে। এ ছাড়া ইহুদি সহিফাতে অন্যান্য রোজারও সুস্পষ্ট হুকুম রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘রমজান উপলক্ষে আমার উম্মতকে পাঁচটি বস্তু দেওয়া হয়েছে, যা পূর্ববর্তী উম্মতকে দেওয়া হয়নি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সেহ্রি খাওয়া।’ (মুসলিম) অন্য হাদিসে বর্ণিত আছে যে ‘আমাদের এবং ইহুদিদের রোজার পার্থক্য হচ্ছে আমরা সেহ্রি খাই।’",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"তাঁর আগমনে ধন্য হলো ভুবন যেদিন ",ইসলাম ধর্ম,"মহানবী (সা.)-এর শুভাগমন হয়েছিল ৫৭০ খ্রি. ১২ই রবিউল আউয়াল রোজ সোমবার। শীতের অবসান প্রায়, তরু শাখা-প্রশাখায় নব পাতা পল্লব সমাগত। এমন এক দিনে রাতের শেষ প্রহরে হালকা শীতের স্নিগ্ধ বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল। পবিত্র মক্কা নগরীতে উঁচু-নিচু ভূমিতে প্রভাতী আলোক শিখা শুভাগমনী বার্তা নিয়ে কারা যেন ছড়িয়ে পড়েছিল। যার আগমনের অপূর্ব নুরে আসমান-জমিন আলোকিত হয়েছিল। আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছিল- ‘মারহাবা ইয়া হাবিবাল্লাহ্, শুভাগমন! অভিনন্দন! সমস্ত সৃষ্টিজগত আজ আনন্দে আত্মহারা, গগণে গগণে ফেরেশতাদের ছুটাছুটি, তোরণে তোরণে সালাম সম্ভাষণ। সবই আজ বিস্মিত, পুলকিত, কম্পিত ও শিহরিত। জড় প্রকৃতির অন্তরেও লেগেছে দোলা। বেহেশতি খুশবুতে বাতাস আজ সুরভিত। যুগ-যুগান্তরের প্রতীক্ষিত না আসা অতিথির আগমন মুহূর্ত আজ যেন আসন্ন হয়ে উঠেছে। তারই অভ্যর্থনার জন্য আজ সব আয়োজন। এমন স্নিগ্ধ-শান্ত আমেজের মধ্যদিয়ে শুভ মুহূর্তে সোবহে-সাদিকের সময় আরবের মরু দিগন্তে মক্কা নগরীর এক প্রাচীন কুটিরের নিভৃত কক্ষে মা আমেনার কোলে তাশরীফ আনলেন প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)। আম্বিয়াগণের শুভাগমনের মুহূর্তে বিস্ময়কর ও আশ্চর্যজনক কিছু ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কথা ইতিহাসে উল্লেখ আছে। সৃষ্টির দুলালের আগমনের মুহূর্তেও অভাবনীয় বিস্ময়কর ও অতি আশ্চর্যজনক কিছু ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। মুহাদ্দিসগণের পরিভাষায় যাকে বলা হয়- ‘ইরহাসাত’। নবী (সা.)-এর জন্মলগ্নে সত্যের আগমনে মিথ্যার কম্পন সৃষ্টি হয়েছিল তামাম দুনিয়ার খোদাদ্রোহী শাসকদের অন্তরে। সৃষ্টির দুলালের শুভ জন্মের সময়ে পারস্যের রাজ প্রাসাদে ফাটল দেখা দেয়, তার ১৪টি গম্বুজ ভূমিতে ধ্বসে পড়ে, পারস্য মন্দিরের অগ্নি নির্বাপিত হয়ে যায়, যা ইতিপূর্বে হাজার বছরেও নির্বাপিত হয়নি। সিরিয়ার মরুভূমিতে নহর প্রবাহিত হলো। সাওয়া নদী শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হলো। সায়্যিদা আমেনার জীর্ণ কুটিরের আলোতে সিরিয়ার সব মহল ও রোম সাম্রাজ্যের প্রাসাদসমূহ পর্যন্ত আলোকিত হলো। মা আমেনার কোলে তাশরীফ এনেছেন যে-নূর তার নাম মুহাম্মদ (সা.)। হযরত মুহাম্মদ (সা.) একটি নাম। কোটি কোটি মানুষের ওষ্ঠদ্বয় প্রতিদিন বহুবার এ নামের আস্বাদ গ্রহণ করে। এ নাম মুমিনের হৃদয়ে প্রবাহিত করে খুশি ও আনন্দের ফুলগুধারা। সাড়ে ১৪শ’ বছর ধরে এভাবেই চলছে দুনিয়ার ইতিহাস। পৃথিবীর শেষ দিনটি পর্যন্ত অগণিত মানুষের মুখে মরুর দুলালের নামের উচ্চারণ এবং হৃদয়ের গভীরে তার অনুরাগ এমনিভাবে অব্যাহত থাকবে। রাসূল (সা.)-এর শুভ জন্মের দিন সোমবার দিবসটি ইতিহাস বিজড়িত। রাসূল (সা.)-এর শুভ জন্ম হয়েছে সোমবার, নবুওয়্যাত লাভ করেছেন সোমবার, মদিনায় হিজরতের উদ্দেশে মক্কা ত্যাগ করেছেন সোমবার, মদিনা মুনাওয়্যারায় আগমন করেছেন সোমবার, উম্মতদেরকে শোক সাগরে ভাসিয়ে পরপারে যাত্রা করেছেন সোমবার এবং হাজরে আসওয়াদ স্থাপন করেছেন সোমবার। মানব সৃষ্টির কম-বেশি ছয় হাজার বছর পর সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল হিসেবে আবির্ভূত হয়ে ওহির জ্ঞানের আলোকে আদর্শ সমাজ গড়ে যে শিক্ষা মানব জাতিকে দিয়েছেন, সে শিক্ষার আলোকে পথ চলে আমরাও হাউজে কাউসার পানকারী এবং তাঁর শাফায়াতের যোগ্য হতে পারি ইনশাআল্লাহ। সমস্যা হোক পাহাড়সম, জটিলতা হোক সমুদ্রসম তবুও নবীজীর আনীত ধর্মে তার সঠিক সমাধান ও সঠিক উত্তর নিহিত রয়েছে। প্রিয় নবীজির অপ্রতিদ্বন্দ্বী আদর্শের দিকে ফিরে যাওয়াতেই রয়েছে ইহকালীন ও পরকালীন শান্তি। তাঁর অনিন্দ্য সুন্দর জীবনের আলোয় আমাদের জীবনকে আলোকিত করার মধ্যেই রয়েছে সফলতা। নবী (সা.)-এর প্রদর্শিত মত ও পথকে মুক্তির একমাত্র গ্যারান্টি হিসেবে জীবনের সর্বক্ষেত্রে গ্রহণ করার মধ্যেই রয়েছে আমাদের কল্যাণ।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,সিরিয়ার প্রভাবশালী আলেমের ইন্তেকাল,ইসলাম ধর্ম,"সিরিয়ার প্রসিদ্ধ আলেম ও দায়ী শায়খ মুস্তফা আল-সাইরাফি ইন্তেকাল করেছেন। সর্বশেষ তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। গত শনিবার (২৬ আগস্ট) দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভোগার পর তিনি কাতারের দোহায় মারা যান। তিনি ছিলেন সিরিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী আলেম।ইসলাম বিষয়ক আকর্ষণীয় বক্তব্য দিতেন তিনি। তিনি বিভিন্ন মসজিদে ইমাম ও ইসলাম প্রচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।শায়খ আল-সাইরাফি ১৯৩০ সালে সিরিয়ার হামা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল সম্ভ্রান্ত ইলমী পরিবার।ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষকে ইসলামের প্রতি ডাকতে অভ্যস্ত ছিলেন। তাঁর হাস্যোজ্জ্বল মুখ ও বিনয়ীভাব মানুষকে তাঁর কাছে নিয়ে আসত। বিশুদ্ধ ভাষায় বক্তব্যের জন্য তিনি সবার মধ্যে সুপরিচিত ছিলেন। শায়খ মুহাম্মদ আল-হামিদ, শায়খ মুহাম্মদ আলী মুরাদসহ সমকালীন বিখ্যাত আলেমদের কাছ থেকে তিনি ইসলামী জ্ঞান অর্জন করেন।১৯৫০ সালে তিনি দামেশক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ইসলামী শরিয়াহ, সাহিত্য, দর্শনসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।শায়খ মুস্তফা আল-সাইরাফি ছাত্রাবস্থা থেকেই বিভিন্ন সাংগঠনিক তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন। তরুণদের মধ্যে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব গড়তে তিনি নিয়মিত হামা শহরের জামে আল-মাসউদে বক্তব্য দিতেন। তখনকার সময় বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে অনেক তরুণ ইসলামচর্চা শুরু করে।তখন তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে উঁচু পদের জন্য অফার করা হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।১৯৬৩ সালের মার্চে বাথ পার্টি সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিলে তার নিপীড়ন শুরু হয়। পরের বছর তিনি প্রথমে আরব আমিরাত যান। এরপর পুনরায় দেশে ফিরে কাতার চলে যান। আমৃত্যু সেখানে তিনি বিভিন্ন ইসলামী কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকেন। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকতা, দাওয়াতি কার্যক্রম, মসজিদের ইমামতিসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের সংখ্যালঘু বিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"‘রমযান মাস তো সে মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে’ ",ইসলাম ধর্ম,"রমযার মাস,আল কোরআন নাজিলের মাস। এ মাস তাকওয়ার মাস।এরশাদ হচ্ছে-‘হে ইমাদারগণ!তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে,যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পুর্ববতী নবীর উম্মতের উপর। আশা করা যায় তোমাদের মাঝে তাকওয়ার গুন ও বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হবে’। (সুরা বাকারা-১৮৩)। রোজা একটি ফরজ ইবাদত।ইহা পালন করা ফরজ। এরশাদ হচ্ছে,‘ যাদের কাছে রোজার মাস উপস্থিত হবে,তারাই রোজা পালন করবে’।রোজাকে অস্বীকার বা অবহেলা কারী কাফের।একজন মুসলমানের ইমানী দায়ীত্ব হচ্ছে রমজান মাসে রোজা পালন করা। রোজা পালন করলেই তাকওয়ার গুন অর্জন করা না। তাকওয়া অর্জনের জন্য খোদা ভীতি,মহান আল্লাহ তাআলার নাফরমানি,অবাধ্যতা থেকে নিজেকে বেঁচে রাখ।অন্তরে আল্লাহ ভীতি জাগ্রত রাখা। যা মোমেন বান্দার জন্য একান্ত ভাবে কাম্য। মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে সর্ব শ্রেষ্ঠ্য জাতি হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরন করেন। মানুষকে পরিচালনার জন্য মহা গ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করেন। কোরআন হচ্ছে, সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।পার্থক্যে পরিমাপের মাপ কাটি । এরশাদ হচ্ছে- ‘রমযান মাস তো সে মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল করা হয়েছে। আর এ কোরআন হচ্ছে মানব জাতির জন্য পথের দিশা। মানুষের জন্য সত্য মিথ্যার পার্থক্য কারী’।(সুরা বাকারাহ-১৮৫)। মহান আল্লাহ তাআলা সব সহিফা এবং বড় বড় চারি খানা আসমানি কিতাব রমজান মাসে নাজিল করেন। পবিত্র হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে,‘হযরত ইব্রাহিম (আ) এর উপর সহিফা রমজানের ১লা তারিখে,হযরত মুসা (আ) এর উপর তাওরাত শরীফ রমজানের ৬ তারিখে,হযরত দাউদ (আ) এর উপন যাবুর শরীফ রমজানের ১২ তারিখে, হযরত ঈসা (আ) এর উপর ইজ্ঞিল শরীফ রমজানের ১৮ তারিখে এবং সব শেষ মহা গ্রন্থ আল কোরআন শরীফ বিশ^ নবী (দ) এর উপর রমযান মাসের কদরের রাতে নাজিল করা হয়েছে’। প্রত্যেক বনি আদমের ভালো কাজের প্রতিদান দশগুন থেকে সাতশত গুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়।এরশাদ হচ্ছে,‘আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসুল (দ) বলেছেন,বনী আদমের প্রত্যোক ভালো কাজের প্রতিদান দশগুন থেকে সাতশত গুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,তবে সওম ছাড়্ াযেহেতু তা কেমল আমার জন্য আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।কেননা একজন সওমকারী তার প্রবৃত্তিকে আমার জন্য নিবৃদ্ধ রেখেছে এবং খানাপিনা থেকেও বিরত থেকেছে। রোজাদারের জন্য রয়েছে দু’টো মুহুত। ১.যখন সে ইফতার করে। ২. যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাত করেবে। রোজাদারের মুখের গন্ধ মহান আল্লাহর নিকট মিশকে আম্বরের চেয়েও অধিক সুগন্ধি যুক্ত। প্রকৃতপক্ষে সিয়াম ঢাল স্বরুপ। সুতুরায় তোমাদের কেউ যখন রোজার দিনে সওম রাখবে তখন যেন যৌন মিলন না করে,অশ্লীল বাক্যলাপও না করে। তবে যদি কেউ তোমাদের কোন রেজাদারের সাথে বিবাদে লিপ্ত হয় বা ঝগড়া বাধিয়ে দেয়,তখন যেন বলে দেয় যে,আমি একজন রোজাদার’।(বুখারী)। রমযান মাস, মোমেন বান্দার জন্য মহা নিয়ামত।তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন.হে আল্লাহ,বাতিল ছেড়ে সত্য পথের দিশা দেখাও। এরশাদ হচ্ছে-‘হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে সরল সঠিক পথের দিশা দাও’। (সুরা ফাতিহা)্।তার জবাবে আল্লাহ বলেন,‘আলিফ লাম মিম!এটা সেই কিতাব,তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এটি মুত্তাকি লোকদের পথ দেখাবে’।(সুরা বাকারা১-২)। মহান আল্লাহ তাআলা আল কোরআনের মাধ্যমে মুত্তাকি বান্দার পুরুস্কার ঘোষনা করেন।এরশাদ হচ্ছে,‘নিশ্চয় যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং যারা সৎকর্ম পরায়ন,আল্লাহ তাদের সঙ্গে রয়েছেন’।‘নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকিদেরকে ভালোবাসেন’। ‘যে আল্লাহকে ভয় করে,আল্লাহ তার পাপ মার্জন করবেন এবং তাকে দেবেন মহা পুরুস্কার’।‘যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারনাতীত উৎস থেকে জীবিকা দান করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট’।‘যদি তোমরা ধৈর্য ধারন করো এবং আল্লাহকে ভয় করো। তাদের ষড় যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না’।‘যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করতো তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা জান্নাতের নিকট উপস্থিত হবে,তার দরজা গুলো খুলে দেওয়া হবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদের বলবে,তোমাদের প্রতি সালাম এবং জান্নাতে প্রবেশ করো, স্থায়ী ভাবে অবস্থানের জন্য”। হাদীসে কুরসিতে আল্লাহ বলেন,‘রোজা আমার জন্য,আমি নিজে তার পুরুস্কার দিব’। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্নিত হযরত রাসুল (দ) বলেন, সিয়াম এবং কোরআন বান্দার জন্য কিয়ামতের দিবসে সুপারিশকারী হবে,সিয়াম বলবে,হে প্রভু আমি তাকে দিনের বেলা খাওয়া এবং প্রবৃত্তির তাড়না থেকে নিবৃত্ত রেখেছি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহন করুন। কোরআন বলবে,আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি,তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন,আল্লাহ বলবেন,তাদের সুপারিশ গ্রহন করা হলো’।‘যে রমজানের ইমান এবং এহতেসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে,আল্লাহ তার পুর্বের গোনাহ মাফ করে দেবেন’।(বুখারী-মুসলিম)। রোজা মানুষের পাপ রাশিেেক জ¦ালিয়ে একজন খাটি মানুষ হিসাবে তৈরী করে। রাত জেগে আল কোরআন তেলাওয়াত,আল্লাহর নিয়ামত ও অসংখ্য নেকী অর্জন করার মাস। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘আর এ কুরআন হচ্ছে মানব জাতির জন্য পথের দিশা। মানুষের জন্য হক-বাতিলে পার্থক্য কারী’। আধুনিক সভ্যতা,সংস্কৃতিকে আকড়ে ধরেছি। যা দুনিয়ার জীবনে শেষ। পরকালের জন্য কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। আল্লাহ তাআলা কোরআনের প্রতিষ্ঠানিক রুপদানেবান্দার প্রতি রোজা ফরজ করেন। আমরা নামাজ,রোজা,যাকাত,হজ্জ ইত্যাদি ইবাদত করি।এরশাদ হচ্ছে,‘নিশ্চয় নামাজ খারাপ ও অশ্লুীল কাজ থেকে বিরত রাখে’। আমরা,সঠিক পথের সন্ধ্যান পাচ্ছি না। আল কোরআন অধ্যায়ন ও রোজা পালনের মাধ্যমে মুত্তাকি হতে পারছি না।আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত হযরত রাসুল (দ) বলেন,যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুয়ায়ী আমল বর্জন করতে পারে নি,তার খাওয়া ও পান করা পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজনে নেই। (বুখারী)। হযরত রাসুল (দ) বলেন,কত রোজাদার আছে,যাদের সওমের বিনিময়ে ক্ষুদা ছাড়া আর কিছুই জোটে না।(মসনদে আহমদ)।মোট কথা আমাদেরকে মিথ্যা কথা,গীবত,অপবাদ,পাপাচার,পরনিন্দা এবং অন্যায় কাজ কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। সওমের মাধ্যমে ক্ষমা পেতে হলে,সওম হতে হবে পাপমুক্ত। শুধু মাত্র পানাহার ত্যাগ আর গুনাহের কাজ না ছাড়লে কোন ভাবেই সওম পালন কওে মুক্তাকি হওয়া যাবে না। মাহে রমযান বরকত,রহমত ও নাজাতের মাস। আমরা হালাল,হারাম,ন্যায়-অন্যায়,সত্য-মিথ্যাসহ যাবতীয় বিধানাবলি যথাযথ ভাবে পালন করি। বিশ^ নবী (দ) অন্ধকার যুগে জাহিলিয়াত,পাশবিকতা ও হিং¯্রতা,শিরক, পৌত্তলিকতা ও অমানবিকতায় ভরা অন্ধাকার সমাজকে দুর করে সোনালি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেন। সে সমাজে উদয়মান সুর্য্যরে দীপ্ত আলোয় বিশ^ হলো আলোকিত।বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ হলো আমার যুগ’। এরশাদ হচ্ছে,‘আমি আকাশ পৃথিবী ও পর্ব্বত মালার সামনে এ আমানত(আল কোরআনের তথা খেলাফতের দায়ীত্ব)পেশ করলাম। কিন্তু তারা তা গ্রহন করতে প্রস্তুত হলো না। তারা ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু মানুষ তার স্কন্ধে তুলে নিল।’(সুরা আহযাব)। মহান আল্লাহ আরো বলেন,‘ইয়াসিন,জ্ঞান গর্বময় কোরআনের শপথ,তুমি অবশ্যই রাসুলদের একজন।নিঃসন্দেহে তুমি সরল পথের উপর (প্রতিষ্ঠিত) রয়েছ। পরাক্রমশালী ও পরম দয়ালু আল্লাহর পক্ষ থেকেই কোরআন অবর্তীনা’।(সুরা ইয়াসিন)। আল কোরআনের জ¦লন্ত আগুন,মানুষকে পুড়িয়ে সোনার মানুষে পরিনত করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহনের পুর্বে মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা) বিশ^ নবী (দ) কে হত্যা করার জন্য ঝড়ের বেগে ছুটছে। কিন্তু আল কোরানের র্স্পশে ওমরের হৃদয়ে পরিবর্তন আসে। তারপর,তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় খলিফা হলেন।আসুন,আমরা রোজার তাকওয়া অর্জন ও আল্লাহর নৈকট্য লাভ করি। আল কোরআনের জ্ঞানে নিজেকে আকড়ে ধরি। এই হোক সবার প্রত্যাশা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"সউদী আরবে ১৩শ’ বছর আগের মসজিদ পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ ",ইসলাম ধর্ম,"জামে আল-সাফা। ১৩ শ’ বছর আগে নির্মিত সউদী আরবের প্রাচীনতম একটি মসজিদ। এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান গৃহীত ঐতিহাসিক মসজিদের উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে আল-বাহা অঞ্চলের এই মসজিদটিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সংস্কারের মাধ্যমে মসজিদের স্থাপত্যশৈলী ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব নিশ্চিত করা হবে। আল-সাফা মসজিদটি বালজুরাশি অঞ্চলে অবস্থিত। সাড়ে ১৩ শ’ বছর আগে উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত মসজিদটির আশপাশে রয়েছে পাথরের তৈরি বিভিন্ন ভবন। মনে করা হয়, আল-সাফা মসজিদটি প্রথম নির্মাণ করেন সুফিয়ান বিন আউফ আল-গামদি। তখনকার সামাজিক প্রেক্ষাপটে মসজিদটির গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল। গ্রামবাসী এখানে একত্র হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করত। মাগরিব ও এশার নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিরোধ মীমাংসা করা হতো। ঐতিহাসিক মসজিদ সংস্কার প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে সউদী আরবের ১৩টি অঞ্চলের ৩০টি মসজিদ আছে। এর মধ্যে রিয়াদে ছয়টি, মক্কায় পাঁচটি, মদিনায় চারটি, আসিরে তিনটি, আল-জউফ ও জাজানের দুটি, তাবুক, আল-বাহা, নাজরান, হায়েল ও আল-কাসিমসহ বিভিন্ন মসজিদ আছে। এর আগে সংস্কার প্রকল্পের প্রথম ধাপে ১০টি অঞ্চলের ৩০টি ঐতিহাসিক মসজিদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। মসজিদগুলোর সুরক্ষা, সংস্কার, স্থায়িত্ব ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে স্থাপত্য সৌন্দর্য বজায় রাখতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। সউদী আরবের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য অক্ষুণœ রেখে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি করাই এ প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য। আরব নিউজ, সউদী গেজেট।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive যুগান্তর,ঈদ: সন্তুষ্টি ও ক্ষমাপ্রাপ্তির এক মহাআনন্দের দিন,ইসলাম ধর্ম,"ঈদ খুশির দিন। শ্রমের পারিশ্রমিক প্রাপ্তির দিন। পুরস্কার লাভের দিন। সন্তুষ্টি ও ক্ষমাপ্রাপ্তির দিন। অফুরন্ত দানের দ্বার উন্মুক্ত করার দিন। বড়ত্ব-মহত্ব প্রকাশের দিন। তাই ঈদের কল্পনা করতেই প্রতিটি ঈমানদার নারী-পুরুষের শরীরে সৃষ্টি হয় শিহরণ। পুলকিত হয় তাদের তনুমন। কারণ এদিনের পুরস্কার লাভের জন্যই তারা দীর্ঘ এক মাস ক্ষুধা ও অনাহারে থেকেছেন, সিয়াম সাধনা করেছেন, তারাবির নামাজ পড়েছেন, কিয়ামুল লাইল করেছেন ও সাহরি খেয়েছেন। মহান মালিকের দরবারে রোনাজারি ও কাকুতি-মিনতি করেছেন। আর আজ তাদের জন্য মহান মালিক সন্তুষ্টি ও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করবেন। হজরত আনাস (র) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন ঈদের দিন হয় তখন আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করে বলেন, হে আমার ফেরেশতারা! সেই শ্রমিকের পারিশ্রমিক কি হবে যে তার কাজ যথাযথ সম্পাদন করেছে? তারা উত্তরে বললেন, হে আমাদের প্রতিপালক! তার বিনিময় ইহাই যে, তাকে পুরোপুরি পারিশ্রমিক দেওয়া হোক। তখন আল্লাহতায়ালা বলবেন, হে আমার ফেরেশতারা! আমার বান্দারা তাদের প্রতি আমার অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে অতঃপর (ঈদগাহের দিকে) আমার কাছে প্রার্থনা করার জন্য তাকবির ধ্বনি দিয়ে যাচ্ছে। আমার ইজ্জত ও বুজুর্গি, সম্মান ও সুউচ্চ মর্যাদার কসম, আমি অবশ্যই তাদের প্রার্থনা কবুল করব। অতঃপর আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করবেন, তোমরা ফিরে যাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম। তোমাদের পাপগুলোকে পুণ্যে রূপান্তরিত করে দিলাম। ফলে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে যাবে। (আল মুজামুল কাবির লিত তাবারানি, হাদিস নং – ৬১৭, আত তারগিব ওয়াত তারহিব -৫৪৯) তাই মুমিনের কর্তব্য হলো, পবিত্র ঈদের দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং ক্ষমাপ্রাপ্তির জন্য আল্লাহ ও তার রাসুলের বাতানো পথে ঈদ উদযাপন করা। ঈদ আনন্দ উৎসব উদযাপনের নামে বিজাতীয় কৃষ্টি-কালচার অনুসরণে পাপ এবং গর্হিত কাজে লিপ্ত না হওয়া।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ভোরের কাগজ,"ধর্মগুরুর জলাতঙ্ক রোগের বার্তায় স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা ",অন্যান্য,"উপজেলার গন্ডিমসারা গ্রামে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সন্তানদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না অভিভাবকরা। স্থানীয় এক ধর্মগুরু এবং কবিরাজের ছড়ানো গুজবে সন্তানদের ঘরের বাইরে যেতে দিচ্ছেন না তারা। পুলিশ প্রশাসনের লোকজন গ্রামবাসীর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও পরামর্শ দিচ্ছেন। স্থানীয়রা জানায়, গন্ডিমসারা গ্রামে প্রভাষ চন্দ্র নামে এক ব্যাক্তি ৪-৫ মাস আগে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান। তার মারা যাওয়ার পর একজন কবিরাজ ওই গ্রামের শিশু, নারী-পুরুষসহ প্রায় সবার শরীরে মৃত প্রভাষের কুকুরের বিষ প্রবেশ করেছে বলে মত দেন। তার কথায় বিশ্বাস করে গ্রামের শিবেন দেবনাথ, বাচ্চু মোল্লা, মিলন ইসলামসহ গ্রামবাসীরা কবিরাজের ঝাড়-ফুঁক, পানিপড়া, গুড়পড়াসহ হাতুড়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিভাবকরা সন্তানদেরকে নিয়ে চরম দুশ্চিতায় রয়েছেন। ধর্মগুরু আর কবিরাজের নাম-পরিচয় জানাতে তারা রাজি হননি। গন্ডিমসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণা কান্তি সরকার জানান, গুজবে অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না। এতে তার বিদ্যালয়সহ আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাধে শ্যাম আগরওয়ালা ও আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগের লোকজন গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করতে জনসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গুজব ছড়ানো সেই কবিরাজের খোঁজে পুলিশ মাঠে নেমেছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ",অন্যান্য,"স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। এদেশের আলেম-ওলামারা সহযোগিতা করলে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল করা সম্ভব হবে। রোববার বেলা সোয়া ২টার দিকে শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং ওলামা-মাশায়েখ ফোরামের উদ্যোগে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী ওলামা-মাশায়েখ সমাবেশ’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সমাবেশে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে না। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে রয়েছে বড় ঘরের সন্তানরা। জঙ্গিবাদে এরাই জড়িত। তাই সমাজের অন্যায়-অবিচার প্রতিরোধের জন্য আলেম-ওলামাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। উপস্থিত আলেম-ওলামাদের উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে আপনাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ইমামরা মসজিদগুলোতে শুক্রবার জুমার দিনের খুতবায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কুফল সম্পর্কে বক্তব্য দিলে জনগণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কুফল সম্পর্কে সচেতন হবে। যে যেখানে সুযোগ পান, সেখানেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী বক্তব্য দেবেন। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়ে অবস্থান নিই। ১৯৭৮, ১৯৯২, ২০১৬ সালে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এখন ২০১৭ সালেও তারা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা যদি খেতে পারি, তাহলে ১০ লাখ রোহিঙ্গাদেরও খেতে দিতে পারব। প্রধানমন্ত্রী ২ হাজার একর জমিতে রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন। শরীয়তপুরের জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুনের সভাতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন-২৭) অ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অ্যাডিশনাল আইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবা আক্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল, ভোজেশ্বর ঐতিহাসিক জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা শওকত আলী ও আংগারিয়া কওমি মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,বিখ্যাত দানবীর হাতেম তাঈয়ের পরিবার যেভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন,ইসলাম ধর্ম,"আরবের বিখ্যাত দাতা হাতেম তাঈ। যাঁর বদান্যতার গল্প আরব উপদ্বীপ ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র বিশ্বে। তাঁর পরিবার রাসুল (সা.)-এর যুগেই ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। দাতা হাতেমের ছেলে আদি ইবনে হাতেম (রা.) ছিলেন নবীজি (সা.)-এর সাহাবি। ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক তাঁর ইসলাম গ্রহণের বর্ণনা এভাবে তুলে ধরেন। আদি ইবনে হাতেম (রা.) বলতেন, আরবে আমার চেয়ে কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কথা বেশি অপছন্দ করত না। তবে আমি স্বভাবে সম্ভ্রান্ত এবং ধর্মে খ্রিস্টান ছিলাম। আমার কাজ ছিল চৌথ (লুণ্ঠিত সম্পদের এক-চতুর্থাংশ) উশুলের জন্য বিভিন্ন গোত্রে ঘুরে বেড়ানো। মহানবী (সা.)-এর আগমনের কথা শুনে আমার গা জ্বলত। আমি আমার গোলামকে নির্দেশ দিলাম সে যেন আমার উটের পাল থেকে কিছু মোটাতাজা উট বাছাই করে রাখে এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর বাহিনী আসছে এই কথা শুনলে আমাকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেয়। কিছুদিন পর সে আমাকে খবর দিল মুহাম্মদ (সা.)-এর বাহিনী আপনার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি তখনই সিরিয়ার পথ ধরলাম এবং আমার এক বোন সাফফানা বিনতে হাতেমকে সেখানেই রেখে গেলাম। আমি চলে যাওয়ার পরপর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘোড়সওয়ার বাহিনী গোত্রের ওপর চড়াও হলো। অন্যদের মতো হাতেমের কন্যাকে বন্দি করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে হাজির করা হলো এবং আমার পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ তাঁকে জানানো হলো। অন্যান্য বন্দির মতো হাতেমের কন্যাকেও মসজিদ-ই-নববীতে আটকে রাখা হয়। একদিন মহানবী (সা.) সে স্থান অতিক্রম করার সময় তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার বাবা মারা গেছেন, অনাথের ভরসা হারিয়ে গেছে। আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন। আল্লাহ আপনাকে অনুকম্পা করবেন। নবীজি (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার ভরসা কে? হাতেমকন্যা বলল, আদি ইবনে হাতেম। তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল থেকে পলায়নকারী? এরপর তিনি চলে গেলেন। এভাবে তিন দিন অনুগ্রহ ও মুক্তি চাওয়ার পর নবীজি (সা.) তাঁকে মুক্তি দিলেন। তবে বললেন, তুমি চলে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ো না। বরং তোমাকে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার মতো নির্ভরযোগ্য লোক পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করো। অতঃপর কুজায়া গোত্রের কিছু লোকের সঙ্গে হাতেমকন্যা সফরের প্রস্তুতি নিলে মহানবী (সা.) তাঁকে বাহন, পোশাক ও প্রয়োজনীয় পাথেয় দিলেন। বোন সিরিয়ায় পৌঁছানোর পর আদি ইবনে হাতেম (রা.)-কে বকাঝকা করে তাঁকে ফেলে রেখে আসায় এবং তিনি তাঁর ভুল স্বীকার করে নেন। বোনই তাঁকে পরামর্শ দিলেন তিনি যেন মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করেন। আদি ইবনে হাতেম (রা.) নিশ্চিত হতে চাইছিলেন, মুহাম্মদ (সা.) কোনো সাধারণ বাদশাহ, নাকি সত্যিকার নবী। কিছু বিষয় প্রত্যক্ষ করার পর তিনি নিশ্চিত হন, তিনি নবী। যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলা, বিছানায় আদি (রা.)-কে বসিয়ে নিজে নিচে বসা এবং আদি (রা.)-এর ক্ষমতার গোপন মোহ সম্পর্কে বলে দেওয়া ইত্যাদি। এরপর তিনি বিলম্ব না করেই ইসলাম গ্রহণ করেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া : ৫/১২২) ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive কালের কন্ঠ,"হোয়াইট হাউসে ঈদ উৎসব, শোনা গেল কোরআন তিলাওয়াত",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হোয়াইট হাউসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার (২ মে) অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি দৃঢ় সমর্থনের কথা তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কোরআন থেকে রোজাবিষয়ক একটি আয়াত তিলাওয়াত করতে শোনা যায়। ঈদ উৎসবের স্বাগত বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রমজান মাসের রোজা ও মুসলিমদের ওপর এর প্রভাব প্রসঙ্গে কথা বলেন।এ সময় তিনি আমেরিকান সমাজে মুসলিম সম্প্রদায়ের অবদানের প্রশংসা করে জানান, মার্কিন কূটনীতি, সামরিক খাত থেকে শুরু করে সিনেমা, খাদ্য ও বস্ত্রশিল্পে মুসলিমদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আপনাদের মতো ৩৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। আপনারা ভিন্ন ভিন্ন জাতি থেকে এসেছেন। বিভিন্ন ভাষায় কথা বলেন।কিন্তু এখন আপনারা আমেরিকান হিসেবে এখানে একত্রিত হয়েছেন। আমেরিকার ইতিহাসে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান কংগ্রেসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলিম দায়িত্ব পালন করছেন। বক্তব্য শেষে ‘ঈদ মোবারক’ বলে উপস্থিত সবাইকে অভিবাদন জানান বাইডেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন ইমাম মাখদুম জিয়া।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, কংগ্রেস সদস্য আন্দ্রে কার্সন ও ইলহান ওমরসহ শতাধিক মুসলিম নেতা।এদিকে হোয়াইট হাউসে ঈদের আয়োজনে নিউ জার্সির প্রসপেক্ট পার্কের মুসলিম মেয়র মোহাম্মদ খায়রুল্লাহকে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দেয়নি গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট সার্ভিস। তবে তাকে কেন হোয়াইট হাউসে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি তা জানা যায়নি। ",ধর্মীয় উৎসব,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে যা জানাল আমিরাত,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি জানিয়েছে, আগামী ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতর পালিত হতে পারে। আজ রবিবার গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আমিরাত জ্যোতির্বিদ সোসাইটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান জানান, শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ১০ এপ্রিল পড়তে পারে। এ দিন হবে বুধবার। এ হিসেবে এ বছর মুসলিমদের ৩০টি রোজা পালন করা লাগতে পারে। উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। রমজানের মাসব্যাপী রোজা পালনের পর ঈদুল ফিতরের দিন উৎসব হিসেবে পালন করেন মুসলিমরা।",ধর্মীয় উৎসব,Neutral যুগান্তর,ইয়াজিদ ছিল একজন মুনাফিক,ইসলাম ধর্ম,"ইয়াজিদ ছিল একজন মুনাফিক ও অত্যাচারী শাসক। তার শাসনের বিরুদ্ধে লড়তে ইমাম হোসাইন (রা.) কুফায় রওনা দেন।এ সময় ইয়াজিদের বিপুলসংখ্যক সৈন্য কারবালা প্রান্তরে ইমাম হোসাইনের কাফেলাকে অবরুদ্ধ করে। এক অসম এবং অন্যায় যুদ্ধে ন্যায়ের জন্য হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার ৭২ জন সঙ্গী শহীদ হন। এত বিপুল রণসজ্জা দেখে ইমাম হোসাইন (রা.) ভীত হননি বরং অত্যাচারী ইয়াজিদের বিরুদ্ধে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেন। প্রাণ দেন শিশু, যুবক ও বৃদ্ধসহ অনেকেই। এরপরও তিনি অন্যায়-অবিচার মেনে নেননি। এ ঘটনাটি যেমন হৃদয়বিদারক তেমনি অত্যাচারী ও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেরণা জোগায় যুগে যুগে। অন্যায় আর অবিচারের সঙ্গে আপস না করার দৃঢ়তা শেখায়। ঐতিহাসিক এ আশুরার দিনে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হওয়া এবং সব ধরনের জাহেলি রসম-রেওয়াজ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য।অতএব, মর্যাদার এ মাসে আমরা যেমন রোজা ও নফল ইবাদতসহ বিভিন্ন নেক আমল করব তেমনি ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যায়, অত্যাচার আর অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নেব।ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা আমাদের জীবনে ধারণ করার সংকল্প করব। আসুন, সত্য ও ন্যায়ের পথে জীবন গড়ে তুলি।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative কালের কন্ঠ,আয়ারল্যান্ডের জাতীয় স্টেডিয়ামে জুমার নামাজ,ইসলাম ধর্ম,"আয়ারল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উইন্ডসর পার্কের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ নামাজে বেলফাস্ট শহরের মুসলিমরা অংশ নেন। নামাজের পর তারা পুরো স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন। স্থানীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক ও সংযোগ তৈরি করতেই অভিনব এই আয়োজন করে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ।আইরিশ ফুটবল স্টেডিয়ামের জনসংযোগ কর্মকর্তা অ্যান্ডি হারডি বলেন, ‘স্টেডিয়ামে প্রথমবার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নামাজে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির ৫০ জন অংশ নেন। মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে এই আয়োজন করা হয়। মূলত পরিকল্পনা করেই জমায়েতটি অনুষ্ঠিত হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন আরো করা হবে।’স্টেডিয়ামে জুমার নামাজ আয়োজনের বিষয়কে ইতিবাচকভাবে দেখছেন আইরিশ মুসলিম কমিউনিটি। এটিকে আন্ত সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে মনে করছেন তাঁরা। বেলফাস্টের মুসলিম কমিউনিটির প্রতিনিধি আবিওলা সানুসি বলেন, ‘দিনটি আমাদের জন্য বিশেষ দিন ছিল। আজীবন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।আয়ারল্যান্ডে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সব কমিউনিটির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’সানুসি আরো বলেন, ‘বেলফাস্ট শহরে ৪-৫টি মসজিদ রয়েছে। আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক বিদ্যমান। তা ছাড়া ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাও আমাদের এক করে রেখেছে।আমাদের অনেকে স্টেডিয়ামে যেতে দ্বিধাবোধ করতেন। কিন্তু সেখানে সবার প্রতি আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা হয়।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,নবীজির স্বপ্নযোগে পাওয়া দোয়া,ইসলাম ধর্ম,"মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বলেন, একদিন সকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করতে আসতে দেরি করেন। এমনকি আমরা সূর্য উদিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলাম। তিনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলে নামাজের জন্য ইকামত দেওয়া হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) সংক্ষেপে নামাজ আদায় করলেন। তিনি সালাম ফেরানোর পর উচ্চৈঃস্বরে আমাদের ডেকে বলেন, তোমরা যেভাবে সারিবদ্ধ অবস্থায় আছ সেভাবেই থাকো। তারপর তিনি আমাদের দিকে ফিরে বসলেন, অতঃপর বললেন, সকালে তোমাদের কাছে আসতে আমাকে কিসে বাধাগ্রস্ত করেছে তা এখনই তোমাদের বলছি। আমি রাতে উঠে অজু করলাম এবং সামর্থ্যমতো নামাজ পড়লাম। নামাজের মধ্যে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। অতঃপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম, এমন সময় আমি আমার বরকতময় প্রভুকে খুব সুন্দর অবস্থায় (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললাম, প্রভু! আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, ঊর্ধ্বজগতের অধিবাসীরা (শীর্ষস্থানীয় ফেরেশতারা) কী ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললাম, প্রভু! আমি জানি না। আল্লাহ তাআলা এ কথা তিনবার বললেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তাঁকে দেখলাম যে তিনি তাঁর হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। আমি আমার বক্ষস্থলে তাঁর হাতের আঙুলের শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে প্রতিটি জিনিস আমার নিকট আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উঠল এবং আমি তা জানতে পারলাম। আল্লাহ তাআলা বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললাম, প্রভু! আমি আপনার কাছে উপস্থিত। তিনি বললেন, ঊর্ধ্বজগতের বাসিন্দারা কী ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললাম, কাফফারাত (যেসব কাজে পাপ মোচন হয়) বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে। তিনি বলেন, সেগুলো কী? আমি বললাম, হেঁটে নামাজের জামাতগুলোতে উপস্থিত হওয়া, নামাজের পর মসজিদে বসে থাকা এবং কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে অজু করা। তিনি বললেন, তারপর কী ব্যাপারে (তারা বিতর্ক করছে)? আমি বললাম, খাদ্যপ্রার্থীকে আহার্য দান, নম্রতার সঙ্গে কথা বলা এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে সেই সময় নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে। আল্লাহ বললেন, তুমি কিছু চাও। আমি বললাম, উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা ফি’লাল খাইরাতি, ওয়া তারকাল মুনকারাতি, ওয়া হুব্বাল মাসাকিনি, ওয়া আন-তাগফিরালি, ওয়া তারহামানি, ওয়া ইজা আরাদতা ফিতনাতা কাউমিন ফাতাওয়াফফানি গাইরা মাফতুনিন। আসয়ালুকা হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মান ইয়ুহিব্বুকা ওয়া হুব্বা আমালিন ইয়ুকাররিবু ইলা হুব্বিকা। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভালো ও কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ কাজগুলো বর্জনের, দরিদ্রজনদের ভালোবাসার তাওফিক চাই, তুমি আমায় ক্ষমা কোরো ও দয়া কোরো। তুমি যখন কোনো গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা কোরো, তখন তুমি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে তোমার কাছে তুলে নিও। আমি প্রার্থনা করি তোমার ভালোবাসা, যে তোমায় ভালোবাসে তার ভালোবাসা এবং এমন কাজের ভালোবাসা, যা তোমার ভালোবাসার নিকটবর্তী করে দেয়।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, স্বপ্নটি অবশ্যই সত্য। অতএব তা পড়, তারপর তা শিখে নাও। ইমাম তিরমিজি (রহ.) হাদিসটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত বলে মন্তব্য করেছেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩২৩৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,ভারতের মুসলিম সংস্থার নতুন সভাপতি,ইসলাম ধর্ম,"ভারতের প্রাচীনতম ইসলামী সংস্থা ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’-এর নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানি। বোর্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই দিনব্যাপী (৩-৪ জুন) বৈঠকে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। মধ্যপ্রদেশের আম্বেদকর নগরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন।এর আগে গত ১৩ এপ্রিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সভাপতি মাওলানা রাবে হাসান নদভি ৯৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে বোর্ডের সভাপতির পদটি শূন্য হয়। এ ছাড়া বৈঠকে মাওলানা ফজলুর রহিম মুজাদ্দিদিকে সাধারণ সম্পাদক, সাইয়েদ শাহ খসরু হুসাইনি গুলবারগা ও সাইয়েদ সাদাতুল্লাহ হুসাইনিকে সহ-সভাপতি পদে এবং মাওলানা সাইয়েদ বিলাল হাসানি নদভি, মাওলানা আহমাদ ওয়ালি ফয়সাল রাহমানি ও মাওলানা ইয়াসিন আলী উসমানি সদস্য মনোনীত হন। নতুন দুই সহ-সভাপতিকে শূন্য পদের বিপরীতেই নির্বাচিত করা হয়েছে।বৈঠকের দ্বিতীয় নতুন সভাপতির সভাপতিত্বে ‘দ্য ইউনিফর্ম সিভিল কোড’-সহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়। মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ড. এম কিউ আর ইলিয়াসকে বোর্ডের মুখপাত্র হিসেবে এবং জেবি কামাল ফারুকিকে সহকারী মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেন।উল্লেখ্য, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানি ৫ নভেম্বর ১৯৫৬ বিহারের দারভাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জামিয়া রাহমানি মুঙ্গের এবং দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে পড়াশোনা করেছেন।পেশায় তিনি একজন লেখক ও ধর্মতাত্ত্বিক। ইসলামী আইন গবেষণার ওপর তাঁর একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কন্ঠ,মুসলিম ইতিহাসের প্রথম নারী শাসক,ইসলাম ধর্ম,"উম্মে খলিল ইসমাতুদ্দিন সাজারাতুদ্দুর ছিলেন মুসলিম ইতিহাসের প্রথম নারী শাসক। যিনি একজন দাসী থেকে আইয়ুবীয় রাজবংশের সম্রাজ্ঞীতে পরিণত হন। তাঁর শাসনামল সংক্ষিপ্ত হলেও তাঁর বীরত্ব, সাহসিকতা, প্রশাসনিক দক্ষতা ও জনকল্যাণমূলক কাজ তাঁকে ইতিহাসের পাতায় অম্লান করে রেখেছে। সুলতানা সাজারাতুদ্দুর ছিলেন আইয়ুবীয় শাসক মালিক সালিহ আইয়ুবের স্ত্রী এবং শাহজাদা খলিলের মা।সপ্তম ক্রুসেড যুদ্ধে স্বামী মালিক সালিহ মারা গেলে তিনি দেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ২ মে ১২৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি মিসরের সম্রাজ্ঞী মনোনীত হন।সুলতানা সাজারাতুদ্দুর ছিলেন তুর্কি বা আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সুন্দরী, ধার্মিক ও বুদ্ধিমান নারী।মালিক সালিহ সুলতান হওয়ার আগেই তাঁকে একজন ক্রীতদাসী হিসেবে ক্রয় করেছিলেন। ১২৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি সুলতান হন এবং সাজারাতুদ্দুরের গর্ভে শাহজাদা মালিক মানসুর খলিলের জন্ম হয়। এর কিছুদিন পর সুলতান তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। এপ্রিল ১২৪৯ খ্রিস্টাব্দে মালিক সালিহ আইয়ুব সিরিয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।ফলে তিনি মিসরে ফিরে আসেন এবং তিনি দামিয়েত্তা শহরের নিকটবর্তী আশমুম তানাহতে অবস্থান নেন। কেননা তিনি জানতে পেরেছিলেন ফ্রান্সের রাজা নবম লুইস সাইপ্রাসে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছেন এবং তিনি মিসরে আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন। জুনে ক্রুসেডার বাহিনী দামিয়েত্তা শহরে অবতরণ করে। অন্যদিকে মালিক সালিহ সুরক্ষিত আল-মানসুরাহ শহরে অবস্থান করে ক্রুসেডার বাহিনীর মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেন। ২২ নভেম্বর ১২৪৯ খ্রিস্টাব্দে এখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।সাজারাতুদ্দুর সভাসদদের সুলতানের মৃত্যুর সংবাদ গোপন রাখার নির্দেশ দেন। কেননা তিনি ভেবেছিলেন, শত্রু আক্রান্ত দেশে সুলতানের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। সুলতানের লাশ অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে রুদাহ দ্বীপে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সুলতানের ছেলে আল মুয়াজ্জাম তুরানশাহকে ডেকে পাঠান এবং তাঁকে পরবর্তী সুলতান হিসেবে মনোনীত করেন। নিহত সুলতানের হাতের লেখা নকল করে রাষ্ট্রীয় ফরমান জারি রাখেন। কিন্তু সুলতানের মৃত্যু খবর ক্রুসেডার বাহিনীর কাছে পৌঁছে যায়। ফলে তারা আশমুম খাল পার হয়ে মিসরের মূল ভূখণ্ডে আক্রমণ করে। সাজারাতুদ্দুর মানসুরায়ই অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন এবং টোপ ফেলে আগ্রাসী বাহিনীকে শহরের ভেতরে নিয়ে আসেন। অতঃপর মিসরীয় বাহিনী ও শহরবাসী একযোগে আক্রমণ করে তাদের পরাজিত করে। যুদ্ধে নবম লুইস আটক হন। তুরানশাহ মিসরে এলে সুলতানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়।ক্ষমতায় বসে তুরানশাহ অনুভব করেন সাজারাতুদ্দুরের ব্যক্তিত্ব ও প্রভাব তাঁর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা লাভের পথে বাধা। এ ছাড়া প্রভাবশালী মামলুক ও প্রাসাদের রক্ষী বাহিনীর ওপর তাঁর কার্যকর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে তিনি প্রশাসনে নিজের পছন্দের লোক বসাতে শুরু করেন এবং জেরুজালেম সফররত সাজারাতুদ্দুরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিনি যেন তাঁর পিতার সম্পদ ও অলংকারগুলো তাঁকে ফেরত দেন। তুরানশাহের এমন অকৃতজ্ঞ আচরণে সাজারাতুদ্দুর কষ্ট পান। তিনি তাঁর অনুগত মামলুক ও রক্ষী বাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারাও ক্ষুব্ধ হয়। একদিন তুরানশাহ মদ্যপ অবস্থায় দাসীদের অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করছিলেন। তখন বাইবার্স ও মামলুক সেনাদের হাতে নিহত হন।তুরানশাহ নিহত হওয়ার পর সভাসদ, প্রশাসক ও মামলুকরা মিলে সাজারাতুদ্দুরকে সম্রাজ্ঞী এবং ইজ্জুদ্দিন আইবেককে সেনাপ্রধান মনোনীত করেন। তাঁর রাজকীয় নাম নির্ধারণ করা হয় ‘মালিকা ইসমাতুদ্দিন উম্মে খলিল সাজারাতুদ্দুর’। তিনি মুসলিম ইতিহাসের প্রথম নারী, যাঁর নামে জুমার দিন খুতবা পাঠ করা হতো এবং যাঁর মুদ্রা জারি করা হয়েছিল। সাজারাতুদ্দুর ক্ষমতায় আরোহণের পর রাজা নবম লুইয়ের সঙ্গে সমঝোতা করেন। ফলে লুই ও তাঁর ১২ হাজার যুদ্ধবন্দি মুক্তিপণ ও দামিয়েত্তাসহ দখলকৃত অঞ্চল অর্পণের বিনিময়ে মুক্তি লাভ করে।রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাজারাতুদ্দুর সেনাপতি ইজ্জুদ্দিন আইবেক বিয়ে করেন। তাঁরা যৌথভাবে সাত বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। কিন্তু ইজ্জুদ্দিন একসময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেন। এতে আবারও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং ইজ্জুদ্দিন নিহত হন। এর জেরে ২৮ এপ্রিল ১২৫৭ সাজারাতুদ্দুরও নিহত হন। তাঁকে তুলুন মসজিদের কাছে দাফন করা হয়। সাজারাতুদ্দুর তাঁর সংক্ষিপ্ত শাসনামলে জনকল্যাণমূলক বহু কাজ করেছেন। অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, পানির কূপ ও আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেন। মাদরাসা-মসজিদের সঙ্গে কবরস্থান নির্মাণ করা ছিল তাঁর উদ্ভাবন। এ ছাড়া তিনি ইসলামী স্থাপত্যে নতুন ধারার সূচনা করেন, যা ‘বাহরি মামলুক’ রীতি নামে পরিচিত।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"কুয়াকাটায় সংস্কার শেষে সীমা বৌদ্ধ মন্দিরের উদ্বোধন ",বৌদ্ধ ধর্ম,"কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছে মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির সংস্কার শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ড. ফার্দিনান্দ ফন ভেইয়ে গতকাল বুধবার এর উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডের দেশ পরিচালক টোবিয়াস বেকার, জিআইজেডের কোস্টাল লাইভলিহুডস অ্যাডাপটেশন প্রজেক্টের প্রধান উপদেষ্টা পূর্ণিমা ডোরিস চট্টোপাধ্যায়-দত্ত, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার, রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা মং তেনথান প্রমুখ। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার তাণ্ডবে মন্দিরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১২ সালে জার্মান দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল মন্দিরটি পরিদর্শনকালে এর সংস্কার এবং উন্নয়নের জন্য সহায়তা করার আশ্বাস দেয়।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"রোজা মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ ও আলোকিত করে ",ইসলাম ধর্ম,"রোজা মানুষের নফস বা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ ও আলোকিত মানুষ করে দেয়। সিয়ামের দ্বারা রোজাদার নিজের ব্যক্তিসত্তা বা নফসকে বিধৌত করে। ‘নফস’ শব্দের অর্থ এক কথায় প্রকাশ করা যায় না। প্রধানত মানুষের নিজস্বতা, ব্যক্তির সত্তা, আমিত্ব, প্রবৃত্তি অর্থেও নফস শব্দ ব্যবহৃত হয়। আত্মশুদ্ধির রমজান মাসে সিয়াম-সাধনার মাধ্যমে ‘তাজিকায়ায়ে নফস’ সাধিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে, যে পবিত্রতা অর্জন করে এবং তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত আদায় করে।’ (সূরা আল-আলা, আয়াত: ১৪-১৫)। ইলমে তাসাওউফে নফসকে অবস্থাভেদে ‘নফসে আম্মারা’, ‘নফসে লাওওয়ামা’, ‘নফসে মুতমাইন্না’, ‘নফসে মুলহিমা’ মোটামুটি এই চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ১. ‘নফসে আম্মারা’ হচ্ছে প্ররোচক ও প্রলুব্ধকারী প্রবৃত্তি, এক কথায় বলা যায়- কুপ্রবৃত্তি। এই নফস ব্যক্তিকে এমনভাবে বশীভূত করে যে, ব্যক্তির নিজের ওপর কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ থাকে না, তার প্রবৃত্তি যা আদেশ করে, সে তাই সম্পাদন করে, এর ওপর শয়তানের প্রবল প্রভাব বিরাজমান থাকে। ফলে এই নফস ব্যক্তিসত্তাকে সব ধরনের অন্যায়, অপকর্ম ও মন্দ পথের দিকে ধাবিত করে। সোজা কথায়- নফসে আম্মারায় আবেষ্টিত ব্যক্তিসত্তার মধ্যে এমন একটা মনোভাব থাকে যে, পাপ আবার কী? যা ইচ্ছে তাই করতে থাকে। ২. ‘নফসে লাওওয়ামা’ হচ্ছে সেই নফস, যার গুনাহের দিকে আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা থাকলেও ভুল-ত্রুটি বা পাপকাজ করার পর আতঙ্ক বা ভয় জাগ্রত হয় এবং মন্দকে ভর্ৎসনা করে। গুনাহ করে আত্মগ্লানির কারণে সে ব্যক্তি তওবা করে; কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না; ফলে আবার গুনাহ করে, আবার তওবা করে। এই নফস কিঞ্চিৎ পবিত্র। এর ভালো-মন্দ বোধশক্তি থাকে। ৩. ‘নফসে মুতমাইন্না’ হচ্ছে সেই নফস, যার মধ্যে পবিত্রতার সুরভি আছে এবং নুরানি তেজ আছে। এটাই হচ্ছে আলোকিত নফস। এই নফস সবসময় নেককাজ ও কল্যাণের দিকে মানুষকে ধাবিত করে। মন্দ ও অকল্যাণ এই নফসের কাছে ঘেঁষতে পারে না। এটাই হচ্ছে প্রশান্ত এবং জাগতিক চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে এক অনন্য শান্ত প্রবৃত্তি। ৪. নফসে মুতমাইন্নায় উন্নীত নফস যখন পুণ্যে প্রেরণাদায়ক ও উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হয় তখন আল্লাহ তায়ালার গোপন ভেদ ও আদেশ তার ওপর প্রতিফলিত হয়, সে ইলহাম বা প্রত্যাদেশ লাভে ধন্য হয়। এই নফসকেই বলা হয় ‘নফসে মুলহিমা’। হাদিস শরিফে নফসের সঙ্গে জিহাদকারীর পরিচয় প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে, প্রকৃত মুজাহিদ ওই ব্যক্তি, যে নিজের নফসের সঙ্গে জিহাদ করে। নফসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও সাধনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ বলার আরও একটি তাৎপর্য হলো- কাফের, মুশরিক, ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের পরিচালিত যুদ্ধ কোনো বিশেষ সময়েই সংঘটিত হয়। যখন ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর শত্রুদের আঘাত আসে। যুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হওয়ার পর সে জিহাদ বন্ধ থাকে। কিন্তু নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ ও সংগ্রাম হরদম চালিয়ে যেতে হয়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই জিহাদের বিরাম নেই, শেষ নেই। এই হিসেবেও নফসের সঙ্গে জিহাদকে জিহাদে আকবর বা সর্বোত্তম জিহাদ বলার সার্থকতা উপলব্ধি করা যায়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক খবরপত্র,"একজন মানবতাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর জন্য পরম শ্রদ্ধা ",বৌদ্ধ ধর্ম,"২০২৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি। একটি দিন। একটি সময়ের সন্ধিক্ষণ। এ দিন ৭২ পেরিয়ে ৭৩Ñএ পা রাখলেন আদিবাসীদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো। ০১ ফেব্রুয়ারি আমার কাছে কেবলই একটি তারিখ নয় বরং একটি দীপ্তিদায়ক দিন কারণ এই দিন এমন এক গুণী মানুষের জন্মদিন যাকে খুব কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। একাধারে তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় পরমকল্যাণমিত্র, মানবতাবাদী, প্রজ্ঞাবান, মহানকর্মবীর, পরোপকারী। আমার জানা মতে, এই মহান বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নিরহংকারী, ত্যাগী ও দয়ালু। পরম পূজনীয় শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো বহু প্রতিষ্ঠানের রূপকার। তিনি একজন সমাজ সেবক এবং চাকমা জাতির বা আদিবাসীদের দিকপাল। সৌভাগ্যবশতঃ দীর্ঘদিন যাবত এমন গুণী মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে নিজেকে খবই ধন্য মনে করি। শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো চট্টগ্রামের ইতিহাসে আদিবাসীদের জন্য একজন মহাপুরুষ যিনি যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শিক্ষার আলো বিলিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদে মাঝে। এক্ষেত্রে প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো আদিবাসী সমাজের জন্য শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত, আলোকবর্তিকা এবং একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র যাকে বলা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জন্য ইতিহাসের ভেতর আরও একটি ইতিহাস। তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে পারলে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে দক্ষ করতে পারলে এবং তরুণদের জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে পারলে একটি জাতি উন্নতির র্শীষে অবস্থান করে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের রক্ষা, কল্যাণ, উন্নতি এবং আদিবাসী জাতির ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্য আজ তরুণ প্রজন্মকে শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ ভান্তের দর্শন, চিন্তা-চেতনা, তাঁর নিঃস্বার্থ অবদান মনেপ্রাণে ধারণ করা অনস্বীকার্য। আমি মনে করি, এই মহান মানুষ আমাদের মাঝে না এলে আমরা আজও অনেক পিছিয়ে থাকতাম বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা। আমরা পেতাম না শ্রদ্ধেয় ভান্তের হাতে গড়া অনেক প্রতিষ্ঠান। সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা শোভিত পৃথিবীর এক অপূর্ব দেশ বাংলাদেশ। এ দেশে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত তিন পার্বত্য জেলা-রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। শ্রীমৎ প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর জন্ম ১৯৫২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, খাগড়াছড়ি জেলাধীন দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায়। আলোকিত মানুষ ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর পারিবারিক নাম বলেন্দ্র দেব চাকমা। তাঁর পিতা প্রয়াত নরেন্দ্র লাল চাকমা ও মাতা প্রয়াত ইন্দ্রপতি চাকমা। ভেন. ১৯৬৮ সালে দীঘিনালা উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক ও ১৯৭২ সালে হাটহাজারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৭৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পালি ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর সদ্ধর্মাদিত্য ভদন্ত জ্ঞানশ্রী মহাথের মহোদয়ের উপস্থিতিতে তারই উপাধ্যায়ত্বে ভিক্ষু হিসেবে দীক্ষিত হন। তার দু’বছর আগে ১৯৬৬ সালে মাইনী উপত্যকায় ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ পীঠস্থান বোয়ালখালী দশবল বৌদ্ধ রাজবিহারে এসে শ্রদ্ধেয় জ্ঞানশ্রী মহাথেরোর কাছে শ্রামণ্য ধর্মে দীক্ষিত হন। দীক্ষাগুরু জ্ঞানশ্রী মহাথেরোর পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে মানবতার সেবায় আত্মনিবেদিত করেন। সেই থেকে মহান ব্রত নিয়ে আজও কাজ করে যাচ্ছেন পাবর্ত্য অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি বিশেষত অনাথ, অসহায়, হত-দরিদ্র, ছিন্নমূল ও দুঃস্থ শিশুদের কল্যাণ ও শিক্ষা বিস্তারে। প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর পরমারাধ্য গুরু জ্ঞানশ্রী মহাথের ১৯৭৪ সালে বোয়ালখালী ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হন। এর পর থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেছিলেন যা কালের স্বাক্ষী হিসেবে এখনও তাকিয়ে আছে। ১৯৭৪ সালে মোনঘর প্রতিষ্ঠা করা হলে তিনি এর সাধারণ সম্পদক হন। মোনঘর পরিচালনা পর্ষদে প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে দীর্ঘদিন ধরে মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। শ্রদ্ধেয় ভান্তে ২০০৪ সালে রাজধানী মিরপুরে বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে ঢাকার বুকে দাঁড়িয়ে থেকে সমগ্র দেশের আদিবাসীদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ২০২৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি, এ মহান ব্যক্তির শুভ জন্মদিন। এদিন ভান্তে ৭২ পেরিয়ে ৭৩ বছর বয়সে পর্দাপণ করেছেন। যদিও পরম পূজনীয় শ্রদ্ধেয় ভান্তে এইসব বিষয়ে এতো আন্তরিক নন তারপরও সবার অনুরোধে খুবই সাদামাটাভাবে শ্রদ্ধেয় ভান্তের ৭৩তম শুভ জন্মদিন পালন করা হলো। ক্ষুদ্র পরিসরে ভক্ত বা শিষ্যরা মিলে অমরা ক’জন অনুষ্ঠানে সামিল হলাম। নিজের হাজারো ত্যাগ তিতিক্ষাকে স্বীকার করে ধর্মীয় ও অধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত হয়ে ’প্রকৃত পক্ষে মানব’ হওয়ার শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো। আজ এই মহান সময়ে আপনার আজীবনকার মেধা, কর্মশক্তি আমাদের সবার কল্যাণের জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন তাই আমরা আপনার কাছে চিরঋণী। পাশাপাশি আপনার সুদীর্ঘ মানবজীবন চর্চিত সকল কুশল ও পূণ্যময় কর্মপ্রবাহ জন্ম জন্মান্তর আমাদের চলার পথে পাথেয় হোক; আমরা যেন আপনার মানবতার শক্তিকে ফুলে ফসলে সুশোভিত করতে পারি এই আর্শীবচন একান্তভাবে কামনা করছি। পরিশেষে আপনি আমৃত্যু নিরোগ, সুস্থ জীবন লাভ করে ধন্য হোন তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের অনন্ত কর্মশক্তির কাছে কায়মন বাক্যে এই প্রার্থনা করছি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"চির অভিশপ্ত এক জাতি ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহ ইহুদিদের ওপর স্থায়ীভাবে লাঞ্ছনা, অপমান ও নির্যাতন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। যুগে যুগে ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে তাদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন। মিসরের ফেরআউন শাইশাক জেরুসালেম দখল করে এবং ইহুদিদের তাড়িয়ে দেয়। তারপর ব্যাবিলনের রাজা বখতে নসর জেরুসালেম দখল করে ইহুদিদের বন্দি করে নিয়ে আসে এবং তাদের দাস বানিয়ে রাখে। পরে পারস্য সম্রাট ইহুদি দাসদের সেখানে ফেরত পাঠান সত্য, কিন্তু তখন পারস্য সম্রাটেরই অধীন ছিল। ৬৬ খ্রি. রোমান সম্রাট তাইতুস জেরুসালেম দখল করে এবং ইহুদিদের ব্যাপকহারে হত্যা করে। উপরন্তু ৭০ খ্রি. রোমান বাহিনী হাজার হাজার ইহুদিকে বন্দি করে নিয়ে যায় এবং তাদের দাস বানায়। এডলফ হিটলার জার্মানির নাৎসি নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন। হিটলারের ইহুদিদের প্রতি ঘৃণার কারণ হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্য ইহুদিদের দায়ী করার কথা বলা হয়। যদিও এটা একটা ধারণা মাত্র। হিটলারের ইহুদি হত্যার আসল কারণ হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মুহূর্তে ইহুদি নেতারা বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইহুদিরা ওই সময় পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করে। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদের দেশত্যাগ প্রয়োজন। কিন্তু কোনো ইহুদি ইসরাইল রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিল না। তখন ইহুদি নেতারা হিটলারের সাথে এক গোপন ইহুদি হত্যা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। যাতে করে বিশ্বব্যাপী ইহুদিদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা যায় এবং তারা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৪ লাখ ৫০ হাজার ইহুদির মধ্যে মাত্র ৭ হাজারকে ইসরাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং অবশিষ্টদের হত্যার নীলনকশা করা হয়। হিটলার ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে জড়ো করে গ্যাস বোমা মেরে হত্যা করে। এরপরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইহুদিরা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি নেতারা বিশ্বের সর্বত্র ইহুদি হত্যার গোপন পরিকল্পনা হাতে নেয়। যাতে করে তাদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। ইহুদিরা ইসরাইলের হাইফা বন্দরে এসেও জাহাজ থেকে নামতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি বোঝাই জাহাজটিকে তাদের নেতা ডেভিড গুরিওন বোমা মেরে সাগরে ডুবিয়ে দেয়। এভাবে আল্লাহর ঘোষণা সত্যে পরিণত হয়। (ইসলাম ও অন্যান্য মতবাদ : পৃ. ৮৪)। এতদসম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আরো স্মরণ করো, যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, তিনি কেয়ামত পর্যন্ত সবসময় বনি ইসরাইলের ওপর এমন লোককে প্রভাবশালী করবেন যারা তাদের নিকৃষ্টতম শাস্তি দান ও নির্যাতন করতে থাকবে। (সূরা আরাফ : ১৬৭)। ইরশাদ হয়েছে, তাদের ওপর অপমান ও অভাব লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গজবের শিকার হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরি করেছে এবং নবীদের হত্যা করেছে, এটা ছিল তাদের নাফরমানি এবং তারা ছিল সীমালঙ্ঘকারী। (সূরা বাকারা : ৬১)। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে আরো ইরশাদ করেন, যারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরি করে, নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারীদেরও হত্যা করে, তাদের কষ্টদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। তারাই ওই সকল যাদের আমল দুনিয়া এবং আখেরাতে ব্যর্থ বেকার এবং যাদের কোনো সাহায্যকারী নেই। (সূরা আল ইমরান : ২১-২২)। আল্লাহ ইহুদিদের ব্যাপারে আরো বলেন, তারা মন্দ কাজ থেকে বিরত হয় না, যা তারা ইতঃপূর্বে করেছে এবং তারা যা করে তা কতই না খারাপ। (সূরা মায়েদা : ৭৯)। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজবপ্রাপ্ত জাতি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাদের ধ্বংস অনিবার্য। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক হাদিসের আলোকে বলা যায়, বর্বর নৃশংস অত্যাচারী ইহুদিরা অবশ্যই ধ্বংস হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না যতক্ষণ না মুসলিমদের সঙ্গে ইহুদিদের যুদ্ধ হবে। মুসলিমরা ইহুদিদের হত্যা করতে থাকবে। তখন তারা (ইহুদিরা) পাথর ও গাছের পেছনে লুকিয়ে আশ্রয় নেবে। তখন পাথর ও গাছ বলবে, হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা, এই তো ইহুদি আমার পেছনে লুকিয়ে আছে। এসো, তাকে হত্যা করো। (সহিহ মুসলিম)। তবে নির্দিষ্ট করে জানা নেই, সে চূড়ান্ত যুদ্ধটি কতদূরে। আর এর আগে ইহুদিদের হাতে ঝরবে কত মুসলমানের প্রাণ? আল্লাহ আপনি পরীক্ষার সময়টি দ্রুত সমাপ্ত করে সহসাই মুক্তি ও বিজয়ের চূড়ান্ত দিনটির সূর্য উদিত করুন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"মুম্বাইয়ে বোরখা পরে কলেজে ঢুকতে বাধা ",অন্যান্য,"ভারতে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের কলেজে হিজাব বিতর্কের পর এবার ছাত্রীদের বোরখা পরা নিয়ে সহিংষতা মহারাষ্ট্রের একটি কলেজে। বিজেপি-শিন্ডেসেনা জোট শাসিত ওই রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ের একটি কলেজে বুধবার বোরখা পরা ছাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মুম্বাইয়ের চেম্বুরের ওই কলেজে নির্দিষ্ট পোশাকবিধি রয়েছে বলে কয়েকজন মুসলিম ছাত্রীকে বোরখা পরিহিত অবস্থায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ঘটনার জেরে ওই ছাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনের অভিভাবক এবং স্থানীয়দের একাংশ ওই কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ঘিরে বিতর্ক, ওই ‘এনজি আচার্য অ্যান্ড ডিকে মরাঠে কলেজ’ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, ‘কলেজের পোশাক পরার সময় কিছু শর্ত এবং নিয়ম মেনে চলতেই হবে।’ এর আগে, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্ণাটকের উদুপির একটি কলেজে কয়েকজন হিজাব পরিহিত মুসলিম ছাত্রীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেয়ার হয়। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট বলেছিলেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। ওই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য-জুড়ে। এরপর, একই বছরের ২৬ জানুয়ারি কর্ণাটক সরকারের শিক্ষা দফতর এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগে পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েকজন ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন। তারা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনোভাবেই তা বাতিল করা যাবে না। কিন্তু গত বছরের মার্চ মাসে কর্ণাটক হাইকোর্ট মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে জানায়, হিজাব পরা ইসলামে ‘বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন’-এর মধ্যে পড়ে না। এরপর আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু গত অক্টোবরে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ‘খ-িত রায়’ দেয়ায় মামলাটি এখন শীর্ষ আদালতেরই উচতর বেঞ্চে রয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ স্থগিতাদেশ না দেয়ায় কর্ণাটক সরকারের ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশ’ এখনো বহাল রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ ",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা আজ রোববার (২৫ জুন) শুরু হচ্ছে। এদিন ভোরে মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শয়তানকে উদ্দেশ্য করে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে ১২ জিলহজ শেষ হবে হজ। এদিকে শনিবার (২৪ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে ছেড়ে গেছে হজের শেষ ফ্লাইট। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, হজযাত্রী নিয়ে ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের শেষ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর গত ২১ মে বিমানের প্রথম ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের হজযাত্রা। হজযাত্রীদের বহন করে বিমান বাংলাদেশ, সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিমান বহন করে ৬১ হাজার ১৫১ জন হজযাত্রী। বাকিদের বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস। গত বৃহস্পতিবার বিমানের হজ ফ্লাইট শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ৩ জুলাই। উল্লেখ্য, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার বিষয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়। সে লক্ষ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় চূড়ান্ত নিবন্ধন। এবার হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ৯ দফা সময় বাড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত কোটা পূরণ করা যায়নি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,ন্যায্য মজুরি শ্রমিকের অধিকার,ইসলাম ধর্ম,"শ্রমিককে কাজ সম্পাদন করামাত্রই তাঁর প্রাপ্য পারিশ্রমিক প্রদান করা মালিকের প্রধান দায়িত্ব। শ্রমিক-মজুরেরা নিজের ও পরিবারের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের জন্য কঠিন পরিশ্রম করে থাকেন। প্রাপ্য মজুরিই তাঁদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু যুগ যুগ ধরে শ্রমিকেরা ন্যায্য প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাঁদের কাজের সময় কমানো ও ন্যায্য মজুরি প্রাপ্তির অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করতে গিয়েই তাঁরা নিগৃহীত হন। শুরু হয় শক্তির দাপটে তাঁদের ওপর মালিকপক্ষের জুলুম-নির্যাতন। অথচ শ্রমিকেরাই হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে মালিকের জন্য খাদ্য-বস্ত্র উৎপাদন করেন, বাসস্থান নির্মাণ করেন। এমতাবস্থায় শ্রমিকেরা যদি ন্যায্য মজুরি না পান বা প্রয়োজন অপেক্ষা কম পান বা নির্দিষ্ট সময়মতো প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন, তবে তাঁদের দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। এতে হতাশায় ভারাক্রান্ত হয়ে কাজের প্রতি শ্রমিকদের বীতশ্রদ্ধা ও বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নবী করিম (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও ঋণ পরিশোধ নিয়ে ধনী ব্যক্তিদের টালবাহানা করা জুলুম।’ (বুখারি ও মুসলিম) শ্রমের বিনিময়ে মালিকের বিনিয়োগকৃত সম্পদ শ্রমিকের কাছে আমানত। শ্রমিকদের ওপর এ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে তিনি যেন তাঁর চুক্তিকৃত মজুরির বিনিময়ে উত্তম সেবা প্রদান করেন এবং মালিকের প্রদত্ত জিম্মাদারি অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সঙ্গে সম্পন্ন করেন ও তাঁর পরিপূর্ণ শক্তি-সামর্থ্য নির্দিষ্ট কাজে ব্যয় করেন। শ্রমিকের তত্ত্বাবধানে যেসব প্রতিষ্ঠান বা কারখানার মূল্যবান আসবাব দেওয়া হয়, তা আমানতস্বরূপ ব্যবহার করবে এবং সেগুলো তুচ্ছ মনে করে চুরি, অবৈধ ব্যবহার, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা অন্য কোনো ধ্বংসাত্মক পন্থায় জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করা যাবে না। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছেন, ‘নিজের কিংবা অন্যের কোনো ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে না।’ (দারাকুতনি) শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে মালিকের যেসব দামি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল তাঁদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, সেগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা ও জেনেশুনে তা নষ্ট বা ধ্বংস না করা তাঁদের অবশ্যকর্তব্য। যে কাজ যেভাবে করা উচিত, সে কাজ সেভাবে আঞ্জাম দেওয়া শ্রমিকের দায়িত্ব, অন্যথায় চরম বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা করা হবে। এ ব্যাপারে সদাসচেতন থাকার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো লোকের অধীন শ্রমিক স্বীয় মালিকের সম্পদের রক্ষক এবং সে তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম) সম্পদ ব্যবস্থাপনায় মালিকপক্ষ বা পুঁজিপতি তাঁর মূলধন খাটানোর কারণে এবং শ্রমিক তাঁর শ্রমের বিনিময়ে লাভের হকদার হয়ে থাকেন। মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক বিরাজমান থাকলে এবং শ্রমিক তাঁর ন্যায্য পাওনা পেলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশ ও জাতি যেমন উপকৃত হয় তেমনি শান্তি স্থাপিত হয় সর্বত্র। শ্রমিকেরা উৎপাদনে শরিক থাকলেও মুনাফায় তাদের অংশীদার করা হয় না। কিন্তু ইসলািম ব্যবস্থায় লাভের মধ্যেও তাঁদের অংশীদার করার বিধান রয়েছে। এ জন্য নবী করিম (সা.) শ্রমিককে মজুরি দান করার পরও তাঁকে লাভের অংশ দেওয়ার জন্য উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘শ্রমিকদের তাঁদের শ্রমার্জিত সম্পদের লভ্যাংশ দাও, কেননা আল্লাহর শ্রমিককে বঞ্চিত করা যায় না।’ (মুসনাদে আহমাদ) কর্মক্ষেত্রে নিহত, আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের কর্মদিবসের আয় অনুযায়ী আর্থিক বা দৈহিক ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। সামর্থ্যের বাইরে শ্রমিকদের ওপর কাজের বোঝা চাপানো যাবে না এবং তাঁদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সদাচরণ করতে হবে। অথচ বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও স্থায়ী পঙ্গুত্ব যেন শ্রমিকের নিয়তি! অগ্নিকাণ্ড বা মর্মান্তিক কোনো দুর্ঘটনার পর নিহত শ্রমিকের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা যেন আরেক ট্র্যাজেডি! মালিকপক্ষের প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার গতি এতটাই মন্থর যে তা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সহায় হয়ে উঠতে পারে না। যদিও ইসলামে শ্রমিকের পরিশ্রমের ফল বা কর্মীর কাজের প্রতিদান পাওয়ার অধিকার অনস্বীকার্য। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রত্যেকের মর্যাদা তার কর্মানুযায়ী—এটা এ জন্য যে আল্লাহ প্রত্যেকের কর্মের পূর্ণ ফল দেবেন এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না।’ (সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ১৯) অধীনস্থ শ্রমিকদের দেশে প্রচলিত রীতি অনুসারে উপযুক্ত খোরপোশ ও পোশাক-পরিচ্ছদ দিতে হবে এবং তাঁদের ওপর সামর্থ্য অনুযায়ী কাজের দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। মজুরি বৃদ্ধির সংগ্রাম শ্রমিকদের সাময়িক সুবিধা দিলেও প্রকৃত সুবিধা প্রাপ্তি স্থায়ী থাকাটা মোটেও নিশ্চিত হয় না। এ জন্য মজুরির পরিমাণ এমন হতে হবে যেন তা কোনো দেশ ও যুগের স্বাভাবিক অবস্থা ও চাহিদা অনুসারে যুক্তিসংগত হয় এবং উপার্জনকারী শ্রমিক তাঁর পারিশ্রমিক দ্বারা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মানবিক, মৌলিক অধিকার ও দৈনন্দিন জীবনধারণের অন্যান্য প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) যথার্থই বলেছেন, ‘অধীনস্থ শ্রমিকদের খোরপোশ দিতে হবে।’ (মুসলিম) তাই বর্তমান বাজার অনুযায়ী একটি শ্রমজীবী পরিবারের জীবন-যাপনের সাধারণ মানের কথা বিবেচনায় রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা উচিত। আজীবনের জন্য যে শ্রমিকের পুরো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো এবং সারা জীবনে তিনি কত আয় করতেন, এসব দিক বিশেষভাবে মানবিক বিবেচনায় রাখতে হবে। শ্রমিকের অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসারে জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। আর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকপক্ষগুলোকে শ্রমিকদের এ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে অথবা যথাসময় এমন মজুরি দেবে, যাতে তাঁদের প্রয়োজন মিটে যায়। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকের কর্মদক্ষতা, যোগ্যতা, পরিবেশ, চাহিদা, জীবনযাত্রা প্রভৃতি পর্যালোচনা করে মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। এগুলো যেহেতু পরিবর্তনশীল, তাই শ্রমিকের মজুরির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সাধিত হতে পারে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive কালের কন্ঠ,বেশি কথা বলার পরিণতি,ইসলাম ধর্ম,"মুখ আছে বলেই শুধু কথা বলতে থাকবে—এমনটি যেন না হয়। কেননা, কথা বলার জন্য মুখ একটি আর কথা শোনার জন্য কান দুটি। তাই উত্তম কথা বলতে হবে নতুবা চুপ থাকতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৬০১৮-১৯; মুসলিম, হাদিস : ৪৭-৪৮) প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বললে বেশি ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ভুল মানুষের জন্য মন্দ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। নবী করিম (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই বান্দা কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টির কোনো কথা বলে অথচ সে কথা সম্পর্কে তার জ্ঞান নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবার বান্দা কখনো আল্লাহর অসন্তুষ্টির কথা বলে ফেলে, যার পরিণতি সম্পর্কে তার ধারণা নেই, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৮) অন্য বর্ণনায় এসেছে, বান্দা এমন কথা বলে, যার ফলে সে জাহান্নামের এত দূরে নিক্ষিপ্ত হয়, যা পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তের মধ্যস্থিত ব্যবধানের চেয়ে বেশি। (মুসলিম, হাদিস : ২৯৮৮) সুতরাং হাদিস থেকে জানা গেল যে বেশি কথা বলা কখনো কখনো জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative Dhaka Tribune,"প্রধানমন্ত্রী: দেশে সবাই সমান ধর্মীয় অধিকার ভোগ করে ",অন্যান্য,"প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “তার সরকার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।” রবিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপূজার মণ্ডপে হিন্দু ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে।” সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৭১ সালে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল এবং তাই এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে।” “আমরা সবাই এই মাটির সন্তান। আমরা এই ভূমিতে আমাদের নিজ নিজ অধিকার উপভোগ করে বসবাস করব।” প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ও এর অগ্রগতির জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি বাড়ি বিদ্যুতের আওতায় এসেছে এবং প্রতিটি পরিবারে খাবার রয়েছে। সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এই উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রতিটি স্থান স্পর্শ করেছে।” আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের কাজ এবং একমাত্র দায়িত্ব। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা এবং আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব।” শেখ হাসিনা বলেন, “সারাদেশে আনন্দও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে এবং উৎসব চলাকালে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ ও তার দলের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা আন্তরিকভাবে কাজ করছে।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা চাই এই পূজা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক। সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে সারাদেশে ৩২ হাজারেরও বেশি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মণীন্দ্র কুমার নাথ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, বিপিইউপির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দেশের বিভিন্ন মন্দির ও অস্থায়ী মণ্ডপে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"ঘুমানোর পূর্বে সুরা মুলক পাঠের গুরুত্ব ",ইসলাম ধর্ম,"সুরা মুলক পবিত্র কোরআনের ৬৭তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ২ রুকু, ৩০ আয়াত। আল্লাহ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং সর্বশক্তিমান। তিনি মানুষকে দিয়েছেন দেখার ও শোনার শক্তি ও বিবেক। অথচ তারা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এ সুরা পাঠের ফজিলত সীমাহীন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআনে এমন একটি সুরা আছে, যার আয়াত ৩০টি। এই সুরা যে পাঠ করবে, সেই ব্যক্তির জন্য সুরাটি সুপারিশ করবে এবং তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক)। (সুনানে আত-তিরমিজি, ২৮৯১) প্রতি রাতের যেকোনো সময় সুরা মুলক তিলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তিরমিজি শরিফের ২,৮৯২ নম্বর হাদিস অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.) সুরা আস-সাজদা ও সুরা মুলক তিলাওয়াত না করে কোনো দিন ঘুমাতেন না। তার মানে এই নয় যে সুরাটি দিনে পড়া যাবে না। যেকোনো সময়ই পড়া যাবে, তবে রাতে বিশেষ জিকির হিসেবে এ সুরা পড়া উত্তম। সুরাটি নামাজের সঙ্গে পড়াও ভালো। মুখস্থ না থাকলে দেখে দেখে অর্থ বুঝে পড়লে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। সুরা মুলকের ছয়টি ভাগ: প্রথম ভাগ ১ থেকে ৪ আয়াত—এ অংশে আছে আল্লাহর ক্ষমতার বর্ণনা। দ্বিতীয় ভাগ ৫ থেকে ১৫ আয়াত—এ অংশে জাহান্নাম ও জান্নাতের প্রসঙ্গ। তৃতীয় ভাগ ১৬ থেকে ২২ আয়াত—এখানে আছে অত্যাসন্ন বিপদের বার্তা। চতুর্থ ভাগ ২৩ থেকে ২৪ আয়াত—সে বিপদে প্রস্তুতির সময় নিয়ে প্রশ্ন। পঞ্চম ভাগ ২৫ থেকে ২৭ আয়াত—সে বিপদ কবে ঘটবে, তা নিয়ে মানুষের কৌতূহল? শেষ ভাগ ২৮ থেকে ৩০ আয়াত—আল্লাহর বিপরীতে মানুষের দুর্বলতা। সুরার বিষয়বস্তু সুরাটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজগতের কর্তৃত্ব ও রাজত্ব সবই আল্লাহর। আরও বলা হয়েছে বিশ্বজগৎ সৃষ্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সৃষ্টিজগতের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। সুরাটিতে আছে তারকারাজি সৃষ্টির রহস্যের কথা, কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের অবস্থা এবং তাদের চিন্তা ও গবেষণা করার দাওয়াত এবং বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান। সুরাটির নামের মধ্যেই এর বিষয়বস্তু ও মর্মার্থ সুস্পষ্ট হয়েছে। আরবি মুলক মানে সার্বভৌমত্ব। আসমান ও জমিনে সার্বভৌমত্বের একমাত্র অধিকারী যে আল্লাহ, তা এ সুরায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সুরাটির শুরুতেই আল্লাহ তাঁর পরম সার্বভৌম কর্তৃত্বের কথা ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’ এতে বোঝা যায়, জীবনের মতো মৃত্যুও স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি। এ আয়াত থেকে আরও স্পষ্ট বোঝা যায় যে যিনি মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, তিনি অবশ্যই মৃত্যু থেকে মুক্ত। অর্থাৎ মৃত্যু তাঁর ওপর কার্যকর হতে পারে না। ৩ ও ৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তিনি স্তরে স্তরে সাজিয়ে সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন। করুণাময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোনো খুঁত দেখতে পাবে না। আবার তাকিয়ে দেখো, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি না। তারপর তুমি বারবার তাকাও, তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে।’ এখানে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত বা অসংগতি আছে কি না, তা বারবার খুঁজে দেখতে বলেছেন। কারণ, প্রথমবার মানুষ যখন অবাক হয়ে কোনো কিছু দেখে, তখন কোনো ত্রুটি বা অসংগতি তার চোখে পড়ে না। বারবার অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে আল্লাহ সৃষ্টির অসংগতি খুঁজে দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। নিটোল সৃষ্টির কোনো অসংগতি না দেখতে পেয়ে মানুষের দৃষ্টি ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে। এরপর পঞ্চম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি নিম্নতম আকাশকে প্রদীপমালায় সুশোভিত করেছি এবং তাদের ক্ষেপণীয় বস্তু করেছি শয়তানের ওপর নিক্ষেপ করার জন্য। আর আমি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।’ এ আসমানকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়েছে, তেমনি এগুলোকে আক্রমণের মাধ্যমও করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর এই সৃষ্টির মধ্যে কোমলতা ও কঠোরতা পাশাপাশি রয়েছে। ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে প্রশস্ত করেছেন, অতএব তোমরা দিগ্‌দিগন্তে বিচরণ ও তাঁর দেওয়া জীবনের উপকরণ থেকে আহার করো। পুনরুত্থানের পর তাঁরই কাছে",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"ইফতারে খেজুরের গুরুত্ব ",ইসলাম ধর্ম,"ইফতারে খেজুর না থাকলে ইফতারির টেবিলে যেন পূর্ণতা আসে না। খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি খুবই পুষ্টিকর। খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংকসমৃদ্ধ খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ করে। রোজার সময় ইফতারে খেজুর রাখা ভালো। পবিত্র রমজান এলে খেজুরের কদর বেড়ে যায়। রোজাদাররা খেজুর দিয়ে ইফতার করতে পছন্দ করেন। পৃথিবীতে দুই শতাধিক খেজুরের জাত রয়েছে। মরু অঞ্চলেই খেজুর বেশি উৎপাদিত হয়। সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্বকারী ফল খেজুর। আরবরা প্রধানত খেজুর ও আরবি কফি দিয়ে আপ্যায়ন করেন। রমজানে ইফতারের প্রধান উপকরণ খেজুর। খেজুরের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ, আকৃতি ও রং; এর মিষ্টতায়ও রয়েছে বৈচিত্র্য। খেজুরকে আরবরা এত গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হলো তাঁরা বিশ্বাস করেন, খেজুর দিয়েই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইফতার করতেন। এর ফলে রমজান মাসে খেজুর খাওয়া মুসলিম ঐতিহ্য। মহানবী (সা.)-এর সুন্নত হিসেবে বিশ্বব্যাপী রোজাদাররা এটি পালন করেন। অভিজাত শ্রেণির খেজুরের মধ্যে মেডজুল, আজওয়া, মরিয়ম—এগুলোর রং উজ্জ্বল বাদামি, প্রায় দেড় ইঞ্চির মতো লম্বা, স্বাদ খুবই মিষ্টি। মরিয়ম বা কালমি মরিয়ম খেজুর একটু গাঢ় বাদামি, প্রায় কালচে রঙের। দেখতে খানিকটা ডিম্বাকৃতির। একটু হালকা বাদামি রঙের সুফরি মরিয়ম। ১. আজওয়া খেজুর সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এটি মদিনায় বেশি উৎপাদিত হয়। আজওয়া এর স্থানীয় নাম ‘পবিত্র খেজুর’। কালো বা গাঢ় বাদামি রঙের এই খেজুরের রয়েছে স্বতন্ত্র স্বাদ ও আবেদন। এটি কিছুটা মিষ্টি এবং ভিটামিনে ভরপুর। জামের মতো কালো রঙের আবরণে মোড়ানো ছোট আকারের এই খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। অনেক জটিল রোগের প্রতিষেধক রয়েছে মর্মে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া (উৎকৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৪৪৫) ২. খালাস সৌদি আরবের অভিজাত জাতের খেজুর। এটি গাঢ় বাদামি, মিষ্টি গন্ধযুক্ত ডিম্বাকৃতির একটি খেজুর। খালাস খেজুর সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলের খেজুর। আরবের সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রায়ই খালাস খেজুর খেতে দেওয়া হয়। ৩. মিষ্টি মিছরির স্বাদ সুকারি খেজুরের। খুব বেশি মিষ্টি হওয়ায় একে সুকারি বলা হয়। এটি আঁশজাতীয় খাবারের বড় উৎস। খেজুরের এই জাত আরবে বেশ জনপ্রিয়। একে রাজকীয় খেজুর বলা হয়। ৪. সাগাই খেজুরের একটি অংশ নরম এবং অপর অংশ কুঁচকানো ও শুকনা হয়। এর স্বাদ লাল চিনির মতো।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","ওমরাহ পালনে শিশুদের জন্য নতুন নির্দেশনা সৌদির ",ইসলাম ধর্ম,"শিশুদের ওমরাহ নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিল সৌদি আরব। শিশুদের ওমরাহতে নিয়ে গেলে অভিভাবকদের মানতে হবে নতুন কয়েকটি নির্দেশনা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গালফ নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ওমরাহর সময় শিশুদের ডান অথবা বাঁ হাতের কব্জিতে পরিচিতিমূলক ব্রেসলেট থাকতে হবে। ভিড়ে কোনো শিশু হারিয়ে গেলে তার পরিচিতি সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাবে সেই ব্রেসলেটে। যেসব ওমরাহযাত্রী তাদের শিশুদের নিয়ে ওমরাহ পালনে যাবেন, তাদের যেসব স্থানে ভিড় কম হয় সেসব স্থানে ওমরাহ’র আনুষ্ঠানিকতা পালন করার জন্য বলা হয়েছে। শিশুদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে অভিভাবকদের যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। ওমরাহ’র সময় শিশুরা যেন স্বাস্থ্যকর ও তাদের শরীরের জন্য উপযোগী খাদ্য গ্রহণ করতে পারে, সেজন্য অভিভাবকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। নারীদের শরীরে কোনো ধরনের অলংকার থাকতে পারবে না এবং ঢিলেঢালা পোষাক পরিধান করতে হবে। পোষাক যেমনই হোক তা দ্বারা যেন সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা থাকে সেদিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral যায়যায়দিন,"এক কাঠমিস্ত্রির ঘটনা রয়েছে সুরা ইয়াসিনে ",ইসলাম ধর্ম,"এই ঘটনা বিশ্বে হজরত ঈসা (আ.)-এর আগমনেরও আগের। সিরিয়ার আন্তাকিয়ার শহরতলিতে বাস করতেন একজন কাঠমিস্ত্রি। তার নাম হাবিব ইবনে ইসমাইল। ইসলামের ইতিহাসে তিনি হাবিব নাজ্জার, অর্থাৎ কাঠমিস্ত্রি হাবিব নামে পরিচিত। আন্তাকিয়া ছিল ওই সময়ের এক জনপদ। আন্তাকিয়ার লোকজন ছিল পৌত্তলিক। হাবিবও ছিলেন কুষ্ঠরোগী। রোগমুক্তির আশায় তিনি নানা প্রতিমার উপাসনা করতেন। আল্লাহ ওই সম্প্রদায়কে সতর্ক করার বাসনা করলেন। প্রথমে তিনি তাদের কাছে দুজন আল্লাহ্‌ প্রেরিত বার্তাবাহী ব্যক্তিত্ব (রাসুল) পাঠালেন। দ্বীনের দাওয়াত দিতে তাঁরা আন্তাকিয়া শহরে গেলেন। সেখানে তাঁদের দেখা হলো হাবিবের সঙ্গে। তাঁরা তাকে মূর্তিপূজা ত্যাগ করে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দাওয়াত দিলেন। হাবিব বললেন, আপনাদের দাবি যে সত্য, তার কি কোনো প্রমাণ আছে? তাঁরা বললেন, আছে। হাবিব তাঁর কুষ্ঠরোগের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘আপনারা কি আমার এ ব্যাধি দূর করে দিতে পারবেন?’ তাঁরা বললেন, ‘হ্যাঁ! আমরা আমাদের রবের কাছে দোয়া করব। তিনি তোমাকে রোগমুক্ত করবেন।’ হাবিব এ কথা শুনে অবাক হয়ে বললেন, ‘আমি সারা জীবন দেব-দেবীর প্রার্থনা করলাম। কিন্তু কোনো উপকার পেলাম না। অথচ আপনাদের রব কীভাবে আমার কঠিন অবস্থা পাল্টে দেবেন?’ রাসুলদের দোয়ায় আল্লাহ হাবিবকে সুস্থ করলেন। তাঁর ঈমান দৃঢ় হলো। আল্লাহর এই দুই প্রতিনিধি আন্তাকিয়াবাসীদের সঠিক পথের দাওয়াত দিতে থাকলেন। কিন্তু তারা তাঁদের দুজনকে মিথ্যাবাদী বলে আখ্যা দিল। তাঁদের শক্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আল্লাহ আরেকজন রাসুল পাঠালেন। কিন্তু তাঁদের উপদেশের জবাবে জনপদবাসীরা তাঁদের মিথ্যুক বলেই অপবাদ দিতে থাকল। কোরআনে আছে, ‘ওরা বলল, তোমরা তো আমাদেরই মতো মানুষ। করুণাময় আসলে কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তোমরা কেবলই মিথ্যা বলছ।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৫) তাদের রূঢ় কথাবার্তা শুনে কষ্ট পেলেও প্রতিনিধিরা দ্বীনের দাওয়াত চালিয়েই গেলেন। তাঁরা বললেন, ‘আমাদের প্রতিপালকের শপথ, আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে প্রেরিত হয়েছি, স্পষ্টভাবে প্রচার করাই আমাদের দায়িত্ব।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৬-১৭) তবু আন্তাকিয়াবাসীরা তাঁদের কথা অমান্য করে চলল। তাদের অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ আন্তাকিয়া শহরে দুর্ভিক্ষ দিলেন। আল্লাহর সতর্কতা সঙ্কেত তারা মোটেই বুঝতে পারল না, বরং রাসুলদের তারা বলল, ‘আমরা তোমাদেরকে অমঙ্গলের কারণ মনে করি। যদি তোমরা বিরত না হও, তোমাদেরকে অবশ্যই আমরা পাথর মেরে হত্যা করব ও নিদারুণ শাস্তি দেব।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৮) এক সময় তারা রাসুলদের হত্যা করার কথা ভাবল। এই চক্রান্তের খবর শুনতেই হাবিব নাজ্জার তাদের কাছে ছুটে এলেন। তার সম্প্রদায়ের লোকদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেন। অথচ তারা তাঁর কথায় মোটেই কান দিল না। কোরআনে আছে, ‘তারা বলল, এ কি এজন্য যে, আমরা তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি? তোমাদের অমঙ্গল তোমাদেরই, আসলে তোমরা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৯) কোরআনে আরও আছে ‘শহরের এক প্রান্ত থেকে একজন ছুটে এসে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! রাসুলের অনুসরণ করো, অনুসরণ করো তাদের যারা তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চায় না, আর যারা সৎপথ পেয়েছে।যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন ও যার কাছে তোমরা ফিরে যাবে, আমি তাঁর উপাসনা করব না কেন? আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য উপাস্য গ্রহণ করব? করুণাময় আল্লাহ্ আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইলে, ওদের সুপারিশ আমার কোনো কাজে আসবে না; আর ওরা আমাকে উদ্ধার করতেও পারবে না। এমন করলে আমি অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পড়ব। আমি তোমাদের প্রতিপালকের ওপর বিশ্বাস রাখি, তাই তোমরা আমার কথা শোনো।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২০–২৫) এলাকাবাসী হাবিবের কথা তো শুনলই না। উল্টো তাঁর ওপর চড়াও হয়ে পাথর ছুড়তে ছুড়তে তাঁকে হত্যা করে ফেলল। আল কোরআনে আছে, ‘শহীদ হওয়ার পরে তাঁকে বলা হলো, জান্নাতে প্রবেশ করো। সে বলে উঠল, হায়, আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত, কী কারণে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা করেছেন ও সম্মানিত করেছেন!’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২৬–২৭) কোরআনে আরও আছে, ‘আমি তাঁর (মৃত্যুর) পর তাঁর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আকাশ থেকে কোনো বাহিনী প্রেরণ করিনি, আর তার প্রয়োজনও ছিল না। কেবল এক মহাগর্জন হলো। ফলে ওরা নিষ্প্রাণ, নিস্তব্ধ হয়ে গেল। আমার দাসদের জন্য দুঃখ হয়, ওদের কাছে যখনই কোনো রসূল এসেছে তখনই ওরা তাকে ঠাট্টাবিদ্রূপ করেছে। ওরা কি লক্ষ করে না, ওদের আগে কত মানবগোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি যারা আর ওদের মধ্যে ফিরে আসবে না? আর ওদের সকলকে তো আমার কাছে একত্র করা হবে। ‘ওদের জন্য একটা নিদর্শন মৃত ধরিত্রী, যা আমি পুনর্জীবিত করি ও যার থেকে আমি শস্য উৎপন্ন করি—যা ওরা খায়। তার মধ্যে আমি সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙুরের বাগান এবং বইয়ে দিই ঝরনা, যাতে ওরা এর ফলমূল খেতে পারে—যা ওদের হাতের সৃষ্টি নয় । তবু ওরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না? পবিত্র-মহান তিনি যিনি উদ্ভিদ, মানুষ এবং ওরা যাদের জানে না তাদের প্রত্যেককে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২৮–৩৬)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,আর্মেনিয়ায় মুসলমানের হাজার বছরের ইতিহাস,ইসলাম ধর্ম,"পশ্চিম এশিয়ার স্থলবেষ্টিত দেশ আর্মেনিয়ার দাপ্তরিক নাম ‘দ্য রিপাবলিক অব আর্মেনিয়া’। ককেশাস অঞ্চলে অবস্থিত দেশটির সঙ্গে ইউরোপের গভীর ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এর পশ্চিমে তুরস্ক, উত্তরে জর্জিয়া, পূর্বে আজারবাইজান এবং দক্ষিণে ইরান অবস্থিত। ইয়েরেভান আর্মেনিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।দেশটির মোট আয়তন ২৯ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশটির জনসংখ্যা ৩০ লাখ ৭৫৬ জন। আর্মেনিয়ার ৯৮ শতাংশ মানুষ আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত।আর্মেনিয়ার প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক খ্রিস্টান।মুসলমানের সংখ্যা এক শতাংশের চেয়েও কম। দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা তিন হাজারের সামান্য বেশি বলে ধারণা করা হয়। আর্মেনিয়ায় ইসলামের বিজয় অভিযান শুরু হয় ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে। আলজেরিয়া ও আজারবাইজানের পারস্য অঞ্চল বিজয়ের পর মুসলিম বাহিনী আর্মেনিয়ার প্রতি মনোযোগী হয়।আর্মেনিয়া তখন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীন ছিল।আর্মেনিয়ায় প্রথম সামরিক সাফল্য পান সাহাবি ইয়াজ বিন গানম (রা.)। তিনি ১৭ হিজরি মোতাবেক ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে তারতুস ও রোমান ভূমি অতিক্রম করে বাদলিসে পৌঁছান। খিলাত শহর হয়ে আর্মেনিয়ার ‘আল আইন আল হামেসা’য় পৌঁছে যান। ইয়াজ বিন গানম (রা.)-এর বিজয়াভিযান ছিল অসস্পূর্ণ ও ক্ষণস্থায়ী।তিনি ১৯ হিজরি উসমান বিন আবিল আস সাকাফিকে অভিযানে প্রেরণ করেন। এ যুদ্ধে সাফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল (রা.) শহীদ হন। অবশেষে আর্মেনিয়াবাসী ‘জিজিয়া’ বা নিরাপত্তা কর চুক্তিতে সম্মত। চুক্তিতে প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে এক দিনার কর নির্ধারণ করা হয়। তবে কিছুদিনের মধ্যে তারা চুক্তি ভঙ্গ করে।২১ হিজরিতে সুরাকা ইবনে আমর (রা.)-এর নেতৃত্বে পুনরায় অভিযান শুরু হয়। আর্মেনিয়ানরা আবারও সমঝোতা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। তবে চূড়ান্ত বিজয়ের আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। আবদুর রহমান বিন রাবিআ বাহেলি (রা.) তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। অবশেষে ২৫ হিজরিতে হাবিব বিন মাসলামা ফিহরির নেতৃত্বে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তবে উমাইয়া শাসনের শেষভাগ পর্যন্ত আর্মেনিয়ায় মুসলিম শাসন স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছায়নি।৬৫২ সালে আর্মেনীয়দের সঙ্গে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক চুক্তি হয়। প্রিন্স থিওডরস দামেশক ভ্রমণ করেন এবং সেখানে তিনি মুসলিম শাসক কর্তৃক আর্মেনিয়া, জর্জিয়া ও আলবেনিয়ার শাসক নিযুক্ত হন। সপ্তম শতাব্দীর শেষে আব্বাসীয় আমলে একাধিক প্রতিনিধির মাধ্যমে আর্মেনিয়া শাসন করা হতো। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে আর্মেনিয়া আরব ও তুর্কি মুসলিম বসবাস করতে শুরু করে। খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে এই ধারা আরো প্রবল হয়। আর্মেনীয়রাও মুসলিম আমিরদের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে যোগদান শুরু করে। পরে আর্মেনিয়া উসমানীয় ও ইরানের সাফাবিদ সাম্রাজ্যের অধীন হয়। সাফাবীয়দের অধীনে থাকা পূর্ব আর্মেনিয়ার রাশিয়ার দখলে চলে যায় এবং পশ্চিম আর্মেনিয়া যেটি আর্মেনিয়ার মূল ভূখণ্ড মনে করা হয় তা তুর্কিদের অধীনে ছিল। ১৯১৮ সালে আর্মেনিয়া তুরস্ক থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু ১৯২০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর্মেনিয়া দখল করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে আর্মেনিয়া স্বাধীন হয়।দীর্ঘদিন মুসলমানদের শাসনাধীন থাকার পরও আর্মেনিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায়। এর প্রধান কারণ জাতিগতভাবে খ্রিস্টধর্মের প্রতি আর্মেনীয়দের ঝোঁক, ধর্মের প্রতি মুসলিম শাসকদের উদাসীনতা ও ইসলাম প্রচারে ব্যর্থতা। এ ছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুর্কিদের সঙ্গে আর্মেনীয়দের সংঘাত ও ইসলামের প্রতি সোভিয়েত শাসকদের কঠোর মনোভাবের কারণে দেশটির বেশির ভাগ মুসলমান দেশত্যাগ করে বলে মনে করা হয়। সোভিয়েত আমলে আর্মেনিয়ার মসজিদসহ অন্য মুসলিম স্থাপনাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এগুলোর রূপান্তর ঘটানো হয়। রাজধানী ইয়েরেভানে অবস্থিত ব্লু মসজিদকে আর্মেনীয় মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় স্থাপনা মনে করা হয়। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৯৬ সালে তা পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। এটি একটি শিয়া মসজিদ।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"রাসূলের আদর্শেই গড়ে উঠে উন্নত সমাজ-২ ",ইসলাম ধর্ম,"সভ্যতা ও ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে ইসলাম এসেছে একটি পশ্চাৎপদ সমাজে। নবীজি (সা.) সেই আরবদেরই পরিণত করেছেন পৃথিবীর উন্নত জাতিতে। মানবেতিহাসে তিনিই প্রথম এমন একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা পেশ করেছেন, যা আত্মিক ও বস্তুগত উভয় দিক থেকে মানুষের সংকটমুক্তির দায়িত্ব নিয়েছে। ইসলাম পৃথিবীর সেই একক ও বৃহত্তম ধর্ম, যা নিঃস্ব ও দরিদ্র জীবনের মাঝে মর্যাদা ও তাৎপর্য দান করেছে। ইসলাম বিভিন্ন গোত্রের মানুষকে পরস্পরে ভাইয়ের মতো থাকার এবং বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার শিক্ষা দিয়েছে। ইসলাম মানব পৃথিবীতে একটি উন্নত সভ্যতা দান করেছে, যার ফলশ্রুতিতে ইসলামী সমাজের রূপ সামনে এসেছে। সে সমাজে মুসলমানদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের অনুসারীরাও সৃজনশীলতা ও পরিতৃপ্তির সঙ্গে জীবন অতিবাহিত করেছেন। ইসলাম তার অবস্থার প্রাচুর্য দিয়ে বিত্তবান বানিয়েছে পুরো পৃথিবীকে। ইসলামী সমাজব্যবস্থার পরিধি অনেক বিস্তৃত। যে সমাজে ইসলামের সভ্যতা ও শরীয়তের প্রয়োগ হয় এবং কুরআন ও সুন্নতের অনুসরণ করা হয় সেটিই ইসলামী সমাজরূপে গণ্য। ওই সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে- ক) মানবজাতির ঐক্য খ) কল্যাণের বিকাশ ও মন্দের দ্বার রুদ্ধকরণ, গ) মানবচিন্তার ঐক্য, ঘ) মানবতার সম্মান, ঙ) সমতা, চ) রাসূলের আনুগত্য। আজ পৃথিবীতে যে ধর্ম ও কর্মসূচির প্রয়োজন সে’টি হচ্ছে আলোকজ্জ্বল দ্বীন-ইসলাম। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়ত ও তাঁর সীরাত গোটা মানবজাতির জন্য একটি সমন্বিত সম্পদ। এখানে সবারই ভাগ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালার সব বস্তুগত নেয়ামত যেমন সব মানুষের জন্য অবারিত, ঠিক তেমনই এই রূহানী নেয়ামতও সকল মাখলুকের জন্য উন্মুক্ত। নবীয়ে আখেরুজ্জামান সম্পর্কে কুরআনে কারীমে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনাকে গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি’। আরেক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আপনি বলে দিন পবিত্র সেই সত্ত্বা যিনি হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী কুরআন নিজ বান্দার ওপর অবতীর্ণ করেছেন, যেন তিনি সব মানুষকে শেষ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করতে পারেন’। আমরা সবাই রাসূলে আকরামের উম্মত। তিনি আমাদের কাছে বার্তা পৌঁছিয়েছেন বন্ধুত্ব, সহিষ্ণুতা, মানুষের সম্মাননা, নিরাপদ সহাবস্থান, পক্ষপাতমুক্ততা এবং শান্তি ও নিরাপত্তার। নিরাপত্তা, সৌজন্য ও শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের দায়িত্ব হলো, এই সীরাতে তাইয়্যিবার প্রসার ঘটানো। নিজেরাও উসওয়ায়ে হাসানা বা উত্তম আদর্শ গ্রহণ করি এবং অন্যদেরও এর প্রতি উৎসাহিত করি। নবীজির সীরাত ও তাঁর শিক্ষা আমাদেরকে এমন একটি সমাজ গড়তে অনুপ্রাণিত করে, যে সমাজের প্রতিটি সদস্য হয়ে উঠে সৎ মানুষ। এমন সৎ মানুষ, যার গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে সূরায়ে আসরে। ইসলামের তত্ত্বগত দর্শন সম্পর্কে সমাজের প্রতিটি সদস্যের অন্তরে থাকতে হবে দৃঢ় বিশ্বাস। মানুষকে পুরা করতে হবে আল্লাহ তায়ালার বন্দেগীর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। খেলাফতব্যবস্থা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রতিটি মুহূর্তে অনুভূতি জাগ্রত থাকতে হবে আল্লাহর আনুগত্য, সুন্নতের অনুসরণ, তাকওয়া অবলম্বন এবং আখেরাতের জবাবদিহি সম্পর্কে। হেদায়েতের উলূম তথা দ্বীনি ইলমের চর্চা থাকতে হবে। পাশাপাশি চলতে হবে বৈষয়িক, আর্থিক ও বিজ্ঞানবিষয়ক জ্ঞানের চর্চা। দিতে হবে মানুষের শৈল্পিক ও পেশাভিত্তিক মেধা বিকাশের সুযোগ। যেন সে হালাল জীবিকা অর্জন করতে পারে। মানুষের অন্তরে, চরিত্রে ও জীবনে শুদ্ধি আনতে হবে। মানুষ যেন সত্যের আহ্বানকারী ও কল্যাণ কাজের সঞ্চালক হয় সে উদ্যোগ নিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে তাদেরকে পরিশ্রম ও কষ্ট সহিষ্ণুতায় অভ্যস্ত করতে, ধৈর্যও বরদাশত-যোগ্যতা অর্জন করাতে এবং আত্মমর্যাদা ও আত্মপ্রত্যয়ে বলিয়ান করতে। সর্বোপরি মানুষের মাঝে সময় ও নিয়মানুবর্তিতার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সব ভিত্তির ওপরই একটি আদর্শ সমাজের কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন। এ সমাজই পৃথিবীর সব সমাজের ওপর সর্বাত্মক প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়েছিল। তাই বর্তমান যুগেও একটি আদর্শ সমাজের রূপায়ন সম্ভব হবে যখন আমরা মানবতার ত্রাণকর্তা হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর শিক্ষা ও সীরাতকে জীবনোপায় বা কর্মপন্থা হিসেবে গ্রহণ করে নেব। যখন তাঁকে অনুসরণ করব। এতেই রয়েছে মানবতার মুক্তি। এটিই কল্যাণ ও সাফল্যের অব্যর্থ মন্ত্র।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীরা ধর্মান্ধ : প্রধানমন্ত্রী ",অন্যান্য,"প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ বরেণ্য শিক্ষাবিদ সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর যারা হামলা চালালো তারা কারা, এরা ধর্মান্ধ। এদের খুঁজে বের করতে হবে। ওরা মনে করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারলেই বেহেস্ত নিশ্চিত। আসলে তারা বেহেস্তে যাবে না, তাদের জায়গা দোজখে। এটা নিশ্চিত। রোববার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়/গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এবং মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ও বিশেষ গবেষণা অনুদান-২০১৮ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধর্মান্ধরা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ যারা করে তারা দেশের মঙ্গল করতে পারে না। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য এ সময় আহ্বানও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, একটি অনুষ্ঠানে তাকে পিছন দিক থেকে চুরিকাঘাত করা হয়েছে। ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি নির্দেশ দিয়েছি হেলিকপ্টারে দ্রুত ঢাকায় এনে চিকিৎসা করার জন্য। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যারা করে তারা শিক্ষা দেয় যে, মানুষকে খুন করতে পারলেই তারা বেহেস্তে যাবে। এ ধরনের কথা ইসলাম সমর্থন করে না। আমাদের ইসলাম ধর্মে হত্যা মহাপাপ। কাজেই তারা কখনই বেহেস্তে যেতে পারবে না। তাদের জায়গা হবে দোযখে। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন সভা সমাবেশে আপনাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক সম্পর্কে সচেতন করার জন্য। আশা করি, প্রতিটি বাবা-মা তাদের সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। এই ধর্মান্ধরা কারো ভালো করতে পারে না। এরা শুধু জানে ধ্বংস করতে। সুতরাং এদের থেকে সাবধান হতে হবে। রাজধানীর ওসমাসী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব অনোয়ার হোসেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. রুহুল হক এমপি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,আত্মমুগ্ধতা যেভাবে অহংকারী করে তোলে,ইসলাম ধর্ম,"বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে একটি ঈমানঘাতী মারাত্মক রোগ হলো আত্মমুগ্ধতা। এটি মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। দুনিয়ার জীবনে মহান আল্লাহ আমাদের অনেক নিয়ামত দিয়েছেন, আমাদের উচিত এগুলো নিয়ে আত্মমুগ্ধতায় না ভুগে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। যারা আল্লাহপ্রদত্ত নিয়ামত পেয়ে শুকরিয়া না করে অহংকারের ঢেঁকুর দেয়, মহান আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন না। মহান আল্লাহ ইতিহাসের অন্যতম ধনী কারুনকেও অনেক সম্পদ দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দিয়েছিলেন; কিন্তু তার দাম্ভিকতা তার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। তাকে ঈমানদাররা এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিল; কিন্তু সে তার দাম্ভিকতা থেকে ফিরে আসেনি। এবং ধ্বংস হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কারুন ছিল মুসার সমপ্রদায়ভুক্ত, বস্তুত সে তাদের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল। আমি তাকে দান করেছিলাম এমন ধনভাণ্ডার, যার চাবিগুলো বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ করো, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দম্ভ করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৭৬) আত্মমুগ্ধতার ব্যাপারে বান্দাকে সতর্ক করতে মহান আল্লাহ এমন অনেক আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। যেমন পবিত্র কোরআনের অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর তাদের যা কিছু উপদেশ ও নসিহত করা হয়েছিল তা যখন তারা ভুলে গেল তখন আমি সুখ-শান্তির জন্য প্রতিটি বস্তুর দরজা উন্মুক্ত করে দিলাম। যখন তারা তাদের দানকৃত বস্তু লাভ করে খুব আনন্দিত ও উল্লসিত হলো তখন হঠাৎ একদিন আমি তাদের পাকড়াও করলাম, আর তারা সেই অবস্থায় নিরাশ হয়ে পড়ল।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৪৪) এ আয়াতে বলা হয়েছে যে তাদের অবাধ্যতা যখন সীমাতিক্রম করতে থাকে, তখন তাদের একটি বিপজ্জনক পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। আত্মমুগ্ধতা অহংকারের নামান্তর। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক ব্যক্তি নবী (সা.) এর কাছে এলো। লোকটি ছিল খুবই সুন্দর। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি সৌন্দর্যকে ভালোবাসি। আপনি তো দেখতে পাচ্ছেন আমাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়েছে। এদিক দিয়ে কেউ আমার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করুক তা আমি চাই না, এমনকি কেউ যদি বলে, আমার জুতার ফিতার চেয়ে তার ফিতাটা ভালো, সেটাও পছন্দ করি না। এরূপ করা কি অহংকার? তিনি (সা.) বলেন, না; বরং অহংকার হলো সত্যকে অবজ্ঞা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ মনে করা।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৯২) মহান আল্লাহ আমাদের আত্মমুগ্ধতা ও অহংকারের মতো ধ্বংসাত্মক অভ্যাস ত্যাগ করার তাওফিক দান করুন। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative ভোরের কাগজ,"হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্মী পূজা আজ ",হিন্দু ধর্ম,"সনাতন ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস, ধন-সম্পদ-ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী। এছাড়া তিনি হলেন জ্ঞান, আলো, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের প্রতীক। তাই বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ধন সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর পূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আওয়াজ উঠবে- ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে, আমারই ঘরে থাকো আলো করে’। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে হিন্দু সম্প্রদায় লক্ষ্মী পূজা উদযাপন করে থাকে। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী পূজা। বাঙালি হিন্দুদের বিশ্বাস লক্ষ্মী দেবী দ্বিভূজা। তিনি ঈশ্বরের পালন রূপ শক্তি নারায়ণী। যাকে ভক্তরা ধন সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী, অন্নদাত্রী দেবীরূপে আখ্যায়িত করে পূজা করেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, লক্ষ্মী দেবী সন্তুষ্ট থাকলে সংসারে অর্থকষ্ট থাকবে না ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে। ঘরে ঘরে মা লক্ষ্মী ধন-সম্পদের দেবী হিসেবে পূজিত হন। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে এ দিন লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন। সঙ্গে থাকে বাহন পেঁচা এবং হাতে থাকে শস্যের ভাণ্ডার। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, রামসীতা মন্দির, পঞ্চানন্দ শিব মন্দির, গৌতম মন্দির, রাধামাধব বিগ্রহ মন্দির, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দিরসহ দেশের অনেক মন্দিরে ঘরোয়া পরিবেশে লক্ষ্মী পূজার নানা ধর্মীয় কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।",ধর্মীয় উৎসব,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","ইমামকে সিজদায় পেলে যেভাবে নামাজ পড়বেন ",ইসলাম ধর্ম,"অনেক সময় ইমামের সঙ্গে শুরু থেকেই নামাজ পাওয়া যায় না। কোনো সময় রুকু, সিজদা অথবা বৈঠকে গিয়ে ইমামের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন মুসল্লিরা। কখনো জামাতের নামাজে সিজদারত অবস্থায় ইমামকে পেলে মুসল্লিদের অনেকে সন্দেহে থাকেন সিজদাতেই ইমামের সঙ্গে যু্ক্ত হবেন নাকি ইমাম সিজদা থেকে ওঠে দাঁড়ানো বা বসার অপেক্ষা করবেন। মুসল্লিদের এমন সন্দেহ দূর করতে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলে থাকেন, কোনো মুসল্লিা ইমামকে সিজদায় পেলে তখনই ইমামের সঙ্গে সিজদায় অংশ গ্রহণ করে ফেলবে; ইমামের সিজদা থেকে ওঠার অপেক্ষা করবে না। হাদিস শরীফে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, إِذَا أَتَى أَحَدُكُمُ الصَّلَاةَ وَالإِمَامُ عَلَى حَالٍ فَلْيَصْنَعْ كَمَا يَصْنَعُ الإِمَامُ তোমাদের কেউ যখন নামাজে আসে তখন ইমামকে যে অবস্থায় পায় সে যেন তাই করে (অর্থাৎ যে অবস্থায়ই ইমামকে পাবে, জামাতে অংশ গ্রহণ করে ফেলবে।) (জামে তিরমিজি, হাদিস, ৫৯১) আরেক হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, وَإِذَا وَجَدْتُّمُ الْإِمَامَ قَائِمًا فَقُومُوا، أَوْ قَاعِدًا فَاقْعُدُوا، أَوْ رَاكِعًا فَارْكَعُوا، أَوْ سَاجِدًا فَاسْجُدُوا، أَوْ جَالِسًا فَاجْلِسُوا যখন তোমরা ইমামকে দাঁড়ানো অবস্থায় পাবে তখন দাঁড়ানো অবস্থায় নামাজে অংশ গ্রহণ করবে। বসা অবস্থায় পেলে বসাতেঅংশ গ্রহণ করবে। রুকুতে পেলে রুকুতে অংশ গ্রহণ করবে। আর সিজদায় পেলে সিজদায় অংশ গ্রহণ করবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস, ৩৩৭৩) তবে সিজদায় ইমামের সঙ্গে অংশ গ্রহণ করলে ওই রাকাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না; বরং রাকাত পাওয়ার জন্য ইমামের সাথে রুকু পাওয়া শর্ত। (আলমাবসূত, সারাখসী ১/৩৫; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৩১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১; ফাতহুল বারী ২/১৪০)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,বাংলাদেশিদের জন্য উচ্চশিক্ষায় সহায়তা অব্যাহত থাকবে : সৌদি রাষ্ট্রদূত,ইসলাম ধর্ম,"বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সৌদি সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলান। গতকাল রবিবার (৮ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আরবি বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এ কথা বলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। রাষ্ট্রদূত ইসা বলেন, ‘শিক্ষা-গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আগামীতে সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আরো সম্প্রসারিত হবে।’ বাংলাদেশি কর্মীদের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সৌদি আরবের উন্নয়নে বাংলাদেশি কর্মীদের বিশেষ অবদান রয়েছে।দেশটির সব অঞ্চলে এ দেশের লোক পাওয়া যায়। কর্মদক্ষতার মাধ্যমে তারা আর্থ-সামাজিক অবদান রাখছেন।’ অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আরবি বিভাগের আয়োজনে এ ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের এগিয়ে চলার পথে অনুপ্রেরণা যোগাবে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা, তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আরো বিস্তৃত হবে।অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সৌদি রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আরবি বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ১৫জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,আসবাব থেকে নাপাকি দূর করার ইসলামী বিধান,ইসলাম ধর্ম,"সাধারণত শরীরে কিংবা কাপড়ে নাপাকি লাগলে তা পবিত্র করে থাকি, তাই তার নিয়ম-কানুনও আমরা বেশির ভাগ মানুষ জানি। কিন্তু আসবাবে নাপাকি লাগার ঘটনা বিরল, তাই এমন পরিস্থিতির শিকার হলে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি যে এই জিনিস কিভাবে পবিত্র করা যায়। নিম্নে আসবাব পবিত্র করার উপায় তুলে ধরা হলো : যদি এমন জিনিসে নাপাকি লাগে যা নিংড়ানো যায় না, যেমন—থালা-বাসন, কলস, খাট, মাদুর, জুতা ইত্যাদি, তাহলে তা পবিত্র করার নিয়ম হলো, একবার তা ধুয়ে এমনভাবে রেখে দেবে যেন সব পানি ঝরে যায় এবং পানির ফোঁটা পড়া বন্ধ হয়ে যায়, তারপর অনুরূপ আরেকবার করবে, এভাবে তিনবার ধুয়ে নিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। জুতা বা চামড়ার মোজায় গাঢ় বীর্য, রক্ত, পায়খানা, গোবর ইত্যাদি গাঢ় নাপাকি লাগলে তা যদি মাটিতে খুব ভালোমতো ঘষে বা শুকনা হলে নখ বা ছুরি/চাকু দিয়ে খুঁটে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ফেলা যায় এবং বিন্দুমাত্র নাপাকি না থাকে, তাহলেও তা পবিত্র হয়ে যাবে, না ধুলেও চলবে। কিন্তু পেশাবের মতো তরল নাপাকি লাগলে পূর্বোক্ত নিয়মে ধোয়া ছাড়া পবিত্র হবে না। আয়না, ছুরি, চাকু, সোনা-রুপার অলংকার, থালা-বাসন, বদনা, কলস ইত্যাদি নাপাক হলে ভালোমতো ঘষে বা মাটি দিয়ে মেজে ফেললেও পবিত্র হয়ে যায়, কিন্তু এজাতীয় জিনিস কারুকাজকৃত হলে উপরোক্ত নিয়মে পানি দিয়ে ধোয়া ছাড়া পবিত্র হবে না। নাপাক ছুরি, চাকু বা হাঁড়ি-পাতিল জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে পোড়ালেও পবিত্র হয়ে যায়। কুকুর কোনো পাত্রে মুখ দিলে তা অপবিত্র হয়ে যায়। তিনবার ধুলেও তা পবিত্র হয়ে যায়, তবে সাতবার ধোয়া উত্তম। আর একবার মাটি দিয়ে মেজে ফেললে আরো বেশি উত্তম। (সূত্র : আহকামুন নিসা, পৃষ্ঠা ৩৫৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral " আলোকিত বাংলাদেশ","ঢাবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সরস্বতী পূজা উদযাপন , উপাচার্যের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ",হিন্দু ধর্ম,"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি (২০২৪) বুধবার সন্ধ্যায় জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এসময় জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ""ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল দীর্ঘকাল ধরে সাড়ম্বরে এই উৎসব আয়োজন করে আসছে। দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ও অসাম্প্রদায়িক সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন মানুষ সকল উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে""। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিকতার প্রতীক এই উৎসব থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সভ্যতাসহ সকল ক্ষেত্রে বলীয়ান হওয়ার প্রয়াস নেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপাচার্য সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পূজা উৎসব আয়োজনের জন্য জগন্নাথ হল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।",ধর্মীয় উৎসব,Positive সমকাল,সংস্কৃতির ধর্ম কিংবা ধর্মের সংস্কৃতি,অন্যান্য,"ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিরোধ নিয়ে তর্ক কোনোভাবে কি গ্রহণযোগ্য? তবুও সমাজে কিছু মানুষ এই তর্ক চালিয়ে যাবেন হাত দিয়ে পাহাড় ঠেলার মতো। ধর্মে ধর্মে বিরোধ; তা তো চলে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সারাবিশ্বে। এই ধর্মের রেষারেষি পৃথিবীকে বিভক্ত করতে করতে আজ যেন ক্লান্ত এক পৃথিবীর বুকে আমরা অসহায়ের মতো বসবাস করছি। ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাসের বিষয়, যা মূলত পরকালকেন্দ্রিক। যেহেতু পরকাল আমরা দেখতে পাই না, তাই পুরোটাই দাঁড়িয়ে আছে আমাদের মনোজগতে যে বিশ্বাসের ভিত্তি আছে তার ওপর। অন্যদিকে সংস্কৃতি মানুষের প্রতিদিনের জীবনাচরণ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে আমাদের যাপিত জীবনের যা কিছু আছে সবকিছুকে ধারণ করে। এ নিয়ে বিতর্কটি বছর ঘুরলেই তুলে আনেন যাঁরা; তাঁরা আসলে ধর্ম ও সংস্কৃতির মাঝে সম্পর্কটিকে কতটা বিশ্লেষণ করতে পারেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাঁদের উদ্দেশ্যও খুব পরিষ্কার। তাঁরা মূলত দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিটুকু ধ্বংস করার মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী। সারাবছর যে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বসবাসের চেষ্টা; সেই চেষ্টায় বিরোধ, সংঘর্ষ, বিচ্ছিন্নতা ও বৈরিতার সম্পর্ক তৈরি করাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য; আর কিছু নয়। আমাদের মনোজাগতিক সংস্কৃতিও যেন যুক্ত হচ্ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বিরোধপূর্ণ তর্কে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব? আচ্ছা, দু’জন দুই ধর্মের মানুষের দেহাকৃতি থেকে শুরু করে জীবনাচরণে এই যে এত মিল, তা কি অস্বীকার করা সম্ভব? কেবল দুই ধর্মের দু’জনের মাঝে নানা কিছুতে মিল থাকলেই কি তারা একে অপরকে অনুকরণ করছে– আমরা এমন দাবি করতে পারি? ঠিক যেমনটি মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রাণীর প্রতীকী চিত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাণী ও প্রকৃতি পূজার সঙ্গে মিলে যায় বলে দাবি করছে কেউ কেউ? ধর্ম কিংবা সংস্কৃতি কোনোটিকে কি এতটা সরল-সাধারণীকরণ সম্ভব? কোনো বিভিন্নতা, বৈচিত্র্য কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না? কাছাকাছি কিংবা মিলে যাওয়া সাদৃশ্যপূর্ণ সংস্কৃতির মাঝেও কি ভিন্নতা নেই? সাধারণীকরণের বাইরে গিয়ে উত্তরাধুনিকতাবাদী চিন্তাভাবনা কিন্তু আমাদের জানান দেয়– বিভিন্নতা, বৈচিত্র্য সর্বত্র! ধরা যাক, রহিম সাহেব শার্ট-প্যান্ট পরিধান করে অফিসে যান, রাজেন্দ্র বাবুও তো তাই পরিধান করেই অফিস করছেন! তাই বলে তাদের দু’জনের চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, চালচলন, জীবনবোধের মাঝে কোনো তফাত নেই? কেবল বাহ্যিক মিলই তাঁদের আত্মিক মিলের কারণ হয়ে দাঁড়াবে? তাঁরা দু’জনেই যাঁর যাঁর অফিসে যে যে কাজ করার কথা, তা করে বাজার করে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে বসে রাতের খাবার খেয়ে নেন। সেখানেও কোনো পার্থক্য নেই। যেহেতু তাঁদের দৈন্দন্দিন জীবনযাপনের সংস্কৃতি মিলে যাচ্ছে; তাহলে কি বলা যায়– হয় রহিম রাজেন্দ্রকে অনুকরণ করছেন, কিংবা রাজেন্দ্র করছেন রহিমকে? রহিম ও রাজেন্দ্র– তাঁদের দু’জনকেই প্রকৃতি সমানভাবে বিচার করে। এমন নয়, একজন সূর্যের আলো কম পেয়ে থাকেন অন্যজনের চেয়ে কিংবা একটি গাছের নিচে দাঁড়ালে গাছটি দু’জনের মাঝে একজনকে বেশি ছায়া দিয়ে থাকে। তেমনটিও তো নয়! তাহলে ধর্মের দোহাই দিয়ে তাঁদের এই যে প্রতিদিনের জীবনযাপনের সংস্কৃতি, সেখানে প্রতিনিয়ত ধর্মের পরিচয় তুলে ধরা, ধর্ম নিয়ে প্রতিযোগিতা করা, তর্ক করা, ধর্মভিত্তিক পরিচিতি নির্মাণের রাজনীতি করার কী মানে দাঁড়ায়? ঠিক একইভাবে বলা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রায় যা যা আনুষ্ঠানিকতা হয়, সেসব হিন্দু ধর্মের পূজা অর্চনার বিষয়– এমন মিল ধরে আমরা তর্ক কেমন করে করি? এক ধর্মের সঙ্গে আরেক ধর্মের মিল থাকতেই পারে। যেমনটি থাকতে পারে এক সংস্কৃতির সঙ্গে আরেক সংস্কৃতির; থাকতে পারে অমিলও। তাই বলে একটি অন্যটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা কীভাবে বলা যায়? নৃবিজ্ঞানে ‘একালচারেশন’ বলে একটা ধারণা আছে, যেখানে বলা হয়, সংস্কৃতি প্রবহমান। কালের পরিক্রমায় এক সংস্কৃতি আরেক সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে কিছুটা গ্রহণ করে, কিছুটা বর্জন করে। একাধিক সংস্কৃতির এই মেলামেশা, গ্রহণ-বর্জনের মধ্য দিয়েই সংস্কৃতি তার রূপ বদলায় অল্প অল্প করে। হতে থাকে সংস্কৃতির বিবর্তন। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাশীল সংস্কৃতি একালচারেশনের মাধ্যমে নিজের সংস্কৃতির উপাদানকে অন্যদের মাঝে ঢোকানোর চেষ্টা করে, যেমন উপনিবেশকালে আমাদের মাঝে ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি ঢোকানো হয়েছে, যার লিগ্যাসি এখনও আমরা বহন করে চলছি। এখন ভারত-পাকিস্তান ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত দুটি রাষ্ট্র কি ঔপনিবেশিক সংস্কৃতিকে ধারণ করছে না? ধর্ম তো সংস্কৃতিরই অংশ! সংস্কৃতি কখনও চিরতরে হারিয়ে যায় না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন ধর্মে বা দেশে ফিরে ফিরে আসে। আবার যায়, আবার আসে। আমরা যদি লক্ষ্য করি, এখনকার যে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, এই ব্যবস্থায় যে আইনগুলো হয়েছে, এগুলো কিন্তু একেবারেই আদি যুগ থেকে ছিল; তেমনটি নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একালচারেশনের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতির বিবর্তন বা পরিবর্তন আসে। সেই সঙ্গে আসে আইনগুলোরও পরিবর্তন। কিছুটা ক্ষমতার জোরে চাপিয়ে দেওয়া, কিছুটা নিজেদের প্রয়োজনে। আবার কিছুটা তথাকথিত আধুনিকতার কথা বলে পশ্চিমা সভ্যতার মধ্যে আমাদের জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বা আমরা ঢুকেছি সময়ের পরিক্রমায়। প্রক্রিয়া যেটাই হোক; শেষ কথা তো সেটাই– ধর্ম ও সংস্কৃতি দুটোই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়; যেতে হয়। তাই দেশ, ধর্ম, সমাজ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবাই সবার পরিপূরক। কিন্তু তাদের মিলিয়ে এক ও অভিন্ন করে দেখার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি সংঘর্ষেরও অবকাশ নেই। এই যাওয়া-আসার মাঝে সংস্কৃতি নতুন নতুন করে আবিষ্কারও হয়। আবার যে কোনো ধর্মেরই কিছু সংস্কৃতি থাকে, যা যুগের সঙ্গে, সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে। এই পরিবর্তিত রূপে যেমন থাকে ধর্মের সংস্কৃতি, তেমনি থাকে সংস্কৃতির ধর্ম! অতএব, এই দুইয়ের মাঝে সংষর্ষ নেই। যা আছে তা হলো, পারস্পরিক একালচারেশন। একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে নতুনভাবে নিজেকে আবিষ্কার করার আকুলতা। এই আকুলতার মাঝে নতুনের আহ্বান থাকে। থাকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে পুরাতনকে বিদায় জানানোর আকুতি। এই আকুতির সঙ্গে আমাদের বর্ষবরণের আকুতির সুর যেন মিলে গেছে। তাহলে বর্ষবরণের সংস্কৃতির সঙ্গে ব্যক্তির মতাদর্শ, শ্রেণি, বর্ণ কিংবা ধর্মের সংঘর্ষ কোথায় থাকল– যেখানে পরিবর্তনের প্রবণতা বিদ্যমান, নতুনের হাতছানি অনবরত ও অবধারিত, যেখানে সত্য ও বাস্তবতার মুখোমুখি আমাদের সবার গন্তব্য?",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral Dhaka Tribune,"পাকিস্তানে হিন্দু বিয়ে আইন পাস ",হিন্দু ধর্ম,"পাকিস্তানের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য নতুন বছরের উপহার হিসেবে 'হিন্দু ম্যারেজ বিল' পাস করেছে দেশটি। ফলে সেখানকার হিন্দু নাগরিকদের বিয়ের সময় আদালতে রেজিস্ট্রি করতে হবে এবং বিচ্ছেদের ক্ষেত্রেও তারা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। এই বিলের ফলে পাকিস্তানের তালাকপ্রাপ্ত হিন্দুরা পুনরায় বিয়েও করতে পারবেন। এই বিলের ফলে বিয়ের প্রমাণ হিসেবে দেশটির হিন্দুরা ‘শাদিপারাত’ অর্থাৎ ‘নিকাহনামা’র মতো দলিল হাতে পাবেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় দেশে দেশে নিন্দা-বিক্ষোভ ",ইসলাম ধর্ম,"সউদী আরব, ইরান ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র জরুরি বৈঠক ডেকেছে। তুরস্ক, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, লেবানন, মরক্কো, সিরিয়া ও ইরাকসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরকার সুইডিশ সরকারের মদদে পবিত্র কুরআন অবমাননার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এইসব দেশ সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে অথবা সুইডেন থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ডেকে এনেছে প্রতিবাদ হিসেবে। দাবি উঠেছে সুইডিশ পণ্য বর্জনের। এদিকে, সুইডেনে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত সুইডিশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু মুসলিম দেশ। গত বুধবার স্টকহোম শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এক ব্যক্তি। তার নাম সালওয়ান মোমিকা। তুরস্ক, ইরাক, ইরান, মিশর ও সউদী আরবসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ইরাকের একজন ক্ষমতাধর ধর্মীয় নেতা মোকতাদা আল-সদর এর প্রতিবাদ জানানোর ডাক দিলে বৃহস্পতিবার রাজধানী বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের সামনে একদল লোক জড়ো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে বেশ কিছু মানুষকে দূতাবাস ভবনটির প্রাঙ্গণে হাঁটতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে থাকা এএফপির একজন ফটোসাংবাদিক বলেছেন, কিছু লোক দূতাবাস ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে ও প্রায় ১৫ মিনিট সেখানে অবস্থান করে। পরে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী আসার পর তারা সেখান থেকে চলে যায়। এদিকে সুইডেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, মোমিকাকে দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনের আওতায় মসজিদের বাইরে প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটার পর পুলিশ বলছে, তারা এখন ঘৃণা উস্কে দেওয়ার দায়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে। তুরস্ক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের ইসলামবিরোধী কর্মকা- অগ্রহণযোগ্য। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, উদ্ধত পশ্চিমাদের আমরা একসময় শিক্ষা দেবো যে মুসলিমদের অপমান করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। মরক্কো ও জর্ডান এ ঘটনার প্রতিবাদে স্টকহোম থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরে আসতে বলেছে। মরক্কোর রাবাতে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলবও করা হয়। মিশর বলেছে, যখন মুসলিমরা ঈদুল আজহা পালন করছে তখন এই লজ্জাজনক ঘটনা বিশেষভাবে উস্কানিমূলক। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন বলেছেন এ ঘটনা ‘আইনগতভাবে বৈধ হলেও অনুচিত’ ছিল। সুইডেনে কুরআন পোড়ানোর পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে এর আগে দাঙ্গা হয়েছে। ন্যাটো সদস্য তুরস্ক এর আগে সুইডেনকে এ জোটের সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেনি ও এর একটি কারণ হিসেবে এ ধরনের ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে। রাশিয়ার সংসদ দ্যুমা সুইডিশ সরকারের মদদে পবিত্র কুরআন অবমাননার নিন্দা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, রাশিয়ায় পবিত্র কুরআন অবমাননা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান আহমাদ আততাইয়্যেব সুইডিশ পন্য বর্জনের পদক্ষেপ নিতে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানের চাঁদ দেখতে সন্ধ্যায় সভা,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র রমজান মাসের তারিখ নির্ধারণের লক্ষ্যে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার (১১ মার্চ)। হিজরি ১৪৪৫ সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় (বাদ মাগরিব) এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠেয় সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"লজ্জা মুসলিম চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ",ইসলাম ধর্ম,"লজ্জা বা হায়া শব্দটি বেহায়াপনা ও অশ্ল­ীলতার বিপরীত অর্থে ব্যবহৃত হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক ধর্মেরই কিছু না কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। লজ্জাশীলতা হলো ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্য।’ লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। লজ্জাশীলতার মাধ্যমে একজন মুসলমানের ঈমানের পরিমাপ করা যায়। যিনি অবলীলাত্রমে ও নির্দ্বিধায় লজ্জাকর কাজ করে যায় এবং নিজের বেহায়াপনা বা অশ্ল­ীলতার জন্য এতটুকুন অনুতপ্ত হয় না, বুঝতে হবে তার ঈমানে বড় ধরনের কোন ত্রুটি রয়েছে। অপর দিকে এমন ব্যক্তি রয়েছেন যার দ্ধারা কোন লজ্জাকর কাজ সংঘটিত হলে, সাথে সাথে ভুলের জন্য আড়ষ্ট হয়ে মুখ লুকায় এবং বিবেকের কষাঘাতে জর্জড়িত হয়। তখন বুঝতে হবে তাঁর ঈমান জীবিত আছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। আর ঈমানের স্থান বেহেস্ত। অপরদিকে অকথ্য গালিগালাজ জুলুমের অন্তর্ভুক্ত। আর জুলুমের স্থান দোযখ।’ (আহমাদ)। লজ্জা মু’মিনের ভূষণ। এটি মু’মিনের চারিত্রিক সৌন্দর্যকে সুশোভিত করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) লাজুক প্রকৃতির নম্র-ভদ্র, সহনশীল ও কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। হযরত আবু সাইদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) কুমারী মেয়েদের চেয়েও অধিকতর লজ্জাশীল ছিলেন। তিনি যখনই কোন লজ্জাকর কাজের সম্মুখীন হতেন, তাঁর মুখ রক্তিমবর্ণ ধারণ করতো। রাসুল (সা.) বলেছেন লজ্জা ও ঈমান অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। যখন একটির অভাব ঘটে, তখন অন্যটিও বিলুপ্তির পথ ধরে। লজ্জাহীন ব্যক্তির চরিত্র হয় অশ্ল­ীল। সে সমাজের এমন হীন কাজ নেই যা সে করতে পারে না। এ ধরনের ব্যক্তি সাধারণত ফাসেক, পাপিষ্ঠ, কদাচারী, দৃুর্বৃত্ত ও দুর্নীতিপরায়ণ হয়। লজ্জাহীনতা তার আচরণকে করে উদ্যত, স্বভাব হয়ে উঠে রুক্ষ, মেজাজের ভারসাম্য হারিয়ে সামাজিক জীবন যাপনে বেপরোয়া, উন্মাদ, পরশ্রীকাতর, পরধনে লোভী, ঠাউট-ভাটপার ও দুর্নীতিবাজ এক কথায় উন্মাদ ব্যক্তিতে পরিণত হয়। এদের আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো যে, এরা সাধারণত মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে। মিথ্যাই এদের প্রধান পূঁজি হিসাবে কাজ করে। এই রকম একজনমাত্র নির্লজ্জ ব্যক্তি একটি সমাজ, একটি রােষ্ট্রর জন্য অশান্তি ও বিপর্যয়ের জন্য যতেষ্ট কারন হতে পারে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিন্মোক্ত হাদীস থেকে লজ্জাহীন ব্যক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাই। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোন মানুষের অধঃপতন ঘটে, প্রথমে তার হৃদয় হতে লজ্জার বিচ্যূতি ঘটে। পরে সে নিকৃষ্ট কাজের অনুগামী হয়। যখন কোন পাপীষ্ট আল্লাহর রোষানলে নিপতিত হয় তখন তার হৃদয় হতে লজ্জা উঠিয়ে নেন। আর যখন লজ্জা বিচ্যূত হলো, তখন হিংসুক হয়ে উঠে এবং হিংসার আগুণে জ্বলতে থাকে। শত্রুতা করতে দেখবে অথবা শত্রু দ্ধারা আক্রান্ত দেখবে। যখন উল্লেখিত দুই অবস্থায় কাউকেও দেখবে, বুঝবে তার থেকে আমানত উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এবং যখন সে আমানত বিচ্যূত হলো, তখন তাকে আমানত খেয়ানতকারী অথবা আমানত বঞ্চিত দেখতে পাবে। বস্তুতঃ যখন তাকে এরূপ অবস্থায় দেখবে, মনে করবে তার থেকে স্নেহ-মমতা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আর যখন সে দয়া বিচ্যুত হলো, তোমরা তাকে বিতাড়িত, অভিশপ্তরূপে দেখতে পাবে। যখন তাকে এমতাবস্থায় দেখবে, মনে করোও তার গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলা হয়েছে। (অর্থাৎ ইসলাম বিচ্যুত হলো)Ñইবনে মাজা। লজ্জাশীলতা কোন দূর্বলতার নাম নহে। বরং লজ্জাশীল ব্যক্তি একজন দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী। লজ্জা হলো, তার চরিত্রের মার্জিত রুচীশীল পোষাক সদৃশ। রাসুল (সা.) বলেছেন : নির্লজ্জতা যাকে আকৃষ্ট করে সে চিরকলুষ হয়। অপরপক্ষে লজ্জা যাকে পরশ লাগায় সে চিরসুন্দর হয়ে উঠে। লজ্জাশীল ব্যক্তি মানসম্মানকে এতটাই অগ্রাধিকার দেয় যে. প্রয়োজনে নিজের প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জন দিবে কিন্তু আত্মমর্যাদার অবমাননা হতে দেবে না। লজ্জা ও ভয় পাশাপাশি অবস্থান করে। প্রথমতঃ লজ্জাশীল ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে। সে এ বিশ্বাস পোষণ করে যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার প্রতিটি কথা ও কাজ প্রত্যক্ষ করছেন। এ ধরনের ব্যক্তি সর্বদা আল্লাহকে হাজির-নাজির জানে বলেই কোন লজ্জাকর কাজ তার দ্ধারা সংঘটিত হয় না। দ্বিতীয়ত, নিজের ব্যক্তিত্ব, মর্যাদা ক্ষুণœ হওয়ার ভয় করে। মানুষের দৃষ্টিতে সে নিকৃষ্ট হেয় প্রতিপন্ন হবে এ ভয়ে যে কোন অপকর্মে লিপ্ত হয় না। এটি কোন দূর্বল চিত্তের লক্ষণ নয়। বরং এ ধরনের ব্যক্তিরাই সমাজের দৃঢ়চিত্ত ও বিরোচিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়। যার লজ্জা নাই তার মধ্যে আল্ল­াহর ভয় নাই। যার মধ্যে আল্লাহর ভয় নাই তার মধ্যে ঈমান কি করে থাকে। কারণ লজ্জাহীন ব্যক্তি আল্লাহর কোন হুকুমের পরোয়া করে না। সমাজের সকল কু-কাজের একচ্ছত্র নায়ক বনে যায়। এ ধরনের লোকেরা অশ্ল­ীল ও নিন্দনীয় কাজ করে অনুতপ্ত হওয়ার পরিবর্তে তৃপ্তির নিঃস্বাস ছাড়ে। লক্ষ-কোটি জনতার ধিক্কারকে সে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়। সমাজ ও সভ্যতার সকল নিয়ম-কানুনকে সে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। সামাজিক বিপর্যয় ও অসংখ্য বণী আদমের দূর্ভোগে সে পশুত্বের অট্রহাসি ছড়ায়। দুনিয়ার সকল কিছুই তার জন্য অতি সামান্যই মামুলী ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবী নামক এ গ্রহটি সকল জীবের জন্য বসবাসের অনোপযোগী হযে পড়ে। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেন, জলে-স্থলে ফাসাদ ছড়িয়ে পড়েছে। এটি পৃথিবীর নির্লজ্জ মানুষদের হাতের কামাই। নির্লজ্জরা সাধারণত হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়। সত্য থেকে অনেক দুরে অবস্থান করায় সত্যের চিন্তা ও উপলব্ধি করতে পারে না। অসত্য, অন্যায় ও অকৃতজ্ঞতার ওপর এদের জীবনের ভীত রচিত হয়। পৃথিবীর ইতিহাস স্বাক্ষী এ ধরনের ব্যক্তিরা ইতিহাসে কালো পাতায় শুধু স্থান পেয়েছে। কিন্তু জীবিত নির্লজ্জরা এ সমস্ত ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,দাসী থেকে রাজ উপদেষ্টা হন যে গণিতবিদ,ইসলাম ধর্ম,"লুবনা কুরতুবিয়্যা ছিলেন একজন স্প্যানিশ মুসলিম নারী গণিতবিদ ও কবি। খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি তাঁর সাহিত্যপ্রতিভা ও বিজ্ঞানে বিশেষ দক্ষতার জন্য খ্যাতি লাভ করেন। লুবনার জন্ম হয়েছিল একজন দাসী হিসেবে এবং তিনি স্পেনের বিখ্যাত রাজপ্রাসাদ ‘মাদিনাত আল জাহরা’তে বেড়ে ওঠেন। তিনি স্পেনের উমাইয়া খলিফা দ্বিতীয় হাকামের পাঠাগারের একজন লিপিকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।পরবর্তী সময়ে নিজের মেধা, প্রতিভা, জ্ঞানগত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার দরুন রাজ-উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন।লুবনা খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমানের আমলে মাদিনাত আল জাহরা প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল একজন দাসী হিসেবে। কিন্তু জন্মের পরপরই আরো অনেকের মতো তিনি মুক্তি পান।তবে গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এইচ এম পুয়েত্রা ভিলচেজের দাবি লুবনা ছিলেন খলিফা আবদুর রহমানের কন্যা। একজন মুক্তিপ্রাপ্ত দাসীর গর্ভে তাঁর জন্ম হয়। রাজকীয় হেরেমেই তিনি বেড়ে ওঠেন। রাজকীয় ব্যবস্থাপনায় লুবনার শিক্ষাদীক্ষা সম্পন্ন হয়, যা তাঁকে পরবর্তী সময়ে একজন গণিতবিদ, ভাষাবিদ, কবি ও রাজ উপদেষ্টা হতে সাহায্য করেছিল।অবশ্য শুধু লুবনা নয়, বরং ইসলামী শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে যুগে যুগে মুসলিম শাসকরা বহুসংখ্যক দাস মুক্ত করেছেন, তাদের শিক্ষিত করে উপযুক্ত পদে নিযুক্ত করেছেন।লুবনার কর্মজীবন শুরু হয় দ্বিতীয় আল হাকামের পাঠাগারের একজন লিপিকার হিসেবে। খলিফা দ্বিতীয় আল হাকামের সময় ১৭০ জন এমন নারী সম্পর্কে জানা যায়, যাঁরা শহর ও শহরতলিতে মূল্যবান পাণ্ডুলিপির অনুলিপি তৈরি করতেন। পরবর্তী সময়ে খলিফা তাঁকে একজন আবাসিক সহকারী ও পণ্ডিত হিসেবে নিয়োগ দেন। কূটনৈতিক বার্তা প্রেরণ এবং রাজকীয় ফরমান লেখার ক্ষেত্রে খলিফা লুবনার প্রতি আস্থাশীল ছিলেন।আরবি, স্প্যানিশের পাশাপাশি তিনি গ্রিক, হিব্রু ও লাতিন ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।লুবনার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ছিল রাজকীয় পাঠাগারের তত্ত্বাবধান করা। আর লিপিকার হিসেবে কাজটি তাঁর জন্য সহজ ছিল। পাঠাগারের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ বই পাঠের সুযোগ পান এবং সেগুলোতে মন্তব্য ও টীকা লেখেন। যার মধ্যে আর্কিমিডিস ও ইউক্লিডও ছিল। হাদসাই বিন শাপরুতের সঙ্গে তিনি মাদিনাত আল জাহরার রাজকীয় পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং এর সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এই পাঠাগারে কমপক্ষে চার লাখ বই ছিল। পাঠাগারের জন্য প্রাচীন পাণ্ডুলিপির সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। এ সময় তিনি কায়রো, দামেস্ক, বাগদাদসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শহর ভ্রমণ করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive Dhaka Tribune,"বিজ্ঞানের শিক্ষক ধর্ম অবমাননা করেননি, আটকে রেখে আপনারা করছেন ",অন্যান্য,"বিজ্ঞানের শিক্ষককে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হেনস্তা করা হয়েছে পর্যন্ত জেনে বালিতে মুখ গুঁজে দিয়েছিলাম। যখন জানতে পারলাম ওই শিক্ষক গ্রেপ্তার আছেন তখন বুঝলাম ক্রমশ তপ্ত বালুতে ডুবে যাচ্ছে সারা দেশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে প্রতিবাদ করছেন, অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছেন। আমি ভাবছি বিলম্ব, তাই তো বিলম্ব মানে দেরি! আমি আরও ভাবছি মাত্র ১৫/১৬ বছরের শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করছেন কারণ তিনি মেনে নিতে রাজি হননি যে, ধর্মই সব বিজ্ঞানের উৎস! তাই তিনি ধর্মের অবমাননা করেছেন! বিলম্ব মানে দেরি, তাই না? ইদানিং দেখতে পাই, ইদানিং, না কি আগেও ছিল, আমি ভালো জানি না। আমি দেখতে পাই ইদানিং যে, ধর্মের খুব দায় পড়েছে বৈজ্ঞানিক হওয়ার। মানে, ধর্মের অনুশাসনগুলো কত আধুনিক আর কত বেশি বিজ্ঞানের লিটমাস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়, তা দেখানোর জন্য বিশ্বাসীরা খুব ব্যস্ত। বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার ধর্মগ্রন্থে আছে এ কথা প্রমাণ করতে ধার্মিকেরা মরিয়া। বৈজ্ঞানিক হওয়ার জন্য ধর্মের এই ব্যাকুলতা আমরা পেলাম কোথায়? নাকি আমার ধর্ম ছাড়া আর বাকি সব বিশ্বাস বা আচরণ যে অবৈজ্ঞানিক আর অযৌক্তিক, তা বোঝানো এখন আমাদের অবশ্য কর্তব্য। আরেকজনকে ছোট করলেই আমরা বড় হই শুধু! যতটুকু বুঝি বিজ্ঞান একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। তাই তা কখনো বদলায়, প্রায়ই নানা দিকে মোড় নেয়, হামেশাই নতুন সময় তার সংস্কার করে। সংস্করণ সম্ভব নয় বলে ধর্মগ্রন্থের পক্ষে বৈজ্ঞানিক হওয়ার ঝুঁকি সব সময় রয়ে যায়- বিজ্ঞানে আজকের সমাধান আগামীকাল এমনকি হাসির খোরাকও হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে আর পৃথিবী সমতল, এই ছিল এক সময়ের বিজ্ঞান! আবার মহাকাশ, মহাসাগর বা চিকিৎসাবিজ্ঞান/জীবাণুর মতো অসংখ্য বিষয় নিয়ে মানুষের জ্ঞান বাড়তে পারে, খুব কাছাকাছি সময়ই পাল্টে যেতে পারে বা সংশোধিত হতে পারে। তাই আজকের বিজ্ঞান মাথায় রেখে যারা পবিত্র গ্রন্থের মহত্ত্বের আলাপ দিচ্ছেন তারা কি একটু বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেলছেন না? একজন মহাজন বললেন, ধর্মের আচরণে বা বইয়ে বিজ্ঞানের অনুসন্ধান আগেও ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা এমনকি বিজ্ঞানীরাও দেশে বিদেশে যার যার ধর্মের বিশ্বাস-আচরণ-নীতিমালার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরেছেন। আমিও মানি তারা এরকম করেছেন। গুগল-ইউটিউবের এই যুগে একটু পেছনে গিয়ে তাদের দাবি আর শ্রেষ্ঠত্বের পক্ষে যুক্তি এখন দেখলে তাদের জন্য একটু মায়াই হতে পারে। যেসব বিশ্বাসের, বয়ানের বা ডিভাইন গাইডলাইনের অংশগুলো তারা বৈজ্ঞানিক বলে দৃঢ় প্রমাণ হাজির করেছিলেন এখন বিজ্ঞান সেগুলোর বেশিরভাগই সংশোধন করে নিয়েছে। তো এখন? সৃজনশীল হয়ে অনুবাদের দোহাই দেওয়া ছাড়া আর উপায় কী? বিশ্বাসের মুরুব্বি ধর্মের গুরুদের প্রতি আমার আহ্বান, বিশ্বাসই আসল, সেই শিক্ষাই দিন। কালের পাল্লায় সবকিছু না মাপাই বোধহয় ভালো। সবশেষে বলি, বিজ্ঞানের শিক্ষক ধর্মকে অবমাননা করেননি। বিজ্ঞানের সবকিছু ধর্ম থেকে আসেনি বললে ধর্মের অবমাননা হয় না। ধর্ম বিশ্বাসে ভর দিয়ে চলে তাই তা বিজ্ঞান-নির্ভর নয়। আপনারা যারা তাকে হেনস্তা করলেন, আটকে রাখছেন, তারাই ধর্মের অবমাননা করছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"রমজান : পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভালোবাসার মাস ",ইসলাম ধর্ম,"মাহে রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। সহমর্মিতার মাস। প্রতি বছরই সংযম ও নেক আমলের বার্তা নিয়ে এ মাসের আগমন ঘটে। এ মাসের প্রতিটি দিনই সাহরি, ইফতার, তারাবিহ, নফল নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির-আযকার ও দান-খয়রাতের মতো বহুবিধ ইবাদতের সমাহার। আর তাই এ মাসে মুসলমানদের দৈনন্দিন রুটিন, আমলের প্রস্তুতি, আমলের উপলক্ষ ও নেক কাজের আগ্রহ বরাবরই একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। পাশাপাশি এ মাসের অনিবার্য বিষয় যেহেতু, শারীরিক অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ, যা রোজার দীর্ঘ উপবাসের কারণে হয়ে থাকেÑ তাই এ সময় অন্যের একটু সহায়তা ও সহমর্মিতা খানিকটা হলে স্বস্তি এনে দিতে পারে রোজাদারের মনে। সুতরাং বরকতপূর্ণ এই মাহে রমজানে রোজা ও অন্যান্য ইবাদতে বরকত লাভের একটি অনিবার্য অনুষঙ্গ হচ্ছে, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা। তাছাড়া পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একটি স্বতন্ত্র নেক আমলও। বলা বাহুল্য, মাহে রমজানে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অন্যান্য ইবাদতের মতোই বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। নেককাজ ও তাকওয়া অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যের সহায়তা ও সহযোগিতা করা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করবে। গুনাহ ও জুুলুমের কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করবে না। আল্লাহকে ভয় করে চলো। নিশ্চয়ই আল্লাহর শাস্তি অতি কঠিন।’ (সূরা মায়েদা : ২)। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের পার্থিব কষ্টসমূহের একটি দূর করে দেয়, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীর অভাবের কষ্ট লাঘব করে, আল্লাহ তাআলা তার দুনিয়া ও আখেরাতের অভাবের কষ্ট লাঘব করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আল্লাহ তাআলা বান্দার সহায়তায় থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সহায়তায় থাকে।’ (সহীহ মুসলিম : হাদিস ৩৮)। আরেক হাদিসে এসেছেÑ ‘তোমাদের মধ্যে যে তার ভাইয়ের উপকার করার সামর্থ্য রাখে, সে যেন তা করে।’ (সহীহ মুসলিম : হাদিস ৬১)। ‘শুআবুল ঈমান’ ও ‘সহীহ ইবনে খুযাইমা’র এক রেওয়ায়েতে রমজান মাস সম্পর্কে এসেছেÑ (রমজান মাস) সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মাস। (শুআবুল ঈমান : হাদিস ৩৩৩৬; সহীহ ইবনে খুযাইমা : হাদিস ১৮৮৭)। কোরআন ও সুন্নাহর বাণীগুলো এ বিষয়ে সুস্পষ্ট যে, নেক কাজে মুসলিম ভাইয়ের সহযোগিতা করা অনেক বড় নেক আমল। আল্লাহ তাআলা নিজেই এর আদেশ করেছেন এবং আল্লাহ তাআলা সহায়তাকারীর সাহায্যে থাকার সুসংবাদ দিয়েছেন। আর তা যদি হয় মাহে রমজানে! রোজাদারের সহযোগিতা করার কারণে! তাহলে তো ‘নূরুন আলা নূর’। বিশেষত পৃথিবীর এক সঙ্কটকালে রমজান আমাদের মাঝে এসেছে। যেখানে সহযোগিতা ও সহমর্মিতাই পারে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে। নেক কাজে মুসলিম ভাইয়ের সহযোগিতা, বিশেষভাবে রোজাদারের সহযোগিতা একটি বিশাল ও বিস্তৃত অধ্যায়। এখানে শুধু রোজাদারের সহযোগিতার কয়েকটি আঙ্গিক ও দিক সংক্ষিপ্তাকারে পেশ করা হলো। আল্লাহ তাআলা আমাদের এগুলোর ওপর আমল করে রমজানের বরকতকে বহুগুণে বাড়িয়ে নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ইত্তেফাক,কলাবাগানে পূজার অনুমতি না দেওয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ,হিন্দু ধর্ম,"ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডিতে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে দুর্গাপূজা উদ্যাপনের অনুমতি না দেওয়ায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও মাঠের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করেছে সম্মিলিত হিন্দু সংগঠন।শনিবার (৯ অক্টোবর) বিকালে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংগঠনের আহ্বায়ক কপিল কৃষ্ণ মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সুমন কুমার রায়ের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে। আরো বক্তব্য রাখেন অখিল মন্ডল, সাজেন মিশ্র, সুজন ঘোষ ও সৈকত কুন্ডসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার প্রায় ৬০ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাস করেন। এ জন্য কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠেই ২০০৭ সাল থেকে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন করা হচ্ছে। অন্যান্য বারের মতো গত ২৬ আগস্ট পূজা উদ্যাপনের জন্য আমরা সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর লিখিত আবেদন করি। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া পাইনি। যা স্বাধীন দেশে ধর্ম পালনে বাধা বলে মনে করি। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র থাকার পরও সিটি করপোরেশনের আচরণ আমাদের ব্যথিত করেছে।’ আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তারা আরো বলেন, সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করলেও সিটি করপোরেশনের আচরণ সাম্প্রদায়িক। আমরা মেয়রের এমন আচরণের প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই আচরণের কারণে ২ কোটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আজ অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা উদ্বিগ্ন এ বিষয় নিয়ে। আজকের মধ্যে আমরা অনুমতি প্রদান করে পূজা উদ্যাপন করার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বক্তব্য: দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) গত শুক্রবার রাতে এক লিখিত বক্তব্যে পূজা উদ্যাপনের অনুমতি প্রদান না করার বিষয়ে জানায়। গতকাল শনিবারও তারা অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি। সিটি করপোরেশন জানায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র থাকার পরেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অসহযোগিতার কারণে পূজা উদ্যাপন করতে পারছেন না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অভিযোগ করেছেন। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পূজা উদ্যাপন কমিটি কর্তৃক পূজা উদ্যাপনকালে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠ ও মাঠের স্থাপনাসমূহের কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি/বিনষ্ট না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, এমন শর্তসাপেক্ষে পূজা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করার বিষয়টি তারা উল্লেখ করেননি। এছাড়া মন্ত্রণালয় প্রদত্ত ‘শর্তসাপেক্ষ অনুমতি প্রদান’ করার জন্য ডিএসসিসি’র কাছে যে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে, এতে পূজা আয়োজনের ফলে কলাবাগান মাঠ কিংবা প্রকল্প এলাকায় কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে তার যথার্থ ক্ষতিপূরণ/জরিমানা দেওয়া হবে এমন নিশ্চয়তা প্রদানপূর্বক কমিটির পক্ষ হতে এখন পর্যন্ত ডিএসসিসির কাছে কোনো আবেদনও করা হয়নি। সিটি করপোরেশন জানায়, কলাবাগান মাঠ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় কলাবাগান মাঠের উন্নয়ন, মাঠ হতে ধানমন্ডি-৩২ এবং মাঠ হতে ধানমন্ডি হ্রদের পানসি রেস্তোরাঁ পর্যন্ত পথচারীদের হাঁটার পথ (ফুটপাত), মাঠের চারপাশে নর্দমা (ড্রেনেজ) ব্যবস্থা ও হ্রদের পাড়ে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) নির্মাণ, মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য সুবিধা সংবলিত অনুষঙ্গ সৃষ্টি এবং অনুশীলনের জন্য জাল (নেট) স্থাপন ইত্যাদি বহুবিধ কর্মযজ্ঞ চলমান। ২০১৯ সালে কলাবাগান মাঠে বিশেষ বিবেচনায় মাঠের ক্ষয়ক্ষতি না করা এবং ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করার শর্তে দুর্গাপূজার অনুমতি দেওয়া হয়। সামগ্রিকভাবে সে সময় প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে মর্মে মুচলেকা হলেও বস্তুত কমিটি কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রদান করেনি।",ধর্মীয় উৎসব,Negative ভোরের কাগজ,"ধর্মের ব্যবহার কি ক্ষমতার জন্য ",অন্যান্য,"রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারের কারণে দারিদ্র্য কমছে না বরং দরিদ্র মানুষকে শোষণ করা হচ্ছে ধর্মীয় বেড়াজালে আবদ্ধ করে। রাষ্ট্র শাসকরা ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের ভাগ্য পাল্টাচ্ছেন আর কৌশলে জনগণকে রাখছেন ধর্মীয় চেতনায় মাতোয়ারা। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্র শাসকদের বেঁধে দেয়া ধর্মীয় চেতনার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারছে না মনস্তাত্ত্বিক কারণে। ধর্মীয় মোড়কে শোষণটা বন্ধ হয়নি। সারা পৃথিবীর রাজনীতিতে ধর্ম এখন বড় ফ্যাক্টর। দুনিয়াজুড়ে রাজনীতির প্রচ্ছদ যে ধর্মীয় মোড়কে আচ্ছাদন করা হচ্ছে তাতে কি ধর্মের উৎকর্ষতা সাধিত হবে, নাকি ধর্মকে রাজনীতির রণকৌশলের বর্ম বানিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পরিষ্কার করাটাই মুখ্য হয়ে যাবে? আর এই কারণে ধর্মীয় মূল আর্দশটাই বিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার যে, ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়াটাই এখন মুখ্য বিষয়। ধর্মীয় বিষয়গুলো অনুশীলন এখানে অনেকটা গৌণ। ধর্মের ব্যবহার শুধু রাজনীতিবিদরাই করে ক্ষান্ত নন, পুঁজিবাদকে টিকিয়ে রাখতে ব্যবসায়ীরাও ধর্মকে পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবহার করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই রাজনীতির মতো ধর্মের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। ধর্মের ব্যবহারের মাধ্যমে অনুশীলন করা রাজনীতি সমাজে কোনো প্রকার শান্তি আনতে পারে না এটা সবারই জানা, কারণ প্রত্যেক ধর্মানুসারীরাই নিজের ধর্মটাকে বড় মনে করে। এই মনে করাতেই সৃষ্টি হয় সংঘাতের। আর এ ধরনের রাজনীতির কারণে সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ভারতের সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে বড় অনুঘটকের কাজ করেছে ধর্ম। জুশনে মোহাম্মাদ নামে ইসলাম ধর্মের একটি জঙ্গি সংগঠন এবারের ভারতের নির্বাচনে বিজয়ী মোদির পালে হাওয়া জুগিয়েছে। সংগঠনটির নেতা আজহার মাসুদ নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এই জঙ্গি ভারত ও পাকিস্তানের চির বৈরী সম্পর্কের আগুনে ঘি ঢালেন। জঙ্গি নেতার ঘি ঢালায় পাকিস্তান-ভারত ঘৃতাগ্নিতে পুড়তে থাকে, যদিও এই অনল তেমন একটা ছড়ায়নি, স্বল্প সময়ের মধ্যেই থেমে যায়। ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত থেমে যাওয়ার পর জঙ্গি নেতা আজহার মাসুদ আশ্রয় নেন চীনে। ভারত রাষ্ট্র সংঘের কাছে দাবি করে চীন যেন আজহার মাসুদকে ভারতে ফেরত দেয়। চীন মাসুদকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। গণচীন সমাজতান্ত্রিক দেশ, দেশটির ক্ষমতায় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংগঠন। পৃথিবীর কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে এত সংখ্যক সদস্য নেই যত সংখ্যক সদস্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টিতে রয়েছেন। এমনকি পৃথিবীর অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা বেশি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টিতে একটা নিয়ম আছে তা হলো কমিউনিস্ট পার্টির কোনো সদস্য প্রকাশ্যে কোনো ধর্মানুসারী হতে পারবেন না। অর্থাৎ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কোনো সদস্য কোনো ধর্মেরই অনুসারী নন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ধর্মনিরপেক্ষ একটি রাজনৈতিক দলের শাসনাধীন চীনে ধর্মীয় জঙ্গি নেতা আজহার মাসুদ কী করে নিরাপদে ঠাঁই পান? বাস্তব প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে দেখা যায় চীন এই অঞ্চলের ভৌগোলিক রাজনীতিতে স্বীয় আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখতে পাকিস্তানের মতো একটি উগ্র মৌলবাদী রাষ্ট্রকে সহায়তা করে। বর্তমানে এশিয়া অঞ্চলে শিল্প ক্ষেত্রে চীনের পাশাপশি ভারত অগ্রসরমান একটি দেশ। চীনের শাসকরা নিজের বাজারকে সুসংহত রাখতে নানা রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। তার কারণেই নিজেরা ধর্মনিরপেক্ষ হয়েও জঙ্গি নেতাকে ঠাঁই দিচ্ছেন। সুতরাং সার্বিক প্রেক্ষাপটে ধর্মটা একটি উপকরণ, যা ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের আধিপত্য বজায় রাখছে বিভিন্ন দেশের ক্ষমতাসীনরা বিভিন্ন দেশে দেশে বা নিজ দেশে। আর এ ধরনের নিয়মে রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারের কারণে দারিদ্র্য কমছে না বরং দরিদ্র মানুষকে শোষণ করা হচ্ছে ধর্মীয় বেড়াজালে আবদ্ধ করে। তাই দরিদ্র মেহনতি মানুষও পাচ্ছে না তার ন্যায্য পাওনা। রাষ্ট্র শাসকরা ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের ভাগ্য পাল্টাচ্ছেন আর কৌশলে জনগণকে রাখছেন ধর্মীয় চেতনায় মাতোয়ারা। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্র শাসকদের বেঁধে দেয়া ধর্মীয় চেতনার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারছে না মনস্তাত্ত্বিক কারণে। অন্যদিকে আবার তারা নিজের নায্যটাও বুঝে নিতে পারছেন না শাসকদের কাছ থেকে ধর্মীয় বেড়াজালে মাতোয়ারা হয়ে থাকার কারণে। সরকার ধর্মীয় খাতে অকাতরে অর্থ ব্যয় করছে। চলতি অর্থবছরে সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে দুই থেকে তিনটি করে মসজিদ উন্নয়নের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে টাইলসসহ সৌন্দর্যবর্ধন এবং নানা সংস্কারের কাজ করেছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মসজিদ এখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেইসঙ্গে দেশের হিন্দু ধর্ম পালনকারীদের উপাসনালয় মন্দিরের উন্নয়নের কাজ করছে সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্যাগোডা, গির্জার উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ হয় সরকারিভাবে। দেশের প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি আরেকটি শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিভাবেই চলছে। তা হলো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা। বাংলাদেশের ইসলাম ধর্ম পালনকারী মানুষের সংখ্যা বেশি। এর পরের স্থানে রয়েছে হিন্দু ধর্ম পালনকারীর সংখ্যা। তারপর অন্য ধর্ম পালনকারীরা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মসজিদ ও মন্দিরভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য রয়েছে প্রকল্প। বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক। আর প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টিও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখানে প্রশ্ন হলো, প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক থাকার পরও কেন মন্দির বা মসজিদভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজন? এই প্রকল্পে সরকারিভাবেই অর্থ ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, প্রতি বছরই কৃষক তার উৎপাদিত ধান সরকারিভাবে বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করতে পারছে না। এই বিক্রি করতে না পারার কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র নেই। সরকার দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্য গুদামও স্থাপন করতে পারছে না। এ বছর সরকার নিজে থেকেই ঘোষণা করেছে দেশের খাদ্য গুদামগুলোতে খাদ্য মজুত রাখার মতো স্থান নেই। তাই সব ধান সরকারের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। লালসালু উপন্যাসের কোনো এক জায়গায় মসজিদ নির্মাণের বিষয়টিও উঠে এসেছিল, লালসালু উপন্যাসটির প্রেক্ষাপটটা কল্পনার হলেও সেই সময়ের সমাজ ব্যবস্থার একটি প্রতিবিম্ব হিসেবে গণ্য করা যায়। সময়ের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন কতটা হয়েছে? সবই শক্তির নিত্যতার সূত্রের মতো। এক রূপ থেকে অন্যরূপে রূপান্তর হয়েছে মাত্র। কিন্তু ধর্মীয় মোড়কে শোষণটা বন্ধ হয়নি। বিশ্বের দেশে দেশে রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় থাকার জন্যও মাঝে মাঝে মুঘল স¤্রাট আকবরের মতো সব ধর্মকেও একীভূত করে ফেলার চেষ্টাও করেন। তাই সব ধর্মের নামে চলে নানা গুণগান। কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলে গেছেন, মানুষ এনেছে ধর্মগ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ। সুতরাং মানুষের উন্নয়ন বাদ দিয়ে যারা রাজনৈতিক কারণে ধর্মের উন্নয়নের নামে লোক দেখাচ্ছেন তারা প্রকৃতার্থে মানুষের কল্যাণ চান না। তারা ক্ষমতার মোহে বা ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে ধর্মকে নানাভাবে ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় উত্থান ঘটেছে ধর্মীয় রাজনীতির। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে বিচ্যুত হওয়ার ফলেই আজকে কৃষকসহ মেহনতি মানুষের দুরবস্থা। তারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের সুফল ভোগ করতে পারছে না। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরতে হলে, রাজনীতি থেকে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। আর এটা করতে না পারলে কৃষক ও মেহনতি মানুষের জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে না।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,ইসলামে প্রতিবন্ধীদের অধিকার,ইসলাম ধর্ম,"মহান আল্লাহ তাআলা সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা। তাঁর সৃষ্টিকুলের মধ্যে কিছু সৃষ্টিকে আমরা কখনো অস্বাভাবিক দেখতে পাই। এতে তাঁর বিশেষ উদ্দেশ্য ও মহান রহস্য বিদ্যমান। কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই সৃষ্টির রহস্য হলো প্রথমত, বান্দা যেন তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পারে, তিনি যেমন স্বাভাবিক সুন্দর সৃষ্টি করতে সক্ষম, তেমনি এর ব্যতিক্রমও করতে সক্ষম। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ যাকে বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ রেখেছেন; সে যেন নিজের ওপর আল্লাহর দয়া ও অনুকম্পাকে স্মরণ করে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। কারণ, আল্লাহ চাইলে তার ক্ষেত্রেও সে রকম করতে পারতেন। তৃতীয়ত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা এই সমস্যার বিনিময়ে তাঁর সন্তুষ্টি, দয়া, ক্ষমা ও জান্নাত দিতে চান। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি যার প্রিয় চোখ নিয়ে নিই, অতঃপর সে ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা করে; আমি তার জন্য এর বিনিময়ে জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুতে সন্তুষ্ট হই না।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৯৫৯)। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির করণীয় প্রথমত, ধৈর্য ধারণ করবে এবং সন্তুষ্ট থাকবে। কারণ, এটি তার ভাগ্যের লিখন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘পৃথিবীতে এবং তোমাদের ওপর কোনো বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগৎ সৃষ্টির আগেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। এটা এ জন্য, যাতে তোমরা যা হারাও, তাতে দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদের যা দিয়েছেন, তাতে উল্লসিত না হও। আল্লাহ উদ্ধত ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা হাদিদ, আয়াত: ২২-২৩)। দ্বিতীয়ত, বিশ্বাস রাখবে, আল্লাহ যখন কোনো মুমিনকে পরীক্ষায় ফেলেন, তখন তিনি তাকে ভালোবাসেন এবং অন্যদের থেকে তাকে অগ্রাধিকার দেন। তাই তিনি নবীদের সবচেয়ে বেশি বিপদ-আপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করেছিলেন। নবী করিম রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নবীরা সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত হন, অতঃপর তাঁদের থেকে যাঁরা নিকট স্তরের। মানুষকে তার বিশ্বাস অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হয়। যদি তার ইমান শক্তিশালী হয়, তাহলে তার পরীক্ষা কঠিন হয়। আর যদি তার ইমান দুর্বল হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও সে অনুযায়ী হয়। বিপদ বান্দার পিছু ছাড়ে না। পরিশেষে তার অবস্থা এমন হয় যে সে পাপমুক্ত হয়ে জমিনে চলাফেরা করে।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৪৩ ও ইবন মাজাহ)। তৃতীয়ত, মনে রাখবে যে দয়ালু আল্লাহ মুমিন ব্যক্তিকে তার প্রতিটি কষ্টের বিনিময় দেন, যদি সেই কষ্ট নগণ্যও হয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মুসলিম ব্যক্তিকে কষ্ট, ক্লান্তি, দুঃখ, চিন্তা, আঘাত, দুশ্চিন্তা গ্রাস করলে এমনকি কাঁটা বিঁধলেও আল্লাহ তাআলা সেটা তার পাপের কাফ্ফারা করে দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)। চতুর্থত, মুমিন ব্যক্তি যেন তার নির্দিষ্ট প্রতিবন্ধিতাকে ভুলে গিয়ে শরীরের বাকি অঙ্গগুলোকে কাজে লাগায়। কারণ, কোনো এক অঙ্গের অচলতা জীবনের শেষ নয়। দেখা গেছে, যার কোনো একটি ইন্দ্রিয় বা অঙ্গ অচল, তার বাকি ইন্দ্রিয় বা অঙ্গগুলো বেশি সক্রিয় ও সচল। প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের করণীয় নিজের সুস্থতা ও পূর্ণতার জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের জন্য দোয়া করা। যথাসম্ভব প্রতিবন্ধীদের সাহায্য-সহযোগিতা করা। প্রতিবন্ধীর দেখাশোনা করা তার অভিভাবকের কর্তব্য হলেও সমষ্টিগতভাবে তা সমাজের সবারই দায়িত্ব। ইসলামে প্রতিবন্ধীর গুরুত্ব ও মর্যাদা ইসলামের দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান। ইমান ও তাকওয়া হচ্ছে মানুষের মর্যাদার মানদণ্ড। যে যত বেশি মুত্তাকি, আল্লাহ তাকে তত বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে; পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন, যে বেশি মুত্তাকি।’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩)। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের শরীর ও আকৃতির দিকে দেখেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তরের দিকে দেখেন।’ (মুসলিম)। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা, যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী যেন অপর কোনো নারীকে উপহাস না করে; কেননা, যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১১)। প্রতিবন্ধীদের সামাজিক স্বীকৃতি প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) একাধিকবার তাঁর অনুপস্থিতির সময় মদিনার মসজিদে নববিতে ইমামতির দায়িত্ব এক প্রতিবন্ধী সাহাবির ওপর অর্পণ করে তাদের সমাজের সর্বোচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত করার নজির তৈরি করেন। তিনি সেই প্রতিবন্ধী সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে আজান দেওয়ার কাজেও নিযুক্ত করেছিলেন। (বুখারি, অধ্যায়: মাগাজি, অনুচ্ছেদ: বদর ও ওহুদের যুদ্ধ)। প্রতিবন্ধীদের জন্য ছাড় ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ বিধানে প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে সহজতা ও সহনশীলতা। তাই এমন প্রতিবন্ধী, যে ইসলামের বিধান পালনে একেবারে অক্ষম, যেমন পাগল ও জ্ঞানশূন্য ব্যক্তি, তার ওপর ইসলাম কোনো বিধান জরুরি করে না। আর আংশিক প্রতিবন্ধী যে কিছুটা করতে সক্ষম, তার প্রতি অতটুকুই পালনের আদেশ দেয়। ফরজ বিধান যা মহান আল্লাহ মানুষের জন্য নির্ধারণ করেছেন, যদি মানুষ তা পালনে সক্ষম হয়, তাহলে তার প্রতি তা আবশ্যিক হবে। আর যদি সে তাতে অক্ষম হয়, তাহলে তা থেকে সে মুক্তি পাবে। অর্থাৎ, যে পরিমাণ পালন করতে সক্ষম হবে, সে পরিমাণ তাকে পালন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬)। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন আমি তোমাদের কোনো আদেশ করি, তখন তা বাস্তবায়ন করো, যতখানি সাধ্য রাখো।’ (বুখারি ও মুসলিম)। ইসলামে প্রতিবন্ধীদের অধিকার নবী করিম রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নাও এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও।’ (বুখারি)। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে সদাচরণ করা, সাহায্য-সহযোগিতা করা এবং তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া আবশ্যক। প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ানো মানবতার দাবি ও ইমানি দায়িত্ব। প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে অসদাচরণ বা তাদের উপহাস, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বা ঠাট্টা-তামাশা করা স্রষ্টাকে তথা আল্লাহকে উপহাস করার শামিল। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করে, আল্লাহ ততক্ষণ বান্দাকে সাহায্য করেন।’ (মুসলিম)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘আর তাদের ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিত ব্যক্তিদের হক বা অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত: ১৯)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিজন। আল্লাহর কাছে প্রিয় সৃষ্টি সে, যে তাঁর সৃষ্টির প্রতি সদয় আচরণ করে।’ প্রিয় নবী (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্ষুধার্তকে অন্ন দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে ফল খাওয়াবেন। যে তৃষ্ণার্তকে পানি পান করায়, আল্লাহ জান্নাতে তাকে শরবত পান করাবেন। যে কোনো দরিদ্রকে বস্ত্র দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে উত্তম পোশাক দান করবেন।’ (তিরমিজি)। জন্মগত প্রতিবন্ধী হোক কিংবা দুর্ঘটনাজনিত প্রতিবন্ধীই হোক; ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভেদ ভুলে তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসা আমাদের কর্তব্য। প্রিয় নবী (সা.) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে তাঁর অপার ভালোবাসায় ধন্য করেছেন। তিনি যখনই তাঁকে দেখতেন, তখনই বলতেন, ‘স্বাগত জানাই তাকে, যার সম্পর্কে আমার প্রতিপালক আমাকে সতর্ক করেছেন।’ পরে মহানবী (সা.) এই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাহাবিকে দুবার মদিনার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। প্রতিবন্ধীদের প্রতি ভালোবাসা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় সুন্নত। (মুসলিম)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যুগান্তর,সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ,ইসলাম ধর্ম,"২৫ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার। ঘড়ির কাঁটায় আনুমানিক রাত ৪টা। উত্তরের প্রাচীন জনপদ সৈয়দপুর শহর ছাড়িয়ে আমাদের গাড়ি এসে থামল ইসবাগে। গাড়ি থেকে নামতে চোখ পড়ল সুন্দর কারুকার্যে ঘেরা সুরম্য এক মসজিদে। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম। কী অপরূপ মসজিদ। এক দেখাতেই যে কারও নজর কাড়বে এটি। সামনে এগিয়ে গেলাম। মূল ফটকের পাশের এক অংশে ফার্সি এবং বাংলায় বড় করে লেখা ‘চিনি মসজিদ ১৮৬৩’। ওজু শেষে মসজিদে প্রবেশ করলাম। ফজরের সালাত শেষে যখন বেরিয়ে আসি প্রকৃতি তখন বেশ ফর্সা হয়ে গেছে। কোমল স্নিগ্ধ বাতাস। আমরা একদল অভিভূত দর্শক, মুগ্ধ হয়ে দেখছি প্রায় পৌনে দুইশ বছরের পুরোনো এ স্থাপনা। নীলফামারী জেলা সদর থেকে ২০ কিমি. দূরে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার খুব কাছে ইসবাগ এলাকায় অবস্থিত এ ঐতিহাসিক চিনি মসজিদ। বাংলাদেশে যে কয়টি মসজিদ ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে পড়ে, চিনি মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম। শৈল্পিক কারুকাজ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য হিসাবে চিনি মসজিদের রয়েছে বিশেষ খ্যাতি। এ মসজিদে পাঁচ শতাধিক মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। ১৮৬৩ সালে হাজি বাকের আলী ও হাজি মুকুল নামের স্থানীয় দুই বাসিন্দা সৈয়দপুর উপজেলা শহরের ইসবাগ এলাকায় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে প্রথম এ মসজিদের গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তী সময়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় মসজিদটিকে টিনের মসজিদে রূপান্তর করা হয়। এরপর এলাকার লোকজন মসজিদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন। ১৯২০ সালে হাফেজ আবদুল করিমের উদ্যোগে প্রথম মসজিদের প্রথম অংশ পাকা করা হয়। এ সময় মসজিদের দৈর্ঘ্য ছিল লম্বায় ৪০ ফুট ও প্রস্থে ৩৯ ফুট। ১৯৬৫ সালে মসজিদের দ্বিতীয় অংশ পাকা করা হয় এবং ১৯৮০-এর দশকে মসজিদের শেষ অংশ পাকা করা হয়। কারুকার্যের জন্য কলকাতা থেকে মর্মর পাথর ও চীনামাটির নকশা করা থালা আনা হয়। মসজিদের অধিকাংশ কারুকাজ চীনামাটির। মসজিদের নকশার কারিগরও কলকাতা থেকে আনা হয়েছিল। সৌন্দর্য বাড়াতে দেওয়ালে চীনামাটির থালা ও কাচের টুকরা বসানো হয়। এ পদ্ধতিকে ‘চিনি করা’ বা ‘চিনি দানার’ কাজ বলা হয়। ধারণা করা হয় এখান থেকেই এর নামকরণ হয় ‘চিনি মসজিদ’। আবার কেউ কেউ বলেন পুরো মসজিদে চীনামাটির কাজ রয়েছে। এ কারণেও এর নাম চিনি মসজিদ হতে পারে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"সরকারি কাজে ইংরেজি ক্যালেন্ডার ব্যবহার করবে সউদি আরব ",ইসলাম ধর্ম,"সউদি আরব এখন থেকে সরকারি কাজে ইংরেজি ক্যালেন্ডার (গ্রেগোরিয়ান) ব্যবহার করবে। সউদি মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সউদি প্রেস অ্যাজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে। উল্লেখ্য, সউদি আরব ২০১৬ সালে দেশের সরকারি ও আইনগত কিছু কার্যক্রমে হিজরি ক্যালেন্ডারের বদলে ইংরেজি ক্যালেন্ডার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সৌদি আব ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে চান্দ্রভিত্তিক হিজরি ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে আসছিল। তবে ইংরেজি ক্যালেন্ডার দ্বিতীয় ক্যালেন্ডার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। হিজরি ক্যালেন্ডার ১২ মাসের হলেও চাঁদ দেখার ভিত্তিতে এতে প্রতি মাসে থাকে ২৯ থেকে ৩০ দিন। সাধারণত হিজরি ক্যালেন্ডার দিন হয় ৩৫৪টি। আর গ্রেগরিয়ান তথা ইংরেজি ক্যালেন্ডারে দিন থাকে ৩৬৫টি। অর্থাৎ হিজরি ক্যালেন্ডারে সাধারণত ১১টি দিন কম হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,গাজা ও রাশিয়ায় পারমাণবিক বোমা ফেলার আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসম্যানের,ইসলাম ধর্ম,"ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ও রাশিয়ায় পারমাণবিক বোমা ফেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরোশিমা ও নাগাসাকির মতো অবস্থা তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন টিম ওয়ালবার্গ নামে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির এক কংগ্রেসম্যান। সম্প্রতি নিজের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা সভায় এ ধরনের আহ্বান জানান তিনি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিশিগানের রিপ্রেজেন্টেটিভ টিম ওয়ালবার্গ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইল ও ইউক্রেনের মিত্র রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাজার অবস্থা নাগাসাকি ও হিরোশিমার মতো হওয়া উচিত। এই সমস্যা দ্রুত শেষ করুন। একই অবস্থা হওয়া উচিত রাশিয়ারও। এ সময় গাজায় ত্রাণসহায়তা পাঠানোর কঠোর বিরোধিতা করেন ওয়ালবার্গ। তিনি বলেন, ‘গাজায় ত্রাণসহায়তার জন্য আমাদের আর একটি পয়সাও ব্যয় করা উচিত নয়। এই পয়সা উল্টো ইসরাইলের জন্য ব্যয় করা উচিত। কেননা, পৃথিবীর যেকোনো স্থানে, যেকোনো ইস্যুতে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র।’ উল্লেখ্য, টিম ওয়ালবার্গ নামে রিপাবলিকান পার্টির এই কংগ্রেসম্যান একজন ধর্মযাজক ছিলেন রাজনীতিতে আসার আগে। গণসংযোগকালে তার মুখে উচ্চারিত এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ছড়িয়ে পড়েছে ইতোমধ্যে। ওয়ালবার্গের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহলও। একজন সাবেক খ্রিষ্টান যাজক হয়ে তিনি কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন এই নিয়ে জোর সমালোচনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র। বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেসম্যানের এ বক্তব্যকে ‘গণহত্যার স্পষ্ট আহ্বান’ আখ্যা দিয়েছে কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (কাইর)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক দাউদ ওয়ালিদ ওই বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সব আমেরিকানের উচিত ওয়ালবার্গের বক্তব্যের নিন্দা করা, যারা মানুষের জীবন এবং আন্তর্জাতিক আইনকে মূল্য দেয়।’ এদিকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসার চেষ্টা করছেন টিম ওয়ালবার্গ। রোববার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে মার্কিন এ কংগ্রেসম্যান জানান, তার মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে মিডিয়া। তার দাবি, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষে কথা বলেননি তিনি। গার্ডিয়ান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"আল- রাজী: চক্ষু- চিকিৎসাবিজ্ঞানের আবিস্কারক ইসলামী চিন্তাবিদ ",ইসলাম ধর্ম,"আল- রাজী'র সম্পূর্ণ নাম আবু বকর মোহাম্মাদ ইবন জাকারিয়া আল রাজী। তিনি আল- রাজী নামে বেশী পরিচিত। তিনি ল্যাটিন ভাষায় (Rhazes) রাযেস এবং ইংরেজীতে (Rhasis) রাসিস নামে পরিচিত। আল রাজী ছিলেন একজন দক্ষ পারসিক চিকিৎসক এবং দার্শনিক। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞান, আল-কেমি, পদার্থবিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর প্রায় ২০০ বই লিখেছিলেন। তিনিই অপথ্যালমোলজি বা চক্ষু- চিকিৎসাবিজ্ঞানের আবিস্কারক। তিনিই প্রথম ""সালফিউরিক এসিড"" আবিষ্কার করেছেন। যদিও সালফিউরিক অ্যাসিড পূর্বে ‘অয়েল অফ ভিট্রিয়ল’ নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞানী মহলের সুপরিচিত ""সালফিউরিক অ্যাসিড"" নামটি তাঁরই দেওয়া। সালফিউরিক অ্যাসিড একটি শক্তিশালী খনিজ অ্যাসিড বা অম্ল। এই রাসায়নিক যৌগটির কাঠামোগত “হাইড্রোজেন সালফেট” নাম এবং এর সংকেত H2SO4 - টিও তাঁর দেওয়া। তিনি ইথানলও আবিষ্কার করেন। ইথানল সাধারনত ""ইথাইল অ্যালকোহল"" নামে পরিচিত। এটা এক প্রকারের জৈব যৌগ। এটা দাহ্য, স্বাদবিহীন, বর্ণহীন, সামান্য বিষাক্ত ও বিশিষ্ট গন্ধযুক্ত, এবং অধিকাংশ মদ বা মাদকের প্রধান উপাদান। এতে ৯৯% বিশুদ্ধ অ্যালকোহল থাকে। এটা জৈব সংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। আল- রাজী ইথানল উৎপাদন, বিশুদ্ধকরণ এবং চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়াও আবিষ্কার করেন। ইথানল বা ইথাইল অ্যালকোহলের রাসায়নিক সংকেত ""CH3-CH2-OH"" বা ""C2H6O"" বা ""EtOH"" বা ""C2H5OH"" -ও আল রাজী'র দেওয়া। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণও করেছেন। বাগদাদ নগরীতে তাঁর একটি পরীক্ষাগারও ছিল। তাঁর নামে ইরানে ""রাজী ইনষ্টিটিউট"" এবং ""রাজী বিশ্ববিদ্যালয়"" রয়েছে। তাঁর স্মরণে ইরানে প্রতি বছর ২৭শে আগস্ট আল-রাজী দিবস পালন করা হয়। আল- রাজী ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ৬০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive যায়যায়দিন,"ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ পড়ায় সময় বিদেশী ৫ শিক্ষার্থীকে নির্মম নির্যাতন ",ইসলাম ধর্ম,"জাতিসংঘে ভোট দানে বিরত থাকার দিন ভারতে গুজরাটে আবারও মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা ঘটলো। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র ক্ষোভে সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে এআরসি (মুসলিম বিরোধী আইন) পাশ অন্যদিকে বিদেশী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মুসলিমদের ভেতর। এর আগে গত শুক্রবার জুমার দিন দিল্লিতে নামাজ পড়ার সময় এক পুলিশ সদস্য নামাতরত মুসলিদের লাথি মেরে রাস্তার ওপর থেকে সরিয়ে দেয়। নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস। গভীর রাতের পাঁচজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পাসে নামাজ আদায়ে আপত্তি তুলে পাঁচ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। আহত ছাত্ররা উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিক। শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা নিজেদের রুমেই নামাজ পড়ছিলেন। ওই সময় একদল লোক নামাজ পড়ার প্রতিবাদ জানান এবং চেঁচাতে শুরু করেন। ওই লোকরা নিজেরাও ধর্মীয় স্লোগান দিতে শুরু করে। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে পরিণত হয়। জানা গেছে, আমবাদে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ব্লক ‘এ’-তে এ ঘটনা ঘটে। সেখানেই বিদেশী শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস আছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আমদাবাদের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ দমন) নীরজকুমার বদগুজর জানান, ইতোমধ্যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এফআইআর রুজু করা হয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে একজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা। আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঝামেলা শুরুর সাথে সাথে পুলিশকে খবর দেয়া হলেও হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ সেখানে এসে পৌঁছায়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। দেখা যায়, ঘটনায় অন্তত পাঁচটি বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এদিকে ছাত্রাবাসের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত রাত ১১টার দিকে বাইরে থেকে ১০ থেকে ১৫ জন আমাদের হোস্টেল ক্যাম্পাসে আসে। আমরা নামাজ আদায়ের সময় তাদের মধ্যে তিনজন আমাদের হোস্টেল ভবনে প্রবেশ করে। তারা আমাদের বলে যেন আমরা নামাজ আদায় না করি। এরপর জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে শুরু করে তারা। তারা নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এবং তারপর নামাজ আদায় করা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। অন্যান্য অমুসলিম বিদেশী ছাত্ররা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। তখন তারাও হামলার শিকার হয়। তাদের ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। তাদের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও আয়না ভাঙচুর করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার দু’জন এবং আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার এক শিক্ষার্থী এই হামলায় আহত হন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ইত্তেফাক,সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসনসহ ১ জন পূর্ণমন্ত্রী চায় হিন্দু মহাজোট,হিন্দু ধর্ম,"জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন ও একজন পূর্ণমন্ত্রীর দাবি জানায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। শনিবার (১৯ জুন) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি ছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণ, রথ যাত্রায় ১ দিনের সরকারি ছুটিসহ বেশকিছু দাবি তুলে ধরে জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, নির্বাহী সভাপতি দীনবন্ধু রায়, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রতীভা বাকচী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘বাঁচতে শেখা’ নামে দুটি এনজিওকে হিন্দু ধর্ম ও সমাজবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি তোলা হয়। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে হিন্দু সম্প্রদায় সারাদেশের প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও ঘোষণা দেন সংগঠনটির মহাসচিব।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কন্ঠ,মসজিদুল হারামের ৩৫ হাজার কার্পেট পরিষ্কার করা হয় যেভাবে,ইসলাম ধর্ম,"মক্কায় অবস্থিত পবিত্র মসজিদুল হারামে প্রতিদিন লাখ লাখ মুসল্লির জমায়েত হয়। বিশেষত রমজান মাস ও হজের সময় সেখানে ২০ লাখের বেশি লোকের সমাবেশ ঘটে। এ সময় মসজিদের মেঝে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পবিত্র মসজিদুল হারামের মেঝেতে আছে ৩৫ হাজারের বেশি কার্পেট।সব সময় তা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিযুক্ত রাখার পেছনে আছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রতি সপ্তাহে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে দুই হাজার কার্পেট পরিষ্কার করে তাতে সুগন্ধি দেওয়া হয়। মক্কার কুদাইয়ে অবস্থিত বিশেষায়িত একটি প্রতিষ্ঠানে এসব কাজ সম্পন্ন হয়। এ প্রসঙ্গে সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের সঙ্গে কথা হয় মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সেবাবিষয়ক প্রধান জাবের আহমদ আল-ওয়াদানির।তিনি বলেন, ‘পবিত্র মসজিদুল হারামের ৩৫ হাজারের বেশি কার্পেট রয়েছে। মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ ও ইবাদত করতে পারে তাই সেখানে খুবই উন্নত মানের ও বিলাসবহুল কার্পেট বিছানো হয়েছে। এসব কার্পেটের রং সবুজ; মানুষের মন-মানসিকতায় যেন এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে তাই এই রং ব্যবহার করা হয়েছে।’আল-ওয়াদানি আরো জানান, মূলত পবিত্র মসজিদুল হারামের জন্য নরম সুতা ও মোটা স্তূপ থেকে এসব বিলাসবহুল কার্পেট তৈরি করা হয়।এগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন বারবার ধোয়া হলেও তাতে কোনো সমস্যা না হয়। কার্পেটের মান বজায় রেখে অত্যাধুনিক উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তা পরিষ্কার করা হয়। কার্পেট পরিচ্ছন্নতা বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল রয়েছে, যারা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ত্রুটিমুক্ত উপায়ে পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করে।তিন ধাপে পরিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম ধাপে উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্পেট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ময়লা ও ধুলা দূর করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে জীবাণুনাশক, পানি ও বিশেষ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধোয়া হয় এবং জীবাণুমুক্ত করা হয়।তৃতীয় ধাপে অতিরিক্ত পানি দূর করতে কার্পেটগুলো বিশেষ টিউবে বসানো হয়। সব শেষে সূর্য ও বাতাসে শুকাতে কার্পেটগুলো বিছানো হয়। দ্রুত শুকাতে ফ্যানও ব্যবহার করা হয়। এরপর অত্যাধুনিক ঝাড়ু দিয়ে তা মোছা হয় এবং তাতে তায়েফের বিখ্যাত গোলাপজলের সুগন্ধি দেওয়া হয়। অতঃপর প্যাকেট করে রাখা হয়।আল-ওয়াদানি বলেন, প্রতি ঘণ্টায় ২৪০ মিটার ধোয়া হয়। এরপর তা বিশেষ গুদামে সংরক্ষিত রাখা হয়। তাতে পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদে পরিবহনের জন্য প্রস্তুত ২৬ হাজার কার্পেট জমা করা হয়। কার্পেটগুলোকে ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখতে পরিচ্ছন্নতা বিভাগে অত্যাধুনিক মেশিনের একটি পরীক্ষাগার রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) লাখো মানুষের অংশগ্রহণে রাজধানীতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা ",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে বিএসপি চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীর নেতৃত্বে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজধানীতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা জশনে জুলুস র‌্যালী বের হয়েছে। এসময় বাংলাদেশ সূপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান এবং মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম, আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সভাপতি হযরত শাহ্সূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী আল্-হাসানীর (মা.জি.আ.) নেতৃত্বে লাখো নবী (সা:) প্রেমি সুফিবাদী জনতা উচ্ছ্বাসমুখরভাবে অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হতে ধর্মীয় শোভাযাত্রা শুরু হয়ে রাজধানীর শাহবাগ, মৎস ভবন, দোয়েল চত্বর হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়। ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা, উপজেলা থেকে লাখ লাখ জনতা শোভাযাত্রা ও শান্তি মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হন। শোভাযাত্রার অগ্রভাগেই দৃষ্টিনন্দন বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী ছালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসূল ছালামু আলাইকা’। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ও আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার ব্যবস্থাপনায় জশনে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, প্লেকার্ড, ফেস্টুন ছাড়াও, বহন করে বাংলাদেশের বিশাল জাতীয় পতাকা। জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা নারায়ে তকবির, নারায়ে রেসালতের স্লোগানে স্লোগানে রাজধানীর রাজপথ মুখরিত করে তোলেন। জুলুস শেষে মুসলিম জনতা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়। সভাপতিত্ব করেন লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী। তিনি বলেছেন, মহানবীর (দ.) দুনিয়ায় শুভাগমন জগৎবাসীর জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ। তিনি আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীবাসীকে শান্তি, সাম্য ও মুক্তির পথ দেখান। রাসূলে পাক (দ.) দুনিয়ায় শুভাগমনের মূল উদ্দেশ্যই হলো একটি শান্তি ও সহাবস্থানপূর্ণ মানবিক বিশ্ব সমাজ গড়ে তোলা। তিনি আরো বলেন, ধর্ম মানুষকে সুশৃংখলিত করে। উগ্রতা, হঠকারিতা, জঙ্গি কর্মকান্ড জ্বালাও পোড়ার মাধ্যমে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা ধর্মের বিধান নয়। শান্তি, সাম্য, ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করাই ইসলাম তথা প্রিয়নবীর (দ.) মূল আদর্শ। রাসূলের (দ.) আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারনেই আজ সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ তাবৎ দুনিয়ায় যুদ্ধ সংঘাত ও রক্তপাতে জর্জরিত। শক্তিধর দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ খাদ্য,জ্বালানি,মৌলিক অধিকার সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মহানবীর (দ.) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। প্রিয়নবী (দ.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র নায়ক।সাড়ে চৌদ্দশত বৎসর আগে রাসূলই আমাদেরকে দেখিয়েছেন কীভাবে সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক আধুনিক কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করা যায়। পীরজাদা মুফতী মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল-আযহারী ও শায়খ আজমাঈন আসরারের সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন ১৪ দলীয় সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু (এম.পি), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক (এম.পি), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ (এম.পি), লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান ও লিবারেল ইসলামিক জোটের কো-চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরাম সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরামের নির্বাহী সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, এফবিসিআই পরিচালক মো. রেজাউল করিম রেজনু, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক আকন্দ, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. আব্দুল আজিজ সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ, আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সহসভাপতি মো. কবীর চৌধুরী, অ্যাড. মো. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, মহাসচিব মো. আলমগীর খান, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব আলহাজ্ব কাজী মহসীন চৌধুরী প্রমুখ।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ইত্তেফাক,নিউইয়র্কে হিন্দু সমাবেশ,হিন্দু ধর্ম,"নানা আয়োজনে নিউইয়র্কে শেষ হলো প্রবাসী বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন ইউনাইটেড হিন্দুস অব ইউএসএ ইনক-এর সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে এদিন প্রবাসী নেতারা ছাড়াও অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার জনপ্রতিনিধিরা।স্থানীয় সময় রোববার (৮ জানুয়ারি) রাতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। রাম দাস ঘরামীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার, হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস অব বাংলাদেশ মাইনোরিটিস-এর পরিচালক প্রিয়া সাহা, শংকর পাড়িয়াল প্রমুখ । আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশ থেকে হিন্দু আনুপাতিক হারে কমাসহ বিগত দিনে হিন্দু মন্দিরে হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এ ব্যাপারে বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান । নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হলে সমাজে শান্তি বিনষ্ট হয় না। তিনি বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস অব বাংলাদেশ মাইনোরিটিস-এর পরিচালক প্রিয়া সাহা বলেন, নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমতে কমতে এখন সাড়ে ৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে। সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রবাস প্রজন্মকে বাংলা শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস ছাড়াও নিজ নিজ ধর্ম পালনে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নিত্যানন্দ কিশোর দাস, সাংবাদিক ও কলামিস্ট শীতাংশু গুহ, সুশীল সাহা, হিমেন রায় প্রমুখ।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ভোরের পাতা,"হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু, মিনার পথ ধরেছেন হাজিরা ",ইসলাম ধর্ম,"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনি ও কাবা প্রদক্ষিণের মাধ্যমে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতিহাসে এবারই (২০২৩ সালে) সবচেয়ে বেশি হাজির পদচারণায় মুখরিত হবে কাবা প্রাঙ্গণ। রোববার (২৫ জুন) কাবা ঘর প্রদক্ষিণ করেন বিশ্বের ১৬০টি দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হাজি। ইতিহাসের সবচেড়ে বড় হজ হওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ বছর, আমরা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ প্রত্যক্ষ করব।’ ২০২০ সালের করোনা মহামারি হানা দেওয়ার পর— এবার প্রথমবারের মতো সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার একসঙ্গে হজ করবেন ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস জানিয়েছিল, ২০১২ সালে হজ করেছিলেন ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন হাজি। যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ ছিল। এবার এ সংখ্যাটি পার হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে হজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার মানুষ; ২০২১ সালে ৫৯ হাজার। আর গত বছর এ সংখ্যাটি ছিল ১০ লাখ। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় হাজিরা মিনার দিকে যাবেন। যা কাবা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এরপর আরাফাত ময়দানে যাবেন তারা। শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এই আরাফাতের ময়দানেই তার সর্বশেষ ভাষণটি দিয়েছিলেন। হাজিরা যেন নির্বিঘ্নে হজের সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে পারেন সেজন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। মিনায় হাজিদের সুবিধার্থে খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। এদিকে এবার হজের মৌসুমটা পড়েছে তীব্র গরমের মধ্যে। জানা গেছে হাজিদের প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে। এই গরমে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে যেন তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় সেজন্য ৩২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ বছর হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামীকাল ২৬ জুন। যা চলবে ১ জুলাই পর্যন্ত। আর এ বছর সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ২৮ জুন। ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive ভোরের কাগজ,"আসলেই ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে ",অন্যান্য,"একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন আগে দশ বছর সাজাপ্রাপ্ত বর্তমানে হত্যা চেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনীতি কোনো দিনই সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হবে না। আজ সময় এসেছে এদের প্রত্যাখ্যান করার। বাংলাদেশের জনগণ যত তাড়াতাড়ি বিএনপি ও তার জোটভুক্ত দলগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে ততই তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। কয়েকদিন আগে আমি একটি কলাম লিখেছিলাম ‘নিজেকে প্রশ্ন করুন কোন পক্ষে যাবেন’- শিরোনামে। যেখানে আমি নানা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি কীভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমার সে লেখায় এটাও বলার চেষ্টা করেছিলাম যে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলার মাটিতে বিএনপি নামক ঘাতক দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে এবং কারা প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এ এইচ এম কামরুজ্জামান এবং এম মনসুর আলীকে হত্যা করেছে, যে বিএনপি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নৃশংস গ্রেনেড হামলায় প্রত্যক্ষ মদদ জুগিয়েছে, সেই বিএনপির আসলেই কি কোনো অধিকার থাকতে পারে বাংলাদেশে রাজনীতি করার? জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপি বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নানামুখী চক্রান্ত করে যাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে। জিয়াউর রহমান দল গঠন করে দেশদ্রোহী-রাজাকারদের বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করেছিলেন, তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ও পুত্র তারেক রহমান জিয়া নির্দেশিত পথেই এগিয়ে গেছেন। জিয়া পরিবারের জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক কিছুই করেছেন। খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু আপন কন্যার মতোই স্নেহ করতেন। খালেদা জিয়ার ভাঙা সংসার বঙ্গবন্ধুই জোড়া লাগিয়ে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এত আদর-স্নেহের মূল্য জিয়া দিয়েছেন ‘বুলেট’ দিয়ে, আর তার স্ত্রী-পুত্র দিয়েছেন ‘গ্রেনেড’ দিয়ে। মানুষ কতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে, ক্ষমতা ও স্বার্থের জন্য কতটা নিচে নামতে পারে, জিয়া পরিবারকে না দেখলে বাংলাদেশের মানুষ কিছুতেই তা বুঝতে পারতেন না। কথায় বলে- ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’। আসলেই ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে। ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডির রায়ের কল নড়েছিল ২৩ বছর ২ মাস পরে আর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হয় ১৪ বছর ২ মাস ১৯ দিনের মাথায়। দীর্ঘ সময় পর হলেও আদালতের রায়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুখোশ খুলে গেছে ষড়যন্ত্রকারীদের। আজ শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, পৃথিবীর নানা দেশের মানুষই বুঝতে পারছে বিএনপি স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়, বিএনপির বিশ্বাস হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, তাই জামায়াত তাদের বন্ধু। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিকেল ৫.৪০ মিনিটে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেই হামলায় ঘটনাস্থলেই মারা যান আওয়ামী লীগের ২৪ জন নিরপরাধ নেতাকর্মী। এর মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানও আছেন। আহত হন পাঁচশ’র অধিক নেতাকর্মী। বাংলাদেশের ইতিহাসে দিবালোকে এমন নৃশংস ঘটনার আর কোনো নজির নেই। সবশেষে শেখ হাসিনাকে বহন করা গাড়িতেও কয়েকটি গুলি করেছিল তাকে হত্যার জন্য। সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। মূলত শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হলেও, এর পেছনে ছিল আরো গভীর চক্রান্ত। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বাংলাদেশকে মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য বানাতে চেয়েছিল, বিপথে নিয়ে যেতে চেয়েছিল ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তমূল্যে কেনা সব অর্জন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়নি বিএনপি ও তার দোসররা। এই হামলাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য সব আলামত নষ্ট করা হয়। আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানো হয়, সাজানো হয় জজ মিয়া নাটক। নোয়াখালীর সেনবাগের শ্রমজীবী যুবক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ওরফে জজ মিয়া নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ৪ বছর ২৬ দিন জেলখানায় কাটাতে হয়। রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয় জজ মিয়ার ওপর। ক্রসফায়ারের হুমকি ও জজ মিয়ার পরিবারকে টাকা দেয়ার শর্তে শেখানো জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় জজ মিয়ার। তবু শেষ রক্ষা হয় না। একে একে বের হতে থাকে আসল ঘটনা। তারপর অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১০ অক্টোবর, ২০১৮ সালে ঘোষিত হয় আদালতের রায়। ৪৯ জন আসামির মধ্যে ১৯ জন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়, যাবজ্জীবন সাজা হয় ১৯ জনের, বাকি এগারো জন পায় বিভিন্ন মেয়াদের দণ্ড। আদালতের রায় ঘোষিত হওয়ার পরে নানাজন নানাভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগী ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ। এখানে আমি রায়ের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না, আমি শুধু বলতে চাই- এই ঐতিহাসিক রায়ে একটি জিনিস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সেটা হলো- বিএনপি একটি সন্ত্রাসী ও ঘাতক দল। হত্যা, খুন, লুটপাট ও জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দান করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। এরা চায় না বাংলাদেশ সুখে-শান্তিতে থাকুক, নিরাপদে বসবাস করুক বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ। এরা ষড়যন্ত্র করে কিংবা মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সহায়তায় যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তখন দেশে দুর্নীতি বেড়ে যায়, বোমাবাজি বেড়ে যায়, রাষ্ট্র খেতাব পায় অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে। বিএনপি স্পষ্টত রাষ্ট্র চালনায় ব্যর্থ এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে এরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এরা মুখোশ পরে থাকে, কিন্তু মুখোশের আড়ালে এদের যে মুখটা আছে সেটা খুবই ভয়ঙ্কর। একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন আগে দশ বছর সাজাপ্রাপ্ত বর্তমানে হত্যা চেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনীতি কোনো দিনই সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হবে না। আজ সময় এসেছে এদের প্রত্যাখ্যান করার। বাংলাদেশের জনগণ যত তাড়াতাড়ি বিএনপি ও তার জোটভুক্ত দলগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে ততই তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। বিএনপি পদে পদে ব্যর্থতা, অযোগ্যতা ও নৃশংসতার পরিচয় দিয়েছে। যারা নৃশংস, সন্ত্রাসী, ব্যর্থ এবং অযোগ্য তাদের হাতে দেশ ও দেশের মানুষ কিছুতেই নিরাপদ থাকতে পারে না। আমি প্রথমেই বলেছিলাম আমার পূর্ববর্তী একটি নিবন্ধের কথা- ‘নিজেকে প্রশ্ন করুন কোন পক্ষে যাবেন।’ আজ আবার এই প্রশ্ন উত্থাপন করে বলতে চাই- বাংলাদেশের মানুষ কোন পক্ষে যেতে চায়? তারা কি হত্যায় বিশ্বাসী, মৌলবাদে উস্কানিদাতা, দুর্নীতিবাজ বিএনপির সঙ্গে যাবে? বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী, দল এবং যারা জোট করতে চান তাদেরও নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উন্নয়নে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে? বাংলাদেশের মানুষ খুবই আবেগপ্রবণ, তাদের মনও অত্যন্ত কোমল। বাঙালি আবেগপ্রবণ আর কোমল মনের বলে অনেক সহজেই এরা ক্ষমাশীল। ক্ষমা মহৎ গুণ বটে। তবে ঘাতককে, দেশদ্রোহীকে ক্ষমা করার কোনো মানে নেই। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে বয়কট করে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ জন্য যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাদের হাত শক্তিশালী করতে হবে। নির্দ্বিধায় গণরায় দিতে হবে দেশপ্রেমিক, উন্নয়নমুখী, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক দলকে। বিগত দশ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূরে এগিয়ে গেছে, বিদেশেও মর্যাদা বাড়ছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বিএনপি নয়- আওয়ামী লীগই এখন আমাদের একমাত্র ভরসা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"ইসলামে নামাজ কায়েমের ফজিলত ",ইসলাম ধর্ম,"ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে সালাত হচ্ছে দ্বিতীয়। পবিত্র কুরআনের পরিভাষায় সালাতের স্থলে নামাজ কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আভিধানিক ভাবে দোয়া, দুরুদ, প্রতিদান, কারো দিকে মুখ করা, নিকটবর্তী হওয়া, অগ্রসর হওয়া ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘সালাত’ কুরআন, হাদীস, ইজমা দ্বারা প্রমাণিত ফরজ। রাসুল (সা:) এর আমল থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর সব মুসলিম কোনো মতবিরোধ ছাড়াই এর ফরজিয়াত, গুরুত্ব, তাৎপর্য, প্রয়োজনীয়তা, বৈজ্ঞানিক যুক্তিবাদ স্বীকার করে আসছেন। রাসুল (সা:) এর মক্কি জীবনে মিরাজের সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। ঈমানের পরই এর স্থান। একজন লোকের ঈমানের প্রমাণ ও বাস্তব রূপ প্রকাশ পায় তার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর আদেশ পালন করা হয় এবং সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টের মধ্যে একটা গভীর সর্ম্পক সৃষ্টি হয়, যা আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ এনে দেয়। রাসুল (সা:) বলেছেন- বান্দা সিজদারত অবস্থায় তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। (মুসলিম)। পৃথিবীতে প্রত্যেক নবী-রাসুলের ওপরই সালাত ফরজ ছিল। হযরত আদম (আঃ) ও তার বংশধর হযরত নুহ (আঃ) ও হজরত ইব্রাহীম (আঃ) কে নামাজের আদেশ দেয়া হয়েছিল এবং তারা নামাজ পড়ত; এর প্রমাণ মিলে সূরা মরিয়মের ৫৮ নাম্বার আয়াতে। বলা হয়েছে, নবীদের মধ্যে যাদের আল্লাহ পুরস্কৃত করেছেন এরাই তারা, আদমের ও যাদের তিনি নূহের সথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলেন তাদের বংশোদ্ভুত, ইব্রাহীম ও ইসরাইলের বংশোদ্ভুত এবং যাদের তিনি পথনির্দেশ করেছিলেন তাদের অন্তর্ভুক্ত। তাদের নিকট করুনাময় আল্লাহর আয়াত আবৃত্তি হলে তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ত ও রোদন করত। সূরা ইব্রাহীমের ৪০ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে আমার রব, আমাকে এবং আমার বংশধরকে যথাযত নামাজ প্রতিষ্টাকারী কর। ‘সূরা লোকমানের ১৭ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে, হে বৎস! নামাজ কায়েম করবে, সৎ কাজের নির্দেশ দেবে, অসৎ কাজ প্রতিরোধ করবে এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করবে। অনুরূপ ভাবে কুরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবী রাসুলের ব্যাপারেই স্পষ্ট আয়াত রয়েছে, যাদেরকে সালাতের তাকিদ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কালামে পাকে নামাজের আদেশ, গুরুত্ব,তাৎপর্য ও সফলতা সংক্রান্ত যে আয়াতগুলো রয়েছে, এগুলোর মধ্যে কিছু আয়াত সুরার নাম সহ উল্লেখ করা হলো: বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা:) কে উদ্দেশ্য করে সূরা ইব্রাহীম বলা হয়।- ‘আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদের নামাজ কায়েম করতে বলুন’। (১৪:৩১)। সূরা আল হজের ৭৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ওহে যারা ঈমান এনেছে তোমরা রুকু করো, সিজদা করো ও তোমাদের রবের ইবাদত করো এবং সৎ কাজ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। (২২:৭৭) সুরা ত্বহার ১৩২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, আর আপনার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন এবং আপনি নিজেও এতে অবিচলিত থাকুন। সুরা বাকারার ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত প্রদান এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করো। (২:৪৩)। একই সুরার ২৩৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা নামাজ সমূহকে হেফাজত করো। বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজকে আর আল্লাহর সামনে তোমরা বিনীতভাবে দাঁড়াও।’ (২:২৩৮)। এ আয়াতের মধ্যবর্তী সালাত বলতে আসরের নামাজের কথা বলা হয়েছে। কারণ এই সময়ে মানুষের মধ্যে ব্যস্ততা বেশি থাকার দরুন নামাজটি ফউত(কাজা) হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সে জন্য এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে । সহি বুখারি শরিফের ১/৫৫২ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আসরের নামাজ ছেড়ে দিল, সে যেন তার পরিবার ও ধনসম্পদ হারাল। একই গ্রন্থের ১/৫৫৩ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে আসরের নামাজ ছেড়ে দিয়ে পরে তা আদায় করলে আদায় হবে না। নামাজের সফলতার বাণী ও প্রচারিত হয়েছে আল কুরআনের অনেক জায়গায়। ‘ঈমানদারেরা অব্যশই সফলকাম হয়েছে, যারা নিজেদের নামাজে বিনয়ী ও নম্র।’ (২৩:১-২)। সফলকাম ব্যক্তি সেই যে পবিত্রতা অর্জন করেছে। আপন প্রতিপালকের নাম স্বরণ করেছে এবং নামাজ আদায় করেছে।’ সুরা: আল আলাক, আয়াত ১৪-১৫। নামাজ না পড়ার জন্য যে শাস্তির কথা আল কুরআনে বলা হয়েছে তা নিুরূপ: সূরা আল মুদাসসিরে দোজখের কটিন শাস্তিতে নিক্ষিপ্তদের সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘ কী অপরাধে তোমাদের দোজখে টেনে আনা হলো? তারা উত্তরে বলবে, আমরা মুসলিমদের অর্ন্তভূক্ত ছিলাম না তথা সালাত আদায় করিতাম না। (আয়াত ৪২:৪৩)। যারা নামাজ আদায় করে না, হাদিস শরিফে তাদের সর্ম্পেক অনেক সর্তকবাণী উচ্চারিত হয়েছে। যেমন- রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, বান্দা ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ আদায় না করা। (মুসলিম)। নামাজ সম্পর্কে সুরা আল আনকাবুতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ খারাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।‘ (আয়াত ৪৫)। নামাজ মানুষকে চিন্তামুক্ত রাখে তাই রাসুল (সাঃ) কোনো ব্যাপারে পেরেশান হলে নামাজ আদায় করতেন। সূরা বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ এ ছাড়াও কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে নামাজ আদায় করার আদেশ, এর সুফল ও আদায় না করার কুফল সম্পর্কে অসংখ্য উদ্ধৃতি রয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো নামাজের স্বরূপ নিয়ে। নামাজের স্বরূপ হলো দু’টি-ফরজিয়াত (গধহফধঃড়ৎু): ফরজিয়াত সালাতগুলো হচ্ছে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ এবং এর সাথে আনুষাঙ্গিক কিছু সুন্নত ও নফল নামাজও রয়েছে। এই ফরজ নামাজগুলো ১০ বছর বয়স থেকে শরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত (যতক্ষণ জ্ঞান থাকবে) ফকির, বাদশা, আমির ওমরাহ সুস্থ-অসুস্থ, শাসক-শাসিত, মনিব-গোলাম, মুকিম-মুছাফির সবার জন্য ফরজ। জাকাত, রোজা ও হজের ফরজিয়াতের বেলায় পূর্বশর্ত ও অবস্থার সাথে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নামাজ এমনই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবাদত, যা সব সময় সব অবস্থায় ফরজ। এই ফরজিয়াত নামাজ পরিত্যাগ করলে, কায়েম না করলে বান্দাকে শাস্তি পেতে হবে। ফরজ নামাজের বিনিময়ে কোনো সওয়াব বা প্রতিদানের প্রত্যাশা করা যাবে না। ফরজ নামাজ আদায়ের পর ব্যক্তির জন্য আরো ফরজ কাজ রয়েছে, যেমন- হালাল রিজিক অর্জন, সদাচরণ, নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন ইত্যাদি। (গধহফধঃড়ৎু) এই ফরজ নামাজগুলো আদায় করতে হবে কেন? এর উত্তরে বলা যেতে পারে মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন অত্যন্ত শখ করে অন্য প্রাণিকুলের মধ্যে অতি উত্তম ও সুন্দর আকৃতিতে। সূরা আতত্বিনে বলা হয়েছে, ‘আমি মানুষকে অতি উত্তম ও সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি। (আয়াত-৪)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,দেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তির সঙ্গে ধর্ম পালন করতে পারছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী,অন্যান্য,"মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শেখ হাসিনা সব ধর্মাবলম্বীর নিরাপদ আশ্রয়। একসময় সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি শুরু করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা পুনরায় ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনেন। এখন সব ধর্মের মানুষ শান্তির সঙ্গে সমভাবে ধর্ম পালন করতে পারছে।আজ শুক্রবার সকালে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা সদরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।শ ম রেজাউল করিম বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সবাই মানুষ। সবাইকে নিরাপত্তা দেওয়া, সব ধর্মের মানুষকে ধর্ম পালনের সুযোগ করে দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শেখ হাসিনা হচ্ছেন সেই নেত্রী, যিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা দিয়ে তাঁদের শান্তিতে রাখার জন্য সবকিছু করেছেন। সনাতন সম্প্রদায়ের সম্পত্তি যাতে বেহাত না হয়, সে ব্যবস্থাও তিনি করে দিয়েছেন।ধর্ম কখনোই মানুষের মধ্যে বিভাজন করে না উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো ধর্মের মানুষই কারও জন্য ক্ষতিকর নয়। ১৯৭১ সালে কিছু রাজাকার, কিছু দুষ্কৃতকারী, সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি সনাতন সম্প্রদায়সহ যাঁরা আওয়ামী লীগ করতেন, তাঁদের ওপর আঘাত করেছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সেই রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে রায় কার্যকর করেছেন। এখন আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সুন্দর বাংলাদেশে বসবাস করছি। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির শেষ আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানে জান্নাতের দরজায় ফেরেশতাদের আহ্বান,ইসলাম ধর্ম,"আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রমজান মাসের প্রথম রাতেই শয়তান ও দুষ্টু জিনদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে ফেলা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, এর একটি দরজাও তখন খোলা হয় না; জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকে, ‘হে কল্যাণকামী! অগ্রসর হও! হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আছে জাহান্নাম থেকে বহু লোককে মুক্তি দান। প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬৮২) রমজান মাস মুমিনের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। এই মাসে আল্লাহ মুমিনের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ রেখেছেন। রমজানের প্রথম প্রহর থেকেই একজন ঘোষণাকারী এই কল্যাণের ঘোষণা দিতে থাকে। সে বলতে থাকে, ‘হে কল্যাণকামী! অগ্রসর হও! হে পাপাসক্ত! বিরত হও’। এই আহ্বান বান্দার প্রতি আল্লাহর কল্যাণকামিতারই বহিঃপ্রকাশ। কেননা তা বিশ্বাসী ব্যক্তিকে আল্লাহর আনুগত্য করতে এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে, বিশেষত যখন ঘোষণা করা হয় জাহান্নাম থেকে মুক্তির। প্রত্যেক মুমিনের উচিত, পাপ পরিহার ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাওবা করে মুক্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) পাপ পরিহারের পুরস্কার এভাবে ঘোষণা করেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান, তার মধ্যবর্তী সময়ের জন্য পাপমোচনকারী হবে যদি কবিরা গুনাহ হতে বেঁচে থাকে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,পবিত্র কোরআনে এতিম প্রতিপালন সম্পর্কে যা বলা হয়েছে,ইসলাম ধর্ম,"এতিম মানে নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ। বাংলা ভাষায় মাতা-পিতাহীন বালক-বালিকাকে এতিম বলা হয়। ইসলামী পরিভাষায় যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন তাকে এতিম বলা হয়। পিতা উপস্থিত থাকাবস্থায় মাতাবিহীন শিশুকে ইসলামী পরিভাষায় ‘এতিম’ বলা হয় না। পবিত্র কোরআনের ১২টি সুরার ২২ আয়াতে এতিম সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। ঈমান আনা যেমন পুণ্যের কাজ, নামাজ পড়া যেমন পুণ্যের কাজ, তেমনি এতিম ও অসহায়ের সহায় হওয়া পুণ্যের কাজ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘...কিন্তু পুণ্য আছে কেউ আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, কিতাব ও নবীদের ওপর ঈমান আনলে। আর (পুণ্য আছে) আল্লাহকে ভালোবেসে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য দান করলে...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৭৭)। এতিমের তত্ত্বাবধায়ক হওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার ও অত্যন্ত মর্যাদাকর বিষয়। যিনি এই মহান দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন তিনি অবশ্যই মহান মানুষ। নিজের সন্তানের মতো এতিমের সার্বিক বিষয় দেখভাল করবেন। কখনো আদর করে, মাথায় হাত বুলিয়ে সহানুভূতি প্রদর্শন করবেন, আবার অবাধ্যতায় কখনো শাসন করবেন। দাউদ (আ.) বলতেন, ‘এতিমদের প্রতি দয়াবান পিতার মতো হয়ে যাও।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১৩৮) এখানে এতিম প্রতিপালনের পথ ও পন্থা সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো- লালন-পালন ও শিষ্টাচার শিক্ষাদান সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠা শিশুর জন্মগত অধিকার। কিন্তু শৈশবে পিতৃবিয়োগের কারণে এটি অনেক সময় বিঘ্নিত হয়। তাই শৈশব থেকেই তাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিতে হবে। আলী (রা.) বলেন, ‘যার পিতা মারা গেছে সে প্রকৃত এতিম বা অনাথ নয়। বরং জ্ঞান ও শিষ্টাচারে দৈন্য ব্যক্তিই প্রকৃত এতিম।’ (জামিউ দাওয়াবিনিশ শিরিল আরাবি ১০/১৭০) বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করা, দেখা হলে সালাম দেওয়া, গৃহে প্রবেশ ও বের হওয়ার আদব, খাওয়া-পরার আদব, ঘুমানো ও ঘুম থেকে ওঠার আদব, সালাতের নিয়ম ও প্রয়োজনীয় দোয়া-কালাম প্রভৃতি দৈনন্দিন জীবনে চলার নিয়ম-পদ্ধতি শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ এতিমের তত্ত্বাবধায়কের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করা যাবে না। কেননা প্রত্যেককেই কিয়ামতের দিন নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমরা প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৫৫৪) প্রয়োজনীয় শিক্ষাদীক্ষার ব্যবস্থা করা ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাপক। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম অবতীর্ণ পাঁচটি আয়াতের প্রথম শব্দটিই হচ্ছে ‘পড়ো’। আল্লাহ বলেন, ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। পড়ো! আর তোমার পালনকর্তা বড়ই দয়ালু। যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দান করেছেন।’ (সুরা : আলাক, আয়াত : ১-৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ।’ (ইবনে মাজাহ : ২২৪) তাই যথাসাধ্য এতিমের দ্বিনি ও জাগতিক-ব্যাবহারিক উপকারী জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা করা জরুরি। একজন এতিমকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বাত্মক চেষ্টা করা একজন ‘কাফিল’ বা তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব। ঈমান ও আমল শেখানো ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি শিশুই ফিতরাত তথা ইসলাম গ্রহণের যোগ্যতাসহ জন্মগ্রহণ করে। তারপর তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজক বানায়।’ (বুখারি, হাদিস : ১৩৮৫) ঈমান, আমল ও সুন্দর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়ার যোগ্যতা প্রতিটি শিশুর মধ্যেই বিদ্যমান আছে। যদি শিশুর পিতা-মাতা বা অভিভাবক এ ব্যাপারে যত্নবান হয় এবং পরিবেশ যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে শিশুর মধ্যে অনুপম চরিত্রের বিকাশ ঘটে। পাশাপাশি শিরক ও বিদআতের ভয়াবহতা তুলে ধরা এবং এসব থেকে বেঁচে থাকতে বলা। যেমনটি লোকমান তাঁর সন্তানকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘স্মরণ করো, যখন লোকমান উপদেশ দিতে গিয়ে তার পুত্রকে বলেছিল, হে বৎস! আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই শিরক মহা অন্যায়।’ (সুরা ; লুকমান, আয়াত : ১৩) হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে বসা ছিলাম। এমন সময় তিনি আমাকে বলেন, ‘হে বৎস! আমি তোমাকে কিছু কথা শিক্ষা দেব। তুমি আল্লাহর হুকুমের হেফাজত করো, আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করবেন, আল্লাহর বিধানের হেফাজত করো, আল্লাহকে তোমার সামনে পাবে। যখন কিছু চাইবে একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইবে, আর যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে কেবল আল্লাহর কাছেই করবে। জেনে রেখো, সমস্ত জাতি যদি তোমার উপকার করার জন্য একত্র হয়, তাহলে এতটুকু উপকারই করতে পারবে, যা আল্লাহ লিখে রেখেছেন। আর যদি তারা তোমার কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একত্র হয়, তাহলেও ততটুকু ক্ষতিই করতে পারবে, যা আল্লাহ লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং কালি শুকিয়ে গেছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬) সুতরাং ঈমান ও আমল শিক্ষাদানের উপযুক্ত বয়স হচ্ছে শিশু-কিশোর বয়স। তাই এতিমের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার অধীনস্থ এতিম সন্তানকে ঈমান ও আমল শিক্ষা দেবেন। শিরক ও বিদআতমুক্ত সুন্নাতপন্থী হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবেন। তবেই তিনি নিজেকে একজন সফল এতিম প্রতিপালনকারী হবেন। উপযুক্ত বয়সে বিবাহের ব্যবস্থা করা এতিমের দায়িত্বশীলের এটিও অন্যতম দায়িত্ব যে বিবাহের বয়স হলে তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করা। বিবাহ মুসলিম জীবনের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। বিবাহের মাধ্যমে যেমন নিঃসঙ্গতা দূরীভূত হয়, চিন্তা প্রশমিত হয়, ঠিক তেমনি তাকওয়া বা পরহেজগারিতা বৃদ্ধি পায়। অশান্ত মনে প্রশান্তি ফিরে আসে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর মহান আল্লাহর নিদর্শনাবলির মধ্যে আছে যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মধ্যে পরস্পরে ভালোবাসা ও দয়া।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ২১) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করতে সক্ষম তারা যেন বিবাহ করে। কারণ বিবাহ দৃষ্টি অবনত রাখতে ও গুপ্তাঙ্গের হেফাজতে বেশি কার্যকর। আর যে ব্যক্তি বিবাহ করতে অক্ষম সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা যৌন চাহিদা অবদমিত রাখে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০৬৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,মসজিদুল হারামের সম্প্রসারিত মাতাফ অংশের নাম ঘোষণা,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র মসজিদুল হারামের মাতাফ অংশের সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজকীয় নির্দেশনায় এর নাম ‘সৌদি রিওয়াক’ হিসেবে ঘোষণা দেন পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইস। মাতাফ সম্প্রসারণের ফলে আরো অধিকসংখ্যক মুসল্লি ও তাওয়াফকারী এখন স্বাচ্ছন্দ্যে হজ ও ওমরাহ পালন করতে পারবেন।শায়খ আল-সুদাইস বলেন, পবিত্র মসজিদুল হারামের মাতাফের আয়োতন সর্বোচ্চ পরিমাণ সম্প্রসারিত হয়েছে, যা পূর্বে কখনো হয়নি।মূলত সৌদি রিওয়াকের মাধ্যমে পূর্ণতা পেয়েছে আব্বাসি রিওয়াক। পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণের চারপাশের আব্বাসি রিওয়াকের ঠিক পেছনে তা নির্মিত হয়। মূলত সর্বাধিকসংখ্যক মুসল্লির অংশগ্রহণের লক্ষ্যে মসজিদুল হারাম সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন সৌদি রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজ।১৩৭৫ হিজরি মোতাবেক ১৯৫৫ সালে বাদশাহ সাউদের শাসনামলে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং তা বাদশাহ ফয়সাল ও বাদশাহ খালিদের সময়ে তা চলমান থাকে।সর্বশেষ বাদশাহ ফাহাদ, বাদশাহ আবদুল্লাহ ও বাদশাহ সালমানের সময় এর কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়। সৌদি রিওয়াক অংশের চার তলায় দুই লাখ ৮৭ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। আর প্রতি ঘণ্টায় রিওয়াক ও মাতাফ প্রাঙ্গণে এক লাখ সাত হাজারজন তাওয়াফ করতে পারবেন। মাতাফ অংশের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের একটি হলো তাপরোধী মার্বেল পাথর।মেঝেতে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার ক্ষেত্রে এই পাথরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,ভ্রাতৃত্ববন্ধন ও উদারতার শিক্ষা দেয় রমজান,ইসলাম ধর্ম,"রমজান মাস শুরু হলেই আমাদের মাঝে এক ধরনের ইবাদতের আমেজ কাজ করে। ইবাদতের শিডিউল তৈরি হতে থাকে। ইবাদত নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ভ্রাতৃত্ববন্ধন এক উত্তম ইবাদত। এর দ্বারা সমাজের মধ্যে ইসলামী পরিবেশ তৈরি হয়, দীনি হাওয়া চালু হয়। একে অন্যের প্রতি মায়া-মমতা ও মহাব্বত তৈরি হয়। ধীরে ধীরে মানুষ আল্লাহর প্রতি ধাবিত হতে থাকে। কেননা ভাতৃত্ববন্ধনে মানুষ একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল-নম্রতাশীল হয়। একে অন্যের প্রতি যত্নবান হয়। প্রত্যেকে চায় তার দ্বারা যেন অন্য ভাইয়ের কোনো অসুবিধা-কষ্ট না হয়। আর এটি মুমিনের অন্যতম একটি গুণ। হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মুমিন পরিপূর্ণ ইমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তার হাত-মুখ থেকে অন্য মুসলমান ভাই নিরাপদ থাকে। (বুখারি, মুসলিম)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মাঝে মীমাংসা করে দাও।’ (সুরা হুজুরাত : ১০)। আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন নর ও মুমিন নারী সবাই একে অন্যের বন্ধু।’ (সুরা তাওবা : ৭১)। আয়াতদ্বয় দ্বারা কোরআনে বর্ণিত ভাতৃত্ববন্ধনের পরিচয় জানা যায়। রমজান মাসে এই ভাতৃত্ববোধ নিজেদের মধ্যে জেগে ওঠে। অনেকেই তার আশপাশের লোকদের খোঁজখবর নিয়ে থাকে। তার প্রতিবেশী কীভাবে ইফতার করছে, রমজান মাস তাদের কীভাবে কাটছে? তখন নিজেদের সাধ্যমতো তাদের সহোযোগিতা করে থাকে। পবিত্র রমজান মাসে কাউকে ইফতার করানোর ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘যাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানি (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- কোনো রোজা পালনকারীকে যে লোক ইফতার করায় সে লোকের জন্যও রোজা পালনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। কিন্তু এর ফলে রোযা পালনকারীর সাওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।’ (সহিহ ইবনু মাজাহ : ১৭৪৬) সুবহানাল্লাহ। মক্কায় অবস্থিত সাহাবায়ে কেরাম যখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে মদিনাতে হিজরত করেন, তখন মদিনার আনসার সাহাবিগণ মুহাজিরদের সঙ্গে ভাতৃত্ববন্ধনের যে নিদর্শন স্থাপন করেছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে আজ পর্যন্ত ভাতৃত্বের এই অনুপন দৃশ্য আর কোনো জাতি দেখাতে পারেনি। মদিনার মুসলমানগণ সহযোগিতা ও সহানুভূতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তারা নিজেদের প্রয়োজন ও দারিদ্র্য থাকা সত্ত্বেও সহায়-সম্বলহীন মুহাজির মুসলমান ভাইদের জন্য ধনসম্পদ ও আপন স্বার্থ পর্যন্ত ত্যাগ করেছিলেন। যাদের দুটি বাড়ি ছিল তারা নিজেদের জন্য একটি রেখে অন্য মুহাজির ভাইয়ের জন্য আরেকটি ছেড়ে দেন। তাদের ত্যাগ ও কোরবানির এ গুণটি পছন্দ করে আল্লাহতায়ালা কালামে পাকে ইরশাদ করেন- ‘তারা (আনসারেরা) নিজেদের ওপর (মুহাজিরদের) প্রাধান্য দেয়। যদিও নিজেদের প্রয়োজন ও অভাব থাকে।’ (সুরা হাশর : ০৯)। এই গুণের অধিকারীদের সম্পর্কে অন্য জায়গায় ইরশাদ হচ্ছে, ‘(তারাই এসব নেয়ামত লাভ করবে যারা...) এবং যারা মিসকিন, এতিম ও বন্দিদের খাবার দান করে তার প্রতি (নিজেদের) আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও। (আর বলে) আমরা তো তোমাদেরকে খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। তোমাদের থেকে আমরা কোনো প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।’ (সুরা দাহর : ৮-৯)। এক হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজ সাথীদের প্রতি উদারতার একটি ঘটনা বর্ণিত আছে। হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক নারী সাহাবি নবীজির জন্য সুন্দর কারুকার্যখচিত একটি নতুন কাপড় হাদিয়া এনে আরজ করলেন, আমি এটি স্বহস্তে তৈরি করেছি। আপনি তা পরিধান করলে খুশি হব। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপড়টি গ্রহণ করলেন। তাঁর কাপড়ের প্রয়োজনও ছিল। যখন তিনি তা লুঙ্গি হিসেবে পরিধান করে ঘরের বাইরে এলেন, এক ব্যক্তি তা দেখে বলল, খুব চমৎকার কাপড় তো! আমাকে তা দান করবেন কি? তখন নবীজি ঘরে ফিরে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে ওই কাপড়টি ভাঁজ করে লোকটির জন্য পাঠিয়ে দিলেন। এ দৃশ্য দেখে অন্যান্য সাহাবি ওই ব্যক্তিকে তিরস্কার করে বলতে লাগলেন, আরে মিয়া! তুমি কি জানো না, কাপড়টি নবীজির প্রয়োজন রয়েছে। আর তিনি কোনো কিছু চাইলে ‘না’ বলেন না। ওই লোকটি জবাবে বলল, আমি সবই জানি। এরপরও চেয়েছি, যাতে তাঁর মুবারক শরীর-স্পর্শে ধন্য কাপড় দিয়ে আমি নিজের কাফন বানাতে পারি। বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন, ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর সেই কাপড়েই তাকে দাফন করা হয়েছিল।’ (সহিহ বুখারি : ১২৭৭, ২০৯৩)। সিরাতের কিতাবগুলোতে এই জাতীয় বহু ঘটনা বণিত আছে। ভাতৃত্ববন্ধন ইসলামের অন্যতম একটি বড় গুণ। এর দ্বারা মানুষ মানুষকে মূল্যায়ন করতে শিখে। নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি, মনের অমিল ও দূরত্ব কমে গিয়ে এক উত্তম আদর্শ সৃষ্টি হয়। আল্লাহপাক এই রমজানে আমাদেরকে ভাতৃত্বের এই মহৎ গুণ পরিপূর্ণভাবে অর্জন করার তৌফিক দান করুন।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive যায়যায়দিন,"বেনামাজির রোজা কবুল হবে না ",ইসলাম ধর্ম,"ইমানের গভীরতা ও দৃঢ়তা সৃষ্টি এবং শরিয়ত পালনে অবিচলতা অর্জনের কার্যকর উপায় সিয়াম সাধনার মাস রমজানুল মোবারকের আজ চতুর্দশ দিবস আজ। বিগত জীবনের ভুল-ভ্রান্তি সংশোধনের জন্য ও জীবনের সব গুনার কথা স্মরণ করে মুসলমানরা প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শেষে অশ্রুসিক্ত নয়নে তওবার মাধ্যমে রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। তবে নির্বোধ অনেকেই নামাজ না পড়ে সারাদিন উপবাস থেকে সেহরি ও ইফতারি খেয়ে সিয়াম পালনের দাবি করেন। ইসলাম তাদের সুনির্দিষ্টভাবে সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, বেনামাজির রোজা কবুল হবে না। এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ইসলামের প্রথম স্তম্ভ হলো নামাজ। তারপর পর্যায়ক্রমিকভাবে রোজ, হজ, জাকাত ইত্যাদির অবস্থান। নামাজ ছাড়া কোনো ইবাদতই কবুল হয় না। এ ছাড়া সালাত হচ্ছে একজন মানুষের ইসলাম গ্রহণের পর ইসলাম টিকিয়ে রাখার প্রথম শর্ত। অর্থাৎ ইমান আনার পর সেই ইমানে অবিচল থাকা প্রধান শর্ত হচ্ছে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। যদি কেউ তা না করে তবে তার আর ইমান থাকবে না। সে কাফের হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে চুক্তি হলো সালাত। সুতরাং যে ব্যক্তি তা ত্যাগ করবে সে কাফির হয়ে যাবে। (তিরমিজিঃ ২৬২১, ইবনে মাজাহঃ ১০৭৯) অর্থাৎ ৫ ওয়াক্তে সর্বমোট অন্তত ১৭ রাকআত ফরজ সালাত একজন মানুষকে মুসলিম থাকতে হলে অবশ্যই আদায় করতে হবে। যদি সে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সে ক্ষেত্রেও তাকে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাত অবশ্যই আদায় করতে হবে। সুতরাং হাদিস অনুযায়ী যে রোজা রাখল কিন্তু সালাত আদায় করল না তার রোজা কবুল হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এমনকি বেনামাজির জাকাত ও হজসহ কোনো আমলই কবুল হয় না। ইমাম বুখারি (৫২০) বুরাইদা (রা.) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।’ এ হাদিস প্রমাণ করে, বেনামাজির কোনো আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং বেনামাজি তার আমল দ্বারা কোনোভাবে উপকৃত হবে না। তার কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না। ‘ফাতাওয়াস সিয়াম’ (পৃ-৮৭) গ্রন্থে এসেছে শাইখ ইবনে উছাইমীনকে বেনামাজির রোজা রাখার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এর উত্তরে বলেন, বেনামাজির রোজা শুদ্ধ নয় এবং তা কবুলযোগ্য নয়। কারণ নামাজ ত্যাগকারী কাফের, মুরতাদ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন করিমে বলা হয়েছে, ‘আর যদি তারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও জাকাত দেয় তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই।’ [৯ সূরা আত্ তওবা: ১১] প্রসিদ্ধ তাবেয়ি আব্দুল্লাহ ইবনে শাক্বিক রাহিমাহুমুল্লাহ বলেছেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবিগণ নামাজ ছাড়া অন্য কোনো আমল ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না।’ উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যদি কোনো ব্যক্তি রোজা রাখে; কিন্তু নামাজ না পড়ে তবে তার রোজা প্রত্যাখ্যাত, গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাছে কোনো উপকারে আসবে না। এমনকি যদি কোনো ব্যক্তি শুধু রমজান মাসে রোজা পালনে ও নামাজ আদায়ে সচেষ্ট হয় আর রমজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নামাজ ত্যাগ করে, তবে তার সিয়াম কি কবুল হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আলেমদের ভাষ্য, নামাজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। সাক্ষ্যদ্বয়ের পর ইসলামের স্তম্ভগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ফরজে আইন। যে ব্যক্তি এর ফরজিয়তকে অস্বীকার করে কিংবা অবহেলা বা অলসতা করে তা ত্যাগ করল সে কাফের হয়ে গেল। আর যারা শুধু রমজানে নামাজ আদায় করে ও রোজা পালন করে তবে তা হলো আল্লাহ্র সঙ্গে ধোঁকাবাজি। রমজান ব্যতীত অন্য মাসগুলোতে নামাজ ত্যাগ করায় তাদের সিয়াম শুদ্ধ হবে না।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম : জাফরুল্লাহ চৌধুরী,ইসলাম ধর্ম,"গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার নামই হলো জিহাদ। মানুষের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামই জিহাদ। অধিকার বঞ্চিত মানুষের ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই জিহাদ। জিহাদ বললে আমাদের লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। ভাবতে হবে আমি ন্যায়ের পক্ষে আছি।’ আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় ‘সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ নয় : সম্প্রীতি, ইনসাফ ও সহনশীলতাই ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ এ আলোচনা সভা আয়োজন করে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র, সাম্য এবং জনগণের অধিকার। মুক্তিযুদ্ধে সবই ইসলামের কথা বলেছি। মানুষের কথায় বলেছি, ন্যায়ের কথায় বলেছি। আজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ভূলণ্ঠিত, সেজন্য সংগ্রামে যেতে হবে।’ গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমি নামাজ পড়ি না বলে আমাকে মুরদাদ বলার অধিকার আপনাদের নেই। এটা আল্লাহ সিদ্ধান্ত নেবেন। নামাজ পড়ি না বলে আমাকে বেত মারার অধিকার আপনার নেই, খোদা বিচার করবেন। আজকে আলেমদের নামে কেন বলাৎকারের অভিযোগ আসবে? অন্যরা করলে দোষ হয় না, কিন্তু আপনারা করলে দোষ হবে। কারণ, মানুষ আপনাদের সম্মান করে। আপনারা ছোট দোষ করলে দোষটা বড় হয়ে যায়।’ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ড. মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, ড. আল্লামা সাইয়েদ কামাল উদ্দিন জাফরী, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে নওগাঁয় কিশোর আটক,অন্যান্য,"নওগাঁর মহাদেবপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে এক কিশোরকে (১৬) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে ওই কিশোরকে আটক করা হয়। পরে সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ওই কিশোর স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।থানা-পুলিশের ভাষ্য, গত শনিবার বিকেলে ওই কিশোর তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট দেয়। পোস্টটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা ওই কিশোরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল দুপুরে উপজেলার সরস্বতীপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে বিকেল চারটার দিকে অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করে পুলিশ। সন্ধ্যায় আদালতের নির্দেশে ওই কিশোরকে যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি জানার পরই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত কিশোরকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে যশোরে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বিশৃঙ্খলা না করে সবাইকে আইনের প্রতি আস্থা রাখার জন্য অনুরোধ জানান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative Dhaka Tribune,"বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ",ইসলাম ধর্ম,"গোপালগঞ্জে বাবা-মায়ের কবরের পাশে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। রবিবার (১৪ জুন) বাদ আসর গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার কেকানিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে অ্যাম্বুলেন্সে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মরদেহ বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে সরাসরি তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কেকানিয়া গ্রামে এসে পৌঁছায়। বিকেল ৫ টার দিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহ দাফন করা হয়। শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মৃত্যুতে গোটা গোপালগঞ্জ জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ শোক প্রকাশ করেছেন।ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহচর গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ রুহুল আমিন বলেন, “শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ছিলেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতা। স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে পথ চলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন তিনি।” টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলায় উন্নয়ন প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে নিরলস কাজ করেছেন তিনি। সুখে ও দুঃখে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার মানুষের সাথে সব সময় ছিলেন শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনি এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষের খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন।” কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ একজন আদর্শবান মানুষ। এই নেতাকে হারিয়ে, আমরা অভিভাবক হারিয়েছি। এ শূণ্যতা পূর্ণ হওয়ার নয়।”",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative " আলোকিত বাংলাদেশ","দেশের সম্মানহানি যেন না ঘটে : ধর্মমন্ত্রী ",অন্যান্য,"হজ গাইডদের উদ্দেশ্যে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় একজন হজ গাইড নয়, আপনার পরিচয় আপনি বাংলাদেশি। আপনি হলেন আপনার দলের হজযাত্রীদের জিম্মাদার, পথ প্রদর্শক ও পরামর্শক। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফুটে উঠবে। আপনার কারণে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও সম্মানহানি যেন না ঘটে সেদিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।’ শনিবার (৯ মার্চ) সকালে ঢাকার আশকোনায় হজ অফিসে সরকারি হজ গাইড প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হজ গাইডদের ‍তিনি এসব কথা বলেন। ধর্মমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক সুস্থ ও সামর্থ্যবান মুসলমান নরনারীর উপর হজ আদায় করা ফরজ। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে হজের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। প্রত্যেক হজযাত্রী যাতে সহীহ্ ও শুদ্ধভাবে হজ পালন করতে পারে সে বিষয়ে হজ গাইডদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। ধর্মমন্ত্রী আরও বলেন, আপনাদের দক্ষ হজ গাইড হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই আজ এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের প্রতিটি অধিবেশনে শতভাগ মনোযোগী থাকবেন। হজের নিয়ম কানুন, হুকুম-আহকাম ও ধারাবাহিক কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞান অর্জন করতে হবে। বুঝতে সমস্যা হলে প্রশিক্ষকদের বারবার জিজ্ঞাসা করতে হবে। প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে গ্রহণ করলেই আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। প্রশিক্ষকদের উদ্দেশ্যে ফরিদুল হক খান বলেন, দক্ষ হজ গাইড গড়ে তুলতে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোন প্রশিক্ষণার্থীই যাতে পিছিয়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ধীরে শেখে এমন প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"এরকম কাপুরুষদের কোনো ধর্ম ও জাতি নেই: আজহার আলী ",অন্যান্য,"নিউজিল্যান্ডের মসজিদে ভয়াবহ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী। টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এ হামলায় যাদের পরিবারের মানুষ নিহত হয়েছেন তাঁদের কথা ভেবে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এখানে খেলোয়াড় ও বুদ্ধিজীবীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও বাংলাদেশ দল নিরাপদে আছে তা শুনে স্বস্তিবোধ করছি। এরকম কাপুরুষদের কোনো ধর্ম ও জাতি নেই। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ভয়াবহ হামলায় প্রাণে বেঁচে গেছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ওই মসজিদে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা পবিত্র জুমা আদায় করার কথা ছিল। মসজিদের ভেতরে গুলির প্রচণ্ড আওয়াজ শুনে বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে রক্ষা পান। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনার পর বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা একটি পার্কের মধ্য থেকে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন৷ এসময় তাদের নিরাপত্তা দিতে কোনও পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি৷ মসজিদে সন্ত্রাসীর ওই এলোপাতারি গুলিতে ৪৯ জন নিহত হন। ভয়াবহ এ হামলায় সারা বিশ্বে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা নানাভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এ ঘটনার।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative " আলোকিত বাংলাদেশ","বন্যায় ডুবে যাওয়া মসজিদে নামাজ আদায়ের বিধান ",ইসলাম ধর্ম,"বৃষ্টিপাত ও বন্যায় চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারসহ দেশের অনেক জায়গায় কয়েকদিন ধরে জনজীবন বিপন্ন। বন্যার পানিতে অনেক মসজিদও ডুবে গেছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু বন্যার কারণে ডুবে যাওয়া মসজিদে পানির উপর নামাজ কি পড়তে হবে? পড়লে পদ্ধতি কী হবে?— জানতে চান অনেকে। এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মসজিদ পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলে সেখানে নামাজ পড়তে হবে না। আশপাশের কোথাও পানিহীন স্থানে রুকু সেজদাসহ নামাজ আদায় করে নেবে। আবার রুকু সেজদা দিয়ে নামাজ পড়ার মতো স্থান থাকা অবস্থায় বন্যাকালীন সময়ে মসজিদে এসে পানিতে ইশারা করে নামাজ আদায় করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। মসজিদে আসার ইচ্ছে থাকার কারণে ইনশাআল্লাহ মসজিদে আসার সওয়াব থেকে মাহরুম হতে হবে না। (তথ্যসূত্র: নুরুল ইজাহ, ‘সালাত’ অধ্যায়, ‘জামাত’ পরিচ্ছদ: ৭৮; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি: ২৯৯; রদ্দুল মুহতার: ২/২৯২; মাওসুয়াতুল ফিকহিয়া আল কুয়েতিয়াহ: ৪২/৬৩; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি: ২৯৭)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral ভোরের কাগজ,"শ্যামাপূজার দিন অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান ",হিন্দু ধর্ম,"বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামাপূজা ও দীপাবলি। আগামী রবিবার (১২ নভেম্বর) শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হিন্দুদের এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে দিনটিতে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্যে বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন যে, বিরোধী দলসমূহ ঐক্য পরিষদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোববারের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন। উল্লেখ্য, সরকার পতনের একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী রবিবার ও সোমবার সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"৩য় চার্লসের রাজ্যাভিষেকে বিভিন্ন ধর্মের মিলনমেলা ",অন্যান্য,"ব্রিটেনের রাজা হিসেবে তৃতীয় চার্লসের অভিষেক হচ্ছে আজ শনিবার। তিনি হবেন ব্রিটেনের ৪০তম রাজা। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে সীমিত কিন্তু জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই রাজকীয় অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে। আধুনিক ব্রিটেন যে বিভিন্ন স¤প্রদায় ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের দেশ, তা তুলে ধরতেই অনুষ্ঠানটিকে বিশেষভাবে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন চার্লস। তার মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মারা যাওয়ার পর তিনি রাজার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অভিষেক অনুষ্ঠানে যা হবে : ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে অভিষেক অনুষ্ঠানে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে কুইন কনসর্ট ক্যামিলাকেও মুকুট পরানো হবে। এই অভিষেক অনুষ্ঠান মূলত অ্যাংলিকান খ্রিস্টানদের একটি ধর্মীয় সভা যা আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি পরিচালনা করে থাকেন। এ সময় রাজার মাথায় ও হাতে ‘পবিত্র তেল’ লেপন করা হয় এবং রাজকীয় প্রতীক হিসেবে তিনি রাজদণ্ড ও রাজগোলক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্বে রাজা তৃতীয় চার্লসের মাথায় সেন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট পরিয়ে দেবেন আর্চবিশপ। এটি একটি স্বর্ণের মুকুট যা ১৬৬১ সালে তৈরি করা হয়েছিল। অভিষেক অনুষ্ঠানে কারা থাকছেন, কারা থাকছেন না : রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে অনেক বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকছেন। আবার রাজপরিবারেরই অনেক সদস্য থাকছেন না। বিশ্বনেতাদের মধ্যে থাকছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং প্রমুখ। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। অন্য রাজপরিবারগুলোর মধ্যে স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেতিসিয়া, যুবরাজ ফ্রেদেরিক এবং ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্সেস মেরিসহ বিভিন্ন দেশের রাজপরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অভিষেকে থাকছেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার প্রতিনিধিত্ব করবেন স্ত্রী জিল বাইডেন। অভিষেকে উপস্থিত না থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্তানদের নিয়ে থাকবেন। অবশ্য কয়েক মাসের দর-কষাকষির পর অনুষ্ঠানে থাকতে রাজি হয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। রাজ্যাভিষেকে বিভিন্ন ধর্মের উপস্থিতি : ইংল্যান্ডের রাজা সরকারিভাবে ‘চার্চ অব ইংল্যান্ড’-এর প্রধান। তা ছাড়া, তাকে ‘ধর্মের রক্ষাকর্তা’ বলেও মান্য করা হয়। প্রথাগতভাবে এই ‘ধর্ম’ খ্রিস্টান ধর্ম। কিন্তু চার্লস বরাবরই বলে এসেছেন, তিনি ‘সব ধর্মের রক্ষাকর্তা’ হিসেবেই পরিচিত হতে চান। তাই অভিষেক অনুষ্ঠানে চার্লস বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাকিংহাম প্রাসাদ সূত্রের খবর, এই অনুষ্ঠানটি যার পৌরহিত্যে হবে, সেই আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবেরি রেভারেন্ড জাস্টিন ওয়েলবির সঙ্গে আলোচনা করেই অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে। রাজ্যাভিষেক মূলত খ্রিস্টীয় রীতি মেনে হলেও এবার বিভিন্ন ধর্মের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানকে বিশেষ মাত্রা দেবে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে আশা প্রকাশ করেছেন চার্লস। আজকের অনুষ্ঠানে বাইবেল থেকে পাঠ করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এর আগে সব সময়ে এই কাজটি করে এসেছেন কোনো এক বিশপ। প্রসঙ্গত, সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু। অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ অংশে রাজার হাতে ‘রাজকীয়’ কিছু দ্রব্য তুলে দেয়া হয়। প্রথাগতভাবে যাজক বা রাজপরিবারের সদস্যরাই এই কাজ করেন। কিন্তু এবারের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ৩ জন অ-খ্রিস্টান। ‘করোনেশন রিং’ বা অভিষেক অঙ্গুরীয় রাজার হাতে তুলে দেবেন লর্ড বাবুভাই প্যাটেল (হিন্দু)। তারপরে, রাজাকে করোনেশন গ্লাভস বা দস্তানা দেবেন লর্ড ইন্দ্রজিৎ সিংহ (শিখ)। তারা দুজনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এরপরে রাজাকে ব্রেসলেট দেবেন পাকিস্তানের বংশোদ্ভূত লর্ড সৈয়দ কামাল (মুসলিম)। অনুষ্ঠান শেষে, বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে সম্ভাষণ জানাবেন রাজা। তাদের মধ্যে থাকবেন ইহুদি, বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলিম, শিখসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,মিথ্যাবাদীর স্থান ইসলামে নেই,ইসলাম ধর্ম,"মিথ্যা বলা ও মিথ্যাবাদীর স্থান ইসলামে নেই। ইসলাম হলো সত্য ধর্ম। এখানে কেবলই সত্যবাদীর স্থান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার ভালোভাবে জানা নেই তা নিয়ে পড়ে থেক না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও হৃদয়- এসবের ব্যাপারে কেয়ামতের দিন প্রশ্নের মুখোমুখি হবে’ (সুরা বনি ইসরাইল-৩৬)। জেনেশুনে তো বটেই এমনকি অনুমাননির্ভর মিথ্যা সম্পর্কেও কোরআন সুস্পষ্ট বলে দিয়েছে, ‘অনুমাননির্ভর মিথ্যাচারীরা ধ্বংস হোক’ (সুরা জারিয়াত-১০)। অন্য আয়াত থেকে জানা যায়, মিথ্যাবাদীকে স্বয়ং আল্লাহ অভিশাপ দিয়ে থাকেন। মুবাহালা সংক্রান্ত আয়াতে এসেছে, ‘তাহলে আমরা সবাই আল্লাহর কাছে এ দোয়া করি যে, মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ অঝোর ধারায় বর্ষিত হোক’ (সুরা আলে ইমরান-৬১)। আল্লাহতায়ালা মিথ্যাবাদীকে ঘৃণা করেন এবং কেয়ামতের দিন মিথ্যাবাদী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। আল্লাহ কোরআনে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘সুতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে নিফাক (দ্বিমুখিতা) রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তারা আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারণে’ (সুরা তওবা-৭৭)। অন্য আয়াত থেকে জানা যায়, মিথ্যা বলা মুনাফিকি বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মিথ্যা বলার শাস্তির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাদের হৃদয়ে আছে একটি অসুখ, আল্লাহ সে অসুখ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি; কারণ তারা ছিল মিথ্যাবাদী’ (সুরা বাকারা-১০)। মিথ্যা সব পাপের মা বলা হয়। একটি ছোট্ট মিথ্যা থেকে শত শত পাপের জন্ম হয়। তাই খুব সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা নিষেধ। কেননা মিথ্যাকে হালকা মনে করার ফলে মানুষ ধীরে ধীরে মিথ্যায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন মিথ্যা কথা বলতে তার আর দ্বিধা করে না। যে কোনো বিষয়ে মুখ দিয়ে অকপটে মিথ্যা বের হয়ে আসে। জলিলে কদর সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সত্যকে আঁকড়ে ধর। কারণ সত্য পুণ্যের পথ দেখায় আর পুণ্য জান্নাতের পথ দেখায়। কোনো ব্যক্তি সব সময় সত্য কথা বললে এবং সত্যের অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে লিখিত হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা পাপের রাস্তা দেখায় আর পাপ জাহান্নামের রাস্তায় নিয়ে যায়। কোনো ব্যক্তি সব সময় মিথ্যা কথা বললে এবং মিথ্যার অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদীরূপে পরিগণিত হয়’ (মুসলিম)। আমরা কথায় কথায় খুব সাধারণ বিষয়ে অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে ফেলি। অতি সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা এমনকি বিনোদনের জন্যও মিথ্যা বলাও ইসলামে নিষেধ। হিজাম (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির, যে মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে। অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির, অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির’ (তিরমিজি)। অন্য হাদিসে স্বপ্ন নিয়ে মিথ্যা বলা সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো স্বপ্ন দেখেছে বলে দাবি করল, অথচ সে তা দেখেনি, তাহলে তাকে দুটি জবের দানা একত্রে জোড়া দিতে বাধ্য করা হবে অথচ সে তা কখনোই করতে পারবে না’ (বুখারি ও তিরমিজি)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইবাদতে ব্যস্ত থাকা ব্যক্তির জন্য আল্লাহর সুসংবাদ,ইসলাম ধর্ম,"অবসর মানে ব্যস্ততা থেকে খালি হওয়া। ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার অর্থ হলো, আখিরাতের জীবনকে সামনে রেখে পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালিত করা। মহান আল্লাহ হাদিসে কুদসিতে তাঁর ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য অবসর হও। আমি তোমার বক্ষ অভাবমুক্ত করে দেব এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করে দেব। আর যদি সেটা না করো (অর্থাৎ আমার ইবাদতের জন্য অবসর না হও), তবে তোমার দুই হাত ব্যস্ততা দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার অভাব-অনটনের পথ কখনো বন্ধ করব না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬৬) অন্য বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য অবসর হও। তাহলে আমি তোমার অন্তর ধনী বানিয়ে দেব এবং তোমার দুই হাত রিজিক দিয়ে পূর্ণ করে দেব। হে আদম সন্তান! আমার (ইবাদত) থেকে দূরে সরে যেয়ো না! তবে আমি তোমার হৃদয় দারিদ্র্য দিয়ে পূর্ণ করে দেব এবং তোমার দুই হাত ব্যস্ততা দিয়ে ভরে দেব।’ (মুস্তাদরাক হাকেম, হাদিস : ৭৯২৬) সব কাজ থেকে যথা সময়ে নিজেকে অবসর করে নিয়ে আল্লাহর অভিমুখী হওয়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য। মহান আল্লাহ তাঁর রাসুল (সা.)-কে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও এবং তোমার রবের দিকে রুজু হও।’ (সুরা : ইনশিরাহ, আয়াত : ৭-৮) এ আয়াতের তাফসিরে ইবনু কাসির (রহ.) বলেন, ‘যখন তুমি দুনিয়ার কাজকর্ম ও ব্যস্ততা থেকে অবসর হবে এবং দুনিয়ার যাবতীয় সম্পৃক্ততা থেকে মুক্ত হবে, তখন ইবাদতে আত্মনিয়োগ করো এবং অন্তরকে খালি করে সক্রিয়ভাবে ইবাদত সম্পাদন করো। আর নিয়ত ও আগ্রহকে একমাত্র তোমার রবের জন্য বিশুদ্ধ করো।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির, ৮/৪৩৩) ইবাদতের জন্য অবসর তিন ভাগে বিভক্ত : (১) মনের অবসর, (২) শরীরের অবসর ও (৩) সময়ের অবসর। মনের অবসর : মনের অবসর হলো, গভীর মনোযোগী হয়ে ইবাদত করা, অন্তরকে লৌকিকতামুক্ত করা, নিয়ত পরিশুদ্ধ করা। শরীরের অবসর : শরীরের অবসর হলো, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর আনুগত্যে নিয়োজিত করা এবং পাপাচার থেকে বিরত রাখা, জিহ্বাকে জিকরে ব্যস্ত রাখা, সত্য কথা বলা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, পেট হারাম খাদ্য থেকে বিরত রাখা ইত্যাদি। সময়ের অবসর : সময়ের অবসর হলো, নির্দিষ্ট সময় ইবাদতের জন্য বরাদ্দ রাখা। যেমন : প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জন্য সময় বরাদ্দ রাখা, প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি। সব কিছুর ওপর আল্লাহর ইবাদতের অগ্রাধিকার ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হলো, দুনিয়ার সব কাজের ওপর আল্লাহর আনুগত্য প্রাধান্য দেওয়া। কেননা দুনিয়াতে মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে ইবাদতে মধ্যপন্থা অবলম্বন করবে। কারণ সামর্থ্যের অতিরিক্ত আমল করা শুরু করলে কয়েক দিন পরে সেটাতে বিরক্তি চলে আসবে। তাই ইবাদতে মধ্যপন্থা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করতে থাকো। কারণ আল্লাহ (সওয়াব দানে) ক্লান্তিবোধ করেন না, যতক্ষণ না তোমরা (আমল সম্পাদনে) ক্লান্ত হয়ে পড়ো। আর আল্লাহর কাছে ওই আমল সবচেয়ে প্রিয়, যা অল্প হলেও নিয়মিত করা হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৮৬১) আল্লাহর ইবাদতের জন্য অবসর হওয়ার সর্বশেষ স্বরূপ হলো, ইবাদতে ইস্তিকামাত তথা অবিচল থাকা। আর ইবাদতে অবিচল থাকার অর্থ হচ্ছে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়মিত আল্লাহর আনুগত্য করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। অতএব তোমরা তাঁর দিকেই দৃঢ়ভাবে গমন করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।’ (সুরা : হা-মিম সাজদাহ, আয়াত : ৬) মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive সমকাল,"বাংলার মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ী নয়: সজীব ওয়াজেদ",অন্যান্য,"বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বাংলার মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ী নয়। পহেলা বৈশাখে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা লিখেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারে নাই। আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকই ধর্মপ্রাণ মুসলমান, কিন্তু ধর্মান্ধ নন। বাংলার মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে সরলপ্রাণ ও ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম প্রদর্শনকারী বা ধর্মব্যবসায়ী নয়।’ ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরাই একসময় বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। বিপরীতে মাত্র ৯টি আসন পেয়ে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় ধর্মব্যবসায়ীরা।’ গত শারদীয় দুর্গোৎসবে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, মণ্ডপে হামলার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন প্রত্যক্ষ করে বাংলাদেশ। সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডল ও নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালের ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগ উত্থাপনের পর দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আসার পর সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার এক শিক্ষক আত্মগোপনে চলে গেছেন। এসব ঘটনায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িকতা আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হলে বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তুলে ধরেন। সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আপনারা জানেন- দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে যে চারটি স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। সবাই সবার নিজের ধর্ম পালন করবে, অন্যদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, ধর্ম নিয়ে কেউ সহিংসতা করবে না- এটাই হলো ধর্মনিরপেক্ষতার মূল কথা। এর সঙ্গে নৃতাত্ত্বিকভাবে চলে আসা বাঙালি সংস্কৃতির কোনো বিভেদ নেই। সাংস্কৃতিকভাবে আমরা অনেক সমৃদ্ধ জাতি।’ আবহমান বাংলার ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারে নাই। প্রত্যেক বাঙালি শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করুন এবং একইসঙ্গে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করুন। যারা এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারা বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এবং সংস্কৃতিকে ধারণ করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই জাতি- ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি। করোনামুক্ত দেশে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনুক এবারের বৈশাখ। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সম্প্রীতির পথে হাঁটতে শুরু করুক সবাই। বাংলা ভাষা এবং হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক আমাদের নতুন প্রজন্মের হাত ধরে।’ স্বাধীন দেশে নিজেদের সংস্কৃতি লালন করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পূর্বপুরুষদের অনিঃশেষ ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, এই দেশে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। আবহমান বাংলার প্রধানতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকা। শান্তি ও সমৃদ্ধির আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শুরু হোক নতুন বছর।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,ভুল স্বীকার করা ব্যক্তিত্বের পরিপন্থী নয়,ইসলাম ধর্ম,"চলার পথে আমাদের অনেকের ভুল হয়ে যায়। ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় আমরা প্রায়ই ভুল করে ফেলি। কেউ কেউ যখন ভুল বুঝতে পারে তা শুধরে নেয়। আবার কেউ নিজের ভুলের ওপর গোঁ ধরে বসে থাকে। এই মনে করে যে ভুল স্বীকার করা ব্যক্তিত্বের পরিপন্থী। হয়তো এর কারণে নিজের সম্মানহানি হবে। অথচ বিষয়টি একেবারেই এমন নয়। মানুষ ভুল করবে—এটাই স্বাভাবিক। আর মহৎ গুণগুলোর একটি হচ্ছে, কৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া। ভুল করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে এটাই মানুষের বৈশিষ্ট্য। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তাওবাকারীরা উত্তম। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫১) আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর ঘটনা। ভুল হয়ে গেলে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার চমৎকার উদাহরণ রেখে গেছেন রাসুলের প্রিয় সাহাবি আবু বকর ও ওমর (রা.)। আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আবু বকর (রা.) ও ওমর (রা.)-এর মধ্যে বিতর্ক হলো, আবু বকর (রা.)-এর কোনো কথায় ওমর (রা.) রাগান্বিত হন। এবং রাগান্বিত অবস্থায় ওমর (রা.) সেখান থেকে চলে গেলেন। আবু বকর (রা.) তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে তাঁর পিছু নিলেন, কিন্তু ওমর (রা.) ক্ষমা করলেন না, বরং তাঁর সম্মুখের দরজা বন্ধ করে দিলেন। এরপর আবু বকর (রা.) রাসুল (সা.)-এর দরবারে এলেন। আবু দারদা (রা.) বলেন, আমরা তখন রাসুল (সা.)-এর কাছে ছিলাম, ঘটনা শোনার পর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের এই সঙ্গী আবু বকর আগে কল্যাণ লাভ করেছে। ’ তিনি বলেন, এতে ওমর লজ্জিত হলেন এবং সালাম করে নবী (সা.)-এর পাশে বসে পড়েন। সব কথা রাসুল (সা.)-এর কাছে বর্ণনা করেন। আবু দারদা (রা.) বলেন, এতে রাসুল (সা.) অসন্তুষ্ট হলেন। আর আবু বকর (রা.) বারবার বলছিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি বেশি দোষী ছিলাম। ’ পুনরায় রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার খাতিরে আমার সাথির ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? তোমরা আমার খাতিরে আমার সঙ্গীর ত্রুটি উপেক্ষা করবে কি? এমন একদিন ছিল যখন আমি বলেছিলাম, হে লোকসকল! আমি তোমাদের সকলের জন্য রাসুল, তখন তোমরা বলেছিলে, তুমি মিথ্যা বলেছ আর আবু বকর (রা.) বলেছিল, আপনি সত্য বলেছেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৬৪০) ‘আমি ভুল করেছি, আমাকে মাফ করে দিন। ’ এটুকু কথায় লুকিয়ে থাকা সব ক্ষোভ রফা করে দিতে পারে মুহূর্তেই। কিন্তু সমাজে ভুল স্বীকার করার মানুষ খুব কম। অথচ এই অনুশোচনায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্বের প্রকাশ ঘটে। তাই ভুল হলে আন্তরিকতার সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নিজের ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা। এতে দুর্বলতা নয়, উদারতা প্রকাশ পায়। তাই ভুল হলে আমাদের করণীয়- এক. ভুল স্বীকার করা এবং অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাওয়া। আর এর দায়ভার মেনে নেওয়া। কোনো মাধ্যম ব্যতীত যার সঙ্গে ভুল হয়েছে সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলে দুঃখ প্রকাশ করা। আর প্রকাশ্যে ভুল করলে প্রকাশ্যে তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া। কারো প্রতি দায়ভার না চাপিয়ে নিজেই সব মেনে নেওয়া। নিজের ভুল স্বীকার করতে গিয়ে আকার-ইঙ্গিতে কাউকে দোষারোপ না করা। দুই. ভুল যদি নিজের অজান্তে হয়ে থাকে তাহলেও তা মানুষের সামনে স্পষ্ট করা। ইনশাআল্লাহ, এর দ্বারা আপনার সম্মান বৃদ্ধি হবে। তবে বারবার যেন একই ভুল করা থেকে পূর্ণ সতর্ক থাকা, নয়তো এর কারণে মানুষের মধ্যে আপনার তথা ওজন কমে যাবে। উল্টো আপনি হবেন হাসির পাত্র। তিন. কৃত ভুলের কারণে যদি কোনো সংকট তৈরি হয় তা মেনে নিয়ে সমাধানের পথ খোঁজা। এ ক্ষেত্রে কোনো তিরস্কারের সম্মুখীন হলে ধৈর্য ধারণ করা। তার সঙ্গে অহেতুক তর্কে না জড়ানো; বরং অনুশোচনা প্রকাশ করা। ভুল স্বীকার করা নবীদের বৈশিষ্ট্য ছিল। অথচ তাঁরা ছিলেন পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাঁরা আমাদের জন্য নমুনা হিসেবে রেখে গেছেন ভুল স্বীকার মানুষের মর্যাদাকে ছোট করে না। আদম (আ.)-এর ভুল স্বীকার আমাদের পিতা আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) যখন বুঝতে পেরেছেন শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে তাঁরা ভুল করেছেন এবং নিষিদ্ধ গাছ থেকে ফল ভক্ষণ করেছেন। তখন তাঁরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ বলেন, তারা বলল, ‘হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করছি। আর যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং দয়া না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবো। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৩) মুসা (আ.)-এর ভুল বুঝতে পারা নবুয়ত প্রাপ্তির আগের মুসা (আ.) যখন জনৈক কিবতিকে চড় দিতে গিয়ে হত্যা করেছিলেন। তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে এ কথা স্বীকার করলেন—এই কাজটি শয়তানের প্ররোচনায় হয়েছে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকলেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনি নগরীতে প্রবেশ করলেন, যখন এর অধিবাসীরা ছিল অসতর্ক। সেখানে তিনি দুটি লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত দেখলেন, একজন তার নিজ দলের এবং অন্যজন তার শত্রুদলের। অতঃপর মুসার দলের লোকটি ওর শত্রুর বিরুদ্ধে তার সাহায্য প্রার্থনা করল, তখন মুসা তাকে ঘুষি মারলেন এভাবে তিনি তাকে হত্যা করে বসলেন। ’ মুসা বললেন, ‘এটা শয়তানের কাণ্ড। সে তো প্রকাশ্য শত্রু ও বিভ্রান্তকারী। তিনি বলেন, ‘হে আমার রব! আমি তো আমার নিজের প্রতি জুলুম করেছি; কাজেই আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ১৫, ১৬) আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দান করুন। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"যেভাবে সাফা-মারওয়া পাহাড় পরিস্কার করা হয় ",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র নগরী মক্কায় মসজিদে হারামের নিকট অবস্থিত সাফা-মারওয়া‌ মহান আল্লাহ তা’য়ালার অন্যতম নিদর্শন। হারামাইন শরিফাইনের পরিচালনা কমিটি পবিত্র কাবা ও তার পবিত্র স্থানগুলোর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সাফা এবং মারওয়া প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩০০ মি. (৯৮০ ফুট)। এসব স্থানের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তাদের আলাদা পরিকল্পনাও রয়েছে। মহামারি করোনার এ সময়ে কাবা শরিফের চারপাশসহ সাফা-মারওয়া পাহাড়ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। কারণ সাফা মারাওয়া পাহাড় হজ ও ওমরার অন্যতম রোকন। এটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা গুরুত্বও অনেক বেশি। কেননা আল্লাহ তা’য়ালা এ পবিত্র দুই স্থান সম্পর্কে কুরআনে আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ اللّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ ‘নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’য়ালা নিদর্শনগুলোর অন্যতম। সুতরাং যারা কাবা ঘরে হজ অথবা ওমরাহ পালন করে, তাদের পক্ষে এ দুটিতে (সাফা-মারওয়ায়) প্রদক্ষিণ করাতে কোনো দোষ নেই। বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকির কাজ করে, তবে আল্লাহ তাআলার অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তার সে আমলের সঠিক মুল্য দেবেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৮) মসজিদে হারামের গালিচা পরিস্কারের ইনচার্জ জাবের আল-ওয়াদানী বলেন, সাফা ও মারওয়া পাহাড় পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া হয়৷ মসজিদে হারাম পরিস্কার করার জন্য ব্যবহৃত উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সাফা-মারওয়া পাহাড় পরিস্কার করার কাজে ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক এই পাহাড় সাফা ও মারওয়া পরিস্কার করার জন্য একটি দল গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিদিন পাহাড় এবং তার আশপাশ অত্যন্ত যত্নের সাথে পরিস্কার করে। হারামাইন শরিফাইনের জেনারেল প্রেসিডেন্সির মহামারি প্রতিরোধক ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক হাসান আল-সুওয়াহিরি বলেন, মসজিদে হারাম এবং অন্যান্য পবিত্র স্থানগুলিকে সবধরনের পোকামাকড় এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক বস্তু থেকে রক্ষা করার জন্য অন্তত ২০টি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মসজিদে হারাম এবং অন্যান্য জায়গাগুলি পরিস্কার করার সাথে সাথে পোকামাকড়ও বিনাশ করে থাকে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"লাইলাতুল কদর : বান্দার ভাগ্যনির্ধারণী রাত ",ইসলাম ধর্ম,"কোরআনে ১১৪টি সূরা। সেই সূরাসমূহের মধ্যে একটি বিশেষ রাতকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ একটি সূরা নাজিল করা হয়েছে। সূরা কদর। এই থেকেই বোঝা যায় শবে কদরের গুরুত্ব কতোখানি। আলহামদুলিল্লাহ, বলতে গেলে আমরা কেউই শবে কদরের মর্যাদা ও ফজিলত সম্পর্কে কম ওয়াকিবহাল নই। অতএব, এ রাতের ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া হবে নিতান্তই এক দুর্ভাগ্য। ইরশাদ হয়েছে : আমি এ (কোরআন) নাজিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জানো, কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও বেশি ভালো। ফেরেশতারা ও রূহ এই রাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রতিটি হুকুম নিয়ে নাজিল হয়। এ রাতটি পুরোপুরি শান্তিময় ফজরের উদয় পর্যন্ত। (সূরা কদর : ১-৫। প্রশ্ন হচ্ছে, শবে কদর আসলে কবে? বুখারি ও মুসলিমের হাদিস থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, আমাকে শবে কদর দেখানো হয়েছিল; কিন্তু পরে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব, তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতে তা অনুসন্ধান করো। সে হিসাবে, আমরা বেশির ভাগই ধরে নিই যে, ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের যেকোনো এক রাতে শবে কদর। তবে আমরা যদি সালাফদের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব যে, অনেকেই ব্যাখ্যা করেছেন শুধু বিজোড় রাত নয়, যেকোনো জোড় রাতেও শবে কদর হয়ে যেতে পারে! শবে কদরের হাদিসগুলো নিয়ে ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ (রা.)-এর ব্যাখ্যাটি সত্যিই আকর্ষণীয়। আলহামদুলিল্লাহ, নিশ্চয়ই রমজানের শেষ দশকের কোনো এক রাত হচ্ছে শবে কদর। আর এ রাতটি হচ্ছে কোনো এক বিজোড় রাত, যেভাবে হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আর সাধারণত এই বিজোড় রাতটি ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের যেকোনো এক রাতে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত অন্য এক হাদিস থেকে জানা যায়, ‘রমজানের (শেষ দশকের) অবশিষ্ট নবম রাতে, অবশিষ্ট সপ্তম রাতে, অবশিষ্ট পঞ্চম রাতে এবং অবশিষ্ট তৃতীয় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)। এ হাদিস থেকে আমরা দেখতে পারি যে, যদি কোনো রমজান মাস ৩০ দিনের হয়, তাহলে অবশিষ্ট নবম রাতটি হবে ২২ রমজানের রাত, অবশিষ্ট সপ্তম রাতটি হবে ২৪ রমজানের রাত, অবশিষ্ট পঞ্চম রাতটি হবে ২৬ রমজানের রাত এবং অবশিষ্ট তৃতীয় রাতটি হবে ২৮ রমজানের রাত! আর এভাবেই আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা.) শবে কদরের রাত সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন। অন্য দিকে, যদি কোনো রমজান মাস ২৯ দিনের হয়, তাহলে উক্ত হাদিস অনুযায়ী শবে কদরের রাত পড়বে শেষ দশকের বিজোড় তারিখের রাতগুলোর যেকোনো এক রাতে। অতএব, মুমিনের উচিত, রমজানের শেষ দশ রাতের প্রতিটি রাতেই শবে কদর অনুসন্ধান করা। সুতরাং পুরো রমজান মাসেই শবে কদরের তালাশে থাকা উচিত। রমজানের প্রত্যেকটি রাত যদি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো যায়, তবে শবে কদর অবশ্যই ভাগ্যে মিলবে বলে আশা করা যায়। আর তা সম্ভব না হলে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে জাগ্রত থেকে জিকির-আজকার, নফল নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদির মাধ্যমে যদি কাটানো যায়, তবে শবে কদর মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এটা সম্ভব না হলে, অন্তত এই রাতগুলোতে যেন এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা হয়। এতে আশা করা যায়, শবে কদরের ফজিলত থেকে মাহরুম হতে হবে না। কারণ, হাদিস মতে এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় সম্পূর্ণ রাত ইবাদত করার সমতুল্য। আর যদি বেজোড় রাতগুলো পূর্ণভাবে ইবাদতের মধ্যে অতিবাহিত করার সুযোগ না হয়, তবে অন্তত ২৭ তারিখের রাতের গুরুত্ব দেয়া এবং পুরো রাত ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা দরকার। যে জন্য শেষ দশ দিন ইতিকাফ সুন্নত করা হয়েছে। নবী করিম (সা.) জীবনভর রমজানে ইতিকাফ করেছেন। যেন জোড়-বিজোড় প্রতিটি রাতেই মানুষ শবে কদর তালাশ করার সুযোগ পায়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,মৃত্যু আসার আগেই প্রস্তুতি নেওয়া মুমিনের কর্তব্য,ইসলাম ধর্ম,"মৃত্যুই প্রতিটি জীবনের অমোঘ পরিণতি। নিজের মৃত্যু আমরা চাই না। উপরন্তু মৃত্যুর কথা চিন্তাও করতে চাই না। আপনজনদের মৃত্যুতে ব্যথিত হই কিন্তু শত আপত্তি, বেদনা আর অনিচ্ছা সত্ত্বেও মৃত্যুই জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। আরও বড় সত্য হলো- কখন মরব তা আমরা কেউই জানি না। সবচেয়ে বড় কথা হলো- যে জীবনের জন্য আমরা এত লালায়িত সে জীবনটি মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের তুলনায় কিছুই নয়। এজন্য জীবনের বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। যে আগন্তুককে কোনোভাবেই ফেরানো যাবে না, তাকে অভ্যর্থনার জন্য সদা সর্বদা প্রস্তুত থাকাই তো বুদ্ধিমানের কাজ। আর মৃত্যুর অভ্যর্থনা হলো তাকে বারবার স্মরণ করে সতর্ক থাকা। দুনিয়াতে আল্লাহ পাঠিয়েছেন যে কদিন তিনি বাঁচিয়ে রাখবেন ভালোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। দুনিয়ার সফলতার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু কখনই তা আখেরাতকে নষ্ট করে নয়। যেহেতু চলেই যেতে হবে, কী হবে আর অকারণ বিবাদ করে, পরস্পরের সম্পর্ক নষ্ট করে মানুষের নিন্দা ও ধিক্কারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়ে মহান রবের কাছেও অপরাধী হয়ে যাওয়ার। যতটুকু পারা যায় নিরিবিলি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলা এবং নিজের পাথেয় সংগ্রহ করতে থাকা। যেন গুনাহটা কম হয়। অন্তত মানুষ মরার পর একবার হলেও যেন তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করে। অসুখে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। কারণ সব অসুস্থতা ও কষ্ট মুমিনের জন্য সওয়াব বয়ে আনে। মুখে স্বাভাবিক বেদনা বা কষ্ট প্রকাশে অসুবিধা নেই। তবে অসুস্থতার জন্য আল্লাহকে, ভাগ্যকে দোষ দেওয়া, আপত্তিকর কথা বলা অবশ্যই পরিহার করতে হবে। এতে কখনই বিপদ কাটে না। শুধু শুধু গুনাহ হয়। কোনো কষ্টেই মৃত্যু কামনা করা যাবে না। জীবনটা আল্লাহর দেওয়া সবচেয়ে বড় নেয়ামত, একে নষ্ট করা, ক্ষতিগ্রস্ত করা, আত্মহত্যা করা তো দূরের কথা, শত কষ্টেও মৃত্যু কামনা করা যাবে না। এ কামনা মৃত্যুকে এগিয়ে আনে না, কষ্ট কমায় না, কিন্তু মুমিনের সব নেকি নষ্ট করে দেয় এবং গুনাহ অর্জনে সহায়তা করে। নবীজির চাচা হজরত আব্বাস (রা.) অসুস্থ হয়ে যখন মৃত্যু কামনা করেন, তখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, চাচা মৃত্যু কামনা করবেন না। আপনি যদি নেককার হন তবে জীবন বাড়লে নেকি বাড়বে। আর যদি বদকার হন তবে জীবন বাড়লে তওবা করার সুযোগ পাবেন। কাজেই কোনো অবস্থাতেই মৃত্যু কামনা করবেন না। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, একান্তই বাধ্য হলে কেউ বলতে পারবে, হে আল্লাহ যতক্ষণ আমার জন্য জীবন কল্যাণকর, ততক্ষণ আমাকে জীবিত রাখুন। আর যখন আমার জন্য মৃত্যু অধিকতর কল্যাণকর হয় তখন আমাকে মৃত্যু দিন। (বুখারি শরিফ)। সব মুমিনেরই উচিত মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা। বেশি বেশি নেক আমল করা। সব রকমের গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং এ প্রতিজ্ঞা করা, গুনাহ যত ছোটই হোক করব না। নেকি যত ছোটই হোক কখনই ছাড়ব না। মানুষের পাওনা থাকলে আদায় করে দেওয়া বা আদায়ের ব্যবস্থা রাখা ও অসিয়ত করা। একটি বিশেষ অসিয়ত সব মুমিনেরই করা উচিত, তা হলো তাকে যেন পরিপূর্ণ সুন্নত পদ্ধতিতে দাফন করা হয়। সাহাবি-তাবেইনগণ এরূপ অসিয়ত করে যেতেন। মানুষের আখেরাতের সফলতা নির্ভর করে তার কর্মের ওপর। কাজেই শুধু মৃত্যুকালীন অবস্থা দেখে তাকে ভালো বা মন্দ বলা যায় না। তবে কোনো কোনো মৃত্যুকে ভালো বলা যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার জীবনের সর্বশেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে ব্যক্তি একসময় না একসময় গুনাহগার হলেও শাস্তি ভোগের পর জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আবু দাউদ ইবনে হিব্বান)। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, মুমিনের মৃত্যু হয় কপালের ঘামের মধ্য দিয়ে। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, কোনো মুসলিম শুক্রবারের দিবসে বা রাতে মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাকে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিজি)। অর্থাৎ কর্মের হিসাব, পুরস্কার বা শাস্তি কেয়ামতের দিন হবে, তবে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত কবরের শাস্তি থেকে আল্লাহতায়ালা তাকে রক্ষা করবেন। শাহাদাত বা শহীদি মৃত্যুর মর্যাদার কথা আমরা সবাই জানি। বিভিন্ন সহিহ হাদিসে নিম্নরূপ মৃত্যুকে শাহাদাত বা শহীদি মৃত্যু বলা হয়েছে। ১. প্লেগ বা মহামারিতে মৃত্যু। ২. পেটের পীড়ায় মৃত্যু। ৩. পানিতে ডুবে, ধ্বংসস্তূপে বা বাড়িঘর ধসে মৃত্যু। ৪. সন্তান প্রসব অবস্থায় মৃত্যু। ৫. অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু। ৬. বক্ষব্যাধিতে মৃত্যু। ৭. যক্ষ্মা রোগে মৃত্যু ৮. নিজের জীবন, পরিবার-পরিজনের সম্ভ্রম বা সম্পদ রক্ষার্থে মৃত্যু। এসব হাদিসের আলোকে আমরা বুঝতে পারি যেসব দুরারোগ্য বৃদ্ধির কারণে মৃত্যু, অস্বাভাবিক বা কষ্টকর মৃত্যু, নিজের অধিকার রক্ষার জন্য মৃত্যু এবং মজলুম হয়ে নিহত হওয়া মৃত্যুকে শাহাদাতের মৃত্যু বলে গণ্য হবে। মৃত্যুপথযাত্রী অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তিকে দেখতে গেলে তার এবং তার পরিবারের জন্য ভালো দোয়া করতে হবে। এ সময়ে দোয়ায় ফেরেশতারা আমিন বলেন বলে সহিহ হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,আমিরাতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শারদীয় দুর্গাপূজা,হিন্দু ধর্ম,"দেশের মতো প্রবাসেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজা। শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গোৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সন্ধ্যা নামতেই আমিরাতের আজমানে অস্থায়ী পূজামণ্ডপ মুখরিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পদচারণায়। ঢাকের তালে তালে নাচ আর নানা আনুষ্ঠানিকতায় আয়োজন করেন তারা। উলুধ্বনি আর প্রার্থনায় দেবী দুর্গার অসুর পথ মানুষের মুক্তির দিনটি উদযাপন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী আমিরাত প্রবাসীরা। বাংলাদেশিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পূজায় অংশ নেন অন্যান্য দেশের হিন্দু ধর্মালম্বীরাও। পূজা, পুষ্পঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ এবং আরতিসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় পূজা উদযাপন করে তারা। প্রবাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলেন, বিজয়ের দশমির প্রথমভাগে দেবী দূর্গার বিদায়কে সামনে রেখে ভক্তি আর শ্রদ্ধা আরতি অঞ্জলি প্রদান করেন। এতে উপভোগের পাশাপাশি অনাচার সংঘমুখ্যর এবং বিশ্ববাসীর প্রার্থনা করেন তারা। দেশ থেকে অনেক দূরে থাকলেও এই উৎসব দেশের অনেকটাই আমেজ মনে করিয়ে দেয় এমনটাই বলেছেন পূজায় অংশগ্রহণকারীরা।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ইত্তেফাক,৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন আজ,ইসলাম ধর্ম,"মানুষের কাছে ইসলামের সঠিক বাণী পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণে শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন। মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে অজুর জন্য পৃথক জায়গা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতব্যবস্থায় নামাজ আদায়ের সুবিধা রয়েছে। এছাড়া, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র এবং ইসলামী গ্রন্থাগার, অটিজম কর্নার, দাফন কার্যক্রমের ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজাখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সম্মেলন কক্ষ এবং ইসলামিক দাওয়াহ, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার পাশাপাশি সব পৌরসভায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ নির্মাণে সরকার ২০১৭ সালে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বিভিন্ন পর্যায়ে এ পর্যন্ত মোট ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার উদ্বোধন করেছেন। নতুন আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০০।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আল কোরআনের আয়নায়, চাই নিজেকে ",ইসলাম ধর্ম,"মহা গ্রস্থ আল কোরআন। মুত্তাকিন বান্দার জন্য হিদায়াত। মানব জাতির জীবন বিধান। যা মহান আল্লাহ তাআলা বিশ^ নবী হজরত রাসুল (দ) এর উপর নাজিল করেন। এ কিতাব বিশ^ নবী (দ) এর জন্য একটি জীবন্ত মোজেজা। যে কিতাব অন্ধাকার-থেকে আলো,মিথ্যা থেকে-সত্য,অন্যায় থেকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাপ কাটি।এরশাদ হচ্ছে-‘আমি যুগে যুগে নবী রাসুল পাঠিয়েছি প্রামান্য দলিলসহ,আর নাজিল করেছি কিতাব ও ন্যায়ের দন্ড। যাতে করে গোটা মানুষ জাতি ন্যায় ও ইনসাফের উপর প্রতিস্টিত হতে পারে’।(আল হাদীদ-২৫)। সুতরাং বুঝা গেল যে,ন্যায়,ইনসাফ ও কল্যাণ প্রতিষ্টার একমাত্র মাপ কাটি আল কোরআন। এরশাদ করেন, ‘হে মুহাম্মদ! এটি একটি কিতাব। আমি এটি তোমার উপর নাজিল করেছি। যাতে করে তুমি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসো’।(আল ইব্রাহীম-১)। মহান আল্লাহ তাআলা পুথিবীতে এক লক্ষ বা দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী ও রাসুল (দ) প্রেরন করেন। নবী ও রাসুলদের প্রতি সহিফা ও আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। প্রত্যেক নবীর ও রাসুলের শরীয়ত একই রকম ছিল না। সর্বশেষে বিশ^ নবী (দ) এর উপর মহা গ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করে ইতিপুর্বে নাজিল কৃত সব আসমানি কিতাবের হুকুম আহকাম বাতিল করেন। শুধু মাত্র কোরআনের বিধি-বিধান কিয়ামত পর্যন্ত চালু থাকবে। সুতরাং আল কোরআন মোমিন বান্দার জন্য উপর প্রশান্তির ঝর্না ধারা।এ কিতাবে মানব জীবনের সব সমস্যার সমাধান। মানুষ সৃষ্টির ম্রেষ্ঠ জীব। মহান আল্লাহ তাকে জ্ঞান,বিবেক,ও বুদ্ধি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যার কারনে মানুষ,ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ,নিয়ম-কানুন,বিধি-নিষেধ, হালাল-হারাম বুঝার ক্ষমতা রাখেন। এরশাদ হচ্ছে-‘তিনি আল্লাহ,যিনি স্বীয় রাসুলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীন সহকারে পঠিয়েছেন। যাতে তিনি এ দ্বীনকে অন্য সমস্ত মত ও জীবন ব্যবস্থার উপর বিজয়ী করে দিতে পারেন। চাই তা মুশরিকদের কাছে যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন”।(আস সফ-৯)। মহা গ্রন্থ আল কোরআনে ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ,ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সব আদেশ নির্দেশ রয়েছে।সুতরাং এটি একটি পুনাঙ্গ জীবন বিধান। এটা এমন একটা জীবন-বিধান,এখানে বৈচিত্রময় কিছু বিধান রয়েছে। যা মানব রচিত বিধানে নেই। সে হিসাবে বুঝা যায় যে,আল কোরআনের আয়নায়, চাই নিজেকে। আয়নায় সব কিছু সুস্পষ্ঠ ভাবে ভেসে উঠে। কোন অন্তরায় দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। এরশাদ হচ্ছে-‘হে মানুষ তোমাদের জন্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নসিহত এসে গেছে। এটা ঐ জিনিস যা অন্তরের সব রোগ সারায় এবং মুমিনের জন্য হেদায়াত ও রহমত। হে নবী আপনি বলে দিন এটা আল্লাহর দয়া ও মেহরেবানী যে, তিনি তা পাঠিয়েছেন। এর জন্য তো লোকদের খুশি হওয়া উচিৎ’। (ইউনুস)। আল কোরআন,একটি জ্ঞানের সাগর। জ্ঞান ডুবুরীরা এ সাগরে ডুবে সোনা-রুপা,মনি-মুক্ত,হিরা-জহুরত নিয়ে আসে। তারা মহান আল্লাহর নিয়ামত ও কুদরত খুজে পান। কোন মানুষ যদি আসমানি কিতাবের জ্ঞানে জ্ঞানী না হয়,তাহলে তার মাঝে মানুষ,মানুষত্ব ও মানবতাবোধ উপস্থিত থাকে না। জ্ঞান শুন্য হয়ে,সে হয় অমানুষ।এ কিতাব অধ্যায়নে জিরো থেকে জিরো, জ্ঞানের সন্ধান পাওয়া যায। আল্লাহর সৃষ্টির রহস্য খোজা সম্ভব হয়। আল্লাহর নিয়ামত ও রহমত অফুরন্ত। এ সব মানুষের জন্য। কিন্তু আমরা মানুষ নাফরমান। আল্লাহর শুকুর আদায় করতে পারি না। আল্লাহ মানুষকে ন্যায়-অন্যায়,সত্য-মিথ্যা,আলো-অন্ধকার বুঝার ক্ষমতা দিয়েছেন। সত্য পথে চলার রাস্তা সহজ করে দিয়েছেন।এই কিতাবে আদেশ-নিষেধ,বিধি-বিধান,কিচ্ছা-কাহিনী,ইতিহাস-ঐতিহ্য,পাহাড়-পর্ব্বত,সাগর-নদী,মরুভুমি ইত্যাদি বিষয় সুস্পষ্ট ভাবে আলোচিত হয়েছে। একজন মানুষ দৈনিক কিভাবে আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত করবে তার ব্যাখা রয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে,‘হে নবী আপনি বলুন,আমার নামাজ, কোরবানী,জীবন মরন একমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত’। এই বিধানকে যারা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অস্বীকার করে,তারাই কাফের।কারণ,আল্লাহর নিকট অন্য কোন ধর্ম নয়, একমাত্র মনোনীত ধর্ম হলো ইসলাম। এরশাদ হচ্ছে-‘একমাত্র আল্লাহর নিকট মনোনীত ধর্ম ইসলাম’। এরশাদ হচ্ছে-‘এটা আল্লাহর হেদায়াত যে,এটাই আমার সরল মজবুত পথ। এ পথেই চল। অন্য সব পথে চলবে না। তাহলে তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে ছড়িয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।এ ঐ হেদায়াত যা তোমাদের রব তোমাদেরকে দিয়েছেন।হয় তো তোমরা বাকাঁ পথ থেকে বেচে থাকবে’।(আনয়াম)। ইসলামী আইনের মুল উৎস হলো-কোরআন,হাদীস,ইজমা ও কিয়াস। এরশাদ হচ্ছে-‘সুতরাং তাদের জন্যই ধ্বংস যারা নিজের হাতে শরিয়তের বিধান রচনা করে। তারপর লোকদের বলে যে,এ সব আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এর বদলে সামান্য কিছু মুল্য পেতে পার।তাদের হাতের এ লেখা তাদের জন্য ধ্বংসের কারন এবং তাদের এ রোজগারও ধ্বংস করবে’।(বাকারাহ)। আমরা মানুষ, ক্ষুদ্র জ্ঞানের অধিকারী। আমাদের জ্ঞান যেখানে শেষ, সেখান মহান আল্লাহ জ্ঞান শুরু। আল্লাহর জ্ঞানের কোন সীমা রেখা নেই। তিনি অসূম জ্ঞানের অধিকারী।আল কোরআন একটি মহা কাব্য। এ কাব্যে ছড়া,কবিতা,গল্প সমগ্র,প্রবন্ধ ভান্ডার রয়েছে। যা সাহিত্যে রসে ভরপুর। প্রতিটি শব্দ,লাইনে সাহিত্যের বৈশিষ্ট ও উপাদান যথাযথ ভাবে মিলে মিশে রয়েছে। সাহিত্যে সর্ম্পকে একটি সুরা নাজিল হয়েছে। কোরআনের সাথে জীবনের গভীর সর্ম্পক।শুধু জীবনই নয়,মানুষের ব্যক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,স্বরাষ্ট্রনীতি,পররাষ্ট্রনীতি,সমর নীতি,শিক্ষা নীতি,চিকিৎসা নীতি,আইন-কানুনসহ দেশ পরিচালনার জন্য সব ধরনের বিধি-বিধান চালু রয়েছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞান,সৃষ্টি রহস্য,পরকাল,জান্নাত,জাহান্নাম,বিশ^ প্রকৃতির প্রতি বিশ^াস স্থাপন করা মোমিন জীবনে একমাত্র দায়ীত্ব ও কর্তব্য। পরিশেষে বলতে চাই যে,আল-কোরআন মুসলমানের সংবিধান। যা একমাত্র ইহকাল ও পরকালে মুক্তির উপায়। সুতরাং আল কোরআনের আয়নায়,চাই নিজেকে। প্রত্যেক মোমিন-মুসলমানের ব্যক্তি,পরিবার,সমাজিক জীবনে আল কোরআনকে যথাযথ ভাবে মুল্যায়ন করি। তবেই চারি দিকে প্রশান্তির ঝর্না ধারা প্রস্ফুটিত হবে। ফিরে আসবে সুখ-শান্তি। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সেই বিধান পালনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী হোক। এই কামনা করি।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"উমর (রা.) কন্যা হাফসা (রা.)–র জীবনী ",ইসলাম ধর্ম,"একবার খলিফা উমর (রা.) এক নারীর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কী হয়েছে?’ নারীটি বললেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমার স্বামী আমার কাছ থেকে দূরে আছে। তাঁকে আমার কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়ে উঠেছে।’ উমর (রা.) তখন তাঁর মেয়ে হাফসা (রা.)–র কাছে গিয়ে বললেন, ‘আমি তোমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাই। আমাকে সাহায্য করো। স্বামী কত দিন দূরে থাকলে স্বামীকে কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মেয়েদের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠে?’ হাফসা (রা.) লজ্জায় মাথা নত করে ফেলেন। উমর (রা.) তখন বললেন, ‘আল্লাহ সত্য প্রকাশের ব্যাপারে লজ্জা করেন না।’ হাফসা (রা.) তখন হাতে ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন তিন বা চার মাস। উমর (রা.) নির্দেশ দিলেন, কোনো সৈনিককে যেন চার মাসের বেশি সময় আটকে রাখা না হয়। হাফসা (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)–র কন্যা। তাঁর ভাই সাহাবি আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা.)। হাফসা (রা.) আবদুল্লাহর চেয়ে ছয় বছরের বড় ছিলেন।বিয়ের বয়স হলে উমর (রা.) বনু সাহম গোত্রের খুনাইস ইবনে হুজাফার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন। খুনাইস (রা.) মক্কায় প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্যতম। স্বামীর সঙ্গে হাফসা (রা.) মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় যাওয়ার কিছুদিন পরই খুনাইস (রা.) ইন্তেকাল করেন। হাফসা (রা.) বিধবা হয়ে যান। তাঁর বয়স তখন ২০ বছরেরও কম। উমর (রা.) তাঁর মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবতে লাগলেন। রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। হাফসাকে ৪০০ দিরহাম মোহরানা দেওয়া হয়। হাফসা (রা.) ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী। তাঁর মধ্যে শেখার প্রবল আগ্রহ লক্ষ করে রাসুল (সা.) তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। নারী সাহাবি শিফা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) লিখতে ও পড়তে জানতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নির্দেশে তিনি হজরত হাফসা (রা.)–কে লেখাপড়া ও রোগ নিরাময়ের উপায় শেখান। হাফসা (রা.) ৬০টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদিসগুলো তিনি রাসুল (সা.) এবং উমর (রা.)–এর কাছে শুনেছিলেন।আয়েশা (রা.) আর হাফসা (রা.)–এর সম্পর্ক ছিল বোনের মতো। তাঁরা একে অপরের সহযোগী ছিলেন। আয়েশা (রা.) তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, হাফসার বাবা যেমন প্রতিটি কথা ও কাজে দৃঢ়সংকল্প, হাফসাও তেমন। (আবু দাউদ) রাসুল (সা.)–এর ইন্তেকালের আগে কোরআন একত্রে সংকলনবদ্ধ হয়নি। কোরআন ছিল সাহাবিদের অন্তরে খোদিত। আবু বকর (রা.)–এর খিলাফতের সময় সাহাবি যায়িদ ইবনে সাবিত (রা.)–কে কোরআন সংকলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংকলিত সেই কোরআন হাফসা (রা.)–র কাছে সংরক্ষিত ছিল। উসমান (রা.) খিলাফতকালে হাফসা (রা.)–র কাছে রক্ষিত কোরআনের কপিকে প্রামাণ্য ধরে আরও কপি তৈরি করা হয়। হাফসা (রা.) ৪৫ হিজরিতে রোজা রাখা অবস্থায় মদিনায় ইন্তেকাল করেন। জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,গৃহস্থালি জিনিস ধার দিলে যে সওয়াব,ইসলাম ধর্ম,"এখন সোনালি ফসল ঘরে তোলার মৌসুম। বিরামহীন বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই ঠিকভাবে সোনালি ফসল ঘরে তুলতে গ্রামাঞ্চলে ব্যস্ত সময় পার করছে মানুষ। এ সময় রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফসল প্রক্রিয়াজাত করতে বহু গৃহস্থালিসামগ্রীর প্রয়োজন হয়, যা অনেক সময় অনেক পরিবারের কাছে পর্যাপ্ত থাকে না। তাই কখনো ছোটখাটো জিনিস প্রতিবেশী থেকে ধার করতে হয়। এর প্রচলন পৃথিবীতে আদি যুগ থেকেই চলে আসছে। এমনকি রাসুল (সা.)-ও বিশেষ প্রয়োজনে ধার করেছেন, যার উল্লেখ বিভিন্ন হাদিসে রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে সাফওয়ানের পরিবারের কিছু ব্যক্তির সূত্র থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে সাফওয়ান! তোমার কাছে যুদ্ধাস্ত্র আছে কি? সে বলল, ধার চাইছেন, না জোরপূর্বক নেবেন? তিনি বলেন, না, বরং ধার হিসেবে। সাফওয়ান তাঁকে ৩০ থেকে ৪০টি লৌহবর্ম ধার দিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) হুনাইনের যুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করলেন। মুশরিকরা পরাজিত হলে সাফওয়ানের লৌহবর্মগুলো একত্র করে দেখা গেল, কয়েকটি বর্ম হারিয়ে গেছে। নবী (সা.) সাফওয়ানকে বলেন, আমরা তোমার কয়েকটি বর্ম হারিয়ে ফেলেছি। আমরা তোমাকে এর ক্ষতিপূরণ দেব কি? সে বলল, না, হে আল্লাহর রাসুল! কারণ তখন আমার মনের অবস্থা যেমন ছিল আজ তেমন নেই। ইমাম আবু দাউদ (রহ.) বলেন, তিনি ইসলাম কবুলের আগে এগুলো ধার দিয়েছিলেন, পরে ইসলাম কবুল করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৬৩) এ থেকে বোঝা যায়, কখনো কোনো প্রয়োজনে প্রতিবেশীর সহযোগিতা নেওয়ার অবকাশ রয়েছে। এবং কোনো প্রতিবেশী কোনো কিছু ধার চাইলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়াও উচিত নয়। যেমন—গ্রামে এখন বিভিন্ন কাজে প্রতিবেশীর থেকে দা, কোদাল, শাবল, বালতি ইত্যাদি ধার করতে হয়। যেহেতু এগুলো মানুষের প্রতিদিন প্রয়োজন হয় না, তাই অনেকেই এগুলো তৈরি করেন না। কেউ এ ধরনের ছোটখাটো জিনিস চাইলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়াকে পবিত্র কোরআনে খুব নিকৃষ্ট কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এবং এ ধরনের ছোটখাটো বিষয়ে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(দুর্ভোগ তাদের জন্য)...এবং ছোটখাটো গৃহসামগ্রী দানে নিষেধ করে। ’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৭) আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর যুগে ‘মাউন’ গণ্য করতাম বালতি, হাঁড়িপাতিল ইত্যাদি ছোটখাটো বস্তু ধারে আদান-প্রদান করাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৫৭) যুগের পরিবর্তনের কারণে আরো অনেক ছোটখাটো জিনিস এগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যেগুলো আমাদের নিত্যদিন প্রয়োজন হয়। আমাদের উচিত প্রতিবেশীর কখনো এ রকম ছোটখাটো জিনিস প্রয়োজন হলে, যদি নিজের কাছে এগুলো থাকে, তাহলে তাদের সহযোগিতা করা। ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,"কোরআন মুখস্থ সাহাবির বিয়ের মোহরানা ",ইসলাম ধর্ম,"হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.)-এর বরাতে একটি হাদিসের বর্ণনা আছে। এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার জীবন আপনার হাতে সমর্পণ করতে এসেছি।’ নবী (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে সতর্ক দৃষ্টিতে তাঁর আপাদমস্তক দেখলেন। তারপর মাথা নিচু করে রইলেন। ওই নারী যখন দেখলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো ফয়সালা দিচ্ছেন না, তখন তিনি বসে পড়লেন। সাহাবিদের মধ্য থেকে একজন দাঁড়িয়ে তখন বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, যদি আপনার বিয়ের প্রয়োজন না থাকে, তবে আমার সঙ্গে এই নারীকে বিয়ে দিয়ে দিন।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কাছে কী আছে?’ সাহাবিটি উত্তর দিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কিছুই নেই।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখ, কিছু পাও কি না।’ সাহাবি চলে গেলেন। ফিরে এসে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি কিছুই পাইনি।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘আবার গিয়ে লোহার একটি আংটিও পাও কিনা দ্যাখো।’ সাহাবি আবারও ফিরে গেলেন। এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! তা–ও পেলাম না। এই আমার বস্ত্র। শুধু এটাই আছে।’ তাঁর কাছে কোনো চাদরও ছিল না। লোকটি তার অর্ধেক নারীটিকে দিতে চাইলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার বস্ত্র দিয়ে সে কী করবে? তুমি যদি এটি পরো, তাহলে তার কোনো কাজে আসবে না; আর যদি সে পরে, তাহলে তোমার কোনো কাজে আসবে না।’ সাহাবিটি বেশ কিছুক্ষণ নীরবে বসে থাকলেন। এর পর উঠে দাঁড়িয়ে চলে যেতে উদ্যত হলেন। নবী (সা.) তখন তাঁকে ডেকে এনে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার কি কোরআন মুখস্থ আছে?’ তিনি বললেন, ‘অমুক অমুক সুরা আমার মুখস্থ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘এগুলো কি তোমার মুখস্থ।’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘যে পরিমাণ কোরআন তোমার মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে তোমার কাছে এই নারীকে আমি বিয়ে দিলাম।’ (বুলুগুল মারাম, হাদিস: ৯৭৯)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral প্রথম আলো,"আল্লাহর ভয়ে কাতর থাকা ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহকে ভয় করা জরুরি। আল্লাহর ভয় করে আমরা নিজেদের সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজেদের সৎ পথে পরিচালনা করতে হবে। জীবনকে ইসলামের নীতিতে মূল্যবোধের সঙ্গে চালনা করতে আল্লাহ ভয় করে মুমিনের একটি বিশেষ কর্তব্য। নবী=রাসুলদের এই বৈশিষ্ট্য ছিল। আল্লাহর ভয় ইমানের অপরিহার্য উপাদান। আল্লাহ বলেছেন, ‘সুতরাং তোমরা মানুষকে ভয় কোরো না, আমাকে ভয় করো।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৪৪) আল্লাহ বলেন, ‘তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত। আর আমাকে আশা ও ভীতিসহকারে ডাকত। আর তারা ছিল আমার কাছে বিনয়ী।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯০) আল্লাহর আজাবের ভয়ে ফেরেশতাদের ইমান আনা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তারা তাদের ওপরে আল্লাহকে ভয় করে আর তারা তা-ই করে, যা তাদের আদেশ দেওয়া হয়।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৫০) আল্লাহ আরও বলেন, ‘আল্লাহর বান্দাহদের মধ্যে তারাই তাঁকে ভয় করে যারা জ্ঞানী।’ (সুরা ফাতির, আয়াত: ২৮)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"শুরু হয়েছে বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান ",বৌদ্ধ ধর্ম,"দেশের পার্বত্য এলাকায় বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে ত্রি-চীবর নামে বিশেষ পোশাক দান করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের পর গতকাল (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী এ উৎসব। উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলো বিরাজ করছে সাজসাজ রব। পাহাড়ের বিভিন্ন বিহারে ধারাবাহিকভাবে এ উৎসব পালিত হবে। ভারতীয় জনপদে 'কঠিন চীবর দান' শব্দটি গৌতম বুদ্ধের সময় থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা কেটে, সুতা বানিয়ে, রং করে, নানা রকম আচার ও নিয়ম মেনে একেকটি চীবর তৈরি করার কাজটি খুব বেশি কঠিন বলেই অনুষ্ঠানের এই নাম। ইতিহাস থেকে জানা যায়, গৌতম বুদ্ধের সময় বিশাখা নামে এক পূণ্যবতী, বুদ্ধের জন্য এক দিনের ভেতর এভাবেই চীবর তৈরি করেছিলেন। আর তারই ফলশ্রুতি বর্তমান 'কঠিন চীবর দান' অনুষ্ঠানটি। পূণ্যার্থীদের বিশ্বাস এ কাজের প্রভাবে মৃত্যুর পরে নির্মাণগামী হওয়া যায়। শুক্রবার দুপুর ২টায় রাঙামাটি সদরের মোরঘোনা সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের জন্মস্থান মোরঘোনা বন বিহারে পালিত হয় কঠিন চীবর দান। একই দিনে বাঘাইছড়ি উপজেলার আর্য্যপুর ধর্মোজ্জল বন বিহারেও পালিত হয় এ অনুষ্ঠান।",ধর্মীয় উৎসব,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,উপহার বিনিময়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি,ইসলাম ধর্ম,"উপহার বিনিময় সামাজিক জীবনের একটি সাধারণ অনুষঙ্গ। উপহারের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা-সম্প্রীতি বাড়ে। উপরন্তু এটি ইসলামের দৃষ্টিতে খুবই পুণ্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, তোমরা কিছুতেই বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ তোমরা ঈমান না আনবে, আর যতক্ষণ তোমরা একে অন্যকে ভালো না বাসবে ততক্ষণ তোমরা (পূর্ণ) ঈমানদারও হতে পারবে না। আমি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলে দিই, যা করলে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। তোমরা তোমাদের মধ্যে সালামের প্রচলন ঘটাও। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৬৮৮) অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে উপহার দাও, এতে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। ’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং : ৫৯৪) উল্লিখিত দুইটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি ১. বেহেশতে যেতে হলে ঈমান আবশ্যক। ঈমান ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না। ২. ঈমান যদিও আল্লাহ তায়ালার ওপর এবং নবী-রাসুল, ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, পরকাল ও তকদিরের ওপর বিশ্বাসের নাম; কিন্তু পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে হলে এবং ঈমানের পূর্ণ সুফল পেতে চাইলে এ বিশ্বাসের পাশাপাশি ঈমানদারদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভালোবাসাও জরুরি। ৩. পারস্পরিক এ ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য দুই হাদিসে দুটি পথ বলে দেয়া হয়েছে এক. অধিক হারে সালামের প্রচলন ঘটানো, দুই. পারস্পরিক উপহার আদান-প্রদান। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া উপহার দাও। এটি মনের শত্রুতা ও বিদ্বেষ দূর করে দেয়। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২১৩০) পারস্পরিক উপহার বিনিময় যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়, তখন দূরের মানুষের সঙ্গেও গড়ে ওঠে গভীর-নিটোল সম্পর্ক। অনেক সময় এ সম্পর্ক রক্ত ও আত্মীয়তার বাঁধনকেও ছাড়িয়ে যায়। উপহার বিনিময় উত্তম গুণ হলেও কাউকে উপহার দিতে চাপে ফেলা কোনোভাবেই উচিত নয়। কেউ যদি কারও অতিথি হয়, তাহলে সাধারণত গৃহকর্তাদের জন্য কিছু একটা নিয়েই যায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অতিথিরা সাধ্যানুযায়ী অথবা সুবিধা মতো উপহার নিয়ে যান। কিন্তু বিভিন্ন আনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ খুব আনন্দের হলেও কারও কারও জন্য বেশ নিরানন্দের। যাদের অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে, তারা অত্যন্ত মিতব্যয়িতার সঙ্গে ও নির্দিষ্ট আয়ের মাধ্যমে সব খরচ বহন করেন। তারা আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশীর এরকম আনন্দ অনুষ্ঠানের সংবাদে ও আমন্ত্রণে যেমন উল্লসিত হয়, তেমনি পরক্ষণেই আবার দুশ্চিন্তায় মগ্ন হয়। কারণ সেখানে মানসম্মত হাদিয়া উপহার না দিলে মানরক্ষা হয় না। আর মান রক্ষা করতে গেলে নিজের ক্ষমতায় কুলায় না। এ ধরনের উভয় উভয়সংকটে পড়ে অনেকে। আবার অনেক সময় কোনো অনুষ্ঠানের দাওয়াতের অর্থই হলো আপনাকে উপস্থিত হওয়ার পাশাপাশি মানসম্মত উপহারও নিয়ে যেতে হবে। উপরন্তু উপহার গ্রহণ করার জন্য সেখানে ভিন্ন রকমের আয়োজন রাখা হয়। ‘প্রমাণস্বরূপ’ তা লিখেও রাখা হয়। এরপর কে কত দিল এবং কত খরচ হলো আর কত টাকা উঠে এলো তার হিসাব চলে। এ রকম দৃশ্য আমাদের সমাজের অনেকটা অংশজুড়ে দেখা যায়। উপহার আদান-প্রদানের পরিপূর্ণ সুফল পেতে সামাজিক বাধ্যবাধকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আন্তরিকতাপূর্ণ উপহার দেওয়া হলে সম্প্রীতি ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর তা ঈমানের পূর্ণতার একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গও বটে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,নবিজিকে ভালোবাসবো কী কারণে?,ইসলাম ধর্ম,"এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে অকারণে ভালোবাসে না। যদি কোন লোকের মধ্যে ভালোবাসার মতো গুণ, বৈশিষ্ট্য, বিশেষত্ব ও অসাধারণত্ব বিদ্যমান থাকে, তাহলেই কেবল তাকে ভালোবাসে। যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে ভালোবাসার মতো গুণ ও বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান না থাকে, তাহলে তাকে কেউ ভালোবাসে না। সম্মান করে না ও মর্যাদা দেয় না। বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে ভালোবাসার মতো সমুদয় স্বভাব, প্রকৃতি, নৈপুণ্য, দক্ষতা, পূর্ণতা ও যোগ্যতা পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান ছিল। পৃথিবীতে যত সুন্দর গুণ রয়েছে সকল গুণের আকর ছিলেন মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমরা মনেপ্রাণে ভালোবাসবো। নবিজির কল্যাণকামনা: মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসতেন। তিনি সব সময় নিজের উম্মতের কল্যাণ কামনা করতেন। তার কাছে উম্মতের কষ্ট-ক্লেশ, আপদ-বিপদ ও বালা-মুসিবত অত্যন্ত অসহ্যকর ছিল। ঈমানদার লোকদের প্রতি কল্যাণকামনায় তার হৃদয় ভরপুর ছিল। আর যে মহান সত্তার মধ্যে কল্যাণকামনার এই গুণ বিদ্যমান থাকে লোকে তাকে ভালবাসে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে উম্মাহর প্রতি কল্যাণ কামনা বিদ্যমান থাকার কারণে তিনি উম্মতের প্রতিটি সদস্যের ভালোবাসা পাওয়ার হকদার। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে কল্যাণ কামনার গুণ বিদ্যমান থাকার সাক্ষ্য দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসুল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।’ (সুরা তওবা, আয়াত : ১২৮) চরিত্রবান হওয়া: চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমান। চরিত্রহীন মানুষ ও পশুর কর্মকা-ের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। মন্দ চরিত্রের অধিকারী মানুষ যা ইচ্ছা তাই করে বেড়ায়। তাই এমন লোককে কেউ ভালবাসে না। কেবল চরিত্রবান লোকই মানুষের ভালোবাসা পায়। কোন ব্যক্তি নিজের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে লোক নিয়োগ দেওয়ার পূর্বে চরিত্রবান লোকের সন্ধান চালায়। বিবাহ দেওয়া ও করানোর পূর্বে লোকেরা বর বা কন্যা চরিত্রবান কিনা তা অনুসন্ধান করে। যদি লোকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে চরিত্রবান হওয়ার সাক্ষ্য দেয়, তাহলে এমন লোক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়ার কিংবা বিবাহ শাদি নিষ্পন্ন করা ও করানোর পছন্দের তালিকায় থাকে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি চরিত্রের ষোলকলাপূর্ণ করার জন্যই পৃথিবীর বুকে আগমন করেছিলেন। তাই আমরা তাকে ভালোবাসবো। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়ার সাক্ষ্য দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কলম, আয়াত : ৪) দয়াশীল হওয়া: বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, মানুষ দয়ার দাস। যদি কোন ব্যক্তি কারো উপর দয়া করে, তাহলে সেই ব্যক্তি দয়াশীল ব্যক্তিকে ভালোবাসে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোমল হৃদয়ের অধিকারী ও দয়ার আধার ছিলেন। তিনি সাহাবায়ে কেরামের সুবিধা ও অসুবিধার প্রতি তীক্ষè দৃষ্টি রাখতেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেন। একবার কতিপয় যুবক সাহাবি মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বিশরাত অবস্থান করলে তিনি বুঝতে পারলেন তারা তাদের স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি অতিশয় আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তখন তিনি তাদেরকে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। হজরত মালিক ইবনু হুওয়াইরিস রা. বলেন, আমরা প্রায় একই বয়সের কিছু যুবক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বিশদিন অবস্থান করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র হৃদয়। তিনি বুঝতে পারলেন, আমরা আমাদের পরিবারের লোকজনের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছি। তাই নিজ পরিবারে আমরা কাকে কাকে রেখে গিয়েছি এ বিষয়ে তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করলে আমরা তাকে সে বিষয়ে অবহিত করলাম। তখন তিনি বললেন, ঠিক আছে, তোমরা নিজ পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে অবস্থান করে তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষাদান করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৪২১) নবিজি আল্লাহর বন্ধু: সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তিনি আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য ও গ্রহ নক্ষত্রের সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন। তার ক্ষমতার বাইরে কোন কিছুই নেই। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। অতএব, যদি তার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা যায় এবং তার অন্তরঙ্গ বন্ধুকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসা যায়, তাহলে নিজের মনস্কাম পূর্ণ করা সহজ হবে। আর আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার অন্তরঙ্গ বন্ধু। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ার ঘোষণা নিজেই প্রদান করেছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জেনে রাখো! কারো সাথে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নেই, যদি কাউকে বন্ধু বানাতাম তবে আবু বকরকেই বানাতাম। তোমাদের সঙ্গী আল্লাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬০৭০) মহানবির সঙ্গলাভের জন্য: মানব সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ এই পৃথিবীতে আগমন করেছে, করছে ও করবে তাদের সকলের মধ্যে মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। তাই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতে মর্যাদার সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত থাকবেন। বেহেশতে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে থাকার অন্যতম উপায় হলো তাকে ভালোবাসা। কেননা যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে তার সঙ্গেই তার হাশর হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলো। অতঃপর সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! সে লোকটি সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন, যে একটি সম্প্রদায়কে ভালোবাসে অথচ সে তাদের সাথে মিলিত হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে যাকে ভালোবাসে পরকালে সে তার সঙ্গেই থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৬১১) নবির স্নেহশীলতার কারণে: বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতের প্রতিটি সদস্যের প্রতি অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ ছিলেন। নবীজির স্নেহশীলতার কারণে উম্মতের প্রতিটি সদস্যের জন্য সমীচীন হলো তাকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসা। এক হাদিসে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে উম্মাহর জন্য স্নেহশীল পিতার মতো বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি তার উম্মতকে স্নেহশীল পিতার মতোই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে চলার নিয়ম কানুন পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে শিক্ষা দিয়েছেন। এমনকি তার শিক্ষা দানের আওতা হতে শৌচ কর্মের নিয়ম-কানুনও বাদ যায় নি। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য পিতৃতুল্য, তোমাদেরকে আমি দ্বীন শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমাদের কেউ পায়খানায় গেলে কেবলাহমুখী হয়ে বসবে না এবং কেবলার দিকে পিঠ দিয়েও বসবে না, আর ডান হাতে শৌচ করবে না। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড় দ্বারা শৌচ করতে নিষেধ করতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ০৮)",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,ইসলামের আলোকে পথশিশুদের অধিকার,ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। দায়িত্ব সফলভাবে প্রতিপালন করলে বন্ধুত্বের সম্মানে বিভূষিত করবেন। ইসলাম সর্বকালের সর্বযুগের সব মানুষের জন্য। ইসলামে রয়েছে পথশিশুদেরও ন্যায্য অধিকার। পথশিশু বলতে তাদের বোঝানো হয়, যাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসা ও শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। পথশিশুরা এসব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ইসলামের বিধানে পথশিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। যারা পথশিশু, তারা তাদের এ অবস্থার জন্য দায়ী নয়। এমনকি তাদের এ অবস্থার জন্য তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবকও সর্বাংশে দায়ী নন। সুতরাং যাঁরা ভালো অবস্থায় ও ভালো অবস্থানে আছেন, তাঁদেরও ভাবতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে এ অবস্থা আমার এবং আমার পরিবারের বা আপনজনদের কারও হতে পারত। আল্লাহ যখন কোনো মোমিনকে পরীক্ষায় ফেলেন, অর্থাৎ কষ্টে নিপতিত করেন; তখন তিনি তাকে ভালোবাসেন এবং অন্যদের থেকে তাকে অগ্রাধিকার দেন। তাই তিনি নবীগণকে সবচেয়ে বেশি বিপদাপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করেছিলেন। নবীজি (সা.) বলেন, ‘নবীগণ সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত হন, অতঃপর তাঁদের থেকে যারা নিকট স্তরের। মানুষকে তার বিশ্বাস অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হয়। যদি তার ইমান শক্তিশালী হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও কঠিন হয়। আর যদি তার ইমান দুর্বল হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে হয়। বিপদ বান্দার পিছু ছাড়ে না, পরিশেষে তার অবস্থা এমন হয় যে সে পাপমুক্ত হয়ে জমিনে চলাফেরা করে। (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১৪৩ ও ইবনে মাজাহ)। ইসলামের দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান। ইমান ও তাকওয়া হচ্ছে মানুষ মর্যাদার মানদণ্ড। যে যত বেশি মুত্তাকি, আল্লাহ তাকে তত বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে অধিক মুত্তাকি।’ (সুরা-৪৯ হুজুরাত, আয়াত: ১৩)। পথশিশু এবং ছিন্নমূল ও গৃহহীন নারী বা পুরুষ সবার সমান অধিকার ও সম্মান রয়েছে। ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ বিধানে দুর্বলদের জন্য রয়েছে সহজতা ও সহনশীলতা। তাই এমন মানুষ যারা ইসলামের বিধিবিধান পালনে অক্ষম, তাদের ওপর ইসলাম তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পালনের সুযোগ দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তাঁর সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৮৬)। আমাদের উচিত নিজের সচ্ছলতা ও আর্থসামাজিক নিরাপত্তার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং ছিন্নমূল, গৃহহীন ও পথশিশু ভাইবোনদের জন্য দোয়া করা। যথাসম্ভব তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা। ছিন্নমূল, গৃহহীন ও পথশিশুদের দেখাশোনা করা সমষ্টিগতভাবে সমাজের সবারই দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নাও এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও।’ (বুখারি)। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী পথশিশুদের সঙ্গে সদাচার করা, তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা আবশ্যক। পথশিশুদের পাশে দাঁড়ানো মানবতার দাবি এবং ইমানি দায়িত্ব। পথশিশুদের সঙ্গে অসদাচরণ বা তাদের উপহাস, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বা ঠাট্টা-তামাশা করা আল্লাহকে উপহাস করার শামিল। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিজন। আল্লাহর কাছে প্রিয় সৃষ্টি সে, যে তাঁর সৃষ্টির প্রতি সদয় আচরণ করে।’ প্রিয় নবীজি (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্ষুধার্তকে অন্ন দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে ফল খাওয়াবেন। যে তৃষ্ণার্তকে পানি পান করায়, আল্লাহ জান্নাতে তাকে শরবত পান করাবেন। যে কোনো দরিদ্রকে বস্ত্র দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে উত্তম পোশাক দান করবেন।’ (তিরমিজি)। একদা নবীজি (সা.) ঈদের ময়দানে যাচ্ছিলেন। দেখলেন পথের ধারে একটি শিশু কাঁদছে। নবীজি (সা.) তাকে আদর করে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। শিশুটি বলল, ‘আমার বাবা-মা নেই, আমি এতিম; আজ এই ঈদের দিনে আমার নতুন জামাকাপড়ও নেই।’ নবীজি (সা.) শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন। হজরত আয়িশা (রা.) কে বললেন, ‘তোমার জন্য একটি ছেলে এনেছি। একে গোসল করিয়ে ভালো পোশাক পরাও।’ শিশুটিকে বললেন, ‘আজ থেকে আয়িশা তোমার মা, ফাতিমা তোমার বোন, আমি তোমার বাবা।’ এভাবেই শিশুটির মুখে হাসি ফুটল। (সীরাতুন নবী সা.)। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার পিতা নেই, যে এতিম, আমি তার পিতা। যার অভিভাবক নেই, যে অভিভাবকহীন; আমি তার অভিভাবক। যার আশ্রয়স্থল নেই, আমি তার আশ্রয়স্থল। যার ঘর নেই, আমার ঘরই তার ঘর।’ (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"তারাবিহতে আজ: ১৭ শত্রুর ঘরে নবীর পালন ও কারুনের ধ্বংসের গল্প",ইসলাম ধর্ম,"আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা নামলের ৬০ থেকে সুরা কাসাস ও সুরা আনকাবুতের ১ থেকে ৪৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে। ২০তম পারা পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আসমান-জমিন সৃষ্টি, আল্লাহর ক্ষমতা, ইমানদারের পরীক্ষা, মৃত্যু-পরবর্তী জীবন, রিজিক, দুই নদীর মাঝখানে পার্থক্যরেখা, মুসা (আ.) ও ফেরাউনের কাহিনি, কারুনের ঘটনা, মুসলমানদের দুঃখ-কষ্ট, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য, সবুজ-শ্যামল বাগান সৃষ্টি, মিঠা পানি ও লবণাক্ত পানির দরিয়া, কোরআন আঁকড়ে ধরা ও হিদায়েত আল্লাহর হাতে ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। বান্দার ডাকে আল্লাহর সাড়া সুরা নামলের ৬০ থেকে ৬৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহর কুদরত ও একাত্ববাদ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। পরে মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের আলোচনা এসেছে। আল্লাহর দয়ামায়া মানুষকে বেষ্টন করে আছে। অসহায় অবস্থায়, দুঃখ-কষ্টের সময় এবং অসুস্থতার মুহূর্তে তিনিই সাড়া দেন নিরুপায় বান্দার ডাকে। গভীর অন্ধকারে জলে-স্থলে তিনিই দেন পথের দিশা। বৃষ্টি বর্ষণের আগমুহূর্তে তিনি শীতল ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত করেন। তিনিই মানুষকে রিজিক দেন। জীবন দেন। ভালো কাজের প্রতিদান ইসলাম বিশ্বাসী মানুষের কাছে চায় শ্রেষ্ঠ ও উত্তম আমল। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে, মানুষের কল্যাণে কাজ করে, মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তার জন্য আল্লাহর কাছে উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। আল্লাহ তাকে মহব্বত, নৈকট্য ও অনুগ্রহের দ্বারা সম্মানিত করবেন। তার আশার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেবেন। তার অস্থিরতা দূর করবেন। বর্তমানে মানুষ নানা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে, এক বাঁধনহীন উড়াল জীবন বয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় মানুষ; কোথাও যেন শান্তি নেই, মানুষের এই অস্থিরতা কাটাতে পারে তাদের ভালো কাজ। ভালো কাজ ভয়াবহ সেই কিয়ামতের দিনেও মানুষের জন্য আলো হয়ে দাঁড়াবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে উৎকৃষ্টতর প্রতিদান পাবে এবং সেদিন তারা গুরুতর অস্থিরতা থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৮৯) সুরা কাসাসে নানা ঘটনা ৮৮ আয়াতবিশিষ্ট সুরা কাসাস মক্কায় অবতীর্ণ। এটি কোরআনের ২৮ তম সুরা। কাসাস অর্থ কাহিনি বর্ণনা করা। এ সুরায় বিস্তারিতভাবে মুসা (আ.)-এর ঘটনা বর্ণিত হওয়ার পাশপাশি আরও বিভিন্ন নবীর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, তাই এটিকে সুরা কাসাস বলা হয়। যে নবী বেড়ে উঠেছেন শত্রুর ঘরে স্বপ্নের ব্যাখ্যায় ফেরাউন জানতে পারলেন, বনি ইসরায়েলের এক পুত্রসন্তান তাকে হত্যা করবে। ফেরাউন বনি ইসরায়েলের সব পুত্রসন্তানকে হত্যার নির্দেশ দেন। বনি ইসরায়েল ভেঙে পড়লেন। এদিকে মুসা (আ.)-এর মা তাঁকে প্রসব করলেন। চিন্তায় পড়ে গেলেন। আল্লাহ মায়ের অন্তরে শিশুপুত্রকে রক্ষার যাবতীয় কৌশল ঢেলে দিলেন। মা সিন্দুক বানালেন। একদিন শিশু মুসাকে সিন্দুকে বসিয়ে দরিয়ায় ভাসিয়ে দিলেন। মুসার বোন চললেন সিন্দুকের গতির পথ ধরে। সেই সিন্দুক ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গেল ফেরাউনের ঘাটে। শিশু মুসা গেল ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়ার কোলে। ফেরাউন দেখে তাকে হত্যা করতে উদ্যত হলো। আসিয়া দাঁড়ালেন বাধা হয়ে। এবার তবে ক্ষুধার্ত শিশু মুসাকে দুধ খাওয়াতে হয়। দুগ্ধবতী কয়েকজন নারী চেষ্টা করলেন। কাজ হলো না। মুসার বোন অপরিচিতি হয়ে সব ঘটনা কাছ থেকে দেখছিলেন। তিনি আসিয়াকে বনি ইসরায়েলের এক নারীর খবর দেন, যার দুধ এই বাচ্চা পান করতে পারে। ডাকা হয় সেই নারীকে। সেই নারী মুসার মা। শত্রুর ঘরে মায়ের আদরে মুসা বড় হতে থাকে। যৌবনে পদার্পণ করেন। ঘটনাচক্রে মুসার হাতে জনৈক কিবতির হত্যা হয়। ফেরাউন মুসাকে হত্যার নির্দেশ দিলে এক ব্যক্তির পরামর্শে শহর ছেড়ে মাদায়েনে চলে যান তিনি। কূপ থেকে জন্তুকে পানি খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে শুআইব (আ.)-এর মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। আট থেকে দশ বছর শুআইব (আ.)-এর ঘরে কাজ করার পর তাঁর কন্যার সঙ্গে বিয়ে হয়। পরে নবুওয়ত ও মোজেজা লাভ করেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে ভাই হারুন (আ.)-এর নবুওয়াত আনেন। ফেরাউনসহ অবিশ্বাসীদের একাত্ববাদের দাওয়াত দেন। মুসার বিরোধিতার জন্য ফেরাউনের নির্দেশে হামান কর্তৃক প্রাসাদ নির্মাণ করেন। একদিন মুসা (আ.) ও তাঁর সঙ্গীদের ধাওয়া করতে গিয়ে ফেরাউন ও তাঁর লোকজন নদীতে ডুবে মারা যান। সুরা কাসাসের ৩ থেকে ৫০ নম্বর আয়াতে মুসা (আ.)-এর জীবনের এসব ঘটনার বিবরণ রয়েছে। যে কারণে ধ্বংস হয়েছিল কারুন মুসা (আ.)-এর সময়ে আরেক অহংকারী ও দুষ্ট লোক ছিল কারুন। তার ছিল অঢেল সম্পত্তি। বাইবেল ও তালমুদে কারুনের নাম পাওয়া যায় কোরহ। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাসের (রা.) মতে, ‘কারুন ছিল মুসা (আ.)-এর চাচাতো ভাই। মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের এক অঞ্চলের নেতৃত্ব দিতেন এবং কারুন নেতৃত্ব দিত অন্য অঞ্চলের।’ (তাফসিরে তাবারি) কারুনের ধনভান্ডারের চাবিগুলো বহন করত একদল শক্তিশালী বাহিনী। তাদের পক্ষে ব্যাপারটি ছিল কষ্টসাধ্য। সম্পদের প্রাচুর্য তাকে ধোঁকায় ফেলে দিয়েছিল। সে অহংকার করত। কাউকে দান করত না। আল্লাহকে ভয় করত না। মুসা (আ.) তাকে বোঝালেন। আল্লাহর ভয় দেখালেন। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘(মুসা তাকে বলল) আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন, তা দিয়ে পরকালের ঘর অনুসন্ধান করো এবং ইহকাল থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৭৭) কারুন মুসা (আ.)-এর কথা শুনল না। সে অহংকার দেখিয়ে চলল। অবশেষে আল্লাহ তাআলা কারুনকে তার বাড়িঘরসহ জমিনে ধসিয়ে দেন। সুরা কাসাসের ৭৬ থেকে ৮২ নম্বর আয়াতে সম্পদশালী কারুনের দম্ভ, অবাধ্যতা ও ধ্বংসের কাহিনির বর্ণনা রয়েছে। সুরা আনকাবুতের বিষয়বস্তু কোরআনের ২৯তম সুরা আনকাবুত মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৬৯। এ সুরার আজকের অংশে তাওহিদ, রিসালাত, আখেরাত, মক্কার জীবনে মুসলমানদের কষ্ট, অত্যাচার ও বিপদের মধ্যে পড়া, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য, নুহ (আ.), ইবরাহিম (আ.), লুত (আ.), শুআইব (আ.)-এর কষ্ট ও ত্যাগ, আদ ও সামুদ জাতি, কারুন, ফেরাউন ও হামানদের ধ্বংসের কাহিনি এবং সত্যবাদীর জন্য আল্লাহর পরীক্ষার বর্ণনা রয়েছে। শেষাংশে অবিশ্বাসীদের দেব-প্রতিমা ও মূর্তিগুলোকে মাকড়সার জাতের সঙ্গে উপমা দেওয়া হয়েছে। মাকড়সার জাল যেমন দুর্বল, অবিশ্বাসীদের দেব-প্রতিমাও তেমন দুর্বল।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা ইসলামের ভাষা হতে পারে না : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী,ইসলাম ধর্ম,"ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ইসলামের ভাষা হতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম, সেই হিসেবে আমরা শান্তির অনুসারী। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলেই জাতি ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি একটি বিশাল জনগোষ্ঠী মূলধারা ফিরে পাবে। সৃষ্টি হবে কর্মমুখী মানব সম্পদ। রবিবার বিকালে শেরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল লছমনপুর এলাকার আল আরাবিয়া ফারাজিয়া কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্র-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এসব কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানা করেন, তারা সমাজের ভাল লোক। ভাল লোকদের দেশ প্রেমে আরও এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় দেশ পিছিয়ে পড়বে। এর আগে দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ধর্মীয় আইনে ধর্ষণের শাস্তি ",ইসলাম ধর্ম,"ধর্ষণ সমাজ জীবনে এক জঘন্যতম পাপাচার। জিনা-ব্যভিচার এক সমাজ বিধ্বংসী কালচার। ধর্ষণ মানুষকে পশুতে পরিণত করে দেয়। ব্যভিচারের প্রসারের কারণে মানবতা বিপন্ন হয়। সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘিœত হয়। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দেশে একেরপর এক ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা দেশে নারীর সামাজিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। আরও কত ঘটনা যে আমাদের অজান্তেই ঘটেছে, কত ধর্ষিতা মা বোন লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছে তার হিসেব মেলা ভার! বছর শেষে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন দেয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানগুলো এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ বলছে, তারা একটি ধারণা দিয়ে থাকেন, তবে সঠিক সংখ্যা এর চেয়েও বেশি। এমনকি পত্রিকায় যখন অন্য কোনও ইস্যুকে গুরুত্ব দেয় তখন প্রতিনিধিরা ধর্ষণের খবর দেওয়ার চেয়ে ওইসব সুনির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগী থাকেন। ফলে ধর্ষণের অনেক ঘটনাই পরিসংখ্যানের বাইরে থেকে যায়। আর প্রকৃত হিসেব ইস্যুর ভিড়ে চাপা পড়ে যায়। ধর্ষণ- ব্যভিচারের শাস্তি : ইসলামে ধর্ষণ-ব্যভিচার এতোটাই জঘন্য যে, এর আশে পাশে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। ব্যভিচার ও ধর্ষণ রোধে ইসলামে পর্দার বিধান রাখা হয়েছে, নারীদের শালীন পোশাক পরিধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাথে দুনিয়া ও আখেরাতে এর কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। রাসূল সা. বলেন, ‘ব্যভিচারী অবিবাহিত নারী পুরুষকে ১০০ বেত্রাঘাত এবং ১ বছরের জন্য নির্বাসন করতে হবে। আর বিবাহিত নারী-পুরুষকে রজম করতে হবে অর্থাৎ পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করতে হবে’ ( মুসলিম : ১৬৯০)। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদকে ডাকে না, শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে ব্যক্তি এসকল কাজ করে সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। এবং এ শাস্তি লাঞ্ছিত অবস্থায় সে অনন্তকাল ভোগ করতে থাকবে। (সুরা ফুরকান : ৬)। রাসূল সা. বলেছেন, অর্ধ রজনীতে আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হয়। এ সময় মুসলিম যে দুআই করবে তার সে দুআ আল্লাহ কবুল করবেন। তবে ব্যভিচারকে পেশা হিসেবে গ্রহণকারিণী নারীর দুআ আল্লাহ কবুল করবেন না। (আল মুজামুল কাবীর লিততাবারানী : ৪৩৯১)। ধর্ষণের কারণ ও প্রতিকার : সমাজে ধর্ষণের ঘটনা ঘটার প্রধান কারণ এবং প্রথম ধাপ, পরনারী কিংবা পরপুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি দেওয়া। ইসলাম সেই উৎসটাই উপড়ে ফেলতে চেয়েছে। তাই পুরুষকে নির্দেশ দিয়েছে দৃষ্টি অবনত রাখতে আর নারীকে বলেছে দৃষ্টি অবনত রাখার পাশাপাশি দৈহিক সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখতে এবং কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে শরিয়ত সমর্থিত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যেতে। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে নবী আপনি মুমিনদেরকে বলে দিন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এটাই তাদের জন্যে সবচেয়ে বড় পবিত্রতা। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা আবহিত আছেন। (সুরা নূর : ৩০)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের বাসস্থানে অবস্থান করবে এবং জাহেলি যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মতো তোমরা তোমাদের প্রদর্শন করবে না, তোমরা যথাযথভাবে নামাজ আদায় করবে এবং জাকাত প্রদান করবে।’ (সূরা আহজাব : ৩৩)। সমাজের সবাই যদি ইসলামী আদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়, একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, রাষ্ট্রীয় আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়, তবে আশা করা যায় ধর্ষণের প্রকোপ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। বিশেষত রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো ধর্ষক যেন আইনের হাত থেকে রক্ষা না পায়, রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে গণসচেতনা গড়ে তুলতে হবে। তবে এই সামাজিক অভিশাপ থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইসলাম ধর্মে শিষ্টাচার,ইসলাম ধর্ম,"মানুষই একমাত্র প্রাণী যার বিবেক বুদ্ধি ও জ্ঞান আল্লাহ তাকে দান করেছেন। এ জ্ঞান বিবেক বুদ্ধি দিয়েই মানুষ নিজের জীবনকে পরিচালনা করে। সৃষ্টির সেরা জীব হলো মানুষ। তাই কোরআন মানুষকে তার চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে জীবন পরিচালনা করার তাগিদ দিয়েছে বারবার। আল্লাহ বলেন, এভাবেই আল্লাহতায়ালা তাঁর আয়াতগুলো তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করে বলে দিচ্ছেন, আশা করা যায় তোমরা তা অনুধাবন করবে। (সুরা বাকারা, আয়াত ২৪২)। আমরা সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে বসবাস করতে হলে আমাদের সবাইকে সামাজিক রীতিনীতি ও শিষ্টাচার মেনে জীবন পরিচালিত করতে হয়। আল্লাহ রব্বুল আলামিন রসুল (সা.) এর নীতি ও আদর্শ অনুকরণের জন্য পবিত্র কোরআনে তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, রসুল তোমাদের যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে তোমাদের নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক। (সুরা হাশর, আয়াত ০৭)। পিতা-মাতার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, কী আচরণ করতে হবে সে বিষয়েও আল্লাহ কোরআনে বলেন, তোমরা পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর। যদি তোমাদের কাছে তাঁদের কোনো একজন বা উভয়েই বৃদ্ধ অবস্থায় উপনীত হয় তাহলে তাদের সঙ্গে ‘উহ্’ শব্দটিও বল না এবং কখনো তাদের ধমক দিও না, তাদের সঙ্গে সম্মানজনক ও ভদ্রজনোচিত কথা বল। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩)। আমাদের জীবনে শিষ্টাচার প্রতিটি ক্ষেত্রে বিদ্যমান। একজনের বাসায় গেলে তার অনুমতি নিয়ে সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করতে হয়। আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা কখনো নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারও ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি না চেয়ে এবং তাদের সালাম প্রদান না করে গৃহে প্রবেশ কর না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। আশা করা যায় তোমরা এ থেকে শিক্ষা নিতে পারবে। (সুরা আন নুর, আয়াত ২৭)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ সমুন্নত রাখার জন্য বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। কখনো যদি মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাতের সূচনা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে কী করতে হবে তা কোরআনের সুরা হুজরাতের ৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, মুমিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই, অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক করে দাও। আল্লাহকে ভয় কর, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানি করা হবে। (সুরা হুজরাত, আয়াত ১০)। পবিত্র কোরআনের সুরা হুজরাতে আরও বর্ণিত হয়েছে- কোনো নারী যেন অন্য কোনো নারীকে বিদ্রুপ না করে, কেউ যেন কাউকে নিন্দা না করে, কাউকে মন্দ নামে না ডাকে, অন্যের সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষণ না করে, অন্যের গোপন বিষয়ে পেছনে না লাগে, আর কারও বিরুদ্ধে পরচর্চা বা গিবত না করে। আমাদের সমাজে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলো পরের নিন্দা করা আর তার পেছনে লাগা। অথচ আল্লাহ বলেন, দুর্ভোগ রয়েছে প্রত্যেক পেছনে ও সামনে নিন্দাকারী ব্যক্তির জন্য। (সুরা আল হুমাযাহ, আয়াত ০১)। আমাদের উচিত জীবনের মূল্যবান সময়গুলো অন্যের দোষ না খুঁজে মানুষের কল্যাণে কাজ করা। কাউকে মন্দ নামে ডাকা, মন্দ ধারণা পোষণ করা, কারও বিরুদ্ধে পরচর্চা করা কোরআনে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও আমরা এই কাজগুলো করে আনন্দ পাই। রসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহতায়ালা কেয়ামতের ময়দানে তার দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবেন। (মুসলিম শরিফ, ৬৭৪৬)। আমাদের সমাজের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলো গিবত বা পরনিন্দা করা। আল্লাহ বলেন, তোমাদের কেউ যেন কারোর কোনো গিবত বা পরনিন্দা না করে, তোমাদের কেউ কি চায় যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করবে? তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাক। (সুরা হুজরাত, আয়াত ১৩)। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষকে কিছু নীতি, নিয়ম, শিষ্টাচার ও রীতিনীতির মাধ্যমে জীবন পরিচালিত করতে হয়। যাতে সমাজে সবসময় একে অপরের সঙ্গে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গভীর হয় এবং নৈতিকতা, শালীনতা মেনে জীবন পরিচালিত হয়। তাহলে প্রতিটি মানুষের জীবন হবে নির্বিঘ্ন ও শঙ্কামুক্ত।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,সংখ্যালঘু শব্দটা মুছে ফেলতে হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী,অন্যান্য,"ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, অনেকে নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবেন। এ শব্দটা মুছে ফেলতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন কিন্তু হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন করেছে।আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুল্লাহ আল শাহীন।প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশি ও আমরা বাঙালি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের ভেতরে ভেদাভেদের কোনো প্রশ্ন আসতে পারে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে চাই, বাঙালি হিসেবে থাকতে চাই।’অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম এ বারী, গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম ইসমাইল হোসেন মিয়া, অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম, কাপাসিয়ার ইউএনও এ কে এম গোলাম মোরশেদ খান, কালিয়াকৈরের ইউএনও তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ, গাজীপুর সদরের ইউএনও সৈয়দ মোরাদ আলী, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন, গাজীপুর জেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি কামরুল ইসলাম, গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের খতিব আকতার হোসেন প্রমুখ।ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘আজকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশ পা ফেলেছে। ২০৪১ সালে এটা উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে শামিল হবে। অনেকে মনে করেন কী করে এটা সম্ভব যে আমেরিকার মতো এ দেশ হবে, রাশিয়ার মতো এ দেশ হবে, সুইজারল্যান্ডের মতো এ দেশ হবে। আসলেই এটা সম্ভব। আমাদের ১০টি মেগা প্রকল্প আছে। আজকে এক পদ্মা সেতু থেকে আমাদের পারডে ইনকাম হলো ৩০০ কোটি টাকার ওপরে। এতে বছরে যে অঙ্ক দাঁড়ায়, একসময় আমাদের দেশের বাজেটও এত টাকা ছিল না।’দেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে ফরিদুল হক আরও বলেন, এবার চালু হয়েছে মেট্রোরেল। এখানকার আয় থেকে জিডিপি ২ ভাগ বেড়ে যাবে। ঠিক তেমনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলটি যখন চালু হবে, তখন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে দূরত্ব কমে যাবে প্রায় অর্ধেক। এতে তেলের খরচ অর্ধেক কমে যাবে। সময়ও লাগবে অর্ধেক। বাকি অর্ধেক সময় মানুষ অন্য কাজে লাগাতে পারবে। এ ছাড়া টানেল ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নেওয়া ট্যাক্সের সঙ্গে যোগ হবে। আরও সাতটি মেগা প্রকল্প যখন হয়ে যাবে, তখন জিডিপির হার বেড়ে যাবে বর্তমান সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশ যখনই এগিয়ে যায়, তখনই একশ্রেণির মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কন্ঠ,স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান নিয়ে ইসলাম কী বলে,ইসলাম ধর্ম,"স্বামী-স্ত্রী সমবয়সী হওয়া কিংবা বয়সের তারতম্য থাকা—উভয় অবস্থায় বিবাহ বৈধ। দেশে দেশে স্বামী-স্ত্রীর বয়সের স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক ব্যবধানেরও বহু নজির আছে। শরিয়তে বয়সে তারতম্যময় বিবাহ নিষিদ্ধ নয়। আবার ইসলাম এ বিষয়ে কাউকে উৎসাহও দেয়নি। এ ক্ষেত্রে আছে প্রশস্ততা ও অবাধ স্বাধীনতা। কিন্তু বিষয়টি নির্ভর করে বাস্তবতা, সমাজ, সংস্কৃতি ও পরস্পর বোঝাপড়ার ওপর। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রথমা স্ত্রী খাদিজা (রা.) রাসুল (সা.)-এর চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, খাদিজা (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)-এর চেয়ে ১৫ বছরের বড়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বয়স ছিল তখন ২৫ বছর। নবী করিম (সা.) ও খাদিজা (রা.)-এর মধ্যে শুভ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় শাম দেশ থেকে প্রত্যাবর্তনের দুই মাস পর। তিনি সহধর্মিণী খাদিজা (রা.)-কে মোহরানাস্বরূপ ২০টি উট প্রদান করেন। ওই সময় খাদিজা (রা.)-এর বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। বংশমর্যাদা, সহায়-সম্পদ, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সমাজের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়া। তাঁর জীবদ্দশায় রাসুল (সা.) অন্য কোনো নারীকে বিবাহ করেননি। (ইবনে হিশাম ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৮৯-১৯০; ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা ৫৯) আর রাসুল (সা.) যখন তাঁর সবচেয়ে কম বয়সী স্ত্রী আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু করেন, তখন তাঁদের বয়স ছিল যথাক্রমে ৫৩ ও ৯। যদিও বিবাহ আরো আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) আয়েশা (রা.)-কে প্রধানত পাঁচ কারণে বিয়ে করেছিলেন— ১. আয়েশা (রা.)-এর পিতা আবু বকর (রা.)-এর অতি আগ্রহ ছিল যে তিনি [আবু বকর (রা.)] যেভাবে ঘরের বাইরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী হয়ে যাবতীয় খেদমত আঞ্জাম দেন, অনুরূপ ঘরের ভেতরও যেন তাঁর পরিবারের কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমত করতে পারেন। তাই আবু বকর (রা.) মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার সম্পর্কে রূপান্তর করেন। ২. সব ইতিহাসবিদ এ ব্যাপারে একমত যে আয়েশা (রা.) ছিলেন তৎকালীন আরবের অন্যতম মেধাবী নারী। তাই মহানবী (সা.) তাঁকে বিবাহ করার মাধ্যমে ইসলামের বিধি-বিধান, বিশেষ করে নারীদের একান্ত বিষয়াদি উম্মতকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। ৩. মহানবী (সা.) তাঁকে বিয়ে করেছেন ওহির নির্দেশ অনুসরণ করে। ওহির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৫) ৪. শুধু আরবের সংস্কৃতি নয়, গোটা বিশ্বে সেই সময়ে ধর্মীয় নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবার মধ্যে অল্প বয়সী নারীকে বিবাহ করার ব্যাপক প্রচলন ছিল। ৫. মহান আল্লাহ তাঁর হিকমত অনুযায়ী, মহানবী (সা.)-এর মাধ্যমে এমন কিছু কাজ করিয়েছেন, যেসব কাজের উদ্দেশ্য ছিল—তাঁর উম্মতের জন্য বৈধতা ও অবৈধতার সীমারেখা চিহ্নিত করা এবং সংস্কৃতির নামে মানুষের কল্পিত অলিখিত আইনগুলো ভিত্তিহীন প্রমাণ করা। যেমন—নামাজ কাজা হওয়া, পালক পুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা ইত্যাদি। মহানবী (সা.) নিজে এগুলোর নজির স্থাপন করেছেন। অনুরূপ নিজের চেয়ে বেশি বয়সের কিংবা কম বয়সের স্ত্রী গ্রহণ বৈধ প্রমাণ করার জন্য মহান আল্লাহ মহানবী (সা.)-এর মাধ্যমে নজির স্থাপন করেছেন। এর মাধ্যমে বিবাহের বিধানে প্রশস্ততা ও অবারিত সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যুগে যুগে দেশে দেশে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সুযোগ গ্রহণ করেছে। স্বামীদের যেমন নিজেদের চেয়ে কম বয়সী স্ত্রীকে বিবাহ করার নজির আছে, অনুরূপ স্ত্রীদের মধ্যে নিজেদের চেয়ে কম বয়সী স্বামী গ্রহণের নজিরও দেশে দেশে আছে। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য সবচেয়ে বেশি ছিল রাসুল (সা.)-এর পালক পুত্র জায়িদ ইবনে হারিসা (রা.) ও তাঁর স্ত্রীর। তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন রাসুল (সা.) লালন-পালনকারী বারাকাহ (রা.)। তাঁর প্রসিদ্ধ নাম উম্মে আইমান। জায়িদ ইবনে হারিসার চেয়ে তাঁর স্ত্রী উম্মে আইমান (রা.) কমপক্ষে ৩০ বছরের বড় ছিলেন। উম্মে আইমান (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)-এর পালক মা। রাসুল (সা.)-কে কোলে-কাঁধে করে যাঁরা বড় করেছেন, তিনি তাঁদের একজন। রাসুল (সা.) একদিন সাহাবায়ে কিরামকে বলেন, কেউ যদি জান্নাতি নারীকে বিয়ে করতে চায় সে যেন উম্মে আইমানকে বিয়ে করে। জায়েদ (রা.) দেরি না করে রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টির জন্য তাঁকে বিয়ে করেন। উম্মে আইমান (রা.) তখন বয়স্কা নারী। আর জায়েদ (রা.) অবিবাহিত যুবক। তাঁর উদরে (মক্কায়) জন্মলাভ করেন বিখ্যাত সেনানায়ক উসামা ইবনে জায়েদ (রা.)। (উসদুল গাবাহ ২/১৩০; আল-ইসাবাহ ২/৪৯৬) স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ভারসাম্য স্বামী-স্ত্রীর বয়সে ভারসাম্য রক্ষা করা উচিত। বয়স স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আচরণগত (স্বভাব ও দৈহিক) বিষয়ে প্রভাবক। এ ক্ষেত্রে কোরআনের সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও ইঙ্গিত আছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং (জান্নাতে) তাদের পাশে থাকবে সমবয়সী আয়তনয়না (জান্নাতি রমণী)।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৫২) অন্য আয়াতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি জান্নাতি রমণীদের উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদের করেছি চিরকুমারী, সোহাগিনী, সমবয়স্কা।’ (সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৩৫-৩৮) সুতরাং স্বামী-স্ত্রীর বয়স কাছাকাছি হওয়া বাঞ্ছনীয়। বয়সের বেশি ব্যবধানে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তাই প্রয়োজন ভারসাম্য। ফাতেমা (রা.)-কে বিয়ে করার প্রস্তাব সর্বপ্রথম আবু বকর (রা.) দেন। অতঃপর ওমর (রা.) প্রস্তাব দেন। উদ্দেশ্য ছিল—তাঁরা রাসুল (সা.)-এর জামাতা হওয়ার সম্মান অর্জন করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, সে [ফাতেমা (রা.)] অনেক ছোট। তাঁদের বয়স অনেক বেশি ছিল। রাসুল (সা.) বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁদের আবেদন নাকচ করে দেন। এতে বোঝা যায়, মেয়ের বয়স কম হলে স্বামীর বয়স অতিরিক্ত বেশি হওয়া উচিত নয়। বয়সের বেশি অসমতায় বিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়। (ইত্তিহাফুস সায়েল বিমা লিফাতিমাতা মিনাল মানাকিবি ওয়াল ফাদাইল, পৃষ্ঠা : ৩৪-৩৬) ফাতেমা (রা.)-এর বিয়ের সময় বয়স ছিল সাড়ে ১৫ বছর। (সিয়ারু আলামিন নুবালা, পৃষ্ঠা : ৪২৩)। তবে ইবনে সাদের মতে, সে সময় তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর। আর আলী (রা.)-এর বয়স ছিল ২১, মতান্তরে ২৫ বছর। ইসলামে আলী (রা.) ও ফাতেমা (রা.)-এর বিয়ে একটি আদর্শ বিয়ে। এই দীর্ঘ আলোচনা থেকে জানা যায়, বর-কনের বয়সের ভারসাম্য রাখা উচিত। উত্তম হলো, বয়স কাছাকাছি হওয়া। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর বয়স কিছু কম হওয়া মন্দ নয়। কেননা নারীর গ্রোথ পুরুষের চেয়ে প্রবল। তাই পরস্পরের বয়সে ভারসাম্য আনতে স্বামীর তুলনায় স্ত্রীর বয়স কিছু কম হওয়া কাম্য। অভিজ্ঞরা বলেন, স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বয়সে একটু ছোট হয় তাহলে ভালো। আর নারীর শারীরিক কাঠামো থাকে দুর্বল। ফলে সে আগে বৃদ্ধা হয়ে যায়। যদি দুই-চার বছরের পার্থক্য থাকে তাহলে সমতা আসে। (হুকুকুল জাওজাইন, পৃষ্ঠা ৩৭০) পরিশেষে, আমৃত্যু এক ছাদের নিচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে মানুষ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। আর স্বামী-স্ত্রীর বয়সের অতিরিক্ত তারতম্যের পরিণতি অনেক ক্ষেত্রে সুখকর হয় না। বিবাহ শুধু কিছুদিন এবং কয়েক বছরের উপভোগের জন্য হওয়া উচিত নয়। আর এ ক্ষেত্রে পরস্পর বোঝাপড়া ও শারীরিক সক্ষমতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত থাকে। তাই কাছাকাছি বয়স বা সামান্য ব্যবধান দীর্ঘস্থায়ী দাম্পত্যজীবনের অনুকূল।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral প্রথম আলো,"মুঠোফোনে দেখা যাবে মদিনার মসজিদে নববির ভেতরে-বাইরে ",ইসলাম ধর্ম,"ঘরে বসেই মুঠোফোনে মদিনার মসজিদে নববির ভেতর-বাইরে ঘুরে দেখা যাবে। শারীরিক, আর্থিক বা অন্য কারণে যাঁরা মদিনার মসজিদে নববিতে যেতে পারবেন না, তাঁরাও মসজিদে নববির ভেতর-বাইরে দেখার সুযোগ পাবেন। ঘরে বসে ভার্চ্যুয়াল মসজিদে নববি ঘুরে দেখার জন্য এই ঠিকানার (https://vr.qurancomplex.gov.sa/msq/) ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ভার্চ্যুয়াল মসজিদে নববি দেখার সময় আজানসহ পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শোনা যাবে। মসজিদে নববি প্রাঙ্গণে থাকা উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে ত্রিমাত্রিক ছবি দেখা যাবে এবং দরকারি তথ্য পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে আরবির পাশাপাশি ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষায়ও তথ্যগুলো পড়তে পারবেন। বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রবেশের পর মসজিদে নববিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের সামনের ও পাশের অংশ দেখতে পাবেন ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণকারীরা। মসজিদে নববির বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ রয়েছে। আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট ও কিং ফাহাদ গেট। গেট নির্বাচন করে দিলে সেই পথে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে। পর্দার ওপরে মাঝখানে থাকা নির্দেশনাসূচক বাটন থেকে গেটগুলো নির্বাচন করতে হবে। ভার্চ্যুয়াল প্রযুক্তিতে আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট দিয়ে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে। ঢোকার পর দেখা যাবে পাঠাগার, গ্যালারি ও প্রদর্শনী কক্ষ। নবীর তৈরি মসজিদের ওপরের অংশও দেখা যাবে। সবুজ মিনারের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি মসজিদে নববির মিনারও দেখা যাবে এই ভ্রমণে। ভার্চ্যুয়ালি মসজিদে নববি দেখার সময় কম্পিউটার বা মুঠোফোনের পর্দার আকার ছোট বা বড় করে দেখা যাবে। সৌদি আরবের সরকারি সংস্থা ‘কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স’ ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি টিমের ব্যবস্থা করেছে। স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে ব্রাউজ করেই উপভোগ করতে পারবেন মসজিদে নববি। ২০০১ সালে কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১০ সালে পবিত্র মসজিদের নববির ভেতর-বাইরের অর্ধশত উচ্চমানের ছবি যুক্ত করে সাইটটি তৈরি করা হয়। ৩৬০ ডিগ্রিতে ছবিগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় শোনা যাবে মসজিদে নববির আজান, পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত। ভার্চ্যুয়ালি ঘুরে আসতে পারেন মসজিদে নববি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ঘড়ির কাঁটা উল্টো ঘোরে যে মসজিদে ",ইসলাম ধর্ম,"বছরের পর বছর ধরে, প্রচলিত নিয়মে বাঁ থেকে ডানে না গিয়ে ঘড়ির কাঁটা ছুটছে উল্টো দিকে। এমনই এক ব্যতিক্রমী ঘড়ির দেখা মিলবে তিউনিসিয়ার দ্য গ্রেট মস্ক অব তিস্তুরের মিনারে। অদ্ভুত নিয়মে চলা এ ঘড়ি বানানো হয়েছে অন্তত চারশ’ বছর আগে। খবর ইয়াহু নিউজ’র। ১৭ শতকের প্রথম দিকে, স্পেন থেকে আন্দালুসিয়া সম্প্রদায়ের অনেকেই পালিয়ে তিস্তুরে আশ্রয় নেয়। তাদেরই একজন নির্মাণ করেছিলেন মসজিদটি। সেই নির্মাণশৈলি এত বছর পরও ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা। সবকিছু ছাপিয়ে অবশ্য মসজিদের রহস্যময় ঘড়িটিই রয়েছে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে। এর কাটা কেন উল্টো দিকে ঘুরছে তা নিয়ে রয়েছে নানা মত। অনেকের বিশ্বাস, কাবা ঘর তাওয়াফের সময় ডান থেকে বাঁ দিকে ঘোরে মুসল্লিরা। আর তাই ঘড়িটিও সেভাবেই বানানো হয়েছে। স্থানীয় অনেকের মত, পালিয়ে আসলেও, অতীতে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আন্দুলিসানরা। তাদের সেই স্বপ্নকেই ঘড়ির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তিস্তুরের শহর সুরক্ষা সংস্থার সভাপতি রাচিদ সোসি বলেন, কেউ কেউ বলে, কাবার চারপাশে মুসল্লিরা ডান থেকে বাঁয়ে ঘোরে, আরবি লেখা হয় ডান থেকে বাঁ দিকে সে অনুযায়ী ঘড়িটি বানানো হয়েছে। এছাড়া অনেকের মত, তারা আন্দালুসিয়ার স্মরণে তারা ঘড়িটি এভাবে বানিয়েছিল। আন্দালুসিয়া অঞ্চলের অবস্থান মানচিত্রের বাঁ দিকে। মসজিদের মিনারের গায়ে থাকা আরেক রহস্য ‘দ্য স্টার অব ডেভিড’কে স্থানীয়রা বলছেন একতার প্রতীক। তাদের দাবি, যুগের পর যুগ ধরে তিউনিসিয়ার এই শহরটিতে বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থানকে তুলে ধরছে এই চিহ্ন। রাচিদ সোসি আরও বলেন, দ্য গ্রেট মস্ক অব তিস্তুরের মিনার তিনটি ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। ইসলাম তো অবশ্যই; এছাড়া মিনারটিতে রয়েছে দ্য স্টার অব ডেভিড যা ইহুদি ও খ্রিস্টান দুই ধর্মেই গুরুত্বপূর্ণ। নিঃসন্দেহে এই শহরের বিভিন্ন ধর্মের বাসিন্দাদের সহাবস্থানকে তুলে ধরেছে। বিশ্বে উল্টো ঘড়ি এটিই একমাত্র নয়। ইতালি, চেক রিপাবলিক ও জার্মানিতেও রয়েছে এমন অদ্ভুত ঘড়ি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় বাড়ল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত,ইসলাম ধর্ম,"হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও ২১ দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে রবিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটা এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। আগামী বছর (২০২৪ সাল) হজে যেতে সরকারি-বেসরকারি হজযাত্রীদের নিবন্ধন শুরু হয় গত ১৫ নভেম্বর। নিবন্ধনের সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল আর রবিবার। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কন্ঠ,মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ইসলামী ব্যক্তিত্বদের সম্মাননা,ইসলাম ধর্ম,"সৌদি আরবের মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পড়তে আসা দুই হাজার ৫৫২ শিক্ষার্থী তাতে অংশ নেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অনুষ্ঠিত জমকালো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মদিনা অঞ্চলের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন আনাস গাজি সাহলুল। তিনি বিশ্বব্যাপী জ্ঞান ও বিজ্ঞান প্রচার-প্রসারে এই শিক্ষাকেন্দ্রের অতুলনীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। মুসলিম সমাজে ইসলামের মধ্যপন্থা ছড়িয়ে দিতে এই বিশ্ববিদ্যালয় আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে বলে জানান তিনি। সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ড. মামদুহ বিন সাউদ সানয়ান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি তার তৃতীয় কৌশলগত পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জনের পথে চলছে। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মিলে এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ও গবেষণায় নিত্য-নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করছে এবং বিশ্বব্যাপী শিক্ষিত সমাজ গড়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর এখান থেকে শিক্ষা সম্পন্ন করে সুদক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।এদিকে দ্বিতীয় বছরের মতো এবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীদের বিশেষ সম্মাননা ও ৫০ হাজার রিয়াল পুরস্কার দেওয়া হয়। শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তার, আর্থ-সামাজিক অবদান, সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা, টেকসই উন্নয়ন ও পেশাগত দক্ষতাসহ চার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়।এসব ক্ষেত্রে যারা পুরস্কার লাভ করেন তারা হলেন, নাইজেরিয়ার অ্যালর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শরিয়াহ বিষয়ক শিক্ষক ড. আবদুর রাজ্জাক, কোরিয়ার মায়ংজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. হামিদ চৈ ইয়ং কিল, ইন্দোনেশিয়া সরকারে পিপলস কনসালটেটিভ কাউন্সিলের উপপ্রধান ড. হেদায়াত নুর ওয়াহিদ এবং নাইজেরিয়ার ইউবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানববিদ্যা ফ্যাকাল্টির প্রধান ড. দুকুরি মাসিরি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"সম্পদের অহংকার ধ্বংস করে কারুনকে ",ইসলাম ধর্ম,"কারুন ছিল হজরত মুসা (আ.)-এর সম্প্রদায়ের লোক। আল্লাহ তাকে বিপুল ধনভান্ডার ও প্রাচুর্য দান করেছিলেন। সম্পদের মোহে কারুন ওই এলাকার মানুষের ওপর নিপীড়ন চালাত। কাউকে সে দান করত না। নবী মুসা (আ.) তাকে বোঝালেন। আল্লাহর ভয় দেখালেন। আখিরাতের কথা বললেন। মানুষের প্রতি দয়া দেখাতে বললেন। তাতে কাজ হয়নি। অবশেষে আল্লাহ তাআলা কারুনকে তার বাড়িঘরসহ সবকিছু ধ্বংস করে দেন। সুরা কাসাসে সম্পদশালী কারুনের দম্ভ, অবাধ্যতা ও ধ্বংসের কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। তাফসিরে তাবারিতে আছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাসের (রা.)–এর মতে, কারুন ছিল মুসা (আ.)-এর চাচাতো ভাই। মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের এক অঞ্চলের নেতৃত্ব দিতেন। কারুন নেতৃত্ব দিত অন্য অঞ্চলের। মিসরের ফায়ুম শহরে কারুন হ্রদ নামে একটি স্থান রয়েছে। রাজধানী কায়রো থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখন লোকে সেটিকে চেনে বিরকেত কারুন নামে। কোরআনে আছে, ‘কারুন ছিল মুসার সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের ওপর জুলুম করেছিল। আমি তাকে এত ধনভান্ডার দিয়েছিলাম, যার চাবিগুলো বহন করা একজন শক্তিশালী লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ করো, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দেমাক কোরো না, আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ যা তোমাকে দিয়েছেন, তা দিয়ে পরলোকের কল্যাণ অনুসন্ধান করো এবং ইহলোকে তোমার বৈধ সম্ভোগকে তুমি উপেক্ষা কোরো না। তুমি সদয় হও, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি সদয়। আর পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চেয়ো না। আল্লাহ ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না। ‘কারুন বলল, এ সম্পদ আমি আমার জ্ঞানের জোরে পেয়েছি। সেকি জানত না আল্লাহ তার আগে বহু মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছেন, যারা তার চেয়েও শক্তিতে প্রবল ছিল, সম্পদে ছিল সমৃদ্ধ? অপরাধীদেরকে ওদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না। ‘কারুন তার সম্প্রদায়ের সম্মুখে জাঁকজমকের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিল। যারা পার্থিব জীবন চাইত তারা বলল, আহা! কারুনকে যা দেওয়া হয়েছে, আমরা যদি তা পেতাম! সত্যিই তিনি বড় ভাগ্যবান! আর যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল তারা বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ আর ধৈর্যশীল ছাড়া কেউ এ পাবে না। ‘তারপর আমি কারুনকে ও তার প্রাসাদকে মাটির নিচে মিলিয়ে দিলাম। তার পক্ষে এমন কোনো দল ছিল না, যারা আল্লাহর শাস্তির বিরুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করতে পারত। আর সে নিজেও আত্মরক্ষা করতে পারেনি। আগের দিন যারা তার মতো হতে চেয়েছিল, তারা তখন বলতে লাগল, দেখো, আল্লাহ তাঁর দাসদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা জীবনের উপকরণ বাড়ান ও যার জন্য ইচ্ছা তা কমান। যদি আল্লাহ আমাদের ওপর সদয় না হতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি মাটির নিচে মিলিয়ে দিতেন। দেখো, অবিশ্বাসীরা সফল হয় না। ‘এ–পরকাল, যা আমি নির্ধারণ করি তাদেরই জন্য যারা এ-পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চায় না। সাবধানীদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম। যে সৎকাজ করে, সে তার কাজের চেয়ে বেশি ফল পাবে, আর যে মন্দ কাজ করে, সে তো কেবল তার কাজের অনুপাতে শাস্তি পাবে। যিনি তোমার জন্য কোরআনকে বিধান করেছেন, তিনি অবশ্যই তোমাকে স্বদেশে ফিরিয়ে আনবেন। বলো, আমার প্রতিপালক ভালোই জানেন কে সৎ পথের নির্দেশ এনেছে আর কে পরিষ্কার বিভ্রান্তিতে আছে।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৭৬-৮২)",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative ভোরের পাতা,"মুসলিম বান্ধবীদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ফরাসি তরুণীর ইসলাম গ্রহণ ",ইসলাম ধর্ম,"তুরস্কে বেড়াতে এসে মুসলিম বান্ধবীদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন এলোডলে মরেনো নামে এক ফরাসি তরুণী। তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআর ডট এজেন্সি এ তথ্য জানায়। শুক্রবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেকিরদাগের দারুল ইফতায় আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন। তেকিরদাগের প্রাদেশিক মুফতি শায়খ ইসমাইল ইপেক তাকে কালেমা পড়িয়ে ইসলামে স্বাগত জানান। ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর নিজের নতুন নাম নির্ধারণ করেছেন সিবেল। ডেইলি সাবাহকে ওই তরুণী জানান, সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। এলোডলে মরেনোর ইসলাম গ্রহণের অনুষ্ঠানটি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। অনুষ্ঠানে মুফতি শায়খ ইসমাইল ইপেক বলেন, ‘আমরা মুসলিম। আমরা বিশ্বাস করি- সকল নবী-রাসূল আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এবং তারা সত্যের ওপর অটল ছিলেন। শেষ নবী হলেন- হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.)। ‍পবিত্র কুরআন আল্লাহর কিতাব এবং তা আল্লাহর তরফ থেকে সর্বশেষ ওহী ও প্রত্যাদেশ। পবিত্র কুরআনে যা আছে, আমরা তা নিঃসন্দেহে সত্য বলে বিশ্বাস করি। আমরা সমস্ত ফেরেশতা, তাকদির ও মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার প্রতি ঈমান রাখি।’ বক্তৃতার শেষে মুফতি ইসমাইল ইপেক নওমুসলিমা সিবেল ও ইসলাম গ্রহণে তাকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানান এবং সিবেলের সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করেন। সিবেল আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম গ্রহণের পর মুফতি ইসমাইল ইপেক তাকে কুরআনে কারিমসহ বেশ কিছু ইসলামী গ্রন্থ উপঢৌকন দেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"তুর্কমেনরা তারাবি পড়ে ফজর পর্যন্ত ",ইসলাম ধর্ম,"তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাত। রমজানকে বরণ করে নিতে তুর্কমেনদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। ‘আল মিসরিল ইয়াওমি’ পত্রিকায় বলা হয়েছে, তাঁদের বড় আয়োজন হলো রমজানের জন্য বিশেষ বাজারসদাই। রমজানের আগে মসজিদ ও বাসাবাড়ি পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা হয়। রমজানে সব আত্মীয়স্বজন একত্র হয়। তুর্কমেনদের ঐতিহ্য পরিবারের সবাই একসঙ্গে রোজা রাখা এবং একসঙ্গে ইফতার করা। তুর্কমেনি নারীরা সাজতে খুব পছন্দ করেন। রমজান আসার আগে নিজেদের বাসা, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদে শোভা বাড়াতে তাঁরা নতুন কার্পেট কেনেন। কারুকাজখচিত কাপড় বুনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রমজানের জোহরের নামাজের পরই মসজিদগুলোতে নানা অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানে কোরআন–হাদিসের মজলিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতারও আয়োজন থাকে। প্রতিযোগিতার বিষয় হয় ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। তাতে অংশ নেয় তুর্কমেনি শিশু–কিশোরেরা। রমজান এলে পরস্পর দান–সদকারও প্রতিযোগিতা করে। তুর্কমেনিস্তানে ইফতারির টেবিল সেজে ওঠে প্রকার বাহারি সব খাবার দিয়ে। এর মধ্যে আছে দাগরামা সমুচা ও তুর্কমেন পানীয়। সঙ্গে খেজুর ও বিভিন্ন শাকসবজি। ইফতার ও সাহ্‌রিতে উট বা ভেড়ার গোশতের তৈরি বিভিন্ন খাবার থাকে। তাতে নানা মসলার ব্যবহার থাকে। তাদের ইফতারির টেবিলের আবশ্যিক অনুষঙ্গ উটের দুধের চা। শীতপ্রধান দেশ হওয়ায় চায়ের কদর রয়েছে বারো মাস। তুর্কমেনিস্তানে পুরো রমজানে তারাবিহর নামাজ আদায় করা হয়। তুর্কমেনরা এশার নামাজ দেরি করে পড়ে ফজর পর্যন্ত তারাবিহর নামাজ দীর্ঘ করে। এটা তুর্কমেনদের বিশেষ কৃষ্টি। অন্য কোনো দেশে এ রকমটা দেখা যায় না। শবে কদরকে কেন্দ্র করে তুর্কমেনরা বিশেষ ইবাদতের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"অহেতুক ও অবান্তর প্রশ্ন ত্যাগ করাই সদ্গুণ ",ইসলাম ধর্ম,"প্রশ্নকে বলা হয়ে থাকে অজ্ঞতার চিকিৎসা। প্রশ্নকে বলা হয়ে থাকে জ্ঞান বা ইলমের অর্ধেক। এটা তো তখনই বলা হয়, যখন প্রশ্ন করে কোনো ইলম হাসিল করা উদ্দেশ্য হয় প্রশ্নকারীর। প্রশ্নটি যদি অর্থবোধক ও ইতিবাচক হয় তাহলে আহলে ইলম ও প্রাজ্ঞজনদের উত্তরে জ্ঞানের নতুন সুন্দর ভুবন উন্মোচিত হয় প্রশ্নকারীর সামনে। কিন্তু প্রশ্ন যদি অর্থহীন, অহেতুক কিংবা বিভ্রান্তিকর হয়, তবে কি সে প্রশ্ন কোনো সুফল বয়ে আনে? ফালতু ও বিরক্তিকর প্রশ্ন করা কি সমীচীন? কল্পিত কোনো বিষয় নিয়ে, তাৎপর্য ও উদ্দেশ্যহীন কোনো কৌতুহল নিয়ে প্রশ্ন সব বিবেচনা থেকেই নিরুৎসাহযোগ্য একটি প্রবণতা। এ প্রবণতা পরিত্যাগ করতে পারাই হচ্ছে সফলতা। রাসূলে আকরাম (সা.), সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী মনীষীগণের বাণী ও আমল থেকে এ বার্তাই পাওয়া যায়। হযরত মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, নবী (সা.) বিভ্রান্তিকর ও জটিলতা সৃষ্টিকারী প্রশ্ন করতে নিষেধ করেছেন। হযরত সাহল ইবনে সা’দ (রা.) প্রমুখ থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (সা.) কিছু প্রশ্নকে অপছন্দ করেছেন এবং সেগুলোকে মন্দরূপে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য এটা কেন, ওটা কীভাবে (এমনতর জিজ্ঞাসা) এবং অধিক প্রশ্ন করাকে অপছন্দনীয় করেছেন। হযরত আমীর ইবনে সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্ক্সা (রা.) তার পিতাকে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেছেন, মুসলমানদের ওপর সেই ব্যক্তি সবচেয়ে বড় নিপীড়নকারী যে মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ নয় এমন বিষয়ে প্রশ্ন করার ফলে বিষয়টি নিষিদ্ধ হয়ে যায়। তাউস থেকে বর্ণিত, হযরত উমর ইবনুল খাত্তার (রা.) মিম্বরে অবস্থান করা কালে বলেন, ‘ওইসব ব্যক্তির ব্যাপারে আমি আল্লাহর নামে সতর্ক করছি, যারা ভিত্তিহীন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অস্তিত্ব আছে এমন সব বিষয়ই সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন।’ তাউস বর্ণিত হযরত উমর (রা.)-এর আরো একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। হযরত উমর বলেন, কোনো মানুষের জন্য বৈধ নয় এমন বিষয়ে প্রশ্ন করা, যা আসলে কিছুই নয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা যে বিষয়ের ভিত্তি রয়েছে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করেছেন। হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হে লোক সকল! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যার কোনো ভিত্তি নেই। নিশ্চয়ই হযরত উমর (রা.) ভিত্তিহীন বিষয়ে প্রশ্নকর্তাকে অভিশাপ দিয়েছেন। আওযায়ী বলেন, যখন আল্লাহ তাঁর কোনো বান্দাকে ইলমের বরকত থেকে মাহরূম করতে ইচ্ছা করেন তখন তার মুখে অহেতুক ও বিভ্রান্তিকর কথা নিক্ষেপ করেন। হযরত হাসান বসরী (রাহ.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মাঝে মন্দ লোক তারা, যারা মন্দ প্রশ্ন করে এবং সেসব প্রশ্ন দ্বারা আল্লাহর বান্দাদের ফিৎনায় ফেলে দেয়। ইয়াহইয়া ইবনে আইয়ুব বলেন, আমার কাছে এ তথ্য পৌঁছেছে যে, প্রাজ্ঞজনেরা বলতেন, যখন আল্লাহ ইচ্ছা করেন তাঁর বান্দাকে ভালো কিছু শেখাবেন না তখন তাকে বিভ্রান্তিকর কথাবার্তায় নিমগ্ন করে দেন। অহেতুক ও অবান্তর প্রশ্নে কোনো উপকার নেই। কিন্তু এ ধরনের প্রশ্নের কোনো সীমানাও নেই। দ্বীনী ইলমের পোশাক পরিয়েই এসব প্রশ্ন নিয়ে এক শ্রেণির মানুষকে ব্যাকুল হয়ে যেতে দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে অবান্তর, অহেতুক ও বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন। অধিকাংশ সময়ই মেধার চাতুর্য ও মনের বিলাস প্রবণতা থেকে এ ধরনের প্রশ্নের উদ্ভব হয়। প্রশ্নকারীর নিজের কোনো ফায়দা যেমন এসবে জড়িত নেই তেমনি এসবের উত্তরের সঙ্গে বিশ্বাসগত, আমলগত কিংবা শরীয়ত প্রবর্তকের পক্ষ থেকে নির্দেশ ও নিষেধাজ্ঞাগত কোনো বিধানেরও সম্পর্ক নেই। এ ধরনের প্রশ্ন তো সাধারণভাবে উত্তরযোগ্য নয়ই, তবে তিরস্কার, তাচ্ছিল্য ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ ধরনের প্রশ্ন করা হলে নিঃসন্দেহে তা নিষিদ্ধ ও অবৈধ। প্রশ্ন যদি জানার জন্য, বাস্তব ভিত্তিক ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে হয় তাহলে উত্তরদাতা প্রশ্নকারীর চাহিদা পূরণ করতে পেরে তৃপ্তি বোধ করেন, শান্তি পান। সর্বোপরি তার ওপর অর্পিত ইলমী দায়িত্ব সম্পন্ন করতে পারার আনন্দ লাভ করেন। তাই আহলে ইলম ও প্রাজ্ঞজনকে দ্বীনের যে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে সে প্রশ্নের বাস্তবতা, উপকারিতা সম্পর্কে পূর্ণ সচেতনতা বজায় রাখা সবারই প্রয়োজন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,শাওয়ালের ইবাদতের অপরিসীম ফজিলত,ইসলাম ধর্ম,"মাহে রমজানের শিক্ষাকে বছরজুড়ে ধরে রাখার শিক্ষা দেয় শাওয়ালের ছয় রোজা। শাওয়াল আরবি শব্দ। এর অর্থ উঁচু করা, পূর্ণতা, ফলবতী, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয়ী হওয়া, প্রার্থনায় হাত উত্তোলন করা বা ভিক্ষায় হাত প্রসারিত করা। সুতরাং এ মাসের আমলের দ্বারা বান্দার উন্নতি হয়, নেকির পাল্লা ভারী হয়, গৌরব অর্জন ও সাফল্য আসে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং নিজে শাওয়ালের রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। মানব জাতিকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদতের জন্য। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন, ‘আমি জিন ও মানব জাতিকে একমাত্র আমারই ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।’ সুরা জারিয়াত, আয়াত ৫৬। রমজানে আমরা এতটুকু শিখতে পেরেছি যে তাকওয়া অর্জন করে, পরিপূর্ণভাবে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি-হানাহানি পরিত্যাগ করে আমরা মুমিনরা ভাই ভাই হয়ে গেছি। রমজান আমাদের শিখিয়েছে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে এবং আগামী ১১ মাস আল্লাহর আদেশ-নিষেধ যথাযথ মেনে চলতে হবে। এক মাস রোজা রেখেই যেন বান্দা রোজাকে ভুলে না যায় সে জন্য প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩ থেকে ১৫ তারিখের রোজা, আশুরার রোজা, ৯ জিলহজ আরাফার দিনের রোজাসহ অন্যান্য নফল রোজার বিধান রেখেছে ইসলাম। ফরজ নামাজের কমতিগুলো পোষাতে যেমন নফল নামাজ রয়েছে, তেমনি ফরজ রোজার পরও শাওয়ালের সুন্নত রোজা রয়েছে। এ নফলগুলো ফরজের ত্রুটিগুলোর ক্ষতিপূরণের জন্য। রোজাদার যদি অনর্থক বাক্যালাপ, কুদৃষ্টি প্রভৃতি কাজ থেকে সম্পূর্ণ বাঁচতে না পারে তাহলে তার রোজার পুণ্য কমে যায়। আর কমতি পুণ্যকে পূর্ণ করতেই শাওয়ালের ছয়টি রোজা। শাওয়ালের ছয়টি রোজার মাধ্যমে রমজানের রোজার শুকরিয়া আদায় করা হয়। যখন কোনো বান্দার আমল আল্লাহতায়ালা কবুল করেন তখন তাকে অন্য নেক আমলের তৌফিক দেন। আমাদের পূর্বসূরিদের অনেকে রমজানের পর ছয় মাস আল্লাহর দরবারে এ জন্য কাঁদতেন, যেন রমজানে কৃত ইবাদত কবুল হয়। ইবাদত কবুল হওয়ার আলামত হলো আগের অবস্থার উন্নতি হওয়া। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘মৃত্যু পর্যন্ত তোমার রবের ইবাদত কর।’ সুরা আল হিজর, আয়াত ৯৯। রসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও শাওয়ালের রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কিরামদের রাখার নির্দেশ দিতেন। হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, এরপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ মুসলিম। রমজানের ৩০ রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে কোরআনুল কারিমে। তাহলে ৩৬ রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০ রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে)। অর্থাৎ সারা বছর রোজার সমান সওয়াব হবে। হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।’ নাসায়ি। শাওয়ালের ছয়টি রোজা নারী-পুরুষ সবার জন্যই সুন্নত। মাসের শুরু-শেষ কিংবা মাঝামাঝি- সব সময়ই রাখা যায় এ রোজাগুলো। একনাগাড়ে অথবা মাঝে ফাঁক রেখে পৃথকভাবেও রাখা যায়। শাওয়ালে শুরু করে শাওয়ালে শেষ করলেই হলো। তবে ঈদুল ফিতরের পর শাওয়ালের প্রথম দিকে একসঙ্গে ছয়টি রোজা রাখাই উত্তম। হজরত উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তিনি বললেন, তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখ এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখ, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ তিরমিজি। শাওয়ালের ছয় রোজা নারী-পুরুষ সবার জন্যই সুন্নত। প্রত্যেক সুস্থ সবল ব্যক্তির উচিত ফজিলতপূর্ণ এ ছয়টি রোজা রেখে পূর্ণ এক বছর রোজা রাখার সমান সওয়াব হাসিল করা।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যুগান্তর,আজও প্রবহমান তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমানের (রা.) কূপ,ইসলাম ধর্ম,"তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমানের (রা.) কূপ এখনও বিদ্যমান। কূপের স্বচ্ছ পানিও প্রবহমান। আরবের একটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থার বিশেষজ্ঞ টিম মদিনায় অবস্থিত ওই কূপ পরীক্ষা করে দেখেছে হযরত ওসমানের (রা.) কূপের পানি এখনও প্রবহমান। মহানবীর (সা.) সময়ে ওসমান (রা.) এক ইহুদির কাছ থেকে ওই কূপটি ক্রয় করে সর্বসাধারণের জন্য ওয়াকফ করে দেন। সৌদি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ওই কূপের চারপাশে গড়ে ওঠা খেজুরবাগানে আজও কূপের পানি দিয়েই সেচকার্য সমাধা করা হয়। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকা হযরত ওসমানের (রা.) এই কূপের আসল নাম ‘বিরেরুমা’ বা রুমা কূপ। কূপটির মালিক রুমা নামক এক ব্যক্তির নামানুসারে এটাকে রুমা কূপ বলা হতো। ওসমান (রা.) ৩৫ হাজার দিরহামের বিনিময়ে কূপটি ক্রয় করে রাসূলকে (সা.) বলেন, আমি কূপটি কিনে নিয়েছি এবং আজ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত এই কূপের পানি সমস্ত মুসলমানের জন্য উন্মুক্ত করে দিলাম। আল্লাহও তার এ দানকে চিরদিনের জন্য কবুল করে নিয়েছেন। ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"লাইলাতুল মিরাজে নবীজী যা দেখেছিলেন ",ইসলাম ধর্ম,"নবী করিম (সা.) মিরাজের রাতে জান্নাত ও জাহান্নামসহ বৈচিত্র্যময় সৃষ্টির অনেক কিছুই প্রত্যক্ষ করেছেন। (আহমাদ : ৫/৩৮৭)। এছাড়াও এদিন আরও অনেক কিছু দেখেছিলেন। যেমন : ১। এ রাতে নবীজী জাহান্নাম পরিদর্শনে গেলে মালেক নামক জাহান্নামের প্রধান রক্ষী নবীজীকে সালাম ও অভ্যর্থনা জানান। (মুসলিম : ১৬৫)। ২। তিনি দাজ্জালকেও দেখেছিলেন। (মুসলিম : ১৬৫)। ৩। এমন এক দল লোকের পাশ দিয়ে নবীজী গমন করেছিলেন, যাদের নখ ছিল তামার। এই নখ দ্বারা তারা স্বীয় মুখম-ল ও বক্ষ আঁচড়াচ্ছিল। এদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জিবরাইল নবীজীকে জানালেন, এরা সেই লোক, যারা দুনিয়াতে মানুষের গোশত ভক্ষণ করত। অর্থাৎ একে অপরের গীবত ও মানহানি করত। অন্য এক বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, বরং দুনিয়াতে গীবতকারী এসব লোকদেরকে মৃত ভক্ষণ করতে দেখেছিলেন নবীজী। (আহমাদ : ৩/২২৪)। ৪। এই মহান রাতে নবীজী এমন কিছু লোককে দেখতে পেয়েছিলেন, যাদের ঠোঁট কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছিল, ঠোঁট কাটা মাত্র তা পুনরায় জোড়া লেগে পূর্ববৎ হয়ে যেত। এদের স¤পর্কে প্রশ্ন করলে জিবরাইল নবীজীকে উত্তর দিলেন, এরা এমন বিষয়ে বক্তৃতা ও ওয়ায করত, যা তারা নিজেরা আমল করত না। (আহমাদ : ৩/১৮১)। ৫। শবে মেরাজে নবীজী এমন লোকদের দেখলেন, যাদের পেট ছিল এক একটি গৃহের মতো। পেটের ভেতরটা ভর্তি ছিল সর্পে, যা বাইরে থেকেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। প্রশ্ন করা হলে জিবরাইল জানালেন, এরা সুদখোর। (আহমাদ : ২/৩৫৩)। ৬। মহানবী (সা.) জান্নাত দেখার সৌভাগ্যও লাভ করেছিলেন। (তিরমিযী : ৩১৪৭)। ৭। মোতি জমরদের প্রাসাদে ঘেরা একটি নহর দেখতে পেলেন, যার পানি ছিল মেশক-এর চেয়ে বেশি সুগন্ধিময়। এটা কী- নবীজী জানতে চাইলে জিবরাইল (আ.) বললেন, এর নাম ‘কাওসার’, যা আপনার প্রতিপালক একমাত্র আপনার জন্যই সুরক্ষিত করে রেখেছেন। ৮। মহানবী চারটি নদীও দেখেছিলেন। এর মধ্যে দু’টি জাহেরী আর দু’টি বাতেনী। বাতেনী দু’টি জান্নাতে প্রবাহিত আর জাহেরী দু’টি হচ্ছে নীল ও ফোরাত। ৯। নবীজী জান্নাতে প্রবেশ করে একপাশে একটি হালকা আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিসের আওয়াজ? জিবরাইল বললেন, মুয়াযযিন বেলালের কণ্ঠ। মিরাজ থেকে ফিরে নবীজী সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশে বললেন, বেলাল সাফল্য অর্জন করেছে, আমি তার জন্য এমন সব মর্তবা দেখেছি। (আহমাদ : ১/২৫৭)। ১০। বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, নবী করীম (সা.) বায়তুল মাকদিসে যাওয়া বা আসার পথে মক্কার কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলাও দেখতে পেয়েছিলেন। (মুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা : ৩২৩৫৭)। শবে মিরাজের সকাল বেলা। নবীজী হাতীমে কাবায় চিন্তিত মন নিয়ে একান্তে বসে আছেন। মনে মনে ভাবছেন, রাত্রে সংঘটিত মিরাজ ও ইসরার কথা প্রকাশ করলে মানুষ আমাকে মিথ্যুক ঠাওরাবে না তো? ইতোমধ্যে কাছ দিয়ে যাচ্ছিল আবু জাহল। নবীজীর কাছে বসে বিদ্রƒপের ছলে বলল, কোনো ব্যাপার আছে নাকি? নবীজী বললেন, হাঁ। সে বলল কী? তিনি জবাব দিলেন, আজ রাতে আমার মিরাজ হয়েছে। সে বিস্ময়ের সাথে সুধাল, কতদূর পর্যন্ত যাওয়া হয়েছিল? নবীজী বললেন, বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত। সে আরও ঠাট্টা করে বলে উঠল, চমৎকার তো! এরপর সকালেই তুমি আমাদের কাছে এসে গেলে? তিনি দৃঢ়তার সাথে বললেন, হাঁ। এরপর আবু জাহল কথা না বাড়িয়ে তাঁকে বলল, আচ্ছা! আমি যদি পুরো কওমকে ডেকে নিয়ে আসি তাহলেও কি তুমি একই কথা বলতে পারবে? নবীজী আরও সুদৃঢ় হয়ে বললেন, অবশ্যই। আবু জাহল লুয়াই ইবনে কা’ব গোত্রের নাম ধরে ডাকতে লাগল। আর তারাও দলে দলে খানায়ে কাবায় সমবেত হতে লাগল। সকলে এসে উপস্থিত হলে আবু জাহল বলল, আমাকে যা কিছু তুমি শুনিয়েছিলে, পারলে তা এদের কাছেও ব্যক্ত করো। নবীজী পুনরায় একই ঘটনা তাদের সম্মুখে ব্যক্ত করলে কিছু লোক বিস্ময়ে হাতের ওপর হাত রাখল। আবার অনেকেই হতবাক হয়ে মাথায় হাত দিল। তারা বলল, তাহলে তুমি কি আমাদের কাছে বায়তুল মাকদিসের অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে? উল্লেখ্য, উপস্থিত অনেকেই বায়তুল মাকদিস সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিল। (তিরমিযী : ৩৪৬২)। নবীজী বলেন, আমি তাদের কাছে বায়তুল মাকদিসের অবস্থা বর্ণনা করতে লাগলাম। কিছু বিষয় আমার কাছে অস্পষ্ট মনে হচ্ছিল। মনে মনে আমি খুব চিন্তিত হচ্ছিলাম। আমি তখনও কাবার হাতীমে পুরো কওমের সামনে দ-ায়মান, ইতোমধ্যেই পুরো বায়তুল মাকদিস আমার চোখের সামনে উদ্ভাসিত করা হলো। আকীলের ঘরের উপর উদ্ভাসিত বায়তুল মাকদিস আমি স্বচক্ষে দেখে দেখে সব কিছু নিসংকোচে বলতে লাগলাম। শুনে উপস্থিত লোকেরা মন্তব্য করল, মানচিত্র ও অবস্থা তো সঠিকই বর্ণিত হয়েছে। মক্কার কোনো পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন হযরত আবু বকর (রা.)। মক্কার কাফেররা তাকে এ বিস্ময়ের কথা বলে সুধাল, তবুও কি তুমি তাকে বিশ্বাস করবে? হযরত আবু বকরের হৃদয়ে ঈমানের বহ্নিশিখা জ্বলে উঠল। তিনি এক আকাশ আস্থা নিয়ে সুদৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠলেন, আমি তো এর চেয়েও আরো দূরের অনেক জটিল বিষয়েও তাঁকে বিশ্বাস করি। তাঁর কাছে আসা আসমানী বার্তাসমূহের ওপর রয়েছে আমার অটল বিশ্বাস ও সুদৃঢ় ঈমান। (মুসতাদরাক : ২/৩৬১)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ",ইসলাম ধর্ম,"সম্প্রতি ট্রান্সজেন্ডার নামে এক অদ্ভুত মতবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্নভাবে এ মতবাদ লালনকারীরা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে এবং ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আর মিডিয়াপাড়াও খুব পজিটিভলি জাতির সামনে এদের উপস্থাপন করছে। ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ কী : ট্রান্সজেন্ডার বলতে মূলত বোঝায়, যাদের এমন একটি নিজস্ব যৌন পরিচয় বা যৌন অভিব্যক্তি রয়েছে, যা তাদের জন্মগত যৌনতা থেকে ভিন্ন। যার প্রবক্তারা পৃথিবীবাসীকে এমন এক পথের দিকে আহ্বান করছে , যেখানে শরীর নয়, মনই ব্যক্তির আসল লিঙ্গ-পরিচয়। অর্থাৎ একজন পুরুষের যদি মনে হয় সে নারী, তাহলে সে নারী। আবার একজন নারীর যদি মনে হয় সে পুরুষ, তাহলে সে পুরুষ।তাদের দাবী হলো ; তাদের বাহ্যিক লিঙ্গ আর বিকৃত চিন্তাগত লিঙ্গ দুটো ভিন্ন ভিন্ন। এরা আরও দাবি করে ;ডাক্তারের সাহায্যে তাদের মনের রূপকে বাস্তবেই রূপান্তর করা সম্ভব। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে; তথাকথিত লিঙ্গ পরিবর্তন তথা সার্জারির মাধ্যমে কেউ আসলে পুরুষ থেকে নারী বা নারী থেকে পুরুষ হয় না। মূলত এগুলো এক ধরনের কসমেটিক সার্জারি। এ ধরণের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেবল বাহ্যিকভাবে কিছু পরিবর্তন আনা যায়, সৃষ্টিগত লিঙ্গের কোনো পরিবর্তন করা যায় না। ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে ইসলাম যা বলে : আল্লাহ তাআলা আমাদের শ্রেষ্ঠ উম্মত বানিয়েছেন এবং সুন্দর অবয়বে আমাদের সৃষ্টি করেছেন।এ সুন্দর অবয়ব আল্লাহ প্রদত্ত আমানত ও নেয়ামত। এতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা কিংবা শরয়ি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে এ স্বাভাবিক অবয়বে কৃত্রিম উপায়ে বিকৃতি সাধন করা শয়তানি ফাঁদ এবং চরম ঘৃণ্য কাজ। শয়তানের এই জঘন্য ফাঁদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা আগেই আমাদের সতর্ক করেছেন। এবং আল্লাহর আদেশ মানার পরিবর্তে যে শয়তানি মিশন বাস্তবায়ন করবে, সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে মর্মে সাবধান করে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) অভিসম্পাত করেছেন এবং সে (শয়তান) বলেছে, আমি তোমার দাসদের এক নির্দিষ্ট অংশকে (নিজের দলে) গ্রহণ করবই। এবং তাদের পথভ্রষ্ট করবই; তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করবই, আমি তাদের নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা পশুর কর্ণচ্ছেদ করবেই এবং তাদের নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবেই। আর যে আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে, নিশ্চয় সে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯)। হাদিসেও এ ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করা হয়েছে এবং যারা আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি ঘটায় তাদের অভিসম্পাত করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) এমন সব নারীর ওপর অভিসম্পাত করেছেন, যারা অঙ্গে উল্কি আঁকে ও অন্যকে দিয়ে উল্কি আঁকায় এবং সৌন্দর্যের জন্য ভ্রুর চুল উপড়ে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে (তিরমিজি : ২৭৮২)। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ পুরুষদের মধ্যে নারীর বেশ ধারণকারীদের এবং নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণকারিণীদের অভিশাপ দিয়েছেন। ( মিশকাত: হাদীস নং ৪৪২৯)। ট্রান্সজেন্ডার সামাজিকীকরণে হবে ভয়াবহ বিপর্যয় : ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে অনেকের কাছে মনে হতে পারে, এতে সমস্যা কী, সবাই তো আর এক রকম হয় না। ওদের সংখ্যাই বা আর কত। তারা তো আমাদের কোনো সমস্যা করছে না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই মতাদর্শ পলিসি বাস্তবায়নের ফলে বিভিন্ন সামাজিক, স্বাস্থ্য এবং আইনগত সমস্যা গত কয়েক বছরে অনুধাবন করা যাচ্ছে। এটি হাজার হাজার বছরের প্রতিষ্ঠিত লিঙ্গভিত্তিক সিস্টেমকে ওলোট-পালট করে দিচ্ছে, তৈরি হচ্ছে নানা বিতর্ক। এ মতবাদ সমাজের ভারসাম্যতা ও স্বাভাবিক রীতিকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিচ্ছে। উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে তৈরি হচ্ছে মারাত্মক সামাজিক বিশৃঙ্খলা। সাথে সাথে জেনা- ব্যভিচারের রাস্তাও আরও সুগম আরও সহজ হয়ে যাবে। কারণ ট্র্যান্সজেন্ডার মেয়েদের যদি মহিলা বিশেষায়িত স্থান তথা মহিলা হোষ্টেল ইত্যাদিতে প্রবেশের অবাধ অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে তা হবে সুকৌশলে ব্যভিচারের পথকে আরো সহজ করে দেওয়া । কারণ আমরা আগেও উল্লেখ করছি, অস্ত্রোপচার বা অন্য কোনো মাধ্যমে শরীরের কিছু পরিবর্তন আসলেও তাদের সৃষ্টিগত লিঙ্গের কোনো পরিবর্তন হয় না। সুতরাং এভাবে একজন ট্র্যান্সজেন্ডার মেয়েকে(যে কিনা বাস্তবে একজন পুরুষ) মহিলা বিশেষায়িত স্থানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া তার জন্য ধর্ষণের পথ খুলে দেওয়া নয়কি? গবেষণায় দেখা গেছে ট্রান্সজেন্ডার স্বাভাবিক সুস্থ মানুষ হিসেবে নিজেদের মনে করলেও বা সমাজে উপস্থাপন করলেও তারা অনেক মানসিক সমস্যায় জর্জরিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে সাধারণ মানুষের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি আত্মহত্যা চিন্তা এবং ২২ গুণ আত্মহত্যা প্রচেষ্টা নেয়। তাছাড়া মাঝে মাদকাসাক্ত, নিজে নিজের ক্ষতি করা (ংবষভ-যধৎস), ডিপ্রেশন, উদ্বিগ্নতা ইত্যাদির প্রবণতাও অনেক বেশি। সামাজিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রাখতে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলো এলজিবিটির বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে। এমনকি উগান্ডা পশ্চিমা ভিসা নিষেধাজ্ঞা, বিশ্বের ব্যাংকের ঋণ স্থগিত করার মতো অর্থনৈতিক ব্যাপারকেও উপেক্ষা করেছে। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোও ট্রান্সজেন্ডার মতাদর্শে বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়েছে। জেন্ডার আইডেন্টিটি ইস্যুতে ইতালির সরকার পরিবর্তন হয়। সম্প্রতি হ্যাংগেরি ট্রান্সজেন্ডাদের লিগালাইজেশন বন্ধ ঘোষণা করেছে। সব ধরনের সমস্যাকে সামনে রেখে রাষ্ট্রের উচিত, এ ধরনের মতবাদ যারা লালন করে, এ মতবাদ বিস্তারে যারা সক্রিয় ভুমিকায় আছে তাদের চিহ্নিত করা, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া। নতুবা অদূর ভবিষ্যতে এমনসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে যার সমাধান বের করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই ঘৃণ্য কাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,নামাজে সুরা ফাতিহা পড়তে হয় কেন,ইসলাম ধর্ম,"ফিকহ গবেষকরা এ বিষয়ে একমত যে নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করা আবশ্যক। হানাফি মাজহাব অনুসারে নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব। অন্য মাজহাবে তা পাঠ করা ফরজ। প্রশ্ন হলো নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করা আবশ্যক কেন? উত্তরে ধর্মতাত্ত্বিক আলেমরা বলেন, ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস ও শিক্ষা, পবিত্র কোরআনের মূলভাষ্য ও নামাজের মূল উদ্দেশ্য সুরা ফাতিহাতে বিবৃত হয়েছে। এ ছাড়া সুরা ফাতিহায় বান্দার কাছে আল্লাহর এবং আল্লাহর কাছে বান্দার প্রত্যাশাগুলো ফুটে উঠেছে। বান্দার সর্বোত্তম প্রার্থনা : সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.) সুরা ফাতিহার তাৎপর্য বর্ণনা করে বলেন, ‘সুরা ফাতিহা নিয়ে একটু চিন্তা করে দেখুন! সুরাটি কোরআনের অলৌকিকত্বের উত্তম দৃষ্টান্ত। যদি পুরো পৃথিবীর সব মেধা, সকল জাতি-গোষ্ঠীর সৃষ্টিশীল কবি-সাহিত্যিক, মনোবিদ, নৈতিকতার শিক্ষক ও ধর্মীয় গুরু একত্র হয় এবং তারা এমন একটি বক্তব্য তৈরি করতে চায়, যা বিভিন্ন বর্ণ, শ্রেণি ও স্তরের মানুষের প্রার্থনা হিসেবে যথেষ্ট হবে—যদিও তাদের প্রয়োজন ও প্রত্যাশাগুলো পরস্পর থেকে ভিন্ন এবং যে বক্তব্যের মাধ্যমে তারা নিজেদের ইবাদতে মনের ভাব পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারবে, তবে তারা সুরা ফাতিহার চেয়ে উত্তম কোনো ভাষ্য তৈরি করতে পারবে না। কেননা সুরা ফাতিহা সর্বশ্রেণির মানুষের আত্মিক প্রশান্তির জন্য যথেষ্ট।’ (আরকানে আরবাআ, পৃষ্ঠা ৪৭) সুরা ফাতিহাই নামাজ : আল্লাহর স্মরণ, ভাব, ভাষ্য ও প্রার্থনার বিচারে সুরা ফাতিহা নামাজেরই সমার্থক। এ জন্য হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ সুরা ফাতিহাকে ‘নামাজ’ শব্দে ব্যক্ত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, আমার ও আমার বান্দার মধ্যে আমি নামাজকে (সুরা ফাতিহা) অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি এবং আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়। বান্দা যখন বলে, সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য, আল্লাহ তখন বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। সে যখন বলে, তিনি অতিশয় দয়ালু এবং করুণাময়); আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করেছে, গুণগান করেছে। সে যখন বলে, তিনি বিচার দিনের মালিক; তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। আল্লাহ আরো বলেন, বান্দা তার সব কাজ আমার ওপর সমর্পণ করেছে। সে যখন বলে, আমরা কেবল তোমারই ইবাদাত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যকার ব্যাপার। আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়। যখন সে বলে, আমাদের সরল-সঠিক পথে পরিচালনা করুন। যেসব লোকদের আপনি নেয়ামত দান করেছেন, তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি আপনার শাস্তি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। তখন আল্লাহ বলেন, এসবই আমার বান্দার জন্য এবং আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৬৪)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,"শরীর নিষ্ক্রিয়, এক আঙুলে লিখলেন পাঁচ বই",ইসলাম ধর্ম,"কঠিন বিপদের মধ্যেও প্রবল মানসিক শক্তি নিয়ে টিকে থাকেন অনেকে। শারীরিকভাবে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হলেও বুদ্ধিদীপ্ত কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে তারা স্থান করে নেন অনেক সুস্থ মানুষের ওপর। হাজারো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মেধা ও সৃজনশীল কাজে তারাই সবার অনুপ্রেরণার উৎস। এমনি ধৈর্যশক্তি ও অধ্যবসায়ের বাস্তব দৃষ্টান্ত হলেন নায়েফ বিন আইয়াদ আল-হারবি।তিনি সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশের আল-রাস এলাকার বাসিন্দা। দুই দশক আগে দুর্ঘটনায় এ তরুণের পুরো শরীর একদম নিস্তেজ হয়ে পড়ে। কিন্তু দেহ নিষ্ক্রিয় হলেও তাঁর মেধা ও বুদ্ধিমত্তা খুবই সক্রিয়। দীর্ঘ এ সময় হাতের মাত্র একটি আঙুলের সাহায্যে ল্যাপটপে লিখেছেন পাঁচটি গ্রন্থ।সৌদি সংবাদ মাধ্যম আল-আরাবিয়া সূত্রে জানা যায়, নতুন চিন্তা ও সৃজনশীল ভাবনার জন্য নায়েফ আল-হারবি সবার কাছে সুপ্রিয়। পুরো হাত নিষ্ক্রিয় হওয়ায় তিনি ল্যাপটপের কি-বোর্ড দিয়ে লিখতে পারেন না; বরং স্ক্রিনে আলাদা কি-বোর্ডে হাতের একটি আঙুলের সাহায্যে কাজ করেন তিনি। নিয়মিত কাজ করার পাশাপাশি নিজের আবেগ ও অনুভূতি লিখে প্রকাশ করেন তিনি। বর্তমানে তিনি স্থানীয় প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থা কুদরা অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কেয়ার অব পারসন উইথ ডিসেবেলিটিজের তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন।তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রতিযোগিতার প্রগ্রাম প্রস্তুত করেন। তা ছাড়া ফটোশপ, পাওয়ারপয়েন্ট ও ওয়ার্ড ডিজাইনে তার রয়েছে অসাধারণ দক্ষতা। তার বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও অতিথিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একটি বড় ডিসপ্লে স্ক্রিন রয়েছে। তাঁর লেখা গ্রন্থের মধ্যে ‘মিনাল আমাক ইলাল আফাক’ উল্লেখযোগ্য। সদ্য মারা যাওয়া স্ত্রীকে লিখেছেন ‘আইনা আল-মারদিয়্যাহ’।বাবা ও মায়ের উদ্দেশে লিখেছেন ‘ওয়া জান্না আন্নাহুল ফিরাক’। প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা বিষয়ে লিখেছেন ‘আল-মুসাবাকাত’। এ ছাড়া ‘কিতমানুল মিসক’ গ্রন্থে তিনি নিজের বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে লিখেছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক খবরপত্র,"সাংবাদিক মানিক লাল দত্ত ও তার দুই সন্তানসহ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ",ইসলাম ধর্ম,"মানব জাতির শ্রেষ্ঠ ধর্ম হলো ইসলাম। ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষা হল, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ পৃথিবীতে নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রাসূল। ইসলাম” শব্দের অর্থ হচ্ছে আত্মসমর্পণ করা। আর সেই ইসলাম ধর্মে মুখরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেলেন নীলফামারী জলঢাকার কলম সৈনিক সাংবাদিক মানিক লাল দত্ত সহ পুরো পরিবার। এবিষয়ে মানিক লাল দত্তর সাথে কথা বলে জানা যায়। আমার পরিবারে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান সহ আমরা মোট তিনজন পবিত্র ইসলাম ধর্মের আচার অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় বিধি বিধান এবং নিয়ম কানুন ভালো লাগায় ও পবিত্র ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি। ৪২ বছর বয়সী মানিক লাল দত্ত ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য বুধবার (১৬ মার্চ) ‘বিজ্ঞ নোটারি পাবলিক কার্যালয়’ নীলফামারী মাধ্যমে ‘এফিডেভিট’ সম্পন্ন করেন। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। জানা গেছে, মানিক লাল দত্ত ধর্মান্তরিত হয়ে নতুন নাম রেখেছেন মো. মাহাদী হাসান (মানিক)। এ ছাড়া তার দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে ১৫ বছর বয়সী অর্ণব দত্ত থেকে নতুন নাম মো. মাহমুদ হাসান (অর্ণব) ও সাত বছর বয়সী সূর্য দত্ত থেকে মোঃ মাহতাব হোসেন (সূর্য)। ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে মানিক ও তার দুই ছেলে অর্ণব ও সূর্য স্বাক্ষর করেছেন। নবমুসলিম মাহাদী হাসান মানিক বলেন, ‘আমার বাবা বাবুল দত্ত ও মা রাধা রানী দত্ত শৈশবে মারা যান এবং স্ত্রী মুন্নী রানী দত্ত প্রায় তিন বছর আগে মারা যান। আমার বেড়ে ওঠা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে। যার কারণে মুসলিম আচার-আচরণ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান দেখে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি এবং স্ব-পরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। তিনি বলেন, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় মসজিদের ইমাম আবু রায়হান আমাদের ‘কালেমা’ পড়ান। নবমুসলিম মো. মাহাদী হাসান মানিক রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার জলঢাকা উপজেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক জলকথার বার্তা সম্পাদক হিসেবে বর্তমানে কাজ করছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive নয়াদিগন্ত,"মুসলিমদের বিরুদ্ধে গো-হত্যার মিথ্যা মামলা, উত্তর প্রদেশে হিন্দু মহাসভা চক্রান্ত",হিন্দু ধর্ম,"ভারতের উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গরু হত্যার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার একটি অভিযোগ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার সদস্যরা কট্টর হিন্দুত্ববাদী শাসকদের অধীনে থাকা উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের জীবন আরো অতীষ্ট করতে চাচ্ছে। জানা গেছে, গত মাসে মুসলিম ধর্মাবলম্বী চারজনের বিরুদ্ধে গোহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এনিয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। তারপর পুলিশ জানতে পারে, আসলে ওই মুসলিম ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল। কারণ তাদের একজনের সাথে এক হিন্দু সংগঠনের নেতার ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল। আর তার জেরেই তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপরই পুলিশ ওই মিথ্যা অভিযোগকারীদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে। আরো সাতজনকে পুলিশ খুঁজছে। উত্তরপ্রদেশের আগ্রার ঘটনা। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে পুলিশের এই নিরপেক্ষতার ঘটনাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবে আলোচনা চলছে পুরোদমে। আগ্রার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ আর কে সিং জানিয়েছেন, গত ৬ এপ্রিল আগ্রা পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছিল। তার মধ্যে ইমরান কুরেশি ওরফে ঠাকুর আর শানু ওরফে ইল্লি। তারা এভাবে নিরীহ লোকেদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। আরো সাতজনের কথা জানা গেছে, যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। এদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার চারজন সদস্যও এই চক্রান্তের শরিক বলে জানা গিয়েছে। তাদেরও খোঁজ করছে পুলিশ। মহাসভার জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জয় জাট এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত। জানিয়েছে পুলিশ। এসিপি জানিয়েছেন, চারজনের বিরুদ্ধে ওদের কোনো ব্যক্তিগত রাগ ছিল। সেকারণেই তারা মিথ্যে অভিযোগ এনেছিল।পরে মহাসভার পক্ষ থেকে থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয় নাকিমের গ্রেফতারের দাবিতে। তবে পুলিশ তদন্তে নেমে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানতে পারে যে ঘটনার সময় এফআইআরে নাম থাকা কেউ ঘটনাস্থলে ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, চারজন মুসলিম ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"এবার 'ধর্মগুরুর' আশ্রম থেকে উদ্ধার হল অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৪৮ মেয়ে ",হিন্দু ধর্ম,"ধর্মগুরু' রাম রহিমের পর এবার বিরেন্দ্র দেব দিক্ষিত নামে আরেক গুরুর সন্ধান মিলেছে ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লিতে। সম্প্রতি তার আশ্রম থেকে কমপক্ষে ৪৮ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা যায়, নগরীর আধ্যাত্নিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আশ্রমে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আশ্রমটি যেন এক দুর্ভেদ্য দুর্গ। কাঁটাতার ও একাধিক তালা দেওয়া ফটক ডিঙিয়ে আমরা তাদেরকে উদ্ধার করেছি। এদিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আশ্রমের সুনাম ক্ষুন্ন করতেই এ ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে। নারী ভক্ত ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর, এ ধরনের কোনো কাজ এখানে করা হয় না। তারা আরও জানিয়েছে, তাদের গুরু হিন্দু দেবতাদের অবতার; তিনি বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে মেল বন্ধনে পৃথিবীতে এসেছেন। প্রসঙ্গত, পরিবারের সদস্যরা উধাও হয়ে যাচ্ছেন- এ বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টে তিনটি পরিববার মামলা দায়ের করলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। আদালতে ৩২ বয়স্ক একজন নারী জানান, ২০০০ সালে ওই আশ্রমে থাকা অবস্থায় দিক্ষিত কর্তৃক তিনি ধর্ষণের শিকার হন। তিন বছর পর তার পরিবার ছোট বোনটিকেও ওই আশ্রমে দিয়ে দিতে ‘বাধ্য’ হয়। এ ব্যাপারে দিল্লি রাজ্য সরকারের নারী বিষয়ক সংস্থার প্রধান স্বাতী মালিওয়াল বলেন, ""আশ্রমে অবৈধ কার্যকলাপ চালানো হয়। ওখানে ঘর ভর্তি ওষুধ পাওয়া গেছে-যার বেশির ভাগের গায়েই কোনো নাম লেখা ছিল না। নারীদেরকে তাদের দেহ দিক্ষিতের কাছে ‘সমর্পণ’ করা বিষয়ক ধর্মীয় বাণী সম্বলিত বইও পাওয়া গেছে।"" এছাড়া আদালতে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, আশ্রমে নারীরা পশুর মতো জীবন যাপন করে। এখনও ১৬৮ জন নারী ও ২৫ জন পুরুষ সেখানে বসবাস করছেন। তাদের সকলেই ভগ্ন স্বাস্থ্যের ও মাদকাসক্ত। এদিকে দিক্ষিত সম্পর্কে খুব কম তথ্যই এ পর্যন্ত জানা গেছে। এমনকি এ গুরু এখন কোথায় আছে, তাও জানে না পুলিশ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,মক্কা-মদিনার ঐতিহাসিক স্থাপনা সংস্কার করবে সৌদি আরব,ইসলাম ধর্ম,"মক্কা ও মদিনার শতাধিক ঐতিহাসিক স্থাপনা উচ্চমানের করতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আরো সমৃদ্ধ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর মক্কার হিরা কালচারাল সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান দেশটির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী তাওফিক আল-রাবিয়াহ।তাওফিক আল-রাবিয়াহ বলেন, ‘দুয়ুফুর রহমান অর্থাৎ আল্লাহর অতিথিদের মক্কা ও মদিনার ভ্রমণকে আরো সমৃদ্ধ ও অবিস্মরণীয় করতে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পের সহযোগিতায় কাজ চলছে।পবিত্র এ দুই শহরের বিশাল ইতিহাস রয়েছে। এ নিয়ে মুসলিমদের অনেক বেশি আগ্রহও রয়েছে। তাই এসব স্থাপনার ইতিহাস সবার কাছে তুলে ধরতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, হেরা গুহাসহ মক্কার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থানগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।এরই মধ্যে টিকিট বুক করার জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফরমও চালু করা হয়েছে।সৌদি আরবের শতাধিক ঐতিহাসিক ১৩০টি মসজিদ সংস্কারের ঘোষণা দেন সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান। গত বছর উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে মক্কা ও মদিনার বিভিন্ন স্থাপনার কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে রয়েছে পবিত্র কুবা মসজিদ।পরিকল্পনা অনুসারে তা ৫০ হাজার বর্গমিটার সম্প্রসারণ করা হবে, যেখানে একসঙ্গে ৬৬ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন। বর্তমানে এর পরিধি মাত্র পাঁচ হাজার ৩৫ বর্গমিটার। তা ছাড়া মদিনায় মহানবী (সা.)-এর জীবনীসংশ্লিষ্ট শতাধিক স্থাপনার সংস্কারকাজও শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব স্থাপনার উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি মক্কা অঞ্চলের ঐতিহাসিক পাঁচ মসজিদ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","নেদারল্যান্ডসে ‘পুড়িও না, পড়’ কর্মসূচিতে কুরআন বিতরণ ",ইসলাম ধর্ম,"নেদারল্যান্ডসের আর্নহেম শহরে ‘ডোন্ট বার্ন, রিড’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি ডাচ অতি-ডানপন্থী নেতা এডউইন ওয়াগেনসভেল্ডের কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি জ্যান্সপ্লেইন স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় ছয়টি মসজিদের ইমামসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে পথচারীদের মধ্যে বিনামূল্যে ডাচ ভাষায় অনুদিত কুরআনের কপি এবং ইসলামের ব্যাখ্যামূলক বই ও ব্রোশিয়ার বিতরণ করা হয়। ডাচ দিয়ানেট ফাউন্ডেশনের সাথে সংযুক্ত আর্নহেম তুর্কিয়েম মসজিদ ফাউন্ডেশনের সভাপতি গালিপ আয়দেমির বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে বোঝানো, কেন ইসলাম ও কুরআন মুসলমানদের জন্য পবিত্র।’ তিনি আর্নহেমের জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সংহতির আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে বলেন, ‘কুরআন ও অন্য পবিত্র গ্রন্থগুলো পুড়িয়ে না ফেলে পড়ুন।’ ইভেন্টে অংশ নিয়ে কুরআনের একটি কপি সংগ্রহ করেছেন জন মেটার্স নামের একজন ডাচ নাগরিক। তিনি শান্তিপূর্ণ এই ইভেন্টের প্রশংসা করেছেন এবং ওয়াগেনসভেল্ডের গত মাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত মাসে যে উসকানিমূলক কাজটি করা হলো, এর মাধ্যমে কেবল মানুষে মানুষে শত্রুতাই সৃষ্টি হয়। এটি বোঝার জন্য কাউকে ধার্মিক হতে হবে বলে আমি মনে করি না।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ডলারের দাম বাড়ায় হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি : ধর্মমন্ত্রী,ইসলাম ধর্ম,"ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মশিউর রহমান মোল্লা সজলের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি এ কথা জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হজে প্রেরণকারী দেশ। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বিগত বছর সমূহের ন্যায় ২০২৪ সালেও যাতে পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী হজে যেতে পারে সেজন্য ২০২৩ সালের হজের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কময়ে ২০২৪ সালে হজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা মূল্যের সাধারন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ হজে গমন করতে পারে। মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে মক্কা ও মদিনায় অনেক এলাকায় বাড়ি ও হোটেল ভেঙে ফেলায় বাড়ি ভাড়া ব্যয় এ বছর অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক নানা কারণে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মিনায় মিনা আরাফায় তাবু ভাড়াসহ মেয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সকল কারণে সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় আর কমানো সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, অধিক সুযোগ-সুবিধা আশা করেন এই রকম হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি মাধ্যমের বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,জেনেশুনে আমল করাই সর্বোত্তম,ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন- আমার ভয় এটা নয় যে, তোমরা দরিদ্রতার কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে, বরং আমার ভয় তাদের জন্য, যারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েও নিজেকে গরিব-দরিদ্র মনে করবে। কারণ তার সম্মুখে যখন আরেকজনের অধিক অর্থসম্পদ দেখবে তখন তার অর্থসম্পদকে নেহায়েত অল্প মনে হবে। সম্পদের আরও লোভ তার মনে বাসা বাঁধবে। এ ধরনের মানুষের অর্থলোভ কখনো শেষ হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, যে মাসআলা তুমি জান, যদি সে অনুযায়ী আমল না কর তাহলে মনে রেখ হাশরের ময়দানে পাঁচটি প্রশ্ন করা হবে। এর মধ্যে সর্বশেষ প্রশ্ন হলো- যা তোমার জানা ছিল, সেই মোতাবেক তুমি আমল করেছ কি না? যদি জানা না থাকে তাহলে আল্লাহর কাছে একটা জবাব দিতে পারবে। কিন্তু জানা থাকা সত্ত্বেও যদি আমল না কর তাহলে এর কী উত্তর দেবে? একবার এক লোক আমাকে বলল যে, হুজুর! না জানলেই ভালো? তাই আপনি আর আমাদের কোনো কিছু জানাবেন না। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে, কেয়ামতের দিন জিজ্ঞেস করা হবে তুমি আমার বিধিবিধান জানতে? যদি বলে হ্যাঁ, জানতাম। তাহলে বলা হবে ভিতরে যাও। তুমি ওইদিকে আমার লোক। আর যদি বলে- না, জানি না। তাহলে বলা হবে, যাও। তুমি জান না। এই হলো বিপদ। যদি এমন হতো যে, প্রথম গেটে না জেনে প্রবেশ করা যেত তাহলে কোনো অসুবিধা ছিল না। আগে পরিচয় দিতে হবে। আল্লাহপাক জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা আমাকে চেন? যদি বলে না, তাহলে আল্লাহপাক বলবেন, তোমরা অন্য মানুষ, তোমরা বাইরে চলে যাও। না জানলে উপায় নেই। তাই জেনে আমল করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, আমল করার ক্ষেত্রে যেন চেষ্টায় কোনো ত্রুটি না হয়। তারপরও যদি কোনো ত্রুটি হয়ে যায়, তাহলে এর সমাধান হাদিসে এসেছে। এক সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমি বিশুদ্ধভাবে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করতে চেষ্টা করি, কিন্তু জিহ্বা মোটা হয়ে যাওয়ার কারণে বিশুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করতে পারি না। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি চেষ্টা কর? সে বলল জি, আমি চেষ্টা করি। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তুমি উম্মতকে শুনিয়ে দাও যে ব্যক্তি কোরআন শিক্ষার চেষ্টা করে, তার প্রতিটি আমলে ডাবল সওয়াব দান করা হয়। বুঝে আমি কেন শিখব না। তাই আমাকে আমার সাধ্যানুযায়ী শিখতেই হবে, শিখে সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। যদি আমি আমল করতে ব্যর্থ হয়ে যাই, তাহলে আমার চেষ্টার কারণে আল্লাহ আমাকে মাফ করে দেবেন। যাই হোক বলছিলাম যে, প্রথমে ইলম শিক্ষা করতে হবে, দ্বিতীয় নম্বরে সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। আমার যাবতীয় আমল যেন আমার ইলম মোতাবেক হয়। আমি জানি, আমার নামাজ পড়তে হবে; অবহেলায় যেন নষ্ট না হয়। আমি জানি আমার জবানের হেফাজত করতে হবে; আমার জবান থেকে যেন কারও গিবত বের না হয়। গিবত তথা অন্যের দোষ চর্চা করা মহাপাপ। গালিগালাজ করা, অশ্লীল কথাবার্তা বলা, মিথ্যা বলা মহাপাপ। এ জাতীয় গুনাহ মাফ করা হয় না, যতক্ষণ না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে গিয়ে মাফ চাওয়া হয়। তাই আমাকে আমার জবানের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। পর্দার হুকুম সম্পর্কে আমার জানা আছে, তাই আমাকে পর্দার হুকুম পালন করতে হবে। সর্বোপরি সব গুনাহ সম্পর্কে আমার জ্ঞান আছে, তাই সব গুনাহ আমাকে বর্জন করতে হবে। আমাকে সব নেক কাজ করতে হবে। সুতরাং যে বিষয়গুলো আমার জানা আছে, সে অনুযায়ী যদি আমি আমল করি এবং নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করি তাহলেই আমার নাজাতের জন্য তা যথেষ্ট হবে। আল্লামা মুহাম্মাদ বিন ফুজাইল বুখারি বলখি (রহ.) বলেছেন, দুর্ভাগা সেই ব্যক্তি, যে জানার পরও আমল করে না। জানে তাহাজ্জুদ পড়লে বিরাট সওয়াব হয়, সূর্য ওঠার পর দুই রাকাত এশরাকের নামাজ পড়লে বিরাট সওয়াব হয়। মানুষের উপকার করলে মহা লাভ হয় ইত্যাদি সবকিছুই জানে, কিন্তু তারপরও আমল করে না, তাহলে তার চেয়ে হতভাগা দুনিয়া ও আখেরাতে আর কেউ নেই। আমল মাকবুল থেকে দুটি শর্ত : শুধু আমল থাকলেই হবে না; আমলের মধ্যে আরও দুটি বিষয় থাকতে হবে। এক. আমলের আত্মা তথা এখলাস থাকতে হবে। অর্থাৎ আমার আমল হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। নামাজ পড়ি আল্লাহর জন্য, দান-খয়রাত করি আল্লাহর জন্য। মোটকথা আমি যা কিছু করি তা কেবল আল্লাহর জন্য। এটাকে বলা হয়- এখলাস। শরীরের জন্য আত্মা যেমন, আমলের জন্য এখলাসও ঠিক তেমন। দুই. আমলটা সুন্নত মোতাবেক হতে হবে। যেভাবে মন চায় সেভাবে আমল করলে হবে না, বরং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে আমল করেছেন সেভাবে আমল করতে হবে। তিনি যেভাবে নামাজ পড়েছেন সেভাবে নামাজ পড়তে হবে। তিনি যেভাবে হজ করেছেন সেভাবে হজ করতে হবে। তাঁর পোশাক যেমন ছিল তেমন পোশাক পরতে হবে। তিনি যেভাবে খানা খেতেন সেভাবে খেতে হবে। তিনি যেভাবে ঘুমাতেন সেভাবে ঘুমাতে হবে। মোটকথা আমার যাবতীয় কাজকর্ম রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত মোতাবেক হতে হবে। এই হলো মোট চারটি বিষয়- এক. ইলম, দুই. আমল। আমলের জন্য আবার দুটি বিষয় প্রয়োজন। এক. এখলাস, দুই. সুন্নতের অনুসরণ। আল্লাহপাক সবাইকে বোঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন!",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,আল্লাহর যেসব হক আদায় করা মুমিনের কর্তব্য,ইসলাম ধর্ম,"‘হক’ শব্দের অর্থ অধিকার, অংশ ও প্রাপ্য। হক দুই প্রকার। ১. হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক ২. হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক। ১. আল্লাহর হক : হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক হলো যা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার কাছে প্রাপ্য। আর এটি শুধু তাঁর সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন—একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা। ২. বান্দার হক : আল্লাহ ছাড়া আল্লাহর অন্য সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্কিত হককে হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক বলা হয়। যেমন—মা-বাবার হক, স্বামী-স্ত্রীর হক ইত্যাদি। এখানে আমরা আল্লাহর হক সম্পর্কে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ তাঁর হক সম্পর্কে বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৬) মুআজ (রা.) বলেন, উফায়র নামক একটি গাধার পিঠে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, হে মুআজ! তুমি কি জানো বান্দার ওপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর ওপর বান্দার হক কী? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন। তখন তিনি বলেন, নিশ্চয়ই বান্দার ওপর আল্লাহর হক হলো বান্দা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর ওপর বান্দার হক হলো তাঁর ইবাদতে কাউকে শরিক না করলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন না। (বুখারি, হাদিস : ২৮৫৬) উক্ত হাদিসে আল্লাহর দুটি হক প্রমাণিত হয়। ১. একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, ২. শিরক না করা। বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর প্রধান হক হলো বান্দা একমাত্র তাঁর ইবাদত করবে। ইবাদত শব্দের অর্থ আনুগত্য করা, নত হওয়া ও বিনম্র হওয়া। আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধ থেকে বিরত থাকাই ইবাদত। আল্লাহর ইবাদত করা এমন গুরুত্বপূর্ণ হক, যে জন্য আল্লাহ মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। (সুরা : জারিয়াত, আয়াত : ৫৬) মহান আল্লাহর দ্বিতীয় হক হলো তাঁর ইবাদতে কাউকে শরিক না করা। আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করা। শিরকের মাধ্যমে আল্লাহর নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হয়। এ কারণেই শিরক জঘন্যতম অপরাধ। আল্লাহর হক সম্পর্কিত আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে উল্লেখ করা হলো— আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা : বান্দার প্রতি আল্লাহর অন্যতম হক হলো তাঁর প্রতি ঈমান আনা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা (পূর্ণরূপে) বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর ওপর, তাঁর রাসুলের ওপর এবং ওই কিতাবের ওপর, যা তিনি নাজিল করেছেন।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৩৬) ঈমানের ওপর দৃঢ় থাকা : মুমিনের প্রতি আল্লাহর হক হলো ঈমানের ওপরে দৃঢ় থাকা। কোনো অবস্থায় ঈমান ত্যাগ না করা, ঈমান বিধ্বংসী কাজ না করা ইত্যাদি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা বলে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। অতঃপর তার ওপর দৃঢ় থাকে, তাদের ওপর ফেরেশতামণ্ডলী নাজিল হয় এবং বলে যে, তোমরা ভয় পেয়ো না ও চিন্তান্বিত হয়ো না। আর তোমরা জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেওয়া হয়েছিল।’ (সুরা : হা-মিম-সাজদাহ, আয়াত : ৩০) ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত করা : বান্দার কাছে আল্লাহর অন্যতম হক হলো শুধু তাঁরই জন্য ইবাদত করা। সুরা ফাতিহায় প্রতি রাকাতে আমরা বলি, ‘আমরা কেবলমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য চাই।’ (সুরা : ফাতিহা, আয়াত : ৪) আল্লাহকে ভয় করা : আল্লাহ তাআলার হক হলো একমাত্র তাঁকেই ভয় করা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা শুধু আমাকেই ভয় করো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ৪০) সালাত আদায় করা : ঈমানের পর সালাতের স্থান। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘বলো, আমার সালাত ও আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ, সব কিছু জগৎসমূহের রব আল্লাহর জন্য।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৬২) জাকাত প্রদান করা : ইসলামে সালাতের পর জাকাতের স্থান। এটি মহান আল্লাহর অন্যতম হক। সিয়াম পালন করা : সিয়াম পালন করাও আল্লাহর হক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, ‘সিয়াম আমার জন্যই, আমিই এর প্রতিদান দেব। সে আমার সন্তোষ অর্জনের জন্যই তার প্রবৃত্তি ও পানাহার ত্যাগ করেছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৪৯২) হজ পালন করা : সম্পদশালী মুসলিমের ওপর আল্লাহর জন্য তাঁর ঘর জিয়ারত করা আল্লাহর অন্যতম হক। আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ ফরজ করা হলো ওই লোকদের ওপর, যাদের এখানে আসার সামর্থ্য আছে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে (সে জেনে রাখুক যে) আল্লাহ জগদ্বাসী থেকে অমুখাপেক্ষী।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭) আল্লাহর বিচার মেনে নেওয়া : আল্লাহর বিচার ফয়সালা মেনে নেওয়া তাঁর অন্যতম অধিকার। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আদেশ দানের ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া কারো নেই।’ (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৪০) অবিলম্বে তাওবা করা : প্রত্যেক প্রাণীই মরণশীল। তাই প্রত্যেক মানুষের উচিত অনতিবিলম্বে তাওবা করা। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো বিশুদ্ধ তাওবা।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৮) শুকরিয়া আদায় করা : মহান আল্লাহ মানুষকে বহু নিয়ামত দিয়েছেন। মানুষ তা গণনা করে শেষ করতে পারবে না। তাই মানুষের প্রতি আল্লাহর অন্যতম হক হলো আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৫২) তাওয়াক্কুল করা : আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা আল্লাহর অন্যতম হক। তিনি বলেন, ‘একান্তভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করো, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২৩) আল্লাহকে স্মরণ করা : আল্লাহকে স্মরণ করা আল্লাহর অন্যতম নির্দেশ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৫২) আল্লাহকে ভালোবাসা : নিরঙ্কুশ ভালোবাসা পাওয়ার একমাত্র অধিকারী হলেন আল্লাহ তাআলা। নবী করিম (সা.) বলেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে আছে, সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারে—১. আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে বেশি প্রিয় হওয়া; ২. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা; ৩. কুফরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা। (বুখারি, হাদিস : ১৬) মহান আল্লাহ আমাদের তাঁর হকগুলো আদায় করার তাওফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"রাসুল (সা.)–এর কাছে রহস্যময় অতিথি ",ইসলাম ধর্ম,"উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, একবার আমরা নবীজি (সা.)–এর মজলিশে ছিলাম। এমন সময় এক লোক মজলিশে এসে হাজির। তার কাপড়-চোপড় ধবধবে সাদা, চুল কালো। দেখে মনে হলো না যে তিনি দূরের কোনো দেশ থেকে এসেছেন। তার মধ্যে সফরের কোনো চিহ্নও দেখা যাচ্ছিল না। কাছাকাছি এলাকার হলে আমরা তাকে চিনে নিতাম; কিন্তু আমাদের কেউই তাকে চিনল না। অবশেষে তিনি নবীজি (সা.)–এর সামনে বসে তাঁর দুই হাঁটু নবীজি (সা.)–র হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন। বললেন, মুহাম্মাদ (সা.) বলুন তো ইসলাম কী? নবীজি (সা.) বললেন, ইসলাম হচ্ছে এই যে তুমি সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, নামাজ কায়েম করবে, জাকাত আদায় করবে, রমজানের রোজা পালন করবে এবং বায়তুল্লাহতে যাওয়ার সক্ষমতা থাকলে হজ করবে। তিনি বললেন, আপনি সত্যই বলেছেন। উমর (রা.) বলেছেন, আমরা তাঁর কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। কেননা, তিনি (অজ্ঞের মতো) প্রশ্ন করে (বিজ্ঞের মতো) সমর্থন করছেন। তিনি বললেন, আমাকে ইমান সম্পর্কে বলুন। নবীজি (সা.) বললেন, ইমান এই যে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর প্রেরিত নবীগণ ও শেষ দিনের ওপর ইমান রাখতে হবে এবং তাকদির এবং এর ভালো ও মন্দের প্রতিও বিশ্বাস রাখতে হবে। তিনি বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন। নবীজি (সা.) বললেন, ইহসান এই যে তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তাকে দেখছ। যদি তাকে না দেখো তাহলে তিনি তোমাকে দেখছেন বলে অনুভব করবে। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে বলুন। এর কিছু নিদর্শন বলুন। তিনি বললেন, কিয়ামত কখন হবে, তার সঠিক সময় কেবল জানেন আল্লাহ। দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে এবং নগ্নপদ, বস্ত্রহীন, দরিদ্র, সহায়-সম্বলহীন বকরির রাখালদের বড় দালান-কোঠা নির্মাণের প্রতিযোগিতায় গর্ব-অহংকারে মত্ত দেখতে পাবে। উমর (রা.) বলেছেন, এরপর লোকটি চলে গেল। আমি বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। তারপর নবীজি (সা.) আমাকে বললেন, হে উমর, তুমি কি জানো এই প্রশ্নকর্তা কে? আমি বললাম, আল্লাহ আর তাঁর রাসুলই ভালো জানেন। নবীজি (সা.) বললেন, তিনি জিবরাইল (আ.)। তোমাদের কাছে তিনি দীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন। (মুসলিম, হাদিস: ১)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"আল্লাহর অস্তিত্ব এবং আমাদের চিন্তা করার সামর্থ্য ",ইসলাম ধর্ম,"এই বিশ্ব এবং এই মহাকাশ, এ সবকিছু কোত্থেকে এল? এর আগেই–বা কী ছিল? মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, প্রথমে ছিলেন আল্লাহ, আর কিছুই ছিল না। না কোনো পানি, আরশ, আকাশ কোনো কিছুই ছিল না। সুনানে তিরিমিজিতে এসেছে, এক সাহাবি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে প্রশ্ন করলেন, ‘আল্লাহ শুরুতে কোথায় ছিলেন?’ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জবাব দিলেন, ‘তিনি সব সময়ই ছিলেন, তাঁর ওপর এবং নিচে কিছুই ছিল না, এমনকি বাতাসও না।’ আমরা যখন আল্লাহকে চিন্তা করি, তখন আমরা আমাদের মানব মস্তিষ্ক দিয়ে ভাবি। যেমন এক হাদিসে আছে, আল্লাহ রাতের শেষ অংশে পৃথিবীর নিকটতম আসমানে নেমে আসেন। অনেকে এটা শুনে ভাবতে পারেন, আল্লাহ হয়তো বাস্তবেই নিচে নেমে আসছেন। এভাবেই আমরা আল্লাহকে মানুষের চিন্তা দিয়ে মাপতে থাকি। আবার অনেক সময় আরাফার ময়দানে দোয়া করার মুহূর্তে প্রশ্ন আসতে পারে, আল্লাহ কি এত মানুষের ভিড়ে আমার কথা শুনতে পাবেন? এগুলো সবই আমাদের মানবিক চিন্তা। এভাবেই আমরা আল্লাহকে মানুষের চিন্তা দিয়ে মাপতে থাকি। এ বিষয়ে ইসলামের বিজ্ঞজনেরা একটি নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, ‘যখনই তুমি আল্লাহর কথা ভাববে এবং তখন তোমার মনে যা কিছুই আসুক, যেকোনো ছবি কিংবা কোনো অবয়ব, তুমি ধরে নেবে, যা ভাবছ আল্লাহ তার চেয়ে ভিন্ন।’ আল্লাহর আকৃতি নিয়ে চিন্তা করার সামর্থ্য আমাদের মস্তিষ্কের নেই। আমাদের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সুন্দর একটি দোয়া করতেন। তিনি বলতেন, ‘ও আল্লাহ, আপনিই হলেন প্রথম, আপনার আগে কিছু ছিল না। আপনিই সর্বশেষ, আপনার পর আর কিছু নেই। আপনিই প্রকাশ্য, এর চেয়ে প্রকাশ্য আর কিছু নেই। আবার আপনিই লুকায়িত, আপনার চেয়ে গোপন কিছু নেই।’ সুরা হাদিদের আয়াতটিও একই কথা বলছে, ‘তিনি শুরু ও শেষ, তিনিই প্রকাশিত এবং তিনিই লুকায়িত। তিনি সব বিষয়ে জ্ঞান রাখেন।’ বিজ্ঞজনেরা বলেন, আল্লাহ একই সঙ্গে গোপন ও প্রকাশ্য হলেও তিনি কিন্তু তাঁর সৃষ্টি থেকে বিচ্ছিন্ন নন। যেমন দুনিয়ার রাজা-বাদশারা শাসন করেন ঠিকই, কিন্ত তাঁরা প্রজাদের বিষয়ে কমই অবগত থাকেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেছেন, ‘আকাশ ও পৃথিবীর কোনো কিছুই তাঁর কাছে গোপন নয়। তিনি সব বিষয়ে পরিপূর্ণ অবগত।’ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, ‘আল্লাহকে তোমরা তাঁর সেরা নাম তথা ইসমে আজম দিয়ে ডাকো।’ তিনি বলেছেন, এ নামটি সুরা বাকারা, সুরা আল-ইমরান এবং সুরা ত্বহাতে রয়েছে। অনেকে মনে করেন এই নামটি হলো ‘আল হাইইউ ওয়াল কাইয়ুম’ অর্থ—চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। এ নামটি এতটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ হিসেবে পণ্ডিতেরা বলেন, এই নাম অনুযায়ী, তিনি সব সময় ছিলেন এবং থাকবেন। ‘কাইয়ুম’ অর্থ—যিনি নিজেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিজেই নিজের সব প্রয়োজন পূরণ করেন। উল্লেখ্য, তিনটি সুরাতেই এই নাম পাওয়া যায়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,যেসব আমলে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হওয়া যায়,ইসলাম ধর্ম,"কিছু আমল এমন আছে, যেগুলোর পুরস্কারস্বরূপ মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সদ্যোভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ করে দেন। নিম্নে হাদিসের আলোকে সে রকম কিছু আমল তুলে ধরা হলো— ১. যথাযথভাবে পবিত্র হজ পালন : ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ, যা শুধু সামর্থ্যবান মানুষের ওপর ফরজ। সঠিকভাবে হজ পালন করলে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাকে সদ্যোভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ করে দেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এ ঘরের (বাইতুল্লাহর) হজ আদায় করল, অশ্লীলতায় জড়িত হলো না এবং আল্লাহর অবাধ্যতা করল না, সে মায়ের পেট থেকে সদ্যঃপ্রসূত শিশুর ন্যায় (হজ থেকে) প্রত্যাবর্তন করল। (বুখারি, হাদিস : ১৮২০) ২. রোগশয্যায় ধৈর্যধারণ : সুস্থ-সবল মানুষ থেকে হঠাৎ রোগশয্যায় পড়ে যাওয়া অনেক কষ্টের। যারা সেই কঠিন সময়েও মহান আল্লাহর ওপর আস্থা রাখে, আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট থাকে এবং তাঁর সাহায্য কামনা করে, মহান আল্লাহ তাদের সদ্যোভূমিষ্ঠ শিশুর মতো গুনাহমুক্ত করে দেন। শাদ্দাদ ইবন আওস ও সুনাবিহী (রা.) রোগীকে বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দাদের মধ্যে কোনো মুমিন বান্দাকে রোগাক্রান্ত করি। রোগগ্রস্ত করা সত্ত্বেও যে আমার শুকরিয়া আদায় করবে, সে রোগশয্যা থেকে সদ্যঃপ্রসূত শিশুর মতো সব গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে উঠবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের বলেন, আমি আমার বান্দাকে রোগ দিয়ে বন্দি করে রেখেছি। তাই তোমরা তার সুস্থ অবস্থায় তার জন্য যা লিখতে তা-ই লিখো। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৭১১৮) ৩. রমজানের ইবাদত : হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাস সম্পর্কে বলেন, এটি এমন একটি মাস, যখন আল্লাহ তোমাদের ওপর তাঁর সাওম ফরজ করেছেন এবং আমি তোমাদের ওপর এর দণ্ডায়মান হওয়া (রাত জেগে ইবাদত করা) সুন্নত করেছি। অতএব, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় এ মাসে সাওম রাখে ও (রাতে ইবাদতে) দণ্ডায়মান হয়, সে তার জন্মদিনের মতো পাপমুক্ত হয়ে যায়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩২৮) ৪. অজু ও নামাজে বিশেষ গুরুত্ব : হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, কাফফারাত দ্বারা মানুষকে তার জন্মলগ্নের মতো নিষ্পাপ করে দেওয়া হয়। ‘কাফফারাত’ অর্থ নামাজের পর মসজিদে বসে থাকা, নামাজের জামাতে উপস্থিতির জন্য হেঁটে যাওয়া এবং কষ্টকর সময়েও সুষ্ঠুভাবে অজু করা। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে লোক এসব কাজ করবে সে কল্যাণের মধ্যে বেঁচে থাকবে, কল্যাণের সঙ্গে মরবে এবং তার জন্মদিনের মতো গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যাবে।...(তিরমিজি, হাদিস ৩২৩৩) ৫. উত্তমরূপে অজু করে নামাজ পড়া : মুসলিম শরিফের দীর্ঘ একটি হাদিসের একাংশে আছে, আমর ইবনে আবাসাহ আস সুলামি (রা.) মদিনায় নবীজি (সা.)-কে কিছু দ্বিনি বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তার মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল, হে আল্লাহর নবী! অজু সম্পর্কে আমাকে বলুন। তিনি বলেন, তোমাদের যেকোনো ব্যক্তির কাছে অজুর পানি পেশ করা হলে সে যেন কুলি করে, নাকে পানি দিয়ে তা পরিষ্কার করে, এতে তার মুখমণ্ডলের ও নাক গহ্বরের সমস্ত পাপ ঝরে যায়। অতঃপর যখন সে আল্লাহর নির্দেশমতো মুখমণ্ডল ধৌত করে, তখন পানির সঙ্গে তার মুখমণ্ডল থেকে, এমনকি দাড়ির আশপাশের সমস্ত পাপ ঝরে যায়। অতঃপর তার দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার আঙুলসমূহ থেকে পানির সঙ্গে গুনাহগুলো ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার পদদ্বয় ধৌত করে তখন তার আঙুলগুলো দিয়ে তার পাপসমূহ ঝরে যায়। অতঃপর সে যদি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করে, তাঁর যথাযোগ্য মর্যাদা বর্ণনা করে এবং আল্লাহর জন্য নিজের অন্তরকে পৃথক করে নেয়, তাহলে সে তার জন্মদিনের মতো গুনাহমুক্ত হয়ে যায়।... (মুসলিম, হাদিস : ১৮১৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন বছরের হজ চুক্তি সই,ইসলাম ধর্ম,"২০২৪ সালের জন্য হজ পালনে সৌদি সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। আজ সোমবার সৌদি আরবের জেদ্দায় স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় এ চুক্তি হয়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার ও সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আব্দুল ফাত্তাহ বিন সুলাইমান মাশাত চুক্তিতে সই করেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মঞ্জুরুল হক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী এ বছরও ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি হজ পালনের সুযোগ পাবেন। চুক্তির সময় ধর্ম সচিব হজ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয় এবং হজযাত্রীদের সুযোগ বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে এরই মধ্যে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর হজের নিবন্ধন শুরু হয়। প্রথম দফায় ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল। পরে সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু নিবন্ধনে সাড়া না মেলায় নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে কুরআনের পথনির্দেশ ",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ ঐশীগ্রন্থ পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন, যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন। (সূরা আন-নিসা : ১২৮)। বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবন ও পারিবারিক জীবনের সূচনা হয়। ইসলামী শরীয়তে এই সম্পর্ক কায়েম করতে হলে যেমন সুনির্ধারিত কিছু বিধান রয়েছে তেমনি প্রয়োজনে এই সম্পর্ক ছিন্ন করতে হলেও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কুরআন-হাদীসে সেগুলো অনুসরণ করারও জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষের দাম্পত্য জীবনের এমন একটি জটিল দিক সম্পর্কে পথনির্দেশ করেছেন, সুদীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের বিভিন্ন সময়ের প্রত্যেকটি দম্পতিকেই যার সম্মুখীন হতে হয়। তা হলো স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক মনোমালিন্য ও মন কষাকষি। আর এটি এমন একটি জটিল সমস্যা, যার সুষ্ঠু সমাধান যথাসময়ে না হলে শুধু স্বামী-স্ত্রীর জীবনই দুর্বিসহ হয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে এহেন পারিবারিক মনোমালিন্যই গোত্র ও বংশগত কলহ-বিবাদ তথা হানাহানি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। কুরআনুল কারীম নরনারীর যাবতীয় অনুভূতি ও প্রেরণার প্রতি লক্ষ্য রেখে উভয় শ্রেণীকে এমন এক সার্থক জীবন ব্যবস্হা বাতলে দেয়ার জন্য অবতীর্ণ হয়েছে, যার ফলে মানুষের পারিবারিক জীবন সুখময় হওয়া অবশ্যম্ভাবী। এর অনুসরণে পারস্পরিক তিক্ততা ও মর্মপীড়া, ভসলবাসা ও প্রশান্তিতে রুপান্তরিত হয়ে যায়। আর যদি অনিবার্য কারণে সম্পর্কচ্ছেদ করতে হয়, তবে তা করা হবে সম্মানজনক ও সৌজন্যমুলক পন্হায় যেন, তার পেছনে শত্রুতা, বিদ্বেষ বা উৎপীড়নের মনোভাব না থাকে। সূরা-নিসা- এর ১২৮ তম আয়াতটি এমনি সমস্যা সম্পর্কিত, যাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ফাটল সৃষ্টি হয়। নিজ নিজ হিসাবে উভয়ে নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও পারস্পরিক মনের মিল না হওয়ার কারণে উভয়ে নিজ নিজ ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করে। যেমন, একজন সুদর্শন সুঠামদেহী স্বামীর স্ত্রী স্বাস্থ্যহীনা, অধিক বয়স্কা অথবা সুশ্রী না হওয়ার কারণে তার প্রতি স্বামীর মন আকৃষ্ট হচ্ছে না। আর এর প্রতিকার করাও স্ত্রীর সাধ্যাতীত। এমতাবস্থায় স্ত্রীকেও দোষারোপ করা যায় না, অন্যদিকে স্বামীকেও নিরপরাধ সাব্যস্ত করা যায়। এহেন পরিস্থিতিতে কুরআনের সাধারণ নীতি- অর্থাৎ, উক্ত স্ত্রীকে বহাল রাখতে চাইলে তার যাবতীয় ন্যায্য অধিকার ও চাহিদা পুরণ করে রাখতে হবে। আর তা যদি সম্ভব না হয়, তবে কল্যাণকর ও সৌজন্যমুলক পন্থায় তাকে বিদায় করবে এমতাবস্থায় স্ত্রীও যদি বিবাহ বিচ্ছেদে সম্মত হয়, তবে ভদ্রতা ও শালীনতার সাথেই বিচ্ছেদ সম্পন্ন হবে। পক্ষান্তরে স্ত্রী যদি তার সন্তানের খাতিরে অথবা নিজের অন্য কোন আশ্রয় না থাকার কারণে, বিবাহ বিচ্ছেদে অসম্মত হয়, তবে তার জন্য সঠিক পন্থা এই যে, নিজের প্রাপ্য মোহর বা খোর-পোষের ন্যায্য দাবী আংশিক বা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে স্বামীকে বিবাহ বন্ধন অটুট রাখার জন্য সম্মত করাবে। দায়দায়িত্ব ও ব্যয় ভার লাঘব হওয়ার কারণে স্বামীও হয়তো এসমস্ত অধিকার থেকে মুক্ত হতে পেরে এপ্রস্তাব অনুমোদন করবে। এভাবে সমঝোতা হয়ে যেতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া-কলহ বা সন্ধি সমঝোতার মধ্যে অহেতুক কোন তৃতীয় ব্যক্তি নাক গলাবে না। বরং তাদের নিজেদেরকে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। কারণ, তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতির ফলে স্বামী-স্ত্রীর দোষ-ত্রুটি অন্য লোকের গোচরীভূত হয়, যা তাদের উভয়ের জন্যই লজ্জাজনক ও স্বার্থের পরিপন্থী। তদুপরি তৃতীয় পক্ষের কারণে সন্ধি-সমঝোতা দুষ্কর হয়ে পড়াও বিচিত্র নয়। আলোচ্য আয়াতের শেষের অংশে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা কল্যাণ সাধন কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন।’ এখানে বুঝানো হয়েছে যে, অনিবার্য করণ বশত: স্বামীর অন্তরে যদি স্ত্রীর প্রতি কোন আকর্ষণ না থাকে এবং তার ন্যায্য অধিকার পুরণ করা অসম্ভব মনে করে তাকে বিদায় করতে চায়, তবে আইনের দৃষ্টিতে স্বামীকে সে অধিকার দেয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় স্ত্রীর পক্ষ থেকে কিছুটা স্বার্থ পরিত্যাগ করে সমঝোতা করাও জাযেয। কিন্তু এতদসত্তেও স্বামী যদি সংযম ও খোদাভীতির পরিচয় দেয়, স্ত্রীর সাথে সহানুভূতিপূর্ণ ব্যবহার করে, মনের মিল না হওয়া সত্তেও তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ না করে বরং তার যাবতীয় অধিকার ও প্রয়োজন পুরণ করে, তবে তার এই ত্যাগ ও উদারতা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ওয়াকিফহাল রয়েছেন। অতএব, তিনি এহেন ধৈর্য, উদারতা, সহনশীলতা ও মহানুভবতার এমন প্রদিদান দেবেন, যা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। এখানে ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন’ বলেই ক্ষান্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদান কি দেবেন, তা উল্লেখ করা হয়নি। কারণ, এর প্রতিদান হবে কল্পনার ঊর্ধ্বে, ধারণার অতীত। মোটকথা, কুরআনুল কারীম উভয়পক্ষকে একদিকে স্বীয় অভাব-অভিযোগ দুর করা ও ন্যায্য অধিকার লাভ করার আইনতঃ অধিকার দিয়েছে। অপর দিকে ত্যাগ, ধৈর্য, সংযম ও উন্নত চরিত্র আয়ত্ব করার উপদেশ দিয়েছে। এখানে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, বিবাহবিচ্ছেদ হতে যথাসাধ্য বিরত থাকা কর্তব্য। বরং উভয়ের পক্ষেই কিছু কিছু ত্যাগ স্বীকার করে সমঝোতায় আসা বাঞ্ছনীয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আল্লাহপাকের জিকির থেকে গাফেল না হই ",ইসলাম ধর্ম,"এই দুনিয়াতে আল্লাহপাকের কুদরতের বিবরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না। তাঁর প্রশংসা করেও কেউ শেষ করতে পারবে না। তিনি এতই বড়, এতই মহান। আল্লাহপাক স্বয়ং কোরআনে কারীমে ইরশাদ করেছেন : পৃথিবীতে যত গাছ আছে তার সব যদি কলম হয়ে যায়, আর পৃথিবীর সব সাগর-মহাসাগর এবং তার সঙ্গে আরও সাত সমুদ্র যোগ করে তার সবই যদি কালি হয় আর আল্লাহপাকের কথা লেখা হতে থাকে, তাহলে সে কলম ও কালি ফুরিয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহপাকের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। (সূরা লুকমান : ২৭)। এরপর আল্লাহপাক বলেন : তোমাদের সকলকে সৃষ্টি করা ও পুনর্জীবিত করা (আল্লাহর পক্ষে) একজন মানুষকে (সৃষ্টি করা ও পুনর্জীবিত করা)-এর মতোই। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছু দেখেন। (সূরা লুকমান : ২৭)। এ আয়াতেও আল্লাহপাকের কুদরত ও ক্ষমতার বিবরণ দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর সবাই মিলে চেষ্টা করলেও, সকল সামর্থ্য ব্যয় করলেও একজন মানুষ কেউ সৃষ্টি করতে পারবে না। আল্লাহপাক বলেন, তোমাদের সবাইকে সৃষ্টি করা এবং মৃত্যুর পর আবারও সৃষ্টি করা আমার কাছে একজনকে সৃষ্টি করা ও পুনরায় জীবিত করার মতোই। আল্লাহর কাছে বিষয়টি একেবারেই সহজ। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন কোরআনে কারীমে এভাবে তাঁর কুদরতের বিবরণ দিয়েছেন। মানুষ যেন তাঁর প্রতি ইমান আনে। তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করে। তাঁর হুকুম-আহকাম মেনে চলে। আমাদের দুনিয়ার এ জীবনই তো শেষ নয়। সামনে আমাদের জন্য আখেরাতের অনন্তকালের জীবন অপেক্ষা করছে। আখেরাতের তুলনায় এ দুনিয়ার জীবন কিছুই নয়। আখেরাতের জীবনের শুরু আছে, শেষ নেই। মাটি থেকে নিয়ে আসমান পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবী যদি সরিষা দানা দিয়ে পূর্ণ করে ফেলা হয় আর এখান থেকে বছরে একটি করে সরিষা দানা সরানো হয়, তাহলে একদিন এ পৃথিবী ভর্তি সরিষা দানা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আখেরাতের জীবন কখনো শেষ হবে না। অতএব সে অনন্ত জীবনের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য দুনিয়ার জীবনেই নেক কাজ করে যেতে হবে। যারা নেক কাজ করবে না, আল্লাহর নাফরমানি করে জীবন কাটাবে, তারা মৃত্যুর সময় বড় আফসোস করবে। বলবে, আল্লাহ আমাদেরকে আর কিছুদিন সময় দিন, আমরা পূর্ণ নেককার হয়ে যাব। কোরআনে কারীমে বিষয়টি আল্লাহপাক এভাবে তুলে ধরেছেন : আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে তোমরা (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় করতে থাকো, সেদিন আসার পূর্বে যেদিন তোমাদের কারও মৃত্যু উপস্থিত হবে আর সে বলবে, হে আমার রব, আমাকে যদি একটু সুযোগ দিতেন। তাহলে আমি দান-সদকা করব এবং নেককার বান্দা হয়ে যাব। কারও নির্দিষ্ট সময় হয়ে গেলে তাকে আর সুযোগ দেয়া হবে না। আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহপাক তা জানেন। (সূরা মুনাফিকুন : ১০, ১১)। সুতরাং আমাদেরকে হায়াত থাকতে থাকতে আখেরাতের পুঁজি সংগ্রহ করতে হবে। নেক আমল করতে হবে। দুনিয়া যেন আমাদেরকে আল্লাহ থেকে, আখেরাত থেকে গাফেল করে না রাখে। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন বান্দাদের সতর্ক করে দিয়ে ইরশাদ করেছেন : হে ঈমানদাররা, তোমাদেরকে যেন তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল করে না রাখে। এমনটা যারা করবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সূরা মুনাফিকুন : ০৯)। দুনিয়া আমাদেরকে আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল করে দেয়। সম্পদের পেছনে মানুষ জীবন শেষ করে দেয়। সন্তানদের জন্যও অনেক সময় মানুষ দ্বীন থেকে দূরে সরে যায়। এ বিষয়ে আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। কোনোভাবেই যেন সময় নষ্ট না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে কিছু জিকির করতে হবে। আল্লাহপাকের নামের জিকিরের অনেক ফায়েদা। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন বলেন : যারা ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর শান্তি পায়। (সূরা রা’দ : ২৮)। দিলের শান্তি ও প্রশান্তির মাধ্যম হলো আল্লাহপাকের জিকির। আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে যার কলব প্রশান্ত থাকবে তার মৃত্যুর সময় আল্লাহপাক তাকে সম্বোধন করে বলবেন : হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার রবের কাছে ফিরে চলো এমতাবস্থায় যে, তুমিও তার প্রতি সন্তুষ্ট আর তিনি তোমার প্রতি সন্তুষ্ট। আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"সৌদির শীর্ষ ধর্মপ্রচারক ড. আবদুল আজিজ আল ফাওজানকে গ্রেপ্তার ",ইসলাম ধর্ম,"সৌদি আরবের শীর্ষ ধর্মপ্রচারক ড. আবদুল আজিজ আল ফাওজানকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশজুড়ে শেখ এবং ধর্মপ্রচারকদের দমন-পীড়নের বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করে এক টুইট প্রকাশ করেন আল ফাওজান। সামাজিক মাধ্যমের কর্মীরা জানিয়েছেন, ওই টুইটকে কেন্দ্র করেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগেও সৌদি কর্তৃপক্ষ আল ফাওজানকে হেনস্তা করেছে। আল ইমাম মোহাম্মদ ইবনে সৌদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল ফাওয়াজ এর আগে এক টুইটে উল্লেখ করেছিলেন যে, তাকে আসন্ন গ্রেপ্তারের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। দু'সপ্তাহ আগে তার ওপর ভ্রমণ এবং সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়। সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় আল ফাওজান বলেন, আমার প্রিয় মানুষেরা। যে যেখানে আছেন, আপনাদের প্রার্থনায় আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেন। সৌদিতে বহু সংখ্যক আলেমকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন বিজ্ঞ ব্যক্তি ও ধর্মপ্রচারককে গ্রেপ্তার করেছে সৌদির নিরাপত্তা বিভাগ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"যেভাবে নির্মিত হলো মসজিদে নববি ",ইসলাম ধর্ম,"হিজরতের বছর ৬২২ সালে শুরু হয় মসজিদে নববির নির্মাণকাজ। ৬২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় সাত মাস সময় লাগে এর কাজ শেষ হতে। মদিনায় প্রবেশের পর রাসুল (সা.)-এর উট কাসওয়া যে জায়গাটিতে বসে পড়েছিল, সেখানেই তৈরি করা হয় ঐতিহাসিক মসজিদে নববি। মদিনার দুই এতিম বালক সাহল ও সোহাইলের কাছ থেকে ১০ দিনারের বিনিময়ে জায়গাটি কিনে নেওয়া হয়। টাকা পরিশোধ করেন হজরত আবু বকর (রা.)। জমির ছোট এক অংশে রাসুল (স.)-এর জন্য বাসস্থান এবং বাকি অংশজুড়ে তৈরি করা হয় মসজিদ। হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) হিজরত করে মদিনায় এসে বনি আমর ইবনে আওফ গোত্রের এলাকার উঁচুভূমিতে পৌঁছে চৌদ্দ রাত অবস্থান করলেন। বনি নাজ্জারের লোকজন তাঁকে ঘিরে ছিল। সবার মনে একটাই আকুতি, নবীজি (সা.) যেন তাদের মেহমান হন। আল্লাহর কুদরতি ফায়সালাকারী উট আবু আইয়ুব আনসারি (রা.)–র বাড়িতে এল। সেখানেই নবীজি (সা.) অবস্থান করলেন। সাহাবি আনাস (রা.) বলেছেন, যেখানে নবীজির (সা.) উট থেমেছিল, তার চৌহদ্দি বা সীমানায় ছিল একটি বাগান। বাগানটিতে ছিল খেজুরগাছ, কিছু কবর আর কিছু ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ। নামাজের সময় হলেই নবীজি (সা.) নামাজ আদায় করতেন। নবীজি (সা.) মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে নির্দেশ পেলে বনি নাজ্জার গোত্রের নেতাদের ডেকে পাঠালেন। তারা এলে তিনি তাদের বললেন, বনি নাজ্জার, তোমাদের এই বাগানটি অর্থের বিনিময়ে আমার কাছে বিক্রি করবে? তারা বলল, না, আল্লাহর শপথ, আমরা অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করব না। তবে আমরা আল্লাহর কাছেই এর প্রতিদানের প্রত্যাশা রাখব। বাগান মালিকদের অনুমতি পেয়ে নবীজি (সা.) নির্দেশ দিলেন, খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলো, কবরগুলো খুঁড়ে ফেলো এবং ধ্বংসাবশেষগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দাও। নামাজের স্থানটুকু পবিত্র হলে ভূপৃষ্ঠের যেকোনো জায়গায় নামাজ পড়তে কোনো বাধা নেই। তারা খেজুরগাছের গুঁড়িগুলো কিবলার দিকে সারি করে রেখে দরজার দু পাশে পাথর স্থাপন করল। আনাস (রা.) বলেন, এসব কাজ করার সময় তারা এক সুরে কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। তাদের সঙ্গে নবীজিও এক স্থানে কবিতা আবৃত্তি করছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আখিরাতের কল্যাণই প্রকৃত কল্যাণ। তুমি আনসার ও মুহাজিরদের সাহায্য করো।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫২৪)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,অর্থব্যয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বনে স্বস্তিদায়ক জীবন,ইসলাম ধর্ম,"ইসলাম একটি ভারসাম্যপূর্ণ সর্বজনীন জীবনবিধান। মধ্যপন্থা এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাই ইসলাম কৃপণতাকে যেমন নিরুৎসাহ করে, তেমনি অপচয় ও অপব্যয়েরও নিন্দা করা হয়েছে। বিশেষত সংকটকালে অপচয় আরো বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। তখন অপচয় রোধ করে এবং মধ্যপন্থী হয়ে সংকট মোকাবেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। বর্তমানে সারা বিশ্বেই জ্বালানিসংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পর্যায়ে বিদ্যুতের অপচয় রোধ ও তার সংযত ব্যবহারের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় কাজ। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যখন তারা ব্যয় করে তখন অপচয়ও করে না আবার কার্পণ্যও করে না। বরং উভয়ের মাঝামাঝি অবস্থান করে। ’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৬৭) ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ থেকে রাষ্ট্র— সব জায়গায় মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাওয়াদাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, বিয়েশাদিসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অপব্যয় থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কোরআনে অপব্যয়কারীকে শয়তানের ভাই আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘তোমরা অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৬) অপচয়কারী দুনিয়ায় যেমন অপমানিত হবে তেমনি আখিরাতেও লজ্জিত হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তুমি তোমার হাত তোমার গ্রীবায় আবদ্ধ করে রেখো না (অর্থাৎ কৃপণ হয়ো না) এবং তাকে একেবারে খুলেও দিয়ো না (অর্থাৎ অপচয় করো না), তাহলে তুমি নিন্দিত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে। ’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৯) মহানবী (সা.) জীবনের সর্বক্ষেত্রে অপব্যয় করা থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা পানাহার করো। দান-সদকা করো। পোশাক পরিধান করো। তবে অহংকার ও অপচয় করে নয়। ’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৬৯৫) অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, বিয়েশাদি ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে আমরা সীমাহীন অপচয় ও অপব্যয় করি। সাজসজ্জা ও খাবার গ্রহণে অনেক বেশি অপচয় করি। এ জন্য কিয়ামতের দিন কঠিন জবাবদিহি করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর সেদিন তোমাদেরকে আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতের ব্যবহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা : তাকাসুর, আয়াত : ৮) সর্বোপরি আল্লাহর কাছে আত্মসংযমের দোয়া করতে হবে। কোরআনে ইরাশাদ হয়েছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের পাপ ক্ষমা করুন, সব ক্ষেত্রে অপচয় থেকে রক্ষা করুন এবং অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের ওপর আমাদের বিজয় দান করুন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৭)",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,শেরপুরে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের গণঅনশন,হিন্দু ধর্ম,"শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদ শেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গণঅনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচি চলছে। শহরের নয়ানীবাজারস্থ মা ভবতারা মন্দির প্রাঙ্গনে সকাল-সন্ধ্যার এ গণঅনশন কর্মসূচি চলছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চিরতরে বন্ধসহ সরকারি দলের গত নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের দাবিতে এ গণঅনশন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জেলা শাখার সভাপতি দেবাশিষ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন। এ গণঅনশন কর্মসূচিতে সংগঠনটির জেলা নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পাঁচ উপজেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ সদস্যরা অংশগ্রহণ করছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"পাকিস্তানকে ‘ধর্মবিদ্বেষী রাষ্ট্র’ ঘোষণার দাবি যুক্তরাষ্ট্রে ",অন্যান্য,"পাকিস্তানকে ‘ধর্মবিদ্বেষী রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি তুলল যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট রেক্স টিলারসনের কাছে এই বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন একাধিক সেনেটর। শুধু সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রই নয়, ধর্ম বিদ্বেষের ঘোরতর অভিযোগ থাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন ঘোষণা করার দাবি তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, বব মেনেনডেজ,মার্কো রুবিও, ক্রিস কুনস, টোড ইয়ং, জেফ মার্কলে ও জেমস ল্যাংকফোর্ড নামে ছয় মার্কিন সেনেটর এই চিঠি দিয়েছেন। আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়কে। মূলত কোনও দেশ যদি ধর্ম সংক্রান্ত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে, তাহলে ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিডম অ্যাক্টের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সেই দেশকে এই ‘ধর্মবিদ্বেষী রাষ্ট্র’ তকমা দিয়ে থাকে। সাধারণত ধর্মের জন্য যদি মানুষের উপর নৃশংস অত্যাচারের ঘটনা ঘটে, তবেই সেই দেশকে এমন তকমা দেওয়া হয়। মার্কিন সেনেটরদের দেওয়া সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের সরকার প্রতিনিয়ত ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে চলেছে। এমনকি ধর্মের জন্য বহু মানুষকে জেলবন্দি করার বা হত্যা করার মত ঘটনাও ঘটছে। ধর্মীয় আইন লঙ্ঘন করার জন্য বর্তমানে ৪০ জনকে ফাঁসির কিংবা যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানে। হিন্দু, ক্রিশ্চানের মত সংখ্যালঘুরা মার খাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"নওয়াজ আবার লন্ডনে পালিয়ে যেতে পারেন : ইমরান খান ",ইসলাম ধর্ম,"পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফের নাম নির্বাচন পর্যন্ত বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ তালিকায় (ইসিএল) রাখার পরামর্শ দিয়েছেন, বলেছেন যে, ৮ ফেব্রæয়ারি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর নওয়াজ আবার লন্ডনে পালিয়ে যেতে পারেন। পিটিআই-এর ‘প্ল্যান সি’-এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ৮ ফেব্রæয়ারি ‘ভিন্ন দৃশ্য’ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিনটি বিরোধীদের জন্য হতবাক হবে। ‘প্ল্যান সি’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি জোর দিয়েছিলেন যে এটি প্রকাশ করা যাবে না অন্যথায় তার সমর্থকদের তুলে নেয়া হবে। তিনি ‘সফ্টওয়্যার আপডেট’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন যাদের কর্তৃপক্ষের দ্বারা বাছাই করা হয়েছিল এবং পরে পিটিআইয়ের সাথে তাদের পথ আলাদা করার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। ‘ব্যক্তিদের বাছাই করা হচ্ছে, এবং পরে জানা যায় যে তাদের সফ্টওয়্যার আপডেট করা হয়েছে,’ তিনি বলেছিলেন। নির্বাচনে দলটি যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে, পিটিআইয়ের পুরো নেতৃত্বকে বেছে নেয়া হয়েছে। এমনকি দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ কেড়ে নিয়ে পিটিআই প্রার্থীদের দেয়া হয়েছে অবাঞ্ছিত প্রতীক। ইমরান সুপ্রিম কোর্টকে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারণার সময় পিটিআই প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার নথিভুক্তির তদন্ত করার আহŸান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীরা কখন কোথায় নির্বাচনী প্রচারণায় বের হবেন?’ তিনি বলেছিলেন যে, জাতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দাস থাকবে নাকি স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঁচবে। ‘এ যুদ্ধ স্বাধীনতার যুদ্ধ। আমাদের কি সব সময় ক্ষমতাবানদের দাস হয়ে থাকতে হবে? আমি দাসত্ব গ্রহণ করব না,’ তিনি বলেন, ‘নওয়াজ শরীফ নীরব কারণ তিনি দাসত্ব মেনে নিয়েছেন।’ তিনি তার আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে কঠোর জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন না হওয়া পর্যন্ত দেশ এগোবে না। তিনি ‘পিটিআই সদস্যদের গ্রেপ্তারের’ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মনোযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং মরিয়ম নওয়াজ এবং আসিফ আলি জারদারির মতো ব্যক্তিদের দ্বারা কথিত অসদাচরণ সম্পর্কে অনুসন্ধান করার জন্য আহŸান জানান। সূত্র : ট্রিবিউন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,মদিনার পথে লঙ্কা দ্বীপের প্রতিনিধি,ইসলাম ধর্ম,"ভারতবর্ষ ইসলামের ইতিহাসে অতীব গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই উপমহাদেশ কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র গুরুত্ব ও মর্যাদার দাবিদার। সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় প্রথম মানব ও প্রথম নবী আদি পিতা আদম (আ.)-কে হিন্দুস্তানের অন্তর্ভুক্ত একটি দ্বীপাঞ্চলে (সরণ দ্বীপ; বর্তমানে শ্রীলঙ্কা) পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি পবিত্র ভূমি মক্কার দিকে রওনা হয়েছিলেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় প্রথম মানব আদম (আ.)-কে হিন্দুস্তানের মাটিতে পাঠিয়েছিলেন। [মুস্তাদরকে হাকেম, হাদিস : ৩৯৯৪ (সহিহ)] তাফসিরকারক সুদ্দি (রহ.) বর্ণনা করেন, আদম (আ.) সর্বপ্রথম হিন্দুস্তানের মাটিতে অবতরণ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে হাজরে আসওয়াদ পাথরটিও ছিল। সঙ্গে জান্নাতের কিছু পাতাও ছিল, তা তিনি হিন্দুস্তানের মাটিতে ছিটিয়ে দিলেন, এতে অনেক সুগন্ধি গাছ উৎপন্ন হয়। (আখবারু মক্কা, টীকা : ২৩) বর্ণনাটির সূত্র হাসান। আরবদেশ ও ভারতবর্ষের পারস্পরিক সুসম্পর্ক প্রখ্যাত ইতিহাস গবেষক সাইয়েদ সুলায়মান নদবি (রহ.) লেখেন : ‘ভারত উপমহাদেশ ও আরববিশ্ব এমন দুটি অঞ্চল যাকে এক হিসাবে প্রতিবেশীও বলা যায়। এ দুটির মধ্যে শুধু বাধা হলো ভারত মহাসাগর। দুটি অঞ্চল একই সাগরের দুই বিপরীত স্থলভাগে অবস্থিত। সাগরের বিশাল জলরাশির এক হাত আরবদের পবিত্র ভূমির পাদদেশ স্পর্শ করলে অন্য হাত হিন্দুস্তানকে স্পর্শ করে। নদীতীরবর্তী দেশগুলো স্বভাবত বাণিজ্যিক হয়। এটিই প্রথম সম্পর্ক যা এই দুই জাতিকে একত্র করেছে। হাজার বছর ধরে আরব ব্যবসায়ীরা ভারতের উপকূলে আসত এবং এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য মিসর ও সিরিয়া হয়ে ইউরোপে নিয়ে যেত। আবার ইউরোপীয় পণ্যসামগ্রী হিন্দুস্তান, ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং বঙ্গোপসাগর হয়ে জাপান ও চীন নিয়ে আসত। ’ (আরব ও হিন্দ কে তাআল্লুকাত পৃষ্ঠা ৫) এই সূত্র ধরে আদি যুগ থেকেই ভারতবর্ষের মানুষের সঙ্গে আরবদের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তী সময়ে দ্বিনে ইসলাম ও মুসলিমদের মাধ্যমে তা আরো ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়। মদিনার পথে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি প্রসিদ্ধ পর্যটক ও নাবিক বুজুর্গ ইবনে শাহরিয়ার (মৃত্যু : ৩০০ হি.) স্বীয় গ্রন্থ ‘আজায়েবুল হিন্দ’-এ উল্লেখ করেন : ভারত উপমহাদেশের অন্তর্ভুক্ত দ্বীপ এলাকা সরণদ্বীপ (বা সিলন, যা বর্তমানে শ্রীলঙ্কা নামে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত) অঞ্চলের অধিবাসীরা সাধারণত বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী ছিল। যখন তারা আরবদেশে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আবির্ভাব ও দাওয়াতের খবর পেলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে তারা একজন জ্ঞানী সাধু-সন্ন্যাসী প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেন। উদ্দেশ্য ছিল, যেন তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দ্বিন ও দাওয়াতের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ ও সরাসরি খবর নিতে পারেন। ওই সফরে তাঁর সঙ্গে তাঁর একজন ভৃত্যও ছিল। মদিনার দিকে গমনকারী প্রতিনিধির অথৈ সমুদ্র ও দুর্গম পথ পাড়ি দিতে দীর্ঘ কয়েক বছর সময় লেগে যায়। ইত্যবসরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকাল হয়ে যায় এবং তারপর আবু বকর (রা.)-এরও ইন্তেকাল হয়ে যায়। ওই প্রতিনিধি মদিনা শরিফে যখন পৌঁছেন, তখন ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর শাসনামল চলছিল। লঙ্কান প্রতিনিধি খলিফা ওমর (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দ্বিন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। খলিফা ওমর (রা.) তাঁকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দ্বিন সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিলেন। মদিনার পথে লঙ্কা দ্বীপের প্রতিনিধি অতঃপর লঙ্কান প্রতিনিধি সব খবারখবর নিয়ে ফিরে আসেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ফিরতি পথে তিনি ‘মাকরান’ তথা বর্তমান পাকিস্তানের অন্তর্গত বেলুচিস্তানের একটি পাহাড়ি এলাকায় এসে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তাঁর সফরসঙ্গী ভৃত্য সরণদ্বীপে এসে পৌঁছে। ওই ভৃত্য এসে সরণদ্বীপবাসীকে সব খবরাখবর বিশেষত রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর খলিফা আবু বকর (রা.)-এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানায়। আর তাঁরা খলিফা ওমর (রা.)-এর বিনয় ও উত্তম চরিত্র যা দেখেছিল সে ব্যাপারেও জানায় এবং এটিও বলে যে খলিফা ওমর (রা.) বিশাল রাজ্যের শাসনকর্তা হওয়া সত্ত্বেও নিজে তালিযুক্ত জামা পরেন এবং মসজিদে একাকী রাত্রিযাপন করেন। তার এসব বিবরণ শুনে সরণদ্বীপবাসী যারপরনাই মুগ্ধ ও আনন্দিত হন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এই বিমুগ্ধতার প্রভাব থেকে যায়। যার ফলে সরণদ্বীপবাসীর অনেক লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নেয়। এমনকি যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনি তারাও মুসলিমদের প্রতি ছিল শ্রদ্ধাশীল। (আজায়েবুল হিন্দ পৃষ্ঠা ১৫৭, খেলাফতে রাশেদা আওর হিন্দুস্তান—কাজি আতহার মোবারকপুরি পৃষ্ঠা ২১৯-২২১-এর বরাতে)",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"শাবানের ধ্বনিতে রমজানের আগমন বার্তা ",ইসলাম ধর্ম,"ইবাদতের বসন্ত মাস পবিত্র মাহে রমজানের আগমনী বার্তা জানিয়ে উপস্থিত হয়েছে শাবান মাস। বসন্ত আগমনের আগেই যেমন প্রকৃতি নতুন সাজে সজ্জিত হতে থাকে, তেমনি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যেও শাবান মাসে শুরু হয় মাহে রমজানের ক্ষণগণনা। যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে ইবাদত, তারাবি-তাহাজ্জুদের নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, তওবা-ইস্তেগফার ইত্যাদি আমলের ও আমল কবুলের ভরা মৌসুম। কারণ এ মাসে আসমান থেকে বর্ষিত হতে থাকে রহমত, বরকত ও নাজাতের বারিধারা। সব মিলিয়ে শাবান মাস বিশ্বমুসলিমদের মন-মানসে নতুন করে জেগে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে আসে। আরবিতে এ মাসের পূর্ণ নাম হচ্ছে ‘আশ-শাবানুল মুয়াজ্জাম’ অর্থাৎ সুমহান মর্যাদাবান শাবান মাস। এ মাসকে ‘শাবান’ শব্দ দ্বারা নামকরণ প্রসঙ্গে বিখ্যাত হাদিস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, ‘আরবের লোকেরা এ মাসে পানি সংগ্রহের জন্য বসতি ছেড়ে বেরিয়ে যেত, তাই এ মাসকে শাবান শব্দে নামকরণ করা হয়েছে, যাতে রয়েছে বেরিয়ে যাওয়ার অর্থ। অথবা এ শব্দে নামকরণের এই কারণ হতে পারে যে, রজব মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ হওয়ার দরুন সবাই নিজের এলাকায় অবস্থান করত। যখনই রজব মাস গিয়ে শাবান মাস শুরু হতো সবাই যুদ্ধের জন্য এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ত।’ (ফাতহুল বারি : ৪/২১৩) শাবান মাসে পবিত্র রমজান মাসের আগমনী বার্তা সম্পর্কে হজরত সালমান ফারসি (রা.) বলেন, একবার শাবান মাসের শেষদিন রাসুল (সা.) আমাদের উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করেন। তিনি বললেন, হে মানবম-লী! তোমাদের ওপর এমন একটি মহান ও বরকতপূর্ণ মাস ছায়া বিস্তার করেছে, যাতে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম একটি মহিমান্বিত রজনী রয়েছে। এ মাসে মহান আল্লাহতায়ালা তোমাদের জন্য রোজাকে ফরজ এবং রাতে নামাজ আদায় করাকে নফল করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় একটি নফল কাজ করবে, সে ওই ব্যক্তির সমান সওয়াব পাবে, যে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করেছে। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করবে, সে ওই ব্যক্তির সমান সওয়াব পাবে, যে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করেছে। সুতরাং রমজান মাস ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো একমাত্র জান্নাত। এটা পারস্পরিক সহানুভূতির মাস। এটা এমন এক বরকতপূর্ণ মাস, যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। আর এ মাসে যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে শুধু এক চুমুক দুধ অথবা একটি খেজুর অথবা এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করাবে, এটা তার জন্য গুনাহ মাফের মাধ্যম হবে এবং নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির কারণ হবে। আর তাকে রোজাদার ব্যক্তির সমপরিমাণ সওয়াব প্রদান করা হবে। এতে রোজাদারের সওয়াব থেকে কোনো অংশ কম করা হবে না। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো রোজাদারকে পরিতৃপ্তির সঙ্গে ইফতার করাবে, আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাউসে কাউসার থেকে পানি পান করিয়ে পরিতৃপ্ত করাবেন। যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত আর তৃষ্ণার্ত হবে না। আর এটা এমন মাস যার প্রথমভাগ রহমত, মধ্যভাগ ক্ষমা এবং শেষভাগে আছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি। আর যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধীনে চাকর-বাকরের কাজের ভার হালকা করে দেবে, আল্লাহতায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান করবেন। (মিশকাত : ১৮৬৮) শাবান মাসের বিশেষ গুরুত্বের কারণে আল্লাহর রাসুল (সা.) এ মাসকে ‘শাহরুর রাসুল’ তথা নিজের মাস বলে অভিহিত করেছেন। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শাবান হলো আমার মাস। যে ব্যক্তি শাবান মাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল সে আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল। আর যে আমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, কেয়ামতের দিন আমি হব তার অগ্রবর্তী এবং নেকির ভান্ডার। আর রমজান মাস হলো আমার উম্মতের মাস।’ (শুয়াবুল ইমান : ৩৫৩২)। পবিত্র মাহে রমজানের আগের দুই মাস থেকেই তিনি মহান প্রভুর দরবারে মিনতি ভরে দোয়া করতেন—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগ না রামাজান’, অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ! আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের জীবন প্রলম্বিত করুন।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২৩৪৭) এ মাসেই মহান আল্লাহর কাছে বান্দার আমলনামা পেশ করা হয়। বান্দার ভালো-মন্দ কর্মের বিবরণ প্রকাশিত হয়। হজরত উসামা ইবনে জায়েদ (রা.) একবার নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে শাবান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে এত বেশি ইবাদত করতে দেখি না। এর প্রকৃত কারণ কী? নবীজি (সা.) উত্তরে বললেন, এটা রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস, যে মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে বান্দার আমলগুলো পেশ করা হয়। অথচ এ মাসে মানুষ উদাসীন হয়ে যায়। কিন্তু আমি চাই আমি রোজা পালনকারী অবস্থায় আমার আমলগুলো মহান আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক।’ (নাসায়ি : ২৩৫৭) রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসের অনেক ফজিলত এবং বেশ কিছু করণীয়ও রয়েছে। প্রথমত শাবানের চাঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই দিন গণনায় গুরুত্ব দেওয়া। যেন রমজানের রোজা সঠিক সময় আদায় করা সহজ হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রমজান ঠিক রাখার জন্য শাবানের চাঁদ গণনা করো।’ (তিরমিজি : ৬৮৭)। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) শাবান মাসের তারিখ এতটাই মনে রাখতেন যতটা অন্য মাসের তারিখ মনে রাখতেন না। শাবানের ২৯ তারিখ চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন রমজানের রোজা রাখতেন। আর সেই দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শাবান ৩০ দিন পূর্ণ করে রমজানের রোজা শুরু করতেন।’ (আবু দাউদ : ২৩২৭) শাবান মাসে যেসব আমল করতে হয় : শাবান মাসের অন্যতম একটি আমল হলো, নফল রোজা রেখে আগত রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, একদা মহানবীকে (সা.) জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, কোন রোজার ফজিলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সম্মানার্থে শাবান মাসে কৃত রোজার ফজিলত বেশি। আবার জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন দানের ফজিলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, রমজান মাসে কৃত দানের ফজিলত বেশি।’ (বায়হাকি : ৮৭৮)। অন্য এক বর্ণনায় আছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.) বছরের অন্য কোনো মাসে শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা রাখতে দেখিনি। শাবান মাসে তিনি প্রায় সারা মাসই রোজা রাখতেন। খুব সামান্য কয়েক দিন বাদ যেত।’ (তিরমিজি : ৭৩৬)। অর্থাৎ রোজা রাখার ক্ষেত্রে শাবানের ২৭ তারিখের পরে না যাওয়া। কেননা, এর পরের দিনগুলো সন্দেহপূর্ণ। হাদিসে এ দিনগুলোতে রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। হজরত কাতাদাহ (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেন, ‘নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজান মাস ও শাবান মাসের মাঝে এক বা দুদিনের ব্যবধান বজায় রাখো (রোজা রাখা বর্জন করে)।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৭৩১৬)। শাবান মাসের ফজিলতের আরেকটি কারণ হলো, এ মাসের ১৪ তারিখের বরকতময় রাত। যা মহিমান্বিত শবেবরাত নামে মুসলমানদের মাঝে প্রসিদ্ধ। এ রাতে ইবাদতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য অর্জন করা যায়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘আল্লাহতায়ালা অর্ধশাবানের রাতে তার বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের ওপর অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।’ (শুআবুল ইমান : ৩৮৩৫) এ মাসে সংঘটিত হয়েছে ইসলামের ইতিহাসের আরেক যুগান্তকারী ঘটনা। হিজরতের প্রায় দেড় বছর পর এ মাসেই মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তন হয়। আগে মুসলমানদের কেবলা ছিল ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাস, এ মাসে তার পরিবর্তে মক্কার কাবা গৃহকে কেবলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয়—‘বারবার আপনার আকাশের দিকে চেহারা ঘোরানোর বিষয়টি আমি দেখেছি। সুতরাং আপনার কেবলার দিক পরিবর্তন করে দেব, যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন। অতএব আপনি মসজিদুল হারামের (কাবা শরিফ) দিকে চেহারা ঘোরান। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, ওই (কাবা) দিকেই মুখ ফেরাও।’ (সুরা বাকারা : ১৪৪) মোটকথা, শাবান মাস রমজানের প্রস্তুতি নেওয়ার মাস। আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার ক্ষমা অর্জনের মাস। তাই বেশি বেশি নেক আমল ও পাপকাজ বর্জনের মাধ্যমে রমজানের প্রস্তুতি নিতে হবে। রমজানে রোজা রেখে সাধারণত ভারী কাজ করা মুশকিল। তাই বড় ধরনের ঝামেলা এখনই চুকিয়ে ফেলতে হবে। সর্বোপরি এ মাসে নামাজ, রোজা, জিকির, তেলাওয়াতসহ বেশি বেশি নফল ইবাদতের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। যেন মাহেন রমজানের আমল স্বাচ্ছন্দ্য ও গতিশীলতার সঙ্গে হয়। মহান আল্লাহ সবাইকে তওফিক দিন। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,পরিবার যেসব কারণে গুরুত্বপূর্ণ,ইসলাম ধর্ম,"পৃথিবীর আদি পিতা আদম (আ.) ও আদি মাতা হাওয়া (আ.)-কে কেন্দ্র করে মানবজাতির প্রথম পরিবার গড়ে উঠেছিল জান্নাতে। এই পরিবারের সদস্য স্বামী ও স্ত্রীকে উদ্দেশ করে মহান আল্লাহ বলেছিলেন, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে অবস্থান করো এবং সেখান থেকে যা চাও খুশিমনে খাও। কিন্তু তোমরা দুজন এই গাছটির কাছেও যেয়ো না। তাহলে তোমরা সীমা লঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩৫) এই প্রথম পরিবার থেকে মানবজাতি বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় করো। যিনি তোমাদের একজন মানুষ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকে তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর ওই দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যাঁর নামে তোমরা একে অন্যের কাছে যাচ্ঞা (সাহায্য কামনা) করে থাকো এবং আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কে সতর্ক হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ওপর সদা সতর্ক তত্ত্বাবধায়ক। ’ (সুরা: নিসা, আয়াত : ১) পরিবার একটি সর্বজনীন পদ্ধতি এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের আয়না। সারা বিশ্বে পরিবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভিত্তি হিসেবে গণ্য হয়। পরিবার একজন মানুষের সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ। পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও স্নেহ-মায়া-মমতার বন্ধনে আবদ্ধ একেকটি পরিবার বহু হৃদয়ের সমষ্টি, যেখানে আছে জীবনের প্রবাহ, আছে মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসা, মিলেমিশে থাকার প্রবল বাসনা; আছে নিরাপত্তা, সহনশীলতা এবং পরস্পরকে গ্রহণ করার মানসিকতা। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে পারিবারিক বন্ধনের প্রভাব বিস্তৃত। পরিবার মানুষের জন্য যেমন নিরাপদ আশ্রয়স্থল, তেমনি মানসিক প্রশান্তি লাভের স্থান। মানবজীবনে পরিবার তাই এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কিন্তু পরিবার না থাকলে মানুষকে নানা ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। তন্মধ্যে কয়েকটি দিক নিম্নে উল্লেখ করা হলো— নিরাপত্তাহীন হওয়া : পরিবার মানুষের জন্য এক সুন্দর আশ্রয়। পার্থিব জীবনে সংঘটিত বিভিন্ন বিপদাপদ, অসুখ-বিসুখ, ব্যথা-বেদনা, দুঃখ-যাতনা ইত্যাদির শিকার হয়ে মানুষ অনেক সময় দিশাহারা হয়ে যায়। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা তার সাহায্যে এগিয়ে আসে। অসুখে সেবা করে, বিপদে সাহায্য করে, দুঃখ-কষ্টে সান্ত্বনা দেয় এবং শোকে সমব্যথী হয়। কিন্তু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো মানুষের জন্য এসব পাওয়ার উপায় থাকে না। ফলে সে হয়ে পড়ে উদভ্রান্ত। তার জীবনের নিরাপত্তা থাকে না। সে কোথাও মরে পড়ে থাকলে তার খোঁজখবর নেওয়ার বা তাকে কাফন-দাফন করার মতো লোকও থাকে না। সহযোগিতা না পাওয়া : অর্থ মানবজীবনের এক আবশ্যিক বিষয়। রক্ত ছাড়া যেমন মানুষ বাঁচে না, অর্থ ছাড়া তেমনি জীবন চলে না। তাই বিভিন্ন সময়ে মানুষের অর্থের প্রয়োজন হয়। পরিবারের লোকেরাই সেই প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসে। তা ছাড়া জীবনের সর্বক্ষেত্রে মানুষ কর্মক্ষম থাকে না। জীবনের সূচনাকালে যেমন সে অক্ষম ও পরনির্ভরশীল থাকে, তেমনি জীবনের শেষ বেলায় সে আবার অক্ষম ও পরনির্ভরশীল হয়ে যায়। এ সময়ে পরিবারভুক্ত মানুষ পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য পায়। তার সার্বিক প্রয়োজন পূরণে তারা এগিয়ে আসে। অথচ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো মানুষের সাহায্যে তেমন কেউ এগিয়ে আসে না। বন্ধনহীন হওয়া : একেকটি পরিবার মূলত কতগুলো হৃদয়ের সমষ্টি, যেখানে আছে জীবনের প্রবাহ, মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসা, যত্ন-আত্তি, সেবা-পরিচর্যা, নিরাপত্তা, মিলেমিশে থাকার প্রবল আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো মানুষ এসব সুযোগ-সুবিধা পায় না। নৈতিক অবক্ষয় : বর্তমান সমাজের অবক্ষয় ও সামাজিক ব্যাধি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে পরিবারকে কেন্দ্র করে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ঘরে ঘরে দাউ দাউ করে জ্বলছে অশান্তির আগুন। পরিবারগুলোর অশান্তির প্রভাব পড়ছে সমাজে। ডিশ, সিডি, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, সাইবার ক্যাফে ইত্যাদির মাধ্যমে পর্নো ছবি দেখা, ব্ল্যাকমেইলিং, ইভ টিজিং বাড়ছে মহামারির মতো। অশালীন পোশাক, রূপচর্চা, ফ্যাশন, অবাধ মেলামেশা, যত্রতত্র আড্ডা, প্রেমালাপ, মাদক, পরকীয়া প্রেম, অবৈধ যৌনাচার ও সন্ত্রাস চলছে সমাজের সর্বত্র। এসব কাজে যে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়, তা জোগাড় করতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, মনোমালিন্য, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই-রাহাজানি, কিডন্যাপ ও খুন-খারাবি কিছুই বাদ যাচ্ছে না। এর নেতিবাচক পরিণতি হিসেবে পারিবারিক সহিংসতার বিস্তৃতি ঘটছে। সংসারবিরাগী হওয়া : সংসারবিরাগী হওয়া বা বৈরাগ্য জীবন যাপন করার অনুমতি ইসলামে নেই। আল্লাহ বলেন, ‘আর বৈরাগ্যবাদ—তা তারা নিজেরাই নতুনভাবে চালু করেছে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। আমি (আল্লাহ) তাদের ওপর এ বিধান অপরিহার্য করিনি। ’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ২৭) হাদিসে এসেছে, সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ওসমান ইবনে মাজউন (রা.)-কে নিঃসঙ্গ জীবনযাপনের অনুমতি দেননি। তাকে অনুমতি দিলে আমরা নির্বীর্য হয়ে যেতাম। (বুখারি, হাদিস : ৫০৭৩) উদ্দেশ্যহীন জীবন : পরিবার মানুষকে একটি স্থানে ও একটি লক্ষ্যে চলতে সাহায্য করে। কখনো সে লক্ষ্যচ্যুত হলে পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে সঠিক পথে চলতে ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়। কিন্তু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন মানুষের কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থাকে না। সে যা ইচ্ছা তা-ই করে, যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে চলে যায়। পারিবারিক বন্ধনহীন এই জীবন যেন হালবিহীন নৌকার মতো। সুতরাং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া কোনো বিবেকবান মানুষের জন্য সমীচীন নয়।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,টঙ্গীর ময়দানেই হবে বিশ্ব ইজতেমা,ইসলাম ধর্ম,"রাজধানীর সন্নিকটে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরেই অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমা। স্থান সংকুলান না হওয়ায় টঙ্গী ময়দানের পাশাপাশি উত্তরা দিয়াবাড়ি বউবাজার এলাকায়ও প্রস্তুত হচ্ছিলো ইজতেমা ময়দান। প্রশাসনিক অনুমতি না পাওয়ায় আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিয়াবাড়ি ময়দানের সকল কার্যক্রম স্থগিত করেন প্রথম পর্বের আয়োজক কমিটি। তাবলিগ জামাতের বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও আলাদাভাবে প্রথম পর্বে জোবায়ের অনুসারী দ্বিতীয় পর্বে সাদ পন্থী’রা ইজতেমার আয়োজন করবেন। প্রথম পর্বের আয়োজক কমিটি প্রশাসনিক কোন অনুমতি না নিয়ে উত্তরা দিয়াবাড়ি বউবাজার এলাকায় খুটি গাথা, সামিয়ারা টানানো, অস্থায়ী শেীচাগার, গোসল ও অজুখানা নির্মাণ করে। পরে মৌখিক অনুমতি চাইলে প্রশাসন এতে রাজি নন। দিয়াবাড়ি ময়দানের জিম্মাদার মো: ফরিদ বলেন,মুুরব্বিরা নিষেধ করেছেন, কাজ করতে। আজ সকাল থেকে সকল কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কাকরাইল মসজিদে মুরব্বিদের আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, টঙ্গী তুরাগ নদের তীরেই অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দিয়াবাড়ী এলাকায় একটা মঞ্চ করবেন না বলেছিলেন, কিন্তু আপনারা মঞ্চ করে ফেলেছেন। এটা অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমরা চাই, আপনারা ভবিষ্যতে যৌথভাবে কাজ করবেন। জোবায়ের ও সাদ পন্থীদের মিলেমিশে ইজতেমা করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব তাবলীগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন এর ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমাকে সামনে রেখে তুরাগ নদের তীরবর্তী ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ময়দানে এগিয়ে চলছে বিশ্ব ইজমেতার প্রস্তুতি। বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা জেলাওয়ারী খিত্তায় অবস্থান নিবেন। ২ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৪ফেব্রুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব-ইজতেমার প্রথম পর্ব। এরপর ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। দ্বিতীয় পর্ব ১১ই ফেব্রুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে উভয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,সালাম ইসলাম ধর্মের ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের প্রতীক,ইসলাম ধর্ম,"সালামের প্রচলন কীভাবে ঘটানো যায় তার একটি রূপরেখাও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তখন যেন সে সালাম দেয়। এরপর কোনো গাছ কিংবা কোনো পাথর বা দেয়ালের আড়াল থেকে এসে যখন আবার তার সঙ্গে দেখা হয় তখনো যেন তাকে সালাম দেয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫২০০)। শুধু পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতিই নয়, সালামের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয় আমাদের আমলনামাও। হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রা.-এর বর্ণনা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিসে এসে এক ব্যক্তি ‘আস্সালামু আলাইকুম’ বলে সালাম দিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন। লোকটি তখন মজলিসে বসে পড়ল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দশ (অর্থাৎ তুমি দশ নেকি পেলে)। এরপর আরেকজন এসে ‘আস্সাালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ’ বলে সালাম দিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন। লোকটি তখন মজলিসে বসে পড়ল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বিশ (অর্থাৎ তুমি বিশ নেকি পেলে)। এরপর তৃতীয় আরেকজন এসে ‘আস্সালামু আলাইকুুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’ বলে সালাম দিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন। লোকটি তখন মজলিসে বসে পড়ল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ত্রিশ (অর্থাৎ তুমি ত্রিশ নেকি পেলে)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫১৯৫)। সালামের আরেক সুফল সালাম মানুষকে অহংকার থেকে মুক্ত রাখে। তবে এজন্যে শর্ত হল আগে সালাম দেয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন :‘যে আগে সালাম দেয় সে অহংকার থকে মুক্ত’। (শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৮৪০৭)। মানুষ যখন বড় হয়, তা বয়সের বিবেচনায়ই হোক, কিংবা যশ-খ্যাতি সম্মান বা অর্থসম্পদের দিক দিয়েই হোক, আর পদমর্যাদা ও ক্ষমতা দিয়েই হোক, সে চায় তার অধীনস্তরা কিংবা তার চেয়ে ছোট যারা তারা তাকে সম্মান করুক। অন্যদের সম্মানে সে তৃপ্তি পায়। তাই কেউ বড় হয়ে গেলে ছোটদের নিয়ে এ মানসিকতা থাকা স্বাভাবিক আমি কেন তাকে সালাম দেব, বরং সে আমাকে সালাম দেবে! এ মানসিকতা থেকেই অহংকারের সূচনা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মানসিকতাকেই শেকড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলেছেন। তাঁর বাণী ও শিক্ষা অনস্বীকার্য যে যত বড়ই হোক, সামাজিকভাবে যত উচ্চ মর্যাদার অধিকারীই হোক, আগে বেড়ে সে যখন অন্য কাউকে সালাম দেবে তখন তার মন থেকে অহংকার বিদায় নিতে বাধ্য। প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. ছিলেন মদীনা মুনাওয়ারার বিদ্বান সাহাবীদের অন্যতম। তাকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে ওঠে হাদীস চর্চার পাঠশালা। অথচ তিনি হাদীসের মজলিস রেখে মাঝে মাঝেই বাজারে ঘুরে বেড়াতেন। উদ্দেশ্য- অধিক সংখ্যক মানুষকে সালাম দেয়া। তাঁর শিষ্য হযরত তুফায়েল ইবনে উবাই ইবনে কাবের বক্তব্য শুনুন ‘আমি একদিন আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর নিকট এলাম। তিনি তখন আমাকে নিয়ে বাজারের দিকে রওনা করলেন। আমি তাকে বললাম, বাজারে গিয়ে আপনি কী করবেন? আপনি তো কোনোকিছু কেনাবেচা করেন না, কোনো পণ্য সম্পর্কে কিছু জানতেও চান না, কোনোকিছু নিয়ে দামাদামিও করেন না, কারও সঙ্গে কোনো বৈঠকেও শরিক হন না, তবুও কেন আপনি বাজারে যাবেন? আপনি এখানে বসুন, আমরা হাদীস শুনব। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. তখন বললেন, আরে শোনো, আমরা তো কেবল সালাম দেয়ার জন্যেই বাজারে যাই। যার সঙ্গে দেখা হয় তাকেই আমরা সালাম দিয়ে থাকি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদীস ১৭২৬)। সালামকে যদি আমরা এভাবে আমাদের সমাজে ছড়িয়ে দিতে পারি, এবং যদি সালামের মর্ম আমরা আমাদের জীবনে ধারণ করতে পারি, তাহলে একদিকে যেমন আমাদের পরকালীন পুঁজি বৃদ্ধি পাবে, তেমনি সমাজে বয়ে যাবে আন্তরিকতা আর সম্প্রীতির স্নিগ্ধ হাওয়া। আমাদের পার্থিব জীবনও হয়ে ওঠবে শান্তি ও কল্যাণময়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক আমল করার তাওফিক দান করুন, আমীন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"হজ বিশ্বজনীন ইসলামী ভ্রাতৃত্বের বলিষ্ঠ প্রকাশ ",ইসলাম ধর্ম,"সর্বপ্রথম কথা, মাওলানা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভীর ভাষায়, একথা সত্য যে, ঔপনিবেশিক শাসন ও বৃহৎ শক্তিবর্গের ক‚টনৈতিক শঠতার ফলে ইসলামী উম্মাহ আজ বিভিন্ন বর্ণের জাতীয়তাবাদের অভিশাপের শিকার হয়ে পড়েছে। হজ হচ্ছে সেই খÐিত, কৃত্রিম ও অভিশপ্ত জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বজনীন মহান ইসলামী জাতীয়তাবাদের বিজয়উৎসব। এখানে এসে একাকার হয়ে যায় বিশ্বের শত কোটি তাওহিদবাদী মুসলমান। মুছে যায় ভাষা ও বর্ণের সব ব্যবধান। ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় মানুষের হাতে গড়া ভৌগোলিক সীমারেখার বিভেদ-প্রাচীর। স্ব স্ব জাতীয় পোশাক ও পরিচয়, এত দিন যা ছিল তাদের একান্ত গর্বের, একান্ত আপনার, ত্যাগ করে তারা অঙ্গে ধারণ করে ইহরাম নামের শ্বেতশুভ্র একক ইসলামী জাতীয় পোশাক। চোখের পানিতে, আবেগের উচ্ছ¡াসে ও হৃদয়ের ভাষায় যে কোনো তফাৎ নেই তার বাস্তব প্রমাণ মেলে তালবিয়ায়। একই ভাষায়, একই সুরে, একই তালে লক্ষ লক্ষ হাজির কণ্ঠে ধ্বনিত হজ-সংগীতের মিষ্টি মধুর সুরমূর্ছনায়-‘হে প্রভু! আমি হাজির। আমি হাজির, তোমার কোনো শরীক নেই। আমি হাজির। তোমারই সকল প্রশংসা ও নিয়ামত। তোমারই বাদশাহী। তোমার কোনো শরীক নেই। এখানে আমীর-গরীব ও বান্দা-মনিবের, ছোট-বড়র কোনো ভেদাভেদ নেই, নেই শাসিতের হীনম্মন্যতা ও শাসকের প্রভুত্বসুলভ অহঙ্কার। ইহরামের শ্বেতশুভ্র পোশাকে ও লক্ষ কণ্ঠের ভাবগম্ভীর লাব্বাইকা ধ্বনিতে সবকিছু ছাপিয়ে ভেসে উঠে সর্বজনীন ইসলামী বিশ্ব-ভ্রাতৃত্বের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। হজের প্রতিটি আহকামে, প্রতিটি গতি-বিধিতে সেই একই দৃশ্য জুড়িয়ে দেবে আপনার হৃদয়-প্রাণ। ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেবে ভাষা, বর্ণ ও রক্ত-কৌলিন্যের মিথ্যা অভিমান। এখানে এসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে দূর-নিকটের, সাদা-কালো মুসলমান, বুকে বুক মিলিয়েছে আরব-আজমের আদমসন্তান। একসাথে তারা দৌড়াচ্ছে সাফা-মারওয়ার মাঝে, চলেছে মিনা-আরাফার পথে। অশ্রুসিক্ত চোখে, কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে দু’হাত তুলে মোনাজাত করছে জাবালে রহমতের পাদদেশে। মুযদালিফার খোলা আকাশের নিচে, নরম বালুর বিছানায় একসাথে কাটছে সবার রাত। বিশ্ব-মানবতার ঐক্যের সে কী অপূর্ব প্রকাশ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : যখন তোমরা দলে দলে আরাফা থেকে ফিরবে তখন মাশআরে হারামের নিকট আল্লাহর জিকির করবে এবং তাঁর প্রদর্শিত পথে তাঁর জিকির করবে। এর পূর্বে নিশ্চয়ই তোমরা অজ্ঞ ছিলে। (সূরা বাকারা : ১৯৮)। অভিন্ন সবার গতি ও অবস্থান, একসাথে চলা, একসাথে থামা এবং একসাথে মক্কায় ফিরে আসা। ‘হ্যাঁ, তোমরা ঠিক ততদূর গিয়ে ফিরে আসবে যতদূর অন্যরা যায় এবং আল্লাহর কাছে তোমরা মাগফিরাত কামনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়’। পৃথিবীতে হজ ইনশাআল্লাহ কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। কোনো জাতীয়তাবাদী আহŸান ও অনৈসলামী সেøাগানই হাজারো ত্রæটি ও দুর্বলতা সত্তে¡ও ইসলামী উম্মাহকে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করতে পারবে না কিছুতেই। স্বদেশপ্রেম তাদের যত গভীর হোক, জন্মভ‚মির আলো-বাতাস যত প্রিয়ই হোক, পৃথিবীর কোনো শক্তিরই সাধ্য নেই তাদের কাবাকেন্দ্রিক জীবনের এই পরিক্রমাকে ভিন্ন কোনো কেন্দ্রবিন্দুতে আবর্তিত করার। কিয়ামত পর্যন্ত বাইতুল্লাই থাকবে ইসলামী উম্মাহর প্রাণপ্রিয় কিবলা। কিবলামুখী হয়েই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে পৃথিবীর শত কোটি তাওহিদবাদী মুসলমান। হজ-মৌসুমে এখানেই তারা ছুটে আসবে প্রেমদগ্ধ হৃদয়ের জ্বালা মেটাতে। ইরশাদ হয়েছে : আর (সে সময়ের কথা স্মরণ করুন)-যখন পবিত্র কাবাঘরকে আমি মানুষের জন্য আশ্রয় ও নিরাপত্তার কেন্দ্র নির্ধারণ করেছি। আর মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে নির্বাচন করে নাও। (সূরা বাকারা : ১২৫)।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"বাইতুল্লাহ বা কাবাগৃহ কল্যাণময় ও বরকতের আধার ",ইসলাম ধর্ম,"বাইতুল্লাহ বা কাবাগৃহ কল্যাণময় ও বরকতের আধার, যা চিরভাস্কর এবং চির অভিনন্দিত। এ প্রসঙ্গে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : নিঃসন্দেহে মানুষের জন্য সর্বপ্রথম এবাদতের নির্ধারিত ঘর এটাই যা বাক্কায় (মক্কায়) অবস্থিত এবং সারা বিশ্বের মানুষের জন্য সুপথ প্রদর্শক ও রবকতময়। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত-৯৬)। এই আয়াতেকারীমায় কাবাগৃহকে ‘মুবারক’ বা কল্যাণময় ও বরকতের আধার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আরবি ‘মুবারক’ শব্দটি ‘বারাকাতুন’ শব্দ হতে উদ্ভূত। বারকাতুন শব্দের অর্থ বর্ধিত হওয়া, বৃদ্ধি পাওয়া, পরিমাণে শ্রী বৃদ্ধি ঘটা। স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে কোনো বস্তু দু’ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যথা: (১) প্রকাশ্যে বস্তুটির পরিমাণ বৃদ্ধি লাভ করা এবং (২) এর দ্বার এতবেশি কাজ আঞ্জাম পাওয়া যা তার চেয়ে বেশি বস্তু দ্বারা ও সম্ভব হয়ে উঠে না। কাবা গৃহের দ্বারা এই উভয় প্রকার কল্যাণ ও বরকতের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে, তা সহজেই অনুধাবন করা যায়। তাছাড়া এর বরকত ও কল্যাণের বৃদ্ধি পাওয়াকে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকেই নিরীক্ষণ করা যায়। কাবাগৃহের বাহ্যিক বরকত এই যে, পবিত্র মক্কা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ শুষ্ক বালুকাময়, অনুর্বর মরুভূমি। ফল ও ফসলের উৎপাদন এই উষর মরুভূমিতে মোটেই সম্ভব নয়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও বছরের সকল ঋতুতে ফলমূল, তরী-তরকারী, ভোগ্যপণ্য, উট, দুম্বা, ছাগল ইত্যাদির বিপুল মওজুদ মক্কায় লেগেই থাকে। কখনোও সেখানে কোনো জিনিসের অভাব দেখা দেয় না। আকাল বলতে সেখানে কিছুই নেই। মক্কার জনসংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তদুপরি হজ, ওমরা এবং বিভিন্ন এবাদত বন্দেগির উদ্দেশ্যে বহিরাগতদের হুজ্জুম সেথায় লেগেই থাকে। এত কিছুর পরও মক্কায় অভাব অনটনের নাম গন্ধ ও নেই। সেখানকার জনগণের যাবতীয় প্রয়োজন মহান আল্লাহপাকের দয়া ও অনুগ্রহে পরিপূরণ হয়ে যাচ্ছে। জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে কোনরকম অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে না। এমন কি কুরবানির পশু ও সেখানে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এ যাবৎ কাল পর্যন্ত কুরবানির পশুর অভাব কোথাও দেখা যায়নি। তাছাড়া কাবাগৃহের অভ্যন্তরীণ আধ্যাত্মিক ও রূহানী বরকত কি পরিমাণ তা নিরূপন করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কতিপয় বিশেষ বিশেষ এবাদত কাবা গৃহেই আদায় করা হয়। এ সকল এবাদতের সওয়াব ও বিনিময় খুবই বিশাল এবং বিরাট। এই অগনিত সওয়াব ও পূন্য মূলত কাবাগৃহের কারণেই সাধিত হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলূল্লাহ (সা.) বলেছেন, বাসগৃহে নামাজ আদায় করলে এক নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়। কিন্তু মহল্লাহর মসজিদে আদায় করলে পঁচিশ নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়। আর জামে মসজিদে পড়লে পাঁচশ নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়। মসজিদে আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাসে পড়লে এক হাজার নামাজের সওয়াব পাওয়া যায। আর আমার মসজিদে (মদিনার মসজিদে নবুবীতে) পড়লে পঞ্চাশ হাজার নামাজের সওয়াব এবং মসজিদে হারামে পড়লে এক লক্ষ নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়। (সুনানে ইববে মাজাহ; তাবারি)। আল কুরআন গভীর অভিনিবেশ সহকারে অধ্যয়ন করলে দেখা যায় যে, মহান আল্লাহপাক আরবি মুবারক শব্দটি তিনটি রূপে আল কুরআনে ১২ বার ব্যবহার করেছেন। যথা : ১. ‘মুবারাকুন’ রূপে ৪ বার। যেমন, সূরা আনয়ামের ৯২ নং আয়াতে ও ১৫৫ নং আয়াতে, সূরা আম্বিয়া এর ৫০ নং আয়াতে। এবং সূরা সোয়াদ এর ২৯ নং আয়াতে। ২.‘মুবারাকান রূপে ৪ বার। যেমন, সূরা আলে ইমরানের ৯৬ নং আয়াতে, সূরা মারইয়ামের ৩১ নং আয়াতে সূরা আল মুমেনুনের ২৯ নং আয়াতে, এবং সূরা কাফ-এর ৯ নং আয়াতে। ৩. আর ‘মুবারাকাতিন’ রূপে ৪ বার। যেমন সূরা নূর-এর ৩৫ নং আয়াতে এবং ৬১ নং আয়াতে। সূরা কাসাস-এর ৩০ নং আয়াতে এবং সূরা দুখান এর ৩ নং আয়াতে। উল্লিখিত ১২টি আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত মুবারক বা অধিক বরকতের দ্বারা আল্ কুরআনে সুষমা ম-িত করেছে। একই সাথে কাবাগৃহ বা বাইতুল্লাহকে বরকতের শামিয়ানার দ্বারা আচ্ছাদিত করেছেন এবং হযরত ঈসা (আ.) ও হযরত নূহ (আ.)-এর প্রতি অজস্র বরকত নাজিল করেছেন। তাছাড়া হযরত মূসা (আ.)-এর ঘটনায় বিবৃত বরকতময় ভূমির ওপরও আল্লাহপাকের অশেষ বরকত বর্ধিত হয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ওমরাহ ভিসার নিয়ম পরিবর্তন করল সৌদি আরব,ইসলাম ধর্ম,"সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি নতুন নিয়ম অনুসারে, এখন থেকে ওমরাহ ভিসা ইস্যু করার তারিখ থেকে তিন মাস স্থায়ী হবে। পরিবর্তনটি বার্ষিক হজ মৌসুমের প্রস্তুতিকে প্রবাহিত করতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টার অংশ। দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগে ওমরাহ ভিসার ৯০ দিন মেয়াদ গণনা শুরু হতো সৌদিতে প্রবেশের পর। কিন্তু এখন থেকে এই নিয়মের পরিবর্তে ভিসা ইস্যুর দিন থেকে ৯০ দিন সৌদিতে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ১৫ জ্বিলকদ উত্তীর্ণ হবে। এর আগে ওমরাহ ভিসার মেয়াদ থাকতো ২৯ জ্বিলকদ পর্যন্ত। মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে বলেছে, ওমরাহ ভিসা ইস্যু হওয়ার তারিখ থেকে তিন মাস মেয়াদ থাকবে এবং তা ১৫ জ্বিলকদের মধ্যেই শেষ হতে হবে। পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় হজ যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral Dhaka Tribune,"ভারতে মন্দিরে মুসলিম যুগলের বিয়ে ",ইসলাম ধর্ম,"ভারতে হিন্দু মন্দির প্রাঙ্গণে ইসলামিক রীতি অনুযায়ী বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন এক নবদম্পতি। হিমাচল প্রদেশের সিমলা জেলার রামপুর এলাকায় ওই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়, রামপুরের সত্যনারায়ণ মন্দিরটিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের জেলা কার্যালয় রয়েছে। সেখানেই রবিবার মৌলবী, পুরোহিত, আইনজীবী ও দুই পরিবারের উপস্থিতিতে মুসলিম যুগলের চার হাত এক করে দেওয়া হয়। এ সময় মুসলিম যুগলের বিবাহ অনুষ্ঠান দেখতে দু-পক্ষের পরিবার, আত্মীয়দের পাশাপাশি দর্শক হিসাবে মন্দির চত্বরে উপস্থিত ছিলেন এলাকার হিন্দু বাসিন্দারাও। মূলত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়তেই মন্দির চত্বরে মুসলিম যুগলের বিয়ে হল বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। রামপুরের ঠাকুর সত্যনারায়ণ মন্দির ট্রাস্টের জেনারেল সেক্রেটারি বিনয় শর্মা বলেন, “এই মন্দিরটি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পরিচালনা করছে এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের জেলা অফিস।” বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও এটি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই দুই সংগঠন মুসলিম-বিরোধী। কিন্তু এই মন্দির চত্বরেই এক মুসলিম যুগলের বিয়ে হল। সনাতন ধর্ম যে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে, এটা তার নজির।”",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কন্ঠ,সুস্থতা আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত,ইসলাম ধর্ম,"সুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় নিয়ামত। এই নিয়ামতের কদর অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত অনুধাবন করা যায় না। কোনো রোগ এমন আছে, যেগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মানুষ সারা জীবনের অর্জিত সব সম্পত্তি দিয়ে দিতে রাজি, কিন্তু পৃথিবীর সব কিছু দিয়েও তারা এক চিলতে সুখ কিনে নিতে পারে না। কখনো কখনো সাধারণ রোগব্যাধিও এতটা যন্ত্রণাদায়ক হয়, রোগীর কাছে মনে হতে থাকে এই মুহূর্তে এই রোগটা থেকে মুক্ত হওয়া তার কাছে বিশ্বজয়ের চেয়ে বড় হবে।এ জন্যই প্রিয় নবীজি (সা.) সুস্থতার নিয়ামতের মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘এমন দুটি নিয়ামত আছে, যে দুটিতে বেশির ভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হচ্ছে, সুস্থতা আর অবসর।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪১২) খুশুখুজুর সঙ্গে ইবাদত করার জন্যও সুস্থতা প্রয়োজন। একজন অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা একজন ব্যস্ত ব্যক্তি চাইলে শতভাগ মনোযোগ দিয়ে ইবাদত করতে পারে না। তাই অসুস্থতা আসার আগে মানুষের উচিত, সুস্থতার মূল্যায়ন করা এবং সঠিকভাবে ইবাদত ও হালাল উপার্জনের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ অর্জন করা। বিশ্বনবী (সা.) রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে সুস্থতা বিরাট সম্পদ হিসেবে গণ্য করার নসিহত করেছেন। আমর ইবনে মায়মুন আল আওদি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে নসিহতস্বরূপ বলেন—‘পাঁচটি জিনিস আসার আগে পাঁচটি কাজকে বিরাট সম্পদ মনে করো।১. তোমার বার্ধক্যের আগে যৌবন, ২. রোগগ্রস্ত হওয়ার আগে সুস্বাস্থ্য, ৩. দরিদ্রতার আগে অভাবমুক্ত থাকা, ৪. ব্যস্ততার আগে অবসর সময় এবং ৫. মৃত্যুর আগে জীবন।’ (শুআবুল ঈমান) পৃথিবীতে যে ঈমানদার সুস্থ আছে, তার পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা আছে, বলা যায়, সে দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ লাভ করেছে। এটা বিশ্বনবী (সা.)-এর ভাষ্য। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে লোক পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে সকালে উপনীত হয়, সুস্থ শরীরে দিনাতিপাত করে এবং তার কাছে সারা দিনের খোরাকি থাকে, তাহলে তার জন্য যেন গোটা দুনিয়াটাই একত্রিত করা হলো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৬)নবী (সা.)-এর এই হাদিস পড়ার পর ফিলিস্তিনবাসীর কথা মনে পড়ে যায়।তাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই, পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি নেই, ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে, আত্মীয়-স্বজন হারিয়ে গেছে।উল্লিখিত হাদিসে যে বিষয়গুলোকে বিরাট নিয়ামত হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, সেগুলো যে বাস্তবেই কত বড় নিয়ামত তা ফিলিস্তিনবাসী হয়তো ভালোভাবে টের পাচ্ছে না। এই পৃথিবীতে মানুষ আল্লাহর রহমত ছাড়া বড় অসহায়। বড়ই দুর্বল। কখন মানুষকে কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে, তা তারা নিজেরাও জানে না। তাই মানুষের উচিত, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করা, আল্লাহর বিধানগুলো মেনে চলা। আল্লাহর দেওয়া জান-মাল ও সুস্থতার মূল্যায়ন করা।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"হজরত শোয়াইব (আ.)–কে খতিবুল আম্বিয়া বলা হয় ",ইসলাম ধর্ম,"হজরত শোয়াইব (আ.)-এর কওম যেখানে বসবাস করত, সেটা ছিল একটি পাহাড়ি উপত্যকা। চারদিকে পাহাড়-পর্বত। মাঝখানে সমতল ভূমি। চারদিকে প্রাচীরবেষ্টিত ছিল তারা। তাতে ছিল বিশালকায় প্রবেশদ্বার। এখনো সে স্থানে কওমে শোয়েবের ঘরবাড়ির কিছু বিশেষ নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। তবে তারা ঘর নির্মাণ করত পাথুরে পাহাড়ের গা খোদাই করে। একটির পর একটি আলাদা আলাদা ঘর। একটি ঘরের ভেতর চারটি বা পাঁচটি ছোট খোপ থাকত। আর সামনে একটি বড় অলিন্দ। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে যাওয়ার জন্য ছিল বড় সুড়ঙ্গ বা গর্তের মতো সরু পথ। সবখানে সহজে বাতাস চলাচলের সুবিধার্থে পাথর কেটে ফোকর বা জানালার ব্যবস্থা করে রাখত তারা। আর তারা মানুষকে কবর দিত সারিবদ্ধভাবে পরিখার মতো খুদে পরিসরে। একেকটি পরিখায় একেকজন মানুষ শুতে পারত। বাড়ির সামনের দেয়ালে তারা কিছু নকশা ও কারুকাজের চিহ্নও দিয়ে রাখত শিল্পিত হাতে। আজও কালের সাক্ষী হয়ে আছে সেসব চিত্রকর্ম।হজরত শোয়াইব (আ.)–কে তাঁর চমৎকার বাগ্মিতার কারণে ‘খতিবুল আম্বিয়া’ বলা হয়। এ ছাড়াও তিনি তাদের নানান সংযম, সহনশীলতা ও মমতার সঙ্গে সব বুঝিয়েছেন। কিন্তু বিনিময়ে কেবল উপহাস-পরিহাসই পেয়েছেন। অবশেষে তারা যখন সীমা লঙ্ঘন করল, তখন আল্লাহ–তাআলার গজব এসে গেল। তাফসিরকারকেরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে তাদের ওপর তিন ধরনের আজাব হয়েছিল। এক. ঘন মেঘমালা থেকে অগ্নিবৃষ্টি বর্ষিত হয়েছিল। দুই. এর পর প্রচণ্ড শব্দ শোনা যায়। তিন. সবশেষে ভূমিকম্প হয়। এ ব্যাপারে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, হজরত শোয়াইব (আ.)-এর জাতির ওপর এমন গজব চাপিয়ে দেওয়া হয়, যেন জাহান্নামের দরজা তাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিন তাদের অঞ্চলে প্রচণ্ড গরম পড়ল। একদিন দুপুরে গরমে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হতে থাকে। তখন ছায়া ও পানি কোথাও তাদের স্বস্তি ছিল না। অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের কেউ নিজেদের ভূগর্ভস্থ কক্ষে, কেউ জঙ্গলে আশ্রয় নিল। কিন্তু দেখতে পেল সেখানে আরও গরম। কাছের একটা ময়দানের ওপর গাঢ় মেঘমালা দেখা দিল। তারা ছটফট করতে করতে সেই ময়দানের দিকে ছুটে চলল। দেখল, সেখানে মেঘের ছায়া, আর নিচে শীতল বাতাস বইছে। সবাই গরমে অস্থির হয়ে মেঘের নিচে এসে আশ্রয় নিল। কিন্তু সেটি যে বিধ্বংসী মেঘ ছিল, তারা তা জানত না। তারা বলতে লাগল, এই মেঘ থেকে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হবে। কিন্তু আল্লাহর আদেশ এল এবং সীমালঙ্ঘনকারীদের মহাগর্জন আঘাত করল। সঙ্গে ঘন কালো মেঘ আগুনে রূপান্তরিত হয়ে তাদের ওপর বর্ষিত হলো। আর নিচের দিকে শুরু হলো প্রচণ্ড ভূমিকম্প।ওরা নিজেদের ঘরে-জঙ্গলে যে যেখানে ছিল, সেখানেই এমনভাবে উপুড় হয়ে শেষ হয়ে গেল, যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। কিন্তু আল্লাহর অনুগ্রহে শোয়াইব (আ.) এবং তাঁর কথায় যাঁরা ইমান এনেছিলেন, তাঁরা বেঁচে গেলেন। বরং এই ধ্বংসের সময় শোয়েব (আ.) তাঁর নিজগৃহেই অবস্থান করছিলেন। তিনি যখন তাঁর সম্প্রদায়ের এ পরিণতি লক্ষ করলেন, তখন তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর তিনি ওই এলাকা থেকে এ কথা বলে চলে গেলেন যে, হে আমার কওম, আমি তোমাদের কাছে আমার রবের বাণী পৌঁছে দিয়েছি। তোমাদের মঙ্গল কামনার হকও আদায় করেছি। এখন যে কাওম সত্য কবুল করতেই অস্বীকার করে, তার জন্য আমি কী করে আফসোস করি? (সুরা আরাফ, আয়াত: ৯৪) হেজাজ থেকে তাবুকে বা সিরিয়া যাওয়ার পথে হাজারমাওতে একটি সমাধি রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই সেটি সর্বসাধারণের দর্শনীয় স্থান। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে সেটাই শোয়াইব (আ.)-এর কবর। তাঁদের মতে, আইকাবাসীরা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে হজরত শোয়াইব (আ.) এখানে এসে বসতি স্থাপন করেন। এখানেই তিনি তিরোহিত হন। এর বর্তমানে সঠিক স্থান হিসেবে বলা হয়, হাজারামাওতের বিখ্যাত শহর শাইউনের পশ্চিম দিকে শাবান নামে যে জায়গাটি রয়েছে, সেখান থেকে ‘ওয়াদিয়ে ইবনে আলী’ অবস্থিত, তার থেকে উত্তর দিকে এগিয়ে গিয়ে ওয়াদি পা হলেই সমাধিটি পাওয়া যাবে। আশপাশে এখন আর কোনো বসতি চোখে পড়ে না। তবে স্থানটি দর্শনার্থীদের আগমনে সব সময়ই গুলজার থাকে। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"বিশ্ব মুসলিম অশান্তির দাবানলে ",ইসলাম ধর্ম,"আজকের বিশ্ব-পরিস্থিতির দিকে তাকালে আমরা যে চিত্র দেখতে পাই তা সত্যিই হতাশাজনক। বিশ্ব শান্তি আজ হুমকির মুখে। সামাজিক ন্যায়বিচার এখানে সুদুর পরাহত। জাহেলী যুগের মত ‘জোর যার মুল্লুক তার’ এই নীতিই যেন সারা বিশ্বে বিরাজমান। ব্যক্তি জীবন, সামাজিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, আন্তজাতিক অঙ্গন-সকল ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের অনেক অভাব। অনেক মারাত্মক অপরাধী ক্ষমতার বলে শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। আবার দুর্বল হওয়ার কারণে লঘু অপরাধে অনেকে গুরুতর শাস্তি ভোগ করছে। এমনকি অনেক নিরাপরাধ ব্যক্তিকেও দেয়া হচ্ছে মারাত্মক শাস্তি। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডনে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্রের ওপর অন্যায় হস্তক্ষেপ করছে। তাদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধ্য করছে। সহজে তা মেনে না নিলে শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এমনকি কখনো কখনো অন্যায়ভাবে তাদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। মিথ্যা অজুহাতে গোটা দেশ ধক্ষংস করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মুসলিমদের ও মুসলিম দেশগুলোর অবস্থা আরো ভয়ানক। সারা পৃথিবীতে আজ তারা নানা জুলুম-নির্যাতনের স্বীকার। অশান্তি ও বিশৃঙ্খলায় তারা জর্জরিত। ইসলাম বিদ্বেষী সম্প্রদায় মুসলিম ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর ওপর নানামূখী নির্যাতন চালাচ্ছে। কোথাও তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে, কোথাও আবার পরোক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে। কোথাও আবার প্ররোচনা দিয়ে মুসলিমদের বিভিন্ন দল ও উপদলে বিভক্ত করছে। এর মধ্যে কোন এক দলকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে অন্য দলের ওপর লেলিয়ে দিচ্ছে। অবশ্য মুসলিম সম্প্রদায়ও এক্ষেত্রে কম দোষী নয়। তারা আজ ইসলামের শিক্ষা থেকে বহু দূরে অবস্থান করছে। সঠিক ইসলাম থেকে তারা বিচ্যুত। তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানিতে লিপ্ত। আল-কুরআনের এই শিক্ষা তারা নিজেদের সমাজে বাস্তবায়ন করতে পারছে না। আল্লাহ বলেছেন-যদি মুমিনদের দুটি দল মারামারি করে তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিও। অতঃপর যদি তাদের এক দল অন্য দলের উপর বাড়াবাড়ি করে তাহলে যে দল বাড়াবাড়ি করবে তোমরা তার বিরুদ্ধে লড়বে, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে তোমরা উভয়ের মাঝে ন্যায়ের সাথে মীমাংসা করে দিবে এবং সুবিচার করবে। আল্লাহ তো সুবিচারকারীদেরকেই ভালবাসেন। এ কারণে বর্তমানে বিশ্বে দেখা যায়, বেশিরভাগ অন্যায়-অবিচার, জুলুম-নির্যাতন, অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সংঘটিত হচ্ছে হয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর, না হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম শাসিত এলাকায়। আমরা যদি মিয়ানমারের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায় সংখালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতিগত গুদ্ধি অভিযানের নামে গত পঞ্চাশ বছর ধরে অমানবিক জুলুম-নির্যাতন পরিচালনা করছে। মুসলিমদের ব্যাপারে তারা যেন গৌতম বুদ্ধের বাণী ‘প্রাণী হত্যা মহা পাপ’ এবং জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ ভুলে গেছে। তারা সেখানে মুসলিম নারী, পুরুষ, শিশু, যুবক, বৃদ্ধসহ সকল মুসলিমদের নির্বিচারে হত্যা করছে। ধ্বংস করছে তাদের ঘর-বাড়ী। অন্যায়ভাবে তাদের সম্পদ দখল করে নিচ্ছে। সামাজিক ন্যায়বিচার বলতে তেমন কিছু যেন অবশিষ্ট নেই। ক্ষমতা থাকলে সবকিছু করা বৈধ মনে করা হচ্ছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্ব-নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠীসমূহ সেখানে কার্যকর ভূমিকা রাখাতে ব্যর্থ হচ্ছে। জোর করে সেখানে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উৎখাত করা হচ্ছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের অবস্থা আরো ভয়াবহ। ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষনা “ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব আর্থার জেম্স্ বেলফোর তাঁর দেশের ইহুদী নেতা ব্যারন রথচাইন্ডকে নিখিত এক পত্রের মাধ্যমে প্যালেস্টাইনের আরব ভূমিতে একটি ইহুদী রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রিুতি দেন। যাকে ঐতিহাসিক বেলফোর ঘোষণা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।” অনুযায়ী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিজয়ী ইঙ্গ-মার্কিন অন্যয়ভাবে অসহায় ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখন্ড থেকে উৎখাত করে সেখানে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে আরবদের পরাজিত হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। ইসরাইল কর্তৃক একের পর এক ফিলিস্তিনি ভূখন্ড জোরপূর্বক দখলের মাধ্যমে বহু ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়। এরপর প্রায় সাত দশক পেরিয়ে গেলেও উদ্ধাস্তু ফিলিস্তিনিরা আজো তাদের নিজ আবাসে ফিরতে পারেনি। বরং ইসরাইলের নির্যাতনে প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশু নিহত হচ্ছে। নির্বিচারে বর্ষিত বোমার আঘাতে তাদের ঘর-বাড়ি চূর্ণ-বিচূর্ণ হচ্ছে। ইসরাইলী দখলদার বাহিনী নানা অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের তাদের আবাস থেকে উচ্ছেদ করছে। তাদের জায়গা-জমি দখল করছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয়সহ বহু পশ্চিমা দেশ নীরবে তাদের এসব অন্যায় কর্মকান্ডের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার মিথ্যা অজুহাতে ইরাককে ধ্বংস হয়েছে। সেখানে নির্বিচারে হাজার হাজার নিবীহ ও নিরপরাধ নারী-পুরুষ, শিশু, যুবক ও বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে। আফগানিস্তানও একই পরিণতি ভোগ করেছে। একজন ব্যাক্তিকে শাস্তি দিয়ে গিয়ে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা হরা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে বহু জনপদ। বন্দী করা হয়েছে বহু মানুষকে। শুধু বন্দী করেই ক্ষান্ত দেয়া হয়নি। বন্দীদের উপর চালানো হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। গুয়াতানামো কারাগারের কথা আমরা জানি। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগার, যা বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। এই কারাগারে বন্দীদের বিনাবিচারে আটক রাখা হয় এবং তথ্য আদায়ের লক্ষ্যে ওয়াটার বোর্ডিংসহ বিবিধ আইন বহির্ভূত উপায়ে নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের প্রকার ও মাত্রা এতই বেশি যে এই কারাগারকে মর্ত্যের নরক বলে করা হয়েছে। ইরাক, আগগানিস্তান, ফিলিস্তিন ও লিবিয়ার ন্যায় সিরিয়া, মিসর ও ইয়ামেনেও যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে। অন্যায়-অত্যাচার ও জুলুম-নির্যাতনে সেখানের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। সেখানে অমুসলিমদের চেয়ে মুসলিমদের দ্বারাই অন্য মুসলিম নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু পৃথিবীর মুসলিমরা এ সব বন্ধে সেখানে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তারা পাশ্চাত্যের বৃহৎ শক্তিগুলো দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে। মুসলিম নামধারী কিছু অত্যাচারী শাসক দ্বারা তারা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে সাহায্যে-সহযোগিতা করছে অমুসলিমরা। এছাড়া বর্তমানে সারা বিশ্বের অমুসলিম সমাজেও চরম অশান্তি বিরাজমান। বর্তমানের পরিবর্তিত ও কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের বানানো বিভিন্ন ধর্মীয় মতবাদ মানুষের সামগ্রিক জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের সঠিক সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তাওহীদ ও আখিরাত বিমুখ কোন জড়বাদী নীতি কখনো সমাজে সার্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করতে পারে না। পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রের মধ্যে সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার ইনসাফপূর্ণ কোন কর্মসূচী নেই। এ কারণে আমরা দেখতে পাই, পাশ্চাত্যের পারিবারিক জীবনে আজ হুমকির মুখে। সেখানে পিতা তার সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন করছে না। একইভাবে সন্তানও পিতা-মাতার প্রতি যথাযথ কর্তব্য পালন করছে না। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের হক আদায় করছে না। ফলে সেখানে এক আশান্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। এছাড়া পাশ্চাত্যের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নানাভাবে বিশ্বের দূর্বল রাষ্ট্রগুলোর ওপর তাদের অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে বিশ্বশান্তি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ স.-এ দাওয়াতী জীবনের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল, আল্লাহর বিধানের ভিত্তিতে এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ করা, যেখানে প্রত্যেক নিজ নিজ অধিকার ভোগ করবে সাথে সাথে অপরের অধিকার আদায়ে অগ্রগামী হবে। কোন রকম জুলুম-নির্যাতনের আশ্রয় নেবে না। আর এ কাজে তিনি মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রতি যেমন প্রদ্ধাশীল ছিলেন, তেমনি সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যও সংগ্রাম করেছেন। আর এটা সম্ভব করেছিলেন সমাজের বিভিন্ন শেণি-পেশার মানুষের মধ্যে এক সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে। তিনি শরীয়তের বিধান পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন এবং এ ক্ষেত্রে কোন রকম পক্ষপাতিত্ব করেননি। আল্লাহ্র সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা, সম্পদের সুষম বন্টনব্যবস্থা, জীবন সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সকলের স্বাভাবিক স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তিনি সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা আনয়ন করেন। সর্বোপরি তিনি সকলকে পরকালীন চেতনায় জাগ্রত করেন। আখিরাতের কঠিন আযাবের ব্যাপারে সতর্ক করেন এবং চিরস্থায়ী জান্নাতের দিকে ধাবিত হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দেন। বিশ্বে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকলকে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ স.-এর শিক্ষা সমাজের প্রতিটি স্তরে বাস্তবায়ন করতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,যেভাবে তৈরি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন মসজিদ,ইসলাম ধর্ম,"অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমদের যাতায়াত ষষ্ঠদশ শতাব্দী থেকে হলেও বিংশ শতাব্দী থেকে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে এখানে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ থেকে ম্যাকাসান সম্প্রদায়ের মুসলিম দর্শনার্থীরা এখানে এসেছিলেন। ১৮৬০ সালের দিকে অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে কাজের জন্য আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত উপমহাদেশ বিশেষত আফগানিস্তানের অনেক উটচালকের আগমন ঘটে। তাদের মধ্যে অনেক ধার্মিক মুসলিমও ছিল। ১৯৫৪ সালের পর থেকে ব্যাপকভাবে মুসলিমদের অভিবাসন শুরু হয়। মূলত আধুনিক অস্ট্রেলিয়া গঠনে তাদের ব্যাপক ভূমিকা আছে। সরকারি পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে মুসলিমদের সংখ্যা আট লাখ ১৩ হাজার ৩৯২ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৩.২০ ভাগ। খ্রিস্টধর্মের পর ইসলামই দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম হিসেবে মনে করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলিমের বসবাস রয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে সাড়ে তিন শর বেশি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার মারি মসজিদকে সবচেয়ে পুরনো বা প্রথম মসজিদ হিসেবে মনে করা হয়। আফগানদের তৈরি প্রথম মসজিদ : অ্যাডিলেড শহর থেকে ছয় শ কিলোমিটার দূরে মারি অঞ্চলে বসবাসরত তৎকালীন আফগান সম্প্রদায় মারি মসজিদটি নির্মাণ করে। ১৮৮২ সালের দিকে কাঠের কাঠামোতে মাটি, শুকনো ঘাস ও পাতার ছাউনি দিয়ে তৈরি হয় ছোট এই মসজিদ। স্থানীয় উট চালক ও ওয়াঙ্গামান্না স্টেশনের মালিক আবদুল কাদিরের তত্ত্বাবধানে তৈরি হওয়া মসজিদের প্রথম ইমাম ছিলেন মোল্লা আসিম খান, যিনি নিজেও উট চরাতেন। ১৯৫৬ সাল থেকে প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল মসজিদটি পরিত্যক্ত থাকে। ২০০৩ সালে মসজিদ প্রতিষ্ঠাকারীর বংশধররা পুরনো কাঠামো বজায় রেখে মূল মসজিদের মতো আরেকটি মসজিদ তৈরি করে। অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এই মসজিদ দেখতে আসেন অনেকে। পর্যটক ও স্থানীয়রা এখানে নিয়মিত নামাজ পড়ছেন। প্রাচীন মসজিদ নির্মাণ : অস্ট্রেলিয়ার খনিজসমৃদ্ধ শহর ব্রোকেন হিলে অবস্থিত মসজিদ মিউজিয়াম। স্থানটি ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সর্বসাধারণের কাছে তা অজ্ঞাত। ১৮৮৭ সালে আফগান উট চালকদের তৈরি করা মসজিদটি অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম। বর্তমানে মসজিদটি দেখাশোনা করেন ৮১ বছর বয়সী আমিনুল্লাহ ববি শামরোজ। এই অঞ্চলের উট চালকদের বংশধর সম্পর্কে বর্তমানে তিনি সবচেয়ে অবহিত রয়েছেন। তাঁর বাবা শামরোজ খান ও দাদা জায়দুল্লাহ ফয়জুল্লাহ এই মসজিদেই নামাজ পড়েছেন। মোটকথা ধারাবাহিক তিন প্রজন্ম একই মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। দীর্ঘ তিন দশক ধরে উট চালকদের গবেষণা থাকায় ববি শামরোজ এখন সর্বত্র পরিচিত মুখ। তাঁর মাধ্যমেই অস্ট্রেলিয়ার ইসলামের ইতিহাসের নানা দিক উন্মোচিত হয়। দেশটিতে আসা উট চালকদের অধিকাংশ সুন্নি মুসলিমের তৈরি মসজিদগুলোর তথ্য তুলে ধরেন তিনি।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral Dhaka Tribune,"৫০১ দেব-দেবীর প্রতিমা নিয়ে বাগেরহাটের শিকদার বাড়ি দুর্গোৎসব ",হিন্দু ধর্ম,"দরজায় কড়া নাড়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এ উৎসব। কোভিড মহামারির কারণে বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের শিকদার বাড়িতে গত তিন বছর উৎসব বন্ধ ছিল। বিখ্যাত মণ্ডপটি এবার ৫০১টি প্রতিমা নিয়ে আগের রূপে ফিরছে। গ্রামের শিল্পপতি লিটন শিকদার সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়িতে দুর্গোৎসবের আয়োজন করেন। যদিও মহামারির সময় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে সমুন্নত রাখার জন্য ছোট পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। এ বছর আগের মতোই জাঁকজমকপূর্ণ পূজা উদযাপন করতে যাচ্ছে শিকদার বাড়ি। নানা পৌরাণিক ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে ভাস্কর্যে/ইউএনবি শিকদার বাড়ি পূজামণ্ডপে মোট ৫০১টি দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। একাদশ প্রহরে মণ্ডপে প্রতিমা সাজানোর কাজ চলছে। দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করতে প্রতিমাগুলোতে নানা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এদিকে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে মহামায়া দেবী দুর্গার সঙ্গী হিসেবে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলিযুগের দেব-দেবীরা পূজামণ্ডপ জুড়ে বিস্তৃত। কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়া আর তুলির আঁচড়ে সেখানে দেব-দেবীর প্রতিমা এমনভাবে সাজানো হয়েছে দেখলে মনে হবে জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তিন বছর পর শিকদার বাড়ির দুর্গোৎসব বড় পরিসরে আয়োজনের খবরে দর্শনার্থী আর ভক্তকুলের মধ্যে উৎসব ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছে পূজামণ্ডপে। দেব-দেবীর প্রতিমা এমনভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দেখলে মনে হবে যেন স্বর্গরাজ্য। দেব-দেবীরা মা দুর্গার সঙ্গী হয়ে ধরাধামে এসেছেন একসঙ্গে। মহিষাসুরকে যেভাবে বধ করেছিলেন দেবী দুর্গা, তা দেখানো হয়েছে প্রতিমার মাধ্যমে। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে প্রতিমায়। কারিগররা (ভাস্কর) তাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়া আর রং তুলিতে অপরূপ সাজে প্রতিমা সাজিয়েছেন। ৫০১টি প্রতিমা বলে অনেক গল্প/ইউএনবি বিশাল পূজামণ্ডপটি ঘুরে দেখা গেছে, ঘোড়ায় চড়ে দুর্গার মর্ত্যলোকে আগমন ও গমন, বিভিন্ন দেব-দেবীর সৃষ্টির রহস্য, নারায়ণের অনন্ত শয্যা, সমুদ্র মন্থন, সীতা হরণ, শ্রীকৃষের অষ্টসখী, ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের কুম্ভকর্ণের প্রতিমূর্তি। জানা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে শিকদার বাড়ির পারিবারিক এই পূজামণ্ডপে ২০১১ সালে ২৫১টি প্রতিমা সাজিয়ে প্রথম দুর্গোৎসব শুরু হয়। এরপর প্রতি বছর বেড়েছে প্রতিমার সংখ্যা। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৮০১টি দেব-দেবীর প্রতিমা সাজিয়ে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। আয়োজক পরিবারের সদস্য শিশির শিকদার জানান, কোভিডের জন্য গত তিন বছর শুধু ধর্মীয় রীতি রক্ষায় পূজা করলেও দুর্গোৎসব করতে পারিনি। এ বছর আগের মতো ধুমধাম করে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সানাতন ধর্ম সম্পর্কে মানুষকে উজ্জীবিত করতে তার স্বর্গীয় বাবা ডা. দুলাল কৃষ্ণ শিকদার বৃহত্তর পরিসরে দুর্গোৎসব শুরু করে গেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও বড় পরিসরে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। শিশির শিকদার জানান, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেচ্ছাসেবক বাহিনী দিয়ে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। তল্লাশির মধ্য দিয়ে দর্শনার্থীদের পূজামণ্ডপে প্রবেশ করতে হবে। বাগেরহাট জেলা পূজা উযদাপন পরিষদের সভাপতি নিলয় কুমার ভদ্র দাবি করেন, পারিবারিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্গোৎসব শিকাদার বাড়ি পূজামণ্ডপ। দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ ভক্ত ও দর্শর্ণার্থী এই দুর্গোৎসবে আসেন। প্রতিমার কারিগর (ভাস্কর) বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় জানান, পাঁচ মাস ধরে ১৫ জন মিলে শিকদার বাড়ির এই পূজামণ্ডপে বিভিন্ন ৫০১টি প্রতিমা তৈরি করেছেন। দেশি-বিদেশি নানা রঙ আর অলংকার দিয়ে প্রতিমা সাজানো হয়েছে। প্রতিমায় সোনালি রঙ করা হয়েছে। ৯ ফুট থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমায় রেডিএস কালার ব্যবহার করা হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান জানান, শিকদার বাড়ি দুর্গোৎসবে পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। সাদা পোশাকেও পুলিশ সেখানে মোতায়েন থাকবে। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, দুর্গাপূজা উৎসবমুখর এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা মিলে জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর ৬৫২টি পূজা মণ্ডপে দুর্গা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।",ধর্মীয় উৎসব,Positive কালের কন্ঠ,বদরুজ্জামানের কণ্ঠে আসছে ‘হাবিবি মুহাম্মদ’,ইসলাম ধর্ম,"ইসলামী সংগীতশিল্পী মুহাম্মদ বদরুজ্জামানের কণ্ঠে আসছে ‘হাবিবি মুহাম্মাদ’ নামে নতুন নাতে রাসুল। আগামী রবিবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কলরব ও হলি টিউনের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তা রিলিজ হচ্ছে। কক্সবাজারে ধারণ করা সংগীতটির ভিডিওতে আরো দেখা যাবে কলরবের শিল্পী হুসাইন আদনান, তাওহিদ জামিল, আহনাফ খালিদ ও ফজলে এলাহী সাকিবকে।মুহাম্মদ (সা.)-এর ভালবাসায় লেখা সংগীতটির গীতিকার হুসাইন আল-হাফিজ।এতে যৌথভাবে সুর করেছেন সাইফুল্লাহ নুর ও মুহাম্মদ বদরুজ্জামান। মিউজিক ডিরেকশনে ছিলেন তানজিম রেজা। অডিও মিক্স এবং মাস্টার করেছেন খিজির মুহাম্মদ। ভিডিও বানিয়েছেন তরুণ নির্মাতা এইচ আল হাদী।‘হাবিবি মুহাম্মদ’ সম্পর্কে মুহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘এটি একটি নাতে রাসুল (সা.)। আমার বিশ্বাস, শ্রুতিমধুর সুরে গাওয়া সংগীতটি সবার ভালো লাগবে। আকর্ষণীয় চিত্র সমৃদ্ধ ‘হাবিবি মুহাম্মদ’ সংগীতটি আগামী ২৫ জুন বিকেলে জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল হলি টিউনে রিলিজ হবে ইনশাআল্লাহ।’উল্লেখ্য, একটা সময় ইসলামী সংগীতের শ্রোতা ছিল খুবই সীমিত।কালক্রমে আধুনিক প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের সুবিধায় এখন তা সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। এখন সব শ্রেণীর মানুষ ইসলামী সংগীত শুনেন। এর পেছনে যারা নিরলসভাবে কাজ করছেন, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান তাদের অন্যতম। তিনি জনপ্রিয় সংগীত সংগঠন কলরবের নির্বাহী পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হলি টিউনের প্রধান নির্বাহী।তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংগীত হলো, হাসবি রাব্বি জাল্লাল্লাহ, জিকরুল্লাহ, মালিকরে ভুলিয়া, মইরা গেলে ফিইরা আসেনা, সেদিনও এমন করে, ইশকে নাবি জিন্দাবাদ, আজব টাকা ও আল্লাহ বলো মুখে মুখে ইত্যাদি।ইসলামি সংগীতশিল্পী সাঈদ আহমাদ, আবু রায়হান ও আহমদ আব্দুল্লাহসহ কলরব শিল্পীদের সঙ্গে বেশকিছু যৌথ সংগীত গেয়েছেন তিনি। তা ছাড়া প্রায় দুই শ সংগীতের সুর করেছেন তিনি।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"নিজে জানাজা পড়িয়ে ছেলেকে চিরনিদ্রায় শায়িত করলেন তারিক জামিল ",ইসলাম ধর্ম,"নিজে জানাজার নামাজ পড়িযে ছেলেকে চিরনিদ্রায় শায়িত করেছেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা তারিক জামিল। জানাজা নামাজ শেষে নিজের পৈতৃক শহর তালামবাতে সোমবার (৩০ অক্টোবর) তারিক জামিলের ছেলে আসিম জামিলকে সমাহিত করা হয়। দীর্ঘদিন মানসিক রোগে ভোগা আসিম জামিল গত রোববার পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ছেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে জানাজার নামাজে তারিক জামিল বলেন, ‘তরুণ ছেলেকে হারানোর বেদনা শুধুমাত্র কাছের লোকেরাই বুঝতে পারে। এই ক্ষত দ্রুত সারবে না।’ এক বিবৃতিতে মুলতানের আঞ্চলিক পুলিশ অফিসার (আরপিও) ক্যাপ্টেন (অব:) সোহেল চৌধুরী বলেন, বিভাগীয় পুলিশ কর্মকর্তা একটি সিসিটিভির ফুটেজ দেখেছেন। এতে দেখা গেছে, আসিম জামিল আত্মহত্যা করছেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, আসিম মানসিক রোগে ভুগছিলেন এবং কয়েক বছর ধরে ওষুধ গ্রহণ করছিলেন এবং তিনি একটি ৩০-বোর পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মাওলানা তারিক জামিলের বড় ছেলে, ইউসুফ জামিল, পরবর্তীতে জানান তার ছোট ভাই মানসিক রোগের জন্য ইলেকট্রোকনভালসিভ থেরাপি (ইসিটি) নিচ্ছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, আসিম জামিল ছোটবেলা থেকেই অনেক হতাশায় ভুগতেন। গত ছয় মাসে যা বৃদ্ধি পায়। ইউসুফ জামিল জানিয়েছেন, মৃত্যুর সময় আসিম বাড়িতে একা ছিলেন এবং একজন নিরাপত্তারক্ষীর অস্ত্র দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। কারণ আসিম ‘কষ্ট ও দঃখ আর সইতে পারছিল না।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral যুগান্তর,ঈদের হাসি ফোটে সাদাকায়ে ফিতরে,ইসলাম ধর্ম,"হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সাদাকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন, অনর্থক অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার জোগানোর জন্য। (আবু দাউদ)। ফিতরা আদায়ের পদ্ধতি ঈদের নামাজ পড়ার আগেই ফিতরা আদায় করার নির্দেশনা রয়েছে-হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন ‘গোলাম, স্বাধীন, পুরুষ, নারী, ছোট, বড় সব মুসলিমের ওপর রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ‘সা’ খেজুর, অথবা অর্ধ ‘সা’ গম জাকাতুল ফিতর ফরজ করেছেন এবং (ঈদের) নামাজের আগে তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।’ (বুখারি, মুসলিম)। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী ২ পরিমাপে ৫ জিনিস দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। আর তা হলো যব, কিশমিশ, খেজুর, পনির ও গম। এসবের মধ্যে গমের পরিমাপ হলো অর্ধ ‘সা’ আর বাকিগুলোর পরিমাপ এক ‘সা’। সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো একটি দিয়ে এ ফিতরা আদায় করতে পারবেন। (এক ‘সা’ সমান ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম, অর্ধ ‘সা’ সমান ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ঘোষিত এবারের নির্ধারিত ফিতরার পরিমাণ হচ্ছে-জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬৪০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা। ফিতরা যারা দেবেন সামর্থ্যবান মুমিন নারী-পুরুষের ওপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। সামর্থ্যবানদের অধীনস্থ পরিবারের সব সদস্যের ফিতরাও দায়িত্বশীল ব্যক্তি আদায় করবেন। এক কথায় সামর্থ্যবান নারী-পুরুষ, শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সব স্বাধীন, পরাধীন এমনকি হিজড়া সম্প্রদায়ের ওপরই ফিতরা আদায় করা আবশ্যক। বালেগ সন্তান যদি পাগল হয় তবে পিতার পক্ষ থেকে তা আদায় করা ওয়াজিব। ফিতরা ওয়াজিব হওয়ার শর্ত ঈদুল ফিতরের দিন কোনো স্বাধীন মুসলমানের কাছে জাকাতের হিসাব তথা সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ কিংবা সাড়ে ৫২ তোলা রুপা অথবা তার সমূল্যের নগদ অর্থ কারও কাছে থাকলেই ওই ব্যক্তির জন্য ফিতরা ওয়াজিব। এ সম্পদ ঋণ এবং মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত হতে হবে। তবে ব্যতিক্রম হলো-জাকাতের জন্য এ সম্পদ পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকতে হবে, আর ফিতরার ক্ষেত্রে এক বছর থাকা শর্ত নয়।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইবাদতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক মাহে রমজান,ইসলাম ধর্ম,"রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে যেন কাজে লাগানো যায়, ঈমানদারের মধ্যে সেই প্রচেষ্টা থাকা উচিত। কেননা এ মাস আমলের মাস, ইবাদতের মাস। এটি ইবাদতের বসন্তকাল। এখানে রমজানের বিশেষ কিছু আমল উল্লেখ করা হলো— রোজা রাখা : ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি হলো রোজা। আর রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এই মাসে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে রোজা পালন করে।’ (সুরা : বাকারা : আয়াত : ১৮৫) সাহরি খাওয়া : হাদিসে এসেছে, ‘সাহরি হলো বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরি খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরি খেয়ে নাও। কেননা সাহরির খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তাআলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১১১০১) ইফতার করা : সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা ফজিলতপূর্ণ আমল। এতে কোনো বিলম্ব করা যাবে না। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি রোজা পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৭) তারাবি ও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা : রমজানে কিয়ামুল লাইল করার কথা আছে। কিয়ামুল লাইল শব্দের অর্থ রাতের নামাজ। তারাবি যেমন কিয়ামুল লাইলের মধ্যে পড়ে, তেমনি শেষরাতে তাহাজ্জুদও সালাতুল লাইলের অন্তর্ভুক্ত। সালাতুত তারাবি পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। তারাবি পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব হাসিলের আশায় রমজানে কিয়ামু রমাদান (সালাতুত তারাবি) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২০০৯) সাহাবায়ে কিরাম জামাতের সঙ্গে তারাবি শেষ না করে বাড়ি ফিরতেন না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তারাবি শেষ করা পর্যন্ত ইমামের সঙ্গে থাকল, সে সারা রাত ইবাদতের নেকি পেল।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৬) দান-সদকার পরিমাণ বাড়ানো : প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর বদান্যতা আরো বেড়ে যেত।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩২০৮) ইতিকাফ : ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘মহানবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ১১৭১) রোজাদারদের ইফতার করানো : রোজাদারকে ইফতার করালে রোজাদারের মতো রোজার সওয়াব পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজা পালনকারীকে (রোজাদারকে) ইফতার করাবে, সে রোজা পালনকারীর অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে। এতে রোজা পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২৩০২) তাওবা ও ইস্তিগফার করা : সর্বদা তাওবা করা ওয়াজিব, বিশেষ করে রমজান মাসে তাওবা করা উচিত। এ মাসে তাওবার অনুকূল অবস্থা বিরাজ করে। শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নাম থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি, তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক।’ (জামেউল উসুল, হাদিস : ১৪১০) বেশি বেশি নেক আমল করা : রমজান মাসে অধিক হারে নেক আমলের চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য একান্ত আবশ্যক, বিশেষ করে রমজানের শেষ দশকে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন রমজানের শেষ দশক এসে যেত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন রাত জাগরণ করতেন, পরিবারবর্গকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে দিতেন, লুঙ্গি শক্ত ও ভালো করে বেঁধে (প্রস্তুতি গ্রহণ) নিতেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ১১৭৪) বেশি বেশি জিকির করা : আল্লাহ তাআলার জিকির এমন এক মজবুত রজ্জু, যা সৃষ্টিকে স্রষ্টার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে। তাঁর সান্নিধ্য লাভের পথ সুগম করে। মানুষকে উত্তম আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠা করে। সরল ও সঠিক পথের ওপর অবিচল রাখে। এ কারণে আল্লাহ তাআলা মুসলিম ব্যক্তিকে দিবা-রাত্রি গোপনে-প্রকাশ্যে জিকির করার আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে বেশি পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল-বিকাল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৪১-৪২) একে অন্যকে কোরআন শোনানো : রমজান মাসে একজন অন্যজনকে কোরআন শোনানো একটি উত্তম আমল। এটিকে দাওর বলা হয়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, জিবরাঈল (আ.) রমজানে প্রতি রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং রাসুল (সা.) তাঁকে কোরআন শোনাতেন। (বুখারি, হাদিস : ১৯০২) কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা : এ মাসে একটি ভালো কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সে জন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভালো কাজ করতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘এ মাসের প্রতি রাতে একজন ঘোষণাকারী এই বলে আহ্বান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী, তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ করো। (তুমি কি জানো?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৪) লাইলাতুল কদর তালাশ করা : রমজান মাসে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল-কোরআনের ঘোষণা, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা : কদর, আয়াত : ৪) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদত করবে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৫) তাকওয়া অর্জন করা : তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমজান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম। কোরআনে এসেছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৩) বিবাদ ও বেহায়াপনা থেকে বিরত থাকা : মাহে রমজানে মুমিনকে যাবতীয় ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, অশ্লীল কথা ও বেহায়াপনা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে অশ্লীল গান-বাজনা এবং রেডিও, টিভি ও মোবাইলের অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকতে হবে। তবেই সিয়ামের সওয়াব ও উচ্চ মর্যাদা লাভ করা যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যখন তোমাদের কেউ সিয়াম পালন করবে, তখন সে কোনো মন্দ কথা বলবে না এবং বাজে বকবে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা লড়াই করতে আসে তখন সে যেন বলে, আমি ‘সায়েম—রোজাদার’। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৪) দোয়া করা : রোজাদারের দোয়া কবুল হয়। তাই প্রত্যেক সায়েমের উচিত আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করে বেশি বেশি দোয়া করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না—১. রোজাদার—যতক্ষণ না সে ইফতার করে, ২. ন্যায়নিষ্ঠ নেতা এবং ৩. মজলুম।’ (সহিহ ইবনু হিব্বান, হাদিস : ৩৪২৮)",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive ভোরের কাগজ,"কুমিল্লায় মণ্ডপের নিরাপত্তায় সক্রিয় আওয়ামী লীগ ",হিন্দু ধর্ম,"এবারের দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় কুমিল্লাতে নিয়োজিত আছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গেল বছরের নাশকতার পর এবারের দুর্গোৎসবে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। উদ্‌যাপন নিয়ে শঙ্কা কাটাতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। জানা গেছে, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনে এবার সহিংসতার শঙ্কা নেই বললেই চলে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকা ও জেলার ১৭টি উপজেলায় ৭৯৪টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উৎসবের আমেজ ফিরে এসেছে প্রতিটি মণ্ডপে।কুমিল্লার পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতারা ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্ট বলে জানান। তারা বলছেন, এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের বাড়তি তৎপরতা দেখছেন তারা। এতে অনেকটা ‘স্বস্তিতেই’ পূজা উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি শেষ করেছেন। শনিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে সারা দেশের মতো কুমিল্লায় শুরু হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫ দিনের সর্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নগরীর ঋষি পট্রি কালিবাড়ি মণ্ডপের নিরাপত্তায় রয়েছেন কুমিল্লা নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে সামাদ সাগর ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কুমিল্লা মহানগর এর সাধারণ সম্পাদক যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন মিঠু কর্মীদের নিয়ে পালা করে মণ্ডপের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে এ কে সামাদ সাগর বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সব ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করবে, সম্প্রীতি বজায় থাকুক তাই আমরা মণ্ডপগুলোতে অবস্থান করছি। নাশকতা এড়াতে আমরা মন্দির পাহারা দিচ্ছি। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় এমপি বাহারের নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্যদের দিয়ে প্রতিটি মণ্ডপের পাহারায় কমিটি করে দিয়েছেন। তিনি এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন এ বছর নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপসহ প্রতিটি স্থানে সর্বোচ্চ সতর্কতায় পূজা উদ্‌যাপন করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি বাহার বলেন, এ বছর আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। নানুয়ার দিঘির পাড়ে এবার অবশ্যই জাঁকজমক ভাবে পূজা হবে। এবার যদি কেউ কোনো পূজা মণ্ডপে নাশকতা করার চেষ্টা করে, সে পালিয়ে বাঁচতে পারবে না। এবার কোনো ষড়যন্ত্র হলে ষড়যন্ত্রকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে কুমিল্লা নগরীর প্রতিটি পূজামণ্ডপ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,কোরআনে প্রকৃত মুমিনের পরিচয়,ইসলাম ধর্ম,"প্রকাশ্য ঘোষণা, আন্তরিক বিশ্বাস, ত্রুটিহীন ও পরিপূর্ণ আমলদার ব্যক্তিই প্রকৃত বা ‘কামিল মুমিন’।বিশ্বাস ও কর্মগত কারণে ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের পরিভাষা হয়। যেমন—১. মুহসিন তথা পূর্ণতা ও উৎকর্ষ অর্জনকারী, ২. মুমিন তথা বিশ্বাসী, ৩. মুসলিম তথা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী, ৪. ফাসিক তথা অধার্মিক, লঘুপাপী, দুশ্চরিত্র, ৫. ফাজির তথা পাপাচারী, অনিষ্টকারী, ৬. মুনাফিক তথা কপট, ধর্মের ধ্বজাধারী, ৭. কাফির তথা গোপনকারী, অস্বীকারকারী, প্রত্যাখ্যানকারী, ৮. মুশরিক তথা পৌত্তলিক, বহু ঈশ্বরবাদী, আল্লাহর সঙ্গে শরিককারী, ৯. জিন্দিক তথা ধর্মদ্রোহী, ১০. মুরতাদ তথা ধর্মত্যাগী, ১১. মুলহিদ তথা নাস্তিক, অবিশ্বাসী।আরবি ‘কুফর’ শব্দটি অবিশ্বাস, অস্বীকার, অকৃতজ্ঞতা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়।শব্দটির মূল অর্থ ‘আবৃত করা।’ইবনু ফারিস (রহ.) বলেন, ‘ঈমান বা বিশ্বাসের বিপরীত অবিশ্বাসকে কুফর বলা হয়; কারণ অবিশ্বাস অর্থ সত্যকে আবৃত করা।’ কুফরি দুই ধরনের এক. বড় কুফরি, এ কুফরি ব্যক্তিকে মুসলিম মিল্লাত থেকে বের করে দেয়।দুই. ছোট কুফরি, একে কর্মগত কুফরি বা আমলি কুফরিও বলা হয়।মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে কোনো বিষয়ে তাঁর সমতুল্য বা সমকক্ষ কিংবা তুলনীয় বলে বিশ্বাস করার মাধ্যমে যে কুফরি হয় তাই শিরক।একটি শিরকি কাজ ঈমান ও যাবতীয় সৎকর্ম নিষ্ফল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। মহান আল্লাহ বলেন, ‘(হে রাসুল) আর তোমার কাছে আর তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে এই মর্মে ওহি নাজিল করা হয়েছে যে তুমি যদি (আল্লাহর) শরিক স্থির করো, তাহলে তোমার কর্ম অবশ্য অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যাবে। আর তুমি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা : ঝুমার, আয়াত : ৬৫)পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে শিরকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, যেমন—সুরা : বাকারা, আয়াত ২২; সুরা : নিসা, আয়াত ১১৬; সুরা : মায়েদা, আয়াত ৭২; সুরা : আনআম, আয়াত : ৮৮।ইমাম রাবেগ ইস্পাহানি (রহ.) ‘মুফরাদাত’ গ্রন্থে লিখেছেন, শিরকের অর্থ দুই স্বত্বাধিকারের সংমিশ্রণ, সমকক্ষ স্থির করা ইত্যাদি।শিরক প্রধানত দুই প্রকার এক. শিরকে আকবর তথা বড় শিরক। শিরকে আকবর চার প্রকার : ক. সত্তাগত অংশীদারি, খ. গুণাবলিতে শিরক, গ. আইনগত অধিকারে কাউকে শরিক করা, ঘ. ইবাদতের মধ্যে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা।দুই. শিরকে আসগর তথা তুলনামূলক ছোট শিরক।এটি প্রকারভেদে সীমিত করা যায় না। তবে উল্লেখযোগ্য হলো : ক. কথাগত, খ. কার্যগত, গ. বস্তুগত শিরক। প্রত্যেক মুসলমানকে অবশ্যই এসব বিষয়ে বিশ্বাসী হতে হবে যে সব কিছু মহান আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। যেমন—দিবারাত্রি, ঋতুচক্রের পরিবর্তন, তাঁরই হাতে আমাদের জীবনচক্রের নিয়ন্ত্রণ, চেহারার সৌন্দর্য, পুত্র-কন্যর জন্ম, হেদায়াত ও সুস্থতা, ক্ষমতা, সম্পদ-সামর্থ্য সব কিছুর ফায়সালা মহান আল্লাহর কাছে—মানুষের হাতে নয়। পবিত্র কোরআনে আছে—‘তাঁরই কাছে আছে অদৃশ্যের চাবি!... তিনি জানেন যা কিছু আছে স্থলে ও জলে। গাছের একটি পাতাও ঝরে না তাঁর অজ্ঞাতসারে। কোনো শস্যকণা মাটির গভীর আঁধারে অঙ্কুরিত হয় না অথবা ভেজা আর শুকনো কোনো জিনিস নেই, যার স্পষ্ট বিবরণ তাঁর লিখনীতে (কিতাব বা বিধানে) নেই।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৯)আর কোনো কিছু হয় না আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে আছে কিয়ামত সম্পর্কে জ্ঞান এবং তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন আর তিনিই জানেন যা কিছু আছে মাতৃগর্ভে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মারা যাবে।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ৩৪) মহান আল্লাহ আমাদের খাঁটি মুমিন হওয়ার তাওফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যায়যায়দিন,"উইক্রেনীয় তরুণীর ইসলাম গ্রহণের পর মৃত্যু, জানাজায় মানুষের ঢল ",ইসলাম ধর্ম,"এমন মৃত্যুই আশা করেছিলেন তিনি। কারণ তার সঙ্গে থাকা সহকর্মীদের তিনি বলেছিলেন মৃত্যুর আগে যেন ইসলাম গ্রহণ করতে পারেন। তার সেই ইচ্ছেই পূর্ণ হলো। মৃত্যুর সময় তিনি রোজা অবস্থায় ছিলেন। জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইউক্রেনীয় এক তরুণী ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর মৃত্যুবরণ করেছে। ‘জানাজাইউএই’ নামের একটি জনপ্রিয় এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই তরুণীর মৃত্যুর খবর জানার পর তার জানাজায় শত শত মানুষের ঢল নামে। ‘জানাজাইউএই’ পরে আরো কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে। এতে দেখা যাচ্ছে, শুক্রবার (২৯ মার্চ) আল কাসাইস কবরস্থান মসজিদে ওই নারীর জানাজা পড়তে হাজির হয়েছেন শত শত মানুষ। এর আগে বৃহস্পতিবার ওই নারীর মৃত্যু ও জানাজার সময় জানায় সংস্থাটি। এক্স বার্তায় তারা জানান, ‘জানাজার নামাজ, ১৯ রমজান ১৪৪৫ হিজরি, দুবাইয়ে জুমার নামাজের পর। জানাজা হবে ইউক্রেনের তরুণী দারিয়া কোতসারেঙ্কোর। তিনি রোজারত অবস্থায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কয়েক ঘণ্টা পর মৃত্যুবরণ করেন। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুক।’ সংস্থাটি আরো জানায়, দুবাইয়ে দারিয়ার কোনো আত্মীয়-স্বজন ছিল না। এজন্য জানাজায় উপস্থিত হয়ে তার প্রতি সাধারণ মানুষেকে ভালোবাসা প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়। একটি ডকুমেন্ট থেকে জানা গেছে, দারিয়া জন্মসূত্রে খ্রিষ্টান ছিলেন। পরে গত ২৫ মার্চ তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, হার্টঅ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সময় তিনি রোজা রেখেছিলেন। সূত্র: খালিজ টাইমস",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কৃষ্ণের আবির্ভাব,হিন্দু ধর্ম,"‘জন্মাষ্টমী’ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব। সারা পৃথিবীর হিন্দুরা সাড়ম্বরে এ জন্মাষ্টমী উৎসব উদ্যাপন করে থাকে। আক্ষরিক অর্থে জন্মাষ্টমী বলতে বোঝায় জন্মের সঙ্গে জড়িত অষ্টমী তিথি। কার জন্ম? ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম। দ্বাপর যুগে এক ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে নিরাকার পরমব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণরূপে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন। পরমব্রহ্মের অবতাররূপে আবির্ভূত হওয়ার কারণ হচ্ছে সাধুদের পরিত্রাণ, দুষ্টের বিনাশ এবং ধর্ম অর্থাৎ ন্যায় প্রতিষ্ঠা। এককথায় মানুষ ও জগতের কল্যাণ। কখনো কখনো দেশ অনাচারে ভরে যায়। এমনকি রাজশক্তিও রাজধর্ম ভুলে গিয়ে হয়ে ওঠে প্রজাপীড়ক ও অত্যাচারী। তখন তাদের দমন করার জন্য দরকার প্রচণ্ড শক্তির বা শক্তিমানের। পরমব্রহ্ম সর্বশক্তিমান। তাই তাঁকেই দায়িত্ব নিতে হয়। প্রশ্ন উঠতে পারে, পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বর তো সর্বশক্তিমান। তিনি ভগবান—কৃপাময়। অসীম তাঁর শক্তি ও মাহাত্ম্য। তিনি তো তাঁর অবস্থানে থেকেই অবলীলায় দুষ্টের দমন করতে পারেন। নিশ্চয়ই পারেন। তবে পরমব্রহ্ম লোকশিক্ষকও বটেন। তিনি লোকশিক্ষা দিতে চান। তাই লোকশিক্ষা দিতে তিনি বারবার নানা রূপ ধরে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন। আমাদের মতোই একজন হয়ে, জীব হয়ে জন্ম নেন। দেখাতে চান, মানুষেরও শক্তি আছে। মানুষও পারে প্রচণ্ড শক্তিতে অত্যাচারীকে দমন করতে, তাকে সমুচিত শাস্তি দিতে। ত্রেতা যুগে পরমব্রহ্ম রামরূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তার পরেকার যুগ—দ্বাপর যুগে তিনি অবতীর্ণ হলেন শ্রীকৃষ্ণরূপে। দ্বাপর যুগে তখনকার ভারতবর্ষে কয়েকজন রাজা খুব অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মগধের রাজা জরাসন্ধ, চেদিরাজ শিশুপাল, মথুরার রাজা কংসসহ অনেকে। তাঁদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করার জন্য পরমব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণরূপে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মথুরার রাজা কংসের কথাই ধরা যাক। কংস নিজের পিতা উগ্র সেনকে কারাগারে বন্দী করে অধিকার করেন মথুরার রাজসিংহাসন। প্রজাদের ওপরও চালান উৎপীড়ন। কংসের কাকা দেবক। তাঁর কন্যা দেবকী। সুতরাং দেবকী সম্পর্কে কংসের কাকাতো বোন। তবে কাকাতো বোন হলেও কংস তাঁকে সহোদরার মতোই স্নেহ করতেন। শূর বংশীয় বসুদেবের সঙ্গে দেবকীর বিয়ে হয়। বসুদেবের সঙ্গে দেবকী যখন প্রথম শ্বশুরবাড়ি যাবেন, তখন কংস নিজেই রথ চালিয়ে তাঁদের পৌঁছে দিতে যান। কিন্তু পথে দৈববাণী শুনতে পান কংস। সে দৈববাণীর মর্ম হলো, দেবকীর গর্ভজাত অষ্টম পুত্রসন্তান কংসকে হত্যা করবে। ভাগনের হাতে মৃত্যু! এ ভবিতব্য সংঘটিত হতে দেওয়া যায় না। তখন কংস তরবারি কোষমুক্ত করে দেবকীকে হত্যা করতে উদ্যত হন। বসুদেব দেবকীকে রক্ষা করার জন্য কংসকে বলেন যে সন্তানের কারণেই তো ভয়! তাঁদের সন্তান হওয়ামাত্র তাঁরা সে সন্তানকে কংসের হাতে তুলে দেবেন। যুক্তিটি কংসের কাছে মন্দ লাগে না। তিনি দেবকীকে হত্যা না করলেও প্রথমে গৃহবন্দী করে রাখেন, পরে কারাগারে নিক্ষেপ করেন। দেবকীর অষ্টম গর্ভজাত পুত্রসন্তানরূপে পরমব্রহ্ম আবির্ভূত হন। তাঁর নাম রাখা হয় কৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ কংসকে হত্যা করেন। মামা বলে ক্ষমা করেন না। এ থেকে আমরা একটা শিক্ষা পাই: পাপী পাপীই। আত্মীয় বলে তাকে ক্ষমা করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদের স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে ওঠার আদর্শ অনুসরণ করার শিক্ষা দিলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংসরাজকে হত্যা করে মথুরা অধিকার করেন। কিন্তু সে অধিকৃত রাজ্য তিনি উগ্রসেনকে দিয়ে দেন। এর মধ্য দিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদের নিষ্কাম কর্মের শিক্ষা দিলেন। দিলেন ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করার শিক্ষা। দ্বাপর যুগে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা কুরুক্ষেত্রে কাকাতো-জেঠতুতো ভাইদের মধ্যে যুদ্ধ। সে যুদ্ধ মহাযুদ্ধে রূপ নেয়। এক পক্ষে পাণ্ডুপুত্র পঞ্চপাণ্ডব—যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব। অপরপক্ষে ধৃতরাষ্ট্রের দুর্যোধন, দুঃশাসনসহ শত পুত্র। এ যুদ্ধে ভারতবর্ষের রাজন্যবর্গ কেউ পাণ্ডবদের পক্ষে, কেউ দুর্যোধনাদি কৌরবদের পক্ষে অংশ নেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে অংশ নেন পাণ্ডবদের পক্ষে নিরস্ত্রভাবে অর্জুনের রথের সারথি হিসেবে। কারণ, তাঁরা ধর্মযুদ্ধ করছিলেন। দুর্যোধনেরা অন্যায়ভাবে রাজ্যের অধিকার নিজেদের করায়ত্ত রেখেছিলেন। যুদ্ধ শুরুর সময়ে পাণ্ডবপক্ষের অর্জুন যখন আত্মীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইছিলেন না—তা ছাড়া যুদ্ধে প্রচুর লোকক্ষয় ঘটবে—ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তখন কর্তব্যকর্ম সাধন করার উপদেশ দিলেন অর্জুনকে। দিলেন নিষ্কাম কর্মের শিক্ষা। মহাভারতে সে উপদেশবাণী উজ্জ্বল হয়ে আছে। আর এ অংশটি ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’ নামে পৃথক গ্রন্থের মর্যাদা পেয়েছে। এ উপদেশবাণী মানুষের চলার পথে, কর্তব্য-অকর্তব্য নির্ধারণে, অবিচল ভক্তিতে ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণের ক্ষেত্রে সহায়ক। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজের পিসতুতো ভাই চেদিরাজ শিশুপালকেও হত্যা করেন। তিনিও দুর্বৃত্ত হয়ে উঠেছিলেন। মগধরাজ জরাসন্ধকেও তিনি দমন করেছিলেন। এগুলো সব দুষ্টের দমনের দৃষ্টান্ত। আবার তাঁর মধ্যে ছিল দরিদ্রের প্রতি মমত্ববোধ এবং সবার প্রতি সমদর্শিতা। তাঁর দরিদ্র জ্ঞানী সহপাঠী সুদামা দারিদ্র্যের কারণে তাঁর কাছে কিছু চাইতে গিয়েছিলেন, যাতে দারিদ্র্য দূর হয়ে যায়। কিন্তু সুদামা লজ্জায় কিছু চাইতেই পারলেন না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সরাসরি কিছু না দিয়ে বন্ধুকে খালি হাতেই বিদায় জানিয়েছিলেন। এদিকে সুদামা ফিরে এসে দেখেন তাঁর পর্ণকুটির নেই, সেখানে এক প্রাসাদ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেবশিল্পী বিশ্বকর্মাকে দিয়ে সেই বাড়ি নির্মাণ করিয়েছিলেন। সুদামাকে দিয়েছিলেন অঢেল ধনসম্পদ—যাতে তিনি নিশ্চিন্তে জ্ঞানের সাধনা চালিয়ে যেতে পারেন। এখানেও একটি লোকশিক্ষার পরিচয় পাওয়া যায়। তা হলো: সামনাসামনি দান করে দানের গর্ব প্রকাশ না করা। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, দাতাকে উদ্ধত অহংকারী নয়, তাঁকে বিনয়ী হতে হয়। এক রূপে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চক্রধারী কঠোর, আরেক রূপে তিনি কুসুম কোমল, দীনবন্ধু—করুণা সিন্ধু। শুভ জন্মাষ্টমীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপা সবার ওপর বর্ষিত হোক।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,যেসব জিনিস সাথে রাখতে পারবেন না ওমরাহকারীরা,ইসলাম ধর্ম,"ওমরাহ করার ক্ষেত্রে এবার আরো বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় কিছু নির্দিষ্ট জিনিস বহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, আতশবাজিও রয়েছে নিষিদ্ধ জিনিসের তালিকায়। এছাড়া লেজার লাইট, নকল মুদ্রা এবং অনিবন্ধিত ওষুধ নিয়েও কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর অতিথিরা সৌদিতে ঢোকার আগে নিশ্চিত করবেন যে, কারো কাছে যেন এইসব জিনিস না থাকে।' এর আগে রমজানে একাধিকবার ওমরাহ করার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব। জানিয়ে সম্ভাব্য ভিড় এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চলতি রমজান মাসের প্রথম ১৫ দিনে ওমরাহ পালন করেছেন ৮২ লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলিম। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম আল আরাবিয়া। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট ৮২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৮০ জন মুসুল্লি চলতি মৌসুমে ওমরাহ পালন করেছেন। রমজান মাসে হাজারো মানুষ সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্ত ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাবা শরীফে ছুটে আসেন। নামাজ পড়া ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যেই তারা মূলত এখানে আসেন। যার ফলে এ সময়য় পবিত্র এই ভূমিতে মানুষের ভিড় অনেক বেশি থাকে। এদিকে গত সপ্তাহে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় রমজান মাসে একবারের বেশি ওমরাহ পালনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। পবিত্র মাসে ভিড় কমাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। সবাই যাতে স্বচ্ছন্দে ওমরাহ পালন করতে পারে, তা নিশ্চিতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কন্ঠ,উমাইয়া বংশের খ্যাতিমান মুহাদ্দিস ছিলেন যে নারী,ইসলাম ধর্ম,"আতিকা বিনতে ইয়াজিদ (রহ.) ছিলেন সময়ের খ্যাতিমান নারী মুহাদ্দিস ও উমাইয়া বংশের গর্ব। হাদিস গবেষকরা তাঁকে ‘তৃতীয় স্তরের মুহাদ্দিস বা হাদিস বর্ণনাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি ছিলেন মুয়াবিয়া বিন আবি সুফিয়ান (রা.)-এর নাতি, খলিফা আবদুল মালিক বিন মারওয়ানের স্ত্রী এবং খলিফা ইয়াজিদ বিন আবদুল মালিকের মা। এ ছাড়া আত্মীয়তার সূত্রে উমাইয়া বংশের ১২ জন খলিফার মারহাম ছিলেন তিনি।ফলে তাদের সঙ্গে তাঁর পর্দা করতে হতো না।আতিকা বিনতে ইয়াজিদ (রহ.) একজন নারী মুহাদ্দিস হিসেবেই ইতিহাসের পাতায় অম্লান হয়ে আছেন। বিখ্যাত আইনজ্ঞ ও হাদিস বিশারদ আবু জুরআ (রহ.) বলেন, ‘শামের যেসব নারী হাদিস বর্ণনা করেছেন তাদের মধ্যে আতিকা বিনতে ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া (রা.) অন্যতম। তাঁর থেকে আমর ইবন মুহাজির আল-আনসারি (রহ.)-এর মতো মুহাদ্দিসও হাদিস বর্ণনা করেছেন।আলেমরা তাঁকে তৃতীয় স্তরের (মুহাদ্দিস) বলে গণ্য করেন।’ প্রখর মেধা, উচ্চতর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জন্য খলিফা আবদুল মালিক আতিকা বিনতে ইয়াজিদ (রহ.)-কে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তিনি সব সময় তাঁকে পাশে রাখতেন, বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করতেন, চরম শত্রুর ব্যাপারেও তাঁর সুপারিশ গ্রহণ করতেন। খলিফা প্রিয়তমা স্ত্রীর বিচ্ছেদ, দুঃখ ও কষ্ট কখনো সহ্য করতে পারতেন না।বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতায় তাঁকে দাদা মুয়াবিয়া (রা.)-এর সঙ্গে তুলনা করা হতো।আতিকা বিনতে ইয়াজিদ (রহ.) ছিলেন পুণ্যবতী ও দানশীল নারী। পরিবার-পরিজনের জন্য নিঃসংকোচে ব্যয় করতেন। পিতা ও দাদার সূত্র তিনি যত সম্পদ লাভ করেছিলেন সব পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে দান ও ওয়াকফ করে দেন। যদিও স্বামী সন্তানদের প্রত্যাশা ছিল তিনি তাঁর সম্পদ দুই ছেলে ইয়াজিদ ও মারওয়ান দিয়ে যাবেন।তিনি তাঁকে এই অনুরোধও করেছিলেন। দুই ছেলে ছাড়াও উম্মে কুলসুম নামে তাঁর একটি মেয়ে ছিল।আতিকা বিনতে ইয়াজিদ (রহ.)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দামেস্কে ‘বাবে জাবিয়া’-এর বাইরের একটি অঞ্চলকে ‘আরদু আতিকা’ বলা হয়। এখানে তাঁর একটি প্রাসাদ ছিল এবং এ প্রাসাদেই তাঁর স্বামী খলিফা আবদুল মালিক বিন মারওয়ান ইন্তেকাল করেন। তিনি নিজেও দামেস্কে ইন্তেকাল করেন এবং বাবে জাবিয়ার বাইরে তাঁর প্রাসাদের কাছে দাফন করা হয়। এখনো দামেস্কে তাঁর সমাধি সৌধ রয়েছে। মূলত নাতি ওয়ালিদ বিন ইয়াজিদের মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং অসুস্থ হয়ে যান। ১২৬ হিজরি মোতাবেক ৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন। নাতির মৃত্যুতে তাঁর ভেঙে পড়ার কারণ হলো, এক হজের সফরে তাঁর সামনেই ওয়ালিদ বিন ইয়াজিদকে হত্যা করা হয়। খলিফা আবদুল মালিক সে বছর তাঁকে হজ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পবিত্র কাবা ও নবীজি (সা.)-এর রওজা জিয়ারতের আকাঙ্ক্ষা তিনি উপেক্ষা করতে পারেননি।সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আতিকা (রহ.) ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিখ্যাত সাহাবি জুবায়ের ইবনুল আউয়াম (রা.)-এর ছেলে ও আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.)-এর ভাই মুসআব ইবনে জুবায়ের (রহ.)-কে শহীদ করার পর তাঁর মাথা আবদুল মালিক বিন মারওয়ান প্রথমে কুফাতে এবং এরপর মিসরে পাঠান। অতঃপর তা দামেস্কে পাঠানো হয়। মুসআব (রহ.)-এর খণ্ডিত মস্তক দামেস্কে পৌঁছানোর পর আতিকা বিনতে ইয়াজিদ (রহ.) তা নিয়ে গোসল করান এবং মর্যাদার সঙ্গে দাফন করেন। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, তোমরা যা করছ তাতে তোমরা খুব খুশি! যে মাথাটি শহরে শহরে ঘুরাচ্ছ। এটা খোদাদ্রোহিতা ছাড়া কিছুই না। ঐতিহাসিকরা বলেন, মুসআব ইবনে জুবায়ের (রা.)-এর বিরুদ্ধে অভিযান না চালানোর অনুরোধও করেছিলেন আতিকা (রহ.)।আল্লাহ এই মহীয়সী নারীর কবরকে শীতল করুন। আমিন",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,শবেবরাতের ছুটি ছিল আশীর্বাদ,ইসলাম ধর্ম,"শবেবরাতের কারণে অমর একুশে বইমেলা আরও একটি ছুটির দিন পেয়েছে গতকাল। এ দিন নতুন করে নড়েচড়ে বসেন প্রকাশকরা। বিকাল থেকে মেলার প্রবেশদ্বার বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিকিকিনিতে দম ফেলার ফুরসত পাননি বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে কর্মরত বিক্রয়কর্মীরা। শবেবরাতের ছুটির দিনটি লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের জন্য আশীর্বাদ ছিল বলে জানান বেশির ভাগ প্রকাশক। একই কথা বলেছেন বিক্রিতে ব্যস্ত থাকা বিক্রয়কর্মীরাও। যদি দর্শনার্থী ও বইপ্রেমীদের এই ঢল অব্যাহত থাকলে এবারের বইমেলা বিগত সব বছরের সফলতার রেকর্ড ভাঙবে বলে আশা প্রকাশ করেন বেশির ভাগ প্রকাশক। বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন রাসিক মেয়র : গাঙচিল এবং বিশ্বসাহিত্য ভবন কর্তৃক প্রকাশিত বেশ কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। গতকাল বিকালে অমর একুশে বইমেলার ২৬তম দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশ্বসাহিত্য ভবনের স্টলের সামনে বঙ্গবন্ধু ও জাপান এবং শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন রাসিক মেয়র। উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরও মোড়ক উন্মোচন করা হয় দীপল কান্তি বিশ্বাসের একজন গাঙচিল দাদু ভাই, ফয়সাল হাওলাদারের মেঘ আরশী, অভিজিৎ মণ্ডলের স্মৃতির অন্তরীক্ষে, এস এ কে রেজাউল করিমের ধারা নং ৫১১১, এলমান সৈয়দের জীবনের কবিতা, এশরাত জাহান বর্ণার এক আকাশ নীল, মিজানুর রহমানের দিগন্তরেখায় গোধূলি কথন, শিউলি রহমানের অন্যরকম অনুভবে, খাদিজা রহমান ফেরদৌসী বেগমের নিঃশ্বাসের কাছাকাছি, মাহফুজা বীনার ছড়ায় ছড়ায় শিখবে কথা, খান আহমেদ ইফতেখারের স্বপ্ন ছোঁয়ায় বঙ্গবন্ধু, বেগম দিল আফরোজের জীবন ধারা, আমিনা খাতুনের ষড়ভুজ, শিউলী খানের অচৈতন্য ভাবনা, ড. এ বি এম শরীফ উদ্দীনের নিরুদ্দেশ সম্পর্ক, নাসিমা খাতুনের চির পথচারী, খান আখতার হোসেনের ডুমুরিয়ায় শ্রেণিশত্রু নিধনের অশান্ত ঢেউ, রবিদাস মণ্ডলের রক্ত আবীর প্রেম, শেখ আকমান আলীর পুষ্প সুরভি, শেখ আকমান আলীর গোপু পাগলের পাগলামি, আসমা আক্তার কাজলের হৃদয়ে একুশ, পলাশ মজুমদারের সত্যের সন্ধানে মতুয়া ও মতুয়া জাগরণী সংগীত, রেজাউল করিমের হাবুডুবু ও রানু গাজীর হিজলতলী গাঁ ইত্যাদি।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ইত্তেফাক,‘অন্যায়ের প্রতিবাদে’ ভারতে মুসলিম হচ্ছেন হাজারো দলিত ,অন্যান্য,"অবিচারের প্রতিবাদে মুসলিম হচ্ছেন হাজারো দলিত। আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি ভারতের তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের কাছের একটি গ্রামের ৩ হাজারেরও বেশি দলিত জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ তুলে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশটির সংবাদ মাধ্যমে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রবিবার বৈঠকের পর এমন সিধান্ত নেন দলিতরা। ঘটনার সূত্রপাত, গত ২ ডিসেম্বর চেন্নাই থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে নাদুরে একটি দেয়াল প্ৰবল বৃষ্টির কারণে ভেঙে দলিতদের বাড়িতে পড়ে। এতে ১৭ জন দলিতের মৃত্যু হয় যাদের মধ্যে ১০ জন নারী ও ২ শিশু ছিল। দলিতদের অভিযোগ, ঘটনার পরে পুলিশ ওই ভেঙে পড়া দেয়ালের বাড়ির মালিক শিবসুমব্রমানিয়মকে গ্রেপ্তার করলেও পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পায়। দলিতদের আরও অভিযোগ, উচ্চবর্ণের হিন্দুদের থেকে দলিতদের পৃথকভাবে বাস করতে বাধ্য করার জন্য ওই দেয়াল তোলা হয়েছিলো। ১৫ ফুট লম্বা দেয়ালটি কোনও রকম পিলার ছাড়াই নির্মিত হয়েছিল বলেও অভিযোগ। দলিতদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইলাভেনিল বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ২০ দিনের মধ্যে জামিনে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু গণতান্ত্রিক উপায়ে ন্যায় বিচার চাওয়ায় দলিতদের সংগঠনের সভাপতি নাগাই তিরুভল্লুয়ানযে জেলে রাখা হল।’ নিউজ ১৮, হিন্দু। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"রমজান : সামগ্রিক পরিশুদ্ধির মাস ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহর রহমতের চিরন্তন সর্বজনীন উৎস কুরআন নাজিলের শুকরিয়া আদায়ের লক্ষ্যেই সিয়াম ফরজ করা হয়েছে। আর সিয়ামের মাধ্যমে তাকওয়ার গুণাবলী অর্জন এবং কুরআনের জীবন পদ্ধতির বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমে তাযকিয়াহর শীর্ষে উন্নীত হওয়ার জন্যই সিয়াম ফরয করা হয়েছে। তাকওয়াকে আমরা কুরআন ও সুন্নাহর অনুবাদের ক্ষেত্রে শুধু আল্লাহভীতি, পরহেজগারী ও ভয় করা অর্থেই ব্যবহার করে থাকি। আর সিয়ামকে আমরা পানাহার যৌনচার ও পাপাচার বর্জন অর্থেই ব্যবহার করে থাকি। ইসলামী শরীয়ার পরিভাষায় রোযার সংজ্ঞা হচ্ছে, ‘সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, কামাচার ও পাপাচার বর্জনের নামই রোযা। প্রকৃত পক্ষে সওম শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, বিরত থাকা, বিরত করা ও বিরত রাখা। যে মুসলিম জনগোষ্ঠী সিয়ামের মাধ্যমে শুধু সুনির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত পানাহার, কামাচার হতে বিরত থাকে অথচ পরিপূর্ণ জীবন ধারায় আল্লাহ দ্রোহী জীবনধারা হতে বিরত থাকে না। আল্লাহদ্রোহী কুশিক্ষা, বর্বরতা, মাদকাসক্তি, ব্যভিচার, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, খুন-খারাবী, হিংসা-বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা, অসভ্যতা, এসিড নিক্ষেপ, পাশবিকতা, মানবাধিকার হরণের ঘৃণ্য পাপাচার হতে বিরত রাখে না, তাদের সিয়াম সাধনা নিছক আনুষ্ঠনিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। যে সিয়াম দ্বারা সিয়াম পালনকারী শুধু একমাস উপবাস ও দিনের বেলায় যৌনচার হতে বিরত থাকে, অথচ সমগ্র জিন্দেগীতে পাপাচারের গড্ডালিকা প্রবাহে ভাসিয়ে ভ- ও বক ধার্মিক সেজে আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলে; সালাত ও সিয়াম আদায় করে কিন্তু মিথ্যা বর্জন করে না, তাদের রাত জাগা ও উপবাস থাকা ছাড়া আল্লাহর নিকট কোন প্রতিদানই পাবে না। আল কুরআন শুধু সিয়ামই ফরজ করেনি, একই সাংবিধানিক ভাষায় লিখিতভাবে ফরজ করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং হত্যা ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কিসাসের বিধান কায়েম করা ও আল্লাহ তায়ালার পরিপূর্ণ দীন প্রতিষ্ঠা করাকেও ফরজ করা হয়েছে। কুরআনে সিয়ামকে যেমন লিপিবদ্ধভাবে ফরজ করা হয়েছে, তেমনি সালাতকে সুনির্ধারিত সময়ে লিখিতভাবে সাংবিধানিক ভাষায় ফরয করা হয়েছে। কুরআন শরীফে অসংখ্য আয়াতে মানব জাতিকে বিশ্বজনীন কল্যাণকর জীবন আচরণের নির্দেশনা ও নিন্দনীয় কার্যাবলীকে বর্জন করার বিধান দেয়া হয়েছে। এ ধরনের মুনকার ঘোষিত সকল ব্যবস্থাপনা হতে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিরত হওয়া, বিরত করা ও বিরত থাকার নামই সিয়াম সাধনা। শুধু উপহাস-ব্রত পালনের নামই সিয়াম-সাধনা নয়। মানবতার জন্য অকল্যাণকর সকল ক্রিয়াকা- ও আচরণ থেকে বিরত থাকা, বিরত করা, ও বিরত রাখার নাম সিয়াম বা রোজা। রোজা হচ্ছে ইসলামের তৃতীয় রোকন বা স্তম্ভ। শব্দটি আরবী শব্দ সাওম থেকে প্রথম ফার্সী ভাষায় এবং পরে ফার্সী থেকে অপরিবর্তিতভাবে বাংলা ভাষায় এসেছে। মূল আরবী শব্দ সাওমের অর্থ হচ্ছে সংযম, বিরত থাকা বা উপবাস যাপন। আর পরিভাষা হিসেবে এর অর্থ হছে, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌন সংসর্গ থেকে বিরত থাকা। সাওম বা রোযা শুধু মুসলমানদের উপরই নয়, পূর্ববর্তী জাতিসমূহের উপরও আল্লাহ তায়ালা রোযা ফরজ করে দিয়েছেন। সওমের তাৎপর্য : কুরআন অবতীর্ণের মাস রমজানুল মুবারকে আল কুরআনের আদেশ নিষেধ জীবনের সকল ক্ষেত্রে মেনে পানাহার, ব্যভিচার, কামাচার, পাপাচার তথা মহান আল্লাহ তায়ালার মর্জির বিপরীত সকল নিষিদ্ধ কর্ম হতে ব্যক্তি জীবনে বিরত থাকা। নিজের পরিবারের সকল সদস্যকে আল্লাহর তরফ হতে অবতীর্ণ আল কুরআন ও আল কুরআনের জীবন বিধানের পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠাতা কুরআনের জীবন্ত প্রতীক রাসুল (সা.) কর্তৃক নিন্দনীয় ও বর্জনীয় সকল ক্রিয়াকা- থেকে বিরত রাখা। আর মুসলিম বৃহত্তম জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত সমাজ ও রাষ্ট্রকে আল্লাহ ও রাসুল কর্তৃক অশ্লীল ও নিষিদ্ধ সকল কর্মতৎপরতা মানব রচিত আইন ও অপসংস্কৃতি হতে বিরত করার লক্ষ্যে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, ‘হে ইমানদারগণ ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো। আর তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে পারো; কেননা তিনি তোমাদের হেদায়েত দান করেছেন, যেন তোমরা আল্লাহর শুকর আদায় করতে পারো।(সূরা বাকারা: ১৮৩ ও ১৮৫ ) লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে যে, উপরোক্ত আয়াত দ্বারা আল্লাহ তায়ালা সিয়াম পালনের নির্দেশ দানের সঙ্গে সঙ্গে সিয়ামের উদ্দেশ্য বলে দিয়েছেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে তিনটি। ক. মুত্তাকি হওয়া, খ. হেদায়েত প্রদানের জন্য আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা, গ. তার শোকর আদায় করা। উদ্দেশ্য তিনটির মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে মুত্তাকি হওয়া। মুত্তাকি বলতে কি বুঝায়? মুত্তাকী শব্দিটি এসেছে আরবী তাকওয়া থেকে এবং যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে তিনি হচ্ছেন মুত্তাকী। তাকওয়া শব্দের অর্থ হচ্ছে সংযম ও আল্লাহভীতি এবং মুত্তাকী শব্দের অর্থ হচ্ছ সংযমী, পুণ্যবান ও আল্লাহভীরু। সিয়াম বা রোজা পালনের দ্বারা মানুষ যদি সংযমী ও খোদাভীরু হতে পারে, তাহলেই সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব। কেননা একজন সংযমী বা আল্লাহভীরু ব্যক্তির দ্বারা সমাজে কোন অন্যায় বা জুলুম হতে পারে না। যেহেতু আল্লাহভীরু ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহর নিকট পরকালে জওয়াব দেওয়ার ভয়ে ভীত থাকে। তার মনে সর্বদাই এ ভয় বিরাজ করবে যে, তিনি যদি অন্যায় করেন দুনিয়াতে রেহাই পেয়েও যান, পরকালে তিনি নিস্তার পাবেন না। সেখানে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। আল্লাহর কাছে এই জবাবদিহি ও পরকালে শাস্তির ভয়ই মানুষকে যাবতীয় অন্যায় থেকে বিরত রাখবে। মানুষ যদি এভাবে সংযমী হয়, কেউ কোন অন্যায় অত্যাচার না করে,কারো অধিকার হরণ না করে, কারো ইজ্জত আবরুর উপর হামলা না করে, কাউকে বে আইনিভাবে হত্যা না করে। যার যার অধিকার তাকে যথাযথভাবে প্রদান করে, তাহলেই সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করে মুত্তাকী হলেই শুধু এরূপ সংযমী হওয়া সম্ভব। আবার রোজা পালন করতে হয় বছরে এক মাস এবং তা রমজান মাসে, কুরআন নাজিলের মাসে। আল কুরআন হচ্ছে, মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। এ কুরআনের মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালা মানুষকে হেদায়েত তথা পার্থিব জীবনের জন্য সঠিক ও কল্যাণকর পথ প্রদর্শন করেছেন। কুরআনে রয়েছে মানব জীবনের সকল ক্ষেত্র যথা তার ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, বিয়ে-তালাক, উত্তরাধিকারিত্ব, উপার্জন ও ব্যয় ব্যবসা-বাণিজ্য, রাষ্ট্র পরিচালনা, বিচার ও প্রশাসন, এক কথায় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যত কাজ মানুষকে করতে হয় তার প্রতিটির জন্য সর্বোত্তম পথের দিশা। আল্লাহ তায়ালার প্রদর্শিত পথ সর্বোত্তম কেনো? কারণ, তিনি সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী, কুশলী ও সর্বোপেক্ষা ক্ষমতাবান। তিনি হচ্ছেন অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে সম্যক অবগত। তার নির্দেশেই এ বিশ্বজগত পরিচালিত হচ্ছে আবার তার নির্দেশেই সব একদিন ধংস হয়ে যাবে। আবার তিনিই সবাইকে পুনর্জীবিত করে হিসেব-নিকাশ সম্পন্ন করে যার যার প্রাপ্য শাস্তি বা পুরস্কার তাকে তা দিয়ে দিবেন। এ ক্ষমতা একমাত্র তারই করায়েত্তে। কাজেই তার শাস্তি এড়িয়ে পুরস্কার পেতে হলে তার নির্দেশিত পথেই মানুষকে চলতে হবে। তিনি যদি দয়া করে মানুষকে এ পথ প্রদর্শন না করতেন তাহলেও তার কোন ক্ষতি হত না। তা সত্ত্বেও তিনি মানুষকে সর্বোত্তম পথের সন্ধান দিয়েছেন। মহান রাব্বুল আলামীন আরও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর প্রদর্শিত পথ ছাড়া অন্য কোন পন্থা বা পদ্ধতি তার কাছে আদৌ গ্রহণযোগ্য হবে না। মানুষ যেন এ কথা উপলব্ধি করে যে শাস্তি ও পুরস্কার প্রদানের ক্ষমতা একমাত্র তারই আছে, অন্য কারোই নাই। এ জন্য সকলেরই উচিত তার ক্ষমতা ও শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে তার শোকর আদায় করা। মানুষ যদি আল্লাহ প্রদত্ত হেদায়েত প্রাপ্ত হয়েও তার শোকর আদায় না করে , তাহলে সে হবে অকৃজ্ঞ। তিনি যদি মানুষকে সঠিক পথের দিশা না দিতেন, তাহলেই কেউ উত্তম পথ পেত না। দুনিয়াতে কোন মুমিন-মুসলমানের অস্তিত্বও থাকতো না। সকলেই কাফের, মুশরিক বা সংশয়বাদী হিসেবে জীবন যাপন করে পরকালে জাহান্নামের ইন্ধন হতো। শুধু পরকালেই নয়, আল্লাহ তায়ালার প্রদর্শিত পথে না চলে এ পৃথিবীতেও বহু লোক আজও ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে চরম অশান্তির অনলে দগ্ধ হচ্ছে।আর যারা তার হেদায়েত মেনে নিয়ে জীবন যাপন করেন, তারা এ পৃথিবীতেও অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ জীবন অতিবাহিত করেন। পরকালের শান্তিতো তাদের জন্যই অপেক্ষা করছেই। কাজেই মহান রাব্বুল আলামীনের প্রদত্ত হেদায়েতের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শোকরিয়া স্বরুপ তার শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতির ঘোষণা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"কুরআন কারীমের হেদায়েত গ্রহণই সফলতার একমাত্র পথ ",ইসলাম ধর্ম,"পৃথিবীতে আরো অনেক নবী-রাসূল এসেছেন। তাঁদের প্রতি আল্লাহ তাআলা অনেক কিতাবও নাযিল করেছেন। কিন্তু সেইসব কিতাব স্বরূপে সংরক্ষিত থাকেনি। নানা ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও ফেতনার কবলে পড়ে বিকৃত হয়েছে। মানুষের মনগড়া কথাবার্তা দিয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু কুরআনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো : কোনো মিথ্যা এর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। না এর সম্মুখ থেকে না পেছন থেকে। (সূরা হা মীম সাজদাহ : ৪২)। মূলত আল্লাহ তাআলা নিজেই কুরআন হেফাযত ও সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। এর মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পর্কের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বলেছেন : তোমরা আল্লাহর রজ্জু (অর্থাৎ এই কুরআন) মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো। বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (সূরা আলে ইমরান : ১০৩)। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন : নিশ্চয় এই পথ বিপদসংকুল। তাতে দাঁড়িয়ে আছে শয়তান। ডাকছে, হে আল্লাহর বান্দা, এদিকে এসো। পথ এদিকে। মূলত ওরা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করতে চায়। সুতরাং তোমরা আল্লাহর রজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো। নিশ্চয় আল্লাহর রজ্জু হলো তাঁর কিতাব। (তাফসীরে তাবারী : ৫/৬৪৫)। অতএব এই কুরআন যারা আঁকড়ে ধরবে, ধারণ করবে, গ্রহণ করবে তারা দুনিয়া-আখেরাতে সফল হবে এবং সকল অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে। যারা এই কুরআন থেকে বিমুখ হবে, তাদের জন্য থাকবে মহা সংকটময় জীবন। আল্লাহ তাআলা বলেন : যে আমার উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য রয়েছে মহা সংকটময় জীবন। কিয়ামতের দিন তাকে আমি উঠাব অন্ধ করে। সে বলবে, হে আমার রব! আপনি আমাকে অন্ধ করে উঠালেন কেন? আমি তো (দুনিয়াতে) চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এভাবেই তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল। তুমি তা ভুলে থেকে ছিলে। আজ তাই এমনিভাবে তোমাকে ভুলে থাকা হবে। (সূরা ত্বহা : ১২৪-১২৬)। বিখ্যাত তাফসীরবিদ সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন : যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করবে এবং কুরআনের বিধি বিধান মেনে চলবে আল্লাহ তার জন্য এই দায়িত্ব নিয়েছেন যে, সে দুনিয়াতে পথভ্রষ্ট হবে না। আখেরাতেও দুর্দশাগ্রস্ত হবে না। আরেক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন : যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করবে। কুরআনের বিধান অনুযায়ী চলবে। আল্লাহ তাআলা তাকে সকল ভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা করবেন। কিয়ামতের ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে হেফাযত করবেন। তার প্রমাণ আল্লাহ তাআলার এই বাণী : যে আমার হেদায়েতের অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না। দুঃখগ্রস্ত হবে না। (তাফসীরে তাবারী : ১৮/৩৮৯)। এখানে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) কুরআনের অনুসরণ প্রসঙ্গে প্রথমে বলেছেন তিলাওয়াতের কথা। এরপর বিধি-বিধান মেনে চলার কথা। কুরআন মাজীদ নিজে তিলাওয়াত করলে যেমন ফায়েদা ও সওয়াব, তেমনি অন্যের তিলাওয়াত শোনায়ও অনেক ফায়েদা ও সওয়াব। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত বিখ্যাত হাদিস, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ তিলাওয়াত করবে তার জন্য রয়েছে একটি নেকী। আর প্রতিটি নেকী দশ গুণ বৃদ্ধি পাবে। আমি বলছি না, ‘আলিফ লাম মীম’ একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ। (জামে তিরমিযী : ২৯১০)। অর্থাৎ কেউ যদি শুধু ‘আলিফ লাম মীম’ তিলাওয়াত করে তাহলেও ত্রিশ নেকী লাভ করবে। এভাবে যেকোনো সূরা তিলাওয়াত করা হবে তার প্রতি হরফে কমপক্ষে দশটি নেকী আল্লাহ তাআলা দান করবেন। কুরআনের একেকটি আয়াতে একেকটি সূরায় কতগুলো করে হরফ থাকে! সুবহানাল্লাহ। হযরত আবু উমামা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি : তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করো। কেননা, কুরআন কিয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশকারী হিসেবে হাযির হবে। (সহীহ মুসলিম : ৮০৪)। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত নবী (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন রোযা ও কুরআন সুপারিশ করবে। তখন তাদের সুপারিশ কবুল করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ : ৬৬২৬)। হাদিস শরীফে কুরআন তিলাওয়াতের আরও অনেক ফযীলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদেরকে কুরআনওয়ালা বানিয়ে দিন। কুরআন বুকে ধারণ করার, নিয়মিত তিলাওয়াত করার, অন্যদের তিলাওয়াত শুনে ফায়েদা অর্জন করার, আয়াতের অর্থ, ভাব ও মর্ম নিয়ে চিন্তা-ফিকির করার এবং কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফীক দান করুন। কুরআনকে আমাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী বানিয়ে দিন। কুরআনের মাধ্যমে আপনার নৈকট্য লাভ করা সহজ করে দিন। (-আমীন।)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ইত্তেফাক,‘হিন্দু হয়েও মুসলিম ধর্ম পালন করি’,ইসলাম ধর্ম,"আশির দশক থেকে এখন পর্যন্ত খল চরিত্রে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন অভিনেত্রী শাহনাজ পারভিন দুলারী। সুমিতা দেবী, মায়া হাজারিকা কিংবা রিনা খানের পরে দুলারী হচ্ছেন একজন শক্তিমান খল অভিনেত্রী। প্রায় ৮ শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। পেয়েছেন বহু পুরষ্কার। তার এই দীর্ঘ ক্যারিয়ার মোটেই সহজ ছিলো না। সম্প্রতি চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারীর ‘উল্টো চশমা’ নামে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তার জীবনের বহু অজানা বিষয় শেয়ার করেছেন।তিনি বলেন, ‘আমি হিন্দুর মেয়ে। আমার আগের নাম আল্পনা দুলারী দে। এখন আমার নাম শাহনাজ পারভিন দুলারী। আমি মুসলিম ধর্ম পালন করি। আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, কোরবানি দেই, রোজার মাসে রোজা রাখি, আমার যে ধর্ম ভালো লাগে...।’ তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই অভিনয় অনেক ভালো লাগতো। দেখতাম- রাজ্জাক ভাই, শাবানা আপা, কবরী আপাকে অভিনয় করতে। তখন থেকেই আসছে অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক। পঞ্চম শ্রেণিতে ওঠার পর একদিন স্কুল পালিয়ে ‘মালেকা বানুর’ শুটিং দেখতে গিয়েছিলাম। এরপর বাড়িতে ফেরার পর মায়ের মার খেলাম। ওই মার খাওয়ার পর থেকেই মনে জিদ চেপে গেলো আমি অভিনয়ই করবো। মূলত বান্ধবীর মামার হাত ধরেই আমার সিনেমায় আসা। কিছুদিন পর বাড়ি থেকে চম্পট! চলে আসি এফডিসিতে। সেখানে এসে পরিচালক সিরাজুল ইসলামের সাথে দেখা হয়। আমি তাকে অনুরোধ করি; আমি তো আর বাড়ি ফিরে যেতো পাবো না সুতরাং আপনি আমাকে কাজ দেন। তখন তিনিই আমাকে প্রথম কাজ দেন।’ এই অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রথমে আমি কমেডি দিয়েই অভিনয় শুরু করি। ৫ বছরে আমার ১৩০টি কমেডি ছবি রিলিজ। এরপর আমি খল চরিত্র শুরু করি। এখনো সেটাই চলছে। তবে এর মাঝে আমি বাড়ি ফেরে গেলে আমার বাবা-মা আমাকে গ্রহণ করলেও আমার কাকারা আমাকে গ্রহণ করেনি। তাই তখন থেকেই আমি তাদের থেকে আলাদা।’ পরোপকারী ও সমাজসেবক হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। সম্প্রতি তিনি কাজ করেছেন পরিচালক কাজী হায়ত ও চিত্রনায়ক শাকিব খানের ‘বীর’ সিনেমায়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে সুরের লড়াই ",হিন্দু ধর্ম,"দেবী দুর্গার ধর্মীয় মাহাত্ম্যের প্রথম উল্লেখ দেখা যায় শ্রীশ্রীচণ্ডীতে। সেখানে যে ধর্মীয় কাহিনি আছে, তাতে বলা আছে: রাজা সুরথ রাজ্য হারিয়ে আর সমাধি বৈশ্য ব্যবসা-বাণিজ্য হারিয়ে তাঁদের পরিবার-পরিজন কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে মনের দুঃখে গৃহত্যাগী হলেন। রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য কেউই কারও পূর্বপরিচিত নন। মনের দুঃখে তাঁরা দিগ্বিদিক ঘুরছিলেন। ঘুরতে ঘুরতে একসময় দুজনের দেখা হলো মেথস মুনির আশ্রমে। সেখানেই তাঁদের কথা হয়। দুজনেই তাঁদের দুঃখ ও যন্ত্রণার কথা পরস্পরকে বলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁরা দুজনেই দুঃখ-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে মা দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করলেন। সময়টা ছিল বসন্তকাল। চণ্ডীতে বলা আছে, মা দেবী দুর্গা তাঁদের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে দেখা দিলেন এবং তাঁদের শোকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিলেন। এই হলো দেবীপূজার মাহাত্ম্য। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে যে মেথস মুনির আশ্রমটির কথা বলা আছে, আশ্রমটির অবস্থান যেখানে থাকার কথা উল্লেখ আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে, সেটি এখনো আছে নবগ্রামের বোয়ালখালী থানার করলডেঙ্গা গ্রামের করলডেঙ্গা পাহাড়ে। আশ্রমটি তেমনভাবেই আছে। বিশ্বাসীদের মতে, আগে এই অঞ্চলটি বেশ দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ছিল। এই স্থানের পর্যটনের গুরুত্ব অনেক। তাই কয়েক বছর ধরে এই স্থানের পর্যটন গুরুত্ব, ধর্মীয় গুরুত্ব উপলব্ধি করে, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের খানিকটা সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, দেবী দুর্গার ধর্মীয় মাহাত্ম্য অনুযায়ী দেবী দুর্গার আবাহনের এই স্থানটির যথাযথ সংস্কার জরুরি। একই সঙ্গে নানা ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটন করপোরেশন স্থানটিকে দর্শনার্থী, তীর্থযাত্রীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। তাহলে বাংলাদেশ-ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে বহু দর্শনার্থী, তীর্থযাত্রী স্থানটি পরিদর্শনে আসতে পারবে। এতে বাংলাদেশ পর্যটন খাতটি আরও সমৃদ্ধ হবে। বসন্তকালে দুর্গাপূজা হবে, এমনটাই যখন বলা আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে, তখন এ ঘটনার ব্যতিক্রম দেখি রামায়ণে। রামায়ণে উল্লেখ আছে, রামচন্দ্র সীতাকে উদ্ধারের জন্য দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেছিলেন। আর সময়টা ছিল শরৎকাল। তাই পরবর্তী সময়ে যখন শারদীয় দুর্গাপূজার ব্যাপক প্রচলন হয়, তখন এই পূজাকে আমরা বলি শারদীয় দুর্গোৎসব। সেই সঙ্গে অকালবোধন পূজা। আমরা যদি শ্রীশ্রীচণ্ডীর মাহাত্ম্য বা রামচন্দ্রের অকালবোধন পূজার উদ্দেশ্যের দিকে তাকাই, দেখতে পাই দেবী দুর্গার আরাধনা, শক্তিরই আরাধনা। রাজা সুরথ আর রামের সময় আর পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও তাঁরা একই দেবীর পূজা করেন শক্তি সঞ্চয়ের জন্য। আর সেই শক্তিটি হলো শুভশক্তি। যে শক্তি আসুরিকতার বিরুদ্ধে, সব অসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আদিম যুগের পরবর্তী সময়ে যখন প্রস্তর যুগের সূচনা হলো, দেখলাম মানুষ পাথর দিয়ে বিভিন্ন জিনিস সৃষ্টি করে মনের ভাব প্রকাশ করতে শুরু করল। তার পরবর্তী সভ্যতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইট ও মাটি দিয়ে তৈরি জিনিসের প্রচলন শুরু হলো। তখন যে ভক্তিবাদের উন্মেষ ঘটেছিল, সেখানে মাটি দিয়ে তৈরি দেবীরই আরাধনা করতে শুরু করল মানুষ। আমরা মিসরীয় সভ্যতা, মহেেঞ্জাদারো সভ্যতা, হরপ্পা বা ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, ভারত সভ্যতা, অথবা মধ্যপ্রাচ্যের সভ্যতার দিকে যখন তাকাই, সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দেখতে পাই, সব সভ্যতাতেই বাসনকোসনের সঙ্গে মাটির তৈরি মূর্তিগুলোও পাওয়া গেছে। এ দেশে মা দেবী দুর্গার মাটির তৈরি প্রতিমা গড়ে পূজার প্রচলন শুরু করেন রাজশাহীর তাহিরপুরে রাজা কংস নারায়ণ। সেটাও আজ থেকে প্রায় সাত-আট শ বছর আগের কথা। এর আগে দেবী দুর্গার মাটির মৃণ্ময়ী রূপের প্রচলন হতে দেখা যায়নি। রাজা কংস নারায়ণ প্রতিমা গড়ে যে পূজা করেছিলেন, সেখানে তৎকালীন সময়ে নয় লাখ টাকা খরচ করা হয়েছিল। বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে যেসব রাজা-মহারাজা ছিলেন, তাঁদের একাংশ ছিলেন প্রজাদের প্রতি নিষ্ঠুর। আরেকাংশ প্রজাবৎসল। প্রজাবৎসল রাজারা যে শুধু প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন তা-ই নয়, প্রজাদের সঙ্গে মিলে তাঁরা দুর্গোৎসবের আয়োজনও করতেন। রাজারা এই উৎসবকে কেন্দ্র করেই প্রজার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতেন। এই উৎসবে রাজা-প্রজা, ধনী-নির্ধন—সবাই মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতেন। ফলে রাজা আর প্রজার মধ্যে নৈকট্যের জন্ম হতো। এটি ছিল ভয়ের সংস্কৃতির বিপরীতে একটি সৌহার্দ্যের সংস্কৃতি গড়ে তোলার চেষ্টা। আর এই ধারাটা চলে এসেছে প্রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ কাল পর্যন্ত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন রাজা-মহারাজাব্যবস্থা থাকল না, তখন দেখা গেল, সাধারণ বাঙালি একজোট হয়ে দুর্গাপূজা করছে। সেই সময় থেকেই দুর্গাপূজা সর্বজনীনতার রূপ নিল। তখন দুর্গাপূজা রাজার আঙিনা থেকে বেরিয়ে সাধারণের আঙিনায় চলে এল। বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালির জীবন ইতিহাসে দেখা যায়, বাঙালি কখনো কারও ওপর আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেনি। চিরকাল তারা আগ্রাসিত হয়েছে। এর কারণে বাঙালির জীবনে দুঃখ এসেছে, বিপর্যয় এসেছে, হাসি-কান্না-বেদনার দিন এসেছে। পরবর্তী সময়ে এই কান্না, দুঃখ, বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য নতুন করে প্রাণোদ্যম ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছে উৎসবের মাধ্যমে। সেটা আজও অব্যাহত। বাংলার যেমন ষড়্ঋতু আছে। আছে সেই ঋতুগুলোর বৈচিত্র্য। এই বৈচিত্র্য আর কোথাও দেখা যায় না। আর প্রতি ঋতুতেই বাঙালির উৎসব আছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে বাঙালির বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি আছে। সংকীর্ণতা ভুলে বাঙালি পরিসরে একাকার হওয়ার চেষ্টা করে এ অঞ্চলের জনগণ। এ জন্যই আমরা বলি, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। প্রত্যেক বাঙালির যার যার ধর্ম আছে। ধর্মাচার আছে। কিন্তু সব ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচারের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসব আছে। এখান থেকে আমরা উচ্চারণ করতে পারি: ধর্ম যার যার উৎসব সবার। চট্টগ্রামে যে পাড়ায় আমি থাকি, তার নাম দেওয়ানজি পুকুরপাড়। এই এলাকায় মূলত হিন্দু সংখ্যালঘুদের বাস। এই পাড়ার নিকটতম প্রতিবেশী ছিল আজকের বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানদের পরিবার। একবার সরস্বতী পূজা উপলক্ষে পাড়ায় যে কমিটি হয়েছিল, সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। বিএনপির সাবেক মন্ত্রী। বর্তমানে তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যান। আবার কলাবাগানে যে সর্বজনীন দুর্গোৎসব হচ্ছে, এই উৎসবের সূচনা ও আয়োজনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সেই এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। তঁারাই এলাকার হিন্দুদের একত্র করে এই উৎসবের আয়োজনে উৎসাহিত করেছেন। সেই থেকেই কলাবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব হয়ে আসছে। এটা খুব বেশি দিনের কথা নয়। আমরা লক্ষ করি, শারদীয় দুর্গাপূজা হিন্দুধর্মাবলম্বীরা করে। গৌতম বুদ্ধের জন্মদিনে বুদ্ধপূর্ণিমা বা খ্রিষ্টের জন্মদিনে ক্রিসমাস ডে করে, সবই আবহমানকাল থেকে বাঙালির সংস্কৃতির একটি রূপ। আরেকটি ব্যাপার উল্লেখযোগ্য, মা দুর্গার যে কাঠামো, রাষ্ট্র ও সমাজকে প্রতিফলন করে এ কাঠামো। আসুরিক শক্তির প্রভাবে যখন স্বর্গ থেকে দেবতারা চ্যুত হয়ে গেলেন, তখন তাঁরা আসুরিক সংস্কৃতির হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য মা দুর্গার আরাধনা করলেন। দেবতাদের মিলিত আরাধনার মাধ্যমেই তো মা দুর্গার আবির্ভাব। দেবতাদের যাঁর হাতে যা ছিল, তা-ই কিন্তু মায়ের হাতে স্থান পেল। রাষ্ট্র ও সমাজেরও তেমনি আসুরিক শক্তি আছে। আসুরিক অত্যাচারে মানুষ যখন ভয়ে থাকে, যখন উৎপীড়নের সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়, তা থেকে উত্তরণের জন্য বাঙালি যুদ্ধ করে। ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে বাঙালি যখন যূথবদ্ধ হয়ে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখে, এই অবয়বটি মা দুর্গার কাঠামোতে আছে। অসুরের সঙ্গে মা দুর্গার যে লড়াইটি হয়েছিল, তাতে আসুরিক শক্তির পরাজয় ঘটেছিল। দেখা যায়, যখনই আসুরিক শক্তির পরাজয় ঘটল, সেখানে যে সমাজকে দেখি, লক্ষ করি জ্ঞানের প্রতীক সরস্বতী, ধনের প্রতীক লক্ষ্মী, জনগণের প্রতীক গণেশ আর বীরের প্রতীক কার্তিক। তার মানে জনতা, জনগণ, ধ্যানজ্ঞান ও বীরের মধ্য যে রাষ্ট্রকাঠামো, এটা হলো শান্তি-সৌহার্দ্য বিনির্মাণের রাষ্ট্র ও সমাজকাঠামো। এই কাঠামো বিনির্মাণের জন্যই তো ঐক্যবদ্ধ বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ করেছে। কিন্তু এই স্বপ্নের বাংলাদেশ স্বাধীনতার চার দশক পর আজও আসেনি। আসুরিক শক্তি আজও সমাজে বর্তমান। পাশাপাশি শুভশক্তিও অবস্থান করছে। তাই আসুরিক শক্তির সঙ্গে শুভশক্তির বারবার সংঘর্ষ হচ্ছে, লড়াই হচ্ছে। তাই সময়ের বিচারে শারদীয় পূজা এখনো প্রাসঙ্গিক। ভবিষ্যতেও থাকবে। এই পূজার মাহাত্ম্য কখনো শেষ হওয়ার নয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,কেমন আছে কেনিয়ার মুসলমানরা,ইসলাম ধর্ম,"উত্তর আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার দাপ্তরিক নাম ‘রিপাবলিক অব কেনিয়া’। দেশটির উত্তর-পশ্চিমে দক্ষিণ সুদান, উত্তরে ইথিওপিয়া, পূর্বে সোমালিয়া, পশ্চিমে উগান্ডা, দক্ষিণে তানজানিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে ভারত মহাসাগর অবস্থিত। কেনিয়ার মোট আয়তন পাঁচ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ বর্গকিলোমিটার। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশটির মোট জনসংখ্যা ৪৭.৬ মিলিয়ন। এর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ১০.৯ শতাংশ (প্রায় ৫.২ মিলিয়ন)। আয়তনে কেনিয়া বিশ্বের ৪৮তম, জনসংখ্যায় ২৭তম এবং সাব-সাহারান অঞ্চলে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। আবহাওয়া ও ভূমির বৈশিষ্ট্যে কেনিয়া এক বৈচিত্র্যময় দেশ। নাইরোবি কেনিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে কেনিয়ায় আরব মুসলিমদের আগমন ঘটে। তারা সেখানে আগমন করেন ব্যাবসায়িক সূত্র ধরে। কেননা খোলাফায়ে রাশেদার যুগ থেকে পারস্য উপসাগর ও কেনিয়ার সোয়াহিলি উপকূলের শক্তিশালী বাণিজ্যিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে কেনিয়ায় পাওয়া সর্বপ্রাচীন মুসলিম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন খ্রিস্টীয় দশম শতকের। কেনিয়ার মুসলিম নিদর্শনগুলোর মধ্যে মুসলিম বসতি গেদি ও মান্দা দ্বীপের মুসলিম শহর অন্যতম। কেনিয়ায় মুসলিম ব্যবসায়ীদের বিচরণ ও তৎপরতা বৃদ্ধির সঙ্গে ইসলামেরও প্রসার হতে থাকে। কেনিয়ান উপজাতিগুলোর মধ্যে সোয়াহিলি ও বানতু উপজাতির লোকেরা প্রথমে ইসলাম গ্রহণ করে। আরব মুসলিমদের মাধ্যমে সেখানে আরব-আফ্রিকান সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। এমনকি বানতু ভাষা আরবি বর্ণে লেখা হয়। যা থেকে আরব মুসলিমদের প্রভাব সহজেই বোঝা যায়। প্রাচীনকাল থেকেই কেনিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলেই মুসলিমদের বসবাস বেশি। তারা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করত, তবে প্রত্যেক অঞ্চলের মুসলিমরা সংঘবদ্ধভাবে পৃথক আবাস গড়ে তুলত। মরক্কোর বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক ইবনে বতুতা ১৩৩১ খ্রিস্টাব্দে সোয়াহিলি উপকূল ভ্রমণ করেন। তিনি সেখানে মুসলমানদের সম্মানজনক উপস্থিতি দেখতে পান। ইবনে বতুতার বর্ণনা মোতাবেক কেনিয়ার মুসলিমরা ছিল ধার্মিক, সামাজিক সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তিনি সেখানে কাঠের তৈরি একাধিক মসজিদ দেখতে পান। খ্রিস্টীয় ১৭ শতকে কেনিয়ায় পর্তুগিজ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্যে মুসলমানের প্রভাব ও তাদের সম্মানজনক অবস্থান অব্যাহত ছিল। ঔপনিবেশিক শাসননীতি ও খ্রিস্টধর্ম প্রসারের প্রচেষ্টা মুসলিমদের এক সংঘাতময় সময়ের মধ্যে ফেলে দেয়। ঔপনিবেশিক শাসকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ১৯ শতকের শুরুভাগে নিকটবর্তী জানজিবার দ্বীপপুঞ্জ ওমানের শাসনাধীন হওয়ার পর কেনিয়ায় মুসলিমরা সুদিন ফিরে পেতে শুরু করে। ১৯৬৩ সালে স্বাধীনতা লাভের পর মুসলিমরা ক্রমেই ধর্মপালনের স্বাধীনতা ফিরে পেতে থাকে। দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান মুসলমানের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়। স্বাধীন কেনিয়ায় বহু মুসলিম জাতীয় পর্যায়ে নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। যেমন কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদ ইউসুফ হাসান আবদি, রাজনীতিক নাজিব বালালা, প্রধান বিচারপতি আবদুল মজিদ কুকরার, ক্রিকেটার ইরফান করিম, ফুটবলার রামা সেলিম, বক্সার ওপর আহমদ প্রমুখ। ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব কেনিয়া মুসলিম, দ্য সুপ্রিম কাউন্সিল অব কেনিয়া মুসলিমস, দি ইসলামিক পার্টি অব কেনিয়া ইত্যাদি সংগঠন কেনিয়ায় মুসলিম অধিকার নিয়ে কাজ করছে। ‘ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব কেনিয়া’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশটিতে প্রাইমারি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের একাধিক ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"হজ ব্যবস্থাপনাকে বিশ্বের মধ্যে একটি মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে চাই ",ইসলাম ধর্ম,"ধর্মমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের হজ ব্যবস্থাপনাকে স্মার্ট করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট হজ এই প্রত্যয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনাকে আমরা বিশ্বের মধ্যে একটি মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে চাই। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ ) বিকালে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(হাব) আয়োজিত আলোচনা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ধর্মমন্ত্রী বলেন, সরকার হজযাত্রীদের কল্যাণে সম্ভাব্য সকল ধরণের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণে বদ্ধপরিকর। আল্লাহর মেহমানগণকে আমরা যথাযথ সম্মানের সঙ্গে হজব্রত পালন করানোর জন্য যাবতীয় উদ্যোগ নিতে সদাপ্রস্তুত। এক্ষেত্রে হাবের সহযোগিতা প্রয়োজন। ধর্মমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের হজ ব্যবস্থাপনায় কোন দুর্বলতা থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং এর সম্ভাব্য সমাধানের সকল পথ বের করতে হবে। কী কী পদক্ষেপ নিলে হজযাত্রীগণ আরেকটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন সেগুলো নিয়ে আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে। হজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে মোঃ ফরিদুল হক খান বলেন, গত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। বিশেষ করে হজ ব্যবস্থাপনায় নানা ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আশকোনা হজক্যাম্প হজযাত্রীদের জন্য উপযোগী করা হয়েছে। ই-হজ ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে। জেদ্দা হজ টার্মিনালে বাংলাদেশ প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে রেকর্ডসংখ্যক ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৩৫ জন হজযাত্রী হজব্রত পালন করেছেন। হজ ব্যবস্থাপনায় হাবের ভূমিকা তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, এদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় হাব একটি বড় অংশীদার। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে হাবের ইতিবাচক ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে হজযাত্রায় উদ্বুদ্ধকরণ, হজযাত্রী সংগ্রহ ও হজ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি প্রভৃতিক্ষেত্রে হাবের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আগামীদিনে হজযাত্রীদের কল্যাণে হাবের ভূমিকাকে আরো বেশি ফলপ্রসূ ও কল্যাণমূখী করার জন্য মন্ত্রী হাবের প্রতি অনুরোধ জানান। হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মতিউল ইসলাম, হাবের মহাসচিব ফারুক আহমেদ সরদার, সিনিয়র সহসভাপতি মওলানা ইয়াকুব শরাফতীসহ হাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"ঢাবিতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ডাকসুর ",অন্যান্য,"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) কার্যনির্বাহী সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ডাকসুর কার্যনির্বাহী সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ও চেতনার জায়গা, সুতরাং এখানে কোনো ধর্মেরই ধর্মভিত্তিক, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চর্চার সুযোগ নেই। তাদের কোনো ধরনের তৎপরতা ঐতিহ্যগতভাবে এখানে নেই। সেটি যেন কোনো ক্রমেই এদের অনুপ্রবেশ বা কর্মকাণ্ড পরিচালিত না হয় সেবিষয়ে যেন সকলে যত্নশীল থাকে সেজন্য ডাকসুর তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোরামে সেগুলো নিষিদ্ধ করে যেন আইনে পরিণত করা হয় সেই দাবিও জানানো হয়েছে বলেও জানান উপাচার্য। এর আগে বিকাল পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী চলা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়। ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, ডাকসুর প্রস্তাব অনুযায়ী ধর্মভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। নির্বাহী সভার এ্যাজেন্ডা অনুযায়ী প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক মাজহারুল কবির শয়ন। একই সাথে ডাকসুর গঠনতন্ত্রে এ সম্পর্কিত ধারা সংযোজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-কানুনে এটি সন্নিবেশ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে সাধারণ সম্পাদকের পদ হারানো ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী সভায় উপস্থিত ছিলেন না। গোলাম রাব্বানীর উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে সাদ্দাম বলেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি আজকের সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। এছাড়াও সভায় অন্যান্য এজেন্ডা হিসেবে সান্ধ্যকালীন কোর্স, লাইব্রেরীর আসন সংকট, হলের আবাসন সমস্যা, ক্যাম্পাসের পরিবহন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সাদ্দাম।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,ভ্রমণ সম্পর্কে মহানবী (সা.) যা বলেছেন,ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিরহস্যের নানা উপকরণ। প্রতি মুহূর্তে মানুষকে তা হাতছানি দিয়ে ডাকছে। মন প্রফুল্ল রাখতে ও শারীরিক সুস্থতা ধরে রাখতে এবং জ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে ভ্রমণের বিকল্প নেই। তাইতো প্রতিনিয়ত মানুষ বিশাল এ ধরিত্রীর নানা অংশে ছুটে যায় সৃষ্টির বিশালতা আর প্রকৃতির রূপকে আপন করে দেখতে। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ভ্রমণের মাধ্যমে তাঁর অসীম ক্ষমতা ও সৃষ্টির বিশালতা অবলোকন করে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘পৃথিবীজুড়ে বিশ্বাসীদের জন্য আছে অসংখ্য নিদর্শন। ’ (সুরা : জারিয়াত, আয়াত : ২০) বিনোদন ছাড়াও জীবনের নানা প্রয়োজনে আমাদের আবাসস্থল ছেড়ে দূর-দূরান্তে যেতে হয়। অন্য সব বিষয়ের মতো ভ্রমণ সম্পর্কেও ইসলামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে— ► সফরের ক্ষেত্রে একেবারে প্রথম কাজটি হোক ইস্তিখারা। আপনার জন্য এ সফর কল্যাণকর হবে কি না—জেনে ফেলুন ইস্তিখারার নামাজের মাধ্যমে। (ঘুমের আগে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নির্দিষ্ট দোয়া পড়ে ইস্তিখারা করা হয়)। জাবির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সব ব্যাপারে ইস্তিখারা করতে শিখিয়েছেন, যেভাবে কোরআনের সুরা গুরুত্বের সঙ্গে শিখিয়েছেন। (ইবনু হিব্বান, হাদিস : ৮৮৭) ► সফরকালে নানা রকম বিপদাপদের আশঙ্কা থাকে। সে জন্য যানবাহন, আসবাবপত্র ও যাত্রাপথ সম্পর্কে যতটুকু সম্ভব ভালো করে খোঁজখবর নিন। ► সফরের সিদ্ধান্ত হলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়া উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সফরকারী তার পরিবারের জন্য দুই রাকাত নামাজের চেয়ে ভালো কিছু রেখে যায় না। (মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা, হাদিস : ৪৯১২) ► যতটা সম্ভব একাকী সফর পরিহার করুন। একাকী সফর নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি করে। সুতরাং ভালো কাউকে সফরসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করুন। মহানবী (সা.) বলেছেন, সঙ্গীহীনতায় কত কী সমস্যা! আমি যেমন জানি, তোমরাও জানলে রাতে একাকী কখনো সফর করার সাহস পেতে না। (বুখারি, হাদিস: ২৯৯৮) ► অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কাউকে গ্রুপ লিডার নির্বাচন করুন। যিনি পরামর্শের ভিত্তিতে সফরের দায়িত্বগুলো সম্পন্ন করবেন। অন্যদের কাজ হবে তার নির্দেশনা মেনে চলা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সফরে তোমরা যদি তিনজন হও, একজনকে আমির নিযুক্ত করো। (আবু দাউদ, হাদিস, ২৬০৯) ► সাতসকালে যাত্রা করুন। সাহাবি সাখর আল গামিদি ব্যবসায়ী ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, ‘ভোরবেলাকে আমার উম্মতের জন্য বরকতে পূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে। ’ এর পর থেকে সাখর গামিদি (রা.) সকাল সকাল ব্যবসায় নেমে পড়তেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। (ইবনু হিব্বান, হাদিস : ৪৭৫৪) ► পরিচিত ও প্রিয়জনদের থেকে সুন্দরভাবে বিদায় নিন। বিদায় দানকারী বলবেন, আল্লাহ তোমাকে তাকওয়া-পরহেজগারি দান করুন, তোমার গুনাহ ক্ষমা করুন আর যেখানেই থাকো তোমাকে তিনি কল্যাণ দিন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৪) আর সফরকারী বলবেন, আল্লাহর নিরাপত্তায় তোমাকে অর্পণ করছি, তিনি অনন্য আস্থাভাজন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৯২১৯) ► সফরের জিকির এবং দোয়াগুলো পড়ুন। গাড়িতে উঠে পড়বেন, ‘সুবহানাল্লাজি সাখখরা লানা হাজা ওয়া মা কুন্না লাহু মুকরিনিন। ’ অর্থাৎ ‘পবিত্র ওই সত্তা, যিনি এটিকে আমাদের আয়ত্তাধীন করেছেন, অথচ আমরা একে নিজেরা আয়ত্তাধীন করতে পারতাম না। ’ আর সফর শেষে পড়বেন, ‘আ-ইবুনা, তা-ইবুনা, আবিদুনা, লি রাব্বিনা হামিদুন। ’ অর্থাৎ ‘আমরা ফিরে এসেছি, পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে, আনুগত্যের প্রত্যয় নিয়ে এবং আল্লাহর প্রশংসায় মুখর হয়ে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৪২) ► সফর শেষে প্রথমে নিজ এলাকার মসজিদে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। (বুখারি, হাদিস : ২৬০৪) বাড়িতে হঠাৎ করে যাবেন না। আগে জানান, তারপর যান। (মুসলিম, হাদিস : ১৮০১) আশা করা যায়, উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করলে সফরের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদত বলে গণ্য হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টিরহস্য অবলোকনের মাধ্যমে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে প্রকৃতবোধ জাগ্রত হবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"কাবা থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো নামাজের কাতার ",ইসলাম ধর্ম,"চলতি বছরের পবিত্র রমজান মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার ছিল গতকাল। এদিন পবিত্র কাবা শরীফে তারাবির নামাজ আদায়ের জন্য জড়ো হয়েছিলেন লাখ লাখ মানুষ। মুসল্লিদের ভিড় এতই বেশি ছিল যে কাবার গ্র্যান্ড মসজিদ পেরিয়ে নামাজের কাতার পৌঁছে গিয়েছিল তিন কিলোমিটারেরও বেশি দূরের মাআলা এলাকায়। শনিবার (২৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে। মাআলা এলাকায় মানুষের নামাজ পড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ড্রোন থেকে তোলা এ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নিচে হাজার হাজার মানুষ গিজ গিজ করছেন। তবে কাবায় নামাজ পড়তে যাওয়া ব্যক্তিরা যেন কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়েন সেটি নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন ভিড় সামলানোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আল মাআলা মক্কার একটি প্রসিদ্ধ এলাকা। সেখানে অনেক আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। এই এলাকায় রয়েছে আল মাআলা কবরস্থান। যা মক্কার অন্যতম পুরোনো একটি কবরস্থান। মহানবী হযরত মোহাম্মদ সা:-এর অনেক সাহাবী এই কবরে শুয়ে আছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,জুমাতুল বিদা আজ,ইসলাম ধর্ম,"রমজানের শেষ শুক্রবার আজ। মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটি জুমাতুল বিদা নামেও পরিচিত। এটি রমজান মাসকে এক বছরের জন্য বিদায়ের ইঙ্গিত দেয়। মুসলমানদের কাছে এমনিতেই সপ্তাহের অন্য দিনের চেয়ে শুক্রবারের মর্যাদা বেশি। আর রমজান মাসের শুক্রবারগুলোর মর্যাদা আরও অধিকতর। রমজানকে বিদায়ের ইঙ্গিত দেওয়া শেষ জুমার দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিন মসজিদে মসজিদে জুমার খুতবায় রমজান মাসের ফজিলত ও ইবাদতের গুরুত্ব ব্যাখ্যাসহ বিশেষ দোয়া হয়ে থাকে। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মোকাদ্দাস মুক্তির লক্ষ্যে রমজান মাসের শেষ শুক্রবার সারা বিশ্বে আল কুদস দিবস হিসেবেও পালিত হয়। প্রতিবারের মতো এবারও সারাদেশে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করবেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। জুমা শেষে মুসল্লিরা মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও রহমত কামনা করবেন।",ধর্মীয় উৎসব,Neutral কালের কন্ঠ,মানত সম্পর্কে মহানবী (সা.) যা বলেছেন,ইসলাম ধর্ম,"মানত হলো নিজের ওপর কোনো ভালো কাজ আবশ্যক করে নেওয়া। ইসলামপূর্ব আরব সমাজে মানতের প্রচলন ছিল। পৃথিবীর প্রায় সব প্রাচীন ধর্মে মানতের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। শরিয়ত মানতকে বৈধ বললেও তাকে নিরুৎসাহ করেছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মানত করতে নিষেধ করেছেন। কেননা তা মানুষের কোনো কল্যাণ করতে পারে না। এর মাধ্যমে কেবল কৃপণ ব্যক্তি থেকে সম্পদ বের করা হয়। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৮০১) আগের ধর্মে মানত পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মে মানতের প্রচলন ছিল। পবিত্র কোরআনে তার দৃষ্টান্ত আছে। যেমন—ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল, হে আমার প্রতিপালক! আমার গর্ভে যা আছে তা একান্ত আপনার জন্য আমি উৎসর্গ করলাম। সুতরাং আপনি আমার থেকে তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩৫) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে কাউকে যদি তুমি দেখো, তখন বোলো, আমি দয়াময়ের উদ্দেশে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সঙ্গে বাক্যালাপ করব না। ’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ২৬) মানতের পরিচয় শরিয়তের পরিভাষায় মানত বলা হয়, ‘কোনো মুকাল্লাফ (শরিয়তের বিধান প্রযোজ্য) ব্যক্তির নিজের ওপর এমন কোনো কাজ আবশ্যক করা, যা শরিয়ত প্রণেতা আবশ্যক করেননি। ’ (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া : ২/৭৭৯) মানতের শর্ত কোনো ব্যক্তির ওপর মানত আবশ্যক হওয়ার শর্ত হলো সাবালক হওয়া, জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া এবং এখতিয়ার বা ইচ্ছাধিকার থাকা। (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া : ২/৭৭৯) মানত শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইসলামী আইনজ্ঞরা আরো কিছু শর্তারোপ করেন। যেমন—নেক কাজের মানত করা, বান্দার সাধ্যের ভেতর হওয়া, নিজের মালিকানাধীন হওয়া, তা পাপের কারণ বা উপলক্ষ না হওয়া ইত্যাদি। মানতের বিধান মানত করলে তা পূরণ করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের। ’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৯) অন্য আয়াতে মুমিনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিনের বিপত্তি হবে ব্যাপক। ’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ৭) পাপ কাজের মানত করা কোনো ব্যক্তি পাপ কাজের মানত করলে তা পূরণ করা আবশ্যক নয়। তবে হানাফি মাজহাব অনুসারে ব্যক্তির জন্য কাফফারা দেওয়া আবশ্যক হবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের মানত করে সে যেন তাঁর আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার মানত করে, সে যেন তাঁর অবাধ্য না হয়। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩২৮৯) মৃত ব্যক্তির মানত কোনো ব্যক্তি মানত করার পর যদি তা পূরণ করার আগেই মারা যায়, তবে তার আত্মীয়-স্বজনের দায়িত্ব হলো তা পূরণ করা। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর কাছে এক লোক এসে বলল যে, আমার বোন হজের মানত করেছিল, কিন্তু সে মারা গেছে। তখন নবী (সা.) বললেন, তার ওপর কোনো ঋণ থাকলে তবে কি তুমি তা আদায় করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কাজেই আল্লাহর হককে আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হক আদায় করা আরো বড় কর্তব্য। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৯) বহুদিন আগের মানত মানত করার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলে গেলেও তা পূরণ করা আবশ্যক। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ওমর (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি জাহেলি যুগে মসজিদুল হারামের ভেতর এক রাত ইতেকাফ করার মানত করেছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার মানত পূরণ কোরো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০৩২) শরিয়তের সীমার মধ্যে থাকা মানত পূরণের জন্য ব্যক্তি কখনো শরিয়তের সীমা অতিক্রম করতে পারবে না। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি সোমবার রোজা রাখার মানত করে এবং সেদিন ঈদ হয়, তবে সে সর্বসম্মতিক্রমে রোজা রাখবে না। ’ (শরহুন নববী : ৮/১৬) নিজের ওপর কষ্ট না চাপানো মানতের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের ওপর কোনো কষ্ট চাপিয়ে নেবে না। কেননা নিজেকে কষ্ট দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে তার দুই ছেলের ওপর ভর করে হেঁটে যেতে দেখে বললেন, তার কী হয়েছে? তারা বলল, তিনি পায়ে হেঁটে হজ করার মানত করেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, লোকটি নিজেকে কষ্ট দিক আল্লাহ তাআলার এর কোনো দরকার নেই। অতঃপর তিনি তাকে সওয়ার হয়ে চলার জন্য আদেশ করলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৬৫) বিকল্প জিনিস দ্বারা মানত পূরণ যে বিষয়ের মানত করেছে যা ব্যক্তির জন্য কষ্টসাধ্য হয়, তবে বিকল্প জিনিস দ্বারা মানত পূরণ করা বৈধ। বিশেষত বিকল্প যখন মূলের চেয়ে উত্তম হয়। যেমন— জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর জন্য মানত করেছি যে, আল্লাহ যদি আপনাকে মক্কায় বিজয়ী করেন তবে বায়তুল মুকাদ্দাসে দুই রাকাত নামাজ আদায় করব। নবী (সা.) বলেন, তুমি এখানেই নামাজ আদায় কোরো। লোকটি তার কথার পুনরাবৃত্তি করল। তিনি বললেন, তুমি এখানে নামাজ আদায় কোরো। লোকটি আবারও তার কথার পুনরাবৃত্তি করল। নবী (সা.) বললেন, এই ব্যাপারে তোমার স্বাধীনতা আছে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৩০৫) মানতের কাফফারা মানত পূরণ না করলে ব্যক্তি কাফফারা দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মানতের কাফফারা কসমের কাফফারার মতো। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৮৩৪) কসমের কাফফারা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর এর কাফফারা ১০ জন দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাবার দান করা—যা তোমরা তোমাদের পরিবারকে খেতে দাও, অথবা তাদেরকে কাপড় দান করা কিংবা একজন দাস মুক্তি। যার সামর্থ্য নেই তার জন্য তিন দিন রোজা পালন করা। ’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৮৯) আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral Dhaka Tribune,"৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করতে চায় ধর্ম মন্ত্রণালয় ",ইসলাম ধর্ম,"সৌদি কর্তৃপক্ষ শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ শেষ করতে না পারায় আগামী ৩১ মে’র পরিবর্তে ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট পরিচালনার অনুরোধ জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৩ মে) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে এ চিঠি পাঠিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সৌদি সরকারের রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় এবারের হজে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবগামী শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সব ধরনের প্রস্তুতিও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নেওয়া হয়। কিন্তু সোমবার রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের বাস্তবায়নকারী সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসে জানান, রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের জন্য ৪০ জন জনবলসহ সৌদি টিম ঢাকায় আগামী ২ জুনের আগে এসে পৌঁছাতে পারবে না। প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস/যন্ত্রপাতি এখনো ঢাকায় এসে পৌঁছেনি। এসব যন্ত্রপাতি উল্লেখিত সৌদি আরবের দলের সঙ্গে ঢাকায় আসবে। যন্ত্রপাতিগুলো হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইনস্টল করতে হবে। এতে কিছু সময় লাগবে। ফলে, আগামী ৫ জুনের আগে তাদের পক্ষে ঢাকা থেকে হজযাত্রীদের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, ৩১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু করা হলে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের হজযাত্রীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রথম হজ ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য ডেডিকেটেড ফ্লাইট এবং ঢাকায় প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার স্বার্থে ৩১ মের পরিবর্তে আগামী ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করা প্রয়োজন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ মের পরিবর্তে আগামী ৫ জুন থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"আহ্লান সাহ্লান মাহে রমজান ",ইসলাম ধর্ম,"খোশ আমদেদ মাহে রমজান। হিজরি সালের নবম মাস পবিত্র মাহে রমজান উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য আল্লাহর অপার সন্তুষ্টি ও তাঁর প্রতিশ্রুত বেহেশত লাভের সওগাত। ‘রামাদান’ শব্দটি আরবি ‘রাম্দ’ ধাতু থেকে উদ্ভূত। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে দহন, প্রজ্বলন, জ্বালানো বা পুড়িয়ে ভস্ম করে ফেলা। রমজান মাসে সিয়াম সাধনা তথা রোজা পালনের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মানুষ নিজের সমুদয় জাগতিক কামনা-বাসনা পরিহার করে আত্মসংযম ও কৃচ্ছ্রপূর্ণ শান্তিময় জীবনযাপন করে এবং ষড়্রিপুকে দমন করে আল্লাহর একনিষ্ঠ অনুগত বান্দা হওয়ার সামর্থ্য অর্জন করে। মাহে রমজান মানুষের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় অহংকার, কুপ্রবৃত্তি, নফসের দাসত্ব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় বলে এ মহিমান্বিত মাসের আরবি নাম ‘রামাদান’। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পারো।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩) ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম হচ্ছে রোজা। নামাজের পরেই মুসলমানদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে ইবাদত ফরজ করেছেন তা হচ্ছে মাহে রমজানের রোজা। দ্বিতীয় হিজরি সালে উম্মতে মুহাম্মদীর ওপর রমজান মাসের রোজা ফরজ করা হয়। তবে এই রোজা অন্যান্য জাতির ওপরও ফরজ ছিল। অসাধারণ ফজিলত ও তাৎপর্যপূর্ণ মাহে রমজানে সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের ইমানি চেতনা সুদৃঢ় হয়, তাকওয়া বা আল্লাহভীতির নিদর্শন প্রকাশ পায় এবং অত্যন্ত গভীরভাবে ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতি সঞ্চারিত হয়। ইসলামের অন্যান্য বহু আদেশ-নির্দেশের মতো রোজাও ক্রমিক নিয়মে ফরজ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা কেবল মাহে রমজানে রোজা নির্দিষ্ট ও এতেই সীমাবদ্ধ করে দেননি, বরং শরিয়তসম্মত কোনো অনিবার্য কারণবশত কেউ রমজান মাসে রোজা পালন করতে না পারলে এরপর অন্য যেকোনো সময় রোজার কাজা আদায় করার পথও উন্মুক্ত রেখেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে। এবং কেউ পীড়িত থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করতে হবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না, এ জন্য যে তোমরা সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎ পথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মহিমা কীর্তন করবে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫) মুমিনের জীবনে বছরের মধ্যে রমজান মাসটিই এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেয়, তাই এ পুণ্যময় মাসের গুরুত্ব এত বেশি। একদা নবী করিম (সা.) মাহে রমজানের প্রাক্কালে খোশ আমদেদ জানিয়ে বলেন, ‘রমজান মাস আগত প্রায়, এ মাস বড়ই বরকতের মাস, আল্লাহ তাআলা বিশেষ দৃষ্টি প্রদান করেন এবং খাস রহমত বর্ষণ করেন, গুনাহ মাফ করেন এবং দোয়া কবুল করেন।’ এ মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে, তাই মাহে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত অপরিসীম। রমজান মাসের সম্মানজনক মর্যাদা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যখন রমজান মাস আগত হয় তখন আকাশ বা বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, সারা রমজান মাসে তা বন্ধ করা হয় না, আর দোজখের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, সারা রমজান মাসে তা খোলা হয় না, আর শয়তানকে জিঞ্জিরে বন্দী করা হয়।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজা) আত্মিক উৎকর্ষ ও পরকালীন কল্যাণ লাভের এক বেহেশতি সওগাত এই রমজান মাস। আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমত ও নিয়ামতের অফুরন্ত ভান্ডারের দরজা রমজান মাসে রোজা পালনকারীর জন্য উন্মুক্ত করে দেন। হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত আছে যে তাৎপর্যপূর্ণ ও ফজিলতময় পবিত্র মাহে রমজানে রোজা পালনকারী ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাআলা পুরস্কারের ভান্ডার নির্ধারণ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেছেন: আদম সন্তানের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, তবে রোজা ব্যতীত, কেননা রোজা আমার জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দেব।’ (বুখারি ও মুসলিম) রমজান এমনই এক বরকতময় মাস, যার আগমনে পুলকিত হয়ে স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কিরামদের মোবারকবাদ পেশ করতেন। নবী করিম (সা.) সাহাবিদের এই মর্মে সুসংবাদ প্রদান করেছেন, ‘তোমাদের সামনে রমজানের পবিত্র মাস এসেছে, যে মাসে আল্লাহ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন।’ (মুসলিম) রাসুলুল্লাহ (সা.) আগে থেকেই রমজান মাসের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতেন এবং রজব মাসের চাঁদ দেখে মাহে রমজান প্রাপ্তির আশায় বিভোর থাকতেন। মহানবী (সা.) আবেগভরে পরম করুণাময়ের দরবারে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবানের মধ্যে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (মুসনাদে আহমাদ) রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে তখন একজন আহ্বানকারী আহ্বান করেন, ‘হে কল্যাণকামী এগিয়ে যাও! হে মন্দান্বেষী স্তব্ধ হও!।’ (তিরমিজি) এ জন্য মাহে রমজানের অসীম কল্যাণ ও বরকত লাভের প্রত্যাশার জন্য আগে থেকে সবার দৈহিক ও মানসিকভাবে ইবাদতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রমজান মাস মুসলমানদের নিয়মতান্ত্রিক পানাহার, চলাফেরা, ঘুমসহ নানা ইবাদত-বন্দেগিতে আধ্যাত্মিক জীবনে নবজাগরণ সৃষ্টি করে। মুমিন বান্দাগণ এ মাসে আল্লাহর রহমত লাভের জন্য সদা তৎপর থাকেন। প্রকৃতপক্ষে মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য একটি বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্স, যার মাধ্যমে রোজাদারদের জীবন প্রভাবিত হয়। তাই মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে মাসব্যাপী ইবাদত-বন্দেগি তথা সেহ্রি, ইফতার, তারাবি, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, ইতিকাফ, তাহাজ্জুদ, দান-সাদকা, তওবা-ইস্তেগফার প্রভৃতি আদায়ের সামগ্রিক প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।",ধর্মীয় উৎসব,Positive যুগান্তর,পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ। সমগ্র মানবজাতির শিরোমণি মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের দিন আজ। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল শেষ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মা আমিনার কোলে জন্ম নেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের এ দিনে ৬৩ বছর বয়সে তিনি ওফাত লাভ করেন। বিশ্বের মুসলমানরা দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি বা সিরাতুন্নবি (সা.) হিসাবে পালন করেন। বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় ছুটি। পবিত্র এ দিনটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। দিনটি উপলক্ষ্যে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। জাতীয় পতাকা ও ‘কালিমা তায়্যিবা’ অঙ্কিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কদ্বীপ ও লাইটপোস্টে টানানো হবে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় আলোকসজ্জা করা হবে। দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোয় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধনিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে আজ উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোয় যথাযথভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালন করা হবে। দিনটি উদযাপনে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) ১৪৪৪ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানবতার মুক্তিদাতা ও ত্রাণকর্তা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। মহানবি (সা.) থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি হয়ে উঠবে উন্নত, সমৃদ্ধ, শান্তি ও কল্যাণময়। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে দৃষ্টান্ত আমাদের দেশে আছে তা হতে পারে আরও সুসংহত ও সুদৃঢ়।",ধর্মীয় উৎসব,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আমি জানতে চাই, ফরয গোসলের সময় গোসলের পূর্বে ওযুর সময় জামা খুলে ওযু করে গোসল করা যাবে কিনা? বাথরুমে একাকি পরিধেয় কাপড় খুলে গোসল করা ইসলামী শরিয়ত সম্মত হবে কিনা? জানালে উপকৃত হবো।",ইসলাম ধর্ম," যে কোনো সময়ই জামা খুলে অজু করা যায়। ফরজ গোসলের আগেও খালি গায়ে অজু করা যায়। এতে কোনো সমস্যা নেই। বাথরুমে একাকী অবস্থায়ও পরিধেয় সব কাপড় খুলে গোসল করা ঠিক না। কেননা এটি নিজের ব্যক্তিত্বের জন্য হানিকর। আল্লাহর ফেরেশতাগণ ও অদৃশ্য জ্বিন জাতি থেকেও লজ্জা করা উচিত। তাছাড়া আল্লাহ তায়ালাও আমাদের লজ্জাশীলতা পছন্দ করেন। একান্ত প্রয়োজনে সব কাপড় খোলা যায়। তবে, পারতপক্ষে এমন না করাই কর্তব্য। যে কোনো উপযোগী পরিবেশেও পূর্ণ বিবস্ত্র না হওয়া, কমপক্ষে একটি চাদর, তোয়ালে বা গামছা দিয়ে আড়াল করে নেওয়া জরুরী। প্রশ্ন : জানাযার নামাযে পিছনের মুসল্লী শুনতে পেয়েছে এমন কান্নার কারনে নামায ফাসেদ হবে কি? উত্তর : জানাযার নামাজ পূর্ণাঙ্গ নামাজ নয়। এটি একটি নামাজ সদৃশ দোয়া মাত্র। এতে অনিচ্ছাকৃতভাবে শব্দ করে কাঁদলে, নিজে বা অন্যরা শুনলে নামাজের কোনো ক্ষতি হয় না। ইচ্ছাকৃতভাবে কান্না বা অন্য কোনো আচরণ জানাযার ক্ষতি করে। প্রশ্ন : আমার ৪০ দিনের একটি ছেলে সন্তান মারা গেছে । কবরে সে কি অবস্থায় থাকবে জানতে চাই। উত্তর : ৪০ দিন বয়সী শিশু মারা গেলে কবরে সে আল্লাহর নেগাহবানীতে শান্তিতেই থাকবে। তার রূহ যেহেতু আল্লাহর তত্ত্বাবধানে নিজ ঠিকানায় অবস্থান করবে, সে জন্য কবরে বাচ্চাটির দেহ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কিছুই নেই। তাছাড়া মাটিতে তার দেহ যেমনই থাকুক, মিছালী জগতে আল্লাহ মুসলমানের সন্তান হিসাবে তাকে ষষ্ঠ আকাশে হযরত ইবরাহীম আ. এর সাহচর্যে নিয়ে রাখতে পারেন। রূহের জগতে তার রূহ থাকবে, মিছালী জগতে সশরীরে সে শিশুদের সাথে থাকবে, পার্থিব জগতে তার দেহ দুনিয়ার কবরে থাকবে। এসব আল্লাহর মহান কুদরতের অকল্পনীয় ব্যবস্থাপনা। খোলা চোখে সীমিত জ্ঞানে মানুষ এত কিছু বোঝে না বলেই পেরেশান হয়। এ বয়সী শিশু মা বাবার জন্য, বিশেষ করে মায়ের জন্য আখেরাতে মুক্তির কারণ হয়ে থাকে। চরম কষ্টের বিষয় বলেই এখানে আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ও ধৈর্য ধরা এত বড় সওয়াবের কাজ। যার প্রতিদান জান্নাত। প্রশ্ন : ছোট বাচ্চাদের ( বয়স ২/৩ মাস ) পেশাব কাপড়ে লাগলে নামাজ হবে কি না ? উত্তর : ২/৩ মাসের বাচ্চার পেশাবও নাপাক। ছিটে ফোঁটা বা এক সিকি পরিমাণ হলে নাপাক হয় না। এর বেশী হলে কাপড় বা শরীর নাপাক হয়ে যায়। ধুয়ে পাক করতে হবে। পাক নাপাক বিষয়ে যারা সচেতন তারা শিশুর পেশাব থেকেও জরুরী কাপড় চোপড় দূরে সরিয়ে রাখেন। নামাজের কাপড় ছাড়া ব্যবহারিক ঘরোয়া জামা-কাপড় বাচ্চার পেশাব সহই পরিধান করা যায়। শিশু প্রতিপালনের সাথে যারা যুক্ত তাদের এছাড়া উপায়ও নেই। তবে, শিশুদের পেশাব নাপাক নয় এমন ধারণা করা ঠিক না। যে কোনো সময়ই জামা খুলে অজু করা যায়। ফরজ গোসলের আগেও খালি গায়ে অজু করা যায়। এতে কোনো সমস্যা নেই। বাথরুমে একাকী অবস্থায়ও পরিধেয় সব কাপড় খুলে গোসল করা ঠিক না। কেননা এটি নিজের ব্যক্তিত্বের জন্য হানিকর। আল্লাহর ফেরেশতাগণ ও অদৃশ্য জ্বিন জাতি থেকেও লজ্জা করা উচিত। তাছাড়া আল্লাহ তায়ালাও আমাদের লজ্জাশীলতা পছন্দ করেন। একান্ত প্রয়োজনে সব কাপড় খোলা যায়। তবে, পারতপক্ষে এমন না করাই কর্তব্য। যে কোনো উপযোগী পরিবেশেও পূর্ণ বিবস্ত্র না হওয়া, কমপক্ষে একটি চাদর, তোয়ালে বা গামছা দিয়ে আড়াল করে নেওয়া জরুরী। প্রশ্ন : জানাযার নামাযে পিছনের মুসল্লী শুনতে পেয়েছে এমন কান্নার কারনে নামায ফাসেদ হবে কি? উত্তর : জানাযার নামাজ পূর্ণাঙ্গ নামাজ নয়। এটি একটি নামাজ সদৃশ দোয়া মাত্র। এতে অনিচ্ছাকৃতভাবে শব্দ করে কাঁদলে, নিজে বা অন্যরা শুনলে নামাজের কোনো ক্ষতি হয় না। ইচ্ছাকৃতভাবে কান্না বা অন্য কোনো আচরণ জানাযার ক্ষতি করে। প্রশ্ন : আমার ৪০ দিনের একটি ছেলে সন্তান মারা গেছে । কবরে সে কি অবস্থায় থাকবে জানতে চাই। উত্তর : ৪০ দিন বয়সী শিশু মারা গেলে কবরে সে আল্লাহর নেগাহবানীতে শান্তিতেই থাকবে। তার রূহ যেহেতু আল্লাহর তত্ত্বাবধানে নিজ ঠিকানায় অবস্থান করবে, সে জন্য কবরে বাচ্চাটির দেহ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কিছুই নেই। তাছাড়া মাটিতে তার দেহ যেমনই থাকুক, মিছালী জগতে আল্লাহ মুসলমানের সন্তান হিসাবে তাকে ষষ্ঠ আকাশে হযরত ইবরাহীম আ. এর সাহচর্যে নিয়ে রাখতে পারেন। রূহের জগতে তার রূহ থাকবে, মিছালী জগতে সশরীরে সে শিশুদের সাথে থাকবে, পার্থিব জগতে তার দেহ দুনিয়ার কবরে থাকবে। এসব আল্লাহর মহান কুদরতের অকল্পনীয় ব্যবস্থাপনা। খোলা চোখে সীমিত জ্ঞানে মানুষ এত কিছু বোঝে না বলেই পেরেশান হয়। এ বয়সী শিশু মা বাবার জন্য, বিশেষ করে মায়ের জন্য আখেরাতে মুক্তির কারণ হয়ে থাকে। চরম কষ্টের বিষয় বলেই এখানে আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ও ধৈর্য ধরা এত বড় সওয়াবের কাজ। যার প্রতিদান জান্নাত। প্রশ্ন : ছোট বাচ্চাদের ( বয়স ২/৩ মাস ) পেশাব কাপড়ে লাগলে নামাজ হবে কি না ? উত্তর : ২/৩ মাসের বাচ্চার পেশাবও নাপাক। ছিটে ফোঁটা বা এক সিকি পরিমাণ হলে নাপাক হয় না। এর বেশী হলে কাপড় বা শরীর নাপাক হয়ে যায়। ধুয়ে পাক করতে হবে। পাক নাপাক বিষয়ে যারা সচেতন তারা শিশুর পেশাব থেকেও জরুরী কাপড় চোপড় দূরে সরিয়ে রাখেন। নামাজের কাপড় ছাড়া ব্যবহারিক ঘরোয়া জামা-কাপড় বাচ্চার পেশাব সহই পরিধান করা যায়। শিশু প্রতিপালনের সাথে যারা যুক্ত তাদের এছাড়া উপায়ও নেই। তবে, শিশুদের পেশাব নাপাক নয় এমন ধারণা করা ঠিক না।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"হজে থাকছে না বয়সের বাধা ",ইসলাম ধর্ম,"আগামী বছর বড় পরিসরে হজ হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তিনি বলেছেন, হজে ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ হজে যেতে পারবেন। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে তার সঙ্গে রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) নেতারা সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধির কারণে গত বছর সীমিত পরিসরে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়। বাংলাদেশ থেকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সি কেউ হজে যেতে পারেননি। এবার সেই বয়স বাধা দূর হচ্ছে। এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি সরকারের সঙ্গে আমাদের যতটুকু আনঅফিসিয়াল কথা হয়েছে, সেই অনুযায়ী এবার হয়তো পূর্ণ হজই হবে। গত বছর আমাদের যেটা হয়েছিল সেটা হয়তো নাও হতে পারে, এবার হয়তো রেশিও হিসেবে আমরা যতটুকু পাওয়ার ততটুকু পাব। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বিদেশিদের হজ পালনের সুযোগ দেয়নি সৌদি সরকার। তবে ২০২২ সালে করোনার প্রকোপ কমে এলে সীমিত সংখ্যক বিদেশিদের হজ পালনে সৌদি যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। প্রতি বছর সাধারণত ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ হজ পালনের অনুমতি পান। কিন্তু গত বছর এ সুযোগ পান মাত্র ১০ লাখ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ পান ৫৭ হাজার মুসল্লি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি হয় না,ইসলাম ধর্ম,"ফকিহ আলেমরা বলেন, কোরবানি জায়েজ হওয়ার জন্য মৌলিকভাবে পশু চারটি মারাত্মক ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে হবে। তা হলো—ক. গুরুতর অন্ধত্ব, খ. গুরুতর অসুস্থতা, গ. খোঁড়া হওয়া, ঘ. গুরুতর স্বাস্থ্যহানি ও অঙ্গহানি ঘটা। (আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু, কোরবানি অধ্যায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ) উল্লিখিত মূলনীতির আলোকে আলেমরা বলেন, কোনো পশুর দুই চোখ বা এক চোখ অথবা এক চোখের এক-তৃতীয়াংশের বেশি নষ্ট হয়ে গেলে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নয়। অনুরূপ যে পশুর একটি কান বা লেজের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কেটে গেছে তা দ্বারাও কোরবানি করা বৈধ নয়। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৮) যে পশু এমন খোঁড়া যে মাত্র তিন পায়ের ওপর ভর করে চলে, চতুর্থ পা মাটিতে লাগেই না, কিংবা মাটিতে লাগে বটে কিন্তু তার ওপর ভর করে চলতে পারে না—এমন পশু দ্বারা কোরবানি করা বৈধ নয়। তবে যদি খোঁড়া পায়ের ওপর ভর করে চলতে পারে, তবে তা দ্বারা কোরবানি করা বৈধ। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/২২৮) কোনো পশুর হাড়ের মগজ বা মজ্জা শুকিয়ে গেলে তা দ্বারা কোরবানি করা বৈধ নয়। দাঁত ওঠেনি এমন পশু দ্বারাও কোরবানি করা জায়েজ নয়। তবে যদি বেশির ভাগ দাঁত অবশিষ্ট থাকে তবে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। শিং ওঠেনি এমন পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। অনুরূপ শিঙের অগ্রভাগ ভেঙে গেলেও তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। কিন্তু শিং মূল থেকে ভেঙে গিয়ে থাকলে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নেই। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/২২৭-৮; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৭) যে পশুর গায়ে বা কাঁধে দাদ বা খুজলি হয়েছে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। কিন্তু ঘা যদি গোশত পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং তার কারণে পশুর স্বাস্থ্যহানি ঘটে তবে এরূপ পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নেই। (হেদায়া : ৪/৪৩২) গর্ভবতী পশু কোরবানি করা : গর্ভবতী পশুও কোরবানি করা জায়েজ। তবে বাচ্চা জন্ম নেওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে এমন পশু কোরবানি করা মাকরুহ। এই পশুর পরিবর্তে অন্য পশু কোরবানি করাও জায়েজ আছে। জবাই করার পর পেটে বাচ্চা পেলে তা সদকা করে দেওয়া বা জবাই করে গোশত খাওয়া উভয়টি বৈধ। তবে মৃত বাচ্চা পেলে তার গোশত খাওয়া বৈধ হবে না। (হেদায়া : ৪/৪৩২; ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/২২৭)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম,ইসলাম ধর্ম,"পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে আসা ইসলামী সমাজব্যবস্থার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। সাহায্য-সহযোগিতার নানা ধরন ও উপায়ের মধ্যে অভাবগ্রস্তকে বিনা সুদে ঋণ প্রদান অন্যতম সাদকা হিসেবে বিবেচিত। বিনিময়হীন ঋণ প্রদানের মাধ্যমে অন্যকে সহযোগিতা করা হয়, অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ানো হয়। অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত ব্যক্তিকে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে তাকে বিশেষ সহায়তা করা হয়। তবে ঋণ প্রদান করা ভালো হলেও ঋণ গ্রহণ করা ভালো কিছু নয়। ইসলামে ঋণ প্রদানে উৎসাহ দিলেও ঋণী হতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তার পরও প্রয়োজনে ঋণের আদান-প্রদান হয়। সে ক্ষেত্রে ঋণদাতা ও গ্রহীতার দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। ঋণ সুদমুক্ত হওয়া : ঋণের বিনিময়ে মূলধনের অতিরিক্ত কোনোরূপ শর্তারোপ করা যাবে না। এটিই সুদ, যা সম্পূর্ণ হারাম। সাধারণ সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদ সব একই। আল্লাহ বলেন, ‘যারা সুদ খায় (কিয়ামতের দিন) তারা সেই ব্যক্তির মতো উঠবে, শয়তান যাকে স্পর্শ দ্বারা মোহাবিষ্ট করে দেয়। এটা এ জন্য হবে যে তারা বলেছিল, বিক্রিও তো সুদেরই মতো হয়ে থাকে। অথচ আল্লাহ বিক্রিকে হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৭৫) ঋণ লিপিবদ্ধ করা : ঋণদাতা ও গ্রহীতা পরস্পরের চাওয়া-পাওয়ায় একমত হয়ে লিপিবদ্ধ করে রাখা উচিত। এরপর যথাসাধ্য তা মেনে চলতে হবে। সব ধরনের চুক্তি ও লেনদেনের ক্ষেত্রেই লিখিত থাকাটা উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘তা ছোট হোক বা বড় হোক, মেয়াদসহ লিখতে তোমরা কোনোরূপ বিরক্ত হইয়ো না। আল্লাহর কাছে তা নায্যতর ও প্রমাণের জন্য দূঢ়তর এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক না হওয়ার নিকটতর। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮২) অতি দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ না হওয়া : মানুষের জীবন স্বল্পমেয়াদি। যেকোনো সময় মৃত্যু এসে যেতে পারে। আগামীকাল পর্যন্ত জীবিত থাকার যেখানে নিশ্চয়তা নেই, সেখানে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারার নিশ্চয়তা কোথায়? মানুষের জীবনের বাস্তবতা হাদিসে এভাবে প্রকাশিত হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা উসামা ইবন জায়েদ এক শ দিনার দিয়ে একটি হালাল প্রাণীর মাদি বাচ্চা কিনলেন এই আশায় যে এক মাস পর তা খাওয়ার যোগ্য হবে। রাসুলুল্লাহহ (সা.) শুনে বললেন, ‘এক মাস মেয়াদে খরিদকারী উসামাকে দেখে তোমরা কি অবাক হচ্ছো না? উসামা তো দীর্ঘ আশা পোষণকারী। যার হাতে আমার জীবন সেই আল্লাহর কসম! আমি চোখ মেলে তাকানোর পর ভাবি, হয়তো চোখের পাতা মিলিত হওয়ার আগেই আল্লাহ আমার প্রাণ কেড়ে নেবেন। একটা পেয়ালা মুখে তুলে পান করার পর ভাবি, হয়তো পেয়ালাটা নামানোর আগেই আমি মারা যাব। এক লোকমা খাবার মুখে নেওয়ার পর ভাবি, হয়তো ওটা গিলে খাওয়ার আগেই আমার মৃত্যু হয়ে যাবে। মহান আল্লাহর কসম! তোমাদের যার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে (কৃতকর্মের ফল লাভ ও হিসাব-নিকাশ) তা অবশ্যই পূর্ণ করা হবে। তোমরা কোনো ভাবেই তা প্রতিহত বা বন্ধ করতে পারবে না। ’ (শুয়াবুল ঈমান, হাদিস: ১০০৮০) ঋণ পরিশোধে আন্তরিক হওয়া : বিশেষ প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করলে যতদ্রুত সম্ভব তা পরিশোধ করতে চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহর কাছে ঋণ পরিশোধের সামর্থ কামনা করতে হবে। ঋণ পরিশোধ করার সদিচ্ছা থাকলে এবং এ ব্যাপারে আন্তরিক হলে আল্লাহ তায়ালা তা পরিশোধ করার ব্যবস্থা করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে মানুষের সম্পদ পরিশোধের নিয়তে (ঋণ) নেয়, আল্লাহ তার পক্ষ থেকে পরিশোধ করে দেন। আর যে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে (ঋণ) নেয়, আল্লাহ তা ধ্বংস করে দেন। ’ (বুখারি, হাদিস: ২২৫৭) ঋণ পরিশোধ করতে গড়িমসি না করা : সামর্থ্য থাকার পরও ঋণ পরিশোধ না করা বড় অন্যায়। সামর্থ্য থাকার পরও ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করাকে নবী (সা.) জুলুম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সামর্থ্যবানদের পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম। ’ (বুখারি, হাদিস: ২১৬৬; মুসলিম, হাদিস: ৪০৮৫) ঋণদাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ : ঋণ প্রদান করার জন্য ঋণদাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তার জন্য দোয়া করা সুন্নত। এতে সে খুশি হয় এবং ঋণদানে উৎসাহ বোধ করে। আবদুল্লাহ ইবনে আবি রাবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, হুনাইন যুদ্ধের সময় নবী (সা.) আমার কাছ থেকে ৩০ বা ৪০ হাজার (দিরহাম) ঋণ নিয়েছিলেন। যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে তিনি তা পরিশোধ করেন এবং বলেন, ‘বারকাল্লাহু লাকা ফি আহলিকা ওয়া মালিকা’। (আল্লাহ তোমার পরিবারে ও সম্পদে বরকত দান করুন) ঋণের বিনিময় হলো, পরিশোধ ও কৃতজ্ঞতা। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৬৪১০; নাসায়ি, হাদিস: ৪৬৮৩) ঋণগ্রহীতার প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া : ঋণগ্রহীতা বাস্তবিকই অসচ্ছল ও অভাবী হলে ঋণ দাতার উচিত ঋণগ্রহীতার প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি অভাবগ্রস্ত হয় তাহলে সচ্ছলতা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেওয়া বিধেয়। আর যদি তোমরা ছেড়ে দাও তবে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৮০) হাদিসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অভাবী ঋণগ্রস্তকে অবকাশ দেয় অথবা ক্ষমা করে দেয়, আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের নিচে আশ্রয় দেবেন যে দিন তাঁর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩০৬) ঋণগ্রহীতাকে কষ্ট না দেওয়া : খোঁটা বা অন্য কোনোভাবে ঋণগ্রহীতাকে কষ্ট দিলে ঋণ প্রদানের সাওয়াব নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ঋণ দেওয়া অপেক্ষা ঋণপ্রার্থীর সঙ্গে সুন্দর কথা বলা ও দোয়া করাই উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা, খোঁটা ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের সদাকাকে সেই ব্যক্তির মতো নষ্ট কোরো না, যে নিজের সম্পদ ব্যয় করে মানুষকে দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত এ রকম—যেমন এক মসৃণ পাথরের ওপর মাটি জমে আছে, অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ে এবং সেটিকে (পুনরায়) মসৃণ পাথর বানিয়ে দেয়। এরূপ লোক যা উপার্জন করে তার কিছুই তাদের হস্তগত হয় না। আর আল্লাহ কাফেরদের হিদায়াতে উপনীত করেন না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬৪) নম্রতার সঙ্গে পাওনা চাওয়া : ঋণ পরিশোধের সময় হলে বা প্রয়োজনে আগেও পাওনা চাওয়া যায়। তবে সর্বাবস্থায় নম্রতার সঙ্গে চাওয়া উচিত। কঠোরতা, গালাগাল, ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকা উচিত। উত্তম চরিত্র মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। লেনদেন করতে উত্তম চরিত্রের প্রকাশ একান্ত কাম্য। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন যে নম্রতার সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয় করে ও পাওনা ফিরিয়ে চায়। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৯৭০) পরিশেষে বলা যায়, মানুষের একার পক্ষে সব সময় সব প্রয়োজন পূরণ সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে পরস্পরকে সাহায্য করতে হয়। প্রয়োজনে ঋণের আদান-প্রদান হয়। বিশেষ প্রয়োজনে কেউ ঋণ চাইলে সামর্থ্য থাকলে এবং সমীচীন মনে হলে ঋণ দেওয়া উচিত। আবার ঋণগ্রহীতারও ঋণ পরিশোধে আন্তরিক হওয়া উচিত।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হজের নিবন্ধন ",ইসলাম ধর্ম,"২০২৪ সালের হজে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের নিবন্ধন শুরু হবে আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে। নিবন্ধন চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ২০২৪ সালের হজের নিবন্ধন বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটায় এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। সরকারিভাবে আগামী বছর হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বিশেষ হজ প্যাকেজের মধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। সরকারি হজ প্যাকেজের সঙ্গে সমন্বয় করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে। প্রাক-নিবন্ধনের সময় নেওয়া ২৯ হাজার টাকা বাদে প্যাকেজের বাকি টাকা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। হজযাত্রীরা নিবন্ধনের আগে হজ প্যাকেজ সম্পর্কে অবহিত হয়ে নিবন্ধন করবেন, নিবন্ধনের পর প্যাকেজ পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। নিবন্ধনের পর হজে যেতে অসমর্থ্য হলে এরই মধ্যে ব্যয় করা অর্থ কর্তনের পর অবশিষ্ট অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। হজযাত্রীর সুযোগ-সুবিধা উল্লেখ করে হজ এজেন্সি হজযাত্রীর সঙ্গে লিখিত চুক্তি সম্পাদন করবে। এজেন্সি তার নিবন্ধিত হজযাত্রীর সর্বোচ্চ ৫% প্রতিস্থাপন করতে পারবে বলে নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,স্নিগ্ধ ফজরের অনন্য উপকারিতা,ইসলাম ধর্ম,"ইসলাম যে পাঁচটি স্তম্ভের ওপর সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে সালাত বা নামাজ তার অন্যতম। ইমানের পর সালাতের গুরুত্ব সর্বাগ্রে। সালাত জীবনে সফলতা বয়ে আনে। পবিত্র ও আলোকিত জীবনবোধে উদ্বুদ্ধ করে। কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার সালাত হিসাব হবে। যদি নামাজ ঠিক হয়, তবে তার সব আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি নামাজ বিনষ্ট হয় তবে তার সব আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। তাবরানি : ১৯২৯। নামাজ এমন এক ইবাদত যা সারা বছর দৈনিক পাঁচবার আদায় করতে হয়। মৃত্যু ছাড়া আর কোনো অবস্থাতেই নামাজ মাফ হয় না। এমনকি মৃত্যুশয্যায় স্বাভাবিক জ্ঞান থাকা অবস্থায় নামাজ থেকে বিরত থাকার কোনো বিধান নেই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজের গুরুত্ব আরও বেশি। আজকে আমরা ফজরের নামাজ আদায়ের বিশেষ কয়েকটি উপকারী দিক নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। এক. ফজরের নামাজে দাঁড়ানো, সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সমান। হাদিসে হজরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত জেগে নামাজ পড়ল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন পুরো রাত জেগে নামাজ পড়ল। সহিহ মুসলিম : ১০৯৬। দুই. ওই দিনের পুরোটা আল্লাহর জিম্মায় থাকার সৌভাগ্য হয়। ফজরের নামাজ পড়লেই শুধু এ ঈর্ষণীয় সৌভাগ্য লাভ করা সম্ভব। সাহাবি হজরত জুনদব ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সুফিয়ান আল বাজালি (রা.) বলেন, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর জিম্মায় চলে গেল। অতএব আল্লাহ যেন তার জিম্মার বিষয়ে তোমাদের কোনোরূপ অভিযুক্ত না করেন। সুনানে তিরমিজি : ২১৮৪। তিন. ফজরের নামাজ কিয়ামতের দিন নূর হয়ে দেখা দেবে। হজরত বুরাইদা আল আসলামি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যারা আঁধারে (ফজর নামাজে) মসজিদের দিকে হেঁটে যায় তাদের কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ নূর প্রাপ্তির সুসংবাদ দাও। সুনানে আবু দাউদ : ৪৯৪। চার. জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাত প্রাপ্তির সুসংবাদ। হজরত আবু জুহাইর উমারা ইবনে রুয়াইবা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের আগে (ফজর ও আসরের নামাজ) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। সহিহ মুসলিম : ৬৩৪। পাঁচ. মুনাফেকি থেকে মুক্তি পাবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুনাফেকদের ওপর ফজর ও এশার নামাজ অপেক্ষা অধিক ভারী নামাজ আর নেই। যদি তারা এর ফজিলত ও গুরুত্ব জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছার ভরে অবশ্যই (মসজিদে) উপস্থিত হতো। সহিহ বোখারি : ৬৫৭। ছয়. সরাসরি আল্লাহর দরবারে নিজের নাম আলোচিত হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কাছে পালাক্রমে দিনে ও রাতে ফেরেশতারা আসে। তারা আসর ও ফজরের সময় একত্রিত হয়। যারা রাতের কর্তব্যে ছিল তারা ওপরে উঠে যায়। আল্লাহ তো সব জানেন, তবুও ফেরেশতাদের প্রশ্ন করেন, আমার বান্দাদের কেমন রেখে এলে? ফেরেশতারা বলে, আমরা তাদের নামাজরত রেখে এসেছি। যখন গিয়েছিলাম তখনো তারা নামাজরত ছিল। সহিহ বোখারি : ৫৪০। সাত. দুনিয়া ও আখেরাতের সেরা বস্তু অর্জিত হয়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ফজরের দুই রাকাত দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে, সবকিছুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। সহিহ মুসলিম : ১২৪০। আট. পরিপূর্ণ এক হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে, যদি সে সূর্য ওঠা পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকে। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হরজত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায়ান্তে বসে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থেকে সূর্য উদয় হওয়ার পর দুই রাকাত নফল নামাজ (ইশরাক) আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ এক হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে। ‘পরিপূর্ণ’ এ শব্দটি তিনি (নবী করিম সা.) তিনবার বলেছেন। সুনানে তিরমিজি : ৫৮৬। ৯. তুলনাহীন গণিমত লাভ করবে। খলিফা হজরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) নাজদের দিকে এক অভিযানে একটি সেনাদল পাঠান। তারা প্রচুর গণিমতের সম্পদ অর্জন করে এবং তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। তাদের সঙ্গে যায়নি এমন এক লোক বলল, অল্প সময়ের মধ্যে এত পরিমাণে উত্তম গণিমত নিয়ে এদের চেয়ে তাড়াতাড়ি আর কোনো সেনাদলকে আমরা ফিরে আসতে দেখিনি। তখন হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের এমন এক দলের কথা বলব না, যারা এদের চেয়ে তাড়াতাড়ি উত্তম গণিমত নিয়ে ফিরে আসে? যারা ফজরের নামাজের জামাতে হাজির হয়, (নামাজ শেষে) সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহতায়ালার জিকির করতে থাকে, তারাই অল্প সময়ের মধ্যে উত্তম গণিমতসহ প্রত্যাবর্তনকারী। সুনানে তিরমিজি : ৩৬৪১।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral প্রথম আলো,"মা-বাবার কবর জিয়ারতের দোয়া ",ইসলাম ধর্ম,"মা-বাবার কবরের পাশে গেলে মন বিষণ্ন হওয়া বা চোখ অশ্রুসিক্ত হওয়া স্বাভাবিক। তাই কবরের কাছে গিয়ে হা–হুতাশ করা ঠিক নয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর আম্মার কবর জিয়ারত করতে গিয়ে ক্রন্দন করেন। তাঁর সঙ্গীসাথীরাও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি আমার রবের কাছে আমার মায়ের কবর জিয়ারত করার অনুমতি চাইলে তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন। কাজেই তোমরা কবর জিয়ারত করবে। কেননা, তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (আবু দাউদ) কবর জিয়ারত করার নিয়ম কবরের পাশে গিয়ে দোয়া পড়া, মা-বাবার মুক্তির জন্য দোয়া করাই জিয়ারতের উদ্দেশ্য। নিজেদের জন্যও দোয়া করা উত্তম। জিয়ারত শুরু করতে হয় এই বলে, ‘আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মুমিনিনা ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন।’ (মুসলিম) এর পর দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা ও ইখলাস এবং আয়াতুল কুরসি পড়তে হবে। তারপর মা-বাবার (মৃত ব্যক্তির) রুহের মাগফিরাত বা ক্ষমা প্রার্থনা করে মোনাজাত করতে হবে। কবর জিয়ারতের সময় কবর জিয়ারতের জন্য কোনো সময়ের বিধিনিষেধ নেই। যেকোনো দিন যেকোনো সময় কবর জিয়ারত করা যায়। তবে জুমার দিন কবর জিয়ারত করলে জিয়ারতকারীর জন্যও তা ক্ষমালাভের কারণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি জুমায় তার মা-বাবা বা তাদের একজনের কবর জিয়ারত করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে এবং মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারীদের মধ্যে গণ্য করা হবে।’ কবর জিয়ারতের দোয়া কবর জিয়ারতের দোয়া সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যে দোয়াগুলো পড়তেন, তা হলো, ‘আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর; ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আছার।’ এর অর্থ, ‘হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের আগে তোমরা কবরে গেছ এবং আমরা পরে আসছি।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,০৫৩) আসসালামু আলাইকুম দার ক্বাওমিম মুউমিনি না ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুনা। অর্থ: মুমিন ঘরবাসীর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশা আল্লাহ, আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব। (সহিহ মুসলিম: ২৪৯) কবরস্থানে পবিত্র হয়ে গিয়ে প্রথমে সালামের উল্লেখসহ দোয়া পড়তে হবে। এ ছাড়া অন্য মুখস্থ সুরা পড়ে কবরবাসীর জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে হবে। কবরস্থানে যা করবেন না মহানবী (সা.) কবরস্থানে বেশ কিছু কাজ না করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলোর কয়েকটি তুলে ধরা হলো: ১.রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে কবর বানিয়ো না এবং কবরগুলোকে উৎসবের জায়গা বানিয়ো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২,০৪২) ২.রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পুরো পৃথিবীই মসজিদ, শুধু কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩১৭) ৩. কবরস্থানে পশু জবাই করা যাবে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইসলামে (কবরের পাশে) কোনো জবাই নেই। জাহিলি যুগের লোকজন কবরে গাভি বা ছাগল জবাই করত।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩,২২২) ৪.কবরের ওপরে বসা নিষেধ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ কবরের ওপর বসবে, এর চেয়ে উত্তম হলো আগুনের ওপর বসা। আর সেই আগুন যেন তার কাপড় পুড়িয়ে দিয়ে চামড়া পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ৯৭১) ৫.কবরের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করা নিষেধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কবরের দিকে (মুখ করে) নামাজ আদায় করবে না এবং তার ওপর বসবেও না।’ (মুসলিম, হাদিস: ৯৭২)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,মৃত্যুর পর মুমিনের জীবন কেমন হবে,ইসলাম ধর্ম,"মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সময়টুকু মানুষ কবর তথা সমাধিস্থলে অবস্থান করবে। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় এই সময়কাল ‘বারজাখ’ বলা হয়। বারজাখ অর্থ দুটি জিনিসের মধ্যবর্তীয় অন্তরাল। পবিত্র কোরআনে মৃত্যু থেকে কিয়ামতের মধ্যবর্তী সময়কে ‘বারজাখ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন সে বলে, হে আমার প্রতিপালক, আমাকে পুনরায় প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকাজ করতে পারি যা আমি আগে করিনি। না, এটা হওয়ার নয়। এটা তো তার একটি কথা মাত্র। তাদের সম্মুখে বারজাখ থাকবে উত্থান দিবস পর্যন্ত। ’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৯৯-১০০) মৃত্যু থেকেই নতুন জীবন : মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষ নতুন জীবনে প্রবেশ করে। সেটা হলো ‘আলমে বারজাখ’। ইমাম শাবি (রহ.) বলেন, বারজাখ হলো দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যবর্তী একটি জীবন। যা যেমন পার্থিব জীবন নয়, তেমন পরকালীন জীবনও নয়। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৩/৩২১) ফেরেশতাদের জিজ্ঞাসাবাদ : কবরের জীবনের প্রথম ধাপ হলো ফেরেশতাদের জিজ্ঞাসাবাদ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মৃত ব্যক্তি বা তোমাদের কাউকে যখন কবরে রাখা হয়, তখন কালো বর্ণের এবং নীল চোখবিশিষ্ট দুজন ফেরেশতা আসেন তার কাছে। তাঁদের মধ্যে একজনকে মুনকার এবং অন্যজনকে নাকির বলা হয়। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৭১) যা জিজ্ঞাসা করা হবে : বারা ইবনে আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসের ভাষ্য মতে, কবরে তিনটি প্রশ্ন করা হবে। তা হলো, তোমার প্রতিপালক কে? তোমার দ্বিন বা ধর্ম কি? তোমার নবী কে? (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩১২০) প্রশ্নের উত্তরে মুমিন ব্যক্তি বলবে, আমার প্রতিপালক আল্লাহ, আমার ধর্ম ইসলাম, আর তিনি হলেন আমাদের মাঝে প্রেরিত রাসুল মুহাম্মদ (সা.)। তখন ফেরেশতারা তাদের বলবে, জাহান্নামে তোমার জন্য নির্ধারিত স্থান দেখে নাও। আল্লাহ এই স্থানের পরিবর্তে তোমাকে জান্নাতে স্থান দান করেছেন। অতঃপর তাকে জান্নাত ও জাহান্নাম উভয় স্থান দেখানো হবে। অন্যদিকে মুনাফিক ও অবিশ্বাসীরা উত্তর দেবে আমি জানি না। তখন তাকে বলা হবে, তুমি জানতে চাওনি, তুমি পাঠ করোনি। এরপর সে শাস্তির মুখোমুখি হবে। (শহরুত তহাবিয়্যা : ২/৫৭২-৫৭৮) কবর না দিলেও কি শাস্তি হয় : আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো মৃত্যুর পর সবাই মুনকার-নাকিরের প্রশ্নের মুখোমুখি হবে এবং বারজাখের শাস্তি ও সুখ ভোগ করবে। চাই তাকে দাফন করা হোক বা না হোক। এমনকি তার দেহ যদি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, হিংস্র প্রাণী তাকে খেয়ে ফেলে, সে পুরে ভস্ম হয়ে যায়, তাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হয় অথবা ছাই বানিয়ে তার দেহাবশেষ বাতাসে উড়িয়ে দেয় বা সমুদ্রে ডুবে যায়। যেমন নুহ (আ.)-এর সম্প্রদায় সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘তাদের অপরাধের জন্য তাদের নিমজ্জিত করা হয়েছিল এবং পরে তাদের দাখিল করা হয়েছিল আগুনে। এরপর তারা কাউকে আল্লাহর মোকাবেলায় পায়নি সাহায্যকারী। ’ (সুরা নুহ, আয়াত : ২৫) ঘুমিয়ে থাকবে মুমিন ব্যক্তি : আলমে বারজাখে মুমিন ব্যক্তি জান্নাতের সুখ-শান্তি উপভোগ করবে এবং প্রশান্তচিত্তে ঘুমিয়ে থাকবে। হাদিসে এসেছে, মুমিনের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়ে মুনকার-নাকির বলবে, আমরা জানতাম তুমি এ কথাই বলবে। তারপর সে ব্যক্তির কবর দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ৭০ গজ করে প্রশস্ত করা হবে এবং তার জন্য এখানে আলোর ব্যবস্থা করা হবে। তারপর তাকে বলা হবে, তুমি ঘুমিয়ে থাকো। তখন সে বলবে, আমার পরিবার-পরিজনকে সুসংবাদ দেওয়া জন্য আমি তাদের কাছে ফিরে যেতে চাই। তারা উভয়ে বলবে, বাসরঘরের বরের মতো তুমি এখানে এমন গভীর ঘুম দাও, যাকে তার পরিবারের সবচেয়ে প্রিয়জন ছাড়া আর কোনো ব্যক্তি জাগিয়ে তুলতে পারে না। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৭১) এদিকে ইঙ্গিত দিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কবর হলো জান্নাতের উদ্যানগুলোর একটি উদ্যান অথবা জাহান্নামের গর্তগুলোর একটি গর্ত। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬০) জাহান্নামিদের জন্য শাস্তি : জাহান্নামিরা মৃত্যুর পর থেকেই শাস্তির মুখোমুখি হবে। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর আল্লাহ তাকে তাদের ষড়যন্ত্র অনিষ্ট থেকে রক্ষা করলেন এবং কঠিন শাস্তি পরিবেষ্টন করল ফিরাউন সম্প্রদায়কে। তাদের উপস্থিত করা হয় আগুনের সম্মুখে সকাল-সন্ধ্যা এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন বলা হবে, ফিরাউন সম্প্রদায়কে নিক্ষেপ কোরো কঠিন শাস্তিতে। ’ (সুরা মুমিন, আয়াত : ৪৫-৪৬) শহীদের মৃত্যু নেই : আল্লাহর পথে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের বাহ্যত মৃত্যু হলেও, প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে রিজিকপ্রাপ্ত। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদের কখনোই মৃত মনে কোরো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দিয়েছেন তাতে তারা আনন্দিত এবং তাদের পেছনে যারা এখনো তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি তাদের জন্য আনন্দ প্রকাশ করে এ জন্য যে তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৬৯-১৭০) মৃত্যুর পরও যারা নেকি লাভ করবে : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার যেসব কাজ ও তার যেসব পুণ্য তার সঙ্গে যুক্ত হয় তা হলো, যে জ্ঞান সে অন্যকে শিক্ষা দিয়েছে এবং তার প্রচার করেছে, তার রেখে যাওয়া সৎকর্মপরায়ণ সন্তান, কোরআন, যা সে ওয়ারিশি সূত্রে রেখে গেছে অথবা মাসজিদ, যা সে নির্মাণ করিয়েছে অথবা পথিক-মুসাফিরদের জন্য যে সরাইখানা নির্মাণ করেছে অথবা পানির নহর, যা সে খনন করেছে অথবা তার জীবদ্দশায় ও সুস্থাবস্থায় তার সম্পদ থেকে যে দান-খয়রাত করেছে, তা তার মৃত্যুর পরও তার সঙ্গে (তার আমলনামায়) যুক্ত হবে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪১) মুমিন আত্মার সম্মিলন : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর মুমিন ব্যক্তির আত্মাকে যখন মুমিনদের রুহগুলোর কাছে নিয়ে যান। তোমাদের কেউ প্রবাস থেকে এলে তোমরা যেরূপ আনন্দিত হও, মুমিনদের রুহও ওই নবাগত রুহকে পেয়ে ততোধিক আনন্দিত হয়। মুমিনদের রুহ নবাগত রুহকে জিজ্ঞাসা করে যে অমুক ব্যক্তি দুনিয়াতে কী কাজ করেছে? তখন ফেরেশতারা বলেন, তার সম্পর্কে তোমরা কি জিজ্ঞাসা করবে? সে দুনিয়ার চিন্তা-ভাবনায় ছিল। যখন নবাগত রুহ বলে, সে কি তোমাদের কাছে আসেনি? তখন আসমানের ফেরেশতারা বলেন, তাকে তার বাসস্থান হাবিয়াতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৮৩৩)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"অপুষ্টিতে গাজার শিশুরা, ক্ষুধায় মাথা ঘোরাচ্ছে ",ইসলাম ধর্ম,"বন্দি বিনিময়ের জন্য ইসরাইলকে যে শর্ত দিলো হামাস :: বৈশ্বিক নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা এরদোগানের :: খান ইউনিসের ২০ শতাংশ বাসিন্দার জন্য ইসরাইলের আল্টিমেটাম যুক্তরাষ্ট্র যদি ইয়েমেনে হামলা করে তাহলে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছে দেশটির ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। গত বুধবার হুথি নেতা আবদেল-মালেক আল-হুথি এ হুমকি দিয়েছেন। ইয়েমেনের বেশিরভাগ ভূখ-ের নিয়ন্ত্রণে থাকা হুথি বিদ্রোহীদের নেতা আবদেল-মালেক আল-হুথি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি উত্তেজনা বাড়াতে চায় এবং আমাদের দেশে হামলা বা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর মতো বোকামি করতে চায় তাহলে আমরা বসে থাকব না। টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি আরো বলেছেন, কোনো মার্কিনি আমাদের টার্গেট করলে তাকে আমরা নিশানা করব। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, স্বার্থ ও নৌ চলাচলকে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও সামরিক অভিযানের নিশানা হবে। হুথি নেতা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে চাইলে তাদের মনে রাখা উচিত যে, আমরা তাদের ভয় পাই না এবং তাদের পুরো জনগোষ্ঠীর মুখোমুখি হতে হবে। ইয়েমেনে মার্কিন সেনা পাঠানোর বিরুদ্ধে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, আফগানিস্তান ও ভিয়েতনামের চেয়ে তাদের পরিণতি খারাপ হবে। গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা করছে হুথিরা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের কয়েকটি জাহাজ কোম্পানি সুয়েজ খাল দিয়ে নৌ চলাচল এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লোহিত সাগরে হুথিদের একের পর এক হামলার প্রতিবাদে ১০ দেশের জোট ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই জোটে যোগ দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বাহরাইন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সিসিলিস এবং স্পেন। বন্দি বিনিময়ের জন্য ইসরাইলকে যে শর্ত দিল হামাস : ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হলে বন্দি বিনিময়ে কোনো আলোচনা হবে না বলে জানিয়েছে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাস। গতকাল এক বিবৃতিতে গাজার শাসক গোষ্ঠীটি এই অবস্থান তুলে ধরেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তা হলো, আগ্রাসন পুরোপুরি বন্ধ না হলে বন্দিদের নিয়ে বা বন্দি বিনিময়ে কোনো আলোচনা হবে না। ইসরাইল ৪০ বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু হামাস তাতে রাজি হয়নি বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে। ইসরাইলি প্রস্তাব নিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বর্তমানে মিসরে রয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন, আর দরকার আরো মানবিক সহায়তা। এই প্রথমবারের মতো গাজার আরেকটি সংগঠন ইসলামিক জিহাদকেও আলোচনায় ডাকা হয়েছে। তারাও জানিয়ে দিয়েছে, গাজায় আটক প্রায় ১০০ জনের বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে আটক সব ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি দাবি করেছে। তারাও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছে। আলোচনার সঙ্গে জড়িত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, হামাস মানবিক বিরতি চাচ্ছে না। তারা গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের পূর্ণ অবসান চায়। হামাস মনে করে, বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হলে ইসরাইল আরো নৃশংসভাবে হামলা চালাতে থাকবে। কাজেই বন্দিদের বিনিময়েই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দরকার। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমাদের সব বন্দির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজা যুদ্ধ বন্ধ হবে না। গাজা উপত্যকা থেকে কেউ যেন আর কোনো দিন ইসরাইলের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করাকেও গাজা আগ্রাসনের অন্যতম লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু। বুধবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু এসব কথা বলেন। নেতানিয়াহু বলেন, যেসব লক্ষ্যে গাজায় অভিযান চলছে তার একটি হচ্ছে হামাসকে নির্মূল করা। বৈশ্বিক নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা এরদোগানের : গাজা যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব এখনো কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করলেন প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। বুধবার দেশটির একটি বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে একে মানবতার জন্য লজ্জাজনক আখ্যায়িত করে বলেন, ইসরাইল যখন গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে তখন বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলো নিষ্ক্রিয়। এটা খুব লজ্জাজনক। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ধর্মতত্ত্ববিদ সুলেমান উলুদাগ, ইতিহাসবিদ আলী বিরিঞ্চি, গায়ক এমেল সাইন, চিত্রশিল্পী আলহামি আতালে, পরিচালক সামি সেকেরোগ্লু, ডিজিটাল শিল্পী রেফিক আনাদোল, স্থপতি সিনান জেনিম এবং লেখক নাজান বেকিরোগ্লুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। খান ইউনিসের ২০ শতাংশ বাসিন্দার জন্য ইসরাইলের আল্টিমেটাম : ইসরাইল একটি নতুন আলটিমেটাম জারি করেছে, অবরুদ্ধ গাজার প্রধান দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটির বিশাল এলাকার বাসিন্দাদের পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, জাতিসংঘ বলেছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় [ওসিএইচএ] বলেছে যে, ইসরাইল নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে যেখানে খান ইউনিস শহরের প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা জুড়ে রয়েছে যা ব্যাপকভাবে বহির্গমনের জন্য চিহ্নিত ছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে এলাকাটি ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি লোকের বাসস্থান ছিল। এ অঞ্চলে ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেখানে ১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে রাখা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই পূর্বে উত্তর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আরেক যোদ্ধাকে হারালো হিজবুল্লাহ : লেবাননের হিজবুল্লাহ বলেছে যে, ইসরাইলের সাথে সীমান্ত এলাকায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে তাদের একজন যোদ্ধা নিহত হয়েছে। লেবাননের গোষ্ঠীর একটি বিবৃতিতে যোদ্ধাটিকে ইব্রাহিম রাসলান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এটি বলা হয়েছে যে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক আক্রমণের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতি হিজবুল্লাহর সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ‘জেরুজালেমের রাস্তায়’ হত্যা করা হয়েছে। গোষ্ঠীটি আরো বলেছে যে, তারা আল-আবাদে একটি ইসরাইলি সামরিক সাইট এবং উপযুক্ত অস্ত্র দিয়ে দুর্গকে লক্ষ্যবস্তু করেছে এবং ‘নিশ্চিত হতাহতের’ ঘটনা ঘটিয়েছে। আলাদাভাবে, লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা এনএনএ-এর উদ্ধৃতি দিয়ে লেবানিজ গ্রুপটি বলেছে যে, তারা ‘বিরকাত রিশা সাইটের আশেপাশে একটি ইসরাইলি পদাতিক বাহিনীকে টার্গেট করে’ এবং ইসরাইলি সেনাদের হতাহতের ঘটনা ঘটায়। হিজবুল্লাহর পূর্ববর্তী বিবৃতি অনুসারে, ৮ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত যোদ্ধাদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮-এ। অপুষ্টিতে গাজার শিশুরা ক্ষুধায় মাথা ঘোরাচ্ছে : দক্ষিণ গাজায় বাস্তুচ্যুত শিশুরা মুরগির জন্য কান্না করছিল, কিন্তু তাদের মা সারাদিনের জন্য পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য রেখে গিয়েছিলেন একটি মটরদানার টিন। এক ব্যক্তি তাকে কাঁদতে দেখে তার প্রতি করুণা করে রেখে গিয়েছিলেন সেটি। তিনি বলেছিলেন যে, তার বাচ্চাদের ওজন কমে গেছে এবং তারা পর্যাপ্ত না খাওয়ার কারণে মাথা ঘোরাচ্ছে। গাজার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আমার বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য ভিক্ষা করছিলাম এবং কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি সমাজকল্যাণ অফিসে যাই, তারা বলে মসজিদে যাও। আমি মসজিদে যাই, তারা বলে অ্যাফেয়ার্সে যাও’। কল্যাণ মন্ত্রণালয় যা সাধারণত কষ্টে থাকা মানুষের কাছে ময়দার মতো মৌলিক পণ্য বিতরণের আয়োজন করে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী ফিলিস্তিনিদের অগণিত সমস্যার মধ্যে ক্ষুধা সবচেয়ে চাপে পরিণত হয়েছে। সাহায্য ট্রাকগুলো প্রয়োজনের সামান্য অংশই আনতে সক্ষম এবং যুদ্ধের বিশৃঙ্খলার কারণে বিতরণ অসম। কিছু ট্রাক খাবারের জন্য মরিয়া লোকরা থামিয়ে লুট করেছে। আর বিধ্বস্ত অঞ্চলের কিছু অংশ তাদের নাগালের বাইরে, কারণ প্রবেশের রাস্তাগুলো সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র। এমনকি রাফাহতে, যেটির মধ্য দিয়ে মিসরে একটি ক্রসিং রয়েছে যার মাধ্যমে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো প্রবেশ করে এবং এটি এমন একটি এলাকা যেখানে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বেসামরিকদের আশ্রয় নিতে বলেছে, খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব এতটাই তীব্র যে, এটি মানুষের ওজন হ্রাস করে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাফাহ-এর প্রাথমিক পরিচর্যা চিকিৎসক সামিয়া আবু সালাহ বলেন, ‘আমরা লোকেদের বিষণœ অবস্থায় দেখতে শুরু করেছি’। তিনি বলেন, ওজন হ্রাস এবং রক্তাল্পতা একটি সাধারণ বিষয় এবং লোকেরা এত দুর্বল এবং ডিহাইড্রেটেড ছিল তারা বুকের সংক্রমণ এবং ত্বকের অবস্থার জন্য বেশি সংবেদনশীল। শিশুরা বিশেষভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং তাদের বৃদ্ধি প্রভাবিত হবে। হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সামরিক অভিযানে গৃহহীন গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগের মতো তাহানি নাসর রাফাহতে একটি তাঁবু শিবিরে শুধুমাত্র একটি বিষয়ের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন: কীভাবে পর্যাপ্ত খাবার এবং পানি খুঁজে পাওয়া যায় যাতে অন্তত একটি দিন কাটতে পারে। পেঁয়াজ একটি খাবার : ‘আমার বাচ্চারা আজ আমাকে বলেছে যে, তারা মুরগির গোশত খেতে চাইছে। আমি তাদের মুরগি কোথায় পাব? কোথায়? আমি কি জানি? আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন’ নাসর বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ‘দুদিন ধরে আমরা কোনো খাবার পাইনি। আমি কিভাবে আমার বাচ্চাদের বোকা বানাবো? কিছু পাস্তা দিয়ে? কিছু মসুর ডাল? যদি খুঁজে পেতাম’! তিনি বলেন, কখনও কখনও তিনি শুধুমাত্র পেঁয়াজকে খাবার তৈরির অবলম্বন করেছিলেন। নাসর তার তাঁবুতে মটরের টিন আনতে গেল সে বলল, একজন দয়ালু লোক তাকে দিয়েছে, যদিও সে নিজের জন্য কিনেছিল। ‘এই তো। সারাদিনের জন্য এইটুকুই’ সে রাগত স্বরে বলল। একটি চরম ঘটনা হওয়া থেকে দূরে, নাসরের দেয়া বিবরণটি রাফাহ এবং অন্য কোথাও রয়টার্সের সাথে কথা বলার অনেক সাক্ষাৎকারকারীর গল্পের প্রতিধ্বনি করেছে। লোকেরা দিনে মাত্র একবার খাওয়ার কথা বলেছিল, অপর্যাপ্ত পুষ্টিসহ অপর্যাপ্ত খাবার, রেশনের পানি, নোংরা পানি পান করে শিশুদের ডায়রিয়া হওয়ার কথা বলেছিল। ইসরাইলে হামাস-চালিত হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা স্ট্রিপের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় লাগাতার বর্বরতায় ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে যাদের মধ্যে ৮ হাজারের বেশি শিশু এবং ৬ হাজারের বেশি মহিলা। সেখানকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, গাজায় ইসরাইল একটি মানবিক বিপর্যয় ঘটিয়েছে। বাস্তুচ্যুত মহিলা মাহা আল-আলমি দক্ষিণ গাজা শহরের খান ইউনিসের একটি স্কুলে আটটি শিশু এবং নাতি-নাতনি নিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছেন। তিনি বলেছেন যে, ক্ষুধার অভিজ্ঞতাই সবাইকে বেশি আহত করছে। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে বলছি, আল্লাহর ইচ্ছায় একবার যুদ্ধ শেষ হলে ফিলিস্তিনি জনগণের মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সামনে বসতে হবে’। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"ধর্মকে কেন বারবার আঘাত করা হয়? ",অন্যান্য,"দিন দিন যেন দেশে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ বাড়ছে। আমাদের সমাজে দেখতে পাই মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং উপাসনালয়ে হামলা হতে। ভেঙে দেয়া হয় মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা। সম্প্রতি যা ঘটে গেল সেটা তো আমরা দেখলাম। রংপুরের পীরগঞ্জে জেলেপাড়ায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কিছু সন্ত্রাসী। এর আগে কুমিল্লায় পবিত্র কুরআন শরিফ রেখে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করেছে কিছু সন্ত্রাসী। যাতে বাংলার হিন্দু-মুসলমান আলাদা হয়ে যেতে পারে, দাঙ্গায় জড়াতে পারে। সেটা তারা পেরেছেও, যার ফল হিসেবে কিছু ধর্মান্ধ যাচাই-বাছাই ছাড়া পূজামণ্ডপে ভাঙচুর চালিয়েছে। এরপর ফেনী বড় মসজিদে কিছু সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এভাবে এর শেষ কোথায় হয়, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন! আমরা যদি একদম অতীতে ফিরে দেখি তবে দেখতে পাব ২০০২ সালের রঘুনাথ মন্দির হামলা, ২০১২ সালের কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা, ২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিএনএস ইশা খাঁ ঘাঁটি সংলঘœ মসজিদে বোমা হামলা চালানো হয়। এছাড়া ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাজশাহীর বাগমারা এলাকায় একটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় কিছু আত্মঘাতী হামলাকারী। এই হামলায় দুর্বৃত্তরাসহ নিহত হয় একজন এবং আহত হয় ৩০ জনেরও অধিক। ২০১৬ সালের ৮ জুন বগুড়ার শিয়া মসজিদের হামলা সম্পর্কেও আমাদের অজানা কিছু নয়। ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার একটি গ্রামে কালী মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ রকম হাজারো নথি আমাদের কাছে থাকতে পারে। কিন্তু এরপরও এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কোনো সচেতনতা কিংবা আইনি পদক্ষেপ আমরা দেখছি না। আমরা মসজিদ ভাঙলে হিন্দুদের দোষারোপ করি আর মন্দির ভাঙলে মুসলমানদের দোষারোপ করে থাকি। কিন্তু মূলত অপরাধী কারা তা আমরা যাচাই করি না। আসলে অপরাধী কোনো ধর্মের নয়। এরা অন্য একটি দল কিংবা গোত্র। যারা ধর্ম বিশ্বাস করে না তারাই এসব কর্মকাণ্ড করে থাকে। আসলে এদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এক ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের দাঙ্গা তৈরি করে দেয়া। ইসলাম কখনোই এসব সমর্থন করে না। আমার জানা মতে কোনো ধর্মেই এসব নোংরা কাজ সমর্থন করে না। প্রতিটা ধর্মই শান্তি চায়। সারাদেশে ২ লাখ ৫০ হাজার ৩১৯টিরও অধিক মসজিদ রয়েছে। ধর্মপরায়ণ মানুষ না থাকলে এত মসজিদ তৈরি হতো না বাংলাদেশে। একইভাবে মন্দিরের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে। ধর্মের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে বলেই দেশে এত বেশি বেশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে। কোনো ধর্মে মারামারি, হানাহানি এবং হামলা সমর্থন করে না। এটা কোনো ধর্মে উল্লেখও নেই। যারা এসব কথা বলে মানুষকে বিপথগামী করে তুলে তারা আসলেই ধর্মবিরোধী, দেশ ও জনগণের শত্রæ। তাই বর্তমান সরকারের কাছে প্রত্যাশা এসব কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের দেশ থেকে অতিদ্রুত উচ্ছেদ করা। সরকারেরও ধর্মের প্রতি আরো সহনশীল হতে হবে। বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের বিশ্বাস এবং ভালোবাসা আছে। তাই আমি আশা করি বর্তমান সরকার কোনো ধর্মকেই অবহেলা করবে না। প্রতিটা ধর্মের মানুষকে সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। বঙ্গবন্ধুর এই সাজানো সোনার বাংলায় যেন সব ধর্মের মানুষ সুন্দর এবং স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেটাই আমাদের কাম্য। দেশে যেন আর কোনো মসজিদ, মন্দির এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাঙতে না পারে সেদিকে নজর দেয়া অতীব জরুরি। আশা করি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টাকে গুরুত্বসহকারে দেখবেন। দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে তাদের ধর্মের প্রতি কখনোই আঘাত হানতে দেবে না বর্তমান সরকার। এটা আমরা বিশ্বাস। আমাদের এই সোনার বাংলায় ধর্মকে হাতিয়ার করে যেন কোনো ধরনের রাজনীতি করা না হয় সেটাও সবার মাথায় রাখতে হবে। আমাদের সবার এক হতে হবে। মুসলমানদের পাশে হিন্দু, হিন্দুর পাশে মুসলমান, এভাবেই সবার এক থাকতে হবে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ যদি এক হয়ে কাজ করতে পারে তবে আমাদের এই সোনার বাংলা বিশ্বের মাঝে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে থাকবে। চাই শুধু একতা। সম্মান দিতে হবে প্রতিটা ধর্মের মানুষকে। সম্মান দিতে হবে প্রতিটা ধর্মকে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানে দান সদাকার ফজিলত,ইসলাম ধর্ম,"ইসলাম ধর্মে দান সদাকা ও অন্যকে সহযোগিতার গুরুত্ব অপরিসীম। আর রমজান মাসে দানের গুরুত্ব ও সওয়াব অনেক বেশি। এ মাসের একটি নফল ইবাদত একটি ফরজ ইবাদতের সমান। আর একটি ফরজ ইবাদত করলে সত্তর গুণ সওয়াব পাওয়া যায়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম, যে মানুষের উপকার করে’ (তাবারানি)। রসুল (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় দানশীল। আর রমজান মাসে তিনি সবচেয়ে বেশি দান সদাকা করতেন। জিবরাইল (আ.) এ সময়ে তাঁর কাছে আসতেন এবং পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। রসুল (সা.) তখন প্রবাহিত বাতাসের চেয়ে অধিক দান-খয়রাত করতেন (মুসলিম)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যদি তোমাদের দানকে প্রকাশ করো ভালো কথা, তাতে কোনো দোষ নেই, তবে যদি তোমরা তা গোপন রাখো এবং চুপে চুপে তা অসহায়দের দিয়ে দাও, তবে তা হবে তোমাদের জন্য বেশি উত্তম। এ দানের কারণে আল্লাহ তোমাদের বহুবিধ গুনাহ খাতা মুছে দেবেন, আর তোমরা যাই কর না কেন, আল্লাহ সে সম্পর্কে অবগত আছেন’ (সুরা বাকারা-২৭১)। সুবহানাল্লাহ। সুতরাং বেশি বেশি দান-খয়রাত করা আমাদের উচিত। কখনো প্রকাশ্যে কখনো গোপনে। আল্লাহ আরও বলেন, ‘তোমরা যা দান-সদাকা কর তা তোমাদের জন্যই কল্যাণকর, কারণ তোমরা তা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই খরচ কর। তোমরা আজ যা কিছু দান করবে আগামীকাল তার পুরোপুরি বিনিময় আদায় করে দেওয়া হবে (সুরা বাকারা-২৭২)।’ যারা দিন রাত গোপনে প্রকাশ্যে নিজেদের মাল সম্পদ ব্যয় করে তাদের মালিকের দরবারে তাদের এ দানের প্রতিফল সুরক্ষিত রয়েছে। তাদের ওপর কোনোরকম ভয়ভীতি থাকবে না, তারা সেদিন চিন্তিতও হবে না (সুরা বাকারা-২৭৪)। সাহায্য-সহযোগিতা দান-সদাকা করতে হবে দীন-দরিদ্র, ফকির-মিসকিন, এতিম, অন্ধ, বিধবা, অসহায় ও গরিব আত্মীয়স্বজনকে। রসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাওয়া হলো দান সদাকার উপযুক্ত পাত্র কারা? আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘তারা তোমার কাছে জানতে চাইবে তারা কি খাতে খরচ করবে? তুমি তাদের বলে দাও, যা কিছুই তোমরা তোমাদের পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, অসহায়, মিসকিন এবং মুসাফিরের জন্য খরচ করবে, তাই আল্লাহ গ্রহণ করবেন। যা ভালো তোমরা করবে, আল্লাহ তা অবশ্যই জানতে পারবেন’ (সুরা বাকারা-২১৫)। অসহায়দের প্রতি সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করে বিপুল সওয়াব লাভের শ্রেষ্ঠ সময় রমজান। আমাদের সমাজে অনেক গরিব-দুঃখী আছেন যারা দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাহরি ও ইফতারের সামান্য খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খান। বছরের এই সময়ে তাদের জীবনযাত্রায় দুর্ভোগ বেড়ে যায়। এ ধরনের মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের প্রতিটি মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যারা নিজেদের ধনসম্পদ আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি বীজের মতো, যে বীজটি বপন করার পর তা থেকে সাতটি শিস বেরোলো, এর প্রতিটি শিষে রয়েছে ১০০ করে শস্যদানা, আল্লাহ যাকে চান তার জন্য এটাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন’ (সুরা বাকারা-২৬১)। এই রমজানে গরিব আত্মীয়স্বজনের খোঁজ নিন, তাদের মধ্যে কেউ আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলে তাকে সাহায্য করুন। আপনজনদের ভালোবাসুন। গরিবদের সম্মান করুন। রসুল (সা.) বলেছেন, যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ো, যে তোমার প্রতি অবিচার করে তাকে ক্ষমা কর’ (মুসলিম)। রহমত ও মাগফিরাতের মাসে দয়া ও ক্ষমার অনুশীলন করুন। এতিম, অসহায়, বিধবাদের খোঁজখবর নিন। তাদের মুক্তহস্তে দান করুন। তাহলে আল্লাহ খুশি হবেন। নাজাত পাওয়ার রাস্তা সহজ হবে। দান-খয়রাত সদাকা প্রাপকের হাতে পৌঁছে দিতে সচেষ্ট হোন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানের প্রথম জুমা আজ,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম জুমা আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ)। রহমতের দশকের চতুর্থ রোজায় পড়েছে বরকতময় এ জুমা। দিনটির বিশেষ গুরুত্ব কোরআন হাদিসে এসেছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ। এরপর নামাজ শেষ হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমা, (৬২), আয়াত, ৯-১০) আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- সূর্য উদিত হয় এমন সকল দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনেই আদম (আলাইহিস সালাম)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান হয়। এই দিনেই তাকে তা থেকে বের করা হয়। আর এই জুমার দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। - সহিহাহ ১৫০২, সহিহ আবু দাউদ ৯৬১, মুসলিম, তা’লীক সহিহ ইবনু খুজাইমাহ ৩/১১৬, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৮৮ [আল মাদানী প্রকাশনী] আগে মসজিদে যাওয়ার সওয়াব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন জুমার দিন আসে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন। (বুখারি, হাদিস, ৮৮২) দোয়া কবুল জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমার দিনে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাস করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস : ১৩৮৯)",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive যায়যায়দিন,"নুহ (আ.) নবীর অবাধ্য ছেলে ",ইসলাম ধর্ম," মহাপ্লাবন শুরু হওয়ার আগে হজরত নুহ (আ.) নিজের ছেলেকে ডাকলেন। পবিত্র কোরআনে আছে, ‘পাহাড়প্রমাণ ঢেউয়ের মাঝে এ তাদেরকে নিয়ে বয়ে চলল। নুহ তার পুত্র যে আলাদা ছিল তাকে ডেকে বলল, হে আমার পুত্র! আমাদের সঙ্গে ওঠো, আর অবিশ্বাসীদের সঙ্গে থেকো না।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪২) নুহ (আ.)-এর ছেলে যুক্তি দিলেন, আমি যদি পাহাড়ে গিয়ে উঠি, পাহাড়ের ওপর তো আর পানি পৌঁছাতে পারবে না। মহাপ্লাবন শুরু হলে পানি পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে পৌঁছাল। নুহ (আ.)-এর ছেলে ওই পানিতে ডুবে মারা যান। ওই ছেলে আল্লাহর অবাধ্য হয়েছিলেন। আল্লাহর আজাবের ব্যাপারে যুক্তি দাঁড় করিয়েছিলেন। হজরত নুহ (আ.) নিজের ছেলেকে পানিতে ডুবতে দেখে আল্লাহর কাছে প্রশ্ন করলেন। ‘নুহ তাঁর প্রতিপালককে সম্বোধন করে বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার পুত্র আমার পরিবারের একজন আর তোমার প্রতিশ্রুতি তো সত্য; আর তুমি তো বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪৫) জবাবে আল্লাহ বলেন, ‘হে নুহ! সে তোমার পরিবারের কেউ নয়। সে অসৎ কর্মপরায়ণ। সুতরাং যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে আমাকে অনুরোধ কোরো না। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, তুমি যেন অজ্ঞদের শামিল না হও।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪৬) নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করে বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে যাতে তোমাকে অনুরোধ না করি, এ জন্য আমি তোমার শরণ নিচ্ছি । তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো ও দয়া না করো, আমি ক্ষতিগ্রস্তদের শামিল হব।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪৭ ) নবী নুহ (আ.) মনে করেছিলেন রক্তসম্পর্কীয় মানুষ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হয়। আর আল্লাহ জানিয়ে দিলেন সম্পর্কটা হয় ইমানের দিক থেকে। একজন মুমিনের কাছে আরেকজন মুমিন তার পরিবারের মতো আপন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"খরা, অনাবৃষ্টি থেকে বাঁচতে গাছ অপরিহার্য ",ইসলাম ধর্ম,"কেউ যদি গাছ লাগায় সেখান থেকে যে কেউ উপকার গ্রহণ করুক তা আমার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এমনকি কেউ যদি আমার লাগানো গাছ থেকে চুরি করে খায়, সেটাও বিফলে যাবে না। হাঁ, চুরির কারণে তার গোনাহ হবে, কিন্তু আমি সওয়াব পেয়ে যাবো। হাদিসে এসেছে : মুসলিম যখন কোনো গাছ রোপণ করে, তো এর যে ফল খাওয়া হবেÑ এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এ থেকে যা চুরি যাবে তাও সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। হিংস্র প্রাণীও যদি তা থেকে খায় তাও সদাকা হবে। পাখি খেলে সদাকা হবে। (এমনকি) যে কেউ যে কোনোভাবে এ থেকে (উপকার) গ্রহণ করবে তা সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। (সহীহ মুসলিম : ১৫৫২)। এ বর্ণনার শেষ অংশ থেকে বোঝা যায়, শুধু ফলবান গাছ উদ্দেশ্য নয় এবং শুধু ফল খেয়ে উপকার গ্রহণ উদ্দেশ্য নয়, বরং যে কোনো প্রকারের গাছ এবং যে কোনো প্রকারের উপকার গ্রহণই সওয়াব অর্জনের মাধ্যম বলে গণ্য হবে। আরেক বর্ণনায় এসেছে : কোনো ব্যক্তি যখন গাছ লাগায়, তো এ গাছে যতো ফল হবে, তার আমলনামায় এ ফল পরিমাণ সওয়াব লেখা হবে। (মুসনাদে আহমাদ : ২৩৫২০)। রাসূলুল্লাহ (সা.) যেমন নিজ হাতে গাছ লাগিয়েছেন, গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহিত করেছেন, তাঁর সাহাবীগণও নিজেরা গাছ লাগাতেন এবং একে সওয়াবের কাজ মনে করতেন। এমনকি এটি যে একটি ভালো কাজÑ এ বিষয়ে কারো মাঝে অস্পষ্টতা বা অজ্ঞতা থাকলে তা দূর করতেন। হযরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি গাছ লাগাচ্ছিলেন, এমন সময় তার পাশ দিয়ে এক ব্যক্তি যাচ্ছিলো। তাঁকে গাছ লাগাতে দেখে লোকটি বলে উঠলোÑ আপনি রাসূলের সাহাবী হয়ে গাছ লাগাচ্ছেন! তখন আবু দারদা (রা.) তাকে বললেন, একটু শুনে যাও; আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যখন কেউ গাছ লাগায়, আর তা থেকে কোনো মানুষ বা কোনো প্রাণী খায়, এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হয়। (মুসনাদে আহমাদ : ২৭৫০৬)। এ থেকেই বোঝা যায়, বৃক্ষরোপণের বিষয়ে নবীজীর উৎসাহকে সাহাবায়ে কেরাম কত গুরুত্ব সহকারে অনুধাবন করেছেন ও আমল করেছেন। মানুষের কল্যাণেই যেহেতু বেশি বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন, সবুজ ভূমির প্রয়োজন, ফলে নবীজী (সা.) শুধু গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহিত করেই ক্ষান্ত হননি বরং সবুজায়নের নতুন পথও উদ্ভাবন করেছেন। যে সকল জমি অনাবাদী পড়ে আছে সেগুলো যেন আবাদ হয়, সবুজ ভূমি বৃদ্ধি পায়, তাই নবীজী (সা.) অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন : যে ব্যক্তি কোনো পতিত ভূমি আবাদ করবে তা তার মালিকানায় চলে আসবে। (জামে তিরমিযী : ১৩৭৮)। বৃক্ষরোপণের বিভিন্ন ফযীলতের ঘোষণার সাথে সাথে নবীজী (সা.)-এর সর্বোচ্চ গুরুত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। এক হাদিসে তিনি ইরশাদ করেন : যদি কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহূর্তেও তোমাদের কারো হাতে একটি চারাগাছ থাকে, তাহলে সে যেন তা রোপণ করে দেয়। (মুসনাদে আহমাদ : ১২৯০২)। যে বৃক্ষ আমার এতো এতো উপকার করে, বিনা প্রয়োজনে আমরা যেন তা না কাটি। এটি যেমন এ নিআমতের না-শুকরি হবে তেমনি নিজের ক্ষতি ডেকে আনা হবে। কারণ, বৃক্ষ যতো কমতে থাকবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। খরা, অনাবৃষ্টি দেখা দেবে। পৃথিবীর আবাদী অনাবাদীতে পরিণত হবে। মানুষসহ পশু-পাখি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। সুতরাং বিনা প্রয়োজনে আমরা গাছ কাটব না। এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে : যে ব্যক্তি কোনো বড়ই গাছ কাটবে আল্লাহ তাকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। আবু দাউদ (রাহ.)-কে এ হাদিসের অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন : এ হাদিসের বক্তব্যটি সংক্ষিপ্ত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যে ব্যক্তি অকারণে বা না-হকভাবে মরুভূমির কোনো বড়ই গাছ কাটবে, যেখানে পথিক বা কোনো প্রাণী ছায়াগ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (দ্র. সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৫২৩৯)। তবে কেউ কেউ বলেন, এ হাদিস হরম অঞ্চলের বড়ই গাছ কাটার সাথে সম্পৃক্ত। তো যাইহোক অকারণে গাছকাটা যে নিজেদের ক্ষতি ও সওয়াব থেকে মাহরূমিÑ উপরের আলোচনায় আশা করি তা স্পষ্ট হয়েছে। সুতরাং আমরা বেশি বেশি গাছ লাগাব, অকারণে গাছ কাটব না। দুনিয়াবী অনেক কাজের ক্ষেত্রেই সে কাজের প্রতি গুরুত্বারোপের সাথে সাথে- নবীজী তাঁর সাহাবীদের মানসিকতাকে আখেরাতমুখি করেছেন। তো বৃক্ষরোপণের ক্ষেত্রেও নবীজী এমনটি করেছেন। তাঁর প্রিয় সাহাবী গাছ লাগাচ্ছে তো তাকে জান্নাতে গাছ লাগানোর পথও বাতলে দিচ্ছেন : হযরত আবু হুরাইরা (রা.) একদিন গাছ লাগাচ্ছিলেন। এমন সময় নবীজী পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরাইরা! কী লাগাচ্ছো? তিনি বললেন, একটি চারা রোপণ করছি। নবীজী বললেন, আমি কি তোমাকে এর চেয়ে উত্তম রোপণের কথা বলে দেব? আবু হুরায়রা বললেন, আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই বলুন। তখন নবীজী (সা.) বললেন, বল, এর প্রতিটির বিনিময়ে জান্নাতে তোমার জন্য একটি করে গাছ লাগানো হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৮০৭)। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive যায়যায়দিন,"রোজা না রাখলে গ্রেপ্তার ",ইসলাম ধর্ম,"পুরো বিশ্বে এখন রমজান মাস চলছে। এ কারণে বদলে গেছে চিত্র। এমন কি বিশ্বের বড় বড় শহরেও রোজার মাসে চিত্র থাকে ভিন্ন রকম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে সব রাষ্ট্রপ্রধানরা ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। মধ্যপ্রাচ্যের রোজার মাসে খাদ্রপণ্য বিতরণের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। এদিকে বিভিন্ন দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এই সময় রোজা পালন করেন। কিন্তু সম্প্রতি এমন একটি দেশের খবর মিলেছে, যেখানে রোজা পালন না করলে প্রশাসনের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে নাইজেরিয়ায়। ইতোমধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে নাইজেরিয়া পুলিশ। মূলত আফ্রিকার এই দেশটির একটি প্রদেশে রোজার মাসে দিনের বেলা খাবার খেতে দেখার পর তাদের গ্রেফতার করা হয়। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়া ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও এখানকার ১২ প্রদেশে শরিয়া আইন চালু করা হয়। এই ১২ প্রদেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকই সংখ্যাগরিষ্ঠ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এসব প্রদেশের মধ্যে একটি হলো কানো। আর এখানকার ইসলামিক পুলিশ ‘হিসবাহ’ নামে পরিচিত এবং প্রতি বছর রমজান মাসে তারা খাবারের দোকান এবং বাজারে তল্লাশি চালিয়ে থাকে। গত মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত ১১ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং একজন নারী। গ্রেফতারের পর তারা আর ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা মিস করবেন না বলে শপথ করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। হিসবাহের মুখপাত্র লওয়াল ফাগে বিবিসিকে বলেছেন, আমরা মঙ্গলবার ১১ জনকে পেয়েছিলাম যার মধ্যে একজন নারীও ছিলেন, যিনি চিনাবাদাম বিক্রি করছিলেন এবং তাকে তার জিনিসপত্র থেকে খেতে দেখা গেছে এবং পরে কিছু লোক আমাদের এই বিষয়টি জানায়। তিনি বলেন, অনুসন্ধান ও তল্লাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে অমুসলিমরা এই অভিযানের আওতার বাইরে। লওয়াল ফাগে বলছেন, আমরা অমুসলিমদের গ্রেফতার করি না। কারণ এটি (রোজা) তাদের পালন করার বিষয় নয়। শুধু একটি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেই আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করি। আর তা হচ্ছে, যাদের রোজা রাখার কথা, সেসব মুসলমানের কাছে বিক্রি করার জন্য যারা খাবার রান্না করে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের সম্পর্কে ইসলামিক পুলিশের এই মুখপাত্র বলেন, তারা এখন থেকে রোজা রাখা শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তি পেয়েছে এবং ‘তাদের মধ্যে কারও কারও পরিবার যেন তাদের পর্যবেক্ষণ করে, সে জন্য আমাদের তাদের আত্মীয় বা অভিভাবকদেরও ডাকতে হয়েছিল।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative যুগান্তর,বঙ্গবন্ধু ছিলেন খাঁটি মুসলিম নেতা,ইসলাম ধর্ম,"ইংরেজদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতনে উপমহাদেশের মুসলমানরা যখন কোণঠাসা জীবনযাপন করছিল, তখন আল্লামা ইকবাল স্বপ্ন দেখালেন আলাদা ভূখণ্ড না হলে একদিন উপমহাদেশে ইসলাম এবং মুসলমানদের নাম গন্ধও থাকবে না। তখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং একে ফজলুল হক উপমহাদেশের মুসলমানদের দুর্দিন কাটিয়ে ওঠার জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ করছিলেন।১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জে এক সভায় তারা দু’জন বক্তৃতা করেন। বক্তৃতায় মুসলমানদের মনে আলাদা ভূখণ্ডের স্বপ্নের বীজ বুনে দেন। ওই সভার স্বেচ্ছাসেবীদের নেতা ছিলেন স্কুলছাত্র মুজিব। অল্প সময়ের জন্য কথা হয় সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে। পরে সোহরাওয়ার্দী কলকাতা ফিরে গিয়ে মুজিবের নামে চিঠি পাঠায়। তখনও গোপালগঞ্জে মুসলিম ছাত্রলীগ কমিটি গঠন হয়নি। সোহরাওয়ার্দীর আদেশ পেয়েই মুসলিম ছাত্রলীগ কমিটি গঠন করে জজবা নিয়ে কাজ শুরু করে দেন মুজিব। মুজিব নিজেই লেখেন, ‘তখন রাজনীতি শুরু করেছি ভীষণভাবে। সভা করি, বক্তৃতা করি। খেলার দিকে আর নজর নেই। শুধু মুসলিম লীগ আর ছাত্রলীগ। পাকিস্তান আনতেই হবে, নতুবা মুসলমানদের বাঁচার উপায় নেই।’ শুরু হয়ে গেল মুসলমানদের বাঁচানোর জেহাদ। বঙ্গবন্ধু লেখেন, ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে হাজার হাজার বাঙালি মুজাহিদ কীভাবে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সিপাহী বিদ্রোহ, ওহাবি আন্দোলন, শরিয়ত উল্লাহ ও তিতুমীরের জেহাদের ইতিহাস আমার জানা ছিল। ওইসব ঘটনা বলেই বাংলার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতাম। এখানে বলে রাখা দরকার, ভারতবর্ষে তখন হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছিল। মুসলমানরা ইসলামের শত্রু মনে করে ইংরেজদের থেকে দূরে থাকার মতো মারাত্মক ভুল করে বসে। এ সুযোগে ইংরেজ সরকারের পা-চাটা গোলাম সেজে শিক্ষিত হিন্দুরা কারণে অকারণে মুসলমানদের পিঠের চামড়া তুলে নিত। বঙ্গবন্ধু বলেন, বিষয়টি আমার খুবই খারাপ লাগত। তখনও তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েননি।স্কুলের হিন্দু সহপাঠীদের ছুঁতমার্গ আচরণ দেখে বেজায় কষ্ট পেতেন। এক মুসলিম ছাত্রকে মারার প্রতিবাদে হিন্দু সহাপাঠীদের মেরে জেলও খেটেছিলেন স্কুল জীবনেই। তবে ধর্মীয় গোঁড়ামি যাকে বলে তা বঙ্গবন্ধুর মাঝে কখনই ছিল না।তিনি বলেন, ওই সময় হিন্দুরা যেমন মুসলমানদের দেখতে পারত না, মুসলমানরাও বক্তৃতা শুরুই করত হিন্দুদের গালিগালাজ করে। এসব আমার মোটেই ভালো লাগত না। হাশিম নামে এক মুরব্বি বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, ‘আমাদের লেখাপড়া করতে হবে। শুধু গালিগালাজ করে পাকিস্তান আসবে না।’ পাকিস্তান আনার স্বপ্নে বঙ্গবন্ধু এতই বিভোর ছিলেন যে অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু লেখেন, তখন আমি ইসলামিয়া কলেজের ল’র ছাত্র। ‘রাতে পড়তাম। দিনে পাকিস্তানের জন্য কাজ করতাম। পাকিস্তানই যদি না আনতে পারি তাহলে পড়ালেখা করে আর কী করব!’ বঙ্গবন্ধু তার বন্ধুদের বলতেন, ‘তোমরা পড়ালেখা করে মহাপণ্ডিত হয়ে যাও। আমাকে পাকিস্তান আনতে দাও।’ নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে পাকিস্তান এলো। ততদিনে বঙ্গবন্ধু তুখোড় নেতা হয়ে উঠলেন। বড় আফসোসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু দেখলেন, পাকিস্তান এসেছে ঠিক, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আগে অত্যাচার করত হিন্দু জমিদাররা। এখন অত্যচার করছে খোদ মুসলমান নেতারাই। সে সময়ই মহাকবি ইকবালের মতোই বঙ্গবন্ধুর মনে এমন ধারণা জন্মালো সে বাঙালির জন্য একটি আলাদ ভূখণ্ড না হলে একদিন দুনিয়ার বুকে বাঙালি আর তাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের নাম গন্ধও থাকবে না। তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখলেন। মাওলানা মহিউদ্দিন খান বড় সুন্দর করে বলেছেন, ‘গদি পেয়ে মুসলমান নেতারা মদিরার নেশায় এমনই ডুবে ছিলেন যে, পাকিস্তানের বড় বড় অংশ পর্যন্ত হাতছাড়া হয়ে গেল, এ নিয়ে কেউ টুঁ শব্দটিও করেনি।’ এবার পাকিস্তান সরকারই বঙ্গবন্ধু-মওলানা ভাসানীদের জেলে পুরে রাখলেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়লে বিস্তারিত জানা যাবে। যে কথাটি আজ জোর দিয়ে বলা দরকার তা হল, বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিরেট একজন খাঁটি মুসলিম নেতা। ছিলেন খোলাফায়ে রাশেদার ছায়াতুল্য। জীবনের প্রতটি মুহূর্ত আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা এবং বিশ্বাসের জোরে পাহাড় সমান বাধাকে জয় করেছেন। তিনি যাদের সাহচর্যে ছিলেন, সহকর্মী হিসেবে যাদের পেয়েছেন, অনেকেই ছিলেন মাওলানা, সবাই ছিলেন কঠোর ধর্মভিরু, আউলিয়াভক্ত। ধর্মবিরোধীদের দু’চোখে দেখতে পারতেন না। অন্যায়ের সঙ্গে আপসহীন জীবনের সবক বোধহয় সবচেয়ে বেশি পেয়েছিলেন মর্দে মোমিন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী থেকে। বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়ে বারবার এ কথাই মনে হয়েছে। ইতিহাস বুঝি এভাবেই বিগড়ে যায়। আগাগোড়া কট্টর ইসলাম মানা মানুষটিকে নিয়ে আজ কী সব কাণ্ডকারখানাই না হচ্ছে। টয়লেট পেপারেও বঙ্গবন্ধু, বদনাতেও বঙ্গবন্ধু, চাঁদাবাজের মুখেও বঙ্গবন্ধু। যেন বঙ্গবন্ধু জীবন-যৌবন পানি করে চোর-বাটপাড়দের জন্য সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আমৃত্যু স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা সোনার মদিনার মতো সুখী হবে। যোগ্য বাবার যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মদিনার সনদে দেশ চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আজ যারা কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বলে মুখে ফেনা তুলছেন, তাদের মনে রাখতে হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ইসলাম, শান্তি, সম্প্রীতি। যারা জীবন থেকে, রাষ্ট্র থেকে ইসলাম মুছে ফেলতে চায়, তারা যেন বঙ্গবন্ধুর নামটিও মুখে না আনে। এতে বঙ্গবন্ধুর আত্মা কষ্ট পাবে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"হযরত আম্মার (রা.) এক সাহসি সাহাবী ",ইসলাম ধর্ম,"আরব দেশ,মরু ভুমির দেশ। বিরাজমান জাহেলি পরিবেশ। কোথাও নেই ধর্ম পালনের পরিবেশ। বিধর্মীরা দেব-দেবীর উপসনায় লিপ্ত।হিংসা-বিধেশ,খুন-খারাবী,মার-মারি,কাটা-কাটি,চুরি-ডাকাতি,ধষন,জেনা ব্যভিচার ছিল তাদের স্বভাবজাত চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। বিনা কারণে বছরের পর বছর চলছে যুদ্ধ। কোথায় শান্তিময় সমাজ।অমবশ্যার ঘোর অন্ধকারে উদয় হলো শান্তির সূর্যোদয়। সেই রুবর নাম হলো হযরত রাসুল (দ)।ফুটন্ত সৌরভ ছড়িয়ে পরে দিগ দিগন্তে। বঞ্চিত মানুষের হলো আশ্রয়।প্রস্ফুটিত হলো অশান্তিময় সমাজে,শান্তির বারি ধারা। বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘বন্ধুরা তোমরা যা করেছ তা ঠিক নয়। তোমরা মুক্তি পুজা ছাড়।এ সব মিথ্যা ও অলীক। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি কর্তা। তাই এক আল্লাহকে মানো’। আরবের অধিকাংশ মানুষ ছিল অহংকারী,কলুষিত মনের অধিকারী। তারা নবী (দ) এর কথা না শুনে বরং তার বিরুধিতায় লিপ্ত ছিল। বিশ^ নবী (দ) ছিলেন একজন আল্লাহর মনোনীত রাসুল।তিনি (দ) বিরতিহীন ভাবে ইসলামের বাণী প্রচারের কাজ শুরু করেন।প্রিয় নবী (দ) এর সু মধুর বানী কাফের-মুশরিকদের কানে আঘাত করে। তারা আল্লাহ ও নবীর উপর ইমান আনে। শুরু হলো সাহাবীদের প্রতি চরম নির্যাতন। নির্যাতিত ব্যক্তিদের মধ্যে ইয়াসির (রা) ও সুমাইয়া (রা) ছিলেন অন্যতম সাহসি সাহাবী। হযরত ইয়াসির ও তার স্ত্রী হযরত সুমাইয়া (রা) যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন,তখন পুত্র আব্দুল্লাহ ও আম্মার (রা) ছোট ছিল। ইসলামের বাহক নবী (দ) এর মহা ডাকে সারা দিয়ে আব্দুল্লাহ ও আম্মার ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তখনই স্বপরিবারেত নির্যাতনের শিকার হোন। ইসলামের চির শত্রু আবু জেহেল। তার বর্শার নিষ্ঠুর আঘাতে হজরত সুমাইয়া (রা) ক্ষত বিক্ষত দেহ। তিনিই হলেন ইসলাম ধর্মের প্রথম মহিলা শহীদ। তেমনি ভাবে হযরত ইয়াসির (রা) ও পুত্র সন্তান আব্দুল্লাহ আল্লাহর পথে শাহাদাত লাভ করেন।বেচে থাকেন শহীদ পরিবারের আরেক সাহসি মানুষ হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা)। তিনি ছিলেন এক বৈচিত্র ময় জীবনের অধিকারী। ইসলাম বিরুধী শক্তি তার উপর নানা ভাবে জুলুম,নির্যাতন চালাতে থাকেন। তিনি সব নির্যাতন নিরবে সহ্য করেন। অথচ আম্মার (রা) এর অন্তর,এক আল্লাহর প্রতি বিশ^াসে অবিচল ছিল। তিনি আল্লাহ,রাসুল (দ) ও ইসলাম ধর্ম থেকে এক বিন্দু পরিমান সরে যান নি।কাফেররা হযরত আম্মার (রা) কে জ¦লন্ত আগুনে শুইয়ে,পানিতে ডুবিয়ে মারার চেষ্টা অবাহৃত রাখেন। আল্লাহ জীবন ও মরণের একমাত্র মালিক। তার হুকুম ছাড়া কোন প্রাণীর বাচা বা মরা সম্ভব নয়। আল্লাহর অসীম কদুরত ও রহম দিয়ে প্রতি বারেই তিনি বেচে গেছেন। হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা) ছিলেন রাসুল (দ) এর একজন নিবেদিত প্রাণ সাহাবী। একজন অগ্রগামী বীর সৈনিক। হযরত রাসুল (দ) ও দ্বীনের ডাকে সবার আগে হাজির। জীবন বাজি রেখে দ্বীন ইসলামের কাজ করেন। যুদ্ধের ময়দানে আল্লাহর উপর ভরসা ও এক বুক সাহস নিয়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে বিরতিহীন ভাবে লড়াই করেন। চলছে ইয়ামামার যুদ্ধ। এক ভয়ানক যুদ্ধ।এ যুদ্ধে আম্মার জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ শুরু করেন। হযরত আম্মার (রা) একটি কান, ইসলামের চির শত্রু কাফেরের তলোয়ারের আঘাতে শহীদ হয়ে মাটিতে পরে।তাতে আম্মার (রা) এর কোন দুঃখ বা আফসোস নেই। তিনি খোলা তলোয়ার নিয়ে ছুটে জান শুত্রুর ভিড়ে। চারি দিকে শত্রু। করেন কচু কাটা। অপর দিকে মুসলিম বাহিনীর সব সৈনিক কাফেরদের চরম আঘাতে ছত্র ভঙ্গ হয়ে পরে। তখন হুযরত আম্মার (রা) এক বুক সাহস নিয়ে পাহাড়ের মত শক্ত করে দাড়ান। সাথীদের আহব্বান করেন, তোমরা যুদ্ধে ফিরে আস। আম্মার (রা) ডাক শুনে মুসলিম বাহিনীর সব সাহসি সৈনিক ফিরে আসে যুদ্ধে। শুরু হলো প্রান পণে যুদ্ধ। চারি দিকে লাশের পর লাশ। তারপর, মুসলিম বাহিনীর হাতে বিজয়ের পতাকা। উড়ছে পত পত করে। হযরত আম্মর (রা) এর সাহসিকতায় ইয়ামমার যুদ্ধে সবাই মুগ্ধ। হজরত আম্মার (রা) নবীজীর একজন পাণ প্রিয় সাহাবী ছিলেন। নবীজী তাকে অন্তরের অন্তর দিয়েই ভালোবাােসন।মদিনা শহর। চলছে মসজিদে নববীর ভিত্তি স্থাপনের কাজ। বিশ^ নবী (দ) নিজেই নির্মান কাজ করছে। হজরত আম্মার (রা) মাথায় ইট নিয়ে হযরত রাসুল (দ) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রিয় নবী (দ) সে সময় আম্মারের মাথার ধুলি-বালি নিজ হাতে পরিস্কার করে দিলেন। যার মাথায় নবী (দ( এর হাত, তিনি কতই না উত্তম,সুভাগ্যবান ব্যক্তি। একদিন নবী (দ) অতি কষ্টে আম্মার (রা) কে বলেন,‘আফসোস আম্মার! একটি বিদ্রোহী দল তোমাকে শহীদ করবে। তুমি তাদেরকে আল্লাহর আদেশের দিকে ডাকবে আর তারা তোমাকে ডাকবে জাহান্নামের দিকে’।সময় কারো জন্যে অপেক্ষা করে না। চলছে আপন গতিতে। চলছে ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা) এর শাসন কাল। হজরত আলী (রা) ও হজরত মুয়াবিয়া (রা) এর মাঝে চলছে সিফফিনের যুদ্ধ। সে সময় হজরত আম্মার (রা) এর বয়স ৯১ বছর। এ বৃদ্ধ বয়সে যুদ্ধ ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকা তার কাছে মোটেও ভালো লাগল না।তিনি ছুটে আসেন যুদ্ধেও মযদানে। তিনি লড়াই করেন হজরত আলী (রা) এর পক্ষে, হজরত মুয়াবিয়া (রা) বিপক্ষে। চলছে তুমুল লড়াই। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষে চার হাজার সৈনিক শাহাদাত বরন করেন। হজরত আম্মার (রা) সিফফিনের যুদ্ধেই শাহাদাত বরন করেন। হজরত আম্মার (রা) ছিলেন একজর অপরাজিত সাহসি সৈনিক,রাসুল (দ) এর প্রিয় সাহাবী। তিনি স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অভ্যস্থ ছিলেন।তিনি সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কারো সাখে কোন প্রকার আপোষ,মিমাংসা করেন নি।তিনি আল্লাহ ও রাসুলকে গভীর ভাবে ভালোবাসেন। ভালোবাসেন ইসলামকে। আল্লাহর রাস্তায় হাসি মুখে নিজের জীবন উৎসগ করেন। তার ত্যাগ তিতিক্সা কোন দিন ভুলার মত নয়। তার আর্দশ যদি আমরা পালন করি।তার মহান মানসিকতা সম্পপুর্ণ পুত্র সন্তান প্রতিটি পরিবারে গড়ে উঠুক এই কামনা করি।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করেছে সৌদি ",ইসলাম ধর্ম,"তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সতর্কতা জারি করেছে সৌদি আরব। এরই ধারাবাহিকতায় জুমার নামাজের খুতবায় এ সংগঠন সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী ডা. আব্দুললতিফ আল শেখ। গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) এক টুইট বার্তায় এ নির্দেশনা জানানো হয় তাবলিগ জামাত সম্পর্কে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, এটি সন্ত্রাসবাদের একটি প্রবেশপথ। এদের বিপদ সম্পর্কে মানুষকে বোঝান। এদের ভুলগুলো তুলে ধরুন। তাবলিগ জামাতের পাশাপাশি নিষিদ্ধ করা হয়েছে দাওয়া নামে আরেকটি সংগঠনকে। মন্ত্রী টুইটে জানিয়েছেন, মসজিদে ইমামদের তাদের ভাষণে উল্লেখ করা উচিত এরা কীভাবে সমাজের জন্য বিপজ্জনক। ১৯২৬ সালে দাওয়া নামের এ সংগঠনটির গঠিত হয়। তবলিগ জামাত ও দাওয়া দুটিই সুন্নি মুসলিমদের সংগঠন। অন্যদিকে সৌদি আরবের অধিকাংশ মানুষ আহলে হাদিস মতাদর্শের অনুসারী। দুই পক্ষই ইসলামের অনুশীলন আরও বেশি শুদ্ধ করার পক্ষপাতী হলেও দুই শিবিরের মধ্যে একটি সংঘাত রয়েছে। সারা বিশ্বে তাদের ৩৫০-৪০০ মিলিয়ন অনুসারী রয়েছে বলে দাবি সংগঠনের। সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের লক্ষ্যই হলো ধর্মীয় বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া এবং অত্যন্ত কড়াভাবে রাজনীতি এড়িয়ে চলা। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তাবলিগ জামাত বিশ্বের অনেক অংশেই ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ ইসলামকে ‘শুদ্ধ’ করার জন্য ভারতে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের অর্থের মূল উৎস ছিল সৌদির দাতব্য সংস্থাগুলো। আরও কিছু দেশের সরকারও সৌদিকে অনুসরণ করে তাবলিগকে নিষিদ্ধ করতে পারে। তবে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে তাবলিগ নিষিদ্ধ করা কঠিন হতে পারে। কারণ এসব দেশে প্রচুর তাবলিগী জনসংখ্যা রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"সহজ ও সুন্দর মৃত্যুর জন্য আপনজনদের করণীয় ",ইসলাম ধর্ম,"মৃত্যু অনিবার্য কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা বলেন,-‘হে নবী আপনি বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পালায়ন করছ, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের সাথে সাক্ষাত করবে। অতপর তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এমন সত্তার কাছে যিনি দৃশ্য-অদৃশ্য সকল কিছু জানেন। এরপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের কর্ম সম্পর্কে অবগত করবেন।’ [সূরা জুমআ:৮] অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর কিয়ামত দিবসে তোমাদেরকে দেওয়া হবে তোমাদের কর্মের পরিপূর্ণ প্রতিদান। যে ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হলো আর জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো সে সফলতা লাভ করল। [সূরা আলে ইমরান:১৮৫] পবিত্র এই আয়াত দুটির বার্তা হচ্ছে, মৃত্যু অনিবার্য। অনিবার্য এই মৃত্যুর ডাকে সবাই সাড়া দিবে। পাড়ি জমাবে দুনিয়ার ওপারে। সাড়া না দিয়ে কেউ পার পাবে না। কোনো কিছু ভালো বলে বিবেচিত হওয়ার জন্য সুন্দর সমাপ্তি জরুরী। এ বিষয়ে বাংলায় একটি প্রসিদ্ধ প্রবাদও আছে। প্রবাদটি হলো- ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’। বাস্তবতাও এমনি। যে কোনো বিষয় ভালোভাবে শেষ হলে তার প্রসংশার কোনো শেষ থাকে না। আবার শেষটা যদি কোনো কারণে খারাপ হয়ে যায়, তাহলে নিন্দা ও তিরিস্কারের ঝড় বয়ে যায়। কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে মৃত্যুর বিষয়টিও এমনি। পরপারে সুন্দর ও সুখময় জীবনের জন্য সুন্দর মৃত্যুর বিকল্প নেই। মৃত্যুটা যদি ঈমানের সঙ্গে হয়। বিদায়কালে ঈমানটা যদি সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে দুনিয়ার পাহাড়সম দুঃখ-কষ্ট, ব্যাথা-বেদনা সবই তখন তচ্ছ। আর যদি এর বিপরীত কিছু হয়, শয়তানের ধোঁকায়, নফসের প্রবঞ্চনায় নিজের ঈমানটা খুইয়ে বসে, ঈমান হারিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়, তাহলে দুনিয়ার সকল সুখ-শান্তি, আরাম-আয়েশ সব কিছুই তখন গৌণ। তার পরকালের পুরো জীবনটাই কাটবে শুধু অসহ্য দুঃখ-কষ্ট আর আযাব-গযবে। এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আমল তো শেষ অবস্থা অনুসারেই বিবেচিত হবে।’ [বুখারী, হাদীস:৬৬০৭] হাদীসটির ভাষ্যমতে যার মৃত্যু সুন্দর হবে, ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে, তার পরকালের জীবনটাও সুন্দর হবে। ফুলে-ফলে ভরে উঠবে তার পরকালীন জীবন। তাই সুন্দর মৃত্যু হওয়াটা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। সহজ ও সুন্দর মৃত্যুর জন্য আপনজনদের করণীয় এ জন্য একজন মৃত্যুপথযাত্রীর আত্মীয়-স্বজন ও আপনজনদের উচিত তার সুন্দর মৃত্যুর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা। কুরআন-হাদীসের আলোকে একজন মৃত্যুগামী ব্যক্তির সহজ ও সুন্দর মৃত্যুর জন্য তার আত্মীয়-স্বজন ও আপনজনদের কিছু করণীয় আছে। সেগুলো হলো- ১. তার জন্য দুআ করা এ আমলটি দূরের কাছের সবাই করতে পারেন। তার মৃত্যু যেন ঈমানের সঙ্গে হয় এবং সহজ হয়- এ দুআ করা। এ দুআটুকুর জন্য পাশে বা কাছে থাকার প্রয়োজন হয় না। যারা সংবাদ পেয়েছে সবাই এ দুআ করতে পারে। সুন্দর মৃত্যুর জন্য এ দুআ খুবই জররী। আত্মীয়-স্বজন ও আপনজনদের এ দুআর কল্যাণে যদি মৃত্যুগামী ব্যক্তির মৃত্যু সুন্দর হয়, তাহলে তো সে চির সফল। মহা সৌভাগ্যবান। তাই এখন সুন্দর মৃত্যুর জন্য দুআটাই তার বেশি দরকার। এই দুআতে কেবল মৃত্যুগামী ব্যক্তির উপকার হবে- ব্যাপারটি এমন কিন্তু নয়; বরং দুআকারীরও এতে ব্যাপক উপকার হয়। এক হাদীসে আছে, কেউ যদি তার কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য দূর থেকে দুআ করে, তাহলে ফিরিশতারা বলেন, দুআকারীকেও যেন দুআকৃত বিষয়গুলো দান করা হয়। [মুসলিম, হাদীস: ২৭৩২-২৭৩৩] তাই কোনো আপনজন মৃত্যুগামী ব্যক্তির সুন্দর মৃত্যু, সহজ মৃত্যু ও ঈমানের সাথে মৃত্যুর জন্য দুআ করলে, আশা করা যায়, দুআকারীরও মৃত্যু হবে সুন্দর, সহজ ও ঈমানের সঙ্গে হবে। ২. কালীমার তালকীন করা দ্বিতীয় করণীয় হলো, মাইয়িতকে কালীমার তালকীন করা। এ ব্যাপারে সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী রা. এর বাচনিক মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের মৃত্যুপথযাত্রীদের ‘লা ইলাহ ইল্লাহ’র তালকীন কর। [মুসলিম, হাদীস:৯১৬-৯১৭] ‘লা ইলাহ ইল্লাহ’র তালকীনের অর্থ হলো, মুমূর্ষ ব্যক্তির পাশে বসে মৃদু আওয়াজে [এমন আওয়াজ যেন কালিমার আওয়াজ মুমূর্ষ ব্যক্তি শুনতে পায়] কালিমা পড়তে থাকা। তবে মনে রাখতে এ অবস্থায় তাকে কিছুতেই মুখে উচ্চারণ করে কালিমা পড়ার আদেশ করা যাবে না। কোনো প্রকার জোরাজুরি করা যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই নিয়ম হলো, তার পাশে বসে মৃদু আওয়াজে কেবল কালিমা পড়তে থাকা। কালিমা বলুন বা এ জাতীয় কিছু বলা যাবে না। তার পাশে বসে যখন এভাবে কালিমা পড়া হবে এবং তিনি যখন কালিমার আওয়াজ শুনতে পাবেন, তখন আশা করা যায়, তিনি নিজেই কালিমা পড়ে নিবেন। আর যার মৃত্যু হবে কালিমার সাথে। যার শেষ কথা হবে এই কালিমা, হাদীসের ভাষ্যমতে তিনি জান্নাতী। সাহাবী মুআয ইবনে জাবাল রা. এর বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যার দুনিয়ার জীবনের শেষ কথা হবে লা ইলাহ ইল্লাহ, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস:৩১১৬] ৩. মুমূর্ষ ব্যক্তির পাশে থেকে সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত করতে থাকা মুমূর্ষ ব্যক্তির জন্য তৃতীয় আরেকটি আমলের কথা হাদীসে পাওয়া যায়। সেটি হলো, মুমূর্ষ ব্যক্তির পাশে থেকে সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত করতে থাকা। সাহাবী মাকাল ইবনে ইয়াসার রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,‘তোমরা তোমাদের মৃত্যুপথযাত্রীদের পাশে বসে সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত কর।’ [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস: ৩১২১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস:৩০০২] আপনজনদের উচিত মুমূর্ষ ব্যক্তির সুন্দর ও সহজ মৃত্যুর জন্য উপরোক্ত আমলগুলো গুরুত্ব দিয়ে করা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,কোরবানির পশু জবাইয়ের সুন্নত পদ্ধতি,ইসলাম ধর্ম,"ইসলামী শরিয়ত সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর কোরবানি আবশ্যক করেছে। সামর্থ্য থাকার পরও যারা কোরবানি করে না রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তবে এই ইবাদত কবুলের জন্য তা যথাসময়ে সঠিক পদ্ধতিতে করা আবশ্যক। নিম্নে পশু কোরবানির সময় ও পদ্ধতি তুলে ধরা হলো— কোরবানির সময় : কোরবানির সময়কাল হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। এই তিন দিনের যেকোনো দিন কোরবানি করা জায়েজ। তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সর্বাপেক্ষা উত্তম। তারপর দ্বিতীয় দিন। তারপর তৃতীয় দিন। জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কোরবানি করা শুদ্ধ নয়। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/২৯৬) একইভাবে ঈদুল আজহার নামাজের আগে কোরবানি করা বৈধ নয়। অবশ্য যে স্থানে ঈদের নামাজ বা জুমার নামাজ বৈধ নয়, সে স্থানে ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পরও কোরবানি করা জায়েজ। (কুদুরি, পৃষ্ঠা ১৯৮) নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক কোনো ব্যক্তি ১০ ও ১১ জিলহজ যদি সফরে থাকে তারপর ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে বাড়িতে আসে, তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। যদি কোনো মুকিম ব্যক্তি গরিব হয় এবং ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে আল্লাহ তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বানিয়ে দেন, তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ৫/২৯২) কোরবানির পশু জবাইয়ের পদ্ধতি : নিজের কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজে জবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা জবাই করাবে। এ অবস্থায় নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/২৭২) জবাই করার সময় কোরবানির পশু কিবলামুখী করে শোয়াবে। অতঃপর ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করবে। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া জায়েজ আছে। (হেদায়া : ৪/৪৩৫) পশু জবাই করার সময় মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়ত করবে যে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/২৭২) জবাই করার সময় চারটি রগ কাটা জরুরি : ১. কণ্ঠনালি, ২. খাদ্যনালি, ৩-৪. দুই পাশের মোটা দুটি রগ, যাকে ওয়াজদান বলা হয়। এই চারটি রগের মধ্যে যেকোনো তিনটি যদি কাটা হয় তাহলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (হেদায়া : ৪/৪৩৭) পশু জবাইয়ের মুস্তাহাব : জবাই করার আগে ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নেওয়া মুস্তাহাব। কোরবানির পশুকে এমনভাবে জবাই করা উচিত, যাতে পশুর কোনো প্রকার অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। এমনিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে জবাই করা উচিত। জবাইকারী ব্যক্তির সঙ্গে যদি কেউ ছুরি চালানোর জন্য সাহায্য করে, তার জন্যও ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলা ওয়াজিব। ’ (হেদায়া : ৪/৪৩৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া : ৩/৫৪৭, ফাতাওয়ায়ে শামি : ৯/৪৭৩) কোরবানির দোয়া : কোরবানির পশু কিবলামুখী করে শোয়ানোর পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে : ‘ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৭৯৫) এই দোয়া পাঠ করার পর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে পশু জবাই করবে। পশু জবাই করার পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে—‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মদ ও খালিলিকা ইবরাহিম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম।’ যদি একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করে তবে ‘মিন্নি’র স্থলে ‘মিন্না’ পাঠ করবে এবং শরিকদের নাম পাঠ করবে। তবে তাদের নাম শুধু নিয়ত করলে হবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যা,বৌদ্ধ ধর্ম,"খাগড়াছড়ি সদরের গুগড়াছড়িতে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বিশুদ্ধা মহাথের (৫২) নামের এ বৌদ্ধ ভিক্ষু গুগড়াছড়ি ধর্মসুখ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ। রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে। গতকাল খাবার (ছোয়াইং) দিতে এসে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে বিহারের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামের একজন মহিলা। পরে গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেন। বিহারে একাই ছিলেন তিনি। ১ নম্বর খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞান দত্ত ত্রিপুরা জানান, ‘দুর্বৃত্তরা বিহারে ডাকাতি করতে এসে ভিক্ষুকে খুন করে থাকতে পারে।’ তবে নিহত বৌদ্ধ ভিক্ষুর ছোট ভাই ক্যউচিং মারমা জানিয়েছেন, বিহার অধ্যক্ষের হাতে তেমন নগদ টাকা ছিল না। দুটি মোবাইল ফোন খোয়া গেছে। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রশীদ জানান, রবিবার মধ্যরাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা বৌদ্ধধর্মীয় গুরুকে কুপিয়ে ও মাথায় আঘাত করে খুন করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আবদুল আজিজসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এদিকে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, এই ভিক্ষু ৩০ বছর ধরে ধর্ম প্রচার ও মানবসেবায় নিয়োজিত ছিলেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,পবিত্র কোরআনে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে,ইসলাম ধর্ম,"বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসা ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ। বায়তুল মুকাদ্দাস অর্থ পবিত্র ঘর। মসজিদুল আকসা অর্থ দূরবর্তী মসজিদ। মসজিদুল হারামের অবস্থান থেকে মসজিদুল আকসা দূরে অবস্থিত হওয়ায় বায়তুল মুকাদ্দাসকে কোরআনে মসজিদুল আকসা বলা হয়েছে।ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে অবস্থিত এই মসজিদে মিরাজের রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) গমন করেন এবং সব নবী-রাসুলের ইমামতি করেন। এটি মুসলমানদের প্রথম কিবলা। পবিত্র কোরআনে বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিন অঞ্চল পুণ্যভূমি হিসেবে আলোচিত হয়েছে।মুসলমানদের প্রথম কিবলা : মসজিদুল আকসা মুসলমানদের প্রথম কিবলা।এই মসজিদের দিকে মুখ করে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবিরা নামাজ আদায় করতেন। হিজরতের ১৭ মাস পর কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ সংবলিত আয়াত নাজিল হয়। তাতে মসজিদুল আকসা থেকে মসজিদুল হারাম অভিমুখে নামাজের আদেশ দেওয়া হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানো আমি অবশ্য লক্ষ করি। সুতরাং তোমাকে অবশ্যই এমন কিবলার দিকে ফেরাব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, তার দিকেই মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে তারা নিশ্চিতভাবে জানে যে তা তাদের রবের প্রেরিত সত্য। তারা যা করে সে ব্যাপারে আল্লাহ অনবহিত নন।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৪৪)রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গমনস্থল : মিরাজের রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সব নবী-রাসুল সমবেত ছিলেন। তিনি সেখানে পৌঁছার পর আজান ও ইকামাত দেওয়া হয়। নবী-রাসুলরা কাতারবন্দি হয়ে দাঁড়িয়ে যান। জিবরাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর হাত ধরে ইমামতির জন্য সামনে বাড়িয়ে দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সব নবী ও রাসুলের ইমামতি করেন। (দ্র. সীরাতুল মুস্তফা, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৯৫-২৯৬)তারপর তাঁর ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ শুরু হয়। আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন আল-মসজিদুল হারাম থেকে আল-মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)বরকতময় ভূখণ্ড ফিলিস্তিন পৃথিবীর এক বরকতময় স্থান। এখানে অনেক নবী-রাসুলের আবাসস্থল ছিল। ইবরাহিম (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.), মুসা (আ.), দাউদ (আ.), সুলাইমান (আ.), ঈসা (আ.) ও আরো অনেক নবী-রাসুলের অনুসারীরা এই ভূমিতে বসবাস করতেন। ফিলিস্তিন অসংখ্য নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এর আশপাশে অনেক নবী-রাসুলের সমাধি আছে। পবিত্র কোরআনের পাঁচ স্থানে মহান আল্লাহ ফিলিস্তিনকে বরকতময় ও পুণ্যময় ভূখণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছেন ১. ‘যার (মসজিদুল আকসার) আশপাশে আমি বরকত নাজিল করেছি, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)এই অঞ্চল প্রাকৃতিক নদ-নদী, ফল-ফসলের প্রাচুর্য এবং নবীদের বাসস্থান ও কবরস্থান হওয়ার কারণে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের দাবি রাখে। এ কারণে একে বরকতময় আখ্যা দেওয়া হয়েছে।২. ‘আর আমি তাকে (ইবরাহিম) ও লুতকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলাম সেই ভূখণ্ডে, যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি বিশ্ববাসীর জন্য।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৭১)বেশির ভাগ ব্যাখ্যাদাতার কাছে এ থেকে শাম (বর্তমানে সিরিয়া ও ফিলিস্তিন) দেশকে বোঝানো হয়েছে, যাকে শস্য-শ্যামলতা, ফলমূল, নদ-নদীর আধিক্য ও বহু নবীর বাসস্থান হওয়ার কারণে বরকতময় ও কল্যাণময় বলা হয়েছে।৩. ‘যে সম্প্রদায়কে (মুসা ও বনি ইসরাইলকে) দুর্বল মনে করা হতো, তাদের আমি আমার কল্যাণপ্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী করি; এবং বনি ইসরাইল সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালকের শুভ বাণী সত্যে পরিণত হলো, যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৩৭)এখানে শাম বা সিরিয়া ও মিসর ভূমির কথা বলা হয়েছে, যাতে আল্লাহ তাআলা কওমে ফিরআউন ও কওমে আমালেকাকে ধ্বংস করার পর বনি ইসরাইলকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এবং শাসনক্ষমতা দান করেছিলেন।৪. ‘এবং সুলায়মানের বশীভূত করে দিয়েছিলাম উদ্দাম বায়ুকে; সে তার আদেশক্রমে প্রবাহিত হতো সেই ভূখণ্ডের দিকে, যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি; প্রত্যেক বিষয় সম্পর্কে আমিই সম্যক অবগত।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৮১)কল্যাণময় ভূখণ্ড বলতে শামকে (ফিলিস্তিন ও সিরিয়া) বোঝানো হয়েছে।৫. ‘ওদের (সাবা সম্প্রদায়) ও যেসব জনপদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলাম সেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে দৃশ্যমান বহু জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং ওই সব জনপদে ভ্রমণের যথাযথ ব্যবস্থা করেছিলাম এবং ওদের বলেছিলাম—তোমরা এসব জনপদে নিরাপদে ভ্রমণ করো দিনে ও রাতে।’ (সুরা : সাবা, আয়াত : ১৮)এই জনপদ বলতে মুলকে শাম বোঝানো হয়েছে। প্রাচীন শামদেশ হলো বর্তমান সিরিয়া, জর্দান, লেবানন ও ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এই জনপদ হলো বায়তুল মুকাদ্দাস। (রুহুল মাআনি, ২২/১২৯)এভাবে কোরআনুল কারিমে বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিন অঞ্চলের অসামান‌্য মর্যাদা ও বৈশিষ্ট‌্যময় হওয়ার বিষয়টি অলোচিত হয়েছে। কাজেই তা মুসলমানদের অনুরাগ ও ভালোবাসার উৎস এবং প্রাণের চেয়ে প্রিয় বস্তুতে পরিণত হবে—এটাই স্বাভাবিক।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive সমকাল,শয়তানের পূজারি' ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর রহস্যময় সংস্কৃতি,ইসলাম ধর্ম,"আরব দেশগুলোতে যেখানে ইসলামের জন্ম হয়েছে, সেখানেই আজও টিকে আছে পুরাতন ধর্ম ইয়াজিদি। ইয়াজিদি এমন এক সম্প্রদায় যারা নিজেদের ঐতিহ্য এবং স্বতন্ত্র ধর্ম পরিচয়কে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করেও ধীরে ধীরে পৃথিবীর বুক থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এদের অত্যন্ত পবিত্র স্থান ‘লালিশ’। তারা লালিশকে মুসলিমদের ‘মক্কা’, খ্রিস্ট্রানদের জেরুজালেমের মতোই পবিত্র বলে মনে করে। লালিশ একটি ছোট্ট পাহাড়ে গড়ে উঠা গ্রাম। যেটি ইরাকের কুর্দিস্তানে (ইরবিল থেকে ১২৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে) অবস্থিত। অথচ সবুজে ঘেরা এই ছোট্ট পাহাড়ে মাত্র ২৫ জনের বাস। সেখানে ইয়াজিদিদের প্রধান ধর্মীয় নেতারা সবাই বাস করেন। সাত হাজার বছরের পুরোনো এই ধর্মীয় বিশ্বাসের অনুসারীর সংখ্যা বিশ্বব্যাপী সাত লাখ। এদের অনেকে জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক এবং অস্ট্রেলিয়াতে পুনর্বাসিত হয়েছে। অনেকে বিশ্বের অন্যান্য শরণার্থীদের সাথে মিশে এখনো উন্নত দেশগুলোতে আশ্রয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর হাজার হাজার ইয়াজিদি বাস করছে ইরাক আর সিরিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পে। ইয়াজিদি ধর্ম বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি। ‘ইয়াজিদি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল ‘আল্লাহর উপাসক’। এই শব্দটি মূলত ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে। ইয়াজিদিরা তাদের দেবতাকে ‘ইয়াজদান’ বলে ডাকে। ইয়াজিদিজম কী? ইয়াজিদিরা বিশ্বাস করে যে ইয়াজিদিজম বা ইয়াজিদিবাদ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম ধর্ম এবং ইসলাম, খ্রিষ্টধর্মের কিছু কিছু বিষয় এক হওয়ায় এই ইয়াজিদি ধর্ম এই দুই ধর্মের মতোই অনন্য। ইয়াজিদিরা বিশ্বাস করে, ঈশ্বর এই পৃথিবী আর আদম-হাওয়াকে সৃষ্টি করতে সাহায্য করার জন্য সাতজন ফেরেশতা সৃষ্টি করেন। এরপর ঈশ্বর এই সাতজন ফেরেশতাকে বললেন, `তোমরা আদমের সামনে মাথা নত করো'। একজন বাদে বাকি ছয়জন ফেরেশতা ঈশ্বরের আদেশ পালন করলো। যে ফেরেশতা মাথা নত করলোনা ঈশ্বর তাকে পৃথিবীতে নির্বাসিত করলেন ময়ূর বেশে এবং সে `মালাইকা আত-তাউস' (ময়ূর ফেরেশতা) নামে পরিচিত হলো। পরবর্তীতে ঈশ্বর এই ফেরেশতাকে সকল ফেরেশতা এবং পৃথিবীতে মানুষের দায়িত্ব দেন। এটিই মূলত ইয়াজিদিদের উপর নিপীড়ণের মূল কারণ যেখানে দেখা যায় ইয়াজিদিরা একজন পতিত ফেরেশতাকে উপাসনা করে। ইসলাম এবং খ্রিষ্ট ধর্মমতে `শয়তান' হচ্ছে সেই পতিত ফেরেশতা এবং অনেক মানুষ বিশ্বাস করে ইয়াজিদিরা তাহলে শয়তানের উপাসক। কিন্তু ইয়াজিদিদের মতে, ইয়াজিদিরা শয়তানে বিশ্বাস করে না এবং শয়তান পাপের উৎস একথাও মানতে নারাজ। এদের বিশ্বাস ঈশ্বর প্রদত্ব সমস্ত ভালো কিছুই মানুষের জন্য এবং মন্দ যা তা সব মানুষেরই কাছ থেকে আসে। ইয়াজিদিরা ঈশ্বরকে এত পবিত্র মনে করে যে তারা সরাসরি তার উপাসনাও করে না। তাদের মতে, ইয়াজদান সমগ্র মানব সৃষ্টির স্রষ্টা, তবে তিনি মহাবিশ্বকে রক্ষা করেন না, এই কাজটি তার অবতার দ্বারা করা হয়, যাতে ময়ূর ঈশ্বর প্রধান হুহ। ইয়াজিদিরা ময়ূরের দেবতার পাশাপাশি তার ময়ূরের পালককেও পূজা করে। ইয়াজিদিদের আরেকটি ধর্মীয় বিশ্বাস হচ্ছে তারা প্রকৃতি পূজারী। তাদের মন্দিরের ফটকে একটি কালো রঙের সাপের প্রতিকৃতি থাকে। যাকে তারা ‘প্রকৃতির মা’ হিসেবে বিবেচনা করে। তারা কখনও সাপ হত্যা করে না, এমনকি সেটি বিষাক্ত হলেও। ইয়াজিদি ধর্মমতে অন্য ধর্মের কেউ ইয়াজিদি ধর্ম গ্রহণ করতে পারবে না। ইয়াজিদি হতে হলে তাকে ইয়াজিদি বাবা-মার সন্তান হতে হবে। এর মানে হলো কেউ ইয়াজিদি না হলে ইয়াজিদি হতে পারবে না। ধর্মীয় আরও কিছু প্রথা এই ধর্মকে দিন দিন সংকুচিত করে ফেলছে যার মধ্যে রয়েছে এদের বিবাহ নিজেদের ধর্মের মধ্যেই হতে হবে। ইয়াজিদিদের প্রার্থনা কেমন? ইয়াজিদিরা দৈনিক পাঁচবার প্রার্থনা করে। নিভেজা বেরিস্পেদে (ভোরের প্রার্থনা), নিভেজা রোঝিলাতিনে (সূর্যোদয়ের প্রার্থনা), নিভেজা নিভ্রো (দুপুরের প্রার্থনা), নিভেজা এভারি (বিকেলের প্রার্থনা), নিভেজা রোজাভাবুনে (সূর্যাস্তের প্রার্থনা)। তবে বেশিরভাগ ইয়াজিদি মাত্র দুই বারই প্রার্থনা করে আর তা হলো সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তর সময়। এই দুই সময় এরা সূর্যের দিকে এবং বাকি সময় গুলো লালিশের (যেখানে এদের পবিত্র মন্দির অবস্থিত) দিকে মুখ করে প্রার্থনা করে। এই দৈনিক প্রার্থনা বাইরের লোকেদের উপস্থিতিতে করা নিষিদ্ধ। বুধবার হচ্ছে ইয়াজিদিদের পবিত্র দিন এবং শনিবার হলো বিশ্রামের দিন। ইয়াজিদিদের উৎসব কেমন? ইয়াজিদিদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের একটি হচ্ছে ইরাক এর উত্তর মসুলের লালিশে অবস্থিত শেখ আদি ইবনে মুসাফির (শেখ সাদী) এর মাজারে সাতদিনের হজ্বব্রত বা তীর্থভ্রমণ পালন। যদি সম্ভব হয় প্রত্যেক ইয়াজিদি তাদের জীবদ্দশায় একবার শেখ সাদীর মাজারে তীর্থভ্রমণের চেষ্টা করতে বলা হয়েছে। তীর্থভ্রমণের সময় তারা নদীতে গোছল করে। তাউস মেলেকের মূর্তি ধৌত করে এবং শেখ সাদীর মাজারে শত প্রদীপ জ্বালায়। এসময় তারা একটি ষাঁঁড় কুরবানি করে। ব্যাপ্টিস্ট খ্রিষ্টানদের মতো ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের শিশুদের সর্বাঙ্গ পবিত্র পানিতে ডুবিয়ে দীক্ষা দেন একজন পীর। ডিসেম্বর মাসে ইয়াজিদিরা তিন দিন রোজা রাখে। পরে পীরের সঙ্গে সুরা পান করে। ইয়াজিদিরা কেন নির্যাতিত? মূলত ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের লোকজন নিপীড়ণের লক্ষ্য হয়েছে। তবে এই নিপীড়ন সবসময় সহিংস রূপে ছিলোনা। এদের ভূমি থেকে উচ্ছেদও এদের প্রতি নিপীড়ণের একটা কারণ। ধর্মীয় বিচার ছাড়াও আরেকটি কারণে ইয়াজিদিরা নিপীড়িত হয়েছে আর তা হলো সাদ্দাম হোসেন কর্তৃক উত্তর ইরাকে আরব বসতি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে অনারব ইরাকিদের বাস্তুচ্যুত করার চেষ্টা।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Negative কালের কন্ঠ,অস্ট্রেলিয়ায় সিরাতবিষয়ক সেমিনারে পাঁচ হাজার অতিথির সমাবেশ,ইসলাম ধর্ম,"অস্ট্রেলিয়ায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সিরাতবিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দেশটির সিডনি শহরের অলিম্পিক পার্ক স্পোর্টস সেন্টারে তা অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক হাইকাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত এই সম্মেলনে মুসলিমসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ এতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় মুসলিম সম্প্রদায় ও দারুল ফতোয়াকে শুভেচ্ছা জানান অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর জেনারেল ডেভিড হার্লি ও সংসদ সদস্য ক্রিস মিন্স।তা ছাড়া সরকারের মন্ত্রী জিহাদ দিব ও বিরোধীদলীয় নেতা জর্ডান লেন তাঁদের বক্তব্যে দারুল ফতোয়া অস্ট্রেলিয়ার নানামুখী কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।উদ্বোধনী বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ার দারুল ফতোয়ার প্রধান শায়খ সালিম আলওয়ান বলেন, ‘মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী শীর্ষক সম্মেলন উপলক্ষে আমরা একত্র হয়েছি। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) আমাদের সহনশীলতা, দয়া ও অনুকম্পার মূল্যবোধ শিখিয়েছেন। কারণ তিনি পুরো বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন।অস্ট্রেলিয়ার মুসলিমরা এই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বিশেষত কর্ম ও প্রচার উভয় ক্ষেত্রে ঘৃণ্য চরমপন্থাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং মধ্যপন্থার দৃষ্টিভঙ্গি মেনে তাঁরা সমাজে সহনশীলতা প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’এ ধরনের কর্মসূচি বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করে। বিশেষত মিসরের আল-আজহার, মালয়েশিয়ার জাকিম, ইন্দোনেশিয়ার স্কলারস কাউন্সিল, মরক্কোর আল-কারাওইন ও তিউনিসিয়ার আল-জায়তুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রধান ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাছাকাছি নিয়ে আসে।বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে মালয়েশিয়ার ইসলামবিষয়ক জাতীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ড. কে এইচ ইয়াহিয়া খলিল, ইন্দোনেশিয়ার নাহদাতুল উলামার প্রতিনিধি ড. আবদুল গফুর মাইমোন, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, লেবানন, জর্দান, মিসর, মালয়েশিয়া, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন জাতি ও ভাষার অসংখ্য ইমাম, ধর্মীয় নেতা, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের আগমন ঘটেছিল।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"মণ্ডপ ও বাড়ি যখন একাকার ",হিন্দু ধর্ম,"পুরান ঢাকার দুর্গোৎসবের সমারোহ মানেই শাঁখারীবাজার। এ সময় শাঁখারীবাজারের রূপ যেন বদলে যায়। বাজারের মূল সড়কের প্রস্থ বড়জোর ১০ ফুট হবে, দুই পাশে পুরোনো দিনের দোতলা, তিনতলা ভবন, তার নিচে শাঁখা, পূজার উপকরণসহ বিভিন্ন মনিহারি দ্রব্যের দোকান। সেই সড়কে ১৫ ফুট পরপর একটি করে পূজার মণ্ডপ— বয়স ৪০, ৫০ বা ৬০ বছর। রাস্তায় বাঁশের খুঁটি পুতে তার ওপর মাচা বসানো হয়েছে, সেই মাচার ওপর মণ্ডপ বানানো হয়েছে। তার নিচ দিয়েই হাঁটতে হয়, সেখানে হাঁটতে গেলে মানুষের গায়ে গায়ে লেগে যায়, তবু মানুষের কমতি নেই, নেই উৎসবের কমতি। পূজা উপলক্ষে রাস্তার ওপর আরও কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে। তারা সবাই পদ্মফুলসহ দুর্গাপূজার বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি করছে। মূল পূজার অনুষ্ঠানের সময় সেখানে ঢাকের শব্দ ও উলুধ্বনিতে কান পাতা দায়। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ অঞ্জলি দিতে আসেন, অষ্টমী ও নবমীর দিন কত জন অঞ্জলি দেন, সেই হিসাব করার সাধ্য কার! সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পরও কানে ঢাক ও উলুধ্বনির অনুরণন হয়। পূজার সময় এই ছোট্ট মহল্লার মানুষের যেন দম ফেলার ফুরসত থাকে না। এত এত পূজা, তার জোগাড় তো তাঁদেরই করতে হয়, এ তো আর কম ঝক্কি নয়! যাঁদের সে অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরা সেটা বুঝবেন, কিন্তু যাঁদের তা নেই, তাঁদের পক্ষে সেটা বোঝা মুশকিল। নাওয়া-খাওয়া ভুলে এই পূজার পেছনেই সারাদিন লেগে থাকতে হয়। পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সবুজ স্বপন সংঘ পূজা কমিটির পূজা মণ্ডপ l ছবি: প্রথম আলো পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সবুজ স্বপন সংঘ পূজা কমিটির পূজা মণ্ডপ l ছবি: প্রথম আলো শাঁখারীবাজারে যেমন বারোয়ারি পূজা আছে, তেমনি বাড়ির পূজাও আছে। শাঁখারী পুষ্পনাথ সেন ২০/২১ বছর ধরে নিজ বাড়ির পূজা করছেন। পঞ্চমীর দিন তাঁর সঙ্গে কথা হলো। তিনি বললেন, শাঁখারীবাজারে মোট নয়টি পূজা হয়। পাকিস্তান আমলে শাঁখারীবাজারে দুটি বা তিনটি পূজা হতো, স্বাধীনতার পর বেড়েছে। ফুরসত নেই তাঁর। কথার ফাঁকে ফাঁকেই বাড়ির লোকেরা পূজার আয়োজনের বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করছিলেন, তিনিও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন। আরও বললেন, পূজার কটা দিন যে কীভাবে কেটে যায়, টেরই পাওয়া যায় না। এ সময় বাড়ি আর মন্দির যেন একাকার। খিচুড়ি-লাবড়া-লুচি-পায়েস—পূজার সময় এসবই তাঁদের খাদ্য। এই পূজার বিশেষত্ব হচ্ছে, তাঁরা শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন দেন না, চৈত্র মাসে একই প্রতিমায় বাসন্তী পূজা করার পর মূর্তি বিসর্জন দেন, যদিও সাধারণভাবে দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রতিদিনই তাঁরা দেবীর ভোগ দেন। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, দুর্গাপূজা মূলত চৈত্র মাসেই হতো। পরবর্তীকালে রাজা রামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। পূজার সময় এত মানুষের সমাগমেও শাঁখারীবাজারের বাসিন্দারা বিরক্ত হন না। এমনকি তাঁরা নিজেদের বাড়িতে অনেক দর্শনার্থীদের আপ্যায়ন করেন, প্রয়োজন হলে নারী দর্শনার্থীদের টয়লেট ব্যবহার করতে দেন। এসবই তাঁরা হাসিমুখে মেনে নেন। কারণ, তাঁরা জানেন, শাঁখারীবাজারে না এলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পূজা সার্থক হয় না। আসলে শুধু শাঁখারীবাজারই নয়, পুরান ঢাকার মণ্ডপে না ঘুরলে হিন্দুদের পূজা যেন সম্পূর্ণ হয় না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, একসঙ্গে এত পূজার মণ্ডপ ঢাকার আর কোথাও নেই। শুধু সূত্রাপুর থানাতেই ৪০-৪২টি পূজা হয়। আর এখানকার পূজার যে ঐতিহ্য রয়েছে, তার আকর্ষণও মানুষকে টেনে নিয়ে আসে। সেখানে গেলে মানুষ এক ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হয়। বাংলাবাজারের পূজার বয়স এবার ৮২ হলো। কয়েক প্রজন্মের আয়োজকেরা এত দিন ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে এই পূজা করে আসছেন। সেখানকার আয়োজকেরা বললেন, অষ্টমীর দিন তাঁরা দুই হাজার মানুষকে খিচুড়ি, লুচি ও পায়েস দিয়ে আপ্যায়ন করেন, এলাকাবাসীর মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করেন। তাঁরা নবমীর রাতে আরতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন আর দশমীর দিন গরিবদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করেন। ফলে পূজার কটা দিন দম ফেলার ফুরসত থাকে না। এলাকার হিন্দু-মুসলমাননির্বিশেষে সবাই তাতে অংশ নেন। তাঁরা বলেন, ঢাকার কিছু স্থানে এখন অনেক জাঁকজমকপূর্ণ পূজা হলেও পুরান ঢাকার আমেজ সেখানে নেই। সে কারণেই পুরান ঢাকার পূজা অনন্য। ওদিকে ঋষিকেশ দাস রোডের একরামপুর পূজা কমিটি ৪৪ বছর ধরে পূজা করছে। এর মধ্যে ৪১ বছর ধরে তারা একই স্থানে পূজা করে আসছে। এই পূজা কমিটির অনেক সদস্যই বীর মুক্তিযোদ্ধা আর কমিটির ১০ জন সদস্য মুসলিম ধর্মাবলম্বী। ঢাকা নগরে পূজার আমেজ পেতে হলে পুরান ঢাকায় যাওয়ার বিকল্প নেই। শাঁখারীবাজার থেকে নর্থ ব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার, ফরাশগঞ্জ, ঋষিকেশ দাস রোড, নারিন্দা, গেন্ডারিয়া—সব স্থানেই রয়েছে ঢাক ও উলুর মিলিত ধ্বনি। সঙ্গে আছে ঐতিহ্যের অংশ হওয়ার আহ্বান। দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা শেষ হবে। কিন্তু দুর্গাপূজার পর পুরান ঢাকা ঝিমিয়ে পড়বে না, শুরু হয়ে যাবে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন, আর তারপর তো কালীপূজা আছেই। সব পূজাই সেখানে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইসলামে ব্যভিচার গ্রহণযোগ্য নয়,ইসলাম ধর্ম,"ইসলামে ব্যভিচার বিশেষত বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক অনুমোদন করা হয় না। এ ধরনের অপকর্মের অপরাধীরা যেমন আখিরাতের জীবনে কঠিন সাজার সম্মুখীন হবে তেমন দুনিয়ার জীবনেও তাদের কঠোরতম শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সাহাবা আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ইমান হচ্ছে একটি সুন্দর পোশাক, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তা পরিয়ে দেন। কিন্তু যখন কেউ ব্যভিচার করে, আল্লাহ তখন তার গা থেকে ইমানের পোশাক খুলে নেন। এরপর যদি সে তওবা করে তবে আল্লাহ তাকে আবার ওই পোশাক ফিরিয়ে দেন।’ বায়হাকি, আবু দাউদ, তিরমিজি ও হাকেম। রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! তোমরা ব্যভিচার থেকে পরহেজ কর। কেননা এর ছয়টি খারাপ পরিণতি রয়েছে। যার তিনটি ইহলোকে ও তিনটি পরলোকে সংঘটিত হবে। ইহলোকের তিনটি হচ্ছে- তার চেহারার সৌন্দর্য লোপ পায়, তার আয়ু হ্রাস পায় এবং চিরকাল সে দরিদ্রতার ভিতর থাকবে। পারলৌকিক তিনটি হচ্ছে- সে আল্লাহর অসন্তুষ্টি, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তির সম্মুখীন হবে।’ -ইবনে জাওজি। রসুল (সা.) বলেন, ‘ইবলিশ শয়তান তার শিষ্যবাহিনীকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার সময় বলে দেয়, তোমাদের যে কোনো মুসলমানকে পথভ্রষ্ট করতে পারবে, তার মাথায় আমি নিজ হাতে মুকুট পরিয়ে দেব এবং সে আমার কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদাবান বিবেচিত হবে। দিনের শেষভাগে সবাই ফিরে এসে ইবলিশের কাছে তাদের সারা দিনের কৃতকর্মের হিসাব দিতে থাকে। কেউ বলে আমি অমুকের পেছনে লেগে থেকে প্ররোচনার মাধ্যমে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করেছি। ইবলিশ বলে, তোমার এ কাজ তো তেমন কিছুই নয়, সে আর এক রমণীকে বিয়ে করে নেবে। এরপর আর একজন বলে, আমি সারা দিন অমুকের পেছনে লেগে থেকে নানা প্ররোচনার মাধ্যমে তার ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ বাধিয়ে দিয়ে এসেছি। ইবলিশ বলে, তোমার এ কাজ তো তেমন কিছুই নয়, অচিরেই তারা পরস্পরে মীমাংসা করে নেবে। এরপর আর একজন বলে, আমি সারা দিন প্ররোচনার মাধ্যমে অমুককে ব্যভিচারে লিপ্ত করিয়েছি। ইবলিশ এবার খুশি হয়ে বলে, হ্যাঁ, তুমি একটা কাজের কাজ ঘটিয়েছ। এরপর ইবলিশ তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেয়।’ আর এক হাদিসে রসুল (সা.) বলেন, ‘যে লোক মদপানে অভ্যস্ত অবস্থায় (বিনা তওবায়) মারা যায়, আল্লাহ তাকে গাওতাত নামক নহরের পানি পান করাবেন। গাওতাত হচ্ছে, জাহান্নামে ব্যভিচারিণীদের যোনীপথ থেকে নির্গত দূষিত রক্ত ও পুঁজের প্রবহমান ঝরনাধারা।’ আহমদ, আবু ইয়ালা, ইবনে হিব্বান, হাকেম। অন্যত্র রসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শিরক করার পর অবৈধ নারীর গুপ্তাঙ্গে বীর্যপাতের চেয়ে জঘন্য কবিরা গুনাহ আর নেই।’ আহমদ, তাবারানি। ব্যভিচার থেকে বাঁচতে হলে দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের বিকল্প নেই। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মোমিনদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে ও তাদের যৌনাঙ্গের সুরক্ষা করে এবং মোমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে ও তাদের যৌনাঙ্গের সুরক্ষা করে।’ সুরা নুর, আয়াত ৩০-৩১। ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া এবং যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে এক শ বার বেত্রাঘাত করাই হলো একমাত্র শাস্তি। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে একই বিধান প্রযোজ্য। হাশরের মাঠে সবাই একত্রিত হবে। এদিন কারও পরনে কাপড় থাকবে না। এটি মানুষের চতুর্থ জগৎ। কবর হলো তৃতীয় জগৎ। হাশরের মাঠে নেকি ও পাপের ফয়সালা হবে। সেখান থেকে মানুষ চিরস্থায়ী জগতে পাড়ি দেবে। সেই চিরস্থায়ী জগতের নাম জান্নাত ও জাহান্নাম। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর নবীকে এ কথা বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন মানব জাতিকে খালি পায়ে, উলঙ্গ ও খতনাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! এ অবস্থায় তো নারী-পুরুষ পরস্পরের দিকে তাকাবে। তিনি বললেন, হে আয়েশা! সেদিনকার অবস্থা এত ভয়াবহ হবে যে পরস্পরের দিকে তাকানোর কোনো কল্পনাই করবে না।’ বুখারি, মুসলিম। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা রসুলুল্লাহ (সা.) এ আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন- “যেদিন জমিন তার যাবতীয় খবর বলে দেবে”। এরপর হুজুর (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা বলতে পার জমিনের সংবাদগুলো কী কী? সাহাবিরা আরজ করলেন আল্লাহ ও তাঁর রসুলই কেবল জানেন। আমরা জানি না। হুজুর (সা.) বললেন, জমিনের সংবাদ হলো জমিনের ওপর নারী-পুরুষ যা কিছু ভালো-মন্দ কাজ করেছে, কিয়ামতের দিন জমিন তার সাক্ষ্য দেবে। জমিন বলবে, আমার বুকের ওপর অমুক অমুক দিনে অমুক লোক এ কাজ করেছে। হুজুর (সা.) বললেন, এ-ই হলো জমিনের সংবাদ দান।’ আহমাদ, তিরমিজি। অর্থাৎ দুনিয়ায় যারা ব্যভিচারসহ অপকর্মে লিপ্ত হবে, আখিরাতে তা কোনোভাবে গোপন রাখা সম্ভব হবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবর ও হাশরের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার তৌফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative প্রথম আলো,ধর্ম মন্ত্রণালয় নেবে আইন উপদেষ্টা ও প্যানেল আইনজীবী,অন্যান্য,"ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয়ে আইন উপদেষ্টা ও প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়াক্ফ প্রশাসনের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং ওয়াক্ফ এস্টেটের পক্ষে ও বিপক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়ে একটি আইনজীবী প্যানেল গঠন এবং ওয়াক্ফ এস্টেটের বিভিন্ন বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য একজন আইন উপদেষ্টা নেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিভাগের জন্য আবেদনকারীদের ঢাকায় নিয়মিতভাবে বসবাসরত হতে হবে এবং অন্যান্য বিভাগের ক্ষেত্রে যে বিভাগের জন্য আবেদন করা হবে সেই বিভাগে নিয়মিতভাবে বসবাস করতে হবে। আইন উপদেষ্টা বা প্যানেল আইনজীবী কোন পদের জন্য আবেদন করা হচ্ছে, তা উল্লেখপূর্বক আবেদন করতে হবে। প্যানেল আইনজীবীদের বিভাগভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদনকারী কোন বিভাগের জন্য প্যানেলভুক্ত হতে আগ্রহী, তা উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে।আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স ও অভিজ্ঞতা ইত্যাদি উল্লেখ করে জীবনবৃত্তান্ত দিতে হবে। আবেদনের সঙ্গে সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি সংযুক্ত করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ৫৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। আবেদনের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র, বার কাউন্সিলের সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ এবং হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের তালিকাভুক্তির সনদসহ সব সনদের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে।আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স ও অভিজ্ঞতা ইত্যাদি উল্লেখ করে জীবনবৃত্তান্ত দিতে হবে। আবেদনের সঙ্গে সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি সংযুক্ত করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ৫৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। আবেদনের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র, বার কাউন্সিলের সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ এবং হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের তালিকাভুক্তির সনদসহ সব সনদের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে।আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিভাগের প্যানেল আইনজীবীর ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনায় কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে ঢাকা বিভাগ ব্যতীত অন্য বিভাগের জন্য আবেদনকারীর ক্ষেত্রে জজ কোর্টে মামলা পরিচালনায় কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।ওয়াক্ফ প্রশাসকের পক্ষে মামলায় স্বাধীনভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, মামলার আরজি তৈরি, মামলার জবাব তৈরি এবং নথিতে আইনি মতামত প্রদানের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral " আলোকিত বাংলাদেশ","মক্কার আধ্যাত্মিকতায় মুগ্ধ হয়ে ব্রিটিশ ধনকুবেরের ইসলাম গ্রহণ ",ইসলাম ধর্ম,"ইসলাম গ্রহণ করেছেন প্রসিদ্ধ ব্রিটিশ অভিনেতা ও গায়ক ড্যানি ল্যাম্বো। বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী হিসেবেও বিশ্বব্যাপী তার ব্যাপক পরিচিতি। বৃহস্পতিবার সৌদি সংবাদ সংস্থা আল-আরাবিয়া ল্যাম্বোর ইসলামে প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ড্যানি ল্যাম্বোর ইসলাম গ্রহণের ঘোষণাটি বেশ চমকপ্রদ। তিনি মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামে ওমরাহ আদায়ের একটি ভিডিও ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে গুরুত্বপূর্ণ এ ঘোষণাটি দিয়েছেন। ওই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, আপনি জানবেন না যে- জীবন আপনাকে কোন পথে নিয়ে যাবে? আমি ব্যবসার কাজে সৌদি আরবে এসেছিলাম, কাজও দ্রুত শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে আমার সাক্ষাৎ হয় এমন এক ব্যক্তির সাথে, যিনি আমাকে পবিত্র মক্কায় নিয়ে আসেন। এখান থেকেই আমার নতুন এক আধ্যাত্মিক ও মানসিক সফর শুরু হয়ে গেল। আবেগঘন ওই ভিডিওতে ল্যাম্বোকে কাবার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতেও দেখা গেছে। আর এখন তিনি নওমুসলিম হিসেবে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ইনস্টাগ্রামে সৌদি আরবের এক বন্ধুর সাথেও নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন ব্রিটিশ ধনকুবের। ‘মক্কা সফর’ হাইলাইটস দিয়ে ওই বন্ধুর উদ্দেশে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ আমার ভাই বাসিত। তুমি আমাকে জীবনের আসল অর্থ ও উদ্দেশ্য চিনিয়েছো।’ ব্রিটিশ এই অভিনেতার প্রকৃত নাম ছিল ড্যানি কার্ন। ইতালীয় সুপারকার ল্যাম্বরগিনির প্রতি তার ভালোলাগা প্রকাশ করার জন্য নামের সাথে ‘ল্যাম্বো’ যুক্ত করেছিলেন তিনি। তারপর থেকে তিনি ‘ড্যানি ল্যাম্বো’ হিসিবেই নিজের পরিচয় দিয়ে আসছেন। আর্থিক দিক থেকে ড্যানি ল্যাম্বো বেশ প্রভাবশালী। আল-আরাবিয়া জানায়, তার মোট সম্পদের মূল্য অন্তত ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড। এর বড় একটি অংশ তিনি লন্ডনে হোটেল ব্যবসায় বিনিয়োগ করে উপার্জন করেছেন। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন ড্যানি। তার দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে। তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে গানকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। এর জন্য তিনি কঠোর সমালোচনার সম্মুখীন হন এবং তার একজন শিক্ষক তাকে ব্যর্থ মানুষ বলেও আখ্যায়িত করেন। সঙ্গীতের পাশাপাশি ড্যানি একজন হোটেল ব্যবসায়ী হিসেবেও কাজ শুরু করেন। যা তার সম্পদ বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল। এভাবে মাত্র ২২ বছর বয়সে কোটিপতিদের তালিকায় নিজের নাম লেখান ড্যানি কার্ন থেকে ড্যানি ল্যাম্বো হওয়া ব্রিটিশ এই ধনকুবের, গায়ক ও অভিনেতা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"কাবার পথের মেহমান! লাব্বায়িক (উপস্থিতি) নিশ্চিত করুন ",ইসলাম ধর্ম,"হজ্ব ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রোকন বা স্তম্ভ। আরবী ভাষায় হজ্ব শব্দের অর্থ যিয়ারতের সংকল্প করা। যেহেতু খানায়ে কাবা যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মুসলমানরা পৃথিবীর চারিদিক হতে নির্দিষ্ট কেন্দ্রের দিকে চলে আসে, তাই এর নাম হজ্ব রাখা হয়েছে। কিন্তু এ হজ্বের পেছনে এক সংগ্রামী, চিত্তাকর্ষক ও শিক্ষাপ্রদ ইতিহাস নিহিত রয়েছে। যারা এ বিশ্ব সম্মেলন কেন্দ্রে আল্লাহর মেহমান হিসাবে হাজিরা দিতে যাবেন, তারা যদি একটু গভীর মনযোগ সহকারে সে ইতিহাস অধ্যয়ন করে নেন তবে হজ্জ্বের প্রকৃত শিক্ষা ও কল্যাণ লাভ করা সহজ হবে। হজ্ব এলেই আমাদের হৃদয়স্পটে ভেসে ওঠে শিরকের মুলোৎপাঠনকারী মুসলিম মিল্লাতের অবিসংবাদিত সংগ্রামী নেতা ও পিতা হযরত ইবরাহিম আঃ এর কথা। যিনি মহান সৃষ্টিকর্তা ও প্রভুর সন্ধানে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ ও নক্ষত্রকে ব্যর্থ প্রভু ভেবে ভেবে অবশেষে সত্যের আলোর সন্ধান পেলেন এবং উদাত্ত কন্ঠে ঘোষনা করলেনঃ “তোমরা যাদেরকে আল্লাহর শরীক বলে মনে কর তাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নাই।” তিনি আরো বললেন ”আমি সব দিক হতে মুখ ফিরিয়ে বিশেষভাবে কেবল সেই মহান সত্তাকেই ইবাদাত-বন্দেগীর জন্য নির্র্দিষ্ট করলাম, যিনি সমস্ত আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের মধ্যে শামিল নই।” এ পুর্ণাঙ্গ মানুষটি যৌবনের শুরুতেই যখন আল্লাহকে চিনতে পারলেন তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে বললেনঃ ”ইসলাম গ্রহণ কর-স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন কর, আমার দাসত্ব স্বীকার কর। তিনি উত্তরে পরিস্কার ভাষায় বললেন: আমি ইসলাম কবুল করলাম, আমি সারা জাহানের প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করলাম, নিজেকে তার নিকট সোপর্দ করলাম। তিনি রাব্বুল আলামীনের জন্য শত শত বছরের পৈতৃক ধর্ম এবং এর যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান ও আকীদা বিশ্বাস পরিত্যাগ করলেন। অথচ পৈতৃক মন্দিরের পৌরহিত্যের মহাসম্মানিত গদি তার জন্য অপেক্ষা করছিল। যে গদিটিতে বসলে তিনি অনায়াসেই জাতির নেতা বনে যেতেন। চারদিক থেকে নযর-নিয়ায এসে জড় হত এবং জনগণ ভক্তি -শ্রদ্ধা ভরে মাথা নত ও হাত জোড় করে বসত। সাধারণ মানুষ হতে বাদশাহ পর্যন্ত সকলকে আজ্ঞানুবর্তী গোলাম বানিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু এ বিরাট স্বার্থের উপর পদাঘাত করে সত্যের জন্য দুনিয়া জোড়া বিপদের গর্ভে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত হলেন। জন্মভূমি হতে বের হয়ে আরব দেশ সমুহ ঘুরতে লাগলেন। এ ভ্রমনে তার উপর অসংখ্য বিপদ এসেছে। রাত-দিন তিনি কেবল একটি চিন্তা করতেন, দুনিয়ার মানুষকে অসংখ্য রবের গোলামীর নাগপাশ হতে মুক্ত করে কিভাবে এক আল্লাহর বান্দায় পরিণত করা যায়। দেশত্যাগ ও নির্বাসনের দুঃখ-কষ্ট ভোগ করার পর বৃদ্ধ বয়সে আল্লাহ তাকে সন্তান দান করলেন। তিনি তার জন্যও একই ধর্ম ও কর্তব্য ঠিক করলেন। সব কঠিন পরীক্ষায় পাশ করার পর চুড়ান্ত ও শেষ কঠিণ পরীক্ষা অবশিষ্ট রয়ে গিয়েছিল যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত হযরত ইবরাহিম আঃ সবকিছু অপেক্ষা রাব্বুল আলামীনকেই বেশী ভালবাসেন কিনা, তার ফয়সালা হতে পারত না। তাই বৃদ্ধ বয়সে একেবারে নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর তার সন্তান লাভ হয়েছিল সে প্রিয় সন্তানকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী করতে পারেন কি না তারই পরীক্ষা নেয়া হলো। পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হলেন। তখন চুড়ান্তরূপে ঘোষনা করা হলো যে, এখন তুমি প্রকৃত মুসলিম হওয়ার দাবীকে সত্য বলে প্রমান করেছ। এক্ষণে তোমাকে সারা পৃথিবীর ইমাম বা নেতা বানানো যায়। আল কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতে এ কথাই বলা হয়েছে:-“এবং যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি ব্যাপারে পরীক্ষা করলেন এবং সে সব পরিক্ষায় ঠিকভাবে উত্তীর্ণ হলেন তখন তাকে জানিয়ে দেয়া হলো যে, আমি তোমাকে সমগ্র মানুষের ইমাম বা নেতা নিযুক্ত করছি। তিনি বললেন, আমার বংশধরদের সম্পর্কে কি হুকুম ? আল্লাহ তা’আলা বললেন যালেমদের জন্য আমার ওয়াদা প্রযোজ্য নয়।”(সুরা বাকারা-১২৪) এভাবে হযরত ইবরাহিম আঃ কে দুনিয়ার নেতৃত্ব দান করা হল এবং বিশ্বব্যাপী ইসলাম বা মুসলমানদের চিরস্থায়ী আদর্শিক নেতা নিযুক্ত করা হল। জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাইল আঃ কে সাথে নিয়ে তিনি হিযাযের মক্কা নগরীকে কেন্দ্র করে আরবের কোণে কোণে ইসলামের শিক্ষাকে বিস্তার সাধন করলেন। আর পিতা পুত্র মিলে ইসলামী আন্দোলনের বিশ্ববিখ্যাত কেন্দ্র খানায়ে কাবা প্রতিষ্ঠা করেন। আল্লাহ তা’আলা নিজেই এ কেন্দ্র নির্দিষ্ট করে দেন। খানায়ে কাবা সাধারণ মসজিদের ন্যায় নিছক ইবাদাতের স্থান নয়, প্রথম দিন হতেই এটা দ্বীন ইসলামের বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের প্রচার কেন্দ্ররূপে নির্ধারিত হয়েছিল। এ কাবা নির্মানের মুল উদ্দেশ্য ছিল যে, পৃথিবীর দুরবর্তী অঞ্চলসমুহ হতে এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী সকল মানুষ এখানে এসে মিলিত হবে এবং সংঘবদ্ধভাবে এক আল্লাহর ইবাদাত করবে, আবার এখান থেকে ইসলামের বিপ্লবী পয়গাম নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে তা বান্তবায়নে সচেষ্ট হবে । বিশ্ব মুসলিমের এ সম্মেলনেরই নাম হজ্ব। এ ঘরের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে হযরত ইবরাহীম আঃ এর দোওয়া শুনুন ঃ আল কুরআনে আল্লাহ বলছেন “এবং স্মরণ কর, যখন ইবরাহিম দুআ করেছিলেনঃ হে আল্লাহ ! এ শহরকে শান্তিপূর্ণ বানাও, আমাকে এবং আমার সন্তানকে মূর্তি পুজার শিরক হতে বাঁচাও। হে আল্লাহ! এ মুর্তিগুলো অসংখ্য লোককে গোমরাহ করেছে। অতএব,যে আমার পন্থা অনুসরণ করবে সে আমার, আর যে আমার পন্থার বিপরীতে চলবে-তখন তুমি নিশ্চয়ই বড় ক্ষমাশীল ও দয়াময়। পরওয়ারদিগার! আমি আমার বংশধরদের একটি অংশ তোমার এ মহান ঘরের নিকট,এ ধুসর মরুভূূমিতে এনে পুনর্বাসিত করেছি-এ উদ্দেশ্যে যে, তারা নামায কায়েম করবে। অতএব,হে আল্লাহ! তুমি লোকদের মনে এতদুর উৎসাহ দাও যেন তারা এর দিকে দলে দলে চলে আসে এবং ফল-মুল দ্বারা তাদের জীবিকার ব্যবস্থা কর। হয়ত ইহারা তোমার কৃতজ্ঞ বান্দা হবে।” সুরা ইবরাহীম-৩৫-৩৭ এ সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আরো বলেনঃ-“এবং স্মরণ কর, যখন ইবরাহীমের জন্য এ ঘরের স্থান ঠিক করেছিলাম-এ কথা বলে যে, এখানে কোন প্রকার শিরক করোনা এবং আমার ঘরকে তওয়াফকারী ও নামাযীদের জন্য পাক-সাফ করে রাখ। আর লোকদেরকে হজ্জ করার জন্য প্রকাশ্যভাবে আহবান জানাও-তারা যেন তোমার নিকট আসে, পায়ে হেটে আসুক কিংবা দুরবর্তী স্থান হতে কৃশ উটের পিঠে চড়ে আসুক। এখানে এসে তারা যেন দেখতে পায় তাদের জন্য দ্বীন-দুনিয়ার কল্যাণের ব্যবস্থা রয়েছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর দেয়া জন্তু গুলোকে আল্লাহর নামে কুরবানী করবে, তা হতে নিজেরাও খাবে এবং দরিদ্র ও অভাবগ্রস্থ লোকদেরকে খেতে দেবে।” (সুরা হজ্জ-২৬-২৮) এ ঘরের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে পিতা পুত্র মিলে মহান আল্লাহর দরবারে আরো দু’আ করেছিলেন যা আল্লাহ নিজের ভাষায় কুরআনে বলেছেন:-“এবং স্মরণ কর, ইবরাহিম ও ইসমাইল যখন এ ঘরের ভিত্তি স্থাপন কালে দোওয়া করছিলেনঃ পরওয়ারদিগার! আমাদের এ চেষ্টা কবুল কর, তুমি সব কিছু জান এবং সবকিছু শুনতে পাও। পরওয়ারদিগার ! তুমি আমাদের দু’জনকেই মুসলিম-অর্থাৎ তোমার অনুগত কর এবং আমাদের বংশাবলী হতে এমন একটি জাতি তৈরী কর যারা একান্তভাবে তোমারই অনুগত হবে। আমাদেরকে তোমার ইবাদাত করার পন্থা বলে দাও, আমাদের প্রতি ক্ষমার দৃষ্টি নিক্ষেপ কর, তুমি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াময়। পরোয়ারদিগার! তুমি সে জাতির প্রতি তাদের মধ্য হতে এমন একজন নবী পাঠাও যিনি তাদেরকে তোমার বাণী পড়ে শোনাবে,তাদেরকে কিতাব ও জ্ঞান শিক্ষা দিবে এবং তাদের চরিত্র সংশোধন করবে। নিশ্চয় তুমি সার্বভৌম ক্ষমতা সম্পন্ন এবং বিজ্ঞ।”(সুরা বাকারা-১২৭-১২৯) যে শিরক উচ্ছেদ ও মূর্তি পূজা বন্ধ করার সাধনা ও আন্দোলনে হযরত ইবরাহীম আঃ ও ইসমাইল আঃ এর সারাটি জীবন অতিবাহিত করেছিলেন, কালের বিবর্তনে এ কাবা ঘরে আবার ৩৬০টি মুর্তি স্থাপন করা হয়। চারদিকে শিরক আর শিরক চলতে থাকে। লাত, মানাত, হুবাল, নসর,ইয়াগুস, উজ্জা,আসাফ, নায়েলা আরো অসংখ্য নামের মূর্তি তৈরী করে পূজা করত। হজ্বকে তারা তীর্থযাত্রার অনুরূপ বানিয়ে তাওহীদ প্রচারের কেন্দ্রস্থল কাবা ঘর হতে মূর্তি পূজার প্রচার শুরু করে ছিল এবং পূজারীদের সর্বপ্রকার কলা কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত লোকদের নিকট হতে নযর-নিয়ায আদায় করত। হজ্জের অন্যান্য অনুষ্ঠান গুলোকে বিকৃতরূপ দিয়ে পালন করত। এ ভাবে ইবরাহীম আঃ ও হযরত ইসমাইল আঃ যে মহান কাজ শুরু করেছিলেন এবং যে উদ্দেশ্যে তারা হজ্জ-প্রথার প্রচলন করেছিলেন, তা সবই বিনষ্ট হয়ে যায়। অবশেষে হযরত ইবরাহীম আঃ এর দু’আরই ফসল মানবতার বন্ধু হযরত মোহাম্মদ সাঃ মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে শিরকের মূলোৎপাঠন করেন এবং মুসলিম মিল্লাতের পিতার হাড়ানো হজ্জের নিদর্শন গুলো পূনরুদ্ধার করেন। হজ্জের প্রতিটি পদে পদে আল্লাহর স্মরণ-আল্লাহর নামের যিকর, নামায,ইবাদাত ও কুরবানী এবং কা’বা ঘরের প্রদক্ষিণ। আর এখানে একটিমাত্র আওয়াযই মুখরিত হয়ে উঠে, হেরেম শরীফের প্রাচীর আর পাহাড়ের চড়াই উৎরাইয়ের প্রতিটি পথে উচ্চারিত হয়ঃ ”লাব্বায়িক আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক, লা শারিকা লাকা লাব্বায়িক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়মাতা লাকা ওয়াল মুলকা লা শারিকা লাক” অর্থা হে প্রভু তোমার ডাকে আমি উপস্থিত। আমি এসেছি, তোমার কোন শরীক নাই, আমি তোমারই নিকটে এসেছি। সকল প্রশংসা একমাত্র তোমার জন্যে। সব নিয়ামত তোমারই দান, রাজত্ব আর প্রভুত্ব সবই তোমার। তুমি একক-কেউই তোমার শরীক নাই।” কাবার পথের যাত্রীরা কোথায় হাজিরা দিতে যাচ্ছেন আর হাজিরা দিতে গিয়ে কি বলছেন তা অবশ্যই গভীর মনোযোগের সাথে চিন্তা করতে হবে। এমনিভাবে হজ্বের প্রতিটি অনুষ্ঠান পালন করার সময় কি করা হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে তা অনুধাবণ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষেই কি আমরা আমাদের বাস্তব জীবনকে শিরকমুক্ত করতে পেরেছি এবং আল্লাহর কাছে নিজেকে পুর্ণাঙ্গ মুসলিম হিসাবে পেশ করতে পেরেছি ? আত্মজিজ্ঞাসার জবাব যদি নাবোধক হয়। তবে আমরা লাব্বায়িক বলে এ বিশ্বসম্মেলন কেন্দ্রে হাজিরা দিব ঠিকই কিন্তু আল্লাহর হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত লেখা হবে। যেমন প্রানহীন নামায মন্দ কাজ হতে বিরত রাখতে পরছেনা, প্রানহীন রোযা তাকওয়ার গুণ সৃষ্টি করতে পারছেনা ও যাকাত আমাদেরকে পবিত্র করতে পারছে না। তেমনিভাবে প্রানহীন হজ্ব আল্লাহর হাজিরা খাতায় অনুপস্থিতিই লেখা হবে। তাই কাবার পথের যাত্রীরা তাদের উপস্থিতিকে নিশ্চিত করার জন্য হজ্জে গমনের পুর্বে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো প্রতি নজর দেয়া প্রয়োজন। শিরককে পরিত্যাগ করতে হবে:- শিরক একটি জুলুম। শিরকের গুনাহ আল্লাহ মাফ করবেন না। শিরক সমস্ত নেক আমলকে ধ্বংস করে দেয়। এ শিরক বর্তমানে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে আমাদের সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করেছে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় এ শিরককে পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ শিরক মুক্ত জীবন ও সমাজ গঠণ করার জন্যই হযরত ইবরাহীম আঃ ও হযরত মুহাম্মদ সাঃ আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তাছাড়া মহান আল্লাহর সম্মানিত মেহমান হিসাবে তালবিয়া পাঠে বলা হচ্ছে ”আমি উপস্থিত। আমি এসেছি, তোমার কোন শরীক নাই, আমি তোমারই নিকটে এসেছি। তুমি একক-কেহই তোমার শরীক নাই।” এ কথাটিকে বাস্তব জীবনে রূপায়ন করতে হবে। দ্বিমুখী নীতি পরিহার করে,পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে:-জন্মসূত্রে মুসলমান নয় বরং একজন পরিপূর্ণ মুসলিম হতে হবে, সারা জাহানের প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে, নিজেকে তার নিকট সোপর্দ করতে হবে। জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজ কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী হতে হবে। শুধু মাত্র পাচ ওয়াক্ত নামাযে আল্লাহকে প্রভু হিসাবে স্বীকার করা হলো কিন্তু জীবনের বিশাল অংশকে মানুষের তৈরী আদর্শের হাতে সোপর্দ করলে তিনি মুসলিম নন বরং একজন খাটিঁ মোনাফিক। প্রতি নামাযেই অসংখ্যবার বলা হচ্ছে: “আমরা তোমারই গোলামী করি আর তোমারই সাহায্য চাই”। অথচ নামাযের বাইরে তার বিপরীত কাজ করা হচ্ছে। এ এক মিথ্যাচার ছাড়া কি হতে পারে ? আর এ মিথ্যাচারকে বিশ্ব সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাবেন না। সেখানে গিয়ে যখন আপনি বললেন. “হে প্রভু তোমার ডাকে আমি উপস্থিত। আমি এসেছি, তোমার কোন শরীক নাই,আমি তোমারই নিকটে এসেছি। সকল প্রশংসা একমাত্র তোমার জন্যে। সব নিয়ামত তোমারই দান, রাজত্ব আর প্রভুত্ব সবই তোমার। তুমি একক-কেউই তোমার শরীক নাই।” অথচ বাস্তবক্ষেত্রে তার বিপরীত কার্য পরিলক্ষিত হয়। এ ধরনের দ্বিমুখী নীতি বা মুনাফেকী আচরণ আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরিত্যাগ করতে হবে। হজ্ব চেতনার অনুধাবন:-হজ্জের অনুষ্ঠানগুলো ঐতিহাসিক চেতনাকে সামনে রেখে পালন করতে হবে। আর এ চেতনাকে হযরত ইবরাহীম আঃ ও হযরত ইসমাইল আঃ ন্যায় শিরক উচ্চেদে এবং মানুষকে অসংখ্য মিথ্যা রবের নাগপাশ থেকে মুক্ত করার আপোষহীন সংগ্রামের কাজে ব্যবহার করতে হবে এবং এ সংগ্রাম নিজ নিজ এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবেই হজ্জের স্বার্থকতা ও সুফল পাওয়া যাবে এবং আল্লাহর হাজিরা খাতায় উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি উচিত নয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী,অন্যান্য,"মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে ভারত সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যারা আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছিল তারাও ক্ষমা চেয়েছে। তাই রাসুল (সা.) এর নির্দেশ মেনে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শনিবার বিকেলে নগরীর কুমারপাড়ায় বাংলাদেশের প্রথম আর্ট কলেজ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানুষ নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। ভারত সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই রাসুল (সা.) এর নির্দেশ মেনে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত হবে না।’ সিলেটে দেশের প্রথম আর্ট কলেজের যাত্রা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, “সিলেট হচ্ছে আধ্যাত্মিক নগরী। বিভিন্ন সংস্কৃতি এখানে সংযুক্ত হয়েছে। এটি যেমন শাহজালালের পূণ্যভূমি, তেমনি শ্রীচৈতন্যেরও লীলাভূমি। আমেরিকা যখন আবিষ্কার হয়নি সেই ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দে কিংবা ইউরোপে যখন রেঁনেসা আসেনি; তখন এই বঙ্গভূমিতে ১৪০৮ খ্রিস্টাব্দে চন্ডিদাস গেয়ে ওঠেছেন ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’।” তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সেই আলোকে বলা যায়, এই কলেজ থেকে অনেক মহৎপ্রাণ মহান মানুষ তৈরি হবেন। যাদেরকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারবো।’",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive ভোরের কাগজ,"সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনির ছবিও পোড়াচ্ছে ইরানের বিক্ষোভকারীরা ",ইসলাম ধর্ম,"ইরানের খোরামাবাদ, যানজান ও আহভাজ শহরে রবিবার মিছিল থেকে দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনির পদত্যাগ ও তার ‘নিপাত’ যাওয়ার দাবিতে স্লোগান দেয়া হয়েছে। আবহার শহরে বিক্ষোভকারীরা দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনির ছবি সংবলিত সুবিশাল ব্যানারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আটত্রিশ বছর আগে ইরানে যে ইসলামিক বিপ্লব হয়েছিল, তার পর সে দেশে গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ’র বিরুদ্ধে এই ধরনের বিক্ষোভ প্রায় নজিরবিহীন বলা চলে। বিবিসি পার্সিয়ান বিভাগের বিশ্লেষক কাসরা নাজি বলছেন, ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে মূলত তরুণ ও পুরুষ এই বিক্ষোভকারীরা সরাসরি দেশ থেকে মোল্লাতন্ত্র উচ্ছেদের ডাক দিচ্ছেন। তাদের এই বিক্ষোভ ইরানের ছোট ছোট শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে এবং ক্রমশ আরও ব্যাপক আকার নিতে যাচ্ছে বলেও তিনি মনে করছেন। এদিকে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন চলতে থাকলে, শক্ত হাতে তা দমন করা হবে এমন হুশিয়ারি দিয়েছে দেশটির বিপ্লবী বাহিনী। দেশটিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবনমান নিম্নমুখী হয়েছে, এমন অভিযোগে তৃতীয় দিনের মত ইরানের বিভিন্ন বড় শহরে বিক্ষোভ চলছে। বিবিসি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,গাজার ইতিহাস সংরক্ষণে ফিলিস্তিনি ৯ নারীর উদ্যোগ,ইসলাম ধর্ম,"ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পুরনো বই ও দুর্লভ পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলত সারা বিশ্বের গবেষকদের গবেষণায় সহায়তা করতে নিজেদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে সংরক্ষণের এই প্রকল্প গ্রহণ করে দি আইস অন হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। এর তত্ত্বাবধানে হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নথিভুক্তির কাজ করছেন ফিলিস্তিনের ৯ উদ্যমী নারী। তাঁরা পুরনো বই, পাণ্ডুলিপি, পত্রপত্রিকা, পুরনো নথিপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সংরক্ষণ করেন। ২০১৭ সাল থেকে তাঁরা এখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এই উদ্যোগে কাজ করছেন। তাঁদের এই প্রকল্পে সহায়তা করছে ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এর মধ্যে শত বছর থেকে শুরু করে হাজার বছরের পুরনো অনেক গ্রন্থ ও পাণ্ডুলিপি আছে। এর মাধ্যমে ফুটে উঠবে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাস।কিন্তু ইসরায়েলের অবরোধের ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এই প্রকল্প। গাজা সীমান্তবর্তী এলাকার দীর্ঘ প্রতিবন্ধকতা গবেষণার নথি সংরক্ষণ কাজের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে। প্রকল্পের পুনরুদ্ধারে বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন হানিন আল-সারসাবি। তিনি জানিয়েছেন, এখানে দুর্লভ পত্রিকা, বই, সংবাদপত্র, নথি ও পাণ্ডুলিপি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের কাজ করা হয়।কয়েক ধাপে এসব কাজ সম্পন্ন হয়। প্রথমে এসব পাণ্ডুলিপির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি এসব সামগ্রীর কাগজের গুণমান, অম্লতা, কালির স্থিতিশীলতা এবং তা কার্বন বা লোহা হলে এর ধরন পরীক্ষা করে দেখা হয়। এরপর বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা দেখা হয় এবং নরম ব্রাশ বা মেডিক্যাল ফোরসেপ বা কাঁচি ইত্যাদি ব্যবহার করে পৃষ্ঠা পরিষ্কার করা হয়। অতঃপর তা আর্কাইভে যুক্ত করা হয়।পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের কাজটি খুবই গুরুত্ব বহন করে। বিশেষত আরব ও ইসলামী জগতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সংরক্ষিত হয়। আর দুর্লভ পাণ্ডুলিপি ও বইয়ের গুরুত্ব যত বেশি হবে তা সংরক্ষণের গুরুত্বও তত বেশি হবে।আইস অন হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হানিন আল-আমসি বলেন, এই প্রকল্পে পিএইচডি ও স্নাতকোত্তরধারী ৯ জন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক কাজ করছেন। তাঁদের আন্তর্জাতিক মান অনুসারে ডিজিটাল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তা ছাড়া গাজা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু একের পর এক ইসরায়েলি বিধি-নিষেধের কারণে প্রকল্পের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,"ঈদের জামাত মসজিদে, মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি: ধর্ম মন্ত্রণালয়",ইসলাম ধর্ম,"আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে মসজিদে আদায়ের অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আজ সোমবার এক আদেশে এই অনুরোধ করা হয়।আদেশে বলা হয়, ইসলামি শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে মুসল্লিদের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনায় এ বছর ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার অনুরোধ করা হলো। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাতের আয়োজন করা যাবে।ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আদেশে আরও বলা হয়, ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগেই সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন। এ ছাড়া মসজিদে অজুর স্থানে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে। প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। ঈদের নামাজের জামাতে আসা মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। আর ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করতে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"যে সময়গুলো নষ্ট হচ্ছে সেগুলোই আসল সময় ",ইসলাম ধর্ম,"এক এক মুহূর্তের সমষ্টিই তো জীবন। প্রতিটি মুহূর্ত সময়ের একটি অংশ। সময়ের আলাদা কোনো অস্তিত্ব যেহেতু মানুষ অনুভব করে না। তাই সময়ের বয়ে চলাও অনুভূত হয় না। আমরা দুনিয়ার বুকে যেন নৌকার যাত্রী। মনে হয়, ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। অথচ সময় আমাদের নিয়ে বয়ে চলেছে। নৌকা কিংবা গাড়ির আরোহী কোথাও যাওয়ার সময় মনে করে সে বসে আছে। অথচ সে চলছে। ঠিক তেমনি সময়ও তার কাজ করে চলেছে। সময় শেষ হয়েই যায়। বয়স বাড়ার অর্থ জীবন কমে যাওয়া। অথচ আমরা একটুও ভাবি না। আমাদের অবস্থা হলো, কবির ভাষায় : সংরক্ষণ করা যায় এমন বস্তুর মধ্যে সময় সবচেয়ে মূল্যবান/অথচ তোমাকে দেখছি, এটিই সবচেয়ে সহজে তোমার কাছে নষ্ট হচ্ছে। রমজানুল মুবারক শুরু হয়ে শেষ হওয়ার পথে। বুদ্ধিমানেরা আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে, কর্মের প্রস্তুতি গ্রহণ করে, আলাদা নিযামুল আওকাত তৈরি করে ইবাদতে মশগুল হয়ে গিয়েছিল। রমজানের শুরু থেকেই প্রতিটি মুহূর্ত তারা কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। আর কিছু মানুষ প্রথম দশক পর্যন্ত মনে করল, কেবল তো রমজান শুরু হলো। আর অধিকাংশ মানুষ তো প্রথম দুই-চার দিনেই তাদের সব আগ্রহ-উৎসাহ শেষ করে ফেলে। আর সকলের কাছেই শেষ দশক যেন রমজানের পরিশিষ্ট, মূল রমজান তো আগেই শেষ হয়ে যায়! এ কারণে শেষ দশক কাটিয়ে দেয়া হয় ঈদের প্রস্তুতিতে। এ সময়ের প্রধান ব্যস্ততা থাকে কেনাকাটা, ঘুরে বেড়ানো ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা। এ তো আমাদের অবস্থা! কিন্তু আমাদের আকাবির কী করতেন? তাঁদের রমজান কেমন ছিল? শেষ দশক তারা কীভাবে কাটাতেন-এসব তাদের জীবনী-গ্রন্থ থেকে পাঠ করা উচিত। শায়খুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলভী (রাহ.)-এর পুস্তিকা ‘আকাবির কা রমজান’ও অধ্যয়ন করা যেতে পারে। শেষ দশকের গুরুত্ব উপলব্ধির জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, এটিই হচ্ছে সুন্নত ইতিকাফের সময়। আর লায়লাতুল কদরেরও প্রবল সম্ভাবনা শেষ দশকেই হওয়ার। হাদিস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি লায়লাতুল কদরের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়, সে তো সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৬৪৪)। সুতরাং শেষ দশককে যে নষ্ট করে সে প্রকৃতপক্ষে নিজের সব কল্যাণ বিসর্জন দেয়। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) শেষ দশকে সবচেয়ে বেশি মেহনত করতেন। (সহীহ : ১১৭৫)। তিনি আরো বলেন : শেষ দশক শুরু হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) সারা রাত জাগতেন। পরিবারের লোকদেরকেও জাগাতেন। অনেক মেহনত করতেন। এমনকি কোমর বেঁধে নিতেন। (সহীহ বুখারী : ২০২৪)। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন : যে সওয়াবের আশায় রমজানের সওম আদায় করে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আর যে সওয়াবের আশায় লায়লাতুল কদরে জাগরণ করে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (সহীহ বুখারী : ২০১৪)। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন : তোমরা শেষ দশকে লায়লাতুল কদর অন্বেষণ কর। তোমাদের কেউ দুর্বল কিংবা অক্ষম হলে সে যেন অবশিষ্ট সাত রাতের বিষয়ে পরাজিত না হয়। (সহীহ মুসলিম : ১১৬৫)। অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন : তোমরা শেষ দশ রাতে লায়লাতুল কদর তালাশ কর। অথবা বলেছেন, শেষ নয় দিনে। (সহীহ মুসলিম : ১১৬৫)। এই হাদিসের মতো অন্য অনেক হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, লায়লাতুল কদর নির্দিষ্ট কোনো রাতের নাম নয়, যে রাতে সবাই মসজিদে সমবেত হবে, কিছু কথা শুনবে, এরপর সম্মিলিতভাবে উচ্চস্বরে দুআ করে চলে আসবে, লায়লাতুল কদর লাভের জন্য গোটা রমজান বিশেষ করে শেষ দশকে পূর্ণ প্রস্তুত থাকা উচিত এবং এর খোঁজে নিজেকে পূর্ণ মনোযোগী রাখা উচিত। নফল নামায, দুআ-যিকির, ইস্তিগফার, কুরআন তিলাওয়াত ও দরূদ শরীফ ইত্যাদি আমলে সময় কাটানো উচিত। যেন শবে কদরের বরকত হাসিল হয় এবং মাগফিরাতের নেয়ামত লাভ করা যায়। এজন্য প্রথম চেষ্টা হওয়া উচিত, শেষ দশকের ইতিকাফ। কমপক্ষে অধিকাংশ সময় মসজিদে ও ইবাদতে কাটানো। আর গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকা তো মুমিনের সবসময়ের কর্তব্য। রমজান মাসে বিশেষ করে শেষ দশকে তা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে অনর্থক ও অযথা যে কাজে এই মুবারক সময়টুকু নষ্ট করা হয় তা হলো কেনাকাটা, ঘুরে বেড়ানো ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা। আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে এর অভিশাপ থেকে রক্ষা করুন এবং রমজান থেকে তাকওয়ার নেয়ামত লাভ করার তাওফীক দান করুন। (আমীন)।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"তারাবিহতে আজ : ১৩ মুসা ও খিজির (আ.)-এর চিত্তাকর্ষক গল্প",ইসলাম ধর্ম,"আজ খতমে তারাবিহতে পবিত্র কোরআনের সুরা কাহাফের ৭৫ নম্বর আয়াত থেকে সুরা মারইয়াম ও সুরা তোয়াহা তিলাওয়াত করা হবে। ১৬তম পারা পড়া হবে। আজকে আল্লাহর সাক্ষাৎ, তাঁর সঙ্গে শরিক করা, তাঁর অস্তিত্ব, মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর ঘটনা, জুলকারনাইনের ঘটনা, ইয়াজুজ-মাজুজের ফিতনা, মরিয়ম ও ঈসা (আ.)-এর বর্ণনা, পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, তওবা, বুড়ো বয়সে জাকারিয়া (আ.)-এর সন্তান লাভ, ইবরাহিম (আ.)-এর একত্ববাদের ঘোষণা ও তাঁর বাবার অস্বীকার, মুমিনের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা, মহানবী (সা.)–কে সান্ত্বনা ও অবিশ্বাসীদের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। মুসা (আ.) ও খিজির (আ.) আল্লাহ মুসা (আ.)-কে জানালেন, দুই নদীর মোহনায় তাঁর চেয়ে জ্ঞানী এক ব্যক্তি আছেন। মুসা ওই ব্যক্তির সন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন। সমুদ্রের কাছে গিয়ে খিজির (আ.)-কে পেলেন। তাঁর সঙ্গে সময় কাটানোর অনুমতি চাইলেন। খিজির (আ.) মুসাকে শর্ত দিলেন। একাধিক শর্ত মানার অঙ্গীকারে তাঁরা পথ চললেন। তাঁদের সফরে তিনটি ঘটনা প্রকাশ পেল। ১. খিজির (আ.) একটি নৌকা ছিদ্র করে ফেলেন, যার মালিক তাঁদের বিনা ভাড়ায় নদী পার করেছিল। ২. তিনি একটি নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করেন। ৩. তিনি এক সম্প্রদায়ের পতনোন্মুখ একটি দেয়াল মেরামত করে দেন। অথচ সে সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের খাবার খাওয়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। মুসা (আ.) তিনটি ঘটনায় প্রশ্ন করেছিলেন। আপত্তি জানিয়েছিলেন। শেষে খিজির (আ.) একসঙ্গে পথচলার বিষয়টি নাকচ করে দেন। তবে তিনি তিনটি ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। প্রথম ঘটনার ব্যাখ্যা: ওই অঞ্চলে ছিল এক অত্যাচারী বাদশাহ। সে বল প্রয়োগ করে মানুষের নৌকা ছিনিয়ে নিত। তবে ছিদ্র করা নৌকা নিত না। নৌকাটি ছিল কয়েকজন গরিব-মিসকিনের। তারা এটা দিয়ে জীবিকা অন্বেষণ করত। নৌকাটি ছিদ্র করে দেওয়ার ফলে বাদশাহর ছিনিয়ে নেওয়া থেকে রেহাই পেল। দ্বিতীয় ঘটনার ব্যাখ্যা: শিশুটি বড় হয়ে অবিশ্বাসী হবে; যা তার মা-বাবার জন্য আজাবের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তার মা-বাবা ছিল বিশ্বাসী মানুষ। তৃতীয় ঘটনার ব্যাখ্যা: দেয়ালটি ছিল দুজন এতিমের। তাদের মা-বাবা বিশ্বাসী নেক মানুষ ছিলেন। প্রাচীরের নিচে তাদের নেককার বাবার রক্ষিত গুপ্তধন ছিল। সুরা কাহাফের ৬০ থেকে ৮২ নম্বর আয়াতে মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর এসব ঘটনার বিবরণ রয়েছে। বাদশাহ জুলকারনাইন ও ইয়াজুজ-মাজুজের কাহিনি মুসা ও খিজির (আ.)-এর ঘটনার পর এই সুরার ৮৩ থেকে ১০১ নম্বর আয়াতে জুলকারনাইন ও ইয়াজুজ-মাজুজের ঘটনার আলাপ আছে। কোরআনে তাঁকে জুলকারনাইন বলা হয়েছে। তাঁর প্রকৃত নাম সিকান্দার। তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও আল্লাহ বিশ্বাসী বাদশাহ ছিলেন। তিনি পুরো পৃথিবী শাসন করেছেন। সফর করেছেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। সফরকালে নির্যাতিত, বঞ্চিত, শাসকের হাতে শোষিত লোকদের সাহায্য করেছেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। সফরকালে একবার দুই পাহাড়ের মাঝে এমন এক জনগোষ্ঠীকে খুঁজে পেলেন, যারা ইয়াজুজ-মাজুজ জনগোষ্ঠীর আক্রমণের কবলে পড়তে যাচ্ছিল। ওই জাতি তাঁর কাছে সাহায্য চাইল। তিনি একটি শক্তিশালী প্রাচীর নির্মাণ করে দেন। ফলে বেঁচে যায় তারা। ‘আল্লাহকে যে পাইতে চায়’ এ সুরার ১১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁকে পাওয়ার জন্য তিনটি আবশ্যকীয় আমলের কথা বলেছেন। ১. নেক আমল করা। ২. আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস। ৩. ইবাদতে তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা। নারীর নামে সুরার নাম ৯৮ আয়াতবিশিষ্ট সুরা মারইয়াম মক্কায় অবতীর্ণ। এটি কোরআনের ১৯তম সুরা। এ সুরার একটি অংশজুড়ে মরিয়ম (আ.)-এর আলোচনা রয়েছে, তাই এর নাম রাখা হয়েছে সুরা মারইয়াম। জাকারিয়া (আ.), ইসা (আ.), ইবরাহিম (আ.), মুসা (আ.), হারুন (আ.) ইসমাইল (আ.) ও ইদরিস (আ.)-এর আলোচনা রয়েছে এ সুরায়। হজরত মরিয়ম (আ.)-এর মৃত্যু কামনা হজরত মরিয়ম (আ.) তখন মসজিদুল আকসায়। জিবরাইল (আ.) মানুষের বেশে এলেন। মরিয়ম (আ.) ভয় পেয়ে বসেন। জিবরাইল পরিচয় দিলেন। সন্তান হওয়ার সুসংবাদ দিয়ে তাঁকে ফুঁ দিলেন। আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন হিসেবে মরিয়ম (আ.) গর্ভবতী হলেন। প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে তিনি মসজিদ ছাড়লেন। স্বামী ছাড়া সন্তান হবে; এটা তিনি নিতে পারছিলেন না। ফলে মরে যেতে চাইলেন। মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে যেতে চাইলেন। যেখানে জিবরাইল (আ.) তাঁকে বলেছেন, ‘এই সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে, তিনি এই সন্তানের মাধ্যমে মানবজাতির জন্য নিদর্শন ও রহমত বানাবেন।’ সন্তান কোলে একদিন তিনি নিজ গ্রামে ফেরেন। মানুষজন তাঁকে অপবাদ দিল। নানান কথা বলল। তিনি কোলের শিশুকে দেখিয়ে দেন। শিশু মায়ের সৎ চরিত্রের সাক্ষ্য দেন। সুরা মরিয়মে ১৬ থেকে ৪০ নম্বর আয়াতে এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা আছে। বাবা-ছেলের কাহিনি এই সুরার ৪১ থেকে ৫০ নম্বর আয়াতে ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর বাবার কাহিনি আলোচনা হয়েছে। তাঁর বাবা ছিল অবিশ্বাসী। তিনি তাকে একাত্ববাদের দাওয়াত দেন। কিন্তু বাবা তাঁর কথা শোনেনি। ইবরাহিম একদিন ইমান বাঁচাতে দেশ ছেড়ে চলে যান। পরে তাঁর বংশেই মুহাম্মাদ (সা.)-সহ অনেক নবীর জন্ম হয়। সুরা তহায় মুসা (আ.)-এর জীবনের গল্প কোরআনের ২০তম সুরা তহা মক্কায় অবতীর্ণ। এর আয়াতসংখ্যা ১৩৫। এ সুরার শিশু মুসাকে আল্লাহর আদশে বাক্সে ভরে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া, শত্রুর ঘরে মায়ের কোলে লালন-পালন, নবুওয়াত অর্জন, আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথন, ফেরাউনকে দ্বীনের দাওয়াত, জাদুকরদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মুসার বিজয়, জাদুকরদের ইসলাম গ্রহণ, বনি ইসরাইলকে নিয়ে মিসর ত্যাগ, ফেরাউনের ধাওয়া ও নদীতে ডুবে ফেরাউনসহ পুরো বাহিনীর মৃত্যু, বনি ইসরায়েলের অকৃজ্ঞতা, গো-বাছুরের পূজা ও তুর পাহাড়ে ধ্যানে গিয়ে মুসা (আ.)-এর তওরাত লাভ, কেয়ামতের ভয়াবহ চিত্র, অবিশ্বাসীদের শাস্তির বিবরণ, আদম ও ইবলিসের কাহিনি এবং দাওয়াতের কাজে অবিচল থাকা ইত্যাদির বর্ণনা রয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral প্রথম আলো,"ফেরেশতাদের বন্ধু ও এক মুমিনের গল্প ",ইসলাম ধর্ম,"আজ খতমে তারাবিহতে পবিত্র কোরআনের সুরা জুমারের ৩২ থেকে সুরা মুমিন ও সুরা হামিম সাজদার ১ থেকে ৪৬ নম্বর আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে। ২৪তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। আজকের তারাবিহতে তওবা, সামাজিক শিষ্টাচার, মুমিন ও কাফেরের শেষ পরিণতি, মৃত্যু, নিরাশা, হক বাতিল, মুমিন ব্যক্তি কর্তৃক ফেরাউনকে সতর্ক, বান্দার ডাকে আল্লাহর সাড়া, আল্লাহকে চেনার উপায়, কোরআন হেদায়াত ও শেফা, মানুষের কল্যাণে চতুষ্পদ প্রাণী, কিয়ামত, হেদায়াত, ইমানদারের জন্য ফেরেশতাদের দোয়া, জাহান্নামিদের অবস্থা, মুসা ও ফেরাউনের ঘটনা, আল্লাহর অনুগ্রহ, মানুষের অকৃজ্ঞতা, কোরআনের মাহাত্ম্য ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে। আল্লাহর রহমত নিয়ে নৈরাশ্য নিষেধ সুরা জুমারের ৫৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘বলো, হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ মানুষের জীবনে দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ-বেদনা, ঘাত-প্রতিঘাত, বিপদ–আপদ আসবে। দুঃখকে একেবারে উপেক্ষা করে চলা যায় না। আল্লাহ নবী-রাসুলদেরও বিপদে ফেলেছেন। কষ্ট দিয়েছেন। পরীক্ষা করেছেন। তাঁরা ধৈর্য ধরে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। মুমিন জীবনে দুঃখ-কষ্ট, হতাশা ও বেদনা এলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। দুঃখ-কষ্ট আর বিপদে ধৈর্য ধারণ করা মুমিনের গুণ ও ইবাদত। কখনোই হতাশ হওয়া যাবে না। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। যারা আল্লাহর অবাধ্যতা করেছে, গুনাহে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে, তাদেরও আল্লাহ তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন। সুরা মুমিনে এক মুমিনের কাহিনি মক্কায় অবতীর্ণ সুরা মুমিনের আয়াতের সংখ্যা ৮৫। এটি কোরআনের ৪০তম সুরা। ফেরাউনকে পথভ্রষ্টতা ছেড়ে আল্লাহর পথে আসার জন্য সতর্ক করেছিলেন এক ব্যক্তি, তাফসিরের কিতাবে তাকে ফেরাউনের চাচাতো ভাই বলেছেন কেউ কেউ। কোরআনে আল্লাহ তাঁকে ‘মুমিন’ বলেছেন, তাই এর নাম রাখা হয়েছে মুমিন। গাফিরও বলা হয় এ সুরাকে। আল্লাহর চার গুণ আল্লাহ তাআলার অগণিত গুণ রয়েছে। সুরা তওবার ৩ নম্বর আয়াতে চারটি গুণের উল্লেখ রয়েছে। যথা এক. আল্লাহ গুনাহ ক্ষমাকারী। দুই. তওবা কবুলকারী। তিন. কঠিন শাস্তি দানকারী ও চার. মানুষের ওপর করুণা ও অনুগ্রহকারী। মুসা (আ.)-কে দেশ ছাড়ার পরামর্শ মুসা (আ.)-এর সময়ে একজন আল্লাহ–বিশ্বাসী মানুষ ছিলেন। যিনি ফেরাউনকে একত্ববাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন। মুকাতিল, সুদ্দি, হাসান বসরি প্রমুখ তাফসিরবিদেরা বলেন, ওই মুমিন ব্যক্তি ফেরাউনের চাচাতো ভাই ছিলেন। এক কিবতিকে হত্যার ঘটনায় যখন ফেরাউনের দরবারে মুসা (আ)-কে পাল্টা হত্যা করার শলাপরামর্শ চলছিল, তখন তিনিই মুসাকে শহর ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন) মুফতি তকি উসমানি বলেন, কোরআনে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়নি। তাঁর নাম ছিল শামআন। মুমিন ব্যক্তি দেখলেন, ফেরাউন আল্লাহর অবাধ্য। সে অহংকারী, অন্যায়-অবিচারে লিপ্ত। তখন তাকে দীনের পথে দাওয়াত দিলেন। আল্লাহর আজাবের ভয় দেখালেন। মুসা (আ.)-এর ধর্ম মানার পরামর্শ দিলেন। কাজ হলো না। উপরন্তু ঠাট্টা-বিদ্রুপ করল ফেরাউন। সে উজির হামানকে বলল, একটা প্রাসাদ বানাও, সেখানে চড়ে আমি দেখব মুসার উপাসককে দেখা যায় কি না! ফেরাউনের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য তিনি গা করলেন না। মনে রাখলেন না। দাওয়াতের কাজ অব্যাহত রাখলেন। আসন্ন আজাবের ব্যাপারে সতর্ক করলেন। ফেরাউন পাত্তা দিল না। আল্লাহর আজাব এল। ফেরাউন ও তার অনুসারীরা নদীতে ডুবে মারা পড়ল। বেঁচে গেল মুমিন ব্যক্তি। সুরা মুমিনের ২৩ থেকে ৪৬ নম্বর আয়াতে এ ঘটনার বিবরণ রয়েছে। সুরা হামিম সাজদার বয়ান কোরআনের ৪১তম সুরা হামিম সাজদা মক্কায় অবতীর্ণ। এর আয়াতের সংখ্যা ৫৪। এ সুরার আরেক নাম ফুসসিলাত। এ সুরায় আল্লাহর অনুগ্রহ, কোরআনের আলোচনা, মানুষের অকৃতজ্ঞতা, আদ ও সামুদ জাতির ঘটনা, কিয়ামতের দিন মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গই মানুষের পক্ষে-বিপক্ষে সাক্ষী দেওয়া, কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের অবস্থা, মুমিনদের পুরস্কার, আল্লাহকে চেনার উপায়, ধৈর্য ও ন্যায়ানুগ ফয়সালা, অহংকারী ও অস্বীকারকারীদের আলোচনা এবং আল্লাহর কাছে সম্মানিত ব্যক্তিদের বর্ণনা রয়েছে। সুরা হামিম সাজদার ৩০ থেকে ৩২ নম্বর আয়াতে ইহকাল ও পরকালে ফেরেশতাদের বন্ধুদের কয়েকটি গুণের কথা বলা হয়েছে। তাদেরকে নির্ভয় ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে জান্নাতের। ফেরেশতাদের বন্ধুরা হলেন: এক. যারা আল্লাহকে পালনকর্তা বলে বিশ্বাস করে। দুই. এই কথার ওপর অবিচল থাকে। সত্য গ্রহণের জন্য মানুষকে চোখ-কান দেওয়া হয়েছে। যারা গ্রহণ করে, তারা সফল ব্যক্তি। এই সত্য গ্রহণ তাদের জীবনকে মহিমান্বিত করবে। আর অনেকে আছে, সত্য গ্রহণ করে না। সত্যের বাণী হৃদয় দিয়ে অনুভব করে না। এর ফলে তারা নিজেদের ইহকাল ও পরকালের ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়। এ ক্ষতির জন্য আল্লাহ দায়ী নন। আল্লাহ কারও প্রতি অবিচার করেন না। মানুষই নিজেদের প্রতি অবিচার করে। আল্লাহ কারও ওপর এক অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। যদি কেউ একটি সৎ কাজ করে, তাহলে আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে তাকে মহাপুরস্কার দান করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে সৎ কর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে, আর যে অসৎ কর্ম করে, তা তার ওপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই জুলুম করেন না।’ (সুরা হামিম সাজদা, আয়াত: ৪৬)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ",অন্যান্য,"ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ’র করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে। রবিবার (১৪ জুন) সকালে তার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায় বলে ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রসঙ্গত, শনিবার (১৩ জুন) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান ৭৫ বছর বয়সী এ মুক্তিযোদ্ধা। এরপর করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শেখ মো. আব্দুল্লাহ ১৯৪৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতী নদীর তীরবর্তী কেকানিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral যায়যায়দিন,"গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদে ১০০ বছর পর আবার আজানের ধ্বনি ",ইসলাম ধর্ম,"ইউরোপে দিন দিন মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। আর মানুষের মধ্যে ধর্ম পালনে আগ্রহ বাড়ছে। গ্রিসে ঠিক ১০০ বছর আগে মুসলিমরা যুদ্ধে পরাজিত হবার পর অনেক মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়। তার অন্যতম গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ। জানা যায়, গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ, ১শ’ বছর ধরে যেখানে বন্ধ ছিল নামাজ আদায়। অর্থোডক্স খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠদের দেশটিতে গত শতক থেকেই বহাল ছিল এমন সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি, মত পাল্টায় দেশটির কর্তৃপক্ষ। এক শতাব্দি পর, বুধবার আদায় হয় ঈদুল ফিতরের নামাজ। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর প্রাচীন নিদর্শনটি কখনো ব্যবহার হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে, কখনো বা জাদুঘর। আদতে এক সময় যা ছিল মসজিদ। একশ বছর পর, আবারও মুসলিমদের জন্য খুলে দেয়া হলো গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ। পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমরা ফিরে পান হারানো ঐতিহ্য। গ্রিসের এক নাগরিক বলেন, গ্রিসে, মুসলিম আর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ ধরনের উদ্যোগ তারই বার্তা দেয়। আমার দেশ, আমার ধর্মকে সম্মান করছে। প্রার্থনা করতেও সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। সুতরাং, এটি খুবই ভালো আর গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। অটোম্যান শাসনামলে মসজিদটি তৈরি হয়েছিলো মূলত ডনমেহ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য। যারা ইহুদি থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৩ সালে, গ্রিস এবং তুরস্কের মধ্যকার চুক্তি অনুসারে বিনিময় হয় দু’দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় মসজিদটিতে মুসলিমদের প্রার্থনা। গ্রীসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে অবস্থিত এই মসজিদ সম্পর্কে অজানা ছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি, দেশটির কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে মসজিদটিতে ঈদের নামাজে অংশ নেন ৭০ মুসল্লি। এসময়ে এক মুসল্লি বলেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে ১শ’ বছরের মধ্যে এই প্রথম, মসজিদটির দরজা খুলে দেয়া হবে। তাই নামাজ পড়তে এসেছিলাম। এতদিন এটাকে জাদুঘর হিসেবে চিনলেও, জানতাম না এটা একটা মসজিদ। প্রায় ৬৩ ব্ছর যাবৎ এখানে আছি, আজকেই প্রথম দেখলাম। প্রায় এক শতাব্দিরও বেশি সময়ের আগের ((১৯০২)) মসজিদটির স্থাপত্যে দেখা মেলে ইসলামিক কারুকার্যের। ১৯০২ সালে, ইতালিয়ান স্থপতি ভিতালিনো পোসেলির হাত ধরেই গড়ে ওঠে অনন্য নিদর্শনটি। ইউরোপের দেশ, গ্রিসের অধিকাংশই অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। ২০২০ সাল পর্যন্তও দেশটিতে মুসলিমদের জন্য ছিল না কোনো মসজিদ। বর্তমানে, মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ ইসলাম ধর্মের অনুসারী।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"শুভ বড়দিন সারা বিশ্বে সংঘাত দূর হোক, শান্তি নামুক",খ্রীষ্টান ধর্ম,"আজ ২৫ ডিসেম্বর। আমরা খ্রিষ্টানগণ মহাসমারোহে ক্রিসমাস অর্থাৎ বড়দিন পার্বণ উদ্্যাপন করছি। আজ থেকে প্রায় দুই হাজার তেইশ বছর পূর্বে ঈশ্বরতনয় আশ্চর্যজনকভাবে ঐশ শক্তিতে মেরির কোলে বেথলেহেমের জীর্ণ গোশালায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মানবজাতির প্রতীক্ষিত মুক্তিদাতা প্রভু যিশু ত্রিশ বছর বয়সে প্রকাশ্যে প্রচারকার্য শুরু করেন। বাণী প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই চারদিকে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনেক লোক তাঁর অমৃতময় বাণী শোনার জন্য তাঁর চারপাশে ভিড় জমাতে থাকে। শ্রোতাদের তিনি মন পরিবর্তনের আহ্বান জানান। পাপ, অসত্য, অন্যায় থেকে মন ফিরিয়ে সত্য, সুন্দর ও ভালো কাজে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। তিনি শিক্ষা দেন, আমরা যাতে পাপকে ঘৃণা করি, পাপীকে নয়। তিনি অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অস্পৃশ্যদের পক্ষ অবলম্বন করেন। যিশু বলতেন, অসুস্থদেরই চিকিৎসক প্রয়োজন, সুস্থদের নয়। পৃথিবীতে থাকাকালীন তিনি অনেক আশ্চর্য কাজ করেছেন: অন্ধকে দিয়েছেন দৃষ্টি, কালাকে দিয়েছেন শোনার ক্ষমতা, প্রতিবন্ধীকে দিয়েছেন হাঁটার শক্তি, এমনকি মৃতকেও দিয়েছেন জীবন। তিনি একে অন্যকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসার শিক্ষা দেন। শুধু পাড়া–প্রতিবেশী ও বন্ধুদের নয়, এমনকি শক্রদেরও তিনি ভালোবাসতে বলেন। তিনি একে অপরকে ক্ষমা করার শিক্ষা দেন। তিনি বলেন, তিনি সেবা পেতে নয়, সেবা করতে এ জগতে এসেছেন। অন্যকে সেবা করার মধ্য দিয়েই আমরা মুক্তি ও পরিত্রাণ লাভ করি। আমরা প্রতিবেশী ভাইবোনদের সহায়তা, ক্ষুধার্তকে অন্ন, তৃষ্ণার্তকে জল, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র এবং অসুস্থ, অসহায়, গরিব ও দুঃখী মানুষকে যখন সেবাদান করি, তখন তিনিই সেই সেবা গ্রহণ করেন। যিশু সম্পর্কে পূর্ববর্তী প্রবক্তারা বলেছেন, তিনি হবেন শান্তিরাজ। তাঁর আগমনে এই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এ বছর আমরা যখন বড়দিন উদ্্যাপন করছি, তখন যিশুর জন্মস্থান পুণ্যভূমিতে চলছে যুদ্ধ। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। যুদ্ধ চলছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে। এর সঙ্গে আমেরিকাসহ ইউরোপের অনেক দেশ জড়িত হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে কত দেশে নিজেদের জাতি-গোষ্ঠী ও ধর্মের মানুষের মধ্যে চলছে সহিংসতা, হানাহানি ও মারামারি। কত সংঘাত, দুশ্চিন্তা ও অশান্তির মধ্যে মানুষ জীবন যাপন করছে। বাইবেলে বর্ণিত যিশুর জন্মকাহিনিতে আমরা শুনি, ‘জয় ঊর্ধ্বলোকে পরমেশ্বরের জয়। ইহলোকে নামুক শান্তি তাঁর অনুগৃহীত মানবের অন্তরে’ (লুক ২: ১৪)। যিশু তাঁর শিষ্যদের জন্য শান্তি দান করেছেন: ‘শান্তি তোমাদের জন্য রেখে যাচ্ছি, আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি’ (যোহন ১৪: ২৭)। এই শান্তি হলো শক্তিশালী, ঐশ্বরিক ও চিরস্থায়ী। জগতের কষ্ট, বাধাবিপত্তি এ শান্তি কেড়ে নিতে পারে না।’ যিশু আমাদের প্রকৃত শান্তিদাতা। শান্তি স্থাপনকারীকে বাইবেলে অনেক উচ্চে স্থান দেওয়া হয়েছে, ‘শান্তি স্থাপন করে যারা, ধন্য তারা; তারাই ঈশ্বরের সন্তান বলে পরিচিত হবে’ (মথি ৫: ৯)। যিশুর প্রচার ও শিক্ষার প্রধান বিষয়বস্তু ছিল, এ জগতে ঐশ রাজ্যের সুখবর ঘোষণা করা। আর এই ঐশ রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ হলো শান্তি (রোমীয় ১৪: ১৭)। শিষ্যদের প্রতি পুনরুত্থিত খ্রিষ্টের প্রথম ও প্রধান উপহার হলো শান্তি।যিশুর দেওয়া এই সর্বজনীন শান্তি স্থাপন করা হোক আমাদের সবার পবিত্র কর্তব্য ও দায়িত্ব। আমাদের পরিবারে, সমাজে ও দেশে আমরা সবাই হয়ে উঠি শান্তির দূত। পরিশেষে বড়দিন আমাদের আহ্বান জানায় হৃদয়-মন বড় করতে; উদার হতে, নিজের সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে আসতে। এই বড়দিনে আমাদের প্রার্থনা হোক প্রভু যিশুর আগমনে সব সংঘাত, হানাহানি ও যুদ্ধ বন্ধ হোক, এই ধরায় নেমে আসুক স্বর্গীয় শান্তি। বড়দিন আপনাদের প্রত্যেকের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি, ভ্রাতৃত্ব, একতা ও সম্প্রীতি। আমি সবাইকে বড়দিনের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ভোরের কাগজ,"ভোলার ঘটনা ধর্মান্ধদের মদদ ",অন্যান্য,"ফেসবুকে একটি বিভ্রান্তিকর পোস্টের সূত্র ধরে গত রবিবার (২০ অক্টোবর) ভোলার বোরহানউদ্দিনে ঘটে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক যুবকের বিচারের দাবিতে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ থেকে পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ভোলা ইস্যুতে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ধৈর্যধারণ ও গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একটি মিথ্যা অপপ্রচার বা গুজব কত সহজেই যে জনগণের কোনো কোনো অংশকে উত্তেজিত করে ভয়ঙ্কর কাণ্ড তথা লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে পারে তার অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমাদের দেশেই রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার জেলার রামুতে হামলা চালিয়ে লুটপাটসহ ১২টি বৌদ্ধমন্দির ও ৩০টি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়। ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রসরাজ নামে এক মৎস্যজীবীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে লোকজনকে ক্ষেপিয়ে তুলে ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়। আমরা প্রায়ই দেখতে পাই এসব ধর্মীয় উগ্রবাদী ও স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা অপপ্রচার এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে থাকে। বিশেষ করে দেশে যখন কোনো ক্রান্তিকাল উপস্থিত হয় আবার যখন কোনো ইস্যু থাকে না তখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের লক্ষ্যে এরা কখনো ধর্ম অবমাননাসহ নানা ইস্যু সামনে এনে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। আসলে খতমে নবুয়ত বলুন আর তৌহিদী জনতা আর ইমান রক্ষা কমিটি বা তাহফুজে খতমে নবুয়ত, যে নামেই তারা মাঠে নামে, এরা মূলত জামায়াতে ইসলামীরই ভিন্নরূপ। এরা একেক সময় একেক নাম দিয়ে মাঠে নামে আর রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে। পাকিস্তানে যেমন ধর্মকে ব্যবহার করে দেশটাকে বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে ঠিক একইভাবে এ দেশকেও চাচ্ছে উগ্র ধর্মান্ধদের কেন্দ্রে পরিণত করতে। এর আগে আমরা দেখেছি ধর্ম অবমাননার কথা বলে বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কখনো ইসলাম সমর্থন করে না। আজ যারা বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে এবং বড় ধরনের নাশকতার চিন্তাভাবনা করছে তাদের বলতে চাই, মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা কি জ্বালাও-পোড়াও করে অর্জিত হবে, নাকি তাঁর উত্তম আদর্শ স্থাপন করার মাধ্যমে অর্জিত হবে? ইসলাম ধর্মের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্ব হলো, এটা প্রত্যেক মানুষকে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করে। এই স্বাধীনতা কেবল ধর্ম-বিশ্বাস লালন-পালন করার স্বাধীনতা নয় বরং ধর্ম না করার বা ধর্ম বর্জন করার স্বাধীনতাও এই ধর্মীয় স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তুমি বল, তোমার প্রতিপালক-প্রভুর পক্ষ থেকে পূর্ণ সত্য সমাগত, অতএব যার ইচ্ছা সে ইমান আনুক আর যার ইচ্ছা সে অস্বীকার করুক’ (সুরা কাহাফ : ২৮)। সত্য ও সুন্দর নিজ সত্তায় এত আকর্ষণীয় হয়ে থাকে যার কারণে মানুষ নিজে নিজেই এর দিকে আকৃষ্ট হয়। বলপ্রয়োগ বা রাষ্ট্রশক্তি নিয়োগ করে সত্যকে সত্য আর সুন্দরকে সুন্দর ঘোষণা করানো অজ্ঞতার পরিচায়ক। যেমন সূর্যোদয়ই সূর্যের অস্তিত্বের প্রমাণ। এই নিয়ে গায়ের জোর খাটানোর বা বিতণ্ডার অবকাশ নেই। ঠিক তেমনি কে আল্লাহকে মানল বা মানল না, কে ধর্ম করল বা করল না এটা নিয়ে এ জগতে বিচার বসানোর কোনো শিক্ষা ইসলাম ধর্মে নেই। ভোলার নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে মূলত উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর মদদ রয়েছে। কেননা তাদের দাবি আর খতমে নবুয়ত, হেফাজতে ইসলাম এবং তৌহিদী জনতার দাবি একই, শুধু ভিন্ন নামে মাঠে নেমেছে। দেশকে শান্তিময় এবং নিরাপদ রাখতে হলে এসব ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিষয়ে সরকারকে যেমন আরো কঠোর হতে হবে তেমনি সমগ্র দেশবাসীকেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,শিরক সবচেয়ে বড় পাপ,ইসলাম ধর্ম,"শিরক মানে অংশীদারিত্ব স্থাপন করা। বিশ্ব জাহানের একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করার নাম শিরক। শিরক সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ। আল্লাহর গুণাবলিতে অন্য কাউকে সমকক্ষ স্থির করার চেয়ে বড় অপরাধ আর নেই। শিরকের চেয়ে ভয়াবহ জুলুম আর কিছু নেই। পবিত্র কোরআনে শিরককে বড় জুলুম বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করো সেই সময়ের কথা, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বলল, হে বৎস, আল্লাহর সঙ্গে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা বড় জুলুম। ’ (সুরা : লুকমান : আয়াত : ১৩) ইমাম আবু আবদিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল বুখারি (রহ.) তার ‘সহিহ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, যখন নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়-‘যারা ঈমান আনে এবং তাদের ঈমানের সঙ্গে কোনো জুলুম মিশ্রিত করে না...।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২) তখন সাহাবিদের কাছে বিষয়টা খুব কঠিন মনে হলো। তারা বলতে লাগলেন, আমরা সবাই তো কোনো না কোনো জুলুম তথা গুনাহ করে ফেলি। একেবারে জুলুমমুক্ত আমাদের মধ্যে কে আছে? রাসুল (সা.) তাদের এ কথা শুনে বলেন, তোমরা ব্যাপারটাকে যেমন ভেবেছ বিষয়টা তেমন নয়। তোমরা কি দেখো না যে লুকমান তার ছেলেকে কী নসিহত করেছেন! তিনি বলেছেন, ‘হে প্রিয় বৎস, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করবে না। মনে রেখো, শিরক সবচেয়ে বড় জুলুম। ’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৩) রাসুল (সা.)-এর কথা ও লুকমান হাকিম (রহ.)-এর উপদেশ-এ দুইয়ের আলোকে এ কথা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে এই পৃথিবীতে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার চেয়ে বড় কোনো জুলুম তথা অপরাধ নেই। শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় গুনাহ। ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। মহান আল্লাহ শিরককারীকে ক্ষমা করেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে ব্যক্তি তার সঙ্গে শরিক করে। এ ছাড়া অন্য পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করল, সে অত্যন্ত গুরুতর অপবাদ আরোপ করল।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪৮) শিরকের কারণে পরকালে জান্নাত হারাম হয়ে যায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নিশ্চিত জেনো, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর যারা (এরূপ) জুলুম করে তাদের কোনো রকমের সাহায্যকারী লাভ হবে না।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৭২) তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত, যেকোনো মূল্যে শিরকমুক্ত থাকার চেষ্টা করা। অতীতের শিরক হয়ে গেলে তার ওপর অনুতপ্ত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করা। এবং আগামীতে কখনো এ ধরনের গুনাহে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সংকল্প করা। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের গুনাহ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative প্রথম আলো,"সুরা হাশরের শেষ ৩ আয়াতের ফজিলত ",ইসলাম ধর্ম,"সুরা হাশর পবিত্র কোরআনের ৫৯তম সুরা। সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত (বাংলা উচ্চারণ )হলো: ‘হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাদি, হুয়ার রাহমানুর রাহিম। হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানাল্লাহি আম্মা য়ুশরিকুন। হুআল্লাহুল খালিকুল বা-রিউল মুছাওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।’ অর্থ : তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়। তিনিই আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনিই মালিক, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, নিরাপত্তাবিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অহংকারের অধিকারী। ওরা যাকে শরিক করে আল্লাহ্ তার থেকে পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ্, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, সব সুন্দর নাম তাঁরই । আকাশ ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্র মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, তত্ত্বজ্ঞানী। (সুরা হাশর, আয়াত: ২২থেকে ২৪) আরও পড়ুন আল্লাহ অবিশ্বাসীদের কথা বলেছেন সুরা কাফিরুনে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের কথা বলেছেন সুরা কাফিরুনে মদিনা থেকে দুই মাইল দূরে বনু নাজিরের বসবাস। তারা নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। এ অবস্থায় নবী করিম (সা.) তাদের মহল্লায় গেলে তারা তাঁকে একটি ছাদের নিচে বসতে দেয়। পরে ছাদ থেকে পাথর গড়িয়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। আল্লাহ তাআলা ওহির মাধ্যমে তাঁকে এ বিষয়ে জানানো হলে তিনি জায়গাটি থেকে সরে যান। তাদের জানিয়ে দেন, ‘তোমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ। তোমাদের যেখানে ইচ্ছা চলে যাওয়ার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হলো। এরপর তোমাদের কাউকে পাওয়া গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।’ মুনাফিক সরদারের প্ররোচনায় তারা দেশ ত্যাগ করল না। নবী করিম (সা.) চতুর্থ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে তাদের পাড়া ঘেরাও করেন। নিরুপায় হয়ে তারা নতিস্বীকার করলে নবী করিম (সা.) আবারও তাদের সুযোগ করে দিয়ে বললেন, ‘অস্ত্র ছাড়া যতটা পারো জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে এখনই এলাকা ত্যাগ করো।’ আদেশ মেনে তারা দেশত্যাগ করল। কেউ চলে গেল খাইবার উপত্যকায়, কেউ সিরিয়ায়। সুরাটির শেষ তিন আয়াতে আছে, ‘তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়’। সুরা হাশর মদিনায় অবতীর্ণ। এর ৩ রুকু, ২৪ আয়াত। এই সুরায় ইহুদিদের নির্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি সকাল বেলা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে। আল্লাহ ওই ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করেন; যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি,হাদিস : ৩০৯০)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,রোজাদারের স্তর ও মর্যাদা,ইসলাম ধর্ম,"পার্থিব কাজের বিচারে যেমন মানুষকে নানা স্তরে ভাগ করা যায়, তেমনি ইবাদত-বন্দেগির বিচারেও মানুষকে নানা স্তরে ভাগ করা যায়। যেমন রোজা। রোজাদার ব্যক্তির দ্বিনদারি, আত্মিক অবস্থা ও রোজার শিষ্টাচার রক্ষায় আন্তরিকতার বিচারে তাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। রোজাদারের চার স্তর ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রোজাদার ব্যক্তিদের চার স্তরে বিভক্ত করা যায়। যেমন— ১. যাদের রোজা নিষ্ফল : যে ব্যক্তি রোজাকে প্রথা-প্রচলনের চেয়ে বেশি কিছু মনে করে না। পরিবার ও সমাজে মুখ রক্ষার জন্য রোজা রাখে। তার রোজা সাহরি ও ইফতারের বাইরে সীমাবদ্ধ থাকে। রোজার শর্ত ও শিষ্টাচার কোনোটাই তার ভেতর পাওয়া যায় না। তারা রোজা রেখেও শরিয়তবিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না। যেমন—মিথ্যা, পরনিন্দা, প্রতারণা ইত্যাদি মন্দ কাজ করতে থাকে। এমন ব্যক্তি রোজার মর্যাদা ও বরকত থেকে বঞ্চিত হয়। রোজা তাদের জীবনে কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে না। হাদিসের ভাষায় ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া তাদের আর কোনো অর্জন নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কত রোজাদার এমন যাদের রোজা ক্ষুিপপাসা ছাড়া আর কিছুই না এবং কত তাহাজ্জুদ আদায়কারী এমন যাদের তাহাজ্জুদ রাত জাগরণ ছাড়া আর কিছু না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ২০১৪) ২. আল্লাহভীরু রোজাদার : যে ব্যক্তি ব্যক্তিগত জীবনে দ্বিনদার এবং যথাসম্ভব কবিরা ও সগিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে। রোজা এমন রোজাদারের ভেতর আল্লাহভীতি তৈরি করে। যেন তারা নিম্নোক্ত আয়াতেরই দৃষ্টান্ত—‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৩) আল্লাহভীতির কারণে রোজাদার ব্যক্তি তার দৈনন্দিন আমলগুলোকে হালাল-হারামের দাঁড়িপাল্লায় মেপে নেয়। এমন রোজাদারের জন্য রোজা ঢালস্বরূপ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রোজা ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন রোজা অবস্থায় অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৪) ৩. আল্লাহর পরিচয় লাভকারীর রোজা : আল্লাহর পরিচয় লাভকারী কামেল ব্যক্তি হলেন যিনি শুধু আল্লাহভীতিই অর্জন করেন না, বরং নিজের প্রবৃত্তির ওপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। এক ব্যক্তি খাজা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া মুলতানি (রহ.)-কে তাঁর রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, রোজা হলো নিজের প্রবৃত্তি কামনা করে এমন বস্তু থেকে বিরত থাকা। নিম্নোক্ত আয়াতে তাদের রোজার ফলাফল বর্ণিত হয়েছে, ‘পক্ষান্তরে যে স্বীয় প্রতিপালকের সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা : নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১) ৪. মুশাহাদার স্তরে উপনীত ব্যক্তির রোজা : যে ব্যক্তি মুশাহাদার স্তরে উপনীত হয় সৃষ্টিজগৎ থেকে তার দৃষ্টি সরে গিয়ে মহান আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলিতে আবদ্ধ থাকে। তারা পৃথিবীতে জীবনযাপন করলেও পৃথিবীর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক থাকে না। সৃষ্টিজগতের ব্যাপারে তারা থাকে অমুখাপেক্ষী। এমন ব্যক্তির রোজা তার ভেতর আল্লাহর নুরই বৃদ্ধি করে এবং রোজা তার জন্য আল্লাহর অধিকতর নৈকট্য লাভের মাধ্যম কেবল। এমন ব্যক্তি সম্পর্কেই হাদিসে বলা হয়েছে, সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, অবশ্যই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৪) রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, জান্নাতের রাইয়ান নামের একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন রোজা পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়: হাইকোর্ট,ইসলাম ধর্ম,"রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করেনি। বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অন্য দুই বিচারপতি হলেন, কাজী রেজা-উল হক ও মো. আশরাফুল কামাল। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দারের লেখা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২ক অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম শুধু সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লিখিত শুধু মৌলিক নীতিগুলো অন্য কোনো বিধানের সঙ্গেও অসংগতিপূর্ণ নয়। সংবিধানে ইসলামকে ‘রাষ্ট্রধর্ম মর্যাদা’ প্রদান করা হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক মর্যাদা প্রদানের বাধ্যবাধকতা নেই। অনুচ্ছেদ ২ক অবশ্যই সামগ্রিকভাবে পড়তে হবে এবং পড়লে এটা সুস্পষ্ট হয় যে, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার ধারণার সন্নিবেশ কোনোভাবেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করে না। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করে না এবং সংবিধানে বাহুল্যতাও সৃষ্টি করে না। রায়ে বলা হয়েছে, তর্কিত সংশোধনী সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকেও প্রভাবিত করে না। অতএব, আমরা মনে করি যে, তর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২ক সন্নিবেশ করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানবিরোধী নয়। বিষয়টিকে সহজ করার প্রয়াস হিসেবে, উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক আমরা আমাদের রায়ে আলোচনা করেছি। ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২ (ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে। তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন ব্যক্তি। ২০১১ সালের ৮ জুন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দেন। ওই দিনই অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের সহায়তাকারী) হিসেবে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।ওই রুল জারির প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মার্চ এই রুল শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। ওই দিন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশটি প্রত্যাহার করেন আদালত। পরে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেওয়া হয়। সেই রায় সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive নয়াদিগন্ত,ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি : হিন্দু কলেজছাত্র আটক,ইসলাম ধর্ম,"ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করায় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর এলাকার শুভ সরকার (১৮) নামের এক হিন্দু কলেজ ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত শুভ সরকার রাজাপুর এলাকার মহানন্দ সরকারের ছেলে এবং সরকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। পুলিশ জানায়, হিন্দু কলেজছাত্র শুভ সরকার গত মঙ্গলবার ফেসবুকে ‘এ কেমন ধর্ম, হাজারো পশু হত্যা করে উৎসব পালন’ লিখে ইসলাম ধর্মকে কটুক্তি করে তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পলে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত শুভ সরকারকে আটক করে। মহম্মদপুর থানার ওসি মোঃ রবিউল হোসেন জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার দায়ে শুভ সরকারকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,যেসব দেশে আজ ঈদ,ইসলাম ধর্ম,"সিয়াম-সাধনার মাস রমজান শেষে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে। এদিকে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপিত হবে বাংলাদেশে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোজা ৩০টি হলেও মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এবার রোজা হয়েছে ২৯টি। এ বছর দেশ দু’টিতে পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছিল গত ১২ মার্চ। সে হিসেবে মঙ্গলবার এই দু’টি দেশে রমজানের ২৯তম দিন ছিল। এ ছাড়া কাতার, মিসর, কুয়েত, বাহরাইন, ইয়েমেন, ইরাক, লেবানন, সিরিয়া, ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বাকি দেশগুলোতেও আজ ঈদ পালন করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মরক্কো, লিবিয়া, সুদানসহ উত্তর আফ্রিকার মুসলিমরাও আজ ঈদের উৎসব পালন করছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, তুরস্ক, ইরানও বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে। ইউরোপ ও আমেরিকার অন্য দেশগুলোতেও ঈদ হবে বুধবার। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষ্যিত দেশ পাকিস্তানেও আজ বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির চাঁদ দেখা কমিটি পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে বলে বুধবার ঈদের ঘোষণা দেয়। এদিকে, ভারতের তিনটি রাজ্যে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। যদিও দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বেশিরভাগ অঞ্চলে চাঁদ দেখা যায়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ এবং কেরালায় শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে এসব অঞ্চলে বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আর যে সব অঞ্চলে মঙ্গলবার চাঁদ দেখা যায়নি সেখানে ঈদ পালিত হবে বৃহস্পতিবার।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,প্রবারণা উৎসবে রঙিন রাখাইন পল্লী,বৌদ্ধ ধর্ম,"বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। প্রতি বছর দুই দিনব্যাপী এ উৎসব পালন করেন রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ। এবার প্রবারণা উপলক্ষে রবিবার রাতে কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে গৌতম বুদ্ধের স্মরণে ১ হাজার মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। পরে আকাশে ওড়ানো হয় অর্ধশতাধিক ফানুস। আতশবাজি ও নাচে-গানে মাতেন রাখনাইন যুবক-যুুবতী। উৎসব দেখতে ভিড় করেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। গতকাল বিকালে উৎসব শেষ হয়েছে। এর আগে রবিবার সকালে পঞ্চশীল, অষ্টশীল প্রার্থনা, ঘণ্টা বাজানোসহ ধর্মীয় আলোচনা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ফল ও পিঠাপুলি বৌদ্ধ ভিক্ষুকে দেন রাখাইন সম্প্রদায়ের বয়স্ক নারী-পুরুষরা। উৎসব ঘিরে কলাপাড়া উপজেলার ২৪টি রাখাইন পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। আলোকসজ্জা করা হয়েছে প্রতিটি বিহার। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, এই দিনে গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। এ কারণে দিনটি তাদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া বুদ্ধের স্মরণে আষাঢ়ি পূর্ণিমায় ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত শুরু হয়ে কার্তিকের এ পূর্ণিমা শেষ করেন। উৎসব ঘিরে বাড়ি বাড়ি তৈরি হয় বাহারি পিঠা, পুলি, পায়েস। গৃহে অতিথি আপ্যায়নসহ রাখাইনরা এই দিনে পরিষ্কার কিংবা নতুন পোশাকে বিহারে গমন করেন। পালন করা হয় বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান। মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের ভিক্ষু ও গৌতম বুদ্ধ পাঠাগারের গবেষক উত্তম ভিক্ষু বলেন, আত্মশুদ্ধি এবং অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণেই এ উৎসব। শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার ভিক্ষু উপাধ্যক্ষ ইদ্রবংশ বলেন, প্রতিবছর এ সময় আকাশে ফানুস উড়িয়ে এবং ধর্মীয় নানা আয়োজনে গৌতম বুদ্ধ দেবকে স্মরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উপজেলার ২৪টি রাখাইন মন্দিরে প্রবারণা উৎসব পালনের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। রাখাইনরা যাতে উৎসব ভালোভাবে পালন করতে পারে সেজন্য নেওয়া হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা।",ধর্মীয় উৎসব,Positive Dhaka Tribune,"ফখরুল: সাম্প্রদায়িক সীমানা ছাড়িয়ে সবাইকে মিলিত করে ধর্মীয় উৎসব ",অন্যান্য,"শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (২৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী। এ উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করছি।” বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করছে। ধর্মীয় উৎসব সাম্প্রদায়িক সীমানা অতিক্রম করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে এক বৃহত্তর শুভেচ্ছার প্রাঙ্গণে মিলিত করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ। আমরা সবাই বাংলাদেশি– এটিই আমাদের গর্ব, এটিই আমাদের একমাত্র পরিচয়।” বাণীতে তিনি বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনে একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। সুদীর্ঘ কাল ধরেই এই উপমহাদেশে এক সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য ধারণ করে আছে এই ধর্মীয় উৎসব।” এতে বলা হয়, যেকোনো ধর্মীয় উৎসবই সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিভাজনকে অতিক্রম করে মানুষে মানুষে মহামিলন সূচনা করে। শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব সবার মধ্যে নিয়ে আসে আনন্দের বার্তা। একটি শাশ্বত সার্বজনীন উৎসব হিসেবে বাংলাদেশে এটি পালিত হয়। যেকোনো ধর্মীয় উৎসব জাতি-রাষ্ট্রে সব মানুষের মিলন ক্ষেত্র। বিএনপি আবহমানকালের দৈশিক চেতনা ও ঐতিহ্যের ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, “এই সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ ও ভাঙচুর অতি মাত্রায় সংঘটিত হচ্ছে। বর্তমানে দুর্গাপূজার প্রাক্কালে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ও মন্দিরে আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা দেশ ও মানবতার শত্রু।”",ধর্মীয় উৎসব,Positive ভোরের পাতা,"যে আমল করলে বিশ্বনবী নিজ হাতে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন ",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) নিজ হাতে ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, মুমিনের জন্য এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে? কী এমন আমল রয়েছে, যার বিনিময়ে তিনি তাঁর উম্মতকে হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন? ‘হ্যাঁ’, ছোট্ট একটি আমল রয়েছে। হাদিসের বর্ণনায় এমনটিই এসেছে, যা দিনের শুরুতে করতে হয়। তবে এ আমলটির বাস্তবায়নই হচ্ছে মূল কথা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর এমন উম্মতকে হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; যে আল্লাহকে প্রভু হিসেবে পেয়ে খুশি, ইসলামকে দ্বীন তথা জীবন ব্যবস্থা হিসেবে পেয়ে খুশি এবং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবি হিসেবে পেয়ে খুশি ও সন্তুষ্ট। হাদিসে পাকে এ আমলটির কথাই বলা হয়েছে- হজরত মুনাইজির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি সকালে এ বাক্যগুলো বলবে- رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَّ بِالْاِسْلَامِ دَيْنَا وَّبِمُحَمَّدٍ نَبِيَّا উচ্চারণ : ‘রাদিতু বিল্লাহি রাব্বাও ওয়া বিল ইসলামি দিনাও ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যা’ অর্থ: ‘আল্লাহকে প্রভু হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবি হিসেবে গ্রহণ করতে পেরে আমি সন্তুষ্ট ও খুশি হয়েছি।’ (এ ঘোষণাকারীর জন্য) আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি যে, তাঁর হাত ধরে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো।’ (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব) অন্তরের বিশ্বাস, মুখের স্বীকৃতি ও কাজের বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিদিনের এ ঘোষণায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রিয় উম্মতকে নিজের মোবারক হাতে ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে উম্মতকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাতে ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; তার জন্য এর চেয়ে সৌভাগ্যের আর কী হতে পারে!",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"১৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ",ইসলাম ধর্ম,"ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী মাসের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত বিশ্বইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে—বৃহস্পতিবার ধর্মমন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে এ কথা জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে— এর আগে দুই পর্বে এ বিশ্বইজতেমা অনুষ্ঠিত হলেও এবার একটাই হবে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, দুই গ্রুপ এক সঙ্গে একই জায়গায় এবারের ইজতেমা করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। গতকাল ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা হবে যৌথ আয়োজনে-আর দিন ঠিক হবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠকে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দুই পক্ষের ‘মুরুব্বিদের’ নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি। তাবলিগ জামাতের প্রতিদ্বন্দ্বি দুই পক্ষের বিবাদ মিটে গেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসছে ফেব্রুয়ারিতে দুই পক্ষ একসঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা করতে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, বিরোধ মীমাংসা হয়েছে— এখন আর কোনো বিরোধ নেই, ফেব্রুয়ারি মাসে একসঙ্গে ইজতেমা হবে আর আগামীকাল ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দুই পক্ষের প্রতিনিধি মাওলানা জুবায়ের আহমেদ ও মাওলানা ওয়াসেকুল ইসলাম বৈঠক করে দিন ঠিক করবেন। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দিল্লির মাওলানা সাদ এবার আর ইজতেমায় যোগ দিতে আসছেন না, বৈঠকে এ সিদ্ধান্তই হয়েছে। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় দুই পক্ষের ‘মুরুব্বিরা’ কোলাকুলি করেন। বিরোধ মীমাংসায় সমন্বয়কারী কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা মাজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে একবারেই ইজতেমা হবে। তাদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল তা মিটমাট হযে গেছে এখন আর বিরোধ নেই। কয়েক লাখ লোকের জমায়েতের কারণে বিশ্ব ইজতেমাকে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মিলন বলা হয়। প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হলেও তাবলিগ জামাতের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে এবার তা স্থগিত করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের মধ্যে তাবলিগের শুরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসেকুল ইসলাম এবং দেওবন্দপন্থিদের মধ্যে শুরা সদস্য মাওলানা জুবায় আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, র্যা ব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,"তারাবিহতে আজ: ২৪ চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ঘটনা",ইসলাম ধর্ম,"আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ তেলাওয়াত করা হবে। ২৭তম পারা পড়া হবে। আজকের তারাবিহতে পূর্ববর্তী জাতির অবাধ্যতার পরিণতি, মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ উৎসর্গ, আসমান-জমিন সৃষ্টি, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তার খণ্ডন, তাকদির, আল্লাহর অস্তিত্ব, ইমান, ইমানদারের প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে। মানুষ সৃষ্টির কারণ আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষ পাঠাতে চাইলেন। ফেরেশতাদের বললেন, ‘আমি মানুষ সৃষ্টি করব। পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি পাঠাব।’ ফেরেশতারা বললেন, ‘আমরাই তো আপনার প্রশংসা করছি। মানুষ পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা করবে। মারামারি করবে।’ আল্লাহ আদম (আ.)-কে বানালেন। পৃথিবীতে পাঠালেন। এই আদমের জাতি মানুষ আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি। আল্লাহ মানুষকে ভালোবেসে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। তাঁর আদেশ মোতাবেক চলার জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ৫৬) আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশিত পথ ও মতে জীবন পরিচালনা করা হলো ইবাদত। সুরা তুরে যা আছে ৪৯ আয়াত বিশিষ্ট সুরা তুর মক্কায় অবতীর্ণ, এটি কোরআনের ৫২তম সুরা। রাসুল (সা.) তখন মক্কায়। মাগরিব নামাজ পড়ছিলেন। নামাজে তিলাওয়াত করছিলেন সুরা তুর। জুবাইর ইবনে মুতইম তখনো মুসলমান হননি। তিনি তিলাওয়াত শুনছিলেন। যখন সুরা তুরের ৩৫ থেকে ৩৭ নম্বর আয়াত শুনলেন, তার মনে হলো, অন্তরাত্মা উড়তে শুরু করেছে। সেদিনই তাঁর অন্তরে ইসলাম জায়গা করে নিয়েছে। সেই আয়াতগুলোর অর্থ হলো, ‘তারা কি আপনা-আপনিই সৃষ্টি হয়ে গেছে, না কি তারাই (নিজেদের) স্রষ্টা? নাকি আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবী তারা সৃষ্টি করেছে? না; বরং মূল কথা হচ্ছে, তারা বিশ্বাসই রাখে না। তোমার প্রতিপালকের ভান্ডার কি তাদের কাছে রয়েছে? নাকি তারাই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক?’ (সুরা তুর, আয়া: ৩৫-৩৭; বুখারি, ৩০৫০, ৪৮৫৪; দালাইলুন নুবুওয়া, আবু নুআইম, ১/৩০৮) সুরা তুরের ১৭ থেকে ২৮ নম্বর আয়াতে জান্নাতে তাঁদের জন্য কী কী নেয়ামত থাকবে, তার বিবরণ রয়েছে। যেমন তাঁরা দোজখ থেকে রক্ষা পাবেন, সুখে ও সম্পদে থাকবেন, তৃপ্তির সঙ্গে খাবেন ও পান করবেন, সবকিছু আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করবেন, সারি সারি সাজানো আসনে হেলান দিয়ে আরামে বসবেন, সুন্দরী রমণী পাবেন, তাঁদের সন্তানেরাও তাঁদের সঙ্গে থাকবেন, ফলমূল ও গোশত পাবেন, শরাব পান করবেন; কিন্তু অনর্থক প্রলাপ করবেন না, তাঁদের সেবায় সুরক্ষিত মণিমুক্তা সদৃশ কিশোরেরা থাকবেন। যে আয়াত শুনে অবিশ্বাসীরাও সিজদা করেছিল ৬২ আয়াত বিশিষ্ট সুরা নাজম মক্কায় অবতীর্ণ, এটি কোরআনের ৫৪তম সুরা। যখন এ সুরার শেষ আয়াত নাজিল হয়েছিল, রাসুল (সা.), উপস্থিত সাহাবি ও অবিশ্বাসীরা সিজদা করেছিল। (তাফসিরে ইবনে কাসির) এ সুরায় আল্লাহ বেশ কিছু বিষয়ের কসম করে মুহাম্মাদ (সা.)-এর সত্য নবী হওয়া, তাঁর প্রতি নাজিলকৃত ওহিতে সন্দেহ ও সংশয় না থাকার প্রমাণ, মূর্তি উপাসক ও যারা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা সাব্যস্ত করে তাদের নিন্দা, কিয়ামতের বর্ণনা, কারও গুনাহের বোঝা অপরের কাঁধে চাপানো হবে না এবং আল্লাহর কুদরতের বর্ণনা রয়েছে। চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার গল্প ৫৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা কমার মক্কায় অবতীর্ণ। এটি কোরআনের ৫৪ তম সুরা। সুরার শুরুতে রাসুল (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার আলোচনা থাকায়, এর নাম সুরা কমার রাখা হয়েছে। তখন ইসলামের শুরুর সময়। রাসুল (সা.) মক্কার অবিশ্বাসীদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। তারা অস্বীকার করে চলল। একবার আবু জাহেলের নেতৃত্বে একদল মুশরিক ও ইহুদিরা জানাল, ‘যদি মুহাম্মাদ চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করতে পারে, তাহলে তাঁকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেব।’ জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ। নবীজি আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। চাঁদের দিকে আঙুল ইশারা করলেন। চাঁদ দিখণ্ডিত হয়ে যায়। অবিশ্বাসীরা ব্যাপারটি জাদু বলল। ইহুদিদের কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছিল। তারা তাওরাতে চাঁদের ব্যাপারটি পড়েছিল। দ্বিখণ্ডিত চাঁদ মক্কার বাইরের লোকজনও দেখেছিল। তারপরও অবিশ্বাসীরা বলল, ‘এটা জাদু। আমরা তাঁকে রাসুল মানব না।’ নেয়ামতের বর্ণনা সুরা রহমানে কোরআনের ৫৫তম সুরা রহমান মদিনায় অবতীর্ণ। এর আয়াত সংখ্যা ৭৮। এ সুরার প্রথম আয়াতটিই হলো, আর-রহমান, তাই এর নাম রহমান রাখা হয়েছে। এ সুরার আরেক নাম ‘উরুসুল কোরআন’ বা ‘কোরআনের নববধূ’। জগতের সবকিছু মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত। সুরা রহমানে আল্লাহ দুনিয়া-আখিরাতের বহু নেয়ামতের উল্লেখ করেছেন। এ নেয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ মোট ৩১ বার প্রশ্ন করেছেন, ‘অতএব তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?’ সুরা ওয়াকিয়ার বিষয়বস্তু ৯৬ আয়াতবিশিষ্ট সুরা ওয়াকিয়া মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আরেক নাম গিনা, অর্থাৎ সমৃদ্ধিশালী। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, তাকে কখনো দারিদ্র্য স্পর্শ করবে না।’ (শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকি: ২৪৯৮) এ সুরায় কিয়ামতের সময়কার বিভিন্ন বর্ণনা, কিয়ামতের দিন মানুষের শ্রেণি বিভেদ, আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ববাদ, কুদরত ও ক্ষমতার প্রমাণ, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশ, কোরআনের মাহাত্ম্য, মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও আল্লাহর আনুগত্য ইত্যাদির কথা আছে। লোহা সৃষ্টির কারণ ২৯ বিশিষ্ট সুরা হাদিদ মদিনায় অবতীর্ণ। হাদিদ অর্থ লোহা। লোহা সৃষ্টির আলোচনা থাকায় এ সুরার নাম হাদিদ। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরার ৩ নম্বর আয়াতটি অন্যান্য হাজার আয়াত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ এ সুরায় আল্লাহ লোহা সৃষ্টির দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন। এক. এতে শত্রুদের মনে ভীতি সঞ্চার হয়। দুই. এতে রয়েছে বহুবিধ কল্যাণ। জগতের সবকিছু আল্লাহর, তিনি মালিক, সবকিছু তাঁর প্রশংসা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান, দ্বীন প্রতিষ্ঠায় জীবন-সম্পদ কোরবানি, দুনিয়ার মোহে ধোঁকায় না পড়া, আল্লাহর ভয় ইত্যাদির বয়ান আছে এ সুরায়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,চান্দ্র মাসের হিসাব গণনায় নবীজি (সা.)-এর সতর্কতা,ইসলাম ধর্ম,"হিজরি বর্ষ হলো ইসলামের দাপ্তরিক বর্ষ। ইসলামের বিভিন্ন বিধি-বিধান হিজরি বর্ষ তথা চান্দ্র মাস অনুযায়ী পালন করতে হয়। যেমন—রমজানের রোজা, আইয়ামে বিজের রোজা, হজ, আশুরা, ঈদ, শবেবরাত, শবেকদর প্রভৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত বিধি-নিষেধ চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া জাকাতের এক বছর গণনা, সন্তানের বয়স গণনা এবং পূর্ণ দুই বছর সন্তানকে মায়ের দুধ পান করানোর হিসাব—সবই হিজরি বর্ষ তথা চান্দ্র মাস অনুযায়ী হয়ে থাকে।কোরবানির পশুর বয়সও চান্দ্র মাস অনুযায়ী বিবেচিত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘লোকে তোমাকে নতুন চাঁদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে। বলো, এটি মানুষ এবং হজের জন্য সময় নির্দেশক। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৯)অর্থাৎ চাঁদের এই পরিবর্তন দেখে দিন-তারিখ ঠিক করা হয় এবং তারই আলোকে ইবাদত পালনের সময় নির্ধারিত হয়।ইসলামের অনেক বিধি-বিধান চান্দ্র মাস ও হিজরি বর্ষের সঙ্গে জড়িত। ঈদ, আশুরা, শবেবরাত, শবেকদরসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, আনন্দ-উত্সব সবই এর ওপর নির্ভরশীল। মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় জীবনে হিজরি বর্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। চান্দ্র মাসের হিসাব গণনায় নবী (সা.) অত্যন্ত সতর্ক থাকতেন।চান্দ্র মাসের হিসাব গণনায় নবীজি (সা.)-এর সতর্কতা : নবী (সা.) খুব সতর্কতার সঙ্গে চাঁদের হিসাব রাখতেন এবং অন্যদের এ ব্যাপারে উত্সাহিত করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের খুব হিসাব করতেন। এ ছাড়া অন্য কোনো মাসের এত হিসাব করতেন না। এরপর রমজানের চাঁদ দেখে রোজা রাখতেন। আকাশ মেঘলার কারণে চাঁদ দেখা না গেলে শাবান মাস ৩০ দিনে গণনা করতেন, অতঃপর রোজা রাখতেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২৩২৭) সবার জন্য বোধগম্য : সূর্য ও চন্দ্র মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি ও অন্যতম নিদর্শন। বিশ্বব্যবস্থাপনা সূর্য ও চন্দ্রের গতি ও কিরণ-রশ্মির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত রয়েছে। সূর্য ও চন্দ্রের গতি ও নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণব্যবস্থা একটি বিশেষ হিসাব ও পরিমাপ অনুযায়ী চলে। এর মাধ্যমেই রাত-দিনের পার্থক্য, ঋতুর পরিবর্তন এবং মাস-বছর নির্ধারিত হয়। সূর্যের গতি থেকে সৌরবর্ষ এবং চন্দ্রের গতি থেকে চন্দ্রবর্ষ হিসাব করা হয়। আকাশের চাঁদ দেখে চান্দ্র মাসের হিসাব সহজেই আয়ত্ত করা যায়। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, গ্রামবাসী-মরুবাসী-উপজাতি-নির্বিশেষে সবার জন্যই চান্দ্র মাসের হিসাব সহজতর। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং এর মানজিল নির্দিষ্ট করেছেন, যাতে তোমরা বছর গণনা ও সময়ের হিসাব জানতে পারো। আল্লাহ এসব নিরর্থক সৃষ্টি করেননি। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি এসব নিদর্শন বিশদভাবে বিবৃত করেন।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৫) কোরআন-সুন্নাহে হিজরি বর্ষের আলোচনা : হিজরি বর্ষের মাসগুলো কোরআন-সুন্নাহে আলোচিত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সত্পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫) মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘হজ হয় সুবিদিত মাসগুলোতে...।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৭) সুবিদিত মাসসমূহের ব্যাখ্যায় ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘সুবিদিত মাসসমূহ হলো শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজের প্রথম দশক।’ (বুখারি, হাদিস: ১৪৮৪)অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গণনায় মাস ১২টি, তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩৬) চারটি নিষিদ্ধ মাসের ব্যাখ্যা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। আবু বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘চারটি নিষিদ্ধ মাসের তিন মাস ধারাবাহিক—জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর রজব, যা জামাদিউস সানি ও শাবানের মধ্যের মাস। (বুখারি, হাদিস: ৩০২৫; মুসলিম, হাদিস: ৪৪৭৭) সফর মাস প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘সফর মাসে অকল্যাণ নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৪২৫; মুসলিম, হাদিস: ৫৯২৬) রবিউল আওয়াল মাসের বর্ণনায় ইবনে শিহাব (রহ.) বলেন, উরওয়া ইবন জুবায়ের (রা.) হিজরত প্রসঙ্গে বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সবাইকে নিয়ে ডানদিকে মোড় নিয়ে বনু আমর ইবনে আউফ গেত্রে অবতরণ করলেন। এদিনটি ছিল রবিউল আওয়াল মাসের সোমবার। (বুখারি, হাদিস: ৩৬৯৪) যথাসময়ে ধর্মীয় বিধি-বিধান পালনের স্বার্থে চাঁদ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে চান্দ্র মাস ও হিজরি বর্ষের হিসাব রাখা সবার জন্য জরুরি। এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল,অন্যান্য,"মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ আমলি আদালত-১-এর বিচারক জশিতা ইসলাম তাঁকে অব্যাহতির আদেশ দেন। র আগে ২২ মার্চ ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ বাদী হয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হৃদয় মণ্ডলের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানউল্লাহ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ৮ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। গতকাল হৃদয় মণ্ডল আদালতে হাজিরা দিতে এলে বিষয়টি আবার আদালতে তোলা হয়। সেখানে মামলার বাদী ও বিবাদী উপস্থিত ছিলেন। বাদীর কোনো আপত্তি না থাকায় আদালতের বিচারক তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন।মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর আজ বুধবার হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক। একটি মিথ্যা অভিযোগে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। ১৯ দিন জেল খাটতে হয়েছে। মানুষের চোখে ছোট হতে হয়েছে। ভেতরে চাপা কষ্ট ছিল। সব সময় অশান্তিতে ভুগতাম। অপরাধ না করেও অপরাধী ছিলাম। আজকে আমার ওপর আনা সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সব দোষ থেকে মুক্ত হয়েছি। এখন মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াতে পারব। সবাইকে বলতে পারব, আমি অপরাধী নই। আমি অপরাধ করিনি।’হৃদয় মণ্ডল আরও বলেন, জামিনে বেরিয়ে আসার পর তাঁর বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে হুমকি-ধমকি দেওয়া হতো। ভয়ে তিনি ঘর থেকে বের হতেন না। তিনি জানান, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চান তিনি। ২৪ বছর শিক্ষকতা করেছেন। সাড়ে পাঁচ বছরের মতো চাকরির বয়স আছে। বাকি জীবন সম্মান নিয়ে বাঁচতে চান তিনি।২০ মার্চ দশম শ্রেণির মানবিক শাখার বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। সেখানে বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয়ে তাঁর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের পক্ষে-বিপক্ষে কথোপকথন হয়। এক শিক্ষার্থী ওই কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তী সময়ে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীনকে বিষয়টি জানানো হয়। প্রধান শিক্ষক সেদিনই হৃদয় মণ্ডলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এবং শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকতে বলেন। তবে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় কয়েকজন ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানায়। পরদিন সকালে তারা বিদ্যালয়ে এসে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ২২ মার্চ হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই দিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯ দিন কারাগারে থাকার পর ১০ এপ্রিল জামিনে মুক্তি পান হৃদয় মণ্ডল। ১১ এপ্রিল সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল হাই তালুকদারকে প্রধান করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ২০ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। তদন্তে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রমাণ পায়নি কমিটি। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"মারা গেলে নয়, সব সময় বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করা ",ইসলাম ধর্ম,"কোরআনে মা-বাবার জন্য সন্তানকে আল্লাহ একটা দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। দোয়াটি হলো ‘রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’ কেউ কেউ মনে করেন, রহমতের এ দোয়াটি মৃত মা-বাবার জন্য। দোয়াটির অর্থ হচ্ছে, ‘আমার প্রতিপালক! বাবা-মায়ের ওপর দয়া করো, যেভাবে ছেলেবেলায় বাবা-মা আমাকে লালন-পালন করেছিলেন।’ মা-বাবার জীবিত থাকা অবস্থায়ও এই দোয়াটি পড়া যায়। মূলত ইসলাম মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন। তোমার জীবদ্দশায় ওঁদের একজন বা দুজনই বার্ধক্যে পৌঁছালেও তাঁদের ব্যাপারে “উহ-আহ্” বোলো না, আর ওঁদের অবজ্ঞা কোরো না, ওঁদের সঙ্গে সম্মান করে নম্রভাবে কথা বলবে। তুমি অনুকম্পার সঙ্গে, বিনয়ের ডানা নামাবে, আর বলবে, হে আমার প্রতিপালক! ওঁদের ওপর দয়া করো, যেভাবে ছেলেবেলায় ওঁরা আমাকে লালন-পালন করেছিলেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৩-২৪) সব অবস্থায় মা-বাবার সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এক লোক এসে প্রশ্ন করলেন, আমার কাছ থেকে সবচেয়ে ভালো আচরণ পাওয়ার অধিকার কার? নবী করিম (সা.) বললেন, তোমার মায়ের। লোকটি আবার প্রশ্ন করলে তিনি একই উত্তর দেন। তিন-তিনবার এমন উত্তর দেওয়ার পর লোকটি আবার একই প্রশ্ন করেন। নবী করিম (সা.) বলেন, তোমার বাবার। (বুখারি, হাদিস, হাদিস: ২,২২৭) আল্লাহর ইবাদত ও মাতা-পিতার খেদমত কোরআনে আছে, আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি তো মানুষকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে (ভালো ব্যবহারের) নির্দেশ দিয়েছি। কষ্টের পর কষ্ট করে জননী সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে, আর তার দুধ ছাড়াতে ছাড়াতে দুই বছর লেগে যায়। তাই আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার ওপর কৃতজ্ঞ হও। আমার কাছেই তো প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’ (সুরা লুকমান, আয়াত: ১৪) মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ করার হাদিস অনেক রয়েছে। একটি হাদিসে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার মিম্বরের ওপর উঠে তিনবার আমিন বলেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে জিবরাইল (আ.) এসেছিলেন। এসে তিনি বলেন, হে নবী (সা.)! ওই ব্যক্তির নাক ধুলামলিন হোক, যার সামনে আপনার নাম উচ্চারিত হয়, অথচ সে আপনার ওপর দরুদ পড়ে না। বলুন, আমিন। সুতরাং আমি আমিন বললাম। আবার তিনি বললেন, ওই ব্যক্তি জীবনে রমজান মাস এল এবং চলেও গেল, অথচ তাকে ক্ষমা করা হলো না। বলুন, আমিন। আমি আমিন বললাম। আবার তিনি বললেন, ওই ব্যক্তিকেও আল্লাহ ধ্বংস করুন, যে তার বাবা-মা উভয়কে পেল অথবা কোনো একজনকে পেল, অথচ তাদের খিদমত করে জান্নাতে যেতে পারল না। আমিন বলুন। আমি তখন আমিন বললাম।’ মাতা-পিতার খেদমত ও রমজান কোরআনে আরও আছে, ‘আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছি, তবে ওরা যদি তোমাকে আমার সঙ্গে এমন কিছু শরিক করতে বাধ্য করে, যার সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই, তুমি তাদের কথা মানবে না। আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন (করতে হবে)। তারপর তোমরা ভালোমন্দ যা কিছু করেছ, আমি তা তোমাদের জানিয়ে দেব।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৮) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মাতা-পিতার রাজি-খুশির মধ্যেই আল্লাহর রাজি-খুশি। মাতা-পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহর অসন্তুষ্টি।’ (সুনানে তিরমিজি) অন্য একটি হাদিসে আছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া নিঃসন্দেহে কবুল হয়। তা হলো ক. মজলুমের দোয়া, খ. মুসাফিরের দোয়া এবং গ. সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়া।’ (সুনানে তিরমিজি) রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বাবা জান্নাতের মধ্যবর্তী দরজা। এখন তোমাদের ইচ্ছা, এর হেফাজত করো অথবা একে নষ্ট করে দাও।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১,৯০১) আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করেন, কোন আমল মহান আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়? রাসুল (সা.) বললেন, সময়মতো নামাজ আদায় করা। তিনি বললেন, তারপর কোন কাজ? তিনি বললেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। তিনি বললেন, তারপর? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বুখারি, হাদিস: ৫,৯৭০) আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, ‘এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, তোমার বাবা-মা কি জীবিত? সে বলল, হ্যাঁ। রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে তুমি তাদের খেদমতে জিহাদ করো।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৫৪৯)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"শিক্ষিকার নির্দেশে মুসলিম ছাত্রকে চড়: বন্ধ করা হলো ভারতের স্কুল ",ইসলাম ধর্ম,"শিক্ষিকার নির্দেশে মুসলিম ছাত্রকে মারধরের ঘটনার পর ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের সেই স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, নেহা পাবলিক স্কুল নামের স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্কুলটি দেশের “শিক্ষা বিভাগের মানদণ্ড পূরণ না করায়” বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের কোনো সরকারি স্কুল বা কাছাকাছি অন্যান্য স্কুলে স্থানান্তরিত করা হবে। গত সপ্তাহে ওই স্কুলে এক মুসলিম ছাত্রকে চড় মারার নির্দেশ দেন স্কুলটির শিক্ষিকা তৃপ্তা ত্যাগী। পড়া মুখস্ত করতে না পারায় ওই ছাত্রকে হিন্দু ছাত্রদের মারধর করারন তিনি। এ ঘটনায় ক্ষোভ তৈরি হয় অনলাইন মাধ্যমে। এর পরেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানা গেল।চড় মারার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, এক মুসলমান ছাত্রকে ক্লাসের সামনে দাঁড় করিয়ে শিক্ষক অন্য ছাত্রদের নির্দেশ দিচ্ছেন, তাকে চড় মারতে। কেউ আস্তে মারতে চাই শিক্ষক তাকে আরও জোরে মারা কথা বলছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক ও মুসলিম নেতারা। সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন দলের প্রেসিডেন্ট আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “শিশুটির সঙ্গে যা ঘটেছে তার জন্য দায়ী আদিত্যনাথ (উত্তরপ্রদেশের বিজিপির মুখ্যমন্ত্রী)। সম্ভবত এরপর তিনি এই অপরাধীকে লখনউতে আমন্ত্রণ জানাবেন এবং তাকে পুরস্কৃত করবেন। কত মুসলিম শিশু নিরবে এমন অপমান সহ্য করতে বাধ্য হয়েছে তার হিসেব নেই। স্কুলে মুসলিম শিশুদের ‘জিহাদি’ বা ‘পাকিস্তানি’ বলাটা প্রচলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।” বিজেপি শাসিত ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদ বৈষম্য নতুন কিছু নয়। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। সেসময় অবশ্য তিনি তা অস্বীকার করেন। ভারতের প্রখ্যাত রাজনৈতিক শশী থারুর ঘটনাটিকে ভারতীয়দের লজ্জা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “এটা অবিশ্বাস্য। আমি বিশ্বাস করতে পারি না যে এটি আমাদের দেশে ঘটছে। আর যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই ঘটনায় ভারতীয়দের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে লজ্জায়। এই ধরনের ঘটনা আমাদের সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে কেড়ে নিতে পারে।” শ্রেণিকক্ষে মুসলিম শিশুকে মারধরের বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা সংস্থা। সংস্থাটির প্রধান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো আবেদ বলেছেন, “উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে এক শিক্ষিকার নির্দেশে ক্লাসের একাধিক পড়ুয়াকে দিয়ে একটি শিশুকে মারধর করার ঘটনা জানা গেছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।” ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২০১৪ সাল থেকে ভারতের ক্ষমতায় আছে। এই সময়ে ধর্মান্তর বিরোধী আইন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা, অবৈধ স্থাপনা সরানোর নামে মুসলিমদের সম্পত্তি ধ্বংস করা ও কর্নাটকে শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরা নিয়ে বড় ধরনের গণ্ডগোল তৈরি হয়। মোদির শাসনামলে সংখ্যালঘু নির্যাতনকে “কৃষ্ণগহ্বরের” সঙ্গে তুলনা করেছেন ভারতের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী “হিন্দুত্ব ওয়াচ”র প্রতিষ্ঠাতা রাকিব হামিদ নায়িক। তিনি বলেছেন, “ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ভারত একটি কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়েছে।” ভারতে শিক্ষিকার নির্দেশে মুসলিম ছাত্রকে একে একে চড় মারল সহপাঠীরা",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative নয়াদিগন্ত,আপত্তিকর স্লেøাগান দেয়ায় জাগো হিন্দু পরিষদ নেতৃবৃন্দের দুঃখ প্রকাশ,হিন্দু ধর্ম,"জাগো হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মিলন শর্মা ও চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি রুবেল দের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামে বিশিষ্ট আলিমদের সাথে এক বৈঠকে গত ৭ নভেম্বর চট্টগ্রামে জাগো হিন্দু পরিষদের ব্যানার ব্যবহার করে আপত্তিকর সেøাগান দেয়ায় দুঃখ প্রকাশ প্রকাশ করেন এবং উসকানিদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তারা বলেন, এমন সেøাগানের সাথে আমরা একমত নই। জাগো হিন্দু পরিষদ উগ্রবাদী সংগঠন নয়, অন্য ধর্মকে সম্মান করে নিজেদের অধিকার আদায় নিয়ে কাজ করে । তারা বলেন, জাগো হিন্দু পরিষদ অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং যারা আপত্তিকর সেøাগান দিয়েছে এ ঘটনায় জাগো হিন্দু পরিষদ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো উসকানি না দেয়, সবাইকে শান্ত ও সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবার প্রতি অনুরোধ করা হয়। চট্টগ্রাম জিইসি প্যালেস রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঝাউতলা কওমি মাদরাসার প্রধান পরিচালক মাওলানা আলী ওসমান, জিরি জামিয়া আরাবিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, লালখানবাজার মাদরাসার সহকারী পরিচালক মুফতি হারুন ইজহার, ফিরোজশাহ কলোনি মাদরাসার সিনিয়র উস্তাদ মাওলানা ছানাউল্লাহ নদভী ও মাওলানা দিদারুল ইসলাম। বৈঠকে উভয় ধর্মের প্রতিনিধিদল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেন এবং দেশের স্বার্থে ভবিষ্যতেও যেকোনো সঙ্কটে আলোচনার ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। আলিমরা বলেন, বাংলাদেশ বহুত্ববাদী সমাজ। নানা ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর অধিবাস। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাংলাদেশের ঐতিহ্য। প্রতিটি নাগরিকের ধর্মচর্চা, ধর্মশিক্ষা, ধর্ম-অনুশীলন ও ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মাণের অধিকার আছে। ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাসী। যেকোনো ধরনের উগ্রতা ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নস্যাৎ করার যেকোনো অপচেষ্টাকে ওলামা মাশায়েখরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার মাধ্যমে যারা নতুন সঙ্কট সৃষ্টি করতে চায় চট্টগ্রামে উগ্র স্লোগানদাতারা মূলত তাদেরই দোসর। আলিমরা বলেন, ব্যক্তির অপরাধের জন্য সম্প্রদায় বা ধর্ম দায়ী নয়। তৃতীয় কোনো শক্তি যাতে সম্প্রীতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে ধর্ম ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশের একশ্রেণীর তরুণদের মাঝে পরধর্মের প্রতি অসহিষ্ণু ও কটাক্ষ করার একটি অসুস্থ মানসিকতা জেগে উঠেছে। এটাকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না, কঠোর হাতে দমন করতে হবে। তারা বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানগণ নবীর অবমাননার কারণে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মিছিল মিটিং করে যাচ্ছেন। কোনো সম্প্রদায় বিশেষের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন নয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের পাতা,"জুমার দিন আছরের পর যে আমল করবেন! ",ইসলাম ধর্ম,"জুমার দিন সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি মহিমান্বিত। আল্লাহ তায়ালা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন এর অন্যতম হলো জুমার দিন। রাসূল (সা.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ) অন্য হাদিসে আছে, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে এর মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন।’কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দ্বারা এই দিনের মর্যাদার কথা জানা যায়। পবিত্র আল-কোরআনে জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহতায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছেন এই দিনে। মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার গুনাহ মাফের জন্য বিশেষ বিশেষ আমলের ব্যবস্থা করেছেন। বেশ কিছু দোয়া রয়েছে, যা পাঠ করলে মহান আল্লাহ খুশি হন। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি জুমআর দিন রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি এ ছোট্ট দরূদ পাঠ করবে, তার জন্য অনেক সাওয়াব রয়েছে। আমলটি হলো- উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়াসাল্লিম তাসলীমা’। জুমার দিনের আরো কিছু আমলের মধ্যে রয়েছে, জুমার দিনে সুরা কাহ্ফ তিলাওয়াত করলে কিয়ামতের দিন আকাশতুল্য একটি নূর প্রকাশ পাবে। বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা এবং বেশি বেশি জিকির করা মুস্তাহাব। যে ব্যক্তি জুমার দিন আছরের নামাজের পর ৮০ বার এ দরুদ পড়বে, তার ৮০ বছরের গোনাহ্ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ছোট্ট দরূদটি পড়ার মাধ্যমে উল্লেখিত ফায়েদা লাভের তাওফিক দান করুন। পরকালের বিশ্বনবীর সাফায়াত নসিব করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ডলারের দাম বাড়ায় হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি : ধর্মমন্ত্রী,ইসলাম ধর্ম,"ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মশিউর রহমান মোল্লা সজলের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি এ কথা জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হজে প্রেরণকারী দেশ। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বিগত বছর সমূহের ন্যায় ২০২৪ সালেও যাতে পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী হজে যেতে পারে সেজন্য ২০২৩ সালের হজের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কময়ে ২০২৪ সালে হজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা মূল্যের সাধারন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ হজে গমন করতে পারে। মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে মক্কা ও মদিনায় অনেক এলাকায় বাড়ি ও হোটেল ভেঙে ফেলায় বাড়ি ভাড়া ব্যয় এ বছর অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক নানা কারণে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মিনায় মিনা আরাফায় তাবু ভাড়াসহ মেয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সকল কারণে সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় আর কমানো সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, অধিক সুযোগ-সুবিধা আশা করেন এই রকম হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি মাধ্যমের বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,কোরআন অবমাননা : ইইউতে প্রতিনিধিদল পাঠাবে ওআইসি,ইসলাম ধর্ম,"সম্প্রতি কোরআন পোড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকের আয়োজন করেছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে পবিত্র কোরআন অবমাননা রোধে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাবে সংস্থাটি। সোমবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ১৮তম জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক বিবৃতিতে ওআইসি জানায়, সংস্থাটি পবিত্র কোরআন অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে।সর্বশেষ গত ২০ জুলাই সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ঘৃণ্য এ কাজ সংঘটিত হয়। এরপর গত ২৪ জুলাই ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ রোধে দেশগুলোর পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সংস্থাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের পুনরাবৃত্তি বন্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।তা ছাড়া সদস্য দেশগুলোকে সুইডেন, ডেনমার্কসহ যেসব দেশে পবিত্র কোরআনের কপি অবমাননা হয় বা পোড়ানো হয় তাদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।এ ছাড়া সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে কোরআন অবমাননাকারী সুইডেন, ডেনমার্ক ও অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের পরামর্শের জন্য তলবসহ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এদিকে ইসলামী ও মুসলিমদের পবিত্র স্থানের বিরুদ্ধে ইসলামভীতিমূলক আচরণ পর্যালোচনার জন্য নিয়মিত বৈঠক আয়োজনের আহ্বান করা হয়। তা ছাড়া ধর্মীয় গ্রন্থ, স্থান ও বিশ্বাস নিয়ে ঘৃণাত্মক বক্তব্যের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,মসজিদুল আকসা যখন নির্মাণ করা হয়,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র মক্কা ও মদিনার পর মসজিদুল আকসা মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান। নানা তাৎপর্য ও বৈশিষ্ট্যের কারণে মসজিদুল আকসা মুসলমানদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন মসজিদুল আকসা অসংখ্য নবী-রাসুলের স্মৃতিধন্য পুণ্যভূমি এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা। হিজরতের পর ১৭ মাস পর্যন্ত মুসলমানরা মসজিদুল আকসার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করত।রাসুলুল্লাহ (সা.) মিরাজের রাতে মসজিদুল আকসায় গমন করেন। এ ছাড়া আল আকসা ইসলামী শিক্ষা ও মুসলিম সভ্যতা-সংস্কৃতির তীর্থভূমি। মুসলিম শাসকদের জনকল্যাণমূলক বহু কাজের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে আছে পবিত্র এই ভূমি।কোরআনের বর্ণনায় আল আকসা পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে আল আকসা ও ফিলিস্তিন ভূমির বর্ণনা এসেছে, যা এই পবিত্র ভূমির বিশেষ মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত করে।যেমন ইরশাদ হয়েছে, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)মসজিদুল আকসার নির্মাণকাল খ্রিস্টপূর্ব দুই হাজার বছর আগে মসজিদুল আকসা নির্মিত হয়। এটা পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম মসজিদ।আবু জর গিফারি (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সর্বপ্রথম কোন মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বললেন, মসজিদুল হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদুল আকসা। আমি বললাম, এ দুইয়ের নির্মাণের মাঝখানে কত পার্থক্য? তিনি বললেন, ৪০ বছর। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪২৫)মসজিদুল আকসার নির্মাতা মসজিদুল আকসা সর্বপ্রথম কে নির্মাণ করেন তা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। এর মধ্যে প্রধান মত তিনটি। তা হলো, মানবজাতির পিতা আদম (আ.), নুহ (আ.)-এর ছেলে সাম ও মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.)। তবে গবেষক আলেমরা আদম (আ.)-কে মসজিদুল আকসার নির্মাতা হওয়ার মতকে প্রাধান্য দেন। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদুল হারাম ও মসজিদুল আকসার নির্মাণকালের পার্থক্য বলেছেন ৪০ বছর। আর নির্ভরযোগ্য তথ্য মতে, আদম (আ.) মসজিদুল হারামের নির্মাতা ছিলেন। পুনর্নির্মাণ, সংস্কার ও পরিচর্যা মসজিদুল হারামের মতো মসজিদুল আকসাও একাধিকবার পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। আদম (আ.)-এর পর খ্রিস্টপূর্ব দুই হাজার বছর আগে ইবরাহিম (আ.) এর পুনর্নির্মাণ করেন। তাঁর বংশধরদের ভেতর ইসহাক ও ইয়াকুব (আ.) পবিত্র এই মসজিদের পরিচর্যা করেন। অতঃপর খ্রিস্টপূর্ব এক হাজার বছর আগে সুলাইমান (আ.) মসজিদুল আকসা পুনর্মির্মাণ করেন।আল-আকসার আয়তন ১৪৪ একর ভূমির ওপর আল আকসা কম্পাউন্ড অবস্থিত, যা প্রাচীন জেরুজালেম শহরের ১৬.৬ ভাগের এক ভাগ। আল আকসা কম্পাউন্ড অর্ধ-আয়তাকার। এর পশ্চিম দিক ৯৪১ মিটার, পূর্ব দিক ৪৬২ মিটার, উত্তর দিক ৩১০ মিটার এবং দক্ষিণ দিক ২৮১ মিটার প্রশস্ত। কম্পাউন্ডের ভেতরে মসজিদুল আকসা ছাড়াও একাধিক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। যেমন—সোনালি বর্ণের কুব্বাতুস সাখরা। উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান ৭২ হিজরিতে এটি নির্মাণ করেন। এর পাশেই কিবলি মসজিদ নির্মাণ করেন খলিফা ওয়ালিদ ইবনে আবদুল মালিক। কিবলি মসজিদ নির্মাণ করতে ১০ বছর (৮৬-৯৬ হি.) সময় লেগেছিল। কুব্বাতুস সাখরা মূল অবয়বে টিকে থাকলেও কিবলি মসজিদ একাধিকবার পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন হয়েছিল। যেমন ১৩০ হিজরি ও ৪২৫ হিজরির ভূমিকম্পের পর।আল-আকসার স্থাপনাগুলো আল আকসা কম্পাউন্ডে ছোট-বড় ২০০ স্থাপনা রয়েছে। যার মধ্যে আছে মসজিদ, গম্বুজ, আঙিনা, মিহরাব, মিম্বার, আজানের স্থান, কূপ ইত্যাদি। এসব স্থাপনার মধ্যে কুব্বাতুস সাখরার অবস্থান আল আকসা কম্পাউন্ডের ঠিক মধ্যখানে। কিবলি মসজিদের অবস্থান সর্বদক্ষিণে। এই মসজিদের সাতটি আঙিনা ও বারান্দা রয়েছে। কম্পাউন্ডের প্রবেশপথ ছয়টি। কম্পাউন্ডের ভেতর ২৫টি সুপেয় পানির কূপ। রয়েছে বেশ কয়েকটি পানির ফোয়ারা। পাথর আচ্ছাদিত কায়েতবাই ফোয়ারাটিই সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন। আরো আছে ৪০টি উঁচু আসন। যেখানে বসে প্রাজ্ঞ আলেমরা ধর্মীয় জ্ঞানের পাঠদান করে থাকেন। এসব স্থাপনা বিভিন্ন শাসনামলে নির্মিত।মুসলমানদের আল-আকসা বিজয় ১৫ হিজরি মোতাবেক ৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম বাহিনী ফিলিস্তিন ভূমি জয় করেন এবং আল আকসা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন হয়। বিজয়ের পর খলিফা ওমর (রা.) ফিলিস্তিন সফর করেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন আবু উবাইদা আমের ইবনুল জাররাহ, সাআদ বিন আবি ওয়াক্কাস, খালিদ বিন ওয়ালিদ ও আবু জর গিফারি (রা.)-সহ সাহাবিদের একটি দল। ওমর (রা.) একটি সন্ধিচুক্তির অধীনে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে আল আকসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে পবিত্র পাথর ও আল আকসার আঙিনা পরিষ্কার করেন। তিনি আল আকসা মসজিদের দক্ষিণে ছোট একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।বিভিন্ন শাসনামলে আল-আকসা খোলাফায়ে রাশেদার পর উমাইয়া শাসনের সূচনা হয়। উমাইয়া শাসকদের রাজধানী ছিল দামেস্ক। দামেস্ক ফিলিস্তিনের নিকটবর্তী হওয়ায় উমাইয়া খলিফারা আল আকসাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তাঁদের সময়ে আল আকসার মৌলিক অবকাঠামোগত বহু উন্নয়ন হয়। উমাইয়াদের পর আব্বাসীয় খলিফাদের শাসনাধীন হয় আল আকসা। কিন্তু তাঁদের রাজধানী বাগদাদ হওয়ায় মসজিদুল আকসার ব্যাপারে তাঁদের মনোযোগ অনেকটাই কম ছিল। তবে তাঁরা প্রয়োজনীয় সংস্কার ও স্থানীয় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডগুলোতে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।৯৭০ খ্রিস্টাব্দে রামাল্লার যুদ্ধে আব্বাসীয় বাহিনী মিসরে ফাতেমি বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। এর মাধ্যমেই ফিলিস্তিন ভূমির পতন শুরু হয়। ফাতেমিরা ছিল শিয়া ইসমাইলিয়া মতবাদের অনুসারী। যাদের বেশির ভাগ আলেম মুসলিম মনে করেন না। ফাতেমীয় শাসকরা মসজিদুল আকসার ওপর নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করে এবং ফিলিস্তিন ভূমিতে ইসলামী শিক্ষাধারা বন্ধ করে শিয়া মতবাদ প্রচারের সুযোগ করে দেন। ফাতেমীয় শাসক হাকিমের শাসনামলের শেষভাগে ১০২১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ আল-কুদস ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চায় তার অতীত ঐতিহ্যের সবটুকু হারিয়ে ফেলে।১০৭৩ খ্রিস্টাব্দে ফিলিস্তিন সেলজুকদের শাসনাধীন হয়। তারা ছিল সুন্নি মতবাদে বিশ্বাসী। ফলে আল আকসা তার হারানো মর্যাদা ফিরে পেতে শুরু করে এবং ফিলিস্তিনে আবারও বিশুদ্ধ ইসলামী জ্ঞানের চর্চা শুরু হয়। ধারণা করা হয়, ১০৯৫ খ্রিস্টাব্দে আল আকসায় ইমাম গাজালি (রহ.)-এর আগমন ঘটে এবং তিনি কয়েক বছর অবস্থান করেন। কিন্তু এই সুদিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না। ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা আল আকসা দখল করে। তারা মসজিদুল আকসাসহ ইসলামী ঐতিহ্যগুলো ধ্বংস করতে তৎপর হয়।১১৮০ খ্রিস্টাব্দে মিসরের শাসক সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি (রহ.) ক্রুসেডারদের হাত থেকে ফিলিস্তিন ভূমি মুক্ত করেন। বিজয়ের এক সপ্তাহের মধ্যে মসজিদুল আকসা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। পরবর্তী জুমা থেকে সেখানে নামাজ শুরু হয়। তিনি নিজ হাতে গোলাপজল দিয়ে আল আকসা পরিষ্কার করেন। তিনি বিজয়ের প্রতীক হিসেবে একটি মিম্বার তৈরি করেন এবং এ ছাড়া আল আকসা কম্পাউন্ডের ভেতর একাধিক শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। সালাহুদ্দিন আইয়ুবি ও তাঁর বংশধররা ক্রুসেডারদের একাধিক আক্রমণ থেকে ফিলিস্তিন ভূমিকে রক্ষা করেছিল। মামলুকরা আইয়ুবীয়দের উত্তরাধিকারী হলে তারা আল আকসার নিরাপত্তায় আত্মনিয়োগ করে। ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দে ফিলিস্তিন ভূমি উসমানীয় শাসকদের নিয়ন্ত্রণে আসে, যা ১৯১৭ সাল পর্যন্ত অটুট ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের পরাজয়ের মাধ্যমে পবিত্র এই ভূমির নিয়ন্ত্রণ চলে ব্রিটেনের হাতে। ফলে ফিলিস্তিনে দীর্ঘ মুসলিম শাসনের অবসান ঘটে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"৩৮৭৯ হজযাত্রী সউদী পৌঁছেছেন ",ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সউদী আরব পৌঁছেছেন বাংলাদেশের ৩ হাজার ৮৭৯ হজযাত্রী। সোমবার (২২ মে) দিবাগত মধ্যরাতে হজযাত্রী বহনকারী এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, হজ অফিসের বরাত দিয়ে হজ পোর্টালে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হজ অফিস জানিয়েছে, সউদীতে যাওয়া ৩ হাজার ৮৭৯ জন হজযাত্রীর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৬৫৬ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২২২৩ যাত্রী পৌঁছেছেন। গত ২১ মে হজযাত্রীদের সউদী আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয়। সউদী আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ২২ জুন। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটা খালি রেখেই হজের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে সরকার। এবার সবচেয়ে বেশি ১৬২টি ফ্লাইটে ৬১ হাজার যাত্রী নেবে বিমান বাংলাদেশ। এ ছাড়া ৫৩টি ফ্লাইটে ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স নেবে ২০ হাজার এবং ১১৩টি ফ্লাইটে ৪১ হাজার হজ যাত্রী পরিবহন করবে সউদী এয়ারলাইন্স।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive যায়যায়দিন,"রমজানে রাসুল (সা.) যেভাবে ইফতার করতেন ",ইসলাম ধর্ম,"রমজান মাস রোজাদারের জন্য আনন্দের মাস। সবচেয়ে বড় আনন্দ হলো ইফতারে সময়। রোজাদারেরা সারাদিন সকল পানহার থেকে বিরত থাকে। ইফতারের সময় রোজাদার কেমন আনন্দানুভব করে তা কেবল যারা রোজা রাখে তারাই অনুধাবন করতে পারেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুইটি আনন্দ- একটি ইফতারের সময় ও অপরটি যখন আল্লাহর সন্তুষ্টি মিলবে তখন। রাসুল (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতেন, কারণ এটি শর্করা ও পুষ্টি উপাদানের উৎস হিসেবে কাজ করে। ইফতারে খেজুর অত্যন্ত উপযোগী উপকরণ। সালমান ইবনে আমির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয় পানি পবিত্র। (আহমাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও দারেমি শরিফ; আলফিয়্যাতুল হাদিস : ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২) আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) নামাজের আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত, তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে।’ (সুনানে তিরমিজি; রোজা অধ্যায় : ৬৩২) অন্য হাদিসে ভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, রাসুল (সা.) (মাগরিবের) নামাজের আগে তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর পাওয়া না যেত, তবে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। আর যদি শুকনা খেজুর পাওয়া না যেত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করতেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত দেওয়া মহানবীর সুন্নত,ইসলাম ধর্ম,"কোনো মুসলমানের ঘরে যখন কোনো নবজাতকের আগমন ঘটত তখন সর্বপ্রথম তাকে বংশের কিংবা মহল্লা, গ্রাম ও এলাকার কোনো বুজুর্গের কাছে নেওয়া হতো। তিনি নবজাতকের ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিতেন। মুসলিম পরিবারের এই সংস্কৃতি এখনো সচেতন মুসলিম পরিবারগুলোতে আছে। তবে ধর্ম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান না থাকায় বহু পরিবারের মুরব্বিদের সঙ্গে এই সংস্কৃতিও হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ এটি রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। রাসুল (সা.) নিজেও তাঁর নাতি হাসান (রা.)-এর কানে আজান দিয়েছিলেন। উবাইদুল্লাহ ইবনে আবু রাফি (রা.) বলেন, ফাতিমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তার কানে নামাজের আজানের মতো আজান দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১০৫) শুআবুল ঈমানের বর্ণনায় আছে, ফাতিমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তার ডান কানে নামাজের আজানের মতো আজান দিয়েছিলেন। এবং বাম কানে ইকামত দিয়েছিলেন। (শুআবুল ইমান, হাদিস : ৮৬২০) হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন যে যার সন্তান হয়, সে যেন তার ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেয়। (শুআবুল ইমান, হাদিস : ৮৬১৯) এই হাদিসগুলোর সনদের ব্যাপারে কোনো কোনো মুহাদ্দিসের ভিন্ন মত থাকলেও নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে বেশির ভাগ ওলামায়ে কেরাম একমত। নবজাতকের কানে কী কারণে আজান দেওয়া হয় এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে। কেউ কেউ লিখেছেন, শিশুর কানে আজান-ইকামত দেওয়ার অর্থ হলো তাকে এই কথা বলে দেওয়া যে আজান-ইকামত হয়ে গেছে, এখন শুধু নামাজের অপেক্ষা (নামাজ শুরু হতে সামান্য বিলম্ব, তা-ই তোমার জীবন)। হজরত থানভি রহ. বলেন, ‘আজান-ইকামতের মাধ্যমে শিশুর কানে প্রথমেই আল্লাহর পবিত্র নাম পৌঁছে দেওয়া, যেন তার প্রভাবে তার ঈমানের ভিত্তি মজবুত হয়ে যায় এবং শয়তান দূরে সরে যায়। এই দুটি হিকমতেরই সারমর্ম হলো দুনিয়াতে আসার পর তুমি আল্লাহকে ভুলে গাফেল হয়ে থেকো না। ’ (তরবিয়তে আওলাদ, হজরত থানভি রহ.) এ ব্যাপারে আবুল হাসান আলী নদভি রহ. বলেন, আজান ও ইকামত শুধু নামাজের জন্য নির্দিষ্ট। আর নবজাতক শিশু নামাজ তো দূরের কথা—এই আজান-ইকামতের মর্ম ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কিছুই বোঝে না। তাহলে তার কানে আজান-ইকামত বলার উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য সম্ভবত এই যে কোনো কিছু পৌঁছবার আগে শিশুর কানে সর্বপ্রথম আল্লাহর নামাজ ও তাঁর ইবাদতের ডাক গিয়ে যেন পৌঁছে। এ সময় আল্লাহর কোনো বুজুর্গ বান্দার চিবানো খেজুর কিংবা খোরমার একটি টুকরার রস বরকতের জন্য তার মুখে দেওয়া সাধারণভাবে প্রচলিত। একে ইসলামী পরিভাষায় তাহনিক বলে। রাসুল (সা.) থেকে তা সুন্নত হিসেবে প্রমাণিত। আবু মুসা (রা.) বলেন, আমার একটি পুত্রসন্তান জন্মালে আমি তাকে নিয়ে নবী (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইবরাহিম। তারপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দোয়া করে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। সে ছিল আবু মুসার সবচেয়ে বড় ছেলে। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৬৭) তাহনিকের মাধ্যমে যেমন নবী (সা.)-এর সুন্নত পালনের বরকত অর্জন করা যায়, তেমনি এটি নবজাতককে জন্মের পর স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেও রক্ষা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্মের পর নবজাতকের মুখে ঘষে দেওয়া এক ডোজ মিষ্টান্ন প্রিম্যাচুয়ার (অপরিপক্ব) বাচ্চাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার একটি কার্যকর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হতে পারে। কারণ জন্মের পর লো ব্লাড সুগার প্রতি ১০ শিশুর একটির ওপর খুব বিপজ্জনকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। নব আবিষ্কৃত এই চিকিৎসাপদ্ধতিকে বলা হয় জেল থেরাপি। নিউজিল্যান্ডের একটি গবেষকদল ২৪২টি শিশুকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে তার ফলাফলের ভিত্তিতে দাবি করেন যে বর্তমানে এটি প্রথম সারির চিকিৎসা হওয়া উচিত। তাঁদের সেই গবেষণা বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। (বিবিসি) আমাদের নবীজি (সা.)-এর এই গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতগুলো যত্নসহকারে পালন করা। পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনকে এই সুন্নতগুলোর ব্যাপারে সচেতন করা এবং সুন্নতগুলো পালনে উদ্বুদ্ধ করা।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive ভোরের কাগজ,"চিরসত্যের আলো জ্বেলেছেন মহানবী ",ইসলাম ধর্ম,"মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রদর্শিত পথে চলার আহ্বান জানিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, মহানবী (সা.) অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়ে জ্বেলেছেন চিরসত্যের আলো। তিনি বিশ্ব শান্তি ও মানবতার পথ প্রদর্শক। রবিবার (৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ:) উপলক্ষে আশেকানে রহমানিয়া মইনিয়া সহীদিয়া মাইজভান্ডারীয়া আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু ইসলামের কল্যাণে কাজ করে গেছেন উল্লেখ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণসহ ইসলামের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আওলাদে রাসূল শাহ সুফি মাওলানা সৈয়দ সহিদ উদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারী। ভক্তদের নবীর দুরূদ বেশি বেশি আমল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দয়াল নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) এর আদর্শই উত্তম আদর্শ। তাকে অনুসরণ অনুকরণ করে সেই অনুযায়ী জীবন পরিচালনার বিকল্প নেই। একইসঙ্গে তিনি নবীর দেখানো পথ অনুসরণ করে নামাজ, নবীর দুরূদ ও সালাম কায়েমের জন্য ভক্তদের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান আরও বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আবির্ভাব এক অসাধারণ ও অবিস্মরণীয় ঘটনা। তার ক্ষমা, উদারতা, নারী জাতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন, যুদ্ধ কৌশল, শাসনব্যবস্থাসহ বিশ্বশান্তির যে মহান বাণী জগতে প্রচার করেছেন, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি আমরা কর্মপন্থা নির্ধারণ করি তাহলে আমাদের মাতৃভূমি হয়ে উঠবে আরো শান্তিময়। বাংলাদেশে যে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রয়েছে তা আরও দৃঢ় হবে। প্রিয় নবীর খাঁটি উম্মত হয়ে তার প্রদর্শিত পথে চলার জন্য আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি নবীর রেখে যাওয়া দিক নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের পথে চলার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া অনুষ্ঠানে হাক্কানী ওলামায়ে কেরামসহ ভক্ত ও আশেকানরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে দুপুরে মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে একটি র‌্যালি (জশনে জুলুশ) বের হয়। জিরোপয়েন্ট ঘুরে আবার নাট্যমঞ্চে এসে র‌্যালি শেষ হয়। এরপর বাদ জোহর দেশ-জাতির কল্যাণ ও বিশ্ব শান্তি কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করেন সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আওলাদে রাসূল শাহ সুফি মাওলানা সৈয়দ সহিদ উদ্দিন আহমেদ মাইজভান্ডারী। এরপর তবারক বিতরণের মধ্য দিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবীর এই অনুষ্ঠান শেষ হয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"রামেন্দু মজুমদার: মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ধর্মের সঙ্গে মেলানো অন্যায় ",হিন্দু ধর্ম,"দুয়ারে কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা নতুন বছরকে বরণে বিভিন্ন আয়োজনে প্রস্তুত বাঙালিরা। বাংলা নববর্ষের উদযাপনের বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা অন্যতম। তবে, সম্প্রতি মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ। এবার এই বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের অন্যতম পুরোধা রামেন্দু মজুমদার। সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা মানুষের কল্যাণের জন্য বলে মন্তব্য করেন সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা এই নাট্যজন। রামেন্দু মজুমদার বলেন, “বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন আমরা সবাই একত্রে মিলিত হই। এই দিনটি সব বাঙালির। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার। সবাই দিনটি উদযাপন করেন, অপেক্ষা করেন। বিশেষ এই দিনে দীর্ঘ দিন ধরে মানুষের মঙ্গল কামনা করে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়ে আসছে। তাই বলব, মঙ্গল শোভাযাত্রা মানুষের কল্যাণের জন্য।” তিনি বলেন, “এটাকে যদি ধর্মের সঙ্গে মেলানো অন্যায় হবে। দুটো দুই রকম বিষয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক ঐহিত্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালির প্রাণের উৎসব হচ্ছে পহেলা বৈশাখ, সেই সুন্দর দিনটিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়ে আসছে।” পহেলা বৈশাখকে বাঙালির প্রধান অসাম্প্রদায়িক উৎসব উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই দিনটির সঙ্গে কত কী জড়িত। বাঙালির চেতনার জায়গা থেকে দিনটির গুরুত্ব বিশাল। সবার সঙ্গে সবাই মিলিত হওয়ার দিন। যা অন্য কোনো উৎসবে সম্ভব নয়। আমাদের জাতীয় জীবনে পহেলা বৈশাখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে যে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে- আমি বিশ্বাস করি তা টিকবে না। কারা এর পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে জানি না, কিন্তু অতীতেও এমন হয়েছে। পাকিস্তান আমল থেকে ইন্ধন দিয়ে আসছে বাঙালির চেতনাকে থামিয়ে দিতে। যারা এই কাজ করছে তারা লেবাস পরে আছে। আমরা কিন্তু প্রতিবাদ করছি। প্রতিবাদ আরও জোরে হবে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট থেকে প্রতিবাদ করা হয়েছে।” মঞ্চ নাটকের দল থিয়েটারের প্রধান ব্যক্তিত্ব এবং ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের বর্তমান অনারারি প্রেসিডেন্ট রামেন্দু মজুমদারের বলেন, “আমি মনে করি, এরকম নোটিশ দেওয়ার জন্য এবারের পহেলা বৈশাখে কোনো প্রভাব পড়বে না। প্রভাব পড়তে পারেও না। বরং আগের চেয়ে আরও বেশি মানুষ একত্রিত হবে দিনটিতে। কেননা- এটাতো বাঙালির দিন। বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত করার যে চিন্তা, তা বেশিদূর এগোবে না। এটা রুখতেই হবে। অপশক্তির পরাজয় হবে। সত্য ও সুন্দরের জয় হবে।” তিনি আরও বলেন, “কতভাবে আমাদের ওপর আঘাত এলো। বহুবছর আগে আমাদের ভাষার ওপর আঘাত এসেছি। কিন্তু অপশক্তির পরাজয় হয়েছে। আমরা জয়ী হয়েছি। সাংস্কৃতিক লড়াই থেকে রাজনৈতিক লড়াইয়ে পৌঁছাতে পেরেছিলাম তখন। এবারও পারব।”",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,শাওয়াল মাসের ছয় রোজা নিয়ে মহানবী (সা.) যা বলেছেন,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র রমজান মাস ছিল মুমিনের আমলের মৌসুম। এ মাসের আমলগুলো যেন পুরো বছর অব্যাহত থাকে সেটাই এ মাসের প্রধান শিক্ষা। এর মাধ্যমে রোজার সামর্থ্যের জন্য মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়। কোরআনে রোজা রাখার নির্দেশের পরই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কথা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যেন তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫) শাওয়াল মাসের ছয় রোজা : কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অন্যতম দিক হলো, আমল করা অব্যাহত রাখা। এর মধ্যে রমজানের পর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখা গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ রোজা রাখতেন এবং সাহাবাদের তা রাখার নির্দেশ দিতেন। আবু আইউব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানে রোজা রাখবে এবং পরবর্তী সময়ে শাওয়ালের ছয় রোজা রাখবে সে যেন পুরো বছর রোজা রাখল।’ (মুসলিম, হাদিস : ১১৬৪) ছয় দিনের রোজায় পুরো বছরের সওয়াব : রমজান মাসে রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসে আরো ছয়টি রোজা রাখলে পুরো বছর রোজার সওয়াব পাওয়া যায়। সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ সব ভালো কাজের প্রতিদান ১০ গুণ করে দেন। তাই রমজান মাস ১০ মাসের সমতুল্য এবং পরবর্তী (শাওয়াল মাসের) ছয় রোজার মাধ্যমে এক বছর পূর্ণতা লাভ করে।’ (নাসায়ি : ২/১৬২) পুরো বছর সওয়াব হয় যেভাবে : মূলত রমজান মাসের রোজার পর অতিরিক্ত ছয় রোজা মিলে সাধারণত ৩৬টি রোজা হয়। আর তা ১০ গুণ করলে মোট ৩৬০টি হয়। কারণ মুমিনের যেকোনো আমলের সওয়াব ১০ গুণ করে দেওয়া হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ কোনো ভালো কাজ করলে সে তার ১০ গুণ পাবে। আর কেউ কোনো খারাপ কাজ করলে তাকে শুধু তার প্রতিফলই দেওয়া হবে; তাদের ওপর কোনো জুলুম করা হবে না।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৬০) রমজানের রোজার পরিপূরক : নফল আমলের মাধ্যমে ফরজের ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করা হয়। তেমনি শাওয়ালের রোজার মাধ্যমে রমজানের রোজার ত্রুটিগুলো পূর্ণ করা হবে। নামাজ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার ফরজ নামাজের হিসাব করা হবে। তা ঠিক থাকলে সে সফলকাম। আর তাতে সমস্যা হলে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর কোনো ফরজ আমলে অপূর্ণতা দেখা দিলে মহান রব বলবেন, তোমরা দেখো, আমার বান্দার কি কোনো নফল নামাজ রয়েছে? নফল থাকলে তা দিয়ে ফরজকে পরিপূর্ণ করা হবে। এভাবে সব ফরজ আমলের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ করা হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪১৩)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীকে দেওয়া হলো 'রাষ্ট্রীয় মর্যাদা' ",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাত দিবসকে (১২ রবিউল আওয়াল) দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। গত সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 'পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর দিবসটিতে বাংলাদেশের সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন ও অফিস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এছাড়া বিদেশি কূটনৈতিক মিশন ও দূতাবাসগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।' অবিলম্বে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের কাছে এক পবিত্র দিন। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"নবী (সা.)-এর ওপর দুরূদ ও সালাম ",ইসলাম ধর্ম,"আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার আখেরী রাসূল। তিনি গোটা মানবজাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার সর্বশেষ দূত। তাই তাঁর প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য ছাড়া আল্লাহতে বিশ্বাস ও আল্লাহর আনুগত্যের দাবি অর্থহীন। কুরআন মাজিদের বিভিন্ন জায়গায় এ বিষয়টি ঘোষিত হয়েছে। আল্লাহকে পাওয়ার একমাত্র পথ খাতামুন্নাবিয়ীন হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর অনুসরণ। তাই তাঁর জন্য হৃদয়ের গভীরে মহব্বত ও ভালোবাসা পোষণ করা এবং তাঁর জন্য আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে দুয়া করা প্রত্যেক উম্মতের ঈমানী কর্তব্য। কুরআন মাজিদে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা নবী (সা.)-এর জন্য দরূদ পাঠের তথা আল্লাহর দরবারে তাঁর জন্য দুয়া করার আদেশ করেছেন। এটা একদিকে যেমন আল্লাহর কাছে তাঁর রাসূলের মর্যাদার প্রমাণ অন্যদিকে মুমিন বান্দার রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীর ওপর রহমত নাযিল করেন এবং ফেরেশতারা তাঁর জন্য রহমতের দুয়া করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দুরূদ পড় এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও। (সূরা আহযাব : ৫৬)। এখানে কিছু ফযীলত উল্লেখ করা হলো। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই সহজ ও মূল্যবান আমলটি বেশি বেশি করার তাওফিক দিন। ১. রহমত, মাগফিরাত ও দরজা বুলন্দির আমল। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন : যে আমার ওপর একবার দুরূদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তার ওপর দশটি রহমত নাযিল করবেন। (সহীহ মুসলিম ১/১৬৬; জামে তিরমিযী ১/১০১)। অন্য হাদিসে আছে, হযরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন : যে আমার ওপর একবার দুরূদ পড়বে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা বুলন্দ হবে। (সুনানে নাসায়ী ১/১৪৫)। অন্য বর্ণনায়, আবু বুরদা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তার আমলনামায় দশটি নেকী লেখা হবে। (আল মুজামুল কাবীর, তবারানী : ২২/৫১৩)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকেও দুরূদের এই ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। (মুসনাদে আহমদ ২/২৬২ : ৭৫৬১)। ২. ফেরেশতারা মাগফিরাতের দুয়া করেন। হযরত আমের ইবনে রবীআহ (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি : আমার ওপর দুরূদ পাঠকারী যতক্ষণ দুরূদ পড়ে ফেরেশতারা তার জন্য দুয়া করতে থাকে। সুতরাং বান্দার ইচ্ছা, সে দুরূদ বেশি পড়বে না কম। (মুসনাদে আহমদ ৩/৪৪৫)। ৩. কিয়ামতের দিন নবীজীর সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন : কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দুরূদ পড়েছে। (জামে তিরমিযী : ১/১১০)। ৪. দোজাহানের সকল মকসূদ হাসিল হবে। হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রা.) বলেন, একবার আল্লাহর রাসূল (সা.) যিকরুল্লাহর খুব তাকিদ করলেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করে থাকি। আমি আমার দুয়ার কতভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব? তিনি বললেন, তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা। আমি বললাম, চারভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে তিন ভাগের দুই ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা হয়। তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে কি আমার দুয়ার পুরোটাই হবে আপনার প্রতি দুরূদ? তিনি বললেন, তবে তো তোমার মকসূদ হাসিল হবে, তোমার গুনাহ মাফ করা হবে। (জামে তিরমিযী : ২/৭২)। ৫. গরিব পাবে সদকার সওয়াব। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মুসলমানের দান করার সামর্থ্য নেই সে যেন দুয়ায় বলে : এটা তার জন্য যাকাত (সদকা) হিসেবে গণ্য হবে। (সহীহ ইবনে হিববান : ৩/১৮৫)। ৬. উম্মতের সালাম নবীজীর নিকট পৌঁছানো হয়। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালার যমীনে বিচরণকারী কিছু ফেরেশতা আছেন, তারা আমার নিকট উম্মতের পক্ষ থেকে প্রেরিত সালাম পৌঁছিয়ে থাকেন। (মুসনাদে আহমদ : ১/৪৪১)। ৭. দুরূদ বিহীন দুয়া আসমান-যমীনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, যে পর্যন্ত তুমি তোমার নবীর (সা.) ওপর দুরূদ না পড়বে ততক্ষণ দুয়া আসমানে যাবে না, আসমান-যমীনের মাঝে থেমে থাকবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,হাদিসে শবেবরাত সম্পর্কে যা বলা হয়েছে,ইসলাম ধর্ম,"শবেবরাত ফারসি ভাষার দুটি যুক্ত শব্দ। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত, ‘বরাত’ অর্থ নাজাত বা মুক্তি। আরবি ভাষায়ও বরাত শব্দের ব্যবহার আছে। এই দুই শব্দ মিলে অর্থ হয় মুক্তির রজনী। হাদিসের ভাষায় এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) বলা হয়। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে কোরআন মাজিদে সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও হাদিস শরিফে নির্ভরযোগ্য সনদ বা বর্ণনাসূত্রে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।বিখ্যাত সাহাবি মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তাঁর সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন। ’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫) মুহাদ্দিসিনে কেরামের ভাষ্যমতে, হাদিসটির মান সহিহ তথা বিশুদ্ধ। এ জন্যই ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) তাঁর প্রসিদ্ধ হাদিসের রচিত কিতাব ‘কিতাবুস সহিহ’ এই হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। তা ছাড়া এসংক্রান্ত অনেক হাদিস আছে, যেগুলো এর অর্থকে শক্তিশালী করে। তাই এই রাত আসার আগেই শিরক ও হিংসা থেকে মুক্ত থেকে মহান আল্লাহর রহমতের আশায় থাকা মুমিনের কর্তব্য। আর এ রাতের আমলের ব্যাপারে বিভিন্ন হাদিস থেকে বোঝা যায়, এই রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) রাত্রি জাগরণ করেছেন এবং দীর্ঘ আমলে মশগুল ছিলেন। তবে এই রাতে বিশেষ পদ্ধতির কোনো ইবাদত তিনি আদায় করেননি এবং সাহাবায়ে কেরামদেরও তা করার নির্দেশ দেননি। তা ছাড়া পূর্ববর্তী সালাফরা এ রাতে বিশেষ পদ্ধতির কোনো ইবাদত করেননি; বরং প্রত্যেকেই নিজ নিজ ব্যক্তিগত ইবাদতে মশগুল ছিলেন। নিম্নে এ রাতে সালাফদের ইবাদত-বন্দেগি, পরের দিন রোজা ও তার ফজিলতের মূল্যায়ন নিয়ে তাঁদের কয়েকটি বক্তব্য তুলে ধরা হলো— এ রাতের করণীয় সম্পর্কে সালাফদের বক্তব্য ১. ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৪ তারিখ রাত, দুই ঈদের রাত। ’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯২৭) ২. ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) আদি ইবনে আরতাতের উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘বছরের চারটি রাত তুমি অবশ্যই লক্ষ রাখবে। কেননা সেসব রাতে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়—রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৪ তারিখ রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত। ’ (আত-তালখিসুল হাবির, ইবনে হাজার : ২/১৯১) ৩. ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর পৌঁছে যে পাঁচ রাতে দোয়া কবুল হয়। জুমার রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত, রজবের প্রথম রাত ও শাবানের ১৪ তারিখ রাত। এ রাতগুলো সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে আমি সেগুলো মুস্তাহাব মনে করি, ফরজ মনে করি না। ’ (আল-ইতিবার, পৃষ্ঠা : ১৪৩) ৪. শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘শাবানের ১৪ তারিখ রাতের ফজিলত রয়েছে। পূর্ববর্তী মুসলিম মনীষীদের অনেকেই এ রাতে সালাত পড়তেন। তবে সম্মিলিতভাবে মসজিদে সে রাত জেগে থাকা বিদআত; এমনকি দলবদ্ধভাবে জামাতে সালাত আদায় করাও বিদআত। ’ (আল-ফাতওয়াল কুবরা, ইবনে তাইমিয়া : ১/১৩০১) ৫. ইমাম ইবনে রজব (রহ.) বলেন, ‘একজন মুমিন বান্দার উচিত, এ রাতে জিকির ও দোয়ার জন্য পুরোপুরি অবসর হওয়া। প্রথমে খাঁটি মনে তওবা করা, এরপর মাগফিরাত ও ক্ষমা প্রার্থনা করা, আপদ-বিপদ দূর হওয়ার জন্য দোয়া করা এবং নফল নামাজ পড়া। ’ (লাতাইফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা : ১৫১/১৫৭) সালাফদের এসব বক্তব্য দ্বারা বোঝা যায়, এ রাতের ফজিলত ও ব্যক্তিগত আমল যুগপরম্পরায় প্রমাণিত। সুতরাং এই রাতের ফজিলত ও আমলকে ভিত্তিহীন বা বিদআত বলার সুযোগ নেই। পরের দিন রোজা রাখা সম্পর্কে সালাফদের দৃষ্টিভঙ্গি এ প্রসঙ্গে আলী (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৮৮) এই বর্ণনাটির সনদ দুর্বল হলেও হাদিসের প্রথম অংশ—ইবাদতের বিষয়টি অন্যান্য হাদিস দ্বারা সমর্থিত। আর রোজার বিষয়টি শুধু এ বর্ণনায় রয়েছে। তবে কেউ যদি চায় এ মাসের ১৫ তারিখ রোজা রাখতে তাহলে সুযোগ রয়েছে। কেননা ১৫ তারিখ হলো আইয়ামে বিজের অন্তর্ভুক্ত। আইয়ামে বিজ অর্থাৎ প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার বিষয়টিও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তা ছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিসে এসেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.) বলেন, ‘শাবানের ১৫ তারিখ রোজা রাখতে নিষেধ নেই। কেননা ১৫ তারিখ হলো আইয়ামে বিজের অন্তর্ভুক্ত। আর প্রত্যেক মাসের এই তারিখে রোজা রাখা তো মুস্তাহাব। এ ছাড়া রাসুল (সা.) বিশেষভাবে শাবানের রোজা রাখতে বলেছেন। ’ (লাতাইফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা : ১৮৯) তবে উত্তম হলো ১৫ তারিখের সঙ্গে আগে পরে এক দিন মিলিয়ে নেওয়া, অন্যথায় শুধু এ দিন রোজা রাখার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া মাকরুহ। এমনটাই বলেছেন শায়খ ইবনে তাইমিয়া (রহ.)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ শারদীয় আহ্বান,হিন্দু ধর্ম,"সম্প্রতি গঙ্গা–যমুনা নাট্যোৎসবে কলকাতার অনীক নাট্যদলের একটি নাটক দেখার সুযোগ হলো। নাটকটির নাম ব্রাহ্মণ। বিহার অঞ্চলের একটি দাঙ্গা–বিপর্যস্ত এলাকার কাহিনি। কাহিনিতে দেখা যায়, একদিন প্রত্যুষে গঙ্গাস্নানে যাওয়ার সময় একজন ব্রাহ্মণ পণ্ডিত ক্ষতবিক্ষত মুমূর্ষু একজন মানুষকে দেখতে পান। আশপাশে অনেক ধার্মিক মানুষ থাকা সত্ত্বেও এই মুমূর্ষু মানুষকে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কেউ না। অবশেষে ব্রাহ্মণ তাঁর বাড়িতে লোকটিকে নিয়ে আসেন। বাড়িতে স্ত্রী ও পুত্রও ব্রাহ্মণকে বাধা দেয়। একমাত্র কন্যা ও সেবায়েত তাঁকে সমর্থন দেয়। সবাই ওই মুমূর্ষু লোকটির পরিচয় জানতে চায়। তাঁর শারীরিক অবস্থার চেয়ে ধর্ম ও বর্ণই মুখ্য হয়ে ওঠে। ইতিমধ্যেই এলাকার রাজনীতিক, সামাজিক নেতারাও বিষয়টি গুরুত্ব দিতে শুরু করেন। তাঁদের সন্দেহ, ওই মুমূর্ষু লোকটি ভিন্ন ধর্মের। তাই তাঁকে এখান থেকে নিয়ে কোনো একটা ঝোপজঙ্গলে ফেলে দিতে হবে। ব্রাহ্মণ পণ্ডিত অনড়। ধর্মের মানবিক দিকটিই বারবার তিনি তুলে ধরতে চান। তবে পণ্ডিতের বাড়িটি আক্রান্ত হয়। একপর্যায়ে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের পথ ধরে তারা ওই বাড়ি থেকে জোর করে মুমূর্ষু মানুষটিকে নিয়ে যায়। অসহায় ব্রাহ্মণ পণ্ডিত প্রত্যুষে বরাবরের মতো গঙ্গাস্নানে যান এবং ফিরে আসেন না। সম্ভবত ব্রাহ্মণ পণ্ডিত মুসলিম সমাজকেই বেছে নেন। রাজনীতিকেরা এই অন্যায়ের সুযোগ নেন। গঙ্গার ঘাটেই ওই ব্রাহ্মণের নামে একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। কিন্তু নিচে লেখা থাকে ‘শুধু হিন্দুদের জন্য’। একসময় ব্রাহ্মণের পরিবার ও উপস্থিত জনগণ স্মৃতিফলকটিকে ভেঙে ফেলে। বিখ্যাত সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিতের একটি ছোটগল্পকে রজত ঘোষ নাট্যরূপ এবং অরূপ রায় নির্দেশনা দিয়ে একেবারেই সাম্প্রতিক ভারতবর্ষের পরিস্থিতিতে নাটকটি প্রযোজনা করেছেন। সাম্প্রদায়িকতা গণমানুষের সৃষ্টি নয়। জাতপাত, ধর্ম—এসবের মধ্যে সাধারণ মানুষ কখনো থাকে না। শত শত বছর ধরে সব ধর্মের মানুষই এই দেশে সহাবস্থান করেছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, বৌদ্ধমন্দির পাশাপাশি থেকে যার যার ধর্ম পালন করে আসছে। এক মাস রোজা রেখে যেমন ঈদ উৎসবে মুসলিম জনগোষ্ঠী আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে, তেমনি দুর্গাপূজা, সরস্বতীপূজা, লক্ষ্মীপূজায়, নানা পার্বণে তারা তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে থাকে। ক্রিসমাসে বা বুদ্ধপূর্ণিমায় ধর্মাবলম্বী মানুষেরা একটা নতুন জীবনের আবাহনের সঙ্গে যুক্ত হয়। উৎসব আসলে মানবজাতির একটা সাংস্কৃতিক উদ্‌যাপন। নতুন বস্ত্র, উন্নত খাদ্য, সৌভ্রাতৃত্ব, গুরুজনকে সম্মান, সর্বোপরি মানবজাতির কল্যাণ কামনার একটা উপায়। ব্রাহ্মণ যেমন মানবতার বাণী প্রচার করছেন, তেমন সুফি–সাধকেরাও যুগ যুগ ধরে এই একটি বাণী মানুষের সামনে তুলে ধরছেন। কিন্তু ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার করে রাষ্ট্রের অংশীদারত্বের দাবিদার হয়েই সমস্যাটা জটিল হয়েছে। যুদ্ধবিগ্রহ, ধর্মের নামে শোষণ চালু হয়েছে। বর্ণের ভিত্তিতে সমাজ শাসনের প্রক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে সমাজ। আর নানা সময়ে ধর্মীয় উসকানির দাঙ্গা কিছু মানুষের আগ্রাসী সম্পদলিপ্সাকে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নিয়েছিল। কিন্তু ধর্মীয় উসকানিদাতাদের মৃত্যু হয়নি। তারা ঘাপটি মেরে থেকে চেষ্টা করেছে এবং সুযোগ পেয়েই এই ভয়ংকর অস্ত্রটিকে ব্যবহার করেছে। তাই এ দেশের অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে বিভিন্ন পূজা–পার্বণে সতর্ক থাকতে হয়েছে। এ সময় পূজার প্যান্ডেলগুলোয় পুলিশ মোতায়েন করতে হচ্ছে। আমাদের বাল্যকাল, কৈশোর, এমনকি আরও পরে কোনো দিন তো রাষ্ট্রীয় পাহারা প্রয়োজন হয়নি। কারণ, প্রকৃত ধার্মিকেরা জানেন, সব ধর্মের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের কল্যাণ, এক মহৎ মানবিক উদ্যোগ। এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারি, বাংলাদেশের মানুষ কোনো অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক নয়। একটা বড় কারণ হচ্ছে কৃষককুলের অর্থনীতি দুই ধর্মের মানুষের সমবায়ে দাঁড়িয়ে আছে। সংঘাতের ফলে এই অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে। নোয়াখালীর দাঙ্গায় হিন্দু–মুসলমান কোনো দিন অংশ নিত না যদি সেখানকার মোক্তার গোলাম সরোয়ার তাঁর বন্ধুপ্রতিম উকিল রাজেন্দ্র লাল চৌধুরীর জমিদারি প্রাসাদ আক্রমণ না করতেন। কলকাতার দাঙ্গার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হামলায় ওই বাড়ির প্রত্যেক পুরুষ নিহত হন আর মুসলমানদের আশ্রয়ে মেয়েরা বেঁচে যান। এই গোলাম সরোয়ার সে সময় জেলেও গিয়েছিলেন। তবে তার ‘যোগ্য পুরস্কার’ হিসেবে তিনি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যও হয়েছিলেন। প্রাসঙ্গিকভাবে এসব কথা এসে গেল। উৎসবে এ আকাঙ্ক্ষিত নয়। তবে প্রায়ই আমি পূজায় বিভিন্ন সমাবেশে যাই বলেই কথাগুলো বলছি। কোথাও আমি কোনো রকম দাঙ্গা বাধানোর উদ্যোগ দেখিনি। বরং এই আন্দোলনে সব ধর্মের মানুষ মিলেই অংশগ্রহণ করে। তবে কোথাও কোনো একটি অত্যন্ত সম্পদলোভী গোষ্ঠী ঘাপটি মেরে থেকে সুযোগের সন্ধান করে। সাম্প্রতিক কালে ডিজিটাল ব্যবস্থা তাদের এই সুযোগ সন্ধানে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাম্প্রতিক কালের বৌদ্ধদের ওপর আক্রমণ থেকে যা কিছু হয়ে আসছে, সবই ওই ফেসবুকের ‘কল্যাণে’। উৎসব মানুষকে উদার করে তোলে। উৎসব ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে সবার কাছে আসার একটা সুযোগ করে দেয়। সেই সুযোগে শত শত বছর ধরে শরতের আগমনে শারদীয় পূজা বাঙালির ধর্মীয় উৎসব আর থাকে না। যেমন ঈদ, ক্রিসমাস, বুদ্ধপূর্ণিমা এবং সবচেয়ে বড় উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে পয়লা বৈশাখ। মানুষের যেমন ঘরে ঘরে আনন্দ নামে, তেমনি জনতার ঢল নামে পথে, মেলায় সাংস্কৃতিক আয়োজনে। মানুষের যে মানবিক চেতনা, তাকে সমুন্নত রাখাই সব ধর্মের কাজ। কিন্তু পৃথিবী ক্রমাগত বিভাজনের পথে এগোচ্ছে। এই বিভাজনের প্রক্রিয়ায় ধর্মও বাদ যায়নি। লেখার প্রথমে যে ব্রাহ্মণের কথা উল্লেখ করেছি, সব ব্রাহ্মণই ও রকম নন। কাজী নজরুল মোল্লা–পুরোহিতদের বিষয়ে স্পষ্টই উচ্চারণ করেছেন। ধর্মযুদ্ধের নামে মানুষ নিধন হয়েছে; দাঙ্গায় নারী, শিশু, বৃদ্ধ–বৃদ্ধার অসহায় মৃত্যুবরণ আমরা দেখেছি, যার মধ্য দিয়ে মানবজাতি কলঙ্কিত হয়েছে। এসব আর কাম্য নয়। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই যুদ্ধবিরোধী এবং শান্তির পক্ষে। মানবজাতি একটি উন্নত মস্তিষ্কের অধিকারী। কিন্তু সেই মানুষই কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণ কখনো কখনো ডেকে এনেছে। এসবের বিনাশ হোক। এক অবিনাশী কল্যাণকর শারদীয় উৎসবের মধ্যে উচ্চারিত হোক ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যুগান্তর,জানাজার নামাজে মেলে পাহাড় সমান সওয়াব,ইসলাম ধর্ম,"মহানবি (সা.) ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ আদায় করে, সে এক ‘কিরাত’ পরিমাণ নেকি লাভ করে আর যে ব্যক্তি কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ আদায় করে এবং তার দাফনের কাজে অংশগ্রহণ করে, সে দুই ‘কিরাত’ পরিমাণ সওয়াব লাভ করে।” কোনো এক সাহাবি প্রশ্ন করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! দুই কিরাত কী?’ নবি করিম (সা.) বললেন, ‘দুই কিরাতের ক্ষুদ্রতম কিরাত ওহুদ পাহাড়ের সমান’ (ইবনে কাছির)। উসমান (রা.) থকে বর্ণিত রয়েছে-মহানবি (সা.) যখন কোনো মৃত ব্যক্তির দাফন কাজ শেষ করতেন তখন কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সাহাবাদের বলতেন, ‘তোমাদের ভাইয়ের জন্য তোমরা ক্ষমার দোয়া কর। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর-তিনি যেন তাকে ইমানের ওপর দৃঢ় ও অবিচল রাখেন। তাকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২২১)। কোনো মুসলিম মারা গেলে মাগফিরাতের জন্য মরদেহ সামনে নিয়ে বিশেষ নিয়মে যে দোয়া করা হয়, তার নাম জানাজার নামাজ। ‘জানাজা’ শব্দের অর্থ মরদেহ। জানাজার নামাজ আদায় করা ফরজে কেফায়া। ফরজে কেফায়া হলো দু-একজন আদায় করলে মহল্লার সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। আর কেউ আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"রোজার বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেনাকাটায় ভোক্তাদের মিতব্যয়ী হতে হবে ",ইসলাম ধর্ম,"এবার রমজানের আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। রোজায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে ক্রেতাদের কেনাকাটায় অধিক মিতব্যয়ী ও আরও বেশি সহনশীল ভুমিকা রাখতে। নিজ নিজ জায়গা থেকে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে। যদিও বিগত করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট, ব্যাংকে এলসি খোলা নিয়ে জটিলতা-এ ধরনের নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ ধরনের সিন্ডিকেটের হাতেই জিম্মি সাধারণ ক্রেতা। রমজানের পণ্য আনতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য সরকার বাকিতে পণ্য আমদানির সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে এ সংক্রান্ত এলসি খোলার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সুফল ব্যবসায়ীরা ভোগ করছেন। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। নিত্যপণ্যের দাম শুধু বাড়ছেই। মূল্যবৃদ্ধির প্রমাণ দিচ্ছে খোদ সরকারি একাধিক সংস্থা। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বলছে, রোজায় আমদানিকৃত পণ্যের দাম আরো বাড়বে । অপরদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য হচ্ছে গত বছরের তুলনায় এখনই গড়ে পণ্যের দাম ৫৯ শতাংশ বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের প্রভাব আরও প্রকট। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৌশল পালটেছে। আগে রোজা শুরু হলে দাম বাড়ত। তখন চারদিক থেকে রব উঠত। সরকারের তৎপরতা আরও বেড়ে যেত। ফলে সিন্ডিকেট বেশিদূর যেতে পারত না। এসব কারণে এখন তারা রোজার দেড়-দুই মাস আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে থাকে। প্রথম রোজা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ব্যবসায়ীদের কৌশলের কারণে ক্রেতাদের সাবধান হতে বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা অনুরোধ জানিয়েছেন, কেউ যেন একসঙ্গে অনেক বেশি পণ্য না কেনে। তাদের মতে, ক্রেতারা সাবধান হলেও এখন থেকেই কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে। অন্যথায় রোজার আগে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের রমজান কাটবে অস্বস্তিতে। অপরদিকে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার রোজায় আমদানি করা পণ্যের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি থাকবে বলে জানিয়েছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তবে সরকারের আরেকটি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, রোজার এক মাস ১৭ দিন আগেই গত বছরের তুলনায় আমদানি করা পণ্যের দাম গড়ে ৫৯ শতাংশ বেশি। তবে আদা সর্বোচ্চ ১১১ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিতে এলসি জটিলতা দূর করা না গেলে রমজানে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। এদিকে এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। তারা বলছে, রোজা এলেই সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও সেটাই করা হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের পণ্যের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেড়েছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে ট্যারিফ কমিশনের উপ-পরিচালক জানান, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার রোজায় আমদানি করা পণ্যের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম না বাড়লেও দেশে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করবে। এর বেশি বাড়বে না। রমজানের আগেই সিন্ডিকেটের কবলে দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ। একাধিক সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এখানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে বাড়ানো হয়েছে ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল ও মুরগির দাম। সরবরাহ ঘাটতি না থাকলেও দাম বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না ভোজ্যতেল। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় এসব পণ্যের দাম আরও বেশি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, পূর্বে প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের কারণে গত কয়েক বছর ধরে রমজানে দ্রব্যমূল্য তেমন একটা বাড়ানোর সুযোগ পান না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা এখন কৌশল পালটেছেন। রমজান আসার আগেই তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন, যাতে পরে এ নিয়ে আর প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়। এবারও রমজানের ঠিক আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে। যা কাম্য নয়। যদিও কথাটি সত্য, রমজানে পণ্যের সংকটের কারণেই কেবল বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে না? মূলতঃ দাম বৃদ্ধির পেছনে ভোক্তাদেরও দায় আছে। অনেকের অভিযোগ, অনেক ক্রেতাই রমজানের আগে পুরো এক মাসের বাজার করেন। এতেই সৃষ্টি হয় কৃত্রিম সংকট। চাহিদা বুঝতে পেরে লাগামহীন দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। বিশ্লেষকদের পরামর্শ, রোজার বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেনাকাটায় ভোক্তাদের আরও বেশি সহনশীল হতে হবে। সহমর্মিতা ও আত্মসংযমের মহান শিক্ষার মাস পবিত্র রমজান। কিন্তু এ মাসেই সবচেয়ে অসিহষ্ণু আচরণ করেন অনেকে। সপ্তাহ নয় বরং পরিবারের জন্য পুরো রমজান মাসের নিত্যপণ্য কেনেন তারা। ক্রেতারা বলছেন, রমজানে পণ্য সংকট হওয়ার আশঙ্কা থেকে অনেকেই আগেভাগে পুরো মাসের বাজার একসঙ্গে করে ফেলছেন। আগে কিনে যদি ১০ টাকা কমে পাওয়া যায়, তাহলে তো লাভই হলো। আগে থেকে কিনে রাখলে কিছুটা সাশ্রয় হয়। রমজান এলে বাজার আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যাবে। বিক্রেতাদের অভিযোগ, কেনাকাটায় এমন অধৈর্য আচরণ পণ্যের দামবৃদ্ধিকে উসকে দেয়। তারা বলছেন, অনেকে এক মাসের বাজার একত্রে করায় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে যদি ভোক্তারা বাজার না করেন, যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই যদি কিনে তাহলে পণ্যের দাম কোনোভাবেই বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। রোজাদারদের আরও মিতব্যয়ী হতে বলছেন বিশ্লেষকরা। বিআইআইএসএসের গবেষণায় বলা হয়েছে, বাজারে যদিও পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। তারপরেও পুরো ব্যবস্থাকে ঠিক রাখতে সরকারকে হিশশিম খেতে হচ্ছে। সুতরাং, এই অবস্থায় যেন আমরা মিতব্যয়ী হই। আমরা যেন বুঝেশুনে কেনাকাটা করি। একই পরামর্শ জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইফতারিতে বেগুন কিংবা শসা খেতেই হবে, সেক্ষেত্রে আমরা ভোক্তারাই বাজারে হামলে পড়ি, বাজারকে অস্থির করে তুলি। আমাদের আরও সচেতন হওয়ার সুযোগ আছে। রমজানের প্রথম সপ্তাহের পরেই পণ্যের দাম অনেকটা স্থিতিশীল থাকে। তাই আমাদেরকে একটু ধৈর্যশীল থাকতে হবে। ধরুন, একটি ভবনে হয়তো ২০টি পরিবার থাকে। তাদের মধ্যে কেউ একজন উদ্যোগী হয়ে সবার চাহিদা নিরুপন করে সপ্তাহে একদিন পাইকারি বাজার থেকে পণ্য ক্রয় করেন, তাহলেই কিন্তু ২০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি সাশ্রয় করা সম্ভব। পাশাপাশি রমজানের চাহিদা বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের আগেভাগেই পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি করা জরুরী বলে মনে করি। সর্বোপরি রোজার বাজার স্থিতিশীল রাখতে ক্রেতাদের অধিক মিতব্যয়ী হওয়াটা অধিক জরুরী বলে মনে করি। পাশাপাশি বাজার সিন্ডিকেটদের অপতৎপরতা রুখতে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহন করা হবে এমনটিই কাম্য।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,অস্ট্রেলিয়ার সাবেক গ্র্যান্ড মুফতির ইন্তেকাল,ইসলাম ধর্ম,"অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবশালী আলেম ও সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ তাজুদ্দিন হামিদ আল-হিলালি ইন্তেকাল করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভোরে মিসরে মারা যান তিনি। এর আগের দিন তিনি মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করে নিজ বাড়িতে ফেরেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের বিখ্যাত লাকেমবা মসজিদের ইমাম হিসেবে দীর্ঘ ৩১ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন।তাঁর মৃত্যুতে অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন অব ইসলামিক কাউন্সিল ও লেবানিজ মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন গভীর শোক জানিয়েছে।অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ ড. রাতিব জুনাইদ বলেন, ‘শায়খ তাজুদ্দিনের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁকে হারিয়ে আমরা একজন সত্যিকারের জ্ঞানী ও সমাজসেবককে হারালাম। আমরা তাঁর পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি।শায়খ তাজ ১৯৮২-২০১৩ সাল পর্যন্ত একজন অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম কমিউনিটিতে ঐক্যের প্রাণ ছিলেন। ৪০ বছরের বেশি সময় তিনি এই দেশের মুসলিমদের সেবায় কাজ করেছেন। আমি নিজেও তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ ৩০ বছর কাজ করেছি। যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে পরিচিত তাঁরা জানেন, তিনি কতটা রসিক ও উদার ছিলেন।’তিনি বলেন, ‘শায়খ আল-হিলালি সব সময় কমিউনিটির সেবার জন্য উদগ্রীব থাকতেন। তিনি খুব সহজেই তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে জনসাধারণকে আকর্ষণ করতে পারতেন। মুফতি ও ইমামের দায়িত্ব থেকে অবসরের পর তিনি উত্তর আফ্রিকায় ধর্মীয় তাৎপর্য নিয়ে ঐতিহাসিক গবেষণা প্রকল্পে যুক্ত হন এবং মিসরের গ্রামাঞ্চলে মানবিক কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় মুসলিমদের শিক্ষা, পরামর্শসহ নানাভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন। মহান আল্লাহ তাঁকে উত্তম বিনিময় দিন এবং তাঁকে সর্বোচ্চ জান্নাত দান করুন।’শায়খ আল-হিলালির মেয়ে আসমা এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘শায়খ আল-হিলালি একটি প্রতিষ্ঠান ছিলেন, যার প্রভাব আমাদের অন্তরে জীবন্ত থাকবে। কমিউনিটিতে তিনি একজন সচেতন বাবার ভূমিকায় ছিলেন। কমিউনিটির যেকোনো সদস্যের ডাকে তিনি সাড়া দিতেন এবং ক্লান্তিহীনভাবে তার জন্য কাজ করতেন। অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম কমিউনিটির সবার অন্তরে ইসলামের ভালোবাসা তৈরিতে তাঁর অসামান্য অবদান রয়েছে। মানবিকতা, অধ্যবসায় ও কঠিন কাজের জন্য তিনি অস্ট্রেলিয়াবাসীর কাছে কিংবদন্তিতুল্য ছিলেন। শেষ বয়সে তিনি মিসরে বসবাস করতেন এবং মাঝেমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় যেতেন।’শায়খ তাজুদ্দিন আল-হিলালি মিসরের সাওহাজ অঞ্চলের সামাতে ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রামে পবিত্র কোরআন হিফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়া ও আইন বিষয়ে ‘আলামিয়াহ’ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর আরবি ভাষা ও ফিকহুল মুকারিন বিষয়ে উচ্চতর ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেন। তিনি মিসরের আওকাফ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইমাম হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন কলেজে আরবি ভাষা ও ইসলামী ফিকহের শিক্ষকতা করেন।১৯৮২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত লাকেমবা মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এদিকে ১৯৬৯ সাল থেকে শায়খ জায়দান শারীরিক অসুস্থতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারছিলেন না। অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন অব ইসলামিক কাউন্সিল ১৯৮৮ সালে শায়খ আল-হিলালিকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের গ্র্যান্ড মুফতি নিযুক্ত করে। মুসলিম কমিউনিটির সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২০০৫ সালে শায়খ আল-হিলালিকে বর্ষসেরা মুসলিম ব্যক্তিত্ব হিসেবে ‘অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডস’ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে তিনি লাকেমবা মসজিদের ইমামতি থেকে অব্যাহতি নেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"হতাশা মুমিনের চরিত্র নয় ",ইসলাম ধর্ম,"মাঝে মাঝে নানারকম মনখারাপি আর জীবন- সমস্যার মুখোমুখি হই আমরা। তখন আমাদের মনে ভর করে নানারকম পেরেশানি আর দুশ্চিন্তা। আমরা ভেঙে পড়ি, হতাশায় ভুগি, ডিপ্রেশনে কালাতিপাত করি। আবার অনেকে টেনশন সইতে না পেরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলি। অথচ মুমিনের শান হওয়া উচিত, যতকাল সে বেঁচে থাকবে আল্লাহর রহমতের কাছে আশাবাদী হয়েই বেঁচে থাকবে। কারণ যারা এক আল্লাহকে বিশ্বাস করে, যারা মুমিন, যারা সঠিক পথের অনুসারী, দুনিয়াবী না পাওয়া, ব্যর্থতা, আর হারিয়ে ফেলায় তারা কিছুতেই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে না। সামান্য দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়তে পারে না, আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। হতাশা মানুষকে আল্লাহর রহমতের কথা ভুলিয়ে দিতে চায়। আল্লাহর কুদরত থেকে তার দৃষ্টিকে সরিয়ে দিতে চায়। আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহ এবং দয়াকে আড়াল করে দিতে চায়। তাই জীবনে চলার পথে আমরা যখন হতাশার মুখোমুখি হবো, তখন নি¤েœালিখিত বিষয়গুলো মেনে চলার করবো। ইনশাআল্লাহ আমরা হতাশাকে জয় করতে পারবো। ধৈর্য ধারণ করা :- জীবনে যখন খারাপ সময় আসবে, তখন ধৈর্য ধারণ করুন। বিশ্বাস রাখুন, আপনার সাথে রব আছেন, কষ্টের পরে তিনিই স্বস্তি দিবেন। আর এটাও মনে রাখবেন, বিপদে ধৈর্য ধারণকারীদের জন্য আল্লাহ তাআলা পরকালে মহাপুরস্কার রেখেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব সামান্য ভয় ও ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলের কিছুটা ক্ষতি দিয়ে; আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও- যাদের ওপর কোনো মসিবত এলে বলে, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’- নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব। (০সূরা বাকারা (২) : ১৫৫-১৫৬)। তাকদীরের উপর ছেড়ে দেওয়া :- ভালো-মন্দ যাই হোক না কেন, তাকদিরের ওপর ছেড়ে দিন। সমস্যার সমাধান একমাত্র রবই করতে পারে এই বিশ্বাস রাখুন। দেখবেন, দুশ্চিন্তা কখনোই আপনাকে কাবু করতে পারবে না, হতাশা আদৌ আপনার মনোবল দুর্বল করতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তোমাদের ক্লেশ দিলে তিনি ছাড়া তা মোচনকারী আর কেউ নেই। আর আল্লাহ যদি তোমার মঙ্গল চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহ রদ করার কেউ নেই...। ’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ১০৭)। বিপদে আল্লাহকে ডাকা :- আল্লাহ ছাড়া কেউ বিপদ থেকে মুক্তি দিতে পারে না। তাই বিপদাপদ, চিন্তা- পেরেশানির সময় বেশি বেশি দোয়া করা উচিত, বিশেষত, দুশ্চিন্তা ও মানসিক অস্থিরতা থেকে নাজাতের উদ্দেশ্যে হাদিসে বেশ কিছু দোয়া শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। ওই দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়ুন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি এমন একটি দোয়া সম্পর্কে অবগত আছি, কোনো বিপদগ্রস্ত লোক তা পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা তার সেই বিপদ দূর করে দেন। সেটি হচ্ছে আমার ভাই ইউনুস (আ.)-এর দোয়া। দোয়াটি হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বলিমীন। ’ অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫০৫)। চিন্তায় পরিবর্তন আনা :- দুনিয়ার চাকচিক্য আর অঢেল বিত্ত বৈভবের কথা না ভেবে চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে নিজের চেয়ে নি¤œ আয়ের মানুষদের অবস্থার দিকে তাকান। ভাবুন, আল্লাহ আপনাকে তার থেকে কতোটা ভালো রেখেছেন। খাব্বাব (রা.) বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে অভিযোগ করলাম এ অবস্থায় যে, তিনি কাবাঘরের ছায়ায় একটি চাদরে ঠেস দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম, আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য দোয়া করবেন না? জবাবে তিনি বলেন, ‘তোমাদের জানা উচিত, তোমাদের আগের মুমিন লোকেদের এই অবস্থা ছিল যে একজন মানুষকে ধরে আনা হতো, তার জন্য গর্ত খুঁড়ে তাকে তার মধ্যে পুঁতে রাখা হতো। অতঃপর তার মাথার ওপর করাত চালিয়ে তাকে দুই খ- করে দেওয়া হতো এবং দেহের গোশতের নিচে হাড় পর্যন্ত লোহার চিরুনি চালিয়ে শাস্তি দেওয়া হতো। কিন্তু এই কঠোর পরীক্ষা তাকে তার দ্বিন থেকে ফেরাতে পারত না। (বুখারি, হাদিস : ৩৬১৬)। ইস্তেগফার করা:- চিন্তা পেরেশানি অনেক সময় আর্থিক সঙ্কটের কারণে হয়ে থাকে। এজন্য নিয়মিত ইস্তেগফার করলে আর্থিক টানাপোড়েন সহ সব সঙ্কট আল্লাহ তাআলা দূর করে দিবেন এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২০)। সুধারণা পোষণ করা :- আল্লাহর ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করুন। তাঁর ওপর ভরসা রাখুন। আশা রাখুন যে, তিনি আপনাকে আপনার দুরবস্থা থেকে নাজাত দেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। ’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘আমি আমার বান্দার ধারণা অনুসারে তার সাথে আচরণ করি। সে যদি আমার ব্যাপারে ভালো ধারণা করে তবে তার জন্যই, আর সে যদি আমার ব্যাপারে খারাপ ধারণা করে তবে তাও তার জন্য।’ (সুনানে আহমদ, ৯০৭২)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,হাদিসের ভাষ্য মতে অযোগ্যদের দৌরাত্ম্য যখন বাড়বে,ইসলাম ধর্ম,"হাদিসের ঘোষণা মতে, শেষ যুগে ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে। তখন মানুষের মধ্যে দ্বিনের চর্চা থাকবে না। দ্বিন থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে সর্বত্র অশান্তি দেখা দেবে। অযোগ্য অথর্বদের ভিড়ে যোগ্যরা কোণঠাসা হয়ে যাবে।যোগ্যতার মূল্যায়ন না হওয়ায় অযোগ্য মানুষের সংখ্যাই সমাজে বাড়বে। মানুষের মাঝে মানবিক গুণ থাকবে না। দ্বিন-ধর্ম থেকে দূরে সরা মানুষগুলো শয়তানের তাঁবেদারিতে মগ্ন থাকবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মানুষ এমন শত উটের মতো, যাদের মধ্য থেকে তুমি একটিকেও বাহনের উপযুক্ত পাবে না। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৯৮)অর্থাৎ উটের কাজ হলো বোঝা বহন করা। আর যে উট বোঝা বহন করতে পারে না, সেটা নিজেই একটা বোঝা। অনুরূপভাবে মানুষ আজ নামে মাত্র মানুষ। তার দেহ-সৌষ্ঠব সুন্দর হলেও শত মানুষের মাঝে মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিয়ামতের আগে সমাজে অযোগ্যদের এই দৌরাত্ম্য আরো বাড়বে। অশিক্ষিত, গরিব শ্রেণির লোকেরা হঠাৎ করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাবে। হাদিসে জিবরাইলে ইরশাদ হয়েছে, তিনি (জিবরাইল) এবার বলেন, তাহলে কিয়ামতের নিদর্শনগুলো বলুন। তিনি বলেন, দাসী আপন মনিবকে জন্ম দেবে এবং নাঙ্গা পা-ওয়ালা বস্ত্রহীন দেহ গরিব মেষচালকদের দালানকোঠা নিয়ে গর্ব করতে দেখবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৯৫)এখানেই শেষ নয়, শেষ যুগে যেহেতু নিম্ন শ্রেণির মানুষের কাছেও অনেক সম্পদ চলে আসবে, তখন তারা সমাজে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠবে।তারা নিজেরাও জানবে তারা অযোগ্য, অথর্ব। কিন্তু তারা নিজেদের অযোগ্যতা ঢাকতে কৌশলে যোগ্যদের অযোগ্য বলে প্রচার করবে। নির্দোষরা দোষী হয়ে যাবে, আর দোষীরা হয়ে উঠবে ফুলের মতো পবিত্র চরিত্রের মুখোশধারী ব্যক্তিত্ব। অবশেষে তারা হয়তো একসময় নেতৃত্ব পেয়েও যাবে, তখন বুঝে নিতে হবে, পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।হাদিস শরিফে শেষ যুগের এই চিত্র ফুটে উঠেছে। ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, অচিরেই লোকদের ওপর প্রতারণা ও ধোঁকাবাজির যুগ আসবে। তখন মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদী গণ্য করা হবে, আমানতের খিয়ানতকারীকে আমানতদার, আমানতদারকে খিয়ানতকারী গণ্য করা হবে এবং রুওয়াইবিয়া হবে বক্তা। জিজ্ঞাসা করা হলো, রুওয়াইবিয়া কী? তিনি বলেন, নীচ প্রকৃতির লোক, সে জনগণের হর্তাকর্তা হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০৩৬)অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল (সা.) মজলিসে জনসম্মুখে কিছু আলোচনা করছিলেন। এরই মধ্যে তাঁর নিকট জনৈক বেদুইন এসে জিজ্ঞেস করল, ‘কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর আলোচনায় রত থাকলেন। এতে কেউ কেউ বলেন, লোকটি যা বলেছে তিনি তা শুনেছেন কিন্তু তার কথা পছন্দ করেননি। আর কেউ কেউ বলেন বরং তিনি শুনতেই পাননি। আল্লাহর রাসুল (সা.) আলোচনা শেষে বলেন, ‘কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়?’ সে বলল, ‘এই যে আমি, হে আল্লাহর রাসুল!’ তিনি বলেন, ‘যখন কোনো অনুপযুক্ত ব্যক্তির ওপর কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯) অতএব, কঠিন এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে মুসলিমদের আরো সচেতন হতে হবে। কোরআন-হাদিস চর্চায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। নিজেদের পরবর্তী প্রজন্মকেও সঠিক কোরআন-হাদিসের জ্ঞানে আলোকিত করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। কিয়ামতের মন্দ আলামতের চিহ্ন হওয়া থেকে বিরত রাখুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative সমকাল,প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ধর্ম ব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে: কাদের,ইসলাম ধর্ম,"আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ধর্ম ব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, হেফাজত নেতার নৈতিক অবনমনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তথ্যনির্ভর এবং প্রকৃত সত্যের উদঘাটন। ওবায়দুল কাদের সোমবার সকালে তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের আঁতে ঘা লেগেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ ভেবেছে এ লজ্জাজনক ঘটনার পর তথাকথিত নেতারা জনসম্মুখে ক্ষমা চাইবেন, কিন্তু দেখা যাচ্ছে চোরের মায়ের বড় গলা। ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশ পীর, আউলিয়া ও ওলামায়ে কেরামের দেশ। এখানে ধর্মকে অধর্ম চর্চার হাতিয়ারে পরিণত করতে খোদ ইসলাম প্রিয় জনগণই দেবে না। তাদের একজন নেতার সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে অনৈতিক ঘটনার পর তাদের ফোনালাপসহ অন্যান্য বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এবং একজন নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দেওয়া এখন আর গোপন নয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব অনৈতিক ঘটনার সমর্থনে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের যে তাণ্ডবলীলা চলছে, তাতে এই উগ্র- সাম্প্রদায়িক, গোষ্ঠীর স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। এই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে টার্গেট করেই তারা তাদের পুরনো পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায় বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি ধর্মীয় এই অপশক্তিকে প্রতিহত ও পরাজিত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সব দেশপ্রেমিক জনগণকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যারা তাণ্ডব চালিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে দেশের জনগণ রয়েছে, সুতরাং যারা পেছন থেকে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে উস্কানি দিচ্ছে এবং অর্থায়ন করছে-তাদের মুখোশও উন্মোচন করা হবে। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দেশব্যাপী আজ থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন কার্যকর করতে শুরু করছে। সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনাগুলো অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার জন্য দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানান কাদের। ওবায়দুল কাদের আবারও উদাসীনতা না দেখিয়ে সবাইকে শতভাগ মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,আল্লাহ মিথ্যাচারীকে পথপ্রদর্শন করেন না,ইসলাম ধর্ম,"কোনো মানুষ যদি সত্য উদঘাটনে সন্দেহে পতিত হয়, অতঃপর প্রবৃত্তির অনুসরণ বাদ দিয়ে আল্লাহর কাছে নিজ সত্যতার পরিচয় দিয়ে তা অনুসন্ধান করে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে এবং সত্য খুঁজে পায়। কিন্তু তারপরও যদি বিফল হয় তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। সত্যের বিপরীত হচ্ছে মিথ্যা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ করা হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারী মিথ্যাচারীকে পথ প্রদর্শন করেন না (সুরা মুমিন-২৮)। সর্বপ্রথম অন্তরে মিথ্যার উদয় হয়, অতঃপর তা ভাষায় প্রকাশ করে এবং শারীরিক কর্মে তার প্রতিফলন ঘটে। ফলে মিথ্যার প্রভাবে তার জবান, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল এবং অবস্থা বিনষ্ট হয়। তখন মিথ্যাচার তার বেসাতিতে পরিণত হয়। মুমিন হতে হলে আল্লাহ এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিরঙ্কুশ ভালোবাসায় আবদ্ধ হতে হবে। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসায় তার জাগতিক জীবনের সবকিছু নির্ধারিত হবে। আল্লাহর প্রতি নিরঙ্কুশ ভালোবাসার কারণে সে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসবে। রসুলের নির্দেশিত পথে যেহেতু আল্লাহকে চেনা যায়, আল্লাহর দেওয়া দীনে আবদ্ধ থাকা যায় সেহেতু তার প্রতি তার নিখাদ আনুগত্য থাকতে হবে। ইমানদার হওয়ার জন্য আল্লাহ এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিরঙ্কুশ ভালোবাসার প্রকাশ অপরিহার্য শর্ত। এ ভালোবাসার জন্য দুনিয়ার অন্য সবকিছুর প্রতি তার পক্ষপাতিত্বের অবসান ঘটাতে হবে। আল্লাহ তার রসুল এবং মুমিনদের ভালোবাসার মাধ্যমে ইমানের স্বাদ লাভ করা যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে আছে সে ইমানের স্বাদ লাভ করবে। (ক) আল্লাহ এবং তার রসুল তার নিকট সর্বাধিক প্রিয় পাত্র হবে। (খ) কোনো মানুষকে ভালোবাসলে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ভালোবাসবে। (গ) কুফরি থেকে আল্লাহ, তাকে মুক্তি দেওয়ার পর তাতে পুনরায় ফিরে যাওয়াকে ঘৃণা করবে, যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে সে ঘৃণা করে’ (বুখারি ও মুসলিম)। অন্তরে যদি ভালোবাসার বীজ বপন করা হয় এবং ইখলাস ও নবী (সা.)-এর অনুসরণ দ্বারা তাকে সিক্ত করা হয়, তবে তাতে রংবেরঙের ফলের সমাহার দেখা যাবে, আল্লাহর হুকুমে তার স্বাদও অত্যন্ত সুমিষ্ট হবে। ভালোবাসা চার প্রকারের : (১) আল্লাহকে ভালোবাসা। এটাই হচ্ছে ইমানের মূল। (২) আল্লাহর কারণে কাউকে ভালোবাসা এবং তার কারণেই কাউকে ঘৃণা করা। এটা হচ্ছে ওয়াজিব ভালোবাসা। (৩) আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে ভালোবাসা। অর্থাৎ ওয়াজিব ভালোবাসায় আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে অংশী করা। যেমন, মুশরিকদের তাদের মাবুদদের ভালোবাসা। এটা হচ্ছে আসল শিরক। (৪) স্বভাবগত ভালোবাসা। যেমন পিতা-মাতা, সন্তান, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদিকে ভালোবাসা। এটা জায়েজ। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাইলে দুনিয়াবিমুখ হতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তুমি দুনিয়াবিমুখ হও, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন’ (ইবনে মাজাহ)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative প্রথম আলো,"ঈদের দিনে কী করব ",ইসলাম ধর্ম,"ঈদের দিনটি শুরু করতে হবে ভোরে ফজর নামাজ জামাতে আদায় করার মধ্য দিয়ে। সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বরাতে বলা হয়েছে যে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এশা ও ফজর নামাজের মধ্যে কী আছে, তারা সেটা জানতে পারলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এই দুই নামাজের জামাতে শামিল হতো। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) ফিতরা দেওয়া: ঈদের নামাজের আগেই ফিতরা দেওয়া বড় ইবাদত। প্রত্যেক প্রাপ্ত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, গোলাম-আজাদ সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করতে হবে। শিশুর পক্ষ থেকে তার অভিভাবক ফিতরা আদায় করবেন। পরিচ্ছন্ন হওয়া: ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা একান্ত প্রয়োজন। কেননা এ দিন সব মানুষ নামাজ আদায়ের জন্য মিলিত হন। ইমাম মালেক (রহ.) বলেছেন, আমি আলেমদের কাছ থেকে শুনেছি, তারা প্রত্যেক ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার ও সাজসজ্জাকে মোস্তাহাব বলেছেন। এ দিনে যেহেতু সব মানুষ একত্র হন, তাই উচিত হলো, তার প্রতি আল্লাহর যে নিয়ামত তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য নিজেকে শোভনভাবে সজ্জিত হওয়া। খাবার গ্রহণ: ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায়ের আগে খাওয়া এবং ঈদুল আজহার দিন ঈদের নামাজের আগে কিছু না খেয়ে নামাজ আদায়ের পর কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। হজরত বুরাইদা (রা.)–র বরাতে বলা হয়েছে, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আবার ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের আগে খেতেন না। হেঁটে মসজিদে যাওয়া: ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য তাড়াতাড়ি মসজিদ বা ঈদগাহে যেতে হবে। হেঁটে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। হজরত আলী (রা.)–র বরাতে এক হাদিসে বলা হয়েছে, ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম এভাবে আমল করেন। তাদের মতো হলো, পুরুষ ঈদগাহে হেঁটে যাবেন, এটা মুস্তাহাব। তাকবির দেওয়া: হাদিসে প্রমাণ আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছানো পর্যন্ত তকবির পড়তেন। তকবির পড়া ঈদের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যেতেন। নামাজ শেষ হয়ে গেলে আর তকবির পড়তেন না। শেষ রমজানের সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তকবির পড়তে হবে। বিশেষভাবে মসজিদের উদ্দেশে বের হওয়া এবং সেখানে নামাজের অপেক্ষায় থাকার সময় গুরুত্বের সঙ্গে তকবির পড়তে হবে। নামাজ পড়া: ঈদের দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। ঈদের নামাজ ওয়াজিব। একজন ঈমানদার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বেশি আনন্দিত হয়ে থাকে। হাদিসে আছে, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে বের হয়ে দুই রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করতে হবে। ঈদের নামাজের পর ইমাম দুটো খুতবা দেবেন। খুতবা শোনাও ওয়াজিব। ঈদের নামাজ আদায়ের পর নিজের এবং জীবিত-মৃত সব মুসলমানের জন্য দোয়া করা উত্তম। এক পথে গিয়ে অন্য পথে ফেরা: মসজিদ বা ঈদগাহের দিকে এক পথে গিয়ে অন্য পথে ফিরে আসা সুন্নত। হজরত জাবের (রা.) বলেছেন, নবী করিম (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন। (সহিহ বুখারি) অর্থাৎ, যে পথে তিনি ঈদগাহে যেতেন, সে পথে ফিরে না এসে অন্য পথে ফিরতেন, যাতে দুই দিকের পথের লোকদেরই সালাম দেওয়া যায় এবং তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। শুভেচ্ছা বিনিময়: ঈদ উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবারা ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকুম।’ এর অর্থ, আল্লাহতায়ালা আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন। অভাবীকে খাওয়ানো: এতিমের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া। এটা ইমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। একই সঙ্গে নিজ পরিবার–পরিজনকে সময় অতিবাহিত করা, আত্মীয়স্বজন, মা-বাবার সঙ্গে দেখা করা ও খোঁজখবর নেওয়া, পাড়া–প্রতিবেশী, গরিব–অসহায় নির্বিশেষে সবার খোঁজখবর নেওয়া ও কুশল বিনিময় করা, সম্ভব হলে পরস্পরকে দাওয়াত দেওয়া, আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, ঝগড়া–বিবাদ–কলহ–হিংসা–বিদ্বেষ ভুলে সবার সঙ্গে মোলাকাত করে একাকার হয়ে যাওয়া।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,কোরআনে যাদের জন্য অর্থব্যয় করতে বলা হয়েছে,ইসলাম ধর্ম,"মানুষ উপার্জনের সবটুকু একা ভোগ করতে পারে না। নিজের উপার্জিত অর্থে পরিবার ও অভাবী মানুষের অধিকার আছে। সম্পদ কোথায় বা কোন খাতে ব্যয় করব—এ বিষয়ে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। বৈধ পন্থায় অর্জিত সম্পদের যে অংশ নিজের প্রয়োজন মেটানোর পর অবশিষ্ট থাকে, তা অন্যদের জন্য ব্যয় করা উচিত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘...মানুষ তোমার কাছে জানতে চায়, তারা (আল্লাহর পথে) কী (পরিমাণ) খরচ করবে? বলে দাও, যা তোমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত...। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২১৯) ১. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে অর্থ ব্যয় : নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ ব্যয় করা মহাপুণ্যের কাজ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ ফেরালে তা কিন্তু প্রকৃত পুণ্যের কাজ নয়; বরং প্রকৃত নেক কাজ হলো, মানুষ ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি, পরকালের প্রতি, ফেরেশতাদের প্রতি, কিতাবের প্রতি, নবীদের প্রতি; আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় অর্থসম্পদ ব্যয় করবে আত্মীয়দের জন্য, এতিমদের জন্য, মিসকিনদের ও পথিকদের জন্য, সাহায্যপ্রার্থীদের জন্য এবং মানুষকে গোলামির জিঞ্জির থেকে মুক্ত করার জন্য...। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭৭) ২. উত্তম বস্তু বেছে নেওয়া : আর দান ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালোটি বেছে নিতে হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা নিজেদের পছন্দনীয় জিনিস আল্লাহর পথে ব্যয় করবে। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, সে সম্পর্কে আল্লাহ পূর্ণ জ্ঞাত। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯২) ৩. অগ্রাধিকার পাবে যারা : দান, প্রয়োজন পূরণ ও অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি ও অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার সবচেয়ে বেশি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর দাসত্ব করো। তাঁর সঙ্গে কাউকেও শরিক করো না। দয়া ও সহানুভূতিমূলক আচরণ করো মা-বাবার সঙ্গে, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে, এতিমদের সঙ্গে, মিসকিনদের সঙ্গে, নিকট-প্রতিবেশীদের সঙ্গে, দূর-প্রতিবেশীদের সঙ্গে, সঙ্গী-সাথিদের সঙ্গে, পথিকদের সঙ্গে এবং তোমাদের অধীনস্থ ভৃত্যদের সঙ্গে। নিশ্চয়ই আল্লাহ গর্ব ও অহংকারী লোকদের ভালোবাসেন না, যারা নিজেরা কার্পণ্য করে, অন্যদেরও কৃপণতার শিক্ষা দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দান করেছেন তা লুকিয়ে রাখে। এরূপ অকৃতজ্ঞ লোকদের জন্য আমি (আল্লাহ) অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৬-৩৭) ৪. দ্বিনের কাজে ব্যস্ত মানুষের খোঁজ নেওয়া : যেসব মানুষ দ্বিন-ধর্মের কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন কিংবা ইসলাম প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিজেকে নিয়োজিত রাখার দরুন অর্থ উপার্জনে মনোযোগ দিতে পারেন না, এমন মানুষের জন্য যথাসাধ্য ব্যয় করা মুসলিম ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অন্যতম দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘এটা (অর্থ) প্রাপ্য অভাবগ্রস্ত লোকদের; যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে ব্যাপৃত যে দেশময় ঘোরাফেরা করতে পারে না; কারো কাছে না চাওয়ার কারণে অজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবমুক্ত মনে করে—তুমি তাদের লক্ষণ দেখে চিনতে পারবে। তারা মানুষের কাছে নাছোড় হয়ে হাত পাতে না। যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করো আল্লাহ তো তা বিশেষভাবে জানেন। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৩) বর্তমানেও যেসব লোক নিজেদের পুরো সময় দ্বিনের জ্ঞান লাভ, শিক্ষাদান, দ্বিনের প্রচার এবং সমাজের অন্য কল্যাণমূলক কাজে নিয়োগ করে এবং ব্যক্তিগত আয় রোজগারের দিকে দৃষ্টিপাত করার সুযোগ পায় না, তারাও এ আয়াতে উল্লিখিত মানুষের অন্তর্ভুক্ত। নিজের অধীনস্থ কর্মচারীদের সুখ-দুঃখ দেখা এবং তাদের জন্য যথাসাধ্য ব্যয় করাও অর্থব্যয়ের অন্যতম খাত। ইরশাদ হয়েছে, ‘...তোমাদের ক্রীতদাসদের মধ্যে যারা চুক্তি সম্পাদন করতে চায়, তোমরা তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হও—যদি তাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ আছে বলে তোমরা মনে করো। আর তাদের আল্লাহর সেই অর্থসম্পদ থেকে দান করো, যা তিনি তোমাদের দান করেছেন...। ’ (সুরা নূর, আয়াত : ৩৩) ৫. শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অর্থব্যয় : অর্থব্যয় ও পরোপকারে একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হলো, অর্থব্যয় করতে হবে পার্থিব কোনো বিনিময় গ্রহণের আশা ছাড়া—শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কোরআনে এসেছে, ‘আর (সৎ লোকেরা) আল্লাহর ভালোবাসায় খাবার খাওয়ায় মিসকিন, এতিম এবং বন্দিদের, আর বলে, আমরা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তোমাদের আহার করাচ্ছি। তোমাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের বিনিময় বা কৃতজ্ঞতা লাভের আমরা আকাঙ্ক্ষী নই। ’ (সুরা দাহর, আয়াত : ৮-৯) ৬. উল্লিখিত খাতে ব্যয় করা সবার কর্তব্য : পবিত্র কোরআনে বর্ণিত এসব খাতে ব্যয় করাকে কোরআন শুধু একটি মৌলিক নেক কাজ বলেই ক্ষান্ত হয়নি; বরং অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এ কথাও বলে দিয়েছে যে এমনটি না করলে সামগ্রিকভাবে সমাজের ধ্বংস অনিবার্য। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহর পথে ব্যয় করো আর নিজেদের হাতেই নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়ো না। মানুষের প্রতি অনুগ্রহ-ইহসান করো। আল্লাহ অনুগ্রকারীদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral যুগান্তর,বঙ্গবন্ধুর ধর্মপ্রেম,ইসলাম ধর্ম,"শেখ মুজিব একটি নাম, একটি ইতিহাস। যে ইতিহাস বাঙালিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখিয়েছে। শিখিয়েছে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে। বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বের গুণেই বলিয়ান ছিলেন না, ছিলেন একজন যুগশ্রেষ্ঠ ইসলামি নেতাও। বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার ও ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ ও নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক বিনির্মাণে তিনি যে অসামান্য অবদান রেখেছেন, তা বিরল। তিনি যেমন ইসলামি গবেষণা সংস্থা হিসাবে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন, তেমনি পুনর্গঠিত করেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত এবং বাংলা তরজমা প্রচারের উদ্যোগও করা হয় তারই নির্দেশনায়। শুধু কি তাই? হজযাত্রীদের জন্য ‘ভ্রমণকর’ রহিত করা, তাবলিগ জামাতের কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় কাকরাইল মসজিদের জন্য অতিরিক্ত জমি বরাদ্দ দেওয়া, বিশ্ব ইজতেমা সুন্দর ও সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য টঙ্গীতে আলাদা স্থানও নির্ধারণ করে দিয়েছেন ইসলামপ্রিয় এই মহান মানুষটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ওরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধুর নামটিও ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। এমনকি বঙ্গবন্ধুর লাশের প্রতিও দেখিয়েছে অমানবিক আচরণ।ঘাতকরা সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে অসৌজন্যতা দেখিয়ে হয়তো ভেবেছিল, তারা সফল হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ যাকে সম্মানিত করেন, তাকে অপমানিত করবে সাধ্য কার? পবিত্র কুরআনে তো বলাই আছে, আল্লাহ ‘যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন, আর যাকে ইচ্ছা অপমান করেন।’ (সূরা আল ইমরান, আয়াত : ২৬)। সেদিন যারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ভেবেছিল, বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলেছে, তাদের সেই ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে আল্লাহতায়ালা বঙ্গবন্ধুর নামকে আজ পুরো বিশ্বে সূর্যের মতো আলোকিত করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আজ পুরো পৃথিবীতে স্বীকৃত, সমাদৃত। সেদিন যারা বাংলার মানুষকে বঙ্গবন্ধুর জানাজায় অংশগ্রহণ করতে দেয়নি, আজ তারা এবং তাদের উত্তরসূরিরা বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করছে, দোয়া মাহফিলে হাত তুলে মোনাজাত করছে। আসলে এই বাধ্য হওয়াটাই আল্লাহর ফয়সালা। কারণ বঙ্গবন্ধু ছিলেন ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ। ন্যায়পরায়ণ শাসক। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কুরআনের ধারক-বাহক ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের প্রতি সম্মান দেখানো মহান আল্লাহর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অন্তর্ভুক্ত।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৪৩)। বঙ্গবন্ধুর ধর্মময় জীবনের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাকে স্নেহের ছায়ায় আগলে রেখেছেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ, আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-এর মতো সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম ওলামারা। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার কথা শুনে মওলানা ভাসানী সেদিন কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, ‘সব শেষ হয়ে গেল, সব শেষ হয়ে গেল’। তিনি সেদিন এতটাই কষ্ট পেয়েছিলেন যে, ওইদিন মুখে কোনো খাবারই তুলতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর গায়ের কালো কোটের ইতিহাস কে না জানে? আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) নিজ গা থেকে কোটটি খুলে বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে বলেছিলেন, ‘গায়ে দাও তো নাতি, দেখি তোমাকে কেমন লাগে?’ কোট পরার পর তিনি বঙ্গবন্ধুকে বললেন, ‘দারুণ লাগছে তো নেতাকে। এখন তোমাকে সত্যিকারের জাতীয় নেতা মনে হচ্ছে।’ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে তিনি মাওলানা তর্কবাগীশ হবেন। আদর্শ নেতা হিসাবে তর্কবাগীশের ছবি যে তার হৃদয়পটে আঁকা হয়েছিল।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive ইত্তেফাক,নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ,হিন্দু ধর্ম,"হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর সপ্তম অবতার হিসেবে পরিচিত শ্রী রামের জন্ম ও তার জন্মস্থান অযোধ্যা নিয়ে করা নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান। একই দাবি নিয়ে আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে হিন্দু ধর্ম সুরক্ষা পরিষদ। এ সময় নেপালের প্রধানমন্ত্রীর 'মিথ্যা' বক্তব্য প্রত্যাহারে দাবি জানান তারা।এ সময় মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি সম্প্রতি বলেছেন, হিন্দু ধর্মের অন্যতম অবতার রাম নেপালের রাজপুত্র ছিলেন এবং অযোধ্যার অবস্থান নেপালেই ছিল। তার এ বক্তব্য মানুষের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। অনতিবিলম্বে তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে সমমনা হিন্দু সংগঠনগুলো নিয়ে বাংলাদেশস্থ নেপালের হাইকমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেওয়া হবে। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত নিমচন্দ্র ভৌমিক, হিন্দুধর্ম সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় ও সিনিয়র সহ-সভাপতি বিমল কৃষ্ণ শীল প্রমুখ। নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আমরা আশা করিনি। আমরা এ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাই। বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলতে পারেন, তা আমার আগে ধারণা ছিল না। নেপাল এখন ভারত রেখে চীনের দিকে ঘেঁষছে। সেজন্যই রামের জন্মস্থান নিয়ে নতুন গল্প ফেঁদেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে তিনি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। তার বক্তব্য ইতিহাস বিবর্জিত। বিমল কৃষ্ণ শীল বলেন, আমাদের মনের, বিবেকের অস্তিত্ব অযোধ্যা ভারতে অবস্থিত। আমরা ভারতবর্ষের সঙ্গে আছি। ছোটবেলা থেকে যে সত্য জেনে এসেছি, সেই সত্যের সঙ্গে আছি। আমাদের ধর্ম বিশ্বাসকে কেউ বিতর্কিত করতে পারবে না। মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় বলেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী এত বড় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে যে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। অনতিবিলেম্বে তার এ বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। এর আগে গত ১৭ তারিখে জাগ্রত হিন্দু সমাজ নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,ইমাম প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণ করলেন জার্মানির সাবেক প্রেসিডেন্ট,ইসলাম ধর্ম,"জার্মান সরকারের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো দেশটির ইমামদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ওসনাব্রুক সিটির ডয়েচল্যান্ডের ইসলামিক কলেজে দুই বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে ২৪ জন ইমামকে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ দেওয়া হয়। এ সময় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন জার্মানির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ইসলামিক কলেজের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ক্রিশ্চিয়ান উলফ। জার্মানভিত্তিক মুসলিম সংগঠন দ্য সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিমের চেয়ারম্যান আয়মান মাজিক বলেন, ‘ইমাম প্রশিক্ষণ কর্মসূচি জার্মানির মুসলিমদের জন্য একটি স্মরণীয় ঘটনা।উন্নয়নমূলক এই কর্মসূচি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এবারই প্রথম ইমামদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুরোপুরি জার্মান ভাষায় পরিচালিত হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে কলেজ থেকে তাঁদের ইমাম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবেও কাজ করতে পারেন।সাবেক জার্মান প্রেসিডেন্ট ও ইসলামিক কলেজের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ক্রিশ্চিয়ান উলফ বলেন, ‘প্রথমবারের মতো জার্মানির ইমাম প্রার্থীরা জার্মান ভাষায় তাঁদের ব্যাবহারিক প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। এটি জার্মান মুসলিমদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এ ধরনের প্রশিক্ষণ আগে কখনো হয়নি; অথচ দেশের লাখ লাখ মুসলিমের বিবেচনায় তা আরো আগে হওয়া উচিত ছিল।’তিনি আরো বলেন, ‘প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর মাধ্যমে ইসলামিক কলেজ শান্তি বিনির্মাণ ও একত্রীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।কলেজটি একটি স্বীকৃত প্রশিক্ষণকেন্দ্র এবং বিভিন্ন দেশের দিকনির্দেশনায় এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা প্রথম দিকে কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে কিছুটা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। তবে সরকার তাঁদের জন্য ধর্ম প্রচারক এবং ইসলামী কল্যাণমূলক ক্ষেত্র তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে।’ ইসলামিক কলেজের পরিচালক বুলেন্ট উকার বলেন, ‘এটি জার্মানির একমাত্র বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান যেখানে স্বতন্ত্রভাবে ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। শিগগিরই ইমাম প্রশিক্ষণ কর্মসূচি জার্মানির মূলধারার প্রশিক্ষণে পরিণত হবে।আর প্রশিক্ষিত ইমামদের চাকরির ক্ষেত্রও আরো বিস্তৃত হবে।’ইউনিভার্সিটি অব এরলাঞ্জেন-নুরেমবার্গ এর ইসলাম ধর্মবিষয়ক শিক্ষক তারেক বাদাবিয়া বলেন, ‘কমিউনিটিতে ধর্মীয় ব্যক্তিদের চাহিদা অনেক বেশি। ইমামরা ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেন। ফলে অনেকে তাদের ইমাম অর্থাৎ সমাজের প্রধান ব্যক্তিকে দীর্ঘ সময় প্রশিক্ষণের জন্য ছেড়ে দেওয়া কঠিন মনে করে। তবে ইসলামিক কলেজের প্রতি সবার আগ্রহ ও আস্থা তৈরি হচ্ছে। তাই স্নাতকদের শুধুমাত্র একাডেমিকভাবে প্রশিক্ষিত করা উচিত নয়। বরং সামাজিকভাবে তাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। আর প্রশিক্ষিত ইমামদের মধ্যেও সরকারের স্বীকৃতি ও মূল্যায়নের কারণে কৃতজ্ঞবোধ তৈরি হয়েছে।’ চার বছর আগে জার্মানির বাইরে থেকে আসা ইমামদের সংখ্যা কমাতে নিজস্ব উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করে জার্মান সরকার। এরপর ২০১৯ সালে ওসনাব্রুক শহরের ডয়েচল্যান্ডে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ইসলামিক কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালের গ্রীষ্মে ইমাম প্রশিক্ষণের প্রথম ব্যাচের কার্যক্রম শুরু হয়। কলেজটি জার্মান ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান লক্ষ্য হলো, জার্মান ভাষায় দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি ইসলামী ধর্মগুরু ও আধ্যাত্মিক গাইডদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। এরই মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীতে মুসলিম চ্যাপ্লেন নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।ইসলামী ধর্মতত্ত্বে স্নাতক ডিগ্রি বা সমতুল্য ডিপ্লোমা থাকলে এই প্রগ্রামে আবেদন করা যাবে। এর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় কোরআন তিলাওয়াত, প্রচার-প্রসারের রীতি ও কৌশল, উপাসনার অনুশীলনসহ রাজনীতিবিষয়ক শিক্ষা দেওয়া হয়। জার্মানিতে বর্তমানে ৫৫ লাখের বেশি মুসলিম বসবাস করে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ শতাংশ। তাই মুসলিম জনগোষ্ঠী দেশটির সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,ফিলিস্তিনের সমর্থনে স্টেডিয়ামে উপচে পড়া ভিড়,ইসলাম ধর্ম,"ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মালয়েশিয়ায় বৃহত্তম গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজধানী কুয়ালালামপুরের আজিয়াটা অ্যারেনা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গে রয়েছে মালয়েশিয়া’ শীর্ষক মিছিল ও জমায়েতে অংশ নেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম। স্টেডিয়ামের ১৬ হাজার আসনের পুরো ভেন্যু পূর্ণ হয়ে যায়, যা ছিল গাজায় হামলার শুরুর পর দেশটির বৃহত্তম গণজমায়েত। ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি স্কার্ফ পরে এবং ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করে এতে অংশ নেয় সবাই।তারা ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি’, ‘ফিলিস্তিন বাঁচাও’, ‘গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো এবং ‘নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত, ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে’ স্লোগান দিতে থাকে।বক্তব্যে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে অতীতে ছিলাম, বর্তমানে রয়েছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। ইয়াসির আরাফাতের সময় থেকে আজ পর্যন্ত মালয়েশিয়ার মানুষ স্বাধীন ফিলিস্তিনের জন্য নির্ভয়ে নিজেদের সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। মানুষ হত্যা করা, শিশুদের হত্যা করা, হাসপাতালে বোমা ফেলা এবং স্কুল ধ্বংস করার অনুমতি দেওয়া পাগলামির একটি স্তর।’তিনি আরা বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা আর কিছু চাই না। আমরা চাই আরব, ফিলিস্তিন ও গাজার জনগণকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা হোক। হত্যা বন্ধ করুন। তাদের খাবার দিন।তাদের ওষুধ দিন। শিশুদের বাঁচার অধিকার দিন। এতে কি খুব বেশি চাওয়া হয়েছে?’মিছিলে অংশ নেওয়া বৃদ্ধ মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘অনেকে গাজায় যেতে চান। তবে তা এখন অসম্ভব। আমরা গাজায় যেতে না পারলেও মানবিক সমর্থন দিতে পারি।আর এ জন্যই আমরা এখানে এসেছি।’ মালয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পররাষ্ট্রনীতি এবং নিরাপত্তা কৌশলবিদ কলিন্স চং ইউ কিট বলেন, ‘মানবিক কারণে এক বিশালসংখ্যক মুসলিম ও অমুসলিম জনসংখ্যা ফিলিস্তিন ইস্যুতে সংহতি জানিয়েছে। তা ছাড়া সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানো মালয়েশিয়ার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। এটি তারই বহিঃপ্রকাশ। তবে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মালয়েশিয়া সব সময়ই অবিচল ও সোচ্চার থাকলেও বাস্তবিক প্রভাব তৈরি করতে দেশটির আরো সুদৃঢ় অবস্থান জরুরি। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক নৈপুণ্যের প্রয়োজন হবে।’ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু সংস্কৃতির একটি দেশ মালয়েশিয়া। ফিলিস্তিনের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে দেশটির। ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে নেই কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, ফিলিস্তিনি ইস্যু এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমর্থনে দেশটিতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভক্তি দেখা যায় না। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। হামাসের সঙ্গে এ যুদ্ধে গাজায় পাঁচ হাজারের বেশি লোক মারা গেছে, যার মধ্যে ৬০ শতাংশই নারী ও শিশু। গাজার বেসামরিক স্থাপনা ও হাসপাতালে বোমা নিক্ষেপের পাশাপাশি সেখানে বিদ্যুৎ, পানি, খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েলের আত্মরক্ষায় সমর্থন জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,পবিত্র কোরআনে মায়ের ত্যাগের বর্ণনা,ইসলাম ধর্ম,"সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধ পান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও বেশি আদর-সোহাগ করে থাকেন। পবিত্র কোরআনেও মহান আল্লাহ সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগের কথা উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং অতিকষ্টে তাকে প্রসব করেছেন। তার গর্ভধারণ ও দুধ পান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মা-বাবার ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি এবং আমি যেন ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। ’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ১৫) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো। ’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৪) এ জন্য ইসলাম ধর্মে মাকে সর্বোচ্চ সম্মানের মুকুট পরানো হয়েছে। নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরাম মায়ের প্রতি যত্ন নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে আহবান করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার? তিনি বলেন, তোমার মা। লোকটি বলল, অতঃপর কে? নবী (সা.) বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তারপর তোমার বাবা। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭১) অন্য একটি হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, মায়ের পদতলে জান্নাত। এমনকি এক সাহাবিকে তিনি জিহাদে না নিয়ে মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, মুআবিয়া ইবনে জাহিমা সালামি (রহ.) থেকে বর্ণিত, আমার বাবা জাহিমা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খিদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা করেছি। এখন আপনার কাছে পরামর্শ করতে এসেছি। তিনি বলেন, তোমার মা আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তাঁর খিদমতে লেগে থাকো। কেননা জান্নাত তাঁর দুই পায়ের নিচে। (নাসায়ি, হাদিস : ৩১০৪) মহান আল্লাহ আমাদের সবার মমতাময়ী মায়ের ত্যাগগুলো কবুল করুন। এবং আমাদেরকে মায়ের যথাযথ খিদমত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"হোয়াটসঅ্যাপে ‘ধর্ম অবমাননা’, পাকিস্তানে একজনের মৃত্যুদণ্ড",অন্যান্য,"পাকিস্তানে হোয়াটসঅ্যাপে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগের মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। গত শুক্রবার পাকিস্তানের পেশোয়ার শহরের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এই রায় দেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।সাজার আদেশ পাওয়া ওই ব্যক্তির নাম সৈয়দ মুহাম্মদ জিশান। পাকিস্তানের ইলেকট্রনিক অপরাধ দমন আইন এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাঁকে ৪ হাজার ৩০০ ডলার জরিমানা করা হয়েছে।পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননাসংক্রান্ত আইন বেশ কঠোর। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইনটি আরও শক্ত করা হয়। আইন সংস্কার করে আরও বাড়ানো হয় বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে অবমাননার সাজার পরিসর।পাকিস্তান সরকারের এমন পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা। তাদের অভিযোগ, আইনটির সংস্কার ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলবে।পাকিস্তানে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ন্যাশনাল কমিশন অব জাস্টিস অ্যান্ড পিস ইন পাকিস্তানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ বছরে দেশটিতে ৭৭৪ জন মুসলমান এবং সংখ্যালঘু বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ৭৬০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস) বলছে, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে পাকিস্তানে অন্তত ১৮ নারী ও ৭১ পুরুষ ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,অসুস্থদের রোজা পালনের বিধান,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র রমজান মাসে রোজা পালন করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। মুসলমানদের জন্য রমজান মাসে রোজা পালন করা ফরজ। তবে যারা অসুস্থ বা শরিয়ত সম্মত ভ্রমণে থাকবে অথবা বার্ধক্যজনিত কারণে রোজা পালনে অপারগ হবে তাদের জন্য বিভিন্নভাবে ছাড় প্রদান করা হয়েছে। দয়াময় আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পার। রোজা নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্য। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সেই রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয় তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। আল্লাহ রোজাদারদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য কষ্টকর কিছু কামনা করেন না। (সুরা আল বাকারা : ১৮৩-১৮৫) নারীদের জন্য তাদের মাসিক পিরিয়ড ও প্রসবকালীন কিছুদিন রোজা পালন করা শরিয়তের আলোকে নিষেধ। ওই সময়ে ছেড়ে দেওয়া রোজা রমজান-পরবর্তী কোনো সময়ে পূরণ করে নেবে। এভাবে যারা শরিয়ত সম্মত সফর অথবা অসুস্থতাজনিত কারণে যে ধরনের অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করে রোজা আদায় করতে সক্ষম হন, তাদের জন্যও পরবর্তীকালে রোজা আদায় করা আবশ্যক। আর যদি অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে কিংবা এমন বৃদ্ধ অবস্থায় পৌঁছে যান যার জন্য রোজা রাখার সক্ষমতা ও সামর্থ্য কখনো ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই, তাহলে ওই ব্যক্তি ফিদিয়া আদায় করবে। কোনো ধরনের ভুলভ্রান্তির কারণে শরিয়তের পক্ষ থেকে যে বিনিময় বাধ্যতামূলক করা হয় তাকে ফিদিয়া বলে। পবিত্র রমজান মাসে যারা রোজা রাখতে অক্ষম, তাদের বিকল্প বিধানকেও ফিদিয়া বলা হয়। ফিদিয়ার পরিমাণ হলো- প্রতিটি রোজার জন্য একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে পেট ভরে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা। টাকা দিয়েও ফিদিয়া আদায় করা যায়। তখন প্রত্যেক রোজার জন্য ফিদিয়ার ন্যূনতম পরিমাণ হলো- সদকায়ে ফিতরের সমান। ফিদিয়া পাওয়ার উপযুক্ত হলো গরিব, মিসকিন যারা জাকাত পাওয়ার উপযুক্ত তারাই ফিদিয়া পাওয়ার উপযুক্ত হিসেবে গণ্য হবে। আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। অনেকে মনে করে, কেউ অসুস্থ হলে বা রোজা পালন করতে অক্ষম হলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি রোজা রাখাতে হয়। আসলে বদলি রোজা বলতে ইসলামে কোনো পরিভাষা নেই। বরং অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, সুস্থ হওয়ার পর নিজেকেই তা কাজা করতে হবে। আর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে প্রতিটি রোজার জন্য একেকটি করে ফিদিয়া আদায় করতে হবে। রোজা অবস্থায় ইনহেলার স্প্রে করার বিধান : শাসকষ্ট দূর করার জন্য মুখের ভিতরে ইনহেলার স্প্রে করা হয়। কেউ কেউ এমন আছে যারা এই ইনহেলার ব্যবহার করা ব্যতীত দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে অক্ষম। ওষুধটি স্প্রে করার সময় যদিও গ্যাসের মতো দেখা যায়, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা দেহবিশিষ্ট তরল ওষুধ। অতএব মুখের অভ্যন্তরে ইনহেলার স্প্রে করার দ্বারা রোজা ভেঙে যাবে। সাহরির সময় থেকে ইফতার পর্যন্ত ইনহেলার ব্যবহার করা ব্যতীত যারা অতিক্রম করতে অক্ষম তাদের জন্য রোজা পালন করা বাধ্যতামূলক নয়। তারাও অসুস্থ হওয়ার কারণে পরবর্তী রোজা কাজা করবে। তা সম্ভব না হলে ফিদিয়া আদায় করবে। আর অসুস্থ ব্যক্তি তার রোজা কাজা করা বা ফিদিয়া দেওয়ার আগেই মারা গেলে তার পক্ষ থেকে তার আত্মীয়স্বজন যথাসাধ্য ফিদিয়া আদায় করার চেষ্টা করবে। লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরা, ঢাকা",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহার চেয়ারে অন্য রকম সত্যপ্রিয় মহাথের",বৌদ্ধ ধর্ম,"কক্সবাজার শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে রম্যভূমি পরিচয়ে খ্যাত রামুর অবস্থান। সেখানে মেরংলোয়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহার। দৃষ্টিনন্দন তিনতলা বিহারের নিচতলায় বসে দর্শনার্থীদের মিলনমেলা। ভক্তদের কয়েকজন বললেন, সত্যপ্রিয় মহাথের এই প্রতিকৃতি যেন আরও সুন্দর। সত্যপ্রিয় মহাথের গত হয়ে গিয়ে যেন হয়ে উঠেছেন আরও বেশি প্রভাবসঞ্চারী। গত বছরের ৪ অক্টোবর ছিল সত্যপ্রিয় মহাথেরের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি ঘিরে ১ অক্টোবর বিহার প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় স্মরণসভা। বৌদ্ধসম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ সমবেত হয়ে সত্যপ্রিয়কে স্মরণ করেছিলেন। বিহারের নিচতলার এক কোণে চন্দন ও সেগুন কাঠের তৈরি দৃষ্টিনন্দন একটি চেয়ারে বসতেন বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু সত্যপ্রিয় মহাথের। পূজারীরা এসে তাঁর কাছে দীক্ষা নিতেন, দিতেন নানা উপদেশ-পরামর্শ। চেয়ারটি উপহার দিয়েছিল মিয়ানমার সরকার।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আরব আমিরাতে খেজুরের দাম কমল ৪০ শতাংশ ",ইসলাম ধর্ম,"রমজান মাসে খেজুর খাওয়ার বিশেষ এবং প্রধান কয়েকটি তাৎপর্য রয়েছে। মূলত খেজুর ইফতারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কাজ করে। ঐতিহ্যগতভাবে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার করতেন। আর এই কারণে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে রমজান উপলক্ষে অন্য পণ্যের সঙ্গে খেজুরের দাম কমিয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মিষ্টি এবং পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এই ফল সারাদিন রোজা রাখার পর রোজাদারদের শরীরে দ্রুত শক্তিও বৃদ্ধি করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা পূরণ করতে সাহায্য করে। পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। আর এর মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) খেজুরের দাম কমেছে ৪০ শতাংশ। মূলত রমজান মাস উপলক্ষ্যে দেশটিতে স্বাভাবিকের তুলনায় খেজুরের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাস আসতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি এবং এর মধ্যেই প্রয়োজনীয় সকল খেজুরই বর্তমানে আরব আমিরাতে প্রায় ৪০ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে। খালিজ টাইমস শারজার ওয়াটারফ্রন্ট মার্কেট ও জুবাইল মার্কেট পরিদর্শন করেছে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় খেজুরের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে বলে দেখতে পেয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বর্তমানে ফিলিস্তিন, জর্ডান এবং সৌদি আরবের মাজদুল খেজুর প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে ২০ দিরহামে। মাত্র কয়েকদিন আগে প্রতি কেজি এই খেজুরের দাম ছিল ৩০ দিরহাম। একইভাবে, রুটাব খেজুর সাধারণত ৬০ দিরহামে ৩ কেজি কিনতে পাওয়া গেলেও এখন রমজানের আগে ওই একই পরিমাণ খেজুরের দাম কমে ৪৫ দিরহামে নেমে এসেছে। আজওয়া খেজুরের দাম এখন প্রতি কেজি ৩৫ দিরহাম। যা এই খেজুরের আগের দাম ৪৫ দিরহাম থেকে কম। আর বাজেট-সচেতন ক্রেতারা সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে ইরান থেকে আসা জাইদি খেজুর কিনতে পারছেন। কেজি প্রতি ৫ দিরহামে এই খেজুর কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ওয়াটারফ্রন্ট মার্কেটের ১৩০ নম্বর স্টলে খেজুর বিক্রেতা মোহাম্মদ রইস বলছেন, বর্তমানে ডিসকাউন্ট মূল্যে শুকনো ফল দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে, মাজদুল খেজুরের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। আমরা প্রতিদিন ১০০ কেজির বেশি খেজুর বিক্রি করছি এবং আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে প্রতিদিনের বিক্রির পরিমাণ ৫০০ কেজি ছাড়িয়ে যাবে।’ মোহাম্মদ রইস আরও বলেন, ‘বাজারের সকল খেজুর বিক্রেতাই এই শক্তি-সমৃদ্ধ ফলটি ডিসকাউন্টে (ছাড়কৃত মূল্যে) বিক্রি করছে এবং বহু মানুষ অল্প দামে খেজুর কিনে এই সুবিধা নিচ্ছেন।’ খালিজ টাইমস বলছে, রমজান শুরু হওয়ার আগে বাসিন্দাদের এখনই খেজুর মজুদ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করার সময়োপযোগী সুযোগ রয়েছে। ওয়াটারফ্রন্ট মার্কেটের বিক্রেতা আনজিল এস বলেন, ‘আমাদের কাছে বর্তমানে ৩০ টিরও বেশি জাতের খেজুর রয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে আমরা বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে আরও বিভিন্ন জাতের খেজুর আনার আশা করছি। আগামী সপ্তাহগুলোতে চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাসিন্দারা ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির আশা করতে পারে।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের পাতা,"যেসব সম্পদের ওপর জাকাত নেই ",ইসলাম ধর্ম,"জাকাত ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের মধ্যে একটি। জাকাত আরবী শব্দ। এর মূল ধাতু হচ্ছে যাকয়ুন। এর চারটি অর্থ রয়েছে। যেমন- ১. পবিত্রতা ২.বৃদ্ধি পাওয়া ৩. প্রশংসা ৪. প্রাচুর্যতা। শরিয়তের পরিভাষায় জাকাত বলা হয়- সম্পদশালীদের উপর আল্লাাহর নির্ধারিত সেই অংশ যা আদায় করা ওয়াজিব। জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধি পায়, পবিত্র হয় এবং অন্য দিকে দারিদ্র্য সমস্যা দূর করে। দ্বিতীয় হিজরীতে জাকাত ফরজ হয় এবং নবম হিজরীতে জাকাত ইসলামী রাষ্ট্রের রাজস্বকর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। চার প্রকার সম্পদের উপর জাকাত ফরজ। যেমন- ১. স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থ, ২. বাণিজ্যিক পণ্য, ৩. মাঠে বিচরণকারী গবাদি পশু, ৪. জমিতে উৎপাদিত শস্য ও ফলমূল। কাদের ওপর জাকাত ফরজ প্রত্যেক ধনবান ব্যক্তি বা নেসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির উপর জাকাত ফরজ। সাড়ে সাত তোলা (৮৫ গ্রাম) সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৫৯৫ গ্রাম) রূপা অথবা তার সমমূল্যের সম্পদকে নেসাব বলা হয়। এই পরিমাণ সম্পদ যখন কোন ব্যক্তির জীবন ধারনের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণাদির অতিরিক্ত হবে এবং পূর্ণ এক বছর সে ঐ সম্পদের মালিক থাকবে, তখন তার উপর জাকাত ফরজ হবে। স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থ ও ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের বছরান্তে ৪০ ভাগের এক ভাগ বা শতকরা ২.৫% জাকাত বাবত আদায় করতে হবে। সোনার নেসাব অনুযায়ী সোনার জাকাত এবং রূপার নেসাব অনুযায়ী রূপার জাকাত আদায় করতে হবে। নগদ টাকা এবং ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত রূপার নেসাবের হিসাবে আদায় করতে হবে। অর্থাৎ নগদ টাকা বা ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত আদায় করার সময় সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যকে পরিমাণ ধার্য করতে হবে। গৃহপালিত পশুর জাকাত গৃহপালিত পশু ও নির্দিষ্ট সংখ্যায় পৌছলে জাকাত দিতে হয়। চারণভুমিতে বিচরণশীল ৩০টি গরু অথবা মহিষের জন্য ১ বছর বয়সের ১টি গরু অথবা মহিষের বাচ্চা জাকাত দিতে হবে। অনুরূপ ৪০ থেকে ১২০টি ছাগলের জন্য বছরে ১টি ছাগল জাকাত দিতে হবে। ৩০ টির কমে গরু অথবা মহিষে এবং ৪০টির কমে ছাগলে জাকাত নেই। তবে ব্যবসার উদ্দেশ্যে যদি ক্রয় করে রাখা হয় তাহলে ব্যবসায় পণ্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে এগুলোর মূল্যের উপর জাকাত আসবে। উশর তথা উৎপাদিত শস্য ও ফল মূলের জাকাত উশর তথা ফল ফসলের জাকাত আমাদের দেশে খুব কমই আদায় করা হয় এবং এর আলোচনা ও কম হয়। যার দরুন এ সম্পর্কে অনেকে জানেইনা যে, উৎপাদিত ফসলেরও জাকাত আদায় করতে হয়। উশর এর অর্থ হলো এক দশমাংশ। জমি থেকে উৎপন্ন সকল প্রকার শস্য, শাকশব্জি ও ফলের এক দশমাংশ জাকাত বাবত আদায় করাকে উশর বলে। সকল প্রকার শস্য, শাকশব্জি ও ফলের উপর জাকাত প্রযোজ্য। কারো কারো মতে কেবল গোলাজাত শস্য বা ফসল ছাড়া অন্য ফষলের উপর জাকাত নেই। জমির ফসল আহরণের সঙ্গে সঙ্গে উশর পরিশোধ করতে হয়। এক্ষেত্রে বৎসর অতিক্রান্ত হওয়া প্রয়োজন নেই। বৎসরে একাধিকবার ফসল আসলে একাধিক বার উশর আদায় করতে হবে। শস্য ও ফলমূলের নেসাব যেসব জমিতে সেচ প্রয়োজন হয় না, অর্থাৎ ফসল উৎপাদনের জন্য পানি সি ন করতে হয় না বরং প্রাকৃতিকভাবে নদী বা বৃষ্টির পানি দ্বারাই ফসল ফলানো হয়, এরকম জমি থেকে আহরিত ফসলের দশ ভাগের একভাগ আর যে জমিতে সেচের প্রয়োজন হয়, অর্থাৎ পানি সি ন করে ফসল উৎপাদন করতে হয় এরমক জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ জাকাত বাবত আদায় করতে হবে। বিশ ভাগের এক ভাগকে বলা হয় নিসফে উশর। অবশ্য এ থেকে চাষ, কর্তন, মাড়াই ইত্যাদির খরচ বাদ যাবে। ফসলের নেসাবের পরিমাণ হলো ৫ ওয়াসাক। অর্থাৎ কেউ যদি ৫ ওয়াসাক তথা আনুমানিক ২৫ মন শস্য পায় তাহলে সে উশর বা নিসফে উশর আদায় করতে হবে। তবে ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ.) এর মতে, ৫ ওয়াসক হওয়া জরুরী নয় বরং ফসল পৌণে দুই সেরের বেশি হলেই উশর আদায় করতে হবে। (দুররুল মুখতার, ২য় খন্ড) যেসব সম্পদের ওপর জাকাত নেই অত্যাবশ্যকীয় সম্পদ বা উপকরণ হলো- বসবাস, ব্যবহার ও উৎপাদনের কাজে বা ভাড়ায় নিয়োজিত ঘর, বাড়ি, দোকান কোঠা, স্থায়ী সম্পত্তি, দালান কোঠা, পেশাগত সামগ্রী, কারখানার যন্ত্রপাতি, যোগাযোগের বাহন ইত্যাদির উপর জাকাত আসেনা। তবে এসব থেকে ভাড়া বাবত অর্জিত আয় অন্য জাকাত যোগ্য সম্পদের সাথে যুক্ত করে ২.৫% হারে জাকাত আদায় করতে হবে। ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করে রাখা জমি, দালান ও দোকান ঘর, অ্যাপার্টমেন্ট, গাড়ি, যন্ত্রপাতি উত্যাদির মূল্যের উপর জাকাত ধার্য হবে। ঘরের আসবাব পত্র, তৈজসপত্র, খাদ্যদ্রব্য, পোশাক পরিচ্ছদ, নিজের ও নিজের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল আত্মীয় স্বজনদের দৈনন্দিন খরচের উপর জাকাত আসে না।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,কাতারে আন্তর্জাতিক অনুবাদ সংস্থার পুরস্কার ঘোষণা,ইসলাম ধর্ম,"কাতারভিত্তিক আরবি অনুবাদবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘শেখ হামাদ অ্যাওয়ার্ড ফর ট্রান্সেলেশন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ সপ্তম পর্বের পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা দিয়েছে। গত রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দোহায় অনুষ্ঠিত এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন শেখ সানি বিন হামাদ বিন খলিফা আলে সানি। আলজাজিরার খবরে এ তথ্য জানা যায়। আরবি থেকে তুর্কি ভাষায় অনুবাদ বিভাগে ইবনে রুশদ লিখিত ‘তাফসিরু মা বাদাদ তাবিয়াহ’ গ্রন্থ অনুবাদ করে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন মহিউদ্দিন মাজিদ, ‘রুহুল হাদাসাহ’ গ্রন্থ অনুবাদের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মুহাম্মদ আমিন মাশালি ও মুনতাহা মাশালি এবং ‘আল-মুসাক্কাফুন ফিল হাদারাতিল আরাবিয়্যাহ’ গ্রন্থ অনুবাদের জন্য নোমান কাওকালি। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ‘দিলালাতুল হায়িরিন’ অনুবাদের জন্য উসমান বাইদার ও আজজান আকদাগ এবং ‘আস সিয়াসাহ আল-শরইয়্যাহ’ গ্রন্থ অনুবাদের জন্য সনির দোমান। তুর্কি থেকে আরবি ভাষায় অনুবাদ বিভাগে ‘তারিখুল ফন্নি খত্তি’ গ্রন্থের অনুবাদের জন্য প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন সালেহ সাদায়ি এবং ‘বারবারি আসারি মুতাহাজজির’ গ্রন্থের অনুবাদের জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন হাফাল দাকমাক। আরবি থেকে ইংরেজি অনুবাদে পুরস্কার পেয়েছেন উইলিয়াম হুতশিন্স এবং লিরি ব্রিস। ইংরেজি থেকে আরবিতে ‘আশ শুউবিয়্যাহ ওয়াস সিয়াসাহ আল-আলামিয়্যাহ’ গ্রন্থের অনুবাদের দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মুহাম্মদ আবদুস সালাম হামশি, ‘গাজা বাহসুন ফি ইসতিশহাদিহা’ গ্রন্থ অনুবাদের জন্য আইমান হাদ্দাদ, ‘আল-বাহরুল মাফতুহ’ গ্রন্থ অনুবাদের জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মোস্তফা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ কাসিম এবং ‘আসসারিকাতু মিনাল মুসলিমিন’ গ্রন্থের অনুবাদের জন্য আমির শায়খুনি। এদিকে ইংরেজি থেকে আরবি ভাষায় অনুবাদে অবদানের জন্য লেবাননের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আল-শাবাকাহ আল-আরাবিয়্যাহ এবং আরবি-তুর্কি ভাষায় অনুবাদের জন্য তুরস্কের ইনসান ইয়াইনালারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। তা ছাড়া অনুবাদক হিসেবে তুরস্কের মুহাম্মদ হাক্কি চতশিন ও বুরহান কুর উগলু, মিসরের মুহাম্মদ হারব ও আবদুল্লাহ আহমদ ইবরাহিম আল-আজব, রোমানিয়ার নিকোলা ডুবরিশান, জর্জ গ্রেগোরি, কাজাখস্তানের ইখতিয়ার বালতুরি, ইন্দোনেশিয়ার আবদুল হাই আল-কাত্তানিকে সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। শেখ হামাদ অ্যাওয়ার্ড ফর ট্রান্সেলশন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর আরবি ও নির্ধারিত ভাষায় অনূদিত বইয়ের জন্য পুরস্কার দিয়ে আসছে। অনুবাদের প্রধান ভাষার পুরস্কার হিসেবে দুই লাখ ডলার এবং সাধারণ ভাষার জন্য এক লাখ ডলার নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালে আরবি-বাংলা অনুবাদে পুরস্কার পেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ মারুফ মুহাম্মাদ শাহ আলম।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"মরক্কোয় কামানের শব্দে ফতুর শুরু ",ইসলাম ধর্ম,"আফ্রিকার সবচেয়ে পশ্চিমের দেশ মরক্কো। মরক্কোতে ইফতারকে বলে ফতুর। কামানের শব্দে সেখানে ফতুর শুরু হয়। নানা আচার–অনুষ্ঠান দিয়ে রমজানকে তারা স্বাগত জানায়। মরক্কোবাসী রমজানকে স্বাগত জানাতে এক মাস আগে প্রস্তুতি নেন। শাবান মাস থেকে মসজিদ ও বাড়িঘর তাঁরা পরিষ্কার করেন। সংযোজন করেন নতুন আসবাব। আর নিজেদের জন্য কেনেন মরক্কোর ঐতিহ্যবাহী পোশাক। কমবেশি সবাই এই পোশাক পরে মসজিদে তারাবিহ আদায় করতে ও ঈদের নামাজ পড়তে যান। ইফতারের সময় জানাতে তাঁরা কামান দাগেন। কামানের শব্দ শুনে মরক্কোর মানুষ রোজা ভাঙেন। এটি তাঁদের ঐতিহ্যবাহী একটি রীতি। সাহ্‌রিতে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলার জন্য নাফর নামক একটি দল তৈরি হয়। নাফররা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে রাস্তায় যেতে যেতে সাহ্‌রির সময় বলতে থাকে। সঙ্গে তিলাওয়াত করে গজল। আর ফুঁ দিতে থাকেন শিঙায়। সে শব্দ শুনে মানুষ ঘুম থেকে উঠে সাহ্‌রি খান। এ জন্য নাফররাদের রমজানের পরে সম্মানী দেওয়া হয়। ইফতার আয়োজনে মরক্কোবাসীর প্রথম পছন্দ হারিরা স্যুপ। হারিরা স্যুপ প্রস্তুত করা হয় টমেটো, ছোলা, মসুরের ডাল ও গোশতের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে। চেবাকিয়া হালুয়া ইফতারের অন্যতম খাবার। চেবাকিয়া হালুয়া মরক্কোর ঐতিহ্যবাহী হালুয়া। এটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় আটা, ময়দা, তিল, ঘি, মধু ও বিভিন্ন ফুলের রস। এ ছাড়া ইফতারের টেবিলে থাকে শাবাকিয়া পিঠা, সেদ্ধ ডিম, মিষ্টি, পাস্তা, ভাজা মাছ ও বিভিন্ন প্যানকেক। তারাবিহর পরে বাড়ির সবাই মিলে চা, কফি, দুধ, শরবত ইত্যাদি পান করেন। ইসলামের নানা গল্প শুনে পার করে দেন সময়। মরক্কোর ঐতিহ্যের অংশ হলো রমজানে সবাই পরিবারের কাছে থাকেন। মরক্কোতে শিশুদের রোজা রাখার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। একে তাদের ভাষায় ‘তাখইয়াতুন নাহার’ বলে। রোজা রাখার জন্য শিশুদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকও পরানো হয়, যাতে তারা বুঝতে পারে রোজা আসছে। যেসব বাচ্চারা রোজা রাখে, তাদের পরিবার তাদের পুরস্কৃতও করে থাকে। ২৭ রমজান রাতে লাইলাতুল কদর পাওয়ার আশায় অনুষ্ঠান করে থাকেন মরক্কোবাসী। নারীরা কিসকিস নামের একজাতীয় মিষ্টান্ন তৈরি করে মুসল্লিদের জন্য মসজিদে পাঠান। রাতের জন্য তাঁরা তাঁদের ঘরবাড়ি সাজিয়ে তোলেন। ছোট ছোট মেয়ে নববধূর মতো সাজসজ্জা করে উল্লাস করে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative Dhaka Tribune,"মুসলিমদের আবেদন খারিজ, জ্ঞানবাপী মসজিদের তহখানায় চলবে পূজা",হিন্দু ধর্ম,"ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসির কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের লাগোয়া জ্ঞানবাপি মসজিদের ভূগর্ভস্থ কক্ষে (সেলার বা তহখানা) পূজা করতে পারবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। মসজিদ কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও আরজি খারিজ করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট সোমবার (২৬ ফেব্রয়ারি) এই রায় দিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিচারপতি রোহিত রঞ্জন আগরওয়ালের বেঞ্চ জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরের দক্ষিণ দিকে হিন্দুদের পূজা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। মসজিদ কর্তৃপক্ষের আরজি খারিজ করে বিচারপতি রোহিত রঞ্জন আগরওয়াল বলেন, “বারানসির জেলা আদালত এই বিষয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা বহাল থাকবে। তহখানায় হিন্দুদের পূজা–অর্চনা চলবে।” এর আগে, জ্ঞানবাপী মসজিদের সিল করা একটি তহখানায় হিন্দুদের পূজার অনুমতি দিয়েছিল বারানসি জেলা আদালত । গত ৩১ জানুয়ারি বারানসি জেলা আদালত ওই নির্দেশ জারি করেছিলেন। তহখানায় পূজা করার অধিকার দাবি করে নিম্ন আদালতে মামলা করেছিলেন শৈলেন্দ্র কুমার পাঠক নামের এক ব্যক্তি। আবেদনে তিনি জানিয়েছিলেন, তার পূর্বপুরুষরা ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে পূজা করতেন। বংশগত পূজারি হিসেবে, তাকে তহখানায় আবারও পূজা শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়। আদালতের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানায় মুসলিমরা। মসজিদ কমিটি বলেছে, জ্ঞানবাপীর ভূগর্ভে কোনো মূর্তি নেই। তাই সেখানে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পূজা করার প্রশ্নই আসে না। তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের জন্য যান। কিন্তু বারানসি আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে মসজিদ কমিটির আবেদন শুনতে অস্বীকার করে, তাদেরকে হাইকোর্টে যেতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানায় মসজিদ কমিটি। ১৫ ফেব্রুয়ারি উভয়পক্ষের শুনানি শেষে, আজ সোমবার জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে পূজা চালিয়ে যাওয়ার রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের পর হিন্দুপক্ষের আইনজীবী প্রভাস সাংবাদিকদের বলেন, “সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই রায় এক বিরাট জয়। এর ফলে সেখানে এখন বাধাহীন পূজা করা যাবে।”",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative যায়যায়দিন,"তিনি মহানবী (সা.)–এর মেহমানদারি করার গৌরব অর্জন করেন ",ইসলাম ধর্ম,"মদিনার মানুষ রাসুল (সা.)–এর আগমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন। আনসারদের একটি দল নিয়মিত প্রতিদিন সকালে মদিনার চার–পাঁচ মাইল দূরে ‘হাররা’ নামক স্থানে চলে যেতেন। হজরত আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রা.) এ দলের একজন সদস্য ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর সম্ভাব্য আগমন পথের দিকে তাকিয়ে দলটি দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করত। একদিন তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন, এমন সময় এক ইহুদি বহুদূর থেকে রাসুল (সা.)–কে দেখতে পেয়ে তাঁদের খবর দেয়। আনসাররা মহানবী (সা.)–কে স্বাগত জানাতে দ্রুত ছুটে যান।আল্লাহর নির্দেশে নবুয়তের ১৩ তম বছরে রাসুল (সা.) এবং মক্কার মুসলমানরা মদিনায় হিজরত করেন। মদিনার উপকণ্ঠে কুবা নামে একটি জায়গায় কয়েক দিন থাকার পর রাসুল (সা.) মদিনার মূল শহরের দিকে রওনা হলেন। রাস্তার দুই পাশে মদিনাবাসী লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। মদিনার শিশু-কিশোরেরা গান গেয়ে রাসুল (সা.)–কে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। আনসার সাহাবিরা প্রত্যেকেই চাইছিলেন রাসুল (সা.)–কে আতিথেয়তা দিতে। সবাই তাঁকে তাঁদের বাড়িতে মেহমান হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর বাহন মাদি উটের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের বারবার বলছিলেন, ‘তোমরা ওর পথ ছেড়ে দাও। ও আল্লাহর নির্দেশপ্রাপ্ত।’ মাদি উটটি যেতে যেতে একসময় আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রা.)–র বাসার কাছে গিয়ে মাটিতে বসে পড়ল। রাসুল (সা.) নেমে পড়লেন। আবু আইয়ুব (রা.)–এর মন আনন্দে ভরে গেল। তিনি মহানবী (সা.)–এর মেহমানদারি করার গৌরব অর্জন করলেন। রাসুল (সা.) মসজিদ এবং মসজিদের কাছে তাঁর নিজের বাড়ি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আবু আইয়ুব (রা.)–এর বাসায় থেকেছিলেন। আবু আইয়ুব (রা.) অত্যন্ত ভালোবাসা ও বিনয়ের সঙ্গে মেহমানদারির দায়িত্ব পালন করেন। আবু আইয়ুব (রা.)–র বাসা ছিল দোতলা। রাসুল (সা.)–এর জন্য তিনি ওপরের তলাটি ঠিক করেছিলেন। কিন্তু রাসুল (সা.) তাঁর নিজের এবং সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে নিচতলা পছন্দ করেন। এখানে থাকা অবস্থায় কখনো আবু আইয়ুব (রা.), কখনো অন্য আনসাররা পালাক্রমে রাসুল (সা.)–কে খাবার পাঠাতেন। রাসুল (সা.) ছয়–সাত মাস এ বাসায় থাকেন। মসজিদে নববি এবং এর পাশে ঘর তৈরি হলে তিনি সেখানে চলে যান। একদিন দুপুরের প্রচণ্ড গরমে আবু বকর (রা.) মসজিদে নববিতে এলেন। উমর (রা.) তাঁকে দেখে বললেন, ‘এই প্রচণ্ড গরমে আপনি বাইরে এলেন কেন?’ আবু বকর (রা.) বললেন, ‘খুব খিদা পেয়েছে, তাই বাইরে বের হয়ে এসেছি।’ উমর (রা.) বললেন, ‘আমিও একই কারণে বাইরে বের হয়েছি।’ রাসুল (সা.)–ও বললেন, ‘আমিও ঠিক একই কারণে বাইরে বের হয়ে এসেছি।’ রাসুল (সা.) তাঁদের দুজনকে নিয়ে আবু আইয়ুব (রা.)–এর বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। আবু আইয়ুব (রা.) প্রতিদিন রাসুল (সা.)–এর জন্য কিছু খাবার রেখে দিতেন। রাসুল (সা.) নির্দিষ্ট সময়ে না এলে তাঁর পরিবারের লোকেরা তা ভাগ করে খেয়ে ফেলতেন। রাসুল (সা.) আর তাঁর সঙ্গীরা দরজায় পৌঁছালে তাঁদের স্বাগত জানালেন আবু আইয়ুব (রা.)–এর স্ত্রী উম্মে আইয়ুব। রাসুল (সা.) জানতে চাইলেন, ‘আবু আইয়ুব কোথায়?’ আবু আইয়ুব (রা.) বাড়ির কাছেই তাঁর খেজুরবাগানে কাজ করছিলেন। রাসুল (সা.)–এর কণ্ঠ শুনে তিনি ছুটে এসে বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আপনি তো সাধারণত এ সময় আসেন না!’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘ঠিকই বলেছ!’ আবু আইয়ুব (রা.) দৌড়ে বাগানে গিয়ে এক কাঁদি খেজুর কেটে নিয়ে এলেন। তাতে শুকনো, কাঁচা ও পাকা খেজুর ছিল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘পুরো কাঁদি কেটে আনলে কেন?’ আবু আইয়ুব (রা.) বললেন, ‘আপনি এখান থেকে শুকনো, কাঁচা ও পাকা খেজুর খাবেন। তাই কেটে আনলাম। এক্ষুনি একটা বকরিও জবাই করে আনছি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘যদি করো, তাহলে দুধেল বকরি জবাই কোরো না।’ আবু আইয়ুব (রা.) একটি বকরির বাচ্চা জবাই করলেন। তাঁর স্ত্রী গোশত রান্না করলেন, রুটি বানালেন। রান্নার পরে রাসুল (সা.) আর তাঁর সঙ্গীদের খাবার পরিবেশন করা হলো। তাঁরা তৃপ্তি করে খেলেন। রাসুল (সা.) এক টুকরো গোশত আর একটা রুটি আবু আইয়ুব (রা.)–র হাতে দিয়ে বললেন, এটা ফাতিমার কাছে নিয়ে যাও। বহু দিন সে এমন খাবার খায়নি।’ আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রা.)–র জন্ম মদিনার বনু নাজ্জার বংশে। রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৩১ বছর। মদিনায় ইসলামের দাওয়াত ছড়িয়ে পড়ার পর মদিনাবাসীদের অনেকে ইসলামের ছায়াতলে আসতে শুরু করেন। আকাবার তৃতীয় শপথে আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রা.) উপস্থিত ছিলেন। রাসুল (সা.)–এর হাতে বাইয়াত নিয়ে তিনি মদিনায় ফিরে যান। আবু আইয়ুব (রা.) ছিলেন কোরআনের হাফেজ। রাসুল (সা.)–এর যুগে আনসারদের মধ্যে পাঁচজন সাহাবি কোরআন সংগ্রহ করতেন। তার মধ্যে আবু আইয়ুব (রা.) একজন। হজরত আবু আইয়ুব (রা.)–এর জ্ঞান আহরণ এবং তা প্রচারের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল। শাওয়াল মাসে যে ছয়টি নফল রোজা রাখতে হয়, এই হাদিসটি আবু আইয়ুব (রা.)–র কাছে থেকেই পাওয়া যায়। আবু আইয়ুব (রা.)–র তরফ থেকে ১৫০টি হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে বলে সিরাতের বইগুলোতে উল্লেখ পাওয়া যায়। আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রা.)–এর চরিত্রে তিনটি বৈশিষ্ট্য ছিল: ১. রাসুল (সা.)–এর প্রতি অগাধ ভালোবাসা। ২. ইমানের দৃঢ়তা। ৩. সত্য ভাষণ। কারও ভয়ই তাঁকে সত্য বলা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। বদর, ওহুদ, খন্দক, বাইয়াতুর রিদওয়ানসহ বিভিন্ন যুদ্ধ ও অভিযানে আবু আইয়ুব (রা.) রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)–এর ইন্তেকালের পর খলিফাদের যুগের যুদ্ধগুলোতেও তিনি পিছিয়ে থাকেননি। সাহাবা সমাজে তাঁর মর্যাদা ছিল উঁচুতে। অন্য সাহাবিরা তাঁর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে মাসআলা জিজ্ঞেস করতেন। কোনো মাসআলা নিয়ে সাহাবাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে সবাই তাঁর কাছেই ছুটে যেতেন। হজরত আলী (রা.)–এর খিলাফতের সময় ইবনে আব্বাস (রা.) যখন বসরার গভর্নর, তখন আবু আইয়ুব (রা.) সেখানে গিয়েছিলেন। ‘যেভাবে আপনি রাসুলুল্লাহর জন্য ঘর খালি করে দিয়েছিলেন, আমারও এখন আপনার জন্য সেভাবেই ঘর খালি করে দেওয়ার ইচ্ছা।’ এ কথা বলে ইবনে আব্বাস নিজের পরিবারের সদস্যদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়ে বাড়িটি তাঁর থাকার জন্য ছেড়ে দেন। ৫২ হিজরিতে মুয়াবিয়া (রা.) যখন রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, আবু আইয়ুব (রা.) ৮০ বছরের বৃদ্ধ। অভিযানের সময় এক মহামারিতে বহু মুজাহিদ মারা যান। আবু আইয়ুব (রা.)–ও ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। মুসলমান বাহিনীর সেনাপতি ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া অন্তিম রোগশয্যায় আবু আইয়ুব (রা.)–র শেষ ইচ্ছার কথা জানতে চাইলেন। আবু আইয়ুব (রা.) বললেন, ‘আমি মারা গেলে তোমরা আমার মৃতদেহ ঘোড়ায় চাপিয়ে শত্রুভূমি থেকে যত দূর সম্ভব বাইরে নিয়ে গিয়ে একেবারে শেষ প্রান্তে দাফন করবে।’ আবু আইয়ুব (রা.)–এর মৃত্যুর পর তাঁর এই শেষ ইচ্ছাটি বাস্তবায়ন করা হয়",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"পঞ্চপল্লীর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ধর্মমন্ত্রী ",অন্যান্য,"ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীর ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মধুখালী উপজেলার চোপেরঘাট গ্রামে নিহতদের বাড়িতে যান মন্ত্রী। সেখানে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানান তিনি। এ সময় নিহত দুই ভাইয়ের বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আশ্বাস দেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা সহায়তা দেন মন্ত্রী। পরে চোপেরঘাট কবরস্থানে নিহতদের কবর জিয়ারত করেন তিনি। এসময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু আ হামিদ জমাদ্দার, জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমসহ কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে বিকেল সাড়ে ৪টায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সম্প্রীতি রক্ষা কমিটির বিশেষ সভায় অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে তার। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"শীতের মৌসুম ইবাদতকারীদের জন্য গনিমতস্বরূপ ",ইসলাম ধর্ম,"গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্তে মেতে ওঠে প্রকৃতি। প্রকৃতির পালাবদলে নেচে ওঠে গ্রাম-গঞ্জের সবুজ মাঠ। সবুজ প্রান্তর। ঋতুচক্রে শীত, সত্যিই মহান সষ্টার অপার মহিমা। শীত অধিকাংশ মানুষেরই প্রিয় ঋতু। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের কাছে এ মৌসুম আরো প্রিয়।আর শীতকালকে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুমিনের জন্য ঋতুরাজ বসন্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ্ (সা.)বলেন- ‘শীতকাল হলো মুমিনের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমাদ)।খালীফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর (রা.) বলেছেন, ‘শীতকাল হলো ইবাদতকারীদের জন্য গনিমতস্বরূপ।’ শীত তো এমন গনিমত (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ), যা কোনো রক্তপাত কিংবা চেষ্টা ও কষ্ট ছাড়াই অর্জিত হয়। সবাই কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই এ গনিমত স্বতঃস্ফূর্তভাবে লাভ করে এবং কোনো প্রচেষ্টা বা পরিশ্রম ব্যতিরেকে তা ভোগ করে।শীতকালে আমরা অধিকহারে ঠান্ডা অনুভব করি এবং গ্রীষ্মকালে আমরা প্রচন্ড গরম অনুভব করি। এ দুই কালে ঠান্ডা ও গরমের প্রচন্ডতার কারণ কি তা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ্ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট এ বলে অভিযোগ করেছিল, হে আমার প্রতিপালক! (প্রচন্ড উত্তাপের কারণে) আমার এক অংশ অন্য অংশকে গ্রাস করে ফেলেছে। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে দু’টি শ্বাস ফেলার অনুমতি দিলেন। একটি শীতকালে, অপরটি গ্রীষ্মকালে। আর সে দু’টি হলো, তোমরা গ্রীষ্মকালে যে প্রচন্ড উত্তাপ এবং শীতকালে যে প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভব কর তাই।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা গরমের যে প্রচন্ডতা অনুভব করো তা জাহান্নামের গরম নিঃশ্বাসের কারণেই। আর শীতের তীব্রতা যা পাও তা জাহান্নামের ঠা-া নিঃশ্বাসের কারণেই।’ (সহিহ বুখারি)। শীতকাল আল্লাহ তা’য়ালার দেওয়া নিয়ামত ও ইবাদতের বিশেষ মওসুম বা সিজন।এই মওসুম বা সিজন যে ভাবে ফলফলাদির বিশেষ সিজন ঠিক তেমনি আ’মালের জন্যও বিশেষ মওসুম বা সিজন। কাজেই শীতকালের এই মওসুমকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য মুমিনের জন্য কিছু উওম ইবাদত নি¤েœ তুলে ধরা হলোঃ-* শীতকালের রোজা রাখা.ঈমানদারের জন্য শীতকাল বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। হাদিসে এসেছে, শীতকাল মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। আমের ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘শীতল গনিমত হচ্ছে শীতকালে রোজা রাখা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৯৫)। শীতকালে দিন থাকে খুবই ছোট। তাই শীতকালে রোজা রাখলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয় না। তাই কারো যদি কাজা রোজা বাকি থাকে, তাহলে শীতকালে সেগুলো আদায় করে নেওয়া। তা ছাড়া বেশি বেশি নফল রোজা রাখারও এটি সুবর্ণ সময়। রাসূলুল্লাহ (স:) ইরশাদ করেছেন, ‘বিশুদ্ধ নিয়তে যে ব্যক্তি এক দিন রোজা রাখল, মহান আল্লাহ প্রতিদানস্বরূপ জাহান্নাম এবং ওই ব্যক্তির মাঝখানে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২৮৪০)। শীতকালের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো.-প্রতি বছর ঘুরে ঘুরে আসে শীত ও শৈত্যপ্রবাহ। পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল। হাড়-কাঁপানো শীতে নাকাল দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। শীতার্তসহ বিপন্ন সব মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের আদর্শ। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহর প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে।’ (সুরা : দাহার, আয়াত : ০৮)পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় শীতকালে অনেক গরিব মানুষকে কষ্ট করতে হয়। শীতার্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় বস্ত্র দিয়ে জান্নাতের মহা নিয়ামত লাভে ধন্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে মুমিন অন্য বিবস্ত্র মুমিনকে কাপড় পরিয়ে দিল, মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিয়ে দেবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৪৯)। আমাদের নিকটস্থ অভাবী মানুষটিকে একটি শীতবস্ত্র কিনে দিয়ে আমরাও পেতে পারি জান্নাতের সেই সবুজ রেশমি পোশাক। শীতকালের ইবাদত হল তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা.-শীতকালে রাত অনেক লম্বা হয়। কেউ চাইলে পূর্ণরূপে ঘুমিয়ে আবার শেষ রাতে তাহাজ্জুদের সালাত পড়তে সক্ষম হতে পারে। মহান আল্লাহ ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের রবকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা : সাজদাহ, আয়াত : ১৬)। শীতকালের অজু ও গোসলের ব্যাপারে সচেতন হওয়া.- শীতকালে মানুষের শরীর শুষ্ক থাকে। তাই যথাযথভাবে ধৌত না করলে অজু-গোসল ঠিকমতো আদায় হয় না। আর অজু-গোসল ঠিকমতো আদায় না হলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। গ্রীষ্মকালে মানুষ ইবাদত-বন্দেগি স্বাভাবিকভাবে করলেও শীতকালে কিছুটা অলসতাবোধ করে। কেউ কেউ আবার শীতের তীব্রতার কারণে মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ কাজাও করে ফেলে। তাই এ বিষয়ে বিশেষভাবে যতœবান হতে হবে; এমনকি শীতের মৌসুমে গরম পানি দিয়ে অজু করলেও সওয়াবে কমতি হবে না। শীতের সময় প্রচ- ঠান্ডায় যাতে কেউ অজু করতে অবহেলা না করে, সে কারণে অজু ও নামাজের প্রতি যতœবান হতে এবং বড় পুরস্কার ও ফজিলতের কথা এভাবে ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি-হাদীসের অনুবাদ : ‘আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ের সংবাদ দেব না! যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তোমাদের গোনাহসমূহ মিটিয়ে দেবেন (তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন) আর (আল্লাহর কাছে) তোমাদের মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি করে দেবেন? সাহাবায়েকেরাম বললেন- অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল! নবিজী সাল্লাল।লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- (শীত বা অন্য যে কোনো ঠা-ার) কষ্টকর মুহূর্তে ভালোভাবে অজু করা।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫১)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে শীতকালে ইবাদত বন্দীগি করার তৌফিক দান করুন। আমীন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,হে মুসলমান গিবত করো না,ইসলাম ধর্ম,"আরবি ‘গিবত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা, কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা, পরচর্চা, দোষারোপ, কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের পেছনে দোষ বর্ণনা, পরচর্চা ও নিন্দা করা জঘন্যতম অপরাধ। ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার দোষত্রুটি আলোচনার নামই হলো গিবত বা পরনিন্দা। গিবত হতে পারে কথা বা ইশারায় কিংবা লেখনীর মাধ্যমে। গিবত যেভাবেই হোক তা মানুষের দুনিয়া ও পরকালে লাঞ্ছিত হওয়ার অন্যতম কারণ। হাদিসের বর্ণনা, ‘যারা সামনে বা পেছনে অন্যের দোষ বলে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুঃসংবাদ।’ (মুসলিম)। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১২) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা পেছনে ও সামনে মানুষের নিন্দা করে।’ (সুরা হুমাজাহ, আয়াত ১) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন রসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কি বলতে পারো গিবত কাকে বলে?’ উত্তরে সাহাবিরা বললেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসুলই ভালো জানেন।’ তখন দয়াল নবি বললেন, ‘গিবত হলো কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার এমন দোষত্রুটি বর্ণনা করা, যা শুনলে সে কষ্ট পায়। (তিরমিজি ও মেশকাত)। অন্য হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) গিবতের পরিচয় এভাবে তুলে ধরেছেন, ‘একদিন কোনো প্রয়োজনে এক বেঁটে মহিলা রসুলুল্লাহর খেদমতে আসেন। সেই মহিলা চলে যাওয়ার পর আয়েশা (রা.) রসুলের কাছে ওই মহিলার দৈহিক কাঠামো বেঁটে বলে মন্তব্য করেন। এমন মন্তব্য শুনে রসুলের চেহারা মলিন হয়ে গেল। তিনি বললেন, ‘আয়েশা, তুমি তার গিবত করলে! তুমি এমন কথা বললে যা সমুদ্রে নিক্ষেপ করলে সমুদ্রের পানির রং পরিবর্তন হয়ে কালো হয়ে যেত।’ আয়েশা বললেন, ‘আমি তো এমন ত্রুটির কথাই বলেছি যা তার ভেতর আছে।’ অর্থাৎ আমি তো কোনো মিথ্যা কথা বলিনি।’ এ কথা শুনে রসুল (সা.) বললেন, ‘হে আয়েশা! যদিও তুমি সত্য কথা বলেছ কিন্তু তুমি তার ত্রুটি বর্ণনা করায় তা গিবত হয়ে গেল।’ (মুসলিম) গিবতের ভয়াবহতা সম্পর্কে হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘গিবত ব্যভিচারের চেয়েও জঘন্য।’ তিনি জানতে চাইলেন এটা কীভাবে? রসুলুল্লাহ বললেন, ‘এক ব্যক্তি ব্যভিচার করার পর তওবাহ করলে তার গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ যার গিবত করা হয় সে মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তাফসিরে মাজহারি)। হজরত হাসান ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মেরাজের রাতে আমাকে এমন একদল মানুষের পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো, যাদের নখ ছিল তামার। তারা নখ দিয়ে নিজের মুখ, দেহের গোশত আঁচড়াচ্ছিল। আমি জিবরাইলকে জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কারা? তিনি বললেন, ওরা ওই সব লোক যারা তাদের মুসলমান ভাইয়ের গিবত করত এবং ইজ্জতহানি করত।’ (মাজহারি) গিবত থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রিয় নবী নসিহত করে বলেছেন, ‘হে আমার আদরের উম্মত! তোমরা একে অন্যের নিন্দা কোরো না। আর পরনিন্দা হলো অন্য ভাইয়ের এমন দোষ বর্ণনা করা যা তার অপছন্দ। যে ব্যক্তি অন্য মুসলমানের দোষ অনুসন্ধান করে আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধানে নেমে পড়েন। আর আল্লাহ যার দোষ অনুসন্ধান করেন তাকে লাঞ্ছিত ও অপমানজনক শাস্তি দেবেন।’ (তিরমিজি)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তুমি যদি কখনো কোনো ভাইয়ের গিবত করেই ফেল তাহলে সেই গিবতের কাফফারা হলো তুমি যার গিবত করেছ, তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে। তুমি এভাবে বলবে, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার ও তার গুনাহ মাফ করে দাও।’ (বায়হাকি)",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative যায়যায়দিন,"রাসুল (সা.)–এর স্ত্রী ছিলেন জুওয়াইরিয়া (রা.) ",ইসলাম ধর্ম,"জুওয়াইরিয়া (রা.) ছিলেন আরবের দুর্ধর্ষ বনু মুসতালিক গোত্রের মেয়ে, যাঁরা যুদ্ধেই সবকিছুর সমাধান খুঁজতেন। জুওয়াইরিয়ার বাবা হারিস ইবন দিরার ছিলেন বনু মুসতালিক গোত্রের সর্দার। জুওয়াইরিয়ার (রা.) প্রথম বিয়ে হয় তাঁরই গোত্রের মুসাফি ইবন সাফওয়ান নামে তার এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে। জুওয়াইরিয়ার (রা.) বাবা হারিস ও স্বামী মুসাফি দুজনই ছিলেন ইসলামের চরম শত্রু। মক্কার অন্যান্য গোত্রের মতো মুহাম্মদ (সা.) এই গোত্রের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছিলেন। তারা সেটা গ্রহণ করেনি। পঞ্চম হিজরির শাবান মাসে বনু মুসতালিকের যুদ্ধ নামে একটা যুদ্ধ হয়েছিল। তাতে মুসলমানরা জয়ী হয় এবং জুওয়াইরিয়ার স্বামী নিহত হন। মুসলিমরা ৬০০ যুদ্ধবন্দীসহ প্রচুর গনিমতের সম্পদ লাভ করেন। এই যুদ্ধে মুসলিমদের হাতে বনু মুস্তালিকের বন্দী হওয়া নর-নারীদের মধ্যে জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিসও ছিলেন। সব যুদ্ধবন্দীকে দাসদাসী ঘোষণা করে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈনিকদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়। জুওয়াইরিয়া পড়েন সাবিত ইবন কায়েসের বা মতান্তরে তাঁর চাচাতো ভাইয়ের ভাগে। গোত্রনেতার কন্যা জুওয়াইরিয়া দাসীর জীবন মেনে নিতে পারেননি। ইসলামি আইন যুদ্ধবন্দী নর–নারীকে মুকাতাবা বা চুক্তির সুযোগ দেয়। যুদ্ধে বন্দী হওয়ার পর তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় চুক্তি অনুযায়ী (মুকাতাবা) সে তার মালিকের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে সম্মত একটি মুক্তিমূল্য নির্ধারণ করবে এবং দাসদাসী সেই মুক্তিমূল্য একসঙ্গে বা কিস্তিতে পরিশোধ করে নিজেকে মুক্ত করে নেবে। জুওয়াইরিয়া (রা.) সাবিত ইবনে কায়েসের (রা.) কাছে দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য চুক্তির আবেদন জানালেন। সাবিত (রা.) ৯ উকিয়া (১ উকিয়া সমান ৪০ দিরহাম) সোনার‌ বিনিময়ে দাসত্ব থেকে মুক্তির ব্যাপারে একটি চুক্তি করলেন। কিন্তু জুওয়াইরিয়ার কাছে সে পরিমাণ অর্থ ছিল না। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করবেন। রাসুল (সা.) গনিমতের মাল বণ্টন শেষ করার পর জুওয়াইরিয়া তাঁর সামনে এসে বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি ইসলাম গ্রহণ করে এসেছি। আমি আমার গোত্রপতি হারিস ইবন নিবারের কন্যা। মুসলিম বাহিনীর হাতে বন্দী হয়ে সাবিত ইবনে কায়েসের ভাগে পড়েছি। সাবিত আমার সঙ্গে চুক্তি করেছেন। কিন্তু আমি অর্থ পরিশোধ করতে পারছি না। আমি আপনার কাছে এই প্রত্যাশা নিয়ে এসেছি যে আপনি আমার চুক্তিবদ্ধ অর্থ পরিশোধে সাহায্য করবেন।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি কি এর চেয়েও ভালো কিছু আশা করো না?’ জুওয়াইরিয়া বললেন, ‘সেটা কী?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আমি তোমার চুক্তির সব অর্থ পরিশোধ করে দিয়ে তোমাকে বিয়ে করি।’ এমন অপ্রত্যাশিত প্রস্তাবে জুওয়াইরিয়া (রা.) দারুণ খুশি হয়ে সম্মতি দিলেন। রাসুল (সা.) তখন সাবিতকে ডেকে চুক্তির অর্থ তাঁকে দিয়ে জুওয়াইরিয়াকে (রা.) দাসত্ব থেকে মুক্তি করেন। এর পর তাঁকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দান করেন। তাঁদের বিয়ের সময় নবী (সা.)–এর বয়স ছিল ৫৯ বছর, আর জুওয়াইরিয়া (রা.)–র বয়স ছিল ২০ বছর। বিয়ের খবরে সাহাবিরা বললেন, রাসুল (সা.) যে গোত্রের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন, সে গোত্রের কাউকে তাঁরা দাস হিসেবে ধরে রাখতে পারেন না। এরপর তাঁরা পরামর্শ করে একজোট হয়ে একসঙ্গে সব বন্দীকে মুক্ত করে দিলেন। এ উপলক্ষে বনু মুস্তালিকের ১০০ বাড়ির সব বন্দী মুক্তি পান। বনু মুস্তালিকের গোত্রপতি জুওয়াইরিয়ার (রা.)–র বাবা হারিস মুক্ত হয়ে রাসুল (সা.)–এর কাছে হাজির হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন। তা দেখে বনু মুস্তালিক গোত্রের ভেতরে ইসলাম গ্রহণের তাগিদ শুরু হয়। আরবের বিশাল এক শক্তি রাসুলের (সা.) শত্রুদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ইসলামের সহায়ক শক্তিতে পরিণত হলো। বিয়েটি ইসলামের প্রচার ও নিরাপত্তার জন্য বিরাট কল্যাণ বয়ে নিয়ে এল। আত্মীয়তার সূত্রে গড়ে উঠল মিত্রতা। আল্লাহর নবীর সংস্পর্শে এসে জুওয়াইরিয়া (রা.) একজন আদর্শ নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। ইসলামের আদর্শ তাঁর চরিত্রে ফুটে উঠেছিল। রাসুল (সা.) জুওয়াইরিয়াকে (রা.) ভালোবাসতেন। একবার তাঁর ঘরে এসে জিজ্ঞেস করেন ‘খাওয়ার কিছু আছে?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘আমার দাসী কিছু সাদকার গোশত দিয়েছিল, শুধু তা–ই আছে। এ ছাড়া আর কিছু নেই।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাই নিয়ে এসো। কারণ সাদকা যাকে দেওয়া হয়েছিল, তার কাছে পৌঁছে গেছে।’ জুওয়াইরিয়া (রা.) রাসুলুল্লাহর (সা.) সাতটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। একাধিক হাদিসের বর্ণনায় জানা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রায়ই তাঁর কাছে এসে তাঁকে তাসবিহ ও তাহলিলে মশগুল দেখতে পেতেন। মানুষ তাঁর সঙ্গে কথা বললে মুগ্ধ হয়ে যেতেন। তাঁর বিয়ের পাঁচ বছর পর রাসুল (সা.) ইন্তেকাল করেন। রাসুলের (সা.) ইন্তেকালের পরে এই নারী ভেঙে পড়েননি। তিনি তাঁর জীবন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টায় ব্যয় করেছিলেন। আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘আমি কোনো নারীকে তাঁর সম্প্রদায়ের জন্য জুওয়াইরিয়ার চেয়ে বেশি কল্যাণময়ী দেখিনি।’ জুওয়াইরিয়া (রা.) হিজরি ৫০ সনে রবিউল আওয়াল মাসে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। মদিনার গভর্নর মারওয়ান তাঁর জানাজা পড়ান। মদিনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁর কবর রয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"ইসলাম 'সংস্কার' করছে চীন ",ইসলাম ধর্ম,"চীন সরকার ইসলামকে ‘চীনা ঘরানার সমাজতন্ত্রের’ সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার উদ্দেশ্যে একটি নতুন আইন প্রনয়ন করেছে। শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) দেশটির শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের ‘আটটি ইসলামী সংস্থা’র সঙ্গে বৈঠকের প্রেক্ষিতে এই আইন প্রণয়ন করা হয়। চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানায়, জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষই ‘ইসলামকে সমাজতান্ত্রিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উপায়ে পরিচালিত করা এবং চীনা ঘরানা অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে একমত হয়েছে। এই আটটি ইসলামি সংস্থার নাম কিংবা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে চীনের বিভিন্ন স্থানে মুসলমানদের ধর্ম পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এসব অভিযোগ থেকে জানা যায়, নামাজ-রোজার পাশাপাশি দাড়ি রাখা বা হিজাব পরার মতো কারণেও ধরপাকড়ের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে অনেককে। বিভিন্ন মসজিদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে গম্বুজ ও চাঁদ-তারার প্রতিকৃতি। মাদ্রাসা ও আরবি শিক্ষার ক্লাস নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে শিশুদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি, দেশটির কিছু স্থানে ইসলামের চর্চা নিষিদ্ধ। একই অভিযোগ করে জাতিসংঘ জানায়, ১০ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলিমকে আটক রেখে তাদের ধর্ম পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বলপূর্বক তাদের কমিউনিস্ট পার্টির মতাদর্শে বিশ্বাস স্থাপন করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে চীনা সরকার ইসলামের সমাজতান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তবে, তাদের নতুন এই আইন মুসলমানদের ধর্ম চর্চায় নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে বলে আলজাজিরা তাদের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে। উল্লেখ্য, চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটিতে বিভিন্ন ‘মতবাদে বিশ্বাসী জনগোষ্ঠী’র ওপর চাপ বাড়ছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,মাসজিদুল আকসার গুরুত্ব ও ফজিলত,ইসলাম ধর্ম,"গোটা পৃথিবীর মুসলমানদের হৃদয়ের স্পন্দন পবিত্র আল আকসা। পবিত্র কোরআনে আল আকসার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার চারদিককে আমি বরকতময় করেছি যেন তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দিই।’ (সুরা বনি ইসরায়েল : ১)। মাসজিদুল আকসার কথা পবিত্র কোরআনের আয়াতে উল্লেখ থাকাই এর গুরুত্ব প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। মাসজিদুল আকসা পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম মসজিদ। পবিত্র কাবাঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর আল আকসা নির্মিত হয়। আবুজর গিফারী (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজি (সা.)-কে প্রশ্ন করলাম জমিনে কোন মসজিদ প্রথম তৈরি হয়েছিল? তিনি বললেন, ‘মসজিদে হারাম’। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘মসজিদে আকসা’ আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করি এ দুটোর মধ্যে ব্যবধান কত? তিনি বললেন ৪০ বছর।’ বুখারি মুসলিম। মাসজিদুল আকসা মুসলমানদের প্রথম কিবলা। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ ১৭ মাস এদিকে ফিরে নামাজ পড়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রসুলুল্লাহ (সা.) মক্কায় থাকাকালীন পবিত্র কাবা তার সামনে থাকাবস্থায় তিনি বায়তুল মাকদিসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেন। মদিনায় হিজরতের পর সুদীর্ঘ ১৬ মাস সেদিকে ফিরেই নামাজ আদায় করেন। অতঃপর কাবার দিকে মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তিত হয়।’ মুসনাদে আহমদ। মাসজিদুল আকসা পৃথিবীর তৃতীয় মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ। সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ হলো মাসজিদুল হারাম, তারপর মাসজিদুল নববী (সা.), তারপর মাসজিদুল আকসা। কাজের স্থান-কালের ভিন্নতায় কাজের মর্যাদা ও মান বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। তেমনি মাসজিদুল আকসায় নামাজ আদায় করলেও সওয়াব বহুগুণে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে এক রাকাত নামাজ পড়লে ৫০০ রাকাত নামাজের সমান সওয়াব দেওয়া হয়। আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মসজিদে হারামে এক নামাজ এক লাখ নামাজের সমান, আমার মসজিদে (মসজিদে নববী) এক নামাজ এক হাজার নামাজের সমান এবং বাইতুল মাকদিসে এক নামাজ ৫০০ নামাজের সমান।’ মাজমাউয যাওয়াইদ। অন্য হাদিসে এসেছে, মাসজিদুল আকসায় নামাজ আদায় করলে গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুলায়মান ইবন দাউদ (আ.) যখন বায়তুল মাকদিস তৈরির কাজ করেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয়ে প্রার্থনা করেন : এমন সুবিচার যা আল্লাহর হুকুমের অনুরূপ, এমন রাজত্ব যা তাঁর পরে আর কাউকে দেওয়া হবে না, আর যে ব্যক্তি বায়তুল মাকদিসে কেবলমাত্র সালাত আদায় করার জন্য আসবে, সে তার গুনাহ থেকে সদ্যোজাত সন্তানের মতো নিষ্পাপ অবস্থায় বেরিয়ে আসবে। এরপর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রথম দুটো তাদের দুজনকে দেওয়া হয়েছে, আর আমি আশা করি তৃতীয়টি আমাকে দান করা হবে। ইবনে মাজাহ। বিশেষ সওয়াব পাওয়ার আশায় সাধারণত বিশেষ কোনো মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য মুসাফির হওয়ার বিধান নেই ইসলামে। কিন্তু তিনটি মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য মুসাফির হওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি মসজিদুল হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদুল আকসার উদ্দেশে সফরকে বিশেষ পুণ্যময় কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে বিশেষ সওয়াবের উদ্দেশ্যে পরিভ্রমণ কর না। আর সে তিনটি মসজিদ হলো মসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ (মসজিদে নববী) ও মসজিদুল আকসা।’ সহিহ বুখারি।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"তাঁর চরিতের কাছে ফিরে আসতেই হবে ",ইসলাম ধর্ম,"ক্লান্ত পাখিরা দিন শেষে ফিরে আসে আপন নীড়ে, নদীর পানি কল কল রবে বয়ে যায় সমুদ্রের পানে, দিন ঢুকে পড়ে রাতের অন্ধকারে, রাত দূরীভূত হয় দিনের আলোয়- এভাবে সকলেই ফিরে যায়, ফিরে আসে, ফিরে আসতে হয় তার আসল ঠিকানায়। পৃথিবীও ঘুরে ফিরে আশাহত ভঘœ হৃদয় নিয়ে বার বার আশ্রয় নেয় মহান এক চরিতের কাছে, তিনি হলেন, মানবতার পরম সহৃদ মহান বন্ধু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি খুলুকে আজিম বা বিশাল চরিত্রের অধিকারী। তাঁর চরিতই হলো অশান্ত পৃথিবীর শান্তির ঠিকানা। সুতরাং তাকে ফিরে আসতেই হবে। পৃথিবী তো অনেকবার অনেক চরিতের কাছে গিয়েছে। কিন্তু কোথাও শান্তি নাই। কারণ তাদের চরিত্র ছিল আংশিক, একপেশে এবং একান্তই সীমিত ও নি¤œ পর্যায়ের। একমাত্র মুহাম্মদ সা: এর চরিত্রই ছিল মহান যা তাঁর প্রভুই তাকে দান করেছেন এবং তিনি ঘোষনাও করেছেন। তিনি বলেছেন, “ইন্নাকা লা’আলা খুলকিন আজিম”। “ওয়া ইন্নাকা লা‘আলা খুলুকিন আজিম” অর্থাৎ এবং নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী (সুরা কলম-৪)। বলেছেন স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামীন যিনি নিজে ‘রাব্বিয়াল আজিম’। আয়াতে ব্যবহৃত “আজিম” শব্দটি আল্লাহর গুণবাচক নাম সমুহের একটি। অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা এমন মহান বা বিশাল সত্ত্বা যার মহানত্ব ও বিশালতার সীমা পরিসীমা আমাদের কল্পনা, চিন্তা ও ইন্দ্রিয়ানুভূতির অনেক বাইরে। অর্থাৎ তিনি সীমা বা আয়ত্বের দূর্বলতা থেকে পবিত্র। এমন কি কেউ তার বড়ত্বের একটা আন্দাজ করেছেন তিনি সেই আন্দাজ-অনুমান থেকেও পবিত্র। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নৈতিক চরিত্রের মহানত্ব প্রকাশ করার জন্য আল্লাহ তা’আলা ‘আজিম’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এর দ্বারা এই কথাই বুঝানো হয়েছে যে, তাঁর চরিত্রের বিশালতাও সীমাহীন। আমাদের কল্পনা, চিন্তা ও ইন্দ্রিয়ানুভূতিরও বাইরে। ‘আজিম’ শব্দটি সম্পর্কে শুরুতেই বলা হয়েছে যে, এটি এমন বিশালতার প্রকাশ ঘটায় যার সীমা পরিসীমা আমাদের কল্পনা, চিন্তা ও ইন্দ্রিয়ানুভূতির বাইরে। যার বিশালতাকে কোন পরিমাপক যন্ত্রও আয়ত্ব করতে পারে না। যার দৈর্ঘ, প্রস্ত ও উচ্চতা আয়ত্ব করা মানুষের সাধ্যের বাইরে। মানুষ গ্রহ-নক্ষত্র, চাঁদ-সুর্য ও সৌরজগত সম্পর্কে আনুমানিক বা মোটামুটি একটি ধারণা আয়ত্ব করতে পারে। বিশাল সৌরজগতে বা বিশাল সৃষ্টি জগতে সুর্য হলো, আল্লাহর একটি বৃহৎ ও শক্তিশালী সৃষ্টি। আধুনিক আকাশ বিজ্ঞানীরা সুর্য সম্পর্কে সঠিক হোক আর বেঠিক হোক একটি পরিমাপ তারা করতে পেরেছে যে, সুর্য সমগ্র সৌরজগত নিয়ে প্রতি সেকেন্টে ২০ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে চলছে। পৃথিবী থেকে সুর্যের দুরত্ব ১৫ কোটি ৬৬ লক্ষ মাইল। কিন্তু ‘আজিম’ এর পরিমাপ করা কোন বিশেষজ্ঞের পক্ষে আদৌ সম্ভব হয়নি আর হবেও না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নৈতিক চরিত্রের সর্বোত্তম সংগা দিয়েছেন উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা:। তিনি বলেছেন, কুরআনই ছিলো তাঁর চরিত্র। কুরআন সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন,“ওয়ালাকাদ আতাইনা সাবয়াম মিনাল মাসানি ওয়াল কুরআনিল আজিম” অর্থাৎ “আমি তোমাকে এমন সাতটি আয়াত দিয়ে রেখেছি যা বার বার আবৃত্তি করার মতো এবং তোমাকে দান করেছি মহান কুরআন”(সুরা হিজর:৮৭) কুরআনের বেলায়ও ‘আজিম’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যার অর্থ এ এক মহান বা বিশাল কিতাব, যার মহত্ব ও বিশালতার কোন সীমা পরিসীমা নেই। এটি সকল কালের জন্য প্রযোজ্য, যা কখনো সেকেলে বা পুরাতন হয় না। সকল কালের জন্য এটি নতুনভাবে আবির্ভুত হয়। কুরআনের মহত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ”আমি যদি এ কুরআন কোন পাহাড়ের উপড়ও অবতীর্ণ করে দিতাম তাহলে হে নবী! আপনি লক্ষ্য করতেন যে, আল্লাহর ভয়ে ধসে যাচ্ছে, দীর্ণ-বিদীর্ণ হচ্ছে।”(সুরা হাশর-২১) ”আমি আকাশ পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এ আমানত (আল-কুরআন) পেশ করলাম। কিন্তু তারা তা গ্রহন করতে প্রস্তুত হল না, তারা ভয় পেয়ে গেল।কিন্তু মানুষ তার স্কন্ধে তুলে নিল।”(সুরা আহযাব-৭২)”অচিরেই আমি তোমার উপড় একটি ভারী কিছু রাখতে যাচ্ছি।” (সুরা মুয্যাম্মেল-৫) যেহেতু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন জীবন্ত কুরআন সেহেতু তাঁর চরিত্রও ছিল মহান। তাঁর চরিত্র বা সুন্নাহ সকল কালের জন্য প্রযোজ্য। তাঁর চরিত্র বা সুন্নাহ কখনো সেকেলে বা পুরাতন হয় না। বরং সকল যুগে সকল কালে রাসুলের চরিত্র ও সুন্নাহ নতুনভাবে কার্যকরী প্রতিষেধক। তাই তাঁর মহান চরিত্র চীর আধুনিক এবং যে কোন যুগ বা কালের সংকীর্ণতার উর্ধ্বে। আর এটিই ‘খুলুকে আজিম’ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ পৃথিবী যখন যেই সমস্যার সম্মুখীন হবে, রাসুলের চরিত্র ও সুন্নাহ তখন কার্যকরী প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করবে। সুতরাং পৃথিবীকে তাঁর চরিতের কাছে ফিরে আসতেই হবে। বিকল্প পথে শুধু শুধুই মানবতার লাঞ্চনা ও প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই নহে। আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্র কেমন ছিল? তাহলে আমি আপনাকে পাল্টা প্রশ্ন করবো যে, আচ্ছা আপনি তো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তার আগে আপনি পৃথিবীর দ্রব্য সামগ্রীর একটা বর্ণনা পেশ করুন তো? আপনি বলবেন, তা কি আদৌ সম্ভব হতে পারে? তাহলে আপনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্র সম্পর্কে অবহিত করা কিভাবে সম্ভব? কারণ আল কুরআনে দুনিয়ার দ্রব্য সামগ্রীকে মহান আল্লাহ ‘কালীলা’ বা স্বল্প বলে আখ্যায়িত করেছেন, অথচ এই স্বল্পের বর্ণনাকে আপনি অসম্ভব বলছেন। অথচ সেই কুরআনেই আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসুলের চরিত্রের বর্ণনা দিয়েছেন “আজিম” শব্দ দিয়ে। অর্থাৎ তিনি বিশাল বা মহান চরিত্রের অধিকারী। দুনিয়ার সমস্ত দ্রব্য-সামগ্রীকে বলা হয়েছে “কালীলা” বা যতসামান্য স্বল্প আর রাসুলের চরিত্রকে বলছেন “আজিম” বা মহান। আপনি যদি স্বল্পের উত্তর না দিতে পারেন তবে আমি কি কওে আজিম এর উত্তর দিবো? কিন্তুু দু:খের বিষয় হলো, আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেই মহান চরিত্র ও সুন্নাহকে ভুলে মানুষের মস্তিস্ক প্রসূত চিন্তার দ্বারন্থ হই, ফলে সমাধানের পরিবর্তে হাজারো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জালে আবদ্ধ হয়ে জীবনকে অতিষ্ট করে তুলি। তাই বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ পৃথিবীতে শান্তি আনয়নের জন্য, পৃথিবীকে সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য, পৃথিবীকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য ও পৃথিবীকে মানুষের বাস উপযোগী করার জন্য হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহান চরিতের অনুসরণ করুন। আমি জানি, একটু শান্তির প্রত্যাশায় বিশ^ নেতৃবৃন্দ দিন-রাত মাড়িয়ে চলেছেন। তাদের আন্তরিকতার প্রশ্নে কোন মন্তব্য না করে তাদের এ চলা যে অনেকটা তারাহীন রাত্রির দিকভ্রান্ত পথিকের মতো তাতে সন্দেহ নেই। শান্তির প্রত্যাশায় প্রয়োগকৃত তাদের হাজারো ভ্রান্ত উদ্যোগ বার বার চপেটাঘাত করে শুধু ফিরিয়েই দিচ্ছে। দুর্ভাগ্য ও দু:খ তাদের জন্য, যারা দেখে না, বুঝে না অতি নিকট ইতিহাসে ঘটে যাওয়া দিবালোকের মতো স্পষ্ট একজন মানুষ এসেছিলেন নিকষ অন্ধকারে ডুবে থাকা জাজিরাতুল আরবের বুক চিরে, তপ্ত বালুকায় চিক চিক আলো রশ্মির ঢেউ তুলে মরু সাইমুম মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:। তিনি আল্লাহর নির্দেশনায় শত শত বছরের অন্ধকারে ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তুললেন। অন্ধকার দূরীভুত হলো, মানুষ জেগে উঠল একরাশ সোনালী আভায়। পথহারা মানুষ ফিরে পেলো সঠিক পথের দিশা। এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের বিশে^র নেতৃবৃন্দ ও প্রতিটি দেশের শাসকবৃন্দকে আবারো বলছি সত্যিই আপনারা যদি বিবেকের সাথে প্রতারণায় লিপ্ত না হোন, সত্যি সত্যিই পৃথিবীতে বা প্রত্যেকের সংশ্লিষ্ট দেশে সার্বিক শান্তি আনতে চান এবং পৃথিবীকে সন্তাস ও জঙ্গীমুক্ত করতে চান, যা কোনক্রমেই পারছেন না, খুব দ্রুত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিতের দিকে মনোনিবেশ করুন। আমি আবারো জোর দিয়ে বলছি আপনার রাষ্ট্র ও সমাজ নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ আবাসস্থল হিসেবে একশভাগ গড়ে উঠবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive Dhaka Tribune,"কে জন্মায়, হে বৈশাখ ",হিন্দু ধর্ম,"বাঙালির সূর্য রবির জন্ম দিবস এই ২৫ বৈশাখ। শুধু শতবর্ষ নয়, কোটি বর্ষ জুড়ে এককভাবে একটি জাতিগোষ্ঠীর শ্বাস প্রশ্বাসের মতো প্রবাহিত হওয়ার সামর্থ রাখে যার সৃষ্টিকর্ম। একটি জাতিগোষ্ঠী বলা হয়তো ক্ষুদ্রার্থ হয়ে যায়। “জল পড়ে, পাতা নড়ে”র কবিকে বরং মনে করবে বিশ্ব মানব। ধর্ম, ভাষা, সীমানা, বর্ণ ও যাবতীয় ভেদকারী জাত-পাতের উর্দ্বে যার অবস্থান। রবির সময়েও হেটার্স ছিলেন। কুতর্ক তাকে নিয়েও কম হয়নি। বা হচ্ছে না। কিন্তু তার উচ্চতার কারণেই বারবার ঘৃণা নিক্ষেপকারীদের দিকেই ফিরে আসে তা। কে কোথায় জন্মাবে তা বিধি নির্ধারণ করে। রূপার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো প্রসঙ্গে গল্পগুচ্ছ এর শেষে পরিশিষ্ট অংশে যে বিষয়ে রবি লিখতে বাধ্য হন দু'কলম। তার প্রশ্ন ছিল- কুড়ির মধ্যে যে কীট জন্মে, সে কি ফুলকে ভালো চেনে? না যে বাইরে থেকে ফুল দেখেছে সে? নোবেল জয়, নাইটহুড উপাধি-অর্জন বর্জন নিয়েও বিতর্ক চলে। পূর্ববঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার না-কি বিরোধী ছিলেন? ব্রিটিশ তোষণ, সৃষ্টিকর্মে মুসলমান চরিত্রের স্বল্প উপস্থিতি ও লালনের গান মেরে দেয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে। আহা! কাণ্ডজ্ঞানহীনতার কী বিপুল বিস্ফোরণ! রবীন্দ্র সমালোচনা চলুক তার মাথা থেকে পা অবধি। তবে নিশ্চিত শেষ পর্যন্ত তার পদালোচক হয়েই থাকতে হবে তাবৎ পণ্ডিতকূলকে। রবীন্দ্রনাথের ৮০ বছরের জীবনে অপূর্ণতা ছিল কমই। বিশ্ববিদ্যালয় সনদহীন রবি নিজেই অনন্য এক বিদ্যাপীঠের স্রষ্টা। অনেক বিনাশ স্বত্ত্বেও যা এখনও বাতিঘর হয়ে আছে স্বমহিমায়। একাধিক দেশের জাতীয় সঙ্গীত স্রষ্টা হিসেবে পূজিত হন ঠাকুর নিয়মিত। কিন্তু প্রয়াণের এত বছর পরও তার আরাধ্য বাঙালি হয়ে থাকা “মানুষ” মুক্ত হয় নি জুলুমতন্ত্র থেকে। শিল্প সাহিত্যের সকল শাখার মতো গানেও তিনি আছেন। কোনো প্রতিষ্ঠান কপিরাইট কর্তৃত্বে রাখতে পারেনি তার সঙ্গীত। যে সঙ্গীত একই সঙ্গে উপশমকারী ও শক্ত সমর্থ বিপ্লবী ব্যক্তি স্বত্ত্বা নির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ। সূর্যের উদয় আর সূর্যাস্ত থেকে সব প্রহরে যেন পৃথিবীর সব মাটিনিষ্ঠরা সমর্পিত হন রবির সৃষ্টিতে। বাংলা জনপদে রবীন্দ্রনাথ মূলত এক সূর্য। বহু কালের অন্ধকার দূর করতে যার ধরায় আগমন। আমরা ভাগ্যবান রবিকে পেয়ে। ভাগ্যিস আমাদের জনপদে, আমাদের ভাষায় তার আগমন! রবীন্দ্রনাথের বহুমাত্রিকতায় আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি। রবির আভায় এমন সিক্ত হওয়া বাঙালির জন্য পরম অভিজ্ঞতা। তার সৃষ্টি এতই বিপুল ও বৈচিত্র্যময় যে শুধু তাতে ডুবেই এক জীবন কাটিয়ে দেয়া যায়। বাংলা জনপদে প্রতি প্রহরে কোনো রবি জন্মান না। এক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মান মহাকালে একবার। আর ইতিহাসে সে ক্ষণকে আমরা সনাক্ত করি রেনেসাঁ পর্ব নামে। যার কীর্তি যুগে যুগে কালে মানবতাকে সিগ্ধ, পবিত্র রাখে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ বহুমাত্রিক ছিলেন। শুধু তার সাহিত্য নিয়ে এমন মন্তব্য নয়। আমাদের তো কম বেশি জানা আছে যে, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার, সুর স্রষ্টা, নাট্যকার, অভিনেতা, চিত্রকর, গল্পকার, উপন্যাসিক, দার্শনিক, চিন্তক, গায়ক এমন অজস্র গুণের অধিকারী। এক কথায় তিনি ছিলেন এক কর্মবীর। নিজে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সমাপ্ত না করলেও শান্তি নিকেতনের মতো অনন্য এক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কৃতিত্ব তার। মানব জীবনের যাবতীয় অপূর্ণতাকে পূর্ণ করতেই যেন তার আগমন। একটি মানুষ কীভাবে এত কিছু পারেন এ বিস্ময় ঘোর থেকে বের হওয়া সহজ নয়। কিন্তু তার জীবন কি কন্টকহীন ছিল? জীবনকালে বা প্রয়াণের পর তাকে ব্যাখ্যায়? অতল স্পর্শী জনপ্রিয় রবীন্দ্রনাথকে জীবনে বহু সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আজও মিথ্যাচার করে প্রচারিত হয় রবীন্দ্র বিদ্বেষ। মানুষে মানুষে, ধর্মে ধর্মে ভেদকারী আর নিজের স্বার্থ দেখা গোষ্ঠী ছাড়া এ কাজ আর কারও দ্বারা সম্ভব নয়। পারিবারিকভাবে উত্তরসূরী হিসেবে রবীন্দ্রনাথ জমিদারী পেয়েছেন। আমাদের জনপদের কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, পতিসর ও শাহজাদপুরে ছিল যার অবস্থান। এজন্য অনেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আখ্যায়িত করেন ধনকুবের, বড়লোক, শ্রেণি বিবেচনায় শাসক শ্রেণি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের কোনো কার্যক্রমে তার জমিদারী বা বড়লোক সুলভ দাঁপট প্রকাশ হয়না। প্রবন্ধ গ্রন্থ কালান্তর - এ রবীন্দ্রনাথ লেখেন, “আমি জানি জমিদার জমির জোঁক। সে প্যারাসাইট, পরাশ্রিত জীব। আমরা পরিশ্রম না করে, উপার্জন না করে, কোন যথার্থ দায়িত্ব গ্রহণ না করে ঐশ্বর্য ভোগের দ্বারা দেহকে অপুট ও চিত্তকে অলস করে তুলি। যারা বীর্যের দ্বারা বিলাসের অধিকার লাভ করে আমরা সে জাতির মানুষ নই। প্রজারা আমাদের অন্ন জোগায় আর আমলারা আমাদের মুখে অন্ন তুলে দেয়- এর মধ্যে পৌরুষও নেই, গৌরবও নেই।”-কালান্তর, পৃষ্ঠা- ২৯৪ তিনি জমিদারী শ্রেণি প্রথা উচ্ছেদে যা করেছেন তার কোনো তুলনা নেই। আজীবন নিষ্ঠ ছিলেন গরিব মানুষের ভাগ্য বদলে। মুসলমান কৃষকদের প্রতি তার ছিল অসাম্প্রদায়িক মনোভাব। কৃষি উন্নয়ন, সমবায় ব্যবস্থা, রাজস্ব আহরণ থেকে শুরু করে জমিদার রবির প্রতিটি কর্মে প্রাধান্য পেয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠের মঙ্গল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরুদ্ধে আরেক মিথ্যা অভিযোগ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছেন। যদিও এর কোনো দালিলিক প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেননি। উল্টো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া লিখিত বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ধর্মে ধর্মে বিরোধ হতে পারে না। কারণ ধর্ম হল মিলনের সেতু আর অধর্ম বিরোধের। যখন ধর্মে বিকার উপস্থিত হয় তখনই বিচ্ছেদ প্রবল হয়ে ওঠে। শুধু হিন্দু-মুসলমানে প্রভেদ নয় সমাজের মধ্যে ভেদের অন্ত নেই। যখন মানুষ মানুষকে অপমান করে, তখন সে দুর্গতি-দারিদ্র্যে চরম সীমায় উপনীত হয়, আমি আমার সমাজের জন্য লজ্জিত হয়েছি, বিচ্ছেদের রক্তপ্লাবনে মানব-সমাজের প্রতি স্তর কলুষিত হয়েছে। এই সমস্যা ভারতে বহুদিন থেকে আছে। বিরোধের প্রাচীর তুলে ত সমস্যার সমাধান হবে না। শুভবুদ্ধির আলোক বিকীর্ণ হোক। তবেই আমাদের চিত্ত মুক্ত হবে।” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে আরেক মিথ্যাচার হচ্ছে লালনকে নিয়ে। নিন্দুকেরা কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই বলে থাকেন রবি ঠাকুর লালনের গান চুরি করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে গ্রামীণ লোকজ ধারার অনুসারি লালনের সৃষ্টিকে বাংলা অঞ্চলসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রথম প্রকাশিত বই রূপে পরিচিত করান রবি ঠাকুর। এর আগে লালনের গান মুখে মুখে প্রচারিত হতো। রবি ঠাকুরই প্রথম একে প্রকাশ যোগ্যভাবে উপস্থাপন করে আরও বহু মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। তাই যিনি জন্মান বৈশাখে; তিনি আর কেউ নন- আমাদের একান্ত রবিই সে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,মধ্য শাবানের পুণ্যময় রজনী,ইসলাম ধর্ম,"আরবি চান্দ্রমাসের মধ্যে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ শাবান মাসের মধ্যভাগে রয়েছে লাইলাতুল বরাতের মতো পুণ্যময় রজনী। হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত্রি হাদিসের পরিভাষায় ‘লাইলাতুন নিস্ফ মিন শাবান’ অর্থাৎ ‘শাবানের মধ্যবর্তী রজনী’কে উপমহাদেশে ‘শবে বরাত’ বলা হয়। প্রতিবছরের মতো শবে বরাত মুসলমানদের কাছে রমজান মাসের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। আসন্ন মাহে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য শাবান একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফজিলতময় মাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) অধিক হারে এ সময় দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের ওপর বরকত নাজিল করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিন!’ (মুসনাদে আহমাদ) ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে শাবানের মধ্য রজনীটি আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে পুণ্যময় ও মহিমান্বিত বলে বিবেচিত। আল্লাহ তাআলা মানবজাতির জন্য তাঁর অশেষ রহমতের দরজা এ রাতে অবারিত করে দেন। রাত জেগে নফল ইবাদত করে গুনাহখাতা মাফ ও অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন এবং অনুতপ্ত বান্দাদের পাপমুক্ত করে দেন। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মধ্য শাবানের রাত্রিতে আল্লাহ তাআলা রহমতের ভান্ডার নিয়ে তাঁর সব সৃষ্টির প্রতি এক বিশেষ ভূমিকায় আবির্ভূত হন এবং মুশরিক অথবা হিংসুক ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (তাবারানি) অন্য হাদিসে আছে, ‘আল্লাহ তাআলা ১৫ শাবানের রাতে প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং এ রজনীতে কেবল মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বায়হাকি, ৩/৩৮০) আল্লাহ তাআলা মানবসমাজ তথা বিশ্বের সব সৃষ্টির পরবর্তী বছরের ভাগ্য এই রাত্রিতে পুনর্নির্ধারণ করেন। তিনি মুমিন বান্দাদের আকুতি ও আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের উত্তরণের পথ দেখান। এ দিন সূর্যাস্তের পর থেকে তিনি মানুষের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এ জন্য মুসলমানদের কাছে শবে বরাতের নফল ইবাদত বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন মধ্য শাবানের রজনী আসে তখন তোমরা রাত জেগে ইবাদত করো এবং পরের দিন রোজা রাখো। কেননা প্রতিটি রাত্রিতে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মহান আল্লাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। কোনো রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক প্রদান করব। কোনো বিপদগ্রস্ত আছে কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করব। সুবহে সাদেক পর্যন্ত এ আহ্বান অব্যাহত থাকে।’ (ইবনে মাজা) নবী করিম (সা.) শাবান মাসে বেশি নফল রোজা রাখতেন এবং সাহাবিদের রোজা পালন করতে বলতেন। হজরত উসামা বিন যায়েদ (রা.) বলেন, ‘একদা নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি তো আপনাকে শাবান মাসের মতো অন্য কোনো মাসে এত অধিক রোজা রাখতে দেখি না।’...উত্তরে তিনি বললেন, ‘শাবান মাসটি রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী মাস। অনেক মানুষ এ মাসের ফজিলত সম্পর্কে উদাসীন থাকে। অথচ বান্দার আমলসমূহ এ মাসে আল্লাহর সমীপে পেশ করা হয়। এ জন্য আমি চাই যে আমার আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে এমতাবস্থায় পেশ করা হোক যে আমি রোজাদার।’ (বায়হাকি) তাই মাহে রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসের অন্যতম ঐচ্ছিক ইবাদত রোজা পালন হিসেবে ‘নিস্ফে শাবান’ তথা শবে বরাতের আগে সোমবার ও বৃহস্পতিবার মিলিয়ে কমপক্ষে দুটি নফল রোজা পালন করা উচিত। তা ছাড়া, প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে ‘আইয়ামে বিজের’ তিনটি নফল রোজা পালনের জন্য নবী করিম (সা.) অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, ‘যখন তুমি মাসে তিনটি রোজা রাখতে চাও, তখন ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখো।’ পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর কবর জিয়ারত এবং ইসালে সওয়াব শবে বরাতের নেকআমল। একদা মধ্য শাবানের রজনীতে উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.)-এর ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে রাসুলে করিম (সা.) নীরবে জান্নাতুল বাকির সমাধিস্থলে গিয়ে মৃত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করছিলেন। (বায়হাকি) নবী করিম (সা.) কবর জিয়ারতে গিয়ে মানুষকে এ দোয়া করতে শিক্ষা দিয়েছেন, ‘হে কবরবাসী মুমিন ও মুসলিমগণ! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক! আমরাও ইনশা আল্লাহ তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব! আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের এবং তোমাদের জন্য ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি!’ (মুসলিম) যুগ যুগ ধরে শবে বরাতে মুসলিম সম্প্রদায় যথাসাধ্য রাত্রি জাগরণ করে বাসায় ও মসজিদে ঐচ্ছিক ইবাদত তথা নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, তওবা-ইস্তেগফার ও দোয়া-দরুদে মশগুল থাকেন এবং পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের কল্যাণ, দেশ-জাতি তথা মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য আল্লাহর রহমত কামনায় এবং সবার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন। এতে মুমিন বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সক্ষম হন এবং ব্যক্তিজীবনে এর বাস্তব প্রতিফলন ঘটে। রোজাদার মুসল্লিরা সাধ্যমতো দান-সাদকা, গরিব-দুস্থদের মধ্যে হালুয়া-রুটি বিতরণ এবং পরলোকগত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনায় কবর জিয়ারত করে ফাতিহা পাঠ করেন। এভাবে শবে বরাতের তাৎপর্য অনুধাবন করে ধর্মপ্রাণ মানুষ সর্বক্ষেত্রে অন্যায় পরিহার ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হন। তবে সারা বছর ফরজ ইবাদত না করে শুধু শবে বরাতে রাত্রি জেগে নফল ইবাদত করে সব ধরনের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, এমন চিন্তার কোনো সুযোগ নেই। আতশবাজি বা এ ধরনের কিছুর মাধ্যমে যাতে নফল ইবাদতরত ধর্মপ্রাণ মানুষের আল্লাহর ধ্যানে বিঘ্ন না ঘটে, সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখা উচিত।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ভোরের কাগজ,"ধর্মোৎসব পালনে নিরাপত্তার কথা ভাবতে হয় কেন? ",হিন্দু ধর্ম,"শারদীয় দুর্গোৎসব চলছে। আগামীকাল বুধবার বিজয়া দশমী শেষে এবারের দুর্গোৎসব শেষ হবে। দেশে এবার সর্বমোট ৩২ হাজার ১৬৮ মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রশাসন থেকে দাবি করা হয়েছে, সব পূজামণ্ডপেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক দৃষ্টি রাখছে, নিরাপত্তা বিধানে সর্বতোভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দলীয় নেতাদেরও দল বেঁধে পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা বিধানে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এবার পূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি আগে থেকেই আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটিও সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আগে থেকেই নিরাপত্তা বিধানের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সরকারও এবারের পূজায় যেন নিরাপত্তার বিষয়টি নিñিদ্র থাকে সে ব্যাপারে বারবার প্রতিশ্রæতি দিচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এ কারণেই যে গত বছর দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও ১৩ অক্টোবর অষ্টমীর প্রভাতেই পবিত্র কুরআন অবমাননার এক বানোয়াট লাইভ সম্প্রচার করে গোটা দেশে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল তা ছিল অচিন্তনীয়, অকল্পনীয় এবং সাধারণ মানুষকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এক অশুভ উদ্দেশ্য সাধনের তৎপরতা। কুমিল্লা থেকে সেই বিষবাষ্প মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অংশে। অশুভ সেই অপশক্তি দেশে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে গণেশের হাতে বসিয়ে মিথ্যাচার ছড়িয়ে দিয়েছিল। পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অবমাননাকারী ছিল কারা আর অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করা হলো কাদের বিরুদ্ধে? এ নিয়ে যে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল তাতে ভেঙেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, দুর্গাপূজার প্রতিমা, বাড়িঘর, লুট করা হয়েছে মন্দিরে সংরক্ষিত সম্পদ, টাকা পয়সা, প্রাণ গেছে নিরীহ কয়েকজন মানুষের। তথাকথিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সেই লাইভ দেখে যেসব কিশোর, তরুণ ধর্ম অবমাননার বিশ্বাস থেকে রাস্তায় নেমে যে তাণ্ডব সংঘটিত করেছিল তা বাস্তবেই ছিল একটি অশুভ শক্তি দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়ার পরিকল্পনার খেলা। পরে সবই জানা গেল, বোঝাও গেল। কিন্তু যে ক্ষতি মুহূর্তের মধ্যে হয়ে গেল তা কিছুতেই পূরণ করার সুযোগ ছিল না। ধর্মানুভূতিকে ব্যবহার করে এ দেশে একটি সংঘবদ্ধ চক্র শিশুকিশোরদের প্রায়ই রাস্তায় নামিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় যে লঙ্কাকাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করে সেটি আসলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা ছড়ানোর লক্ষ্যে পরিচালিত একটি অপরাজনীতি। কিন্তু ব্যবহার করা হয় মানুষের পবিত্র ধর্মবিশ্বাসকে। কুমিল্লায় যে তরুণটি মিথ্যা লাইভে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানুষকে ঘর থেকে বের হয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার খবর ছড়িয়ে ছিল। সেই অপরাধী ব্যক্তি এবং চক্রের বিচারের কি হলো তা আমরা আজো জানতে পারিনি। নোয়াখালীতে মন্দির লুট এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ও মন্দির লুটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের কি হলো তাও তো জানা গেল না। রংপুরের পীরগঞ্জের জেলে পাড়ায় হতদরিদ্র মানুষদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের কি হলো? বছর তো গড়িয়ে গেল। কিন্তু অপরাধীদের ধরা কিংবা বিচার করা গেল কিনা সেটিই তো জানা গেল না। কুমিল্লার লাইভ সম্প্রচারকারীকে শনাক্ত করতে তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কুমিল্লার ঘটনার সঙ্গে আরো অনেকেরই সংশ্লিষ্টতার কথা তখন শোনা গেছে। পবিত্র কুরআনকে অপমানিত করার অপরাধেই তো এদের বিচার হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু পবিত্র কুরআনকে নিয়ে এমন অপরাধকারীদের বিরুদ্ধে কেন কোনো ব্যবস্থা নেয়ার দাবি শোনা যাচ্ছে না। তাহলে ধর্মানুভূতির বিষয়কে কাজে লাগিয়ে যারা দেশে উত্তেজনা ছড়ায় কিংবা যারা উত্তেজিত হয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মাধিষ্ঠানে আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং সাধারণ নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ায়, ভীতি সঞ্চার করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্যই প্রকাশিত হয়ে যায়- এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। গেল বছর দুর্গোৎসব উপলক্ষে যা ঘটেছিল তা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক মহলেও ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর আগেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উপলক্ষে প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দিরে হামলার ঘটনা কমবেশি ঘটানো হয়েছিল। একটি গোষ্ঠী সমাজের ভেতরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা, অন্য সম্প্রদায়ের মানুষদের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করা, তাদের প্রতি বিদ্বেষ ভয়ভীতি ছড়ানোর মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা ও দখলদারিত্বই প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে আসছে। এই অপশক্তি সারা বছরই সুযোগ সন্ধানে থাকে। সে কারণেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নাম করে ঘটানো হয়েছে, যার পেছনে থাকে কারো অজ্ঞতা, মূর্খতা আবার কারো স্বার্থ উদ্ধার। বিশেষত কিশোর-তরুণদের এ ধরনের সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ও উত্তেজনা ছড়ানোর কাজে সবচাইতে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ বছর র‌্যাবের নতুন মহাপরিচালক তেমন আক্রমণের সম্ভাবনাকে নাকচ করে দেননি। বেশ কিছু কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবারো জঙ্গিবাদে উদ্দীপিত হয়ে আকস্মিকভাবে গৃহ ত্যাগ করেছে, উধাও হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে এরা এবারো কোথাও না কোথাও নাশকতামূলক কিছু একটা ঘটাতে তৎপর থাকবে। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ধরনের অপপ্রচার, গুজব এবং মিথ্যাচার ভুয়া আইডি খুলে যেভাবে প্রচার করা হয়ে থাকে, তাতে অনেক কিশোর-তরুণই বিভ্রান্ত হয়ে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। সে কারণে অভিভাবকদের দৃষ্টি রাখতে হবে সন্তানদের প্রতি। তারা যেন কিছুতেই গুজব, অপপ্রচার আর ধর্মীয় অনুভূতির আঘাতের আহ্বানে সাড়া না দেয়। ধর্ম পালন মানুষের মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারে কারো হস্তক্ষেপ করা মোটেও উচিত নয়। পৃথিবীতে প্রায় ৪ হাজার ২০০টির মতো ধর্ম রয়েছে। তবে সবচাইতে বেশি অনুসারী হচ্ছে বৌদ্ধ, ইসলাম, সনাতন, খ্রিস্ট ও ইহুদি ধর্মের। মানুষ জন্মগতভাবেই কোনো না কোনো ধর্মীয় পরিবারের সদস্য। সেটি কালক্রমে তার ধর্ম হিসেবেই অনুসৃত হয়। এর ওপর কারো কোনো হাত নেই। সুতরাং প্রত্যেকেরই উচিত অন্যের ধর্ম পালন করার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ত্থাকা। কারো ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা বর্তমান আধুনিক যুগে একেবারেই অনুচিত। কিন্তু আমাদের মতো দেশগুলোতে অজ্ঞতা এবং নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক পশ্চাৎপদতার কারণে আমরা একে অপরের ধর্ম বিশ্বাস ও পালন নিয়ে মাতামাতি ও বাড়াবাড়ি করে থাকি। এই উপমহাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতাই সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দিয়েছে কিংবা ব্যবহার করেছে। এর ফলে ধর্মের নামে মারামারি কিংবা হানাহানি ঘটেছে। তাতে নিরীহ নিরপরাধ মানুষই আক্রান্ত হয়েছে, মারাও গেছে। কিন্তু পরাক্রমশীল রাজনীতিবিদ এবং তাদের অনুসারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বরং লাভবান হয়েছে। সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ, যারা অন্তর থেকে ধর্ম বিশ্বাস করেন। তারাই ঘাতকদের হাতে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হন। ইতিহাসে এর প্রচুর বিবরণ রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ ইতিহাসের সেই সত্যটি জানার সুযোগ পায় না। তাদের গুজব, মিথ্যাচার ও অপপ্রচার দিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়। কয়েক দশক আগেও আমাদের সমাজ এতটা বিভাজিত ছিল না। কিন্তু আমাদের সমাজপতিরাই ধর্মের নামে বিভেদ, হানাহানি এবং নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। সেটি এখন অপশক্তিরাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে অপব্যবহার করে কিশোর-তরুণদের বিভ্রান্ত করছে এবং নানা দুর্ঘটনায় তাদেরই মাঠে নামিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। ৫০-৬০ বছর আগে আমিও যখন শিশু-কিশোর ছিলাম, তখন গ্রামেগঞ্জে অন্তত হিন্দু, মুসলিম এই দুই সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি বসবাস করতে খুব বেশি বিদ্বেষের মুখোমুখি হতে দেখিনি। ঈদুল ফিতরে আমাদের ভিন্ন সম্প্রদায়ের বন্ধুদের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে মিলিত হয়েছি। টুকটাক খানাপিনা করেছি আবার খেলাধুলাও করেছি। দুর্গাপূজায় ঢোলের শব্দ সন্ধ্যার পর শুধু কান পেতেই শুনিনি, মণ্ডপে গিয়েও দেখেছি, উপভোগ করেছি, মিষ্টি ও নাড়– খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছি। দুর্গোৎসবে সাংস্কৃতিক নানা অনুষ্ঠান হতে দেখেছি। কীর্তন শুনেছি, ধুপধুনা নাচ উপভোগ করেছি। পাড়া পড়শি অনেকেই সেখানে ভিড় জমাতেন। সেই সময় পূজামণ্ডপ এত জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও আন্তরিকতাটা ছিল ভীষণভাবে নাড়া দেয়ার মতো। গ্রামগঞ্জে সাধ্যমতো পূজার অনুষ্ঠান হতো কিন্তু উপস্থিতি হতো অনেক বেশি। তখন কোনো নিরাপত্তার প্রশ্ন আসত না। কেউ প্রতিমা ভাঙারও চেষ্টা করত না। এখন গ্রামাঞ্চলে পূজার আয়োজন সীমিত আকারেই হয়। কিন্তু সেখানেও নিরাপত্তার শঙ্কা ছড়িয়ে গেছে। সে কারণে স্থানীয় প্রশাসনকে নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করতেই হয়। শহরাঞ্চলে এটি আরো বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। কেননা কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছু ঘটালে সেটি মুহূর্তের মধ্যেই সংবাদ হয়ে যেতে পারে। নিরাপত্তা বিধান ছাড়া এখন কেন যেন দুর্গোৎসবের কথা ভাবাই যায় না! এভাবে তো ধর্মের অধিকার সুরক্ষিত হয় না। উপমহাদেশে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির পেছনে অপশক্তি ও রাজনীতির কালো হাত প্রসারিত করেছে। সে কারণেই আমরা গত এক-দেড় শতক থেকেই ধীরে ধীরে ধর্মের নামে হানাহানি, বিভাজন বৃদ্ধি পেতে দেখছি, অথচ একসময় এমনটি ছিল না। কারো ধর্ম পালনে নিরাপত্তাপ্রহরী দাঁড় করানোর প্রয়োজন পড়ত না। এখন কেন একে অপরের ধর্ম পালনে নিরাপত্তা বিধানের প্রয়োজন পড়বে? এবার দুর্গোৎসব শেষ হলে তারপরই বলতে পারব নিরাপত্তাপ্রহরী বসিয়ে নিরাপত্তা বিধান কতটা কার্যকর করা গেছে। শারদীয় দুর্গোৎসব বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসের অংশ। এটি ভারতবর্ষের অন্য অঞ্চলে নেই। দুই বাংলায় এই উৎসবের উত্থান ঘটেছে। ৫০০ বছর আগেই রাজশাহীতে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেই হিসেবে এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ইতিহাসের অংশ। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষজনও অংশ নেয়। এর ধর্মীয় অংশ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একান্ত বিষয়, কিন্তু সাংস্কৃতিক ও মিলনমেলার বিষয়টি সবার। অন্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই ঘটে। সে কারণে বলা হয়, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই বোধটি সবার মধ্যেই থাকতে হবে। উৎসব কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে নিশ্চিত করা যায় না। এটি স্বতঃস্ফূর্ততার বিষয়। উৎসবকে সেই চরিত্রেই ফিরিয়ে আনতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,মোবাইলের স্ক্রিনে কোরআনের আয়াত ব্যবহার করা যাবে?,ইসলাম ধর্ম,"একসময় শুধু কথা বলার যন্ত্র হিসেবে পরিচিত মোবাইল এখন মানুষের হাতের মুঠোয় বিশ্ব এনে দিয়েছে। যোগাযোগ থেকে শুরু করে কেনাকাটা, লেনদেন, অফিশিয়াল কাজ এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজেও মোবাইলের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। হাতের মোবাইল ফোনটিও এখন অনেকটা ব্যক্তিত্বের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবেও কাজ করছে। তাই অনেকেই তার শখের মোবাইল ফোনটি মনের মাধুরী দিয়ে সাজাতে পছন্দ করেন।যার মধ্যে মোবাইলের ওয়ালপেপার বা স্ক্রিনসেভারও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকের মোবাইলের ওয়ালপেপার বা স্ক্রিনসেভার দেখেও তার শখ কিংবা লক্ষ্য আন্দাজ করা যায়। ওয়ালপেপার বা স্ক্রিনসেভারে এমন কিছুর ছবি দিতে পছন্দ করেন, যে জিনিসের সঙ্গে তার আবেগ জড়িত। যেমন অনেকে তার সন্তান কিংবা মা-বাবা অথবা প্রিয়তমা স্ত্রী/স্বামী অথবা পছন্দের তারকা প্রভৃতির ছবি দিয়ে রাখেন।অনেকে আবার তাঁর স্বপ্নের বাড়ি বা বাহন ইত্যাদির ছবি দিয়ে রাখেন। অনেকে আবার তাঁর প্রিয় প্রতিষ্ঠানের লোগোও ব্যবহার করেন।যাঁরা ইসলামমনস্ক, তাঁরা আবার বিভিন্ন ইসলামিক ওয়ালপেপার বা স্ক্রিনপেপার মোবাইলে ব্যবহার করেন। যেখানে মক্কা-মদিনাসহ বিভিন্ন ইসলামী স্থাপনার ছবি থাকে অথবা বিভিন্ন বাণী ইত্যাদিও টাইফোগ্রাফি আকারে থাকে।অনেকে আবার ‘আল্লাহু’, ‘মুহাম্মদ’ কিংবা কোরআনের আয়াতসংবলিত ওয়ালপেপার/স্ক্রিনসেভার ইত্যাদিও ব্যবহার করেন। প্রশ্ন হলো, মোবাইল সব সময় মানুষের সঙ্গে থাকে, এমনকি যখন মানুষ টয়লেটে যায়, তখনো তাঁদের পকেটে মোবাইল থাকে। অনেক সময় খাটে কিংবা টেবিলে পড়ে থাকে, অসতর্কতাবশত পায়ের সঙ্গেও মোবাইল লেগে যায়। এ অবস্থায় কি মোবাইল স্ক্রিনে আল্লাহ বা রাসুল (সা.)-এর নামসংবলিত কিংবা কোরআনের আয়াত বা হাদিসসংবলিত ওয়ালপেপার বা স্ক্রিনসেভার ব্যবহার করা ঠিক হবে?এর উত্তর হলো—মোবাইল স্ক্রিনে আল্লাহর নামের ক্যালিগ্রাফি বা লিখিত আয়াত কিংবা অন্য কোনো জিকির ইত্যাদি সেভ করে রাখা ঠিক নয়। কেননা এতে আল্লাহর নামের সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয় থাকে।মোবাইল সাধারণত সম্মানের সঙ্গে ব্যবহার করা হয় না। অনেক সময় বসার স্থানে, নিচেও থাকে, চার্জের প্রয়োজনেও নিচে রাখতে হয় ইত্যাদি। তাই এ ধরনের কোনো কিছু স্ক্রিনসেভারে রাখা ঠিক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫০) তাই আমাদের উচিত, মোবাইল স্ক্রিনে এমন কোনো ওয়ালপেপার বা স্ক্রিনসেভার ব্যবহার না করা, যাতে কোরআন-হাদিস ইত্যাদির অবমাননা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া কোনো প্রাণীর ছবি ব্যবহার করা অনুচিত।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral ভোরের পাতা,"ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ ",ইসলাম ধর্ম,"৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে রবিবার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন মাওলানা সাদের ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। দোয়া অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ১০টায়। শুক্রবার রাতে বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম এই তথ্য নিশ্চিত করেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, আজ শনিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বয়ান করবেন মাওলানা আব্দুল আজিম (ভারত), যোহরের পরে বয়ান করবেন মাওলানা শরিফ (ভারত) বাংলা তরজমা-মাওলানা মাহমুদুল্লাহ। আসরের পরে বয়ান-মাওলানা ওসমান (পাকিস্তান), বাংলা তরজমা-মাওলানা আজিম উদ্দিন। বয়ানের পরে যৌতুকবিহীন বিবাহ অনুষ্ঠিত হবে। মাগরিবের পরে বয়ান-মুফতি ইয়াকুব (ভারত), বাংলা তরজমা-মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। রবিবার ফজরের পরে বয়ান- মুফতি মাকসুদ (ভারত), বাংলা তরজমা-মাওলানা আব্দুল্লাহ। বয়ানের পরেই হেদায়েতের কথা ও দোয়া পরিচালনা করবেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ (ভারত), বাংলা তরজমা-মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive নয়াদিগন্ত,বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চিবর দান উৎসব শুরু,বৌদ্ধ ধর্ম,"পঞ্চশীল প্রার্থনাসহ ধর্মীয় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটির আসামবস্তি বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণ থেকে মাসব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দানোত্তম কঠিন চিবর দান উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙ্গামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে ২০তম দানোত্তম কঠিন চিবর দান উৎসব শুরু হয়। এ সময় আয়োজিত ধর্ম সভায় পুর্ণার্থীদের উদ্দেশে প্রধান ধর্মদেশনা দেন পশ্চিম গহিরা শান্তিধাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত মৈত্রীপ্রিয় মহাথেরো। পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ও সংঘরাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথেরোর সভাপতিত্বে এবং বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙ্গামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়ার পরিচালনায় ধর্মসভায় উপস্থিত ছিলেন সংঘরাম বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ ধর্র্মকীতি মহাথেরো, ধর্মচক্র বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পাঞ্চাবংশ মহাথেরো, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙ্গামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সুপ্রিয় বড়ুয়া, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের সহ-সভাপতি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে পবিত্র মঙ্গলাচরণ পাঠ করেন বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ করুনাপাল ভিক্ষু। এতে শত শত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল ভোরে পরিত্রাণ পাঠ, পুষ্পপূজা ও ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, জাতীয় পতাকা ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, সংঘদান ও ভিক্ষু সংঘের ধর্মদেশনা, অনুত্তর পুণ্যক্ষেত্র ভিক্ষু সংঘকে পিণ্ডদান। দুপুরে ছিল উদ্বোধনী সঙ্গীত, দানোত্তম কঠিন চিবর দান অনুষ্ঠান, পূজনীয় ভিক্ষু সংঘের ধর্মোপদেশ ও সন্ধ্যায় ফানুস বাতি উত্তোলন। উল্লেখ্য, মহামতি বুদ্ধের প্রজ্ঞাদীপ্ত শিক্ষা ‘বর্ষাবাস তথা বর্ষাব্রত’ পালনের সমাপনী অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা এবং দানোত্তম কঠিন চিবর দান উৎসব হলো বৌদ্ধদের অতি পবিত্র ও মাহাত্ম্যপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,সিয়াম-সাধনার বৈশিষ্ট্য ও আত্মশুদ্ধির শিক্ষা,ইসলাম ধর্ম,"প্রত্যেক রোজাদারের দায়িত্ব হলো, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাতলানো পথ অনুসরণ ও অনুকরণ করে রমজানে সিয়াম-সাধনার মাধ্যমে জীবনের পাপ-পঙ্কিলতা মার্জনার পূর্ণ চেষ্টা করে আত্মার পরিপূর্ণ পরিশুদ্ধি করা। হজরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমজানে রাত জাগরণ করে (তারাবি ও তাহাজ্জুদ পড়ে), আল্লাহ তার পূর্ববর্তী সব পাপ মাফ করে দেন।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২২০২)’। উল্লিখিত হাদিস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহর দেওয়া সব অঙ্গীকারকে সত্যজ্ঞান করে সঠিক জেনে, মনে প্রাণে বিশ্বাস করে তা বাস্তবায়ন করা এবং প্রতিটি কাজে আল্লাহর কাছে সওয়াবের প্রত্যাশা করা; একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশা করা, সব কাজের আগে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বিষয়টি স্মরণে রাখা। আল্লাহপাক সর্বাবস্থায় সব কিছু দেখেন ও জানেন এর বিশ্বাস মনেপ্রাণে লালন করা। কারণ ইয়াকিন ও বিশ্বাস একজন বিশ্বাসীর সম্মানকে উঁচু করে দেয়। তাকে সম্মানের আসনে নিয়ে যায় এবং একনিষ্ঠভাবে সিয়াম-সাধনা পালন একজন রোজাদারকে বহু পুরস্কারে ভূষিত করে। পুরস্কার পাওয়া যাবে স্বয়ং রব্বুল আলামিনের কাছ থেকে। যেমন তিনি নিজেই ইরশাদ করেছেন, ‘আসসাওমু লী ওয়াআনা আজযী বী’ রোজা আমার জন্য আমি নিজেই রোজাদারের পুরস্কার দেব। সুবহানাল্লাহু। তাই রোজা পালন হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য, সামাজিক লজ্জার ভয়ে নয়। কারণ পারিবারিক ও সামাজিক নিয়ম হিসেবে রোজা রাখলে তাতে কোনো বরকত থাকে না। আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে না। আমরা অনেক সময় দেখি, মানুষ অসুস্থ হলে পানাহার ত্যাগ করে, সফরেও খাবারের সংকট থাকে বিধায় হিসাব করে খাবার গ্রহণ করে। এতে রোজা পালন হয় না। মূলত রোজার উদ্দেশ্য শুধু পানাহার ত্যাগ করা নয়। রোজার মূল্য উদ্দেশ্য আল্লাহর নির্দেশ মান্য করা। তিনি যা কিছু ত্যাগ করতে বলেছেন তা ছেড়ে দেওয়া। রোজাদার যখন বিশ্বাস করবে- আল্লাহ যা বলেছেন আমার কল্যাণের জন্যই বলেছেন, তিনি আমাকে প্রতিদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং আমি অবশ্যই তাঁর সেই প্রতিদান পাচ্ছি, তখন সে আত্মিক প্রশান্তি খুঁজে পাবে। মনে রাখতে হবে খাঁটি ও বিশুদ্ধ নিয়ত ছাড়া ইবাদত অর্থহীন। সুতরাং রোজা পালনে আল্লাহর সন্তুষ্টির বিষয়টি সবসময় স্মরণে রাখা আবশ্যক। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা বলেন, মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্যই-রোজা ছাড়া। তা আমার জন্য, আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। আর রোজাদারদের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের ঘ্রাণের চেয়ে বেশি সুগন্ধযুক্ত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯২৭)। ওই হাদিস দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, বান্দা যখন আল্লাহর জন্য তার সব প্রিয় জিনিস ত্যাগ করে, এ জন্য আল্লাহ নিজেই বান্দা-বান্দিকে এর প্রতিদান দেবেন। সুবহানাল্লাহু। দীর্ঘ একটি মাস সিয়াম পালনে অবশিষ্ট ১১ মাসের ইবাদতের প্রতি শক্তি জোগায়, রোজার কারণে অন্যান্য ইবাদতের প্রতি আগ্রহ জন্ম নেয়, তাতে প্রশান্তি মেলে। কারণ রোজার অন্যতম উদ্দেশ্য প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। রোজার মাধ্যমে মানুষ রিপু ও প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের শক্তি পায় এবং তা সহজ হয়ে যায়, শরিয়তের ওপর চলার আগ্রহ তৈরি হয়, ইবাদতে তৃপ্তি এনে দেয়। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল পূর্ববর্তীদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৩)। তাকওয়ার মূল দাবি সম্পর্কে হজরত ওলামায়ে কিরাম বলেছেন, তাকওয়ার সারমর্ম হলো, এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া যে আল্লাহ কোন কাজে সন্তুষ্ট হবেন বা কোন কাজে অসন্তুষ্ট হবেন, কোন কাজ বৈধ করেছেন এবং কোন কাজ অবৈধ করেছেন- এ ব্যাপারে পরিপূর্ণ সজাগ থাকা। আল্লাহর হুকুমগুলো মান্য করা। নিষিদ্ধ বিষয় থেকে দূরে বহু দূরে থাকা। পবিত্র মাহে রমজানে দীর্ঘ এক মাস যখন মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বিষয়গুলো মেনে চলবে, পাপ-পঙ্কিলতা ও হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করবে, তখন তা তার অভ্যাসে পরিণত হবে। এ জন্য রমজানে নেকির কাজ বেশি বেশি করা। গুনাহ ও পাপের কাজ পরিহার করা। রমজানে কোনো ব্যক্তি ভালো কাজের আগ্রহ এবং মন্দ কাজ ত্যাগ করার অনুশীলন করলে তার জীবন বদলে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর কেউ যদি রোজা রেখে পাপ পরিহার করতে না পারে তার ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘোষণা হলোথ- ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা, মিথ্যা অনুযায়ী চলা বর্জন না করে, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)। সিয়াম সাধনা পালনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, রোজাদার রোজার মাধ্যমে আল্লাহমুখী হয়। আর বান্দা আল্লাহমুখী হয় নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, আল্লাহর জিকির, তেলাওয়াত, ধ্যান, তাহাজ্জুদ, নফল ইবাদত ইত্যাদির মাধ্যমে। মহান রব্বে কারিম আমাদেরকে মাহে রমজানে আল্লাহর বেশি বেশি ইবাদত করার তৌফিক দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"বদরের প্রান্তরে ফেরেশতাদের আগমন ",ইসলাম ধর্ম,"বদর মদিনা থেকে প্রায় ৭০ মাইল দূরের একটি কুয়ার নাম। কুয়াটির নামে সেখানে একটি গ্রামও আছে। ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এখানে। সেটি ছিল মুসলমানদের প্রথম ও প্রধান যুদ্ধ। বদর যুদ্ধের বিজয়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ছিল অনেক বেশি। বদরের যুদ্ধে সাহাবি ছিলেন মাত্র ৩১৩ জন। মুসলমান বাহিনীর সেনাপ্রধান ছিলেন স্বয়ং নবীজি (সা.)। কুরাইশদের সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০ জন—৭০০ জন উষ্ট্রারোহী, ৩০০ জন অশ্বারোহী। কুরাইশ বাহিনী ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত ছিল। হজরত উমর (রা.) বলেছেন, বদরের যুদ্ধে নবীজি (সা.) প্রতিপক্ষের বাহিনীর দিকে তাকিয়ে দেখলেন। এর পর কিবলামুখী হয়ে দুই হাত উঁচু করে উচ্চৈঃস্বরে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, আল্লাহ, আপনি আমাকে যে ওয়াদা করেছেন, আমার জন্য তা পূরণ করুন। আল্লাহ, আপনি আমাকে যা প্রদানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা প্রদান করুন। আল্লাহ, মুসলমানদের এই ক্ষুদ্র সেনাদল ধ্বংস করে দিলে পৃথিবীতে আপনার ইবাদত করার কেউ থাকবে না। এক সময় নবীজি (সা.)–র কাঁধ থেকে চাদর পড়ে গেল। আবু বকর (রা.) কাছে এসে তাঁর কাঁধে চাদর তুলে দিয়ে পেছন থেকে তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললেন, আল্লাহর নবী আপনার দোয়া যথেষ্ট। নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনার সঙ্গে যে ওয়াদা করেছেন, তা অচিরেই পূর্ণ করবেন। আল্লাহ তাআলা একটি আয়াত অবতীর্ণ করলেন, ‘স্মরণ করো, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে কাতর প্রার্থনা করেছিলে, তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন (এবং বলেছিলেন), আমি তোমাকে সাহায্য করব এক সহস্র ফেরেশতা দিয়ে, যারা একের পর এক আসবে।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ৯) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন যে সেদিন একজন মুসলমান সৈন্য তার সামনে থাকা একজন মুশরিককে ধাওয়া করছিলেন। এমন সময় তিনি তার মাথার ওপর থেকে বেত্রাঘাত ও অশ্বারোহীর আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি অদৃশ্য অশ্বারোহীকে বলছিলেন, হে হায়মুম (ফেরেশতার ঘোড়ার নাম), সামনের দিকে এগিয়ে যাও। এর পর সামনে থাকা মুশরিকটির দিকে তাকিয়ে দেখতে পান, সে চিত হয়ে পড়ে আছে। ভালো করে তাকিয়ে তিনি দেখতে পেলেন, তার নাকে ক্ষত এবং মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন, যেন কেউ তাকে বেত্রাঘাত করেছে। আহত স্থানগুলো সবুজ রং ধারণ করেছে। সেই মুসলিম আনসার ব্যক্তিটি নবীজি (সা.)–এর কাছে এই ঘটনা বর্ণনা করেছিলেন। নবীজি (সা.) বললেন, তুমি ঠিকই বলেছ। এই সাহায্য আসমান থেকে এসেছে। সেদিন মুসলিমরা সত্তরজনকে হত্যা এবং সত্তর জনকে বন্দী করেন। ইবনে আব্বাস (রা.) আরও বলেছেন, যুদ্ধবন্দীদের আটক করা হলে নবীজি (সা.) তাদের সম্পর্কে আবু বকর (রা.) এবং উমর (রা.)-এর পরামর্শ চাইলেন। আবু বকর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর নবী! তারা তো আমাদের চাচাতো ভাই এবং সগোত্রীয়। আমি মনে করি, তাদের কাছে থেকে আপনি মুক্তিপণ গ্রহণ করুন। এতে কাফেরদের চেয়ে আমাদের শক্তি বাড়বে। এমনও অসম্ভব নয় যে আল্লাহ তাদের ইসলাম গ্রহণের তৌফিক দেবেন। এরপর নবীজি (সা.) বললেন, উমর, এ ব্যাপারে তোমার অভিমত কী? উমর (রা.) বললেন, আল্লাহর কসম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) আমি একমত নই। আবু বকর যা উচিত বলে মনে করছেন, আমি তা মনে করি না। আমার মনে হয়, আপনি তাদের আমাদের হস্তগত করুন। আমরা তাদের ঘাড় নিশ্চিহ্ন করে দেব। আকিলকে আলীর হাতে দিয়ে দিন। তিনি তার শিরশ্ছেদ করবেন। আর আমার বংশের অমুককে আমার কাছে অর্পণ করুন, আমি তার শিরশ্ছেদ করব। কেননা তারা হলো কাফিরদের মর্যাদাশালী নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। নবীজি (সা.) অবশ্য আবু বকর (রা.)-এর পরামর্শই পছন্দ করলেন। উমর (রা.) যা বললেন, তা তিনি করেননি। পরের দিন উমর (রা.) নবীজির (সা.) কাছে এলে দেখলেন যে, নবীজি (সা.) এবং আবু বকর (রা.) উভয়েই কাঁদছেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আমাকে বলুন, আপনি আর আপনার সঙ্গী কাঁদছেন কেন? বিষয়টি শুনে আমিও কাঁদব । নবীজি (সা.) বললেন, ফিদিয়া বা মুক্তিপণ গ্রহণ করার কারণে তোমার সঙ্গীদের ওপর বিপদের কথা ভেবেইই কাঁদছি। আমার কাছে তাদের শাস্তি পেশ করা হলো এই গাছটির চেয়েও কাছে! গাছটি ছিল নবীজির নিকটে। গাছের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, এই গাছের চেয়েও কাছে তোমাদের ওপর সমাগত আজাব আমাকে দেখানো হয়েছে। এরপর আল্লাহ এ আয়াত নাজিল করেন, ‘দেশে সম্পূর্ণভাবে শত্রু নিপাত না করা পর্যন্ত বন্দী রাখা কোনো নবীর পক্ষে সমীচীন নয়। তোমরা চাও পার্থিব সম্পদ আর আল্লাহ চান পরলোকের কল্যাণ। আল্লাহ্ তো শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী। আল্লাহর পূর্ববিধান না থাকলে তোমরা যা গ্রহণ করেছ তার জন্য তোমাদের ওপর মহা শাস্তি পতিত হত। যুদ্ধে তোমরা যা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম ভেবে উপভোগ করো। আর ভয় করো আল্লাহকে। আল্লাহ তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা আনফাল, আয়াত: ৬৭-৬৯) এর ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য গনিমত হালাল করে দেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive " আলোকিত বাংলাদেশ","তারাবির নামাজ পড়তে না পারলে করণীয় ",ইসলাম ধর্ম,"নানা কারণে অনেকে তারাবির নামাজে অংশ নিতে পারেন না। তাহলে কি করবেন? ফরজ রোজা পালনের জন্য যেসব সুন্নতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমল করতে হয় তার একটি তারাবি নামাজ। তারাবি নামাজের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমজান সম্পর্কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমজান অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারি, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস, ১৮৭৯) প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য তারাবি নামাজ আদায় করা সু্ন্নতে মুয়াক্কাদা। কোনো বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তারাবির নামাজ ছেড়ে দেওয়া মাকরুহ। অসুস্থ ও রুগীর ওপর তারাবি জরুরি নয়, তবে কোনো কষ্ট না হলে তাদেরও পড়া মুস্তাহাব। তারাবির ইমাম প্রাপ্ত বয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্ক পুরুষ হওয়া জরুরি। নাবালেগ হাফেজের পেছনে বালেগ পুরুষ-মহিলা কারও জন্যই ইক্তিদা করা বৈধ নয়। পুরুষদের মসজিদে জামাতের সঙ্গে তারাবি নামাজ আদায় করা উচিত। নারীদের জন্য কোনো মসজিদে বিশেষ ও নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে নারীরাও মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য তারাবি নামাজ আদায় করা সু্ন্নতে মুয়াক্কাদা। কোনো বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তারাবির নামাজ ছেড়ে দেওয়া মাকরুহ। অসুস্থ ও রুগীর ওপর তারাবি জরুরি নয়, তবে কোনো কষ্ট না হলে তাদেরও পড়া মুস্তাহাব। তারাবির ইমাম প্রাপ্ত বয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্ক পুরুষ হওয়া জরুরি। নাবালেগ হাফেজের পেছনে বালেগ পুরুষ-মহিলা কারও জন্যই ইক্তিদা করা বৈধ নয়। পুরুষদের মসজিদে জামাতের সঙ্গে তারাবি নামাজ আদায় করা উচিত। নারীদের জন্য কোনো মসজিদে বিশেষ ও নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে নারীরাও মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ আদায় করতে পারবেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ভারতে আরো দুই ঐতিহাসিক মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা ",ইসলাম ধর্ম," অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় তৈরি বিতর্কিত রামমন্দির উদ্বোধনের কয়েকদিন পরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘মহাভারতে পা-বদের কাছ থেকে পাঁচটি গ্রাম চেয়েছিল কৃষ্ণ। আর হিন্দুরা তাদের আস্থার সঙ্গে যুক্ত তিনটি জায়গা চাইছে শুধু।’ কয়েক দশকের আইনি বিবাদের পর অযোধ্যার জমি নিয়ে মামলায় হিন্দুদের পক্ষে রায় দিয়েছিল ভারতের শীর্ষ আদালত। বাবরি মসজিদের সেই বিতর্কিত জমিতে তৈরি হয়েছে বিশাল রামমন্দির। এরই মাঝে সাম্প্রতিককলে আবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে। এ আবহে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিততে কাশী এবং মথুরার মসজিদ নিয়েও বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকার। যার ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এর আগে হিন্দুপক্ষের দাবি মেনে কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদের একটা নির্দিষ্ট অংশে পুজা পাঠের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। পরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এ নিয়ে মামলা হয়। তবে একইভাবে হিন্দুদের পক্ষ নিয়ে পুজার ওপর স্থগিতাদেশ দেয়নি উচ্চ আদালত। এরই মাঝে গত ১ ফেব্রুয়ারি জ্ঞানবাপীর বেসমেন্টে পুজাপাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এদিকে সম্প্রতি একটি আরটিআই-এর জবাবে আর্কেওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আগে মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদের জায়গায় কাটরা কেশবদেব মন্দির ছিল। দাবি করা হয়, ব্রিটিশ শাসনকালে গণপূর্ত বিভাগ বিল্ডিং এবং সড়ক বিভাগকে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৯টি স্মৃতিস্তম্ভের একটি তালিকা সরবরাহ করেছিল। তালিকায় কাটরা কেশবদেব শ্রীকৃষ্ণ ভূমি ৩৭ নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে লেখা আছে, আগে কাটরা টিলায় কেশব দেবের মন্দির ছিল। অর্থাৎ, এভাবেই ভারতে একের পর এক মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়ার পরিকল্পনা করছে মোদী সরকার।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"বিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য নয় ",ইসলাম ধর্ম,"বিবাহ হলো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং একটি পবিত্র বন্ধন। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই একে অন্যের কাছে উপকৃত ও পরিতৃপ্ত হওয়ার মাধ্যম। এটি ব্যবসা বা অর্থোপার্জনের উপায় নয়। তেমনি বর-কনেও ব্যবসার পণ্য নয়, যাদেরকে বিক্রি করে পয়সা কামানো হবে। অতএব একটি হালাল বন্ধনকে হারাম অর্থোপার্জনের মাধ্যম বানানো কোনো সুস্থ বিবেকবান ব্যক্তির কাজ হতে পারে না। যৌতুক দাবীর ফলে দাম্পত্য সম্পর্কের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যায়। পরিবারে শান্তির বদলে অশান্তির আগুন জ্বলতে থাকে। ঝগড়া-বিবাদ গালিগালাজ এমনকি মারধর পর্যন্ত গড়ায়। অনেক ফ্যামিলি আছে, যারা দিন আনে দিন খায়, অনেক টানাপোড়েনে সংসার চালায়, যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এরকম ফ্যামিলির অভিভাবকরা মেয়ের যৌতুকের টাকা পরিশোধ করতে করতে একসময় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তবুও মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেদের সর্বোচ্চটা বিলিয়ে দেয়। তবে হাঁ, কন্যার বিবাহের সময় বা রুখসতির সময় পিতা নিজ সাধ্য অনুসারে তাকে যে গহনাগাটি বা সামানপত্র শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উপহার দেয়, যাকে আরবীতে বলে ‘জাহায’, এটি বৈধ এবং প্রচলিত যৌতুকের সাথে এর বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। তবে শর্ত হল, তা হতে হবে কোনো প্রকার সামাজিক চাপ ছাড়া, স্বতঃস্ফূর্ত ও সন্তুষ্টচিত্তে। নবি কারিম (সা.) ও নিজ কন্যা ফাতিমার বিয়ের সময় উপঢৌকন হিসেবে একটি পশম-নির্মিত সাদা রঙ্গের চাদর, একটি ইযখির ঘাস-নির্মিত বালিশ এবং চর্ম নির্মিত পানির মশক দিয়েছিলেন। (ইবনে মাজাহ: হাদিস, ৬৪৩)। উপঢৌকনের ক্ষেত্রে লোকমুখে খ্যাতি বা প্রসংশা কুড়ানোর জন্য অতিরঞ্জন করা মোটেও কাম্য নয়। এ ধরনের প্রতিযোগিতামূলক উপঢৌকন প্রদান ও প্রদর্শন মূলত: রিয়া বা লোকদেখানো ও অহংকার প্রকাশের মাধ্যম বৈ অন্য কিছু না। নবি কারিম সা. বলেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই, তা হলো শিরকে আসগর (ছোট শিরক)। সাহাবিরা প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! শিরকে আসগর কী? তিনি বলেন, রিয়া বা লোক দেখানো আমল। কেয়ামতের দিন যখন মানুষকে তাদের কর্মের প্রতিফল দেওয়া হবে, তখন মহান আল্লাহ তাদেরকে বলবেন, তোমরা যাদের দেখাতে তাদের কাছে যাও, দেখো তাদের কাছে তোমাদের পুরস্কার পাও কি না!’ (মুসনাদে আহমদ : হাদিস ৪২৮-৪২৯)। যৌতুক প্রথার সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বিভিন্ন কারণ জড়িত। এসব কারণের মধ্যে সামাজিক কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস, সামাজিক প্রতিপত্তি ও প্রতিষ্ঠা লাভের মোহ, দারিদ্র্য, অজ্ঞতা, উচ্চাভিলাষী জীবনযাপনের বাসনা, পুরুষশাসিত সমাজে নারীদের নি¤œ আর্থসামাজিক মর্যাদা ও অসহায়ত্ব ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য কারণ বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করে থাকেন। এসব জাহেলি সংস্কৃতি নির্দিষ্ট কোনো সময় বা স্থানের গ-িতে আবদ্ধ নয়, বরং তা হচ্ছে হৃদয়, আত্মা, চিন্তা, বুদ্ধি ও জীবনের একটা বিশেষ রূপ ও প্রকৃতি, যা তখনই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে যখন মানবজীবনের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত মৌলিক মূল্যবোধগুলোর পতন ঘটে এবং ঐসব কৃত্রিম মূল্যবোধ তার স্থলবর্তী হয় যার ভিত্তি হচ্ছে লোভ- লালসা, ভোগবাদ ও বস্তুবাদ। চৌদ্দশ বছর আগের মতো আজো বিশ্বমানবতার উদ্দেশে মুসলিম উম্মাহর প্রতি একই দাওয়াত, একই পয়গাম, অর্থাৎ - হে মানুষ, এক আল্লাহকে বিশ্বাস করো। আল্লাহর রাসূলের নিশ্বর্ত অনুসরণ করো। আখেরাত ও বিচারদিবসে বিশ্বাস করো। লোভ লালসা পরিত্যাগ করো। মানুষের সম্পদ অন্যায় আর অন্যায্যভাবে নিজায়ত্তে আনার মানসিকতা পরিহার করো। তবেই এসব অভিশপ্ত অপসংস্কৃতি আর কুসংস্কার সমাজ থেকে চিরতরে বিদায় নিবে। সাথে সাথে নারীকে পণ্যদ্রব্য হিসেবে বিবেচনা না করে নিজেদের অর্ধাঙ্গী হিসেবে সঠিক মর্যাদা দিতে হবে সমাজের প্রত্যেক পুরুষকে। পুরুষদের অর্থলোভ ত্যাগ করে নারীর গুণ ও গৌরবের তাৎপর্য উপলব্ধি করে সমাজে নারীর শরয়ীগত প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যৌতুক দেয়া ও নেয়াকে ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে সকলকে বিবেচনা করতে হবে। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,পবিত্র জীবনের অনন্য পাথেয় সত্যবাদিতা,ইসলাম ধর্ম,"রসুল (সা.) বলেন, তোমরা সত্যবাদিতা অবলম্বন কর, কেননা সত্যবাদিতা সৎ কাজের দিকে নিয়ে যায়। আর সৎ কাজ জান্নাতের পথ নির্দেশ করে। মানুষ সত্য বলতে থাকে এবং সত্য বলতে চেষ্টা করতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে তাকে সত্যবাদী হিসেবে লেখা হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। কেননা মিথ্যা পাপের পথ দেখায়। আর পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে এবং মিথ্যা বলার চেষ্টায় থাকে শেষ পর্যন্ত তাকে মিথ্যাবাদী হিসেবে লেখা হয়। (বুখারি ৬০৯৪)। ইসলাম ধর্ম সব সময় সত্যবাদিতার জন্য সব ধরনের ভয়ভীতি ও নিন্দাকে উপেক্ষা করার আদেশ দিয়েছে। মিথ্যাকে পরিহার করার কথা বলেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক।’ (সুরা তাওবা, আয়াত ১১৯)। ইসলাম সত্যবাদিতার জন্য সব ধরনের ভয়ভীতি ও নিন্দাকে উপেক্ষা করাসহ মুসলমানদের উন্নত নৈতিকতা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সত্যবাদীদের সম্পর্কে বলেন, এই সেই দিন যেদিন সত্যবাদীগণ তাদের সত্যের জন্য উপকৃত হবে, তাদের জন্য আছে জান্নাত যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা মহাসফলতাও। (সুরা মায়েদা, আয়াত ১১৯)। এটি মহান সফলতা। স্রষ্টা ও পরম প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জন হয়ে গেলে এর চেয়ে বৃহত্তর সফলতা আর কী হতে পারে? হজরত ওমর (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, বেহেশতে প্রবেশকারীর আলামত কী? রসুল (সা.) বললেন, সত্য কথা বলা। বান্দা যখন সত্য কথা বলে তখন সে একটি সৎ কাজ করল। যে সৎ কাজ করে সে শান্তিপ্রাপ্ত হয় এবং যে শান্তি পাস করল সে যেন বেহেশত লাভ করল। (মুসনাদে আহমদ)। রসুল (সা.) আরও বলেছেন, সত্যবাদী হও, সত্যবাদিতা সৎ পথের সন্ধান দেয় এবং সৎ পথ বেহেশতে নিয়ে যায়। যে ব্যক্তি সর্বদা সত্য কথা বলে আল্লাহর কাছে তিনি ‘সিদ্দিক’ নামে বিবেচিত হন। (বুখারি শরিফ)। আমরা আমাদের জীবনে সব সময় সত্যবাদী ব্যক্তির ওপর নির্ভয়ে নির্ভর করতে পারি। আল্লাহতায়ালা মিথ্যাবাদীকে শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছেন এবং মিথ্যাবাদী আল্লাহরও অপছন্দনীয়। মিথ্যাবাদী তার মিথ্যাচারের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে পাপের শাস্তি ভোগ করবে। রসুল (সা.) বলেছেন, মনে রেখ, সত্যবাদিতা রক্ষা কর এবং মিথ্যাবাদিতার ধ্বংস সাধন কর। আমাদের মনে রাখতে হবে, মিথ্যাবাদীদের কেউ পছন্দ করে না। কোনো ক্ষেত্রেই তাদের ওপর বিশ্বাস করা যায় না। মিথ্যাবাদিতা তাদের কুপথে পরিচালিত করে। মিথ্যা এমন এক জিনিস যা প্রমাণ করতে বারবার মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। তাই আমাদের সবার উচিত হবে সত্যবাদী হওয়া। সত্যবাদীকে আল্লাহ রব্বুল আলামিন যেমন পছন্দ করেন তেমনি তার জন্য রয়েছে ইহকাল ও পরকালে পুরস্কার। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্যবাদী বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ভারতে সবথেকে গরিব মুসলিমরা ",ইসলাম ধর্ম,"ভারতের সবথেকে দরিদ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী হলেন মুসলিমরা। ভারতের প্রধান ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মুসলিমদের হাতেই সবথেকে কম সম্পত্তি আছে এবং তাদের ক্রয়ক্ষমতা সবথেকে কম। ‘অল ইন্ডিয়া ডেবট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সার্ভে’ (এআইডিআইএস) এবং ‘পিরয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে’র (পিএলএফএস) তথ্যের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে এমনই বিষয় সামনে এনেছে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের সার্বিক গড় হিসাবে মুসলিমদের গড় ক্রয়ক্ষমতা ৮৭.৯ শতাংশ এবং গড় সম্পত্তির মূল্য ৭৯ শতাংশ। আর হিন্দুদের তুলনায় মুসলিমদের গড় সম্পত্তির মূল্য ৭৯.৩ শতাংশ এবং গড় ক্রয়ক্ষমতা ৮৭.৮ শতাংশ বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ধর্মীয় গোষ্ঠীর ভিত্তিতে সবথেকে কম মাসিক মাথাপিছু ব্যয় করেছেন মুসলিমরা। তারা মাসিক মাথাপিছু গড়ে খরচ করেছেন মাত্র ২,১৭০ ভারতীয় রুপি (বাংলাদেশী মুদ্রায় ২,৮৬০ টাকা)। নিচের তালিকায় ধর্মের ভিত্তিতে মাসিক মাথাপিছু ব্যয়ের (গড়) পরিসংখ্যান দেখানো হলো (ভারতে যে ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা এক শতাংশ বা তার কম, সেই গোষ্ঠীগুলোকে অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে রাখা হয়েছে)- ১) ইসলাম : ২,১৭০ রুপি। ২) হিন্দু : ২,৪৭০ রুপি। ৩) অন্যান্য : ২,৭৪৬ রুপি। ৪) খ্রিস্টান : ৩,১৯৪ রুপি। ৫) শিখ : ৩,৬২০ রুপি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘অল ইন্ডিয়া ডেবট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সার্ভে’ (এআইডিআইএস) এবং ‘পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে’র (পিএলএফএস) তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে যে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মের মানুষের পরিবারপিছু গড় যে সম্পদ আছে, সেই তালিকার একেবারে শেষে আছেন মুসলিমরা। দেখে নিন সেই তালিকা (কম থেকে বেশি) - ১) ইসলাম : ১৫,৫৭,৬৩৮ রুপি। ২) হিন্দু : ১৯,৬৪,১৪৯ রুপি। ৩) খ্রিস্টান : ২১,৮৯,১৬০ রুপি। ৪) অন্যান্য : ২২,৯৫,৫৭৯ রুপি। ৫) শিখ : ৪৭,৭৭,৪৫৭ রুপি। দুটি সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’র প্রতিবেদনে যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তাতে দেখা গেছে যে হিন্দুদের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) থেকেও মুসলিমদের উচ্চশ্রেণির মাসিক মাথাপিছু ব্যয় (গড়) কম। শুধুমাত্র হিন্দু তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তুলনায় তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জাতিভুক্তদের মাসিক মাথাপিছু ব্যয় (গড়) বেশি। শতাংশের ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে কতজন মুসলিম আছেন, সেই বিষয়টি বিবেচনা করলেই তাদের একটি বড় সমস্যা দেখা যাবে। যে বিষয়টি সাচ্চার কমিটিসহ একাধিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ১) হিন্দু তফসিলি উপজাতি : ১,৭৮৯ রুপি, যা বাংলাদেশী টাকায় ২,৩৫৮ টাকা। ২) হিন্দু তফসিলি জাতি : ২,০৯৫ রুপি। ৩) মুসলিম তফসিলি উপজাতি, তফসিলি জাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণি : ২,১৬৪ রুপি। ৪) সব মুসলিম : ২,১৭০ রুপি। ৫) অন্যান্য মুসলিম : ২,১৮০ রুপি। ৬) হিন্দু অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি : ২,৩৯৩ রুপি। ৭) সব হিন্দু : ২,৪৭০ রুপি। ৮) হিন্দু বা মুসলিম নয় : ৩,২৩৭ রুপি। ৯) অন্যান্য হিন্দু : ৩,৩২১ রুপি। হিন্দুস্তান টাইমস।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,ইসলামের বসন্তকাল রবিউল আউয়াল,ইসলাম ধর্ম,"রবিউল আউয়াল আরবি হিজরি চান্দ্রবর্ষের তৃতীয় মাস। রবি অর্থ বসন্তকাল, আউয়াল অর্থ প্রথম; রবিউল আউয়াল অর্থ প্রথম বসন্ত। রবিউস সানি মানে দ্বিতীয় বসন্ত বা বসন্তের দ্বিতীয় মাস। সেকালে আরব দেশে রবিউল আউয়াল ও রবিউস সানি—এই দুই মাস মিলে ছিল বসন্তকাল। বসন্ত ঋতু হলো পত্রপল্লবে সুশোভিত ঋতুরাজ। এমনি এক মোহনীয় সময়ে জগদ্বাসীর জন্য প্রশান্তির বারতা নিয়ে পৃথিবীতে শুভাগমন করলেন রহমাতুল লিল আলামিন তথা সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমত ও করুণার আকর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। সঙ্গে নিয়ে এলেন সভ্যতার বসন্তকাল। সেদিন ছিল সোমবার। আজও মদিনাবাসী সপ্তাহে সোমবারে রোজা পালন করেন, শরিফে মসজিদে নববিতে করা হয় ইফতারের বিশেষ আয়োজন। নবী করিম (সা.) সোমবার রোজা পালন করতেন। সাহাবিগণ জানতে চাইলেন, হুজুর, আপনি কেন প্রতি সোমবার রোজা পালন করেন? নবীজি (সা.) উত্তরে বললেন, সোমবারেই আমার জন্ম হয়েছিল; তাই এই দিনটিতে আমি রোজা পালন করে আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া জ্ঞাপন করি। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল, আজ থেকে প্রায় ১৪৪৪ সৌরবর্ষ পূর্বে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই ধরাধামে আগমন করেন। তখন চলছিল আইয়ামে জাহিলিয়াত, মানে অন্ধকার যুগ। অজ্ঞানতা, মূর্খতা, কুসংস্কার ও দুর্নীতি, পাপাচারে লিপ্ত ছিল জাজিরাতুল আরব বা আরব উপদ্বীপবাসী। এ সময় জ্ঞানের আলো নিয়ে, মুক্তির বাণী নিয়ে স্বর্গ থেকে মর্তে্য নেমে এলেন মানবতার মহান বন্ধু হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘কাদ জাআকুম মিনাল্লাহি নূরুঁ ওয়া কিতাবুম মুবিন’ অর্থাৎ ‘তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আলোকজ্যোতি ও মহাগ্রন্থ এসেছে’। (আল–কোরআন, পারা: ৬, পৃষ্ঠা: ১১১/৯ হা., সূরা-৫ আল মায়িদাহ, আয়াত: ১৫)। সে মহাগ্রন্থ আল কোরআন এবং আল–কোরআনের বাস্তব রূপ হলেন আল্লাহর হাবিব মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)। তিনি এলেন শুক্লপক্ষে, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে। পুণ্যময় পূর্ণিমা শশীর পূর্ণ আলোয় আলোকিত করতে বিশ্বজগৎকে। এসেছেন তিনি প্রভাতে। সেই বর্বর যুগের পশুসুলভ জীবনাচার ও জুলুম-নির্যাতন এবং সামাজিক অন্যায়-অবিচারের তমসা হতে মানবতাকে সভ্যতার আলোর দিকে এগিয়ে নিতে; তিনি ভোরের সমীরণ প্রবাহ সঙ্গে নিয়ে, প্রভাত রবির রক্তিম আভায়, উষার আকাশে উদিত হলেন মুক্তির দূত রূপে। তাঁর শত–সহস্র গুণবাচক নামের একটি হলো মুআল্লিম অর্থাৎ শিক্ষক। সত্যিই তিনি ছিলেন বিশ্বশিক্ষক। তিনি শিখিয়েছেন ভালোবাসা, শিখিয়েছেন ভ্রাতৃত্ব ও সাম্য, শিখিয়েছেন মানুষের প্রতি মানুষের অধিকার ও কর্তব্য। সর্বোপরি আরও শিখিয়েছেন ‘সৃষ্টির সেবা ও স্রষ্টার ইবাদত’। সেই মহামানবের আগমন বার্তা কোরআন কারিমে ঘোষণা করা হয়েছে এভাবে, ‘অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসুল এসেছেন। তোমাদিগকে যাহা বিপন্ন করে উহা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি তিনি দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। অতঃপর উহারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনি বলুন, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোনো ইলাহ নেই। আমি তাঁরই ওপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা আরশের অধিপতি।’ (আল–কোরআন, পারা: ১১, পৃষ্ঠা: ২০৮/৬ হা., সূরা-৯ তাওবা, আয়াত: ১২৮-১২৯)। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) একজন রাসুল; তাঁর পূর্বে বহু রাসুল গত হয়েছেন। সুতরাং যদি তিনি ইন্তেকাল করেন অথবা শাহাদত বরণ করেন, তবে তোমরা কি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে? এবং কেহ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহর ক্ষতি করবে না; বরং আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদিগকে পুরস্কৃত করবেন।’ (আল–কোরআন, পারা: ৪, পৃষ্ঠা: ৬৯/৭ হা., সূরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১৪৪)। ‘মুহাম্মদ (সা.) তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নহেন; বরং তিনি আল্লাহর রাসুল এবং সর্বশেষ নবী। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।’ (আল–কোরআন, পারা: ২২, পৃষ্ঠা: ৪২৪/২ হা., সূরা-৩৩ আহযাব, আয়াত: ৪০)। ‘মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাহাদিগকে রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবেন। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে: তাওরাতে তাদের বর্ণনা এইরূপ এবং ইঞ্জিলেও তাদের বর্ণনা এইরূপই। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা হতে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর ইহা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের ওপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে, যা চাষির জন্য আনন্দদায়ক। এইভাবে আল্লাহ মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাহাদিগকে প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের।’ (আল–কোরআন, পারা: ২৬, পৃষ্ঠা: ৫১৬/১৪ হা., সূরা-৪৮ ফাৎহ, আয়াত: ২৯)। ‘যারা ইমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই তাদের প্রতিপালক হতে প্রেরিত সত্য, তিনি তাদের মন্দ কর্মগুলো বিদূরিত করবেন এবং তাদের অবস্থা ভালো করবেন।’ (আল–কোরআন, পারা: ২৬, পৃষ্ঠা: ৫০৮/৬ হা., সূরা-৪৭ মুহাম্মদ, আয়াত: ২)। তিনি মহান প্রভুর সর্বাধিক প্রশংসাকারী ‘আহমাদ’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্মরণ করো, মারইয়াম তনয় ঈসা (আ.) বলেছিল, “হে বনি ইসরাইল! আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসুল এবং আমার পূর্ব হতে তোমাদের নিকট যে তাওরাত রয়েছে, আমি তার সর্বাধিক সমর্থক এবং আমার পরে আহমাদ নামে যে রসুল আসবেন, আমি তাঁর সুসংবাদদাতা।”’ (আল–কোরআন, পারা: ২৮, পৃষ্ঠা: ৫৫৩/১১ হা., সূরা-৬১ সফ, আয়াত: ৬)। তিনি কামলিওয়ালা। প্রিয় বন্ধু হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে তাঁর মহান বন্ধু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নানান অভিধায় অভিহিত করেছেন, বিভিন্ন বিশেষণে বিভূষিত করেছেন, বিবিধ সম্ভাষণে সম্বোধন করেছেন। আহ্বান করেছেন কখনো ‘তহা’, আবার কখনো ‘ইয়ািসন’। (আল–কোরআন, পারা: ১৬, পৃষ্ঠা: ৩১৩/১১ হা., সূরা-২০ তহা, আয়াত: ১; পারা: ২২, পৃষ্ঠা: ৪৪১/১৯ হা., সূরা-৩৬ ইয়ািসন, আয়াত: ১)। এসবের মাঝে পরিচিত তিনি ‘কামলিওয়ালা’ নবী তথা ‘মুযযাম্মিল’ ও ‘মুদ্দাছছির’। (আল–কোরআন, পারা: ২৯, পৃষ্ঠা: ৫৭৭ ও ৫৭৯/ ১৫ ও ১৭ হা., সূরা-৭৩ মুযযাম্মিল, আয়াত: ১ ও সূরা-৭৪ মুদ্দাছছির, আয়াত: ১)। ",ধর্মীয় উৎসব,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,মহিমান্বিত রজনি শবেকদর,ইসলাম ধর্ম,"আরবি শব্দ ‘লাইলাতুল কদর’-এর অর্থ হলো কদর রজনি। এর ফারসি শব্দ হলো শবেকদর। অর্থ- সম্মানিত ও মহিমান্বিত রজনি বা রাত। ভাগ্যনির্ধারণী রজনি। একটি বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বরকতময় রাত হলো শবেকদর। মহাগ্রন্থ আল কোরআন এই রাতেই নাজিল করা হয়েছিল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘রোজার মাস (এমন একটি মাস) যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে আর এ কোরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য পথের দিশা, সৎপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও হক বাতিলের পার্থক্যকারী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫)। ‘অবশ্যই আমি এ গ্রন্থটি এক মর্যাদাপূর্ণ রাতে নাজিল করেছি, তুমি কি জানো সেই মর্যাদাপূর্ণ রাতটি কী? মর্যাদাপূর্ণ রাতটি হচ্ছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা আল কদর, আয়াত ১, ২, ৩)। কোরআন হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এই কোরআন হলো মানবজীবনের দিকদর্শন। রসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবেকদরকে সন্ধান কর।’ (মুসলিম শরিফ) আর এই রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজান। আরবি মাসে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়। রসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফে বসতেন। আল্লাহর সান্নিধ্য, শবেকদর তালাশ ও সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তিনি ইতেকাফে মগ্ন হতেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত জেগে ইবাদাত করে তার অতীতের গুনাহগুলো আল্লাহ মাফ করে দেন।’ (বুখারি শরিফ, ৩৪)। সুবহানাল্লাহ। শবেকদরের রাতে যেসব আমল করা উত্তম তা হলো- তাহাজ্জুদের নামাজ, সালাতুত তাসবিহ, সালাতুল হাজতের নামাজ আর বেশি বেশি করে নফল নামাজ, ইস্তেগফার করা। সেজদায় গিয়ে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করা। সেজদা হলো আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সাক্ষাৎ। এই দিনের শেষে (সূর্যাস্তের পর) আল্লাহতায়ালা প্রথম আসমানে অবতরণ করে তাঁর বান্দাদের আহ্বান করেন, কে আছ অসুস্থ আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তাকে শেফা দান করব। কে আছ অভাবগ্রস্ত, আমার কাছে চাও আমি আজ তার অভাব মিটিয়ে দিব। কে আছ আজ বিপদগ্রস্ত, আমার কাছে চাও আমি তার বিপদ দূর করে দিব। লাইলাতুল কদরের রাতে আল্লাহর ওইসব বান্দা বেশি সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন যাদের সঙ্গে কোরআনের সম্পর্ক বেশি। যিনি কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালিত করেন। আর এরাই হচ্ছেন সফলকাম। মর্যাদার এ রাতে আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করবেন বা কী চাইবেন? এ সম্পর্কে হাদিসে একটি বর্ণনা এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) রসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রসুল (সা.) আপনি বলে দিন, আমি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা যদি জানতে পারি, তাতে আমি কি দোয়া পড়ব? রসুল (সা.) বললেন, তুমি বলবে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হা মিম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কোরআন) এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা দুখান, আয়াত ১-৬)। লাইলাতুল কদরের রাতে চার ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয় না। তারা হলো- ১. নিয়মিত মদ্যপানকারী ২. পিতামাতার অবাধ্য সন্তান ৩. আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী ৪. আর অন্যের ক্ষতি করার ইচ্ছা পোষণকারী। এই রাতে জিবরাইল (আ.) আরও ফেরেশতাদের নিয়ে দুনিয়ার বুকে অবতরণ করেন এবং বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। এই রাতে যারা নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ইস্তেগফার আর আল্লাহ রব্বুল আলামিনের দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করতে থাকেন তাদের সঙ্গে ফেরেশতারাও আমিন আমিন বলতে থাকেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,সৌদি আরবে নবীযুগের প্রাচীন বাজার চিহ্নিত,ইসলাম ধর্ম,"ইসলাম-পূর্ব যুগে আরব উপদ্বীপের প্রসিদ্ধ বাজারগুলোর একটি ছিল সুক হুবাশা। তিহামাহ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো বাজার ছিল এটি। পবিত্র মক্কা নগরী থেকে আট দিনের দূরত্বে তা অবস্থিত। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হিজাজ ও ইয়েমেনের ব্যবসায়ীরা আসতেন।ইয়েমেন থেকে শাম অঞ্চলে যাওয়ার প্রাচীন বাণিজ্যপথ ছিল এটি। প্রতিবছর রজব মাসের শুরু থেকে আট দিন পর্যন্ত এই বাজার চলত। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাতিয়ে রাখতে এখানে কবি ও সাহিত্যকদেরও আগমন ঘটত। কবিতার মাধ্যমে গোত্রীয় গৌরব, শৌর্য-বীর্য, বীরত্ব তুলে ধরত তারা।ইতিহাস থেকে জানা যায়, ইসলাম-পূর্ব সময়ে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এখানে বাণিজ্য করেছেন। তিনি এখানে খাদিজা (রা.)-এর বাণিজ্য করতেন। ইসলামী যুগ, উমাইয়া যুগ ও আব্বাসি যুগের কিছুকাল পর্যন্ত এই বাজারের কার্যক্রম চলে। এরপর ১৯৭ হিজরিতে দাউদ বিন ঈসার যুগে এর পতন ঘটে।তখন সৈন্যসহ একজন প্রতিনিধি পাঠানোর রীতি ছিল। তারা সেখানে তিন দিন অবস্থান করতেন। সেই বছর আজদ গোত্রের কেউ প্রতিনিধিদলকে হত্যা করে। তখন মক্কার গভর্নরের নির্দেশনায় পুরো স্থান নিশ্চিহ্ন করা হয়। এর পর থেকে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ হয়ে যায়।এখানে পাথরখচিত স্মৃতিস্তম্ভসহ বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া যায়।এখানে বিভিন্ন অঞ্চলের পণ্যসামগ্রীর প্রদর্শনী হতো। প্রাচীন ইয়েমেনের মিখলাফ আল-জুনদ এলাকার পাতলা লিনেন, বারিক উপত্যকার শস্য-ফসল, মধু, ঘিসহ নানা রকম সুস্বাদু খাবার পাওয়া যেত। তা ছাড়া মূল্যবান পাথর, স্বর্ণ, রৌপ্য, সিসা, ইসমিদ সুরমা, সুগন্ধি, অস্ত্রের সরঞ্জাম, রেশম, জোয়াল, জুতা, ধাতুসহ খাবারের মূল্যবান পাত্র ও সামগ্রীর জন্য তা বিখ্যাত ছিল। যুদ্ধবন্দি ও দাসদের বেচাকেনাও হতো এখানে। প্রসিদ্ধ সাহাবি জায়েদ বিন হারেসা (রা.)-কে দাস হিসেবে এই বাজারে বিক্রয় করা হয়েছিল।হিজরি তৃতীয় শতকের ঐতিহাসিক মুহাম্মদ বিন সাআদ লিখেছেন, ‘ইসলাম-পূর্ব যুগে হাকিম বিন হিজাম (রা.) প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী ছিলেন। মক্কা ও তিহামাহ অঞ্চলের এমন কোনো বাজার ছিল না যেখানে তিনি উপস্থিত হতেন না। তিনি বলেছেন, তিহামাহ অঞ্চলে অনেক বাজার ছিল। এর মধ্যে হুবাশা বাজার সবচেয়ে বড় ছিল। মক্কা থেকে এর দূরত্ব আট দিনের। আমি সেখানে সব সময় যেতাম। আমি রাসুল (সা.)-কে সেখানে উপস্থিত হতে দেখেছি। আমি কাপড় ক্রয় করে তাঁকে নিয়ে মক্কায় ফিরে আসি। এরপরই খাদিজা (রা.) তাঁকে হুবাশায় ব্যবসার জন্য পাঠিয়েছিলেন। মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে তার দাস মাইসারাও ছিল। তাঁরা উভয়ে বিভিন্ন পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় করে মক্কায় ফেরেন। এই ব্যবসায় তাঁরা ভালো লাভ করেছিল। প্রতিবছর রজব মাসে আট দিন এই বাজার অনুষ্ঠিত হতো।’ (আত-তাবাকাত আল-কুবরা, ১/২১৬)ঐতিহাসিক হুবাশা বাজারের সঠিক অবস্থান নিয়ে নানা মত রয়েছে। ২০২১ সাল থেকে এর অবস্থান চিহ্নিত করতে কাজ করেছে সৌদি আরবের প্রত্নতত্ত্ববিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিং আবদুল আজিজ ফাউন্ডেশন ফর রিসার্চ অ্যান্ড আর্কাইভস। সম্প্রতি সৌদির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ক কমিশনের সহযোগিতায় একদল গবেষক বাজারটির সম্ভাব্য অবস্থান চিহ্নিত করে। তারা মক্কা অঞ্চলের আরদিয়াত শহরের ‘কানুনা’ উপত্যকার পশ্চিম-দক্ষিণে হুবাশা বাজারের অবস্থান বলে জানান।হুবাশা বাজারবিষয়ক সায়েন্টিফিক কমিটির প্রধান ফাহাদ আল-সামারি জানিয়েছেন, ‘হুবাশা বাজার চিহ্নিত করতে একটি কমিটি গঠিত হয়। এতে গবেষক, ইতিহাসবিদ, ভূগোলবিদ, সিরাত বিশেষজ্ঞ ও প্রত্নতত্ত্ববিদ রয়েছেন। ঐতিহাসিক উকাজ বাজারের নথিপত্র, মহানবী (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত একাধিক স্থান ও ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে এই অনুসন্ধান চালানো হয়।’ ঐতিহাসিক এই বাজার সৌদি আরবের প্রত্নতাত্ত্বিক বিকাশ এবং ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপনার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কুষ্টিয়ায় যুবক গ্রেপ্তার ",হিন্দু ধর্ম,"কুষ্টিয়ার মিরপুরে হিন্দু ধর্মকে অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় নায়েবুর রহমান (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত নায়েবুর রহমান কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বাসিন্দা। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পুলিশ লাইনের কনফারেন্স রুমে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. খায়রুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৪ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত মো. নায়েবুর রহমান নিজের ফেসবুক আইডি থেকে বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক অরাজকতা ও শত্রুতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একটি স্ট্যাটাস দেয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হলে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ওই যুবকের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্যই ওই যুবক ইচ্ছাকৃতভাবে ওই পোস্ট দেয়। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative Dhaka Tribune,"আরো ১৬ কোটি রুপির সম্পদ জব্দ জাকির নায়েকের ",অন্যান্য,"বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে বিতর্কিত ইসলাম ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েক ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৬ কোটি ৪০ লক্ষ রুপির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)৷একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মে বিশ্বাসীদের অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনেছে দেশটির সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এ সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ দেয়া হয়। এ নিয়ে তার ৫১ কোটি রুপির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। জানা গেছে, জাকির নায়েকের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে অর্থ লেনদেন করা হলেও তদন্ত শুরুর পর সেই অর্থ তার স্ত্রী, ছেলে ও ভাগ্নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফিরিয়ে দেয়া হয় । ইডি তার প্রতিবেদনে আরো জানায়, মুম্বাইয়ের ফাতিমা হাইটস, আফিয়া হাইটসসহ ভাণ্ডুপ এলাকায় একটি বেনামি প্রজেক্টে জাকির নায়েকের আত্মীয়দের বিনিয়োগ রয়েছে বলে জানতে পারেন ইডির তদন্তকারীরা। এমনকি পুনেতে এনগ্রাসিয়া নামে একটি প্রজেক্টের সঙ্গেও তারা জড়িত বলে জানতে পেরেছে ইডি। এর আগে ২০১৬ সালে বিতর্কিত এ ধর্ম প্রচারকের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। পরে ২০১৭ সালের অক্টোবরে মুম্বাইয়ের একটি আদালতে জাকির নায়েক চার্জশিট দাখিল করে এনআইএ। এদিকে, এ নিয়ে তৃতীয়বার জাকির নায়েক ও তার আত্মীয়দের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ভারত সরকার।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative ভোরের কাগজ,"একাত্তরের বোরকাপরা নারী ও ধর্মদ্রোহের পশ্চিমা শিক্ষা ",অন্যান্য,"একাত্তরের বোরকাপরা নারী ঢাকা থেকে পাঠানো ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রতিনিধি ক্লেয়ার হোলিংওয়ার্থের একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন ১৭ আগস্ট ১৯৭১ প্রকাশিত হয়। সংবাদটির শিরোনাম : ‘বোরকাপরা মেয়েরা সশস্ত্র গেরিলাদের সহায়তায়’। ভারী বোরকায় আচ্ছাদিত নারীরা পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর সক্রিয় মুক্তিফৌজের জন্য অস্ত্র চোরাচালানে ক্রমেই আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছেন। কিছু কিছু গেরিলা অপারেশনে তাদের ভূমিকা মুখ্য যেখানে মাইন, গ্রেনেড কিংবা বোমা পরিবহন করে শহরে কোনো স্থানে লুকিয়ে রাখতে হয়। অস্ত্র পরিবহনে বোরকাপরা নারী সম্পূর্ণ নিরাপদ কারণ সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ তাদের স্পর্শ করার কথা ভাবতেই পারে না। এমনকি বাসে-ট্রেনে নারী তল্লাশকারীরাও তাদের ছেড়ে দেয়, যদিও ইউরোপীয় কোনো নারী পেলে অস্ত্রের সন্ধানে সারা শরীরে তালাশ করে। মর্যাদার প্রতীক হিসেবে অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত নারী বোরকা পরেন, তারা স্থূলদেহী, দেখেই বোঝা যায় তারা মাঠে কাজ করেন না। কালো পোশাকে আপাদমস্তক ঢাকা, মাথার দিকে হুড, মুখের সামনে ঘোমটা দেখে মনে হয় কালো কিছু ধীরে ধীরে চলছে। তাদের কেউ কেউ বহন করছে মারণাস্ত্র। বাজার থেকে বাজারে আগ্রহী তরুণী শিক্ষার্থী যারা মুক্তিফৌজের সঙ্গে কাজ করছে, তারাও নিরাপদ, শরীরে গোলাবারুদ বাঁধা, ঝুড়িতে মাইন, তাদের মুখমণ্ডল দূরে থাক কেউ তাদের পায়ের গোড়ালিও দেখতে পায় না। সাধারণত সীমান্তের ওপার থেকে পুরুষরা অস্ত্র নিয়ে নিকটবর্তী কোনো গ্রাম্য বাজারে হাজির হন, সেখান থেকে ভারী বোরকায় আবৃত মেয়েরা তা পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গমন করে। ১৯৭১ সালে বিদেশি পত্রিকায় প্রকাশিত এ ধরনের কিছু টুকরো খবর পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির একটি কোলাজচিত্র তুলে ধরে। এমন কিছু সংবাদ ভাষান্তর করে প্রয়োজনীয় টীকাসহ উপস্থাপন করা হচ্ছে। ৬ মে ১৯৭১ নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত একটি সংবাদ শিরোনাম : বিদেশি সংবাদ প্রতিবেদনের সমালোচনায় পাকিস্তান করাচি, পাকিস্তান ৫ মে পাকিস্তান সরকারের একজন মুখপাত্র গতকাল বলেছেন সেন্সরশিপ বহাল থাকার কারণে সাংবাদিকদের যে অসুবিধে হচ্ছে সে জন্য সরকার দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাবলি নিয়ে বিদেশে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে মুখপাত্র তার তীব্র সমালোচনা করেন। পাকিস্তান মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আকবর খান বলেছেন তিনি মনে করেন বিদেশি সাংবাদিকদের অনেক প্রতিবেদনে প্রকৃত সত্যের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিস্ময়কর ঐতিহ্যের ওপর কালিমা লেপন করা হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে পূর্ব পাকিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং জাতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। বিদেশি সাংবাদিকদের নোটবই এবং তাদের তোলা ছবির ফিল্ম ছিনিয়ে নিয়ে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন থেকে সাংবাদিকরা পূর্ব পাকিস্তানের ভারতীয় সীমান্তপথে ভেতরে প্রবেশ করছে। পাকিস্তান সরকারের অনুমতিপ্রাপ্ত ছয়জন সাংবাদিক আগামীকাল উড়োজাহাজে পূর্ব পাকিস্তান গমন করবেন। পশ্চিমের শিক্ষায় ধর্মদ্রোহিতা : পাকিস্তান আর্মি আওয়ামী লীগের স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে গুঁড়িয়ে দিতে ২৫ মার্চ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল, বিদেশি সাংবাদিকদের বহিষ্কার করল। সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান সফরের জন্য ৬ জন বিদেশি সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তান সফরের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাদের একজন ম্যালকম ডব্লিউ ব্রাউন ১১ মে নিউইয়র্ক টাইমস-এ যে ডেসপাচটি পাঠান তা ১৩ মে প্রকাশিত হয়। সেটি অনূদিত হলো : ঢাকা, পাকিস্তান ১১ মে : পশ্চিমা ধাঁচের শিক্ষার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যুদ্ধ ঘোষণা করেছে; তারা মনে করে এই শিক্ষাই ধর্মদ্রোহিতা ও নাস্তিকতার কারণ, এই শিক্ষার কারণেই রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে, তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটে। স্বাভাবিক অবস্থায় শিক্ষা নিয়ে সেনাবাহিনী কী ভাবল তা নিয়ে পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ফ্যাকাল্টির উদ্বিগ্ন হবার কারণ থাকার কথা নয়। কিন্তু ২৫ মার্চ সেনাবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। যাদের সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে করা যেতে পারে যাদের ভাষ্য অনুযায়ী নিহত ছাত্রের সংখ্যা একশত থেকে পাঁচশত। সৈন্যরা সরকারবিরোধী সুনির্দিষ্ট ক’জন শিক্ষক ও ছাত্রের সন্ধান করেছে; পুরো বাড়ি ধ্বংস করেছে এবং পরিবারের সব সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত শিক্ষকের সংখ্যা বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী ১৪ জন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ডক্টর জি সি দেব, একজন সহকর্মীর মতে তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী একজন পাণ্ডিত্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তার কাজ যুক্তরাষ্ট্রেও সমাদৃত। আরো যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর সঙ্গে তুলনায় এই সংখ্যাটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। সম্ভবত শত-সহস্র মানুষ তারা হত্যা করেছে এবং এই হত্যা ও ধ্বংস অব্যাহত রয়েছে। যেমন আদেশ দিয়েছে রেলওয়ে ট্রাকের দু’পাশের বাড়িঘর সরিয়ে ফেলতে হবে। ঢাকা থেকে উত্তরে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৯০ মাইল পথের দু’ধারের ৩০ হাজার পরিবারকে বাড়িঘর ভাঙতে হয়েছে, একটার পর একটা ইট সরিয়ে নিতে হয়েছে, তারা এখন যোগ দিয়েছে বাস্তুহারার দলে। এই সেনাবাহিনী যাদের সদস্যরা পশ্চিম পাকিস্তানি, আসলে তারা শত্রæদেশে অবরুদ্ধ, তারাও আক্রমণ ও নাশকতার শিকার হচ্ছে। তারা মনে করেছে রেললাইনের দু’পাশ থেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে সংকট কমিয়ে ফেলেছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা তাদের একটি ভয়ংকর সামরিক দৃষ্টিভঙ্গির আভাস দেখতে পাচ্ছেন। পড়াশোনার ভবিষ্যৎ নেই একজন অধ্যাপক বললেন, ‘পাকিস্তানে পড়াশোনা ও শিক্ষার কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সেনাবাহিনী যে দণ্ড হাতে নিয়েছে তাতে পিটিয়ে শিক্ষাকেই হত্যা করবে। আমার নিজের ব্যাপারে বলছি, আমার পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়াই ভালো।’ সেনাবাহিনীর একজন মেজর বললেন, ‘আমাদের এটা বিবেচনা করতে হবে এক প্রজন্মের ছাত্রদের সকলেই নষ্ট হয়ে গেছে, ঢিলেঢালা শাসন এবং বাবা-মার প্রশ্রয়ে তারা বখে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মদ্যপানের কথা আর ধর্ষণের কথা কখনো শুনেছেন- মুসলমান সমাজে এমন কখনো ঘটতে পারে না। তিনি বললেন, ‘এ ধরনের মানুষের পর্যন্ত দুর্বৃত্ত হওয়া অনিবার্য। তারা হাতে অস্ত্র নেয় এবং আমাদের গুলিতে নিহত হয়।’ ‘পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে গিয়ে নতুন প্রজন্মকে কঠোর ইসলামি কানুনে লালন করতে হয়। অনেকে ভুলে গেছে যে, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টিই হয়েছে মুসলমানদের হোমল্যান্ড হিসেবে। আমরা যখন এই ধারণা থেকে সরে যাই আমরা দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে পড়ি।’ ক’জন মুসলমান সেনাকর্মকর্তা জোর দিয়ে বললেন, পাকিস্তানি মহিলাদের অবশ্যই হিজাব পরতে হবে এবং ব্যাংকের সুদ নিষিদ্ধ করতে হবে। মূল্যবোধের প্রশ্ন মার্চের সহিংস ঘটনার বিরোধিতা করে সেনা প্রতিরোধে অংশ নেয়নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একজন রক্ষণশীল ছাত্র বলল, এটা মানতে হবে সেনাবাহিনীর একটি কথা ঠিক- ‘এটা অবশ্যই সত্য পাকিস্তান একটি ধর্মভিত্তিক দেশ। ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ নয়, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’ কিন্তু ট্র্যাজেডি হচ্ছে সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা অফিসাররা বুদ্ধিবৃত্তিবিরোধী প্রবক্তা হয়ে উঠেন। অধঃপতিত এই দেশের গৌরব ফিরিয়ে আনতে না পারলে তাদের দমানো যাবে না। পাকিস্তান মহাকাব্যের কবিদের জন্য চমৎকার, কিন্তু প্রকৌশলী ও আমার মতো বাস্তববাদী মানুষের জন্য এটা নরক। সেনাবাহিনীর বুদ্ধিবৃত্তিবিরোধী অবস্থান অর্থনীতি পর্যন্ত বিস্তৃত- সেখানে বাস্তবতা হচ্ছে পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে দেওলিয়া হয়ে পড়লেও সেখানে জাতির গর্ব হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে সংযুক্ত ইসলামিক জাতি। একজন ব্যবসায়ী বললেন, আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যা বাড়তেই থাকবে- এক সময় আমাদের জেনারেলরা আবিষ্কার করবেন যে আমাদের মানুষ না খেয়ে আছে এবং আমাদের টাকা দেশের বাইরে কোথাও চলছে না। সেই জায়গায় পৌঁছলে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করব সম্ভবত ভারতের বিরুদ্ধে আমরা সেখানে পৌঁছে গেছি; এবং আমাদের মহান আত্মিক আলো আমাদের দারিদ্র্য ও পশ্চাৎপদতাকে ডুবিয়ে দিতে পারবে না। তিনি বললেন, যাই ঘটুক তা দেখার জন্য আমি আর অপেক্ষা করতে চাই না। ট্যাংক যখন কথা কেড়ে নেয় ২৭ মার্চ যখন ৩৫ জন সাংবাদিককে ঢাকা থেকে বহিষ্কার করা হয় তাদের একজন ছিলেন হাওয়ার্ড হুইটেন। তিনি এএপি-রয়টারের সংবাদদাতা। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তার দাখিল করা একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন ২৯ মার্চ ১৯৭১ অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্য এজ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। গত রাতে আধঘণ্টার নোটিসে পশ্চিমের অন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে আর্মি ট্রাকে উঠিয়ে ঢাকা থেকে বের করে দেয়া হয়। আমরা বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) থেকেই হোটেলে আবদ্ধ অবস্থায় আছি, সেদিন আর্মি নামল পূর্ব পাকিস্তানি নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্র ভাঙার প্রচেষ্টা গুঁড়িয়ে দেবে। আমাদের অবলম্বন যা কিছু ছিল স্যুটকেসে ভরে আমাদের সেনা কনভয়ে তুলে জনশূন্য এয়ারপোর্ট রোড ধরে আগুনে জ¦লতে থাকা দোকান এবং সাধারণ মানুষের বানানো ব্যারিকেড ভেঙে এগোলো। প্রত্যেককেই এয়ারপোর্টে তন্নতন্ন করে তল্লাশি করা হলো, সৈন্যরা আমাদের ফিল্ম, টেপ এবং নোট বইগুলোও ছিনিয়ে নিল। ঢাকায় সম্পূর্ণ সেন্সরশিপ থাকার কারণে আমি এখন পর্যন্ত ক্র্যাকডাউন সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। শেখ মুজিবের অসহযোগ আন্দোলন তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সরকার শিক্ষা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য অচল করে দিয়েছে। শুক্রবার ঢাকার আকাশ কালো ধোঁয়ার কুণ্ডুলিতে ছেয়ে ছিল, শেখ মুজিবের অনুসারীদের ওপর আচমকা আক্রমণ চালানোর ১৮ ঘণ্টা পরও ক্ষণে ক্ষণে অটোমেটিক রাইফেলের গুলির শব্দ রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে দিচ্ছে। পাকিস্তানি সেনা শাসকরা যে দরকষাকষি করা রাজনীতিবিদদের নিয়ে অধৈর্য হয়ে পড়েছে তার প্রথম প্রমাণ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের ভেতর আকস্মিক সেনা সমারোহ, এখানেই বিদেশি সাংবাদিকরা অবস্থান করছিলেন। একজন ক্যাপ্টেন আদেশ করলেন, কেউ বেরোতে পারবে না, বেরোলে গুলি করা হবে। সৈন্যরা জমায়েত হয়ে বাংলাদেশের একটি অতিকায় পতাকাতে আগুন ধরিয়ে দিল। হোটেলের কর্মচারীরা ১২ ঘণ্টা আগে পতাকাটি উঠিয়েছিল। ততক্ষণে গুজব রটে গেল, ১১ দিন এখানে থেকে সংকট মেটাবার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তার বাড়িতে (প্রেসিডেন্টস হাউস) ফোন করা হলে তা নিরুত্তর বয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে সব ফোন এবং টেলিগ্রাম ডেড হয়ে যায়। হোটেলের সামনে দিয়ে অল্প আলোতে সেনা কনভয় চলতে দেখা যায়। রাত একটার দিকে শেখ মুজিবের বাড়িতে ফোন করা হলে তিনি সেখানে আছেন বলে জানা যায়, কিন্তু এক ঘণ্টা পর বোঝা যায় লাইন ডেড হয়ে গেছে। রিকয়েললেস রাইফেলের গুলির সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছিন্ন পিস্তলের গুলির শব্দ শোনা যায়। আগুন দিগন্ত আলোকিত করে তোলে। হোটেলের কাছে জঙ্গি বাঙালিদের জাতীয়তাবাদী পত্রিকা ‘দ্য পিপল’ অফিস আগুনে জ¦লতে থাকে। এমনকি তার চেয়ে অনেক বড় আগুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলের দিকে, আলোতে এয়ারপোর্টও দেখা যায়। ট্রাকভর্তি সৈন্য যখন এদিক-ওদিক যাচ্ছে প্যাটন ট্যাংকের শব্দ তখন রাস্তার ওপর, বুলেটের আগুনের বিচ্ছুরণ আকাশে মিলিয়ে যায়। বাংলায় গণহত্যা এক্সপ্রেসেন স্টকহোম ১ এপ্রিল ১৯৭১ শেখ মুজিবুর রহমানকে যে বন্দি করা হয়েছে তা প্রমাণ করতে পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষ একটি আলোকচিত্র অবমুক্ত করেছে। তাঁর বন্দিদশার ছবিটি দেখিয়ে সামরিক সরকার পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মনোবল ভেঙে দিতে চায়। প্রশ্ন, ছবিটি আগে ছাড়া হলো না কেন? কোন তারিখের ছবি তা-ই বা উল্লেখ করা হয়নি কেন? তারা শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন দেখাচ্ছে না? তবে এটা স্পষ্ট, ইয়াহিয়া খানের শাসন যে কোনো মূল্যে তাঁর (শেখ মুজিব) শহীদ হওয়ার সুযোগ প্রতিহত করতে চাইবে। প্রশ্ন হচ্ছে কারাবন্দি শেখ মুজিবকে দেখার যে অনুভূতি পূর্ব পাকিস্তানে জন্মাবে, তা কি পরিস্থিতি পাল্টে দেবে? তাঁকে নিয়ে কিংবা তাঁকে ছাড়া (বন্দিদশায় রেখে) যে অবস্থায়ই হোক না কেন, পূর্ব পাকিস্তানের আর পিছু হটার পথ নেই। সত্য গোপন করার জন্য সামরিক সরকারের সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমরা এখন জানি পূর্ব পাকিস্তানে কী ঘটছে। শরণার্থীরা ব্যাপক গোলাবর্ষণ, বেপরোয়া ধ্বংসযজ্ঞ এবং গণহত্যার সাক্ষ্য দিয়েছে। শত-সহস্র মানুষ তাদের ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছে। পাকিস্তানের ঐক্য অটুট রাখতেই হবে- এই প্রণোদনার নামে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতি শক্রতার অস্ত্র প্রয়োগ করা হচ্ছে। দেশের প্রথম সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল ভণ্ডুল করে দেয়ার পর জন্য সামরিকজান্তা সহিংস শক্তি প্রয়োগ করে চলেছে। সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল হজম করার প্রস্তুতি পাকিস্তানি শাসকদের ছিল না- উল্টো সামরিক বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে। এটা স্পষ্ট, এই পদ্ধতিতে কখনোই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের পুনর্মিলন ঘটানো সম্ভব হবে না। নির্মমভাবে অধিকার প্রতিষ্ঠা অথবা যুদ্ধ- এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। এই নীতি অনুসরণের জন্য অবশ্যই নিন্দা জ্ঞাপন করতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,স্বচ্ছ মনোবল আনন্দময় জীবনের চাবি,ইসলাম ধর্ম,"জীবনকে সুন্দর করার সঠিক উপায় হচ্ছে সর্বদা ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করা। নিজের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা। সুদৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে আপন কাজে মনোনিবেশ করা। আনন্দ বাইরে না খুঁজে নিজের ভিতর অনুভব করা জীবনকে সুন্দর ও আনন্দময় করার এক অনন্য চাবিকাঠি। আনন্দে থাকা, সুখী হওয়া আপনার সিদ্ধান্ত। যতক্ষণ না আপনি সুখী হতে চাইবেন, কারও পক্ষেই সম্ভব না আপনাকে সুখী করা, আনন্দিত করা। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সম্পদের আধিক্যতায় ধনী হয় না, অন্তরের ধনীই প্রকৃত ধনী।’ (বুখারি)। মুসলমান হিসেবে আমরা জানি, এ পার্থিব জীবন একটি পরীক্ষামাত্র। আমরা বিশ্বাস করি, জীবনে চলার পথে কখনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়, বিপদে পড়তে হয়, চিন্তাগ্রস্ত হতে হয়, ভাবতে হয়। আবার আনন্দময় মুহূর্তও পাওয়া যায়। সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। তিনিই সবকিছুর নিয়ন্তা। অতএব তাঁর ওপর ভরসা করে জীবনের সব মুহূর্ত সুদৃঢ় মনোবল নিয়ে পাড়ি দিতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে আপন লক্ষ্যে। ছিনিয়ে আনতে হবে মুক্তির সূর্য। চিরকাক্সিক্ষত বিজয়। মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘এরপর যখন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহর ওপরই ভরসা করুন। আল্লাহ ভরসাকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৫৯)। ইসলাম বলে, একমাত্র আল্লাহই আমাদের সব দুশ্চিন্তা, হতাশা, অক্ষমতা ও কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে পারেন। তাই সর্বাবস্থায় তাঁর সাহায্য কামনা করা বুদ্ধিমানের কাজ। মহানবী (সা.) যাবতীয় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তিলাভ এবং মনোবল অর্জনের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি দুশ্চিন্তা, দুঃখ, অপারগতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋণের ভার এবং মানুষের প্রভাব বিস্তার থেকে আশ্রয় চাই।’ (বুখারি)। অন্য এক হাদিসে বর্ণিত আছে, রসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কাজের ওপর স্থায়িত্ব এবং দৃঢ় থাকার প্রার্থনা করছি।’ (তিরমিজি)। প্রতিটি মানুষের মাঝে আবেগ আর অনুভূতি আছে। এগুলো না থাকলে আমরা মানুষ হয়ে উঠতে পারতাম না। তবে আমাদের স্মরণ রাখতে হবে জীবন একটি ‘ওয়ান টাইম অফার’। এ অফারটি আমাদের বিবেচনার সঙ্গে ব্যবহার করা প্রয়োজন। অলস বা ভীরু হয়ে সময় ক্ষেপণ করা জীবনের প্রতি অবিচার। হীনমন্যতা এবং হতাশার কারণে মন ও কাজের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়। শরীর ও মেধা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম হয়। মানুষের মনোবল এবং দৃঢ় আস্থা কাজের ওপর ভালো প্রতিক্রিয়া বয়ে আনে। আল্লাহ কর্তৃক প্রদানকৃত অনন্য উপহারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, নিজের ইচ্ছায় চলার ক্ষমতা। তাই জীবনের যে-কোনো ব্যাপারে যদি আমরা চিন্তা করি- আমরা সফল হব, এ চিন্তাটাই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নেবে। নিজের প্রতি বিশ্বাসী ও আশাবাদী মানুষের প্রতিটি মুহূর্ত সুন্দর হবে। একজন পজিটিভ চিন্তাশীল সর্বদাই আনন্দ উপভোগ করবে। তার মানসিকতার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারবে শান্তির পথে, সমৃদ্ধির পথে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সহজ কর, কঠিন কোরো না, শান্তি প্রদান কর, বিদ্বেষ সৃষ্টি কোরো না।’ (বুখারি)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,ধূসর আফ্রিকার আলোকিত মুখ আল কিসওয়ানি,ইসলাম ধর্ম,"আফ্রিকা মহাদেশকে মনে করা হয় আধুনিক পৃথিবীর সবচেয়ে পশ্চাৎপদ অঞ্চল। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগেনি এর বহু অঞ্চলে। তবু আফ্রিকার বহু বিজ্ঞানী আধুনিক জ্ঞান ও বিজ্ঞানে কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন। তাঁদেরই একজন উত্তর নাইজেরিয়ার মুসলিম বিজ্ঞানী মুহাম্মদ আল-ফুল্লানি আল কিসওয়ানি।তিনি ছিলেন খ্রিস্টীয় অষ্টদশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তিনি আধুনিক নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কাতসিনায় ১৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে মিসরের কায়রোতে ইন্তেকাল করেন। তাঁর পুরো নাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ আল ফুল্লানি আল কিসওয়ানি।আল কিসওয়ানি কাতসিনার প্রাচীন ইসলামী বিদ্যাপীঠ ‘গোবারাউ মিনারেত’-এ লেখাপড়া করেন।লেখাপড়া শেষে এখানেই অধ্যাপনা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি মিসরের কায়রোতে স্থায়ী হন। ১৭৩২ খ্রিস্টাব্দে কায়রো থেকে তাঁর ‘এ ট্রিয়েটাইজ অন দ্য ম্যাজিক্যাল ইউজ অব দ্য লেটারস অব দ্য আলফাবেট’ শীর্ষক গবেষণা প্রকাশ পায়। এটা মূলত ১১ ক্রম পর্যন্ত ম্যাজিক্যাল স্কয়ার তৈরির পাণ্ডিত্যপূর্ণ গাণিতিক পাণ্ডুলিপি।পাঠকদের উৎসাহিত করতে তিনি লেখেন, ‘অজ্ঞতার কারণে হাল ছাড়বেন না। এটা শিল্পের নিয়মানুসারে প্রস্তুত করা হয়নি। এটা প্রেমিকের মতো। কঠোর ও অবিরাম অধ্যবসায় ছাড়া আপনি সাফল্যের আশা করতে পারেন না।’আলকিসওয়ানিগণিতের ম্যাজিক্যাল স্কয়ার নিয়ে গবেষণা করেন।ম্যাজিক বা ম্যাজিক্যাল স্কয়ার হলো নির্ধারিত দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের একটি বর্গক্ষেত্র, যার প্রতিটি সারি, কলাম ও তির্যক কোণের যোগফল সমান হবে। একইভাবে তিনি বিজোড় সংখ্যার ম্যাজিক্যাল স্কয়ার নিয়েও গবেষণা করেন এবং বিজোড় সংখ্যার ম্যাজিক্যাল স্কয়ার নির্মাণের সূত্র তৈরি করেন। মুহাম্মদ আল কিসওয়ানি নতুন ম্যাজিক স্কয়ার তৈরিতে জ্যামিতি ব্যবহার করেছিলেন। যেমন তিনি ‘তিন গুণ তিন’ একটি ম্যাজিক স্কয়ারের রূপান্তর ব্যবহার করে সাতটি নতুন ম্যাজিক স্কয়ার তৈরি করেন। যে রূপান্তরগুলোকে ডাইহেড্রাল গ্রুপ নামে পরিচিত। আল কিসওয়ানি ম্যাজিক্যাল ধ্রুবক বের করার সূত্র আবিষ্কার করেন। তা হলো n(n^2 + 1)/2। যেখানে এন ম্যাজিক স্কয়ারের সমান। মুহাম্মদ আল কিসওয়ানি কাতসিনার দান রাকো এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন, যা ছিল একটি বাণিজ্য নগরী। তিনি একটি ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ফলে তিনি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হন। মুহাম্মদ আল ওয়ালি আল বুরনাভি, মুহাম্মদ ফুদি, উসমান দান ফাদিয়ো, মুহাম্মদ আল বিন্দোর মতো খ্যাতিমান মুসলিম পণ্ডিতের কাছে তিনি পাঠ গ্রহণ করেন। ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি হজযাত্রায় বের হন। পশ্চিম আফ্রিকার তৎকালীন প্রচলন অনুসারে তারা প্রথমে কায়রোতে যাত্রা বিরতি দেন। মূলত এখানে হাজিরা হজের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি নিতেন। আল কিসওয়ানি কায়রো ও হিজাজ সফরের সময় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম পণ্ডিতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়ের সুযোগ পান। ১৭৩৩-৩৪ খ্রিস্টাব্দে হজ থেকে ফেরার সময় তিনি কায়রো থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং আল আজহার বিশ্ববিদ্যারয়ের নিকটবর্তী এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তাঁর কায়রোতে অবস্থানের উদ্দেশ্য ছিল গবেষণা ও লেখালেখিতে মনোযোগ দেওয়া। প্রথম চার বছরে তিনি ‘আল দুররুল মানজুম’, ‘বাহজাতুল আফাক’, ‘বুলুগুল আরব’ ও ‘দুরার আল ইয়াওকি’।আল কিসওয়ানি তাঁর পাণ্ডিত্যের জন্য অল্পদিনেই মিসরে পরিচিতি লাভ করেন। প্রখ্যাত মিসরীয় ইতিহাস গবেষক আবদুর রহমান আল জাবার্তির পিতা হাসান আল জাবার্তি ছিলেন আল কিসওয়ানির শিক্ষক। হাসান আল জাবার্তির বাড়িতেই ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪২ বছর। আল কিসওয়ানির গবেষণা কর্মগুলোর বেশির ভাগ কায়রোর আল আজহার পাঠাগার ও দারুল কুতুবে (জাতীয় গ্রন্থাগার) সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া মরক্কো, নাইজেরিয়া ও লন্ডনেও তাঁর কিছু গবেষণাকর্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য আরো কয়েকটি গবেষণাকর্ম হলো, আল মাওয়ালি ফি তারজামাতি মুহাম্মদ আল ওয়ালি, ইজালাতুল উবু আন ওয়াজহি আল-কুদ্দুস, কিতাবুদ দুর ওয়াল তিরয়াক ফি ইলমিল আওফাক এবং আল মুগনিল মাওয়াফি আন জামিয়িল কাওয়াফি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,মসজিদে নামাজ আদায়ে যেসব নির্দেশনা দিল ধর্ম মন্ত্রণালয়,ইসলাম ধর্ম,"করোনার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সারা দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আরোপিত বিধিনিষেধের আলোকে আজ বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা দেয়।মন্ত্রণালয়ের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ কাল থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে যে আদেশ জারি করে, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেবে বলে জানিয়েছিল। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখা, মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসা, প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে এবং সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে। অজুর সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিদের জায়নামাজ নিয়ে যেতে হবে। কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামায়াতে অংশগ্রহণ করা হতে বিরত থাকবেন। এ ছাড়া মসজিদের অজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। আর করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার নির্দেশনাও রয়েছে জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে। মসজিদের খতিব, ইমাম ও মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।এ ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাসনালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"দেশে ফিরলেন ৭৫ হাজার হাজি ",ইসলাম ধর্ম,"হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ৭৫ হাজার ৫২৪ জন হাজি। সর্বশেষ তথ্যানুসারে হজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১১১ জন বাংলাদেশি হাজি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে বুধবার (১৯ জুলাই) মারা গেছেন ২ জন হাজি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে জানা যায় এ তথ্য। সবশেষ হজ বুলেটিনে জানানো হয়, বুধবার রাত পর্যন্ত মোট ফিরতি ফ্লাইট সংখ্যা ১৯৭টি। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট ৮৮টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট ৭৬টি ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট ৩৩টি। এদিকে, এবার হজে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১১১ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮৬ ও নারী ২৫ জন। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মক্কায় ৯১, মদিনায় ৭, জেদ্দায় ১, মিনায় ৯, আরাফায় ২, মুজদালিফায় একজন মারা গেছেন। সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, সেখানেই তাদের দাফন করা হয়েছে। গত ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন হজ পালনে সৌদি আরব যান। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট গত ২ জুলাই শুরু হয় এবং শেষ হবে আগামী ২ আগস্ট।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,"তিনি ছিলেন সাহিবুল হিজরাতাইনের একজন ",ইসলাম ধর্ম,"সাহাবিদের মধ্যে যাঁরা হাবশা ও মদিনায় দুই জায়গাতেই হিজরত করেছিলেন, তাঁদের বলা হয় ‘সাহিবুল হিজরাতাইন’। হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) ছিলেন সাহিবুল হিজরাতাইনের একজন। হাবশা থেকে পরে তিনি ফিরে আসেন মক্কায়। তারপর হিজরত করেন মদিনায়। মদিনায় হিজরতের কিছুদিন পর তিনি এক আনসারি নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর একদিন তিনি রাসুল (সা.)–এর খিদমতে হাজির হলেন। তাঁর কাপড়ে হলুদের দাগ দেখে রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি বিয়ে করেছ?’ আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘বিয়েতে মোহর কত নির্ধারণ করেছ?’ তিনি বললেন, ‘কিছু সোনা।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘একটি ছাগল দিয়ে হলেও ওয়ালিমা করে নাও।’ (বুখারি) রাসুল (সা.)–এর নির্দেশে তিনি ওয়ালিমার দায়িত্ব সেরে নেন। ইসলামের জন্য অপরিসীম ত্যাগের জন্য যাঁরা পৃথিবীর জীবনেই জান্নাতের সুসংবাদ লাভ করেছেন, তাঁদের মধ্যে আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) অন্যতম। যৌবনের শুরুতেই ইসলাম গ্রহণ করে তিনি ইসলাম প্রচারে সর্বাত্মকভাবে নিয়োজিত হয়েছিলেন। ইসলামের সূচনালগ্নে ইসলাম গ্রহণকারী প্রত্যেককেই অবিশ্বাসীদের চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) হাবশায় হিজরত করেন। হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে সব যুদ্ধেই অংশ নিয়েছেন এবং সাহস ও দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। ইবনে হাজারের মতে, ওহুদ যুদ্ধে ইবনে আউফের শরীরের ৩১টি স্থানে আঘাত লেগেছিল। ষষ্ঠ হিজরির শাবান মাসে রাসুল (সা.) মদিনা থেকে প্রায় ৩০০ মাইল উত্তরে দুমাতুল জান্দালে একটি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়ে আবদুর রহমান (রা.)–কে তার দায়িত্ব দেন। যাত্রার আগে রাসুল (সা.) নিজ হাতে আবদুর রহমানের মাথার পাগড়ি খুলে একটি কালো পাগড়ি তাঁর মাথায় বেঁধে দেন। তারপর তাঁকে যুদ্ধের নীতি সম্পর্কে কিছু উপদেশ দিয়ে বিদায় জানান। রাসুল (সা.)–এর নবুয়তপ্রাপ্তির পর প্রথম পর্যায়ে ইসলাম গ্রহণ করে যাঁরা ‘সাবেকিনে আওয়ালিন’–এর বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত হয়েছিলেন, আবদুর রহমান (রা.) তাঁদের মধ্যে একজন। দারুল আরকামে রাসুল (সা.)–এর প্রশিক্ষণে তিনি ছিলেন নিয়মিত অংশগ্রহণকারী। আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) ছিলেন কোরআন ও হাদিসে পরিপূর্ণ জ্ঞানী, পরামর্শদানে বিজ্ঞ, বিচার ফয়সালার ক্ষেত্রে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং ফতোয়ায় অভিজ্ঞ। প্রথম তিন খলিফার খিলাফতকালে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খলিফাদের পরামর্শ দিয়ে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral দৈনিক ইনকিলাব,"এতিমদের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা ",ইসলাম ধর্ম,"এতিম একটি শব্দ, যা শুনলে হৃদয়ে ধাক্কা না দিয়ে পারে না। প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে দুঃখবোধ জাগ্রত হয়। পৃথিবীতে এমন কোন মানব সন্তান নেই, যে এই শব্দটাকে ভয় করে না। কোন পিতা মাতা চান না যে মহান রব তার ছেলে মেয়েকে অসহায় রেখে তাকে ডেকে নিয়ে যান। এতিম অনাথ হওয়ার চেয়ে বড় বেদনার বড় দুঃখের আর কিছু নাই। এই সময় বড় অসহায়ত্বের সময়, বড় নিঃসঙ্গতার সময়। এই সময়ের চেয়ে বড় অসহায়ত্বের সময় আর মানুষের জীবনে নেই। কারো মা বাবা মারা গেলে দুরের মানুষও ভাবতে থাকে এই এতিম বাচ্চাটির কী হবে? কে তাকে লালন পালন করবে? পিতা মাতা থাকলে একটি শিশু ভয় আর উদ্বেগহীন ভাবে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। পিতা মাতা তাকে সব সময় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখার চেষ্টা করেন। তার অসুখ বিসুখ, তার প্রয়োজন সকল ক্ষেত্রে পিতা মাতা তার সুযোগ সুবিধা সব কিছু দেখেন। কিন্তু একজন পিতা মাতাহীন শিশু সব কিছু নিজের কাধে নিয়ে চলতে হয়। অনেক সময় মা খাবার দিতে পারে না অথবা মা আবার বিয়ে করে অন্যের ঘর সংসার করেন। অনেক ক্ষেত্রে ঐ পিতা এতিমকে আশ্রয় দেয় না। দিলেও অনেক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তখন তার আশ্রয় হয় কোন এতিম খানায়, সরকারী শিশু নিবাসে। এই এতিমের কষ্ট যে কত তা কে বুঝতে পারে? সে ছাড়া এবং তার মত পিতা মাতাহীন ছাড়া আর কেউ তার এই কষ্ট বুঝতে পারবে না। বুঝতে সক্ষম হবে না। মহান আল্লাহ কোরআনুল কারীমের ২২ টি আয়াতে ২২ বার ইয়াতিম শব্দটি এক বচন বা বহুবচন অবস্থায় বর্ণনা করেছেন। এই সকল আয়াতে কারীমায় এতিমদের মর্যাদা, এতিমদদের অবস্থা, খোদ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এতিম অবস্থার বর্ণনা, এতিমদের অধিকার, এতিমদের অধিকার হরণের ভয়াবহতা বর্ণনা করেছেন। আমাদের প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রিয় মা হারা বাবা হারা অসহায় এতিমদের জন্য এক রহমত। আমার প্রিয় নবী নিজের এতিম ছিলেন। যখন তিনি মায়ের গর্ভে। আগত সন্তানকে নিয়ে মা বাবার মনে কত আনন্দ, কত স্বপ্ন! আবার আসছেন কে রাহমাতুল্লিল আলামীন। তারা জানেন না, তাদের ঘরে পৃথিবী উজ্জ্বল করে কার আগমন বার্তা শোনা যায়। কিন্তু মহান রবের পক্ষ থেকে আনন্দের ঝিলিক অবশ্যই তাদের অন্তরকে আলোড়িত করেছে। রাসুল সাল্লামের মাতৃগর্ভে থাকাকালে আমিনার স্বপ্ন তাদেরকে এই ইঙ্গিত দিয়েছিল। রাসুল সাল্লাম মাতৃগর্ভে থাকাকালে পিতা আব্দুল্লাহ ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া গমন করেন। সফরকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফিরতি পথে বেশি অসুস্থতার কারনে পিতা আব্দুল মোত্তালিবের নানার বাড়ি বনি আদি বিন নাজ্জারের নিকট মদিনাতেই থেকে যান। কাফেলা চলে আসার কিছু দিন পর তিনি সেখানে মারা যান। আব্দুল মোত্তালিব বড় ছেলে হারিসকে মদিনায় পাঠালে এই খবর জানতে পারেন। আমার প্রিয় রাসুল জন্মের আগেই এতিম হয়ে গেছেন। ছয় বছর বয়সে মা আমিনা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে মদিনায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। সাথে এই এরাদাও রাখেন, যে তিনি তার স্বামীর কবর, ছেলে তার বাবার করব যেয়ারত করে আসবে। ফিরতি পথে মক্কা মদিনার মাঝখানে আবওয়া নামাক স্থানে অসুস্থ হওয় মারা যান। আরো দুই বছর পর প্রিয় দাদাকেও হারিয়ে ফেলেন। কত হৃদয় বিদারক ঘটনা। কোন পাষান হৃদয়ও কি আফসোস না করে পারে? আমার প্রিয় রাসুলের উপর দিয়ে খুব ছোট্ট কালেই এই ঝড়গুলো একটার পর একটা বয়ে গেছে। মহান রব তাঁকে এই ভাবে সকল ছায়া থেকে ফারাক করে একমাত্র তাঁর ছায়ায় আশ্রয় দিয়েছেন। আমার প্রিয় রাসুল এতিমদের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত সংবেদনশীল। সাহল ইবনে সাদ রাঃ বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি এবং এতিমদের লালন পালনকারী জান্নাতে এমন ভাবে থাকব, এই বলে তিনি তাঁর শাহাদাত আঙ্গুল ও তর্জনী আঙ্গুল একসাথে মিলালেন। বুখারী। এতিমের মাথায় হাত বুলানোর কত বরকত, এতিমকে একটু আদর সোহাগ দেওয়া তার খোজ খবর নেওয়া কত মর্তবা। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট আসল, এসে বলল হে আল্লাহর রাসুল আমার হৃদয় খুব কঠিন, আমি কি করলে আমার হৃদয় নরম কোমল হবে। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি এতিমের মাথায় হাত রাখ আর মিসকিনকে খাবার দাও। (আত্তারগীব ওয়াত্তাহরীব)। এই দুই আমল হৃদয়ের কঠিন্য দুর করে দেয়। মহান আল্লাহ কোরআনুল কারীমের সুরা নিসার ১০ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন, যারা এতিমদের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষন করে, তারা নিজেদের পেট আগুন দ্বারা পূর্ণ করছে। খুব তাড়াতাড়ি তারা আগুনে প্রবেশ করবে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হে আল্লার আমি দু প্রকার দুর্বলের হক নষ্ট করাকে হারাম করেছি, এতিম ও নারী। ইবনে মাজাহ। বাবা মারা যাওযার পর যে মা সন্তানদের দিকে চেয়ে আর বিয়ে করেনি, সে মায়ের মর্যাদা নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি ঐ ব্যক্তি যার জন্য সর্ব প্রথম জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হবে। তবে একজন মহিলা আমার আগেই সেখানে পৌছে যাবে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করব তুমি কে? তোমার কী হয়েছে? তখন মহিলা জবাব দেবে, আমি ঐ মহিলা যার স্বামীর মৃত্যুর পর শুধু সন্তানদের লালন পালন করার জন্য দ্বিতীয় বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া থেকে বিরত ছিলাম। (আবু ইয়ালা)। এতিমের দেখভাল কারীরা সম্পর্কে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, বিধবা, এতিম ও গরিবের সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে মুজাহিদের সমতুল্য অথবা তার মর্যাদা সেই রাত জাগরণকারীর (নামাজীর) মতো, যে কখনো ক্লান্ত হয় না অথবা তার মর্যাদা সেই রোজাদারের মতো, যে কখনো ইফতার (রোজা ভঙ্গ) করে না। (মুসলিম)। আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুসলিমদের ঘরসমূহের মধ্যে যে ঘরে ইয়াতীম থাকে এবং তার সাথে সদয় ব্যবহার করা হয়, সেই ঘরই সর্বোত্তম। পক্ষান্তর মুসলিমদের ঘরসমূহের মধ্যে যে ঘরে ইয়াতীম থাকে এবং তার সাথে নির্দয় ব্যবহার করা হয়, সেই ঘরই সর্বাধিক নিকৃষ্ট। (ইবনে মাজাহ)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন ‘যে ব্যক্তি কোনো এতিমকে আপন মাতা-পিতার সঙ্গে নিজেদের (পারিবারিক) খাবারের আয়োজনে বসায় এবং তাকে এই পরিমা খাবার দেয় যে, সে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করে, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমাদ)। আল্লাহ তায়ালা সুরা মাাউনে এতিমদের সাথে রূঢ় আচরণকারীকে লক্ষ করে রাসুল্লাহ সা. কে বলেন, আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচার দিবসকে মিথ্যা বলে? সে তো সেই, যে এতিমকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয় এবং মিসকিনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না। (সুরা মাউন)। আল্লাহতে বিশ্বাসী, আখেরাতে বিশ্বাসী, প্রিয় রাসুল সাঃ কে ভালবাসার দাবীকারী কেউ এতিমের সাথে খারাপ আচরণ করতে পারে না। এতিমকতে ভালবাসা তার ইমানের দাবী। মহান রব আমাদেরকে এতিমদের ভালবাসার তাওফিক দিন। জান্নাতে আমার প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশে থাকার তাওফিক দিন। আমীন। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,নামাজে কাতার সোজা রাখার রহস্য কী,ইসলাম ধর্ম,"নামাজের মাঝে কাতার সোজা করার গুরুত্ব অনেক বেশি। বিভিন্ন হাদিসে এর গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। নামাজের মাঝে কাতার সোজা করার অর্থ হচ্ছে, সব মুসল্লি একজন আরেকজনের বরাবরই দাঁড়াবে, কেউ কারো থেকে আগ-পিছ হবে না। দুই মুসল্লির মাঝে কোনো খালি জায়গা থাকবে না। দুজনের মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না। কাঁধ বরাবর কাঁধ ও পায়ের গোড়ালি সমান রেখে নামাজে দাঁড়াবে। কাতারের প্রভাব সমাজে কাতার সোজা করার প্রভাব সমাজে ফুটে ওঠে। সুন্দর সমাজ গঠন করার ক্ষেত্রে এর অসামান্য অবদান রয়েছে। যে সমাজ নামাজের কাতারের প্রতি বেশি যত্নবান হবে সে সমাজ তত সুন্দর ও সুসংহত থাকবে। নোমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের (নামাজের) কাতারগুলো সোজা করে দিতেন, মনে হতো তিনি যেন কামানের কাঠ সোজা করছেন। যতক্ষণ না বুঝতে পারতেন যে আমরা তার থেকে পুরোপুরি বিষয়টি বুঝতে পেরেছি। অতঃপর তিনি স্বস্থানে দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলতে যাবেন, এমন সময় দেখলেন এক ব্যক্তি কাতার থেকে সামনে এগিয়ে আছে, তখন তিনি বলেন, আল্লাহর বান্দাগণ তোমাদের লাইন সোজা কোরো, অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করে দেবেন। (মুসলিম, হাদিস : ৮৬৫) কাতারের মাঝে শয়তানের অনুপ্রবেশ যারা কাতারের মাঝখানে ফাঁকা রেখে নামাজ আদায় করে তাদের শয়তান খুব সহজেই ধোঁকা দিতে সক্ষম হয়। কারণ শয়তান এই ফাঁকা জায়গায় অবস্থান করে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, তোমরা কাতারে পরস্পর মিশে দাঁড়াও। কাতারসমূহকে পরস্পর নিকটবর্তী রাখো এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও। যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ তাঁর শপথ! আমি শয়তানকে দেখছি ছোট ছোট বকরির মতো কাতারের মধ্যে প্রবেশ করছে। (নাসায়ি, হাদিস : ৮১৫) যেভাবে কাতার সোজা করবেন এক. ইমাম সাহেব মুসল্লিদের উদ্দেশে ঘোষণা করবেন কাতার সোজা করার জন্য। এবং কাতার পূর্ণরূপে সোজা হওয়ার আগ পর্যন্ত নামাজ আরম্ভ করবেন না। হাদিসে এসেছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নামাজের ইকামত হচ্ছে, এমন সময় আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের দিকে মুখ করে তাকালেন এবং বলেন, তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নাও আর মিলে দাঁড়াও। কেননা, আমি আমার পেছনে তোমাদের দেখতে পাই। ’ (বুখারি, হাদিস : ৭১৯) দুই. যারা চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে যদি দাঁড়াতে সক্ষম হয় সে ক্ষেত্রে চেয়ারকে পেছনে রেখে কাতার বরাবর দাঁড়াবে। যখন সেজদায় যাবে তখন চেয়ারে বসে যাবে। আর যদি শুরু থেকেই চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে তাহলে চেয়ার কাতার বরাবর করে দাঁড়াবে। তিন. মাঝখানে কোনো খালি জায়গা রাখবে না। পায়ের গোড়ালি সমান করে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতার সোজা করবে। কাতার সোজা করার রহস্য ১. ফেরেশতাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা। কারণ নামাজ আদায়ের সময় ফেরেশতাগণও এভাবে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়। জাবের ইবনে সামুরাহ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ফেরেশতাগণ যেরূপ তাদের প্রতিপালকের কাছে কাতারবদ্ধ হয়ে থাকে তোমরা কি সেরূপ কাতারবদ্ধ হবে না? আমরা বললাম, ফেরেশতাগণ তাদের প্রতিপালকের কাছে কিরূপে কাতারবদ্ধ হয়? তিনি বলেন, সর্বাগ্রে তারা প্রথম কাতার পূর্ণ করে, তারপর পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কাতারগুলো এবং তারা কাতারে পরস্পর মিলে মিলে দাঁড়ায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৬১) ২. আল্লাহ তাআলার হুকুম আদায়ের গুরুত্ব ফুটে ওঠে এভাবে দাঁড়ানোর মাধ্যমে। ৩. কাতার সোজা করা মুসলমানদের একে অপরের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় ও মজবুত করে দেয়। নামাজের মাঝে ছোট-বড় যত করণীয় রয়েছে কোনোটাই অযথা দেওয়া হয়নি। পায়ের আঙুল মিলিয়ে রাখা এবং পৃথক রাখা, নামাজের মাঝে দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার জায়গায় স্থির রাখা, রুকু অবস্থায় পায়ের ওপর এবং সেজদা অবস্থায় নাকের ওপর রাখা; সবই হচ্ছে নামাজের মাঝে খুশুখুজু পূর্ণরূপে আসার জন্য। আর যখন কোনো ব্যক্তি যখন নামাজের যাবতীয় হুকুম-আহকাম যত্ন সহকারে আদায় করবে, তখনই তার নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হবে; যে নামাজ দুশ্চিন্তা, বিরক্তি, শয়তানি কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা থেকে আপনাকে নিয়ে যাবে স্রষ্টার প্রেমের বাগানে আর সৌভাগ্যের শীর্ষদেশে। আর তখনই উভয় জাহানের সফলতা আমাদের পদচুম্বন করবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,ফিলিপাইনে ভার্চুয়াল শরিয়াহ আদালতের অনুমোদন,ইসলাম ধর্ম,"ফিলিপাইনে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে সর্বোচ্চ মানের আইনি সুবিধা দিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শরিয়াহ আদালত পরিচালনার প্রক্রিয়া চলছে। গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফিলিপাইনের আইন সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবিত বিলটি তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ে পাস হয়। এতে মুসলিম ট্রাইব্যুনালের আদালত পরিষেবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাওয়া যাবে এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে প্রস্তাবিত বিলটি আইন হিসেবে পাস হওয়ার আগে ফিলিপাইনের সিনেট থেকেও অনুমোদন পেতে হবে।শরিয়াহ আদালতের সহজীকরণের এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিপাইনের মুসলিম আইন বিষয়ক সহায়তাকারী সংস্থা দ্য ন্যাশনাল কমিশন অব মুসলিম ফিলিপিনো (এনসিএমএফ)। যেসব অঞ্চলে সরাসরি কোনো শরিয়াহ আদালত নেই সেখানকার মুসলিমদের এই সংস্থাটি প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার অনুমোদন পাবে। এনসিএমএফের মুখপাত্র ইউসুফ মানদো বলেন, ‘শরিয়াহ আদালতের ইতিবাচক উন্নয়নকে এনসিএমএফ সাধুবাদ জানায়। আমাদের অধিকাংশ ক্লায়েন্টের আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন।শরিয়াহ আদালত পরিষেবার ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া তাদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করবে, যারা এমন স্থানে বসবাস করে যেখানে কোনো শরিয়াহ আদালত নেই। এটি সবার জন্য ন্যায়বিচারের সমান সুযোগ তৈরি করবে। এনসিএমএফ নিজস্ব আইনবিষয়ক ব্যুরোর মাধ্যমে বিবাহ, জন্ম ও মৃত্যু সনদসহ মুসলিমদের প্রয়োজনীয় নথিপত্রের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফরম তৈরি করবে। এ ক্ষেত্রে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সমন্বয় থাকবে ’মানডো বলেন, ‘আমরা কংগ্রেসকে বিশেষ করে বিলটির লেখকদের ধন্যবাদ জানাই। তারা ফিলিপাইনের মুসলিমদের অধিকার সুরক্ষায় আমাদের আইন বিষয়ক ব্যুরোকে সুদৃঢ়করণে সহযোগিতা করেছে। এই পর্যায়ে আমরা অপেক্ষায় রয়েছি, বিলটি সিনেটের পক্ষ থেকে পাস হবে এবং আইন হিসেবে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হবে।’ফিলিপাইনে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১১০ মিলিয়নের মধ্যে ৬ শতাংশের বেশি মুসলিম রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দেশটির দক্ষিণে মিন্দানাও ও সুলু দ্বীপপুঞ্জ এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ পালাওয়ানে বাস করে।১৯৭৭ সাল থেকে ফিলিপাইনের মুসলিমদের জন্য রয়েছে মুসলিম শরিয়াহ আদালত। সেই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রেসিডেন্ট ফারদিনান্দ মারকোস সুপ্রিম কোর্টের আওতায় এর অনুমোদন দেন। বর্তমানে দেশটির পাঁচটি জেলায় শরিয়াহ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত আছে। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"মানুষের অপকর্মে পরিবেশ বিপর্যয় ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহ তাআলা সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সুব্যবস্থা রেখেছেন। আল্লাহর সৃষ্টি পশু-পাখি, গাছপালা, নদী-নালা, সাগর-মহাসাগর, পাহাড়-পর্বত, বনজঙ্গল, আগুন, পানি ও বায়ু—এ সবই মানুষের উপকারী ও পরিবেশবান্ধব। এদের মহান সৃষ্টিকর্তা যথাস্থানে স্থাপন করে রেখেছেন। মানুষের চারপাশে পরিবেশের যেসব উপায় উপকরণ রয়েছে যেমন গাছ, মাটি, পানি, বাতাস, নদ-নদী, পথঘাট-মাঠ, আকাশ-মহাকাশ, গ্রহ-নক্ষত্র—সবই মনোরম প্রকৃতির অজস্র নিয়ামতের নিদর্শন। সৃষ্টিকর্তার এসব নিয়ামতরাজির যথাযথ ব্যবহারবিধি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ প্রদত্ত জীবিকা থেকে তোমরা পানাহার করো এবং দুষ্কৃতকারীরূপে পৃথিবীতে অনর্থক বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়াবে না।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৬০) কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব নিয়ামতের অপব্যবহার ও অবাঞ্ছিত পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ সীমা লঙ্ঘন করে প্রতিনিয়ত পরিবেশকে দূষিত করে চলেছে। মনুষ্য সৃষ্ট পরিবেশদূষণের কারণের মধ্যে পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, বৃক্ষনিধন, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস অন্যতম প্রধান। এসব প্রাকৃতিক পরিবেশগত বিষয়ে ইসলামি নীতিমালা জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব মানুষেরই অনুসরণ করা দরকার। ইসলামি জীবনব্যবস্থায় মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশ উন্নয়নের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে মানুষ নিজের ব্যক্তিস্বার্থে মজে ও জীবনের উন্নয়নের জন্য পরিবেশের ওপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। মানুষের অপতৎপরতা, বিশেষ করে বিজ্ঞানের উন্নতির পর থেকে দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ অজস্র ছোট-বড় প্রাণী, গাছগাছালি ও প্রাকৃতিক সম্পদের বিনাশ সাধন করেছে। এসবের অবশ্যম্ভাবী ক্ষতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। কারণ, আল্লাহ তাআলা ভূপৃষ্ঠে পরিমিতরূপে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন আর এতে রেখেছেন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার মানদণ্ড। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে পরিমিত করেছেন যথাযথ অনুপাতে।’ (সূরা আল-ফুরকান, আয়াত : ০২) মানুষ যখন সৃষ্টিগুলোকে তাদের কার্যকর স্থান থেকে লোভের বশবর্তী হয়ে অন্যায়ভাবে স্থানচ্যুত করে বা কোনো অপকর্মে ব্যবহার করে, তখনই পৃথিবীতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসে। এর প্রমাণ বর্তমানে পৃথিবীর তাপমাত্রা অধিক পরিমাণে বাড়ছে, জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। পৃথিবীর সব অঞ্চলেই খরা, বন্যা ও পশু-পাখির বিলুপ্তি ঘটছে। একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জনের জন্য নির্বিচারে বনজঙ্গলের কাঠ কেটে বিক্রি করছে এবং পাহাড় কেটে ধ্বংস করছে। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করছে এবং এতে জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে; এমনকি পরিবেশ বিপর্যয়ে শত শত লোক মৃত্যুবরণ করছে। মানুষকে যেহেতু পরিবেশে বাস করতেই হবে, সেহেতু তাদের উচিত নিজেদের অস্তিত্ব ও স্থায়িত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পরিবেশের মৌলিক উপাদানগুলো যথাযথ সংরক্ষণ করা। পরিবেশ বিপর্যয় রোধে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রোগ নিরাময়ে বনায়নের ভূমিকা অনন্য। যদি জানা যায় যে আগামীকাল কিয়ামত, তথাপিও আজ যদি কারও হাতে কোনো বীজ বা চারা গাছ থাকে, তবে তা বপন করে দিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ আমাদের বনখেকো বন কর্মকর্তারা যে কী পরিমাণে বনভূমি উজাড় করেছেন, তার হিসাব করলে উদ্বিগ্ন হতে হয়। এখনো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনাঞ্চল ধ্বংস করে চলেছেন। অথচ অনর্থক গাছ কাটা ও বন উজাড় করাকে ইসলামে শরিয়ত গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাস্তাঘাটে বা মাঠে-ময়দানে যেসব বৃক্ষমালা ছায়া দেয়, যেখানে মানুষ বা পশু বিশ্রাম নেয়, এমন গাছকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেটে ফেলা অত্যন্ত জঘন্য অপকর্ম। যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে তার কোনো ফায়দা ছাড়া গাছ নিধন করেছে, যার নিচে পথিক ও পশু আশ্রয় নেয়, তার শাস্তি সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে অকারণে একটি কুলগাছও কেটেছে, তাকে আল্লাহ মাথা নিচু করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (আবু দাউদ) কিন্তু মানবসভ্যতার উন্নয়ন, প্রগতি ও উৎকর্ষের নামে মানুষ নানা কালে নানা কারণে পরিবেশকে বিপর্যস্ত করেছে। মানুষের সঙ্গে পরিবেশের যে আন্তসম্পর্ক ইসলাম স্থাপন করেছিল, তা-ও চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে। সে জন্যই পরিবেশ-সংকটে মানব সৃষ্ট কারণগুলোকে আজ ব্যাপকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, মানুষের নৈতিক অধঃপতনই পরিবেশ-সংকটের বড় কারণ। পৃথিবীতে যত প্রকারের দুর্যোগ পতিত হচ্ছে, এসবেরই হোতা মানুষ। মানুষই অর্জন করে সব ধরনের বিপর্যয়। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে মানুষের অপকর্মের কারণেই। তাই পবিত্র কোরআনে সতর্ক করা হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, ফলে তাদেরকে তাদের কোনো কোনো অপকর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সূরা আর-রুম, আয়াত: ৪১) পরিবেশ নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা জাতির সম্পদ নয়, পরিবেশ সবার সম্পদ এবং এর বিপর্যয় নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং মানবজাতির বিপর্যয় হিসেবে গণ্য হয়। তাই পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। তা না হলে মানুষকে হাশরের ময়দানে আল্লাহর দরবারে আসামির কাঠগড়ায় জবাবদিহির জন্য দাঁড়াতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ গঠনে বিশ্বব্যাপী পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে হলে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়ন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ধরিত্রী সম্মেলনে গৃহীত পদক্ষেপের যথাযথ বাস্তবায়ন পৃথিবীকে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই দেশের মানুষের উচিত যে কাজে জাতির ক্ষতি হয়, দেশের সর্বনাশ হয়, তা থেকে অবশ্যই বিরত থাকা। মানুষের অন্যায় অপকর্ম থেকে ফিরে এসে পৃথিবীকে বিপদমুক্ত ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা একান্ত বাঞ্ছনীয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,ইসলামে পরিবেশ সুরক্ষা ও পরিচ্ছন্নতা,ইসলাম ধর্ম,"মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে তাঁর ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, বিশেষ উপলক্ষে তাকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। তারও আগে পৃথিবীকে মানব বসবাসের উপযোগী করে তৈরি করেছেন। মানব জাতির সব চাহিদা পূরণের যাবতীয় আয়োজন করে তিনি যে উপযুক্ত প্রতিবেশ সাজিয়েছেন, তা হলো আমাদের প্রকৃতি। পরিবেশ বলতে আমরা বুঝি আমাদের চারপাশের অবস্থা। এই পরিমণ্ডলে রয়েছে গাছপালা, নদ-নদী, ফুল-ফল, পশু-পাখিসহ নানান আয়োজন। এগুলো নৈসর্গিক বা প্রাকৃতিক পরিবেশের অংশ। এ ছাড়া মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে খোদার দান প্রকৃতির মধ্যে যে ইতিবাচক কল্যাণকর পরিবর্তন সৃষ্টি করে, তা হলো সামাজিক পরিবেশ। যেমন: রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, কলকারখানা ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে, সামাজিক পরিবেশ বিনির্মাণে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না, যা প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব। সে হিসেবে মানুষের চলাফেরা, আচার-ব্যবহার, আখলাক-চরিত্র, রুচিবোধ, মননশীলতা—সবকিছু শ্রেষ্ঠ হবে, এটাই স্বাভাবিক। একই সঙ্গে মানুষ সামাজিক জীব, মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে; তাই মানুষের নিজেদের সুরক্ষার জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, পাশাপাশি জীবনকে আরও সুন্দর ও উপভোগ্য করার জন্য সামাজিক পরিবেশের উন্নতি করতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা এবং সুন্দর পরিবেশ তৈরির জন্য যুগে যুগে আল্লাহপাক নবী-রাসুলদেরও নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি হজরত নূহ (আ.)-এর পূর্ব পর্যন্ত নবীদের প্রধান কাজ ছিল মানব বসবাসের উপযোগী সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা। ইসলামের উদ্দেশ্যও হলো ‘দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তি’। আব-হাওয়া বা জল-বায়ু আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত আমাদের প্রকৃতির প্রধান ও শ্রেষ্ঠ অংশ হলো ‘আব-হাওয়া’ তথা পানি ও বাতাস। এ দুটি উপাদান আমাদের প্রতিনিয়ত প্রয়োজন। তাই পানি ও বাতাস দূষণমুক্ত রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও সামাজিক কর্তব্য। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য, এ গ্রহের নিরাপত্তার জন্য আমাদের জল-বায়ু সংরক্ষণ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি তোমাদের মৃত্তিকা হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাতেই তোমাদের আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন।’ (১১ সূরা হুদ, আয়াত: ৬১)। পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে পৃথিবীতে আবাদ হতে পারে। পরিবেশ যখন সংরক্ষিত থাকবে না, তখন পৃথিবীতে আবাদ হবে না এবং বসবাসের উপযোগী থাকবে না। পৃথিবী বাসযোগ্য থাকার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তু হলো পানি। আল্লাহ তাআলা পানি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের ষাট জায়গায় বলেছেন। পানি ছাড়া আমাদের জীবন অচল, তাই বলা হয় পানির অপর নাম জীবন। পানি আল্লাহর দেওয়া এক শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। সুতরাং এই নেয়ামতের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রাণবান সবকিছু পানি হতে সৃষ্টি করেছি।’ (২১ সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৩০)। পানি হচ্ছে প্রাণ সৃষ্টির মূল উপাদান, এই উপাদান সংরক্ষণ করার জন্য কোরআনে কারিমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা পরিবেশ বলতে আমরা সাধারণত সুন্দর পরিবেশ, উন্নত পরিবেশ এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বুঝি। অর্থাৎ পরিবেশের সঙ্গে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যেমন পানি হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান উপাদান। পানি ছাড়া গাছপালা, বন-বনানী, নদী-নালা, পশু-পাখি কল্পনাও করা যায় না। পানির অস্তিত্ব প্রাণীর অস্তিত্বের পূর্বশর্ত। সেই পানি কিন্তু সবচেয়ে বেশি পবিত্র, অর্থাৎ পানি নিজে পবিত্র এবং অন্যকেও পবিত্র করতে সক্ষম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তিনিই (মহান আল্লাহ) স্বীয় অনুগ্রহের প্রাক্কালে সুবার্তাবাহী বায়ু প্রেরণ করেন এবং আমি (আল্লাহ) আকাশ হতে পবিত্র (ও পবিত্রকারী) বারি বর্ষণ করি। যা দ্বারা আমি মৃত ভূমিকে জীবিত করি এবং আমার সৃষ্টির বহু জীবজন্তু ও মানুষকে উহা পান করাই।’ (২৫ সূরা ফুরকান, আয়াত: ৪৮-৪৯)। পরিবেশদূষণ ও অপরিচ্ছন্নতা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুন্দর পরিবেশের প্রথম বৈশিষ্ট্য। তাই প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা পরিবেশকে দূষিত করবে না।’ পুকুরের পানি, নদীর পানি, আবদ্ধ জলাশয়ের পানি যেন দূষিত না হয়, সে জন্য প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘আবদ্ধ পানি ও জলাশয়ের পানিতে তোমরা প্রস্রাব করবে না। প্রস্রাব করে তোমরা পানিকে দূষিত করে সেখানে আবার গোসল করবে না।’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস: ৪২৪)। প্রতিটি মানুষের সুস্থতার জন্য পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানির প্রয়োজন সর্বাগ্রে। তাই মহানবী (সা.) পানিকে পবিত্র রাখতে এবং পানিকে সংরক্ষণ করতে বলেছেন; কোনোভাবেই যাতে পানি অপবিত্র ও দূষিত হতে না পারে। কারণ দূষিত পানির মাধ্যমে পানিবাহিত রোগ সৃষ্টি হতে পারে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘খবরদার! তোমরা পানির মধ্যে নিশ্বাস ত্যাগ করবে না বা ফুঁ দেবে না।’ (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ১৪১০)। এই হাদিসটিতে খাওয়ার পানির কথা বলা হয়েছে। কারণ মানুষের নিশ্বাসের সঙ্গে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়; যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পানির অপচয় সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা প্রয়োজনের অধিক পানি অপচয় করবে না। যদিও তোমরা বহমান নদীর তীরে থাকো।’ (বুখারি)। অতএব, আমাদের উচিত পানিকে দূষণমুক্ত রাখা এবং পানির অপচয় রোধ করা। পানির পাশাপাশি আরও যত প্রাকৃতিক সম্পদ আছে—সবকিছুর যথাযথ ব্যবহার, পরিচর্যা ও সংরক্ষণ করে আমরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা না করলে মানব সভ্যতায় নেমে আসবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের ফলে জলে ও স্থলে বিপর্যয় ঘটেছে।’ (৩০ সূরা রুম, আয়াত: ৪১)। আল্লাহ তাআলা চান মানুষ সুন্দর পরিবেশে পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করুক। সৈয়দ তানতাভী (র.) লিখেছেন, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের মধ্যে পাঁচ শতবার পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য উৎসাহিত করেছেন। পবিত্রতা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ব্যতীত সুন্দর পরিবেশ কল্পনা করা যায় না। প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ।’ (মিশকাত শরিফ, পৃষ্ঠা ৩৮)। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের উঠান-আঙিনা পরিচ্ছন্ন রাখো।’ প্রিয় নবী (সা.) আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা পবিত্র, তিনি পবিত্রতাকে ভালোবাসেন।’ এ ছাড়া কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদেরও ভালোবাসেন।’ (০২ সূরা বাকারা, আয়াত: ২২২)। পরিবেশ সুরক্ষা ইবাদত ঈদ আনন্দময় ইবাদত, ইবাদত মানে আনুগত্য; যার উদ্দেশ্য হলো নিজের ও অপরের কল্যাণ করা এবং কারও ক্ষতি না করা। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। নিজে ভালো থাকা এবং অন্যকে ভালো রাখা তথা সুখী হওয়া ও সুখী করাই হলো ঈদ উদ্যাপন। কারও ক্ষতি করে, কাউকে কষ্ট দিয়ে প্রকৃত সুখ বা আনন্দ লাভ করা যায় না। মহান ঈদুল আজহার পর এখন আমাদের সবার দায়িত্ব পরিবেশের সুরক্ষা করা। আমাদের কর্মকাণ্ড যেন পরিবেশের ক্ষতির কারণ না হয়। সবচেয়ে বেশি লক্ষ রাখতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি। বদ্ধ পুকুরে আবর্জনা ফেলা যাবে না। কোরবানির পশু (গরু-মহিষ, ভেড়া-ছাগল ইত্যাদি) যেখানে জবাই করা হয়েছিল, সেই জায়গাগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কোনোভাবেই যেন পানি ও বাতাস দূষিত না হয়। কারণ কোরবানি করা যেমন একটি ইবাদত, তেমনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং পরিবেশ সুন্দর রাখাও এর অংশ। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিবেশ সুরক্ষা করুন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার ও সুন্দর পরিবেশ গড়ার তাওফিক দিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,কোরআন পরিত্যাগকারীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি,ইসলাম ধর্ম,"সমাজের বহু মানুষ কোরআনচর্চাকে রমজান মাসের ভেতর সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে। তারা রমজান মাসে এক খতম বা দুই খতম কোরআন তিলাওয়াত করেন। কিন্তু সারা বছর কোরআন স্পর্শ করে দেখেন না। এটা কোরআন পরিত্যাগ করার নামান্তর। আর কোরআনচর্চায় অনীহা এবং কোরআন থেকে দূরে থাকার পরিণতি ভয়াবহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের কাছে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি। তার একটি হলো আল্লাহর কিতাব। তাতে আছে হিদায়াত ও আলো, যে এটাকে আঁকড়ে রাখবে সে হিদায়াতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আর যে এটা ছেড়ে দেবে সে পথ হারিয়ে ফেলবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬১১৯) কোরআন পরিত্যাগের অর্থ : মহানবী (সা.) কোরআন পরিত্যাগকারীদের ব্যাপারে অনুযোগ করে বলেছেন, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমার সম্প্রদায় তো এই কোরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে। ’ (সুরা : ফোরকান, আয়াত : ৩০) উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) লেখেন, ‘মক্কার কুরাইশরা কোরআন তিলাওয়াতের সময় শোরগোল ও হৈচৈ করত এবং তা শ্রবণ করত না—এটা কোরআন পরিত্যাগ। কোরআনের ওপর আমল ছেড়ে দেওয়া এবং তা মুখস্থ না করাও কোরআন পরিত্যাগ। কোরআনের প্রতি ঈমান ত্যাগ করা, তা সত্যায়ন না করা, কোরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা না করা, কোরআনের আদেশ ও নিষেধ অনুসরণ না করাও কোরআন পরিত্যাগ করা। কোরআনের পরিবর্তে কবিতা, গদ্য, গান, হাসি-কৌতুক, গালগল্প ইত্যাদির প্রতি ঝুঁকে যাওয়াও কোরআন পরিত্যাগ। ’ (তাফসিরে ইবনে কাসির) কোরআন পরিত্যাগকারীর প্রতি হুঁশিয়ারি : কোরআনের একাধিক আয়াতে কোরআন পরিত্যাগকারীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এক কিতাব, বিশদভাবে বিবৃত হয়েছে এর আয়াতগুলো, আরবি ভাষায় কোরআন, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। কিন্তু বেশির ভাগ লোক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সুতরাং তারা শুনবে না। ’ (সুরা: হা-মিম সাজদা, আয়াত : ৩-৪) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আমার কাছ থেকে তোমাকে দান করেছি উপদেশ। যে এটা (কোরআন) থেকে বিমুখ হবে সে কিয়ামতের দিন মহাভার বহন করবে। তাতে তারা স্থায়ী হবে এবং কিয়ামতের দিন এই বোঝা তাদের জন্য হবে কত মন্দ। ’ (সুরা: তাহা, আয়াত : ৯৯-১০১) কোরআন পরিত্যাগের নানা দিক : আল্লামা ইবনুল কায়্যিম ঝাওজি (রহ.) বলেন, কোরআন পরিত্যাগের নানা দিক আছে। তা হলো— ১. কোরআন শ্রবণ ও তার প্রতি ঈমান পরিত্যাগ করা। ২. কোরআনের হালাল ও হারাম সংক্রান্ত বিধানগুলো জানা ও তার ওপর আমল পরিহার করা। যদিও ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে এবং তার প্রতি বিশ্বাস রাখে। ৩. কোরআনকে আইনের উৎস হিসেবে গ্রহণ না করা এবং কোরআনের বিধানগুলোকে অর্থহীন মনে করা। ৪. কোরআন নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা ত্যাগ করা। ৫. আত্মার রোগের প্রতিকারে কোরআনি চিকিৎসা পরিত্যাগ করা। উল্লিখিত সব দিক নিম্নোক্ত আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। যদিও তার কোনো কোনোটি বেশি গুরুতর। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমার সম্প্রদায় তো এই কোরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে। ’ (সুরা ফোরকান, আয়াত : ৩০; আদ-দাউল মুনির আলাত-তাফসির : ৪/৩৯৬) মুমিনের করণীয় : কোরআন পরিত্যাগের পাপ থেকে বাঁচতে মুমিনের করণীয় হলো— ১. তিলাওয়াত করা : মহান আল্লাহ কোরআন তিলাওয়াতের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘তুমি আবৃত্তি কোরো কিতাব থেকে, যা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়। ’ (সুরা: আনকাবুত, আয়াত : ৪৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করো। কেননা কিয়ামতের দিন কোরআন তার ধারণকারীর জন্য সুপারিশ করবে। ’ (সহিহ মুসলিম, আয়াত : ৮০৪) ২. কোরআন শ্রবণ করা : কোরআন শ্রবণের ব্যাপারে কোরআনের নির্দেশনা হলো, ‘যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা শ্রবণ কোরো এবং চুপ থাকো। যেন তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হতে পারো। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২০৪) ৩. চিন্তা ও গবেষণা করা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক কল্যাণময় কিতাব, এটা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা গ্রহণ করে উপদেশ। ’ (সুরা: সাদ, আয়াত : ২৯) ৪. আমল করা : কোরআন মানবজাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। সুতরাং মুমিন শুধু তা পাঠ করবে না; বরং তার ওপর আমলও করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এই কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি, যা কল্যাণময়। সুতরাং তার অনুসরণ কোরো এবং সাবধান হও, তাহলে তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হবে। ’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৫৫) ৫. কোরআনের চিকিৎসা গ্রহণ : পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মানুষের আত্মিক ও শারীরিক রোগের আরোগ্য রেখেছেন। তাই কোরআনের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি অবতীর্ণ করি কোরআন, যা মুমিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমত। কিন্তু তা অবিচারকারীদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে। ’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮২) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন! তা হলো মুমিনদের জন্য সুপথ ও আরোগ্য স্বরূপ। ’ (সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৪৪) ৬. বিচার করা : ইসলামী রাষ্ট্রের আইনের প্রধান উৎস হবে কোরআন। কোরআনের আলোকেই পরিচালিত হবে মুসলিম সমাজের বিচারব্যবস্থা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তো তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি আল্লাহ তোমাকে যা জানিয়েছেন সে অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা করো এবং বিশ্বাস ভঙ্গকারীদের সমর্থনে তর্ক কোরো না। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০৫) আল্লাহ সবাইকে কোরআনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন ",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative প্রথম আলো,"হারুত-মারুত বাবেল শহরে অবতীর্ণ হয়েছিলেন ",ইসলাম ধর্ম,"হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার নাম। নবী সোলায়মান (আ.)–এর সময়ে ওই দুই ফেরেশতা বাবেল শহরে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। হারুত–মারুত কিছু লোককে জাদু শিখিয়েছিলেন। শেখানোর শর্ত ছিল, সেই জাদু কারও ওপর প্রয়োগ করা যাবে না। জাদুবিদ্যা যে আসলে মন্দ, সবাইকে এটা শেখানোর জন্যই তাঁরা এসেছিলেন। নবীরা মুজিজা দেখান। মুজিজা জাদু নয়। কোরআনে সুরা বাকারায় আছে ‘আর সোলায়মানের রাজত্বে শয়তানেরা যা আওড়াত তারা (সাবাবাসীরা) তা মেনে চলত। সোলায়মান অবিশ্বাস করেনি, বরং শয়তানেরাই অবিশ্বাস করেছিল। তারা মানুষকে শিক্ষা দিত (সেই) জাদু যা বাবেল শহরের দুই ফেরেশতা হারুত ও মারুতের ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল । তাই ‘আমরা তো (তোমাদের জন্য) ফিতনা (পরীক্ষাস্বরূপ)। তোমরা অবিশ্বাস কোরো না’—এই না বলে তারা কোনো মানুষকে শিক্ষা দিত না। এ-দুজনের কাছ থেকে তারা এখন বিষয় শিক্ষা করত, যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারত, তবু আল্লাহর নির্দেশ ছড়া কারও কোনো ক্ষতি তারা করতে পারত না। তারা যা শিক্ষা করত তা তাদের ক্ষতিসাধনই করত, আর কোনো উপকারে আসত না। আর তারা ভালো করেই জানত যে যে-কেউ তা কিনবে পরকালে তার কোনো অংশ নেই । আর যদি তারা জানত, তারা যার বিনিময়ে নিজেদের বিক্রি করেছিল তা কত নিকৃষ্ট! আর তারা যদি বিশ্বাস করত ও আল্লাহকে ভয় করত তবে নিশ্চয় তারা আল্লাহ কাছে ভালো পুরস্কারই পেত, জানত। যদি তারা জানত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১০২-৩) ইবনে কাসির তফসির লিখতে গিয়ে মন্তব্য করেন, এ ঘটনাগুলো সম্ভবত ইসরায়েলি কাহিনি থেকে এসেছে। ‘পাপ’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন: কহিলেন বিভু—তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ যে দুইজন যাক পৃথিবীতে, দেখুক কি ঘোর ধরণীর প্রলোভন! হারুত মারুত ফেরেশতাদের গৌরব রবি-শশী ধরার ধুলার অংশী হইল মানবের গৃহে পশি। কায়ায় কায়ায় মায়া বুলে হেথা ছায়ায় ছায়ায় ফাঁদ, কমল-দীঘিতে সাতশ হয়েছে এই আকাশের চাঁদ!’",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral ভোরের কাগজ,"এখনও নীরবে চলছে ধর্ম ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন ",অন্যান্য,"দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলছে। এই সহিংসতার মাত্রা হয়তো অতীতের মতো ভয়াবহ ছিল না, কিন্তু তা সত্ত্বেও যে সহিংসতা হয়েছে তা গণতান্ত্রিক ধারা ও মানবাধিকারের সঙ্গে যায় না। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে মামলা ও নির্যাতন বেশি হয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রচারণার সময় ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার ও হামলা শুরু হয়েছিল, এখনও তা নীরবে চলছে। ‘নির্বাচন, সহিংসতা মানবাধিকার: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় উত্থাপিত লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করা হয়।‌ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত এই সভা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে। সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার। পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক শাহরিয়ার কবির, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিদের একজন অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর প্রমুখ । লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এবারের নির্বাচনে প্রকৃতপক্ষে কোনো বিরোধী দল অংশ নেয়নি। আমরা আশা করেছিলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াতে ইসলামি নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচনে ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা সেভাবে আসবে না। তারপরও আমরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। বাস্তবতা হচ্ছে, এই নির্বাচনও বহু স্থানে বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিশ্চিন্তে ভোট দিতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টির কোনো কোনো প্রার্থী সরাসরি হিন্দু সম্প্রদায়কে হুমকি দিয়েছেন, ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বলেছেন। পরে বাড়িঘরে হামলা হয়েছে, লুটপাট হয়েছে, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। কিন্তু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিতরা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। দুঃখজনক হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের ধারার মধ্যেও তাদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। তারা কৌশলে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করার ষড়যন্ত্র করছে। এই অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান শক্তি আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ । অন্যথায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে, অন্ধকারে পথ হারাবে। মতবিনিময় সভায় বিদ্যমান সমস্যা থেকে উত্তরণের সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে নিতে এবং সে অনুযায়ী সমাজ পরিচালিত করার প্রত্যাশা রাখেন অংশগ্রহণকারীরা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,এবার ফিতরা কত?,ইসলাম ধর্ম,"এ বছর রোজার ঈদে বাংলাদেশে মুসলমানদের জন্য জনপ্রতি ফিতরার সর্বনিম্ন হার ১১৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। সর্বোচ্চ ফিতরা হবে ২,৯৭০ টাকা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের সাদাকাতুল ফিতরের (ফিতরা) এ হার নির্ধারণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন। এতে ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের ফিতরার হার জানান। ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী, প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ঈদুল ফিতরে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। নাবালক ছেলেমেয়ের পক্ষ থেকে বাবাকে এই ফিতরা দিতে হয়। আর তা দিতে হয় ঈদুল ফিতরের নামাজের আগেই। মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী গম, আটা, খেজুর, কিসমিস, পনির ও যবের যেকোনো একটি পণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ বা এর বাজারমূল্য ফিতরা হিসেবে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করতে পারবেন। আটার ক্ষেত্রে এর পরিমাণ এক কেজি ৬৫০ গ্রাম। খেজুর, কিসমিস, পনির ও যবের ক্ষেত্রে তিন কেজি ৩০০ গ্রাম মাধ্যমে ফিতরা আদায় করতে হয়। এসব পণ্যের বাজারমূল্য হিসাব করে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের সব বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা, যব, খেজুর, কিসমিস ও পনিরের সর্বোচ্চ বাজার মূল্যের ভিত্তিতে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,"গৌরনদীতে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি, গ্রেপ্তার ১",অন্যান্য,"কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় সংখ্যালঘু এক তরুণের ধর্ম নিয়ে অশালীন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার রাতে একটি মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।এদিকে ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে উসকানি দেওয়া ও মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আজ শনিবার গৌরনদী মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করায় মহানন্দ বাড়ৈ (১৮) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের কাজিরপাড় গ্রামের বাড়ৈ বাড়িতে সার্বজনীন দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় হিন্দু–মুসলিম নারী ও শিশু শান্তিপূর্ণভাবে বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন। এ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই গ্রামের মহানন্দ বাড়ৈ ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট দেন। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়লে অনুষ্ঠানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন মহানন্দকে মারধর করে আটক করেন। এ সময় কিছু তরুণ মণ্ডপে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করেন।গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ায় স্থানীয় সুমন খান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ ছাড়া মন্দিরে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় ধুরয়াইল সর্বজনীন হরিচাঁদ পূজামণ্ডপ কমিটির সহসভাপতি সুভাষ বৈদ্য বাদী হয়ে অপর একটি মামলা করেছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,কাবার গিলাফে এক বাংলাদেশির আলপনা,ইসলাম ধর্ম,"প্রতিবছর একবার পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়। রেশমের সুতায় তৈরি উন্নতমানের এ কাপড়ে লেখা থাকে কোরআনের অনেকগুলো আয়াত। আনন্দের বিষয় হলো- গিলাফের এসব লিখনিতে একজন বাংলাদেশির হাতের ছাপও রয়েছে। তার নাম শায়খ মুখতার আলম শিকদার।দুই দশকের বেশি সময় ধরে তিনি মক্কার গিলাফ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর ম্যানুফ্যাকচারিং দ্য কাবাস কিসওয়াহতে কাজ করছেন। আরবি লিখনশৈলী সুলুস পদ্ধতি অনুসরণ করে তিনি গিলাফের চারপাশে কোরআনের নির্দিষ্ট আয়াতের ক্যালিগ্রাফি করেন। মূলত দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ক্যালিগ্রাফি চর্চা করছেন। অতঃপর তিনি এ অনন্য মর্যাদা লাভ করেন।বিগত সময়ের মতো হিজরি নববর্ষ উপলক্ষে পরিবর্তন হতে যাওয়া কাবার গিলাফে আছে তাঁর ক্যালিগ্রাফি। গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানান তিনি।২০২১ সালের ১১ নভেম্বর সৌদি আরবের নাগরিকত্ব লাভ করেন মুখতার আলম। সেই সময় বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের এক রাজকীয় নির্দেশনায় বিভিন্ন পেশায় অবদান রাখা বিদেশি কর্মীদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন।মূলত তখন থেকেই পবিত্র কাবাঘরের প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে মুখতার আলমের বিষয়টি দেশি ও বিদেশি সব সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। সেই বছরের ১৫ নভেম্বর কালের কণ্ঠে সংবাদটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়।মুখতার আলম ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার রশীদের ঘোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে বাবার কর্মস্থলের সূত্রে তিনি সৌদি আরব যান। শৈশবের পুরো সময় তিনি পবিত্র মসজিদুল হারামে কাটান এবং সেখানেই কোরআন হিফজ করেন।এরপর তিনি মক্কার বিখ্যাত উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পকলা বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেন। আরবি লিখনশৈলী নিয়ে তাঁর লেখা বই সৌদি আরবসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। সৌদি আরব ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে তাঁর ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শিত হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"জুয়ামুক্ত সমাজের সন্ধানে ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহ প্রদত্ত মানবপ্রতিভার বড় নির্দয়ভাবে অপচয় হচ্ছে কিংবা হচ্ছে অপব্যবহার। জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই তা সঠিক খাতে পরিচালিত এবং সঠিক কাজে নিয়োজিত হচ্ছে না। মানুষের যাবতীয় মেধা ও প্রতিভা মানবজাতি ও মানবসভ্যতার কল্যাণ সাধনের পরিবর্তে ডেকে আনছে তার চরম সর্বনাশ। সাহস ও বীরত্বের প্রকাশ ঘটছে যুলুম অত্যাচারের পথে। দানশীলতা ও বদান্যতার প্রকাশ ঘটছে অপচয় ও অপব্যায়ের পথে। মেধা ও বুদ্ধির প্রকাশ ঘটছে অপরাধের নব নব কৌশল এবং প্রবৃত্তির চরিতার্থতার নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে। আল্লাহর দেয়া নেয়ামত-ধনসম্পদের অপব্যবহার হচ্ছে, জুয়া ফ্লাস, পাশা, বাজি রেখে ঘোড়দৌড়, তাসখেলা, চাকতি ঘোরানো ও রিং নিক্ষেপ ইত্যাদির পেছনে। ধীরে ধীরে সমাজদেহে এমনসব দুষ্ট ব্যাধি বাসা বাঁধতে শুরু করেছে, যা মানবতার ধ্বংসকেই শুধু তরান্বিত করছে এবং আশা ও আশ্বাসের সব আলো নিভিয়ে এমন অন্ধকার গহব্বরের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে যেখান থেকে উদ্ধারের কোনো উপায় থাকে না। বর্তমান সামাজিক ব্যাধিগুলোর অন্যতম হচ্ছে জুয়া। একটা সময় গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন বাঁশঝাড়ে জুয়াড়িদের দেখা মিলত। লোকচক্ষুর অন্তরালে গিয়ে মানুষ এসব অসামাজিক কাজে জড়িত হত। কিন্তু সময় যত এগুচ্ছে জুয়াড়িদের দৌরাত্ম ততই বেড়ে যাচ্ছে। নতুন নামে অপরাধের ভিন্ন রূপ নিয়ে জুয়ার অভিনব সব পদ্ধতির আবিষ্কার হচ্ছে। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে, বিভিন্ন অলিতেগলিতে, শহরে কিংবা গ্রামে নামে-বেনামে জুয়ার রমরমা ব্যবসা চলছে। কৃষক, তরুণ, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ছেন মরণনেশা জুয়ায়। এসব আসরে উড়ছে লাখ লাখ টাকা। বর্তমানে জুয়াবাজির জন্য বিভিন্ন রকমের আসর বসে বিভিন্ন স্থানে। কোথাও হাউজি আবার কোথাও সবুজ টেবিল নামে। ফুটবল ও অন্যান্য খেলাধুলার প্রতিযোগিতায়ও বাজি ধরা হয়। জুয়ার আর্থিক ও পারিবারিক ক্ষতি :- জুয়ার খপ্পরে পড়ে নি¤œ আয়ের মানুষ আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। জুয়ার নেশায় পড়ে একজন বিত্তশালী মানুষ মুহূর্তেই ধনসম্পদ হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। গেম থিওরির সফল ব্যবহারের কারণে কোনো জুয়াড়ির পক্ষেই ক্রমাগত জিতে যাওয়া সম্ভব নয়। এরকম ক্ষেত্রে কিংবা ক্রমাগত হার স্বীকার করে দেউলিয়া হলে মানুষ হতাশায় পড়ে। ক্রমেই সে বিষণ্নতায় ভোগে এবং শান্তির পরিবারে অশান্তির আগুন প্রজ্জ্বলিত হতে থাকে। সম্পর্কের অবনতি ঘটে যা ডিভোর্স ও ছাড়াছাড়ি পর্যন্ত গড়ায়, আবার কেউ কেউ তো আত্মহত্যার সিদ্ধান্তও নেয়। জুয়ার সামাজিক ক্ষতি:- জুয়া সমাজে অনাচার অস্থিরতা সৃষ্টি করে। জুয়ার প্রভাবে সমাজে দ্বন্দ্ব কলহ বাড়তে থাকে। জুয়ার কারণে একটা সুন্দর সুশৃঙ্খল সমাজ ক্রমেই বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। অনেকসময় দেখা যায়, জুয়াকে কেন্দ্র করে সমাজে মারামারি আর হতাহতের ঘটনাও ঘটে। জুয়া খেলতে গিয়ে পরস্পর মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়ে বহুদিনের সম্পর্কে ভাটা পড়ে। জুয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষতি :- জুয়ার মাধ্যমে একই স্থানে অল্প সময়ের মধ্যে এত টাকার লেনদেনের কারণে দেশে অপরাধ বেড়ে যেতে পারে। নানা রকমের প্রতারণা, আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাংয়ের উদ্ভব, বিভিন্ন রকমের অরাজকতার সৃষ্টি হতে পারে। জুয়া বিত্তবানদের আরও বিত্তশালী হওয়ার ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখে , যা সম্পদে বৈষম্য আছে এমন একটি দেশে বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। জুয়ার ধর্মীয় ক্ষতি :- জুয়া মানুষকে উন্মাদ করে দেয়, নীতিনৈতিকতা কেড়ে নেয়। ফলে তারা আল্লাহকে ভুলে এই শয়তানি মরীচিকায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে দেয়। জুয়া মানব-সভ্যতার চরম শত্রু। এটা জীবন ও সম্ভাবনাকে নষ্ট করে। দুনিয়া ও আখেরাত উভয়টাকে বরবাদ করে। জুয়ার কারণে সভ্যতা ও সম্ভাবনার চাকা পিছনের দিকে ঘুরতে থাকে। তাই কল্যাণের ধর্ম ইসলামে এর কোনো স্থান নেই। আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজীদে ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদি ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা-বিদ্বেষ ঘটাতে এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে বাধা দিতে। তবে কি তোমরা বিরত হবে না?’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৯০-৯১)। নবী কারিম সা.ও জুয়া থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। ভয় দেখিয়েছেন জুয়ার শাস্তির কথা বর্ণনা করে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মদ, জুয়া ও বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন। ’ (বায়হাকি, হাদিস: ৪৫০৩; মিশকাত, হাদিস: ৪৩০৪)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, জুয়ায় অংশগ্রহণকারী, খোঁটাদাতা ও মদ্যপায়ী জান্নাতে যাবে না। ’ (দারেমি, হাদিস: ৩৬৫৩; মিশকাত, হাদিস: ৩৪৮৬)। এসব খেলায় আসক্ত হওয়ার কারণ :- বস্তুত: মানুষের যখন আখেরাত ও অনন্ত জীবনের ব্যাপারে উদাসীনতা সৃষ্টি হয়, দুনিয়ার দু’দিনের জীবন ছাড়া আর সবকিছুই তার কাছে ফিকে মনে হয়, এ জগতের বাইরে কল্পনা- উর্ধ্ব আরেকটি জগত আছে, সময় ও সীমাহীন আরেকটি জীবন আছে বলে যার জানা নেই, সে কী আর করতে পারে, বরং কী না করতে পারে! ষাট সত্তর বছরই ত তার পুঁজি, তার আশা আকাঙ্ক্ষার শেষ সীমা, তার জ্ঞান ও চিন্তার শেষ সীমানা। কিসের আশায় কিসের ভরসায় বর্তমানের ভোগ-উপভোগ, স্বাদ আহ্লাদ ও আনন্দ ফূর্তির কোনো সুযোগ হাতছাড়া করবে সে? কোন জীবনের জন্য, কোন আনন্দের জন্য, কোন প্রাপ্তি ও তৃপ্তির জন্য ত্যাগ ও আত্মত্যাগ ক্ষুধা ও তৃষ্ণা এবং সাধনা ও সংযমের জীবন অবলম্বন করবে সে? এটাই হচ্ছে জীবন সম্পর্কে আজকের সভ্য মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি। তাই তো হেসে খেলে, জুয়ার আড্ডায়, মদের বারে, আল্লাহর দেয়া জীবনটাকে হেসেখেলে নষ্ট করে দিচ্ছে। আল্লাহ পানাহ! মুক্তির উপায় কোন পথে :- আমরা যদি সামাজিক ব্যাধিগুলো থেকে মুক্তি পেতে চাই, তাহলে গোড়া থেকে সংস্কার শুরু করতে হবে। আবার আমাদের ইসলামের দিকে ফিরে আসতে হবে। ঈমানী পরিবেশে,ঈমানী তারবিয়াত গ্রহণ করতে হবে। মনস্তত্ত্ব ও নৈতিকতার ইতিহাস মানুষের মধ্যে মানবিক বিচ্যুতি ও নৈতিক স্খলনের পথে যতগুলো প্রতিরোধকের সাথে পরিচিত হয়েছে তন্মধ্যে ঈমানই হচ্ছে সবচে’ কার্যকর ও শক্তিশালী প্রতিরোধক। সেই ঈমানই সাহাবায়ে কেরাম অর্জন করেছিলেন নবীজির সোহবত ও তারবিয়াত থেকে। কত সজীব জীবন্ত ও আর জাগ্রত ঈমান! তাই তো দেখা যায়, মানবিক দুর্বলতার কোনো শিথিল মুহূর্তে যদি ভিতরের পশুপ্রবৃত্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠত এবং কোনো স্খলন ঘটে যেত তখন ঈমানই তাদের ভেতরটাকে এমনভাবে নাড়া দিত এবং অন্তরে অনুশোচনার এমন দহন ও বিবেকের দংশন সৃষ্টি করত যে, সাজা ও শাস্তির জন্য কানুনের হাতে নিজেকে তুলে না দিয়ে স্থির থাকা সম্ভব হত না। এভাবে আল্লাহর গজব ও আখেরাতের আজাব থেকে বাঁচার জন্য দুনিয়ার কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি তারা অম্লান বদনে মাথা পেতে নিতেন। এটা কিসের ফল! আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান ও আত্মসমর্পণ এবং সর্বত্র- সংরক্ষণ আল্লাহ দেখছেন এ বিশ্বাসের ফল। আমরাও যদি এরকম ঈমান অর্জন করতে পারি, গুনাহের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ফিরে আসতে সচেষ্ট থাকি, তাহলে ইনশাআল্লাহ শুধু জুয়া নয় সকল অনাচার থেকেই আমরা মুক্তি পাব। আর মুক্তি তো আমাদের পেতেই হবে। যেহেতু আখিরাত সত্য, জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য তাই সকল অনাচার আমাদের ছাড়তেই হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন। ইয়া রাববাল আলামীন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,"ইসলাম শান্তির ধর্ম, হেফাজতের নামে দুষ্কর্মকারীরা অমানুষ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী",ইসলাম ধর্ম,"ইসলাম শান্তির ধর্ম, হেফাজতের নামে দুষ্কর্মকারীরা অমানুষ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম কখনো সহিংসতার কথা বলে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। যারা হেফাজতের নামে দুষ্কর্ম করে, নিষ্ঠুরতা করে, অত্যাচার করে এরা মানুষ না এরা অমানুষ।’ আজ শুক্রবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে হেফাজতের তাণ্ডেবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন শেষে এসব কথা মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজে এসে দেখে গেলাম, আমি আপনাদের সাথে ওয়াদা করছি যারা এই সহিংসতার সাথে জড়িত তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছেন। তিনি নিজেও একজন মুসলমান, তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, সময় মতো তাহাজ্জুদ পড়েন, কোরআন পড়েন, তার হাতে বাংলাদেশ, তিনি কোরআন সুন্নাহর বাইরে কিছু করেন না।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"বিপদে হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল পাঠের মাহাত্ম্য ",ইসলাম ধর্ম,"হজরত ইব্রাহিম (আ.)–কে যখন অবিশ্বাসী অত্যাচারী শাসক নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করে, তখন তিনি পড়েন ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল’। যার ফলে আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)–কে আগুন থেকে রক্ষা করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে সুরা আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াতের অংশ ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, নিমাল মাওলা ওয়া নিমান নাসির।’ অর্থ: আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক। ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, নিমাল মাওলা ওয়া নিমান নাসির।’ এই দোয়া জিকির যেকোনো সময় করা যায়। অসুস্থ বা উদ্বিগ্ন অবস্থায়, কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় অথবা শত্রুর হাত থেকে মুক্তির জন্য এ দোয়া বিশেষ কার্যকর। এই দোয়ায় আল্লাহর কাছে সরাসরি কিছু চাওয়া হয় না। আল্লাহই যথেষ্ট এবং উত্তম সাহায্যকারী। অন্য দোয়ার মতো আল্লাহর কাছে কোনো আবেদন করা হয় না। দোয়াটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে এই দোয়া পড়তেন। এই আয়াতের প্রেক্ষাপট হলো মুসলিমরা প্রথমবারের মতো জানতে পারে তাদের বদরের যুদ্ধে অংশ নিতে হবে। আবু সুফিয়ানের বাণিজ্যযাত্রা, মক্কার কুরাইশদের এক হাজার সদস্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে আগমন সব তথ্য মুসলিমরা পাচ্ছিল। মুসলিমরা বদরের ময়দানে যুদ্ধের জন্য উপস্থিত হলেও তাদের তখনো প্রস্তুতি চলছিল।এ অবস্থায় সাহাবিদের মানসিকতা কেমন ছিল, আল্লাহ সে প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তাদেরকে লোকে বলেছিল যে তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো । তখন এ তাদের বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছিল আর তারা বলেছিল ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৩) এটি পড়ার কথা সহিহ হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। রাসুল (সা.) মুশরিকদের হামলা হবে, এমন খবর শুনে হামরাউল আসাদ নামক জায়গায় দোয়াটি পাঠ করেন। (বুখারি, হাদিস: ৪৫৬৩) এখানে আল্লাহকে ওয়াকিল বলা হয়েছে। ওয়াকিল মানে হলো অভিভাবক। মানুষ যখন আল্লাহর হাতে নিজেদের কোনো সংকটকালীন মুহূর্তে সোপর্দ করে, তখন আল্লাহ নিজেই তাদের হেফাজত করা এবং সমস্যা সমাধান করার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন। একইভাবে সুরা তওবার ৫৯ নম্বর আয়াতে আছে, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ওদেরকে যা দিয়েছেন, তাতে যদি ওরা তুষ্ট হতো, তাহলে বলা হতো আর যদি বলত আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ অবশ্যই শিগগিরই নিজের অনুগ্রহ থেকে আমাদের দান করবেন ও তাঁর রাসুল দান করবেন; আমরা আল্লাহরই ভক্ত। (সুরা তওবা, আয়াত: ৫৯)আবার সুরা তওবার শেষ আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তারপর ওরা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তুমি বলো আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। আমি তাঁর ওপরই নির্ভর করি আর তিনি মহা আরশের অধিপতি।’ (সুরা তওবা, আয়াত: ১২৯) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন ইব্রাহিম (আ.)–কে আগুনের কুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন—হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল। ফলে তিনি রক্ষা পেয়েছিলেন। সেই জ্বলন্ত আগুন তাঁর জন্য শীতল হয়ে পড়েছিল। মুহাম্মদ (সা.) তখন বলেছিলেন, ‘যখন লোকেরা বলেছিল, (কাফির) লোকেরা তোমাদের মোকাবিলার জন্য সমবেত হয়েছে। ফলে তোমরা তাদের ভয় করো। কিন্তু এ কথা তাদের ইমান বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল—হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল। অর্থাৎ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।’ সাহাবিরা এই দোয়া আমল করেছিলেন খন্দকের যুদ্ধের সময়। যখন সাহাবিরা জানতে পারলেন ১০ হাজার সেনা এসে মদিনা শহরকে ঘেরাও করতে যাচ্ছে, তখনো তাঁরা আল্লাহর কাছে এই বলে সাহায্য কামনা করেছিলেন—হাসবুনাল্লাহি ওয়া নিমাল ওয়াকিল। (বুখারি: ৪৫৬৩-৪৫৬৪)তিরমিজি শরিফে একটি হাদিস আছে। হাদিসটি যে পরিচ্ছেদে আছে, তার নাম হলো, ‘বিপদে আপনি যা করবেন।’ অর্থাৎ বিপদে পড়া অথবা বিপদের আশঙ্কা থাকে, তখন করণীয় কী? হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেমন করে হাসিখুশি থাকব, অথচ শিঙাওয়ালা (ইসরাফিল ফুৎকার দেওয়ার জন্য) শিঙা মুখে ধরে আছেন। আর তিনি কান লাগিয়ে আছেন যে তাঁকে কখন ফুৎকার দেওয়ার আদেশ করা হবে এবং তিনি ফুৎকার দেবেন।’ এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর সাহাবিরা রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন। এমনটি দেখে মহানবী (সা.) তাঁদের বললেন, ‘তোমরা বলো, হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল।’ অর্থাৎ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক। (তিরমিজি: ২৪৩১, ৩২৪৩",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,"চাঁদ দেখা যায়নি, ঈদ বৃহস্পতিবার",ইসলাম ধর্ম,"বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। তাই বৃহস্পতিবার সারাদেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বুধবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চাঁদ দেখা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভা থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সভায় ধর্মমন্ত্রী জানান, সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর, মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের আকাশে হিজরি ১৪৪৫ সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। বুধবার (১০ এপ্রিল) রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) শাওয়াল মাসের প্রথম দিন দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। অন্যদিকে, গত সোমবার (৮ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামীকাল বুধবার (১০ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ",ধর্মীয় উৎসব,Positive কালের কন্ঠ,শাওয়ালের ছয় রোজা রাখলে কী সওয়াব,ইসলাম ধর্ম,"শাওয়াল মাসের ছয় রোজাকে ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। পূর্বসূরি আলেমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে রমজান মাসের রোজা পালন করতেন। শরিয়তের দৃষ্টিতে শাওয়াল মাসে ছয় রোজা রাখা মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর তার সঙ্গে সঙ্গে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন পূর্ণ বছরই রোজা রাখল। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬৪) এক বছরের সমান হয় যেভাবে : রাসুলুল্লাহ (সা.) এক বছরের সমান হওয়ার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এই হলো এক বছরের রোজা।’ (সুনানে নাসায়ি : ২/১৬২)। মুহাদ্দিসরা বিষয়টি আরো ব্যাখ্যা করে বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন ‘কেউ কোনো সৎকাজ করলে সে তার ১০ গুণ সওয়াব পাবে এবং কেউ কোনো অসৎকাজ করলে তাকে শুধু তারই প্রতিদান দেওয়া হবে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৬) এই হিসাবে রমজানের ৩০ রোজায় ৩০০ রোজার সওয়াব হয়। আর শাওয়ালের ছয় রোজায় ৬০ রোজার সওয়াব হয়। এভাবে রমজানের ৩০ রোজা ও শাওয়ালের ছয় রোজা মোট ৩৬০ রোজার সমপরিমাণ হয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,যুক্তরাজ্যে ‘আমার মসজিদ ভ্রমণ করুন’ কর্মসূচিতে বিপুল সাড়া,ইসলাম ধর্ম,"সবার মধ্যে ইসলামের পরিচিতি তুলে ধরতে যুক্তরাজ্যে ‘আমার মসজিদ ভ্রমণ করুন’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত শনিবার ও রবিবার (২৩-২৪ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি)-এর ‘ভিজিট মাই মস্ক’ কার্যক্রমে দেশটির আড়াই শতাধিক মসজিদ অংশ নেয়। এর মাধ্যমে সব ধর্ম ও বর্ণের দর্শক ইসলাম সম্পর্কে জানার সুযোগ লাভ করেন। সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধ তৈরি করতে দর্শনার্থীদের মধ্যে খাবার ও উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হ্যাশট্যাগভিজিটমাইমস্ক’ লিখে প্রচারণা চালায় এমসিবি কর্তৃপক্ষ। লুটন শহরের ইউকেআইএম মদিনা মসজিদে ২৫ বছর ধরে নামাজ চলছে। মসজিদটির ট্রাস্টি মাকসুদ আনোয়ার বলেন, ‘মসজিদ ভ্রমণের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া সুদৃঢ় হয়। আপনি একবার একে অন্যের বিশ্বাস সম্পর্কে জানলে তা মানুষকে কাছাকাছি নিয়ে আসে।পারস্পরিক দূরত্ব দূর হয়। একে অপরের প্রতি সন্দেহ দূর হয়। মুসলিম হিসেবে মানুষকে একত্র করা এবং বার্তা পৌঁছে দেওয়া আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ সাফোকের ব্রুমে সিদ্দিকা নওয়াজ ব্রুম মসজিদ এবং মেডিটেশন সেন্টারের ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করছেন ফাতমা বোধি।তিনি বলেন, ‘মসজিদ ভ্রমণের দিনকে মানুষ প্রশ্ন করার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা মনে করি, এই দিনে মানুষ আমাদের সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে। স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অবশ্য আমাদের মসজিদ বছরের সব দিনই উন্মুক্ত। এখানে রান্না, কফি, মেডিটেশনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে। এখানে আসা বেশির ভাগ দর্শনার্থী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। তারা আমাদের পরিচয়, আমাদের ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারে।’ আল-মদিনা সেন্টারের দায়িত্বশীল রজব আলী বলেন, ‘মসজিদ শুধু এক দিন বা এক ঘণ্টা-দুই ঘণ্টার জন্য নয়। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই একই সমাজে বসবাস করছি। মসজিদের মতো শান্তির স্থানে আমরা মিলিত হয়েছি। সাপ্তাহিক এই ছুটির দিনে প্রথমবার যাঁরা মসজিদ ভ্রমণে এসেছেন, তাঁরা শান্তি অনুভব করেছেন। তাই যে কেউ যখন ইচ্ছা মসজিদের ইমাম বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশ্ন করতে পারেন।’ ইসলাম ও মুসলিমদের সম্পর্কে সবার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার ‘ভিজিট মাই মস্ক’ উদ্যোগটি পালিত হয়। প্রথম বছরই সবার মধ্যে মসজিদভিত্তিক এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলে। ওই বছর যুক্তরাজ্যের ২০টি মসজিদ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করলেও বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে তিন শর কাছাকাছি পৌঁছেছে। দিনটিতে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিরোধীদলীয় নেতা, জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা স্থানীয় মসজিদ পরিদর্শন করেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive Dhaka Tribune,"আজ মহালয়া ",হিন্দু ধর্ম,"হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন, শুভ মহালয়া আজ শনিবার (১৪ অক্টোবর)। এ দিন থেকেই শুরু দেবীপক্ষের। শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই “চন্ডী”তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া। পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই পূজার্থীরা দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শুনতে পাবেন। দুর্গাপূজার এই সূচনার দিনটি সারাদেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হবে। ভোরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য মন্দিরেও এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ভোর থেকেই ছিল শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের আয়োজন। ২৪ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসব। এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোন মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলত অসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতারিত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের অধীশ্বর হতে চায়। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সন্মিলিত ভাবে “মহামায়া” এর রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা নয় দিনব্যাপি যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে। মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপুরুষের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকে মহালয়া বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া। পিতৃপক্ষের ও শেষদিন এটি। ",ধর্মীয় উৎসব,Positive যায়যায়দিন,"মাদকাসক্তের আমল বিশুদ্ধ হবে না ",ইসলাম ধর্ম,"নশ্বর পৃথিবীর প্রতি মোহ ও আকর্ষণ কমাতে এবং চিরস্থায়ী নিবাস আখেরাতের প্রতি নিবিষ্টতা বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকর ইসলামের অন্যতম বুনিয়াদি ইবাদত সিয়াম সাধনার মাস রমজানুল মুবারকের অষ্টাদশ দিবস আজ। আর মাত্র দু’দিন পর শুরু হবে নাজাতের দশক। মুমিন মুসলমানগণ আধ্যাত্মিক সাধনার চরম উৎকর্ষতা লাভে মগ্ন। বিগত জীবনের ভুলভ্রান্তি সংশোধন করে যাতে বাকি জীবন ধর্মের পথে পরিচালনা করতে পারে এজন্য কায়মনে গাফুরুর রাহিমের অনুগ্রহ কামনা করছেন। হারাম-হালালের পার্থক্য এবং কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে আমল কবুল হবে না তা জানতেও উন্মুখ সবাই। কেননা অনেকেই না জেনে, না বুঝেই নানা ধরনের পাপাচারে লিপ্ত হয়ে থাকেন। কেউ কেউ রোজা রেখে পাপকর্ম থেকে দূরে থাকলেও রমজান মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন করে আগের পথে ফিরে যান। বিশেষ করে মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা এ পাল্লায় এগিয়ে থাকেন। যদিও তাদের অনেকেই নিয়মিত ইবাদতও করেন। অথচ এ বিষয়ে ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, যে ব্যক্তি হালাল মনে করে মদ্যপান করে বা ব্যভিচার কিংবা যে কোনো পাপ সম্পাদন করে তবে সে কাফির বলে গণ্য। আর কুফরির সঙ্গে কোনো আমলই বিশুদ্ধ হবে না। আর কেউ যদি হারাম যেনেও প্রবৃত্তির তাড়নায় পাপ কাজ সম্পাদন করেন এবং এ আশা করেন যে আল্লাহ তাকে তা থেকে রক্ষা করবেন। তবে এই ব্যক্তিটি তার ইমানের কারণে মুমিন এবং পাপের কারণে ফাসেক হিসেবে চিহ্নিত হবেন। মদ-জুয়াকে হারাম হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘হে ইমান্দারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি এবং লটারির তীর এসব গর্হিত বিষয়, শয়তানি কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং এ থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাক, যেন তোমাদের কল্যাণ হয়। শয়তান তো এটাই চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর স্মরণ হতে ও নামাজ হতে তোমাদেরকে বিরত রাখে, সুতরাং এখনও কি তোমরা ফিরে আসবে?’ (সূরাঃ মায়িদাহ/ ৯০-৯১) নবী করিম হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, সমস্ত নেশাকারী বস্তু মদ আর প্রত্যেক নেশাকারী বস্তু হারাম।’ (মুসলিম হা/৩৭৩৩)। তিনি মদ, মদ্যপানকারী, মদ প্রস্তুতকারী, সে ব্যাপারে নির্দেশ প্রদানকারী, বহনকারী, যার নিকট তা বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়, এর বিক্রেতা, ক্রেতা এবং তার মূল্য ভক্ষণকারী সবাইকে অভিশম্পাত করেছেন। অতএব মুসলিম সবার উপর ওয়াজিব হলো- যাবতীয় নেশা জাতীয় বস্তু থেকে নিজে দূরে থাকা ও অপরকে দূরে রাখা। আর যারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন তার কর্তব্য হলো দ্রুত এ পথ থেকে সরে এসে আল্লাহর নিকট তাওবাহ করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ আল্লাহর নিকট তোমরা তাওবাহ কর তবেই তোমরা সফলকাম হবে।’ (সূরা নূরঃ ৩১) তিনি আরও বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট বিশুদ্ধভাবে তাওবা কর।’ (সূরা তাহরীমঃ ৮) পবিত্র কুরআনের অপর এক আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, (হে রাসূল!) তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে তাদের জন্য কি হালাল করা হয়েছে? আপনি বলে দিন তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করা হয়েছে। (আল মায়েদাহ ৪) আবদুল্লাহ বিন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যদি কেউ মদ পান করে, আল্লাহ তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল করেন না। আর যদি এ অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে; তবে সে জাহান্নামি হবে। তবে যদি সে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। এরপর যদি দ্বিতীয় বার মাদক গ্রহণ করে তাহলে তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল হবে না। তবে যদি দ্বিতীয় বার তওবা করে, আল্লাহ তওবা কবুল করবেন। এরূপ যদি চতুর্থ বার সে পুনরায় মদ পান করে, তাহলে আল্লাহ তায়ালার ওপর হক হয়ে যায় যে তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন’। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস রয়েছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মদ সব অশ্লীলতার মূল ও মারাত্মক কবিরা গুনাহ। এদিকে ইসলামি দৃষ্টিকোণে মাদক ও মাদকাসক্তির নানাবিধ কুফল এবং ভয়াবহ পরিণাম তো রয়েছেই, পাশাপাশি সামাজিক এবং ব্যক্তিগত পর্যায়েও মাদকের ছোবল ভয়ংকর। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই শয়তান মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে পারস্পকি শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে বিরত রাখতে চায়, তবুও কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না? (সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত-৯১)",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative প্রথম আলো,শিরকের পরই বড় অপরাধ মানব হত্যা,ইসলাম ধর্ম,"মানব ইতিহাসে প্রথম সংঘটিত অপরাধ হলো মানব হত্যা। এটি শিরকের পরেই ‘কবিরা গোনাহ’ বা সবচেয়ে বড় অপরাধ। আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-এর দ্বিতীয় পুত্র কাবিল প্রথম আপন বড় ভাই হজরত হাবিল (র.)-কে অন্যায়ভাবে হত্যা করে। এ প্রসঙ্গটি কোরআন মজিদে এভাবে এসেছে—‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাহাদিগকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কবুল হলো না। সে বলল, “আমি তোমাকে হত্যা করবই।” অপরজন বলল, “অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিদের কোরবানি কবুল করেন। আমাকে হত্যা করার জন্য তুমি হাত তুললেও তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি হাত তুলব না। আমি তো জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং অগ্নিবাসী হও, ইহাই আমি চাই এবং ইহা জালিমদের কর্মফল।” অতঃপর তার চিত্ত ভ্রাতৃহত্যায় তাকে উত্তেজিত করল। ফলে সে তাকে হত্যা করল; তাই সে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হলো। অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভ্রাতার শবদেহ কীভাবে গোপন করা যায় তা দেখানোর জন্য মাটি খনন করতে লাগল। সে বলল, “হায়! আমি কি এই কাকের মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভ্রাতার শবদেহ গোপন করতে পারি?” অতঃপর সে অনুতপ্ত হলো। এ কারণেই বনি ইসরায়েলের প্রতি এই বিধান দিলাম যে নরহত্যা অথবা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কার্য করা; হেতু ব্যতীত কেহ কাহাকেও হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল, আর কেহ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। তাদের নিকট তো আমার রাসুলগণ স্পষ্ট প্রমাণ এনেছিল, কিন্তু এরপরও তাদের অনেকে দুনিয়ায় সীমা লঙ্ঘনকারীই রয়ে গেল। যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কার্য করে বেড়ায়, ইহাই তাদের শাস্তি যে তাহাদিগকে হত্যা করা হবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে অথবা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাহাদিগকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। দুনিয়ায় এটিই তাদের লাঞ্ছনা ও পরকালে তাদের জন্য মহা শাস্তি রয়েছে। তবে, তোমাদের আয়ত্তাধীনে আসার পূর্বে যারা তওবা করবে, তাদের জন্য নয়। সুতরাং জেনে রাখো যে আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (আল কোরআন, পারা: ৬, সূরা-৫ আল মায়িদাহ, আয়াত: ২৭-৩৪)। ইসলামের শিক্ষা হলো: সব মানুষ এক আল্লাহর বান্দা; যারা বিশ্বাসী, তারা অনুগত বান্দা আর যারা অবিশ্বাসী, তারা পাপাচারী। সব মানুষ একই পিতা-মাতার সন্তান; সব মানুষ একই রক্ত-মাংসে গড়া; তাই সাদা-কালোতে কোনো প্রভেদ নেই। সব মানুষ আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত {হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর সময় থেকে কেয়ামত পর্যন্ত}। কালেমা পড়া মুসলমান সবাই সমান। কবরে ও হাশরে সবাইকে একই প্রশ্ন করা হবে। কবরে প্রশ্ন করা হবে না, তুমি কি শিয়া ছিলে নাকি সুন্নি ছিলে। প্রশ্ন করা হবে না, তুমি কি হানাফি ছিলে নাকি সালাফি ছিলে। বরং প্রশ্ন করা হবে, তুমি কি বিশ্বাসী মুমিন ছিলে? নাকি অবিশ্বাসী কাফির ছিলে? আরও প্রশ্ন করা হবে, তোমার জীবন পদ্ধতি কী ছিল? এবং মানবতার মুক্তির দূত শান্তির নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে তোমার জীবনাচারের কী সম্পর্ক ছিল? প্রশ্ন তিনটি হবে এভাবে—‘মান রব্বুকা, ওয়া মা দ্বীনুকা, ওয়া মান হাযার রজুল’। অর্থাৎ তোমার রব বা প্রভু কে? তোমার ধর্মাচার কী ছিল? এবং এই ব্যক্তি—হজরত মুহাম্মদ (সা.)—কে? একমাত্র সঠিক উত্তর হবে—‘রাদিতু বিল্লাহি রব্বাওঁ, ওয়া বিল ইসলামে দীনাওঁ, ওয়া বি মুহাম্মাদিন (সা.) নাবীয়্যাওঁ ও রসুলা।’ অর্থাৎ আমার রব আল্লাহ, আমার দীন-ধর্ম ইসলাম এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবী ও রাসুল; এতেই আমি সন্তুষ্ট। হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে এই দোয়া পড়বে (অর্থাৎ উপরিউক্ত ঘোষণা দেবে), আল্লাহ তাআলার ওপর ওয়াজিব (অবধারিত) হয়ে যাবে কিয়ামতের দিন তাকে (জান্নাতদানের মাধ্যমে) খুশি করা।’ এবং তার কবরের সওয়ালের জবাব দেওয়া সহজ হবে। (তিরমিজি শরিফ, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৪৬৫, হাদিস: ৩৩৮৯)। ইসলামে মানব হত্যার পরকালীন বিধান সম্বন্ধে কোরআন মজিদে বলা হয়েছে: ‘কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য মহা শাস্তি প্রস্তুত রাখবেন।’ (আল-কোরআন, পারা: ৫, সূরা-৪ আন নিসা, আয়াত: ৯৩)। আরও সতর্ক করে বলা হয়েছে: ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা করবে না।’ (আল-কোরআন, পারা: ৮, সূরা-৬ আল আনআম, আয়াত: ১৫১)। ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা করো না! কেহ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে তো আমি উহা প্রতিকারের অধিকার দিয়েছি; কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে; সে তো সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছে।’ (আল-কোরআন, পারা: ১৫, সূরা-১৭ আল ইসরা/বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৩)। মানব হত্যার জাগতিক বিধান সম্বন্ধে কোরআনুল কারিমে বলা হয়েছে: ‘হে মুমিনগণ! নিহতের ব্যাপারে তোমাদের জন্য “কিসাস”-এর বিধান দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস ও নারীর বদলে নারী, কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সহিত তার দেয় আদায় বিধেয়। ইহা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে ভার লাঘব ও অনুগ্রহ। এরপরও যে সীমা লঙ্ঘন করে, তার জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।’ (আল-কোরআন, পারা: ২, সূরা-২ আল বাকারা, আয়াত: ১৭৮-১৭৯)। ইসলামি শরিয়তের প্রধান উদ্দেশ্য হলো জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা, বংশ রক্ষা ও ধর্ম রক্ষা। এখানে প্রণিধানযোগ্য যে শরিয়তের মূল পাঁচটি লক্ষ্যের শেষটি হলো ধর্ম রক্ষা এবং প্রথমটি হলো জীবন রক্ষা। কারণ, প্রাণ না থাকলে ধর্ম অচল। আজকাল অনেকেই সামান্য খুঁটিনাটি কারণে সন্ত্রাস, হত্যা, গুপ্তহত্যাসহ খুনখারাবি করতে দ্বিধাবোধ করে না। এটা ইসলামের শিক্ষা নয়; ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। ইসলামে জীবন রক্ষার জন্য প্রাণ বধের বিধান রয়েছে বটে; কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হলে শরিয়া আইন অনুসরণ করতেই হবে। ইসলামি আদালত বা খলিফা কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধি বিচারের দায়িত্ব পালন করবেন। কেউ যদি এমন কোনো অপরাধও করেন, যাতে তার প্রাণ নিধনের বিধান আছে; তবে তা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক বাস্তবায়ন করা ইসলামসম্মত নয়; বরং তা যথাযথ আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই কেবল বাস্তবায়নের এখতিয়ার রাখে। কারণ, কোরআন-হাদিসে বর্ণিত বিধিবিধান, যা অন্যের সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থাৎ ব্যক্তির একান্ত নিজের নয়; তথা সমাজ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তা কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায় নিজেদের মতো করে বাস্তবায়ন করা শরিয়তসিদ্ধ নয়; এটি কেবল আদালত ও সরকারের দায়িত্ব।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,"যত দিন আল্লাহর নাম উচ্চারিত হবে, তত দিন দুনিয়া টিকে থাকবে",ইসলাম ধর্ম,"মহান আল্লাহ মানুষকে যত নিয়ামত দিয়েছেন তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো ঈমান। কারণ বান্দা যা-ই করুক না কেন, ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে যেতে পারলে কোনো একসময় সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণও ঈমান বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি গম পরিমাণও ঈমান বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। এবং যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও ঈমান বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৪) মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ইসলাম গ্রহণ করে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না; বরং আল্লাহই ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১৮) উভয় জগতে ফেরেশতারা যাদের বন্ধু কোনো অপরিচিত জায়গায় বন্ধুবান্ধব থাকলে মানুষ মনে জোর পায়। সম্ভাব্য সহযোগিতার আশা করে। সহযোগিতা পেয়েও থাকে। মহান আল্লাহ উভয় জগতে ফেরেশতাদের ঈমানদারদের বন্ধু বানিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমরা তোমাদের বন্ধু দুনিয়া ও আখিরাতে...।’ (সুরা হা-মিম আসসাজদা, আয়াত : ৩১) যাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা মহান আল্লাহ ঈমানদারদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছেন। তাদের জন্য রয়েছে সঠিক পথপ্রাপ্ত হওয়ার ঘোষণা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানে কোনো ত্রুটি মিশ্রিত করেনি, তাদেরই জন্য আছে নিরাপত্তা আর তারাই সুপথপ্রাপ্ত।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৮২) যারা সৃষ্টির সেরা যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে মহান আল্লাহ তাদের সৃষ্টির সেরা ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, নিশ্চয় তারাই সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে উত্কৃষ্ট।’ (সুরা বায়্যিনাহ, আয়াত : ৭) যাদের সবাই ভালোবাসতে বাধ্য সবাই চায় সবাই তাকে ভালোবাসুক। মহান আল্লাহ বলেন, তিনি ঈমানদার সৎ কর্মপরায়ণদের প্রতি সবার ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে দয়াময় অবশ্যই তাদের জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন।’ (সুরা মারইয়াম, আয়াত : ৯৬) যেভাবে ঈমান বাড়ে মহান আল্লাহর আনুগত্য করলে ঈমান ও মর্যাদা বাড়ে, নাফরমানি করলে কমে। নাফরমানি দ্বারা অন্তরে জং ধরে যায়। তখন ভালো কাজ আর ভালো লাগে না। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, “মুমিন ব্যক্তি যখন গুনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। অতঃপর সে তাওবা করলে, পাপ কাজ ত্যাগ করলে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করলে তার অন্তর পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। সে আরো গুনাহ করলে সেই কালো দাগ বেড়ে যায়। এই সেই মরিচা, যা আল্লাহ তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন (অনুবাদ) : ‘কখনো নয়; বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের অন্তরে জং (মরিচা) ধরিয়েছে।” (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৪৪) দুনিয়া তত দিন টিকে থাকবে যত দিন দুনিয়াতে ঈমানদার থাকবে এবং তাঁদের দ্বারা আল্লাহর নাম উচ্চারিত হতে থাকবে তত দিন দুনিয়া টিকে থাকবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত পৃথিবীতে ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ বলার মতো লোক থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৭০) আল্লাহ তাআলা সবাইকে প্রকৃত ঈমাদানদার ও সৎ কর্মপরায়ণ হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"শারদীয় দুর্গোৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের ঢল ",হিন্দু ধর্ম,"শারদীয় দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও এটি এখন বাঙালির উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এ উৎসব। সার্বজনীন এ দুর্গোৎসবকে ঘিরে আগ্রহ ও আনন্দ সবার। তাই শারদীয় দুর্গাপূজার নবমীতে নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। উলুধ্বনি, ঢাক-ঢোল, বাদ্যি-বাজনা আর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে চট্টগ্রামে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমী উদযাপিত হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন মণ্ডপগুলোতে ভিড় জমাতে থাকেন পুজারিরা। বিপুল সংখ্যক হিন্দু নারী-পুরুষ মহানবমী পূজার পূণ্যতিথিতে বিশেষ প্রার্থনা ও অঞ্জলি প্রদান করেন। হিন্দু ছাড়াও মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষ রাত পর্যন্ত পূজা অর্চনা দেখেন। শারদীয় দুর্গোৎসবের চতুর্থ দিনের মহানবমীতে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে নানা আচারের মধ্য দিয়ে মহানবমীর পূজা শেষে ছিল অঞ্জলি নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ। বিকালের পর হয়ে যাওয়া এক পশলা বৃষ্টি উৎসব-আনন্দ উদযাপনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। দর্শনার্থী, পুজারি ও ভক্তরা এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে ভিড় করেন দেবীদর্শনের উদ্দেশে। ঘরোয়া পূজা ছাড়া নগরীতে এবার ২৮৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়। আর চট্টগ্রাম জেলায় এবার মোট ২০৬২টি পূজা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতিমা পূজা ১৫৮৭টি এবং ঘট পূজা ৪৭৫টি। বাঙালির ঐতিহ্য-সংস্কৃতির নানা দিকের পাশাপাশি সমাজের নানা অসঙ্গতি সাজসজ্জা, প্রতিমা এবং আলোকায়নের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় বন্দর নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে। বর্ণিল আলোকসজ্জা, ডেকোরেশন আর ঢোলের শব্দে একেকটি মণ্ডপ যেন হয়ে উঠেছে একেকটি উৎসবের মিলনায়তন।এদিকে, আজ বুধবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা। পেছনে ফেলে যাবেন ভক্তদের চার দিনের আনন্দ-উল্লাস আর বিজয়ার অশ্রæ। বিজয়া দশমীতে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বির্সজনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা নিরঞ্জনের স্বার্থে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সিটি করপোরেশন বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।চট্টগ্রাম পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা বলেন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সার্বিক সহযোগিতায় চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সবাই নিয়ম ও নির্দেশনা মোতাবেক পূজা উদযাপন করছে। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আচার-আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। সিএমপির পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময় রাত ৮ টার আগে প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বির্সজনের সুবিধার্থে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া চান্দগাঁও থানা প্রতিমা নিরঞ্জন কমিটির উদ্যোগে কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট এলাকায় বিসর্জন অনুষ্ঠান হবে। নগরীর পতেঙ্গা, কালুরঘাট, কাট্টলী ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা বির্সজন হবে।",ধর্মীয় উৎসব,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"বাংলাদেশের প্রথিতযশা হাদীস বিজ্ঞানী শায়খুল হাদীস আল্লামা ফখরুদ্দীন রহ: ",ইসলাম ধর্ম,"বিংশ শতাব্দীর শেষ পাদলগ্নে ও একবিংশ শতাব্দীর সূচনাপর্বে বাংলাদেশের হাদীস চর্চা, গবেষণা ও অধ্যয়নের ইতিহাসে দেশবরেণ্য যে কয়জন গবেষক ও শিক্ষাবিদ ইলমে হাদীসের শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে কীর্তিমান অবদান রেখে উজ্জ্বল প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন,তাদের মধ্যে বিশিষ্ট হাদীস সেবক,তাফসীর কারক ও ফিকাহবিদ,জ্ঞানের অত্যুজ্জ্বল শিখা,ইলমের অমূল্য ভান্ডার প্রফেসর অধ্যক্ষ আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) ছিলেন শীর্ষস্থানীয়। আমার শিক্ষা জীবনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য, তিনি আমার শুধু আমার উস্তাদ নয়, আমার চাচা এবং শ্বশুরও বঠে। তিনি প্রতি বৎসর পবিত্র রমজানুল মুবারক মাসের অবকাশকালে উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক শরাফতের অধিকারী, সুনামধন্য বুজুর্গ ও অলীয়ে কামেল মাওলানা আমিনুল্লাহ শাহ (রাহ) দরগাহ সংলগ্ন জামে মসজিদে এতেকাফ নিতেন। এসুবাদে আমি ফাজিল ক্লাসে অধ্যয়নকালে ১৯৮০-৮১ সালে তাঁর নিকট হতে হাদীস শাস্ত্রে মিশকাত শরীফ ও ফিকাহ শাস্ত্রে হেদায়া প্রভৃতি গ্রন্থাবলী অধ্যয়ন করার সুযোগ লাভ করি। মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় অধ্যয়নকালে আমি তাঁর নিকট বুখারী শরীফ,মুসলিম শরীফ,নাসায়ী শরীফ ও অন্যান্য সিহাহ গ্রন্থাবলীর নিয়মিত পাঠ গ্রহণ করি। অধ্যাপক আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) ছিলেন বাহরুল উলুম, গভীর জ্ঞানের অধিকারী,অগাধ জ্ঞান ভান্ডারের ধারক বাহক। তাঁর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ ইলমী দক্ষতা ও যোগ্যতা মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় অধ্যয়নকালে শিক্ষকমন্ডলীর মধ্যে তাঁর দরসের ঢং,বর্ণনাভঙ্গি, বক্তৃতা পদ্ধতি অনন্য ব্যতিক্রমধর্মী রূপে আমি পেয়েছি। তাঁর প্রদত্ত লেকচার গুলি ছিল গবেষণাধর্মী। তিনি নিজেই প্রচুর লেখাপড়া করতেন।হাদীসের বিভিন্ন শরুহাত (ব্যাখ্যাগ্রন্থাবলী) অধ্যয়ন করে তার সারসংক্ষেপ সংগ্রহ করে নিতেন।বিভিন্ন মাযহাব থেকে হানাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠা ও প্রাধান্য প্রূানের প্রমাণ্য আলোচনার অবতারণা করতেন। তাঁর প্রদত্ত লেকচারগুলি শুনার জন্য শিক্ষার্থীগণ অধির আগ্রহের সহিত অপেক্ষণ করতেন। সে সময়ে মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা এর বহু সংখ্যক ছাত্র কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত ছিল।কিন্তু যখন আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) এর ক্লাস আরম্ভ হতো তখন ছাত্রগণ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চলাকালীন ক্লাস ছেড়ে তাঁর ক্লাসে উপস্থিত হতো। তাঁর জ্ঞান গবেষণসুলভ বক্তব্য শুনে শিক্ষার্থীগণ পরিতৃপ্ত হতো।তাঁর পাঠদানের স্টাইল ছিল অসাধারণ। আলামা আব্দুর রহমান কাশগড়ি (রাহ) এর পাঠদানের রীতি তাঁর জীবনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। আল্লামা কাশগড়ি (রহ) যেভাবে, যে উপায়ে, যে পদ্ধতিতে দরস পেশ করতেন। হাদীস বিশারদ আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) এর লেকচারের আরো অন্যতম একটি গুন ও বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর তাঁর বক্তব্যের মধ্যে ছিল মুফতি সৈয়্যদ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী বরকতী (রহ) এর ইলমী পান্ডিত্য, ফেকহী ও ইজতেহাদী প্রতিভা বিনয়-উদারতা ও লিল্লাহিয়াতের ছাপ।তিনি তাঁর শিক্ষক মন্ডলীর মধ্যে মুফতি সাহেব ও আল্লামা কাশগড়ি সাহেবের অবদানের কথা আজীবন অকপটে স্বীকার করতেন। কৃতজ্ঞতাভরে তাদের উভয়ের ইহছানের কথা বারবার স্মরণ করতেন। তিনি তাদের শিষ্যত্বের কথা তাঁর শিষ্যদের কে সগর্ভে নিঃসংকোচচিত্তে ব্যক্ত করতেন। মুফতি সাহেব কলকাতা আলিয়া মাদরাসার কামিল হাদীস বিভাগের পাঠদানকালে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে হাদীসের প্রারম্ভিক প্রাসঙ্গিক অতীব প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহের উপর পাঠ সূচনার ভূমিকা স্মরণ বহু মূল্যবান ভাষণ পেশ করতেন। মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর মুফতি সাহেব ঢাকায় চলে আসেন এবং তিনি ঢাকায়ও সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। এতে হাদীস শিক্ষার্থীদের প্রচুর উপকার হতো। এ আলোচনার ধারা কয়েক সপ্তাহ ধরে অব্যাহত থাকত। আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) তার স্বীয় উস্তাদ মুফতি সাহেবের উক্ত রীতি ও পদ্ধতি অবলম্বনে সিদ্ধহস্ত ছিলেন।তিনি তাঁর লিখিত ডায়েরি ও পান্ডুলিপি নিয়ে ক্লাসে আসন গ্রহণ করে অনর্গল মূল্যবান লেকচার ও বক্তৃতাসম্ভার পেশ করতেন। মনে হতো যেন তাঁর পবিত্র যবান থেকে অমূল্য রতœ ও মুক্তা ঝরছে। ছাত্ররা গভীর উৎসুকের সহিত তাঁর প্রদত্ত লেকচারগুলি শুনতো,আহরণ করে নিতো অমূল্য ধনজ্ঞান ভান্ডার,সমৃদ্ধচিত্তে জ্ঞান পিপাসা নিবারণ করতো। প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন শায়খুল হাদীস আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) আমাদেরকে ক্লাসে বর্ণনা করেছেন যে,আমার উস্তাদ মুফতি সাহেব তাঁর প্রদত্ত উপস্থাপিত হাদীস বিজ্ঞানের সেই সব প্রারম্ভিক ভাষণ ও লেকচারগুলি সম্পাদিত করে উর্দু ভাষায় “ইলমে হাদীসকে মুবাদিয়াত” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংকলন লিপিবদ্ধ করেছেন। এ সংকলনের একটি কপি আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এ অধমও মুফতি সাহেবের পাঠাগারে এ পান্ডুলিপিখানা দেখার সুযোগ হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। অধ্যাপক আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) ছাত্রজীবন হতে তাঁর কলম ও লেখার ধার ছিল প্রবল ও শক্তিশালী। তবে তিনি কিতাবের শরাহ কিংবা গ্রন্থ লেখার কাজে তেমন মনযোগ দেননি। তিনি সারাক্ষণ গ্রন্থপাঠে নিমগ্ন ও নিয়োজিত থাকতেন। পাঠশেষে গ্রন্থের মূল্যবান মাল-মসল্লা ও উপাদানগুলো সংগ্রহ করে নিতেন। একদা আমি তাঁকে জিজ্ঞেসা করেছিলাম মাননীয় চাচা মহোদয়! আপনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছু লেখনী রেখে যান। উত্তরে তিনি আমাকে বলেছেন, আমাদের আকাবিরগণ পূর্বসূরী জ্ঞানীরা পৃথিবীতে যে অমূল্য জ্ঞান ভান্ডার রেখে গেছেন, সেইগুলি অধ্যয়ন করার লোক নেই।সেগুলি আমরা শেষ করতে পারিনি। নতুনভাবে লেখার কি প্রয়োজন রয়েছে? সৌভাগ্যের কথা তাঁর লেখা দুইটি গ্রন্থের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ১টি তাঁর লেকচার সমগ্রের একটি সংকলন। তিনি নিজেই এই সংকলনের নামকরণ করেছেন “মাখযানুল উলুম”। এটি আরবী,ফার্সি ও উর্দু ভাষায় রচিত। মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা ও সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা এর অধ্যাপনাকালে বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত বক্তব্যগুলির একক সংকলন। এতে ইলমে হাদীসের অমূল্য রতœরাজি, বহু মূল্যবান দুর্লভ তাত্ত্বিক আলোচনা ও গবেষনা সমৃদ্ধ জ্ঞান ভান্ডারের অপূর্ব সমাহার রয়েছে। পা-ুলিপিখানা কয়েক ভলিয়মে বিন্যস্ত হবে। এটি তার পারিবারিক পাঠাগার ও গবেষণালয়ে সংরক্ষিত রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের সহৃদয়বান প্রকাশকগণ এগিয়ে আসলে এ গ্রন্থটির প্রকাশনার কাজ সহজ হতো। পাক-বাংলা-ভারত উপমহাদেশের জ্ঞান পিপাসু পাঠকমহল এতে প্রচুর উপকৃত হতো। উল্লেখ্য সম্প্রতি এ অধম তাঁর লেখা কয়েকটি প্রবন্ধ বাংলায় ভাষান্তর করার সুযোগ হয়েছে। এমনকি কয়েকটি তা প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলির মধ্যে একটি “সিহাহ সিত্তা: একটি গবেষনাধর্মী পর্য্যালোচনা” এটি আমি অধমের সম্পাদিত সাহিত্য সাময়িকী “শাফায়াত” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশক- ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, চন্দনাইশ,মাওলানা মঞ্জিল,চট্টগ্রাম। ১৯৮৭ সাল। হাদীস বিজ্ঞানী আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) এর অন্য আরো একটি কীর্তি আরবী ভাষায় রচিত হাদীসের সনদের গ্রন্থ যা গ্রন্থকারে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির নাম “আদ-দুরারুস সানীয়্যাহ ফী বায়ানে আসানীদিশ শুয়ুখিল আজিল্লাতে ইলা মুত্তয়াল্লি ফিস সিহাহিস সিত্তাতে” দারুল উলুম কামিল মাদরাসা,চট্টগ্রাম ও মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় কামিল হাদীস অধ্যয়নকালে তাঁর শায়খ ও উস্তাদগণের যে সনদগুলি সিহসহ সিত্তার রচিয়তাগণ পর্যন্ত তথা রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছেছে,সেই সব সনদগুলির ধারাবাহিক বর্ণনা এখানে উল্লেখ করেছেন। এ সনদ গ্রন্থটি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা ও সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে রচনা করেছেন। তবে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন। এ সনদগ্রন্থটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর অন্যান্য শায়খ ও উস্তাদ গণের মধ্যে হতে বিশেষ করে তাঁর প্রিয় শিক্ষক বিশ্ববরেণ্য হাদীস বিজ্ঞানী মুফতি সৈয়দ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী (রহ) এর নিকট অর্জিত সহীহ বুখারী,সহীহ মুসলিম,সুনানে আবু দাউদ,সুনানে তিরমিজি, সুনানে নাসায়ী,সুনানে ইবনে মাজাহ গ্রন্থাবলীর হাদীসের সনদগুলি রাবীদের বিশেষ পরিচিতি সহ চমৎকার আলোচনার অবতারণা করেছেন তিনি এতে। কামিল হাদীস শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত ডিগ্রীধারীদেরকে তথা সনদ প্রত্যাশীদেরকে তিনি স্বীয় হস্তে স্বাক্ষর সম্বলিত ইযাযতনামা লিপিবদ্ধ করে এ সনদগ্রন্থটি প্রদান করতেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন কামিল মাদরাস সমূহে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ও মাস্টার্স ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মাঝে এ সনদগ্রন্থটির চর্চা ও বিতরণ হয়ে আসছে।সনদ গ্রন্থটির সিংহভাগ সনদগুলি মুফতি সৈয়দ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী (রহ) এর লিখিত “মিন্নাতুল বারী” হতে সংগৃহিত ও সংকলিত। মুফতি সাহেবের সনদ গ্রন্থটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো-তাঁর প্রিয় শায়খ বাহরুল উলুম আল্লামা মোশতাক আহমদ কানপুরী (রহ) এর মাধ্যমে বর্ণিত সনদগুলি একদিকে শায়খে মুহাক্কিক আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (রহ) এর সহিত সম্পৃক্ত। আরো একদিকে দিল্লীর বিখ্যাত কুতুব শাহ ওলী উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (রহ) ও তাঁর খান্দানের সহিত সম্পৃক্তত লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে তাঁর বর্ণিত সনদগুলি হারামাইন শরীফাইন (মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারা) ওলামাদের সহিত মিলিত হয়েছে। আবার অন্যদিকে তাঁর বর্ণিত সনদগুলি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওলামাদের সহিত সম্পৃক্ত রয়েছে। মূলত তার অর্জিত সনদগুলি আরব-আজমের ওলামা ও ওলামায়ে হিন্দ এর সহিত সম্পৃক্ত রয়েছে। উল্লেখ্য আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) এর সনদগুলির মধ্যে দুইটি ধারা বিদ্যমান রয়েছে। দেউবন্দী ধারা ও বেরেলভী ধারা। তাঁর অধিকাংশ সনদগুলি তাঁর প্রিয় শ্রদ্ধাভাজন শায়খ সৈয়দ মুফতি আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী (রহ) এর নিকট হতে অর্জন করেছেন। মুফতি সাহেবের স্বীয় প্রিয় শায়খ বাহরুল উলুম আল্লামা মোশতাক আহমদ কানপুরী (রহ) এর নিকট হতে অধিকাংশ সনদ গ্রহণ করেছেন।আল্লামা মোশতাক আহমদ কানপুরী (রহ) ছিলেন ইমামে আহলে সুন্নাত আলা হযরত মুফতি আহমদ রেযা খান বেরেলভী (রহ) এর অন্যতম খলিফা। এইখানে উল্লেখ্য যে, আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরেলভী (রহ:) স্বীয় হাদীসের সনদগ্রন্থ “আল-ইযাযাতুল মতীনাহ লে ওলামায়ে বাক্কাতাহ মদীনাহ” স্বীয় শিষ্য ও খলীফা,আলেমকুল সম্রাট আল্লামা যুফর উদ্দীন বিহারী (রহ:) কে ইযাযাত দান করেন। তিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার হেড মুহাদ্দিস মুফতি সৈয়দ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী (রহ:) কে উক্ত সনদগ্রন্থটি ইযাযাত দান করেন। তিনি স্বীয় শিষ্য ও খলীফা আল্লামা ফখর উদ্দীন (রহ:) কে মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় অধ্যয়নকালে এ সনদগ্রন্থটি ইযাযাত দান করেন। আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) স্বীয় শিষ্য,ছাত্র,ভাতিজা ও জামাতা আমি অধম মুহাম্মদ আমিনুর রহমান কে মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় অধ্যয়নকালে এ সনদগ্রন্থটি ইযাযাত দানে ধন্য করেন। আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) মুফতী সৈয়দ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী বরকতী (রহঃ) এর নিকট মুজাদ্দেদীয়া নকশবন্দীয়া তরীকতের ইযাযত গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া তিনি কাদেরীয়া রেজভীয়া তরীকতের ইযাযতপ্রাপ্ত ছিলেন। কেননা মুফতী সাহেব ইমাম আহমদ রেযা খান বেরেলভী (রহঃ) এর সন্তানতুল্য ও শীর্ষস্থানীয়নীয় খলীফা মালাকুল উলামা যুফর উদ্দীন বিহারী (রহঃ) এবং আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান (রহঃ) এর অন্যতম খলীফা বাহরুল উলুম আল্লামা মোশতাক আহমদ কানপুরী (রহঃ) এর নিকট হতেও কাদেরীয়া রেজভীয়া তরীকতের ইযাযত ও খিলাফত লাভ করেছিলেন মুফতী সাথে এ দুজনের নাম “মিন্নাতুল বারী” গ্রন্হে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া মুফতী সাহেব দিল্লীর আধ্যাত্মিক শরীয়তের অধিকারী, ইমামে রাব্বানী, মুহাদ্দিদে আমাকে সানী শায়খ আহমদ ফারুকী সারহিন্দী (রহঃ) এর অন্যতম বংশীয় উত্তরাধিকার, আস্-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী শাহ আবুল হাসান যায়দ আজহারী মুহাদ্দেদী ফারুকী দেহলভী ইবনে শাহ আবুল খায়র মহিউদ্দিন আব্দুল্লাহ মুজাদ্দেদী ফারুকী দেহলভী (রহঃ) এর নিকট হতেও মুজাদ্দেদীয়া নকশবন্দীয়া তরীকতের ইযাযতপ্রাপ্ত ছিলেন কিন্তু মুফতী সাহেব নিজেই তাঁর স্বীয় অজিফায় তাঁর উস্তাদ, পীর ও শ্বশুর আবু মুহাম্মদ বরকত আলী শাহ সাহেবের শাজরা, মুফতী সাহেবের দ্বিতীয় পীর শাহ আবু সা’দ আহমদ (রহঃ) এর শাজরা ও মুফতী সাহেবের তৃতীয় পীর,চাচা ও উস্তাদ সৈয়দ আবদুদ দায়্যান বরকতী (রহঃ) এর শাজরা শরীফা ধারাবাহিকভাবে আলোচনার অবতারনা করেছেন। একটি চমকপ্রদ ঘটনা হলো আমার উস্তাদ, চাচা শ্বশুর অধ্যক্ষ আল্লামা আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ ফখরুদ্দীন (রহঃ) স্বভাবত স্বীয় প্রিয় শিক্ষক আল্লামা আব্দুর রহমান কাশগড়ি (রহঃ) এর রীতিনীতি, আদর্শাচার ও জীবনধারার প্রতি প্রগাঢ় ভক্ত ছিলেন। আল্লামা কাশগড়ি (রহঃ) স্বাধীনচেতা, উদার সাহিত্যিক চিন্তাধারার বিশ্বাসী ছিলেন। তাই তিনি মুফতী সাহেবের সূফী প্রাবল্যের প্রতি তেমন বেশী ধার করতেন না। আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) স্বীয় প্রাথমিক জীবনে উভয় উস্তাদদ্বয়ের মধ্যে আল্লামা কাশগড়ি (রহঃ) এর আদর্শ ও জীবনধারার প্রতি অধিক প্রভাবে প্রভাবিত হন। এ ছাড়া আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) আল্লামা কাশগড়ি (রহঃ) এর তত্ত্বাবধানে দীর্ঘসময় স্বীয় রিসার্চ কাজ চালীয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। এ সময়ে তিনি আল্লামা কাশগড়ি (রহঃ)কে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ পান। তাই আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) তার আদর্শ ও চিন্তাধারার প্রতি ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েন। আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) কোন একসময় মুফতী সৈয়দ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী বরকতী (রহঃ) এর ঢাকাস্থ কলুটৌলা খনকায় যান এবং মুফতী সাহেবের বিশেষ রুহানী ফুয়ুজাত ও তাওয়াজুত্ত কামনা করেন। আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) মুজাদ্দেদীয়া নকশবন্দীয়া তরীকতের উজ্জ্বল নক্ষত্র মুফতী সৈয়দ আমীমুল ইহছান মুজাদ্দেদী (রহঃ) এর পূণ্যময় হস্তে বায়আাত হন। মুফতী সাহেব তাঁকে স্বীয় লিখিত তাসাউফ বিষয়ক গ্রন্থ “আৎ-তাশাররুফ লে আদাচিত তাসাউফ “ গ্রন্হটি প্রদান করেন এবং উক্ত গ্রন্থে বর্ণিত তরীকায়ে নকশবন্দীয়া মুজাদ্দেদীয়া, তরীকায়ে মুজাদ্দেদীয়া কাদেরীয়া, মুজাদ্দেদীয়া চিশতীয়া,মুজাদ্দেদীয়া সোহরাওয়ার্দী তথা সূফী তরীকতের বিভিন্ন সনদগুলির ইযাযত দান করেন। মুফতী সাহেব নিঃসন্তান ছিলেন। কেবলমাত্র তাঁর একটি কন্যা ছিল। মুফতী সাহেব আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) কে সন্তানতুল্য ভালবাসতেন মুফতী সাহেবের বাসায় ও খানকায় তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এভাবে তিনি মুফতী সাহেবের সুযোগ্য ইলমী ওয়ারেছ ও রুহানী উত্তরসূরীর মর্যাদায় অভিষিক্ত হন। আলহামদুলিল্লাহ! আমার শ্রদ্ধেয় পিতা অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুর রহমান ও আমার শ্রদ্ধেয় উস্তাদ, চাচা ও শ্বশুর আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহঃ) উভয়েই মুফতী সাহেবের রুহানী ফুয়ুজাত দ্বারা সমৃদ্ধ। তাঁদের আধ্যাত্মিক অমীয় সুধা ধারা যুগ যুগ ধরে বহমান থাকুক। প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ) এর শিষ্য ও ছাত্রগণের সুদীর্ঘ তালিকা রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive নয়াদিগন্ত,বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে বিএনপির শুভেচ্ছা বিনিময়,বৌদ্ধ ধর্ম,"বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।দিবসটির আগের দিন বুধবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপেতে এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। এই অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান প্রমুখ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থেকে খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, বান্দরবান, পাবর্ত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বুদ্ধ পূর্ণিমা বৃহস্পতিবার। মহান গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের সব স্থানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধ পূর্ণিমা নামে পরিচিত। বিএনপির দিবসটি উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে ঢাকার মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের সুনন্দ মিত্র থের, জিন প্রিয় ভিক্ষু, খাগড়াছড়ি বৌদ্ধ মন্দিরের ইন্দ্র বংশ ভিক্ষু উপস্থিত ছিলেন। দলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সুভাষ চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া ও বিজন কান্তি সরকার, বৌদ্ধ সম্প্রদায় সদস্যদের থেকে সাচিং প্রু জেরি, উদয় কুসুম বড়ুয়া, সুশীল বড়ুয়া, মৈত্রী চাকমা, প্রবীন চন্দ্র চাকমা, চন্দ্র কুমার বড়ুয়া, পার্থ প্রতিম বড়ুয়া, কোহিলী দেওয়ান, সনত তালুকদার, ঝন্টু কুমার বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।",ধর্মীয় উৎসব,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ইসরাইলের নৃশংস হামলা : লেবাননে নারী-শিশুসহ নিহত ৯ ",ইসলাম ধর্ম,"বুধবার লেবাননেও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এ হামলায় নয়জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চার শিশু ও চারজন নারী। নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক বলে জানা গেছে। দক্ষিণ লেবানন অঞ্চলের এক হাসপাতালের পরিচালক এবং লেবাননের তিনটি নিরাপত্তা সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। এর আগে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরাইলি এক সেনাসদস্য নিহত হয়। হিজবুল্লাহর রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে। লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠীর ওই হামলায় এক ইসরাইলি সেনা নিহত হন। আল-সাওয়ানা গ্রামে ইসরাইলি হামলায় একজন নারী ও তার দুই সন্তান নিহত হয়েছেন বলে দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। আর শহরের হাসপাতালের পরিচালক হাসান ওয়াজনি এবং অন্য তিনটি নিরাপত্তা সূত্রের মতে, নাবাতিহের একটি ভবনে হামলায় আরও দুই শিশু, তিনজন নারী ও একজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। চার মাস ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৭ হাজার। গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সেই আগ্রাসন শুরুর কয়েক দিন পর থেকেই লেবানন-ইসরাইল সীমান্ত এলাকায় রকেট ও ড্রোন হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরাইলের সেনাবাহিনীও পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে। ওয়াজনি বলেছেন, ইসরাইলি হামলার পর চিকিৎসার জন্য আরও সাতজন হাসপাতালে গিয়েছেন। গোষ্ঠী এবং নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, পৃথক হামলায় চার হিজবুল্লাহ যোদ্ধাও নিহত হয়েছেন। অবশ্য হিজবুল্লাহ বুধবার কোনো অভিযানের ঘোষণা দেয়নি। এর কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান বলেছেন, বুধবার লেবাননের ভ‚খÐে ইসরাইলের হামলার ‘জবাব দেয়া হবে’। এদিকে ইসরাইলি সরকারের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, বুধবার সকালে লেবানন থেকে রকেট হামলায় ইসরাইলের এক নারী সৈন্য মারা গেছে এবং অন্য আটজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মুখপাত্র ইলানা স্টেইন বলেছেন, ‘আমরা বারবার স্পষ্ট করেছি, ইসরাইল দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধে আগ্রহী নয়। তবে উস্কানি দিলে আমরা কঠোর জবাব দেব।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তারা তাদের বাড়িতে ফিরতে পারছে না, এটি অসহনীয়। তাদেরকে অবশ্যই দেশে ফিরে শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারতে হবে।’ স্টেইন এবং ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী লেবানন থেকে আন্তঃসীমান্ত রকেট হামলার জবাব দিয়েছে। গাজায় ৪৪৭টি মসজিদ ধ্বংস : ইসরাইলি বাহিনী গত কয়েক মাস ধরে গাজায় নিরবচ্ছিন্নভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলা কেবল হাজার হাজার মানুষের জীবনকেই লক্ষ্য করেনি, বরং প্রায় ৪৪৭টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে। ফিলিস্তিনের এই মসজিদগুলো শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নামাজের স্থানই ছিল না, বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক ছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বিখ্যাত ওমারি মসজিদে বোমাবর্ষণ করেছিল। এটি মসজিদের প্রাচীনতম নির্মাণগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এটি সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। ধর্মীয় স্থান ধ্বংস করা বিতর্ক এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগের উৎস। তবে ইসরাইল নিজেদের রক্ষা করে বলেছে যে মসজিদগুলো হামাস যোদ্ধারা লুকানোর জন্য ব্যবহার করেছিল। এভাবে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে শুধুমাত্র হামাসকে ধ্বংস করার জন্য। তবে তাদের এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। তাছাড়া বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীন গির্জা সেন্ট পোরফিসরিয়াস চার্চসহ গাজায় আরো বেশ কয়েকটি ধর্মীয় স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়া ইসরাইলি হামলায় ১০০ জন ইসলাম ধর্মপ্রচারক নিহত হয়েছেন। এমনকি অফিস ও কুরআনিক স্কুলও ধ্বংস করা হয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুকে হালকাভাবে নেবেন না : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান মঙ্গলবার বলেছেন যে, এ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তির জন্য ফিলিস্তিন সংকটের স্থায়ী সমাধান জরুরি। ‘প্রতিটি ঘটনা যা সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে মীমাংসা করা হয়নি বা আমরা উড়িয়ে দিয়েছি, একটি সমস্যা হিসাবে থেকে যায়,’ তিনি বলেছিলেন, ‘ইসরাইল যদি এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি চায়, তবে তাকে অবশ্যই সম্প্রসারণবাদী স্বপ্ন অনুসরণ করা বন্ধ করতে হবে এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নিতে হবে। গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ অসম্প‚র্ণ থেকে যাবে যতক্ষণ না একটি স্বাধীন, সার্বভৌম এবং ভৌগোলিকভাবে একীভ‚ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ১৯৬৭ সীমানার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার রাজধানী পূর্ব জেরুজালেম।’ সোমবার দুবাইয়ে শুরু হওয়া ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিট (ডবিøউজিএস) ২০২৪-এর দ্বিতীয় দিনে দেয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন এরদোগান। সেদিনের প্রধান অতিথি ছিলেন তুরস্ক। এরদোগান ফিলিস্তিন শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার (ইউএনআরডবিøউএ) অবদান অব্যাহত রাখার জন্য দেশগুলির প্রতি আহŸান জানিয়েছেন, এর খ্যাতির উপর সাম্প্রতিক হামলাকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করে বলেছেন, ‘আমি বিবেকসম্পন্ন দেশগুলিকে এজেন্সি ( ইউএনআরডবিøউএ) রক্ষা করা চালিয়ে যাওয়ার আহŸান জানাই, যা জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলের ৬০ লাখ উদ্বাস্তুদের জন্য লাইফলাইন।’ তিনি বলেন, ‘আমি এমন একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটা বলছি যারা ইহুদিসহ অসংখ্য শরণার্থীর জন্য দরজা খুলে দিয়েছে যারা নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়েছিল।’ এরদোগান ফিলিস্তিনকে সাহায্য করার জন্য তুরস্কের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং দেশটি এখন পর্যন্ত কীভাবে সহায়তা করেছে তা ভাগ করে নিয়েছেন। ‘আমরা এ সংকট ঠেকাতে সবকিছু বিনিয়োগ করেছি,’ তিনি বলেছিলেন। ‘এ পর্যন্ত গাজায় ৩৪ হাজার টনেরও বেশি সাহায্য পাঠানো হয়েছে। আমরা আমাদের দেশে ৩৮০ রোগীর পাশাপাশি ৩৪৪ পরিবারের সদস্যদের হোস্ট করেছি, তাদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছি। আমরা কখনোই আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের পরিত্যাগ করব না।’ তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে অবিচারেরও নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সঙ্কটের উৎস হল টেকসই বসতি স্থাপন যা ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব সত্তে¡ও ফিলিস্তিনে অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইল নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে। অবৈধ বসতি ও গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,ক্ষমা মুমিনের অনন্য একটি গুণ,ইসলাম ধর্ম,"অন্যের ভুলত্রুটি ক্ষমা করা এবং অসদাচরণের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করা মুমিনের অনন্য একটি গুণ। এই গুণ বা বৈশিষ্ট্য অর্জনের মাধ্যমে একজন মানুষ খুব সহজেই সবার প্রিয় হয়ে উঠতে পারে এবং আল্লাহর বিশেষ বান্দা হিসেবে মনোনীত হতে পারে। আল্লাহ তায়ালা এই গুণ অর্জনে মানুষকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে সবর করে ও ক্ষমা করে, নিশ্চয়ই তা অতি আবশ্যকীয় বিষয়। ’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৪৩) এই গুণ অর্জনে রয়েছে ক্ষমা ও আল্লাহর ভালোবাসা। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা মানুষকে ক্ষমা করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা : আল ইমরান, আয়াত : ১৩৪) মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাদের ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। তাই তিনি তার প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে এই গুণ অর্জনে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আপনি ক্ষমাশীলতা অবলম্বন করুন এবং মানুষকে ভালো বিষয়ের আদেশ করুন। আর মূর্খদের উপেক্ষা করুন। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৯৯) অন্যকে ক্ষমা করা এবং তার ভুলের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করার প্রায়োগিক উজ্জ্বল উদাহরণ ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)। তার প্রশস্ত উদারতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বিখ্যাত সাহাবি আনাস (রা.) বলেন, আমি নবীজির সঙ্গে হাঁটছিলাম। তার পরনে ছিল একটি নাজরানি (ইয়েমেনি) চাদর, মোটা কাপড় বিশিষ্ট। এক বেদুইন তার কাছে এসে সেই চাদর ধরে সজোরে টান দিল। আমি দেখলাম মোটা কাপড়ের ঘষায় নবীজির কাঁধে দাগ বসে গেল। লোকটি কর্কশ স্বরে তাকে বলল, ‘আল্লাহর যে মাল তোমার কাছে আছে, তা থেকে আমাকে কিছু দিতে বলো!’ নবীজি (সা.) লোকটির দিকে ফিরে তাকালেন এবং মুচকি হাসলেন, এরপর তাকে কিছু দেওয়ার আদেশ করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩১৪৯) আমদের প্রীয় নবীজির এই মুগ্ধকর আচরণের প্রশংসা আল্লাহ কোরআন মাজিদে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর দয়ায় আপনি তাদের প্রতি বিনম্র থেকেছেন। আপনি যদি কর্কশ ও কঠোর মনের হতেন, তাহলে এরা সবাই আপনার চারপাশ থেকে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ত। সুতরাং তাদের ক্ষমা করুন, তাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করুন। ’ (সুরা : আল ইমরান, আয়াত : ১৫৯) নবীজি নিজেও যেমন এই গুণের ওপর যত্নশীল ছিলেন, তেমনি আমাদেরও এই গুণ অর্জনে উৎসাহিত করেছেন। এক বর্ণনায় তিনি বলেছেন, ‘কোমলতা যেখানেই থাকবে, সেটাই হবে সৌন্দর্যমণ্ডিত। আর যেখান থেকেই তা উঠিয়ে নেওয়া হবে, সেটাই হবে দোষযুক্ত।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৯৪) আল্লাহ তায়ালা আমাদের মহৎ এই গুণ অর্জন করে মানুষের মন জয়ের পাশাপাশি আল্লাহর মনোনীত বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,ইসলামের ইতিহাসে মক্কা বিজয়ের প্রভাব,ইসলাম ধর্ম,"মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসে এক যুগান্তকরী ঘটনা। মক্কা বিজয়ের পর পুরো আরব ভূ-খণ্ডে এবং সারা বিশ্বে অল্পদিনের মধ্যে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টম হিজরির রমজান মাসে ঐতিহাসিক এই বিজয় অর্জিত হয়। মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বলেন, ‘হে কুরাইশ বংশধর! আমি তোমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করব বলে তোমাদের ধারণা? তারা বলল, আপনি আমাদের মহান ভাই, মহান ভাইয়ের ছেলে। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের তাই বলব, যা ইউসুফ (আ.) তার ভাইদের বলেছিলেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। যাও তোমরা আজ মুক্ত। ’ (তাফসিরে কাশশাফ : ৬/৪৫১) ইসলাম আবির্ভাবের পর দীর্ঘ এক দশক মুসলমানের ওপর মক্কাবাসীর সীমাহীন অত্যাচার এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-সহ অন্য মুসলিমদের দেশান্তরে বাধ্য করার পরও মহানবী (সা.)-এর উদারতায় বিস্মিত হয়। ফলে তাদের চোখ থেকে মিথ্যার আবরণ খসে পড়ে এবং ইসলামের সঙ্গে নতুন দিনের যাত্রা শুরু করতে আগ্রহী হয়। মক্কাবাসীর আগ্রহ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের থেকে আনুগত্যের বাইআত গ্রহণ করেন। মূলত এ বাইয়াত ছিল নতুন সমাজ গড়ার অঙ্গীকার। পবিত্র কোরআনে বিবৃত অঙ্গীকারে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা বিষয়ক অপরাধগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যা একটি নতুন বিজিত ও স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহাসিকরা বলেন, মক্কায় মুসলিম বাহিনীর বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর মক্কার অধিবাসীদের সামনে সত্য পরিষ্কার হয়ে গেল। তারা বুঝতে পারল ইসলাম ছাড়া সাফল্যের কোনো পথ নেই। ফলে তারা বাইয়াতের জন্য একত্র হলো। মহানবী (সা.) সাফার ওপর বসলেন এবং লোকদের বাইয়াত গ্রহণ করছিলেন। ওমর (রা.) তাঁর নিচে ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) মানুষ থেকে যথাসম্ভব আনুগত্যের অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। পুরুষদের অঙ্গীকার গ্রহণের পর নারীদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। ওমর (রা.) রাসুল (সা.) থেকে একটু নিচু স্থানে বসে তাঁর নির্দেশে বাইআত করাচ্ছিলেন এবং নারীদের কথা তাঁর কাছে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। (আর রাহিকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা ৪২৫) অন্য বর্ণনায় এসেছে, মহানবী (সা.) নারীদের থেকে ছয়টি অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। পবিত্র কোরআনে যা এভাবে বিবৃত হয়েছে, ‘হে নবী, মুমিন নারীরা যখন আপনার কাছে এসে এ মর্মে বাইয়াত করে—তারা আল্লাহর সঙ্গে কোনো শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তার হত্যা করবে না, তারা সজ্ঞানে কোনো অপবাদ রটাবে না এবং সৎকাজে আপনাকে অমান্য করবে না, তখন আপনি তাদের বাইয়াত গ্রহণ করুন। আর তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, দয়ালু। ’ (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত : ১২)",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,"ঈদের দিনের আমল ",ইসলাম ধর্ম,"নতুন চাঁদকে আরবিতে বলে ‘হিলাল’। ‘হিলাল’ হচ্ছে এক থেকে তিন তারিখের চাঁদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো, ইফতার করো বা ঈদ করো।’ যে সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখা যায়, সে রাত হলো ‘চাঁদরাত’। আরবি চান্দ্র বছরের নবম মাস রমজান এবং দশম মাস শাওয়াল। রমজানের রোজার শেষে পয়লা শাওয়াল ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। শাওয়ালের চাঁদরাত হলো ঈদের রাত। ইসলামে যে রাতগুলো ইবাদতের জন্য এবং ফজিলতে পরিপূর্ণ, সেসবের অন্যতম এই ঈদের রাত। চাঁদরাতের প্রথম সুন্নত ও ফরজে কিফায়া আমল হলো সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ দেখা। চাঁদ দেখলে বা চাঁদ দেখার সংবাদ নিশ্চিত হলে দোয়া পড়া সুন্নত (তিরমিজি ৩৪৫১) রমজানের ঈদের রাতে পুরুষদের মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে পড়ার চেষ্টা করা এবং নারীদের ফরজ নামাজ আদায় করা। রাতের ইবাদতের জন্য বিশেষভাবে পবিত্রতা অর্জন করা। ইবাদতের উপযোগী ভালো কাপড় পরা। মাগরিবের পর আউওয়াবিন নামাজ পড়া এবং শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া। রাত জেগে নফল ইবাদত করা। নফল নামাজ পড়া। তাহ্যিয়াতুল অজু, দুখুলুল মসজিদ, তওবার নামাজ, সলাতুল হাজাত, সলাতুত তসবিহ, সলাতুস শোকর ইত্যাদি পড়া। কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করা, সুরা ইয়াসিন, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, সুরা মুজাম্মিল, সুরা মুদ্দাচ্ছির, সুরা ফাতহ, সুরা নাবা ইত্যাদি পাঠ করা। দরুদ শরিফ পাঠ করা, ইস্তিগফার করা, জিকির করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন ঈদুল ফিতরের দিন আসে, তখন আল্লাহ বান্দাদের বিষয়ে ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করে বলেন, হে আমার ফেরেশতারা! যে শ্রমিক তার কাজ পূর্ণ করেছে, তার বিনিময় কী? তারা বলবে, তাদের বিনিময় হলো তাদের পারিশ্রমিকও পরিপূর্ণভাবে পরিশোধ করা। বলবেন, হে আমার ফেরেশতারা! আমার বান্দারা তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছে, তারপর দোয়ার উদ্দেশে বের হয়েছে। আমার সম্মান, মহত্ত্ব, করুণা, মাহাত্ম্য ও উচ্চ মর্যাদার শপথ! আমি তাদের প্রার্থনা গ্রহণ করব। এরপর আল্লাহ বলবেন, তোমরা ফিরে যাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম। তোমাদের মন্দ আমলগুলো নেকিতে পরিবর্তন করে দিলাম। নবীজি (সা.) বলেন, তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে যাবে। ঈদের নামাজ পড়া পুরুষদের জন্য ওয়াজিব। ঈদের নামাজের সময় হলো সূর্যোদয়ের পর থেকে মধ্য দিবসের আগ পর্যন্ত। ঈদের নামাজের আগে পরে কোনো নফল নামাজ পড়া যায় না। ঈদের নামাজের জন্য আজান ও একামত দিতে হয় না। দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ ছয়টি অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরসহ আদায় করতে হয়। প্রথম রাকাতে সানা পড়ার পর সুরা পড়ার পূর্বে তিনটি তকবির এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কিরাত পড়ার পর রুকুতে যাওয়ার আগে তিনটি তকবির বলতে হয়। প্রতিটি তকবির বলার সময় কান পর্যন্ত উভয় হাত তুলে হাত ছেড়ে দিতে হয়। ঈদের নামাজের পর খুতবা দেওয়া হয়। খুতবা মানে ভাষণ বা বক্তৃতা। ঈদের খুতবা দেওয়া বা শোনা দুটোই ওয়াজিব। সব রকমের খুতবার সময় শ্রোতাদের নীরবতা ওয়াজিব ।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"লাইবেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হয়ে নিহত ২৯ ",খ্রীষ্টান ধর্ম,"লাইবেরিয়ার রাজধানী মনরোভিয়াতে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দেশটির পুলিশ এ তথ্য জানান। খবর এনডিটিভির। বুধবার ভোরে অথবা বৃহস্পতিবার সকালে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পুলিশের মুখপাত্র মোসেস কার্টার বলেন, নিহতের সংখ্যা অস্থায়ী এবং এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পুলিশের মুখপাত্র আরও বলেন, হাতে ছুরি থাকা একদল গ্যাংস্টার উন্মুক্ত স্থানে প্রার্থনাকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পদদলিত হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়। তিনি জানান, ছুরি বহনকারী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাইবেরিয়ায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার সমাবেশকে ক্রুসেড বলা হয়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী এমানুয়েল গ্রে (২৬) বলেন, তিনি অনেক চিৎকার শুনতে পান এবং অনেক মৃতদেহ দেখতে পান। বিবিসি আরও জানিয়েছে, নিহতদের মরদেহ রেডেম্পশন হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative দৈনিক ইনকিলাব,"গাজায় অনাহারে ২০ জনের মৃত্যু ",ইসলাম ধর্ম,"গণহত্যা বন্ধে আইসিজের কাছে ফের আবেদন দক্ষিণ আফ্রিকার গাজার যুদ্ধ মানবসভ্যতার জন্য লজ্জার : চীন কয়েক সপ্তাহের জন্য সংঘাত থামিয়ে রাখার একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে মিশরের আলোচকদের চেষ্টার মাঝেই, ইসরাইলের সামরিক বাহিনী, বুধবার গাজা ভুখন্ড জুড়ে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়েছে। স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হামলা হচ্ছে হাসপাতালেও। এতে করে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে। হামাসের প্রতিনিধি দলটি চলমান আলোচনার মধ্যেই কায়রো ত্যাগ করেছে। তারা বলেছে যে, ইসরাইল একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সমস্ত প্রচেষ্টা ‘বিফল’ করেছে। সরকারি কর্মকর্তা, মানবিক কর্মী এবং এনজিও কর্মীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছিটমহলটি দুর্ভিক্ষের গভীরে পতিত হওয়ার পরেও ইসরাইল গাজার জন্য ‘ভিত্তিহীনভাবে’ সকল সহায়তা কার্যক্রম অবরুদ্ধ করেছে। এরসঙ্গে অবরুদ্ধ এই ভুখন্ডটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজায় অনাহারে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে অবরুদ্ধ এই ভ‚খÐটিতে অনাহারে মৃতের সংখ্যা পৌঁছাল ২০ জনে। এছাড়া হিসাবের বাইরেও ফিলিস্তিনি এই ভুখন্ডর আরও অনেকেই নীরবে মারা যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ইসরাইলি অবরোধের মধ্যে গাজা উপত্যকায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছেছে বলে বুধবার ভ‚খÐটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে আল-শিফা হাসপাতালে ১৫ বছর বয়সী এক শিশু এবং উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ৭২ বছর বয়সী একজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এতে করে অপুষ্টি এবং ডিহাইড্রেশনের কাছে হার মেনে গাজায় প্রাণ হারানো মানুষের আনুষ্ঠানিক সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছেছে। আল-কুদরা জোর দিয়ে বলেন, ঘোষিত এই মৃত্যুর সংখ্যা শুধুমাত্র হাসপাতালে যারা পৌঁছেছেন বা হাসপাতালে যারা মারা গেছেন তাদের মৃত্যুকেই সামনে আনছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আরও বহু লোক হাসপাতালে না পৌঁছানোর ফলে অনাহারে নীরবেই মারা যাচ্ছেন।’ আশরাফ আল-কুদরা বিবৃতিতে আরও বলেছেন, ‘উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য।’ এদিকে নুসেইরাত এবং দেইর আল-বালাহতে ইসরাইলি হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। এছাড়া নুসেইরাত শরণার্থী শিবির এবং দেইর আল-বালাহতে ইসরাইলি হামলার ফলে আরও অনেক ফিলিস্তিনি আহত এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ফিলিস্তিনের গাজা ভ‚খÐের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ। ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে আইসিজের কাছে ফের আবেদন দক্ষিণ আফ্রিকার : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পূর্ণ মাত্রায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) কাছে ফের আবেদন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়। সেখানে ইতিমধ্যে ইসরাইলের প্রতি যেসব নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ইসরাইলি কঠোরতার কারণে গাজায় ভয়াবহ মাত্রায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ৮৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আগামী ছয় মাসেক্ষুধায় মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের আবেদনে জানায়, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গণহত্যা চালানোর কারণে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশু ও নবজাতকরা চরম অবস্থার মুখে রয়েছে। এমন অবস্থায় আদালতের কাছ থেকে আরও কিছু পদক্ষেপ আমরা আশা করছি। উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার আনা ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ২৬ জানুয়ারি আইসিজে অন্তর্র্বতী আদেশে ইসরাইলকে গণহত্যা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল। এছাড়া গাজায় আরও বেশি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পাঠানো নিশ্চিত করতেও বলেছিল জাতিসংঘের এই আদালত। দক্ষিণ আফ্রিকা এক বিবৃতিতে জানায়, দুঃখজনকভাবে ইসরাইল আদালতের ওই আদেশ পালন করেনি। বরং ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যামূলক অপরাধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। হেগের আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার এ আবেদনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ প্রায় আসন্ন। কেবল গত সপ্তাহেই খাবারের অভাবে অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে। গাজার যুদ্ধ মানবসভ্যতার জন্য লজ্জার : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গতকাল গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধকে ‘মানবসভ্যতার জন্য লজ্জাজনক’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং ‘শিগগির যুদ্ধবিরতির’ দাবি জানান। এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি মানবজাতির জন্য অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং সভ্যতার জন্য একটি লজ্জাজনক বিষয় যে ২১ শতকে এসেও এ ধরনের একটি মানবিক বিপর্যয়কে থামানো যাচ্ছে না।’ গত বছরের অক্টোবরে থেকে চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের শুরু থেকেই চীন যুদ্ধবিরতির আহŸান জানিয়ে এসেছে। ঐতিহাসিকভাবে চীন ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সহানুভ‚তিশীল। দেশটি এ অঞ্চলের সংঘাত নিরসনে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল নামে দুইটি পৃথক, সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের (টু স্টেট থিওরি) মতবাদের প্রতি সমর্থন জানায়। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একটি ‘আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন’ আয়োজনের মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের আহŸান জানিয়েছেন। ওয়াং বলেন, ‘এ সংঘাত অব্যাহত রাখার পেছনে কোনো যুক্তি নেই এবং এই মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের পক্ষেও কোনো গ্রহণযোগ্য অজুহাত নেই।’ ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শিগগির উদ্যোগ নিতে হবে। তাৎক্ষনিক যুদ্ধবিরতি ও সহিংসতা বন্ধের উদ্যোগকে অন্য সব কিছুর ঊর্ধ্বে রাখতে হবে এবং (গাজায়) মানবিক ত্রাণ পৌঁছানো নিশ্চিত করাকে নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি। বেইজিং এর শীর্ষ ক‚টনীতিক আরও জানান, চীন চায় ফিলিস্তিন জাতিসংঘের ‘স্থায়ী’ সদস্যপদ পাক। ওয়াং বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ গ্রহণের প্রতি সমর্থন জানাই।’ তিনি বলেন, ‘গাজার বিপর্যয় আবারও বিশ্বকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে ফিলিস্তিনি ভ‚খÐ দীর্ঘ সময় ধরে দখল করে রাখা হয়েছে এবং এ বিষয়টিকে আর অবজ্ঞা করা সম্ভব নয়। ফিলিস্তিনি জনগণের দীর্ঘদিনের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র দেশ গঠনের ইচ্ছাকে আর এড়িয়ে যাওয়া যায় না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ফিলিস্তিনি জনগণ ঐতিহাসিকভাবে যে অন্যায়ের শিকার হয়েছে, তা সংশোধন করতে হবে।’ সূত্র : আল-জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস, এএফপি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative কালের কন্ঠ,দুর্নীতির বিরুদ্ধে মহানবীর কঠোর হুঁশিয়ারি,ইসলাম ধর্ম,"দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি সমাজকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়। ইসলামের দৃষ্টিতে দুর্নীতি করে মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করা জঘন্যতম অপরাধ। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনেবুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের কাছে পেশ কোরো না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৮) এই আয়াতের দুটি অংশে দুই ধরনের দুর্নীতির ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। প্রথমাংশে চতুরতার আশ্রয় নিয়ে অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ গ্রাস করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় অংশটির এক অর্থ হচ্ছে, শাসকদের ঘুষ দিয়ে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা কোরো না। দুর্নীতির মূল কারণ লোভ-লালসা। মানুষ লোভ-লালসা থেকে দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কাব ইবনে মালেক আল-আনসারি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকে ছাগলের পালে ছেড়ে দেওয়া হলে তা যতটুকু না ক্ষতি সাধন করে, কারো সম্পদ ও প্রতিপত্তির লোভ এর চেয়ে বেশি ক্ষতি সাধন করে তার ধর্মের। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৭৬) তাই নিজের দ্বিন-ধর্ম বাঁচাতে হলে অবশ্যই লোভ-লালসা ত্যাগ করতে হবে। আর লোভ-লালসা ত্যাগ করা গেলে দুর্নীতিও কমে যাবে, ইনশাআল্লাহ। দুর্নীতির দৌরাত্ম্য বাড়ার পেছনে জ্বালানির কাজ করে ঘুষ, যা মানুষকে অভিশপ্ত করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ঘুষ দাতা ও গ্রহীতাকে অভিসম্পাত করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৮০) অর্থাৎ ইসলামের দৃষ্টিতে ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই সমান অপরাধী। উভয়ই দুর্নীতিবাজ। রাসুল (সা.) এই কাজে লিপ্ত নিকৃষ্ট মানুষদের অভিশাপ দিতে বাধ্য হয়েছেন। ঘুষের লোভে পড়ে মানুষ কোটি কোটি মানুষের হক নষ্ট করে, যা জুলুমের শামিল। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোনো বিষয়ে জুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয়, সেদিন আসার পূর্বে যেদিন তার কোনো দিনার বা দিরহাম থাকবে না। সেদিন তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ যা তা তার নিকট থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ থেকে নিয়ে তা তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৯) নাউজুবিল্লাহ! যারা দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করে, তারাও রাষ্ট্রের সব নাগরিকের ওপর জুলুম করে। কঠিন কিয়ামতের দিন তারা কতজন মানুষের ওপর জুলুমের প্রায়শ্চিত্ত করবে? কতজনের হক আদায় করতে সক্ষম হবে? মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করুন। আমিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative ভোরের পাতা,"তাবলীগ ধ্বংসে হেফাজতপন্থীরা, পৃষ্ঠপোষকতায় কারা? ",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্ব মুসলিম উম্মার দ্বিতীয় জমায়াতে তাবলীগ। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের তাবলীগ জামায়াতকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে হেফাজতপন্থীরা। আর হেফাজতপন্থীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন খোদ সরকারের একটি অংশ, বিশেষ করে একজন মন্ত্রী। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান বিরোধে হামলা, সংঘর্ষে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছে। টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানকে ব্যবহার করা নিয়েও চলছে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র। মূল বিশ্ব ইজতেমার আগে ৫ দিনের জোড় ইজতেমার আয়োজন করা হয় প্রতিবছরই। এমনকি গাজীপুরের টঙ্গীতে আগামী ১৩-১৭ অক্টোবর হতে যাচ্ছে দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মার্কাজের অনুসারী তথা মাওলানা সাদ আহমদ কান্ধলভী অনুসারীদের পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা। রোববার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয় এ সংক্রান্ত একটি অনুমতিপত্র দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিজামুদ্দিন বিশ্ব মার্কাজ অনুসারী টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম। তিনি জানান, দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার সফলতার জন্য পুরনো সাথীদের সমন্বয়ে টঙ্গী ময়দানে পাঁচ দিনের জোড় আগামী ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ অক্টোবর করার জন্য অনুমতি চেয়ে এক সপ্তাহ আগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়। আবেদনটি করেন নিজামুদ্দিন বিশ্ব মার্কাজের অনুসারী তাবলিগের মূলধারা ও ঢাকা কাকরাইল জামে মসজিদ মার্কাজের আহলে শুরার পক্ষে সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা পালনের অনুমতি দিয়েছেন। জোড় ইজতেমা কেন্দ্র করে কিছু দিনের মধ্যেই ময়দান প্রস্তুতির কাজ শুরু হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। তবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গাজীপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ অনুমতি দিলেও পরের দিনই সরকারের একজন মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন হেফাজতপন্থীরা। তারা ওই মন্ত্রীকে দিয়ে জোড় ইজতেমা বন্ধের দাবি তুলেছেন। ফলে মাওলানা সাদ আহমদ কান্ধলভী অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। অনেকে অভিযোগ করেই বলেছেন, একজন মন্ত্রী এবং সরকারের মধ্যে থাকা কয়েকজন হেফাজতপন্থীদের দিয়ে এসব করাচ্ছে। ধর্মীয় এই কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায় একটি মহল। ফলে বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক একটি মনোভাব গড়ে ‍উঠছে। এদিকে, তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী মুরব্বিরা সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, বিশ্ব ইজতেমা ময়দান নিয়ে তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। কোনো কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী মুরব্বিরা অভিযোগ করেছেন, তাবলিগ জামাতকে বিতর্কিত করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। বিশ্ব ইজতেমা ময়দান নিয়ে তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। কোনো কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না।সাদপন্থী মুরব্বিরা দাবি করেন, বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা ও তাবলিগের যাবতীয় কাজ পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হওয়া দরকার। তারা প্রশাসনের তদারকিতে দু’পক্ষকে প্যান্ডেল তৈরি ও খোলার দায়িত্ব অর্পণসহ ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস বাদল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা সা’দপন্থী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম, অ্যাডভোকেট ইউনুস মিয়া, মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, মো. সোহেল ও আতাউল্লাহ। উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলাম শুরুতে অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কার্যক্রম শুরু করলেও সময়ে সাথে নিজেদের রাজনৈতিক মোড়কে মুড়িয়ে ফেলে। বিশেষ করে সংগঠনটির আমির আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবানুগরীর নেতৃত্বে অর্থ ও রাষ্ট্রক্ষমতার লোভ চরমভাবে পেয়ে বসে সংগঠনটির। এরপর থেকে রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী নানা ইস্যুতে জড়িয়ে ফেলে নিজেদের।হেফাজত নেতাদের গ্রেফতারের পর একে একে বেড়িয়ে এসছে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাবলীগ জামাত ভাঙার পেছনেও হেফাজতের ইন্ধনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ একাধিক নেতাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য উঠে এসেছে। হেফাজতের একটি সূত্র বলছে, হেফাজতের একটি অংশ নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে এবং ধর্মভিত্তিক একমাত্র শক্তি হতে অন্য ইসলামীক সংগঠনগুলোকেও টার্গেট বানাতে ছাড়েনি। বিশেষ করে তবলীগ জামাতে যে সমস্যার কারণে তাদের মধ্যে বিভাজন এবং ভেঙেছে তার পেছনে হেফাজতের ইন্ধন একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। আর এসব বিষয়গুলো এখন হেফাজতের অনেক নেতাই রিমান্ডে এসে মুখ খুলছেন যা নিয়ে খোদ হেফাজতের মধ্যেই এখন টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাবলীগ জামাত ভাঙার ব্যাপারে নতুন তথ্য পেয়েছি। তাবলীগ জামাত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে। এতে ইজতেমার জৌলুস আগের চেয়ে কমে গেছে। তাবলীগ জামাতকে পরিকল্পিতভাবে ভাঙতে হেফাজতের কোনো কোনো নেতা দীর্ঘদিন কাজ করেছে, যাতে অরাজনৈতিক এই সংগঠন তাদের ওপর আরও নির্ভরশীল হয়। এটা ছিল তাবলীগ জামাত ভাঙার অন্যতম উদ্দেশ্য। হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাবলীগ জামাত ভাঙার ব্যাপারে এমন বক্তব্য তারা দিয়েছেন। দিল্লি ও লাহোরের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৮ সালে বিভক্ত হয়ে পড়ে তাবলীগ জামাত। এ দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার আলেমদের একটি অংশ যুক্ত হয়ে পড়ে। তারা একটি পক্ষকে সমর্থন দেওয়ায় এ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে না বলে মনে করছেন তাবলীগ জামাত সংশ্নিষ্টরা। বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের দু`পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলেন, হেফাজতের রাজনৈতিক অভিলাস এবং রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে আকাঙ্খা পেয়ে বসেছিলো তাই তারা নিজদের অবস্থান শক্ত করার জন্য অনেক কিছুই করে। তবে সবচেয়ে বড় কথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা যে ষড়যন্ত্র করেছে তার জন্য সাধারণ মানুষের মথ্যেও এখন তাদের অবস্থান শূন্যের কোঠায়। এই পরিস্থিতিতে সরকার বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যখন প্রমাণের ভিত্তিতে হেফাজত নেতাদের গ্রেফতার করছে তখন হেফাজতের মধ্যেই বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হেফাজত এখন ভেঙেচুরে একটি অচল অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থার পরও তারা এখন তাবলীগ জামায়াতের পাকিস্তানপন্থী মাওলানা জুবায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে তাবলীগকে দুর্বল করতে তারা সরকারের একজন মন্ত্রীকে প্রতিনিয়তই ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative নয়াদিগন্ত,পাঁচ শতাধিক হিন্দু নারীকে এমপি বাবলার শাড়ি উপহার,হিন্দু ধর্ম,"দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকার জুরাইনে নিজ নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর-কদমতলীর প্রতিটি মন্দিরে নগদ অর্থ সহায়তা ও পাঁচশতাধিক হিন্দু নারীর মাঝে পূজার শাড়ি উপহার প্রদান ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মান্ধ নয়, ধর্মভীরু। সুপ্রাচীনকাল থেকেই এ দেশে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টি কোনো ধর্মীয় সহিংসতায় বিশ্বাস করে না। কিন্তু ইসরাইল নিরীহ ফিলিস্তিনের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা চালাচ্ছে তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। সারা পৃথিবী যখন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একসাথে হয়ে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করছে সেই সময়ে ইসরাইলের আগ্রাসন পৃথিবীর শান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন দে’র সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় আরো বক্তৃতা করেন, ডিএমপির ওয়ারী ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার, শ্যামপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো: নুরুন্নবী, শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নাজমা আক্তার, সাথী আক্তার, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ডি কে সমির, স্বপন দাশ, শৈলেশ দাশ, ইন্দ্রজিত দাশ, বিলাশ পোদ্দার, সুনীল টাইগার, নারায়ণ দাশ, রাম দাশ, নন্দন দাশ, শিপলু পাল, প্রেম কুমার দাশ, পার্থ দাশ, পলাশ দাশ, বিষ্ণু দাশ প্রমুখ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive নয়াদিগন্ত,দেশের উন্নয়নে কাজ করতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির,বৌদ্ধ ধর্ম,"রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্য সমুন্নত রাখা এবং গৌতম বুদ্ধের আদর্শ অনুসরণ করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সব ধর্মের মূল বার্তা হচ্ছে মানবকল্যাণ। রাষ্ট্রপতি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে গতকাল বিকেলে বঙ্গভবনে আয়োজিত এক সংবর্ধনায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনিধি দলের উদ্দেশে এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, সমাজে সত্য, সুন্দর, শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সব ধর্মের লোকের অবদান রয়েছে। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ বলে উল্লেখ করে বলেন, দেশের সব ধর্মের লোক তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো: আবদুল্লাহ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো: মাহাবুব আলী এমপি, সুনন্দাপ্রিয় ভিক্ষু, জিনারক্ষিতা ভিক্ষু, বুদ্ধানন্দ ভিক্ষুসহ বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া, আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ভুটান, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন বৌদ্ধঅধ্যুষিত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারগণ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণ, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পেশাজীবীগণ, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান এবং তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এর আগে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা আল্লাহর জন্য ",ইসলাম ধর্ম,"বন্ধুত্ব ও ভালবাসা আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ নিয়ামাত, যা তিনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের হৃদয়ের মাঝে প্রদান করেছেন। রূহ-এর জগতেও এর অস্তিত্ব বিদ্যমান। এর মাধ্যমেই সৃষ্টিলগ্ন থেকে সমগ্র মাখলুক বিশ্ব জগতে আজও টিকে আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে। কিন্তু মানব জাতির মাঝে আল্লাহ তা’য়ালা বন্ধুত্ব ও ভালবাসার একটি সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই সীমারেখা মেনে চলার মাঝেই নিহিত রয়েছে মানব জাতির অস্তিত্ব, মানব সমাজের সৌন্দর্য্য, মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ, ইহকালীন কল্যান ও পরকালীন নাজাত। মানুষের মাঝে এই নিয়ামাতের স্মরণ করিয়ে দিয়ে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জু (ইসলাম ও কুরআন)-কে আঁকড়ে ধর এবং ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামাতের কথা বিশেষভাবে স্মরণ কর! যখন তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু তখন আল্লাহ তোমাদের মনের মধ্যে ভালবাসা তৈরি করে দিলেন আর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো ছিলে আগুনের গর্তের কিনারে, আর আল্লাহ সেখান থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন, যেন তোমরা হিদায়াত লাভ কর। (সূরা আলে-ইমরান : ১০৩)। যারা আল্লাহ তা’য়ালা এবং তাঁর রসূলের উপর বিশ্বাসী তারা শুধুমাত্র হৃদয়ের আবেগে বা নাফসের কামনা-বাসনায় বা জৈবিক লালসায় বন্ধুত্ব ও ভালবাসার লাগামহীন পথে পা বাড়ায় না, বরং তারা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ সর্বদা আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা মেনে চলেন। প্রকৃত মুমিনের বন্ধুত্ব ও ভালবাসা শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালা, তাঁর রসূল ও প্রকৃত মুমিনের জন্যই নির্ধারিত। এ প্রসংগে আল্লাহ তায়ালা বলেন : তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং যারা ঈমান এনেছে তারা, যারা বিনীত ভাবে রুকূর সাথে সালাত কায়িম করে এবং যাকাত আদায় করে। যারা আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং মুমিনদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে নিশ্চয়ই তারাই হবে আল্লাহর দল, তারাই বিজয়ী হবে। (সূরা মায়েদা : ৫৫-৫৬)। আল্লাহর অভিভাবকত্ব ও বন্ধুত্ব প্রসংগে তিনি বলেন : যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক ও বন্ধু। আল্লাহ তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে পরিচালিত করেন। আর যারা কুফরি করে তাদের অভিভাবক ও বন্ধু হল তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে পরিচালিত করে। তারাই জাহান্নামের অধিবাসী এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। (সূরা বাকারাহ : ২৫৭)। রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভালবাসা প্রসংগে তিনি বলেন: তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল এসেছেন। তোমাদেরকে যা বিপদগ্রস্ত করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী। মুমিনদের প্রতি তিনি অত্যন্ত দয়ালু, পরম করুণাময়। (সূরা তওবা : ১২৮)। মুমিনদের বন্ধুত্ব প্রসংগে তিনি বলেন : মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের অভিভাবক ও বন্ধু। তারা ভাল কাজের আদেশ দেয়, খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, সালাত কায়িম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। আল্লাহ তাদের প্রতি অচিরেই রহমত নাযিল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়। আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য এমন জান্নাতের অঙ্গীকার করেছেন যে জান্নাতের নিচ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ বয়ে যায়। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন মহাপবিত্র স্থায়ী বাসস্থান আদন নামক জান্নাতের। বস্তুত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। (সূরা তওবা : ৭১-৭২)। যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করে, নায়েবে রসূল ওলামায়ে কেরামগণের সাথে শত্রুতা পোষণ করে, কুরআনের বিধান ও রসূলের আদর্শকে অপছন্দ করে- এসব লোকদের সাথে প্রকৃত মুমীনগণ কখনও বন্ধুত্ব স্থাপন করেন না। এসব লোক তাদের পিতা, ভাই, পুত্র, আত্মীয়-স্বজন বা অন্য কোন ঘনিষ্টজন হলেও তাদের সাথে কোন ভালবাসা পোষণ করেন না। এসব লোক অমুসলিম নামধারীও হতে পারে বা মুসলিম নামধারীও হতে পারে। মুসলিম নামধারী হলেও আল্লাহ তায়ালার দরবারে তারা মুসলিম হিসাগে গণ্য নয়। এ প্রসংগে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন : আপনি মুমিনদের এমন কোন দল পাবেন না, যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং আখিরাতের প্রতিও ঈমান রাখে- অথচ তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতাকারীদেরকে ভালবাসে, যদিও তারা তাদের পিতা, তাদের পুত্র, তাদের ভাই বা তাদের আত্মীয়-স্বজনও হয়। আল্লাহ তাদের অন্তরে ঈমানকে সুদৃঢ় করে দিয়েছেন এবং নিজের পক্ষ থেকে তাদেরকে রূহ (হিদায়াতের আলো)। দিয়ে শক্তিশালী করেছেন। তিনি তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যে জান্নাতের নিচ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ বয়ে যায়, সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। মনে রেখ! আল্লাহর দল অবশ্যই কল্যাণপ্রাপ্ত হবে। (সুরা মুজাদালা : ২২)। তিনি আরও বলেন : হে মুমিনগণ! তোমাদের মাতা-পিতা ও তোমাদের ভাইয়েরা যদি ঈমানের উপর কুফরিকে প্রাধান্য দেয় তাহলে তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে, তারা হবে সীমালংঘনকারী। আপনি বলুন : তোমাদের মাতা-পিতা, তোমাদের সন্তান-সন্ততি, তোমাদের ভাইগণ, তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের জ্ঞাতিগণ, তোমাদের উপার্জিত অর্থ-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা- তোমরা যার মন্দার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যা তোমাদের নিকট অত্যন্ত পছন্দ; এসব যদি তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করার চেয়ে প্রিয় হয় তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে (শাস্তির)। হুকুম আসার অপো কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপাচারী জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। (সূরা তওবা : ২৩-২৪)। কোন কাফির, মুশরিক, মুনাফিক, ইহুদী, নাসারা, নামধারী মুসলিম ও জালিমের সাথে প্রকৃত মুমিনের কোন আন্তরিক ভালবাসা হতে পারে না। যদি কোন মুসলিম তাদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন করে তাহলে আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকবে না, বরং সে আল্লাহর দরবারে তাদেরই দলভূক্ত বলে গন্য হবে। তবে কোনরুপ দুনিয়াবী ক্ষতির আশংকা থাকলে সেক্ষেত্রে বাহ্যিক সতর্কতা অবলম্বন দোষনীয় হবে না। এ প্রসংগে আল্লাহ তায়ালা বলেন : মুমিনগণ যেন মুমিনগণকে বাদ দিয়ে কোন কাফিরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করে। যে মুমিনকে বাদ দিয়ে কাফিরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তার সাথে আল্লাহর কোন সম্পর্ক থাকবে না। তবে তোমরা যদি তাদের নিকট থেকে কোনরূপ ক্ষতির আশংকা কর, তার কথা স্বতন্ত্র। আল্লাহ তাঁরই সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছেন। আর আল্লাহর নিকটই ফিরে যেতে হবে। (সূরা আলে ইমরান : ২৮)। তিনি আরও বলেন : হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ঘনিষ্ঠতম বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর না। কেননা অন্যরা তোমাদের ক্ষতি করতে দ্বিধা করে না এবং যা তোমাদেরকে কষ্ট দেয় তারা তাই কামনা করে। তাদের মুখ থেকে কখনো কখনো বিদ্বেষ প্রকাশ পায়, কিন্তু তাদের মনে যা গোপন রয়েছে তা আরো ভয়ঙ্কর। আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করছি, যেন তোমরা বুঝতে পার। (মুমিনগণ!)। তোমরা এমন যে, তোমরাই তাদেরকে ভালবাসো, কিন্তু তারা তোমাদেরকে ভালবাসে না। আর তোমরা কিতাবের প্রতিটি বিষয়ে ঈমান রাখ। তারা যখন তোমাদের সংস্পর্শে আসে, তখন তারা বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন তারা একান্তে মিলিত হয় তখন তোমাদের প্রতি আক্রোশে নিজেদের আঙুলের মাথা কামড়াতে থাকে। বলুন (হে রাসূল!)।, তোমরা মরো তোমাদের আক্রোশেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে সবকিছুই জানেন। যদি তোমাদের ভাল কোন কিছু হয় তাহলে তা তাদেরকে কষ্ট দেয় আর তোমাদের যদি খারাপ কিছু হয় তাহলে তারা তাতে আনন্দিত হয়। যদি তোমরা ধৈর্যশীল ও মুত্তাকী হও, তাহলে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। তারা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। (সূরা আলে-ইমরান : ১১৮-১২০)। তিনি আরও বলেন : হে মুমিনগণ! তোমরা মুমিনদের বাদ দিয়ে কাফিরদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর না। তোমরা কি তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে আল্লাহর নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করতে চাও? নিশ্চয়ই জাহান্নামের সর্বনি¤œ স্তরে হবে মুনাফিকদের অবস্থান, আর আপনি তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী পাবেন না। তবে যারা তওবা করে, আত্মশুদ্ধি করে, আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে দ্বীনে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে, তারা মুমিনদের সাথেই থাকবে। আর আল্লাহ মুমিনদেরকে শীঘ্রই মহাপুরস্কার প্রদান করবেন। (সূরা নিসা : ১৪৪-১৪৬)। তিনি আরও বলেন : হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা এক অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যারাই তাদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ (এসব)। জালিম সম্প্রদায়কে সুপথে পরিচালিত করেন না। বস্তুতঃ যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তাদেরকে আপনি দেখতে পাবেন যে, দৌড়ে গিয়ে তাদেরই মধ্যে প্রবেশ করে এবং তারা বলে, আমরা আশংকা করি যে, আমাদেরকে কোন বিপদ এসে আক্রমন করে নাকি। অতএব সেদিন বেশী দুরে নয়, যেদিন আল্লাহ বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দিবেন, ফলে সেদিন তারা স্বীয় মনোভাবের জন্য অনুতপ্ত হবে। মুমীনগণ বলবে- এরা কি সেই সব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করে বলত যে আমরা তোমাদের সাথে আছি! তাদের কর্মফল বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ। (সূরা মায়েদা : ৫১-৫৩)। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বন্ধু নির্বাচনে মুমিনগণকে সতর্ক করেছেন। যেমন- হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু)। থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : কোন ব্যক্তি তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়ে থাকে। কাজেই খেয়াল রাখা উচিত সে কেমন বন্ধু নির্বাচন করছে। (আবু দাউদ ও তিরমিযী)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,বয়স্কদের জন্য মহানবী (সা.)-এর সুসংবাদ,ইসলাম ধর্ম,"মানুষ জন্মের পর শৈশব-কৈশোর ও যৌবন পার করে বার্ধক্যে উপনীত হয়। প্রবীণরা সব সময় শ্রদ্ধার পাত্র। যথাযথ সম্মানের পাশাপাশি তাঁদের সার্বিক যত্ন নেওয়া মানবতা ও ঈমানের দাবি; বরং প্রবীণদের যথাযথ মূল্যায়ন করার মধ্যেই একটি সমাজের কল্যাণ। ইসলামের দৃষ্টিতে বেশি বয়সীদের আছে বিশেষ মর্যাদা।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি কি তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তির সংবাদ দেব না? তারা বলল, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে দীর্ঘ আয়ু লাভ করে এবং সুন্দর আমল করে। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ৭২১২, ইবনু হিব্বান, হাদিস : ৩০৪৩) অন্যদিকে আমলহীন দীর্ঘ জীবন এক বোঝা। নবীযুগে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল! উত্তম ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং তার আমল সুন্দর হয়েছে। ওই ব্যক্তি আবার প্রশ্ন করল, নিকৃষ্ট মানুষ কে? তিনি বলেন, যে দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং তার আমল খারাপ হয়েছে।(তিরমিজি, হাদিস : ২৩৩০)বৃদ্ধকে সম্মান করা মহান আল্লাহকে সম্মান করার শামিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, নিশ্চয়ই শুভ্র চুলবিশিষ্ট মুসলিমকে সম্মান করা আল্লাহকে সম্মান করার শামিল। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৪৩)জারবি (রা.) বলেন, আনাস বিন মালিক (রা.)-কে আমি বলতে শুনেছি, একজন বয়স্ক লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে দেখা করতে এলো। লোকেরা তার জন্য পথ ছাড়তে বিলম্ব করে।তা দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের স্নেহ করে না এবং আমাদের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৯)তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ (রা.) বলেন, দুজন মুসলমানের মধ্যে একজন শহীদ হলো এবং অন্যজন এক বছর পরে মারা গেল। তালহা (রা.) স্বপ্নে দেখলেন, পরে মারা যাওয়া লোকটি শহীদের আগে জান্নাতে চলে গেল। তারা বিস্মিত হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ঘটনাটি বর্ণনা করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অন্য লোকটি কি তারপর এক বছর বেঁচে থাকেনি? সাহাবিরা বলেন, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সে একটি রমজান মাস পেয়েছে, সাওম পালন করেছে এবং এক বছর যাবত এত এত সালাত কি পড়েনি? তারা বলল, হ্যাঁ। তখন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আসমান-জমিনের মধ্যে যে ব্যবধান আছে তাদের দুজনের মধ্যে তার চেয়ে বেশি ব্যবধান রয়েছে। (ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৯২৫)আলোচ্য হাদিস থেকে বোঝা যায়, বয়স বেশি পেয়ে বেশি ইবাদত করে শহীদের চেয়েও অগ্রগামী হওয়া সম্ভব। তবে আমল ও ইবাদতের মাধ্যমে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটানো চাই। শেষ বয়সে ইবাদতের মাত্রা যথাসাধ্য বাড়িয়ে দিতে হবে। কারণ এ সময় ইবাদতে অনীহা এসে যাওয়ার ফলে কাফির হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা আছে। আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় সুরা নাজম তিলাওয়াত করে সিজদা করলেন। তখন এক বৃদ্ধ ছাড়া সবাই সিজদা করল। সে এক মুষ্টি কংকর বা মাটি তুলে নিয়ে তাতে কপাল ঠেকাল এবং বলল, আমার জন্য এরূপ করাই যথেষ্ট। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, পরবর্তীকালে আমি তাকে কাফির অবস্থায় নিহত হতে দেখেছি। (বুখারি, হাদিস : ১০০৫)মহান আল্লাহ আমাদের সুস্থ ও ইবাদতময় বৃদ্ধকাল নসিব করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral যায়যায়দিন,"জুয়া ও লটারি সম্পর্কে ইসলামের নীতি কি? ",ইসলাম ধর্ম,"শান্তির ধর্ম ইসলাম বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে। তার ফজিলত ও বরকতের কথা শুনিয়েছে; ইহকালের কল্যাণ ও পরকালের সুসংবাদ দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নামাজ শেষ হওয়ার পর পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং মহান আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো।’ (সুরা জুমা : ১০)। এখানে অনুগ্রহের অর্থ জীবিকা ও সম্পদ। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি উৎসাহ দানের উদ্দেশ্যে মূলত আয়াতটি নাজিল হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) ব্যবসায়ীদের অনুপ্রাণিত করতে গিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা ব্যবসায় করো, ব্যবসায়ে ১০ ভাগের ৯ ভাগ রিজিকের ব্যবস্থা আছে।’ ইসলামের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও পারস্পরিক কায়কারবারের বৈধতা ও সুষ্ঠুতা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ওপর নির্ভর করে। ব্যবসা-বাণিজ্যে বৈধতা পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর প্রতিষ্ঠিত। আর এ জন্য ব্যবসায়িক ব্যাপারে উভয় পক্ষের সহযোগিতা অবশ্যই থাকতে হবে। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘পুণ্য ও আল্লাহভীরুতার পথে একে অপরকে সাহায্য করো। পাপ ও অন্যায় পথে কখনো কারো সহযোগিতা করবে না।’ (সুরা মায়িদা : ২)। যেকোনো কারবারে উভয় পক্ষের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি অবশ্যই থাকতে হবে। জবরদস্তিত সম্মতির কোনো মূল্য নেই। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ বাতিল পন্থায় খেয়ো না। কিন্তু তা ব্যবসার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্মতিতে হলে (কোনো আপত্তি নেই)।’ (সুরা নিসা : ২৯)। তবে কারবারে কোনো প্রকার প্রতারণা, আত্মসাৎ, ক্ষতি ও পাপাচার থাকতে পারবে না। অর্থাৎ ইসলামী শরিয়ত যেসব বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে, সেসবের ব্যবহার করা যাবে না। মহানবী (সা.) বলেছেন, নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিত নয়। এর মাধ্যমে মূলত জুয়া ও লটারির কথা বলা হয়েছে। কারণ এক পক্ষের লাভ এবং অন্য পক্ষের নিশ্চিত লোকসানের ওপরই এসবের ভিত্তি রচিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে, আপনি বলে দিন এগুলোতে বিরাট পাপাচার রয়েছে।’ (সুরা বাকারা : ২১৯)। সম্পদ বৃদ্ধি ও মুনাফা অর্জনের যেসব ব্যাপারে উভয় পক্ষের মধ্যে কোনো এক পক্ষের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি পাওয়া যায়নি, বিপাকে পড়ে এবং জবরদস্তি সম্মতিকেই স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি বলে ধরে নেওয়া হয়েছে, যেমন সুদের কারবার কিংবা কোনো শ্রমিককে ঠকানো। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ বেচাকেনা (বৈধ ব্যবসায়) হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।’ (সুরা বাকারা : ২৭৫) ইসলামের দৃষ্টিতে পাপ এমন কারবার করা অথবা এমন সব বস্তু কেনাবেচা করা, যা মূলত অপবিত্র। যেমন- মদ, মৃতদেহ, প্রতিমা, শূকর প্রভৃতি। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ওপর মৃতদেহ, রক্ত ও শূকরের মাংস হারাম করা হয়েছে।’ (সুরা মায়িদা : ৩)। হজরত জাবির (রা.) বলেন, আমি মহানবী (সা.)কে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ মদ, মৃতদেহ, শূকর ও মূর্তি বেচাকেনা হারাম করেছেন।’ (নায়লুল আওতার, পঞ্চম খণ্ড)। উভয় পক্ষের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরও যেসব লেনদেনে কলহবিবাদের আশঙ্কা থাকে। যেমন- পণ্য অথবা মূল্য কিংবা উভয়টাই অস্পষ্ট রাখা। কী দামে কেনা হলো কিংবা কী বস্তু কেনা হলো, তা স্পষ্ট করে বলা হলো না। অথবা একটা লেনদেনকে দুটোয় পরিণত করা হলো। যেমনÑ যেসব পণ্য দেখা প্রয়োজন, কিন্তু না দেখেই ক্রয় করা হলো। মহানবী (সা.) বেচাকেনার সময় অনুপস্থিত বস্তু বেচাকেনা করতে নিষেধ করেছেন (তিরমিজি)। যেসব লেনদেনে ধোঁকা ও প্রতারণা নিহিত রয়েছে। যেমন- এক ধরনের পণ্য দেখিয়ে অন্য ধরনের পণ্য দেওয়া কিংবা বস্তার ভেতরে কমদামি পণ্য রেখে ওপরে দামি পণ্য সাজিয়ে রেখে ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়া। মহানবী (সা.) প্রতারণামূলক লেনদেন নিষেধ করে বলেছেন, ‘যে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ এদিকে মহান আল্লাহ বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যকে হালাল করলেও সুদকে হারাম করেছেন। সুদ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘যারা সুদ খায় তারা সেই ব্যক্তির মতো দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ করেই পাগল করে দেয়। এটা এ জন্য যে তারা বলে বেচাকেনা তো সুদের মতোই।’ (সুরা বাকারা : ২৭৫)। মহানবী (সা.) সুদখোর, সুদ প্রদানকারী, সুদি কারবারের সাক্ষী এবং সুদ চুক্তি লেখককে অভিশাপ দিয়েছেন। (বুখারি, মুসলিম)। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহপাক ব্যবসাকে বা কেনাবেচাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন’ (সুরা বাক্বারা: আয়াত ২৭৫)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না কিন্তু পরস্পর রাজি হয়ে ব্যবসা করা বৈধ’ (সুরা নিসা: আয়াত-২৯)। যারা আল্লাহর বিধান অনুসারে ব্যবসা করে তারা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মর্যাদাবান। যারা আল্লাহর অন্যান্য বিধান পালনকরত সৎভাবে ব্যবসা করে তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘সেই সকল লোক যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ হতে এবং সালাত কায়েম ও জাকাত প্রদান হতে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সেই দিনকে যেই দিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।’ (সুরা নূর: আয়াত-৩৭)। উক্ত আয়াতে সৎ ব্যবসায়ীর পরিচয় দেওয়া হয়েছে- বলা হয়েছে সৎ ব্যবসায়ী আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ হয় না, আল্লাহর বিধান পালনে সে সর্বদা তৎপর থাকে। একজন সৎ ব্যবসায়ী মানুষকে ওজনে কম দিতে পারে না। পণ্যে ভেজাল মিশ্রিত করে তা বিক্রি করতে পারে না। আল্লাহর বিধান পালনকারী একজন ব্যবসায়ী ব্যবসার ক্ষেত্রে কখনো কোনো প্রকার প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারে না। অসৎ ব্যবসায়ীরা মানুষকে ওজনে কম দেয়, পণ্যে নানা ধরনের ভেজাল মিশ্রিত করে বাজারকে অস্থির করে তোলে। এতে করে ক্রেতাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। এরা বাহ্যিক লাভবান হয় বটে; কিন্তু এদের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। এদের করুণ পরিণাম সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। যারা লোকের নিকট হতে মেপে লওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে এবং যখন তাদের জন্য মাপে বা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়। তারা কি চিন্তা কওে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহা দিবসে’ (সুরা মুতাফফিফিন: আয়াত ১-৫)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative কালের কন্ঠ,মসজিদের পরিচর্যা নিয়ে মহানবী (সা.) যা বলেছেন,ইসলাম ধর্ম,"মসজিদ মুসলমানদের মিলনস্থল এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের উৎসভূমি। সুতরাং মসজিদ নির্মাণ, তত্ত্বাবধান ও সংস্কার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নামাজ আদায় ছাড়াও মসজিদ নির্মাণ ও মসজিদ আবাদ করা স্বতন্ত্র ইবাদত। আর মসজিদের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে মসজিদ পরিপূর্ণ আবাদ হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি অত্যন্ত পুণ্যের কাজ। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের সওয়াব (ইবাদতের প্রতিদান) আমার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, এমনকি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক মসজিদ থেকে ময়লা-আবর্জনা দূর করার সওয়াবও (যা আমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে পুণ্যের কাজ)। অন্যদিকে আমার উম্মতের পাপরাশিও আমাকে দেখানো হয়েছে। আমি তাতে কোরআনের কোনো সুরা বা আয়াত শেখার পর তা ভুলে যাওয়ার চেয়ে বড় গুনাহ আর দেখিনি। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬১) মসজিদ যেন অপবিত্র না হয়, দুর্গন্ধযুক্ত না হয়, সে জন্য সব মুসল্লিকে সতর্ক থাকতে হবে। অপবিত্র পোশাকে, অপবিত্র ও অপরিচ্ছন্ন স্থানে নামাজ হয় না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে বনি আদম, প্রত্যেক সালাতের সময় তোমরা তোমাদের সৌন্দর্যবর্ধক (পোশাক) গ্রহণ করো। আর খাও, পান করো, কিন্তু অপচয় করবে না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১) মসজিদকে অপবিত্র করা, ময়লাযুক্ত করা কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত করার অধিকার কারো নেই। জাবির ইবনে আবুদুল্লাহ (রা.) থেকে বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এ রসুনজাতীয় উদ্ভিদ খাবে, কোনো কোনো সময় তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি পেঁয়াজ, রসুন বা মুলা খাবে সে যেন আমার মসজিদের কাছেও না আসে। কেননা মানুষ যেসব জিনিস দ্বারা কষ্ট পায় ফেরেশতারাও সেসব জিনিস দ্বারা কষ্ট পায়। (মুসলিম, হাদিস : ১১৪১) মসজিদ সব সময় পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখতে হবে। এটা সবার দায়িত্ব। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ নির্মাণ করতে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং সুবাসিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৫৯৪) মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলে এর পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। সায়িব ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বলেন, আমি মসজিদ-ই-নববীতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এমন সময় একজন ব্যক্তি আমার দিকে একটা কাঁকর নিক্ষেপ করল। আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে তিনি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)। তিনি বললেন, যাও, এ দুজনকে আমার কাছে নিয়ে এসো। আমি তাদের নিয়ে তার কাছে এলাম। তিনি বললেন, তোমরা কারা? তোমরা কোন স্থানের লোক? তারা বলল, আমরা তায়েফের অধিবাসী। তিনি বললেন, তোমরা যদি মদিনার লোক হতে, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা দুজনে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলেছ! (বুখারি, হাদিস : ৪৭০) মসজিদে যত্রতত্র থুথু ফেলা নিষিদ্ধ। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, মসজিদে থুথু ফেলা গুনাহের কাজ, আর তার কাফফারা হচ্ছে তা মুছে ফেলা। (বুখারি, হাদিস : ৪১৫) উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) কিবলার দিকের দেয়ালে নাকের শ্লেষ্মা, থুথু কিংবা কফ দেখলেন এবং তা পরিষ্কার করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৪০৭) যে কেউ স্বেচ্ছায় মসজিদের সেবা করতে পারে। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন কালো বর্ণের পুরুষ অথবা বলেছেন কালো বর্ণের নারী মসজিদ ঝাড়ুু দিত। সে মারা গেল। নবী (সা.) তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সাহাবিরা বলেন, সে মারা গেছে। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে খবর দিলে না কেন? আমাকে তার কবরটা দেখিয়ে দাও। অতঃপর তিনি তার কবরের কাছে গেলেন এবং তার জানাজার সালাত আদায় করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৫৮) সুতরাং আপনি এ ধরনের ক্ষুদ্র কাজ করেও প্রশংসার দাবিদার হতে পারেন। প্রিয় নবীর দোয়া পেতে পারেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে তিনি মসজিদের সম্মান বজায় রাখা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় কত গুরুত্ব দিতেন। একবার এক বেদুইন এসে মসজিদের কোণে প্রস্রাব শুরু করে দিল। সে মসজিদের মর্যাদা সম্পর্কে অবগত ছিল না। সাহাবায়ে কিরাম রাগান্বিত হয়ে তাকে বাধা দিতে গেলেন। কিন্তু প্রিয় নবী (সা.) তাদের বাধা দিলেন। তাই কেউ মসজিদের আদব রক্ষা না করলে তাকে হিকমতের সঙ্গে বোঝাতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক বেদুইন মসজিদে প্রস্রাব করে দিল। তখন লোকজন তাকে শাসন করার জন্য উত্তেজিত হয়ে পড়ল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের বলেন, তোমরা তাকে ছেড়ে দাও এবং তার প্রস্রাবের ওপর এক বালতি পানি অথবা এক পাত্র পানি ঢেলে দাও। কারণ তোমাদের নম্র ব্যবহারকারী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে, কঠোর ব্যবহারকারী হিসেবে পাঠানো হয়নি। (বুখারি, হাদিস : ৬১২৮) সুতরাং মসজিদের পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান করতে হবে। এর সম্মান বজায় রাখতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। ",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার বিচারক যে বাংলাদেশি আলেম,ইসলাম ধর্ম,"সৌদি আরবে চলমান আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বিচারক নিযুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশি আলেম হাফেজ মাওলানা ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান। তাঁকে ৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন ও তাফসির প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল ২৫ আগস্ট প্রতিযোগিতাটি শুরু হয়েছে। যা আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত চলবে।সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় ১১৭টি দেশের ১৬৬ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করবে। তাঁরা মোট পাঁচটি বিভাগে অংশগ্রহণ করবেন। বিজয়ী প্রতিযোগীরা ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল পুরস্কার লাভ করবেন।ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস হিসেবে কর্মরত।তিনি বিভিন্ন সময়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকায় আয়োজিত দেশের সর্ববৃহৎ হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর’-এর বিচারক ছিলেন।উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সাফল্য ঈর্ষণীয় হলেও এসব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি আলেমদের বিচারক নিযুক্ত হওয়ার ঘটনা বিরল।",ধর্মীয় উৎসব,Positive ভোরের পাতা,"জেনে নিন কিয়ামত কখন-কোন সময়ে ঘটবে? ",ইসলাম ধর্ম,"কিয়ামত আরবি শব্দ। অর্থ মহাপ্রলয়, পুনরুত্থান। ইয়াওমুল কিয়ামা—অর্থ কিয়ামতের দিবস। দুনিয়ার সব মানুষ ও জ্বীন জাতিকে একত্রিত করা হবে কিয়ামতের দিন। তাদের সব নেক ও বদ আমলের চূড়ান্ত হিসাব হবে। এর পর হবে জান্নাত ও জাহান্নামের ফয়সালা। যারা জান্নাত লাভ করবে তারা চিরকাল জান্নাতে থাকবে, আর যারা জাহান্নাম লাভ করবে তারা চিরকাল জাহান্নামে অবস্থান করবে। এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে কিয়ামত বা পুনরুত্থান কখন সংঘটিত হবে? এ প্রসঙ্গে কোরআন-হাদিসে নির্দিষ্ট কোন তারিখ উল্লেখ না থাকলেও এর আলামত সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তারা কি শুধু এই অপেক্ষায় রয়েছে যে কিয়ামত তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কিয়ামতের লক্ষণগুলো তো এসেই পড়েছে। সুতরাং এসে পড়লে তারা কীভাবে উপদেশ গ্রহণ করবে? (সূরা : মুহাম্মাদ, আয়াত : ১৮)। আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘শেষ যুগের উম্মতের এক সম্প্রদায়কে বানর ও শূকরে বিকৃত করে দেয়া হবে।’ সাহাবিরা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! তারা কি আল্লাহ এক ও মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল হওয়ার সাক্ষ্য দেয় না?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ তারা রোজা রাখে, নামাজ পড়ে এবং হজও আদায় করে।’ সাহাবিরা বললেন, ‘তাহলে তাদের অপরাধ কী?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘তারা ঢাকঢোল, বাদ্যযন্ত্র ও গায়িকা মহিলা বরণ করবে। এই লোকগুলো আমোদ-প্রমোদ ও মদ্যপানে মত্ত অবস্থায় রাত কাটাবে। সকালে দেখা যাবে, তাদের বানর ও শূকরে বিকৃত করে দেয়া হয়েছে।’ (আসবাহানি, হিলয়াতুল আউলিয়া : ৩/১১৯-১২০)। সাহল বিন সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মাঝে ধ্বংস, পাথরবৃষ্টি এবং চেহারা বিকৃতকরণ শাস্তি আসবে।’ সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘হে রাসূল! কবে এই আজাব আসবে?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘যখন বাদ্যযন্ত্র ও গায়িকা নারীদের খুব বিস্তার ঘটবে আর মদকে হালাল মনে করা হবে।’ (তাবারানি, আলমুজামুল কাবির : ৬/১৫০; তিরমিযি, আসসুনান : ২২১৩; সনদ হাসান)। কিয়ামতের ছোট আলামতগুলো প্রকাশিত হয় গেলে হঠাত করেই কিয়ামতের বড় আলামতগুলো প্রকাশিত হতে শুরু করবে। রাসূল (সাঃ) বলেন, মালা ছিড়ে গেলে এর পুতিগুলো যেমন দ্রুত খসে পড়ে ঠিক সেভাবেই কিয়ামতের (বড়) আলামতগুলো একের পর এক প্রকাশিত হতে থাকবে। (তিরমিযী) কিয়ামতের বড় আলামতগুলো হচ্ছে: দুখান (ধোঁয়া)। রক্তিম ধোঁয়া, যা পৃথিবীকে ঢেকে ফেলবে এবং যার প্রভাবে মুমিনদের সামান্য সর্দি-কাশির মত অবস্থা হবে আর কাফেরদের জন্য যা হবে ভয়াবহ আযাব;দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ; হযরত ঈসা (আঃ) এর অবতরন; ইয়াজূজ-মাজূজ;পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়; দাব্বাতুল র্আ‌দ (প্রাণীবিশেষ যা মাটি ভেদ করে বের হবে);তিনটি ভূধ্বস, একটি পূর্ব প্রান্তে, একটি পশ্চিম প্রান্তে আরেকটি জাযীরাতুল আরবে। কিয়ামতের বড় বড় আলামত এখনো পরিদৃষ্ট না হলেও ছোট ছোট আলামতগুলো এমনভাবে সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে, যা রোধ করার ক্ষমতা কারো নেই। কোরআন ও হাদিসের জ্ঞান থেকে মানুষকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বদদ্বীনি আচরণ ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করছে। মানুষ থেকে নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। হিংসা, লোভ ও অহংকারের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিযোগিতা করে অট্টালিকা নির্মাণ করা হচ্ছে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের পরিবর্তে দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমনের কার্যক্রম গর্বের সঙ্গে করা হচ্ছে। শিরক, বিদআত, নিফাক ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে, মিথ্যা, আমানতের খিয়ানত, ওয়াদা খিলাফ অহরহ হচ্ছে। সন্তান পিতা-মাতার শুধু অবাধ্য নয়, বরং পিতা-মাতাকে খুন করছে। পিতা-মাতা সন্তানকে আদর-স্নেহ দিয়ে মানুষ করার পরিবর্তে নিজেই হত্যা করছে। যা জাহেলি যুগেও করা হতো না। অন্যায়-অবিচার এত প্রকট আকার ধারণ করেছে যে মানুষ অন্যায়কে অন্যায় মনে করছে না। ন্যায়নীতির পরিবর্তে অন্যায়-জুলুম করা হচ্ছে। নারীরা পর্দা করার পরিবর্তে পর্দাহীনতাকে অহংকারের বিষয় বানিয়ে নিয়েছে। সুদ-ঘুষ, মদ, জিনা-ব্যভিচার বেড়ে গেছে। জাহেলি যুগের মতো সুদকে ব্যবসার ন্যায় হালাল মনে করা হচ্ছে। ঘুষকে স্বাভাবিকভাবে দেখা হচ্ছে। মদপানকে তুচ্ছ করে দেখা হচ্ছে। পাঁচ বছরের বালিকা পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যুবতীরা যুবকদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। সমাজে সৎ ও নেককার লোকেরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। অসৎ ও দুষ্ট লোকদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। বদকর্মে পৃথিবী টইটম্বুর হয়ে যাওয়ার ফলে বলতে হয় কিয়ামত আর কত দূর। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের আগে অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, মানুষের হৃদয় কঠিন হয়ে যাবে এবং মারামারি, হত্যাযজ্ঞ বেড়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি) ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral ভোরের কাগজ,"সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষায় আগ্রহী রোহিঙ্গারা ",অন্যান্য,"বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ শিশু। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয় নেয়া ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গার বয়স ১৮ বছরের নিচে, যা মোট জনগোষ্ঠীর ৫৫ শতাংশ। এ বিপুলসংখ্যক শিশুর শিক্ষাদানের জন্য পাঠ্যক্রম তৈরি এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন ক্যাম্পে ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের শিশুদের ইংরেজি, গণিত ও বার্মিজ ভাষায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা দেয়ার কাজ করছে কয়েকটি এনজিও। কিন্তু শিশুদের এই শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ নেই তাদের অভিভাবকদের। সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রেই তাদের আগ্রহ বেশি। সরেজমিন দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের নিজেদের ব্যবস্থাপনায় ক্যাম্পের ভেতরে গড়ে উঠেছে মক্তব। সেখানে শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হয়। ক্যাম্পের বাসিন্দাদের খরচেই মক্তবগুলোতে কয়েক হাজার শিশুকে আরবি শিক্ষা দেয়া হয়। ধর্মীয় শিক্ষা বুকে ধারণ করেই বেঁচে থাকার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। মধুরছড়া ক্যাম্পের মাঝি (প্রধান) কলিমুল্লাহ জানান, ক্যাম্পের শিশুরা সকালে কিংবা বিকেলে মক্তবে শুধু আরবি পড়ে। প্রচলিত অন্য কোনো শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ নেই। ময়নার ঘোনা ক্যাম্পের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ (৪৫) তিন সন্তানের জনক। তার বড় মেয়ে নূরুননেছা (১৫) মিয়ানমারে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিল। নূরুননেছা এখন ক্যাম্পের একটি শিক্ষাদানকারী কেন্দ্রে বার্মিজ ভাষা শেখায়। নূরুননেছা বলেন, আমি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। এখানে এসে আর পড়তে পারিনি। আবার এখানকার পড়ালেখাও আমি জানি না। তবে ক্যাম্পের বাচ্চাদের বার্মিজ শেখাতে পেরে ভালো লাগে। নূর মোহাম্মদের বাকি দুই সন্তানকে তিনি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান। একই ক্যাম্পের বাসিন্দা মৌলভি ফকির আহমদ (৫৮) পাঁচ ছেলে ও ছয় মেয়ের জনক। মিয়ানমারে চাষাবাদ এবং স্থানীয় একটি মসজিদে চাকরি করতেন। ছেলেমেয়েদের তিনি ক্যাম্পের মক্তবে পাঠান। তিনি জানান, মিয়ানমারে থাকা অবস্থায় তাদের সন্তানরা মসজিদের মক্তবে লুকিয়ে এক বেলা পড়তে পারত। ২০১২ সালের পর সেখানে সব মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়। ক্যাম্পের মক্তবে তার সন্তানরা নামাজ পড়তে পারছে, ধর্মীয় শিক্ষা নিতে পারছে। এতেই তিনি ভীষণ খুশি। মধুরছড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা আবু সৈয়দের (৪৫) চার ছেলে মেয়ে এবং মো. ইউসুফ (৫২) আট সন্তানের জনক। তারাও চান তাদের সন্তান ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। প্রচলিত শিক্ষা না থাকায় এবং কেবলমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা রোহিঙ্গা শিশুদের অনেককেই মৌলবাদের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মুক্তি কক্সবাজার নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশুদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা দিয়ে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা বলেন, এমনিতে রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে মানতেই রাজি নয় মিয়ানমার। এখন যদি রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেয়া হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে। এ কারণে রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলামাধ্যমে লেখাপড়া শেখানো হবে না। শুধু বাংলামাধ্যমেই নয়, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়েও তাদের শিক্ষা দেয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হবে। রোহিঙ্গা শিশুদের বার্মিজ ভাষায় শিক্ষাদান করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশ রয়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফরে এসে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। পরে সংস্থার এক বিবৃতিতে জিম ইয়ং কিম উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি তাদের শিক্ষার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আনুমানিক ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু ও যুবকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ দরকার। শিক্ষায় অনুদান দেয়ার একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্বব্যাংক। এর পর দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার অনুদান দেয়ার আশ্বাস দেয় বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশনের ৮৩ লাখ ডলার অনুদানও রয়েছে, যা বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমেই ব্যয় হবে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ৭৩ শতাংশের কোনো অক্ষরজ্ঞান নেই। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা শিশুসহ নিরক্ষর রোহিঙ্গাদের শিক্ষা কার্যক্রমে জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুদান দেয়া হচ্ছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,রানি হয়েও যিনি ছিলেন তাপসী নারী,ইসলাম ধর্ম,"খাতুন ইসমাতুদ্দিন বিনতে মঈনুদ্দিন উনুর (রহ.) ছিলেন একজন প্রখ্যাত প্রশাসকের কন্যা এবং দুজন সুলতানের স্ত্রী। তিনি খাতুন ইসমিয়্যাহ নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি দামেস্কে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। ইসমাতুদ্দিন (রহ.) প্রথমে ৫৪২ হিজরিতে সুলতান নুরুদ্দিন মাহমুদ জাংকি (রহ.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ৫৬৯ হিজরিতে তাঁর মৃত্যুর পর ৫৭২ হিজরিতে সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি (রহ.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সুলতান নুরুদ্দিন মাহমুদ জাংকি (রহ.)-এর ঔরসে তাঁর ছেলে ইসমাইল জন্মগ্রহণ করেন। অবশ্য নুরুদ্দিন জাংকি (রহ.)-এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে রাজনৈতিক কারণেই হয়েছিল। কেননা তাঁর বাবা মঈনুদ্দিন উনুর ছিলেন বিখ্যাত সেনাপতি। ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের হাত থেকে দামেস্ক রক্ষায় তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। ৫৪৪ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি (রহ.)-এর সঙ্গে যখন তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তখন তাঁর বয়স প্রায় ৫০ বছর এবং সুলতানের বয়স ৪০ বছর। দ্বিতীয় সংসারে তাঁর কোনো সন্তান ছিল না। বয়সে বড় হওয়ার পরও তিনি তাঁকে বিয়ে করেছিলেন সুলতানা হিসেবে ইসমাতুদ্দিনের সম্মান রক্ষা এবং নেককার ও গুণবতী নারীকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে সৌভাগ্য ঘরে তোলার জন্য। কেননা সুলতানা ইসমাতুদ্দিন (রহ.) আল্লাহভীতি, ইবাদতে নিমগ্নতা, বুদ্ধিমত্তা ও উচ্চ সাহসিকতার জন্য সুপরিচিত। সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি (রহ.) বহু বিষয়ে তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করতেন। বলা হয়, সুলতান আইয়ুবির সাহসী পদক্ষেপগুলোর পেছনে সুলতানা ইসমাতুদ্দিন (রহ.) ছিলেন বিশেষ অনুপ্রেরণাস্বরূপ। সুলতানও তাঁকে বিশেষ মূল্যায়ন করতেন। হাররা নামক স্থানে সুলতান অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিদিন প্রিয়তমা স্ত্রীর নামে দীর্ঘ দীর্ঘ পত্র লিখতেন। একজন বিখ্যাত সেনাপতি ও প্রশাসকের কন্যা এবং সুলতানের স্ত্রী হওয়ার পরও সুলতানা ইসমাতুদ্দিন (রহ.) ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও আল্লাহভীরু। রাত-দিন ইবাদতে মগ্ন থাকতেই তিনি পছন্দ করতেন। বিশেষত রাত জেগে ইবাদত করা ছিল তাঁর প্রিয় আমল। তাঁর পিতা মঈনুদ্দিন উনুরও ছিলেন একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি আলেমদের ভালোবাসতেন এবং দ্বিনি কাজে উদার মনে খরচ করতেন। যা তাঁর জীবনে গভীর রেখাপাত করেছিল। তাঁর প্রথম স্বামী নুরুদ্দিন জাংকি (রহ.)-ও তাঁকে প্রভাবিত করেছিলেন। কোনো এক রাতে তিনি তাহাজ্জুদের সময় জাগ্রত হতে না পেরে খুবই মনঃক্ষুণ্ণ হন। তাঁর মানসিক অস্থিরতা দেখে সুলতান নুরুদ্দিন (রহ.) তাহাজ্জুদের সময় প্রাসাদে বিশেষ আওয়াজের ব্যবস্থা করেন এবং ইসমাতুদ্দিন (রহ.)-এর তাহাজ্জুদের সঙ্গী হিসেবে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেন। সুলতানা ইসমাতুদ্দিন (রহ.) পিতার মতোই আলেম-উলামা ও দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য হাত খুলে ব্যয় করতেন। তিনি একাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তাঁর অর্থায়নে দামেস্কে হানাফি মতাদর্শের একটি মাদরাসা, মহিলা মাদরাসা, সুফিদের জন্য খানকা, ইয়াজিদ নদীর তীরে কাসিয়ুন শহরে একটি কবরস্থান নির্মাণ করেন এবং ৫৮১ হিজরিতে সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ ওয়াকফ করে যান। তাঁর ভাই সাআদুদ্দিনও এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপুল অর্থ দান করে যান। সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি (রহ.) প্রিয় স্ত্রীর স্মরণে কবরস্থানের পাশেই একটি মাদরাসা-মসজিদ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করেন, যা ইতিহাসে ‘আল-জামিউল জাদিদ’ নামে পরিচিত। উসমানীয় শাসনামলের শুরু ভাগ পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠান টিকে ছিল। ইসমাতুদ্দিন (রহ.) যে বছর মারা যান, সে বছরই তাঁর ভাই সাআদুদ্দিন মাসউদও মারা যান। যিনি সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি (রহ.)-এর বোন জামাই ও আইয়ুবি বাহিনীর বড় সেনা অফিসার ছিলেন। তাঁদের শোকে সুলতান এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে মানুষ তাঁর জীবনের আশা ছেড়ে দেয়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"রোজার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা ",ইসলাম ধর্ম,"রোজা সাওমের আরবি প্রতিশব্দ যার অর্থ বিরত থাকা। মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দা‌র জন্য সকল সৃস্টির রহস্য।অত্যান্ত বরকত ও নেয়ামতের শুভ সংবাদ নিয়ে বান্দার দ্বারে দ্বারে রমজান মাস হাজির হয়। এতে রয়েছে ইহকাল ও পরকা‌লের জন্য কল্যাণ। রোজা পালন করতে গিয়ে একজন মুসলিমের রমযান মাসের প্রতিদিন সূবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, ইন্দ্রীয়তৃপ্তি ও শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা অনিবার্য । এছাড়াও মুসলিমগণ এই সময় সকল প্রকার ঝগড়া-বিবাদ, মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থেকে নিজেদের মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করার মাধ্যমে রোজার মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয়। এ কারণে রোজা যে শুধু মাত্র আধ্যাত্মিক উন্নতিই সাধন করে তা নয়, সাথে সাথে শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ঠের উন্নতিও ঘটায়। যা চি‌কিত্‍সা বিজ্ঞা‌নের বি‌ভিন্ন গ‌বেষণায়ও তার উজ্জল প্রমাণীত হয়েছে। রমজানের রোজায় আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে সাথে বৈজ্ঞানিকভাবে আমরা নানান শারীরিক উপকারিতা স্রষ্টার পক্ষ থেকে পেয়ে থাকি বিশেষভাবে। ১৭৬৯ সালে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ পিটার ভেনিয়ামিনভ রোজা নিয়ে একটি রিপোর্টে বলেন, তিনি মানুষকে রোজা রাখার উপদেশ দেন। তার যুক্তি ছিল রোজার কারণে পরিপাকতন্ত্র একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশ্রাম পায়। ফলে সুস্থ হবার পর তা ঠিক মত নিজের কাজ চালাতে পারে। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ পিজি স্পাসকি বলেন, রোজার মাধ্যমে কালাজ্বর ও শরীরের অন্যান্য সকল পুরাতন রোগ কোন মেডিসিন ছাড়াই ভালো হয়ে যায় বলে প্রমাণিত। জার্মান হোমিও ডাক্তার ফেডারিক হ্যানিম্যান বলেন, রোজার মাধ্যমে মৃগী রোগ ও আলসারের চিকিত্‍সা করা যায়। এছাড়াও পেটের অসুখ, অজীর্ণ, বদহজম, গ্যাস্ট্রিকের চিকিত্‍সাও করা সম্ভব । ইতালির বিখ্যাত শিল্পী মাইকেল এঞ্জেলা ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি ৯০ বছর বয়সেও কর্মক্ষম ও কর্মঠ ছিলেন। এর রহস্য জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন, 'আমি বহু বছর আগে থেকে মাঝে মাঝে রোজা রেখে এসেছি। আমি প্রত্যেক বছর এক মাস ও প্রতি মাসে এক সপ্তাহ রোজা পালন করতাম।' এমন অনেক উদাহরণ আছে যারা রোজার মাধ্যমে নানাভাবে উপকৃত হয়েছেন। এই সমস্ত বুদ্ধিজীবী ডাক্তার গবেষকরা ভালো করেই জানেন মহান স্রষ্টা অকারণে রোজাকে ফরজ করেন নি। কারণ তারা কুরআন ও ইসলামের নিয়ম কানুন নিয়ে রীতিমত পড়াশুনা ও গবেষণা করেন। এখন জেনে নেয়া যাক স্বাস্থ্য ও ম‌নস্থাত্বিক উপকারিতায় রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে। ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমায়ঃ ডায়াবেটিকস রোগে আক্রান্তদের রোগীদের সবসময় ক্যালরি গ্রহণের ক্ষেত্রে আলাদা সতর্ক থাকতে হয়। রোজার দিনে ক্যালরি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আলাদা একটা নিষেধাজ্ঞা কাজ করে। তাই রোজা রাখলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। বার্ধক্যকে দূরে রাখেঃ বার্ধক্য ভয় পায় না এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। বার্ধক্য শরীর-মন দুটোকেই ভারাক্রান্ত আর অসহায় করে তোলে। রোজা রাখলে আয়ু বাড়ে এবং এটি বার্ধক্য সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলোকে দূরে রাখে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিঃ রমজানে রোজা রাখার মাধ্যমে দেহ ও মনে নিঃসন্দেহে একধরণের ইতিবাচক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। দুই দিন রোজা রাখলেই শরীরে হরমোন বাড়ার হার পাঁচ গুণ বাড়ে। রমজানে রোজা রাখার মাধ্যমে মস্তিষ্কে নতুন নতুন কোষের জন্ম হয়। ফলে মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা বেড়ে যায়। হার্ট এটাক্টের ঝুঁকি কমায়: ওষুধ ছাড়া রক্তচাপ কমানোর এক আশ্চর্য পদ্ধতি রোজা। রোজা রাখলে প্রথমে গ্লুকোজ, পরে চর্বি কণা গুলি ক্ষয় হয়ে শক্তি উত্‍পাদন করে। মেটাবলিক রেটও কমে। এড্রিনালীন ও নর এড্রিনালীনের মত স্ট্রেস হরমোন উত্‍পাদন কমে। আর এতে করে মেটাবলিক হার একটা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে। ফলে ব্লাড প্রেসার কমে। যায় এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে ধমনীতে চর্বি জমার প্রক্রিয়ার উপর যা হার্ট এটাক্টের ঝুঁকি কমায়। চর্বি কমাতে সহায়তা করেঃ অতিরিক্ত খাবার গ্রহনের জন্য অনেকেই অনেক সমস্যায় ভুগতেছেন। তাই তো ইসলাম অতিরিক্ত আহার গ্রহনের পক্ষে নয়। অতিরিক্ত খাবার গ্রহনের ফলে দেহে প্রচুর চর্বি জমে যায়, ফলে শরীর অস্বাভাবিক মোটা হয়ে যায়, যা স্বাভাবিক জীবন যাপনকে ব্যাহত করে। কিন্তু রোজা রাখলে শরীরে জমে থাকা চর্বি শরীরের কাজে ব্যবহৃত হয় ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধিঃ মানুষের শারীরিক মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যে হরমোন বেশি প্রয়োজন, তা রোজা রাখার ফলে বৃদ্ধি পায়। চিকিত্‍সাবিজ্ঞানীদের মতে রোজা একই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। রোজা পালনের ফলে দেহে রোগজীবাণুবর্ধক অনেক জীবাণু ধ্বংস হয়। ধূমপানের অভ্যেস ত্যাগ: যারা রোজা রাখেন তাঁরা দিনের দীর্ঘ সময় ধরে ধূমপান করেন না। এভাবে টানা একমাস ধূমপান না করার কারণে রোজাদারদের ধূমপানের অভ্যাস অনেকটাই কমে যায়। সেই সঙ্গে ধূমপানের কারণে সৃষ্ট নানা রকম সমস্যা দূর হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধূমপান না করার কারণে রোজার মাসটি ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সুস্থতার পাশাপাশি রোজায় মানসিক শক্তি, স্মরণ শক্তি, দৃষ্টিশক্তি, আধ্যাত্মিক শক্তি সহ সব কিছুই বৃদ্ধি পায়। রোগ প্রতিষেধক ও প্রতিরোধের কাজ: চিকিত্‍সাবিজ্ঞানীদের মতে রোজা একই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। রোজা পালনের ফলে দেহে রোগজীবাণুবর্ধক অনেক জীবাণু ধ্বংস হয়। ইউরিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে নানা প্রকার নার্ভ-সংক্রান্ত রোগ বৃদ্ধি পায়। রোজাদারের শরীরে পানির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার ফলে চর্মরোগ বৃদ্ধি পায় না। সুতরাং রোগের অজুহাত দেখিয়ে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ নয়। আবার রোজার দিন শেষে মাগরিবের আজানের সময় যথাসময়ে ইফতার করা সুন্নত। ইফতারের প্রচলিত কিছু উপকরণের মধ্যেও বিশেষ স্বাস্থ্যগত তাত্‍পর্য রয়েছে। যেমন ছোলা ইফতারের ঐতিহ্যগত একটি উপাদান। বাঙালী ইফতার সংস্কৃতিতে ছোলার ব্যবহার আদিকাল থেকে। ছোলার মধ্যে আমিষ, ভিটামিন, শ্বেতসার ও খনিজ লবণের পরিমাণ আশ্চর্যজনকভাবে বেশি। চিনির শরবত ইফতারের একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসেবে কাজ করে। মোট কথা আধুনিককালে যাঁরা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেছেন, তাঁদের জ্ঞানও আল্লাহপাক সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে বৈজ্ঞানিকরা যতই গবেষণা করবেন, আল্লাহ তায়ালার দেওয়া প্রতিটি বিধানে তাঁরা তত বেশি উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক সমাধান খুঁজে পাবেন। জিহ্বা ও লালাগ্রন্থির বিশ্রামে খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ বৃদ্ধি: পূর্ণ এক মাস রোজার ফলে জিহ্বা ও লালাগ্রন্থি বিশ্রাম পায়। ফলে এঅংগগুলো সতেজ হয়। যারা ধূমপান করেন তাদের জিহ্বায় ক্যান্সার প্রভৃতি রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এক মাস রোজার সময় ধূমপায়ীরা ধূমপান কম করেন বলে উল্লিখিত রোগগুলো হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। এ ছাড়া এক মাস রোজার ফলে জিহ্বায় খাদ্যদ্রব্যের স্বাদও বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে তাদের বেলায়, যারা অত্যাধিক ধূমপান আর পান খেয়ে জিহ্বায় খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ হারিয়েছেন। আহারের সময় খাদ্যদ্রব্য যখন চিবানো হয় তখন লালাগ্রন্থি থেকে এক প্রকার রস নির্গত হয়, যা খাদ্যদ্রব্য চিবাতে, গলাধঃকরণ ও হজম করতে সাহায্য করে। দীর্ঘ এক মাস রোজার ফলে গ্রন্থিগুলো বিশ্রাম পায় বলে সতেজ হয়। লালগ্রন্থি থেকে অনবরত লালা নির্গত হওয়ায় মুখগহব্বর ভেজা ও পিচ্ছিল থাকে। গ্রন্থিগুলো থেকে কোনো কারণে যদি লালা নির্গত না হয়, তবে তাকে শুকনা মুখ বলে। তাই পূর্ণ এক মাস রোজার ফলে লালাগ্রন্থিগুলো বিশ্রাম পায় বলে শুকনা মুখ হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। সারা বছরে পুরো এক মাস রোজা রাখার ফলে শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। দৈনিক গড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা উপবাসের সময় লিভার, কিডনি ও মূত্রথলি প্রভৃতি অঙ্গ বেশ উপকারিতা লাভ করে। যাদের লিভার ও প্লিহা বড় হয়ে গেছে, রোজার ফলে তাদের ওই বর্ধিত অংশ অনায়াসেই কমে আসতে সাহায্য করে। কিডনি ও মূত্রথলির নানা প্রকার উপসর্গ রোজার ফলে নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। রোজার ফলে অগ্ন্যাশয় থেকে হজমের রস দিনের বেলায় নির্গত বন্ধ থাকে বিধায় তা-ও একমাস বিশ্রাম পায়। ফলে অগ্ন্যাশয়ের কারণে বহুমূত্র রোগ উপশম পাবে। অতি ভোজনের ফলে অনেকেরই পাকস্থলি বড় হয়ে যায়। রোজার ফলে বড় পাকস্থলি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং তার প্রকৃত অবস্থা ধারণ করে। পাকস্থলি একটি বৃহদাকার পেশি বিশেষ। শরীরের অপরাপর পেশির মতো এরও বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। একে বিশ্রাম দেওয়ার একমাত্র পথ এর মধ্যে খাদ্য প্রবেশ না করানো অর্থাত্‍ রোজা রাখা। মোট কথা রোজার মাধ্যমে আল্লাহপাক আমাদেরকে শারিরীক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য দান করেন। রোজাদার ব্যক্তির শারিরীক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক পরিবর্তনেও সাহায্য করে। রোজায় যে আনন্দ, অনুভূতি, আত্মিক পরিতৃপ্তির সাথে সংযম, কৃপ্রবৃত্তি দমন, লোভ-লালসা, হিংসা, প্রতিহিংসা ইত্যাদি ত্যাগ করার যে আলোকোজ্জ্বল অনুভূতির চর্চা হয় তা রমযানের রোজা ছাড়া অন্য কোনসময় কোনভাবে লাভ করা যায় না। তাই রোগাক্রান্ত অবস্থায়ও অনেকেই রোজা রাখতে চান। তবে আমরা রোজা পালন করি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। সেই সাথে রোজার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা আমাদের জন্য স্বর্গীয়সূধা।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,বিভিন্ন দেশে কোরআন বিষয়ক মিউজিয়াম চালুর উদ্যোগ,ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন বিষয়ক মিউজিয়াম চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে মক্কাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ (এমডাব্লিওএল)। এসব মিউজিয়ামে মুসলিম ও অমুসলিম সব দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং সেখানে কোরআন বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ থাকবে। গত ৬ আগস্ট মক্কায় কোরআন বিষয়ক আন্তর্জাতিক মিউজিয়াম প্রকল্প উদ্বোধনকালে সংস্থাটির মহাসচিব ড. আবদুল করিম আল-ঈসা এসব কথা জানান।উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ড. আল-ঈসা বলেছেন, পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর সেবার লক্ষ্যে মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ অত্যাধুনিক এ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করেছে।বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে প্রথম বারের মতো এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। মক্কায় এমডাব্লিওএল-এর সদর দপ্তরে প্রকল্পটি উদ্বোধন হয়েছে; যা পবিত্র কোরআন প্রথমে অবতরণস্থল এবং যেখানে সারাবিশ্বের মুসলিমদের কিবলা রয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, এমডাব্লিওএল-এর সদর দপ্তরে এসে যে কেউ কোরআন বিষয়ক প্রদর্শনীটি দেখতে পারবে। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশেও এ প্রদর্শনীর শাখা খোলা হবে।সেখানে গিয়েও দর্শনার্থীরা কোরআন বিষয়ক নানা বিষয় জানতে পারবে। আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর সবচেয়ে আকর্ষনীয় বৈশিষ্ট্য হলো, পবিত্র কোরআনে বর্ণিত বিধি-বিধান, বৈজ্ঞানিক তথ্যসমৃদ্ধ অলৌকিক বিষয়াবলি ও নৈতিক মূল্যবোধ সংক্রান্ত বিষয় জানা যাবে। তিনি বলেন, এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, কোরআন সংশ্লিষ্ট অমুসলিমদের নানা প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসার জবাবও এ প্রদর্শনীতে থাকবে। তা হয়ত আগ থেকেই প্রস্তুত করা থাকবে কিংবা দর্শকদের অনুসন্ধান বা জিজ্ঞাসার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তর দেওয়া হবে।প্রশ্নের ধরন অনুসারে মিউজিয়াম শাখায় কর্মরত বিশেষজ্ঞ ও গবেষক বা সাইন্টিফিক কমিটির মাধ্যমে উত্তর প্রস্তুত করা হবে। ড. আল-ঈসা বলেছেন, এ মিউজিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী অমুসলিম ব্যক্তিত্বদের কোরআন বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা ও চিন্তা-ভাবনাও সংযুক্ত থাকবে। বহিঃবিশ্বে এর শাখাগুলোতে নিজ ভাষায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কোরআনের তথ্যাবলি উপস্থাপন করা হবে। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,গাজা থেকে ৯ হাজার রোগীর জরুরি স্থানান্তর প্রয়োজন,ইসলাম ধর্ম,"গাজা থেকে প্রায় নয় হাজার রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্যে স্থানান্তর প্রয়োজন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনী এই অঞ্চলে কেবলমাত্র ১০টি হাসপাতাল কার্যকর থাকার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসিস শনিবার এ কথা বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেন, পুরো গাজায় মাত্র ১০টি হাসপাতাল কার্যকর রয়েছে। হাজার হাজার রোগী স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যুদ্ধের আগে গাজায় ৩৬টি হাসপাতাল চালু ছিল। গেব্রিয়াসিস বলেন, ক্যান্সার, বোমায় আহত, কিডনি ডায়ালাইসিস ও অন্যান্য জটিল রোগসহ জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসার জন্য গাজার প্রায় নয় হাজার লোকের জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে স্থানান্তর জরুরি। সংস্থাটি মার্চের প্রথমে এ সংখ্যা আট হাজার বলেছিল, যা এখন বেড়েছে। অবরুদ্ধ গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হয়। যা এখনো চলমান রয়েছে। গাজার বৃহত্তম আল শিফাসহ আরো কয়েকটি হাসপাতালে ইসরাইল হামলা চালিয়ে আসছে। টেডরস বলেন, এ পর্যন্ত তিন হাজার ৪০০ রোগীকে রাফার মধ্যদিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে দুই হাজার ১৯৮ জন আহত এবং এক হাজার ২১৫ জন অসুস্থ। কিন্তু আরো অনেককে গাজা থেকে সরিয়ে নেয়া জরুরি। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইসরাইলের প্রতি জরুরি স্থানান্তরের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে জরুরি রোগীরা দ্রুত চিকিৎসা পায়। প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ।’ যুদ্ধের আগে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ রোগীকে পূর্ব জেরুসালেম কিংবা পশ্চিমতীরে স্থানান্তর করা হতো। এদের বেশিভাগই ছিল ক্যান্সার রোগী। এএফপি। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানের প্রথমার্ধে ওমরাহ করেছেন ৮২ লাখেরও বেশি মুসল্লি,ইসলাম ধর্ম,"চলতি রমজান মাসের প্রথম ১৫ দিনে ওমরাহ পালন করেছেন ৮২ লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলিম। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম আল আরাবিয়া। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট ৮২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৮০ জন মুসুল্লি চলতি মৌসুমে ওমরাহ পালন করেছেন। রমজান মাসে হাজারো মানুষ সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্ত ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাবা শরীফে ছুটে আসেন। নামাজ পড়া ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যেই তারা মূলত এখানে আসেন। যার ফলে এ সময়য় পবিত্র এই ভূমিতে মানুষের ভিড় অনেক বেশি থাকে। এদিকে গত সপ্তাহে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় রমজান মাসে একবারের বেশি ওমরাহ পালনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। পবিত্র মাসে ভিড় কমাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। সবাই যাতে স্বচ্ছন্দে ওমরাহ পালন করতে পারে, তা নিশ্চিতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কিছু অপশক্তি আছে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী,অন্যান্য,"দেশের মানুষের সম্প্রীতি নষ্টের জন্য সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কিছু অপশক্তি আছে বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। আজ বুধবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসকের মিলনায়তনে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।ফরিদুল হক খান বলেন, ‘সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কিছু অপশক্তি আছে, যারা সুযোগ খোঁজে আমাদের সম্প্রীতি বিনষ্ট করার। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। গ্রামাঞ্চলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ দেশে যাঁরা বসবাস করেন, সবাই এ দেশের নাগরিক। সব ধর্মের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সবার রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। সরকার সব ধর্মের উপাসনালয়ের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করছে। ইতিমধ্যে দেশে ৪৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এটা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য অব্যাহত রাখতে হবে।’সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উপপরিচালক শাহ নজরুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদসহ ধর্মীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,মিতব্যয়িতা সম্পর্কে ইসলামের বিধান,ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহতায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। দিয়েছেন আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন সব। অক্সিজেন, পানি, গ্যাস, নবায়নযোগ্য শক্তি, ফলমূল, ফুল-ফসল সব দিয়ে ভরে রেখেছেন আমাদের চারপাশ। এসব জীবনোপকরণ থেকে আমাদের যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু খাওয়া ও গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভক্ষণ ও গ্রহণে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা আহার এবং পান কর, আর অপচয় করো না; তিনি (আল্লাহ) অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা আরাফ : ৩২)। শুধু খাদ্য নয়; গ্যাস, বিদ্যুৎ কোনোটিই অপচয় করার জায়েজ নেই। ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। বাংলাদেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকটেরও অন্যতম কারণ অপচয়। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ফ্যান বা লাইটের সুইচ বন্ধ করেছি কি-না তা আমরা অনেকে খেয়াল করি না। প্রয়োজন অপ্রয়োজনের বিবেচনা না করে কেবল আভিজাত্যের প্রতিযোগিতায় এসিসহ নানা বৈদ্যুতিক জিনিসপত্রের ব্যবহার করেন অনেকে। টয়লেট থেকে বের হয়ে লাইটটি বন্ধ করি না। অপ্রয়োজনেই সারারাত ঘরের লাইট জ্বালিয়ে রাখি, সামান্য কারণে আলোকসয্যা ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার করে বিদ্যুৎ অপচয় করছি। বাড়ির মালিকই তো বিদ্যুৎ বিল দেন, ভাড়াটিয়া হয়ে আমি কেন কম ব্যবহার করব- এমন মানসিকতা অনেকের মাঝেই কাজ করে। ইসলামে তা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রসুলুল্লাহ (সা.) অপচয়ের বিরুদ্ধে এতই কঠোর অবস্থানে ছিলেন যে, একটু পানিও অপ্রয়োজনে খরচ করতে নিষেধ করেছেন। একদা রসুলুল্লাহ (সা.) হজরত সা’দকে (রা.) অজুতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যয় করতে দেখে বললেন, ‘হে সা’দ! অপচয় করছ কেন? হজরত সা’দ (রা.) বললেন, অজুতে কি অপচয় হয়? নবীজি (সা.) বললেন, হ্যাঁ। প্রবাহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো তা অপচয়’ (ইবনে মাজা)। অপচয়কারীর একটি পরিণাম হলো, দারিদ্র্য তাকে দ্রুত ধরে ফেলবে আর আল্লাহ তাকে পথ প্রদর্শন করেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, নিশ্চয় আল্লাহ অপচয়কারী ও মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না। (সুরা মুমিনুন : ২৮)। আমার উপার্জিত টাকা আমি যেভাবে ইচ্ছে খরচ করব, অপচয়-অপব্যয় করব সমস্যা কী- এমন চিন্তা অনেকে করেন। না, উপার্জন ও খরচের ক্ষেত্রেও আমরা জবাবদিহির মুখোমুখি হব। উপার্জন হালাল হলেও তা হালাল পথে খরচ হয়েছে কি-না, অপচয় অপব্যয়মুক্ত ছিল কি-না সে ব্যাপারে হাশরের ময়দানে আল্লাহতায়ালার কাছে জবাব দিতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসিত না হওয়া পর্যন্ত একজন আদম সন্তানের পা সরাতে পারবে না। যার মধ্যে রয়েছে সে সম্পদ কোত্থেকে উপার্জন করেছে। সম্পদ কোন পথে ব্যয় করেছে। অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে।’ (তিরমিজি)। অপচয়-অপব্যয়ের কারণে আমার উপার্জিত সম্পদ যেন জাহান্নামে যাওয়ার কারণ না হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা কাম্য। অপব্যয়কারীকে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা শয়তানের ভাই হিসেবে অভিহিত করে ভর্ৎসনা করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, আত্মীয়-স্বজনকে তার হক দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। এবং কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই আর শয়তান তো তার প্রতিপালকের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ। (সুরা বনি ইসরাইল ২৬-২৭)। বিদ্যুৎ আমাদের জতীয় সম্পদ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা কারণে সাময়িক যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় শুধু সরকার নয়, জনগণেরও আন্তরিক হওয়া উচিত। একজনের অপচয়ের কারণে সংকট বাড়লে অন্য মুসলমান কষ্ট পাবে। যার কারণে অন্যরা কষ্ট পায় সে প্রকৃত মুসলমান হিসেবে গণ্য হবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার কষ্ট থেকে আশপাশের মানুষেরা নিরাপদ নয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বুখারি, মুসলিম)। আমরা সচেতন হয়ে অপচয় বন্ধ করলে জাতীয় সম্পদ রক্ষা হবে, এ বিদ্যুতে অন্যরা প্রয়োজন পূরণ করতে পারবেন, আমি গুনাহ থেকে বাঁচব, পাশাপাশি খরচ কমিয়ে অর্থ জমিয়ে দান সদকা কিংবা ভালো কাজে খরচ করে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারব। যারা অপচয় এবং কৃপণতার পথ পরিহার করে মিতব্যয়িতার পথ অবলম্বন করবে তারা আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কৃত হবেন। আল্লাহ তাদের নিজের বান্দা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘(রহমানের বান্দা তো তারাই) যারা অপব্যয়ও করে না আবার কৃপণতাও করে না। তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী’ (সুরা ফুরকান : ৬৭)। দয়ালু আল্লাহতায়ালার বান্দা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জনে আমাদের সব ধরনের অপচয়-অপব্যয় পরিহার করে মিতব্যয়ী হতে হবে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"ফজরের সময় উঠতে চাইলে যেসব আমল করবেন! ",ইসলাম ধর্ম,"মুমিনদের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ ফরজ করেছেন। তবে ফজরের নামাজ অন্য চার ওয়াক্তের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফজরের নামাজ আদায় করলে অগণিত সওয়াবের সাথে অনেক ধরনের ফজিলতও পুরস্কারের কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। তাই ফজরের সওয়াব ও পুণ্য লাভের নির্দিষ্ট সময় জাগ্রত হওয়ার বিকল্প নেই। কী কী আমল বা কাজ করলে, ফজরের সময় সহজে ঘুম ভাঙবে এবং জেগে নামাজ আদায় করা যাবে, এ নিয়ে আজকের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। বিতরের নামাজের পর দোয়া শেষ রাতে তাহাজ্জুদ আদায়েল অভ্যাস না থাকলে বিতরের নাসাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। যেন তিনি আপনাকে ঘুম থেকে জেগে উঠে ফজরের নামাজ আদায়ে সাহায্য করেন। কোরআন তিলাওয়াত করে ঘুমানো মহাগ্রন্থ আল-কোরআন তেলাওয়াত কত বড় ইবাদত বলার অপেক্ষা রাখে না। আর কোরআন তেলাওয়াত আপনার মনোযোগ ঠিক রাখবে। ফজরের নামাজের জন্য জেগে উঠতে সহযোগিতা করবে। মহানবী (সা.) ঘুমাতে যাওয়ার আগে সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক (৩২ ও ৬৭ নম্বর সুরা) পাঠ করার পরামর্শ দিয়েছেন। রাতে ঘুমানোর আগে অজু করুন বারা ইবনে আজিব (রা.)-কে মহানবী (সা.) বলেছিলেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন নামাজের অজুর মতো অজু করবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৮৪) মহান আল্লাহকে চেনা ও ভয় করা আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ত্ব সম্পর্কে জানা প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে তার ইবাদত করা- আপনার প্রতি তাঁর নির্দেশ। তাহলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই জেগে উঠবেন। এছাড়াও নামাজের প্রতি আন্তরিক হওয়ার বিকল্প নেই। ফজরের নামাজের জন্য জেগে উঠার ব্যাপারে আন্তরিক হোন। আন্তরিকভাবে প্রতিজ্ঞা করুন যে, আমি ফজরের ওয়াক্তে জেগে নামাজ পড়ব-ই ইনশাআল্লাহ। অন্যদের বলে রাখা আপনাকে জাগাতে পরিবারের অন্য সদস্য কিংবা বন্ধুদের বলে রাখতে পারেন আপনাকে ফজরের সময় জাগিয়ে দিতে। আর আপনি আগে জাগলে, তাদের জাগিয়ে দিন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ইসলামের আলোকে স্বাধীনতা ও আজকের মুসলিম উম্মাহ-৩ ",ইসলাম ধর্ম,"আমরা আজ মুসলিম বিশ্বের দুর্দশার এক নির্মম চিত্র দেখতে পাচ্ছি। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শিক্ষা-সংস্কৃতিতে দীর্ঘকাল ধরে পাশ্চাত্য শিক্ষা-সংস্কৃতির অনুসরণের ফলে দেশে দেশে মুসলিম তরুণ মানস পাশ্চাত্যের ধ্যান-ধারণায় গড়ে উঠেছে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে প্রতিষ্ঠা পেয়ে এরাই পাশ্চাত্যের জীবনধারাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শাসকবর্গ বিরল ব্যতিক্রম বাদে, সকলেই পাশ্চাত্যের অন্ধ গোলামীতে লিপ্ত। এখন দেশে দেশে পাশ্চাত্যের দালাল শ্রেণির সহায়তায় সহজেই সাম্রাজ্যবাদীরা একের পর এক মুসলিম দেশের স্বাধীনতা হরণের সুযোগ পাচ্ছে। সার্বিকভাবেই আজ আমাদের ভেবে দেখতে হবে যে, মুসলিম বিশ্ব আজ কতটুকু স্বাধীন? মুসলিম বিশ্বের চতুর্দিকে তাকালে আজ যে চিত্র আমরা দেখতে পাই তা কি সুখকর? পরাধীনতার শত শৃঙ্খল কি আজ মুসলিম উম্মাহকে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরেনি? আজ মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদের বিবেকের স্বাধীনতা কোথায়? ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নে সত্য কথা বলবার স্বাধীনতা তাদের কতটুকু আছে? আন্তর্জাতিক জীবনে মুক্ত বিবেকে তাদের মতামত প্রকাশের অধিকার কোথায়? স্বাধীনভাবে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র নীতি রচনার সাহস কতটুকু তাদের? এ এমন কতগুলো জিজ্ঞাসা যা এড়িয়ে যাবার অবকাশ নেই। এসব জিজ্ঞাসার কোনো সদুত্তর নেই। অতএব ইসলামের পরিচয়ে বেঁচে থাকতে হলে আজ মুসলিম উম্মাহকে ভাবতে হবে। মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদেরকে ভেবে দেখতে হবে তারা বিজাতির দাসত্ব করে শৃগালের মতো বেঁচে থাকতে চায় না ইসলামের স্বাধীনতা নিয়ে সিংহের মতো বাঁচতে চান। সাম্রাজ্যবাদের কালো রাহু আজ গোটা মুসলিম বিশ্বকে গ্রাস করতে চাইছে। মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র নীতিসহ সর্বক্ষেত্রে অশুভ প্রভাব বিস্তার করে এবার মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর ভৌগোলিক স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের উপরও কালো হাত বিস্তার করছে। এক ভয়াবহ অশুভ ও সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলিম বিশ্বকে ধোঁকা দেয়ার জন্যে এ যুদ্ধের নাম দেয়া হয়েছে ‘সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধ’ সেই অপকৌশলে রীতিমতো প্রতারিত হচ্ছেন অনেক অবিবেচক মুসলিম রাষ্ট্রনায়ক। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের অবস্থাও খুব ভালো নেই। এ দেশের আকাশেও দেখা যাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদের কালো মেঘ। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত চলছে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধেও। তবে মুসলিম বিশ্বের এ দুঃসময়ে আশার কথা হলো, মুসলিম উম্মাহর স্বাধীনতাকামী আদর্শবাদী শক্তিও নির্বিকার বসে নেই। শত ষড়যন্ত্র ও বিপর্যয়ের মুখেও তারা দেশে দেশে ঈমান ও আদর্শের অঙ্গীকারে সংগ্রামের পথে জাগ্রত। তারা একটি আদর্শের কাছে নিজেদের দায়বদ্ধ বলে বিশ্বাস করছেন এবং সেই দায়বদ্ধতা তাদেরকে জীবনপণ সংগ্রামে নিবেদিত রেখেছে। শত দুর্যোগের মধ্যেও একটি আশ্বাস তারা পৃথিবীকে দিতে চাইছেন। তা হচ্ছে ইসলামের যে চেতনা ও আদর্শ একবার মুসলিম উম্মাহকে মুক্তি দিয়েছিল, পরীক্ষিত সে চেতনা ও আদর্শই আজও মুসলিম উম্মাহকে মুক্তি দিতে পারবে। সে অভীষ্ট মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্যই তাদের এ সুকঠিন প্রত্যয়দীপ্ত সংগ্রাম। আজ মুসলিম সরকারগুলোকে ভেবে দেখতে হবে, তারা কি শৃগালের মতো বাঁচতে চান না সিংহের মতো বাঁচতে চান? যদি তারা মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চান তাহলে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে ইসলামী উম্মাহর স্বাধীন-সার্বভৌম অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াসে সাহস ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এগিয়ে আসা। মুসলিম সরকারগুলো যদি সামগ্রিক স্বাধীনতার সে প্রয়াসকে বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যেতে চায় তাহলে বিকল্প পথেই এ স্বাধীনতা সংগ্রাম অব্যাহত থাকতে বাধ্য। এ নতুন কোনো ইতিহাস নয়; বরং ইতিহাসের অমোঘ ধারার পুনরাবৃত্তি মাত্র। আজ মুসলিম বিশ্বের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে ইসলামের সামগ্রিক আযাদী চেতনায় তাদের নির্ভয়ে জাগ্রত হতে হবে। এ জাগ্রতির পথে বিবেক-বিবেচনা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে জীবনের প্রতিটি স্তরে উপায় উপকরণের শক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের প্রচেষ্টা যেমন থাকতে হবে তেমনিভাবে ততোধিক গুরুত্বের সঙ্গে নিজেদের মধ্যে ঈমান ও আদর্শবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। মুসলিম উম্মাহর মুক্তির জন্য এবং তাদের সার্বভৌম স্বতন্ত্র অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ঈমান ও আদর্শবোধ উৎসারিত শক্তির কোনো বিকল্প নেই।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive কালের কন্ঠ,শ্বশুরবাড়ির মৌসুমি যৌতুককে না বলুন,ইসলাম ধর্ম,"যৌতুক একটি নীরব ঘাতক। সমাজের ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সব মহলেই এর চর্চা রয়েছে। বিভিন্ন মৌসুমি খোলসে যৌতুকের দানবীয় উপস্থিতি বহু মানুষকে পিষ্ট করে চলেছে। বিয়ের দিন যে যৌতুক বরপক্ষ উসুল করে তাকে আমাদের সমাজ খাটো চোখে দেখলেও এর পর থেকে বিরামহীন যৌতুকের ধারাবাহিকতা শুরু হয়, তাকে কিন্তু সমাজ বিশাল সম্মানের বিষয়ই মনে করে থাকে। অথচ বিয়ের দিনের যৌতুক তো শুধু ভূমিকামাত্র। এরপর শুরু হয় বিভিন্ন মৌসুমি ছদ্মনামে যৌতুক আদায়ের মহোৎসব। যেমন- রমজানে ইফতারি পাঠানো, ঈদুল ফিতরে সেমাই-চিনি, ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু, ফলের মৌসুমে মৌসুমি ফল ইত্যাদি। এর ধারাবাহিকতা যেন মৌসুমের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন নামে সারা বছরই লেগে থাকে, যা আদায় করতে গিয়ে কনেপক্ষ হয়ে পড়ে দিশাহারা। কারো কারো ক্ষেত্রে শরণাপন্ন হতে হয় সুদি মহাজনের কাছে কিংবা কখনো হারিয়ে ফেলতে হয় নিজেদের শেষ সম্বলটুকু। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও টানাপড়েনের এই কঠিন সময়েও সামর্থ্য না থাকা সত্ত্বেও আত্মীয়দের চাপে পড়ে দিতে হয় ইফতারি, ঈদ উপহার, মৌসুমি ফলসহ নানা রঙের যৌতুক, যা অনেকটা অন্যায়ভাবে উপহার আদায়ের নামান্তর। অথচ অর্থনৈতিক লেনদেনের মৌলিক বিধান সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পরস্পর একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ কোরো না এবং এই উদ্দেশ্যে বিচারকের কাছে সে সম্পর্কে মামলা কোরো না যে মানুষের সম্পদ থেকে কোনো অংশ জেনেশুনে গ্রাস করার গুনাহে লিপ্ত হবে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৮) রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলমানের সম্পদ তার আন্তরিক সম্মতি ছাড়া হস্তগত করলে তা হালাল হবে না। ’ (বায়হাকি, হাদিস : ১৬৭৫৬) যৌতুকের প্রচলনে আমরা নিজেরাই দায়ী। কার শ্বশুরবাড়ি থেকে কী পরিমাণ যৌতুক এলো এ নিয়ে আমাদের সমাজে খুব বেশি অহংকার করা হয়। ফলে শ্বশুরালয়ের লোকদের মধ্যে এমন চিন্তা কাজ করে যে সবার বাড়িতে উপহার এলো, আমার বাড়িতে এলো না, আমি গরিবের সঙ্গে আত্মীয়তা করলাম? এমন হীন মানসিকতাই আমাদের সবাইকে এই নোংরা ‘ভিক্ষা’ নিতে বাধ্য করে। অথচ হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘ওপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাত থেকে শ্রেষ্ঠ।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৪১) আবার অনেক কনের বাবাও মেয়ের বাড়িতে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিভিন্ন অহেতুক বাড়তি জিনিসপত্র দিয়ে সমাজের অন্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। মেয়েকে সন্তুষ্টচিত্তে কিছু দিতে চাইলে এমনভাবে দেওয়া উচিত, যাতে অন্যরা এই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হয়। কারণ বেশির ভাগ মানুষই লোকলজ্জার ভয়ে পড়ে নিজের সামর্থ্য না থাকা সত্ত্বেও এই নোংরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়, যার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। মহান আল্লাহ সবাইকে সুবুদ্ধি দান করুন। আমিন",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"ভালোবেসে মসজিদের ছবি তোলেন ইউরোপীয় ফটোগ্রাফার ক্রাউসেন ",ইসলাম ধর্ম,"বেলারুশের মতো দেশেও যে মসজিদ রয়েছে, সেটা ক'জন জানে? এক জার্মান-ডেনিশ ফটোগ্রাফার ইউরোপের মসজিদ ও ইসলামি স্থাপত্যের ছবি তুলে সংকলন প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় মুসলিমদের সম্পর্কে ভুল ধারণা ভাঙতে চান তিনি। প্রাচ্যদেশীয় অলংকার, ক্যালিগ্রাফি ও জমকালো ঝাড়বাতি হোক, বা কোপেনহেগেনের প্রধান মসজিদের স্থাপত্য ও নান্দনিকতা- এমন সব স্থাপনা জার্মান-ডেনিশ আলোকচিত্রী একহার্ড আহমেদ ক্রাউসেন-কে মুগ্ধ করে। শুধু তাই নয়, সামগ্রিকভাবে তার কাছে মসজিদের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। একহার্ড বলেন, “মসজিদের মধ্যে শান্ত পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করে। মানুষ সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্যালিগ্রাফি পড়তে পারেন, অন্যান্য মুসলিমদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। অবশ্যই নামাজ পড়া তো যায়ই। শান্তিতে পরিবেশও উপভোগ করা যায়।” ফটোগ্রাফার হিসেবে তিনি অনেক বছর ধরে ইউরোপের মসজিদ ও ইসলামি স্থাপত্য নথিভুক্ত করে চলেছেন। জার্মানি, ইটালি, স্পেন ও ব্রিটেনের মতো ইউরোপের ১৫টি দেশে তিনি ৭০টিরও বেশি মসজিদের ছবি তুলেছেন। সেই ছবির একটি সংকলনও প্রকাশিত হয়েছে। ইসলামি বিশ্বের সঙ্গে একটি পার্থক্য তিনি লক্ষ্য করেছেন। একহার্ডের মতে, মুসলিম দেশগুলির তুলনায় ইউরোপের মসজিদগুলির আকার-আয়তন ও চাকচিক্য কম। ইউরোপের মসজিদগুলোতে সাধারণত লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আযান দেওয়ার অনুমতি নেই। বহুকাল আযানের মিনার নির্মাণেরও অনুমতি ছিল না। তবে ইউরোপে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় অনেক মসজিদ বাইরে থেকেও সহজে চেনা যায়। একহার্ড আহমেদ ক্রাউসেন বলেন, “ডেনমার্কে নতুন ও আধুনিক মসজিদে মিনার তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়। আগে সেটা সম্ভব ছিল না। ১৯৬৪ সালে কোপেনহেগেনের বাইরে প্রথম মসজিদ তৈরির সময়ে সেটা স্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছিল। সৌভাগ্যবশত আজ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।” একহার্ড আহমেদ ক্রাউসেন জার্মানির পশ্চিমে আখেন শহরে এক রক্ষণশীল খ্রিস্টান পরিবারে বড় হয়েছেন। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষে তিনি জার্মানি ছেড়ে এশিয়া ও আফ্রিকার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। মিশরে গিয়ে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।একহার্ড আহমেদ ক্রাউসেন/ ডয়চে ভেলে ১৯৯২ সালে তিনি ধর্মান্তরিত হন। তখন তার বয়স তিরিশের শেষ দিকে। ইউরোপীয় মুসলিম হিসেবে নিজের পরিচয়ের খোঁজে তিনি ফটোগ্রাফিকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন। একহার্ড বলেন, “আমি বুঝতে পারলাম, আমি আসলে ইউরোপীয় ইসলামি স্থাপত্যের সন্ধান করছি। সেটা আমার এত ভালো লেগেছিল যে, আমি সরাসরি এই সব মসজিদ ভালোবেসে ফেলেছিলাম। এগুলো আমারই মসজিদ, আমার বিশাল ভালোবাসা।” দুই দশক ধরে একহার্ড যে সব মসজিদের ছবি তুলে চলেছেন, সেগুলো একাধিক প্রদর্শনীতে দেখানো হয়েছে। তার বইয়ে ব্যক্তিগত স্তরে সবচেয়ে প্রিয় মসজিদগুলির ছবি স্থান পেয়েছে। একহার্ড আহমেদ ক্রাউসেন বলেন, “বেলারুশের মসজিদ আমার সবচেয়ে প্রিয়। হলুদ আমার সবচেয়ে পছন্দের রং বলে হলুদ রংয়ের এই মসজিদ মনে ধরেছে। ডেনিশ ভাষায় একটি বই আমার অন্য প্রকল্প। সেটির মধ্যে এই বইয়ের তুলনায়ও বেশি অভিব্যক্তি ফুটে উঠবে।” একহার্ড আহমেদ ক্রাউসেন ডেনমার্কেই বাসা বেঁধেছেন। নিজের তোলা ছবির মধ্যে তিনি নিজের জীবনকাহিনীর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। ইউরোপে মুসলিমদের সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করার লক্ষ্যে কাজ করতে চান তিনি। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,হিন্দুধর্ম প্রশ্নপত্রে হিন্দু সমপ্রদায় নিয়ে কটুক্তি,হিন্দু ধর্ম,"প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৪ সালের হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হিন্দু সমপ্রদায় নিয়ে কটুক্তিমুলক প্রশ্ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দাস সমপ্রদায়ের শিক্ষার্থীরা পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার পর ঝিনাইদহ দলিত পরিষদের মধ্যে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। পরিষদের সভাপতি বিদ্যুৎ দাস ও সাধারণ সম্পাদক সূর্য কান্ত দাস তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। সাথে সাথে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষার ১ম পৃষ্টার ৭নং নৈর্বাক্তিক প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে 'তোমার বাড়িতে দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান চলছে, এমন সময় একজন মুচি এসে বলল, সে পূজায় অংশ গ্রহন করতে চাই। এমতাবস্থায় তুমি কী করবে? এখানে ৪টি প্রশ্ন করা হয়েছে (ক) বাবাকে জিজ্ঞাসা করবো(খ) অংশ গ্রহন করতে দিব(গ) অংশগ্রহন করতে নিরুৎসাহিত করবো(ঘ) অন্যের নিন্দার ভয়ে সুযোগ দিব না। এমন ধরনের হেয় করে প্রশ্নে দলিল সমপ্রদায়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেক শিশুর বাড়িতে এসে প্রশ্ন সম্পর্কে অভিভাবককে জানায়। অভিভাবকগন এমন ধরনের প্রশ্নে অবাক হয়ে যান। তারা জানান, বাংলাদেশ সরকার সেখানে সব ধর্ম, বর্নের সমধিকার জারি করেছেন। সেখানে এমন প্রশ্নে তাদের অবমাননা মুলক করা হয়েছে। তারা প্রশ্ন রেখে বলেন প্রশ্নপত্র তৈরী ও মুল্যয়ন কমিটির কিভাবে দলিল জনগোষ্টীর অবমুল্যায়ন করে এমন ধরনের প্রশ্ন কেন করা হলো। অবিলম্বে তারা ঘটনার সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তা না হলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশব্যাপী মানবন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলায় জেলায় স্মারকলিপি প্রদান করার ঘোষনা দিয়েছেন।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইজতেমায় আরও এক মুসল্লির মৃত্যু,ইসলাম ধর্ম,"বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে তুরাগ তীরের ইজতেমা ময়দানে আরও এক মুসল্লরি মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে জালাল মন্ডল (৬০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপাড়া থানার বড়াইখোলা গ্রামের। বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ যাবৎ ইজতেমা ময়দানে দ্বিতীয় পর্বে মোট পাঁচজন মুসল্লি মারা গেছেন। পরে তাদের জানাজা নামাজ শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহত অন্যদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শেরপুর সদর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবুল কালাম (৬৫), একই দিন বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার কুতুবপুর গ্রামের হেলিম মিয়া (৬৫) ও বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানার শিবনগর এলাকার জহির উদ্দিন (৭০) এবং রাত ৮টা ৫০মিনিটে জামালপুরের ইসলামপুর থানার গোয়ালের চর এলাকার নবীর উদ্দি (৬৫) মারা যান। মোহাম্মদ সায়েম জানান, বিশ্ব ইজতেমা মাঠে তাদের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং যাদের তথ্য ও ঠিকানা পাওয়া গেছে তাদের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর হয়েছে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral কালের কণ্ঠ,সর্ববৃহৎ ইসলামী অর্থনীতির দেশ মালয়েশিয়া,ইসলাম ধর্ম,"আবারও সর্ববৃহৎ ইসলামী অর্থনীতির দেশ হিসেবে মুকুট পরল মালয়েশিয়া। ‘স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি রিপোর্ট ২০২২’-এ এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া বর্তমানে মাল্টি-ট্রিলিয়ন ডলারের ইসলামী অর্থনীতির নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেশটি নবমবারের মতো শীর্ষ ইসলামী অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেল। মালয়েশিয়ার পরেই আছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইন্দোনেশিয়া। বিশ্ব অর্থনীতির ছয়টি বিবেচ্য বিষয়ের মধ্যে মালয়েশিয়া চারটিতেই শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। তা হলো মুসলিমবান্ধব পর্যটন, ইসলামী অর্থায়ন, হালাল খাবার, মিডিয়া ও বিনোদন। অপর দুটি বিষয়ের মধ্যে মালয়েশিয়া ওষুধে দ্বিতীয় এবং প্রসাধনী ও আধুনিক ফ্যাশনে নবম স্থানে আছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়া সরকারি ব্যবস্থাপনার পাঁচটি বিবেচ্য বিষয়ের মধ্যে দুটিতে শীর্ষ অবস্থানে আছে। তা হলো পর্যটন আইন ও প্রতিবিধান এবং সচেতনতা ও মিডিয়া কাভারেজ। মুসলিমবান্ধব পর্যটনে মালয়েশিয়া আগে থেকেই তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানের সঙ্গে শীর্ষ পাঁচে অবস্থান করছিল। মালয়েশিয়ার শিল্প, সংস্কৃতি ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক সেরি ন্যান্সি শুকরি বলেন, আল-হামদুলিল্লাহ, ক্রমবর্ধন মুসলিম পর্যটন বাজারে এগিয়ে যেতে মালয়েশিয়া সঠিক পথেই আছে। করোনা মহামারির সময় শিল্প, সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ইসলামিক ট্যুরিজম সেন্টারের মাধ্যমে উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। উল্লেখ্য, ইসলামী অর্থনীতি বিষয়ক গণমাধ্যম সালাম গেটওয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ডিনার স্ট্যান্ডার্ড যৌথভাবে প্রতিবছর ‘স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি রিপোর্ট ২০২২’ প্রকাশ করে থাকে। প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করে দুবাইয়ের অর্থনীতি ও পর্যটন বিভাগ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,হিজাব পরে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে কাজ করছেন যে নারী,ইসলাম ধর্ম,"ড. তাহানি আমের মিসরীয় বংশোদ্ভূত একজন মহাকাশ প্রকৌশলী। চার সন্তানের মা ড. তাহানির কাছে ধর্মীয় অনুশীলন ও ক্যারিয়ারের সাফল্য উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের নির্বাহী পরিচালক তিনি। কর্মক্ষেত্রের বাইরে তিনি জনসাধারণকে ইসলাম বুঝতে সহায়তা করেন।১৯৮৩ সালে বিয়ের পর মাত্র ১৭ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। বাবার অনুপ্রেরণায় বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এরপর যান্ত্রিক প্রকৌশলে স্নাতক এবং মহাকাশ প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি ভার্জিনিয়ার ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।১৯৯২ সালে তিনি নাসায় কাজ শুরু করেন। সেখানে কম্পিউটেশনাল ফ্লুইড ডাইনামিকস প্রজেক্ট (সিএফডি) নামে তাঁর একটি প্রকল্প ছিল। ২০১৪ সালে বিজ্ঞানে নারী ও সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ প্রচারের জন্য নাসার পক্ষ থেকে পাবলিক সার্ভিস পুরস্কার লাভ করেন। জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছর ১১ ফেব্রুয়ারি নারী ও মেয়েদের বিজ্ঞানবিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস পালিত হয়। ‘দ্য রয়াল একাডেমি অব সায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট’ (আরএএসআইটি)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবার তা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর দিবসটি উদযাপনে অংশ নেন তিনি। একজন মুসলিম নারী হিসেবে বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। স্টেম এডুকেশন তথা সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথমেটিকসে মুসলিম নারীসহ সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছেন তিনি।কর্মক্ষেত্রে হিজাব পরার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তাহানি বলেছেন, ‘নাসায় বহু মুসলিম কাজ করলেও কখনো কোনো হিজাবি নারীকে দেখিনি। আজও এখানে হিজাব সবার পছন্দের হয়ে ওঠেনি। একজন হিজাবি নারী কর্মী হিসেবে নিজের মধ্যে অন্য রকম অনুভূতি অনুভব করি। তবে চাকরিজীবনে কখনো হিজাবের বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা করিনি। হিজাব পরা ইসলামী শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। বরং সব সময় ধর্মীয় নির্দেশনা মেনে চলেছি আলহামদুলিল্লাহ।’১/১১-র দুঃসহ সময়ের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘ওই সময় অনেকে আমার হিজাব নিয়ে কথা বলেছিল। তাদের যুক্তি ছিল, কষ্ট থেকে বাঁচতে হিজাব খোলার বিধান রয়েছে। তাদের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে আমি আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে মনোযোগী হই। কেননা জীবনের সর্বত্র তাঁর নির্দেশনাকে প্রাধান্য দিতে হবে। অবশ্য অন্যদের পরামর্শে হিজাব খোলার বদলে আমি হিজাব পরেই সব কাজ করেছি।’ মুসলিম নারীর সামাজিক ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষিত মুসলিম নারী হিসেবে আমার কর্তব্য রয়েছে। তাই স্থানীয় মসজিদে সাপ্তাহিক পাঠদানের পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে কাজ করি। সমাজের সদস্যদের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলতে এ কার্যক্রম বেশ সহায়ক। পরিবার, মাতৃত্ব ও কাজের পেশাদারির মধ্যে সমন্বয় সাফল্যের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। আমার সন্তান জন্ম নেওয়ার পরও আমি নিজের কাজ অব্যাহত রাখি। আমি নিজের ঘরকে কর্মক্ষেত্রে রূপান্তরিত করি এবং তার দেখাশোনা করি। এ সময় কয়েকজন সহকর্মীও আমার সঙ্গে ঘরে কাজ করেছিলেন, যা জীবনের সুখকর স্মৃতিগুলোর একটি হয়ে রয়েছে। আমি সন্তানদের সব ধরনের কাজে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলছি, যেন তারা জীবনের সব ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।’ড. তাহানি আমির ভার্জিনিয়ার ইসলামিক সেন্টার অব হ্যাম্পটন মসজিদে শিশু ও নারীদের জন্য কোরআন শিক্ষা ও আরবি ভাষার পাঠদান করেন। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরেন। তিনি তাঁর জীবনে তিনটি মূলনীতি অনুসরণ করেন—‘সৃষ্টিকর্তাকে অনুগ্রহ করুন এবং আপনি সবাইকে খুশি করতে পারবেন। শিক্ষা সুযোগের চাবিকাঠি। সহানুভূতি ও অনুগ্রহের মাধ্যমে অন্যের সেবা করুন।’জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সাফল্যের একটি সূত্র বর্ণনা করেন ড. তাহানি। তিনি বলেন, ‘এটিকে আমি ‘Amer’s Equation of Success’ বলি। সাফল্যের সমীকরণ হলো, (IP3 + R) / T। এর ব্যাখ্যা হলো, আপনার ভবিষ্যৎ কল্পনা (Imagination) করুন। এর সঙ্গে তিনটি ‘পি’ আবেগ (Passion), অধ্যবসায় (Perseverance) ও পরিকল্পনা (Planning)-কে গুণ দিন। এরপর সময়ের (Time) সঙ্গে সম্পর্ক (Relationships) যুক্ত করুন। ফলাফল হবে সাফল্য। অর্থাৎ কেউ এসবের মধ্যে সমন্বয় করলে সাফল্য তার পদচুম্বন করবে।’ ",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"মানবজীবনে ওয়াদা রক্ষার গুরুত্ব ",ইসলাম ধর্ম,"ওয়াদা’ আরবী শব্দ। এর মানে চুক্তি, অঙ্গীকার। ওয়াদা রক্ষা করা সৎ লোকের অন্যতম গুণ। ওয়াদার বিপরীত করা হীন লোকের স্বভাব। যারা ওয়াদা রক্ষা করে না, মানুষ তাদেরকে বিশ্বাস করে না। যারা ওয়াদা রক্ষা করে না তারা পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির কাছে অপমানিত হয়। পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় ওয়াদা পূরণের গুরুত্ব অপরিসীম। ওয়াদা রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন : (১) ‘তোমরা ওয়াদা পূরণ করিও, নিশ্চয়ই ওয়াদা সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে’ (সূরা বনি ইসরাইল : আয়াত-৩৪)। (২) ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ করবে’ (সূরা মায়িদা : আয়াত-১)। (৩) ‘স্মরণ কর, যখন আল্লাহপাক নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, ‘তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি তার শপথ, আর তোমাদের কাছে যা আছে তার সমর্থকরূপে যখন একজন রাসূল আসবে তখন নিশ্চয়ই তোমরা তাকে বিশ্বাস করবে এবং তাকে সাহায্য করবে’। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এ সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে?’ তারা বলল, আমরা স্বীকার করলাম’। তিনি বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম’ (সূরা আল-ইমরান : আয়াত-৮১)। (৪) ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের’ (সূরা ফাতাহ : আয়াত-২৯)। উক্ত আয়াতগুলোতে ওয়াদা রক্ষার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ওয়াদা রক্ষার জন্য হাদীসে অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। (১) হযরত আনাস (রা.) বর্ণিত হাদীসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যার মধ্যে আমানতদারী নেই তার ঈমান নেই এবং যার মধ্যে অঙ্গীকারের মূল্য নেই তার দ্বীনও নেই’ (বায়হাকী)। (২) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণিত হাদীসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকবে, সে পাক্কা মুনাফিক এবং যার মধ্যে তার একটি স্বভাব থাকবে, তার মধ্যে মুনাফিকীর একটি স্বভাব থাকবে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিহার করে-(১) যখন তার কাছে কিছু আমানত রাখা হয় তাতে সে খিয়ানত করে। (২) সে যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে। (৩) সে যখন ওয়াদা করে, তা ভঙ্গ করে। (৪) যখন কারও সাথে কলহ করে, তখন সে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে’ (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত : পৃষ্ঠা-১৭)। (৩) হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদীসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মুনাফিকের আলামত হচ্ছে তিনটি-যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে। যখন সে ওয়াদা করে, ভঙ্গ করে। যখন তার কাছে কোনো কিছু আমানত রাখা হয়, তাতে সে খিয়ানত করে’ (বুখারী ও মুসলিম) কিন্তু মুসলিম শরীফের বর্ণনায় এটাও রয়েছে যে, যদিও সে নামাজ পড়ে, রোজাও রাখে এবং মনে করে যে, সে মুসলমান (মুসলিম ১ম খ- : পৃষ্ঠা-৫৬, মিশকাত : পৃষ্ঠা-১৭)। (৪) হযরত উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) বর্ণিত হাদীসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নিজেদের পক্ষ থেকে আমাকে ছয়টি বিষয়ের জামানত দাও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জামিন হব-(১) যখন তোমরা কথা বলবে, তখন সত্য বলবে। (২) যখন ওয়াদা কর তা পূর্ণ করবে। (৩) যখন তোমাদের কাছে আমানত রাখা হয় তা আদায় করবে। (৪) নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে। (৫) আপন দৃষ্টিকে অবনত রাখবে। (৬) আপন হস্তকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখবে’ (আহমদ, বায়হাকী, মিশকাত : পৃষ্ঠা-৪১৫)। মানবজীবকে ওয়াদা রক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। আগেকার মুসলমানগণ কিভাবে ওয়াদা রক্ষা করতেন তার কয়েকটি উদাহরণ উপস্থাপন করা হল : (১) হযরত ওমর (রা.)-এর খেলাফতকালে জেরুজালেম বিজিত হলে সেখানে যে সকল অমুসলিম ছিল, তাদের সাথে মুসলমানদের পক্ষ থেকে এ চুক্তি করা হলো যে, আমরা তোমাদের জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। এর বিনিময়ে তোমরা আমাদেরকে জিজিয়া (নিরাপত্তা কর) প্রদান করবে। চুক্তি অনুযায়ী অমুসলিমগণ প্রতি বছর জিজিয়া প্রদান করতো। এক সময় জেরুজালেমে নিয়োজিত সৈন্যদের অন্যত্র জিহাদে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল। বিষয়টি খলিফাকে জানানো হলে তিনি বললেন, জিহাদের মাঠে সৈন্য প্রেরণের পূর্বে জেরুজালেমে বসবাসকারী অমুসলিমদেরকে একত্রিত করে ঘোষণা দাও যে, ‘আমরা তোমাদের জানমালের হেফাজতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম এবং এ লক্ষ্যে সৈন্য মোতায়ন করেও রেখেছিলাম। কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে এখন আমরা সৈন্য সরিয়ে নিচ্ছি। এজন্য আমরা তোমাদের তত্ত্বাবধান করতে পারবো না। তাই এ বছর তোমরা আমাদেরকে যে জিজিয়া প্রদান করেছ, তা আমরা ফিরিয়ে দিচ্ছি। এখন আমরা তোমাদের নিকট থেকে ওয়াদামুক্ত। সুতরাং আজ থেকে নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেরাই করতে হবে। (২) হযরত মুআবিয়া (রা.) যখন সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন, তখন পাশ্ববর্তী সা¤্রাজ্য রোমের সাথে প্রায়ই তার যুদ্ধ হতো। একবার তাদের সাথে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে হযরত মুআবিয়া (রা.) সৈন্য নিয়ে বের হয়ে পড়েন। সীমান্ত এলাকায় গিয়ে সৈন্য বিন্যস্ত করে রাখেন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তিনি সৈন্য বাহিনীকে সামনে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। প্রতিপক্ষ ছিল সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত, তাই মুসলিম বাহিনীর গতিরোধ করতে পারেনি। তারা একটির পর একটি জনপদ জয় করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলেন। তাদের মধ্যে বিজয়ের উল্লাস। ঠিক এমন সময় ঘোড়া ছুটিয়ে উপস্থিত হন প্রিয় নবীর প্রিয় সাহাবী হযরত আমর ইবনে আব্বাসা (রা.)। তিনি হযরত মুআবিয়া (রা.)-কে লক্ষ্য করে বললেন, ওয়াদা পূর্ণ করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। ভঙ্গ করা নয়। হযরত মুআবিয়া (রা.) ব্যথিব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার! আমরের জবাব! ‘আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যুদ্ধ বিরতির সময় হামলা করা যেমন অবৈধ, তেমনি হামলার উদ্দেশ্যে সৈন্য মোতায়েন করাও অবৈধ।’ এ কথা শুনামাত্রই হযরত মুআবিয়া (রা.) নির্দেশ দিলেন, যতটুকু এলাকা আমাদের দখলে এসেছে, তা ফিরিয়ে দাও। সঙ্গে সঙ্গেই মুসলিম বাহিনী সম্পূর্ণ বিজিত এলাকা প্রত্যার্পণ করে নিজ এলাকায় প্রত্যাবর্তন করলেন। (৩) একদিন হযরত ওমর (রা.) বসে আছেন দরবারে। পাশে উপবিষ্ট সাহাবায়ে কেরাম অনেকেই। এমন সময় দুই যুবক অন্য এক যুবককে ধরে নিয়ে হযরত ওমর (রা.) এর দরবারে প্রবেশ করে সমস্বরে বলে উঠলো, আমিরুল মুমিনীন! এ জালিম আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে। আমরা আপনার কাছে এর বিচার চাই। হযরত ওমর (রা.) তখন ঘাতকের দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমার সম্পর্কে এরা যা বললো তা কি সত্য? ঘাতক বলল, হ্যাঁ। ওমর (রা.) বললেন, তুমি যা করেছ তার বিচার তো একমাত্র মৃত্যুদ-। ঘাতক বলল, শরীয়তের হুকুম এবং খলিফার রায় মানতে আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে আমার একটি আবেদন আছে। আবেদন হলো-আমার একটি ছোট ভাই আছে। যার জন্য আমার মরহুম পিতা সামান্য সোনা আমার কাছে রেখে গেছেন। আমি এগুলো এক জায়গায় পুতে রেখেছি। এ-খবর আমি ছাড়া আর কেউ জানে না। এই মুহূর্তে যদি আমাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়, তবে ভাইটি সম্পদ থেকে বঞ্চিত হবে। আর কিয়ামতের দিন আমি দায়ী হব। তাই আমাকে তিন দিনের জন্য জামিনে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করছি। খলিফা ওমর (রা.) একটু ভেবে বললেন, সুযোগ দেওয়া যায়। কিন্তু তোমার জামিন হবে কে? লোকটি দরবারে উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে বলল, আমার মুসলমান ভাইগণ! সন্দেহ নেই আপনারা কেউ আমাকে চিনেন না। কিন্তু আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি ওয়াদা খেলাপ করবো না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমি এসে যাবো। আপনাদের মধ্যে কেউ যদি আমার জামিন হোন তাহলে আমার দায়িত্বটি পূর্ণ হতে পারে। এ কথা শুনে হযরত আবু জর গিফারী (রা.) তার জামিন হলেন। লোকটি ছাড়া পেয়ে চলে গেল। তৃতীয় দিন দরবার যথারীতি বসলো। জামিনদার আসামীর অপেক্ষায় রইলেন। সময় অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু আসামীর কোনো পাত্তা নেই। হযরত ওমর (রা.) ঘোষণা করলেন, আসামী যদি না আসে তবে আবু জরের উপর সে হুকুম কার্যকরী হবে, সেটা ইসলামী বিধান মতে প্রযোজ্য। আবু জর (রা.) বলে উঠলেন, খোদার কসম! আমি জানামত পূর্ণ করবো। এরূপ কথাবার্তা হচ্ছে-এমন সময় আসামী হাজির। সালাম দিয়ে দরবারে প্রবেশ করে বলল, ‘আমি দায়িত্ব পালন করে এসেছি। এখন আমার উপর শাস্তি প্রয়োগ করুন। আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’ আসামীর সততায় মুগ্ধ হয়ে এ মুহূর্তে বাদীদ্বয় বলে উঠলো-‘আমিরুল মুমিনীন! আমরা আমাদের পিতার রক্তের দাবী মাফ করে দিলাম’। ওয়াদা রক্ষা করা সৎলোকের অনুপম বৈশিষ্ট্য। ওয়াদা রক্ষায় ব্যর্থ হলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে অনেক বিপর্যয় দেখা দেয়। ওয়াদা রক্ষায় অলসতা করা মোটেই উচিত নয়। সকল প্রকার ওয়াদা রক্ষায় ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে এগিয়ে আসা আমাদের সকলের উচিত।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ফিতনা থেকে সুরক্ষায় মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা,ইসলাম ধর্ম,"ফিতনা থেকে দূরত্ব বজায় রাখা এবং কোথাও ফিতনা প্রকাশ হলে তা থেকে নিজেকে রক্ষার যথাসাধ্য চেষ্টা যারা করবে তাদের ওপর আল্লাহর রহমত ও কল্যাণ থাকবে। এর দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করা যায় অসুস্থতা থেকে সুস্থতা লাভ করা ব্যক্তিকে। যিনি অসুস্থতার সমস্ত ধকল সহ্য করে বিশ্রামের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং পরবর্তী সুস্থ জীবনের জন্য রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য তাঁর নবীর ভাষায় একটি উপমা পেশ করেছেন। নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এভাবে সিরাতে মুসতাকিমের একটি উদাহরণ দিয়েছেন, রাস্তার দুই ধারে দুটো প্রাচীর। প্রাচীর দুটোতে আছে অনেকগুলো খোলা দরজা। এগুলোর সামনে পর্দা ঝোলানো রয়েছে। একজন আহ্বানকারী রাস্তার মাথায় দাঁড়িয়ে আহ্বান করছেন, অন্য এক আহ্বানকারী রাস্তায় থেকে ডাকছেন, ‘আর আল্লাহ তাআলা শান্তিময় আবাসের দিকে আহ্বান করছেন। তিনি যাকে ইচ্ছা সোজা পথের হিদায়াত দান করেন।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ২৫) রাস্তার দুই পাশের দরজাগুলো আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত সীমাসমূহ। সুতরাং কোনো ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করবে তার জন্য (দরজার) পর্দা সরে যায়। আর রাস্তায় থেকে যিনি আহ্বান করছেন তিনি হলেন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে উপদেশদাতা! (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৫৯) অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা একটি উদাহরণ পেশ করেছেন। তা হলো, একটি সরল সঠিক পথ রয়েছে, এর দুদিকে দুটো দেয়াল। এসব দেয়ালে উন্মুক্ত দরজা রয়েছে এবং তাতে পর্দা ঝোলানো। আর রাস্তার মাথায় একজন আহ্বায়ক, যে (লোকদের) আহ্বান করছে, ‘এসো, সোজা রাস্তা দিয়ে চলে যাও। ভুল ও বাঁকা পথে যাবে না।’ আর এ আহ্বানকারীর একটু সামনে আছে আরেকজন আহ্বানকারী। যখনই কোনো বান্দা সে দরজাগুলোর কোনো একটি দরজা খুলতে চায়, তখনই সে তাকে ডেকে বলে, সর্বনাশ! এ দরজা খুলো না। যদি তুমি এটা খুলো তাহলে ভেতরে ঢুকে যাবে (প্রবেশ করলেই পথভ্রষ্ট হবে)। অতঃপর তিনি এর ব্যাখ্যা করলেন, সরল-সঠিক পথের অর্থ হচ্ছে ‘ইসলাম’ (সে পথ জান্নাতে চলে যায়)। আর খোলা দরজার অর্থ হলো, ওসব জিনিস আল্লাহ তাআলা যা হারাম করেছেন এবং দরজার মধ্যে ঝোলানো পর্দার অর্থ হলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমাসমূহ। রাস্তার মাথায় আহ্বায়ক হচ্ছে কোরআন। আর তার সামনের আহ্বায়ক হচ্ছে নসিহতকারী ফেরেশতা, যা প্রত্যেক মুমিনের অন্তরে আল্লাহর তরফ থেকে বিদ্যমান। (আহমাদ, হাদিস : ১৭১৮২) উপরোক্ত দুটি বর্ণনা থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে আল্লাহ তাআলা তাঁর নির্ধারিত সীমা ও সংরক্ষিত সীমানার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং মাকরুহের পর্দা টানিয়ে দিয়েছেন। হারাম পর্যন্ত পৌঁছতে হলে মানুষকে সেই পর্দা অতিক্রম করতে হবে। আর তখনই মানুষ ইসলামের মাকরুহ ও বর্জনীয় কার্যক্রমে লিপ্ত হয়। যখন বান্দা এই পর্দা সরিয়ে দরজা খুলে ফেলে তখন সে ফিতনা ও হারামে নিমজ্জিত হয়ে যায়। তা ছাড়া সন্দেহপূর্ণ বিষয়বস্তু ও হারামের প্রাথমিক ধাপগুলোতে শিথিলতা প্রদর্শনকারী অতি দ্রুত ফিতনায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। তবে ফিতনা থেকে যথাসাধ্য সতর্কতা অবলম্বন করার কারণে বান্দা সর্বপ্রকার গোনাহ থেকে দূরে থাকে। পাশাপাশি যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্ধারিত সীমানার পর্দাকে ঝুলন্ত অবস্থায়ই ছেড়ে দেবে সে ফিতনার দুর্যোগ থেকে নিরাপদ থাকবে। মনে রাখতে হবে, শয়তান সব সময় দ্বিনের পথ থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টায় লেগে থাকে। এ কাজে সে কখনোই বিরক্ত হয় না। কারণ যদি মানুষকে গোমরাহ করার পথে শয়তান কখনো নিরাশ হতো, তাহলে আল্লাহর প্রথম নবী ও দুনিয়ার প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.) অনন্তকালের জন্য জান্নাতে বসবাস করতেন, যা ছিল অসম্ভব। এমনকি অভিশপ্ত এই শয়তান মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য নিত্যনতুন চিত্তাকর্ষক কৌশল ব্যবহার করছে। বর্তমানে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ফলে তা বিষয়টি আরো সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সাইটে যুবক-যুবতিরা অশ্লীল ভিডিও, ফোনালাপ ও পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে। আর বিবাহিত নর-নারী অবৈধ প্রেম-পরকীয়ায় শেষে ফেঁসে যাচ্ছে, যার শুরুতে হয়তো কোনো মহৎ উদ্দেশ্যে কথাবার্তা চলতে থাকে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা অসৎ কাজে পরিণত হয়। তাইতো আল্লাহ তাআলা শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সতর্কসংকেত দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, হে ঈমানদারগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। যে ব্যক্তি শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তাকে তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে। যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকত, তবে তোমাদের কেউ কখনো পবিত্র হতে পারতে না; কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন। আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও জানেন। (সুরা : নুর, আয়াত : ২১) মহান আল্লাহ শয়তানের সব ধরনের ফিতনা থাকে আমাদের হেফাজত করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"খ্রিস্টধর্মের যিশু ও মেরিকে যেভাবে দেখা হয় ইসলাম ধর্মে ",ইসলাম ধর্ম,"খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব “বড়দিন” আজ। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ২৫ ডিসেম্বর বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে “বড়দিন” হিসেবে উদযাপন করে থাকেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। তবে খ্রিস্টধর্মের প্রভু যিশুকে নিয়ে ইসলাম ধর্মেও রয়েছে আলোচনা। শুধু যিশু নন; তার মা মেরিকে নিয়েও রয়েছে আলোচনা। মুসলমানদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফে একাধিকবার উল্লেখ রয়েছে এই দুজনের কথা। যখন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ যিশুর জন্ম উদযাপন করছে, তখন অনেকের মধ্যেই আগ্রহ যে মুসলমানরা ভার্জিন মেরি অর্থাৎ কুমারী মরিয়ম এবং তার পুত্র জেসাস বা যিশু বা নবী ঈসাকে কীভাবে দেখে? বিশ্বব্যাপী যিশুর অনুসারীর সংখ্যা সর্বাধিক। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানেই রয়েছে মুসলমানরা। ইসলাম ধর্মে নবী ঈসার মা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে কোরআনের একটি সূরার নাম “মরিয়ম” রাখা হয়েছে। তিনিই একমাত্র নারী, যাকে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থে নাম ধরে উল্লেখ করা হয়েছে। কোরআনের ১১৪টি সুরার মধ্যে ১৯ নম্বর সুরাটি তার নামে নামকরণ করা হয়। জন ইউনিভার্সিটির থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক জেকি সারিটোপ্রাক যুক্তরাষ্ট্রের, অক্সফোর্ড বিবলিওগ্রাফিজ ওয়েবসাইটে ""মেরি ইন ইসলাম"" লেখায় বলেন, ""মরিয়মের নাম ক্যানোনিকাল গসপেলগুলোয় যতবার বলা হয়েছে তার চাইতে বেশি বলা হয়েছে কোরআনে। কোরআনে কমপক্ষে ৭০টি আয়াতে মরিয়মের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।"" মরিয়ম মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত একজন নারী এবং যারা তাকে সম্মান করে না তাদেরকে মুসলমান বলে গণ্য করা হয় না। মুসলমানদের মতে, নবী ঈসার জন্মের ছয় শতাব্দী পরে কোরআন নাজিল হয়। সে সময় ফেরেশতা জিবরাইলের (খ্রিস্টান ধর্মমতে দেবদূত গ্যাব্রিয়েল) মাধ্যমে, ইসলামের নবী মুহাম্মদের কাছে কোরআন নাজিল হয়। খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্ম অনুসারে, গ্যাব্রিয়েল বা জিবরাইল প্রথমবারের মতো মেরি বা মরিয়মকে জানান যে তিনি গর্ভবতী। খ্রিস্টধর্মের মতো ইসলামও বিশ্বাস করে যে, মরিয়মের গর্ভধারণ ছিল একটি অলৌকিক ঘটনা। সূরা আল ইমরানে এই ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে; যেখানে মরিয়মকে ""সুসংবাদ"" জানানো হয় এই বলে যে, তিনি এমন একজনের মা হবেন যিনি মেসাইয়াহ বা আল্লাহর রসুল হবেন। এ নিয়ে মরিয়মের প্রতিক্রিয়া কোরআনের ৪৭ নম্বর আয়াতে উঠে এসেছে। ""হে ঈশ্বর! আমাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ না করা সত্ত্বেও আমার সন্তান হবে কিভাবে?"" পরবর্তীতে সুরায় মরিয়মের সতীত্বের ওপর জোর দিয়ে বলা হয়, ""এবং মরিয়ম এমন একজন যিনি তার কুমারীত্ব রক্ষা করেছিলেন, তারপর আমি তার ভেতর আমার রূহ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং তাকে ও তার পুত্রকে সমগ্র জগতবাসীর জন্য এক নিদর্শন বানিয়েছিলাম।"" একা নারীর শক্তি যদিও উভয় ধর্মই মরিয়মের প্রশংসা করেছে, তবে যিশুর মা-কে নিয়ে গল্পগুলোয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিন্নতা রয়েছে। ইসলাম ধর্মে নবী ইউসুফের (খ্রিস্টান ধর্মমতে জোসেফ) কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি, যেখানে কিনা খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল অনুসারে মেরি ছিলেন জোসেফের বাগদত্তা। অন্যদিকে ইসলাম ধর্মমতে, নবী ঈসার মা যখন গর্ভবতী হয়েছিলেন তখন তিনি বিবাহিত ছিলেন না অর্থাৎ কুমারী ছিলেন। ইসলাম ধর্মমতে, মরিয়ম তার পরিবার এবং তার সম্প্রদায় থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন; যাতে তিনি একটি খেজুর গাছের ছায়ায় একা একা বাচ্চা প্রসব করতে পারেন। সুরা মরিয়মের ২২ থেকে ২৫ আয়াতে নবী ঈসার জন্মের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। ""অতঃপর তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করলেন এবং একটি নির্জন স্থানে চলে গেলেন। প্রসব বেদনায় তিনি এক খেজুর গাছের নীচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। সন্তান প্রসবের বেদনায় তিনি বলেছিলেন: ‘এর আগেই যদি আমি মরে যেতাম আর মানুষের স্মৃতি থেকে পুরোপুরি মুছে যেতাম!’"" “অতঃপর ফেরেশতা তাকে নীচ থেকে আওয়াজ দিলেন যে, তুমি দুঃখ করো না। তোমার পালনকর্তা তোমার পায়ের তলায় এক নহর বইয়ে দিয়েছেন।” “তুমি তোমার দিকে খেজুর গাছের কাণ্ড নাড়া দাও, সেটি তোমার সামনে তাজা, পাকা খেজুর ফেলতে থাকবে।” এক নারীর সাহসিকতা ইসলামে মরিয়মের গুরুত্বের আরেকটি দিক হল যে কোরানের কিছু আয়াতে নবী ঈসাকে ""মরিয়মের পুত্র"" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ইসলামের ইতিহাসে এমন অনেক নারী আছেন যাদের মুসলিমরা প্রশংসা করেন। যেমন নবী মুহাম্মদের স্ত্রী এবং কন্যা। নবী ঈসার মা মুসলমানদের জন্য ধৈর্য ও সাহসের উদাহরণও বটে। কারণ, তিনি যখন তার সম্প্রদায়ে ফিরে আসেন, তখন মরিয়মকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যেমনটি সুরা মরিয়মের আয়াতগুলোয় বর্ণনা করা হয়েছে। ""অতঃপর তিনি তার সন্তানকে কোলে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের সামনে হাজির হলেন। তারা বলল: হে মরিয়ম, তুমি তো এক অঘটন ঘটিয়ে বসেছ।” “হে হারুনের বোন! তোমার পিতা কোনো অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মা ব্যভিচারিণী ছিলেন না।” কোরআন অনুসারে, নবী ঈসা নবজাতক হওয়া সত্ত্বেও কথা বলে ওঠেন, ""আমি আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে একজন নবী করেছেন।"" নবী ঈসা ইসলামিক ঐতিহ্যে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এবং প্রায়শই নবী মুহাম্মদের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নবী হিসাবে তাকে বিবেচনা করা হয়। মুসলমানরা নবী মুহাম্মাদের নাম উচ্চারণ করার পরে সাল্লাল্লাহু ওলায়হি ওয়াসসাল্লাম বা ""তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"" বলে থাকে। যখন নবী ঈসা সম্পর্কে কথা বলেন তখনও তারা একই কাজ করেন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় যিশু এবং মেরি দুটি খুব জনপ্রিয় নাম, তেমনি মুসলিম বিশ্বে ছেলেদের ঈসা এবং মেয়েদের মরিয়ম নামটিও খুব প্রচলিত। উপাসনা ইসলাম এবং ক্যাথলিক ধর্মে মরিয়ম এবং তার ছেলেকে ঘিরে যেসব ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সেখানে অন্যতম প্রধান অসঙ্গতির বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। ক্যাথলিকদের জন্য, ভার্জিন মেরি হলেন ঈশ্বরের মা এবং ঈশ্বর জেসাস বা যিশুর মধ্যে মানুষ রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। অন্যদিকে মুসলমানদের জন্য, নবী ঈসা ঈশ্বর নন। তাই, মরিয়ম ঈশ্বরের মা নন। ইসলামে মরিয়ম বা নবী ঈসা কাউকে স্রষ্টার সামনে সুপারিশকারী হিসাবে দেখা হয়নি। তারা মানুষ ছিলেন; যাদের কাছে কিছুই প্রার্থনা করা বা চাওয়া যায় না বা চাওয়া হয় না। নবী ঈসার নাম কোরআনে ২৫ বার উল্লেখ করা হয়েছে, তাকে আল্লাজ প্রদত্ত এক অলৌকিক বিষয় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, শান্তির নবী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কোরআনে নবী ঈসার অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিকৃতি ক্যাথলিক গির্জা এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি, যানবাহন এবং পোশাকে মেরির বিভিন্ন প্রতিকৃতি দেখা যায়। ক্যাথলিক গির্জা একটি বিষয় খেয়াল রাখে তা হলো, তারা যখন মেরির প্রতি বিশ্বাস রেখে প্রার্থনা করে তখন সেটা যিশুর মায়ের প্রতিকৃতিকে উপাসনা করা হয় না। ইসলামে আল্লাহর কোনো নবীকে কোন ছবি বা প্রতিকৃতির মাধ্যমে তুলে ধরা নিষেধ। এ কারণে মসজিদে মানুষের কোনো ছবি থাকে না। মসজিদের দেয়ালে আরবি ক্যালিগ্রাফিতে কোরআনের আয়াত লেখা থাকে। ইসলামের সুন্নি ধারাও মরিয়মকে প্রতিকৃতি রূপে প্রকাশ করাকে আপত্তিকর বলে মনে করে। যদিও অনেক শিয়া (ইসলাম ধর্মের আরেকটি শাখা) ইসলামি ব্যক্তিত্বের ছবি প্রকাশের ব্যাপারে বেশ নমনীয়। আরেকটি অসঙ্গতি ক্যাথলিক ধর্ম এবং ইসলামের মধ্যে জেসাস/যিশু বা নবী ঈসাকে নিয়ে মূল পার্থক্য হল ইসলামে তাকে একজন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করার হয় এবং তাকে ঈশ্বর বা ঈশ্বরের পুত্র বলা হয় না। তিনি যেভাবে মারা গেছেন সেটা নিয়েও দুটি ধর্মে ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। ইসলাম ধর্মানুসারীদের মতে, যিশু বা নবী ঈসাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়নি। কোরআনের ১৫৭ ও ১৫৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: ''যদিও তারা বলেছে: আমরা মরিয়মের পুত্র আরেকজন আল্লাহর নবী ইসাকে হত্যা করেছি, তারা সেটা বিশ্বাস করলেও আসলে তারা হত্যা করতে পারেনি বা ক্রুশবিদ্ধ করতে পারেনি। এবং যারা তার সম্পর্কে দ্বিমত পোষণ করেছে, বস্তুত: তারা এ সম্বন্ধে সন্দিহান ছিল, আসলে কী ঘটেছে, সেই সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। আর এটা নিশ্চিত যে, তারা তাকে হত্যা করেনি” “কিন্তু আল্লাহ তাকে নিজের কাছে তুলে নিয়েছেন। আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।"" এ ধরনের মতভেদ থাকা সত্ত্বেও নবী ঈসা ইসলামের প্রিয় একজন নবী। তবে মুসলমানরা তার জন্মদিন বা বড়দিন উদযাপন করে না। অন্যদিকে ক্যাথলিক ধর্মের নেতারা শুরু থেকেই মেরি এবং জেসাস/যিশুর প্রতি ইসলামের গভীর শ্রদ্ধাকে স্বীকৃতি দিয়ে এসেছে। অনেকের মতে, এটি উভয় বিশ্বের মধ্যে সংলাপ স্থাপনের সেরা সেতুবন্ধনগুলোর একটি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,জমজম কূপ থেকে উদ্ধার হওয়া সোনার হরিণ,ইসলাম ধর্ম,"মহানবী (সা.)-এর দাদা আবদুল মুত্তালিব এক রাতে স্বপ্ন দেখেন, তাঁকে জমজম কূপ খননের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং স্বপ্নযোগে তার স্থানও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। তারপর ঘুম থেকে জেগে উঠে তিনি খননকাজ শুরু করে দেন। খননকাজ চলাকালে কূপ থেকে কিছু জিনিস উত্তোলন করা হয়। সম্ভবত বনু জুরহুম গোত্র মক্কা ছেড়ে যাওয়ার প্রাক্কালে কূপের এসব জিনিস নিক্ষেপ করেছিল।নিক্ষিপ্ত দ্রব্যের মধ্যে ছিল কিছুসংখ্যক তলোয়ার ও লৌহবর্ম এবং দুটি সোনার হরিণ। আবদুল মুত্তালিব তলোয়ারগুলো দ্বারা কাবাগৃহের দরজা ঢালাই করেন, সোনার হরিণ দুটি দরজার সঙ্গে সন্নিবেশিত করে রাখেন এবং হজযাত্রীদের পানি পান করানোর ব্যবস্থা করেন। [সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহ.), আর-রাহিকুল মাখতুম] জমজম কূপ খননকালে কুরাইশরা দাবি করে, খননকাজে তাঁদেরও অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে। আবদুল মুত্তালিব বলেন, ‘যেহেতু এ কূপ খননের জন্য তিনি স্বপ্নযোগে আদিষ্ট হয়েছেন, সেহেতু এ খননকাজে তাঁদের অংশগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না।কিন্তু অন্য কুরাইশরাও ছাড়ার পাত্র নয়। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তাঁরা বনু সাদ গোত্রের এক ভবিষ্যদ্বক্তা নারীর কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এ উদ্দেশ্যে মক্কা থেকে যাত্রা শুরু করেন। কিন্তু পথের মধ্যে তাঁরা এমন কতিপয় নিদর্শন প্রত্যক্ষ করেন, যাতে তাদের কাছে এটা সুস্পষ্ট হয়ে যায়, মহান আল্লাহ জমজম কূপের খননকাজ আবদুল মুত্তালিবের জন্যই নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তাই তাঁরা আর অগ্রসর না হয়ে মক্কায় ফিরে আসে।এ পরিপ্রেক্ষিতেই আবদুল মুত্তালিব মানত করেছিলেন যে আল্লাহ তাআলা যদি অনুগ্রহ করে তাঁকে ১০টি পুত্রসন্তান দান করেন এবং সবাই বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে জীবনের এ স্তরে গিয়ে পৌঁছে যে তাঁরা আত্মরক্ষা করতে সক্ষম, তাহলে তিনি তাঁর একটি সন্তানকে বায়তুল্লাহর জন্য উৎসর্গ (কোরবানি) করবেন। (ইবনে হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৪২-১৪৭)আবদুল মুত্তালিব ছেলেদের মধ্যে কাকে কোরবানি করা যায়—এ ব্যাপারে লটারি দেন। লটারিতে আবদুল্লাহর নাম উঠে যায়। আবদুল মুত্তালিব আবদুল্লাহর হাত ধরে তাঁকে নিয়ে যান কাবার কাছে। তাঁর হাতে ছিল জবেহ করার ধারালো অস্ত্র।কিন্তু কোরাইশদের মধ্যে বনু মাখজুম অর্থাৎ আবদুল্লাহর নানা গোষ্ঠীর লোকজন এবং আবদুল্লাহর ভাই আবু তালিব এ ব্যাপারে তাঁকে বাধা প্রদান করেন।মানত পূরণের বিকল্প পদ্ধতি জানতে আবদুল মুত্তালিব জনৈক তত্ত্ববিশারদের পরামর্শ চান। তিনি আবদুল্লাহ এবং ১০টি উটের মধ্যে নির্বাচনগুটিকা ব্যবহারের পরামর্শ দেন। নির্বাচনী গুটিকায় যদি আবদুল্লাহর নাম উঠে যায় তাহলে ১০টি উটের সঙ্গে আরো ১০টি উট যোগ করে নির্বাচনী গুটিকা ব্যবহার করতে হবে যে পর্যন্ত না আবদুল্লাহর নামের স্থানে ‘উট’ কথাটি প্রকাশিত হয় সে পর্যন্ত একই ধারায় নির্বাচনী গুটিকা ব্যবহার করে যেতে হবে, যতক্ষণ না আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে যান। তারপর উটের যে সংখ্যা নির্ধারক নির্বাচনী গুটিকা ব্যবহার করা হবে সেই সংখ্যক উট আল্লাহর নামে উৎসর্গ করতে হবে। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবদুল মুত্তালিব, আবদল্লাহ ও ১০টি উটের মধ্যে নির্বাচনী গুটিকা ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে আবদুল্লাহর নামই প্রকাশিত হয়। তত্ত্ববিশারদের নির্দেশ মোতাবেক দ্বিতীয় দফায় উটের সংখ্যা আরো বেশি বৃদ্ধি করে তিনি নির্বাচনী গুটিকা ব্যবহার করেন। কিন্তু এতেও আবদুল্লাহর নামই উঠে যায়। কাজেই পরবর্তী প্রত্যেক দফায় ১০টি উটের সংখ্যা বৃদ্ধি করে তিনি নির্বাচনী গুটিকা ব্যবহার করে যেতে থাকেন। এ ধারায় চলতে চলতে যখন এক শ উট এবং আবদুল্লাহর নাম নির্বাচনী গুটিকায় ব্যবহার করা হয়, তখন উট কথাটি প্রকাশিত হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল মুত্তালিব আবদুল্লাহর পরিবর্তে ১০০ উট আল্লাহর নামে উৎসর্গ করেন। আর এ জন্যই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি দুই জবেহ (উৎসর্গকৃত)-এর সন্তান, একজন ইসমাঈল (আ.) এবং অন্যজন আমার পিতা আবদুল্লাহ।’ (রহমাতুল্লিল আলামিন, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮৯-৯০)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive নয়াদিগন্ত,বাড়ছে হিন্দু!‌ তাই ইসলামাবাদে তৈরি হতে চলেছে প্রথম মন্দির,হিন্দু ধর্ম,"পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে তৈরি হতে চলেছে প্রথম হিন্দু মন্দির। শহরের বাইরে গিয়ে যাতে আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুজোর কাজ করতে না হয়, তাই এই ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। প্রথমবারের জন্য এই মন্দির তৈরি হচ্ছে পাকিস্তানের রাজধানীতে।সম্প্রতি ইসলামাবাদের এইচ ৯ সেক্টরে এই মন্দিরের ভূমি পুজাও হয়ে গেল। প্রায় ৪ ক্যানাল জমি এই মন্দির নির্মাণের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। পাকিস্তান সংসদের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী লাল চাঁদ মালহি জানিয়েছেন, শেষ কয়েক দশকে পাকিস্তানে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে হিন্দু জনসংখ্যা। অনেক দিন ধরেই রাজধানীতে বাসরত হিন্দুরা একটি মন্দিরের দাবি তুলছিলেন। সেই দাবি মেনেই এই মন্দির তৈরি করা হবে।এর পাশাপাশি হিন্দুদের দাহ করার কোনো শ্মশানও ইসালামাবাদে নেই। সেটিও আলাদা করে একটি তৈরি করা হবে। ইসলামাবাদ হিন্দু পঞ্চাযেত মন্দিরের নাম দিয়েছে শ্রী কৃষ্ণ মন্দির, যেটি তৈরি হবে প্রায় ২০ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে। এই মন্দির তৈরির সমস্ত খরচ পাকিস্তান সরকার বহন করবে বলেও জানিয়েছেন পাকিস্তানের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী। মন্দির তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ১০ কোটি পাকিস্তানি রুপি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"ঝড়-বৃষ্টির সুখবর দিলো আবহাওয়া অফিস ",অন্যান্য,"তাপপ্রবাহের মধ্যে জনজীবনের যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, তখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় সালাতুল ইস্তিসকার বা বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ এবং বিভিন্ন প্রার্থনার মাধ্যমে বৃষ্টি চাইছেন সাধারণ মানুষ। সেই বৃষ্টি কবে স্বস্তি হিসেবে ঝরতে পারে সে বিষয়ে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দেয়া আবহাওয়া বার্তায় সেই তথ্যই নির্দিষ্ট করলো আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বর্ধিত ৫ দিনের শেষের দিকে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি বাড়তে পারে। একইসঙ্গে তাপমাত্রাও কমে আসবে। আরো পড়ুন: ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম কালবৈশাখীর রেকর্ড এছাড়া আবহাওয়া বার্তায় আরো জানানো হয়, শনিবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। এতে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানিয়েছে, জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকবে। এছাড়া আগামীকাল (রবিবার ২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"মীরাছে নারীর হিস্যা, শরীয়তের হুকুম ও সমাজের প্রচলন ",ইসলাম ধর্ম,"অনেক মুসলমান সম্পদের মোহে পড়ে শরীয়তের হুকুম মোতাবেক মীরাছ বণ্টন করে না। তারা যদি অন্যায় ও গুনাহর কাজ মনে করেও তা করে তাহলে তা একটি ফাসেকি ও মারাত্মক গুনাহ। আর আল্লাহ না করুন- যদি কুরআনী বিধানের প্রতি অশ্রদ্ধা ও অস্বীকারের কারণে হয় তাহলে তো পরিষ্কার কুফরি। মীরাছের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান লঙ্ঘন করার একটি ঘৃণ্য দিক হচ্ছে নারীদেরকে তাদের হিস্যা থেকে বঞ্চিত করা। অনেক জায়গায় অনেক ধরনের প্রথা ও কুসংস্কার আছে, যেগুলোর মাধ্যমে নারীদেরকে তাদের হক থেকে বঞ্চিত করা হয়। যেমন : বিধবাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা। কোনো কোনো জায়গায় এ রকম আছে যে, স্বামীর মৃত্যুর পর অন্যত্র বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হলে তাকে মৃত স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়। এজন্য ওই অসহায় নারীরা দ্বিতীয় বিবাহ থেকে বিরত থাকে। আর জীবনভর বৈধব্যের চিতায় জ্বলতে থাকে এরপর স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের লাঞ্ছনা-গঞ্জনা তো আছেই। কোনো কোনো অঞ্চলে এই প্রচলন আছে যে, স্ত্রী স্বামীর বংশের না হলে তাকে স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়। এটিও চরম মূর্খতা ও অবিচার। কুরআন মজীদে স্ত্রীর অংশ সুনির্ধারিত। বিধবা চাই স্বামীর বংশের হোক বা অন্য বংশের, দ্বিতীয় বিবাহ করুক বা না করুক সর্বাবস্থায় তার নির্ধারিত অংশ তাকে দিতেই হবে। বোনের হিস্যা না দেয়া। এই অপরাধ তো অনেক ‘দ্বীনদার’ ও ‘শিক্ষিত’ পরিবারেও পাওয়া যায়। তারা বোনদের কাছ থেকে মীরাছের হিস্যা মাফ করিয়ে নেয়। মনে রাখতে হবে, বোনদের কাছে মাফ চেয়ে দায়মুক্ত হওয়া যাবে না। কারণ জাহেলী প্রথা ও রেওয়াজের কারণে মেয়েরা নিজেরাও সম্পদ চাওয়াকে দোষের মনে করে, উপরন্তু ভায়েরা অসন্তুষ্ট হবে, সমাজের লোকে নিন্দা করবে এসবের ভয় করে। এই জাহেলী প্রথা শুধু তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিতই করেনি, তাদের মুখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আল্লাহর ওয়াস্তে এই অবলা নারীদের বুকচেরা ‘হাহাকার’-কে ভয় করুন। এর একটি স্ফুলিঙ্গ আপনার সাজানো বাগানকে ছারখার করে দিতে পারে। হাদিস শরীফে আছে, মাজলুমের ফরিয়াদকে ভয় করো। আল্লাহ তাআলা ও মাজলুমের ফরিয়াদের মাঝে কোনো আড়াল থাকে না (অতি দ্রুত তা কবুল হয়ে যায়।) আর দুনিয়ার আযাব থেকে বেঁচে গেলেও আখিরাতের কঠিন আযাব থেকে তো বাঁচার কোনোই উপায় নেই। যে আযাব সম্পর্কে কুরআন মজীদে বলা হয়েছে : আর নিঃসন্দেহে আখিরাতের আযাবই হলো সবচেয়ে বড়। মোটকথা, তারা যেহেতু স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাফ করে না তাই তারা মাফ করে দিলেও শরীয়তে তা গ্রহণযোগ্য নয়। উপরন্তু এই মাফ করা ও মাফ চাওয়া দু’টোই গুনাহর কাজ। কারণ এর দ্বারা হিন্দুদের একটি কুপ্রথা এবং শরীয়তবিরোধী ভ্রান্ত প্রচলনকে প্রতিষ্ঠিত রাখা হয়, যা একটি কবীরা গুনাহ। বর্তমান সময়ে এটা অপরিহার্য যে, বোন দাবি না করলেও ভাই তাদেরকে তাদের অংশ বুঝিয়ে দিবে। এটা ফরয। এ বিষয়ে কোনোরূপ অবহেলা করা যাবে না। আর ভাই যদি অবহেলা করে তাহলে বোনের কর্তব্য, নিজের হক দাবি করা। এ বিষয়ে কারো নিন্দা-সমালোচনার পরোয়া করবে না এবং এই ভেবে নিজের হিস্যা দাবি করা থেকে বিরত থাকবে না যে, আমি তো স্বচ্ছল। এই হিস্যার আমার প্রয়োজন নেই; বরং প্রয়োজন না থাকলেও নিজের হক উসূল করবে। যেন এই কুরসম বিলুপ্ত হয় এবং আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। কেউ কেউ বলে, বিভিন্ন উপলক্ষে ভাইরা বোনদেরকে যে উপহার ইত্যাদি দিয়ে থাকে তার বিপরীতে বোনেরা তাদের মীরাছের অংশ ভাইদের দেয়। এই ধারণাও ভুল। কারণ এই লেনদেনে কি বোনদের সম্মতি নেয়া হয়েছে, না তা একতরফা ঘোষণা? দ্বিতীয়ত রেওয়াজের কারণে তাদের তো কিছু বলারও উপায় নেই। সুতরাং এই সম্মতি গ্রহণযোগ্য নয়। তৃতীয়ত ‘বিভিন্ন সময় দেয়া উপহার ইত্যাদি’ কিছু অনির্দিষ্ট বস্তু, যার পরিমাণ, মূল্য সবই অনির্দিষ্ট ও অজানা। তাহলে এটি মীরাছের বিনিময় কীভাবে হতে পারে? চতুর্থ কথা এই যে, এই উপহার আদান-প্রদান তো হয়ে থাকে আত্মীয়তা সম্পর্কের দাবিতে, যা বোনদের একটি আলাদা হক। মীরাছের সাথে এ কোনোই সম্পর্ক নেই। যারা বোনদেরকে উপরোক্ত অজুহাতে বঞ্চিত করে তারা প্রকৃতপক্ষে মীরাছের হক ও আত্মীয়তার হক কোনোটাই আদায় করে না। আর যেখানে এই প্রচলন আছে যে, বোন নিজের হিস্যা দাবি করলে এবং তাকে হিস্যা দেয়া হলে তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হয় এটা তো এত বড় মূর্খতা ও জাহালত, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। মনে রাখতে হবে, যারা এমন কাজ করে তারা অভিশপ্ত, তাদের দুনিয়া ও আখিরাত দু’টোই বরবাদ। মোটকথা, হারামকে হালাল করার জন্য এবং অবলা বোনদের মীরাছের হিস্যা আত্মসাৎ করার জন্য যত ফন্দি-ফিকিরই করা হোক না কেন শরীয়তের দৃষ্টিতে তা সব প্রত্যাখ্যাত।",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative কালের কন্ঠ,বগুড়ায় সম্রাট শাহজাহানের আমলে নির্মিত মসজিদ,ইসলাম ধর্ম,"সবুজ-শ্যামলে ঘেরা বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম। ডানে-বাঁয়ে চিরনিদ্রার সুবিশাল কবরস্থান। সামনে পায়চারি করার সবুজে ছাওয়া সুবিশাল এক মাঠ ও নববী শিক্ষাকেন্দ্র কওমি মাদরাসা। তারই স্পর্শ ঘিরে আছে শিশু-কিশোরদের আলোকময় ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের প্রতীক প্রাথমিক বিদ্যালয়।বলছিলাম উত্তরবঙ্গের বগুড়া জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল প্রতাপ খাদুলী গ্রামের এক মুসলিম ধর্মীয় কেন্দ্র প্রতাপ খাদুলী জামে মসজিদের কথা, সংস্কারের অভাবে যা প্রায় বিলুপ্তির পথে। সম্রাট শাহজাহানের আমলে ১৬৩৮ সালে এটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নির্মাণ গঠনে মিসরীয় সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি মেলে। এলাকার মুরব্বি আলহাজ আছাব উদ্দিন তালুকদার ৩৫ থেকে ৪০ বছর এ মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেন।তিনি বলেন, ‘আমার দাদার কাছ থেকে শোনা কথা, প্রায় ১৭ শতাব্দীর শুরুর দিকে নির্মিত হয় এই মসজিদ।’মসজিদে আছে ১২০ ফুট সুউচ্চ একটি বিশাল গম্বুজ, ভেতরে দুই কাতার প্রশস্ত জায়গা, যেখানে আনুমানিক প্রতি কাতারে পাঁচ-ছয়জন নামাজ আদায় করতে সক্ষম। আছে ছোট একটি মিহরাব, দুই পাশের দেয়ালে আছে কোরআন শরিফ ও ধর্মীয় গ্রন্থ রাখার খোপ আকারের শেলফ। আর ভেতরের ওপরের অংশে আছে উন্নত ও ডিজাইন করা চকচকে গ্লাস, যা সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করেছে।এককথায় ভেতরে গেলে চাকচিক্য ও সৌন্দর্য দেখে মনে হয়, এ যুগের কারুকার্যখচিত দৃষ্টিনন্দিত কোনো মসজিদ। বাইরের গম্বুজের উপরিভাগকে কয়েকটি ধাপে সাজানো হয়েছে। তবে মরহুম আলহাজ আছাব উদ্দিনের বক্তব্য অনুযায়ী, আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে বিশাল আকৃতির গম্বুজের একদম ওপরের ছোট্ট গম্বুজটিতে তৎকালীন নির্মাতাদের মূল্যবান ধাতু সংরক্ষিত থাকায় দুষ্কৃতকারীরা তা ভেঙে সেগুলো নিয়ে যায়, যা আজও সেভাবেই দৃশ্যমান। বাইরের চারপাশে আগের কারুকার্য বহাল না থাকলেও গ্রামবাসীর যৌথ অর্থায়নে সিমেন্ট ও বালু দিয়ে তিন শতক আগের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সংস্কার করা হয়েছে।বর্তমানে গ্রামবাসী তাদের গৌরবময় এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সময় সময় টুকটাক বিভিন্ন সংস্কার করে থাকে।এলাকার লোকের আধিক্য বিবেচনা করে মরহুম আছাব উদ্দিনের উদ্যোগে মসজিদটির সঙ্গে মিলিয়ে পেছনে একটি ছয় কাতার ধারণক্ষমতার মসজিদ নির্মাণ করা হলেও ধর্মপ্রাণ মানুষের নামাজের জায়গা সংকুলান হচ্ছিল না। তাই চলতি বছরের শুরুর দিকে এলাকাবাসীর অর্থায়নে সে জায়গাজুড়ে প্রায় ১২ কাতার ধারণক্ষমতার তিন তলা ফাউন্ডেশনের একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যার কাজ চলমান।প্রাচীন এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে মসজিদটির সংস্কারমূলক কাজে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral কালের কন্ঠ,সন্তানের জন্য সম্পদ রাখা প্রসঙ্গে কোরআন কী বলে,ইসলাম ধর্ম,"সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সব মা-বাবা চিন্তা করে। তারা চায় সন্তানের জন্য ভবিষ্যতের পথ মসৃণ করে রেখে যেতে। সন্তানের সুন্দর জীবনের কথা চিন্তা করে সব কষ্ট সহ্য করে নেয় তারা। পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করার নীতি ও নির্দেশনা রয়েছে।মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর ওই প্রাচীর, যা ছিল নগরবাসী দুই পিতৃহীন কিশোরের, এর নিম্নদেশে আছে তাদের গুপ্তধন এবং তাদের পিতা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। সুতরাং আপনার প্রতিপালক দয়াপরবশ হয়ে ইচ্ছা করলেন যে, তারা বয়ঃপ্রাপ্ত হোক এবং তারা তাদের ধনভাণ্ডার উদ্ধার করুক।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৮২) আয়াতের প্রেক্ষাপট কোরআনের উল্লিখিত আয়াতটি মুসা ও খিজির (আ.)-এর সফরের বিবরণে এসেছে। একবার মুসা (আ.) খিজির (আ.)-এর সফরসঙ্গী হওয়ার ইচ্ছা করেন এবং তাঁরা একসঙ্গে পথ চলতে শুরু করেন।একসময় তাঁরা ক্ষুধার্ত হন এবং একটি শহরে পৌঁছে শহরবাসীর কাছে মেহমানদারির অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা আপ্যায়ন করতে অস্বীকার করে। মেহমানদারির মতো সাধারণ ভদ্রতা ও শিষ্টাচার রক্ষা না করায় মুসা (আ.) মনে কষ্ট পান। তাঁরা উভয়ে চলতে থাকেন।পথে দেখতে পান, শহরের একটি প্রাচীর ভেঙে পড়েছে। খিজির (আ.) পতনোম্মুখ প্রাচীরটি ঠিক করে দেন। মুসা (আ.) বললেন, আপনি এই প্রাচীর মেরামতের বিনিময়ে পারিশ্রমিক নিতে পারতেন। কেননা একদিকে আমরা ক্ষুধার্ত, আমাদের প্রয়োজন আছে, অন্যদিকে তারা খাবার না দিয়ে অমানবিক আচরণ করেছে। উত্তরে খিজির (আ.) জানান, প্রাচীর মেরামতের কাজ তিনি শুধু নিজের ইচ্ছায় করেননি, বরং আল্লাহর নির্দেশনায় করেছেন। আয়াতের শিক্ষা আয়াতে প্রাচীর মেরামতের ব্যাপারে আল্লাহর ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য দুটিই বর্ণনা করা হয়েছে। তা হলো তিনি প্রাচীর মেরামতের মাধ্যমে নেককার পিতার সম্পদ সন্তানদের জন্য সংরক্ষণ করতে চান। যেন তারা উপযুক্ত বয়সে তা লাভ করে এবং এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে। অথচ তাদের পিতা তাদেরকে অপরিণত বয়সে রেখে গেছেন। এ আয়াতের প্রধান দুটি শিক্ষা হলো : ১. সন্তানের জন্য সম্পদ রেখে যাওয়া : ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তানদের নিঃস্ব রেখে যাওয়ার চেয়ে তাদের জন্য কিছু সম্পদ রেখে যাওয়া উত্তম। যেমন আয়াতে বর্ণিত বাবা তাঁর সন্তানদের জন্য সম্পদ সংরক্ষণ করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে এমন নির্দেশনাই দিয়েছেন। তিনি বলেন, তোমার পরিবার-পরিজনকে যদি তুমি সম্পদশালী রেখে যাও, অথবা বলেছেন স্বাচ্ছন্দ্যে রেখে যাও, তবে তা তাদের মানুষের কাছে হাত পাতা অবস্থায় রেখে যাওয়ার তুলনায় ভালো। (মুসলিম, হাদিস : ৪১০৭)২. মা-বাবার নেক আমলও সম্পদ : আলোচ্য আয়াতের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, মা-বাবার নেক আমলও সন্তানের জন্য সম্পদস্বরূপ, বরং তা অন্যান্য সম্পদের জন্য নিরাপত্তা। মা-বাবা যদি নেককার হন এবং তারা সামান্য সম্পদ রেখে যান, তবে আল্লাহ এর মাধ্যমে সন্তানদের উপকৃত হওয়ার সুযোগ দেবেন। তাদের নেক আমল, দোয়া ও চোখের পানির বদৌলতে সম্পদগুলো সন্তানদের জন্য রক্ষা করবেন; বরং আল্লাহ তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।অন্যদিকে মা-বাবার স্বেচ্চাচারী জীবন, তাদের হারাম উপার্জন সন্তানের ভবিষ্যেক অভিশপ্ত করে তোলে। সমাজে এমন বহু পরিবার দেখা যায় যারা এক প্রজন্ম আগে ধনী ছিল, কিন্তু এক প্রজন্ম পরেই চরম দারিদ্র্যের শিকার হয়েছে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral Dhaka Tribune,"বিয়ের সময় নাম পরিবর্তন করেছিলেন শাহরুখ-গৌরি ",অন্যান্য,"শাহরুখ খান-গৌরি জুটিকে বলা হয় বলিউডের অন্যতম সফল এবং আদর্শ জুটি। সময়ের পরিক্রমায় যেখানে অনেক সম্পর্কই ঠুনকো হয়ে যায়, সেখানে শাহরুখ-গৌরি আজও একে অপরের হাতে হাত রেখে আছেন। তাই বিনোদন জগতে ভালোবাসার অনন্য নজির খুঁজলে এ জুটির নাম থাকবে তালিকার শীর্ষেই। শাহরুখ খান যখন একজন সাধারণ যুবক হয়ে বলিউডে পায়ের নিচে মাটি খুঁজছেন, তখন তার হাত ধরেছিলেন গৌরি। এরপর কঠোর পরিশ্রম এবং নিজ অভিনয়গুণে শাহরুখ হয়েছেন বলিউডের খ্যাতনামা সুপারস্টার। কিন্তু গৌরির প্রতি ভালোবাসায় আজও কোনো কমতি নেই বলিউড বাদশাহর। তাই এখনও তাদের বিবাহিত জীবন অনেকের কাছেই অনুকরণীয় নজির। তিন দশকেরও বেশি সময় আগে শাহরুখ ও গৌরি পরস্পরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তবে সেই বিয়ের সময়ের তারা দুজনই পরস্পরের ধর্ম অনুযায়ী নাম পরিবর্তন করেছিলেন। এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। শাহরুখ খান ও গৌরি/সংগৃহীত গৌরিকে বিয়ে করার সময় শাহরুখ নিজের নাম পাল্টে রেখেছিলেন “জিতেন্দ্র কুমার তুলি”। মূলত দুই কিংবদন্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবেই এ নাম বেছে নিনিয়েছিলেন বলিউড বাদশাহ। তাছাড়া জিতেন্দ্র কুমার তুলি নামটি রাখার পেছনেও দুটি কারণ আছে। এক. শাহরুখের দাদির মনে হতো, বলিউড অভিনেতা জিতেন্দ্র কুমারের সঙ্গে তার নাতির চেহারার মিল রয়েছে। দুই. বলিউডের আরেক খ্যাতিমান অভিনেতা রাজেন্দ্র কুমারের প্রকৃত ডাকনাম ছিল তুলি। শাহরুখের পাশাপাশি গৌরি নিজেও বিয়ের সময়ে নাম পরিবর্তন করেছিলেন। কিং খান যেখানে বিয়ের জন্য হিন্দু নাম বেছে নিয়েছিলেন, সেখানে গৌরি বেছে নিয়েছিলেন মুসলিম নাম। বিয়ের সময় নিজের নাম হিসেবে শাহরুখপত্নী বেছে নিয়েছিলেন “আয়েশা”। নাম নিয়ে অবশ্য শাহরুখ-গৌরির বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা এখানেই প্রথম ছিল না। নিজের পরিবারের সঙ্গে প্রথমবারের মতো শাহরুখের আলাপ করাতে গিয়ে তাকে “অভিনব” হিসেবে পরিচিত করিয়েছিলেন গৌরি। গৌরির মনে হয়েছিল, হিন্দু হিসেবে তার পরিবারের কাছে শাহরুখের অবস্থান ইতিবাচক করবে। অনেকেই হয়তো জানেন না, আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে কোর্ট ম্যারেজ সেরে ফেলেছিলেন শাহরুখ-গৌরি। তবে এ বিষয়েও এ জুটির একটি মজার গল্প আছে। বিয়ের সময়ে শাহরুখের বয়স ছিল ২৬। অন্যদিকে, গৌরি ছিলেন ২১ বছর বয়সী তরুণী। একে তো মুসলমান, তার ওপর তখন সবেমাত্র বলিউডে নিজের পায়ের তলায় মাটি খুঁজছেন শাহরুখ। তাই শাহরুখের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে গৌরির অভিভাবকের ছিল ঘোর আপত্তি। ভালোবাসার সম্পর্কের শুরুর দিনগুলোয় শাহরুখ খান ও গৌরি/সংগৃহীত শুধু তাই না, শাহরুখকে বিয়ে করার সিদ্ধান্তে গৌরি অটল থাকায় একপর্যায়ে গৌরির মা অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলেছিলেন। তবে সৌভাগ্যবশত তিনি বেঁচে যান। এরপর মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে শাহরুখ-গৌরি দুজনই জানান, তারা ইতোমধ্যে বিয়ে করে ফেলেছেন। যদিও তখনো মাত্রই তারা কোর্ট ম্যারেজের জন্য নিবন্ধন করলেও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। তবে যাই হোক, নিজের মেয়ের প্রতি শাহরুখের একাগ্র ভালোবাসা দেখে গৌরির অভিভাবক বিয়েতে রাজি হন। শাহরুখ যখন দিল্লিতে থাকতেন, তখনই গৌরির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১৯৮৪ সালে এক বন্ধুর পার্টিতে তাদের প্রথম দেখা হয়। তখন শাহরুখের বয়স ১৮ আর গৌরীর ১৪ বছর। প্রথম পরিচয়ের পর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে তা তুমুল প্রেমে গড়াতে সময় নেয়নি। তবে প্রেমিক হিসেবে শাহরুখ একটু বেশিই অধিকার খাটাতে চাইতেন। বিষয়টি আবার গৌরির অপছন্দ ছিল বলে তিনি শাহরুখের সঙ্গের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন এবং একসময় দিল্লি ছেড়ে মুম্বাইয়ে চলে আসেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা শাহরুখও হাল ছাড়ার পাত্র নন। তিনিও মুম্বাইয়ে চলে আসেন। শাহরুখ খান ও গৌরির সেকাল-একাল/সংগৃহীত যদিও গৌরি কোথায় থাকেন, তা শাহরুখের জানা ছিল না। তবে সমুদ্র যে গৌরির ভীষণ প্রিয়, সেটা ঠিকই শাহরুখ জানতেন। তাই মুম্বাইয়ে সমুদ্র সৈকতগুলোতে তিনি গৌরিকে খুঁজতে থাকেন। কয়েকটি সৈকতে খোঁজার পর আচমকা গৌরীর দেখা পান শাহরুখ। শাহরুখকে চোখের সামনে দেখে গৌরিরও তখন চক্ষু চড়কগাছ। এরপর আবারও তাদের সম্পর্কের সূচনা হয়। সম্পর্কে বাধা এলেও সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর বিয়ে করেন শাহরুখ ও গৌরী। বর্তমানে তাদের সংসার আলো করে আছে দুই ছেলে আরিয়ান, আব্রাহাম ও এক কন্যা সুহানা। শাহরুখ খানকে সর্বশেষ বড়পর্দায় দেখা গিয়েছিল গত ২৫ জানুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত “পাঠান” সিনেমায়। অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রটি ভারতের পঞ্চম সিনেমা হিসেবে বিশ্বব্যাপী এক হাজার কোটি রুপির বেশি আয় করে। সামনে শাহরুখকে দেখা যাবে “জাওয়ান” সিনেমায়। এতে কিং খানের সঙ্গে আছেন নয়নতারা, বিজয় সেথুপতি, সানিয়া মালহোত্রা, প্রিয়ামনি, সুনীল গ্রোভারসহ অনেকে। অতিথি চরিত্রে হাজির হবেন দীপিকা পাড়ুকোন ও থালাপতি বিজয়ের মতো তারকা। ছবিটি আগামী ৭ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral প্রথম আলো,অভয়নগরের শিবমন্দির,হিন্দু ধর্ম,রাজা নীলকণ্ঠ রায় ১৭ শতকের মাঝামাঝি ৬০ একর জায়গার ওপর ১১টি শিবমন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরগুলো যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত। পৌরাণিক ইতিহাসে এ মন্দির প্রতিষ্ঠার গল্পটা বেশ হৃদয়বিদারক। রাজা নীলকণ্ঠের কন্যা অভয়ার স্বামী নীলাম্বর দুরারোগ্য ব্যাধিতে মারা গেলে পূজা–অর্চনার জন্য এ শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়।,ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral বাংলাদেশ প্রতিদিন,মাহে রমজানে ওমরাহ হজতুল্য,ইসলাম ধর্ম,"পৃথিবীর প্রথম নির্মিত ঘর ও প্রথম মসজিদ হলো মক্কায় স্থাপিত কাবাঘর। সেটিই মুসলমানের কিবলা ও হজ-ওমরাহর মূল কেন্দ্র। হজ ও ওমরায় রয়েছে ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারের অসংখ্য স্মৃতি। ইবরাহিম (আ.) স্ত্রী হাজেরা ও শিশু ইসমাঈলকে আল্লাহর হুকুমে মক্কায় রেখে যান। ইসমাঈল (আ.) পিতার কাজে সহযোগিতা করার মতো বয়সে পদার্পণ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি কাবাঘর পুনর্নির্মাণের নির্দেশ আসে। তিনি পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে কাবাঘর পুনর্নির্মাণ করেন। ইবরাহিম (আ.)-এর কাবা নির্মাণকালীন পদচিহ্নবিশিষ্ট পাথর আজও সেখানে বিদ্যমান, যা মাকামে ইবরাহিম নামে পরিচিত। হাজেরা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে জনশূন্য এই প্রান্তরে অবস্থানকালে কঠিন পিপাসায় পানির খোঁজে সাফা-মারওয়া পাহাড়ে বারবার দৌড়ান। সাতবার ছোটাছুটি করেও পানির সন্ধান না পেয়ে শিশুর কাছে ফিরে আসেন। তখনই জিবরাইল (আ.) শুষ্ক মরুভূমিতে পানির একটি ঝরনাধারা বইয়ে দেন। বর্তমানে এই ধারাই জমজম কূপ। সামর্থ্যবানদের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ এবং জীবনে একবার ওমরাহ পালন করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তুলনামূলকভাবে ওমরাহ একটি সহজ ইবাদত। তাই সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে ওমরাহ করা উচিত। রমজান মাস ওমরা পালনের সেরা সময়। ওমরাহর গুরুত্ব ও ফজিলত ওমরাহর মর্যাদা অনেক। এক ওমরাহ থেকে অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সব পাপের কাফফারা হয়ে যায়। ওমরাহ দরিদ্রতা ও গুনাহকে মুছে ফেলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সব কিছুর কাফফারা। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত। (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩) ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা বারবার হজ ও ওমরাহ কোরো। কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহকে সেভাবে মুছে ফেলে, যেভাবে কর্মকারের হাওয়া দেওয়ার যন্ত্র লোহার ময়লাকে দূর করে থাকে। (নাসায়ি, হাদিস : ২৮৮৭) রমজানের ওমরাহ নবীজির সঙ্গে হজের মতো রমজানে ওমরাহ আদায় করা হজের সমান। এক বর্ণনা মতে, রমজানের ওমরাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ আদায়ের সমতুল্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) এক আনসারি নারীকে বললেন, আমাদের সঙ্গে হজ করতে তোমার বাধা কিসের? মহিলা বলল, আমাদের একটি পানি বহনকারী উট ছিল। কিন্তু তাতে অমুকের পিতা ও তার পুত্র (মহিলার স্বামী ও ছেলে) আরোহণ করে চলে গেছে। আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট, যা দ্বারা আমরা পানি বহন করে থাকি। নবী (সা.) বললেন, আচ্ছা! রমজান এলে তখন ওমরাহ করে নিও। কেননা রমজানের একটি ওমরাহ একটি হজ। (বুখারি : ১৭৮২) অন্য বর্ণনায় রাসুল (সা.) বলেছেন, রমজান মাসে একটি ওমরাহ আদায় একটি হজ আদায়ের সমতুল্য অথবা আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমতুল্য। (বুখারি, হাদিস : ১৭৬৪) রমজান মাসে ওমরাহর খরচ ও কষ্ট দুটিই বেড়ে যায়। তার পরও মহৎ ফজিলত পেতে এ মাসেই ওমরাহ পালনের নিয়ত ও চেষ্টা থাকা চাই। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দিন। আমিন।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive প্রথম আলো,"বেহালা শিল্পীকে আল্লাহর দেওয়া পুরস্কার ",ইসলাম ধর্ম,"খলিফা হজরত উমর (রা.)–এর সময়ে আরবে একজন বেহালাবাদক ছিলেন। তাঁর সুন্দর বেহালা যে কারও হৃদয় ছুঁয়ে যেত। এটাই ছিল তাঁর জীবিকা। বেহালাবাদক হিসেবে তিনি সুনামও অর্জন করেছিলেন। এভাবেই তাঁর জীবনের প্রায় ৭০ বছর কেটে গেল। জীবনের শেষ দিকে এসে বেহালাবাদক উপলব্ধি করলেন, তিনি একেবারে নিঃস্ব ও দীনহীন। সামান্য একটি রুটির টাকাও আয় করতে পারতেন না। বাঁচার আর কোনো উপায় না দেখে তিনি ভিক্ষা করতে শুরু করলেন। একদিন আল্লাহর কাছে বলতে লাগলেন, ‘হে আল্লাহ, আমি দীর্ঘ ৭০ বছর হায়াত পেয়েছি। আমার এ বয়সে অনেক গুনাহ ও নাফরমানি করেছি। এর বিনিময়ে আপনি এক মুহূর্তের জন্যও আমার প্রতি আপনার অনুগ্রহ উঠিয়ে নেননি। আজ আমি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আপনার মেহমান হয়ে আছি। এখন থেকে মানুষের দরজায় দরজায় বেহালা না বাজিয়ে শুধু আপনার জন্যই বাজাব। আপনি চাইলে আমার জন্য যেকোনো কম দামি জিনিসকেই মূল্যবান করে দিতে পারেন।’ এ কথা বলে তিনি একটি কবরস্থানের পাশ গিয়ে বেহালা বাজাতে শুরু করলেন। অনেকক্ষণ ধরে বেহালা বাজাতে বাজাতে লোকটি মাথার পাশে বেহালাটি রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুমের মধ্য দেখতে পেলেন যে বড় এক মাঠে তিনি পাখির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি মনে মনে ভাবতে লাগলেন, মহান আল্লাহ যদি আমাকে এখানে আজীবনের জন্য রেখে দিতেন, তাহলে কতই–না সুন্দর হতো। সুন্দর এ জগতের বাগানে ডানা ছাড়া উড়তে পারতাম, পা ছাড়া চলাফেরা এবং কোনো কিছু না চিবিয়েই খেতে পারতাম। এখানে পার্থিব চিন্তামুক্ত থেকে মহান আল্লাহর ইবাদত করতে পারতাম। চোখ বুজে এ জগতের সব সুন্দর দৃশ্য অবলোকন করতে পারতাম। হজরত উমর (রা.) ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে দেখতে পেলেন, কে যেন তাঁকে নির্দেশ দিচ্ছে, হে উমর, ওই কবরস্থানের কাছে গিয়ে দেখো একজন বেহালাবাদক মাথার নিচে বেহালা রেখে ঘুমিয়ে আছে। তুমি তার কাছে গিয়ে তাকে কিছু স্বর্ণমুদ্রা দান করে আসো। অসময়ে এ স্বপ্ন দেখে হজরত উমর (রা.) ৭০০ স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে কবরস্থানে ঘুমন্ত লোকটির কাছে গেলেন। লোকটিকে না জাগিয়ে তার জাগার অপেক্ষায় পাশে বসে রইলেন। লোকটি জেগে উঠেই পাশে হজরত উমর (রা.)–কে দেখে ভয় পেয়ে গেলেন। মনে মনে ভাবলেন, এত দিন গুনাহ করার ফলে খলিফা তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য তার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন। খলিফা হজরত উমর (রা.) তাকে নির্ভয় দিয়ে বললেন, আপনি আজ সারা দিন বেহালা বাজানোর কারণে এই ৭০০ স্বর্ণমুদ্রা অর্জন করেছেন। এগুলো আপনি গ্রহণ করুন। এগুলো শেষ হলে আমার কাছ থেকে আরও মুদ্রা নিয়ে আসবেন। বেহালাবাদক খুশি হয়ে আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে লাগলেন। সব গুনাহ থেকে তওবা করে আল্লাহর একজন অনুগত বান্দা হিসেবে জীবন যাপন করতে লাগলেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,ইসলাম কি কোনো ধর্ম নাকি জীবনবিধান?,ইসলাম ধর্ম,"বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম ইসলাম। ইসলামের বর্তমান অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২০০ কোটি, যা বর্তমান বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ। (‘হোয়াই ইসলাম ইজ দ্য ওয়ার্ল্ড ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং রিলিজিয়ন’, পিউ রিসার্চ সেন্টার, মাইকেল লিপিকা অ্যান্ড কনরড হাসিকেট)ইসলাম মূলত কী? এটা কি কোনো ধর্ম, নাকি জীবনবিধান? নাকি কোনো দর্শন বা সংস্কৃতি? ইসলাম আরবি শব্দ। মূল ধাতু ‘সিলমুন’ থেকে শব্দটি উৎপন্ন হয়েছে। কোনো কোনো অভিধানকারের মতে, ইসলামের শাব্দিক অর্থ ‘শান্তি’ ও ‘আত্মসমর্পণ’। কোনো কোনো অভিধানকার বলেছেন, ইসলাম শব্দের বিভিন্ন অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে আছে ‘অনুগত হওয়া’ বা ‘আনুগত্য করা’, ‘মেনে নেওয়া’, ‘বিনম্র হওয়া’, ‘নিরাপত্তা’ এবং ‘সমর্পণ’ ইত্যাদি।শরিয়তের পরিভাষায় ইসলাম হলো, ‘তাওহিদের স্বীকৃতি প্রদান করার মাধ্যমে আল্লাহ–তাআলার কাছে আত্মসমর্পণ করা এবং একমাত্র তাঁর আনুগত্য গ্রহণ করা। বিনাদ্বিধায় তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা এবং তাঁর প্রদত্ত জীবনবিধান অনুসারে জীবন যাপন করা।’ (শারহুল আকাইদিন নাসাফিয়্যা, পৃষ্ঠা ৯১) আর ইসলামি জীবনবিধান মোতাবেক যিনি বা যাঁরা জীবন যাপন করেন, তিনি বা তাঁরা হলেন ‘মুসলিম’। (দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পৃষ্ঠা ৩৩) আভিধানিকভাবে ইমানের সম্পর্ক বিশ্বাসের দিকে বা সঙ্গে আর ইসলামের সম্পর্ক কর্মের দিকে বা সঙ্গে। (কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা, খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ২৭)আল্লাহ–তাআলার পক্ষ থেকে মুহাম্মদ (সা.) অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে আদর্শ ও বিধিবিধান নিয়ে এসেছেন, তা মনে-প্রাণে বিশ্বাস ও অনুসরণ করার নাম ইসলাম| আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘বলুন! আমার নামাজ, আমার ইবাদত, আমার জীবন ও মরণ জগৎসমূহের মালিকের উদ্দেশ্যে। তাঁর কোনো শরিক নেই। আর আমি এ জন্যই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম মুসলিম।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৬২-১৬৩)ইসলামের সংজ্ঞা বা পরিচয়ের বিষয়টি সবচেয়ে সহজভাবে বিখ্যাত হাদিসে জিব্রাইল থেকে পাওয়া যায়। হজরত জিব্রাইল (আ.) একবার মানুষের বেশে উপস্থিত হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, হে মুহাম্মদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন! রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ–তাআলা ছাড়া সত্য কোনো মাবুদ বা ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল—এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা, নামাজ কায়েম করা, জাকাত আদায় করা, রমজান মানে রোজা রাখা এবং সামর্থ্যবানের জন্য হজ পালন করা, এটাই হলো ইসলাম।’ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তর শুনে জিব্রাইল (আ.) বললেন, ‘আপনি সত্য বলেছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮)আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণনায় আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পাঁচটি স্তম্ভের ওপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত। স্তম্ভগুলো হলো—১. আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ বা ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. জাকাত আদায় করা। ৪. রমজান মাসে রোজা রাখা এবং ৫. সামর্থ্য হলে হজ পালন করা। (মুসলিম, হাদিস: ১৬)ইসলাম আল্লাহ–তাআলার পক্ষ থেকে নাজিল হওয়া একমাত্র মনোনীত ও চূড়ান্ত বা পরিপূর্ণ ধর্ম। ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম কেউ গ্রহণ করতে চাইলে তা কবুল বা গ্রহণযোগ্য হবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ–তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘ইসলাম আল্লাহ–তাআলা কর্তৃক মনোনীত একমাত্র দ্বীন বা ধর্ম।’ ",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাওয়া মায়ের নবজাতক শিশুর কানে আজান দিয়ে নাম রাখলেন এরদোয়ান,ইসলাম ধর্ম,"ভয়াবহ ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাওয়া এক নারীর নবজাতক শিশুর কানে আজান দিয়ে নাম রেখেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে ইস্তাম্বুলের বাসাকসেহির ক্যাম ও সাকুরা সিটি হাসপাতালে যান তিনি। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে হতাহতদের দেখতে গেলে ওই শিশুর মা শিশুর নাম রাখার আবদার করেন। এ সময় তিনি নবজাতক শিশুর কানে আজান দিয়ে তার নাম রাখেন আশেয়া বেতুল। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় দুটি প্রচণ্ড ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কেই নিহত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪১৮ জন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নিহত হয়েছে পাঁচ হাজার ৮০০ জনের বেশি। তুরস্কের আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলের পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ৭ দশমিক ৭ ও ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটির ১০টি প্রদেশে ভয়াবহ আঘাত করে। আক্রান্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে হাতায়, গাজিয়ানটেপ, আদানা, আদিয়ামান, দিয়ারবাকির, কাহরামানমারাস, কিলিস, মালটিয়া, ওসমানিয়ে ও সানলিউরফা। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive প্রথম আলো,"আল্লাহকে নিয়ে আলাপ ",ইসলাম ধর্ম,"‘সৃষ্টিকর্তা কি আসলেই আছেন?’ বিশেষ করে যাঁরা তরুণ ও ইসলাম নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন, তাঁদের অনেকের মনে এ ধরনের প্রশ্ন আসাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এখন প্রশ্ন হলো, কেউ যদি এ ধরনের চিন্তা মাথায় আনে, তাহলে সে গুনাহগার হবে? মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) একবার এক সভায় বসা ছিলেন। সেখানে তাঁর কিছু সাহাবি আল্লাহর মাহাত্ম্য, আল্লাহর এই সুন্দর সৃষ্টির কথা বর্ণনা করছিলেন। হঠাৎ একজন বলে উঠলেন, ‘কিন্তু আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?’ হাদিসটি সহিহ মুসলিমে আছে। আরও একটি হাদিসে একই ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন আল্লাহকে নিয়ে চিন্তা করে, তখন শয়তান এসে মানুষের মাথায় প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন কিন্তু আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?’ দুটি হাদিসের ক্ষেত্রেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের উপদেশ দিয়েছেন—এই ধরনের কোনো চিন্তা এলে বলবে ‘আমানতু বিল্লাহ’, অর্থাৎ আমি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করি। এটা বলার মাধ্যমে তুমি শয়তান পরাজিত করবে এবং মূল বিশ্বাসে ফিরে আসবে। কিন্তু কারও মনে যদি এ ধরনের চিন্তা বারবার আসতে থাকে, তাহলে কি সে গুনাহগার হবে? একদমই না। হজরত আবদুলাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) একবার কোনো এক বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, ‘পুরো কোরআনের ভেতর কোন আয়াতটি মানুষের জন্য প্রশান্তিদায়ক বলে তুমি মনে করো?’ আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) তখন সুরা জুমারের ৩৯ নম্বর আয়াত পাঠ করে শোনালেন, ‘বলো, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) মাঝেমধ্যে খুবই হতাশায় ভুগতেন। তখন এ আয়াতটি তাঁকে প্রশান্তি দিত। এবার আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আপনার পছন্দের আয়াত কোনটি?’ তখন ইবনে আব্বাস (রা.) তেলাওয়াত করলেন, যখন ইবরাহিম বলেছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি মৃতকে কীভাবে জীবিত করবেন, তা আমাকে দেখান।’ আল্লাহ বললেন, ‘তুমি কি বিশ্বাস করো না?’ ইবরাহিম বলল, ‘নিশ্চয়ই, তবে যাতে আমার অন্তর স্বস্তি লাভ করে (এ জন্য তা দেখতে চাই)।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬০) এর আগে ইবরাহিম (আ.)–এর সঙ্গে বাদশা নমরুদের সাক্ষাৎ হয়েছিল। নমরুদকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার স্রষ্টা হলেন আল্লাহ, যিনি জীবন দিতে পারেন আবার নিতেও পারেন।’ নমরুদ বলে উঠল, ‘এটা তো আমিও পারি।’ এরপর সে জেল থেকে একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্ত করে দিল এবং আরেকজন নিরপরাধ কয়েদিকে মৃত্যুদণ্ড দিল। ইবরাহিম (আ.) বুঝলেন নমরুদ আসলে মাথামোটা। এরপর তিনি বললেন, ‘আমার স্রষ্টা আল্লাহ, তিনি সূর্যকে পূর্ব থেকে উদিত করে পশ্চিম দিক থেকে অস্ত নেন।’ এ কথা শুনে নমরুদ বোকা বনে গিয়েছিল। অর্থাৎ ইবরাহিম (আ.) পরিপূর্ণ ইমান নিয়ে কথা বলেছিলেন। কিন্তু এরপরও তিনি অন্তরের প্রশান্তির জন্য আল্লাহর কাছে অলৌকিকত্ব দেখতে চাইলেন। আল্লাহ তাঁর বান্দার এই আকুতি রেখেছিলেন। আল্লাহ তাআলা ইবরাহিম (আ.)–কে একটি পাখি টুকরা টুকরা করে কেটে তা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রেখে আসতে বললেন। একটু পর সেই টুকরাগুলো জোড়া লেগে ইবরাহিম (আ.)–এর চোখের সামনে পাখিটি জীবিত হয়ে উড়ে গেল। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) এই আয়াতটির কথাই বলছিলেন। ইবরাহিম (আ.) একজন নবী হয়েও অন্তরের প্রশান্তি কামনা করছিলেন, যা প্রমাণ করে আমাদের অন্তরে এ ধরনের প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক। তার জন্য আল্লাহ আমাদের শাস্তি দেবেন না। যেমন এক হাদিসে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের ওই কথাগুলো ক্ষমা করে দেবেন, যা সে নিজের সঙ্গে বলেছে এবং যতক্ষণ না সে এই কথাগুলো কাজে রূপান্তর করে।’",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,কোরআন-হাদিসে মধু সম্পর্কে যা বলা হয়েছে,ইসলাম ধর্ম,"মহান আল্লাহ প্রদত্ত এক মহা নিয়ামতের নাম মধু। আমাদের নবী (সা.) মুধ অত্যন্ত পছন্দ করতেন। এটি একদিকে যেমন পুষ্টিকর খাদ্য, তেমনি রোগ নিরাময়েও একে মহৌষধ হিসেবে গণ্য করা হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তিবর্ধনে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।জান্নাতে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের যেসব নিয়ামত দেবেন, তার অন্যতম হলো মধু। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুত্তাকিদের যে জান্নাতের ওয়াদা দেওয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হলো, তাতে আছে নির্মল পানির নহর, দুধের ঝরনা, যার স্বাদ পরিবর্তিত হয়নি, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর এবং আছে পরিশোধিত মধুর ঝরনা।’ (সুরা : মুহাম্মদ, আয়াত : ১৫) দুনিয়ায়ও মহান আল্লাহ এই মধুকে মানুষের জন্য উপকারী করেছেন। এতে রেখেছেন বহু রোগের নিরাময়।পবিত্র কোরআনে মধুর ঔষধি গুণ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমার রব মৌমাছির প্রতি ইলহাম করেছেন যে পাহাড়ে, বৃক্ষে আর উঁচু চালে বাসা তৈরি করো। অতঃপর তুমি প্রত্যেক ফল থেকে আহার করো এবং তুমি তোমার রবের সহজ পথে চলো। তার পেট থেকে এমন পানীয় বের হয়, যার রং ভিন্ন ভিন্ন, যাতে রয়েছে মানুষের জন্য রোগ নিরাময়। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন আছে ওই জাতির জন্য, যারা চিন্তা করে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৬৮-৬৯) মহানবী (সা.) তাঁর সাহাবিদের মধুর মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর কাছে একজন লোক এসে বলল, আমার ভাইয়ের পাতলা পায়খানা (উদরাময়) হচ্ছে। তিনি বলেন, তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু পান করায়, তারপর এসে বলে, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমি তাকে মধু পান করিয়েছি। কিন্তু তাতে পেটের পীড়া আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তাকে মধু পান করাও। বর্ণনাকারী বলেন, সে তাকে মধু পান করানোর পর এসে বলে, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমি তাকে তা পান করিয়েছি। কিন্তু এর ফলে তাঁর পেটের পীড়া আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা সত্য বলেছেন (মধুতে নিরাময় আছে), কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেটই মিথ্যা বলছে। আবার তাকে মধু পান করাও। অতএব, লোকটি তাকে মধু পান করায় এবং সে সুস্থ হয়ে ওঠে। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৮২)বর্তমান যুগেও মধু নিয়ে বহু গবেষণা আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মহান আল্লাহ মধুতে বহু রোগের নিরাময় রেখেছেন। বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটে মধুর প্রায় ৩০টি উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে হৃদরোগ প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি, রক্ত পরিশোধন ইত্যাদি অন্যতম। আমাদের উচিত, কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা পালনার্থে সাধ্যমতো খাঁটি মধু সেবন করা।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral নয়াদিগন্ত,মধু পূর্ণিমা আজ,বৌদ্ধ ধর্ম,"আজ শুভ মধু পূর্ণিমা। বৌদ্ধ বিশ্বের ইতিহাসে এটি অন্যতম এক শুভ তিথি। বিশেষ করে বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমায় এটি উদযাপিত হয়। বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমা তিথি ভাদ্র মাসে এ উৎসব উদযাপন করা হয়। তাই এর অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা। তবে বিশ্বে এটি ‘মধু পূর্ণিমা’ নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মধু পূর্ণিমার শুভ এ দিনটি নানা উৎসব, আনন্দ ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন। নানা শ্রেণী-পেশা ও বয়সের মানুষ এ দিন বুদ্ধ ও ভিক্ষুসংঘকে মধু দান করার জন্য উৎসবে মেতে ওঠেন। বিহারে দেখা যায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মধুদানের এক আনন্দঘন পরিবেশ। বিহারে সন্ধ্যায় বৌদ্ধকীর্তন ও পুঁথিপাঠ করা হয় এবং বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো বুদ্ধপূজা, প্রদীপ, ধূপপূজা, ভিক্ষুকে আহার্য দান, ধর্মীয় সভা ও বুদ্ধ-কীর্তন পরিবেশিত হবে। শুক্রবার ভোর ৫টা ১১ মিনিটে পূর্ণিমা শুরু এবং শনিবার ভোর ৪টা ৫৯ মিনিটে শেষ হবে।",ধর্মীয় উৎসব,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,ঝগড়া-বিবাদে জড়িত ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ঘৃণিত,ইসলাম ধর্ম,"মন্দ পদ্ধতিতে বিবাদ ও বিতর্কের মাধ্যমে প্রাচীন বন্ধুত্ব ও সুদৃঢ় বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়। কখনো বিপক্ষ দলের ওপর চড়াও ও আগ্রাসী হওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়। এর পথ ধরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। এতে জীবন, সম্পদ ও সম্মানের ব্যাপক হানি ঘটে। বিবাদ ও বিতর্কের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো : কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া আল্লাহ তাআলা শবেকদরের মতো মহান রাতের সুনির্দিষ্ট সময়ের বিষয়টি শুধু বিতর্ক বা বিবাদের কারণে তুলে নেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৯) এতে বোঝা যায়, বিবাদ কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে। শয়তান তথা তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেয় বিবাদের সময় ব্যক্তি তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করে। হোক সেটা বৈধ বা অবৈধ উপায়। কিন্তু সেই সুযোগে শয়তান যেকোনো ব্যক্তিকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দেয়। তৃতীয় পক্ষ এর থেকে ফায়দা হাসিল করে। সে বিষয়ে মুসলিম ইবনু ইয়াসার (রহ.) বলতেন, ‘তোমরা অবশ্যই ঝগড়া-বিবাদ থেকে সাবধান থাকবে। কেননা এটি একজন আলেমের অজ্ঞতার মুহূর্ত। আর এই মুহূর্তে শয়তান এর দ্বারা তার ত্রুটি বা বিভ্রান্তি কামনা করে।’ (দারেমি, হাদিস : ৪১৯) বিবাদে জড়িত ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ঘৃণিত ঝগড়া বা বিতর্ককারী আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট সেই লোক সবচেয়ে ঘৃণিত, যে অতি ঝগড়াটে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৭) তদন্ত ছাড়া বিতর্ক না করা তদন্ত করে নিশ্চিত না হয়ে শুধু কোনো কথা নিয়ে মানুষের সঙ্গে বিতর্ক করা উচিত নয়। কারণ শোনা কথা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে। এ জন্য শোনা কথা যাচাই না করে প্রচার করলে পাপের অংশীদার হতে হবে। এহেন কাজে রাসুল (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, ‘একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শোনে তা-ই প্রচার করে বেড়ায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫) উত্তম পন্থায় বিবাদ-বিতর্ক অগত্যা কারো সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে গেলে উত্তম পন্থায় তার জবাব দিতে হবে, যেন এতে কোনো ক্ষতি না হয়, মানসিকভাবে কেউ যেন আঘাত না পায়, কাউকে খাটো করা না হয় বা তাদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ প্রকাশ না পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান করো প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালোভাবেই জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালোভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১২৫)",ধর্মীয় শিক্ষা,Negative ইত্তেফাক,প্রতারকের খপ্পরে পড়ে হজে যেতে পারলেন না ৩০০ জন,ইসলাম ধর্ম,"ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজে যাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ৩০০-এর মতো হজযাত্রী। যারা প্রতারণা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সঙ্গে হজযাত্রীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ট্রাভেলস কোম্পানিসহ অন্য যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হজযাত্রীদের হয়ে কাজ করবে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বারবার সতর্ক করার পরেও প্রায় ৩০০ (এখন পর্যন্ত খবর অনুযায়ী) হজযাত্রীকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে কিছু অসাধু চক্র এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনিবন্ধিত বেনামি এজেন্সি (আল হেলাল এজেন্সি) এবং নিবন্ধিত এজেন্সি মারিয়া, আরবি টুরস ইত্যাদি সংস্থা হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন না করেই হজে পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ সব চক্রের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative " আলোকিত বাংলাদেশ","ছেলে শিশুর খৎনা করানো হয় কেন? ",ইসলাম ধর্ম,"ইসলামি সংস্কৃতিতে ছেলে শিশুদের খৎনা বা ত্বকচ্ছেদ দেওয়া হয়। আরবি ভাষায় খিত্না (ختنة) বা খিতান্‌ (ختان) নামে প্রচলিত।খৎনা ইসলামের সকল মাযহাব কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত অনুশাসন হিসাবে গৃহীত হয়েছে। ইসলামি সম্প্রদায়ের (উম্মাহ) অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চিহ্ন হিসাবে খৎনা বিবেচিত হয়। ছেলে শিশুর খৎনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত । মুসলিম সমাজে এটি মুসলমানি বলে পরিচিত। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সময়কাল থেকে এই সুন্নতের প্রচলন হয়। নবীদের মধ্যে তিনিই প্রথম সুন্নতে খৎনা করেন। এজন্য খৎনাকে সুন্নতে ইবরাহিমও বলা হয়। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ৮০ বছর বয়সে খৎনা করেন বলে হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আশি বছরোর্দ্ধ বয়সে খৎনা করেন। (বুখারি, মুসলিম, আল আদাবুল মুফরাদাত, ১২৫৬) ইবরাহিম আলাইহিস সালাম প্রথম বেশি বয়সে খৎনা করলেও বর্তমান সময়ে শৈশবেই শিশুদের খৎনা করানো হয়। বড়দের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ইরেকশনের কারণে রক্তপাত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোনো নির্দিষ্ট বয়স না থাকলেও, বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় তিন বা চার বছর বয়স খৎনার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো- শিশুর শারীরিক উপযুক্ততা ও তার বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পৌঁছার আগেই বা এর মাঝামাঝি সময়ে যেমন, ৭-১০ বছর বা অনুর্ধ্ব ১২ বছরের মধ্যে করে নেওয়া উত্তম। মুসলমানি করালে ফাইমোসিস হয় না; পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া উল্টে শক্ত হয়ে গেলে ওই চামড়াকে আর সামনে ও পেছনের দিকে নড়াচড়া করা যায় না। তখন লিঙ্গের মাথা ফুলে যায়, রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু মুসলমানি করালে এই জটিলতা থেকে রক্ষা মেলে; পেনাইল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা তৈরি করে খৎনা। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষার জন্যও যেকোনো ধর্মের পুরুষরা খৎনা করিয়ে থাকেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"‘তোমাদের জন্য রাসূল (দ:)-এর জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’ ",ইসলাম ধর্ম,"অন্ধকার যুগ। ধর্মহীন জীবন। কোথাও শান্তি নেই।অশান্তির প্লাবনে হাবুডুবু খাচ্ছে। অনেকে কোন ধর্ম মানছে না।ঐতিহাসিক গণ এই সময়কে ‘অ্যাইয়ামে জাহিলি’ যুগ হিসাবে উল্লেখ্য করেছেন। হত্যাশা গ্রস্থ জাতির মুক্তির প্রয়োজন। মুক্তির জন্য প্রয়োজন একজন আর্দশবান মানুষ।মহান আল্লাহ তাআলা আর্দশ মানুষ হিসাবে হযরত রাসুল (দ)কে নির্বাচন করেন। আর্দশ মানুষটির মাঝে অনেক গুনের সমাবেশ রয়েছে।তমধ্যে সর্বত্তোম গুনটি হলো রাহমাতাল্লিল আলামিন। এরশাদ হচ্ছে,‘তোমাদের জন্য রাসুলের (দ) জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আর্দশ’।উন্নত জীবনের জন্য প্রয়োজন উত্তম আর্দশের। হযরত রাসুল (দ)পৃথিবীর বুকে সর্বোত্তম আর্দশ মানুষ। মহান আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সবার জন্য আল্লাহর রাসুল (দ) হিসাবে আর্বির্ভুত হয়েছি’। তিনি নিজেই ঘোষনা দিলেন,মুহাম্মদ (দ) একজন রাসুল।তিনি ইহকাল ও পরকালের কান্ডারী।তাছাড়া রাসুল (দ) বলেন,‘আমাকে সচ্চরিত্রের পুর্ণতা সাধনের নিমিত্তেই প্রেরণ করা হয়েছে’। চারিত্রিক বৈশিষ্টে তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ মহা মানব।আর্দশের দিক দিয়ে জাতি,বর্ণ,ধর্ম,গোত্র,সম্প্রদায়,দেশ, কাল সর্বক্ষেত্রে ছিলেন আর্দশের প্রতীক। আমরা মানুষ,আল্লাহর বান্দা। তার ইবাদত বন্দেগী করি।চাই আল্লাহর ভালোবাসা। তার ভালোবাসা,অনুসরন ও নৈকট লাভের একমাত্র মাধ্যম রাসুল (দ)। বিশ^ নবী (দ)এর আর্দশ অসুরসন ব্যতীত আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করা সম্ভব নয়।ইরশাদ হচ্ছে,‘হে রাসুল আপনি বলে দিন,তোমরা যদি আল্লাহর ভালোবাসা চাও তাহলে আমাকে অসুসরন করো। তবেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবে’। হযরত রাসুল (দ) এর জীবর্নাদশ অনুসরন করা আমাদের জন্য পালনীয় বটে। আমরা ব্যক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিক জীবনে তাঁর আর্দশ মেনে চলি। মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘তোমাদের রাসুল যা নিয়ে এসেছে তা আকঁড়ে ধরো,আর যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থেকো’। আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ দু’টোই পালন করা ফরজ।সে হিসাবে আল কোরআনের আদেশ নিষেধ,ইসলামী শরীয়তের বিধি বিধান যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করছি।বিশ^ নবী (দ) শুধু একজন আর্দশ মহা মানবেই নয়,তিনি একজন আর্দশ শিক্ষক। রাসুল (দ) বলেন, ‘আামাকে প্রেরন করা হয়েছে মানবতার শিক্ষ হিসাবে’।তিনি লেখা পড়া জানতেন না।কিন্তু ছিলেন মহা জ্ঞানের অধিকারী। সারা বিশ^ বাসিকে উত্তম শিক্ষা দিয়েছেন।তার উত্তম শিক্ষা নীতির মাধ্যমে পৃথিবী থেকে অশিক্ষা,কুশিক্ষা,জুলুম,অত্যাচার, কুসংস্কার এবং সামাজিক বৈষম্য, ইত্যাদি দুর করা সম্ভব হয়েছে। হযরত রাসুল (দ) ছিলেন, দয়া ও মায়ার জীবন্ত প্রতীক। প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষমতা ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও চরম শত্রুকে ক্ষমা করে দিতেন। মক্কা বিজয়ের দিনে তিনি ঐতিহাসিক ভাষনে বলেছিলেন,‘হে কুরাইমগণ!তোমরা আমার কাছে কেমন ব্যবহারের আশা করো? তারা বলল,সম্মানিত ভাই ও ভ্রতুস্পুত্রের মতো।তিনি বলেন তোমরা চলে যাও।আজ তোমরা মুক্ত’। তিনি প্রতিশোধে বিশ^াসি ছিলেন না। তিনি মানুষের বিপদ আপদ বুঝেন। নিজের অপুর্ব করুনা দ্বারা তা সমাধান করার চেষ্টা করেন। ভুলে জান শত্রু ভেদাভেদ,হিংসা বিদ্বেষ। সারা বিশ^ ছিল অন্ধকার।অন্ধকার যুগকে দ্বীনের আলোয় আলোকিত করে সোনালি যুগে পরিনত করেন। যার কারনে,নবুয়ত লাভের ২৩ বছরে সভ্যতা ও সংস্কৃতির আমুল পরিবর্তন সাধিত করেন। প্রতিষ্টা করেন, ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি । এমনি ভাবে,বিশ^ নবী(দ) এর পরশ পেয়ে এক দল উত্তম আর্দশ ও চরিত্র বান সৎ মানুষ তৈরী হলেন। যারা ছিল,একমাত্র আল্লাহর খাটি বান্দা ও মোমেন। তারা অশান্ত ও অভিশপ্ত পৃথিবীতে ন্যায়,নিরাপত্তা,শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাসুল (দ) সাহায্য করেন। তার ছোয়ায় চারি দিকে ইসলামের আলো ছড়িয়ে পরে। পরিবর্তন আসে ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্রে জীবনে।এরশাদ হচ্ছে‘মুহাম্মদ হলেন, আল্লাহর রাসুল। আর তার সঙ্গে যারা রয়েছেন তারা কাফেরদের প্রতি অত্যান্ত কঠোর,কিন্ত নিজেরা পরস্পর খুবেই রহমশীল’। তার ছোয়ায় এসে সাহাবীরা পৃথিবীর সর্ব শ্রেষ্ঠ মানুষের পরিনত হলেন। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন। এরশাদ হচ্ছে,‘আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর পাকের ওপর সন্তুষ্ট’। হযরত রাসুল (দ) সারা বিশ^বাসির কাছে রহমতের প্রতীক।করুনার সাগর। মহান আল্লাহ তার প্রিয় হাবিবকে সর্বোত্তম গুনের অধিকারী করে সৃষ্টি করেছেন।পবিত্র কোরআনে এরশাদ হচ্ছে,‘হে নবী! আমি আপনাকে সমগ্র বিশ^বাসির জন্য করুনার প্রতীক হিসাবে প্রেরণ করেছি’। তিনি হলেন,আল্লাহর পক্ষ থেকে করুনার প্রতীক। তার করুনা ও কথার পরশে সবাই মুগ্ধ। যেন পরশ পাথর। আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘হে রাসুল আপনি সর্বোন্নত চারিত্রিক মাধুয্যের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন’। তিনি নৈতিক চরিত্র ও উত্তম আর্দশের উপর প্রতিষ্ঠিত।তিনি ছিলেন আল আমিন,আস সাদিক। আরব বাসিরা তাকে আস সাদিক উপাধি দিয়ে ভুষিত করেছেন। রাসুল (দ) এর নৈতিক চরিত্র বনর্না দিতে গিয়ে হযরত আয়েশা রা) বলেন,‘আাল-কোরআন ছিল তার চরিত্র’। তিনি মানুষের কাছে শুধু কোরআনের শিক্ষা দিয়ে চুপ ছিলেন না বরং নিজেকে কোরআনের জীবন্ত নমুনা হিসাবে তুলে ধলেছেন। আল কোরআন একটি জীবন্ত মোজেজা। কিয়ামত পর্যন্ত আল কোরআন জীবন্ত মোজেজা হিসাবে থাকবে।সুস্পষ্ট ভাবে প্রমান হয় যে,বিশ^ নেতা রাসুল (দ) সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী একজন মহা মানব। আল্লাহর ভালোবাসা,আনুগত,আদেশ নিষেধ পালন করার জন্য রাসুল (দ) শ্রেষ্ঠ একজন মানুষ। সে হিসাবে আল্লাহ পাক রাসুল (দ)কে নির্বাচন করেন। যা মোমেন বান্দার জন্য নিঃসন্দেহে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। রাসুল (দ) এর শৈশব-কৈশরের অনেক ঘটঁনা আমরা জানি।তিনি জাতিকে ধব্ংসের হাত থেকে বাচানোর জন্য ‘হিলফুল ফুযুল’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।কাব্বা ঘর নির্মাণের সময় তার প্রচেষ্টায় হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথরটি যথাস্থানে রাখা সম্ভব হয়েছে।বিশ^ নবী ছিলেন একজন আর্দশ স্বামী।তিনি বলেছেন,‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম। আর আমি আমার সব স্ত্রীর কাছে উত্তম ব্যক্তি’।তিনি আরো বলেন,‘ফাতেমা আমার কলিজার টুকরা,নয়নের মনি। যে ব্যক্তি ফাতেমাকে কষ্ট দিল সে যেন আমাকেই কষ্ট দিল। আর যে ব্যক্তি ফাতেমাকে সন্তুষ্ট করল সে যেন আমাকেই সন্তুষ্ট করল’।আরব সমাজে নানা রকম কৃসংস্কার বিরাজমান ছিল। সে সময় আরব বাসিরা নারী বা কন্যা সন্তানকে অলক্ষন ভাবতো। রাসুল (দ) ঘোষনা কররেন,‘যে ব্যক্তি যথাযথ ভাবে কন্যা সন্তানের অধিকার আদায় করবে,সে জান্নাতে নবীজী (দ) এর কাছা কাছি থাকবে’। বিশ^ নবী (দ) ছিলেন শ্রেষ্ট দানশীল ব্যক্তি।একবার তার কাছে একজন লোক আসল সাহায্য প্রাথী হয়ে। তিনি তাকে দুই পাহাড়ের মাঝে সব বকরি দিয়ে দিলেন। তারপর লোকটি নিজের সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে বলল,‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম গ্রহন করো। কেননা মুহাম্মদ (দ) এত বেশী পরিমাণ দান করেন যে, তিনি নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কোন ভয় করেন না’।তিনি ছিলেন উদার। কোন ব্যক্তি কোন কিছু চাইলে তিনি কখনো না বলতেন না।এভাবে তিনি অসংখ্য গুন ও আর্দশের অধিকারী ছিলেন। জাহিলি যুগে সারা পৃথিবীতে মানুষের মাঝে বৈষম্যের পাহাড় ছিল। কেউ বংশীয় কারনে,কেউ আবার জন্ম সুত্রে সম্মানের অধিকারী ছিল। বৈষম্য ছিল সাদা কালোর মাঝে। বিশ^ নবী (দ) এসে সেই বৈষম্য দুর করেন। নবী (দ) এরশাদ করেন.‘হে লোক সকল! তোমাদেও প্রতিপালক এক,তোমাদের পিতা এক। শোন! আরবির উপর অনারবির এবং অনারবির উপর আরবীর,কৃঝ্ষ কায়ের উপর শে^তকায়ের এবং শে^তকায়ের উপর কৃষকায়ের কোন শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নেই। শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্য়াদা আছে তো কেবল ‘তাকওয়ার ভিত্তিতেই’। পরিশেষে বলতে চাই,হযরত রাসুল (দ) এর চরিত্র ও আর্দশ বনর্না করা কোন লেখকের পক্ষেই সম্ভব নয়। তিনি ছিলেন মহান চরিত্রের অধিকারী। সর্বক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আর্দশের অধিকারী।আল কোরআনে তার চরিত্রের কথা বহুবার উল্লেখ্য রয়েছে। একজন মোমেন বান্দা হিসাবে রাসুল (দ) এর জীবর্নাশকে যথাযথ ভাবে ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে মেনে চলার দরকার।আমরা তাফসিরুল কোরআন,হাদীস শরীফ,বিশ^ নবীর জীবনী অধ্যায়ন করি। জীবনের সর্বক্ষেত্রে রাসুল (দ) এর আর্দশ পালন করি। এই হোক মোমেন জীবনের প্রত্যাশা।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive যায়যায়দিন,"বই পরিচিতি হারানো মুসলিম সভ্যতার খোঁজে",ইসলাম ধর্ম,"বিশ্ব ইতিহাসে ইসলাম যে একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি তা এখন সর্বজনস্বীকৃত। ১৪০০ বছরের বেশি আগে আরব ভূমিতে উৎসরিত মুসলিম রাজনৈতিক শক্তি উত্তরাধিকার সূত্রে ও সাম্রাজ্য বিস্তারের মাধ্যমে ইউরোপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে পূর্ব আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পরযন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যাক জনগোষ্ঠী ইসলাম গ্রহণ করেছে। তবে মুসলিম চিন্তাবিদ, বিজ্ঞানী, ধর্মতাত্ত্বিক থেকে শুরু করে শাসক, রাষ্ট্রনায়ক, ও যোদ্ধাদের বিভিন্ন অবদানের বহু বিষয় ইতিহাস থেকে হারিয়ে বা মুছে গেছে। আমেরিকান গবেষক ও ইতিহাসবিদ ফিরাস আলখাতিবের বই লস্ট ইসলামিক হিস্টোরি: রিক্লেইমিং মুসলিম সিভিলাইজেশন ফ্রম দ্য পাস্ট (ইসলামের হারানো ইতিহাস: অতীত থেকে মুসলিম সভ্যতার পুনরুদ্ধার) সেই মুছে যাওয়া অবদানের কিছু নতুনভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা কয়েকজন মুসলিম ব্যক্তিত্ব ও কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর এই বইয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বইটিতে এগারোটি অধ্যায়: প্রাক-ইসলামী আরব, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভূমিকা, খুলাফায়ে রাশেদিন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর পত্তন, জ্ঞানচর্চা ও মেধা বিকাশের সোনালি সময়, প্রবল বিশৃঙ্খলা, আল আন্দালুস, পুনর্জন্ম, পতন, এবং পুরানো ও নতুন চিন্তাধারা। বইটিতে উমাইয়া, আব্বাসীয় এবং উসমানীয় সময়কালের কথা যেমন বিধৃত হয়েছে, তেমনি উঠে এসেছে মুর স্পেন, পশ্চিম আফ্রিকার সাভানা রাজ্য ও ভারতের মুঘল শাসনামলের গল্প। পরবর্তীকালে মুসলিম ভূখণ্ডগুলোয় ইউরোপীয় বেনিয়া-উপনিবেশিক শাসকদের দখল-শোষণ এবং আধুনিককালে মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন জাতি-রাষ্ট্রের উত্থানের ইতিহাসও ঠাঁই পেয়েছে এতে। বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি, সামাজিক কাঠামো ও সংস্কৃতিক বিকাশে ইসলামী বিশ্বাসের প্রভাব নিয়ে লেখক গুরুত্বসহকারে আলোকপাত করার পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকভাবে বিভিন্ন মুসলিম ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরেছেন। এছাড়া প্রায় অজানা বা কম জানা অথচ গুরুত্বপূর্ণ কিছু অবদানের কথা অতিসংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে সর্বশেষটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিকাগোতে সিয়ার্স টাওয়াররে নকশাকারী বাঙালি মুসলমান ফজলুর রহমান খানের কথা। ১৯৭৩ সালে এই টাওয়ারটি যখন উদ্বোধন হয়, তখন থেকে বহুবছর এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Neutral কালের কন্ঠ,শহরে ও গ্রামে ঈদ,ইসলাম ধর্ম,"‘ঈদ’ শব্দটি আরবি। যার অর্থ প্রত্যাবর্তন করা, ফিরে আসা, বারবার আগমন করা ইত্যাদি। দিনটি যেহেতু প্রতিবছর খুশি ও আনন্দবার্তা নিয়ে সমাজে আগমন করে তাই দিনটিকে ‘ঈদ’ বলা হয়। কোরআন-হাদিসের আলোকে, তাৎপর্য ও মূল্যায়ন বিবেচনার দিক থেকে ঈদ হিসাব, পুরস্কার ও আনন্দ উৎসবের দিন হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার আরবি ‘আ-দাহ’ শব্দ থেকে ‘ঈদ’ শব্দের উৎপত্তি হতে পারে, তখন এর অর্থ হয় অভ্যস্ত করে তোলা। অর্থাৎ আল্লাহ প্রতিবছর বান্দাহকে দয়া, করুণা ও আনন্দভোগে অভ্যস্ত করে তোলেন। তা হলো অভিবাদন, অভিনন্দন ও আতিথেয়তার চিরন্তন অভ্যাসে অভ্যস্ত করা। ঈদের দিন আনন্দময় ও উপভোগ্য করে তুলতে এই দিনে রোজা রাখাকে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ‘ঈদ’ শব্দটির সরল অর্থ উৎসব, ঋতু, পর্ব। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম ঈদ উদযাপিত হয় (আনুমানিক) ৩১ মার্চ ৬২৪ খ্রিস্টাব্দ ১ম শাওয়াল, মদিনায়। তারই ধারাবাহিকতায় মক্কা বিজয়ের পর ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে বিজয়ের ঠিক ১১ দিন পর মক্কায় ঈদ পালিত হয়। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম কখন ঈদ উদযাপিত হয় তার সুনির্দিষ্ট কোনো ইতিহাস জানা যায় না। তবে ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম প্রচার শুরু হওয়ার অব্যবহিত পরে সর্বপ্রথম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ঈদ উদযাপিত হয় বলে ইতিহাসের কোনো কোনো সূত্রের দাবি। তা ছিল সুলতানি আমল এবং ১৩০০-১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনো সময়ে। ঈদ উদযাপন ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি যে চমৎকার সংস্কৃতিও—তার প্রমাণ মহানবী (সা.) এর হাদিসে আছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কা থেকে যখন মদিনায় হিজরত করেন তখন মদিনাবাসীর দুটি দিন ছিল; যে দিনদ্বয়ে তারা খেলাধুলা-আনন্দ-ফুর্তি করত। রাসুল (সা.) এই দিন দুটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা জবাব দিল, জাহেলি যুগে আমরা দিন দুটিতে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বলেন, আল্লাহ এই দিন দুটির পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিন। এখানে একটি চমৎকার সৌন্দর্যবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। তা হলো, বিনোদনের অনুঘটক সংস্কৃতির সঙ্গে ইসলামী বিধানের সমন্বয়। ঈদ উদযাপনে ধর্মীয় বিধান যেমন ঈদের নামাজ, তাকবির ইত্যাদি তো অপরিবর্তিত আছে, সেই সঙ্গে সংস্কৃতি হিসেবে যে দিকগুলো ইসলাম প্রবর্তন করেছে তারও ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। ইসলামের মূলনীতি ও মৌলিক বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হলে ইসলাম তাতে বাধা দেয়নি। বাঙালি সমাজে ঈদ সামাজিক-ধর্মীয় উৎসব হিসেবে সবিশেষ অবস্থান করে নিয়েছে। তবে আজকের যে ঈদ উৎসব তার ধরন-রূপ-রস-প্রকার-প্রকরণ এক শতাব্দী পূর্বে ভিন্ন ছিল। সে সময় বাংলাসহ গোটা ভারতবর্ষে ‘ক্রিসমাস ডে’কে সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে পরিগণিত করা হতো। এই দিনের আগে-পরে সরকারি ছুটি বরাদ্দ ছিল। এরপর দুর্গাপূজাই ছিল জাঁকালো এবং আড়ম্বরপূর্ণ উৎসব। আর্থ-সামাজিকভাবে পশ্চাদপদ মুসলানদের পক্ষে ঈদকে জাতীয় পর্যায়ের উৎসবে পরিণত করা প্রায় অসম্ভব ছিল। কেননা তাদের বেশির ভাগ ছিল বিত্তহীন ও শিক্ষাবঞ্চিত। বিখ্যাত ইতিহাসগ্রন্থ ‘তাবাকাতুননাসিরি’র লেখক মিহাজুস সিরাজ সেকালের ঈদ উৎসব প্রসঙ্গে বলেন, ঈদ উপলক্ষে মুসলিম শাসকরা ধর্মোপদেশমূলক বক্তব্য রাখতেন এবং ইমাম নামাজ পড়াতেন। শহর-গ্রামে ঈদগাহে জামাত অনুষ্ঠিত হতো। রমজানের শুরু থেকেই ঈদের প্রস্তুতি শুরু হতো। আবুল মনসুর আহমদ (১৮৯৮-১৯৭৯) সেকালের ঈদ জামাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ঈদের জামাতে বড়রাই শামিল হতো। তাই জামাতে খুব অল্প লোকই দেখা যেত। নতুন জামাকাপড় পরিধান করে লোকেরা গান-বাজনা করত। বাড়ি বাড়ি সারা রাত ঢোলের আওয়াজ ধ্বনিত হতো। ঈদের জামাতেও লোকেরা কাছা-ধুতি পরিধান করে যেত। নামাজের সময় কাছা খুলতেই হতো। তবে তা নামাজ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে খুলত। নামাজের কাতারে বসার পরই চুপিসারে কাছা খুলে নিত, নামাজ শেষ হওয়ার পরই তা পরিধান করে নিত। এই ধারা বিংশ শতকের দ্বিতীয়-তৃতীয় দশক পর্যন্ত অনেকটা চলমান ছিল। এরপর মুসলমান সমাজ শিক্ষা-দীক্ষায় ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাওয়ার ফলে তাদের সামাজিক-ধর্মীয় যাবতীয় কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন হতে থাকে। সবিশেষ বাংলাসহ উপমহাদেশে ব্যাপক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার কারণে একদিকে ধর্মাচারে শুদ্ধির উন্মেষ হয়, অন্যদিকে সামাজিক সংস্কার সবাইকে দারুণভাবে উদ্দীপ্ত করে তোলে। এরই ধারাবাহিকতায় লেখালেখি, প্রকাশনা, ধর্মীয় ওয়াজ-নসিহত ইত্যাদির কল্যাণে এ ধরনের সামাজিক ঐক্যের অনুষ্ঠানগুলো বেশ কার্যকর হয়ে ওঠে। ফলে এখনো আমরা দেখতে পাই দুই ঈদের আগে শহরের মানুষগুলোর গ্রামে যাওয়ার কী প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা! জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক-নৌপথে যুদ্ধাভিযানের আদলে ঘরে ফেরার কী দৃশ্য! বিংশ শতাব্দীর আশি-নব্বইয়ের দশকেও ঈদকে কেন্দ্র করে যে সামাজিক সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য পরিলক্ষিত হতো তা রীতিমতো অপূর্ব। ঈদের দিন ধনী-গরিব, মনিব-ভৃত্য, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি অজানা-অচেনা মানুষজনের জন্য যে আতিথেয়তার আয়োজন তা মানবতার প্রকৃত রূপকেই প্রকাশ করে। ঈদের নামাজ শেষে কবরস্থানে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারতের সে দৃশ্য মন-জুড়ানো। দল বেঁধে শত শত অতিথির আগমনেও কখনো বিরক্তির লেশমাত্র কারো মুখে পরিদৃষ্ট হতো না, বরং অতিথির আধিক্যে আপ্লুত হতেই দেখা যেত সবাইকে। ঈদ মুসলিম ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যও মুসলমানদের দরজা উন্মুক্ত থাকে। ঈদকে কেন্দ্র করে গ্রামের মেঠো পথ তার শহরে থাকা সন্তানদের ফিরে পায়। সরব হয়ে ওঠে গ্রামের আনাচ-কানাচ। সে সময়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আতিথেয়তায় থাকে মিষ্টান্নজাতীয় দ্রব্য। নানা প্রকার সেমাই, পুড়িং, কেক ইত্যাদি। সময়ের বিবর্তনে তাতেও আজকাল ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হতো; এখন মিষ্টির তালিকা সংকুচিত হয়ে ঝালের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সমধিক বলেই মনে হয়। তাই ঈদের দিনের খাবার তালিকায় দেখা যায় নুডলস, ছোলা, পোলাও-বিরিয়ানির মতো ভারী খাবার। শহরের ঈদ উদযাপন অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকের; সেখানে আত্মীয়-স্বজনের সংখ্যা কম বিধায় বন্ধুবান্ধব, অফিস কলিগ, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের বাসাবাড়িতে যাওয়া-আসা হয়। সেখানকার আতিথেয়তার ধরন-মাত্রাও বেশ জৌলুসপূর্ণ হয়ে থাকে। অবশ্য আধুনিকতা পেরিয়ে উত্তরাধুনিকের এ কালে বেশ অশনি নিদর্শনও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। একসময় কিশোর, তরুণ-তরুণীরা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য কী যে উদগ্রীব ছিল, তা আর পরিলক্ষিত হয় না। এখন কোনোমতে ঈদ জামাত শেষ করে মোবাইল কিংবা অন্য যেকোনো ডিভাইসে বুঁদ হয়ে থাকে। না আছে আত্মীয়তার সম্পর্কের অনুভূতি, না আছে তার ব্যাপারে কোনো আবেগ-আগ্রহ, বরং যান্ত্রিক বিধ্বংসী যন্ত্রটিই তার জীবন হয়ে উঠছে! গ্রামের নিষ্কলুষ পরিবেশও আজ দেখা যায় ঈদও ঐতিহ্যশূন্য হতে চলেছে; গ্রামের টং দোকান, পুকুরঘাট, বটতলা ইত্যাদি জায়গায় দেখা যায় জটলা, হাতে তাসের সেট, সামনে জুয়ার বেটে ছড়ানো ছিটানো টাকার বান্ডিল। একইভাবে দেখা যায় ক্যারম, মার্বেল ইত্যাদির খেলা, পশ্চাতে জুয়ার মেলা! তবু ভ্রাতৃত্ব-হৃদ্যতা-সৌহার্দ্যের বার্তাবাহী ঈদ ইসলামের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যবোধের প্রকাশের অন্যতম অনুঘটক। ঈদ সবার জীবনে বয়ে দিক খুশি-আনন্দ ও শান্তি-সুখের ফল্গুধারা।",ধর্মীয় উৎসব,Positive প্রথম আলো,"নারীরা যেভাবে ইতিকাফ করবেন ",ইসলাম ধর্ম,"ইতিকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, নিয়তসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এমন মসজিদে কেবল ইবাদত- বন্দেগির উদ্দেশ্যে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। নারীরা নিজের ঘরের কোনো একটি কক্ষে নির্জনে নিয়ত করে ইবাদত-বন্দেগির জন্য অবস্থান করে ইতিকাফ করতে পারেন। নারী ইতিকাফের আগে স্বামীর সম্মতি নেবেন। কোনো কারণে স্বামী ইতিকাফ ভাঙতে বললে তা করার আবশ্যকতা আছে। ইতিকাফকারী নারীর ঋতু শুরু হলে ইতিকাফ ছেড়ে দেবেন। নির্ধারিত সময়ের পর আবার ইতিকাফ শুরু করতে পারবেন। ইতিকাফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো, মুসলমান হওয়া, মানসিকভাবে সুস্থ হওয়া, মাসিক ও সন্তান প্রসব পরবর্তী অবস্থা থেকে পবিত্র হওয়া। ইতিকাফ অবস্থায় নফল নামাজ আদায় করা, কোরআন-হাদিস তিলাওয়াত করা, জিকির করা, জ্ঞান শেখা ও শেখানো, ইসলামি বইপত্র পড়াসহ সব সওয়াবের কাজ করা বৈধ। অহেতুক আলোচনা করা, প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফের জায়গা ত্যাগ করার অনুমতি নেই।",ধর্মীয় শিক্ষা,Neutral কালের কন্ঠ,তাজিকিস্তানে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ উদ্বোধন,ইসলাম ধর্ম,"তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে ইমাম আবু হানিফা গ্র্যান্ড মসজিদ চালু হয়েছে। গত ৮ জুন মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম এই মসজিদ উদ্বোধন করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি ও তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমাম আলী রহমান। কাতার সরকারের অর্থায়নে মসজিদটি নির্মাণে সময় লাগে প্রায় ১৪ বছর। এতে প্রায় এক শ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়।মসজিদের চারপাশে রয়েছে চারটি মিনার। এর মধ্যে দুটির উচ্চতা ৭৪ মিটার এবং অন্য দুটির উচ্চতা ২১ মিটার। তা ছাড়া ৪৩ মিটার উচ্চতার সুদৃশ্য গম্বুজ এবং ৩৫ মিটার উঁচু ১৭টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের মূল কাঠামোর আয়তন ৬২ হাজার বর্গ মিটারের চেয়ে বেশি।এখানে একসঙ্গে এক লাখ ৩৩ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। এর মধ্যে মসজিদের ভেতরে ৬২ হাজার মুসল্লির ধারণক্ষমতা রয়েছে।তাজিকিস্তানের ধর্মবিষয়ক কমিটির প্রধান সুলাইমান দাওলাত জাদাহ বলেন, রাজধানী দুশানবের ইমাম আবু হানিফা মসজিদ মধ্য এশিয়ার সর্ববৃহৎ মসজিদ। কাতার সরকারের অর্থায়নে তৈরি মসজিদটি বিভিন্ন দেশের কাতারের ধর্মীয় ও মানবিক সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে এবং শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"দরুদ শরীফের গুরুত্ব ও ফজিলত ",ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহর বাণী ঃ- নিশ্চয় আমি আমার ফেরেস্তাদের সাথে নিয়ে আমার এ নবীর উপর দরুদ পড়ি। হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরাও তাঁর উপর দরুদ ও সালাম পাঠ কর। (সূরা আহযাব- আয়াত-৫৬)। কোন এক শিশু কবির ভাষায়- “ দোয়া যদি করে কেহ দরুদ বিনিতে সেই দোয়া নাহি পারে আকাশে যেতে/দরুদে খুলে দেয় আকাশের দ্বার তবেতো যেতে পারে হজুরে খোদার”। আমরা প্রত্যেকেই এ আশা রাখি যে, আমাদের নামায রোজা, দান-খয়রাত, আমাদের যাবতীয় ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল মাকবুল ও মাররুর হোক। কিন্তু আমাদের ঈমান ও আমলের ক্রটির কারণে হয়ত তা হয় না। তাছাড়া কোর্ট-ফি ও সনদ প্রাপ্ত উকীল ব্যারিস্টারের সই ছাড়া যেমন সাধারণ লোকদের কোনো আরযী বিচারকের এজলাসে গৃহীত হয় না। তেমনি সব বিচারকের বিচারক আল্লাহর দরবারেরও কোর্ট-ফি ও সনদপ্রাপ্ত ব্যক্তির সুপারিশ ছাড়া কোনো দোয়াই কবুল হয় না। আর এ কোর্ট-ফি হচ্ছে দরুদ শরীফ। আর সনদপ্রাপ্ত সুপারিশকারী হচ্ছেন বিশ^নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) । এজন্য প্রত্যেক প্রকার ইবাদতের আগে-পিছে দরুদ শরীফ পড়া উচিত। নামাজ হচ্ছে সব ইবাদতের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। এমন ইবাদতের মধ্যে যদি পাছে আমরা ভুলে দরুদ শরীফ না পড়ি, এ জন্য তাশাহহুদের সাথে দরুদ শরীফ জুড়ে দেয়া হয়েছে। দরুদ শরীফ ও তেমনি ইবাদতকে আল্লাহর দরবারে পৌছে দেয়। তখন আল্লাহ তা’আলা বেছে বেছে শুধু দরুদসমূহই রেখে দেন না, দরুদ কর্তৃক নীত ইবাদতগুলোও গ্রহণ করেন। আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) মেরাজে গিয়ে উম্মতদের নাজাত-চিন্তায় অত্যন্ত ব্যথাতুর হয়ে উঠেন। তদ্দর্শনে আল্লাহ বলেন, হে প্রিয় হাবীব। আপনি এত ব্যথাতুর হচ্ছেন কেন? আপনার উম্মাতের যে কোন দোয়া আমি কবুল করে নেবো- যদি তারা তার সাথে দরুদ শরীফ বেঁধে দেয়। (ইবনে মাযাহ শরীফ) এ জন্য প্রত্যেক দোয়া প্রত্যেক ইবাদতের আগে বা পরে দরুদ শরীফ পড়ে নেয়া উচিত। তাছাড়া প্রথমে উল্লিখিত কুরআনের আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নবী করীম (সাঃ) আমাদের শাফায়াতকারী বলেই তাঁর উপর দরুদ শরীফ পড়া আমাদের কর্তব্য হয়েছে, তা নয়। দরুদ শরীফ পড়া আল্লাহরই আদেশ। দরুদ শরীফ পড়ার ফযীলত ঃ (১) হযরত আবু হুরাইয়া (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন: কোন ব্যক্তি যদি মাত্র একবার দরুদ শরীফ পাঠ করে, তবে একজন ভ্রাম্যমান ফেরেশতা আমার দরবারে উপনীত হয়ে খবর দেয়: ইয়া রাসুলুল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার উপর এত মোর্তবা দরুদ শরীফ পাঠ করেছেন, তখন আমিও তার উপর ঠিক তত মোর্তবা দরুদ পাঠ করি। অতঃপর সেই ফেরেশতা আল্লাহর দরবারে আরযী পেশ করে- হে-মা’বুদ। অমুকের পত্র অমুক ব্যক্তি আপনার হাবীবের উপর এত মোর্তবা দরুদ পাঠ করেছে। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তাকে বলেন- উত্তম। কিরামান ও কাতেবীনকে বলে দাও, এ ব্যক্তির প্রত্যেক মোর্তবা দরুদ পাঠের পরিবর্তে যেন তার আমলনামা থেকে একটি করে গুনাহ কেটে দেয় এবং আমার পক্ষ থেকে প্রত্যেক কাটাস্থানে দশটি করে নেকী লিখে দেয়। (মুয়াত্তা শরীফ)। (২) আল্লাহর রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জুম্আর নামাযের জন্য মসজিদে উপস্থিত হয়ে আযানের পর ও খুতবা আরম্ভ হওয়ার আগে চল্লিশ মোর্তবা নিম্মোক্ত দরুদ শরীফ পাঠ করবে তার চল্লিশ বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (বুখারী শরীফ)। দরুদ শরীফটি হলো - আল্লা হুম্মা ছলি’øআলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উ¤িঁ§য়ে ওয়া ‘আলা-আ-লিহি ওয়া আছহা-বিহী ওয়া বা-রিকা ওয়া সাল্লিম। (৩) যদি কেউ উক্ত দরুদ শরীফ আছরের নামায বাদ একশ বার পড়ে তবে তাঁর আশি বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যদি প্রত্যেক জুমআর দিন নামাযের পূর্বে কেউ উক্ত দরুদ শরীফ এক হাজার বার পড়ে, তবে যতদিন না ঐ ব্যক্তি স্বপ্নে তাঁর বেহেশতের বাড়িটি দেখতে না পায় ততদিন তার মৃত্যু হয় না। (মুসলিম শরীফ ও আত্তারগীব ফি ফাযায়িলিল আমাল লি ইবনে শাহিন, ১৪ পৃষ্ঠা হাদিস নং-১৯)। (৪) নূরে মুজাসসাম রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি আমার উপর জুম্আর রাত ও জুম্আর দিনে একশ বার দরুদ শরীফ পাঠ করে আল্লাহর তা’আলা তার একশটি হাজত পূরণ করবেন। ৭০টি আখিরাতের আর ৩০টি দুনিয়ার। (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ১১১ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-৩০৩৫)। (৫) রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন: কিয়ামতের দিন আমার নিকটতম ব্যক্তি হবে যে, দুনিয়ায় আমার উপর বেশি পরিমাণে দরুদ শরীফ পড়েছে। (তিরমিযী, ২য় খন্ড ২৭ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-৪৮৪)। (৬) রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশবার ও সন্ধ্যায় দশ বার দরুদ শরীফ পাঠ করে তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ নসীব হবে। (মাজমাউয যাওয়ায়িদ,১০ম খন্ড, ১৬২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-১৭০২২) (৭) হুজুরপূর নূর (সাঃ) ইরশাদ করেন: যে এটা বলে, “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ওয়া আনযিলহুল মাকয়াদাল মুকাররাবা ইনদাকা ইয়াওমাল কিয়ামাতি তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে যাবে”। (মুজাম কবীর, ৫ম খন্ড,২৫ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-৪৪৮০)। (৮) রহমতে আলম রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি কিতাবে আমার উপর দরুদ পাক লিখেছে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার নাম তাতে থাকবে, ফিরিশতারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে। ( মুজাম আওসাত, ১ম খন্ড ৪৯৭ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-১৮৩৫) (৯) রাহমাতুল্লীল আলামীন নবিজী (সাঃ) ইরশাদ করেন: “ হে লোকেরা নিশ্চয় কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা এবং হিসাব নিকাশ থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে আমার উপর দুনিয়াতে অধিক হারে দরুদ শরীফ পাঠ করে থাকে।” (আল ফিরদৌস বিমাসুবিল খাত্তাব, ৫ম খন্ড,২৭৭ পৃষ্ঠা হাদিস-৮১৭৭) । (১০) আল্লাহ পাকের প্রিয় মাহাবুব, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ করেন: নামাযের পর হামদ, সানা ও দরুদ শরীফ পাঠকারীকে বলা হয়: দোয়া কর কবুল করা হবে। প্রার্থনা কর, প্রদান করা হবে। (নাসায়ী,২২০ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-১২৮১) (১১) নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন: “যে আমার উপর এক বার দরুদে পাক পাঠ করে, আল্লাহ তা’ আলা তার জন্য এক ‘ক্বীরাত’ পরিমান সাওয়াব লিখে দেন। ক্বীরাত হচ্ছে উহুদ পর্বতের সম-পরিমাণ।(মুসান্নিফ আব্দুর রাজ্জাক, ১ম খন্ড,৩৯পৃষ্ঠা, হাদিস নং-১৫৩)। (১২) সুলতানে দো- আলম জনাবে রাসূল পাক (সা:) ইরশাদ করেন: কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার আরশের ছায়া ব্যতীত আর কোনো ছায়া থাকবে না। তিন ব্যক্তি ( ঐ দিন) আল্লাহ তা’ আলার আরশের ছায়ায় থাকবে। আরজ করা হলো: ইয়া রাসূল্লাহ (সা:) তারা করা হবে? তিনি ইরশাদ করলেন: (ক) ঐ ব্যক্তি যে আমাঁর উম্মতের পেরেশানী দূর করে। (খ) আমার সুন্নাতকে জীবিতকারী। (গ) আমাঁর উপর অধিক পরিমাণে দরুদ শরীফ পাঠ কারী।” (আল বাদূরুস সাফিরাতু লিসসূয়ুতী, ১৩১ পৃষ্ঠা, হাদিস-৩৬৩)। (১৩) রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন “যে ব্যক্তি এটা বলে “জাযাল্লাহু মুহাম্মাদান মা হুয়া আহলুহু” সত্তর জন ফিরিশতা এক হাজার দিন পর্যন্ত তার জন্য নেকী লিখতে থাকে”। (মুজাম আওসাত,১ম খন্ড ৮২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং-২৩৫) । (১৪) হযরত ওমর ফারুক (রা:) বলেন: “দোয়া আসমান ও যমীনের মধ্যখানে ঝুলন্ত থাকে। তা থেকে কিছুই ওপরে যায় না(অর্থাৎ দোয়া কবুল হয় না) যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি আঁপন নবীর উপর দরুদ পাঠ করো”। (জামে তিরমিযী,২য় খন্ড, ২৮ পৃষ্ঠা হাদিস নং-৪৮৬)। (১৫) রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন: ‘যখন কোনো জাতি কোনো বৈঠকে বসে আর সেখানে যদি তারা আল্লাহকে স্বরণ না করে ও নবী করীম (সাঃ) এর প্রতি দরুদ পাঠ না করে তাহলে তাদের জন্য কিয়ামতের দিন সে আফ-সোসের কারণ হবে, যদিও তারা পুরষ্কার হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করে”। হাকেম১/৫৫০, মুসনাদে আহমদ হাদিস-৯৯৬৬)। তাইতো কবি বলেন “ কবর যদি চাও উজালা দরুদ বানাও গলের মালা/খুলবে তোমার দিলের তালা দেখবে নবী মোস্তফা”। আল্লাহ পাক প্রত্যেক ভালো কাজের পূর্বে ও পরে আমাদের নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করার তাওফিক দান করুন, আমীন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"সৌদিতে মক্কা-মদিনা ছাড়া সব মসজিদ বন্ধ ",ইসলাম ধর্ম,"করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সৌদি আরবে সকল মসজিদ বন্ধ করে দেয় হয়েছে। ফলে প্রতিদিনের ৫ ওয়াক্ত নামাজ এবং সাপ্তাহিক জুমার নামাজও বন্ধ থাকবে। তবে শুধুমাত্র মক্কা ও মদিনায় দুটি প্রবিত্র মসজিদ খোলা থাকবে। দেশটির সর্বোচ্চ শরিয়াহ কাইন্সিল থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। মসজিদগুলোর দরজা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও মসজিদ থেকে আযান দেয়া হবে এবং লোকজনকে নিজেদের বাসায় নামাজ পড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মসজিদগুলো পুরোপুরি পরিষ্কার করে পরে তা সীমিত আকারে খুলে দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, দেশটিতে করোনায় ১৩৩ জন আক্রান্ত হলেও এখনো কেউ মারা যায়নি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative নয়াদিগন্ত,"২০২৩ সালে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা! রাজধানী কাশী, ভোটাধিকার থাকবে কেবল হিন্দুদের",হিন্দু ধর্ম,"ভারতীয় সংবিধানকে বদলে ফেলে ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বানানোর ঘোষণা প্রকাশ্যেই দেয়া হয়েছে। এখন চলছে নতুন ‘সংবিধান’ তৈরির কাজ। খসড়াও তৈরি হয়ে গেছে। উদ্যোক্তা বারাণসীর শঙ্করাচার্য পরিষদ নামে এক সংগঠন। এমনই খবর বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। পরিষদের দাবি, ২০২৩ সালে মাঘ-মেলা উপলক্ষে প্রয়াগরাজের ‘ধর্ম সংসদ’-এ ঘোষণা করা হবে সেই ‘সংবিধান’। যে ‘সংবিধান’ অনুযায়ী, ভারতে ভোটাধিকার থাকবে শুধু হিন্দুদের। বাকি ধর্মের প্রতিনিধিরা দেশে থাকতে পারবেন, অন্যান্য অধিকারও থাকবে, কিন্তু ভোট দিতে পারবেন না। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে তৃণমূল থেকে সিপিএম সকলেই বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের নিন্দায় সরব। তবে সঙ্ঘ পরিবারের কট্টরপন্থী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, এমন কর্মসূচির কথা তাদের জানাই নেই। যোগাযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপিও।সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এক দল সাধুসন্ত এবং বিশিষ্টজন মিলে ‘হিন্দু রাষ্ট্রের’ রূপরেখা তৈরি করছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে সংগঠনের পক্ষে যে ধর্ম সংসদ হয়েছিল, সেখানে আলাদা ‘সংবিধান’ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এখন ৩০ জনের একটি দল সেই কাজ করছে। শঙ্করাচার্য পরিষদের সভাপতি স্বামী আনন্দস্বরূপ বলেছেন, ‘মোট ৭৫০ পাতার সংবিধান তৈরি হবে যা নিয়ে এখন পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা চলছে। আলোচনায় অংশ নেবেন ধর্মীয় পণ্ডিত এবং বিশেষজ্ঞরা। তার ভিত্তিতে সংবিধানের অর্ধেক (৩০০ পাতার মতো) প্রকাশ্যে আনা হবে ২০২৩ সালের মাঘ-মেলায়।’ এর মধ্যে শিক্ষা, নিরাপত্তা, আইন ব্যবস্থা, ভোটদান-সহ কিছু বিষয় নিয়ে ৩২ পাতার খসড়া তৈরি হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আনন্দস্বরূপ।আনন্দস্বরূপ এই বিষয়ে জানাতে গিয়ে এমন আশাও ব্যক্ত করেছেন, ‘আগামীতে একদিন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার একসাথে এসে যাবে।’ পরিকল্পনা অনুযায়ী এখনকার সংসদীয় ব্যবস্থার পরিবর্তে তৈরি হবে ৫৪৩ সাংসদের ‘ধর্ম সংসদ’। দাবি, ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা কোনো নিয়মকানুন কাজ করবে না সেই অখণ্ড ভারতে। সবই চলবে ‘বর্ণাশ্রম’ ব্যবস্থা মেনে। বিচারব্যবস্থা চলবে ‘ত্রেতা ও দ্বাপর যুগের নিয়মে’। শিক্ষায় ফিরবে প্রাচীন গুরুকূল পদ্ধতি। দেশের সব নাগরিকের সামরিক প্রশিক্ষণ হবে বাধ্যতামূলক। আর কৃষিক্ষেত্র থাকবে সম্পূর্ণভাবে করমুক্ত। এ ছাড়া, ‘বদলে যাবে’ দেশের রাজধানীও। দিল্লির বদলে কাশী।এমন সম্ভাব্য ভারতের কথা শুনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মোহম্মদ সেলিম বলেন, ‘এ সব হচ্ছে আরএসএস-এর মস্তিস্কপ্রসূত ব্যাপার। বহুমতের ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদের ভাবনা। এই সব কথা বলা হলে প্রতিবেশী দেশের সাথে ভারতের সম্পর্কও ধাক্কা খাবে।’ একইভাবে নিন্দায় সরব হয়েছেন তৃণমূলের প্রবীণ এমপি সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয়। বহুত্বের দেশ ভারতে এমন ভাবনার প্রতিবাদ করা উচিত সকলের।’",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"আল্লাহ অবিশ্বাসীদের জন্য নুহ ও লুত (আ.) স্ত্রীর দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছেন ",ইসলাম ধর্ম,"সুরা তাহরিম পবিত্র কোরআনের ৬৬তম সুরা। এর ২ রুকু, ১২ আয়াত। তাহরিম মানে হারাম মনে করা। হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে আল্লাহ বলছেন, ‘আল্লাহ যা হালাল করেছেন, তা তুমি কেন হারাম মনে করো।’ আসরের নামাজের পর রাসুল (সা.) তাঁর পত্নীদের সঙ্গে অল্পক্ষণের জন্য হলেও দোয়া করতেন। মধু পান করার জন্য জয়নাবের (রা.) গৃহে তিনি একাধারে অবস্থান করায় বিলম্ব হলে তাঁর অপর দুই স্ত্রী আয়েশা (রা.) ও হাফসা (রা.) অনুযোগ করেন। এতে রাসুল (সা.) আর মধু খাবেন না বলে শপথ করেন। এই প্রেক্ষাপটে সুরাটির অবতারণা। আয়েশা ও হাফসাকে (রা.) এ সুরায় তওবা করে পারিবারিক জীবনে শান্তি আনার উপদেশ দেওয়া হয়। নুহ (আ.) ও লুত (আ.)-এর স্ত্রীদের উল্লেখ করে এতে বলা হয় যে তাঁরা নবী (সা.)–এর পত্নী হওয়া সত্ত্বেও নিজের কর্মের জন্য নরক ভোগ করেছিল। অন্যদিকে ফেরাউনের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও সৎ কর্মের জন্য তার স্ত্রী জান্নাত লাভ করেন। এ সুরায় আল্লাহর দেওয়া হালালকে হারাম করতে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আল্লাহ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেন, কেন তুমি তা নিষিদ্ধ করছ তোমাদের স্ত্রীদের খুশি করার জন্য? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (আয়াত: ১) এর পরের আয়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কেউ কোনো হালালকে নিজের ওপর হারাম করার শপথ করলে অবশ্যই তাকে সে শপথ ভাঙতে হবে। সে শপথ ভাঙার কাফফারা আদায় করে আল্লাহর আরোপ করা হালালকে গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের শপথ থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, আল্লাহ তোমাদের সহায়। আর তিনি সর্বজ্ঞ, তত্ত্বজ্ঞানী। (আয়াত: ২) জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে রক্ষা করা ইমানদার পুরুষের দায়িত্ব। এই সুরায় আছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদের ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যার নিয়ন্ত্রণভার অর্পিত আছে নির্মম হৃদয় কঠোর স্বভাব ফেরেশতাদের ওপর, যারা আল্লাহ তাদেরকে যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না ও যা আদেশ করা হয়। তা-ই করে।’ (আয়াত: ৬) আসিয়া বিনতে মুজাহিম ছিলেন প্রাচীন মিসরে ফেরাউনের স্ত্রী ছিলেন। এক আল্লাহ্‌র ওপর ছিল তাঁর বিশ্বাস। মানুষের প্রতি ছিলেন দয়ালু ও সহানুভূতিশীল। তাঁর স্বামী ফেরাউন নিজেকে খোদা বলে দাবি করত। নিজের স্ত্রী অন্যের উপাসনা করে, এ তথ্য জানতে পেরে ফেরাউন স্ত্রীকে চাপ দেন। আসিয়া অটল। ফেরাউন তখন আসিয়াকে হত্যার আদেশ দেয়। ফেরাউনের সৈন্য-সামন্তরা তাঁর হাত-পা বেঁধে উত্তপ্ত সূর্যের নিচে ফেলে রাখে। ক্ষতবিক্ষত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ইমান ছাড়েননি। জীবনের বিনিময়ে তিনি ইমান রক্ষা করেন। তিনি আল্লাহর প্রতিবেশী হওয়ার আকুলতা ব্যক্ত করেন। তাঁর প্রার্থনার কথা সুরায় আছে এভাবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! তোমার কাছে জান্নাতে আমার জন্য একটা ঘর তৈরি করো, আমাকে উদ্ধার করো ফেরাউন ও তার দুষ্কর্ম থেকে, আর উদ্ধার করো সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায় থেকে।’ (আয়াত: ১১) সুরার শেষে ফেরাউনের স্ত্রী ছাড়াও আরেকটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি হজরত নুহ (আ.)–এর অবিশ্বাসী স্ত্রী। বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ অবিশ্বাসীদের জন্য নুহের ও লুতের স্ত্রীর দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছেন। ওরা ছিল আমার দুই সৎ কর্মপরায়ণ দাসের অধীন। কিন্তু ওরা তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তাই নুহ ও লুত তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারল না। আর ওদেরকে বলা হলো, যারা জাহান্নানে ঢুকবে, তাদের সঙ্গে তোমরাও সেখানে ঢোকো।’ (আয়াত: ১০, সুরা তাহরিম, কোরানশরিফ: সরল বঙ্গানুবাদ, অনুবাদ: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের কাগজ,"ধর্মকে কাজে লাগিয়ে ভোটের কৌশল খুঁজছে আ.লীগ ",অন্যান্য,"আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী সিলেটে নির্বাচনী জনসভায় 'নৌকা নূহ নবী'কে রক্ষার বাহন' বলে যে মন্তব্য করেছেন, তার জবাবে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ভোটের আগে নৌকা হয় 'নূহ নবীর' আর ভোটের পরে আওয়ামী লীগের নৌকা হয়ে যায় শ্রীকৃষ্ণের! আজীবন আওয়ামী লীগ মন্দিরে গিয়ে নৌকা'কে শ্রীকৃষ্ণের বাহন বলেছে এখন মাজারে গিয়ে নূহ নবী'কে রক্ষার বাহন বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। সত্যিই আওয়ামী লীগ একটি জোকার রাজনৈতিক দল! ভোট আসলেই আওয়ামী লীগ মুসলিম -হিন্দুদের ভোট পাওয়ার কৌশল খোঁজে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে পল্টন, প্রেসক্লাব এলাকায় গণসংযোগ এবং লিফলেট বিতরণকালে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এসময় বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আওয়ামী লীগের বাঁচার এখন একমাত্র পথ পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এছাড়া সরকারের বাঁচার কোন রাস্তা নেই। বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারের উপর আর বিন্দু মাত্র আস্থা রাখতে পারছে না। দেশের অর্থনীতি ও জনগণের জীবন-জীবিকা এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণ এই সরকারের কাছ থেকে এখন মুক্তি চায়।জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস খান বলেন, আওয়ামী লীগের নেত্রী এবং অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন দেশে-বিদেশে অকেজো সরকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি নাই, তবে শীঘ্রই জনগণ পতনের গ্যারান্টি কার্ড আওয়ামী লীগের হাতে ধরিয়ে দিবে। ভালোই ভালোই পদত্যাগ করুন অন্যথায় অনেক বেদনা নিয়ে বিদায় নিতে হবে। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ-সভাপতি ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বায়ক রাশেদ প্রধান বলেন, এই আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ যে, আওয়ামী লীগ মন্দিরে গিয়ে কপালে তিলক লাগায় আর মুসলমানদের দাঁড়ি ধরে টেনে কারাগারে পাঠায় এবং ভোটের আগে নবী রাসূলের বয়ান চালায়। তবে আওয়ামী লীগের মনে রাখা ভালো শাপলা চত্বরে আলেম ওলামাদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি! কারাগারে আলেম-ওলামারা মুক্তি এখনো পায়নি। ইনশাআল্লাহ সব হিসেব নেওয়ার সময় এসে গেছে। প্রতিশোধ জনগণ সময় মতই নিবে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস খান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ-সভাপতি ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বায়ক রাশেদ প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামি বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন পারভেজ। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির হান্নান আহমেদ বাবলু, বাংলাদেশ এলডিপির এম এ বাশার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামি এম এ কাশেম ইসলামাবাদী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির শরীফুল ইসলাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির আবু মোহাম্মদ হানিফ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের আবু মনসুর ভুইয়া, যুব জাগপার মনোয়ার হোসেন, এলডিপি যুবদলের ফয়সাল আহমেদ, ছাত্র সমাজের কাজী ফয়েজ আহমেদ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের নিজাম উদ্দিন আল আদনান প্রমুখ।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,রমজানের দ্বিতীয় দশক: ইবাদতে নিমগ্ন হওয়ার তাগিদ,ইসলাম ধর্ম,"মহিমান্বিত রমজানের এক দশক গত হয়ে দ্বিতীয় দশক চলছে। যেন রমজান মুমিনদের তার বিদায়ের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করছে। সে বলছে, আমি বিদায়ের পথে বহুদূর অগ্রসর হয়েছি। তোমার কি এখনো ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়ার সময় আসেনি? অথচ প্রিয় নবী (সা.) পুরো রমজানেই ইবাদতে আত্মমগ্ন হয়ে থাকতেন। আর দ্বিতীয় দশক এলে তিনি তাতে আরো বেশি মনোযোগী হতেন। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের মধ্যবর্তী ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন। (মুয়াত্তায়ে মালিক, হাদিস : ৯) বেশির ভাগ হাদিসের বর্ণনা মতে, নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। তবে মধ্যবর্তী দশকের মর্যাদা প্রমাণের জন্য উল্লিখিত হাদিসটি যথেষ্ট। অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন। অতঃপর মধ্যবর্তী ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি লাইলাতুল কদরের তালাশে ইতিকাফ করেছি। আমাকে বলা হলো, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকে। অতএব, কেউ ইতিকাফ করতে চাইলে সে ইতিকাফ (শেষ দশকে) করতে পারে। ফলে লোকজন তাঁর সঙ্গে ইতিকাফ করল। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১১৭০৪) আবদুল্লাহ বিন উনাইস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন, আমি লাইলাতুল কদর দেখেছি, অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব, তোমরা রমজানের শেষ অর্ধেকে তালাশ কোরো। (শরহু মাআনিল আসার : ৩/৮৮) অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের ১৭ তারিখ রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৩৮৪) প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, লাইলাতুল কদরের দিনের সকাল বদরের দিনের সকালের মতোই। আর সিরাত ও মাগাজি বিশেষজ্ঞদের প্রসিদ্ধ মতানুসারে বদরের রাত ছিল ১৭ রমজান এবং দিনটি জুমার দিন ছিল। জায়িদ বিন সাবিত (রা.) ১৭ রমজানের মতো অন্য রাতে এত বেশি জেগে থাকতেন না। তিনি বলতেন, আল্লাহ বদরের দিন সকালে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য স্পষ্ট করেছেন এবং কাফির নেতাদেরকে সেদিন সকালে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। উল্লিখিত হাদিস ও বর্ণনাগুলো দ্বারা প্রমাণিত রমজানের মধ্যবর্তী দশকও ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহমুখী হওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রাখে।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"মাহে রমজানে যাবুর অবতরণ ",ইসলাম ধর্ম,"রমজান মাসের ১২ তারিখে আল্লাহর নবী হজরত দাউদ (আ.)-এর কাছে আসমানি কিতাব ‘যাবুর’ নাজিল করা হয়। তাঁর গোত্রের মাতৃভাষা ছিল ইউনানি, তাই ‘যাবুর’ ইউনানি বা আরামাইক ভাষায় অবতীর্ণ হয়। নবী-রাসুলদের কাছে মাতৃভাষায় ওহি নাজিল না করা হলে এগুলো অবতরণের উদ্দেশ্য ব্যাহত হতো। কেননা, এসব আসমানি কিতাব অবতরণের মূল উদ্দেশ্য মানুষের হেদায়াতপ্রাপ্তি ও পুণ্য অর্জনের জন্য এর সঠিক মর্ম অনুধাবন করা এবং ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে ঐশীগ্রন্থের আলোকে জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে ওহি প্রেরণ করেছি, যেমন নূহ ও তার পরবর্তী নবীদের কাছে প্রেরণ করেছিলাম; ইব্রাহিম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধরগণ; ঈসা, আইউব, ইউনুস, হারুন ও সোলায়মানের কাছে ওহি প্রেরণ করেছিলাম এবং দাউদকে যাবুর দিয়েছিলাম।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৬৩) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি তো নবীদের কতককে কতকের ওপর মর্যাদা দিয়েছি এবং দাউদকে যাবুর দিয়েছি।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৫৫) হজরত দাউদ (আ.)-এর ঊর্ধ্বতন একাদশ পুরুষ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর দুজন স্ত্রী ছিলেন। বিবি হাজেরার গর্ভজাত সন্তান হজরত ইসমাইল (আ.)-এর বংশধারায় পৃথিবীতে শুভাগমন করেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) [৫৭০-৬৩২ খ্রি.]; আর বিবি সারার গর্ভের সন্তান হজরত ইসহাক (আ.)-এর বংশধারায় হজরত দাউদ (আ.) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জালুত নামক অত্যাচারী রাজাকে ভীষণ যুদ্ধে পরাজিত ও হত্যা করে এক বিশাল রাজত্ব লাভ করেন, যাঁর রাজধানী ছিল জেরুজালেম। এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘দাউদ জালুতকে সংহার করল, আল্লাহ তাকে কর্তৃত্ব এবং হিকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫১) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘স্মরণ করো, আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদের কথা, সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী।’ (সূরা সোয়াদ, আয়াত: ১৭) হজরত দাউদ (আ.) নানাবিধ মানবিক গুণে ভূষিত ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সুমধুর কণ্ঠস্বর দান করেছিলেন যে সুললিত ভাষায় তিনি ‘যাবুর’ তিলাওয়াত করতেন। তাঁর পাঠ শুনে বনের পক্ষিকুল নেমে আসত এবং মনোযোগসহকারে তা শুনত। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘আমি তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্মিতা।’ (সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২০) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই দাউদ ও সোলায়মানকে জ্ঞান দান করেছিলাম। তারা বলেছিল, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের তাঁর বহু মুমিন বান্দাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।’ (সূরা আন-নামল, আয়াত: ১৫) আল্লাহ তাআলা হজরত দাউদ (আ.)-কে অনেক মুজিজা বা অলৌকিক ক্ষমতা দান করেছিলেন। তিনি লোহা দিয়ে সুন্দর সুন্দর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বানাতেন। হজরত দাউদ (আ.)-এর পুত্র হজরত সোলায়মান (আ.) পিতার রাজত্ব আরও সুবিস্তৃত ও সমৃদ্ধশীল করে তুলেছিলেন। হজরত দাউদ (আ.) বায়তুল মোকাদ্দাসে তাঁর আমলের রাজধানী স্থাপন করেন এবং একটি বিশাল ইবাদতখানা নির্মাণে হাত দেন, যা হজরত সোলায়মান (আ.) কর্তৃক জিনদের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। এভাবে বায়তুল মোকাদ্দাসের পবিত্রতার মর্যাদা বাস্তবরূপ লাভ করে। এরপর হজরত ঈসা (আ.)-এর সময় থেকে তাঁর অনুসারীদের স্বাক্ষর এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির পর থেকে মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মোকাদ্দাস পবিত্র স্থান হিসেবে গণ্য হতে থাকে। কোরআন মজিদে বায়তুল মোকাদ্দাসকে পবিত্র ভূমি বলে উল্লে­খ করা বলা হয়েছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি নির্দিষ্ট করেছেন, তাতে তোমরা প্রবেশ করো এবং পশ্চাদপসরণ কোরো না, তাহলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।’ (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ২১) হজরত দাউদ (আ.) ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। তিনি ছিলেন সুশাসক ও সুবিচারক। জনগণ সব সময় তাঁর কাছ থেকে ন্যায়বিচার পেত। তাঁর বিচারব্যবস্থা ছিল নিখুঁত ও নিরপেক্ষ। তিনি রাজকোষ থেকে কোনো অর্থসম্পদ গ্রহণ করতেন না। তিনি যেমন ছিলেন ন্যায়পরায়ণ ও মানবদরদি, তেমনি ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী। তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং নিজের হাতে লৌহবর্ম তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি আল্লাহর কুদরতে লোহাকে নরম করে এর দ্বারা ইস্পাতের জেরা বা বর্ম তৈরি ও তা বাজারে বিক্রি করে যা আয় করতেন, তা দিয়ে সংসার চালাতেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি নিশ্চয়ই দাউদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এবং আদেশ করেছিলাম, ‘হে পর্বতমালা! তোমরা দাউদের সঙ্গে আমার পবিত্রতা ঘোষণা করো এবং বিহঙ্গকুলকেও, তার জন্য নমনীয় করে দিয়েছিলাম লৌহ; যাতে তুমি পূর্ণ মাপের বর্ম তৈরি করতে পারো এবং বুননে পরিমাণ রক্ষা করতে পারো।’ (সূরা সাবা, আয়াত: ১০-১১) নবী করিম (সা.) শ্রমের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে হজরত দাউদ (আ.)-এর স্বহস্তে উপার্জনের বিষয়টি উল্লেখ করে মানুষকে উৎসাহিত করেছেন, ‘নিজের হাতের কাজ ও শ্রম দ্বারা উপার্জিত খাদ্য খাওয়া অপেক্ষা উত্তম খাদ্য কেউ খেতে পারে না। হজরত দাউদ (আ.) নিজের হাতের শ্রমের উপার্জিত খাবার খেতেন।’ (বুখারি) হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে ‘হজরত দাউদ (আ.) বর্ম তৈরি করতেন, হজরত আদম (আ.) কৃষিকাজ করতেন, হজরত নূহ (আ.) কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন, হজরত ইদ্রিস (আ.) সেলাইয়ের কাজ করতেন এবং হজরত মূসা (আ.) রাখালের কাজ করতেন।’ (মুসতাদরাকে হাকিম) আসমানি কিতাব ‘যাবুর’প্রাপ্ত আল্লাহর নবী হজরত দাউদ (আ.)-এর যুগেও রোজার প্রচলন ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হজরত দাউদ (আ.)-এর রোজা। তিনি এক দিন রোজা রাখতেন এবং এক দিন বিনা রোজায় থাকতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) অর্থাৎ হজরত দাউদ (আ.) অর্ধেক বছর রোজা রাখতেন এবং অর্ধেক বছর বিনা রোজা থাকতেন, তিনি এক দিন অন্তর অন্তর সিয়াম পালন করতেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"রোজা আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ নেয়ামত ",ইসলাম ধর্ম,"রোজাদার ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নিকট এতোটাই মহব্বতের পাত্র যে, সে কিছু চাইলে আল্লাহ তা ফিরিয়ে দেন না। নবীজী বলেন : তিন ব্যক্তির দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না : এক. রোজাদারের দুআ ইফতার পর্যন্ত। দুই. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দুআ। তিন. মজলুমের দুআ। আল্লাহ এ দুআকে মেঘমালার উপরে নিয়ে যান। এর জন্য আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেন। রব বলেন, আমার ইযযতের কসম, বিলম্বে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করব। (জামে তিরমিযী : ৩৫৯৮)। কিয়ামতের দিন রোজাদারের জন্য রোজা নিজে সুপারিশ করবে। হাদিসে এসেছে : কিয়ামতের দিন সিয়াম ও কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ওগো রব! দিবসে আমি তাকে পানাহার ও (বৈধ) জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তার ব্যাপারে আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, রাতে আমি তাকে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তার ব্যাপারে আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। অতঃপর তাদের সুপারিশ কবুল করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ : ৬৬২৬)। রোজাদার হলেন আল্লাহ তা’আলার বিশেষ মেহমান। জান্নাতে প্রবেশের জন্য তার সৌজন্যে বিশেষ তোরণের ব্যবস্থা থাকবে। নবীজী বলেন : জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন তা দিয়ে রোজাদাররা প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, রোজাদাররা কোথায়? তখন তারা আসবে। তারা ছাড়া তা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করবে না। রোজাদাররা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। এরপর আর কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করবে না। (সহীহ বুখারী : ১৮৯৬)। আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : তোমরা সাহরী কর। কেননা সাহরীর খাবারে বরকত রয়েছে। (সহীহ বুখারী : ১৯২৩)। সাহরী করা যেমন মুস্তাহাব তেমনি তা ওয়াক্তের শেষ দিকে করাও উত্তম। অর্থাৎ সতর্কতামূলক সময় হাতে রেখে সুবহে সাদিকের পূর্ব-নিকটবর্তী সময়ে সাহরী করা ভালো। নবীজী বলেন : আমরা নবীগণ এ মর্মে আদিষ্ট হয়েছি যে, সময় হওয়ার সাথে সাথেই ইফতার করব এবং শেষ ওয়াক্তে সাহরী গ্রহণ করব। (আলমুজামুল আওসাত, তবারানী : ১৮৮৪)। সময় হওয়ার সাথে সাথেই ইফতার করা। এতোক্ষণ আল্লাহর হুকুম ছিল খাবে না। এখন সূর্য অস্ত গিয়েছে। এখন তাঁর হুকুম ইফতার করা। তাই আর দেরি নয়, জলদি জলদি ইফতার শুরু করে দিন। পূর্বে উল্লেখ হয়েছে দ্রুত ইফতার করা ছিল নবীগণের বৈশিষ্ট্য। সাহাবায়ে কেরামও দ্রুত ইফতার করতেন। নবী কারীম (সা.) বলেন : মানুষ ততোদিন খায়ের ও কল্যাণের মাঝে থাকবে, যতোদিন তারা সময় হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ইফতার করবে। (সহীহ বুখারী : ১৯৫৭)। পুরো রমজানই রহমত-মাগফিরাতের মাস। তবে কিছু কিছু মুহূর্তে বান্দার প্রতি তা প্রবল বেগে ধাবিত হয়। ইফতারের সময়টিও এমন। তাই এ সময়ের দুআ আল্লাহপাক বিশেষভাবে কবুল করেন। নবীজী বলেন : ইফতারের সময় রোজাদারের অন্তত একটি দুআ এমন, যা ফিরিয়ে দেয়া হয় না। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৭৫৩)। অর্থাৎ কমপক্ষে একটি দুআ অবশ্যই কবুল হয়। সুতরাং এ সময় নিজে দুআ করি, ঘরের নারীদেরও শরীক করি। ইফতারের সময় হাদিস শরীফে এ দুআ পড়ার কথা এসেছে : আয় আল্লাহ! আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই রোজা রেখেছি এবং আপনার রিযিক দিয়েই ইফতার করেছি। (সুনানে আবু দাউদ : ২৩৫৮)। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইফতার গ্রহণ করে এই দুআও পড়তেন : পিপাসা নিবারিত হলো, শিরা-উপশিরা সতেজ হলো। আর আল্লাহ চাহেন তো সওম-এর সওয়াব প্রাপ্তির খাতায় লিপিবদ্ধ হলো। (সুনানে আবু দাউদ : ২৩৫৭)। রোজাদারকে ইফতার করানো অনেক বড় সওয়াবের আমল। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : কেউ যদি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় তাহলে সে ওই রোজাদারের সমান সওয়াব লাভ করবে। আর এতে ওই রোজাদারের সওয়াবে কোনো কম করা হবে না। (জামে তিরমিযী : ৮০৭)।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive ভোরের পাতা,"সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ! ",ইসলাম ধর্ম,"দেশের নাগরিকদের পেনশনব্যবস্থার আওতায় আনতে বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) চালু করছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে আজ থেকেই সবার জন্য সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে মাওলানা শায়খ আহমাদুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট দিয়েছেন। তিনি সেখানে সুদমুক্ত সর্বজনীন পেনশনের দাবি করেছেন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি জানান, পৃথিবীর বহু দেশে অনেক আগে থেকেই সর্বজনীন পেনশন-ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। খুশির খবর হলো, বাংলাদেশেও সর্বজনীন পেনশন চালু হয়েছে। মৌলিকভাবে এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে সরকার ঘোষিত সর্বজনীন পেনশনের যে রূপরেখার কথা আমরা জানি, তা কনভেনশনাল বীমার অবিকল, যা ‘গারার’ ও রিবানির্ভর। অর্থাৎ, একজন নাগরিক নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত নির্ধারিত হারে নিয়মিত অর্থ জমা দেবে, বিপরীতে শেষ বয়সে সরকার তাকে আমৃত্যু পেনশন দেবে। তিনি জানান, নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিয়ে সেই অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার যে চুক্তি—তা সুদের আওতায় পড়ে। এদেশের বেশিরভাগ মুসলমান সুদকে অপছন্দ করে। এ কারণে কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর তুলনায় ইসলামী ব্যাংকসমূহে গ্রহকদের ভিড় বেশি। এছাড়া কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোও গ্রাহক চাহিদার কারণে ইসলামী উইং খুলতে বাধ্য হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা মনে করি, সাধারণ স্কিমের পাশাপাশি সুদমুক্ত একটা স্কিমও চালু করা উচিত। যাতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে এবং সুদমুক্ত স্কিম চালু করা মোটেও কঠিন বিষয় নয়। সরকার আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিলেই এটি সম্ভব। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive যায়যায়দিন,"এক সাহাবিকে নিয়ে ১৬ আয়াত নাজিল হয় ",ইসলাম ধর্ম,"আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) সাহাবিকে নিয়ে কোরআনে ১৬টি আয়াত নাজিল হয়। ঘটনাটা এ রকম। একদিন রাসুল (সা.) কুরাইশ গোত্রের কয়েকজন নেতাকে ইসলাম সম্পর্কে বলছিলেন। সে সময় আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) এসে হাজির হলেন। তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আল্লাহ আপনাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন, তার থেকে কিছু আমাকে শিখিয়ে দেন।’ আল কোরআনে আছে, ‘সে (মুহাম্মদ) ভ্রু কুঁচকে মুখ ফিরিয়ে নিল, কারণ তার কাছে এক অন্ধ এসেছিল। তুমি ওর সম্পর্কে কী জান? সে হয়তো পরিশুদ্ধ হতো বা উপদেশ নিত কিংবা উপদেশ থেকে উপকার পেত? যে নিজেকে বড় ভাবে, তার প্রতি বরং তোমার মনোযোগ! যদি সে নিজেকে পরিশুদ্ধ না করে, তবে তাতে তোমার কোনো দোষ হতো না। অথচ যে কিনা তোমার কাছে ছুটে এল, আর এল ভয়ে ভয়ে, তাকে তুমি অবজ্ঞা করলে! কক্ষনো (তুমি এমন করবে) না, এ এক উপদেশবাণী, যার ইচ্ছা এ গ্রহণ করবে। এ আছে মহান, উচ্চমর্যাদাশীল, পবিত্র কিতাবে. (যা) এমন লিপিকারের হাতে (লেখা) যে সম্মানিত ও পূতচরিত্র।’ (সুরা আবাসা, আয়াত: ১-১৬) রাসুল (সা.) একটু বিরক্ত বোধ করলেন। তবে তাঁর কথায় কোনো গুরুত্ব না দিয়ে কুরাইশ নেতাদের সঙ্গেই কথা চালিয়ে গেলেন। কুরাইশ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে রাসুল (সা.) যখন বাসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই আল্লাহ ওহি নাজিল করলেন। ধর্ম নিয়ে জানার আগ্রহের কারণে আল্লাহ আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)–কে মর্যাদা দিয়ে কোরআনের আয়াত নাজিল করেছেন। এরপর থেকে রাসুল (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)–কে খুব সম্মান করতেন। তিনি এলে ডেকে কাছে বসাতেন, কুশল জিজ্ঞেস করতেন এবং কিছু প্রয়োজন থাকলে তা পূরণ করতেন। ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) ছিলেন অন্ধ। তাঁর বাড়ি ছিল মসজিদ থেকে একটু দূরে। সব সময় তার সাহায্যকারীও ছিল না। এত অসুবিধা সত্ত্বেও তিনি জামাতে নামাজ আদায় করতেন। মদিনায় হিজরতের পর রাসুল (সা.) ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) এবং বিলাল ইবনে রাবাহ (রা.)–কে মুয়াজ্জিন নিয়োগ করেন। বিলাল (রা.) আজান দিতেন, আর ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) দিতেন ইকামত। আবার কখনো উম্মে মাকতুম (রা.) আজান দিতেন, বিলাল (রা.) ইকামত দিতেন। ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) ছিলেন ইসলামের প্রথম পর্বের বিশ্বাসীদের একজন। মক্কার অন্যদের মতো তিনিও কুরাইশদের উৎপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। সেসব জুলুমেও তাঁর ইমান কখনো দুর্বল হয়ে পড়েনি। তিনি এবং মুসয়াব ইবনে উমাইর (রা.) সাহাবিদের মধ্যে সর্বপ্রথম মদিনায় হিজরত করেন। আল্লাহর রাসুল (সা.)–কে তিনি অসম্ভব ভালোবাসতেন। কোরআন শিক্ষার প্রতি ছিল তাঁর প্রবল আগ্রহ। মদিনাবাসীকে তিনি কোরআন শেখাতেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"তারাবিতে আজ: ৭ গনিমতের সম্পদ বণ্টননীতির বর্ণনা ও অবিশ্বাসীদের বৈশিষ্ট্য",ইসলাম ধর্ম,"আজ খতমে তারাবিহর সপ্তম দিন। আজ থেকে তারাবিহতে প্রতিদিন এক পারা করে পড়া হবে। আজ কোরআনের সুরা আনফালের ৪১ থেকে সুরা তওবার ৯৩ আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে; পারা হিসেবে কোরআনের দশম পারা। এই অংশে মুসলমানদের বিজয়ে আল্লাহর সাহায্য, বন্ধু গ্রহণের নীতি, আনসার, মুহাজির এবং মুজাহিদদের পুরস্কার ও মর্যাদা, জিহাদ, বদর যুদ্ধের ঘটনা ও শিক্ষা, যুদ্ধবন্দী, গনিমত, জাতীয় জীবনে উত্থান-পতনের মূলনীতি, মক্কা বিজয়, হুনাইন যুদ্ধ, তাবুক যুদ্ধ, তওবা, মুশরিকদের কাবাঘর তাওয়াফে নিষেধাজ্ঞা, কাফেরদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল, পূর্ববর্তী জাতিদের ভয়াবহ পরিণাম, মতানৈক্য, অহংকার পরিহারসহ নানা বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। গনিমতের সম্পদ বণ্টননীতি অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর যে সম্পদ পাওয়া যায়, সেটা হলো গনিমত। আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য এই গনিমতের সম্পদ হালাল করে দিয়েছেন। আগের উম্মতের জন্য তা হালাল ছিল না; যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অবিশ্বাসীদের কাছ থেকে পাওয়া সব সম্পদ এক জায়গায় জমা করলে আসমান থেকে আগুন এসে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিত। মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনব্যবস্থায় যুদ্ধলব্ধ সব সম্পদ রাষ্ট্রের কাছে জমা দিতে হয়। কোনো সৈন্যের জন্য তা থেকে বণ্টনের আগে কোনো বস্তু রেখে দেওয়ার অনুমতি নেই। রাষ্ট্রপ্রধান সেই সম্পদ বণ্টন করবেন। তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, যুদ্ধলব্ধ সব সম্পদ পাঁচ ভাগে ভাগ করা হবে। এর চার ভাগ যোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। আর বাকি এক–পঞ্চমাংশ পাঁচ ভাগে ভাগ করা হবে। প্রথম ভাগ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের জন্য। এই অংশ মুসলিমদের সাধারণ স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যয় হবে। দ্বিতীয় ভাগ মুহাম্মদ (সা.)-এর স্বজনদের জন্য নির্ধারিত। বনু হাশেম ও বনু মুত্তালিব। তৃতীয় ভাগ এতিমদের জন্য সুনির্দিষ্ট। চতুর্থ ভাগ ফকির ও মিসকিনদের জন্য এবং পঞ্চম ভাগ মুসাফিরদের জন্য। আজকের তারাবিহর শুরুতে গনিমতের সম্পদে অংশীদারত্ব এবং বণ্টনের নীতিনির্ধারণ বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন মানুষকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে ধৈর্য নিয়ে দীর্ঘ সাধনা চালিয়ে যেতে হয়। ধৈর্য ধারণ করা ছাড়া মানুষ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। কখনো কোনো বিপদে পড়লেও ধৈর্য ধারণ করতে হয়। বান্দার প্রতি মহান সৃষ্টিকর্তার নির্দেশনাও এটাই। ধৈর্য ধারণ করা নবী-রাসুলদের গুণ। প্রায় নবী-রাসুলই অবিশ্বাসীদের কারণে লাঞ্ছিত হয়েছেন। শরীরের রক্ত ঝরিয়েছেন। মাতৃভূমি ছেড়েছেন। কিন্তু ধৈর্যহারা হননি। ধৈর্য ধরে আল্লাহর সাহায্য কামনা করেছেন। আল্লাহ প্রতিদান দিয়েছেন। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের প্রতিদান দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রয়েছেন ধৈর্যশীলদের সঙ্গে।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ৪৬) যে সুরার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ নেই কোরআনের নবম সুরা তওবার আয়াত সংখ্যা ১২৯। এটি মদিনায় অবতীর্ণ। এটিকে ‘সুরা বারাআত’ও বলা হয়। বারাআত অর্থ সম্পর্ক ছিন্ন করা। এতে অবিশ্বাসীদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়িত্বমুক্তির কথা উল্লেখ রয়েছে। সুরা মুমিন বলার কারণ হলো, এ সুরায় মুমিনদের তওবা কবুল হওয়ার কথা আলাপ রয়েছে। এ সুরার ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য হলো এর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লেখা হয়নি। অন্যান্য সুরা নাজিলের সময় ‘বিসমিল্লাহ’সহ নাজিল হতো, যাতে বোঝা যেত এই সুরা শেষ হয়ে আরেক সুরা নাজিল হচ্ছে। এই সুরা নাজিল হওয়ার সময়, ‘বিসমিল্লাহ’সহ নাজিল হয়নি। নবীজি (সা.) ‘বিসমিল্লাহ’ লেখার নির্দেশ দেননি। (তাফসিরে মারেফুল কোরআন, পৃষ্ঠা ৫৫২) সাহাবিদের আত্মত্যাগের অনন্য নজির ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের নবম হিজরি তখন। মদিনায় খেজুর পাকার মৌসুম চলছে। সময়মতো খেজুর ঘরে না তুলতে পারলে মুশকিলে পড়তে হবে সবার। খেজুরের কাঁদিগুলো ভারে নুইয়ে পড়েছে। মদিনায় খাদ্যাভাবও দেখা দিয়েছে সে সময়। তীব্র গরমে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এর মধ্যে রোমানদের হাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দূত হারেস বিন উমায়ের (রা.)-কে হত্যার মধ্য দিয়ে তাবুক যুদ্ধের ডঙ্কা বেজে ওঠে। নবীজি (সা.) দূতের মাধ্যমে জানলেন, ‘মুতা যুদ্ধে’র প্রতিশোধ নিতে পরাশক্তি রোম চূড়ান্ত ফয়সালাকারী একটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা বিশাল বাহিনী মোতায়েন করেছে। মদিনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নবীজি (সা.) মনস্থির করলেন, হিরাক্লিয়াসের আক্রমণের আগে তিনি আক্রমণ করবেন। তাবুক প্রান্তরে যাবেন। মুসলমানদের তৈরি হতে বললেন তিনি। এর আগে এমন রাজকীয় বাহিনীর মুখোমুখি তাঁরা কোনো দিন হননি। মদিনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধও করেননি। মদিনা থেকে এটি ৬৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তাবুক মদিনা ও দামেস্কর মাঝখানে অবস্থিত। সাহাবিরা নবীজি (সা.)–এর কাছে নিজেদের আত্মসমর্পণ করলেন। যুদ্ধের বাইয়াত নেন। অনেকে যুদ্ধে যেতে চাইলেন না। রাসুল (সা.) ৩০ হাজার যোদ্ধা সাহাবির কাফেলা নিয়ে চললেন তাবুক প্রান্তরে। হিরাক্লিয়াস মুসলমানদের এমন দুঃসাহসিক অভিযানের সংবাদ পেয়ে ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যায়। সুরা তওবার ৩৯ নম্বর আয়াতে তাবুক যুদ্ধের বয়ান রয়েছে। কপটদের ১১ বৈশিষ্ট্য যার ভেতরের অবস্থা প্রকাশ্যের বিপরীত, সে কপট। আল্লাহ কপটদের অপছন্দ করেন। তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট শাস্তি। আল্লাহ তাআলা সুরা তওবার ৪২ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াতে কপটদের কিছু বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা করেছেন। যেমন: মিথ্যা অজুহাত পেশ করে, মিথ্যা শপথকারী, কৃপণ, টালবাহানাকারী, নবীজি (সা.)–কে গালমন্দকারী, হাস্যকর আপত্তির কথা বলে জিহাদে না যাওয়ার অনুমতি আদায় করে, সমাজে অনিষ্ট ছড়ায়, মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ায় ও মুসলমানদের বিপদে আনন্দ প্রকাশ করে, সম্পদ পেলে আনন্দ পায়, না পেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে, আল্লাহর মহব্বত; আল্লাহর জিকির ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ শূন্য অন্তর এবং একে অপরকে মন্দ কাজের আদেশ দেয়, ভালো কাজ থেকে নিষেধ করে। যাদের জাকাত দেওয়া যাবে জাকাত দেওয়ার খাত হলো আটটি। যথা: এক. ফকির, দুই. মিসকিন, তিন. জাকাত সংগ্রহে নিয়োজিত কর্মচারী, চার. ইসলামের দিকে চিত্ত আকর্ষণের জন্য জাকাত দেওয়া, পাঁচ. দাসমুক্তির জন্য, ছয়. ঋণগ্রস্তের জন্য, সাত. আল্লাহর পথে যুদ্ধকারীর জন্য এবং আট. মুসাফির অর্থাৎ সফর অবস্থায় অভাবগ্রস্ত মানুষ। (সুরা তওবা, আয়াত: ৬০)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"আমরা বাড়ি ছাড়ব না মারব অথবা মরব ",ইসলাম ধর্ম,"চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজা খালি করার ইসরাইলি নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, তারা তাদের মাতৃভূমি ত্যাগ করবে না। তারা হয় শত্রুদের পরাজিত করবেন, কিংবা নিজের বাড়িতেই মরবেন। ইসরাইল উত্তর গাজার ১১ লাখ বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভূখ-ের দক্ষিঞ্চালয় ছেড়ে যেতে বলার প্রেক্ষাপটে হামাস এই মন্তব্য করল। হামাসের রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যুরোর প্রধান বাসেম নাইম বলেন, ‘আমাদের কাছে মাত্র দুটি বিকল্প আছে : হয় এই দখলদারদের পরাজিত করা কিংবা আমাদের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা চলে যাব না। আমরা আরেকটি নাকবার পুনরাবৃত্তি ঘটতে প্রস্তুত নই।’ তিনি এ দিয়ে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় নৃশংসতার মুখে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুত করার কথা উল্লেখ করেন। নাইম বলেন, গত শনিবারের হামলাটি ছিল ১৭ বছর ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখার ফল। তিনি বলেন, আমরা নীরবে মারা যাচ্ছি। আমরা উন্মুক্ত-কারাগার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের কণ্ঠ পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আমরা যা করছি, তা আত্মরক্ষামূলক কাজ। আমরা আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। আমরা এই দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি পেতে চাই। এটা হলো এই অঞ্চলের সকল সমস্যার মূল কারণ। উত্তর গাজার ১১ লাখ বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভূখ-ের দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে যেতে বলেছে ইসরাইল। এদিকে মানবিক কারণে জাতিসংঘ এই আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার এএফপি’কে একথা বলেছেন। গাজায় কর্মরত জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তাদের ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে ‘ওয়াদি গাজার উত্তরে গাজার সমগ্র জনসংখ্যাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ গাজায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।’ জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এএফপি’কে বলেছেন, এই এলাকায় জনসংখ্যা প্রায় ১১ লাখ । ডুজারিক বলেছেন, একই আদেশ স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ক্লিনিকসহ জাতিসঙ্ঘের সমস্ত কর্মী এবং জাতিসঙ্ঘের স্থাপনাগুলোতে আশ্রয়প্রাপ্তদের জন্যও প্রযোজ্য হবে। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত ৪ লাখ ২৩ হাজার মানুষের মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি লোককে আশ্রয় দিচ্ছে। ওয়াদি গাজার উত্তরে বর্তমানে কতজন লোক অবস্থান করছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। ডুজারিক বলেন, ‘বিধ্বংসী মানবিক পরিণতি ছাড়া এই ধরনের স্থানান্তর করা অসম্ভব বলে মনে করে জাতিসংঘ।’ ‘একটি ট্র্যাজেডিকে একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে রূপান্তরিত হওয়া এড়াতে এই ধরনের যে কোনো আদেশ প্রত্যাহরে জাতিসংঘ দৃঢ় আবেদন জানায়। ইতিমধ্যেই সেখানে ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’ গত শনিবার হামাসের হামলায় ১,২০০ জনেরও বেশি ইসরাইলি মারা যায় এবং প্রায় ১৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। ইসরাইল প্রতিশোধ নিতে ২৩ লাখ লোকের একটি ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় ভয়াবহ বিমান ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করেছে। এতে ভবনগুলো মাটির সাথে মিশে যায়। এতে এই পর্যন্ত ইসরাইল ১,৪০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"মসজিদে নববিতে জায়গা মিলবে কি না, জানাবে অ্যাপ ",ইসলাম ধর্ম,"মদিনার মসজিদে নববিতে নামাজের জায়গা মিলবে কি না, তা মুসল্লিদের আগেই জানাতে নতুন অ্যাপ চালু করেছে সৌদি আরব। মসজিদে নববির ‘স্ট্যাটাস অব প্রেয়ার প্লেসেস’ নামে এই অ্যাপ মসজিদে যাওয়ার আগে সেখানে নামাজের জায়গায় বাড়তি ভিড় এড়াতে, স্থান সংকুলান সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাবে। মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে নামাজের জায়গায় যাওয়ার নির্দেশনা দিতে অ্যাপটি চালু করেছে। অ্যাপ ছাড়াও এই ঠিকানার (https://eserv.wmn.gov.sa/e-services/prayers_map/?lang=en) ওয়েবসাইটে যেতে হবে। আরবি, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় এই অ্যাপ পাওয়া যাবে। নামাজের সময় মসজিদের বিভিন্ন অংশে ধারণক্ষমতার অবস্থা বোঝাতে অ্যাপে বিভিন্ন রং ব্যবহার করা হবে। সবুজ রং মানে জায়গাটি খালি আছে; হলুদ মানে ভিড় আছে; গোলাপি মানে মানুষে পূর্ণ; ধূসর মানে হলো সেখানে যাওয়া যাবে না। এই অ্যাপ পরিষেবার মাধ্যমে মুসল্লিরা সহজে মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন এবং মসজিদ থেকে বের হতে পারবেন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive প্রথম আলো,"অনুপম তওবার প্রতিফলন ",ইসলাম ধর্ম,"বুরাইদাহ (রা.)-এর বরাতে তার পিতা বর্ণনা থেকে পাওয়া এই হাদিস। মাইয ইবনু মালিক আসলামী নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! নিশ্চয়ই আমি আমার আত্মার ওপর জুলুম করেছি, অর্থাৎ ব্যাভিচার করেছি। আমি চাই যে আপনি আমাকে পবিত্র করবেন। তখন তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। পর দিন সে আবার নবী (সা.)–এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি ব্যাভিচার করেছি। এবারও তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সম্প্রদায়ের কাছে একজন লোককে পাঠালেন। লোকটি সেখানে গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি মনে করেন যে তার মস্তিষ্ক–বিকৃতি ঘটেছে? সে মন্দ কাজে লিপ্ত হয়েছে? জবাবে তারা বলল, আমরা তো তার মস্তিষ্কের বিকৃতি সম্পর্কে কোনো কিছু জানি না। আমরা জানি যে সে সম্পূর্ণ সুস্থ প্রকৃতির।এরপর মাইয তৃতীয়বার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এল। তখন তিনি আবারও একজন লোককে তার গোত্রের কাছে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠালেন। তখনো তাঁরা তাঁকে জানালেন যে আমরা তার সম্পর্কে খারাপ কোনো কিছু জানি না এবং তার মস্তিষ্কের কোনো বিকৃতি ঘটেনি। এরপর যখন চতুর্থবার সে এল, তখন তার জন্য একটি গর্ত খোঁড়া হলো। নবী (সা.) তাকে (ব্যভিচারের শাস্তি প্রদানের) নির্দেশ প্রদান করলেন। সুতরাং তার ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হলো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর গামিদী এক নারী এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি ব্যাভিচার করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে পবিত্র করুন। তখন নবী (সা.) তাকে ফিরিয়ে দিলেন।পর দিন আবার নারী এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আপনি কেন আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আপনি সম্ভবত আমাকে ওইভাবে ফিরিয়ে দিতে চান, যেমনভাবে আপনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মাইযকে? আল্লাহর শপথ করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি গর্ভবতী। তখন তিনি বললেন, তুমি যদি ফিরে যেতে না চাও, তবে আপাতত এখনকার মতো চলে যাও এবং প্রসবকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করো। এরপর যখন সে সন্তান প্রসব করল, তখন ভূমিষ্ঠ সন্তানকে এক টুকরা কাপড়ের মধ্যে নিয়ে তাঁর কাছে এল এবং বলল, এ সন্তান আমি প্রসব করেছি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, যাও তাকে (সন্তানকে) দুধপান করাও। দুধপান করানোর সময় পার হলে পরে এসো। এরপর যখন তার দুধপান করানোর সময় শেষ হলো, তখন ওই নারী শিশুসন্তানটি নিয়ে তাঁর কাছে আবার এল এমন অবস্থায় যে শিশুটির হাতে এক টুকরা রুটি ছিল। এরপর বলল, হে আল্লাহর নবী! এই তো সেই শিশু, যাকে আমি দুধপান করানোর কাজ শেষ করেছি। সে এখন খাবার খায়। শিশুসন্তানটিকে তিনি একজন মুসলোনকে প্রদান করলেন। এরপর তাকে (ব্যভিচারের শাস্তি) দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। নারীর বুক পর্যন্ত গর্ত খনন করানো হলো; এরপর জনগণকে (তার প্রতি পাথর নিক্ষেপের) নির্দেশ দিলেন। তারা তাকে পাথর মারতে শুরু করল।খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) একটি পাথর নিয়ে অগ্রসর হলেন এবং নারীর মাথায় নিক্ষেপ করলেন, তাতে রক্ত ছিটকে পড়ল খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-এর মুখমণ্ডলে। তখন তিনি নারীকে গালি দিলেন। নবী (সা.) তাঁর গালি শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, সাবধান! হে খালিদ! সে মহান আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন, জেনে রেখো! নিশ্চয়ই সে এমন তওবা করেছে, যদি কোনো ‘হক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক বিনষ্টকারী ব্যক্তি এমন তওবা করত, তবে তারও ক্ষমা হয়ে যেত। এরপর তার জানাজার নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। তিনি তার জানাজার নামাজ আদায় করলেন। এরপর তাকে দাফন করা হলো।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive Dhaka Tribune,"‘এপ্রিল ফুল’ এর সঙ্গে কি আসলেই মুসলমানদের ট্র্যাজেডি জড়িত? ",ইসলাম ধর্ম,"ইউরোপের দেশগুলোতে এপ্রিল মাসের প্রথম দিনটি বেশ ঘটা করে পালন করা হয়। এদিনে একে অপরকে চমকে দিয়ে “বোকা বানাতে” চায়। এ দিনটিকে তাই বলা হয় “অল ফুলস ডে”। পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেকে এই দিনে কিছুটা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে। অন্যথায় কারো না কারো কাছে তাকে বোকা হিসেবে পরিচিত হতে হবে এবং এটি নিয়ে হাস্যরস তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে ভুয়া ও ভুল সংবাদ ছাপায়। পরদিন অবশ্য সেটার সংশোধনী দিয়ে জানিয়ে দেয় খবরটা আসলে এপ্রিল ফুল ছিল। একইসঙ্গে এইদিনে পরিবারের ছোটরা সাধারণত বড়দের সঙ্গে নানাভাবে মজা করে বোকা বানানোর চেষ্টা করে। আবার বন্ধু বা সহকর্মীরাও একে অন্যের সঙ্গে মজা করে। তবে যাকে বোকা বানানো হয়, তাকে শেষে সবাই মিলে চিৎকার করে জানিয়ে দেয় “এপ্রিল ফুল”। যদিও বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে এই দিবসের প্রচলন খুব একটা দেখা যায় না। বাংলাদেশে একটা ধারণা প্রচলিত রযেছে যে, এপ্রিল ফুলের সঙ্গে মুসলমানদের বোকা বানানোর ইতিহাস জড়িত। মুসলমানদের ট্র্যাজেডি অনেকেই মনে করেন ১৫শতকের শেষ দিকে স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটান রাজা ফার্দিনান্দ ও রানি ইসাবেলা। তারা স্পেনের মুসলিম অধ্যুষিত গ্রানাডায় হামলা করেন এবং পরাজিত অসংখ্য মুসলিম নারী, পুরুষ ও শিশুকে মসজিদে আটকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারেন। আর সেদিনটি ছিল পহেলা এপ্রিল। কিন্তু এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই বলে জানিযেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান। তিনি যুক্তারাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ""এটি আমরাও শুনেছি এবং এটি একরকম আমাদের বিশ্বাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমি ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে যখন স্পেনের ইতিহাস পড়েছি, দেখেছি যে সেসময় গ্রানাডার শাসক ছিলেন দ্বাদশ মোহাম্মদ। তার কাছ থেকেই ফার্দিনান্দ ও ইসাবেলা গ্রানাডা দখল করে নেন। আর এ ঘটনাটি ঘটেছিল জানুয়ারি মাসের ২ তারিখে। কোন কোন সূত্র বলে জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ। এবং এটি দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠনিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে হয়েছিল।"" তিনি জানান, সেই সময়ে ফার্দিনান্দ ও ইসাবেলা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করেছে, ইহুদিদের ওপরও করেছে, কিন্তু এপ্রিল ফুলের যে ট্র্যাজেডির কথা বলা হয় সেটার সঙ্গে তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ""ইতিহাসে আমরা যে বইগুলো পড়েছি সেখানে কোথাও ঐ বর্ণনা পাইনি। আমাদের কাছে মনে হয় এই ঘটনা নিয়ে একটা মিথ তৈরি করা হয়েছে, যার সঙ্গে কোনো ঐতিহাসিক সংযোগ নেই।"" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, “অন্যদিকে গূরুত্ব দিয়ে অবশ্য মুসলমানরা এটি উদযাপন নাও করতে পারে। কারণ ইসলাম ধর্ম মিথ্যা বলা, প্রতারিত করা বা কাউকে বোকা বানানো সমর্থন করে না।” ক্যালেন্ডার বদল কিন্তু এই এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি কীভাবে? কেনইবা এর নাম এপ্রিল ফুল হল? মজার ব্যাপার হল এই দিনটির ইতিহাসের ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায় না। অনেকগুলো মত এ ব্যাপারে প্রচলিত আছে। অনেকে বিশ্বাস করেন, মুসলমানের জন্য এ দিনটি আসলে ট্র্যাজেডির। আসলেই কি তাই? ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ব্রিটানিকা, হিস্ট্রিসহ বেশ কিছু ওয়েবসাইট বলছে এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি হয় ফ্রান্সে। আর সেটা ১৫০০ শতকে, যখন ক্যালেন্ডার বদল ঘটে। তার আগে পর্যন্ত জুলিয়াস সিজার প্রবর্তিত জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার হয়ে আসছিল। যে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঋতুর সঙ্গে মিল রেখে নতুন বছর শুরু হতো মার্চের শেষে বা এপ্রিলের শুরুর দিকে। কিন্তু ফ্রান্স প্রথম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে। যে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পহেলা জানুয়ারি ধরা হয় বছরের প্রথম দিন। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই সেই খবর সব জায়গায় পৌঁছাতে আরো বেশ কিছুদিন লেগে যায়। অনেকে আবার সিদ্ধান্ত নেয় তারা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ীই চলবেন। ফলে পহেলা জানুয়ারির পরিবর্তে অনেকেই আগের মতো মার্চের শেষে বা এপ্রিলের শুরুতে নতুন বছর উদযাপন করতে থাকে। আর সেই বিষয়টি বেশ হাস্যরস ও আনন্দের খোরাক হয়ে দাঁড়ায়। ফলে যারা এরই মধ্যে পহেলা জানুয়ারি নতুন বছর উদযাপন করছে তারা তখন তাদের “এপ্রিল ফুলস” বলে ডাকতে থাকে। ফ্রান্সে বা অন্যান্য দেশে ফ্রেঞ্চভাষী মানুষদের মাঝে এই দিনটি অবশ্য “এপ্রিল ফিশ” হিসেবেই বেশি পরিচিত। এদিন যাকে বোকা বানানো হয় তার পেছনে একটা কাগজের মাছ এমনভাগে লাগিয়ে দেওয়া হয় যাতে সে বুঝতে না পারে। ব্রিটিশদের মতে ইংরেজি সাহিত্যের জনক জেফরি চসারের বিখ্যাত দ্য ক্যান্টারবুরি টেলস বই থেকে এই এপ্রিল ফুল ব্যাপারটি এসেছে। ইয়ের নানস প্রিস্টস টেল গল্পে তিনি বর্ণনা করেন মার্চ মাসের ৩২তম দিনে একটা মোরগকে বোকা বানায় শেয়াল। কিন্তু যেহেতু মার্চ মাস ৩১ দিনের, তাই তিনি আসলে ৩২তম দিন বলতে পহেলা এপ্রিলকেই বুঝিয়েছেন বলে ধরে নেন অনেকে। আবহাওয়া বোকা বানায় ভারনাল ইকুইনক্স-অর্থাৎ যেদিন পৃথিবীর দিন ও রাত সমান হয়। সাধারণত মার্চের ২০-২১ তারিখে এমনটা হয়ে থাকে। আর নর্দান হেমিস্ফেয়ার অঞ্চলে এটি হল বসন্তের আগমনী হিসেবে দেখা হয়। আর এ সময়টায় আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। তাই আগে থেকে কিছু অনুমান করা যায় না। অর্থাৎ আবহাওয়া মানুষকে বোকা বানায়। আর সে থেকেই এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি বলে মনে করেন অনেক ইতিহাসবিদ। প্রাচীন রোমের 'হিলারিয়া' ইতিহাসবিদরা প্রাচীন রোমের সঙ্গেও এপ্রিল ফুলের যোগসূত্র দেখে থাকেন। মার্চের শেষদিকে সেখানে দেব-দেবীদের মাতা খ্যাত সাইবেলের অনুসারীরা একটি উৎসব পালন করতেন যার নাম ছিল হিলারিয়া। লাতিন এই শব্দের অর্থ হল আনন্দদায়ক। এদিনে মানুষ বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে অন্যদের সাথে মজায় লিপ্ত হত। আর সেখান থেকেই এপ্রিল ফুলের শুরু বলে অনুমান অনেকের।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative প্রথম আলো,"ইসলামে সমবায়ের ওপর যে কারণে জোর দেওয়া হয়েছে ",ইসলাম ধর্ম,"সমবায়ের ইতিহাস প্রায় মানবসভ্যতার ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের উন্নতিতে সমবায়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সমবায়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এক বন্ধনে আবদ্ধ হয়। যার ফলে যেকোনো বড় কাজ অতি সহজে সম্পাদন করা যায়। সমবায়ের মূল কথা সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সহযোগিতা। সমবায় জনগণকে সংঘবদ্ধ করার একটি বড় মাধ্যম। শুধু ব্যক্তির আত্মপ্রতিষ্ঠা নয়, বরং ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ইসলামের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে সমবায় একটি সহায়ক পন্থা, যার মাধ্যমে অর্জিত হবে বৃহত্তর মানবকল্যাণ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতে, ‘সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের ব্যক্তিগণ সম-অধিকার ও দায়িত্বের ভিত্তিতে যে সংস্থা গড়ে তোলে, তাকে সমবায় সমিতি বলে।’ কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রয়াসই সমবায়। সমবায় সমিতির বহুবিধ উদ্দেশ্য রয়েছে। যেমন দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জন, আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন, বড় বিনিয়োগের জন্য মূলধন সৃষ্টি, নৈতিক শিক্ষা, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, সামাজিক উন্নয়ন, মধ্যস্বত্বভোগীদের উৎখাত, সেবার মানসিকতা, সামাজিক বন্ধন, সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করা, সঞ্চয়ী করে তোলা, পরামর্শভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থাপনা, আইনগত সত্তা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি। সমবায় সমিতির মূল লক্ষ্য হলো ‘দরদি-সমাজ গঠনে অংশগ্রহণ করা এবং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় দূরীভূত করা।’ সমবায়ের মাধ্যমে একে অপরকে সহযোগিতা করে সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কল্যাণ সাধন ইসলামের অন্যতম দর্শন। সমবায়ের মাধ্যমে সংকটকালে আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যের বিপদে এগিয়ে যাওয়া যায়। একজনের বিপদাপদে যখন অন্যজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তখন তার জন্য নির্ধারিত হয় বিরল মর্যাদা এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে বলেন, ‘সৎকর্ম ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যকে সাহায্য করবে না। আল্লাহকে ভয় করবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।’ (সুরা-৫ মায়িদা, আয়াত: ২) ‘নিশ্চয়ই যারা স্বীয় দ্বীনকে খণ্ডবিখণ্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সঙ্গে আপনার কোনো সম্পর্ক নেই।’ (সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১৫৯) বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তরুণ বয়সে ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সেবাধর্মী সমবায় সংঘ গঠন করে সমাজের কল্যাণে কাজ করেন। এই সমবায়ের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি ছিল সমাজ থেকে অশান্তি ও অসংগতি দূর করা, নাগরিক ও অভ্যাগতদের জীবন-সম্পদ ও মানসম্মান রক্ষার্থে সদা সচেষ্ট থাকা, বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে সম্প্রীতি ও সদ্ভাব স্থাপন করা, অত্যাচারীর হাত থেকে অত্যাচারিত ব্যক্তিদের রক্ষা করা এবং অত্যাচারীকে প্রতিহত করা। এই সমবায় পদ্ধতি একটি অনুকরণীয় আদর্শ। ইসলামের বিধানাবলি লক্ষ করলে দেখা যায়, এর প্রতিটি বিধান সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠার অনুকূল। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ আদায়, শুক্রবারে জুমার জামাত, দুই ঈদের জামাত, হজের মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিম সম্মেলন যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ঐক্য বিনষ্টকারী বিষয়গুলো—হিংসা, বিদ্বেষ, শত্রুতা, দ্বন্দ্ব-কলহ, গিবত, অপবাদ, নিন্দাবাদ, অবজ্ঞা, মন্দ ধারণা পোষণ করা, অধীন ব্যক্তিদের কষ্ট দেওয়া, বংশের গৌরব করা, অপরের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা, ঝগড়াবিবাদ, পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদি সম্পূর্ণ হারাম করা হয়েছে। (সুরা-১০৪ হুমাজাহ, আয়াত: ১-৯) এর বিপরীতে ভ্রাতৃত্ব, সহানুভূতি, ভালোবাসা, পরোপকার, সদুপদেশ, বিপদ-আপদে সাহায্য, সহমর্মিতা, সহাবস্থান, অপরকে অগ্রাধিকার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা, মেহমান, প্রতিবেশী, এতিম, গরিব-মিসকিন, নারীদের অধিকার সুরক্ষা, বড়দের প্রতি সম্মান, ছোটদের প্রতি স্নেহ, রোগীর সেবা, পরস্পরের কল্যাণ কামনা ইত্যাদিকে ইবাদত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সমবায়ের মাধ্যমে সংকটকালে আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যের বিপদে এগিয়ে যাওয়া যায়। একজনের বিপদাপদে যখন অন্যজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তখন তার জন্য নির্ধারিত হয় বিরল মর্যাদা। কাউকে ভুল পথে চলতে দেখলে সমবায়ের মাধ্যমে তাকে সতর্ক করা যায়। তাকে কোনো অপকর্মে লিপ্ত দেখে তাকে দূরে ঠেলে দিয়ে নয়; বরং তার সমব্যথী হয়ে সে দোষ থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা যায়।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"গাজার গণকবরে অন্তত ২০ জনকে জীবন্ত দাফনের অভিযোগ তদন্তে বিশ্বজুড়ে চাপ বাড়ছে",ইসলাম ধর্ম,"যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নাসের ও আল শিফা হাসপাতালে গণকবরে শত শত লাশ পাওয়ার ঘটনায় একটি স্বাধীন তদন্তের জন্য জাতিসংঘের আহŸানকে সমর্থন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। খান ইউনিসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান ইয়েমেন আবু সোলায়মান জানিয়েছেন, গাজার গণকবর থেকে ৩৯২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই মরদেহে মধ্যে মাত্র ৬৫টির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৮৫ শতাংশ লাশই অজ্ঞাত। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার দুটি প্রধান হাসপাতালে পাওয়া গণকবরের ‘স্পষ্ট, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের’ আহŸান জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরাইলি সেনারা এই হাসপাতাল দুটিতে অভিযান চালিয়েছিলেন। মঙ্গলবার জাতিসংঘ এ আহŸান জানায়। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বস্ত তদন্তকারীদের অবশ্যই স্থানগুলোয় প্রবেশাধিকার থাকতে হবে। গাজায় প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ইইউ মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো বলেছেন, ‘এটি এমন কিছু যা আমাদের সমস্ত সন্দেহ এবং সমস্ত পরিস্থিতির মধ্যে একটি স্বাধীন তদন্তের আহŸান জানাতে বাধ্য করে, কারণ প্রকৃতপক্ষে এটি এমন ধারণা তৈরি করে যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।’ এর আগে মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, গাজা সিটির শিফা মেডিকেল সেন্টার ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল ধ্বংস এবং ইসরাইলিরা চলে যাওয়ার পর ওই স্থাপনার আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবরে তিনি ‘আতঙ্কিত’। এ হত্যাকাÐের স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, দায়মুক্তির বিদ্যমান পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে এতে আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীন হাসপাতালগুলো বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী। আর যুদ্ধে অংশ নিতে অক্ষম এমন বেসামরিক নাগরিক, বন্দী ও অন্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধ। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল হাসপাতালগুলোয় গণকবরের খবরকে ‘অবিশ্বাস্যভাবে উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে ইসরাইল সরকারের কাছে তথ্য চেয়েছেন। এদিকে, গাজার গণকবরে অন্তত ২০ জনকে জীবন্ত দাফন করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত লাশের নমুনা দেখে গতকাল এমনটাই দাবি করেছেন ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সদস্য মোহাম্মদ মুগির। তিনি বলেছেন, গণকবর থেকে অন্তত ১০টি লাশ হাত বাধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদেরকে বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামসহ মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। মুগির মনে করছেন, সম্ভবত তাদেরকে জীবন্ত অবস্থায় গণকবর দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অন্তত ২০টি লাশের ময়না তদন্ত করা দরকার। কারণ আমাদের মনে হচ্ছে তাদেরকে জীবন্ত দাফন করা হয়েছে। সূত্র : আল-জাজিরা।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Negative বাংলাদেশ প্রতিদিন,হজের জন্য ১৩ দিনে ৮২৪ জনের নিবন্ধন,ইসলাম ধর্ম,"আগামী বছর পবিত্র হজে যেতে ইচ্ছুকদের জন্য চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য গত ১৫ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এই ১৩ দিনে নিবন্ধন করেছেন ৮২৪ জন। হজযাত্রীদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত পোর্টাল থেকে পাওয়া তথ্য মতে, আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১৩ দিনে হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন ৮২৪ জন। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ২৯৬ জন আর বেসরকারি পর্যায়ে ৫২৮ জন। বাংলাদেশ থেকে আগামী বছর হজ করতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি কোটায় ১ লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন। গতবারের তুলনায় এ বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার আসন বেশি নিবন্ধন করার সুযোগ থাকছে। এবার সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হবে। বিশেষ হজ প্যাকেজে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ হবে। অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হাব। প্রথম প্যাকেজের (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Neutral ভোরের কাগজ,"বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় চেতনা ",অন্যান্য,"বাংলাদেশ বিশ্বের এশিয়া মহাদেশ ও ভারতীয় উপমহাদেশভুক্ত একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম মুসলিম রাষ্ট্র। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে মরুময় আরবে ইতিহাসের ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ তথা জেহালত বা অজ্ঞতার অন্ধকার যুগে বিশ্বমানবতার সামগ্রিক শান্তি, নিরাপত্তা ও মুক্তির লক্ষ্যে পবিত্র ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। পরবর্তী এক শতকের মধ্যেই তৎকালীন বঙ্গীয় অঞ্চল ইসলামের সুমহান বাণী বাহকদের পদধূলিতে ধন্য হয় বলে ঐতিহাসিক তথ্য-প্রমাণাদি রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আরব, পারস্য ও তুর্কি থেকে ইসলাম প্রচারের মহান ব্রত নিয়ে সুফিয়ায়ে কেরাম এতদাঞ্চলে আগমন করেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫ খ্রি.)-এর পূর্ব পুরুষগণও সুদূর ইরাক থেকে এদেশে এসেছিলেন ইসলাম প্রচারের কাজে; দরবেশ শেখ আউয়াল (রহ.) ছিলেন তার ঊর্ধ্বতন বংশধর। এছাড়া ‘শেখ’ কথাটিও ইসলামেরই প্রতিনিধিত্ব করে; কেননা যারা শুধু ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এতদাঞ্চলে এসেছিলেন তারাই ‘শেখ’ হিসেবে অভিহিত। সুতরাং আমরা দেখি নাম, উপাধি ও বংশপরম্পরাগত ঐতিহ্যের দিক থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু কথায়-কাজে, আচার-আচরণে ও মনে-প্রাণে অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় চেতনার একজন খাঁটি মুসলিম ছিলেন। নিজ ধর্মের প্রতি আনুগত্য আর অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ছিল ধর্মীয় ক্ষেত্রে তাঁর অনুসৃত মূলনীতি; যা তিনি সর্বাবস্থায় আমৃত্যু অকপটে ধারণ করেছেন। তাঁর কীর্তিময় জীবন, অবিসংবাদিত নেতৃত্ব আর জনগণের ওপর অবিশ্বাস্য প্রভাব বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় এটি প্রমাণিত যে, মাত্র সাড়ে ৩ বছরের শাসনামলে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ও আন্তঃধর্মীয় চেতনা বিকাশের পাশাপাশি ধর্মীয় ক্ষেত্রে তিনি যে উদারনৈতিকতা ও মানবিকতার বীজ বপন করেছিলেন, তা রাষ্ট্র-কাঠামো পরিচালনায় সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য এক অত্যুজ্জ্বল নিদর্শন। বিশেষ করে আন্তঃধর্মীয় মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধু সরকারের অনুকরণীয় পদক্ষেপগুলো আজো এক্ষেত্রে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্ম ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও তিনি আবশ্যকীয় কর্মকাণ্ডের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিশেষ পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে, কার্যক্রমে, বক্তৃতা-ভাষণে, আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা তাঁর মাঝে ধর্মীয় চেতনার এক শানিত রূপ দেখতে পাই। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা, বৈষম্যের অবসান, জুলুমের প্রতিবাদ, সাম্য-মৈত্রীর জয়গান, অপরিসীম মানবপ্রেম, অসম সাহসিকতা, অকুতোভয় নেতৃত্বের গুণাবলি, হাসিমুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা, জনগণের বিজয় প্রশ্নে আপস না করা, সত্য-সততার স্থানকে কলুষিত করতে না দেয়া, আলেমদের সান্নিধ্যে গমন ও তাদের সাহচর্য গ্রহণসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা এসব বৈশিষ্ট্যের পরতে পরতে তাঁর মাঝে আমরা আশৈশব বিরাজমান অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় চেতনা ও মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই। এছাড়া বঙ্গবন্ধু রচিত ও অতি সাম্প্রতিক প্রকাশিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়াচীন এবং কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থত্রয়েও তাঁর জীবনমানে ধর্মীয় চেতনা-সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি নানা আঙ্গিকে ফুটে উঠেছে। আমাদের বর্তমান গবেষণাকর্মে বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় চেতনার বিকাশে বঙ্গবন্ধুর অনবদ্য অবদানগুলো বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের প্রয়াস পাব। বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় চেতনার এক মহান নেতা। তবে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ধর্মকর্ম পালন করেছেন, ধর্মের শান্তি-সফলতার অমীয় বাণীগুলো তাঁর প্রাত্যহিক জীবনমানে রেখাপাত করেছে এবং ধর্মীয় বিধিবিধান ও আচার-অনুষ্ঠানের বিষয়াবলি তাঁর সম্ভ্রান্ত পারিবারিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে তাঁকে প্রভাবিত করেছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর ব্যক্তিজীবনকে কখনোই ধর্মীয় অনুশাসনের বাইরের বিষয় বলে ভাবেননি, বরং যতটুকু পেরেছেন প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডে ধর্মীয় নীতিবিধানের ফরমাবরদারি করেছেন; যা তাঁর ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের নানা ঘটনাপ্রবাহে প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশমান সেসব বিষয়ের আলোকে একজন সত্যনিষ্ঠ ধার্মিক মানুষ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে মূল্যায়ন করাই বর্তমান গবেষণার মূল লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধুকে একজন ধার্মিক মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করাটাও তাঁর কীর্তিময় জীবনের জন্য খুব জরুরি বলে আমরা মনে করি না। তবে কেনই-বা আমাদের বর্তমান এই প্রয়াস? এখানে তার দীর্ঘ জবাবের অবকাশ নেই, শুধু এটুকু বলি- পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বেদনাদায়ক ও নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বিয়োগান্ত ঘটনার পর থেকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তাঁর নানা বিষয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষোদগার, ভিত্তিহীন অপপ্রচার ও জঘন্য কুৎসা রটানো হয়েছে। এটি অপ্রত্যাশিত হলেও আমাদের সমাজ-বাস্তবতার দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ভয়াল রূপ। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যেসব বিষয়ে অপপ্রচার হয়েছে তার অন্যতম হলো ধর্মীয় অঙ্গন; স্বার্থান্বেষী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নিজেদের ষোলো আনা ফায়দা হাসিলের মানসিকতায় ধর্মীয় নানা বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ আরোপ করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের ধর্মীয় নেতৃত্বের কিছু জায়গা থেকেই বহুকাল ধরে লাগাতার এসব অপপ্রচার চলেছে। অথচ বঙ্গবন্ধুর জীবনের সঙ্গে ধর্মের বিশেষত শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলামের যে কোনো বিভেদ বা সংঘাত নেই- তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে এ দেশে মদ, জুয়া ও হাউজির লাইসেন্স বাতিল করেছিলেন, ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ করেছিলেন, তাবলিগ জামাতের নিরবচ্ছিন্ন ইসলাম প্রচারের স্বার্থে কাকরাইল মসজিদের জমি বরাদ্দ, পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত টঙ্গির বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের জায়গা নির্ধারণ, মাদ্রাসা বোর্ডের সংস্কার ও আধুনিকায়ন, বেতার-টিভিতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা, জাতীয় পর্যায়ে সিরাত মজলিস ও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন, শবেকদরের মহিমান্বিত রজনিতে সংবিধান পাস, হজযাত্রীদের ভ্রমণ কর রহিতকরণ, রাশিয়ায় তাবলিগ জামাতের প্রতিনিধি প্রেরণ এবং একেকজন সদস্যকে স্বদেশের পক্ষে কূটনীতিকের ভূমিকা পালনের আহ্বান, আলেম-ওলামা, পির-মাশায়েখগণের সঙ্গে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন, শর্ষিণা ও ফুরফুরাসহ বিশুদ্ধ আকিদার অন্যান্য দরবার ও খানকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, অহঙ্কারমুক্ত বিশাল হৃদয় নিয়ে সত্যনিষ্ঠ অবস্থান গ্রহণ করা, মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করা ও মানবতার খেদমতে আত্মনিয়োগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান রচনা ও প্রণয়নে ঐতিহাসিক মদিনার সনদের বিভিন্ন ধারার সঙ্গে সাযুজ্য রক্ষা ও তার প্রভাব প্রতিবিম্বিত করা, ‘কুনু মাআস্ সাদেকিন’ পবিত্র কুরআনের এ নির্দেশনা অনুযায়ী সত্যনিষ্ঠ, বিবেকবান ও দেশপ্রেমিক মানুষদের সাহচর্য ও বন্ধুত্ব গ্রহণ, ছাত্রজীবন থেকেই ধর্মপ্রাণ ও নামাজি শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নজর দান ও নানাবিধ কাজে তাদের অগ্রাধিকার প্রদান, ধর্মীয় সভা-সমিতি, ওয়াজ-নসিহত বা মাহফিল অনুষ্ঠানে বিঘœ বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে দায়িত্ব নিয়ে সেই সভা বা মাহফিল অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে দেয়া, অধ্যয়নকালীন অবস্থায়ও প্রিয় স্ত্রীকে লেখা চিঠি-পত্রাবলিতে মহান আল্লাহর ওপর অকৃত্রিম বিশ্বাসের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা, আল্লাহ যা করেন তা মঙ্গলের জন্যই করেন মর্মে সবকিছু তাকদিরের অংশ হিসেবে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়া, জীবনের প্রথমবারের মতো জেলে যাওয়ার কারণটিকে ধর্মীয় চেতনার অংশ হিসেবে স্মরণীয় করে রাখা, জীবনের সমগ্র ভাষণে উদারতা, কল্যাণকামিতা আর সীমাহীন আন্তরিকতার স্বাক্ষর রেখে আদম সন্তানদের ‘ভায়েরা আমার’ বলে সম্বোধন করা, যাবতীয় জুলুম ও অনিয়ম-অনাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার অসীম সাহসিকতা প্রদর্শন, বৈষম্য ও নিপীড়নের দিক থেকে বাঙালি সমাজকে মক্কার সমাজের প্রতিচ্ছবি করা, তমদ্দুন মজলিসসহ অন্যদের সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে ইসলামি চেতনাবোধের প্রতি সহমত থাকা, সত্য ও ন্যায়ের প্রতি নিষ্ঠাবান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েও অন্যায় আদেশের সামনে মাথা নত না করা, মুচলেকা ও জরিমানা না দেয়া ও আত্মসম্মান আর আত্মমর্যাদা বোধের ওপর অবিচল থাকা, সত্তরের নির্বাচনের প্রাক্কালে দেয়া বিশেষ ভাষণে ও অন্যান্য সময়ে ‘কুরআনবিরোধী কোনো আইন করা হবে না’ মর্মে ঘোষণা দেয়া, কথায়-বার্তায় ও বক্তৃতা-ভাষণে অনুপম ভঙ্গিতে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলে ইসমে আজমের অসীম ক্ষমতার প্রতি আস্থা জ্ঞাপন, যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসাসহ কওমি ঘরানার আলেমদের নিয়ে ভারতের ‘দারুল উলুম দেওবন্দ’ প্রকৃতির ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা এবং মুসলিম মিল্লাতের বৃহত্তর স্বার্থ সংরক্ষণের তাগিদে ওআইসির সম্মেলনে অংশগ্রহণসহ নানাবিধ কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তাঁর ইসলামবিষয়ক কীর্তি ও ধর্মীয় চেতনার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তবে বাংলাদেশে ইসলামের তরে চিরস্মরণীয় ও নজিরবিহীন যে কাজটি তিনি করেছেন সেটি হলো- ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা। সমগ্র বিশ্বে ইসলামের প্রচার-প্রসার ও গবেষণা আর প্রকাশনার ক্ষেত্রে এটি সর্ববৃহৎ এক অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত। এ বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই যে, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ও এর জনগণের ওপর কোনো ক্ষেত্রেই আদল ও ইনসাফ তথা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেনি। বরং তারা এতদাঞ্চলের মানুষের ওপর রীতিমতো অবিচার তথা জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা সর্বক্ষেত্রে খারাপ কাজের নজির স্থাপন করেছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, উদার ও মহানুভব একজন বিশ্ব নেতা। সব ধর্মের সমান অধিকার তিনি নিশ্চিত করেছিলেন। প্রত্যেকেই যেন তার নিজস্ব ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী স্বাধীনভাবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারেন, তিনি প্রকৃত অর্থে সেই ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছি। প্রকৃতপক্ষে সব ধর্মমতের মানুষের সহাবস্থান ইসলামেরই মহান শিক্ষা; বঙ্গবন্ধু মদিনা সনদের আলোকে সেই শিক্ষারই বাস্তবায়ন ঘটিয়েছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর বঙ্গবন্ধু মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রভূত উন্নতি বিধান করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর গতিশীল নেতৃত্ব আর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দিয়ে অল্পকালের ব্যবধানে সে সম্পর্ক এমন এক জায়গায় উপনীত করেন যে, তাদের অনেকেই তখন বাস্তবতা উপলব্ধি করেন এবং পুরো বিষয়ে তারা যে অন্ধকারে ছিলেন ও তাদের ভাবনা যে সঠিক ছিল না- তা তারা স্বীকার করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে ১৯৭৪ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে তিনি যে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন, তাতে বিশ্ব মুসলিমের মধ্যে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয় এবং মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গেও সম্পর্কের আরো উন্নতি ঘটে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা যদি মহানবী (সা.) প্রচারিত মানবপ্রেম ও মানুষের মর্যাদার শাশ্বত মূল্যবোধ মানবসমাজে সঞ্চারিত করতে পারি, তাহলে তা থেকে চলমান সমস্যাদির যথোপযুক্ত সমাধানে মুসলিম জনসাধারণ সুস্পষ্ট অবদান রাখতে পারবে। এসব মূল্যবোধে উদ্দীপ্ত হয়ে শান্তি ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে আমরা একটি নতুন আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য গড়ে তুলতে পারি।’ উপরিউক্ত আলোচনার ফলে আমরা কাউকে হেয় প্রতিপন্ন না করেও বলতে পারি যে, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ও আন্তঃধর্মীয় চেতনার আলোকে দেশ ও জাতির কল্যাণে যেসব কার্যসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে, তা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সত্যিকার অর্থেই অতুলনীয়।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,যেসব আমলে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে জান্নাতে থাকা যাবে,ইসলাম ধর্ম,"মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য সব সময় সৌভাগ্যের ও প্রার্থিত। মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ ছাড়া তাঁর সান্নিধ্যের সৌরভ লাভ করা সম্ভব নয়। পার্থিব জীবনে মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভ করা এখন আর সম্ভব নয়, তবে মুমিন চাইলে পরকালে তাঁর সঙ্গী হতে পারে। আর তা সম্ভব হবে নির্ধারিত কিছু আমলের মাধ্যমে।নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো—যারা নবীজি (সা.)-এর সঙ্গী হবে ১. যারা নবীজিকে ভালোবাসবে : যারা পার্থিব জীবনে মহানবী (সা.)-কে ভালোবাসবে তারাই জান্নাতে তাঁর সঙ্গী হবে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, কিয়ামত কখন হবে? তিনি বললেন, তুমি কিয়ামতের জন্য কী জোগাড় করেছ? সে বলল, কোনো কিছু জোগাড় করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসি। তিনি বলেন, তুমি তাঁদের সঙ্গেই থাকবে যাঁদের তুমি ভালোবাস। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৮৮)২. বেশি পরিমাণ নামাজ আদায়কারী : যারা বেশি পরিমাণে নামাজ আদায় করবে এবং সিজদা করবে পরকালে তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী হবে।রাবিআ বিন কাব আসলামি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে তার অজুর পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার কাছে কিছু চাও। আমি বললাম, আমি বেহেশতে আপনার সঙ্গ কামনা করি। তিনি বললেন, এ ছাড়া অন্য কিছু কি চাও? আমি বললাম, না, এটাই।তিনি বলেন, তা হলে তুমি বেশি সিজদা দ্বারা তোমার এ কাজে আমাকে সাহায্য কোরো। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১১৩৮) ৩. যারা রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করবে : যারা মহানবী (সা.)-এর আনুগত্য করবে, তারা পরকালে তাঁর সঙ্গী হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, তারা তাদের সঙ্গে থাকবে, যাদের আল্লাহ নিয়ামত দান করেছেন।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৬৯)৪. উত্তম চরিত্রের অধিকারী : জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির চরিত্র ও আচরণ সর্বোত্তম সে আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় এবং সে কিয়ামতের দিনও আমার খুবই কাছে থাকবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০১৮)৫. এতিম প্রতিপালনকারী : যারা এতিম শিশুর দায়িত্ব নেয় এবং প্রতিপালন করে, আল্লাহ তাদের পরকালে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্যে ধন্য করবেন।সাহাল বিন সাআদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি ও এতিমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব। এটা বলে তিনি তাঁর শাহাদাত ও মধ্যমা আঙুল দ্বারা ইঙ্গিত করেন এবং উভয় আঙুলের মধ্যে সামান্য ফাঁক রাখলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩০৪) ৬. কন্যাশিশুর প্রতিপালনকারী : আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তির দুজন বোন বা কন্যা থাকে এবং সে তাদের প্রতি উত্তম আচরণ করে, আমি ও সে জান্নাতে এভাবে থাকব (তিনি তাঁর দুই আঙুল মিলিয়ে দেন)। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১২৫৯৩)৭. বেশি বেশি দরুদ পাঠকারী : আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আমার নিকটমত ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করেছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪৮৪)মহান আল্লাহ আমাদের জান্নাতে নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গী হওয়ার তাওফিক দান করুন।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,কোরআন তিলাওয়াতে ঈমান বাড়ে,ইসলাম ধর্ম,"কোরআন মাজিদ হচ্ছে হিদায়াতের ব্যবস্থাপত্র, যা সাধারণ ডাক্তার বা হেকিমদের ব্যবস্থাপত্রের মতো নয়। কারণ তাঁদের ব্যবস্থাপত্র বুঝতে না পারলে কোনো উপকারে আসে না। আর কোরআন শরিফ হচ্ছে হিদায়াতের এমন ব্যবস্থাপত্র, যা পাঠ করলেই ঈমান বাড়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন তাদের সামনে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২) কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অন্তরে আল্লাহর ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। একেকটি অক্ষর পাঠ করলে দশ-দশটি নেকি পাওয়া যায়। এ সওয়াব পাওয়ার জন্য অর্থ বোঝার শর্ত হাদিসে উল্লেখ নেই। উসমান (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পড়বে, সে একটি নেকি পাবে, আর প্রতিটি নেকি ১০ গুণ করে বৃদ্ধি করে দেওয়া হবে। (তিরমিজি : ২৯১০) ভালোভাবে কোরআন পড়তে না পারলেও কোরআন পাঠ অব্যাহত রাখবে। এতেও সওয়াব মিলবে। আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যারা সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তিলাওয়াত করে, তারা নেককার সম্মানিত ফেরেশতাদের সমতুল্য মর্যাদা পাবে। আর যারা কষ্ট সত্ত্বেও কোরআন শুদ্ধভাবে পড়ার চেষ্টা ও মেহনত চালিয়ে যায়, তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৫৪) তদ্রূপ কোরআন শরিফ মধুর কণ্ঠে পড়াও প্রশংসনীয়। হাদিস শরিফে সুন্দর কণ্ঠে পড়তে উত্সাহিত করা হয়েছে। বারা ইবনে আজেব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা সুললিত কণ্ঠে কোরআন পড়ো, কেননা তা কোরআনের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দেয়। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ২১৪১) আর কোরআনের অর্থ বোঝার জন্য কোরআনের আয়াতগুলো সঠিকভাবে উচ্চারণ করা ও পড়া প্রথম শর্ত। আর সম্ভব হলে কোরআন বোঝার চেষ্টা করবে। কোরআন বোঝা যদিও একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, তবে শুধু শব্দ শেখাও একটি মৌলিক কাজ। হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী (রহ.) এ ব্যাপারে সুন্দর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন—যারা শুধু অর্থের গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে তিলাওয়াতের গুরুত্ব উপেক্ষা করেছে, তাদের অনুধাবন করা উচিত, অর্থ বোঝা শব্দ পাঠের অনুগামী। প্রথম হলো শব্দের জ্ঞান। আর নীতি হলো প্রয়োজনীয় বিষয়ের সূচনাও প্রয়োজনীয় হয়ে থাকে। তাই শাব্দিক তিলাওয়াত লাভহীন—এ ধারণা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআনের শব্দের প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব দিতেন। তিনি শব্দের প্রতি এত বেশি গুরুত্ব দিতেন যে ওহি অবতরণকালে জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে দ্রুত আবৃত্তি করতেন। অথচ তাঁর স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। এ থেকে তাঁর শব্দের প্রতি অসাধারণ আগ্রহ অনুধাবন করা যায়। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শব্দের প্রতি এত ব্যাকুল হওয়ার আরেকটি প্রমাণ হলো, তিনি নিজে তিলাওয়াতের পাশাপাশি অন্যের তিলাওয়াতও শুনতেন। একবার ইবনে মাসউদ (রা.)-কে বললেন, আমাকে কোরআন শোনাও। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি আপনাকে শোনাব! অথচ আপনার ওপরই কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে? নবীজি (সা.) বলেন, আমি অন্যের কাছ থেকে কোরআন শুনতে ভালোবাসি। (বুখারি, হাদিস : ৫০৪৯)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ গাজা : মাহমুদ আব্বাস ",ইসলাম ধর্ম,"গাজাকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের একটি ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ বলেছেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। শুক্রবার তার পশ্চিম তীরের সদর দপ্তরে একজন শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার সময় এ মন্তব্য করেন তিনি। তার কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। আব্বাসের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আব্বাস সফররত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানকে বলেছেন, ‘গাজা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।’ পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘বিচ্ছিন্নতা বা ভূখ-ের কোনো অংশকে বিচ্ছিন্ন করার কোনো প্রচেষ্টা অগ্রহণযোগ্য।’ বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আব্বাস ‘চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন, বিশেষ করে গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আজকাল যে গণহত্যা চালানো হচ্ছে তা বন্ধ করার জরুরি প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়েছেন’। মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ‘ইসরাইলের যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ এই অঞ্চলে সুলিভানের সফরে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠকও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করে, হামাসের আক্রমণের প্রতি ইসরাইলি প্রতিক্রিয়াকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছে। বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এবং গাজার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথাও বলেছে দেশটি। তবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাবকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছিল, কিন্তু ওয়াশিংটন সেখানে ভেটো দিয়েছে। অক্টোবর হামাস ইসরাইলের ওপর একটি নজিরবিহীন হামলা চালালে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ সেই হামলায় নিহত হয়েছে। অন্যদিকে হামাস শাসিত গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, যুদ্ধের পর থেকে ১৮ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive ভোরের কাগজ,"কুমিল্লায় ৭৮৮ মণ্ডপ ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ",হিন্দু ধর্ম,"আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব। কুমিল্লায় এবার ৭৮৮টি পূজামণ্ডপে চলছে দুর্গোৎসব। দক্ষ কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন করে নির্মিত হয়েছে ব্যয়বহুল দেব-দেবীসহ দুর্গা প্রতিমা। তবে গত বছর নগরীর নানুয়া দীঘির পাড়ের একটি অস্থায়ী মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননা ও এ নিয়ে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনার রেশ আজও কাটেনি। এতে এই উৎসবকে সামনে রেখে আতঙ্কও বিরাজ করছে জেলার সর্বত্র। এদিকে গত বছরের মণ্ডপকাণ্ড ও সহিংসতার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার জেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপ ঘিরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, এ বছর কুমিল্লা মহানগরসহ জেলার ১৭টি উপজেলায় ৭৮৮টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এসব পূজামণ্ডপের মধ্যে রয়েছে- কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা এলাকায় ৭২টি, সদর দক্ষিণে ৪৪টি, লালমাই ১৭টি, মনোহরগঞ্জে ১৩টি, লাকসামে ৩৫টি, নাঙ্গলকোটে ৯টি, চৌদ্দগ্রামে ২২টি, বরুড়ায় ৮৮টি, বুড়িচংয়ে ৪৩টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১৮টি, দেবিদ্বারে ৮৭টি, চান্দিনায় ৭২টি, মুরাদনগরে ৮২টি, বাঙ্গরা ৬৬টি, দাউদকান্দিতে ৪৭টি, হোমনায় ৫১টি, তিতাসে ১৫টি ও মেঘনায় ৭টি। সূত্র জানায়, গত বছর এ জেলায় পূজামণ্ডপ ছিল ৭৭৬টি। তবে গত বছর জেলার সর্বত্র শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হলেও ১৩ অক্টোবর মহাঅষ্টমির দিন ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘির পাড়ের অস্থায়ী একটি মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে।এ ঘটনায় কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার সৃষ্টি হয়। পবিত্র কোরআন অবমাননা ও পরবর্তীতে মন্দির ভাঙচুরসহ বিভিন্ন ঘটনায় জেলায় মোট ১২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৮টি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি এবং দাউদকান্দি ও দেবিদ্বারে একটি করে মামলা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয় শতাধিক আসামি। মামলাগুলো এখনো সিআইডি, পিবিআই ও পুলিশের তদন্তাধীন আছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি নির্মল পাল জানান, এ বছর জেলার সবগুলো পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। গত বছরের অনাকাক্সিক্ষত সহিংসতার ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রেখে এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উৎসব সম্পন্ন করতে তিনি প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের ঘটনা মাথায় রেখে জেলার প্রত্যেক উপজেলায় পূজামণ্ডপগুলোতে বাড়তি সতর্কতার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং থাকছে সিসি ক্যামেরাও। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যত্যয় যেন না ঘটে সেজন্য সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এছাড়া পূজার সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ র‌্যাব-পুলিশের টহল ও আনসার মোতায়েনের মাধ্যমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে প্রতিটি মণ্ডপ ঘিরে সতর্কতামূলক প্রহরা বসানো হবে বলেও জানান তিনি।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive দৈনিক ইনকিলাব,নামাজে প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পূর্বে এবং ফাতিহার পর অন্য সুরা বা আয়াত মিলানোর পূর্বে কি বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলতে হয়?,ইসলাম ধর্ম,"বিসমিল্লাহ বলা যায়। সূরা ফাতিহার পূর্বে পড়া যায়, না পড়লেও কোনো অসুবিধা নেই। নতুন সূরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নাত/মুস্তাহাব। প্রশ্ন : চাশতের নামাজের সঠিক ওয়াক্ত কখন শুরু হয় এবং কখন শেষ হয়? উত্তর : সূর্য তার প্রথম প্রহরে তেজ নিয়ে দ্বিপ্রহরে প্রবেশের আগে চাশতের সময়। যা জোহরের ওয়াক্ত শুরুর ঘণ্টাদেড়েক আগে শেষ হয়। শুরু হয় ইশরাকের ঘন্টাদেড়েক পর। ঘড়ির সময়ে তা নানা মওসুমে ভিন্ন হতে পারে। তবে, যারা আমল করেন, তারা সূর্যের গতি দেখে তা নির্ধারণ করে থাকেন। প্রশ্ন : ওয়াজ মাহফিল এবং হিন্দুদের মেলায় দোকান দেয়া যাবে কি? উত্তর : হালাল ব্যবসার জন্য দোকান দেয়া যাবে। তবে, হিন্দুদের মেলায় তাদের জাকজমক বা সমাবেশ বৃদ্ধি হয় এমন অবস্থায় দোকান না দেয়া উত্তম। নিছক ব্যবসার উদ্দেশ্যে দিতে হলে নির্দিষ্ট মাসআলা নিয়ে নিবেন। পরিবেশ পরিস্থিতির বিভিন্নতায় মাসআলা ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রশ্ন : আমার মোবাইলে কে জানি একশত টাকা ফ্ল্যাক্সি পাঠায়। মনে হয় পরিচিত কেউ পাঠায়নি। এবং কেউ ফোনও করেনি। এমতবস্থায় আমি কী সে টাকা খরচ করতে পারবো? খরচ করতে না পারলে কি করবো। উত্তর : আপনার জন্য এ টাকা খরচ করা তখনই জায়েজ হবে, যখন আপনি কেউ দাবী করলে সেটি ফেরত দিতে সম্মত থাকেন। এভাবে বছর দু’বছর চলে যাওয়ার পর তার নামে এ টাকা দান করে দিবেন। এরপরও যদি দাবী তোলা হয় তখন আবার দিয়েও দিবেন। দান করার শর্তে এ টাকা ব্যবহার করা আপনার জন্য বৈধ হবে। প্রশ্ন : আমার এলাকার মসজিদে ফজরের সালাত খুব সংক্ষিপ্ত করে পড়ানো হয় এবং তার কেরাতও সুন্দর হয়না। মোট কথা আমি এখানে সালাত পড়ে শান্তি পাইনা। এমতাবস্থায় আমি একটু দূরে পাশের মসজিদে ফজরের সালাত পড়ি। এতে কোন সমস্যা আছে কি? উত্তর : এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে, বিষয়টি যেন সামাজিক কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করে। মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ বা অশান্তি তৈরি হতে পারে এমন কাজ না করে বরং কিছু কম শান্তি বা অস্বস্তি নিয়েও নিজ মহল্লার মসজিদে এডজাস্ট করে থাকা বেশি উত্তম। প্রশ্ন : সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। মনে হয় মহামারীর রূপ নেবে। রেহাই পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে কি দোয়া পড়া যায়? উত্তর : বালা-মসিবতে নাজাত পাওয়ার জন্য হাদীসে বিভিন্ন আমলের কথা আছে। ১. সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে এ দিন ও রাতের জন্য যথেষ্ট। ২. সূরা ফালাক ও নাস পড়ে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া যায়। ৩. ফজরের নামাজ সময়মতো পড়লে এ দিনের জন্য লোকটি আল্লাহর আশ্রয়ে চলে যায়। ৪. বিপদের সময় ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যোয়ালিমিন’ (অর্থাৎ, আল্লাহ আপনি ছাড়া আর কোনো মা’বুদ নাই, আপনি মহা পবিত্র, আর আমি অনাচারীদের অন্তর্ভূক্ত) পাঠ করা উত্তম। ৫. ডেঙ্গু বা মহামারীর জন্য বিশেষভাবে এ দুয়া পাঠ করা বেশি ফলদায়ক। দুয়াটি এই ‘আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মাতি মিন র্শারি মা খালাক’ (অর্থাৎ, আল্লাহর পবিত্র ও পূর্ণাঙ্গ কালিমা সমূহের মাধ্যমে তার সৃষ্টির সকল অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।)",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,‘মাহফুজ আনাম ও ডেইলি স্টার হিন্দু ধর্ম নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেতেছে’,হিন্দু ধর্ম,"বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের যুগ্ম মহাসচিব শ্যামল কান্তি নাথ বলেছেন, হিন্দু আইন নিয়ে দেশে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও তার স্ত্রী শাহীন আনাম। তাদের পরামর্শে ২০২০ সালে আইন মন্ত্রণালয়ে আইন কমিশন হিন্দু ধর্মীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। উক্ত আইন প্রণয়নের যেসব সংগঠন সহযোগিতা করেছে তাদের মধ্যে ইউএনডিপি ও একটি আন্তর্জাতিক এনজিওর অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এটার খসড়া তৈরির দায়িত্ব পালন করে। তার আগে ২০১০-১১ সালে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধর্মীয় আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। আন্তর্জাতিক সকল জিও এবং দেশীয় যে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছে তারা কেউই হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাছাড়া আইন কমিশন বলছেন, তারা ঢাকা, রাজশাহী ও চিটাগাংয়ে মাত্র ২৪৬ জনের একটি টিমের সঙ্গে কথা বলে এটা চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে বিচারপতি আছেন, ব্যবসায়ী আছেন, ছাত্র আছেন ও কৃষক আছেন। শুধুমাত্র ২৪৬ জনের মতামতের ওপর ভিত্তি করে হিন্দু ধর্মীয় আইন সংস্কারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, এটি কেন? বাংলাদেশের দুই লক্ষাধিক হিন্দু মানুষ রয়েছেন। সেখানে ২৪৬ জনের মতামতের ভিত্তিতে কিভাবে তারা এ আইনের খসড়া তৈরি করে? প্রশ্ন হচ্ছে কারা এই কমিশন গঠন করেছে? আইন ও সালিশ কেন্দ্র, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করে না। রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে হিন্দু ধর্মীয় আইন পরিবর্তন প্রচেষ্টার প্রতিবাদে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল ধর্মীয় সংগঠনের সমন্বয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। শ্যামল কান্তি নাথ বলেন, এসব প্রত্যেকটি সংগঠনের মালিক-কর্তৃপক্ষ মুসলিম। এরপরও তারা কেন এই উদ্যোগ গ্রহণ করবেন, এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, সরকারের সমর্থনপুষ্ট বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু পরিষদ উদযাপন পরিষদ, সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি আছে। তাদেরকেও আইনের তৈরির সঙ্গে ইনভলভ করেনি। হিন্দু আইন তৈরির নেপথ্য একটি হিন্দু পরিষদ নেই, একজন হিন্দু সংগঠন নেই। এই প্রশ্নটি সবচেয়ে বড়। এই কমিশন যখন আইনটি প্রণয়ন করতে চায় তারা তখন উদাহরণ দিয়েছে ভারত এবং নেপালের। নেপাল হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র হিন্দুরাষ্ট্র সেখানে যদি হিন্দু আইন সংস্কার হয় বাংলাদেশে কেন সংশোধন হবে না? আমরা বলেছি, নেপালের মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘর কেউ লুটপাট করেনি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এখানে হিন্দুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে। এখানে হিন্দুদের ধর্মীয় আইন সংস্কারের পরিবেশ নেই। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, প্রথম আলো তারা এই ষড়যন্ত্রের পেছনে জড়িত। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুরা নির্যাতিত হয়েছে তখন প্রথম আলো-ডেইলি স্টার অথবা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন কেউই প্রকাশ্যে হিন্দুদের পাশে দাঁড়ায়নি। কোনোদিন তারা হিন্দুদের পক্ষে মাঠে নামেনি। অথচ তারা হিন্দু আইন সংস্কারের পক্ষে কথা বলছে এটি কেন? ডেইলি স্টারের একটি কলাম ছাপা হয়েছিল। সেখানে একটি বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। কলামে সেই কেইস স্টাডি উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেননি। তিনি এখানে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। এরকম একটি ভুয়া বানোয়াট গাঁজাখুড়ি গল্প লিখেছে ডেইলি স্টার। অথচ এই কলামে নিচে ডেইলি স্টার লিখে দিয়েছে-এই কলামের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। শাহানা নামের সেই লেখকের সাফাই যশোরের এক হিন্দু নারী নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয়েছে। এটা লেখার কারণে অন্যান্য পত্রিকাতেও ছাপা হয়। এতে হিন্দু ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি তেরি হয়েছে। এর দায় মাহফুজ আনাম এড়াতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, মাহফুজ আনামদের প্রস্তাবে আইন কমিশন তাদের প্রস্তাবিত আইনে বলেছে হিন্দুরা যেখানেই যান সেখানে একাধিক বিয়ে করেন। এসব কথাবার্তা কেন তারা লিখেছেন তা আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। আমরা এই চক্রের বিচার চাই। তিনি বলেন, দেবেশ ভট্টাচার্যের উদ্ধৃতি দিয়ে মাহফুজ আনামের পরামর্শে আইন কমিশন তাদের খসড়া আইনে ভট্টাচার্যের একটি উদ্ধৃতি যুক্ত করেছেন। তিনি ২০১০ সালে মারা যান। তার বক্তব্য কোথায় পেলেন এত পরে তারা?",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Negative প্রথম আলো,শিশু আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ নিয়ামত,ইসলাম ধর্ম,"আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে অগণিত নিয়ামত দান করেছেন। এসব নিয়ামতের মধ্যে সুসন্তান অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের যুগল হতে তোমাদের জন্য পুত্র ও পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের উত্তম জীবনোপকরণ দিয়েছেন।’ (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৭২)। শিশু মানবজাতির অতীব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিশুরা নিষ্পাপ, শিশু পবিত্রতার প্রতীক। শৈশবেই মানুষের জীবনের গতিপথ নির্ধারিত হয়। তাই ইসলাম শৈশবকালকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে শিশু শব্দের সমার্থক আরবি চারটি শব্দ মোট ৭৫ বার উল্লেখ হয়েছে। যথা: ‘তিফল’ (শিশু, বালক), ‘ছবিয়্য’ (শিশু, কিশোর), ‘গুলাম’ (শিশু, তরুণ) ও ‘ওয়ালাদ’ (শিশু, বত্স, সন্তান। ‘তিফল’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে তিনবার। এর বহুবচন ‘আতফাল’ আছে একবার। ‘ছবিয়্য’ শব্দটি কোরআনে আছে দুবার। ‘গুলাম’ শব্দটি আছে ১২ বার। এর দ্বিবচন ‘গুলামান’ কর্মকারকরূপে ‘গুলামাঈন’ আছে একবার (১৮: ৮২। বহুবচনে ‘গিলমান’ আছে একবার। ‘ওয়ালাদ’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে ৩৩ বার। এর বহুবচন ‘আওলাদ’ শব্দটি রয়েছে ২২ বার। প্রিয় নবী হজরত (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুই স্বভাবধর্মে (ইসলামে) জন্মগ্রহণ করে।’ (তিরমিজি)। হজরত আবু রাফি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে দেখেছি, হজরত হাসান (রা.)-এর জন্ম হলে তিনি তাঁর কানে নামাজের আজানের মতো আজান দিয়েছিলেন। (তিরমিজি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১৮৩)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, হজরত হাসান (রা.)-এর জন্মের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর ডান কানে আজান ও বাঁ কানে ইকামাত দিয়েছিলেন। (বায়হাকি)। শিশুর সুন্দর নাম রাখা: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, পিতার ওপর নবজাতকের হক (অধিকার) হলো তার জন্য সুন্দর নাম রাখা। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হলো ‘আবদুল্লাহ’ ও আবদুর রহমান’। (কানজুল উম্মাল, খণ্ড: ১৬, পৃষ্ঠা: ৪১৭)। হজরত আবু রাফি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা কারও নাম ‘মুহাম্মাদ’ রাখলে তাকে মারধর করবে না এবং তাকে অসম্মান করবে না। (কানজুল উম্মাল, খণ্ড: ১৬, পৃষ্ঠা: ৪১৮)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যার তিন তিনটি সন্তান জন্মগ্রহণ করল, অথচ সে কারও নাম ‘মুহাম্মাদ’ রাখল না, সে জাহিল (মূর্খ) সুলভ আচরণ করল। (কানজুল উম্মাল, খণ্ড: ১৬, পৃষ্ঠা: ৪১৯)। আমরা শিশুদের নানান আদুরে শব্দে ডাকি, এটি সুন্নতে নববি। রাসুলে করিম (সা.) হজরত আয়িশা (রা.)কে শৈশবে ‘হুমায়রা’ (বণ্য) নামে ডাকতেন। (মুসলিম)। মদিনায় হিজরতের পর প্রথম এক সাহাবির সন্তান হলে সব সাহাবি আনন্দ উৎসব করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)। শিশুকে কোলে নেওয়া সুন্নত: মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) শিশুদের কোলে নিতেন। একবার এক সাহাবির সন্তানকে কোলে নিলে শিশুটি তাঁর কোলে প্রস্রাব করে দেয়। তবে এতে তিনি বিরক্ত হননি। শিশুকে আদর–স্নেহ করা: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ছোটদের স্নেহ করে না, সে আমার উম্মত না।’ (আবুদাউদ ও তিরমিজি)। হজরত আনাস (রা.) বলেন, এক গরিব মহিলা তাঁর দুই কন্যাসন্তান নিয়ে হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.)-এর কাছে এলে তিনি তাঁকে তিনটি খেজুর দিলেন। মহিলাটি তাঁর দুই কন্যাকে দুটি খেজুর দিলেন এবং একটি নিজে খাওয়ার জন্য মুখে তুলে নিচ্ছিলেন, এ সময় শিশুরা সেটি খেতে চাইলে মহিলা ওই খেজুরটি দুই ভাগ করে তাদের হাতে তুলে দিলেন। আয়িশা (রা.) বলেন, মহিলার এই কাজে আমি অভিভূত হলাম, তাই আমি ঘটনাটি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বললাম। তিনি বললেন, আয়িশা! আল্লাহ তাআলা এই মহিলাকে এর বিনিময়ে জান্নাত দান করবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। (মুসলিম, রিয়াদুস সালিহিন, পৃষ্ঠা: ১৩৮-১৩৯)। শিশুকে চুম্বন করা: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার এক ব্যক্তি একটি শিশুকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে এলেন এবং শিশুটিকে চুমু দিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ দৃশ্য দেখে বললেন, শিশুটির প্রতি কি তোমার ভালোবাসার উদ্রেক হয়েছে? লোকটি বলল, জি হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা তোমার প্রতি এর চেয়েও বেশি দয়া করবেন। {আদাবুল মুফরাদ, ইমাম বুখারি (রা.)}। হযরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, এক বেদুইন ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে এসে বললেন, আপনি কি শিশুদের চুমু দেন? আমি তো কখনো শিশুদের চুমু দিই না। তিনি তাকে বললেন, আল্লাহ যদি তোমার অন্তর থেকে দয়া ছিনিয়ে নেন, তবে আমার কীই-বা করার আছে? (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৪২১)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত হাসান (রা.)কে চুমু দিলেন, তখন সেখানে আকরা ইবনে হাবিস (রা.) উপস্থিত ছিলেন। এ দেখে তিনি বললেন, আমার ১০টি সন্তান আছে, আমি কখনো তাদের চুমু দিইনি। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বললেন, যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হয় না। (বুখারি ও মুসলিম, রিয়াদুস সালিহীন, পৃষ্ঠা: ১২০)। শিশুর মুখে প্রথম কথা: হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের শিশুদের সর্বপ্রথম কথা শেখাবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ (আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নেই)। (বায়হাকি ও মুসতাদরাকে হাকিম)। শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার: ইসলামে শিশু হত্যা নিষিদ্ধ। তা দারিদ্র্যের ভয় বা পারিবারিক সুনাম–সম্মান রক্ষা অথবা যেকোনো কারণেই হোক না কেন। জাহেলি যুগে আরব দেশে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। এ ধরনের অমানবিক প্রথাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না। আমি তোমাদের এবং তাদের রিজিক দিয়ে থাকি।’ (সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১৫১)। আরও বলা হয়েছে, ‘দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা কোরো না। তাদের এবং তোমাদের আমিই রিজিক দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদের হত্যা করা মহাপাপ।’ (সুরা-১৭ ইসরা, আয়াত: ৩১)। শিশু হত্যার পরিণতি: জাহেলি যুগে শিশুদের হত্যা করা হতো, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। ইসলাম নারী, কন্যাসন্তান ও শিশুর সুরক্ষায় বিধান করে দিয়েছে যে যুদ্ধের সময়ও এদের ওপর আক্রমণ করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে রয়েছে, রোজ কিয়ামতে আল্লাহ এর কৈফিয়ত তলব করবেন: ‘যখন জীবন্ত সমাধিস্থ কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল?’ (সুরা-৮১ তাকভির, আয়াত: ৮-৯)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্ববান এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। প্রতিটি মানুষ তার পরিবার রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দায়িত্ববান; তাকে এ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সম্পদ ও সন্তানের ব্যাপারে দায়িত্ববান; সে এসবের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।",ধর্মীয় সংস্কৃতি,Positive দৈনিক ইনকিলাব,"ইসলামে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় ",ইসলাম ধর্ম,"ডেঙ্গু রোগের কোনো ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি। সামগ্রিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সবিশেষ মনোযোগী হলেই কেবল ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব। কালজয়ী জীবনাদর্শ ইসলামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আজকে আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে ইসলামের অনন্য কিছু কথা বলব ইনশাআল্লাহ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপনের ব্যাপারে কোরআন ও হাদিস শরিফে বিভিন্ন জায়গায় বারবার উৎসাহিত করা হয়েছে এবং যারা পূত;পবিত্র থাকবে, তাদের জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে প্রভূত কল্যাণ ও সওয়াবের। মদিনার নিকটবর্তী কোবা এলাকার লোকজন পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করত। তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সেখানে এমন লোকেরা রয়েছে, যারা ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে পছন্দ করে। আর আল্লাহ তায়ালা পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন’ (সূরা তাওবা-১০৮)। আরো বর্ণিত আছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের’ (সূরা বাকারা-২২২)। প্রিয়নবী সাল্বলাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , ‘তোমরা তোমাদের উঠান ও আঙিনা পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি করে রাখো’ (জামে তিরমিজি-৭৭৬৯)। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো সালাত, এই সালাতের জন্য পূর্বশর্ত হল পবিত্রতা (অজু) অর্জনকে। আরেক হাদিসের মধ্যে পবিত্রতাকে ঈমানের অর্ধেক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। হযরত আবু মালেক আশআরি রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক’ (মুসলিম ২২৩)। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা যখন সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন নিজেদের মুখম-ল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে, মাথা মাসেহ করবে এবং পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধৌত করবে; যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। তোমরা যদি পীড়িত হও, কিংবা পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নেবে’ (সূরা মায়িদাহ-৬)। (মহামারির আকার ধারণ করছে ডেঙ্গু। প্রবাদে আছে,‘রোগ প্রতিরোধ রোগ নিরাময় থেকে শ্রেয়।’তাই ডেঙ্গু হওয়ার পূর্বে ইসলামের আলোকে প্রতিরোধ সম্ভব। দরকার সচেতনতা আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা)। এক মার্কিন গবেষক তার প্রবন্ধে লিখেছেন, আমি ডিপ্রেশন (মানসিক রোগে) আক্রান্ত কয়েকজন রোগীকে প্রতিদিন পাঁচবার মুখ ধৌত করিয়েছি। কিছু দিন পর তাদের রোগ কমে যায়। অতপর, আরো কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করলাম এবং সেই সাথে দিনে পাঁচবার হাত, মুখ ও পা ধোয়ার ব্যবস্থা করলাম। এবার তারা অনেকটাই সুস্থ হয়ে গেলেন। এই গবেষক তার প্রবন্ধের উপসংহারে অকপটে স্বীকার করেছেন, মুসলমানদের মধ্যে মানসিক রোগ কম দেখা যায়। কারণ, তারা দিনে কয়েকবার হাত, মুখ ও পা ধুয়ে থাকে। উচ্চ রক্তচাপের সহজ ওষুধ হলো অজু। এক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অত্যন্ত আত্মপ্রত্যয় ও দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীকে প্রথমে অজু করিয়ে দিন, তারপর ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করুন, দেখবেন প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এক মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মুসলিম গবেষক বলেন, মানসিক রোগের কার্যকরী চিকিৎসা হলো অজু।জীবন পরিচালনার জন্য মানুষ যাই করুক না কেন তা যদি আল্লাহ ও রসূলের নির্দেশিত পদ্ধতি অনুযায়ী হয় তবে তা ইবাদত বলে গণ্য হবে। কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনা এবং সরকারের দেওয়া পদ্ধতি যদি আমরা সঠিকভাবে মেনে চলি তাহলে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন বিপর্যয় থেকে মুক্তি এবং সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকা সম্ভব(যত দিন হায়াত) আছে দুনিয়ার জীবনে। ইনশাআল্লাহ।",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive কালের কন্ঠ,কোরআন অবমাননা রোধে আইন করছে ডেনমার্ক,ইসলাম ধর্ম,"পবিত্র কোরআনসহ ধর্মীয় গ্রন্থ অবমাননা নিষিদ্ধ করতে আইন করছে ডেনমার্ক। এরই অংশ হিসেবে প্রকাশ্যে কোরআন, তাওরাতসহ অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননাকে ‘অপরাধ’ বিবেচনা করে দেশটির সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়। নতুন আইন মতে, লঙ্ঘনকারীদের অর্থদণ্ডের পাশাপাশি দুই বছর কারাদণ্ড হতে পারে। গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ড্যানিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।নতুন এই আইন প্রসঙ্গে দেশটির বিচারবিষয়ক মন্ত্রী পিটার হামেলগার্ড বলেছেন, ‘বিলটি নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তা কারো মৌখিক বা লিখিত অভিব্যক্তি কিংবা অঙ্কনের ওপর আইনটি প্রযোজ্য হবে না। বিলটি এমন কিছু কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে, যা উন্মুক্ত স্থানে বা জনসাধারণের উদ্দেশে সম্পাদিত হয়। মূল কথা হলো, তা একটি ‘শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ বলে বিবেচিত হবে।যেমন— প্রকাশ্যে বাইবেল বা কোরআন পুড়িয়ে ফেলা।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক কোরআন পোড়ানোর ঘটনার ফলে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে ডেনমার্ককে এমনভাবে দেখা হচ্ছে, যেন দেশটি অন্য দেশ ও ধর্মের বিরুদ্ধে অবমাননা এবং অপমানজনক কর্মকাণ্ডের সুবিধা দিয়ে থাকে। এ ধরনের অপমানজনক ও অবমাননাকর কার্যক্রম দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় স্থানে ড্যানিশদের নিরাপত্তাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।’এমন পদক্ষেপ গ্রহণকে ইতিবাচক বলে মনে করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন।তিনি বলেছেন, ‘ডেনমার্ক যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রতি আমার যথাযথ সম্মান রয়েছে। তবে তা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে।’উপপ্রধানমন্ত্রী জ্যাকব এলেম্যান জেনসেন বলেছেন, ‘অন্যদের ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো, ক্ষতি করা বা ধ্বংস করার পেছনে উসকানি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকে না। তা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ডেনমার্ককে একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। এমন অবস্থায় সরকার নিষ্ক্রিয়ভাবে বসে থাকতে পারে না।কোনো বই পুড়িয়ে ফেলা যায় না; বরং তা পড়তে হয়।’গত কয়েক মাসে সুইডেন, ডেনমার্কসহ উত্তর ইউরোপীয় ও নর্ডিক দেশগুলোতে বারবার পবিত্র কোরআনের কপি পোড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৪ আগস্ট সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে কোরআনের কয়েকটি পৃষ্ঠা পোড়ানো হয়। বাকস্বাধীনতার অজুহাতে পুলিশের নিরাপত্তায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে মুসলিম দেশসহ সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগসহ মুসলিম দেশগুলো এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়।গত ১২ জুলাই এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ রোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচআরসি) একটি প্রস্তাব পাস হয়। সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ধর্মীয় গ্রন্থের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করা হয়। তাতে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলা হয়। ",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive কালের কন্ঠ,নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে প্রথমবার শোনা গেল আজানের ধ্বনি,ইসলাম ধর্ম,"নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সদর দপ্তরে প্রথমবারের মতো আজান শোনা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সিটি কাউন্সিলের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এরিক অ্যাডামস আনুষ্ঠানিকভাবে জুমার নামাজ ও রমজান মাসের মাগরিবের নামাজে প্রকাশ্যে আজানের অনুমোদনের কথা জানান। এরপরই সভাস্থলে আজান দিয়েছেন নিউ ইয়র্ক সিটির ইসলামিক সেন্টারের ইমাম শায়খ আবদুল্লাহ সালিম। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা মুবাশিরকে ঐতিহাসিক মুহূর্তে আজান দেওয়ার অনুভূতির কথা জানিয়েছেন শায়খ সালিম।তিনি বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সদর দপ্তরের অভ্যন্তরে প্রথমবার আজান দিয়েছি। এমন মর্যাদাপূর্ণ কাজের সম্পাদনের অনুভূতি সত্যিই বর্ণনাতীত। মুসলিমদের এ সম্মান অর্জনে প্রথমত মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এরপর মুসলিম সর্বোচ্চ সহযোগিতার জন্য নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের প্রচেষ্টাকে সর্বোচ্চ সম্মান জানাচ্ছি।বর্তমান সিটি মেয়র দীর্ঘদিন যাবত এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন।’ মসজিদের আজান প্রসঙ্গে ইমাম সালিম আরো বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটির সব মসজিদে নিজস্ব মুয়াজ্জিন রয়েছে। তারা মসজিদের ভেতরের মাইক দিয়ে আজান দিয়ে থাকেন। মসজিদের বাইরে আজানের কিছুই শোনা যায় না।অবশ্য কিছু এলাকার অনেক পুরোনো মসজিদে মাইক দিয়ে আজান দেওয়া হয়; যার আওয়াজ বাইর থেকে শোনা যায়। সিটি কাউন্সিলের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে আজানে বাইরের মাইক ব্যবহার করা যাবে।’তিনি আরো জানান, আগে মাইক দিয়ে আজান দেওয়ার জন্য অনেক কাগজপত্রসহ সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব আবেদন অগ্রাহ্য হতো। বর্তমানে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।এখন সব মসজিদ আজানের অনুমোদন পেয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিসের পর নিউ ইয়র্ক সিটির মসজিদেও প্রকাশ্যে আজান দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে শহর কর্তপক্ষ। এখন থেকে প্রতি শুক্রবার জুমার আজান এবং রমজান মাসে মাগরিবের আজান প্রকাশ্যে দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে শহরটির কর্তৃপক্ষ। এ জন্য মসজিদগুলোকে শহর কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হবে না। স্থানীয় মুসলিম নেতা ও পুলিশ বিভাগের সহায়তায় আওয়াজের মাত্রা সীমিত পরিসরে নির্ধারণ করা হবে।এর আগে গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ শহর মিনেসোটায় উচ্চৈঃস্বরে আজানের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে সেখানে শুধু সকাল ও সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে আজান দেওয়া যেত।",ধর্মীয় প্রতিবেদন,Positive বাংলাদেশ প্রতিদিন,মা-ছেলের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ,ইসলাম ধর্ম,"কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বাবলী রাণী দাস ও তার একমাত্র পুত্র সন্তান বাঁধন ঘোষ হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বাবলী রাণী দাস উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়নের হেসাখাল দক্ষিণ দায়েমছাতির মৃত হরি মোহন দাস ও জোসনা রাণী দাসের দ্বিতীয় মেয়ে। সম্প্রতি কুমিল্লা বিজ্ঞ নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে মা ও ছেলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বাবলী রাণী দাসের পরিবর্তিত নাম ফাতেমা আক্তার ও ছেলে বাঁধন ঘোষের নাম রাখা হয়েছে মো. নুরুন্নবী। মা ও ছেলে বর্তমানে পার্শ্ববর্তী লাকসামের একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করছে। নওমুসলিম ফাতেমা আক্তার বলেছেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে মুসলমানের সংস্পর্শে এসে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রন্থ পড়ে ও ইসলামিক স্কলারদের ওয়াজ শুনে বুঝতে পারি, ইসলাম পৃথিবীর একমাত্র শান্তির ধর্ম। আমি অনুধাবন করতে পেরেছি, একমাত্র ইসলামই সেরা ধর্ম, যা পরকালে মুক্তির সন্ধান দিতে পারে। আমি সাবালিকা বিধায় বুঝে-শুনে আমি এবং আমার একমাত্র সন্তান বিজ্ঞ আলেমের নিকট গিয়ে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে কালেমা পড়ে মহাপবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি।’ ধর্মান্তরিত হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম গ্রহণে কেউ আমাকে প্ররোচিত করেনি। আমি বাকি জীবন আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই। এজন্য সকলের দোয়া চাই।’",ধর্মীয় শিক্ষা,Positive